banner

সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: May 16, 2024

 

আমেরিকান ইউনিভার্সিটিতে আল কুরআন পাঠ বাধ্যতামূলক!

জিয়াউল হক


জ্বি পাঠক, আমেরিকার একটা ইউনিভার্সিটিতে কুরআন পড়া ও তার সুক্ষ্ম বিশ্লেষণধর্মী পাঠ বাধ্যতামুলক করা হয়েছে। এবং সেটি হয়েছে মেইনস্ট্রিম মিডিয়া সহ খৃষ্টবাদী সংগঠনের প্রবল বিরোধিতাকে সফলভাবে মোকাবেলা করেই।

আমেরিকার University of North Carolina (UNC) -এ অধ্যয়নরত প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য একটি বই বাধ্যতামুলক ভাবে পাঠ্যসুচীতে (গ্রীষ্মকালীন পাঠ্যবিষয় হিসেবে) অন্তর্ভুক্ত করে ২০০২ সালে।

এর প্রতিবাদে কিছু উগ্রপন্থী খৃষ্টবাদী সংগঠন বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের ভিত্তিক, দু‘জন মার্কিন নাগরিক, যথাক্রমে; James Yocuvelli ও Terry Moffitt এবং সেই সাথে ঐ একই ইউনিভার্সিটির কয়েকজন ছাত্র মিলে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ করে। এদের সাথে অচিরেই স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বও জুটে যায়। তারা স্থানী রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে দেন-দরবার চালিয়ে যেতে থাকে। ফলে স্থানীয় এমপিরা ইউনিভার্সিটি কর্তৃক কুরআন শিক্ষা বাধ্যতামূলক এই কোর্সে অর্থায়ন বন্ধ করে দেবার পক্ষে ভোট প্রদান করে এ সিদ্ধান্তটি ইউনিভার্সিটি পরিচালনা পরিষদকে জানিয়ে দেয়।

এর ফলে ইউনিভার্সিটি কর্তৃকপক্ষ তাদের কারিকুলাম ঠিক রেখেই কোর্সে কিছুটা পরিবর্তন আনে। পরিবর্তনটা হলো এই যে, কোনো ছাত্র যদি কুরআন পড়তে না চায় বা ছাত্রের অভিভাবকরা যদি তাদের সন্তানদের তা পড়তে না দিতে চায়, তবে তারা তা করতে পারবে। তবে সে ক্ষেত্রে উক্ত ছাত্রকে তার গ্রীষ্মকালীন কোর্স হিসেবে সে কেন কুরআন পড়তে চায় না, সে বিষয়ের উপরে একটা পেপার জমা দিতে হবে তার ইউনিভার্সিটি বরাবর।

কিন্তু এ সংশোধনিতে কোর্সের বিরোধিতাকারীরা সম্মত হতে পারে নি। তাদের দাবী ছিলো, ইউনিভার্সিটির এ দাবী মেনে নিলেও ছাত্রদের কোনো লাভ হবে না। কারণ, কোনো ছাত্র যদি কোরানের কোর্সটি করতে না চায়, তার পরেও তাকে এই না চাওয়ার পক্ষে সাফাই গেয়ে ইউনিভার্সিটিতে পেপার জমা দিতে গেলে কোরানের বিরোধিতা করে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রবন্ধ লিখতে হবে আর সে প্রবন্ধ লিখতে গেলে তাকে কুরআন পড়তেই হচ্ছে!

অতএব তারা ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের এ স্বিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে না পেরে আদালতের শরণাপন্ন হয়। তারা ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কুরআন ও তার ব্যাখা সম্বলিত বইটি পড়ানো সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটা নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য আদালতে আবেদন জানান। তবে আদালতের বিচারকরা তাদের এ আবেদনকে নাকচ করে দেন।

যে বইটি নিয়ে এত লংকা কান্ড ঘটে গেলো, সেই বইটির ব্যপারেই এখনও কিছু বলা হয় নি আপনাদের। মার্কিন Michael A Sells গবেষকই নন, তিনি তুলনামুলক ধর্মত্বত্ত বিষয়ে একজন বিদগ্ধ পন্ডিতও বটে। তিনি Haverford University তে Comparative Religion এর একজন Professor, শিক্ষক। ইসলাম, কুরআন ও মুসলমানদের জীবন রাজনীতি ও ইতিহাস নিয়ে ইতোমধ্যেই তিনি বেশ কিছু গ্রন্থ ও প্রবন্ধ লিখেছেন।

অতি সম্প্রতি তিনি আল কুরআনের ৩০তম পারা তথা আমপারার ৩৫টি সুরা বাছাই করে সে সব সুরার শানে নুযুল, আলোচনার বিষয়বস্তু, নাযিল কালীন সময়ের ইতিহাস ঘটনাপ্রবাহ ও প্রাসাঙ্গিকতা ও সুরাসমুহে ব্যবহৃত ভাষা, ছন্দ, কাব্যিক আবেদনসহ এসব সুরার মূল শিক্ষার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে,

‘Approaching The Quran; The Early Years’ শীর্ষক একটা বই লেখেন। বইটি সমাজের বিভিন্ন মহলে অ্যত্যন্ত ব্যপক জনপ্রিয়তার পাশাপাশি বিতর্কেরও জন্ম দেয়। তবে মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সচেতন মহলে বইটি ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতাও পায়।

কুরআনের তাফসির সম্বলিত এই বইটিকেই University of North Carolina (UNC) তাদের ছাত্রদের জন্য গ্রীষ্মকালীন কোর্সের মূল পাঠ্যসুচী হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে। আর এতেই ইসলাম বিদ্বেষী মহলে গাত্রদাহ শুরু হয়। তারা তাদের সর্বশক্তি নিয়ে এর বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে এবং ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে তাদের স্বিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য করতে উঠে পড়ে লাগে। লেখালের্খি বক্তৃতা-বিবৃতি, নিন্দাবাদ প্রচার-প্রচারণা’সহ মামলা, সব কিছুই ঘটে একের পর এক। ঐ চিহ্নিত ইসলাম বিরোধি মহলের সাহায্যে এগিয়ে আসে বাঘা বাঘা ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াগুলোও।

বিখ্যাত এপি নিউজ মিডিয়া ২০০২ সালের ২রা আগষ্ট বিষয়টি নিয়ে নিউজ কভার করে। এর মাত্র ক‘দিন পরে এসে ৭ই আগষ্ট বিবিসি‘ও সংবাদ প্রচার করে। তারা ইউনিভার্সিটির ভিসি James Moeser এর স্বাক্ষাৎকার প্রচার করে।

এক প্রশ্নের জবাবে ভার্সিটির ভিসি বলেন ‘আমরা কোনো ধর্মকে প্রচার করছি না, বরং আমরা এমন একটা বিষয় পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করেছি যে, এই বিষয়টির চেয়ে ‘সমকালীন’ বলে কোন বিষয় আর নেই।’

আর এর মাত্র একদিন পরে স্থানীয় রেডিও ষ্টেশনে এক উগ্রপন্থী খৃষ্টান পাদ্রী বিষয়টি নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে সরাসরি আল কুরআনকেই আক্রমণ করে অশালীন ও অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য দিয়ে বসে। তারই রেশ ধরে ‘ Franklin Graham ’ নামক অন্য এক খৃষ্টান পাদ্রী একইভাবে ইসলাম ও আল কুরআনকে সন্ত্রাসবাদের সমার্থক হিসেবে অভিহিত করে আপত্তিকর বক্তব্য দিতে থাকে। এর ফলে আমেরিকায় মুসলমানদের সবচেয়ে সব সংগঠন ‘Council on American Islamic Relations (CAIR) ’ তাদের এই সব বক্তব্যের বিরোধিতায় এগিয়ে আসে।

সুখের কথা হলো, ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ কোন রকম চাপের কাছেই নতী স্বীকার না করে তাদের স্বিদ্ধান্তে অটল থাকেন। ফলে আশাতীত সংখ্যায় ছাত্র-ছাত্রী তাদের গ্রীষ্মকালীন পাঠ্যবিষয় হিসেব আল কুরআনের ক্রিটিকাল স্টাডিতে অংশ নেয়। এভাবেই খোদ আমেরিকায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আল কুরআন পাঠ্যসূচীতে ঠাঁই করে নেয়।

 

বিশ্ব অটিজম দিবস( ২রা এপ্রিল) নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা

অপরাজিতা ডেক্স


গত ৫ই এপ্রিল রোজ বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত Crossroads – Restaurant & Lounge -এ এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশে সফলভাবে সমাপ্ত হল বিশ্ব অটিজম দিবস( ২রা এপ্রিল) উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষজ্ঞ মতামত ও উন্মুক্ত আলোচনা।

এতে মুখ্য বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন  ভিজিটিং কনসালটেন্ট, মনোরোগ বিভাগ, আল জউফ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি, সৌদি আরব; সহযোগী অধ্যাপক ও টেলি-সাইকিয়াট্রি কনসালটেন্ট, এশিয়ান ইন্সিটিউট অফ মেডিসিন সায়েন্স টেকনোলজি (AIMST), কেদাহ, মালয়েশিয়া এবং শেখ কামাল সাইকিয়াট্রি হসপিটাল, বাহরাইন এবং ইউনিট প্রধান, সাইকথেরাপী এন্ড কাউন্সিলিং উইং, মনোরোগ বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হসপিটাল, ঢাকা এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডঃ এম এস কবীর জুয়েল।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগদান করেছিলেন Consultant Psychiatrist (Geriatric Psychiatry) and Post Graduate College Tutor. The Briary Wing Harrogate District Hospital, Lancaster Park Road, Harrogate, North Yorkshire, United Kingdom. এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডঃ সুমন আহমেদ। এবং অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত করার জন্য সাথে ছিলেন সমাজের আগ্রহী সচেতন নাগরিকবৃন্দ।

আগ্রহী সচেতন নাগরিকদের নিয়ে শিশু ও কিশোর কিশোরীদের আবেগজাত সমস্যা ও এর প্রতিকার নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত ও উম্মুক্ত আলোচনা, যার  আয়োজক ছিল সানোফি এভেন্টিস।

ডা. কবীর জুয়েল তার আলোচনায় এক পর্যায়ে বলেছেন, “অনিয়ন্ত্রিত ভার্চুয়াল জগত কেন্দ্রীক চিন্তা আমাদের তরুন তরুণীদের মাঝে আবেগজাত সমস্যা বাড়াচ্ছে।”

অনুষ্ঠানটি মূলত  অটিজম, শিশু মনোরোগ এবং কিশোর কিশোরী-দের আবেগজাত সমস্যা ও প্রতিকার নিয়ে আয়োজিত হয়েছিল এখানে উপস্থিত নাগরিকবৃন্দ বিভিন্ন মানসিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করেন, এবং বিশেষজ্ঞগণ তাদের জবাব প্রদান ও আলোচনার মাধ্যমে প্রাণবন্ত পরিবেশে উপস্থিত অতিথিদের কৌতুহল এবং শঙ্কা দূর করেন।

মুলত এই রূপ প্রোগ্রাম সরাসরি কোন মানুষের উপকারে আসবে কিনা বলা কঠিন, কিন্তু যদি একজন মানুষের মাঝেও সচেতনতা তৈরি হয়, তাহলেই সার্থক এই প্রচেষ্টা।