banner

বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 604 বার পঠিত

 

অনাবিল এক প্রশান্তি


ফাতিমা শাহীন


আজ বেশ অনেকদিন পর অঝোর ধারায় বৃষ্টির দেখা মিললো , আলহামদুলিল্লাহ !

ক’দিন গরমের পর কত যে আকাঙ্খিত এই মুহূর্ত ! বেশ কিছু কাপড় পড়ে ছিল ধোয়ার অপেক্ষায়। আলসেমি করে করে ধোয়াই হয়ে উঠছিলনা। বৃষ্টির পূর্বাভাষ যেন আলসে মনের গোড়ায় ইঞ্জিন জুড়ে দিল। একদিনের ভেতরে সব কাপড় ধুয়ে শুকিয়ে গুছিয়ে রাখাও শেষ। আজ সকালে সবজি বাগানে পানি দিতে গিয়েও বারবার তৃষ্ণার্তের মত আকাশের দিকে তাকিয়েছি, আর ভেবেছি , দূরে আবছা হয়ে আকাশের গায়ে লেপ্টে থাকা মেঘগুলোর রহমতের বারি হয়ে ঝরে পড়তে আর কত বাকি ! অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হয়ে যেন ফুরাচ্ছিলনা কিছুতেই !

স্কুল শেষে বাচ্চাদের নিয়ে ফিরে সবে গাড়িবারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছি , প্রকৃতি জুড়ে যেন তখনি বেজে উঠল বৃষ্টিকে বরণ করে নেবার আগমনী সঙ্গীত। ঘরের সামনে লাগানো গোলাপ গাছগুলোর ফুটে থাকা গোলাপের পাপড়িগুলো বাতাসে উড়তে শুরু করল, যেন প্রিয় কোন সঙ্গীকে স্বাগত জানাতেই গোলাপের এই স্বেচ্ছা পুষ্পবৃষ্টি ! আহা ! কি বিমূর্ত সে সময় ! তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকে বাসার পেছনে জোছনা আর বৃষ্টি দেখার জন্য শখ করে বানানো আমার কাঁচঘরে গিয়ে পৌঁছতে না পৌঁছতেই ফোঁটায় ফোঁটায় শুরু হল বর্ষণ। এ এমনই এক ক্ষণ যখন অকারণেই অভিমানী মন দু:খবিলাসী হয়ে ওঠে অজান্তেই , হৃদয় কারো চির ঋণে জড়াতে চায় …

প্রকৃতি যখন বৃষ্টির ছন্দে তাল মিলিয়ে নেচে চলেছে ,আমি তখন বৃষ্টিবিলাসী চাতকের মত সিক্ত করে নিচ্ছিলাম আমার বর্ষণপিয়াসী হৃদয় ! পুরো কাঁচঘর জুড়ে যখন বৃষ্টিরাগের উন্মাতাল মূর্ছনা খেলে বেড়াচ্ছে, তখন বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা আমার অনুভবে ছড়িয়ে যাচ্ছিল অনাবিল এক প্রশান্তির ছোঁয়া। আমি আকুল হয়ে আমার নিঃশ্বাসের সাথে মিশিয়ে নিচ্ছিলাম ভেজা মাটির সতেজ ঘ্রাণ… যা এক অনির্বচনীয় আনন্দ হয়ে মিশে যাচ্ছিল আমার মনে … মানসে … প্রতিটি উপলব্ধিতে ….।

ক্যাটাগরি: মনের জানালা।

Facebook Comments