banner

রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1036 বার পঠিত

 

শিশুর ডায়াবেটিকস ঝুঁকি


স্বাস্থ্যকথা


ডায়াবেটিস কি?

আমরা সারা দিনে যা খাই তার সারাংশ আমাদের শরীরে জমা হয়। এই সারাংশকে চিকিৎসাদের ভাষায় বলা হয় ক্যালোরী,সুগার, গ্লুকোজ বা শর্করা। শরিরের এই জমা ক্যালোরী,সুগার বা গ্লুকোজ হজম করার জন্য ইনসুলিনের প্রযোজন হয়। যদি শরীরের ইনসুলিন জমা ক্যালোরী,সুগার বা গ্লুকোজ বা শর্করা সব হজম করতে না পারে তবে যে বাড়তিটুকু থাকে সেটাই ডায়াবেটিস। এই অতিরিক্ত সুগার রক্ত ও পেশাবের সাথে মিশে যায় এবং রক্ত ও পেশাবকে মিষ্টি করে। এটাকেই ডায়াবেটিস বলে। ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে বা সংক্রামক কোন রোগ নয়।

ডায়াবেটিক টাইপ:

১. টাইপ.১- এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরী হয় না।

২.টাইপ.২-এই শ্রেণীর রোগীর বয়স অধিকাংশ ক্ষেত্রে ত্রিশ বৎসরের উপরে হয়ে থাকে। তবে ত্রিশ বৎসরের নিচে এই ধরনের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন তৈরী হয় তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ঠ নয় অথবা শরীরে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়।

৩.গর্ভকালীন ডায়াবেটিস-অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। আবার প্রসবের পর ডায়াবেটিস থাকে না। এই প্রকারের জটিলতাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়।

শিশুরা কিভাবে ঝুঁকিতে

দেশে দ্রুত বাড়ছে শিশুদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। ডায়াবেটিসের প্রকোপতা স্বাস্থ্য সমস্যাটি বাংলাদেশসহ শিল্পোন্নতদেশ গুলতে প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে। এবং সরকার একে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যেসব শিশুর শরীরের ওজন বেশি, তাদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি খুব বেশি। অথচ এ ধরনের ডায়াবেটিস বয়স্কদের মধ্যেই দেখা দেওয়ার কথা। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষ করে শিশুদের স্থূলতার একটি মহামারি হওয়ায় এমন ধরনের ডায়াবেটিস প্রবলভাবে দেখা দিচ্ছে তাদের মধ্যে। আবার টাইপ-১ ডায়াবেটিস বলতে বুঝায়, অগ্নাশয় যদি ইনসুলিন খুব সামান্য পরিমাণ উৎপাদন করে অথবা অনেক ক্ষেত্রে একেবারেই করতে না পারে তখন তা হল টাইপ-১ ডায়াবেটিস।বাডাসের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি লাখে শূন্য থেকে ১৪ বছর বয়সের চার দশমিক তিনজন শিশু টাইপ-১ ডায়াবেটিসের শিকার হচ্ছে।

প্রাথমিক কারণ

১. শিশু ও তরুণদের স্থূলতা:
– ফাস্টফুড,
-টিভির সামনে একটানা অনেক সময় বসে থাকা,
-চিপস,
-পান করছে কোমল পানীয়,
-ভিডিও গেম,
-হাঁটাপথও নেই,
-তেলেভাজা খাবার-ভুঁড়ি
২. শিশুদের মধ্যে শরীরচর্চা কমে যাওয়া।
৩.খাদ্য গ্রহণে ত্রুটিপূর্ণ অভ্যাস
৪.বংশগত কারণ।

ডায়াবেটিক দেখা দিলে যেসব লক্ষণ দেখা যায়?

আচার-আচরণে পরিবর্তন, হঠাৎ করে নিয়মিত ঘুমে সমস্যা হলে কিংবা অনেকদিন ধরে ক্ষুধা কমে গেলে শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত।

-শরীরের কোন তিল বা আঁচিলের আকার বা আকৃতিতে দ্রুত পরিবর্তন
-ওজন ক্রমেই কমবে
-অল্পতেই হাপিয়ে উঠবে
-শ্রবন ক্ষমতা কমে যাওয়া
-️প্রস্রাবে শর্করার পরিমাণ খুব বেশী বেড়ে যাওয়া
-️খুব বেশী পিপাসা লাগা
-ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
-অত্যন্ত বেশী ক্ষুধা লাগা
-️বমি ভাব হওয়া
-️দুর্বলতা বোধ হওয়া
-️ঝিমানো
-️শ্বাস কষ্ট হওয়া
-️দ্রুত শ্বাস নেওয়া
-️মাথা ধরা
-চোখে ঝাপসা দেখা
-️নিস্তেজ বোধ হওয়া
-শ্বাসে গন্ধ পায়

ডায়াবেটিক ফলে শিশুর ক্ষতি

মুলত ডায়াবেটিস থেকে শিশুদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ডায়াবেটিক মুখোমুখি হয় জীবনব্যাপী জটিলতার।

-কিডনি নিষ্ক্রিয়তা,
-হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ এসব জটিলতা।

শিশুদের জন্য সচেতনতা

১.হাঁটতে, চলতে, দৌড়াতে উৎসাহ দিন বাচ্চাদের।
২.টিভি বন্ধ করে দিন। টিভি দেখার সময় কমিয়ে নিতে পারলে, এর একটি সীমারেখা টানতে পারলে স্থূলতা প্রতিরোধ করা যাবে অনেকটা।
৩.খাদ্য গ্রহণে ত্রুটিপূর্ণ অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। প্লেটে যা কিছু আছে সবকিছু খেয়ে প্লেট সাফ করতে বাচ্চাদের বাধ্য করবেন না।
৪.শিশুদের ওপর বেশি নিয়ন্ত্রণ নয়। শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করারও সুযোগ দিতে হবে।

শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সী নবজাতকদের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। তবে আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগের বয়স আট থেকে ১৬ বছর এবং শতকরা নব্বই ভাগই শহরের বাসিন্দা।

Facebook Comments