banner

সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ইং, ,

All posts by Oporajita

 

ঈদের ভ্রমণে ঘুরে আসুন সাজেক

‘সাজেক’ এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থল। বন্ধুবান্ধব নিয়ে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো হোক আর হোক পরিবার নিয়ে সময় কাটানো অথবা শুধু একা একা প্রকৃতিকে উপভোগ করা যেটাই হোক আপনার উদ্দেশ্য সাজেক কিন্তু হতাশ করবে না আপনাকে। এমনকি ঋতুভেদে এর সৌন্দর্য্য বদলাবে কিন্তু কমবে না কোন অংশে।
মেঘের ‘পরে মেঘ জমেছে,
আঁধার করে আসে,
আমায় কেন বসিয়ে রাখ
একা দ্বারের পাশে।
কাজের দিনে নানা কাজে
থাকি নানা লোকের মাঝে,
আজ আমি যে বসে আছি
তোমারি আশ্বাসে।
আমায় কেন বসিয়ে রাখ
একা দ্বারের পাশে।
কবিগুরু হয়ত কবিতাটি লিখেছিলেন একলা জানালার পাশে বসে। কিন্তু সাজেকের মেঘ আপনাকে কবিগুরুর এই কবিতার প্রেমিক চরিত্রের মতই উদাস করে তুলবে। পাহাড়ের পর পাহাড়, তার উপর দিয়ে ভেসে চলেছে মেঘ। মেঘের উপর হাসছে সূর্য্য, মেঘ ভেদ করে পাহাড়ে রোদ পড়ছে না কোথাও কোথাও, সেই মেঘের ছায়ার লুকোচুরি দেখাও যে মনকে শান্ত করে, আনন্দ দেয়, বলে প্রকৃতিতে আর কোন সত্য নেই, একটাই সত্য- সৌন্দর্য্য।
মেঘের পাশেই যে কোন রিসোর্টে রুম ভাড়া নিয়ে মেঘের মাঝেই কাটিয়ে আসতে পারেন আপনার ঈদ। তবে ঢাকা থেকে ফোনে বুকিং দিয়ে যেতে অবশ্যই। সাজেকের সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার হল, জায়গাটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। রাতেও পাহাড়ের কোলে বসে অনুভব করতে পারবেন মেঘের সিক্ত ছোঁয়া। তারা ভরা আকাশ গল্প শোনাবে আদিম কোন পাহাড়ী মেয়ের, দুরন্ত কিশোরীর মত্ন হবে উল্কা পতন, দূরের আকাশে বিদ্যুৎ ঝলকে হঠাত হঠাত দেখিয়ে দেবে রাতের পাহাড়ের নিথর মূর্তি।
অবশ্যই দেখবেন-
কমলক পারা-
সাজেক থেকে একটু সামনে পাহাড়ের উপরে কমলক পারার অবস্থান। ছোট একটি গ্রাম এটি। সম্প্রতি এখানে একটি রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। কমলক এই অঞ্চলের সবচেয়ে উঁচু জায়গা। সর্বোচ্চ পয়েন্ট থেকে পাবেন চমৎকার প্যানারমিক ভিউ। আর সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য তো রয়েছেই।
ঝর্ণা
বর্ষায় সাজেকে পাবেন বেশ কিছু ঝর্ণা। তবে কমলক ঝর্ণাটি সবচেয়ে সুন্দর। অবশ্যই একজন গাইড নেবেন। স্থানীয় যে কেউ গাইড হিসেবে আপনাকে সাহায্য করবে।
যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন-
১। পর্যটকদের নিরাপত্তার সুবিধার্থে সাজেকে এখন ২টি প্রবেশ সময় নির্ধারন করা হয়েছে। সকাল ১১ টা এবং বিকেল ৩টা। অবশ্যই এই সময়ের মধ্যে আর্মি চেক পয়েন্টে পৌছতে হবে আপনাকে। সাজেক ত্যাগের ক্ষেত্রেও এই সময়সূচি প্রযোজ্য।
২। আদিবাসিদের সাথে ভাল ব্যবহার করুন। তারা আপনাকে অনেক সহযোগিতা করবে।
৩। যদি পাহাড়ে ট্রেকিং করতে চান অবশ্যই ভালো জুতা পরবেন।
৪। মশার উপদ্রপ অনেক তাই ওডোমস সাথে নেবেন।
৫। উচ্চতা অনেক বেশী, তাই রোদের তাপ অনেক বেশী। সান্সত্রিম ব্যবহার করুন।
থাকার ব্যাবস্থা-
সাজেক রিসোর্ট : এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত রিসোর্ট। যোগাযোগ : খাগড়াছড়ি সেনানিবাসের গিরি থেবার মাধ্যমে বুকিং দিতে হবে। যার নম্বর : ০১৮৫৯০২৫৬৯৪। আরেকটি নম্বর : ০১৮৪৭০৭০৩৯৫।
রুন্ময় : এটি সাজেকে অবস্থিত। যোগাযোগ : ০১৮৬২০১১৮৫২।
আলো রিসোর্ট : এটি সাজেকের একটু আগে রুইলুই পাড়াতে অবস্থিত। যোগাযোগ : পলাশ চাকমা – ০১৮৬৩৬০৬৯০৬।
ইমানুয়েল রিসোর্ট : এটিতে ৮ টি রুম আছে। সব গুলো কমন বাথ। যোগাযোগ: ০১৮৬৫৩৪৯১৩০, ০১৮৬৯৪৯০৮৬৮( বিকাশ)
সারা রিসোর্ট: এটি রুইলুই পাড়ায় অবস্থিত। এর মালিক রুইলুই পাড়ার কারবারী মনা দাদা। এখাণে ৪ টি রুম আছে। তিনটি এটাচ বাথ। প্রতি রুমে একটি খাট আছে। ২ জন থাকা যাবে। রুম গুলো একটু ছোট। টিনের তৈরী। সোলার আছে। যোগাযোগ: ০১৫৫৪৫৩৪৫০৭।
রুইলুই পাড়া ক্লাব হাউজ : এটি সাজেকের একটু আগে রুইলুই পাড়াতে অবস্থিত। এখানে ১৫ জনের মত থাকতে পারবেন। নিজেরা রান্না করে খেতে পারবেন। এর কেয়ার টেকার মইয়া লুসাই দাদা সব ব্যবস্থা করে দিবে। যোগাযোগ : মইয়া লুসাই – ০১৮৩৮৪৯৭৬১২, ০১৮৭২৪৬৮৯৪২। লক্ষন – ০১৮৬০১০৩৪০২।
জলবুক রিসোর্ট: এটি কমলকের কাছাকাছি পাহাড়ে অবস্থিত। প্রতি কক্ষের সাথে এটাচ বাথ আছে। যোগাযোগ- ০১৮৬০৯৯৫৯৫।
যাতায়াত:
ঢাকা থেকে শ্যামলী , হানিফ ও অন্যান্য পরিবহনের বাসে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন । ভাড়া নিবে ৫২০ টাকা । শান্তি পরিবহনের বাস দীঘিনালা যায় । ভাড়া ৫৮০ টাকা । এছাড়া BRTC ও সেন্টমার্টিন্স পরিবহনের এসি বাস খাগড়াছড়ি যায় । যোগাযোগঃ সেন্টমার্টিন্স পরিবহন – আরামবাগঃ ০১৭৬২৬৯১৩৪১ , ০১৭৬২৬৯১৩৪০ । খাগড়াছড়িঃ ০১৭৬২৬৯১৩৫৮ ।শ্যামলী পরিবহন – আরামবাগঃ ০২-৭১৯৪২৯১ । কল্যাণপুরঃ ৯০০৩৩৩১ , ৮০৩৪২৭৫ । আসাদগেটঃ ৮১২৪৮৮১ , ৯১২৪৫৪ । দামপাড়া (চট্টগ্রাম)ঃ ০১৭১১৩৭১৪০৫ , ০১৭১১৩৭৭২৪৯ । শান্তি পরিবহন- আরামবাগ ( ঢাকা ) – ০১১৯০৯৯৪০০৭ । অক্সিজেন(চট্টগ্রাম) ০১৮১৭৭১৫৫৫২ । চট্টগ্রাম থেকেও খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন । BRTC এসি বাস কদমতলী(চট্টগ্রাম): ০১৬৮২৩৮৫১২৫ । খাগড়াছড়িঃ ০১৫৫৭৪০২৫০৭ ।
খাগড়াছড়ি বা দিঘিনালা থেকে যেতে পারবেন চাদের গাড়ি, সি এন জি বা মোটর সাইকেল এ। চাদের গাড়িতে ১২/১৪ জন যেতে পারবেন ৬-৭ হাজার টাকা খরচ পড়বে। সি এন জি তে ৩-৫ জন, ৩-৪ হাজার টাকা। মোট্রসাইকেল এ ২ জন ১৫০০-৩০০০ টাকা লাগবে।
* ঈদের সময় খরচ আরও বেশী হতে পারে।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

‘আর্টিস্ট মজনু খাঁ’ চরিত্রে নিশো

ঈদ উপলক্ষে পদ্মনাভ দাস গুপ্তের ‘চ্যাপলিন’ গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয় নাটক ‘আর্টিস্ট মজনু খাঁ’। আসাদদুজ্জামান সোহাগের চিত্রনাট্যে নাটকটি নির্মাণ করেন মেহেদী হাসান জনি। বিরহী মাল্টিমিডিয়ার প্রযোজনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন কায়েস চৌধুরী, আফরান নিশো, শারলিন ফারজানা, বাসার বাপ্পি, শরিফুলসহ আরো অনেকে। ঈদের অনুষ্ঠানমালায় ঈদের দশম দিন বৃহস্পতিবার রাত ৭ টা ৫০ মিনিটে নাটকটি মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচার হবে।

‘আর্টিস্ট মজনু খাঁ’ নাটকটির কাহিনীতে দেখা যাবে, মজনু (আফরান নিশো) নামের হতদরিদ্র লোকটির একমাত্র পেশা হচ্ছে বিভিন্ন বিয়ে বাড়িতে, জন্মদিন কিংবা যে কোন অনুষ্ঠানে মানুষকে হাসানোই তার কাজ। তাই বলে সবসময় যে মানুষ হাসে তা নয়। মজনু চার্লি চ্যাপলিনের বিশেষ ভক্ত। চ্যাপলিনের মত পোশাখ পোশাক পরে তারই আদলে বিভিন্ন জন্মদিনের অনুষ্ঠানে পারফর্ম করে সে। তার খেলা দেখে বাচ্চারা মজা পায়। কিন্তু তার এই কাজের কোন ঠিক ঠিকানা নেই।

যখন কাজ থাকে তখন হয়ত দিনে দু’বেলা খাওয়া জোটে কিন্তু যখন কাজ থাকেনা তখন একপ্রকারে না খেয়েই থাকতে হয়। ঘরে মা মরা রাতুল (শরিফুল) নামে একমাত্র সাত বছরের ছেলে রয়েছে তার। দুবেলা খাওয়া জুটুক কিংবা না জুটুক প্রাণ চাঞ্চল্যে ভরা এই মানুষটার জীবন। ছেলেটাও হয়েছে তার একেবারে ন্যাটা। বাপ যেমন ছেলেও তেমন। সারাক্ষন হাসতে আর ফুর্তি করতে ভালোবাসে দু’জনে।

একদিন একটি অনুষ্ঠানে বাবা-ছেলে পারফর্ম করতে গিয়ে পরিচয় হয় এনজিও কর্মী নিতু (শারলিন ফারজানা) সঙ্গে। তাকে মুগ্ধ করে বাবা ও ছেলের এই অদ্ভূত জীবনের ক্যামেস্ট্রি। মজনুর কর্মহীন দু:খী জীবনে একটু স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেবার জন্য নিতুই একদিন মজনুকে টেলিভিশনে পারফর্মমেন্স করার সুযোগ করে দেয়। আর ঘটতে থাকে নানা ঘটনা। এভাবেই নাটকের কাহিনী এগিয়ে চলে।

 

সাংবাদিকতার অনুসরণীয় যে নারীরা

পৃথিবী এগিয়ে চলছে। আর তার সাথে সাথে এগিয়ে চলছে মানুষও। শুধু পুরুষই নয়, তাদের পায়ের সাথে সমান তাল রেখে এগিয়ে যাচ্ছে নারীরাও। ঘরে-বাইরে কোথায নেই নারীরা? বিশেষ করে নারী সাংবাদিক, তাদের কথা তো মোটেই ভুলে যাওয়ার মতন নয়। জীবনের বাজি রেখে দুর্গম থেকে দুর্গমতর স্থান থেকে তারা এনে দিয়েছেন খবর, করেছেন অসম্ভব রকমের কষ্ট, আর উঠে এসেছেন সবার চাইতে উঁচুতে। আর সারা বিশ্বের নারী সাংবাদিকদের ভেতরে এমন শ্রেষ্ঠ কয়েকজন সাংবাদিকের কথাই নীচে বলা হল।

 

১. জিল আব্রামসন

কলেজ জীবন থেকেই লেখালেখির সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন মার্কিন এই লেখক ও সাংবাদিক। সেসময় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে দ্যা হার্ভার্ড ইন্ডিপেন্ডেন্টে এ কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর সেখান থেকে চলে যান টাইম ম্যাগাজিনে। ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৬ সালের সময়টা জিলের সেখানেই কাটে। এর পাশাপাশি দ্যা আমেরিকান ল ইয়ারে এক যুগ কাটান তিনি। ১৯৮৬ সালে জিল লিগ্যাল টাইমের প্রধান সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন এবং দুই বছর পর দ্যা ওয়াল স্ট্রীট জার্নালে চলে যান। সেখানে ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৭ সাল অব্দি কাজ করেন তিনি। সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে যোগদান করে খুব দ্রুত চলে যান অনেক উপরে। তবে ১৯৯৭ সালে দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমসে চলে যান জিল। আর ২০০০ সালে সেখানেই ওয়াশিংটন ব্যুরো প্রধান হিসেবে কাজ করতে থাকেন। এখানে পরবর্তী সময়ে বেশ কিছু ঝামেলার মুখোমুখি পড়তে হয় তাকে। ১৯৯৫ সালে জিল ও তার ওয়াল স্ট্রীট জার্নালের সহকর্মী জেন মায়ার যৌথভাবে স্ট্রেঞ্জ জাস্টিস:দ্যা সেলিং অব ক্লারেন্স থমাস বইটি লেখেন। ২০০০-২০০১ সালের এই এক বছর জিল প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেন। একই সময়ে আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস এন্ড সায়েন্সের ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তীতে ২০১০ সালে টাইমসের সাথে ৬ মাসের জন্যে কাজ করার কথা বলা হলেও ২০১১ সালে টাইমস জিলকে নিজেদের সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত ও ঘোষণা করে। তবে ২০১৪ তে এসে টাইমস থেকে তাকে না করে দেওয়া হয়। তবে এখনো অব্দি মানুষ তাকে টাইমসের সম্পাদক হিসেবেই এক নামে চেনে। ২০১২ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকানুযায়ী বিশ্বের সবচাইতে শক্তিশালী নারীর ভেতরে অন্যতম একজন হিসেবে জিলকে নির্বাচিত করা হয়।

২. আরিয়ানা হাফিংটন

দ্যা হাফিংটন পোষ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক আরিয়ানা হাফিংটনের লেখক ও অভিনেত্রী হিসেবেও বেশ পরিচিতি রয়েছে। গ্রীসে ১৯৫০ সালে জন্ম নেওয়া বিখ্যাত সাংবাদিক কন্সটানটিনোস ও এলি স্ট্যাসিনোপোউলোর মেয়ে এই নারী মিডিয়াকর্মী ১৬ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। সেখানে প্রথম বিদেশি ও তৃতীয় নারী হিসেবে ক্যামব্রিজ ইউনিয়নে যোগ দেন আরিয়ানা। আরিয়ানা বড় বোন আগাপি বেশ ভালো লেখক হিসেবে পরিচিত। তখন তিনি নিজের লেখালেখি শুরু করেছিলেন। এদিকে বার্নার্ড লেভিনের সাথে বেশকিছু জায়গায় যেমন- ফেস দ্যা মিউজিকের একটি সংখ্যায় দেখা যায় আরিয়ানাকে। তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে। বিবিসিতে তাদেরকে একসাথে কাজ করতে দেখা যায়। বার্নার্ডের অনুপ্রেরণায় তার সম্পাদকীয় সাহায্য নিয়ে লিখতে শুরু করেন আরিয়ানা। কিন্তু একটা সময় তাদের সম্পর্কের অবনতি হলে ১৯৩০ সালে নিউ ইয়র্কে চলে আসেন তিনি। এরপর তেকে একের পর এক বই লিখে যান আরিয়ানা। নারীদেরকে নিয়ে ১৯৭৩ সালে দ্যা ফিমেল ও্যমেন লেখেন তিনি। এরপর ন্যাশনাল রিভিউ এর পাতায় ছাপান বেশ কিছু আর্টিকেল। একে একে প্রকাশিত হয় তার লেখা মারিয়া ক্যালাস ও পাবলো পিকাসোর জীবনী। মাইকেল হাফিংটনকে বিয়ে করার পর কনজারভেটিভ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। কাজ করতে থাকেন আরো বেশি। ১৯৯৭ সালে নিজের লেখা গানের জন্যে অ্যামি এ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হন আরিয়ানা। ১৯৯৮ সালে রেডিও অনুষ্ঠান লেফট, রাইট এন্ড সেন্টারে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। এবং একটা সময় রিপাবলিকদের সমর্থন করতে শুরু করেন। শুধু তাই নয়, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ডের দূত হিসেবে প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকা ও পরে বার্লিনের সামিটে যোগদেন তিনি। ২০১৪ সালে বিশ্বের সবচাইতে ক্ষমতাধর নারীদের তালিকার ৫২ তম অবস্থানে রাখে তাকে ফোর্বস।

৪. ক্রিস্টিয়ান আমানপুর

১৯৫৮ সালের ১২ই জানুয়ারি জন্ম নেওয়া ক্রিস্টিয়ানের প্রধান পরিচয় তিনি একজন সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক। সিএনএন প্রধান আন্তর্জাতিক মুখপাত্র এবং সিএনএন ইন্টারন্যাশনাল এর আমানপুর অনুষ্ঠানটির বর্তমান উপস্থাপক তিনি।  এবিসি নিউজেও উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেন তিনি। ২০১৪ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে তিনিই একমাত্র সাংবাদিক যাকে সবচাইতে বেশি সংখ্যক বিশ্বনেতা অনুসরন করেন। তবে এত পরিচিতির তুঙ্গে থাকা এই নারীর শুরুটা হয় ইরানে। ব্রিটিশ-ইরানি আমানপুর ইরানে নিজের প্রাথমিক শিক্ষা নেবার পর ইউনিভার্সিটি অব রোডে আইল্যান্ডে সাংবাদিকতার ওপরে পড়াশোনা শেষ করেন। সে সময় একই সাথে ডব্লিউবিআরইউ-এফএম ও এনবিসিতে কাজ করতেন তিনি। ১৯৮৩ সালে সিএনএনে ডেস্ক সহকারী হিসেবে যোগ দেন আমানপুর। এরপর কাজ শুরু করেন মুখপাত্র হিসেবে। আমানপুরের জীবনের সবচাইতে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ঘটনাটি ঘটে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়। এরপর থেকেই একনাগাড়ে অনেকগুলো জায়গায় মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেন তিনি। ১৯৯০ সালে পারসিয়ান গালফ ওয়ারের ওপর করা তার কাজ পুরো বিশ্বের নজর কাড়তে সক্ষম হয়। একের পর এক অসাধারন সব কাজের বিনিময়ে সিএনএন এর প্রধান আন্তর্জাতিক মুখপাত্রের স্থানে উঠে আসেন আমানপুর আর সেখানেই ১৯৯২ থেকে ২০১০ সাল অব্দি কাজ করে যান। যুদ্ধের অনেক দূর্গম স্থান থেকে নানারকম তথ্য ও ইন্টারভিউ এনে দেওয়া ছাড়াও মোজাম্মদ খাতামী, মাহমুদ আহমেদিনিজাদ, টনি ব্লেয়ার, হিলারি ক্লিনটন, গাদ্দাফি, পারভেজ মোশাররফ সহ আরো অনেকের সাথে কথা বলেছেন তিনি। পরবর্তীতে ২০১০ সালে এসে সিএনএন ও এবিসি নিউজের কোনটাকে বেছে নেওয়া হবে এই নিয়ে কথা-বার্তা চলতে থাকলে যৌথভাবে উভয় জায়গাই তাকে কাজ করতে অনুমতি দেয়।

লিখেছেন-
সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
ফিচার রাইটার

 

রেস্টুরেণ্ট স্বাদের সবজি তৈরি করে ফেলুন খুব সহজে

মাংস খেতে খেতে বিরক্ত চলে এসেছে নিশ্চয়। স্বাদ বদলাতে অনেকেই সবজি, মাছ রান্না করছেন। প্রতিদিন একই ধরণের সবজি খেতে কার ভাল লাগে বলুন? সবজি রান্নাটি একটু ভিন্নভাবে করা গেলে দারুন হয়, তাই না? প্রতিদিনকার সবজি রান্না করুন একটু ভিন্নভাবে রেস্টুরেন্ট স্টাইলে।

উপকরণ:

গ্রেভির জন্য

৩টি বড় টমেটো

২টি মাঝারি আকারে পেঁয়াজ

২ টেবিল চামচ কাজুবাদাম

১-১/২ টেবিল চামচ তেল

সবজির জন্য

১/৪ কাপ আলু কুচি

১/৪ কাপ গাজর কুচি

১/৪ কাপ ফুলকপি

১/৪ কাপ বিনস

১/৪ কাপ মটরশুঁটি

১/৪ কাপ ক্যাপসিকাম কুচি

১/৪ কাপ পনির কুচি

২-৩ টেবিল চামচ মাখ

২-৩ টেবিল চামচ ক্রিম

ধনেপাতা কুচি

লবণ স্বাদমত

১-১/২ টেবিল চামচ কাশ্মেরী লাল মরিচ গুঁড়ো

১ চা চামচ ধনিয়া গুঁড়ো

১ চা চামচ জিরা গুঁড়ো

১/২ চা চামচ গরম মশলা গুঁড়ো

১/২ চা চামচ কাসরি মেথি

১/২ চা চামচ আদা রসুন পেস্ট

৩-৫ টেবিল চামচ তেল

১টি ভাজা পাঁপড় (ইচ্ছা)

প্রণালী:

১। গ্রেভির জন্য প্রথমে প্যানে তেল গরম করতে দিন।

২। এরপর এতে টমেটো কুচি, কাজুবাদাম এবং পেঁয়াজ কুচি দিয়ে মঝারি আঁচে নাড়ুন।

৩। টমেটো নরম হয়ে এলে এতে পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন।

৪। এখন আরেকটি প্যানে তেল গরম করতে দিন। এতে আলু কুচি, গাজর কুচি দিয়ে ভাজুন। ভাজা হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন।

৫। আবার ফুলকুপি, বিনস, এবং পনির দিয়ে ভেজে নামিয়ে ফেলুন।

৬। এখন বাকি তেলের সাথে মাখন দিয়ে দিন। মাখন গলে গেলে আদা রসূনের পেস্ট দিয়ে নাড়ুন।

৭। এরপর এতে টমেটো পেস্ট, লবণ, লাল মরিচ গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে নাড়ুন।

৮। বলক না আসা পর্যন্ত এটি নাড়তে থাকুন।

৯। গ্রেভি রান্না হয়ে গেলে এতে মটরশুঁটি, ক্যাপসিকাম কুচি দিয়ে ২-৩ মিনিট নাড়ুন।

১০। তারপর এতে ভাজা সবজিগুলো দিয়ে দিন।

১১। ধনিয়া গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, গরম মশলা গুঁড়ো, কাসরি মেথি দিয়ে দিন।

১২। এবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫ মিনিট রান্না করুন।

১৩। শেষে ক্রিম, ধনে পাতা কুচি দিয়ে দিন।

১৪। চুলা থেকে নামানোর আগে ভাজা পাঁপড় গুঁড়ো করে দিয়ে মিশিয়ে নিন।

১৫। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার রেস্টুরেন্ট স্টাইল মিক্স ভেজি সবজি!

 

আসন্ন পূজা উৎসবে সেজে উঠুন স্টাইলে

শুরু হতে চলেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের উৎসবের আমেজ তথা উৎসবের সিজন। সুতরাং এখনই সময় ওয়ারড্রব থেকে ক্লাসিক আনারকলি, ঢোলা লেহেঙ্গা, লম্বা কুর্তা, লং স্কার্ট এবং অসাধারণ শাড়িগুলো বের করার। এছাড়া আপনি যদি সম্পূর্ণ ঐতিহ্যগত পোশাকে অভিনব স্টাইলে বের হতে চান, তাহলে বেছে নিতে পারেন ক্রপ টপ এবং ঢোলা লেহেঙ্গা।

আপনি যদি সমসাময়িক ফ্যাশনে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন তাহলে কিছুটা সাদাসিধে পোশাকও বেছে নিতে পারেন। এজন্য বেছে নিতে পারেন উজ্জ্বল রঙের বিচিত্র প্রিন্টের পোশাক। এই উৎসবমুখর পরিবেশকে উপেক্ষা করার মতো কোন যথাযথ কারণ নেই। রাভিনা বলেন, ‘বার্গান্ডি ভোগে এসেছে তার সুন্দর সূচিকর্ম এবং আরি কর্মের সমন্বয়ের পোশাক যা উৎসবমুখর লুক এনে দেবে। গোড়ালি পর্যন্ত লম্বা আনারকলির সাথে চিকন ও পাতলা সূচিকর্মের লং জ্যাকেট কিংবা ক্রাশ স্কার্ট এখন বড় ট্রেন্ড।’

রাজ শ্রফ, রাভাগে মনে করেন উৎসব উপলক্ষে ড্রেস আপের সময় যে কেউ নিজেকে নিয়ে পরীক্ষা করা শুরু করে দেয়। তিনি বলেন, ‘ফেস্টিভ ফ্যাশন সবসময় অনেকটা যার যার পছন্দের মতো এবং আপনি ঐতিহ্য থেকে দূরে সরে যেতে পারবেন না, কিন্তু রঙ, স্টাইল এবং নিজের পছন্দ নিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন। তরুণদের কাছে এটা অনেকাংশে আধুনিকীকরণ, তবে ভবিষ্যৎ ফ্যাশনে ভারতীয় ক্লাসিকের মতো কিছু নেই।’

আপনি যদি স্টাইলে প্লেফুল লুক নিয়ে আসতে চান তাহলে শাড়ি পরতে পারেন, তবে একটু অভিনব স্টাইলে এবং সাথে গতানুগতিক সোনা ও হীরার গহনা না পরে পরতে পারেন টেরাকোট্টা জুয়েলারি। ডিজাইনার অঞ্জলি শরমা বলেন, ‘ভারতীয় উৎসবের সবচেয়ে সুন্দর দিক হচ্ছে এখানে নিজের মতো পরীক্ষা করে নেওয়াটা গ্রহণযোগ্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই সিজনে যত বেশি সম্ভব কালার ব্যবহার করা হয়- সেটা টান্ডেম হোক আর মনোক্রোমাটিক!’

সুসান ফার্নান্ডেজ বলেন, ‘কটন ও সিল্কের তাঁতশিল্পে, সুন্দর সূচিকর্মে এবং সুবিন্যাস্ত ডিজাইনে ভারতীয় সংস্কৃতি বেশ সমৃদ্ধ। আর যখন এটা উৎসবের সময় হয় তখন এর সমৃদ্ধ কাপড়কে কথা বলতে দিন।’

 

তিনি একজন বিজয়িনী নারী

রেশমা কুরেশি বানো। অ্যাসিড যাকে পোড়াতে পারেনি। ২০০৪ সালে ১৯ বছরের যে নারীর মুখে এসিড ঢেলে দিয়েছিলো তার স্বামী। বৃহস্পতিবার ‘নিউ ইয়র্ক ফ্যাশন উইক’-এ সগর্বে হাঁটলেন তিনি।

হ্যাঁ, পাঠক সত্যি! এবার ‘পোড়ামুখী’ এক নারী র‌্যাম্প মাতিয়ে দিলেন অর্চনা কোচারের পোশাকে। দীর্ঘ ক্রিম অ্যান্ড ফ্লোরাল গাউনে তাকে দেখাচ্ছিল রাজকীয়! ফ্যাশন উইক প্রযোজনা সংস্থা ‘এফটিএল মোডা’ রেশমাকে আমন্ত্রণ জানান এ বছরের ‘নিউ ইয়র্ক ফ্যাশন উইক’এ। ফ্যাশন র‌্যাম্পে সৌন্দর্যের প্রথাগত সংজ্ঞাকে ভেঙে দিতেই সংস্থার এই উদ্যোগ। গত বছর যেমন র‌্যাম্প হেঁটেছিলেন ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত এক তরুণী।

এসিড আক্রান্ত রেশমার পাশাপাশি এ বছর অর্চনা কোচরের পোশাকে হেঁটেছেন সানি লিওন। দু’জনে ছবিও তুলেছেন একসঙ্গে! অনুষ্ঠানের পর উচ্ছ্বসিত রেশমা বলেছেন, ‘জীবনকে পুরোদমে উপভোগ করার অধিকার আমাদেরও আছে। এখানে এসে আমার বেঁচে থাকার মানেটাই পাল্টে গেল। অসাধারণ অভিজ্ঞতা!’ রেশমার আপাতত একটাই লক্ষ্য— স্কুলের পাঠ চুকিয়ে কলেজে ভর্তি হওয়া।

 

পথে পথে হয়রানি: নির্যাতন-নিপীড়নে অনিরাপদ ঢাকা

১৯ বছরের কিশোরী নায়লা।বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং করতে জয়পুরহাটের মফস্বল এলাকা থেকে ঢাকায় এসেছেন। থাকছেন লালমাটিয়ায় একটি মেসে বন্ধুদের সাথে।দিনের বেলা কোচিং থেকে ফেরার পথে ফুটপাতে হাঁটার সময় লক্ষ্য করেন, একদল ছেলে তার পিছু নিয়েছে।এক পর্যায়ে ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে এসে রিকশা নিয়ে লালমাটিয়ায় রওনা হলে দেখেন,সেই পিছু নেওয়া চলছেই।ছেলেগুলো সেদিন মেস চিনে যায়। পরদিন থেকে শুরু হয় উৎপাত।এক সপ্তাহের মধ্যে চারজন ছেলে অচেনা এই শহরে কিশোরীর টিকে থাকা অনিশ্চিত করে দেয়।ধর্ষণের শিকার হয় মেয়েটি।লোকলজ্জার ভয়ে পুলিশি সহায়তা না নিয়ে মেয়েকে সঙ্গে করে এলাকায় ফেরেন অভিভাবক।মেয়েটির পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়।

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা।অফিস শেষে বাড়িতে ফেরার যানবাহনের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন শাহিনা পারভীন।মোটরসাইকেলে আরোহী দুই যুবক তার দিকে ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ করলে,তিনি প্রতিবাদ করেন।মোটরসাইকেল আরোহী একজন নেমে এসে তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করলেও আশপাশ থেকে কেউ তাকে সহায়তা করে না।বেশ কিছুক্ষণ পর তাকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করা হয়।মেয়েটির অভিযোগ,কাছেই একটা টহল পুলিশের ভ্যান থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। তার চিৎকার শুনে লোকজন আশেপাশে এলেও কেউ সহায়তা করেনি।একসময় তাকে গালাগালি করে চলে যায় ওই মোটরসাইকেলের আরোহীরা।

যে মেয়েদের জীবিকার তাগিদে কিংবা নানা কাজে বাড়ির বাইরে যেতে হয়, তাদেরকে এধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে কম-বেশি সবাকেই যেতে হয়। বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশনএইড-এর ‘নিরাপদ নগরী নির্ভয় নারী’ প্রচারণার অংশ হিসেবে করা এক গবেষণা তথ্য মতে,…

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস ২০১৪ সালের মে-জুন মাসে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের সাতটি বিভাগীয় শহরে ১২০০ জন উত্তরদাতার স্বাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। এর মধ্যে ৮০০ জন নারী ও কিশোরী এবং বাকি ৪০০ জনের মধ্যে ২০০ জন পুরুষ এবং ২০০ জন হলো অনুর্ধ ১৮ বছরের ছেলে।

গবেষণায় দেখা যায়,শতকরা ৮৪ জন নারীকে বখাটেদের কটুক্তি ও অশোভন আচরণের সম্মুখীন হতে হয়েছে।অর্ধেকেরও বেশী নারীকে রাস্তা ঘাটে কুপ্রস্তাব শুনতে হয়েছে। সর্বোপরি ৫৭ শতাংশ উত্তরদাতাকে অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ বা গায়ে হাত দেওয়ার মতো হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়েছে। আরও হতাশার দিক হলো,একজন নারী কিন্তু একাধিকবার একাধিক ধরনের যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। যেমন গড়ে একজন নারী গত তিন মাসে ৪ থেকে ৫ বার অশোভন আচরণের সম্মুখীন হয়েছেন, একইভাবে ৪ থেকে ৫ বার অপরিচিতের কাছ থেকে ‘কুপ্রস্তাব’ পেয়েছেন এবং ২ থেকে ৩ বার অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শের মত হয়রানির সম্মুখীন হয়েছেন।

এছাড়া দেশের ৯৫ শতাংশ নারী মনে করেন, পুলিশি সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার হতে হয়।নারী নেত্রীরা বলছেন,সব থেকে ভয়াবহ বিষয় হলো,যৌন নির্যাতনের শিকার ৮৪ শতাংশ নারী এ ব্যাপারে কোথাও অভিযোগ করা দরকার বলে মনে করেন না। উত্তরদাতাদের ৬৫ শতাংশ নারী মনে করেন,পুলিশ অভিযোগকারীকেই দোষারোপ করে।

কেবল পুলিশ না, সামাজিকভাবেও মেয়েটিকেই দোষারোপ করা হয়- বলেন মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় কোনও হয়রানির শিকার হলে মেয়েরা পরিবারের সদস্যদের সাথেও শেয়ার করতে সাহস পায় না।সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গিয়ে অভিযোগ করবে সে-তো অভাবনীয়। এমনকি কোনও নারী ধর্ষণের শিকার না হওয়া পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ নিতে দ্বন্দ্বে থাকতে দেখা যায়। ফলে ইভটিজিং বা যৌন হয়রানির ঘটনায় নারীরা নিজেদের আড়াল করেই টিকে থাকতে চান।’

অ্যাকশন এইড এর জরিপ বলছে, রাস্তায় বা অন্যান্য পাবলিক পরিসরে হয়রানি দিয়ে বুঝা যায়,শহরে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি নারী অনিরাপদ থাকেন এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেক চিন্তিতও থাকেন। অন্তত ১০ শতাংশ নারী পাবলিক পরিসরে নিজেদের অনিরাপদ ভাবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের মাহবুবা নাসরিন  বলেন, ‘আমাদের পাবলিক প্লেসগুলো নারীবান্ধব না। একজন নারী সন্ধ্যার পর অফিস থেকে বের হয়ে নিজের মতো করে বাসায় ফিরবে, তার জন্য তাকে বাড়তি খরচ করতে হয়। বাসে করে যাওয়া অনিরাপদ বলে তাকে কাছের দূরত্বেও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ভাড়া করতে হয়। ফলে তিনি শুরুতেই নিজে থেকে সতর্ক হতে গিয়ে চলাফেরার পরিধি কমিয়ে দেন। আর যারা সেটা করতে চান না, সমাজ এখনও তাদের সাথে ঘটা যেকোনও অপরাধের জন্য তাদেরই (নারীদেরই) দোষ দিয়ে থাকে। ফলে নারীর জন্য ঘরে-বাইরে সমান অনিরাপদ, যতদিন না আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো যাবে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন  বলেন, ‘নিউ মার্কেট গাউসিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নারীদের হয়রানির যে চিত্র তুলে ধরা হয়, সেসব বন্ধে আমাদের পরিকল্পনা আছে। মানুষকে সচেতন করে তোলা জরুরি। নারীদের সার্বিক উন্নয়নে নারী কাউন্সিলর বাড়ানোর পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীকে সংবেদনশীলভাবে কাজে লাগানো জরুরি।’ তিনি আরও বলেন,‘ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে কেবল ময়লা আবর্জনা নয়, আমাদের উচিত নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য নিরাপদ নগরী উপহার দিতে চেষ্টা করা।’

 

ডিভোর্সি নারী মানেই ‘সর্বস্বহীন’ নয়

জেসমিন চৌধুরী: পনেরো বছর আগের কথা, তখন দেশে থাকি। আমার এক সহকর্মী একবার একটা কাজে আমার বাসায় এসে চারদিকে তাকিয়ে আশ্চর্য হয়ে বললেন, ‘তোমার তো দেখি সবই আছে?’ ‘মানে?’ ‘মানে একেবারে সাজানো সংসার তোমার, আর সবার মতো।‘

‘আপনি কী ভেবেছিলেন?’

‘না মানে, একটা মেয়ে স্বামীকে ছেড়ে এসে বাচ্চাদেরকে নিয়ে একা থাকছে শুনলে অন্যরকম একটা ছবি মাথায় আসে, এরকম সাজানো-গোছানো ড্রয়িং রুম নয়’।

আরেকবার আমার এক বোন-পো আমার বাসায় বেড়াতে এলো তার বন্ধুকে নিয়ে। আমার বাচ্চারা তখন হৈচৈ করে খাবার টেবিলের উপরে ‘বনভোজন’ করছে। আমি কাদামাটি দিয়ে একটা চূলা বানিয়ে দিয়েছিলাম তাদেরকে। সেই চূলাকে একটা বড় এল্যুমিনিয়ামের থালার মাঝখানে রেখে তার মধ্যে ঝাড়ুর কাঠির আগুন জ্বালিয়ে আড়ং থেকে কেনা মাটির পিচ্চি পাতিলে চাল ডাল বসানো হয়েছে। সত্যিকারের রান্নার মতো টগবগ করে ফুটতে থাকা খিচুড়ির দিকে তাকিয়ে বিশ্বজয়ের হাসি হাসছে আমার দুই ক্ষুদে গর্ডন রামজি।

পাশেই বেতের সোফায় বসা বোন পো’র বন্ধুটি শুনি ফিসফিসিয়ে বলছে,

‘এরা তো অনেক ফুর্তিতে আছে রে, বিষয়টা কী?’

আজ মৌসুমী কাদেরের ‘কাবেরী গায়েনের লেখা এবং আমার কিছু প্রশ্ন’ নামক লেখাটা পড়তে গিয়ে মনে পড়লো সেই ‘সর্বস্বহীন’ সময়ের কথা। ওটা ছিল আমার বিবাহ বিচ্ছেদের প্রথম পর্বের (বহু পর্বেই সারতে হয়েছিল কাজটা) সময়। বিবাহ বিচ্ছেদ কঠিন হবার কথা, আমার জন্যও কিছুই সহজ ছিল না। কিন্তু আমি কি ‘সর্বস্বহীন’ ছিলাম?

আমি তখন সিলেটের একটা স্কুলের নিচের দিকের ক্লাসে সামান্য বেতনে শিক্ষকতা করি, বেতন দিয়ে সংসার চলে না বলে বিকেলবেলা বাসায় বাচ্চা পড়াই। নির্মাণাধীন একটা দালানের রেলিংবিহীন দোতলার ফ্ল্যাটে বাচ্চাদের নিয়ে থাকি, কামলা ডেকে বাঁশ দিয়ে নিজে রেলিং বানিয়ে নিয়েছি। নিরাড়ম্বর সাদামাটা জীবন, কিন্তু নিজের বাচ্চাদের নিরাপত্তার জন্য আমার এই সামান্য বাঁশ-বেতের ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা আমার কাছে ছিল কোনো বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানা থেকেও অনেক বেশি গৌরবের।

একাকী জীবনে টানাপোড়েন ছিল, ঝুট ঝামেলা ছিল, দিন আনি দিন খাই অবস্থা ছিল। আমাদের অনেক টাকা ছিল না সত্যি, কিন্তু একটা বাঁচবার মতো জীবন ছিল। প্রতিদিন বিকেলে ছাত্র পড়ানো শেষে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে যেতাম, ছুটির দিনে বাইরে কোথাও খেতাম আমরা, লম্বা বন্ধে ট্রেনে চড়ে ঢাকায় বই কিনতে যেতাম। মাথার উপরে এক পুরুষ সিংহের হুংকারের ভয় ছিল না দিন রাত। শ্বাস-প্রশ্বাস নেবার মতো সাধারণ বিষয়কেও সুখের মনে হতো। সত্যি কথা বলতে সেই প্রথম আমি এবং আমার বাচ্চারা জীবনের স্বাদ যথার্থভাবে উপভোগ করেছিলাম।

কিন্তু আমাদের এই হৈ হুল্লোড় করা আনন্দের জীবনকে কীভাবে দেখতো চারপাশের মানুষ? একটা মেয়ের একাকী জীবনে আপন মনে সুখী থাকতে পারা কি একটা ভাল ব্যাপার?

বিয়ে ভাঙ্গা একটা মেয়ের মনমরা হয়ে থাকবার কথা, জীবন নিয়ে অভিযোগ করবার কথা, সে কেন সারাক্ষণ আনন্দে মেতে থাকবে? নিশ্চয়ই তার কোনো পুরুষের সাথে সম্পর্ক আছে, পুরুষবিহীন জীবনে কীভাবে আনন্দে থাকে অবলা নারী?

একদিন স্টাফরুমে একজন সহকর্মী বললেন, ‘আপনার চরিত্র নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে।‘ আরেকবার শুনলাম, মায়েরা নাকি বাচ্চাদের স্কুল থেকে নিতে এসে কানাঘুষা করেন, ‘ডিভোর্সি একটা মহিলাকে নিয়েছে বাচ্চা পড়ানোর জন্য, আমাদের বাচ্চারা এর কাছ থেকে কী শিখবে?’

আঠারো বছরে বয়সের বাল্যবিবাহ সুখের হবে, এই আশা বিয়ের দিন লাল-নীল জরি দিয়ে সাজানো টয়োটা করোলায় উঠে বসার পরপরই উবে গিয়েছিল। তারপর বিবাহিত জীবনের প্রতিটি দিনই অন্তত:পক্ষে একবার বিচ্ছেদের স্বপ্ন দেখেছি, তারপরও সেই যোগ্যতা অর্জন করতে কেটেছে আরো আঠারোটি বছর।

অনেকে বলেন, শুরু থেকেই যদি জানতে তাহলে এতোদিন লাগলো কেন? একটা মেয়ের কোনদিকে রেহাই নেই। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করে থাকলে বলা হবে, থাকলে কেন? ছাড়লে বলা হবে, ছাড়লে কেন? ছাড়বেই যদি, এতো সময় নিলে কেন? আত্মহত্যা করলে বলা হবে, মরলে কেন?

যা’ই হোক, জরাগ্রস্ত এই সমাজের সমস্ত সংস্কারকে বৃদ্ধাংগুষ্ঠি দেখিয়ে শেষপর্যন্ত যেদিন কাজটি করতে সক্ষম হই, ঐ দিনটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের এবং গৌরবের দিন। খুব সেজেগুজে ডিভোর্স রেজিস্ট্রি করতে বেরিয়ে যাচ্ছি দেখে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ আত্মীয়া ধমক দিয়ে বলেছিলেন, ‘এমন কাজে সেজেগুজে যাচ্ছ কেন? একটু শরম কর। মাথায় কাপড় দিয়ে যাও’।

আমার আনন্দের কারণ তাকে কেন, কাউকেই বুঝিয়ে বলতে পারিনি। আমার কাছে ঐ দিনটিই আমার জন্মদিন, তার আগের দিনগুলো ছিল সমাজের, মা-বাবার, সংস্কারের, আমার নয়। তার আগের দিনগুলোতে আমি ছিলাম নিঃস্ব, কারণ আমার ‘আমি’ বলতেই কিছু ছিল না। নিজেকে ফিরে পাবার ঐশ্বর্যে ভরপুর আমার নতুন জীবন একাকী হতে পারে, কিন্তু ‘সর্বস্বহীন’ হয় কীভাবে?

বাংলাদেশে নারীদের আত্মহত্যার কারণের কোন সমীক্ষা আমি পড়িনি, কিন্তু খবরে প্রতিনিয়তঃ যা শুনি তা থেকে মনে হয় বিচ্ছেদ প্রাপ্ত থেকে বিবাহিত, ধর্ষিত, নির্যাতিত মেয়েদের আত্মহত্যার সংখ্যা অনেক বেশি। আকতার জাহানের আত্মহত্যার কারণ কী ছিল তার বিবাহ বিচ্ছেদ, না’কি ব্যক্তিগত কষ্ট, নিঃসঙ্গতা, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের হাতে তার অসহায়ত্ব? এগুলো ভেবে দেখবার বিষয়।

মজার ব্যাপার হলো, নারীর একাকী ভালো থাকা যে সমাজ মেনে নিতে পারে না, সেই সমাজই আকতার জাহান জলি’র আত্মহত্যার মতো ঘটনা নিয়ে আবার মাতম করে। আপনারা আমাদের বাঁচতেও দেবেন না, মরতেও দেবেন না। আমরা যেমনই থাকি, শুধু পুরুষের কণ্ঠলগ্ন হয়ে থাকলেই আপনারা খুশী।

অবশ্য আমার বাঁশের রেলিং দেয়া বাসায় বাচ্চাদেরকে নিয়ে ছোট্ট গোছানো সংসারে একা থাকার দিনগুলোর পর অনেক এগিয়ে গেছে পৃথিবী। কিছুদিন আগে বন্ধুদের সাথে এক ড্রইংরুম আড্ডায় কথা হচ্ছিল একা জীবন কাটানো নারীদেরকে নিয়ে। গালগল্পে যেসব নারীদের কথা উঠে এসেছিল তারা সবাই শিক্ষিত, প্রতিষ্ঠিত, নিজের পরিচয়ে পরিচিত, জীবন নিয়ে পরিতৃপ্ত।

ব্যতিক্রম নেই, তা নয়। একা জীবনের অনেক কষ্ট আছে, অপূর্ণতা আছে, কিন্তু সেই সাথে আছে স্বস্তি এবং শান্তিও। মোট কথা, একজন নারীর জীবনের সার্থকতার সাথে একজন পুরুষ সঙ্গীর চেয়ে আরো অনেক বিষয়ের সম্পৃক্ততা এখন অনেক বেশি। একজন আকতার জাহান ডিভোর্সি ছিলেন এবং আত্মহত্যা করেছেন, তার মানে এই নয় যে তিনি ‘সর্বস্বহীন’ ছিলেন, বা প্রতিটি ডিভোর্সি নারীর জীবন করুণ এবং সর্বস্বহীন।

একটু মন দিয়ে চারদিকে তাকালে এমন অনেক নারীকে দেখতে পাবেন যারা বিবাহ বিচ্ছেদের পর বাচ্চাদের নিয়ে একা জীবন বাঁচার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবং তারা ভালোই আছেন। ভালো থাকার জন্য একজন নারীর প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং স্বচ্ছলতা। সাথে একজন যোগ্য পুরুষসঙ্গী জুটে গেলে তা উপরি পাওনা, আর না থাকলেও খুব একটা সমস্যা নেই, বরং দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়ালই আধুনিক নারীর বেশী কাম্য।

 

৪১ দিন নিখোঁজ থাকা প্রসঙ্গে যা বললেন বৈরাগী

গত ৭ আগস্ট ২০১৬ থেকে অভিনেতা ফখরুল হাসান বৈরাগী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আর এই কথাটি জানা যায় ফেসবুকে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এর গ্রুপ পেজ’য়ের এর থেকে।

পরবর্তীতে গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর  বৈরাগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে খবরটির সত্যতা যাচাই করার পর ‘খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না অভিনেতা ফখরুল হাসান বৈরাগীকে’ এই নামে একটি নিউজ প্রকাশ করা হয়। এরপর দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঢালাও ভাবে নিউজটি প্রকাশ করে এবং ফেসবুকে শেয়ার করে তুমুল ভাবে খবরটি চাঙ্গা করা হয়। যাতে করে তাকে দ্রুত খুঁজে পাওয়া যায়।

তবে ঘটনার ৪১ দিন পর তার খোঁজ পাওয়া গেল। তিনি কলাবাগান থানায় স্বশরীরে হাজির হয়েছেন।

 

৩টি ভুল এড়িয়ে চলুন নতুন ব্যবসায়

প্রতিযোগিতার বাজারে অনলাইন ব্যবসায় দ্রুত এগিয়ে যেতে চান? একটাই উপায়। আপনাকে থাকতে হবে সদা উদ্যমী। অলসতা আপনার জন্য নয়। ভুলে যান বিশ্রাম, ঘুরোঘুরি। ভুলে যান আড্ডাবাজি। কঠিন শ্রমের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিন আর এড়িয়ে চলুন এই ভুলগুলো-
দেরী করলেই বিপদ
ব্যবসার জন্য হয়ত মূলধন ইনভেস্ট করে অনেক পণ্য কিনেছেন। অথবা আপনার প্রতিষ্ঠানে ক্যাশ অন ডেলিভারি বা এরকম নতুন কিছু চালু করতে চান। দেরী করবেন না। কারণ আপনার আইডিয়া অন্য কারো মাথাতেও আসতে পারে। বাজারে একটা কিছু যখন আপনিই প্রথম আনছেন তখন স্বাভাবিকভাবেই সেই পণ্য/সেবা আপনাকে দেবে অনন্যতা। কিন্তু যখনই আপনি ২য় বা ৩য় হয়ে যাবেন, তখন তা আর বিশেষ কিছু থাকবে না। তাই যা করবেন দ্রুত করে ফেলুন।
ইউনিক হওয়া ছাড়া উপায় নেই
এখন চারিদিকে প্রচুর দোকান। আপনি যে পন্যেরই ব্যবসা শুরু করুন না কেন আপনি একাই সেই ব্যবসা করছেন না, আছে আরো অনেক বিক্রেতা। তাই আলাদাভাবে নজরে পড়তে আপনার পণ্যকে হতে হবে যথেষ্ট আলদা। ভিন্নতাই হবে একমাত্র কৌশল যা ক্রেতাকে হাজার অনলাইন শপের ভীড়ে ফিরিয়ে আনবে আপনার কাছে।
কথা আর আজে মিল থাকতে হবে
আপনি হয়ত কী কী করবেন, কীভাবে করবেন তা নিয়ে বিশদ চিন্তা করছেন, কিন্তু যে সময় দেয়া দরকার সে কাজকে বাস্তবায়ন করতে তা করছেন না। এভাবে আপনি এগোতে পারবেন না। প্রতিদিন বরং নিজের কাজের একটা টার্গেট ঠিক করুন। সে অনুযায়ী দিন শেষে মিলিয়ে দেখুন কী কী করেছেন, কী কী বাকি আছে। কাজই আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই পরিশ্রম হলেও দিনের কাজ দিনে শেষ করুন। বেশি চিন্তা করে সময় নষ্ট করবেন না।
মাত্র ৩টি পরামর্শ আপনার ব্যবসাকে সফল করতে পারে। নিয়মিত মেনে চলুন। মনে রাখুন, আপনি একজন ব্যবসায়ী। সময় নষ্ট করবার মত সময় আপনার নেই। যখন আপনি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবেন তখন উপভোগ করুন জীবনকে নিজের ইচ্ছেমত।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

মাশরুমের ভিন্ন স্বাদের রান্না “মশলা মাশরুম”

চিকেন মশলা অথবা বিফ মশলা প্রায় রান্না করা হয়। যারা নিরামিষভোজী তাদের কাছে মাশরুম বেশ পছন্দের একটি খাবার। এই মাশরুম দিয়ে তৈরি করা যায় মজাদার মাশরুম মশলা। চলুন, মাশরুম মশলা তৈরির রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক তাহলে।

উপকরণ:

২৫০ গ্রাম মাশরুম

১/২ কাপ টমেটো পিউরি

১টি পেঁয়াজ কুচি

২ চা চামচ ধনিয়া গুঁড়ো

কাঁচা মরিচ কুচি (স্বাদ মত)

লবণ

১/২ চা চামচ সরিষা

১ চা চামচ জিরা

কারি পাতা

১ চা চামচ জিরা গুঁড়ো

১ চা চামচ গরম মশলা

২ চা চামচ মরিচ গুঁড়ো

তেল

১টি ক্যাপসিকাম কুচি

২ টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি

২ টেবিল চামচ আদা রসুনের পেস্ট

লেবুর রস

রসুন কুচি

মাখন

প্রণালী:

১। একটি প্যানে তেল দিয়ে দিন। তেল গরম হয়ে আসলে এতে সরিষা, জিরা, কাঁচা মরিচ, কারি পাতা, হলুদ গুঁড়ো, পেঁয়াজ কুচি, আদা রসুনের পেস্ট, লবণ দিয়ে ঢাকনা দিয়ে দিন।

২। নরম হয়ে আসলে গরম মশলা, জিরা গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, ক্যাপসিকাম কুচি, টমেটো পিউরি দিয়ে ভাল করে মেশান।

৩। এরপর মাশরুম এবং লবণ দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫ মিনিট রান্না করুন। অল্প আঁচে মাশরুম রান্না করতে থাকুন।

৪। এবার আরেকটি প্যানে মাখন, কাঁচা মরিচ, রসুন দিয়ে, কারি পাতা, ধনেপাতা, লবণ এবং গোল মরিচ গুঁড়ো দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিন।

৫। এরপর মাখনের মিশ্রণটি মাশরুমের কারির মধ্যে দিয়ে দিন। এর উপর লেবুর রস দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।

৬। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার মশলা মাশরুম।

 

সাজে আফরোজা পারভীনের এক্সক্লুসিভ বিউটি টিপস

উৎসবকে মাথায় রেখে অনেকেই অনেক ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। কেউ অনেক দামী পোশাক কেনেন, কেউ বা বিদেশ থেকেও নিয়ে আসেন। এদিন কে কিভাবে দিনটি পালন করবে তা নিয়ে থাকে জল্পনা কল্পনা। কিন্তু এদিন সবশেষে আপনার সাজটাই যদি সুন্দর না হয়ে তাহলে সবকিছু কিন্তু মাটি। তাই ফ্যাশন পাঠকদের জন্য রইলো ঈদ স্পেশাল রেড বিউটি পার্লার ও স্যালন এর কর্ণধার আফরোজা পারভীনের ঈদের দিনের সাজ নিয়ে বিউটি টিপস।

আফরোজা পারভীন : যে কোন উৎসবের জন্যই সাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেহেতু এটা কোরবানীর ঈদ, তাই এর প্রস্তুতি আমাদেরকে ভিন্নভাবে নিতে হয়।

তরুণী: যেসব তরুণী সেদিন বাড়িতে থাকে তাদের সাজটা হবে ফ্রেশ, এট্রাক্টিভ ও কালারফুল। সে বাড়ির মেয়ে। তাকে দেখে বাবা মা ভাই বোন সবার ভালো লাগতে হবে। সে স্কিন টোনটা ঠিক রেখে কম্প্যাক্ট পাউডার দিয়ে ফেস’য়ে বেজড করে নিতে পারে। আই মেকআপ অনেক ব্রাইট হতে পারে। শ্যাডোটা কালারফুল ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা কেউ যদি শ্যাডো ব্যবহার না করে সেক্ষেত্রে আই কাজল বা আই লাইনার লাগাতে পারে। সেগুলো কালারফুল হলে ভালো লাগবে। আর চুলটা অনেক ফ্যাশনেবল করে বাঁধতে পারে। লিপস্টিকটা হতে পারে অনেক ব্রাইট। এই হচ্ছে একজন তরুণীর ফ্যাশন।
বাড়ির বউ: অন্যদিকে বাড়ির নতুন বউকে হতে হবে মনোরম ও স্নিগ্ধ। তবে সে অবশ্যই কালারফুল হতে পারে। সে শাড়ি অথবা সেলোয়ার কামিজ পরতে পারে। হাত ভরা চুড়ি, গলায় নেকলেস ও কানে ঝুমকা পরলে মানাবে।

আর সাজসজ্জার ক্ষেত্রে ফেস স্কিন একটু লিকুইড বেইজড হতে পারে। কালার টোনে ব্যবহার করতে পারে গোল্ড অথবা কপার টোনের শ্যাডো। এতে তাকে অনেক ব্রাইট দেখাবে। চোখে আই লাইনার বা কাজল ব্যবহার করা যেতে পারে। একটু ভারি করে মাশকারা ব্যবহার করলে ভালো লাগবে। ঠোটে লাইট টোনের লিপস্টিক ও কপালে বড় করে টিপ তাকে অনেক ম্যাচিউর ও কালারফুল করে তুলবে। চুল সে তার পছন্দ মতো একটি বেনী করে নিতে পারে। এখন অনেক স্টাইলের আর্টিস্টিক বেনী করা যায়। তাহলে বউকে দেখতে বউ এর মতোই লাগবে।

মা: একজন মা’কে আমরা মার মতোই সাজে দেখতে পছন্দ করে থাকি। সেক্ষেত্রে একজন মা কম্প্যাক্ট পাউডার দিয়ে প্রথমে ফেসটাকে ফ্রেশ করে নিতে পারে। এরপর একটু লাইট কালারের ব্রাশঅন দিতে পারে। চোখ ভরে কাজল এক্ষেত্রে ভালো লাগবে।

চুলটাকে টেনে ঘাড়ে একটি খোপা করে নিলেও সুন্দর লাগবে দেখতে। যদি টিপ ভালো লাগে এক্ষেত্রে একটি টিপ সে পরে নিতে পারে। কুঁচি দিয়ে শাড়ি পরার পর যেরকম দেখতে লাগবে সন্তানরা তাকে সেরকম মায়ের সাজেই যেন দেখতে চায়। এতে তাকে অনেক মনোমুগ্ধকর লাগবে।

 

কোরবানির পশু জবাই সংক্রান্ত কিছু মাসআলা

মাসআলা : নিজের কুরবানীর পশু নিজে জবাই করা, কুরবানীর পশু নিজে জবাই করা উত্তম। নিজে না পারলে অন্যকে দিয়েও জবাই করাতে পারবে। এক্ষেত্রে কুরবানীদাতা পুরুষ হলে জবাইস্থলে তার উপস্থিত থাকা ভালো। [মুসনাদে আহমদ ২২৬৫৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২২-২২৩, আলমগীরী ৫/৩০০, ইলাউস সুনান ১৭/২৭১-২৭৪]

মাসআলা : জবাইয়ে একাধিক ব্যক্তি শরীক হলে, অনেক সময় জবাইকারীর জবাই সম্পন্ন হয় না, তখন কসাই বা অন্য কেউ জবাই সম্পন্ন করে থাকে। এক্ষেত্রে অবশ্যই উভয়কেই নিজ নিজ যবাইয়ের আগে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ পড়তে হবে। যদি কোনো একজন না পড়ে তবে ওই কুরবানী সহীহ হবে না এবং জবাইকৃত পশুও হালাল হবে না। [রদ্দুল মুহতার ৬/৩৩৪]

মাসআলা : কুরবানীর পশু থেকে জবাইয়ের আগে উপকৃত হওয়া, কুরবানীর পশু কেনার পর বা নির্দিষ্ট করার পর তা থেকে উপকৃত হওয়া জায়েয নয়। যেমন হালচাষ করা, আরোহণ করা, পশম কাটা ইত্যাদি।সুতরাং কুরবানীর পশু দ্বারা এসব করা যাবে না। যদি করে তবে পশমের মূল্য, হালচাষের মূল্য ইত্যাদি সদকা করে দিবে। [মুসনাদে আহমদ ২/১৪৬, নায়লুল আওতার ৩/১৭২, ইলাউস সুনান ১৭/২৭৭, কাযীখান ৩/৩৫৪, আলমগীরী ৫/৩০০]

মাসআলা : জবাইয়ের অস্ত্র, ধারালো অস্ত্র দ্বারা জবাই করা উত্তম। [বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩]

মাসআলা : পশু নিস্তেজ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা, জবাইয়ের পর পশু নিস্তেজ হওয়ার আগে চামড়া খসানো বা অন্য কোনো অঙ্গ কাটা মাকরূহ। [বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩]

মাসআলা : অন্য পশুর সামনে জবাই করা, এক পশুকে অন্য পশুর সামনে জবাই করবে না। জবাইয়ের সময় প্রাণীকে অধিক কষ্ট না দেওয়া।

লিখেছেন : মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান
সৌজন্যে : মাসিক আল কাউসার

 

যে খাবারগুলো সবার খাওয়া উচিৎ

রোগের প্রকোপ কমানো ও দীর্ঘায়ু হওয়ার জন্য অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বা প্রদাহরোধী খাবার খাওয়া প্রয়োজনীয়। সম্প্রতি সাইকোনিউরোইমিউনোলজি নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি আর্টকেলে ড. জর্জ স্লেভিস প্রকাশ করেন যে, “আমেরিকাতে ১০ জনের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যুর  প্রধান কারণ হচ্ছে ইনফ্লামেশন”। প্রক্রিয়াজাত খাবার, পরিবেশগত বিষ এবং ক্রমবর্ধমান স্ট্রেস  লেভেলের জন্যই আমাদের শরীরের প্রদাহের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অ্যারিজোনা সেন্টার ফর মেডিসিন এর মতে, “প্রত্যেকটি ক্রনিক ডিজিজই হচ্ছে ইনফ্লামেটরি ডিজিজ”। ইনফ্লামেশনকে সাইলেন্ট কিলার ও বলা যায়। সুখবর হচ্ছে কিছু খাবারের মাধ্যমে এই ইনফ্লামেশন বা প্রদাহকে কমানো যায়। আসুন তাহলে প্রদাহরোধী সে খাবারগুলো যা সবার খাওয়া উচিৎ সে বিষয়ে জেনে নিই।

১। বীট

প্রথমেই বীটের নাম দেখে অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ বীট ফলে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা প্রদাহ   কমাতে চমৎকার কাজ করে। বীট ফলে বেটালেইন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা বীটের চমৎকার বর্ণের জন্য দায়ী। বীট ফল শুধু খাবারের প্লেটের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করেনা, এটি পদ্ধতিগত প্রদাহ দ্বারা সৃষ্ট কোষের ক্ষতি মেরামত করার ক্ষেত্রেও বিস্ময়কর ভাবে কাজ করে।

২। আখরোট

আখরোটের গঠন অনেকটা মানুষের মস্তিষ্কের মতোই। আসলে আখরোট মস্তিষ্কের জন্য চমৎকার ভাবে কাজ করে এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডেও সমৃদ্ধ থাকে। যারা ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডের উৎস ফ্যাটি ফিশ খাননা তাদের জন্য আখরোট হতে পারে আদর্শ। আখরোটে উচ্চমাত্রার ও অনন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা খুব কম খাবারেই পাওয়া যায়। এজন্যই আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করুন আখরোট।

৩। সবুজ শাক

আপনার খাওয়ার প্লেটে প্রতিদিন সবুজ শাক রাখার কারণ হচ্ছে সবুজ শাকে শক্তিশালী খনিজ উপাদান, উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্লেভনয়েড থাকে যা ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং সার্বিক ইনফ্লামেশন কমায়। যদি আপনার সবুজ শাক খেতে ভালো না লাগে তাহলে শাক দিয়ে স্মুদি তৈরি করে খান অথবা শসা, সেলেরি, পাতা কপি ও লেবু দিয়ে তৈরি মজাদার গ্রিন জুস খান।

৪। আনারস

আনারসের শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ আছে। আনারসে ব্রোমেলেইন থাকে যা হজমেও সাহায্য  করে। আনারসে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি থাকে যা জীবাণু ও অসুস্থতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে। সকালে আনারসের স্মুদি পান করতে পারেন অথবা মধ্য দুপুরে স্ন্যাক্স হিসেবে খেতে পারেন আনারস।

৫। ব্রোকলি

অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ডায়েটের জন্য চমৎকার ব্রোকলি। এতে পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে।  অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাওয়ার হাউজ হচ্ছে ব্রোকলি। এছাড়াও এতে ভিটামিন, ফ্লেভনয়েডস ও  ক্যারোটিনয়েড থাকে। এই সবগুলো উপাদান একত্রে শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এবং ক্রনিক ইনফ্লামেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করার পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়।

লিখেছেন-
সাবেরা খাতুন
ফিচার রাইটার

 

বাংলাদেশের সাথে ঘুরে আসুন শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপ

সামগ্রিক কাজের মধ্যে আমাদের ব্যস্ত জীবনে বিনোদন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিনোদনের উৎস হিসেবে ভ্রমণ মানে শুধু কর্মব্যস্ততাকেই ছুটি দেওয়া নয় বরং এটি ভ্রমণকারীর অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করে এবং শরীর ও মনকে করে চাঙ্গা। কিন্তু মাঝে মধ্যে ভ্রমণের আয়োজন ও খরচের কারণে ভ্রমণ সম্পর্কে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিতে হয়। সেজন্যই ঝামেলাহীন ভ্রমণের জন্য অনেকগুলো ভ্রমণ প্যাকেজ বেছে নেওয়ার সুযোগ নিয়ে এসেছে ট্রাভেল বুকিং বাংলাদেশ (টিবিবিডি)। টিবিবিডি দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপ ভ্রমণের রোমাঞ্চকর সুযোগ।

বাংলাদেশের মতোই শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপে রয়েছে পরিপূর্ণ প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য এবং ভ্রমণের জায়গা। এ দুটি দেশের দর্শনীয় জায়গা এবং আতিথেয়তার যে অফার তা দেখে ভ্রমণপিপাসুরা নিশ্চয় আশ্চর্য হবেন।

শ্রীলঙ্কার জন্য ট্রাভেল বুকিং বাংলাদেশ নিয়ে এসেছে পাঁচটি দারুণ প্যাকেজ, যাতে রয়েছে তিন দিন দুই রাত থেকে ছয় রাত সাত দিন পর্যন্ত অবস্থানের সুযোগ। প্যাকেজগুলোর মূল্য টুইন শেয়ার ভিত্তিতে প্রতিজন ভ্রমণকারীর জন্য। কলম্বো সিটি প্যাকেজে থাকছে দুই রাত তিন দিন থাকাসহ কলম্বো সিটি ঘুরে দেখার সুযোগ। ভ্রমণকারীদের পছন্দ মতো এই প্যাকেজের মূল্য ৫০,৩০০ টাকা থেকে ৫৪,৫০০ টাকা পর্যন্ত। কলম্বো-হিক্কাদুয়া প্যাকেজে ভ্রমণকারীরা পাবেন চমৎকার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের সুযোগ। তিন রাত চার দিনের এই আকর্ষণীয় প্যাকজের মূল্য ৫৩,৬০০ টাকা থেকে ৫৯,৬০০ টাকা। কলম্বো-ক্যান্ডি মাউন্টেইন প্যাকেজে ভ্রমণকারীরা পাবেন শ্রীলঙ্কার পর্বতগুলো এবং সুমদ্র সৈকত ঘুরে দেখার দারুণ সুযোগ। তিন রাত চার দিনের এই প্যাকেজের মূল্য ৫৪,২০০ টাকা থেকে ৬০,৫০০ টাকা। ক্যান্ডি-নিউয়ারেলিয়া প্যাকেজে থাকছে ৫৭,৩০০ টাকা থেকে ৬৫,৮০০ টাকায় চার রাত পাঁচ দিন থাকাসহ এক সঙ্গে কলম্বো, ক্যান্ডি এবং নিউয়ারেলিয়া ঘুরে দেখার সুযোগ। সবচেয়ে বড় প্যাকেজ হচ্ছে কলম্বো-ক্যান্ডি-নিউয়ারেলিয়া-বেনতোতা সৈকত প্যাকেজ। এতে থাকছে ৬৬,৮০০ টাকা থেকে ৮০,৫০০ টাকার মধ্যে ছয় রাত সাত দিন থাকাসহ অন্য সকল প্যাকেজের সাথে বিস্ময়কর বেনতোতা সৈকত ঘুরে দেখার সুযোগ। শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে আরও রয়েছে পুরনো বৃটিশ ভবন এবং শ্রীলঙ্কার স্থাপত্য, দলহারা হাতির অভয়ারণ্য, সিলন চা জাদুঘর (প্যাকেজের অন্তভূক্ত নয়), টেম্পল অব টিথ, ক্যান্ডি লেক ও নৌকা ভ্রমণ এবং যুদ্ধ সমাধীক্ষেত্রে ভ্রমণের সুযোগ। বেনতোতা সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণকারীরা উপভোগ করতে পারবেন রকেলিং এবং স্কুবা ডাইভিং এর সুযোগ।

এছাড়াও ভ্রমণকারীরা উপভোগ করতে পারবেন ডিনার ক্রুস, সী টার্টল কনজারভেশন প্রজেক্ট, জু পার্ক ট্যুর এবং বেনতোতা সৈকতে প্যারাগ্লইডিং, প্যারাগসাইলিং-এর সুযোগ। একজন সম্পূর্ণ ইংলিশ কথা বলা গাইডের সাথে টিবিবিডি দিচ্ছে কলম্বো-ক্যান্ডি সিনিক রোড ভ্রমণের প্রাইভেট ট্যুর, যাতে ভ্রমণকারীরা ইচ্ছা মতো যে কোনো স্থানে থামতে পারবেন এবং নিজেদের পছন্দের ইচ্ছাগুলোকে আবিস্কার করতে পারবেন। মিরিসা থেকে তিমি/ ডলফিন দেখা যায়।

মালদ্বীপ ভ্রমণের জন্যও ট্রাভেল বিডি বাংলাদেশ নিয়ে এসেছে দারুণ সব অফার। মালদ্বীপ ভ্রমণের অফারে ওয়াইড রেঞ্জ রিসোর্টসহ রয়েছে জেনারেল আইল্যান্ড রিসোর্ট যেমন, ফান আইল্যান্ড, প্যারাডাইস আইল্যান্ড, সান আইল্যান্ড, রয়েল আইল্যান্ড ভ্রমণের সুযোগ। এই অফারে আরও রয়েছে চেইন অব সেনতারা, ফুরাভেরি, সিনামন, ছায়া এবং অ্যাটমোসফেয়ার; বাংলাদেশে শুধুমাত্র টিবিবিডি এই আকর্ষণীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে। এই ভ্রমণ প্যাকেজগুলোতে থাকছে ৪৬,৫০০ টাকা থেকে ১,৫০,০০০ টাকায় দুই রাত তিন দিন থেকে তিন রাত চার দিন পর্যন্ত ভ্রমণের সুযোগ। প্যাকেজগুলোর মূল্য টুইন শেয়ার ভিত্তিতে প্রতিজন ভ্রমণকারীর জন্য।

এই প্যাকেজগুলোতে থাকছে প্যাকেজের ওপর নির্ভর করে এক বেলা থেকে তিন বেলারও বেশি স্ন্যাক্স ও পানীয় পানের সুযোগ। এই প্যাকেজে রয়েছে সী প্লেনের মতো অবিস্মরণীয় ভ্রমণের সুযোগ যা আপনার জীবনে যোগ করবে অনন্য এক অভিজ্ঞতা। অথবা নন-মোটরাইজ্ড নৌকায় ভ্রমণের সুযোগ যাতে সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে। ভ্রমণকারীরা মালদ্বীপের নীল পানিতে স্কুবা ডাইভিং অথবা রকেলিং করে পানির ভেতরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

যারা হানিমুন অথবা বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করতে চান তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা যেমন, কাস্টমাইজড বীচ ডিনার এবং প্রোফেশনাল ফটোগ্রাফি। যারা আরও একটু বেশি রোমাঞ্চকর অনুভূতি পেতে চান তাদের জন্য রয়েছে মাছ ধরা এবং সেই মাছ দিয়ে রাতের খাবারের ব্যবস্থা।

ভ্রমণকারীদের জন্য টিবিবিডি কিছু বিশেষ সুবিধা নিয়ে এসেছে। টিবিবিডি ভ্রমণকারীদের জন্য দিচ্ছে সর্বনিন্ম মূল্যের গ্যারান্টি। এতে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য রয়েছে কাস্টমাইজড অফারসমূহ যাতে তারা তাদের গন্তব্য, কার্যক্রম এবং থাকার স্থানকে পছন্দ মতো বেছে নিতে পারবেন। যেসব ভ্রমণপিপাসু সীমিত বাজেটে ভ্রমণ করতে চান তারা টিবিবিডি-এর সাথে যোগাযোগ করুন এবং টিবিবিডি তাদের বাজেটের মধ্যেই প্রত্যাশিত ভ্রমণের চাহিদাগুলো পুরণ করবে। ভ্রমণকারীরা ভ্রমণের কিছু অংশ বাদ দিতে অথবা সংযুক্ত করতে পারবেন। ভ্রমণকালে টিবিবিডি টেলিফোন, ই-মেইল, ফেসবুক, স্কাইপ এবং অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যমে ভ্রমণকারীর খোঁজ-খবর রাখবে। টিবিবিডি-এর লক্ষ্য হচ্ছে, খুবই সুলভ মূল্যে ভ্রমণপিপাসুদের একটি অবিস্মরণীয় ভ্রমণ অভিজ্ঞতা দেওয়া।

প্যাকেজগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন- ০১৭০৯৬৪২৩০১, ০১৭০৯৬৪২৩০২, ০১৭০৯৬৪২৩০৩, ০১৭০৯৬৪২৩০৬, এবং ০১৭০৯৬৪২৩০৭ নম্বরে।

 

ক্যাটস আইয়ের ঈদের পোশাকে বিশেষ ছাড়

ক্যাটস আই স্টোরগুলোতে এসেছে পাঞ্জাবি, শার্ট, চিনো বটম, জিন্টস, পলো বা টি শার্টের ফরমাল ও ক্যাজুয়াল লাইন। ওভেন, নিট ও সিঙ্গেল জার্সি কাপড়ের এসব পোশাকে থাকছে স্লিম ফিট প্যাটার্ন ও ডিজাইনেও থাকছে সমকালীন ট্রেন্ড। মেয়েদের জন্য থাকছে সিম্পল প্যাটার্নের টিউনিক কুর্তি বা কামিজ। কো ব্র্যান্ড মুনসুন রেইনে থাকছে কাপড় ও কলার বৈচিত্র্যে ফিটিংস পাঞ্জাবি। ঈদের কেনাকাটায় বাড়তি স্বাধীনতা এনে দিতে ক্যাটস আই দিচ্ছে দুটি পণ্য কেনায় পরবর্তি পণ্যে ২০ ভাগ ছাড়ের সুযোগও থাকছে জাপান গার্ডেন সিটি, বসুন্ধরা সিটি, গুলশান ২ ও যমুনা ফিউচার পার্ক আউটলেটে।

পাশাপাশি রাজধানীর এ্যালিফ্যান্ট রোডের ক্লিয়ারেন্স আউটলেটে সর্বোচ্চ শতকরা ৫০ ভাগ ছাড়ে ক্যাটস আই পণ্য কেনার এ সুবিধাতো থাকছেই। এছাড়াও ঘরে বসে নতুন পণ্য দেখতে ঢু মারুন ফেসবুক বা অনলাইনের www.catseye.com.bd ঠিকানায়।

 

ঈদে একসঙ্গে জাহিদ-মৌ

এবারের ঈদ উল আজহায় টেলিভিশন পর্দায় একটি মাত্র নাটকেই জাহিদ হাসান এবং সাদিয় ইসলাম মৌ দম্পতিকে দেখতে পাবেন দর্শকরা। পর্দায় বহুবার একসঙ্গে অভিনয় করলেও এবারের ঈদে একুশে টেলিভিশনের সাতদিন ব্যাপি বর্ণাঢ্য আয়োজনের সাত পর্বের একক নাটক ‘নীলের বউ রাশি’তে দেখা যাবে এই দম্পতিকে।

মৌ ছাড়াও এই একক নাটকে জাহিদ হাসানের পাত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেহরিন নিশা, ভাবনা, সারিকা, নাদিয়া, বন্যা মির্জা এবং তারিন। ইফফাত আরেফিন মাহমুদেরে রচনা এবং জাহিদ হাসানের পরিচালনায় সাত পর্বের একক নাটক ‘নীলের বউ রাশি’।

ঈদের দিন হতে ঈদের সপ্তম দিন পর্যন্ত প্রতিদিন রাত ১১টা ২৫ মিনিটে একুশে টেলিভিশনে প্রচার হবে।

 

৬ ধাপে বাঁচুন বর্তমানে

আমাদের মস্তিষ্ক সবসময় চিন্তাগ্রস্থ থাকে। আমরা অতীতের ঘটনা ভেবে দুঃখ পাই। ভবিষ্যতের চিন্তায় স্ট্রেসড হয়ে যাই। আবার বর্তমানে থেকেও আমরা বর্তমানে থাকি না অনেক সময়, থাকি অন্য জগতে। খুব ছোট্ট একটি উদাহরণ দিই। ধরুন, আপনি আপনার বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে গেছেন। সবাই আনন্দ করছে। কিন্তু আপনি ভাবছেন, বাসায় কী হচ্ছে না হচ্ছে! আপনার বাচ্চাটা কি করছে, মা ঠিক মত বাসায় পৌছেছে কিনা, কাজের বুয়া রান্না করেছে কিনা ইত্যাদি নানান কিছু।
শুধু আপনি নন, আমরা সবাই কমবেশি এরকম। আমরা ঠিক যেই সময়ে যেখানে আছি সেই সময়টাকে উপভোগ করতে পারি না। আমরা নানান রকম চিন্তায় নিজেদের মগ্ন করে ফেলি। এভাবে আমরা হারাই এমন কিছু মূহুর্ত যা হতে পারত আমাদের জন্য সবচেয়ে মূল্যবান।
৬টি পথ অবলম্বন করতে পারেন এজন্য-
পারফর্মেন্স ভাল করার জন্য সেটার কথা ভাবা বন্ধ করুন
ধরুন, আপনাকে স্টেজে তুলে দেওয়া হল, গান গাইতে। আপনার মনে হতে থাকলো, সবাই আপনার গান শুনে কি ভাববে! নিশ্চয়ই আপনাকে দেখা মাত্রই তারা আপনার সম্পর্কে নানান কথা বলতে থাকবে! এসব ভাবা বন্ধ করুন। কারণ নেতিবাচক ভাবনা আপনার পারফর্মেন্সকে আরও ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
ভবিষ্যতের চিন্তা এড়াতে বর্তমানে ফোকাস করুন
ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তিত মানুষের অভাব নেই। এমন মানুষও অনেক আছেন যারা সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকেন, কবে যেন অসুস্থ্য হয়ে পড়েন সেই সময়ের জন্য টাকা জমানো দরকার। বৃদ্ধ বয়সে যদি দেখার কেউ না থাকে তাহলে তখন কি হবে! আজ থেকেই সেই সময়ের সব খরচ গোছাতে শুরু করেন অনেকে। আমরা কতদিন বাচব, তাই তো জানি না। বর্তমানে ফোকাস করুন শুধু।
সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যই বর্তমানকে উপভোগ করতে হবে
আপনি যদি একটি সাজানো ভবিষ্যত চান তাহলে আপনাকে আগে সাজাতে হবে বর্তমানকে। চিন্তা করে দেখুন, কাল আপনার পরীক্ষা। আপনার মনে পড়ছে, আগের পরীক্ষায় ফলাফল কেমন খারাপ হয়েছিল। কাল কি হবে এই ভেবে ভীষণ স্ট্রেস নিয়ে আপনার জ্বর চলে এল রাতের মাধ্যেই। কিভাবে আপনি ভাল পরীক্ষা দেবেন? তাই আগে কি হয়েছিল, পরে কি হতে পারে না ভেবে শ্রম দিন বর্তমানে।
মনোযোগ ফিরিয়ে আনুন
আপনি যখনই অন্য কিছু ভাবছেন নিজেকে সচেতনভাবে ফিরিয়ে আনুন বর্তমানে। মন খারাপ হওয়া, স্ট্রেস দেওয়া, দুশ্চিন্তা তৈরি করা বিষয়গুলো থেকে মনকে সরিয়ে আনুন। নিজের ভাল মূহুর্ত নিজে তৈরি করুন। কিভাবে? সহজ এবং মজার একটা উপায় হল, আপনার কলমটি আঙুলের উপর দাঁড় করানোর চেষ্টা করুন। করছেন কিন্তু পারছেন না? চেষ্টা করে যান।
কিছুক্ষণ পর খেয়াল করুন সকল দুশ্চিন্তা থেকে এই সময়টা দূরে ছিলেন আপনি!
পালিয়ে না যেয়ে মোকাবেলা করুন
আমাদের মাঝে এত এত অতীতের ভাবনা রয়ে যায় কারণ আমরা অতীতের সব সমস্যা মিটিয়ে সামনে এগিয়ে যাই না। আমাদের অনেক হিসেবনিকেশ বাকি রয়ে যায়। আমরা অনেক কিছু সরাসরি মোকাবেলা না করে বরং পালিয়ে যাই, ভাবি এভাবেই বোধ হয় ঝামেলা এড়ানো সহজ হবে। কিন্তু আমাদের অবচেতন মন এগুলো ভুলে যায় না। সে ভীত হয়ে পড়ে আর নানান বিষয়ে সেগুলো মনে করিয়ে দেয়।
 
সবসময় নতুনকে লক্ষ্য করুন
এমন অনেক সময় হয় যে, আমরা হয়ত একটা বই পড়ছি, হঠাৎ খেয়াল করলাম আগের পৃষ্ঠায় কি লেখা ছিল মনে করতে পারছি না। একই রাস্তায় একটিউ আগেই ড্রাইভ করে গেছি, ফেরার পথে আর এক্সিট পয়েন্ট মনে করতে পারছি না। মনোবিজ্ঞান একে বলছে Mindlessness। এই সমস্যা কাটানোর সহজ উপায় হল, যে কোন নতুন জিনিস খেয়াল করুন। এই নতুন জিনিসই ক্লু হয়ে বা তথ্য হিসেবে সেভ হবে আপনার মেমোরিতে এবং আপনাকে বর্তমানে থাকতে সাহায্য করবে।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার,

 

ঝটপট তৈরি করে ফেলুন মজাদার অনিয়ন সমুচা

বিকেলের নাস্তায় হোক অথবা হুটহাট আসা অতিথি অ্যাপায়নে সমুচা বেশ পরিচিত একটি নাস্তা। ঝামেলার কারণে অনেকেই এই খাবারটি তৈরি করতে চান না। পেঁয়াজ এবং চিড়া দিয়ে তৈরি করে নিতে পারবেন মজাদার সমুচা। কীভাবে? আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক রেসিপিটি।

উপকরণ:

১ কাপ আটা

১/২ চা চামচ চাট মশলা

১ চা চামচ মরিচের গুঁড়ো

ধনেপাতা কুচি

১/২ চা চামচ জিরা

৩টি কাঁচা মরিচ

১ কাপ ময়দা

তেল

১ কাপ পেঁয়াজ

১ কাপ চিড়া

লবণ

পানি

প্রণালী:

১। একটি পাত্রে ময়দা, আটা, লবণ এবং তেল ভাল করে মিশিয়ে ডো তৈরি করে নিন। এই ডোটি ১০ মিনিট রেখে দিন।

২। আরেকটি পাত্রে পেঁয়াজ কুচি, চিড়া, মরিচ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনেপাতা কুচি এবং চাট মশলা একসাথে মিশিয়ে নিন।

৩। আরেকটি পাত্রে ময়দার সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।

৪। এবার ডো থেকে পাতলা রুটি তৈরি করে নিন। রুটির দুইপাশ হালকা করে সেঁকে নিন। খুব বেশি ভাজবেন না।

৫। এবার রুটিটি অর্ধেক করে কোন (ভিডিও অনুযায়ী) আকৃতি করে নিন। এর মধ্যে পেঁয়াজের মিশ্রণটি ভরে দিন।

৬। ত্রিভুজ আকৃতির মুখ ময়দা দিয়ে বন্ধ করে দিন।

৭। তেল গরম হলে সমুচাগুলো দিয়ে দিন। বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।

৮। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার অনিয়ন সমুচা।

 

বিয়ের আগে জেনে নিন ৭টি জরুরি তথ্য

সম্পর্ক স্থাপন করলেই হয় না। এর যত্ন নিতে হয়। তাই বিয়ের মাধ্যমে সম্পর্কের পরিণতি টানার আগে বেশ কিছু বিষয় জেনে রাখা ভালো। এখানে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন সামাজিক বিজ্ঞানের এ-সংক্রান্ত গবেষণা থেকে প্রাপ্ত কিছু তথ্য।
১. বিয়েতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে যদি ২৩ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করেন তবে সম্পর্কে বিচ্ছেদের সম্ভাবনা কমে আসে। ২০১৪ সালে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার গবেষণায় বলা হয়. যারা ১৮তেই বিয়ে করে ফেলেন তাদের ৮০ শতাংশেরই বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু বিয়ের জন্য ২৩ পর্যন্ত অপেক্ষা করলে বিচ্ছেদের ঘটনা ৩০ শতাংশে নেমে আসে।
২. বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমায় ভালোবাসার আদান-প্রদান এবং তার রেশ একবছর পর্যন্ত বিরাজ করে। চরম আকর্ষণ আর আকাঙ্ক্ষা এ সময় পর্যন্তই থাকে। এরপর থেকে তা কমে আসতে থাকে বলে জানান মনমাউথ ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী গ্যারি ডাব্লিউ লিওয়ানডোস্কি জুনিয়র।
৩. অবশেষে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি আর একা নন। দুজন একসঙ্গে বসবাস শুরু করবেন। সেখানে অবশ্য আপনার ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা থাকবে। কাজেই কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা হতেই পারে।
৪. সঙ্গী-সঙ্গিনীর ভালো খবরে যখন আপনি সত্যি সত্যিই উত্তেজিত পড়বেন, তখন বন্ধন আরো দৃঢ় হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যে দম্পতিরা প্রত্যেকের ভালো খবরটি উদযাপন করেন তারা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি সুখী হয়ে থাকেন।
৫. বন্ধুত্বের মাধ্যমে সবচেয়ে সুখী দাম্পত্য জীবন গড়ে উঠতে পারে। ২০১৪ সালে ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক্সের গবেষণায় বলা হয়েছে, বিয়ে ও তৃপ্তিকর জীবনের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অতি জরুরি।
৬. দুজনের বয়স যত কম বিচ্ছেদের ঘটনা তত কম। ইমোরি ইউনিভার্সিটির গবেষণায় বলা হয়েছে, বয়সে ৫ বছরের পার্থক্য যাদের তাদের বিচ্ছেদের সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি থাকে। আর এ পার্থক্য ১০ বছর হলে সম্ভাবনা ৩৯ শতাংশে লাফ দেয়।
৭. দুজনের সম্পর্কে অপমানবোধ ছোটখাটো ঝামেলার ইতি ঘটায় না। আর সম্পর্কে এসব খুঁটিনাটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন ৬০ শতাংশ আমেরিকান। কাজেই এসব বিষয়ে মন দিতে হবে।
সূত্র : ইনডিপেনডেন্ট

 

ইতিহাস গড়া নারী ফুটবলাররা লোকাল বাসে লাঞ্ছিত!

ঢাকা থেকে ধোবাউরাগামী বাস। থেমে থেমে উঠানো হচ্ছে যাত্রী। আর এই লোকাল বাসেই বাড়ি ফিরছেন ইতিহাস গড়া বাংলাদেশের অনুর্ধ্ব-১৬ দলের কলসিন্দুরের নারী ফুটবলাররা।

এএফসি দলের বাছাইপর্বের প্রতিটি ম্যাচেই গ্যালারি ভর্তি দর্শকদের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন তারা। অথচ দুই দিনের ব্যবধানেই চরম লাঞ্ছনার শিকার হন দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনা সোনার মেয়েরা।

এতো বড় অর্জনের পর মেয়েরা কলসিন্দুরে ফিরছে লোকাল বাসে করে। সঙ্গে নেই কোন অভিভাবক বা বাফুফের কেউ।

আর বাসে তাদের শুনতে হয়েছে বিভিন্ন লোকের অশ্লীল কটূক্তি। শুনতে হয়েছে গালিগালাজ। এছাড়াও ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে তাদের।

দেশের জন্য এতো কিছুর করার পর এই ছিল তাদের প্রাপ্তি!

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত কলসিন্দুরের মেয়েরা।

চলন্ত অবস্থায় তারা দেশের বেসরকারি চ্যানেল যমুনা টিভিকে এক নারী ফুটবলার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এত সুন্দর একটা রেজাল্ট করলাম আমরা।বাংলাদেশের জন্য খেললাম…কিন্তু এই (ঘটনার পর) যাত্রাটা বইতেছি তা খুব কষ্ট লাগতাছে।

এ ঘটনায় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

লাঞ্ছনার শিকার হওয়া এক মেয়ের অভিভাবক বলেন, আমরা যখন মেয়েদের বাড়ি থেকে বিদায় দেই, তখন থেকে বাংলাদেশ সরকার বা ফেডারেশনের ওপরই থাকে। কিন্তু মেয়েদের সঙ্গে ফেডারেশনের কোনও প্রতিনিধি না থাকার জন্যই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনায় ভার্চুয়াল জগতে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনার ঝড়।
খুকু নাঈম নামের একজন লিখেছেন,দেশকে এত বড় গৌরব এনে দিলে কী হবে? তাদের অপরাধ তারা গরিব, তারা অসহায়। তাই তো অর্জনের পর সবার বাহবা আর খেলা শেষে নেই কোনও সম্মান!

শাওনা তালুকদার নামের একজন মন্তব্য করেন, বাফুফের কর্মকর্তারা কি ঘাস চিবাইতেছিলেন? তারা তাদের (মেয়েদের) জন্য একটা বাস রিজার্ভ করতে পারেন নাই?

আফরোজা হক রিক্তা নামের একজন মন্তব্য করেন, এমন দায়িত্বহীন কেন বাফুফে? এই হিরোইন নারী ফুটবলারদের জন্য একটা বাসের ব্যবস্থা করতে পারে না। এত টাকা কোথায় যায়?

 

স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য

স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য
মানুষ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে নারীদের সাথে অবিচার ও তাদের শোষণ করে আসছিল। নারীদেরকে পুরুষের তুলনায় নিকৃষ্ট মনে করা হত। আইনের দৃষ্টিতে তাদের কোন অধিকার ছিল না। আর না সমাজে তাদের কোন মর্যাদা ছিল। তারা তুচ্ছ ভোগ্যবস্ত্ত কিংবা পরিবারের অন্যান্য আসবাব পত্রের মত ব্যবহৃত হত। ইসলাম পূর্ব আরব সমাজে এটি একটি সাধারণ রীতি ছিল যে, পিতার মৃত্যুর পর ছেলেরা পরিবারের অন্যান্য সামগ্রীর মত তার স্ত্রীদেরও মালিক হত। তার মাও তখন তার স্ত্রী ও দাসী হিসেবে কাজ করত। পৃথিবীর কোন কোন অংশে নারীদেরকে আত্মাহীন একটি প্রাণী কিংবা তাদের কোন স্বতন্ত্র জীবন আছে বলে মনে করা হত না। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে যখন কোন মৃত স্বামীকে চিতায় আগুনে পোড়ানো হত; তার জীবন্ত স্ত্রীকেও সেই জ্বলন্ত আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মাহুতি দিতে বলা হত। তার কোন স্বতন্ত্র জীবন যাপনের অধিকার বলতে ছিল না। স্বামী যতদিন জীবিত থাকত ততদিনই সে বেঁচে থাকার অধিকার লাভ করত এবং যখন তার স্বামী মৃত্যুবরণ করত তাকেও তখন স্বেচ্ছায় জীবন বিসর্জন দিতে হত। এখনো ভারতের কোন কোন অঞ্চলে এই প্রথা প্রচলিত রয়েছে। কেননা, এটি হিন্দু মতবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি। অনেক সমাজে নারীদের মনে করা হত দুষ্টকর্মের উৎস, যারা বেহেস্তে ঈভ (হাওয়া আ.) এর প্রথম অপরাধের কলঙ্ক বহন করছে।

ইসলামের আবির্ভাব নারীদের মর্যাদার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসে। ইসলাম তাদের মর্যাদাকে পুরুষের সমান্তরালে নিয়ে আসে। তা তার সকল নৈতিক অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করে এবং তার জীবনের প্রতিটি বিষয় পছন্দমত নির্বাচন করার স্বাধীনতা প্রদান করে। এটি তাকে সমাজে সকল মর্যাদা ও সম্মানের প্রতিমূর্তিতে পরিণত করে এবং তাকে সব ধরনের শোষণ থেকে নিরাপত্তা প্রদান করে।

কোরান মাজিদ বারংবার নারী ও পুরুষকে পৃথক সত্তা হিসেবে উল্লেখ করেছে, যা আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মৌলিক মানবাধিকারের ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী সমান। কোরান মাজিদ বলে:

নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়াম পালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফেরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্ত্তত করে রেখেছেন। (আল-আহযাব, ৩৩:৩৫)

আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (আত-তাওবা, ৯:৭১)

আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে এবং (ওয়াদা দিচ্ছেন) স্থায়ী জান্নাতসমূহে পবিত্র বাসস্থানসমূহের। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড়। এটাই মহা সফলতা। (আত-তাওবা, ৯:৭২)

আর তোমরা আকাঙ্খা কর না সেসবের, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের একজনকে অন্যজনের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। পুরুষদের জন্য রয়েছে অংশ, তারা যা উপার্জন করে তা থেকে এবং নারীদের জন্য রয়েছে অংশ, যা তারা উপার্জন করে তা থেকে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ চাও। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত। (আন-নিসা, ৪:৩২)

কোরান মাজিদ আরও ঘোষণা করে যে, পুরুষ ও নারী একই উৎস থেকে এসেছে এবং আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মানসিক ও আধ্যাত্মিক যোগ্যতার বিচারে উভয়েই সমান। কোরান মাজিদ বলে: হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চেয়ে থাক। আর ভয় কর রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। (আন-নিসা, ৪:১)

স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য
কোরান মাজিদে নারীদের (নিসা) নামে একটি পৃথক সূরা রয়েছে। যাতে স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বর্ণিত হয়েছে। যদিও পুরুষ ও নারী বিয়ের ক্ষেত্রে সমান অংশীদার, দায়িত্বের একটি বৃহত্তর অংশ বহন করতে হয় পুরুষকে । পুরুষকে পরিবারের প্রধান বিবেচনা করা হয় এবং তাকে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য অতিরিক্ত দায়িত্বভার বহন করতে হয়। এজন্যে কোরান ও হাদিস স্বামীদেরকে তাদের স্ত্রীদের সাথে আচরণের ব্যাপারে একটি সার্বজনীন ও সবিস্তার নির্দেশনা প্রদান করে। এই নির্দেশনাসমূহ সেসব নির্দেশনা থেকে অনেক ব্যতিক্রম যা স্বামীদের সাথে স্ত্রীদের আচরণের প্রেক্ষিতে প্রদান করা হয়েছে। নারীদের মর্যাদা ও অধিকার সংরক্ষণের জন্য অন্য কোন ধর্ম কিংবা মানব সমাজ এত বেশি গুরুত্ব দেয় নি। নিম্নে কিছু নির্দেশনা তুলে ধরা হল:

আর তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও, অতঃপর তা থেকে খুশি হয়ে যদি তারা কিছু ছাড় দেয়, তাহলে তোমরা তা সানন্দে তৃপ্তিসহকারে খাও। (সূরা আন-নিসা, ৪:৪)

মোহরানা প্রদান বিয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত। যখন কোন পুরুষ কোন নারীর সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রস্তাব করে তখন তাকে একটি বিশেষ পরিমাণ মোহরানা প্রদানে স্বীকৃত হতে হয়। আর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হল যে, তাকে সমাজে তার নিজের অবস্থান ও স্ত্রীর মর্যাদা অনুসারে মোহরানার পরিমাণ ধার্য করতে হবে। কোরান মাজিদ বলে:

তোমাদের কোন অপরাধ নেই যদি তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও, এমন অবস্থায় যে, তোমরা তাদেরকে স্পর্শ কর নি কিংবা তাদের জন্য কোন মোহর নির্ধারণ কর নি। আর উত্তমভাবে তাদেরকে ভোগ-উপকরণ দিয়ে দাও, ধনীর উপর তার সাধ্যানুসারে এবং সংকটাপন্নের উপর তার সাধ্যানুসারে। সুকর্মশীলদের এটি আবশ্যক। (বাকারা, ২:২৩৬)

মেয়েদের সেই মোহরানায় স্বীকৃত হওয়া কিংবা তা প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রয়েছে। মোহরানার উপর রাজি হওয়া ব্যতিরেকে বিয়ে বৈধ হয় না। কোরান মাজিদ বলে:

হে নবি, আমি তোমার জন্য তোমার স্ত্রীদেরকে হালাল করেছি যাদেরকে তুমি মোহরানা দিয়েছ…। (আল-আহযাব, ৩৩:৫০)

তোমরা তাদেরকে বিয়ে করলে কোন অপরাধ হবে না, যদি তোমরা তাদেরকে তাদের মোহরানা প্রদান কর। (আল-মুমতাহিনা, ৬০:১০)

মোহরানা একবার দিয়ে দেয়া হলে তা স্ত্রীর নিজস্ব সম্পত্তিতে পরিণত হয়। স্বামী তা পুনরায় ফিরিয়ে নিতে পারে না; এমনকি যদি সে তাকে তালাকও প্রদান করে। কোরান মাজিদ বলে:

আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রীকে বদলাতে চাও আর তাদের কাউকে প্রদান করেছ প্রচুর সম্পদ, তবে তোমরা তা থেকে কোন কিছু নিও না। তোমরা কি তা নেবে অপবাদ ও প্রকাশ্য গুনাহের মাধ্যমে? (আন-নিসা, ৪:২০)

মৌলিক চাহিদার প্রতি যত্নবান হওয়া
পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজেদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। (আন-নিসা, ৪:৩৪)

এই আয়াতের উপর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, স্ত্রীর জীবনের মৌলিক চাহিদার যোগান দেওয়া একজন স্বামীরই দায়িত্ব। যদি সে তা না করে তবে সে আল্লাহ তাআলার আদেশ লংঘন করে। অধিকন্তু মুসলিম পরিবারে স্ত্রীকে উপার্জন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় নি। অবশ্য সে স্বামীর অনুমতি স্বাপেক্ষে কোন কাজ করতে পারে। আর যে অর্থ সে উপার্জন করবে তা তার নিজস্ব এবং তার সম্পদের উপর স্বামীর কোন বৈধ অধিকার নেই।

নারীদের সমান অধিকার
তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। (আল-বাকারা, ২:১৮৭)

আর নারীদের আছে বিধি মোতাবেক অধিকার। যেমন আছে তাদের উপর (পুরুষদের) অধিকার। ( আল-বাকারা, ২:২২৮)

আরও উল্লেখ্য যে, পুরুষ ও নারীর মধ্যে সমানাধিকারের ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি ও পশ্চিমা ধারণার মধ্যে মৌলিক ফারাক রয়েছে। ইসলাম উভয়কে একই ধরনের মৌলিক মানবাধিকার প্রদান করে। কিন্তু সমান দায়িত্বভার অর্পণ করে না। একজন পশ্চিমা নারীকে রান্নাঘরে কাজ করতে হয়, শিশুদের খাওয়াতে হয়, ছেলেমেয়েদের লালন পালন করতে হয়, আবার যুগপৎভাবে পারিবারিক ব্যয় নির্বাহ করার জন্যে স্বামীকে সহযোগিতাও করতে হয়। সে সমরাস্ত্রও বহন করে এবং দেশ প্রতিরক্ষায়ও অংশ নেয়। ইসলাম পুরুষ ও নারীর মধ্যে এমন দায়িত্বসংক্রান্ত সমতার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে। তা বুঝে যে, পুরুষ ও নারীর শরীরতন্ত্র ও শারিরিক গঠনের ক্ষেত্রে অনেক ভিন্নতা এবং তাদের উভয়ের মাঝে বিশেষ যৌন স্বাতন্ত্র রয়েছে। অধিকন্তু তাদের আবেগিক চাহিদা ও মানসিক বিচার বুদ্ধির ক্ষেত্রেও অনেক পার্থক্য রয়েছে। একারণে ইসলাম পুরুষ ও নারীকে ভিন্ন ভিন্ন দুই গোচ্ছ দায়িত্ব প্রদান করে। মুসলিম সমাজে পুরুষ হল পারিবারিক কর্মকান্ডের প্রধান। তাদের প্রথমিক দায়িত্ব হল পরিবারের সদস্যদের জন্য উপার্জন করা। পক্ষান্তরে, নারীরা ঘরের ঘরের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত থাকে। তাদের প্রধান দায়িত্ব হল সন্তান লালন পালন করা। পুরুষরা এভাবে দায়িত্বের একটি বড় বোঝা বহন করে। কোরান মাজিদে তা খুব পরিষ্কারভাবে বর্ণিত হয়েছে:

আর নারীদের আছে বিধি মোতাবেক অধিকার। যেমন আছে তাদের উপর (পুরুষদের) অধিকার। আর পুরুষদের রয়েছে তারে উপর মর্যাদা এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। ( আল-বাকারা, ২:২২৮)

আর তোমরা আকাঙ্খা কর না সেসবের, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের একজনকে অন্য জনের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। পুরুষদের রয়েছে অংশ, তারা যা উপার্জন করে তা থেকে এবং নারীদের রয়েছে অংশ তারা যা উপার্জ করে তা থেকে। (আন-নিসা, ৪:৩২)

স্ত্রীর প্রতি দয়া প্রদর্শন
আর তোমরা তাদের সাথে সদভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যান রাখবেন। (&আন-নিসা, ৪:১৯)

এমন কোন নারী পাওয়া দুষ্কর যে তার জীবনের সব দিক দিয়ে পরিপূর্ণ। কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে এভাবে কোন কারনে অপছন্দ করা শুরু করতে পারে। এক্ষেত্রে কোরান মাজিদ স্বামীকে বলে, তার দুর্বলতাকে এড়িয়ে যেতে এবং তার সাথে দয়া ও সহানুভূতির আচরণ করতে। কোরান মাজিদ আরও সুসংবাদ প্রদান করে যে, স্বামীর এই কাজের জন্য আল্লাহ তাআলা তাকে প্রভূত কল্যান দান করবেন।

স্ত্রীকে ক্ষমা করে দেওয়া
হে মুমিনগণ, তোমাদের স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের কেউ কেউ তোমাদের দুশমন। অতএব, তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। আর যদি তোমরা মার্জনা কর, এড়িয়ে যাও এবং মাফ করে দাও তবে নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। (আত-তাগাবুন, ৬৪:১৪)

কোন কোন ক্ষেত্রে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের চাহিদা আল্লাহ তাআলার বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে। পরিবারের এধরনের সদস্যরা আমাদের শত্রু। কোরান মাজিদ আমাদেরকে বলে যে, আমাদের পরিবারের এসব সদস্যদের কেবল ক্ষমা করে দেয়াই উচিৎ তা নয়, বরং তাদের দোষ-ত্রুটি ও দুর্বলতাকে গোপন রাখতে হবে। তাদের দোষ প্রকাশ করলে তা তাদের জন্য মানহানির কারণ হবে, যা ইসলামে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ।

স্ত্রীর সম্ভ্রম রক্ষা
যারা সচ্চরিত্রা সরলমনা মুমিন নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত। আর তাদের জন্য রয়েছে মহা আযাব। (আন-নূর, ২৪:২৩)

আর তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচার করে, তোমরা তাদের উপর তোমাদের মধ্য থেকে চারজন স্বাক্ষী উপস্থিত কর। (আন-নিসা, ৪:১৫)

ইসলামি আইনে কোন অপরাধীকে শায়েস্তা করার জন্যে তার অপরাধ প্রমাণ করতে দুইজন স্বাক্ষী আবশ্যক হয়। ইসলামে একজন নারীর সম্ভ্রম ও সতীত্বকে এতই মর্যাদা দেয়া হয়েছে যে, ইসলামি আইন তার অপরাধ প্রমাণের জন্য চারজন স্বাক্ষী পেশ করাকে অপরিহার্য করেছে। অন্যথায় সে নিরপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

সালিশ নিয়োগের সমান অধিকার
যদি কোন নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে কোন দুর্ব্যবহার কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে, তাহলে তারা উভয়ে কোন মীমাংসা করলে তাদের কোন অপরাধ নেই। (আন-নিসা, ৪:১২৮)

স্ত্রীর প্রতি দয়া প্রদর্শন, এমনকি তালাক প্রদানের পরও
আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দেবে অতঃপর তারা তাদের ইদ্দতে পৌঁছবে তখন তোমরা তাদেরকে বাধা দিয়ো না যে, তারা তাদের স্বামীদেরকে বিয়ে করবে যদি তারা পরস্পরে তাদের বিধি মোতাবেক সম্মত হয়। (আল-বাকারা, ২:২৩২)

এগুলি কোরান মাজিদের এমন কিছু নির্দেশনা, যা ইসলাম নারীদের যে সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করেছে তার চিত্রকে ফুটিয়ে তোলে। পৃথিবীর অন্য কোন ধর্ম কিংবা সমাজ এমনকি এর ধারে কাছেও আসে না।

মূল : ড. মাজহার ইউ কাজি
বাংলা অনুবাদ : মাওলানা ফয়জুল্লাহ মুজহিরি
সম্পাদনা : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক

 

সাত শরীকের কোরবানি এবং কারো নিয়তে সমস্যা থাকলে?

মাসআলা : সাত শরীকের কুরবানী, সাতজনে মিলে কুরবানী করলে সবার অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরীকের কুরবানীই সহীহ হবে না। [বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭]

মাসআলা : কোনো অংশীদারের গলদ নিয়ত হলে, যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে। [বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮, কাযীখান ৩/৩৪৯]

মাসআলা : শরীকদের কারো পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয় তাহলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না।

লিখেছেন : মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া
গ্রন্থনা সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান
সৌজন্যে : মাসিক আল কাউসার

 

মেঘলা দিনে রোমান্টিক সারিকা-ইমন

মেঘলা দিন। সঙ্গে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। সব মিলিয়ে এক রোমান্টিক আবহ। উত্তরার শুটিং বাড়ি ‘ক্ষণিকালয়ে’র বারান্দায় দাঁড়িয়ে এমনটাই যেন অনুভব হচ্ছিল। কিছুক্ষণের জন্য ভুলেই গিয়েছিলাম কাজ বলেও যে একটা কথা আছে। আর তারই কারণে এই শুটিং বাড়িতে আসা। তাই সেই আবহের মগ্নতা কমিয়ে কাজেই মনোযোগ দিতে হল। এই শুটিং বাড়িতে জনপ্রিয় নির্মাতা সাজ্জাদ সুমনের নাটকের দৃশ্যধারণের কাজ চলছে। তার এই নাটকে দ্বিতীয়বারের মতো জুটিবদ্ধ হয়েছেন সারিকা এবং ইমন। একটু পরেই শট দিবেন সারিকা-ইমন তাই পরিচালক সবাইকে প্রস্তুত হতে বললেন। শটের জন্য সাদা টি-শার্ট আর জিন্স পরনে সুদর্শন ইমন হাজির। নেই শুধু সারিকা। হঠাৎ সিঁড়িতে পায়ের শব্দ শোনা গেল। তাকিয়ে দেখতেই লাল শাড়ি পরনে সারিকাকে দেখা গেল।

শটের জন্য প্রস্তুত তারা। পরিচালক অ্যাকশন বলতেই আয়নার সামনে বসে থাকা সারিকাকে পিছন থেকে এসে ইমন বলে উঠলেন, ‘চুল তার কবে কার অন্ধকার বিদিশার দিশা’।

জীবনানন্দের কবিতার লাইনটি যেন আবারো বাইরের রোমান্টিক আবহের কথা মনে করিয়ে দিল। অবশ্য পরিচালকের কাছ থেকে জানা গেল এই দৃশ্য রোমান্টিক হবে। বাহ, রোমান্টিক আবহে রোমান্টিক দৃশ্য। দৃশ্যটি যখন নেয়া হচ্ছিল তখন মনিটরে এক পলক তাকিয়ে রইলাম। তিন বছর পর অভিনয়ে ফেরা সারিকা এখনও যেন তার জায়গায় সেই আগের সারিকা। ইমন আর সারিকা রোমান্টিক দৃশ্য এক শটেই ওকে। পরিচালকও খুশি।

ইমন সারিকার বন্ধুত্বের কথা কারো অজানা নয়। কিন্তু এই বন্ধুত্ব জীবনে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার জুটি বেধে কাজ করছেন তারা। নাটকে নীলা চরিত্রে আছেন সারিকা আর আবির চরিত্রে ইমন। নাটকটি রচনা করেছেন মেজবাহ উদ্দীন সুমন। নাম ‘নীল ঘুম’।

নাটকের নাম শুনে গল্পটি জানার আগ্রহ বেড়ে গেল। সেই আবদার থেকে পরিচালককে জিজ্ঞেস করা।

পরিচালক সাজ্জাদ সুমন বলেন, ‘জীবনে অনেক পরিচালনা করেছি। তবে এবারেরটা আমার জন্য বেশ স্পেশাল। বেশ সুন্দর গল্প এবং হৃদয়স্পর্শ করবে সবার। নীলা-আবির সুখী দম্পতি। তাদের দিন ভালো মতই কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তাদের জীবনে আসে এক দুঃখজনক দিন। এর বেশি কিছু এখনই বলতে চাচ্ছি না। তবে দর্শকদের ভালো লাগবে আশা করি।’

পরিচালক গল্পের কিছুটা বলতে গিয়েই যেন কিছুটা শান্ত। তখন কিছুটা আঁচ করা গেল কিছু একটা স্পর্শকাতর গল্পই হবে।

সারিকার সঙ্গে এই পরিচালকের প্রথম কাজ। তাই কেমন অনুভূতি জানতে চাওয়া হল। তিনি বলেন, ‘গল্পের জন্য একটু সুন্দর, মিষ্টি মেয়ের দরকার ছিল। যার জন্য সারিকা একদম ঠিক। গল্পের চরিত্রের সারিকাকে একদম মানিয়েছে। সে খুবই ভালো একজন অভিনেত্রী’।

অভিনয়ে ফিরে যার এতো প্রশংসা সেই সারিকাকে শট দেয়ার পর ছবির জন্য কিছু সময় বের করে নেয়া হল। সঙ্গে সুদর্শন ইমন। আর ছবি তুলতে তুলতেই কথা হল তাদের সঙ্গে।

প্রথমে ইমন বলে উঠলেন, ‘কাজটি বেশ স্পেশাল আমার জন্য। এর গল্প খুবই সুন্দর। গল্পে সারিকা আর আমি সুখী দম্পতি। সারিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব অনেক দিনের। কিন্তু কাজ কম। তারপরও একবারের জন্য মনে হচ্ছে না যে আমরা আগে কখনও কাজ করিনি’।

এবার যে সারিকার পালা। মিষ্টি মেয়ে সারিকার মুখেও ইমনের প্রশংসা। গল্প নিয়েও বেশ খুশি তিনি। ফেরার পর ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিনয়ে ফেরার পর থেকে একটি দিনও শান্তি নেই। শুটিং নিয়েই ব্যস্ত। বাসায় বাচ্চাকেও সময় দিতে পারছি না। তবে পুরনো জায়গায় ফিরে বেশ উচ্ছ্বসিত আমি।’

ছবি তোলার মধ্যেই যেন সারিকা ইমনের গভীর বন্ধুত্বের ছাপ দেখা গেল। তাদের এই মিষ্টি বন্ধুত্ব সম্পর্কের ছবির পর্ব শেষ হতেই কথার পালাও শেষ। কারণ এর পরেই আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন তারা দুজন। আর তাদের মেঘলা দিনের রোম্যান্টিক দৃশ্যগুলো লাক্স নিবেদিত ‘নীল ঘুম’ পর্দায় দেখা যাবে ঈদের দ্বিতীয় দিন আরটিভিতে।

 

গ্রামীণ ইউনিক্লো’র ঈদ কালেকশন

ঈদের খুশিতে প্রতিটি মানুষই চায় প্রতি মুহূর্তে আনন্দে থাকতে। তাই উৎসবের বিভিন্ন মুহূর্তের সাথে মানিয়ে গ্রামীণ ইউনিক্লো নিয়ে এসেছে ঈদ কালেকশন। হোক সে ঈদের দিনে বেড়ানো বা প্রিয়জনের সাথে আনন্দের মুহূর্তগুলো ভাগ করে নেওয়ার, দূর দূরান্তে ঘুরে বেড়ানো বা প্রকৃতিকে উপভোগ করার সব মুহূর্তেই চাই আরামদায়ক ও পরিবেশ উপযোগি পোশাক। ঈদে গ্রামীণ ইউনিক্লো নিয়ে এলো এমনই আরামদায়ক ও যেকোন পরিবেশ উপযোগি পোশাকের সমারহ।

ঈদে অন্যান্য পোশাকের সাথে লিনেন শার্ট পাচ্ছেন ১৪৯০টাকায়, পোলোশার্ট পাচ্ছেন ৯৯০টাকায়, বিভিন্ন ফাংশনাল জিনস পাচ্ছেন ১৫৯০ টাকায়, চিনোপ্যান্ট পাচ্ছেন ১৬৯০ টাকায়, গ্রাফিকটি-শার্ট পাচ্ছেন ৪৯০ টাকায়। এছাড়া মেয়েদের কামিজ পাবেন ১৬৯০ ও ২৪৯০ টাকায়। কামিজের সাথে মানানসই লেগিংস পাবেন ৩৫০ টাকায় ও পালাজ্জো  ৭৯০ টাকায়। এছাড়াও ট্রেন্ডি পেন্সিলপ্যান্ট পাচ্ছেন ৯৯০টাকায় । ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন সফট এন্ড কালেকশনে একের অধিক কিনলেই পাবেন ছাড়।

গ্রামীণ ইউনিক্লো এর বর্তমানে ৯টি আউটলেট আছে। গ্রামীণ ইউনিক্লো আউলেট লোকেশন: বসুন্ধরাসিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, ধানমন্ডি সাইন্সল্যাব মোড়, কাঁটাবন মোড় (এলিফ্যান্ট রোড), খিলগাঁও তালতলা, নয়াপল্টন, মিরপুর-০১, মোহাম্মদপুর রিং রোড এবং গুলশান বাড্ডা লিংক রোডে। আরোও জানতে লগ ইন করুন: http://www.facebook.com/grameenuniqlo

 

ঈদে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কক্সবাজার

ঈদুল আজহার ছুটি থেকে শুরু হচ্ছে প্রতীক্ষার পর্যটন মৌসুম। ঈদে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে হোটেল, মোটেল ও বার্মিজ মার্কেটগুলো প্রস্তুত।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এখন পর্যটক শূন্য। তবে ঈদের ছুটি কাটাতে দীর্ঘ এ সৈকতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজার হাজার পর্যটক। তাই পর্যটকদের আনন্দ আরো বাড়িয়ে দিতে পর্যটন কেন্দ্র, হোটেল-মোটেল রিসোর্টগুলো সাজছে নতুন সাজে।

হোটেল মালিক সমিতি বলছে, পর্যটকদের কাছে ঈদের ছুটিকে আনন্দময় করে তুলতে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আর পর্যটকদের বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার নিচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশও।

পর্যটকদের নানান সুযোগ-সুবিধা দিতে যাবতীয় প্রস্তুতিও প্রায় শেষ পর্যায়ে। বসে নেই বার্মিজ দোকানের ব্যবসায়ীরাও। তারাও দোকানকে নতুন সাজে সাজাতে ব্যস্ত। পর্যটন নগরীতে ছোট বড় ২ শতাধিক হোটেল মোটেল ও ২ শতাধিক গেস্ট হাউস ও রিসোর্ট রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন দেড় লক্ষাধিক পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

পর্যটকদের বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার জোন ট্যুরিস্ট পুলিশ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বী।

 

সানজিদার জয়ের গল্প

‘২০০৩ সালে পত্রিকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখি। নারী শিক্ষকদের যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি। এইচএসসি পাস আমার মনটা আনন্দে ভরে যায়। ভাশুর ও স্বামীর হাতে চাকরির দরখাস্ত দিতে থাকি। টানা ছয় বছর। কিন্তু কখনোই লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাইনি। এভাবে সন্দেহ হয়, তাঁরা হয়তো আমার আবেদন পোস্টই করেন না।’ কথাগুলো বলেন নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার ৫৯ নম্বর বন্দর মোল্লাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সানজিদা জামান। ২০১৩ সালে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য তাঁকে ‘জয়িতা’ সম্মাননা দেয়।

‘২০০৯ সালে নিজেই দরখাস্ত জমা দিই। পরীক্ষা দিয়ে ২০১০ সালে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। তবে এটা সহজ ছিল না। এর জন্য অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে।’ ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভীষণ আগ্রহ ছিল সানজিদার। মা-বাবাকে কখনো বলতে হয়নি, ‘পড়তে বসো।’ বাবা ছিলেন সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের সার্জেন্ট। নিজে ‘বড়’ চিকিৎসক নন বলে স্বপ্ন দেখতেন মেয়ে দেশের নামকরা চিকিৎসক হবে। তা ছাড়া মা প্রায়ই অসুস্থ থাকতেন বলে সানজিদার মধ্যেও চিকিৎসক হওয়ার বাসনা পোক্ত হতে থাকে।

বাবা সরকারি চাকরিজীবী হলেও তাঁর বেতন-ভাতা ছিল খুব কম। চার ছেলেমেয়ের সংসারে অভাব লেগেই ছিল। মা সংসারের চাহিদা মেটাতে দরজির কাজ করতেন। সানজিদা বলেন, ‘তখন আমি ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। মাকে একদিন বললাম, প্রাইভেট পড়া দরকার। মা কিছু না বলে খুব কেঁদেছিলেন। বুঝতে পারি সম্ভব নয়। সেদিন খুব খারাপ লেগেছিল।’ বাবা বদলি হলে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে চলে আসেন সানজিদা। কুমিল্লা ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে কিছুদিন ক্লাস করে চলে আসেন গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দরে। বাড়ি থেকে চার মাইল দূরের সোনাকান্দা উচ্চবিদ্যালয়ে ক্লাস করতে থাকেন। এক আত্মীয়ের পরামর্শে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই মা সানজিদাকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ান। ‘মায়ের যুক্তি, সংসারে অভাব। তার ওপর মেয়েদের পড়াশোনা তাড়াতাড়ি শেষ হলেই ভালো। মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও খুব খেটে পরীক্ষা দিই। ১৯৯৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে রেকর্ড নম্বর পেয়ে পাস করি।’ বলেন সানজিদা।

এখানেই শেষ নয়। সানজিদা বলেন, ‘ভাগ্য বলতে কিছু আছে, এটা আমি বিশ্বাস করি। তবে জীবনের মোড় এভাবে ঘুরে যাবে, তা ভাবতে পারিনি। ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমার মতো কুমিল্লা বোর্ডের প্রায় হাজার পরীক্ষার্থীর ফলাফল স্থগিত করা হয়। বোর্ড পর্যন্ত গিয়ে ফলাফল জানতে পারি, রেকর্ড নম্বর পেয়েও আমি বিফল!’

দমকা হাওয়ার মতো এক নিমেষেই জীবনের লক্ষ্য, স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সানজিদা। এক বছর বিরতি দিয়ে আবার ১৯৯৭ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেন। আবারও স্টার মার্কস পেয়ে পাস করি। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের তিন মাসের মাথায় বিয়ে হয় সানজিদার।

‘একান্নবর্তী পরিবারের বউ আমি। বড় সংসার। জায়েরা আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়। তাদের সন্তানেরা আমার সহপাঠী। বাড়ির বউ চাকরি করতে পারবে না, এমন মানসিকতার মধ্য দিয়ে গৃহিণী হয়ে দিন কাটাচ্ছি। কিন্তু ভেতরে-ভেতরে গুমরে মরি। রাতভর কান্না করি। পড়ার নেশা কাটেনি! আবার পড়ার উপায়ও নেই।’ বড় ভাশুরকে অনেক অনুরোধ করে অনিয়মিত ছাত্রী হিসেবে ভর্তি হন নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে। কলেজে ভর্তি হলেও ক্লাস করা হয় না। দিনভর হাড়ভাঙা খাটুনি, ক্লান্ত শরীরে রাতে বারান্দায় পড়তে বসেন। পরিবারের শান্তি বজায় রাখতে প্রবাসে থাকা স্বামীর কাছেও নিজের ইচ্ছেগুলো প্রকাশ করতে পারতেন না সানজিদা।

এভাবেই বুঝে না বুঝে পড়াগুলো মুখস্থ করে কখনো গাইড বইয়ের সাহায্য নিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে এইচএসসি পাস করেন তিনি। লেখাপড়া আবার স্থগিত! ‘তবে আমি থেমে থাকিনি। চেষ্টা করেছি কিছু একটা করতে। শেষ পর্যন্ত পেরেছি। এখন আমি দুই সন্তানের মা। তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি আমিও লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছি। স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে ২০১৫ সালে বিএসএস পাস করি। এখন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করছি।’

শিক্ষকতার পাশাপাশি সানজিদা লেখালেখিও করেন। নিজেকে ‘জয়িতা’ পরিচয় দিতে গর্বে বুক ভরে ওঠে তাঁর। ছাত্রছাত্রীদের, অভিভাবকদের সব সময় বোঝান লেখাপড়ার গুরুত্ব।

 

কোরবানি করার জন্য কেমন পশু উত্তম?

যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কুরবানী দেওয়ার নিয়তে কিনে আর সে ধনী হয় তাহলে ইচ্ছা করলে অন্যকে শরীক করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একা কুরবানী করাই শ্রেয়। শরীক করলে সে টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি ওই ব্যক্তি এমন গরীব হয়, যার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়, তাহলে সে অন্যকে শরীক করতে পারবে না।

মাসআলা : ২২. কুরবানীর উত্তম পশু, কুরবানীর পশু হৃষ্টপুষ্ট হওয়া উত্তম। [মুসনাদে আহমদ ৬/১৩৬, আলমগীরী ৫/৩০০, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩]

মাসআলা : যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কুরবানী দেওয়ার নিয়তে কিনে আর সে ধনী হয় তাহলে ইচ্ছা করলে অন্যকে শরীক করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একা কুরবানী করাই শ্রেয়। শরীক করলে সে টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি ওই ব্যক্তি এমন গরীব হয়, যার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়, তাহলে সে অন্যকে শরীক করতে পারবে না। এমন গরীব ব্যক্তি যদি কাউকে শরীক করতে চায় তাহলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়ত করে নিবে। [কাযীখান ৩/৩৫০-৩৫১, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০]

লিখেছেন : মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান
সৌজন্যে : মাসিক আল কাউসার

 

কেন তিনি এত জনপ্রিয় ছিলেন সালমান শাহ?

১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর দিনটি ছিল শুক্রবার। সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরীকে টেলিফোন করে বলা হলো তার ছেলের বাসায় যেতে। টেলিফোন পেয়ে নীলা চৌধুরী দ্রুত ছেলে সালমান শাহ’র বাসার দিকে রওনা হয়েছিলেন।

তবে সালমানের ইস্কাটনের বাসায় গিয়ে ছেলের মৃতদেহ দেখতে পান নীলা চৌধুরী। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অন্যতম শ্রেষ্ঠ নায়কের আকস্মিক মৃত্যুতে স্তম্ভিত হয়ে যায় পুরো দেশ।

তার মৃত্যুর সংবাদ দর্শকদের মনে এতটাই দাগ কেটেছিল যে ২০ বছর পরেও অনেকে প্রিয় নায়ককে ভুলতে পারেনি।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নব্বই’র দশকের এই তুমুল জনপ্রিয় নায়কের ২০তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন করছে তার ভক্তরা। সালমানের মৃত্যুর দুই দশক পরেও তাকে নিয়ে দর্শকদের মাঝে আলোচনা থামেনি।

কিন্তু সালমান শাহ’র বিশেষত্ব কী ছিল? কেন তিনি এতোটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন?

চলচ্চিত্র বিশ্লেষক এবং বেসরকারি ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জাকির হোসেন রাজু মনে করেন, সালমান শাহ যে সময়টিতে অভিনয়ে এসেছিলেন, তখন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে পালাবদলের সময়।

১৯৯২ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন সালমান শাহ। জনপ্রিয় একটি হিন্দি সিনেমার অফিসিয়াল রিমেক ছিল ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’।

এ সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই চলচ্চিত্রে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন সালমান। পর্দায় তার পোশাক-পরিচ্ছেদ, সংলাপ বলার ধরন, অভিনয় দক্ষতা সবকিছু মিলিয়ে দর্শকের মনে স্থান করে নিতে সময় লাগেনি এ নায়কের। বাংলাদেশের সিনেমায় তিনি ‘রোমান্টিক হিরো’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

সালমান শাহকে নিয়ে ফেসবুকে অনেকে তাদের মূল্যায়ন তুলে ধরছেন। সাফিন জাহিদ ফেসবুকে লিখেছেন , ” আহ কী সেই নায়ক, কী তার অভিনয়, কী তার স্টাইল।”

সালমান শাহ-এর মৃত্যুর পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ময়না তদন্তে বেরিয়ে আসে যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

কিন্তু তার পরিবার সেটি বিশ্বাস করতে পারেনি। পরিবারের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়। সেখানেও বলা হয়েছিল যে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছে।

দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করা হলে মামলার কাজ সেখানেই থেমে যায়।

মাত্র চার বছরে ২৭টি সিনেমা করে ১৯৯০’র দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আলোড়ন তুলেছিলেন নায়ক সালমান শাহ। ২৭টি সিনেমার বেশিরভাগই ছিল আলোচিত এবং ব্যবসা সফল ছবি।

চলচ্চিত্র বিশ্লেষক মি: রাজু বলছিলেন, ১৯৭০ -৮০’র দশকের নায়কদের পরে চলচ্চিত্রে সালমানের আবির্ভাব তারুণ্যের উচ্ছ্বাস তৈরি করেছিল।

নায়ক রাজ্জাক, আলমগীর এবং ফারুকের পর নতুন একদল তরুণ নায়কের আবির্ভাব হয়েছিল ঢাকার চলচ্চিত্রে।

নব্বই’র দশকের প্রথম দিকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে যত নায়কের আবির্ভাব হয়েছিল তাদের মধ্যে সালমান শাহ সবচেয়ে বেশি প্রমিজিং ( প্রতিশ্রুতিশীল) ছিলেন বলে উল্লেখ করেন মি: রাজু।

তার বর্ণনায়, সালমান শাহ’র অভিনয়ের মধ্যে দর্শক একটা ভিন্নধারা খুঁজে পেয়েছিল।

অনেকে সালমান শাহ’র মধ্যে বলিউড নায়কদের ছায়া খুঁজে পেয়েছিল।

দর্শকদের বর্ণনাতে সে কথা পরিষ্কার। ফেসবুকে মাসউদুর রহমান লিখেছেন, ” সালমান শাহ। এমন স্মার্ট সুদর্শন নায়ক আগে দেখেনি ঢাকাইয়া সিনেমা।”

 

লিডারশীপ ডেভেলপ করার সহজ ৪ স্টেপ

লিডারশীপ হচ্ছে নিজের খেয়ে, অন্যকে দিয়ে বনের মোষ তাড়ানো। আরো সোজা কথায় বললে, যাকে অন্যরা ফলো করে সে-ই লিডার। সেটা ভার্সিটির ক্লাব, ভলান্টিয়ার অর্গানাইজেশন, কিংবা ট্যুরে বের হওয়া ফ্রেন্ডদের গ্রুপেও হতে পারে। তবে লিডারশীপ কোয়ালিফিকেশনের কথা শুনলেই বেশিরভাগ পোলাপান হাফ প্যান্ট খুলে দৌড় মেরে বাকি জীবন দুধ-ভাত হয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ লিডারশীপ ডেভেলপ করা খুবই খুবই সোজা। সিম্পল ৪ টা স্টেপ ফলো করলে যে কেউ লিডার হতে পারবে।

স্টেপ-১: বি এভেইলএবল: 

কম্পিউটারের খাঁচা, খেলা দেখার নেশা, বাথরুমের চিপা থেকে একটু সময় বের করতে হবে। ক্যাম্পাসে প্রায়ই কালচারাল ইভেন্ট, ক্যারিয়ার ক্লাব, ডিপার্টমেন্টের প্রোগ্রাম, ভলান্টিয়ার এক্টিভিটি হয়। এরকম একটা বা দুইটা ইভেন্টে যাবা।নির্ধারিত সময়ের একটু আগে গিয়ে কোনার মধ্যে লুকিয়ে না থেকে, অর্গানাইজাররা যেখানে ছোটাছুটি করতেছে তার আশেপাশে ঘুরাঘুরি করবা। তেমন কিছু বলার বা করার দরকার নাই। জাস্ট দেখো, খেয়াল করো, অবজার্ভ করো। কেউ ভারি কিছু একা একা সরাইতে না পারলে একটু হেল্প করো। ব্যস, এই টুকুই। এর বেশি কিছু না।

স্টেপ-২: বি হেল্পফুল: 

অর্গানাইজাররা যখন দেখবে তুমি হেল্প করতেছ এবং বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে বুঝাই দিচ্ছ তুমি এভেইলএবল। তখন তারাই বলবে, রিসেপশনের যে থাকার কথা সে এখনো আসে নাই। তুমি কি ওই খানে একটু বসতে পারবা? কোন গেস্ট আসলে সামনের সারিতে এনে বসবা। বা এই খাবারের প্যাকেটগুলার সাথে একটা করে ড্রিংকস দিতে পারবা? তখন হাসি মুখে বলবা- অবশ্যই। এই “অবশ্যই” শব্দটা বলে তুমি একটা অর্গানাইজেশনের আনঅফিসিয়াল মেম্বার হয়ে গেছ। এইভাবে দুই-তিনটা ইভেন্টে হেল্প করলে, ওরাই তোমাকে পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারি বা ফুড সেক্রেটারি বানায় দিবে। ব্যস, তোমার সিভিতে বড় বড় করে লেখার মতো একটা জিনিস পেয়ে গেলা। যারা রুমে বসে বসে গেইম অফ থ্রোন দেখতেছে তাদের চেয়ে এগিয়ে গেলা।

স্টেপ-৩: বি এ ফলোয়ার:

একটা অর্গানাইজেশনের সাথে যুক্ত হলেই সেটার সাথে দিনরাত ২৪ ঘন্টা লেগে থাকা লাগে না। মাসে ৩-৪ ঘন্টা বা সেমিস্টারে ১০-১৫ ঘন্টা সময় দিলেই হয়। তবে তোমাকে যেসব দায়িত্ব দিবে সেগুলা সিনসিয়ারলি করবা। যেখানে যেতে বলবে সেখানে যাবা। পড়ালেখা ঠিক মতো করো বা না করো, এই কাজে কোন ফাঁকিবাজি করবা না। সিনিয়ররা যেসব ডিসিশন নিচ্ছে, সেগুলা খেয়াল করবা। বেশিরভাগ জিনিসই কমন সেন্স। তোমার কোন অভিমত থাকলে জানাবা। বি এ গুড ফলোয়ার। গুড লিসেনার। রিলায়েবল টিম মেম্বার। আর কিছু না।

স্টেপ-৪: বি এ লিডার: 

তুমি যখন থার্ড ইয়ারের শেষ দিকে যাবা, তখনই সিনিয়রদের বিদায় ঘন্টা বেজে উঠবে। তারা চাইবে তাদের প্রাণপ্রিয় অর্গানাইজেশনটা কোন ইফেক্টিভ এবং সিনসিয়ার পারসনের হাতে তুলে দিতে। তুমি যেহেতু এত দিন ধরে দায়িত্ব নিয়ে হেল্প করেছ। তোমাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ পদ দিবে। তারপর থেকে তুমিই জুনিয়রদের কাজে লাগাবা। তুমিই ডিসিশন মেক করবা। মানে তুমিই লিডার হয়ে যাবা।

সো, লিডার হওয়ার জন্য হেল্প করার মেন্টালিটি নিয়ে এখন যারা লিড দিচ্ছে তাদের ফলো করতে থাকো। সময়ের আবর্তনে সুযোগ তোমার কাছে চলে আসবে। এতদিন সিনিয়ররা যা কিছু করতো সেগুলা কপি-পেষ্ট করলেই তোমার ভিতরে সাহস বেড়ে যাবে, ক্লাবের ভিশন ডেভেলপ হয়ে যাবে। কাকে দিয়ে কিভাবে কাজ করিয়ে নিতে হবে সেই বুদ্ধি গজাবে। হচ্ছে না, হচ্ছে না বলেও, শেষ মুহূর্তে স্পন্সর জোগাড় হয়ে যাবে। ঠেকায় পড়ে, পোস্টার ডিজাইন, ম্যাগাজিন প্রিন্ট, টি-শার্ট ডিজাইন শিখে ফেলবে। দশ-পনের জনের একটা টিম চালানোর দক্ষতার আবির্ভাব হয়ে যাবে। এভাবে কাজে নেমে পড়লে ঠিক সময়ে লিডারশীপ স্কিলও পয়দা হয়ে যাবে।

জীবনে সফল হওয়ার জন্য কনফিডেন্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কনফিডেন্স, পিপল ম্যানেজমেন্ট আর লিডারশীপ স্কিল ডেভেলপ করার জন্য ভার্সিটি লাইফ এবং ভার্সিটির অর্গানাইজেশনের চাইতে মামুলি জায়গা আর নাই। তাই যখন কোন টিমের সদস্য হবা তখন লিডার হওয়ার আগে ভালো টিম মেম্বার হও। কোন কিছু চাপিয়ে দেয়ার আগে, সেটা সবার সাথে ডিসকাস করে সবার ভিতর থেকে বের করে আনার চেষ্টা করো। অন্যের উপর কাজ চাপিয়ে না দিয়ে, সবাই মিলে দায়িত্ব ভাগ করে নাও। পজিটিভলি চিন্তা করো। আটকে গেলে, সিনিয়র বা স্যারদের পরামর্শ নিবে। যারা নতুন আসবে তাদেরকে কিভাবে কি করতে হবে বলে দিবে। এগুলাই লিডারশীপ। এগুলা করার জন্য ইচ্ছা আর চেষ্টাই যথেষ্ট।

 

সেইলরে ৫০ ভাগ ছাড়ে নতুন পোশাক

ঈদ মানেই তারুণ্যের জন্য চাই নতুনত্ব। সমকালীন ট্রেন্ড ও সৃষ্টিশীল ডিজাইনারদের ডিজাইন ও সূচিকর্মে সেইলর প্যাটার্ন ও ডিজাইনে ‘পরিবর্তন’ এনেছে। রেডি টু ওয়ার আউটফিটে থাকছে ফরমাল এবং ক্যাজুয়াল আবহ। পোশাকের ঢং বা রং-ও এখন তাই তারুণ্যের চাহিদানুযায়ী উৎসবমুখী। ভ্যালু এডিশন হিসাবে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে ওয়াশ, প্রিন্ট এবং এমব্রয়ডারির নকশার উপর। শার্ট, পলো এবং ট্রাউজারে অনুসরণ করা হয়ে বিশেষ কাট। তরুণীদের জন্য স্মুদি লেয়ারিং ফ্যাশন থাকছে এবারও।

সামার এবং ঈদ, যুগপৎ নতুন ডিজাইনের পোশাক এখন সেইলর আউটলেটে। সেইলর এর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট প্রধান রেজাউল কবির জানান, ‘তরুণীদের ফিউশনধর্মী কাপড় বেশি পছন্দ। কম বয়সী মেয়েরা সিঙ্গেল কামিজ, পালাজ্জো, ন্যারো শেপ সিগারেট প্যান্ট বা লেগিংস বা স্কার্ট পরছে লেয়ারিং করে। সালোয়ার-কামিজ না পরে অনেকে ধুতি-সালোয়ার, ট্রাউজারের সঙ্গে বেছে নিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের টপ। পাশাপাশি এবার ছেলেদের ফ্যাশন ট্রেন্ডে রঙ-বাহারি শার্ট ও প্যান্ট বাজারে এসেছে। চেক শার্টের বৈচিত্র্য পাওয়া যাবে এবার। গ্যাবার্ডিন প্যান্টের সঙ্গে ক্যাজুয়াল শার্টের জোড় ঈদ উৎসবে  ছেলেদের আরও স্মার্ট লুক দেবে। কলার এবং ডিজাইন ভেদে বৈচিত্র্য নিয়ে স্লিমফিট কাট এবারও এগিয়ে থাকবে তরুণদের কাছে। পাশাপাশি এনজাইম ওয়াশ বা কুল ডাই বা এসিড ওয়াশের পলোগুলোও ঈদ ফ্যাশনে ইন থাকবে। সঙ্গে লোফার বা ক্যাজুয়াল চামড়ার জুতো, বেল্ট পাল্টে দিতে পারে আউটলুক।’

সেইলর-এর সাশ্রয়ী দামের এসব ট্রেন্ডি এবং নতুন পোশাক উৎসব এবং গরমের স্ট্রিট ফ্যাশনকে করবে বর্ণিল। এছাড়াও ঈদের পোশাক বাজেট আরো সাশ্রয়ী করতে সেইলর দিচ্ছে সর্বোচ্চ ৫০ ভাগ ছাড়ে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক ক্রয়ের স্বাধীনতা। চলতি এই মূল্যহ্রাসে আপনি জুতো থেকে জামা সবই কিনতে পারবেন আপনার পছন্দে ডিজাইন থেকে। ধানমন্ডি, উত্তরা, যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুর ও  পুলিশ প্লাজাসহ  সকল আউটলেটে ছাড়ের পাশাপাশি নিত্যনতুন সেইলর- প্রোডাক্ট এর খোঁজখবর পাবেন ফেসবুক sailor –(https://web.facebook.com/clothings.sailor/) এর অফিসিয়াল পেইজ-এ।

 

বর্তমান পৃথিবীর ক্ষমতাধর পাঁচ নারী

নারী কোমলমতি, নারী ছায়াদানকারী, স্নেহমমতায় ভরপুর। তবে এতকিছুর সাথে সাথে সাথে নারী ক্ষমতাধরও। ঘরের ছোট্ট রাজত্ব থেকে শুরু করে পৃথিবী- সবখানে ছড়িয়ে রয়েছে নারীর এই ক্ষমতার ছটা। আর ক্ষমতাধর এই নারীদের ভেতরেই আয় ও ক্ষমতার দিক দিয়ে সবচাইতে এগিয়ে থাকা ১০০ জনের তালিকা তৈরি করেছে সম্প্রতি ফোর্বস। চলুন দেখে আসি তাদেরই প্রথম পাঁচকে।

১. অ্যাঙ্গেলা মার্কেল

লৌহমানবী হিসেবে খ্যাত জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল গাত বছর ফোর্বসের ক্ষমতাধরদের তালিকায় ৫ নং স্থানে থাকলেও এ বছর তিনি উঠে আসেন পুতিনের পরেই। দ্বিতীয় অবস্থানটিতে। প্রথমদিকে একজন গবেষনা বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করলেও রাজনীতিতে পা দিয়ে প্রথম নারী হিসেবে জার্মানির এই আসনটিকে আয়ত্ব করেন এই নারী। আর ২০০৫ সাল থেকে সফলভাবে নিজের কাজ চালিয়েও যাচ্ছেন তিনি। এ বছরের বেশকিছু কাজ, বিশেষ করে সিরিয়ার উদ‌্বাস্তু সমস্যা আর গ্রীসের অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে তার কার্যকরী দিক-নির্দেশনা ফোর্বসের চোখে পৃথিবীর অন্যতম ক্ষমতাধর একজন হিসেবে তুলে ধরেছে তাকে।

২. জ্যানেট ইয়েলেন

বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যাক্তিদের তালিকায় তখনই ঢুকে পড়েছিলেন জ্যানেট যখন ২০১৪ সালে পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে ফেডারেল রিজার্ভের প্রথম নারী প্রধান হিসেবে নাম লেখান তিনি। কাজের শুরু থেকেই নিরন্তর পরিশ্রম করে গিয়েছেন এই নারী। নিজের সবটা দিয়ে চেষ্টা করে গিয়েছেন ফেডারেল রিজার্ভকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার। আর বর্তমানে যে অবস্থায় তিনি নিয়ে এসেছেন একে গত এক বছরের চেষ্টায় সেটা কিছুদিন আগেও মানুষ কেবল স্বপ্নেই দেখতো। পৃথিবীর সবচাইতে ক্ষমতাধর নারীদের তালিকাতেও ৪ নং অবস্থানে আছেন জ্যানেট।

৩. টেইলর সুইফট

২৬ বছর বয়সেই বিশ্বের প্রতিটা মানুষকে নিজের জাদুকরী কন্ঠের আবেশে আবেশিত করে তোলা এই তরুণী ২০১৬র প্রথমভাব অব্দি আয় করে নিয়েছেন প্রায় ১৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৫ সালে ক্ষমতাধর নারীদের ভেতরে নিজেকে ৬৪ তম স্থানে ও ২০১৬ সালে আমেরিকান নাগরিকদের মধ্যে নিজের চেষ্টায় এতটা আসার জন্যে ফোর্বসের আরো দুটো তালিকায় জায়গা করে নেন সুইফট। আর এবার সমসাময়িক সব তারকার আয়ের সাথে টক্কর লাগিয়ে সবাইকে হারিয়ে দিয়ে সামনে চলে এলেন নিজের অভিজ্ঞতাগুলোকে পুঁজি করে গানের লাইন লিখে যাওয়া এই তারকা। তবে গানের জগত্ বাদেও কেডস, ডায়েট কোক আর অ্যাপলের সাথে কাজ করেন টেইলর।

৪. অ্যাডেল

হ্যালো! শব্দটি খুব পরিচিত কারণ প্রতিদিন আমরা সেটা ব্যবহার করি নানা কাজে। বিশেষ করে টেলিফোনের ওপারের ব্যাক্তিটির সাথে কথা বলতে। তবে গত বছর এই শব্দটিকে আরো একটু জনপ্রিয় করে তুলেছেন সঙ্গীতশিল্পী অ্যাডেল নিজের হ্যালো গানটির মাধ্যমে। পুরো নাম অ্যাডেল লরি ব্লু অ্যাটকিনস। গীতিকার ও গায়িকা অ্যাডেলের প্রথম অ্যালবাম ১৯ বের হয় ২০০৮ সালে। বেশকিছু সম্মাননা জিতে নেন তিনি তখন এই কাজের জন্যে। এরপর ২০১১ এর প্রথমদিকে মুক্তি পাওয়া তার পরবর্তী অ্যালবাম ২১ প্রচুর পুরষ্কার এনে দেয় এই শিল্পীকে। বিশেষ করে সেই পুরষ্কারগুলোর ভেতরে থাকা রেকর্ড তৈরি করা ছয়টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের কথা তো না বললেই নয়। সে বছরের অ্যালবাম অব দ্যা ইয়ার হিসেবে বিবেচিত হয় ২১। এমনকি এই অ্যালবামটির জন্যে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে জায়গা করে নেন তিনি। ২০১১-১২ সালে বিলবোর্ড তাকে বছরের সেরা শিল্পী হিসেবে নির্ধারণ করে। টাইম ম্যাগাজিনে ২০১২ সালের সবচাইতে প্রভাবশালীদের ভেতরে অন্যতম একজন হিসেবে তালিকায় স্থান করে নেন অ্যাডেল। আর ২০১৬? এবছরে নিজের হ্যালো অ্যালবামটির মাধ্যমে প্রায় ১০০ মিলিয়নের বেশি কপি বিক্রির রেকর্ড গড়ে ফোর্বসের সর্বাধিক আয়ের অধিকারী মানুষের তালিকার নবম অবস্থানে জায়গা করে নেন এই গায়িকা।

৫. হিলারি ক্লিনটন

বর্তমান সময়ে আর সবাইকে পেছনে ফেলে দিয়ে যে নারীর নাম পৃথিবীর এ মাথা থেকে ও মাথা উচ্চারিত হচ্ছে, তিনি হচ্ছেন হিলারি ক্লিনটন। এবারের আমেরিকর প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন হিলারি। আর সেই সুবাদেই তার নাম এখন সর্বত্র। ক্ষমতাধারী নারীদের তালিকাতেও তিনি এবার রয়েছেন এগিয়ে।

লিখেছেন-
সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
ফিচার রাইটার

 

ঝটপট খুব সহজে তৈরি করে নিন মজাদার চিকেন ড্রাম বাস্টার

চিকেন ফ্রাই, চিকেন ললিপপ, চিকেন উইংস বেশ জনপ্রিয় কিছু খাবার। রেস্টুরেন্টে গেলে সাধারণত এই খাবারগুলো অর্ডার করা হয়। চিকেনের আরেকটি খাবার হল চিকেন ড্রাম বাস্টার। বাচ্চাদের সাথে সাথে এই খাবারটি বড়রাও খেতে পছন্দ করে। টিফিনে হোক কিংবা বিকেলের নাস্তায় তৈরি করে নিতে পারেন মজাদার চিকেন ড্রাম বাস্টার।

উপকরণ:

৫০০ গ্রাম মুরগির মাংস

১০০ গ্রাম মুরগির চর্বি

২ টেবিল চামচ ক্রিম

২ চা চামচ গোল মরিচে গুঁড়ো

লবণ

তেল

২ চা চামচ রসুন কুচি

১ চা চামচ শুকনো মরিচ

১ চা চামচ গরম মশলা

২ টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি

মাখন

১/২ চামচ কর্ন ফ্লাওয়ার

১ চা চামচ ময়দা

১ চা চামচ বেকিং সোডা

১টি ডিম

প্রণালী:

১। মুরগির বুকের মাংস ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। এরপর মুরগির টুকরো, মুরগির চর্বি একসাথে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন।

২। এবার মুরগির কিমার সাথে ক্রিম, গোল মরিচের গুঁড়ো, লবণ, শুকনো মরিচের গুঁড়ো, গরম মশলা, ধনেপাতা কুচি, লেবুর রস দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।

৩। এবার মুরগির মিশ্রণটি ছোট বলের মত করে কাঠির সাথে লাগিয়ে (ভিডিও অনুযায়ী) নিন।

৪। আরেকটি পাত্রে কর্ণ ফ্লাওয়ার, ময়দা, গোল মরিচের গুঁড়ো, বেকিং সোডা, লবণ ভাল করে মেশান। এর সাথে ডিম এবং পানি দিয়ে কিছুটা পাতলা মিশ্রণ করুন।

৫। এবার মুরগির কাঠিগুলো ময়দার মিশ্রণে ডুবিয়ে ডুবো তেলে দিয়ে দিন।

৬। বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।

৭। ব্যস তৈরি হয়ে গেল চিকেন ড্রাম বাস্টার।

 

পায়ের নিচে লক্ষ তারার মেলা

উজ্জ্বল নিভু নিভু তারারা মিট মিট করে জ্বলে রাতের আকাশে। কোন রাত এমন হয় না যেদিন আমরা আকাশের দিকে তাকাই আর তারা খুঁজি না। এই ঢাকার ধুলিভরা ধোঁয়াশা আকাশেও ঠিক উঁকি দেয় একটি দু’টি তারা। আকাশ যেখানে পরিষ্কার সেখানে মেলা বসে হাজারো তারার।
তারাদের মেলা দেখতে মানুষ ছুটে যায় কতদিকে। সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন আকাশ আছে যেখানে, সেখানে শুধু তারা নয়, খালি চোখে ধরা পড়ে মিল্কিওয়ে, গ্যালাক্সি। আমাদের তারা সূর্য, তাকে দেখা কঠিন। দূর আকাশের মিট মিট এই সূর্যরা যেন চোখে আরাম দেয়, মনকে কৌতুহলী করে, বিস্মিত করে।
কিন্তু তারা কি আছে শুধুই আকাশে? যদি তারার দেখা মেলে সমূদ্রে? হ্যাঁ, সমুদ্রের জলেও পেতে পারেন অগুণতি তারার দেখা। সেই তারা বিছানো ঢেউ-এ পা ডুবিয়ে বসে থাকতে পারবেন আপনি। হাতে তুলে নিতে পারবেন এক মুঠো তারা। অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন রসিকতা করছি? একদমই না।
তারা ছড়ানো এই বিচ দেখতে আপনাকে যেতে হবে মালদ্বীপে। ঝকঝকে বিন্দু বিন্দু তারারা এখানে থাকবে আপনার পায়ের তলায়। মনে হবে যেন রূপকথার কোন দেশে চলে এসেছেন আপনি। কিন্তু তা নয়। এই তারার মেলা সম্পূর্ণই প্রাকৃতিক। বিন্দু বিন্দু এই আলোর উৎপত্তির কারণ এক ধরণের মাইক্রোস্কোপিক জীব যাকে বলা হয় bio luminescent phytoplankton, or Lingulodinium polyedrum।
এই প্ল্যাঙ্কটন রক্তিম ঢেউয়ের অংশ। কোন একটা এলাকায় যখন এই প্লাঙ্কটন বেশী মাত্রায় জন্মে তখন সেই এলাকার পানির রং লালচে কমলা হয়ে যায়। তবে প্রকৃতির এই খেলা কিছুক্ষেত্রে সমূদ্রের প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকর। ক্ষতিকর মানুষের জন্যও।
মজার ব্যাপার হল রাতে এই লাল পানি সম্পূর্ণ ভিন্ন রং ধারণ করে। সৃষ্টি করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য আলোক বিন্দুর। বিচের বালিতে হেটে গেলে আপনার প্রতি পায়ের ছাপে জ্বলে উঠবে আলোর বিন্দুরা। যেসব সার্ফাররা রাতে সার্ফিং করেন তাদের বোটের ঢেইয়ের সাথে সাথে যেন হাজারো আলোর রাশি ঝলসে ওঠে। সমুদ্রের প্রতিটি ঢেউ যেন লক্ষ্য কোটি তারা নিয়ে আচরে পড়ে সৈকতে।
মালদ্বীপ ভ্রমণে অবশ্যই যাবেন এই বিচে। তবে অবশ্যই রাতে। রাতই এখানে চমক, বিস্ময়।

 

কোরবানির পশুতে আকীকা করা যাবে কিনা?

কুরবানীর পশুতে আকীকার অংশ, কুরবানীর গরু, মহিষ ও উটে আকীকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কুরবানী ও আকীকা দুটোই সহীহ হবে। [তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২]

মাসআলা : কুরবানীর পশুতে আকীকার অংশ, কুরবানীর গরু, মহিষ ও উটে আকীকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কুরবানী ও আকীকা দুটোই সহীহ হবে। [তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২]

লিখেছেন : মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া
গ্রন্থনা সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান
সৌজন্যে : মাসিক আল কাউসার

 

কসোভো উৎসবে সেরা পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার তৌকির আহমেদ

গত ৩১ আগস্ট শুরু হয় `দ্য গডেস অন দ্য থ্রোন’ শীর্ষক কসোভোর চলচ্চিত্র উৎসব। আর এতে অংশ নিয়ে ‘অজ্ঞাতনামা’র জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতলেন তৌকির আহমেদ। এছাড়াও তিনি সেরা চিত্রনাট্যকারের পুরস্কারটিও পেয়েছেন। উৎসবটি শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর। এ আয়োজনের বিচারকদের চোখে ‘অজ্ঞাতনামা’র বিষয়বস্তু সমকালীন বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ও অতি প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে।

গল্পে দেখানো হয়েছে, বিদেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন। পুরস্কার গ্রহণের পর সুখবর জানিয়ে তৌকির বলেছেন, ‘আমার ছবির কলাকুশলীদের ধন্যবাদ। সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’

এদিকে ওয়াশিংটন ডিসি সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে যাচ্ছে ‘অজ্ঞাতনামা’। এটি অনুষ্ঠিত হবে  ৯ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ওয়াশিংটনের আরেক উৎসব সিয়াটল সাউথ এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (১৪ থেকে ২৩ অক্টোবর) অংশ নেবে ছবিটি। তার আগে  ইতালির ট্রেন্টোতে রিলিজিয়ন টুডে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (৭ থেকে ১৭ অক্টোবর) যাবে এটি। ছবিটির ইংরেজি নাম ‘দ্য আননেমড’।

মঞ্চনাটক হিসেবে ‘অজ্ঞাতনামা’ লিখেছিলেন তৌকির আহমেদ। গল্প, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পরিচালনার পাশাপাশি ছবিটির জন্য দুটি গানও লিখেছেন তিনি। এগুলো গেয়েছেন রোকন ইমন, পিন্টু ঘোষ ও সুকন্যা ঘোষ। সংগীত পরিচালনা করেছেন পিন্টু ঘোষ।

বাংলাদেশে গত ১৯ আগস্ট মুক্তি পায় ‘অজ্ঞাতনামা’। তার আগে ইতালির গালফ অব নেপলস ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ছবিটি অর্জন করে জুরি মেনশন অ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়া গত মে মাসে কান চলচ্চিত্র উৎসবের সিনেমা বাজার মার্শে দ্যু ফিল্মে অংশ নেয় এটি।

ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড প্রযোজিত ‘অজ্ঞাতনামা’য় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, মোশাররফ করিম, নিপুণ, শহীদুজ্জামান সেলিম, শতাব্দী ওয়াদুদ, আবুল হায়াত, শাহেদ শরীফ খান, শাহেদ আলী সুজন, মোমেনা চৌধুরী, জুঁই করিম, সুজাত শিমুল, নাজমুল হুদা বাচ্চু, শিশুশিল্পী আপন, সায়েম প্রমুখ।

 

অন্যদের ত্রুটি ধরার আগে ভাবুন এই বিষয়গুলো

নিজের কাজটি ঠিকমত করার বদলে আমরা সারাক্ষণই অন্যের ভুল ধরতে ব্যস্ত থাকি। খুবই সামান্য ব্যাপার। হয়ত অফিসের কলিগ লাঞ্চ ব্রেকে বেশী সময় নিয়ে ফেলে। সেটাই আলোচনার জন্য একটি ইস্যু। আবার কখনো হয়ত ঘটনাটি বেশ বড়। সামনের মানুষটি হয়ত সবার অগোচরে আঘাত করে চলেছে আপনাকে। তার ব্যাপারে কথা বলছেন আপনি।
মনোবিজ্ঞানী এবং মেডিটেশনের শিক্ষক তারা ব্রাচ একটি গল্প বলেন প্রায়ই। মনে করুন, আপনি হেটে বাড়ি ফিরছেন। পথে আপনি একটি ছোট কুকুর দেখতে পেলেন। কুকুরটিকে খুব সুন্দর আর আদুরে লাগলো আপনার চোখে। আপনি ভাবলেন একে বাসায় নিয়ে যাবেন। হঠাৎ কুকুরটি আপনাকে আক্রমণ করতে চাইলো। এখন আর তাকে সুন্দর বা আদুরে কোনটাই লাগছে না। এরপর অনেকদিন পর আপনি আবার কুকুরটিকে দেখতে পেলেন। ফাঁদে আটকে আছে তার পা। আপনার তার প্রতি করুণা হল। যদিও তখনো সে রেগে আছে, কিন্তু আপনি জানেন যে, পায়ের ব্যাথা এবং কষ্টের কারণে সে এমন করছে।
গল্পটি আমাদের যে শিক্ষা দেয়, ব্যাখ্যা করেছেন মনোবিজ্ঞানী বারবারা মার্কোয়ে।
আপনার আচরণ স্বাভাবিক
জন্মগতভাবেই আমরা মানুষেরা আত্মরক্ষার প্রশ্নে খুবই সচেতন নিজেকে দোষারোপ করার কিছু নেই। স্বাভাবিক ভাবেই একজন মানুষ যখন আমাদের সাথে কেউ রূঢ় আচরণ করলে আমরা সেটি মেনে নিতে পারি না। আমরাও পাল্টা রুঢ় আচরণ করি। বোঝার চেষ্টা করি না এই ব্যবহারের পেছনে কোন কারণ আছে কিনা। নিজেকে শান্ত করুন। আগে জানার চেষ্টা করুন, কোন সমস্যা আছে কিনা।
নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতেই
যদিও অন্যকে জাজমেন্ট করা আমাদের একটি সাধারণ বৈশিষ্ঠ্য। প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে একটু সময় নিন। আগে মাথা ঠান্ডা করুন, তারপর বসের মেইলের জবাবটি পাঠাবেন। কারণ একবার আপনি যে কথাটি বলে ফেললেন তা কিন্তু আর ফেরানো যাবে না।
নিরপেক্ষ হন
যখন কেউ আপনার সাথে একমত হচ্ছে না তখন হয়ত আপনি যে কাজটি করতে চাচ্ছেন তা করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু ওপরের দ্বিমতের পেছনেও কারণ থাকতে পারে। আপনার কাছে আপনার জীবন অনেক সংগ্রামময়। কিন্তু অন্যরাও তাদের জীবনে কম সংগ্রাম করেন না। উইল স্মিথ বলেন, “সংগ্রাম সবাই করে চলেছে। শুধু কিছু মানুষ সেটা অন্যদের তুলনায় বেশী লুকিয়ে রাখতে পারে।” তাই সবার সিদ্ধান্তকেই শ্রদ্ধা করুন।
 
ভাল দিকগুলো দেখুন
এটি একটি অনুশীলনের বিষয়। মানুষের ভাল দিকগুলো বেশী মনে রাখার চেষ্টা করুন। এটা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। প্রতিটি মানুষের মাঝেই ভাল-মন্দ উভয় দিকই রয়েছে। আমরা দূর্ব্যবহার, অসততা, কষ্ট দেওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো বেশী মনে রাখি। এবার একটু ভিন্ন ভাবে ভাবুন, মনে রাখার প্র্যাক্টিস করুন।
মন্ত্র পড়ুন
একটি বাক্য সবসময় আওরাবেন “আমার মত”। যার উপরে আমি এত রেগে আছি সে আমারই মত তার পরিবারকে ভালবাসে। আমার মতই সে যা করছে কারও না কারও ভালর জন্য করছে। সে আমার মতই একজন সুস্থ মানুষ এবং অপ্রকে ভালবাসে।
ক্ষমা করে দিন
মানুষকে ক্ষমা করে দিন। ছোট ছোট অপরাধগুলো মনে রাখবেন না। আপনার পক্ষে কখনোই জানা সম্ভব নয় একজন মানুষ কতরকম খারাপ পরিস্থিতির শিকার হতে পারে। তাই তার আচরণটি দৃশ্যত খারাপ হলেও এর পেছনের কারণটি হয়ত খুবই মর্মস্পর্শী ছিল।
যা আপনার ক্ষতি করে না
আপনার সহপাঠী বা সহকর্মী যা করছে তা যদি আপনার কোন ক্ষতি না করে তাহলে সেটা নিয়ে আপনি ভাববেন না। আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের জীবন রয়েছে এবং সে জীবনকে সাজানোর জন্য আমাদের অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। তাই যা আমাদের চলার পথে কোনও প্রকার বাধা তৈরি করে না তা নিয়ে ভেবে নিজের জীবনের মূল্যবাণ সময় নষ্ট করবেন না।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

ঘরে তৈরি করে নিন ইতালীয় মজাদার খাবার তিরামিস্যু

ইতালীয় খাবারগুলোর মধ্যে তিরামিস্যু বেশ জনপ্রিয়। অনেকের পছন্দের একটি খাবার। বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট গেলে এই খাবারটি দেখতে পাওয়া যায়। তবে সব সময় রেস্টুরেন্টে গিয়ে এই খাবারটি খাওয়া সম্ভব হয় না। আপনি চাইলে ঘরে তৈরি করে নিতে পারবেন এই খাবারটি। তাহলে জেনে নিন তিরামিস্যু বানানোর রেসিপিটি।

উপকরণ:

২০০ গ্রাম ক্রিম চিজ

৫ টেবিল চামচ চিনি

১ টেবিল চামচ কোকো পাউডার

২টি ডিম

২ টেবিল চামচ কফি পাউডার

৫০ গ্রাম ডার্ক চকলেট

৬-৭ টা লেডি ফিংগার বিস্কুট

প্রণালী:

১। প্রথমে ডিম থেকে কুসুম আলাদা করে নিন। কুসুমটি ভাল করে ফাটুন। যতক্ষণ না কুসুমটি পাতলা হচ্ছে ততক্ষণ ফাটুন।

২। এবার এতে ১ চামচ চিনি গুঁড়ো দিয়ে ফেটে নিন। তারপর আবার এক চামচ চিনি গুঁড়ো দিয়ে ফাটুন। এভাবে সম্পূর্ণ চিনি গুঁড়া দিয়ে ফাটতে থাকুন যতক্ষণ না পাতলা ক্রিমের মত না হয়।

৩। আরেকটি পাত্রে ক্রিম চিজের সাথে ডিমের অংশটুকু ভাল করে মেশান। সম্ভব হলে বিটার দিয়ে বিট করে নিতে পারেন। এতে ভাল করে মিশে যাবে সবগুলো উপাদান।

৪। ব্ল্যাক কফি বানিয়ে রাখুন।

৫। এবার যে বাটিতে তিরামিস্যু  পরিবেশন করবেন সেখানে ক্রিম চীজ মিশ্রণের কিছু অংশ দিয়ে দিন। এতে কোকো পাউডার মিশিয়ে নিন।

৬। কফি ঠান্ডা হয়ে গেলে তাতে লেডি ফিংগার বিস্কুট ভিজিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন একদম নরম যাতে না হয়ে যায়।

৭। এবার কোকো পাউডার ক্রিম চীজ মিশ্রণের ওপর বিস্কুট ভেঙ্গে দিন। তার উপর সাদা ক্রিম চীজ মিশ্রণ (যেখানে কোকো পাউডার মেশানো হয়নি) দিয়ে দিন। তার উপর ডার্ক চকলেটের কুচি দিন।

৮। আবার কোকো পাউডার ক্রিম চীজ মিশ্রণটি দিন তারপর বিস্কুট, সাদা ক্রিম চীজ মিশ্রণ, এবং সবশেষে ডার্ক চকলেট কুচি দিয়ে দিন।

৯। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার তিরামিস্যু।

 

ঈদ-উল-আজহায় বর্ণিল ‘লা রিভ’

আসছে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদ-উল-আজহা। চলছে উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি।

আর আসছে উৎসবকে সামনে রেখে লা রিভ এনেছে আকর্ষণীয় ও নজরকাড়া সব নতুন পোশাক। নানা রঙ ও ডিজাইনের পোশাকগুলো বরাবরের মতোই বৈচিত্র্যময় অলংকরণে সমৃদ্ধ।

এবারের ঈদ উদযাপিত হবে বৃষ্টিময় স্যাঁতসেঁতে ও গরম আবহাওয়ায়। এ সময় পোশাক ব্যবহারে আরামের কথা বিবেচনা করে বেছে নেওয়া হয়েছে সুতি কাপড়, সিল্ক, মসলিন, এন্ডি সিল্ক, জয়শ্রি, এন্ডি কটন, জর্জেট, শিফনসহ অন্যান্য আরামদায়ক কাপড়। কারচুপি, এম্ব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক, স্টিচিংসহ কারুকাজে এসব পোশাক উৎসবে আপনাকে করবে অন্য সবার চেয়ে আলাদা।

পোশাকগুলোর রঙ নির্বাচনে উজ্জ্বল আর বৈচিত্রময় রঙকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ঈদ পোশাকে আধুনিক ধারার শিল্পরীতি ফুটিয়ে তুলতে আকর্ষণীয় সব রঙের পাশাপাশি যোগ করা হয়েছে ফুলেল নকশা, লেইস, মসৃণ ফেব্রিক ও ভেলভেট।

ঈদে মেয়েদের পোশাক সালোয়ার কামিজে লা রিভ নিয়ে এসেছে ভিন্নতা। সালোয়ার কামিজে ফ্রক স্টাইল, এ লাইন এবং রেগুলার শেপের প্রাধান্য রয়েছে। লাল, কমলা, ম্যাজেন্টা, বেগুনী, রয়্যাল ব্লু’র মতো উজ্জ্বল রঙ তো আছেই। পাশাপাশি ঈদ মৌসুমে বৃষ্টি এবং গরমের কথা মাথায় রেখে হালকা আকাশী, গোলাপী, লেমন, হালকা হলুদ, সবুজ এবং সাদা রঙের ব্যবহার করা হয়েছে বেশিরভাগ পোশাকে।

কামিজ ও চুড়িদারে বিভিন্ন শেড করা হয়েছে ডেলিকেট এবং ভেজিটেবল ডাই এর মাধ্যমে। এছাড়া ব্যবহার করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী চুন্দ্রি ও টাই ডাই। সঙ্গে রয়েছে জারদৌসী হাতের কাজ, রাজস্থানী এমব্রয়ডারী ইত্যাদি। প্রধানত লিলেন, সুতি, মসলিন, জর্জেট, জামদানী কটনও ব্যবহার করা হয়েছে মেয়েদের পোশাকে। টিউনিকে বাটারফ্লাই স্টাইল, কাপ্তান স্টাইল ব্যবহার হয়েছে। লাল, হলুদ, কালো, ম্যাজেন্টা, স্কাই ব্লু, পেস্ট ইত্যাদি রঙের সূতী লিলেন, জর্জেট ও ল্যাকনা কাপড় ব্যবহার হয়েছে টিউনিক ও টপসে।

ছেলেদের ঈদের পাঞ্জাবীতে রয়েছে শর্ট, সেমি লং এবং ঐতিহ্যবাহী পাঞ্জাবির প্যাটার্ন। স্বতন্ত্রতা আনার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সেলাইয়ের বিভিন্ন ডিজাইন। পাঞ্জাবীর রঙের ক্ষেত্রে লাল, কফি, বেগুনী, কমলা, জলপাই সবুজের মতো উজ্জ্বল এবং চকচকে রং এর পাশাপাশি রয়েছে হালকা আকাশী, সাদা, অফ হোয়াইট, বেবী পিঙ্ক, ধুসর ইত্যাদি রঙের সমাহার। কমলা, নীল, সাদা, কফি, কালো রঙের টিশার্ট পাবেন লা রিভে। বিভিন্ন প্রিন্ট এবং এম্ব্রয়ডারীর ব্যবহার টি শার্টগুলোকে করেছে অনন্য। ক্যাজুয়াল শার্টেও ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন রঙের শেড। সঙ্গে আছে ওয়াশের ভিন্নতা নিয়ে বিভিন্ন রঙের ফিটেড ডেনিম প্যান্ট এবং নীল, ইট রং এবং খাকী রঙের ফিটেড টুইল প্যান্ট।

শিশুদের জন্য রয়েছে কিডস কর্ণার। যেখানে রয়েছে চমৎকার সব স্টাইলিশ পোশাকের সমাহার। ২ থেকে ১২ বছরের ছেলে মেয়ের জন্য রয়েছে শার্ট, প্যান্ট, টি শার্ট, পাঞ্জাবি, জিন্স, ফ্রকসহ অন্যান্য সব পোশাক।

লা-রিভের হেড অফ ডিজাইন মুন্নুজান নার্গিস বলেন, আসছে উৎসবে ছেলে এবং মেয়েদের পোশাকে উজ্জ্বল রঙের প্রাধান্য রয়েছে, সঙ্গে রয়েছে ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন কাটের এবং ডিজাইনের সংমিশ্রন।

বনশ্রী, ধানমন্ডি, মিরপুর-১, উত্তরা, ওয়ারী, বেইলি রোড, যমুনা ফিউচার পার্ক, পুলিশ প্লাজা কনকর্ড  ও বসুন্ধরা সিটিসহ নারায়ণগঞ্জ এবং সিলেট শোরুমগুলোতে পাওয়া যাবে এসব পোশাক। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট থেকে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে অর্ডার করতে পারবেন। অনলাইনে লা-রিভ পণ্য কিনতে ভিজিট করুন-www.lerevecraze.com

Save

Save

Save

Save

 

অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা

জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল তবে ব্যবধানটা হয়নি প্রত্যাশা মতো।  সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ সি-এর বাছাইপর্বে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে আমিরাতকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টানা পাঁচ ম্যাচ জয়ে পুরো ১৫ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ যোগ দিয়েছে আগামী ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে চীনে অনুষ্ঠিতব্য চূড়ান্ত পর্বে।

ভেজা মাঠ আর প্রচণ্ড গরমে স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি দুই দলই।  এর মাঝেও দুটি গোল করেছেন অধিনায়ক কৃষ্ণা রাণী সরকার।  পাঁচ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা আট।

আজ খেলার দ্বিতীয় মিনিটেই প্রথম গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ।  প্রথম কর্নারটিতেই আসে গোল, মারজিয়ার কর্নারে হেড করে দলকে এগিয়ে দেন অধিনায়ক কৃষ্ণা রাণী সরকার। বাংলাদেশ অমিরাতের রক্ষণভাগেই বল নিয়ে আনাগোনা করতে থাকে তবে আমিরাত গোলরক্ষক দালাল আল হাম্মাদির দৃঢ়তায় বারবার গোল বঞ্চিত হয়। এরমাঝে ১৮ মিনিটে সানজিদার কর্নারে ডিফেন্ডার নার্গিস খাতুনের হেড ক্রস পোস্টে লেগে ফিরে আসলে হতাশার মাত্রাটা বাড়ে বাংলাদেশের।  সেটা আরও চরমে পৌঁছায় ৩৬ মিনিটে যখন শামসুন্নাহার করেন পেনাল্টি মিস।  আমিরাত ডিফেন্ডার মারিয়াম আহমেদ কৃষ্ণা রাণীকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ, সামসুন্নাহার স্পট কিক থেকে বল মারেন সাইড পোস্টের বাইরে।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য চিত্রটা বদলায়, গোল মিসের হতাশা কাটিয়ে ৫১ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। সানজিদার কর্নারে কৃষ্ণা রাণী প্লেস করে বল জড়িয়ে দেন কাছের পোস্টের জালে।

এর পাঁচ মিনিট পর আনুচিং মগিনি করেন দলের তৃতীয় গোলটি, কৃষ্ণা রানীর ক্রস ডিফেন্সে ক্লিয়ার হয়ে বক্সের ওপরে পড়লে তা এগিয়ে দেন মারিয়া মান্ডা। নিজ মার্কারকে কাটিয়ে মাটি কামড়ানো শটে তৃতীয় গোল করেন এই ফরোয়ার্ড।

শেষ গোলটি করেন বদলি ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন।

 

মেয়েরা যা পারছে, ছেলেরা তা পারছে না: প্রধানমন্ত্রী

অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দলের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ফুটবলে মেয়েরাই সুনাম বয়ে এনেছে। বড় হয়ে এরা আরও সুনাম বয়ে আনবে। তবে মেয়েরা যা পারছে, ছেলেরা তা পারছে না। আশা করি, ছেলেরাও একদিন ভালো করবে’।

রোববার দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, খেলাধুলায় প্রশিক্ষণ সবচেয়ে জরুরি। ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি তখন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) কেবল সাপই দেখা যেতো। সেখানে আমরা উন্নয়ন করে খেলাধুলার উপযোগী করেছি। এখন প্রত্যেক বিভাগে বিকেএসপি’র শাখা করছি। খেলাধুলায় গুরুত্ব দিচ্ছি বলেই মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে। এছাড়া প্রতিবন্ধীরাও ভালো করছে। আমরা দেখছি যারা ‍অন্ধ তারাও ট্রফি নিয়ে আসে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন স্টেডিয়াম দরকার। পূর্বাচলে সেটা করা হবে। প্রত্যেক উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করা হবে। এমনভাবে তৈরি করা হবে, যেন রাস্তা দিয়ে যেতেই মানুষজন খেলা দেখতে পারে। এভাবেই যেন সবাই উৎসাহ পায়। কারণ খেলাধুলা করলে আমাদের সন্তানরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে, সুস্থ চিন্তা করতে শিখবে।

শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ থেকে তরুণ প্রজন্মকে ফেরাতে খেলাধুলা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তার সরকার খেলাধুলার উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ক্রিকেট, ফুটবলসহ দেশীয় খেলাধুলার মানোন্নয়নে বিভিন্ন ক্রীড়া-কমপ্লেক্স, স্টেডিয়াম এবং খেলার মাঠ নির্মাণ করছে সরকার। এ ছাড়া প্রতিবন্ধীদের প্র্যাকটিসের জন্য জায়গায় করে দিচ্ছি। প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা কমপ্লেক্স করে দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ব ক্রিকেটে আজ রয়েল বেঙ্গল টাইগার অনেক পরিচিত। রয়েল বেঙ্গল টাইগারদের ক্রিকেট বিশ্ব এখন হিসেব করে চলে। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম একদিন বিশ্বকাপ জিতবে। গ্রামে কিছু খেলা ছিলো। এগুলোর আবার চালু করতে হবে। গোল্লাছুট, হা-ডু-ডু, ডাঙ্গুলির মতো খেলাও প্র্যাকটিস করতে হবে।

 

নৌকাই একমাত্র ভরসা ওদের

গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের চরাঞ্চল থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে বালাসি ঘাট হয়ে প্রতিদিন স্কুল করছে শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী। এদের মধ্যে অধিকাংশই ছাত্রী। কঞ্চিপাড়া নজরুল হক আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও কঞ্চিপাড়া এমএইউ হাইস্কুল এর ছাত্রীরাই প্রতিদিন স্কুল থেকে পায়ে হেটে আধাঘন্টা পর বালাসি ঘাটে যায়।

অতপর নৌকা কখন যাবে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় বেশ সময় ধরে। নৌকায় ওঠার পর ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিনিট সময় ধরে রোদ, বৃষ্টি, ঝড় উপেক্ষা করে কেউ যাচ্ছে কুচখালীর চরে কেউ যাচ্ছে ছাত্তারকান্দির চরে আবার কেউ যাচ্ছে হারোডাঙ্গা চরে। নৌকা থেকে নামার পর চরে হাটতে হয় আবারো আধাঘন্টা বা তার বেশি। এভাবেই জীবনের সাথে যুদ্ধ করে প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াত করছে চরাঞ্চলের মেয়েরা।

কঞ্চিপাড়ার কবি নজরুল হক আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী রহিমা, তাসলিমা ও জোসনা এবং দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমি আকতার এর সাথে কথা বললে তারা বলেন, প্রতিদিন দুশ্চিন্তা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হই এবং স্কুল শেষে ঐ দুশ্চিন্তা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। তারা বলেন, চরাঞ্চলের এই নারী শিক্ষার্থীদের জন্য যদি নির্দিষ্ট ও নিরাপত্তা বেষ্টিত নিরাপদ নৌকা সরকার থেকে দেয়া হতো তাহলে আমরা চিন্তা ছাড়াই স্কুলে যেতে পারতাম। এই রকম নিরাপদ নৌকার কোনো সুযোগ হলে চরের অনেক মেয়েরা আগ্রহী হয়ে উঠবে লেখা পড়া করার জন্য।

এনজিও কর্মী শাহনাজ আকতার বলেন, এমনিতে চরে বাল্য বিবাহের হার বেশি। এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে স্কুলে আসতে ভয় পায় এবং এক পর্যায়ে মা বাবা অল্প বয়সেই বিয়ে দিযে দেন। তাই ছাত্রীদের নিরাপত্তার সহিত দুশ্চিন্তামুক্ত পরিবেশ তৈরী করলে চরাঞ্চলে নারী শিক্ষার হার যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি বাল্য বিবাহের হারও কমে যাবে বলে এই এনজিও কর্মী মনে করেন।

 

কোরবানির পশু সংক্রান্ত জরুরি কিছু মাসআলা

কোন কোন পশু দ্বারা কুরবানী করা যাবে, উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এসব গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন হরিণ, বন্যগরু ইত্যাদি দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। [কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫]

মাসআলা : কুরবানীর উদ্দেশ্যে ক্রয়কৃত পশু সময়ের পর যবাই করলে, কুরবানীর দিনগুলোতে যদি জবাই করতে না পারে তাহলে খরিদকৃত পশুই সদকা করে দিতে হবে। তবে যদি (সময়ের পরে) জবাই করে ফেলে তাহলে পুরো গোশত সদকা করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে গোশতের মূল্য যদি জীবিত পশুর চেয়ে কমে যায় তাহলে যে পরিমাণ মূল্য হ্রাস পেল তা-ও সদকা করতে হবে। [বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০-৩২১]

মাসআলা : কোন কোন পশু দ্বারা কুরবানী করা যাবে, উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এসব গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন হরিণ, বন্যগরু ইত্যাদি দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। [কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫]

মাসআলা : নর ও মাদা পশুর কুরবানী, যেসব পশু কুরবানী করা জায়েয সেগুলোর নর-মাদা দুটোই কুরবানী করা যায়। [কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫]

মাসআলা : কুরবানীর পশুর বয়সসীমা , উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয। অবশ্য এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬ মাস বয়সের হতে হবে। উল্লেখ্য, ছাগলের বয়স ১ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না। [কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫-২০৬ ]

মাসআলা : এক পশুতে শরীকের সংখ্যা, একটি ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা দ্বারা শুধু একজনই কুরবানী দিতে পারবে। এমন একটি পশু কয়েকজন মিলে কুরবানী করলে কারোটাই সহীহ হবে না। আর উট, গরু, মহিষে সর্বোচ্চ সাত জন শরীক হতে পারবে। সাতের অধিক শরীক হলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না। [সহীহ মুসলিম ১৩১৮, মুয়াত্তা মালেক ১/৩১৯, কাযীখান ৩/৩৪৯, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭-২০৮]

মাসআলা : উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কুরবানী করা জায়েয। [সহীহ মুসলিম ১৩১৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭]

লিখেছেন : মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া
গ্রন্থনা সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান
সৌজন্যে : মাসিক আল কাউসার

 

রেস্তোরাঁ স্বাদের চিকেন ৬৫ তৈরি হবে আপনার রান্নাঘরে

চাইনিজ খাবারের নাম শুনলেই জিভে পানি চলে আসে। চাইনিজ খাবার পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। চাইনিজের চিকেনের আইটেমগুলোর মধ্যে চিকেন ৬৫ অন্যতম। রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে অনেকেই চিলি চিকেনের পরিবর্তে চিকেন ৬৫ অর্ডার করে থাকেন। জনপ্রিয় এই খাবারটি আপনি চাইলে নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন। পারফেক্ট চাইনিজ চিকেন ৬৫ তৈরির রেসিপিটি তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ:

৪০০ গ্রাম হাড়ছাড়া মুরগির মাংস (কিউব করে কাটা)
তেল

১ টেবিল চামচ আদা রসুন পেস্ট

১ টেবিল চামচ মরিচের গুঁড়ো

লবণ

২ চা চামচ ধনিয়া গুঁড়ো

১/২ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো

১ চা চামচ জিরা গুঁড়ো

গোল মরিচের গুঁড়ো

২ টেবিল চামচ লেবুর রস

১টি ডিম

৩ টেবিল চামচ কর্ণস্টার্চ

১ টেবিল চামচ ময়দা

১ কাপ টকদই

৩টি শুকনো মরিচ

১/২ চা চামচ সরিষা

২-৩টি কাঁচা মরিচ

১/২ চা চামচ আদা কুচি

৬-৮টি কারিপাতা

১ টেবিল চামচ লাল শুকনো মরিচের পেস্ট

১/২ কাপ পেঁয়াজ কলি কুচি

প্রণালী:

১। একটি পাত্রে মুরগির টুকরো, আদা রসুনের পেস্ট, মরিচের পেস্ট, লবণ, ধনিয়া গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, গোল মরিচের গুঁড়ো এবং লেবুর রস দিয়ে মেরিনেইট করে রাখুন ৩০ মিনিট।

২। এরসাথে ডিম, কর্ণস্টার্চ, ময়দা চাল করে মেশান।

৩। চুলায় তেল গরম করতে দিন।

৪। এবার মুরগির টুকরোগুলো তেলে দিয়ে দিন। বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।

৫। আরেকটি পাত্রে টকদই, মরিচের গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, লবণ, কর্ণস্টার্চ এবং কিছু পানি দিয়ে ভাল করে মেশান।

৬। আরেকটি প্যানে তেল দিয়ে দিন। সরিষা এবং লাল শুকনো মরিচ দিয়ে ৩০ সেকেন্ড ভাজুন।

৭। এরপর এতে কাঁচা মরিচ, আদা কুচি, কারিপাতা, রসুন কুচি দিয়ে উচ্চ তাপে ভাজুন। মরিচের পেস্ট দিয়ে নাড়ুন।

৮। চুলা কমিয়ে দিয়ে মিশ্রণের সাথে টকদই দিয়ে ৫-১০ মিনিট রান্না করুন। এরপর ভাজা মুরগির মাংস, পেঁয়াজকলি কুচি এবং লেবুর রস দিয়ে নাড়ুন।

৯।  পেঁয়াজের রিঙ দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন মজাদার চিকেন ৬৫।

 

বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পেতে নিজের শিকড় আঁকড়ে থাকতে হবে: সব্যসাচী মুখার্জী

বলিউডের ব্যতিক্রমী অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান কয়েকদিন আগে একটি ফ্যাশন শোতে অংশগ্রহণ করে হইচই ফেলে দিলেন মিডিয়াতে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের বিশেষ পোশাকের মুখপাত্র হওয়ার পর ল্যাকমে ফ্যাশন উইকের মঞ্চ মাতালেন কারিনা। ফ্যাশন ডিজাইনার সব্যসাচীর পোশাকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় র‍্যাম্পে হাঁটলেন তিনি।

এই প্রথমবার ফ্যাশন ডিজাইনার সব্যসাচী মুখার্জীর কোনও ক্রিয়েশন পরেন কারিনা। এর আগে তারকা ডিজাইনারের সঙ্গে কোনও শো বা ছবিতে কাজ করা হয়নি বলে আক্ষেপও ছিল কারিনার। সে আক্ষেপও ঘুচল এই শোয়ে। ৩৪ বছর বয়সী অভিনেত্রী ক্যাটওয়াকের সময় বলেন, এই শো চিরকাল তার কাছে খুব বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ থাকবে। কারণ তার সন্তানও এখানে হাঁটলেন তার সঙ্গে। সবদিক দিয়েই এই শো নিয়ে একটু বেশিই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। এর সঙ্গে তিনি জানান, তার শাশুড়ি শর্মিলা ঠাকুর ডিজাইনার সব্যসাচীর কাজের বড় ভক্ত।

সব্যসাচী মুখার্জীর সাক্ষাৎকার পাওয়া তো সহজ ব্যাপার নয়। পারফেকশনিস্ট ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে বেশ নাম ডাক আছে সব্যসাচী মুখার্জীর। তাই শোয়ের আগে আরও বেশি ব্যস্ত হয়ে ওঠেন খুঁটিনাটি নিয়ে। শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকলেও চল্লিশোর্ধ্ব ডিজাইনার ভারতীয় একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দেন। প্রিয়.কমের পাঠকদের জন্য সব্যসাচী মুখার্জীর সাক্ষাৎকারটি উপস্থাপন করা হল-

আপনি ‘ল্যাকমে’র ফ্যাশন ডিজাইনার আগেও বহুবার হয়েছেন। এখনও শো’য়ের আগে নার্ভাস লাগে আপনার?
সব্যসাচী মুখার্জী: নাহ্‌! অনেক তো বয়স হল। এখন আর নার্ভাস লাগে না। আসলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হতাশ হওয়াগুলোও কমে যায়। সত্যি কথা বলতে কী, একটা সিজন একটু গড়বড় হলেও আমার ব্যবসার কোনও ক্ষতি হবে না। কিন্তু নতুনদের জন্য একটা শো খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি কম বয়সে অনেক বেশি নার্ভাস থাকতাম। শো করতে হলে ভয় পেতাম। এখন সেসব হয় না। আরেকটা কথা ঠিক, যে সংবাদমাধ্যমকে খুশি করার জন্যে আমাদের অনেক সময় অনেক কিছু করতে হয়। কিন্তু আমি ধীরে ধীরে বুঝেছি, নিজস্ব ছাপ ধরে রাখতে পারলে তবেই ক্রেতারা খুশি হবেন। আর ক্রেতারা খুশি হলে সংবাদমাধ্যমের কাছে আলাদা করে কিছু প্রমাণ করতে হবে না। হয়তো আমার কথাগুলো খুবই একগুঁয়েমির মত শোনাচ্ছে। কিন্তু আমি বাস্তবতা বিশ্বাস করি।

ফ্যাশন দুনিয়ায় একটার পর একটা সিজন কি সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ?
সব্যসাচী মুখার্জী: গুরুত্বপূর্ণ নয়। হয়তো সারা দুনিয়ার দৃষ্টিতে দেখলে কিছুটা গুরুত্ব পায়। কারণ এখনও কিছু জায়গায় একেক রকম আবহাওয়ায় অনেকটা পার্থক্য দেখা যায়। অবশ্য এখন গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য সকলেই একটা মাঝামাঝি মৌসুম ধরে নেয় ফ্যাশনের ক্ষেত্রে। কিন্তু ভারতীয় আবহাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সারা বছরে একটা ফ্যাশন উইক করলেই আমার জন্যে যথেষ্ট।

এবারের ফিনালের কালেকশনের পিছনে কোনও অনুপ্রেরণা কাজ করেছে?
সব্যসাচী মুখার্জী: ল্যাকমে’র ফিনালে করলে কী হয়, প্রথমে মেকআপটা কেমন হবে, সেটা বলে দেওয়া হয়। তার উপর নির্ভর করে, কালেকশন কী হবে। এবারের থিম ছিল ‘শিমার’। শিমার দু’ভাবে করা যায়। এক, ম্যাট রঙের পোশাকের সঙ্গে। আর দুই, শিমারি পোশাকের সঙ্গে। আমার কালেকশনে এই দু’রকমই চোখে পড়বে। কালার প্যালেট ঠিক করেছি ল্যাকমে’র মেকআপ প্রোডাক্ট থেকে— ব্লাশ, আইলাইনার, আইশ্যাডো। খুব সুন্দর বেরি, চারকোল, মস্‌ গ্রিন বা এমারেল্ড গ্রিনের মতো রং রয়েছে।


একটা থিম আগে থেকে নির্ধারিত থাকলে সৃজনশীলতায় বাধা পড়ে না?
সব্যসাচী মুখার্জী: আমি কী করতে চাই সেই ভিশনের সঙ্গে মিলে গেলে কিন্তু খুব একটা বাধা পড়ে না। এবারের ফ্যাশন উইক করার পিছনে একটা বড় কারণ রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে খুব গ্লসি কালেকশন তৈরি করেছি। এবার ইচ্ছে ছিল সেটা একটু টোন ডাউন করে শিমার কালেকশন তৈরি করব। যখন ল্যাকমে’র কাছ থেকে প্রস্তাব পাই ফিনালে করার তখন জানানো হয়, ওদের এবারের থিম শিমার। তাই রাজি হয়ে যাই। আসলে আমার ব্যবসা এখন অনেকটা ছড়িয়ে পড়েছে। আগের মতো যা-ইচ্ছে-তাই করতে পারি না। মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী চলতে হয়। তাই সব সময় একটা পরিকল্পনা থাকে। আমাদের প্রোডাকশনেও সব প্ল্যান অনেক আগে থেকে শুরু হয়ে যায়। সেই পরিকল্পনার সঙ্গে এবারের ল্যাকমে’র থিম মিলে গেল বলেই রাজি হলাম।

বলিউডের শো-স্টপার নেওয়া আপনার অপছন্দ। কিন্তু এবার সেই নিয়মটা ভাঙতেই হল। ‘ল্যাকমে’র ‘ফেস’ হওয়ায় কারিনা কাপুর ফিনালের শো-স্টপার হলেন।
সব্যসাচী মুখার্জী: কারিনার সঙ্গে আগে কখনও কাজ করা হয়নি। আমাদের ‘বাজিরাও মাস্তানি’ করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি বা কারিনা কেউ-ই আর ছবিটা করিনি।

আপনি বরাবরই হ্যান্ডলুম নিয়ে কাজ করে এসেছেন। ইদানীং স্মৃতি ইরানির হ্যান্ডলুম নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন খুব জনপ্রিয় হয়েছে। এতকিছুর পরেও কি আমাদের কারিগরেরা সেভাবে উপকৃত হচ্ছেন?
সব্যসাচী মুখার্জী: সবাই শুধু মুখেই বলেন, আমাদের কারিগরেরা না খেতে পেয়ে মরে যাচ্ছেন। এই পেশা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু কেন সেটা হচ্ছে বুঝতে হবে তো! চাইনিজ জিনিস ব্যবহার করলে দেশি জিনিসের কদর করবে কে? বিদেশ থেকে মেটিরিয়াল কিনে পরলে হ্যান্ডলুম বিক্রি হবে কেন! সচেতনতা বাড়লে তবেই চাহিদা বাড়বে। সেই অনুযায়ী সাপ্লাই চেন বদলাবে। এখন সাপ্লাই অনেক বেশি। যেদিন চাহিদা তার চেয়েও বেড়ে যাবে, সেদিন কারিগরদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিও হবে। আগে বাংলার বাজারে জরদৌসি কারিগরেরা খেতে পেতেন না। কিন্তু আমার ব্রাইডালওয়্যার যখন থেকে জনপ্রিয় হল, তার কপিও মার্কেটে ছেয়ে গেল। তখন সকলে জরদৌসি এখান থেকেই করাতে শুরু করল! এটা পুরোটাই ডিমান্ড-সাপ্লাইয়ের খেলা।


ডিজাইনারেরা এ বিষয়ে কতটা উদ্যোগী?
সব্যসাচী মুখার্জী: একটা কথা আমি মানি যে সবাইকেই হ্যান্ডলুম নিয়েই কাজ করতে হবে, তেমনটা নয়। ধরুন হ্যান্ডলুম নিয়ে কাজ করলে যদি কারও সৃজনশীলতায় বাধা পড়ে, তাহলে সে করবে কেন! কেউ যদি সুইমওয়্যার বা লঁজারি নিয়ে কাজ করে, সে কী করে হ্যান্ডলুম ব্যবহার করবে! তবে এটাও ঠিক, যে দুনিয়াজুড়ে হ্যান্ডলুম খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ মানুষ অনেক বেশি অর্গ্যানিক লিভিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন। এটাকে অ্যান্টি-টেকনোলজি মুভমেন্ট বলা হচ্ছে। এখানকার যে ডিজাইনারেরা সেটা টের পেয়েছেন, তারাই কিন্তু হ্যান্ডলুম নিয়ে কাজ করছেন। কারণ এতে তাদেরই লাভ।

‘ক্রিশ্চিয়ান লুবোতঁ’র সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফুটওয়্যার ডিজাইনিং শুরু করেছিলেন। এই ধরনের ‘কোলাবরেশন’ এর মধ্যে আর করছেন?
সব্যসাচী মুখার্জী: এই কিছুদিন আগেই ‘এশিয়ান পেন্টস’ আর ‘ফরএভার মার্ক’এর সঙ্গে কাজ করলাম। খুব তাড়াতাড়ি আন্তর্জাতিক স্তরে একটা বড় কোলাবরেশনে কাজ করব। কী, এখনই বলতে পারছি না। তবে এটুকু বলতে পারি, দেশের সবচেয়ে বড় কোলাবরেশনের মধ্যে একটা হতে চলেছে। এই কাজগুলোর গুরুত্ব একটাই। দু’টো সম্পূর্ণ আলাদা গুণ মিলে একটা নতুন কিছু তৈরি হয়। যেমন ফুটওয়্যার ডিজাইনিংয়ে ‘ক্রিশ্চিয়ান লুবোতঁ’র তুলনা হবে না। তবে আমার মতো এমব্রয়ডারির কাজও ওরা করতে পারত না। একসঙ্গে কাজ করলে ফলটা অনেক বেশি সুন্দর হয়।

এত সুন্দরভাবে নিজের স্টোরগুলো সাজান। ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং নিয়ে কিছু ভাবছেন না কেন?
সব্যসাচী মুখার্জী: হয়তো সেটাই আমার পরের বড় আন্তর্জাতিক কোলাবরেশন। আসলে সবই আলোচনা স্তরে রয়েছে। বিষয়টা পাকা হলে জানতে পারবেন।

ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য কোনও পরামর্শ দেবেন?
সব্যসাচী মুখার্জী: একটা জিনিস আমি বিশ্বাস করি, দুনিয়াজোড়া খ্যাতি পেতে গেলে নিজের শিকড়গুলো আঁকড়ে থাকতে হবে। আমার এখনও মনে আছে, ইন্দিরা গান্ধী যখন বিদেশে যেতেন, সব সময় শাড়ি পরতেন। বিদেশে আপনার দেশি পোশাক একটা বর্মের মতো। কেউ সেটা নিয়ে ছেলেখেলা করতে পারবে না! আমি সব সময় বাকিদের বলি, বিদেশে যাওয়ার সময় তাদের পোশাক পরে যাওয়া মানে তাদের অধীনস্থ হয়ে যাওয়া। আমাদের পোশাক পরার মধ্যে একটা ঔদ্ধত্য ফুটে ওঠে। তাই বিদেশে ডিজাইনার হিসেবে ছাপ ফেলতে হলে, ভারতীয়তা বজায় রাখতেই হবে। শুধু ডিজাইনার কেন, সব ভারতীয়দেরই এই কথাটা মাথায় রাখা উচিত।

Save

Save

Save

Save

Save

 

১১ নারী পেলেন ‘অনন্যা’ সম্মাননা

স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১০টি বিভাগে ১১ জন নারীকে ‘অনন্যা শীর্ষদশ-২০১৫’ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। নারী-বিষয়ক সাময়িকী পাক্ষিক অনন্যা এই সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এ বছর পর্বতারোহণের জন্য ওয়াসফিয়া নাজরীন, প্রযুক্তি খাতে সোনিয়া কবির বশির, সাংগঠনিক দক্ষতায় লুভা নাহিদ চৌধুরী, উদ্যোক্তায় মালিহা এম কাদির, সাংবাদিকতায় সুপ্রীতি ধর, সমাজকর্মে সাহিদা আক্তার স্বর্ণা, শিক্ষায় উম্মে তানজিলা চৌধুরী মুনিয়া, চলচ্চিত্রে অপর্ণা ঘোষ ও সংগীতে অণিমা মুক্তা গোমেজ এই সম্মাননা পেয়েছেন। এ ছাড়া খেলাধুলায় অবদান রাখায় যৌথভাবে এ পুরস্কার পেয়েছেন গত বছর এসএ গেমসে ভারোত্তলনে স্বর্ণপদক বিজয়ী মাবিয়া আক্তার ও সাঁতারে স্বর্ণপদক বিজয়ী মাহফুজা খাতুন শিলা।

১৯৯৩ সাল থেকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য নারীদের এই সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। গত ২২ বছরে ২১০ জন কৃতী নারী এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।

পাক্ষিক অনন্যার সম্পাদক তাসমিমা হোসেন সম্মাননা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এই স্বীকৃতি নারীদের আরও অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করবে।’

চট্টগ্রামের দৃষ্টিহীন সমাজকর্মী উম্মে তানজিলা চৌধুরী মুনিয়া প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা অধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য এবার অনন্যা সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিবন্ধী নারীরা যে কতটা পিছিয়ে আছে সে কথা গণমাধ্যমে আসে না। আমি কৃতজ্ঞ, অনন্যার এই সম্মাননা আমার কাজকে আরও উৎসাহিত করবে।’

খেলাধুলায় যৌথভাবে সম্মাননা পাওয়া মাহফুজা খাতুন শিলা বলেন, ‘মেয়েদের যোগ্যতা থাকলে মেয়েদের কেন সুযোগ দেওয়া হবে না? সমাজে বৈষম্যের শেষ নেই, তবু মেয়েরা এগিয়ে যাবেই।’

আগে মেয়েরা লোকসংগীত গাইতে গেলে বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার হতের বলে জানান সংগীতে সম্মাননা পাওয়া অণিমা মুক্তা গোমেজ। এখন এ অবস্থার অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। তিনি জানালেন, জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লোকসংগীত নিয়ে তিনি কাজ করতে চান।

নারীর চোখে বিশ্ব দেখার প্রত্যয় নিয়ে ১৯৮৮ সালে পাক্ষিক অনন্যা যাত্রা শুরু করে। অনন্যা শুধু বাংলাদেশই নয়, সমগ্র বিশ্বের নারীর সক্ষমতা ও অগ্রগতিকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে। লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরে নারীর মানবিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারের বিষয়গুলো।

সম্মাননা অনুষ্ঠানে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবীর, নারীনেত্রী মাহফুজা খানম উপস্থিত ছিলেন।

 

ওয়াজিব কোরবানি না দিতে পারলে করণীয় কী?

মোরগ কুরবানী করা, কোনো কোনো এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে মোরগ কুরবানী করার প্রচলন আছে। এটি না জায়েয। কুরবানীর দিনে মোরগ জবাই করা নিষেধ নয়, তবে কুরবানীর নিয়তে করা যাবে না। [খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৪, ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২০০]

মাসআলা : কুরবানী করতে না পারলে, কেউ যদি কুরবানীর দিনগুলোতে ওয়াজিব কুরবানী দিতে না পারে তাহলে কুরবানীর পশু ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করে ছিল, কিন্তু কোনো কারণে কুরবানী দেওয়া হয়নি তাহলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে। [বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪, ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৫]

মাসআলা : মোরগ কুরবানী করা, কোনো কোনো এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে মোরগ কুরবানী করার প্রচলন আছে। এটি না জায়েয। কুরবানীর দিনে মোরগ জবাই করা নিষেধ নয়, তবে কুরবানীর নিয়তে করা যাবে না। [খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৪, ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২০০]

লিখেছেন : মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া
গ্রন্থনা সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান
সৌজন্যে : মাসিক আল কাউসার

 

হাবিব ওয়াহিদের মন তিশার জন্য কতটা বেপরোয়া!

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ। অন্যদিকে মডেল ও অভিনেত্রী তানজিন তিশা। তবে হাবিব ওয়াহিদের মন তিশার জন্য কতটা বেপরোয়া! শিরোনাম পড়ে কি ভড়কে গেলেন? না বিষয়টি তেমন কিছু নয়। গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে, অন্তর্জালে প্রকাশ পেয়েছে হাবিব-তিশার রোমান্টিক রসায়ন ‘বেপরোয়া মন’।

চিত্রপরিচালক অনন্য মামুনের পরিচালনায় এই গানের ভিডিওতে জুটি বেঁধেছেন তারা! ভিডিওটি নির্মিত হয়েছে একেবারে সিনেমাটিক ফর্মুলায়। তাই তো এর নির্দেশক ও কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করছেন অনন্য মামুন আর ভিডিওতে হাবিবের বিপরীতে নায়িকা রূপে আছেন তিশা। দুজনার কসটিউম ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন রামিম রাজ।

রোমান্টিক ধরনের এ গানটির শুটিং হয়েছে ১৩ আগস্ট, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে। ঈদ উপলক্ষে লাইভ টেকনোলজির ব্যনারে প্রকাশ পেয়েছে ভিডিওটি। আর গানটির সুর-সংগীত-কণ্ঠ হাবিব নিজেই করেছেন। লিখেছেন হৃদ্ধি।

এদিকে চলতি মাসের প্রথম রাতে প্রকাশ পায় হাবিবের শেষ মিউজিক ভিডিও ‘মনের ঠিকানা’। যাতে হাবিবের বিপরীতে মডেল হন শার্লিনা হোসাইন। অন্যদিকে ইমরানের ‘বলতে চেয়ে মনে হয়’ গানে সর্বশেষ মডেল হয়েছিলেন তানজিন তিশা। সম্প্রতি এই গানটি ইউটিউবে ভিউয়ার্স এক কোটি ছাড়িয়েছে।

 

ভ্রমণ করুন বোরা বোরা আইল্যান্ডে

সমুদ্রের জল কতটা স্বচ্ছ হতে পারে? এতটা যে আপনার মনে হবে কোন জলই নেই? দূর থেকে একটা টলটলে টারকুইশ রঙ চোখে পড়বে আপনার, কিন্তু কাছে এলে দেখবেন কোন রঙ নেই। সমুদ্রের তল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। মাঝে যে জলের একটা ব্যারিয়ার আছে সেটা যেন চোখেই পড়ে না।
ভেসে চলা বোটগুলো পানিতে ভাসছে নাকি শূন্যে? জলের অনুভব ছাড়া দৃশ্যত যেন কোন জল নেই। হ্যাঁ, এমন স্বচ্ছ জলও আছে পৃথিবীতে। দেখতে হলে চলে যান দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের বোরা বোরা অঞ্চলে। ফ্রান্সের প্লিনেসিয়ার লিউয়ার্ড আইল্যান্ডগুলোর অন্যতম এই বোরা বোরা। সম্প্রতি U.S. News দ্বারা “the best island in the world” হিসেবে এটি স্বীকৃতি পেয়েছে।
এটি যেন মর্ত্যের বুকে স্বর্গ। স্বর্গে পা ফেলে আপনি ভুলে যাবেন পার্থিব সকল চিন্তা। শুধু বিস্ময়ের অনুভূতি নিয়ে কেটে যাবে আপনার ভ্রমণের সময়টা। বোরা বোরাকে সম্পূর্ণ রূপে উপভোগ করতে করুন এই কাজগুলো-
১। হেলিকপ্টার ট্রিপ
একটি হেলিকপ্টারে করে সারা আইল্যান্ডটি ঘুরে দেখুন। উপভোগ করুন সমূদ্রের রঙ, বিস্তৃত সৈকত আর সবুজে ঢাকা পর্বত ওটেমানু। উপভোগ করুন সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উভয়ই।
২। প্যারাসেইলিং
প্যারাসেইলিং করে সমূদ্রের টারকুইশ লাগুন দেখুন বার্ডস আই ভিউ থেকে। দেখুন একই পর্বত ওটেমানুকে। সাথে উপভোগ করুন সমূদ্রের প্রাণীদের জীবনাচরণ। স্বচ্ছ জলের নীচে দেখতে পাবেন কচ্ছপ, হাঙ্গর আর স্ট্রিংগ্রে।
৩। কাইট সার্ফিং
এটি প্যারাসেইলিং এবং উইন্ডসার্ফিং এর একটি সমন্বয়। এটি করতে হলে ছোট্ট একটা প্রশিক্ষণ নিতে হবে আপনাকে। তবে বেশ রোমাঞ্চকর হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ আপনি থাকবেন সমুদ্রের একদম কাছাকাছি, কিন্তু উড়বেন শূন্যে!
৪। একুয়া বাইক
২ সিটের একটি বাইকে চড়ে একটি ভিন্নধর্মী রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে পারেন আপনি। অভিজ্ঞ একজন ড্রাইভার বাইক চালিয়ে আপনাকে নিয়ে নেমে যাবেন সমুদ্রের জলে। বাইক সহ ডুবন্ত অবস্থায় আপনি মাছেদের খাওয়াতে পারবেন। মজার না বিষয়টা?
৫। একুয়া সাফারি উইথ হেলমেট
সমুদ্রকে আরো কাছ থেকে একেবারে তলদেশে প্রবেশ করে উপভোগের সুযোগ এটি। স্নোরকেলিং এবং একটি নৌকা ভ্রমণ যুক্ত আছে এই প্যাকেজে। কোন অভিজ্ঞতার প্র্যোজন নেই। এপনি যদি ভাল সাঁতার না জানেন তাতেও কোন সমস্যা নেই। ১৫ ফুট গভীর পর্যন্ত হেটে চলে যেতে পারবেন আপনি, সাথে আপনার গাইড আপনাকে শোনাবেন মাছেসের গল্প, সমূদ্রের নানান কাহিনী।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

কেমন হবে ইন্টারভিউ অ্যাটিচিউড?

ইন্টারভিউ এর দিনটি কিন্তু খুবই স্পেশাল। একেবারে যেন ভাগ্য নির্ধারণের দিন। আর যে কোন দিন যেমন তেমন, কিন্তু ইন্টারভিউ এর দিন থাকা চাই ফিটফাট। পোশাকে শুধু নয়, প্রকাশভঙ্গিতে থাকা চাই স্মার্টনেস। ব্যক্তত্বে প্রকাশ পাওয়া চাই আত্মবিশ্বাস। তবেই যেন আসবে সফলতা। হ্যা, ইন্টারভিউ বোর্ডে যোগ্যতার সাথে সাথে এই অ্যাটিচিউড প্রকাশ করাও বিশেষ জরুরি। জেনে নিই আরও বিস্তারিত-
 
এক্সট্রোভার্ট অ্যাটিচিউড
ইন্টারভিউ বোর্ডে এক্সট্রোভার্ট ব্যক্তিত্বের মানুষেরা বেশী নজর কাড়ে। কারণ আপনি যদি ইন্ট্রোভার্ট হন তা থেকে মনে হতে পারে আপনি লাজুক, সহকর্মীর সাথে মানিয়ে চলতে আপনার সমস্যা হবে, ক্লায়েন্টের সাথে ডিলিংস এও পিছিয়ে পড়বেন আপনি। ইন্টারভিউয়াররা সবসময় এমন একজন মানুষকে তাদের কোম্পানির জন্য নির্বাচিত করতে চান যিনি দায়িত্ব সামলানোর জন্য শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় যোগ্য হবেন না, একই সাথে তিনি হবেন এক্সট্রোভার্ট।
স্মার্ট অ্যাটিচিউড 
স্মার্ট তো হতেই হবে। এর কোন বিকল্প নেই। আপনি যে অঞ্চলের মানুষই হন না কেন আপনার উচ্চারণ হতে হবে শুদ্ধ বাংলা। ইন্টারভিউ বোর্ডে অশুদ্ধ উচ্চারণ খুব বাজে ইম্প্রেশন তৈরি করে। আপনাকে পোশাকেও স্মার্ট হতে হবে। চুল আঁচড়ানো থেকে শুরু করে পায়ের জুতা পর্যন্ত ঝকঝকে হওয়া চাই। চোখে মুখে থাকা চাই বুদ্ধির ছাপ।
সিরিয়াস অ্যাটিচিউড
স্মার্ট হবেন, সাথে হবেন ক্লাসি। আপনি এই ইন্টারভিউতে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে চাকরিজীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন। আপনি যে আপনার ক্যারিয়ারের ব্যাপারে সিরিয়াস সেটা আপনার আচরণে প্রকাশ পাওয়া প্রয়োজন। চাকরিটা আপনার দরকার শুধু নয়, আপনার মাঝে আছে প্রফেশনের প্রতি নিষ্ঠা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধা, এই অ্যাটিচিউড নিঃসন্দেহে মুগ্ধ করবে বোর্ডের সবাইকে।
ম্যানেজেবল অ্যাটিচিউড
ইন্টারভিউ বোর্ডে অনেক বিব্রতকর প্রশ্ন করা হয়। আপনার দায়িত্ব হল বিব্রত না হয়ে কৌশলে উত্তর দেওয়া। এই প্রশ্নগুলো করাই হয় যাতে পরীক্ষা করা যায় আপনি অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি কতটা ম্যানেজ করতে পারেন। কারণ চাকরি জীবনে আপনাকে অনেক কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। তাই ইন্টারভিউ বোর্ডেই প্রমাণ করে দিন আপনার সেই ক্ষমতা আছে। ধরে রাখুন আত্মবিশ্বাস।
 
ওবিডিয়েন্ট অ্যাটিচিউড
আত্মবিশ্বাসী হবেন, কিন্তু অনুগতও হতে হবে। আপনার কোম্পানি নিশ্চয়ই ঔদ্ধত্য পছন্দ করবে না আপনার মাঝে। তাই প্রতিটি পদক্ষেপে আনুগত্য প্রকাশ করুন। ইন্টারভিউ কক্ষে প্রবেশের সময় অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করুন। বসার আগে অনুমতি নিন। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেবার সময় বিনয়ের সাথে উত্তর দিন। ধন্যবাদ দিন। কোম্পানির প্রশংসা করুন। এই কোম্পানির সাথে কাজ করতে পারলে আপনি খুশী হবেন সেটা প্রকাশ করুন। চাকরি আপনার নিশ্চিত।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

ছোট্ট ক্ষুধা মেটান চিকেন কিমা প্যাটিসে

ফাস্ট ফুড হিসেবে প্যাটিস বেশ পরিচিত। তবে তৈরি করা বেশ ঝামেলা বলে অনেকেই বাড়িতে তা তৈরি করতে চান না। আজ দেখে নিন এমন একটি রেসিপি যাতে ঝামেলা একেবারেই কম। আর এই প্যাটিস তৈরিতে মুরগীর মাংসের কিমার পাশাপাশি ব্যবহার করা হয় সেদ্ধ আলু, ফলে প্যাটিস হয় নরম ও মুখরোচক। চলুন দেখে নিই একদম সহজ রেসিপিটি।
উপকরণ
– ২৫০ গ্রাম মুরগীর মাংসের কিমা
– ৩টি বড় আলু, সেদ্ধ করা
– লবণ স্বাদমতো
– ২ টেবিল চামচ কর্ন ফ্লাওয়ার
– ভাজার জন্য তেল
– ১ টেবিল চামচ রসুন কুচি
– ১ টেবিল চামচ আদা-রসুন বাটা
– ১টি বড় পিঁয়াজ, মিহি কুচি করা
– ১ চা চামচ কাশ্মীরি মরিচের গুঁড়ো
– ১ চা চামচ গরম মশলা গুঁড়ো
– ১ চা চামচ ধনে গুঁড়ো
– ১ চা চামচ চাট মশলা
– দেড় টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি
– পরিবেশনের জন্য চাটনি ও সস
প্রণালী
১) একটি বড় বাটিতে সেদ্ধ আলু চটকে নিন। এতে লবণ এবং কর্ন ফ্লাওয়ার দিয়ে মাখিয়ে নিন।
২) ১ টেবিল চামচ তেল গরম করে নিন একটি নন-স্টিক প্যানে। এতে রসুন কুচি দিয়ে সোনালি করে ভেজে নিন। আদা-রসুন বাটা দিয়ে ভালো করে সাঁতলে নিন ১ মিনিট।
৩) পিঁয়াজ কুচি দিয়ে ১ মিনিট সাঁতলে নিন। কিমা দিয়ে দিন। বেশি আঁচে ভাজুন ১-২ মিনিট।
৪) আঁচ কমিয়ে দিন। লবণ, মরিচ, গরম মশলা এবং ধনে দিয়ে ভালো করে মেশান। ওপরে অল্প করে পানি দিয়ে কম আঁচে রান্না করে নিন ৫ মিনিট বা কিমা সেদ্ধ হয়ে আসা পর্যন্ত।
৫) কিমা রান্না হয়ে এলে চাট মশলা এবং ধনেপাতা কুচি দিন। মিশিয়ে ঠাণ্ডা হতে রাখুন একটি বাটিতে।
৬) হাতে অল্প করে তেল মেখে নিন। সমান ভাগে ভাগ করে নিন আলুর মিশ্রণ এবং কিমার মিশ্রণ।
৭) একভাগ আলুর মিশ্রণ নিন। এর মাঝে গর্ত করে একভাগ কিমার মিশ্রণ দিন। আলু দিয়ে ঢেকে প্যাটিসের আকৃতি দিন। এভাবে কয়েকটি প্যাটিস তৈরি করে নিন। প্যাটিসে অল্প করে কর্ন ফ্লাওয়ার ছিটিয়ে নিন।
৮) নন স্টিক তাওয়াতে অল্প করে তেল গরম করে নিন। মাঝারি আঁচে প্যাটিস ভেজে নিন। কিচেন পেপারে তেল ঝরিয়ে নিন।
গরম গরম পরিবেশন করুন চাটনি ও সসের সাথে।

 

জেনে নিন শাড়ি পরার ভিন্নরকম কিছু টিপস্

শাড়ি আর নারী! একে অপরকে ছাড়া যেন অসম্পূর্ণ। যতই মর্ডান ফ্যাশন থাকুক না কেন, শাড়িতে যে নারী অপরূপ সুন্দরী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু শাড়ির ফ্যাশনেও বা কেন বাদ পড়বে আধুনিকতার ছোঁয়া? তাই শাড়ি পরার স্টাইলে আনুন কিছু নতুনত্ব। জেনে নিন কয়েকটি টিপস, তাতে সাধারণের মধ্যে আপনি হয়ে উঠবেন অনন্যা।

১.চটজলদি শাড়ির সাজে আনুন নতুনত্ব। শাড়ির আঁচলটি টাই আকারে জড়িয়ে নিন গলায়। দেখবেন, কেমন অসাধারণ সুন্দর দেখাবে আপনাকে।

২.একটু অন্যভাবে সাজতে, ব্লাউজের বদলে টি-শার্টের উপর শাড়ি পরতে পারেন।

৩.স্কার্ফের স্টাইলে জড়িয়ে নিন শাড়ির আঁচল।

৪.ঐতিহ্যে মোড়া স্লিভলেস ব্লাউজ ট্রাই করুন। আপনার সাজে নতুন ঝলক আনতে শাড়ির উপর লম্বা কোট মানাবে দারুণ।

৫.এক রঙা শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন প্রিন্টেড শাড়ি।

৬.শাড়ি ও স্নিকার্স একসঙ্গে! অনেকে তা কল্পনাও করতে পারেন না। তবে আপনি যে আত্মবিশ্বাসী ও সাহসী তা বোঝাতে শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন একজোড়া স্নিকার্স।

 

৫টি উপায়ে খরচ কমান ইউরোপ ভ্রমণে

ইউরোপ ভ্রমণে যাবেন? প্যারিস, লন্ডন, রোম যে কোন ভ্রমণকারীর সারা জীবনের স্বপ্ন ইউরোপের স্বাদ গ্রহণ। প্রতিটি দেশ যেন ভিন্ন ভিন্ন স্বর্গ। কোথাও খুলেছে দর্শনের স্কুল, কোথাও আছে আজব সব জাদুঘর, কোথাও গেলে জানা যায় সভ্যতার আদ্যোপান্ত, কোথাও বাস করে মিথলজির সবগুলো চরিত্র। বিচিত্র এই মহাদেশ ভ্রমণের আগ্রহ একেক ভ্রমণকারীর কাছে একেকরকম। কিন্তু আপনি যদি হন ব্যাকপ্যাকার, শুধু আগ্রহ নয় ভাবতে হবে বাজেটের কথাও।
আপনাদের জন্য রইল কিছু টিপস-
টিকেট কেটে ফেলুন আগেভাগে
প্লেনের টিকেট অগ্রীম কাটার বেশ কিছু সুবিধার মধ্যে একটি, এতে আপনার খরচ কমবে। যারা নিয়মিত ভ্রমণ করেন প্লেনে তারা ভালোই জানেন ব্যাপারটি। মাত্র ২/৩ মাস আগে টিকেট কাটার দূর্দান্ত সুবিধা পাবেন আপনি। আগে থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে গেলে আপনি অবশ্যই উল্লেখযোগ্য ডিসকাউন্ট বা ছাড় পাবেন। এই সুযোগ কেন নেবেন না? অনেক ধরেই নিশ্চয়ই প্ল্যান করছেন। বন্ধুরা মিলে টিকেট করে রাখুন না!
হোটেলে নয়, হোস্টেলে থাকুন
ইউরোপের বেশিরভাগ হোস্টেল পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপদ। হোটেলে থাকা নিঃসন্দেহে ব্যাপক ব্যয়সাধ্য। তাই হোস্টেল বেছে নিন। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আপনি এই সংক্রান্ত তথ্য পাবেন। যেমন কেমন রুম, রুমে কি কি সুবিধা আছে, ভাড়া কত সব জানতে পারবেন। ডুম স্টাইলের রুমগুলো সবচেয়ে সস্তা হয়, কারণ সেখানে আপনাকে অপরিচিতদের সাথে রুম শেয়ার করতে হবে। নিরাপত্তার কোন চিন্তা নেই। সানন্দে উঠে যেতে পারেন। দেশ দেখার সাথে সাথে নতুন বন্ধুও পাবেন। ভ্রমণে পাওয়া বন্ধুরা কিন্তু মাটি খুঁড়ে পাওয়া রত্নের মতই দামী।
সোল্ডার সিজনে যান
ইউরোপে সাধারণত বসন্ত বা শরত হল সোল্ডার সিজন। এই সময় একেবারে শীত পড়ে যায় না। রোদ থাকে। আবার ট্যুরিস্ট কম থাকায় সব কিছুর খরচ কমে যায়। নিজের মত ঘুরে বেড়াতে পারবেন, গাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে যেতেন পারবেন লং ড্রাইভে। পিক সিজনের তুলনায় কত যে সাশ্রয়ী হবে আপনার ভ্রমণ আপনি ভাবতেও পারবেন না। জ্বী, খাবারও পাবেন সস্তা। শপিং করতে পারবেন কম খরচে।
ফ্রি মিউজিয়াম ডে
প্রতিটি মিউজিয়ামের একটি দিন থাকে যেদিন আপনি বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন। ভাল অংকের টাকা বেঁচে যাবে আপনার। কষ্ট করে ইন্টারনেটে শুধু চেক করে নিন কবে মিউজিয়ামটি বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছে। সপ্তাহের সেই দিনটিতে চলে যান। ব্যাস।
বাসেবাউট
এটি ব্যাকপ্যাকারদের জন্য খুবই জনপ্রিয় যাতায়াত সেবা। বাসেবাউট এর রুট আছে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে। আর এদের বেশীরভাগ পাসই আপনাকে যেখানে ইচ্ছা নামার এবং ওঠার সুবিধা দেবে। এই বাসের ৩৩ টিরও বেশী জনপ্রিয় ভ্রমণস্থানে স্টপেজ আছে। আরেকটি মজার সুবিধা হল, একই মানুষের সাথে বার বার দেখা হবে বাসে আপনার, ফলে বন্ধুও পেয়ে যাবেন।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

মাহরাম আত্মীয় ছাড়া কোনো নারী একাকি সফর বা হজ করতে পারবে কিনা?

অনেক মহিলাকে বিমান কিংবা অন্য যানবাহনে উঠার সময় বিদায় জানাতে দু,একজন মাহরাম নিকটজন হাযির থাকে, আবার তাকে স্বাগত জানাতেও এমন দু,একজন হাযির থাকে। কিন্তু পুরো সফরে তার পাশে থাকে কে? যদি বিমানে কোনো ত্রুটি দেখা দেয় এবং তা অন্য কোনো বিমানবন্দরে অবতরণে বাধ্য হয় কিংবা নির্দিষ্ট বিমানবন্দরে অবতরণে বিলম্ব ঘটে বা উড্ডয়নের সময়সূচী পরিবর্তন হয়, তাহলে তখন অবস্থা কি দাঁড়াবে?

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কোনো মহিলা স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম এমন কোনো আত্মীয়কে সাথে না নিয়ে যেন ভ্রমণ না করে”। [সহীহ বুখারী; সহীহ মুসলিম; মিশকাত হাদীস নং ২৫১৫ (হজ্জ অধ্যায়)]

[এ নির্দেশ সকল প্রকার সফরের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য; এমনকি হজের সফরের ক্ষেত্রেও।] মাহরাম কোনো পুরুষ তাদের সাথে না থাকলে দুশ্চরিত্রের লোকদের মনে তাদের প্রতি কুচিন্তা জাগ্রত হওয়া অসম্ভব কিছু নয়। এভাবে তারা তাদের পিছু নিতে পারে। আর নারীরা তো প্রকৃতিগত ভাবেই দুর্বল। তারা তাদের মান, ইযযত, আব্রু নিয়ে সামান্যতেই বিব্রত বোধ করে। এমতাবস্থায় দুষ্টলোকেরা তাদের পিছু নিলে বাধা দেওয়া বা আত্মরক্ষামূলক কিছু করা তাদের জন্য কষ্টকর তো বটেই।

অনেক মহিলাকে বিমান কিংবা অন্য যানবাহনে উঠার সময় বিদায় জানাতে দু,একজন মাহরাম নিকটজন হাযির থাকে, আবার তাকে স্বাগত জানাতেও এমন দু,একজন হাযির থাকে। কিন্তু পুরো সফরে তার পাশে থাকে কে? যদি বিমানে কোনো ত্রুটি দেখা দেয় এবং তা অন্য কোনো বিমানবন্দরে অবতরণে বাধ্য হয় কিংবা নির্দিষ্ট বিমানবন্দরে অবতরণে বিলম্ব ঘটে বা উড্ডয়নের সময়সূচী পরিবর্তন হয়, তাহলে তখন অবস্থা কি দাঁড়াবে? [ট্রেন, বাস, স্টীমার প্রভৃতি সফরেও এরূপ ঘটনা হর-হামেশা ঘটে। তখন কী যে অবস্থায় সৃষ্টি হয় তা ভুক্তভোগী ছাড়া বুঝিয়ে বলা কষ্টকর। সুতরাং সাথে একজন মাহরাম পুরুষ থাকা একান্ত দরকার, যে তার পাশে বসবে এবং আপদে-বিপদে ও উঠা-নামায় সাহায্য করবে।]

মাহরাম হওয়ার জন্য চারটি শর্ত রয়েছে। যথা-মুসলিম হওয়া, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন হওয়া ও পুরুষ হওয়া। যেমন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কোনো মহিলা যে আল্লাহ ও শেষ দিবসের ওপর ঈমান রাখে তার জন্য তিন দিন বা ততোধিক সফর করা বৈধ নয়; যদি না তার সাথে থাকে তার পিতা, তার পুত্র, তার স্বামী, তার ভাই অথবা তার কোনো মাহরাম পুরুষ”। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৪০

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

নাচে-গানে-পরিপূর্ণ বিনোদনধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চান সুবর্ণা

সুবর্ণা মুস্তাফা তার উত্তরসূরী অভিনয়শিল্পীদের জন্য এক আদর্শের নাম। বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীর তালিকা করলে সে তালিকায় সুবর্ণা মুস্তাফার নাম থাকবে প্রথম সারিতে। এই জনপ্রিয় শিল্পীই এবার সাবধান করেছেন অভিনেতা সাজু খাদেমকে।

তবে বাস্তবে নয়, ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠান সাজু সাবধান-এর বিশেষ অতিথি হয়ে এসে সুবর্ণা মুস্তাফা অনুষ্ঠান সঞ্চালক সাজুকে জানিয়েছেন, তার জীবনের মজার কিছু তথ্য।

গত ২৮ আগস্ট বিএফডিসি’তে এ অনুষ্ঠানের ধারণকার্য সম্পন্ন হয়। সাজুর প্রতিবেশীদের সঙ্গে মজার এক আড্ডার অতিথি হয়ে এসে সুবর্ণা তার বর্ণাঢ্য ক্যরিয়ার নিয়ে বলেছেন না জানা অনেক কথা, পরামর্শ দিয়েছেন তরুণ প্রজন্মকে, জানিয়েছেন দর্শকদের দেশিয় টিভি চ্যানেলে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজন আগের মত নাটক প্রচার করা। এজেন্সির কাছ থেকে নাটক ক্রয়ের পরিবর্তে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর উচিত স্বাধীনভাবে মেধাবী, গুণী, জনপ্রিয় নির্মাতাদের কাছ থেকে নাটক নেয়া।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে যে কোনো মুহূর্তে তিনি নির্মাণ করবেন নাচে-গানে-পরিপূর্ণ বিনোদনধর্মী একটি চলচ্চিত্র।

জেড আই ফয়সাল ও মনিরুজ্জামান খানের প্রযোজনায় সাজু সাবধান প্রচারিত হবে ঈদের ২য় দিন, রাত ৯টায়, মাছরাঙা টেলিভিশনে।

 

স্বনির্ভর পেশায় ৫টি উপায়ে ধরে রাখুন মোটিভেশন

আর নয় বসের অধীনে থাকা। এবার বাইরের পৃথিবীতে পা রাখার সময় আপনার। হোক সে পৃথিবী অনেক খারাপ, প্রতিযোগিতাপূর্ণ, কঠিন তবু নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে আপনাকে। স্বনির্ভরতা যখন আপনার সিদ্ধান্ত, তখন ঝুঁকি তো নিতেই হবে।
নেতৃত্ব নিজের হাতে নেওয়া নিঃসন্দেহে অনেক বড় দায়িত্ব নেওয়া। ভয় লাগাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেজন্য তো স্বপ্ন থেকে দূরে সরে যাওয়া যাবে না, তাই না? আত্মনির্ভরশীল প্রতিষ্ঠানে নিজেকে মোটিভেশন দিতে হয় নিজেরই। আসুন জেনে নিই কীভাবে নিজেই নিজেকে মোটিভেটেড রাখতে পারবেন সারাক্ষণ।
নিজেকে জানুন
আপনার মাঝে লুকিয়ে আছে অসীম ক্ষমতা। সেই ক্ষমতাকে চিনুন। বাজারে এখন প্রতিযোগিতা তুঙ্গে। সবাই নিজের আলাদা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে আগ্রহী। খেয়াল করে দেখুন, মাঠে সবাই নামে। কিন্তু সবাই টিকে থাকতে পারে না। টিকে থাকার জন্য চাই ধৈর্য্য, কৌশলী মন।
আপনার যদি একজন দূর্দান্ত ব্যবসায়ী মানসিকতা থাকে তাহলে কোনভাবে যেন এর কম ব্যবহার না হয়। আবার যদি সেটা না থাকে তাহলে নিজেকে গড়ে তুলতে শ্রম দিতে হবে আপনার। আপনার আত্মবিশ্বাস আপনার নিজের ভেতর থেকেই আসবে। যখন আপনি নিজেকে চিনবেন আপনি জানবেন আপনাকে কি করতে হবে। তখন আপনাকে কেউ হারাতে পারবে না।
নিয়মানুবর্তিতা
একজন নেতার জন্য নিয়মের গন্ডিতে আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি সব কাজ যত সময়মত করতে থাকবেন তত আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকবে। আপনার কোন কাজ জমে থাকবে না। এভাবে আপনার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে বহুগুণে।
প্রতিদিন রাতে নিজের একটি রুটিন করুন। কিভাবে পরদিন কাজ করবেন, কখন কি করবেন ঠিক করুন। দিনশেষে যখন মিলিয়ে দেখবেন সব কাজ ঠিকমত করতে পেরেছেন তখন পরদিন কাজ করার স্পৃহা আরও বেড়ে যাবে। আর কারও কাছ থেকে নিজের শ্রমের স্বীকৃতির প্রয়োজন হবে না আপনার। আপনি নিজেই নিজেকে বলবেন ‘সাব্বাস’!
নিজেকে মনে করিয়ে দিন কেন কি করছেন
চাকরিজীবন থেকে স্বনির্ভরতার এই সংগ্রামে আপনি নিজেই নিজেকে নিয়ে এসেছেন। এখানে আপনার কোন বস নেই বলে আপনি যদি হালকা চালে চলা শুরু করেন তাহলে কিন্তু বিপদ! সময় পেরিয়ে যাবে, বছর শেষে আপনার মনে হবে কিছুই করা হল না। তখন মনে হবে, সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল।
আপনার সিদ্ধন্তটি খুবই সাহসী। কিন্তু একে সগল করতে হলে হতে হবে পরিশ্রমী। নিজেকে সারাক্ষণ মনে করিয়ে দিন আপনার উদ্দেশ্য, নিজেই নিজেকে সজাগ রাখুন। একটা টার্গেট ঠিক করুন। সেটা এমন জায়গায় লিখে রাখুন যাতে সবসময় চোখে পড়ে।
বড় হন
এই বড় হওয়া শরীরে বা বয়সে বা মননে নয়। সফলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হল নিজের যোগাযোগের গন্ডিকে বাড়ানো। আপনার নেটওয়ার্ক বড় করুন। নিজেকে ছড়িয়ে দিন অনেক মানুষের মাঝে। নিজের গল্প বলুন। অবশ্যই পজেটিভ গল্প যা অন্যকে উদ্বুদ্ধ করে। মানুষকে শুধু ব্যবসায়িক দিক থেকে আবেগের দিক থেকেও নিজের সাথে যুক্ত করুন।
বড় হন, পরিপক্ক হন। নিজেকে প্রকাশ করুন উজ্জ্বল করে, আপনার ব্যবসার ভবিষ্যতও উজ্জ্বল হবে।
উৎসাহব্যঞ্জক বই
নিজেকে সব সময় মোটিভেটেড রাখতে ভাল বই এর বিকল্প নেই। স্বনির্ভর মানুষের গল্প পড়ুন, তাদের বক্তব্য, জীবনদর্শন জানুন। দেখবেন, আপনার সাহস বেড়ে গেছে অনেক গুণে। ঝুঁকি নেবার মানসিক ক্ষমতাও বেড়ে গেছে।
সবচেয়ে বড় কথা, এসব বই আপনাকে জানাবে কিভাবে শূণ্য থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হয়! কিভাবে কিছু মানুষ আপনার চেয়ে খারাপ অবস্থায় থেকেও আজ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব পরিণত হয়েছেন। কিছু মোটিভেশনাল উক্তি লিখে রাখুন, যখনই দূর্বল বোধ করবেন পড়বেন।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার,

 

শত বাধা পেরিয়ে অন্যের বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করে করেছে শারমিন

‘নিজেদের বাড়িঘর বলতে কিছুই নেই। নানার দেওয়া ত্রক টুকরো বসত ভিটায় একটা চালা ঘর আছে বাবা হোটেলের কর্মচারী আমরা দুই বোন খাওয়া খচরই হয় না তার মধ্যে লেখাপড়ার খরচ ও কাপড়চোপর দিবে কে?।আমি যখন ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ি তখন মামার বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করি রক্তের কোনো সর্ম্পক না থাকলেও মামা-মামী তাদের সন্তানদের মতোই আমাকে দেখে। তারাই আমার বাবা মা।’ কথাগুলো বলছিলেন এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শারমিন আক্তার। রৌমারী উপজেলার চাকতাবাড়ি গ্রামে যে বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করেছে ওই রাড়িতে কথা হয় শারমিন আক্তারের সঙ্গে।

শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমার বাবা মা খুবই গরীব। ভাগ্যকে মেনে নিয়েই আমি রাত জেগে লেখাপড়া করেছি। তার চেয়ে বড় ভরসা ছিল আমার আশ্রয়দাতা মামা-মামী। তারা যদি সহযোগিতা না করত তাহলে হয়তো লেখাপড়া অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যেত। হাজারো কষ্ট সহ্য করে লেখাপড়া করেছি। কারন আমার লেখাপড়া করার খুব ইচ্ছা। জানি না আমার ভাগ্যে লেখাপড়া আল্লাহ লেখছে কিনা। কারন আপনারা তো জানেন আমার বাবা মা’র সামর্থ নেই আমাকে পড়ানোর । এ অবস্থায় একজন মেয়ে হয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা আমার জন্য খুব কঠিন হবে। তবে আমি আরো লেখাপড়া করতে চাই।’

কুড়িগ্রামের রৌমারীর যাদুরচর ডিগ্রি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন শারমিন আক্তার। এর আগে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও এসএসসিতে অল্প কয়েক নম্বরের কারনে জিপিএ-৫ পায়নি সে। তার বাবা সাজেদুল ইসলাম কর্তিমারী বাজারে একটা চা-হোটেলের কর্মচারী। মা আছমা খাতুন অন্যের বাড়িতে ঝিএর কাজ করে। শারমিনের ছোট বোন সুমাইয়া খাতুন ৫ম শ্রেণিতে পড়ে।
চাকতবাড়ি গ্রামের জহুরুল ইসলাম। তিনি এবং তার স্ত্রী দু’জনেই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক শ্রেণীতেই দেখেছি মেয়েটির মেধা ভালো। কিন্তু পারিবারিক দুরাবস্থার কারনে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মেয়েটিকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। সেই থেকে আমার সন্তাদের সঙ্গে সে লেখাপড়া করে। তার পরনের কাপড়চোপড় থেকে শুরু করে প্রাইভেট পড়ার আমি বহন করে আসছি।’ জহুরুলের স্ত্রী আকতারা বেগম বলেন, ‘শারমিন আমাদের রক্তের সর্ম্পক না হলেও সে আমাদের সন্তান হিসেবেই দেখি। কথনও নিজের সন্তানের চেয়ে আলাদা দেখি না। কারন আমরা জানি তার বাবা মা খুবই গরীব। এর মধ্যে মেয়েটিকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিল তার বাবা মা কিন্তু আমরা তা হতে দেইনি। কারনে সে আরো লেখাপড়া করবে।’
শারমিন আক্তারের বাবা সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়ে আমরা হলেও বড় অইছে, লেহাপড়া করছে মাইনসের বাড়িত থাইকা । কারন আমরা তার খরচ দিবার পারি না। চা দোকানের সবাই কয় তোর মেয়ে তো ভালো রেজাল্ট করেছে। তখন আমার সব কষ্ট দূর হইয়া যায়। আবার চিন্তা করি এহন বড় কলেজে লেহাপড়া কিভাবে করব। আমগর তো কিছুই নেই।’

শারমিনের মা আছমা খাতুন বলেন, ‘মাইনসে কয় বড় কলেজে পড়তি মেলা ট্যাহা নাগবো। এত ট্যাহা পামু কই। গেদির বাপে তো চা দোহানে কাম করে।’
যাদুরচর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলম জানান, শারমিন আক্তার মেধাবি। তার পারিবারিক দুরাবস্থার জন্য আমরাও কলেজ থেকে সুযোগ সুবিধা দিয়েছি। তাকে একটু নার্সিং করলে ভবিষ্যতে খুবই ভালো করবে।

 

মজাদার পনির টিক্কা মাসালা রান্না করুন খুব সহজে

অনেকেই মনে করেন পনির দিয়ে তেমন কোন খাবার রান্না করা সম্ভব নয়। অথচ এই খাবারটি দিয়ে তৈরি করা সম্ভব মজার মজার সব খাবার। টিক্কা মাসালা খাবারটির নাম শুনলে চোখে ভেসে উঠে চিকেন কিংবা মাটন টিক্কা মাসালার ছবি। পনির দিয়েও টিক্কা মাসালা তৈরি করা সম্ভব। এটি স্বাদে, গন্ধে চিকেন টিক্কা থেকে কিছু কম নয়। আসুন তাহলে পনির টিক্কা মাসালার রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ:

২৫০ গ্রাম পনির

১ টি বড় লাল ক্যাপসিকাম

১টি বড় হলুদ ক্যাপসিকাম

১টি বড় সবুজ ক্যাপসিকাম

১টি বড় পেঁয়াজ

২০০ গ্রাম টকদই

১ চা চামচ আদা রসুনের পেস্ট

১/৪ চা চামচ মৌরি

২ চা চামচ লাল মরিচ গুঁড়ো

১/২ হলুদ গুঁড়ো

১/২ চা চামচ চাট মশলা

১/২ টা লেবুর রস

১ টেবিল চামচ সরিষা তেল

১ টেবিল চামচ মাখন

লবণ

সাজানোর জন্য

পুদিনা পাতা

পেঁয়াজের টুকরো

লেবুর টুকরো

প্রণালী:

১। পনিরকে ডাইস আকৃতিতে কেটে নিন।

২। একটি পাত্রে টকদই, মরিচ গুঁড়ো, চ্যাট মশলা, লবন, সরিষা তেল, হলুদ গুঁড়ো, মৌরি, আদা রসুনের পেস্ট এবং লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে নিন।

৩। এবার মশলার এই পেস্টে পেঁয়াজের টুকরো, ক্যাপসিকামের টুকরো এবং পনিরের টুকরো দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে ১৫ মিনিট মেরিনেইট করার জন্য রাখুন।

৪। একটি কাবাব শিকে প্রথমে ক্যাপসিকামের টুকরো, তারপর পনিরের টুকরো, এরপর ক্যাপসিকামের টুকরো এবং সবশেষে পনির দিয়ে দিন।

৫। একটি নন-স্টিক প্যানে তেল গরম করতে দিন। এতে শিকগুলো দিয়ে দিন।

৬। রান্না করতে থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত না ভালভাবে রান্না হয়। পনিরের উপর মাঝে মাঝে মাখন ব্রাশ করুন।

৭। দুই পাশ বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।

৮। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার পনির টিক্কা মাসালা।

 

গুচির নতুন ক্যানভাস শোল্ডার ব্যাগ

কিছুদিন পরপর সম্পূর্ণ নতুন এবং অপ্রত্যাশিত আইটেম বাজারে নিয়ে আসার জন্য বেশ পরিচিতি পেয়েছে বিখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ড গুচি। তাদের সংগ্রহে এবার যোগ হল ক্যানভাস শোল্ডার ব্যাগ। চলুন জেনে নেওয়া যাক তাদের এই আইটেমটি সম্পর্কে।

বিভিন্ন স্টাইল এবং ডিজাইনের এই ব্যাগগুলো সাথে নেওয়া যাবে বিভিন্ন রকম আউটফিটের সাথে। এছাড়া একেক রকম শোল্ডার ব্যাগ একেক রকম কাজের জন্য বিশেষভাবে মানানসই। নিচে এরকম কয়েকটির বিবরণ দেওয়া হল।

– ‘ডায়োনাইসিস জিজি সুপ্রিম ক্যানভাস শোল্ডার ব্যাগ’ বর্তমান সিজনের ফ্যাশন ট্রেন্ডগুলোর একটি। এটা একই সাথে ক্যাজুয়াল এবং ক্লাসিক। ব্যাগটি নিয়ে আপনি এক মিনিটেই চলে যেতে পারবেন স্মার্ট ক্যাজুয়াল লুকে।

– ‘বস্টন গুচি হ্যান্ডব্যাগ’ যেন কখনও পূর্ণ হয় না। আপনি আপনার দরকারি জিনিসপত্র সবসময় এতে নিয়ে ঘুরতে পারবেন। কারণ এতে রয়েছে এর জন্য যথেষ্ট জায়গা।

– ‘গুচি নুড স্টুডিও ক্রস-বডি ব্যাগ’ একটি ক্লাসিক এবং স্টাইলিশ ব্যাগ। যে কোন সময় আপনি এই ব্যাগ নিয়ে বের হতে হতে পারেন যখন আপনার খুব বেশি জিনিসপত্র সাথে না রাখলেও চলে। ব্যাগটি কয়েক কালারে পাওয়া যায়, যেমনঃ জিজি ব্ল্যাক, জিজি নুড এবং গুচির নিজস্ব স্টাইলে।

– ‘গুচি মনোগ্রামড ক্যানভাস লেদার ট্রাভেল ব্যাগ’ যে কোন জায়গায় ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত এবং ভ্রমনের জন্য একটি স্টাইলিশ আইটেম।

 

নারীর ক্ষমতায়নে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ: অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে ঢাকায় নবনিযুক্ত অষ্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বাংলাদেশে নবনিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে একজন চ্যাম্পিয়ন।’

অষ্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারকরণে আগ্রহী।’

‘আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই, বিশেষ করে জ্বালানি খাত এবং শিক্ষা খাতে’, উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে পারষ্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য শিগগিরই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা রয়েছে।

সন্ত্রাসকে বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, তার সরকার এই সমস্যা দূরীকরণে দেশব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ শিক্ষকসহ সারাদেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী গণসচেতনতা সৃষ্টির পদক্ষেপ নিয়েছি। এক্ষেত্রে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে।’

তিনি এ প্রসঙ্গে দেশের ৬৪টি জেলায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করে তার সরকারের জনমত সৃষ্টির উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী সে সময় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, ক্রীড়া, সংস্কৃতি- প্রভৃতি বিষয়ে আরও বৃহৎ পরিসরে সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানান।

নারীর উন্নয়নে তার সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোনো দেশই তাদের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করা ব্যতীত এগুতে পারে না।’

বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীরা এগিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা এখন প্রায় প্রতিটি পর্যায়েই পুরুষের কাছাকাছি অবস্থানে চলে এসেছে। শিক্ষা, ক্রীড়া এবং সৃজনশীল কর্মকাণ্ড- কোনো কিছুতেই তারা আর পিছিয়ে নেই।

মেয়েরা শিক্ষাক্ষেত্রে বরং ছেলেদের থেকে এগিয়ে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

স্থানীয় সরকারে বিশেষ করে ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনে শতকরা ৩০ ভাগ আসন নারীদের দিয়ে পূরণের বিধান রাখা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও জানান, প্রশাসন, বিচার বিভাগ, সশস্ত্রবাহিনী এবং আইন-শৃঙ্খলা রাক্ষাকারী বাহিনীতে নারীরা কর্মরত রয়েছে উল্লেখ করে দেশের সকল শ্রেণি পেশার ক্ষেত্রেই উচ্চপদে নারীরা আসীন হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকার কথা উল্লেখ করে এই সম্পর্ক সেই ১৯৭২ সালে প্রথম অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ভুক্ত (ওইসিডি) দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের সময় থেকেই বলেও উল্লেখ করেন।

সে সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া সরকার ও জনগণের মূল্যবান অবদানের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম সে সময় উপস্থিত ছিলেন।

 

বেলাল খানের সুরে তিন তারকার ‘একই স্বপ্ন’

সংগীতের দুই তারকা বোন ফাহমিদা নবী ও সামিনা চৌধুরী। ব্যক্তিজীবনে দু’জনার মধ্যে মধুর সম্পর্ক থাকলেও সচরাচর এক অ্যালবামে পাওয়া যায় না তাদের গান। তবে এবার সেটি পাওয়া যাচ্ছে। দু’জনে গেয়েছেন ‘একই স্বপ্ন’ শিরোনামের একটি বিশেষ অ্যালবামে।

এতে দুই বোনের সঙ্গে এবারই প্রথম অ্যালবামে গাইলেন সংগীতের আরেক প্রিয় মুখ শারমিন রমা। গানের পাশাপাশি যাকে সংবাদ পাঠিকা হিসেবেও জেনে থাকেন দর্শকরা। আসছে ঈদ উপলক্ষে সদ্য রেকর্ড শেষ হওয়া বিশেষ এই অ্যালবামটির সুর করেছেন বেলাল খান। গান লিখেছেন রবিউল ইসলাম জীবন ও নীহার আহমেদ।

এই ঈদে সিএমভির ব্যানার হয়ে জিপি মিউজিকে প্রকাশ পাচ্ছে তিন গানের ‘একই স্বপ্ন’। অ্যালবামটি প্রসঙ্গে বেলাল খান বলেন, ‘এটা আমার সৌভাগ্য। তিনজন অসম্ভব গুণী শিল্পীর কাজ করেছি এবার। আমি চেষ্টা করেছি নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার। এ ক্ষেত্রে উনাদের সহযোগিতাও পেয়েছি। আশা করছি উনাদের কণ্ঠে এবার নতুন কিছু পাবেন শ্রোতারা।’

এদিকে সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘বেলাল খুবই ভালো কাজ করছে এখন। আমাকে অসাধারণ একটি গান গাইতে দিয়েছে সে। এক কথায় মুগ্ধ গানটি গেয়ে।’

‘একই স্বপ্ন’ অ্যালবামের গান তিনটি হলো, ‌’পিপিলিকা’, ‘একই স্বপ্ন’ এবং ‘আমি প্রশ্ন হয়ে যাই’।

 

তাহাজ্জুদের নামাজ কি, কেন এবং কীভাবে আদায় করতে হয়?

রাসূল (সা.) যেভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন- কখনও মধ্যরাতে, কখনও তার কিছু আগে অথবা পরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুর কয়েক আয়াত পড়তেন। তারপর মিসওয়াক ও অজু করে নামাজ পড়তেন। অর্ধ রাতের পরে, রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম।

তাহাজ্জুদ শব্দটি আরবি। এর ব্যবহার পবিত্র কোরআনে আছে। তাহাজ্জুদ শব্দটি নিদ্রা যাওয়া ও জাগ্রত হওয়া এই পরস্পরবিরোধী দুই অর্থে ব্যবহৃত হয়। পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ইসরাইলে ৭৯ নং আয়াতের অর্থ এই যে, রাতের কিছু অংশ কোরআন পাঠসহ জাগ্রত থাকুন। আয়াতে উল্লেখিত ‘বিহী’ সর্বনাম দ্বারা কোরআন বোঝানো হয়েছে। (মাজহারি)। কোরআন পাঠসহ জাগ্রত থাকার অর্থ নামাজ পড়া। এ কারণেই শরিয়তের পরিভাষায় রাত্রিকালীন নামাজকে তাহাজ্জুদ নামাজ বলা হয়। সাধারণত এর অর্থ এভাবে নেয়া হয় যে, কিছুক্ষণ নিদ্রা যাওয়ার পর যে নামাজ পড়া হয় তাই তাহাজ্জুদের নামাজ। কিন্তু তফসিরে মাজহারিতে এভাবে বলা হয়েছে, আয়াতের অর্থ এতটুকুই যে, রাতের কিছুক্ষণ নিদ্রা যাওয়ার পর জাগ্রত হয়ে নামাজ আদায় করলে যেমন এ অর্থ ঠিক থাকে, তেমনি প্রথমেই নামাজের জন্য নিদ্রাকে পিছিয়ে নিলেও এ অর্থের ব্যতিক্রম হয় না। তাই তাহাজ্জুদের জন্য প্রথমে নিদ্রা যাওয়ার শর্ত কোরআনের অভিপ্রেত অর্থ নয়।

তাছাড়া কোনো কোনো হাদিস দ্বারা তাহাজ্জুদের এ সাধারণ অর্থ প্রমাণ করা হয়েছে। হজরত হাসান বসরি (রা.) বলেন, এশার পরে পড়া হয় এমন প্রত্যেক নামাজকে তাহাজ্জুদ বলা যায়। তবে প্রচলিত পদ্ধতির কারণে কিছুক্ষণ নিদ্রা যাওয়ার পর পড়ার অর্থে বোঝা দরকার। এর সারমর্ম এই যে, তাহাজ্জুদের আসল অর্থে নিদ্রার পরে হওয়ার শর্ত নেই এবং কোরআনের ভাষায়ও এরূপ শর্তের অস্তিত্ব নেই; কিন্তু সাধারণত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম শেষ রাতে জাগ্রত হয়ে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন। তাই এভাবে পড়াই উত্তম। (ইবনে কাসির)। তাহাজ্জুদ নামাজের প্রচলন ঠিক কখন থেকে শুরু হয়েছিল তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও তাহাজ্জুদ নামাজের নির্দেশ সর্বপ্রথম পাওয়া যায় সূরা মুজ্জাম্মিলের প্রথম দিকের আয়াত নাজিল হওয়ার পর। আর সূরা মুজ্জাম্মিল যেহেতু ইসলামের শুরুতে কোরআন অবতরণের প্রাথমিক যুগে অবতীর্ণ হয়েছে। তাই বলা যায়, ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকেই তাহাজ্জুদের যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু শুরু থেকে তাহাজ্জদু নামাজ ফরজ ছিল।

হজরত আয়েশা (রা.) ও বাগভী (রহ.) বলেন, সূরা মুজ্জাম্মিলের নির্দেশানুযায়ী তাহাজ্জুদ তথা রাতের নামাজ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সমগ্র উম্মতের ওপর ফরজ ছিল। ওই আয়াত দ্বারা তাহাজ্জুদ নামাজ কেবল ফরজই করা হয়নি, বরং তাতে রাতের কমপক্ষে এক-চতুর্থাংশ মশগুল থাকাও ফরজ করা হয়েছিল। কারণ আয়াতের মূল আদেশ হচ্ছে কিছু অংশ বাদে সারা রাত নামাজে মশগুল থাকা। ইমাম বাগভী (রহ.) বলেন, এ আদেশ পালনার্থে রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম অধিকাংশ রাত তাহাজ্জুদের নামাজে ব্যয় করতেন। ফলে তাদের দুই পা ফুলে যেত এবং আদেশটি বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এভাবে পূর্ণ একবছর অতিবাহিত হওয়ার পর সূরা মুজ্জাম্মিলের শেষ আয়াত নাজিল হওয়ায়, দীর্ঘক্ষণ নামাজে দ-ায়মান হওয়ার বাধ্যবাধকতা রহিত করে দেয়া হয় এবং বিষয়টি ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দিয়ে ব্যক্ত করা হয় যে, যতক্ষণ নামাজ পড়া সহজ মনে হয়, ততক্ষণ নামাজ পড়াই তাহাজ্জুদের জন্য যথেষ্ট। এ বিষয়বস্তু আবু দাউদ ও নাসাঈতে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে। তাহাজ্জুদ নামাজের এ বিধান বলবৎ ছিল পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মেরাজের রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আদেশ অবতীর্ণ হলে তাহাজ্জুদ নামাজের ফরজ হুকুম রহিত হয়ে যায়। তবে তারপরও তাহাজ্জুদ সুন্নত রয়ে যায়। কারণ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরাম সর্বদা নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়তেন। (মাজহারি)। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে থাক। এ নামাজ তোমার জন্য অতিরিক্ত। শিগগিরই আল্লাহ তোমাকে মাকামে মাহমুদ দান করবেন। (বনি ইসরাইল : ৭৯)।

হাদিসে কুদসিতে রয়েছে, যে বান্দা আমাকে ভালোবাসার বাদী করে অথচ সারা রাত ঘুমিয়ে কাটায় সে তার দাবিতে মিথ্যাবাদী। এ জন্য যে, সে কেমন প্রেমিক যে, তার মাহবুবের মহব্বত কামনা করেন। অথচ আমি তার অপেক্ষায় থাকি। সে যদি তার দাবিতে সত্যবাদী হতো তাহলে অবশ্যই আমার ডাকে সাড়া দিত। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, হজরত আবদুল্লাহ বিন সালাম (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) যখন মদিনায় তাশরিফ আনেন, তখন প্রথম যে কথাগুলো তাঁর মুখ থেকে শুনি তা হলো- হে লোকজন! ইসলামের প্রচার-প্রসার করো, মানুষকে আহার দান করো। আত্মীয়তা অটুট রাখো, আর যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকবে তখন তোমরা রাতে নামাজ পড়তে থাকবে। তাহলে তোমরা নিরাপদে বেহেশতে যাবে। (হাকেম, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি)। রাসূল (সা.) বলেছেন, ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট নামাজ হলো রাতে পড়া তাহাজ্জুদ নামাজ। (মুসলিম, আহমাদ)।

রাসূল (সা.) যেভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন- কখনও মধ্যরাতে, কখনও তার কিছু আগে অথবা পরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুর কয়েক আয়াত পড়তেন। তারপর মিসওয়াক ও অজু করে নামাজ পড়তেন। অর্ধ রাতের পরে, রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম। ফজরের নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত পড়া যায়। তবে ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে এশার নামাজের পর পড়লে তাহাজ্জুদের সুন্নত আদায় হবে। তাহাজ্জুদ নামাজ সর্বনিম্ন দু’রাকাত। সর্বোচ্চ আট রাকাত পড়া উত্তম। তবে আরও বেশি পড়া জায়েজ আছে। দু’রাকাত দু’রাকাত করে যথাসম্ভব রুকু, সেজদা ও কেরাত লম্বা করে একাগ্রচিত্তে পড়া ভালো। তাহাজ্জুদের নামাজ ঘরে পড়া উত্তম। তবে মসজিদে পড়লেও ক্ষতি নেই। রমজান ছাড়া মাঝে মাঝে জামাতে পড়া জায়েজ আছে। তবে নিয়মিত নয়। কিরাত আস্তে অথবা জোরে পড়া জায়েজ আছে। তবে কারও কষ্ট হলে আস্তে পড়া ভালো।

তাহাজ্জুদের নামাজ হলো আল্লাহর দিদার লাভের সর্বোত্তম উপায়। যুগে যুগে যত মানুষ আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের প্রধান আমল ছিল রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া। অতএব আমাদের সবার উচিত তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব দেয়া।

সময়
অর্ধ রাতের পরে। রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম। তবে ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে এশার নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নত ও বিতরের আগে তা পড়ে নেয়া জায়েজ আছে।

রাকাত সংখ্যা
সর্বনিম্ন দুই রাকাত। আর সর্বোচ্চ ৮ রাকাত পড়া উত্তম। তবে আরও বেশি পড়া জায়েজ আছে। এরপরে বিতর নামাজ পড়া।

পড়ার নিয়ম
দুই রাকাত দুই রাকাত করে যথাসম্ভব লম্বা কেরাত, লম্বা রুকু ও সেজদা সহকারে একান্ত নিবিষ্ট মনে পড়া।

পড়ার স্থান
ঘরে পড়া উত্তম। তবে মসজিদে পড়াও জায়েজ আছে।

কেরাত
উঁচু বা নিচু উভয় আওয়াজে পড়া জায়েজ আছে। তবে কারও কষ্টের কারণ হলে চুপিচুপি পড়া কর্তব্য।

জামাতে পড়া
রমজান ছাড়া অন্য সময় মাঝেমধ্যে জামাতে পড়া জায়েজ আছে। তবে নিয়মিতভাবে নয়।

লিখেছেন : মুহাম্মদ আরিফুর রহমান জসিম
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

নতুন কোম্পানির নাম হবে কেমন?

নামে কি আসে যায়? শেক্সপিয়ার বলেছিলেন, “a rose by any other name would smell as sweet”। কিন্তু কোম্পানির ক্ষেত্রেও কি তাই? না। একটা কোম্পানির নাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন নতুন ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন তখন অবশ্যই নাম নির্বাচনে বিশেষ গুরুত্ব দিন। খেয়াল রাখুন এই বিষয়গুলো-
 
সহজ একটি শব্দ নিন
জটিল অর্থবহ কোন শব্দকে নাম হিসেবে বেছে নিতে হবে এমন নয়। বরং নামটি হতে পারে একেবারেই সাধারণ একটি শব্দ। যেমন- অ্যাপল। সহজ একটি শব্দ। কিন্তু সহজেই মনে থাকবে, উচ্চারণে সহজ, পরিচিত একটি শব্দ। এধরণের শব্দ আমাদের মনে ছাপ ফেলে দ্রুত।
পরিচিত শব্দ
ভিন্ন ভাষার শব্দের চেয়ে পরিচিত দেশী কোন শব্দ বেছে নিতে পারেন। বিদেশী শিব্দ হলেও সেটা যেন জনসাধারণের শব্দ ভান্ডারের কোন শব্দ হয়। যেমন, ইংরেজী শব্দগুলো বিদেশী হলেও আমরা বুঝতে পারি। গ্রীক অনেক শব্দই আমাদের পরিচিত। এই বিভিন্ন ধরনের শব্দ থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দেরটি।
প্রাসঙ্গিকতা জরুরী নয়
আপনার কোম্পানি হয়ত পোশাক বিক্রী করবে। তাই বলে কোম্পানির নামও পোশাক সংশ্লিষ্ট হতে হবে তা নয়। বেশীরভাগ বিখ্যাত কোম্পানির দিকে খেয়াল করুন, তাদের পণ্য এবং নাম একেবারে আলাদা। এটা ক্রেতার মনোযোগ আকর্ষণের একটি কৌশল। ভিন্ন একটি শব্দ সহজেই মনে খটকা তৈরি করে, প্রশ্ন তৈরি করে। ফলে সেটার প্রতি মনোযোগ বেশী দেওয়া হয়।
কমন কিন্তু ভিন্ন একটি শব্দ নিন
বাজারে অনেক কোম্পানি। নতুনভাবে আপনার কোম্পানির নাম শুনে ক্রেতা কিভাবে সেটা মনে রাখবে এই দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। এমন একটি শব্দ নাম হিসেবে বেছে নিন যেটা মূহূর্তে ভাল লাগা তৈরি করে। অ্যাপলের কথাই ভাবুন। সফটওয়্যার কোম্পানি কিন্তু ফলের নামে নাম। নাম শুনেই আপনার মনে হবে, এটা কেমন কথা! কিন্তু নামটি মনে রয়ে যাবে আপনার ওই প্রশ্নটির জন্যই।
দীর্ঘসময়ের কথা চিন্তা করুন
আপনার কোম্পানি নিয়ে নিশ্চয়ই আপনার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আছে। নাম একবার রেখে পরিবর্তন করা, নতুন নাম আবার পরিচিত করা খুবই ঝামেলার কাজ। তাই আগেই দেখুন, যে নামটি আপনি নিচ্ছেন সেটি আগেই অন্য কোন কোম্পানি ব্যবহার করছে না তো? ভাল করে যাচাই-বাছাই করে নিন। শুধু অনলাইনে নয়, অফলাইনেও। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, নাম নিবন্ধনের সময় জানা যায় নামটি আগেই নিবন্ধিত। দীর্ঘমেয়াদে কাজে লাগাতে হলে সব দিকে খোঁজ নিন।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

সবুজ আপেল যে কারণে বেশি বেশি খাওয়া ভালো

সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় যে ফলটি তা হচ্ছে আপেল। বেশিরভাগ মানুষই লাল আপেল খেয়ে থাকেন। যেহেতু লাল আপেল হজমে সাহায্য করে, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, দাঁতের ছিদ্র হওয়া প্রতিরোধ করে এবং নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে। আপেল নিয়ে প্রচলিত জনপ্রিয় প্রবাদ – “প্রতিদিন একটি আপেল খেলে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়না” এর কথা মনে আসলেই আমাদের মনে পড়ে লাল আপেলের কথা। লাল আপেলের নিকটাত্মীয় হচ্ছে সবুজ আপেল যার কৃতিত্বের স্বীকৃতি সে পায়না। সবুজ আপেল ভিটামন এ, সি ও কে তে সমৃদ্ধ। এছাড়াও সবুজ আপেল আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্ল্যাভোনয়েডের সমৃদ্ধ উৎস। নিয়মিত সবুজ আপেল খাওয়ার উপকারিতাগুলোর বিষয়ে জেনে নিই চলুন।

১। ফুসফুসের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়

গবেষণায় জানা যায় যে, সবুজ আপেল খেলে অ্যাজমার ঝুঁকি কমে যেহেতু এটি ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ। অ্যাজমার ঝুঁকি কমানোর সাথে ফ্ল্যাভোনয়েড সম্পর্কযুক্ত বলে  দাবী করেন গবেষকেরা। এটি ছাড়াও সবুজ আপেল ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় নারীদের ক্ষেত্রে ২১% পর্যন্ত।

২। ব্লাড ক্লট প্রতিরোধে সাহায্য করে

সবুজ আপেলে রুটিন নামক রাসায়নিক যৌগের উপস্থিতির কারণে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর কারণ হচ্ছে রুটিন রক্ত জমাট বাঁধার এনজাইমকে আটক করে ফেলে। গবেষকেরা বলেন এই আবিষ্কারটি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস  সবুজ আপেলের জুস বা আস্ত সবুজ আপেল খেলে আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।

৩। মেটাবোলিজমের উন্নতি ঘটায়

সবুজ আপেল হজমের জন্য অত্যন্ত ভালো। এটি পেট ফাঁপা প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং পাকস্থলী থেকে যেকোন বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। সবুজ আপেলে ফাইবার থাকে বলে সহজে হজম হয় এবং বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি হতে পারে আদর্শ স্ন্যাক্স যা ক্ষুধা নিবারণ করে এবং অন্য চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখে।

৪। হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়

সবুজ আপেল খাওয়া নারীদের জন্য বিশেষ উপকারী কারণ এটি পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে এ পরিপূর্ণ থাকে। গবেষণায় জানা গেছে যে, ভিটামিন কে নারীদের অষ্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে এবং সার্বিক হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।

৫। অকালে ত্বকের বয়স বৃদ্ধির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে

সবুজ আপেল ভিটামিন এ, সি এমনকি অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ও ভালো উৎস। তাই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধ করে এবং ত্বককে স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে সবুজ আপেল।

৬। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে

যদি আপনি আপনার চোখ ও দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে চান তাহলে সবুজ আপেল খাওয়া শুরু করুন। যেহেতু সবুজ আপেলে ভিটামিন এ থাকে তাই এটি চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় কাজ করে।

৭। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ভালো

যদি আপনি ডায়াবেটিকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে লাল আপেলের পরিবর্তে সবুজ আপেল খান। ডাক্তারদের মতে সবুজ আপেলে লাল আপেলের তুলনায় চিনির পরিমাণ কম থাকে এবং ফাইবার বেশি থাকে। সবুজ আপেল টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

৮। কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ প্রতিরোধ করে

সবুজ আপেল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ অন্যান্য খাদ্য খেলে কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজের ঝুঁকি ৩৫% কমে। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সমস্ত নারীরা লাল ও সবুজ আপেল উভয়টিই নিয়মিত খান তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ১৩-২২% পর্যন্ত কমে। এর কারণ এই ফলটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে।

 

লিখেছেন-
সাবেরা খাতুন
ফিচার রাইটার

 

সিঙ্গাপুরের জালে বাংলাদেশের গোল উৎসব

এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বে বাংলাদেশের জয়রথ ছুটছেই। প্রথম ম্যাচে ইরানকে ৩-০ গোলে হারানোর পর আজ সোমবার সিঙ্গাপুরের জালে গোল উৎসব করেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী দল।

সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে সিঙ্গাপুরকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে গোল করেছেন কৃষ্ণা রাণী ও অনুচিং মগিনি। বাকি গোলটি করেন মৌসুমী।

এদিন খেলার শুরুর থেকেই সিঙ্গাপুরকে চাপে রাখে বাংলাদেশ। একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে সানজিদা-মারজিয়া-মৌসুমীরা। বাররার প্রতিপক্ষের রক্ষনভাগ পরাস্ত করলেও গোলমুখে এসে খেই হারিয়ে ফেলছিলেন তারা।

প্রথম গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৩৯ মিনিট পর্যন্ত। সানজিদার উড়ন্ত ক্রসে ডি বক্সে দাঁড়ানো কৃষ্ণা জোরালো হেডে বল জড়িয়ে দেন জালে। ১-০ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

বিরতির পর দ্বিতীয় মিনিটেই দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। এবারো গোলদাতা কৃষ্ণা। মারিজিয়ার বাঁকানো ক্রসে বল পান কৃষ্ণা। সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক নুর ইজ্জাতিকে পরাস্ত করতে একটুও বেগ পেতে হয়নি তাকে।

৮৩ মিনিটে তৃতীয় গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। বদলি ফরোয়ার্ড অনুচিং মগিনি করেন গোলটি। আরেক বদলি ফরোয়ার্ড তহুরার মাটি কামড়ানো শট নুর ইজ্জাতির হাত ফসকে গেলে তাতে টোকা দিয়ে গোলটি করেন তিনি।

তিন মিনিট পর আবারও গোল। এবার বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন মৌসুমি। এরপর শেষ বাঁশি বাজার কিছুক্ষন আগে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান অনুচিং মগিনি। ফলে ৫-০ এর বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

এই বাছাই পর্বের গ্রুপসেরা দল পাবে ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে মূল আসরে খেলার টিকেট। তাতে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশের মেয়েরা। বাংলাদেশের পরবর্তী খেলা কিরগিজস্তানের বিপক্ষে, ৩১ আগস্ট।

 

না​ইবা দেখতে পেলাম

পারুল, হোসনে আরা, হাসনা হেনা, রেণু আরা—তাঁরা চার বোন। চারজনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তবে রান্নাসহ সংসারের প্রায় সব কাজ নিজেরাই করেন। শুধু এই চারজনই নন, তাঁদের আপন ভাইয়ের ছেলে ও মেয়েও চোখে দেখেন না। অনেক আগে চিকিৎসক দেখিয়েছেন। তবে কোনো লাভ হয়নি। চার বোনই এখন সরকারের প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। আট বোনের মধ্যে চার বোনই এখন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তাঁদের চার ভাই চোখে দেখেন।

গত ৩১ জুলাই ময়মনসিংহ শহরের ব্রাহ্মপল্লির ১১৫/এ বকুলতলা ঠিকানায় গিয়ে দেখা মেলে দুই বোন ও ভাতিজা-ভাতিজির। এক বোনের কাছ থেকে মুঠোফোনে খবর পেয়ে অন্য দুই বোনও হাজির হন। দুই বোন এক ভাইয়ের আশ্রয়ে আছেন। অন্য দুই বোন এক যুগের বেশি সময় আগে সরকারের কাছ থেকে একটি করে ঘর বরাদ্দ পেয়েছিলেন। সেসব ঘরে মূলত তাঁদের ছেলেরা থাকছেন। ছেলেদের সংসারে তাঁরা খুব একটা ভালো থাকছেন, তা জোর দিয়ে বলতে পারলেন না। কথা হলো চার বোনের সঙ্গে।

ভাইয়ের আশ্রয়ে পাওয়া টিনের ছোট এক চিলতে ঘর হোসনে আরার। ঘরে একটি খাট, সস্তা কাঠের নেট লাগানো ছোট একটি আলমারি, ছোট টেবিলে একটি গ্যাসের চুলা আর পাশেই একটি চেয়ার। ঘরে দিনের আলোতেও তেমন কিছু দেখা যায় না। ঘরটি এতটাই ছোট যে, বিছানা থেকে নামার পর কাজ করতে গেলে বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যায়।

হোসনে আরা এই প্রতিবেদকের সামনেই সকালের নাশতা খাওয়ার জন্য নুডলস রান্না করলেন। গ্যাসের চুলা ধরানো, মরিচ, পেঁয়াজ কাটাসহ সব কাজ একাই করলেন। তিনি জানালেন, বেশ কয়েক বছর একজনের বাসায় রান্নার কাজও করেছেন।

জাতীয় প্রতিবন্ধী সেবা সংস্থা নামের একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান হোসনে আরা। বিভিন্ন ধরনের ২৬২ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এ সংগঠনের সদস্য। অর্থের অভাবে বর্তমানে সংগঠনটির কার্যক্রম নেই বললেই চলে।

হোসনে আরা জানালেন, একটু বড় হওয়া পর্যন্ত চোখে দেখতেন। এখন কিছুই দেখেন না। স্বামী তাঁকে ফেলে চলে গেছেন। ১২ বছর বয়সী ছেলের দায়িত্বও এখন হোসনে আরার কাঁধে।

হাসনা হেনার বিয়ে হয় ছোট বয়সেই। তাঁর চোখের সমস্যারও শুরু অল্প বয়স থেকেই। বিয়ের পরে স্বামীর সংসারে ১০ দিন থাকার পর স্বামী তাঁকে ফেলে চলে যান। এখন থাকেন হোসনে আরার পাশের ঘরে, ভাইয়ের আশ্রয়ে। ভাইয়ের সংসারের রান্না করা ছাড়াও কাপড় ধোয়া, ঘর ঝাড়ু দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজ করে দেন। হাতের ইশারায় সব করতে পারেন বলে জানালেন।

আরেক বোন পারুলের বয়সের কারণে সামনের দুটি দাঁত পড়ে গেছে। স্বামী মারা গেছেন। তাঁর দুই ছেলে, এক মেয়ে। ছেলেমেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। একবার রান্না করার সময় গায়ে আগুন লেগে গিয়েছিল। তিনি এবং তাঁর আরেক বোন রেণু আরা ১৩ বছর আগে সরকারের কাছ থেকে একটি ঘর পেয়েছেন। ওই ঘরে থাকলেও পরিবারের আপনজনেরাই অনেক সময় এমন কথা বলেন, যা শুনে তাঁদের কষ্ট হয় বলে জানালেন।

রেণু আরার এক ছেলে, এক মেয়ে। তাঁরও স্বামী মারা গেছেন। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ঘরে ছেলে ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে থাকেন। এখন ভিক্ষা করে রেণু আরা নিজের খাদ্যের সংস্থান করেন। ছেলের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ নেই। তিনি বললেন, ‘ছেলেরই সংসার চলে না। ১০ জনের কাছে চাইলে একজন কিছু দেয়। তা দিয়েই চলে আমার।’ এই চার বোন সরকারের কাছ থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে তিন মাসে ১ হাজার ৫০০ করে টাকা পাচ্ছেন।

এই চারজনের আরেক বোন (চোখে দেখেন) রুমা বললেন, ‘দুই বোন সরকারের কাছ থেইক্যা ঘর পাইছে। অন্য দুই বোন দরখাস্ত দিছে। কিন্তু এখন তো টাকা চায়। টাকা না দিলে কোনো কিছু পাওয়া যায় না। এই দুই বোনের একটা গতি হইলে সবাই বাইচ্যা যাইত।’

হোসনে আরাসহ চার বোনের অনেক কষ্টের স্মৃতি আছে। হোসনে আরা বলেন, ‘ছেলের মুখ দেখতে পাইলাম না আজ পর্যন্ত। খালি চোখের পানি ফালাই। ছেলের মুখটা যদি দেইখ্যা যাইতে পারতাম।’ তিনি চার বোনের মধ্যে সবার ছোট।

হাসনা হেনা বললেন, ‘মানুষ কানা ডাকলে খারাপ লাগে। এইটা তো একটা গালি। তার চাইতে অন্ধ কইলেও হয়। ঘরের বাইরে বাইর হইলেই মানুষ খারাপ কথা কয়।’

এক বোন ছাড়া অন্য তিন বোন মানুষের কাছে হাত পাতেন না। তবে কেউ কিছু দিলে তা ফিরিয়ে দেন না। কেননা মানুষের সহায়তায় তাঁরা এখন পর্যন্ত অন্তত বেঁচে তো থাকতে পারছেন।

বাবার রেখে যাওয়া সামান্য সম্পত্তি নিয়ে বড় ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধের জের আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বলে জানালেন হোসনে আরা। যে ভাইয়ের আশ্রয়ে দুই বোন থাকতে পারছেন, ওই ভাইও তাঁদের ফেলে দিলে তাঁদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। হোসনে আরা বললেন, ‘আমরা বেশি কিছু চাই না। খালি চলার মতন একটি গতি হইলেই খুশি।’

 

সাফল্যের দৌড়ে সুমি

গল্পটা এভাবে বলি। ভাবুন, এ দেশেরই কোনো গ্রামের দুরন্ত এক কিশোরী। সারা দিন দৌড়ঝাঁপ আর খেলাধুলায় দিন কাটে তার। অন্য মেয়েদের মতো রান্নাবাটি খেলায় মন নেই, সারা দিন শুধু দুরন্তপনা! স্থির হওয়ার সময় যেন তার নেই। তাকে ছুটতে হবে, দূর থেকে বহু দূরে। যত দূরে গেলে মুঠো ভর্তি করে নেওয়া যায় সাফল্যের রত্নভান্ডার!

ক্রীড়াবিদ হতে হবে—এটাই জানেন সুমি l ছবি: এভারেস্ট একাডেমিগল্পের চরিত্রটার নামও জেনে নেওয়া যাক তবে। নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে ১২ আগস্ট এভারেস্ট একাডেমি আয়োজন করে ‘ঢাকা উইমেন্স ম্যারাথন’-এর প্রথম আসর। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়োজনে এই ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন সুমি আক্তার। বলছিলাম তাঁর গল্পই! সেনাবাহিনীর এই সৈনিক দৌড়েছেন ১০ জন নয়, ১০০, ২০০-ও নয়, অন্তত ৩০০ মেয়ের সঙ্গে। আর ৪৮ মিনিট ২২ সেকেন্ড খরচ করে প্রথম হওয়ার আগে ছুটেছেন টানা ১০ কিলোমিটার পথ!
সুমি আক্তারের পরিচয়টা অবশ্য এতটুকুই নয়। এর আগে ২০১৪ সালে জাতীয় পর্যায়ে ৮০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতেছিলেন তিনি। গত বছর তো ৮০০ মিটার, ১০০০ মিটার ও ১৫০০ মিটার—তিন ইভেন্টেই জিতেছেন সোনা। অপেক্ষায় আছেন এ বছরের জাতীয় পর্যায়ের ইভেন্টের।
সুমি ছোটবেলা থেকেই জানতেন, আর কিছু নয়, ক্রীড়াবিদই হতে চান। ‘ছোটবেলা থেকেই আমি বুঝতে পেরেছি, খেলাধুলা ছাড়া কিছুতেই আমি তেমন ভালো করতে পারব না। খেলাধুলাটা আমি ভালো পারি, তাই সেদিকেই আমার এগোনো উচিত।’

এগোতে চাইলেই নিশ্চয় তা খুব সহজ হয় না। জন্ম মানিকগঞ্জের এক গ্রামে। পরিবারের সহযোগিতা ছাড়া তো তা অসম্ভবের কাছাকাছি! দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে পরিবারে সবার ছোট মেয়ে সুমি নিজেও বললেন তা-ই। পরিবারের সহযোগিতা ছাড়া দৌড়ে যত পারদর্শীই হন না কেন, এত দূর আসা হতো না কখনোই! তবে তাঁর মুখের কাঠিন্য ও আত্মবিশ্বাসটা এমন, যেন ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা কখনো মনে উঁকিও দেয়নি!

১০ কিলোমিটারের এই ম্যারাথনেও শুধু অংশগ্রহণের জন্য নয়, জিততে পারেন, এই সম্ভাবনা মাথায় রেখেই অংশ নিয়েছিলেন, ‘আমরা যারা সেনাবাহিনীতে আছি, আমাদের প্রতিদিনই সাত-আট কিলোমিটার দৌড়াতে হয়। যখন ম্যারাথনের কথা জানলাম, ভাবলাম অল্প একটু চেষ্টা করলে জিতে যেতেই পারি।’ আর দৌড়ের সময় অর্ধেক পথ পার করে অনেকটা নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিলেন, এই দুস্তর পারাবার তিনিই সবার আগে পেরোবেন!

সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দিয়েছেন ২০১৪ সালে। পড়ালেখার আগ্রহটাও হারাননি, আগামী বছর এইচএসসি পরীক্ষা দেবেন তিনি। অগ্রযাত্রাতেই যাঁর সাফল্য, ভবিষ্যতে তিনি নিশ্চয়ই পেরোবেন আরও অনেক পথ। বললেনও তা-ই, ‘ভবিষ্যতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের জন্য গর্ব বয়ে আনতে চাই। দেশকে নিজের নাম দিয়ে আরও উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরতে চাই বিশ্বের মানচিত্রে।’

এই ম্যারাথন যে জন্য, অর্থাৎ নারীর ক্ষমতায়ন, সে ব্যাপারে কী ভাবেন সুমি? সুমির ভাবনা, ‘সমাজ ও জীবনের সব পর্যায়ে নিজের স্বতন্ত্র অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করা, নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারা এবং সে পথেই নিজের জীবনকে পরিচালনা করার পর্যায়ে পৌঁছানোই নারীর ক্ষমতায়ন।’

কথাবার্তা শেষের পথে, ছবি তোলার পালা। জয়ে যে খুব উচ্ছ্বসিত তিনি, এমনটা ছবি তোলার সময়ও মনে হলো না। যেন ‘এ আর এমন কী, আমাকে তো ছুটতে হবে আরও অনেক, অনেক দূর’!

সুত্রঃ প্রথম আলো

Save

Save

Save

Save

 

বিবাহিত নারীর সাথে করমর্দন করা যাবে কিনা?

নিঃসন্দেহে এটা হাতের যিনা। যেমন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দুচোখ যিনা করে, দুহাত যিনা করে, দুপা যিনা করে এবং লজ্জাস্থানও যিনা করে”। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৩৯১২; সহীহুল জামে, হাদীস নং ৪১২৬]

আজকের সমাজে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা অবারিতভাবে চলছে। ফলে অনেক নারী-পুরুষই নিজেকে আধুনিক হিসাবে যাহির করার জন্য শরী‘আতের সীমালংঘন করে পরস্পরে মুসাফাহা করছে। তাদের ভাষায় এটা হ্যান্ডশেক বা করমর্দন। আল্লাহর নিষেধকে থোড়াই কেয়ার করে বিকৃত রূচি ও নগ্ন সভ্যতার অন্ধ অনুকরণে তারা এ কাজ করছে এবং নিজেদেরকে প্রগতিবাদী বলে যাহির করছে। আপনি তাদেরকে যতই বুঝান না কেন বা দলীল-প্রমাণ যতই দেখান না কেন তারা তা কখনই মানবে না। উল্টো আপনাকে প্রতিক্রিয়াশীল, সন্দেহবাদী, মোহাচ্ছন্ন, আত্মীয়তাছিন্নকারী ইত্যাদি বিশেষণে আখ্যায়িত করবে।

চাচাত বোন, ফুফাত বোন, মামাত বোন, খালাত বোন, ভাবী, চাচী, মামী প্রমুখ আত্মীয়ের সঙ্গে মুসাফাহা করা তো এসব লোকদের নিকট পানি পানের চেয়েও সহজ কাজ। শরী‘আতের দৃষ্টিতে কাজটি কত ভয়াবহ তা যদি তারা দূরদৃষ্টি দিয়ে দেখত তাহলে কখনই তারা এ কাজ করত না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় তোমাদের কারো মাথায় লোহার পেরেক ঠুকে দেওয়া ঐ মহিলাকে স্পর্শ করা থেকে অনেক শ্রেয়, যে তার জন্য হালাল নয়”। [ত্বাবরাণী; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ২২৬।]

নিঃসন্দেহে এটা হাতের যিনা। যেমন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দুচোখ যিনা করে, দুহাত যিনা করে, দুপা যিনা করে এবং লজ্জাস্থানও যিনা করে”। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৩৯১২; সহীহুল জামে, হাদীস নং ৪১২৬]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অধিক পবিত্র মনের মানুষ আর কে আছে? অথচ তিনি বলেছেন, “আমি নারীদের সাথে মুসাফাহা করি না”। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ২৭৫৩; সহীহুল হাদীস, হাদীস নং ২৫৯০]

তিনি আরও বলেছেন, “আমি নারীদের হাত স্পর্শ করি না”। [ত্বাবরাণী; কাবীর, ২৪/৩৪২; সহীহুল জামে‘, হাদীস নং ৭০৫৪]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, “আল্লাহর শপথ, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাত কখনই কোনো বেগানা নারীর হাত স্পর্শ করে নি। তিনি মৌখিক বাক্যের মাধ্যমে তাদের বায়আত নিতেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮৬৬]

সুতরাং আধুনিক সাজতে গিয়ে যারা নিজেদের বন্ধুদের সাথে মুসাফাহা না করলে স্ত্রীদের তালাক দেওয়ার হুমকি দেয় তারা যেন হুঁশিয়ার হয়। জানা আবশ্যক যে, মুসাফাহা কোনো আবরণের সাহায্যে হোক বা আবরণ ছাড়া হোক উভয় অবস্থাতেই হারাম।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

৪টি কৌশলে হয়ে উঠুন পারফেক্ট ম্যানেজার

আমাদের পৃথিবী দিনে দিনে আরও গতিশীল হচ্ছে। ইন্টারনেটের দরুণ আগেই পৃথিবী চলে এসেছিল হাতের মুঠোয়, এখন স্মার্টফোন তাকে নিয়ে এসেছে নখদর্পনে। এই গতিশীলতার সাথে তাল মেলাতে হলে আমাদেরও হতে হবে দ্রুতগামী।
আপনি যখন নতুন একটি ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন প্রতিযোগিতার বাজারে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে ঝড়ের গতিতে। তৈরি করতে হবে এমন নেটওয়ার্ক যা যে কোন পরিস্থিতিতে আপনার কাজে লাগবে। আপনার টিম হতে হবে এমন যারা নির্দেশ পাওয়ার সাথে সাথে বাস্তবায়ণ করতে নেমে পড়বে আপনার স্বপ্নকে। কীভাবে হবেন এমন ম্যানেজার? জেনে নিন কৌশলগুলো-
১। টিম কমিউনিকেশন খুবই জরুরী
যোগাযোগ নেই মানেই ভুল বোঝাবুঝি। আপনার টিমের সাথে আপনাকে থাকতে হবে সারাক্ষণ সম্পৃক্ত। কখন কোন অর্ডার হল, সেটা কবে ডেলিভারি হবে, স্টকে আছে কিনা প্রতিটি বিষয়ে ওয়াকিভাল থাকতে হবে আপনাকে। আপনি যদি এতটুকু হাল ছেড়ে দেন, দেখবেন আপনার কর্মীরা ঠিকমত কাজ করছে না। কারণ জানতে চাইলে একজন আরেকজনকে দোষারোপ করছে। এই সুযোগ দেবেন না। নিজেই সব খোঁজ নেবেন। ফোন করে সাথে সাথে জেনে নেবেন। কোন তথ্য মনে রাখার চেষ্টা না করে লিখে রাখুন এবং একমাত্র লিখিত তথ্যের উপর বিশ্বাস করুন।
 
২। প্রতিষ্ঠানের অর্থের ব্যাপারে সবাইকে সিদ্ধান্ত নিতে দেবেন না
কথায় আছে ‘অধিক সন্নাসীতে গাজন নষ্ট’। আপনার সকল অর্থনৈতিক চুক্তি হতে হবে দুইটি পক্ষের মধ্যে। কোণ মধ্যস্থতাকারী রাখবেন না। টাকা যেমন সকল সুখের জন্য প্রয়োজন তেমনি এই টাকাই সকল অনর্থের মূল। তাই প্রতিষ্ঠানে আপনার যত আত্মার আত্মীয় থাকুক না কেন, সকল অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিজে নিন। হ্যাঁ, পরামর্শ নিতে পারেন। তবে মূল নেতৃত্ব নিজের হাতে রাখুন। একজন হিসাবরক্ষক রাখুন। এতে আপনার স্ট্রেস কমবে, হিসেব রাখতেও সুবিধা হবে।
৩। একটা ট্রাকিং মেথড মেনে চলুন
প্রতিষ্ঠানের শুরুতে হয়ত আপনার সম্পদ কম থাকবে। কিন্তু আপনার টার্গেট থাকবে আরও সম্পদ বাড়ানোর, প্রতিষ্ঠানকে বড় করার। আয় এবং ব্যায় ট্রাক করতে পারা শুরুতে একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। সব রকম হিসেন নিকেশের পরও মনে হবে টাকা যে কোথায় খরচ হয়ে যাচ্ছে! আগে প্রতিষ্ঠানে লোক রাখা হত আলাদা করে এগুলো খাতায় লিখে রাখার জন্য। এখন যুগ বদলেছে। আমরা প্রযুক্তিনির্ভর হয়েছি। অফিসের কাজের সহযোগী এপ্স ব্যবহার করুন। একদম প্রথম থেকে প্রতিটি ট্রাকজেকশন ডাটা লিখে রাখুন। ‘মাত্র তো শুরু’ এই চিন্তা করে শুরুতে হেলাফেলা করলে সেই কোম্পানির হিসেবের লাগাম ধরা অনেক পরেও আর সম্ভব হয়ে ওঠে না।
৪। প্রভাব বিস্তার করুন
সিদ্ধান্ত হবে আপনার আর আপনার সিদ্ধান্তকে সবাই মানবে খুশী মনে। আপনার কর্মীরা সবার আগে গুরুত্ব দেবে আপনাকে, বিশ্বাস করবে আপনাকে। সবার উপর নিজের এই প্রভাব বিস্তার করুন। “It’s all about the delegation” এটি এখনকার প্রতিষ্ঠানের মূল মোটো হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক সময় কর্মীরা কম শিক্ষিত হতেন, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা অন্যরকম কঠিন ব্যাপার। এখনকার উচ্চ শিক্ষিত কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করা আরেক্রকম কঠিন। নেতার ইতিবাচক প্রভাব না থাকলে টিমওয়ার্ক করা কঠিন। এক কথার মানুষ হন, হন কৌশলী। কর্মীদের প্রতি সদয় হন।
বলা যতটা সহজ, করা ততটাই কঠিন। একজন ম্যানেজার এই কঠিন কাজটি করে যান প্রতিনিয়ত। আপনার বুদ্ধিমত্তার সাথে সাথে খেয়াল করুন এই পরামর্শগুলো। আরও সহজ হবে ম্যানেজ করা।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

গ্রামীণ ইউনিক্লো এনেছে ঈদ কালেকশন

ঈদের খুশিতে প্রতিটি মানুষই চায় প্রতিমুহূর্তে আনন্দে থাকতে। তাই উৎসবের বিভিন্ন মুহূর্তের সাথে মানিয়ে গ্রামীণ ইউনিক্লো নিয়ে এসেছে ঈদ কালেকশন। হোক সে ঈদের দিনে বেড়ানো বা প্রিয়জনের সাথে আনন্দের মুহূর্তগুলো ভাগ করে নেওয়ার, দূর দূরান্তে ঘুরে বেড়ানো বা প্রকৃতিকে উপভোগ করার সব মুহূর্তেই চাই আরামদায়ক ও পরিবেশ উপযোগি পোশাক। ঈদে গ্রামীণ ইউনিক্লো নিয়ে এলো এমনই আরামদায়ক ও যে কোন পরিবেশ উপযোগি পোশাকের সমারহ।

ঈদে অন্যান্য পোশাকের সাথে লিনেন শার্ট পাচ্ছেন ১৪৯০ টাকায়, পোলো শার্ট পাচ্ছেন ৯৯০ টাকায়, বিভিন্ন ফাংশনাল জিনস পাচ্ছেন ১৫৯০ টাকায়, চিনো প্যান্ট পাচ্ছেন ১৬৯০ টাকায়, গ্রাফিক টি-শার্ট পাচ্ছেন ৪৯০ টাকায়। এছাড়া মেয়েদের কামিজ পাবেন ১৬৯০ ও ২৪৯০ টাকায়। কামিজের সাথে মানানসই লেগিংস পাবেন ৩৫০ টাকায় ও পালাজ্জো  ৭৯০ টাকায়। এছাড়াও ট্রেন্ডি পেন্সিল প্যান্ট পাচ্ছেন ৯৯০ টাকায়। ঈদ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সফট এন্ড কালেকশনে একের অধিক কিনলেই পাবেন ছাড়।

গ্রামীণ ইউনিক্লো এর বর্তমানে ৯টি আউটলেট আছে। গ্রামীণ ইউনিক্লো আউলেট লোকেশন: বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচারপার্ক, ধানমন্ডি সাইন্সল্যাব মোড়, কাঁটাবন মোড়(এলিফ্যান্ট রোড), খিলগাঁও তালতলা, নয়াপল্টন, মিরপুর-০১, মোহাম্মদপুর রোড এবং গুলশান বাড্ডা লিংক রোডে।

 

বিকেলের নাস্তায় তৈরি করুন মুচমুচে খাস্তা কচুরি

বিকেলের নাস্তায় পুরি, আলুর চপ, বেগুনি খেতে খেতে একঘেয়ামি চলে আসছে? নতুন কিছু তৈরি করতে চান? অনেকেই কচুরি তৈরি করে থাকেন। এইবার একটু ভিন্নধরণের খাস্তা কচুরি তৈরি করে নিন।

উপকরণ:

পুরের জন্য:

১/২ কাপ মুগ ডাল

২ চা চামচ মরিচের গুঁড়ো

১ চা চামচ ধনিয়া গুঁড়ো

১/২ চা চামচ জিরা গুঁড়ো

২ চা চামচ আমচূর গুঁড়ো

১ চা চামচ গরম মশলা

১ চা চামচ মৌরি গুঁড়ো

লবণ

১/২ চা চামচ চিনি

১.৫ টেবিল চা চামচ তেল

ডোয়ের জন্য:

১ কাপ ময়দা

১ কাপ আটা

১/২ চা চামচ বেকিং সোডা

৩ টেবিল চামচ ঘি

লবণ

২/৩ কাপ পানি

তেল

প্রণালী:

১। মাঝারি আঁচে মুগ ডাল ভেজে নিন। বাদামী রং হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন।

২। এবার ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে গুঁড়ো করে নিন।

৩। মুগ ডালের গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, আমচূর পাউডার, গরম মশলা, মৌরি গুঁড়ো, লবণ এবং চিনি ভাল করে মেশান। এর সাথে কিছুটা পানি ভাল করে মেশান।

৪। এবার আরেকটি পাত্রে ময়দা, আটার সাথে ঘি দিয়ে ভাল করে মেশান। ব্রেড ক্রাবসের মত গুঁড়ো না হওয়া পর্যন্ত মেশাতে থাকুন।

৫। এরপর এতে লবণ, বেকিং সোডা এবং পানি দিয়ে ভাল করে ডো তৈরি করুন।

৬। ডোটি একটি পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে ১০ মিনিট রেখে দিন।

৭। ডোটি থেকে ১২টি লেচি কেটে নিন।

৮। এরপর লেচি দিয়ে ছোট রুটি তৈরি করে এর ভিতর মুগ ডালের মিশ্রণটি দিয়ে রুটির মুখটি বন্ধ করুন। তারপর হালকা করে বেলে নিন।

৯। গরম তেলে কচুরিগুলো দিয়ে দিন। অল্প আঁচে কচুরিগুলো ভাজুন।

১০। বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।

১১। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার খাস্তা কচুরি।

 

ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারবেন যে ৭টি ফল

বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস খুব পরিচিত এবং সাধারণ একটি রোগ। ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ খাওয়ার চেয়ে ডায়েট বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কী খাবেন আর কী খাবেন না এই নিয়ে অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্ব কাজ করে ডায়াবেটিস রোগীদের। এই সময় মিষ্টি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়, বিধায় ফল খাওয়া নিয়া তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অথচ কিছু ফল আছে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারি। নির্ভাবনায় এই ফলগুলো ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন।

১। আপেল

প্রচলিত আছে প্রতিদিন একটি আপেল খান আর ডাক্তার দূরে রাখুন। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। আপেলের ফাইবার, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, এবং ভিটামিন সি ক্যালরি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া টাইপ-২ ডায়াবেটিস কমিয়ে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ করে।

২। কমলা এবং লেবু জাতীয় ফল

কমলা ফাইবারের অন্যতম উৎস। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে লেবু জাতীয় ফল ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। কিন্তু এই জাতীয় ফলের রস আবার ডায়াবেটিস বৃদ্ধি করে থাকে। কমলার গ্লুকোজ ইনডেক্স (GI) ৪০ কিন্তু চিনি ছাড়া কমলার রসের গ্লুকোজ ইনডেক্স (GI) ৫০। তাই এই সকল ফলের রস পান করার চেয়ে ফল খাওয়া বেশি স্বাস্থ্যকর।

৩। কালো জাম

কালো জাম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। কালো জাম রক্তের চিনির পরিমানে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও কালো জামের বীজ গুঁড়ো করে খেলেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৪। চেরি

চেরি রক্তে ৫০% পর্যন্ত ইনসুলিন তৈরি করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং লো কার্বোহাইড্রেইডের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি আর্দশ ফল। প্রতিদিন চেরি ফল খাদ্য তালিকায় রাখুন।

৫। পেয়ারা

ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফল হল পেয়ারা। পেয়ারার মধ্যে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘সি’ এবং ভিটামিন ‘এ’ আছে, যা সুগার রোগীদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। বিনা সংকোচে খেতে পারেন এই ফল।

৬। কিউয়ি

একটা সময় ছিল বিদেশি এই ফল বাংলাদেশে তেমন একটা পাওয়া যেত না। কিন্তু আজকাল আমাদের দেশের বাজারে এটি দেখা যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বেশ স্বাস্থ্যকর একটি ফল। এই ফলটি রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখে।

৭। কামরাঙ্গা

দেশি এই টক ফলটা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কামরাঙ্গায় আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

এছাড়া আমড়া, আমলকী, টক বরই ইত্যাদি দেশি ফল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

লিখেছেন
নিগার আলম
ফিচার রাইটার

 

শরয়ী কারণ ছাড়া স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর কাছে তালাক প্রার্থনা করার বিধান

সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কোনো মহিলা যদি বিনা দোষে স্বামীর নিকট তালাক প্রার্থনা করে, তাহলে জান্নাতের সুগন্ধি তার জন্য হারাম হয়ে যাবে”। [মুসনাদে আহমদ; তিরমিযী; মিশকাত, হাদীস নং ৩২৭৯]

এমন অনেক স্ত্রীলোক আছে যারা স্বামীর সঙ্গে একটু ঝগড়া-বিবাদ হলেই কিংবা তার চাওয়া-পাওয়ার একটু ব্যত্যয় ঘটলেই তার নিকট তালাক দাবী করে। অনেক সময় স্ত্রী তার কোনো নিকট আত্মীয় কিংবা অসৎ প্রতিবেশী কর্তৃক এরূপ অনিষ্টকর কাজে প্ররোচিত হয়। কখনো সে স্বামীকে লক্ষ্য করে তার জাত্যভিমান উষ্কে দেওয়ার মত শব্দ উচ্চারণ করে। যেমন সে বলে, ‘যদি তুমি পুরুষ হয়ে থাক তাহলে আমাকে তালাক দাও। কিন্তু তালাকের যে কি বিষময় ফল তা সবার জানা আছে। তালাকের কারণে একটি পরিবারে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। সন্তানরা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এজন্য অনেক সময় স্ত্রীর মনে অনুশোচনা জাগতে পারে। কিন্তু তখন তো আর করার কিছুই থাকে না। এসব কারণে শরীআত কথায় কথায় তালাক প্রার্থনাকে হারাম করে সমাজের যে উপকার করেছে তা সহজেই অনুমেয়।

সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কোনো মহিলা যদি বিনা দোষে স্বামীর নিকট তালাক প্রার্থনা করে, তাহলে জান্নাতের সুগন্ধি তার জন্য হারাম হয়ে যাবে”। [মুসনাদে আহমদ; তিরমিযী; মিশকাত, হাদীস নং ৩২৭৯]

উক্ববা ইবন আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, “সম্পর্কছিন্নকারিণী ও খোলাকারিণী নারীগণ মুনাফিক”। [ত্বাবরানী ফিল কাবীর, ১৭/৩৩৯, সহীহুল জামে‘ ১৯৩৪]

হ্যাঁ যদি কোনো শরঈ ওযর থাকে যেমন-স্বামী সালাত আদায় করে না, অনবরত নেশা করে কিংবা স্ত্রীকে হারাম কাজের আদেশ দেয়, অন্যায়ভাবে মারধর করে, স্ত্রীর শরঈ অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করে। কিন্তু স্বামীকে নছীহত করেও ফেরানো যাচ্ছে না এবং সংশোধনেরও কোনো উপায় নেই সেক্ষেত্রে তালাক দাবী করায় স্ত্রীর কোনো দোষ হবে না। বরং দীন ও জীবন রক্ষার্থে তখন সে তালাক প্রার্থনা করতে পারে।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

মৃতব্যক্তির পক্ষে বা তার নামে কোরবানি করার বিধান

যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানি করার অসিয়ত করে যায় এবং অসিয়ত অনুযায়ী কোরবানি করা হয় তবে সেই কোরবানির গোশত গরিব মিসকিনদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া ওয়াজিব। এ গোশত ধনী এবং সৈয়দ বংশের লোকদের দেয়া জায়েজ নয়। (ফিকহুস সুন্নাহ।)

একাধিক মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে উট বা মহিষ কোরবানি করলে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য আলাদা আলাদা অংশ থাকা আবশ্যক। একাধিক মৃত ব্যক্তির জন্য এক অংশ কোরবানি করা জায়েজ নয়। তবে নিজের পক্ষ থেকে নফল কোরবানি করে তার সওয়াব জীবিত বা মৃত এক বা একাধিক ব্যক্তির উদ্দেশে দান করা জায়েজ আছে। রাসূল (সা.) তার জীবদ্দশায় একটি কোরবানির সওয়াব তার সমগ্র উম্মতের জন্য দান করেছিলেন। (সহিহ বোখারি)।

যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানি করার অসিয়ত করে যায় এবং অসিয়ত অনুযায়ী কোরবানি করা হয় তবে সেই কোরবানির গোশত গরিব মিসকিনদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া ওয়াজিব। এ গোশত ধনী এবং সৈয়দ বংশের লোকদের দেয়া জায়েজ নয়। (ফিকহুস সুন্নাহ।)

যদি মৃত ব্যক্তির সম্পদ থেকে কোরবানি না করে কোনো ব্যক্তি মৃতের পক্ষে নিজ সম্পদ থেকে কোরবানি করে, এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তি অসিয়ত করে যাক বা না যাক এরকম কোরবানির গোশতের বিধান নিজের সম্পদ থেকে কোরবানি করার মতোই। এর গোশত নিজেও খেতে পারবে এবং ধনী ও সৈয়দদেরও খাওয়াতে পারবে। (ফাতাওয়ায়ে রহীমীয়া, ইমদাদুল ফাতাওয়া।)

লিখেছেন : আল ফাতাহ মামুন
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

শিগগিরই উন্মুক্ত করা হবে স্টার সিনেপ্লেক্স

রাজধানীর জনপ্রিয় শপিংমলগুলোর একটি বসুন্ধরা সিটি। সম্প্রতি সেখানে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে সাময়িক বন্ধ রয়েছে দেশের অন্যতম প্রেক্ষাগৃহ ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’। অগ্নিকাণ্ডের ফলে ২৬ আগস্ট এখানে দেশ-বিদেশের নতুন কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। গত রোববার থেকে প্রদর্শিত হয়ািন কোনো ছবিও।

তবে শিগগিরই এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্টার সিনেপ্লেক্স-এর মিডিয়া ও বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, ‘শিগগিরই সিনেমা প্রদর্শনসহ স্টার সিনেপ্লেক্স চালু হবে। এর জন্য আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্টার সিনেপ্লেক্সের সবগুলো হলই সুরক্ষিত রয়েছে। আগুনে না পুড়লেও ধোঁয়ার কারণে সার্বিক পরিবেশ কিছুটা বিপন্ন হয়েছে। সেটা সংস্কারে এখন খুব দ্রুত কাজ চলছে। শিগগিরই স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে এনে সিনেমা প্রদর্শনসহ যাবতীয় কার্যক্রম পুরোদমে চালু করতে পারব বলে আমরা আশা করছি।’

একই সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার জন্য দর্শকদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশও করেছে সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, গত ২১ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে বসুন্ধরা সিটির লেভেল ছয়ে আগুন লাগে। পরে প্রায় ২০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অভিযানের পর পুরো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট।

 

৫টি কার্যকরী উপায়ে করুন অনলাইনে পণ্যের মার্কেটিং

আজকের তরুণ সমাজ আর বেকার নেই। সবাই কিছু না কিছু করছে। ফেসবুকে বিনামূল্যে পেজ খুলে ছোট পরিসরে ব্যবসা খুলছেন অনেকে। স্বল্প মূলধন লাগে বলে বিনিয়োগ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় না তেমন। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চমৎকার এই সুযোগ গ্রহণ করছেন অনেক উদ্যোক্তা। কিন্তু ব্যবসা তো নাহয় খোলা গেল কম খরচে। ব্যবসা বাড়াতে হলে প্রচারে তো যেতেই হবে। এছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই।
বেছে নিন এই কৌশলগুলো-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করুন
আপনার কাজগুলো ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করুন। এটি প্রচারণার সবচেয়ে সহজ বুদ্ধি। আপনার প্রফাইল থেকে সহজেই বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিন নিজের কাজ। ফেসবুক পেজ থেকেই আপনি পাচ্ছেন ‘ইনভাইট’ অপশন। সেটি ব্যবহার করে সরাসরি বন্ধুদের আহবান করুন ‘লাইক’ দিতে। বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার দিন। আপনার পণ্যের ক্রেতা হতে পারে এমন মানুষদের মাঝে ট্যাগ দিন পণ্যের ছবিতে। তবে অবশ্যই আগে অনুমতি নিয়ে নিন।
নিজস্ব বক্তব্য প্রচার করুন
পেজ এ পণ্যের সাথে অবশ্যই জুড়ে দিন কিছু কথা আপনার ক্রেতাকে সহজে আকৃষ্ট করবে। মানুষ এখন নানান দিকে ঠকতে ঠকতে ক্লান্ত। তারা ভরসা করতে চায়। বিশ্বাস করতে চায়। আপনার প্রচারণামূলক বক্তব্যে তাদেরকে আস্থা দেবার চেষ্টা করুন পণ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে। আপনি যে পণ্য বিক্রী করছেন সে সম্পর্কে পড়াশোনা করুন, আর্টিকেল লিখুন। এতে ক্রেতা জানবে যে আপনি যা করছেন বুঝেই করছেন। এভাবেই তৈরি হবে বিশ্বাস।
বন্ধুদের সাহায্য নিন
প্রচারণায় বন্ধুদের সাহায্য নিন। আপনার যদি ফেসবুকে ২০০ জন বন্ধুও থাকে তাহলে তাদের মাধ্যমে আরও ২০০ জন করে ৪০,০০০ মানুষের কাছে পৌছতে পারবেন আপনি। আপনার বন্ধুরা আপনার শক্তি। এই শক্তি কাজে লাগান। তাদেরকে উতসাহিত করুন পণ্যের ছবি শেয়ার দিতে, ছড়িয়ে দিতে যতটুকু পারা যায়।
সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন মাধ্যম হল গ্রাহক
আপনার গ্রাহককে খুশী করুন। একজন গ্রাহক যখন আপনার পণ্য পেয়ে খুশী হয়ে আরও ১০ জনকে এর সুনাম করে তখন কিন্তু চমৎকার একটি প্রচারণা হয়ে যায়। এর চেয়ে কার্যকরি এবং বিশ্বস্ত প্রচারণা আর হয় না। তাই ক্রেতাকে সবসময় ভাল পণ্য দিন। পণ্যের গুণের সাথে কখনো সমঝোতা করবেন না।
ক্রিয়েটিভ হন
আপনার পণ্যের উপস্থাপনায় প্রকাশ করুন ভিন্নতা। হাজারো একই পণ্যের বাজারে আপনার কোম্পানির পণ্যটি যাতে চোখে পড়ে সেদিকে খেয়াল করুন। মন কাড়তে, চোখকে আকৃষ্ট করতে ভিন্নধর্মী উপস্থাপনার বিকল্প নেই। অবশ্যই একইসাথে শব্দের ক্ষমতার কথা ভুলবেন না। পণ্যের বৈশিষ্ঠ্য তুলে ধরুন এমন শব্দে যেন পড়েই মনে হয় এটি একটি বিশেষ পণ্য। অন্য সব পণ্যের মত দেখতে হলেও আসলে সব পণয় থেকে আলাদা।
 
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

ভিন্ন স্বাদের কাশ্মীরি চা আগে তৈরি করেছেন কি?

ক্লান্তি দূর করতে বলুন অথবা ঘুম তাড়াতে চায়ের বিকল্প নেই। কম বেশি সবাই চা পান করতে পছন্দ করেন। দুধ চা, রং চা, মশলা চা নানা ধরণের চা পাওয়া যায়। কাশ্মীরি  চা নামক এক ধরণের চা আছে যা বেশ জনপ্রিয় এবং প্রচলিত। আজ আপনাদের সেই কাশ্মীরি  চায়ের রেসিপিটি জানিয়ে দেব।

উপকরণ:

২ কাপ পানি

২ চা চামচ গ্রিন টি

২ চিমটি বেকিং সোডা

২ চিমটি লবণ

১ চিমটি জায়ফল গুঁড়ো

১ চিমটি জয়ত্রি গুঁড়ো

৪টি এলাচ

২টি লবঙ্গ

২ টেবিল চামচ পেস্তা বাদাম কুচি

২ টেবিল চামচ কাঠাবাদাম কুচি

চিনি

২.৫ কাপ ফুল ফ্যাট দুধ

১.৫ কাপ বরফ ঠান্ডা পানি

প্রণালী:

১। একটি পাত্রে উচ্চ তাপে পানি জ্বাল দিন।

২। পানি বলক আসলে এতে দুই চা চামচ গ্রিন টি দিয়ে মাঝারি আঁচে ১০ মিনিট জ্বাল দিন।

৩। এরপর এর সাথে বেকিং সোডা (গোলাপী রং হওয়ার জন্য), লবণ, এলাচ এবং লবঙ্গ দিয়ে ১০ মিনিট মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন।

৪। ১০ মিনিট পর চুল বন্ধ করুন। এর সাথে ঠান্ডা পানি মেশান এবং ৩-৪ মিনিট এটি নাড়ুন।

৫। তারপর চুলা জ্বালিয়ে এতে জায়ফলের গুঁড়ো, জয়ত্রি গুঁড়ো, পেস্তা বাদাম, কাঠবাদাম, দুধ দিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন।

৬। গোলাপি রং হয়ে আসলে এতে চিনি দিন এবং ৫ মিনিট অল্প আঁচে জ্বাল দিন।

৭। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার কাশ্মীরি  চা। পেস্তা বাদাম কুচি, কাঠবাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

 

ব্লাউজের স্টাইলের রকমফের

শাড়ি বাঙালি নারীর প্রথম পছন্দ। তাই তো শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ হওয়া চাই স্টাইলিশ। যাতে কেউ চোখ ফেরাতে না পারে। ভিড়ের মাঝেও সবার নজর কাড়তে এইসব স্টাইলিশ ব্লাউজের ডিজাইন বেছে নিতে পারেন আপনিও…

টাই-আপ ব্লাউজ ব্যাক নেক ডিজাইন : অন্যতম আকর্ষণীয় ব্লাউজের ডিজাইন। ফ্যান্সি শাড়ির সঙ্গে এই ধরনের ব্লাউজ ভালো মানায়। পিঠের দিকটা বেশ অনেকখানি কাটা হয় এবং রিবন দিয়ে ক্রস আকারে করা থাকে বাঁধার জন্য।

বোট নেক : স্ট্রেট বোট নেক এখন ফ্যাশনে খুব চলতি। এই ডিজাইনার ব্লাউজের সঙ্গে সিম্পল শাড়ি পরলেও খুব ভালো মানাবে।

V-শেপ ব্লাউজ ব্যাক নেক ডিজাইন : এই ধরনের নকশা কাটা ব্লাউজ়ের ডিজাইন খুব ইউনিক এবং ততটাই সুন্দর। ট্র্যাডিশনাল অথচ সাজে আধুনিক টাচ রাখতে এই ধরনের ব্লাউজ বাজিমাত করবে।

এমবেলিশড্ ব্যাক ব্লাউজ সঙ্গে টাসেল : ক্রেপ সিল্কের শাড়ির সঙ্গে এই ধরনের ব্লাউজ সবচেয়ে ভালো মানায়। শরীরের গড়ন খুব ভালো ফুটে ওঠে।

দড়ি স্টাইল ব্লাউজ : পিঠে দড়ি বাঁধা ব্লাউজের স্টাইল নতুন নয়। ফ্যাশনে বহুদিন ধরে রয়েছে। সেই ফ্যাশনে নয়া বিষয়টি হল, ব্লাউজের পিঠে উপর-নীচে দড়ি দেওয়া, সেই সঙ্গে বড় বড় স্টোন বা পুঁথি দড়ির সঙ্গে বাঁধা।

হাই নেক ব্লাউজ : নেট, জার্দৌসি এবং রেশমের কারুকার্য করা এই ব্লাউজ এখন খুব ফ্যাশনেবল। সোনালি বা লাল রঙের এই স্টাইলের একটি ব্লাউজ থাকলে, যে কোনও শাড়ির সঙ্গে পরতে পারবেন।

কাট-ওয়ার্ক ব্লাউজ ডিজাইন: সাজকে স্পেশাল করে তুলতে শিফন বা সিল্কের শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন কাট-ওয়ার্ক ব্লাউজ। জরি ও স্টোনের কারুকার্য করা এই ব্লাউজের ডিজাইন সকলের নজর কাড়বে।

 

ফিলিপাইনে মাদক যুদ্ধ: একজন নারী ঘাতকের গল্প

দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ফিলিপাইনের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট রুদ্রিগো দুতার্তে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। আর তাতে এক সপ্তাহেই প্রায় দুই হাজার মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

যারা এই খুনগুলো করছে, তাদেরই একজন মারিয়া, যদিও এটি তার আসল নাম নয়। মাদক বিরোধী লড়াইয়ের অংশ হিসাবে সরকারের পক্ষ হয়ে টাকার বিনিময়ে তিনি অন্তত ছয়টি খুন করেছেন।

যদিও এই নারীকে দেখে কোন খুনি বলে মনে হবে না, বরং একজন স্বন্ত্রস্ত, ভীত নারী বলে মনে হবে, যার কোলে আবার একটি শিশুও রয়েছে।

মারিয়া জানান, কাছাকাছি একটি প্রদেশে ২ বছর আগে তিনি প্রথম খুন করেন। প্রথমবার বলে তার সত্যিই খুব ভয় লেগেছিল।

যে ‘হিট টিমে’ মারিয়া কাজ করেন, সেখানে মোট তিনজন নারী রয়েছে। তাদের দলে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়, কারণ একজন পুরুষের তুলনায় কোন সন্দেহ তৈরি না করেই তারা শিকারের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারেন।

মারিয়া জানান, তার বসের নির্দেশেই ‘পুলিশের একজন কর্মকর্তা’ এসব হত্যা করেছেন তিনি।

পুলিশের নির্দেশে একজন ঘাতক হিসাবে কাজ করতেন মারিয়ার স্বামী। কিন্তু একদিন সেই পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করলেন, তাদের একজন নারী খুনী দরকার।

মারিয়া বলছেন, ‘একদিন তাদের একজন নারী দরকার হলো। আমার স্বামীই সেই কাজের জন্য আমাকে ফাঁদে ফেললেন। কাজে নেমে পরার পর যখন আমি সেই ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম, যাকে আমার খুন করার কথা, আমি তার কাছাকাছি গিয়ে গুলি করলাম।’

ম্যানিলার কাছাকাছি একটি এলাকা থেকে এসেছেন মারিয়া এবং তার স্বামী। টাকার বিনিময়ে খুনের কাজ শুরুর আগে তাদের নিয়মিত কোন আয়-রোজগারও ছিল না। এখন তারা প্রতি হত্যার জন্য ৪৩০ ডলার করে পান, যা দলের আরও তিন চারজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে হয়।

নিম্ন আয়ের ফিলিপিনোদের জন্য একটি আর্শীবাদ। কিন্তু মারিয়ার জন্য যেন সেটি একটি ফাঁদ, কারণ তার এ থেকে বেরিয়ে আসার উপায় নেই।

চুক্তির বিনিময়ে হত্যাকাণ্ড ফিলিপাইনে নতুন কিছু নয়, কিন্তু এখনকার মতো এত ব্যস্ত সময় তারা আর কখনোই কাটায়নি। কারণ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট দুতার্তে। নির্বাচনের আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, নির্বাচিত হলে প্রথম ছয়মাসেই তিনি এক লক্ষ অপরাধীকে হত্যা করবেন।

এ বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তবে ফিলিপাইনের স্থানীয় মানুষের কাছে তার এই অভিযান বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

এই অভিযানের ভয়ে যারা মৃত্যুভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাদের একজন রজার, যদিও তারও এটি আসল নাম নয়।

তরুণ বয়সে শাবু নামের অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন রজার। এরপর নিজেও মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন, পাশাপাশি মাদক বিক্রিও শুরু করেন। অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল।

মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন রজারের মতো অনেকে, ছবি: বিবিসি।

কিন্তু এখন তাকে প্রতিদিন এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

রজার এ বিষয়ে বলেন, ‘প্রতিদিন, প্রতি ঘণ্টায়, এক মুহূর্তের জন্যও আমি ভয় থেকে দূরে থাকতে পারি না। আপনার সামনেই যে ব্যক্তি দাড়িয়ে আছে, সেই গিয়ে আপনার সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দেবে না, বা আপনাকে খুন করবে না, আপনি জানেন না। রাতেও ঘুমানো যায় না। সামান্য একটি শব্দেই আমি জেগে উঠি। সবচেয়ে কষ্টকর ব্যাপার হলো, কাউকেই আমি বিশ্বাস করতে পারি না’।

স্ত্রী এবং বাচ্চাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন রজার। নিজের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত রজার, কিন্তু সেই ভুল শোধরানোর আর কোন রাস্তা খোলা আছে কিনা, তা তার জানা নেই।

কিন্তু যারা তাকে হত্যার জন্য খুঁজছে, তাদেরকেও অপরাধবোধ তাড়া করছে। মারিয়া যেমন বলছেন, ‘আমি নিজেই অপরাধবোধে ভুগি’।

এই কাজে তার সন্তানরা আসুক বা তাদের কাজ সম্পর্কে জানুক, সেটা তিনি চাননা।

তবে ইচ্ছা করলেই ভাড়াটে খুনির পেশা থেকে বেরিয়ে আসাও তার পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ তার বস, পুলিশ কর্মকর্তা তাদের এর মধ্যেই হুমকি দিয়েছেন, কেউ যদি এই গুপ্তঘাতকের দল থেকে বেরিয়ে যাবার চেষ্টা করে, তাহলে তাকেও হত্যা করা হবে।

তাই মারিয়ারও মনে হয়, সেও যেন ফাঁদে আটকে রয়েছে।

 

আনারস দিয়ে তৈরি করুন ভিন স্বাদের পাইনঅ্যাপল জর্দা পোলাও

আনারস ফল হিসেবে অনেকে পছন্দ করেন আবার অনেকে পছন্দ করেন না। ফল ছাড়া আনারস বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করা যায়। যেমন জর্দা রান্না করতে অনেকেই কিশমিশ, মোরব্বার সাথে আনারস দিয়ে থাকেন। এমনি একটি রেসিপি পাইনঅ্যাপল জর্দা পোলাও।

উপকরণ:

১ কাপ বাসমতি চাল

১.৪ কাপ পানি

১ কাপ চিনি

৩ টেবিল চামচ ঘি

১ কাপ আনারস কুচি

লবণ

১/৪ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো

৫টি পেস্তা

৫টি কাঠবাদাম

৫০ গ্রাম খোয়া

জাফরণ

প্রণালী:

১। প্রথমে প্যানে ঘি দিয়ে দিন। এরপর এতে আনারসের টুকরোগুলো দিন।

২। কিছুক্ষণ নাড়ুন। তারপর এতে সামান্য পানি যোগ করুন।

৩। এবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে তিন থেকে চার মিনিট জ্বাল দিন।

৪। আনারস নরম হয়ে আসলে এতে চিনি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।

৫। আরেকটি প্যানে পানি দিন। পানির মধ্যে ঘি, জাফরণ এবং চাল দিয়ে দিন।

৬। এর মধ্যে এক চিমটি লবণ দিয়ে দিবেন।

৭। এটি ৫ মিনিট রান্না করুন।

৮। তারপর বাসমতি চাল সিদ্ধ হয়ে আসলে এতে আনারসের মিশ্রণ দিয়ে দিন। তার সাথে দারুচিনি গুঁড়ো, এলাচ গুঁড়ো, কাঠবাদাম, খোয়া, পেস্তা বাদাম মিশিয়ে দিন।

৯। অল্প আঁচে ৩ মিনিট রান্না করুন। পানি শুকিয়ে গেলে চুলা বন্ধ করে দিন।

১০। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার পাইনঅ্যাপল জর্দা পোলাও।

টিপস:

বাসমতি চাল কমপক্ষে তিন ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন।

 

ফ্যাশনে নয় কোন বাধা!

নিজের রুচিতে খাও আর পরের রুচিতে পর। এমন কথা আজকাল আর চলে না। মর্ডান যুগে সবাই নিজের রুচিকেই বেশি প্রাধান্য দেন। সেটা করাই উচিত। তবে হ্যাঁ, যাতে লোকে আপনার রুচি ও পছন্দের বিষয়ে কটুক্তি না করে সেই কথা মাথায় রেখে জিনিসপত্র বেছে নেওয়া ভালো। নিজের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট গড়তে ফ্যাশনে কোনও বিধিনিষেধ থাকা উচিতই নয়। বরং নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দিন, তবেই সকলের নজর কাড়তে পারবেন –

১) অনেক অফিসেই জিন্স পরা মানা। তবে ডেনিমও কিন্তু ফরমাল ড্রেস হিসেবে পরা যেতে পারে। ডেনিম জিন্সের সঙ্গে সাদা শার্ট পরে অফিস যাওয়াই যায়। আবার অফিস পার্টি বা কোনও ফরমাল মিটিংয়েও ডেনিম পরতে পারেন। লাইট ডেনিম শার্ট বা পেনসিল ডেনিম স্কার্ট অফিস যাওয়ার সময় পরতে পারেন মহিলারা।

২) বিয়ে মানেই লাল রঙের পোশাক। মহিলারা লাল শাড়ি ছাড়া অন্য কোনও রঙের কথা ভাবতে পারেন না, অন্যদিকে পুরুষরাও লাল রঙের ধুতি বা লাল সেরওয়ানি পছন্দ করেন। কিন্তু লাল রং ছাড়াও বিয়েতে বেছে নেওয়া যেতে পারে বিভিন্ন রং। তাতে আপনার স্টাইল সেন্স অন্যদের প্রভাবিত করবে, সেই সঙ্গে নজিরও গড়বে।

৩) ভালো পোশাক পরার জন্য সুন্দর মাজাঘষা শরীর থাকা মাস্ট! এটা একেবারেই ভুল কথা। সঠিক পোশাক বেছে নিলে, যে কাউকে ভালো মানায়। তার জন্য মডেলদের মতো মাজাঘষা শরীরের কোনও প্রয়োজন নেই। নিজের চেহারা অনুযায়ী রুচিসম্মত পোশাক বেছে নিন।

৪) দিনের বেলা বেশি ঝকমকে পোশাক পরা মানা। এমনটা নয়। আপনার ইচ্ছে হলে দিনের বেলাও ঝকমকে পোশাক নির্দ্বিধায় পরতে পারেন। তবে অবশ্যই মাত্রা বুঝে।

৫) পিঙ্ক বা গোলাপি মানেই মেয়েলি বিষয়! পুরুষরা পিঙ্ক কালারের পোশাক পরলেই রুচি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আচ্ছা বলুন তো এমনটা কি কোথাও উল্লেখ আছে, যে পুরুষরা পিঙ্ক কালারের পোশাক পরতে পারবেন না? পুরুষরাও নির্দ্বিধায় পরতে পারেন এই রঙের পোশাক।

 

নিজের অতীতের কথা সন্তানকে জানানো কি ঠিক?

আমাদের সন্তান যেন একই সময় ফিরিয়ে নিয়ে আসে আমাদের সামনে। যে শৈশব আমরা ফেলে এসেছি, যে কৈশোর হারিয়ে গেছে কালের অতল গভীরে তার সাথে যেন আবার আমরা মুখোমুখি হই। মেয়েটিই যেন মায়ের হারিয়ে যাওয়া জীবনের ছবি, ছেলেটি যেন তার বাবারই পূনর্জন্ম।
আমাদের চোখের সামনে যখন একই সময় কাটায় ছোট্ট শিশুটি তখন তাকে সতর্ক করার জন্য, বোঝানোর জন্য অনেক সময়ই নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরি আমরা। কখনো নিজেকে তার চেয়ে ভাল ছিলাম বলে দাবি করি, কখনো বা আরও কত খারাপ ছিলাম বলে সান্ত্বনা দিই। সন্তানকে নিজের অতীত জানানো কি আদৌ ঠিক? এতে কি সন্তানটির সামনে আপনার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে? জেনে নিন মনোবিজ্ঞানীদের মত-
আপনি কী বলছেন খেয়াল করুন
আপনার সন্তানের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেসব বিষয় যা আপন তার সামনে ইতিবাচক রূপে তুলে ধরবেন! আপনি যদি ছেলেবেলায় ভুতের গল্প শুনে কেমন ভয় পেয়ে যেতেন সে কথা তার সাথে শেয়ার করেন তাহলে তার ভয় আরও বেড়ে যেতে পারে। অথবা সে আপনাকে ভীতু ভাবতে পারে। তাই বলার আগে সিদ্ধান্ত নিন, আপনার গল্পটি তার উপর কিরূপ প্রভাব ফেলবে।
সংকোচকে বিদায় দিন
অনেক সময় আমরা দরকারি অনেক কথা শিশুদের বলি না। যেগুলো তাদের জানা খুবই জরুরী। আপনার শিশুটি ছেলে হোক বা মেয়ে শারীরিকভাবে এবিউজ হতে পারে যে কোন সময়। আপনি যদি তার সাথে এই ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করেন তাহলে হয়ত সে সতর্ক হবে এবং এই ধরণের বাজে অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে। আমরা প্রায়ই সন্তানদের নিরাপত্তার চিন্তা থেকে ‘এটা কর না’, ‘ওখানে যেও না’ এসব নিষাধাজ্ঞা জার করি। ‘না’ সূচক কথা শিশুরা বুঝতে পারে না। এতে তারা বিরক্ত হয়। কিন্তু আপনি যখন নিজের অভিজ্ঞতা তাকে বলবেন তখন সে বিষয়টি বুঝতে পারবে।
শিশুকে হীনমন্যতায় ফেলবেন না
আমরা বাবা মায়েরা প্রায়ই শিশুকে বলি, ‘আমার রেজাল্ট তোমার চেয়ে অনেক ভাল ছিল”, ‘আমাদের সময় আমরা অনেক ভাল কাজ করতাম, এযুগের ছেলেমেয়েরা করে না’। এভাবে আমরা শিশুদের মাঝে একরকম হীনমন্যতা প্রবেশ করিয়ে দিই। তারা কখনো নিজেদের আলাদা স্বত্ত্বা ভাবতে শেখে না। তার পরিস্থিতি এবং আপনার সময়ের বাস্তবতার ভিন্নতা বোঝে না। তাকে ভিন্নভাবে উপদেশ দিন। বলুন, ‘তুমিও পারবে। তুমি বরং আমার চেয়ে ভাল পারবে’।
ভাল মন্দ চিনতে সাহায্য করে
আপনার সন্তানের উপর একটা বয়স পর্যন্ত আপনার প্রভাব থাকে সবচেয়ে বেশী। কিন্তু এক সময় বন্ধুবান্ধবের প্রভাব বাড়তে থাকে। তাকে নিজের জীবনের গল্প এমনভাবে বলুন যাতে অসৎ সঙ্গ তাকে বদলে দিতে না পারে। আপনি মা হয়ে ছেলেকে যখন কৈশোরে কিভাবে পারার ছেলেদের দ্বারা মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেছেন সেই গল্প বলবেন, তখন আপনার কষ্ট দেখে আপনার সন্তান আরেকটি মেয়েকে টিজ করার আগে ভাববে। এভাবেই মানুষ মানুষ হয়ে গড়ে ওঠে। শুধু গড়ে তোলার দায়িত্বটা সঠিকভাবে নিতে হয়।
আপনার সন্তান আপনার অংশ। তার কাছে মহৎ হওয়ার যেমন কিছু নেই তেমনি ক্ষুদ্র হওয়ারও কিছু নেই। তাকে গড়ে তোলাই মুখ্য। শুধু সেদিকেই মনোযোগ দিন। দেখবেন, আপনার মত শ্রদ্ধা সে আর কাউকে করবে না।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

মধ্যবয়সেও তারুণ্য

বিয়ের বছর খানেক পর শখ করে হয়তো একটি শাড়ি কিনেছিলেন। অনেক দিন পর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গায়ের ওপর মেলে ধরতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। কারণ, তখনকার ছিপছিপে গড়ন আর নেই। মুখের বলিরেখাগুলোও যেন একটু আগেভাগে হাজির হয়েছে। এখন কি আর সেই শাড়িতে মানাবে? মধ্যবয়সী নারীদের জীবনের খুব পরিচিত চিত্র এটি। তবে, বিপরীত উদাহরণও দেখানো যাবে। নিয়মমাফিক জীবন, নিজের প্রতি ভালোবাসা, পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় মাঝবয়সের পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে অনেকেই সহজে মানিয়ে নিতে পারেন। বয়স যে কেবল একটি সংখ্যা, তা কিন্তু কথার কথা নয়। সত্যিকার অর্থেই বয়স যা-ই হোক না কেন, তারুণ্যের বাস মানুষের মনের মধ্যেই।

এই বয়সে এসেও পছন্দমতো পোশাক পরা যাবেহরমোনের পরিবর্তনের ওপর নেই কারও নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু নিজের জীবনযাপনের ওপর তো আছে। কুড়িতেই বুড়ি—এ ধরনের প্রচলিত কথাকে বুড়ো আঙুল দেখাতে হলে সবার আগে প্রয়োজন মনোবল। মাঝবয়সে এসে বেশির ভাগ নারীই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। চামড়ায় ভাঁজ পড়ে গেছে, চুল পড়ে যাচ্ছে, সাজগোজ করে আর কী হবে?—এমন ধারণা মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা মনে করেন, প্রতিটি বয়সেরই একটি আলাদা সৌন্দর্য আছে। আর তার চেয়েও বড় কথা, নিজের সৌন্দর্য নিজের কাছে। বললেন, ‘নিজের সাজসজ্জা অন্যের জন্য নয়।’ রাহিমা সুলতানা নিজে এই মধ্যবয়সে এসেও নিজের পছন্দমতো সাজেন, ইচ্ছা হলে খোঁপায় ফুল গুঁজে নেন। যেমন পোশাকে মানায় তেমন পোশাক পরেন। এই কথাগুলো তিনি বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই জানালেন। নারীর জীবনে ঠিক এই আত্মবিশ্বাসেরই প্রয়োজন।
কথা হলো মধ্যবয়স অর্থাৎ চল্লিশ পেরোনো কয়েকজন নারীর সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে আলাপ করে বোঝা গেল, মাঝবয়সেও সুস্থ, সতেজ থাকতে চাইলে শরীরকে ফিট রাখতে হবে। ত্বক সতেজ রাখতে রূপচর্চা করতে হবে। তার সঙ্গে সুষম ডায়েটের প্রয়োজনীয়তার কথাও বিশেষভাবে উঠে এসেছে।

ভালোবাসুন নিজেকে
নারী গৃহিণী হতে পারে, কর্মজীবী-পেশাজীবীও হতে পারে। দুই ক্ষেত্রেই চল্লিশের ঘরে পৌঁছে গেলে নারীকে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। পেশাজীবনে কাঁধে এসে পড়ে নানা গুরুভার। সংসারের দেখভাল, সন্তান লালন-পালন আর বাড়তি সামাজিক কর্তব্য তো আছেই। সব দিক সামলাতে গিয়ে নারী নিজের প্রতিই হয়ে ওঠে সবচেয়ে অমনোযোগী। অথচ মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তনের জন্য এই সময়টাতেই তার প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। এই বিষয়ে কথা হচ্ছিল বারডেম হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের প্রধান আখতারুন নাহার আলোর সঙ্গে। ‘সবাইকে ভালো রাখতে হলে আগে নিজেকে ভালো থাকতে হবে।’ এভাবেই কথা শুরু করলেন তিনি।
নারীর শরীরের একটা বড় পরিবর্তন আসে মা হওয়ার পর। গর্ভকালীন খাদ্যাভ্যাসের যে পরিবর্তন আসে, তাতে সঠিক সময় লাগাম দিতে হবে। আখতারুন নাহারের পরামর্শ অনুযায়ী সন্তান জন্মের কয়েক মাস আগে থেকে সন্তান জন্মের ছয় মাস পর পর্যন্ত নারীকে অনেক বেশি আমিষ ও ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে। সন্তান বুকের দুধ ছেড়ে দিলেই ফিরে যেতে হবে পুরোনো সেই পরিমিত খাদ্যাভ্যাসে। তাহলেই শরীরের স্বাভাবিক গঠন ধরে রাখা যাবে। তবে, অনেক সময় হরমোনের পরিবর্তনের জন্যও স্বাস্থ্য বাড়তে থাকে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

এই বয়সে খাবারদাবার
রাজধানীর ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ ও বারডেম জেনারেল হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সামসাদ জাহান বলেন, সন্তান জন্মের পর তাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মায়ের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম বের হয়ে যায়। আবার মেনোপোজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্যও দেহ আর আগের মতো ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে না। ফলে হাড় ক্ষয় হতে থাকে। মাঝবয়সে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। অবশ্য, সুষম খাদ্য ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করে এসব রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে দেহে আয়রনের ঘাটতিও দেখা দেয়। এ ছাড়া চল্লিশ পেরোলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধিও পেতে পারে। পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী, কায়িক শ্রম কম করলে এই বয়সে খাদ্যতালিকায় ক্যালরির পরিমাণ একেবারে কমিয়ে আনতে হবে। শর্করা ও তেলযুক্ত খাবার নামমাত্র খেয়ে আমিষজাতীয় খাবারের পরিমাণ পর্যাপ্ত রাখুন।
খেতে হবে—
* ·মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, দই, বাদাম।
* ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে ডাল, শুঁটকি মাছে।
* খেতে হবে ভিটামিন ডি। দুধ, সামুদ্রিক মাছ, ডিম থেকে এটি পাওয়া যায়। সকাল ৯-১০টার দিকে সূর্যের যে আলো আসে, তা শরীরে লাগালেও ত্বকের নিচেই ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়।
* কচুশাক, লালশাক, কলমিশাক, পুদিনা পাতা থেকে মিটবে আয়রনের ঘাটতি।
* আয়রনকে শোষণ করতে দরকার ভিটামিন সি। লেবু ও টক ফলে পাওয়া যাবে এই ভিটামিন। এ ছাড়া প্রতিদিন একটি আমলকী ভিটামিন সি-এর চাহিদাই কেবল পূরণ করে না, একে বলা হয় অকালবার্ধক্য রোধক। ত্বক, চুল আর দাঁতের জন্যও এটি ভালো।
* দুধ খেলে যদি সমস্যা হয়, তাহলে সয়াবিন দুধ, সয়া নাগেট, সয়াবিনের বীজ থেকে ক্যালসিয়াম নিন।
* ডায়াবেটিস না থাকলে প্রচুর ফল খেতে হবে। যদি থাকে, তাহলেও নিয়ম অনুযায়ী রোজ কিছু না কিছু ফল ও টাটকা শাকসবজি খাবেন।

 

চল্লিশ পার হলেই কি বন্ধ হয়ে যাবে সাজগোজ?মন থাকুক ফুরফুরে

দেহ সুস্থ থাকলে মনও ভালো থাকে। বয়স বেড়ে চলেছে—এই চিন্তাকে উড়িয়ে দিয়ে জীবনটা উপভোগ করুন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কোথাও ঘুরতে বেরিয়ে যান। মন চাইলে প্রিয় বান্ধবীর সঙ্গে সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরিয়ে একটু ফুচকা খেয়ে আসুন। ছুটির দিনে কোনো ভালো সিনেমা দেখে আসুন।পছন্দের লেখকের বই পড়ুন। সংসারের ঘানি টানার ফাঁকেই নিজের জন্য এই সময়টুকু বের করে নিতে পারলে ভালো।

এ সময় বেশির ভাগ নারীর মনেই বিষণ্নতার মেঘ জমে। অনেকে নিজেকে অপ্রয়োজনীয় ভাবতে শুরু করেন। এমন ধারণা যদিও ভ্রান্ত। তবে এমনটা ভাবার কিছুর কারণও আছে। এসব বিষয়ে রাহিমা সুলতানা বেশ খোলামেলা আলোচনা করেছেন। মেনোপোজের সময় যখন এগিয়ে আসতে থাকে, তখন হরমোনের নানা রকম পরিবর্তন হয়। মেনোপোজ হয়ে গেলে শারীরিক কিছু পরিবর্তনের জন্য কারও কারও দাম্পত্য জীবনের সুখও বিঘ্নিত হয়। নারীর মেজাজ তখন খিটমিটে থাকে। একসময় চামড়া কুঁচকে যাওয়া, চোখের নিচে কালি পড়া আর চুল পেকে যাওয়ায় সে নিজেকে অসুন্দর মনে করতে শুরু করে।

এই সময় সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে স্বামীকে। স্ত্রীকে ভালোবাসতে হবে। তাঁর মনে সাহস জোগাতে হবে। সন্তানদেরও এ সময় দায়িত্ব আছে। মাকে এ সময় বেশি সঙ্গ দিতে হবে। সাদামাটা পোশাক উপহার না দিয়ে রঙিন পোশাক পরতে তাঁকে উৎসাহিত করতে হবে।

হাসিখুশি থাকা, কিছুক্ষণের জন্য আড্ডা দেওয়া, ঘুরে বেড়ানো, বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়ার মতো কাজগুলোও করা চাইডিজাইনার মাহিন খান মনে করেন, সুন্দর আর রঙিন পোশাক পরলে মনটা বেশ ফুরফুরে লাগে। বয়স যেন তখন কয়েক বছর কমে যায়! খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা করে ফিট থাকতে পারলে মধ্য বয়সেও স্টাইলিশ পোশাক পরা যাবে। এই বয়সে কামিজের কাটছাঁটে বৈচিত্র্য আনতে পারেন। শাড়ি আর ব্লাউজের মধ্যে একটির রং হালকা হলে অন্যটি গাঢ় দেখে বেছে নিন। পশ্চিমা ঘরানার পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলে তা-ও পরতে পারেন।
তবে, জীবনের এই পর্যায়ে এসে সমাজ ও পরিবারের কাছে ব্যক্তির একটি ভাবমূর্তি তৈরি হয়ে যায়। সেটাকে ভেঙেচুরে একেবারে নতুন কিছু করার চেষ্টা না করাই ভালো। এই বয়সে ফ্যাশন ধারণা হওয়া চাই পরিপক্ব। এমন মত রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খানের।
এ বয়য়ে ফ্যাশন নিয়েও মনে কিছু দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করে। ডিজাইনার শাহরুখ আমিন বলেন, ‘বয়স বাড়তে থাকলে চামড়ায় ভাঁজ পড়তে শুরু করে, চুলের রঙেও আসে পরিবর্তন। এ সময়টায় তাই সাজপোশাক একটু বুঝেশুনে পরা উচিত। তাই বলে মধ্যবয়সীরা যে ফ্যাশন করতে পারবেন না বা তাঁদের হালকা রংই সব সময় বেছে নিতে হবে, তেমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
এই বয়সে টকটকে বা ফ্লোরোসেন্ট রংগুলো এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি। তবে গাঢ় রঙের লিপস্টিক চলতে পারে। এ ছাড়া এই বয়সে বেশির ভাগেরই শরীর কিছুটা মুটিয়ে যায়; এটাও মাথায় রাখতে হবে। উদাহরণ টেনে শাহরুখ আমিন বলেন, মসলিন শাড়ি যেমন এখন খুব চলছে। কিন্তু এটি ভীষণ পাতলা হয়। মাঝবয়সী নারী মসলিনের বদলে জামদানি পরতে পারেন, এতেও কিন্তু কম সুন্দর দেখাবে না। ব্লাউজের কাটছাঁট বা প্রিন্টে বৈচিত্র্য নিয়ে এলে আপনার উপস্থিতিটা হবে আরও নজরকাড়া।
অবশ্য মাঝবয়সেও যদি কেউ ছিপছিপে শরীরের অধিকারী হন তাহলে শিফন, নেট, মসলিন শাড়ি পরা যেতেই পারে। পালাজ্জো বা স্ট্রেট কাট প্যান্টের সঙ্গে লম্বা কুর্তা, কামিজ—সবই চলতে পারে।

নির্ভর করে ব্যক্তিত্বের ওপর

বড় কথা হলো কে কেমন পোশাক পরবেন, সেটি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে তার ব্যক্তিত্বের ওপর। পেশা ও জীবনযাপনের ধরনও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। অভিনেত্রী কুমকুম হাসান যেমন ৫৫ বছরে পা দিয়েও ফ্যাশনে তারুণ্য ধরে রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘স্টাইল করি কিন্তু অমার্জিত কিছু পরি না কখনোই। স্লিভলেসও পরি। তবে, সেটা দেখতে যেন খারাপ না লাগে নিজেকে সেভাবেই উপস্থাপন করার চেষ্টা করি সব সময়। বয়স হয়ে গেছে বলে যে ফ্যাশনের বর্তমান চল অনুসরণ করতে পারব না, সেটা একদম মনে করি না।’ কুর্তা, পালাজ্জো প্রায়ই পরেন তিনি। খুব আঁটসাঁট না পরে একটু ঢিলেঢালা পোশাক পরার পক্ষে এই অভিনেত্রী। একদম হালকা রং আর সব সময় ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করেন।

করতে পারেন যোগব্যায়ামরূপ সচেতনতা
বাইরের লেবাসে তারুণ্য আনার আগে মনটাকেও তো প্রফুল্ল রাখতে হবে। রোজ এক ঘণ্টা হাঁটা, নিয়ম মেনে শরীরচর্চা, যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন করলে মন হালকা লাগবে। মন ভালো থাকলে চেহারায় ক্লান্তির ছাপ দূর হয়ে ভেতরের সৌন্দর্য ফুটে উঠবে। ত্বকের যত্নে কয়েকটি ফেস প্যাকের প্রণালি দিয়েছেন রাহিমা সুলতানা—
* একটি কলা, একটি ফেটানো ডিম, ১ চা-চামচ মধু, ১ চা-চামচ লেবুর রস ও ১ চা-চামচ গ্রিন টি পাউডার মিশিয়ে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
* ১ চামচ আমলকী বাটা, আধা চামচ ধনে গুঁড়া, ১ চামচ নিম পাতা বাটা, আধা চামচ চন্দন গুঁড়া ও ২ চামচ গোলাপজলের মিশ্রণ প্রস্তুত করে তা মুখে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটিও ১৫ মিনিট রাখতে হবে।
* কাঁচা হলুদ বাটা ও আঙুরের রস ১ চামচ ও টমেটোর রস ২ চামচ মুখে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
* পাকা পেঁপের রস, গুঁড়া দুধ ও গোলাপজল এক চা-চামচ। চন্দন গুঁড়া আধা চা-চামচ ও আলুর রস দুই চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

চুলের পরিচর্যায়—
* লেবুর রসের সঙ্গে ত্রিফলার চূর্ণ মিশিয়ে সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত হয় ও চুল দ্রুত বাড়ে। এই মিশ্রণটি ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।

* পেঁয়াজ ও জবা ফুলের মিশ্রণ চুল গজাতে সাহায্য করে।

* সমপরিমাণ পেস্তা বাদামের তেল, লেবু ও আমলকীর রস নিয়মিত চুলের গোড়ায় মালিশ করলে চুল পাকার হার কমে যায়।

* এ ছাড়া চুলে নিয়মিত নিম পাতার তেল ব্যবহার করলেও চুল পেকে যাওয়াসহ অনেক সমস্যা রোধ হয়।

মেনে নিতেই হবে, পঁচিশে যা ছিলেন, পঞ্চাশে এসে তার অনেক কিছুই হয়তো হারিয়ে যাবে। তবে এই বয়সে পৌঁছানোর পথে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে, সেগুলোকে ইতিবাচকভাবে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। খেয়াল করলেই বুঝবেন, নিজে সতেজ থাকলে অন্যদের দিকেও খেয়াল রাখা হবে খুশিমনে।

Save

Save

 

পুরুষের মাঝে সুগন্ধি মেখে নারীর চলাফেরা : কী বলে ইসলাম

বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠানে, হাটে-বাজারে, যানবাহনাদিতে, নানা ধরনের মানুষের সমাবেশে, এমনকি রমযানের রাতে মসজিদে আসার সময় তথা সর্বত্র নারীরা যে সুগন্ধিযুক্ত প্রসাধনী আতর, সেন্ট, আগর, ধূনা, চন্দনকাঠ ইত্যাদি নিয়ে যাতায়াত করছে। অথচ শরীয়ত তো শুধু নারীদের জন্য সে আতরের অনুমোদন দিয়েছে যার রঙ হবে প্রকাশিত পক্ষান্তরে গন্ধ হবে অপ্রকাশিত।

আজকাল আতর, সেন্ট ইত্যাদি নানা প্রকার সুগন্ধি মেখে নারীরা ঘরে-বাইরে পুরুষদের মাঝে চলাফেরা করছে। অথচ মহানবী [সা.] এ বিষয়ে কঠোর সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেন, “পুরুষরা গন্ধ পাবে এমন উদ্দেশ্যে আতর মেখে কোনো মহিলা যদি পুরুষদের মাঝে গমন করে তাহলে সে একজন ব্যভিচারিণী বলে গণ্য হবে।” [মুসনাদে আহমদ; সুনান নাসাঈ; মিশকাত, হাদিস নং ১০৬৫]

অনেক নারী তো এ ব্যাপারে একেবারে উদাসীন কিংবা তারা বিষয়টিকে লঘুভাবে গ্রহণ করছেন। তারা সেজেগুজে সুগন্ধি মেখে ড্রাইভারের সাথে গাড়িতে উঠছেন, দোকানে যাচ্ছেন, স্কুল-কলেজে যাচ্ছেন; কিন্তু শরীআতের নিষেধাজ্ঞার দিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ করছেন না। নারীদের বাইরে গমনকালে শরীয়ত এমন কঠোরতা আরোপ করেছে যে, তারা সুগন্ধি মেখে থাকলে অপবিত্র হেতু ফরয গোসলের ন্যায় গোসল করতে হবে। এমনকি যদি মসজিদে যায় তবুও। নবী [সা.] বলেছেন, “যে নারী গায়ে সুগন্ধি মেখে মসজিদের দিকে বের হয় এজন্য যে, তার সুবাস পাওয়া যাবে, তাহলে তার সালাত তদবধি গৃহীত হবে না যে পর্যন্ত সে অপবিত্রতার নিমিত্ত ফরয গোসলের ন্যায় গোসল না করে।” [মুসনাদে আহমদ ২/৪৪৪; সহীহুল জামে‘, হাদিস নং ২৭০৩]

বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠানে, হাটে-বাজারে, যানবাহনাদিতে, নানা ধরনের মানুষের সমাবেশে, এমনকি রমযানের রাতে মসজিদে আসার সময় তথা সর্বত্র নারীরা যে সুগন্ধিযুক্ত প্রসাধনী আতর, সেন্ট, আগর, ধূনা, চন্দনকাঠ ইত্যাদি নিয়ে যাতায়াত করছে তার বিরুদ্ধে একমাত্র আল্লাহর কাছেই সকল অভিযোগ। অথচ শরীয়ত তো শুধু নারীদের জন্য সে আতরের অনুমোদন দিয়েছে যার রঙ হবে প্রকাশিত পক্ষান্তরে গন্ধ হবে অপ্রকাশিত। আল্লাহর নিকট আমাদের প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ না হন। অপগণ্ড নর-নারীর কাজের জন্য সৎ লোকদের পাকড়াও না করেন এবং সবাইকে সিরাতুল মুস্তাকীমে পরিচালিত করেন। আমীন!

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ

সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

তওবা কী, কেন এবং কীভাবে?

তওবা সম্পর্কিত কোরআনের দুটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। প্রথম ঘটনা হলো, তাবুক যুদ্ধের সময় দশজন সাহাবি বিনা কারণে সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। তাদের মধ্যে সাতজন সাহাবি কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়ে নিজেদের মসজিদের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখে অনুশোচনা প্রকাশ করেছিলেন। (সূরা তওবা : ১০২)।

তওবা মানবজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তওবা মানুষের বিকশিত হওয়ার হাতিয়ার। দোষগুণ এ দুইয়ের সমন্বয়ে মানুষের জীবন পরিচালিত হয়। মানুষ দোষ করবে এটাই স্বাভাবিক প্রকৃতি। কিন্তু দোষ বা অন্যায় বা পাপ যেন অভ্যাসে পরিণত না হয়, সেটাই লক্ষণীয়। তওবা শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো, ফিরে আসা, ক্ষমা প্রার্থনা করা, অনুতপ্ত হওয়া, বিশুদ্ধ হওয়া ইত্যাদি।

ইসলামী পরিভাষায় কোনো অন্যায় বা অপরাধমূলক কাজ হয়ে যাওয়ার পর অনুতপ্ত হয়ে সেই কাজের জন্য মহান প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং সেই অন্যায় কাজ ছেড়ে ভালো পথে ফিরে আসাকে তওবা বলে। ইসলামের নির্দেশ অনুযায়ী প্রত্যেক গুনাহ তথা অন্যায় থেকে তওবা করা ওয়াজিব। তওবার ব্যাপারে কোরআনের বহু আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি সম্পূর্ণ একটি সূরার নামকরণ করা হয়েছে। কেননা ওই সূরায় মুসলমানদের তওবার বর্ণনা রয়েছে। তাই তার নাম তওবা রাখা হয়েছে। (মাজহারি)।

তওবা সম্পর্কিত কোরআনের দুটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। প্রথম ঘটনা হলো, তাবুক যুদ্ধের সময় দশজন সাহাবি বিনা কারণে সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। তাদের মধ্যে সাতজন সাহাবি কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়ে নিজেদের মসজিদের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখে অনুশোচনা প্রকাশ করেছিলেন। (সূরা তওবা : ১০২)। বাকি তিনজন যথাক্রমে কাব ইবনে মালিক, মারার ইবনে রাবিয়া ও হিলাল ইবনে উমাইয়া (রা.)। যারা প্রকাশ্যে এভাবে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেননি। রাসূল (সা.) তাদের সঙ্গে সালাম, দোয়া আদান-প্রদান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তাদের সমাজচ্যুত করে রাখেন ৫০ দিন। এভাবে একঘরে করে রাখেন। কিন্তু রাসূল (সা.) সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রাখলেন, ক্ষমা করবেন কী করবেন না। তখন তাদের ব্যাপারে সূরা তওবার ১০৬নং আয়াত নাজিল করেন। (বোখারি ও মুসলিম)।

অন্য ঘটনাটি হলো, হজরত মুসা (আ.) যখন আল্লাহর সঙ্গে তুর পাহাড়ে দেখা করতে গেলেন, তখন ইসরাইলি সম্প্রদায়ের নেতা সামেরি যিনি আগে থেকেই অনেক পরিচিত ছিলেন, তিনি মুসা (আ.) এর অনুপস্থিতিতে তাদের লোকদের স্বর্ণ-গয়না জমা রাখলেন। আর আগে থেকে তার কাছে জিবারইল (আ.) বাহনের ক্ষুরার নিচের মাটি ছিল। স্বর্ণ-গয়না ও মাটি মিলিয়ে জাদুর মাধ্যমে একটি বাছুরের মূর্তি বানালেন এবং তাকে খোদা বলে সাব্যস্ত করলেন। আর বললেন, মুসা তোমাদের ধোঁকা দিয়েছেন, খোদা এখানে চলে এসেছেন। তখন মহান আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসা (আ.) এর মাধ্যমে সতর্ক করলেন আর তওবা করতে বললেন। কিন্তু তওবার জন্য কঠোর শর্ত দিলেন যে, তাদের একজন অন্যজনকে হত্যা করতে থাকলেই তাদের তওবা কবুল হবে। আল্লাহর শর্তানুযায়ী তারা তা পালন করলেন। অতঃপর মুসা (আ.) আল্লাহর নির্দেশে তাদের ডেকে বললেন, প্রভু তোমাদের সবার তওবাই কবুল করেছেন। এ হত্যাযজ্ঞে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তারা শহীদ হয়েছেন। আর যারা বেঁচে রয়েছেন তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত। এখানে প্রতীয়মান হয়, যেসব লোক মন্দ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তা সে কাজ যত বড়ই পাপ হোক, কুফরিও যদি হয়, তবুও পরবর্তী সময়ে তওবা করে নিলে এবং ঈমান ঠিক করে ঈমানের দাবি অনুযায়ী নিজের আমল বা কর্ম সংশোধন করে নিলে আল্লাহ তাকে নিজ রহমতে ক্ষমা করে দেবেন। কাজেই কোনো পাপ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা থেকে তওবা করে নেয়া একান্ত কর্তব্য। (তাফসিরে মারেফুল কোরআন)।

তওবা কোনো আনুষ্ঠানিকতার নাম নয়। তওবা মূলত অন্তরের ব্যাপার। অন্যায় বা পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার আন্তরিক ইচ্ছাই হলো তওবা। কিন্তু তওবা কবুল হওয়ার জন্য কতগুলো শর্ত বিদ্যমান। যদি শরিয়তের দৃষ্টিতে অপরাধমূলক কাজ তথা গুনাহ আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে হয় ও তার সঙ্গে কোনো মানুষের হক জড়িত না থাকে, তবে তা থেকে তওবা করার তিনটি শর্ত রয়েছে। আর তা তওবা কবুলের শর্তও বটে। প্রথমত, তওবাকারীকে গুনাহ থেকে বিরত থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, সে তার কৃত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত। তৃতীয়ত, তাকে পুনরায় গুনাহ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে। আর যদি অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে গুনাহের কাজটি সংশ্লিষ্ট থাকে, ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী তা থেকে তওবা করার ওপরের তিনটি শর্ত ছাড়া আরও একটি শর্ত আছে, যা বান্দার হকের সঙ্গে জড়িত। চতুর্থ শর্তটি হচ্ছে, তওবাকারীকে হকদার ব্যক্তির হক আদায় করতে হবে। শর্ত থাকে যে, প্রাপক জীবিত থাকলে তাকে তার ধনসম্পদ ফেরত দিতে হবে অথবা মাফ করিয়ে নিতে হবে। প্রাপক জীবিত না থাকলে তার ওয়ারিশদের ফেরত দেবে। কোনো ওয়ারিশ না থাকলে বায়তুল মালে জমা দেবে। যদি বায়তুল মালও না থাকে অথবা তার ব্যবস্থাপনা সঠিক না হয়, তবে প্রাপকের পক্ষ থেকে সদকা করে দেবে।

এছাড়া কোনো অন্যায় দোষারোপ এবং অন্য কোনো বিষয় থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে তার শাস্তি ভোগ করতে হবে অথবা তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। গিবত বা পরনিন্দার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। সব তওবার জন্য অবশ্যই গুনাহ বর্জনীয়। শারীরিক দুর্বলতা ও অক্ষমতার কারণে গুনাহ বর্জন করলে তওবা কবুল হবে না। যাবতীয় গুনাহ থেকে বিরত থাকা ও তওবা করাই শরিয়তের কাম্য। কিন্তু কোনো বিশেষ গুনাহ থেকে তওবা করলেও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতানুযায়ী সে গুনাহ মাফ হবে। তবে অন্যান্য গুনাহ বহাল থাকবে। এ সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা মন্দ কাজ করে, তারপর তওবা করে নেয় এবং ঈমান আনে, তবে নিশ্চয়ই তোমার প্রভু তওবার পর অবশ্য ক্ষমাকারী করুণাময়। (সূরা আল আরাফ : ১৫৩)।

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, তিনি তার বান্দাদের তওবা কবুল করেন, পাপগুলো মার্জনা করেন এবং তোমরা যা কর, সে বিষয় তিনি অবগত রয়েছেন। (সূরা আশশুরা : ২৫)।

হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, হজরত আবু মুসা আবদুল্লাহ ইবনে কায়েস আশয়ারি (রা.) রাসূল (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ পশ্চিম (আকাশ) দিক থেকে সূর্যোদয় (কেয়ামত) না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতে তার ক্ষমার হাত সম্প্রসারিত করতে থাকেন। যাতে রাতে গুনাহগার তওবা করে। (মুসলিম)। উল্লিখিত আলোচনা পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় যে, তওবার গুরুত্ব অপরিসীম। তওবা করার জন্য আসলে নির্দিষ্ট কোনো দোয়া বা পন্থা নেই, যার দ্বারা তওবা করা যায়। তবে প্রসিদ্ধ আছে যে, ‘আসতাগফিরুল্লাহ রাব্বি মিন কুল্লি জানবিউ ওয়াতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লা হিল আলিয়িল আজিম’- এটা বলে মূলত তওবা করা হয়। এছাড়াও কয়েকটি দোয়া পড়া হয়। তবে মনে মনে বিশুদ্ধ নিয়ত করলেই তওবা কার্যত হয়ে যাবে। মোট কথা হলো, মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন কিছু নিয়মনীতি, বিধিবিধানের মাধ্যমে। আল্লাহ তায়ালা যেসব কাজ-কর্ম আমাদের জন্য বৈধ করে দিয়েছেন, এর বাইরে কিছু হয়ে গেলে তা থেকে তওবা করে নেয়াটাই উচিত। খালেছ নিয়তে বিশুদ্ধ তওবাই মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ।

লিখেছেন : মুহাম্মদ আরিফুর রহমান জসিম
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

ঘুরে দাঁড়িয়েছেন হনুফা

‘এমন সময় গ্যাছে, তিন-চাইর দিন ভাতের পাতিল পাহায় (চুলায়) বহাইতে পারি নাই। মাইনষের তোন চাইয়াচিন্তা পোলাপানরে খাওয়াইছি। মাছ-মুকরা (মুরগি) খাই নাই বচ্ছরের পর বচ্ছর। ঘর আছিল না। বিষ্টিতে ভিজজি, শীতে কোঁকড়া দিয়া রইছি। কী যে কষ্ট করছি হেই সময়।’
এভাবেই নিজের পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করেন ৫৫ বছর বয়সী হনুফা বিবি। তিনি মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করেন। আবার অনেক সময় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতেও কাজ করেন। একসময় দুবেলা খাবার জোটাতে না পারলেও নিজ প্রচেষ্টায় হনুফা বিবি তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। এখন আর না খেয়ে থাকতে হয় না। এমনকি স্থায়ী একটি মাথা গোঁজার ঠাঁইও তৈরি করেছেন।
১২ বছর বয়সে আদেল খলিফার দ্বিতীয় স্ত্রী হয়ে শ্বশুরবাড়ি আসেন হনুফা বিবি। হনুফার শ্বশুরবাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বোরাদী গরঙ্গল গ্রামে। বাবার বাড়ি পাশের গ্রাম কলাবাড়িয়ায়। শৈশব পেরোতেই শ্বশুরবাড়ি। আর শ্বশুরবাড়ি আসতে না-আসতেই হনুফাকে কাঁধে তুলে নিতে হয় স্বামীর আগের পক্ষের সন্তানের দায়িত্ব, সংসারের হাল। গত ৯ জুলাই বোরাদী গরঙ্গলের এক বাসায় কাজ করার ফাঁকে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
শুরু থেকেই সংসারে টানাপোড়েন। স্বামী কিছুদিন পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না। সে কারণে ঘরে চুলাও জ্বলে অনিয়মিত। ছেলেমেয়ে নিয়ে আধপেটা খেয়ে, কখনো না খেয়ে দিন কাটাতে হয়। এর মধ্যেই ধরা পড়ে স্বামীর ব্লাড ক্যানসার। হনুফা বলেন, ‘হ্যার ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। ডাক্তার দেহাইতে যাইয়া জাগা-জমিন হগল খুয়াইছি। হে ভালো অইল না। মইর্যাে গেল।’
স্বামীর মৃত্যুর সময় হনুফার বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। মেয়ে বিবাহযোগ্য। নিজের ছেলে রোগা। কোনো কাজ করতে পারে না। স্বামীর আগের পক্ষের ছেলে খোঁজ নেয় না। এদিকে স্বামীর চিকিৎসায় বাড়ি, সম্পত্তি সব বিক্রি করে দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় ছেলেমেয়ে নিয়ে কী করবেন, বুঝে উঠতে পারেন না। একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েন।
মাঝেমধ্যে অন্যের ফরমাশে কাঁথা সেলাই করলেও ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে—কখনো ভাবেননি হনুফা বিবি। কিন্তু বেঁচে থাকার তাগিদে ঘরের বাইরে পা রাখতে হয় তাঁকে। বলেন, ‘তহন পরথম নগরে (হিন্দুপাড়া) আহি। মাইনষের বাড়ি কাম করা শুরু করি। যে যহন বোলায়, হ্যার কামই করি। এরম কাম কইর্যাুই পোলা-মাইয়ার মুহে খাওন দেই। আস্তে আস্তে বাঁচনের স্বপন দেহি।’
বছরের ৩৬৫ দিনই হনুফা বিবি কাজ করেন। বাদ যায় না ঈদের দিনও। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, তীব্র শীতেও তাঁকে কাজ করতে হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। পারিশ্রমিক তিনবেলা খাবার, সঙ্গে দুই শ টাকা। রাতের খাবারটা বাড়িতে নিয়ে যান। তবে অনেকেই পারিশ্রমিকের চেয়ে বেশি টাকা দেন বলে জানান তিনি।
বাইরে পা দিয়ে হনুফা বিবি কেবল খাবারের ব্যবস্থাই করেননি, ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবতে শুরু করেন তিনি। খেয়ে না-খেয়েই করতে থাকেন সঞ্চয়। টাকা জমিয়ে ছোট হলেও একটি টিনের ঘর তোলেন; যেখানে ছেলে-ছেলেবউ-নাতি নিয়ে বসবাস করছেন। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।
মানুষের বাসায় কাজ করতে গিয়েই পড়াশোনার গুরুত্ব বুঝতে পারেন হনুফা। তিনি বলেন, ‘কাম করতে যাইয়াই বুজি লেহাপড়ার কদর। কষ্ট কইর্যারও পোলা-মাইয়ারে লেহাপড়া করাইলে আয়ের এট্টা উপায় হইত। মাইনষের বাড়ি কাম করা লাগদো না।’ তাই নাতিদের পড়াশোনায় জোর দেন তিনি। তাঁর ছেলের ঘরের এক নাতি প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আরেক নাতি পঞ্চম শ্রেণিতে, যার রোল নম্বর ১। নাতিদের লেখাপড়ার সব দায়িত্ব হনুফা বিবিই বহন করেন।
হনুফাকে ছাড়া এলাকার কোনো বিয়েবাড়ির কাজই হয় না। এতে তাঁর পারিশ্রমিকের সঙ্গে পাঁচ শ টাকা ও একটি শাড়ি বকশিশ হিসেবে নির্ধারিত। কেউ কেউ আবার বেশিও দেন। হনুফা বলেন, ‘হগলে আমারে ভালো পায়। কাম কইর্যাে যা পাওনের, হ্যার থিকা বেশি দেয়। না অইলে বাঁচতে পারতাম না।’
হনুফা বিবি কোনো রকমে নিজের নাম লিখতে পারলেও জীবনের বাস্তবতা ভালো বোঝেন। শেষ জীবনে কাজ করতে পারবেন না। বন্ধ হয়ে যাবে রোজগার। তবে এ সময় কারও কাছে বোঝা হতে চান না তিনি। এ জন্য ব্যাংকে ৬০ হাজার টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করেছেন। তিনি বলেন, ‘যহন বুড়া অইয়া যামু, এই টাহায় চলমু। কারও কাছে হাত পাতমু না।’

 

সেঁজুতি মানে সন্ধ্যাপ্রদীপ

১৯৯৩ সালের এক সন্ধ্যায় মেয়েটি পৃথিবীকে দেখল প্রথম। মায়াবী আলোয় মাখামাখি ফুলের মতো একটি মুখ। মা-বাবা তার নাম রাখল সেঁজুতি চৌধুরী। সেঁজুতি মানে সন্ধ্যাপ্রদীপ। কিন্তু তখন কি আর বোঝা গেছে নিজের মধ্যে সন্ধ্যার এক টুকরো অন্ধকারও সে বয়ে এনেছে!
ওর বয়স ছয় বা সাত মাস পেরোতেই সেটি বোঝা গেল। ডাক দিলে শোনে না। জোরে চিৎকার করলে শোনে না! পাশে সশব্দে মিউজিক প্লেয়ারে গান বাজলে, জোরে টিভি চললে মেয়েটির মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না। মা জয়শ্রী চৌধুরীর বুকটা কেঁপে ওঠে। সংগোপনে চোখ মোছেন, তবে কি মেয়েটা মূক ও বধির হয়ে জন্মাল? চিকিৎসককে দেখালে ওটাই চরম এক সত্যি হয়ে ধরা পড়ল। ডাক্তার বললেন, প্রায় বিকল শ্রবণেন্দ্রিয় নিয়ে জন্মেছে মেয়েটি। তবে কথা বলতে পারবে। তবে সে জন্যও পাড়ি দিতে হবে অনেক চড়াই-উতরাই। সরকারি চাকরির সুবাদে বাবা সুপ্রীতি চৌধুরী থাকতেন বগুড়ায়। সেখান থেকেই চিকিৎসার শুরু। তারপর কলকাতা, চেন্নাই, ঢাকা। ফুটফুটে মেয়েটিকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থেকে একটু স্বাভাবিক করে তুলতে কী প্রাণান্ত চেষ্টা!
মা জয়শ্রী চৌধুরী, বাবা সুপ্রীতি চৌধুরী, কাকা সজল চৌধুরী বা গোটা পরিবারের শ্রম-ঘাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা আজ সার্থক। সেঁজুতি আজ পার নওগাঁর চৌধুরী পরিবারের গর্ব। ২০১১ সালে ঢাকার প্রিপারেটরি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ সে মাধ্যমিক পরীক্ষায়, ২০১৩ সালে হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক। ইচ্ছে ছিল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। বাক, শ্রবণ বা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের নেওয়া হয় না—প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নোটিশটা দেখে ওর মন খারাপ হয়ে যায়। মেধার মূল্যায়ন কেন করবে না দেশের শীর্ষ সারির এই শিক্ষায়তন? ও প্রতিজ্ঞা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। ওই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হয় ফার্মেসি বিভাগে। এখন তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। মেধার স্বাক্ষর রেখে এগিয়ে চলেছে দৃপ্ত পায়ে।
ঢাকার সোসাইটি ফর অ্যাসিস্ট্যান্স টু হিয়ারিং ইম্পেয়ার্ড চিলড্রেন (সাহিক) থেকেই কথা বলা শেখানো হয়েছে তাকে। তবু কথা বলে খুব ধীরে। সে কথা শুনতেও কাছের লোকদের কষ্ট কম হয় না। দেড় বছর বয়স থেকেই কানে উঠেছে শ্রবণযন্ত্র। প্রায় দেড়-দুই লাখ টাকা দামের যন্ত্র কানে লাগিয়ে চলতে হয়। গান তার ভীষণ প্রিয়। কিন্তু শুনতে তো পারে না, টেলিভিশন বা সরাসরি কোনো অনুষ্ঠানে শিল্পীদের ঠোঁটের ভাষা পড়ে বুঝে নেয়। নাচতে পারে। সুন্দর ছবি আঁকে। সবচেয়ে ভালো সে লেখাপড়ায়। সব প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে সেটির প্রমাণ সেঁজুতি দিয়ে চলেছে নিরন্তর। ওর ক্লাসের বন্ধুরা ওকে দেখে বিস্মিত হয়, গৌরব বোধ করে—শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে চলা একজন তাঁদের সহপাঠী! ক্লাসে বসে একেবারে সামনের বেঞ্চে। তবুও কথা শুনতে পারে না। শিক্ষকদের নোট তুলে নেয় খাতায়। বাসায় নিয়ে আসে অডিও ক্লিপিংস। তাতেই সেরা ছাত্রদের একজন। ওর বন্ধু ফ্লোরা, অন্তরা, ঐশী, তিথি, তুলতুল ওকে তো একেবারে চোখে হারায়। আর শিক্ষকেরা? ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, অন্যান্য শিক্ষক যেমন সামিউল স্যার, সীতেশ চন্দ্র বাছার স্যারদের কাছে খুব প্রিয় ছাত্রী সেঁজুতি। এই তো কিছুদিন আগে সামিউল স্যার এক গবেষণার কাজে ২৫ জন ছাত্রের মধ্যে নির্বাচিত করেছেন ওকে। একমাত্র ছোট ভাইটি ভর্তি হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিবারে গর্ব আর আনন্দ জড়াজড়ি করে থাকে।
কিন্তু পেছনের দিনগুলোর কথা ভাবতে গেলেই সেঁজুতির মা জয়শ্রী একটু বিহ্বল হয়ে পড়েন। জীবনের ওপর দিয়ে কী ঝড়টাই না বয়ে গেছে। নিজের ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন মেয়েকে সমাজের আর দশটি প্রতিভাবান মেয়ের মতো বড় করে তুলবেন, তিনি পেরেছেন। আর এই লড়াইয়ে জয়শ্রী সবচেয়ে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সাহিকের শিক্ষক মমতাজ খানমকে। নিজে একবার সাহিক নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ মায়ের খেতাব পেয়েছেন, তবু বলেন, ‘মমতাজ আপা না থাকলে সেঁজুতিকে মানুষ করতে পারতাম না।’
একদিন সেঁজুতিদের বাসায় গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। কথা তো নয়, খাতার পাতায় লিপি বিনিময়। ভবিষ্যতে তুমি কী করবে সেঁজুতি? মুক্তোর মতো হস্তাক্ষরে সে লিখে জানায়, ‘ফার্মাসিস্ট হতে চাই। আর যদি সুযোগ পাই, কাজ করব গবেষক হিসেবে। উচ্চতর শিক্ষা নিতে যাব বিদেশে।’
সেঁজুতির এই ইচ্ছে যে পূরণ হবে, সেই বিশ্বাস আছে ওর মা-বাবার। আছে ওর ক্লাসের বন্ধু আর শিক্ষকদের। নাম সন্ধ্যাপ্রদীপ, আঁধারে আলো জ্বালানোই যে তার কাজ!

 

পরিবারেও নারী-পুরুষের সমান সুযোগ থাকা জরুরি

সম্প্রতি একটি গোলটেবিল বৈঠকে কারখানার সুযোগ-সুবিধা-মান (কমপ্লায়েন্স) সম্পর্কে বলতে গিয়ে ‘ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স’-এর কথা উল্লেখ করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। এই ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টি কী—তা জানিয়েছেন নাজনীন আহমেদ। ২১ আগস্ট ঢাকায় বিআইডিএস কার্যালয়ে তাঁর সাক্ষাৎ​কার নিয়েছেন মুসলিমা জাহান

ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টি কী?
নাজনীন আহমেদ:
 টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিল্পকারখানায় কমপ্লায়েন্স রাখা হয়। সেখানে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা যাতে মানসম্পন্ন পরিবেশে কাজ করতে পারেন সে বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হয়। তাঁদের বেতন, ছুটি, কর্মপরিবেশসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার নিশ্চয়তা থাকে। ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রেও তা-ই। ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স মানে একটি আদর্শ বা অধিকার-সচেতন পরিবার, যেখানে সব সদস্য নারী-পুরুষভেদে কারও অধিকার খর্ব না করে জীবনযাপনের সমান সুযোগ অর্জন করবেন। সর্বক্ষেত্রেই তাঁরা সমান অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন, কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব হবে না। পরিবারের মধ্যে কোনো ধরনের প্রভুত্ব থাকবে না। সবার মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় থাকবে।

আমাদের দেশে নারীরা কি পারিবারিকভাবে সম-অধিকার ভোগ করে থাকেন?
না. আ.:
 সংবিধান অনুযায়ী নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রাপ্তির কথা উল্লেখ থাকলেও সামাজিক ও ঐতিহ্যগতভাবে প্রতিটি পরিবারে একজনকে কর্তা হিসেবে দেখা হয়। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেই কর্তা হন একজন পুরুষ। আমাদের দেশে পরিবারে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের বিষয়টি চর্চা তো হয়-ই না, এমনকি বিষয়টি অপ্রয়োজনীয়ও মনে করা হয়। এ জন্য পরিবারে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্যগুলো স্পষ্ট।

বৈষম্যগুলো কোথায়-কীভাবে ঘটে?
না. আ.:
 ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টির চর্চা হয় না বললেই চলে। পরিবারে যিনি গৃহিণী, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত পরিবারের; তিনি দিনরাত কায়িক-মানসিক পরিশ্রম করছেন। অথচ গৃহিণীদের কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটে। দেখা যায়, পুরুষ বাইরে কাজ শেষে এসে অবসর সময় কাটান। খুব বেশি হলে সন্তানদের পড়াশোনার খোঁজ নেন। কিন্তু নারীকে বাইরের কাজ শেষ করে সন্তান পালনসহ ঘরের সব কাজ করতে হয়। নারীর কোনো অবসর বা ছুটি নেই। এমনকি ছুটির দিনেও ছুটি নেই।

খাবারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, দিন শেষে নারী সবার পরে খাচ্ছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, দরিদ্র পরিবারের অন্য সদস্যদের তুলনায় নারীরা বেশি অপুষ্টিতে ভুগছেন। তার মানে কি নারীরা এখানে উপেক্ষিত?ধনী পরিবারের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটে। আমরা খেয়াল করি না নারী সদস্য পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছেন কি না। তাঁর জন্য যথেষ্ট খাবার আছে কি না।

খাবারের বণ্টন থেকে শুরু করে সব বিষয়ে বৈষম্য আছে। দেখা যায় একই পরিবারের ছেলেকে ব্যবসার জন্য পুঁজি দেওয়া হলেও, মেয়েকে দেওয়া হয় না। হয়তো মেয়েটির উৎপাদনশীলতা বেশি। সে ব্যবসা করলে বেশি ভালো করতে পারত। এই বৈষম্য থাকলে তাকে আমরা আদর্শ পরিবার বলতে পারি না। এতে যোগ্যতার সর্বোচ্চ ব্যবহার হয় না।

গৃহিণীর কাজের স্বীকৃতি বিষয়টি কীভাবে হতে পারে?
না. আ.: অনেকে মনে করেন গৃহিণীর কাজের স্বীকৃতি মানে জিডিপির অন্তর্ভুক্তীকরণ। আমি এর পক্ষপাতী নই। আমি চাই ঘরের কাজের একটি সামাজিক স্বীকৃতি থাকবে। একে ‘কাজ’ বলে মূল্যায়ন করা হবে। তবে এর অর্থনৈতিক মূল্যায়নও হতে পারে। একজন গৃহিণীর যে ছুটি দরকার, অবসর দরকার, সেটা দেখা হয় না। এই বিষয়গুলোতে আমাদের মনোযোগী হতে হবে।

এ বিষয়টি গৃহকর্মীর জন্যও প্রযোজ্য। তাঁদের আমরা ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে বাধ্য করি। তিনি কখন ঘুমাবেন, কখন উঠবেন, তা-ও আমরা নির্ধারণ করে দিই। একজন মানুষ হিসেবে যে তাঁর ছুটি, বিনোদন, বা অবসরের দরকার আছে, তা ভাবিই না। এ বিষয়টি ভাবতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁরাও আমাদের পরিবারের অংশ।

পরিবারে সম-অধিকার কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে? এ জন্য কি আইন করা প্রয়োজন?
না. আ.:
 সবকিছু ছকে বেঁধে বা আইন করে করতে হবে বিষয়টি তেমন নয়। প্রথমত নারী-পুরুষভেদে সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এ জন্য আমরা যখন নারী অধিকার নিয়ে কথা বলব, তখন ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টি তুলে নিয়ে আসতে হবে। এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানাতে হবে। সরকার নারী উন্নয়ননীতি বাস্তবায়নে অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, সেখানে ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টির উল্লেখ থাকতে হবে। বৃহৎ পরিসরে পরিবারে সম-অধিকারের বিষয়টি আলোচিত হলে এর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করবে। তা ছাড়া স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। বিজ্ঞাপন, নাটকের মাধ্যমেও এই বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করা যায়।

কখন বোঝা যাবে পরিবারের মধ্যে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বা সবাই সমান সুযোগ পাচ্ছে?
না. আ.:
 সমাজ থেকে মানুষের সুখী হওয়ার হার কমে যাচ্ছে। তার বড় একটি কারণ পরিবারে পারস্পরিক শ্রদ্ধার অভাব। পরিবারে হয়তো সহিংসতা নেই। কিন্তু শান্তি নেই। ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স থাকলে এই সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। তখন পরিবারের সবাই সম-অধিকার ভোগ করতে পারবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সমান সুযোগ পাবে। যে যে বিষয়ে পারদর্শী, সেখানে মতামত দিতে পারবে। পারস্পরিক সম্মানবোধ বজায় থাকবে। নারীদের সিদ্ধান্তের মূল্যায়ন হবে। স্ত্রী নন, সঙ্গীকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

এতে পরিবারটি কীভাবে উপকৃত হবে?
না. আ.:
 যে পরিবারে শোষণ নেই অর্থাৎ কমপ্লায়েন্স বা মানসম্পন্ন ফ্যামিলি, সেখানে সবাই সমান সুযোগ পাবে। ফলে পরিবারটি অন্য পরিবারের তুলনায় বেশি উৎপাদনশীল হবে। অর্থনীতিতে বেশি অবদান রাখতে পারবে। মেধা বা যোগ্যতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারবে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটবে। মায়েরা অপুষ্টি থেকে রেহাই পাবে। সন্তানেরা পরিবার সম্পর্কে একটি ইতিবাচক ধারণা নিয়ে বড় হবে। যাতে ভবিষ্যতে প্রতিটি পরিবারের সবাই সম-অধিকার ভোগ করতে পারবে। পরিবারটি হয়ে উঠবে সবার শান্তির জায়গা।

সুত্রঃ প্রথম আলো

 

মজাদার চিজ কর্ন বল

হঠাৎ বাসায় অতিথি আসলে ঝটপট তৈরি করে ফেলতে পারেন সুস্বাদু চিজ কর্ন বল। শিশুদের জন্য বিকেলের নাস্তায়ও রাখতে পারেন মজাদার আইটেমটি।

জেনে নিন কীভাবে তৈরি করবেন-

উপকরণ

আলু- ১০০ গ্রাম (সেদ্ধ ও খোসা ছাড়ানো)
পনির- ১০০ গ্রাম (কুচি)
সুইট কর্ন- ৫০ গ্রাম
কাঁচামরিচ- ৫টি (কুচি)
কর্ন ফ্লাওয়ার- ২ টেবিল চামচ
তেল- প্রয়োজন অনুযায়ী
লবণ- স্বাদ মতো

প্রস্তুত প্রণালি

একটি পাত্রে সুইট কর্ন, সেদ্ধ আলু ও পনির একসঙ্গে মেশান।লবণ ও কাঁচামরিচ কুচি দিয়ে দিন মিশ্রণে। ভালো করে মাখিয়ে ছোট ছোট বল তৈরি করুন।

প্যানে তেল গরম করে নিন। বলগুলো কর্ন ফ্লাওয়ারে গড়িয়ে ডুবো তেলে ভাজুন। বাদামি রং হয়ে আসলে নামিয়ে নিন। পুদিনা সস অথবা টমেটো সসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন চিজ কর্ন বল।

 

এই গরমে মাত্র ২ মিনিটে তৈরি করুন মজাদার স্ট্রবেরি আইসক্রিম

ভ্যানিলা, চকলেট নানা ফ্লেভারের আইসক্রিমের মধ্যে স্ট্রবেরি বেশ জনপ্রিয় একটি আইসক্রিম ফ্লেভার। আগে এই ফলটি সুপার শপগুলো ছাড়া পাওয়া যেত না। এখন কাঁচা বাজারের ভ্যানেই কিনতে পাওয়া যায় এই ফলটি। সহজলভ্য এই ফলটি দিয়ে আপনি নিজেও তৈরি করে নিতে পারেন মজাদার স্ট্রবেরি আইসক্রিম। এরজন্য প্রয়োজন নেই কোন আইসক্রিম মেকারের। আইসক্রিম মেকার ছাড়া মাত্র দুই মিনিটে তৈরি করে নিতে পারেন স্ট্রবেরি আইসক্রিম।

উপকরণ:
৩/৪ কাপ দুধ

১/২ কাপ কনডেন্সড মিল্ক

১ টেবিল চামচ লেবুর রস

৩ কাপ স্ট্রবেরি

প্রণালী:

১। প্রথমে স্ট্রবেরি ভাল করে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।

২। এবার একটি ব্লেন্ডারে দুধ, কনডেন্সড মিল্ক, লেবুর রস এবং স্ট্রবেরি দিয়ে ব্লেন্ড করুন।

৩। ভাল করে কয়েকবার  ব্লেন্ড করে নিন।

৪। এবার মিশ্রণটি একটি আইসক্রিমের বক্সে ঢেলে রাখুন।

৫। বক্সটি ফ্রিজে ৫ ঘন্টা অথবা সারা রাত রেখে দিন।

৬। সকালে পেয়ে যান  দারুণ স্ট্রবেরি আইসক্রিম।

 

ফ্যাশনের সাথে গড়ে উঠুক আপনার ক্যারিয়ার

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং

এই মুহূর্তে ক্রিয়েটিভ ডিজ়াইনিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি গ্ল্যাম ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অন্যতম আকর্ষক পেশাই হল ফ্যাশন ডিজ়াইনিং।

আজকের দিনে সকলেই তাদের পোশাক-আসাক, লেটেস্ট ট্রেন্ড, কোনটা ইন, কোনটা আউট এসব নিয়ে বেশ সচেতন। তার উপর অনেকেই আবার চলতি কোনও একটা ট্রেন্ড অনুসরণ করার বদলে একটা নিজস্ব ট্রেন্ড চালু করতেই বেশি আগ্রহী। সেখান থেকেই এসেছে ফ্যাশন ডিজ়াইনিংয়ের ব্যাপারটা। অর্থাত্‌ নতুন ট্রেন্ড ভাবার সৃজনশীলতা এবং কল্পনাশক্তিই হল এই পেশায় আসার প্রধান শর্ত। টেকনিক্যাল শিক্ষা তো রয়েছেই, তবে ক্রিয়েটিভিটির কোনও বিকল্প এই পেশার ক্ষেত্রে নেই। মনে রাখতে হবে, ফ্যাশন ডিজ়াইনিং মানে কিন্তু শুধুমাত্র গ্ল্যামারাস সেলেব্রিটিদের জন্যই কাজ করা নয়, সেন্স অফ স্টাইল কিন্তু আনা যায় সব ধরনের পোশাকেই। যথাসম্ভব বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার মধ্যেই কিন্তু একজন ফ্যাশন ডিজ়াইনারের সার্থকতা লুকিয়ে থাকে।

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং বিষয়ে কাজ করার প্রধান ক্ষেত্রগুলোই হল কাপড়, বিভিন্ন পোশাক-আসাক অর্থাত্‌ টেক্সটাইল্স ডিজ়াইনিং। ভারতের ক্ষেত্রে ফ্যাশন ডিজ়াইনিং নিয়ে কাজ করার কিছু বাড়তি সুবিধে আছে, তার কারণ হল বিভিন্ন ধরনের সিল্ক বা রেশম, ট্র্যাডিশনাল হ্যান্ডলুম ফেব্রিক, রাস্টিক টেক্সচারে কাজ করতে পারার সুযোগ। ভারতের এই ধরনের কাজগুলোর চাহিদা সারা পবৃথিবীতেই রয়েছে। এই কারণেই আমাদের দেশের টিন জেনারেশন ফ্যাশন নিয়ে কেরিয়ার করার ব্যাপারে খুব বেশিই আগ্রহী হয়ে উঠছে।

কাজের ধরন

ফ্যাশন ডিজ়াইনার কাজই হল চলতি ট্রেন্ডের বিভিন্ন আকর্ষক ভ্যারাইটি তৈরির মাধ্যমে ক্রেতা বা ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করা। শুধুমাত্র লেটেস্ট ট্রেন্ডের কাজই নয়, মার্কেট কন্ডিশন এবং আবহাওয়ার ধরন বুঝেও ড্রেস মেটিরিয়াল নির্বাচন করতে হয়। মাথায় রাখতে হয় ফিট, স্টাইল, কালার, টেক্সচার এবং মেটিরিয়ালের কথাও।

 

যে পোশাকটি তৈরি করতে হবে, সেটি প্রথমে স্কেচ করতে হয়। তারপর এর বিভিন্ন অংশগুলো সঠিক সাইজ়ে একটি কাগজের উপর এঁকে কেটে নিতে হয়। সেগুলো সেলাই করে কোনও মডেল বা ম্যানিকুইনের গায়ে ফিট করে কি না দেখে নেওয়ার পর আসল ফেব্রিকের পোশাকটি তৈরি করা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে শেখার সময় কাগজ দিয়েই ট্রায়াল হয় বিভিন্ন পোশাকের। তারপর কাপড়ের সাহায্যে ফাইনাল স্ট্রাকচার তৈরির সময় দেখে নিতে হয় ফেব্রিক, উইভ, ড্রেপিং কোয়ালিটি, মেটিরিয়াল কালার এবং ডিজ়াইন।

ডিজ়াইনিংয়ের পেশায় অনেক ধরনের কাজের আলাদা-আলাদা বিভাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে সাধারণ প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর বিভিন্ন বিভাগের জন্য আলাদা করেও প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়। এই পেশার অন্তর্গত দপ্তরগুলো হল,

ডিজ়াইন ডিপার্টমেন্ট : এটি হল প্রধানত ম্যানুফাকচারিং ইউনিট। এই বিভাগে যেসব পদে কাজ করা যায়, সেগুলো হল ডিজ়াইনার, কাটিং অ্যাসিসট্যান্ট, স্কেচিং অ্যাসিসট্যান্ট, জুনিয়র ডিজ়াইনার ইত্যাদি। এদের মাধ্যমেই বড় স্কেলে ডিজ়াইনার গারমেন্টস ম্যানুফাকচার করা হয়।

মার্কেটিং এবং মার্চেন্ডাইজ়িং : আজকের দিনে ফ্যাশনের ট্রেন্ড প্রতিমুহূর্তেই পালটাচ্ছে। তাই মার্কেটিং এবং মার্চেন্ডাইজ়িং বিভাগেও চলতি ফ্যাশন সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি সেল্স ডেটার উপর নজর রেখে মার্কেটিং অবজেক্টিভ তৈরি করার দায়িত্বও থাকে এই বিভাগের কর্মীদের উপর। এঁরাই বিভিন্ন প্রডাক্টের দাম, প্রয়োজনীয়তা, চাহিদা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় ইনপুট পৌঁছে দেন স্টাইলিং ডিপার্টমেন্টের কাছে।

ম্যানুফাকচারিং : ম্যানুফাকচারিং বিভাগটি চলে প্রডাকশন ম্যানেজারের অধীনে। তাঁর দায়িত্বে থাকে কাজের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং প্রডাকশনের কোয়ালিটি বজায় রাখা। কাজের প্রত্যেকটা পর্যায়ই প্রডাকশন ম্যানেজারকে কমবেশি নজরে রাখতে হয়।

ফ্যাশন কো-অর্ডিনেটর : এটিও ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। এঁদের কাজ হল ক্রেতা এবং প্রডাকশন ম্যানেজারের মধ্যে কো-অর্ডিনেট করানো। প্রডাকশন শেডিউল ঠিকমতো মেনে চলা, ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী ফেব্রিক, কালার, ডিজ়াইন এবং কোয়ালিটির উপর নজর রাখাই এদের প্রধান কাজ। এঁরা অনেকসময় ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজ়াইনার ওয়্যার এবং উপযুক্ত অ্যাকসেসরিজ়ও সাজেস্ট করে দেন। প্রডাকশনের ক্ষেত্রেও ক্রেতাদের ফিডব্যাক ফ্যাশন কো-অর্ডিনেটরদের মাধ্যমেই আসে।

কাজের প্রয়োজনীয় অ্যাপটিটিউড

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং নিয়ে কাজ করার বা ক্যারিয়ার তৈরির আগ্রহ টিনএজারদের মধ্যে ক্রমশই বাড়ছে। বিশেষত পোশাক-আসাকের ব্যাপারে যারা বরাবরই এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালবাসে, শিল্পবোধ এবং সৃজনশীলতা আছে, তাদের জন্য এই কেরিয়ার খুবই উপযুক্ত। তবে প্রথম থেকেই যে-কোনও আইডিয়া স্কেচ করে দেখানোর দক্ষতা বা অ্যাপটিটিউড গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজনীয়। খুব দক্ষ শিল্পী হওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে কালার, শেড এবং টোন নিয়ে কাজ করা বা ম্যাচিং-মিক্সিং করার সেন্স থাকাটা জরুরি। পাশাপাশি কাগজে-কলমে যা আঁকা বা প্ল্যান করা হল, থ্রি-ডায়মেনশনে তার ভিসুয়ালাইজ়েশন কেমন হবে, সেই বোধটাও ফ্যাশন ডিজ়াইনারের থাকতে হয়।

এই পেশায় ভাল করতে হলে শুধু ভাল শিল্পী হলেই হবে না। রীতিমতো পড়াশোনা করে চলতি ফ্যাশন ট্রেন্ডের খোঁজখবর রাখার প্রয়োজন হয়। একজন ফ্যাশন ডিজ়াইনারকে বাণিজ্যিক সাফল্য পেতে হলে অবশ্যই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের ফ্যাশন জার্নাল, ম্যাগাজ়িন বা টিভি চ্যানেলে নিয়মিত চোখ রাখতে হয়। শুধু তাই নয়, শিল্প এবং ইতিহাসভিত্তিক নানারকম মিউজ়িয়াম বা প্রদর্শনী থেকেও তাকে নানারকম আর্ট ফর্ম কালেক্ট করার প্রয়োজন হতে পারে। আবার ডিজ়াইনার হিসেবে নিজেকে আরও উন্নত করে তোলার জন্য প্রাথমিক টেলরিং-এর কাজও, যেমন, কাটিং, সিউয়িং, ড্রেপিং ইত্যাদিও তাকে শিখে রাখার প্রয়োজন হয়। এসব কিছুর পর, ডিজ়াইনারের কমিউনিকেশন স্কিলও খুব ভাল হওয়ার দরকার হয়, যাতে সে তার কাজ এবং আইডিয়া স্পষ্ট করে ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরতে পারে।

 

পিতা-মাতার প্রতি কর্তব্য ও মেয়েদের পিতা-মাতা

আমি এমন অনেক নাটক, সিনেমা দেখেছি যাতে দেখানো হয়েছে ছেলের বাবা বা মাকে ছেলের বউ সহ্য করতে পারছে না ৷ কিন্তু এমন কোনো নাটক, সিনেমা দেখিনি যাতে দেখানো হয়েছে মেয়ের বাবা-মা বৃদ্ধ বয়সে কোথাও যাবার জায়গা পাচ্ছেন না; মেয়েটি চেষ্টা করছে যতটা সম্ভব সাহায্য করার, কিন্তু মেয়েটির স্বামী বা শ্বশুর বাড়ীর লোক সহ্য করতে পারছে না৷ আশেপাশের লোক বলছে মেয়ের বাড়ী থাকবেন, কেমন দেখায়? কিন্তু এই মেয়েটির জন্যও তার বাবা -মায়ের অনেক ত্যাগ ছিল, এই মেয়েটির জন্যও তারা রাত জেগেছেন, ভেজা বিছানায় শুয়েছেন ৷ উপরন্তু তার নিরাপত্তার জন্য বাড়তি উদ্বেগ সহ্য করেছেন; মেয়েটির বিয়ে দেবার সময় ছেলে পক্ষের যৌক্তিক-অযৌক্তিক সব দাবী মেনে নিয়েছেন, জামাই বা জামাই বাড়ীর কেউ আসলে টাকা থাকুক বা নাই থাকুক বাজারের বড় মাছ কিনেছেন; কোমরে ব্যাথা নিয়েও হাসি মুখে জামাইয়ের জন্য রান্না করেছেন৷ এত কিছুর পরেও কেন এই বাবা-মায়ের ত্যাগ , কষ্ট কোথাও মূল্যায়ণ পায় না? শুধু ‘মেয়ের বাবা-মা’ হওয়ার কারণে? আমি যখনি কোনো নাটক বা সিনেমায় সন্তানের জন্য মায়ের ত্যাগ দেখেছি আশ্চর্যজনক ভাবে সন্তানটি সর্বদাই ছেলে সন্তান ছিল, একবারের জন্যও আমি মেয়ে সন্তান দেখিনি। কারনটা কি হতে পারে? -আমি অনেকবার ভাবার চেষ্টা করেছি। মায়েরা কি ছেলেদের জন্য বেশী ত্যাগ করে যা ছেলেদের মনে রাখা উচিত? মায়েদের ছেলে সন্তানের প্রতি আকর্ষণটা একটু বেশী হতে পারে (অনেক মনোবিজ্ঞানী মনে করেন) কিন্তু ত্যাগ তো তারা মেয়েদের জন্য একটুও কম করেন না। তাহলে কেন মেয়ের মায়েদের ত্যাগটা সবসময় অনুচ্চারিতই থেকে যায়? আবার ভাবার চেষ্টা করেছি মেয়েরা হয়তো এমনিতেই বাবা মায়ের প্রতি যত্নশীল , ছেলেদের বরঞ্চ মনে করিয়ে দিতে হয় বাবা-মা তার জন্য কী কষ্ট করেছে । এটা হয়ত কোনো কোনো ক্ষেত্রে সত্যি হতে পারে কিন্তু যদি আমরা ছেলেদের জন্য বাবা মা কতটা কষ্ট করেছেন শুধু তাই পুনঃ পুনঃ উচ্চারণ করতে থাকি তবে কি মেয়ের বাবা-মায়েদের ত্যাগ ঢাকা পড়ে যাচ্ছে না? এ তো গেলো এ দুনিয়ার কথা ৷ মৃত্যু পরবর্তী দুনিয়ার ব্যাপারেও ছেলের বাবা মায়ের সুবিধা মেয়ের বাবা মায়েদের থেকে বেশী দেখানো হয় ৷ ‘মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত’ কথাটা শুনলেই কেন যেন আমাদের মনে এক মা আর তার ছেলে এমন একটা ছবি ভেসে ওঠে ৷ একবার এক মফঃস্বলের এক মাওলানা যিনি ওই এলাকার মাদ্রাসার শিক্ষক এবং নিয়মিত ঈদের জামাতে ইমামতি করেন ও খুতবা দেন (অর্থাৎ একজন ধর্মীয় শিক্ষক এবং নেতা ) আমাকে বলছিলেন, “মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত এবং বিয়ের পরে মেয়েদের জন্য মা-বাবার স্থান নিয়ে নেয় তার শ্বশুড়- শ্বাশুড়ী ৷” তিনি আমাকে যা বোঝাতে চাইছিলেন তার অর্থ দাঁড়ায় ছেলেদের বেহেশত সর্বদাই মায়ের পায়ের নীচে থাকে কিন্তু মেয়েদের বেহেশত বিয়ের সময় তার মায়ের পায়ের নীচ থেকে সরে গিয়ে স্থান নেয় শ্বাশুড়ীর পায়ের নীচে ৷ অর্থাৎ বিয়ের সময় মেয়ের মায়েরা বেহেশত হারান আর ছেলের মায়েরা বাড়তি একটি লাভ করেন ৷ এই সুত্র অনুযায়ী কোনো মহিলার যদি দুটি ছেলে থাকে তবে তিনি চারটি বেহেশতের উপরে দাড়িয়ে থাকেন কিন্তু যার দুটি মেয়ে তিনি মেয়েদের বিয়ে দেবার সাথে সাথে বেহেশতশূণ্য হয়ে যান ৷ এই যদি হয় অবস্থা তাহলে কোন নারী চাইবে মেয়ের মা হতে? কে চাইবে কষ্ট করে মেয়ে পেটে ধরে, তার জন্ম দিয়ে, তাকে বড় করার সব কষ্ট সয়েও বেহেশতশূণ্য হতে? তার থেকে ভালো ছেলের মা হওয়া – ছেলের জন্য কষ্ট করার পুরস্কার হিসাবে পার্মানেন্ট একটা বেহেশত তো থাকবেই তার উপরে বোনাস হিসাবে মেয়ের মায়েরটাও পাওয়া যাবে। এভাবে কি আমরা সবাই মিলে এমন একটা সামাজিক চাপ তৈরী করছি না যাতে সবার মধ্যে ছেলে সন্তান পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাড়ে, আর মেয়ে সন্তানের আকাঙ্ক্ষা কমে? আর এ থেকে তৈরী হয় ভারসাম্যহীনতা আর পরিনামে জন্ম নেয় নানা রকম পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা । আমরা জানি রাসুল (সঃ) এর সময় মক্কার লোকেরা মেয়ে শিশু সন্তানদের জীবন্ত কবর দিত; কেন? যে বাবা এ কাজটি করত তার কি একটুও কষ্ট হতনা ? অবশ্যই হত। ইতিহাস সাক্ষী যে একাজ করার সময় তাদের বুক ফেটে যেত; চোখের পানিতে মুখ ভেসে যেত; তারপরও কেন তারা এটা করত? কারণ সমাজের চাপ। সমাজ এমন এক পরিবেশ তৈরী করে রেখেছিল যাতে ছেলের পিতা-মাতা নানা ভাবে সুবিধা ভোগ করত আর মেয়ের পিতা-মাতাদের পড়তে হত অসুবিধা জনক অবস্থানে – কাজেই কেউই মেয়ে সন্তান চাইতো না । আমাদের এই আধুনিক যুগেও যদি আমরা নাটক, সিনেমা, সাহিত্য সর্বত্র ছেলের বাবা-মায়েদের ত্যাগ কে হাইলাইট করি আর মেয়ের বাবা-মাদের ত্যাগ কে অবহেলা (over look) করি তবে আমরাও এমন এক পরিবেশ তৈরী করছি যাতে সবার মধ্যে ছেলের বাবা- মা হওয়ার ইচ্ছা বাড়ে, আর মেয়ের বাবা- মা হওয়ার ইচ্ছা অনুৎসাহিত হয়। আমরা কি এভাবে মেয়ে ফীটাস এবরশন কে উত্সাহিত করছি না? আমি একবার খুব নামকরা একজন ধর্মীয় বক্তার ওয়াজ শুনছিলাম ‘পিতা মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য’ এর উপর । বক্তব্যের শব্দ চয়ন এবং ধরন (Tone) এমন ছিল যে ওখানে উপস্থিত সব পুরুষের মনে হলো বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে তারা যথেষ্ট মনোযোগী হতে পারছেন না এবং এর সম্ভাব্য কারণ বা বাধা হলো স্ত্রী । অপরপক্ষে উপস্থিত প্রতিটা নারীর মনে হলো যে শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর প্রতি দায়িত্ব পালনে তার ভূমিকা সমালোচিত হলো । এমন ব্যাখ্যা নিঃসন্দেহে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে ভালো প্রভাব ফেলবে না । শুধু তাই না, এধরনের ব্যাখ্যা যেহেতু ছেলের মায়েদের সুবিধা জনক স্থানে রাখছে সেহেতু ওই ওয়াজে উপস্থিত সব নারীর মনেই (আমার নিজেরও ) ছেলের মা হওয়ার ইচ্ছা তৈরী হয়েছে, মেয়ের মা হতে তেমন কারোই সেদিন ইচ্ছা হয়নি। ওয়াজগুলো কি এমন হতে পারে না যা শুনে প্রত্যেকটা পুরুষ ভাবতে পারে, সন্তান হিসাবে তার বাবা মায়ের সাথে সে নিজে ভালো আচরণ করছে কিনা?

লিখেছেন:  কানিজ ফাতিমা

 

কোন স্ত্রীর ওপর ফেরেশতারা সারারাত অভিশাপ দিতে থাকে?

অনেক মহিলাকেই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীতে একটু খুনসুটি হলেই স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার মানসে তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা বন্ধ করে বসে। এতে অনেক রকম ক্ষতি দেখা দেয়। পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। স্বামী দৈহিক তৃপ্তির জন্য অবৈধ পথও বেছে নেয়, অন্য স্ত্রী গ্রহণের চিন্তাও তাকে পেয়ে বসে। এভাবে বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে স্বীয় শয্যা গ্রহণ বা দৈহিক মিলনের জন্য আহবান জানায়, কিন্তু স্ত্রী তা অস্বীকার করায় স্বামী তার ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে রাত কাটায়, তখন ফিরিশতাগণ সকাল পর্যন্ত ঐ স্ত্রীর ওপর অভিশাপ দিতে থাকে”। [সহীহ বুখারী; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৩২৪৬]

অনেক মহিলাকেই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীতে একটু খুনসুটি হলেই স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার মানসে তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা বন্ধ করে বসে। এতে অনেক রকম ক্ষতি দেখা দেয়। পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। স্বামী দৈহিক তৃপ্তির জন্য অবৈধ পথও বেছে নেয়, অন্য স্ত্রী গ্রহণের চিন্তাও তাকে পেয়ে বসে। এভাবে বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সুতরাং স্ত্রীর কর্তব্য হবে স্বামী ডাকামাত্রই তার ডাকে সাড়া দেওয়া। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে তার সঙ্গে দৈহিক মিলনের জন্য ডাকবে, তখনই যেন সে তার ডাকে সাড়া দেয়। এমনকি সে যদি ক্বাতবের পিঠেও থাকে। ” [যাওয়াইদুল বাযযার ২/১৮১ পৃ; সহীহুল জামে, হাদীস নং ৫৪৭] ‘ক্বাতব’ হচ্ছে, উঠের পিঠে রাখা গদি যা সওয়ারের সময় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

স্বামীরও কর্তব্য হবে, স্ত্রী রোগাক্রান্ত্র, গর্ভবতী কিংবা অন্য কোনো অসুবিধায় পতিত হলে তার অবস্থা বিবেচনা করা। এতে করে তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় থাকবে এবং মনোমালিন্য সৃষ্টি হবে না।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

ওলি-আউলিয়াদের কারামত কী ও কেন?

ওলি ওই ব্যক্তি, যিনি আল্লাহ তায়ালার জাত ও সিফাতগুলোর মারেফাত তথা পরিচয় লাভ করেছেন। সাধ্যানুযায়ী ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত রয়েছেন। যাবতীয় কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা ও আনন্দ-উপভোগ থেকে বিমুখতা অবলম্বন করেন এবং যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকেন।

আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দাদের বৈশিষ্ট্যের সর্বোচ্চ নিদর্শন ‘মোজেজা’ ও ‘কারামত’। মোজেজা প্রকাশ পায় নবী ও রাসূলদের মাধ্যমে আর কারামত হক্কানি আউলিয়ায়ে কেরামদের জন্য নির্ধারিত।
‘কারামত’ শব্দটি আরবি একবচন। বহুবচনে ‘কারামাত’। এর অর্থ বিশেষ ক্ষমতা, মর্যাদা ও সম্মান ইত্যাদি। ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে কারামত হলো- মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর পছন্দনীয় বান্দাদের থেকে এমন কিছু কাজ প্রকাশ করেন, যা দ্বারা তিনি তাদের সম্মানিত করেন, যা অস্বাভাবিক ও অলৌকিক। নবী-রাসূলদের পরই এই বান্দাদের মর্যাদা- যাদের ওলি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন, ‘জেনে রাখ, নিশ্চয় যারা আল্লাহর ওলি তাদের নেই কোনো ভয় এবং নেই কোনো চিন্তা।’ (সূরা ইউনুস-৬২)।

ইমামে আজম আবু হানিফা (রহ.) ‘আল ফিকহুল আকবর’-এ ওলির সংজ্ঞায় বলেছেন, ওলি ওই ব্যক্তি, যিনি আল্লাহ তায়ালার জাত ও সিফাতগুলোর মারেফাত তথা পরিচয় লাভ করেছেন। সাধ্যানুযায়ী ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত রয়েছেন। যাবতীয় কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা ও আনন্দ-উপভোগ থেকে বিমুখতা অবলম্বন করেন এবং যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকেন।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা হচ্ছে, ‘কারামাতুল আউলিয়ায়ে হাক্কুন’, অর্থাৎ আউলিয়ায়ে কেরামদের কারামত সত্য। এগুলো তাদের উচ্চ কামালাত তথা মর্যাদার সাক্ষ্য বহন করে বটে; কিন্তু কখনও তারা এসবের মাধ্যমে নিজেদের জনসমাজে প্রকাশ করেন না। ওলিদের যে কারামত সংঘটিত হয়, এগুলো তাদের অনিচ্ছায় এবং আল্লাহর ইচ্ছায় অলৌকিকভাবে সম্পন্ন হয়। ঘটনাচক্রে বা ক্ষেত্রবিশেষে ওলিদের মাধ্যমে কারামত প্রকাশ পায়।

প্রকৃতপক্ষে যিনি আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দা অর্থাৎ যারা আল্লাহর ওলি তাদের কারামত আল্লাহ পাকের জাত, সিফাত ও এলমে মারফতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যে ব্যক্তি শরিয়তের পূর্ণ অনুসারী কেবল তার দ্বারা কোনো অলৌকিক ঘটনা ঘটলেই এটিকে কারামত বলা হয়।

যে ব্যক্তি আমলের ক্ষেত্রে শরিয়তের খেলাপ করে সে যদি চেষ্টা-সাধনা করে কোনোরূপ অলৌকিক কাজ প্রদর্শন করে তবে এটিকে কারামত বলে না। তাই জাদুকর, কাফের বা যোগী-সন্ন্যাসীদের দ্বারা যে অস্বাভাবিক কাজ প্রদর্শিত হয় সেগুলো কখনও কারামত নয়। এসবকে ‘এসতেদরাজ’ বলে। ওলি থেকে কারামত প্রকাশ পাওয়া জায়েজ ও অস্বাভাবিক। এটি সহিহ দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত। প্রকৃত মুসলমান একে অস্বীকার করতে পারে না। কারণ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ওলিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। সূরা তওবার ১১৯নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও। এখানে সত্যবাদী বলতে ওলিদের বোঝানো হয়েছে।

লেখক : মুহাম্মদ আনিসুর রহমান নূরী
সম্পাদনা ও গ্রন্থনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

দক্ষ টিমওয়ার্কের জন্য জরুরি ৫টি কৌশল

এগিয়ে যেতে হলে দল বেঁধেই এগিয়ে যেতে হয়। একা একা বড় হওয়া খুবই কঠিন। যারা একাই সফলতার শীর্ষে পৌঁছে যেতে চান তারা প্রায়শই কিছু পথ পেরিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। একসাথে কাজ করলে মানসিক চাপ কারও একার ওপর পড়ে না। বিনিয়োগ বড় হয়, কাজ ভাগ করে নেওয়া যায়।
কিন্তু নানান মতের, নানান ধরণের মানুষকে নিয়ে একটি টিম একই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে কাজটি কিন্তু ভাবতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে আদতে তত সহজ নয়। কীভাবে টিমওয়ার্ক ভাল হতে পারে আসুন জেনে নিই সে বিষয়ে কিছু টিপস-
আপনার কর্মীরা যত কাছে থাকবে তত তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে
আপনার দলকে একত্র রাখার দায়িত্ব নিতে হবে আপনাকেই। কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে থাকলে তাদের কাজের খোঁজ নেওয়া, তাদের মাঝে ইউনিটি তৈরি করা, ভুল ধরিয়ে দেওয়া সবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কাজের অবস্থানের দূরত্ব অনেক রকম ভুল তথ্য ছড়াতে সাহায্য করে। কর্মীরা একজন আরেকজনকে ঈর্ষা করা, দ্বন্দ তৈরি করার মত কাজে জড়িয়ে পড়েন। এতে ব্যহত হয় প্রজেক্টের গতি।
লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বার বার তুলে ধরুন
কর্মীদের মাঝে কাজের গুরুত্ব বার বার তুলে ধরুন। মাঝে মাঝে মিটিং করুন। মিটিং ছাড়াও কর্মীদের প্রায়ই মনে করিয়ে দিন কাজের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। এভাবে তারা কখনো ঝিমিয়ে যাবেন না। কোম্পানির কর্পোরেট ভ্যালু যেন তারা ভাল ভাবে বোঝেন সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। হতে পারে এটি আপনার একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, কিন্তু আপনি আপনার কর্মীদের মানসিকতাকে পরিচালিত করতে পারেন একটি চমৎকার সংস্কৃতির দিকে। গড়ে তুলতে পারেন এমন একটি টিম যা শুধু কাজ করে না তুলে ধরে ব্রান্ড ভ্যালু।
 
কোম্পানিকে নিজের ভাবতে শেখান
আপনার কমীদের মাঝে কৃতজ্ঞতা তৈরি করুন। তাদেরকে এমনভাবে কোম্পানির কথা বলুন যেন তারা বুঝতে পারেন তারাই শুধু কোম্পানিকে শ্রম দেন না, কোম্পানিও তাদের কথা ভাবেন। সময় মত তাদের বেতন পরিশোধ করুন, বাড়তি কাজের টাকাও পরিশোধ করুন। মাঝে মাঝে সম্ভব হলে ইন্টেন্সিভ বোনাস দিন। দৃশ্যত এটি কোম্পানির বাড়তি খরচ মনে হলেও আসলে কর্মীদের কর্মচাঞ্চল্য মুনাফা হয়ে কোম্পানির ফান্ডেই ফিরে আসে।
প্রশংসা করুন
কর্মীদের কাজ ভাল হলে অবশ্যই প্রশংসা করুন। ভাল কাজের স্বীকৃতি দিন। যোগ্যতা অনুযায়ী পুরস্কৃত করুন। আপনি যদি টিমে স্বজনপ্রীতি বা বিশেষ কারও প্রতি ভালোবাসার চর্চা করেন তাহলে সেটি অন্যদের কাজও করার আগ্রহকে নষ্ট করবে। কারণ আপনার কর্মীরা ধরেই নেবেন, তারা যতই পরিশ্রম করুন না কেন স্বীকৃতি পাবেন না। তখন তারা কোম্পানির জন্য কষ্ট করতে চান না। এভাবেই কোম্পানি দক্ষ কর্মী হারায়।
বিশ্বস্ততা তৈরি করুন
কর্মীদের সাথে সৎ হন। বিশ্বস্ততা না থাকলে টিমওয়ার্ক কখনো সফল হয় না, দীর্ঘস্থায়ী হয় না। টিম মেম্বারদের কাছে পরিচ্ছিন্নভাবে কোম্পানির কাজ তুলে ধরুন। তাদেরকে বোঝান, এটি তাদের সকলের কোম্পানি। এর গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব সকলের। মিটিং এ সকলকে মতামত প্রকাশের সুযোগ দিন। আপনার একার মস্তিষ্ক অনেক বুদ্ধিদীপ্ত হতে পারে। কিন্তু আপনি যখন আরও অন্যদের আইডিয়া শুনবেন তখন আরও অনেক পথ খুঁজে পাবেন। একই সাথে কর্মীদের এই সম্মান দিলে তারা কোম্পানিকে নিজের মনে করবে। কোম্পানির লাভ হোক আর লস হোক, পাশে থাকবেন। কখনো টিম ভেঙ্গে চলে যাবেন না।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

তৈরি করুন মজাদার চিকেন কাঠি রোল

মুরগি মাংসের যেকোন খাবার খেতে দারুন লাগে। মুরগি মাংস দিয়ে নানা খাবার তৈরি করা যায়। বাচ্চাদের টিফিনে কি খাবার দেবে তা নিয়ে মায়েদের চিন্তার শেষ নেই। বাচ্চাদের টিফিনের সমস্যা সমাধান করে দেবে চিকেন কাঠি রোল। সহজে অল্প কিছু উপকরণ দিয়ে এই কাবাবটি তৈরি করে নিন।

উপকরণ:  

ডো তৈরির জন্য:

২ কাপ ময়দা

১ কাপ আটা

১ চা চামচ লবণ

পুররের জন্য:

২৫০ গ্রাম মুরগির মাংস

৫টি পেঁয়াজ কুচি

১ চা চামচ আদা রসুনের পেস্ট

১ চা চামচ জিরা গুঁড়ো

১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো

১ চা চামচ মরিচ গুঁড়ো

২ চা চামচ চিকেন মশলা পাউডার

১ চা চামচ চ্যাট মশলা

৩ চা চামচ লেবুর রস

তেল

১টি শসা কুচি

২টি পেঁয়াজ কুচি

১ চা চামচ লেবুর রস

১ চা চামচ চ্যাট মশলা

২টি ডিম ফাটানো

লবণ

চাটনি (পুদিনা পাতা, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ, লবঙ্গ, লেবুর রস এবং লবণ)

প্রণালী:

১। একটি পাত্রে ময়দা, আটা, লবণ এবং পানি মিশিয়ে ডো তৈরি করে নিন।

২। চুলায় প্যান দিয়ে তাতে তেল গরম করতে দিন। তেল গরম হয়ে আসলে জিরা দিয়ে দিন।

৩। জিরা ফুটে আসলে এতে পেঁয়াজ কুচি, আদা রসুনের পেস্ট দিয়ে দিন।

৪। পেঁয়াজ নরম হয়ে আসলে এতে হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো দিয়ে দিন।

৫। এরপর এতে মুরগির টুকরো এবং লবণ দিয়ে ১০ মিনিট রান্না করুন।

৬। চিকেন মশলা দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করুন। এরপর এতে গরম মশলা, চ্যাট মশলা এবং লেবুর রস দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করুন।

৭। রান্না হয়ে গেলে এটি নামিয়ে রাখুন।

৮। ডো দিয়ে রুটি তৈরি করে নিন। অল্প তেলে রুটি ভেজে নিন।

৯। রুটি ভাজা হয়ে গেলে একটি ডিম ফেটে প্যানে দিয়ে দিন। ডিমটির উপর রুটি দিয়ে ভাজুন।

১০। শসা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, লেবুর রস, চ্যাট মশলা, এবং লবণ দিয়ে সালাদ তৈরি করে রাখুন।

১১। ডিম রুটির উপর চাটনি, মুরগির মাংস এবং সালাদ দিয়ে রোল তৈরি করুন।

১২। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার চিকেন কাঠি রোল।

 

সালোয়ার কামিজের সঙ্গে যে ধরণের জুতো মানানসই

বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানে অনেক নারী শাড়ির বদলে সালোয়ার কামিজেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই সালোয়ার কামিজের সাদামাটা সাজকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে সঙ্গে থাকা চাই স্টাইলিশ জুতো –

হাই হিল : হাই হিলের কথা নতুন করে  বলার অপেক্ষা রাখে না। স্টাইলিশ লুকের ক্ষেত্রে স্টিলেটোর কোন তুলনা নেই। রাতের জমকালো পার্টিতে অনায়াসে সালোয়ার কামিজের সঙ্গে হাই হিলের জুটি গড়তে পারেন।

পাম্প শু : অনুষ্ঠানে অনায়াসে পরে ফেলতে পারেন সলিড গোল্ড পাম্প শু। ট্র্যাডিশনাল হোক বা এথনিক, যেকোনও সালোয়ার কামিজের সঙ্গে ভালো মানাবে এই শু।

জরির কাজ করা স্যান্ডেল : যে কোনও অনুষ্ঠানে এই জুতো পরতে পারেন। দেখতে সুন্দর তো বটেই, তাছাড়া এই জুতো পরতেও বেশ আরামদায়ক। বিশেষ করে সোনালি বা রুপোলি রঙের জরির কারুকার্য করা জুতো দারুণ দেখায়।

কোলাপুরি চপ্পল : যেকোনও ধরনের ট্র্যাডিশনাল সালোয়ারের সঙ্গে পরতে পারবেন কোলাপুরি জুতো। বিশেষ করে পোশাকের সঙ্গে মানানসই রং বেছে নিতে সাজগোজে বিশেষ মাত্রা যোগ করতে পারেন।

 

এগিয়ে যাচ্ছে মুসলিম নারীরা

দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বিশ্ব।তার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে সবা্ই,পিছনে ফিরে তাকানোর ফুসরত যেন কারো নেই।আমরা জানি না এই অগ্রযাত্রার শেষ কোথায়।

ইতিহাস সাক্ষ্যি ছুটে চলার এই প্রতিযোগীতায় সব সময় এগিয়ে গিয়েছে পূরুষ পিছিয়ে পড়েছে নারী।

আবার এগিয়েছে নারী পিছিয়ে পড়েছে মুসলিম নারীরা,যারা ইসলামকে ধারন করেন।

‘মুসলিম নারী’ শব্দটি উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথেই চোখের সামনে ভেসে উঠে আপাদমস্তক আবৃত ঘরের কোনে আবদ্ধ এক নারী চিত্র!

পশ্চিমা বিশ্ব আমাদেরকে এ ভাবেই শিখিয়েছে।

তবে সময়ের আর্বতনে এক্ষেত্রে এবার পরিবতর্নের জোয়ার এসেছে।বিশ্বের বিভিন্ন্ প্রান্তে মুসলিম নারীরা তাদের পশ্চিমা বিশ্বের দেয়া চিরায়িত রুপকে অস্বীকার করে নিজেদেরকে দক্ষতা আর যোগ্যতার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সমানতালে।নীতি নির্ধারনী পযার্য়ে,রাজনীতি,অর্থনীতি ও সমাজিক ক্ষেত্রে,শিক্ষা ব্যবস্থায় এবংপ্রযুক্তি ইত্যাদি প্রায় সব ক্ষেত্রে মুসলিম নারীদের দৃপ্ত পদচারনা উল্লেখ করার মত।বিশ্বখ্যাত এই মহীয়সীদের কয়েকজনকে এখানে তুলে ধরা হলো-

বিশ্বের সেরা শিক্ষক ফিলিস্তিনের হানান

14012028_10205848761092785_1301377234_n

বিশ্বের সবচেয়ে সহিংস স্থানে শিশুদের অহিংসার দিক্ষা দিয়ে বিশ্বসেরা শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন ফিলিস্তিনি শিক্ষিকা হানান আল-হ্রব।
ফিলিস্তিনের বেথেলহেমে উদ্বাস্তু শিবিরে বেড়ে ওঠা মহান এ শিক্ষিকা সারাজীবন লড়াই করে যাচ্ছেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে।
তারই পুরস্কার হিসেবে তিনি পেয়েছেন এক মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৮ কোটি টাকা) গ্লোবাল টিচার প্রাইজ। খবর দ্যা টেলিগ্রাফের।
ফিলিস্তিনের সামিহা খলিল হাই স্কুলের ওই শিক্ষিকাকে ভার্কে ফাউন্ডেশন গ্লোবাল টিচার প্রাইজ ২০১৬ এর জন্য  নির্বাচন করা হয়।  সোমবার হানান আল-হ্রবকে ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৮ কোটি টাকা তুলে দেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম।

পুরস্কার নেয়ার সময় উৎফুল্ল হানান বলেন, একজন ফিলিস্তিনি নারী শিক্ষক হিসেবে এ মঞ্চে দাঁড়াতে পেরে আমি গর্বিত। এই পুরস্কার শুধু আমার একার নয়। সব শিক্ষক বিশেষ করে ফিলিস্তিনি শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আমি এটি গ্রহণ করছি।
দ্বিতীয় বারের মতো এই পুরস্কার দেয়া হলো।
এর আগে এক সাক্ষাৎকারে ৪৩ বছর বয়সী হানান বলেছিলেন, আমার শিক্ষা পদ্ধতিতে খেলার মাধ্যমে শিক্ষা এবং অহিংসার দিক্ষা দেয়া।
তিনি বলেন, তার শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে মূল্যবোধ শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কিছু আচরণগত সমস্যার সমাধান হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইসরাইলি দখলদারিত্বের কারণে আমাদের ছেলেমেয়েদের মধ্যে অনেক আচরণগত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এ শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে আমি এসব আচরণগত সমস্যার সমাধান করতে পারছি এবং একটি শান্তিপ্রিয় ও সহযোগিতামূলক প্রজন্ম তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছি।
হানান জানান, ২০০০ সালে আল-আকসা মসজিদ কেন্দ্রীক ইন্তিফাদার (বিদ্রোহ) সময় পশ্চিমতীরে তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করেন ইসরাঈলি বাহিনী।তিনি বলেন াামার স্বামী প্রথমে ইসরাঈলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন।তাকে এ সময় হাসপাতালে না নিতে দিয়েবরং ইসরাঈলি বাহিনী বিদ্রুপ করে তাকে মৃত্যু মুখে ঠেরে দেয়।হানান বলেন তার উদ্ভাবিত শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে তার সন্তানরা আবার সুস্থ্য হয়ে উঠে ও আত্ন বিশ্বাস ফিরে পায়।দুবাইয়ে গ্লোবাল ইডুকেশন এন্ড স্কিলড ফোরামের ওই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে মহান ওই শিক্ষিকাকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান পোপ ফ্রান্সিস।

নোবেল বিজয়ী প্রথম আরব নারী তাওয়াক্কুল কারমান

13989454_10205848763292840_776402699_n

তাওয়াক্কুল কারমান পেশায় একজন সাংবাদিক,রাজনীতিবিদ্ ও মানবাধিকার কর্মী।ইয়ামেনী এই নারীর জন্ম ১৯৭৯ সালে। আরব নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।তার দেশে অনেক দিন ধরেই বাকস্বাধীনতার জন্য তিনি কাজ করছিলেন।২০০৫সালে তিনি ‘ইউমেন জার্নালিস্ট ইউদাউট চেইনস’     নামে একটি প্রচারনা গ্রুপ তৈরী করেন। প্রতিষ্টার দুই বছর পর থেকে এ গ্রুপটি ইয়ামেনের রাজধানীতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু করে।

14030934_10205848764212863_865865395_n

আর্ন্তজাতিক দৃশ্যপটে কারমানের আবির্ভাব মূলত ২০১১ সালে।তৎকালীন ইয়ামেনী প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুললাহ সালেহ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে।তিনি ২০১১ তে নোবেল পুরস্কার পান।নোবেল পুরস্কার গ্রহন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন ,‘আমি সব সময় বিশ্বাস করি যে,কোন ধরনের সহিংসতা ছাড়াই নিযার্তন ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়।আমি আরো বিশ্বাস করি মানব সভ্যতা হচ্ছে নারী পুরুষ উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠার ফল।’নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির পর থেকে তিনি আরব বসন্ত উত্তর দেশ সমূহে ব্যাপক সফর করেন এবং সে সব দেশের মানুষের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।গত বছর কারমান ঘোষনা দেন যে, তিনি নোবেল পুরস্কার হিসাবে প্রাপ্ত ৫লক্ষ ডলার আত মানবতার সেবায় ব্যায় করবেন।বিশেষ করে আরব বসন্তে ইয়ামেনের যে সকল মানুষ আহত হয়েছেন  ও যে সবল পরিবার স্বজন হারিয়েছেন তাদের কল্যানে তিনি এ অর্থ ব্যয় করবেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম মহিলা কেবিনেট মন্ত্রী শেখ লুবনা আল কাশেমী

14011871_10205848765332891_1190405004_n

শেখ লুবনা আল কাশেমী সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম মহিলা কেবিনেট মন্ত্রী যিনি বর্তমানে আর্ন্তজাতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রানালয়ের দায়িত্বে আছেন।মন্ত্রী হিসাবে শেখ লুবনা প্রথম দায়িত্ব প্রাপ্ত হন ২০০৪ সালে। তখন তিনি অর্থনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রলয়ের দায়িত্ব পালন করেন।প্রভাবশালী মহিলাদের তালিকায় এ নিয়ে পরপর চারবার শেখ লুবনা আল কাশেমী শীষস্থানে রয়েছেন।

শেখ লুবনা মূলত একজন আইটি বিশেষজ্ঞ।তিনি দুবাই এয়ারপোর্টে কার্গো বিমানের মালামাল খালাসের সময় উল্লেখযোগ্য ভাবে কমিয়ে আনার জন্য প্রশংসিত হন।২০০০সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম অন লাইন মার্কেট প্লেস।তার প্রতিষ্ঠিত এ ব্যবসা এখন দুবাইয়ের সবচেয়ে সফল ব্যবসা গুলোর একটি।তার ব্যবসার শাখা ছড়িয়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে।

মন্ত্রানালয়ের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি দুবাইচেম্বার অব কর্মাসের বোড অব ডাইরেক্টরস এর সদ্যস।এছাড়া আমিরাত পারমানবিক শক্তি সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান।ন্যাশনাল ইউএস আরব চেম্বার অব কর্মাসের একজন বোড মেম্বার এবং শেখ লুবনা আমিরাত ফাউন্ডেশন আবুধাবী ফ্রেন্ডশ অব ক্যান্সার পেশেন্ট এর একজন বোড মেম্বার।

তিনি ক্যালির্ফোনিয়া স্টেট ইউনির্ভাসিটি অব সিকাগো থেকে বি এস সি  ডিগ্রি অর্জন করেনএবং আমেরিকা ইউনির্ভাসিটি অব শারজাহ থেকে এম বি এ ডিগ্রি অর্জন করেন্।

 

বিশ্বখ্যাত ইসলামিক স্কলার মুসলিমা পারমুল

14010088_10205848765972907_511937096_n

মুসলিমা পারমুল উত্তর কেরোলিনার রেলি শহরে জন্মগ্রহন করেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ডিয়াগোতে বেড়ে উঠেন।১৯৮০র দশকে তার পিতামাতা আফগানিস্থান থেকে যুক্তরাট্রে আসেন। তিনি কেলিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘রিলিজিয়াস স্টাডিজ’ ও ‘সিডল ইর্স্টান স্টাডিজ’বিষয়ে ডিগ্রী লাভ করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সময় তিনি এম.এস.এ..ইউ.সি.এস.ডি এবং এম এস এ পশ্চিমে বিভিন্ন্ দায়িত্ব পালন করেন।ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে তিনি মিশরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আল আজাহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক শরিয়াহ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অজর্ন করেন।আমেরিকান ইউনিভার্সিটি কায়রোতে দুইবছর ইসলামি স্টাডিজ বিষয়ে অধ্যায়ন  করেন।কাযরোতে পড়াশুনা করার সময় তিনি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলারস’ এর ফিউচার স্কলারস প্রোগ্রামে অংশগ্রহন করেন।

বতর্মানে তিনি ইসলামিক সেন্টার আরভিন এ ইয়াং মুসলিমের প্রোগ্রাম পরিচালক হিসাবে কাজ করছেন।এ সেক্টরে তিনি যুবক ও তরুন পেশাজীবিদের ধর্মীয় শিক্ষা ও লিডারশীপের প্রশিক্ষন দেন ও বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করেন।

জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন সমাবেশে ইসলামিক আইন,নৈতিকতা ও অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষন দেন ও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।তিনি আমেরিকায় ইয়াং মুসলিমদের মাঝে ইসলাম প্রচারে নিবেদিত প্রান হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

গুগলের শীর্ষ বক্তা বাংলাদেশের রাখশান্দা রুখাম

13988917_10205848766732926_1574669391_n

বিশ্বের সব থেকে বড় প্রযুক্তি সম্মেলন ‘গুগল আইও’ সম্মেলনের ডেভেলপার সামিটের শীর্ষ বক্তা নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের গুগল উইমেন টেকমেকারসের লিড রাখশান্দা রুখাম।১০০ দেশের ৫০০ অংশগ্রহণকারী ডেভেলপারদের ভোটে শীর্ষ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রাখশান্দা।

গত ১৮ থেকে ২০ মে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউয়ে অনুষ্ঠিত হয় দশমবারের মতো গুগলের এই বার্ষিক সম্মেলন। যেখানে অংশ নেয় গুগল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত বিশ্বের শীর্ষ ডেভেলপার, ডিজিটাল এক্সপার্টস এবং প্রযুক্তি পেশাজীবীরা। সম্মেলনের আগের দিন প্রি-ইভেন্ট হিসেবে প্রতিবছরই আয়োজিত হয় গুগল ডেভলপার সামিট। যেখানে ১০০টি দেশের প্রায় ৫০০ ডেভেলপার গ্রুপ ম্যানেজার, গুগল ডেভেলপার রিলেশন টিমের সদস্য এবং গুগল ডেভেলপার এক্সপার্টরা অংশ নেন। যেখানে বাংলাদেশ থেকে এবার চারজন অংশ নিয়েছেন।এ সম্মেলনে অন্যতম ম্যানেজার রাখশান্দা শীর্ষ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হন ১০০টি দেশের ভোটে। তিনি উইমেন টেকমেকার্স নির্বাচিত হন ২০১৫ সালে। আর গুগল ডেভেলপার গ্রুপের ম্যানেজার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন ২০১৬ সালে ।

তিনি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় টেলিকমিউনিকেশনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে ইনোভেটিভ ডিজিটাল প্রডাক্ট ডিজাইনে এবং আইসিটি খাতে মেয়েদের অংশগ্রহণ নিয়ে কাজ করেন।

রাখশান্দা বলেন, বাংলাদেশ আর শুধু অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে নয় বরং সম্মেলনের গুরুতপূর্ণ অংশ হিসেবে তুলে ধরতে চাই। আমি চেষ্টা করব বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে যেতে। একদিন বাংলাদেশীরা গুগলের প্রধান নির্বাহীর মত পদে বসতে পারবে।

 

 

ফ্যাশনে রঙ পরিবর্তিত শার্ট

১৯৯০ এর দিকে হাইপার কালার অর্থাৎ রঙ পরিবর্তন হওয়া শার্ট বেশ জনপ্রিয় ছিল। ততদিন এটি ফ্যাশনে ট্রেন্ড হিসেবে ছিল, যতদিন পর্যন্ত না ক্রেতারা বুঝতে পারল কয়েকবার ধোয়ার পর তাদের প্রিয় শার্টের রঙ ফিকে হতে শুরু করে। তবে সম্প্রতি নিউইয়র্কের ডিজাইনার নিকোলাস বেনটেল আবারও ফ্যাশনে নিয়ে এলেন হাইপার কালার। দুষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই আবারও এই ধারনাটি নিয়ে এসেছেন এই ফ্যাশন ডিজাইনার। আগের ডিজাইনের শার্টগুলো তাপমাত্রার সঙ্গে তার রং পরিবর্তন করত। আর এবার বেনটিলের শার্টগুলো দুষণের কাছাকাছি আসলে তাদের রং পরিবর্তন করবে।

বেরটিলের প্রত্যেকটা শার্ট দুষণ এবং তেজস্ক্রিয়তার কাছাকাছি এলে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। উদাহরণ হিসেবে বেনটিল দেখিয়েছেন, তার তৈরি শার্ট কার্বণ মনোক্সাইডের সংস্পর্শে এলে রঙ পরিবর্তন করবে। এছাড়া ধুলাবালি এবং ধোঁয়া পেলেও বদলাবে কাপড়ের রঙ।

বেনটিলের দাবি, এই প্রযুক্তিতে তৈরি শার্টের প্রচার ঠিক মত হলে চারদিকে বেশ সাড়া পড়ে যাবে। তার আবিস্কার প্রশংসা তো পাবেই, সেই সঙ্গে হবে বেশ জনপ্রিয়। শার্টটি কার্বণ মনোক্সাইডের দাগ আবিস্কারক হিসেবে কাজ করবে। এতে লোকজন পরিবেশ দুষণের ব্যাপারে আরো সচেতন হবে। কাপড় ব্যবহারকারী তার স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতে রং পরিবর্তনের সতর্কতা পাবেন।

 

লেডি সার্জেন্টদের স্কুটি প্রদান করল ডিএমপি

সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া লেডি সার্জেন্টদের স্কুটি প্রদান করল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া দেশের প্রথম নারী সার্জেন্টদের হাতে স্কুটির চাবি তুলে দেন। এরপরই স্কুটি নিয়ে রাজপথে দায়িত্ব পালনে নেমে যান লেডি সার্জেন্টরা।

২৮ জন নারী সার্জেন্ট প্রশিক্ষণ নিলেও ২২ জন ডিএমপিতে দায়িত্বরত রয়েছেন। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের মোটরসাইকেল মেকানিক্স সেকশন ইনচার্জ কনস্টেবল নাজমুল হুদা খান জানান, ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে তাদের হাতে চাবি তুলে দেওয়া হলো।

গত ৩০ জুলাই থেকে পুলিশ লাইন্সের মাঠে লেডি সার্জেন্টদের মোটরসাইকেল চালানোর প্রশিক্ষণ শুরু হলেও তারা এখন সড়কে চালাতে পারদর্শী হয়ে উঠেছেন। প্রশিক্ষণ শেষে ডিএমপির হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত স্কুটি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ২০ লেডি সার্জেন্ট উপস্থিত ছিলেন। একজন অসুস্থ থাকায় এবং অন্যজনের মাস্টার্স পরীক্ষা থাকায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। ২০১৫ সালে দেশে প্রথমবারের মতো নারী সার্জেন্ট নিয়োগ দেয় সরকার। তারা ২০১৫ সালের ২২ মে চাকরিতে যোগদান করেন। ঢাকায় ২২ জনের পদায়ন হয় গত জানুয়ারিতে।