All posts by Oporajita

 

পার্লার ব্যবসার মাধ্যমে ডেইজির এগিয়ে যাওয়ার গল্প


আবিদা হক লোরা


উন্নয়নশীল বাংলাদেশে এখন নারী পুরুষ সবাই সমান। সকলেই অবদান রাখছেন দেশের উন্নয়নে। অর্থাৎ সকলে এখন রোজগার করছে। সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও মানুষ স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই নারী সমাজও। এক সময় দেশের নারী সমাজ নানা বৈষম্যের শিকার হলেও সমাজে দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন হওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে মহিলারা যুগান্তরকারী পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখছে। একটা সময় ছিল কোনো কাজ করতে গেলে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো। তবে আশার আলো এই যে, বর্তমানে নারীরা বিভিন্ন বাধাবিপত্তি পেরিয়ে নিজেদেরকে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করছেন। বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে পার্লার প্রতিষ্ঠা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে। বেশ ভাল সারাও পাচ্ছেন অনেকে। তবে এই ব্যবসায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একক মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত বিধায় নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে নারীদের। এখনো তারা বিভিন্ন সামাজিক, আর্থিক, মূল্যবোধ এবং সব থেকে বড় যে সমস্যাটি তারা মুখোমুখি হচ্ছেন তা হলো ব্যবসায় প্রসার করতে যথাযথ প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞ কর্মচারী এবং উপযুক্ত প্রযুক্তির অভাবঘটিত সমস্যা। কিন্তু তারপরও থেমে নেই নারীরা। তাদেরই একজন ডেইজি। পুরো নাম শিরিন আক্তার ডেইজি।
বরিশালের মেয়ে ডেইজি (৩৮) পড়াশোনায় বেশি দূর এগোতে পারেননি। অল্প বয়সেই বাবা-মা তাকে বিয়ের পিড়িতে বসান। ছোটবেলা থেকেই তার প্রবল আগ্রহ ছিল নিজে কিছু একটা করবেন। যেহেতু পড়াশোনা তেমন একটা করা হয়ে উঠেনি তাই চাকরি করার চিন্তা বাদ দিয়ে নিজেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার কথা ভাবলেন। স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে ২০০৬ সালে তিনি একটি পার্লার দেয়ার পরিকল্পনা করেন। প্রথমে মালিবাগের একটি পার্লারে কাজ শেখা শুরু করলেও সংসার এবং বাচ্চা দেখাশোনা করার জন্য বেশিদিন সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। কয়েক মাস পর ইস্কাটনের শাহিন’স পার্লারে ত্রিশ হাজার (৩০,০০০) টাকা দিয়ে তিন মাসের একটি প্রশিক্ষণ নেন তিনি। পরে সেখানে বেশ কিছুদিন কাজও করেন তিনি। এ ভাবে ছয় মাস কাজ করার পর নিজেই বাসার ভিতর একটা রুমে দুইটা চেয়ার আর একটা বেড দিয়ে শুরু করলেন বিউটি পার্লার ব্যবসা। মাত্র বিশ হাজার টাকা দিয়ে তার প্রথম ব্যবসার পথচলা। ধীরে ধীরে যখন কাস্টমার আসা শুরু করল তখন চিন্তা করলেন কিভাবে পার্লারটাকে আরও বড় পরিসরে সাজানো যায়। ২০০৯ সালে কাঁঠাল বাগানে এসে তিনি নিজস্ব সাইনবোর্ড দিয়ে এবং পার্লারের নাম সরকারি খাতায় নিবন্ধন করে বড় করে খুললেন নতুন পারলার। পার্লারের নাম রাখেন ‘স্টাইল বিউটি পার্লার এন্ড বিউটি শপ’। পার্লারের পাশাপাশি তিনি মহিলাদের বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রীও দোকানে রাখা শুরু করলেন। তিনি বিভিন্ন ট্রেইনারদের কাছ থেকে ট্রেনিং নেন। এর মধ্য চায়না এবং ইন্ডিয়া থেকে আগত মেকাপ আর্টিস্টদের শিক্ষানবিশ ছিলেন তিনি। তাছাড়া কাকলি ব্যানার্জি নামে একজন থেকে ফেসিয়ালের উপরও প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এসব প্রশিক্ষন নিতে তাকে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে এবং এর জন্য বেশ কিছু সনদও পেয়েছেন তিনি।
তবে এতকিছু কিন্তু ডেইজির জন্য খুব একটা সহজ ছিল না। পরিবার থেকে নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। ডেইজি বলেন, “আমি যখন নিজের একটা পার্লার করার উদ্যোগ গ্রহণ করি তখন আমার পরিবার এমনকি আমার স্বামীর কাছ থেকেও আমি বাধা পাই। তার মতে পার্লারে কাজ করলে মহিলারা খারাপ হয়ে যায়। আমাকে এই কাজের জন্য টাকা দিতেও আপত্তি জানান তিনি। আমি আমার ভাইর কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে প্রথম কাজ শুরু করি। কিন্তু বর্তমানে আমার স্বামী আমাকে সব ধরনের সহায়তা করেন এবং আমার কাজে আমাকে উৎসাহ দেন। সংসারের সব কাজেও আমার পাশে থাকেন তিনি। পুরো পরিবারই এখন আমার এই কাজ নিয়ে গর্ব করে।”
ডেইজি এখন পার্লারের পাশাপাশি বুটিক্স দিয়েছেন। বুটিক্সের জিনিসপত্র তিনি ইসলামপুর থেকে সংগ্রহ করেন এবং কসমেটিকস আমদানি করেন ভারত থেকে। পার্লার এবং বুটিক্স থেকে তিনি ভালই লাভ পাচ্ছেন। কিন্তু একটি সমস্যার কথা তিনি বলেছেন তা হলো দক্ষ বিউটিশিয়ানের অভাব।
নিজের ব্যবসাকে আরও বড় এবং আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সাজানোর একটি ইচ্ছা ব্যক্ত করেন তিনি। তার মতে, “নতুন উদ্যোগ শুরু করতে পরিকল্পনাই হল বড় বিষয়। পরিকল্পনা সঠিক হলে অর্থের সমস্যাটাকে বড় করে দেখার কিছু নেই”।
সব শেষে তিনি বলেন, ‘সমাজে বাঁধা-বিপত্তি থাকবেই। তারপরও এগিয়ে যেতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং একাগ্রতা থাকলে কোন কিছুই কঠিন নয়। কেবলমাত্র স্বামী কিংবা পুরুষের ওপর নির্ভর না করে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করলে দেশের নারী সমাজও হতে পারে আত্মনির্ভরশীল, অবদান রাখতে পারে দেশের
অগ্রজাত্রায়।’
সুত্র: বাসস।

 

তুরাগে কিশোরীকে পাশবিক নির্যাতন


নারী সংবাদ


রাজধানীর তুরাগের নিমতলীতে এক কিশোরীকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সৎ বাবার বিরুদ্ধে। পাশবিক নির্যাতনের শিকার কিশোরীকে গতকাল উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সৎ বাবা আবদুল সামাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই মাস ধরে সামাদ এ অনৈতিক কাজ করে আসছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী কিশোরীর মা জানান, প্রথম স্বামীর সাথে আট বছর আগে তালাক হয়ে যাওয়ার পর সামাদের সাথে দ্বিতীয় বিয়ে হয় তার। দ্বিতীয় স্বামী ও আগের পক্ষের দুই সন্তান নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে তুরাগের নিমতলীতে ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি। গার্মেন্টশ্রমিক হিসেবে কাজ করায় বাসা অনেকটা ফাঁকাই থাকে। এ সুযোগে স্বামী সামাদের পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় তার বড় মেয়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল সামাদকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেন স্থানীয়রা।

তুরাগ থানার ওসি নুরুল মুত্তাকিন জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত আবদুল সামাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, ভুক্তভোগী কিশোরী অভিযুক্তের সৎ মেয়ে। দুই মাস ধরে সে এ অনৈতিক কাজ করে আসছিল। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

অনাবিল এক প্রশান্তি


ফাতিমা শাহীন


আজ বেশ অনেকদিন পর অঝোর ধারায় বৃষ্টির দেখা মিললো , আলহামদুলিল্লাহ !

ক’দিন গরমের পর কত যে আকাঙ্খিত এই মুহূর্ত ! বেশ কিছু কাপড় পড়ে ছিল ধোয়ার অপেক্ষায়। আলসেমি করে করে ধোয়াই হয়ে উঠছিলনা। বৃষ্টির পূর্বাভাষ যেন আলসে মনের গোড়ায় ইঞ্জিন জুড়ে দিল। একদিনের ভেতরে সব কাপড় ধুয়ে শুকিয়ে গুছিয়ে রাখাও শেষ। আজ সকালে সবজি বাগানে পানি দিতে গিয়েও বারবার তৃষ্ণার্তের মত আকাশের দিকে তাকিয়েছি, আর ভেবেছি , দূরে আবছা হয়ে আকাশের গায়ে লেপ্টে থাকা মেঘগুলোর রহমতের বারি হয়ে ঝরে পড়তে আর কত বাকি ! অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হয়ে যেন ফুরাচ্ছিলনা কিছুতেই !

স্কুল শেষে বাচ্চাদের নিয়ে ফিরে সবে গাড়িবারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছি , প্রকৃতি জুড়ে যেন তখনি বেজে উঠল বৃষ্টিকে বরণ করে নেবার আগমনী সঙ্গীত। ঘরের সামনে লাগানো গোলাপ গাছগুলোর ফুটে থাকা গোলাপের পাপড়িগুলো বাতাসে উড়তে শুরু করল, যেন প্রিয় কোন সঙ্গীকে স্বাগত জানাতেই গোলাপের এই স্বেচ্ছা পুষ্পবৃষ্টি ! আহা ! কি বিমূর্ত সে সময় ! তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকে বাসার পেছনে জোছনা আর বৃষ্টি দেখার জন্য শখ করে বানানো আমার কাঁচঘরে গিয়ে পৌঁছতে না পৌঁছতেই ফোঁটায় ফোঁটায় শুরু হল বর্ষণ। এ এমনই এক ক্ষণ যখন অকারণেই অভিমানী মন দু:খবিলাসী হয়ে ওঠে অজান্তেই , হৃদয় কারো চির ঋণে জড়াতে চায় …

প্রকৃতি যখন বৃষ্টির ছন্দে তাল মিলিয়ে নেচে চলেছে ,আমি তখন বৃষ্টিবিলাসী চাতকের মত সিক্ত করে নিচ্ছিলাম আমার বর্ষণপিয়াসী হৃদয় ! পুরো কাঁচঘর জুড়ে যখন বৃষ্টিরাগের উন্মাতাল মূর্ছনা খেলে বেড়াচ্ছে, তখন বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা আমার অনুভবে ছড়িয়ে যাচ্ছিল অনাবিল এক প্রশান্তির ছোঁয়া। আমি আকুল হয়ে আমার নিঃশ্বাসের সাথে মিশিয়ে নিচ্ছিলাম ভেজা মাটির সতেজ ঘ্রাণ… যা এক অনির্বচনীয় আনন্দ হয়ে মিশে যাচ্ছিল আমার মনে … মানসে … প্রতিটি উপলব্ধিতে ….।

ক্যাটাগরি: মনের জানালা।

 

ধর্ষণের শিকার চার বছরের শিশু


নারী সংবাদ


মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় চার বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরাইদ ইউনিয়নের উত্তর ছনকা গ্রামে। গত বুধবার রাতে এ ঘটনায় সাটুরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে ঘটনাটি গত শনিবার ঘটলেও

ধর্ষকের পরিবারের হুমকি এবং স্থানীয় প্রভাবশালীরা মীমাংসার কথা বলায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় অভিযোগ দেয়নি।

জানা গেছে, সাটুরিয়ার বরাইদ ইউনিয়নের উত্তর ছনকা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের বখাটে ছেলে শিপন হোসেন গত শনিবার দুপুরে একই এলাকার এক কৃষকের চার বছরের শিশুকে ফুসলিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় এলাকাবাসী স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে তাকে চিকিৎসা করান।

সাটুরিয়া থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ধর্ষিতার পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুত্র: সমকাল।

 

ব্যক্তিত্ব প্রকাশে হাসির ভূমিকা


 ফাতেমা শাহরিন


“হাসি” অপূর্ব সুন্দর একটি প্রশান্তকর চারিত্রিক গুন। মানুষের মন ভালো করার জন্য একটু মুছকি হাসি যথেষ্ট। আমরা রোজ সকালে ঘুম থেকে হাসি মুখে উঠি এবং রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত এই সঙ্গীকে আপন করে নিয়েই ঘুমাই। বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি খুঁজে পেয়েছেন, তাঁদের গবেষণানুসারে, ‘হাসি’ ক্যাটকোলেমাইন এবং সহানুভূতিশীল সক্রিয়করণ হরমোন নিঃসৃত করে। যা স্ট্রেস কমাতেও সহযোগিতা করে। সুখী থাকার বা খুশি হওয়ার একমাত্র ও প্রধান উপকরণ হল “সহাস্যমুখ”।

হাসি মন এবং শরীরের মধ্যে সেতু বন্ধন করতে সহযোগিতা করে। যদিও হাসি মানুষদের একটি সাধারণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে অন্যতম।
হাসি সামাজিক বন্ধন তৈরি করতে সহযোগিতা করে, বিবাদ -দ্বন্দ্ব মিটালে সহযোগিতা করে। হাসি পারস্পারিক যোগাযোগের মাঝে আনন্দ এবং স্বস্তিকর সামাজিক পরিবেশ তৈরি করতে ট্রিগার হিসেবে কাজ করে।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে তাই হাসি -খুশিকে নিজের করে নেওয়ার গুরুত্ব বার বার উল্লেখ করা হয়।

 শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা

আপনি যখন হাসতে পারবেন তখন তা আপনার শরীর ও মনকে ভাল রাখবে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, যিনি প্রাণ খুলে হাসে তাদের, ‘তা’ রক্তচাপ হ্রাস করে, চাপ হরমোন হ্রাস করে এবং পেশী বক্রতা বাড়ায়। তাই হাসি এবং আনন্দ জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিজের ওপর হাসির নিয়ন্ত্রণ থাকার কারণে জীবনের ছোট-বড় সবটা সুখ পুরোপুরি উপভোগ করতে পারবেন আপনি।

দুশ্চিন্তা কমাতে

হাসি হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সহায়তা করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের হৃদরোগ বা ব্যথা যন্ত্রণা আছে তারা অন্যদের চাইতে হাসির চর্চা কম করেন। এছাড়া সাধারণ জীবনে তাদের হিউমার বা রসবোধটাও কম থাকে।ফলে তারা দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত থাকে। হাসি হৃদপিণ্ড সুস্থ্য এবং দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে।

সুন্দর যোগাযোগ রক্ষার্থে

হাসি মানুষের সম্পর্ক ঘনিষ্ট করতে সাহায্য করে। ইতিবাচক অনুভূতি ফিরিয়ে আনতে এবং একে অপরের মাঝে প্রীতিপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে।

দৃষ্টিভঙ্গিমায় সুন্দর ইতিবাচকতা 

হাসি হচ্ছে ইতিবাচক সংকেত। আপনি অপরের প্রতি কতটুকু পজেটিভ এবং কত সহজেই অন্যকে বুঝতে পারবে, যে কারা তোমার প্রতি খুশি এর একটি সহজ উপায় হল হাসিমুখ। পৃথিবীতে নানারকম সম্পর্কে আবদ্ধ থাকে মানুষ। আর এই সম্পর্কের ভেতরে কিছু সম্পর্ক খুশির পথে সহায়ক হয়ে কাজ করছে।

সন্মান এবং স্মার্টনেস

মানুষের স্মার্ট ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্যে দরকার পড়ে পোশাক, শিক্ষা, অলংকার, টাকা ইত্যাদি। এসবের জন্যে জীবনে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয় মানুষকে। একজন মানুষ তার খুশি তখনই খুঁজে পায় যখন বেঁচে থাকার জন্যে নয়, বরং নিজের ভেতরে থাকা ইচ্ছে-আকাঙ্ক্ষাকে পরিপূর্ণতা দেওয়ার জন্যে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয় সে।
আর হাসিমুখ একজন মানুষকে বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ স্মার্টনেস এবং নিজের প্রতি নিজের সম্মানবোধকে বাড়িয়ে তুলে।

সুতরাং আমরা বলতে পারি, হাসি যেহেতু স্বেচ্ছাকৃত নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাই স্বাস্থ্যের অনেকগুলি সুবিধার কথা চিন্তা করেও আমাদের সবসময় হাসিমুখে থাকা প্রয়োজন।

 

শিগগিরই চালু হচ্ছে নারীর মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি সেবামূলক ওয়েবসাইট


নারী সংবাদ


দু’সন্তানের জননী জিনিয়া সরকারের মেজাজ সবসময় খিটখিটে থাকে। দুই মেয়ে আর স্বামী নিয়ে চল্লিশের কাছাকাছি বয়সের জিনিয়ার সংসার। বড় মেয়েটি জন্মান্ধ। আর এই বড় মেয়েকে নিয়েই তাকে ব্যস্ত থাকতে হয় দিনের প্রায় পুরোটা সময়।
প্রথম দিকে স্বামী ভেবেছিলেন সারাক্ষণ মেয়েদের পেছনে খাটতে হয় বলেই হয়তো জিনিয়ার মেজাজ সবসময় এমন খিটখিটে থাকে। কিন্তু বেশ কিছুদিন পর তার ভুল ভাঙলো। কারণ, সমস্যাটি বেড়েই চলছিল। স্বামী বুঝতে পারলেন এই সমস্যার সমাধান না করলে আরো বেশি খারাপের দিকে যাবে। তাই, একদিন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হলেন একজন মনোবিজ্ঞানীর কাছে।
সুন্দরী তরুনী রাহেলা গত বছরের মার্চে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হন। পাড়ার এক বখাটে দীর্ঘদিন ধরে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু রাহেলা সাড়া না দেওয়ায় একদিন দিন-দুপুরেই তার দিকে এসিড ছুঁড়ে মারে। দীর্ঘদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসা নেয়ার পর রাহেলা বাড়ি ফিরে যান। এখন তিনি কিছুটা সুস্থ হলেও সারাক্ষণ বিষন্ন থাকেন। কারো সাথেই তেমন একটা কথা বলেন না।
জিনিয়া এবং রাহেলার মত এমন লাখো নারী রয়েছেন যারা ভুগছেন বিষন্নতায়। ভুগছেন মানসিক সমস্যায়। কিন্তু এসব নারীর শতকরা ৯৯ শতাংশই কখনো মনোবিজ্ঞানীর দ্বারস্থ হননি। মূলত অসচেতনতা এবং অজ্ঞতাই এর মূল কারণ। অধিকাংশ নারী বুঝেনই না যে, তারা বিষন্নতায় ভুগছেন।
আর এসব নারীর কথা ভেবেই এক্্েরস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় উইমেন ইনোভেশন ক্যাম্পের মাধ্যমে চালু করছে ‘নারীর মানসিক স্বাস্থ্য’ বিষয়ক একটি সেবামূলক ওয়েবসাইট।
জানা গেছে, এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নারীরা তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সকল তথ্য বিশেষ করে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে জানতে পারবেন। নারীরা বিশেষ করে সন্তান প্রসবের পর এক ধরনের প্রসবজনিত বিষন্নতায় ভোগেন। এই বিষন্নতা থেকে উত্তোরণের উপায় পাবেন এই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে। এছাড়াও বাচ্চা কিভাবে লালন-পালন করতে হবে এমন তথ্যও থাকবে এখানে। এই ওয়েব সাইটের মূল পরিকল্পনাকারী হলেন মনিরা হোসেন। যিনি নিজে একজন এসিড সন্ত্রাসের শিকার।
মনিরা বলেন, আমি নিজে একজন ভুক্তভোগী। আমি বুঝি একজন এসিড দগ্ধ নারী কেমন মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যান। মূলত সেখান থেকেই নারীদের জন্য কিছু করার চিন্তা-ভাবনা শুরু করি। আর গত বছর উইমেন ইনোভেশন ক্যাম্পে আমার এ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরি এবং ২০১৭ সালের ৪ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসে আমার এ পরিকল্পনাটিকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এমনকি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমাকে দেয়া হয়েছে ১৯ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ওয়েবসাইটের নমুনা ডিজাইন প্রস্তুত করা হয়েছে। আরো কাজ চলছে। আশা করছি আগামী বছর নারী দিবসে এই ওয়েবসাইট সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া যাবে।
মনিরা বলেন, নারীরা পরিবার এবং সমাজে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এর ফলে তারা দিন দিন মানসিক রোগে ভুগছেন, যা পরবর্তীতে ভয়াবহ আকার ধারন করতে পারে। আমরা এ ধরনের নারীদের জন্য কী কী করনীয় এবং কোথায় এর সমাধান পাওয়া যাবে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেসব বিষয় জানাবো । এছাড়াও এখানে একটি হটলাইন থাকবে যার মাধ্যমে নারীরা চাইলে বিভিন্ন মানসিক সমস্যার জন্য কাউন্সিলিং নিতে পারবেন বলে জানান মনিরা। তিনি বলেন, এই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে সেবা গ্রহনকারীরা সরকারের আরো যেসব স্বাস্থ্য সেবা রয়েছে সেসব সম্পর্কেও জানতে পারবেন। সরকারের স্বাস্থ্য সেবা তথ্য এই ওয়েবসাইটে যুক্ত থাকবে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মানসিক সমস্যাকে আমরা অনেকেই পাগলামী বলে থাকি। বিশেষ করে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে মানসিক বিষন্নতার জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াকে অনেকেই পাগলামি ভাবেন। আবার অনেকে মনে করেন এটা বিলাসিতা। অধিকাংশই আবার এ বিষয়ে সচেতন নন। কিন্তু দীর্ঘদিন যদি একজন ব্যক্তি মানসিক বিষন্নতায় ভোগেন তবে তা আরো খারাপের দিকেই যায়।
তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোর দিকে নজর দিলে আমরা দেখি সেখানে শিশু হতে একেবারে বৃদ্ধ সবাই মাসে একবার অথবা ছয় মাসে অন্তত একবার ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। আবার কেউ কেউ শুধু মাসে একবার যান মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। এই মানসিক রোগ যেকোন কারণে হতে পারে। পারিবারিক অশান্তি, অফিসে ঝামেলা, বাচ্চা সামলাতে না পারা আরো বিভিন্ন ভাবে একজন নারী বিষন্নতায় ভুগতে পারেন। কিন্তু এর প্রতিরোধের জন্য দরকার সঠিক সময়ে, সঠিক পরামর্শ এবং চিকিৎসা।
নারীদের জন্য সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এই সেবা যাতে’ প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় সেজন্য সঠিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
সুত্র: বাসস।

 

বিশিষ্ট সাহিত্যিক ফরিদা হোসেনের সাক্ষাৎকার

 


অপরাজিতা


সুসাহিত্যিক ফরিদা হোসেন একজন গল্পকার, ঔপন্যাসিক, শিশু সাহিত্যিক, নাট্যকার, নাট্যপরিচালক ,গীতিকার সুরকার,আবৃত্তিকার,অনুবাদক , এবং সম্পাদিকা।  ৬০-এর দশকে ছাত্রী অবস্থায় তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘অজন্তা’ প্রকাশ হয়। তার গল্প সংকলন, উপন্যাস, নাটক, শিশু সাহিত্য, অনুবাদগ্রন্থসহ প্রায় ৫০টির মতো গ্রন্থ রয়েছে। ফরিদা হোসেনের যে সাহিত্যকর্ম তা এই সময়কার একজন আধুনিক লেখিকার প্রতিনিধিত্ব করে। তিনি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংগঠন পি.ই.এন এর বাংলাদেশ সেন্টারের সভাপতি হিসাবে দীর্ঘ তের বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। ফরিদা হোসেন ১৯৪৫ সালের ১৯ জানুয়ারী,ভারতে কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ফরিদা হোসেন ২০০৪ সালে সাহিত্যে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক পান। এছাড়াও মওলানা ভাসনী ও অতিশ দিপংকর স্বর্ণপদকসহ মোট ৬ টি ও বিভিন্ন সংগঠন থেকে পক্ষ থেকে মোট ২৫ টি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। হোসেন চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার শাহেরখালী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে সদস্যা। তার বাবা ফয়েজ আহমেদ ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শ্রমিক নেতা ও আই. এল. ও এর গর্ভনিং বডির প্রাক্তন পরিচালক এবং মা বেগম ফয়েজুন্নেছা একজন গৃহিণী। ফরিদা তাদের প্রথম কন্যা।

বর্তমানে তিনি ‘অবিনশ্বর’ সাহিত্য পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক দায়িত্ব পালন করছেন। প্রচারবিমুখ এই মহিয়সী নারী মুখোমুখি হয়েছিলেন  অপরাজিতা সাথে। তার সেই কথপোকথনের কিছু অংশ নিম্নে তুলে ধরা হলো-

অপরাজিতা: লেখিকা হয়ে উঠার শুরুর গল্পটা জানতে চাই।  তৎকালীন সামাজিক প্রেক্ষাপট টাই বা কেমন ছিলো?

ফরিদা হোসেন:আমার লেখালেখির শুরুটা হয়েছে খুব ছোটবেলায়। তখন আমি স্কুলে পড়তাম। আর প্রেক্ষাপটটা ছিলো ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনকে ঘিরে। আমরা তখন নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় থাকতাম। ঐ জায়গাটা ছিলো ভাষা আন্দোলনের তীর্থ ভূমির মত। যা আমার কঁচিমনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। বলা যায় তখন থেকেই লেখালেখিটা শুরু। আমার মনে আছে ঐ পরিস্থিতিতে আমি লিখেছিলাম-

রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।

                 দেশের কথা বলতে চাই।

এরপর থেকেই লিখতে থাকা। নিজ ইচ্ছাতেই কবিতা এবং ছোট গল্প লিখতাম যা মাথায় আসত। তবে খুব গোপনে লিখতাম। একদিন আমার লেখা বাবার হাতে চলে যায়। যেহেতু আমি গল্প কবিতা লিখতাম তাই পড়াশুনায় খুব একটা মনোযোগী ছিলাম না। তাই আমার বড় ভাই একদিন বাবার কাছে ঘর ভর্তি মানুষের সামনে নালিশ করলেন যে আমি পড়াশুনা না করে শুধু কবিতা লিখি। তখন বাবা সবার সামনে কবিতা গুলো আনতে বললেন এবং পড়তে বললেন। আমি পড়ে শুনালাম। সবাই খুব প্রশংসা করলেন। লেখা ভালো হয়েছে সে জন্যে নয়। এতটুকু মেয়ের লেখায় যে দেশাত্নবোধ ফুটে উঠেছে সে জন্যে।

আর তৎকালীন সামাজিক প্রেক্ষাপট বলতে গেলে বলা যায় সাহিত্য চর্চাটা তখন খুব সীমিত আকারে ছিলো। নারীদের মধ্যে তো আরো কম ছিলো। তবে সেই প্রজন্মের সাহিত্যিক ও শিল্পীরা মুলত ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যে অত্যন্ত উদার, প্রগতিশীল, সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক মনমানসিকতা প্রকাশ করত। এখন যেমন অসুস্থতার প্রতিযোগিতা ঢুকে গেছে তেমনটা ছিলো না।

অপরাজিতা: আপনি শিশু ও নারীদের নিয়ে লিখেছেন। কেন  নারী ও শিশুকে লেখার মুল বিষয় হিসাবে গ্রহন করলেন?

ফরিদা হোসেন: মুলত আমার ভাবনায় ‘শিশুদের নিয়ে নিজস্ব জগতে হারিয়ে যাওয়া,’ শিশুদের মন ভোলানো  রাজ্য, জেগে ওঠা ভোরের মতো শিশুদের জাগিয়ে তোলার গল্প কেন জানি বেশি নাড়া দেয়। ওদের পৃথিবীটাকে নিষ্পাপ আর পবিত্র মনে হয়। তাই ওদের সঠিক দিক নিদের্শনার দেবার জন্য, ওদের পৃথিবীটাকে আনন্দে ভরিয়ে দিতেই আমার এ চেষ্টা। সত্যি বলতে কি, ওদের জন্য কাজ আমি করতে ভীষণ আনন্দ পাই।
আর  নারীদের নিয়েও আমার বেশ কয়েকটা বই রয়েছে। সব সময় আমি মনে করি, প্রতিটি নারীর উচিত স্বাধীনভাবে ব্যক্তিত্বের আলোকে নিজের প্রতিভাকে জাগ্রত করার চেষ্টা করা। নিজস্ব কর্মের গুণে প্রতিটি নারীই যেন হয়ে ওঠে বহুমুখী প্রতিভায় উদ্ভাসিত। তাই নারীকে নিয়ে কলম ধরা ।

অপরাজিতা: শিশুদের নিয়ে আপনার যে কাজ গুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে জানতে চাই?

ফরিদা হোসেন: আমার প্রথম লেখাটি প্রকাশ পাওয়ার পর ১৯৬৫ সালে বিটিভিতে প্রথম রূপকথার দেশে নামক ২৫ পর্বের শিশুতোষ ধারাবাহিক  নাটক পরিচালনা করি। এই ধারাবাহিকটি বিটিভির ইতিহাসে প্রথম এত বড় কাজ যা এখন পর্যন্ত কোন চ্যানেল করেনি। তারপর থেকেই শিশুদের নিয়ে লেখালেখি,নাটক পরিচালনা,গান লেখা ,সুর দেওয়া  ধারাবাহিক ভাবে করতে থাকি। আমার লেখা শিশুতোষ অনেক গল্পের মধ্যে, তেলাদার তেলান্তক, তূষার কন্যা, মায়াদ্বীপে অভিযান, খুকুর স্বপ্ন, চাঁদ কন্যার কথা, সপ্তবর্ণ,শান্তির পায়রা, লুকোচুরি, মিতালী, আনন্দ ফুলঝুরি, অচিনপুরের রূপকথা, রোজ রোজ,তারার খোঁজে, এক ব্যাগ রূপকথা, রূপকথা সমগ্র ইত্যাদি অন্যতম।এছাড়াও শিশুদের জন্যে যে কাজ করেছি তার মধ্যে আরেকটি উল্লেযোগ্য কাজ হলো- আমার একটা শিশুদের সংগঠন আছে ’আঞ্জুমান’এই সংগঠনের মাধ্যমে আমি সব কাজ পরিচালনা করেছি।

বিটিভিতে ফরিদা হোসেনের পরিচালনায় ছোটদের নাটকের লিংক…..

“শিশুতোষ নাটক”

অপরাজিতা: পরিচালক হিসাবে কখন থেকে কিভাবে কাজ শুরু করলেন? সেই সাথে মিডিয়াতে আপনার বহুমুখি প্রতিভার সাথেও পরিচিত হতে চাই?

ফরিদা হোসেন: পরিচালক হয়ে উঠার গল্পটা অনেক লম্বা। সংক্ষেপে বলা যায়-আমি তখন সদ্য কৈশোর পেরিয়েছি মাত্র। আমাদের এলাকায় শিশুকিশোর সংগঠন ছিলো নিহারিকা কচি কাচার মেলা।কোন একটা বিষয় নিয়ে সেন্ট্রাল কচিকাচার মেলার সাথে আমাদের একটা মতবিরোধ হয়।তখন আমি মনে মনে জিদ করেছিলাম যে প্রোগ্রাম কাকে আমি দেখিয়ে দিব। ঐ চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম তখন কোন অভিজ্ঞতা ছিল না তখন পাড়ার ছেলেমেয়েদের নিয়ে হ্যাড ক্রিস্টমার এর স্নো হোয়াট উপর নাটক তৈরি করলাম। ভাবটা রেখে পুরোটা আমার মতো করে সাজালাম। এবং চিত্রনাট্য টা করলাম। নাটকের খাতিলেই আমাকে গান লিখতে হল। গান ছাড়া নাটকটা ঠিক যেন প্রাণ পায় না। পাড়ার পাঁচ থেকে পনের বছরের   বাচ্চাদের নিয়ে তারপর নাটকটি পরিচালনা করি। ‘তুষার কন্যা’ নাটকটি ইন্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট পুরো পাকিস্তানে মধ্যে প্রথম হয়েছে। এরপর পাকিস্তান টিভিতে সম্বোধনা দেওয়া হয় আমাদের পুরো টিমকে।
এরপর থেকে মুলত মিডিয়া কাজ করা শুরু। এরপর পাকিস্তান রেডিতেও ডাক আসে। সাপ্তাহিক শিশুতোষ নাটকসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে। এছাড়া মহিলা আসর পরিচালনার দায়িত্ব পাই। এছাড়া পাকিস্তানি টেলিভিশনের জিল্লুর রহমান উনি সম্ভবত ডিজি ছিলেন, তিনি চাচ্ছিলেন আমার ভয়েজটাকে কাজে লাগানো যেন হয়। নিউজ পড়তাম। নিউজ পড়াটি ছিল আমার শখ। এরপর শিশুদেরএকাধারে সিরিয়াল তৈরি ২৪টি পর্ব ‘রূপকথার দেশে’ রচনা পরিচালনা এমনকি সেট ডিজাইন পর্যন্ত আমি করতাম। নাটকটার পাশাপাশি বই বের করি। এছাড়া ধারাবাহিক, সাপ্তাহিক, সিরিজ, শর্টফিল্ম তৈরি করি। ১৯৬৪ বা ১৯৬৫ সালে দিকে গানের প্রচলন নাটকে কম ছিল আমার গান আসত তখন নাটকের প্রয়োজনে। তাই গান রচনা করতে হত। বড় দের নাটক গুল মুলত আমি লিখেছি। কিন্তু পরিচালনা করেছে অন্যরা। মেয়ে গান গাইতো তার প্রয়োজনে গান লিখেছি এবং সুরও করি।

অপরাজিতা: সাহিত্যিক ও পরিচালক ফরিদা হোসেনের পাশাপাশি আপনার আরো কিছু অঙ্গনে দৃপ্ত পদচারণা রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদেরকে কিছু বলুন?

ফরিদা হোসেন: আমি সাহিত্যচর্চা আর বিটিভির পরিচালক হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি সংবাদ পাঠিকা হিসাবে কাজ করেছি। আবৃত্তি করেছি আর গানও গেয়েছি। আমার আবৃত্তির সিডি আছে।এছাড়াও নাট্য রচনা, গীতিকার, সুরকার হিসাবেও কাজ করেছি। মূলত আমার পরিচালনার  কাজ করতে গিয়ে এই কাজ গুলো আমার দ্বারা হয়ে গিয়েছে।

ফরিদা হোসেনের আবৃত্তি শুনতে ক্লিক করুন এই লিংকে–

“ফরিদা হোসেনের আবৃত্তি”

অপরাজিতা: বিটিভিতে ছোটদের কাজ ছাড়াও বড়দের জন্য আপনার পরিচালনায় কি কি হয়েছে?

ফরিদা হোসেন: ছোটদের ছাড়াও বড়দের জন্য নাটক আছে অনেক এই যেমন, ‘অন্যরকম ভালোবাসা’ কিছু ধারাবাহিক এবং অধিকাংশ সাপ্তাহিক। কিন্তু আমি কেবল রচনা করতাম অন্যদের পরিচালনায় তা বিটিভিতে প্রচার করা হত।

অপরাজিতা: আপনার সংসারজীবনে সম্পর্কে কিছু বলুন।

ফরিদা হোসেন: সাংসারিক জীবন ছিল আমার খুবই স্বাচ্ছন্দ্যময়। সবসময় মানসিক সাপোর্ট পেয়ে এসেছি। আমি যখন বাইরে কাজ করতে যেতাম বিটিভিতে প্রোগ্রাম থাকত। মাঝেমধ্যে ফিরতে রাত হত। তখন আমার জন্য আমার হাজবেন্ড অপেক্ষা করতেন।কখনও আমাকে ছাড়া খেয়ে নিতো না। আমরা সবসময় একসাথে রাতে খাওয়ার পর সারাদিনের গল্প করতাম। আমি আমার দাম্পত্য জীবন নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। এমন কোন কথা নেই যা আমি বাসায় এসে আমার হাজবেন্ডকে শেয়ার করিনি। এখন আর তিনি নেই সবসময় শূন্যতা অনুভব করি। তিন মেয়ে আছে। মেয়েদের মানুষ করার চেষ্টা করেছি নিজের আদর্শে।  কখনও গাড়ি দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর সব ছাত্রীদের মতই বাসে আসা যাওয়া করত। ওদের রুমে এসি লাগায়নি দীর্ঘদিন। এসব নিয়ে ওদের কোন অভিযোগ ছিল না। বর্তমানে তারা সবাই খুব ভাল আছে। জামাইরা সবাই খুবই পজেটিভ মাইন্ডের এবং তারা সবাই সুখে আছে। বড় মেয়ে বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠান বে-ইষ্টার্ন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারাহ আঞ্জুম। আমি ওর কাছকাছি থাকি তাই খুব বেশি সমস্যা হয় না আলহামদুলিল্লাহ্‌।

অপরাজিতা: আসছে আপনার ৭৪ তম জন্মদিন। দীর্ঘ জীবনে অনেক কিছু দেখেছেন, অভিজ্ঞতার সঞ্চয়ও ঢের। এত দিন পেরিয়ে এসে আপনার উপলব্ধি কী?

ফরিদা হোসেন: আমার যতটুকু প্রাপ্তি তা নিয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। আমি মনে করি-

‘জীবন একে কর না হেলা
জীবন মানে দুহাতে আধার ঠেলে সামনে এগিয়ে যাওয়া’

আমরা কেউই হেরে যাবার পাত্র নই যে কোন পরিস্থিতিতেই নিজেকে উঠে দাড়াতে হবে। যে কোন পরিস্থিতিতেই তাতে যত কষ্ট লুকিয়ে থাকুক না কেন আমরা মেয়েরা নতি শিকার করার জন্য জন্ম নেয়নি। আমি যাদের নিয়ে লিখেছি শিশু, নারী বা অন্যান্য চরিত্র তা নিজ দায়িত্ব নিয়েই লিখেছি। আমি চাই প্রতিটি নারী আপন যোগ্যতায় বেড়ে উঠবে। তাদেরকে যাতে কেউ পেছনে ফেলতে না পারে।

অপরাজিতা: আপনি বলছিলেন নারীদের কথা, মুলত নারীদের আসলে কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?

ফরিদা হোসেন: সৎ ও চরিত্রবান হওয়া উচিত।

অপরাজিতা: আজকের সমাজের নারীদের সন্মান ও মর্যাদা কতটুকু?

ফরিদা হোসেন: নারীদের সন্মান ও মর্যাদার ব্যাপারে নারী-পুরুষ উভয়েরই জ্ঞান থাকতে হবে। নিজ নিজ যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

অপরাজিতা: সমাজে মূল্যায়নের জন্য নারীদের কি করা উচিত?

ফরিদা হোসেন: তাদের শিক্ষিত হওয়া এবং যোগ্যতা অর্জন করা উচিত।

অপরাজিতা: আমাদের সমাজের বর্তমান নারীদের সম্পর্কে বলুন?

ফরিদা হোসেন: আগের তুলনায় আমাদের সমাজের বর্তমান নারীরা পারিপার্শ্বিকতার ব্যাপারে অনেক সচেতন। তাদের মাঝে আগের দিনের মতো দ্বিধা সংকোচ এখন তেমন আর নেই। এখন নারী সমাজের অনেকের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে এবং সাফল্যও লাভ করছে।

অপরাজিতা: আপনার সাহিত্য পত্রিকা ‘অবিনশ্বর’ সম্পর্কে বলুন?

ফরিদা হোসেন: ‘অবিনশ্বর’ সাহিত্য পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আমি। এই পত্রিকাটি পূর্বে প্রতি মাসেই প্রকাশিত হত বর্তমানে তিন মাস অন্তর অন্তর প্রকাশিত হয়। নারী অধিকার, অলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠায়, শিশুদের নিয়ে ভাবনা সবকিছু সম্মিলিত ভাবে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে এই ‘অবিনশ্বর’ সাহিত্য পত্রিকাটিকে নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দেবার চেষ্টা করছি। আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। তাই নিজস্ব কর্ম ও চিন্তাধারণার আলোকে বহুমুখী প্রতিভাবান লেখকদের লেখাকে একত্রিত করে পত্রিকাটি তিন মাস পর পর প্রকাশিত হচ্ছে।

অপরাজিতা: দীর্ঘ একটা জীবন কাটালেন। জীবন নিয়ে কোনো অপ্রাপ্তি বা হতাশা কি আছে নিজের ভেতরে? নিজেকে ভবিষ্যতে কোথায় দেখতে চান?

ফরিদা হোসেন: আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমি যতটুকু পেরেছি, চেষ্টা করেছি, আমার কাজের প্রচারটা একটু কম কিন্তু আমি অপ্রাপ্তিতে বা হতাশায় ভুগি না। আমি পেন এর সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দীর্ঘ দশ বছর ছিলাম। আবার ২০০৪ সালে সাহিত্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছি। এছাড়াও অজস্র পুরস্কার পাই এসব গুলকেই মূল্যায়ন হিসেবে দেখি। এত দূর নাও আসতে পারতাম আল্লাহর রহমতে আসছি। আমার জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট। লেখালেখি চলছে, সামনে শিশুতোষ মুভি ও শর্টফিল্ম করার ইচ্ছে আছে।। গল্প, কবিতা ও উপন্যাস লিখছি এখনও। আসলে সাহিত্যচর্চাকে আরও সামনে অগ্রসর করে আমি আমাকে অচিরেই সাহিত্য জগতে একটি বিশেষ স্থানে নেওয়ার স্বপ্ন বুনি। অর্থাৎ সাহিত্যের যে একটি স্ট্যান্ডার্ড মান আছে সেই মানে পৌছাতে চাই। আমার লেখা গল্পগুলোকে সার্থকতায় মাপকাঠিতে পৌছাতে চাই।

বাংলা একাডেমী পুরস্কার

অজস্র পুরস্কার

 

চট্টগ্রামে গৃহশিক্ষকের হাতে ছাত্রীর মা খুন

 


নারী সংবাদ


চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানার বিশ্বকলোনি এলাকায় মেয়ের সাবেক গৃহশিক্ষকের হাতে খুন হয়েছেন শাহেনা বেগম নামে এক মহিলা। গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক মোহাম্মদ শাহ জাহানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মিরসরাইয়ের বাসিন্দা শাহ জাহান চার মাস আগে বিশ্বকলোনি এলাকার জসিমের মেয়ে তানজিলাকে পড়ানোর দায়িত্ব পায়। পড়ানোর একপর্যায়ে নবম শ্রেণীর ছাত্রী তানজিলার প্রতি কুনজর পড়ে গৃহশিক্ষক শাহ জাহানের। এ ঘটনা বুঝতে পেরে দুমাস আগে গৃহশিক্ষককে বাসায় পড়াতে আসতে বারণ করে দেন তানজিলার মা শাহানা বেগম। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই শিক্ষক ছাত্রী ও ছাত্রীর বাবা-মাকে ফোনে হুমকি ও নানা ছুঁতোনাতায় বিরক্ত করতে থাকে।
গতকাল দুপুরে এক মাসের বেতন বকেয়া আছে সেই অজুহাতে গৃহশিক্ষক শাহ জাহান বিশ্বকলোনিতে গিয়ে ছাত্রীর বাবা জসিমের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়ায় এবং একপর্যায়ে জসিম ও তার ভাইকে কুপিয়ে আহত করে। তাদের রক্ষায় শাহেনা বেগম এগিয়ে এলে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

 

পরকীয়ার সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা : স্বামী গ্রেফতার


নারী সংবাদ


স্ত্রী নূপুরের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে এমন সন্দেহ করেছিল দুলাল। এর জের ধরেই গত রোববার দিনভর ঝগড়া হয় তাদের। রাতে আবারো ঝগড়া বাধলে নূপুরকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায় স্বামী দুলাল। এ ঘটনায় গতকাল দুলালকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর পূর্ব হাজীপাড়া বইবাজার এলাকার ৭৮/১২ নম্বর বাসা থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় গৃহবধূ নূপুর বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। নিহত নূপুরের বাড়ি খুলনার ফকিরহাটে। তার স্বামী দুলালের বাড়ি শেরপুর শ্রীবর্দি এলাকায়। তবে বেশ কিছু দিন ধরেই স্ত্রী নূপুরের পরকীয়া প্রেম আছে বলে সন্দেহ করে আসছিল দুলাল। রোববার রাতেও ঝগড়ার একপর্যায়ে নূপুরের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে দুলাল।
সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

রূপান্তরের যাত্রা – পর্ব ১০


তাহনিয়া খান


Bismillahir Rahmanir Rahim

Rabbish rahli sadri wa yas-sir li amri wahloul uqdatam mil-lisaani yafqahu qawli.
O my Lord! expand me my breast; Ease my task for me; And remove the impediment from my speech, So they may understand what I say[20:25-28]

মক্কায় আসার দু’দিনের মাথায় মাগরিবের নামায পড়ার সময় চমকে গেলাম। আরে, আব্দুর রহমান আস সুদাইস তেলাওয়াত করছেন। খুব ভালো লাগছিল। নামায শেষে দুই ভাই বোন যখন এক হলাম, দু’জনেই একসাথে বললাম, আজকে কে নামায পড়ালো জানো ? দু’জনই হেসে একই উত্তর দিলাম। বেশীর ভাগ সময়ই উনি মাগরিবের নামায পড়াতেন। ছোট ছোট সূরা পড়তেন। শুধু মনে হতো আরেকটু বড় সূরা পড়লে আরো ভালো লাগতো।

আরেক ভদ্রলোকের তেলাওয়াত আমাদের দু’জনেরই খুব ভালো লাগলো। কিন্তু নাম জানি না। একদিন উনি নামায পড়ানোর পরে আমার ভাই হারাম শরীফের পাশের দোকানগুলোতে গিয়ে জিজ্ঞেশ করছিল কোন ইমাম আজকে নামায পড়ালেন। কেউ বলতে পারে না। অনেকে বুঝেও না কথা। যাই হোক, এক সিডি বিক্রির দোকানী বললেন যে ঐ ইমামের নাম মাহের আল মুকাইলি। আমার ভাই উনার কোরআন তেলাওয়াতের সিডি কিনে নিল।

হজ্জের দিনগুলো কাছে চলে আসছে। তার আগেই আমাদের মোয়াল্লেম মক্কার দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরাতে নিয়ে যাবেন। একদিন সকালের নাস্তা সেরেই আমরা সবাই তৈরি হয়ে গেলাম। হেরা গুহা, মসজিদে নামিরা, আরাফাহ’র ময়দান, জাবালে নূর, মিনা, জামারাহ, নবী (সাঃ) আবু বকর (রাঃ) কে নিয়ে যে গুহায় লুকিয়ে ছিলেন সেই গুহা, ইব্রাহীম (আঃ) যেখানে ছেলেকে কোরবানী দিয়েছিলেন, কবরস্থান সহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরিয়ে দেখানো হলো। হেরা গুহায় আমাদের উঠতে নিষেধ করা হয়েছিল। কারণ হজ্জের আগে শরীর ঠিক রাখতে হবে। এই গুহা এত উপরে যে উঠার সময় শরীরের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ফলে যেই উদ্দেশ্যে মক্কায় আসা, সেটাই যদি না করতে পারি তাহলে আর লাভ কি হলো।

হেরা গুহা যে পাহাড়ে , সেখানে নীচে দাঁড়িয়ে অবাক হয়েছি। কত বন্ধুর পথ ! যদিও এখন উপরে উঠার জন্য সুব্যবস্থা আছে। কিন্তু নবী (সাঃ) এর সময় তো এমন ছিল না। উনার বাসা থেকে কত দূরে ঐ পাহাড়। সেই পাহাড়ের কত উপরে সেই গুহা। সেখানে বিবি খাদিজা (রাঃ) রাসুল (সাঃ) এর জন্য খাবার নিয়ে যেতেন। খাদিজা (রাঃ) এর বয়স তখন ছিল ৫৫ বছর। ৫৫ বছরের এক মহিলা তাঁর স্বামীর জন্য কি কষ্টই না করেছেন। আমার ভাই আমাকে বলে, শিখে নাও, শিখে নাও, কীভাবে স্বামীর যত্ন করতে হয় শিখে নাও। একটু আতে ঘা লাগলো । আমি বুঝি আমার স্বামীর জন্য কষ্ট করি না ? যত্ন নেই না ? সেক্রিফাইস করি না ? তাকেও বললাম, দেখ, খাদিজা (রাঃ) এমনি এমনি এত কষ্ট করেননি। উনার স্বামীও এমন মানুষ ছিলেন যে, বিবি খাদিজা (রাঃ) উনার জন্য কষ্ট করাকে কষ্টই মনে করতেন না। স্ত্রীর ভালোবাসা, সাহায্য আর সম্মান পেতে হলে স্বামীদেরও তেমন যোগ্য থাকা লাগবে। আমার ভাই হাসে।

মসজিদে নামিরাতে গিয়ে দেখি সেটা হজ্জের জন্য পরিষ্কার করা হচ্ছে। বছরে শুধু হজ্জের সময়ই এখানটায় নামায পড়া হয়। মিনার তাবুগলো ঠিকঠাক করা হচ্ছিল। জামারাহ এর ভিতর যাইনি। বাইরে থেকে দেখলাম। মোটামুটি হজ্জের একটা রিহার্সেল সেদিন দিয়ে আসলাম। একটা জিনিস ভালো লাগেনি। মক্কার পাহাড়গুলো কেটে ফেলা হচ্ছে বড় বড় হোটেল আর সুপার মল করার জন্য।

হজ্জের দশম শিক্ষা — পুরো মক্কা শহর আর তার চারপাশে যখন ঘুরে দেখছিলাম তখন আমরা ছিলাম এসি গাড়িতে। সকাল থেকে এত কিছু দেখে যখন মক্কার ভিতরে আসলাম তখন হারাম শরীফে যোহরের আজান দিচ্ছিল। শুধু মনে হচ্ছিল, এত কম সময়ে কতগুলো জায়গা ঘুরে আসলাম। অথচ নবী (সাঃ) এর সময় এই জায়গা গুলো ছিল পাহাড় দিয়ে ঘেরা। এমন সুন্দর রাস্তা ছিল না। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে যেতে কত কষ্ট হয়েছিল উনার। কত কষ্ট করে উনি পাহাড়ে গিয়ে ধ্যান করতেন, কত কষ্ট করে উনি পাহাড়ে গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন, কত কষ্ট করে মানুষের নির্যাতন সহ্য করেছিলেন। তারপরেও তিনি হাল ছেড়ে দেননি, মানুষকে অভিশাপ দেননি, মানুষের মঙ্গল চেয়েছেন, মানুষকে আল্লাহ্‌র পথে ডেকেছেন। তাঁর উম্মতের জন্য দোয়া করেছেন। উনার এসব কাজ শুধু মাত্র আল্লাহ্‌র সন্তোষটির জন্য ছিল। জন্মসুত্রে আমি মুসলিম, মোহাম্মদ (সাঃ) এরই উম্মত। আমার জন্যও উনি দোয়া করেছিলেন। সেই আমি উনার মর্যাদা রক্ষার জন্য কি করছি ? আমি কি সত্যি উনাকে ভালোবেসে, উনার দেখানো পথে, আল্লাহ্‌র সন্তোষটির জন্য কাজ করছি ?

পর্ব- ৯

 

টমেটো আর ডিমের রেসিপি


ঘরকন্যা


ডিম টমেটো সুপ

উপকরণঃ
– টমেটো,বড় ৩ টি
– সিরকা ২ চা. চা.
– পেঁয়াজ,কুচি ১ টি
– সাদা গোলমরিচ,গুঁড়া ১/৪ চা. চা.
– তেল ১ টে. চা.]
– ৩ টি ডিমের সাদা অংশ
– চিকেন স্টক ৫ কাপ
– চিনি, লবণসয়াসস,লাইট ১ টে. চা.
– ধনেপাতা কুচি সামান্য

প্রণালীঃ
১। ফুটানো পানিতে টমেটো দিন। পাতলা খোসা ফেটে গেলে টমেটো তুলে খোসা ছাড়ান। টমেটো টুকরা করুন।
২। তেলে পেঁয়াজ ভাজুন। নরম ও চকচকে হলে চিকেন স্টক,সয়াসস,সিরকা,গোলমরিচ এবং পরিমানমতো লবণ ও চিনি দিন। ফুটে উঠার পরে মৃদু আঁচে ১০ মিনিট রাখুন।
৩। ডিমের সাদা অল্প ফেটান। উপর থেকে ধীরে ধীরে সুপে ডিমের সাদা ঢেলে দিন। নাড়বেন না। ডিম জমার জন্য ১ মিনিট অপেক্ষা করুন। টমেটো দিয়ে ৩ মিনিট মৃদু আঁচে ফুটান। ১ মিনিট পরে সুপের লবণ ও চিনি ঠিক হলো কিনা দেখে নামান।

ডিম-টমেটো পাকোড়া

উপকরণঃ
» বড় টমেটো ২টি।
» চালের গুঁড়া ১ কাপ।
» কাঁচামরিচ ৩টি।
» ডিম ২টি।
» পেঁয়াজ বড় ১টি।
» ধনেপাতা-কুচি আধা আটি।
» অল্প হলুদ।
» বেকিং পাউডার আধা চা-চামচ।
» তেল ও লবণ পরিমাণমতো।

পদ্ধতিঃ
টমেটো ও পেঁয়াজ কুচি করে এতে ২টি ডিম ফেটিয়ে মেশান। চালের গুঁড়া ও ধনেপাতাও এই মিশ্রণে মেশান। হলুদ, লবণ ও বেকিং পাউডার দিন। কড়াইতে তেল গরম করে হাতায় করে গোলা তুলে লাল করে ভেজে নিন। এরপর সসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

সোনারগাঁয়ে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ


নারী সংবাদ


সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী ধনপুর গ্রামে কুলসুম আক্তার নামের এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। ঘটনার পর থেকে কুলসুমের শ্বশুবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। কুলসুম চাঁদপুর জেলার মুন্সিরহাট গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়ার মেয়ে।

উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী ধনপুর গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে মানিক মিয়ার সঙ্গে এক বছর আগে চাঁদপুর জেলার মুন্সিরহাট গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়ার মেয়ে কুলসুমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য তাদের পরিবারে কলহ সৃষ্টি হয়। মানিক মিয়া কুলসুমকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় মারধর করত। নির্যাতন সইতে না পেরে কুলসুম কয়েকদিন আগে বাবার বাড়িতে চলে যান।

এদিকে মানিক মিয়া গত শুক্রবার কুলসুমকে বুঝিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। রোববার দুপুরে এলাকাবাসী কুলসুমের লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌছে কুলসুমের লাশ উদ্ধার করে।

সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) সেলিম মিয়া জানান, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। তবে এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলার প্রস্তুতি চলছে।

 

দাগনভূঞায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা মাদকাসক্ত স্বামীর


নারী সংবাদ


ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের পূর্বচন্দ্রপুর গ্রামে এক মাদকাসক্ত স্বামী তার স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন। এসময় বাড়ির লোকজন তাকে ধরে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। গুরুতর আহত গৃহবধূ ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্বচন্দ্রপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম তার স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করতেন। গতকাল শনিবার রাতে মারধরের একপর্যায়ে শিশুকন্যার সামনে স্ত্রী মোমেনা খাতুন সুইটিকে (২৬) জবাই করে হত্যার চেষ্টা করেন। এসময় তার শোর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এলে ছোরা দিয়ে মাথায় কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাড়ির লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। এবং আহত সুইটিকে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠান।

দাগনভূঞা থানার ওসি ছালেহ আহম্মদ পাঠান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় স্বামী সাইফুলকে আটক করা হয়েছে।

 

কাবিলের বোন

 


ফারহানা বিনতে আমিন


বুক রিভিউ
উপন্যাসঃ কাবিলের বোন
কবি ও কথাসাহিত্যিকঃ আল মাহমুদ

প্রিয় কবি -কথাসাহিত্যিক আল মাহমুদের উপন্যাস পর্যালোচনা করার দুঃসাহস করছি না,পাঠক হৃদয়ের অভিব্যক্তি তুলে ধরতেই এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।উপমহাদেশ, অর্ধেক মানবী,ডাহুকী,নিশিন্দা নারী,আগুনের মেয়েসহ অসাধারণ উপন্যাস লিখে বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন কবি আল মাহমুদ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত হয়েছে তার অনন্য উপন্যাস উপমহাদেশ ও কাবিলের বোন।কবির পরিচয় তো সর্বজনবিদিত, ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।১৯৬৩ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ “লোক-লোকান্তর” প্রকাশিত হয়, আজ অবধি বাংলা ভাষা সাহিত্যে নিরন্তর সাধনা অব্যাহত রয়েছে।সর্বশেষ ২০১৮ সালের বইমেলায় ” জীবন যখন বাঁক ঘোরে” উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়।গত মাসে কবির তিরাশিতম জন্মবার্ষিকী ছিলো,দীর্ঘ এ জীবনে প্রিয় মানুষ সুস্হতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি,বাংলা সাহিত্যকে আরো সমৃদ্ধ করে বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষাকে সুউচ্চস্হানে নিয়ে যান।

কাবিলের বোন উপন্যাসটি কবির সবচে’ দীর্ঘ কলেবরের উপন্যাস,পাঁচটি পর্বে বিন্যস্ত।এ উপন্যাসটিকে মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস বলা যায়,রাজনৈতিক উপন্যাস ও বলা যেতে পারে,যেখানে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্হান,নাগরিক পরিচয়ের সংকট, গণঅভ্যুথান,মুক্তিযুদ্ধ, শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা,ছাত্র সমাজের নেতৃত্বের ভূমিকার বিমূর্ত প্রকাশ ঘটেছে। পাঠক এ লেখাটি পড়ে আবিষ্ট হবেন,নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় আবিষ্কার করবেন, ১০ নং বনগ্রাম লেনের সেই আবাসটি স্বচোখে হৃদয়ে আঁকতে বাধ্য হবেন।কবি নিজেও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন,কবির আত্মজৈবনিক লেখা-“বিচূর্ণ আয়নায় কবির মূখ” ও “যেভাবে বেড়ে উঠি” বইয়ের অনেক কথার প্রতিচ্ছবি তার উপন্যাসে খুঁজে পাওয়া যায়।কবির লেখায় নিজ জীবনের অভিজ্ঞতা আয়নার মতোই প্রতিফলিত হয়েছে।কবি আল মাহমুদের এ লেখা আমরা বাংলাদেশের রূপই নতুন করে খুঁজে পাই।
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র সৈয়দ আহমদ কাবিল ও রোকসানা,কাবিলের চাচী রওনক জাহান,আন্দালিব -মোমেনা,রাজনৈতিক অঙ্গনে দাপুটে আঞ্জুমান-মেধাবী নিশার সকলকে ঘিরেই আখ্যানটির আবর্তন। পাঁচটি পর্বে আলোচনা করবো।

উনিশ শো ষাট সালের জানুয়ারীর এক শীতের সকালে সৈয়দ আহমদ কাবিল ফুলবাড়িয়া স্টেশনে নামল,যার হাতে ঘড়ি ও পায়ে নতুন পাম্প স্যু,যে একটা আশ্রয় খুঁজছিলো-এ দৃশ্য কল্পের সাথে কবির গ্রাম থেকে নতুন শহরে আসার সময়টা চোখে ভাসে।মা জাকিয়া বেগম সর্বস্ব দিয়ে ছেলেকে মেট্রিক পর্যন্ত পড়িয়েছেন,এবার ভাল কলেজে পড়তে ছোট দেবরের কাছে একটা চিঠি দিয়ে পাঠিয়েছেন।এমনি এক সকালে কাবিল গিয়ে চাচা-চাচী আহমদ আলম- রওনক জাহান ও তাদের একমাত্র রোকসানাদের পরিবারে উপস্হিত হয়।
কাবিলের চাচা পরিবারের অসম্মতিতে এক মুজাহির মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন, এই নিয়ে ভুলবোঝাবুঝিতে দীর্ঘদিন পারিবারিক সম্পর্ক রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।কাবিলের আসার মধ্য দিয়ে নতুন করে, আত্মীয়তার বাঁধন নতুন মোড় নেয়।চাচার ব্যবসা দেখাশোনার কাজে সাহায্য করে, আন্দালিব সেও মুহাজির,রোকসানার ফুফাত ভাই।স্বামী আহমদ কামালের মৃত্যুর পর জাকিয়া বানু পুরনো প্রতিজ্ঞা ভুলে, বাড়ির ছোট বউ হিসেবে রওনক জাহানের উপস্থিতি কামনা করেন।কাবিল ও রোকসানা তাদের পূর্বপুরুষের ভূমি আবাদে আবার মনতলা গ্রামে ছুটে যায়।
জাকিয়া বেগম রোকী আর কাবিলের পরস্পরের প্রতি দূর্বলতা আঁচ করেও নিশ্চুপ থাকেন।এমনি সম্পর্কের দোলাচালে এগোতে থাকে সামনের দিনগুলো।এর মধ্যে উপন্যাসের পটপরিবর্তনে বাঙালী, বিহারী -পাঞ্জাবীদের জাতিগত সংকট প্রকট হয়ে ওঠে।

মেধাবী শিক্ষার্থী কাবিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়,ছাত্র রাজনীত-বাঙালী জাতির জীবনের আশা-আকাক্ষা বুকে ধারন করে,পথ চলে।ডাকসুর লিডার সে,শেখ মুজিবের নেতৃত্বে মুখর রাজপথ।ছাত্ররা ছয়দফা নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তাল।এমনি উত্তাল পরিবেশে কাবিলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হয়।ছাত্রসংগঠনগুলোর মাঝে অনৈক্য,বামপন্থীদের আওয়ামী লীগের আন্দোলনে সর্বতোভাবে ঐক্যমত্যে আসতে চায় না।এমনি প্রেক্ষাপটে রওনক জাহান মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন,কাবিল যে বড় দায়িত্ব মাথায় তুলে নিয়েছে তাতে,একটা ছোট্ট পরিবারের হাল ধরবার অবসর কই তার?ব্যবসায়ী রওনক জাহান শখ করে হীরার রিং কিনেছিলেন মেয়ের এনজেগমেন্টের জন্য,কিন্তু কাবিলের কই অবসর!এদিকে জাকিয়া বানু অসুস্হ হয়ে হঠাত মারা যান,তার দেখাশোনা করতো মোমেনা,যার সাথে শৈশব কাবিলের বিয়ে দেওয়ার কথা দিয়েছিলেন জাকিয়া বানু।মায়ের মৃত্যু দেহ দাফনে আসতে পুলিশী নজর এড়িয়ে কাবিল গ্রামে আসে।মায়ের মৃত্যুর পর আশ্রিত বোনের দায়িত্বভার তার কাঁধে চলে আসে।আন্দালিব মোমেনার নারীসুলভ সৌন্দর্য মুগ্ধ,হৃদয়ে টান অনুভব করে।রওনক জাহান এবার দু’জোড়া কন্যা পুত্রকে বিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চান।কিন্তু,কাবিলের রাজনীতি -নেতৃত্বের ব্যস্ততায়, রোকসানা দ্বিধা-দ্বন্ধে বিয়েতে অমত করে বসে।আবার, দু’জনের চাওয়া -পাওয়ার বাধও দীর্ঘ ধৈর্য্যের বাধনে চ্যুত হতে চায়,কাছে পেয়েও দূরে, আলিঙ্গনে বেধেও না বাধার ছল।পাঠক আরো তীব্র ভাবে দুজনার পরিনয় ঘটবার অপেক্ষায়,আসলেই কি কাবিল-রোকী’র পরিনয় সম্ভব হয়েছিল কি,এখানেই উপন্যাসের এক বিষাদময় পরিনতি, যা উপন্যাসের শেষ পর্বে আসার আগে পাঠক আঁচ করতে পারবে কি?

হঠাত কাবিলের চাচা মারা যান,দাফন শেষ ফেরার পথে কাবিল গ্রেফতার হয়।
দেয়াল জুড়ে ছাত্রনেতা কাবিলের মুক্তির জন্য পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে যায়,আন্দোলনে মুখর হয় রাজপথ।পিতার মৃত্যু রোকসানাকে আরো বদলে দিয়েছে ভার্সিটি যাওয়া বন্ধ করে ব্যবসার হাল ধরেছে,একদম পেশাদার বলা চলে।নিজের সামনে একটা আড়ালও তৈরি করে নিয়েছে সে।ছাত্রনেতা কাবিলের মাঝে প্রনয়িনী রোকীর পাচিল,রাজনীতি -দেশ, সমাজের জন্য ব্যক্তিস্বার্থত্যাগী কাবিল, চাচার পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে পারেনি।সেখানে রোকী তার মায়ের মতোই যোগ্যতা-দক্ষতা দিয়ে পারিবারিক ব্যবসা-বানিজ্য সামলে নিয়েছিলো,আন্দালিব যে কিনা নিঃস্বার্থভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলো।আন্দালিব কি একসময়ের ফুফা-ফুফির ওয়াদার কথা,রোকীকে পাওয়ার বাসনা কিংবা দূর্বলতা এখনো পোষণ করে।
হঠাত কাবিলের চাচা মারা যান,দাফন শেষ ফেরার পথে কাবিল গ্রেফতার হয়।
দেয়াল জুড়ে ছাত্রনেতা কাবিলের মুক্তির জন্য পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে যায়,আন্দোলনে মুখর হয় রাজপথ।পিতার মৃত্যু রোকসানাকে আরো বদলে দিয়েছে ভার্সিটি যাওয়া বন্ধ করে ব্যবসার হাল ধরেছে,একদম পেশাদার বলা চলে।নিজের সামনে একটা আড়ালও তৈরি করে নিয়েছে সে।ছাত্রনেতা কাবিলের মাঝে প্রনয়িনী রোকীর পাচিল,রাজনীতি -দেশ, সমাজের জন্য ব্যক্তিস্বার্থত্যাগী কাবিল, চাচার পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে পারেনি।সেখানে রোকী তার মায়ের মতোই যোগ্যতা-দক্ষতা দিয়ে পারিবারিক ব্যবসা-বানিজ্য সামলে নিয়েছিলো,আন্দালিব যে কিনা নিঃস্বার্থভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলো।আন্দালিব কি একসময়ের ফুফা-ফুফির ওয়াদার কথা,রোকীকে পাওয়ার বাসনা কিংবা দূর্বলতা এখনো পোষণ করে!কিন্তু,রোকসানা তো চাচাত ভাই কাবিলের মধ্যে প্রাণের প্রাচুর্য খুঁজে নিয়েছিলো।হয়তো আন্দালিব নিজের নিয়তিকে মেনে নিয়েছে,নাকি সুন্দরী,যৌবনা তরুনী মোমেনাকে পাওয়ার মাঝে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছে।আর,মোমেনা কি শেশবে লালিত স্বপ্নকে কবর দিয়েছে,আশ্রয়হীন, অসহায়ত্বের কথা ভেবে,কিন্তু,সৃষ্টিকর্তা যে তাকে রহস্য,মায়াময়তা দান করেছেন,তা যেকোন পৌরষ হৃদয়ে আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে।কিন্তু,হৃদয়ের সেই সুক্ষ্ম দূর্বলতায় কি আজো কাবিলকে পাওয়ার আশা রাখে সে,কাবিলও কি অবচেতন মনে তার সৌন্দর্য অনুধাবন করেনি,মোমেনাও হয়তো জানে, তার অসাধারণ কোন ক্ষমতা আছে,যা দিয়ে বিশ্ব জয় করতে পারবে।তবে,অভিভাবক হিসেবে কাবিল জেল থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্য়ন্ত সে আন্দালিবকে বিয়ে করতে রাজী হয় না,নারীত্বের পূর্নতার এ আশু সুযোগকে পায়ে ঠেলার অমিত সংযম কি তীব্র ভালোবাসা থেকেই জন্ম নিয়েছে।উপন্যাস পাঠক পারস্পারিক সম্পর্কের দ্বিধা-দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়েছে, শ্বাশত নারী-পুরুষের মনস্তাত্ত্বিক সম্পর্কে নতুন রূপে অনুভব করবেন।এদিকে রওনক জাহান চান,কাবিল জেল থেকে ছাড়া পাবার পর এবার আর আংটি পড়াতে দেরী করবেন না,কিন্তু…

জেল ছাড়া পেয়ে, লিডারের সাথে ইলেকশনের সফরে প্রতিনিধি হিসেবে বেরিয়ে পড়তে হয়।এছাড়াও, নারী হৃদয়ের দ্বন্দ্ব -মোমেনা ও রোকীর মাঝে, যা পাঠককে উদ্বেল করে দেয়।পূর্ব পাকিস্তানের পরিবেশ দিন দিন উত্তপ্ত হতে থাকে অবাঙালীদের পরিচয় সংকট তৈরি হয়।

 

বৈবাহিক সমস্যা ও কোরআনের সমাধান -৪


কানিজ ফাতিমা


‘দরাবা’র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাখ্যা এসেছে। ইবনে আব্বাস দরাবার ব্যাখ্যা করেছেন “মিসওয়াক বা মিসওয়াকের ন্যায় কোন কিছুর (যেমন টুথব্রাশ বা পেন্সিলের) হালকা আঘাত”।
অন্যদিকে কিছু ইসলামী আইনবিদ যারা ফতোয়া দিয়েছেন যে “বিশটি বা চল্লিশটির বেশী আঘাত করা (পিটানো) যাবে না”।
অনেকে বলেছেন শুধু মাত্র মেরে ফেলা বা আহত করা ছাড়া সবই সিদ্ধ (wounds and murder)।

যদি আমারা দরাবার ব্যাখ্যা মিসওয়াক বা মিসওয়াকের ন্যায় কোন কিছুর (যেমন টুথব্রাশ বা পেন্সিল) হালকা আঘাত হিসাবে নেই যেমনটি ইবনে আব্বাস নিয়েছেন তবে এই ব্যাখ্যাটি দ্বারা ‘শাস্তি প্রদান’ কে বোঝায় না । বরঞ্চ এরূপ হালকা আঘাত [ যা কোন ব্যাথা বা আতঙ্কের সৃষ্টি করে না ] স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অসন্তোষ ও হতাশা বোঝানোর একটি বাহ্যিক প্রকাশ মাত্র। স্পর্শ বা জড়িয়ে ধরা দ্বারা যেমন সম্পর্কের উষ্ণতার বহিঃপ্রকাশ হয় তেমনি এরূপ হালকা আঘাত দ্বারা অবহেলা ও বিরক্তির বহিঃপ্রাকশ ঘটে। যেহেতু পিটানো বা শাস্তিপ্রদানের সঙ্গে নির্যাতন ও কষ্ট জড়িত আর হালকা মিসওয়াক জাতীয় জিনিসের আঘাতে এসবকিছু অনুপস্থিত তাই এই ব্যাখ্যাটি ইসলামের মূল ¯ দৃষ্টিকোন থেকে অন্য ব্যাখ্য দুটি অপেক্ষা বেশী যুক্তিসঙ্গত ও বেশী গ্রহণযোগ্য।

অন্যদিকে কিছু ইসলামী আইনবিদ যারা ফতোয়া দিয়েছেন যে “বিশটি বা চল্লিশটির বেশী আঘাত করা যাবে না” তারা ইবনে আব্বাসের মত এ বিষয়টিতে গভীর চিন্তার স্বাক্ষর রাখেননি। [দরাবা শাস্তি প্রাদনের মাধ্যম নাকি অসন্তোষ প্রাকাশের মাধ্যম সেটি তারা বিবেচনায় অনেননি, এ আয়াতটি দ্বারা আল্লাহ স্বামীকে স্ত্রী নির্যাতন বা স্ত্রীকে কষ্টদানের অনুমোদন দিয়েছেন নাকি স্বামীর অসন্তোষের সুষ্ঠ বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে স্ত্রীকে সাবধান করার যুক্তিসঙ্গত পন্থা বাতলে দিয়েছেন সেটি তারা খুঁজে দেখেননি]। তারা এমনকি এই আঘাতের সীমা কতটুকু হবে তাও নির্ধারন করেননি। শরীরের কোন কোন অঙ্গে আঘাত করা যাবে বা যাবে না, হাড় ভাঙ্গা যাবে কি যাবে না, এমনকি এ আঘাত সহ্য করার জীবনী শক্তি তার আছে কি না, সে সম্পর্কে তারা কোনই নির্দেশনা দেননি। কাজেই বোঝা যাচ্ছে ইবনে আব্বাসের ব্যাখ্যা অনেক বেশী যুক্তিসঙ্গত ও চিন্তাশীল । কিন্তু তারপরও দেখা গেছে ইবনে আব্বাসের ব্যাখ্যাতেও একটি ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ রয়ে গেছে যার কারনে অতীতে এবং বর্তমানে ও এই ব্যাখ্যার সুযোগ গ্রহন করে অনেক নির্যাতনকারী স্বামী তাদের অন্যায় আচরনের পক্ষে যুক্তি পেশ করে। [ তারা টুথব্রাশ বা এর মত ছোট কিছুর শর্তটিকে গায়েব করে দিয়ে আঘাত করা যাবে এটুকুকেই মাথায় ও মগজে গেথে নেয়।] কাজেই দরাবার ব্যাখ্যায় এমন কোন সুযোগ রাখা ঠিক নয় যাতে দরাবার ভুল অর্থ গ্রহন সম্ভব হয় , এর অপব্যাবহারের সুযোগ থাকে এবং নিজেদের অন্যায় আচরনকে যায়েজ করার পক্ষে এটি ব্যবহৃত হতে পারে। আর এ কারনেই আমি পুরো ব্যাপারটা নিয়ে নতুন করে চিন্তা করার বিশেষ প্রয়োজন বোধ করেছি।

বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আমি স্পষ্টতঃই দেখতে পেলাম কোরআনে ব্যবহৃত আরবী মূল ক্রিয়া দরাবা কে পূর্ণবয়স্কদের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নেরর মাধ্যম হিসাবে বা স্ত্রীকে স্বামীর আনুগত্যে ফিরিয়ে আনার মাধ্যম হিসাবে নেয়ার ক্ষেত্রে যদি এর অর্থ বা ব্যখ্যা ‘কষ্ট, অপমান, বা দৈহিক ব্যথা’ হিসাবে নেয়া হয়Ñ তবে তাতে সমস্যার সৃষ্টি হবে। এক্ষেত্রে সে ব্যথা বা কষ্টের পরিমাণ বেশি বা কম যাই হোক না কেন। যদি ব্যাপরটি এমন হত যে, যেকোন পরিস্থিতিতেই একজন মুসলিম নারী বিবাহ বন্ধন টিকিয়ে রাখতে বাধ্য থাকত, কোন অবস্থাতেই সে স্বামীকে তালাক দিতে পারত না বা স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাইতে পারত না, তবে সেক্ষেত্রে স্বামীর সব আচরণই সে সহ্য করতে বাধ্য থাকতো।

ফলে তাকে স্বামীর সব আদেশই মাথা পেতে নিতে হত। ব্যাপারটা এমন হলেই কেবল ‘কষ্ট, অপমান, বা দৈহিক আঘাত’ হিসাবে দরাবা বৈবাহিক সমস্যা সমাধানে অথবা অন্ততঃ বৈবাহিক সমস্যা কমানোর ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী পন্থা হত। কিন্তু আমারা জানি যে শরীয়তে ব্যাপারটি এমন নয়। শরীয়ত চাপ প্রয়োগ বা বাধ্য করাকে নয় বরং ভালবাসা ও সহানুভূতিকে পরিবার ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার মাধ্যম করেছে। এভাবে ইসলাম পরিবারের সদস্য (স্বামী বা স্ত্রী) হিসাবে থাকা বা না থাকা তাদের উপর ছেড়ে দিয়েছে; এক্ষেত্রে চাপ প্রয়োগ, অবদমন বা নির্যাতনকে ইসলাম সমর্থন করেনি। স্বামীÑস্ত্রী হিসাবে থাকা যদি দুজন নরÑনারীর জন্য কল্যানকর না হয় তবে ইসলাম দুজনকেই অধিকার দিয়েছে তারা ইচ্ছা করলে এ সম্পর্কের অবসান ঘটাতে পারে। কেননা ঘৃণা, ঝগড়াঝাটি ও তিক্ততার সম্পর্কের থেকে পৃথক বসবাস (separation) অনেক ক্ষেত্রে তাদের জন্য কম ক্ষতিকর। আর এজন্যই শরীয়ত স্বামী ও স্ত্রীকে তালাক ও খোলার অধিকার দান করেছে।

“আর যখন তোমারা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও, অতঃপর তারা নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্ত করে দেয় তখন তোমরা নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে রেখে দাও, অথবা সহানুভূতির সাথে তাদেরকে মুক্ত করে দাও।

আর তোমরা তাদেরকে জ্বালাতন ও বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য আটকে রেখো না। আর যারা এমন করবে, নিশ্চয়ই তারা নিজেদেরই ক্ষতি করবে।” (সূরা বাকারা আয়াত-২৩১)

চাপ প্রয়োগ করা বা শারীরিক আঘাত কখনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি করতে ও বাজায় রাখতে সহায়ক হয় না। এটি তাদের সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধিতে বা পারস্পরিক আস্থা তৈরিতে কোনভাবেই সহায়ক ভূমিকা রাখেনা।

চলবে…

পর্ব-৩

 

নারীরা গর্ভকালীন সময়ে এক বিশেষ ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন


নারী সংবাদ


ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : বর্তমান বিশ্বে একটি অতি পরিচিত রোগের নাম ডায়াবেটিস। পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই যেখানে ক্রমবর্ধমান এই রোগে আক্রান্ত হওয়া লোক নেই। পৃথিবীতে দূরারোগ্য অনেক রোগের ওষুধ আবিস্কার হয়েছে। আবিস্কার হয়েছে ডায়াবেটিসের ওষুধও। অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও এ রোগে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে প্রতি ১১ জন প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের মধ্যে একজন এ রোগে আক্রান্ত। আক্রান্তদের অনেকেই জানে না তারা এ রোগে আক্রান্ত। পুরুষ মহিলা সবাই আজকাল এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে নারীরা গর্ভকালীন সময়ে এক ধরনের বিশেষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। জোবেদা আক্তার পেশায় একজন চাকরিজীবি। তেত্রিশ বছয় বয়সী এই নারীর প্রথম মেয়ে সন্তানের বয়স এখন পাঁচ। গত সাড়ে চার মাস হল জোবেদা আবার সন্তান সম্ভবা। তাই এখন নিয়মিতই আসছেন ডাক্তারের কাছে। কিন্তু কিছুদিন আগে ডাক্তারের পরামর্শে কিছু পরীক্ষা করান তিনি। আর সেখানেই ধরা পড়ে জোবেদার ডায়াবেটিস। এখন তিনি চলছেন সম্পূর্ণ ডাক্তারের নির্দেশনায়। যেকোন মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে যেকোন ধরনের দুর্ঘটনা।
নগরীর মালিবাগ এলাকায় থাকে নীরু ও হারুন দম্পতি। এক মেয়ে আর এক ছেলে নিয়ে সুখের সংসার। কিন্তু হঠাৎ করেই তারা দু’জন মিলে সিদ্ধান্ত নিলেন তারা আরো একটি সন্তান নিবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্তান সম্ভাবা হলেন নীরু। কিন্তু বিধিবাম। ছয় মাসের মাথায় ধরা পড়ল নীরুর ডায়াবেটিস। পরে তার মিসক্যারিজ হয়ে যায়।
ডায়বেটিস রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে সাধারণ ডায়াবেটিসের পাশাপাশি নারীরা গর্ভকালীন সময়ে এক বিশেষ ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। আর এই ডায়াবেটিসের চিকিৎসা পদ্ধতিও বেশ জটিল। মূলত অনেক নারীরই এ সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। যখন রোগ নির্ণয় হয়, তখন ডাক্তারদের আর কিছুই করার থাকে না। যার ফলে মৃত্যু হয় অনেক নারীর।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের পরিচালিত এক বৈশ্বিক গবেষণায় দেখা যায়, ডায়াবেটিস হল বাংলাদেশে মৃত্যুর সপ্তম প্রধান কারণ। ২০৪০ সালে মৃত্যু বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। আর বাংলাদেশ সরকারের পরিচালিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট’র প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বৈশ্বিক ওই গবেষণার বরাত দিয়ে জানায়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে ৩১ হাজার ৪৬০ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এই অসংক্রামক রোগে ২০৪০ সালে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৬৯ হাজার জনে।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির এক প্রকাশনায় দেখা যায়, প্রাপ্ত বয়স্কদের ৬.০৪ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এছাড়াও কয়েক লাখ শিশু এই ডায়াবেটিস (টাইপ-১) এ আক্রান্ত।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. সাইদুর রহমান বলেন, মূলত ডায়াবেটিসের কারণে মানুষের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। আর এই ডায়াবেটিসের কারণে মানুষ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ যেমন- কিডনি, স্ট্রোক, হৃদরোগে ভুগতে পারেন।
তিনি বলেন, দেশে অনেক পরিবার রয়েছে যেখানে এক বা একাধিক ডায়াবেটিসের রোগী আছে। এই রোগ একবার হলে আর ভালো হয় না। তবে রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ মানুষের মতো জীবনযাপন করা সম্ভব।
ডা. মনোয়ারা বেগম বলেন, অনেক নারীই এখন গর্ভকালীন সমেয়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। মূলত পরিবারের অন্য কারো ডায়াবেটিসের ইতিহাস, বেশি বয়সে সন্তান ধারন এবং অধিক ওজন এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আর ডায়াবেটিস থাকাকালীন সময়ে গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকে অনেক বেশি। এসময় রোগী মারাও যেতে পারেন।
তিনি বলেন, কারো যদি একবার ডায়াবেটিস হয় তবে তাকে তা আজীবন বহন করতে হবে। যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। একমাত্র নিয়মানুবর্তিতাই পারে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে। এজন্য ডাক্তারের পরামর্শে চলতে হবে। খাদ্যাভ্যাস পাল্টাতে হবে এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক ডা. নূর মোহাম্মদ বলেন, দেশব্যাপী ডায়াবেটিস রোগীদের চিহ্নিত বা শনাক্ত করার কাজ করছে বর্তমান সরকার। অল্প কিছুদিনের মধ্যে উপজেলা হাসপাতাল থেকে মানুষ বিনা মূল্যে ডায়াবেটিসের ওষুধ পাবে।
মূলত সরকারের একার পক্ষে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এ জন্য সব স্তরের মানুষের ভুমিকা পালন করতে হবে।

সুত্র: বাসস।

 

শিশুর ডায়াবেটিকস ঝুঁকি


স্বাস্থ্যকথা


ডায়াবেটিস কি?

আমরা সারা দিনে যা খাই তার সারাংশ আমাদের শরীরে জমা হয়। এই সারাংশকে চিকিৎসাদের ভাষায় বলা হয় ক্যালোরী,সুগার, গ্লুকোজ বা শর্করা। শরিরের এই জমা ক্যালোরী,সুগার বা গ্লুকোজ হজম করার জন্য ইনসুলিনের প্রযোজন হয়। যদি শরীরের ইনসুলিন জমা ক্যালোরী,সুগার বা গ্লুকোজ বা শর্করা সব হজম করতে না পারে তবে যে বাড়তিটুকু থাকে সেটাই ডায়াবেটিস। এই অতিরিক্ত সুগার রক্ত ও পেশাবের সাথে মিশে যায় এবং রক্ত ও পেশাবকে মিষ্টি করে। এটাকেই ডায়াবেটিস বলে। ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে বা সংক্রামক কোন রোগ নয়।

ডায়াবেটিক টাইপ:

১. টাইপ.১- এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরী হয় না।

২.টাইপ.২-এই শ্রেণীর রোগীর বয়স অধিকাংশ ক্ষেত্রে ত্রিশ বৎসরের উপরে হয়ে থাকে। তবে ত্রিশ বৎসরের নিচে এই ধরনের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন তৈরী হয় তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ঠ নয় অথবা শরীরে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়।

৩.গর্ভকালীন ডায়াবেটিস-অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। আবার প্রসবের পর ডায়াবেটিস থাকে না। এই প্রকারের জটিলতাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়।

শিশুরা কিভাবে ঝুঁকিতে

দেশে দ্রুত বাড়ছে শিশুদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। ডায়াবেটিসের প্রকোপতা স্বাস্থ্য সমস্যাটি বাংলাদেশসহ শিল্পোন্নতদেশ গুলতে প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে। এবং সরকার একে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যেসব শিশুর শরীরের ওজন বেশি, তাদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি খুব বেশি। অথচ এ ধরনের ডায়াবেটিস বয়স্কদের মধ্যেই দেখা দেওয়ার কথা। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষ করে শিশুদের স্থূলতার একটি মহামারি হওয়ায় এমন ধরনের ডায়াবেটিস প্রবলভাবে দেখা দিচ্ছে তাদের মধ্যে। আবার টাইপ-১ ডায়াবেটিস বলতে বুঝায়, অগ্নাশয় যদি ইনসুলিন খুব সামান্য পরিমাণ উৎপাদন করে অথবা অনেক ক্ষেত্রে একেবারেই করতে না পারে তখন তা হল টাইপ-১ ডায়াবেটিস।বাডাসের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি লাখে শূন্য থেকে ১৪ বছর বয়সের চার দশমিক তিনজন শিশু টাইপ-১ ডায়াবেটিসের শিকার হচ্ছে।

প্রাথমিক কারণ

১. শিশু ও তরুণদের স্থূলতা:
– ফাস্টফুড,
-টিভির সামনে একটানা অনেক সময় বসে থাকা,
-চিপস,
-পান করছে কোমল পানীয়,
-ভিডিও গেম,
-হাঁটাপথও নেই,
-তেলেভাজা খাবার-ভুঁড়ি
২. শিশুদের মধ্যে শরীরচর্চা কমে যাওয়া।
৩.খাদ্য গ্রহণে ত্রুটিপূর্ণ অভ্যাস
৪.বংশগত কারণ।

ডায়াবেটিক দেখা দিলে যেসব লক্ষণ দেখা যায়?

আচার-আচরণে পরিবর্তন, হঠাৎ করে নিয়মিত ঘুমে সমস্যা হলে কিংবা অনেকদিন ধরে ক্ষুধা কমে গেলে শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।

-শরীরের কোন তিল বা আঁচিলের আকার বা আকৃতিতে দ্রুত পরিবর্তন
-ওজন ক্রমেই কমবে
-অল্পতেই হাপিয়ে উঠবে
-শ্রবন ক্ষমতা কমে যাওয়া
-️প্রস্রাবে শর্করার পরিমাণ খুব বেশী বেড়ে যাওয়া
-️খুব বেশী পিপাসা লাগা
-ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
-অত্যন্ত বেশী ক্ষুধা লাগা
-️বমি ভাব হওয়া
-️দুর্বলতা বোধ হওয়া
-️ঝিমানো
-️শ্বাস কষ্ট হওয়া
-️দ্রুত শ্বাস নেওয়া
-️মাথা ধরা
-চোখে ঝাপসা দেখা
-️নিস্তেজ বোধ হওয়া
-শ্বাসে গন্ধ পায়

ডায়াবেটিক ফলে শিশুর ক্ষতি

মুলত ডায়াবেটিস থেকে শিশুদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ডায়াবেটিক মুখোমুখি হয় জীবনব্যাপী জটিলতার।

-কিডনি নিষ্ক্রিয়তা,
-হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ এসব জটিলতা।

শিশুদের জন্য সচেতনতা

১.হাঁটতে, চলতে, দৌড়াতে উৎসাহ দিন বাচ্চাদের।
২.টিভি বন্ধ করে দিন। টিভি দেখার সময় কমিয়ে নিতে পারলে, এর একটি সীমারেখা টানতে পারলে স্থূলতা প্রতিরোধ করা যাবে অনেকটা।
৩.খাদ্য গ্রহণে ত্রুটিপূর্ণ অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। প্লেটে যা কিছু আছে সবকিছু খেয়ে প্লেট সাফ করতে বাচ্চাদের বাধ্য করবেন না।
৪.শিশুদের ওপর বেশি নিয়ন্ত্রণ নয়। শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করারও সুযোগ দিতে হবে।

শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সী নবজাতকদের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। তবে আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগের বয়স আট থেকে ১৬ বছর এবং শতকরা নব্বই ভাগই শহরের বাসিন্দা।

 

বিষপানে শেরপুরে সন্তানসহ মায়ের আত্মহত্যা


নারী সংবাদ


১৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে মা শান্তা বেগম (১৯) ও শিশু সন্তান মো. বাবু (৬) মারা যান। জানা যায়, বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় স্বামীর ওপর অভিমান করে বিষপানে ছয় মাসের শিশু সন্তানসহ শান্তা আত্মহত্যা করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালের দিকে উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের বাগড়া কলোনী এলাকার স্বামী মামুনুর রশীদের ওপর অভিমান করে শান্তা বেগম নিজে ও তার ছয় মাসের শিশু সন্তান বাবুসহ বিষপান করেন। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে দুপুরের দিকে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

পুলিশের উপ-পরিদর্শক (টিএসআই) আব্দুল আজিজ মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শজিমেক হাসপাতালে আসার পর জরুরি বিভাগে কমর্ররত চিকিৎসক মা শান্তা বেগম ও শিশু সন্তান বাবুকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

বাজান


—–মনির মোহাম্মদ


সেই ছোট্টবেলা থেকেই দেখে আসছি আব্বা দাদাজানকে বাজান আর দাদীজানকে মায়া ডাকতে। আমার বড় চাচা ,বড় ফুফুরা সবাই একই নামে সম্মোধণ করেন উনাদের। আমার ছোট চাচা কিভাবে জানি বাজান ডাকা বন্ধ করে দিয়ে আব্বা ডাকা শুরু করে দিল। দাদাজান কিছু বলেন না । দাদী দাঁতে কাপড় চেপে ধরে বলে, “কি রে বাজি কি কস এগুলান? তোর বাপ কিন্তু রাগ করে আব্বা ডাকলে” মজার ব্যাপার দাদাদজান কোনদিন এই নিয়ে রাগ করেননি। আমি আব্বাকে অনুকরণ করে আমিও আব্বাকে মাঝে মাঝে বাজান ডাকতাম। আম্মা হাসি দিয়ে বলত আব্বু ডাক বাবা আব্বু! এই আব্বু ডাকের ভিতর কেমন জানি একটা ন্যাকামী লাগে আমার কাছে। কিন্তু বাজান ডাকটা আমার কাছে মধুর মত শুনায়! আর আম্মাকে মায়া ডাকার ভিতরে কী যে একটা মায়া! আব্বা যখন দাদীজানকে মায়া ডাকে তখন মুগ্ধ হয়ে শুনি। আহারে কী মধুর ডাক! দাদাজানের বয়স ৯০ পেরিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। অনেকদিন আগে একটা লেখা লিখেছিলাম ” একান্নবর্তী” নামে। লেখাটি সবাই ভালবেসেছিল। কয়েকটি পত্রিকাতে লেখাটি ছাপা হয়। অনেকেই পড়েছেন। সবার প্রতিক্রিয়া আর ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ!

একটা কথা আমি মানি সেই ছেলেবেলা থেকে, একজন মুরুব্বী একটি বাড়ির বটবৃক্ষ । সেই বটবৃক্ষ সবাইকে আগলে রাখে তার শাখা প্রশাখা দিয়ে। আমি আমার বিভিন্ন গল্পে বিভিন্নভাবে আমদের হারানো শেখড়টাকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

একান্নবর্তী পরিবারটা আজ কেন নেই? পারিবারিক বন্ধনটা কি আজ হারিয়ে গেছে আধুনিক সভ্যতার অতল গহ্বরে? দাদা-দাদীর মুখ থেক আজকের শিশুরা কি গল্প শুনে? সেই গল্প কি তার স্কুলের সহপাঠির কাছে শেয়ার করে? হয়ত শুনে, হয়ত শুনেনা। আমাদের আজকের প্রজন্মের অনেক কিছু জানার আছে। আমি জানি এই স্মার্টফোন আর রোবটিক্স এর যুগে এটাকে অনেকেই হেসে উড়িয়ে দিবেন। ইংলিশ মিডিয়াম আর বাংলা মিডিয়াম এর কথা বলছি না। মিডিয়াম আমার সন্তানকে শিক্ষিত করবে। কিন্তু আমাদের ঐতিহ্যের গল্প কে শুনাবে। সেই গল্প শুনতে চান ? সেই গল্প শুনাবে আমাদের দাদা-দাদীরা। যারা নিজ চোখে সব দেখেছেন। একবার জিজ্ঞাসা করে দেখুন কী সুন্দরভাবে আপনার সামনে ইতিহাসটা তুলে ধরে!

আমি আমার কথা বলছি, দাদাজানের পানের ভাটা হাতে নিয়ে হাঁটছি আর দাদাজান কুটকুট করে পান খায় আর গল্প করে। আমাদের অদেখা জীবনের বাস্তব গল্প। মাঝে মাঝে আক্ষেপ নিয়ে বলে,” আগের দিন আর নাইরে নাতী খাব্লাইয়ে খাব্লাইয়ে চিনি খাইতি।” সত্যিকারের চিনি আমারা খেয়েছি, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট না । একেবারে ক্ষেত থেকে আখ কেটে এনে রস বের করে আগুনে জাল দিয়ে এক প্রকারের লাল ধুলো চিনি যা আর কোনদিন চোখে দেখবোনা। শুধু একটা আক্ষেপ আজকের দিনে, আমাদের প্রজন্ম কি দেখতে পারবে সেই আখ চাষ ? উত্তর না। যাই হোক সবই নব্বই দশকের গল্প বললাম। একটা সোনালী অধ্যায় আমাদের জীবন থেক গত হয়ে গেল। সেই অধ্যায়টাকে মলাটবন্দি করেছি ছয় বছরে। আশা করি আমাদের আগামী প্রজন্ম সেই অধ্যায়টা পড়ে সামান্য হলেও ধারণা পাবে কেমন ছিল আমাদের পূর্বপুরুষদের জীবন? কেমন ছিল উনাদের চিন্তা ধারণা? সব সব তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। অপেক্ষার আক্ষেপ মিটাবো কথা দিয়েছিলাম, কথা আমি রেখেছি। কিন্তু সেই বাজান ডাকটা আমি খুব মিস করি আহারে কী মধুর ডাক বাজান! মনে হয় আমার জানটাই কেড়ে নিচ্ছে।

 

এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা


নারী সংবাদ


চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন এক গৃহবধূ। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার কাশিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানায়, কাশিপুর গ্রামের বাজারপাড়ার আব্দুল হালিম বুধোর স্ত্রী শরিফা খাতুন (৫২) এলাকার বিভিন্ন এনজিও থেকে মোটা অংকের ঋণ গ্রহণ করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেশ কিছু এনজিও কর্মী ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শরিফা খাতুন বিষপানে আত্মহত্যা করেন।

জীবননগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ গনি মিয়া বলেন, এনজিওর ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে বিষপানে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

ইত্তেফাক/জেডএইচ

 

প্রতিবেশিনী….৪


আফরোজা  হাসান


বোনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে নাক-চোখ-মুখ সব ফুলিয়ে ফেলেছে মাহাম। মাহামের ফোলা ফোলা চেহারা থেকে যে লালচে আভা বেড়োচ্ছিলো দেখতে ভীষণ ভালো লাগছিলো আয়ানের। এমনিতে মাহামের চোখে অশ্রু সে সহ্য করতে পারে না। কিন্তু নিজের দোষে যখন মানুষ কান্না করে তখন তাকে সহানুভূতি না দেখিয়ে কাঁদতে দেবার পক্ষপাতী সে। গতকালও আয়ান মাহামকে বলেছে অনেক হয়েছে তোমাদের প্রতিবেশী প্রতিবেশী খেলা। এখন দুষ্টুমি বন্ধ করে নিজেরা একটু শান্ত হও এবং আমাদের দুই ভাইকেও শান্তি দাও। কিন্তু কে শোনে কার কথা! আর কেউ যদি কারো কথা শোনেও শাবাব ও মাহাম সেই কেউয়ের সারিতে দাঁড়ানোর পাত্রী না। ওরা হচ্ছে, তোরা যে যা বলিশ ভাই মোদের দুষ্টুমি করা চাই।

ভাইয়া দুইজনের কান্না বন্ধ করার ব্যবস্থা করো। নয়তো ফ্ল্যাট ভেসে যাবে চোখের জলে।

আরিফীর চাপা স্বরের কথাগুলো কানে আসতে বৌয়ের দিক থেকে চোখ সরিয়ে ভাইয়ের দিকে তাকালো আয়ান। তুই ফিসফিস করছিস কেন? প্রশ্ন করলো।

আরিফী গলার স্বর আরো এক ধাপ নামিয়ে বলল, কথার চাপে গুম হয়ে যাওয়ার ভয়ে ভাইয়া। তুমিও আস্তে কথা বলো নয়তো বাক্য বাণে জীবন পাখী সাঙ্গ হয়ে যেতে পারে।

আয়ান হাসি চেপে বলল, শাবাবের হাতে গরম তেল পড়লো কিভাবে?

ভাইয়া তুমি যদি কখনো শাবাবকে রান্না করতে দেখো তাহলে তোমার মনেহবে বাস্কেট বল খেলা দেখতে এসেছো।

এমন মনে হবে কেন? বেশ অবাক কণ্ঠে প্রশ্ন করলো আয়ান।

শাবাব যেভাবে দূর থেকে পেঁয়াজ-রসুন-মসলা কড়াইয়ের দিকে ছুঁড়ে দেয়। তাতে আমার কাছে মনেহয়েছে কড়াই হচ্ছে বাস্কেট আর পেঁয়াজ-রসুন-মসলা হচ্ছে বল।

আরিফীর কথাগুলো কানে যেতেই ফোঁস করে উঠলো মাহাম। আমার বোনের খেয়াল রাখতে পারো না। এখন আবার মজা করছো?

আরিফী বলল, তোর কথা শুনে তো মনেহচ্ছে আমি ডালের চামচ দিয়ে কড়াই থেকে তেল উঠিতে তোর বোনের হাতে ঢেলে দিয়েছি।

মাহাম বলল, আয়ান দেখেছো কিভাবে কথা বলে তোমার ভাই? থাপ্পড় দাও ধরে একটা।

সাথে সাথে আয়ান বলল, আরিফী তোর দুই গালে টাস টাস করে দুই থাপ্পড় মারলাম কল্পনা করে নে।

কল্পনা করবে কেন? চোখ বড় বড় করে প্রশ্ন করলো মাহাম।

আয়ানস্টাইন কি বলেছেন ভুলে গিয়েছ? কল্পনা বাস্তবতার চেয়ে শক্তশালী।

আইনস্টাইন কবে এই কথা বললেন? উনি বলেছেন জ্ঞানের চেয়ে কল্পনা গুরুত্বপুর্ণ।

আরিফী বলল, ভাবীজান আপনি শুনতে ভুল করেছেন। ‘কল্পনা বাস্তবতার চেয়ে শক্তশালী’ কথাটা আইনস্টাইন না আয়ানস্টাইন বলেছেন।
খিলখিল করে হেসে উঠলো শাবাব। সাথে যোগ হলো আরিফীর হাহাহা। হেসে ফেললো আয়ানও। ধীরে ধীরে মাহামের মুখেও ফুটে উঠলো হাসি।
সবার সম্মিলিত হাসি মরুভূমির বুকে যেন ঝরিয়ে দিয়ে গেলো এক পশলা ঝমঝম বৃষ্টি। ধীরে ধীরে মনখারাপের মেঘ কেটে গিয়ে উঁকি দিলো ভালোবাসার আভা ছড়ানো সূর্যি কিরণ। আরিফীকে শাবাবের সেবাযত্ন করার দায়িত্ব দিয়ে মাহাম আর আয়ান রান্নাঘরে গেলো। দুজন মিলে রান্না করলো এবং চারজন মিলে খেলো। আরিফীকে বৌয়ের প্রতি খেয়াল রাখার ব্যাপারে বিশাল লেকচার দিয়ে মাহান ও আয়ান নিজের ফ্ল্যাটে গেলো।

রাতে ঘুম ভেঙ্গে যাবার পর পাশে তাকিয়ে বিছানায় মাহামকে না দেখে বেশ অবাক হলো আয়ান। আলো জ্বালিয়ে দেখলো পনে তিনটা বাজে। ড্রইংরুমে আলো দেখে উঠে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো সেদিকে। সোফার উপর পা তুলে বসে খুব মনোযোগ দিয়ে মাহামকে লিখতে দেখে বিস্ময়ের মাত্রা আরো বেড়ে গেলো।
আয়ানকে দেখে মাহাম বলল, তুমি উঠে এসেছো যে? আমি তো কোন শব্দ করিনি।

এত রাতে তুমি কি লিখছো?

হাসলো মাহাম। আমার ঘুম আসছিলো একদম। তাই ভাবলাম তোমাকে নিয়ে উপন্যাস লেখাটা শুরু করে দেই। মনের ভেতর কিছু শব্দও ঘোরাফেরা করছিলো।

দেখি কি লিখেছো। হাত বাড়িয়ে দিলো আয়ান মাহামের দিকে। মাহামকে ডায়েরী তার হাতে রাখতে দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছিলো না আয়ানের। তার একশো ভাগ ধারণা ছিলো মাহাম কিছুতেই তাকে এখন পড়তে দেবে না।

তুমি পড়তে থাকো আমি কফি নিয়ে আসি দুজনের জন্য। একদম ফজর পড়ে ঘুমোতে যাবো।

পাশে কফির মগ রাখার শব্দে আয়ান ডায়েরী থেকে চোখ তুলে তাকালো। মাহাম হেসে বলল, কেমন হয়েছে আমার গল্পের শুরু?

সত্যি করে বলবো?

অবশ্যই সত্যি করে বলবে।

আয়ান হেসে বলল, ভীষণ রকম এলোমেলো তোমার শব্দরা। কিন্তু ভালোবাসা আর মুগ্ধতায় মাখামাখি সব অনুভূতি।

প্রথম লিখছি তো সেজন্য। ইনশাআল্লাহ একদিন দেখবে আমি আমার শব্দদেরও গুছিয়ে ফেলবো। আমি কি ঠিক করেছি জানো? তোমার আমার জীবনের প্রতিটি সুন্দর মুহুর্তকে আমি বন্দি করে ফেলবো শব্দে শব্দে। তারপর ছড়িয়ে দেবো।

ছড়িয়ে দেবে মানে?

ছড়িয়ে দেবো মানে হচ্ছে ছড়িয়ে দেবো। আমাদের মুহুর্তরা কারো মনে দোলা দিয়ে যাবে সুখানুভূতির প্রহর হয়ে, কাউকে ভেজাবে জোছনার শিশিরে, কারো জীবন বীণায় তুলে যাবে সুর, কারো পাশে থাকবে আকাশ হয়ে, কাউকে বোঝাবে প্রতীক্ষিত অনুভূতির ভাঁজে ভাঁজে লুকায়িত আকুলতা, কারো মনে ঝরবে আনন্দানুভূতির শ্রাবণ হয়ে।

কি জানি ছিলো মাহামের কণ্ঠে আয়ানের চোখ ভিজে গেলো।
আয়ানের চোখে অশ্রু দেখে থমকে গেলো মাহাম। পর মুহুর্তেই হেসে ফেললো। হাত বাড়িয়ে আঙ্গুলে জড়িয়ে নিলো আয়ানের চোখ থেকে ঝরে পড়া ভালোবাসার শিশির বিন্দুটিকে। আয়ানের চোখে চোখ রেখে বলল, এই এক বিন্দু অশ্রুকণা ঝরাবার অপরাধে আমি সারাজীবন তোমার জন্য সিক্ত রাখবো আমার আঁখিদ্বয়। কিছুটা থেকে বললো ইনশাআল্লাহ।

মাহামের কান ধরে ঝাঁকিয়ে দিলো আয়ান। তারপর কাছে টেনে নিয়ে বলল, তুমি কথা খুব বেশি বলো বুঝেছো? জাস্ট হোল্ড ইউর টাংক এন্ড লেট মি লাভ……

চলবে……

পর্ব-৩

 

পুত্র-পুত্রবধূদের আর ‘বোঝা’ হলেন না জবেদা


নারী সংবাদ


পুত্র আর পুত্রবধূদের আর বোঝা হয়ে রইলেন না জবেদা খাতুন। হাসপাতালের বেড থেকেই বিদায় নিলেন চিরতরে। এ বৃদ্ধার ‘বোঝা’ যেন আর বইতে না পারছিলেন না তার পাষ- ছেলেরা ও তাদের স্ত্রীরা। তাই রাতের আঁধারে তাকে ফেলে গিয়েছিলেন রাস্তায়।

রাতের আঁধারে নিজ সন্তানরা তাকে রাস্তায় ফেলে গেলেও দুই শিক্ষার্থীর মানবিক দৃষ্টিতে পড়েন তিনি। তাকে উদ্ধার করে ঠাঁই দেয়া হয় হাসপাতালের বিছানায়। সেখানে জীবন-যন্ত্রণায় কাঁতরিয়ে অবশেষে ১৪ দিন পর সোমবার রাত সোয়া ৮টার দিকে না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাবেদা খাতুন।

জানা গেছে, গত ৩১ অক্টোবর রাতে তার সন্তানরা মাদারীপুর শহরের শকুনী লেকের উত্তরপাড়ে রাস্তায় ফেলে রেখে যান। পরদিন সকালে সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বিলাস হালদার ও মেহেদী ইসলাম হাঁটার সময় বৃদ্ধাকে পড়ে থাকতে দেখে এগিয়ে যান। গিয়ে দেখেন হাতে-মাথায় রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি পড়ে আছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তারা বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

ওই বৃদ্ধা প্রথম দিন নিজের নাম আর সন্তান-বউ মিলে ফেলে রেখে যাওয়ার কথাটুকুই শুধু বলতে পেরেছিলেন। স্বামীর নাম অজয় মল্লিক, ছেলেদের নাম আলমগীর ও সোবাহান বলেছিলেন। তারপর থেকে তিনি আর কথা বলতে পারছিলেন না। কিছুটা স্মৃতিশক্তি হারানো জবেদা এরপর অপেক্ষা করতে থাকেন মৃত্যুর।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা: ফরিদ উদ্দিন মিঞা বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে আমাদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও শুক্রবার সকাল থেকে অবনতি হয়। সোমবার রাত সোয়া ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

রূপচর্চা ও স্বাস্থ্যে শশা


ঘরকন্যা

শশা সবসময় পাওয়া শীতকালীন সবজি। শশার রস চোখের নিচে কালি, ত্বক, চুল ও স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ দরকারি।

আজকে শশা কাটা আর রস এর কিছু ব্যবহার সম্পর্কে জানি।

কিছু দরকারী ব্যবহার:

১.শসায় প্রচুর পানি থাকে তাই, শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে মনকে প্রশান্ত করে তোলে। শসা ভিটামিন বি–এর খুব ভালো একটি উৎস, যা আমাদের মেজাজ ভালো করে ও মস্তিষ্কের সক্রিয়তা বাড়ায়।

২. শশার রসের বিস্ময়কর হল, রোদে-পোড়া দাগ ও ত্বকের চুলকানি সারাতে সাহায্য করে। চোখের ফোলাভাব কমাতে এক ফালি শসা চোখে দিয়ে রাখতে পারেন।।

৩. শসায় থাকা সিলিকন ও সালফার চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৪.শশার উপকারিতা ভীষণ। শসা নিয়ে মুখের ভেতরের তালুতে রেখে জিহ্বা দিয়ে ৩০ সেকেন্ড চেপে রাখলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।

৫.কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় শশায় থাকা ফাইবার এবং ভিটামিন এ, বি-জটিল এবং সি মত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি সরবারহ করে। এই পুষ্টি শরীরের কোলেস্টেরল মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

৬.নিয়মিত শসা খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

৭.সার পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। শশাতে ম্যাগনেসিয়াম রক্ত চলাচল সচল করে।।

৮.ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণ হবার জন্য যুগ যুগ ধরে ঘরে ঘরে শশা ব্যবহার করা হয়।

৯.চোখের নিচের কাল দাগ কমাতেও শশার কোন জুরি নেই।

 

ক্যান্সার ঝুঁকিতে বাংলাদেশে প্রায় ৬ কোটি নারী


নারী সংবাদ


বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। বিভিন্ন বাঁধা বিপত্তি পেড়িয়ে এক সময়ের ‘তলা বিহীন ঝুড়ি’ রাস্ট্রটি আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। সবক্ষেত্রেই উন্নতি আজ দৃশ্যমান। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেশের আরো বেশি অগ্রগতি দরকার। বিশেষ করে চিকিৎসা বিজ্ঞানে। রোগ ব্যাধির ক্ষেত্রে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। কিন্তু ক্যান্সার এমন একটি রোগ যা থেকে শতভাগ সাফল্য এখনো আসেনি। ক্যান্সার নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই একটি মারাত্মক ব্যধি। তবে নারীর বেলায় বিভিন্ন প্রকারের ক্যান্সারের ঝুঁকিটা যেন একটু বেশিই। যেমন, তিন সন্তানের জননী রাবেয়া ফেরদৌসী। বয়স ৩৭। স্বামী বেসরকারী এক প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। রাবেয়া নিজেও ছিলেন একজন চাকরিজীবি। কিন্তু আজ প্রায় চার বছর হল চাকরী ছেড়ে এখন পুরোপুরি গৃহিনী। কারন সন্তানদের দেখাশোনার কেউ নেই। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তিনি খুব অসুস্থ। কিছুদিন পর পর আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বরে। অনেক ডাক্তার দেখানো আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা গেল রাবেয়া ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। একেবারে শেষ ধাপে।
আরেক নারী শাহেদা আক্তার চাকরী করেন এক মোবাইল কোম্পানীতে। স্বামী, এক ছেলে এবং এক মেয়ে নিয়ে ভালই চলছিল তার সংসার। কিন্তু হঠাৎ করেই তার পরিবারে নেমে আসে দুঃখ। পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানা যায় শাহেদার ব্রেস্ট ক্যান্সার।
মিথিলার বিয়ে হয়েছে মাত্র এক মাস আগে। এখনো হাতে লেগে রয়েছে বিয়ের মেহেদি। বিয়ের আগে থেকেই তার প্রায় সময় অল্প অল্প জ্বর লেগেই থাকত। জ্বর আসলেই সে প্যারাসিটামল অথবা নাপা খেয়ে নিত। এই জ্বর নিয়ে কখনো ডাক্তারের কাছেও যায়নি মিথিলা।
বিয়ের পর স্বামী বিষয়টি জানতে পেরে নিয়ে যায় তাদের পারিবারিক চিকিৎসকের কাছে। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা গেল মিথিলার ফুসফুস ক্যান্সার। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই যেন পাঁয়ের নিচের মাটি সরে যায়।
সম্প্রতি পরিচালিত এক জরীপে দেখা যায়, বাংলাদেশর প্রায় ছয় কোটি নারী কোনো না কোনোভাবে ক্যান্সার ঝুকিতে রয়েছেন। শুধুমাত্র সারভাইক্যাল ক্যান্সারে প্রতি বছর ১২ হাজার নারী আক্রান্ত হন এবং এদের মধ্যে ৬ হাজার নারীর মৃত্যু হয়।
অনকোলজিষ্ট অধ্যাপক ড. মো. ইহতেশামুল হক বলেন, বাংলাদেশে মৃত্যুর ষষ্ঠ প্রধান কারণ ক্যানসার।
বাংলাদেশে নারীদের ১৬.৯০ শতাংশ স্তন ক্যান্সারে, ১৫.৬০ শতাংশ জরায়ু ও জরায়ুমুখ এবং ১১.৯০ শতাংশ খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত। এছাড়াও পুরুষদের ২৩.৯০ শতাংশ খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর, ২২.৯০ শতাংশ মুখ গহ্বর এবং ১৫.৯০ শতাংশ ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত।
তিনি বলেন বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২০ লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং প্রতি বছর নতুন করে এ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন আরও দুই লাখ মানুষ। প্রতি বছর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন আরও দেড় লাখ মানুষ- পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি।
গাইনি বিশেষজ্ঞ ড. মনোয়ারা বলেন, বাংলাদেশে ক্যান্সারের প্রবণতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এরমধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশী। দেশে প্রায় ছয় কোটি নারী কোনো না কোনোভাবে ক্যানসার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
তিনি বলেন, আক্রান্ত নারীদের অধিকাংশই ডাক্তারের কাছে আসেন একেবারে শেষ পর্যায়ে। তখন আসলে ডাক্তারদের আর তেমন কিছুই করার থাকে না। বিভিন্ন প্রকার ক্যান্সারের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যান্সারে কোন ধরনের ব্যাথা থাকে না। যার ফলে অধিকাংশ নারীই বুঝতে পারেননা যে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। এজন্য দরকার সচেতনতা। প্রয়োজন কয়েক মাস পর পর ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে পরামর্শ নেওয়া।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ এর সংখ্যাও অপ্রতুল। সারা দেশে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ আছেন মাত্র ১৫০ জন। এছাড়াও অধিকাংশ হাসপাতালে নেই কোন ক্যান্সার সেন্টার। আবার ক্যান্সার নির্ণয়ের যন্ত্রপাতিও যথেষ্ট নয়। এ বিষয়ে তিনি সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের আরো বেশী জোর ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের রেজিষ্টার ড. সাইদুর রহমান সোহাগ বলেন, প্রায় সব ক্যান্সারই মরন ঘাতক। এজন্য দরকার দ্রুত সময়ে সঠিক চিকিৎসা।
তিনি বলেন, অনেক সময় রোগ নির্ণয় হতে হতেই রোগীর ক্যান্সারের অবস্থান শেষ ধাপে চলে যায়। এসময় রোগীকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায় না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিশেষ করে নারীরা সহজে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে চান না। অল্প অল্প জ্বর থাকলে তারা নিজেরা ওষুধ নিয়ে এসে খেয়ে ফেলেন। কিন্তু এই অল্প অল্প জ্বর ফুসফুস ক্যানসারের প্রধান লক্ষণ। এ থেকে রোগীর ফুসফুস ক্যান্সার হতে পারে যা পরে মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।
এজন্য দরকার সচেতনতা। বছরে অন্তত একবার ডাক্তারের কাছে গিয়ে চেকআপের পরামর্শ দেন ডা. সোহাগ।

সুত্রঃ বাসস।

 

নবজাতকে দেখতে যাবার সময় কি করবেন


প্যারেন্টিং


পৃথিবীর প্রায় সবাই নতুন শিশুদের খুব পছন্দ এবং ভালবাসে। শিশুরা জন্ম নেয় উজ্জীবিত, সাহস এবং সম্ভাবনা পূর্ণ আলো নিয়ে। সুতরাং তাদের আগমনের পর বিভিন্ন জীবাণু বা নানান ধরনের অসুবিধা থেকে নিরাপদে রাখার দায়িত্ব বাবা মা সহ সকল আত্মীয় স্বজনেরও ।সুতরাং নবজাতককে দেখতে গেলে কিছু বিষয় অবশ্যই মেনে চলা দরকার-

১. বাইর থেকে এসেই নবজাতকে কোলে নেওয়া থেকে দূরে থাকুন।

২.যতক্ষণ না শিশুটির অভিভাবক বা ডাক্তার অনুমতি না দেয় ততক্ষণ অপেক্ষা করুন।

৩.সেখানে আত্মীয় স্বজনের উপস্থিতি কেমন তার ধারণা আগেই জেনে নিন।

৪. শিশুর ধরার আগে হাত ধুয়ে নেওয়া আবশ্যক।

৫. যদি আপনি অসুস্থ হয়ে থাকেন, তাহলে বাসায় থাকুন নবজাতকে দেখতে যাবার প্রয়োজন নেই।

৬.যদি কোন নিয়ম সার্বজনীন হয়, তাহলে ভাল হয় শিশুর সুস্থতার কথা চিন্তা করে তা মেনে চলা।

৭.ছোট বাচ্চা বা স্কুলে যাওয়া বাচ্চাদের জীবাণু থাকতে পারে তাই তাদের নিয়ে নবজাতক দেখতে যাবেন না:

৮. যখন আপনি পৌঁছান, আপনার হাত পা সঠিকভাবে ডেটল বা সেভলন দিয়ে ধুয়ে নিন ।

৯.তীব্র মাত্রার সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না।
এমনি ধুমপান করে বাচ্চার কাছে যাবেন না।

১০. খুব দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে থাকবেন না।

১১. কোন ক্রমে নবজাতক শিশুর কাছে ভিড় করবেন না।

১২. পরিবার বা প্যারেন্টকে জিজ্ঞাসা না করে কোন ভাবেই শিশুর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট করবেন না।

 

চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ফেলে মেয়েকে হত্যা


নারী সংবাদ


আশুলিয়ায় চলন্ত বাস থেকে বাবাকে ফেলে দিয়ে বাসের চালক ও তার সহযোগীরা মিলে মেয়েকে অপহরণের পর হত্যা করেছে। হত্যার পর মেয়েটির লাশ মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ আব্দুল্লাপুর-বাইপাইল মহাসড়কের মরাগাং এলাকা থেকে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে। নিহতের নাম জরিনা খাতুন (৪৫)। সে সিরাজগঞ্জের চৌহালী এলাকার আকবর আলী মণ্ডলের মেয়ে।

নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, জরিনা খাতুন তার বাবাকে নিয়ে শুক্রবার দুপুরে আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। পরে সেখান থেকে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে স্বামীর বাড়ি টাঙ্গাইলের উদ্দেশে রওনা দেন। এসময় বাসের মধ্যে চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারসহ কয়েকজনের সাথে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে বাসের চালকের লোকজন তাদের দুজনকেই মারধর করে। পরে রাত ৮টার দিকে আশুলিয়া ব্রিজের নিচে জরিনার বাবা আকবর আলী মণ্ডলকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় সুপারভাইজার, বাস চালক ও তার সহকারীরা।

এদিকে বাস থেকে ফেলে দেয়ার পরপরই আকবর আলী বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে টহল পুলিশের একটি দল পাশের মরাগাং এলাকায় গিয়ে আব্দুল্লাপুর-বাইপাইল মহাসড়কের পাশে ওই নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে টাঙ্গাইল যাওয়ার উদ্দেশে একটি ফাঁকা বাসে ওঠেন বাবা-মেয়ে। বাসের চালক সেখান থেকে কিছুদূর যাওয়ার পর যাত্রী তোলার কথা বলে সাভারের হেমায়েতপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর আবার সেখান থেকে ফিরে আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক হয়ে আব্দুল্লাহপুরের উদ্দেশে চালাতে থাকে।

এভাবে ঘোরাঘুরি করতে থাকায় বাসচালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের সাথে জরিনা বেগম ও তার বাবার বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে বাসটি আশুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি গেলে বাসের সুপারভারইজার ওচালকের সহকারীরা বৃদ্ধ আকবর আলীকে পিটিয়ে সাথে থাকা ৬০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাকে আশুলিয়া ব্রিজের নিচে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ বলেন,‘নিহত নারীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়াও এ ঘটনায় নিহতের মেয়ের জামাই নুর ইসলাম বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সাথে জড়িত বাসচালক, হেলপার ও বাসের নাম শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’

ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) তাহমিদুল ইসলাম জানান, বাস থেকে ফেলে হত্যার আগে বাবার পাশাপাশি ওই নারীকেও পিটিয়েছে ঘাতক বাস শ্রমিকরা। কিন্তু টাঙ্গাইলের কোন বাসে তারা বাড়ি যাচ্ছিলেন তা ঠিক করে জানাতে পারছেন না বৃদ্ধ আকবর আলী। এ ঘটনায় একটি মামলা নেয়া হয়েছে। তদন্ত করে অপরাধীদের গ্রেফতারের আওতায় আনা হবে।

 

“প্যারেন্টিং ভাবনা”


সামিমা খাতুন


যেহেতু টপিকস টা প্যারেন্টিং এর উপর, তাই কিছু লিখতে ইচ্ছে করল। যদিও আমি গুছিয়ে লিখতে পারি না।তারপর ও ট্রাইং। পিজিতে বেশ কিছুদিন প্যারেন্টিং ট্রেনিং শেষন ক্লাস নেবার দায়িত্ব ছিল,সেই তাগিদ থেকেই লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে।
আমরা মূলত ভাবি যে প্যারেন্টিং শুধুমাত্র বাবা মা করে থাকেন। এটা ভূল। পরিবারের সিনিয়ররা যেমন বাবা মা, বড় ভাই বোন,নানা,নানী, দাদা,দাদী, মামা,চাচা ইত্যাদি এমন কি স্কুলের শিক্ষকরাও প্যারেন্টিং করে থাকেন এবং প্যারেন্টিং এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাই প্যারেন্টিংটা সবসময় পজিটিভ হচ্ছে কিনা এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত।

প্যারেন্টিং স্টাইল মূলত ৪ ধরনের। আমি সংক্ষেপে বর্ণনা করছি।

১*অথোরেটারিয়ান: এই পদ্ধতিতে বাবা মা কড়া শাসনের মধ্যে সন্তানের মানুষ করতে চান। আদেশ করা মাত্র ই সন্তানরা তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলবে এটাই প্রত্যাশা করেন। কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই নিয়মকানুন মানতে বাধ্য থাকবে। “আমি বলছি তাই মানতে হবে'” এই জাতীয় মনোভাব থাকে প্যারেন্টসদের। সন্তাদের কোন স্বাধীনতা থাকেনা।এক্ষেত্রে বাচ্চারা কম আত্মমর্যাদা ও কম আত্মবিশ্বাসী হয়।

২*পারমিসিভ: এটা অথোরেটারিয়ান স্টাইলের সম্পূর্ণ বিপরীত। এখানে কোন নিয়ম কানুন থাকে না। থাকলেও খুব ই এলোমেলো। শিশুর সব চাহিদা বলা মাত্র পূরণ করা হয়। শিশু টি বিপদের দার প্রান্তে পৌছনোর সম্ভাবনা না থাকলে শিশু যাই করতে চায় তাতেই পিতামাতা অনুমিত দেন। শিশুদের প্রতি সমাজের কি চাহিদা, প্রত্যাশা সেই সম্পকের বাবা মা কোন ধারনা দেন না।সন্তান রা নিজেদের চাহিদার কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। এই শিশু কিশোরেরা পরবরতীতে হটকারী,অসংযত, আক্রমণাত্মক, অবিবেচক হয়।

৩*আন ইনভ্লমেন্ট: এক্ষেত্রে দেখা যায় বাবা মা সন্তানের কোন খোজ খবর রাখেনা। সন্তান রা যা খুশী করার সুযোগ পায়। শিশু ভালো কাজ করলেও খোজ রাখেনা,প্রশংসা করে না আবার ক্ষতিকর কাজ করলেও তা জানার চেষ্টা করে না। আর্থিক সংগতি থাকলে টাকা পয়সা দিয়ে বাবা মা তাদের দায়িত্ব শেষ করেন।কোন ধরনের গাইড লাইন তারা দেন না। সারা রাত শিশু জরে ভুগছে,কেউ জানতে ও পারলো না সে অসুস্থতায় কষ্ট পেল। শিশু তখন অনুভব করলো কেউ তাকে ভালোবাসে না। সে একাকীত্ব বোধ করে,সম্পক গুলো নিয়ে ককনফিউজড হয়,হীন মন্যতায় ভূগে।

৪:অথোরেটেটিভ: এই পদ্ধতিতে শিশুর জন্য পরিকল্পিত ও সুনির্দিষ্ট নিয়মকানুন থাকে, একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা থাকে। এই সীমারেখার মাঝে সে স্বাধীনতা ভোগ করে। আলোচনার মাধ্যমে নিয়ম কানুন গুলো কখনো সামান্য ঢিলা দেওয়া হয়। শিশুরা বুঝতে পারে এই নিয়ম কানুন গুলো তাদের ভালোর জন্য।বাবা মার সাথে আলোচনার পথ খোলা থাকে।তারা জানে বকোন সমস্যায় পড়লে নিরভয়ে বাবা মায়ের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান সম্ভব। সমস্যা শুনেই বাবা মা প্রথমেই বকা দেবেন না,শুধু শুধু তাদেরকে দোষারোপ করবে না এইটুকু নিশ্চায়তা তারা পায়।এই পদ্ধতিতে বাবা মা নিয়ম তৈরী করে দেন কিন্তু তার বাস্তবায়নের দায়িত্ব অনেকাংশ সন্তানের হাতে তুলে দেন।শিশু কোন ভুল করলে বাবা মা তাকে তিরস্কার না করে শিশুর সাথে বসেন,বোঝার চেষ্টা করেন এবং ঠান্ডা মাথায় আলোচনা করেন। নিজেদের প্রত্যাশা কথা শান্ত অথচ দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দেন এবং ভবিষ্যৎ এ এই ভুল থেকে কিভাবে মুক্ত থাকা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করেন।এর ফলে শিশুরা আত্মবিশ্বাসী, আত্মমর্যাদাপূর্ন এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে শিখে যায়।

আপুরা এবার আপনারা নিজেরাই নিজেদের প্রশ্ন করুন কোন প্যারেন্টিং স্টাইল টা আপনার ভালো মনে হয়েছে?কোন টি আপনার শিশুর জন্য ইফেক্টিভ?আপনিও এখনো কোন প্যারেন্টিং স্টাইলের মধ্যে আছেন?

শিশুর আচরনের জন্য কখনোই শিশু দায়ী নয়,প্যারেন্টিং স্টাইল পজেটিভ হলে শিশুর আচরনও পজেটিভ হবে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে অথোরেটেটিভ স্টাইল টা এখন পর্যন্ত বেস্ট।

আসুন পজেটিভ প্যারেন্টিং করি, শিশুদের ভাল আচরণ শিখতে সহায়তা করি।

 

পেশা যখন কাপড় সেলাই


মেইক ইউরসেলফ


কাপড় সেলাইয়ের সঙ্গে মানুষ যুক্ত অনেকে আগে থেকেই। আর এই কাপড় সেলাই অর্থাৎ দর্জির কাজ ইচ্ছা করলেই পেশা হিসাবে নিতে পারেন যে কেউ। এই পেশাতে আয় উপাজর্ন অনেক। কেননা দুই ঈদ ছাড়াও অন্যান্য উৎসব পর্বনে নতুন কাপড় বানানোর হিড়িক পড়ে যায় পাড়া মহল্লাতে আবার অনেক সৌখিন মানুষ আছে যারা প্রতিমাসেই দর্জি বাড়িতে পা রাখেন। সব মিলিয়ে কেউ এই পেশাতে আসতে চাইলে খুব একটা খারাপ হবে না। আর কেউ যদি চিন্তা করেন কোথায় সেলাই শিখবেন। কিভাবে দোকান শুরু করবেন। কিংবা তার এই পেশার আচরন কেমন হবে তাতে খুব একটা টেনশন নেই। কারণ অন্য পেশার মতো এই পেশাতে খুব চাপ নেই। প্রয়োজন দক্ষতার, সেটি কাজ করতে করতেই চলে আসে। আর আপনার নানা ধরনের আচরন আপনার দোকানে কাস্টমার বাড়িয়ে দিবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক দর্জির পেশায় আসতে চাইলে আপনার কি কি বিষয় মাথায় রাখবে হবে, বিষয়গুলো কারণেই আপনার আয় উপার্জন প্রতিদিন বাড়তে থাকবে-

টেইলরের ঠিকানা : দর্জিবাড়ি যদি বাসা থেকে অনেক দূরে হয়, তাহলে অবশ্যই সেটা আপনার জন্য কনভেনিয়েন্ট হবে না।
ফ্যাশন আইডিয়া: ফ্যাশন রেগুলারই পরিবর্তন হচ্ছে। কাজেই দর্জি যদি চলতি ফ্যাশনের চাপা সিগারেট প্যান্টের জায়গায় একছাঁটের সালোয়ার বানিয়ে পরতে দেন, আপনার কি ভালো লাগবে?
দর্জি মাপ: দর্জি মাপ ঠিকমতো না নিলে, মাপে ভুল হলে পোশাক সুন্দর হবে না। অনেকে ফিতে হাতে মেপে নেন ঠিকই, কিন্তু কাগজে ঠিকমতো লিখে রাখেন না, মুখে বলেন মনে থাকবে এবং এই মনে থাকার চক্করেই সাধের পোশাকের বারোটা বেজে যায়।
বেঁচে যাওয়া কাপড়: যে সব থ্রিপিস বা টুপিস কিনি অথবা গজ কাপড়ের ও অনেক সময় দেখা যায় যে, বেশ অনেকখানি কাপড় বানানোর পর রয়ে গিয়েছে। ওই বেঁচে যাওয়া কাপড়টুকু দিয়ে ছোট বাচ্চাদের জামা, পুতুলের জামা, টুকটাক হ্যান্ডিক্রাফটের কাজ ছাড়াও ক্রিয়েটিভ কাজে ব্যবহার করা যায়। অনেক দর্জিই কাপড় ফেরত দেন না, নিজেরাই রেখে দেন। যিনি ফেরত দিয়ে দেন, তিনি নিঃসন্দেহে একজন ভালো দর্জি।
দর্জি টাকা-পয়সা কেমন চার্জ করেন: আমি বাকিদেরটা জানি না, কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে এটা বিশ্বাস করি, সস্তার তিন অবস্থা। দেড়শ’ টাকা মজুরির জামা অবশ্যই কখনো হাজারের কাছাকাছি মজুরির জামার মতো হবে না।
ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকসের না: কিছু টেইলর আছে মুখে মিষ্টি করে আপু ডাকেন ঠিকই, কিন্তু বুকের মাপ নিতে গিয়ে ইচ্ছে করে গায়ে ছুঁয়ে যান।
ডেলিভারি অন টাইম: যেদিন ডেলিভারির ডেট, দর্জি সেদিন সেই সময়েই পোশাক ডেলিভারি করলে অবশ্যই সে একজন ভালো দর্জি।
পোশাকের কাটিং এবং ফিটিংস: দর্জিবাড়িতে কিন্তু আমরা যাই-ই ভালো কাটিং এবং ফিটিংসের ড্রেস পেতে, কাজেই যার হাতের এ কাজ দুটো ভালো না, তার কাছে পোশাক দেয়া মানে বিপদ বাড়ানো।
সুত্র: মানব কন্ঠ।

 

আদিবাসী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ


নারী সংবাদ


মিরসরাইয়ে এক আদিবাসী কিশোরীকে (১৩) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার খইয়াছড়া ইউনিয়নের পূর্ব মসজিদিয়া ত্রিপুরা পাড়ার উত্তর পাশের নির্জন পাহাড়ের উপরে এ ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার বিকালে এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদি হয়ে মিরসরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলায় শিমুল ত্রিপুরা ও মো. মান্নানকে আসামী করা হয়েছে।

এই ব্যাপারে ধর্ষণের শিকার কিশোরী বলেন, বৃহস্পতিবার দৈনিক বেতনের ভিত্তিতে পাড়ার পাশের একটি পাহাড়ে আরো ৫-৭ জন শ্রমিকসহ বাগান পরিস্কারের কাজ করতে যাই। এসময় আমাদের কাজের পরিচালনা করছিলেন গুণধন ত্রিপুরার ছেলে শিমুল ত্রিপুরা। সেখানে আমার দায়িত্ব ছিলো শ্রমিকদের পানি খাওয়ানো। এক পর্যায়ে শিমুল ত্রিপুরা জ্বালানী কাঠ সংগ্রহের কথা বলে আমাকে ডেকে পাহাড়ের উপরে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে অপেক্ষারত আবুল কাশেমের ছেলে মো. মান্নানসহ শিমুল ত্রিপুরা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে আমাকে ছেড়ে দেয়ার সময় তারা বলে, এ ঘটনা যেন কাউকে না বলি, যদি এ ঘটনা প্রকাশ করি তাহলে আমাকে ও আমার বাবা মাকে হত্যা করবে।

এ বিষয়ে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির জানান, ধর্ষণের ঘটনায় মিরসরাই থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্তপূর্বক আসামীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
সুত্র: নয়া দিগন্ত

 

নৈঃশব্দ্যের অনুরণন


লুনা লাবিব


হে পুরুষ!
তুমি পরের জন্মে নারী হয়ে জন্মিও।
তোমার শিশুর মতো কোমল মন
ক্ষতবিক্ষত হবে বৃদ্ধ শকুনীর নখে,
তোমার কৈশোর লুটবে শেয়াল কুকুর
ধান ক্ষেতে,বনে বাদাড়ে।

হেটে যাবে ভরা মজলিশে তুমি
কাফনের সাতপাকে মুড়ে,
তবুও শুকরের জিব চাটবে তোমার বাহু,
শরীরের খাঁজ, দোষ রবে
শুধু পোশাক জুড়ে।

হে পুরুষ!
তুমি কতবার ধর্ষিত হলে
বুঝবে কি জ্বালা আছে লুকিয়ে,
নিহত হওয়ার পরও তোমায় নিলামে
হবে তোলা মাংসের দামে।

বেঁচে যদি গেলে, মরবে পদে পদে
বিচার সালিশে, হলুদ বল্লমে,
ময়না তদন্ত হবে চরিত্রের অনুবীক্ষণে
ধর্ষিত হবে কাগজ কলমে।

হে পুরুষ!
একবার জন্মিও তুমি সেই নারীর শরীরে
যার দেহে কীট হয়ে চুষেছো পুঁজ
বিষাক্ত লালা ঝরিয়ে,
তবুও যদি হয় প্রায়শ্চিত্ত ঐ জনমে।

 

মতিঝিলে বাসায় ঢুকে স্কুলছাত্রীকে ছুরিকাঘাত


নারী সংবাদ


রাজধানীর মতিঝিলের এজিবি কলোনির একটি বাসায় ঢুকে জয়া মণ্ডল (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে আহত করেছে এক দুর্বৃত্ত। গতকাল বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় লোকজন হাবিব নামে ওই হামলাকারীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। আহত স্কুলছাত্রীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা যায়, আহত জয়া মণ্ডল মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তার বাবা গোপাল চন্দ্র মণ্ডল দুদকের সহকারী পরিদর্শক। তার মা-ও দুদকে চাকরি করেন। মতিঝিল এজিবি কলোনির ৭৯/৩ নম্বরে তাদের বাসা।
সূত্র জানায়, গতকাল বেলা ৩টায় বাসায় একাই ছিল জয়া। এ সময় হাবীব (৩০) নামে ওই যুবক বাসায় ঢুকে তার মাথায় এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এ সময় জয়ার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। তারা হামলাকারীকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়।

ওই যুবক কী কারণে এই ঘটনা ঘটিয়েছে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। আহতের পরিবারও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেনি।
সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

বৈবাহিক সমস্যা ও কোরআনের সমাধান -৩


কানিজ ফাতিমা


আমরা যখন স্ত্রীদের শাস্তি প্রদান (Chastisement) এবং এর ফলে সৃষ্ট আঘাত, কষ্ট ও অপমানের ব্যাপারটি বিবেচনা করবো তখন একটি কথা আমাদের মনে রাখা উচিত যে কষ্ট, ভয় বা উদ্বেগএর (suffering, fear and anxiety) পরিণাম হল ঘৃণা, বিচ্ছিন্নতা ও অনীহা (hate, isolation, apathy)। পক্ষান্তরে ভালবাসা, সম্মান ও বিশ্বাস (love, respect, trust) এর পরিণাম হল সহৃদয়তা, ত্যাগ ও উৎসাহ (Charity, dedication, and enthusiasm)

আমাদের ইতিহাসে দেখা যায় যে, বিগত কয়েক শত বছর ধরে মুসলিম উম্মাহকে কঠিন দমন ও অপমান সহ্য করতে হয়েছে এবং হচ্ছে। এর ফলে স্বৈরশাসন ও ক্ষমতার সুবিধা ভোগের {বা অপপ্রয়োগের} একটি সংস্কৃতি ও মানসিকতা এ উম্মাহর মধ্যে তৈরি হয়েছে। অধিকাংশ সমাজেই এ সংস্কৃতি শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় যন্ত্রগুলোর (state police or security apparatus) মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং এটি সমাজের সাধারণ সংস্কৃতিরও অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। ফলে সমাজে দূর্বল অংশের উপর সবল অংশ ক্ষমতা ও শক্তি প্রদর্শন করে। অথচ এ সংস্কৃতিটি ইসলামের মূল স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্য ইসলামী সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ যেখানে সুন্নাহ হল “মসলিম উম্মাহ একটি ইমারতের মত যার এক অংশ অন্য অংশকে দাড় করিয়ে রাখে।” “মুমিনদের উদাহরণ হচ্ছে একটি দেহের মত যার একটি অঙ্গ অসুস্থ হলে অন্য সব অঙ্গ মিলে ঐ অঙ্গের সুস্থতার জন্য কাজ করে।”
হাদিসে এসেছেঃ “প্রতিটি মুসলিম একে অন্যের ভাই। কাজেই তারা একে অন্যকে নির্যাতন, অপমান বা ত্যাগ করবে না। একজন মুসলিমের অন্যায়ের জন্য এটাই যথেষ্ট যে সে তার ভাইকে ছোট(বা অপমান) করবে।”
“আল্লাহ সেই ব্যক্তির উপর রহমত করেন না যে অন্যকে দয়া দেখায় না ।”
“আল্লাহ তার দয়ালু বান্দাদের উপরই রহমত করেন।”
“একজন ঈমানদার কখনওই অপবাদ রটনাকারী, মানুষকে নিয়ে ঠাট্টাকারি বা অশ্লীল ও অশালীন হতে পারে না।”
“ঈমানদারদের মধ্যে তার ঈমানই সর্বাপেক্ষা মজবুত যার নৈতিকতা সর্বাপেক্ষা উত্তম এবং তোমাদের মধ্যে সেই সর্বাপেক্ষা উত্তম যে তার পরিবারের প্রতি উত্তম।”
একটি হাদীসে উল্লেখ্য আছে যে, হযরত মুহাম্মদ(সা) একজন ব্যক্তিকে কঠিনভাবে ভৎসনা করেছিলেন কারণ সে তার স্ত্রীকে পিটিয়েছিল। “যে তার স্ত্রীকে ভৃত্যের মত পেটায় আবার তার সঙ্গে শুতে লজ্জাবোধ করেনা। ” (বুখারী , vol-6)। মুসলিম শরীফে vol-6 উল্লেখ আছে যে, আল্লাহর পথে জিহাদ ব্যতীত, হযরত (সা) কোন নারী , ভৃত্য অথবা কোন ব্যক্তির উপর কখনও হাত তোলেননি। [এমনটি যুদ্ধকালীন অবস্থায়ও শত্র“পক্ষের নিরীহ নারীদের প্রতি অঘাত করা নিষিদ্ধ ছিল।] রাসুল (সাঃ) আরও বলেছেন “ তোমাদের মধ্যে অনেক মহিলা তাদের স্বামীদের নির্যাতনের ব্যাপারে রাসুলের পরিবারের কাছে শোক প্রকাশ করতে আসে। এই নির্যাতনকারী স্বামীরা কখনওই উত্তমদের অন্তর্ভূক্ত নয়।” (আবু দাউদ, VOL-8 No-2146, P-608)
সূরা নিসার ব্যবহৃত ‘দরাবা’ এর সঠিক ধারণা পেতে হলে আমাদের ইসলামের এই সাধারণ মূলনীতিগুলোর আলোকে বিষয়টিকে দেখতে হবে। এবং এর সাথে সাথে বর্তমান আধুনিক সময়ে মুসলিম পরিবারগুলোর কাঠামোকেও আমাদের বিবেচনায় আনতে হবে।
এখানে দুটি বিষয় বিশেষ গুরুত্বপূর্ন-
প্রথমত, সূরা নিসার ৩৪ও ৩৫ নং আয়াতকে (যাতে এই শ্বাস্তির ব্যাপারটি বিধৃত হয়েছে) বিচ্ছিন্নভাবে ব্যাখা করা যাবে না। এ আয়াতের ব্যাখার ভিত্তি হতে হবে সূরা রূমের ২১ নং আয়াত যেখানে আল্লাহ পারস্পরিক দয়া ও ভালবাসাকে বিবাহের উদ্দেশ্য হিসেবে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে।
“আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংঙ্গী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। ” (আর রূম-২১)
শুধু বিবাহের ক্ষেত্রে নয় এমনকি বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের সময়ও নারীকে অসম্মান করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
“আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও, অতঃপর তারা নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্ত করে নেয়, তখন তোমরা নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে রেখে দাও অথবা সহানুভূতির সাথে তাদেরকে মুক্ত করে দাও। আর তোমরা তাদেরকে জ্বালাতন ও বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য আটকে রেখো না । আর যারা এমন করবে, নিশ্চয়ই তারা নিজেদের ক্ষতি করবে।” (বাকারা-২৩১)
যেখানে বিবাহরে ভিত্তি সম্প্রীতি ও দয়া এবং এই বিবাহরে সমাপ্তিতেও নারীর প্রতি সহানুভূতি ও সম্মানের কথা বলা হয়েছে সেখানে বিবাহকালীন সময়ে সম্পর্ক ধরে রাখার মাধ্যম হিসাবে আঘাত ও মানসিক যন্ত্রণাকে ব্যবহার ঠিক সামঞ্জস্যশীল মনে হয় না।
দ্বিতীয়ত: অতীতে পরিবারে নারীদের ভূমিকা একরকম ছিল। তখন মহিলাদের সকল কার্যক্রম পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। অর্থনৈতিক কার্যক্রম থেকে তারা বিরত থাকতেন। অন্যদিকে পুরুষরা অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করত। পুরুষদের এই অর্থনৈতিক শক্তি তাদেরকে বাড়তি ক্ষমতা প্রদান করত। অর্থনৈতিক ব্যাপারে পুরুষদের উপর নির্ভরশীলতা নারীদেরকে ক্ষমতাহীন করে রাখতো ফলে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও তারা পুরুষদের উপর নির্ভর করতো। কিন্তু বর্তমানে এ চিত্রের পরিবর্তন ঘটেছে। পরিবারে নারী ও পুরুষের এ ভূমিকায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। পুরুষের উপর নারীর অসহায় নির্ভরশীলতা কমেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে; ফলে নারীদের উপর পুরষের একচ্ছত্র ক্ষমতা ব্যবহারের ক্ষেত্রও হ্রাস পেয়েছে। কাজেই বর্তমান সময়ে পরিবারের কোন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বা স্বামী-স্ত্রীর কোন বিরোধ নিরসনে পরিবারের এই কাঠামোকে বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

চলবে….

পর্ব-২

 

‘আমিই মার্কিন কংগ্রেসে প্রথম হিজাবধারী মুসলিম নারী’

নারী সংবাদ

সোমালি বংশোদ্ভূত ৩৭ বছরের ইলহান ওমর এবং ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ৪২ বছরের রাশিদা তালেব – এরা দুজনেই ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী ছিলেন। এরা দুজনেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসী-বিরোধী এবং মুসলিম-বিরোধী বাগাড়ম্বরের প্রকাশ্য এবং ঘোরতর সমালোচক।

মঙ্গলবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে জিতে এরা ইতিহাস তৈরি করেছেন। তারাই প্রথম দুই মুসলিম নারী যারা মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য হচ্ছেন। রাশিদা তালেব জিতেছেন মিশিগান রাজ্য থেকে। ইলহান ওমর জিতেছেন মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের একটি আসন থেকে।

যুক্তরাষ্ট্রে এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক মুসলিম প্রার্থী প্রতিযোগিতা করেছেন। একটি মুসলিম সংগঠনের দেওয়া হিসাবে, মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা ছিল, একশর কাছাকাছি।

‘স্বপ্নের সীমা নেই’
জেতার পর তার প্রথম ভাষণে, ইলহান ওমর বলেন,” মিনেসোটায় আমরা অভিবাসীদের শুধু সাদরে বরণই করিনা, আমারা তাদের ওয়াশিংটনে পাঠাই। আজ রাতে অনেকগুলো ‘প্রথম’ বিশেষণের অধিকারী হিসাবে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি – প্রথম অশ্বেতাঙ্গ হিসাবে আমি এই রাজ্যকে কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্ব করতে চলেছি, হিজাব পরিহিত নারী হিসাবে কংগ্রেস যাচ্ছি, আমিই প্রথম শরণার্থী যে কংগ্রেসে নির্বাচিত হয়েছি, এবং প্রথম একজন মুসলিম নারী হিসাবে কংগ্রেসে যাচ্ছি।”

হিজাব-পরিহিত ইলহান ওমর ১৪ বছর বয়সে বয়সে পরিবারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসনে আগে কেনিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে চার বছর কাটিয়েছিলেন।

স্থানীয় একটি গির্জার স্পন্সরশীপে ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তার পরিবার মিনিয়াপোলিসে আসার সুযোগ পান। বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা গেছে, ১৪ বছর বয়সে যখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে, ইলহান ওমর সামান্যই ইংরেজি জানতেন এবং মাত্র তিন মাসের ভেতর ভাষা রপ্ত করে ফেলেন। তখন থেকেই তার দাদার অনুবাদক হিসাবে সাথে ডেমোক্র্যাটদের বিভিন্ন সভায় যেতে শুরু করেন।

তিনি সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কট্টর সমর্থক। একইসাথে, ঘণ্টায় কমপক্ষে ১৫ ডলার মজুরীর পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন।

এর আগে ২০১৬ সালে মিনেসোটা রাজ্য সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।

সেই নির্বাচনে জেতার পর তিনি বলেছিলেন, “এ বিজয় শরণার্থী শিবিরে ৮-বছর বয়সী এক শিশুর বিজয়। এই বিজয় একজন তরুণীর যাকে জোর করে অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া হয়। এই বিজয় তাদের যাদের বলা হয় যে তাদের স্বপ্ন দেখার সীমা রয়েছে।”

‘আর দূরে দাঁড়িয়ে থাকা নয়’
ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত রাশিদা তালেব মিমিগান অঙ্গরাজ্যের একটি আসন থেকে বিজয়ী হয়েছেন। তার জন্ম ঐ রাজ্যেরই রাজধানী শহর ডেট্রয়েটের দরিদ্র, খেটে খাওয়া এক অভিবাসী ফিলিস্তিনি পরিবারে।

রাশিদা তালেব: “আমি আমার দুই ছেলের জন্য নির্বাচন করছি যাদের মধ্যে তাদের মুসলিম পরিচিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।”

৪২ বছরের তালেব ১৪ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড়। ২০০৮ সালে তিনি প্রথম মুসলিম নারী হিসাবে মিশিগান রাজ্য পরিষদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তিনি জানান, মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে আসা নিষিদ্ধ করা সহ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কিছু রীতির বিরোধিতা করার জন্যই তিনি কংগ্রেস নির্বাচনের দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।

“ইতিহাস রচনার জন্য আমি নির্বাচন করিনি,” এবিসি টিভিকে বলেন রাশিদা তালেব। “আমি অবিচারের জন্য নির্বাচন করেছি। আমাদের ছেলেদের জন্য করেছি যাদের মনে তাদের মুসলিম পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তারা বুঝতে পারছে না তাদের অবস্থান কোথায়। আমি কখনই দূরে দাঁড়িয়ে দেখার মানুষ নই।”

ডেট্রয়েটের কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রাশিদা নিজেকে শ্রমিক শ্রেণীর অধিকারের প্রতিভূ হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় রিপাবলিকানদের একটি নির্বাচনী সভায় ঢুকে তালেব মুখের ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা শুরু করনে। তাকে তখন জোর করে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়।

বৈষম্য
পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা গেছে – যুক্তরাষ্ট্রের ৪৮ শতাংশ মুসলিম অভিযোগ করেছে গত ১২ মাসে তারা কোনো না কোনোভাবে বৈষম্যের শিকার হয়েছে।

৭৫ শতাংশ মুসলিম মনে করে, তাদের বিরুদ্ধে “মারাত্মক” বৈষম্য করা হচ্ছে। প্রায় একই সংখ্যক মুসলিম মনে করে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুসলিম বিদ্বেষী।

২০১৭ সালের এক হিসাব মতে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমের সংখ্যা সাড়ে ৩৩ লাখ। এই সংখ্যা এক দশক আগের তুলনায় ১০ লাখ বেড়েছে।
সুত্র: বিবিসি।

 

অন্তঃসত্ত্বা নারী হত্যায় একজনের যাবজ্জীবন


নারী সংবাদ


অনৈতিক সম্পর্কের জেরে শ্যালকের স্ত্রীকে হত্যার দায়ে বরিশালে একজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বরিশালের বিশেষ আদালতের (জননিরাপত্তা অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল) বিচারক মো. মোহসিনুল হক মঙ্গলবার এ রায় দেন। দণ্ডিত আসামির নাম নবকুমার সাহা (৩৮)। সে খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগতি সাহাপাড়া গ্রামের চিত্ত সাহার ছেলে। নবকুমার বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ী গ্রামে থেকে হারতা বাজারে স্বর্ণকারের কাজ করত। জামবাড়ী গ্রামের বাড়িতে সে তার শ্যালকের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা কল্পনা রানীকে হত্যা করে। ২০১০ সালের ৬ জুলাই রাতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নবকুমারের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার বিবরণীতে জানা গেছে, মাটিকাটা শ্রমিক মিলন কর্মকার স্ত্রী কল্পনা রানীকে নিয়ে নবকুমারের জামবাড়ী গ্রামের বাড়িতে থাকত। এ সুযোগে নবকুমারের সঙ্গে শ্যালকের স্ত্রী কল্পনা রানীর অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

ঘটনার দিন নবকুমারের স্ত্রী দিপা সাহা খুলনায় বাবার বাড়িতে ও ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কল্পনা রারী উজিরপুরের কাউয়ারেখা গ্রামে বাবা সুভাষ হালদারের বাড়িতে ছিল। নবকুমার ওইদিন কল্পনা রানীকে বাবার বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। এ নিয়ে রাতে নবকুমারের সঙ্গে শ্যালক মিলন কর্মকারের ঝগড়া হয়। মিলন ঘুমিয়ে গেলে নবকুমার মিলনের স্ত্রী কল্পনাকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় নবকুমারের নির্যাতনে কল্পনার মৃত্যু হয়।

পরদিন সকালে মিলনকে ভুল বুঝিয়ে কর্মস্থলে পাঠিয়ে কল্পনার মুখে বিষ ঢেলে নবকুমার আত্মহত্যার নাটক সাজায়। পরবর্তীকালে কল্পনার বাবা সুভাষ হালদার হত্যা মামলা করলে পুলিশি তদন্তে কল্পনার মৃত্যু রহস্য বেরিয়ে আসে।

সুত্র: যুগান্তর।

 

প্রতিবেশিনী……৩


আফরোজা হাসান


রাতের মেঘলা আকাশ খুব ভালো লাগে আয়ানের। আর যদি সেই মেঘলা আকাশটা হয় জোছনা ধোয়া তাহলে তো ভালো লাগার মাত্রা বেড়ে যায় কয়েক গুণ বেশি। মেঘের সমুদ্রে চাঁদের ভাসমান ভেলা, সারাটা ক্ষণ জুড়ে চলে উভয়ের লুকোচুরি লেখা। অবশ্য এই লুকোচুরি খেলা আয়ানকে একাই দেখতে হয় সবসময়। মাহাম শুধু সেদিনই তার সাথে আকাশে চোখ রাখে যেদিন জোছনা বান ডেকে যায় হাজার তারার সমারোহে। এখনো পাশে বসে থাকলেও মাহামের চোখ বইয়ের দিকে।

এত রোম্যান্টিক বই পড়াচ্ছি তোমাকে কিন্তু রোমান্টিক দু’একটা বাক্য শোনার সৌভাগ্যও তো হচ্ছে না আমার কানের। মাহামের পাশে বসতে বসতে বলল আয়ান।

বই বন্ধ করে মাহাম বলল, ছোট ছোট বালুকণা বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল। ভাব-সম্প্রসারণ পড়োনি?

ভাব-সম্প্রসারণ তো পড়েছি কিন্তু মাহাম ভাবের কি সম্প্রসারণ করতে চাইছে সেটা বুঝতে পারছি না।

আমি শব্দে শব্দে ছড়িয়ে দিতে চাই না তোমাকে ঘিরে আমার ভালোবাসা। তাই শব্দদের সংরক্ষণ করছি মনের ভাঁড়ারে। যখন পর্যাপ্ত শব্দ একত্রিত হবে তোমাকে একটা প্রেমের উপন্যাস উপহার দেবো। আমি তো কয়েকটা উপন্যাসের নামও ঠিক করে ফেলেছি। “আমরা দুজন ভাসিয়া আসিয়াছি যুগল প্রেমের স্রোতে” কিংবা “একি সোনার আলোয় জীবন ভরিয়ে দিলে”।

উপন্যাসের শুরুই করবে অন্যের থেকে ধার করা শব্দে?

তাই তো! এভাবে তো ভেবে দেখিনি। আচ্ছা নামও আমিই দেবো আমার শব্দ ভাণ্ডার থেকে। কিন্তু তুমি ঠোঁট টিপে হাসছো কেন? আমি উপন্যাস লিখতে পারবো না ভাবছো?

হাত বাড়িয়ে মাহামকে কাছে টেনে নিয়ে হাসতে হাসতে আয়ান বলল, উহু…এমন ভাবার কোন অবকাশই নেই। আমার তো বরং ধারণা অতি উন্নত মানের উপন্যাস লিখতে পারবে তুমি।

এমন ধারণার পেছনে কারণটা কি জানতে পারি?

অবশ্যই জানতে পারো। একজন ঔপন্যাসিক হবার সব গুণ তোমার মধ্যে আছে। ছোট একটা কথাকে তুমি ইলাস্টিকের মত টেনে লম্বা করতে পারো, রহস্য করতে পারো, বিভ্রান্ত করতে পারো, কথার মার প্যাঁচেও তোমার তুলনা মেলা ভার। আর সব চাইতে বড় কারণ শব্দের সাথে শব্দ বুনে চমৎকার মুগ্ধতার আবেশ সৃষ্টি করতে পারো তুমি।

ঠেলে আয়ানকে কাছ থেকে সরিয়ে দিয়ে চোখ বড় বড় করে মাহাম বলল, তুমি কি বলতে চাইছো সোজাসুজি বলো।

হাসি চাপার প্রাণপণ চেষ্টা করতে করতে আয়ান বলল, আরে আমি তো তোমার প্রশংসা করছি। তুমি রেগে যাচ্ছো কেন?

তোমার সাথে তো আমি আর কথাই বলবো না। বলে তো মাহাম উঠে গজগজ করতে করতে ভেতরে চলে গেলো। মাহামের অভিমান ভাঙাতে আয়ানকেও বাধ্য হয়ে পিছু নিতে হলো।

পরদিন সকালে নাস্তার টেবিলে খাবার মুখে দিয়েই মাহামের দিকে তাকালো আয়ান। স্বাদ-ঘ্রাণ দুটোই অন্যরকম লাগছে খাবারের। আয়ানকে তাকিয়ে থাকতে দেখে মাহাম হেসে বলল, আজ নাস্তা আমি বানাইনি। হাদিয়া এসেছে।

হাদিয়া এসেছে! কোত্থেকে?

আমাদের প্রতিবেশিনী পাঠিয়েছেন। হাদিয়ার সাথে একটা চিরকুটও ছিল। তাতে লেখা ছিল-“ রাসূল(সঃ)বলেছেন, ‘তোমরা হাদিয়া আদান-প্রদান করো। এর মাধ্যমে তোমাদের মাঝে হৃদ্যতা সৃষ্টি হবে।” অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূল(সঃ)বলেছেন, ‘হে আবুজর! যখন তুমি তরকারি পাকাও তাতে একটু বেশি পানি দিয়ে ঝোল বাড়াও এবং তোমার প্রতিবেশীকে পৌঁছাও।” আর রাসূল (সঃ) স্পেশালি নারীদেরকে এই বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে বলেছেন, ‘হে মুসলিম নারীগণ! তোমাদের কেউ যেন প্রতিবেশিকে হাদিয়া দিতে সংকোচবোধ না করে। যদিও তা বকরির খুড়ের মতো একটি নগণ্য বস্তুও হয়।”

আয়ান হেসে বলল, যাক তোমার প্রতিবেশিনীর তাহলে অন্যের হকের জ্ঞানও আছে।

হাসলো মাহামও। হ্যা আর শুধু হাদিয়াই না আজ ডিনারের দাওয়াতও দিয়েছে আমাদেরকে। কারণ আজ নাকি হঠাৎ উনার মনে পড়েছে রাসূল(সঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী তার উচিত মেহমানের মেহমানদারী করা।” কি নিয়ে যাবো দাওয়াতে সেটা ভাবছি। তুমি কি কোন পরামর্শ দিতে পারো এই ব্যাপারে?

দুম করে বিয়ে করা কাকে বলে তা কি জানো তুমি?

নাতো। কাকে বলে?

যেই বিয়ের পর দুমাদুম শব্দে বৃষ্টির ন্যায় দুশ্চিন্তাটা মনে বর্ষিত হয় তাকে বলে।

আয়ানের কথা শুনে খিলখিল করে হেসে উঠলো মাহাম।

আয়ানও হেসে বলল, আমরা তখন সবে মাত্র মেডিকেলে ভর্তি হয়েছি। আমাদের দুই ক্লাসমেট দুম করে বিয়ে করে ফেললো। বিয়ে মেনে নিলেও উভয় পরিবারই বয়কট করলো দুজনকে। তখন আমরা সব ফ্রেন্ডরা মিলে নিজেদের পকেটমানির টাকা একসাথ করে ওদেরকে ঘর ভাড়া করে দিয়েছিলাম। এবং প্রায় ছয় মাস ধরে একটু একটু করে সবাই মিলে সাজিয়ে দিয়েছিলাম ওদের সংসারকে। সেই সময়ের অনুভূতি, সেই আনন্দ প্রকাশ করার মত না। তখন আমরা একটা জিনিস উপলব্ধি করেছিলাম কাউকে ফুল-কার্ড-চকলেট উপহার দেবার চেয়ে তার প্রয়োজনীয় ও দরকারি কোন জিনিস কিনে দেবার মাঝে উভয় পক্ষের জন্যই কি আনন্দ ও প্রাপ্তি লুকিয়ে থাকে।

শুনেই তো আমার মনে অদ্ভুত আনন্দধারা বইতে শুরু করেছে। হাসিমুখে বলল মাহাম।

এরপর থেকে আমি যখনই আমার কোন ফ্রেন্ডকে উপহার দিতে চাই আগে খোঁজ নিয়ে দেখি তার কোন জিনিসটার প্রয়োজন রয়েছে। আমার কাছে সবসময় মনেহয় উপহার এমন কিছু দেয়া উচিত যেটা ব্যক্তির কাজে লাগবে। ফ্রেন্ডের সন্তানদেরকে উপহার দেবার সময়ও আমি এটা খেয়াল রাখতে চেষ্টা করি। আমাদের সবারই আসলে খেয়াল রাখা উচিত উপহার যেন অপচয়ের মধ্যে শামিল না হয়। আমাদের প্রতিবেশীদের নতুন সংসার। তাই অনেক কিছুর প্রয়োজন থাকতে পারে। তুমি খোঁজ নিয়ে দেখো। দরকারী যেই জিনিসটা দিলে উনারা লজ্জিত বোধ করবেন না কিন্তু উনাদের একটা প্রয়োজন পূরণ হবে এমন কিছু দেবার চেষ্টা করো।

আরেকবার নতুন করে মাহামের মনকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে গেলো আয়ান। মুগ্ধ কণ্ঠে কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে যাচ্ছিলো কিন্তু এই সময় কানে ভেসে এলো চিৎকার ও কোন কিছু পড়ার হুড়মুড় শব্দ! আয়ান ও মাহাম দুজনই উঠে পাশের ফ্ল্যাটের উদ্দেশ্যে ছুট লাগালো…………

চলবে..

পর্ব-২

 

যে কারনে সকালে পানি পান করবেন

 


স্বাস্থ্যকথা


মনে করুন, আগামী আট ঘণ্টায় আপনাকে কোনো তরল কিছু পান করতে দেওয়া হবে না—কোনো জুস, পানি, চা কিচ্ছু না। এটা মনে করেই আপ গলা হয়ত খানিকটা শুকিয়ে গেছে। কিন্তু, আপনি যখন রাতে ঘুমান, তখন ঠিক এই জিনিসটিই ঘটে।

আপনার শরীর ঘুমের মধ্যে পানিশুষ্ক হয়ে যায়, কারণ আপনার শরীর প্রয়োজনীয় তরল পায় না।

শরীরের কার্যকারিতার জন্য বা ভালোভাবে ফাংশন করার জন্য পানির খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই সারাদিনে প্রচুর পানি পান করলে তা আপনার উপকারে লাগে।

তবে, দিনের শুরুতেই, সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে বড় এক গ্লাস পানি পান করার বিশেষ উপকার আছে। এই অভ্যাসের গুরুত্ব আসলেই আলাদা।

১. আপনার শরীরের পানির অভাব পূরণ করবে
সাত বা আট ঘণ্টা ঘুমের পরে, আপনার শরীর পানিশুষ্ক হয়ে যায়। ঘুম থেকে উঠেই পানি পান করলে শরীরে ভালোভাবে অক্সিজেন প্রবাহিত হয়, এবং এটা মাসল গঠন ও রক্ত কণিকা গঠনে সাহায্য করে।

২. এই অভ্যাস আপনার মেটাবলিজম বাড়ায়
সকালে উঠেই বড় গ্লাসের কমপক্ষে এক গ্লাস পানি পান করলে আপনার মেটাবলিজম বেড়ে যায় ২৪ শতাংশ। এটা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

৩. পানি আপনার শরীরের বিষাক্ত জিনিস বের করে দেয়
আপনি যখন সকালে কোনো কিছু খাওয়ার আগেই খালি পেটে পানি পান করেন, এটা আপনার কোলন পরিষ্কারে কাজে লাগে। খাদ্যের পুষ্টি উপাদানগুলি শরীরে ভালোভাবে শোষিত হয়। এই অভ্যাসের কারণে আপনার কিডনিও ভালোভাবে কাজ করে।

৪. আপনার ব্রেইনের টিস্যুর ৭৫ শতাংশ-ই পানি
আপনি যখন ডিহাইড্রেটেড বা পানিশুষ্ক থাকেন তখন আপনার ব্রেইন খুব সামান্য পরিমাণ তরল পদার্থ নিয়ে ফাংশন করতে থাকে। এর কারণে আপনি ক্লান্তি বোধ করেন। এর ফলে মাথাব্যথাও হয়। এর কারণে মুড খারাপ হয়ে যায় বা বিষণ্ণতার শুরু হয়।

৫. আপনি দীর্ঘক্ষণ ধরে পরিপূর্ণ থাকেন
পানি আপনার পাকস্থলী পূর্ণ রাখে। সকালে ঘুম থেকে উঠে বড় গ্লাসের এক গ্লাস পানি পান করলে তা সকালের নাস্তার সময় কম খেতে বা কম ক্যালরি গ্রহণে সাহায্য করে। এই অভ্যাসের ফলে আপনি সকালের নাস্তা থেকে দুপুরের খাবার সময় পর্যন্ত ক্ষুধা অনুভব করবেন না, এবং এই মধ্যবর্তী সময়ে এক্সট্রা ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে যেভাবে পানি খেলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে ঘুম থেকে উঠেই দেড় লিটার পানি, ৫ থেকে ৬ গ্লাস পানি পান করুন। পানি পান করার পর এক ঘণ্টা কোনোকিছু খাওয়া বা পান করা থেকে বিরত থাকুন।

মানুষের শরীরের ৭২ শতাংশ পানি। আপনার শরীরের কোন অংশে কী পরিমাণ পানি থাকে তা এখানে থাকছে—
আপনার মাসল বা পেশীর ৭৫ শতাংশ পানি আপনার রক্তের ৮২ শতাংশ পানি আপনার ফুসফুসের ৯০ শতাংশ পানি আপনার মস্তিষ্ক বা ব্রেইনের ৭৬ শতাংশ পানি আপনার হাড়ের ২৫ শতাংশ পানি এ থেকেই বোঝা যায় আপনার শরীরের সুসাস্থ্যের জন্য, শক্তির জন্য এবং ভালোভাবে সচল থাকার জন্য পানি কত প্রয়োজন। ডিহাইড্রেট বা পানিশুষ্কতা থেকে মারাত্মক কিছু হতে পারে। আপনার শরীরের প্রতিটা কোষই টিকে থাকার জন্য পানির উপর নির্ভরশীল। প্রতিটা অং-প্রত্যঙ্গ, টিস্যু পানির ওপর নির্ভর করে।

সুতরাং সকালে উঠেই পানি পান করার অভ্যাস তৈরি করুন, একান্তই যদি বিস্বাদ লাগে সেক্ষেত্রে কিছুটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন।

 

বিয়ে বিচ্ছেদে অনিশ্চিত সন্তানের ভবিষ্যৎ


রহিমা আক্তার মৌ


বিয়ে বিচ্ছেদ একজন নারীর জীবনে নিয়ে আসে নানা সমস্যা। কিন্তু তার চেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে এসব পরিবারের সন্তানেরা। তারপরও আমাদের দেশে বিয়ে বিচ্ছেদ বাড়ছে। যা আমাদের শঙ্কিত করে।
এসব নিয়ে লিখেছেন রহিমা আক্তার মৌ

প্রিতুলার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়েছে বেশ আগেই। প্রিতুলার বাবা সন্তানদের কোনো খোঁজ নেন না, যোগাযোগ বা কোনো খরচও দেন না। প্রিতুলারা দুই বোন মায়ের কাছেই থাকে। মায়ের সামনে কখনোই বাবা শব্দটাও উচ্চারণ করে না প্রিতুলা। ওয়াশরুমে গান গায় প্রিতুলা- ‘আমি যাচ্ছি বাবা… আমি যাচ্ছি।’
বের হওয়ার পর ওর মা জিজ্ঞেস করে-
কি গান করছিলে মা।

‘আমি যাচ্ছি মা… আমি যাচ্ছি।’
মা আবার জিজ্ঞেস করলেই প্রিতুলা সত্যিটা বলে, আর বলে- ‘মা গানটা তো বাবা দিয়েই, তাই ওভাবে গাইলাম।’

ঠিক একই ঘটনা এলিজারও। এলিজার বাবা-মায়ের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। এলিজা মায়ের সাথে থাকে। বাবা মাসে এক হাজার টাকা করে দেয় ওর খরচ। ১৪-১৫ বছর বয়সী একটা সন্তানের মাসের খরচ এক হাজার, সত্যিই মনে হচ্ছে- আট টাকায় এখন এক মণ চাল পাওয়া যায়।

এ সন্তানদের অবস্থা অনেক ভালো বলা চলে। প্রিতুলা বা এলিজার মা আর বিয়ে করেননি। সন্তানকে বুক দিয়ে আগলে রেখে কাটিয়ে দিচ্ছেন নিজের বাকি জীবন। দিন তো ঠিক যাচ্ছে, অবচেতনে প্রিতুলা বাবার গান গাইছে, এলিজা মন দিয়ে বন্ধুদের কাছে বাবার গল্প শুনছে, ওদের দিন কাটছে। এর চেয়ে অনেক কঠিন কিছু ঘটনার সম্মুখীন আমরা। সন্তান নিয়ে মা আবার বিয়ে করলে মায়ের সে স্বামী কিন্তু কখনোই সন্তানের বাবা হয় না, হতে পারে না। সে সন্তান যদি মেয়ে সন্তান হয়, তাহলে মায়ের পরের স্বামী কিন্তু সেই মেয়ের জন্য পর পুরুষ। (ব্যতিক্রম কিছু আছে) এই পরপুরুষ দ্বারা মেয়ে সন্তানের জীবন অতিষ্ঠ হওয়ার কিছু ঘটনাও সকলের জানা। তাই আমাদের ভাবতে হবে সন্তানদের কথা, সন্তানদের ভালো আর ভবিষ্যতের কথা ভেবে একটু ত্যাগের বিনিময়ে হলেও সমঝোতায় আসা উচিত বাবা-মায়ের। বিয়ে বিচ্ছেদে নিজের সুখ আসতে পারে, কিন্তু সন্তানের নয়। বিষয়টা দাঁড়াল বাবা-মা নতুন করে জীবন সাজাতে গিয়ে অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন নিজের সন্তানকে। এ ঘটনার জন্য একা মা বা বাবা দায়ী নন, দায়ী দুজনেই।

ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, প্রতিটা দম্পতির উচিত বিয়ের পর অন্তত দুই-চার বছর অপেক্ষা করে সন্তান নেয়া, নিজেদের মধ্যে বিশ্বাস-বন্ধন অটুট হলে বা দুজন দুজনকে বুঝলে তারপর সংসারে নতুন অতিথির কথা ভাবা। বিষয় হলো এখন অনেক মেয়ের বিয়ে হয় লেখাপড়া শেষ করে, তখন তাদের বয়স পঁচিশের ঊর্ধ্বে হয়ে যায়। ডাক্তারদের মতে অনেক ক্ষেত্রে ত্রিশের ঊর্ধ্বে মেয়েদের সন্তান হওয়ায় সমস্যা দেখা দেয়, তাই বিয়ের পর সন্তান নেয়া জরুরি হয়ে পড়ে। ‘ঢাকা শহরে দিনে ৫০-৬০টি দম্পতির বিচ্ছেদের আবেদন করে।’ এমন একটি তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পরে আতঙ্ক দেখা দেয় সচেতন মহলে। বিয়ে বিচ্ছেদ এখন আমাদের সমাজের একটা বিষফোঁড়া, আর বিষফোঁড়ার বিষাক্ত জীবাণু আক্রমণ করছে আমাদের পরের প্রজন্মকে, অর্থাৎ বিয়ে বিচ্ছেদের পরিবারের সন্তানদের।

নারী শিক্ষা, নারী জাগরণ ও নারী নেতৃত্ব বেড়েছে। সাথে বাড়ছে চাকরিজীবী নারীর সংখ্যা। সে হারে পরিবর্তন হয়নি পিতৃতান্ত্রিক বা পুরুষতান্ত্রিক পরিবেশের অবস্থা। বাইরের কাজ করে ঘরের সব দায়িত্ব পালন করেও নারীকে শুনতে হচ্ছে অনেক কথা। দু’দিকে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একপর্যায়ে নারীরা হাঁপিয়ে উঠছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, গত সাত বছরে বিয়ে বিচ্ছেদের প্রবণতা বেড়েছে ৩৪ শতাংশ। অল্প শিক্ষিত দম্পতিদের চেয়ে শিক্ষিত দম্পতিদের মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদ হচ্ছে বেশি। এ জন্য অনেকে শিক্ষিত নারীর জীবিকাকে দোষারোপ করছেন, কিন্তু এর পেছনের গল্প অনেকেই খুঁজতে চান না।

একজন চাকরিজীবী পুরুষ বাইরে বেশী সময় দিলে কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু একজন চাকরিজীবী নারী চাকরির প্রয়োজনেই বাইরে বেশী সময় দিলে, এই নিয়ে শুরু হয় অশান্তি এবং এর পরিণাম বিয়ে বিচ্ছেদ। এ বিচ্ছেদের ফলে তারা নতুন জীবন বেছে নিলেই তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। মতের অমিল, সমঝোতার অভাব, শ্রদ্ধাবোধের ঘাটতি, পুরুষের আধিপত্য ও পরকীয়ার কারণেই বেশি বিয়ে বিচ্ছেদ হচ্ছে। তবে শারীরিক দুর্বলতা, প্রত্যাশা পূরণের অভাব, পরিবারের সদস্যদের অনধিকার চর্চা, ধৈর্যের অভাব এবং ক্যারিয়ার নিয়ে সমস্যা হওয়ার ফলেও বিয়ে বিচ্ছেদ হচ্ছে অনেক।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিয়ে বিচ্ছেদের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সন্তানের ওপর। অনেকের মতে, বিয়ে বিচ্ছেদ বাড়ার ফলে স্ত্রীর মৃত্যুর হার কমেছে বললেও পক্ষান্তরে নারী নির্যাতন আর মানসিক সমস্যাগ্রস্তদের সংখ্যা বেড়েছে। সমস্যার বোঝাপড়া না করতে পেরে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে এক সময় কঠিন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয় তারা। কারণ একটা শিশুকে সুন্দর ভবিষ্যৎ দিতে একা মা কিংবা বাবার দ্বারা সম্ভব নয়, সন্তানের বেড়ে ওঠায় বাবা-মা দুজনের প্রয়োজন।

ঢাকা সিটি করপোরেশনের তথ্যানুযায়ী, ২০১০-২০১৬ সাল পর্যন্ত রাজধানীতে বিয়ে বিচ্ছেদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় বায়ান্ন হাজার। হিসাবে মাসে গড়ে ৭৩৬টি, দিনে ২৪টির বেশি এবং ঘণ্টায় একটি তালাকের আবেদন করা হচ্ছে। বিচ্ছেদের যেসব আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে তার মধ্যে ৮৭ শতাংশ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে পরকীয়ার জেরে। কোনো ক্ষেত্রে স্বামীর পরকীয়া, কোনো ক্ষেত্রে স্ত্রীর পরকীয়া হলেও তথ্য বলছে বিয়ে বিচ্ছেদে নারীরা এগিয়ে আছে। জরিপে দেখা গেছে, ৭০.৮৫ শতাংশ বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করছেন নারী, আর ২৯.১৫ শতাংশ বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করছেন পুরুষ।

নারীদের হার বেশি হওয়ার পেছনে মনোবিজ্ঞানীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেকেই মনে করেন, সাধারণত নারীরা বেশি নির্যাতিত হওয়ায় তারাই বিচ্ছেদের পদক্ষেপ বেশি নিচ্ছে; তবে এর সাথে ভিন্ন মতামত ও রয়েছে। অনেকে বলেন, মেয়েরা এখন অধিকার সচেতন। সামাজিক ও অর্থনৈতিক দুই দিক থেকেই বেশি অধিকার পেয়ে বিয়ে বিচ্ছেদে আগের চেয়ে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। মূলত বিয়ে বিচ্ছেদের সবচেয়ে বড় কারণ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ‘বনিবনা না হওয়া’। স্ত্রীর করা আবেদনে কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বামীর সন্দেহবাতিক মনোভাব, পরনারীর সাথে সম্পর্ক, যৌতুক, দেশের বাইরে গিয়ে আর ফিরে না আসা, মাদকাসক্তি, ফেসবুকে আসক্তি, ব্যক্তিত্বের সঙ্ঘাত, নৈতিকতাসহ বিভিন্ন কারণ। আর স্বামীদের আবেদনের কারণ- অবাধ্য হওয়া, ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী না চলা, বদমেজাজ, সংসারের প্রতি উদাসীনতা এবং সন্তান না হওয়াসহ এমন অনেক কারণ।

আমরা যতই নারী উন্নয়নের কথা বলি না কেন, এখনো বেশির ভাগ নারীরা গৃহকাজে রয়েছেন। এখনো অধিক হারে নারী নির্যাতন হচ্ছে। একজন পুরুষ ঘরে থাকেন কতক্ষণ, তিনি সংসারের অনেক ঝামেলাকে আড়াল করতে পারেন বাইরে গিয়ে কাজের মধ্যে, আর নারী অবহেলা নির্যাতন সব সয়ে সংসারেই প্রতিটি সময় কাটিয়ে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস হারাতে বসেন। নিজেকে দুর্বল ভাবতে থাকেন, একপর্যায়ে কাউন্সিলিংয়ের অভাবে তিনি বিয়ে বিচ্ছেদের মতো কাজ করতে বারবার ভাবেন না। আরো একটা বিশেষ কারণ হলো- দুর্বলতার সুযোগ।

একজন নারী যখন পরিবারেই অবহেলিত হন তখন বাইরের একটু ভালো কথা, ভালো লাগা-ভালোবাসা পেলে সে নিজের বোধবুদ্ধি ত্যাগ করে বাইরের ক্ষণিকের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে ঘর সংসার ভুলে পরকীয়ায় মেতে ওঠে। বাধ্য হয়ে শুরু হয় অশান্তি, যার ফল দাঁড়ায় বিয়ে বিচ্ছেদে। বিবিএসের দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যে- গত বছর ১৫ বছরের বেশি বয়সী প্রতি এক হাজার নারী-পুরুষের মধ্যে গড়ে ১ দশমিক ৪টি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। ২০১৬ সালে যা ছিল ১.৫ (এক দশমিক পাঁচ)। তথ্যে আরো বলা হয়- তুলনামূলকভাবে বর্তমানে বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে, যা ২.৭ (দুই দশমিক সাত)। আর সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে .৬ (দশমিক ছয়)। এটিও ঠিক, নারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার ফলে নিজের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হচ্ছে, তাই বলে বিচ্ছেদে গিয়ে সন্তানদের টানাপড়েনে ফেলে নয়। বিয়ে বিচ্ছেদ সন্তানদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে উল্লেখ করে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, বাবা-মায়ের মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদ হলে সন্তানেরা অস্থিরতার মধ্যে বড় হয়, যার প্রভাব বইতে হয় সারাজীবন।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা হলো নারীরা সহজে তালাকের সিদ্ধান্ত নেন না। বাংলাদেশে নারীদের পক্ষ থেকে তালাকের আবেদন কেন বাড়ছে, তা নিয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েদের মতামত ছাড়া কম বয়সেই বিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার দেখা যাচ্ছে- বেশি বয়সী লোকের সাথেও অভিভাবকেরা মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন। একটাপর্যায়ে গিয়ে এ ধরনের বিয়েগুলো টিকছে না। সন্তানরা চায়, মা-বাবার সাথে একসাথে একটি স্বাভাবিক ও সুখী পরিবার হয়ে থাকতে। বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা নতুন কিছু নয়, আবার কোনো ক্ষেত্রে অযৌক্তিকও হয়তো নয়। কিন্তু সন্তান থাকলে তার বা তাদের ওপর এর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তাও অস্বীকার করার মতো না। আবার সন্তানের দৃষ্টিকোণ থেকেও তো বিচ্ছেদর বিষয়টি দেখা দরকার। সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়ার অধিকার মা-বাবা কারোই নেই। তাই আবারো বলছি, সন্তান জন্মের আগেই ভাবতে হবে কয়েকবার, একটি সন্তানকে পৃথিবীতে এনে আলোর মুখ দেখাতে যেমন বাবা-মা দুজনের প্রয়োজন, তেমনি ওই সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়তে এই দুজনকেই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

বৈবাহিক সমস্যা ও কোরআনের সমাধান -২


মূল
আব্দুল হামিদ আবুসুলাইমান
অনুবাদ
কানিজ ফাতিমা


একজন কর্তৃক অন্য একজনের প্রতি শক্তি প্রদর্শনের প্রশ্ন তখনই আসে যখন একজনকে অন্যের উপর ক্ষমতাবান মনে করা হয়। অর্থাৎ একজন ক্ষমতাবান ব্যক্তিই (Powerful) তার থেকে কম ক্ষমতাসম্পন্ন কোন ব্যক্তির উপর তার শক্তি বা ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে। কিন্তু‘ একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি তার দায়িত্বে থাকা অন্যান্য ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকে, তাদের প্রতি ক্ষমতা প্রদর্শন করে না। কাজেই দায়িত্বশীল (Responsible) ও ক্ষমতাশীল (Powerful) শব্দ দুটির মধ্যে সুস্পষ্ট ও গভীর পার্থক্য রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন দাঁড়ায় স্বামী-স্ত্রীর অবস্থান ইসলামের দৃষ্টিতে ক্ষমতাবান ও অধঃ¯তনের সম্পর্ক নাকি দায়িত্বশীল ও দায়িত্বের আওতাধীন ব্যাক্তির সম্পর্ক? ক্ষমতার সঙ্গে শ্রেণী বিন্যাসের কথাটিও চলে আসে। সমাজে ক্ষমতাশীল কর্তৃত্বশীল ব্যক্তিরা উঁচুশ্রেণীর বা উঁচু¯স্তরের Status পায় আর ক্ষমতাহীনরা নিম্নশ্রেণীভুক্ত হয়। সে হিসেবে পুরুষরা বা স্বামীরা যদি ক্ষমতাশীল বা কর্তৃত্বশীল হন তবে স্বাভাবিকই এই চিত্র ফুটে উঠে যে, মানবজাতি দু’টি ¯তরে বিভক্ত- ক্ষমতাসম্পন্ন পুরুষ ও ক্ষমতাধীন নারী। কিন্তু‘ প্রশ্ন দাঁড়ায়-ইসলাম কি এরূপ ¯তর বিন্যাস সমর্থন করে? শুধুমাত্র পুরুষ হবার কারণে কেউ উত্তম এবং নারী হবার কারণে কেউ উত্তম শ্রেণীভুক্ত নয় বা দ্বিতীয় শ্রেণীর স্তরভুক্ত-ইসলাম এরূপ কোন কিছুকে সমর্থন করে কি?
ইসলামী চিšতাবিদগণ এ ব্যাপারে একমত যে, নারী ও পুরুষ মানুষ হিসেবে সমান। কেউ উত্তম বা কেউ অধম নয় (৪:১; ৭:১৮৯; ৩৩:৩৫; ৯:৭১) । শুধুমাত্র নারী বা পুরুষ হবার কারণে কেউ শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করতে পারেনা। বরং যে যত বেশি আল্লাহর আদেশ নিষেধ পালনের ক্ষেত্রে সচেতন সেই তত উত্তম। আল্লাহ বলেন: “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তাকওয়ার দিক দিয়ে উত্তম ” (কোরআন)। তাছাড়া ক্ষমতাশীল শব্দটির সঙ্গে নির্যাতন শব্দটির একটি সংযোগ রয়েছে, অপরপক্ষে, দায়িত্বশীল শব্দটির সঙ্গে রয়েছে সহানুভূতি শব্দটির সংযোগ। দায়িত্বশীল শব্দটির মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের ¯তর বিন্যাসও নেই। যেমন একজন প্রেসিডেন্টের দেহরক্ষী তার নিরাপত্তার ব্যাপারে দায়িত্বশীল। এক্ষেত্রে দেহরক্ষীর দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রকাশ পেয়েছে, প্রেসিডেন্টের তুলনায় তার শ্রেষ্ঠত্ব নয়। ইসলাম প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার স্বস্থানের দায়িত্ব দান করেছে। ইসলাম (তাকওয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে) কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেনি। দায়িত্ব ও ক্ষমতার আলোচনা এই জন্য করলাম যে, পেটানো বা নির্যাতনের সাথে এ শব্দ দু’টির গভীর সম্পর্ক রয়েছে। স্বামী নিজেকে ক্ষমতাবান মনে করলে তার মধ্যে পেটানো বা নির্যাতনের স্পৃহা তৈরি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু‘ স্বামী নিজেকে দায়িত্বশীল মনে করলে তার মধ্যে এ ধরণের মনোভাব তৈরি তো হবেই না বরং স্ত্রীর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তার মধ্যে তাগিদ তৈরি হবে। ইসলাম মূলত: স্বামীকে তার স্ত্রী ও সন্তান সন্ততির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব প্রদান করেছে। স্বামীকে স্ত্রীর উপরে ক্ষমতা প্রদর্শন বা স্ত্রীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান কোরআনের অন্যান্য আয়াত ও মেজাজের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন দাঁড়ায় সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াতের ‘কাওয়াম’ শব্দটির সঠিক ব্যাখ্যা কি হবে? আমাদের মনে রাখতে হবে সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াতের শেষাংশেই দরাবার কথা এসেছে। যে ‘কাওয়াম’ শব্দটি এখানে এসেছে তার ব্যাখ্যার সঙ্গে দরাবার সঠিক ব্যাখ্যা অনেকাংশে নির্ভরশীল। আব্দুল হামিদ আবু সুলেমান এ আয়তটির অর্থ করেছেন এভাবে:
“Men are the protectors and maintainers of women, because God has given the one more than the other, and because of the sustenance they provide from their own means” (4:34)
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, “স্বামীটি রক্ষক” (Protector) অর্থ হল স্ত্রীকে সাহায্য করা ও তার ভরণপোষণ প্রদান করা তার দায়িত্ব (তাহসীব লিসান আল আরব, ইবনে মানযুর) । পরিবারে রক্ষণাবেক্ষণকারী “Maintainer” বলতে সেই ব্যক্তিকে বুঝায় যে দায়িত্বে রয়েছে (আল মুযাম আল ওয়াসিত)। কাওয়াম হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে কার্যনির্বাহি করে (execute)(আল মুনযিদ ফী আল-লুঘাহ ওয়া আল আলাম)।
মুহাম্মদ আসাদ এ আয়তটির অর্থ করেছেন এভাবে:
“Men shall take full care of women with the bounties which God has bestowed more abundantly on the former than on the later” (4:34)
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, ‘কাওয়াম’ শব্দটি ‘কিয়াম’ থেকে, এর অর্থ “যে দায়িত্বে থাকেন বা যিনি যতœ নেন” (“one who is responsible for or takes care of”)| (The Message of The Qur’an, p.109) যেহেতু কাওয়ামাহ অর্থ পরিবারের ভরণপোষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সেহেতু মনে রাখা জরুরী যে, একজন স্বামী যখন এই দায়িত্ব পালন করছেন তখন তিনি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। এবং এটি একজন নারীকে তার নিজের প্রতি ও সন্তানদের সঠিক পরিচর্যার প্রতি মনোযোগী হতে সুযোগ করে দেয়। মূলত: সন্তান ধারণ ও লালন পালনের কাজটি যেহেতু প্রাকৃতিক ভাবেই নারীর কাঁধে সেহেতু রক্ষণাবেক্ষণ ও ভরণপোষনের দায়িত্বটি আল্লাহ পুরুষের কাঁধে দিয়ে পারিবারিক দায়িত্বে একটি ভারসাম্য এনেছেন। এভাবেই আল্লাহ স্বামীকে স্ত্রীর রক্ষণাবেক্ষণ ও ভরণপোষণের দায়িত্ব দিয়েছেন, স্ত্রীকে শারীরিক বা মানসিক আঘাত করার ক্ষমতা প্রদান করেন নি।
আব্দুল হামিদ আবু সুলেমান তার Marital Discord: Recapturing the Full Islamic Spirit of Human Dignity বইতে এই গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি তুলে এনেছেন। তার ব্যাখ্যাটি শিক্ষিতা সচেতন ও সম্মানবোধ সম্পন্না মুসলিম নারীদের মন ও মানসিকতার সঙ্গে সঙ্গতীপূর্ণ। এটি একদিকে যেমন সুযোগ সন্ধানী কিছু পুরুষের নির্যাতনের সব পথ বন্ধ করে দেয় তেমনি ইসলামের ছিদ্রান্বেষীদের ‘ইসলাম নারী নির্যাতন সমর্থন করে’ এই চিরায়ত অপবাদের পথও রুদ্ধ করে। কাজেই এটা সময়ের দাবী যে মুসলিমরা ‘দরাবার’ এই ব্যাখ্যাটি জানবেন ও বিবেচনায় আনবেন। সেই বিবেচনায় এই বইটির বাংলা অনুবাদ করার প্রয়াস পেয়েছি। সবাই হয়তো এ ব্যাখ্যার সাথে একমত হবেন না। কিন্তু‘ এ ব্যাখ্যাটি অবশ্যই অন্যান্য ব্যাখ্যা গুলোর পাশাপাশি তার শক্ত অবস্থান করে নেবে। এ ব্যাখ্যাটি নারীদের প্রতি ইসলামের সম্মান সূচক দৃষ্টিভঙ্গীর আরেকটি স্বাক্ষর বহন করবে।
এটা সর্বজনবিদিত যে একটি ভাষার শব্দের হুবহু অর্থ অনেক সময়ই অন্য ভাষার খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই আমি পরিস্কার ভাবে পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে কিছু শব্দের বাংলা অর্থের সাথে সাথে ইংরেজী শব্দটিও উল্লেখ করের্ছি। সর্বোপরি আমি পাঠকদের সুবিধার্থে প্রবন্ধটির হুবহু নয় বরং সরল অনুবাদ করেছি। সবাই উন্মুক্ত মন ও যুক্তিশীল দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে এই প্রবন্ধটি পাঠ করবেন- এমন আশা করি।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।

চলবে…..

পর্ব-১

 

জীবননগরে নির্যাতনে গৃহপরিচারিকা নিহত


নারী সংবাদ


চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলা শহরের জীবননগর আদর্শ সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষিকার নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকা লিলি খাতুন(৫০) মারা গেছেন। নির্যাতনের ঘটনার একদিনের মাথায় মারা গতকাল রোববার সকালে মারা যান তিনি।

নিহত গৃহপরিচারিকা লিলি খাতুন উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া রাজধানীপাড়ার আনসার আলীর স্ত্রী। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নিহত গৃহপরিচারিকার ছেলে শাহেদ হোসেন(২৩) বলেন, আমার মা লিলি খাতুন জীবননগর মহিলা কলেজের প্রফেসর পাপিয়া শারমিন ইতির জীবননগরের বাসায় গত দু’সপ্তাহ আগে দুই হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ শুরু করেন।

এরপর আমার মা গত শুক্রবার সকালে বাড়িতে আসেন এবং বুধবারে ইতির বাসায় ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রফেসর ইতি বলেন শনিবার সকালের মধ্যে তার বাসায় যেতে হবে। আমার মা তাতে রাজি না হওয়ায় ইতি শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে আমাদের বাড়িতে আসেন।

তিনি আরো বলেন, আমার মা ইতিকে আসতে দেখে দৌড়ে প্রতিবেশীদের ঘরে আশ্রয় নেন। কিন্তু তারপরও ইতি আমার মাকে জোর করে টেনে হেঁচড়ে একটি আলমসাধু গাড়িতে তুলে জীবননগরে নিয়ে যাওয়ার সময় দেহাটি-সন্তোষপুর সড়কের কনটেক মিলের সামনে রাস্তার ওপর ফেলে দেয়। এতে আমার মা মারাত্মকভাবে আহত হন। এ সময় আমার মাকে অন্য একটি আলমসাধুতে তুলে দিয়ে ইতি জীবননগরে চলে যায়। পরে তাকে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার বিকালে মায়ের অবস্থা খারাপ হলে ডাক্তার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার মাকে মৃত ঘোষনা করেন।

শাহেদ হোসেন আরো বলেন, আমার মা গাড়ি থেকে লাফ দিয়েছে বলে ঘটনার পর জানান প্রফেসর পাপিয়া শারমিন ইতি। কিন্তু আমার মা গাড়ি থেকে লাফ দিতে পারে তা বিশ্বাস হয় না।

নিহত গৃহপরিচারিকার পুত্রবধূ বৃষ্টি খাতুন অভিযোগ করেন যে, লিলি খাতুনকে ইতি জোরপুর্বক বাড়ি থেকে উঠিয়ে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আন্দুলবাড়ীয়া মিস্ত্রিপাড়া আমার বাপের বাড়ীর সামনে শ্বাশুড়ীকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। এ সময় শ্বাশুড়ীর গায়ের ব্লাউজ, শাড়ী ছেঁড়া ছিল এবং কাপড়-চোপড়ে রক্ত মাখা ছিল। সেই সাথে বমিও করছিল।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাপিয়া শারমিন ইতি বলেন, আমার সাথে আলমসাধু যোগে আসার কথা ঠিক। তবে তাকে আমি গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছি তা সঠিক নয়। আমি আসলে ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি এমপি আলী আজগার টগরের শ্যালিকা হওয়ায় একটি পক্ষ আমাদের সাথে ষড়যন্ত্র করছে।

জীবননগর থানার ওসি শেখ গনি মিয়া বলেন, গৃহপরিচারিকা নিহতের ঘটনায় এখনও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

বৈবাহিক সমস্যা ও কোরআনের সমাধান – ১


মূল
আব্দুল হামিদ আবুসুলাইমান
অনুবাদ
কানিজ ফাতিমা


 

অনুবাদকের কথা
স্ত্রী পিটানো কি ইসলাম সমর্থন করে?- এ প্রশ্নটি দীর্ঘকাল ধরে ধর্মপরায়ন শিক্ষিতা মুসলিম নারীদের মনে কাটা হয়ে বিঁধে ছিল। বিভিন্ন সময়ে সুরা নিসার এই ‘দরাবা’ সংক্রান্ত ৩৪ নং আয়াতটির বিভিন্ন ব্যাখ্যা এসেছে। কোন কোন ইসলামী চিন্তাবিদ একে ‘চল্লিশ ঘা’ আবার কেউ কেউ ‘মৃদু আঘাত’ বলেছেন। কিন্তু সবকটি ব্যাখ্যার সঙ্গেই শারীরীক আঘাত ব্যাপারটি জড়িত রয়ে গেছে। ফলে এর একটি সুস্পষ্ট প্রভাব আমাদের সমাজে দেখা যায়। কারণে অকারণে স্ত্রীকে আঘাত করা তাই অনেক মুসলিম পুরুষই তাদের অধিকার মনে করেন। অনেকে আবার একটু আগ বাড়িয়ে স্ত্রীকে পিটিয়ে শাসন করাকে নিজ পবিত্র দায়িত্ব মনে করেন।
শরীরের আঘাত শুধু শরীরের সঙ্গেই সম্পর্কিত থাকেনা, তা মনের সঙ্গেও গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। শারিরীক আঘাত কম হোক বা বেশি হোক তা আতœসম্মানবোধ সম্পন্ন যেকোন নারীর মনেই কঠিন অপমানবোধ সৃষ্টি করে। এমনকি তা ঐ নারীর পুরুষ আত্মীয়দের মনেও কষ্ট দেয়। এ আঘাতে শরীরে দাগ পড়ুক কি নাই পড়ুক, নারীর মনে দাগ পড়বেই। শরীরের দাগ বা কষ্ট যত দ্রুত মিলিয়ে যায় মনের এ দাগ বা কষ্ট তত দ্রুত মিলিয়ে যায় না। কাজেই বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আব্দুল হামিদ আবু সুলেমান বলেছেন সুরা নিসায় ব্যবহৃত ‘দরাবা’ শব্দটির অর্থ ‘পিটানো’, ‘প্রহার’, এমনকি ‘মৃদু আঘাত’ হিসাবেও নেয়ার অবকাশ নেই। এর কারণ হিসাবে তিনি পেশ করেছেন কঠিন যুক্তি। তিনি তার Marital Discord: Recapturing the Full Islamic Spirit of Human Dignity বইতে বোঝাতে চেয়েছেন- আরবী অভিধানে ‘দরাবা’ শব্দটির অনেক অর্থ রয়েছে; সেক্ষেত্রে অন্য সব অর্থ বাদ দিয়ে স্ত্রীর ক্ষেত্রে ‘পিটানো’ বা ‘আঘাত করা’ অর্থটি গ্রহণ করা কতটা যুক্তিযুক্ত, বিশেষ করে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে, তা ভেবে দেখতে হবে। তাছাড়া কোরআনের ব্যাখ্যা আমাদের গ্রহণ করতে হবে রাসূল (সা.) এর জীবনী থেকে। রাসূল (সা.) এর জীবনে দেখা যায় স্ত্রীদের সঙ্গে বিরোধ বা সমস্যার ক্ষেত্রে তিনি স্ত্রীদের কখনই আঘাত করেননি। বরং দু-দুবার এমন ঘটনায় তিনি একই পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন, আর তাহলো স্ত্রীদের থেকে দুরে সরে যাওয়া । কাজেই সুন্নাহ অনুযায়ী ‘দরাবা’ শব্দটির অর্থ ‘আঘাত করার’ তুলনায় ‘দূরে সরে যাওয়া’ বা ‘সাময়িক দূরত্ব বজায় রাখা’ বেশি সামঞ্জস্যশীল ।
প্রবন্ধে আব্দুল হামিদ আবু সুলেমান দুটি বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছেনÑ
প্রথমত, সূরা নিসার ৩৪ও ৩৫ নং আয়াতকে (যাতে এই শ্বাস্তির ব্যাপারটি বিধৃত হয়েছে) বিচ্ছিন্নভাবে ব্যাখা করা যাবে না। তিনি বলেছেন এ আয়াতের ব্যাখার সময় কোরআনের অন্যান্য আয়াত বিশেষ করে সূরা রূমের ২১ নং আয়াত যেখানে আল্লাহ পারস্পরিক দয়া ও ভালবাসাকে বিবাহের উদ্দেশ্য হিসেবে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন তা বিবেচনায় আনতে হবে।
দ্বিতীয়ত: অতীতে পরিবারে নারীদের ভূমিকা একরকম ছিল। অর্থনৈতিক কার্যক্রম থেকে তারা বিরত থাকত। অন্যদিকে পুরুষরা অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করত। অর্থনৈতিক ব্যাপারে পুরুষদের উপর নির্ভরশীলতা নারীদেরকে ক্ষমতাহীন করে রাখতো । কিন্তু বর্তমান সময়ে পরিবারে নারী ও পুরুষের এ ভূমিকার অনেক পরিবর্তন এসেছে। পুরুষের উপর নারীর অসহায় নির্ভরশীলতা কমেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে নারীদের উপর পুরষের একচ্ছত্র ক্ষমতা ব্যবহারের ক্ষেত্রও হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে পরিবারের কোন সমস্যা সমাধানে বা স্বামী-স্ত্রীর কোন বিরোধ নিরসনে পরিবারের এই কাঠামোকে বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আব্দুল হামিদ আবু সুলেমান এর এ ধারণাটি ইবনে আব্বাসের ব্যাখ্যার সঙ্গেও অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কারণ ইবনে আব্বাস স্বামীদেরকে সাবধান করেছেন যে, তাদের রাগের বহিঃপ্রকাশ যেন কয়েকটি মেসওয়াকের আঘাত বা অনুরূপ কোন কিছূর আঘাতের বেশি কিছু না হয়। অর্থাৎ তিনিও দরাবাকে পিটানো অর্থে নেননি [মেসওয়াক দিয়ে পিটানো সম্ভব নয়]। আব্দুল হামিদ আবু সুলেমান মিসওয়াকের মৃদু আঘাতকেও সমর্থন দেননি বরং তিনি বলেছেন একটি কঠিন বৈবাহিক সম্পর্কের উন্নয়ন ও পুনরায় মিলন ঘটানোর এ প্রেক্ষাপটে দরাবা শব্দটির যে অর্থ গ্রহণ করা উচিত তা হল-বাড়ি থেকে চলে যাওয়া (to “leave” the marital home),অথবা স্ত্রী থেকে আলাদা হওয়া (“separate” from her)।
এমন একটি বিতর্কও ইসলামী চিন্তাবিদদের মধ্যে রয়েছে যে স্বামী – স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ বা অবাধ্যতার (নুশুজ) পরিপ্রেক্ষিতে ‘মৃদু শারীরিক আঘাত’ এর বিধান দেয়া হয়নি বরং এটা এসেছে স্ত্রী কর্তৃক অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে। অর্থাৎ স্ত্রী অবৈধ শারীরিক সর্ম্পকের দোষে দুষ্ট হলে সীমিত শারীরিক আঘাতের কথা বলা হয়েছে। নুশুজ এর ক্ষেত্রে শারীরিক আঘাত প্রযোজ্য নয়।

চলবে……

 

লালমনিরহাটে স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ আটক ৩


নারী সংবাদ


লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বালাপাড়া গ্রামে জোসনা বেগম (২১) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে স্বামী হাবিবুর রহমান হাবিবসহ তার বাবা-মাকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জোসনাকে মারধর করে স্বামী হাবিবুর রহমানসহ তার পরিবারের লোকজন। একপর্যায়ে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হলে তার মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়। পরে এলাকাবাসী বিষয়টি বুঝতে পেরে স্বামীসহ তার বাবা-মাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মকবুল হোসেন জানান, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুত্র: সমকাল

 

শেরপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা


নারী সংবাদ


বগুড়ার শেরপুরের শেরুয়া বটতলা পূর্বপাড়া গ্রামে যৌতুকের টাকা না পেয়ে গত বুধবার রাতে গৃহবধূ আজমিরা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্বামী বুলবুল আহম্মেদ পলাতক রয়েছে। পুলিশ নিহতের শ্বশুর তোজাম হোসেন ও শাশুড়ি বুলবুলিকে আটক করেছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের সিংড়া উপজেলার শুকাস ইউনিয়নের বনকুড়াইল গ্রামের আজমল হোসেনের মেয়ে আজমিরা খাতুনের সাথে দেড় বছর আগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের শেরুয়া বটতলা পূর্বপাড়া গ্রামের তোজাম হোসেনের ছেলে বুলবুল আহম্মেদের সাথে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে মাদকাসক্ত ভবঘুরে বুলবুল আহম্মেদ যৌতুকের টাকার জন্য মাঝে মধ্যেই তার স্ত্রীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করত। গত কোরবানি ঈদের আগে আজমল হোসেন তার মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে গরু বিক্রি করে ৭০ হাজার টাকা জামাইকে দেন। সেই টাকা দিয়ে নেশা করতে করতে একপর্যায়ে ওই টাকা শেষ করে ফেলে আবারো টাকার দাবি করে। কিন্তু স্ত্রী আজমিরা আরো টাকা দিতে অস্বীকার করায় গত বুধবার রাতে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা আজমল হোসেন বাদি হয়ে শেরপুর থানায় অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
সুত্র: নয়াদিগন্ত

 

রূপান্তরের যাত্রা – পর্ব ৯


তাহনিয়া খান


Bismillahir Rahmanir Rahim

Rabbish rahli sadri wa yas-sir li amri wahloul uqdatam mil-lisaani yafqahu qawli.
O my Lord! expand me my breast; Ease my task for me; And remove the impediment from my speech, So they may understand what I say[20:25-28]

দু’এক দিনের মাঝেই হারাম শরীফে নামায পড়ায় অভ্যস্ত হয়ে গেলাম। প্রতিটা নামাযের পর একটা করে জানাজার নামায থাকতোই। প্রথমবার বুঝিনি সবাই কি নামায পড়ছে। পরে ভাইয়ের কাছে জেনেছিলাম। কীভাবে পড়তে হয় সে নিয়মটাও শিখে নিয়েছিলাম । নীচে ভিড়ের কারণে ছাদে তাওয়াফ করতাম প্রায়ই। পায়ে ব্যথা হতো। আলহামদুলিল্লাহ্‌, তারপরেও থেমে ছিলাম না। আমাদের গ্রুপে এক ভদ্রলোক ছিলেন, উনি প্রতিদিন ৬/৭ বার তাওয়াফ করতেন। আমরা নাম দিয়েছিলাম তাওয়াফ চাচা।

আমরা দু’ভাই বোন কোন ছবি তুলিনি হজ্জে গিয়ে। আমার ভাই বলেছিল ইবাদতের চেয়ে ছবি তোলার দিকে বেশী মনোযোগ চলে যাবে। সব ছবি হৃদয়ে গেথে রেখেছি। তাই হজ্জের কোন ছবি দেখলে খুব আগ্রহ নিয়ে দেখি। মনে হয় এই জায়গা দিয়ে তো আমিও হেঁটেছিলাম। কিন্তু আমার ভাই অনেক মানুষের ছবি উঠিয়ে দিয়েছিল। কাবা ঘরের সামনে মোনাজাতের ভঙ্গিতে ফটো তোলা সহ বিভন্ন এঙ্গেলের হাস্যকর ছবি মানুষের অনুরোধে সে তুলে দিয়েছিল। মার্কেটে বেশী ঘুরতাম না। আমার ভাইয়ের কথা ছিল দুনিয়ার চাকচিক্য দেখে ইবাদতের যেন কোন ঘাটতি না হয়।

মক্কার মানুষের কিছু জিনিস খুব ভালো লেগেছে। যে কয়টা দোকানে গিয়েছিলাম, বেশীরভাগই ছিল বাংলাদেশীদের দোকান বা সেখানে বাংলাদেশীরা কাজ করতো। তাদের অমায়িক ব্যবহার খুব ভালো লেগেছিল। শুধু বাংলাদেশী না, সব দোকানদারই ছিল অমায়িক। খেজুর কিনতে গিয়েছি, জোর করে খেজুর খাইয়েছে। ভালো লাগলে যেন কিনে নেই। নতুন কোন খাবার দেখলে কিনবো নাকি কিনবো না দ্বিধায় ছিলাম, জোর করে টেস্ট করিয়েছিল সেটা। খেয়ে ভাল লাগেনি, তো কিনিনি। তাতে দোকানী মন খারাপ করেনি।

একদিন রাস্তায় নামায পড়ার জন্য দাঁড়িয়েছি। ভিড়ের কারণে মসজিদের ভিতর ঢুকতে পারিনি। আমার ভাই বললো, পাশের মার্কেটের চার তালার উপরে নামায পড়ার জায়গা আছে সেখানে গিয়ে জামাত ধরতে পারবো। রাস্তা থেকে মার্কেটের ভিতর ঢুকে গেলাম। পুরো মার্কেট ফাঁকা। দোকানদারও নেই। সবাই দোকান খোলা রেখেই নামাযে চলে গিয়েছে। দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কোন কিছু টুপ করে নিয়ে নেওয়া যাবে সহজেই। কিন্তু কেউ নিবে না বা নেয় না। কারণ ধরা পরলেই হাতের কব্জি কেটে ফেলবে। এই আইন এবং আইনের প্রয়োগ আছে বলেই মানুষ নিশ্চিন্তে থাকে।

আমি প্রায় প্রতিদিনই হারাম শরীফের একদম কাছের এক দোকান থেকে সফট আইসক্রিম কিনে খেতাম। একদিন দোকানীকে বললাম আমি সবগুলো ফ্লেভার একসাথে নিতে চাই। দোকানী আমাকে সব ফ্লেভার একটু একটু করে দিয়ে এত্ত বড় এক কোন আইসক্রিম বানিয়ে দিলেন, কিন্তু আগের দামটাই রাখলেন। এটা শুধু আমার জন্য না। সবার জন্যই এই নিয়ম। আরেকদিন নতুন আরেকটা আইসক্রিমের দোকান আবিষ্কার করলাম আমরা। সেখানে বেশ চড়া দামে আইসক্রিম বিক্রি হচ্ছে। দোকানদার একজন শ্রীলঙ্কান। আমরা দু’জনই দুটো করে ফ্লেভার অর্ডার দিলাম। আমি আগে আমারটা পেলাম। কিন্তু আমার ভাইকে উনি ভুল করে অন্য একটা ফ্লেভার দিয়ে দিয়েছিল। আমার ভাই যখন বললো সে সেটা চায়নি, ভদ্রলোক ‘সরি’ বলে সেই আইসক্রিমের সাথে মিলিয়ে অর্ডার দেওয়া আইসক্রিম দিয়ে দিলেন। আমার ভাই বলেছিল যে লাগবে না, কিন্তু তিনি শুনবেনই না, এতগুলো আইসক্রিম দিয়ে একটা বড় হাসি দিলেন। আমার ভাই মহা খুশী। তার হাতে তিনটা ফ্লেভারের আইসক্রিম। আমিও ভাগ বসিয়েছিলাম তারটায়।

একদিন নামায শেষে এমন ভিড়ের মাঝে পরেছি যে ধাক্কাধাক্কি অবস্থা। আমি ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পড়া শুরু করলাম। কোথা থেকে তিনজন বাংলাদেশী লোক এসে আমাদের ঘিরে ফেললো। যাতে আমার কোন ধাক্কা না লাগে। আমার ভাইতো এমনিতেই সব সময় পিছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে ধাক্কার হাত থেকে বাঁচাতো। কিন্তু তখন তার খুব কষ্ট হচ্ছিল। সেই লোকগুলো ঘিরে ধরে আমাদের ভিড় থেকে বের করে আনলেন। পরে জেনেছি, উনারা অনেকদিন ধরে সেখানে ব্যবসার কারণে বসবাস করেন।

কত বয়স্ক মানুষ এস্কেলেটরে উঠার সময় পরে যেতেন, আমাদের চোখের সামনে প্রায়ই এমন হতো। আমার ভাই দৌড়ে যেত। অনেক বাংলাদেশী ক্লিনারদের দেখেছি বয়স্কদের সাহায্য করতে। ছাদে নামায পড়তাম সবসময়। জমজমের পানি নেওয়ার জন্য ভিড় লেগেই থাকতো সেখানে। এক বাংলাদেশী ক্লিনার আমাকে প্রায়ই পানি এনে দিতেন। এত ভিড়ের মাঝে উঠে গিয়ে পানি আনতে গেলে জায়গা আর পাওয়া যাবে না। তাই উনাকে বলতাম পানি এনে দিতে। বাংলাদেশী টাকা দিয়ে দিলেই খুশী হয়ে যেতেন।

হজ্জের নবম শিক্ষা– ইহসান। মানুষের প্রতি মানুষের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, বিনিময়হীন এমন সদয় ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছে। একদিন, দু’দিন নয়, প্রতিদিন মানুষের এমন ব্যবহার দেখে নিজেকে বিচার করেছি । লজ্জিত হয়েছি । নিজের ক্ষুদ্রতাকে তখন বড় দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে।

পর্ব ৮

 

সামান্য ভুলে শিশু গৃহকর্মীকে বর্বর নির্যাতন


নারী সংবাদ


চার মাস আগে রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রীর ব্যবসায়ী শরীফ চৌধুরীর বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে যোগ দেয় ১২ বছরের শিশু হাওয়া। প্রতি মাসে তার পাঁচ হাজার টাকা বেতন পাওয়ার কথা। কিন্তু বেতন তো দূরের কথা, প্রতিদিন তার কপালে জুটত বেধড়ক পিটুনি। কাজে সামান্য ভুল হলেই চলত অমানবিক নির্যাতন। ঠিকমতো খেতেও দেওয়া হতো না। এভাবে দিনের পর দিন নির্যাতনের ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। স্বজনের মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে বুধবার তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। অভিযানে কথিত মানবাধিকার কর্মী গৃহকর্তা শরীফ চৌধুরী ও তার স্ত্রী নাইমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান সমকালকে বলেন, অভাবের তাড়নায় কাজ করতে এসেছিল ছোট্ট শিশুটি। কিন্তু এই দম্পতি তার ওপর মারাত্মক নির্যাতন চালিয়েছে। শরীরে চট জড়িয়ে তাকে পেটানো হয়েছে। শিশুটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। অমানবিক এ ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালায় পুলিশ। গৃহকর্তা শরীফ চৌধুরী নিজেকে মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের পরিদর্শক বলে দাবি করেন এবং চোটপাট করেন। পরে অবশ্য স্বীকার করেন, তিনি ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীর ব্যবসা করেন। স্ত্রীসহ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। আজ বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করা হবে।

নির্যাতিত শিশুর মামাতো বোন শাহনাজ বেগম ঢামেক হাসপাতালে জানান, হাওয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার নগরকুল গ্রামে। তার বাবার নাম শুনু মিয়া। চার ভাইবোনের মধ্যে হাওয়া সবার বড়। চার মাস আগে তাকে দক্ষিণ বনশ্রীর ই-ব্লকে ৮/২ নম্বর সড়কের ৪৩ নম্বর বাসার ষষ্ঠ তলায় কাজ করতে পাঠানো হয়। কিন্তু এরপর থেকে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারছিলেন না স্বজনরা। ওই বাসায় গেলেও তার সঙ্গে দেখা করতে দেননি শরীফ চৌধুরী ও তার স্ত্রী নাইমা। বারবার এভাবে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। ফলে শিশুটি কী অবস্থায় রয়েছে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তার ওপর প্রচণ্ড নির্যাতন চলছে বলে নানাভাবে খবর পেয়ে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে গতকাল তারা পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন। পুলিশ দুপুরে ওই বাসায় অভিযান চালায়।

খিলগাঁও থানার এসআই সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন জানান, শিশুটিকে উদ্ধার করতে গিয়ে প্রথমে তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। গৃহকর্তা শরীফ চৌধুরী নিজেকে মানবাধিকার কর্মী দাবি করেন এবং শিশুটিকে পুলিশের সামনে আনতে আপত্তি জানান। পরে পুলিশ চাপ দিলে তিনি শিশুকে ঘর থেকে বের করে আনেন। এ সময় দেখা যায়, সে কঙ্কালসার হয়ে পড়েছে। তার মাথার চুল ছোট করে দেওয়া হয়েছে। তার চোখেমুখে যন্ত্রণা ও ভয়ের ছাপ। প্রথমে সে পুলিশ দেখেও ভয় পেয়ে গিয়েছিল। পরে তাকে বোঝানো হয়, তাকে উদ্ধারের জন্যই এসেছে পুলিশ। তার স্বজনরাও সঙ্গে আছে। ওই বাসা থেকে বের হওয়ার পর শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে তার ওপর চালানো নিষ্ঠুর নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। পান থেকে চুন খসলেই তাকে মারধর করা হতো। নানা কৌশলে তাকে নির্যাতন করতেন ওই দম্পতি। সুত্র: সমকাল।

 

মোহাম্মদপুরে স্ত্রীকে হত্যার পর ড্রামে লাশ রেখে পলায়ন


নারী সংবাদ


রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ড্রামের ভেতরে রেখে পালিয়েছে তার স্বামী সেলিম। খবর পেয়ে পুলিশ ওই গৃহবধূর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক অপারেশন শরিফুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১২টায় ঢাকা উদ্যানের বি ব্লকের ওই বাড়ির একটি কক্ষে ড্রামের ভেতর থেকে অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, জানুয়ারি মাসে সেলিম নামে এক ব্যক্তি ওই বাসাটি ভাড়া নেয়। ওই বাসায় তারা স্বামী-স্ত্রী থাকতেন। তিন-চার দিন ধরে প্রতিবেশিরা স্বামী-স্ত্রী কাউকেই দেখতে পাননি।

সুত্র: যুগান্তর।

 

প্রতিবেশিনী……২


আফরোজা হাসান


দরজা খোলায় জন্য যেতে যেতে মাহামের মনে পড়লো সুপার মার্কেটে যাবার সময় তারজন্য লেবুপাতা নিয়ে আসার অর্ডার দিয়েছিলো প্রতিবেশিনী। নিশ্চয়ই লেবুপাতা নিতেই এসেছে। কিন্তু লেবুপাতা কথা তো মনেই ছিল না মাহামের। না জানি প্রতিবেশীর হক বিষয়ক কি লেকচার শুনতে হয় এখন আবার। প্রতিবেশীর উপরে কুরআন-হাদীসের সমস্ত তথ্য ঠোঁটের আগায় নিয়ে ঘোরে তার প্রতিবেশিনীর। আট-ঘাঁট বেঁধে মাঠে নেমেছে সে বোঝাই যায়। মাহাম দরজা খুলতেই দেখলো বিশাল এক লাগেজ হাতে প্রতিবেশিনী দাঁড়িয়ে আছে।

দরজা থেকে সরে দাঁড়ান তো একটু। ভেতরে ঢুকতে দেন আমাকে। বলে নিজেই মাহামকে একপাশে সরিয়ে দিয়ে লাগেজ টানতে টানতে ভেতরে ঢুকে গেলো প্রতিবেশিনী।

মাহামের বিস্ময় ভরা দৃষ্টি সম্পুর্ন অগ্রাহ্য করে বলল, আজ আমি আপনার সাথে থাকবো। শোনেন আমার খুব গড়াগড়ি করার অভ্যাস তাই সোফায় শুতে পারবো না। আমি আপনার সাথে বেডরুমে ঘুমাবো। আপনার স্বামীকে বলবেন ড্রইংরুমের সোফায় ঘুমাতে।

মাহাম বলল, আপনার বাসায় কি গেস্ট এসেছে?

আরে না গেস্ট আসবে কেন? আমি স্বামীর সাথে ঝগড়া করে এসেছি।

কেন কি হয়েছে?

কি হয় নাই সেটা জিজ্ঞেস করেন। আমাকে বলে কি জানেন? বলে চিড়িয়াখানায় অদ্ভুত মানুষের যদি কোন সেল থাকতো তাহলে সে আমাকে সেখানে দিয়ে আসতো। কারণ আমি নাকি টিকিট কেটে দেখার মতো মানুষ।

হাসি পেলেও লেকচার শোনার ভয়ে প্রাণপণে নিজেকে সামলে নিলো মাহাম। যদিও মনে মনে প্রতিবেশিনীর স্বামীর ভাবনার প্রশংসা না করে পারলো না।

গজগজ করতে করতে প্রতিবেশিনী বলল, আমাকে উল্টা পাল্টা কথা বলার মজা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়াবো। কিন্তু রাগের সময় আমার আবার বুদ্ধি কাজ করে না। স্বামীকে শিক্ষা দেবার কোন বুদ্ধি থাকলে বলেন তো।

আমার স্বামীকে শিক্ষা দেবার তেমন প্রয়োজন পড়েনি কখনোই তাই ঠিক জানি না। তবে আমার মামণিকে কিভাবে বাবাকে শিক্ষা দিতেন সেটা বলতে পারি।

নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো। বলেন সেটাই বলেন।

মামণি বলতেন স্বামীকে এমন শিক্ষা দেয়া উচিত যা সে কল্পনার মধ্যেও কল্পনা করেনি কখনো। আর তাই বাবা-মামণির যখনই মনোমালিন্য হতো মামণি সেই সব কাজ করতেন যা বাবা সবচেয়ে বেশি পছন্দ ছিল। যেমন বাবার প্রিয় সব খাবার রান্না করা, বাবার পছন্দের শাড়ি পড়ে, সাজগোজ করে হাসিমুখে কথা বলা, এমন ভাণ করা যে কিছুই হয়নি। এবং মামণির এই পদ্ধতিটা সবসময়ই খুব কাজ দিতো। বাবা নিজের রাগ তো ভুলে যেতেইনি সাথে উল্টো মামণিকে সরি বলতেন।

তারমানে আপনি আমাকেও এমন কিছু করতে বলছেন?

আমি শুধু পরামর্শ দিচ্ছি। কি করবেন সেটা আপনাকেই ঠিক করতে হবে। ভেবে দেখেন আপনি রাগ করে কথা বন্ধ করে দেবেন, রান্না বন্ধ করে দেবেন, কিংবা বাসা ছেড়ে চলে যাবেন এগুলোই কিন্তু স্বাভাবিক। আপনার স্বামী একটুও অবাক হবেন না আপনার এইসব কর্মকান্ডে। কিন্তু আপনি যদি সংসারের সব কাজ ঠিকমতো করেন, এবং খুব স্বাভাবিক ভাবে কথা ও আচরণ করেন উনার সাথে। উনি শুধু যে অবাক হবেন তাই না যে কথা বলেছেন সেটার জন্যও অনুতপ্ত হবেন।

হাসি ফুটলো প্রতিবেশিনীর মুখে। বাহ দারুণ বুদ্ধি তো। এটাকেই মনেহয় কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা বলে। আচ্ছা তাহলে আমার স্বামী আসার আগেই আমি বাসায় চলে যাই। সবকিছু গোছগাছ করে বসে থাকি। এমন চমক দেবো আজ তাকে চোখে সর্ষে ফুল দেখবে।

দরজার কাছে গিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ালো এসে। ফিরে এসে মাহামকে জড়িয়ে ধরে বলল, আপনি অনেক ভালো। জানেন একবার রাসূল সা: সাহাবাদের লক্ষ করে বলেন, “তোমরা কি জানো প্রতিবেশীর হক কী? যদি সে তোমার সাহায্যপ্রার্থী হয় তাকে সাহায্য করবে, যদি সে ধার চায় তাকে ধার দেবে, যদি সে অভাবগ্রস্ত হয় তার অভাব মোচন করবে, যদি সে রোগগ্রস্ত হয় তাকে সেবা দান করবে, যদি তার মৃত্যু হয় জানাজার নামাজে শরিক হবে, যদি তার মঙ্গল হয় তাকে উৎসাহিত করবে, যদি তার বিপদ হয় তার প্রতি সহানুভূতি জানাবে। তার অনুমতি ব্যতীত তোমার ঘর এত উঁচু করবে না, যাতে তার আলো বাতাস বন্ধ হয়ে যায়। যদি তুমি ফলমূল ক্রয় করো, কিছু অংশ প্রতিবেশীর জন্য পাঠাবে। আর যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে তা গোপনে তোমার সন্তানদের খেতে দেবে, যেন প্রতিবেশীর ছেলেমেয়ে তার বাবা-মাকে বিরক্ত না করে।”

মাহাম হেসে বলল, জ্বী আমি জানি হাদীসের এই বানীটি। আসলে পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণের প্রতি অনেক গুরুত্ব দিয়েছে শরীয়ত। আমরা সবাই যদি তা মেনে চলতাম তাহলে আমাদের সমাজে শান্তির অমৃত ধারা প্রবাহিত হতো। পাড়া-প্রতিবেশীর মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝগড়াবিবাদ ও মনোমালিন্য দূরীভূত হতো। এবং সবাই সবার কল্যাণকামী হয়ে একে অন্যের প্রতি দায়িত্ববোধ ও তার অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হয়ে উঠতে পারতো।

প্রতিবেশিনীকে বিদায় জানিয়ে আবার রান্নাঘরে ঢুকলো মাহাম। আয়ান টেবিলে সব খাবার বেড়ে তার অপেক্ষাতে বসে আছে।

মাহাম বলল, আমি তো আসছিলাম তুমি করতে গেলে কেন? এভাবে কিন্তু তুমি আমার অভ্যাস খারাপ করে দিচ্ছো।

আয়ান বলল, সেটা কিভাবে?

এই যে সারাক্ষণ আমাকে সাহায্য করার জন্য হাত উঁচু করে বসে থাকো। এভাবেই এক্সপেক্টটেশন বেড়ে যায়। সবসময় তো তুমি এমন সাহায্য করতে পারবে না আমাকে তাই না? তখন হয়তো আমার মনেহবে তুমি আমাকে আগের মত কেয়ার করো না, ভালোবাসো না। বাবা সবসময় বলেন দাম্পত্যের শুরুর দিকের অপ্রতিরোধ্য আবেগও অনেক জটিলতার বীজ বুনে দিয়ে যায় সম্পর্কের।

হুমম…বুঝলাম। তা বাবার মেয়ে কি বলে সেটাও বলো শুনি।

সম্পর্কের বন্ধন গুলো রেশমের সুতোর মত হয় অনেকটা। তাই সেই সুতোকে কিছু একটার সাথে সুন্দর করে সবসময় বেঁধে রাখা উঠিত। ঐ যে ঘুড়ির লাটাইয়ে যেভাবে ভাঁজে ভাঁজে জড়ানো থাকে সুতো অনেকটা সেরকম। তা না হলে সুতোর প্যাঁচ লেগে যাবার সম্ভাবনা থাকে। প্যাঁচ লেগে যাওয়া সুতোদের একে অন্যের থেকে ছাড়াতে গেলে একটু অসাবধানটাতেই তা ছিড়ে যায়। ছিড়ে যাওয়া সুতো আবার জোড়া হয়তো লাগানো যায়। কিন্তু তাতে গিট পড়ে যায়। আর সম্পর্কের মাঝে কখনোই গিট পড়তে দেয়া ঠিক না।

সম্পর্কের বন্ধনে যাতে গিট না পরে সেজন্য কি করতে হবে?

সুতোগুলোকে শরীয়তের লাটাইয়ে জড়িয়ে নিতে হবে।

সেটাই তো করছি আমি। শরীয়ত যার মাধ্যমে এসেছে তিনিও তো সাংসারিক কাজে সাহায্য করেছেন স্ত্রীকে।

কিন্তু তিনি সবসময় সবকিছুতেই মধ্যাবস্থা অবলম্বন করেছেন।

হাসলো আয়ান। কিছু না বলে প্লেট এগিয়ে দিলো মাহামের দিকে। বড় বেশি লেকচার দেয় এই মেয়ে। এর লেকচার দেয়া বন্ধ করতে হবে। কঠিন কোন শিক্ষা দিতে হবে। কি শিক্ষা দেয়া যায় খেতে খেতে সেটাই ভাবতে লাগলো সে……..

চলবে….

পর্ব-১

 

‘মাথাব্যথা আর সমস্যা নয়’


প্রফেসর আলতাফ হোসেন সরকার


এমন কোন পরিবার খুজে পাওয়া যাবে না, যে পরিবারে মাথা ব্যথা নেই। ইন্টারন্যাশনাল হেডেক সোসাইটি ও সার্ভিকো জেনিক হেডেক সোসাইটির বিজ্ঞানীদের মতে প্রায় শতকরা ১৮ ভাগ লোক মাথা ব্যথায় ভুগে থাকেন। রোগীরা এই মাথা ব্যথা বিভিন্নভাবে চিকিৎসকের কাছে বর্ণনা করে বা উপস্থান করে। তরুন-তরুনী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পর্যন্ত মাথা ব্যথায় ভুগে থাকেন। আপনারা অবশ্যই জানেন, যুগ যুগ ধরে মানুষ মাথা ব্যথায় ভুগে আসছেন। মাথা ব্যথা মেডিকেল কন্ডিশনের একটি অন্যতম অসুস্থতা। এই মাথা ব্যথা থেকে আমরা সবাই মুক্তি পেতে চাই। আর সে জন্যেই মাথা ব্যথার উপর আজকের এই ছোট লেখা। সুপ্রিয় পাঠক, লিখতে বসেছি মাথা ব্যথা তার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে।

জনাব আব্দুর রাহিম। বয়স ২৫ বছর। থাকেন ধামরাইতে। গত ৫ বছর যাবৎ মাথার ডান পাশে ব্যথায় ভুগছেন। মাথা ব্যথার সাথে সাথে তার চোখেও ব্যথা হয়। মাঝে মাঝে ভমিটিং এবং ডিজিনেস হয়। তিনি তার মাথা ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মাথার এক্স-রে, সিটিস্ক্যান ও এমআরআই করেছেন এবং বিভিন্ন প্রকার ল্যাবরেটরী পরীক্ষাও করেছেন। সর্বপ্রকার রিপোর্ট-এ বলা হয়েছে, কোন অসুবিধা নেই। চোখের চিকিৎসকের পরামর্শ এবং তার উপদেশ অনুযায়ী চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা করেছেন। এই রিপোর্ট-এও বলা হয়েছে কোন অসুবিধা নেই। জনাব রাহিম এখন খুবই হতাশ জীবন-যাপন করছেন। মাথা ব্যথার যন্ত্রণায় অনেক কষ্ট পাচ্ছেন কিন্তু পরীক্ষা-নীরিক্ষায় বলা হয়েছে কোন কষ্ট নেই।

মাথা ব্যথা- বিভিন্ন প্রকার হয়। যেমন- সার্ভিকো জেনিক হেডেক, মাইগ্রেন হেডেক, টেনশন হেডেক এবং সাইনোসাইটিস থেকে মাথা ব্যথা হয়। মাথা ব্যথায় ভুগেন শতকরা ১৮ ভাগ লোক। এই শতকরা ১৮ ভাগ এর মধ্যে শতকরা ১৪ ভাগ লোক সার্ভিকো জেনিক হেডেক-এ ভুগেন। এছাড়াও প্যাথলজিক্যাল কারণের জন্যে মাথা ব্যথা হতে পারে। আমি যে মাথা ব্যথার চিকিৎসা করি এবং যে মাথা ব্যথার সম্পর্কে এখানে লিখছি- সে মাথা ব্যথার নাম সার্ভিকো জেনিক হেডেক। অর্থাৎ ব্যথা হয় মাথায় কিন্তু ব্যথার উৎপত্তি হয় ঘাড় থেকে। ঘাড়ের উপরিভাগে অর্থাৎ সি-১-২-৩ লেভেলে কষ্ট থাকে কিন্তু রোগী কষ্ট পায় মাথায়। ঘাড়ের এই অংশে যে সমস্ত স্ট্রাকচারে কষ্ট হলে মাথা ব্যথা হয় তা হলো- মাসেল, লিগামেন্ট, জয়েন্ট, ডুরামেটার, ডিস্ক এবং ভার্টিব্রাল আর্টারি। এই সমস্ত স্ট্রাকচার সি-১-২-৩ সার্ভাইক্যাল স্পাইনাল নার্ভ দ্বারা ইনারভেটেড। ঐ সমস্ত স্ট্রাকচারগুলোই সার্ভিকো জেনিক হেডেক তৈরি করে। অস্ট্রেলিয়ান ফিজিওথেরাপি বিজ্ঞানী এন বকডাক বলেছেন, সার্ভিকো জেনিক হেডেক-এর উৎপত্তি ঐ সমস্ত স্ট্রাকচার থেকে যে সমস্ত স্ট্রাকচার ইনারভেটেড বাই সি-১-২-৩। এছাড়াও উইফ্লাস ইঞ্জুরি থেকেও সার্ভিকো জেনিক হেডেক হয়। মহিলারা পুরুষদের চেয়ে বেশি এই রুগে ভুগে থাকেন।

জনাব রাহিমের ঘাড় পরিক্ষা করে দেখলাম নেকের উপরি ভাগের ডান পাশে ব্যথা এবং টেন্ডার। পাশ থেকে দেখা যায় যে, তার এন্টিরিওর হেড পোশ্চার আছে। তার অক্সিপিটো-নিউকিয়াল রিজিওনে লোকালাইজড পেইন আছে। মাথা ঘুড়াতে কষ্ট হয় অর্থাৎ মুভমেন্ট কমে গেছে। এই সমস্ত উপসর্গ দিক-নির্দেশনা দেয় জনাব রাহিম সার্ভিকো জেনিক হেডেক-এ ভুগছেন। মনে রাখবেন, সার্ভিকো জেনিক হেডেক-এর ক্ষেত্রে মাথার এক্স-রে, সিটিস্ক্যান ও এমআরআই-তে কোন অসুবিধা থাকবেনা।

জনাব রাহিমের জন্য চিকিৎসা হবে ঘাড়ের সফট টিস্যু মোবালাইজেশন, স্ট্রেসিং ও স্ট্রেন্দেনিং। তার সাথে লো-লেভেল লেজার থেরাপি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, হট বা কোল্ড থেরাপি(এ্যাসেসমেন্ট অনুযায়ী) ব্যবহার করতে হবে। জনাব রাহিম এই চিকিৎসায় ভাল হবে। অর্থাৎ তার মাথা ব্যথা চলে যাবে।

প্রিয় পাঠক, আমি আমার এই ছোট লেখার মাধ্যেমে ধারণা দিতে চেষ্টা করেছি যে, আপনার যদি সার্ভিকো জেনিক হেডেক বা ঘাড়ের উপরি ভাগের কষ্টের জন্য মাথা ব্যথা হয় তাহলে আপনি কি ধরনের চিকিৎসা করবেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মাথা ব্যথা আর সমস্যা নয়। আমার চিকিৎসা অন্যান্যদের চেয়ে সর্বাধুনিক এবং উন্নতর। আপনার সার্ভিকো জেনিক হেডেক বা মাথার জন্য আপনার ঘাড়ের উপরি ভাগের যতœ নিন, মাংস শক্তিশালী রাখুন এবং মাথা ব্যথার কষ্ট দূরীভুত করে সুস্থ জীবন-যাপন করুন।

ব্যাকপেইন বিশেষজ্ঞ
লেজার ফিজিওথেরাপি সেন্টার
পান্থপথ, ঢাকা।

সুত্রঃ ইবনে সিনা হেলথ ম্যাগাজিন◾বর্ষ ৬◾সংখ্যা ৩

 

নাটোরে গৃহবধূ এসিড দগ্ধ

 নারী সংবাদ

নাটোর সদর উপজেলার হালসা এলাকায় রাশিদা বেগম নামে এক গৃহবধূকে এসিডে ঝলসে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। হালসা ইউনিয়নের আরোইল এলাকায় তিনি এ ঘটনার শিকার হন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
চিকিৎসক ও গৃহবধূর স্বজনেরা জানান, গত শনিবার রাত ১১টায় সদর উপজেলার হালসা ইউনিয়নের আরোইল গ্রামের হাসেন আলীর স্ত্রী নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় এসিড জাতীয় ধাতব পদার্থ গৃহবধূকে ছুড়ে মারা হয়। ঘটনার সময় ঘরের দরজা খোলা ছিল। এতে গৃহবধূর বাম হাত এবং পিঠের পুরো অংশ পুড়ে যায়।
নাটোর সদর থানার ওসি (তদন্ত) ফরিদুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে তারা অবগত নন। কেউ এখনো থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

গৃহবধুর লাশ নিয়ে ধূম্রজাল


নারী সংবাদ


কুলাউড়ার ভুকশিমইলে বিয়ের সাত মাসের মাথায় লিপি বেগম(১৯) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের পরিবারের দাবি, বিয়ের ফার্নিচারের টাকা দেয়াকে কেন্দ্র করে শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধু লিপি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

রোববার দুপুর ২ টায় উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের কানেহাত গ্রামে গৃহবধুর স্বামীর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিকেলে লাশ উদ্ধার করে।

কুলাউড়া থানায় কান্নাজড়িত কন্ঠে নিহতের মা রুশনা বেগম বলেন, সাত মাস আগে তার মেয়ে লংলা আধুনিক মহাবিদ্যালয়ের ডিগ্রী ১ম বর্ষের ছাত্রী লিপি বেগম(১৯)কে কানেহাত গ্রামের কাতার প্রবাসী আব্দুস সামাদের সাথে বিয়ে দেয়া হয়।

বিয়ের পর থেকে তার মেয়ে লিপি বেগমের নির্যাতন করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, তার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসাবে প্রচার করছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

নিহত লিপির পিতা আব্দুল মনাফ বলেন, আমার মেয়েকে ভাসুর-দেবরসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। আমরা কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি।

নিহত গৃহবধু লিপি বেগমের ভাসুর সাইদুর রহমান বলেন, স্বামীর সাথে মোবাইলে কথা বলে লিপি শোবার ঘরে গিয়ে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। হয়তো স্বামীর সাথে ঝগড়া করে আত্মহত্যা করতে পারে।

নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, নিহত লিপির বাবার বাড়ির এক মেম্বার এসে উসকানী দিয়ে এ মিথ্যে অভিযোগ করাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার এসআই আনোয়ার জানান, ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধুর লাশ উদ্বার করা হয়েছে। তবে মৃত্যুটি হত্যা না আত্মহত্যা- সেটি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর বোঝা যাবে।

নিহত গৃহবধুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ এখনো পাননি বলে জানান তিনি।

কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সুত্র:নয়াদিগন্ত।

 

ইসলাম ধর্মে আইরিশ বিখ্যাত সংগীত শিল্পী ‘সিনেয়াড ও’কনোর’


নারী সংবাদ


আইরিশ শিল্পী সিনেয়াড ও’কনোর ছিলেন
ক্যাথলিক ধর্মের। সাম্প্রতিক তিনি টুইটারে এক বার্তায় ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। নতুন নাম নিয়েছেন শুহাদা।

মুসলিমদের সমর্থন দেবার বিষয়টিকে তিনি আন্তরিকভাবে নিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুসলিম উম্মাকে।

শুহাদা তার বার্তায় জানান, ‘ধর্মতত্ত্ব নিয়ে অধ্যয়নের পর তিনি নিরপেক্ষভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেছেন, ‘যেকোনো বুদ্ধিমান ধর্মতত্ববিদ গণ যদি স্বইচ্ছায় অনুসন্ধান নামেন তবে তা স্বাভাবিকভাবেই ইসলামে এসে তার সমাপ্তি ঘটবে’।

সুত্র : দ্যা গার্ডিয়ান।

 

বিচ্ছেদের চূড়ান্ত বার্তায় ফের দেশ ছাড়লেন শ্রাবন্তী


নারী সংবাদ


বিচ্ছেদের চূড়ান্ত বার্তা নিয়ে ফের দেশ ছাড়লেন অভিনেত্রী ইপ্সিতা শবনম শ্রাবন্তী। দুই মেয়ে রাবিয়াহ ও আরিশাকে নিয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি নিউ ইয়র্কে ফিরে যান।
একজন নির্মাতা জানিয়েছেন, স্বামীর সাথে ডিভোর্স ঝামেলা সুরাহা করতে দেশে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু স্বামী খোরশেদ আলম ডিভোর্স প্রত্যাহার না করে চূড়ান্ত বিচ্ছেদে অটল থাকায় সন্তানদের কথা ভেবে শ্রাবন্তী আমেরিকা ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর খোরশেদ-শ্রাবন্তী বিয়ে করেন। খোরশেদ আলম এনটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা এবং বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন।
বিয়ের আট বছর পর গত ৭ মে বগুড়া সদরের কালীতলার শিববাড়ির শ্রাবন্তীর বাবার বাসার ঠিকানায় তালাকের নোটিশ পাঠান মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।
এ খবর পেয়ে শ্রাবন্তী দেশে ফেরেন। এরপর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেন। তখন তার অভিযোগ ছিল, খোরশেদ আলম অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করছেন। যদিও তার স্বামী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, ‘আমাদের ভেতরে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, আস্থার জায়গাটা নষ্ট হয়ে গেছে; যা এক সাথে থাকলে আরো ধ্বংস হবে। আরো খারাপ দিকে যাবে বলে আমি মনে করছি। পরস্পর সরে আসায় দু’জনের জন্য ভালো হবে।’
জানা যায়, এসব ঝামেলার ভেতরেও শ্রাবন্তীর সাথে স্বামীর তালাকের বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। তার ধারণা ছিল এক সময় খোরশেদ আলম হয়তো সন্তানদের কথা ভেবে হলেও তালাকের নোটিশ প্রত্যাহার করবেন। কিন্তু চূড়ান্ত চেষ্টায়ও আর তার সুরাহা হয়নি। খোরশেদ আলম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি তালাকের নোটিশ প্রত্যাহার করবেন না। বিষয়টি কার্যকরে তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।
স্বামীর এমন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানার পর শ্রাবন্তী ফের দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে করা মামলায় সব দায়িত্ব এক স্বজনকে দিয়ে তিনি আমেরিকায় ফিরে যান। সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

জীবন


জুয়াইরিয়া জাহরা হক


তেজপাতার ইংরেজী করলে হয় ‘bay leaf’. সানজিদা আক্তারের জীবনটা হয়ে গেছে একটা গন্ধ ছাড়া bay leaf. কোন এক সময়ে তিনি অসাধারণ অনুবাদ করতেন। নিয়মিত আয়ত্ত্ব করতেন নতুন নতুন ইংরেজী শব্দ। একবার আয়োজন করে রুদ্র মোহাম্মাদ শহীদুল্লাহর কবিতা অনুবাদ করতে শুরু করেছিলেন! সে সময় এখন স্বর্ণালী অতীত। বর্তমান তিনি জীবন- সংসারের হামানদিস্তার নীচে মোটামুটি পিষ্ট। মাঝেমাঝে তার মনে চায় পঞ্জিকায় তারিখ-টারিখ দেখে কোন এক অমাবস্যা – পূর্ণিমার রাতে গেরুয়া রঙের থ্রি-পিস গায়ে দিয়ে রাস্তায় হাঁটা দিতে!
মহিলা মানুষ সন্যাসব্রত গ্রহণ করতে পারবে না, এমন কোন কথা নাই।
ভদ্রমহিলার জীবন কয়েক বছর আগেও আরেকটু মধুর ছিলো। ছোট মেয়েটা তখন কানে হেডফোন গুজে পা দুলিয়ে গান শুনতো না। বড়টা রাতভর বান্ধবীদের সাথে মোবাইলে কথা বলতো না। হুটহাট দুই মেয়ে দুনিয়ার সাজগোজ করে ঘরময় হাঁটাহাঁটি করতো না। সব ছিলো উনার লাঠির আগায়। বিটিভির রাতের খবর শেষ হওয়ার আগেই সব ঘুমিয়ে পড়তো। কাকরোল-চিচিংগা-মুলা সহ সব রকমের তরকারি দিয়ে ভাত খেয়ে ফেলতো। আসলে রাহবার মালায়শিয়া চলে যাওয়ার পর মেয়েগুলো মারাত্মক লাই পেয়েছে। মেয়ে দুইটা বড় ভাইয়ের ভয়াবহ ভক্ত। কিসব গল্প-টল্প বলে বুঝিয়ে বোন দু’টোর ভাব নজরে রাখতো। ছেলেটাও কাছে নেই। বিচার দিয়ে মনের শান্তি করবে, তারও উপায় নেই। এরা কেউ মাকে বুঝে না। শুধু যন্ত্রনা দেয়!
ছাদ থেকে তুলে আনা শুকনো কাপড় ভাজ করতে করতে রিমি-রিনি-রাহবারদের মা, সানজিদা আক্তার, এসব এলেবেলে চিন্তা করছেন। আজকে একটা ভয়াবহ কিছু হবে। মেয়েরা এখনো বাড়ি ফেরে নি। সূর্য ডোবার আগে ওদের বাসায় ঢোকার কথা। বাংলাদেশের সূর্য ডুবে সে সূর্য আমেরিকায় উঠে বসে আছে! তাদের কোন খবর নেই। কি যেন কি জরুরী নোট না ফোট করবে বলে বেড়িয়েছে। ডাল ঘুটনির আজকে হায়াত শেষ!

একা ঘরে রাগ করে আনন্দ নেই। খালি ঘরের দেয়ালকে রাগ দেখিয়ে ফায়দা কি? তারপরও উনি গজগজ করছেন। বিড়বিড় করে মেয়েদের গুষ্টি উদ্ধার করছেন আর জানালা- দরজা বন্ধ করছেন। ফোন করছেন সমানে। কত বড় কলিজা, বারবার ফোন কেটে দিচ্ছে। আজকে দুই কন্যার রাতের খাওয়া বন্ধ। বাপকে ঢাল বানাবে, ভাইকে ফোন দিবে, কোন লাভ নাই! সকাল হলেই টাকা চাওয়া বন্ধ। আজকে ঠ্যাং ভেঙে দুইটার হাতে ধরিয়ে দেয়া হবে।

এদিকে কর্তার বাড়ি ফেরার সময় হয়েছে। এসে যদি দেখেন মেয়েরা বাসায় নেই, বিশ্বযুদ্ধ অধ্যায় তিন শুরু হয়ে যাবে! সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে যাচ্ছে দেখে এখন একটু ভয় করতে শুরু করেছে। রিমি-রিনির মা সন্ধ্যা রাতের সব কাজ গুছিয়ে ফেলেছেন। খুব চিন্তা হচ্ছে উনার। এমন তো কখনো হয় না! দোয়া ইউনুস পড়ে ফেলেছেন কয়েক’শ বার!

এমন সময় কলিংবেলটা বেজে উঠলো। টানা কিছুদিন প্রচুর গরম পরার পর ঝুম বৃষ্টির মতন!
দরজাটা খুলে কিছুই দেখতে পেলেন না। সিড়ির বাতিটা জ্বালানো হয় নি। বাতিটা জ্বালিয়ে দিলেন।

‘ সারপ্রাইজ ‘!

সামনে দাঁড়িয়ে আছে রাহবার! দুই পাশে দুই বোন আর সাথে তাদের বাবা। চারজনের দাঁত সবকয়টা দেখা যাচ্ছে!
রাহবারের সেমিস্টার ব্রেক শুরু হয়েছে। মাকে বলেছিলো এবার আসবে না। থিসিসের কাজ আছে!
একটু আগে যে মহিলা ছেলেমেয়েদের চিন্তায় ত্যাক্ত ছিলেন, সে একই জন এখন মনে মনে ভাবছেন,

‘ আমার ছেলেমেয়েগুলো এতো দুষ্টু ধরনের অসাধারণ কেন! ‘

 

মা তোর নাকফুল বেচতে দিবনা!


মনির মোহাম্মদ


ক,দিন আগে ফেইসবুকে বৃদ্ধাআশ্রমে একজন মায়ের আকুতি পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। সেই মা বলেছিল ‘ আমি মারা গেলে আমার নাকফুলটা বেচে আমার কাফনের ব্যবস্থ্যা করবে তোমরা’। লেখাটা পড়ে কলিজায় একটা ধাক্কা খেলাম। এ কেমন সন্তান যার মাকে নাক ফুল বিক্রি করে কাফনের ব্যবস্থা করতে হয়! জানিনা এই স্ট্যাটাস টা সেই সন্তান পড়বে কিনা? যে মা এতো কষ্ট করে সন্তানদের গভীর মমতায় আগলে রেখে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

সেই সন্তানরা আজ ব্যস্থতার দোহাই দিয়ে মা-বাবাকে ফেলে আসছে বৃদ্ধাআশ্রম নামক আধুনিক সভ্যতার এক নতুন জঘন্য জীবনে।যেই বয়সে সন্তানদের সেবা আর ভালবাসা পাবার কথা, সেই বয়সে বৃদ্ধাআশ্রমে একলা বসে জীবনের শেষ প্রহর ঘুনছে।

ধিক শত ধিক সেই সব সন্তানদের! পরিশেষে একটি কথা বলতে চাই মা তোর নাকফুল বেচতে দিবনা। বুকের রক্ত বিক্রি করে হলেও তোর মুখে হাসি ফুটাবো, আগলে রাখবো বুকের গভীরে।

ভাল থাকিস মা,
ইতি তোর একজন সন্তান।
——-ম নি র মো হা ম্ম দ!

 

ইথিওপিয়ায় প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট

 


নারী সংবাদ


ইথিওপিয়া বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মত একজন নারী প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করেছে।

পেশাদার কূটনীতিক শাহলি-ওয়ার্ক জিওদি আইন প্রণেতাদের সর্বসম্মত ভোটে নির্বাচিত হন। তিনি মুলাতু তেশমের স্থলাভিষিক্ত হলেন। ইতোপূর্বে মুলাতু পদত্যাগ করেন।

শাহলি-ওয়ার্ক ষাটের দশকের শেষ দিকে ফ্রান্স, জিবোতি, সেনেগালে ইথিওপিয়ার দূত হিসেবে কাজ করেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি জাতিসংঘে আফ্রিকান ইউনিয়নের শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন। ইংরেজী, ফরাসী ও আমহারিক ভাষায় তার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে।

ইথিওপিয়ায় প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিচালনা করেন। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা মূলত উৎসব ও অনুষ্ঠানে যোগদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ গত সপ্তাহে ২০ সদস্য বিশিষ্ট একটি ছোট মন্ত্রীসভা গঠন করেন। এ মন্ত্রীসভার অর্ধেকই নারী। সুত্র: বাসস।

 

দাম্পত্য টিপস

 


দাম্পত্য


আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। কৃতজ্ঞতা বোধকে নিজের ভেতর চেপে রাখবেন না। আসুন জেনে নেই কিছু সুন্দর টিপস…

বিশ্বাস বজায় রাখুন
যদি বিশ্বাস ভেঙ্গে গিয়ে থাকে, তাহলে সেই বিশ্বাস জোড়া দেওয়ার সময় এখনও পার হয়ে যায়নি। এজন্য যেকোনো সময়ই উপযুক্ত সময়। বছরের পর বছর ধরে যে বিশ্বাস আপনি গড়ে তুলেছেন, তা এক মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

তর্ক এড়িয়ে যান
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা নিয়ে তর্ক হয় তা আসল বিষয় থাকে না। দাম্পত্য জীবনের অনেক তর্কই হয়ত এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তবে ক্ষতিকর বিতর্ককে এড়িয়ে যেতেই হবে।

ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ
ভালোবাসা কেবল অনুভুতি নয়; বরং আমাদের কাজের মাধ্যমেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মনের হতাশা ও অতৃপ্তিকে বাড়িয়ে দেয়।
অনেক সময় সুখী দম্পতিরাও ভাবেন যে, তারা ভুল মানুষটিকে বিয়ে করেছেন।

গভীর মনোযোগ দিন
জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর প্রতি আপনার গভীর মনোযোগ পরস্পরের জন্য হতে পারে অমূল্য উপহার।

নিশ্চয়তা দিন
আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী আপনাকে সুখী করার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে না পারলেও তিনি আপনার সুখী হওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই সাহায্য করতে পারেন।

মিথ্যা বলা বর্জন করুন
মিথ্যা বলে হয়ত সামান্য কিছু সুবিধা পান। কিন্তু পরিমাণে মিথ্যা বলার জন্য সুবিধার চেয়ে অনেক বেশি চড়া মূল্য দিতে হয়। অতএব, মিথ্যা বলা বর্জন করুন।

অনুভূতি নিয়ে খেলা

সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অপরাধবোধকে দীর্ঘায়িত করে তার অনুভূতি নিয়ে খেলা করে আপনি যা পেতে চান, তা কখনোই পাবেন না। আপনার যদি মনেি হয়, ‘তুমিই আমার জন্য সঠিক মানুষটি, যাকে আমি বিয়ে করেছি’, তাহলে আপনি ঠিক পথেই আছেন।

প্রলোভনকে দমন করুন
কোনো কিছু প্রমাণ করতে যাওয়ার প্রলোভনকে দমন করতে পারলে, বস্তুত আপনি অনেক কিছুই প্রমাণ করতে পারলেন।

আত্মিক উদারতা
আত্মিক উদারতা একটি সুখী দাম্পত্য জীবনের প্রধান ভিত্তি।

দাম্পত্য জীবনে সাফল্য পেতে হলে, অতীতে কী হয়েছে তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।

সুত্র: ইন্টারনেট

 

শিশু ধর্ষণ ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা


নারী সংবাদ


ধর্ষণের পর আগুনে পুড়িয়ে শিশু আঁখি আক্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে তার খালু শাহাদাত হোসেনকে (৩৩) ।ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুরের চকমিরপুরে।
গত ১৮ অক্টোবর আঁখিকে তার নানার বাড়ি সাটুরিয়া উপজেলার দিঘলিয়ায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে আসেন শাহাদাত। তবে সেখানে না নিয়ে আঁখিকে কৌশলে দৌলতপুরের চকমিরপুর এলাকায় নিয়ে যান ।দুই দিন ওই এলাকায় আঁখিকে রাখার পর ২০ অক্টোবর গভীর রাতে তাকে ধর্ষণ করে শাহাদাত। পরে প্রমাণ নষ্ট করার জন্য আঁখিকে গলাটিপে করে হত্যা করে পেট্রোল ঢেলে লাশের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের ডিআইও-১ মুহম্মদ আশরাফুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপরোক্ত তথ্য জানানো হয়।

পুলিশের ঐ কর্মকর্তা জানান, দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সুনীল কুমার কর্মকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঢাকার ধামরাই থানার বারবারিয়া স্কেল এলাকা থেকে ২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শাহাদাতকে গ্রেফতার করে। এর আগে গত ২১ অক্টোবর এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পরে তাকে আদালতে উপস্থিত করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

 

বাস্তবতা

 


রেহনুমা বিনত আনিস


১/ পরশুদিন রিহামের শিক্ষক নোট পাঠালেন, ‘রিহাম আজ ক্লাসে প্রচন্ড আপসেট ছিলো। আজ আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলো পোকামাকড় নিধন। ক্লাসে কিছু বাচ্চা পোকামাকড় মারার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলো। রিহামের খুব মন খারাপ হয়ে যায়। আমরা এই বিষয়ে আগামী কয়েকদিন আলোচনা করব। রিহামের ব্যাপারে চিন্তিত বোধ করছি’।

অফিস থেকে ফিরতেই রিহাম দরজা খুলল, গম্ভীর চেহারা, ‘টিচার তোমাকে নোট পাঠিয়েছেন’। এর অর্থ হোল ব্যাপারটা যাই হোক না কেন, সেটা ওর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। জুতোটা খুলেই বললাম, ‘নিয়ে এসো’। নোটটা আনতে আনতে ওর গলা বন্ধ হয়ে এলো, চোখ ছলছল করতে লাগল। কিন্তু সে কিছুতেই জনসমক্ষে কাঁদবেনা। আমার ছেলেটা যে কিভাবে আমার মতই হোল! কত জ্ঞানী জ্ঞানী কথা বলে, অথচ মনের কথা মুখে আনতে পারেনা। নোটটা পড়ে আগে ওকে কোলে বসিয়ে, জড়িয়ে ধরে, মাথায় হাত বুলিয়ে সান্তনা দিলাম। বাইরে সে যতই নিজেকে বিজ্ঞানী মনে করুক না কেন, ভেতরে তো সে একজন কোমলপ্রান শিশুই! রিহাম কিছুটা শান্ত হয়ে এলে বললাম, ‘আসলেই তো, যে প্রান মানুষ সৃষ্টি করেনি সে প্রান মানুষের ধ্বংস করার কোন অধিকার নেই’। সে বুঝল আমি ওর মনের কথাটা বুঝেছি। তারপর যুক্তিগ্রাহ্য উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বললাম কেন মাঝে মাঝে কিছু কিছু প্রানীর ক্ষতির সম্ভাবনা হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাদের হত্যা করতে হতে পারে। ওর উদার বিজ্ঞানী মন এই যুক্তিতে খুব একটা খুশি হতে পারলনা, মানুষ সব প্রানীকে বিলুপ্ত করে ফেললে কি করে চলবে? কিন্তু আবার বাস্তবতাও অস্বীকার করতে পারলনা। সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ালো। সিনারিওটা ওর পছন্দ না হলেও সত্যটা সে মেনে নিলো।
কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে ওর শিক্ষকের নোটের জবাব দিলামঃ ‘সুপ্রিয় শিক্ষক, রিহামের প্রতি আপনার সচেতন নজরের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি তো জানেন রিহাম প্রানীদের ভালোবাসে এবং এই ভালোবাসা পোকামাকড়দের প্রতিও বিস্তৃত। একবার ওর বোন একটা মাছি মেরেছিল বলে রিহাম এক ঘন্টা কেঁদেছিলো। আমি কখনোই চাইনা জীবজগতের প্রতি ওর এই মায়া হারিয়ে যাক। আমি চাইনা সে এমন মানুষে পরিণত হোক যে প্রানীহত্যা করে আনন্দ পায়, সেটা হোক পোকামাকড় কিংবা গাছপালা। তবে ওকে এটাও জানতে হবে, মানুষ বড় স্বার্থপর প্রানী, সে নিজেকে ছাড়া আর কাউকে নিয়ে ভাবেনা, এমনকি অপর কোন মানুষকে নিয়েও না। রিহামকে ধীরে ধীরে এই বেদনাদায়ক বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। আপাতত যতটুকু ওর জানা প্রয়োজন সেটুকু আমি ওকে বুঝিয়েছি। বাকীটার জন্য প্রয়োজন অল্প সময় আর অনেক টিস্যূ পেপার’।

২/ আমার মেয়ের মাশাল্লাহ জন্মগতভাবেই প্রচুর যোগ্যতা। ওর দিকে এক নজর তাকালেই বোঝা যায় ওর কোন কিছুই আমার মত নয়। বরং সে ছোটবেলা থেকেই মনে করে এই বে-গুন মা’টাকে সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখা ওর নৈতিক দায়িত্ব। সে দেড় দু’বছর বয়স থেকেই স্বাবলম্বী। চার বছর বয়সে সে আমাকে কোলে নিতে পারত। সাত আট বছর বয়স থেকে সে ওর বাপের বয়সী লোকজনকে কার্যকর পরামর্শ দিতে পারত। দশ বারো বছর বয়সে সে একাই একটা সংসারের দায়িত্ব নেয়ার উপযুক্ততা অর্জন করে। ইদানিং সে স্কুলে এবং অন্যান্য জায়গায় বিভিন্নপ্রকার প্রোগ্রাম অর্গানাইজ করার দায়িত্ব পায় যেখানে ওর চেয়ে বয়সে বড় ছেলেমেয়েরাও ওর নির্দেশ পালন করে। অতিরিক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন লোকজনের সমস্যা হোল ওরা সিদ্ধান্ত দিতে এত অভ্যস্ত হয়ে যায় যে ওরা ভুলে যায় মাঝে মাঝে সিদ্ধান্ত নিতেও হয়, অন্যের সিদ্ধান্ত। বরং ওরা অন্যের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করার চেয়ে নিজের ভুল সিদ্ধান্তে ভরসা করাই শ্রেয় মনে করে। রিহামকে যুক্তি দিয়ে বুঝানো যায়। কিন্তু রাদিয়ার জন্য কেবল একটি নিয়ামকই প্রযোজ্য, ‘নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার ত্যাগ, আমার জীবন এবং আমার মৃত্যু কেবলমাত্র এই মহাবিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন অংশীদার নেই, আমি এভাবেই নির্দেশপ্রাপ্ত, এবং আমি আত্মসমর্পনকারীদের মাঝে অগ্রনী’ (সূরা আন’আমঃ আয়াত ১৬২-১৬৩)। বাবামা সন্তানকে কতটুকুই বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে যদি না এর নিয়ামক হয় আল্লাহর প্রতি আনুগত্য?

৩/ আমি যখন কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরোই তখন বাজে ভোর পৌণে ছ’টা। পৌঁছই তখন ছ’টা বিশ। এই আধঘন্টা আমার দিনের সবচেয়ে প্রিয় সময়। শুধুমাত্র ভরগ্রীষ্ম ব্যাতীত এই সময়টা থাকে অন্ধকার। প্রকৃতি তখনও ঘুম ভেঙ্গে জেগে ওঠেনা। আমরা ক’জন ভোরের পাখি ছাড়া কোন বাড়ীতে আলোও দেখা যায়না। কখনো নিঃশব্দ তুষারপাত, কখনো টুপটাপ বৃষ্টি। এছাড়া অধিকাংশ সময় প্রকৃতি থাকে নীরব নিস্তব্ধ। এই সময়টা আমার ভীষণ ভাল লাগে। এই মৌনতা আমার ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। এ’সময় আমি নিত্য নতুন প্রেমে পড়ি। কিন্তু আগের প্রেম তার জৌলুস হারায়না, আবার নতুন প্রেম পুরোনোকে প্রতিস্থাপিত করতে পারেনা। তারা সকলে মিলে আমার মনের ভেতর সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করে। আমার লেটেস্ট প্রেম হোল এই দু’টির দ্বিতীয়টি, আমার পুত্র কিছুক্ষণ পর পর এসে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আহ্লাদ করে বলে, ‘মি লাভ মাই আম্মু সোওওওওওওও মাচ! মি গিভ মাই আম্মু আ বিইইইইইগ হাগ’। তারপরও সেদিন আমি অফিস থেকে ফেরার পর সে ব্যাস্ত ছিলো বলে আমি অভিমান করে বললাম, ‘আজ কিন্তু তুমি তোমার সবচেয়ে জরুরী কাজটা করনি’। বুদ্ধিমান পুত্র বুঝতে পেরে সাথে সাথে জড়িয়ে ধরল। ভাবি, আমি কবে আমার প্রভুকে মন খুলে বলেছি, ‘ভালোবাসি!’ তবু তিনি আমাকে দিয়ে যাচ্ছেন, অকাতরে, এত বেশি যে মাঝে মাঝে ভয় হয় ওদিকের জন্য বুঝি আর কিছু বাকী রইলোনা।
আবার ভাবি, শুধু ভালোবাসি বলাই কি যথেষ্ট? যেমন কেউ একজনের কাছে প্রচন্ড কষ্ট পেয়ে একজন মুরুব্বীর কাছে সমাধান চাইলাম। তিনি সমাধান দিলেন, ‘তুমি তো জানোই সে সেরকম। তোমারই ভুল হয়েছে। তুমি ওকে সামলে চলতে পারোনি’। বাহ! সে সেরকম সেটা অন্যায় নয়, আর আমি টুঁ শব্দ করলেই অন্যায়! সরে এলাম। আমি সবসময় এসব জায়গা থেকে সরে আসি। সবাই ভাবে আমি সরে আসি কারণ আমি বোকা। কিন্তু না, আমি সরে আসি কারণ আমি বুদ্ধিমান। মানুষের কাছে অধিকার চেয়ে লাভ কি? আমার প্রভুর কাছে প্রতিদান চাইলে পাব ঢের বেশি।

কিন্তু কথা সেটা নয়। কথা হোল আমি বললাম, ‘ভালোবাসি’। কিন্তু আমার চিন্তাচেতনা তাঁর পছন্দ অপছন্দকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় না, আমার কথায় কাজে তাঁর প্রতি ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটেনা, আমার সময়ে তাঁর কোন অধিকার চোখে পড়েনা, তবে এই মৌখিক প্রকাশের কতটুকু মূল্য থাকে?
৪/ কিভাবে কিভাবে যেন আমার অফিসেই সবসময় গল্পের আসর বসে। আমি যেহেতু অনেক ভোরে কাজ শুরু করি, যতক্ষণে অন্যরা গল্পের মুডে আসে ততক্ষণে আমার দিনের অর্ধেক পেরিয়ে যায়, সুতরাং আমিও সময় দিতে পারি। মাঝে মাঝে আমাদের গল্পসল্প অদ্ভুত মোড় নেয়। যেমন আজ জিং বাবামা নিয়ে গল্প শুরু করল। কিছুক্ষণ পর তা এসে ঠেকল খাবারে। লোভনীয় সব খাবারের আলোচনার মাঝে আমি বাগড়া দিলাম আমার অদ্ভুত চিন্তা দিয়ে, ‘আচ্ছা, এখন যদি ডাইনোসর পাওয়া যেত এবং সেটা খাওয়া যেত তাহলে কতজন মানুষ কতদিন যাবত একটা ডাইনোসর খেতে পারত’।
ক্যারী বলল, ‘সেটা তো ডাইনোসরের সাইজের ওপর নির্ভর করে, তাইনা? কিছু কিছু ডাইনোসর ছিলো অনেক ছোট। আবার কিছু কিছু ছিলো অনেক বড়। তবে ধর যদি আমরা একটা মাঝারী আকারের ডাইনোসর ধরি, যেমন টি-রেক্স, তাহলে একটা হিসেব করে দেখা যেতে পারে’।

আমার চিন্তাটা ‘টি-রেক্সকে কিভাবে ধরাশায়ী করা সম্ভব তার খাবারে পরিণত না হয়ে’র দিকে ধাবিত হওয়াটাই হয়ত স্বাভাবিক ছিলো, কিন্ত আমি তাৎক্ষণিক উত্তর দিলাম, ‘নাহ, টি-রেক্স খাবনা। সে হিংস্র। ব্রন্টোসরাস পেলে খেতে পারি’।
ক্যারী মুচকি হেসে চলে গেল যার অর্থ হোল, ‘বুঝলে তো, যে হিংস্র তাকে কেউ কিছু বলেনা। হম্বিতম্বি যা চলে সব নীরিহের ওপর। এটাই জগতের নিয়ম’।

হুমম, বুঝলাম। শেষপর্যন্ত আমার যুক্তি, আমার আনুগত্য, আমার বিনয়, আমার ভদ্রতা পরাজিত হোল এই জগতের নিয়মের কাছে যার অযৌক্তিকতা নিয়ে আমরা এতক্ষণ আলাপ করছিলাম।

 

ধর্ষণের পর গৃহবধূকে পতিতা সাজালো ৪ ধর্ষক


নারী সংবাদ


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এক গৃহবধুকে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। রোববার সকালে উপজেলার কাঁচপুর সোনাপুর এলাকায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পর ৩ ধর্ষক পালিয়ে যায়।

সোনারগাঁও থানায় দায়ের করা মামলার এজহারে ওই গৃহবধু উল্লেখ করেন, উপজেলার কাঁচপুর সোনাপুর এলাকায় একটি ফ্লাটবাসা ভাড়া নিয়ে স্বামীসহ বসবাস করেন। গত শুক্রবার তার স্বামী গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যান। ওইদিনই তার দেবর ও জ্যা তার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। রোববার সকাল ৮টার দিকে কাঁচপুর এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন, হেলাল, রবিন ও দেলেয়ার জোড়পূর্বক তাদের ঘরের প্রবেশ করে। এসময় তার দেবরকে মারধর করে জ্যাসহ তাদের দু’জনকে একটি কক্ষে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূর গায়ের ওড়না দিয়ে তার মুখ বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণকারীরা তার দেবরের কাছে থাকা নগদ টাকা ও ঘরে থাকা প্রায় ১০ হাজার নগদ টাকা নিয়ে যায়।

সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক( এসআই) তানভির আহম্মেদ জানান, গত রোববার সকালে ৪ ধর্ষণকারী গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে ধর্ষণকারীরা ওই গৃহবধূ ও তার জ্যা’কে পতিতা এবং দেবরকে মাদক ব্যবসায়ী বলে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে কৌশলে ৩ ধর্ষক পালিয়ে যায়। কথাবর্তার এক পর্যায়ে আসল রহস্য বেরিয়ে আসলে হেলাল নামের এক ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়। পরে আটক ধর্ষক হেলালকে জিজ্ঞাসায় হেলাল ধর্ষণের কথা স্বীকার করে।বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

প্রতিবেশিনী……১


আফরোজা হাসান


দরজায় চাবি ঢুকিয়ে মোচড় দিতেই এতক্ষণের ধরে রাখা উত্তেজনা ক্লান্তির কণিকা রূপে সারা শরীর জুড়ে প্রবাহিত হয়ে গেলো মাহামের। উফ…শুধু শুধুই সে রেসের ঘোড়ার মত ছুটেছে এতক্ষণ। বাইরে থেকে ফিরে তাকে বাসায় না দেখলে ভীষণ বিরক্ত হয় আয়ান। সুপার মার্কেটে এক পরিচিত অ্যান্টির সাথে দেখা হয়ে গেলো হঠাৎ। এমন গল্প জুড়ে দিলেন ভদ্রমহিলা যে থামারই নাম নিচ্ছিলেন না। মাহাম কয়েকবার বলেছেও অ্যান্টি আমার একটু তাড়া আছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। তাড়ার কথা শুনে উনি বরং লাফ দিয়ে দু’কদম এগিয়ে এসে খপ করে মাহামের হাত চেপে ধরলেন।

বাধ্য হয়ে মাহাম জানালো যে তার স্বামীর বাসায় ফেরার সময় হয়ে গিয়েছে। এই কথা শুনে ভদ্রমহিলা একরকম ঝাড়িই দিলেন মাহামকে। বললেন, সেজন্য তুমি এমন দৌড়াবা নাকি? তুমি সারাদিন একা একা অপেক্ষা করো না বাসায় জামাইয়ের জন্য? এখন তারে একটু অপেক্ষা করতে দাও। পুরুষ মানুষেরও বোঝা উচিত সারাদিন বাসায় বসে অপেক্ষা করতে কেমন লাগে। এরপর দেয়া শুরু করলেন সাংসারিক পরামর্শ। যার সারমর্ম হচ্ছে স্বামীদের কখনোই বিড়াল মারতে দেয়া ঠিক না। না বাসর রাতে না অন্য কোন রাতে। সংসারে বিড়ালকে জীবন্ত রাখতে হবে। বিড়ালের মিউ মিউ ছাড়া সংসার পানসা।

ভদ্রমহিলার সাংসারিক ক্লাস থেকে ছুটি পেয়ে একরকম দৌড়েই বাসায় এসেছে মাহাম। কিন্তু দরজার চাবি দিয়ে লক খোলা দেখে বুঝতে পারলো আয়ান চলে এসেছে বাসায়। মনটা অনেক বেশি খারাপ হয়ে গেলো মাহামের। অল্প যে কয়েকটা আবদার আয়ান তার কাছে করেছে, বাসায় ঢুকেই তার হাসিমুখ দেখা সেগুলোর মধ্যে একটি। কয়েকদিন আগে নাস্তার টেবিলে একটা ব্যাপারে দুইজনের কিছুটা মত পার্থক্য হয়েছিলো। কিছুটা বিরক্তি নিয়েই বাসা থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিল আয়ান। কিন্তু বাসায় ফেরার আগে মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠালো জানি যে আমাদের মনোমালিন্য চলছে। সেজন্য কথা বলা আমাদের। দয়া করে বাসায় ঢুকে যেন তোমার হাসি মুখ দেখি। তা না হলে কথা বলতেই ইচ্ছাই করবে না আমার।

ধীরে ধীরে ঘরে ঢুকলো মাহাম। কেমন যেন লজ্জা লজ্জা লাগছে তার। আয়ান প্রশ্ন করলে কি জবাব দেবে? এইসময় তো সুপার মার্কেটে না গেলেও হতো তার। পুরো বাসায় চোখ বুলিয়ে বুঝলো আয়ান ওয়াশরুমে। কিনে আনা জিনিসপত্র গুলো গুছিয়ে শোবার ঘরে ঢুকলো মাহাম। ড্রেসিংটেবিলের উপর একটা প্যাকেট দেখে হাতে তুলে নিলো। প্রতিমাসে আয়ান তার জন্য একটা করে লাভস্টোরি নিয়ে আসে। আয়ানের মতে মাহাম হচ্ছে এই নোবেল প্রাইজ পাবার মত আনরোম্যান্টিক মেয়ে। পৃথিবীর বিখ্যাত সব লাভস্টোরি পড়িয়ে তাই মাহামকে রোম্যান্টিক বানানোর চেষ্টা করছে সে।

আয়ানকে রুমে ঢুকতে দেখে সালাম দিয়ে আনিকা বলল, তুমি আবারো আমার জন্য ইয়াকি একটা লাভ স্টোরি নিয়ে এসেছো?

সালামের জবাব দিয়ে হাসতে হাসতে আয়ান বলল, হ্যা বেছে বেছে স্টোরের সবচেয়ে ইয়াকি লাভ স্টোরিটা নিয়ে এসেছি তোমার জন্য।

আয়ানের হাসিমুখ দেখে মাহামের মনের ভুবনে আনন্দধারা বইতে শুরু করলো। যাক তাহলে খুব বেশি বিরক্ত হয়নি আয়ান। আলাহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ্‌! মাহাম কখনোই চায় না আয়ানের আবদারের জিনিস গুলোতে কোন ঘাটতি রাখতে। যে মানুষটা তাকে এত ভালোবাসে এইটুকু দাবী সে অন্তত রাখে যে মাহাম তার ইচ্ছে গুলোকে মূল্য দেবে। আর এভাবেই তো একে অন্যের প্রতি আস্থা বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে।

দেড় মাসের সংসার জীবনের প্রতিটি দিনকেই ভালোবাসার এক একটি মহাকাব্য মনেহয় মাহামের কাছে। সে শুধু পাশে থেকেছে কিন্তু মহাকাব্য রচনার কাজ আয়ানই করেছে, করে। শ্বাশুড়ির প্রতি আবারো কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠলো মাহামের মনটা। তাদের বিয়ের রিসিবশনের পর একরকম জোর করেই দুজনকে এই ফ্ল্যাটে উঠতে বাধ্য করেছেন তিনি। উনার যুক্তি ছিল সারাজীবন পরিবারের সাথেই থাকতে হবে তোমাদেরকে। কিন্তু সংসার শুরুর এই প্রথম দিনগুলি যদি সুযোগ থাকে তাহলে শুধু একাকী নিভৃতে কাটানো উচিত দুজনার। তোমাদের যখন সেই সুযোগ আছে সুতরাং কাজে লাগাও। যদিও পরিবারের সবার জন্য খুব খারাপ লাগে মাহামের। রোজই চলে যায় শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়িতে। আয়ান ফিরে আসার আগেই আবার চলে আসে।

খাবার দেবার জন্য মাহাম রান্নাঘরে ঢুকলে আয়ানও এলো পেছন পেছন। বাসায় থাকলে কখনোই কোন কাজ মাহামকে একা করতে দিতে চায় না আয়ান। কিন্তু মাহামই আপত্তি করে আয়ান কাজ করতে এলে। এরও অবশ্য একটা কারণ আছে। গত কয়েকদিন আগে শীল-পাটায় তাকে ভর্তা করতে দেখে, পাটায় বাটতে কেমন লাগে সেটা ট্রাই করে দেখতে চাইলো আয়ান। শীল-পাটার সাথে আয়ানকে যুদ্ধ করতে দেখে খুব হাসছিলো মাহাম। ছোট ননদ বেড়াতে এসেছিল সেদিন তাদের বাসায়। হঠাৎ খেয়াল করলো পর্দার ফাঁক দিয়ে ছোট ননদ দন্ত বিকশিত করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। দুষ্টু প্লাস ফাজিলের চূড়ান্ত একটা মেয়ে তার ননদটি। আর বিবিসি-সিএনএন তো দুধের শিশু ওর কাছে। তাই কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিবারের সবার ঘরে ঘরে পৌছে গেলো এই সংবাদ।
ছোট খালামণি ফোন দিয়ে হাসতে হাসতে বললেন, শুনলাম আয়ান নাকি তোকে মসলাও বেটে দেয়? হিহিহি…হাহাহা…! মামণি কল দিয়ে বলল, এইসব কি শুনছি জামাইকে দিয়ে তুই মসলা বাটাবি কেন? সবকিছুর তো একটা শোভন অশোভন বলেও কিছু আছে নাকি? বাবা ফোন করে বললেন, কি রে মা জামাইয়ের হাতে আবার ফোসকা পরেনি তো? বাবার কণ্ঠ শুনেই শুনেই মাহাম বুঝতে পারছিলো বহু কষ্টে হাসি চেপে ধরে কথা বলছেন। দেবর ম্যাসেজ পাঠালো, ভাবী প্লিজ মানুষকে গৃহপালিত বানানোর টিপস গুলা দাও তো আমাকে। তোমার দেবরাণীর উপর এপ্লাই করতে চাই। তারও কিছুক্ষণ পর দরজার নীচ দিয়ে ঢুকলো একটা চিরকুট। তাতে লেখা ছিল, এক ছিল বেচারা তাকে নিয়ে লিখছি ছড়া, সিংহ সেজে ঘুরতো সে বিয়ে করেই খাইলো ধরা।

একদিন সকালে উঠে দেখে তাদের পাশের ফ্ল্যাটে নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে। কিছুক্ষণ পর ডোর বেল বাজলে মাহাম দরজা খুলে দেখে প্রতিবেশিনী দাঁড়িয়ে আছে। তাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই প্রতিবেশিনী বলল, প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে নিশ্চয়ই জানা আছে আপনার? রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জিবরাঈল (আ.) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে এত বেশি অসিয়ত করছিলেন, একপর্যায়ে আমার ধারণা হয়েছিল যে, আল্লাহ তাআলা মনে হয় প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী করে দেবেন।’ তিনি আরো বলেছেন- -‘ যে আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ এবং একথাও বলেছেন- ‘সে ব্যক্তি মুমিন নয় যে পেট ভরে খায়, অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে’।

সুতরাং আজ দুপুরে আপনাদের বাসায় আমাদের দাওয়াত। তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করে আমার ফ্ল্যাটে আসেন। গোছগাছ করতে সাহায্য করবেন আমাকে। বলেই সে তার ফ্ল্যাটে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো। সাথে সাথেই আবার খুলে বলল, দুই কাপ চা পাঠিয়ে দেন তো। কাজ করতে করতে মাথা ধরে গিয়েছে। এই প্রতিবেশিনী আসার পর থেকে মাহামের জীবনের শান্তি শেষ। দিনের মধ্যে দশ-বারোবার হানা দেয় সে মাহামের ঘরে। কখনো কাপ নিয়ে এসে বলে একটু চিনি দেন, কখনো বলে চা পাতা দেন, কখনো বলে প্লিজ আপনার ঘর মোছার সময় আমার ঘরটাও একটু মুছে দিয়ে যাবেন। আর প্রতিদিনই তিন বেলার যে কোন একবেলা সে দাওয়াত খায় মাহামের বাসায়।

ডোর বেলের শব্দ কানে যেতেই দীর্ঘশ্বাস ফেললো মাহাম। ঐ যে আবারো এসে হাজির তার প্রতিবেশিনী……

চলবে…

 

মেয়েটার সমস্যা কী?


ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস


দিন তিনেক আগে মেয়েটার টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছে। মেয়েটার বয়স ১৬।
২০১৯ এর এসএসসি পরীক্ষার্থী।
টেস্ট পরীক্ষার হলে সে হঠাত মাথা ঘুরে পড়ে গেল। তাড়াতাড়ি তাকে হল থেকে বের করে মাথায় পানি ঢালা হল।

বাসায় আনা হল।

বাসায় আসার পর দুইবার এবং পরবর্তী তিন দিনে আরো ছয়বার খিচুনী হল।

১.হাত পা শক্ত হয়ে যায়,
২.চোখ বন্ধ হয়ে যায়।
৩.দাঁতে দাত চাপ লেগে যায়।
৪.এরপর বাইরের পরিবেশের সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
৫.হাত পা শক্ত হয় মাত্র ২-৩ মিনিটের জন্য, কিন্তু চোখ বন্ধ থাকা আর অজ্ঞান হওয়া বজায় থাকে ২০ মিনিট।
৬.জিহ্বায় কামড়, পায়খানা প্রস্রাব করে দেওয়ার মত ঘটনা ঘটেনি।
৭.ঘুমের মধ্যেও এই ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি।

কিন্তু টেস্ট পরীক্ষার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে টানা চারদিনে সাতবার এমন ঘটনায় পুরা পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে।

কী করবেন?
মুলত রোগটি হল, Conversion Disorder.

এই পয়েন্টগুলো ভালভাবে মনে রাখতে হবে আমাদেরকে।

১। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময় জিহ্বায় কামড় পড়ে, রক্ত আসে, নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা খুবই কম।

২। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময় প্রস্রাব পায়াখানা হয়ে যায়, নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা খুবই কম। প্রস্রাব হয়ে গেলেও পায়খানা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

৩। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময় চোখ খোলা থাকে, চোখ উলটে যায় আর খোলা চোখ দেখে আশপাশের লোকজন ভয় পেয়ে যায়, নকল রোগীর ক্ষেত্রে এই চোখ খোলা থাকে না, পুরা সময়ই চোখ বন্ধ থাকে। এটি খুব ই গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট।

৪। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনি মানুষের সামনেও হয়, আবার একা একা থাকার সময়ও হয়। আর নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে সাধারণত সব সময়ই খিঁচুনি মানুষের সামনেই হয়, একা অবস্থায় কখনোই হয় না।

৫। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনি ঘুমন্ত জাগ্রত সব অবস্থায় ই হয়। আর নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে খিঁচুনি ঘুমন্ত অবস্থায় সাধারণত কখনোই হয় না।

৬। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময়কার কোন ঘটনাই মনে থাকে না। আসপাশে কে কী বলল সেটা শুনতে পায় না। নকল খিঁচুনির রোগী আশপাশের লোকজনের কথা শুনতে পায় এবং খিঁচুনির সময় কখন কীভাবে কী হল – এগুলি কিছু না কিছু বলতে পারে।

 

চট্টগ্রামে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার


নারী সংবাদ


নগরের ডবলমুরিং থানার চৌমুহনী আল আমিন হোটেলের গলি থেকে রীনা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। গতকাল বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
রীনা আক্তারের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা। তার একটি মেয়ে রয়েছে। তার স্বামী গার্মেন্টকর্মী। ঘটনার সময় স্বামী কর্মস্থলে ছিলেন। রীনা ও তার বাবার বাসা পাশাপাশি।
ডবলমুরিং থানার অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রীনা আক্তার আত্মহত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর চূড়ান্তভাবে বলা যাবে এটি হত্যা না কি আত্মহত্যা।
সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

শুধু প্রণোদনা নয়, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণও প্রয়োজন


ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা


একজন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা কহিনুর বেগম। একাগ্রতা ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। তবে যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাবে জীবনে এই সাফল্য বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি তিনি। অনেক নারী উদ্যোক্তার মতো ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনিও নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
বর্তমান সরাকর সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক নারীবান্ধব ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টি এবং সমাজের মূল ধারায় নারীদের নিয়ে আসতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক বাধা ও সঠিক পদক্ষেপের অভাবে কহিনুর বেগমের মত অনেক নারী উদ্যেক্তা সরকারের সদিচ্ছার সঠিক ব্যবহার করতে পারছে না। ফলে তারা তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারছে না। মাঝ পথে যেয়ে তাদেরকে থমকে দাঁড়াতে হচ্ছে। কহিনুর বেগম ১৯৯২ সালে মাত্র তিনশত টাকা মূলধন নিয়ে চালের ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে তিনি এই টাকা দিয়ে তিন মণ ধান কিনে চাল করে গ্রামের বাজারে বিক্রয় করেন। এতে তার ৬০ টাকা লাভ হয়। সেই থেকে তার সংগ্রামী জীবন শুরু। আর তাকে পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। অদম্য সাহস, ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম তাকে ব্যবসায়ে সফলতা এনে দিয়েছিল। কোন বাধা তার গতিরোধ করতে পারেনি। সকল ধরনের বাধা পিছনে ফেলে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি একটি অটো রাইস মিল, একটি দুগ্ধ ও মুরগীর খামারের মালিক হয়েছেন। কিন্তÍু বিধিবাম তার সফলতার চাকা হঠাৎ করে থেমে গেছে। তিনিও এখন ব্যাংক ঋণ খেলাপি।
১৯৯২ সালে ছোট দু’টি সন্তান ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে খুব সংকটে পড়েছিলেন তিনি। তার স্বামী এলাকার একটি খাদ্য গুদামের শ্রমিক ছিলেন। এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি পা হারান। এ সময়ে তিনি নিজেকে খুব অসহায় ভেবেছিলেন। একদিকে স্বামীর চিকিৎসা খরচ, অপরদিকে সন্তানদের নিয়ে সংসারের ঘানি তার কাঁধে চেপে বসে। অনেকটা নিরুপায় হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কোন উপায়ন্তর না দেখে নিজেই সামান্য পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা শুরুতে আর্থিক সমস্যা থাকলেও তার মানসিক শক্তির কোন কমতি ছিল না। নারী ব্যবসায়ী হওয়ায় তাকে নানা কথা শুনতে হয়েছে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পুঁজির অভাবে ব্যবসা বাড়াতে পারছিলেন না। নারী হওয়ায় তাকে কেউ ঋণ দিতে চায় না। জামানত দিতে না পারায় ব্যাংকও তাকে কোন সহযোগিতা করছিল না। জামানত দিবার মত তার কিছুই ছিল না। এরপরও তিনি মনোবল হারাননি। এক বছর যেতে না যেতেই ১৯৯৩ সালে কহিনুর বেগম তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করেন মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ। এই নামে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকেন। তার ব্যবসা সাফল্য দেখে তাকে সহায়তা করতে একটি ব্যাংক এগিয়ে আসে। তিনি ২০০২ সালে প্রথম ব্রাক ব্যাংক হতে দুই লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এটি ছিল তাঁর জীবণে সফলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
ব্যবসা সঠিকভাবে পরিচালনা করে। তিনি ব্যাংক ঋণ সুদসহ যথাসময়ে পরিশোধ করেন। তিনি ২০১০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংক যশোর শাখা হতে ১০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এ টাকা দিয়ে একটি দুগ্ধ ও মুরগীর খামার গড়ে তোলেন। তিনি ব্যবসা করে সাউথইস্ট ব্যাংকের ঋণও যথা সময়ে পরিশোধ করেন। তিনি তাঁর ব্যবসায়ের আয় হতে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটানো ছাড়াও আয়ের একটি অংশ সামাজিক কল্যাণে ব্যয় করতেন। তিনি বিধবাদের সাহায্য, গরীবদের মাঝে কাপড় বিতরণ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে ব্যয় করতেন। তিনি ২০১২ সালে তার দুগ্ধ খামারের জন্য বেসিক ব্যাংক থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ নেন। প্রাথমিক অবস্থায় তিনি নিয়মিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করলেও পর্যাপ্ত বাজারজাতকরণ জ্ঞানের অভাবে তিনি দুগ্ধ খামারে সফলতার মুখ দেখতে পারেননি। বর্তমানে তিনি ব্যাংক ঋণ খেলাপি।
ব্যবসায়ের শুরুতে তিনি একাই সব কাজ করতেন। ব্যবসা সম্প্রসারণের সাথে সাথে তার প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং ২০১৩ সালে কর্মচারীর সংখ্যা এসে দাড়াঁয় ২৬ জনে। কিন্তু তার ব্যবসায়িক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীর সংখ্যা মাত্র আট জন। এসএমই ফাউন্ডেশানের নারী উদ্যেক্তা উন্নয়ন উইং এর ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, বাসস’র সাথে আলাপকালে, নিরাপত্তা ও বাজারজাতকরণ নারী উদ্যেক্তাদের জন্য প্রধান সমস্যা। নারীদের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের প্রয়োজন এবং নারীরা যাতে দক্ষতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে এ জন্য অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি জানান, এসএমই ফাউন্ডেশন ইতোমধ্যে ১২ হাজারের বেশি নারী-পুরুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই নারী। নারী-পুরুষ পরিচালিত ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ের চ্যালেঞ্জগুলো প্রায় একই। তবে সরকার নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে বিভিন্ন প্রণোদনার ব্যবস্থা করে থাকে। এর মাধ্যমে সরকার নারীদের সম্ভবনাগুলোকে কাজে লাগানোর সুযোগ করে দিচ্ছে।

সুত্রঃ বাসস/ইউনিসেফ ফিচার/কেইউসি/অমি/১৭৩২/আহো/-ওজি।

 

ধর্ষণ শিকার চতুর্থ শ্রেণির প্রতিবন্ধী ছাত্রী


নারী সংবাদ


মধ্যদুর্গাপুর (হিন্দুপাড়া) মহল্লার অটোভ্যানচালকের প্রতিবন্ধী মেয়েকে পংকজ কুমার অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেশী শ্রী অনুকুলের বাড়ির কাছে বসে খেলা করছিল মেয়েটি । মেয়েটিকে ডেকে পংকজ সেখানে গিয়ে কৌশলে অনুকুলের ঘরে নিয়ে যায়। এরপর ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। নওগাঁ শহরের মধ্যদুর্গাপুর মহল্লায় চতুর্থ শ্রেণির এক প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণ করা হয়েছে।

ধর্ষক পংকজ কুমারকে (৩৮) আসামি করে নওগাঁ সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে। ঘটনার পর থেকে ধর্ষক পংকজ পলাতক।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি মো. আব্দুল হাই জানান, ঘটনার পরপরই আসামি পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করা গেছে।

খুব শিগগিরই তাকে ধরা সম্ভব হবে।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মনির উদ্দীন আকন্দ জানান, বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কনসালট্যান্টের অধীনে চিকিৎসাধীন। তার ডাক্তারি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। মেয়েটি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

 

ঘর সাজানোর নানান উপায়


ঘরকন্যা


টুকিটাকি জিনিসপত্র:

ঘরে নানা ধরণের টুকিটাকি জিনিসপত্র থাকে, যদি ঘরকে আরও সুন্দর দেখতে চান তাহলে টুকিটাকি জিনিসপত্র গুলোর দিকেও নজর দিতে হবে। সুন্দর করে গুছিয়ে রাখুন সব কিছু। দেখা যাবে অল্প কিছু পরিবর্তনের ফলে ঘর লাগছে আরও সুন্দর।

ঘর সাজাতে গাছের ব্যবহার:

অন্যান্য ঘর সাজানোর জিনিসের তুলনায় ফুল এবং গাছ বেশ সস্তা। এই গাছ দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন আপনার ঘর। গাছ ঘরকে রঙিন ও জীবন্ত করে তুলবে। জানালার ধার ঘেঁষে লতানো গাছ লাগানো যেতে পারে আর ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস না থাকলে গাছের বদলে রেখে দিতে পারেন একগুচ্ছ তাজা ফুল। ঘরের এক কোণে কয়েকটি তাজা ফুল রেখে দিলে নিমিষেই ঘর উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

সুগন্ধি ব্যবহার করুন :

ঘরকে প্রাণবন্ত করতে এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করুন। এতে মন সতেজ হবে, ঘরও হবে সুগন্ধময়।

আসবাবপত্র ঠিক জায়গায় রাখুন:

ঘরের সঠিক জায়গায় সঠিক আসবাবটি বসান। আর যদি ঘরে শিশু থাকে, তাহলে তাদের জন্য আলাদা ফাঁকা জায়গা রাখার চেষ্টা করুন। এতে দেখবেন, ঘরটি আরো পরিপাটি হয়ে উঠবে।

 

বাংলাদেশে নবজাতককে নিয়ে হাসপাতালের পাঁচতলা থেকে মায়ের লাফ


নারী সংবাদ


আজ (শুক্রবার) সকাল নয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের দি ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড স্পেশালাইজড হসপিটালের ওপর থেকে হঠাৎ একটি নবজাতক শিশুকে রাস্তায় আছড়ে পড়তে দেখে পথচারীরা হতভম্ব হয়ে পড়েন।
পরক্ষণেই তারা লক্ষ্য করেন হাসপাতালের পাঁচ তলা থেকে একজন নারী নিজেও লাফ দেয়ার চেষ্টা করছেন।
সেই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদত হোসেন।
বিবিসিকে তিনি বলছিলেন “আমরা কাছে গিয়ে দেখলাম শিশুটি স্পট ডেড। তখন আমরা নীচ থেকে সবাই জড় হয়ে ঐ মহিলাকে বার বার নিষেধ করছিলাম যাতে সে লাফ না দেয়। কিন্তু সেই কিছুক্ষণের মধ্যেই সে লাফ দিল।”
ঘটনাস্থলেই নারীটিও মারা যান।
হাসপাতাল এবং স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, সাথী আক্তার নামে এই নারী গত ১৬ তারিখে দি ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড স্পেশালাইজড হসপিটালের পাশের একটি হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন। হাসপাতালে তার সাথে ছিলেন তার মা।

প্রত্যক্ষদর্শী শাহাদত হাসেন জানান বলেন, লাইফ কেয়ার শিশু জেনারেল হাসপাতালে যেখানে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন সেখানে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, গতকাল রাতভর ঐ ঘর থেকে কথা-কাটাকাটির শব্দ শোনা গেছে বলে পাশের কক্ষে থাকা লোকজন তাকে বলেছেন।

তিনি বলছিলেন “৩০২ এবং ৩০৩ এই দুটি রুমের জন্য একটা এসি বরাদ্দ থাকায় কিছুটা গ্যাপ ছিল। ৩০৩ নং রুমে ছিলেন ফরিদা খাতুন নামে এক রোগি। তিনি বলেন বাচ্চাটা সারা রাত কেঁদেছে, তার কান্নার জন্য তারা ঘুমাতে পারেনি। একই সাথে সীমা তার মায়ের সাথে ঝগড়া করছিল। তাকে ফোনেও কথা বলতে শোনা গেছে। তারা ধারণা করছেন সীমা তার স্বামীর সাথে সেই সময় কথা বলছিলেন।”

চিকিৎসকরা বলেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর অনেক নারী মানসিক চাপে ভোগেন।

সীমার স্বামী লেবাননে থাকেন। বছর খানেক আগে তাদের বিয়ে হয়।
কিন্তু নবজাত শিশুকে নিয়ে কি কারণে তিনি এই আত্মহননের পথ বেছে নিলেন সেই সম্পর্কে কেও ধারণা করতে পারছেন না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম উদ্দিন বলেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা সীমার মাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন, কিন্তু সন্দেহজনক কোন কিছু এখনো তারা পাননি।
পুলিশের ঐ কর্মকর্তা বলেন, “মেয়ের মা বলছে গতকাল থেকেই তাকে মেন্টালি ডিজ-অর্ডার লাগছিল। সে কারো কিছু না বলে তার বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে গেছে এবং পার্শ্ববর্তী আরেকটা হাসপাতাল থেকে বাচ্চাকে ফেলে দিয়ে নিজেও পড়ে গেছে। আসলে এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমরা তদন্ত করছি, একটা মামলা হয়েছে”।
পুলিশ বলছে, হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজে তারা দেখেছেন বাচ্চাকে কোলে করে মহিলা হাসপাতালে তার নিজের কক্ষ থেকে বের হয়ে আসছেন। তার মা বলছেন, সেই সময়ে তিনি ঘরে ছিলেন না।
এদিকে অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর ঘটনায় শহরে আলোচনা তৈরি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মি. হোসেন বলেন, পুরো শহর জুড়ে মানুষজন এ নিয়ে কথা বলছে। “আমাদের কাছে খুব রহস্যজনক মনে হচ্ছে।”
পুলিশ বলছে এই ঘটনায় নিহত সাথীর শ্বশুর বাড়ীর লোকজনকে ডাকা হয়েছে কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা এখনো আসেন নি।

সুত্র: ফারহানা পারভীন
বিবিসি বাংলা, ঢাকা

 

কেঁচো সারে উত্তরে নারীর ভাগ্যবদল


মাহবুব আলম


বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। সৃষ্টির শুরু থেকেই দেশের কৃষকদের লক্ষ্য ছিল কিভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে কৃষি ক্ষেত্র অনেকটাই দখল করেছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। দেশে ঘটেছে কৃষি বিপ্লব। তথাপি বিলুপ্ত হয়নি প্রাকৃতিক পদ্ধতি। আবার কখনো কখনো প্রকৃতির সঙ্গে বিজ্ঞানের মিশেলে কৃষি পদ্ধতি হয়েছে আরো সমৃদ্ধ। যেমন কেঁচো সার একটি যথার্থ উদাহরণ। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক উপায়ে উৎপাদন করা হচ্ছে কেঁচো সার। আধুনিক যুগে যা ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম বাংলায়। বৈজ্ঞানিক উপায়ে কেঁচো সার উৎপাদন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। একজনের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এমন পেশায় নিজেকে শামিল করছেন। এতে পরিবারগুলোর মধ্যে ফিরছে স্বচ্ছলতা। তাদেরই একজন মিনতি রাণী সরকার; বয়স ত্রিশের কোটায়। যিনি কেঁচো সার উৎপাদন করে এনেছেন পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা। দিনাজপুর জেলার বিরলে কেঁচো সার উৎপাদনের ধুম পড়েছে। আর এর অনেকটাই করছেন নারীরা। ঘরে ঘরে কেঁচো সার তৈরি করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি তারা সংসারে এনেছেন স্বচ্ছলতাও। কেবলমাত্র মিনতি রাণীই নন। এলাকার অনেকেই এখন নিজেদেরকে কেঁচো সার তৈরিতে নিয়োগ করেছেন।
সম্প্রতি দিনাজপুরের ওই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথমে উপজেলার দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামের পাঁচ নারী কেঁচো সার তৈরিতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের কাছ থেকে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ নেন। এর মধ্যে গ্রামের বিলপাড়ার পুতুল চন্দ্র দেবশর্মার স্ত্রী লিপা রাণী একজন।
লিপা রাণী জানান, প্রথমে মহিলা বিষয়ক অধিদফতর থেকে ঋণ নিয়ে তারা কেঁচো সার তৈরির কাজ শুরু করেন। সাত মাস আগে ছয়টি রিং, কেঁচোসহ যাবতীয় উপকরণের জন্য খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু এরই মধ্যে পর্যায়ক্রমে তারা ৩০ হাজার টাকার কেঁচো সার বিক্রি করেছেন।
প্রথম ৬টি রিং দিয়ে শুরু করলেও এখন ২২টি রিংয়ে কেঁচো সার তৈরির কাজ চলছে।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, স্বাবলম্বী হতে বিরল উপজেলার দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামের বিলপাড়ার ঘরে ঘরে নারীরা কেঁচো উৎপাদন করছেন। তবে তাদের প্রত্যাশা, সরকারিভাবে এ কাজে বিনাসুদে ঋণ পেলে আরও বড় আকারের খামার তৈরিসহ সারের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব।
এভাবে হতে পারে শত শত নারীর ভাগ্যোন্নয়ন। বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম এই প্রতিবেদককে জানান, বিরলের নারীদের ভাগ্যোন্নয়ন ও কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য কাজ চলছে। এক্ষেত্রে তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও কাজ করছি আমরা।
এদিকে লিপা কিংবা মিনতি নয়, তাদের দেখাদেখি এ কাজে এগিয়ে এসেছেন দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় শতাধিক নারী-পুরুষ। এ কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে জেলার বাইরেও।
পার্শ্ববর্তী বিজোড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামেও তৈরি হচ্ছে কেঁচো সার। স্থানীয় আবদুল আলীম বলেন, যারা আগে কেঁচো সার তৈরি করেছেন তাদের থেকে আমরা সহযোগিতা নিয়েছি। পারস্পরিক সহযোগিতার কারণে এলাকায় কেঁচো সার তৈরি ছড়িয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে বিজোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসলাম কাদির বলেন, কেঁচো সার তৈরির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের নারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। এতে শুধু নারীরাই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে না, কৃষিতে কমে যাবে রাসায়নিক সারের চাহিদাও।
এদিকে পরিবেশবান্ধব জৈব কম্পোস্ট সার ও সবজি উৎপাদনে এলাকার নারীদের নিয়ে কাজ করছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দের চুহড় গ্রামের মর্জিনা খাতুন।
তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের কম্পোস্ট সার, কেঁচো সার তৈরি করে ধান, ভুট্টা, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, আলু, শিম, শশা উৎপাদনে ব্যবহার করেছেন। এতে তার সাফল্যও এসেছে। গত একবছরে তার সাড়ে ৩ লাখ টাকা আয় হয়েছে।
মিঠাপুকুর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, মর্জিনা বেগম এ এলাকার মডেল চাষী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। আমরা তার মতো অন্যদেরও নানা ধরনের সহযোগিতা করছি।

সুত্র: বাসস/ইউনিসেফ ফিচার/মাআ/স্বব/২২২০/আহো/-ওজি।

 

অভিমানী মনের আত্মদহন… ১ম খন্ড


আফরোজা হাসান


চোখ খুলে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে লাফিয়ে উঠে বসলো অধরা! আরেকবার ভালো করে তাকালো ঘড়ির দিকে। সত্যি সত্যিই এগারোটা বিশ বাজে! এটা কি হলো?! সে এতক্ষণ ঘুমোলো কি করে?! সকালে ঘুম থেকে উঠার পর মাথা ভার লাগছিল খুব। তাই বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আধঘন্টার জন্য শুয়েছিল আবার। কিন্তু অ্যলার্ম তো দিয়েই শুয়েছিল! তাহলে? সময়মত অ্যলার্ম কেন বাজলো না দেখার জন্য মোবাইল হাতে নিলো। আজ শুক্রবার কিন্তু সে দিয়েছে শনিবার! এই তাহলে ঘটনা! নিজের উপরই মেজাজ খারাপ হতে লাগলো। এগারোটায় বেশ জরুরি একটা মিটিং ছিল। আরো কিছুক্ষণ গুম ধরে বসে থেকে রাজীব মামাকে ফোন করে আসতে পারবে না জানিয়ে দিলো। বাইরে যেহেতু যাওয়া হচ্ছেই না আরেকটু ঘুমিয়ে নিলে কেমন হয়? এমন অলস চিন্তার জন্য ধিক্কার দিতে দিতে বিছানা থেকে নামলো অধরা। শরীর ও মনের আলসেমী দূর করার জন্য শাওয়ার নেয়া হচ্ছে তার জন্য বেষ্ট অপশন। অবশ্য শুধু আলসেমীই না শাওয়ার মারওয়ার মনের স্যাঁতস্যাঁতে, খিটপিটে, চিড়চিড়ে, ধোঁয়া ধোঁয়া ভাব দূর করতেও বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলো, মন বিষয়ক একটা অ্যাড তৈরি করলে কেমন হয় বলো তো অধরা? অ্যাডের জিঙ্গেল হবে “ মনের স্যাঁতস্যাঁতে, খিটপিটে, চিড়চিড়ে, ধোঁয়া ধোঁয়া ভাব দূর করতে চান? হিয়ার মাঝে লুকিয়ে থাকার কারণে দেখতে না পাবার মতই আপনার হাতের কাছেই লুকিয়ে আছে অবিশ্বাস্য ফর্মূলা। নিজেকে আপাদমস্তক ডুবিয়ে দিন পানিতে, ধীরে ধীরে মন সিক্ত হবে প্রশান্তটিতে!”

আপি আপনি কার সাথে কথা বলছেন?

প্রশ্ন শুনে ঘুরে পেছনে তাকালো অধরা। ছোট ভাইয়ের নববধূ মুনিরা চোখ বড় বড় করে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। হুট করেই তিনমাস আগে মুনিরা আর সাদাতের বিয়ে হয়েছিল। ব্যস্ততার কারণে তখন দুজনকে বাসায় দাওয়াত দিতে পারেনি অধরা। ব্যস্ততা কিছুটা কমে যাবার পর দুজনকে কয়েকদিনের জন্য তার বাসায় নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল। গত পরশু হাজির হয়েছে ক্ষুদে দম্পতি। যারা সকালে হুড়মুড় করে তৈরি হয় অফিস যাবার জন্য নয় বরং ইউনিভার্সিটি যাবার জন্য। গতকাল নাস্তার টেবিলে বসে সাদাত যখন বলছিল, মুনিরা তাড়াতাড়ি করো আমার ক্লাস মিস হয়ে যাবে! অনেক মজা পেয়েছিল অধরা। মুনিরার প্রশ্নের জবাবে হেসে বলল, ক্লাসে যাওনি তুমি?

জ্বিনা আপি। আজ যেতে ইচ্ছে করছিল না। তবে সাদাত গিয়েছে। নাস্তা করবেন না আপি? আমি চায়ের পানি চাপিয়েছি অনেকক্ষণ আগেই। চা বানাবো আপনার জন্য?

আধঘন্টা পরে বানাও। আমি শাওয়ার নিতে যাচ্ছি।

নাস্তার টেবিলে বসে মুনিরার দিকে ভালো করে তাকালো অধরা। নাক-চোখ ঈর্ষৎ লালচে, ফোলা ফোলা লাগছে। কান্না করেছে সেটা রুমে যখন দেখেছে তখনই বুঝতে পেরেছিল। কেন কান্না করেছে সেটা হচ্ছে গিয়ে প্রশ্ন! নববধূদের হাসি-কান্না দুটোই বৈচিত্র্যময়তায় টইটুম্বুর! চলতে চলতে হঠাৎ হুমড়ি খেয়ে পড়ার মত, বিয়ে হচ্ছে মেয়েদের জন্য বড় হতে হতে হঠাৎ আবার ছোট্ট হয়ে যাওয়া। এক্কেবারে ইক্টুসখানি একটা পিচ্চি বাবুনি যাকে বলে। যে একটুকেই হাসে, একটুতেই কাঁদে। আদুরে আদুরে আবদার করে, সেসবে হেরফের হলেই অভিমান করে। কিন্তু পরিবারের মানুষগুলো এসব বোঝে না বেশির ভাগ সময়ই। তারা মনেকরে বড় হয়েছে বলেই বিয়ে হয়েছে। আর বিয়ে হয়েছে মানেই তুমি এখন বিশাল সব দায়িত্বের বোঝা মাথায় নেবার জন্য প্রস্তুত। কেউ বুঝতে চায় না একটা মেয়ে হিসেবে সে বড় হয়েছে। কিন্তু একজন বধূ হিসেবে মাত্রই তার জন্ম হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বোঝে না বলেই একটি মেয়ে নতুন সম্পর্কের জন্মলগ্নের আদর কদর থেকেও বঞ্চিত হয় বেশির ভাগ সময়ই। চুপচাপ নাস্তা সেরে নিলো অধরা। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে হেসে বলল, মাশাআল্লাহ তুমি তো বেশ মজা করে চা বানাও। আমি কফি সবার হাতে খেলেও চা সাধারণত নিজের হাতের বানানো ছাড়া খেতে পারি না। মনেহয় আমার চা আমি ছাড়া অন্যকেউই বানাতে পারবে না। কিন্তু তোমার চা সত্যিই মজা হয়েছে।

হাসি ফুটে উঠলো মুনিরার চেহারাতে। থ্যাঙ্কইউ আপি। আমি যে কয়দিন থাকবো রোজ আপনাকে চা করে দেবো।

ইনশাআল্লাহ। এখন বলো কেমন কাটছে তোমাদের সময়? মুনিরাকে চুপ থাকতে দেখে অধরা হেসে বলল, তুমি আমার সাথে মনের সব কথা শেয়ার করতে পারো।

খানিকটা অভিমানী কন্ঠে মুনিরা বলল, আপি কথা দিয়ে কথা না রাখা কি ভালো?

কথা দেয়া মানে হচ্ছে ওয়াদা করা। আর ওয়াদা রক্ষা করা তো মুমিনের শান।

কিন্তু সাদাত কখনোই কথা দিয়ে করা রাখে না। ফোন করার কথা বলে ফোন করে না, বাসায় ফেরার এক সময় বলে কিন্তু কখনোই সেই সময়ের মধ্যে বাসায় ফেরে না। ঘুরতে যাবার প্ল্যান করেও আবার ক্যান্সেল করে দেয়।

সবসময়ই এমন করে নাকি মাঝে মাঝে?

একটু চুপ থেকে মুনিরা বলল, বেশ কয়েকবার করেছে।

অধরা হেসে বলল, খুব অভিমান জমেছে তোমার মনে বুঝতে পারছি। তুমি সাদাতের কাছে জানতে চাওনি কেন এমন করেছে? কেন কথা দিয়েও সেটা রাখেনি।

জানতে তো চেয়েছিই। অজুহাতের তো কোন অভাব নেই ওর কাছে। ঠিকই নিজের স্বপক্ষে যুক্তি দাঁড় করিয়ে ফেলে।

সাদাতের যুক্তিগুলোকে তুমি অজুহাত কেন ভাবছো? সত্যিও তো হতে পারে তাই না? হয়তো যা যা বলেছে সেসবই ওর ওয়াদা ভঙ্গের কারণ ছিল। এমনটা কি হতে পারে না? মুনিরাকে চুপ দেখে হাসলো অধরা। বলল, আমি ভাইয়ের সাপোর্টে কথা বলছি এমনটা ভাবছো নাতো আবার?

না আপি এমন ভাবছি না।

আমারো বিয়ে হয়েছিল তোমার মত অনেক ছোট বয়সে। ইনফ্যাক্ট তোমার চেয়েও দুই আড়াই বছর ছোট ছিলাম আমি বিয়ের সময়। তোমাদের ভাইয়া প্রচন্ড রকম ব্যস্ত একজন মানুষ ছিলেন। আমাদের বিয়ের পরপর পারিবারিক কিছু কারণে উনার সেই ব্যস্ততার মাত্রা আরো বেড়ে গিয়েছিল। যখন ফোন করে উনাকে পেতাম না, ম্যাসেজ করার করার কয়েক ঘন্টার পরেও রিপ্লাই আসতো না, বাইরে যাবার জন্য তৈরি হয়ে বসে আছি আমি উনি ফোন করে জানাতেন কাজে আটকে পড়েছেন, আমি কথা বলতে চাইতাম আর উনি ক্লান্তির কারণে ঘুমোতে চাইতেন। তখন আমারো এমন তোমার মত অভিমান হতো খুব। খুব খুব অভিমান। উনি আমাকে একটুও ভালোবাসেন না, আমার কোন গুরুত্বই নেই উনার কাছে ইত্যাদি ভেবে ভেবে ওয়াশরুমে, ছাদের কোনায় বসে কত যে কান্না করেছি। কত শত নেতিবাচক কথা যে চিন্তা করেছি। কেন যে বিয়ে করেছি সেই আপসোসের সীমা থাকতো না।

মুনিরা লাজুক হাসি হেসে বলল, আমারো এমন ভাবনা মনে আসে আপি।

অধরা হাসতে হাসতে বলল, জানি। আমরা মানুষেরা একে অন্যের থেকে যতই আলাদা হই না কেন! কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের ভাবনারা একাকার! যাইহোক,অভিমান আর জেদের বশে অনেক সময় ইচ্ছে করে ইগনোর করতাম তোমাদের ভাইয়াকে। হয়তো বাইরে যাবার কথা বলেছে আমি শরীর খারাপের বাহানা করতাম। মুখ ফুটে কিছু বলার স্বভাব ছিল না আমার। তাই এভাবে অভিমানের প্রকাশ ঘটাতাম। কিন্তু আমি যে অভিমান করে বাইরে যেতে চাচ্ছি না সেটা উনি বুঝতে না পারার কারণে বলতেন, আচ্ছা তাহলে তুমি বিশ্রাম নাও। আমার অভিমান তখন আরো বেড়ে যেত। মনেহতো উনি আমাকে বুঝতেই চেষ্টা করছেন না। যদি করতেন তাহলে আমাকে জোর করতেন। কিন্তু একবারও আমার মনেহতো না যে, আমি না বললে, না বুঝতে দিলে উনি কিভাবে জানবেন আমার মনের মধ্যে কি চলছে?! কারো মনের ভাবনা তো কেউ দেখতে পায় না। এমন একদিন আমি উনাকে ফোন করেছিলাম রিসিভ করে আমাকে কোনকিছু বলার সুযোগ না দিয়েই, একটু পরে তোমাকে ফোন দিচ্ছি বলে উনি লাইন কেটে দিয়েছিলেন। সেদিন আমার প্রচন্ড রাগ হয়েছিল। একটূ পর যখন উনি ফোন দিয়েছিলেন আমি ধরিনি। একটু পর পর ফোন দিয়েই যাচ্ছিলেন। আমিও ফোন না ধরার পণ করে বসেছিলাম। আমার কিছু হয়েছে এই চিন্তায় অস্থির হয়ে উনি কাজ ফেলে বাসায় ছুটে এসে যখন দেখলেন আমি দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছি রেগে গিয়েছিলেন প্রচন্ড। এতদিনের জমিয়ে রাখা ক্ষোভ আমিও চাপা দিয়ে রাখতে না পেরে বিস্ফোরিত হয়েছিলাম।

সেদিন বুঝি অনেক ঝগড়া হয়েছিল আপনার আর ভাইয়ার?

উহু! সেদিন আমরা একে অন্যের তরে ভুল বোঝাবুঝির জানালা রুদ্ধ করে দিয়ে সর্বাবস্থায় একে অপরকে বুঝবো, কখনো বুঝতে না পারলে জিজ্ঞেস করবো, কিন্তু কখনোই ভুল বুঝবো না এই দ্বার খুলে দিয়েছিলাম।

কিভাবে আপি?

তোমার ভাইয়া আমাকে বুঝিয়ে বলেছিলেন কিভাবে অভিমান আমাদের চিন্তা চেতনাকে আত্মকেন্দ্রিক করে দেয়। আমাদের ভাবনারা তখনো ডালপালা মেলে কিন্তু শুধু নিজেকে ঘিরে। অভিমানি মনের জগত হয় ‘আমিময়’। অথচ চিন্তার কেন্দ্রটিকে আমি থেকে একটু ঘুরিয়ে দিলেই সবকিছু অনেক সহজ হয়ে যায়। আচ্ছা চলো কিচেনে যাই আমরা। সাদাতের সবচেয়ে পছন্দের কিছু খাবার রান্না করা শিখিয়ে দেব তোমাকে। রান্না করতে করতে গল্পও করা হয়ে যাবে।

মুনিরা হেসে বলল, জ্বি আপি চলেন।

চলবে…

 

কিশোরী বয়সেই বিয়ে, তালাক অতঃপর আত্মহত্যা


নারী সংবাদ


স্বামী তালাক দেয়ায় মনের দুঃখে আত্মহত্যা করেছে তাসলিমা আক্তার তানিয়া নামে মাত্র পনের বছর বয়সী এক স্ত্রী। ভাগ্যাহত ওই কিশোরীর বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী বুরুঙ্গা গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই গ্রামের ইউনুছ আলীর ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া কন্যা তানিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে দিনাজপুর জেলার কানিতোলা উপজেলার তাওলিয়াপাড়া গ্রামের মাজেদুল ইসলামের বাউন্ডেলে ছেলে ইসমাইল হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় এক বছরকাল প্রেম করার পর অভিভাবকদের অগোচরে বিয়ে করে দুজনই।

বিয়ের ৮ মাসের মাথায় পারিবারিক কলহ বাঁধে। পরে সংবাদ পাঠিয়ে তানিয়ার মাকে দিনাজপুর নিয়ে যাওয়া হয়। গত সোমবার স্বামী ইসমাইল শাশুড়িকে ঘরে আটকে রেখে কিশোরী স্ত্রী তানিয়াকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং তালাক দেয়।

এরপর তানিয়া রাতের বাসেই মায়ের সাথে নালিতাবাড়ীস্থ পিত্রালয়ে চলে আসে এবং মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে বিষপান করে।

স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই মধ্যরাতে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় তানিয়ার বাবা ইউনুছ আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসলাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সুত্র: নয়াদিগন্ত

 

১২ হাজার পিস ইয়াবাসহ নারী আটক


নারী সংবাদ


কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবাসহ লায়লা বেগম (৩২) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সময় তার কাছ থেকে ১২ হাজার পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির নগদ সাড়ে ২৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার সময় উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পূর্ব সাতঘরিয়াপাড়ার নিজ বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার লায়লা টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পূব সাতঘড়িয়া পাড়া এলাকার নূরুল আলমের স্ত্রী।

টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, রাতে তারই নেতৃত্বে একদল পুলিশ হোয়াইক্যং পূব সাতঘড়িয়া পাড়ার চিহ্নত ইয়াবা ব্যবসায়ী নূরুল আলমের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ ১২ হাজার পিস ইয়াবা, নগদ ২৯ লাখ ৫৭ হাজার তিনশ টাকাসহ লায়লাকে আটক করে। ইয়াবা ও নগদ টাকাসহ গ্রেফতার লায়লা বেগম ও বাড়ির মালিক নূরুল আলমকে পলাতক আসামি করে মাদকসহ সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, লায়লা বেগমের স্বামী নুরুল আলম চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার নেতৃত্বে রয়েছে শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট। কৌশল এসেই দীর্ঘদিন মাদক ব্যবসা করে আসছিল। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও মাদক ব্যবসায়ী নুরুল আলম ও তার স্ত্রী লায়লাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
সূত্র: নয়াদিগন্ত।

 

স্তন ক্যানসার : সচেতনতাই যার প্রতিকার – ২য় পর্ব


নুসাইবা ইয়াসমীন


বাংলাদেশে স্তন ক্যানসারের সঠিক কোন পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও বিভিন্ন সুত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিগত পাঁচ বছরে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এলার্মিং হারে। পাশ্চাত্যের স্তন ক্যানসারের তীব্রতা অনেক আগে থেকে থাকলেও আমাদের দেশ তা থেকে ছিল অনেকটাই মুক্ত । বিশেষজ্ঞদের মতে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের খাদ্যাভাস এবং জীবনপদ্ধতির পরিবর্তন এর জন্য দায়ী। বর্তমানে প্রাচ্যের মত আমাদের দেশের নারীদের মধ্যেও জন্মনিয়ন্ত্রণকারী পিল বা পিরিয়ড বন্ধকারী পিল খাওয়ার প্রবনতার ঝুঁকি আরও বেড়ে যাচ্ছে।
তবে আশার ব্যাপার হলো প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ সনাক্ত করা গেলে আপনি মৃত্যু ঝুঁকি থেকে অনেকটাই মুক্ত। প্রয়োজন নিয়মিত স্তনের সেল্ফ পর্যবেক্ষণ করা। কখনও যদি স্তনে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণীয় দিক দেখা যায় তা দেখে বিচলিত হবেন না। শরণাপন্ন হন কোন গাইনোকলজিস্টের কাছে। আপনার ডাক্তার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে কোন অস্বাভাবিকতা লক্ষণ বের করে থাকেন তাহলে আপনাকে কিছু টেস্টের মাধ্যমে ব্যাপারটি নিশ্চিত হতে হবে। টেস্টের রির্পোটে যদি অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া না যায় তবে নিয়মিত চেকআপে থাকুন আর যদি ক্যান্সারের সেল সনাক্ত হয় তবে চলে যান একজন সাইকোলজিস্ট ও একজন সার্জনের কাছে।

ব্রেসট ক্যানসার সনাক্তকরনে যে সকল টেস্ট করা হয়ে থাকে তা হল

১. ব্রেসটে আলট্রা সাউনড: ব্রেসটে কোন ধরনের অস্বাভাবিকতা লক্ষণ দেখা গেলেই। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সাধারনত ত ব্রেসটের কতকগুল টেস্ট করার মাধ্যমে ব্রেসট লাম্বের সাইজ ও ধরন নির্নয় করা যায়।

২। এফ এন এ সি ( ফাইন নিডেল এ্যাসপিরেশন সাইটোলজি): এফ এন এ সির পদ্ধতিতে একটি সুই এর মাধ্যমে ব্রেসট থেকে স্যাম্পল নিয়ে পরীকখা করা হয় স্যাম্পলটি ক্যানসারিয়াস কিনা। এই টেস্টে সুই ব্যবহৃত হলেও এতে কোন ব্যথা অনুভূত হয় না।এ পরীকখাটি সাশ্রয়ী ও রিপোর্ট দ্রুত পাওয়া সম্ভব।

৩. কোর বায়োপসি / ট্রু কাট বায়োপসি: ক্যানসার পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করার জন্য কোর বায়োপসি করা হয়ে থাকে। এ পরীকখাটি সাধারনত লোকাল এনেসথেসিয়া দিয়ে করা হয়। এতে ব্রেসটের খুব সামান্য পরিমান (সাধারনত ২ সে. মি) অংশ কেটে স্যাম্পল নেয়া হয়। এ পরীকখা কিছুটা ব্যয়বহুল। সাধারনত টেস্টের রেজাল্ট পেতে সাত দিনের মত সময় লাগে।

৪. ম্যামগ্রাম: বায়োপসিতে যদি ক্যানসার সনাক্ত হয়ে থাকে তবে ম্যামগ্রামের মাধ্যমে ক্যানসার সেলের বৃদ্ধ পাওয়ায় ও ধরন নির্নয় করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ম্যামগ্রাম প্রাথমিক টেস্ট হিসেবে ক্যানসার সনাক্তকরনে ব্যবহৃত হয়। ম্যামগ্রাম এক্সরের মত এক প্রকার ইস্ত্রিনিং পদ্ধতি। এতে রেডিও একটিভ রে ব্যবহৃত হয় বলে গর্ভবতি মহিলাদের এ টেস্ট না করার পরামর্শ দেয়া হয়।

অনেক সময় ক্যানসার সনাক্তকরণে এমআরআই ও করা হয়ে থাকে।

যদি আপনার বা আপনার পরিবারের কোন সদস্যের ক্যানসার সনাক্ত হয় খুব দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে। মনে রাখবেন ক্যানসার খুব দ্রুত বিস্তার লাভ করে তাই এক দিন বিলম্ব আপনার জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে অনেকখানি।
এখেএে সর্ব প্রথম যে সমস্যায় অামরা সমুখখিন হই তা হল সঠিক তথ্য ও দিকনিদের্শনার অভাব।তাই চিকিত্সা শুরুর পূর্বেই যে বিষয়গুলোর ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারনা থাকার প্রয়োজন তা হলো:

১. ঠিক কি কি ধরণের স্তন ক্যান্সার হতে পারে?

২. ক্যান্সার যদি টিউমারজনিত হয় তাহলে এর সাইজ বর্তমানে কত?

৩. কোথায় বা কোন স্থানে এটা হতে পারে?

৪. স্তন ক্যান্সার কি অন্যান্য লিমপফ নোড এ প্রসারিত হয়েছে কিনা।

৫. ক্যান্সারের স্তর বা স্টেজ কি এবং বর্তমানে কোন স্তর এ অাছে।

৬. চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কি অন্য কোন পরীক্ষার প্রয়োজন অাছে কিনা।

৭. অন্য কোনও ডাক্তার (ফার্টিলিটি, ডেনটিসট,কার্ডিও) অথবা অন্য কোন স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখান দরকার আছে কিনা?

৮. ক্যান্সারের হরমোন রিসেপটর অবস্থা কি? এটার মানে কি? ক্যান্সারের HER2 অবস্থা কী? এটার মানে কি?

৯. কিভাবে এই বিষয়গুলি আমার চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করবে এবং চিকিৎসার খেএ্রে কি কি অপশন অাছে।

১০. ক্যান্সারের স্টেজ এর উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কতটুকু?

১১. আমাদের জিনগত পরীক্ষা সম্পর্কে চিন্তা করা উচিত কি? টেস্টিং এর বিকল্প কি?

১২. কিভাবে আমরা আমাদের প্যাথলজি রিপোর্টের একটি কপি পেতে পারি?

১৩.রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য সর্বমোট কত খরচ লাগতে পারে।
বেসরকারি পর্যায়ে ক্যানসারের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। তাই চিকিৎসা শুরুর আগেই পরিবারের সাথে বসে এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নিয়ে নেয়া জরুরী।

ব্রেসট ক্যানসারের ঝুঁকি ও এর প্রকপ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে।সচেতনতা ও সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসাই পারে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে একটি সুন্দর জীবন।

 

সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে ক্যানসার নিয়ে নতুন ওষুধ আবিষ্কার কলকাতার মেয়ে ফিনাজ খান !


নারী সংবাদ


ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করে কেমােথেরাপির নতুন ওষুধ আবিষ্কার করলেন কলকাতার বেলগাছিয়ার হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে ফিনাজ খান। ২৩ বছরের বাংলার এই কন্যার সাফল্য সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আমেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিষ্টি নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি করার সময় ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করেন তিনি। নিজের গবেষণায় কেমােথেরাপির নতুন ওষুধ আবিস্কার করেন ফিনাজ। তার গবেষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছে লন্ডনের রয়াল সোসাইটি অব কেমিষ্টি। শীঘ্রই ফিনাজের তৈরি কেমোথেরাপির নতুন ওষুধ বাজারে ভালো হবে বলেও জানিয়েছে লন্ডনের ওই সংস্থা। হতদরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারের সন্তানের এই অসামান্য কৃতিত্বে খুশির হওয়া বেলগাছিয়া জুড়ে।

বরাবরই মেধাবী ছাত্রী ফিনাজ খান৷ স্কুল জীবন থেকেই আলাদা কিছু করে দেখানোর স্বপ্ন ছিল তার। বাংলার এই বল্যাশ্রীর আদর্শ মানুষটি হলেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম৷ সপ্তম শ্রোণীতে পড়ার সময় স্কুলে একবার প্রোজেক্টারের মাধ্যমে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির বক্তব্য শুনেছিলেন ফিনাজ৷ তার কথায়, ‘সেই দিনই মনে হয়েছিল, আমিও চেষ্টা করলে কিছু করতে পারি। তখন থেকেই মনে হয়েছিল এমন একটা কিছু করব যেটা মানুষের বা সমাজের কাজে আসবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেন তিনি। স্কুলের পর গুরুদাস কলেজ থেকে কেমিস্ট্রিতে গ্রাজুয়েশন করে আমেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার ডিগ্রীতে ভর্তি হন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিনাজ খানরাই ছিল প্রথম ব্যাচ।

মাস্টার ডিগ্রিতে তার প্রোজেক্টের বিষয় হল ক্যানসার৷ তখনই নতুন কিছু করার জেদ চেপে গেল ফিনাজের মধ্যে। তিনি বলেন,
কেমােথেরাপিতে দু-ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়। এক ধরনের ওষুধ তৎক্ষণাং কাজ শুরু করলেও, আর এক ধরনের ওষুধ কাজ করতে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। তবে তার পার্শ্বপ্ৰতিক্রিয়াও রয়েছে। ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের কমােথেরাপি দিলে শরীরের কােষগুলি মারা যায়। মাথার চুল উঠে যায়। একইসঙ্গে বেশ ব্যয়বহুল চিকিৎসা। ক্যানসার নিয়ে প্রজেক্ট পাওয়ার পর এই জায়গাটা আমাকে ভাবিয়েছিল৷ পার্শ্বপ্ৰতিক্রিয়া ছাড়া স্বল্প খরচে কীভাবে রোগীদের কেমােথেরাপির ওষুধ তৈরি করা যায়, তা নিয়ে শুরু করলাম গবেষণা ৷ সেই গবেষণায় আমার ম্যাডাম সাহায্য করেন। গবেষণা করতে গিয়ে দেখলাম, সেটা সম্ভব। একটি মাত্র ওষুধের মাধ্যমে শরীরের যে অংশে ক্যানসার হয়েছে, সেখানে কমোথেরাপি দেওয়া সম্ভব। তৎক্ষণাৎ কাজ করবে এটি। একইসঙ্গে এই ওষুধের কাজ দীর্ঘস্থায়ী হবে। এরফলে খরচ অনেক কম হবে। এছাড়াও শরীরের কোষণ্ডলি জীবিত থাকবে ৷ এটিই আমার আবিষ্কার৷ লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি অব কেমিষ্টির মতো সংস্থা স্বীকৃতি দেওয়ার আমার পরিশ্রম সফল হয়েছে।”

এখানেই শেষ নয়, বর্তমানে ক্যানসারের টিকাকরণ নিয়েও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন ফিনাজ।

ফিনাজ খানের বাড়িতে পড়াশোনা করার মতো পরিকাঠামাে নেই। নেই চেয়ার টেবিল ৷ বাবা মা ও তিন বোনের সংসার ফিনাজদের৷ বোনেদের মধ্যে তিনিই বড়৷ আহিকি অনটন প্রতি মুহূর্তে কড়া নাড়ছে ঘরে। বাবা ঘুরে ঘুরে সাবান বিক্রি করেন ৷ মা শারীরিক ভাবে ভিষণ অসুস্থ৷ ঠিক ভাবে চলতে পারেন না। অহেরি অভাবে মায়ের চিকিৎসা হচ্ছে না ঠিক ভাবে। এমন দরিদ্র পরিবার থেকে বিশ্বের দরবারে নাম উঠে আসার খুশি ফিনাজের বাবা যা।

বাবা মায়ের কথা আসতেই আবেগ তারিত হয়ে পড়েন ফিনাজ। এত কষ্টের মধ্যেই পড়াশোনা থেমে নেই তিন বোনের। ফিনাজ নিজে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্যান্সার টিকাকরণ নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এড করছেন। দুই বোন, একজন বিএসসি দ্বিতীয়বর্ষ অন্যজন প্ৰথমবর্ষে পড়াশোনা করছে। ফিনাজের বাবা মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন কষ্টের মধ্যে তিন মেয়ের স্বপ্নকে সফল করতে প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছেন৷ তাদের মা শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই তিন মেয়ের জন্য পরিশ্রম করছেন। সংসারের এই পরিস্থিতি দেখে পড়াশোনার মধ্যেই চাকরিতে যোগ দিতে হয়েছে তাকে! বেনিয়াপকুরের একটি বেসরকরি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন তিনি। এখন তার লক্ষ্য, ভালো কোনও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করার ৷ কিন্তু হতদরিদ্ৰ পরিবারের এই মেধাবী ছাত্রীকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি কেউ৷ বাংলার এই কন্যার আর্জি,রাজ্য সরকার যদি তাকে সহযোগিতা করে, তাহলে ভালোভাবে পিএইচডি করতে পারেন৷

উৎস:- টিডিএন বাংলা

 

‘তিতলি’


ডা.কবীর জুয়েল


দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর হীম শীতল হাওয়ায় এই রাজধানী ঢাকার শাহুরে পরিবেশেও রীতিমতো নিম্নচাপের আভাস পাচ্ছিলাম, সাথে মিডিয়া গুলোর আলাপন ও ক্রমশঃ সতর্ক বার্তায় বার বার ‘তিতলি’ নামটি উচ্চারিত হচ্ছিলো, এবারের আসন্ন দূর্যোগটিকে এমন এক মোহনীয় মিষ্টি নামে ডাকা হচ্ছে , মাঝে মাঝে মনে হয়, কোন আকাশপরি বুঝি শান্তি সুখের বারতা নিয়ে উড়িষ্যা হয়ে বাংলার ভূতলে নেমে আসছে,তবে আবহাওয়া বিভাগের পূনঃপূনঃ
ভয়ংকর পূর্বাভাস আমাকে শংকাজনক নষ্টালজিক করে বছর চারেক আগের স্মৃতিতে টেনে নিয়ে গেলো, ‘তিতলি’-রুপী ঝড়ের কবলে পড়ে আমাকে পরিবারসহ টানা কয়েকদিন ‘নারকেল জিঞ্জিরা-য় আটকে থাকতে হয়েছিলো,শহর থেকে আনা দ্বীপের খাবার যা ছিল,তা প্রায় শেষ;সেলফোন গুলো চার্জের অভাবে নিছক খেলনা মোবাইলে পরিণত হলো,পুরো দ্বীপ ঘুরে দেখতে দেখতে মোটেল ও স্থানীয়দের ঘর বাড়ীর অবস্থান মুখস্থ হয়ে গিয়েছিলো,এ কারনে স্থানীয়দের সাথে হৃদ্যতা অনেক বেড়ে যায়,ওদের জীবন জীবিকা ও আচার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে যে বিষয়টি আগুন্তুকদের পীড়া দিচ্ছিলো—তা হলো এ নিম্ন চাপের অবসান কবে হবে,এ ঝড়ো হাওয়া কবে শান্ত সুবাতাস রুপে বইবে?
অধীর আগ্রহ নিয়ে বেড়াতে আশা হয়েছিলো এখানে ,কতো পরিকল্পনা করে ছেঁড়া দ্বীপে সাঝ বেলায় বার-বি-কিউ এর কিউরিসিটি ছিলো,
নিরাপত্তাহীনতা আর অজানা শংকায় সব-ই রাতারাতি এক নৈরাশ্যময় বিভিষিকায় পরিণত হলো ,অনেকে নিজেদের এক মৃত্যুপুরির বাসিন্দা ভাবতে লাগলো,
নিজে সাইকিয়াট্রিস্ট হওয়ায় চোখের সামনে ‘মাস প্যনিক এটাকস’ গুলো ডায়াগনসিস করতে পারছিলাম,প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কাউন্সিলিং করতেও হয়েছে কারন কিছু কিছু দূর্বল চিত্ত মূর্ছা যাবার উপক্রম হলো। আমাদের শশব্যস্ত চলমান বিরামহীন জীবনটাকে তুচ্ছতায় পর্যবশিত করে দিয়ে,মহান স্রষ্টা কদাচিৎ বুঝিয়ে দেন, তার সৃষ্টিকূল কতোখানি অসহায় ! তিনি স্পষ্ট করে তোলেন তার অসীম ক্ষমতার কিয়দংশ মাত্র যা দেখে সম্বিৎ ফিরে পায় অনেকে,,, জীবনে জুম্মার নামাজটিও পড়েননি,ওরাও দেখলাম নামাজী হয়ে উঠলো। কয়েকজন তথাকথিত সেলিব্রেটিও ছিল,প্রটোকল আর অহমিকা ভেদ করে সবাই কেবল এক আলোচনায় মনোনিবেশ করলো; কবে টেকনাফের উদ্দেশ্যে জাহাজ ছাড়বে?আদৌ আমরা এ যাত্রায় টেকনাফ পর্যন্ত পৌঁছতে পারবো কিনা? না পারলে আমাদের কি হবে? এ দ্বীপেই কি সলীল সমাধী???
কিছু কিছু ধনীর দুলাল হেলিকপ্টার পাঠাতে অনুরোধ করছিলো,কিন্তু আবহাওয়া এতোটাই প্রতিকূল যে বেশ কয়েকদিন ঢাকা থেকে কোন সিগনাল-ই পাওয়া যায়নি। তবে দ্বীপবাসীর মাঝে আমি বিন্দুমাত্র দ্বীধা,
ভয়, আশংকা দেখিনি, স্থানীয় ভাষায় বলছে ‘আল্লাহু-ই রক্ষা করবে’; ৬৫ বছর ধরে আমাদের পূর্বপুরুষরা থাকে, কোনদিন আমাদের ক্ষতি হয়নি,অদ্ভুত রকমের আত্মবিশবাস,নি:সন্দেহে এতে প্রঘাঢ় স্রষ্টা ভক্তি
রয়েছে, আমি সেই মানুষগুলোকে নিয়ে এসে আমাদের শাহুরে ননীর পুতুলগুলোকে অভয় দিতাম,এদিকে
দ্বীপের সব গুলো হোটেল মোটেল সকল পর্যটকদের
বিল ৭৫% কমিয়ে দিলো, এমন কি জেটিমুখি গরীব ডাব ওয়ালারা ডাব খাওয়ার পর টাকা আছে কিনা জিজ্ঞেস করছে,না থাকলে দিতে হবেনা, মনে মনে ভাবছিলাম এ জন্যই এদের প্রতি করুণাময়ের অবারিত রহমত অব্যাহত থাকে,এরা এখনো মওজুদ্দারী কিংবা সিন্ডিকেটেড ট্রেডিং বোঝেনা, বিপদে ফেলে লোক ঠকানো তো দূরের কথা, তাই আমদের মতো অলীক ভীতি( Phobia/ Panic /Stress) তাদের কক্ষনোই চেপে ধরেনা,আমি জানি আমার টেক্সবুকের ‘Panic Attack’ এদের জন্য মোটেও প্রযোজ্য হবেনা,তবে Psychology -তে পড়া ‘Altruistic Behaviour’ -এর সাথে ওদের আচরণ একেবারেই মিলে যাচ্ছে,ওদের উছিলায় হলেও এই মানুষ গুলো বেঁচে যাবে সে আস্থা আমার পুরোই ছিলো,পাঠক সে যাত্রায় আমরা রক্ষা পেয়েছিলাম তবে শেষ সময়ে দ্বীপে আর খারার ছিলোনা।
যতোটুকু মনে পড়ে কোন এক উপন্যাসে-র নায়িকা ছিলো ‘তিতলি’,এক জনপ্রিয় ধারাবাহিকের একটি চরিএের নাম ‘তিতলি ভাইয়া’ ,আমার পরিচিত কয়েকজন মেয়ের নাম-ও তিতলি,ওরা সবাই অত্যন্ত উদারমনা, আর পেশাগত জীবনে তিতলি নামের প্রতিটি রোগী-ই বেশ ভদ্র হয়ে থাকে, অথচ হঠাৎ ক দিন ধরে
তিতলি’ নিয়ে যে ভীতি ছড়াচ্ছে তা নামটিকে তেতো করে তুলেছে,
ইতিমধ্যেই ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ,ওডিসাসহ আশপাশে ডজনখানেক প্রানহানী ঘটিয়ে জন জীবনের যথেষ্ট ক্ষতিসাধন করে এই তিতলি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে,উল্লেখ্য তিতলির ভয়ে পটুয়াখালী ও বরগুনা-র সাগর সংলগ্ন মানুষগুলোও ঝড়াক্রান্ত তিতির পাখির মতো আশ্রয় খুঁজছে , প্রাকৃতিক দূর্যোগ এমনি ভয়াবহ
হয়ে থাকে, মূহুর্তে-ই সব লন্ডভন্ড,তবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকলে মোকাবিলা সহজ হয়ে যায়। বরগুনাস্থ বামনা থানার বিষখালী নদীটি এ সময় ভয়ানক রুপ পরিগ্রহ করে, বামনার ডেউয়া(এক ধরনের ফল)তলা সহ ছোট্ট শহরটি পানিতে তলিয়ে যায়,নদী তীরবর্তী প্রান্তিক মানুষ গুলো এ সবে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, তবে কোমল মনা অনেকেই সিডর,আইলা ইত্যাদির ভয়াল ছোবল আজো ভূলতে পারেনা। ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও বি,সি,এস -এর সিরিয়ালে প্রথম দিকে থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারনে ২০০১-এ আমার প্রথম পদায়ন হয়েছিল এই বামনায়,তাই আমি খুব কাছ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের এই মানুষগুলোকে প্রত্যক্ষ করেছি,অন্য যে কোন দেশের নাগরিকদের চেয়ে আমাদের দেশের মানুষগুলোর্প্রাকৃতিক দূর্যোগের চাপ প্রক্ষেপণের ক্ষমতা অনেক অনেক বেশী, মধ্যপ্রাচ্যে মানসিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে থাকাকালীন সময়ে সামান্য মরুঝড়( Desert Storm)-এর কিছু ধূলিক্ণায় আরবদের নেত্রে রাজ্যের ত্রাস & ভীতি দেখতে পেতাম,অনেক আরবকে ভর্তি রেখে ঔষধ ও কাউন্সিলিং করতে হতো,আমাদের ঝড় ঝঞ্জাক্রান্ত মানুষগুলোর কাছে এ ধরনের ধুলিমাখা ঝড় নস্যি মাত্র।
আশা করি আমাদের দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ‘তিতলি’ নামীয় নিম্নচাপটি আমাদের নাটক, সিনেমার নায়িকাদের মতোই নরম গোছের একটি দমকা হাওয়া হবে,যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকায় প্রাণঘাতি রুপ নেবেনা।আমাদের সমাজ ও ব্যক্তি জীবনেও তিতলি-র প্রভাব পড়তে শুরু করেছে,পরিশেষে একটি আবহাওয়া সংবাদ দিয়ে লেখাটা শেষ করতে চাই,আজ এক রোগীনী অত্যুৎসাহে আমাকে জানালো সে তার সদ্যোজাত শিশু কন্যার নাম রেখেছে ‘তিতলি’, আমিও অনুসন্ধিৎসু হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন?
বললো “আমি চাই আমার মাইয়া ঝড়ের লাহান শক্তিশালী হউক যাতে জামাইরে হারা জীবন ওর কথায় উঠ বস করাইবার পারে।”
তিতলি নামটি নিয়ে আমার মাঝে যে সুন্দর স্বচ্ছ
ধারণা বাসা বেধেঁছিল, রোগীনী-র কথায় তা মূহুর্তেই কুর্পুরের মতো উবে গেলো।

 

ডা. এম এস কবীর জুয়েল
এমবিবিএস, বিসিএস, এম.ফিল(নিউরো-সাইকিয়াট্রি), ডক্টর অফ মেডিসিন(এম.ডি) মনোরোগ
সৌদি বিশেষায়ীত স্বাস্থ্য কমিশন সার্টিফাইড ইন সাইকিয়াট্রি এন্ড সাইকোথেরাপী
ভূতপূর্ব মনোরোগ ও মাদকাসক্তি বিশেষজ্ঞ, সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল, আল জউফ, সৌদি আরব
ভূতপূর্ব সহযোগী অধ্যাপক
এশিয়ান ইনষ্টিটিউট অফ মেডিসিন, সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি কেদাহ্, মালয়েশিয়া
ইউনিট প্রধান, সাইকোথেরাপি ও কাউন্সিলিং ইউনিট, মনোরোগ বিভাগ
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল

 

উত্তরখানে গ্যাসে দগ্ধ দম্পতির মৃত্যু


নারী সংবাদ


রাজধানীর উত্তরখানে গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে লাগা আগুনে দগ্ধ আটজনের মধ্যে এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন আজিজুল (২৭) ও তার স্ত্রী মোসলেমা (১৮)। গতকাল সকাল সোয়া ১০টায় আজিজুল ও বিকেল ৫টায় মোসলেমা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। গতকাল শনিবার ভোর ৪টায় উত্তরখান ব্যাপারীপাড়া হেলাল মার্কেটের পাশে ১১০/এ নম্বর বাড়ির নিচতলায় গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে লাগা আগুনে একই পরিবারের আটজন দগ্ধ হন। নিহত দম্পতির পরিবারের অভিযোগ, গ্যাসলাইন লিকেজ থাকা সত্ত্বেও ঠিক করেননি বাড়িওয়ালা। দগ্ধরা সবাই আত্মীয়স্বজন।
এ ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা ও আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছেন ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যালে আহতদের দেখতে এসে স্বজনদের এ সহায়তার টাকা বুঝিয়ে দেন।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডা: পার্থ শংকর পাল বলেন, আগুনে আজিজুলের শরীরের ৯৯ শতাংশ এবং তার স্ত্রী মোসলেমার শরীরের ৯৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি পাঁচজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাদের মধ্যে সুফিয়ার (৫০) শরীরের ৯৯ শতাংশ, তার মেয়ে পূর্ণিমার (৩৫) ৮০ শতাংশ, পূর্ণিমার ছেলে সাগরের (১২) ৬৬ শতাংশ, ডাবলু মোল্লার (৩৩) ৬৫ শতাংশ এবং তার ছেলে সৌরভের (৫) শরীরের ১২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
এ ছাড়া শিশু সৌরভের মা আঞ্জুয়ারা বেগমের (২৫) শরীরের ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তার মতে, আগুন খুব দ্রুত সবার গায়ে ধরে গিয়ে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। শিশু সৌরভ ময়নারটেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণী এবং সাগর উত্তরা হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। আগুনে প্রত্যেকের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। তারা অধিকাংশই গার্মেন্ট শ্রমিক। তাদের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়ার রামকানায়।
চিকিৎসাধীন আঞ্জুয়ারা বেগম জানান, গ্যাসলাইন থেকে দুই সপ্তাহ ধরে গন্ধ বের হচ্ছিল। বাড়িওয়ালাকে গ্যাসের গন্ধ পাওয়ার বিষয়টি বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেননি। শুক্রবার রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। ভোরে তাদের কেউ একজন চুলার সুইচ দিতেই আগুন ধরে যায়। তার দাবি, গ্যাসলাইন লিকেজ থাকায় সেখান থেকে গ্যাস বের হয়ে পুরো রুমে ছড়িয়ে পড়ে। চুলার সুইচ দিতেই আগুন ধরে যায়।
বাড়িওয়ালা মেহেদি হাসান বলেন, আগুনের সময় তিনি দ্বিতীয়তলায় ছিলেন। তাই কিভাবে আগুন লেগেছে তা তিনি নিশ্চিত নন। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর তিনি চুলার সুইচ অন দেখতে পান। এতে তার ধারণা, রাতে সুইচ অফ না করাতে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
উত্তরা ফায়ার অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডিউটি অফিসার কামরুল হাসান জানান, ভোরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে দগ্ধ আটজনকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করে। গ্যাসের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। রান্নার জন্য দিয়াশলাই ধরার সাথে সাথে আগুন ধরে যায় বলে জানতে পেরেছি।
উত্তরখান থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, অসাবধানতার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার ধারণা, রাতে বাড়িটির চুলায় গ্যাস ছিল না। অসতর্ক অবস্থায় চুলার সুইচ বন্ধ না করেই তারা ঘুমিয়ে পড়েন। চুলায় গ্যাস আসার পর দরজা জানালা বন্ধ থাকায় গ্যাস বের হতে পারেনি। ভোরে রান্না করতে উঠে আগুন জ্বালানো মাত্র চারপাশে আগুন ধরে সবাই দগ্ধ হয়েছেন।
সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

দুই স্কুলছাত্রীসহ ৪ জন নিহত


নারী সংবাদ


দৌলতদিয়া, হবিগঞ্জ ও বগুড়ার শেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্কুলছাত্রীসহ চারজন নিহত ও কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা জানান, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় নবম শ্রেণীর দুই ছাত্রী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো দৌলতদিয়া ৮ নম্বর ওয়ার্ড যদু ফকিরপাড়ার আ: ছালাম প্রামাণিকের মেয়ে চাঁদনী আক্তার (১৫) ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড ওমর আলী মোল্লাপাড়ার জামাল মোল্লার মেয়ে কেয়া আক্তার (১৫)। তারা দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের ছাত্রী ছিল। বেলা পৌনে ২টায় সড়কসংলগ্ন মডেল হাইস্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত চাঁদনীর ভাই ফরিদুল ইসলাম জানায়, চাঁদনী ও কেয়া একই অটোরিকশায় বাড়ি থেকে পরীক্ষা দেয়ার জন্য স্কুলের সামনে নেমে সড়ক পার হচ্ছিল। এমন সময় ঢাকার দিক থেকে আসা খুলনাগামী গোল্ডেন লাইন পরিহনের একটি দ্রুতগতির বাস তাদের পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে তারা গুরুতর আহত হয়। দ্রুত তাদের গোয়ালন্দ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ দিকে সড়ক দুর্ঘনায় দুই ছাত্রী নিহত হওয়ার খবর পেয়ে উত্তেজিত হয়ে ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসী প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় পুলিশের গাড়িতেও উত্তেজিত জনতা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। মহাসড়কে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার যানবাহনের সিরিয়ালে পাঁচ শতাধিক গাড়ি আটকা পড়ে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবলে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। গুরুতর আহত ১০ জনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে পৃথক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া বাজার থেকে একটি ইজিবাইক কালারডোবা এলাকায় পৌঁছলে হবিগঞ্জ থেকে বানিয়াচংগামী একটি পিকআপ সেটাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে সন্ধ্যা রানী সরকার (৫০) নিহত হন। সন্ধ্যা রানী বানিয়াচং উপজেলা মক্রমপুর ইউনিয়নের নতুল্লারপুর গ্রামের মৃত প্রভু সরকারের স্ত্রী।
এ ঘটনায় ইজিবাইকের আরো পাঁচ যাত্রী আহত হন।
অপর দিকে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবলের ডুবাঐ বাজারে এনা পরিবহনের একটি বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠান। আহতদের মধ্যে কানন (২৫), হৃদয় মিয়া (১৮), রহিদুল ইসলাম (১৩), কামরুর হাসান (২৫), রাইছুল ইসলাম (২৪), জুনায়েদ (২৮) ও সাদিক হোসেনকে (৫০) হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের শেরপুর পৌর শহরের হাজীপুর এলাকায় গত শুক্রবার রাতে দুই কোচের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক আশিকুল আলম আকাশ (৩৫) নিহত এবং ১৫ যাত্রী আহত হয়েছেন।
জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রংপুরগামী যাত্রীবাহী কোচ এনা পরিবহন (ঢাকা-মে-ব-১৫-৩৯১৬) শেরপুর পৌরশহরের হাজীপুর এলাকায় গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি যাত্রীবাহী কোচ মা-মণিকা পরিবহনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে এনা পরিবহন (ঢাকা-মে-ব-১১-১৬৮৭) গাড়িটি মহাসড়কের পশ্চিম পাশে উল্টে যায়। এ ঘটনায় চালক আশিকুল আলম আকাশসহ ১৬ জন যাত্রী অহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই শেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মী ও পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে আশিকুল আলম আকাশ মারা যান। নিহত কোচচালক আকাশ বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার করমবাড়িয়া গ্রামের টুলু মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেনÑ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর আঞ্জুয়ারা বেগম (৩৫), সুরাইয়া খাতুন (১০), রংপুর সদরের ইমন হাসান (২৮), বিজয় কুমার (২৪), রায়হান ইসলাম (৪০), সেকেন্দার আলী (৪৪), মামনুর রশীদ (২২), গাইবান্ধার আল মামুন (৪০), বিনদি সরকার (৩৪), রংপুরের গঙ্গাচড়ার ফরহাদ হোসেন (৩৩), মিঠাপুকুরের রবিউল (২৯), কুড়িগ্রামের রাজারহাটের শামীম হোসেন (২২), উলিপুরের মাজেদুল ইসলাম (১৮), অজ্ঞাত মহিলা (৩০) ও অজ্ঞাত পুরুষ (১৮)।

 

মায়া


 রায়হান আতাহার


১.
পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করছেন হাসান সাহেব৷ বিয়েও করেছেন৷ তার পুরো নাম জাহিদ হাসান। চাকরিতে ঢোকার আগে সবাই তাকে ‘জাহিদ’ নামে চিনতো। এখন অফিসের সবার মুখে ‘হাসান সাহেব’ শুনতে শুনতে যখন বাসায় বাবা-মা-সহধর্মিণী ‘জাহিদ’ নামে ডাকে তখন তার নিজের কাছেই অবাক লাগে। প্রতি বছর ঈদের মৌসুমে সবাইকে তিনি উপহার দিয়ে থাকেন। তিনি নিজেও উপহার পান। তাকে পেনশনের টাকা থেকে উপহার দেন তার বাবা। উপহার নিতে লজ্জা লাগে হাসান সাহেবের। বলেন, “বাবা, কী দরকার ছিলো? শুধু শুধু টাকা খরচ করলে।” উত্তরে বাবা বলেন, “ও তুই বুঝবি না।”

২.
হাসান সাহেবের বাবা-মা গত হয়েছেন বছর খানেক হল। এখন তিনি নিজের একমাত্র মেয়েকেই ‘মা’ বলে ডাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে মেয়ে বাসায় থাকতে পারে না। যখন ছুটিতে বাসায় আসে তখন এটা-ওটা কিনে মেয়েকে খাওয়াতে পছন্দ করেন মিস্টার এন্ড মিসেস হাসান। মেয়ে খেতে পছন্দ করলেও বাবা-মায়ের এরকম ভালোবাসা পেয়ে সে লজ্জা পায়৷ সে ভাবে- হলে তো সে না খেয়ে থাকে না। টিউশনি করে টুকটাক আয়-রোজগারও করে। বাবা-মা কী মনে করে সে না খেয়ে থাকে? এগুলো নিয়ে কিছু বললে বাবা-মা উত্তর দেন, “ও তুই বুঝবি না।”

সারমর্মঃ ছেলে-মেয়ে যত বড়ই হোক, বাবা-মার কাছে সন্তান কখনো বড় হয় না। সন্তান উপার্জন করলেও বাবা-মা খুশি হয়ে যা দেন, তা গ্রহণ করা উচিত। প্রত্যেক বাবা-মা চান সন্তানকে আগলে রাখতে। সময়ের প্রয়োজনে হয়তো তা সব সময় সম্ভব হয় না। কিন্তু সুযোগ পেলে বাবা-মায়ের দেয়া উপহারগুলো গ্রহণ করতে লজ্জা পাওয়া উচিত নয়। সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর সকল বাবা-মাকে ভালো রাখুন।

 

যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী ও শাশুড়ি আটক


নারী সংবাদ


খুলনার ডুমুরিয়ার পল্লীতে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর গলায় রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে আজ শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার গোনালী গ্রামে। পুলিশ এ ঘটনায় তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার নোয়াকাঠি গ্রামের হালিম বরকন্দাজের ছেলে রসুল বরকন্দাজের (২১) সাথে একই উপজেলার গোনালী গ্রামের আমজাদ শেখের মেয়ে ইয়াছমিন বেগমের (১৯) প্রায় এক বছর পূর্বে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে সাংসারিক অশান্তি চলতে থাকে এবং স্ত্রী ইয়াছমিন তার বাপের বাড়িতে থাকে। গত ৫ অক্টোবর রসুল তার স্ত্রীকে আনার জন্য শ্বশুরবাড়িতে যায়। সেখানে ৬ দিন থাকার পর শুক্রবার সকালে থানা পুলিশ রসুলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে নিহতের বাবা হালিম জানান, ৫ তারিখে আমার বেয়াই ফোন করে তার মেয়েকে নিয়ে আসার জন্য ছেলেকে যেতে বলে। কথা অনুযায়ী রসুল তার শ্বশুরবাড়ি যায়। হঠাৎ শুক্রবার গভীর রাতে ফোন করে আমাদেরকে জানানো হয় সে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। আমরা গিয়ে দেখি রসুলের গলায় ওড়না ও গমছা পেচানো অবস্থায় ঝুলে আছে এবং তার পা মাটির সঙ্গে লাগানো আর সারা শরীরে ধুলা বালি মাখা। আমি নিশ্চিত ওরা আমার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে।

ঘটনার তদন্তকারি অফিসার এস আই অনিষ মন্ডল জানান, লাশটি যেভাবে ঝুলে ছিল তাতে মনে হয় না সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে। এছাড়া ব্লেড দিয়ে তার হাতের কজ্বি ও পায়ের গোড়ালির ওপরে কাটা চিহ্ন দেখা গেছে। এ ঘটনায় নিহত গোলম রসুলের মা আকলিমা বেগম বাদি হয়ে পুত্রবধু ইয়াসমিন বেগম, বেয়াই আমজাদ শেখ, ও বিয়াইন সুফিয়া বেগমের নাম উল্লেখ করে ডুমুরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ইয়াছমিন ও তার শাশুড়ি সুফিয়া বেগমকে (৫৪) আটক করা হয়েছে এবং লাশের সুরোতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।

সূত্র: নয়াদিগন্ত

 

দাম্পত্য জীবনের কিছু কথা

দাম্পত্য


“দুনিয়ার সব থেকে কঠিন কাজ হচ্ছে নিজেকে সংশোধন করা এবং
সব থেকে সহজ কাজ হচ্ছে অন্যের সমালোচনা করা”।
—— আমীরুল মু’মিনীন আলী (রা)

দাম্পত্য জীবন কি?

দাম্পত্য জীবনের বিষয়টি হচ্ছে পৃথক ব্যক্তিদের মধ্যে একটি ইউনিয়ন। এটি একটি চুক্তি মত। বিয়ের ফলে দুইজন ব্যক্তির মধ্যে একটি সামাজিক ও আইনি চুক্তি হয়ে থাকে, যেখানে অর্থনৈতিক ভাবে এবং মানসিক ভাবে একে অপরের জীবনে সম্পৃক্ত হয়।

ঐতিহ্যগতভাবে, বিয়েকে নৈতিকতা ও সভ্যতার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হিসেবে দেখা হয়।

দাম্পত্যজীবনে কিছু মৌলিক টিপস:

উৎফুল্ল আচরণ

আপনার উৎফুল্ল আচরণ হতে পারে আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর জন্য খুব দামি একটি উপহার।

অভিযোগ করা থেকে বিরত

কাউকে একইসাথে ভালোবাসা এবং ঘৃণা করা আপনার জন্য অসম্ভব নয়। আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর ব্যাপারে বন্ধুদের কাছে অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া আপনার দাম্পত্য সম্পর্কে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

সময় দিন

সুন্দর সম্পর্ক নিজে থেকেই তৈরি হয় না, সেটি তৈরি করতে হয়। তাই আপনাকেও সেটি তৈরি করতে হবে। কর্মক্ষেত্রেই যদি আপনার সবটুকু কর্মক্ষমতা নিঃশেষ করে ফেলেন, তাহলে আপনার দাম্পত্য জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চাপা ক্ষোভ বর্জন করুন

সাময়িক ঝগড়া বিবাদের কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় না। মনের মধ্যে জমে থাকা চাপা ক্ষোভ আর যন্ত্রণাই দাম্পত্য জীবনকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়। দাম্পত্য জীবনে তা-ই নিয়ম যা দুইজনের পছন্দের ভিত্তিতে ঘটে।

নিজেকে যাচাই করুন

“জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী হিসেবে আমি সর্বোত্তম”-এমনটি মনে হওয়া অতি আত্মবিশ্বাসের লক্ষণ। এমনটি মনে হলে নিজেকে যাচাই করুন। সংসারের ক্রমাগত আর্থিক সচ্ছলতা অর্থ এই নয় যে, দাম্পত্য জীবনও সুখের মধ্য দিয়ে কাটছে।

পরিশেষে বলা যায় যে, দাম্পত্য সম্পর্ক, “কী পেলাম?” –এর হিসেবে মেলানোর জন্য নয়। বরং সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে “কী দিতে পেরেছি,” তা-ই দাম্পত্য সম্পর্কের মূলকথা।

 

নীলফামারীতে ট্রাকের চাকায় প্রাণ গেলো মা-মেয়ের


নারী সংবাদ


নীলফামারীর ডোমারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মা- মেয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। বুধবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার ভাটিয়াপাড়া নামক স্থানে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে। চালকসহ ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হয়েছে বলে জানান ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোকছেদ আলী ব্যাপারী।

নিহতরা হলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মোড় গুচ্ছগ্রামের রুবেল ইসলামের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩০) ও তার পাঁচ বছরের শিশু মেয়ে রুবিনা আক্তার।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, রাত নয়টার দিকে সোনারায় ইউনিয়নস্থ বাবার বাড়ি থেকে বাবা হিমানুর রহমানের রিক্সাভ্যানে চড়ে নাজমা বেগম ও তার মেয়ে রুবিনাকে নিয়ে নিজ বাড়ি যাচ্ছিলেন। এসময় সৈয়দপুর পৌর এলাকার আন্ধারুরমোড় সড়কের ভাটিয়াপাড়া নামক স্থানে একটি মালবাহি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-৩২১১) তাদের রিক্সাভ্যানে ধাক্কায় দেয়।

এতে মা নাজমা বেগম ও তার মেয়ে রুবিনা আক্তার রিক্সাভ্যান থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনা স্থলেই নিহত হন। এসময় নাজমার বেগমের বাবা হিমানুরকে (৫৫) গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান এলাকাবাসী।

এসময় এলাকাবাসী ঘাতক চালক ট্রাক চালকসহ ট্রাকটি আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারসহ ট্রাক ও চালক মো. ইসলামকে (৫৫) আটক করে থানায় নেয়া হয়। সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

সালেহার শূন্যতা


ফাতিমা খান


সালেহার সাথে আমার অনেকদিন পর দেখা, প্রায় ২ বছর। পরিচয় হয়েছিল আমার ডেন্টাল অফিসেই। স্বামীর দাঁতের চিকিৎসার জন্য প্রায়ই আসত এই দম্পতি। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সালেহার সাথে।

তায়েফের মেয়ে সালেহা।
হাসতে হাসতেই একদিন বলছিল, “তায়েফের মানুষ আমাদের নবীজীর সাথে উগ্র আচরণ করেছিল বলেই ভেব না আমরা তায়েফবাসীরা উগ্র, অর্বাচীন। আমাদের মধ্যে ভাল মানুষগুলো কিন্তু সাহাবীদের মতই ভাল। তুমি একবার এসো আমাদের শহরে। পাহাড়ের উপরের ছোট্ট শহরের মানুষ আমরা, যেখানে হাত বাড়িয়েই তুলা তুলা মেঘ ছুঁতে পারা যায়। শীতে কুয়াশা পড়ে। সোনালী ধূসর রঙ এর বালুগুলো দিগন্ত অবধি পাটি বিছিয়ে দিলেও সবুজের মায়া ম্লান হয়না একদম। পাহাড়গুলো সবুজে ঢাকা , মাঝে মাঝে আবার পাহাড়ি ঝর্ণা । স্বাধীন বানর দেখতে হলে এখানে আসতেই হবে তোমাকে, গাছে গাছে লাফিয়ে বেড়াতে ওদের নেই মানা। পাহাড়ের আড়ালে সূর্যোদয় দেখেছ কখনো? ঝমঝম বৃষ্টির পর রংধনু? এখানে দেখবে! এসো কিন্তু একবার। আমার দাদুর খেজুর বাগান আছে, মাইলের পর মাইল। তোমাকে নিয়ে খুব বেড়াব।”

ওখানকার আর বাকী মানুষগুলো কেমন জানিনা, কিন্তু ‘সালেহা’ হয়ত লাখে একজনই পাওয়া যাবে। সদালাপী, হাসিমুখ আর আন্তরিকতার জন্যই ওর কথা মনে করেছি বেশ কয়েকবার। জেদ্দা থেকে ওরা অন্য শহরে পোস্টিং হয়ে চলে যাওয়ার পর অনেকদিন ওর সাথে দেখা হয়নি।

আজ সালেহাকে দেখে আমি চিনতেই পারলাম না। শুকনো ফুলের মতই রিক্ত হয়ে গেছে একদম। ওর স্বামী মারা গিয়েছে আজ ৪ মাস ১৬ দিন। একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হলেও মানসিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিলেন ভদ্রলোক। Bipolar disorder এর জন্য মুড ফ্ল্যাকচুয়েশন হত খুব। আমি নিজে দেখেছি কত যত্ন করে সামলে নিত সে স্বামীকে। মানুষটার প্রচন্ড রোষের মুখেও ওর কষ্টচাপা একটা হাসিমুখ দেখতাম। নিখাদ ভালবাসা না হলে এমন মানুষের সাথে সংসার করা দুঃসাধ্যই বটে!

এত যত্ন, এত ভালবাসা ফেলে রেখে একদিন এই মানুষটা হাঠাতই ঘুমের মধ্যে চলে যাবে, সালেহা একটুও ভাবতে পারেনি।

সালেহা আমার সামনে বসে কাঁদছে, অঝোরে কাঁদছে।। কী গভীর সে কষ্ট, কী অসহ্য তার যন্ত্রণা! আমার ভেতরটা কাঁদছে, কি বলব বুঝতে পারছিনা। ওর অন্তরের কষ্ট মাপার কোন যন্ত্র যে আমার কাছে নেই! ওর শূন্যতা পূরণের রসদ হয়ত পুরো ধরণীতেই নেই!

 

যৌতুকের জন্য বাটখারা দিয়ে পিটিয়ে আহত


নারী সংবাদ


রূপগঞ্জের বরাব গ্রামে সালমা আক্তার নামে এক গৃহবধূকে গতকাল মঙ্গলবার যৌতুকের জন্য লোহার বাটখারা দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে তার মাদকাসক্ত স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ।

জানা যায়, উপজেলার পবনকুল গ্রামের মুসলিম মিয়ার মেয়ে সালমা আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার বরাব এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মোশারফ হোসেনের ২০১১ সালে বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে ্‌এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই মোশারফ হোসেন, তার মা হালিমা বেগম ও তার বোন ইয়াসমিন বেগম যৌতুকের জন্য সালমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে বরপক্ষের দাবি অনুযায়ী দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর পরও মোশারফ হোসেন নেশার টাকার জন্য বিভিন্ন অজুহাতে সালমার বাবাকে আরও দুই লাখ টাকা দিতে বাধ্য করে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে বিদেশ যাওয়ার জন্য আরও তিন লাখ টাকা দাবি করলে তাকে ৯০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বাকি টাকার জন্য গতকাল মঙ্গলবার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ মিলে লোহার বাটখারা দিয়ে তার মাথা থেঁতলে দেয়। পরে স্থানীয়রা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় সালমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের ব্যাপারে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুত্র: সমকাল

 

‘প্রেগনেন্সি’


মারুফ রায়হান খান


‘প্রেগনেন্সি’ বিষয়টা আমার কাছে মিরাকিউলাস লাগে। একটা দেহে দুটো প্রাণ। একসাথে নির্ভর করছে দুটো সত্ত্বার ভালো থাকা-মন্দ থাকা, সুস্থতা-অসুস্থতা–মায়ের সুস্থতার উপর নির্ভর করে সন্তানের বাঁচা-মরা। প্রেগনেন্সিতে স্বাভাবিক অবস্থা থেকে হরমোনের বেশ তারতম্য ঘটে, শারীরিক গঠনের কিছু পরিবর্তন হয়–তাই মায়ের কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা নতুন করে দেখা দেয় বা বেড়ে যায়। দেখা যায় যে, ডেলিভারি হয়ে যাবার পরপর সে সমস্যাগুলোও চলে যায়। এগুলোর বেশিরভাগই ফিজিওলজিক্যাল বা স্বাভাবিক। প্রেগনেন্সি ইস্যুটা যেহেতু সবার কাছে খুব সেন্সিটিভ তাই অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এসব সমস্যায়। আসলে খুব বেশি আতঙ্কগ্রস্ত হবার কিছু নেই। জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন নিয়ে এলে, কিছু পরামর্শ মেনে চললে যার অধিকাংশই প্রতিকার বা প্রতিরোধ করা যায়। একেবারেই কমন কিছু সমস্যার সমাধান নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি।

১. বমিবমি ভাব এবং বমি :

দেখা যায় যে প্রতি ১০০ জন গর্ভবতীর প্রায় ৭৫ জনেরই এ সমস্যাটা থাকে। সাধারণত সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই এ সমস্যা হয়।
-সকালে ঘুম থেকে উঠেই, বলা হয়ে থাকে বিছানাতেই শুকনো খাবার যেমন : টোস্ট, বিস্কিট, মুড়ি ইত্যাদি খেতে।
-প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে বলা হয়।
-অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হয়।
-একবারে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান।

২. কোমর ব্যথা :

প্রতি ১০০ জনের প্রায় ৫০ জনেরই এ সমস্যা দেখা দেয়।
-অনেক বেশি ওজন বাড়িয়ে ফেলা পরিহার করতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে, মোট দশ ঘণ্টা।
-পা কিছুটা উঁচুতে রেখে যেমন : পায়ের নিচে একটা বা দুটো বালিশ রেখে বিশ্রাম নিন।
-শক্ত বিছানায় শোয়া ভালো।
-উঁচু হিলযুক্ত জুতো পরা যাবে না।
– কুঁজো হয়ে বসা বা কোনো জিনিস নিচ থেকে তোলা পরিহার করা শ্রেয়।
– দাঁড়ানোর সময় সোজা হয়ে দাঁড়াবেন।
– ভারী এবং পরিশ্রমের কাজ করবেন না।
– কোমরে ম্যাসাজ করতে পারেন।
– গরম বা ঠাণ্ডা কিছু দিয়ে স্যাঁক দিতে পারেন।

৩. কোষ্ঠকাঠিন্য :

-প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে।
– আঁশজাতীয় খাবার যেমন : শাকসবজি এবং তাজা ফলমূল বেশি করে খেতে হবে।
-ইসপগুলের ভূষি খাওয়া যেতে পারে।
– চাপ এলে টয়লেটে যেতে বিলম্ব করা যাবে না।
– কিছুটা হাঁটাচলার অভ্যেস করা ভালো, দিনে ২০-৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৩ দিন হাঁটা যেতে পারে।

৪. পায়ে খিল ধরা :

-পায়ে ম্যাসাজ করতে হবে।
– গরম স্যাঁক দিলে উপকার পাওয়া যায়।
-চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সেবন করা যেতে পারে।

৫. পায়ে পানি আসা/ পা ফোলা :

-বিশ্রাম নিন এবং পা দুটো একটা বা দুটো বালিশের ওপর রাখুন।
– একটানা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবেন না।
-আরামদায়ক জুতো পরুন।
– বেশি করে পানি পান করুন।

৬. বুক জ্বালাপোড়া, এসিডিটি :

-একসাথে অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলা পরিহার করতে হবে।
– খাবার পরপরই বিছানায় শুতে চলে যাওয়া যাবে না।
– বিছানায় যাবার অনেকক্ষণ আগেই খাবার খেয়ে ফেলুন।
– উঁচু বালিশে শুলে আরাম পাওয়া যায়।
– এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

৭. পায়ে আঁকাবাঁকা শিরা, পাইলস :

-পায়ে আঁকাবাঁকা শিরার জন্যে ক্রেপ ব্যাণ্ডেজ ব্যবহার এবং বিশ্রামের সময় পা উঁচু করে রাখতে বলা হয়।

-পাইলসের জন্যে নিয়মিত টয়লেট সারা জরুরি; কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয়ে যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। টয়লেট সারার সময় বেশি চাপ দেওয়া যাবে না। বাম কাত হয়ে শোয়া ভালো। গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

৮.মাসিকের রাস্তায় সাদা স্রাব :

-ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এর প্রধান চিকিৎসা।
-নরম সূতি আন্ডারগার্মেন্টস ব্যবহার করা ভালো।

তবে সবকথার শেষকথা হচ্ছে প্রতিজন গর্ভবতী নারীরই নিয়মিতভাবে চিকিৎসকের কাছে ভিজিটে যেতে হবে, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে এবং তার প্রেস্ক্রাইব করা ওষুধপত্র নিয়মিত খেতে হবে।

 

রামপুরার বাসা থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার


নারী সংবাদ


রাজধানীর রামপুরা কুঞ্জবন এলাকার একটি বাসা থেকে নার্গিস বেগম (২৯) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ তার স্বামী মুখলেসুর রহমানকে আটক করেছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ৩৩৬/১১ নম্বর বাসা থেকে নার্গিসের লাশ উদ্ধার করে। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়।
রামপুরা থানার উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের জানান, কুঞ্জবন এলাকার ওই বাসা থেকে নার্গিসের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি আরো বলেন, নার্গিসের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে এখনও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় তার স্বামী মুখলেসুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। নার্গিসের লাশের ময়নাতদন্ত হওয়ার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সুত্র: নয়া দিগন্ত।

 

ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জন্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান 


নারীর জন্য আইন


সংবিধানের ১৩- ১ এ এই বিধানটি লেখা রয়েছে। যেখানে ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে যদি কোন মেয়ে যদি সন্তানকে জন্ম দেয় তাহলে শিশুর ভরণপোষণ ব্যাপারে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জন্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান হল-

১[ ১৩৷ (১) অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধর্ষণের কারণে কোন সন্তান জন্মলাভ করিলে-

(ক) উক্ত সন্তানকে তাহার মাতা কিংবা তাহার মাতৃকুলীয় আত্মীয় স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা যাইবে;

(খ) উক্ত সন্তান তাহার পিতা বা মাতা, কিংবা উভয়ের পরিচয়ে পরিচিত হইবার অধিকারী হইবে;

(গ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহণ করিবে;

(ঘ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ব্যয় তাহার বয়স একুশ বত্সর পূর্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রদেয় হইবে, তবে একুশ বত্সরের অধিক বয়স্ক কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে তাহার বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় ভরণপোষণের যোগ্যতা অর্জন না করা পর্যন্ত প্রদেয় হইবে৷

(২) সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ প্রদেয় অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ করিবে৷

(৩) এই ধারার অধীন কোন সন্তানকে ভরণপোষণের জন্য প্রদেয় অর্থ সরকার ধর্ষকের নিকট হইতে আদায় করিতে পারিবে এবং ধর্ষকের বিদ্যমান সম্পদ হইতে উক্ত অর্থ আদায় করা সম্ভব না হইলে, ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হইবেন সেই সম্পদ হইতে উহা আদায়যোগ্য হইবে৷]

সুত্র: বাংলাদেশ সংবিধান।

 

একটি শিশুর আর্তনাদ-১


আফরোজা হাসান


টেবিলে কিছু একটা রাখার শব্দ শুনে তন্দ্রা ছুটে গেলো অধরার। কফির মিষ্টি ঘ্রাণ নাকে এসে লাগতেই চোখ খুলে তাকালো। ধূমায়িত কফি দেখেই শরীর ও মনকে জাপটে ধরে থাকা তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব কিছুটা যেন শিথিল হয়ে এলো। মাথা তুলে তাকালো সহকর্মীর দিকে। কফি রেখে ততক্ষণে নিজের জায়গায় গিয়ে বসে তার দিকেই হাসিমুখে তাকিয়ে আছে শাহরিন।

কফির জন্য এক লক্ষ শুকরিয়া। সেমিনার টক রেডি করতে গিয়ে সারারাত ঘুমাতে পারিনি। এখন ঘুমে মাথা সোজা করে রাখতে পারছিলাম না। হাসি মুখে বলল অধরা।

শাহরিন হেসে বলল, ‘একটি শিশুর আর্তনাদ’! তোমার বিষয় নির্বাচনটা ঠিক বুঝে আসছে না আমার।

এই আর্তনাদটা আসলে ছোট্ট কোন শিশুর আর্তনাদ নয়।

তাহলে?

আমাদের সবার মনের মাঝেই ছোট্ট একটা শিশু বাস করে সেটা তো জানোই। এই আর্তনাদ আসলে সেই শিশুর। অর্থাৎ, পরিণত মানুষের মনের মাঝে বসে থাকা সেই শিশু যে কোন না কোন ভাবে বঞ্চিত হয়েছে তার শৈশব থেকে। শৈশবের হাসি, আনন্দ, উল্লাস থেকে। যা কিনা প্রতিটি শিশুর অধিকার থাকে। একটু ভেবে দেখো একটা শিশুর চাহিদা কতটুকু থাকে? বাবা-মার সাথে আনন্দঘন সময় কাটানো, মাঝে মাঝে বেড়াতে যাওয়া, পছন্দের খেলনা, চকলেট, আইসক্রিম, কারণে অকারণে ছোট ছোট উপহার। এই তো তাই না? সবসময় বাবা-মার পক্ষে হয়তো এই চাহিদাগুলো পূরণ করা সম্ভব হয় না। সেই কারনটা যদি বাবা-মা বুঝিয়ে বলেন সন্তানদেরকে তাহলে ছোটবেলায় কষ্ট বা মনখারাপ করলেও, বড় হবার পর সেটা উপলব্ধি করতে পেরে স্বস্থি খুঁজে পায় মনে। কিন্তু বুঝিয়ে না বলার কারণে মনে তৈরি হয় গোপন কষ্ট ও অভিমান। যখনই বাবা-মার আদর ভালোবাসায় সিক্ত কাউকে দেখে তাদের মনে বেজে ওঠে হাহাকার ঘেরা আর্তনাদ।

কিছুক্ষণ চুপ থেকে শাহরিন বলল, এমন আর্তনাদ তো আমার মনেও কিছুটা আছে। বাবার আদর কাকে বলে? বাবারা কি সন্তানকে আদর করে? কিভাবে করে? বুকে জড়িয়ে ধরে কখনো? কপালে কি আদর এঁকে দেয়? বাবা মাথায় হাত বুলালে কেমন লাগে? নাহ কিছুই জানি না আমি। এই ব্যাপারে কোন অভিজ্ঞতাই যে নেই আমার। নিজের শৈশব আঁতিপাঁতি করে খুঁজেও এমন একটি মুহুর্ত আমি খুঁজে পাই না যেখানে বাবা আমাকে আদর করেছেন। আমাকে কোন উপহার দিয়েছেন, কোথাও বেড়াতে নিয়ে গিয়েছেন। কারণ বাবার ছেলের শখ ছিল। কিন্তু আমি মেয়ে। তাও আবার পাঁচ নাম্বার মেয়ে।

সদা হাসিখুশি, প্রাণবন্ত সহকর্মীর মুখ থেকে কথাগুলো শোনার পর কিছুটা থমকে গেলো অধরা। বলার মত কোন শব্দই খুঁজে পেলো না। শুধু মনেহলো ‘জীবন কারো তরেই নয় সাজানো ফুল বাগান! নিজ নিজ পরীক্ষায় সবাইকে হতে হয় পেরেশান! ছোট ছোট দুঃখ-সুখে ঘেরা প্রতিটি মনের ভুবন! আনন্দ-হাসি উল্লাসের ভিড়ে লুকানো থাকে অদেখা কন্দন!’ তাই হয়তো মনের কোণে জমানো কষ্ট নিয়েও অন্যের মনের ক্ষতগুলোতে সহমর্মীতার পরশ বুলিয়ে যেতে চেষ্টা করে শাহরিন।

অনেকটা ক্ষণ নীরবতার পর শাহরিন বলল, সত্যি অনেক দরকারি একটা বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছো তুমি। আমারো মনেহয় যে বাবা-মাকে মানসিকভাবে কাছে পেলে জীবনের অপ্রাপ্তি গুলোও অনেক সহজে মেনে নেয়া সম্ভব হয়। কিন্তু বাবা-মার সাথে মানসিক দুরুত্ব জীবনের প্রাপ্তিগুলোকেও ফিকে করে দেয়।

একদম ঠিক বলেছো। আমার যেমন সবসময় আপ্রাণ চেষ্টা থাকে আমার সন্তানদের মানসিক ও আত্মিক বিকাশের ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার। শারিরীক যে কোন সমস্যা চোখে দেখা যায় কিন্তু মানসিক অবস্থা দেখা যায় না বলেই বেশি সতর্ক থাকার প্রয়োজন হয় বেশি। যেমনটা বলা হয় যে, শিশুদের মন কাদা মাটির মত, পানির মত, মোমের মত ইত্যাদি। অর্থাৎ, যে পাত্রে রাখা হবে শিশুরা সেটারই আকার ধারণ করবে। কিংবা এভাবেও বলা যায় যেমন খুশি তেমন আকারে গড়া সম্ভব শিশুদেরকে। তাই সতর্ক থাকি কোন ভাবেই যাতে আমার কোন ভুলের কারণে ব্যহত না হয় সন্তানদের সঠিক আকার গঠন। কিন্তু নানান ধরণের ব্যস্ততার কারণে মাঝে মাঝে খেয়াল করতে পারি না ছোট ছোট অনেক বিষয়। তাই বাচ্চাদের সাথে যাতে কোন রকমের দুরুত্ব তৈরি হয়ে না যায় সেজন্য আমি ডায়েরি বেছে নিয়েছি। মানে হচ্ছে ওদেরকে একটা ডায়েরি কিনে দিয়েছি শুধু সেইসব কথা লেখার জন্য যা বলতে চেয়েও নানা কারণে আমাকে বলতে পারে না সময়, সুযোগ বা পরিস্থিতির কারণে।

শাহরিন হেসে বলল, বাহ বেশ মজার তো!

অধরাও হেসে বলল, হুম! এই পদ্ধতিটার উদ্ভাবক আমার ছোট পুত্র। ওর বয়স যখন পাঁচ বছর তখন একদিন একটা কারণে একটু বিরক্ত হয়েছিলাম ওর উপরে। দুষ্টুমির জন্য একটু বকে দিয়ে আমি রান্নাঘরে চলে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি সে তার হোয়াইট বোর্ডটা ঠেলতে ঠেলতে রান্নাঘরে নিয়ে আসছে। রান্নাঘরের দরজা দিয়ে বোর্ডটা ঢুকিয়ে দিয়েই চলে গেলো। আমি কাছে গিয়ে দেখলাম বোর্ডে যে তার মনের অভিমানী শব্দমালা লিখেছে ছবি আর শব্দের সংমিশ্রণে। অদ্ভুত একটা অনুভূতি হয়েছিল আমার তখন। মনে হয়েছিল বকে দেবার আগে উচিত ছিল দুষ্টুমি করাটা কেন ঠিক হয়নি সেটা বুঝিয়ে বলা। এবং ওকেও নিজের পক্ষে কথা বলতে দেয়া। বেশ কয়েকদিন আগে যেমন একটা ডকুমেন্টরি দেখছিলাম আমি জমজ বাচ্চাদের উপরে। একে অন্যের সাথে জোড়া লাগানো জমজ বাচ্চাদের ছবি দেখে আমার মেয়ে বলল, মামণি কতই না ভালো হতো যদি তুমি আর আমি এমন হতাম। তাহলে তুমি সারাক্ষণ আমার সাথে সাথে থাকতে। ব্যস্ততার সময়ও আমাকে তোমার সাথে রাখতেই হতো। ঐ মুহুর্তে হাসলেও পরে আমি এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলেছি মেয়ের সাথে। ওকে বুঝিয়ে বলেছি আমার ব্যস্ততার কারণ এবং এরপর থেকে চেষ্টা করি আরো কিছুটা সময় বেশি কাটাতে বাচ্চাদের সাথে।

কেন পৃথিবীর সব বাবা-মায়েরা এমন হয় না বলো তো অধরা? কেন সন্তান জন্ম দেয়া আর ভরণ পোষণেই সীমাবদ্ধ থাকে বাবা-মার চিন্তা ভাবনা। খুব খুব কষ্ট হয় যখন পেশেন্টরা বাবা-মা আর পরিবারের সদস্যদেরকে ঘিরে তার মনের মধ্যে জমে থাকা অভিমানী কথাগুলো বলে অশ্রু ভেজা চোখে। মনে পড়ে যায় নিজের অপ্রাপ্তি আর নিরানন্দে ঘেরা এলোমেলো শৈশবের কথা। তুমি ঠিক বলেছো যখনই বাবা-মার আদর ভালোবাসায় সিক্ত কাউকে দেখি আমার মনে বসে থাকা শিশুটা আর্তনাদ করে উঠে। যখন আমার হাজবেন্ডকে দেখি আমাদের মেয়েকে আদর করতে, ভালোবাসতে। অনুভব করি নিজের জীবনে বাবার আদর-ভালোবাসার অভাব।

আমার দেখা অনেক মানুষের ভেতর থেকেই এই আর্তনাদটা শুনতে পেয়েছি আমি। সেজন্যই এই বিষয়টাকেই বেছে নিয়েছি আমি।

আর কিছু না বলে চুপচাপ নিজের কাজে মনযোগ দিলো শাহরিন। অধরা বুঝতে পারছে বিষয়টা নিয়ে ভাবতে ও কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে বলেই শাহরিন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। নিজের ভেতরটাও ভারী হয়ে এলো অধরার।এমন নিরাশার আঁধার কালো পর্দা টেনে নিশ্চুপ বসে থাকা মনগুলোকে যখন দেখে ইচ্ছে করে বিজলীর মতো প্রচন্ড গর্জন করে চারিদিক আলোকিত করে ঝলসে উঠতে। হতাশার ঘোর অমানিশা ছিন্ন ভিন্ন করে ভঙ্গ করে দিতে নিস্তব্ধতা। ধূ ধূ মরুভূমির মত ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া ধূলো ধূসরিত পিপাসাক্ত হৃদয়গুলোতে ঝরঝর শ্রাবণও ধারা হয়ে ঝরে যেতে ইচ্ছে করে যে পর্যন্ত না মিটে যায় শুষ্কতার ছাপ। ঘুণপোকার কুড়ে কুড়ে খাওয়া ক্ষতে বুলিয়ে যেতে ইচ্ছে করে আশা জাগানিয়া পরশ।

 

নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের নারীরা


নারী সংবাদ


অবশেষে ভুটানের মাঠে টানা ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে এলে বাংলাদেশের ফুটবল। রোববার সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ মহিলা ফুটবলের ফাইনালে নেপালকে ১-০ তে হারিয়ে প্রথমবার আয়োজিত এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ। ম্যাচের ৫০ মিনিটে মাসুরা পারভীনের গোলে লাল-সবুজরা এখন সাফ সেরা।

অথচ আগস্টেই থিম্পুর এই চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবলের ভারতের কাছে ট্রফি হারায় গোলাম রাব্বানী ছোটনের দল। এবার ফাইনালে ভারতকে না পেলেও নেপাল বধের মাধ্যমে লাল-সবুজের উল্লাস মাঠ ও গ্যালারী জুড়ে। বাংলাদেশ এবার শিরোপার সাথে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারও জিতেছে। সিরাত জাহান স্বপ্না ৮ গোল করে এই ট্রফি জয় করেন।

তুমুল লড়াই করার জন্য খ্যাতি আছে নেপালীদের। ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেভাবেই শুরু নেপালের। মারজিয়ার বদলে খেলতে নামা লাল-সবুজদের স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্নাকে কড়া মার্কিংয়ে রাখে তারা। মিডফিল্ডে সুবধিা করতে দিচ্ছিলনা মারিয়া, মনিকাদের। নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না অধিনায়ক মৌসুমী ও সানজিদা। এরপরও ৭ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। রুপনা চাকমার গোল কিক থেকে মাঝ রেখার কাছে ফাঁকায় বল পান কৃষ্ণা রানী সরকার। তার সামনে শুধুই নেপালী গোলরক্ষক। বল নিয়ে ঢুকে পড়েন তিনি। এরপর এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল জালে পাঠাতে গিয়ে তিনি মারেন বাইরে। অথচ তিনি যতটুকু সময় পেয়েছিলেন তাতে গোলরক্ষককে কাটিয়ে বল জালে পাঠাতে পারতেন।

২২ মিনিটে আরেকটি ভুল করেন অনূর্ধ্ব -১৬ জাতীয় দলের সাবেকই অধিনায়ক কৃষ্ণা । বল ফাঁকায় দাঁড়ানো স্বপ্নাকে না দিয়ে নিজেই মারেন গোলরক্ষক সোজা। এর আগে ১৫ আঁখি খাতুন মিস করেন গোল। এই অর্ধে নেপাল দুটি হায় চান্স পেলেও তা থেকে গোল আদায় করতে পারেনি।

বিরতির পর পরই লিড বাংলাদেশের। মনিকা চাকমার নেয়া ফ্রি-কিকে ডিফেন্স থেকে উঠে আসা মাসুরা পারভীনের হেড গড়িয়ে গড়িয়ে চলে যায় জালে। অবশ্য পরের মিনিটেই সমতার খুব কাছে চলে যায় নেপাল। আঁখি খাতুনের দৃঢ়তায রক্ষা। ফ্রি-কিক থেকে আসা বলে গোলরক্ষক রুপনা চাকমা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। তাতে এক নেপালী ফুটবলারের নেয়া ভলি পোস্টে লাগার পর ক্লিয়ার করেন আঁখি। লিডের পর কিছুটা রক্ষনাত্মক হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এই সুযোগে ৭৪ মিনিটে নেপালের পাওয়া সুযোগ নষ্ট করেন মনীষা। তার শট বার ঘেঁষে চলে যায়। একটু ফাটলও দেখা যায় ছোটন বাহিনীর ডিফেন্স লাইনে। নেপালীরা এই সময়ে অলআউট অ্যাটাকে গেলে বাংলাদেশ কাউন্টার অ্যাটাকে বিপক্ষ রক্ষনভাগ ভাঙার চেষ্ঠা করে। অবশ্য তাতেও ব্যবধান বাড়েনি।

আসরের সব কটি ম্যাচ জিতেই ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে দিয়েছে ২৩ গোল। এই নেপালকে হারিয়েই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। আর ফাইনালেও বাংলাদেশের সামনে দাড়াতে পারেনি হিমালয় কন্যারা। ফলে দেশের ফুটবল সমর্থকদের আরো একবার আনন্দে ভাসাল অনূর্ধ-১৮ নারী ফুটবলাররা।

 

ফতুল্লায় স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় স্বামীর আত্মসমর্পণ


নারী সংবাদ


নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আফরিন আক্তার রানী (২৩) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন তার স্বামী। স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী মেহেদী হাসান (৩০) নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন।
গত শুক্রবার দুপুরে ফতুল্লার চাঁদনী হাউজিং এলাকার ওমর ফারুকের বাড়ির দ্বিতীয় তলার বাসা থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত আফরিন আক্তার রানী নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সরদীয়া এলাকার আবদুর রহিমের মেয়ে।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মামুন আল আবেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে মোবাইলে চার্জ দেয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে মেহেদী তার স্ত্রী রানীকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যার পর মেহেদী সারা রাত বাসাতেই ছিলেন। শুক্রবার দুপুরে পাঁচ মাসের শিশু সন্তানকে বাসায় রেখে ফতুল্লা থানায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
এসআই মামুন আল আবেদ আরো জানান, মেহেদী হাসানের আগের সংসারে স্ত্রী-সন্তান রয়েছে এবং আফরিন আক্তার রানীরও স্বামী-সন্তান রয়েছে। তারা উভয়ই আগের সংসার রেখে পরকীয়া সম্পর্কের পর বিয়ে করে আলাদা সংসার শুরু করে। তাদের সংসার জীবনে আগের সংসার নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো বলে জানা গেছে।

 

অনলাইন বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন নারী উদ্যোক্তারা


নারী সংবাদ



রুবাইয়াত উর্মি। নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ-এমবিএ করে চাকরি না খুঁজে ছোট পরিসরে নিজের ফেসবুকে গ্রুপ খুলে এফ-কমার্সের মাধ্যমে শুরু করেন অনলাইন বাণিজ্য। এর মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার বড় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন।
উর্মি ছাত্রজীবন থেকেই স্বপ্ন দেখেন ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার। তাই প্রথমে ছোট আকারে খুব অল্প পুঁজিতে শুরু করেন। পরে আস্তে আস্তে পরিধি ডালপালা ছড়ায়। উর্মির এফ-কমার্স পেজের নাম ‘ফ্যাশন প্যাশন’। তিনি লোকাল বাজার থেকে কাপড় কিনে ডেভেলপ করেন। যেহেতু আমাদের দেশে অনেকেই দেশীয় পণ্য ব্যবহারে আগ্রহী নন, তাই দেশীয় বিভিন্ন পোশাক কিভাবে গর্জিয়াস কাজ করে পার্টি ড্রেস বানানো যায় তা নিয়ে কাজ করছেন উর্মি।
আলেয়া আফরিন। একটি অ্যাড ফার্মে চাকরির পাশাপাশা আরেকটু স্বাবলম্বী হওয়ার জন্যই এই এফ-কমার্সে তার যাত্রা। এইচএসসি পাস করতেই বাবা সমস্যায় পড়ে চাকরি ছাড়েন। ঠিক তখনি বড় মেয়ে হিসেবে সংসারের হাল ধরার দায়িত্ব পড়ে আলেয়ার ঘাড়ে। আলেয়া খুব সামান্য বেতনে ছোট একটি চাকরি শুরু করেন। প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল তার পড়ালেখা। সামান্য বেতনে পরিবারে ছোট ভাইসহ অন্যদের দেখভালেই চলে যায়, পড়াশোনার খরচ যোগানোই দায়। তখনি এই এফ-কমার্সে চিন্তা এলো এবং সেভাবেই শুরু তার ‘বিবির আয়না’ নামে এফ-কমার্স পেজের। তারপর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স। এখনো চাকরি করছেন ভালো কোম্পানিতে। পাশাপাশি তার সেই এফ-কমার্স ব্যবসাও ধরে রেখেছেন। মাত্র ২৫ হাজার টাকা ধার করে শুরু করেছেন, এখন প্রায় তিন লাখ টাকার প্রোডাক্ট রয়েছে বিবির আয়নায়।
উর্মি আর আলেয়ার মতো শত শত উদ্যোগী মেয়ে অনলাইন বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে ও সফল হচ্ছে। দেশ এখন আলিবাবা, দারাজ, আজকের ডিল, পিকাবোসহ অন্যান্য ই-কমার্স সাইটে সয়লাব। বর্তমান যান্ত্রিক কর্মব্যস্ত দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রই তো প্রযুক্তিনির্ভর। পিছিয়ে নেই ঘরের নারীরাও। বর্তমানে নারীর ঝোঁক বাড়ছে অনলাইন ব্যবসায়। অনলাইন ফ্যাশন হাউজ, জুয়েলারি হাউজসহ নিত্যপণ্যের সম্ভার এখন প্রায়ই চোখে পড়ে। ঘরে বসে কল করে কিংবা মেসেজ পাঠিয়ে পছন্দের পণ্যটি ক্রেতাদের হাতের নাগালে পৌঁছে দিচ্ছেন এ নারী উদ্যোক্তারা। শুধু সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ফেসবুক ব্যবহার করেই তারা এগিয়ে নিচ্ছেন নিজেদের ব্যবসা।
ফেসবুকের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তির এই সম্ভাবনার যুগে নারীর পথচলা আরও সুগম হয়েছে। ঘর-সংসার-সন্তান সব সামলে অনেক নারী এখন অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত এফ-কমার্সে।
বর্তমানে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিসের) তালিকাভুক্ত প্রায় তিন হাজার ফেসবুক পেজ আছে। এর মধ্যে প্রায় ৭০০ পেজ নারী উদ্যোক্তাদের। ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ (এফ-কমার্সের) সুবিধা হলো- অল্প পুঁজিতে এমনকি বিনা পুঁজিতেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াই ব্যবসা করা যায়। বর্তমান তথ্য অনুযায়ী আট হাজার ফেসবুক পেজ আছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক পেজ চালান নারী উদ্যোক্তারা।
এ প্রসঙ্গে লেখিকা আমেনা খানম মীনা বলেন, খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, ১০ থেকে ১৫ বছর আগেও আইসিটি বা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে একচেটিয়া বিচরণ ছিল পুরুষদের। মূল কারণ, কম্পিউটার তথা আইসিটি খাতে শিক্ষা, সেবা ও ব্যবসায় যারা নিয়োজিত ছিলেন, তাদের বেশির ভাগই ছিলেন পুরুষ। কিন্তু এখন আর সে অবস্থা নেই। খুব ধীরে হলেও পাল্টেছে এ চিত্র। বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে এসেছেন তথ্যপ্রযুক্তিতে।
তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো ও নারী সচেতনতার জন্য বেশকিছু পদক্ষেপও নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় মহিলা সংস্থার একটি প্রকল্প ছিল ‘জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ’।
নানা বাধা পেরিয়েও দেশের আইসিটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা নারীর সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নিয়োজিত নারীরা নিজেদের অবস্থা সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তুলছেন। বাংলাদেশেও গড়ে উঠছে এমন সংগঠন। তেমনি একটি ‘বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি’ বা বিডব্লিউআইটি। সংগঠনটির নারীরা কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের সাথে জড়িত। বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে পেশাগতভাবে জড়িত নারীদের এখন পর্যন্ত প্রধান সংগঠন এটি। সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য আইটি খাতের সাথে জড়িত নারীদের একত্রিত করে তাদের পরিচিতির ব্যবস্থা করা। সঙ্গে সঙ্গে তাদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করা। সংগঠনটি তরুণীদের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে এবং এই শিল্পে উদ্যোগী হতে উৎসাহিত করে থাকে। নারী উদ্যোক্তা এবং পেশাজীবীদের আইসিটিতে সাফল্য অর্জনের জন্য নেতৃত্ব গুণাবলীসহ অন্যান্য দক্ষতা বাড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টাও করা হয় এই সংগঠনের পক্ষ থেকে। কাজেই যে নারীরা বাংলাদেশের আইসিটি খাতের সঙ্গে যুক্ত তারা খুব সহজেই বিডব্লিউআইটির সদস্য হতে পারেন।
সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোনো জোরালো ভূমিকা নেই। এই খাতে নারীরা যে পিছিয়ে পড়ছেন এ জন্য যে পরিমাণ জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন, তা দেখা যাচ্ছে না। দেখা যায়, দেশে কারিগরি জ্ঞান প্রশিক্ষণ দেয় যেসব প্রতিষ্ঠান আছেÑ সেখানে পুরুষের সমানতালে নারীরাও আসছেন না। এর জন্য সরকার পক্ষ কিংবা বিভিন্ন এনজিও যারা নারী উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে এমন অনেক সংস্থা বাংলাদেশে আছে। তারা নারীদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীদের পুরুষের পাশাপাশি এগিয়ে আসার জন্য কাজ একেবারেই কম। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অল্পশিক্ষিত নারীরা স্বল্প কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন কাজে সাফল্য পাচ্ছেন। নারীর পূর্ণ ক্ষমতায়ন প্রযুক্তি জ্ঞান ছাড়া সম্ভব নয়। এ জন্য আইসিটি খাতে নারীদের এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে আইন করে হলেও আইসিটিতে নারীদের এগিয়ে আসা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। এই বিশাল জনশক্তিকে প্রযুক্তির জ্ঞানে দীক্ষিত করতে পারলে তারা আমাদের বোঝা হবে না, হবে দেশের সম্পদ। আমাদের দেশে অনেক নারী ঘর থেকে বের হতে চান না। তাদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে ইন্টারনেটে নিজের ঘরে বসে আউট সোর্সিং ফ্রিল্যান্সিং করে দেশি-বিদেশি প্রচুর মুদ্রা অর্জন করতে পারবেন। স্বল্প শিক্ষিত নারীদের সামান্য প্রশিক্ষণ দিতে পারলে ভালো সফলতা পাওয়া যাবে।
আমাদের দেশের অনেক নারী আছেন, যারা ঘরের বাইরে গিয়ে চাকরি করতে পারছেন না। কিন্তু তারা স্বাবলম্বী হতে চান। সেদিক থেকে ই-কমার্সের মাধ্যমে তারা ঘরে বসে ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ই-কমার্সের সুবিধা হলো- অল্প পুঁজিতে এমনকি বিনা পুঁজিতেও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াই ব্যবসা করা যায়। ই-কমার্স মেয়েদের স্বাবলম্বী হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। বাংলাদেশের নারীদের ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে ই-কমার্স। এই সেক্টরে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তা আমাদের দেশের জন্য অবশ্যই ইতিবাচক।

সুত্র: বাসস।

 

বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীকে চমক ওবামার


নারী সংবাদ


আগেও বহুবার প্রকাশ্যে স্ত্রীয়ের প্রতি তার অকুণ্ঠ ভালোবাসার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এবার বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রী মিশেলকে হৃদয়গ্রাহী বার্তা দিয়ে ফের একবার নিজের রোমান্টিক সত্তা প্রকাশ করলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। গত বুধবার ছিল বারাক-মিশেলের ২৬তম বিবাহ বার্ষিকী। এই বিশেষ দিনে স্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে ট্যুইটারকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মিশেলের একটি সুন্দর ছবি পোস্ট করে ৫৭ বছরের বারাক লেখেন, ‘বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা। গত ২৬ বছর ধরে তুমি একজন অসাধারণ সঙ্গী হিসেবে আমার সঙ্গে আছো। তুমি এমন একজন, যে আমাকে হাসাতে পারে, যাঁকে সঙ্গে নিয়ে আমি গোটা পৃথিবী দেখতে চাই।’

সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডিও কম যান না। উত্তরে তিনি স্বামীকে ধন্যবাদ জানিয়ে লেখেন, ‘গত ২৬ বছর ধরে আমাকে অগাধ ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং মর্যাদা দেয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। তুমি সেই মানুষটি, যে আমাকে ও আমাদের মেয়েদের সবসময় উৎসাহ এবং সম্মান দিয়ে এসেছে। প্রতিটা দিন আমি তোমাকে সঙ্গে আছি। তুমিই আমাদের আসল সম্পদ।’

১৯৯১ সালে বাগদান সেরে পরের বছরই অক্টোবর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বারাক ও মিশেল। তাদের দুই মেয়ে রয়েছে — মালিয়া অ্যান ওবামা ও সাশা ওবামা।

 

ভারতে ‘পবিত্র’ গঙ্গা নদীর পাশেই নারী ধর্ষিত!


নারী সংবাদ


ভারতের পাটনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র বলে বিবেচিত গঙ্গা নদীর পাশে একজন নারীকে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, ওই দুই ব্যক্তি পালাক্রমে ওই নারীকে নির্যাতন করেছে এবং তা ভিডিও করেছে।

জানা যাচ্ছে, রোববার ভোরে গঙ্গা নদীতে গোছল করার সময় ওই দুই ব্যক্তি তাকে ধরে নিয়ে যায়।

ভিডিওতে শোনা যায়, গঙ্গা নদীর পবিত্রতার কথা বলে তাকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করছেন নির্যাতনের শিকার নারী, যাকে তিনি ‘মা’ বলেও উল্লেখ করেন।

পুলিশ বলছে, যে মোবাইল ফোনে ওই ঘটনা ভিডিও করা হয়, সেটি জব্দ করে ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশ কিভাবে এই ঘটনার কথা জানতে পেরেছে, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ দাবি করেছে, অনলাইনে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পরেই তারা এই ঘটনা কথা জানতে পারে।

তবে স্থানীয় খবরে বলা হচ্ছে যে, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থানায় গিয়েছিলেন ওই নারী, কিন্তু মামলা নিয়ে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

স্থানীয় পুলিশের কর্মকর্তা আনন্দ কুমার বুধবার বলছেন, ‘ওই ভয়াবহ ঘটনার পর থেকে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং সেটা কাউকেই জানাননি।’

ওই নারী এবং তার ওপর হামলাকারীরা একই গ্রামের বাসিন্দা বলে তিনি বলছেন। এখন ওই নারী এ বিষয়ে অভিযোগ দিতে রাজি হয়েছেন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে প্রতি ১৩ মিনিটে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়, কিন্তু এ নিয়ে সামাজিক ট্যাবুর কারণে অনেক ঘটনাই চাপা পড়ে থাকে।

২০১২ সালে দিল্লিতে একজন ছাত্রীকে বাসে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা এবং তারপর ব্যাপক বিক্ষোভের পর থেকে দেশটিতে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে কড়াকড়ি পদক্ষেপ বেড়েছে।

এরপর মৃত্যুদণ্ডের বিধান থেকে ধর্ষণ বিরোধী শক্ত আইন জারি করে দেশটির সরকার। সুত্র: নয়া দিগন্ত

 

মালয়েশিয়াতে বিবাহবিচ্ছেদ সমস্যা


রেহনুমা বিনত আনিস


সুপ্রিয়া,

আপনি জানতে চেয়েছেন মালয়দের মাঝে বিবাহবিচ্ছেদ এবং পরকীয়া এত বেশি কেন। নারীপুরুষের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কর্মক্ষেত্রে বিচরণের ক্ষেত্রে এত তারতম্য কেন। আমি ঘরকুনো মানুষ। ঘরের বাইরে দুরে থাক, নিজের রুমের বাইরেই যাই কম। তবে যখন বেরোতে বাধ্য হই, প্রচুর মানুষের সাথে কথা বলি, তাঁদের পর্যবেক্ষণ করি, ফলে কিছু বিষয় জানার সুযোগ হয়। তার ওপর ভিত্তি করে যতটুকু উপলব্ধি হয়েছে সেটা আপনার সাথে শেয়ার করছি।

মালয়শিয়ার ব্যপারে আমাদের মাঝে একটা ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। এটি মুসলিম দেশ নয়। এমনকি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বলাও কঠিন। এখানে মাত্র ৬১% মুসলিমের বসবাস যেখানে বাংলাদেশে এই অনুপাত ৯০%। মালয়রা দেশটিকে মুসলিমদের জন্য অনুকূল বাসস্থান হিসেবে গড়ে নিয়েছে, কিন্তু মূলত এটি ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডের অন্তর্ভুক্ত এবং এদের চালচলন তেমনই।

এখানকার মুসলিম বাবামায়েরা ইসলামে প্রদত্ত তিনটি দায়িত্বের মাঝে একটি খুব ভালভাবে পালন করে, একটি আধাআধি পালন করে, আরেকটি করেনা। ওরা সন্তানের সুন্দর নাম রাখে, ইসলামের বেসিকটুকু শেখায়, কিন্তু সন্তানের বিয়ের ব্যপারে কোন দায়িত্ব গ্রহণ করেনা। মালয় ছেলেমেয়েরা অল্প বয়সে বিয়ে করে থাকে, নিজের পছন্দে। প্যারেন্টাল গাইডেন্স ব্যতীত গৃহীত এই সিদ্ধান্ত কতটুকু বাস্তবতার ওপর প্রতিষ্ঠিত আন্দাজ করতে পারছেন নিশ্চয়ই। ফলে গোঁড়াতেই গলদ রয়ে যায়।

ওরা সাধারনত সমবয়সী বিয়ে করে। একটি বৈবাহিক সম্পর্কে অন্তত একজন ম্যচিউর চিন্তাভাবনাসম্বৃদ্ধ হলে বিয়েটাকে ফলপ্রসূ করা সহজ হয়। কিন্তু দুজনই যদি অপরিপক্ব হয় তাহলে কেউই বিয়ের তাৎপর্য, দায়বদ্ধতা কিংবা দায়িত্ব সম্যকভাবে উপলব্ধি করতে পারেনা। ফলে বিবাহবিচ্ছেদের বীজ প্রোথিত হয়ে যায়।

ওদের পুরুষরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে অলস এবং অকর্মন্য হয়ে থাকে। ফলে নারীদের এগিয়ে আসা ব্যতীত উপায় থাকেনা। লেখাপড়ায় এগিয়ে থাকার ফলে চাকরীর ক্ষেত্রেও স্বাভাবিকভাবেই নারীরা এগিয়ে থাকে। ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিগুলোতে বিয়ের ক্ষেত্রে সমযোগ্যতা ফ্যাক্টর নয়। তাই শিক্ষাগত যোগ্যতার পার্থক্য বিয়ের জন্য প্রতিবন্ধক নয়। উপরন্তু পুরুষদের সংখ্যাস্বল্পতা খুব একটা বাছাবাছি করার সুযোগ রাখেনা। ক্যানাডাতেও একই চিত্র দেখেছি।

এখানে বিয়ের সময় থেকেই দুজনে মিলে স্থির করা হয় সংসারের কোন খরচ কে দেবে। ফলে নারীদের কাজ না করে উপায় থাকেনা। নারীরা ঘরে বাইরে সবদিকে কাজে ব্যস্ত থাকে। সে সুযোগে অনেক পুরুষ নতুন নতুন গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কয়েকবার ধরা পড়ার পর নারীরা বিরক্ত হয়ে যায়। ফলে পরিস্থিতি দুটি বাজে দিকের মাঝে আবর্তিত হতে থাকে – একটি পরকীয়া, আরেকটি বিবাহবিচ্ছেদ।

পরকীয়ার পেছনে মূলত দুটি ফ্যাক্টর কাজ করে। একটি বিবাহের ক্ষেত্রে অপরিপূর্ণতা, অপরটি বিপরীত জেন্ডারের সাথে মেলামেশার সুযোগের সহজলভ্যতা। পুরুষদের অকর্মন্যতা, উপরন্তু বিশ্বাসঘাতকতার কথা তো বললাম। এখানকার নারীরা ঘরেবাইরে এত কাজ করে যে বাইরে বেরোনো, পুরুষদের সাথে ওঠাবসা ওদের জন্য ডালভাতে পরিণত হয়। আমি দেখে অবাক হয়েছি ওরা নারীপুরুষের মাঝে মিনিমাম ডিস্টেন্স বজায় রাখেনা। পাশে বসা, গা ঘেঁষে চলাফেরা, গায়ে হাত দিয়ে কথা বলা এমন অকল্পনীয় ব্যপারগুলো ওদের কাছে খুব স্বাভাবিক, এমনকি আপাতদৃষ্টে পর্দানশীন মেয়েদের মাঝেও।

অধিকাংশ নারীপুরুষ মিনিমাম লেভেলে ইসলাম মেনে চলে। টাইটফিটিং প্যন্টশার্টের সাথে মাথায় একটা হিজাব বেঁধে খুশি হয়ে যায়। আবার মসজিদে গেলে পর্দার অভাব ঢাকতে আলাদা পোশাক পরে নামাজ পড়ে। এভাবে ছাড় দিতে দিতে আল্লাহর প্রতি দায়বদ্ধতা যে পর্যায়ে পৌঁছয় সেটা তখন আর অন্যায়ের পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে যথেষ্ট মজবুত সাপোর্ট দিতে পারেনা।

সাংসারিক দায়িত্বের পরিমাণ যত বাড়তে থাকে গান বাজনা নাটক সিনেমার মোহময় আবেশে নিমজ্জিত মানুষগুলোর কাছে বাস্তবতা বড় কঠিন মনে হতে থাকে। এক পর্যায়ে কেউ কেউ পুরাতন স্বপ্ন ফেলে রেখে নতুন স্বপ্নের উদ্দেশ্যে উড়াল দেয়। ফলে আমি এমন নারী দেখেছি যে প্রাক্তন স্বামীর কাছে থেকে একটি ফুটো পয়সা সাহায্য ব্যতিরেকে সন্তানদের প্রতিপালন করছে। এমন পুরুষও দেখেছি যারা মায়ের কাছ থেকে এক বিন্দু স্নেহ ব্যতিরেকে সন্তানদের মানুষ করছে।

তবে এই অবস্থা মনে হয় এখন মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র। গতকাল একজন গবেষকের সাথে দীর্ঘ আলোচনা হল। তাঁর বাবা মালয়শিয়ার আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, তিনি নিজে পি এইচ ডি। বর্তমানে ভারতীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীর মাঝে ডিভোর্সের আশঙ্কাজনকভাবে ক্রমবর্ধমান হার নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু ডিভোর্সের কারণগুলো মোটামুটি একই – বৈবাহিক জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি করার ব্যর্থতা, পারস্পরিক সম্মানবোধ এবং বিশ্বস্ততার অভাব, দায়বদ্ধতার অভাব, দায়িত্বানুভূতির অভাব, অর্থনৈতিক চাপ, কোন কোন ক্ষেত্রে আত্মীয়স্বজনদের দ্বারা সৃষ্ট চাপ, চারিত্রিক দৃঢ়তার অভাব এবং সর্বোপরি আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতির অভাব।

আল্লাহ ক্কুরআনে বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাঁর রাহমাত এবং বারাকাহ তাদের জন্যই নির্ধারিত যারা তাঁর পথকে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করে, এই পথে অবিচল থাকার সংকল্প রাখে এবং তাঁর জন্য ত্যাগ স্বীকার করে। সত্যি কথা বলতে আমরা একটি জ্ঞানবিমুখ, আমলবিহীন, গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে যাওয়া নামসর্বস্ব এবং কেবল বাহ্যিকভাবে মুসলিম জাতিতে পরিণত হয়েছি। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দুর্বলতা আমাদের অন্যান্য সম্পর্কগুলোকেও অস্থায়ী করে ফেলছে। কারণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও পাশে থাকা একমাত্র আল্লাহর প্রতি দায়বদ্ধতার কারণেই সম্ভব। নইলে এই কষ্ট মানুষ কাঁধে তুলে নিতে পারেনা। ঝড়ের প্রথম আভাসেই পালিয়ে যায়।

আমার স্বল্প জ্ঞান এবং অল্প অভিজ্ঞতায় এগুলোই কারণ হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছি। আপনার মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।

 

মেয়েটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন


নারী সংবাদ


ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্যাহ কায়সার সড়কে মেডিস্ক্যান হাসপাতালের পেছনে একটি বাসায় শিশু গৃহকর্মী অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্ত্রী লাভলী আক্তারকে গতকাল সোমবার রাতে আটক করেছে পুলিশ।

নির্যাতিতা মেয়েটি ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত রোজার পর থেকে বৃষ্টি (১২) ইতালি ভবনের ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয়। সে পরশুরাম উপজেলার ধনিকুন্ডা গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। গৃহকর্ত্রীর অমানুষিক নিযাতন সইতে না পেরে মেয়েটি সোমবার সকালে পালিয়ে যায়। এক ব্যক্তির সহায়তায় বিকালে শহরের মেডিনোভা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এলে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। মেয়েটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন।

খবর পেয়ে পুলিশ বৃষ্টিকে ওই হাসপাতাল থেকে নিয়ে যায়।

ফেনী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম জানান, মেয়েটিকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে । পুলিশ তাৎক্ষণিক গৃহকর্ত্রী লাভলীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে । লাভলী দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের জহির উদ্দিনের স্ত্রী। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান ।

গৃহকর্মী নির্যাতনকারী আফরোজা গ্রেফতার

ফেনী সংবাদদাতা, ১২ জুলাই ২০১৭
ফেনী শহরের বিরিঞ্চি এলাকায় শিশু গৃহকর্মী আমেনার নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী আফরোজাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফেনী মডেল থানা পুলিশ আফরোজাকে ধরতে রাজধানীতে অভিযান চালায়। রাজধানীর বাসা থেকে তার মেয়ে ও অপর বাসা থেকে ছেলেকে আটক করে তাদের মাধ্যমে ফাঁদ পেতে আফরোজাকে মঙ্গলবার ভোরে ফেনীর ধলিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। ছেলেমেয়ের ফোন পেয়ে আফরোজা সিএনজি অটোরিকশায় ধলিয়ার সাইনবোর্ড নামক স্থানে পৌঁছলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

ফেনী মডেল থানার ওসি রাশেদ খান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আফরোজা গৃহকর্মী আমেনাকে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১০ ফেব্রুয়ারি শহরের বিরিঞ্চি এলাকার নুরিয়া মসজিদসংলগ্ন হাজী মঞ্জিলের তৃতীয়তলায় আফরোজার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ নেয় ১০ বছরের আমেনা। সেখানে গৃহকর্র্ত্রী আফরোজার নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে সারা পিঠ ঝলসে যায় আমেনার। গত শনিবার রাতে তাকিয়া রোডে আমেনাকে কান্নারত দেখে জনৈক মিজানুর রহমানসহ আশপাশের লোকজন তাকে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এক কান দুই কান হয়ে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

একপর্যায়ে রোববার রাতে সদর হাসপাতালে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) উক্য সিং। ততক্ষণে শিশুটির স্বজনেরাও হাসপাতালে পৌঁছে যান। পরিচয় মেলে গৃহকর্ত্রী আফরোজার। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) উক্য সিংয়ের নেতৃত্বে আফরোজার বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানের টের পেয়ে পালিয়ে যায় গৃহকর্ত্রী আফরোজা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

নির্যাতিতা আমেনা পরশুরামের বিলোনীয়া এলাকার আবুল কাশেমের মেয়ে। তাকে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় রোববার রাতে আমেনার ফুফু ফুলজান বেগম টুনি বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

সুত্র: নয়াদিগন্ত

 

‘আজ না হলেও কাল হবেই’


সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- ফাতেমা শাহরিন


শর্মিলী রহমান একজন শিক্ষার্থী একজন উদ্যোক্তাও বটে। এই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পড়াশুনার পাশাপাশি দীর্ঘ পথ ধরে যে প্রতিষ্ঠান নিয়ে হাটছেন সেই প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মিলন্তিকা’। BBA চতুর্থ বর্ষের এই শিক্ষার্থী প্রথম দিকে স্বল্প পরিসরে গড়ে তোলেন ‘মিলন্তিকা’। কিন্তু বর্তমানে তা ঢাকা-চাঁদপুর সহ সারা দেশে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মিলন্তিকায় মুলত পাওয়া যাবে অরিজিনাল cosmetics প্রোডাক্ট এবং imported প্রোডাক্টস।

অপরাজিতা সাথে কিছু কথা হল ‘মিলন্তিকা’র প্রতিষ্ঠাতা শর্মিলী রহমানের সাথে-

অপরাজিতাঃ মিলন্তিকা শুরুর গল্পটা আমাদেরকে একটু বলুন?
শর্মিলী : ছোটো বেলা থেকে স্বপ্ন ছিল নিজের মত কিছু করা। নিজের একটা পরিচিতি গড়ে তোলার অদম্য ইচ্ছে। একসময় মনে হলো এখনই উপযুক্ত সময় কিছু না কিছু করার। যেই চিন্তা সেই কাজ, ‘আমি চাঁদপুর শহরে থাকি সেই সুবাদে চাঁদপুর কেন্দ্রিক কিছু করার চিন্তা করি। ভেবে দেখলাম আমাদের এখানে অরিজিনাল cosmetics প্রোডাক্ট এবং imported প্রোডাক্টস এর সুবিধা কম। তখনই আরও ভাল ভাবে চিন্তা টা মাথায় আসে। শুধু চিন্তা আসলেই তো হবে না। লাগবে মূলধন , প্রচার , আর সাহস এবং যোগ্যতা। তাই প্রাথমিক দিকে খুব কাছের বন্ধু মিলে মূলধন জোগাড় করলাম। প্রচার করতে ফেসবুক সাহায্য করেছে, সাথে কাছের বন্ধুরা। যখন সবাই ভালো প্রোডাক্টস পেয়ে বুঝতে পেরেছে। তখন এমনিতেই খুব জলদি প্রচার হয়ে যাচ্ছিলো। আমার বেস্ট ফ্রেন্ডরা আর আমার বোন এবং আমার মা আমাকে শুরু থেকে অনেক সাহস জুগিয়েছেন এবং এখনও পাশে আছেন। যার কারণে আজ হয়তো এখানে আসতে পেরেছি। আর এখন আলহামদুলিল্লাহ মিলন্তিকা ঢাকা-চাঁদপুর সহ সারা দেশে সুবিধা দিচ্ছে।

অপরাজিতাঃ শুরুতে দিকে ‘মিলন্তিকা’ প্রচার প্রডাক্ট সিলেক্ট কে কে সাহায্য করেছে?
শর্মিলী: শুরু তেই বলে নিচ্ছি যে উদ্যোগটা আমার একার অবশ্যই ছিলো না। বন্ধুদের সাহায্য নিয়েই এই পথ চলা। হা তবে বলতে পারি এর প্রচার থেকে প্রসারের মূল ভূমিকায় আমি ছিলাম। আর cosmetics প্রোডাক্টস সম্পর্কে আমার বেশ ভালো ধারণা থাকায় এই সেক্টর টাকেই গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করি।

অপরাজিতাঃ আপনার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে জানতে চাই কেউ যদি আপনার মত উদ্যোক্তা হতে চায় তাহলে আপনার পরামর্শ কি?
শর্মিলী: দেখুন, নিজ উদ্যোগে স্বল্প পরিসরে খুব সহজেই করা যাবে এই সব বিজনেস। যদি কেউ করতে চান। শুধু মনোবল রাখতে হবে দৃঢ়ভাবে। যে কোনো একটা ভিন্ন ধরণের প্রোডাক্টস যা অরিজিনাল এবং সহজলভ্য নয় তা দিয়ে শুরু করতে হবে। তা সীমিত মূল্যের হলেও চলবে। যেমন প্রথম amader6 ব্যবসাটি অরিজিনাল ইন্ডিয়ান কাভেরি মেহেদি দিয়ে শুরু করেছিলাম আমি।কারণ জানতাম তখন আশে পাশে যেখানেই কাভেরি ছিল maximum নকল। তাই যখন আসল টা এনেছিলাম খুব সাড়া পেয়েছিলো। কম মূল্যে দেওয়ায় সবাই টেস্ট করতে হলেও নিয়েছিলো অরিজিনাল কিনা। পরে বোঝার পর এমন আরো অনেক অর্ডার এসেছিল।

অপরাজিতাঃ এ সেক্টরে অসহায় মেয়েদের কর্মসংস্থানের কতটুকু সুযোগ আছে?
শর্মিলী: সুযোগ অবশ্যই আছে। আমি আমার ‘মিলন্তিকা’ তে অতিশীঘ্রই কিছু কর্মী নিয়োগ করব। যারা অসহায় কিন্তু মেধাবী তাদের কে বেশি গুরুত্ব দিবো। এখন দেখা যায় বেশির ভাগ কোম্পানি গুলো ৫/৬ বছর যোগ্যতা চায় যার কারণে অনেক শিক্ষিত অসহায় মেয়ে চাকরি না পেয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। স্বপ্ন হারিয়ে ফেলে আমি তাদেরকে সুযোগ করে দিতে চাই। যাতে ঘরে বসেও কাজ করতে পারে। এটাই আমার স্বপ্ন।

অপরাজিতাঃ আবার মিলন্তিকা ফিরে আসি, একজন নারী হিসেবে এ পথ চলা, কেমন ছিল, সহজ কিংবা কঠিন?
শর্মিলী: একজন নারী হিসেবে পথ চলা মোটেই সহজ ছিলো না। শুরুতেই ফ্যামিলি বাঁধা দিয়েছিল। বড় বোন ছাড়া .. সবাই বলছিলো মেয়েদের ব্যবসা করার দরকার কি ? বিপদ আসবে, পড়ালেখার ক্ষতি হবে ইত্যাদি। সব বাঁধা ডিঙ্গিয়ে আসার দিন গুলো adventurous বলা যায় হাহাহা ..। কিন্তু কঠিন ছিল না মোটেই। কারণ তাদের বিশ্বাস জোগাড় দায়িত্বে লাগতে গিয়েই সব দিক ঠিক রাখতে হয়েছিল। পড়ালেখা , ব্যবসা এবং সব কিছু।

অপরাজিতাঃ নতুন উদ্দ্যোক্তাদের কিভাবে উৎসাহ দিবেন?
শর্মিলী: শুরু টা কখনোই মধুর হয় না। অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা প্রতিবন্ধকতা আসবে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সমস্যার জন্ম হবে। হাল না ছেড়ে দিয়ে নিজ যোগ্যতা সাথে এগিয়ে যাওয়া টাই বুদ্ধিমানের কাজ। আজ না হলেও কাল কিছু হবেই।

অপরাজিতাঃ মিলন্তিকা নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
শর্মিলী: ‘মিলন্তিকা’ আমার স্বপ্ন। ভবিষ্যতে আমি চাঁদপুর, ঢাকা সহ দেশের সব যায়গাতেই মিলন্তিকার ব্রাঞ্চ ওপেন করতে চাই। মিলন্তিকা যেনো একদিন নামকরা ব্র্যান্ড এ পরিচিতি পায়। সবার দোয়া প্রার্থী।

️মিলন্তিকার কিছু পণ্যের ছবি,

২.

 

‘যৌন হয়রানি দায়ে শিক্ষককে গণপিটুনি’


নারী সংবাদ


সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ছাত্রীদের প্রতি আপত্তিকর মন্তব্য ও নানা সময় বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির অভিযোগে ঐ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক সাইদুর রহমান ওরফে বাবুলকে শিক্ষার্থীগণ ও অভিভাবকেরা গণপিটুনি দিয়েছেন। পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে অভিভাবকরা।

সবার অভিযোগ, ‘শিক্ষক? সাঈদুর রহমান ওরফে বাবুল প্রায়শ ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানিমূলক প্রস্তাব দিতেন ও অশালীন মন্তব্য করতেন। বিষয়টি একাধিকবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদারকে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এভাবে চলতে থাকলে রবিবার সকালে এসব অভিযোগ নিয়ে ছাত্রীরা ক্লাসে গেলে প্রধান শিক্ষক উল্টো তাদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় তিনি সাঈদুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নিবেন না মর্মে শিক্ষার্থীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল ছাত্রীরা ক্লাস বর্জন এবং ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে অভিভাবক ও ছাত্রীরা সাঈদুর রহমানকে কঠিন গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাসোপর্দ করে।

টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার ওসি সায়েদুর রহমান জানান, ওই শিক্ষককে স্কুলের ছাত্রী ও অভিভাবকরা পিটুনি দেওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। পরে ওই শিক্ষককে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহরিয়ার রহমান ওই শিক্ষককে এক বছরের কারাদণ্ড দেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদার তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাঈদুর রহমান ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। এ জন্য ছাত্রী ও অভিভাবকরা বিক্ষুব্ধ হয়েছে।

 

‘সুসানে গীতি’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম নারী মেজর


নারী সংবাদ


‘সুসানে গীতি’ ক্যাপ্টেন পদবিতে যোগদান করেন ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী ডাক্তার হিসেবে। সশস্ত্র বাহিনীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম নারী মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়েছেন ডাঃ সুসানে গীতি।

৩০ সেপ্টেম্বর রবিবার সেনা সদরদপ্তরে তাঁকে মেজর জেনারেল পদবির র্যাং ক ব্যাজ পরিয়ে দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ সামছুল হক।
এই সর্ব প্রথম নারীর ক্ষমতায়নে এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত দেখা গেল সেনাবাহিনীতে মহিলা অফিসারের এ পদোন্নতি।

মেজর জেনারেল ডাঃ সুসানে গীতি ১৯৮৫ সালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী ডাক্তার হিসেবে ক্যাপ্টেন পদবিতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রথম নারী হিসেবে হেমাটোলজি’তে এফসিপিএস ডিগ্রী অর্জন করেন।

এছাড়াও তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন এবং বিভিন্ন সামরিক হাসপাতালে প্যাথলজি বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

 

‘ফটোগ্রাফি নারীদের কি ক্যারিয়ার হতে পারে’


মেইক ইউরসেলফ


বর্তমান সময়ে ছবির অনেক ক্ষমতা। মানে ছবি কথা বলে দেশ, সমাজ, এবং পরিবার পাশাপাশি ব্যক্তিগত মুহুর্ত্বের। একটা ছবি দিয়ে অনেক সত্যকে তুলে ধরা যায় কথা ছাড়া। আজকের দুনিয়ায় মিডিয়া থেকে শুরু করে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, এমনকি ব্যক্তিগত জীবনে, বিয়ে, জন্মদিনসহ নানান উৎসবে ছবি আমাদের জীবনের একটি অংশ। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও ক্যারিয়ার হিসেবে ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন বর্তমান সময়ে। কিন্তু কোথায় তা শিখবেন বা এর হালচাল সম্পর্কে অনেকের কোন ধারণা নেই। সুতরাং আসুন জেনে নেই ফটোগ্রাফি ক্যারিয়ার হিসেবে কতটুকু সম্ভাবনা রাখতে নারীদের জন্যও।

নারী ফটোগ্রাফার ইতিহাস

ফটোগ্রাফিতে নারীদের অংশগ্রহণ অনেক দিন ধরে। প্রাচীনতম নারী আলোকচিত্রীকারীনীদের মধ্যে বেশিরভাগ ব্রিটেন বা ফ্রান্সের। মুলত পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা প্রাথমিকভাবে নারীরা এই পেশায় আসেন। উত্তর ইউরোপে এটি সর্বাধিক ছিল। পরে ১৮৪০ সালের দিকে নারীগণ প্রথমে ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি এবং সুইডেনের স্টুডিওতে ফটোগ্রাফি ব্যবসা শুরু করেন। ব্রিটেনের তাদের পরিবার থেকে নারীরা ফটোগ্রাফিকে একটি শিল্প হিসেবে গড়ে তুলেন। এরি ধারাবাহিতায় বর্তমানে দিনে দিনে নারী ফটোগ্রাফার বেড়ে চলছে বাংলাদেশেও।

কতরকম ক্যারিয়ার

ফ্যাশন ফটোগ্রাফাররা (ফ্যাশন শুট করে)
ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফাররা(জীবজন্তুর ছবি তুলে),
ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফটোগ্রাফাররা (মেশিনের ছবি তুলে),
আবার ফরেনসিক ফটোগ্রাফাররাদের কাজ (বিভিন্ন অ্যাসপেক্ট থেকে কোন ক্রাইমের ছবি তোলা),
ল্যান্ডস্কেপ ফটোগ্রাফাররা, (তাদের কাজ শুধু বিভিন্ন স্থানকে দর্শনীয় স্থানের মত করে ছবি তোলা।)

সুতরাং যেকোনো ফটোগ্রাফিই পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া যায়।

নারী ফটোগ্রাফারদের পুরষ্কার গ্রহণ

এমা বার্টন ছিলেন প্রথম মহিলা যিনি রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির পদক লাভ করেছিলেন ১৯০৩ সনে। এটি একটি কার্বন মুদ্রণের জন্য দ্য Awakening এনটাইটেলমেন্ট।

ফটোগ্রাফির জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন ভার্জিনিয়া স্কাউ ১৯৪২ সালে। প্রেস ফটোগ্রাফিতে অসাধারণ কাজ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে পুরস্কার প্রাপ্ত প্রথম মহিলা ছিলেন একজন অপেশাদার যিনি ক্যালিফোর্নিয়ার রেডিংয়ের একটি সেতু থেকে ঝুলন্ত ট্র্যাক্টরের ট্রেলারের ক্যাব থেকে উদ্ধারকৃত দুইজন পুরুষের ছবি তোলেন।

এছাড়া ২০০০ সালে, মার্সিয়া রেড, প্রথম মহিলা ছবির পরিচালক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রগ্রাহক গিল্ডে যোগদান করেন ২০০০ সালে এখনও ছবির জন্য অপারেটিং ক্যামেরাম্যান লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের সোসাইটি জিতেছিলেন তিনিই।

আয়

ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফারদের তেমন কোন ফিক্সড বেতন হয় না। ৩০-৩৫০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে। আর ব্যক্তিগতভাবে যদি কেউ ফটো বিক্রি করে, তাহলে অনেক উপার্জন।

ফটোগ্রাফির পেশায় শুরুতেই কি করবেন?

একটা ক্যামেরা সংগ্রহ করুন তবে বেশিদামি না কমদামি। পাশাপাশি ক্যামেরা লেন্স, ফোকাস এবং শ্যাডো সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা গ্রহণ করুন।

ফটোগ্রাফি নিয়ে বই পড়ুন

ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়ালেখা কোন বিকল্প নেই পড়াশুনার জন্য প্রচুর বই পাওয়া যায় নীলক্ষেতসহ নানান বই এর দোকানে। ফটোগ্রাফি নিয়ে দেশি-বিদেশি অনেক ম্যাগাজিন রয়েছে। সেগুলো পড়ুন এবং মনোযোগ দিয়ে দেখুন।

সফটওয়্যারগুলো সম্পর্কে ধারণা

ছবি তোলার সাথে সাথে ফটোগ্রাফিক সফটওয়্যারগুলো সম্পর্কে ধারণা নিন। অ্যাডোবি ফটোশপ, লাইটরুম প্রভৃতি প্রভৃতি সফটওয়্যারের ব্যবহার ফটোগ্রাফিতে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা 

আমাদের দেশে ফটোগ্রাফি শেখানোর অনেক প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে:

পাঠশালা: তিন বছরের প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি কোর্সের (ছয় সেমিস্টার) সেমিস্টার ফি বর্তমানে ৩৫ হাজার টাকা। ঠিকানা: পাঠশালা, ১৬, শুক্রাবাদ, ঢাকা। ফোন: ৯১২৯৮৪৭।

কাউন্টার ফটো: তরুণ ফটোগ্রাফারদের জন্য রয়েছে ছয় মাসের ‘মেন্টর প্রোগ্রাম’। এক বছরের ডিপ্লোমা কোর্সের ফি ৬৫ হাজার টাকা। ঠিকানা: ১৪ পূর্ব শেওড়াপাড়া, মিরপুর। ফোন: ৯০১৩০২৬, ০১৬৭৭০৬৮৭৩৫।

বেগার্ট ইনস্টিটিউট অব ফটোগ্রাফি: এক বছরমেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা। আর প্রতি মাসে টিউশন ফি দুই হাজার টাকা। ঠিকানা: ৮৩ ল্যাবরেটরি রোড (কফি হাউসের গলি), ঢাকা। ফোন: ০১৭১৬৬৬৩৭৫৭।

ঢাকা ফটোগ্রাফি ইনস্টিটিউট: এখানে ভিডিও কোর্স ফি ১০ হাজার টাকা এবং ডিপ্লোমা কোর্স ফি ২০ হাজার টাকা। ঠিকানা: সাহেরা ট্রপিক্যাল সেন্টার (ষষ্ঠ তলা), ২১৮ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা। ফোন: ৯০১৪২১৩, ০১৮১৯২৮৫৫৮৪।

ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (ডিইউপিএস): ডিইউপিএসে ফটোগ্রাফির ওপরে শুধু বেসিক কোর্স করানো হয়। তিন মাসের বেসিক কোর্স ফি তিন হাজার টাকা। প্রশিক্ষণ কোর্সে যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন, তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন। ঠিকানা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, নিচতলা। ফোন: ০১১৯৭২৬০৫৫২-৫৪।

নিত্য নতুন ফটোগ্রাফিক টার্মগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখুন। তবে পেশা হিসেবে ফটোগ্রাফিকে নিতে চাইলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থাকা জরুরি।

 

‘মাদকের টাকা না দেওয়ায় ঘুমন্ত অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা’


নারী সংবাদ


সাহেরা বেগম (২৪) নামে একজন অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন তার স্বামী।

নিহত সাহেরা বেগম উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের ধোপারটেক এলাকার আপেল মিয়ার স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে স্বামী আপেল মিয়া পলাতক রয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায়। মাদকের টাকা না দিতে পারায় ঘুমন্ত অবস্থায় সাহেরাকে তার স্বামী আপেল মিয়া বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। শুক্রবার রাতে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের ধোপারটেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গতকাল শনিবার সকালে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ।‍

স্থানীয়রা জানান, গত কিছুদিন ধরে আচরণে তাকে অপ্রকৃতিস্থ বলে মনে হয়েছে। রাতে বা সকালে স্ত্রীর সঙ্গে তাকে প্রায় ঝগড়া করতে দেখেছে প্রতিবেশীরা।

বিয়ের পর থেকে মাদকের টাকার জন্য সাহেরাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত আপেল। এর মধ্যে সাহেরা অন্তঃসত্ত্বা হয়। শুক্রবার রাতে মাদকের টাকা না দিতে পারায় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সাহেরা ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে স্বামী আপেল ঘুমন্ত সাহেরাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

শনিবার সকালে পরিবারের সদস্যরা খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এসআই আবুল কাসেম।

 

মাকে সন্তানরা বাঁশবাগানে ফেলে গেল


নারী সংবাদ


ফুজলী বেগম (৮৬)। বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুচিয়াবাড়ি গ্রামে।৫ সন্তানের জননী ফুজলী বেগম। ৩০ বছর আগে তার স্বামী ছামাদ শেখ মারা যান। তখন থেকে সংসারের হাল ধরেন তিনি। তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে এই জননী অনেক কষ্টে খেয়ে না খেয়ে তাদের বড় করেছেন। সবার বিয়েও দিয়েছেন মা। এখন সবারই আলাদা সংসার। কিন্তু বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্ব কেউই নিতে চায় না।

৮৬ বছরের বৃদ্ধা মা ফুজলী বেগমকে
২৬ সেপ্টেম্বর বুধবার সন্ধ্যার দিকে কিছুটা দূরে রাস্তার পাশের বাঁশবাগানে ফেলে দিয়ে আসে সন্তানরা কারণ এই বৃদ্ধ মার নড়াচড়া করতে পারেন না ফলে তাকে দেখা শোনা করতে হত।

এর ঘটনার পর প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে ছোট ছেলে রাবু শেখের বাড়ি নিয়ে আসে। পরিত্যক্ত ঘরের বারান্দায় রাতে থাকার ব্যবস্থা করেন তারা।

বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। খবর পেয়ে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু বিকেলে বৃদ্ধা মাকে দেখতে ছুটে যান ওই বাড়িতে। তার দায়িত্ব নিতে চান তিনি। চেয়ারম্যান বৃদ্ধা মায়ের প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে দেবেন বলে ঘোষণা দেন।

লোহাগড়া থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই সিদ্দিক জানান, ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ সময় সকল বউদেরকে শাশুড়ীর প্রতি নৈতিক দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানানো হয়েছে। ছেলেরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়েছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে তিন ছেলে-মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো- বড় ছেলে ডাহু শেখ, ছোট ছেলে রাবু শেখ ও বড় মেয়ে কুলসুম বেগম।

তবে ঘটনার মূল হোতা মেঝো ছেলে বাবু শেখকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

লোহাগড়া থানা … ৮৬ বছরের অসহায় বৃদ্ধা মাকে রাস্তার পাশে বাঁশবাগানে ফেলে গেলেন তার ছেলে ও পূত্রবধূ এই নির্মম সত্যকে দেখছে গোটা দেশ ও গোটা জাতি।

 

স্কুটি-নারী : নিজের বাহন পেতে আগ্রহ বাড়ছে


নারী সংবাদ


কলেজ পড়ুয়া, চাকরিজীবী কিংবা ব্যবসায়ী- নারীদের পছন্দের বাহনের তালিকায় বেশ আগেই জায়গা করে নিয়েছে দুই চাকার বাহন স্কুটি। আজকাল নগরজুড়ে প্রায়ই চোখে পড়ে নারীদের স্কুটি চালিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার দৃশ্য। শখে নয়, প্রয়োজনের তাগিদেই নারীরা বেছে নিচ্ছেন এ বাহন। বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট।
যানজট সমস্যা, গণপরিবহনের অপর্যাপ্ততা তো আছেই। তার ওপর দীর্ঘ অপেক্ষার পর বাসে উঠতে পারলেও সেখানে নেই পর্যাপ্ত সিট। লোকাল বাসে নারীদের বিড়ম্বনার শিকার হওয়ার ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক।
গবেষণা থেকে জানা যায়, গণপরিবহনে ৮৪ ভাগ নারী যৌন হেনস্তার শিকার হন। এসব সমস্যা সমাধানে সমাজ ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ তৎপরতা চোখে পড়ে না। অগত্যা তারা নিজেরাই বেছে নিচ্ছেন আপন গতিছন্দ, চলার পথ, পথপরিক্রমণের উপায়। কবির ভাষায় বলা যেতে পারে, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রেÑ আতিকা রোমা, আমবারিন খান, মোনালিসা ও স্বপ্না ইসলাম তেমনই স্বনির্ভর, আত্মপ্রত্যয়ী চার নারী।
১৯৯০ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় আতিকা রোমার বাইক চালানো শুরু। তবে মাঝে ছিল বিশাল একটা সময়ের ব্যবধান। শিক্ষাজীবনের গ-ি পেরিয়ে ২০০৪ সালে তার কর্মজীবনের শুরু। তখন বাস, সিএনজিই ছিল ভরসা। তবে তা বেশি দিন ভালো লাগেনি তার। ২০০৯ সালে ব্যাটারিচালিত মোটরসাইকেল দিয়ে শুরু করলেন যাতায়াত। ওই সূচনা। রোমা এখন চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন। নিজের উদ্যোগে নারীদের জন্য গড়ে তুলেছেন ‘যাব বহুদূর’ নামে একটি স্কুটি ড্রাইভিং প্রতিষ্ঠান। রোমার দৃঢ় বিশ্বাস, যাত্রাপথে নারীরা স্বাবলম্বী হলে নারী স্বাধীনতার পথে তারা এগিয়ে যাবে আরো একধাপ।
আমবারিন কাজ করেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে। চার বছর ধরে স্কুটি চালাচ্ছেন। যখন চালানো শুরু করেন, তখনো তার গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন হয়নি। আলাপচারিতায় জানালেন, বাসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা, রিকশা ও সিএনজির অতিরিক্ত ভাড়া আর যানজটের নিত্য ভোগান্তি তাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। তবে তার বেশ ভয় লাগত বাসের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতিগুলোকে। বেশ কয়েকবার সেই অনভিপ্রেত পরিস্থিতিতে পড়তেও হয়েছে তাকে। অনেকটা জেদের বশেই স্কুটি চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেন শেষতক। তবে ছোটবেলা থেকেই বাইক চালানোর প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তার। বাবাকে বাইক চালাতে দেখে সে আকাক্সক্ষা ক্রমে ক্রমে আরো জোরদার হয় তার।
বাসা থেকে খুব একটা আপত্তি না থাকলেও প্রথম প্রথম তারা বিষয়টি সহজভাবে নেয়নি। তিনি বলেন, স্কুটি ছাড়া একটা দিনও এখন আমি ভাবতে পারি না। স্কুটি আমার জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে।
বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন মোনালিসা। ২০১২ সাল থেকে স্কুটি চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার কাজের ধরনটা একেবারেই ভিন্ন। অফিসে সময়মতো উপস্থিত হতে হয়। বাস, সিএনজি, রিকশার জন্য অনির্দিষ্ট কাল অপেক্ষা করে থাকলে অফিসে ঠিকমতো যাওয়া যায় না। কাজের প্রয়োজনেই আমি স্কুটি চালানো শুরু করি। এখন তো স্কুটি ছাড়া চলার কথা ভাবতেই পারি না।
বেসরকারি ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা স্বপ্না ইসলাম। অফিসে যাতায়াত এবং দুই সন্তানকে স্কুলে আনা -নেওয়ার দৈনন্দিন কাজটা তিনি স্কুটিতেই করেন। বলেন, বর্তমানে ঢাকায় নারী বাইক চালকের সংখ্যা যে ঠিক কত, তার সঠিক তথ্য নেই। তবে নারী বাইকারদের নিয়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংগঠনের তথ্যানুযায়ী, এ সংখ্যা বর্তমানে পাঁচ-ছয়শ’র কাছাকাছি। দিন দিন বাড়ছে এ সংখ্যা। যাদের বেশিরভাগই চাকরিজীবী কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলো বিশেষ করে ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, বারিধারার মতো এলাকায় মেয়েদের স্কুটি চালাতে বেশি দেখা যায়।
নারীদের বাইক চালানোর ব্যাপারে প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো কি? এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নারী বাইক চালকরা জানান, পরিবারের সম্মতি পাওয়াটাই এ ক্ষেত্রে মুখ্য বিষয়। কারণ আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনো কোনো নারীকে দুই চাকার যানের চালকের আসনে ভাবতে বা দেখতে ঠিক অভ্যস্ত নন। এ কারণে পরিবারের অনাপত্তি পাওয়াটাই হলো বড় কথা। পরিবারের সম্মতিটা প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে বড় সাহসের ব্যাপার হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় অনেকেই কটূক্তি করেন, আড়চোখে তাকান। এসব প্রতিবন্ধকতাকে প্রত্যয় ও সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে পারলে স্কুটি হবে নারীর জন্য নিজের বৈশিষ্ট্য ও স্বয়ম্ভরতা প্রকাশের বড় এবং বলিষ্ঠ মাধ্যম।ঢাকা,সুত্র: (বাসস)।

 

সুবহে সাদিক


কামরুল হাসান তুহিন


আঁধার রাতের তারা গুলো
ঘুমিয়ে পড়া মেঘ গুলো
মেঘের মাঝে দুঃখ গুলো
কেউ দেখেনি, কেউ দেখেনি।

আকাশ ভরা বৃষ্টি গুলো
বৃষ্টি ভেজা পাখি গুলো
পাখির কন্ঠে গান গুলো
কেউ শোনেনি, কেউ শোনেনি।

সুবহে সাদিকের ক্ষণ গুলো
মুয়াজ্জিনের সুর গুলো
সুরের মাঝে মায়া গুলো
কেউ বোঝেনি, কেউ বোঝেনি।

ভোরে ওঠা নক্ষত্র গুলো
নিবিষ্ট মনের সালাত গুলো
সিজদারত অশ্রু গুলো
কেউ মোছেনি, কেউ মোছেনি।।

© ধ্রুব নীল

 

“সত্যিকারের মা” আবার কি !



তাসলিমা শাম্মী


” তোমার জানাশুনা কেউ যদি মা হতে চায় আমাদের গল্পটা বইলো । গর্ভধারিণী হতে চাইলে না ,মা হতে চাইলে । বুঝছো ? আমার নাম্বারটা রাখো । বাসায় আসো একদিন সময় করে , গল্প হবে অনেক । কর্ণফুলী নদীর ওপাড়ে যেখান থেকে সবুজের শুরু , কয়েক মিনিট গেলেই আমাদের বাড়িটা। একদম রাস্তার পাশেই , সড়ক থেকে দেখা যায় “।

একজন সত্যিকারের মা র সাথে কথা হচ্ছিল। ”সত্যিকারের মা “ আবার কি ! সেই গল্পটাই শুনতে আমার ভীষণ ইচ্ছে করছিল উনার নিজের মুখে। তাই এক ছুটির দিনের বিকেলে আমি শহরের বিচ্ছিরি রকমের কোলাহল আর কালো ধোঁয়া পার হয়ে কর্ণফুলী ব্রিজটার ওপাশে সবুজে মোড়ানো ধান ক্ষেতের মাঝখানটায় দাঁড়িয়ে থাকা একতলা বাড়িটায় গিয়ে কড়া নাড়লাম।

” আমিতো শুধু মা হতে চেয়েছিলাম। খুব সাধারণ আর দশজন মেয়ের মতই মাতৃত্বের অনুভূতির স্বাদ পেতে চেয়েছিলাম। বান্ধবী আর কলিগদের দেখে দেখে আমার খুব ইচ্ছে করত প্রথম অনুভব করতে কেমন লাগে “আমি মা হতে চলেছি”!
তারপর থেকে প্রতিটা দিন, প্রতিটা সপ্তাহ গুনে গুনে নিজের ভিতরে আরেকটা প্রাণের অস্তিত্ব অনুভব করতে, সুখ সুখ সেই অসুখটাকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে নয়মাস ধরে উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। নয়মাস পর একদিন মৃত্যু যন্ত্রণার খুব কাছাকাছি গিয়ে স্বর্গীয় সুখ নিয়ে তীব্র চিৎকারে আকাশ বাতাস ফাটিয়ে জন্ম দিতে চেয়েছিলাম আমার ভিতরের ছোট্ট আরেকটা আমি কে। তারপর তো অবাক হবার পালা আমার , কিভাবে আমার রক্ত মাংস দিয়ে আমারই ভিতরে গড়ে উঠা সেই ‘আমিটা’ ভিন্ন এক নিজস্ব স্বত্বা নিয়ে সম্পূর্ণ একজন মানুষ হয়ে উঠছে আমি সেটা অবাক হয়ে হয়ে দেখব !!

কিন্তু না। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছে ছিল অন্যরকম। দীর্ঘ দশবছর ধরে ছোটাছুটি করার পর এই দেশের এবং পার্শ্ববর্তি দেশের নামকরা সব স্পেশালিষ্ট রা যখন আমাকে আর আমার স্বামী মাসুমকে গম্ভীর মুখে কনফার্ম করে দিল যে আমি আর কোনদিনই মা হতে পারবো না তখন আমার মনে হয়েছিল এই পৃথিবীতে থেকেই বা আর লাভ কি যদি নিজের নিজস্ব কিছু পৃথিবীটাকে দিয়ে যেতে না পারি!! সেদিন যখন আমি আমার মা কে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলাম তখন মা আমাকে স্বান্তনা দিতে দিতে বলেছিল, “গর্ভধারিণী হওয়া কিন্তু সহজ মা হবার চেয়ে!! গর্ভধারিণী অনেকে ইচ্ছে করলেই হতে পারে কিন্তু মা সবাই হতে পারেনা রে “।

আমি মা র কথার ইঙ্গিতটা ধরতে ঠিকই পেরেছিলাম সেদিন। খুব রাগ হয়েছিল মা র উপর আমার। মা কে আমার হিংসা হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, আমার মা তো অনুভব করতে ঠিকই পেরেছিল সেই স্বর্গীয় অনুভুতিটুকু তাই আমার মনের ব্যাথা কিভাবে বুঝবে ?

আমার সেই শুন্যতার দিনগুলোতে আমার স্বামী মাসুম ছিল নির্বিকার! সন্তান নাই বলে যে মানুষের একটা দুঃখ থাকতে পারে সেই জিনিসটা মাসুমের জানা ছিল না! শুধু আমিই একা কেঁদে মরতাম। শুধু মাসুম না , ওর মা , ভাই, বোন কারোই কোন মাথাব্যাথা ছিল না আমার এসব ছোটাছুটি আর কান্নাকাটি নিয়ে!!
আমি এর ওর কাছ থেকে তথ্য যোগাড় করে করে দেশ বিদেশের ডাক্তার খুঁজে বের করছি, এই টেস্ট সেই টেস্ট করছি, অলিগলি খুঁজে ঝাড়ফুঁক করা পানি এনে খাচ্ছি কিন্তু আমার শ্বশুর বাড়ির একটা মানুষও আমাকে বাঁধা না দিলেও এসব ব্যাপারে কোন ধরনের আগ্রহ দেখায়নি।
আমার স্কুল টিচার শাশুড়ি বরং বিভিন্ন ভাবে আমাকে বুঝাতে চাইতেন এটাকে তেমন সিরিয়াস ভাবে নেবার কিছু নাই। কি আশ্চর্য !! মা হতে না পারাটা সিরিয়াস কিছু না !! আমার দেবর পিয়াল দেশী বিদেশী প্রচুর পুরষ্কার পাওয়া একজন মেধাবী ফটোগ্রাফার , সে আমাকে এই ব্যাপারটা নিয়ে বিচ্ছিরি রকমের খেপাত !! একমাত্র ননদ রিমি , যাকে আমি বোনের মত আদর করি সে আমার কান্না দেখে বলত আমি নাকি দুঃখ বিলাস করতে ভালবাসি !! অসহ্য লাগত আমার এই পুরা পরিবারটাকে!!

এমনিতেই বিয়ের পর থেকে আমি অনেক ধরনের অস্বাভাবিক ব্যাপার লক্ষ্য করতাম এই বাড়িতে। ষোল বছর আগে আমার বিয়ের পরপর একদিন মা মানে আমার শাশুড়িকে চুপিচুপি বলেছিলাম, ” মা , আমার পিয়াল কে কেমন জানি অন্যরকম লাগে “। মা একদম স্বাভাবিক ভাবেই জবাব দিল, ‘ অন্যরকম কেন লাগবে বৌমা! সেও তোমার আমার মত মানুষ ‘। আমি মা কে জোর দিয়ে বুঝাতে চাইলাম যে পিয়াল আমার উনার মত বা মাসুমের মত নরমাল নয়। মা আমার কথা পাত্তাই দিলেন না!! খুব স্বাভাবিক ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বল্ল, ‘ তুমি নরমাল তো? আমারতো মনে হয় তোমারি মন নরমাল না’!! কি অপমান !! সেদিনের পর থেকে আমি পিয়ালকে নিয়ে কোন ধরনের কথা বলা বাদ দিয়েছিলাম । তারপর আসি রিমির কথায়। রিমি, আমার একমাত্র ননদ। খুব মেধাবী ছাত্রী। একদিন অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, রিমির ডান কানের লতিতে একটা গভীর ক্ষত! আমি চুল বেঁধে দিতে দিতে রিমিকে জিজ্ঞেস করলাম, ” রিমি , তোর কান কে খাইছে রে”? রিমি হাত নেড়ে গল্প বলার মত করে আমাকে বলে, ‘ ভাবি জান ! আমার জন্মের পর আমাকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেয়া হয় , তখন কাক এসে মাংসের টুকরা মনে করে ঠুকরে আমার কান খেয়ে ফেলে ‘ !!
কি অসভ্যরে বাবা !! শাঁকচুন্নি একটা ! আমি মনে মনে ভাবলাম !! বেয়াদবের পরিবার !! দূর! আর কোন আগ্রহ নাই এদের নিয়ে আমার , আমি মরছি আমার চিন্তায় তখন। একটা বাচ্চার জন্য আমার মন প্রাণে তখন মরুভূমির হাহাকার !!
দীর্ঘ দশবছর ধরে চিকিৎসা করার পর যেদিন আমি আর মাসুম ভারতের বিখ্যাত এক ডাক্তারের কাছ থেকে নিরাশ হয়ে দেশে ফিরে আসলাম , ঘরের সবাই সেদিন আমাকে কাউন্সিলিং করা শুরু করল । আমার তখন দুনিয়াদারি অসহ্য লাগছিল। চোখের সামনে আমাকে সহানুভূতি দেখানো মানুষগুলোকে অমানুষের মতোই লাগছিল। ততদিনে পিয়াল দেশের অনেক নামকরা একজন ফটোগ্রাফার , রিমি ইউনিভার্সিটিতে পড়ায়, মা রিটায়ার্ড করে একটা এন জি ও তে সময় দিচ্ছিল ।

সেদিন আমি শোবার ঘরের বাতি নিভিয়ে অন্ধকারে কাঁদছিলাম । মাসুম কে বলছিলাম, ” মাসুম আমি কি আল্লাহর কাছে বেশী কিছু চেয়েছিলাম? একটা বাচ্চাইতো চেয়েছিলাম ! মা হতে চেয়েছিলাম “। আমি আঝোরে কাঁদছিলাম।

মাসুম আমাকে মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিল, ‘ তোমাকে আজকে এমন একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব যাকে গর্ভবতী হতে না পারার অপরাধে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল । কিন্তু উনি আজকে একজন সত্যিকারের মা , তিন তিনজন সফল সন্তানের গর্বিত মা ‘। আমি অবাক হয়েছিলাম, মাসুম কি শোকে দুক্ষে পাগল হয়ে গেল নাকি! কি বলে এসব!!

আমাকে হাত ধরে টেনে মাসুম বসার ঘরে আনল। ঘরের সবাই তখন সেখানে বসে টিভি দেখছিল । আমি তখন অন্য কাউকে খুঁজছিলাম। মাসুম আমার শাশুড়ি মা কে দেখিয়ে দিয়ে বল্ল, দেখ উনিই সেই মা ।
মাসুম সবার সামনেই আমাকে বলা শুরু করল , ‘ খুব ছোট বেলায় আমার মা বাবা এক্সিডেন্টে মারা যাবার পর আমি চাচা চাচির কাছে অযন্তে অবহেলায় বড় হতে থাকি , আমার এই মা কে তখন উনার স্বামী ত্যাগ করেছেন । মা উনার বাবার দেয়া এই বাড়িটায় উনার বৃদ্ধ মা কে নিয়ে থাকেন আর একটা স্কুলে চাকরি করেন । আমাকে মা দত্তক নিয়ে আমার মা হলেন। আমার বয়স যখন পাঁচ , একদিন মা খবর পেলেন এক পরিবার তাদের সদ্য জন্ম নেয়া একটা বাচ্চাকে হাসপাতালে ফেলে চলে গেছে কারণ বাচ্চাটা তৃতীয় লিঙ্গ নিয়ে জন্মেছে। আমার মা সেদিন সেই বাচ্চার মা হয়ে তাকে বাসায় নিয়ে আসলেন , বাচ্চাটার কি অপরাধ ছিল বল? তারপর এক শীতের ভোরে বাসের জন্য অপেক্ষা করার সময়ে ডাস্টবিনের ময়লার ভিতরে একজন মানবশিশুর কান্না শুনতে পেয়ে মা তাকেও বুকে টেনে নেয়। সেদিন কাঁক ফেলে দেয়া রক্তমাখা নবজাতকটার কান ঠুকরে খাওয়া শুরু করে দিয়েছিল। তুমি নিশ্চয় সবই বুঝতে পারছ! পুরো গল্পটাই এখন তোমার চোখের সামনে ‘।

সেদিন থেকে আমার নতুন করে জন্ম হল। আমি চোখ ভরা অপরাধবোধ নিয়ে ওদের দিকে তাকাতে পারছিলাম না। আমার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছিল। রিমি শয়তানটা চিমটা দিয়ে বলছিল ,” ইশ ! কি ঢং ! আমি কি মিথ্যে গল্প বলেছিলাম “? আমি মা কে জড়িয়ে ধরেছিলাম প্রচন্ড অপরাধবোধ নিয়ে !! এমন একজন মা কিভাবে আমার চোখে পড়ল না এতগুলো বছর !! আমি কাঁদতে কাঁদতে অপূর্ব সুন্দর এই পরিবারটাকে মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছি। ফটোগ্রাফারটা তখন আমার বোকার মতন কাঁদার ছবি তুলছিল একটার পর একটা।

আমি এখন দুই দুইটা বাচ্চার মা। এত ব্যস্ত থাকি ওদের নিয়ে আর বইলো না । তোমার চেনা জানা যদি কেউ আমার মত মা হতে চায় তাদেরকে আমাদের গল্পটা বইলো। বলবা ,” গর্ভধারন অনেকেই করতে পারে,সত্যিকারের মা হতে সবাই পারেনা।

সন্তানহীন মানুষ যেমন আছে এই পৃথিবীতে , মা বাবাহীন অসংখ্য সন্তানও রয়েছে আমাদের আশেপাশে। তাদের মা বাবা হতে পারাটা আরো আনন্দের , আরো তৃপ্তির। সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয় ব্যালেন্স করার জন্যই এই ব্যবস্থা করে রেখেছেন ” !!

[Courtesy : Taslima Shammi]