All posts by Oporajita

 

শুকনোপাতার কাব্য-১৩

শুকনোপাতার কাব্য-১৩


শুকনো পাতা


সকাল গড়ায়,দুপুর গড়ায়
বিকেল কাছাকাছি,
সাঁঝের আঁধার ঢাকবে কখন
সেই প্রতিক্ষায় আছি।

সন্ধ্যে নামার খানিক বাদে
আকাশ দেখার ফাঁকে,
বেলা ফুরোনোর গল্প বলি
নীড়ে ফেরা পাখিটাকে।

বিকেল গড়ায় সাঁঝের পানে
রাত্রি আসে ফিরি,
দিন দুয়ারে দাঁড়িয়ে তবু
দিনের হিসেব গুনি।

অল্প সময় অল্প ক্ষনেই
দিন গড়িয়ে রাত,
মন খারাপের গল্পে তবু
আসে না প্রভাত।

হাসি আছে কান্না আছে
আছে ভাঙ্গার কষ্ট
হারিয়ে স্বপ্ন,দিন কেটে যায়
তবু থাকে মন তুষ্ট।

মন খারাপের গল্প লিখি
লিখি দুঃখের কাব্য,
মন খারাপেই হাসতে থাকি
লুকিয়ে নিজের যুদ্ধ!

ফুরোবে গল্প,ফুরোবে পদ্য
প্রতিক্ষায় দিন পাড়,
মন খারাপের গল্প তবু
শেষ হয় না আর…!

 

সাভারে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১২ বছরের কিশোর আটক

সাভারে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১২ বছরের কিশোর আটক


নারী সংবাদ


সাভারে বিরুলিয়া ইউনিয়নের দত্তপাড়ায় পাঁচ বছরের এক মেয়েশিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১২ বছর বয়সী সাকিব হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। সাকিব হোসেন স্থানীয় আল-আমিনের ছেলে।

মঙ্গলবার রাতে ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেছে।

জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে ওই এলাকায় একটি বাড়ির ছাদে ওই মেয়েশিশুকে ধর্ষণ করে সাকিব। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ব্যাপারটি জানাজানি হলে শিশুটির বাবা রাতেই সাভার মডেল থানায় ধর্ষক সাকিব হোসেনকে প্রধান আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সাকিবকে আটক করে।

সাভার মডেল থানা ও বিরুলিয়া ফাঁড়ি ইনচার্জ (এসআই) মো: আজগর আলী জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করেছে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

শুনি নব জীবনের প্রতিধ্বনি…১

শুনি নব জীবনের প্রতিধ্বনি…১


আফরোজা হাসান


ছোট ননদের রুমে কয়েকবার নক করার পরও ভেতর থেকে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো রুহিনা। রুমের ভেতর কোথাও না দেখে বারান্দায় উঁকি দিয়ে দেখলো রেলিঙয়ে পা তুলে দিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আনমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে স্বাতি। ননদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, নাস্তা নিয়ে এসেছি তোর জন্য। খেয়ে নে।

স্বাতি সোজা হয়ে বসে ভাবীকে বসার জায়গা করে দিয়ে বলল, একদম খেতে ইচ্ছে করছে না ভাবী। খাবার কথা মনে করলেই কেমন যেন বমি ভাব হচ্ছে।

গতকাল রাতেও কিছু খাসনি তুই। এমন করলে শেষে অসুস্থ হয়ে যাবি। সোনা বুবু না আমার খেয়ে নে। আচ্ছা চল আমি তোকে খাইয়ে দিচ্ছি। দেখ সব তোর পছন্দের খাবার বানিয়েছে মামণি।

মামণি কি করছে ভাবী?

তোকে নিয়ে টেনশন করা ছাড়া আর কি করবে এই সময়। তারউপর তুই খাওয়া দাওয়া না করে, অনিয়ম করে আরো বেশি টেনশন দিচ্ছিস সবাইকে।

আমি কি করবো খাবার ভেতরে ঢুকতেই চাইছে না।

তুই একটু শান্ত হবার চেষ্টা করতো স্বাতি।

বললেই কি শান্ত হওয়া যায় নাকি? তুমি কি শান্ত ছিলে তোমার বিয়ের এক সপ্তাহ আগে?

হেসে ফেললো রুহিনা। উহু.. আমিও ভয়াবহ রকমের অশান্ত ছিলাম। মনের মধ্যে তুফান, সুনামী, সাইক্লোন সব একসাথে বইতে শুরু করেছিল। এমন সব অদ্ভুত চিন্তা-ভাবনা মনে আসতো যা রূপকথার গল্পেরও স্থান পাবে কিনা সন্দেহ। তবে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করেনি তোর মত। আমার আবার উল্টো স্বভাব জানিসই তো। টেনশনের সময় বেশি বেশি ক্ষুধা লাগে। ঘরের মধ্যে সারাক্ষণ ঘুরতাম আর চকলেট, আইসক্রিম, পেস্ট্রি এসব খেতাম। আম্মু সেটা দেখে সমানে চিৎকার করতো আর বলতো, দুদিন পর বিয়ে কই জীমে যাবি তা না তুই আরো মোটা হবার জিনিস খাচ্ছিস।

স্বাতি হাসতে হাসতে বলল, আমিও খেয়াল করেছি কোন কারণে যেদিন তুমি টেনশনে থাকো ঘুরে ঘুরে শুধু এটা সেটা খাও।

প্লেট থেকে পরোটা নিয়ে একটু করে ছিঁড়ে স্বাতির মুখে দিয়ে রুহিনা হেসে বলল, সবকিছুরই সাইট অ্যাফেক্ট আছে বুঝলি। আমার এই স্বভাবের সাইট অ্যাফেক্টের কারণেও বেশ কয়েকবার লজ্জিত হতে হয়েছে তোর ভাইয়া সামনে।

যেমন?

যেমন তোর ভাইয়া যখন কোন কারণে টেনশনে থাকে তোর মত খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। আর আমার তখন ক্ষুধা বেড়ে যায়। বারবার খেতে ডাকি তোর ভাইয়াকে। সে তখন বিরক্ত স্বরে বলে, তোমার সমস্যা কি এত খাই খাই করছো কেন? তবে সবচেয়ে বেশি লজ্জায় পড়েছিলাম আমাদের বিয়ের দিন। বাসর ঘরে।

সেটা কিভাবে?

আমাকে রুমে রেখে যখন তোরা সবাই বেড়িয়ে গিয়েছিলি প্রথমে তো কিছুক্ষণ স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিলো রুমের মধ্যে এক ফোটাও অক্সিজেন নেই। তোর ভাইয়া রুমে ঢোকার সময় অক্সিজেনের সাথে সাথে আমার জন্য রাজ্যের ক্ষুধাও নিয়ে এলো। এত ক্ষুধা মনেহয় জীবনে আর কোনদিন লাগেনি আমার। খাবার না পেলে এই মূহুর্তে মারা যাব এমন লাগছিল। আমার চোখ মুখ দেখে উনি প্রশ্ন করলেন, কোন সমস্যা হচ্ছে তোমার? ক্ষুধার কাছে নতি স্বীকার করে আমাকে তখন বলতেই হয়েছিল, আমার খুব ক্ষুধা লেগেছে।

স্বাতি খিলখিল করে হেসে উঠে বলল, ও আচ্ছা এজন্যই ভাইয়া আমাকে ডেকে খাবার চেয়েছিলেন? আমি তো ভেবেছিলাম সারাদিন ব্যস্ততায় ঠিকমতো খেতে পারেনি তাই মনেহয় ভাইয়ার ক্ষুধা লেগেছে। কিন্তু সব ছেলে তো আর আমার ভাইয়ার মত সুইট না। বলতে বলতেই আবারো বিয়ের কথা মনে পড়তেই হাসি মুছে গেলো স্বাতির চেহারা থেকে।

আরে একি হাসতে হাসতে আবার মুখ গোমড়া করলি কেন? সব ছেলে যেমন তোর ভাইয়ার মত না। সব মেয়েও তো আমার মত না। তুই কি আমার মতো? তাহলে আমার স্বামীর মত স্বামী হতেই বা যাবে কেন তোর? প্রবাদ শুনিসনি, “যথার সাথে তথা মেলে, রাজার সাথে রাণী মেলে”। তুই আমাদের সবার আদরের ছোট্ট রাজকন্যা। এজন্যই তো আল্লাহ তোর জন্য আরভ ভাইয়ার মতো রাজপুত্র পাঠিয়েছেন। আমি অবাক না হয়ে পারছি না স্বাতি। তুই আরভ ভাইয়াকে নিয়ে এত টেনশন করছিস? তুই তো ছোটবেলা থেকেই ভাইয়াকে দেখছিস। তারপরও এত দুশ্চিন্তা কেন? ইস্তিখারা করতে বলেছিলাম তোকে। করেছিলি?

স্বাতি লাজুক হেসে বলল, হুম! করেছি। সব ঠিক আছে কিন্তু তারপরও কেন জানি না খুব বেশি ভয় লাগছে। আমার জীবনসাথীকে ঘিরে তেমন কোন এক্সপেক্টটেশন নেই। এইসব বিষয় বুঝতে শেখার পর থেকেই মামণি মনের চাওয়ার লাগাম টেনে ধরতে শিখিয়েছেন আমাকে। বুঝিয়েছেন নিজ ভাবনার রঙে মনে কারো ছবি গড়ে তোলা ঠিক নয় বিয়ের আগে। বিয়ের আগে শুধু আল্লাহর কাছে একজন উত্তম জীবনসাথী চাইতে হবে। আল্লাহ যাকে জীবনসাথী করে পাঠাবেন। তাকে সামনে বসিয়েই আঁকতে হয় মনের মাঝে জীবনসাথীর ছবি।

তুই তো আমার চেয়েও ভালো বুঝিস। তাহলে আবার এত ভয় কিসের?

কেমন হবে আমাদের জীবনের প্রথম দিনের শুরুটা। উনি কি বলবেন, আমি কি বলবো এসব ভেবে খুব বেশি টেনশন কাজ করছে।

চলবে…

 

আপন আলাপ

আপন আলাপ


রাহনুমা সিদ্দিকা


টি এস সি-র পাশে ছাউনিতে বসে আছি, বাসের অপেক্ষায়। পাশে দুটি মেয়ের কথোপকথন কানে এলো। কথাবার্তায় বোঝা গেলো এরা একই কলেজে পড়েছে, ভর্তিসংক্রান্ত কাজে এসেছে, দুজনেই বিজনেস ফ্যাকাল্টির, নিউ ফার্স্ট ইয়ারের।
এক পর্যায়ে একজন বলছে,
-তোমাকে না আমি চিনতেই পারি নি! আগে না হিজাব পরতে?
-হ্যাঁ
-ছাড়লে কেনো?
-আরে! ‘ও’ একদম পছন্দ করে না!
তারপর বাস চলে এসেছিলো। ব্যাপারটা ভাবালো! ‘ও’ পছন্দ করে না- তাই মেয়েটা হিজাব ছাড়লো? এমনও মেয়ে আছে -‘ও’ ধার্মিক হলে আপনাকে আবার ‘রিলেশন’ টিকিয়ে রাখার স্বার্থে কিংবা ভালোবাসার দাবীতেই হোক না কেন হিজাব পরতে হচ্ছে! প্রহসন আর কাহাকে বলে!!!!
প্রসঙ্গক্রমে, পারস্যের মহিলাদের তৎকালীন অবস্থা সম্পর্কে বেগম রোকেয়ার কথাটি স্মরণ করুন ,
“ওই যে পর্দা ছাড়িয়াছেন তাহা দ্বারা তাহাদের স্বকীয় বুদ্ধিবিবেচনার ত কোন পরিচয় পাওয়া যায় না! পার্সি পুরুষগণ কেবল অন্ধভাবে বিলাতী সভ্যতার অনুকরণ করিতে যাইয়া স্ত্রীদিগকে পর্দার বাহিরে আনিয়াছেন। ইহাতে অবলাদের জীবনীশক্তির ত কিছু পরিচয় পাওয়া যায় না। তাহারা যে জড়পদার্থ ,সেই জড়পদার্থই আছেন। পুরুষ যখন তাহাদিগকে অন্তঃপুরে রাখিতেন, তাহারা সেখানেই থাকিতেন। আবার পুরুষ যখন তাহাদিগকে ‘নাকের দড়ী’ ধরিয়া টানিয়া মাঠে বাহির করিয়াছেন, তখনই তাহারা পর্দার বাহির হইয়াছেন।”
হিজাব এখানে একটা উদাহরণমাত্র। অমন উদাহরণ হাজারটা দেয়া যায়। আপুরা ভাবুন, আপনার বিশ্বাস, আপনার দর্শন, আপনার জীবনাচরণ নিয়ন্ত্রিত হবে আরেকজনের দ্বারা? আপনার বিশ্বাসের এত তারল্য? তবে যে আপনি কলার উঁচিয়ে ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’ নামে একটি সফিস্টিকেটেড শব্দ উচ্চারণ করছেন আবার?
আপনি যদি একটি মেয়ে হন, আপনি খুব ভালো করেই জানেন মেয়েরা (সাধারণত ) কেন সাজে! খুব ভালো করেই জানেন পত্রিকার ফ্যাশন পাতায় মডেল কন্যাটির পোশাকে বিশেষ ধরণের ডিজাইনটি কেন করা হয়েছে।
কিছু প্রশ্ন সামনে আসে-
অতীতে যেসব মহীয়সীরা নারীমুক্তির জন্য নিজেদের সমস্ত জীবনভর সংগ্রাম করে গেছেন, যেসবঅন্তঃপুরবাসিনীরা একটুকরো জ্ঞানের আলোর জন্য নরক প্রতিকুলতার সাথে লড়াই করে গেছেন- কালক্রমে যাঁদের ত্যাগের সুফল আমরা ভোগ করছি- তাঁরা আজকে থাকলে কী বলতেন? এই স্বাধীনতাই কি তাঁরা চেয়েছিলেন? স্বাধীনতা কি বিপরীত লিঙ্গের মনোরঞ্জনের স্বাধীনতা? স্বাধীনতা কি চ্যানেল আইয়ের পর্দা কাঁপানো সুন্দরীদের মেলা? সেলফিম্যানিয়ার কথা নাহয় না-ই বললাম!
আজ ত নারীরা নিজ যোগ্যতায় সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজের জায়গা করে নিচ্ছে, আজ শিক্ষাঙ্গনে নারী-পুরুষ অনুপাত সমান। কর্মক্ষেত্রে লৈঙ্গিক বৈষম্য প্রায় নেই বললেই চলে। আলোকপ্রাপ্ত এই সমাজের পরিপূর্ণ চিত্র কেবল এটুকই নয়, সচেতন প্রত্যেক ব্যক্তিই তা জানেন।
ভাবুন তো,
আদৌ কি নারীরা স্বাধীন হয়েছেন নাকি এক ছদ্ম (Pseudo) স্বাধীনতার নামে আরেক মানসিক দাসত্বে জড়াচ্ছেন? স্বাধীনতা তো চাকুরিতে, কাপড়ে সীমাবদ্ধ না- চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, যুক্তির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশ ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের স্বাধীনতাই স্বাধীনতা!
খানিক উড়ার সুযোগ পেয়ে নাটাইবাঁধা ঘুড়িরও নিজেকে মুক্ত পাখি ভেবে ভ্রম হতে পারে!

 

স্ত্রীকে হত্যা করে ডাকাতির গল্প সাজিয়েছেন স্বামী

স্ত্রীকে হত্যা করে ডাকাতির গল্প সাজিয়েছেন স্বামী


নারী সংবাদ


নওগাঁর সাপাহারে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ডাকাতির ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করছে চতুর স্বামী নজরুল ইসলাম। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার বিদ্যানন্দী বাহাপুর গ্রামে নিশৃংস ঘটনাটি ঘটেছে। চতুর নজরুল ওই গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ছেলে।

ঘটনা স্থলে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে তার বাবা-মা বাড়ীতে ছিল না। নজরুল বাড়ীতে তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে একই থাকত। ঘটনার দিন রাত ২টার দিকে উক্ত গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ছেলে নজরুল(৩২) বাড়ী থেকে বের হয়ে গ্রামের অন্যলোকের দরজায় আঘাত করলে, কয়েকজন বেরিয়ে আসে এবং তাকে তার মুখে কসটেপ আটানো ও হাত দু’টি পিছনের দিকে গামছা দিয়ে বাধাঁনো অবস্থায় দেখতে পায়। তার মুখের টেপ ও বাধঁন খুললে সে বলে, আমার বাড়ীতে ডাকাত দল প্রবেশ করেছে, তারা আমার ছেলেকে কুপের মধ্যে ফেলে দিতে চায়, আপনারা আমার ছেলেকে বাঁচান বলে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

গ্রামের লোকজন তার বাসায় ছুটে এসে দেখতে পায়, বিছানায় তার স্ত্রী (রুমী) (২৫) অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে ও সন্তান রাফি (২) ঘুমন্ত অবস্থায় রয়েছে। লোকজন তৎক্ষনাত তাকে ও তার স্বামী নজরুল ইসলামকে সেখান থেকে উদ্ধার করে রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক রুমীকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত রুমীর গলায় শ্বাস রোধ করে হত্যাকরার স্পষ্ট চিহৃ রয়েছে।

মৃত গৃহবধু রুমীর স্বামী নজরুল ইসলামের সাথে হাসপাতালে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, রাত দেড়টার দিকে সে বাড়ীর বাথরুম থেকে বেরুনোর সময় তাকে অপরিচিত ৩জন লোক ঝাপটে ধরে এবং তাকে ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে বাইরের দরজার চাবি আদায় করে।

বাড়ীর দরজায় তালা ছিল, তারা কি করে বাসায় প্রবেশ করল? এ প্রশ্নের জবাবে সে কিছুই বলতে পারেনা। এর পর ডাকাতরা চাবি দিয়ে বাড়ীর সদর দরজা খুললে আরো ৬জন লোক বাহির থেকে বাসায় প্রবেশ করে এবং তাকে তার শয়ন ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গামছা দিয়ে দু;হাত বেধেঁ ফেলে ও মুখে কসটেপ এঁটে দেয়। এর পর আবারো তাকে ঘর হতে বের করে নিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় যায়। ওই সময় সে ডাকাত দলের হাত থেকে ফসকে সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে প্রতিবেশীদের ডাক দেয়। এর মধ্যে ঘরে ডাকাতদল কি করল এবং কি সম্পদ লুট করল তা স্বামী নজরুলের জানা নেই বলে জানান এবং এ পর্যন্ত তার স্ত্রী ও সন্তান ঘুমেই ছিল বলে তিনি জানান।

বিষয়টি নিয়ে বড় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে, কোনো পরকীয়া কিংবা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সৃষ্ট কোনো মন মালিন্যের কারণে সে তার স্ত্রীকে ঘুমের ঘোরে শ্বাস রোধ করে হত্যা করতে পারে এ নিয়ে এলাকায় খুব জোরালো গুঞ্জন চলছে। পুলিশ ও বলছে এটি কোনো চুরি কিংবা ডাকাতির ঘটনা নয়, চুরি বা ডাকাতি হলে তারা ঘরের মধ্যে থাকা নগদ টাকা পয়সা, গহনা কিছুই নেয়নি সবই ঠিক মত অবস্থায় রয়েছে।

একটি জিনিসপত্র ও খোয়া যায়নি কিংবা কোনো দরজা জানালাতেও কোনো চিহৃ নেই সবই অক্ষত রয়েছে। তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কোনো ঘনটা থাকতে পারে বলেও পুলিশ ধারণা করছে। নিহত গৃহবধুর পিতা রমজান আলী ও বড় আব্বা নুরমোহাম্মাদ দাবী করে বলেছেন, তাদের মেয়েকে জামাই নজরুল হত্যা করে ডাকাতির নাটক সাজিয়েছে। তাদের বাড়ী ধামইর হাট উপজেলার ফতেপুর গ্রামে। ঘটনার পর রাত সাড়ে ৩টা হতে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই এক দল পুলিশ নিয়ে ঘটনা স্থলে রয়েছে। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত, কোনো মামলা দায়ের না হলেও হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, এটি চুরি কিংবা ডাকাতির কোন ঘটনা নয়। স্বামীর দ্বারাই ঘটনাটি ঘটতে পারে, তবে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উম্মোচিত হবে বলে তিনি মনে করেন। নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার মো: রাশেদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

গাজীপুরে কিশোরী গার্মেন্টস শ্রমিক খুন, মামী-মামাতো ভাই আটক

গাজীপুরে কিশোরী গার্মেন্টস শ্রমিক খুন, মামী-মামাতো ভাই আটক


নারী সংবাদ


গাজীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে কারখানার শ্রমিক এক কিশোরীকে হত্যা করেছে। শুক্রবার নিহতের লাশ এক বন থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় পুলিশ নিহতের মামী ও মামাতো ভাইকে আটক করেছে। নিহতের নাম লুনা আক্তার (১৫)। সে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানার কুলশীবাড়ি এলাকার নবীর উদ্দিনের মেয়ে।

জিএমপি’র সদর থানার এসআই শহিদুল ইসলাম ও স্থানীয়রা জানায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বাহাদুরপুর হাজী মার্কেট এলাকায় মামী ও মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে মুজিবের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় পারটেক্স গ্রুপের আরসি কোলা কারখানায় কাজ করতো লুনা। পারিবারিক কলহের জেরে বৃহষ্পতিবার গভীর রাতে লুনাকে তার মামী ও মামাতো ভাই বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এ ঘটনার পর অসুস্থ্যতার কথা বলে রিক্সায় করে নিহতের লাশ পার্শ্ববর্তী রাজেন্দ্রপুরের বিকেবাড়ি এলাকার এক বনে নিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরদিন শুক্রবার স্থানীয়রা ওই বনে নিহতের লাশ দেখতে পায়।

খবর পেয়ে পুলিশ বন থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় পুলিশ নিহতের মামী ও মামাতো ভাইকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলো- লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানার কুশলীবাড়ি এলাকার মৃত জামিরুল ইসলামের স্ত্রী আকলিমা বেগম (৪৮) ও তাদের ছেলে রবিউল ইসলাম (২০)। এদের মধ্যে আকলিমা এলাকায় রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে এবং রবিউল স্থানীয় এক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতো।

এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

প্রসবপূর্ব ও পরবর্তী সেবায় অবদান রাখছে কমিউনিটি ক্লিনিক

প্রসবপূর্ব ও পরবর্তী সেবায় অবদান রাখছে কমিউনিটি ক্লিনিক


স্বাস্থ্যকথা


মাত্র পাঁচ মাস আগেই মা হয়েছেন সুলতানা। উচ্চশিক্ষিত সুলতানা নিজেই এ ব্যাপারে অনেক সচেতন। কিন্তু ডেলিভারির সময় একেবারে মৃত্যুর মুখে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সুলতানা জানান, ডেলিভারির সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল তার। ডাক্তার কোনভাবেই বন্ধ করতে পারছিলেন না। আর তাই প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়। শুরুতে ডাক্তার সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা বের করে নেয়। না হলে বাচ্চাও অসুস্থ হয়ে যেত। কিন্তু এরপর থেকে আর ব্লিডিং বন্ধ হচ্ছিল না। ভাগ্য সহায় ছিল দশজন ব্লাড ডোনার রেডি ছিল। একের পর এক রক্ত দেয়া হচ্ছিল আমাকে। সাত ব্যাগ রক্ত দেয়ার পাশাপাশি ডাক্তার এবং নার্সদের অক্লান্ত চেষ্টার ফলে বেঁচে যাই।
কিন্তু সব মায়ের ভাগ্য সুলতানার মত নয়। অনেক মা’ই সন্তান জন্মদানের সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। তবে পরিসংখ্যান বলছে আগের চেয়ে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে এসেছে। আর যেসব মায়েরা সন্তান জন্মদানের সময় অথবা শিশুদের মৃত্যু হচ্ছে তার প্রধান এবং অন্যতম কারন হচ্ছে সচেতনতার অভাব। একটু সচেতন হলেই সম্ভব পুরোপুরি মাতৃ মৃত্যু হার একেবারে কমিয়ে আনা এবং এ বিষয়ে সাফল্য অর্জন করা।
বিশিষ্ট গাইনোলজিস্ট ডা. রোকেয়া হক বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে বাংলাদেশের মাতৃ মৃত্যুর হার ৭০ এ নামিয়ে আনতে হবে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি এক লাখ জীবিত শিশুর মধ্যে ১৭২ জন মৃত্যুবরণ করে। ৩৭ শতাংশ মা প্রসবপূর্ব সেবা গ্রহণ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি হয় ৪৭ শতাংশ। আর প্রসব পরবর্তী সেবা গ্রহণ করেন ৭৩ শতাংশ নারী। প্রসবজনিত জটিলতার কারণে দেশে এখনও প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ জন মা মৃত্যুবরণ করেন। বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার।
তিনি বলেন, দেশে মাতৃ মৃত্যুর প্রধান কারণ রক্তক্ষরণ এবং খিঁচুনি। খুব স্বল্প মূল্যের ওষুধ দিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আমাদের অবশ্যই নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর স্বাস্থ্য সেবাকে মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছানোর জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সফলও হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ যদি সেসব সেবা গ্রহণ করতে না চায় এবং সচেতন না হয় তবে একা সরকারের পক্ষে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমানো সত্যিই কঠিন।
তিনি বলেন, এখন দেশে প্রায় ১৩ হাজারের বেশী কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকে বিনা মূল্যে প্রসবপূর্ব এবং প্রসব পরবর্তী সেবা প্রদান করা হয়। এছাড়াও অনেক ক্লিনিকে প্রসুতি সেবাও দেয়া হচ্ছে। রাখা হয়েছে ডেলিভারির ব্যবস্থা। কিন্তু এসব জানার পরও অনেক পরিবার বাড়িতেই সন্তান প্রসব করায়। আর এরফলে মারা যাচ্ছে মা।
তিনি বলেন, এসব বিষয়ে একটি পরিবারের প্রাপ্ত বয়স্ক সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে। যাতে করে একজন মা’ও যেন অকালে মৃত্যুবরণ না করে।
বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যাংছড়ি উপজেলার চিউবতলী বাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা নেয়া সন্তান সম্ভবা মা শান্তি চাকমা বলেন, আমি প্রতিনিয়ত এখানে এসে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করি। এখানে বিনামূল্যে ওষুধও দেয়া হয়। সরকার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আমাদের দিচ্ছে। কিন্তু আমরা সেটা গ্রহণ করতে পারছি না। এর পেছনে মূলত দুটি বিষয় কাজ করে। একটি হচ্ছে সচেতনতার অভাব আর অন্যটি কুসংস্কার।
তিনি বলেন, আমাদের পাড়ায় এমন কিছু পরিবার রয়েছে যারা কখনোই ডাক্তারের শরণাপন্ন হন না। এমনকি তাদের বাড়িতে এখনো পর্যন্ত সন্তান প্রসব করানো হয় এলাকার এক বয়স্ক ধাই মাকে দিয়ে। আমাকেও অনেকে পরামর্শ দিচ্ছে যাতে করে আমিও ওনার কাছে সেবা নিই।
কিন্তু আমি আর আমার স্বামী বলে দিয়েছি সন্তান প্রসবের আগে আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হব। সেখানেই আমার সন্তান জন্ম নিবে।

সুত্রঃ বাসস।

 

ঘরের ভেতরে শিশুর লাশ, সন্দেহের তীর সৎ মায়ের দিকে

ঘরের ভেতরে শিশুর লাশ, সন্দেহের তীর সৎ মায়ের দিকে


নারী সংবাদ


সাভারে দক্ষিণ দরিয়াপুরের তালবাগ এলাকায় ঘরের ভিতর থেকে বৃহস্পতিবার বাদশা(৭) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত বাদশা সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার ঘোষার গ্রামের মোঃ আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি স্থানীয় ইউসুফ মাস্টারের ভাড়াটে বাড়ির একটি কক্ষে সৎ মা ও বাবার সাথে থাকতেন।

সৎ মা ময়না খাতুন সাভারের উলাইলের আল-মুসলিম গামের্ন্টস কারখানায় কাজ করেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সৎ মা ময়না খাতুনকে আটক করেছে পুলিশ।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ৬টার সময় শিশু বাদশা মিয়াকে বাসায় রেখে তার বাবা মাছ বিক্রি করতে সাভারের ব্যাংক কলোনীতে এলাকায় যান। শিশুটির বাবা চলে যাওয়ার পর সৎ মা সাড়ে ৭টার সময় যান তার কর্মস্থল আল-মুসলিম গামের্ন্টেসে। দুপুরে বাবা আনোয়ার হোসেন বাসায় খাওয়ার জন্য এসে ছেলেকে ঘরের ভিতরে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

স্থানীয়দের অভিযোগ নিহত শিশুটির সৎ মা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে থাকতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক এক প্রতিবেশী জানান, শিশুটির গলায় আঘাতের চিহৃ ছিল। এ ঘটনায় পুলিশ তার সৎ মা ময়না খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

সাভার মডেল থানার (এসআই) সবুর জানান, শিশুটির বাবা খবর দিলে আমরা ঘর থেকে লাশটি উদ্ধার করি।

তিনি আরো জানান, ৭ বছরের শিশু আত্নহত্যা করতে পারেন না। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

অ্যাভোকাডো, শশা ,আর টমেটোর সালাদ

অ্যাভোকাডো, শশা ,আর টমেটোর সালাদ


ঘরকন্যা


সালাদ মানেই শশা টমেটো এবার মিশে গেলো অ্যাভোকাডো। শীতের সময়ে সালাদের নানান উপকরণ অনেক সহজলভ্য। তাই আসুন এই সময়ে আপনার খাবারে সালাদের ছোট রেসিপি। সহজে আর ঝটপট করে ফেলতে পারেন।

ছবিঃ অ্যাভোকাডো, শশা & টমেটো

উপকরণঃ

শশা – ২ টি (মাঝারি)
টমেটো -৩ টি (মাঝারি)
অ্যাভোকাডো -১ টি
পেয়াঁজ কুচি -১ টেবিল চামচ
ধনেপাতা কুচি – ১ টেবিল চামচ
কাঁচামরিচ কুচি – ১ চা চামচ
লবন – স্বাদমতো
সরিষার তেল – সামান্য
লেবু- কেউ পছন্দ করলে ছোট ছোট লেবুও কেটে নিন।

প্রস্তুত প্রণালীঃ

শশা, টমেটো এবং অ্যাভোকাডো কেটে নিন একই মত সাইজে। সালাদের সাইজ সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। এর সাথে পেয়াঁজ, কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা কুচি দিন। উপাদানগুলো ওল্টে-পাল্টে মিশিয়ে নিন। স্বাদমতো লবন ও সামান্য সরিষার তেল দিন।

পরিবেশন
সুন্দর বাটিতে, মাখিয়ে খাবারের আগে পরিবেশন করুন।

 

‘অসম্মান, অশ্রদ্ধা, অপমান!’

‘অসম্মান, অশ্রদ্ধা, অপমান!’


আফরোজা হাসান


“ভালোবাসা সেটা গোপন হোক কিংবা প্রকাশ্য।
স্পষ্ট হোক কিংবা অস্পষ্ট। ভালো লাগার স্বীকৃতি দেয়াটা কঠিন হোক কিংবা সহজ। পরিস্থিতি অনুকূলে থাক কিংবা প্রতিকূলে।
সর্বাবস্থাতেই ভালোবাসা কল্ল্যাণকামী থাকে অপর জনের তরে।
তবে এটাও ঠিক যে ভালোবাসার মতোই ভালোবাসার ভাঁজে ভাঁজে, খাঁজে খাঁজে রাগ, অভিমান, অধিকারের অস্তিত্বও বিদ্যমান।
রাগ অভিমানের সংমিশ্রণে ভালোবাসার মানুষকে আঘাত করাটা তাই খুব স্বাভাবিক।
কষ্ট দেবার বদলে নিজেকেও কষ্ট অনুভব করতে হবে জানার পরেও ভালোবাসার মানুষটিকে কষ্ট দিয়ে বিমলানন্দ উপভোগ করার চেষ্টা করাটাও খুব স্বাভাবিক।
কারো প্রতি ভালোবাসা আসলে সাথে করে তাকে ঘিরে সীমাহীন অধিকারও নিয়ে আসে।
সেই অধিকারের দাবীতেই আপনজনকে আনন্দ যেমন দেয়া যায়, বেদনাও দেয়া যায়। তার জন্য ত্যাগ যেমন করা যায়, কোন কিছু জোর করে আদায় করেও নেয়া যায়।
তাকে ঘিরে পছন্দ যেমন থাকে, অপছন্দও থাকে।
তাকে প্রশান্তি দিতে যেমন আকুল থাকে মন, অশান্তি দেবার সুযোগও হাতছাড়া করতে চায় না। তারজন্য বিনিদ্র রজনী কাটানোতেও সুখের দেখা মেলে, তাকে জেগে থাকতে বাধ্য করার মাঝেও মেলে সুখানন্দ।
যাকে ভালোবাসি তারসাথে আবার এত কিসের হিসেব নিকেষ?
যখন ইচ্ছে হয় হাসাবো, যখন ইচ্ছে হয় রাগাবো। কখনো তাকে নিয়ে মাইলের পর মাইল স্বপ্নের মহল গড়বো। কখনো পাথর ছুড়ে মেরে তার স্বপ্নের মহলকে ভেঙে গুঁড়া গুঁড়া করে দেবো। যা ইচ্ছে হয় তাই করবো। যখন ইচ্ছে হবে তখনই করবো। কারণ সব আবেগের প্রবেশাধিকার আছে ভালোবাসার জগতে। তবে হ্যা শুধু মাত্র একটি আবেগ ছাড়া।

”অসম্মান, অশ্রদ্ধা, অপমান! শব্দ তিনটি হলেও সমার্থক। ক্ষেত্র বিশেষে আমরা ভালোবাসার মানুষকে ঘৃণাও করতে পারি। কিন্তু যাকে ভালোবাসি তাকে কখনোই অসম্মান, অশ্রদ্ধা কিংবা অপমান করতে পারিনা।

না নিজে, না অন্যের দ্বারা।

ভালোবাসা কষ্ট দিতে পারে কিন্তু কখনোই অসম্মান করতে পারে না। ভালোবাসা অশান্ত করতে পারে কিন্তু কখনোই অশ্রদ্ধা করতে পারে না। ভালোবাসা অনাকাঙ্ক্ষিত যে কোনো কিছুই করতে পারে কিন্তু অপমান নয়। কখনোই নয়, কোন অবস্থাতেই নয়। ভালোবাসার মানুষের প্রতি সর্বপ্রথম হক সম্মানের। যে সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়, সে যোগ্যতাই রাখে না ভালোবাসার দাবী করার।

নিঃসংকোচে, দ্বিধাহীন ভাবে, আত্মবিশ্বাসের সাথে এমন কারো ভালোবাসাকেই সত্য বলা যায় যে ভালোবাসার মানুষের সম্মান রক্ষার তরে নিজে অন্যদের সম্মুখে অপমানিত হতেও প্রস্তুত থাকে। কিন্তু কেউ তার ভালোবাসার মানুষকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে এই সুযোগ দেয় না। কখনোই না। যে বা যারা দেয় তাদের সাথে ভালোবাসার কোনই যোগসূত্র নেই”…..।

মুল গল্পঃ  ভালোবাসার সুতোয় গাঁথি সম্পর্কের মোতি…শেষ পর্বের একটি অংশ।

 

শিশুদের হাঁপানি : চাই সযত্ন সতর্কতা

শিশুদের হাঁপানি : চাই সযত্ন সতর্কতা


স্বাস্থ্যকথা


মাত্র সাত মাস বয়স রাইফার। কয়েকদিন ধরেই সর্দি লেগে আছে। প্রায় সময়ই কান্নাকাটি করছে ছোট্ট মেয়েটি। কাঁদতে কাঁদতে অনেক সময় বমিও করছে। রাতে ঘুমানোর পর নাক ঘড়ঘড় করছে। বারবার নাকে নেজাল ড্রপ দিয়ে চলেছেন রাইফার মা। এভাবেই চলছিল। কয়েকদিন পর আর থাকতে না পেরে ডাক্তারের কাছে নিতে হলো রাইফাকে। ডাক্তার শিশুটিকে দেখেই বুঝতে পারলেন, তার অবস্থা ভালো না। তিনি কয়েকটি টেস্ট আর রাতের জন্য অল্প কিছু ওষুধ লিখে দিলেন। বললেন টেস্ট গুলো করানোর পর কাল যেন অবশ্যই রিপোর্ট দেখিয়ে নিয়ে যান।
পরদিন রিপোর্ট দেখেই ডাক্তারের সন্দেহ সত্যি হয়ে গেল। রাইফা হাঁপানি রোগে আক্রান্ত। বেশি ঠান্ডা লাগার কারণে নিউমোনিয়াও হয়েছে। দ্রুত রাইফাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিলেন ডাক্তার।
রাইফার মতই ঠা-া লেগেছিল দুই বছর বয়সী শিশু আজাদের। কয়েকদিন পরপরই ঠা-া লেগে থাকে তার। প্রতিবারই নাকের ড্রপ আর ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে খাওয়ানো হয় ওকে। এভাবেই চলছিল। কিন্তু এবারের সর্দি আর কাশি কিছুতেই যেন ভালোই হচ্ছে না আজাদের। শেষ পর্যন্ত মায়ের পীড়াপীড়িতে বাবা ওকে নিয়ে যান এক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়, আজাদের হাঁপানি হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রহমত উল্ল্যাহ বলেন, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়দের মত নয়। যার ফলে অল্পতেই তাদের বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি হয়। এজন্য দরকার বাড়তি যত্ন।
তিনি বলেন, শীতকালে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এরমধ্যে শিশুরা হাঁপানি রোগে কষ্ট পায় বেশি। তাপমাত্রা কমে গেলে তা শিশুদের শ্বাসতন্ত্র সহ্য করতে পারে না। এতে তাদের সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হয়। এছাড়াও ঘুমানোর পর তাদের নিঃশ্বাস ভারি হয়ে ওঠে। এমনকি ঘড়ঘড় করে আওয়াজও হয়। শিশুদের শ্বাসনালি খুবই সংবেদনশীল। একটু ঠান্ডা লাগলেই তাদের সর্দি বা কাশি হয়ে যেতে পারে। এরপর আস্তে আস্তে তা হাঁপানিতে রূপ নেয়।
এছাড়াও বাইরের ধুলো-বালিও এই হাঁপানি রোগের আরেকটি অন্যতম কারণ। অনেক শিশুই ধুলো-বালি সহ্য করতে পারে না তাদের সংবেদনশীল শ্বাসনালির কারণে। তাই দেখা যায়, সুস্থ স্বাভাবিক বাচ্চা ধুলা-বালিতে খেলাধুলা করতে পারলেও হাঁপানি আক্রান্ত শিশুরা সেটা করতে পারে না। কিছুক্ষণ বাইরে থাকার পরই তাদের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
ডা. রহমত উল্ল্যাহ বলেন, এই হাঁপানি আবার বংশগতও হতে পারে। তবে হাঁপানি হলে বেশ কিছু বিষয় এড়িয়ে সচেতনভাবে চলার পরামর্শ দেন তিনি। তার মতে, এলার্জি হয় এমন বিষয় যেমন ধুলো-বালি যত সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। ঠা-া, সর্দি এবং কাশি হলেই সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে। এছাড়াও বাচ্চাদের সামনে ধূমপান একেবারেই করা যাবে না। কারণ সিগারেটের ধোঁয়া বাচ্চাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। হাঁপানি রোগে আক্রান্ত শিশুদের সামনে ধূমপান করলে তা ওদের শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয়।
বাসা-বাড়ি সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন এই শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, বাসা-বাড়ি সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। যাতে করে কোথাও ধুলো-বালি না জমে। এছাড়াও ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। শীতকালে শিশুদের জন্য লোমযুক্ত কোনো কাপড়চোপড় বিশেষ করে কম্বল ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া এলার্জিযুক্ত খাবার বিশেষ করে যেসব খাবারে শিশুর এলার্জি হয় সেসব খাবার তাকে দেয়া যাবে না। হাঁপানি রোগে আক্রান্ত শিশুদেরকে সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে লালন পালন করার পরামর্শ দিয়েছেন ডা.রহমত উল্ল্যাহ।

 

বুটিক হাউজে সবার নয়নমনি আঁখি

বুটিক হাউজে সবার নয়নমনি আঁখি


মাহবুব আলম


পিছিয়ে থাকার দিন শেষ। নারীরা এখন আর ঘরে বসে নেই। পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে চলেছেন তারা। ঘরকন্যার পাশাপাশি সাধারণ চাকরি থেকে শুরু করে প্লেনও চালাচ্ছেন তারা। এর মাঝে কেউ কেউ শূন্য থেকে শুরু করে সফল উদ্যোক্তাও হয়ে অন্যের অনুকরণীয়ও হয়েছেন। তাদেরই একজন ফারজানা আঁখি।
‘আখি’স’এর স্বত্বাধিকারী ফারজানা আঁখি শুনিয়েছেন তার আজকের সফলতার পেছনে থাকা শ্রম ও আনন্দ সুখের কাহিনী।
সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আঁখি জানান, শখ নিয়ে সময় কাটানো থেকেই তার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প শুরু। সেটি ১৯৯৯ সালের কথা। মাত্র আড়াই হাজার টাকা নিয়ে আঁখি ঘরে বসেই নিজ হাতে হরেক ডিজাইনের সালোয়ার-কামিজ সেলাই করতে লাগলেন। বাজার থেকে শাড়ি কিনে তাতে হাতের কাজ করতেন।
মূলত তার গ্রাহক ছিলেন স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন দোকানি ও পরিচিতজনেরা। তাদের কাছ থেকে বেশ প্রশংসাও পেতেন তিনি। ফারজানা আঁখির ভাষায়, কাপড় বিক্রির পর ক্রেতাদের কাছ থেকে পাওয়া প্রশংসা টনিকের মতো কাজ করে। মনোবল আরো বাড়িয়ে দেয়। অর্ডারও বাড়তে শুরু করে।
তবে, পুঁজি না থাকায় আটকে যান ওই সময়ের কিশোরী আঁখি। কিন্তু থেমে থাকেননি। বন্ধুদের সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে থাকেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বেড়ে ওঠা এই উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, আমার আগ্রহ দেখে বন্ধুরা আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এরপর অল্প অল্প করে পরিচিতিও বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে আমার তৈরি বাটিক ও নকশার কাজ করা সালোয়ার-কামিজ, থ্রিপিস, শাড়ি, বিছানার চাদর, কুশন কভার, শাল চাদরের ব্যাপক চাহিদা বাড়তে লাগলো। ফলে, পরিস্থিতিই বলে দেয় একটি শোরুম নেবার। কিন্তু তখনও সমস্যা সেই পুঁজি। এই সময় তিনি দ্বারস্থ হন ব্যাংকের। সেখানে থেকে প্রথমে মাত্র আড়াই লাখ টাকা ঋণ নেন তিনি।
উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনের গল্প বলতে গিয়ে যো ফ্ল্যাশব্যাকে চলে যান আঁখি। বলতে থাকেন, ‘ব্যাংক ঋণের ওই টাকা দিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি শোরুম চালু করি। নাম দিই আখি’স।’ এরপর আর পেছন তাকাতে হয়নি ফারজানা আঁখির। যেন আলাদীনের চেরাগের যাদুর মতো দ্রুতই বদলে গেলো তার জীবন।
গল্পের ছলে তিনি বলেন, একটা সময় আসে যে আমার ডিজাইন করা কাপড়ের চাহিদা খুবই বেড়ে যায়। তখন ডেলিভারি দিতে গিয়ে হিমসিম খেতে হতো। শোরুম চালুর পর এ অবস্থা আরও বেড়ে গেলো। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আঁখি’স এর সুনাম।
আঁখি বলেন, আমি যখন এই ব্যবসা শুরু করি তখন নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা হাতেগোনা। এখানকার মতো ফেসবুকে কিংবা অনলাইনে নারী উদ্যোক্তা ছিল না। ‘শুরুতে নিজেই শোরুমে বসতাম। অবশ্য মানুষের কটু বাক্যও কম শুনতে হয়নি। তবে পাত্তা দিইনি। একমনে কাজটা করে গেছি। তবে, এখন টাকা-পয়সা হয়েছে, দোকানেরও সুনাম হয়েছে। এখন সবাই প্রশংসা করে।’ নিজের উৎসাহের কথা উল্লেখ করে আঁখি বলেন, আশপাশের মানুষ নানা কথা বলতো। কিন্তু সব সময়ই পরিবারে মা-বাবার সহযোগিতা ও সমর্থন পেয়েছি। ‘তখন নিজেই কাঁচামাল কিনতাম। নিজেই ব্যাংকে যেতাম, পাইকারি অর্ডার নিতাম। সব নিজেকেই করতে হতো। এখন অনেকের কর্মসংস্থানও হয়েছে। এটা ভাবতেই ভালো লাগে,’ যোগ করেন তিনি।
শুধু ব্যবসা নিয়েই থাকতে পারেননি ফারজানা আঁখি। ব্যবসা দেখভালের পাশাপাশি সংসারও সামলেছেন তিনি। ফলে, অবসর বলে কিছু ছিল না। ‘অনেকেই অনেক কথা বলেছে। বলতো মেয়ে মানুষ দোকানে বসে। কিন্তু আমি কখনও দমে যাইনি। চেষ্টা আর একাগ্রতা থাকলে যে যেকোনো নারীই ব্যবসা বা কর্মক্ষেত্রে সফল হতে পারেন সেটা আমি বুঝেছি,’ সাফল্যর তৃপ্তির হাসি হেসে বলছিলেন এই উদ্যোক্তা।
নতুনদের উদ্দেশ্যে তার পরামর্শ, পরিচিত কোনো মেয়ে যখন চাকরি করার কথা বলেন, আমি তাদের উৎসাহ দিই ব্যবসা করতে। কারণ, আমাদের একটাই লক্ষ্য, চাকরি করবো না, চাকরি দেবো।
এক্ষেত্রে ব্যবসা করতে গিয়ে উদ্যোক্তারা যেসব সমস্যায় পড়েন সেগুলো মসৃণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান এই নারী। তিনি বলেন, এখনও ব্যাংক লোন পাওয়া অতটা সহজ হয়ে ওঠেনি। এসব বিষয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সুত্রঃ বাসস

 

অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুকন্যাকে গলা কেটে হত্যা

অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুকন্যাকে গলা কেটে হত্যা


নারী সংবাদ


টাঙ্গাইল শহরের ভাল্লুককান্দী এলাকায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মা ও তার চার বছরের একমাত্র কন্যাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, টাঙ্গাইল শহরের ব্যবসায়ী আলামিনের স্ত্রী লাকী বেগম (২২) ও তার কন্যা আলিফা (৪)। এ ঘটনায় নিহত লাকীর বাবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

টাঙ্গাইল মডেল থানার ওসি মীর মোশাররফ হোসেন জানান, শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে দুর্বৃত্তরা বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে ও গলা কেটে অন্তঃসত্ত্বা মা ও তার শিশুকন্যাকে হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দু’টি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিচিতরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।

এই হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ জোর তৎপর চালাচ্ছে। এ ঘটনায় নিহত লাকীর বাবা হাসমত আলী রোববার টাঙ্গাইল মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

নিহত লাকীর স্বামী আলামিন জানান, তিনি টাঙ্গাইল শহরের আসাদ মার্কেটে মোবাইল ফোন ফ্যাক্স ও বিকাশের দোকান করেন। এজন্য বাড়ি ফিরতে তার প্রায়ই মাঝরাত হতো। বাড়িতে যাওয়ার পথে তিনি স্ত্রীকে ফোন করতেন। স্ত্রী বাড়ির গেট খুলে দিতেন। শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পর তিনি বাড়ির কাছাকাছি যাওয়ার পর স্ত্রীকে ফোন করলে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। বাড়ির সামনে গিয়ে দেখেন গেট খোলা। ঘরের ভিতরে উচ্চ শব্দে টেলিভিশন চলছে। তিনি বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই রক্তাক্ত অবস্থায় তার স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে থানায় খবর দেয়া হয়।

নিহতের স্বজনেরা জানান, হত্যাকাণ্ডের পর ঘরের একটি ড্রয়ার খুলে প্রায় আট লাখ টাকা লুট করা হয়েছে। অন্য কোন ড্রয়ার খোলা হয়নি। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

প্রসঙ্গ; শিক্ষা

প্রসঙ্গ; শিক্ষা


জিয়াউল হক


সমাজেই তিন তিন জন বিশ্বখ্যাত দর্শনিক জন্ম নিয়েছিলেন। গ্রিক গ্যাং অব থ্রী নামে তাদেরকে এক নামে সবাই চেনে। সক্রেটিস, তার চুয়াল্লিশ বৎসর পরে প্লেটো এবং তারও একচল্লিশ বৎসর পরে এ্যরিস্টেটলের জন্ম। এই তিন দার্শনিকের দর্শন গ্রিক সমাজে ব্যাপকভাবে চর্চিত হতো। শাসক শ্রেণীর সাথে সক্রেটিসের চিন্তার অনৈক্য তাকে শেষ পর্যন্ত হেমলক পানে আত্মহত্যায় বাধ্য করার ঘটনা আমরা জানি।

সক্রেটিসের একটা উক্তি Know Thyself ’ ( নিজেকে জানো) অমর হয়ে আছে। নিজেকে জানলে কি হবে? সেই জানার পথ ও পদ্ধতিই কি? সে বিষয়ে সক্রেটিস নিশ্চুপ।

সক্রেটিসের অনেক পরে এসে ইসলাম সোজাসাপ্টা বলেছে; নিজেকে জানো, তা হলে তুমি তোমার স্রষ্টাকে জানবে। বলেছে; ‘মান আরাফা নাফসাহু ফাক্বাদ আরাফ রাব্বাহু অর্থাৎ যে নিজেকে চিনেছে, সে তার স্রষ্টাকে চিনেছে।

এই যে স্রষ্টাকে চিনতে পারার সহজ ও সোজা পথ, এই পথটাই সক্রেটিস, প্লেটো এবং এ্যরিষ্টেটল কেউই বলতে পারেন নি।

গ্রিক দর্শনের এই ব্যার্থতার অন্যতম কারণ গ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা, যার মৌলিক ভিত্তি দুটো; এক-ইনটুইশন – Intuition, দুই- লজিক – Logic অর্থাৎ বোধ ও যুক্তি।

এই বোধ আর যুক্তির উপরে ভিত্তি করেই তারা টিকে থাকার চেষ্টা করেছে। সক্রেটিস থেকে শুরু করে এ্যরিস্টেটল পর্যন্ত সকলেই তাদের ‘বোধ কে যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন।

মানুষের বোধে বা উপলব্ধীতেই যদি ভূল হয়, অপূর্ণতা থাকে, তা হলে কি সে অপূর্ণতাকে যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করা যায়? এ প্রশ্নটি কেউ তুলেননি গ্রিক ঐ তিন দার্শনিকের কাছে। সর্বপ্রথম তাদের সেই দর্শন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে ইসলামের সান্নিধ্যে এসে।

গ্রিক সমাজে শিক্ষা দুটি মৌলিক ভিত্তির বিপরিতে ইসলাম তিনটি মৌলিক ভিত্তি দাঁড় করিয়েছে, বোধ ও যুক্তির সাথে এক্সপেরিমেন্টের তথা পরীক্ষা নিরীক্ষার কথা বলেছে। তার মানে, ইসলাম বলেছে, জ্ঞানের উৎস হলো তিনটি; ইনটুইশন (Intuition), লজিক – (Logic), এক্সপেরিমেন্ট (Experiment) অর্থাৎ বোধ-যুক্তি আর নীরিক্ষণ।

এর মধ্যে প্রথমটি অর্থাৎ ইনটুইশন তথা বোধটার উৎস গ্রিক সমাজে মানুষে নিজের মনের উদিত চিন্তা ও বিশ্বাস । ইসলামে এই বোধের উৎস আল্লাহ প্রদত্ত অহি (নবী রাসুল গণের ক্ষেত্রে) অথবা ইলহাম (সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে)। এই ইলহামটিই অহির মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞান, যুক্তি ও বাস্তবতার আলোকে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে বিশ্বাস করা বা না করাটাই হলো ইসলামি শিক্ষার মৌলিক ভিত্তিমূল।

এই ভিত্তিমূলের সন্ধানটাই সক্রেটিস ও তার অপর দুই শিষ্য দিতে পারেন নি। এটা হলো সক্রেটিসের শিক্ষা ও দর্শনের দূর্বলতা। এটা বলতে আমরা ভয় পাই, সংকোচ বোধ করি, কারণ, সক্রেটিস হলেন বিশ্বের কাছে এতো বড় দার্শনিক যে, তাকে পশ্চিমা বিশ্বে চিন্তা ও দর্শনের ইশ্বর ভাবা হয়। ইশ্বরের কি সমালোচনা করা যায়?

এই যে মনস্তত্ব, চিন্তা ও দর্শনের ক্ষেত্রে কিংবা ক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিপত্তির ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত শ্রেষ্ঠত্ব থাকার কারণে প্রশ্নাতীতভাবে দাসত্ব করে যাওয়ার মত মানসিক অবস্থাটা ছিলো গ্রিক সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রতিষ্ঠিত। সেখানে আল্লাহর পরিচিতি কিছুই ছিল না। মানুষের বাইরে আরও উচ্চক্ষমতাশালী কর্তৃত্বপরায়ন কোন শক্তি যদি থেকে থাকে, তারা হলো; ভেনাস, এ্যাপেলো, জুপিটার এসব। আল্লাহ নয়।

সময় গড়িয়ে যাবার সাথে সাথে গ্রিকো-ল্যাটিন সেই দর্শনের মধ্যেও পরিবর্তণ এসেছে। মানুষের বোধ বুদ্ধি ও উপলব্ধীর মধ্যে এক বিরাট অপূর্ণতা রয়েছে এবং তাকে শিক্ষার একমাত্র ও চুড়ান্ত উৎস হিসেবে মেনে নেওয়াটা নিরাপদ নয়, সে বোধ তাদের মধ্যে এসেছে। কিন্তু তা তথা পশ্চিমা সভ্যতা ইনটুইশন এবং লজিক বা উপলব্ধী ও যুক্তি, এ দুটোকে বিজ্ঞানের অধিনস্থ করে দিয়েছে। বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে যদি ইনটুইশন ও লজিক উৎরে যায়, তা হলে সেটাই সত্য!

মানবতার জন্য এ এক আত্মবিধ্বংসী বিশ্বাস। নিত্য পরিবর্তনশীল বিজ্ঞানকেই সত্যের উৎস হিসেবে মেনে নেয়াটা এক মারাত্মক ভ্রম। এই ভুলের মধ্যেই পড়ে আছে আজকের বিশ্ব; আধুনিক বিশ্ব।
আমরা আধুনিক যুগের অধিকাংশ মুসলমানরা ইসলামি শিক্ষা ও সাংস্কৃতির ধারক বাহক হবার বা তেমনটা হবার দাবীদার হওয়া সত্তেও কিন্তু সেই হাজার বসর প্রাচিন গ্রিকদের মানসিকতা ছাড়তে পারি নি।

আমাদের সমাজেও এখন শিক্ষার ক্ষেত্রে অন্যতম বড় সমস্যা হলো, ওস্তাদ বা শিক্ষকের কথার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। ওস্তাদ বা শিক্ষকের বাণীকেই শীরোধার্য হিসেবে মানতে হবে! অথবা যারা একটু স্বাধীন চিন্তা পোষণ করেন তারা ওস্তাদ বা শিক্ষকের মতের বিপরিতে আরও একজনের মতামতকে অন্ধের মত প্রাধান্য দেন; Science বা বিজ্ঞানের !

হয় আমার শিক্ষক, না হয় হয় বিজ্ঞান, দুটোর যে কোন একটা অবশ্যই সত্য ও চুড়ান্ত। এসবের কোনটিকেই শিক্ষার্থী তার নিজস্ব চিন্তা ও বুদ্ধি বিবেচনা দিয়ে পরখ করছে না। অথচ ইসলামের নির্দেশই হলো প্রতিটি জ্ঞান, তথ্য উপাত্ত ও শিক্ষা যাচাই করতে হবে, তারপরেই কেবল তা সত্য বলে গ্রহণ করতে হবে। কারোরই অন্ধ অনুসরণ করা যাবে না (আল কুরআন ১৭ : ৩৬)।

তার মানে হলো ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার তৃতিয় যে বৈশিষ্ঠ, সেই বৈশিষ্ঠের কোন চর্চা হচ্ছে না আমাদের মুসলিম সমাজের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে।

এ মানসিকতার কারণে একজন শিক্ষার্থীর মধ্যে স্বাধীন চিন্তাধারার উন্মেষ ঘটছে না যেমনি, তেমনি শিক্ষাও রয়ে যাচ্ছে অপূর্ণাঙ্গ ও অর্থহীন। ছাত্ররা পড়ছে তবে শিখছে না। এরকম পরিস্থিতি থেকে যত দ্রুত বের হয়ে আসা যায়, ততোই মঙ্গল।

 

এক বছর ধরে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া চাচাতো বোনকে ধর্ষণ, এরপর….

এক বছর ধরে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া চাচাতো বোনকে ধর্ষণ, এরপর….


নারী সংবাদ


মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখানে বিভিন্ন প্রকার ভয় ভীতি দেখিয়ে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মো. আবুল বাশার শেখ (২৩) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আবুল বাশার শেখ উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নে অবস্থিত দক্ষিণহাটী গ্রামের মোঃ হেলাল উদ্দিন শেখের ছেলে।

ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মুন্সীগঞ্জ সদর হসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সিরাজদিখান থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ফরিদউদ্দিন জানান, ধর্ষক মোঃ আবুল বাশার শেখ সম্পর্কে ধর্ষিত ছাত্রীর প্রতিবেশি চাচাতো ভাই। সেই সুবাদে বিবাদী ধর্ষক ওই ছাত্রীর বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। পরে ভয় দেখিয়ে গত এক বছর ধরে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আসছিল মোঃ আবুল বাশার।

সর্বশেষ গত শুক্রবার বিকাল ৪টায় বাড়িতে অন্য কেউ না থাকায় ওই ছাত্রীর বাসায় তখন একা পাইয়া জোড়পূর্বক ধর্ষণ করতে চাইলে ছাত্রীর চিৎকার করিলে ঘটনাটি কাউকে কিছু না বলার জন্য বিভিন্ন প্রকার হুমুকি দিযে কৌশলে ওই বাড়ি হতে চলে যায়। এর পরে বাড়িতে লোকজন আসলে বিষয়টি ওই ছাত্রীর ভাই, বোন ও তার মাকে জানায়। এরপর গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় ছাত্রীর বোন মোসাঃ আমেনা বেগম বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে ওইদিনই রাতেই উপজেলার শেখরনগর দক্ষিণহাটী এরাকা থেকে মোঃ আবুল বাশারকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার আইও এস আই মোঃ আসাদুজ্জামান তালুকদার জানান, আসামিকে শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে জিজ্ঞাসাবাদে একাধিকবার ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে মোঃ আবুল বাশার শেখ।
-নয়া দিগন্ত

 

নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে করণীয়


সৈয়দ মুহম্মদ জুলকারনাইন


আমরা পারিবারিক অশান্তি বা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ যেখানে- সেখানে সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, আন্তর্জাতিক বা বিশ্ব নিয়ে ভাবার সুযোগ কোথায়? তবে কিছু মানুষ অবশ্যই ভাবছেন সীমিত বিষয় নিয়ে। বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা তাই বলে। অথচ তাকালেই দেখি ধ্বংস, ক্ষয় আর নির্মমতার ঘটনাবহুল দিন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের চরম উন্নতিও রক্ষা করতে পারছে না মানুষ নামের প্রাণী ও তার আবাসভূমিকে ধ্বংস, ক্ষয় আর চরম নির্মমতার হাত থেকে। আমরা প্রতিনিয়ত পৈশাচিক আর হৃদয়বিদারক ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছি। সমাজ অভ্যন্তরে চলছে গভীর সঙ্কট। নীতি আদর্শ এবং মূল্যবোধ হারিয়ে মানুষ হয়ে উঠেছে জাহেলিয়া যুগের পশুবৃত্তি ও জিঘাংসাপ্রবন। খুন, গুম, অনৈতিক কর্মকাণ্ড মানবতাকে পদদলিত করে চলেছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুর প্রতি নৃশংসতা ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে।

মানুষকে বলা হয় ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। তাই মানুষের আচরণ হওয়া উচিত অন্যান্য জীবের চেয়ে স্বতন্ত্র। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন, ‘আমি মানব জাতিকে সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছি’। অথচ সে মানুষই আজ দানবের মতো আচরণ করছে। দেশের কোথাও না কোথাও হত্যা, ধর্ষণ, ইভটিজিং ও আত্মহননের ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হারে ঘটে চলেছে। তুচ্ছ ঘটনায়ও মানুষ খুন হচ্ছে, খুন হচ্ছে আদালত কক্ষে বিচারকের সামনে। অর্থাৎ কে, কখন, কোথায় হত্যার শিকার হবে, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। হত্যার পাশাপাশি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ধর্ষণ। ধর্ষকদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ছয়-সাত বছরের মেয়েশিশু কিংবা ছয় মাসের কোলের শিশু। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য মতে, ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে মোট ৪৯৬ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আইন ও সালিস কেন্দ্রের নিয়মিত মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে ধর্ষণের ঘটনা ছিল ৬৩০টি। ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টায় শিশু হত্যার ঘটনা ঘটে ২১টি। ধর্ষণের শিকার শিশুদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশুর বয়স সাত থেকে ১২ বছরের মধ্যে। বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮ সালে সারা দেশে ৪৩৩টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের কারণে একই বছর প্রাণ হারায় ২২ শিশু। এ ছাড়াও ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয় ৫৩ শিশুর ওপর। যৌন নির্যাতনে একটি শিশু মারা যায়। ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, হত্যা ও শারীরিক নির্যাতনে মারা গেছে ২৭১ শিশু। বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে আরো এক হাজার ছয়জন।

যে বয়সে শিশুদের স্কুলে যাওয়ার কথা, সে বয়সে তাদের দেখা যায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) জরিপ মতে, কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ ৪৫ ধরনের কাজের মধ্যে ৪১ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুরা কর্মরত। পেটের দায়ে শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে থাকলেও ছোটখাটো ভুলের জন্য নির্যাতনের শিকার হতে হয়। বিশ্ব বরেণ্য বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, ‘সমাজ কিভাবে শিশুদের প্রতি আচরণ করে তার মধ্য দিয়ে সমাজের চেহারা ফুটে উঠে’। বর্তমানে আমাদের সমাজে যে ধরনের নিষ্ঠুরতা ও যৌন উন্মাদনা চলছে, তা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। নারী ও শিশুদের ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা বেড়েই চলেছে। যেভাবেই ধর্ষণ হোক না কেন, তা গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা অনুযায়ী কারো ইচছার বিরুদ্ধে, সম্মতি ছাড়া, ভয় প্রদর্শন করে, প্রতারণার মাধ্যমে এবং ১৪ বছরের কম বয়সী বালিকার সাথে সহবাস করলে (ব্যক্তি বা দল) ধর্ষণ করেছে বলে গণ্য হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯ ধারা মোতাবেক, ধর্ষণের ফলে যদি কোনো নারী বা শিশুর মৃত্যু হয়, তাহলে ধর্ষণকারীর জন্য রয়েছে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। উপরন্তু কমপক্ষে এক লাখ টাকার অর্থদণ্ড। দলগতভাবে নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করলে ধর্ষণকালে কিংবা ধর্ষণের পর মৃত্যু হলে তবে ওই দলের সবাইকে উল্লিখিত শাস্তি ভোগ করতে হবে। কেউ ধর্ষণের চেষ্টা করলে তার জন্য সর্বোচ্চ ১০ বছর এবং সর্বনিম্ন পাঁচ বছরের কারাদণ্ডসহ অতিরিক্ত অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবুও দুর্বৃত্তরা ক্ষান্ত হচ্ছে না। আইন ও সালিস কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে তিন হাজার ৫৮৭ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। একই সময়ে পুলিশ সদর দফতরে মামলা হয়েছে ১৯ হাজারের অধিক। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১১টি ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলা হয়েছে। তবে আসামিদের মাত্র তিন শতাংশের সাজা হয়েছে। শাস্তির আওতায় আসা আসামিদের এ সামান্য হারেই ধর্ষকদের বেপরোয়া করে তুলছে বলে বিজ্ঞজনদের অভিমত।

গত ১২ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘অনেক ঘটনাই নতুন আরেক জঘন্য ঘটনার চাদরে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। কেবল সেই সব জঘন্য ঘটনার বিচার হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে যেগুলোর ব্যাপারে একযোগে মিডিয়া, সরকার ও সুশীলসমাজ সমানভাবে সোচ্চার হচ্ছে। গণমাধ্যম সোচ্চার হলে প্রশাসন ও নাগরিক সমাজ দৌড়ঝাঁপ করে, কিন্তু বেশির ভাগ ঘটনা ওভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে না। এ ধরনের ঘটনার সাথে বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও ক্ষমতার রাজনীতির সংযোগ রয়েছে। আজ অত্যন্ত বেদনাদায়ক এক ভয়াবহ সময়ে আমরা উপনীত হয়েছি। ঢাকাসহ দেশের সব শহরের অলিতে গলিতে বিশেষত রেললাইনের আশপাশে হতাশা, বেকারত্ব, অসৎ সঙ্গ ও পারিবারিক অশান্তির কারণে মানুষ নেশায় আচ্ছন্ন। ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য টেকনাফ এবং পার্বত্যাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ঢুকে পড়ছে। যার ফলে ধর্ষণ ও ধর্ষণ-পরবর্তী খুন-গুমের মতো অন্যান্য অপরাধ বেড়ে চলেছে।

সূরা আল কেয়ামায় মহান আল্লাহ সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, ‘মানুষ কি মনে করে যে, তাকে এমনি বেহিসাব ছেড়ে দেয়া হবে’? ‘আহকামুল হাকেমিন’ সর্বাবস্থায় শ্রেষ্ঠ বিচারক। এ বোধ, জ্ঞান ও অনুভূতি যার অন্তরে সে ধর্ষণ, খুন, গুম, অন্যায়, অবিচার করতে পারে না। পারে না নীতিশূন্য হতে। অন্য দিকে আল্লাহ ভীতি যার অন্তরে নেই, পরকালে জবাবদিহিতার ভয় নেই তার কাছে তো সুনীতি-দুর্নীতি, ন্যায়-অন্যায় কিংবা ভালো-মন্দ সমান। ওই যে পরকালের জবাবদিহিতার ভয়ে মানুষ অপকর্ম পরিহার করে, তাই ধর্ম। কেন না, কোনো ব্যক্তি যদি চিন্তা-চেতনা, বোধ-বিশ্বাস, আচার-আচরণে পরকালের সংশ্লিষ্টতা রাখেন, তাহলে সে ধর্মহীন হতে পারে না। ধর্ম মানুষের আদিমতম আইন, ধর্মই মানুষকে নীতিশূন্য হতে বাধা দেয়। সুতরাং সময় থাকতে আমাদের পাঠশালা, বিদ্যানিকেতন সর্বত্র নৈতিক শিক্ষা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর তালিম বা শিক্ষাদান করলে শিশু ও নারীর ওপর পাশবিকতা বা নির্যাতন অবসানের আশা করা যায়।

 

দাম্পত্যে ধৈর্য, পারস্পারিক সহানূভূতি


দাম্পত্য


স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মতদ্বৈততা একটি স্বাভাবিক বিষয়। অনেক ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে মতভেদ ঘটতেই পারে। কিন্তু আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল, ধৈর্য, পারস্পারিক সহানূভূতি ও সুধারণা এ সকল সমস্যা অনেকাংশে দূর করতে সক্ষম।

ঘনিষ্ঠতায় 
সুখী দাম্পত্য জীবন সবাই চায়। কিন্তু শুধু চাইলেই তো আর জীবনে সুখ আটকে রবে? সুখী দাম্পত্য জীবন পেতে গেলে তার কতগুলো শর্ত আছে, ঘনিষ্ঠতায় একটি। আপনাকে ভালবাসেন তিনি আপনার ঘনিষ্ঠতায় সান্নিধ্যও উপভোগ করবেন।

আলাদা ব্যক্তিত্ব থাকা সম্পর্কের ভালো
ব্যক্তিত্ব ভিন্ন হলেও একে অপরের সঙ্গে অনেকটা সময় একসঙ্গে কাটান, নিজেদের পছন্দের কাজগুলো করুন। বিয়ের আগে বাড়ির লোকের সঙ্গে রাগ দেখিয়েছেন বলে বিয়ের পরেও সেটা করবেন তা কিন্তু ঠিক নয়। ধীরে ধীরে স্বভাবে পরিবর্তন আনুন। সম্মান দিন একে অপরকে। একে অপরকে নিয়েও আগ্রহটা বাঁচিয়ে রাখুন।

পাশে থাকুন
পরস্পরের অভ্যেস তৈরি করে, পাশে থাকুন। কেউই পারফেক্ট হয় না, আপনিও নন। আপনারা ক্ষমাশীল এবং সম্পর্কটাকে সুস্থ রাখতে আগ্রহী। বড়ো কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করুন। বিপদে পরস্পরের পাশে থাকুন।

আর্থিকভাবে ভারসাম্য রাখুন
সুখী দম্পতিরা আর্থিক ভারসাম্য বজায় রাখেন। সাধারণত উপার্জন, টাকা জমা ও খরচ বিষয়ে তাঁদের ধ্যানধারণা একইরকম হয়। টাকাপয়সা খরচের অভ্যেসে ফারাক থাকার দরুন বহু বিয়ে ভেঙে যায়। তাই আর্থিক ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। বড়ো কোনও খরচ করার আগে পরস্পরকে জানিয়ে রাখুন।

 

আমার ভেতরটা চুরমার হয়ে যাচ্ছে!

আমার ভেতরটা চুরমার হয়ে যাচ্ছে!


সাজেদা হোমায়রা


বারবার চোখ ভিজে যাচ্ছে!
আবরারের মায়ের বিলাপ! বাবার কান্না ভেজা চেহারা! একজন মেধাবীর তিল তিল করে দেখা স্বপ্নগুলো নিমিষেই নিঃশ্বেষ হয়ে গেল!

নির্মমতার স্বাক্ষী আবরারের গোটা শরীর। ৬ ঘন্টা ধরে একটু একটু করে জীবনের আলো নিভে গেছে ছেলেটার…
কেমন ছিলো সেই মুহূর্তটা যখন সে আর শ্বাস নিতে পারছিলো না?
কেমন ছিলো তার সেই চাহনিটা যাতে ছিলো প্রচণ্ড বাঁচার আকুতি?

রাজনীতি মানেই এতোটা নির্মমতা, এতোটা বর্বরতা, এতোটাই সহিংসতা?

ফেসবুকে আবরারের হাত, পা, পিঠের ছবি দেখে আঁতকে উঠেছি। কি হিংস্র! কি নৃশংস!
কি নির্মমভাবে তাকে পিটিয়েছে!
এই পিঠেই কতো রাত তার মা হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে ! কতো যত্নে তাকে আগলে রেখেছে!

ভাবতেই খুব অবাক লাগছে…যারা আবরারকে পিটিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে, তারা রাস্তার নষ্ট হয়ে যাওয়া কোনো ছেলে না। এরাও মেধাবী ছাত্র।
কিন্তু এতো মেধাবী, আউটস্ট্যান্ডিং হওয়ার পরও তারা কিভাবে এমন বর্বর আচরণ করতে পারলো?

দেশ সেরা প্রতিষ্ঠানে পড়লেই মানুষ হওয়া যায় না। এখানেও পশুদের অবাধ বিচরণ!
মানুষ হওয়ার শিক্ষাটা আলাদা।
শিক্ষার সাথে নৈতিকতার যোগসূত্রটা খুব প্রয়োজন। নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা শুধু বর্বরতাই উপহার দিতে পারে।

যে শিক্ষা মানুষকে স্বার্থপর করে….
উগ্র ইন্দ্রিয় সুখের জন্য খুনকে উৎসাহিত করে…
যে শিক্ষায় থাকে ক্ষমতার দাপট…
যে শিক্ষায় ভিন্ন মতাবলম্বীদের নির্মূল করা হয় নির্মমভাবে…
যে শিক্ষায় সহপাঠীকে পিটিয়ে হত্যা করতে কোনো দ্বিধা হয় না…
কি লাভ সে শিক্ষায়? এ শিক্ষায় মেধাবী সন্তান শুধু কুলাঙ্গারই হয়।

নৈতিক শিক্ষা আর ইতিবাচক মনোভাব ছাড়া সত্যিকারের মানুষ হওয়া কখনোই সম্ভব না! কখনোই না!

সব সন্তানই তো বাবা মার অনেক প্রিয়… অনেক ভালোবাসার! কখনো আমরা সন্তানদের এতোটাই ভালোবাসি যে তাদের ছোট ছোট ভুলগুলোও শুধরে দেই না। অথচ একসময় এই ভুলগুলোই বড় আকার ধারণ করে। তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয় তাকে।
ছোট ছোট ভুলগুলো শুধরে দিয়ে সন্তানকে সঠিক পথ দেখানো আমাদের দায়িত্ব। আমরা যতোটা সচেতন থাকি সে পরীক্ষার খাতায় ১০০% মার্কস পেয়েছে কিনা, ততোটা কি সচেতন থাকছি তার আচরণ, মানসিকতা আর নৈতিকতার ব্যাপারে? এসব সন্তান পরবর্তীতে সো কল্ড মেধাবী হলেও মানুষ কখনোই হতে পারে না।

আমার স্বপ্ন… আমার দোয়া…আমার চাওয়া….
আমাদের প্রত্যেকটা সন্তান হোক বাবা মায়ের চোখ শীতলকারী!
প্রত্যেকটা সন্তান মানুষ হোক!
বেঁচে থাকুক নিজে!
বাঁচতে দিক অন্যকে!

 

কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে গার্মেন্টস কর্মীকে গণধর্ষণ

কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে গার্মেন্টস কর্মীকে গণধর্ষণ


নারী সংবাদ


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এক গার্মেন্টস কর্মীকে রাতভর গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মনবাওগা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে । ঘটনার পর ওই গার্মেন্টস কর্মীকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুই আসামী পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছেন তালতলা ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আহসানউল্লা। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ৭ জনকে আসামি করে ওই গার্মেন্ট কর্মী বাদি হয়ে সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

সোনারগাঁও থানায় দায়ের করা মামলার এজহারে বাদি উল্লেখ করেন, গার্মেন্ট কর্মী রূপগঞ্জের রবিন গার্মেন্টে তিনি কর্মরত। গত সোমবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে গার্মেন্ট ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার জন্য গার্মেন্টের সামনে থেকে গাউছিয়া যাওয়ার জন্য একটি সিএনজি অটোরিকশায় উঠেন। ওই সময়ে জাহাঙ্গীর নামের এক অভিযুক্ত ধর্ষক পেছনের সিটে বসা ছিল। গাউছিয়া যাওয়ার পর ওই গার্মেন্ট কর্মী সিএনজি অটোরিকশা থেকে নামতে চাইলে পেছনের সিটে বসা জাহাঙ্গীর তাকে বাঁধা দেয়। পরে সিএনজি চালককে সিএনজিটি দ্রুত গতিতে সোনারগাঁওয়ের তালতলার দিকে চালিয়ে যেতে বলে। ধর্ষক জাহাঙ্গীরের কথা মতো চালক গাড়িটি চালিয়ে যায়। এসময় ওই গার্মেন্ট কর্মীর মুখে সাদা রঙের কসটেপ লাগিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তালতলা এলাকায় হালিম মিয়ার ঘরে নিয়ে আটকে রাখে তাকে। ওই সময় হালিম মিয়া বাড়িতে ছিলেন না। পরে গভীর রাতে ব্রাহ্মনবাওগা গ্রামের মুজিবুর রহমানের বখাটে ছেলে আবু সাইদ, রেহাজউদ্দিনের ছেলে ইমরান, নবি হোসেনের ছেলে রনি, আবু সিদ্দিকের ছেলে আবুল হোসেন, ভট্টু মিয়ার ছেলে মাসুদ, আমির হোসেনের ছেলে আরিফ ও সামসুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর ওই গার্মেন্ট কর্মীকে রাতভর পালাক্রমে ধষর্ণ করে। রাত সাড়ে তিনটার দিকে হালিম মিয়া বাড়িতে এসে এ ঘটনা দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ ধর্ষককে গ্রেফতার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ধর্ষক আরিফ ও জাহাঙ্গীর পালিয়ে যায়।

পুলিশ অসুস্থ ওই গার্মেন্ট কর্মীকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনায় ওই গার্মেন্ট কর্মী বাদি হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

তালতলা ফাঁড়ির ইনচার্জ মো.আহসানউল্লাহ জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’জন পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ভিকটিম উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোনারগাঁও থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির জানান, গণধর্ষণের ঘটনার মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

মা হওয়ার ছয় মাস পর নিয়মিত ব্যায়াম করে ফিটনেস ধরে রাখা সম্ভব


স্বাস্থ্যকথা


চার মাস আগেই প্রথম মা হয়েছেন মন্টি দে। একটি বেসরকারি কোম্পানীতে চাকরি করেন মন্টি। আর মাত্র এক মাস পরেই মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে যোগ দিতে হবে চাকরিতে। কিন্তু এই কদিনেই বেশ মুটিয়ে গেছে মন্টি। আয়নাতে নিজের চেহারা যেন নিজেই চিনতে পারছেনা। মূলত মা হওয়ার পর থেকে বেশ শারীরিক পরিবর্তন হয়েছে তার। বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন মন্টি। কারন চাকরীতে তাকে বেশ দৌঁড়াতে হয়। আর শরীর ফিট না থাকলে কি করে হয়। অনেক ভেবেও কী করা যায় বুঝতে পারছেন না মন্টি। শেষ পর্যন্ত শরণাপন্ন হলেন তারই স্কুল বান্ধবী ডা. শর্মিলার। সব শুনে ডাক্তার পরামর্শ দিলেন আবার ব্যায়াম শুরু করার।
গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. নুরানী নিরু বলেন, মা হওয়ার পর আমরা ধরেই নিই যে আমাদের শারীরিক ফিটনেস শেষ। আমরা আর আগের মত সুন্দর হতে পারব না। পাব না চেহারার সেই সৌন্দর্য্য। কিন্তু আগের সেই শারীরিক সৌন্দর্য্য ফিরে পাওয়া খুব কষ্টের কিছু না। এজন্য দরকার দৃঢ় মনোবল আর আত্মবিশ্বাস।
তিনি বলেন, মানসিকভাবে সুস্থ থাকলে যেকোন মা’ই শারীরিকভাব্ওে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। মা হওয়ার পরবর্তী শারীরিক নাজুক অবস্থা থেকে পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লেগে যেতে পারে। মূলত বড় হওয়া জরায়ু ও দুর্বল হয়ে পড়া পেলভিক মাংসপেশিগুলো আগের অবস্থানে ফিরে আসে ছয় সপ্তাহের মধ্যেই। শুরু থেকেই পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করলে প্রস্রাব ধরে রাখার সমস্যা বা তলপেটের পেশির দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা যায়। তবে পুরোদমে ব্যায়াম শুরু করা উচিত ছয় মাস পর থেকে। আর বুকের দুধ খাওয়ানোর কারণে প্রথম ছয় মাস খুব বেশি ডায়েট না করাই ভালো।
প্রায় একই ধরনের কথা বলেন পিটিআরসি রিহ্যাব অ্যান্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারের পরামর্শক শায়লা। তাঁর সেন্টারে আজকাল অনেক মা হারিয়ে ফেলা ফিটনেস ও ফিগার ফিরে পেতে নানান সেশনে আসছেন। এ ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি অনেক পাল্টেছে। তবে মা হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হাঁটাচলা শুরু করলেও ছয় মাস পর্যন্ত কোনো ভারী ব্যায়াম না করাই উচিত, বিশেষ করে যদি সিজারিয়ান হয়ে থাকে। ছয় মাস পর থেকে বিশেষজ্ঞের অধীন নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে আগের ওজন ও ফিগার পাওয়া সম্ভব। কেবল ওজন কমানোটাই মুখ্য নয়, মা হওয়ার পর পেট ও পেলভিসের পেশিগুলো শিথিল বা লুজ হয়ে পড়ে, এর স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট ব্যায়াম লাগে। ফিট থাকার জন্য মা হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর থেকে প্রতিদিন ৪০ মিনিট করে হাঁটা ভালো।
ফিট থাকতে খাবারের ভূমিকা আছে। ফিটনেস বা স্ট্রেংথ কেবল শরীরের ব্যাপার নয়, এটা মনেরও। অনেক মেয়েই মা হওয়ার পর মানসিক শক্তি ও আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। অনেকে মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে কাজে ফিরে যান বটে, কিন্তু সেই এনার্জি যেন হারিয়ে ফেলেন।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সিফাত ই সাঈদ বলেন, বেশির ভাগ নতুন মায়েরই পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন হয়। মনে হয় যেন সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে। এ বিষয়ে তাঁর পরামর্শ হলো, শরীর ও মন পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে আসতে ৬ থেকে ৯ মাস লাগবে, রাতারাতি আগের মতো হওয়া যাবে না। এটা আগেই মেনে নিতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে। নিজের জন্য সামান্য হলেও আলাদা একটু সময় বের করতে হবে। যে সময় আপনি নিজের যতœ নেবেন, ব্যায়াম করবেন বা হাঁটবেন, চাইলে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দেবেন, একটা ভালো ছবি দেখবেন বা গান শুনবেন। পরিবারের অন্যরা নবজাতকের দায়িত্ব দিনে দু–একবার না নিলে এটা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে স্বামী সবচেয়ে ভালো ভূমিকা রাখতে পারেন।

সুত্রঃ (বাসস)

 

ছোট্ট শিশু “মাসানকে (৪)” নিতে চান না বাবা-মা

ছোট্ট শিশু “মাসানকে (৪)” নিতে চান না বাবা-মা


অন্যান্য সংবাদ


সৃষ্টিকর্তার পর মানুষের সবচেয়ে আপনজন বলা হয় মাকে। আমরা বলি মা-বাবা। কিন্তু চার বছরের ছোট্ট শিশু মাসান আরদিতের আপন যে কে? দুপক্ষের আইনজীবীসহ বিস্মিত পুরো আদালত।

মানবাধিকারকর্মীরা মতে, বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা বিপর্যস্ত করে তুলছে শিশুদের জীবনকে প্রতিনিহিত।

ঢাকার সিএমএম আদালতে তার মা-বাবা জানিয়েছেন, মাসানকে তারা রাখতে চান না। বিবাহ বিচ্ছেদের পর, বাবা উঠেছেন একটি মেসে। সেখানে শিশুটিকে রাখার পরিবেশ নেই। আর সন্তানের খরচ চালানোর অক্ষমতার কথা বলছেন মা।

জানা যায় যে, ২০১৩ সালে দিকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন এ দম্পতি। তবে, নানান কারণে বিভেদ সৃষ্টি হয় দুজনের মধ্যে। দাম্পত্য কলহের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে ডিভোর্সের যান তারা।
তবে সবচেয়ে আশ্চার্যের বিষয় হলো সন্তানকে কেউ কারো কাছে রাখতে চাচ্ছেন না। এমন ঘটনা অবাক করে দেয় উপস্থিত সবাইকে।

এ সময় আদালত প্রশ্ন রাখেন, বাবা-মা না দেখলে ছোট্ট শিশুটির দায়িত্ব নেবে কে?

সানজিদা শারমিন (মাসানের মা) ভাষ্য মতে, বাচ্চার বাবা তার কোনই খোজ নেই না, একবার দেখতে আসে না। ভরণপোষণ ও দিচ্ছে না। তাহলে বাচ্চাটাকে আমি কিভাবে রাখবো?

তবে, বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে চাননি বাবা মাহফুজ ইসলাম।

মাসানের বাবার আইনজীবী ইকবাল আহাম্মেদ খান বলেন, বাচ্চা নাবালক হলে ৭ বছর বয়স পর্যন্ত আইন অনুযায়ী মার কাছেই থাকবে। অপর দিকে মাসানের মায়ের আইনজীবী আকলিমা ইসলাম বলছেন, বাচ্চার মা রাখতে পারবে কিন্তু বাচ্চার খরচ অবশ্যই বাবাকে দিতে হবে, না দিলে ভিন্নপথ অবলম্বন করতে হবে আমাদের।

আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ফাওজিয়া কর্মী ফিরোজ বলছেন, বিচ্ছেদের মামলা বিষাক্ত করে তুলছে এখন শিশুদের জীবনকে। তিনি বলছেন, আমাদের আদালত নারী ও শিশু বান্ধব নয়। আদালত দেখতে চান বলে অনেকেই ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে আসেন, কিন্তু সেখানে বাচ্চা নিয়ে ঢোকার মত পরিবেশ থাকে না।

 

ঘরের কাজে পুরুষরা নারীদের পুরোপুরি সহযোগিতা করবেন বলেই বিশ্বাস মানবাধিকার কর্মীদের

ঘরের কাজে পুরুষরা নারীদের পুরোপুরি সহযোগিতা করবেন বলেই বিশ্বাস মানবাধিকার কর্মীদের


নারী সংবাদ


ইট ভাঙ্গার কাজ করেন ২৯ বছর বয়সী সালমা। প্রতিদিন ভোর ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টার মধ্যে নগরীর মাতুয়াইল এলাকার ইট ভাঙ্গার কাজের জায়গায় হাজির হতে হয়। সঙ্গে নিয়ে আসতে হয় মাত্র সাড়ে সাত-মাস বয়সী বাচ্চাকেও। কারণ, সেছাড়া বাচ্চাটাকে দেখাশোনা করার মত কেউ নেই। থাকেন যাত্রাবাড়ীর এক বস্তিতে। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত একটানা কাজ করতে হয় তাকে। শুধু দুপুরে খাওয়ার জন্য ৪৫ মিনিট ছুটি পান কাজ থেকে। আর বাচ্চা সঙ্গে থাকায় কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝে বাচ্চার দেখাশোনা করার সুযোগ পান সালমা।
সারাদিন কাজ শেষে বাসায় পৌঁছে কিন্তু তার শুয়ে-বসে বিশ্রাম নেওয়ার কোন সুযোগ নেই তার। গোসল করেই ঢুকতে হয় রান্না ঘরে। সবার জন্য রান্না শেষ করে, সবার খাওয়া শেষে তারপর নিজে খেয়ে যখন বিছানায় যান তখন রাত প্রায় সাড়ে ১১টা। পরদিন আবার ভোর ৫টা মধ্যে উঠে সবার জন্য খাবার তৈরী করতে হয় তাকে। প্রায় সময়ই ভোর বেলা নিজে কোন কিছু না খেয়েই ছেলেকে নিয়ে চলে যান মাতুয়াইলে।
ফাহমিদা পেশায় ব্যাংকার। বছর দুয়েক আগে বিয়ে করেন আরেক ব্যাংকারকে। বছর ঘুরতেই তাদের কোল জুড়ে আসে এক মেয়ে সস্তান। তার নিত্যদিনের জীবনটাও অনেকটা সালমার মতোই।
ফাহমিদা বলেন, সকাল সাড়ে ৯ টার মধ্যে গুলাশন-১-এ আমার অফিসে পৌঁছাতে হয়। বাসা নগরীর মধ্য বাড্ডা এলাকায়। সকাল সাড়ে ৬ টায় ঘুম থেকে উঠে সবার জন্য নাস্তা রেডি করি। তারপর নিজে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে অফিসের গাড়ীর জন্য যখন রাস্তায় পৌঁছাই তখন ঘড়ির কাঁটা ৮ টা ২০-এ। অফিস শেষ করে বাসায় পৌঁছাই সাড়ে সাতটার সময়। আসার সময় আমার বাবার বাড়ী থেকে বাবুকে নিয়ে তারপর বাসায় ফিরি। এরপর বাবুর খাবার রেডি করে তাকে ঘুম পাড়িয়ে দিই। তারপর আমাদের রান্না-বান্না শেষ করে খেতে খেতে রাত প্রায় সাড়ে ১১টা বেজে যায়।
এভাবেই দিনের পর দিন চলছে সালমা, ফাহমিদাসহ লাখো নারীর কর্মজীবন আর সংসার। তারা দু’হাতে একই সঙ্গে সামলাচ্ছেন সংসার ও কর্মস্থল।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর সম্প্রতি পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, একজন কর্মজীবী নারী, পুরুষের দ্বিগুণ কাজ করেন। তবে, কর্মজীবী নারীর গৃহস্থালি কাজের কোন আর্থিক মূল্যায়ন করা হয় না বলেই এর গুরুত্ব দৃশ্যমান হয় না। বিবিএস পরিচালিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপে কর্মজীবী নারীর ঘরের কাজকে দ্বিগুণ বোঝা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জরিপ মতে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই কর্মজীবী এমন পরিবারে শতকরা ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই রান্নার কাজ করেন নারী। অন্যদিকে কর্মজীবী পুরুষ যারা রান্না করেন তাদের সংখ্যা মাত্র আড়াই শতাংশ।
এছাড়াও ১০০ জন কর্মজীবী নারীর মধ্যে ৮৯ জনই কাপড় ধোয়ার কাজ নিজেরা করে থাকেন। অন্যদিকে মাত্র ১২ শতাংশ পুরুষ তাদের নিজেদের কাপড় নিজেরা ধুয়ে থাকেন। অন্য পরুষদের কাপড় ধোয়ার কাজ করেন মূলত বাড়ির অন্য নারী অথবা গৃহকর্মীরা।
কর্মজীবী নারীর মধ্যে ৫৩ শতাংশ নারী পরিবারের অন্যান্য সদস্য যেমন-শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ সদস্যদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করেন। আর মাত্র ২১ শতাংশ কর্মজীবী পুরুষ এ দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে, ২৬ শতাংশ কর্মজীবী নারী চাকরির পাশাপাশি সংসারের জন্য কেনাকাটার দায়িত্ব নিয়ে থাকেন।
জরিপ মতে, এসব কাজের বাইরেও সংসারের অন্যান্য কাজগুলোতে কর্মজীবী নারীর অংশগ্রহণ কর্মজীবী পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি। জরিপে বলা হয়, কর্মজীবী নারীরা পর্যাপ্ত বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন না।
মানবাধিকার কর্মী এডভোকেট মানোয়ারা হক বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই মূলত নারীদের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। হয়েছে নারীর ক্ষমতায়ন। এর ফলে নারীরা যেমন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছে অন্যদিকে দেশও এগিয়ে যাচ্ছে।
তবে, দুঃখের বিষয় হচ্ছে, নারীদের শ্রম বাজারে অংশগ্রহণ বাড়লেও তাদের ঘরের কাজ নিয়মিতই করতে হচ্ছে। এখান থেকে এখনো পর্যন্ত নিস্তার নেই। অন্যদিকে অনেক পুরুষ সদস্য তার সঙ্গীনীর চেয়ে কম সময় অফিস করেও ঘরের কোন কাজ করছেন না অথবা তাকে সহযোগিতাও করেন না। আবার অনেক পরিবার শর্তই দিয়ে রাখেন যে, আগে সংসার, স্বামী আর বাচ্চা সামলাতে হবে। তারপর বাইরে চাকরি করা যাবে। অধিকাংশ নারী তা মেনেই বাইরে যাচ্ছেন এবং কাজ করছেন।
মানবাধিকার কর্মীরা মনে করেন, বাংলাদেশে এখন অনেক নারী শ্রম বাজারের সাথে যুক্ত হচ্ছেন, এটা সত্যিই আশার কথা। এর ফলে নারীর ক্ষমতায়ন ও স্বাধীনতা আরো জোরদার হচ্ছে। তবে, সমাজ নারীদের ওপর অতিরিক্ত শ্রমের বোঝা চাপিয়ে দেয়ায় এই ক্ষমতায়ন ও স্বাধীনতার স্বাদ থেকে তারা যেমন বঞ্চিত হচ্ছে তেমন তাদের মানসিক প্রশান্তিও নষ্ট হচ্ছে। তারা বিশ্বাস করেন, দেশ উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের ওপর থেকে অতিরিক্ত শ্রমের বোঝা লাঘব হবে এবং ঘরের কাজে পুরুষরাও নারীদের পুরোপুরি সহযোগিতা করবেন এবং নারীর ক্ষমতায়নে তাদের জীবনসঙ্গীরা পুরোপুরি সহযোগিতা করবেন।
জরিপের অবশ্য একটা আশা জাগানিয়া বিষয় দেখা যায়, আর তা হল আনুষ্ঠানিক ভাবে শ্রমবাজারের পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। জরিপ মতে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের শ্রমশক্তিতে অন্তর্ভুক্ত নারীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। এর আগের অর্থবছরে এ সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৯১ লাখ। এছাড়াও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের শ্রমশক্তির মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৪ কোটি ৩৫ লাখ। আগের অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৩১ লাখ।

সুত্রঃ বাসস।

 

মুরগির মাংসের টিক্কা

মুরগির মাংসের টিক্কা


ঘরকন্যা


উপকরণ

মুরগির মাংসের কিমা ২ কাপ,
পেঁয়াজ বাটা আধা কাপ,
কাঁচা মরিচ ৩টি,
রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ,
আদা বাটা ২ টেবিল চামচ,
সয়াবিন তেল ১ কাপের চার ভাগের এক ভাগ,
ঘি ৩ টেবিল চামচ,

টকদই আধা কাপ,
পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ,
গরম মসলা গুঁড়া ১ চা চামচ,
কাজু ও পোস্ত বাটা একসঙ্গে মিলিয়ে ৩ টেবিল চামচ,
লবণ পরিমাণমতো।

রান্নার প্রক্রিয়া

১. মুরগির কিমা, লবণ, আদা বাটা দিয়ে একসঙ্গে মেখে ছোট ছোট মার্বেলের মতো বল করে ২০ মিনিট রেখে দিন।
২. এবার কড়াইয়ে তেল দিয়ে পেঁয়াজ বাটা, রসুন বাটা, আদা বাটা, কাজু ও পোস্ত বাটা দিয়ে মসলা ভুনে বলগুলো দিন। সঙ্গে দই দিয়ে কষান। পানি দেওয়া যাবে না।
৩. ঘন হয়ে এলে কাঁচা মরিচ, ঘি, গরম মসলা গুঁড়া ও পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আইন পর্ব-১

নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আইন পর্ব-১


নারীর জন্য আইন


নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়।

নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সংঘটিত কয়েকটি অপরাধ চিহ্নিত করে তার দ্রুত বিচার ও শাস্তি বিধান নিশ্চিত করার জন্য এই সব আইন। সাধারণভাবে সংঘটিত কয়েকটি অপরাধের মধ্যে অন্যতম হলো দহনকারী পদার্থ দ্বারা কোনো নারী বা শিশুকে আহত বা মৃত্যু ঘটানো। দহনকারী পদার্থের মধ্যে এসিড নিক্ষেপের অপরাধও অর্ন্তভূক্ত। বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে নির্যাতন মানবাধিকারের সর্বাধিক লঙ্ঘন। এই নির্যাতন সূক্ষ্ম এবং প্রকট উভয় ধরনেরই হতে পারে। বাংলাদেশে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এর প্রতিক্রিয়া বিশাল।

সংজ্ঞা

বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকলে,

এই আইন,

(ক) “অপরাধ” অর্থ এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধ

(খ) “অপহরণ” অর্থ বলপ্রয়োগ বা প্রলুব্ধ করিয়া বা ফুসলাইয়া বা ভুল বুঝাইয়া বা ভীতি প্রদর্শন করিয়া কোন স্থান হইতে কোন ব্যক্তিকে অন্যত্র যাইতে বাধ্য করা

(গ) “আটক” অর্থ কোন ব্যক্তিকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন স্থানে আটকাইয়া রাখা

(ঘ) “ট্রাইব্যুনাল” অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কোন ট্রাইব্যুনাল

(ঙ) “ধর্ষণ” অর্থ ধারা ৯ এর বিধান সাপেক্ষে, Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর Section 375 এ সংজ্ঞায়িত ærape”

(চ) “নবজাতক শিশু” অর্থ অনূর্ধ্ব চল্লিশ দিন বয়সের কোন শিশু

(ছ) “নারী” অর্থ যে কোন বয়সের নারী

(জ) “মুক্তিপণ” অর্থ আর্থিক সুবিধা বা অন্য যে কোন প্রকারের সুবিধা

(ঝ) “ফৌজদারী কার্যবিধি” অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);

(ঞ) “যৌতুক” অর্থ-

(অ) কোন বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সহিত জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসাবে বিবাহের কনে পক্ষের নিকট দাবীকৃত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ; অথবা

(আ) কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সহিত জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্বে বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসাবে প্রদত্ত বা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ;

(ট) “শিশু” অর্থ অনধিক ষোল বত্সর বয়সের কোন ব্যক্তি;

(ঠ) “হাইকোর্ট বিভাগ” অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট এর হাইকোর্ট বিভাগ৷

নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে নির্যাতন উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি সাংঘাতিক বড় সমস্যা যার শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া আগামী প্রজন্ম ও সাধারণভাবে সমাজের ওপর পড়ছে। বাংলাদেশে মানব নিরাপত্তার উদাহরণ রচনার ক্ষেত্রে এই সহিংসতা ও নির্যাতনের অবসান ঘটানো একান্ত আবশ্যক।

সুত্রঃ http://bdlaws.minlaw.gov.bd

 

জুস পান করে মারা যাওয়া সুস্মিতার বোনের আবেগঘন স্ট্যাটাস

নারী সংবাদ

হকারের নিকট থেকে কেনা জুস পান করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া মেধাবী কলেজ শিক্ষার্থী সুস্মিতা হোম চৌধুরী মন্টির মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার বোন সুমনা বাসু। ‘বোধনের আগেই বিসর্জন’ শিরোনামে সুম্মিতাকে নিয়ে বোন সুমনা বাসুর দেয়া আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাসে অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না।

‘মৃত্যু নয় হত্যা- বিচার চাই’ লিখে সুম্মিতার মৃত্যুর বিচার দাবি করে ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন অসংখ্য মানুষ। প্রথম শ্রেণি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত প্রথম হওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী সুস্মিতার এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। আবার অনেকেই ময়মনসিংহ ব্রিজের মোড়কে চুরি-ছিনতাইমুক্ত করার দাবিতেও প্রতিবাদ করছেন।

অপরদিকে সুস্মিতার বাবা কাঞ্চন কুমার হোম শনিবার সকালে মেয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি আকুতি করে বলেন, তার মেয়ের মতো আর কোনো মেয়ের যেন এভাবে মৃত্যু না হয়।

সুস্মিতা হোম চৌধুরী মন্টির জন্য শারদীয় দুর্গোৎসবের জন্য কেনা নতুন কাপড়ও শেষকৃত্যানুষ্ঠানে বিসর্জন দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তার বোন সুমনা বসু ‘বোধনের আগেই বিসর্জন’ শিরোনামে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘যাকে নিয়ে আজ লিখতে বসেছি কোনোদিন কল্পনাও করতে পারিনি ওকে নিয়ে এভাবে লিখবো। কতো মজা করলাম বোনরা মিলে রুমার বিয়েতে এটাই শেষ মজা ছিল? সেদিনও বাসায় আসলি এটাই কি শেষ দেখা ছিল? কত গল্প করলাম ভাবলাম পূজায় বাড়ি যাব। দেখা হবে। কিন্তু কাজটা ঠিক হলো না মন্টি। বোধনের আগেই বিসর্জন।’

উল্লেখ্য, হকারের কাছ থেকে কেনা জুস পান করে মৃত্যুবরণ করেন মুমিনুন্নেছা সরকারি কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী সুস্মিতা হোম চৌধুরী (মন্টি)। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ডৌহাখলা ইউনিয়নের ডৌহাখলা গ্রামের কাঞ্চন কুমার হোম চৌধূরীর কন্যা। ১৩দিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গত বুধবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সুস্মিতা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

পারিবারিক সূত্র ও সাবেক ইউপি সদস্য নিতাই কুমার চন্দ জানান, সুস্মিতা হোম চৌধুরী (মন্টি) গত ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বোনের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার পথে ময়মনসিংহ ব্রীজের মোড়ে দুই শিশু হকারের নিকট থেকে একটি কোম্পানির জুস কেনেন। কিন্তু জুসটি তখন না খেয়ে বোতলটি ব্যাগে রেখে দেন পরে খাবেন কিংবা তার ছোট ভাগ্নেকে দেবেন বলে। কিন্তু ঢাকায় গিয়ে জুসের কথা ভুলে যান তিনি। জুসটি ভাগ্নেকে আর খাওয়ানো হলো না।

এরপর গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে ব্যাগের কাপড় সরাতে গিয়ে জুসের বোতলটি চোখে পড়ে। এরপর তিনি মাকে বলেন, আজ রাতে ভাত খাব না, শুধু একটু দুধ আর এই জুস খেয়ে নেব। তার মা আর জোর না করলে জুস খেয়েই ঘুমাতে যান তিনি। পরদিন সকালে আর ঘুম ভাঙেনি সুম্মিতার। যে মেয়েটি প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, কিন্তু সেদিন সকাল ১০টায়ও ঘুম না ভাঙায় পরিবারের লোকজন জোর করে তার ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে কোনোরকমে ঘুম ভাঙলেও তিনি আর মাথা তুলে বসতে পারছিলেন না।

এরপর স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চারদিন চিকিৎসা শেষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে আসার পর সেদিন রাত থেকেই আবারো ডায়রিয়া শুরু হয় সুস্মিতার। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে পুনরায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এরপর টানা ৮দিন চিকিৎসার পর সুম্মিতার অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার বিকেলে ডাক্তর তাকে ঢাকায় রেফার করেন। ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সুম্মিতাকে নিয়ে ত্রিশাল থেকে পুনরায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফিরে আসেন তারা। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সুস্মিতা আর বেঁচে নেই।

নিহত সুস্মিতা হোম চৌধুরী (মন্টি) মুমিনুন্নেছা সরকারি কলেজ থেকে গণিতে অনার্স ও সদ্য মাস্টার্স পরীক্ষায় দুটোতেই প্রথম শ্রেনীতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।

 

স্বাস্থ্যে ভাল রাখতে খেয়াল রাখুন


স্বাস্থ্যকথা


বাইরে সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বাসায় ফিরে বসুন নিঃশ্বাস নিন  তরতাজা মনকে প্রফুল্ল রাখাবে বিশ্বাস যদি না হলে আজ থেকে নিজেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন এর বিশেষ সুফল।ঐতিহ্যবাহী খাবারের অভ্যাস থেকে সরে আসতে হবে। প্রয়োজনীয় শারীরিক কসরতের অভাব, হতাশা, দুশ্চিন্তা  ছুড়ে ফেলুন।

আর কি কি করতে পারেনঃ

  • টমেটোর রস ও দুধ একসঙ্গ মিশিয়ে মুখে লাগান 
  •  কনুইতে কালো ছোপ দূর করতে লেবুর খোসায় চিনি দিয়ে ভালো করে ঘষে নিন। এতে দাগ চলে গিয়ে কনুই নরম হবে।
  •  রসুনের কোয়া ঘষে নিন ব্রণের উপর। ব্রণ তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যাবে।
  •  চুল পড়া বন্ধ করতে মাথায় আমলা, শিকাকাই যুক্ত তেল লাগান।
  • হাত খুব ঘামে তারা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে লাউয়ের খোসা হাতে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ।
  • মাথাব্যথা হলে প্রচুর মাছ খান। 
  •  মধু কার্যকর  ত্বকের জন্য।
  • পেটের পীড়ায় খেতে পারেন কলা, আদা।
  • স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে গমজাত খাদ্য, বাঁধাকপি কার্যকর।
  • মুখের বাদামী দাগ উঠাতে পাকা পেঁপে চটকে মুখে লাগান, পরে ধুয়ে ফেলুন।
  • শুষ্কতা থেকে মুক্তি পেতে মধু, দুধ ও বেসনের পেষ্ট মুখে লাগান নিয়মিত। এতে ত্বকের বলিরেখা ও দূর হয়ে যাবে।
  • পায়ের গোড়ালি ফাটলে পেঁয়াজ বেটে প্রলেপ দিন এ জায়গায়।
  • ফলে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া গেলেও পড়ে  আপনাকে আরো বেশি দুর্বল করে দেয় এবং দ্রুতই ঘুম পায়, গা ছেড়ে দিয়ে থাকে। যা শরীরের জন্য উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমান বেশি হয়ে থাকে।

 

দেশ খুলনা বিয়ের ৩ দিনের মাথায় কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা


নারী সংবাদ


মেহেদির রঙ শুকানোর আগেই বিয়ের মাত্র তিন দিনের মাথায় কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্রী এক নববধূ আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে গেছেন। নববধূ পাপিয়া খাতুন তার বাবার বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যরা ফ্যানের সাথে লাশ ঝুলতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ তা উদ্ধার করে।

স্বজনরা জানান, খোকসা সরকারি ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী পাপিয়ার সাথে একই কলেজের শামীম রেজার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে ছাত্রীর বাবার বাড়ি উপজেলার হিলালপুর গ্রামে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু এ বিয়ে ওই ছাত্রের পরিবার মেনে নিতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার বিকালে নববধূকে রেখে শামীম নিজের বাড়ি যান। পরে তিনি না ফিরলে নব দম্পতির মধ্যে মোবাইল ফোনে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রাতেই নববধূ আত্মহত্যা করেন। নিহতের বাবা ওমর আলী জানান, শামীম পালিয়ে যাওয়ায় পাপিয়া অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন।

এ ব্যাপারে শামীমকে ফোনে পাওয়া যায়নি। সেই সাথে তার বাবা রাজ্জাক বিশ্বাসের বাড়ি উপজেলার মির্জাপুরের গিয়েও কারও দেখা মেলেনি। খোকসা থানার এসআই বুলবুল আহমেদ বলেন, এ ব্যাপারে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সুত্রঃনয়াদিগন্ত।

 

ছাত্রীকক্ষে গিয়ে উত্যক্ত : বখাটের দুই মাসের কারাদণ্ড

ছাত্রীকক্ষে গিয়ে উত্যক্ত : বখাটের দুই মাসের কারাদণ্ড


নারী সংবাদ


কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে স্কুল শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করার দায়ে রাজন মিয়া (১৯) নামে এক বখাটেকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) একেএম লুৎফর রহমান এ দণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত রাজন মিয়া উপজেলার তারাকান্দি গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে বহিরাগত ৪-৫ জন বখাটে পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের কক্ষে প্রবেশ করে। এ সময় তারা ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতে থাকে। কয়েকজন শিক্ষার্থী বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আফছর উদ্দিন আহম্মদ মানিককে জানান।

পরে প্রধান শিক্ষক অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে বখাটেদের ঘেরাও করেন। এ সময় ৩-৪ জন বখাটে বিদ্যালয়ের দেয়াল টপকে পালিয়ে গেলেও রাজন নামে এক বখাটেকে আটক করে। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) একেএম লুৎফর রহমানকে এ বিষয়টি অবগত করেন প্রধান শিক্ষক। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। পরে ছাত্রীদের অভিযোগ শোনেন এবং বখাটে রাজন অপরাধ স্বীকার করায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ সময় পাকুন্দিয়া থানার এসআই বিষ্ণুপদ দাশ ও প্রধান শিক্ষক আফছর উদ্দিন আহম্মদ মানিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)একেএম লুৎফর রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

মনোজাগতিক অভিযাত্রা (২)

মনোজাগতিক অভিযাত্রা (২)


আফরোজা হাসান


হতাশার চোরাবালিতে আকন্ঠ ডুবে থাকা মানুষ প্রায়ই ছুটে আসে একটু আশার আলোর সন্ধানে। কিন্তু তাদের মনের হতাশার গভীরতা এত বেশি থাকে আমার আশা জাগানিয়া শব্দরা সেখানে পৌছা মাত্রই টুপ করে ডুবে যায়। এমন মানুষদের সঠিক পথের দিশা দেখাতে যেয়ে নিজেই দিশেহারা হয়ে যেতাম। কয়েকজন এসেই আকুতি জানাতো ঘুমের ঔষধের। ঘুমিয়ে কিছুক্ষণের জন্য সবকিছু ভুলে যেতে চায়। কাউকেই এমন সমাধান দিতে ইচ্ছে হতো না। ইচ্ছে হতো এমন কোন সমাধান দিতে যাতে অশান্ত প্রাণগুলো প্রশান্তির সন্ধান পাবে আত্মিক ভাবেই। কোন ড্রাগের প্রভাবে কিছুটা সময় ভুলে থাকবে না নিজের সমস্যার কথা। বরং নিজের সমস্যাকে মেনে নিয়ে সেটার সমাধানের চেষ্টা করবে। সমস্যায় দ্বিগিদিক ছোটার একটা অন্যতম কারণ হচ্ছে মানুষ আগত সমস্যাকে মেনে নিতেই নারাজ থাকে। যারফলে সমাধান হাতের কাছে থাকা স্বর্ত্বেও নিজ সাধ্যের বাইরে কিছু ভেবে নিয়ে আহাজারি করে, ভীত হয়। মনে পড়লো একটা সময়ে আমি নিজেও এমনটাই ছিলাম। কিন্তু যেদিন মন থেকে সত্যিকার অর্থে মেনে নিয়েছিলাম, দুনিয়াতে এসেছিই পরীক্ষা দিতে। এবং ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ভয়, বিপদআপদ ইত্যাদির দ্বারা আল্লাহ পরীক্ষা করবেন। কিন্তু কখনোই আমার সাধ্যের বাইরের কোন বোঝা আমার উপর চাপাবেন না। সেদিন থেকে যে কোন সমস্যাকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গীটাই বদলে গিয়েছিল আমার। এতই অধৈর্য্য স্বভাবের একজন মানুষ ছিলাম আমি সুপার মার্কেটে লম্বা লাইন দেখলে অনেকক্ষণ ধরে খুঁজে খুঁজে বের করা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখেই চলে আসতাম। কারণ অতক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার ধৈর্য্য আমার ছিল না। কিন্তু দুনিয়া পরীক্ষা ক্ষেত্র মেনে নেবার পর থেকে এমন পরিস্থিতিতে পড়লেই মনেহতো ধৈর্য্যশক্তি বৃদ্ধির পরীক্ষা চলছে আমার। এমন ছোট ছোট পরীক্ষার মধ্যে দিয়েই নিজেকে ধৈর্য্যশীল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে আমাকে।

তারমানে আপনার অপরিসীম ধৈর্য্যশীলতার গোপন রহস্য এখানে লুকায়িত?

এই প্রথম হাসি ফুটে উঠলো সিনিয়র সহকর্মীর চেহারাতে। ব্যক্তি হিসেবে উনি যথেষ্ট হাসিখুশি। উনার রসবোধও চমৎকার। এটা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। তবে নিজের ব্যক্তি জীবনের আলোচনা বিশেষ করে অতীতের প্রসঙ্গ উঠলেই কেমন যেন অন্যমনস্ক হয়ে যান। উনার ব্যক্তিত্বের এই অংশটা প্রায় সময়ই চিন্তার খোরাক জোগায় আমার। কর্মজীবনের দীর্ঘ পথে অসংখ্য মানুষকে উনি তাদের অতীতের নিকষ অন্ধকার থেকে মুক্ত সহায়তা করেছেন। অথচ নিজেকে মুক্ত করতে পারেননি মন্দ অতীতের বাহুডোর থেকে। অবশ্য একজন ক্যান্সার স্পেশালিষ্ট যদি ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে একজন মনোচিকিৎসকও ভুগতে পারেন মনোরোগে। যাইহোক, মূল প্রসঙ্গে ফিরে যাই।

আমার প্রশ্নের জবাবে হাসি মুখে বললেন, তা বলতে পারো। তবে মূল কথা কিন্তু একটাই। যে কোন পরিস্থিতিকে মেনে নিতে পারাটা। কারণ একটি পরিস্থিতিকে মেনে নিতে পারাটাই হচ্ছে সেই পরিস্থিতি থেকে বেরোবার বদ্ধ তালার চাবি। এই কথাটা বোঝার পর থেকে কোন পরিস্থিতিই আর আমার সামনে এগিয়ে যাবার পথ রোধ করে দাঁড়াতে পারেনি। তাই আমার একটাই চিন্তা ছিল পেশেন্টদের মনে এই একই আত্মপোলব্ধি জাগানো। সমস্যা থেকে পালানোর চেষ্টা না করে ফেস করতে শেখানো। সমস্যার স্বভাবই যত পিছু ছাড়ানোর চেষ্টা করা হয় পেছন পেছন ধাওয়া করে। কিন্তু যখনই মুখোমুখি দাঁড়ানো হয় একপা, দু’পা করে পিছাতে পিছাতে একসময় ঝেড়ে দৌড় লাগায় এবং হারিয়ে যায় দৃষ্টিসীমার বাইরে।

এই পদ্ধতিটা সত্যিই ফলপ্রসূ। আমার অভিজ্ঞতাও বলে যে কোন সমস্যাকে মেনে নিতে পারাটাই আসলে জয়ের পথের প্রথম কদম। তারপর বলুন..

আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি নানারকমের সুখ-দুঃখ, আশা-নিরাশা, ছন্দ-দ্বন্দ্ব নিয়েই আমাদের জীবন। আর এসব তাই পালা ক্রমে আমাদের জীবনে আসতেই থাকবে। সুখ হোক বা দুঃখ কোন অবস্থায় মধ্যেই স্থির থাকা সম্ভব নয় জীবনে। কিন্তু তারপরও মাঝে মাঝে বিষণ্ণতা ঘিরে ধরে মনকে। তখন মনের অন্ধকার কোনে কুরআনের একটি আয়াত জাগিয়ে যায় প্রশান্তির প্রদ্বীপ শিখা। সূরা রা’দ এর ২৮ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “যারা ঈমান আনে ও আল্লাহর স্মরণে যারা প্রশান্তি লাভ করে। নিঃসন্দেহে আল্লাহর স্মরণেই চিত্ত প্রশান্তি খুঁজে পায়।” আল্লাহর স্মরণের মাঝে প্রশান্তি খুঁজে নিতে পারাটা জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এই প্রাপ্তি একবার যদি কেউ হাসিল করে নিতে পারে দুনিয়ার কোন অপ্রাপ্তি আর সেই মনকে স্পর্শ করতে পারে না। এই প্রাপ্তি অর্জন কিন্তু খুব বেশি কঠিন কিছু নয়। এই প্রাপ্তির জন্য শুধু প্রয়োজন নিজ অবস্থানে সর্বাবস্থায় সন্তোষ। যে কোন পরিস্থিতিতেই আলহামদুলিল্লাহ বলতে পারাটা। এটাও কিন্তু বেশ সহজ। আমাদের জন্য একটা পরিস্থিতি যতই নাজুক হোক না কেন দৃষ্টি নীচের দিকে করলেই তারচেয়েও নাজুক পরিস্থিতির মোকাবিলায় রত অসংখ্য মানুষের দেখা মেলে। তাই নিজ অবস্থানকে সন্তোষ ভরা মেনে নেবার কথাটাই প্রথম বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম পেশেন্টদের। সেই চেষ্টাটাকে জয়ের মুখ দেখানোটা অবশ্য বেশ কঠিন ছিল।

হুম, যখন কোন পরীক্ষা আসে তখন নিচের দিকে তাকানোর সেন্সটাই কাজ করা ছেড়ে দেয় যেন। নিজেকেই তখন জগতের সবচেয়ে অভাগা মনেহয়। আপনার কখনো নিজেকে এমন মনে হয়েছে? কখনো কি ভেতর থেকে কেউ বলেছে তোমার মতো দুর্ভাগা জগতে কেউ নেই? যদি বলে থাকে ঐ পরিস্থিতিতে কিভাবে নিজেকে বুঝিয়েছিলেন?

হেসে বললেন, যখন থেকে শরীয়তের আলোকে চিন্তা করতে শিখেছিলাম তখন থেকে আর কখনোই নিজেকে দুর্ভাগা মনেহয়নি। যখনই কোন সমস্যা এসেছে, আমি কোনকিছু চেয়েছি কিন্তু পাইনি। এমন পরিস্থিতি গুলোকে নিজের জন্য পরীক্ষা ভেবে নিয়েছি। যদিও ভাবাটা সহজ হতো না বেশির ভাগ সময়ই। লক্ষ্য থেকে বারবার ফসকে যেতো চাইতো মন। দুঃখবিলাসে মগ্ন হতে চাইতো। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতাম কিছুতেই হাল ছেড়ে না দেবার। আসলে যে কোন পরিস্থিতিতে হাল ছেড়ে দেবার অসংখ্য কারণ থাকে আমাদের কাছে। কিন্তু হাল ছেড়ে না দেবার জন্য একটা কারণই যথেষ্ট হয়। যেটা হচ্ছে রব্বের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি। জীবনের লক্ষ্যটাকে যদি রব্বের সন্তোষ অর্জনে স্থির করা যায়, তাহলে কঠিন থেকে কঠিন পরিস্থিতিতেও আশায় দিয়া নিভু নিভু করে হলেও প্রজ্জলিত থাকে অন্তরে……।

 

প্রেমিকার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করলেন ছাত্রলীগনেতা


নারী সংবাদ


দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমিকার বাবা জানার পর প্রেমের প্রস্তাবে সম্মতি না দেয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন প্রেমিক।

সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও আলমপুর গ্রামের মৃত ইসলামের পুত্র আমিনুল ইসলাম (৩০) দুবলাই গ্রামের মৃত কোরবান আলী মন্ডলের পুত্র আব্দুর রউফ সাইদ (৩৫) এর কন্যা সিরাজগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অনার্স ১ম বর্ষে পড়ুয়া ছাত্রী সোনিয়ার সাথে প্রেমের সর্ম্পক। সোনিয়ার পিতা প্রেমের সম্মতি না দেয়ায় বুধবার দুপুরে আরআইএম ডিগ্রি কলেজের পাশে এলাপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। সাইদকে কাজিপুর হাসপাতালে ভর্তি করার পর বিকাল ৫টায় তিনি মারা যান।

পুলিশ কাজিপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামকে আটক করেছে। পুলিশ লাশ উদ্বার করে পোস্টমর্টেমের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করবেন বলে জানান নিহতর পরিবারের সদস্যরা।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

ফেনীতে ‘কিশোর গ্যাং’, উদ্বিগ্ন অভিভাবক


নারী সংবাদ


ফেনী শহরের পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং হিসেবে পরিচিত উঠতি বয়সী সংঘবদ্ধ বখাটেদের নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে অভিভাবকরা। তাদের দমনে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এজন্য শহরে বেশ কিছুদিন ধরে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাং মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে জেলায় সংগঠিত খুন, ছিনতাইসহ বেশ কিছু অপরাধ ঘটনায় উঠতি কিশোরের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে।

একাধিক লোহর্ষক হত্যার তদন্তে দেখা গেছে, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এসব অপরাধের সূত্রপাত। পাড়া-মহল্লার অলি-গলি এমনকি স্কুল-কলেজের সামনে তারা পথচারীদের উত্ত্যক্তও করে। ইতোমধ্যে এসব অপরাধ দমনে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। ক’দিন আগে শহরের শাহীন একাডেমী সড়ক, ফনেী সরকারি কলেজ গেইটসহ তিনটি স্থান থেকে ১১ কিশোরকে আটক করা হয়। দৃষ্টিকটু হওয়ায় তাদের চুল কেটে দেয়া হয়। আটককৃতদের অভিভাবকদের থানায় ডেকে নেয়া হয়। পরে তাদের সন্তানদের খোঁজ-খবর রাখা এবং তাদের ব্যাপারে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া। পরে মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

সূত্র আরো জানায়, এসব অপরাধ দমনে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে তিনটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। এসব টিম শহর সহ বিভিন্ন স্থানে টহল অব্যাহত রেখেছে। একজন ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে প্রতিটি টিমে ৭ জন সদস্য রয়েছেন।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া বলেন, কোন অবস্থায় কিশোর গ্যাং মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেয়া হবেনা। উশৃঙ্খল চলাফেরা, আড্ডারত এমনকি মোটর সাইকেলে তিনজন চললেই আটক করা হবে।

ফেনী পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহতাব উদ্দিন মুন্না বলেন, কিশোর অপরাধ বাড়ার পেছনে চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকা অন্যতম কারণ। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই নয়, অভিভাবকদের সচেতনতার বিকল্প নেই। সন্তানদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ ও যত্নশীল হওয়া খুবই জরুরী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিভাবক জানান, স্কুল পর্যায়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে কথিত বড় ভাইদের অনুসরণ করতে গিয়ে শিশু-কিশোররা বিপথগামী হচ্ছে। অনেকে দলভারী করার জন্য শিশু-কিশোরদের তাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ইতোমধ্যে জেলায় সংগঠিত বিভিন্ন অপরাধে এমন সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে এসেছে।

একজন গণমাধ্যম কর্মী জানান, ফেনীর বহুল আলোচিত একরাম হত্যাকাণ্ড, মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত রাফি হত্যাকাণ্ড, স্কুল ছাত্র আরাফাত হত্যাকাণ্ডসহ বেশ কিছু লোহহর্ষক ঘটনায় কিশোররা জড়িত রয়েছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।

ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, কিশোর গ্যাং কালচার খুবই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি সর্বাগ্রে অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, পরিবার ও প্রতিষ্ঠানে এসব ব্যাপারে শিশু-কিশোরদের নিরুৎসাহিত করতে হবে। তিনি তার প্রতিষ্ঠানে (ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুল) শিক্ষার্থীদেরকে এসকল বিষয়ে নিয়মিত নজরদারী করেন। ওই স্কুলে কোন ছাত্র অর্ধ ইঞ্চির উপর চুল রাখতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে তিনি জানান।

ফেনী মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন জানান, এ ধরনের ঘটনায় ১২ জনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, দেশব্যাপী কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। তারা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও খুনোখুনি করেছে। ফেনীতে কিশোর গ্যাং যেন গড়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বেশ কয়েকজনকে আইনের আওতায় আনা হয়ছে।

তিনি আরো বলেন, দুই-তিন কিংবা চারজন মোটর সাইকেলে মহড়া, রাতে আড্ডা, মাদকাসক্ত, স্কুল পালিয়ে ইভটিজিং করলে তাদের আটক করা হচ্ছে।

 

প্যারেন্টিং নিয়ে বইপড়া

প্যারেন্টিং নিয়ে বইপড়া


খালেদা সুলতানা সুইটি


প্যারেন্টিং নিয়ে কিছু বই পড়তে যেয়ে একটা বই বেশ ভালো লাগলো। আমরা পিতামাতা রা চাই সন্তান যেন একজন আদর্শ মুসলিম হয় কিন্তু আমরা নিজেরা কতটা ইসলাম প্র্যাকটিস করছি বা কতটা জানি সেটা নিয়ে ভাবিনা। সন্তানরা পরিবারের মানুষদেরকে বিশেষ করে মাবাবাকে অনুকরন করে। মা বাবার কাছ থেকেই প্রথম জ্ঞানার্জন করে। সেই মা বাবা নিজেরাই যদি না জানে না মানে তবে সন্তানকে শেখাবে কিভাবে বা সন্তানই বা মানবে কেন।

তাই সন্তানকে শেখানোর জন্য মানানোর জন্য সর্বোপরি সন্তানকে গড়ে তোলার জন্য এবং নিজেও পরিপূর্ণ ভাবে ইসলাম প্র্যাকটিসের জন্য যে ধরনের রুটিন ফলো করা দরকার, যা যা জানা দরকার, দৈনন্দিন কাজকর্মের পাশাপাশি, জীবন চলার পথে ইসলামের দিক নির্দেশনা, কুরআন এবং হাদীসের রেফারেন্সসহ সাবলীলভাবে বর্ননা দিয়েছেন বইটিতে লেখক জাবেদ মুহাম্মদ। দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা লাভের জন্য আল্লাহ সুবহানু ওয়া তা’আলার নির্দেশিত কুরআন এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত সুন্নাহ উল্লেখ করে লেখক সন্তান প্রতিপালনের নানাবিষয়ে আলোকপাত করেছেন।

বইটির নাম ” প্যারেন্টিং : এন ইসলামিক আইডোলজি ফর চিলড্রেন।”
– আহসান পাবলিকেশন্স

** শুধু মা বাবারাই নয়, অন্য যে কেউ বইটি পড়ে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে ইসলাম নির্দেশিত পন্থা, কুরআন হাদীসে সে সকল বিষয়ে যে দিক নির্দেশনা আছে তা জানার মাধ্যমে উপকৃত হবে বলে মনে করছি ।

** বইটি পড়ে ভালো লাগলে আমার জন্য দুআ করতে ভুলবেননা যেন।

 

নুসরাত হত্যা মামলার রায় ২৪ অক্টোবর

নুসরাত হত্যা মামলার রায় ২৪ অক্টোবর


নারী সংবাদ


ফেনীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায় আগামী ২৪ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে।

আজ সোমবার রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের এ তারিখ ঘোষণা করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক মো: মামুনুর রশিদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহম্মদ। বাদীপক্ষের আইনজীবী আক্রামুজ্জামান ও এম. শাহজাহান সাজু আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক খন্ডন করে নিজেদের স্বপক্ষে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। তারা আদালতের কাছে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

এর আগে এগার কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুখ আহমেদ, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ নান্নু, আহসান কবির বেঙ্গল ও কামরুল হাসান।

গত ৬ এপ্রিল নুসরাত জাহান রাফিকে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গাঁয়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ওইদিনই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো: শাহ আলম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহআলম তদন্ত শেষে ২৯ মে আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন। এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পিবিআই অন্য ৫ জনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করলে আদালত তা অনুমোদন করেন।

২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাত রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ মামলার চার্জশিট জমা দেয়ার আগে সাতজন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এ মামলায় গ্রেফতারকৃত মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

সুত্রঃ নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয় – নয়া দিগন্ত।

 

ঘরের জন্য পর্দা নির্বাচন করি

ঘরের জন্য পর্দা নির্বাচন করি


ঘরকন্যা


ঘরের পর্দার ধরন, রঙ, ডিজাইন নির্বাচন করা ঘরের দেয়ালের রং, ঘরের সাইজের উপর নির্ভর করে।

পর্দা নির্বাচনে অবহেলার কারনে আপনার অনেক সুন্দর সাজানো ঘরটি তেমন সুন্দর নাও লাগতে পারে। তাই একটু সময় করে, বুদ্ধি খাটিয়ে মানানসই পর্দা নির্বাচন করা দরকার।

পর্দা নির্বাচনে যা খেয়াল রাখবো,

১. ধুতে সুবিধা হয় এমন পর্দা নির্বাচন করা।

২. বয়সভেদে পর্দার রং ভিন্ন হবে।

৩. বেশি কুচি থাকলে পর্দা দেখতে ভালো লাগে।

৪. হালকা রঙের দেয়ালে গাড় রঙের পর্দা বেশি মানায় আর গাড় রঙের দেয়ালের ক্ষেত্রে হালকা রঙের পর্দা মানানসই।

৫. ঘরে শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশ বজায় রাখতে হালকা রঙের পর্দা বাছাই করুন।

৬. হালকা পর্দা ছোট ঘরকে বড় দেখায়।

৭. লম্বা পর্দা এবং একটু খাটো পর্দা কেনার সময় ঘরের সাইজ মনে রাখবেন।

৮. ছোট ঘর হলে লম্বা লম্বি প্রিন্টের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন এতে ঘর বড় লাগবে।

৯. শীতকালের জন্য একটু মোটা কাপড়ের পর্দা নির্বাচন করুন।

১০. গ্রীষ্মকালের পর্দা সুতি হলে ভালো হয়।

১১. বসার ঘরের জন্য গাড় রঙের বাহারি ডিজাইনের পর্দা ব্যবহার করুন।

কিছু কৌশল অবলম্বন করলে আপনিও হতে পারেন পর্দা বাছাইয়ের ব্যাপারে পারদর্শী। আপনার একটু বুদ্ধিমত্তায় ‘সঠিক পর্দা নির্বাচন’ আপনার ঘরের সৌন্দর্য বহু গুন বাড়িয়ে তুলবে।

 

বরগুনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

বরগুনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড


নারী সংবাদ


যৌতুক দাবিতে বরগুনায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী সিদ্দিককে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা এবং শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর ও দেবরের বন্ধুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। রোববার বিকেল ৪টার দিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার পূর্ব রাণীপুর গ্রামের হাসেম গাজী, তার ছেলে বেবীর স্বামী সিদ্দিক, খোকন, সিদ্দিকের মা পারুল বেগম ও খোকনের বন্ধু লিটন। রায় ঘোষণার সময় পারুল বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী জেলার মীর্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর উরবুনিয়া গ্রামের আবদুল আজিজের মেয়ে সাজেদা বেগম বেবীকে ২০০২ সালের জুন মাসে সিদ্দিকের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের পর সিদ্দিক ঢাকায় চলে যায়। এই ফাঁকে সিদ্দিকের ভাই খোকন ও লিটন বেবীকে কুপ্রস্তাব দেয়। বেবী ক্ষিপ্ত হয়ে খোকনকে জুতাপেটা করে। এতে খোকন ও লিটন ক্ষুব্দ হয়।

খোকন ও লিটন সিদ্দিককে জানায় তার স্ত্রী খারাপ। কিছুদিন পর সিদ্দিকের জ্বর হলে সে বাড়িতে চলে আসে। ওই সময় বেবীর বাবা আবদুল আজিজ মেয়েকেসহ সিদ্দিকের বাড়িতে একটি সনি টিভি নিয়ে যান। সিদ্দিক তার শ্বশুরের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। আবদুল আজিজ যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে সিদ্দিক ও অন্য আসামিরা তাকে ও তার মেয়েকে নোংরা ভাষায় গালি দেয়। আবদুল আজিজ তার মেয়েকে সিদ্দিকের বাড়িতে রেখে চলে আসেন।

২০০২ সালের ২০ জুলাই রাত অনুমান তিনটার সময়ন সিদ্দিকের বসতঘরে বসে ওই আসামিরা যৌতুকের দাবি ও চরিত্রহীন বলে বেধড়ক মারধর করেন বেবীকে। ২১ জুলাই সকালে আবদুল আজিজ খবর পেয়ে সিদ্দিকের বাড়ি গিয়ে তার মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।

বাদী বলেন, আমার মেয়েকে সুস্থ অবস্থায় সিদ্দিকের বাড়িতে রেখে আসি। সকালে খবর পাই সে মারা গেছে। পরে জানতে পারলাম আসামিরা আমার মেয়ের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। আমি বেবীর সুরাতহাল ও ময়না তদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করে বেতাগী থানায় মামলা দায়ের করি। পুলিশ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১( ক) ও ৩০ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী কমল কান্তি দাস। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান।

(সুত্রঃ নয়াদিগন্ত)

 

হেঁচকি কেন উঠে

হেঁচকি কেন উঠে, থামাবেন কীভাবে?


স্বাস্থ্যকথা


খাবার খাওয়ার সময়, গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের মধ্যে অথবা অবসর কাটানোর সময় হঠাৎ হেঁচকির প্রকোপ শুরু হওয়াটা খুব সাধারণ একটি বিষয়। এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই যখন তখন মানুষের হেঁচকি শুরু হলে তা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিপাকতন্ত্রের গোলমালের কারণেই মানুষের হেঁচকি আসে।

মানুষের হেঁচকি আসে কেন?

বিজ্ঞানীরা শত শত বছর ধরে আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিহীন এই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যার সুনির্দিষ্ট কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন। হেঁচকির সময় শ্বাসনালীতে সামান্য খিঁচুনির মত হয় যার ফলে শ্বাসযন্ত্রে দ্রুত বাতাস প্রবেশ করে। তখন ভোকাল কর্ড হঠাৎ বন্ধ হয়ে ‘হিক’ শব্দ তৈরি হয়। ফুসফুসের নীচের পাতলা মাংসপেশীর স্তর, যেটিকে ডায়াফ্রাম বলে, হঠাৎ সংকোচনের ফলেই হেঁচকি তৈরি হয়।

হেঁচকি ওঠার একশো’র বেশি মেডিক্যাল কারণ থাকতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলো খুবই সামান্য কারণেই হয়ে থাকে।

ওষুধ নির্মাতা সংস্থা অ্যাকমে’র সিনিয়র ম্যানেজার ও চিকিৎসক আফরোজা আখতার বলেন, “হেঁচকির সবচেয়ে সাধারণ কারণ দ্রুত খাবার গ্রহণ করা।”

দ্রুত খাওয়ার কারণে খাবারের সাথে সাথে পেটের ভেতর বাতাস প্রবেশ করার কারণে ‘ভ্যাগাস’ নার্ভের কার্যকলাপ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে হেঁচকি তৈরি হয়। চেতনানাশক, উত্তেজনাবর্ধক, পার্কিনসন্স রোগ বা কেমোথেরাপির বিভিন্ন ধরণের ওষুধ নেয়ার ফলেও হেঁচকি তৈরি হতে পারে। এছাড়া কিছু অসুখের ক্ষেত্রেও মানুষের হেঁচকি হতে পারে।

মিজ. আখতার বলেন, “কিডনি ফেল করলে, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস বা মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রেও অনেকের হেঁচকি তৈরি হতে পারে।”

কিন্তু অধিকাংশ সময়ই হেঁচকি শুরু হওয়ার জন্য এসব কোনো কারণেরই দরকার হয় না।

হাসি বা কাশির মধ্যে, অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিদ্রুত খাবার গ্রহণ করা বা ঝাঁঝসহ পানীয় বেশি পরিমাণে খেলে হেঁচকি শুরু হতে পারে, তবে কোনো ধরণের কারণ ছাড়াও হেঁচকি আসাটা একেবারেই অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। হেঁচকি ওঠাটা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং সাধারণত মিনিটখানেকের মধ্যেই তা স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় হেঁচকির উদাহরণও কিন্তু রয়েছে।

যেমন সবচেয়ে বেশি সময় ধরে হেঁচকি ওঠার বিশ্ব রেকর্ডের উদাহরণ হিসেবে মনে করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের চার্লস অসবোর্নের ঘটনাকে। ১৯২২ সালে হেঁচকি তোলা শুরু করেন তিনি, কথিত আছে সেসময় তিনি একটি শূকর ওজন করার চেষ্টা করছিলেন। মি. অসবোর্ন হেঁচকি তোলা থামান ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে – মোট ৬৮ বছর পর।

হেঁচকি থামানোর উপায়

ঘরোয়াভাবে হেঁচকি থামানোর প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে মূলত দুইটি মূলনীতি অনুসরণ করা হয়। একটি হলো রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া যেন শ্বাসনালীতে খিঁচুনি বন্ধ হয়। আরেকটি হলো শ্বাসপ্রশ্বাস ও গলধকরণের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা ‘ভ্যাগাস’ স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করা। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী কয়েকটি পদ্ধতিতে হেঁচকি থামানো যায়।

১. কাগজের ব্যাগে নিশ্বাস ফেলা (ব্যাগ মাথা দিয়ে ঢুকাবেন না)

২. দুই হাঁটু বুক পর্যন্ত টেনে ধরে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়া

৩. বরফ ঠাণ্ডা পানি খাওয়া

৪. কিছু দানাদার চিনি খাওয়া

৫. লেবুতে কামড় দেয়া বা একটু ভিনেগারের স্বাদ নেয়া

৬. স্বল্প সময়ের জন্য দম বন্ধ করে রাখা

কখন চিকিৎসার পরামর্শ নিতে হবে

হেঁচকি সাধারণত আপনা থেকেই ভাল হয়ে যায়, তবে যদি অতি দীর্ঘসময় ধরে হেঁচকি উঠতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।

মিজ. আখতার বলেন, “হেঁচকি নিরাময়ে ঘরোয়া চিকিৎসা যদি কাজ না করে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।”

হেঁচকির তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন মিজ. আখতার। এছাড়া নিয়মিত হেঁচকিতে দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রম ব্যহত হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার উপদেশ দেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র : বিবিসি।

 

কালো মেয়ের কিছু কথা

কালো মেয়ের কিছু কথা


আঞ্জুমান আরা


ছোটবেলার কথা। গায়ের রঙ কালো ছিল বলে অনেকেই অনেক কিছু বলত যেমন, তোর বাপের অনেক যৌতুক দিতে হবে । তুই সেজে কি করবি। তুইতো কালো।
মনের মধ্যে একটা চাপা কষ্ট নিয়ে দিন কাটত। নিজেকে খুব ছোট ও মূল্যহীন মন হত। সেজন্য সাজতে লজ্জা হত। লুকিয়ে লুকিয়ে কেঁদেছি অনেক।

বলে রাখি আমি ছোটবেলাটা বেশী কাটিয়েছি গ্রামে। মাাথার মধ্যে শুধু বিয়ে যৌতূক এসব ঢুকোনো হয়েছিল। শুধু আব্বা বলতেন ভালো করে পড়াশুনা করো।
বাঙ্গালী মেয়ে হিসেবে আরো কিছু নেগেটিভ কথা শুনতে শুনতে বড় হয়েছি। যেমন; মেয়ে মানুষের বুদ্ধি কম। মেয়েদের কথা বাদ দাও। মেয়েদের চাকরি করার দরকার নাই। মেয়েলি কান্না থামাও। মেয়েলি স্বভাব বদলাও। মেয়েটি কালো আরেকটি দেখ। মেয়েটি মাল ইত্যাদি।
এসমস্ত কথা কিন্তু শিক্ষিত ব্যক্তিদের মুখেও শুনেছি। যাদেরকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি ও জানি।
ছোটবেলায় আমি মানুষের ওসব নেগেটিভ কথা বিশ্বাস করতাম আবার আব্বার কথাও শুনতাম। এজন্য মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনার ফাঁকেফাঁকে গায়ে হলুদ মাখতাম। তখন বাজারে কাঁচা হলুদ পাওয়া যেত।
কাঁচা হলুদে গায়ের বর্নের কোন উন্নতি না হলেও পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল হওয়া শুরু করল।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করার পর দেখলাম আমার স্কুল, কলেজ, আনার্স, মাস্টার্স সহ চারটা ফাস্ট ক্লাস হয়ে গেছে।। তারমধ্যে একটাতে আবার ফার্সক্লাস ফার্স্ট। নিজের বায়োডাটায় নিজেই মুগ্ধ।
চারদিক থেকে চাকরির অফার আসা শুরু করল। দরখাস্ত করা ছাড়াই। কোনটা ছেড়ে কোনটা ধরি আবস্থা। বিসিএস টাও পাশ করে ফেললাম।

বিয়ে? সেটা থেকে বাঁচতে মিথ্যা কথা বলতে হয়েছে আমাকে। বলেছি এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে। আসলে হয়নি। কারন বিয়ের বাজারেও আমার কদর বেড়ে গিয়েছিল।
একসময় যারা আমার গায়ের বর্ন নিয়ে কানাঘুষা করত তাদের সুরও বদলে যেতে থাকল। আমিও আমার জীবন উপভোগ করতে শুরু করলাম। সুদর্শন মেধাবী আর্মি অফিসার স্বামী সন্তানসহ আমার চাকরি জীবন।

আসলে মেয়েদের গায়ের বর্ণই কি সব? আমার কাছে জীবনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, প্রবল ইচ্ছাশক্তি সেইলক্ষে কঠোর পরিশ্রম আর সাথে প্রচন্ড আত্ববিশ্বাসই নারীর আসল বর্ণ। যা নারীর মর্যাদা বাড়ায়। এই শক্তি যৌতুক কেউ হার মানায়। নারীর নির্যাতন কমায়। মাথা উঁচু করে বাঁচতে শেখায়। নিন্দুকের মাথানত করতে শেখায়।
এখন দেখছি ফর্সা মেয়েদের অনেকেই ঘরের চৌকাঠ পেরুতে পারেনি আর আমি পৃথিবীর আনাচে কানাচে চষে বেড়াই। আর সেই সুন্দরীরা অনেকেই আবার শশুড় শাশুড়ি ও স্বামী দ্বারাও নির্যাতিত হতে শুনি। যা সত্যি কষ্টকর।
এখন মনে হয় নারীর প্রতি এসব নেগেটিভ ধারণা আসলে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পুরুষরা বেশি করে কারন সে যা দেখে এসেছে তার পিতামাতার কাছ থেকে তাই তার জীবনে প্রয়োগ করে। এরা নারী জাতিকে সন্মান করতে শেখে নি, শিখেছে কিভাবে প্রভু হতে হয়।
সে ভুলে যায় সে কোন মায়ের গর্ভে জন্ম গ্রহন করেছিল। সে নির্যাতক খাতায় নাম লেখায় নিজের অজান্তেই। সমাজ যদি পুরুষ শাসিত না হয়ে নারী শাসিত হত তাহলে কিন্তু নারীরাও একি খাতায় নাম লিখাতো। নারী হত তখন নির্যাতক।
কিন্তু আমাদের সমাজে এখনো অনেক নারী নিকৃষ্ট জীবনযাপন করে। শুধুমাত্র ভক্তি ও দায়বদ্ধতার কারনে। বিনিময়ে সে কিছুই পায় না। তারপরেও সে মাটি আঁকড়ে পরে থাকে। কারণ তার তো যাওয়ার কোন জায়গা নেই। কারন সে পরনির্ভরশীল। সেইসাথে যোগ হয় মানসিক নির্যাতন।
নারীর মুক্তি তখনই যখন সে আত্বনির্ভরশীল হবে। নিজের আত্ববিশ্বাস বাড়িয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে পারবে। নিজের অধিকারর আদায় করতে পারবে। দেশ তার লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে সঠিক আইন প্রয়োগ করবে। আর যতদিন তা না হয় ততদিন নারী প্রভুভক্ত হয়ে থাকবে পুরুষের কাছে।
আপনি যদি বাবা মা হন তাহলে আপনার সন্তানকে কি শিক্ষা দিচ্ছেন তা ভেবে দেখুন।
আপনার দেয়া সঠিক শিক্ষার উপরই নির্ভর করবে আপনার সন্তান কি ধরণের ধারণা ও আচরণ করবে অন্যের প্রতি। তাকে ছেলেমানুষ মেয়েমানুষ নাকি মানুষ বানাবেন, তার দায়িত্ব কিন্তু আপনার আমার সকলের।
সকলের মঙ্গল কামনায়

আঞ্জু, লন্ডন।

 

কানাডায় হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হলেন বাংলাদেশী ফাতিমা

কানাডায় হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হলেন বাংলাদেশী ফাতিমা


আন্তর্জাতিক নারী


ফাতিমা কানাডার সংসদের বিরুদ্ধে প্রায় একাই লড়ে বিজয়ী হওয়া ঈমানোদ্দীপ্ত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক কিশোরীর নাম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন একে একে হিজাব ও নিকাব নিষিদ্ধ হচ্ছিল, তারই ধারাবাহিকতায় কানাডাতেও কয়েকমাস আগে প্রকাশ্যে নিকাব নিষিদ্ধ করে একটা আইন পাস হয়। যার নাম বিল-৬২।

এর আইন অনুযায়ী কানাডায় প্রকাশ্যে কেউ নিকাব পড়তে পারবে না। ইউরোপবার্তা ফাতিমার জন্ম ও বেড়ে উঠা কানাডাতে হলেও অন্য আর দশটা মেয়ের মতো সে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতিকে বরণ করে নেয় নি। বরং সে ইসলামী অনুশাসনকে আরও গভীরভাবে বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে থাকে।

নিকাব পরেই সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করা সহ কানাডিয়ান মানুষের মাঝে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছাতে থাকে। তার স্বপ্ন, সে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে স্কুলে শিক্ষকতা করবে, ছোট ছেলে-মেয়েদের দ্বীনের শিক্ষায় শিক্ষিত করবে। কিন্তু তার স্বপ্নের পৃথিবীতে কালো মেঘ হিসেবে আবির্ভূত হয় নিকাব নিষিদ্ধ করা সেই কালো আইন, বিল-৬২।

এই বিল পাসের পর কানাডার বিপুল সংখ্যক হিজাবি নারী যখন অন্ধকার দেখছিল, তখনই আলোর ঝাণ্ডা হাতে লড়াইয়ে নেমে পরে কিশোরী ফাতিমা। সে তার এক শুভাকাঙ্ক্ষীকে সাথে নিয়ে কানাডার আদালতে রিট করে। আইনি লড়াইয়ের সাথে চলতে থাকে বিল-৬২ এর বিপক্ষে জনমত গঠন।

লক্ষ্য পূরণের জন্য ফাতিমা তার কয়েকজন মুসলিম বান্ধবীকে নিয়ে প্রতিকূল পরিবেশে অনেক বাঁধা ও উসকানি সহ্য করেও নিকাব পরেই তার সব কার্যক্রম চালাতে থাকে। কানাডার প্রথম সারির টিভি চ্যানেলগুলিতে সাক্ষাৎকার দিয়ে জনমত গঠনে বড় ভূমিকা পালন করে। তার হিজাবি জীবন নিয়ে একটা ডকুমেন্টারিও প্রচার হয় একটা চ্যানেলে।

দীর্ঘ এক অসম লড়াই শেষে গতকাল সেই ঐতিহাসিক দিনটির সূর্য যেন নতুন আলোর বারতা নিয়ে উদিত হয়েছে। কানাডার আদালত নিকাব নিষিদ্ধ করা সেই কালো আইন বিল-৬২ বাতিল করে দিয়েছে। ফাতিমা আজ বিজয়ী হয়েছে।

এই বিজয় শুধু তার নয়, এই বিজয় পুরা মুসলিম উম্মাহর, এই বিজয়ের গর্ব ১২ হাজার কিলোমিটার দূরের একজন মুসলিম হিসেবে আমাদেরও স্পর্শ করেছে। ফাতিমার এই সংগ্রাম আমাদের শিক্ষা দেয় শত প্রতিকূলতার মাঝেও অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার। তার বিজয় তো আমাদের সেই বাণীর কথাই মনে করিয়ে দেয়- “তোমরা হতাশ হয়ো না, মনমরা হয়ো না। তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হও।

সুত্রঃ ডেইলি মনিং

 

ভাগ্য মানুষকে কোথায় না নিয়ে যায়!

ভাগ্য মানুষকে কোথায় না নিয়ে যায়!


ডা. তামান্না কবীর


ভাগ্য মানুষকে কোথায় না নিয়ে যেতে পারে।গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি এক মহিলার স্বামী বেশকিছুদিন হলেই ঘুরছে

“ম্যাডাম আমার ঔষুধ কেনার টাকা নাই,আপনি যদি একটু হাসপাতাল থেকে সব ঔষুধের ব্যবস্থা করে দিতেন”

এমন কথা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি বেশিরভাগ রোগীই বলে,তবুও সিস্টারদের বলা হলো যেনো সাপ্লাই ঔষুধগুলো উনাকে দেয়া হয়।

আজ evening ডিউটিতে আমি যখন ডিউটি Doctor রুমে বসে আছি লোকটা এসে অবলীলায় ইংরেজীতে কথা বলে যাচ্ছে অথচ তার Appearance,, dress up কোনকিছুই তার এই আচরনের সাথে বিন্দু মাত্র ও মিলছে না,,,কৌতুহলের সীমা ছাড়িয়ে গেলে জিজ্ঞেস করলাম আপনি মনে হচ্ছে অনেকদূর লেখাপড়া করেছেন?

তার উত্তর, সে ঢাকা ভার্সিটি থেকে ইংরেজীতে মাস্টার্স করেছে,স্কলার্শীপ নিয়ে কলকাতা ইউনিভার্সিটিতেও যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো তার…।একটা job করত,কোন একটা কারনে job টা তার থাকেনা,,পরে অন্য job গুলোতে ঘুষ না দিলে হচ্ছিলো না তাই সে এখন অটো ড্রাইভার. job এরও আর বয়স নাই….বৌয়ের অসুস্থতায় অটো চালানো বন্ধ তাই ইনকাম ও নাই…

সে যে DU এর English এ মাস্টার্স করা, এখন সেটা বলতেও লজ্জা পায়…এই সবগুলো কথা সে ইংরেজীতে fluently বলে গেলো…

এমন অনেক ঘটনা গল্পে পড়েছি,কখনও কারও মুখে শুনেছি কিন্তু নিজের চোখে এই প্রথম দেখলাম…
এদেশে প্রকৃত শিক্ষার মূল্য কোথায়…!!

 

বড়লেখায় কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে, পরে হত্যা

বড়লেখায় কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে, পরে হত্যা


নারী সংবাদ


বড়লেখায় এক কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে এক বখাটে। বিয়ের সাড়ে পাঁচ মাস পর ওই ছাত্রীকে হত্যা করে তা আত্মহত্যা বলে চালায় তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ব্যাপারে কলেজছাত্রীর বাবা আদালতে মেয়ের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। মামলার প্রতিবেদন ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, কলেজছাত্রী মাধবী রানী বিশ্বাসকে (১৮) কলেজে যাওয়া-আসার পথে এক যুবক উত্ত্যক্ত করত। ৭ মার্চ কলেজের সরস্বতী পূজা শেষে বাড়ি ফেরার সময় মাধবীকে জুড়ী উপজেলার সায়পুর গ্রামের করুণা বিশ্বাসের ছেলে অরকুমার বিশ্বাস নামের ওই যুবক জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তুলে নেয়ার ২৬ দিন পর অরকুমার বিশ্বাস কলেজছাত্রী মাধবীকে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করে। কিন্তু তার বাবা-মা এ বিয়ে মেনে না নেয়ায় বাড়িতে তুলছিল না মাধবীকে। পরে দুই পরিবারের মধ্যস্থতায় সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।

মাধবীর বাবা অকিল বিশ্বাস অভিযোগ করেন, সামাজিকভাবে বিয়ের পর মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়। বিয়ের সাড়ে ৫ মাসের মধ্যে একটিবারের জন্যও মাধবীকে তার বাবার বাড়িতে যেতে দেয়া হয়নি। ১৮ আগস্ট রাতে স্বামী অরকুমারসহ তার পরিবারের সদস্যরা মাধবীকে মারধর করে। একপর্যায়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর তারা আত্মহত্যার নাটক সাজায়। মাধবী আত্মহত্যা করেছে বলে এলাকায় প্রচারণা চালালেও বাবার বাড়িতে কোনো খবর দেয়া হয়নি। প্রতিবেশী মারফত খবর পেয়ে পরদিন সকালে মাধবীর বাবা ও মা জুড়ী থানায় গেলে পুলিশ তাদেরকে মেয়ের লাশ দেখতে না দিয়েই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেয়। মেয়ের গলায় দায়ের কোপ ও দেহে আঘাতের চিহ্ন থাকার বিষয়টি জেনে অভিযোগ দিতে চাইলে পুলিশ উল্টো হুমকি-ধামকি দেয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিয়ে আসার পরও স্বামীর বাড়ির লোকজন তাদেরকে লাশ দেখতে দেয়নি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মাধবীর পরিবারকে না জানিয়ে লাশ দাহ করে। অবশেষে ২৫ আগস্ট মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫নং আমলি আদালতে স্বামী অরকুমার বিশ্বাসকে প্রধান করে শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ-দেবরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মাধবীর বাবা।

জুড়ী থানার ওসি মো. জাহাঙ্গির হোসেন সরদার জানান, আদালতের নির্দেশে মাধবী রানীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার প্রতিবেদন ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সুত্রঃ যুগান্তর।

 

ফরিদপুর অজ্ঞাত যুবতীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার


নারী সংবাদ


ফরিদপুরের এক যুবতীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের তালতলা বাজার এলাকায় গোয়ালন্দ-তারাইল আঞ্চলিক বেড়িবাধ সড়কের পাশে থেকে পরিচয় না জানা লাশটি উদ্ধার করা হয়।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মো: এনায়েত হোসেন জানান, সকালে অম্বিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বারী চৌধুরীর কাছ থেকে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

যুবতিটির বয়স আনুমানিক ২৬ বছরের মতো বলে তিনি জানান।

এনায়েত হোসেন জানান, লাশের মাথায় জখমের চিহ্ন এবং গায়ে থাকা ওড়নায় প্রচুর রক্তের দাগ রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আবার কোনো সড়ক দুর্ঘটনায়ও তার মৃত্যু হতে পারে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে হত্যার কারণ জানা যাবে।

 

গরমে লাচ্ছি বানিয়ে ফেলুন বাসায়


রেসিপি


গরমের তৃষ্ণা মেটাতে মানেই লাচ্ছি। কম বেশী আমরা সবাই খুব পছন্দ করে থাকি।আর তাই আজ কয়েক প্রকারের লাচ্ছি তৈরি করে দেখাবো।

মিষ্টি লাচ্ছিঃ

উপকরণ :
মিষ্টি দই – ১ কাপ
বরফ কুচি – ১ কাপ
চিনি – রুচি মতন
গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
পানি – সামান্য

মিষ্টি দই লাচ্ছি তৈরি করুন খুব সহজে

প্রণালী :
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে পানি সহ ১ মিনিটের মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

কলার লাচ্ছিঃ

মিষ্টি দই – ১ কাপ
বরফ কুচি – ১ কাপ
কলা – ২ টা
চিনি – রুচি মতন
গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
পানি – সামান্য

প্রণালী :
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে পানি সহ ১ মিনিটের মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

টক মিষ্টি লাচ্ছিঃ

টক দই – ১ কাপ
মিষ্টি দই – ১ কাপ
বরফ কুচি – ১ কাপ
চিনি – রুচি মতন
গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
পানি – সামান্য

প্রণালী :
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে পানি সহ ১ মিনিটের মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

ম্যাংগো লাচ্ছিঃ

  • মিষ্টি দই – ১ কাপ
  • ম্যাঙ্গো স্লাইস- ১ কাপ
  • বরফ কুচি – ১ কাপ
  • চিনি – রুচি মতন
  • গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
  • পানি – সামান্য
প্রনালীঃ
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে দুই গ্লাসের মতন পানি দিয়ে কয়েক বার ভাল মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

লেবুর লাচ্ছিঃ

  • মিষ্টি দই – ১ কাপ
  • লেবুর রস – ১ কাপ
  • বরফ কুচি – ১ কাপ
  • চিনি – রুচি মতন
  • গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
  • পানি – সামান্য
প্রনালীঃ
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে দুই গ্লাসের মতন পানি দিয়ে কয়েক বার ভাল মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।

বাদামের লাচ্ছিঃ

  • মিষ্টি দই – ১ কাপ
  • বরফ কুচি – ১ কাপ
  • চিনি – রুচি মতন
  • গুড়ো দুধ – ১/২ কাপ
  • পানি – সামান্য
  • বাদাম কুচি কয়েক প্রকার-  (এক কাপ)
প্রনালীঃ
ব্লেন্ডারে সব উপকরণ একসাথে দিয়ে দুই গ্লাসের মতন পানি দিয়ে কয়েক বার ভাল মতন ব্লেন্ড করে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করুন গ্লাসে ঢেলে।
সুত্রঃ https://nahidarecipe.com।

 

আত্মহত্যা ঠেকাতে কীটনাশক নিষিদ্ধ


স্বাস্থ্যকথা


প্রতি বছর আনুমানিক দেড় লাখের মতো মানুষ আত্মহত্যা করে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক পান করে। জাতিসঙ্ঘ এইসব পণ্যের সহজে পাওয়ার ব্যবস্থা কমাতে কঠোর নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছে।

প্রায় দুই দশক ধরে শ্রীলঙ্কা ধীরে ধীরে বেশকিছু কীটনাশক নিষিদ্ধ করেছে এবং দেখা গেছে আত্মহত্যায় মৃত্যুর পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে সেখানে। তবে অন্যান্য দেশে আত্মহত্যায় ব্যবহার করা হয় এমন বেশিরভাগ বিষাক্ত কীটনাশক এখনো সহজলভ্য।

১৯৯০ এর সময় থেকে সারা বিশ্বে কীটনাশক পানে আত্মহত্যার সংখ্যা কমে প্রায় অর্ধেকে নেমে এলেও এশিয়ার দারিদ্রপীড়িত গ্রামাঞ্চলে এখনও এটি মৃত্যুর অন্যতম কারণ।

১৯৮০ এবং ৯০-এর দশকে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বেশি আত্মহত্যার হার ছিল শ্রীলঙ্কায়। আর তার মধ্যে কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশই ছিল কীটনাশক পান করে।

তবে, এসব পণ্য নিষিদ্ধকরণে দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেশটির সরকারের নেয়া পদক্ষেপের ফলে সামগ্রিক আত্মহত্যার হার হ্রাস পেয়েছে ৭০%।

কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করা মানুষের সংখ্যা এখনো কমেনি, বরং হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে। এতে প্রমাণ হয় যে, আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষের সংখ্যা কমেনি, তবে সেসব কীটনাশক কম বিষাক্ত ছিল।

কৃষিক্ষেত্রের জন্যে কীটনাশকের প্রতিস্থাপনে এসেছে কম বিষাক্ত কীটনাশক।

অত্যন্ত বিপদজনক কীটনাশকের নিরাপদ বিকল্পের ব্যবহারে কৃষির ফলন কম হয়েছে এমন প্রমাণ বেশি পাওয়া যায়নি, বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)।

এই সময়ে অবশ্য স্বাস্থ্য সেবার মানও উন্নত হয়েছে।

ভারতের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে আত্মহত্যা করে মারা গেছেন ১,৩৪,০০০ জন মানুষ। যার মধ্যে কীটনাশকের কারণে মারা গেছেন ২৪ হাজার। যদিও এই মৃত্যুগুলো দেশটিতে সেভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

ভারতের চন্ডীগড় মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিচার্স ইন্সটিটিউটের ডা. আশীষ ভাল্লা বলছেন, সাধারণ মানুষ প্রায়শই আত্মহত্যার বিষয়টিকে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলে পুলিশের কাছে রিপোর্ট করার ভয়ে লুকিয়ে রাখে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক একদল বিশ্লেষক দেখেছেনে যে, ভারতে নিবন্ধিত কীটনাশকের মধ্যে কমপক্ষে দশটি অত্যন্ত বিষাক্ত। আর সেগুলোই অধিকাংশক্ষেত্রে আত্মহত্যায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসবের অনেকগুলোই ভারত সরকার নিষিদ্ধ করছে বা ২০২০ সালের মধ্যে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার নির্দেশিকা অনুযায়ী এখনো এক ডজনেরও বেশি অত্যন্ত বিপজ্জনক কীটনাশক সহজলভ্য রয়ে গেছে।

এশিয়ার অন্য অঞ্চলগুলোর কী অবস্থা?
২০০০ সালের পর থেকে একই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বাংলাদেশেও। এর ফলে হ্রাস পেতে শুরু করেছে আত্মহত্যায় মৃত্যুর হার। তবে কীটনাশক-বিষক্রিয়ায় হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, ২০১৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০১২ সালে একধরনের অত্যন্ত বিষাক্ত আগাছানাশক নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে কীটনাশক-বিষক্রিয়াজনিত আত্মহত্যার সংখ্যা হ্রাস পায় তাৎক্ষণিকভাবেই। আর সামগ্রিক মৃত্যুহার হ্রাসেও এটি প্রভাব ফেলে।

২০০৬ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত চীনে চালানো এক সমীক্ষায় দেখা যায়, সেখানে আত্মহত্যার সংখ্যা কমেছে এবং কীটনাশক পানে মৃত্যুর হার অত্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।

এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়- এ বিষয়ে দেশটিতে কঠোর বিধি নিষেধ প্রয়োগ, কৃষিতে কমসংখ্যক মানুষের সংশ্লিষ্টতা, নগরায়ন বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন এবং বিশেষ করে জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন।

২০০১ সাল থেকে পাঁচ বছরে ২১টি কীটনাশককে নিষিদ্ধ করেছে চীন।

দেশটির কীটনাশক ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের প্রধান ডা. দিল্লী শর্মা বলেন, এর মধ্যে কয়েকটি স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

তবে কয়েকটি বর্জন করা হয় বিশেষ করে আত্মহত্যায় ব্যবহারের কারণে।

– বিবিসি

 

স্ত্রীর স্বীকৃতি না দেয়ায় ‘স্বামী’র বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

স্ত্রীর স্বীকৃতি না দেয়ায় ‘স্বামী’র বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা


নারী সংবাদ


জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী একেএম নজমুল হাসানের নামে আদালতে ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কাহালু উপজেলার পাল্লাপাড়া গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা এক মহিলা বাদী হয়ে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলাটি দায়ের করেন ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সদরের সুত্রাপুর এলাকার রিয়াজকাজী লেনের মৃত নজিব উদ্দিন আহম্মেদের পুত্র জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী এ কে এম নজমুল হাসান (৬০) ওরফে জামান ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কাহালু উপজেলার পাল্লাপাড়া গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা দুই সন্তানের জননীর পরিচয় হয়। সেই সুবাদে প্রেম থেকে ২ নভেম্বর ২০১১ নজমুল হাসানের ভাড়া বাড়ি বগুড়া সদরের কালিতলায় জনৈক কাজীর মাধ্যমে ইজাব কবুলে বিবাহ হয়।

তারপর থেকে নজমুল হাসান ও সেই নারী স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে ঘর সংসার করে। সংসারকালীন সময়ে প্রায়ই ওই মহিলা নজমুল হাসানকে রেজিস্ট্রি কাবিননামা করতে চাপ প্রয়োগ করতো। কিন্তু নজমুল হাসান বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কৌশলে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে।

গত ফেব্রয়ারি মাসের ১২ তারিখে শাজাহানপুর উপজেলার লতিফপুর মধ্যপাড়ার মোজাম্মেল হকের স্ত্রী রাবেয়া সুলতানা রানীর বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাসকালে লিপি রেজিস্ট্রি কাবিননামা করার জন্য নজমুল হাসানকে ফের চাপ প্রয়োগ করে। এতে নজমুল হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নারীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে রাতে একাধিকবার দৈহিক মেলামেশা করে। ঘটনাস্থল থেকে চলে যাবার পর নজমুল হাসান ওই মহিলার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

মহিলা ভরণ পোষণ না পেয়ে নিরুপায় হয়ে আগস্ট মাসের ২ তারিখে নজমুল হাসানের বাড়িতে গিয়ে তার সাথে দেখা করে। তখন নজমুল হাসান সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে লিপিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেয়। উপায়ান্তর না পেয়ে বিচার ও স্ত্রীর মর্যাদার দাবি নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে গেলে মামলা না নেওয়ায় তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বগুড়াকে তদন্তের আদেশ দেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নজমুল হাসানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি ওই স্বামী পরিত্যাক্তা মহিলার সাথে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে বলেন, ব্ল্যাক মেইলের চেষ্টা করে মহিলাটি মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছে।

তবে বাদী বলেছেন, আমি ইমামের মাধ্যমে বিয়ের পর দীর্ঘদিন এক সাথে ঘর সংসার করেছি। এ সময়ে উনি (স্বামী) সংসারের আসবাপত্রসহ সবকিছু কিনে দিয়েছেন এবং পুরো খরচ দিয়েছেন। কিন্তু কাবিনের জন্য চাপ দেয়ার কারণে তিনি আর খরচ দেন না। স্বামী ও স্ত্রী হিসেবে ঘরসংসারের অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে যা আইনজীবীকে দিয়েছি।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

অতিমাত্রায় ভালোবাসেন?

অতিমাত্রায় ভালোবাসেন?


ডা. মারুফ রায়হান খান


গতকালের অভিজ্ঞতাটা বলতে চাই৷

অতিরিক্ত ভালোবাসা জিনিসটা বোধহয় কখনও কখনও খারাপ ফল নিয়ে আসে। শুধু খারাপ না, বেশ খারাপ। গতকালের অভিজ্ঞতা বলি।

মধ্যবয়স্ক রোগী। প্রচণ্ডমাত্রার বুকে ব্যথা। বুক ধড়ফড়। ঘাম। পেশেন্ট শকে। অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করা যাচ্ছে সম্ভবত রোগীর হার্ট এটাক হয়েছে। ইসিজিতে চলে এলো ভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া। মনিটরে দেখাচ্ছে হার্ট রেইট ২৪৩ বিটস পার মিনিট! এটা এমনই এক খারাপ অবস্থা যে কার্ডিওলজিতে কাজ করে এমন কোনো চিকিৎসক আমি দেখিনি যিনি বিশেষভাবে এলার্ট না হয়ে যান এমন রোগী এলে। ব্রেইনের মাঝে অটোমেটিক্যালি ‘স্পেশাল ইমার্জেন্সি এটেনশান’-এর সাইরেন বেজে ওঠে। পেশেন্টের যা অবস্থা তা হৃদরোগ শাস্ত্র অনুযায়ী ডিসি শক দিয়ে তার হার্টের রিদম স্বাভাবিক আনার চেষ্টা করতে হবে অনতিবিলম্বে। ডিসি শক দেওয়ার আগে আমরা পেশেন্ট পার্টিকে বিস্তারিত বুঝিয়ে বলি। পরে আবার অভিযোগ না যায় ডাক্তার শক দিয়ে আমার ভালো রোগী মেরে ফেলেছে। কে-ই বা চায় অনলাইন পত্রিকার “এ কী করলেন লোভী ডাক্তার : কারেন্টের শক দিয়ে কথা বলতে থাকা রোগীকে খুন (দেখুন ভিডিওসহ)” শিরোনাম হতে?

বুঝিয়ে বলা হলো বিস্তারিত। শক না দিলে মৃত্যুর সম্ভাবনা যে প্রবল তাও জানালাম। রোগীর স্ত্রী অসম্মতি জানালেন এবং যুক্তি হিসেবে যা দাঁড় করালেন তা আমাকে রীতিমতো বিস্মিত করেছে। বললেন উনি ‘নরম’, শক দেবেন না৷ পেশেন্ট পার্টি পারমিশান না চাইলে আমরা শক দিই না। ভাবলাম ওষুধ দিয়ে চেষ্টা করে দেখা যাক। প্রোটোকোল ম্যানেজমেন্টের সব ওষুধ দেওয়া হলো। এমিওডারোন (এ রোগের প্রধান ওষুধ) নামক ওষুধটি সাপ্লাই নেই। লিখে দিলাম বাইরে ফার্মেসি থেকে ৮ এম্পুল নিয়ে আসতে। রোগীর সাথের লোক গেলেন। এই যে গেলেন তার আর দেখা মেলে না৷ আমি আরও আড়াইশো রোগীর ব্যস্ততার মাঝেও চিন্তিতবদনে রোগীর কাছে যাই। সেই ওষুধ তো আর আসে না। রোগীর স্ত্রী বসে বসে পান খায়। মেজাজ চরমে উঠে গেলো। কিছু বললে বলবে রোগীর সাথে দুর্ব্যবহার করলেন ডাক্তার। ঘণ্টা যায় দুঘণ্টা যায় তিন ঘণ্টা যায়… সে তো আসে না। রোগীর অবস্থা খারাপ থেকে খারাপ হতে থাকে। এরমধ্যে একবার এসে বলে রোগীর এখানে অস্থির লাগছে, বাসায় চলে যেতে চায়, ছুটি দিতে! আক্কেল দেখলে! দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর তারা ওষুধ নিয়ে এসেছেন। ততোক্ষণে রোগী মৃতপ্রায়। শুরু করা হলো ওষুধ। কী ভাবছেন? বেঁচে গেলো? নাহ ডাক্তাররা ম্যাজিশিয়ান না। এই রোগী বাঁচানো যায় না। কোনো চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব না। মনিটরে প্রায় যখন স্ট্রেইট লাইন চলে এসেছে তখন রোগীর ওয়াইফ বলে আপনারা রোগী বাঁচাতে যেভাবে ভালো হয় করেন শক দিতে চাইলে দিন!! এই কথাটা সাড়ে ৪ ঘণ্টা আগে যদি বলতেন তিনি!

এই মৃত্যুর দায়টা আসলে কার? এই রোগের চিকিৎসা আমি জানি, আমার কাছে মেশিন ছিল আমি কেন দিতে পারলাম না? আমার চোখের সামনে কেন রোগী মারা গেলো? আপনি আপনার স্বজনকে অতিমাত্রায় ভালোবাসেন মানলাম, আমিও আমার রোগীকে কম ভালোবাসি না। জানপ্রাণ এক করে আমার রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। মাঝেমধ্যে আপনার ‘আলগা আজাইরা দরদ’-এর জন্য পারি না। লোকটা শুধু তড়পাচ্ছিল–এই স্মৃতি আমাকে দংশন করে। এটা তো শুধু একটা রোগীর কথা… গতকাল ডিউটিতে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ ছিল না এমন অবস্থা ছিল। তবুও এক রোগীর লোক প্রায় তেড়ে এসেছিল তার সিরিয়াস রোগীর জন্যে আরেক রুমে অন্য ডাক্তারকে ডাকতে বলায়। আমি আর ইন্টার্ন–কয়জনকে একসাথে দেখা সম্ভব? …রাত সাড়ে এগারোটায় যখন ফিরলাম তীব্র মাথাব্যথা, ঘুমের ওষুধ খেয়েই আমাকে ঘুমাতে হয়েছে। আমি বিনা বেতনে কাজ করি।

#পোস্টগ্রেজুয়েশানের_দিনগুলো -১০

 

প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী ধর্ষণ

প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী ধর্ষণ


নারী সংবাদ


বগুড়ার শেরপুরে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের রণবীরবালা গ্রামে। উক্ত ঘটনায় রোববার দুপুরে ওই কিশোরীর বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক ফটিক মিয়া ওরফে ফছিকে (৪৫) গ্রেফতার করে। সে ওই গ্রামের এমদাদ হোসেনের ছেলে।

শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) বুলবুল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত ফটিক মিয়া স্থানীয় রণবীরবালা বাজারে নৈশপ্রহরীর চাকরি করতেন। এক পর্যায়ে ওই কিশোরীর বাবার সঙ্গে পরিচয় ঘটে। এরই সূত্রধরে ঐ বাড়িতেও যাতায়াত ছিল ফটিকের। নিয়মিত আসা-যাওয়ার সুযোগে ওই কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে সে। এমনকি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফটিক ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানার পর ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

এরপর পুলিশ রণবীরবালা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ঘরে বানাতে পারি

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ঘরে বানাতে পারি


ঘরকন্যা


রেস্টুরেন্টে গিয়ে কিংবা ফাস্টফুডের দোকান মানেই বাচ্চাদের পছন্দ ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বেশ মজার একটি খাবার। ঘরেই তৈরি করতে পারেন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। রেসিপি হলো

উপকরণঃ
১. আধা কেজি মাঝারি সাইজের আলু,
২. হলুদ,
৩. সামান্য লবণ,
৪. ২৫০ গ্রাম তেল।

প্রণালিঃ
ভালো মানের বড় আকারের আলু, খোসা ছাড়ানো আলুকে আংগুলের সাইজে ফালি ফালি করে কেটে নেই। এরপর ফালি করা আলুগুলো ঠান্ডা পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। ১০-১৫ মিনিট পর আলুর ফালিগুলো লবণ পানি থেকে ছেঁকে নিতে হবে। ভালোভাবে আলুর ফালি থেকে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। পানি ঝরানো হলে আলুর ফালিগুলোকে সামান্য লবণ ও হলুদ দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিতে হবে। এরপর কড়াই বা ফ্রাই প্যানে ডুবো তেল দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিতে হবে। তেল গরম হলে অল্প অল্প করে মাখানো আলুর ফালিগুলো তেলে দিয়ে আস্তে আস্তে ভাজতে হবে।

পরিবেশনঃ
লালচে আর মুচমুচে হয়ে এলে ছাঁকনি ছেঁকে তেল থেকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই তুলে নিতে হবে। এভাবে খুব সহজে অল্প সময়ে তৈরি হয়ে যাবে মজার ফ্রেঞ্চ ফ্রাই।

 

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……৩

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……৩


আফরোজা হাসান


হ্যা বাবা আল্লাহ সত্যি এমন বলেছেন।
আল্লাহ আর কি কি বলেছেন আম্মু?
আল্লাহ বলেছেন প্রতিবেশীদেরকে সাহায্য করতে। প্রতিবেশী হচ্ছে তারা যারা আমাদের আশেপাশে থাকে। যেমন ধরো, আমাদের পাশের বাসায় তাসনিয়া আর তাহসান। ওরা হচ্ছে তোমার প্রতিবেশী। ওরা যদি কখনো তোমার কাছে কিছু চায় বা ওদের কিছু প্রয়োজন হয় তাহলে তোমাকে ওদেরকে সেটা দিতে হবে। কেন দিতে হবে? কারণ আল্লাহ দিতে বলেছেন। আর তুমি যদি আল্লাহর কথা মেনে চলো তাহলে কি হবে বলো তো?
আয়াত বলল, তাহলে মারা যাবার পর আমরা যখন নতুন আরেকটা জগতে যাবো যাবো তখন আল্লাহ আমাকে জান্নাত দিবেন। যেখানে আমার যা ইচ্ছে আমি করতে পারবো। যা চাইবো তাই পাবো।
তানিয়া হেসে বলল, একদম ঠিক বলেছো। এবার আম্মুর একটা প্রশ্নের জবাব দাও। এই যে তুমি আমাকে সবসময় বলো তুমি বিজ্ঞানী হতে চাও। এখন বিজ্ঞানী হবার জন্য তোমাকে অনেক অনেক পড়াশোনা করতে হবে। কিন্তু তুমি যদি একটুও পড়াশোনা না করে শুধু মুখেই বলো আমি বিজ্ঞানী হবো, আমি বিজ্ঞানী হবো। তাহলে কি আম্মু তোমার কথা বিশ্বাস করবো?
পড়াশোনা না করলে তুমি আমার কথা বিশ্বাস করবে কেন?
সেটাই তো! ঠিক তেমনি এই যে তুমি বললে মারা যাবার পর আমরা নতুন আরেকটা জগতে যাবো। এখন তুমি যদি এই কাজগুলো সুন্দর মত করো তাহলেই আল্লাহ বুঝবেন তুমি সত্যিই এই কথা বিশ্বাস করো।
শুধু এই কাজ গুলো ঠিকমতো করলেই আমি জান্নাতে যেতে পারবো আম্মু?
তানিয়া হেসে বলল, আমাদেরকে এই কাজগুলো তো করতেই হবে সাথে সাথে আল্লাহ আমাদেরকে এছাড়াও যা যা করতে বলেছেন তা করতে হবে। এবং যা যা করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ আমাদেরকে সেই কাজগুলোই করতে বলেছেন যেগুলো ভালো কাজ। আর যেগুলো পচা কাজ সেগুলো করতেই নিষেধ করেছেন। এখন বলো আমরা যদি জান্নাতে যেতে চাই এবং সেখানে যাবার পর যদি সবকিছু মনের ইচ্ছা মত পেতে চাই তাহলে আমাদেরকে কি করতে হবে?
আয়াত বলল, আল্লাহর কথা মেনে চলতে হবে।
মাশাআল্লাহ এই তো তুমি বুঝতে পেরেছো। এখন যাও পড়তে বসো।
কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকার পর আয়াত বলল, আম্মু আমি তাসনিয়া আর তাহসানকে খেলনা দিয়ে আসি?
কেন?
আল্লাহ দিতে বলেছেন যে! আমি দিয়ে আসি আম্মু প্লিজ নয়তো আল্লাহ আমাকে জান্নাত দেবেন না।
তানিয়া ছেলেকে আদর করে হেসে বলল, আচ্ছা ঠিকআছে যাও দিয়ে এসো।
আয়াত উঠে তার রুম থেকে খেলনা নিয়ে তাসনিয়া আর তাহসানকে ডাকতে ডাকতে পাশের বাসায় উদ্দেশ্যে ছুট লাগালো।

তানিয়াও হেসে আলহামদুলিল্লাহ বলে স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়লো।

চলবে…

 

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……২

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……২


আফরোজা হাসান


দুহাতে খেলনা গাড়ি বুকে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রান্নাঘরে রওনা করলো তানিয়া। প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে কিন্তু আট বছর বয়সি বাচ্চা ছেলের উপর রাগ দেখানো অর্থহীন। নতুন খেলনা কেনার পর পুরনো খেলনা আর ধরে না আয়াত। তাই পাশের বাসার ভাবীকে বলেছিলো এসে কিছু খেলনা নিয়ে যেতে উনার বাচ্চাদের জন্য। ছোট চাকরি করেন বিধায় সংসার সামলাতেই হিমশিম খেতে হয় পরিবারটিকে। বাচ্চাদের জন্য খেলনা কেনা তেমন করে হয়ে উঠে না। একগাদা খেলনা স্টোররুমে পড়ে ছিল তাই এসে নিয়ে যেতে বলেছিল তানিয়া। আয়াতকে আগেই সেটা জানিয়েছিল কিন্তু যেই বাচ্চাদেরকে নিয়ে পাশের বাসায় ভাবী এলেন অমনি বেঁকে বসলো আয়াত। কিছুতেই দেবে না তার খেলনা। ঐ বাচ্চারাও শুরু করলো কান্না। শেষ মেশ অনেক বুঝিয়ে পছন্দের কিছু খেলনা বের করে রেখে বাকীগুলো দেয়ার জন্য আয়াতকে রাজী করে উভয় দিক সামাল দিয়েছে তানিয়া। বাচ্চারা মাঝে মাঝে এত বেশি অপ্রস্তুত করে। উফফ…!
আযান শুনে মনের সব বিরক্তি ঝেড়ে ফেলে ছেলেকে ডেকে নামাজ আদায় করে নিলো তানিয়া। নামাজ সেরেই নিজের কাজে ছুট দেয় আয়াত। ছুট দেবার আগেই ধরে ফেললো তানিয়া ছেলেকে। আদর করে কাছে বসিয়ে বলল, বাবা তোমাকে না সেদিন বুঝিয়ে বললাম নামাজের সময় নড়াচড়া করতে নেই, এদিক সেদিক তাকাতে নেই। কিন্তু তুমি তো আজও নামাজের মধ্যে অনেক নড়াচড়া করেছো।
আয়াত অপরাধী কণ্ঠে বলল, আই এম সরি আম্মু। আর এমন হবে না দেখো।
তানিয়া ছেলেকে আরো কাছে টেনে নিয়ে বলল, আম্মুকে এখন সূরা মাউন তেলাওয়াত করে শোনাবে বাবা?
সাথে সাথেই সূরা মাউন তিলাওয়াত করে শোনালো আয়াত।
তানিয়া ছেলেকে আদর করে হেসে বলল, মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর হয়েছে তোমার তিলাওয়াত। সূরা মাউনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে কি বলেছেন জানো বাবা?
আয়াত আগ্রহ ভরা কণ্ঠে বলল, কি বলেছে আম্মু?
আল্লাহ বলেছেন, আমাদেরকে খুব সুন্দর করে নামাজ পড়তে হবে। নামাজের সময় নড়াচড়া করা যাবে না, এদিক সেদিক তাকানো যাবে না। তুমি যেমন বাবার সাথে নামাজ পড়ার সময় খুব সুন্দর করে নামাজ পড়ো, যাতে বাবা তোমাকে গুড বয় বলেন। তেমনটিও করা যাবে না। বাবা, আম্মু বা অন্যকাউকে দেখানোর জন্য না তোমাকে সুন্দর করে নামাজ পড়তে হবে কারণ আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। তোমাকে গুড বয় হতে হবে আল্লাহর কাছে। বুঝতে পেরেছো বাবা?
জ্বি আম্মু আমি বুঝতে পেরেছি। আমি এখন থেকে আল্লাহর কাছে গুড বয় হবো।
ইনশাআলাহ। সূরা মাউনে আল্লাহ আরো কি বলেছেন জানো?
কি বলেছেন আম্মু?
আল্লাহ বলেছেন, আমাদেরকে গরীব-দুঃখী-অভাবী ও অসহায়দেরকে সাহায্য করতে হবে। যাদের খাবার নেই তাদেরকে খাবার দিয়ে সাহায্য করতে হবে, যাদের পোশাক নেই তাদেরকে পোশাক দিয়ে সাহায্য করতে হবে। যাদের খেলনা নেই তাদেরকে খেলনা দিয়ে সাহায্য করতে হবে।
সাথে সাথে আম্মুর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকালো আয়াত। সূক্ষ্ম অপরাধ বোধের ছায়া ভেসে উঠলো চেহারাতে।
তানিয়া সেটা দেখেও না দেখার ভান করে বলল, আরো কি করতে হবে জানো সোনামণি? নিজের সাথে সাথে অন্যকেও উৎসাহিত করতে হবে গরীব-দুঃখী-অভাবী ও অসহায়দেরকে সাহায্য করতে। যেমন ধরো আম্মু কাউকে তোমার পুরনো পোশাক বা খেলনা দিতে চাইলাম। তখন তোমাকেও হাসি মুখে আনন্দের সাথে আম্মুকে সেসব দিতে উৎসাহিত করতে হবে।
আয়াত চিন্তিত কণ্ঠে বলল, আল্লাহ সত্যি এমন বলেছেন আম্মু?

চলবে…

 

সন্তান হলে কি বাবা মায়ের প্রতি ভালবাসা কমে যায় 

সন্তান হলে কি বাবা মায়ের প্রতি ভালবাসা কমে যায়


শামসুন নাহার মলি


সমবয়সী এক ভাবি প্রায়ই অনেক কিছু জানতে চান দেখা হলে,
সে দিন বল্লেন,
“আচ্ছা মলি ভাবি সন্তান হলে কি বাবা মায়ের প্রতি ভালবাসা কমে যায়?”

এক চোট ভেবে নিয়ে বল্লাম,
“ভালবাসা কমে না,বরং আমার বেড়েছে।সন্তান হবার পর বুঝেছি বাবা মা কি জিনিস,কি নিয়ামত,কত টুকো নি:স্বার্থ ভাবে তারা ভালবাসেন,কতটা ভালো চান,প্রয়োজন মেটান,বোঝেন।এটাও বুঝেছি বাবা মা সন্তানের জন্য কতটা ভাবেন,রক্ত ঘাম ঝরিয়ে মানুষ করেন।ভালোবাসা কমেনি,শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে,নিজেকে দিয়ে বুঝেছি কতটা ত্যাগ স্বীকার করেছেন,এখনো করে যাচ্ছেন আমাদের জন্য।
তবে হ্যা,সন্তান হবার পর দায়িত্ব বোধ বেড়েছে।

ভাবি কিছু বাস্তব উদাহরণ চাইলেন,
বল্লেন,”দেশে গিয়ে যখন বাবা মা আর সন্তান কে দেখা শুনা করেন কোনটা বেশি গুরুত্ব দিয়ে করেন?”

একটু চমকে গেলাম,আসলেই তো আমরা এমন এক বিন্দুতে বসা যার এক মেরুতে সন্তান আরেক মেরুতে বাবা মা।সন্তান ছোট মানুষ,বাবা মা ছাড়া অচল,কর্তব্যের খাতিরেই তো আগেই সন্তানের প্রয়োজন বা কাঁন্না থামাই।তার মানে কি এই যে বাবা মাকে ভালোবাসিনা?

আসলে একজন বাচ্চার পাশে অনেক কেই পাওয়া যায়।ক্ষুধা লাগলে কতজন খাবার দেয়,কাঁদলে খেলনা দেয়,ললিপপ দেয়,ঘুরতে নিয়ে যায়।এমন কি পটি ক্লিন ও করে আপন কতজন ই।কিন্তু ঠিক অপর মেরুর আরেক জোড়া ভালোবাসার মানুষ দের জন্য কজন এমন করে?একজন বাবা মা ৮/১০ টা সন্তান কে হেসে হেসেই লালন পালন করে,অনুভব করে প্রতিটা প্রয়োজন,সমস্যা কে।
কই ৮/১০ জন সন্তান তো পারেনা ২ জন বাবা মায়ের বৃদ্ধকালে ঠিক ওভাবে ছোট বেলার মত করে পাশে থাকতে,ভালোবাসতে,প্রয়োজন মেটাতে?

কেন পারেনা?

কারণ হলো ঐ পিছুটান,সংসার সন্তানের দায়িত্ব বোধ।কোন কোন সন্তান এত টাই উদাসিন হয়ে যান যে বাবা মার সাথে ঠিক মত কথা বলা,সময় দেয়া,খোঁজ নেয়ার ও সময় পান না।

ভাবি,আপনার কি মনে হয় ভালোবাসা কমে গেছে বাবা মায়ের প্রতি?

না ভালোবাসা আসলে কমে না,কোন কোন সন্তান ব্যালেন্স করতে পারেনা।তাদের ভালোবাসার যায়গা অনেক।কোনটাকে কত টুকো গুরুত্ব দিতে হবে,প্রাধান্য দিতে হবে তারা খেয়াল করার সময় পান না।

আমি দেশে গেলে চেষ্টা করি বাবা মা আর সন্তানের জন্য সমান ভাবে করতে।বাচ্চাদের কিছু কাজ কমিয়ে বাবা মা কে সময় দিই।

আমার বড় ভাই আর বোন সেদিন বল্লেন,
“প্রতিবেশি,দীনি ভাই বোন এর জন্য আমরা যত টুকো করি বাবা মা,শ্বশুর,শাশুড়ির জন্যও করবো।দাওয়াতে তাদের মুখে মজার মজার খাবার তুলে দিই,বাবা মা,শ্বশুর-শাশুড়ী ও মাঝে মাঝে এরকম খাবার খাচ্ছে কিনা,পরিবেশ তৈরি করতে পারছেনা খোঁজ নিবো।এটাও আমাদের কর্তব্য তাদের জন্য সেরকম বা তার চেয়ে বেশি বেশি এরকম পরিবেশ তৈরী করা।”

মেইন থিম টা হলো,আমাদের বুঝতে হবে সন্তানের জন্য,প্রতিবেশির জন্য,দ্বীনি ভাই বোন দের জন্য করতে করতে আমাদের আসল নেয়ামাত যাদের জন্য দুনিয়াতে এসেছি তাদের বঞ্চিত করছি কিনা।কোনটার প্রায়োরিটি আগে সেটা বুঝতে হবে।সন্তান দের অভুক্ত রেখে মেহমান দের জন্য জান মাল উজাড় করে দিচ্ছি কিনা কিংবা বাবা মা কে অভুক্ত রেখে সংসার বা বাইরের জগৎ নিয়ে বেশি মাতামাতি করছি কিনা।

ভাবি,একটা সময় সব থাকবে,সব হবে কিন্তু বাবা মা থাকবে না,তাই তারা যতদিন আছেন তাদের সম্মান করি,ভালোবাসি।কারণ একজন বাচ্চার পেছনে কতজন খাটে,কিন্তু একজন মুরুব্বীর ডাকে কেউ সাড়া দেয়না।বিছানা নোংরা করলে ও পরিস্কার করার কেউ থাকেনা।যে সব সন্তান রা এত বড় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে হয়তো তারাই আশাবাদী যে তাদের বার্ধক্যেও তাদের সন্তানরা পাশে থাকবে।কিন্তু বাকিরা?

দুনিয়ার সব কিছু করার সময় হয়,বাবা মায়ের সাথে কথা বলার সময় হয়না,কিসের এত ব্যস্ততা?আমি বুঝিনা।

আমার ডক্টর বলেছিলেন,তোমার সাথে কাউন্সিলিং এর জন্য নার্স পাঠাবো?
গল্প করলে তোমার স্ট্রেস কমবে,ডিপ্রেশন কমবে।
আমি না করেছিলাম।আমার স্ট্রেস কমে আমার ২ জোড়া বাবা মার সাথে কথা বল্লে।আমার বড় ভাই বোনের সাথে কথা বল্লে।যারা আমাকে দ্বীন আর দুনিয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়,প্যারেন্টিং শেখায়।এদের চেয়ে বড় আর ভালো ডক্টর আমার জীবনে আসেনি।

সেজন্যই তো শত ব্যস্ততার ভিতর ও নিজের খবর দেই তাদের,আমিও খোঁজ নিই।খেয়াল করে দেখলাম এতেই আমি ভালো থাকি। আর ভালো থাকি ইবাদাহ বাড়াতে পারলে আর পরোপকার করলে।আরো কিছু মানুষের সাথে কথা বল্লে আমার স্ট্রেস কমে,শান্তি লাগে।কিন্তু ডমিনেটিং ক্যারেক্টার,অহংকারী মানুষ,কঠোর,জটিল স্বভাবের মানুষ,বদ রাগী,অগোছালো,ঝগড়াটে,কম প্রাক্টেজিং দের সাথে মিশলে,কথা বল্লে শান্তি লাগেনা।
তাই নিজের মানুষিক সুস্থতার জন্য এসব মানুষ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকে।কম কথা বলি।

আমি বোকা হলেও এত টুকো বুঝে চলি কোনটা গুরুত্বপূর্ণ।কোনটা আমার দরকার।আগে আমার দ্বীন,তার পর বাবা মা সন্তান পরিবার তারপর সমাজ।

ভালোবাসা কমছে না বাড়ছে এটার চেয়ে দায়িত্ব পালনে আমি সফল না বিফল এটা আমায় ভাবায়।

ধন্যবাদ ভাবিকে,যার এই মুল্যবান প্রশ্নের উত্তর খুৃঁজতে গিয়ে আমার এই লম্বা ভাবনার সুজোগ হলো।

#এন্টিডিপ্রেশন

 

হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’ 

হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’ 


স্বাস্থ্যকথা


“যদি সুস্থ থাকতে চান

নিজের মনকে সুস্থ রাখুন”

আজ ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’। প্রায় প্রতি বছর ১০ই সেপ্টেম্বর ‘হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ নামের সংগঠন দিবসটি পালন করছেন এবং সারা মাসব্যাপী আত্মহত্যা প্রতি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে নানা কর্মকাণ্ডের আয়োজনও রেখেছেন। ২০১৯ এ বছরে দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করা’।

জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দিনটিকে সামনে রেখে আত্মহত্যা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। নতুন এই রিপোর্ট বলছে, প্রতি ৯ মিনিটে ৯ জন মানুষ মারা যাচ্ছেন আত্মহত্যায়। যদিও বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার হার হ্রাস পেয়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতিবছর ৮ লাখ মানুষ মারা যান শুধু আত্মহত্যায়, যা ম্যালেরিয়া, স্তন ক্যান্সার বা যুদ্ধ এমনকি হত্যাযজ্ঞের কারণে মারা যাওয়ার চেয়েও বেশি।

দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীতে সাইক্লিনিং মাধ্যমে ক্যাম্পেইন করেছে হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। ভোরে সাইকেল র‍্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হল আত্মহত্যা প্রতিরোধ সচেতনতার  প্রচারনা। সংসদ ভবন থেকে চাকায় চাকায় মাইল পাড়ি দিয়ে রমনা পার্কের কুসুম চত্বর ঘুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য –এর সামনে এসে শেষ হয়। ছেলে মেয়ে একসাথে সাইকেল র‍্যালিতে যোগদান করেন।

সাইকেল র‍্যালিতে আত্মহত্যাকে না বলে সবার মধ্যে আত্মবল নিয়ে সামনে এগিয়ে চলার মানসিকতা তৈরির কথা বলা হয়। আত্মহত্যার চিন্তা না করে সমস্যা সমাধানে সবাইকে মনোযোগী করে তোলার আহ্বান জানায় অংশগ্রহণকারী সবাই।

আজকের দিনই বেলা তিনটায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যত্নশীল যৌথ সহায়ক মঞ্চ গঠন অনুষ্ঠান। আত্মহত্যার ঝুকি ও পূর্বাভাস চিনতে খোলামেলা আলাপচারিতায় যুক্ত হবে সবাই। সংকোচ কাটিয়ে মনের গোপন কষ্ট, আত্মহত্যার চিন্তার কথা প্রকাশ করা জন্য জরুরী নিরাপদ ও সম্ভব স্বচ্ছন্দের জায়গা সুনিশ্চিত করা হবে। অন্ধকার ঘর থেকে নিজে বের হয়ে এসে অন্যকে বের করতে উৎসাহি হাত একসাথে কাজ করার জন্য যুক্ত হবে বেইলি রোডে।

পরবর্তিতে ২০ শে সেপ্টেম্বর আয়োজন করা হবে মনোসেবকদের দক্ষতা বৃদ্ধি জন্য বিশেষায়িত কর্মশালা।
এরই ধারাবাহিকতায় ২১শে সেপ্টেম্বর সকাল থেকে সাড়া দিন লালমাটিয়ায় এনজিও ফোরামে আয়োজন করা হবে তিনটা পৃথক মনোশালা। আত্নহত্যার প্রতিপক্ষে আশা জাগানোর জন্য সুস্থ মনের চর্চা করা হবে।

সবাই এই উন্মুক্ত মঙ্গলশালায় হাটতে হাটতে চলে এসে যোগ দিতে পারবে।

 

 

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……১

গল্পে গল্পে শিশুদের কুরআন শেখা……১


আফরোজা হাসান


আজ মিহিরের মনে অনেক আনন্দ কারণ দেড়মাস পর দাদুভাই আর দাদুমনিকে আবার কাছে পেয়েছে। দুজনই হজ্জ করতে সৌদিআরব গিয়েছিলেন। মিহিরের জন্য অনেক উপহার নিয়ে এসেছেন তারা। সব উপহারের মধ্যে থেকে কাবা ঘরের শোপিস হাতে নিয়ে মিহির বলল, এটা দিয়ে আমি কি করবো দাদুভাই? দাদুভাই মিহিরকে কাছে টেনে হেসে বললেন, তুমি জানো এটা কি?

হুম জানি তো এটা হচ্ছে আল্লাহর কাবা ঘর। এখানেই তো তোমরা গিয়েছিলে হজ্জ করতে। আচ্ছা দাদুভাই আল্লাহই কি এই ঘর বানিয়েছেন?

হেসে, না দাদুভাই। তবে আল্লাহর নির্দেশে ইবরাহীম(আ)তাঁর ছেলে ইসমাইল(আ)কে নিয়ে কাবা ঘর বানিয়েছিলেন। সে এখন থেকে বহু বহু বছর আগের কথা। একবার কি হয়েছিলো জান?

কি হয়েছিলো দাদুভাই?

আবরাহা নামে এক দুষ্টু রাজা ছিল। সে ঠিক করেছিল সেই কাবাটা সে ভেঙে ফেলবে। কারণ তার ছিল অনেক শক্তি। ইবরাহীম(আ) আর ইসমাইল(আ) আল্লাহর কথা মত কাবা বানানোর পর থেকে অনেক দূর থেকে মানুষরা আল্লাহর ইবাদত করার জন্য কাবায় আসতো। তাই তার মনে কাবাকে ঘিরে খুব হিংসার সৃষ্টি হলো। সে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করে দামি দামি জিনিসপত্র দিয়ে ভীষণ সুন্দর একটা উপাসনালয় বানালো। তারপরে মানুষকে দাওয়াত দিলো যাতে সবাই তার উপাসনালয়ে আসে। কিন্তু কেউ এলো না বরং সবাই আগের মতোই কাবা ঘরেই যাচ্ছিল ইবাদতের করতে। তাই সে ভীষণ রেগে ঠিক করলো কাবা ঘর ধ্বংস করে দিবে।

দুষ্টু রাজাটা তখন কি করলো দাদুভাই?

সে তখন অনেক সৈন্য সামন্ত আর বিশাল এক হাতির বহর নিয়ে কাবা ধ্বংসের উদ্দেশ্যে রওনা করলো।

তারপর কি হলো দাদুভাই?

আবরাহা তার সৈন্য বাহিনী আর বিশাল এক হাতির বহর নিয়ে কাবা ধ্বংস করতে আসছে শুনে তো মক্কার মানুষেরা অনেক ভয় পেয়ে গেল। তাদের তো অস্ত্র বলতে ছিল শুধু ঢাল, তলোয়ার আর বর্ষা। এত বিশাল সেনাবাহিনীর সাথে কিভাবে লড়াই করবে তারা ভেবে পাচ্ছিলো না। তাই তারা দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের কোন বাঁধা দিতে চেষ্টা করলো না।

মিহির ভীত কণ্ঠে বলল,তাহলে দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যরা কাবা ঘর ভেঙ্গে ফেলেছিল?

না দাদুভাই দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের সেই ক্ষমতা কোথায় যে তারা আল্লাহর ঘর ভেঙ্গে ফেলবে। আল্লাহ তো সর্ব শক্তিমান। নিজের ঘরকে দুষ্টুদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ আকাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট ছোট আবাবীল পাখী পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

হাসি ফুটে উঠলো মিহিরের চেহারাতে। উচ্ছ্বাসিত কণ্ঠে বলল,আবাবীল পাখীরা দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের সাথে লড়াই করেছিল?

হেসে, তা বলতে পারো।পাখীদের প্রত্যেকের কাছে ছিল তিনটি করে পাথর। যা তারা সেনা বাহিনীর উপরে ছুড়ে দিয়েছিল। সেই ছোট্ট ছোট্ট নূরী পাথর বৃষ্টির ফোঁটার ঝরে পড়েছিল দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের উপর। যারফলে দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

আনন্দে লাফিয়ে উঠে হাততালি দিয়ে মিহির বলল, খুব ভালো হয়েছে। কত্তো বোকা আল্লাহর ঘর ভাঙতে এসেছিল। উচিত শিক্ষা হয়েছে দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের।

হেসে নাতীকে কোলে টেনে নিয়ে, ঠিক বলেছো দাদুভাই দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যরা ভীষণ বোকা ছিল। এমন অনেক বোকা মানুষ আছে যারা ক্ষমতা ও সম্পদের কারণে নিজেদেরকে অনেক বিশাল কিছু মনে করে। যারফলে তারা আল্লাহ্‌র সাথে লড়াই করতে চায়। কিন্তু…

দাদার মুখ থেকে কথা ছিনিয়ে নিয়ে বলল,আল্লাহ তো সর্বশক্তিমান তাই কেউ জিততে পারে না লড়াইতে।

হেসে,একদম ঠিক বলেছো। আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে যারা লড়াই করতে আসে দুষ্টু রাজা ও তার সৈন্যদের মতই করুণ অবস্থা হয় তাদের।

চোখের সামনে কাবাঘরের শোপিসটা তুলে ধরলো মিহির। কিছুক্ষণ দেখে বলল, আমি আল্লাহর ঘরকে কোথায় রাখবো দাদাভাই?

তুমি কোথায় রাখতে চাও?

একটু চিন্তা করে মিহির বলল, আমার পড়ার টেবিলের উপর। এক্ষুনি রেখে আসি আমি। দাদার কোল থেকে নেমে নিজের ঘরের দিকে ছুট লাগালো মিহির।

চলবে…

 

আসুন মাটির মানুষ হয়ে বেঁচে থাকি!

আসুন মাটির মানুষ হয়ে বেঁচে থাকি


ফাতেমা শাহরিন


“চিন্তাকে সুন্দরভাবে প্রকাশ না করতে পারলে
সুন্দরভাবে চিন্তাও করা যায় না।”
ফাতেমা শাহরিন
আমি এখন আমার সংসারের কথা বলব। DECP আমার বাড়ি, আমার স্বপ্ন ও সুখের অঙ্গন।
আসুন নতুন এক যাত্রার গল্প শুরু করি…

“নিয়ন আলোর রাজপথে
টিএসসির মোড়ে চায়ের দোকানে
বুলেট কিংবা কবিতায়, যদি ফেরার পথে ভুল হয়ে যায়…”

TSC যাচ্ছি। আগেও যেতাম। কখন গিয়েছি PGT একজন সদস্য, একটু ক্লান্তি কাটাতে চুমুক দিতে চায়ের কাপে। কখনও গিয়েছি ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করতে। কখনবা একটু রাহাত আপুর সাথে সময় কাটাতে। সেদিন গিয়েছিলাম স্টুডেন্ট হয়ে। জেনে নিচ্ছিলাম, কিভাবে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের স্টুডেন্টদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে সহযোগিতা করব। আর আজকে যাচ্ছি একজন ট্রেনিং কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট হয়ে। স্টুডেন্টদের সেবা দিতে।

একেকবার যাওয়ার অনুভূতি একেক রকম। কখনও বুকে চিনচিন করে ব্যথা হতো, আমি কেন ঢাবিতে পড়াশুনা করলাম না। আবার কখন উদাস হাজার স্টুডেন্ট মাঝে মিশে যাওয়ার স্বাদ। আর এখন কর্মরত একজন পার্ট টাইম জব মেম্বার। আমাদের প্রতি মাসে একটি বেতন দেওয়া হবে। সুতরাং ‘জব’ করছি।

এখনকার গল্পটা একটু সচেতনতা।

মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে উদাসীনতা আমার ছিল না, তা কিন্তু বলব না। নিজের মনের যে নিজস্ব একটি রাজ্য আছে। সেখানেও যে সভা- সমাবেশ হরতাল এবং প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়। মনের চোখ না থাকলে দেখতে পারবেন না আপনি। আবার কেউ যদি বলে নাহ, না ‘আমার কোন মনের চোখ নেই’ একটু অবাক হবেন। কিছু বলবেন না, কারণ সবার মনের চোখ আছে।

এবার আসুন কেন DECP?

এডুকেশন & কাউন্সেলিং ডিপার্টমেন্ট হচ্ছে, সবচেয়ে আর্দশ উর্বর জমি। আর আমরা হলাম ‘বীজ’। জমি বলাতে মন খারাপ হচ্ছে? করবেন না। আমরা তো মাটি দিয়ে তৈরি সুতরাং জমির সাথে আমাদের গভীর সম্পর্ক।

* পড়তে ইচ্ছে করে না।
* প্রেজেন্টেশনে প্রচন্ড ভয়।
* প্রিয় মানুষটি হুট করে বিট্টে করল।
* সামনে ফাইনাল পরীক্ষা কোন পড়া হয়নি।
* এতো কষ্ট আর বাঁচতে ইচ্ছে করে না।
* কেন একটি কাজ বার বার করি?
* কেন এতো চিন্তা বার বার আসে?
* ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে ভাবতে ভাবতে নিজে নিজে কষ্ট তৈরি করি কেন?
* আব্বু কেন বুঝতে পারছে না, আমার সাবজেক্টটি ভালো লাগছে না।
* প্রিয় বন্ধুটি এতো ভুল বুঝলো কেন আমাকে।
* আমারকে দিয়ে কোন কাজই হবে না।
* কোন কাজেই কেন কোন আনন্দ পাই না।
* আমি কি ওকে ভালো বাসব?
* বাবুটাকে নিব নাকি অ্যাবশন করব?
* কেন বাবা মা আমাকে জোর করে বিয়ে দিবেন?
* আমার পছন্দের কি কোন দাম নাই?
* চুল গুলো টেনে টেনে না ছিঁড়লে অস্বস্থি লাগে কেন?
* আমি কেন ঠিকভাবে ঘুমাতে পারছি না?
* কেন এখনও বিয়ে হচ্ছে না আমার বয়স তো থেমে নেই?
* আমি কি বিয়েটা করব?
* এতো রাগ আর আমার আচরণ কেউ এখন আমাকে ভালো বাসে না?
* আমি ওকে এতো সন্দেহ করি কেন?
* সংসারটি আর করা সম্ভব হবে না ওতো পরকীয়া করে?
* এভাবে কেন শশুড় বাড়ির সবাই আমাকে ভুল বুঝে আচরণ করে?
* আমি কেন আমার সন্তানের সাথে সুন্দরভাবে আচরণ করতে পারছি না?
* ছোট বেলায় যে পাশের বাড়ির আংকেল আমাকে সেক্সচুয়াল অ্যাবিউজ করেছিলেন তাই কি আমি স্বাভাবিক সম্পর্কে জড়াতে ভয় পাচ্ছি?
* আমাকে কেন কেউ ভালোবাসে না?
* আত্মহত্যার চিন্তে এতো তীব্র আসে বার বার?
* আমি তো কয়েকবার অ্যাটেম নিয়েছি, ঘুমের ঔষধ খেয়েছি, ছাদেও উঠেছিলাম, একবার ট্রেন লাইন ধরে হেটেছি।
* বেঁচে থাকতে আর কেন একটুও ভালো লাগে না?
* মা আমাকে কেন ভালো বাসে না?
* জবটা কেন পাচ্ছি না?
* এতো প্রেসার

এ রকম নানান সমস্যায় আমরা অনেকেই আছি। কেউ বা সচেতন বা কেউবা অবচেতন মনে। খেলছি নিজের সাথে রোজ। বেঁচে আছি, বাঁচতে হয় তাই।
অজস্র চিন্তার জাল। মাকড়সাও ঘর ছেড়েছে ভয়ে।

আমরূ, একটু একটু করে কাউন্সেলিং নলেজকে ঘষে মেঝে আলো ঢুকাচ্ছি প্রতিনিহত আমাদের টিচার রা কঠোর পরিশ্রম করছেন। আমরা প্রতিনিহত জ্ঞানের আলোর সমুদ্রে হাবুডুবু, সাতার কাটছি। বই এর পাতায় পাতায় আলো। এই আলো গুলো একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট চেয়ে কোন অংশে কম শক্তিশালী নয়।

মানসিক প্রশান্তির দুয়ার খুলতে শত শত কাউন্সিলর কাজ করছেন বাংলাদেশ জুড়ে।

জ্বর যেমন কোন রোগ নয়, নানান রোগের সিনটম। কখনও মরণঘাতি ক্যান্সারও হয়। তেমনি, মন খারাপও তাই। ড় মন খারাপ হলেই মরতে মন চাচ্ছে না। তবে অতিরিক্ত মন খারাপ পুষে পুষে জীবনটাকে আর জীবন মনে হবে না। জীবন্ত পাথর মনে হবে একদিন।

আসুন মাটির মানুষ হয়ে বেঁচে থাকি, পাথর হয়ে নয়।

ফাতেমা শাহরিন
স্টুডেন্টঃ এডুকেশন & কাউন্সেলিং সাইকোলজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

১৩ বছরের কিশোরকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা

১৩ বছরের কিশোরকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা


নারী সংবাদ


মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সুলেমান (১৩) নামক এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ২ নারীসহ একই পরিবারের ৩ জনকে আটক করেছে।

এ ঘটনায় নিহত কিশোরের বড় ভাই রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ৫ জনের নামে কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের পূর্ব ফটিগুলি গ্রামের মৃত বাজিদ আলীর পুত্র কিশোর সুলেমান গত ৬ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার সকালে নিজ বাড়ির উত্তর পাশে একটা বটগাছের নিচে বসা ছিলো। এসময় লোক মারফত একই গ্রামের আনু মিয়ার বাড়িতে ডেকে নেয়া হয় নিহত সুলেমানকে।

বাড়িতে যাওয়ার পর আনু মিয়ার ছেলে রেদোয়ান মিয়ার নেতৃত্বে সুলেমানকে তাদের ঘরের ভেতরে রশি দিয়ে হাত পা বেঁধে মারপিট করা হয়। এসময় তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মাসুক মিয়াসহ আরও লোকজন এসে সুলেমানকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

ঘটনার পরদিন শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুলেমানের মৃত্যু হয়। এদিকে রোববার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কুলাউড়া থানা পুলিশ আনু মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী পিয়ারা বেগম (৪০) ও মেয়ে আসলিমা বেগম (১৮) কে আটক করেছে।

কর্মধা ইউনিয়নের মেম্বার মো. মাসুক মিয়া জানান, পূর্ব শত্রুতা থাকতে পারে। আমি ছেলেকে উদ্ধার করে দ্রুত মৌলভীবাজার হাসপাতালে ভর্তি করি। এরপর সেখান থেকে ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এব্যাপারে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান জানান, ঘটনার সাথে জড়িত ৩ আসামীকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

বখাটের এসিডের ভয়ে স্কুলে যেতে পারছে না মেঘলা

বখাটের এসিডের ভয়ে স্কুলে যেতে পারছে না মেঘলা


নারী সংবাদ


টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে বখাটের এসিডের নিক্ষেপের ভয়ে প্রায় একমাস যাবৎ বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না স্কুলছাত্রী মেঘলা আক্তার। প্রেমের ডাকে সাড়া না দেয়ায় পৌরসভার গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ফাস্টগার্ল মেঘলাকে এসিড মেরে মুখ জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে পাশের বান্দ্রা গ্রামের ফজল মিয়ার মাদকাসক্ত বখাটে ছেলে মানিক (১৫) ও নুর মোহাম্মদের বখাটে ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (২০)। মেঘলা বন্দটাকুরিয়া গ্রামের মো: মফিজুর রহমানের একমাত্র মেয়ে। এ ব্যাপরে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী পরিবার।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত বখাটে সাখাওয়াত ও মানিক দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে স্কুলছাত্রী মেঘলাকে উত্যক্ত করে আসছিল। এরই জেরে ধরে গত জুলাই মাসে ধনবাড়ী নবাব ইনস্টিটিউডে প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে মেঘলাকে এসিডের বোতল ও চাকু দেখিয়ে ছবি তোলে সাখাওয়াত, মানিক ও তার বন্ধুরা। মেঘলার বাবা-মা এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় গত ১৫ আগস্ট মধুপুর আসার পথে মানিদের বাড়ির কাছে মেঘলার বাবা-মাকে মারধর করে মানিক ও তার বন্ধুরা। এ ঘটনা প্রথমে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো: তোতা মিয়াকে জানালে তিনি সালিসী মীমাংসার করে দিতে চাইলে টালবাহানা করতে শুরু করে অভিযুক্ত বখাটে সাখাওয়াত ও মানিকের পরিবার।

মেঘলা জানায়, বখাটে মানিক প্রথমে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এতে সে সাড়া না দিলে মানিকের বন্ধু সাখাওয়াতও তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। উভয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করার পর মানিক ও সাখাওয়াত উভয়ে মিলে এখন মেঘলাকে এসিড নিক্ষেপের ভয় দেখাচ্ছে। ফলে গত ১৫ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে মেঘলা। নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে চায় বলেও আকুতি জানায় মেঘলা।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী মেঘলার বাবা মো: মফিজুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বেনু সম্পর্কে বখাটে মানিকের চাচাতো ভাই হওয়ায় এবং মানিকের বাবা ধনবাড়ী থানার ওসির বাসার কেয়ারটেকার হওয়ার কারণে তার মেয়েকে উত্যক্তের ঘটনার কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

অভিযুক্ত বখাটে মানিকের বাবা ফজল জানান, জোর করে মেঘলার ছবি তুলে আমার ছেলে ভুল করেছে। সেজন্য তো মেয়ের বাবা মফিজ আমার ছেলেকে ‘মারধর’ করেছে। কিন্তু আমি কিছু বলিনি।

পৌর কাউন্সিলর মো: তোতা মিয়া জানান, ফেনীর নুসরাতের ঘটনা আমরা সবাই জানি। আমরা দ্বিতীয় নুসরাত দেখতে চাই না। ওসির সাথে আলোচনা করে অভিযুক্ত বখাটেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম (বেনু) জানান, বখাটেদের হাতে উত্যক্তের শিকার হওয়ার ঘটনাটি মেয়েটি (মেঘলা) আমাকে মুখে বলেছে। আমি তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছিলাম। কিন্তু দেয়নি। ছেলেটি যেহেতু বহিরাগত, তাই অভিযোগ পেলে ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেলে ওসির সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ধনবাড়ী থানার এসআই নূরে আলম জানান, উভয়পক্ষকে নিয়ে থানায় বসে মীমাংসা করে দেয়া হবে। এটাতে কাজ না হলে মামলা দায়ের করে অভিযুক্ত উক্তত্যকারীদের গ্রেফতার করা হবে।

সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

গর্ভেই নির্ধারিত হয়ে যায় সন্তানের ব্যক্তিত্ব

গর্ভেই নির্ধারিত হয়ে যায় সন্তানের ব্যক্তিত্ব


স্বাস্থ্যকথা


নতুন এক গবেষণা বলছে, কোনো নারী যদি গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকেন, ঐ সন্তান ৩০ বছর বয়সের পৌঁছুনোর আগেই সে ‘পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার’ বা ব্যক্তিত্ব বৈকল্যে আক্রান্ত হতে পারে। ঐ ঝুঁকি স্বাভাবিকের তুলনায় ১০ গুণ বেশি হতে পারে। এমনকি গর্ভাবস্থায় মাঝারি মাত্রার মানসিক চাপ যদি দীর্ঘমেয়াদী হয়, তাহলেও সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

ফিনল্যান্ডে ৩,৬০০ গর্ভবতী নারী তাদের সন্তানদের ওপর ঔ গবেষণাটি চালানো হয়। গর্ভাবস্থায় ঐ নারীদের মানসিক চাপ নিরূপণ করা হয়। পরে তাদের সন্তান জন্ম নেওয়ার পর, ঐ সন্তানদের মানসিক বিকাশের ওপর নজর রাখা হয়।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, গর্ভবতী নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে বিশেষভাবে বিবেচনায় নেওয়া উচিৎ। কীভাবে সন্তানকে বড় করা হয়, পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা কী, শিশু বয়সে সে কোনো সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হয়েছিল কিনা – এগুলোও ব্যক্তিত্বের ওপর প্রভাব ফেলে।

তবে ঐ গবেষণায় জড়িত মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাবও সন্তানের ব্যক্তিত্বে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

‘পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার’ বা ব্যক্তিত্ব বৈকল্য কী

‘পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার’ এমন একটি মানসিক অবস্থা যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের জীবন তো বটেই, অন্যের জীবনেও বড় ধরণের সঙ্কট তৈরি করে। এরা অনর্থক এবং অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন হতে পারে, আবেগের ওঠানামার পেছনে কোনো যুক্তি থাকে না, অতিমাত্রায় সন্দেহ-প্রবণ হয়ে পড়ে। এমনকী অনেক সময় সমাজ-বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এ ধরনের মানুষ প্রায়শই মানসিক চাপে ভোগে। অনেক সময় এরা মাদক এবং মদাসক্ত হয়ে পড়ে।

কীভাবে হয়েছিল এই গবেষণা

এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে মনোবিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ‘ব্রিটিশ জার্নাল অব সাইকিয়াট্রি’তে। গবেষণায় ৩,৬০০ গর্ভবতী নারীকে তাদের গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক মাসে কিছু প্রশ্ন করে তাদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করা হয়। বিশেষ করে মানসিক চাপের মাত্রা নিরূপণের চেষ্টা করা হয়।

এই নারীরা ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কি এবং আশেপাশে থাকতেন। তারা ১৯৭৫ এবং ১৯৭৬ সালে সন্তানের জন্ম দেন। ঐ সন্তানদের বয়স তিরিশে পৌঁছুনোর পর দেখা যায় তাদের ৪০ জনের মধ্যে মারাত্মক ব্যক্তিত্বের সংকট তৈরি হয়েছে । তাদের মানসিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।

গবেষণায় ফলাফল

গবেষণায় দেখা যায় যে সব মায়েরা গর্ভাবস্থায় দীর্ঘদিন বড়রকম মানসিক অস্থিরতার মধ্যে ছিলেন, প্রধানত তাদের সন্তানরাই মানসিক সংকটে পড়েছে। যে সব মায়েদের গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ কম ছিল, তাদের সন্তানদের চেয়ে চাপে থাকা মায়েদের সন্তানদের ব্যক্তিত্ব বৈকল্য হয়েছে অনেক বেশি – প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। মায়েদের চাপের কারণগুলোর মধ্যে ছিল – সম্পর্কের সংকট, সামাজিক বা মনস্তাত্ত্বিক সঙ্কট।

কী করা যেতে পারে?

ব্রিটেনের রয়াল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টের অধ্যাপক ড. ট্রুডি সিনিভারত্নে বলছেন, গর্ভধারণ করলে অনেক নারী মানসিক চাপে পড়েন। তাদের জন্য সাহায্য খুবই জরুরী। তিনি বলছেন – যদি এই মানসিক চাপ ঠিকমতো নিরসন না করা হয়, তার পরিণতি দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে, তাদের জন্য এবং সন্তানদের জন্য।

“আমরা চাই না যে বাবা-মার মনে এমন কোনো অপরাধ-বোধ তৈরি হোক যে তারা তাদের সন্তানদের ক্ষতি করছেন- কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী এবং উঁচু মাত্রার মানসিক চাপ সন্তানদের ক্ষতি করে।”

কীভাবে গর্ভাবস্থায় মাসনিক চাপ কমানো সম্ভব

ড. সিনিভারত্নে বলছেন, গর্ভবতী নারীদের অবশ্যই বাড়িতে এবং কাজের জায়গায় সাহায্য করতে হবে। চাপ তৈরি হলে, কীভাবে সে তা সামলাতে পারে – সে ধ তাকে পরামর্শ দিতে হবে।

“সতাদেরকে জানতে হবে কীভাবে বিশ্রাম নিতে হয়, মানসিক চাপে পড়লে অন্যের কাছ থেকে কীভাবে সাহায্য চাইতে হয়।”

গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ধূমপান ত্যাগ এবং যথেষ্ট ঘুমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

সূত্র : বিবিসি।

 

সম্পর্কে যত্নশীল হয়ে উঠি

সম্পর্কে যত্নশীল হয়ে উঠি


নিশাত জাহান নিশা


Effort and Expectation

দুটো শব্দই ইংরেজি অক্ষর E দিয়ে……. এই মিল টুকু ছাড়াও শব্দ দুটি একে অন্যের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।
আজকাল Discorded Relationship (সম্পর্ক কলহ) একটি কমন সমস্যা। আর এই সম্পর্কগুলো হতে পারে, বাবা-মা ও সন্তান, ভাই-ভাই, ভাই-বোন, বন্ধু, প্রেমিক-প্রেমিকা অথবা স্বামী-স্ত্রী….

আর এই কমন সমস্যার মূল কারণ Effort & Expectation এর অসমতা…
আর এই অসমতাই দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যকার সম্পর্ক গুলো অতি দ্রুত ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।।।

বিনা expectation এ যেমন কেউ effort করতে চায় না তেমনি effort ছাড়া expectation গুলোও কখনো পূর্ণতা পায়না। একটা সুষ্ঠু সম্পর্কের মধ্যে effort ও expectation দুটোই সমানতালে সমান ভাবে থাকতে হবে।

সম্পর্কে Effort ছাড়া Expectation হলো এক ধরনের ফুটো কলসির মত, effort না থাকলে আপনার expectation এর সেই কলস কখনোই পূর্ণ হবে না।।।
আজকাল সম্পর্ক গুলো কেন এত দ্রুত ভেঙে যায়, জানেন, কারন আজ কাল কার বেশিরভাগ সম্পর্কের মধ্যে এক পক্ষে effort দেয় আরেক পক্ষ expect করে, আর ভুলটা এই জায়গাতেই হয় সম্পর্ক যেহেতু দুটি মানুষের মধ্যে, তাই দুজনের মনের মধ্যেই থাকতে হবে একে অপরের প্রতি সম্মান দেওয়ার প্রচেষ্টা ও নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রত্যাশা, তবেই একটা সম্পর্কের মধ্যে ব্যালেন্স বজায় থাকে।
এবার চলুন জেনে নিই সম্পর্কের এক্সপেক্টেশন (প্রত্যাশা) গুলো কি কি।।।।
আমরা কমবেশি সবাই আমাদের সম্পর্কের মধ্যে যে এক্সপেক্টগুলো করি :

১) আমাকে বুঝতে হবে, কারন আমি আমি অভিজ্ঞ

২) আমার কথা শুনতে হবে, কারণ আমি ভাল চাই

৩) আমার ক্ষেত্রে ধৈর্যশীল হতে হবে

৪) ভালবাসলে সেক্রিফাইস মাইন্ডেড হতে হবে

৫) আমাকে অন্ধ বিশ্বাস করতে হবে, কখনো রিয়্যাক্ট করা যাবেনা

৬) আমার পছন্দ অপছন্দ কে মূল্যায়ন করতে হবে

৭) আমার ডিসিশন কে চূড়ান্ত বলে মেনে নিতে হবে

৮) আমার প্রতি 100% loyal থাকবে

৯) আমার মত করেই তাকে ভাবতে হবে (my choice is your choice)।।।

১০) আমার কথাকে অধিকতর সম্মান দিতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি……

অথচ আমরা খুব কম ব্যক্তিই আছি এই expect গুলো করার আগে, নিজেরা সম্পর্কের মধ্যে effort দেই।।।

এবার চলুন এফোর্ড (প্রচেষ্টা) গুলো কি জেনে নেই।

১) আপনার সম্পর্কের মানুষটির ধরন গড়ণ চলন সর্বোপরি সে যেই প্যাটার্নের তাকে সেভাবে গ্রহণ করা, অর্থাৎ যদি না সে গুরুতর সমাজ বিরোধী হয় তাকে পরিবর্তন করার আগে এটুকু বোঝা যে, আপনার সৃষ্টিকর্তা আপনাকে যেভাবে তৈরি করেছেন, সেই একই সৃষ্টিকর্তা তাকে তৈরি করেছেন তার মত করে।।।। অর্থাৎ প্রত্যেকটা ব্যক্তি যে স্বতন্ত্র সত্তার অধিকারী এতটুকু বিবেক বোধ রাখা।।।

২) আপনার যা ভালো লাগে তার কাছে সেটা ভালো নাও লাগতে পারে এই ছোট বিষয় টাকে শুধু জানা নয় মানতেও হয়।।।

৩) নিজের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত দাবি করার আগে, তার সিদ্ধান্তটির পক্ষের যুক্তি গুলো বুঝতে চেষ্টা করা।

৪) পরিপূর্ণ ভালোবাসা ও মর্যাদা দেওয়ার আগেই সেক্রিফাইস, ধৈর্য এগুলো আশা না করা।।।

৫) অপর মানুষটি নিজের অবস্থানে কতটুকু সমঝোতা করে, আপনাদের দুজনার সম্পর্কের মধ্যে সেক্রিফাইস মনোভাব গড়ে তুলতে হচ্ছে, সেটার সমীকরন তৈরি করা।।।

৬) নিজের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস প্রত্যাশা করার পূর্বে, নিজেকে তার কাছে আস্থাশীল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

৭)সম্পর্কের মধ্যে loyalty & liability দুটোই নিশ্চিত করা।

৮) সম্পর্কের মানুষটির প্রতি যত্নশীল হওয়া।

৯) সম্পর্কের মানুষটির self esteem, emotion, patience এগুলোর threshold লেভেল সম্পর্কে অবগত থাকা।

১০) আপনার সম্মান নিশ্চিত করার সাথে সাথে, তার সম্মান সুনিশ্চিত করা।

এই basic effort গুলো থাকলেই সম্পর্কগুলো মোটামুটি ব্যালেন্সে থাকে।।।

*সম্পর্কের মাঝে যখন আপনার expectation হবে ‘

‘feel to be comfort with him/her’

এর আগে আপনার effort হতে হবে

‘I have to make sure his/ her comfort with me’ কারণ আপনার effort এর ওপর ভিত্তি করেই আপনার expectation গুলোর পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটবে*

*Effort ছাড়া সম্পর্ক হলো হলো মাটি (ভিত্তি) ছাড়া গাছ, আর Expectation হলো সেই গাছের মধ্যে আবার ফলন চিন্তা করা।*

তোমার চেয়ে আমার Social Value/Network বেশি, তোমার কম… সম্পর্কটাকে এরকম competitive না করে complementary করে তুলুন “তোমার এটা আছে আমার ওটা আছে” একে অন্যের পরিপূরক। ব্যাস…

আজকাল আমাদের সম্পর্ক গুলোর মধ্যে এক ধরনের রোগ বাসা বেঁধেছে সেটা হলো: এক তরফা প্রচেষ্টা (effort) আর না হয় এক তরফা প্রত্যাশা (expectation)……আমরা যখন আমাদের সম্পর্কের মানুষের সাথে বাকবিতণ্ডা বা তর্কে জড়াই বা যেকোন বিষয়ে অমত হই, তখন কটু কথা বা কাজের মাধ্যমে তাকে ছোট করার সকল প্রচেষ্টা চালানো হয়, সে human being হিসেবে নূন্যতম যতটুকু মর্যাদা পাওয়ার কথা, (টাকা বা সম্পদের খোটা দিয়ে) সেটাও তাকে দেয়া হয় না…..
অথচ তার কাছ থেকে সেক্রিফাইস আশা করার বেলায় আমরা তাকে মহামানব বা দেবীর স্থানে বসিয়ে দেই, আর অকপটে বলে ফেলি আমার জন্য তুমি এতোটুকু সেক্রিফাইস করতে পারলে না…..

আচ্ছা বলুনতো সেক্রিফাইস কারা চায়? সেক্রিফাইস কাদের দরকার?
সেক্রিফাইস কাদের করা হয়?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কি?
উত্তর একটাই, যারা দুর্বল, অপারগ, নিজ দায়িত্বে বা ক্ষমতায় কায়েম থাকতে পারে না, তাদের জন্যই সেক্রিফাইস করা হয়।।‌। আর সেক্রিফাইস হলো একটি মোহ পেতে থাকলে, শুধু পেতেই ইচ্ছা করবে।
আপনাকে কেউ স্বেচ্ছায় সেক্রিফাইস করলো আপনি সেটা গ্রহণ করলেন, it’s ok এটা আপনার ব্যাপার।।।। কিন্তু আপনি কারো কাছ থেকে আগ বাড়িয়ে sacrifice আশা করবেন, it’s not ok। এটা শুধুই আপনার দুর্বলতার পরিচয় দিচ্ছেন।।।

উদাহরণস্বরূপ, একজন সুস্থ সবল ব্যক্তি যার দায়িত্ব নেয়ার সমস্ত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যদি সমাজ তাকে দায়িত্ব মুক্ত করে দেয়, সেটা কি তার জন্য উপকার বা সেক্রিফাইস? বলতে পারেন, সেটা ব্যাক্তির potentiality/ প্রতিভা নষ্ট করার মতো উপকার, আর এই উপকারের মধ্যে কোথাও না কোথাও তাকে demean/ অদক্ষ দাবি করার সূক্ষ একটা ঘ্রান ও পাওয়া যায়।।।

নিজের সম্মান নষ্ট করে sacrifice পেতে কে চায়? অন্যের টা জানিনা, তবে আমি তো অবশ্যই এই ধরনের সেক্রিফাইস পাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতেই পছন্দ করি।।। তাই sacrifice এর মোড়কে, নিজেকে অদক্ষ দাবি না করে বরং নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার মধ্যেই সম্পর্কের সার্থকতা।।

সর্বোপরি, আমরা আমাদের জীবনের বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, সবধরনের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এর প্রতি দায়িত্ববান বা যত্নশীল হয়ে উঠি।। আপনার জন্য কেউ সুখ ত্যাগ বা জীবন দেওয়ার নাম sacrifice নয় বরং এই অস্থিতিশীল, প্রতিকূল পৃথিবীতে আপনার সাথে একত্রে স্বর্গের সুখ অনুভব করার অক্লান্ত প্রচেষ্টার নাম sacrifice…

আপনার জীবনের সম্পর্কের মানুষটি বেঁচে থাকতে তার গুরুত্ব বুঝুন।
তার নামে বড় বড় ইমারত তৈরী করে অর্থের সেক্রিফাইস না দেখিয়ে, তার মনে ভালোবাসার অখন্ড পাহাড় তৈরি করুন।।।।

*তাজমহল’কে দুনিয়া দেখছে, মমতাজ কিন্তু দেখেনি*

 

নিশাত জাহান নিশা 

অ্যাসিস্টেন্ট ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট

 

এসআই ও সোর্স মিলে ধর্ষণ করল আসামির স্ত্রীকে!

এসআই ও সোর্স মিলে ধর্ষণ করল আসামির স্ত্রীকে!


নারী সংবাদ


যশোরে পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে আসামির স্ত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। যশোরের শার্শা উপজেলার গোড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খায়রুলসহ সোর্সের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন একই উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামে আসাদুজ্জামান আশার স্ত্রী।

পুলিশ সুপার এ অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠিয়েছেন। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ওই মহিলাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে অভিযুক্ত এসআই খায়রুল জানান, এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই গৃহবধূ সাংবাদিকদের জানান, শার্শার লক্ষণপুর গ্রামে তার স্বামী আসাদুজ্জামান আশাকে গত ২৫ আগস্ট রাতে শার্শা উপজেলার গোড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খায়রুল বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন ২৬ আগস্ট আশার কাছ থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখিয়ে তাকে আদালতে চালান দেয়।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাত ২ টার দিকে এসআই খায়রুল সোর্সদের নিয়ে আশার বাড়িতে যায় এবং তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। আশাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এসআই খায়রুল তার স্ত্রীর নিকট ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে খায়রুল ও সোর্স কামারুল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

পরে ঘরের ভেতরে গিয়ে আশার স্ত্রীকে প্রথমে এসআই খায়রুল ও পরে পুলিশের সোর্স কামারুল ধর্ষণ করে। এসময় সোর্স লতিফ ও কাদের ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। বিষয়টি কাউকে জানালে তাকেও মামলা ঝুলিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে আশার স্ত্রী যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অফিসে যান এবং সাংবাদিকদের কাছে তিনি ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ধরেন।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে যান এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদের অনুমতি নিয়ে ওই মহিলাকে নিয়ে পুলিশ সুপার মঈনুল হকের অফিসে নিয়ে যান।

এসময় ওসি মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি তিনি শুনে এসেছেন। তাকে নিয়ে এসপি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর বাইরে কোন কিছু বলা সম্ভব নয়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই খায়রুল বলেন, এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পিক্ততা নেই। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে এসপি স্যার তদন্ত শুরু করেছেন।

যশোর পুলিশ সুপার মঈনুল হক সাংবাদিকদের জানান, ওই নারীর অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে। তাকে পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ সঠিক হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

By: dailynayadiganta

 

“বাবা”

বাবা


তানিয়া ইসলাম ইতি


বাবা শব্দ টা আমার মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সবচেয়ে স্বচ্ছ সবচেয়ে শক্তিশালী শব্দ।

আর বাবা নামের মানুষ, মানুষগুলো আরো বেশি শক্তিশালী আরো বেশি স্বচ্ছ, নির্ভীক, পৃথিবীর সবচেয়ে অনুপ্রেরণার জায়গা, আদর্শ আর কষ্ট লালিত এক পুরুষ। নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া এক সংগ্রামি যোদ্ধা ……….।

গত এক সপ্তাহ ধরে এই বাবা নামের শব্দটির সাথে হারিয়ে গেছি। নতুনভাবে আবিষ্কার করার চেষ্টা করছি এত কেন স্বচ্ছ এত কেন নির্ভেজাল বাবা নামের মানুষটা। খুজেও পেলাম অনেক কিছু……….।

১. সন্ধ্যার পরে হাঁটছি একজন বাবা আর সন্তান বাসায় ফিরছেন হয়তোবা সন্তানের পেন্সিল পরে গেছে । বাবা এমন ভাবে রাস্তায় পেন্সিল খুঁজছেন যেন পৃথিবীর সব চাইতে মূল্যবান সম্পদ হারিয়ে ফেলেছেন। শুধুমাত্র সন্তানের একটা কথায় বাবা আমি পেন্সিল হারিয়ে ফেলেছি। হয়তো বাস এক্সিডেন্ট হতে পারতো। কারণ রাস্তায় এত গাড়ি যাচ্ছে বাস প্রাইভেট কার সেগুলো উপেক্ষা করে বাবা নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে পেন্সিল খুঁজে দেয়ার চিন্তা করছে এটা শুধু এই মানুষটার পক্ষেই সম্ভব …….।

২. গত দুইদিন আগে বাংলা টিভি চ্যানেল দুরন্ত চ্যানেল সিসিমপুরে এক চাইনিজ বাবার গল্প বলছিল তার সন্তান। আমার বাবা বেহালা বাজাতে পারে। আমার বাবা ঘোড়ার ডাকার শব্দ, ঘোড়ার দৌড়ানোর শক্ত, হাঁটার শব্দ বেহালায় তুলতে পারে ।এমন ভাবে বাবাকে রিপ্রেজেন্ট করছিল একজন সন্তান ৭ বছরের সন্তান। মনে হলো পৃথিবীর সবচাইতে আদর্শবান বাবার গল্প সে সবার কাছে বলছে। তখন মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সবচাইতে ঘনিষ্ঠতম সম্পর্ক হচ্ছে বাবা আর সন্তানের সম্পর্ক……….।

৩. আজকে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড দিচ্ছিলাম। তখন ঐ দোকানের মালিকের সাথে কথা হচ্ছিল। আমি প্রায়ই মাঝেমাঝে উনার সাথে কথা বলি। কথা বলতে বলতে একটা সময় একটা পিচ্চি ছেলে এসে বলতেছে আঙ্কেল কিছু টাকা দেন ভাত খাবো। পকেট থেকে ২০০ টাকা বের করে দিল আমি বললাম ভাই আপনি টাকা দিয়েছেন ওই টাকা দিয়ে ভাত খাবে না। তখন উনি বলল আপা আমি ছোটবেলা থেকেই খাবারের জন্য কেউ কোন কিছু চাইলে আমি কখনো নিষেধ করি না। কারণ এটা আমার বাবার কথা, বাবা বলেছিল কখনো খাবারের উদ্দেশ্যে কেউ কিছু চাইলে তুমি খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না। তখন আমি বললাম তাহলে তো আপনার বাবা অনেক ভালো মানুষ। উনি বললেন, হ্যাঁ আমার বাবা পৃথিবীর সবচাইতে ভালো মানুষ ছিলেন। উনি এখন নেই মারা গেছে। আমার বাবার একটা কথা বলি আপনাকে, আমরা চার ভাই বোন প্রত্যেকেই অনেক অনেক ভালো জায়গায় আছি । সবাই অনেক ভালো জায়গা থেকে পড়াশোনা করেছি। আমি যখন খুব ছোট স্কুলে পড়তাম কখনো আমার বাবাকে সকালে দেখতাম না। উনি টিচার ছিলেন উনি প্রতিদিন কখন যে বের হয়ে যেতেন আসতেন সন্ধ্যার একটু আগে আর আমাদের পড়তে বসাতেন। তখন খুব রাগ হতো বাবার প্রতি সারাদিন থাকে না বাসায় আমাদের কোনো খোঁজখবর নেন না অথচ পড়ার সময় কোথা থেকে যেন চলে আসতেন। স্কুলে একবার করে প্রতিমাসে যেতেন আমাদের পড়াশোনার কি অবস্থা জানার জন্য। আর কোন মতে কোন কিছু শুনলে মার একটাও মাটিতে পড়তো না। কতবার যে মনে মনে বাবাকে বকেছি সেটার হিসাব নেই। কিন্তু যখন বড় হচ্ছি বুঝতে শিখছি দুনিয়ার সবকিছু। তখন প্রথম জানতে পারলাম আমার বাবা সকাল পাঁচটায় বের হয়ে যায় বাসা থেকে জমিতে। উনি কৃষি কাজ করতো তার পরে স্কুলে যেতো স্কুলের ক্লাস নিয়ে বাসায় ফিরে খাবার খেয়ে আবার জমিতে চলে যেতো কাজের উদ্দেশ্যে। সন্ধ্যায় ঠিকই বাসায় এসে হাজির হতো আমার বাবা। আমার এখনো মনে আছে আমি যখন ক্লাস টেইনে পড়ি তখন আমার বড় ভাই বুয়েটে পড়ে। উনার স্কলারশিপ হয়েছিল তার তখন কিছু টাকা দরকার ছিল আমার বাবার তখন খাদ্যনালীতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। আমাদের জমানো টাকা দিয়ে বাবাকে চিকিৎসা করালে বাবা সুস্থ হয়ে যেতেন । কারণ ক্যান্সারের এক্কেবারে প্রাইমারি অবস্থায় ছিল বাবার । কিন্তু বাবা আমাদের কাউকে জানায়নি না জানাই আমার ভাইকে টাকা দিয়ে কানাডাতে পাঠান। আর তখন বাবার ক্যান্সার পুরা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ……।

পৃথিবীর প্রত্যেকটা বাবাই মনে হয় নিঃস্বার্থ বান একজন মানুষ। যারা সারা জীবন দিয়ে যায় পাওয়ার বিন্দু পরিমান চিন্তা করেন না।

বেঁচে থাকুক এই বাবারা পৃথিবীতে প্রত্যেক আদর্শবান সন্তানের মাঝে, বেঁচে থাকুক। পৃথিবীর প্রত্যেক সন্তানের ভালো কাজের মাঝে প্রত্যেকটা শ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্যে আর বাবা সম্পর্কে যত যত বলবো শেষ হবে না। শুধু বলবো ভালো থাকুক সব বাবারা।

 

দেশ বরিশাল উত্যক্তের শিকার স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা : বখাটে তামিম ৭দিনের রিমান্ডে


নারী সংবাদ


পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় বখাটের উৎপাতে অতীষ্ট হয়ে স্কুলছাত্রী রুকাইয়া আক্তার রূপার আত্মহত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামী তামিম খানকে সাত দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার পিরোজপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযুক্ত বখাটে তামিম খানের ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হলে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

জানা যায়, রোববার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাণ্ডারিয়া থানার এসআই মোঃ কাইয়ুম আসামী তামিমকে পিরোজপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে ভাণ্ডারিয়া থানার ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান জানান।

এর আগে গত শনিবার রাতে স্থানীয় মঞ্জু খানের বখাটে ছেলে তামিম খানকে (১৯) প্রধান আসামী করে ৫ জনকে চিহ্নিত এবং অপর ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচণা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় ভাণ্ডারিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত রূপার বাবা মোঃ রুহুল আমিন মুন্সী। মামলার অন্য আসামীরা হচ্ছে- আঃ মালেক হাওলাদারের ছেলে রাইয়ান, ইরিন (পিতা-অজ্ঞাত), আলম জোমাদ্দারের ছেলে ওয়ালিদ, মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে সাজিদ।

মামলা দায়েরের পর পিরোজপুর ডিবি পুলিশ ও ভাণ্ডারিয়া থানা পুলিশ গত শনিবার সন্ধ্যায় যৌথ অভিযান চালিয়ে স্থানীয় জমাদ্দার বাড়ী থেকে (বখাটের বাড়ী থেকে) মামলার প্রধান আসামী তামিম খানকে গ্রেফতার করে। পরে রোববার তাকে বিচারিক আদালতে তোলা হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকী আসামীদের আটক করতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান।

উল্লেখ্য, জেলার ভাণ্ডারিয়া উপজেলার বখাটে তামিম খান স্কুলছাত্রী রূপাকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। রূপা তা প্রত্যাখ্যান করায় এবং এর প্রতিবাদ করলে ওই বখাটে একটি নগ্ন ছবির সঙ্গে রূপার ছবি এডিট করে জুড়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ায় স্কুলছাত্রী রূপা ও তার পরিবার চরম বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েন। একপর্যায়ে শুক্রবার দিবাগত রাতে ক্ষোভ ও লজ্জায় ঘরে থাকা ঘুমের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরণের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যা করে রূপা। সে স্থানীয় বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

স্মৃতির জোনাকি… ৬

স্মৃতির জোনাকি… ৬


আফরোজা হাসান


স্মৃতির জোনাকি… ৬

নাবিহা একবার ভেবেছিলো মামণি আর ফুপির কথায় কান পাতবে কিন্তু পরমূহুর্তেই এই দুষ্টু চিন্তাকে মন থকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে আদীব্বার রুমের দিকে রওনা দিলো। যে ক’টি চেহারা না দেখলে নাবিহার মনের ভুবনে সূর্যোদয় হয়না পরিপূর্ণ রূপে তারমধ্যে অন্যতম একজন আদীব্বা। আদীব্বার রুমের দিকে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ পথ বদলে রান্নাঘরে পৌঁছে গেলো নাবিহা। ইচ্ছে ছিল গ্রীনটি বানিয়ে আদীব্বার জন্য নিয়ে যাবে। কিন্তু গ্রীনটি বানাতে বানাতে যার জন্য বানাচ্ছিলো তিনি এসে হাজির হলেন রান্নাঘরে। আদীকে ঢুকতে দেখে সালাম দিয়ে নাবিহা বলল, আদীব্বা আমি তোমার কাছেই যাবো ভাবছিলাম।

সালামের জবাব দিয়ে আদী হাসি মুখে বললেন, মা স্মরণ করেছে আর পুত্র হাজির হয়ে গিয়েছে। একেই বলে মাতা পুত্রের বন্ধনের ম্যাজিক। বুঝেছেন আম্মাজান!

নাবিহা হেসে বলল, আলহামদুলিল্লাহ। গ্রীনটি বানিয়েছি তোমার জন্য। সাথে আর কিছু দেবো?

আদী হেসে বললেন, কিছুক্ষণ আগে নাস্তা করেছি পেট একদম ভরা। তবে কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়ে মনের ক্ষুধা মেটাতে পারো। প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, তুমি কি জানো আমাদের নেতাজ্বি কোথায় আছেন এই মূহুর্তে?

নাবিহা হেসে বলল, হসপিটাল থেকে ফোন এসেছিল এ বি নেগেটিভ রক্ত প্রয়োজন। পাপা, জিহাদ ভাইয়া রক্ত দান করতে গিয়েছেন।

জিহাদও গিয়েছে রক্ত দান করতে?

হ্যা, আজকে ভাইয়ার প্রথম রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। পাপা অবশ্য প্রথমে নিতে চাননি ভাইয়াকে। কিন্তু ভাইয়া খুঁটি আঁকড়ে ধরে থাকা টাইপের জেদ ধরে বসে ছিল। পাপা তখন বিরক্ত কন্ঠে বলেছেন, একদম মায়ের মতো অবাধ্য প্রতিটা বাচ্চা। এরপর নিয়ে গিয়েছেন ভাইয়াকে। হাসতে হাসতে বললো নাবিহা।

আদী হেসে বললেন, আচ্ছা এবার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দাও। আনন্দবাড়ির বাতাসে একটা নিউজ ভাসছে, তোমাদের কন্যা গ্রুপের সদস্যারা মিলে নাকি বিজনেস প্ল্যান করছো? ঘটনা কি সত্যি?

নাবিহা চোখ বড় বড় করে বললো, হায় আল্লাহ! তোমার কাছে এই তথ্য পৌঁছে গিয়েছে? আমরা তো সারপ্রাইজ দেবো ভেবেছিলাম।

আদী হেসে বললেন, কিসের সারপ্রাইজ?

নাবিহা হেসে বলল, আচ্ছা চলো তোমাকে পুরো ঘটনা খুলে বলি। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল আজ থেকে প্রায় আড়াই মাস আগে। আমাদের ফ্রেন্ডদের একটা প্রোগ্রাম ছিল। সবসময় তো প্রোগ্রাম আমাদের বাড়িতেই হয়। কিন্তু ঐদিন প্রোগ্রাম আমরা হিবাদের বাসায় করেছিলাম। নানুমণি আমাদের সবার জন্য রসগোল্লা, কালোজাম মিষ্টি বানিয়ে দিয়েছিলেন। মামণি পেস্ট্রি কেক বানিয়ে দিয়েছিলেন। অনেক বেশি করে বানিয়ে দিয়েছিলেন। আমরা সবাই খাওয়ার পরেও অনেক রয়ে গিয়েছিল। সবাই তখন ভাগ করে নিজ নিজ বাসায় নিয়ে গিয়েছিল মিষ্টি আর কেক। ওদের বাসা থেকে আবার ওদের রিলেটিভদের কেউ কেউ খেয়েছে সেই কেক মিষ্টি। মোটকথা, কেক, মিষ্টি ছড়িয়ে পড়েছিল দিকে দিকে, ঘরে থেকে ঘরে।

আদী হেসে ফেললেন। নাবিহাও হাসতে হাসতে বলল, হিবা, ফারিহা, মেহরিন তিনজনই পরদিন ফোন করেছিল কেক, মিষ্টির জন্য। আমি বলেছিলাম মামণি, নানুমণিকে বানিয়ে দিতে বলবো। কিন্তু ওরা যেহেতু পরিমাণে বেশি চাচ্ছিলো তাই হাদিয়া স্বরূপ নিতে চাচ্ছিলো না। কিনে নিতে চাচ্ছিলো। এই কথা শুনে আমি খুবই বিরক্ত হয়েছিলাম। কিন্তু জিহাদ ভাইয়া বললো, এমনটা হলে কিন্তু মন্দ হয়না। পাপা , চাচ্চুদের স্টুডন্ট লাইফের কথা ভেবে দেখো। স্টুডেন্ট লাইফে পাপা, চাচ্চুরাও তো পার্টটাইম জব করেছেন। এবং হোম কিচেন সার্ভিসই করেছেন উনারা। পাপা, চাচ্চুরা সবসময় কতো কনফিডেন্টের সাথে বলেন উনারা সেলফ মেড পারসন। আমরা যদি এই সুযোগটা কাজে লাগাই তাহলে হয়তো আমরাও একসময় বলতে পারবো আমরা সেলফ মেড পারসন। ভাইয়ার কথাটা আমাদের সবার পছন্দ হয়েছিল।

আদী হেসে বললেন, মাশাআল্লাহ! পছন্দ করার মতো কথাই বলেছে জিহাদ। আমরা যখন হোম কিচেন সার্ভিস শুরু করেছিলাম তোমাদের বয়সীই ছিলাম।

আবারো শুনতে চাই তোমাদের কিচেন সার্ভিস শুরু গল্পটা। বলো না আদীব্বা প্লিজ।

আদী হেসে বললেন, একবার ছুটিতে দেশে গিয়েছিলাম আমরা। ফেরার সময় মা, মামণি, আম্মি সবাই মিলে ভাপের পুলি পিঠা, মালপোয়া, নাড়ু আরো অনেক কিছু দিয়ে দিয়েছিলেন আমাদের ফ্রেন্ডদের জন্য। বিকেলে ফ্রেন্ডদেরকে যখন দিচ্ছিলাম তখন আমাদের পাশের ফ্ল্যাটের ডেভিডকে দেখে ওকেও দিয়েছিলাম। ডেভিডের বাসায় তখন ওর কিছু ফ্রেন্ড এসেছিল। ওরা মালপোয়া আর ভাপা পুলিপিঠা খেয়ে এতই মজা পেয়েছিল আবারও নিতে চলে এসেছিল ডেভিড। যা ছিল দিয়ে দিয়েছিলাম তখন। এর পরের উইকএন্ডে ডেভিড অনুরোধ করেছিল ওর এক ফ্রেন্ডের পার্টির জন্য দেড়শো মালপোয়া আর ভাপের পুলিপিঠা এনে দিতে পারবো কিনা। ডেভিড কে বলা হয়নি ওগুলো যে মা দেশ থেকে পাঠিয়েছিলেন। তাই ভেবেছিল আমরা হয়তো আশেপাশের কোন ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট থেকে এনেছি। আমরা হ্যা বা না কিছু বলার আগেই ডেভিড হান্ডেড ডলার হাতে গুঁজে দিয়ে বলেছিল, এতে হয়ে যাবে নাকি আরো লাগবে? ঐ সময় টাকায় বেশ প্রয়োজনও ছিল আমাদের। তাই বললাম, এরমধ্যেই হয়ে যাবে। এরপর ওকে বিদায় দিয়ে তোমার পাপা, আমি আর হুজাইফা মিলেই বানিয়ে ফেলেছিলাম মালপোয়া আর ভাপের পুলিপিঠা। মামণিকে ফোন করে জেনে নিয়েছিলাম সবকিছু। আলহামদুলিল্লাহ মোটামুটি ভালোই হয়েছিল। পার্টির সবাইও খুব পছন্দ করেছিল । পরের ইউকএন্ডে তিনটা পার্টি থেকে প্রায় এক চারশো পিসের অর্ডার পেয়েছিলাম।ডেভিড এরমধ্যে একদিন এসে যেখান থেকে খাবার আনি সেই রেস্টুরেন্ট এর ঠিকানা চাইলো। তখন ওকে জানালাম আমরা নিজেরাই বানিয়ে দিয়েছি। ডেভিড ব্যবসায়ী মানুষ তাই ব্যবসার বুদ্ধি দিলো আমাদেরকে। পরের উইকএন্ডে নিজের বাসায় পার্টি দিয়েছিল। এবং ওর সাথে কথা পরামর্শ অনুযায়ী আমরা নতুন কিছু খাবার বানিয়ে দিয়েছিলাম সেদিন। বীফ টিকিয়া কাবাব, বুন্দিয়ার লাড্ডু, চিকেন রোল এন্ড ভেজিটেবল পাকোড়া। প্রতিটা আইটেমই সবার ভীষণ পছন্দ হয়েছিল আলহামদুলিল্লাহ। এরপর থেকে এত অর্ডার আসতে শুরু করেছিল যে রীতিমত হিমশিম খেতে হতো আমাদেরকে। পাবলিসিটির কাজে ডেভিডই সবকিছু করেছে। ডেভিড পরামর্শ দিয়েছিল ফার্স্টফুড রেস্টুরেন্ট দেবার। কারণ আমাদের স্যান্ডুইচ, বার্গারও খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। কিন্তু প্রথমেই আমরা রেস্টুরেন্ট নেবার সাহস করতে পারিনি। তাছাড়া আমরা সবাই স্টুডেন্ট ছিলাম অতটা সময়ও ছিল না আমাদের। প্রায় দেড় বছর আমরা হোম কিচেন সার্ভিসই চালিয়েছি। এরপর পাবলিক প্লেসে একটা পুরনো রেস্টুরেন্টের খোঁজ এনে দিয়েছিল ডেভিড আমাদেরকে।

সেটাই ছিল তোমাদের প্রথম রেস্টুরেন্ট, তাই না? উচ্ছ্বাসিত কন্ঠে বললো নাবিহা।

আদী হেসে বললেন, হ্যা, আলহামদুলিল্লাহ। সেই রেস্টুরেন্টটাই ছিল আমাদের রেস্টুরেন্ট বিজনেস শুরুর প্রথম রেস্টুরেন্ট। ডেভিডের উৎসাহ ও পরামর্শে আমরা রেস্টুরেন্ট তো নিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু যেহেতু আমরা সবাই স্টুডেন্ট ছিলাম। পড়াশোনা ঠিক রেখে ফুল টাইম রেস্টুরেন্ট দেখাশোনা করার মতো কেউ ছিল না আমাদের। তাই আমরা ডেভিডের সাথে কন্টাক্ট এভাবে করেছিলাম যে ইনভেস্ট আমরা করবো, কি কি খাবার থাকবে সেই মেন্যু আমরা নির্ধারণ করবো। কিন্তু দেখাশোনা থেকে নিয়ে শুরু করে অন্যান্য অফিশিয়াল সব কাজ ডেভিড করবে। এজন্য সেলারি ছাড়াও প্রফিটের টুয়েন্টি পার্সেন্ট ওকে দেয়া হবে। ডেভিড রাজী হয়ে গিয়েছিল বলার সাথে সাথেই। এরপর কাজ শুরু করেছিলাম আমরা। পুরো রেস্টুরেন্টই নতুন করে ডেকোরেশন করেছিলাম। কোয়ালিটির দিকে খুব বেশি কেয়ারফুল ছিলাম আমরা। যাতে কেউ একবার আমাদের রেস্টুরেন্টে এসে খেয়ে যাবার পর, পরবর্তীতে আবারো আসার সময় সাথে করে নতুন কাউকে নিয়ে আসে খাবার টেষ্ট করানোর জন্য। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিভিন্ন ফ্লেবারের জ্যুস, আইসক্রিম, চা-কফি, স্যুপ এসব আমরা রেখেছিলাম অ্যালকোহলের চাহিদা দূর করার লক্ষ্য। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ এই আইটেমগুলোই আমাদের রেস্টুরেন্টের মূল আকর্ষণে পরিণত হয়েছিল। অনেক দূর থেকেও লোকজন আসতো আমাদের রেস্টুরেন্টে। ধীরে ধীরে আমাদের অভিজ্ঞতা যত বেড়েছে, খাবারের মান তত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেই সাথে খাদ্য প্রেমী মানুষও। এক পর্যায়ে গিয়ে রেস্টুরেন্টের সংখ্যা।

নাবিহা হেসে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ। আসলেই যখন মানুষ কল্যাণের পথে চলতে চেষ্টা করে, আল্লাহ সেটা সহজ করে দেন। কল্যাণের পথকে আমরাই কঠিন মনে করে এড়িয়ে যাই। নিজেদেরকে বঞ্চিত করি আল্লাহর করুণাধারায় সিক্ত হওয়া থেকে।

আদী হেসে বললেন, একথাটাই বেশির ভাগ মানুষ বুঝতে পারে না বা বোঝার চেষ্টা করে না। আল্লাহর উপর ভরসা করে বলে কিন্তু সেই ভরসা থেকে উদ্যোগ নেবার সাহস করে না। অথচ সেই ভরসার ভীত কতই না দুর্বল যা আমাদের কদমকে সামনে এগুবার সাহস পর্যন্ত দিতে পারে না। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের মনে এক মূহুর্তের জন্যও দ্বিধা কাজ করেনি। কারণ আমাদের লক্ষ্য ক্লিয়ার ছিল আমাদের কাছে। আমরা জানতাম কি করতে যাচ্ছি, কেন করতে যাচ্ছি। ব্যর্থতা আসতে পারে এই চিন্তাটাকেও আমরা মনের কাছে ভিড়তে দেইনি। হয়তো তখন সবে মাত্র আমরা টিনএজের গন্ডি থেকে বের হয়েছিলাম বলেই অন্যরকম উত্তেজনা ছিল মনে। রিক্স নিতে ভালো লাগতো। অ্যাডভেঞ্চার ভালো লাগতো। চিন্তার করার সাথে সাথেই অ্যাকশনে নেমে পড়তাম সবাই মিলে। ঐসময় একটাই ভাবনা ছিল আমাদের মনে, “ আমাদের উদ্দেশ্য যদি সুন্দর ও সঠিক থাকে তাহলে ব্যর্থতা আমাদেরকে স্পর্শ করতে পারবে না কিছুতেই।“ এই বিশ্বাস আর ভরসাকে আমরা সবসময় ইতিবাচক রুপেই ফিরে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ। তাই হয়তো প্রথম রেস্টুরেন্টটা দেবার সাড়ে তিন বছরের মধ্যে আমাদের রেস্টুরেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৩ টিতে। এবং সেই বছরই আমরা প্রথম সুপার স্টোর দিয়েছিলাম সমস্ত হারাম ফুড অ্যাভয়েড করে শুধুমাত্র হালাল ফুডের। এমনকি আমরা সন্দেহযুক্ত ই-কোড আছে এমন খাবারও অ্যভয়েড করেছি। উইলি দাদু তখন বিশাল বড় সাহায্য করেছিলেন আমাদেরকে। আমাদের নানাভাইয়ের এক আমেরিকান ফ্রেন্ড ছিলেন।

উইলি দাদু, তাই না আদীব্বা?

আদী হেসে বললেন, হ্যা উইলি দাদু। উইলি দাদুদের পারিবারিক বন্ধ পরে থাকা ফ্যাক্টরিটা আমাদেরকে উপহার স্বরূপ দিয়েছিলেন। যারফলে, আমাদের সুপার মার্কেট আমরা নিজস্ব প্রোডাক্ট দ্বারা সাজানোর সুযোগ পেয়েছিলাম আলহামদুলিল্লাহ। আমাদেরকে পার্টটাইম জবের জন্য তখন আর অন্য কোথাও যেতে হতো না। নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেই আমরা নিজেরা কাজ করেছি, আমাদের যেসব ক্লাসমেটদের জবের দরকার ছিল তাদেরকে কাজ দিয়েছি। এছাড়া অসংখ্য নীডি মানুষেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল এরফলে আলহামদুলিল্লাহ।

নাবিহা বলল, আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু পড়াশোনা সামলে এইসব কিছু দেখাশোনা নিশ্চয়ই অনেক বেশি কঠিন হয়েছিল তোমাদের জন্য।

আদী হেসে বললেন, কঠিন হতো যদি আমরা সংঘবদ্ধ না থাকতাম তাহলে। কিন্তু আমরা তো সর্বদা, সর্বাবস্থায় পরস্পরের হাত আঁকড়ে ধরে পথ চলেছি। আমাদের কারো জীবনে এমন কোন সফলতা নেই, যেটাকে ঘিরে বলতে পারি এটা আমার একার অর্জন। আমাদের একার কোন অর্জন নেই। যা কিছুই আছে সব আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতিফল আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের প্রতিটা কাজের পেছনে পরিষ্কার পরিকল্পনা ছিল। নিয়ম ছিল, রুটিন ছিল প্রতিটা কাজের। কেউ যাতে ভুলেও রুটিনে বা নিয়মে কোন উল্টা পাল্টা করতে না পারে সেজন্য আমাদের চারজনের একটা গ্রুপ ছিল। তাদের কাজ ছিল একাউন্ট দেখা আর সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া। যদিও মনেহতো ওরা হয়তো কম কাজ করছে, আরামে আছে। কিন্তু ওদের কাজই ছিল সবচেয়ে কঠিন। সাথীদের পিছনে অতন্দ্রপ্রহরীর মতো লেগে থাকতো ওরা চারজন। আলহামদুলিল্লাহ ওদের এই ধৈর্য্য, অধ্যবসায় ও ত্যাগের মূলধন যদি না থাকতো আমরা কখনোই হয়তো পারফেকশনিস্ট হতে পারতাম না কথা, কাজ ও আচরণে।

নাবিহা হেসে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ। আমার সেই চারটা সোনার টুকরো ছেলে যেন কে কে?

আদী হেসে বললেন, কুতায়বা, হুজায়ফা, হামজা আর মাহমুদ। তবে আম্মাজান আপনার এই সোনার টুকরোরা আপনার পাপার আত্মার একেকটা টুকরো।

নাবিহা হেসে বলল, হ্যা পাপা সবসময় বলেন, ‘আমার সাথীদের ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ। আমার জীবনের সবকিছু অসম্পূর্ণ। ওরা আছে বলেই আমি আছি। ওদের একজনও যদি আমাকে ছেড়ে সরে যায় আমার ভীত হেলে যাবে। আমার প্রতিজন সাথী আমার অস্তিত্বর অত্যাবশ্যকীয় অংশ।’ তোমাদের সবার বন্ধন অদ্ভুত সুন্দর আদীব্বা। কত বছর হয়ে গিয়েছে তাও তোমাদের বন্ধন আগের মতোই আন্তরিক, সুদৃঢ়। মত পার্থক্য অনেক হয় তোমাদের কিন্তু তোমাদের মন সবসময়, সর্বাবস্থায় একত্রিত থাকে। এর কারণ তোমাদের বন্ধনের কেন্দ্রবিন্দু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি ভালোবাসা। ইনশাআল্লাহ আমরাও নিজেদেরকে এভাবেই গড়বো। এখন তাহলে আমি যাই আদীব্বা।

আদী বললেন, যাবে মানে? তোমাদের হোম কিচেন সার্ভিসের ঘটনা বলবে না?

নাবিহা হেসে বলল, অবশ্যই বলবো তবে এমন একা একা না। এটা আমাদের সবার অর্জন তাই সবাই মিলে একসাথে বলবো ইনশাআল্লাহ।

আদী তখন হাসি মুখে নাবিহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। নাবিহাও হাসতে হাসতে চলে গেলো।

চলবে…

পর্ব-৫

 

মানুষের সুচিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যসেবা

মানুষের সুচিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যসেবা


ডাঃ সাকলায়েন রাসেল


ইন্টার্নিশিপের সময় ২ বছর করায় তীব্র প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছেন…চিকিৎসক ও হবু চিকিৎসকরা! সম্ভাব্য আন্দোলনের দাবানল মেডিকেলে মেডিকেলে।

২ বছর ইন্টার্নিশিপের বিষয়ে আমি একটি প্রশ্ন রেখেছিলাম…এতে প্রায় ১২ শ চিকিৎসক, হবু চিকিৎসক মন্তব্য করেছেন!

মাত্র ২ জন…দুই বছরের পক্ষে মত দিলেও বাকী সবাই এর বিপক্ষে মত দিয়েছেন!

উল্লেখ্য, বর্তমানে MBBS পাশ করতে মোট ৬ বছর সময় লাগে। এরমধ্যে ৫ বছর একাডেমিক সময়, ১ বছর ইন্টার্নিশিপ।
২০১৯ সালের প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী ৫ বছর একাডেমিক, ২ বছর ইন্টার্নিশিপ।
ইন্টার্নিশিপের ২ বছরের মধ্যে আবার ১ বছর গ্রামে থাকতে হবে।

শুরুতেই জানিয়ে রাখি উক্ত নিয়ম শুরু থেকেই কার্যকর আছে গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেলে। যারা প্রবক্তা বহুল আলোচিত
ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী।
এখানে তাই ইন্টার্ন সময় দেড় বছর।
১ বছর নিজ মেডিকেলে, ৬ মাস বাইরে।
এটা নিয়ে সেখানকার ডাক্তাররাও শুরু থেকেই প্রতিবাদী। কিন্তু প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস কেউ করেন না।

যারা ২ বছর করার পক্ষে তাদের মত হলঃ
১. এতে নবীন চিকিৎসকরা অধিক দক্ষ হবেন।
২. গ্রামের মানুষ সুচিকিৎসা পাবেন।
৩. উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এটা করা হচ্ছে।

কিন্তু যারা বিপক্ষে তারা এটা মানতে নারাজ।
তাদের যুক্তি হলঃ
১. এতে করে শিক্ষাজীবন অহেতুক বৃদ্ধি পাবে। সাধারণ মানুষ চিকিৎসক হতে নিরুৎসাহিত হবেন।
২. ইন্টার্ন ডাক্তাররা গ্রামের মানুষদের চিকিৎসা দিতে পারবেন না। তারা সুপারভাইজড ট্রেইনিং করতে পারবেন মাত্র।
৩. গ্রামে পর্যাপ্ত কনসালটেন্ট নেই। সেক্ষেত্রে ইন্টার্ন ডাক্তারদের ট্রেইনিং কে দিবে, তারা রোগীর চিকিৎসাই বা কিভাবে করবে?
৪. উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে চাইলে MBBS এর সময় কমানো উচিত।
ইন্ডিয়ায় এমবিবিএস সাড়ে ৫ বছর, দুনিয়ার কোথাও এবিবিএস পাশ করতে ৭ বছর লাগেনা।
৫. অনেকে ডাক্তার বেকার আছে। গ্রামের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাই এসব ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হোক।
৬. গ্রামে পর্যাপ্ত জনবল, অবকাঠামো না থাকায়, নিরাপত্তা সমস্যা মনে করছেন অনেকে, বিশেষ করে নারী নবীন চিকিৎসকরা।
৭. বাংলাদেশের মেডিকেল গুলোতে অনেক বিদেশী স্টুডেন্ট পড়ালেখা করছেন। তাদের মাধ্যমে মোটা অংকের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। ৭ বছর হলে তারা নিরুৎসাহিত হবেন। তারা কখনোই গ্রামে যেতে চাইবেন না।
৮. ইন্টার্ন নিয়োগ দিয়ে গ্রামের মানুষের চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানোর কথা বলা তাই স্রেফ ধোঁকাবাজি মনে করছেন কেউ।
৯. মেডিকেলে একবারে পাশ করার হার খুব বেশি না। তাই ফেল করলে তাদের শিক্ষাজীবন আরো বিলম্বিত হবে।
১০. এমবিবিএস পাশ করতেই যদি ৭ থেকে ১০ বছর লেগে যায় তবে পোস্ট গ্রাজুয়েট শুরু করবে কখন।

এসব দিক বিবেচনায় ইন্টার্নিশিপ সময় ২ বছর করার বিরোধিতা করছেন শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয় আন্দোলনসহ আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পক্ষেও তারা।
কারণ, এখন যারা মেডিকেলে পড়ছেন তাদের প্রজ্ঞাপনে ১ বছর ইন্টার্নির কথা বলা ছিল।
হঠাৎ করে ২ বছরের আইন করলে তা আগামী ৬ বছর পর করতে হবে। কারণ নতুন ব্যাচ মেডিকেলে ভর্তি হলে তারা আগে থেকেই জানবে ইন্টার্নশিপ ২ বছর।

খসড়া নীতিমালা চুড়ান্ত করার আগে তাই এসব বিষয় বিবেচনা করা উচিত বলে করছেন সচেতন মহল।

 

স্মৃতির জোনাকি…৫

স্মৃতির জোনাকি…৫


আফরোজা হাসান


চা নিয়ে ব্যালকনিতে বসার পর তাসমিয়া বলল, আমার ফ্রেন্ড ঈশাকে তো তুমি চেনোই। ওর সমস্যা নিয়ে তোমার সাথে আলোচনা করতে চাচ্ছি ভাবী। ঈশা আর ওর হাজবেন্ডের চমৎকার রিলেশন ছিল। অনেকটা আমাদের বাড়ির ক্যাপলদের মতো সম্পর্ক ছিল ওদের হাজবেন্ড ওয়াইফের মাঝে বিয়ের পর থেকে গত দশ বছর। সারাক্ষণ দুষ্টুমি, খুনসুটি করতো দুজন। ওদের দুই মেয়ে। বড় মেয়ের বয়স সাত, ছোটটার চার। দুজনই যথাসাধ্য শরীয়তের বিধিবিধান মেনে চলার চেষ্টা করতো জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই। মাঝে বছর খানেক যোগাযোগ ছিল না ওর সাথে তেমন। সপ্তাহ খানেক আগে ঈশার হাজবেন্ড সাফী ভাই যোগাযোগ করেছেন আমার সাথে। তখন জানতে পারলাম ঈশা ডিভোর্স ফাইল করেছে। কারণ কি জানতে চাইলে সাফী ভাই জানালেন, বিয়ের আগে অন্য এক মেয়ের সাথে উনার রিলেশন ছিল। পারিবারিক কারণে বিয়ে হতে পারেনি। পরে ঈশার সাথে বিয়ে হয়েছিল। ঈশা খুবই ভালো মেয়ে। এত ভালো একটি মেয়েকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পেয়ে সাফী ভাই অতীত একদম ভুলে সুখের সংসার গড়ে তুলেছিল দুজন মিলে। গত রোজার ঈদের সময় ফেসবুকে আগে যে রিলেশন ছিল সেই মেয়েটার সাথে সাফী ভাইয়ের আবার কন্টাক্ট হয়। প্রথম দিকে দুজন শুধুমাত্র ফ্রেন্ডের মতো কথাবার্তা বলেছে। কিন্তু এভাবে কথা বলতে বলতে দুজন কাছাকাছি চলে আসে পুনরায়। অতীতের স্মরণ করতো দুজন, দুজনের বিয়ে হলে কত ভালো হতো সেসব কল্পনা জল্পনা করতো, বিচ্ছেদের জন্য একে অন্যকে দায়ী করে অভিমান করতো, এভাবে চলতে চলতে আবার পুরনো প্রেম জেগে উঠেছিল দুজনের মনে। একদিন ঈশা সাফী ভাইয়ের ম্যাসেঞ্জারে ঢুকে দেখে দুজনের প্রেমালাপ, মন জুড়ে এখনো তুমি, তোমারে পারিনি ভুলতে টাইপের হাহুতাশ। ঈশা জানার পর সাফী ভাই নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। কিন্তু ঈশার কথা হচ্ছে, স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের ভিত্তিই হচ্ছে বিশ্বাস। বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে ভালোবাসা, সম্মান কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। এমন প্রাণহীন সম্পর্ক না আমাদের জন্য কল্ল্যাণকর হবে, না আমাদের সন্তানদের জন্য। তাই ডিভোর্সই উত্তম। সাফী ভাই অনেক ক্ষমা চেয়েছে, প্রেমিকাকে সব কিছু থেকে ব্লক করে দিয়েছে, সম্পর্ক একেবারে ছিন্ন করেছে কিন্তু ঈশা কিছুতেই রাজী হয়নি ক্ষমা করে দিয়ে পুরনায় সংসার করতে। দুই মেয়েকে নিয়ে ঈশা চলে গিয়েছে ওর বাবার বাড়িতে। সাফী ভাই জানেন ঈশা যে তোমাকে ভীষণ পছন্দ করে। তাই আমাকে অনুরোধ করেছেন আমি যেন তোমাকে বলি ঈশাকে বোঝানোর চেষ্টা করতে। তুমি কি ঈশার সাথে কথা বলবে ভাবী? ওর ফোন নাম্বার দেবো?

তাসমিয়ার প্রশ্ন শোনার পরও বেশ কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর নূহা বলল, কি কথা বলবো? আমার কাছেও দাম্পত্য জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বিশ্বাস। কারো প্রতি বিশ্বাস না থাকলে তাকে শ্রদ্ধা, সম্মান করাও যায় না। আর শ্রদ্ধা, সম্মান, বিশ্বাস ছাড়া কোন সম্পর্ক টিকে থাকবে কিসের উপর ভিত্তি করে? ঈশার স্থানে আমি থাকলে আমি নিজেও হয়তো ঈশার মতোই সিদ্ধান্ত নিতাম। আমি নিজে যে কাজ করবো সেই কাজের বিপরীত কিছু করার জন্য আরেকজনকে কিভাবে উৎসাহিত করবো? তুমি বরং তোমার ভাইজানকে বলো এই বিষয়টা দেখতে। উনি আমার চেয়ে উত্তম পরামর্শ দিতে পারবেন সাফী ভাইকে উনার করণীয়র ব্যাপারে।

তাসমিয়া বলল, ভাইজানকে আমি বলেছি ভাবী। ভাইজান সাফী ভাইকে বিকেলে আসতেও বলেছেন কথা বলার জন্য। কিন্তু ঈশার সাথে কথা তোমাকেই বলতে হবে। ভাইজানও এই কথাই বলেছেন আমাকে।

কোন কথা?

ভাইজান বলেছেন, তোমাকে ভাবীকে বলো ঈশার সাথে কথা বলতে। দুষ্টু মিষ্টি মিশ্র হাসির অভিব্যক্তি ছড়িয়ে পড়লো তাসমিয়ার চেহারা জুড়ে। কিছু কিছু ব্যাপারে নূহা ভীষণ রকম অনুদার সেই তথ্য বেশ ভালো করেই জানা আছে তাসমিয়ার। জানে যে ব্যাপারগুলোতে নূহা কাউকে কনভিন্স করতে নারাজ তারমধ্যে একটি হচ্ছে বিশ্বাস ভঙ্গ। বিশেষ করে দাম্পত্য সম্পর্কে ধোঁকা দেয়া একেবারেই মেনে নিতে পারে না নূহা। সেজন্যই আগে জাওয়াদের কাছেই গিয়েছিল ঈশা, সাফীর সমস্যা নিয়ে তাসমিয়া। কারণ পুরো দুনিয়াতে জাওয়াদই একমাত্র ব্যক্তি যার বলা কোন কথা অপছন্দীয় হলেও বিরোধ করার আগে নূহা দ্বিতীয়বার ভেবে দেখে।

বেশ কিছুক্ষণ নিশ্চুপ বসে থাকার পর নূহা বলল, সাফী ভাই যখন তোমার ভাইজানের সাথে কথা বলতে আসবেন আমাকে বলো। আমি আড়াল থেকে উনাদের কথোপকথন শুনবো। এরপর যদি আমার মনেহয় ঈশার সাথে কথা বলা উচিত তাহলে বলবো ইনশাআল্লাহ।

তাসমিয়া বলল, ঠিকআছে ভাবী। কোন ব্যাপার নিজে মেনে নিতে না পারলে, অন্যকে মানাতে যাওয়াটা আসলেই অনেক কঠিন।

নূহা হেসে বলল, উহু, মোটেই কঠিন না। বরং নিজে মান্য বা আমল না করে অন্যকে সেই ব্যাপারে উৎসাহিত করাটা বর্তমানে মানুষের স্বভাবধর্মে পরিণত হয়েছে। নিজে ভুলের পথে থেকে অন্যকে সঠিক পথের দিশা বাতলে দেয়ার মানুষের অভাব নেই। সেজন্যই হয়তো মাহফিলে স্ত্রীর হক আদায়ের উপরে বক্তব্য উপস্থাপন করা ব্যক্তি ঘরে ফিরে নিজের স্ত্রীকে অপমান, ভৎর্সনা, এমনকি গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধা করেন না। কিন্তু আমি এমন কিছু করতে চাইনা। আমি নিজে যা করবো না, অন্যকেও তা করতে বলবো না। যে বিষয়টা আমার পক্ষে মেনে নেয়া কঠিন, তেমন কিছু করার জন্য আমি কেন অন্য কাউকে বোঝাতে যাবো?

হুম, তোমার কথাও ঠিক আছে ভাবী। আচ্ছা তুমি সাফী ভাইয়ের কথা শুনে দেখো। এরপর যদি তোমার মনেহয় ঈশার সাথে কথা বলা উচিত তাহলে বলো। এখন ঈশার কথা বাদ। এখন আমার দুঃখের কথা শোনো এবং সমাধান দাও।

নূহা হেসে বলল, শোনাও তোমার দুঃখগাঁথা।

তাসমিয়া বলল, তোমার ভাই আমার হাজবেন্ড কম, দোস্ত বেশি এই তথ্য তো জানোই। এমনিতে সে ভীষণ ভালো একটা ছেলে এই তথ্যও তুমি জানো। সেই তথ্য তুমি জানো না সেটা হচ্ছে রাগ হলেই তোমার ভাই আউলা ঝাউলা হয়ে যায়। আমি রাগ করার মতো কর্মকান্ড করি সেটা মানছি। কিন্তু রাগ করার মতো কিছু করলেই কি সবসময় রাগ করতে হবে? ভালোবাসার মতো কত কাজও তো করি। কই সবসময় তো ভালোবেসে ভাসিয়ে দেয়না আমাকে। তাহলে রাগ দেখাতে এমন ভুলে যায় না কেন? ব্যস্ততার কারণে রাগ দেখানোর সময়ের অভাবে বকেয়াই পরে থাকে না কেন? তুমিই বলো ভাবী আমি কি খুব বেশি ভুল কিছু বলেছি?

নূহা হাসতে হাসতে বলল, মোটেই না।

তাসমিয়া বলল, তবে রাগ দেখানো নিয়েও আমার তেমন কোন অভিযোগ নেই। রাগলে তোতলা টাইপ হয়ে যায় তোমার ভাই। তোতলামো কথাগুলো শুনতে এত্তো কিউট লাগে যে কি বলবো! আমি ওর কিউটনেস দেখাতেই ব্যস্ত থাকি বিধায় রাগ করে কি বলছে না বলছে গায়ে মাখি না কখনোই খুব একটা। বকা দিলেও আমিই নিজ থেকে যেয়ে কথা বলি।। কিন্তু উমার ঠিক আমার উল্টো। আমি যদি রাগ করে কিছু বলি ওর গালে পানি এসে যায় একদম। মানে ফুলে ঢোল আরকি! সমবয়সী বিয়ে করার জ্বালাও কম না বুঝলে ভাবী। এই যেমন, তিন বাচ্চাকে আমার কাছে রেখে লাফাতে লাফাতে ছোট ফুপির ছেলের বিয়ে খেতে চলে গেলো গত পরশু। কথা ছিল গতরাতে চলে আসবে। কিন্তু ভাই-বন্ধুদের সাথে আনন্দে মশগুল থেকে আসেনি। আজকে ফার্স্ট ফ্লাইটে ওর চলে আসা উচিত ছিল কিনা বলো? আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম নয়টায় মধ্যে উমার আমার সম্মুখে থাকবে ইনশাআল্লাহ। ওর পছন্দের নাস্তাও রেডি করলাম ফজরের পর না ঘুমিয়ে। নাস্তা রেডি করে ফুপির বাসায় ফোন করেছিলাম উনাদের খোঁজখবর নেয়ার জন্য। তখন কথায় কথায় ছোট ফুপি জানালো উমার এখনো ঘুমোচ্ছে। মাথায় তখন বাজ পড়বে কিনা বলো? অবশ্যই পড়বে। আমারও পড়লো। মনেহলো একা জ্বলবো কেন? যার কারণে বাজ পড়েছে তারেও পুড়িয়ে ছারখাড় করে দেবো। যাইহোক, ফোন করে লেডি টারজান হয়ে কিছুক্ষণ চিৎকার করলাম। তোমার ভাইয়ের এতবড় দুঃসাহস সে নিজের ভুল স্বীকার না করে উল্টা আমাকে ঝাড়ির উপর ঝাড়ি। কবে আমার কারণে তার মেয়েদের জ্বর হয়েছে, কবে তার ছেলে একা একা রান্নাঘরে গিয়ে হাত পুড়িয়েছে, কবে আমি সুপার মার্কেটে গিয়ে নিজের মনে কেনাকাটা করতে করতে বাচ্চাদেরকে আরেক সারিতেই ফেলে এসেছিলাম, ইত্যাদি ইত্যাদি বিশাল লিষ্ট। বললাম, চিৎকার করে এসব কথা বলছো কেন? ফুপিরা শুনলে কি ভাববে? উমার বলল, ফুপিরা যাতে শোনে সেজন্যই জোরে জোরে বলছি। তোমার কর্মকান্ড মাইকিং করে বলার মতো। বাড়ির সবার জানা উচিত কেমন মেয়ে তারা আমার ঘাড়ে চাপিয়েছে। আর কিছু না বলে আমি ফোন রেখে দিলাম। এরপর থেকে আমার মাথা কাজ করছে না। তুমি বুদ্ধি দাও কিভাবে ঘাড়ের বোঝা বাড়িয়ে ওর ঘাড় মটকে দেয়া যায়। আমি মটমট শব্দও শুনতে চাই ওর ঘাড় ভাঙ্গার। হাসি থামাও তো ভাবী পরামর্শ দাও।

নূহা হাসতে হাসতে বলল, পরামর্শ থাক তারচেয়ে দোয়া দেই। দোয়া করি, সারাজীবন তোমরা দুজন এমনই থাকো, খুনসুটি ভালোবাসা দিয়ে পরস্পরকে আঁকড়ে রাখো। কখনো সখনো হলে হোক মত পার্থক্য,কিন্তু উভয়ের মন থাক একাকার অটুট থাকুক ঐক্য।

তাসমিয়া হেসে বলল, তোমার দোয়ায় আমীন।

একটুক্ষণ চুপ থেকে হাসি মুখে নূহা বলল, সুইজারল্যান্ড গিয়ে তুষার ঝড়ে আটকা পড়েছিলাম একবার। আমাদের থাকার প্ল্যান ছিল না। সকালের ফ্লাইটে গিয়েছিলাম। কাজ শেষ করে বিকেলের ফ্লাইটেই ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু প্রচুর তুষারপাতের কারণে আটকা পরে গিয়েছিলাম। তাও আবার মাঝপথে গাড়ির ভেতর। সামনে যাবার পথ ছিল বন্ধ আর পেছনে আমাদের মতো শুভ্র বরফের শ্রাবণে আটকা পরা আরো কয়েকজন ব্যক্তি। করুন চোখে আমার সফরসঙ্গীর দিকে তাকিয়েছিলাম। উনি মিষ্টি করে হেসে আশ্বাস ভরা কন্ঠে বলেছিলেন, এদিকটাতে এমনটা হয় প্রায়ই। চিন্তার কিছু নেই কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে সবকিছু ইনশাআল্লাহ। কিন্তু উনার কথা উল্টো প্রমাণিত হলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই আঁধার নেমে এলো এবং সেই সাথে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। গরম কাপড় যা ছিল তা মোটেই যথেষ্ট ছিল না। কোথাও থেকে গরম কাপড় কিনে নেবার মতো অবস্থাও ছিল না। আমার সফরসঙ্গী বড়ই রোম্যান্টিক ছিলেন। ঐ রকম ভয়ঙ্কর ঠান্ডার মধ্যেও মুখে হাসি টেনে দু’হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, স্বামীরা শত ভালো কথা বললেও তো স্ত্রীদের সেটা মনঃপুত হয় না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কুরআনে বলে দিয়েছেন, “আমি তোমার পরিচ্ছদ এবং তুমি আমার পরিচ্ছদ”। সুতরাং, একে অন্যেকে ঢেকে রাখার, উষ্ণতা দেয়াটাই আমাদের ফার্স্ট ডিউটি। অন্যসময় হলে এই আহ্বান হয়তো বাতাসেই উড়িয়ে দিতাম। কিন্তু ঐ মূহুর্তে দরকার ছিল পরিচ্ছদের, তারচেয়েও বেশি উষ্ণতার।

হাসি একান ওকান বিস্তারিত করে তাসমিয়া হেসে বলল, ভাইজান ছিলেন তোমার সাথে?

তাসমিয়া প্রশ্ন শুনেও না শোনার ভান করে হাসি মুখে নূহা বলল, সূরা বাকারাহ এর ১৮৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,” তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ”। জীবনে এরআগে অসংখ্যবার এই আয়াত ও তার ব্যাখ্যা পড়েছিলাম, শুনেছিলাম। কিন্তু সেদিন প্রথম আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়েছিলাম উষ্ণতার আশায়। অন্যরকম একটা অনুভূতি ছিল ভালো লাগার। কিন্তু তারচেয়েও বেশি ছিল কারো পরিচ্ছদ হবার উপলব্ধি। পোশাক আসলে কি? যা আমাদেরকে ঢেকে রাখে। কিন্তু এই ঢেকে রাখার মাঝেও আছে বৈচিত্রতা। পরিবেশ-পরিস্থিতি, ঋতু-প্রকৃতি, আবহাওয়া ইত্যাদির প্রভাবে পোশাকের বদলে যাওয়া ধরণ। গরমের সময় পাতলা, নরম সুতি কাপড়ের পোশাক কতই না আরামদায়ক। শীতের সময় সেই পোশাকই হয়ে দাঁড়ায় শারীরিক কষ্টের কারণ। আবার শীতপ্রধান দেশের ভারি ওভারকোর্ট মরুভূমিতে বড়ই বেমামান। তেমনি বরষার রেইনকোর্ট গায়ে বসন্তের বুকে চলাও হাস্যকর। মূলকথা, বদলে যায় পোশাকের ধরণ, যখন হয় পরিবেশ ও অবস্থার পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তন মোটেই অপ্রয়োজনীয় কিছু নয়। বরং স্বাভাবিক জীবনযাত্রার জন্য অতীব জরুরি। মনে প্রশ্ন জাগাটা খুব স্বাভাবিক যে, তাহলে কি পরিবেশ ও পরিস্থিতি ভেদে, মনের ঋতু ও আবহাওয়ার পরিবর্তনে আমাদের মানসিক পরিচ্ছদের বদলটাও স্বাভাবিক নয়? স্বাভাবিকের সাথে সাথে অতীব জরুরিও আসলে।

হুম, এভাবে তো ভেবে দেখিনি কখনো। বললো তাসমিয়া।

নূহা বলল, স্বামী-স্ত্রীর বন্ধনটাকে ভীষণ অদ্ভুত, বিস্ময়কর মনেহয় সবসময়ই। দুজন মানুষ যাদের মধ্যে থাকে না কোন রক্তের সম্পর্ক, থাকে না আত্মীয়তার বন্ধন। না থাকে বন্ধুত্ব, না কোন গভীর পরিচিতি। তবুও কি বিস্ময়কর ভাবে জুড়ে যায় পরস্পরের সাথে। এমন একটা বন্ধন যেটা মোটেই অটুট না। বরং ভেঙে যেতেই পারে প্রতিকূলতায় এমন গ্যারান্টি প্রাপ্ত। অথচ সেই বন্ধনের উপর ভর করেই দুজন মানুষ শ্রদ্ধা, সম্মান, বিশ্বাস, ভরসা ও ত্যাগের ফোঁড়ে গড়ে তোলে সুখ-স্বপ্ন-ভালোবাসার নকশীকাঁথা। অচেনা দুজন মানুষ হয়ে যায় সবচেয়ে আপন কেউ, কাছের কেউ, চিরচনা কেউ, সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্ক্ষী, মর্মব্যথী, পরম নির্ভরতার ও প্রশান্তির আশ্রয়। আগলে রাখে একে অন্যেকে সকল নেতিবাচকতা থেকে। ঠিক যেন পোশাকের মতোই। তবে খুব কম সময়ই হয়তো খেয়াল থাকে পোশাকের বৈচিত্রতার কথা। পরিবেশের সাথে সামঞ্জন্সতার কথা। বর্তমান অবস্থায় পরিহিত পোশাকটা ঋতু ও আবহাওয়ার সাথে মানান সই কিনা সেই বিবেচনাটা খুব জরুরি। কারণ কনকনে ঠান্ডায় কারো তরে ফিনফিনে মসলিন হয়ে কি লাভ? কি লাভ প্রখর রৌদ্দুরে উলের সোয়েটার হয়ে? আবার কে বলেছে অঝর শ্রাবণে ছাতা হয়ে লাভ নেই? কে বলেছে ছাতা পরিচ্ছদ নয়? কে বলেছে মরুর বুকে ঝর্ণাধারাই হতে হবে? সাইট ব্যাগে থাকা মিনারেল ওয়াটারের বটল হওয়া যাবে না? এই কথাই বা কে বলেছে?!

এভাবে তো কখনোই চিন্তা করিনি ভাবী।

এখন বসে বসে ভাবো। আমি ততক্ষণে পতিসেবা করে আসি। নাস্তা নিয়ে আসি তোমার ছোট ভাইয়া। বলে হাসতে হাসতে চলে গেলো নূহা।

আর তাসমিয়া গালে হাত দিয়ে ভাবনায় মশগুল হলো।

চলবে..

পর্ব-৪

 

স্মৃতির জোনাকি…৪

স্মৃতির জোনাকি…৪


আফরোজা হাসান


মামণি একই রকম শাড়ি দুইটা কেন? বড় বড় আঁখিদুটি আরেকটু বড় করে বেশ অবাক কন্ঠে প্রশ্ন করলো নাবিহা।

প্রশ্ন শুনে বুক সেলফ গুছানো ছেড়ে হাসি মুখে মেয়ের দিকে তাকালো নূহা। সেই হাসি সম্পূর্ণ চেহারাতে বিস্মৃত করে বলল, প্রথম যেদিন আমার মাঝে তোমার অস্তিত্ব টের পেয়েছিলাম আমার কি মনে হয়েছিল জানো?

কি মনে হয়েছিল মামণি? আহ্লাদিত কন্ঠে প্রশ্ন করলো নাবিহা।

এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে মেয়েকে কাছে টেনে নিয়ে সুখানন্দ ও মমতা মিশ্রত কন্ঠে নূহা বলল, মনে হয়েছিল পুরো পৃথিবীটা ফুলে ফুলে ছেয়ে গিয়েছে। আকাশের বুকে বসেছে লক্ষ, কোটি নক্ষত্রের মেলা। ইচ্ছে করছিল সমস্ত ফুল আর নক্ষত্র তুলে নিয়ে একটা ফুলেল দোলনা বানাতে তোমার জন্য। যে দোলনার ভাঁজে ভাঁজে ঝিকমিক করবে বর্ণিল নক্ষত্রের আলো। আনন্দে আমি দিশাহারা হয়ে গিয়েছিলাম। রিমঝিম বরষা রুপে আনন্দরা অবিরাম ঝরছিল মনের মাঝে। কত শত প্ল্যান যে করে ফেলেছিলাম সেদিন তোমাকে ঘিরে। তারমধ্যে একটি প্ল্যান ছিল তুমি যেদিন প্রথম শাড়ি পড়বে সেদিন মা আর মেয়ে দুজন একই রকমের শাড়ি পড়বো, চুড়ি পড়বো। এরপর হাত ধরাধরি করে বাগানে ঘুরে বেড়াবো।

আনন্দ, খুশি, মুগ্ধতা ও ভালোবাসার মিশ্র পরশে নাবিহা দুহাত বাড়িয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো মাকে। এরপর শাড়ি দুটো নিয়ে কিছুক্ষণ বুকে জড়িয়ে ধরে রেখে আনন্দসিক্ত কন্ঠে বলল, সেদিন তুমি আমাদের দুজনের জন্য একই রকম শাড়ি কিনেছিলে?

নূহা হেসে বলল, হুম। স্পেশাল কিছু মূহুর্ত আছে যা একবারই আসে আমাদের জীবনে। কিন্তু সেই মূহুর্তগুলোর প্রাপ্তি জীবনকে জড়িয়ে থাকে প্রতিক্ষণে। তোমার অস্তিত্বের উপলব্ধি তেমনই একটি মূহুর্ত।

নাবিহা বলল, ইশশ, কতই না ভালো হতো আমি যদি তোমার ভেতর একা থাকতাম। তাহলে তোমার সমস্ত অনুভূতি শুধু আমার একার হতো। ভাইয়া আর জিশানকে ভাগ দিতে হতো না।

নূহা হেসে ফেললে নাবিহাও হাসতে হাসতে বলল, অনেক বেশি সুন্দর শাড়ি দুটা মামণি। কিন্তু এত বছর তুমি আমাকে দেখাওনি কেন?

নূহা হেসে বলল, আমি তো আজকেও তোমাকে দেখাতে চাইনি। আমার ইচ্ছে ছিল স্পেশাল কোন দিনে তোমাকে এই উপহারটা দেবো। সিন্দুকে বন্দী থেকে ভাঁজে ভাঁজে শাড়ি যাতে নষ্ট হয়ে না যায় তাই মাঝেমধ্যে রোদে মেলে দেই। গতকালও দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আজকে আবার লুকিয়ে রাখবো সিন্দুকে। কিন্তু তার আগেই তুমি দেখে ফেলেছো।

নাবিহা হেসে বলল, ঠিকআছে আমি আমার মস্তিষ্কের মেমোরী কার্ড থেকে শাড়ি দেখার এই দৃশ্যটি ডিলিট করে দিলাম। তুমি শাড়ি দুটা সিন্দুকে ঢুকিয়ে রাখো মামণি। স্পেশাল সেই দিনটি যখন আসবে তখন তুমি আর আমি এই শাড়ি পড়বো, চুড়ি পড়বো এরপর হাত ধরাধরি করে বাগানে হাঁটবো।

নাবিহার কথাগুলো আনন্দ-বেদনার মিশ্র ঢেউ তুলে দিলো নূহার মনে। আনন্দ, কারণ এতটা বছর ধরে কল্পনায় দেখা সেই আকাঙ্ক্ষিত দিনটি হয়তো খুব শিঘ্রীই বাস্তব হতে চলছে। বেদনা, কারণ তার ছোট্ট পরীটা বড় হয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে। মনেহয় এই তো সেদিন নূহার অন্ধকার জীবনকে আলোকিত করতে হাজির হয়েছিল তিনটি নক্ষত্র। দেখতে দেখতে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় আঠারো বছর। আর মাত্র চার মাস পরই আঠারোর ঘর ছুঁয়ে দেবে জিহাদ, জিশান, নাবিহা। নাবিহাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে দিয়ে নূহা হেসে বলল, ইনশাআল্লাহ।

নাবিহা হেসে বলল, এখন তাহলে বলে দাও ঈদে আমি কাকে কি গিফট দেবো। তুমি তো জানো আমার বাজেট অল্প। অল্প বাজেটেই আমি বাড়ির সবার জন্য কিছু না কিছু উপহার কিনতে চাই। এবং একই সাথে চাই যাকে যেই উপহার দেবো সেটা যেন তার কাজে লাগে। পাপা, আদীব্বা, বাবার জন্য উপহার আমি সিলেক্ট করে ফেলেছি। তিনজনের জন্যই পাঞ্জাবী অর্ডার করেছি। আমার দেয়া পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে পাপা, আদীব্বা, বাবা ঈদের নামাজে যাবে ইনশাআল্লাহ। আমার খুব ইচ্ছে ছিল ভাইয়া, জিশান আর জারিফের জন্যও একই রকম পাঞ্জাবী অর্ডার করার। কিন্তু তাহলে বাড়ির সবার জন্য উপহার নিতে পারবো না।

নূহা হেসে বলল, তুমি চাইলে আমার কাছ থেকে লোন নিতে পারো। পরে শোধ করে দিও।

নাবিহা বলল, আমিও প্রথমে এমনটাই করবো ভাবছিলাম। কিন্তু পরে পাপার কথা মনে পড়লো। পাপা একদিন বলেছিলেন, অর্থ ধার করা যায় কিন্তু আনন্দ না। নিজ সামর্থ্যর ভেতর থেকে মানুষের জন্য কিছু করতে পারার যে সুখ সেটা কখনোই অন্য কারো কাছ থেকে ধার করে পাওয়া সম্ভব না।

নূহা হেসে বলল, তোমার পাপা একদম ঠিক বলেছেন। আমার থেকে লোন নিয়ে তুমি হয়তো সবাইকে পছন্দনীয় উপহার দিতে পারবে। কিন্তু সেই প্রশান্তি কখনোই অনুভব করবে না, যেমনটা তোমার অল্প বাজেটের মধ্যেই সবার জন্য উপহার কিনলে অনুভূত হবে।

নাবিহা হেসে বলল, এজন্যই তো লোন চাইনা। পরামর্শ চাই অল্প টাকায় সবার জন্য অধিক খুশি কেনার।

নূহা হেসে বলল, পাঞ্জাবীর সাথে তোমার পাপাকে একটা গাছও উপহার দিও।

পাপার বেডরুমের জন্য আমি অলরেডি স্নেক প্ল্যান্ট কিনে ফেলেছি।

নূহা হেসে বলল, এত গাছ থাকতে স্নেক প্ল্যান্ট।

নাবিহা হেসে বলল, নাম শুনে তুমি ভীত হয়ো না মামণি। গুণের শেষ নেই স্নেক প্ল্যান্টের। আমি স্টাডি করে জেনেছি স্নেক প্ল্যান্ট রুমে থাকলে রুমে অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি হয়না। বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইডও শুষে নেয়। এছাড়াও স্নেক প্ন্যান্ট নাইট্রোডেন ডাই অক্সাইড ও ফার্ম্যালডিহাইডের মতো ক্ষতিকারক গ্যাসসমূহকেও শোষণ করে ঘরকে দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

নূহা হেসে বলল, আলহামদুলিল্লাহ। তাহলে তো পার্ফেক্ট সিলেকশন। আচ্ছা আমাকে চিন্তাভাবনা করার জন্য কিছুটা সময় দাও। বিকেলে তোমাকে জানাবো কাকে কি উপহার দেয়া যায়।

কথাবার্তা তো শেষ এখন তাহলে আপনি প্রস্থান করেন আম্মাজান। কারণ আমার ভাবীজানের সাথে অতি জরুরি বিষয়ে শলাপরামর্শ করতে হবে আমাকে এখন। রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো তাসমিয়া।

নাবিহা চোখ বড় বড় করে বলল, তারমানে তুমি এতক্ষণ আমার আর মামণির কথা আড়িপেতে শুনেছো? আড়িপেতে কথা শোনা খুবই দুষ্টু কাজ ফুয়ি।

তাসমিয়া হেসে বলল, তোমার আর তোমার মার আবেগঘন আলাপনে যে আমি বিঘ্ন ঘটাইনি সেই উত্তম কাজের তুলনায় এই দুষ্টু কাজ খুবই গৌন্য আম্মাজান। পরিমাপ করলে দেখতে পাবে উত্তম কাজের দ্বারা মন্দ কাজকে ঢেকে দেবার পরও খানিকটা উত্তম রয়ে গিয়েছে। সেটুকু পরে কখনো কাজে লাগাবো ইনশাআল্লাহ।

হেসে ফেললো নূহা আর নাবিহা। এরপর মা আর ফুপিকে কথা বলার সুযোগ দিয়ে নাবিহা চলে গেলো। নূহা হেসে বলল, দুই কাপ চা বানিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে বোস। বুকসেলফ গুছিয়ে আমি আসছি ইনশাআল্লাহ।

জো হুকুম ভাবীজান বলে তাসমিয়া চা বানাতে ছুটলো।

চলবে..

পর্ব-৩

 

ধর্ষণ চেষ্টার শাস্তি জুতাপেটা

ধর্ষণ চেষ্টার শাস্তি জুতাপেটা


নারী সংবাদ


গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার শাস্তি হিসেবে দুই যুবককে জুতাপেটা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের মান্দ্রা গ্রামে ধর্ষণ চেষ্টার সালিশ বৈঠকে হামিদ শেখ (১৯) ও হালিম শিকদার (১৮) নামে দুই যুবককে জুতাপেটা করা হয়।

হামিদ শেখ মান্দ্রা গ্রামের হাবিব শেখের ছেলে। অপরদিকে হালিম শিদকার একই গ্রামের আনিস শিকদারের ছেলে। এলাকাবাসি সূত্রে জানাগেছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় মান্দ্রা ইউনাইটেট ইনস্টিটিউশনের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার সময় হামিদ শেখ ও হালিম শিকদার নামের দুই যুবক ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ওই ছাত্রীর চিৎকারের আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে হামিদ ও হালিম পালিয়ে যায়।

বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে মঙ্গলবার মান্দ্রা গ্রামের জনৈক আজাহার শেখের বাড়িতে এক সালিশ বৈঠক হয়। সালিশ বৈঠকে হাবিব ডাক্তার, হামিম শেখ, সালাম দাড়িয়া, ইলিয়াছ শেখ, মামুন শেখ, হাসান মিয়া নামে এলাকার সালিশবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সালিশবর্গদের নির্দেশে মামুন শেখ ও হাসান মিয়া হামিদ এবং হালিমকে জুতাপেটা করে।

সালিশকারক হাবিব ডাক্তার বলেন, এলাকার শান্তির জন্য হামিদ ও হালিমকে জুতাপেটা করা হয়েছে। তবে ওই দুই যুবকের অভিভাবকরাই তাদের জুতাপেটা করেছে।

ওই স্কুল ছাত্রীর পিতা বলেন, এলাকার মুরব্বিদের অনুরোধে সালিশ বৈঠকের মাধ্যেমে বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে। সালিশ বৈঠকে ওই দুই যুববকে জুতাপেটা করা হয়েছে। এ ছাড়া সাদা কাগজে একটি মিমাংসাপত্র লেখা হয়েছে। মিমাংসাপত্রটি সালিশকারক হামিম শেখের কাছে রয়েছে।

কোটালীপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো: জাকারিয়া বলেন, এ ধরণের ঘটনায় সালিশ বৈঠকের মাধ্যেমে মিমাংসা করার আইনগত কোন বিধান নেই। ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করলে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

সুত্র: নয়া দিগন্ত।

 

গণপিটুনিতে নিহত রেনুর পরিবারকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

গণপিটুনিতে নিহত রেনুর পরিবারকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল


নারী সংবাদ


রাজধানীর বাড্ডায় গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেনু নিহত হওয়ার ঘটনায় তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রেনুর পরিবারের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

চার সপ্তাহের মধ্যে জননিরাপত্ত বিভাগের সচিব, শিক্ষা সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিএমপি কমিশনার, বাড্ডা থানার ওসি, সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা বোর্ডের সভাপতিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

তাসলিমা বেগম রেনুর বোন নাজমুন নাহার নাজমা ও ভাতিজা সৈয়দ নাছির উদ্দিন এ রিট দায়ের করেন।

২০ জুলাই রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মেয়েকে ভর্তি করানোর তথ্য জানতে স্থানীয় একটি স্কুলে যান তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)। এসময় তাকে ছেলেধরা সন্দেহে প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে টেনে বের করে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

শরীর ভালো রাখার উপায়

শরীর ভালো রাখার উপায়


স্বাস্থ্যকথা


শরীর এবং মন এক সাথে কাজ করে। মন ভালো থাকলেও শরীর ভালো না থাকলে কোনকিছুই ভালো লাগে না। তাছাড়া সুস্থ, সুন্দর ও ফিট শরীর মনকে ভালো করে দেয়। স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপনই পারে কেবন মাত্র মন মেজাজ ঠিক রাখতে এবং সুন্দর ও ফিট শরীর বজায় রাখতে।

মন এবং শরীর সুস্থ থাকার কিছু নিয়মাবলীঃ

হাটতে হবেঃ
হাঁটুন। হাটার চাইতে আর কোনো ভাল ব্যয়াম নেই। ফলে মন এবং শরীর সতেজ থাকে।

পুষ্টিকর খাবার
নিয়মিত খাবার খেতে হবে। খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার (যেমন শাক সবজি এবং ফলমূল) বাড়ান। চর্বিজাতীয় খাবার কমিয়ে আনুন। ফাস্টফুড জাতীয় খাবার কমিয়ে দিতে হবে।

পানি পান করুন
কমপক্ষে ১০-১২ গ্লাস পানি পান করুন। খাবার শেষে অন্তত এক থেকে দুই ঘণ্টা পর পানি পান করুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি খাবেন।

সালাদ এবং সবজি খানঃ
প্রত্যেকবারের খাবারের সময় কাঁচা সবজির সালাদ খাবেন। টাটকা শাক সব্জি খাওয়া শরীরের জন্য ভালো।

অতিমাত্রায় চা ও কফি পরিহার
অতিমাত্রায় চা ও কফির অভ্যাস ত্যাগ করার অল্প করে অভ্যাস করা যেতে পারে।

পরিমিত ঘুম
প্রত্যেকের ঘুমের সময় ভিন্ন ভিন্ন হিসাব ফলো করে। কারো ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের অভ্যাস আবার কারো ৫ থেকে ৬ মিনিট। সুস্বাস্থ্য ও ফিগারের জন্য নিয়মিত ও পরিমিত ঘুম প্রয়োজন।

স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। সবার আগে চাই সুস্থ শরীর।

 

মুরগীর গোস্তের স্যুপ

মুরগীর গোস্তের স্যুপ


রেসিপি

 


মুরগির গোস্তের কয়েকটা টুকরো নিয়ে ১৫-১৬ কাপ পানিতে একটু লবণ দিয়ে সিদ্ধ করি। পানি শুকিয়ে অর্ধেক হলে নামিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। হয়ে গেলো মুরগির স্টক।

উপকরণ :

১. স্টক ১০-১১ কাপ,
২. তেল ১ টেবিল চামচ,
৩. সয়াসস ১ টেবিল চামচ,
৪. চিনি ১ টেবিল চামচ,
৫. মুরগির বুকের মাংস ১ কাপ (মিহি করে কেটে নিতে হবে),
৬. লবণ পরিমাণমতো।

প্রস্তুত প্রণালি :

গোস্তের হাড় থেকে ছাড়িয়ে মিহি করে কেটে সয়াসস দিয়ে মেখে ১০ মিনিট রাখতে হবে। কর্নফ্লাওয়ার স্টক দিয়ে গুলিয়ে নিতে হবে। গরম স্টকে তেল-লবণ মাখানো গোস্ত কিছুক্ষণ সিদ্ধ করে আস্তে আস্তে নাড়তে হবে। শেষে চিনি দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। হয়ে গেলো মজাদার মুরগীর স্যুপ।

 

কাবিননামায় নারীদের জন্য সুখবর

কাবিননামায় নারীদের জন্য সুখবর


নারীর  জন্য আইন 


বিয়ের কাবিননামার পাঁচ নম্বর কলাম থেকে কনের বেলায় ‘কুমারী’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘অবিবাহিতা’ যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এটাকে নারীদের জন্য সুখবর বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

কারণ এক্ষেত্রে ‘কুমারী’ শব্দটি ছিল নারীদের জন্য অসম্মানজনক বলে মনে করা হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশে মুসলমান নারী-পুরুষের বিয়ের নিবন্ধন ফরমের পাঁচ নম্বর কলাম থেকে কনের বেলায় ‘কুমারী’ শব্দ বাদ দেয়া ও চার নম্বর কলামে (ক) যুক্ত করে বরের ক্ষেত্রে ‘বিবাহিত’, ‘বিপত্নীক’ ও ‘তালাকপ্রাপ্ত কিনা’ শব্দগুলো সংযোজন করতে বলা হয়েছে।

মুসলিম বিবাহ ও তালাক আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী বিয়ের কাবিননামায় নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি করে রোববার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

কোর্ট রায় দিয়ে বলেছে, ‘কুমারী’ শব্দটা বাদ দিতে হবে। কারণ এটা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারের ব্যপার। কাবিননামায় এর উল্লেখ থাকা মানে বৈষম্য সৃষ্টি করা। আদালত রায়ে একটি কলামও যোগ করে দিয়েছেন। যেখানে লিখতে হবে বর বিবাহিত কিনা, তালাকপ্রাপ্ত কিনা কিংবা বিপত্মীক কিনা।

কাবিননামার ফরমে পাকিস্তান আমলে তৈরি। স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের জায়গায় বাংলাদেশ বসানো ছাড়া আর কোনো সংশোধন করা হয়নি।

মুসলিম বিবাহ ও তালাক আইনের ৯ ধারার ওই অনুচ্ছেদটি বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, নারীপক্ষ এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ২০১৪ সালেল ৭ সেপ্টেম্বর রিট আবেদন করে।

আবেদনে বলা হয়, রেজিস্ট্রেশন ফরমে (নিকাহনামায়) শুধু কনের বৈবাহিক অবস্থা ও তথ্য সন্নিবেশিত করার জন্য অনুচ্ছেদ রয়েছে।

তবে বরের বৈবাহিক অবস্থা-সম্পর্কিত কোনো কলাম নেই। এটা নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক। সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিষয়টি বৈষম্যমূলক এবং সংবিধান পরিপন্থী।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রেজিস্ট্রেশন ফরমের (নিকাহনামা) পাঁচ নম্বর কলাম কেন বৈষম্যমূলক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না; তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে।

ওই কলাম থেকে ‘কুমারী’ শব্দটি বিলোপ করে ফরমটি সংশোধন করা এবং বর সম্পর্কিত কোনো ক্রমিক ফরমে কেন উল্লেখ করা হবে না; তাও জানতে চাওয়া হয়।

জনপ্রশাসন সচিব, ধর্ম সচিব, প্রিন্টিং এবং প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচাকলসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

এর মধ্যে রুল শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে মতামত দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বেলায়েত হোসেন।

গত ১৬ জুলাই মতামত দেয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফরমের ৫ নম্বার কলামে কলামে এই শব্দটি থাকা উচিত না। কারণ এই শব্দটি ব্যক্তির মর্যাদা ও গোপনীয়তাকে ক্ষুণ্ণ করে; যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

এছাড়া ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী এগুলো থাকা বাধ্যতামূলক নয়। মুসলিম শরীয়তে এ ধরনের শর্ত নেই।

#যুগান্তর

 

মানববন্ধনে অভিযোগ নারী নির্যাতন আইনের অপব্যবহারে হয়রানির শিকার হচ্ছে পুরুষরা

মানববন্ধনে অভিযোগ
নারী নির্যাতন আইনের অপব্যবহারে হয়রানির শিকার হচ্ছে পুরুষরা


নারী সংবাদ


নারী নির্যাতন আইনের সংশোধনের দাবি করে মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশনের ব্যানারে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, এ আইনের অপব্যবহারের দ্বারা নিরীহ পুরুষ ও তার পরিবারের লোকদের নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। গতকাল ‘নারী নির্যাতন আইনের অপব্যবহার বন্ধ ও সংশোধন’-এর দাবিতে জাতীয় প্রেস কাবের সামনে এক মানববন্ধনে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, বাংলাদেশ নারী অধিকার স্বীকৃতির মাধ্যমে নারী উন্নয়নের প্রসার ঘটিয়েছে। সংবিধানেও ২৮ ও ২৯ নং অনুচ্ছেদে নারী অধিকারের কথা বলা আছে। এ ছাড়াও নারীদের সুরার জন্য দেশে একাধিক আইন আছেÑ এর মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন (দমন) আইন ২০০০-এ নারী ও শিশু সম্পর্কিত অপরাধগুলোকে চিহ্নিত করে তা প্রতিকারের বিধি-বিধান প্রণীত আছে, যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু নারী ও শিশু অধিকারের এ বিধানগুলো নিয়ে অন্যকে ঘায়েল করার মাত্রা প্রকট আকার ধারণ করেছে।
সংগঠনের মহাসচিব প্রকৌশলী ফারুক শাজেদ বলেন, তাদের সংগঠনের ২১ দফা দাবির ২য় ও অন্যতম দাবি হলো নারী নির্যাতন আইনের সংশোধন। কারণ এ আইনের অপব্যবহারের দ্বারা নিরীহ পুরুষ ও তার পরিবারের লোকদের নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। এ ছাড়াও মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলার কারণে ভুক্তভোগী ব্যক্তি সামাজিক, মানসিক ও আর্থিক তির শিকার হন। কারো সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হলে তা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই অভিযোগ প্রমাণ না হোওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তের ছবি মিডিয়াতে প্রচার না করার ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি এর অপপ্রয়োগ বন্ধে নারী নির্যাতন দমন আইনকে সংশোধনের মাধ্যমে আরো যুগোপযোগী করার জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা পেশ করেন। তিনি বলেন, নারী নির্যাতন মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী মামলা করতে গেলে আদালতের অনুমতি লাগে। তাই ভুক্তভোগীরা হয়রানির ভয়ে বাদির বিরুদ্ধে মামলা করতে চান না। তাই ভুক্তভোগীর আবেদন ব্যতিত, যা ১৭(২) ধারা মোতাবেক লিখিত হওয়া বাঞ্ছনীয়, তা উঠিয়ে দিয়ে বিচারক রায়ে মিথ্যা মামলাকারীকে চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে আইনের প্রয়োগ করা গেলে মিথ্যা মামলা নিঃসন্দেহে কমে যাবে।
এ ছাড়াও সুষ্ঠু তদন্ত ব্যতিত কাউকে যেন গ্রেফতার করা না হয়। তাই ১৮ ধারাকে সংশোধনে মাধ্যমে তদন্তে অবহেলাকে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য ও মিথ্যা মামলায় সহায়তাকারীকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে বিধি অনুযায়ী তাৎণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তিনি।।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ খায়রুল আলম। তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনটিকে আরো যুগোপযোগী করার প্রয়োজন রয়েছে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে যাতে কারো অধিকার বিঘিœত না হয় সে দিকেও দৃষ্টি রাখা জরুরি।
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক তাইফুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক আল-আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক বাংলাদেশের আলোচিত চিত্রনায়ক আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম, বাংলাদেশ মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশনের ঢাকা মহানগরীর সদস্য লিটন গাজী প্রমুখ।

সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

ইসলাম সন্তান সম্পর্কে কি বলে?

ইসলাম সন্তান সম্পর্কে কি বলে?


ফাতেমা মাহফুজ


অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও সংবেদনশীল একটি বিষয় নিয়ে লিখতে ইচ্ছা করলো।বাস্তব সমাজে আসলে এই বিষয়ের সঠিক ধারনার খুবই অভাব।আর সে কারণেই মানুষের জীবনের অশান্তি,অস্থিরতা বেড়েই চলছে।

#ইসলাম সন্তান সম্পর্কে কি বলে#

বর্তমান সময়ে আমাদের আশে পাশে অনেক পরিবার আছেন যাদের সন্তান নেই। এই একটা সন্তান না হওয়ার জন্য তাদের স্বাভাবিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।তারা বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করছেন। কখনো কখনো মহিলাদের কে মানসিক চাপে রাখা হচ্ছে যে তার স্বামীকে আরেকটি বিয়ে দেয়া হবে।কখনো কখনো স্ত্রীকে সংসার ভেংগে চলে আসতে বলা হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের সুবাদে একে অপরকে দোষারোপ চলছে।অথচ মানুষ ভুলে যাচ্ছে এটা শুধুই আল্লাহর ইচ্ছা ও সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

বর্তমান সময়ে এই ধরনের পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন কিছুই হচ্ছে না।

মূলত দুনিয়ায় আল্লাহর দেয়া অসংখ্য নেয়ামতের মধ্যে একটি হল সন্তান।আল্লাহ সব নিয়ামত সবাইকে দেন না।যেমন সুস্বাস্থ্য, সৌন্দর্য, অর্থ সম্পদ, জ্ঞান, প্রতিভা, মেধা এগুলো আল্লাহ এক একজনকে একেক্টা দিয়েছেন।

আল্লাহর ভাষায়ঃ
মানুষের জন্য নারী, সন্তান, সোনা-রূপার স্তূপ, সেরা ঘোড়া, গবাদী পশু ও কৃষি ক্ষেতের প্রতি আসক্তিকে বড়ই সুসজ্জিত ও সুশোভিত করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের সামগ্রী মাত্র। প্রকৃতপক্ষে উত্তম আবাস তো রয়েছে আল্লাহ‌র কাছে।
(.৩-আলে-ইমরান:১৪.)

যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দেন, যাকে ইচ্ছা পুত্র ও কন্যা উভয়টিই দেন এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। তিনি সব কিছু জানেন এবং সব কিছু করতে সক্ষম।
(.৪২-শূরা:৫০.)

বিভিন্ন নবী ও রাসূলকেও ঠিক একইভাবে পরীক্ষা নিয়েছেন-
এ অবস্থা দেখে যাকারিয়া তার রবের কাছে প্রার্থনা করলোঃ “হে আমার রব! তোমরা বিশেষ ক্ষমতা বলে আমাকে সৎ সন্তান দান করো। তুমিই প্রার্থনা শ্রবণকারী।” যখন তিনি মেহরাবে দাঁড়িয়ে নামায পড়ছিলেন। (৩-আলে-ইমরান:৩৮.)

যাকারিয়া বললোঃ “হে আমার রব! আমার সন্তান হবে কেমন করে? আমি তো বুড়ো হয়ে গেছি এবং আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা।” জবাব এলোঃ “এমনটিই হবে।আল্লাহ্‌ যা চান তাই করেন।” (৩-আলে-ইমরান:৪০.)
হে পরওয়ারদিগার! আমাকে একটি সৎকর্মশীল সন্তান দাও। (.৩৭-সাফ্ফাত:১০০.)

এমনকি বিবি আয়েশা রাঃ ও নিঃসন্তান ছিলেন।তবু তাদের মধ্যে কোন অসন্তোষ ছিলনা,বরং
নবী রাসূল গণ এই নিয়ামত আল্লাহর কাছে চেয়েছেন কিছু বিশেষ কারণেঃ
তারা প্রার্থনা করে থাকে, “হে আমাদের রব! নিজেদের স্ত্রীদের ও নিজেদের সন্তানদেরকে নয়ন শীতলকারী বানাও এবং আমাদের করে দাও মুত্তাকীদের ইমাম।”(সূরা ফুরকান-৭৪)

গর্ভ যখন ভারি হয়ে যায় তখন তারা দুজনে মিলে এক সাথে তাদের রব আল্লাহর কাছে দোয়া করেঃ যদি তুমি আমাদের একটি ভাল সন্তান দাও, তাহলে আমরা তোমার শোকরগুজারী করবো।
(.৭-আরাফ:১৮৯.)
তাদের উদ্দেশ্য ছিল একজন নেক উত্তরসুরী রেখে যাওয়া যে তাদের রেখে যাওয়া দ্বীনি দায়িত্ব পালন করবে।

তাই আল্লাহ কাউকে কাউকে সন্তান দান করেছেন তার সাথে সাথে এটাকে পরীক্ষা হিসেবে পাঠিয়েছেনঃ “এবং জেনে রাখো, তোমাদের অর্থ-সম্পদ ও তোমাদের সন্তান-সন্ততি আসলে পরীক্ষার সামগ্রী। আর আল্লাহর কাছে প্রতিদান দেবার জন্য অনেক কিছুই আছে।”
(.৮-আনফাল:২৮.)

এরপর আমি তোমাদেরকে তাদের ওপর বিজয় লাভের সুযোগ করে দিয়েছি এবং তোমাদেরকে সাহায্য করেছি অর্থ ও সন্তানের সাহায্যে আর তোমাদের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়িয়ে দিয়েছি।
(.১৭-বনী ইসরাঈল:৬.)
এ ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের একটি সাময়িক সৌন্দর্য-শোভা মাত্র। (.১৮-কাহাফ:৪৬.)

কাজেই অস্থিরতা, কষ্ট,হতাশা দূর করে মনে তাওয়াক্কুল টাকেই আরো জোরদার করতে হবে।অনেক চেষ্টা,দোয়া করার পরও যদি আল্লাহ আপনাকে এই নিয়ামত না দিয়ে থাকেন,তো আলহামদুলিল্লাহ! নিশ্চয়ই এমন কোন কল্যাণ আছে যা আমাদের জানা নেই।

তাই বিকল্প উপায়ে সৎ কাজের ধারা অব্যাহত রাখা জরুরি।
যেমনঃ সাদকায়ে জারিয়াহ র কাজ করে যাওয়া,কুরআনের দাওয়াত পৌছে দেয়া,দ্বীনের পথে সংগীদের নিয়ে কাতারবন্দী হয়ে লড়াই করা,দান সাদাকাহ করা,উত্তম কথা,লেখনী এই পৃথিবীতে রেখে যাওয়া।আর বারবার দোয়া কবুল না হলেও করতে থাকা কেননা দুয়া একটি অব্যার্থ আমল,যা কোন না কোন কল্যাণ অবশ্যই বয়ে আনবে।

আল্লাহ বলে দিচ্ছেনঃ “আসলে তো স্থায়িত্ব লাভকারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের কাছে ফলাফলের দিক দিয়ে উত্তম এবং এগুলোই উত্তম আশা-আকাঙ্ক্ষা সফল হবার মাধ্যম।” (কাহাফ:৪৬.)
আল্লাহ আমাদের প্রকৃত কল্যাণ দান করুন। আমীন।

 

শিশুদের জন্য আলাদা আদালত হওয়া উচিত : বিচারপতি ইমান আলী

শিশুদের জন্য আলাদা আদালত হওয়া উচিত : বিচারপতি ইমান আলী


নারীর জন্য আইন


শিশু কিশোর অপরাধের বিচারের জন্য আলাদা শিশু আদালত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিমকোর্টের স্পেশাল কমিটি অন চাইল্ড রাইটসের (এসসিএসসিসিআর) সভাপতি ও আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী।

সুপ্রিকোর্টের সম্মেলন কক্ষে ‘শিশু আইন ২০১৩’ নিয়ে বিভাগীয় পরামর্শ সভায় তিনি আজ এ মন্তব্য করেন। জাতিসংঘের শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ এবং সুপ্রিমকোর্টের বিশেষ কমিটি যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি নাইমা হায়দার আলোচনায় অংশ নেন। এ ছাড়া খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুালর বিচারক ও পাবলিক প্রসিকিউটর, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা উপস্থিতি ছিলেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিচারপতি ইমান আলী বলেন, শিশুদের জন্য পৃথক আদালত হওয়া উচিত। কারণ, শিশুদের বিচার হবে সংশোধনের উদ্দেশ্যে, শাস্তি দেয়ার উদ্দেশে নয়। শিশু আর প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীর বিচার একরকম নয়। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে শিশুদের জন্য আলাদা আদালত রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনও আমরা করতে পারিনি। তিনি বলেন, আইনেই বলা আছে শিশু অপরাধীর বিচার তাড়াতাড়ি করতে হবে। কেননা তাদের ভবিষ্যত সামনে। তাকে ভালো হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিশু আদালত স্থাপন করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ছবি : সংগৃহীত & নয়া দিগন্ত

 

নিজের বুদ্ধিমত্তায় প্রাণে বাঁচল শিশু তানজিলা

নিজের বুদ্ধিমত্তায় প্রাণে বাঁচল শিশু তানজিলা


নারী সংবাদ


নিজের বুদ্ধিমত্তায় পাচারকারীদের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রাজৈর গ্রামের ১১ বছরে শিশু কন্যা তানজিলা আকতার। গত ১৯ আগস্ট (সোমবার) দুপুরে দেড়টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটেছে খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সড়কে। তানজিলা ওই গ্রামের বেলাল সিকদারের মেয়ে।
উপজেলার রাজৈর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী তানজিলা জানায়, ওই সময়ে স্কুল থেকে সে বাড়িতে যাবার পথে পরিষদ সংলগ্ন মঠেরপাড় সড়কের মোড়ে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস এসে তার পাশে দাড়ায়। জনশূন্য ওই সড়কে গাড়ির দরজা খুলে পাচারকারীরা তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নাকের কাছে একটি রুমাল ধরার পর তানজিলা অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
পরে যখন তার জ্ঞান ফেরে, তখন তানজিলা নিজেকে একটি ঘরের তালাবদ্ধ রুমে আবিষ্কার করে। সেখানে আরো একটি শিশু অজ্ঞান অবস্থায় ওই রুমে পড়ে থাকতে দেখেছে সে। পাচারকারী দলের কেউ সেখানে নেই নিশ্চিত হয়ে তানজিলা রুমের জানালা ভেঙ্গে বাগানের মধ্য দিয়ে শরণখোলা-মোড়েলগঞ্জ সড়কের গাজীর ব্রীজ এলাকার মূল সড়কে উঠে ভ্যানযোগে চলে আসে। ওই রুমে থাকা অপর শিশুটির ভাগ্যে কি হয়েছে, তা সে বলতে পারেনি।

এদিকে, তানজিলার মা রিনা বেগম জানান, স্কুল থেকে টিফিনের সময় বাড়িতে ফিরতে দেরী হওয়ায় তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন এবং ওই দিন সন্ধ্যার কিছু পুর্বে তানজিলা ফিরে আসায় পরিবারে মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। পরে সংশ্লিষ্ট খোন্তাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খাঁন ও পরিবারে কাছে তানজিলা ঘটনার বর্ননা করে।
তানজিলা জানায়, ওই এলাকায় তাকে নিয়ে গেলে ওই বাড়ির লোকেশন সে দেখাতে পারবে।
ভ্যানচালক আমড়াগাছিয়া গ্রামের সালাম ফকির মুঠোফোনে জানান, বিকাল ৫টার দিকে শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ মহাসড়কের গাজীর ব্রিজ এলাকায় স্কুল ড্রেস পরিহিত ওই মেয়েটিকে কাঁদতে দেখে তিনি নিয়ে আসেন।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ দিলীপ কুমার সরকার জানান, ঘটনাটি তিনি জেনেছেন। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

সুত্র & ছবি : নয়া দিগন্ত।

 

দাম্পত্য সম্পর্কে কি প্রয়োজন?

দাম্পত্য সম্পর্কে কি প্রয়োজন?


দাম্পত্য


শ্রদ্ধা এবং সুন্দর ব্যবহার, সুন্দর হাসিমুখ সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই দুজনকে সেটি তৈরি করতে হবে। আপনার উৎফুল্ল আচরণ হতে পারে আপনাদের জন্য খুব দামি একটি উপহার।

দোদুল্যমান মন
কাউকে একইসাথে ভালোবাসা এবং ঘৃণা করা, অসম্ভব কিছু নয়। তবে ক্লিয়ার হওয়া কেন আপনি ব্যক্তিকে ভালো বাসবেন? দাম্পত্য জীবনে তা-ই নিয়ম যা দুইজনের পছন্দের ভিত্তিতে ঘটবে সবসময় আশা করা কঠিন। মেনে নিতে হবে।

ক্ষোভ
সাময়িক ঝগড়া বিবাদের কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় না। মনের মধ্যে জমে থাকা চাপা ক্ষোভ আর যন্ত্রণাই দাম্পত্য জীবনকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়।

আর্থিক সচ্ছলতা
আমি সর্বোত্তম”-এমনটি মনে হওয়া অতি আত্মবিশ্বাসের লক্ষণ। সংসারের ক্রমাগত আর্থিক সচ্ছলতা অর্থ এই নয় যে, দাম্পত্য জীবনও সুখের মধ্য দিয়ে কাটছে।

বিশ্বাস ভঙ্গ
বিশ্বাস ভেঙ্গে গিয়ে থাকে, তাহলে সেই বিশ্বাস জোড়া দেওয়ার সময় এখনও পার হয়ে যায়নি। এজন্য যেকোনো সময়ই উপযুক্ত সময়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা নিয়ে তর্ক হয় তা আসল বিষয় থাকে না।

ভালোবাসা কেবল অনুভুতি নয়; বরং আমাদের কাজের মাধ্যমেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মনের হতাশা ও অতৃপ্তিকে বাড়িয়ে দেয়। দাম্পত্য জীবনের অনেক তর্কই হয়ত এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তবে ক্ষতিকর বিতর্ককে এড়িয়ে যেতেই হবে।

 

ট্রেনের টয়লেট থেকে মাদরাসাছাত্রীর লাশ উদ্ধার

ট্রেনের টয়লেট থেকে মাদরাসাছাত্রীর লাশ উদ্ধার


নারী সংবাদ


ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে একটি ট্রেনের বগির ভেতর থেকে পুলিশ গতকাল আসমা আক্তার (১৭) নামে এক মাদরাসাছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে।
গতকাল সকালে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। পুলিশের ধারণা, তরুণীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। গত রোববার সকালে মেয়েটি পঞ্চগড় থেকে নিখোঁজ হয়েছিল বলে স্বজনেরা পুলিশকে জানিয়েছেন।
গতকাল রাতে কমলাপুর জিআরপি থানার ওসি রুশো বণিক নয়া দিগন্তকে বলেন, সকাল ৯টার দিকে স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে কমলাপুর রেলস্টেশনের ওয়াশফিড এলাকায় বলাকা ট্রেনের একটি ড্যামেজ বগির টয়লেটের ভেতর থেকে ১৭-১৮ বছর বয়সী এক তরুণীর লাশ উদ্ধার হয়। লাশটির গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল। ধারণা করছি, মেয়েটিকে দুর্বৃত্তরা শ্বাসরোধে হত্যা করে থাকতে পারে। তবে এর আগে সে ধর্ষিত হয়েছে কি না সেটি ময়নাতদন্তের আগে বলা যাচ্ছে না। প্রতিবেদনের পরই বলা যাবে ধর্ষিত হওয়ার বিষয়টি। আর মেয়েটির শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্নহ্ন পাইনি। এক প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, আমরা লাশের পাশ থেকে তার ব্যবহৃত একটি ব্যাগ পেয়েছি। সেই ব্যাগে কিছু কাগজপত্র ছিল। বার্থ সার্টিফিকেট ছিল। সেই অনুযায়ী তার পরিচয় আমরা নিশ্চিত হয়ে স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করি। আসমার গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার শীলপাড়ায়। তার বাবার নাম আব্দুল রাজ্জাক মিয়া।
তবে হাসপাতাল মর্গে কমলাপুর রেলওয়ে থানার সাব-ইন্সপেক্টর আলী আকবর সাংবাদিকদের বলেন, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নহ্ন রয়েছে। আর তরুণী ধর্ষিত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
আসমার চাচা মো: রাজু পুলিশকে জানান, রোববার সকাল থেকে তার ভাতিজি আসমা নিখোঁজ ছিল। সোমবার পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে তারা লাশ শনাক্ত করেন। চাচা জানান, আসমা গ্রামের একটি মাদরাসা থেকে গত বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। গ্রামের একটি ছেলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আসমা নিখোঁজের পর থেকে ওই ছেলেকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে ওই ছেলে জড়িত থাকতে পারে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সব রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে তিনি দাবি করেন। নিহত আসমার বাবা একজন কৃষক। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সে ছিল তৃতীয়। সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

স্মৃতির জোনাকি… ৩

স্মৃতির জোনাকি… ৩


আফরোজা হাসান


পাপার সন্ধানে পুরো বাড়ি পুনরায় আরেকবার ঘুরে দেখার পর নাবিহার খেয়াল হলো পাপার অন্যতম প্রিয় জায়গাতেই এখনো সন্ধান অভিযান চালানো হয়নি। সেই জায়গাটি হচ্ছে বাড়ির ছাদ। খেয়াল হওয়া মাত্র ছাদের দিকে ছুট লাগালো নাবিহা এবং তার আরাধ্য ব্যক্তিকে অবশেষে খুঁজে পেলো। কারো আগমনের শব্দ পেয়ে জাওয়াদও ফিরে তাকালেন। নাবিহা সালাম দিয়ে বললেন, পাপা তুমি এখানে? আমি সেই কখন থেকে তোমাকে খুঁজছি আর খুঁজছি।

সালামের জবাব দিয়ে জাওয়াদ বললেন, কেন আপনি আমাকে খুঁজছেন আর খুঁজছেন আম্মাজান?

নাবিহা হেসে বলল, অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপারে তোমার মতামত জানার জন্য। তবে সেই ব্যাপারে পরে কথা হবে। আগে বলো তুমি কি করছো এগুলো?

জাওয়াদ হেসে বললেন, আমি তোমার জাল দাদাভাইয়ের পাখীদের জন্য ঘর বানাচ্ছি। তোমার জাল দাদাভাইয়ের ব্যালকনির সাথে লাগোয়া গাছে যে দুটো পাখীর বাসা ছিল, গতরাতের ঝড়ো বাতাসের কারণে দুটো পাখীর বাসাই ভেঙে গিয়েছে। হজ্জ থেকে ফিরে এসে এই দৃশ্য দেখলে বাপী ভীষণ কষ্ট পাবেন। তাছাড়া নীড় ভাঙা পাখীরাও নিশ্চয়ই অনেক কষ্টে আছে। তাই ভাবলাম ওদের জন্য নতুন ঘর বানিয়ে দেই। বাড়ির বাচ্চাদের প্রায়ই দেখি পুরো ছাদ জুড়ে পাখীদের জন্য খাবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। একটু বেখেয়াল হলেই খাবার পায়ের নিচে পড়ে। পাখীদের খাবার, পানি রাখার ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। বাচ্চাদের সবাইকে বুঝিয়ে বলবে এখন থেকে যেন নির্দিষ্ট স্থানে খাবার রাখে।

নাবিহা হেসে বলল, ওকে পাপা ইনশাআল্লাহ। পাপা এই যে তুমি পাখীদের জন্য ঘর বানিয়ে দিচ্ছো, পাখীদের খাবারের জায়গা করে দিচ্ছো এজন্যও তো অনেক সওয়াব হবে তাই না? রাসূল (সঃ) তো বলেছেন, “মুসলিম যখন কোনো গাছ রোপণ করে, তখন এর যে ফল খাওয়া হবে এটা তার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হবে। এ থেকে যা চুরি যাবে তাও সদাকা হিসেবে গণ্য হবে।হিংস্র প্রাণীও যদি তা থেকে খায় তাও সদাকা হবে। পাখি খেলে সদাকা হবে। (এমনকি) যে কেউ যে কোনোভাবে এ থেকে (উপকার) গ্রহণ করবে তা সদাকা হিসেবে গণ্য হবে।” আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কত মহান তাই না পাপা? সবকিছুর মধ্যেই সওয়াবের সুযোগ রেখেছেন। আমরাই গাফলতী করে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারিনা।

জাওয়াদ হেসে বললেন, গাফলতী করো কেন? কোনদিন যদি তোমাকে গাছে পানি দেয়ার দায়িত্ব দিয়ে যাই, তুমি বেমালুম ভুলে গিয়ে গাছেদের তৃষ্ণার্ত রেখে দাও।

নাবিহা বলল, সরি পাপা। আর মন হবে না ইনশাআল্লাহ। এখন থেকে আমিও গাছ লাগাবো, গাছেদের যত্ন করবো।

জাওয়াদ হেসে বলল, এই কথা তো যখন থেকে কথা বলা শুরু করেছো তখন থেকেই বলছো।

নাবিহা কিছুক্ষণ হাসলো। এরপর বলল, গতরাতে কি প্রচন্ড ঝড়ো বাতাস হচ্ছিলো পাপা! ভয়ংকর শব্দে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিলো কিছুক্ষণ পরপর। আমি অনেক ভয় পেয়েছিলাম। একবার ভেবেছিলাম মাঈশার রুমে চলে যাবো ওর সাথে ঘুমোতে। যাওয়ার জন্য উঠেও ছিলাম। কিন্তু রুম থেকে বেরুনোর জন্য দরজা খুলে দেখি তুমি বসে আছো আমার রুমের সামনে। আমি ভয় পাচ্ছি তুমি ফিল করেছিলে তাই না পাপা?

জাওয়াদ হেসে বললেন, এসো আমাকে সাহায্য করো পাখীদের জন্য ঘর বানাতে। কিছু সওয়াব অর্জন করো। সেই সাথে সদাকায়ে জারিয়ার সুযোগ তৈরি করো নিজের জন্য।

নাবিহা পাপার পাশে গিয়ে বসে হাসি মুখে বলল, গতরাতে তোমাকে দেখা মাত্র আমার সমস্ত ভয় এক নিমিষে উধাও হয়ে গিয়েছিল পাপা। একবার ইচ্ছে হয়েছিল তোমার সাথে বসে গল্প করতে। কিন্তু তুমি গভীর মনোযোগের সাথে বই পড়ছিলে তাই আর বিরক্ত করিনি। কিন্তু বিছানায় গিয়ে বসতে না বসতেই আবারো প্রচন্ড শব্দে বজ্রপাত হলো। আমি তখন বজ্রপাতের দোয়া পড়লাম। এরপর সেলফ মোটিভেশনের জন্য বললাম, বসে আছেন পাপা দরজার বাহিরে, হে ভয় এখনো কি যাওনি আমায় ছেড়ে? জানো না বুঝি যখন আশেপাশে থাকেন পাপা, আমি হয়ে যাই পেইন কিলার নাপা। সমস্ত প্রতিকূলতা তখন করতে পারি জয়, বজ্রপাত ভীতি হয়ে যাও চূর্ণ, এই মূহুর্তে ক্ষয়।

হেসে ফেললেন জাওয়াদ। কন্যার কান ধরে ঝাঁকিয়ে দিয়ে বললেন, বেশি বেশি দুষ্টু হয়েছো তুমি।

নাবিহা হাসতে হাসতে বলল, আমার কোন দোষ নেই। দুষ্টুমি গুণও জেনেটিক্যালি পেয়েছি। আমার মামণির কাছ থেকে।

জাওয়াদ হেসে বলল, আচ্ছা! তা কেমন আছেন নাবিহার মামণি?

নাবিহা হেসে বলল, আলহামদুলিল্লাহ মামণি ভালো আছেন। কিন্তু অনেক ঝামেলার মধ্যে আছে।

জাওয়াদ বললেন, ঝামেলার মধ্যে কেন? কি হয়েছে?

নাবিহা হেসে বলল, মামণির কিছু হয়নি পাপা। মামণির স্টুডেন্ট গ্রুপের বেশিরভাগ সদস্যাই তো এখন বিবাহিতা। তারা নিজ নিজ সংসার, বাচ্চাদের নিয়ে নানান ঝামেলাতে আছেন। সেসব ঝামেলার সমাধান করতে করতে মামণিরও ঝামেলার শেষ নেই। পাপা সুন্দর সুন্দর কিছু আশা জাগানিয়া কথা বলো।

জাওয়াদ হেসে বললেন, হঠাৎ আশা জাগানিয়া কথা কেন? তাছাড়া বলতে বললেই তো আশা জাগানিয়া কথা বলা যায় না। উৎস লাগে, প্রসঙ্গের দরকার হয়। তারপর যথার্থ বিশ্লেষণ অতঃপর মন্তব্যে গিয়ে আশা জাগানিয়া কথা বলতে হবে।

নাবিহা একটুক্ষণ চিন্তাভাবনা করে বলল, পাপা তুমি তো আমাদের সবাইকে একা লালন পালন করেছো। আমরা তোমাকে অনেক যন্ত্রণাও করেছি। আমাদের দুষ্টুমিতে অতিষ্ট হয়ে তোমার কি কখনো মামণির উপর রাগ হয়েছে?

পাপা হেসে বললেব, তোমার মামণির স্টুডেন্টরা কি বাচ্চাদের সামলাতে গিয়ে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়ে তাদের লাইফ পার্টনারদের উপর অভিমান করে কখনো সখনো?

নাবিহা হেসে বলল, উনাদের সবার সাথে আমারও অনেক সুন্দর সম্পর্ক। ফোনে কথা হয় প্রায় সময়ই। অভিমানের কথা বলেনি কেউ সেভাবে তবে মাঝেমধ্যে রাগ হয় খুব নিজ নিজ লাইফ পার্টনারের উপর সেটা বলেছে।

জাওয়াদ হেসে বললেন, ওটা মূলত অভিমান, রাগ নয়। সন্তান বলো আর সংসার সেটা উভয়েরই। তাই আনন্দ বেদনা সবকিছু ভাগ করে নেবার একটা আকাঙ্ক্ষা থাকে মনে। পার্টনার যখন দূরে থাকে আনন্দের মূহুর্তগুলোতে যেমন তাকে মনে পড়ে, কষ্টের মূহুর্তগুলোতেও তাকেই সবার আগে মনেপড়ে। তোমরা যখন অনেক মজার কিছু করতে বা বলতে আমার তোমাদের মার কথা সবার আগে মনে পড়তো। মনেহতো তোমাদের মা সাথে থাকলে অনেক আনন্দ পেতো এখন। আবার যখন খুব বিরক্ত করতে কোন কারণে তখনো তোমাদের মাকেই সবার আগে মনে পড়তো। মনেহতো তোমাদের মা পাশে থাকলে এই পরিস্থিতিটা হ্যান্ডেল করা অনেক সহজ হয়ে যেতো আমার জন্য। এটা মূলত লাইফ পার্টনারের প্রতি নিজের নির্ভরশীলতার প্রকাশ। জীবনের আনন্দ বেদনা, সুখ দুঃখ সবকিছু ভাগাভাগি করে নেবার ওয়াদা করেও কেন নেই সে আমার পাশে কঠিন এই মূহুর্তে? এই চিন্তাটা মোটেও রাগ নয়। অধিকার মিশ্রিত অভিমান, ভালোবাসার আকুল আবেদন।

আমি তাহলে উনাদেরকে কি বলবো পাপা?

জাওয়াদ হেসে বললেন, উনাদেরকে বলার দায়িত্ব তোমার মাকেই পালন করতে দাও। আমরা খাল কেটে কুমীর না আনি।

নাবিহা হাসতে হাসতে পাপার কথাকে সমর্থন করলো। এরপর পাপাকে অনুকরণ করে পাখীদের জন্য ঘর বানানোতে মনোযোগ দিলো। বেশ অনেকক্ষণ নীরবে কাজ করার পর নাবিহা বলল, সুখী হওয়ার জন্য, ভালো থাকার জন্য চারপাশের সবকিছু কি মনের মতো হওয়াটা জরুরি পাপা?

জাওয়াদ হেসে বললেন, চারপাশের কোন কিছুই তো শতভাগ তোমার, আমার বা অন্য কারোই মনের মতো হওয়া সম্ভব নয়। আমাদের মন সদা জাগ্রত ক্রিটিকের মতো। পারফেক্ট সবকিছুর মধ্যে থেকেও অবলীয়ায় ইনপারফেকশন খুঁজে বের করে ফেলে মূহুর্তেই। জগতের কোন কিছুই একদম তোমার মনের মতো হবে না। সুখী হবার জন্য এই কথাটাকে মনের মাঝে স্থাপন করতে হবে সবার প্রথমে।

কিন্তু কথাটা যদি কোন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে হয় তাহলে? আইমিন, সময়ের ব্যবধানে কারো আচরণ যদি বদলে যায়? যেভাবে সাপোর্ট করা উচিত সেভাবে যদি না করে তাহলে? সেক্ষেত্রে কি হবে পাপা?

জাওয়াদ বললেন, সাপোর্ট করা উচিত কিন্তু স্বইচ্ছায় করছে না আবার সাপোর্ট করা উচিত কিন্তু করতে পারছে না কোন কারণে। এই দুটা সিচুয়েশন কিন্তু ভিন্ন। যারা আমাদেরকে ভালোবাসে, কেয়ার করে কিংবা যাদেরকে আমরা ভালোবাসি, কেয়ার করি তাদের অপরাগতা মেনে নেয়াটা ভালো থাকার এবং তাকে ভালো রাখার মূলমন্ত্র সমূহের একটি। ইউ কান্ট জাস্ট গিভ আপ অন সামওয়ান বিকজ দ্য সিচুয়েশন’স নট আইডিয়াল। এই জগতে যত সুন্দর সম্পর্ক আছে, বন্ধন আছে। যাদেরকে আমরা আদর্শ মানি, মডেল, আইডল হিসেবে ভাবি তুমি যদি তাদের ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখো তাহলে দেখতে পাবে যে, তাদের সম্পর্ক সুন্দর এর পেছনে কারণ এটা নয় যে তাদের মধ্যে কোন সমস্যা নেই। তাদের সম্পর্ক সুন্দর কারণ তারা সমস্যাগুলোকে তাদের সম্পর্কের উপর, বন্ধনের উপর সওয়ার হতে দেয়না। তারা প্রতিকূলতার জন্য একে অন্যকে দোষারোপ না করে পরস্পরকে আঁকড়ে ধরে সেই পরিস্থিতিটা মোকাবিলার চেষ্টা করে। যারফলে তাদের সম্পর্ক আরো সুন্দর হয়ে ওঠে এবং বন্ধন আরো মজবুত হয়। একটা কথা আছে, গুড বেটার এন্ড বেস্ট, নেভার লেট ইট রেস্ট। আমাদের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া রয়েছে, আমরা গুড ফ্রেন্ড, এরচেয়ে বেস্ট আর কিছু হতেই পারে না। এমন ভাবার কোন অবকাশই নেই নিজের ব্যক্তিজীবনের কোন ক্ষেত্রে কিংবা আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকা কোন স্পেশ্যাল বন্ধনের ক্ষেত্রে। এই যেমন তোমরা যখন বলো, আমাদের পাপা এই পৃথিবীর বেস্ট পাপা। আমি তখন মনে মনে বলি, গুড বেটার এন্ড বেস্ট, নেভার লেট ইট রেস্ট। টিল ইউর গুড ইজ বেটার এন্ড ইউর বেটার ইজ বেস্ট। মোর, মোর এন্ড মোর।

নাবিহা হেসে বলল, লাভ ইউ পাপা। ইউ আর দ্য বেষ্ট, ঐ দেখো নানুমণিও হাজির করতে তোমায় অ্যারেস্ট।

হেসে ফেললেন জাওয়াদ। মিসেস সুরাইয়াও হাসতে হাসতে কন্যা জামাতা আর নাতনীর সাথে এসে বসলেন।

চলবে..
পর্ব-

 

স্মৃতির জোনাকি…২

স্মৃতির জোনাকি…২


আফরোজা হাসান


আজাদ সাহেব আর মিসেস সুরাইয়া নাস্তা করছিলেন। নূহা এসে সালাম দিয়ে হেসে বলল, মামণি তোমার জন্য একটা গিফট আছে। এরপর হাতের প্যাকেটটা মামণির দিকে বাড়িয়ে ধরে হেসে বলল, এখন খুলতে পারবে না। আমি চা নিয়ে উপরে যাবার পর খুলবে।

কন্যার হাত থেকে গিফট নিয়ে আহ্লাদিত কন্ঠে মিসেস সুরাইয়া বললেন, কি আছে এটার ভেতরে?

নূহা হেসে বলল, চা নিয়ে এক্ষুণি চলে যাচ্ছি এরপর নিজেই খুলে দেখো।

আজাদ সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, আমাদেরকে কেউ গিফট টিফট দেয় না কখনোই। অবশ্য মাকে তিনটা গিফট দেবার পর গিয়েই না বাবার পালা আসবে। মাত্র তো দুটা হলো এটা নিয়ে। হুমমম…

হাত থেকে চায়ের কাপ নামিয়ে রেখে পাপাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে দিয়ে হাসতে হাসতে চা নিয়ে চলে গেলো নূহা। তৎক্ষণাৎ দুই টানে প্যাকেট খুলে ফেললন মিসেস সুরাইয়া। আজাদ সাহেব হাসতে হাসতে বললেন, মেয়ের ব্যাপারে একদম বাচ্চাদের মতো হয়ে যাও তুমি সুরাইয়া।

স্বামীর কথাওয়াই কান না দিয়ে প্যাকেট খুলে গিফট বের করে একদম বিমুগ্ধ হয়ে গেলেন মিসেস সুরাইয়া। আজাদ সাহেবও মুগ্ধ কন্ঠে বললেন, মাশাআল্লাহ এতো ভয়াবহ সুন্দর। আমার মা কি নিজ হাতে বানিয়েছে নাকি?

আনন্দিত কন্ঠে মিসেস সুরাইয়া বললেন, আলহামদুলিল্লাহ অবশ্যই আমার মেয়ে বানিয়েছে। দেখেছো কি অদ্ভুত সুন্দর টি-কোজিটা! নানান রঙের উলের সুতো দিয়ে ছোট্ট কুটিরের অবয়বে টি-কোজিটা টা বানিয়েছে। মুগ্ধ চোখে যখন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টি কোজিটা টা দেখছিলেন মিসেস সুরাইয়া হঠাৎ ভেতর থেকে একটা চিরকুট পড়লো। আজাদ সাহেব হাত বাড়িয়ে চিরকুটটি তুলে নিয়ে খুলে হেসে বললেন, তোমার আদূরে কন্যা লিখেছে, “তোমাকে ঠেলতে গিয়ে দূরে মামণি, থমকে গিয়েছিলাম দেখে হৃদয়ের আয়নাখানি। অন্তর জুড়ে তোমার ছবিই সবচেয়ে উজ্জ্বল, তপ্তদাহে ছায়া তোমার মমতা মাখা আঁচল। যতই মেতে থাকি অন্যের সনে উল্লাসে, মাগো তুমি মিশে আছো মোর প্রতিটি নিঃশ্বাসে। জড়িয়ে থাকো তুমি সর্বদা ছায়ার মতোই, কাছে থাকি তোমার কিংবা দূরে যতোই।

আদরের মেয়ের কাছ থেকে এমন ভালোবাসা পূর্ণ শব্দসম্ভার উপহার পেয়ে মিসেস সুরাইয়ার দু’চোখ বেয়ে অঝোর অশ্রু নেমে এলো। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করতে লাগলেন একদম। আজাদ সাহেব তখন স্ত্রীকে ধরে বললেন, এমন করে কেঁদো না সুরাইয়া প্লিজ। আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। চলো তুমি উপরে চলো। নূহার কাছে গিয়ে বসবে। দুজন উপরে যাচ্ছিলেন কিন্তু জাওয়াদকে দেখে আজাদ সাহেবকে যেতে বলে মিসেস সুরাইয়া নাস্তা দিলেন জাওয়াদকে।

নাস্তা করতে বসে টেবিলের উপর কুটির আকৃতির টি কোজিটা দেখে জাওয়াদ হেসে বললেন, এটা কি টি কোজিটা? অদ্ভুত রকম সুন্দর। এটা কি আপনার কন্যার তৈরি?

মিসেস সুরাইয়া গর্বিত কন্ঠে বলল, আলহামদুলিল্লাহ অবশ্যই আমার কন্যার তৈরি। আমার কন্যা ছাড়া সবকিছুতেই এমন গৃহের মায়া ফুটিয়ে তোলার মতো আর কেউ আছে নাকি?

জাওয়াদ হেসে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ। আমি উনার ড্রয়ারে কয়েক কালারের উলের সুতো দেখেছিলাম। সেই আন্দাজের সাথে আপনার চেহারায় ছড়িয়ে থাকা গদগদ ভাব দেখে ঢিল ছুঁড়েছিলাম। তা না হলে আমার জানা ছিল না আপনার কন্যা এত চমৎকার উলের কাজও জানেন।

তুই জানিসই কতটুকুন আমার মেয়ে সম্পর্কে? আমার মেয়ে হচ্ছে ম্যাজিক। বুঝেছিস?

জাওয়াদ হেসে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ। কিভাবে জানবো বলেন? বিয়ের পর শ্বাশুড়িরা মেয়ের জামাইকে পাশে বসিয়ে মেয়ের সম্পর্কে খুঁটিনাটি সবকিছু জানান। কিন্তু আমার শ্বাশুড়ির আমার পাশে এসে বসা মানেই বকাঝকা। যাইহোক, তা আপনার ম্যাজিক গার্ল কোথায়? স্বামী বাড়িতে থাকলে তাকেও যে একটু আধটু ম্যাজিক দেখানো আবশ্যক এই তথ্য কি উনি জানেন না? এখনো পর্যন্ত জেনে না থাকলে আপনার তো উচিত কন্যাকে জানানো।

আমার মেয়েকে আমি কি জানাবো, কি জানাবো না সেটা কি এখন তোর কাছ থেকে শিখতে হবে? চোখ পাকিয়ে বললেন মিসেস সুরাইয়া।

জাওয়াদ হেসে বললেন, শিক্ষা তো মামণি অক্সিজেনের মতো। আমরা যেমন নিয়ম তৈরি করি না যে, আমি কেবল মাত্র বটবৃক্ষ বা আম গাছ থেকে বের হওয়া অক্সিজেনই গ্রহণ করবো। অন্য গাছের অক্সিজেনে আমার এলার্জী আছে। শিক্ষা ব্যাপারটাও এরকম। আমরা যে কোন সময়, যে কারো কাছ থেকেই শিক্ষা অর্জন করতে পারি।

যে কোন সময়, যে কারো কাছ থেকে শিক্ষা অর্জন করতে আমার কোনই আপত্তি নেই। আমার শুধু তোর কাছ থেকে শিক্ষা অর্জনে এলার্জী। তুই যেমন চেরীফল সহ্য করতে পারিস না, আমি তেমন তোর জ্ঞানের কথা সহ্য করতে পারিনা।

আচ্ছা বাদ তাহলে জ্ঞানের কথা। মেয়ের সংসারে তার মায়ের প্রভাব মারাত্মক। শ্বাশুড়িকে তাই খুশি রাখাটা জরুরি। হাসলে হাসতে বললেন জাওয়াদ।

টিজ করা কি মানুষকে খুশি রাখার নতুন পদ্ধতি নাকি? কথা বলছিস না কেন? চুপ করে আছিস কেন? জবাব দে?

জাওয়াদ হেসে বললেন, মেয়েকে যে স্বামীর সেবাযত্ন বিষয়ক কোন শিক্ষাই দেননি। সেই জবাব না আপনি দেবেন।

মিসেস সুরাইয়া বললেন, মেয়ের স্বামীর ঘরে যাবার বয়স হবার মতো সময় পেলে অবশ্যই দিতাম। কিন্তু মেয়ের দুধের দাঁত সব পরে উঠতে না উঠতেই তো জাদু টোনা করে জামাই এসে হাজির।

হাসতে হাসতে জাওয়াদ বললেন, জাদুটোনা করে?

অবশ্যই জাদুটোনা করে। জাদুটোনা ছাড়া তোর মতো বুড়া ছেলেকে আমার মেয়ে পছন্দ করতে যাবে কোন দুঃখে।

জাওয়াদ হেসে বললেন, জাদুটোনা জানলে মেয়ের আগে মেয়ের মাকেই করতাম। তাতে তার ভিলেনিপনার হাত থেকে অন্তত মুক্তি মিলতো। মামণি একটা প্রশ্ন করলে সত্যি জবাব দেবে?

তোকে কি আমি ভয় করি নাকি যে ভয়ে মিথ্যা জবাব দেবো?

জাওয়াদ হেসে বললেন, তোমার কি আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে পছন্দ হয়নি?

উহু, হয়নি।

জাওয়াদ হেসে বললেন, কেন?

আমি আমার মেয়ের জন্য খুব সহজ সরল একটা জামাই চেয়েছিলাম। নির্ঝঞ্ঝাট, পিছুটান নেই এমন কোন ছেলে। আটটা থেকে পাঁচটা ডিউটি করবে। বাকি সময় আমার মেয়ের সাথে কাটাবে। যার মাথার মধ্যে জ্ঞানার্জনের ভূত থাকবে না, মহাজ্ঞানী টাইপ হবে না। সারাক্ষণ মিশন, ভিশন জপবে না। কথায় কথায় তর্জন গর্জন করবে না। একদম শান্ত ও মিষ্ট স্বভাবের হবে। সাধারণ কর্মী টাইপ ছেলে হবে। নেতাগিরি করে বেড়াবে না সর্বত্র। বিশাল বিশাল দায়িত্ব যার কাঁধের উপর থাকবে না। যার জগত হবে আমার মেয়েকে ঘিরে। আমাকে মেয়েকে খুশি রাখা, আনন্দে রাখাটা যার ফেব্রেট হবি হবে। এমন আরো নানান চিন্তাভাবনা ছিল। যার কোনটাই তোর মধ্যে নেই। সেই সাথে আমার অপছন্দনীয় সমস্ত কিছু আবার উপস্থিত তোর মধ্যে।

জাওয়াদ হেসে বললেন, তুমি তাহলে তোমার পছন্দের লিষ্ট আমাকে দাও। যেটা যেটা আয়ত্ত্ব করা সম্ভব আমি আপ্রাণ চেষ্টা করবো নিজের মধ্যে ধারণ করার। যেমন তোমার মেয়েকে খুশি রাখা, আনন্দে রাখাটাকে আমি হবি না আমার কর্তব্যকর্ম মনেকরি। শখ বদলে যেতে পারে মা। কিন্তু কর্তব্যকর্ম প্রতিটি বন্ধনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যতক্ষণ বন্ধন অটুট থাকে, কর্তব্যকর্ম না বদলে যায়, না হেলাফেলা করার সুযোগ থাকে। আচ্ছা চলো তুমি আর আমি আজ একটা ডিল করি। মেয়ের জামাইকে ঘিরে তোমার যত চাওয়া পাওয়া ছিলো সবকিছু মিলিয়ে একটা কোয়েশ্চেন পেপার তৈরি করে দাও আমাকে। আমি তোমার কাছে পরীক্ষা দেবো। যদি সব প্রশ্নের জবাবে উৎরে যেতে পারি, তাহলে নিশ্চয়ই তোমার আপত্তি থাকবে না আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে খুশি মনে মেনে নিতে?

মিসেস সুরাইয়া বললেন, আইডিয়া মন্দ না। চিন্তা ভাবনা করে এরপর আমার সিদ্ধান্ত জানাবো তোকে ইনশাআল্লাহ।

জাওয়াদ হেসে বললেন, এখন তাহলে বলে দাও আমার বৌ কোথায়?

মামণি বললেন, উপরেই কোথাও আছে। উঠছিস কেন? বোস চুপচাপ। তুই যেতে পারবি না এখন ওর কাছে।

জাওয়াদ বললেন, এটা আবার কেন?

মিসেস সুরাইয়া বললেন, আইমিন, একা যেতে পারবি না। আমিও যাবো তোর সাথে। চা নিয়ে আসি রান্নাঘর থেকে ততক্ষণ বসে থাক। এরপর একসাথে যাবো।

জাওয়াদ হেসে বললেন, নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো। বৌকে একেবারে না দেখার চেয়ে ভিলেন শ্বাশুড়ির নজরদারীর মধ্যে দেখাও উত্তম। যান যান চা নিয়ে আসেন। আমিও বসে বসে দোয়া করতে থাকি আমার কানা মামা যাতে দুষ্টু গরু হয়ে না যায়। আমাকেও যাতে প্রবাদ উল্টে বলতে নাহয়, দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।

মিসেস সুরাইয়া জাওয়াদকে ঘুষি মেরে হাসতে হাসতে চলে গেলেন চা আনার জন্য। কারো মৃদু ধাক্কা মূহুর্তেই অতীতের আনন্দঘন সময় থেকে বর্তমানে নিয়ে এলো মিসেস সুরাইয়াকে। নাবিহা হাসতে হাসতে বলল, নানুমণি কি হয়েছে তোমার? সেই কখন থেকে দেখছি টি কোজিটার দিকে তাকিয়ে গভীর ভাবনায় ডুবে আছো। কি ভাবছো এমন করে?

বিরক্ত কন্ঠে মিসেস সুরাইয়া বললেন, তোদের যন্ত্রণায় শান্তি মতো কোথাও বসবো সেই সুযোগও নেই। কি চাই?

নাবিহা হেসে বলল, আমার পাপাকে খুঁজে পাচ্ছি না কোথাও। পাপা কোথায় বলে দাও। তাহলে তোমাকে আর বিরক্ত করবো না।

মিসেস সুরাইয়া বললেন, তোর পাজী পাপাকে তো আমিও খুঁজছি। মামণি নাস্তা দাও বলে সেই যে গেলো আর কোন খবর নেই।

নাবিহা হেসে বলল, তাহলে চলো আমরা দুজন মিলে পাপার সন্ধানে যাই। যে প্রথমে খুঁজে পাবে পাপাকে বিরক্ত করার প্রথম সুযোগ তার।

হেসে ফেললেন মিসেস সুরাইয়া। এরপর নানী, নাতনী মিলে খুঁজতে বের হলো জাওয়াদকে।

চলবে….

পর্ব-১

অসুস্থ কোহিনূরের পাশে বিভিন্ন সংগঠন


নারী সংবাদ


দৈনিক নয়া দিগন্তে সংবাদ প্রকাশের পর থেকে পাল্টাতে থাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রতনপুর গ্রামের অসুস্থ সেই কোহিনূরের কষ্টের জীবন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও মাধ্যমে বিনা খরচে চিকিৎসা শেষে এবার হাতে পেল নগদ লক্ষাধিক টাকা।

‘নবীনগরের আঞ্চলিক কথা’ নামের একটি ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপের সদস্যরা ১৩ আগষ্ট মঙ্গলবার রতনপুর গ্রামে গিয়ে কোহিনূরের হাতে নগদ এক লাখ ৯ হাজার ২৯২ টাকা তুলে দেন। একই সময়ে নবীনগর পৌর এলাকার আলীয়াবাদ গ্রামের বাহরাইন প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের মাধ্যমে দেওয়া হয় ২০ হাজার টাকা, ১১ আগস্ট যুবদল প্রবাসী অনলাইনের পক্ষ থেকে দেয়া হয় ৫০ হাজার টাকা।

নবীনগরের আঞ্চলিক কথা নামের ওই গ্রুপের সভাপতি মোজাম্মেল হক ও অ্যাডমিন বাবুল ভূঁইয়া বলেন, ‘নয়া দিগন্তে সংবাদটি প্রকাশের পর কোহিনূরের চিকিৎসার জন্য মাসখানেক আগে আমরা আমাদের ফেসবুক পেইজটিতে একটি বিকাশ নম্বর দিয়ে সহযোগিতা চাই। এরপরই বিভিন্ন বন্ধুরা দেশ বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতে থাকেন। আজ বন্ধুদের পাঠানো পুরো টাকাটা কোহিনূরের হাতে তুলে দিতে পেরে ভীষণ তৃপ্তিবোধ করছি।’

টাকা হস্তান্তরের সময় নবীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক কাজী ওয়াজেদ উল্লাহ জসীম, আবদুল কাইয়ুম এবং ‘নবীনগরের আঞ্চলিক কথা’ গ্রুপের সদস্য মজিবুর রহমান পথিক, আসাদুজ্জামান, সোহেল রানাসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, নবীনগর উপজেলার রতনপুর গ্রামের মৃত কবির হোসেনের মেয়ে কোহিনুর বেগম গত ৪ বছর আগে মেরুদন্ডের সমস্যার কারণে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তার পিঠে অপারেশন করে দুইটি রড স্থাপন করা হয়। এর পর থেকে অসুস্থ শরীর নিয়ে গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষে করে অন্যের বাড়িতে থেকে, ৫ বছর বয়সী একমাত্র ভাইটিকে রসুল্লাবাদ হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়িয়ে কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। অর্থের অভাবে নির্ধারিত সময়ে সেই রড খুলতে না পারায় চামড়া ছিঁড়ে রডগুলো বেড়িয়ে গিয়ে ওই স্থানে পচন ধরে পোকা হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। গত কয়েক মাস ধরে তার মেরুদন্ডে ব্যথা আবারো ফিরে আসে। তীব্র আকার ধারণ করলে কোহিনূর আবারো শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে।

তার জীবনের করুণ এই চিত্র নিয়ে দৈনিক নয়া দিগন্তে ২৮ জুন ‘এই যন্ত্রণা থেকে মরে যাওয়া অনেক ভালো’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর, এই মানবিক ঘটনাটি নবীনগরের ইউএনও মোহাম্মদ মাসুমের নজরে আসে। পরে তিনি ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হয়ে ১ জুলাই কোহিনূরকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে ঢাকার ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশনে’ পাঠান। সেখানে ফাউন্ডেশনের দুই সদস্য ডা: কাজী আয়েশা সিদ্দিকা বর্ণা ও ডা: হাসান মাহমুদের তত্ত্বাবধানে কোহিনূরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ১৩ ও ১৬ মে তার মেরুদন্ডে সফল অস্ত্রোপচার করেন অধ্যাপক ডা: শাহ আলম। এরপর কোহিনূর সুস্থ হয়ে ১ আগস্ট রতনপুর গ্রামে ফিরে আসে। এক মাস পর আবার যেতে হবে হাসপাতালে। তার এই চিকিৎসা ব্যয়বহুল বলে জানান ডা: কাজী আয়েশা সিদ্দিকা।

নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুম বলেন, কোহিনুরের সুস্থতার জন্য দেশবাসীর নিকট দোয়া কামনা করছি এবং নবীনগর উপজেলা প্রসাশন সব সময় তার পাশে থাকবে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার জন্য সরকারি খাস জায়গা বন্দোবস্ত দেয়াসহ তার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্যও আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

মা-বাবাহীন কোহিনুর বেগম সু-চিকিৎসার সুযোগ ও হাতে নগদ টাকা পেয়ে আনন্দে কান্না জড়িতকন্ঠে সকলের কাছে কৃতজ্ঞা প্রকাশ করে দেশবাসীর কাছে দোয়া ও সহযোগিতা প্রার্থনা করেন।

কোহিনুর বেগমকে আর্থিক সহায়তা করতে ইচ্ছুকরা যোগাযোগ করতে পারেন। বিকাশ নম্বর : ০১৮৪৬৯৮৭২৮১ (ব্যক্তিগত)।

দৈনিক নয়া দিগন্তে

 

গরুর গোস্তের ভুনার

গরুর গোস্তের ভুনার


রেসিপি


টুপটুপ বৃষ্টি হচ্ছে আর খাবারের টেবিলে সাজানো গরম রুটি আর গরুর গোস্তের ভুনা। সাথে লেবু আর সালাদ। কেমন হবে সেই মুহূর্ত? এখন তো ছুটির দিন। তাই তো আজ নিয়ে এলাম মজাদার গরুর গোস্তের ভুনার রেসিপি।

উপকরণ:

গরুর গোস্ত ২ কেজি,

আদা বাটা ৪ টেবিল চামচ,

রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ,

আস্ত রসুন ৬ কোয়া,

জিরা বাটা ১ চা চামচ,

দারুচিনি ৬ টুকরা,

এলাচ ৬ টুকরা,

পেঁয়াজ মোটা গোল করে কাটা ২ কাপ,

পেঁয়াজ চিকন কুচি ১ কাপ,

কাঁচা জিরা,

শুকনা মরিচ ২টা, তেল ২ কাপ,

হলুদ বাটা দেড় চা চামচ,

শুকনা মরিচ বাটা ১ চা চামচ,

লবন ১ টেবিল চামচ,

চিনি ১ চা চামচ।

প্রণালি :

প্রথমে চুলায় তেল গরম করুন। কেলে চিকন কুচি করা পেঁয়াজ দিয়ে ভেজে নিতে হবে। পেঁয়াজ তুলে আলাদা করে রাখুন। তেলে এবার মোটা গোল পেঁয়াজ দিয়ে একটু বাদামি করে ভাজুন। পেঁয়াজ বাদামি রঙ হলে গোস্তে, আদা বাটা, রসুন বাটা, জিরা বাটা, হলুদ বাটা, মরিচ বাটা দিয়ে খুব ভালো করে মেশান। অল্প অল্প করে গরম পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। গোস্তে ২ কাপ গরম পানি ঢেলে দিতে হবে।মাংস ঢেকে দিন। মাংস আধা সেদ্ধ হলে আস্ত রসুন দিতে হবে। পানি কমে আসলে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন।ঢিমা আঁচে কিছু সময় রাখতে হবে। এবার চুলায় কাঁচা জিরা, দারুচিনি, এলাচ, শুকনা মরিচ শুকনা তাওয়ার ওপর দিয়ে ভেজে নিন। ভাজা মশলা পাটায় বা মিক্সারে গুঁড়া করে নিতে হবে। ভাজা পেঁয়াজ চিনির সঙ্গে মিশিয়ে হাত দিয়ে গুড়া করে নিতে হবে। যখন গোস্ত ভুনে তেলের ওপর আসবে, তখন পেঁয়াজের সঙ্গে গুড়া মশলা মিশিয়ে গোস্তের ওপর ছড়িয়ে দিন। অল্প আঁচে আধা ঘণ্টা রাখতে হবে।যখন পানি শুকিয়ে মাখা মাখা হবে এবং তেল ছাড়তে শুরু করবে তখন নামিয়ে নিন। ব্যাস হয়ে গেলো খুব সহজে মজাদার ‘গরু গোস্তের ভুনা।

পরিবেশনঃ গরম গরম রুটি আর ভুনা গোস্ত পরিবেশন করুন।

 

স্ত্রীকে ১৫ টুকরো করে শ্বাশুরীকে ফোন দিয়েছে ঘাতক স্বামী


নারী সংবাদ


গাজীপুরের শ্রীপুরে গার্মেন্টস কর্মী এক নারীকে ১৫ টুকরো করে হত্যা করেছে পাষন্ড স্বামী। পুলিশ ঘরের ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে নিহতের ৫ টুকরো মাংস পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ঘাতক স্বামী মামুন মিয়াকে (২৫) সাভারের কবিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার জানান, নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার দেবকান্দা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে সুমা আক্তার ওরফে সুমির (২৭) সঙ্গে প্রায় দু’বছর আগে গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার সিংহশ্রী ইউনিয়নের বরইবাড়ি এলাকার ফজলুল হকের ছেলে মামুন মিয়ার (২৫) বিয়ে হয়। এটি উভয়ের দ্বিতীয় বিয়ে। বর্তমান সংসারে কোন সন্তানের জন্ম না হলেও তাদের উভয়ের পূর্বের সংসারের একজন করে সন্তান রয়েছে। ওই দু’সন্তানের একজন তার দাদীর কাছে এবং অপরজন তার নানীর কাছে থাকে। বিয়ের পর সুমা তার স্বামী মামুনকে নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গিলারচালা এলাকার শফিকুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় সাবলাইম গ্রীনটেক নামের এক পোশাক কারখানার সুয়িং অপারেটর পদে চাকুরি করতো। মামুন ওই এলাকায় ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করতো। বিয়ের কিছুদিন পর হতে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মামুন ও সুমার মধ্যে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল। সম্প্রতি সুমার জমানো ৪০ হাজার টাকা ও মামুনের নারীঘটিত বিষয়াদি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে দাম্পত্য কলহ চরম আকার ধারণ করে।

পুলিশ সুপার আরো জানান, ঈদের ছুটি কাটাতে শুক্রবার স্বামীকে নিয়ে নেত্রকোনা গ্রামের বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় সুমা। অপরদিকে আগেরদিন স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে মামুন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মামুন স্থানীয় বাজার থেকে দু’টি ট্র্যাভেল ব্যাগ, পলিথিন ও কিছু ঘুমের ট্যাবলেট কিনে। এসময় সে একশ’টাকা দিয়ে একটি ধারালো চাকুও কিনে । বাসায় যাওয়ার সময় মামুন হোটেল থেকে হালিম ও রুটি কিনে নেয়। বাসায় ফিরে রাতে কৌশলে হালিম ও রুটির সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে সুমাকে খাওয়ায়। খাবার খেয়ে রাতে সুমা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এরপর রাত ১টার দিকে বুকের উপর বসে সুমার মুখ চেপে ধরে ও গলা টিপে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে পাষন্ড স্বামী। পরে সুমার লাশ টেনে গোসলখানায় নিয়ে যায়। সেখানে বাজার থেকে কিনে আনা স্টিলের ধারালো চাকু দিয়ে প্রথমে মাথা, হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করে। পরে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে শুধু মাংস খন্ড বিচ্ছিন্ন করে। এভাবে সুমার লাশকে মোট ১৫টি টুকরো করে ১০ কেজি ধারনক্ষম তিনটি পলিথিনে ভর্তি করে প্যাকেট করে মামুন।

শুক্রবার ভোরে দু’দফায় দু’টি প্যাকেটে ভর্তি লাশের ১০ টুকরো দু’টি ট্র্যাভেল ব্যাগে ভরে সিএনজি চালিত অটো রিক্সায় চড়ে পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী এলাকায় শীতলক্ষ্ম্যার শাখা বানার নদীর ব্রীজে নিয়ে যায়। সেখানে লাশের টুকরো ভর্তি ব্যাগগুলো নদীতে ফেলে তৃতীয় প্যাকেট নেওয়ার জন্য পুনঃরায় বাসায় ফিরে আসে মামুন। দু’দফায় ফেলে আসার মাঝে মামুন স্থানীয় রুহুলের বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন মেরামতের কাজ করে নিজেকে স্বাভাবিক করে তোলার চেষ্টা করে। পরে রাতে মামুন তার শ্বাশুড়িকে মোবাইল ফোন করে জানান, সুমাকে সে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। সুমা বাড়িতে পৌঁছেছে কি-না এসময় শ্বাশুড়ির কাছে তাও জানতে চায় মামুন।

এদিকে শুক্রবার রাতে সুমা বাড়ি না পৌছায় স্বজনরা তার মোবাইলে ফোন করে বন্ধ পায়। সুমার খোঁজ না পেয়ে পরদিন শনিবার সুমার ছোট বোন বৃষ্টি ও তার (বৃষ্টির) স্বামী নবী হোসেন শ্রীপুরের গিলারচালায় আসে। বড় বোন সুমার সঙ্গে বৃষ্টি একই কারখানায় চাকুরি করেন। বৃষ্টি একই এলাকায় অনত্র ভাড়া থাকেন। সেখানে কাউকে না পেয়ে ঘরের দরজার তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে কারো খোঁজ পান নি। পরে পার্শ্ববর্তি এক বাড়ি থেকে মামুনকে পেয়ে তাকে সাথে নিয়ে সুমাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন তারা।

এসময় মামুন কৌশলে পালিয়ে যায়। সুমা ও মামুনের খোঁজ না পেয়ে বৃষ্টি ও তার স্বামী গ্রামের বাড়ি ফিরে যান। তারা বাড়ি গিয়ে সুমার খোঁজ না পেয়ে সোমবার পুনঃরায় শ্রীপুরের ওই বাসায় আসেন এবং বাসার ভিতরে প্রবেশ করেন। এসময় তারা ঘরের ভিতরে দুর্গন্ধ পান এবং ঘরে থাকা ড্রেসিং টেবিলের নীচ থেকে মেঝেতে রক্তাক্ত পানি গড়াতে দেখেন। রাত ৮টার দিকে ড্রেসিং টেবিলটির ড্রয়ার খুলে পলিথিনে মোড়ানো মানবদেহের মাংসের পাঁচটি টুকরা দেখতে পান তারা। তবে সেখানে তার মাথা, হাত ও পা ছিল না। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই ৫টুকরো মাংস উদ্ধার করে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

নিহতের বোন বৃষ্টি জানায়, বৃহস্পতিবার বেতন দিয়ে কারখানায় ঈদের ছুটি হয়ে যায়। শুক্রবার তাদের সঙ্গে একত্রে বাড়ি যাওয়ার কথা সুমা’র। ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সুমার জমানো ৪০ হাজার টাকা দিয়ে টিউবওয়েল স্থাপন ও বাড়ির বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করার কথা ছিল। শুক্রবার সকালে বাড়ি যাওয়ার সময় সুমাকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও না পেয়ে বৃষ্টি তার স্বামীর সঙ্গে ময়মনসিংহের শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারা বাড়িতে পৌঁছে একাধিকবার বড় বোন ও ভগ্নিপতির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাদের ফোন বন্ধ পেয়ে শ্রীপুরে সুমার বাসায় এসে মাংসের টুকরোর সন্ধান পান।

পুলিশ সুপার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার ভোর রাতে পুলিশ ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার কবিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফুপাতো ভাইয়ের বাসা থেকে মামুনকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদকালে মামুন সুমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে লোমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়। এসময় সে জানায়, সুমার ৪০ হাজার টাকা নিয়ে একটি মোবাইল ফোন কিনে সে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু ও ট্র্যাভেল ব্যাগ এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।

 

ডেঙ্গু:জ্বর নেমে গেলে রোগীর পরিচর্যা কেমন হবে

ডেঙ্গু:জ্বর নেমে গেলে রোগীর পরিচর্যা কেমন হবে


স্বাস্থ্যসেবা


তাহমিনা আক্তার পলি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক ও মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা।তার সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে নব জাহিদুল কবীরের গায়ে জ্বর উঠেছিলো ২০শে জুলাই। দেরী না করে দ্রুতই সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে যান তারা।

“যখন ছেলেকে হাসপাতালে নিলাম তখন জ্বর ছিলো কম। কিন্তু প্রেশার কমে গিয়েছিলো। রক্তে প্লেটলেট কমতে শুরু করে। এরপর সাত দিন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।”

তিনি বলছেন, “জ্বর চলে যাওয়ার পর ছেলেকে স্যালাইন ও প্রচুর তরল খাওয়াতে হয়েছিলো এবং চিকিৎসকরা যে কয়েকটি জিনিসের প্রতি লক্ষ্য রেখেছিলেন তা হলো নব’র পাতলা পায়খানা হচ্ছে কি-না কিংবা বুকে বা পেটে কোনো ব্যথা হচ্ছে কি-না সেদিকে নজর রাখা।”

তাছাড়া আলট্রাসনোগ্রাম ও বুকের এক্স রে করা হয়েছে কয়েকবার বুকে পানি জমেছে কি-না সেটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য।

চিকিৎসকরা বলছেন, এবারে যাদের ডেঙ্গু হয়েছে তাদের মধ্যে জ্বর খুব একটা বেশি ওঠছে না। আবার উঠলেও সেটি ২/৩ দিনের মধ্যেই নেমে যাচ্ছে।

চিকিৎসকদের মতে এবারে ডেঙ্গুর যে প্রবণতা সেটি আগের বছরগুলোর মতো নয়, এমনকি লক্ষণও কিছুটা ভিন্ন।

কারণ আগের বছরগুলোতে এডিস মশা কামড়ালে প্রচণ্ড জ্বর হতো কিন্তু এবার অনেক ক্ষেত্রেই তাপমাত্রা খুব বেশি হতে দেখা যাচ্ছে না। গত কয়েক বছর হেমোরেজিক জ্বর হচ্ছিলো অনেকের।

কিন্তু এবার সেটি তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। এবার যা হচ্ছে চিকিৎসকরা তার নাম দিয়েছেন ‘শকড সিনড্রোম।’

একারণে এবার অল্প জ্বর হলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে বলছেন তারা।

 সুত্রঃ বিবিসি।

 

শিশুকে আদর–যত্ন–ভালোবাসা দিন


 প্যারেন্টিং


বাচ্চাদের পিছনে শুধু খাওয়া আর পড়াশুনা করান দায়িত্ব শেষ নয়। শিশুকে আদর–যত্ন–ভালোবাসা দিয়ে লালন–পালন করতে হয়। অভিজ্ঞতা শেয়ার করা, উপদেশ দেওয়া বা কখনও কঠিনভাবে কথা বলা; কখনওবা কোমলভাবে ডেকে নেওয়া। উভয়টাই আমাদের কল্যাণের জন্য ।

আসুন দেখিঃ

কি কি করা যাবে না…

খুব দ্রুত প্রশংসা বা তিরস্কার করে ফেলা

বিপদ থেকে দ্রুত উদ্ধার করে ফেলা

কোন ঝুঁকি নিতে না দেয়া

নিজের ভুল স্বীকার না করা

জ্ঞানী উপদেশ, এই করবে না

কি কি করব

 জেনে রাখুন, শিশুরা ছোটদের মতোই আচরণ করবে

১) রেগে গিয়ে বা ধৈর্য হারিয়ে নয় বরং ভেবে-চিন্তে, ধীরে-সুস্থে এই বিষয়গুলো মোকাবিলা করতে হবে, তাদের বুঝাতে হবে, বুঝতে সাহায্য করতে হবে।

২) দোষারোপ করে নয়, মর্জাদা বজায় রেখে সীমা নির্ধারণ করুন

৩) নিজে প্রতিটিসম্পর্কে সচেতন হোন

৪) আপনার শিশুর ব্যক্তিত্ব ও মেজাজ-মর্জি সম্পর্কে জানুন

৫) শিশুকে নিজের ইচ্ছামতো খেলাধুলা করার জন্য প্রচুর সময় দিন

৬) কখন আপনি কথা বলবেন আর কখন তাকে কথা বলতে দেবেন, সেটা জেনে রাখুন

৭) সন্তানের মা বা বাবা ছাড়াও আপনার যে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় আছে, তা তাকে বুঝতে দিন

৮) মনে রাখবেন, কিছু বলার চেয়ে করে দেখানোটা শিশুর কাছে অনেক বেশি গুরুত্ববহ

৯) মনে রাখবেন, শিশুর মধ্যে ইতিবাচক আচরণ ও সহযোগিতার মনোভাব গড়ে ওঠার জন্য দরকার সঠিক যোগাযোগ, আনন্দময় পরিবেশ এবং সৃষ্টিশীলতা

১০) শিশুর সঠিক আচরণ নয়, সঠিক হৃদয়বৃত্তি গড়ে তোলার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ভাবুন

 

কোটালীপাড়ায় ক্লাস ফোরের স্কুলছাত্রী ধর্ষণ : গ্রেফতার ১

কোূটালীপাড়ায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণ : গ্রেফতার ১


নারী সংবাদ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইজাবুল মোল্লা (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল কোটালীপাড়া থানা পুলিশ ইজাবুল মোল্লাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
জানা গেছে, ২ আগস্ট বিকেলে ইউসুফ মোল্লা জটিয়ারবাড়ী গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে স্থানীয় ফরিদ মিয়ার মাছের ঘেরপাড়ে ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ইজাবুল মোল্লা নানাভাবে ওই ছাত্রীর পরিবারকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। গতকাল ওই ছাত্রীর মা কোটালীপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ইজাবুল মোল্লাকে গ্রেফতার করে।
কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান বলেন, ওই স্কুলছাত্রীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ইজাবুল মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য ওই ছাত্রীকে জেলা সদরে পাঠানো হবে।
সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

“আরাফাত দিবসের দোয়া “

“আরাফাত দিবসের দোয়া “


অন্যান্য


’দুআ অর্থ হলো ডাকা, আল্লাহকে ডাকা। ‘ইস্তিগফার’ অর্থ হলো মাফ চাওয়া। আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া। আর ‘ইনাবত ইলাল্লাহ’ অর্থ আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া। দুআ, ইস্তিগফার ও ইনাবাত ইলাল্লাহ মুমিনের প্রত্যাশা। ঈমানদারের সম্বল। মুমিন যখন সুখে থাকেন তখন আল্লাহকে ডাকেন, যখন কষ্ট থাকি তখনও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়না। সুখ ও শান্তি আল্লাহর তরফ থেকে আসে।

“তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দিব।” (আল-মুমিন:৬০)

আরাফাত অর্থ পরিচয়। হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়ার পুনঃপরিচয়ের ক্ষেত্র এবং উভয়ের ক্ষমাপ্রাপ্তির স্থান হবার মর্যাদা লাভের কারণেই এ স্থানটি ‘ময়দান-এ আরাফাত’ নামে পুণ্যস্থানরূপে খ্যাত।

হযরত ইবরাহীম (আঃ)সহ বহু নবী রসুল ও তাদের অনুসারীগণ এ ময়দানে এসে আল্লাহর নিকট কান্নাকাটি করেছেন। আল্লাহর পথের অনুসারী মানুষরা যুগ যুগ ধরে হজ্ব দিবসে নিজেদের গুণাহখাতা ও অপরাধসমূহের কথা স্মরণ করে এখানে আসছেন।

মহানবী (সাঃ) ঘোষণা করেছেন, কোনো লোক যথার্থ অর্থে হজ্ব পালন করার পর নিস্পাপ শিশুতুল্য হয়ে যায়। এমনকি ৪০ দিনের মধ্যে কেউ তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে, সাক্ষাৎকারীর ছোট খাটো অপরাধসমূহ আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।

মেশকাত। মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, ‘‘আরাফাতের দিন আল্লাহ তায়ালা সর্বনিম্ন আসমানে অবতরণ করেন এবং ফিরিস্তাদের নিকট নিজের বান্দাদের ব্যাপারে গর্ব করে বলেন,– দেখো, আমার বান্দাগণ ধূলী ধূসরিত হয়ে চতুর্দিক থেকে আমার কাছে আসছে। আমি তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি যে, তাদের আমি ক্ষমা করে দিলাম। অতঃপর ফিরিস্তারা বলবে, হে পরোয়ারদেগার! উমক ব্যক্তি যে বিলম্বে এসেছে? তখন আল্লাহ বলেন, আমি তাকেও মাফ করে দিলাম।’– (শরহে সুন্নাহ)

রাসুল (সা:) আরাফাতের দিন দু’হাত এমন ভাবে উঠালেন, যেভাবে একজন মিসকিন খাবার প্রার্থনা করে। অতঃপর দোয়া করলেন,

আল্লাহ ব্যতিত আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি এক, তার কোনো অংশীদার নেই। রাজত্ব ও সকল প্রশংসা তারই জন্য নিদিষ্ট। সব কল্যাণ তারই হাতে। তিনি সকল বিষয়ে শক্তিমান।

হে আল্লাহ! আমার অন্তরে আলো দান করুন, আমার কর্ণে আলো দিন, আমার দৃষ্টি শক্তিকে জ্যোতির্ময় করে দিন।

হে আল্লাহ! আমার বক্ষকে উন্মুক্ত করে দিন এবং আমার কাজকে সহজ করে দিন।

হে আল্লাহ! আমি আমার অন্তরের কুমন্ত্রনা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই, কর্মের বিভিন্নতা ও কবরের পরিক্ষা থেকেও।

হে আল্লাহ! আমি রাতে সংগঠিত অমঙল ও দিনের আলোয় সংগঠিত অকল্যান থেকেও আশ্রয় চাই। আর ঐসব অকল্যান থেকে আশ্রয় চাই যা বাতাসে বয়ে বেড়ায়, আর ঐসকল অনিষ্ট থেকে, যা কালের দুর্বিপাকে সংগঠিত হয়।

হে আল্লাহ! আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা। যেমনি ভাবে প্রশংসা আপনি করতে বলেছেন, আমরা যা বলছি তার চেয়েও উত্তম ভাবে।

হে আল্লাহ! আমার নামাজ, আমার কোরবানী, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সবই আপনার জন্য নিবেদিত। আপনারই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন।

হে আমার পালনকর্তা! আপনি আমার যাবতীয় সম্পদের অধিকর্তা।

হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি আমার কথা শুনছেন, আমার অবস্থা দেখছেন। আমার গোপন প্রকাশ্য সবই আপনি দেখেন। আমার কোনো কাজই আপনার নিকট অস্পষ্ট নয়।

আমি হতভাগা, নিঃস্ব, সাহায্যপ্রার্থী, আশ্রয় প্রার্থী, ভীত সন্ত্রস্ত্র, বঞ্চিত এবং গুনাহ ও অপরাধ স্বীকারকারী।

একজন মিসকীনের মতই আপনার দরবারে প্রার্থনা করছি। অপদস্ত ও অপরাধীর ন্যায় অনুনয় বিনয় করছি। ভীত পযুর্দস্ত ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির ন্যায় আপনাকে ডাকছি। যার গর্দান আপনার সামনে অবনত। আপনার সন্তুষ্টির জন্যই যার নয়ন অশ্র প্রবাহিত করে। যার দেহ বিনয়াবনত রয়েছে। যার নাসিকা ধুলি মলিন হয়েছে।

হে আল্লাহ…….!!!

আপনার নিকট পেশ করা আমার এ দোয়া প্রত্যাখ্যান করে আমাকে হতভাগা করবেন না। আমার প্রতি দয়ালু ও মেহেরবান হোন।

হে আল্লাহ তুমি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করতে ভালোবাসো। আমাকে ক্ষমা করে দাও।

 

স্মৃতির জোনাকি…

স্মৃতির জোনাকি…


আফরোজা হাসান


আমি মনে হয় এই পৃথিবীর সেই সব সৌভাগ্যবতী মেয়েদের একজন যারা জন্মের আগে থেকেই তাদের মামণিদের কথনসাথী। মামণি যত কথা আমার জন্মের আগে আমার সাথে বলেছেন তত কথা মনে হয় না জন্মের পর থেকে নিয়ে গত ১৭ বছরে বলেছেন। আমাদের পরিবারের প্রতিজন সদস্য সম্পর্কে মোটামুটি সবকিছু জন্মের আগেই মামণি আমাকে বলে ফেলেছিলেন। কিভাবে বলেছিলেন? আমার জন্য লেখা মামণির ডায়েরিতে। এমন একটা করে ডায়েরির মালিক অবশ্য আমরা সব ভাইবোনেরাই। কিন্তু আমার ডায়েরিটা সবচেয়ে স্পেশাল। স্পেশাল হবার অন্যতম দুটা কারণের একটি হচ্ছে আমার ডায়েরিটা মামণিকে পাপা গিফট করেছিলেন। আর দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে আমার ডায়েরিটার একটা নাম আছে। অদ্ভুত সুন্দর একটা নাম। ডায়েরির একদম প্রথমে মামণি লিখেছেন,” অনিশ্চিত অনাগতের স্বপ্ন আঁকি, সাথে নিয়ে অতীত স্মৃতির জোনাকি”।

প্রথম পৃষ্ঠায় মামণি লিখেছেন, প্রিয় মানুষরা সবসময় আমাদের সাথে থাকে না। সাথে থাকে প্রিয় মানুষদের সাথে কাটানো দুঃখ-সুখের মূহুর্তগুলো। প্রিয় জনদের দেয়া বিরহানন্দের প্রহরগুলোর স্পর্শে জীবন গল্পে রচিত আনন্দ-বেদনার কাব্য। মনের আকাশে প্রিয়জনরাই তারার ফুল হয়ে হাসে, শুভ্র মেঘ হয়ে ভাসে, উঁকি দেয় প্রশান্তির এক ফালি চাঁদ রুপে। প্রিয়জন নামক ভেলায় চড়েই জীবনগাঙে ভিড়ে সুখপাখী। প্রতিজন প্রিয় মানুষ আসলে এক একটি জোনাকি। তাদের সাথে কাটানো ক্ষণ আলোতে হাসে, আঁধারে জ্বলজ্বল করে। ঠিক যেন স্মৃতির জোনাকি! স্মৃতির জোনাকি শব্দটা মামণি একাধিকবার লিখেছেন ডায়েরিতে বিভিন্ন কথা প্রসঙ্গে। আমার ডায়েরির নাম তাই আমি রেখেছি স্মৃতির জোনাকি। নামকরণের পেছনে এরচেয়েও বড় কারণ হচ্ছে যখনই কোন কারণে আমার মনে আঁধার ভর করে, মামণির ডায়েরিতে চোখ বুলালেই মনের ভেতরটা আলো আলো হয়ে যায়। সকল প্রতিকূলতাকে দিতে পারি আমি ফাঁকি, সম্মুখে মেলে ধরি যখন মামণির রেখে যাওয়া স্মৃতির জোনাকি। আলহামদুলিল্লাহ।

ডায়েরিতে আমাকে বলা মামণির প্রথম শিক্ষা ছিল, “জানো ছোট্ট বুড়ি এই জগতে সত্যিকার সুখী হতে চাইলে সর্বাগ্রে আত্মসুখ বিসর্জন দিতে হয়। জগতে যারাই আত্মসুখের লিপ্সা ত্যাগ করতে পেরেছে সুখ তাদের মনের গহীনে সবরের অলংকারে নিজ সাম্রাজ্য গড়ে নিয়েছে। আত্মত্যাগী মানুষেরা সেজন্য ই এত স্থির, এত প্রশান্ত থাকতে পারে সর্বাবস্থাতে। আমিও আপ্রাণ চেষ্টা করি নিজের আগে আমার আপনজনদের সুখকে বড় করে দেখার। জানি না কতটুকুন পারি তবে কারো চোখের নদীতে ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ তোলার চাইতে তার ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি রূপে ফুটতেই ভালোবাসি। আমার কারণে কেউ ব্যথিত হবে এমনটা কল্পনাও করতে পারিনা। মনেহয় কিছু ব্যথা সয়ে যদি অন্যের মুখে হাসি ফোঁটাতে পারি এরচেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিইবা হতে পারে জীবনে! আমার এমন ভাবনার পেছনে তোমার নানুমণির বিশাল অবদান রয়েছে। তোমার নানুমণি মানে আমার মামণি আমার ছোট্ট জীবনে দেখা সবচেয়ে অনন্যা নারী। মামণিকে দেখেই আমি শিখেছি ভালোবাসার সুতোয় কিভাবে গাঁথতে হয় সম্পর্কের মোতি। হাসতে হাসতে কিভাবে নিজের সুখের বদলে অন্যের তরে খুশি খরিদ করতে হয় সেই শিক্ষাও তোমার নানুমণির কাছ থেকেই পেয়েছি। জানি না আমি আমার মামণির মতো অসাধারণ মা হতে পারবো কিনা! তবে আমার মামণির কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাগুলো তোমাকে উপহার স্বরূপ দিয়ে যেতে চাই। কেননা তুমি এসবের হকদারও।”

এইটুকুন লিখে থামলো নাবিহা। জানালার পর্দা সরিয়ে বাগানে উঁকি দিলো। পুরো বাগানে চোখ বুলিয়ে আকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিতে দেখতে না পেয়ে কিঞ্চিৎ আশাহত হতো। এই সময় পাপা সাধারণত বাগানেই থাকেন। আজকে তাহলে নিয়মের ব্যতিক্রম হলো কেন? নিয়মের ব্যতিক্রম হবার কারণ উদঘাটনের জন্য ডায়েরি বন্ধ করে রুম থেকে বেরিয়ে এলো নাবিহা। মামণির ডায়েরির আলোকে নতুন আরেকটা ডায়েরি লিখতে শুরু করেছে এই তথ্যটা সবার আগে পাপাকে জানাতে চায় নাবিহা। কারণ এমনটা করার পরামর্শ পাপাই তাকে দিয়েছিলেন। একদিন কথায় কথায় পাপাকে বলেছিল মামণির ডায়েরি নিয়ে বসলেই নানান ধরণের ভাবনা এসে উঁকি দেয় মনে। পাপা তখন বলেছিলেন, এটা খুব স্বাভাবিক আমরা যখন কারো কথা শুনি, পড়ি তখন সেই কথাগুলোকে ঘিরে আমাদের মনে নিজস্ব ভাবনার জন্ম হয়। আমি চেষ্টা করি আমার এমন ভাবনাগুলোকে টুকে রাখতে। তুমিও চাইলে টুকে রাখতে পারো। পাপার কথা শোনার পর নাবিহা তার নিজস্ব ভাবনাগুলোকে লিখে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু ডায়েরির প্রারম্ভটা প্রশান্তিকর হয়েছে কিনা সেটা একবার পাপাকে দিয়ে যাচাই করে নিতে চায় সম্মুখে এগিয়ে যাওয়ার আগে।

 

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর…৪

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর…৪


আফরোজা হাসান


নীলাকাশের বুকে ডানা মেলা পাখী দেখে নিজে পাখী হবার বায়না ধরে যেই শিশুরা তাদের মতই একজন ছিলাম আমি। পাখী দেখলেই বাবা আর মামণির কাছে গিয়ে ঘ্যানঘ্যান শুরু করতাম, আমাকে পাখী বানিয়ে দাও, আমাকে ডানা লাগিয়ে দাও। এই কথা সেই কথা বলে আমাকে বুঝ দিয়ে রাখতেন বাবা ও মামণি। আমার বয়স যখন ছয় তখন বড়আব্বু বেড়াতে এসেছিলেন আমাদের বাড়িতে। একদিন বিকেলে পাখী দেখে আবার কান্না শুরু করেছিলাম আমি। মামণির কাছ থেকে কান্নার রহস্য জেনে বড়আব্বু আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বাগানে গিয়ে বসলেন। আদর করে মাথায় হাত বুলিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, তুমি পাখী হতে চাও? ফোঁপাতে ফোঁপাতে জবাব দিয়েছিলাম, হু, কিন্তু কেউ আমাকে ডানা কিনে দেয় না। বড়আব্বু তখন হেসে বলেছিলেন, কেউ কেন তোমাকে ডানা কিনে দেয় না জানো? কারণ তোমার তো ডানা আছেই সেজন্য। আমি ভালো মত নিজেকে আরেকবার দেখে বললাম, কোথায় আমার ডানা? বড়আব্বু বলেছিলেন, তোমার ডানা আছে কিন্তু অনেক ছোট ছোট তাই দেখতে পারছো না। তুমি কি চাও তোমার ডানারা বড় হোক? মাথা দুলাতে দুলাতে বললাম, হু চাই। বড়আব্বু বললেন, তাহলে তোমাকে বেশি বেশি বই পড়তে হবে। তুমি যত বই পড়বে তোমার ডানারা তত দ্রুত বড় হবে। সেদিনই আমি জীবনে প্রথমবারের মত লাইব্রেরীতে গিয়েছিলাম। বড় আব্বু লাইব্রেরীতে নিয়ে গিয়ে বলেছিলেন, যাও তোমার যে ক’টা ইচ্ছে বই নাও। দু’হাতে যতগুলো সম্ভব হয়েছিল তুলে নিয়েছিলাম বই। শিশুদের বই ছিল না একটাও তার মধ্যে। কিন্তু বড় আব্বু আমার উড়ন্ত মনে ছুটে চলা প্রথম কদমকে ব্যহত করতে চাননি। কিনে দিয়েছিলেন সবগুলো বই।

যেহেতু বুঝতাম না তাই কয়েকদিন সাথে সাথে রাখার পর একসময় ভুলে গেলাম প্রথম কেনা বইগুলোর কথা। বহু যতনে সেই বইগুলোকে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন বড়আব্বু। যখন ক্লাস ফাইভ থেকে সিক্সে উঠেছিলাম সেই বইগুলোকে খুব সুন্দর করে প্যাকেট করে উপহার দিয়েছিলেন আমাকে। সাথে দিয়েছিলেন আমার জীবনের প্রথম বই কেনার রত্নতুল্য স্মৃতিখানি। বড়আব্বুর কাছে থেকেই প্রথম বই উপহার পেয়েছিলাম। কমিকস আর রূপকথার জগত থেকে বড়আব্বুর হাত ধরেই প্রথম কদম রেখেছিলাম জ্ঞানোরাজ্যে। বড়আব্বু যখন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসতেন কিংবা আমরা যখন বেড়াতে যেতাম পুরোটা সময় উনার সাথেই কাটতো আমার। এখন জানি ইতিহাস প্রিয় মানুষ ছিলেন বড়আব্বু। আর ইতিহাসের কথাই পড়ে শোনাতেন আমাকে। কিছু না বুঝলেও ডানা বড় করার জন্য চুপটি করে শুনতাম উনার সবকথা। এভাবেই যে কোন ব্যাপারে খুব মনোযোগী হবার বীজটিও বড়আব্বুই বুনে দিয়েছিলেন আমার কচি মনে। ডানার আকর্ষণে সেই যে ছুটে গিয়েছিলাম বইয়ের ভুবনে। এরপর আর কোনদিন ফিরে আসা হয়নি। এখনো সন্ধান চলছে ডানার। সময়ের বিবর্তনে ডানাতে পালকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, উড়ার ইচ্ছে আরো জোড়াল হয়েছে, মনটা বাঁধনহারা হয়েছে কিন্তু এখনো ডানাতে উড়ার শক্তি সঞ্চারিত হয়নি। মৌমাছি যেমন ফুলে ফুলে ঘুরে বিন্দু বিন্দু মধু সংগ্রহ করে। আমিও তেমনি বিভিন্ন বই থেকে করে চলছি একটু একটু শক্তি সঞ্চার। জানি না কবে আমার বাঁধনহারা মন প্রসারিত ডানা মেলে উড়তে শিখবে।

চুপচাপ বসে মুগ্ধ মনে স্বাতির কথা শুনছিল আরভ। স্বাতির কাছ থেকে কিছু জানতে হলে প্রশ্ন করে করে সেটা বের করতে হয়। সেটা গত এক সপ্তাহে বেশ ভালো মতোই বোঝা হয়ে গিয়েছে আরভের। অন্যে কেউ যাই বলবে চুপ করে শুনবে কিন্তু কখনোই নিজ থেকে কিছু জানতে চায় না। আবার নিজের সম্পর্কে কোন কথা বলতেও আগ্রহী নয়। তবে প্রশ্ন করলে জবাব দেয়। তাই প্রশ্ন করে করেই আরভকে জানতে হচ্ছে তার নববধূকে। এমনতর বইয়ের ভুবনে ডুবে থাকা কন্যা হবার রহস্য কি জানতে চাইলে নিজের ছোটবেলার কথাগুলো বললো স্বাতি। গত এক সপ্তাহ ধরে একটা প্রশ্ন করতে চাইছে আরভ স্বাতিকে। কিন্তু জিজ্ঞেস করবে কি করবে না সেটা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছে। আরভের খুব জানতে ইচ্ছে করে স্বাতির কি কখনো তাকে জীবনসাথীর জায়গায় কল্পনা করেছে?! যতবারই ভেবেছে জিজ্ঞেস করবে লজ্জা ও সঙ্কোচ ঘিরে ধরেছে মনকে। স্বাতি যদি তার ইনটেনশন না বোঝে? আরভের সবসময় মনেহয় স্বামী-স্ত্রীর কখনোই এমন কোন আচরণ বা কথা বলা উচিত নয়, যারফলে একে অন্যের প্রতি রেসপেক্টে প্রভাব পড়তে পারে। বাবা-মার চমৎকার দাম্পত্য জীবন দেখে বুঝেছে স্বামী-স্ত্রীর বন্ধনে রেসপেক্ট সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভগুলোর একটি। যেটা নড়বড়ে হয়ে যাওয়া মানে সামান্য বাতাসেই দুলে ওঠা বন্ধনটি।

তোমাকে এত চিন্তিত দেখেচ্ছে কেন? মনেহচ্ছে খুব সিরিয়াস কিছু ভাবছো?

স্বাতির প্রশ্ন শুনে আরভ হেসে বলল, চেহারা দেখেই এতকিছু বুঝে ফেলেছো? শেষপর্যন্ত কি ফেস রিডার বিয়ে করে ফেললাম নাকি? অতি চিন্তার বিষয়।

স্বাতি হেসে বলল, চিন্তার বিষয় কেন? অনেক গোপন তথ্যাদির খাজানা লুকায়িত আছে নাকি আপনার মনের মাঝে?

হাত বাড়িয়ে স্বাতিকে আরেকটু কাছে টেনে নিলো আরভ। হেসে বলল, তুমি কি জানো তোমার শব্দরা অদ্ভুত সুন্দর?

চলবে..

পর্ব-৩

 

দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে

দুয়ারগুলি ভাঙল ঝড়ে


ফাতিমা মারিয়াম


এক
-আসসালামু আলাইকুম
-ওয়া আলাইকুম আসসালাম…কেমন আছ?
-আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি…আপনি কেমন আছেন?
-আমিও ভালো…এতদিনেও তুমি আমাকে আপনি করে বলছ? এখন যদি অভ্যাস না কর তবে পরেও তো পারবে না!
-যখন সময় হবে তখন দেখা যাবে। নাস্তা খেয়েছেন?
-হুঁ খেয়েছি…তুমি খেয়েছ?
-জি…আজ সকালে নামাজ পড়েছেন?
-পড়েছি…তবে সময়ের পরে।
-কেন? আজও উঠতে পারেন নি?
-না, তুমি এক কাজ করতো… প্রতিদিন ভোরে নামাজের টাইমে আমাকে জাগিয়ে দেবে।
-তারচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি আপনার মোবাইলে এলার্ম দিয়ে রাখেন।
– তা হয় কিন্তু আমি চাই তুমিই আমাকে ডেকে দেবে। তোমার কথা শুনেই দিনটা শুরু করতে চাই। তাহলে দিনটা ভালো যাবে।
-এটা কুসংস্কার তা জানেন?
-জানি…কিন্তু আগামীকাল থেকে নামাজের সময় তুমিই আমার ঘুম ভাঙাবে।
-আচ্ছা এখন রাখি। আম্মু ডাকছে…
-আচ্ছা রাখছি…মনে থাকে যেন।

দুই
জেবা মায়ের রুমে এসে দেখে তার মা আলমারি খুলে একগাদা কাপড়চোপড় নামিয়ে নিয়েছেন। এগুলো এখন মা মেয়ে দুজনে মিলে গোছাবে। কাপড় ভাঁজ করতে করতে আসমা জেবাকে জিজ্ঞাসা করে- জাহিদ আজ রাতে আসিফকে আসতে বলেছে।

-কেন?

– এমনিই…অনেকদিন ছেলেটা আসে না। জাহিদ সকালে অফিসে যাওয়ার সময় আমাকে আর রূপাকে বলে গেল রাতের জন্য রান্নার ব্যবস্থা করতে।

-আমার সাথে তো কিছুক্ষণ আগেই আসিফের কথা হল! আমাকে তো এই বিষয়ে কিছুই বলল না!

– হয়ত মনে ছিল না।

মা মেয়ে দুজনেই কাপড় গুছানো শেষ করে বসে বসে গল্প করছে। এমন সময় জেবার ভাবী রূপা শাশুড়ির রুমে আসল। – মা আজ দুপুরে আর তেমন কিছু করছি না।কালকের যা আছে তা দিয়েই আমাদের চলবে। রাতের জন্য এখন থেকেই কিছু কাজ গুছিয়ে রাখি।

-রূপা, তাহলে তুমি যতটুকু পার করতে থাক আমি জাওয়াদকে স্কুল থেকে নিয়ে আসি। এসে সবাই মিলে বাকী কাজ শেষ করে ফেলব। জেবা তুইও রূপাকে হেল্প কর।

– তোমার আদরের বৌমার কোন কষ্ট হবে না আম্মু। আমি তার পাশেই থাকব। চিন্তা কোর না।

আসমা নাতিকে স্কুল থেকে আনতে বের হয়ে গেলেন।

মা বেরিয়ে যেতেই জেবা বলল-ভাবী আসিফকে আজ দাওয়াত দেয়ার কি দরকার ছিল? আমার কেমন যেন অস্বস্তি লাগে।

-অস্বস্তির কি আছে? তুই তো আর ওর সামনে যাবি না। বিয়ের এখনো দুই/তিন মাস বাকী। মাঝেমধ্যে তো ও আসবেই। এটাই স্বাভাবিক।

-ওর সাথে প্রতিদিন কথা বলতেও আমার ভালো লাগে না।

-তোর ভাইয়াই তো তোকে বলেছে ওর সাথে মাঝেমধ্যে কথা বলতে। এখানে তোর খারাপ লাগার কি আছে? এত খুঁতখুঁতে হলে এই যুগে চলা যায় না। আমি নিজেও এইভাবে কথা বলা পছন্দ করি না। কিন্তু আসিফ তোর সাথে কিছুটা ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য, তোকে কিছুটা বোঝার জন্য রিয়াদ ভাইকে বলে তোর ভাইয়াকে রাজি করিয়েছে। মা আর আমি আপত্তি করায় তোর ভাইয়া বলল বর্তমানে এসব বিষয় কোন ব্যাপার না। তাই আমরাও আর কিছু বলিনি। এখন তো মাও আসিফ কে বেশ পছন্দ করেন। এসব কথা রাখ তো এখন আয় আমরা মা আসার আগেই কিছু কাজ গুছিয়ে ফেলি।

তিন
রূপাকে কিছু কাজ গুছিয়ে দিয়ে রূপা নিজের রুমে চলে আসলো। আসলে ভাবীর কাছে স্বীকার না করলেও সে প্রতিদিন আসিফের ফোনের অপেক্ষায় থাকে।আগে ওর মোবাইল ছিল না। এঙ্গেজমেন্ট এর পরে ভাইয়া ওকে মোবাইল কিনে দিয়েছে। যাতে করে সে তার রুমে থেকেই আসিফের সাথে কথা বলতে পারে। ল্যান্ডফোনের সেট মায়ের রুমে। তাই জেবার সুবিধার জন্যই ভাইয়া এই ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

প্রথম প্রথম একটু কেমন জানি লাগলেও আসিফের সাথে গল্প করতে এখন তার কাছেও বেশ ভালো লাগে। ভাইয়ার বন্ধু রিয়াদ ভাই এই বিয়ের ঘটক। আসিফ উনার প্রতিবেশী। ভালো ছেলে, ভালো চাকুরী করে, পরিবার বেশ ভালো সব কিছু মনের মত হওয়াতে জাহিদ মা সহ সবার সাথে আলোচনা করেই পাকা কথা দেয়। এখন শুধুমাত্র এঙ্গেজমেন্ট হয়েছে। বিয়ে হবে আসিফের বোন এবং দুলাভাই দেশে আসার পর। উনারা প্রবাসী। তিন চার বছর পরপর দেশে আসেন। এবার তারা যে সময়ে আসবে সেই সময়ে বিয়ে হবে।

বিয়ের ডেট এখনো ঠিক হয় নি। আসিফের বোন আসার পরপরই ডেট হবে। তারপর বিয়ে। দুই পরিবারেই বিয়ে উপলক্ষে প্রস্তুতি চলছে। আসিফ প্রায় প্রতিদিনই ফোন করে। তেমন দরকারি কোন কথা না। কথায় কথায় তাদের সময় বেশ ভালোই কাটে। হুট করেই আসিফ ফোন করে বলবে- আগামীকাল আমার রুমের জন্য ম্যাচিং করে পর্দা আর বিছানার চাদর কিনব। তোমার কি রঙ পছন্দ বল তো! একসেট কিনব তোমার পছন্দ মত আরেক সেট কিনব আমার পছন্দ মত। অথবা আবার কোনদিন বলবে- তুমি কি জামদানী শাড়ি পছন্দ কর? আমি আজ খুব সুন্দর একটা জামদানী কিনে এনেছি। কি কালার সেটা বলব না।তবে এটুকু বলতে পারি তোমার পছন্দ না হয়েই যাবেনা। এভাবে সে আরো কিছু শাড়ি থ্রি পিস কিনে রেখেছে। যখনই যা কিনবে তাই জেবাকে জানাবে। এসব শুনতে জেবার খারাপ লাগে না।

চার
প্রায় দেড় মাস পরের কথা।

আসিফের বোন মিনু ও দুলাভাই মইন বাচ্চাদের নিয়ে দেশে এসেছেন। এসেই তারা জেবাকে দেখতে এসেছেন। মিনু যতক্ষণ এই বাসায় ছিল জেবা, রূপা ও আসমার সাথে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। এমনিতেও মিনু বেশ হাসিখুশি স্বভাবের মেয়ে। পরিচিত অপরিচিত সবার সাথেই গল্প করতে বেশ পছন্দ করে। তার স্বভাবসুলভ হাসি আনন্দ দিয়ে সে জেবার পরিবারের সবার সাথে কথা বলে গেছে।

কিন্তু বাসায় গিয়ে সে যা বলল তা শুনে আসিফ এবং তার বাবা মা স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। সে সাফ জানিয়ে দিয়েছে জেবাকে তার পছন্দ হয়নি। জেবার গায়ের রং পুরোপুরি ফর্সা নয় আর হাইটও কম।

আসিফ আমতা আমতা করে বলল- আপু তুমি এসব কি বলছ? সব কিছু ঠিকঠাক। দুই পরিবারে প্রস্তুতিও নেয়া হয়ে গেছে। এখন কিভাবে ওদের না বলা যায়?

-আচ্ছা আমি তোকে একটি মেয়ে দেখাচ্ছি। যদি এই মেয়ে তোর পছন্দ না হয় তবে জেবাকেই আমরা বউ করে আনব। এই মেয়েটাকে আমি কয়েকদিন আগে দেখেছি। যদি আগে দেখতাম তবে জেবার সাথে তোর এঙ্গেজমেন্ট করার প্রশ্নই আসত না। তোর দুলাভাইয়ের এক বন্ধুর মামা তার স্ত্রী এবং ছেলে মেয়ে নিয়ে কিছুদিন আগে আমাদের ওখানে বেড়াতে গিয়েছিলেন। আমাদের বাসাতেই উঠেছিল। তখন উনার মেয়ে উর্মিকে দেখে আমাদের খুব পছন্দ হয়। দেখতে যেমন সুন্দর আলাপ ব্যবহারও তেমন ভালো। আমি মেয়ের মা বাবাকে হালকা ভাবে কিছু বলে রেখেছি।তারা আমাকে বলেছে আমরা দেশে এসে যেন তোকে নিয়ে তাদের বাসায় যাই। মা আর তোকে নিয়ে আগামীকাল আমি ওখানে যাব। তারপর ওকে দেখে সবাই মিলে একটা সিদ্ধান্ত নেব।

 পরদিন আসিফ মিনু আর মায়ের সাথে পাত্রী দেখতে গেল। মেয়ে দেখে আসিফ ও তার মা মুগ্ধ! এত সুন্দর মেয়ে! বাসায় এসে সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিলো উর্মিকেই বাড়ির বউ করে আনবে।

কথার ফাঁকে আসিফ একবার মিনুকে বলল – কিন্তু আপু জেবা বা জেবার পরিবার আমাদের কি মনে করবে? এতদিন ধরে………

-আরে থাম তো! এঙ্গেজমেন্ট মানেই কি বিয়ে না কী? এখনো আমরা বিয়ের ডেটই ঠিক করিনি। এখন তো মানা করে দিতেই পারব। আর তুই এখন জেবার সাথে কোন কথা বলবি না। ও ফোন করলেও রিসিভ করবি না।

পাঁচ
সেদিন মিনু এসে দেখা করে যাবার পর থেকে আসিফের বাসার কেউই ফোন করছে না। জেবার বাসার সবাই ভাবল ওরা হয়ত ব্যস্ত! সামনে অনুষ্ঠান আর তাছাড়াও মিনু এবং তার বর তাদের বাচ্চাদের নিয়ে এতদিন পরে এসেছে। ওদেরকে নিয়েও তো সবাই ব্যস্ত। তিন চার দিন চলে গেল।

আরো দুইদিন পরে জেবা আসিফের নাম্বারে কল দিল। আসিফ এই কদিন একবারও জেবার সাথে কথা বলে নি। জেবা বেশ চিন্তিত। যত ব্যস্তই থাকুক জেবার সাথে আসিফ কথা না বলে থাকতেই পারে না। রিং হচ্ছে না, মোবাইল বন্ধ। জেবা কিছুক্ষণ পর আবার কল দিল। এখনো মোবাইল বন্ধ।

সন্ধ্যার পরও আসিফকে পেল না। আসিফের কোন সমস্যা হয়েছে কি না জেবা বুঝতে পারছে না। তার ভীষণ দুশ্চিন্তা হচ্ছে। সে রূপাকে বিষয়টা জানালো। রূপা গিয়ে শাশুড়িকে বলল মা আসিফের বাসায় একটু ফোন করে দেখুন তো ওদের কি হয়েছে? আসিফের মোবাইল বন্ধ কেন? কোন সমস্যা হয়েছে কি না একটু জানা দরকার।

আসমা আসিফের বাসার নাম্বারে কল করলেন। রিং হচ্ছে কিন্তু কেউ রিসিভ করছেনা। কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করতেই ওপাশ থেকে ঐ বাসার বুয়া ফোন রিসিভ করল। বুয়া আসমাকে চিনতে পারল না। ভাবল হয়ত আসিফদের কোন আত্মীয়। তাই সে আসমাকে জানালো যে মিনু দেশে এসে আসিফের জন্য অন্য মেয়ে দেখিয়েছে। সেই মেয়েকে বাসার সবাই পছন্দ করেছে এবং আজ ওখানে সবাই গেছে ডেট ঠিক করার জন্য। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যাবে।

আসমা রিসিভার নামিয়ে রেখে হতভম্ব হয়ে বসে রইলেন। মানুষ এভাবে প্রতারণা করতে পারে? এইজন্যই আসিফ তার মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে? আসমা বুঝতে পারছেন এখন তাকে শক্ত থাকতে হবে। তিনি যদি ভেঙ্গে পড়েন তবে জেবাকে কে সাহস যোগাবে? মেয়েটাকে আসিফের সাথে কথা বলতে, যোগাযোগ রাখতে পরিবারের সবাই উৎসাহ দিয়েছিল। সেই সুযোগে আসিফ ওর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করত। তিনি যদি এই কথা বলা সাপোর্ট না করতেন তবে আজ জেবাকে এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে যেতে হত না। উনি নিজেকেই দোষী মনে করছেন।

আসমা রুপা আর জাহিদকে উনার রুমে ডেকে পাঠালেন। ওরা আসলে তিনি পুরো ঘটনা খুলে বললেন। সব শুনে রুপা হাউমাউ করে কেঁদে উঠল। আসমা খুব শান্ত গলায় বলল- কান্না করনা রুপা। আমাদের সবাইকে শক্ত থাকতে হবে। তা না হলে জেবা ঠিক থাকবে কিভাবে?

জাহিদ মনে মনে নিজেকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করছে। মুখ ফুটে মা বা রুপার সামনে কিছু বলতে তার সাহস হচ্ছেনা।

এদিকে আসিফের বন্ধ মোবাইলে জেবা বারবার কল দিয়েই যাচ্ছে… মনে মনে আশা এবার হয়ত রিং হবে, সে শুনতে পাবে আসিফের গলা!

[এই গল্পের পটভূমি বেশ আগের। তখন বাংলাদেশের মানুষ মাত্র মোবাইল ফোন ব্যবহার করা শুরু করেছে। তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিল না। তাই আসিফ তার মোবাইলের সিম বন্ধ রেখেই জেবার কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলতে পেরেছিল।]

 

শিশু শরণার্থী থেকে দেশের প্রেসিডেন্ট

শিশু শরণার্থী থেকে দেশের প্রেসিডেন্ট


নারী সংবাদ


যুদ্ধের মধ্যে থাকা লাটভিয়া থেকে পালিয়ে গিয়েছিল ছোট্ট মেয়েটি। এরপর ৫০ বছর তাকে নির্বাসনে কাটাতে হয়। তবে দেশে ফেরার পরে ভাইরা ভাইক-ফ্রাইবার্গা হলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। শুধু তাই নয়, তিনি হলেন সাবেক সোভিয়েত ব্লকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রথম নারী প্রেসিডেন্টও।

তিনি বলেন, ”আমার বাবা-মা কখনোই আমাকে ভুলতে দেননি যে, আমি একজন লাটভিয়ান।”

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাল্টিক সাগরের তীরের এই দেশটিতে অভিযান চালায় নাৎসি জার্মানি এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন। সেই ১৯৪৪ সালের টুকরো টুকরো স্মৃতি মনে আছে তার, যখন রাশিয়ার কম্যুনিস্ট রেড আর্মি লাটভিয়ায় ঢুকে পড়ে।

”তাদের লাল পতাকা আর মুষ্টিবদ্ধ হাত দেখে আমি খুবই অভিভূত হয়ে ছিলাম। একপর্যায়ে তারা যখন মার্চ করে যাচ্ছে, আমিও আমার মুষ্টিবদ্ধ হাত তাদের উদ্দেশ্যে নেড়ে বললাম ‘হুররা”’, তিনি বলেন।

”একসময় আমি তাকিয়ে দেখলাম একটি ল্যাম্পপোস্টের আড়ালে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমার মা, পুরোপুরি বিধ্বস্ত লাগছিল তাকে। তার গাল বেয়ে চোখের পানি পড়তে শুরু করেছিল। তিনি আমাকে বলছেন, ”এরকম করো না। আজ লাটভিয়ার জন্য খুব দুঃখের একটা দিন।”

নিষ্ঠুর শিক্ষা

যখন ভাইরার বয়স সাত বছর, তখন তারা প্রথমে লাটভিয়া ছেড়ে বিধ্বস্ত জার্মানিতে যায়। এরপর তারা ফরাসি নিয়ন্ত্রিত মরক্কোয় যায়, তারপরে কানাডায়। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সে আর লাটভিয়ায় ফিরতে পারেনি। তবে ৬০ বছর বয়সে তিনি যখন ফিরলেন, তার আট মাসের মাথায় তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হন।

ভাইরা স্মৃতিচারণ করেন, ১৯৪৪ সালের দিকে তারা বাবা বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস শুনতেন, বোঝার চেষ্টা করতেন যে যুদ্ধ কোন দিকে গড়াচ্ছে। পরের বছর তাদের পরিবার লাটভিয়া ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

”১৯৪৫ সালের নববর্ষের রাতে আমরা একটি জাহাজে উঠে বসলাম। এটা ছিল সৈন্যদের পারাপার করার জাহাজ, সেই সঙ্গে অস্ত্রপাতিও থাকতো। যদি কোন টর্পেডো জাহাজটিতে আঘাত করতো, তাহলে পুরো জাহাজটি বিস্ফোরিত হয়ে যেতো।”

”তারা বেশ কিছু বেসামরিক লোকজনকেও জাহাজে নিতো, যারা কম্যুনিজম থেকে যেকোনো মূল্যে পালাতে চাইতো। জাহাজে থাকা লাটভিয়ানরা ডেকে জড়ো হয়ে লাটভিয়ার জাতীয় সঙ্গীত গাইতো।”

জার্মানি জুড়ে যেসব শরণার্থী ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছিল, সেখানে এসে পৌঁছায় পরিবারটি। সেখানকার পরিবেশ ছিল খুবই দুর্দশাজনক। তাঁর ১০ মাস বয়সী শিশু বোনটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। একবছরের মধ্যে ভাইরার আরেকটি ভাই আসে পৃথিবীতে। তবে সেই আনন্দের ঘটনা ছাপিয়ে জীবনের একটি কর্কশ শিক্ষা পান সেদিন।

”আমার মায়ের সঙ্গে সেই রুমে আঠারো বছরের এক তরুণী একটি মেয়ে সন্তান জন্ম দিয়েছিল। কিন্তু সে শিশুটিকে নিতে চায়নি। এমনকি সে তার কোন নামও রাখতে চায়নি, শিশুটির কোন ব্যাপারেই সে আর জড়াতে চায়নি, কারণ রাশিয়ার সৈন্যদের গণ ধর্ষণের ফলে ওই শিশুটির জন্ম হয়েছিল।”

”প্রত্যেকবার যখন সেবিকারা অসহায় শিশুটিকে তার কাছে নিয়ে আসছিল, সে তার চেহারা দেয়ালের দিকে নিয়ে কাঁদছিল আর কোন কথা বলতেও অস্বীকৃতি জানাচ্ছিল। সেবিকারা শিশুটির নাম দেয় মারা, আমার বোনের নামও ছিল তাই।”

তিনি বলছেন, ”আমার মনে হলো, এটা সত্যিই অন্যায়। এখানে একজন মারার জন্ম হয়েছে যাকে এই পৃথিবীতে কেউ চায় না। আর আমাদের মারাকে আমরা এতো বেশি চাইতাম, কিন্তু তাকে আমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেয়া হয়েছে। আমি বুঝতে শুরু করলাম, জীবন আসলেই খুবই রহস্যময় এবং পুরোপুরি ন্যায্য নয়।”

বাল্যবিয়ে ভীতি

১১ বছর বয়সের সময় ভাইরাকে আবার স্থানান্তরিত হতে হয়। এবার জার্মানি থেকে ফরাসি নিয়ন্ত্রিত মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কায়।

”মধ্যরাতে ট্রাক থেকে আমাদের যেখানে নামিয়ে দেয়া হলো, সেটা ছিল ছোট একটি অস্থায়ী গ্রাম। কিন্তু সেটা ছিল যেন পুরো বিশ্বের একটা সংক্ষিপ্ত রূপ। সেখানে ফরাসি লোকজন ছিল, বিশ্বের সবদেশের মানুষ ছিল। গৃহযুদ্ধের সময় থেকে থাকা স্প্যানিশ লোকজন, ইটালিয়ান এবং রাশিয়ান, সব ধরণের মানুষ ছিল।”

তার পিতার একজন সহকর্মী বললেন, তিনি ভাইরাকে বিয়ে করতে চান, যদিও ভাইরা তখন শিশু।

”বাবা একদিন বাসায় ফিরে বললেন, সে আমাকে ১৫ হাজার ফ্রাঙ্ক যৌতুক দিকে চায়। সে আমাকে প্রথম দুইটা গাধা আর গরুও দিতে চেয়েছে। কিন্তু বাবা তাকে বলেছেন, সে একটি শিশু এবং তার স্কুলে যেতে হবে। তখন ওই ব্যক্তি বলছেন, ঠিক আছে, তাকে আমরা স্কুলে যেতে দেবো।”

তার বাবা-মা দুজনে হেসে উঠলেন। কিন্তু ভাইরা সতর্ক হয়ে উঠলেন।

লিঙ্গ বৈষম্যের অধ্যাপক

এর কিছুদিন পরে ভাইরার পরিবার কানাডায় চলে যায়। ষোল বছর বয়সে ভাইরা একটি ব্যাংকে চাকরি পেলেন। সেই সঙ্গে তিনি নাইট স্কুলে যেতে শুরু করলেন। এরপরে তিনি ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টোতে পড়ার সুযোগ পেলেন।

সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হলো এমন একজন ব্যক্তির সঙ্গে, যাকে পরবর্তীতে তিনি বিয়ে করেন। ইমান্টস ফ্রাইবার্গা লাটভিয়া থেকে পালিয়ে আসা আরেকজন। মনোবিজ্ঞানে পড়াশোনা করে ১৯৬৫ সালে পিএইচডি করতে শুরু করেন ভাইরা। কিন্তু ভাইরা বলেন, তার বেছে নেয়া বিষয়টি ছিল যেন ভাগ্যের অঙ্গুলি হেলনে নির্ধারিত একটি বিষয়।

”সম্ভাব্য বিষয়গুলোর একটি তালিকা ছিল রেজিস্টারের কাছে। আমি সেটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে দেখলাম এবং একটি লম্বা শব্দ দেখতে পেলাম যেটা শুরু হয়েছে পি দিয়ে এবং শেষ হয়েছে ওয়াই দিয়ে। আমি বললাম, এই বিষয়টি আমি নিতে চাই।”

কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি তিনি বুঝতে পারলেন, নারীদের এখনো পুরোপুরি স্বাগত জানানো হয় না।

”একদিন আমাদের অধ্যাপক একটি সেমিনারে বললেন, আমাদের এখানে তিনজন বিবাহিত নারী রয়েছেন যারা পিএইচডি করছেন। এটা আসলে পুরোপুরি অপচয়, কারণ যারা বিয়ে করবে, সন্তান জন্ম দেবে তারা এমন একটি জায়গা দখল করে আছে যেটি একটি ছেলে পেতে পারতো যে হয়তো সত্যিকারের একজন বিজ্ঞানী হতে পারতো। ওই সেমিনারে থাকা আমরা সব মেয়েরাই সারা জীবন ধরে সেই কথাগুলো মনে রেখেছি।”

তিনি বলেন, তারা ওই লিঙ্গ বৈষম্য করা অধ্যাপককে দেখিয়ে দিতে চেয়েছেন যে, তার পছন্দের ছেলেদের তুলনায় নারীরা আরো ভালো কিছু করতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অব মন্ট্রিয়লে ৩৫ বছর কাজ করেছেন ভাইরা। তিনি পাঁচটি ভাষায় কথা বলতে পারেন এবং ১০টি বই লিখেছেন।

বাড়িতে প্রত্যাবর্তন…চূড়ান্তভাবে

১৯৯৮ সালে যখন ভাইরার বয়স ৬০ বছর, তিনি প্রফেসর এমেরিটাস নির্বাচিত হলেন এবং অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু একদিন বিকালে তার টেলিফোন বেজে উঠলো। ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন লাটভিয়ার প্রধানমন্ত্রী। লাটভিয়ার একটি নতুন প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবে কাজ করার প্রস্তাব পেলেন ভাইরা।

তাকে বলা হলো, ”তারা বিদেশে থাকা এমন কাউকে খুঁজছে, যিনি অনেকগুলো ভাষায় কথা বলতে পারেন, পশ্চিমা মানসিকতা বুঝতে পারেন এবং সেই সঙ্গে লাটভিয়ার সংস্কৃতি সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে।”

কিন্তু তখনই যেন দেখতে পেলেন যে, তিনি লাটভিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ে গেছেন।

দেশে ফেরার আটমাস পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য কানাডিয়ান পাসপোর্ট ত্যাগ করলেন ভাইরা। তিনি নির্বাচিত হলেন লাটভিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসাবে।

একপর্যায়ে তার জনপ্রিয়তা গিয়ে ঠেকেছিল ৮৫ শতাংশে।

”আমি ছিলাম এমন কেউ, যিনি অর্থ রোজগার বা অন্য কিছুর জন্য নয়, বরং শুধুমাত্র দায়িত্ব পালন করার জন্য। এই পদে এসেছিল। তখন অনেক সংবাদ মাধ্যম আগ্রহের সঙ্গে সমালোচনা করার চেষ্টা করছিল যে, আমি হচ্ছি খরুচে স্বভাবের, পশ্চিমে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেছি। কিন্তু এগুলো পুরোপুরি বানানো” তিনি বলেন।

”আমি আবিষ্কার করলাম, আপনি যদি গণমাধ্যমকে বিশ্বাস করতে না পারেন, তাহলে আপনাকে জনগণের কাছে সরাসরি গিয়ে কথা বলতে হবে।”

২০০৪ সালে নেটো আর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে লাটভিয়ার যোগদানের পেছনে তিনি মূল ভূমিকা রেখেছেন।

ইস্তানবুলে নেটো সম্মেলনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সঙ্গে ভাইরা ”নারী হওয়ার অনেক সুবিধা আছে। আমার মনে পড়ছে, ইস্তানবুলে নেটো সম্মেলনের সময় প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ আমার বাহু ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন, কারণ আমি হাই হিল পড়েছিলাম আর মেঝে ছিল পিচ্ছিল, আমরা আস্তে আস্তে হাঁটছিলাম। আমি সাধ্যমত সবকিছুই করেছিলাম। তাকে বলেছিলাম নেটোর বিস্তৃতি করা কতটা দরকার এবং লাটভিয়া যেন সেখানে থাকে।”

”আমরা আস্তে আস্তে হাঁটছিলাম এবং সময়টা উপভোগ করছিলাম এবং তার কানে লাটভিয়ার প্রপাগাণ্ডা দেয়ার জন্য সবকিছুই করছিলাম। আমার মনে হয়নি এতে তার খারাপ লেগেছে’,’ তিনি বলছেন।

ভাইরার দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হয় ২০০৭ সালে, তার ৭০তম জন্মদিনের কয়েকমাস আগে।

তিনি ক্লাব ডি মাদ্রিদ নামের একটি সংগঠনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, যেটি সাবেক নেতাদের নিয়ে গঠিত। এই সংগঠন গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং গর্ভন্যান্স নিয়ে কাজ করে। নারীদের ক্ষমতায়ন নিয়েও তার বিশেষ নজর রয়েছে। সেই অধ্যাপকের মন্তব্য এখনো তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। তিনি জানেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার এখনো অনেক বাকি আছে। সূত্র : বিবিসি।

 

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ


স্বাস্থ্য কথা


চার সন্তানের জননী রাফিজা খানমের বয়স এখন ছত্রিশ বছর । বাবা-মা আর্থিকভাবে অসচ্ছল হওয়ায় দশম শ্রেণীতে পড়াবস্থায় বিয়ে হয় প্রবাসী আব্দুস সাত্তারের সাথে। বিয়ের মাত্র দুই মাসের মাথায় অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে রাফিজা। আর তাই পরের মেট্রিক পরীক্ষা দেয়া হয়নি রাফিজার। কিন্তু স্বামী আশ্বস্ত করে বাচ্চা হওয়ার পরে সে আবার পড়ালেখা করতে পারবে। এভাবেই এক সময় মাস্টার্স শেষ করে নীলফামারীর স্থানীয় এক উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরীও পেয়ে যান রাফিজা। স্বামী প্রবাসে থাকলেও চার সন্তান নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল রাফিজার। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে শরীরটা খুব খারাপ যাচ্ছে তার। প্রায়ই সময় তলপেটে যন্ত্রণা আর প্রশ্রাবের জ্বালা-পোড়া। শেষ পর্যন্ত এক গাইনী ডাক্তারের সাথে কথা বলে রাফিজা। অনেক পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানা যায় রাফিজা জরায়ুমূখ ক্যান্সারে আক্রান্ত। যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে তার।
ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) সূত্র মতে বাংলাদেশের নারীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় স্তন ক্যানসারে। এর পরেই জরায়ুমুখ ক্যানসার । প্রতিবছর জরায়ুমুখ ক্যানসারে বাংলাদেশে ৮হাজার ৬৮ জন জন আক্রান্ত হয়। আর মৃত্যু বরণ করে প্রায় ৫ হাজার। এছাড়াও বিশ্বে প্রতিবছর এই রোগে আক্রান্ত হয় প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ নারী। আর মৃত্যু হয় প্রায় ৩ লাখ।
গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. রোকেয়া বেগম বলেন, মূলত জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) নামের এক ভাইরাস। আর এই এইচপিভি বিভিন্ন ধরনের আছে, যার মধ্যে এইচপিভি ১৬ ও ১৮ জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জন্য সবচেয়ে বেশী মারাত্মক। তিনি বলেন, মূলত যেসব মেয়েদের বাল্যবিবাহ হয় এবং যেসব নারী অধিক সন্তান জন্ম দেন তারাই এই জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকে। এছাড়াও নারীর ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার বিষয়টিও রয়েছে। যেসব অল্পবয়সী নারী মাসিকরে সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে না পারে তাদের বিভিন্ন ধরনের জীবানু আক্রমন করতে পারে। আর তাই মাসিকের সময় অবশ্যই পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার এবং নিজেকে পরিষ্কার রাখতে হবে। ডা. রোকেয়া বলেন, অল্প বয়সী মেয়ে বিশেষ করে নয় থেকে ১৫ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য রয়েছে এইচপিভি টিকা। একটু দামী হলেও এই টিকা দিয়ে দেওয়াই উত্তম। এছাড়াও বেশী বয়সী নারীদের জন্য রয়েছে ক্যান্সার স্ক্রিনিং। ক্যান্সার স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে সহজে এই রোগ নির্ণয় করা যায় এবং পরবর্তী চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা যায়।
আরেক গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. শাহানা আক্তার বলেন, আমাদের দেশে বিশেষ করে এখনো গ্রামাঞ্চলে মেয়েদের বয়:সন্ধির সময় নোংরা কাপড় ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। এসময় তাদের স্কুল পর্যন্ত বন্ধ করে দেয় কিছু কিছু অভিভাবক। অথচ তার কোন দরকারই হয়না। এখন বাজারে অল্প দামে দেশীয় তৈরী বিভিন্ন ধরনের প্যাড পাওয়া যায় এবং তারা এসব সহজেই ব্যবহার করতে পারে।
তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম আরো বেশী পরিমানে বাড়াতে হবে। যদিও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার স্বাস্থ্য সেবা ঘরের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক অন্যতম। কিন্তু তারপরও কিছু কিছু মানুষ এখনো এসব সেবা নিতে আগ্রহী নয়। তাদেরকে এসব সেবার আওতায় আনার জন্য আরো বেশী পদক্ষেপ নিতে হবে।
ডা. শাহানা বলেন, প্রাথমিকভাবে এই ক্যান্সার ধরা পড়লে খুব সহজেই এ থেকে নিরাময় সম্ভব। নিয়মিত ঔষুধ সেবন করলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে যদি দেরীতে ধরা পড়ে তবে তা অনেক সময় জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে। অনেক সময় ডাক্তারদেরও আর কিছু করার থাকে না। আর তাই এ বিষয়ে পরিবারের সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরী করতে হবে।
তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশের নারীরা এসব মেয়েলী শারীরিক সমস্যা নিয়ে কারো সাথে আলোচনা করতে লজ্জা পায়। একেবারে চরম পর্যায়ে না গেলে তারা তা কাউকে জানায় না । এমনকি অনেক বিবাহিত নারীরাও তাদের স্বামীর সাথে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন না। এর ফলে অনেক নারীই এক প্রকার বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। যা কখনোই কাম্য নয়। তিনি সরকার এবং বিভিন্ন এনজিও যেসব সংস্থা এসব বিষয়ে কাজ করেন তাদেরকে এ বিষয়ে আরো বেশী জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানান। সুত্রঃ বাসস।

 

মা-বাবার মেসেজ গুলো সবসময় গুরুত্বপূর্ণ সন্তানদের জন্য

মা-বাবার মেসেজ গুলো সবসময় গুরুত্বপূর্ণ সন্তানদের জন্য


মো:আশরাফুল ইসলাম


সন্তান জন্মদানের মাধ্যমে মা বাবা পরিপূর্ণতা লাভ করে। একটি বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপরই কান্নার মাধ্যমে তার অস্তিত্ব জানিয়ে দিচ্ছে। কান্নার পরপরই মা বাবা যখন তাকে জড়িয়ে ধরছে শিশুটির আরাম লাগছে এবং নিরাপদ অনুভব করছে। এরপর শিশুটি হামাগুড়ি দেওয়া, হাটতে শেখা, কথা বলতে শেখার মাধ্যমে বেড়ে উঠতে থাকে। শিশুটির বিকাশের ক্ষেত্রে তার মা বাবা এবং আশেপাশের লোকজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিশুটি একটু বড় হওয়ার সাথে সাথে মা বাবা থেকে বিভিন্ন ধরনের মেসেজ পাচ্ছে। এক্ষেত্রে, বিভিন্ন ধরনের মেসেজ পেতে পারে যেমনঃ শিশুটি যখন ঠিকমতো কথা বলতেও শেখে নাই তখন মা বাবা বলছে – আমাদেরতো খুব ইচ্ছা তুমি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবে অথবা বাবা তুমি পেটে থাকতেই আমরা বলেছি তোমাকে মাদ্রাসাই পড়াব। এই যে মা বাবা তাদের নীডগুলো সন্তানের উপর চাপিয়ে দেওয়া শুরু করেছে। আবার, অনেকক্ষেত্রে মা বাবা বাচ্চাকে বলছে তুমি একটা গাঁধা, অন্যরা পারে তুমি কেন পারো না, তোমার দ্বারা কিছুই সম্ভব না। আবার, বাচ্চাটি একটি কাজ করতে গেলে তাকে বলা হচ্ছে তুমি ছোট মানুষ তুমি পারবে না দাও আমি করে দেই। একটি কথা বলতে গেলে তাকে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে তুমি ছোট মানুষ তোমার এত কথা কিসের চুপ থাকো , বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছেলে বাচ্চাদের বলা হচ্ছে – ছেলে মানুষদের শক্ত হতে হবে বাবা কাদে না। মা বাবা যে মেসেজগুলো দিচ্ছে সন্তানরা কোন প্রকার চিন্তা ছাড়াই সেগুলোকে নিয়ে নিচ্ছে।
ফলাফল কি হচ্ছে?
মা বাবা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বানানোর জন্য সন্তানকে প্রচণ্ড চাপ দিচ্ছে, সমালোচনা করছে, সবসময় শাসনের মধ্যে রাখছে এর ফলে পড়ালেখার প্রতি তার বিরক্তি চলে আসছে। আবার, যে বাচ্চাটিকে মাদ্রাসায় দেওয়া হল সে কয়দিন পর পরই মাদ্রাসা থেকে পালাচ্ছে। আবার, যে বাচ্চাটিকে বলা হল তুমি একটা গাঁধা, অন্যরা পারে তুমি কেন পারো না, তোমার দ্বারা কিছুই সম্ভব না সে বড় হয়ে হীনমন্যতাই ভুগছে। দেখা যাচ্ছে, বড় হবার পরও নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারছে না, যখনি কোন একটি কাজে পারছে না তখন চেষ্টা ছেড়ে দিয়ে ভাবছে আমার দ্বারা সম্ভব না এবং বিষণ্ণতাই ভুগছে অথবা তার মধ্যে উদ্বিগ্নতা তৈরি হচ্ছে। আবার, ছোট বলে যে বাচ্চাকে থামিয়ে দেওয়া হল বড় হয়ে সেই বাচ্চাটি কোন কাজ করতে গেলে এবং অন্যদের সামনে কোন কথা বলতে গেলে ভিতর থেকে বাধা পাচ্ছে।
ছোটবেলা বাচ্চারা কোন প্রকার যৌক্তিক চিন্তা ছাড়াই মা বাবার মেসেজগুলো নিয়ে নেয়। এর ফলে বাচ্চারা তার নিজের সম্পর্কে script তৈরি করে এবং মা বাবার মেসেজগুলো সারাজীবন বয়ে বেড়ায়। লক্ষ্য করে দেখবেন অনেক মানুষ সফল হওয়া সত্ত্বেও সারাজীবন নিজেদের অসফল ভাবে শুধুমাএ ছোটবেলায় দেওয়া মেসেজগুলোর কারণে।

বাচ্চারা যে গুরুত্বপূর্ণ এটি কি আমরা তাদের অনুভব করাতে পারি না? কি এমন অসুবিধা হত যদি তাদের শৈশব কাটত আনন্দ আর খেলাধুলায়। আমরা কি তাদের জিজ্ঞেস করতে পারিনা তুমি কি হতে চাও। প্রতিটা বাচ্চার শৈশব খুব গুরুত্বপূর্ণ আর এ সময়ে মা বাবার মেসেজগুলোও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

 

আমার সুখী ডেইলি লাইফ

আমার সুখী ডেইলি লাইফ


খালেদা বীথি


এক একজন আপুর ডেইলি লাইফ পড়ছি আর নিজের জীবনের সুখটুকু যেন বেশী উপলব্ধি করতে পারছি। এক একজন হোম মেকার আপু যেন এক একজন আলাদিনের জীনি। কতটা ধৈর্য্য নিয়ে তারা নিজেদের সংসার আলোকিত করে যাচ্ছেন।

আমার বিয়ে হয় ২০০৮ এ। ২০০৯ এর জুন থেকে চাকুরী শুরু করি। ঐ বছর এ অক্টোবর থেকে নতুন জীবন শুরু করি, শশুর শাশুড়ী ও দুই দেবর সহ। অফিস থাকতো বলে প্রতিদিনের রান্না বান্না সামলানোর যুদ্ধ সেভাবে করতে হয়নি। বাসায় রান্নার জন্য আলাদা লোক সব সময়ই ছিল কারণ শাশুড়ী ও চাকরি করেন। ছুটির দিনে চেষ্টা করতাম কিছু না কিছু বা পুরো রান্নার দায়িত্ব নিতে।

২০১৪ থেকে সম্পূর্ণ নিজের একার সংসার হল। তবে ভাগ্য ভালো আমার। তখনও আমাকে প্রতিদিনের রান্নার ঝামেলা পোহাতে হয়নি। সপ্তাহে ৫/৬ দিন চাকরি করি আর ছুটির দিনে স্পেশাল কিছু রান্না করি। মাঝে মাঝে এটা সেটা নাস্তার আইটেম করা। এই ছিল আমার কাজ।

২০১৮ তে এসে বিভিন্ন ঝামেলায় টিকতে না পেরে জব ছেড়ে দিলাম। প্রায় ৯ বছর চাকরি করে নিজেও যেন হাপিয়ে উঠেছিলাম। ভাবলাম কিছুদিন বিশ্রাম নেই। এজন্য আর নতুন করে চাকরির চেষ্টাও করলাম না। বুঝতে পারছিলাম যে আমার স্বামীর একার কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ও কখনোই আমাকে কোন কিছুর জন্য প্রেশার দেয় নি। ভাবলাম বাসায় বসে আছি। অনেক সময় আমার। একটা অনলাইন বিজনেস করি। কিন্তু যতটা সহজ হবে ভেবেছিলাম ততটা সহজ না আসলে কাজটা। ছোট ছোট দুটো বাচ্চা ( একজনের ৭, অন্যজনের সাড়ে ৩ চলছিল তখন) নিয়ে সারাদিন ওদের পেছনেই চলে যায়। তাই আমার দ্বারা বিজনেসও হয়ে উঠেনা।

আমি মনোবিজ্ঞানের ছাত্রী ছিলাম। ২০১১ তে মনোবিজ্ঞানের আরেকটি Applied branch হিসেবে যাত্রা শুরু করে Educational & Counselling Psychology Department , আমার অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল এই বিষয়ে পড়াশুনা করার। কিন্তু এখানে full time student হতে হয় বলে তখন চাকরি ছেড়ে এখানে পড়ার সাহস হয়নি। তো গত বছর অক্টোবরে যখন শুনলাম নতুন বছরের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে তখনই ঠিক করে ফেললাম বসেই যখন আছি তখন কেন পড়াশোনাটা করে ফেলিনা এই সুযোগে। একাডেমিক পড়াশুনা শুরু করলাম পুরো ১০ বছর পর। ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলাম। ভয়ে ভয়ে ছিলাম, মনে হচ্ছিল যদি চান্স না পাই। আল্লাহর হুকুমে চান্স পেয়ে গেলাম। ২০১৯ জানুয়ারী থেকে শুরু করলাম নতুন করে ছাত্রী জীবন। এখন আমার ডেইলি লাইফ হল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্লাস করে বাসায় আসি। তারপর কিছুটা রেস্ট নিয়ে মাঝে মাঝে ছোট কন্যাকে নিয়ে পড়তে বসি। আর নিজেও কিছুটা পড়ি। এখনো সেই আগের মতোই ছুটির দিনে স্পেশাল কিছু রান্না করি আর বাচ্চাদের জন্য এটা সেটা নাস্তা বানানো, মাঝে মাঝে ঘর গুছানো, কাপড় গুছানো আমার কাজ এতটুকুই। সেল্ফ কেয়ার হিসেবে চলে কাজের পাশাপাশি গান শোনা।

এর মাঝে উল্লেখযোগ্য একটা ঘটনা শেয়ার করতে ইচ্ছে হচ্ছে। আমার সহপাঠীরা আমার চেয়ে ১০ বছরের ছোট। ওরা আমাকে এমনভাবে গ্রহণ করে নিয়েছে যাতে আমার মনেই হয়না যে আমি বুড়ী হয়ে গিয়েছি। আমার মনে হয় আমি যেন আমার ১০ বছর আগের স্টুডেন্ট লাইফ ফিরে পেয়েছি আবার। গত মাসে এই বন্ধুদের কয়েকজন মিলে ৪ দিনের জন্য ঘুরে এলাম কক্সবাজার। আমার সমসাময়িক অনেকে খুব অবাক হয়েছে আমার এই ঘুরতে যাওয়া নিয়ে। কারণ সবাই এমন সাপোর্ট পায় না। তাই বাচ্চা রেখে একা ঘুরতে যাওয়ার কল্পনা ও করতে পারে না। আমি ভাগ্যবান আলহামদুলিল্লাহ। আমার নিজের রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য এই ট্যুরটা যে কি উপকারী ছিল তা বলে বোঝানো যাবে না।

আমি বিন্দাস ইঞ্জয় করে যাচ্ছি আমার এই নতুন জীবন। আমার জন্য দোয়া করবেন আপুরা।

 

দ্রুত ডেঙ্গু প্রতিরোধে ১৩ দফা প্রস্তাব

দ্রুত ডেঙ্গু প্রতিরোধে ১৩ দফার প্রস্তাব


ডা. সাকলাইন রাসেল


১. সমস্ত স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হোক। কারণ এডিস মশা দিনের বেলা কামড়ায়। স্কুল কলেজ থেকে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা তাই বেড়ে যাচ্ছে।

২. যেকোন একটা দিনকে ‘ক্লিন ঢাকা দিবস’ ঘোষণা করা হোক। এই দিন সব স্থানে পরিস্কার করবে সিটি কর্পোরেশন, বাড়ীওয়ালা-ভাড়াটিয়া, স্বেচ্ছাসেবকরা।

৩. ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন করতে ৭২ ঘন্টার জন্য সেনাবাহিনীকে মাঠে নামানো হোক।

৪. পূর্বের ন্যায় বিমান থেকে পুরো ঢাকাতে মশানাশক কার্যকর ঔষধ ছিটানো হোক।

৫. ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু কর্ণার চালু করে সেখানে চিকিৎসা জনবল বৃদ্ধি করা হোক।

৬. অতিরিক্ত রোগীর জন্য চিকিৎসক স্বল্পতা কমাতে দ্রুত ও অস্থায়ী ভিত্তিতে বেকার ডাক্তারদের নিয়োগ দেয়া হোক।

৭. ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাড়ী বাড়ী অভিযান চালানো হোক। কোন বাড়িতে এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেলে জরিমানা করা হোক।

৮. ডেঙ্গু মানেই হাসপাতাল নয়। রোগী সেটেলড থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ঘরে বসেও চিকিৎসা নেয়া যায়। প্রচারণার সময় এ বিষয়টাকে গুরত্ব দেয়া হোক।

৯. ডেঙ্গু সম্পর্কিত সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হোক।

১০. বৃষ্টির আধিক্য জুলাই মাসে বেশি থাকায় প্রতি বছর জুলাই মাসকে ‘ডেঙ্গু সচেতনতা মাস’ ঘোষণা করা হোক।

১১. ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকিভাতার আওতায় আনা হোক।

১২. সিনিয়র ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি ডেঙ্গু এডভাইজারি বোর্ড করা হোক। ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিলে এ বোর্ড দ্রুত গাইড লাইন প্রনয়ন ও দিকনির্দেশনা দিবে।

১৩. ডেঙ্গু নাই..নাই..নাই বলে যারা গুজব রটিয়েছেন..তাদেরকে এডিস বন্ধু ঘোষনা করা হোক এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যাবস্থা নেয়া হোক।

ডেঙ্গুর কোন কার্যকর টীকা নেই।
ডেঙ্গুর সরাসরি কোন চিকিৎসা নেই।
কিন্তু..
এটাকে শতভাগ প্রতিরোধ করা যায় শহরটাকে পরিচ্ছন্ন করে।
শ্লোগান হোক..
চল যাই যুদ্ধে..এডিস মশার বিরুদ্ধে।

 

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর…৩

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর…৩


আফরোজা হাসান


স্বাতি হেসে বলল, আপনার পদ্ধতিটাও কিন্তু সুন্দর। আমিও ইনশাআল্লাহ ট্রাই করে দেখবো আপনার এই পদ্ধতি। আচ্ছা এখনো কি এমন কিছু করছেন? অপছন্দনীয় কিছু কেটে দিয়ে পছন্দনীয় কিছু বসিয়ে দিচ্ছেন সে জায়গায়।

সামান্য হাসলো আরভ। কোন জবাব না দিয়ে আবারো লেখার মাঝে মগ্ন হলো। হঠাৎ লেখার গতি কমে গেলো আরভের। হোঁচট খেয়ে খুঁড়িয়ে চলতে চলতে একসময় থেমে গেলো। চোখ তুলে দেখলো স্বাতি তার দিকেই তাকিয়ে আছে। আচ্ছা স্বাতির কথাটা শুনে এত রেগে গিয়েছিল কেন সে? এমন তো নয় যে ফান বোঝে না! ভালোই বোঝে। কিন্তু তবুও স্বাতির ফানটা নিতে পারেনি! কেন পারেনি? মানুষের মন আসলেই খুব বিচিত্র! কখনো কখনো অনেক বড় কিছুকেও হাওয়ায় উড়িয়ে দেয়! আবার কখনো কখনো ছোট্ট একটা ধূলি কণাকেও ঝেড়ে ফেলে দিতে তৈরি থাকে না! কিন্তু যত যাই কিছু হোক না কেন মজা করারও একটা লিমিটেশন থাকা উচিত! যে কোন সম্পর্কেকে সুন্দর ও গতিশীল রাখার জন্য লিমিটেশন জ্ঞানটা খুব জরুরি! প্রতিটা সম্পর্ক যেমন ভিন্ন, সম্পর্কেও মাঝে বিদ্যমান আদবও ভিন্ন। একটা সম্পর্ক যতই খোলামেলা বা উদার হোক না কেন তাতে বিদ্যমান আদবের বরখেলাপ করা অনুচিত! ইসলামও তো এমনটাই শিক্ষা দেয়! রসিকতার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা নেই শরীয়তে। বরং উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূল (সঃ)এর জীবনাচরণেও পাওয়া যায় যে, স্ত্রীদের সাথে তিনি খুবই প্রেমময়, উদার ও হাসি-মজাকারী ছিলেন। হযরত আলী(আ) বলেছেনঃ রাসূল (সা) যখনই তাঁর কোনো সহচরকে বিষন্ন বা মনমরা অবস্থায় দেখতেন, তখনই কৌতুক মজা করে তাকে প্রফুল্ল করে তুলতেন এবং বলতেনঃ নামাযের পর সবচেয়ে উত্তম আমল হলো মুমিনদের অন্তরকে প্রফুল্ল করা। অবশ্য এমনভাবে হতে হবে যেন তাতে গুনাহের লেশমাত্র না থাকে।

ইমাম হাসান (রা) কে ইমাম আলী (রা) এক উপদেশ বাণীতে বলেছেনঃ “হে সন্তান আমার! সে-ই ইমানদার যে তার দিনরাতের সময়গুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করে নেয়। একটি অংশকে কাজে লাগায় আধ্যাত্মিকতার চর্চা এবং আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করার মধ্য দিয়ে। অপর একটি অংশকে কাজে লাগায় পার্থিব জগতের প্রয়োজনীয়তা ও জীবন জীবিকার চাহিদা মেটাতে। আর তৃতীয় অংশটিকে নির্দিষ্ট করে বৈধ এবং হালাল বিনোদন উপভোগ করার জন্যে।” তোমাকে বিয়ে করাই আমার ঠিক হয়নি” স্বাতির বলা এই কথাটিতে কি রসিকতার মাঝে ফেলা যায় ? ঠিক বুঝতে পারছে না আরভ! সেকি ওভার রিঅ্যাক্ট করেছিল নাকি এই ধরণের কথা আসলেই বলা ঠিক না স্বামী-স্ত্রীর একে অন্যেকে? জানে স্বাতি ফান করেই কথাটা বলেছে! কিন্তু ফান করে কি এমন কথা বলা যায় যাতে অন্যের মনে কষ্ট হতে পারে? ফান মানুষ আসলে কেন করে?

ডায়েরী পাশে রেখে আরভ বলল, আচ্ছা আপনি কি বলতে পারবেন মানুষ ফান কেন করে?

একটু ভেবে স্বাতি বলল, আনন্দ পাবার জন্য।

শুধুই পাবার জন্য?

না দেবার জন্যও।

তাহলে নিশ্চয়ই ফান করে কাউকে এমন কথা বলা উচিত নয় যাতে সে কষ্ট পেতে পারে তাই না?

হুম… একদমই উচিত নয় এটা।

আরভ হেসে বলল, আমারো এমনটাই মনেহয়। যে কোন সম্পর্কেই ফান আসলে এমন হওয়া উচিত যাতে দুজনই আনন্দ পেতে পারে। অন্যেকে কষ্ট দেবার জন্য যা করা হয় সেটা কখনোই ফান হতে পারে না!

অন্যকে কষ্ট দেয়ার নিয়্যাতে আসলে ফান করাও হয় না সাধারণত।

কিন্তু অন্যেকে ক্ষেপানো, রাগানো না বিরক্ত করার নিয়্যাতে অবশ্যই করা হয়। আমার মতে এটাও ঠিক না! যখন দুজন মানুষ একই রকম নির্মল আনন্দ অনুভব ও উপভোগ করবে সেটাই হচ্ছে প্রকৃত অর্থে ফান! সেই হিসেবে ফানের প্রথম শর্ত হচ্ছে, দুজনের জন্যই সেটা উপভোগ্য হতে হবে। তাছাড়া ফান তো আমরা সাধারণত খুব কাছের মানুষদের সাথেই করি তাই না? যারা মনের খুব কাছের! আর এমন প্রিয় মানুষদেরকে কষ্ট দ্বারা লব্ধ কিছু কি আনন্দের উপকরণ হতে পারে? নাকি হওয়া উচিত?

ভেতরে চেপে রাখা লম্বা শ্বাসটা ধীরে ধীরে বের করে দিয়ে স্বাতি বলল, কখনোই হওয়া উচিত নয়। আমি খুব দুঃখিত তোমাকে ঐ কথাটি বলার জন্য।

আরভ হেসে বলল, আমিও খুব দুঃখিত তোমার ফানকে ফান হিসেবে নিতে না পারার জন্য। সম্পর্কের বন্ধন আমার কাছে খুব বেশি গুরুত্ব বহন করে বলেই হয়তো আমি তোমার কাথাটিকে ফান হিসেবে নিতে পারিনি। এখন আমার একটা প্রশ্নের জবাব দেন দেখি!

জ্বি কি প্রশ্ন?

আপনি এত দূরে বসে আছেন কেন? আপনি যদি এত দূরেই বসে থাকবেন তাহলে কেবিন ভাড়া করার দরকার কি ছিল আমার? শুধু দুজনে মিলে এই ছোট্ট ভ্রমণের পরিকল্পনা ও আয়োজন তো আমরা করেছিলাম জীবনের এই মূহুর্তগুলোর ভাঁজ থেকে শত সহস্র সুখানুভূতির শিহরণ, আনন্দানুভূতি আন্দোলন আর প্রেমানুভূতির বিচ্ছুরণ সমৃদ্ধ স্মৃতি সংগ্রহের জন্য। যেসব আমরা রেখে যাবো আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। যা ওদের হৃদয়ে ঝরাবে তুমুল শ্রাবণের চাষবাস!

লাজুকতা জড়ানো হাসি ছড়িয়ে পড়লো স্বাতির চেহারায়। আরভের ঠোঁটের কোণেও ফুটে উঠলো ভালোবাসাময় হাসি। ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে দিলো স্বাতির দিকে………

চলবে…

পর্ব-২

 

ডেঙ্গুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিবের স্ত্রীর মৃত্যু

ডেঙ্গুতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিবের স্ত্রীর মৃত্যু


স্বাস্থ্যকথা


ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফারজানা (৪২) নামে আরও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ বছর ঢামেকে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ৮ জনে দাঁড়াল। সোমবার দিবাগত রাতে ঢামেক হাসপাতালের জেনারেল আইসিইউতে মারা যান ফারজানা। রাজধানীর নিউ ইস্কাটন এলাকায় থাকতেন তিনি।

ঢামেকের সহকারী পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফারজানা আগেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। সোমবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আইসিইউতে নেয়া হয়। রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হেলথ ইকোনিক্স ইউনিটের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) ড. নুরুল আমিনের স্ত্রী তিনি।

ঢামেকে ডেঙ্গু রোগে মৃত ৮ জনের ৬ জনই নারী। মৃত অপর সাতজন হলেন- ফরিদপুরের রাবেয়া (৫০), আজমপুরের ফাতেমা (৪৩), এলিফ্যান্ট রোডের নাসিমা (৩৩), কামরাঙ্গীরচরের হাফিজা (৬১), ডেমরার রাজু (২০), লালবাগের ফরহাদ (৪৪) ও গাজীপুরের রিতা।

নাসির উদ্দীন আরও জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ঢামেকে ৫৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন।

ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত ঢামেক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে ভর্তি হয়েছে মোট ২০১১ জন; যার মধ্যে শুধু জুলাইয়ে ১৮৫৮ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও এ বছরের জানুয়ারিতে তিনজন, (ফেব্রুয়ারি শূন্য) মার্চে চারজন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে ৮ জন, জুনে ১৩৫ ভর্তি হন। তবে জুলাইয়ের ২৮ দিনে একলাফে এ সংখ্যা ১৮৫৮ জনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

সুত্রঃ নয়া দিগন্ত।

 

বিতর্কের ভিডিওতে ভাইরাল হওয়া সেই ‘বিরল মেধাবীর’ গল্প

বিতর্কের ভিডিওতে ভাইরাল হওয়া সেই ‘বিরল মেধাবীর’ গল্প


অন্যান্য


বক্তব্যটা একটা বিতর্ক অনুষ্ঠানের। চিকন মুখে লেগেই আছে মায়াবী হাসি। কণ্ঠে যেন ভায়োলিনের সুর। কী বলছেন ক্ষণিকের জন্য তা ভুলে যেতে হয়; কীভাবে তিনি বলছেন বরং সেটি প্লাবিত হয় হৃদয়ে। দুই দিন ধরে এমনই একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বক্তার খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেল নাম তার রেবেকা শফী।-দেশ রুপান্তর

ঢাকার ধানমন্ডিতে জন্ম এবং সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা তাকে বলছেন ‘বিরল মেধাবী’। বিতর্ক অনুষ্ঠানের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেটি ছিল মূলত বিটিভি আয়োজিত স্কুলভিত্তিক বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনাল। ১৯৯৩-৯৪ সালের সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পুরস্কার দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

রেবেকার গোটা পরিবারই পদার্থ বিজ্ঞানের চর্চায় নিয়োজিত। তার বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা অধ্যাপক আহমেদ শফি। মা প্রফেসর সুলতানা শফি। আহমেদ শফির বাবাও রীতিমতো বিখ্যাত এক নাম, আবদুস সালাম, ছিলেন ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক। রেবেকার বড় বোন ফারিয়াল শফিও পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী।

রেবেকা জেনেটিকসের একজন রিসার্চ ফেলো। ঘরে আছে এনডিমিয়া নামের এক ফুটফুটে সন্তান।

ঢাকার হলিক্রসের পাঠ চুকিয়ে তিনি পদার্থ বিজ্ঞানে লেখাপড়া করতে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের পর হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে অ্যাস্ট্রোফিজিকস নিয়ে পিএইচডি করেন।

সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা শাব্বির আহসান নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তার সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সেদিন পুরোনো এক টিভি ডিবেটের ভিডিও কে যেন পোস্ট করেছিল! এতই ভালো লাগল যে ভাবলাম ইনি কী করেন বা কোথায় আছেন দেখি!’

Physics Undergrad (GPA 4.00) – Cal Tech
Master’s Astrophysics – Harvard
PhD – Harvard (On Black hole Spin!)
Teaching Assistant, Post Doc RA, Swartz Fellow in Comp Neuroscience – Harvard Center of Brain Science
Post Doc Fellow – Broad Inst at MIT and Harvard
Post Doc Fellow – Harvard Med School
Winner of US$ 200,000 grant to study “Measure of Black hole Spin”
Best TV Debater – Bangladesh Television (I just saw her debate in a video, one of the best!)

পেশাজীবীদের সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচিত লিঙ্কডইন থেকে রেবেকা শফী সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য জানা গেছে। নিজের পরিচয় তিনি এভাবে দিয়েছেন, ‘আমি ফিজিকস ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছি। কিন্তু সম্প্রতি বায়োলজিতে প্যাশন আবিষ্কার করেছি। এখন জেনেটিকস এবং নিউরোসায়েন্সের ইন্টারসেকশন নিয়ে কাজ করছি হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলে।’

ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্লিপে শুধু রেবেকাকে দেখা গেছে। কিন্তু বিতর্ক প্রতিযোগিতার ওই পর্বে আরও যারা ছিলেন, তারাও তুখোড় বিতার্কিক। সবাই নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে এখন প্রতিষ্ঠিত।

বাংলাদেশ টেলিভিশন ওই সময় নিয়মিত এই ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করতো। এখনো কালেভদ্রে হয়। তবে হতাশার কথা হল আগের সেই জৌলুস এখন আর নেই। বাংলাদেশের বিতর্ক চর্চায়ও পড়েছে ভাটা। ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশন (এনডিএফ) এবং ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির মতো কয়েকটি সংগঠন নিজেদের লড়াইটা অবশ্য ধরে রেখেছে। তবে এই অঙ্গনের মানুষেরা সেটিকে যথেষ্ট বলে মনে করেন না।

সুত্রঃ আমাদের সময়।

 

দুবাইয়ের শাসকের বিরুদ্ধে পলাতক স্ত্রীর আইনি লড়াই

দুবাইয়ের শাসকের বিরুদ্ধে পলাতক স্ত্রীর আইনি লড়াই


নারী সংবাদ


দুবাইর শাসক শেখ মোহাম্মদ আল-মাখতুম ও তার পালিয়ে যাওয়া এক স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনত আল-হুসেইনের মধ্যে এক আইনি লড়াই লন্ডনের এক আদালতে শুরু হয়েছে।

শেখ মোহাম্মদ আল-মাখতুম মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালী নেতাদের একজন। অন্যদিকে প্রিন্সেস হায়া জর্দানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সৎ বোন। তিনি পড়াশোনা করেছেন ব্রিটেনের প্রাইভেট স্কুলে এবং ঘোড়দৌড়ে অলিম্পিকে অংশ নেয়া প্রতিযোগী।

প্রিন্সেস হায়া কয়েক মাস আগে দুবাই থেকে পালিয়ে আসেন। বলা হচ্ছে, প্রাণনাশের আশঙ্কায় তিনি এখন লন্ডনে লুকিয়ে আছেন।

মূলত সন্তানরা কার কাছে থাকবে, তা নিয়েই লন্ডনের আদালতে এই দুজনের মধ্যে আইনি লড়াই হচ্ছে।

প্রিন্সেস হায়া ২০০৪ সালে শেখ মোহাম্মদকে বিয়ে করেন। তিনি হচ্ছেন শেখ মাখতুমের ছয় নম্বর স্ত্রী। শেখ মোহাম্মদের বয়স এখন ৭০। বিভিন্ন স্ত্রীর গর্ভে তার মোট ২৩ জন সন্তান।

শেখ মোহাম্মদেরও ঘোড় দৌড় নিয়ে আগ্রহ আছে। তিনি ব্রিটেনের নামকরা একটি ঘোড়ার আস্তাবল গোডোলফিন হর্স রেসিং স্ট্যাবলের মালিক।

প্রিন্সেস হায়া প্রথমে দুবাই থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন জার্মানিতে। সেখানে তিনি নাকি রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ারও চেষ্টা করেন। কিন্তু এ মাসে জানা গেল যে তিনি এখন লন্ডনের কেনসিংটনে তার ১০ কোটি ডলারের বেশি দামের এক বাড়িতে থাকছেন ।

প্রিন্সেস হায়া এখন ব্রিটেনেই থাকতে চান বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু দুবাইর শাসক যদি এখন তার স্ত্রীকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানান, সেটা ব্রিটেনের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কূটনৈতিক সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

শেখ মোহাম্মদ তার স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার পর ক্রুদ্ধ হয়ে একটি কবিতা লেখেন। সেখানে তিনি নাম উল্লেখ না করে একজন নারীর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ করেন। এই কবিতা তিনি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন।

প্রিন্সেস হায়া কেন পালিয়ে গেলেন
প্রিন্সেস হায়ার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো দাবি করছে, তিনি সম্প্রতি শেখ মোহাম্মদের এক কন্যা শেখ লতিফাকে রহস্যজনকভাবে যেভাবে দুবাই ফিরিয়ে আনা হয়, সে ব্যাপারে কিছু বিচলিত হওয়ার মতো তথ্য জানতে পেরেছেন। তারপরই তিনি নিজে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

শেখ লতিফা এক ফরাসী পুরুষের সাহায্য নিয়ে দুবাই থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন সমুদ্রপথে। কিন্তু ভারতের সশস্ত্র রক্ষীরা তাদের আটক করে আবার দুবাইর হাতে তুলে দেয়।

সেসময় এই ঘটনার সমালোচনা হলে প্রিন্সেস হায়া দুবাইর শাসকের পক্ষ নিয়ে বলেছিলেন, শেখ লতিফা দুবাইতেই নিরাপদ। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলো তখন বলেছিল, শেখ লতিফাকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে অপহরণ করে দুবাইতে ফিরিয়ে নেয়া হয়।

কিন্তু প্রিন্সেস হায়ার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো এখন দাবি করছে, এঘটনার ব্যাপারে তিনি এখন নতুন কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন। আর এ কারণে তিনি তার স্বামীর পরিবারের দিকে থেকে প্রচন্ড চাপের মুখে ছিলেন।
সূত্র : বিবিসি

 

নুডলস এর রেসিপি

নুডলস এর রেসিপি


ঘরকন্যা


নুডলস পাকোড়াঃ

উপকরণঃ
রান্না করা নুডলস
ডিম ২টি
ময়দা/কর্ণ ফ্লাওয়ার
বিট লবন-১ চিমটি
ভাজার জন্য তেল

প্রস্তুত প্রণালীঃ
আপনার পছন্দ মত নুডলস রান্না করে নিন,চাইলে প্রণ বা চিকেন কিউবও দিতে পারেন । এবার একটু ঠান্ডা করে ফেটানো ডিম,সামান্য ময়দা/কর্ণ ফ্লাওয়ার,এক চিমটি বিট লবন দিয়ে মেখে নিন,আলতো করে মাখবেন নুডলস যেন চটকে পেস্ট না হয়ে যায়… ঝাল খেতে চাইলে একটু কাঁচা মরিচ কুচি দিতে পারেন । এবার গরম ডুবো তেলে ইচ্ছে মত আকারে লালচে করে ভেজে তুলে নিন । চা বা কফির সাথে গরম গরম পরিবেশন করুন।

চিকেন ম্যাগি নুডলসঃ

উপকরণঃ
সিদ্ধ করা ম্যাগি নুডলস ১ প্যাকেট
রসুন এর পেস্ট ২ চাচামচ
সিদ্ধ হাড় ছাড়া মুরগির পিস ১ কাপ বড়
লবন স্বাদমত
সর্ষের তেল ছোট ১ কাপ
ধনে পাতা অল্প।

প্রস্তুত প্রণালীঃ
এটা বানাতে আমরা আগে টমেটো পেস্ট করে নেব । টমেটো পেস্ট দিয়ে তাতে ১চা চামচ রসুন এর পেস্ট, অল্প সর্ষের তেল, ধনে পাতা দিয়ে ভালো ভাবে ব্লেন্ড করে নিন, রেডি হয়ে গেল বেসিক পেস্ট। এরপর নন স্টিক ফ্রাইং প্যানে খানিকটা তেল দিয়ে তাতে বাকি রসুন পেস্টটা দিন ও লাল করে ভাজুন। এবার ব্লেন্ড করা টমেটোর বেসিক পেস্ট টা দিয়ে দিন।সাথে সিদ্ধ মুরগির ছোট ছোট পিস গুলো দিন । ৩ মিনিট রান্না করুন যখন এটা ফুটে উঠবে তখন সিদ্ধ করে রাখা ম্যাগি নুডলস দিন, শেষে পরিমান মত লবন দিয়ে রান্না করুন আরো ৩ মিনিট। খেয়াল রাখেবন নুডলস যেন ড্রাই হয়ে না যায় এবং কিছুটা গ্রেভি যেন অবশ্যি থাকে । পরিবেশন করার আগে ধনে পাতা উপরে ছিটিয়ে দিতে পারেন।

 

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর…২

স্বপ্ন দেখি সুন্দর পৃথিবীর…২


আফরোজা হাসান


মামণি বড় ফ্লাক্সে করে চা/কফি দুটাই দিয়ে দিয়েছিলেন। নিজে চা নেবার সময় এক কাপ আরভের সামনেও রাখলো। ওমা সাথে সাথে হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ উঠিয়ে নিলো আরভ। একেই মনেহয় বলে জাতে মাতাল তালে ঠিক। কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে মোবাইল নিয়ে ম্যাসেজ করলো স্বাতি। “হ্যাপিনেস ব্যান্ডের চশমা দিলাম তোমায় উপহার। নাকের ডগায় বসিয়ে দেখো ছড়ানো আনন্দের বাহার। আনন্দকে খুঁজে পেতে যদিও দরকার হয় না দৃষ্টি। আনন্দ তো মনের ঘরে ঝুমঝুমান্তি রহমতের বৃষ্টি। আনন্দের সবচেয়ে বড় ম্যাজিকটা কি জানো? খুঁজে না পেলেও আনন্দকে মনেতে যায় জন্মানো।”

ম্যাসেজ দেখে সময় আরভের চেহারাতে চাপা হাসি ঝলকে উঠতে দেখলো স্বাতি। কিছুটা সাহস পেলো মনে। আবারো লিখলো, আচ্ছা আমরা কি অপরিচিতদের মত কথা বলতে পারি? সাথে সাথেই জবাব এলো, হুম! আনন্দে হুরররে… বলে চিৎকার দিতে ইচ্ছে করলেও চিৎকারটা গরম চায়ের সাথে গিলে ফেললো স্বাতি। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, আচ্ছা তো আপনি লেখক?

চোখ তুলে তাকালো আরভ। মুখে হাসি টেনে বলল, শখের লেখক বলতে পারেন। জীবনে ঘটমান হৃদয়াস্পর্শিত কথাগুলোকে মনের সাথে সাথে ডায়েরীর পাতাতেও টুকে রাখার চেষ্টা করি।

এর সার্থকতা কি?

সার্থকতা কি সেটা তো ভেবে দেখনি। তবে কখনো যদি মন ভুলে যায় কোন সুন্দর মুহুর্ত। ডায়েরীর পাতার ভাঁজ থেকে সেটিকে সযতনে তুলে নেয়া যাবে।

এটাই তাহলে আপনার লেখক হবার পেছনের কারণ?

ইন্টারভিউ নিচ্ছেন নাকি?

নাহয় হলোই ইন্টারভিউ!

আমার আসলে লাভ স্টোরি পড়ার হবি আছে।

তো? এরসাথে লেখার কি সম্পর্ক?

আমি প্রথম লাভ স্টোরি পড়েছিলাম যখন আমার বয়স সাড়ে সাত বছর।

স্বাতি চোখ বড় বড় করে বলল, সত্যি?

অবশ্যই সত্যি। বানান করে করে পুরো লাভ স্টোরি পড়ে ফেলেছিলাম। এরপর থেকে নিয়মিত পড়তাম।

আপনার বাবা-মা ধোলাই দেয়নি?

উনারা আসলে বুঝতেনই না যে আমি কঠিন সব বই পড়তে পারছি। তাই উনাদের চোখের সামনে বসেই জীবনের প্রথম আট দশটা লাভ স্টোরি পড়ে ফেলেছিলাম।

স্বাতি হাসতে হাসতে বলল, শুধুই কি পড়েছিলেন নাকি কিছু মিছু বুঝেও ছিলেন?

আরভ ঠোঁট টিপে হাসি চেপে বলল, সিরিয়াসলি লাভ স্টোরি পড়া শুরু করেছিলাম হাই স্কুলে উঠার পর। তখন কিছু মিছু না বেশ ভালোই বুঝতাম। কিন্তু বেশির ভাগ লাভ স্টোরিই আমার পছন্দ হতো না। কিছু অংশ খুবই বাজে লাগতো। একটা লাভ স্টোরি খুব পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু শেষে গিয়ে নায়িকা মারা যায়। আমি এটা কিছুতেই মানতে পারছিলাম না। খুব কান্না করেছিলাম। একটা সময় মনে হলো যে, আমি বোকার মতো কান্না করছি কেন? তারচেয়ে গল্পের এন্ডিংটা বদলে দেই। সেদিন থেকে শুরু আমার গল্পের অপছন্দনীয় অংশগুলোকে নিজের মনের পছন্দ মত লেখার। এরপর থেকে যদি একটা লাইনও আমার অপছন্দ হতো কোন বইয়ের আমি সেটা কেটে দিয়ে নিজের পছন্দের লাইন বসিয়ে দিতাম নীচে।

স্বাতি হেসে বলল, শুনতেই অদ্ভুত রকম ভালো লাগছে। আমারো অবশ্য লেখার অভ্যাস আছে। আমার বয়স যখন সাত বছর তখন জীবনের প্রথম ডায়েরীটি উপহার পেয়েছিলাম। নতুন গল্পের বই মনেকরে মহা আনন্দে প্যাকেট খুলে যখন অক্ষর বিহীন সাদা পৃষ্ঠাতে ভরা ডায়েরীটা দেখেছিলাম বিস্ময় ভরা চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম,এটাতে তো কিছুই লিখা নেই। কি পড়বো আমি? বাবা কাছে টেনে নিয়ে হেসে বলেছিলেন,এটাতে কিছু লেখা নেই কেন জানো মা? প্রশ্ন ভরা চোখে তাকালে বাবা বললেন, কারণ এটাতে তুমি লিখবে। অবাক হয়ে জানতে চেয়েছিলাম,আমি কি লিখবো এটাতে? বাবা জবাব দিয়েছিলেন,তোমার যা মন চাইবে তাই লিখবে মা। যেমন ধরো,আজ ঘুম থেকে উঠে তুমি সবার প্রথমে কি করলে, মামণির তোমাকে কতটা আদর করলো,বাবা অফিস থেকে ফেরার সময় তোমার জন্য কি নিয়ে এলো, ভাইয়াদের কাছে কি কি শিখলে,তোমার ভাইবোনদের সাথে কি কি দুষ্টুমি করলে, স্কুলে কি কি হয়েছে এইসব কিছু লিখবে। কিছুক্ষণ চিন্তা করে জানতে চাইলাম,বাবা আমি এসব কেন লিখবো? বাবা হেসে বলল,কারণ এটা হবে তোমার জীবন গ্রন্থ। এটাতে তাই তোমাকেই লিখতে হবে। যাতে বড় হয়ে তুমি জানতে পারো কেমন ছিল তোমার ছোটবেলা। কেমন ছিলে তুমি জীবনের প্রতিটি ধাপে।

আপনার বাবার কনসেপ্ট সত্যিই মুগ্ধকর। স্যালুট উনাকে।

স্বাতি হেসে বলল, আলহামদুলিল্লাহ। এরপর থেকে গত দশ বছরে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সব কথা লিপিবদ্ধ আছে আমার ডায়েরীতে। জীবনের সব খুঁটিনাটি লিখতে গিয়ে আমার বর্তমান ডায়েরীর সংখ্যা তেইশটা। জীবন যখন যে রূপে আমার সামনে এসেছে চেষ্টা করেছি ফুটিয়ে তুলতে সেই প্রতিচ্ছবি। যখন যে রঙে আমার ভুবন সেজেছে,সেই রঙের একটি করে আঁচড় আমার গ্রন্থেও পড়ছে। জীবন সেতো আনন্দ-বেদনার কাব্য। আমার গ্রন্থখানিতেও তাই খুঁজে পাই জীবনের নানান রূপ, নানান রঙ। কখনো মনকে বিষণ্ণ করে ঘন কুয়াশার রঙহীন কাব্য, কখনো বা আনন্দে রিমঝিম ধ্বনি তোলে ঠাস বুনোটের ছন্দ। জীবন গ্রন্থের কিছু পাতা আছে যা শোনায় কল্পনার রংয়ে ভালোবাসার তুলিতে বোনা তুলিতে বোনা স্বপ্নকথন,কিছু পাতা জুড়ে বিরাজমান ধূসর বিবর্ণ নিয়তির অমোঘ লিখন। আছে জীবনের প্রতি বাঁকে বাঁকে মোড়ে মোড়ে স্পর্শ রেখে যাওয়া বর্ণিল সব স্মৃতির সমাহার। দেখতে পাই ক্ষুদ্র এই জীবনে প্রাপ্তির বিশাল সম্ভার। নানা পরীক্ষায় যখনই টালমাটাল হয় মন,প্রবৃত্তি সুযোগে করে দেয় অসন্তোষের বীজ বপন। নজর পড়লে গ্রন্থে কৃতজ্ঞতার অশ্রু হয় বর্ষণ,তখন অনুভব করি নেয়ামতে ঘেরা আমার ভুবন।

আলহামদুলিল্লাহ এবার তো আপনি আমার মনকে মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ করে দিলেন। লাইক ফাদার লাইক ডটার। মাশাআল্লাহ।

চলবে

পর্ব-১

 

শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন সচেতনতা

শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন সচেতনতা


মুসলিমা খাতুন


গভীর রাত। সবাই ঘুমে অচেতন। হঠাৎ পাশের বাড়ির তিনতলা থেকে বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করে ওঠে মধ্য বয়সী এক নারী। তাঁর চিৎকারে ঘুম থেকে জেগে ওঠে অনেকেই। মুহূর্তের মধ্যেই স্পষ্ট বোঝা গেল যে, মধ্যরাতে ঘরে ফিরে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে প্রহার করছে। এক পর্যায়ে ঐব্যক্তি চিৎকার করে কাটা চামচ দিয়ে তার স্ত্রীর চোখ তুলে নেয়ার হুমকি দিলে, ঘরের বাইরে এসে আক্রান্ত নারী তার সর্ব শক্তি দিয়ে বলে বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করতে থাকে। ওই মহিলার স্বামী মাঝে মধ্যেই তাকে এই ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন করে। অসহায় স্ত্রী মান-সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছু না বলে নীরবে সব যন্ত্রণা সহ্য করে যায়।
আমাদের দেশে নারীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। শারীরিক নির্যাতন, যৌতুক, এসিড নিক্ষেপ, পাচার, খুন বা হত্যার মতো নানান ঘটনার খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। যদিও দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী নারী ও শিশু নির্যাতন জঘন্য একটি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। বৈষম্যমুলক সমাজ কাঠামোর ভেতরে দেশের নারীরা নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তারা কর্মস্থলে বৈষম্য ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে, ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে কিশোরীদের কেউ কেউ আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। নারী ও কিশোরীদের অপহরণ করে সীমান্ত পার করে বিদেশে পাঁচার করা হচ্ছে।
এ ধরনের নির্যাতনের ফলে নারীর যেমন শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হয় তেমনি তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘিœত হয়।
দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার অন্যতম কারণ হচ্ছে ‘যৌতুক’। সমাজে যৌতুক প্রথা একটি বড় অভিশাপ। আমাদের দেশে যৌতুক প্রথা যে সব কারণে এখন পর্যন্ত টিকে আছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, অর্থনৈতিক পরনির্ভরশীলতা, সামাজিক কুসংস্কার, বাল্য বিয়ে, রেজিষ্ট্রিবিহীন বিয়ে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকা প্রভৃতি।
অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন (এএসএফ)-এর তথ্য অনুযায়ী গত ১৯ বছরে প্রায় দেড় হাজার নারী ও শিশু অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে। এই অপরাধের দায়ে সাজা হয়েছে মাত্র ৩৪৩ জনের। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী অ্যাসিডের মামলায় গত ১৬ বছরে ১৪ আসামীকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত কারও সাজা কার্যকর করা হয়নি। অ্যাসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ অনুযায়ী ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার কথা বলা আছে।
জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ। দেশটিতে নারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত কোটি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সূচকে গত এক দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। গত এক দশকে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার কমেছে, নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হয়েছে, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক খাতে নারীর প্রবেশ ঘটেছে।
তবে, দুর্ভাগ্যক্রমে এই অগ্রগতির যাত্রার মধ্যেও এদেশের নারীরা নানাভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০১১ এর প্রতিবেদন দেখা যায়, এ দেশের ৮৭ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু সহিংসতার শিকার হচ্ছে। লিঙ্গভিত্তিক অসমতার সূচকে ১৮৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬তম।
বাংলাদেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ১৯৮৩ সালে প্রথম প্রণীত হয় নারী নির্যাতন (ন্যূনতম শাস্তি) অধ্যাদেশ ১৯৮৩ (১৯৮৩ সালের ৬০ নম্বর অধ্যাদেশ)। অন্যান্য আইনের ওপর প্রাধান্য দিয়ে প্রণীত এই আইনটিতে মোট নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিতকরণ ও এর শাস্তি নির্ধারণ করার বিধান আছে এবং ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ছাড়াও বখাটেদের উৎপাতের জন্য দন্ডবিধি আইন প্রচলিত আছে। প্রচলিত আইনে বখাটেদের যে শাস্তির বিধান আছে তা হলো- ঢাকা মহানগর পুলিশ আইনের ৭৬ ধারা ও দ-বিধির ৫০৯ ধারা অনুযায়ী এ অপরাধের জন্য এক বছরের কারাদ-সহ ২ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ নম্বর ধারায় যৌন নিপীড়ন ও শ্লীলতাহানীর জন্য ১০ বছরের কারাদ- দেয়ার বিধান আছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এই নির্যাতন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সমাজে বসবাসরত সকল শ্রেণীর মানুষকে সচেতন করতে হবে।
নারীর প্রতি সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ তার সাড়ে সাত কোটি নারী ও কন্যা শিশুর জন্য অনুকূল পরিবেশে সৃষ্টি করতে পারে, যাতে তারা দেশের সামগ্রিক উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে।
সুত্রঃ বাসস.

 

কখন বুঝবো বাচ্চার ডেঙ্গু হয়েছে?

কখন বুঝবো বাচ্চার ডেঙ্গু হয়েছে?


শিশুর স্বাস্থ্যসেবা


ডেঙ্গু জ্বরের প্রকটতা বেড়েছে বহুগুণ। যেকোনো রোগীর চেয়ে শিশুদের ভোগান্তি একটু বেশিই। শিশুরা সহজে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। গতকাল ২৩ জুলাই মঙ্গলবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এক দিনের রেকর্ড সংখ্যক ৪৭৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৬৯ জন।

শিশুদের মধ্যে যে যে লক্ষণ দেখলে ডেঙ্গু টেস্ট করাবেন,

১. বাচ্চাগুলো একেবারেই নিস্তেজ হয়ে পরে
২. পালস খুব কম
৩. পানি শূন্যতা
৪. কোন কোন বাচ্চার শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসে
৫. বুকে পানি জমা
৬. রক্তচাপটা খুব কমে যাওয়া।
৭. জ্বরের মাত্রা ১০২ ও ১০৩ বা এর থেকেও বেশি থাকতে পারে। এভাবে জ্বরটা তিন থেকে পাঁচ দিন থাকে।
৮. মাথাব্যথা,
৯. চোখব্যথা,
১০. বমি, পেটেব্যথা সঙ্গে পাতলা পায়খানা থাকতে পারে।
১১. শরীরে দানা দানা র্যাশের মতো দেখা দিতে পারে।

মুলত প্লেটিলেট কমে গণনা করি, তখন দেখি খুবই কম। দেখা যায়, আগের দিন রাতে প্লেটিলেট গণনা খুব ভালো থাকলেও পরের দিনই প্লেটিলেট গণনা তিন লাখ থেকে চল্লিশ হাজারে নেমে যেতে পারে।

665 total views, no views today