banner

সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: May 16, 2024

 

হাজারীবাগে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা স্বামী গ্রেফতার

নারী সংবাদ


রাজধানীর হাজারীবাগে যৌতুকের দাবিতে মারুফা বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন তার স্বামী। গত রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ঘাতক স্বামী মোহাম্মদ সুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিহত মারুফার বড় ভাই মোহাম্মদ রুবেল জানান, প্রায় ১১ বছর আগে সুজন-মারুফা প্রেম করে বিয়ে করেন। এই পর্যন্ত সুজনকে যৌতুক বাবদ দেড় লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। তবে সুজন একটি প্রাইভেটকার কেনার জন্য তাদের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। এর জের ধরেই গত শুক্রবার সকালে মারুফাকে লোহার পাইপ দিয়ে পেটান সুজন। এতে মারুফা অসুস্থ হয়ে পড়লে রাত
আড়াইটায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার দুপুরে চিকিৎসকেরা তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে তাকে নিউরো সার্জারি বিভাগের ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চিকিৎসক মারুফাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় গতকাল সকালে মারুফার বড় ভাই বাদি হয়ে হাজারীবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন ও যৌতুক আইনে একটি মামলা করেন। পুলিশ ওই সময় স্বামী সুজনকে আটক করে।

নিহত মারুফা স্মৃতি আক্তার নামে ৯ বছর বয়সী এবং রাইসা মনি নামে তিন বছর বয়সী দুই মেয়ের মা। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। মারুফা হাজারীবাগের টালি অফিসের চরঘাটার মসজিদ গলির (চুন্নু মিয়ার ১৬/১ নম্বর বাড়িতে) ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। তার স্বামী সুজন পেশায় একজন প্রাইভেটকার চালক।

হাজারীবাগ থানার ডিউটি অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুত্রঃ নয়াদিগন্ত

 

জন্মই যখন মানুষ না নারী হয়ে

তানজিনা সুলতানা


“শুনেছি মা-বাবার চতুর্থ কন্যা সন্তান হিসেবে জন্ম নেওয়ার পর আমার মা এক সপ্তাহ আমার মুখের দিকে তাকাননি”। আমার এক বান্ধবী বলেছিলো।

হসপিটালে দেখেছিলাম, এক ভদ্রলোকের নাতনী হয়েছে শুনার সাথে সাথেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন।
নিজের ছায়ার দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না আমার!!

এক আপুর কন্যাসন্তান হওয়ার পর দ্বিতীয়বার যখন পুত্র সন্তান হয় তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “কেমন আছেন আপু??”

জবাবে বলেছিলেন, “ভালো আছি রে, এইবার যদি আবারও মেয়ে হতো তাহলে আমার জামাই আমাকে ঘর থেকে বের করে দিত”

এক মা তার ছেলে সন্তান হওয়ার পর পাশের এক মহিলাকে বলছিলেন, “ভাবী আমার যদি এইবারও মেয়ে হতো আমি স্ট্রোক করে মরে যেতাম!!”

খুব কাছের একজন মানুষ তার ভাইয়ের ছেলে হওয়ার খবর শুনে কান্না করছিলো। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেছিলন, “খুশির কান্না.. আজ যদি আমার ভাইয়ের মেয়ে হতো আমার রুহ থাকতো না”। তাকে বলেছিলাম, “তাহলে তো আমার জন্মের খবর শুনার পর তোমার রুহ ছিলো না”।

“ছিলো না”
এইতো জীবন!!!

আমার পাশের ছেলেটি যখন স্কুলে যায় তখন পরিবার, সমাজ তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, ছেলেটি অনেক বড় হবে। আমি যখন স্কুলে যাই তখন সবাই বলাবলি করে, কোনমতে মেট্রিকটা পাশ করাতে পারলেই হয়।

আমার পাশের ছেলেটি যখন উচ্চতর ডিগ্রী নিতে যায় তখন সমাজ বলে, মেধাবী ছেলে। আমি যখন উচ্চতর ডিগ্রী নিতে যাই সমাজ বলে, “উপযুক্ত ছেলে পাবে তো??”

আমার পাশের ছেলেটি রোজগার করে এনে যখন মা-বাবাকে দেয় তখন সমাজ বলে, “ছেলেটি তোমার বড় ভালো”। আমি যখন রোজগার করে এনে মা-বাবাকে দিই সমাজ বলে, “মেয়ের কামায় খাওয়ার জন্য তো মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছো না”

“আহারে জীবন…
আহা জীবন…
জলে ভাসা পদ্ম জীবন!!!”

দিনশেষে আমার বস্তাবন্দি লাশটা পাওয়া যায় রেলস্টেশনের পাশে…ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় আমার লাশ পড়ে থাকে ঝোঁপে-ঝাঁড়ে…। আমার ঘাড় মটকানো লাশটা খুঁজে পাওয়া যায় বাসের ভিতরে!!

মাঝে মাঝে মনে হয়, ছেলে হয়ে জন্ম নেওয়াটা সৌভাগ্যের!!!

তানজিনা সুলতানা
অ্যাপ্রেন্টিস অ্যাডভোকেট
জজ কোর্ট, চট্টগ্রাম।