banner

সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1557 বার পঠিত

 

বিশিষ্ট সাহিত্যিক ফরিদা হোসেনের সাক্ষাৎকার

 


অপরাজিতা


সুসাহিত্যিক ফরিদা হোসেন একজন গল্পকার, ঔপন্যাসিক, শিশু সাহিত্যিক, নাট্যকার, নাট্যপরিচালক ,গীতিকার সুরকার,আবৃত্তিকার,অনুবাদক , এবং সম্পাদিকা।  ৬০-এর দশকে ছাত্রী অবস্থায় তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘অজন্তা’ প্রকাশ হয়। তার গল্প সংকলন, উপন্যাস, নাটক, শিশু সাহিত্য, অনুবাদগ্রন্থসহ প্রায় ৫০টির মতো গ্রন্থ রয়েছে। ফরিদা হোসেনের যে সাহিত্যকর্ম তা এই সময়কার একজন আধুনিক লেখিকার প্রতিনিধিত্ব করে। তিনি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংগঠন পি.ই.এন এর বাংলাদেশ সেন্টারের সভাপতি হিসাবে দীর্ঘ তের বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। ফরিদা হোসেন ১৯৪৫ সালের ১৯ জানুয়ারী,ভারতে কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ফরিদা হোসেন ২০০৪ সালে সাহিত্যে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক পান। এছাড়াও মওলানা ভাসনী ও অতিশ দিপংকর স্বর্ণপদকসহ মোট ৬ টি ও বিভিন্ন সংগঠন থেকে পক্ষ থেকে মোট ২৫ টি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। হোসেন চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার শাহেরখালী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে সদস্যা। তার বাবা ফয়েজ আহমেদ ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শ্রমিক নেতা ও আই. এল. ও এর গর্ভনিং বডির প্রাক্তন পরিচালক এবং মা বেগম ফয়েজুন্নেছা একজন গৃহিণী। ফরিদা তাদের প্রথম কন্যা।

বর্তমানে তিনি ‘অবিনশ্বর’ সাহিত্য পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক দায়িত্ব পালন করছেন। প্রচারবিমুখ এই মহিয়সী নারী মুখোমুখি হয়েছিলেন  অপরাজিতা সাথে। তার সেই কথপোকথনের কিছু অংশ নিম্নে তুলে ধরা হলো-

অপরাজিতা: লেখিকা হয়ে উঠার শুরুর গল্পটা জানতে চাই।  তৎকালীন সামাজিক প্রেক্ষাপট টাই বা কেমন ছিলো?

ফরিদা হোসেন:আমার লেখালেখির শুরুটা হয়েছে খুব ছোটবেলায়। তখন আমি স্কুলে পড়তাম। আর প্রেক্ষাপটটা ছিলো ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনকে ঘিরে। আমরা তখন নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় থাকতাম। ঐ জায়গাটা ছিলো ভাষা আন্দোলনের তীর্থ ভূমির মত। যা আমার কঁচিমনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। বলা যায় তখন থেকেই লেখালেখিটা শুরু। আমার মনে আছে ঐ পরিস্থিতিতে আমি লিখেছিলাম-

রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।

                 দেশের কথা বলতে চাই।

এরপর থেকেই লিখতে থাকা। নিজ ইচ্ছাতেই কবিতা এবং ছোট গল্প লিখতাম যা মাথায় আসত। তবে খুব গোপনে লিখতাম। একদিন আমার লেখা বাবার হাতে চলে যায়। যেহেতু আমি গল্প কবিতা লিখতাম তাই পড়াশুনায় খুব একটা মনোযোগী ছিলাম না। তাই আমার বড় ভাই একদিন বাবার কাছে ঘর ভর্তি মানুষের সামনে নালিশ করলেন যে আমি পড়াশুনা না করে শুধু কবিতা লিখি। তখন বাবা সবার সামনে কবিতা গুলো আনতে বললেন এবং পড়তে বললেন। আমি পড়ে শুনালাম। সবাই খুব প্রশংসা করলেন। লেখা ভালো হয়েছে সে জন্যে নয়। এতটুকু মেয়ের লেখায় যে দেশাত্নবোধ ফুটে উঠেছে সে জন্যে।

আর তৎকালীন সামাজিক প্রেক্ষাপট বলতে গেলে বলা যায় সাহিত্য চর্চাটা তখন খুব সীমিত আকারে ছিলো। নারীদের মধ্যে তো আরো কম ছিলো। তবে সেই প্রজন্মের সাহিত্যিক ও শিল্পীরা মুলত ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যে অত্যন্ত উদার, প্রগতিশীল, সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক মনমানসিকতা প্রকাশ করত। এখন যেমন অসুস্থতার প্রতিযোগিতা ঢুকে গেছে তেমনটা ছিলো না।

অপরাজিতা: আপনি শিশু ও নারীদের নিয়ে লিখেছেন। কেন  নারী ও শিশুকে লেখার মুল বিষয় হিসাবে গ্রহন করলেন?

ফরিদা হোসেন: মুলত আমার ভাবনায় ‘শিশুদের নিয়ে নিজস্ব জগতে হারিয়ে যাওয়া,’ শিশুদের মন ভোলানো  রাজ্য, জেগে ওঠা ভোরের মতো শিশুদের জাগিয়ে তোলার গল্প কেন জানি বেশি নাড়া দেয়। ওদের পৃথিবীটাকে নিষ্পাপ আর পবিত্র মনে হয়। তাই ওদের সঠিক দিক নিদের্শনার দেবার জন্য, ওদের পৃথিবীটাকে আনন্দে ভরিয়ে দিতেই আমার এ চেষ্টা। সত্যি বলতে কি, ওদের জন্য কাজ আমি করতে ভীষণ আনন্দ পাই।
আর  নারীদের নিয়েও আমার বেশ কয়েকটা বই রয়েছে। সব সময় আমি মনে করি, প্রতিটি নারীর উচিত স্বাধীনভাবে ব্যক্তিত্বের আলোকে নিজের প্রতিভাকে জাগ্রত করার চেষ্টা করা। নিজস্ব কর্মের গুণে প্রতিটি নারীই যেন হয়ে ওঠে বহুমুখী প্রতিভায় উদ্ভাসিত। তাই নারীকে নিয়ে কলম ধরা ।

অপরাজিতা: শিশুদের নিয়ে আপনার যে কাজ গুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে জানতে চাই?

ফরিদা হোসেন: আমার প্রথম লেখাটি প্রকাশ পাওয়ার পর ১৯৬৫ সালে বিটিভিতে প্রথম রূপকথার দেশে নামক ২৫ পর্বের শিশুতোষ ধারাবাহিক  নাটক পরিচালনা করি। এই ধারাবাহিকটি বিটিভির ইতিহাসে প্রথম এত বড় কাজ যা এখন পর্যন্ত কোন চ্যানেল করেনি। তারপর থেকেই শিশুদের নিয়ে লেখালেখি,নাটক পরিচালনা,গান লেখা ,সুর দেওয়া  ধারাবাহিক ভাবে করতে থাকি। আমার লেখা শিশুতোষ অনেক গল্পের মধ্যে, তেলাদার তেলান্তক, তূষার কন্যা, মায়াদ্বীপে অভিযান, খুকুর স্বপ্ন, চাঁদ কন্যার কথা, সপ্তবর্ণ,শান্তির পায়রা, লুকোচুরি, মিতালী, আনন্দ ফুলঝুরি, অচিনপুরের রূপকথা, রোজ রোজ,তারার খোঁজে, এক ব্যাগ রূপকথা, রূপকথা সমগ্র ইত্যাদি অন্যতম।এছাড়াও শিশুদের জন্যে যে কাজ করেছি তার মধ্যে আরেকটি উল্লেযোগ্য কাজ হলো- আমার একটা শিশুদের সংগঠন আছে ’আঞ্জুমান’এই সংগঠনের মাধ্যমে আমি সব কাজ পরিচালনা করেছি।

বিটিভিতে ফরিদা হোসেনের পরিচালনায় ছোটদের নাটকের লিংক…..

“শিশুতোষ নাটক”

অপরাজিতা: পরিচালক হিসাবে কখন থেকে কিভাবে কাজ শুরু করলেন? সেই সাথে মিডিয়াতে আপনার বহুমুখি প্রতিভার সাথেও পরিচিত হতে চাই?

ফরিদা হোসেন: পরিচালক হয়ে উঠার গল্পটা অনেক লম্বা। সংক্ষেপে বলা যায়-আমি তখন সদ্য কৈশোর পেরিয়েছি মাত্র। আমাদের এলাকায় শিশুকিশোর সংগঠন ছিলো নিহারিকা কচি কাচার মেলা।কোন একটা বিষয় নিয়ে সেন্ট্রাল কচিকাচার মেলার সাথে আমাদের একটা মতবিরোধ হয়।তখন আমি মনে মনে জিদ করেছিলাম যে প্রোগ্রাম কাকে আমি দেখিয়ে দিব। ঐ চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম তখন কোন অভিজ্ঞতা ছিল না তখন পাড়ার ছেলেমেয়েদের নিয়ে হ্যাড ক্রিস্টমার এর স্নো হোয়াট উপর নাটক তৈরি করলাম। ভাবটা রেখে পুরোটা আমার মতো করে সাজালাম। এবং চিত্রনাট্য টা করলাম। নাটকের খাতিলেই আমাকে গান লিখতে হল। গান ছাড়া নাটকটা ঠিক যেন প্রাণ পায় না। পাড়ার পাঁচ থেকে পনের বছরের   বাচ্চাদের নিয়ে তারপর নাটকটি পরিচালনা করি। ‘তুষার কন্যা’ নাটকটি ইন্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট পুরো পাকিস্তানে মধ্যে প্রথম হয়েছে। এরপর পাকিস্তান টিভিতে সম্বোধনা দেওয়া হয় আমাদের পুরো টিমকে।
এরপর থেকে মুলত মিডিয়া কাজ করা শুরু। এরপর পাকিস্তান রেডিতেও ডাক আসে। সাপ্তাহিক শিশুতোষ নাটকসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে। এছাড়া মহিলা আসর পরিচালনার দায়িত্ব পাই। এছাড়া পাকিস্তানি টেলিভিশনের জিল্লুর রহমান উনি সম্ভবত ডিজি ছিলেন, তিনি চাচ্ছিলেন আমার ভয়েজটাকে কাজে লাগানো যেন হয়। নিউজ পড়তাম। নিউজ পড়াটি ছিল আমার শখ। এরপর শিশুদেরএকাধারে সিরিয়াল তৈরি ২৪টি পর্ব ‘রূপকথার দেশে’ রচনা পরিচালনা এমনকি সেট ডিজাইন পর্যন্ত আমি করতাম। নাটকটার পাশাপাশি বই বের করি। এছাড়া ধারাবাহিক, সাপ্তাহিক, সিরিজ, শর্টফিল্ম তৈরি করি। ১৯৬৪ বা ১৯৬৫ সালে দিকে গানের প্রচলন নাটকে কম ছিল আমার গান আসত তখন নাটকের প্রয়োজনে। তাই গান রচনা করতে হত। বড় দের নাটক গুল মুলত আমি লিখেছি। কিন্তু পরিচালনা করেছে অন্যরা। মেয়ে গান গাইতো তার প্রয়োজনে গান লিখেছি এবং সুরও করি।

অপরাজিতা: সাহিত্যিক ও পরিচালক ফরিদা হোসেনের পাশাপাশি আপনার আরো কিছু অঙ্গনে দৃপ্ত পদচারণা রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদেরকে কিছু বলুন?

ফরিদা হোসেন: আমি সাহিত্যচর্চা আর বিটিভির পরিচালক হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি সংবাদ পাঠিকা হিসাবে কাজ করেছি। আবৃত্তি করেছি আর গানও গেয়েছি। আমার আবৃত্তির সিডি আছে।এছাড়াও নাট্য রচনা, গীতিকার, সুরকার হিসাবেও কাজ করেছি। মূলত আমার পরিচালনার  কাজ করতে গিয়ে এই কাজ গুলো আমার দ্বারা হয়ে গিয়েছে।

ফরিদা হোসেনের আবৃত্তি শুনতে ক্লিক করুন এই লিংকে–

“ফরিদা হোসেনের আবৃত্তি”

অপরাজিতা: বিটিভিতে ছোটদের কাজ ছাড়াও বড়দের জন্য আপনার পরিচালনায় কি কি হয়েছে?

ফরিদা হোসেন: ছোটদের ছাড়াও বড়দের জন্য নাটক আছে অনেক এই যেমন, ‘অন্যরকম ভালোবাসা’ কিছু ধারাবাহিক এবং অধিকাংশ সাপ্তাহিক। কিন্তু আমি কেবল রচনা করতাম অন্যদের পরিচালনায় তা বিটিভিতে প্রচার করা হত।

অপরাজিতা: আপনার সংসারজীবনে সম্পর্কে কিছু বলুন।

ফরিদা হোসেন: সাংসারিক জীবন ছিল আমার খুবই স্বাচ্ছন্দ্যময়। সবসময় মানসিক সাপোর্ট পেয়ে এসেছি। আমি যখন বাইরে কাজ করতে যেতাম বিটিভিতে প্রোগ্রাম থাকত। মাঝেমধ্যে ফিরতে রাত হত। তখন আমার জন্য আমার হাজবেন্ড অপেক্ষা করতেন।কখনও আমাকে ছাড়া খেয়ে নিতো না। আমরা সবসময় একসাথে রাতে খাওয়ার পর সারাদিনের গল্প করতাম। আমি আমার দাম্পত্য জীবন নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। এমন কোন কথা নেই যা আমি বাসায় এসে আমার হাজবেন্ডকে শেয়ার করিনি। এখন আর তিনি নেই সবসময় শূন্যতা অনুভব করি। তিন মেয়ে আছে। মেয়েদের মানুষ করার চেষ্টা করেছি নিজের আদর্শে।  কখনও গাড়ি দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর সব ছাত্রীদের মতই বাসে আসা যাওয়া করত। ওদের রুমে এসি লাগায়নি দীর্ঘদিন। এসব নিয়ে ওদের কোন অভিযোগ ছিল না। বর্তমানে তারা সবাই খুব ভাল আছে। জামাইরা সবাই খুবই পজেটিভ মাইন্ডের এবং তারা সবাই সুখে আছে। বড় মেয়ে বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠান বে-ইষ্টার্ন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারাহ আঞ্জুম। আমি ওর কাছকাছি থাকি তাই খুব বেশি সমস্যা হয় না আলহামদুলিল্লাহ্‌।

অপরাজিতা: আসছে আপনার ৭৪ তম জন্মদিন। দীর্ঘ জীবনে অনেক কিছু দেখেছেন, অভিজ্ঞতার সঞ্চয়ও ঢের। এত দিন পেরিয়ে এসে আপনার উপলব্ধি কী?

ফরিদা হোসেন: আমার যতটুকু প্রাপ্তি তা নিয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। আমি মনে করি-

‘জীবন একে কর না হেলা
জীবন মানে দুহাতে আধার ঠেলে সামনে এগিয়ে যাওয়া’

আমরা কেউই হেরে যাবার পাত্র নই যে কোন পরিস্থিতিতেই নিজেকে উঠে দাড়াতে হবে। যে কোন পরিস্থিতিতেই তাতে যত কষ্ট লুকিয়ে থাকুক না কেন আমরা মেয়েরা নতি শিকার করার জন্য জন্ম নেয়নি। আমি যাদের নিয়ে লিখেছি শিশু, নারী বা অন্যান্য চরিত্র তা নিজ দায়িত্ব নিয়েই লিখেছি। আমি চাই প্রতিটি নারী আপন যোগ্যতায় বেড়ে উঠবে। তাদেরকে যাতে কেউ পেছনে ফেলতে না পারে।

অপরাজিতা: আপনি বলছিলেন নারীদের কথা, মুলত নারীদের আসলে কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?

ফরিদা হোসেন: সৎ ও চরিত্রবান হওয়া উচিত।

অপরাজিতা: আজকের সমাজের নারীদের সন্মান ও মর্যাদা কতটুকু?

ফরিদা হোসেন: নারীদের সন্মান ও মর্যাদার ব্যাপারে নারী-পুরুষ উভয়েরই জ্ঞান থাকতে হবে। নিজ নিজ যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

অপরাজিতা: সমাজে মূল্যায়নের জন্য নারীদের কি করা উচিত?

ফরিদা হোসেন: তাদের শিক্ষিত হওয়া এবং যোগ্যতা অর্জন করা উচিত।

অপরাজিতা: আমাদের সমাজের বর্তমান নারীদের সম্পর্কে বলুন?

ফরিদা হোসেন: আগের তুলনায় আমাদের সমাজের বর্তমান নারীরা পারিপার্শ্বিকতার ব্যাপারে অনেক সচেতন। তাদের মাঝে আগের দিনের মতো দ্বিধা সংকোচ এখন তেমন আর নেই। এখন নারী সমাজের অনেকের বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে এবং সাফল্যও লাভ করছে।

অপরাজিতা: আপনার সাহিত্য পত্রিকা ‘অবিনশ্বর’ সম্পর্কে বলুন?

ফরিদা হোসেন: ‘অবিনশ্বর’ সাহিত্য পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আমি। এই পত্রিকাটি পূর্বে প্রতি মাসেই প্রকাশিত হত বর্তমানে তিন মাস অন্তর অন্তর প্রকাশিত হয়। নারী অধিকার, অলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠায়, শিশুদের নিয়ে ভাবনা সবকিছু সম্মিলিত ভাবে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে এই ‘অবিনশ্বর’ সাহিত্য পত্রিকাটিকে নতুন প্রজন্মের হাতে তুলে দেবার চেষ্টা করছি। আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। তাই নিজস্ব কর্ম ও চিন্তাধারণার আলোকে বহুমুখী প্রতিভাবান লেখকদের লেখাকে একত্রিত করে পত্রিকাটি তিন মাস পর পর প্রকাশিত হচ্ছে।

অপরাজিতা: দীর্ঘ একটা জীবন কাটালেন। জীবন নিয়ে কোনো অপ্রাপ্তি বা হতাশা কি আছে নিজের ভেতরে? নিজেকে ভবিষ্যতে কোথায় দেখতে চান?

ফরিদা হোসেন: আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমি যতটুকু পেরেছি, চেষ্টা করেছি, আমার কাজের প্রচারটা একটু কম কিন্তু আমি অপ্রাপ্তিতে বা হতাশায় ভুগি না। আমি পেন এর সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দীর্ঘ দশ বছর ছিলাম। আবার ২০০৪ সালে সাহিত্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছি। এছাড়াও অজস্র পুরস্কার পাই এসব গুলকেই মূল্যায়ন হিসেবে দেখি। এত দূর নাও আসতে পারতাম আল্লাহর রহমতে আসছি। আমার জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট। লেখালেখি চলছে, সামনে শিশুতোষ মুভি ও শর্টফিল্ম করার ইচ্ছে আছে।। গল্প, কবিতা ও উপন্যাস লিখছি এখনও। আসলে সাহিত্যচর্চাকে আরও সামনে অগ্রসর করে আমি আমাকে অচিরেই সাহিত্য জগতে একটি বিশেষ স্থানে নেওয়ার স্বপ্ন বুনি। অর্থাৎ সাহিত্যের যে একটি স্ট্যান্ডার্ড মান আছে সেই মানে পৌছাতে চাই। আমার লেখা গল্পগুলোকে সার্থকতায় মাপকাঠিতে পৌছাতে চাই।

বাংলা একাডেমী পুরস্কার

অজস্র পুরস্কার

Facebook Comments