banner

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ ইং, ,

Monthly Archives: May 2025

 

মোহাম্মদপুরে স্ত্রীকে হত্যার পর ড্রামে লাশ রেখে পলায়ন


নারী সংবাদ


রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ড্রামের ভেতরে রেখে পালিয়েছে তার স্বামী সেলিম। খবর পেয়ে পুলিশ ওই গৃহবধূর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক অপারেশন শরিফুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১২টায় ঢাকা উদ্যানের বি ব্লকের ওই বাড়ির একটি কক্ষে ড্রামের ভেতর থেকে অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, জানুয়ারি মাসে সেলিম নামে এক ব্যক্তি ওই বাসাটি ভাড়া নেয়। ওই বাসায় তারা স্বামী-স্ত্রী থাকতেন। তিন-চার দিন ধরে প্রতিবেশিরা স্বামী-স্ত্রী কাউকেই দেখতে পাননি।

সুত্র: যুগান্তর।

 

প্রতিবেশিনী……২


আফরোজা হাসান


দরজা খোলায় জন্য যেতে যেতে মাহামের মনে পড়লো সুপার মার্কেটে যাবার সময় তারজন্য লেবুপাতা নিয়ে আসার অর্ডার দিয়েছিলো প্রতিবেশিনী। নিশ্চয়ই লেবুপাতা নিতেই এসেছে। কিন্তু লেবুপাতা কথা তো মনেই ছিল না মাহামের। না জানি প্রতিবেশীর হক বিষয়ক কি লেকচার শুনতে হয় এখন আবার। প্রতিবেশীর উপরে কুরআন-হাদীসের সমস্ত তথ্য ঠোঁটের আগায় নিয়ে ঘোরে তার প্রতিবেশিনীর। আট-ঘাঁট বেঁধে মাঠে নেমেছে সে বোঝাই যায়। মাহাম দরজা খুলতেই দেখলো বিশাল এক লাগেজ হাতে প্রতিবেশিনী দাঁড়িয়ে আছে।

দরজা থেকে সরে দাঁড়ান তো একটু। ভেতরে ঢুকতে দেন আমাকে। বলে নিজেই মাহামকে একপাশে সরিয়ে দিয়ে লাগেজ টানতে টানতে ভেতরে ঢুকে গেলো প্রতিবেশিনী।

মাহামের বিস্ময় ভরা দৃষ্টি সম্পুর্ন অগ্রাহ্য করে বলল, আজ আমি আপনার সাথে থাকবো। শোনেন আমার খুব গড়াগড়ি করার অভ্যাস তাই সোফায় শুতে পারবো না। আমি আপনার সাথে বেডরুমে ঘুমাবো। আপনার স্বামীকে বলবেন ড্রইংরুমের সোফায় ঘুমাতে।

মাহাম বলল, আপনার বাসায় কি গেস্ট এসেছে?

আরে না গেস্ট আসবে কেন? আমি স্বামীর সাথে ঝগড়া করে এসেছি।

কেন কি হয়েছে?

কি হয় নাই সেটা জিজ্ঞেস করেন। আমাকে বলে কি জানেন? বলে চিড়িয়াখানায় অদ্ভুত মানুষের যদি কোন সেল থাকতো তাহলে সে আমাকে সেখানে দিয়ে আসতো। কারণ আমি নাকি টিকিট কেটে দেখার মতো মানুষ।

হাসি পেলেও লেকচার শোনার ভয়ে প্রাণপণে নিজেকে সামলে নিলো মাহাম। যদিও মনে মনে প্রতিবেশিনীর স্বামীর ভাবনার প্রশংসা না করে পারলো না।

গজগজ করতে করতে প্রতিবেশিনী বলল, আমাকে উল্টা পাল্টা কথা বলার মজা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়াবো। কিন্তু রাগের সময় আমার আবার বুদ্ধি কাজ করে না। স্বামীকে শিক্ষা দেবার কোন বুদ্ধি থাকলে বলেন তো।

আমার স্বামীকে শিক্ষা দেবার তেমন প্রয়োজন পড়েনি কখনোই তাই ঠিক জানি না। তবে আমার মামণিকে কিভাবে বাবাকে শিক্ষা দিতেন সেটা বলতে পারি।

নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো। বলেন সেটাই বলেন।

মামণি বলতেন স্বামীকে এমন শিক্ষা দেয়া উচিত যা সে কল্পনার মধ্যেও কল্পনা করেনি কখনো। আর তাই বাবা-মামণির যখনই মনোমালিন্য হতো মামণি সেই সব কাজ করতেন যা বাবা সবচেয়ে বেশি পছন্দ ছিল। যেমন বাবার প্রিয় সব খাবার রান্না করা, বাবার পছন্দের শাড়ি পড়ে, সাজগোজ করে হাসিমুখে কথা বলা, এমন ভাণ করা যে কিছুই হয়নি। এবং মামণির এই পদ্ধতিটা সবসময়ই খুব কাজ দিতো। বাবা নিজের রাগ তো ভুলে যেতেইনি সাথে উল্টো মামণিকে সরি বলতেন।

তারমানে আপনি আমাকেও এমন কিছু করতে বলছেন?

আমি শুধু পরামর্শ দিচ্ছি। কি করবেন সেটা আপনাকেই ঠিক করতে হবে। ভেবে দেখেন আপনি রাগ করে কথা বন্ধ করে দেবেন, রান্না বন্ধ করে দেবেন, কিংবা বাসা ছেড়ে চলে যাবেন এগুলোই কিন্তু স্বাভাবিক। আপনার স্বামী একটুও অবাক হবেন না আপনার এইসব কর্মকান্ডে। কিন্তু আপনি যদি সংসারের সব কাজ ঠিকমতো করেন, এবং খুব স্বাভাবিক ভাবে কথা ও আচরণ করেন উনার সাথে। উনি শুধু যে অবাক হবেন তাই না যে কথা বলেছেন সেটার জন্যও অনুতপ্ত হবেন।

হাসি ফুটলো প্রতিবেশিনীর মুখে। বাহ দারুণ বুদ্ধি তো। এটাকেই মনেহয় কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা বলে। আচ্ছা তাহলে আমার স্বামী আসার আগেই আমি বাসায় চলে যাই। সবকিছু গোছগাছ করে বসে থাকি। এমন চমক দেবো আজ তাকে চোখে সর্ষে ফুল দেখবে।

দরজার কাছে গিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ালো এসে। ফিরে এসে মাহামকে জড়িয়ে ধরে বলল, আপনি অনেক ভালো। জানেন একবার রাসূল সা: সাহাবাদের লক্ষ করে বলেন, “তোমরা কি জানো প্রতিবেশীর হক কী? যদি সে তোমার সাহায্যপ্রার্থী হয় তাকে সাহায্য করবে, যদি সে ধার চায় তাকে ধার দেবে, যদি সে অভাবগ্রস্ত হয় তার অভাব মোচন করবে, যদি সে রোগগ্রস্ত হয় তাকে সেবা দান করবে, যদি তার মৃত্যু হয় জানাজার নামাজে শরিক হবে, যদি তার মঙ্গল হয় তাকে উৎসাহিত করবে, যদি তার বিপদ হয় তার প্রতি সহানুভূতি জানাবে। তার অনুমতি ব্যতীত তোমার ঘর এত উঁচু করবে না, যাতে তার আলো বাতাস বন্ধ হয়ে যায়। যদি তুমি ফলমূল ক্রয় করো, কিছু অংশ প্রতিবেশীর জন্য পাঠাবে। আর যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে তা গোপনে তোমার সন্তানদের খেতে দেবে, যেন প্রতিবেশীর ছেলেমেয়ে তার বাবা-মাকে বিরক্ত না করে।”

মাহাম হেসে বলল, জ্বী আমি জানি হাদীসের এই বানীটি। আসলে পাড়া-প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণের প্রতি অনেক গুরুত্ব দিয়েছে শরীয়ত। আমরা সবাই যদি তা মেনে চলতাম তাহলে আমাদের সমাজে শান্তির অমৃত ধারা প্রবাহিত হতো। পাড়া-প্রতিবেশীর মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝগড়াবিবাদ ও মনোমালিন্য দূরীভূত হতো। এবং সবাই সবার কল্যাণকামী হয়ে একে অন্যের প্রতি দায়িত্ববোধ ও তার অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হয়ে উঠতে পারতো।

প্রতিবেশিনীকে বিদায় জানিয়ে আবার রান্নাঘরে ঢুকলো মাহাম। আয়ান টেবিলে সব খাবার বেড়ে তার অপেক্ষাতে বসে আছে।

মাহাম বলল, আমি তো আসছিলাম তুমি করতে গেলে কেন? এভাবে কিন্তু তুমি আমার অভ্যাস খারাপ করে দিচ্ছো।

আয়ান বলল, সেটা কিভাবে?

এই যে সারাক্ষণ আমাকে সাহায্য করার জন্য হাত উঁচু করে বসে থাকো। এভাবেই এক্সপেক্টটেশন বেড়ে যায়। সবসময় তো তুমি এমন সাহায্য করতে পারবে না আমাকে তাই না? তখন হয়তো আমার মনেহবে তুমি আমাকে আগের মত কেয়ার করো না, ভালোবাসো না। বাবা সবসময় বলেন দাম্পত্যের শুরুর দিকের অপ্রতিরোধ্য আবেগও অনেক জটিলতার বীজ বুনে দিয়ে যায় সম্পর্কের।

হুমম…বুঝলাম। তা বাবার মেয়ে কি বলে সেটাও বলো শুনি।

সম্পর্কের বন্ধন গুলো রেশমের সুতোর মত হয় অনেকটা। তাই সেই সুতোকে কিছু একটার সাথে সুন্দর করে সবসময় বেঁধে রাখা উঠিত। ঐ যে ঘুড়ির লাটাইয়ে যেভাবে ভাঁজে ভাঁজে জড়ানো থাকে সুতো অনেকটা সেরকম। তা না হলে সুতোর প্যাঁচ লেগে যাবার সম্ভাবনা থাকে। প্যাঁচ লেগে যাওয়া সুতোদের একে অন্যের থেকে ছাড়াতে গেলে একটু অসাবধানটাতেই তা ছিড়ে যায়। ছিড়ে যাওয়া সুতো আবার জোড়া হয়তো লাগানো যায়। কিন্তু তাতে গিট পড়ে যায়। আর সম্পর্কের মাঝে কখনোই গিট পড়তে দেয়া ঠিক না।

সম্পর্কের বন্ধনে যাতে গিট না পরে সেজন্য কি করতে হবে?

সুতোগুলোকে শরীয়তের লাটাইয়ে জড়িয়ে নিতে হবে।

সেটাই তো করছি আমি। শরীয়ত যার মাধ্যমে এসেছে তিনিও তো সাংসারিক কাজে সাহায্য করেছেন স্ত্রীকে।

কিন্তু তিনি সবসময় সবকিছুতেই মধ্যাবস্থা অবলম্বন করেছেন।

হাসলো আয়ান। কিছু না বলে প্লেট এগিয়ে দিলো মাহামের দিকে। বড় বেশি লেকচার দেয় এই মেয়ে। এর লেকচার দেয়া বন্ধ করতে হবে। কঠিন কোন শিক্ষা দিতে হবে। কি শিক্ষা দেয়া যায় খেতে খেতে সেটাই ভাবতে লাগলো সে……..

চলবে….

পর্ব-১

 

‘মাথাব্যথা আর সমস্যা নয়’


প্রফেসর আলতাফ হোসেন সরকার


এমন কোন পরিবার খুজে পাওয়া যাবে না, যে পরিবারে মাথা ব্যথা নেই। ইন্টারন্যাশনাল হেডেক সোসাইটি ও সার্ভিকো জেনিক হেডেক সোসাইটির বিজ্ঞানীদের মতে প্রায় শতকরা ১৮ ভাগ লোক মাথা ব্যথায় ভুগে থাকেন। রোগীরা এই মাথা ব্যথা বিভিন্নভাবে চিকিৎসকের কাছে বর্ণনা করে বা উপস্থান করে। তরুন-তরুনী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পর্যন্ত মাথা ব্যথায় ভুগে থাকেন। আপনারা অবশ্যই জানেন, যুগ যুগ ধরে মানুষ মাথা ব্যথায় ভুগে আসছেন। মাথা ব্যথা মেডিকেল কন্ডিশনের একটি অন্যতম অসুস্থতা। এই মাথা ব্যথা থেকে আমরা সবাই মুক্তি পেতে চাই। আর সে জন্যেই মাথা ব্যথার উপর আজকের এই ছোট লেখা। সুপ্রিয় পাঠক, লিখতে বসেছি মাথা ব্যথা তার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে।

জনাব আব্দুর রাহিম। বয়স ২৫ বছর। থাকেন ধামরাইতে। গত ৫ বছর যাবৎ মাথার ডান পাশে ব্যথায় ভুগছেন। মাথা ব্যথার সাথে সাথে তার চোখেও ব্যথা হয়। মাঝে মাঝে ভমিটিং এবং ডিজিনেস হয়। তিনি তার মাথা ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মাথার এক্স-রে, সিটিস্ক্যান ও এমআরআই করেছেন এবং বিভিন্ন প্রকার ল্যাবরেটরী পরীক্ষাও করেছেন। সর্বপ্রকার রিপোর্ট-এ বলা হয়েছে, কোন অসুবিধা নেই। চোখের চিকিৎসকের পরামর্শ এবং তার উপদেশ অনুযায়ী চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা করেছেন। এই রিপোর্ট-এও বলা হয়েছে কোন অসুবিধা নেই। জনাব রাহিম এখন খুবই হতাশ জীবন-যাপন করছেন। মাথা ব্যথার যন্ত্রণায় অনেক কষ্ট পাচ্ছেন কিন্তু পরীক্ষা-নীরিক্ষায় বলা হয়েছে কোন কষ্ট নেই।

মাথা ব্যথা- বিভিন্ন প্রকার হয়। যেমন- সার্ভিকো জেনিক হেডেক, মাইগ্রেন হেডেক, টেনশন হেডেক এবং সাইনোসাইটিস থেকে মাথা ব্যথা হয়। মাথা ব্যথায় ভুগেন শতকরা ১৮ ভাগ লোক। এই শতকরা ১৮ ভাগ এর মধ্যে শতকরা ১৪ ভাগ লোক সার্ভিকো জেনিক হেডেক-এ ভুগেন। এছাড়াও প্যাথলজিক্যাল কারণের জন্যে মাথা ব্যথা হতে পারে। আমি যে মাথা ব্যথার চিকিৎসা করি এবং যে মাথা ব্যথার সম্পর্কে এখানে লিখছি- সে মাথা ব্যথার নাম সার্ভিকো জেনিক হেডেক। অর্থাৎ ব্যথা হয় মাথায় কিন্তু ব্যথার উৎপত্তি হয় ঘাড় থেকে। ঘাড়ের উপরিভাগে অর্থাৎ সি-১-২-৩ লেভেলে কষ্ট থাকে কিন্তু রোগী কষ্ট পায় মাথায়। ঘাড়ের এই অংশে যে সমস্ত স্ট্রাকচারে কষ্ট হলে মাথা ব্যথা হয় তা হলো- মাসেল, লিগামেন্ট, জয়েন্ট, ডুরামেটার, ডিস্ক এবং ভার্টিব্রাল আর্টারি। এই সমস্ত স্ট্রাকচার সি-১-২-৩ সার্ভাইক্যাল স্পাইনাল নার্ভ দ্বারা ইনারভেটেড। ঐ সমস্ত স্ট্রাকচারগুলোই সার্ভিকো জেনিক হেডেক তৈরি করে। অস্ট্রেলিয়ান ফিজিওথেরাপি বিজ্ঞানী এন বকডাক বলেছেন, সার্ভিকো জেনিক হেডেক-এর উৎপত্তি ঐ সমস্ত স্ট্রাকচার থেকে যে সমস্ত স্ট্রাকচার ইনারভেটেড বাই সি-১-২-৩। এছাড়াও উইফ্লাস ইঞ্জুরি থেকেও সার্ভিকো জেনিক হেডেক হয়। মহিলারা পুরুষদের চেয়ে বেশি এই রুগে ভুগে থাকেন।

জনাব রাহিমের ঘাড় পরিক্ষা করে দেখলাম নেকের উপরি ভাগের ডান পাশে ব্যথা এবং টেন্ডার। পাশ থেকে দেখা যায় যে, তার এন্টিরিওর হেড পোশ্চার আছে। তার অক্সিপিটো-নিউকিয়াল রিজিওনে লোকালাইজড পেইন আছে। মাথা ঘুড়াতে কষ্ট হয় অর্থাৎ মুভমেন্ট কমে গেছে। এই সমস্ত উপসর্গ দিক-নির্দেশনা দেয় জনাব রাহিম সার্ভিকো জেনিক হেডেক-এ ভুগছেন। মনে রাখবেন, সার্ভিকো জেনিক হেডেক-এর ক্ষেত্রে মাথার এক্স-রে, সিটিস্ক্যান ও এমআরআই-তে কোন অসুবিধা থাকবেনা।

জনাব রাহিমের জন্য চিকিৎসা হবে ঘাড়ের সফট টিস্যু মোবালাইজেশন, স্ট্রেসিং ও স্ট্রেন্দেনিং। তার সাথে লো-লেভেল লেজার থেরাপি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, হট বা কোল্ড থেরাপি(এ্যাসেসমেন্ট অনুযায়ী) ব্যবহার করতে হবে। জনাব রাহিম এই চিকিৎসায় ভাল হবে। অর্থাৎ তার মাথা ব্যথা চলে যাবে।

প্রিয় পাঠক, আমি আমার এই ছোট লেখার মাধ্যেমে ধারণা দিতে চেষ্টা করেছি যে, আপনার যদি সার্ভিকো জেনিক হেডেক বা ঘাড়ের উপরি ভাগের কষ্টের জন্য মাথা ব্যথা হয় তাহলে আপনি কি ধরনের চিকিৎসা করবেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মাথা ব্যথা আর সমস্যা নয়। আমার চিকিৎসা অন্যান্যদের চেয়ে সর্বাধুনিক এবং উন্নতর। আপনার সার্ভিকো জেনিক হেডেক বা মাথার জন্য আপনার ঘাড়ের উপরি ভাগের যতœ নিন, মাংস শক্তিশালী রাখুন এবং মাথা ব্যথার কষ্ট দূরীভুত করে সুস্থ জীবন-যাপন করুন।

ব্যাকপেইন বিশেষজ্ঞ
লেজার ফিজিওথেরাপি সেন্টার
পান্থপথ, ঢাকা।

সুত্রঃ ইবনে সিনা হেলথ ম্যাগাজিন◾বর্ষ ৬◾সংখ্যা ৩

 

নাটোরে গৃহবধূ এসিড দগ্ধ

 নারী সংবাদ

নাটোর সদর উপজেলার হালসা এলাকায় রাশিদা বেগম নামে এক গৃহবধূকে এসিডে ঝলসে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। হালসা ইউনিয়নের আরোইল এলাকায় তিনি এ ঘটনার শিকার হন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
চিকিৎসক ও গৃহবধূর স্বজনেরা জানান, গত শনিবার রাত ১১টায় সদর উপজেলার হালসা ইউনিয়নের আরোইল গ্রামের হাসেন আলীর স্ত্রী নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় এসিড জাতীয় ধাতব পদার্থ গৃহবধূকে ছুড়ে মারা হয়। ঘটনার সময় ঘরের দরজা খোলা ছিল। এতে গৃহবধূর বাম হাত এবং পিঠের পুরো অংশ পুড়ে যায়।
নাটোর সদর থানার ওসি (তদন্ত) ফরিদুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে তারা অবগত নন। কেউ এখনো থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

গৃহবধুর লাশ নিয়ে ধূম্রজাল


নারী সংবাদ


কুলাউড়ার ভুকশিমইলে বিয়ের সাত মাসের মাথায় লিপি বেগম(১৯) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের পরিবারের দাবি, বিয়ের ফার্নিচারের টাকা দেয়াকে কেন্দ্র করে শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধু লিপি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

রোববার দুপুর ২ টায় উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের কানেহাত গ্রামে গৃহবধুর স্বামীর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিকেলে লাশ উদ্ধার করে।

কুলাউড়া থানায় কান্নাজড়িত কন্ঠে নিহতের মা রুশনা বেগম বলেন, সাত মাস আগে তার মেয়ে লংলা আধুনিক মহাবিদ্যালয়ের ডিগ্রী ১ম বর্ষের ছাত্রী লিপি বেগম(১৯)কে কানেহাত গ্রামের কাতার প্রবাসী আব্দুস সামাদের সাথে বিয়ে দেয়া হয়।

বিয়ের পর থেকে তার মেয়ে লিপি বেগমের নির্যাতন করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, তার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসাবে প্রচার করছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

নিহত লিপির পিতা আব্দুল মনাফ বলেন, আমার মেয়েকে ভাসুর-দেবরসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। আমরা কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি।

নিহত গৃহবধু লিপি বেগমের ভাসুর সাইদুর রহমান বলেন, স্বামীর সাথে মোবাইলে কথা বলে লিপি শোবার ঘরে গিয়ে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। হয়তো স্বামীর সাথে ঝগড়া করে আত্মহত্যা করতে পারে।

নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, নিহত লিপির বাবার বাড়ির এক মেম্বার এসে উসকানী দিয়ে এ মিথ্যে অভিযোগ করাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার এসআই আনোয়ার জানান, ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধুর লাশ উদ্বার করা হয়েছে। তবে মৃত্যুটি হত্যা না আত্মহত্যা- সেটি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর বোঝা যাবে।

নিহত গৃহবধুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ এখনো পাননি বলে জানান তিনি।

কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সুত্র:নয়াদিগন্ত।

 

ইসলাম ধর্মে আইরিশ বিখ্যাত সংগীত শিল্পী ‘সিনেয়াড ও’কনোর’


নারী সংবাদ


আইরিশ শিল্পী সিনেয়াড ও’কনোর ছিলেন
ক্যাথলিক ধর্মের। সাম্প্রতিক তিনি টুইটারে এক বার্তায় ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। নতুন নাম নিয়েছেন শুহাদা।

মুসলিমদের সমর্থন দেবার বিষয়টিকে তিনি আন্তরিকভাবে নিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুসলিম উম্মাকে।

শুহাদা তার বার্তায় জানান, ‘ধর্মতত্ত্ব নিয়ে অধ্যয়নের পর তিনি নিরপেক্ষভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেছেন, ‘যেকোনো বুদ্ধিমান ধর্মতত্ববিদ গণ যদি স্বইচ্ছায় অনুসন্ধান নামেন তবে তা স্বাভাবিকভাবেই ইসলামে এসে তার সমাপ্তি ঘটবে’।

সুত্র : দ্যা গার্ডিয়ান।

 

বিচ্ছেদের চূড়ান্ত বার্তায় ফের দেশ ছাড়লেন শ্রাবন্তী


নারী সংবাদ


বিচ্ছেদের চূড়ান্ত বার্তা নিয়ে ফের দেশ ছাড়লেন অভিনেত্রী ইপ্সিতা শবনম শ্রাবন্তী। দুই মেয়ে রাবিয়াহ ও আরিশাকে নিয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি নিউ ইয়র্কে ফিরে যান।
একজন নির্মাতা জানিয়েছেন, স্বামীর সাথে ডিভোর্স ঝামেলা সুরাহা করতে দেশে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু স্বামী খোরশেদ আলম ডিভোর্স প্রত্যাহার না করে চূড়ান্ত বিচ্ছেদে অটল থাকায় সন্তানদের কথা ভেবে শ্রাবন্তী আমেরিকা ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর খোরশেদ-শ্রাবন্তী বিয়ে করেন। খোরশেদ আলম এনটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা এবং বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন।
বিয়ের আট বছর পর গত ৭ মে বগুড়া সদরের কালীতলার শিববাড়ির শ্রাবন্তীর বাবার বাসার ঠিকানায় তালাকের নোটিশ পাঠান মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।
এ খবর পেয়ে শ্রাবন্তী দেশে ফেরেন। এরপর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেন। তখন তার অভিযোগ ছিল, খোরশেদ আলম অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করছেন। যদিও তার স্বামী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, ‘আমাদের ভেতরে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, আস্থার জায়গাটা নষ্ট হয়ে গেছে; যা এক সাথে থাকলে আরো ধ্বংস হবে। আরো খারাপ দিকে যাবে বলে আমি মনে করছি। পরস্পর সরে আসায় দু’জনের জন্য ভালো হবে।’
জানা যায়, এসব ঝামেলার ভেতরেও শ্রাবন্তীর সাথে স্বামীর তালাকের বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। তার ধারণা ছিল এক সময় খোরশেদ আলম হয়তো সন্তানদের কথা ভেবে হলেও তালাকের নোটিশ প্রত্যাহার করবেন। কিন্তু চূড়ান্ত চেষ্টায়ও আর তার সুরাহা হয়নি। খোরশেদ আলম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি তালাকের নোটিশ প্রত্যাহার করবেন না। বিষয়টি কার্যকরে তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।
স্বামীর এমন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানার পর শ্রাবন্তী ফের দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে করা মামলায় সব দায়িত্ব এক স্বজনকে দিয়ে তিনি আমেরিকায় ফিরে যান। সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

জীবন


জুয়াইরিয়া জাহরা হক


তেজপাতার ইংরেজী করলে হয় ‘bay leaf’. সানজিদা আক্তারের জীবনটা হয়ে গেছে একটা গন্ধ ছাড়া bay leaf. কোন এক সময়ে তিনি অসাধারণ অনুবাদ করতেন। নিয়মিত আয়ত্ত্ব করতেন নতুন নতুন ইংরেজী শব্দ। একবার আয়োজন করে রুদ্র মোহাম্মাদ শহীদুল্লাহর কবিতা অনুবাদ করতে শুরু করেছিলেন! সে সময় এখন স্বর্ণালী অতীত। বর্তমান তিনি জীবন- সংসারের হামানদিস্তার নীচে মোটামুটি পিষ্ট। মাঝেমাঝে তার মনে চায় পঞ্জিকায় তারিখ-টারিখ দেখে কোন এক অমাবস্যা – পূর্ণিমার রাতে গেরুয়া রঙের থ্রি-পিস গায়ে দিয়ে রাস্তায় হাঁটা দিতে!
মহিলা মানুষ সন্যাসব্রত গ্রহণ করতে পারবে না, এমন কোন কথা নাই।
ভদ্রমহিলার জীবন কয়েক বছর আগেও আরেকটু মধুর ছিলো। ছোট মেয়েটা তখন কানে হেডফোন গুজে পা দুলিয়ে গান শুনতো না। বড়টা রাতভর বান্ধবীদের সাথে মোবাইলে কথা বলতো না। হুটহাট দুই মেয়ে দুনিয়ার সাজগোজ করে ঘরময় হাঁটাহাঁটি করতো না। সব ছিলো উনার লাঠির আগায়। বিটিভির রাতের খবর শেষ হওয়ার আগেই সব ঘুমিয়ে পড়তো। কাকরোল-চিচিংগা-মুলা সহ সব রকমের তরকারি দিয়ে ভাত খেয়ে ফেলতো। আসলে রাহবার মালায়শিয়া চলে যাওয়ার পর মেয়েগুলো মারাত্মক লাই পেয়েছে। মেয়ে দুইটা বড় ভাইয়ের ভয়াবহ ভক্ত। কিসব গল্প-টল্প বলে বুঝিয়ে বোন দু’টোর ভাব নজরে রাখতো। ছেলেটাও কাছে নেই। বিচার দিয়ে মনের শান্তি করবে, তারও উপায় নেই। এরা কেউ মাকে বুঝে না। শুধু যন্ত্রনা দেয়!
ছাদ থেকে তুলে আনা শুকনো কাপড় ভাজ করতে করতে রিমি-রিনি-রাহবারদের মা, সানজিদা আক্তার, এসব এলেবেলে চিন্তা করছেন। আজকে একটা ভয়াবহ কিছু হবে। মেয়েরা এখনো বাড়ি ফেরে নি। সূর্য ডোবার আগে ওদের বাসায় ঢোকার কথা। বাংলাদেশের সূর্য ডুবে সে সূর্য আমেরিকায় উঠে বসে আছে! তাদের কোন খবর নেই। কি যেন কি জরুরী নোট না ফোট করবে বলে বেড়িয়েছে। ডাল ঘুটনির আজকে হায়াত শেষ!

একা ঘরে রাগ করে আনন্দ নেই। খালি ঘরের দেয়ালকে রাগ দেখিয়ে ফায়দা কি? তারপরও উনি গজগজ করছেন। বিড়বিড় করে মেয়েদের গুষ্টি উদ্ধার করছেন আর জানালা- দরজা বন্ধ করছেন। ফোন করছেন সমানে। কত বড় কলিজা, বারবার ফোন কেটে দিচ্ছে। আজকে দুই কন্যার রাতের খাওয়া বন্ধ। বাপকে ঢাল বানাবে, ভাইকে ফোন দিবে, কোন লাভ নাই! সকাল হলেই টাকা চাওয়া বন্ধ। আজকে ঠ্যাং ভেঙে দুইটার হাতে ধরিয়ে দেয়া হবে।

এদিকে কর্তার বাড়ি ফেরার সময় হয়েছে। এসে যদি দেখেন মেয়েরা বাসায় নেই, বিশ্বযুদ্ধ অধ্যায় তিন শুরু হয়ে যাবে! সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে যাচ্ছে দেখে এখন একটু ভয় করতে শুরু করেছে। রিমি-রিনির মা সন্ধ্যা রাতের সব কাজ গুছিয়ে ফেলেছেন। খুব চিন্তা হচ্ছে উনার। এমন তো কখনো হয় না! দোয়া ইউনুস পড়ে ফেলেছেন কয়েক’শ বার!

এমন সময় কলিংবেলটা বেজে উঠলো। টানা কিছুদিন প্রচুর গরম পরার পর ঝুম বৃষ্টির মতন!
দরজাটা খুলে কিছুই দেখতে পেলেন না। সিড়ির বাতিটা জ্বালানো হয় নি। বাতিটা জ্বালিয়ে দিলেন।

‘ সারপ্রাইজ ‘!

সামনে দাঁড়িয়ে আছে রাহবার! দুই পাশে দুই বোন আর সাথে তাদের বাবা। চারজনের দাঁত সবকয়টা দেখা যাচ্ছে!
রাহবারের সেমিস্টার ব্রেক শুরু হয়েছে। মাকে বলেছিলো এবার আসবে না। থিসিসের কাজ আছে!
একটু আগে যে মহিলা ছেলেমেয়েদের চিন্তায় ত্যাক্ত ছিলেন, সে একই জন এখন মনে মনে ভাবছেন,

‘ আমার ছেলেমেয়েগুলো এতো দুষ্টু ধরনের অসাধারণ কেন! ‘

 

মা তোর নাকফুল বেচতে দিবনা!


মনির মোহাম্মদ


ক,দিন আগে ফেইসবুকে বৃদ্ধাআশ্রমে একজন মায়ের আকুতি পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। সেই মা বলেছিল ‘ আমি মারা গেলে আমার নাকফুলটা বেচে আমার কাফনের ব্যবস্থ্যা করবে তোমরা’। লেখাটা পড়ে কলিজায় একটা ধাক্কা খেলাম। এ কেমন সন্তান যার মাকে নাক ফুল বিক্রি করে কাফনের ব্যবস্থা করতে হয়! জানিনা এই স্ট্যাটাস টা সেই সন্তান পড়বে কিনা? যে মা এতো কষ্ট করে সন্তানদের গভীর মমতায় আগলে রেখে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

সেই সন্তানরা আজ ব্যস্থতার দোহাই দিয়ে মা-বাবাকে ফেলে আসছে বৃদ্ধাআশ্রম নামক আধুনিক সভ্যতার এক নতুন জঘন্য জীবনে।যেই বয়সে সন্তানদের সেবা আর ভালবাসা পাবার কথা, সেই বয়সে বৃদ্ধাআশ্রমে একলা বসে জীবনের শেষ প্রহর ঘুনছে।

ধিক শত ধিক সেই সব সন্তানদের! পরিশেষে একটি কথা বলতে চাই মা তোর নাকফুল বেচতে দিবনা। বুকের রক্ত বিক্রি করে হলেও তোর মুখে হাসি ফুটাবো, আগলে রাখবো বুকের গভীরে।

ভাল থাকিস মা,
ইতি তোর একজন সন্তান।
——-ম নি র মো হা ম্ম দ!

 

ইথিওপিয়ায় প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট

 


নারী সংবাদ


ইথিওপিয়া বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মত একজন নারী প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করেছে।

পেশাদার কূটনীতিক শাহলি-ওয়ার্ক জিওদি আইন প্রণেতাদের সর্বসম্মত ভোটে নির্বাচিত হন। তিনি মুলাতু তেশমের স্থলাভিষিক্ত হলেন। ইতোপূর্বে মুলাতু পদত্যাগ করেন।

শাহলি-ওয়ার্ক ষাটের দশকের শেষ দিকে ফ্রান্স, জিবোতি, সেনেগালে ইথিওপিয়ার দূত হিসেবে কাজ করেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি জাতিসংঘে আফ্রিকান ইউনিয়নের শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন। ইংরেজী, ফরাসী ও আমহারিক ভাষায় তার বিশেষ দক্ষতা রয়েছে।

ইথিওপিয়ায় প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিচালনা করেন। প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা মূলত উৎসব ও অনুষ্ঠানে যোগদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ গত সপ্তাহে ২০ সদস্য বিশিষ্ট একটি ছোট মন্ত্রীসভা গঠন করেন। এ মন্ত্রীসভার অর্ধেকই নারী। সুত্র: বাসস।

 

দাম্পত্য টিপস

 


দাম্পত্য


আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। কৃতজ্ঞতা বোধকে নিজের ভেতর চেপে রাখবেন না। আসুন জেনে নেই কিছু সুন্দর টিপস…

বিশ্বাস বজায় রাখুন
যদি বিশ্বাস ভেঙ্গে গিয়ে থাকে, তাহলে সেই বিশ্বাস জোড়া দেওয়ার সময় এখনও পার হয়ে যায়নি। এজন্য যেকোনো সময়ই উপযুক্ত সময়। বছরের পর বছর ধরে যে বিশ্বাস আপনি গড়ে তুলেছেন, তা এক মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

তর্ক এড়িয়ে যান
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা নিয়ে তর্ক হয় তা আসল বিষয় থাকে না। দাম্পত্য জীবনের অনেক তর্কই হয়ত এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তবে ক্ষতিকর বিতর্ককে এড়িয়ে যেতেই হবে।

ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ
ভালোবাসা কেবল অনুভুতি নয়; বরং আমাদের কাজের মাধ্যমেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মনের হতাশা ও অতৃপ্তিকে বাড়িয়ে দেয়।
অনেক সময় সুখী দম্পতিরাও ভাবেন যে, তারা ভুল মানুষটিকে বিয়ে করেছেন।

গভীর মনোযোগ দিন
জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর প্রতি আপনার গভীর মনোযোগ পরস্পরের জন্য হতে পারে অমূল্য উপহার।

নিশ্চয়তা দিন
আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী আপনাকে সুখী করার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে না পারলেও তিনি আপনার সুখী হওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই সাহায্য করতে পারেন।

মিথ্যা বলা বর্জন করুন
মিথ্যা বলে হয়ত সামান্য কিছু সুবিধা পান। কিন্তু পরিমাণে মিথ্যা বলার জন্য সুবিধার চেয়ে অনেক বেশি চড়া মূল্য দিতে হয়। অতএব, মিথ্যা বলা বর্জন করুন।

অনুভূতি নিয়ে খেলা

সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অপরাধবোধকে দীর্ঘায়িত করে তার অনুভূতি নিয়ে খেলা করে আপনি যা পেতে চান, তা কখনোই পাবেন না। আপনার যদি মনেি হয়, ‘তুমিই আমার জন্য সঠিক মানুষটি, যাকে আমি বিয়ে করেছি’, তাহলে আপনি ঠিক পথেই আছেন।

প্রলোভনকে দমন করুন
কোনো কিছু প্রমাণ করতে যাওয়ার প্রলোভনকে দমন করতে পারলে, বস্তুত আপনি অনেক কিছুই প্রমাণ করতে পারলেন।

আত্মিক উদারতা
আত্মিক উদারতা একটি সুখী দাম্পত্য জীবনের প্রধান ভিত্তি।

দাম্পত্য জীবনে সাফল্য পেতে হলে, অতীতে কী হয়েছে তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।

সুত্র: ইন্টারনেট

 

শিশু ধর্ষণ ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা


নারী সংবাদ


ধর্ষণের পর আগুনে পুড়িয়ে শিশু আঁখি আক্তারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে তার খালু শাহাদাত হোসেনকে (৩৩) ।ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুরের চকমিরপুরে।
গত ১৮ অক্টোবর আঁখিকে তার নানার বাড়ি সাটুরিয়া উপজেলার দিঘলিয়ায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে আসেন শাহাদাত। তবে সেখানে না নিয়ে আঁখিকে কৌশলে দৌলতপুরের চকমিরপুর এলাকায় নিয়ে যান ।দুই দিন ওই এলাকায় আঁখিকে রাখার পর ২০ অক্টোবর গভীর রাতে তাকে ধর্ষণ করে শাহাদাত। পরে প্রমাণ নষ্ট করার জন্য আঁখিকে গলাটিপে করে হত্যা করে পেট্রোল ঢেলে লাশের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের ডিআইও-১ মুহম্মদ আশরাফুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপরোক্ত তথ্য জানানো হয়।

পুলিশের ঐ কর্মকর্তা জানান, দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সুনীল কুমার কর্মকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঢাকার ধামরাই থানার বারবারিয়া স্কেল এলাকা থেকে ২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শাহাদাতকে গ্রেফতার করে। এর আগে গত ২১ অক্টোবর এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পরে তাকে আদালতে উপস্থিত করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

 

বাস্তবতা

 


রেহনুমা বিনত আনিস


১/ পরশুদিন রিহামের শিক্ষক নোট পাঠালেন, ‘রিহাম আজ ক্লাসে প্রচন্ড আপসেট ছিলো। আজ আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলো পোকামাকড় নিধন। ক্লাসে কিছু বাচ্চা পোকামাকড় মারার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলো। রিহামের খুব মন খারাপ হয়ে যায়। আমরা এই বিষয়ে আগামী কয়েকদিন আলোচনা করব। রিহামের ব্যাপারে চিন্তিত বোধ করছি’।

অফিস থেকে ফিরতেই রিহাম দরজা খুলল, গম্ভীর চেহারা, ‘টিচার তোমাকে নোট পাঠিয়েছেন’। এর অর্থ হোল ব্যাপারটা যাই হোক না কেন, সেটা ওর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। জুতোটা খুলেই বললাম, ‘নিয়ে এসো’। নোটটা আনতে আনতে ওর গলা বন্ধ হয়ে এলো, চোখ ছলছল করতে লাগল। কিন্তু সে কিছুতেই জনসমক্ষে কাঁদবেনা। আমার ছেলেটা যে কিভাবে আমার মতই হোল! কত জ্ঞানী জ্ঞানী কথা বলে, অথচ মনের কথা মুখে আনতে পারেনা। নোটটা পড়ে আগে ওকে কোলে বসিয়ে, জড়িয়ে ধরে, মাথায় হাত বুলিয়ে সান্তনা দিলাম। বাইরে সে যতই নিজেকে বিজ্ঞানী মনে করুক না কেন, ভেতরে তো সে একজন কোমলপ্রান শিশুই! রিহাম কিছুটা শান্ত হয়ে এলে বললাম, ‘আসলেই তো, যে প্রান মানুষ সৃষ্টি করেনি সে প্রান মানুষের ধ্বংস করার কোন অধিকার নেই’। সে বুঝল আমি ওর মনের কথাটা বুঝেছি। তারপর যুক্তিগ্রাহ্য উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বললাম কেন মাঝে মাঝে কিছু কিছু প্রানীর ক্ষতির সম্ভাবনা হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাদের হত্যা করতে হতে পারে। ওর উদার বিজ্ঞানী মন এই যুক্তিতে খুব একটা খুশি হতে পারলনা, মানুষ সব প্রানীকে বিলুপ্ত করে ফেললে কি করে চলবে? কিন্তু আবার বাস্তবতাও অস্বীকার করতে পারলনা। সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ালো। সিনারিওটা ওর পছন্দ না হলেও সত্যটা সে মেনে নিলো।
কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে ওর শিক্ষকের নোটের জবাব দিলামঃ ‘সুপ্রিয় শিক্ষক, রিহামের প্রতি আপনার সচেতন নজরের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি তো জানেন রিহাম প্রানীদের ভালোবাসে এবং এই ভালোবাসা পোকামাকড়দের প্রতিও বিস্তৃত। একবার ওর বোন একটা মাছি মেরেছিল বলে রিহাম এক ঘন্টা কেঁদেছিলো। আমি কখনোই চাইনা জীবজগতের প্রতি ওর এই মায়া হারিয়ে যাক। আমি চাইনা সে এমন মানুষে পরিণত হোক যে প্রানীহত্যা করে আনন্দ পায়, সেটা হোক পোকামাকড় কিংবা গাছপালা। তবে ওকে এটাও জানতে হবে, মানুষ বড় স্বার্থপর প্রানী, সে নিজেকে ছাড়া আর কাউকে নিয়ে ভাবেনা, এমনকি অপর কোন মানুষকে নিয়েও না। রিহামকে ধীরে ধীরে এই বেদনাদায়ক বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। আপাতত যতটুকু ওর জানা প্রয়োজন সেটুকু আমি ওকে বুঝিয়েছি। বাকীটার জন্য প্রয়োজন অল্প সময় আর অনেক টিস্যূ পেপার’।

২/ আমার মেয়ের মাশাল্লাহ জন্মগতভাবেই প্রচুর যোগ্যতা। ওর দিকে এক নজর তাকালেই বোঝা যায় ওর কোন কিছুই আমার মত নয়। বরং সে ছোটবেলা থেকেই মনে করে এই বে-গুন মা’টাকে সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখা ওর নৈতিক দায়িত্ব। সে দেড় দু’বছর বয়স থেকেই স্বাবলম্বী। চার বছর বয়সে সে আমাকে কোলে নিতে পারত। সাত আট বছর বয়স থেকে সে ওর বাপের বয়সী লোকজনকে কার্যকর পরামর্শ দিতে পারত। দশ বারো বছর বয়সে সে একাই একটা সংসারের দায়িত্ব নেয়ার উপযুক্ততা অর্জন করে। ইদানিং সে স্কুলে এবং অন্যান্য জায়গায় বিভিন্নপ্রকার প্রোগ্রাম অর্গানাইজ করার দায়িত্ব পায় যেখানে ওর চেয়ে বয়সে বড় ছেলেমেয়েরাও ওর নির্দেশ পালন করে। অতিরিক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন লোকজনের সমস্যা হোল ওরা সিদ্ধান্ত দিতে এত অভ্যস্ত হয়ে যায় যে ওরা ভুলে যায় মাঝে মাঝে সিদ্ধান্ত নিতেও হয়, অন্যের সিদ্ধান্ত। বরং ওরা অন্যের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করার চেয়ে নিজের ভুল সিদ্ধান্তে ভরসা করাই শ্রেয় মনে করে। রিহামকে যুক্তি দিয়ে বুঝানো যায়। কিন্তু রাদিয়ার জন্য কেবল একটি নিয়ামকই প্রযোজ্য, ‘নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার ত্যাগ, আমার জীবন এবং আমার মৃত্যু কেবলমাত্র এই মহাবিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন অংশীদার নেই, আমি এভাবেই নির্দেশপ্রাপ্ত, এবং আমি আত্মসমর্পনকারীদের মাঝে অগ্রনী’ (সূরা আন’আমঃ আয়াত ১৬২-১৬৩)। বাবামা সন্তানকে কতটুকুই বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে যদি না এর নিয়ামক হয় আল্লাহর প্রতি আনুগত্য?

৩/ আমি যখন কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরোই তখন বাজে ভোর পৌণে ছ’টা। পৌঁছই তখন ছ’টা বিশ। এই আধঘন্টা আমার দিনের সবচেয়ে প্রিয় সময়। শুধুমাত্র ভরগ্রীষ্ম ব্যাতীত এই সময়টা থাকে অন্ধকার। প্রকৃতি তখনও ঘুম ভেঙ্গে জেগে ওঠেনা। আমরা ক’জন ভোরের পাখি ছাড়া কোন বাড়ীতে আলোও দেখা যায়না। কখনো নিঃশব্দ তুষারপাত, কখনো টুপটাপ বৃষ্টি। এছাড়া অধিকাংশ সময় প্রকৃতি থাকে নীরব নিস্তব্ধ। এই সময়টা আমার ভীষণ ভাল লাগে। এই মৌনতা আমার ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। এ’সময় আমি নিত্য নতুন প্রেমে পড়ি। কিন্তু আগের প্রেম তার জৌলুস হারায়না, আবার নতুন প্রেম পুরোনোকে প্রতিস্থাপিত করতে পারেনা। তারা সকলে মিলে আমার মনের ভেতর সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করে। আমার লেটেস্ট প্রেম হোল এই দু’টির দ্বিতীয়টি, আমার পুত্র কিছুক্ষণ পর পর এসে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আহ্লাদ করে বলে, ‘মি লাভ মাই আম্মু সোওওওওওওও মাচ! মি গিভ মাই আম্মু আ বিইইইইইগ হাগ’। তারপরও সেদিন আমি অফিস থেকে ফেরার পর সে ব্যাস্ত ছিলো বলে আমি অভিমান করে বললাম, ‘আজ কিন্তু তুমি তোমার সবচেয়ে জরুরী কাজটা করনি’। বুদ্ধিমান পুত্র বুঝতে পেরে সাথে সাথে জড়িয়ে ধরল। ভাবি, আমি কবে আমার প্রভুকে মন খুলে বলেছি, ‘ভালোবাসি!’ তবু তিনি আমাকে দিয়ে যাচ্ছেন, অকাতরে, এত বেশি যে মাঝে মাঝে ভয় হয় ওদিকের জন্য বুঝি আর কিছু বাকী রইলোনা।
আবার ভাবি, শুধু ভালোবাসি বলাই কি যথেষ্ট? যেমন কেউ একজনের কাছে প্রচন্ড কষ্ট পেয়ে একজন মুরুব্বীর কাছে সমাধান চাইলাম। তিনি সমাধান দিলেন, ‘তুমি তো জানোই সে সেরকম। তোমারই ভুল হয়েছে। তুমি ওকে সামলে চলতে পারোনি’। বাহ! সে সেরকম সেটা অন্যায় নয়, আর আমি টুঁ শব্দ করলেই অন্যায়! সরে এলাম। আমি সবসময় এসব জায়গা থেকে সরে আসি। সবাই ভাবে আমি সরে আসি কারণ আমি বোকা। কিন্তু না, আমি সরে আসি কারণ আমি বুদ্ধিমান। মানুষের কাছে অধিকার চেয়ে লাভ কি? আমার প্রভুর কাছে প্রতিদান চাইলে পাব ঢের বেশি।

কিন্তু কথা সেটা নয়। কথা হোল আমি বললাম, ‘ভালোবাসি’। কিন্তু আমার চিন্তাচেতনা তাঁর পছন্দ অপছন্দকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় না, আমার কথায় কাজে তাঁর প্রতি ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটেনা, আমার সময়ে তাঁর কোন অধিকার চোখে পড়েনা, তবে এই মৌখিক প্রকাশের কতটুকু মূল্য থাকে?
৪/ কিভাবে কিভাবে যেন আমার অফিসেই সবসময় গল্পের আসর বসে। আমি যেহেতু অনেক ভোরে কাজ শুরু করি, যতক্ষণে অন্যরা গল্পের মুডে আসে ততক্ষণে আমার দিনের অর্ধেক পেরিয়ে যায়, সুতরাং আমিও সময় দিতে পারি। মাঝে মাঝে আমাদের গল্পসল্প অদ্ভুত মোড় নেয়। যেমন আজ জিং বাবামা নিয়ে গল্প শুরু করল। কিছুক্ষণ পর তা এসে ঠেকল খাবারে। লোভনীয় সব খাবারের আলোচনার মাঝে আমি বাগড়া দিলাম আমার অদ্ভুত চিন্তা দিয়ে, ‘আচ্ছা, এখন যদি ডাইনোসর পাওয়া যেত এবং সেটা খাওয়া যেত তাহলে কতজন মানুষ কতদিন যাবত একটা ডাইনোসর খেতে পারত’।
ক্যারী বলল, ‘সেটা তো ডাইনোসরের সাইজের ওপর নির্ভর করে, তাইনা? কিছু কিছু ডাইনোসর ছিলো অনেক ছোট। আবার কিছু কিছু ছিলো অনেক বড়। তবে ধর যদি আমরা একটা মাঝারী আকারের ডাইনোসর ধরি, যেমন টি-রেক্স, তাহলে একটা হিসেব করে দেখা যেতে পারে’।

আমার চিন্তাটা ‘টি-রেক্সকে কিভাবে ধরাশায়ী করা সম্ভব তার খাবারে পরিণত না হয়ে’র দিকে ধাবিত হওয়াটাই হয়ত স্বাভাবিক ছিলো, কিন্ত আমি তাৎক্ষণিক উত্তর দিলাম, ‘নাহ, টি-রেক্স খাবনা। সে হিংস্র। ব্রন্টোসরাস পেলে খেতে পারি’।
ক্যারী মুচকি হেসে চলে গেল যার অর্থ হোল, ‘বুঝলে তো, যে হিংস্র তাকে কেউ কিছু বলেনা। হম্বিতম্বি যা চলে সব নীরিহের ওপর। এটাই জগতের নিয়ম’।

হুমম, বুঝলাম। শেষপর্যন্ত আমার যুক্তি, আমার আনুগত্য, আমার বিনয়, আমার ভদ্রতা পরাজিত হোল এই জগতের নিয়মের কাছে যার অযৌক্তিকতা নিয়ে আমরা এতক্ষণ আলাপ করছিলাম।

 

ধর্ষণের পর গৃহবধূকে পতিতা সাজালো ৪ ধর্ষক


নারী সংবাদ


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এক গৃহবধুকে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। রোববার সকালে উপজেলার কাঁচপুর সোনাপুর এলাকায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পর ৩ ধর্ষক পালিয়ে যায়।

সোনারগাঁও থানায় দায়ের করা মামলার এজহারে ওই গৃহবধু উল্লেখ করেন, উপজেলার কাঁচপুর সোনাপুর এলাকায় একটি ফ্লাটবাসা ভাড়া নিয়ে স্বামীসহ বসবাস করেন। গত শুক্রবার তার স্বামী গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যান। ওইদিনই তার দেবর ও জ্যা তার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। রোববার সকাল ৮টার দিকে কাঁচপুর এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন, হেলাল, রবিন ও দেলেয়ার জোড়পূর্বক তাদের ঘরের প্রবেশ করে। এসময় তার দেবরকে মারধর করে জ্যাসহ তাদের দু’জনকে একটি কক্ষে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূর গায়ের ওড়না দিয়ে তার মুখ বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণকারীরা তার দেবরের কাছে থাকা নগদ টাকা ও ঘরে থাকা প্রায় ১০ হাজার নগদ টাকা নিয়ে যায়।

সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক( এসআই) তানভির আহম্মেদ জানান, গত রোববার সকালে ৪ ধর্ষণকারী গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে ধর্ষণকারীরা ওই গৃহবধূ ও তার জ্যা’কে পতিতা এবং দেবরকে মাদক ব্যবসায়ী বলে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে কৌশলে ৩ ধর্ষক পালিয়ে যায়। কথাবর্তার এক পর্যায়ে আসল রহস্য বেরিয়ে আসলে হেলাল নামের এক ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়। পরে আটক ধর্ষক হেলালকে জিজ্ঞাসায় হেলাল ধর্ষণের কথা স্বীকার করে।বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

প্রতিবেশিনী……১


আফরোজা হাসান


দরজায় চাবি ঢুকিয়ে মোচড় দিতেই এতক্ষণের ধরে রাখা উত্তেজনা ক্লান্তির কণিকা রূপে সারা শরীর জুড়ে প্রবাহিত হয়ে গেলো মাহামের। উফ…শুধু শুধুই সে রেসের ঘোড়ার মত ছুটেছে এতক্ষণ। বাইরে থেকে ফিরে তাকে বাসায় না দেখলে ভীষণ বিরক্ত হয় আয়ান। সুপার মার্কেটে এক পরিচিত অ্যান্টির সাথে দেখা হয়ে গেলো হঠাৎ। এমন গল্প জুড়ে দিলেন ভদ্রমহিলা যে থামারই নাম নিচ্ছিলেন না। মাহাম কয়েকবার বলেছেও অ্যান্টি আমার একটু তাড়া আছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। তাড়ার কথা শুনে উনি বরং লাফ দিয়ে দু’কদম এগিয়ে এসে খপ করে মাহামের হাত চেপে ধরলেন।

বাধ্য হয়ে মাহাম জানালো যে তার স্বামীর বাসায় ফেরার সময় হয়ে গিয়েছে। এই কথা শুনে ভদ্রমহিলা একরকম ঝাড়িই দিলেন মাহামকে। বললেন, সেজন্য তুমি এমন দৌড়াবা নাকি? তুমি সারাদিন একা একা অপেক্ষা করো না বাসায় জামাইয়ের জন্য? এখন তারে একটু অপেক্ষা করতে দাও। পুরুষ মানুষেরও বোঝা উচিত সারাদিন বাসায় বসে অপেক্ষা করতে কেমন লাগে। এরপর দেয়া শুরু করলেন সাংসারিক পরামর্শ। যার সারমর্ম হচ্ছে স্বামীদের কখনোই বিড়াল মারতে দেয়া ঠিক না। না বাসর রাতে না অন্য কোন রাতে। সংসারে বিড়ালকে জীবন্ত রাখতে হবে। বিড়ালের মিউ মিউ ছাড়া সংসার পানসা।

ভদ্রমহিলার সাংসারিক ক্লাস থেকে ছুটি পেয়ে একরকম দৌড়েই বাসায় এসেছে মাহাম। কিন্তু দরজার চাবি দিয়ে লক খোলা দেখে বুঝতে পারলো আয়ান চলে এসেছে বাসায়। মনটা অনেক বেশি খারাপ হয়ে গেলো মাহামের। অল্প যে কয়েকটা আবদার আয়ান তার কাছে করেছে, বাসায় ঢুকেই তার হাসিমুখ দেখা সেগুলোর মধ্যে একটি। কয়েকদিন আগে নাস্তার টেবিলে একটা ব্যাপারে দুইজনের কিছুটা মত পার্থক্য হয়েছিলো। কিছুটা বিরক্তি নিয়েই বাসা থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিল আয়ান। কিন্তু বাসায় ফেরার আগে মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠালো জানি যে আমাদের মনোমালিন্য চলছে। সেজন্য কথা বলা আমাদের। দয়া করে বাসায় ঢুকে যেন তোমার হাসি মুখ দেখি। তা না হলে কথা বলতেই ইচ্ছাই করবে না আমার।

ধীরে ধীরে ঘরে ঢুকলো মাহাম। কেমন যেন লজ্জা লজ্জা লাগছে তার। আয়ান প্রশ্ন করলে কি জবাব দেবে? এইসময় তো সুপার মার্কেটে না গেলেও হতো তার। পুরো বাসায় চোখ বুলিয়ে বুঝলো আয়ান ওয়াশরুমে। কিনে আনা জিনিসপত্র গুলো গুছিয়ে শোবার ঘরে ঢুকলো মাহাম। ড্রেসিংটেবিলের উপর একটা প্যাকেট দেখে হাতে তুলে নিলো। প্রতিমাসে আয়ান তার জন্য একটা করে লাভস্টোরি নিয়ে আসে। আয়ানের মতে মাহাম হচ্ছে এই নোবেল প্রাইজ পাবার মত আনরোম্যান্টিক মেয়ে। পৃথিবীর বিখ্যাত সব লাভস্টোরি পড়িয়ে তাই মাহামকে রোম্যান্টিক বানানোর চেষ্টা করছে সে।

আয়ানকে রুমে ঢুকতে দেখে সালাম দিয়ে আনিকা বলল, তুমি আবারো আমার জন্য ইয়াকি একটা লাভ স্টোরি নিয়ে এসেছো?

সালামের জবাব দিয়ে হাসতে হাসতে আয়ান বলল, হ্যা বেছে বেছে স্টোরের সবচেয়ে ইয়াকি লাভ স্টোরিটা নিয়ে এসেছি তোমার জন্য।

আয়ানের হাসিমুখ দেখে মাহামের মনের ভুবনে আনন্দধারা বইতে শুরু করলো। যাক তাহলে খুব বেশি বিরক্ত হয়নি আয়ান। আলাহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ্‌! মাহাম কখনোই চায় না আয়ানের আবদারের জিনিস গুলোতে কোন ঘাটতি রাখতে। যে মানুষটা তাকে এত ভালোবাসে এইটুকু দাবী সে অন্তত রাখে যে মাহাম তার ইচ্ছে গুলোকে মূল্য দেবে। আর এভাবেই তো একে অন্যের প্রতি আস্থা বাড়তে থাকে ধীরে ধীরে।

দেড় মাসের সংসার জীবনের প্রতিটি দিনকেই ভালোবাসার এক একটি মহাকাব্য মনেহয় মাহামের কাছে। সে শুধু পাশে থেকেছে কিন্তু মহাকাব্য রচনার কাজ আয়ানই করেছে, করে। শ্বাশুড়ির প্রতি আবারো কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠলো মাহামের মনটা। তাদের বিয়ের রিসিবশনের পর একরকম জোর করেই দুজনকে এই ফ্ল্যাটে উঠতে বাধ্য করেছেন তিনি। উনার যুক্তি ছিল সারাজীবন পরিবারের সাথেই থাকতে হবে তোমাদেরকে। কিন্তু সংসার শুরুর এই প্রথম দিনগুলি যদি সুযোগ থাকে তাহলে শুধু একাকী নিভৃতে কাটানো উচিত দুজনার। তোমাদের যখন সেই সুযোগ আছে সুতরাং কাজে লাগাও। যদিও পরিবারের সবার জন্য খুব খারাপ লাগে মাহামের। রোজই চলে যায় শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়িতে। আয়ান ফিরে আসার আগেই আবার চলে আসে।

খাবার দেবার জন্য মাহাম রান্নাঘরে ঢুকলে আয়ানও এলো পেছন পেছন। বাসায় থাকলে কখনোই কোন কাজ মাহামকে একা করতে দিতে চায় না আয়ান। কিন্তু মাহামই আপত্তি করে আয়ান কাজ করতে এলে। এরও অবশ্য একটা কারণ আছে। গত কয়েকদিন আগে শীল-পাটায় তাকে ভর্তা করতে দেখে, পাটায় বাটতে কেমন লাগে সেটা ট্রাই করে দেখতে চাইলো আয়ান। শীল-পাটার সাথে আয়ানকে যুদ্ধ করতে দেখে খুব হাসছিলো মাহাম। ছোট ননদ বেড়াতে এসেছিল সেদিন তাদের বাসায়। হঠাৎ খেয়াল করলো পর্দার ফাঁক দিয়ে ছোট ননদ দন্ত বিকশিত করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। দুষ্টু প্লাস ফাজিলের চূড়ান্ত একটা মেয়ে তার ননদটি। আর বিবিসি-সিএনএন তো দুধের শিশু ওর কাছে। তাই কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিবারের সবার ঘরে ঘরে পৌছে গেলো এই সংবাদ।
ছোট খালামণি ফোন দিয়ে হাসতে হাসতে বললেন, শুনলাম আয়ান নাকি তোকে মসলাও বেটে দেয়? হিহিহি…হাহাহা…! মামণি কল দিয়ে বলল, এইসব কি শুনছি জামাইকে দিয়ে তুই মসলা বাটাবি কেন? সবকিছুর তো একটা শোভন অশোভন বলেও কিছু আছে নাকি? বাবা ফোন করে বললেন, কি রে মা জামাইয়ের হাতে আবার ফোসকা পরেনি তো? বাবার কণ্ঠ শুনেই শুনেই মাহাম বুঝতে পারছিলো বহু কষ্টে হাসি চেপে ধরে কথা বলছেন। দেবর ম্যাসেজ পাঠালো, ভাবী প্লিজ মানুষকে গৃহপালিত বানানোর টিপস গুলা দাও তো আমাকে। তোমার দেবরাণীর উপর এপ্লাই করতে চাই। তারও কিছুক্ষণ পর দরজার নীচ দিয়ে ঢুকলো একটা চিরকুট। তাতে লেখা ছিল, এক ছিল বেচারা তাকে নিয়ে লিখছি ছড়া, সিংহ সেজে ঘুরতো সে বিয়ে করেই খাইলো ধরা।

একদিন সকালে উঠে দেখে তাদের পাশের ফ্ল্যাটে নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে। কিছুক্ষণ পর ডোর বেল বাজলে মাহাম দরজা খুলে দেখে প্রতিবেশিনী দাঁড়িয়ে আছে। তাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই প্রতিবেশিনী বলল, প্রতিবেশীর হক সম্পর্কে নিশ্চয়ই জানা আছে আপনার? রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জিবরাঈল (আ.) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে এত বেশি অসিয়ত করছিলেন, একপর্যায়ে আমার ধারণা হয়েছিল যে, আল্লাহ তাআলা মনে হয় প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী করে দেবেন।’ তিনি আরো বলেছেন- -‘ যে আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ এবং একথাও বলেছেন- ‘সে ব্যক্তি মুমিন নয় যে পেট ভরে খায়, অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে’।

সুতরাং আজ দুপুরে আপনাদের বাসায় আমাদের দাওয়াত। তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করে আমার ফ্ল্যাটে আসেন। গোছগাছ করতে সাহায্য করবেন আমাকে। বলেই সে তার ফ্ল্যাটে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো। সাথে সাথেই আবার খুলে বলল, দুই কাপ চা পাঠিয়ে দেন তো। কাজ করতে করতে মাথা ধরে গিয়েছে। এই প্রতিবেশিনী আসার পর থেকে মাহামের জীবনের শান্তি শেষ। দিনের মধ্যে দশ-বারোবার হানা দেয় সে মাহামের ঘরে। কখনো কাপ নিয়ে এসে বলে একটু চিনি দেন, কখনো বলে চা পাতা দেন, কখনো বলে প্লিজ আপনার ঘর মোছার সময় আমার ঘরটাও একটু মুছে দিয়ে যাবেন। আর প্রতিদিনই তিন বেলার যে কোন একবেলা সে দাওয়াত খায় মাহামের বাসায়।

ডোর বেলের শব্দ কানে যেতেই দীর্ঘশ্বাস ফেললো মাহাম। ঐ যে আবারো এসে হাজির তার প্রতিবেশিনী……

চলবে…

 

মেয়েটার সমস্যা কী?


ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস


দিন তিনেক আগে মেয়েটার টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছে। মেয়েটার বয়স ১৬।
২০১৯ এর এসএসসি পরীক্ষার্থী।
টেস্ট পরীক্ষার হলে সে হঠাত মাথা ঘুরে পড়ে গেল। তাড়াতাড়ি তাকে হল থেকে বের করে মাথায় পানি ঢালা হল।

বাসায় আনা হল।

বাসায় আসার পর দুইবার এবং পরবর্তী তিন দিনে আরো ছয়বার খিচুনী হল।

১.হাত পা শক্ত হয়ে যায়,
২.চোখ বন্ধ হয়ে যায়।
৩.দাঁতে দাত চাপ লেগে যায়।
৪.এরপর বাইরের পরিবেশের সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
৫.হাত পা শক্ত হয় মাত্র ২-৩ মিনিটের জন্য, কিন্তু চোখ বন্ধ থাকা আর অজ্ঞান হওয়া বজায় থাকে ২০ মিনিট।
৬.জিহ্বায় কামড়, পায়খানা প্রস্রাব করে দেওয়ার মত ঘটনা ঘটেনি।
৭.ঘুমের মধ্যেও এই ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি।

কিন্তু টেস্ট পরীক্ষার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে টানা চারদিনে সাতবার এমন ঘটনায় পুরা পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে।

কী করবেন?
মুলত রোগটি হল, Conversion Disorder.

এই পয়েন্টগুলো ভালভাবে মনে রাখতে হবে আমাদেরকে।

১। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময় জিহ্বায় কামড় পড়ে, রক্ত আসে, নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা খুবই কম।

২। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময় প্রস্রাব পায়াখানা হয়ে যায়, নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা খুবই কম। প্রস্রাব হয়ে গেলেও পায়খানা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

৩। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময় চোখ খোলা থাকে, চোখ উলটে যায় আর খোলা চোখ দেখে আশপাশের লোকজন ভয় পেয়ে যায়, নকল রোগীর ক্ষেত্রে এই চোখ খোলা থাকে না, পুরা সময়ই চোখ বন্ধ থাকে। এটি খুব ই গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট।

৪। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনি মানুষের সামনেও হয়, আবার একা একা থাকার সময়ও হয়। আর নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে সাধারণত সব সময়ই খিঁচুনি মানুষের সামনেই হয়, একা অবস্থায় কখনোই হয় না।

৫। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনি ঘুমন্ত জাগ্রত সব অবস্থায় ই হয়। আর নকল মৃগী রোগীর ক্ষেত্রে খিঁচুনি ঘুমন্ত অবস্থায় সাধারণত কখনোই হয় না।

৬। আসল মৃগী রোগীর খিঁচুনির সময়কার কোন ঘটনাই মনে থাকে না। আসপাশে কে কী বলল সেটা শুনতে পায় না। নকল খিঁচুনির রোগী আশপাশের লোকজনের কথা শুনতে পায় এবং খিঁচুনির সময় কখন কীভাবে কী হল – এগুলি কিছু না কিছু বলতে পারে।

 

চট্টগ্রামে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার


নারী সংবাদ


নগরের ডবলমুরিং থানার চৌমুহনী আল আমিন হোটেলের গলি থেকে রীনা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। গতকাল বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
রীনা আক্তারের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা। তার একটি মেয়ে রয়েছে। তার স্বামী গার্মেন্টকর্মী। ঘটনার সময় স্বামী কর্মস্থলে ছিলেন। রীনা ও তার বাবার বাসা পাশাপাশি।
ডবলমুরিং থানার অফিসার ইনচার্জ মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রীনা আক্তার আত্মহত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর চূড়ান্তভাবে বলা যাবে এটি হত্যা না কি আত্মহত্যা।
সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

শুধু প্রণোদনা নয়, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণও প্রয়োজন


ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা


একজন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা কহিনুর বেগম। একাগ্রতা ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। তবে যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাবে জীবনে এই সাফল্য বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি তিনি। অনেক নারী উদ্যোক্তার মতো ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনিও নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
বর্তমান সরাকর সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক নারীবান্ধব ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টি এবং সমাজের মূল ধারায় নারীদের নিয়ে আসতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক বাধা ও সঠিক পদক্ষেপের অভাবে কহিনুর বেগমের মত অনেক নারী উদ্যেক্তা সরকারের সদিচ্ছার সঠিক ব্যবহার করতে পারছে না। ফলে তারা তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারছে না। মাঝ পথে যেয়ে তাদেরকে থমকে দাঁড়াতে হচ্ছে। কহিনুর বেগম ১৯৯২ সালে মাত্র তিনশত টাকা মূলধন নিয়ে চালের ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে তিনি এই টাকা দিয়ে তিন মণ ধান কিনে চাল করে গ্রামের বাজারে বিক্রয় করেন। এতে তার ৬০ টাকা লাভ হয়। সেই থেকে তার সংগ্রামী জীবন শুরু। আর তাকে পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। অদম্য সাহস, ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম তাকে ব্যবসায়ে সফলতা এনে দিয়েছিল। কোন বাধা তার গতিরোধ করতে পারেনি। সকল ধরনের বাধা পিছনে ফেলে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি একটি অটো রাইস মিল, একটি দুগ্ধ ও মুরগীর খামারের মালিক হয়েছেন। কিন্তÍু বিধিবাম তার সফলতার চাকা হঠাৎ করে থেমে গেছে। তিনিও এখন ব্যাংক ঋণ খেলাপি।
১৯৯২ সালে ছোট দু’টি সন্তান ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে খুব সংকটে পড়েছিলেন তিনি। তার স্বামী এলাকার একটি খাদ্য গুদামের শ্রমিক ছিলেন। এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি পা হারান। এ সময়ে তিনি নিজেকে খুব অসহায় ভেবেছিলেন। একদিকে স্বামীর চিকিৎসা খরচ, অপরদিকে সন্তানদের নিয়ে সংসারের ঘানি তার কাঁধে চেপে বসে। অনেকটা নিরুপায় হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কোন উপায়ন্তর না দেখে নিজেই সামান্য পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা শুরুতে আর্থিক সমস্যা থাকলেও তার মানসিক শক্তির কোন কমতি ছিল না। নারী ব্যবসায়ী হওয়ায় তাকে নানা কথা শুনতে হয়েছে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পুঁজির অভাবে ব্যবসা বাড়াতে পারছিলেন না। নারী হওয়ায় তাকে কেউ ঋণ দিতে চায় না। জামানত দিতে না পারায় ব্যাংকও তাকে কোন সহযোগিতা করছিল না। জামানত দিবার মত তার কিছুই ছিল না। এরপরও তিনি মনোবল হারাননি। এক বছর যেতে না যেতেই ১৯৯৩ সালে কহিনুর বেগম তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করেন মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ। এই নামে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকেন। তার ব্যবসা সাফল্য দেখে তাকে সহায়তা করতে একটি ব্যাংক এগিয়ে আসে। তিনি ২০০২ সালে প্রথম ব্রাক ব্যাংক হতে দুই লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এটি ছিল তাঁর জীবণে সফলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
ব্যবসা সঠিকভাবে পরিচালনা করে। তিনি ব্যাংক ঋণ সুদসহ যথাসময়ে পরিশোধ করেন। তিনি ২০১০ সালে সাউথইস্ট ব্যাংক যশোর শাখা হতে ১০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এ টাকা দিয়ে একটি দুগ্ধ ও মুরগীর খামার গড়ে তোলেন। তিনি ব্যবসা করে সাউথইস্ট ব্যাংকের ঋণও যথা সময়ে পরিশোধ করেন। তিনি তাঁর ব্যবসায়ের আয় হতে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটানো ছাড়াও আয়ের একটি অংশ সামাজিক কল্যাণে ব্যয় করতেন। তিনি বিধবাদের সাহায্য, গরীবদের মাঝে কাপড় বিতরণ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে ব্যয় করতেন। তিনি ২০১২ সালে তার দুগ্ধ খামারের জন্য বেসিক ব্যাংক থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ নেন। প্রাথমিক অবস্থায় তিনি নিয়মিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করলেও পর্যাপ্ত বাজারজাতকরণ জ্ঞানের অভাবে তিনি দুগ্ধ খামারে সফলতার মুখ দেখতে পারেননি। বর্তমানে তিনি ব্যাংক ঋণ খেলাপি।
ব্যবসায়ের শুরুতে তিনি একাই সব কাজ করতেন। ব্যবসা সম্প্রসারণের সাথে সাথে তার প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং ২০১৩ সালে কর্মচারীর সংখ্যা এসে দাড়াঁয় ২৬ জনে। কিন্তু তার ব্যবসায়িক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীর সংখ্যা মাত্র আট জন। এসএমই ফাউন্ডেশানের নারী উদ্যেক্তা উন্নয়ন উইং এর ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, বাসস’র সাথে আলাপকালে, নিরাপত্তা ও বাজারজাতকরণ নারী উদ্যেক্তাদের জন্য প্রধান সমস্যা। নারীদের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের প্রয়োজন এবং নারীরা যাতে দক্ষতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে এ জন্য অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি জানান, এসএমই ফাউন্ডেশন ইতোমধ্যে ১২ হাজারের বেশি নারী-পুরুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই নারী। নারী-পুরুষ পরিচালিত ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ের চ্যালেঞ্জগুলো প্রায় একই। তবে সরকার নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে বিভিন্ন প্রণোদনার ব্যবস্থা করে থাকে। এর মাধ্যমে সরকার নারীদের সম্ভবনাগুলোকে কাজে লাগানোর সুযোগ করে দিচ্ছে।

সুত্রঃ বাসস/ইউনিসেফ ফিচার/কেইউসি/অমি/১৭৩২/আহো/-ওজি।

 

ধর্ষণ শিকার চতুর্থ শ্রেণির প্রতিবন্ধী ছাত্রী


নারী সংবাদ


মধ্যদুর্গাপুর (হিন্দুপাড়া) মহল্লার অটোভ্যানচালকের প্রতিবন্ধী মেয়েকে পংকজ কুমার অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেশী শ্রী অনুকুলের বাড়ির কাছে বসে খেলা করছিল মেয়েটি । মেয়েটিকে ডেকে পংকজ সেখানে গিয়ে কৌশলে অনুকুলের ঘরে নিয়ে যায়। এরপর ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। নওগাঁ শহরের মধ্যদুর্গাপুর মহল্লায় চতুর্থ শ্রেণির এক প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণ করা হয়েছে।

ধর্ষক পংকজ কুমারকে (৩৮) আসামি করে নওগাঁ সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে। ঘটনার পর থেকে ধর্ষক পংকজ পলাতক।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি মো. আব্দুল হাই জানান, ঘটনার পরপরই আসামি পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করা গেছে।

খুব শিগগিরই তাকে ধরা সম্ভব হবে।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মনির উদ্দীন আকন্দ জানান, বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কনসালট্যান্টের অধীনে চিকিৎসাধীন। তার ডাক্তারি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। মেয়েটি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

 

ঘর সাজানোর নানান উপায়


ঘরকন্যা


টুকিটাকি জিনিসপত্র:

ঘরে নানা ধরণের টুকিটাকি জিনিসপত্র থাকে, যদি ঘরকে আরও সুন্দর দেখতে চান তাহলে টুকিটাকি জিনিসপত্র গুলোর দিকেও নজর দিতে হবে। সুন্দর করে গুছিয়ে রাখুন সব কিছু। দেখা যাবে অল্প কিছু পরিবর্তনের ফলে ঘর লাগছে আরও সুন্দর।

ঘর সাজাতে গাছের ব্যবহার:

অন্যান্য ঘর সাজানোর জিনিসের তুলনায় ফুল এবং গাছ বেশ সস্তা। এই গাছ দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন আপনার ঘর। গাছ ঘরকে রঙিন ও জীবন্ত করে তুলবে। জানালার ধার ঘেঁষে লতানো গাছ লাগানো যেতে পারে আর ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস না থাকলে গাছের বদলে রেখে দিতে পারেন একগুচ্ছ তাজা ফুল। ঘরের এক কোণে কয়েকটি তাজা ফুল রেখে দিলে নিমিষেই ঘর উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

সুগন্ধি ব্যবহার করুন :

ঘরকে প্রাণবন্ত করতে এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করুন। এতে মন সতেজ হবে, ঘরও হবে সুগন্ধময়।

আসবাবপত্র ঠিক জায়গায় রাখুন:

ঘরের সঠিক জায়গায় সঠিক আসবাবটি বসান। আর যদি ঘরে শিশু থাকে, তাহলে তাদের জন্য আলাদা ফাঁকা জায়গা রাখার চেষ্টা করুন। এতে দেখবেন, ঘরটি আরো পরিপাটি হয়ে উঠবে।

 

বাংলাদেশে নবজাতককে নিয়ে হাসপাতালের পাঁচতলা থেকে মায়ের লাফ


নারী সংবাদ


আজ (শুক্রবার) সকাল নয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের দি ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড স্পেশালাইজড হসপিটালের ওপর থেকে হঠাৎ একটি নবজাতক শিশুকে রাস্তায় আছড়ে পড়তে দেখে পথচারীরা হতভম্ব হয়ে পড়েন।
পরক্ষণেই তারা লক্ষ্য করেন হাসপাতালের পাঁচ তলা থেকে একজন নারী নিজেও লাফ দেয়ার চেষ্টা করছেন।
সেই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদত হোসেন।
বিবিসিকে তিনি বলছিলেন “আমরা কাছে গিয়ে দেখলাম শিশুটি স্পট ডেড। তখন আমরা নীচ থেকে সবাই জড় হয়ে ঐ মহিলাকে বার বার নিষেধ করছিলাম যাতে সে লাফ না দেয়। কিন্তু সেই কিছুক্ষণের মধ্যেই সে লাফ দিল।”
ঘটনাস্থলেই নারীটিও মারা যান।
হাসপাতাল এবং স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, সাথী আক্তার নামে এই নারী গত ১৬ তারিখে দি ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড স্পেশালাইজড হসপিটালের পাশের একটি হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন। হাসপাতালে তার সাথে ছিলেন তার মা।

প্রত্যক্ষদর্শী শাহাদত হাসেন জানান বলেন, লাইফ কেয়ার শিশু জেনারেল হাসপাতালে যেখানে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন সেখানে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, গতকাল রাতভর ঐ ঘর থেকে কথা-কাটাকাটির শব্দ শোনা গেছে বলে পাশের কক্ষে থাকা লোকজন তাকে বলেছেন।

তিনি বলছিলেন “৩০২ এবং ৩০৩ এই দুটি রুমের জন্য একটা এসি বরাদ্দ থাকায় কিছুটা গ্যাপ ছিল। ৩০৩ নং রুমে ছিলেন ফরিদা খাতুন নামে এক রোগি। তিনি বলেন বাচ্চাটা সারা রাত কেঁদেছে, তার কান্নার জন্য তারা ঘুমাতে পারেনি। একই সাথে সীমা তার মায়ের সাথে ঝগড়া করছিল। তাকে ফোনেও কথা বলতে শোনা গেছে। তারা ধারণা করছেন সীমা তার স্বামীর সাথে সেই সময় কথা বলছিলেন।”

চিকিৎসকরা বলেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর অনেক নারী মানসিক চাপে ভোগেন।

সীমার স্বামী লেবাননে থাকেন। বছর খানেক আগে তাদের বিয়ে হয়।
কিন্তু নবজাত শিশুকে নিয়ে কি কারণে তিনি এই আত্মহননের পথ বেছে নিলেন সেই সম্পর্কে কেও ধারণা করতে পারছেন না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম উদ্দিন বলেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা সীমার মাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন, কিন্তু সন্দেহজনক কোন কিছু এখনো তারা পাননি।
পুলিশের ঐ কর্মকর্তা বলেন, “মেয়ের মা বলছে গতকাল থেকেই তাকে মেন্টালি ডিজ-অর্ডার লাগছিল। সে কারো কিছু না বলে তার বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে গেছে এবং পার্শ্ববর্তী আরেকটা হাসপাতাল থেকে বাচ্চাকে ফেলে দিয়ে নিজেও পড়ে গেছে। আসলে এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমরা তদন্ত করছি, একটা মামলা হয়েছে”।
পুলিশ বলছে, হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজে তারা দেখেছেন বাচ্চাকে কোলে করে মহিলা হাসপাতালে তার নিজের কক্ষ থেকে বের হয়ে আসছেন। তার মা বলছেন, সেই সময়ে তিনি ঘরে ছিলেন না।
এদিকে অস্বাভাবিক এই মৃত্যুর ঘটনায় শহরে আলোচনা তৈরি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মি. হোসেন বলেন, পুরো শহর জুড়ে মানুষজন এ নিয়ে কথা বলছে। “আমাদের কাছে খুব রহস্যজনক মনে হচ্ছে।”
পুলিশ বলছে এই ঘটনায় নিহত সাথীর শ্বশুর বাড়ীর লোকজনকে ডাকা হয়েছে কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা এখনো আসেন নি।

সুত্র: ফারহানা পারভীন
বিবিসি বাংলা, ঢাকা

 

কেঁচো সারে উত্তরে নারীর ভাগ্যবদল


মাহবুব আলম


বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। সৃষ্টির শুরু থেকেই দেশের কৃষকদের লক্ষ্য ছিল কিভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে কৃষি ক্ষেত্র অনেকটাই দখল করেছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। দেশে ঘটেছে কৃষি বিপ্লব। তথাপি বিলুপ্ত হয়নি প্রাকৃতিক পদ্ধতি। আবার কখনো কখনো প্রকৃতির সঙ্গে বিজ্ঞানের মিশেলে কৃষি পদ্ধতি হয়েছে আরো সমৃদ্ধ। যেমন কেঁচো সার একটি যথার্থ উদাহরণ। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক উপায়ে উৎপাদন করা হচ্ছে কেঁচো সার। আধুনিক যুগে যা ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম বাংলায়। বৈজ্ঞানিক উপায়ে কেঁচো সার উৎপাদন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। একজনের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এমন পেশায় নিজেকে শামিল করছেন। এতে পরিবারগুলোর মধ্যে ফিরছে স্বচ্ছলতা। তাদেরই একজন মিনতি রাণী সরকার; বয়স ত্রিশের কোটায়। যিনি কেঁচো সার উৎপাদন করে এনেছেন পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা। দিনাজপুর জেলার বিরলে কেঁচো সার উৎপাদনের ধুম পড়েছে। আর এর অনেকটাই করছেন নারীরা। ঘরে ঘরে কেঁচো সার তৈরি করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি তারা সংসারে এনেছেন স্বচ্ছলতাও। কেবলমাত্র মিনতি রাণীই নন। এলাকার অনেকেই এখন নিজেদেরকে কেঁচো সার তৈরিতে নিয়োগ করেছেন।
সম্প্রতি দিনাজপুরের ওই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথমে উপজেলার দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামের পাঁচ নারী কেঁচো সার তৈরিতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের কাছ থেকে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ নেন। এর মধ্যে গ্রামের বিলপাড়ার পুতুল চন্দ্র দেবশর্মার স্ত্রী লিপা রাণী একজন।
লিপা রাণী জানান, প্রথমে মহিলা বিষয়ক অধিদফতর থেকে ঋণ নিয়ে তারা কেঁচো সার তৈরির কাজ শুরু করেন। সাত মাস আগে ছয়টি রিং, কেঁচোসহ যাবতীয় উপকরণের জন্য খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু এরই মধ্যে পর্যায়ক্রমে তারা ৩০ হাজার টাকার কেঁচো সার বিক্রি করেছেন।
প্রথম ৬টি রিং দিয়ে শুরু করলেও এখন ২২টি রিংয়ে কেঁচো সার তৈরির কাজ চলছে।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, স্বাবলম্বী হতে বিরল উপজেলার দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামের বিলপাড়ার ঘরে ঘরে নারীরা কেঁচো উৎপাদন করছেন। তবে তাদের প্রত্যাশা, সরকারিভাবে এ কাজে বিনাসুদে ঋণ পেলে আরও বড় আকারের খামার তৈরিসহ সারের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব।
এভাবে হতে পারে শত শত নারীর ভাগ্যোন্নয়ন। বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম এই প্রতিবেদককে জানান, বিরলের নারীদের ভাগ্যোন্নয়ন ও কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য কাজ চলছে। এক্ষেত্রে তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও কাজ করছি আমরা।
এদিকে লিপা কিংবা মিনতি নয়, তাদের দেখাদেখি এ কাজে এগিয়ে এসেছেন দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় শতাধিক নারী-পুরুষ। এ কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে জেলার বাইরেও।
পার্শ্ববর্তী বিজোড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামেও তৈরি হচ্ছে কেঁচো সার। স্থানীয় আবদুল আলীম বলেন, যারা আগে কেঁচো সার তৈরি করেছেন তাদের থেকে আমরা সহযোগিতা নিয়েছি। পারস্পরিক সহযোগিতার কারণে এলাকায় কেঁচো সার তৈরি ছড়িয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে বিজোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসলাম কাদির বলেন, কেঁচো সার তৈরির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের নারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। এতে শুধু নারীরাই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে না, কৃষিতে কমে যাবে রাসায়নিক সারের চাহিদাও।
এদিকে পরিবেশবান্ধব জৈব কম্পোস্ট সার ও সবজি উৎপাদনে এলাকার নারীদের নিয়ে কাজ করছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দের চুহড় গ্রামের মর্জিনা খাতুন।
তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ধরনের কম্পোস্ট সার, কেঁচো সার তৈরি করে ধান, ভুট্টা, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, আলু, শিম, শশা উৎপাদনে ব্যবহার করেছেন। এতে তার সাফল্যও এসেছে। গত একবছরে তার সাড়ে ৩ লাখ টাকা আয় হয়েছে।
মিঠাপুকুর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, মর্জিনা বেগম এ এলাকার মডেল চাষী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। আমরা তার মতো অন্যদেরও নানা ধরনের সহযোগিতা করছি।

সুত্র: বাসস/ইউনিসেফ ফিচার/মাআ/স্বব/২২২০/আহো/-ওজি।

 

অভিমানী মনের আত্মদহন… ১ম খন্ড


আফরোজা হাসান


চোখ খুলে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে লাফিয়ে উঠে বসলো অধরা! আরেকবার ভালো করে তাকালো ঘড়ির দিকে। সত্যি সত্যিই এগারোটা বিশ বাজে! এটা কি হলো?! সে এতক্ষণ ঘুমোলো কি করে?! সকালে ঘুম থেকে উঠার পর মাথা ভার লাগছিল খুব। তাই বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আধঘন্টার জন্য শুয়েছিল আবার। কিন্তু অ্যলার্ম তো দিয়েই শুয়েছিল! তাহলে? সময়মত অ্যলার্ম কেন বাজলো না দেখার জন্য মোবাইল হাতে নিলো। আজ শুক্রবার কিন্তু সে দিয়েছে শনিবার! এই তাহলে ঘটনা! নিজের উপরই মেজাজ খারাপ হতে লাগলো। এগারোটায় বেশ জরুরি একটা মিটিং ছিল। আরো কিছুক্ষণ গুম ধরে বসে থেকে রাজীব মামাকে ফোন করে আসতে পারবে না জানিয়ে দিলো। বাইরে যেহেতু যাওয়া হচ্ছেই না আরেকটু ঘুমিয়ে নিলে কেমন হয়? এমন অলস চিন্তার জন্য ধিক্কার দিতে দিতে বিছানা থেকে নামলো অধরা। শরীর ও মনের আলসেমী দূর করার জন্য শাওয়ার নেয়া হচ্ছে তার জন্য বেষ্ট অপশন। অবশ্য শুধু আলসেমীই না শাওয়ার মারওয়ার মনের স্যাঁতস্যাঁতে, খিটপিটে, চিড়চিড়ে, ধোঁয়া ধোঁয়া ভাব দূর করতেও বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলো, মন বিষয়ক একটা অ্যাড তৈরি করলে কেমন হয় বলো তো অধরা? অ্যাডের জিঙ্গেল হবে “ মনের স্যাঁতস্যাঁতে, খিটপিটে, চিড়চিড়ে, ধোঁয়া ধোঁয়া ভাব দূর করতে চান? হিয়ার মাঝে লুকিয়ে থাকার কারণে দেখতে না পাবার মতই আপনার হাতের কাছেই লুকিয়ে আছে অবিশ্বাস্য ফর্মূলা। নিজেকে আপাদমস্তক ডুবিয়ে দিন পানিতে, ধীরে ধীরে মন সিক্ত হবে প্রশান্তটিতে!”

আপি আপনি কার সাথে কথা বলছেন?

প্রশ্ন শুনে ঘুরে পেছনে তাকালো অধরা। ছোট ভাইয়ের নববধূ মুনিরা চোখ বড় বড় করে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। হুট করেই তিনমাস আগে মুনিরা আর সাদাতের বিয়ে হয়েছিল। ব্যস্ততার কারণে তখন দুজনকে বাসায় দাওয়াত দিতে পারেনি অধরা। ব্যস্ততা কিছুটা কমে যাবার পর দুজনকে কয়েকদিনের জন্য তার বাসায় নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল। গত পরশু হাজির হয়েছে ক্ষুদে দম্পতি। যারা সকালে হুড়মুড় করে তৈরি হয় অফিস যাবার জন্য নয় বরং ইউনিভার্সিটি যাবার জন্য। গতকাল নাস্তার টেবিলে বসে সাদাত যখন বলছিল, মুনিরা তাড়াতাড়ি করো আমার ক্লাস মিস হয়ে যাবে! অনেক মজা পেয়েছিল অধরা। মুনিরার প্রশ্নের জবাবে হেসে বলল, ক্লাসে যাওনি তুমি?

জ্বিনা আপি। আজ যেতে ইচ্ছে করছিল না। তবে সাদাত গিয়েছে। নাস্তা করবেন না আপি? আমি চায়ের পানি চাপিয়েছি অনেকক্ষণ আগেই। চা বানাবো আপনার জন্য?

আধঘন্টা পরে বানাও। আমি শাওয়ার নিতে যাচ্ছি।

নাস্তার টেবিলে বসে মুনিরার দিকে ভালো করে তাকালো অধরা। নাক-চোখ ঈর্ষৎ লালচে, ফোলা ফোলা লাগছে। কান্না করেছে সেটা রুমে যখন দেখেছে তখনই বুঝতে পেরেছিল। কেন কান্না করেছে সেটা হচ্ছে গিয়ে প্রশ্ন! নববধূদের হাসি-কান্না দুটোই বৈচিত্র্যময়তায় টইটুম্বুর! চলতে চলতে হঠাৎ হুমড়ি খেয়ে পড়ার মত, বিয়ে হচ্ছে মেয়েদের জন্য বড় হতে হতে হঠাৎ আবার ছোট্ট হয়ে যাওয়া। এক্কেবারে ইক্টুসখানি একটা পিচ্চি বাবুনি যাকে বলে। যে একটুকেই হাসে, একটুতেই কাঁদে। আদুরে আদুরে আবদার করে, সেসবে হেরফের হলেই অভিমান করে। কিন্তু পরিবারের মানুষগুলো এসব বোঝে না বেশির ভাগ সময়ই। তারা মনেকরে বড় হয়েছে বলেই বিয়ে হয়েছে। আর বিয়ে হয়েছে মানেই তুমি এখন বিশাল সব দায়িত্বের বোঝা মাথায় নেবার জন্য প্রস্তুত। কেউ বুঝতে চায় না একটা মেয়ে হিসেবে সে বড় হয়েছে। কিন্তু একজন বধূ হিসেবে মাত্রই তার জন্ম হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বোঝে না বলেই একটি মেয়ে নতুন সম্পর্কের জন্মলগ্নের আদর কদর থেকেও বঞ্চিত হয় বেশির ভাগ সময়ই। চুপচাপ নাস্তা সেরে নিলো অধরা। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে হেসে বলল, মাশাআল্লাহ তুমি তো বেশ মজা করে চা বানাও। আমি কফি সবার হাতে খেলেও চা সাধারণত নিজের হাতের বানানো ছাড়া খেতে পারি না। মনেহয় আমার চা আমি ছাড়া অন্যকেউই বানাতে পারবে না। কিন্তু তোমার চা সত্যিই মজা হয়েছে।

হাসি ফুটে উঠলো মুনিরার চেহারাতে। থ্যাঙ্কইউ আপি। আমি যে কয়দিন থাকবো রোজ আপনাকে চা করে দেবো।

ইনশাআল্লাহ। এখন বলো কেমন কাটছে তোমাদের সময়? মুনিরাকে চুপ থাকতে দেখে অধরা হেসে বলল, তুমি আমার সাথে মনের সব কথা শেয়ার করতে পারো।

খানিকটা অভিমানী কন্ঠে মুনিরা বলল, আপি কথা দিয়ে কথা না রাখা কি ভালো?

কথা দেয়া মানে হচ্ছে ওয়াদা করা। আর ওয়াদা রক্ষা করা তো মুমিনের শান।

কিন্তু সাদাত কখনোই কথা দিয়ে করা রাখে না। ফোন করার কথা বলে ফোন করে না, বাসায় ফেরার এক সময় বলে কিন্তু কখনোই সেই সময়ের মধ্যে বাসায় ফেরে না। ঘুরতে যাবার প্ল্যান করেও আবার ক্যান্সেল করে দেয়।

সবসময়ই এমন করে নাকি মাঝে মাঝে?

একটু চুপ থেকে মুনিরা বলল, বেশ কয়েকবার করেছে।

অধরা হেসে বলল, খুব অভিমান জমেছে তোমার মনে বুঝতে পারছি। তুমি সাদাতের কাছে জানতে চাওনি কেন এমন করেছে? কেন কথা দিয়েও সেটা রাখেনি।

জানতে তো চেয়েছিই। অজুহাতের তো কোন অভাব নেই ওর কাছে। ঠিকই নিজের স্বপক্ষে যুক্তি দাঁড় করিয়ে ফেলে।

সাদাতের যুক্তিগুলোকে তুমি অজুহাত কেন ভাবছো? সত্যিও তো হতে পারে তাই না? হয়তো যা যা বলেছে সেসবই ওর ওয়াদা ভঙ্গের কারণ ছিল। এমনটা কি হতে পারে না? মুনিরাকে চুপ দেখে হাসলো অধরা। বলল, আমি ভাইয়ের সাপোর্টে কথা বলছি এমনটা ভাবছো নাতো আবার?

না আপি এমন ভাবছি না।

আমারো বিয়ে হয়েছিল তোমার মত অনেক ছোট বয়সে। ইনফ্যাক্ট তোমার চেয়েও দুই আড়াই বছর ছোট ছিলাম আমি বিয়ের সময়। তোমাদের ভাইয়া প্রচন্ড রকম ব্যস্ত একজন মানুষ ছিলেন। আমাদের বিয়ের পরপর পারিবারিক কিছু কারণে উনার সেই ব্যস্ততার মাত্রা আরো বেড়ে গিয়েছিল। যখন ফোন করে উনাকে পেতাম না, ম্যাসেজ করার করার কয়েক ঘন্টার পরেও রিপ্লাই আসতো না, বাইরে যাবার জন্য তৈরি হয়ে বসে আছি আমি উনি ফোন করে জানাতেন কাজে আটকে পড়েছেন, আমি কথা বলতে চাইতাম আর উনি ক্লান্তির কারণে ঘুমোতে চাইতেন। তখন আমারো এমন তোমার মত অভিমান হতো খুব। খুব খুব অভিমান। উনি আমাকে একটুও ভালোবাসেন না, আমার কোন গুরুত্বই নেই উনার কাছে ইত্যাদি ভেবে ভেবে ওয়াশরুমে, ছাদের কোনায় বসে কত যে কান্না করেছি। কত শত নেতিবাচক কথা যে চিন্তা করেছি। কেন যে বিয়ে করেছি সেই আপসোসের সীমা থাকতো না।

মুনিরা লাজুক হাসি হেসে বলল, আমারো এমন ভাবনা মনে আসে আপি।

অধরা হাসতে হাসতে বলল, জানি। আমরা মানুষেরা একে অন্যের থেকে যতই আলাদা হই না কেন! কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের ভাবনারা একাকার! যাইহোক,অভিমান আর জেদের বশে অনেক সময় ইচ্ছে করে ইগনোর করতাম তোমাদের ভাইয়াকে। হয়তো বাইরে যাবার কথা বলেছে আমি শরীর খারাপের বাহানা করতাম। মুখ ফুটে কিছু বলার স্বভাব ছিল না আমার। তাই এভাবে অভিমানের প্রকাশ ঘটাতাম। কিন্তু আমি যে অভিমান করে বাইরে যেতে চাচ্ছি না সেটা উনি বুঝতে না পারার কারণে বলতেন, আচ্ছা তাহলে তুমি বিশ্রাম নাও। আমার অভিমান তখন আরো বেড়ে যেত। মনেহতো উনি আমাকে বুঝতেই চেষ্টা করছেন না। যদি করতেন তাহলে আমাকে জোর করতেন। কিন্তু একবারও আমার মনেহতো না যে, আমি না বললে, না বুঝতে দিলে উনি কিভাবে জানবেন আমার মনের মধ্যে কি চলছে?! কারো মনের ভাবনা তো কেউ দেখতে পায় না। এমন একদিন আমি উনাকে ফোন করেছিলাম রিসিভ করে আমাকে কোনকিছু বলার সুযোগ না দিয়েই, একটু পরে তোমাকে ফোন দিচ্ছি বলে উনি লাইন কেটে দিয়েছিলেন। সেদিন আমার প্রচন্ড রাগ হয়েছিল। একটূ পর যখন উনি ফোন দিয়েছিলেন আমি ধরিনি। একটু পর পর ফোন দিয়েই যাচ্ছিলেন। আমিও ফোন না ধরার পণ করে বসেছিলাম। আমার কিছু হয়েছে এই চিন্তায় অস্থির হয়ে উনি কাজ ফেলে বাসায় ছুটে এসে যখন দেখলেন আমি দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছি রেগে গিয়েছিলেন প্রচন্ড। এতদিনের জমিয়ে রাখা ক্ষোভ আমিও চাপা দিয়ে রাখতে না পেরে বিস্ফোরিত হয়েছিলাম।

সেদিন বুঝি অনেক ঝগড়া হয়েছিল আপনার আর ভাইয়ার?

উহু! সেদিন আমরা একে অন্যের তরে ভুল বোঝাবুঝির জানালা রুদ্ধ করে দিয়ে সর্বাবস্থায় একে অপরকে বুঝবো, কখনো বুঝতে না পারলে জিজ্ঞেস করবো, কিন্তু কখনোই ভুল বুঝবো না এই দ্বার খুলে দিয়েছিলাম।

কিভাবে আপি?

তোমার ভাইয়া আমাকে বুঝিয়ে বলেছিলেন কিভাবে অভিমান আমাদের চিন্তা চেতনাকে আত্মকেন্দ্রিক করে দেয়। আমাদের ভাবনারা তখনো ডালপালা মেলে কিন্তু শুধু নিজেকে ঘিরে। অভিমানি মনের জগত হয় ‘আমিময়’। অথচ চিন্তার কেন্দ্রটিকে আমি থেকে একটু ঘুরিয়ে দিলেই সবকিছু অনেক সহজ হয়ে যায়। আচ্ছা চলো কিচেনে যাই আমরা। সাদাতের সবচেয়ে পছন্দের কিছু খাবার রান্না করা শিখিয়ে দেব তোমাকে। রান্না করতে করতে গল্পও করা হয়ে যাবে।

মুনিরা হেসে বলল, জ্বি আপি চলেন।

চলবে…

 

কিশোরী বয়সেই বিয়ে, তালাক অতঃপর আত্মহত্যা


নারী সংবাদ


স্বামী তালাক দেয়ায় মনের দুঃখে আত্মহত্যা করেছে তাসলিমা আক্তার তানিয়া নামে মাত্র পনের বছর বয়সী এক স্ত্রী। ভাগ্যাহত ওই কিশোরীর বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী বুরুঙ্গা গ্রামে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই গ্রামের ইউনুছ আলীর ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া কন্যা তানিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে দিনাজপুর জেলার কানিতোলা উপজেলার তাওলিয়াপাড়া গ্রামের মাজেদুল ইসলামের বাউন্ডেলে ছেলে ইসমাইল হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় এক বছরকাল প্রেম করার পর অভিভাবকদের অগোচরে বিয়ে করে দুজনই।

বিয়ের ৮ মাসের মাথায় পারিবারিক কলহ বাঁধে। পরে সংবাদ পাঠিয়ে তানিয়ার মাকে দিনাজপুর নিয়ে যাওয়া হয়। গত সোমবার স্বামী ইসমাইল শাশুড়িকে ঘরে আটকে রেখে কিশোরী স্ত্রী তানিয়াকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং তালাক দেয়।

এরপর তানিয়া রাতের বাসেই মায়ের সাথে নালিতাবাড়ীস্থ পিত্রালয়ে চলে আসে এবং মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে বিষপান করে।

স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই মধ্যরাতে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় তানিয়ার বাবা ইউনুছ আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসলাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সুত্র: নয়াদিগন্ত

 

১২ হাজার পিস ইয়াবাসহ নারী আটক


নারী সংবাদ


কক্সবাজারের টেকনাফে ইয়াবাসহ লায়লা বেগম (৩২) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সময় তার কাছ থেকে ১২ হাজার পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির নগদ সাড়ে ২৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার সময় উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পূর্ব সাতঘরিয়াপাড়ার নিজ বাড়ি থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার লায়লা টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পূব সাতঘড়িয়া পাড়া এলাকার নূরুল আলমের স্ত্রী।

টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, রাতে তারই নেতৃত্বে একদল পুলিশ হোয়াইক্যং পূব সাতঘড়িয়া পাড়ার চিহ্নত ইয়াবা ব্যবসায়ী নূরুল আলমের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ ১২ হাজার পিস ইয়াবা, নগদ ২৯ লাখ ৫৭ হাজার তিনশ টাকাসহ লায়লাকে আটক করে। ইয়াবা ও নগদ টাকাসহ গ্রেফতার লায়লা বেগম ও বাড়ির মালিক নূরুল আলমকে পলাতক আসামি করে মাদকসহ সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, লায়লা বেগমের স্বামী নুরুল আলম চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার নেতৃত্বে রয়েছে শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট। কৌশল এসেই দীর্ঘদিন মাদক ব্যবসা করে আসছিল। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও মাদক ব্যবসায়ী নুরুল আলম ও তার স্ত্রী লায়লাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
সূত্র: নয়াদিগন্ত।

 

স্তন ক্যানসার : সচেতনতাই যার প্রতিকার – ২য় পর্ব


নুসাইবা ইয়াসমীন


বাংলাদেশে স্তন ক্যানসারের সঠিক কোন পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও বিভিন্ন সুত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিগত পাঁচ বছরে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এলার্মিং হারে। পাশ্চাত্যের স্তন ক্যানসারের তীব্রতা অনেক আগে থেকে থাকলেও আমাদের দেশ তা থেকে ছিল অনেকটাই মুক্ত । বিশেষজ্ঞদের মতে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের খাদ্যাভাস এবং জীবনপদ্ধতির পরিবর্তন এর জন্য দায়ী। বর্তমানে প্রাচ্যের মত আমাদের দেশের নারীদের মধ্যেও জন্মনিয়ন্ত্রণকারী পিল বা পিরিয়ড বন্ধকারী পিল খাওয়ার প্রবনতার ঝুঁকি আরও বেড়ে যাচ্ছে।
তবে আশার ব্যাপার হলো প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ সনাক্ত করা গেলে আপনি মৃত্যু ঝুঁকি থেকে অনেকটাই মুক্ত। প্রয়োজন নিয়মিত স্তনের সেল্ফ পর্যবেক্ষণ করা। কখনও যদি স্তনে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণীয় দিক দেখা যায় তা দেখে বিচলিত হবেন না। শরণাপন্ন হন কোন গাইনোকলজিস্টের কাছে। আপনার ডাক্তার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে কোন অস্বাভাবিকতা লক্ষণ বের করে থাকেন তাহলে আপনাকে কিছু টেস্টের মাধ্যমে ব্যাপারটি নিশ্চিত হতে হবে। টেস্টের রির্পোটে যদি অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া না যায় তবে নিয়মিত চেকআপে থাকুন আর যদি ক্যান্সারের সেল সনাক্ত হয় তবে চলে যান একজন সাইকোলজিস্ট ও একজন সার্জনের কাছে।

ব্রেসট ক্যানসার সনাক্তকরনে যে সকল টেস্ট করা হয়ে থাকে তা হল

১. ব্রেসটে আলট্রা সাউনড: ব্রেসটে কোন ধরনের অস্বাভাবিকতা লক্ষণ দেখা গেলেই। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সাধারনত ত ব্রেসটের কতকগুল টেস্ট করার মাধ্যমে ব্রেসট লাম্বের সাইজ ও ধরন নির্নয় করা যায়।

২। এফ এন এ সি ( ফাইন নিডেল এ্যাসপিরেশন সাইটোলজি): এফ এন এ সির পদ্ধতিতে একটি সুই এর মাধ্যমে ব্রেসট থেকে স্যাম্পল নিয়ে পরীকখা করা হয় স্যাম্পলটি ক্যানসারিয়াস কিনা। এই টেস্টে সুই ব্যবহৃত হলেও এতে কোন ব্যথা অনুভূত হয় না।এ পরীকখাটি সাশ্রয়ী ও রিপোর্ট দ্রুত পাওয়া সম্ভব।

৩. কোর বায়োপসি / ট্রু কাট বায়োপসি: ক্যানসার পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করার জন্য কোর বায়োপসি করা হয়ে থাকে। এ পরীকখাটি সাধারনত লোকাল এনেসথেসিয়া দিয়ে করা হয়। এতে ব্রেসটের খুব সামান্য পরিমান (সাধারনত ২ সে. মি) অংশ কেটে স্যাম্পল নেয়া হয়। এ পরীকখা কিছুটা ব্যয়বহুল। সাধারনত টেস্টের রেজাল্ট পেতে সাত দিনের মত সময় লাগে।

৪. ম্যামগ্রাম: বায়োপসিতে যদি ক্যানসার সনাক্ত হয়ে থাকে তবে ম্যামগ্রামের মাধ্যমে ক্যানসার সেলের বৃদ্ধ পাওয়ায় ও ধরন নির্নয় করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ম্যামগ্রাম প্রাথমিক টেস্ট হিসেবে ক্যানসার সনাক্তকরনে ব্যবহৃত হয়। ম্যামগ্রাম এক্সরের মত এক প্রকার ইস্ত্রিনিং পদ্ধতি। এতে রেডিও একটিভ রে ব্যবহৃত হয় বলে গর্ভবতি মহিলাদের এ টেস্ট না করার পরামর্শ দেয়া হয়।

অনেক সময় ক্যানসার সনাক্তকরণে এমআরআই ও করা হয়ে থাকে।

যদি আপনার বা আপনার পরিবারের কোন সদস্যের ক্যানসার সনাক্ত হয় খুব দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে। মনে রাখবেন ক্যানসার খুব দ্রুত বিস্তার লাভ করে তাই এক দিন বিলম্ব আপনার জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে অনেকখানি।
এখেএে সর্ব প্রথম যে সমস্যায় অামরা সমুখখিন হই তা হল সঠিক তথ্য ও দিকনিদের্শনার অভাব।তাই চিকিত্সা শুরুর পূর্বেই যে বিষয়গুলোর ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারনা থাকার প্রয়োজন তা হলো:

১. ঠিক কি কি ধরণের স্তন ক্যান্সার হতে পারে?

২. ক্যান্সার যদি টিউমারজনিত হয় তাহলে এর সাইজ বর্তমানে কত?

৩. কোথায় বা কোন স্থানে এটা হতে পারে?

৪. স্তন ক্যান্সার কি অন্যান্য লিমপফ নোড এ প্রসারিত হয়েছে কিনা।

৫. ক্যান্সারের স্তর বা স্টেজ কি এবং বর্তমানে কোন স্তর এ অাছে।

৬. চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কি অন্য কোন পরীক্ষার প্রয়োজন অাছে কিনা।

৭. অন্য কোনও ডাক্তার (ফার্টিলিটি, ডেনটিসট,কার্ডিও) অথবা অন্য কোন স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখান দরকার আছে কিনা?

৮. ক্যান্সারের হরমোন রিসেপটর অবস্থা কি? এটার মানে কি? ক্যান্সারের HER2 অবস্থা কী? এটার মানে কি?

৯. কিভাবে এই বিষয়গুলি আমার চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করবে এবং চিকিৎসার খেএ্রে কি কি অপশন অাছে।

১০. ক্যান্সারের স্টেজ এর উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কতটুকু?

১১. আমাদের জিনগত পরীক্ষা সম্পর্কে চিন্তা করা উচিত কি? টেস্টিং এর বিকল্প কি?

১২. কিভাবে আমরা আমাদের প্যাথলজি রিপোর্টের একটি কপি পেতে পারি?

১৩.রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য সর্বমোট কত খরচ লাগতে পারে।
বেসরকারি পর্যায়ে ক্যানসারের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। তাই চিকিৎসা শুরুর আগেই পরিবারের সাথে বসে এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নিয়ে নেয়া জরুরী।

ব্রেসট ক্যানসারের ঝুঁকি ও এর প্রকপ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে।সচেতনতা ও সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসাই পারে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে একটি সুন্দর জীবন।

 

সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে ক্যানসার নিয়ে নতুন ওষুধ আবিষ্কার কলকাতার মেয়ে ফিনাজ খান !


নারী সংবাদ


ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করে কেমােথেরাপির নতুন ওষুধ আবিষ্কার করলেন কলকাতার বেলগাছিয়ার হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে ফিনাজ খান। ২৩ বছরের বাংলার এই কন্যার সাফল্য সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আমেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিষ্টি নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি করার সময় ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করেন তিনি। নিজের গবেষণায় কেমােথেরাপির নতুন ওষুধ আবিস্কার করেন ফিনাজ। তার গবেষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছে লন্ডনের রয়াল সোসাইটি অব কেমিষ্টি। শীঘ্রই ফিনাজের তৈরি কেমোথেরাপির নতুন ওষুধ বাজারে ভালো হবে বলেও জানিয়েছে লন্ডনের ওই সংস্থা। হতদরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারের সন্তানের এই অসামান্য কৃতিত্বে খুশির হওয়া বেলগাছিয়া জুড়ে।

বরাবরই মেধাবী ছাত্রী ফিনাজ খান৷ স্কুল জীবন থেকেই আলাদা কিছু করে দেখানোর স্বপ্ন ছিল তার। বাংলার এই বল্যাশ্রীর আদর্শ মানুষটি হলেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম৷ সপ্তম শ্রোণীতে পড়ার সময় স্কুলে একবার প্রোজেক্টারের মাধ্যমে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির বক্তব্য শুনেছিলেন ফিনাজ৷ তার কথায়, ‘সেই দিনই মনে হয়েছিল, আমিও চেষ্টা করলে কিছু করতে পারি। তখন থেকেই মনে হয়েছিল এমন একটা কিছু করব যেটা মানুষের বা সমাজের কাজে আসবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেন তিনি। স্কুলের পর গুরুদাস কলেজ থেকে কেমিস্ট্রিতে গ্রাজুয়েশন করে আমেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার ডিগ্রীতে ভর্তি হন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিনাজ খানরাই ছিল প্রথম ব্যাচ।

মাস্টার ডিগ্রিতে তার প্রোজেক্টের বিষয় হল ক্যানসার৷ তখনই নতুন কিছু করার জেদ চেপে গেল ফিনাজের মধ্যে। তিনি বলেন,
কেমােথেরাপিতে দু-ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়। এক ধরনের ওষুধ তৎক্ষণাং কাজ শুরু করলেও, আর এক ধরনের ওষুধ কাজ করতে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। তবে তার পার্শ্বপ্ৰতিক্রিয়াও রয়েছে। ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের কমােথেরাপি দিলে শরীরের কােষগুলি মারা যায়। মাথার চুল উঠে যায়। একইসঙ্গে বেশ ব্যয়বহুল চিকিৎসা। ক্যানসার নিয়ে প্রজেক্ট পাওয়ার পর এই জায়গাটা আমাকে ভাবিয়েছিল৷ পার্শ্বপ্ৰতিক্রিয়া ছাড়া স্বল্প খরচে কীভাবে রোগীদের কেমােথেরাপির ওষুধ তৈরি করা যায়, তা নিয়ে শুরু করলাম গবেষণা ৷ সেই গবেষণায় আমার ম্যাডাম সাহায্য করেন। গবেষণা করতে গিয়ে দেখলাম, সেটা সম্ভব। একটি মাত্র ওষুধের মাধ্যমে শরীরের যে অংশে ক্যানসার হয়েছে, সেখানে কমোথেরাপি দেওয়া সম্ভব। তৎক্ষণাৎ কাজ করবে এটি। একইসঙ্গে এই ওষুধের কাজ দীর্ঘস্থায়ী হবে। এরফলে খরচ অনেক কম হবে। এছাড়াও শরীরের কোষণ্ডলি জীবিত থাকবে ৷ এটিই আমার আবিষ্কার৷ লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি অব কেমিষ্টির মতো সংস্থা স্বীকৃতি দেওয়ার আমার পরিশ্রম সফল হয়েছে।”

এখানেই শেষ নয়, বর্তমানে ক্যানসারের টিকাকরণ নিয়েও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন ফিনাজ।

ফিনাজ খানের বাড়িতে পড়াশোনা করার মতো পরিকাঠামাে নেই। নেই চেয়ার টেবিল ৷ বাবা মা ও তিন বোনের সংসার ফিনাজদের৷ বোনেদের মধ্যে তিনিই বড়৷ আহিকি অনটন প্রতি মুহূর্তে কড়া নাড়ছে ঘরে। বাবা ঘুরে ঘুরে সাবান বিক্রি করেন ৷ মা শারীরিক ভাবে ভিষণ অসুস্থ৷ ঠিক ভাবে চলতে পারেন না। অহেরি অভাবে মায়ের চিকিৎসা হচ্ছে না ঠিক ভাবে। এমন দরিদ্র পরিবার থেকে বিশ্বের দরবারে নাম উঠে আসার খুশি ফিনাজের বাবা যা।

বাবা মায়ের কথা আসতেই আবেগ তারিত হয়ে পড়েন ফিনাজ। এত কষ্টের মধ্যেই পড়াশোনা থেমে নেই তিন বোনের। ফিনাজ নিজে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্যান্সার টিকাকরণ নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এড করছেন। দুই বোন, একজন বিএসসি দ্বিতীয়বর্ষ অন্যজন প্ৰথমবর্ষে পড়াশোনা করছে। ফিনাজের বাবা মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন কষ্টের মধ্যে তিন মেয়ের স্বপ্নকে সফল করতে প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছেন৷ তাদের মা শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই তিন মেয়ের জন্য পরিশ্রম করছেন। সংসারের এই পরিস্থিতি দেখে পড়াশোনার মধ্যেই চাকরিতে যোগ দিতে হয়েছে তাকে! বেনিয়াপকুরের একটি বেসরকরি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন তিনি। এখন তার লক্ষ্য, ভালো কোনও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করার ৷ কিন্তু হতদরিদ্ৰ পরিবারের এই মেধাবী ছাত্রীকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি কেউ৷ বাংলার এই কন্যার আর্জি,রাজ্য সরকার যদি তাকে সহযোগিতা করে, তাহলে ভালোভাবে পিএইচডি করতে পারেন৷

উৎস:- টিডিএন বাংলা

 

‘তিতলি’


ডা.কবীর জুয়েল


দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর হীম শীতল হাওয়ায় এই রাজধানী ঢাকার শাহুরে পরিবেশেও রীতিমতো নিম্নচাপের আভাস পাচ্ছিলাম, সাথে মিডিয়া গুলোর আলাপন ও ক্রমশঃ সতর্ক বার্তায় বার বার ‘তিতলি’ নামটি উচ্চারিত হচ্ছিলো, এবারের আসন্ন দূর্যোগটিকে এমন এক মোহনীয় মিষ্টি নামে ডাকা হচ্ছে , মাঝে মাঝে মনে হয়, কোন আকাশপরি বুঝি শান্তি সুখের বারতা নিয়ে উড়িষ্যা হয়ে বাংলার ভূতলে নেমে আসছে,তবে আবহাওয়া বিভাগের পূনঃপূনঃ
ভয়ংকর পূর্বাভাস আমাকে শংকাজনক নষ্টালজিক করে বছর চারেক আগের স্মৃতিতে টেনে নিয়ে গেলো, ‘তিতলি’-রুপী ঝড়ের কবলে পড়ে আমাকে পরিবারসহ টানা কয়েকদিন ‘নারকেল জিঞ্জিরা-য় আটকে থাকতে হয়েছিলো,শহর থেকে আনা দ্বীপের খাবার যা ছিল,তা প্রায় শেষ;সেলফোন গুলো চার্জের অভাবে নিছক খেলনা মোবাইলে পরিণত হলো,পুরো দ্বীপ ঘুরে দেখতে দেখতে মোটেল ও স্থানীয়দের ঘর বাড়ীর অবস্থান মুখস্থ হয়ে গিয়েছিলো,এ কারনে স্থানীয়দের সাথে হৃদ্যতা অনেক বেড়ে যায়,ওদের জীবন জীবিকা ও আচার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে যে বিষয়টি আগুন্তুকদের পীড়া দিচ্ছিলো—তা হলো এ নিম্ন চাপের অবসান কবে হবে,এ ঝড়ো হাওয়া কবে শান্ত সুবাতাস রুপে বইবে?
অধীর আগ্রহ নিয়ে বেড়াতে আশা হয়েছিলো এখানে ,কতো পরিকল্পনা করে ছেঁড়া দ্বীপে সাঝ বেলায় বার-বি-কিউ এর কিউরিসিটি ছিলো,
নিরাপত্তাহীনতা আর অজানা শংকায় সব-ই রাতারাতি এক নৈরাশ্যময় বিভিষিকায় পরিণত হলো ,অনেকে নিজেদের এক মৃত্যুপুরির বাসিন্দা ভাবতে লাগলো,
নিজে সাইকিয়াট্রিস্ট হওয়ায় চোখের সামনে ‘মাস প্যনিক এটাকস’ গুলো ডায়াগনসিস করতে পারছিলাম,প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কাউন্সিলিং করতেও হয়েছে কারন কিছু কিছু দূর্বল চিত্ত মূর্ছা যাবার উপক্রম হলো। আমাদের শশব্যস্ত চলমান বিরামহীন জীবনটাকে তুচ্ছতায় পর্যবশিত করে দিয়ে,মহান স্রষ্টা কদাচিৎ বুঝিয়ে দেন, তার সৃষ্টিকূল কতোখানি অসহায় ! তিনি স্পষ্ট করে তোলেন তার অসীম ক্ষমতার কিয়দংশ মাত্র যা দেখে সম্বিৎ ফিরে পায় অনেকে,,, জীবনে জুম্মার নামাজটিও পড়েননি,ওরাও দেখলাম নামাজী হয়ে উঠলো। কয়েকজন তথাকথিত সেলিব্রেটিও ছিল,প্রটোকল আর অহমিকা ভেদ করে সবাই কেবল এক আলোচনায় মনোনিবেশ করলো; কবে টেকনাফের উদ্দেশ্যে জাহাজ ছাড়বে?আদৌ আমরা এ যাত্রায় টেকনাফ পর্যন্ত পৌঁছতে পারবো কিনা? না পারলে আমাদের কি হবে? এ দ্বীপেই কি সলীল সমাধী???
কিছু কিছু ধনীর দুলাল হেলিকপ্টার পাঠাতে অনুরোধ করছিলো,কিন্তু আবহাওয়া এতোটাই প্রতিকূল যে বেশ কয়েকদিন ঢাকা থেকে কোন সিগনাল-ই পাওয়া যায়নি। তবে দ্বীপবাসীর মাঝে আমি বিন্দুমাত্র দ্বীধা,
ভয়, আশংকা দেখিনি, স্থানীয় ভাষায় বলছে ‘আল্লাহু-ই রক্ষা করবে’; ৬৫ বছর ধরে আমাদের পূর্বপুরুষরা থাকে, কোনদিন আমাদের ক্ষতি হয়নি,অদ্ভুত রকমের আত্মবিশবাস,নি:সন্দেহে এতে প্রঘাঢ় স্রষ্টা ভক্তি
রয়েছে, আমি সেই মানুষগুলোকে নিয়ে এসে আমাদের শাহুরে ননীর পুতুলগুলোকে অভয় দিতাম,এদিকে
দ্বীপের সব গুলো হোটেল মোটেল সকল পর্যটকদের
বিল ৭৫% কমিয়ে দিলো, এমন কি জেটিমুখি গরীব ডাব ওয়ালারা ডাব খাওয়ার পর টাকা আছে কিনা জিজ্ঞেস করছে,না থাকলে দিতে হবেনা, মনে মনে ভাবছিলাম এ জন্যই এদের প্রতি করুণাময়ের অবারিত রহমত অব্যাহত থাকে,এরা এখনো মওজুদ্দারী কিংবা সিন্ডিকেটেড ট্রেডিং বোঝেনা, বিপদে ফেলে লোক ঠকানো তো দূরের কথা, তাই আমদের মতো অলীক ভীতি( Phobia/ Panic /Stress) তাদের কক্ষনোই চেপে ধরেনা,আমি জানি আমার টেক্সবুকের ‘Panic Attack’ এদের জন্য মোটেও প্রযোজ্য হবেনা,তবে Psychology -তে পড়া ‘Altruistic Behaviour’ -এর সাথে ওদের আচরণ একেবারেই মিলে যাচ্ছে,ওদের উছিলায় হলেও এই মানুষ গুলো বেঁচে যাবে সে আস্থা আমার পুরোই ছিলো,পাঠক সে যাত্রায় আমরা রক্ষা পেয়েছিলাম তবে শেষ সময়ে দ্বীপে আর খারার ছিলোনা।
যতোটুকু মনে পড়ে কোন এক উপন্যাসে-র নায়িকা ছিলো ‘তিতলি’,এক জনপ্রিয় ধারাবাহিকের একটি চরিএের নাম ‘তিতলি ভাইয়া’ ,আমার পরিচিত কয়েকজন মেয়ের নাম-ও তিতলি,ওরা সবাই অত্যন্ত উদারমনা, আর পেশাগত জীবনে তিতলি নামের প্রতিটি রোগী-ই বেশ ভদ্র হয়ে থাকে, অথচ হঠাৎ ক দিন ধরে
তিতলি’ নিয়ে যে ভীতি ছড়াচ্ছে তা নামটিকে তেতো করে তুলেছে,
ইতিমধ্যেই ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ,ওডিসাসহ আশপাশে ডজনখানেক প্রানহানী ঘটিয়ে জন জীবনের যথেষ্ট ক্ষতিসাধন করে এই তিতলি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে,উল্লেখ্য তিতলির ভয়ে পটুয়াখালী ও বরগুনা-র সাগর সংলগ্ন মানুষগুলোও ঝড়াক্রান্ত তিতির পাখির মতো আশ্রয় খুঁজছে , প্রাকৃতিক দূর্যোগ এমনি ভয়াবহ
হয়ে থাকে, মূহুর্তে-ই সব লন্ডভন্ড,তবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকলে মোকাবিলা সহজ হয়ে যায়। বরগুনাস্থ বামনা থানার বিষখালী নদীটি এ সময় ভয়ানক রুপ পরিগ্রহ করে, বামনার ডেউয়া(এক ধরনের ফল)তলা সহ ছোট্ট শহরটি পানিতে তলিয়ে যায়,নদী তীরবর্তী প্রান্তিক মানুষ গুলো এ সবে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, তবে কোমল মনা অনেকেই সিডর,আইলা ইত্যাদির ভয়াল ছোবল আজো ভূলতে পারেনা। ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও বি,সি,এস -এর সিরিয়ালে প্রথম দিকে থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারনে ২০০১-এ আমার প্রথম পদায়ন হয়েছিল এই বামনায়,তাই আমি খুব কাছ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের এই মানুষগুলোকে প্রত্যক্ষ করেছি,অন্য যে কোন দেশের নাগরিকদের চেয়ে আমাদের দেশের মানুষগুলোর্প্রাকৃতিক দূর্যোগের চাপ প্রক্ষেপণের ক্ষমতা অনেক অনেক বেশী, মধ্যপ্রাচ্যে মানসিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে থাকাকালীন সময়ে সামান্য মরুঝড়( Desert Storm)-এর কিছু ধূলিক্ণায় আরবদের নেত্রে রাজ্যের ত্রাস & ভীতি দেখতে পেতাম,অনেক আরবকে ভর্তি রেখে ঔষধ ও কাউন্সিলিং করতে হতো,আমাদের ঝড় ঝঞ্জাক্রান্ত মানুষগুলোর কাছে এ ধরনের ধুলিমাখা ঝড় নস্যি মাত্র।
আশা করি আমাদের দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ‘তিতলি’ নামীয় নিম্নচাপটি আমাদের নাটক, সিনেমার নায়িকাদের মতোই নরম গোছের একটি দমকা হাওয়া হবে,যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকায় প্রাণঘাতি রুপ নেবেনা।আমাদের সমাজ ও ব্যক্তি জীবনেও তিতলি-র প্রভাব পড়তে শুরু করেছে,পরিশেষে একটি আবহাওয়া সংবাদ দিয়ে লেখাটা শেষ করতে চাই,আজ এক রোগীনী অত্যুৎসাহে আমাকে জানালো সে তার সদ্যোজাত শিশু কন্যার নাম রেখেছে ‘তিতলি’, আমিও অনুসন্ধিৎসু হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন?
বললো “আমি চাই আমার মাইয়া ঝড়ের লাহান শক্তিশালী হউক যাতে জামাইরে হারা জীবন ওর কথায় উঠ বস করাইবার পারে।”
তিতলি নামটি নিয়ে আমার মাঝে যে সুন্দর স্বচ্ছ
ধারণা বাসা বেধেঁছিল, রোগীনী-র কথায় তা মূহুর্তেই কুর্পুরের মতো উবে গেলো।

 

ডা. এম এস কবীর জুয়েল
এমবিবিএস, বিসিএস, এম.ফিল(নিউরো-সাইকিয়াট্রি), ডক্টর অফ মেডিসিন(এম.ডি) মনোরোগ
সৌদি বিশেষায়ীত স্বাস্থ্য কমিশন সার্টিফাইড ইন সাইকিয়াট্রি এন্ড সাইকোথেরাপী
ভূতপূর্ব মনোরোগ ও মাদকাসক্তি বিশেষজ্ঞ, সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল, আল জউফ, সৌদি আরব
ভূতপূর্ব সহযোগী অধ্যাপক
এশিয়ান ইনষ্টিটিউট অফ মেডিসিন, সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি কেদাহ্, মালয়েশিয়া
ইউনিট প্রধান, সাইকোথেরাপি ও কাউন্সিলিং ইউনিট, মনোরোগ বিভাগ
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল

 

উত্তরখানে গ্যাসে দগ্ধ দম্পতির মৃত্যু


নারী সংবাদ


রাজধানীর উত্তরখানে গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে লাগা আগুনে দগ্ধ আটজনের মধ্যে এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন আজিজুল (২৭) ও তার স্ত্রী মোসলেমা (১৮)। গতকাল সকাল সোয়া ১০টায় আজিজুল ও বিকেল ৫টায় মোসলেমা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। গতকাল শনিবার ভোর ৪টায় উত্তরখান ব্যাপারীপাড়া হেলাল মার্কেটের পাশে ১১০/এ নম্বর বাড়ির নিচতলায় গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে লাগা আগুনে একই পরিবারের আটজন দগ্ধ হন। নিহত দম্পতির পরিবারের অভিযোগ, গ্যাসলাইন লিকেজ থাকা সত্ত্বেও ঠিক করেননি বাড়িওয়ালা। দগ্ধরা সবাই আত্মীয়স্বজন।
এ ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা ও আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছেন ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যালে আহতদের দেখতে এসে স্বজনদের এ সহায়তার টাকা বুঝিয়ে দেন।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডা: পার্থ শংকর পাল বলেন, আগুনে আজিজুলের শরীরের ৯৯ শতাংশ এবং তার স্ত্রী মোসলেমার শরীরের ৯৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি পাঁচজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাদের মধ্যে সুফিয়ার (৫০) শরীরের ৯৯ শতাংশ, তার মেয়ে পূর্ণিমার (৩৫) ৮০ শতাংশ, পূর্ণিমার ছেলে সাগরের (১২) ৬৬ শতাংশ, ডাবলু মোল্লার (৩৩) ৬৫ শতাংশ এবং তার ছেলে সৌরভের (৫) শরীরের ১২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
এ ছাড়া শিশু সৌরভের মা আঞ্জুয়ারা বেগমের (২৫) শরীরের ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তার মতে, আগুন খুব দ্রুত সবার গায়ে ধরে গিয়ে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। শিশু সৌরভ ময়নারটেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণী এবং সাগর উত্তরা হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। আগুনে প্রত্যেকের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। তারা অধিকাংশই গার্মেন্ট শ্রমিক। তাদের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়ার রামকানায়।
চিকিৎসাধীন আঞ্জুয়ারা বেগম জানান, গ্যাসলাইন থেকে দুই সপ্তাহ ধরে গন্ধ বের হচ্ছিল। বাড়িওয়ালাকে গ্যাসের গন্ধ পাওয়ার বিষয়টি বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেননি। শুক্রবার রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। ভোরে তাদের কেউ একজন চুলার সুইচ দিতেই আগুন ধরে যায়। তার দাবি, গ্যাসলাইন লিকেজ থাকায় সেখান থেকে গ্যাস বের হয়ে পুরো রুমে ছড়িয়ে পড়ে। চুলার সুইচ দিতেই আগুন ধরে যায়।
বাড়িওয়ালা মেহেদি হাসান বলেন, আগুনের সময় তিনি দ্বিতীয়তলায় ছিলেন। তাই কিভাবে আগুন লেগেছে তা তিনি নিশ্চিত নন। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর তিনি চুলার সুইচ অন দেখতে পান। এতে তার ধারণা, রাতে সুইচ অফ না করাতে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।
উত্তরা ফায়ার অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডিউটি অফিসার কামরুল হাসান জানান, ভোরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে দগ্ধ আটজনকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করে। গ্যাসের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। রান্নার জন্য দিয়াশলাই ধরার সাথে সাথে আগুন ধরে যায় বলে জানতে পেরেছি।
উত্তরখান থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, অসাবধানতার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার ধারণা, রাতে বাড়িটির চুলায় গ্যাস ছিল না। অসতর্ক অবস্থায় চুলার সুইচ বন্ধ না করেই তারা ঘুমিয়ে পড়েন। চুলায় গ্যাস আসার পর দরজা জানালা বন্ধ থাকায় গ্যাস বের হতে পারেনি। ভোরে রান্না করতে উঠে আগুন জ্বালানো মাত্র চারপাশে আগুন ধরে সবাই দগ্ধ হয়েছেন।
সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

দুই স্কুলছাত্রীসহ ৪ জন নিহত


নারী সংবাদ


দৌলতদিয়া, হবিগঞ্জ ও বগুড়ার শেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্কুলছাত্রীসহ চারজন নিহত ও কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা জানান, গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় নবম শ্রেণীর দুই ছাত্রী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো দৌলতদিয়া ৮ নম্বর ওয়ার্ড যদু ফকিরপাড়ার আ: ছালাম প্রামাণিকের মেয়ে চাঁদনী আক্তার (১৫) ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড ওমর আলী মোল্লাপাড়ার জামাল মোল্লার মেয়ে কেয়া আক্তার (১৫)। তারা দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের ছাত্রী ছিল। বেলা পৌনে ২টায় সড়কসংলগ্ন মডেল হাইস্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত চাঁদনীর ভাই ফরিদুল ইসলাম জানায়, চাঁদনী ও কেয়া একই অটোরিকশায় বাড়ি থেকে পরীক্ষা দেয়ার জন্য স্কুলের সামনে নেমে সড়ক পার হচ্ছিল। এমন সময় ঢাকার দিক থেকে আসা খুলনাগামী গোল্ডেন লাইন পরিহনের একটি দ্রুতগতির বাস তাদের পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে তারা গুরুতর আহত হয়। দ্রুত তাদের গোয়ালন্দ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ দিকে সড়ক দুর্ঘনায় দুই ছাত্রী নিহত হওয়ার খবর পেয়ে উত্তেজিত হয়ে ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসী প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় পুলিশের গাড়িতেও উত্তেজিত জনতা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। মহাসড়কে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার যানবাহনের সিরিয়ালে পাঁচ শতাধিক গাড়ি আটকা পড়ে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবলে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। গুরুতর আহত ১০ জনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে পৃথক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া বাজার থেকে একটি ইজিবাইক কালারডোবা এলাকায় পৌঁছলে হবিগঞ্জ থেকে বানিয়াচংগামী একটি পিকআপ সেটাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে সন্ধ্যা রানী সরকার (৫০) নিহত হন। সন্ধ্যা রানী বানিয়াচং উপজেলা মক্রমপুর ইউনিয়নের নতুল্লারপুর গ্রামের মৃত প্রভু সরকারের স্ত্রী।
এ ঘটনায় ইজিবাইকের আরো পাঁচ যাত্রী আহত হন।
অপর দিকে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবলের ডুবাঐ বাজারে এনা পরিবহনের একটি বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠান। আহতদের মধ্যে কানন (২৫), হৃদয় মিয়া (১৮), রহিদুল ইসলাম (১৩), কামরুর হাসান (২৫), রাইছুল ইসলাম (২৪), জুনায়েদ (২৮) ও সাদিক হোসেনকে (৫০) হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের শেরপুর পৌর শহরের হাজীপুর এলাকায় গত শুক্রবার রাতে দুই কোচের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক আশিকুল আলম আকাশ (৩৫) নিহত এবং ১৫ যাত্রী আহত হয়েছেন।
জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রংপুরগামী যাত্রীবাহী কোচ এনা পরিবহন (ঢাকা-মে-ব-১৫-৩৯১৬) শেরপুর পৌরশহরের হাজীপুর এলাকায় গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি যাত্রীবাহী কোচ মা-মণিকা পরিবহনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে এনা পরিবহন (ঢাকা-মে-ব-১১-১৬৮৭) গাড়িটি মহাসড়কের পশ্চিম পাশে উল্টে যায়। এ ঘটনায় চালক আশিকুল আলম আকাশসহ ১৬ জন যাত্রী অহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই শেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মী ও পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে আশিকুল আলম আকাশ মারা যান। নিহত কোচচালক আকাশ বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার করমবাড়িয়া গ্রামের টুলু মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেনÑ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর আঞ্জুয়ারা বেগম (৩৫), সুরাইয়া খাতুন (১০), রংপুর সদরের ইমন হাসান (২৮), বিজয় কুমার (২৪), রায়হান ইসলাম (৪০), সেকেন্দার আলী (৪৪), মামনুর রশীদ (২২), গাইবান্ধার আল মামুন (৪০), বিনদি সরকার (৩৪), রংপুরের গঙ্গাচড়ার ফরহাদ হোসেন (৩৩), মিঠাপুকুরের রবিউল (২৯), কুড়িগ্রামের রাজারহাটের শামীম হোসেন (২২), উলিপুরের মাজেদুল ইসলাম (১৮), অজ্ঞাত মহিলা (৩০) ও অজ্ঞাত পুরুষ (১৮)।

 

মায়া


 রায়হান আতাহার


১.
পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করছেন হাসান সাহেব৷ বিয়েও করেছেন৷ তার পুরো নাম জাহিদ হাসান। চাকরিতে ঢোকার আগে সবাই তাকে ‘জাহিদ’ নামে চিনতো। এখন অফিসের সবার মুখে ‘হাসান সাহেব’ শুনতে শুনতে যখন বাসায় বাবা-মা-সহধর্মিণী ‘জাহিদ’ নামে ডাকে তখন তার নিজের কাছেই অবাক লাগে। প্রতি বছর ঈদের মৌসুমে সবাইকে তিনি উপহার দিয়ে থাকেন। তিনি নিজেও উপহার পান। তাকে পেনশনের টাকা থেকে উপহার দেন তার বাবা। উপহার নিতে লজ্জা লাগে হাসান সাহেবের। বলেন, “বাবা, কী দরকার ছিলো? শুধু শুধু টাকা খরচ করলে।” উত্তরে বাবা বলেন, “ও তুই বুঝবি না।”

২.
হাসান সাহেবের বাবা-মা গত হয়েছেন বছর খানেক হল। এখন তিনি নিজের একমাত্র মেয়েকেই ‘মা’ বলে ডাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে মেয়ে বাসায় থাকতে পারে না। যখন ছুটিতে বাসায় আসে তখন এটা-ওটা কিনে মেয়েকে খাওয়াতে পছন্দ করেন মিস্টার এন্ড মিসেস হাসান। মেয়ে খেতে পছন্দ করলেও বাবা-মায়ের এরকম ভালোবাসা পেয়ে সে লজ্জা পায়৷ সে ভাবে- হলে তো সে না খেয়ে থাকে না। টিউশনি করে টুকটাক আয়-রোজগারও করে। বাবা-মা কী মনে করে সে না খেয়ে থাকে? এগুলো নিয়ে কিছু বললে বাবা-মা উত্তর দেন, “ও তুই বুঝবি না।”

সারমর্মঃ ছেলে-মেয়ে যত বড়ই হোক, বাবা-মার কাছে সন্তান কখনো বড় হয় না। সন্তান উপার্জন করলেও বাবা-মা খুশি হয়ে যা দেন, তা গ্রহণ করা উচিত। প্রত্যেক বাবা-মা চান সন্তানকে আগলে রাখতে। সময়ের প্রয়োজনে হয়তো তা সব সময় সম্ভব হয় না। কিন্তু সুযোগ পেলে বাবা-মায়ের দেয়া উপহারগুলো গ্রহণ করতে লজ্জা পাওয়া উচিত নয়। সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর সকল বাবা-মাকে ভালো রাখুন।

 

যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী ও শাশুড়ি আটক


নারী সংবাদ


খুলনার ডুমুরিয়ার পল্লীতে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর গলায় রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে আজ শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার গোনালী গ্রামে। পুলিশ এ ঘটনায় তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার নোয়াকাঠি গ্রামের হালিম বরকন্দাজের ছেলে রসুল বরকন্দাজের (২১) সাথে একই উপজেলার গোনালী গ্রামের আমজাদ শেখের মেয়ে ইয়াছমিন বেগমের (১৯) প্রায় এক বছর পূর্বে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে সাংসারিক অশান্তি চলতে থাকে এবং স্ত্রী ইয়াছমিন তার বাপের বাড়িতে থাকে। গত ৫ অক্টোবর রসুল তার স্ত্রীকে আনার জন্য শ্বশুরবাড়িতে যায়। সেখানে ৬ দিন থাকার পর শুক্রবার সকালে থানা পুলিশ রসুলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে নিহতের বাবা হালিম জানান, ৫ তারিখে আমার বেয়াই ফোন করে তার মেয়েকে নিয়ে আসার জন্য ছেলেকে যেতে বলে। কথা অনুযায়ী রসুল তার শ্বশুরবাড়ি যায়। হঠাৎ শুক্রবার গভীর রাতে ফোন করে আমাদেরকে জানানো হয় সে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। আমরা গিয়ে দেখি রসুলের গলায় ওড়না ও গমছা পেচানো অবস্থায় ঝুলে আছে এবং তার পা মাটির সঙ্গে লাগানো আর সারা শরীরে ধুলা বালি মাখা। আমি নিশ্চিত ওরা আমার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে।

ঘটনার তদন্তকারি অফিসার এস আই অনিষ মন্ডল জানান, লাশটি যেভাবে ঝুলে ছিল তাতে মনে হয় না সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে। এছাড়া ব্লেড দিয়ে তার হাতের কজ্বি ও পায়ের গোড়ালির ওপরে কাটা চিহ্ন দেখা গেছে। এ ঘটনায় নিহত গোলম রসুলের মা আকলিমা বেগম বাদি হয়ে পুত্রবধু ইয়াসমিন বেগম, বেয়াই আমজাদ শেখ, ও বিয়াইন সুফিয়া বেগমের নাম উল্লেখ করে ডুমুরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ইয়াছমিন ও তার শাশুড়ি সুফিয়া বেগমকে (৫৪) আটক করা হয়েছে এবং লাশের সুরোতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।

সূত্র: নয়াদিগন্ত

 

দাম্পত্য জীবনের কিছু কথা

দাম্পত্য


“দুনিয়ার সব থেকে কঠিন কাজ হচ্ছে নিজেকে সংশোধন করা এবং
সব থেকে সহজ কাজ হচ্ছে অন্যের সমালোচনা করা”।
—— আমীরুল মু’মিনীন আলী (রা)

দাম্পত্য জীবন কি?

দাম্পত্য জীবনের বিষয়টি হচ্ছে পৃথক ব্যক্তিদের মধ্যে একটি ইউনিয়ন। এটি একটি চুক্তি মত। বিয়ের ফলে দুইজন ব্যক্তির মধ্যে একটি সামাজিক ও আইনি চুক্তি হয়ে থাকে, যেখানে অর্থনৈতিক ভাবে এবং মানসিক ভাবে একে অপরের জীবনে সম্পৃক্ত হয়।

ঐতিহ্যগতভাবে, বিয়েকে নৈতিকতা ও সভ্যতার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হিসেবে দেখা হয়।

দাম্পত্যজীবনে কিছু মৌলিক টিপস:

উৎফুল্ল আচরণ

আপনার উৎফুল্ল আচরণ হতে পারে আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর জন্য খুব দামি একটি উপহার।

অভিযোগ করা থেকে বিরত

কাউকে একইসাথে ভালোবাসা এবং ঘৃণা করা আপনার জন্য অসম্ভব নয়। আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর ব্যাপারে বন্ধুদের কাছে অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া আপনার দাম্পত্য সম্পর্কে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

সময় দিন

সুন্দর সম্পর্ক নিজে থেকেই তৈরি হয় না, সেটি তৈরি করতে হয়। তাই আপনাকেও সেটি তৈরি করতে হবে। কর্মক্ষেত্রেই যদি আপনার সবটুকু কর্মক্ষমতা নিঃশেষ করে ফেলেন, তাহলে আপনার দাম্পত্য জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চাপা ক্ষোভ বর্জন করুন

সাময়িক ঝগড়া বিবাদের কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় না। মনের মধ্যে জমে থাকা চাপা ক্ষোভ আর যন্ত্রণাই দাম্পত্য জীবনকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়। দাম্পত্য জীবনে তা-ই নিয়ম যা দুইজনের পছন্দের ভিত্তিতে ঘটে।

নিজেকে যাচাই করুন

“জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী হিসেবে আমি সর্বোত্তম”-এমনটি মনে হওয়া অতি আত্মবিশ্বাসের লক্ষণ। এমনটি মনে হলে নিজেকে যাচাই করুন। সংসারের ক্রমাগত আর্থিক সচ্ছলতা অর্থ এই নয় যে, দাম্পত্য জীবনও সুখের মধ্য দিয়ে কাটছে।

পরিশেষে বলা যায় যে, দাম্পত্য সম্পর্ক, “কী পেলাম?” –এর হিসেবে মেলানোর জন্য নয়। বরং সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে “কী দিতে পেরেছি,” তা-ই দাম্পত্য সম্পর্কের মূলকথা।

 

নীলফামারীতে ট্রাকের চাকায় প্রাণ গেলো মা-মেয়ের


নারী সংবাদ


নীলফামারীর ডোমারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মা- মেয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। বুধবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার ভাটিয়াপাড়া নামক স্থানে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে। চালকসহ ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হয়েছে বলে জানান ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোকছেদ আলী ব্যাপারী।

নিহতরা হলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মোড় গুচ্ছগ্রামের রুবেল ইসলামের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩০) ও তার পাঁচ বছরের শিশু মেয়ে রুবিনা আক্তার।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, রাত নয়টার দিকে সোনারায় ইউনিয়নস্থ বাবার বাড়ি থেকে বাবা হিমানুর রহমানের রিক্সাভ্যানে চড়ে নাজমা বেগম ও তার মেয়ে রুবিনাকে নিয়ে নিজ বাড়ি যাচ্ছিলেন। এসময় সৈয়দপুর পৌর এলাকার আন্ধারুরমোড় সড়কের ভাটিয়াপাড়া নামক স্থানে একটি মালবাহি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-৩২১১) তাদের রিক্সাভ্যানে ধাক্কায় দেয়।

এতে মা নাজমা বেগম ও তার মেয়ে রুবিনা আক্তার রিক্সাভ্যান থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনা স্থলেই নিহত হন। এসময় নাজমার বেগমের বাবা হিমানুরকে (৫৫) গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান এলাকাবাসী।

এসময় এলাকাবাসী ঘাতক চালক ট্রাক চালকসহ ট্রাকটি আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারসহ ট্রাক ও চালক মো. ইসলামকে (৫৫) আটক করে থানায় নেয়া হয়। সুত্র: নয়াদিগন্ত।

 

সালেহার শূন্যতা


ফাতিমা খান


সালেহার সাথে আমার অনেকদিন পর দেখা, প্রায় ২ বছর। পরিচয় হয়েছিল আমার ডেন্টাল অফিসেই। স্বামীর দাঁতের চিকিৎসার জন্য প্রায়ই আসত এই দম্পতি। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সালেহার সাথে।

তায়েফের মেয়ে সালেহা।
হাসতে হাসতেই একদিন বলছিল, “তায়েফের মানুষ আমাদের নবীজীর সাথে উগ্র আচরণ করেছিল বলেই ভেব না আমরা তায়েফবাসীরা উগ্র, অর্বাচীন। আমাদের মধ্যে ভাল মানুষগুলো কিন্তু সাহাবীদের মতই ভাল। তুমি একবার এসো আমাদের শহরে। পাহাড়ের উপরের ছোট্ট শহরের মানুষ আমরা, যেখানে হাত বাড়িয়েই তুলা তুলা মেঘ ছুঁতে পারা যায়। শীতে কুয়াশা পড়ে। সোনালী ধূসর রঙ এর বালুগুলো দিগন্ত অবধি পাটি বিছিয়ে দিলেও সবুজের মায়া ম্লান হয়না একদম। পাহাড়গুলো সবুজে ঢাকা , মাঝে মাঝে আবার পাহাড়ি ঝর্ণা । স্বাধীন বানর দেখতে হলে এখানে আসতেই হবে তোমাকে, গাছে গাছে লাফিয়ে বেড়াতে ওদের নেই মানা। পাহাড়ের আড়ালে সূর্যোদয় দেখেছ কখনো? ঝমঝম বৃষ্টির পর রংধনু? এখানে দেখবে! এসো কিন্তু একবার। আমার দাদুর খেজুর বাগান আছে, মাইলের পর মাইল। তোমাকে নিয়ে খুব বেড়াব।”

ওখানকার আর বাকী মানুষগুলো কেমন জানিনা, কিন্তু ‘সালেহা’ হয়ত লাখে একজনই পাওয়া যাবে। সদালাপী, হাসিমুখ আর আন্তরিকতার জন্যই ওর কথা মনে করেছি বেশ কয়েকবার। জেদ্দা থেকে ওরা অন্য শহরে পোস্টিং হয়ে চলে যাওয়ার পর অনেকদিন ওর সাথে দেখা হয়নি।

আজ সালেহাকে দেখে আমি চিনতেই পারলাম না। শুকনো ফুলের মতই রিক্ত হয়ে গেছে একদম। ওর স্বামী মারা গিয়েছে আজ ৪ মাস ১৬ দিন। একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হলেও মানসিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিলেন ভদ্রলোক। Bipolar disorder এর জন্য মুড ফ্ল্যাকচুয়েশন হত খুব। আমি নিজে দেখেছি কত যত্ন করে সামলে নিত সে স্বামীকে। মানুষটার প্রচন্ড রোষের মুখেও ওর কষ্টচাপা একটা হাসিমুখ দেখতাম। নিখাদ ভালবাসা না হলে এমন মানুষের সাথে সংসার করা দুঃসাধ্যই বটে!

এত যত্ন, এত ভালবাসা ফেলে রেখে একদিন এই মানুষটা হাঠাতই ঘুমের মধ্যে চলে যাবে, সালেহা একটুও ভাবতে পারেনি।

সালেহা আমার সামনে বসে কাঁদছে, অঝোরে কাঁদছে।। কী গভীর সে কষ্ট, কী অসহ্য তার যন্ত্রণা! আমার ভেতরটা কাঁদছে, কি বলব বুঝতে পারছিনা। ওর অন্তরের কষ্ট মাপার কোন যন্ত্র যে আমার কাছে নেই! ওর শূন্যতা পূরণের রসদ হয়ত পুরো ধরণীতেই নেই!

 

যৌতুকের জন্য বাটখারা দিয়ে পিটিয়ে আহত


নারী সংবাদ


রূপগঞ্জের বরাব গ্রামে সালমা আক্তার নামে এক গৃহবধূকে গতকাল মঙ্গলবার যৌতুকের জন্য লোহার বাটখারা দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে তার মাদকাসক্ত স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ।

জানা যায়, উপজেলার পবনকুল গ্রামের মুসলিম মিয়ার মেয়ে সালমা আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার বরাব এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মোশারফ হোসেনের ২০১১ সালে বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে ্‌এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই মোশারফ হোসেন, তার মা হালিমা বেগম ও তার বোন ইয়াসমিন বেগম যৌতুকের জন্য সালমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে বরপক্ষের দাবি অনুযায়ী দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর পরও মোশারফ হোসেন নেশার টাকার জন্য বিভিন্ন অজুহাতে সালমার বাবাকে আরও দুই লাখ টাকা দিতে বাধ্য করে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে বিদেশ যাওয়ার জন্য আরও তিন লাখ টাকা দাবি করলে তাকে ৯০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বাকি টাকার জন্য গতকাল মঙ্গলবার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ মিলে লোহার বাটখারা দিয়ে তার মাথা থেঁতলে দেয়। পরে স্থানীয়রা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় সালমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের ব্যাপারে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুত্র: সমকাল

 

‘প্রেগনেন্সি’


মারুফ রায়হান খান


‘প্রেগনেন্সি’ বিষয়টা আমার কাছে মিরাকিউলাস লাগে। একটা দেহে দুটো প্রাণ। একসাথে নির্ভর করছে দুটো সত্ত্বার ভালো থাকা-মন্দ থাকা, সুস্থতা-অসুস্থতা–মায়ের সুস্থতার উপর নির্ভর করে সন্তানের বাঁচা-মরা। প্রেগনেন্সিতে স্বাভাবিক অবস্থা থেকে হরমোনের বেশ তারতম্য ঘটে, শারীরিক গঠনের কিছু পরিবর্তন হয়–তাই মায়ের কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা নতুন করে দেখা দেয় বা বেড়ে যায়। দেখা যায় যে, ডেলিভারি হয়ে যাবার পরপর সে সমস্যাগুলোও চলে যায়। এগুলোর বেশিরভাগই ফিজিওলজিক্যাল বা স্বাভাবিক। প্রেগনেন্সি ইস্যুটা যেহেতু সবার কাছে খুব সেন্সিটিভ তাই অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এসব সমস্যায়। আসলে খুব বেশি আতঙ্কগ্রস্ত হবার কিছু নেই। জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন নিয়ে এলে, কিছু পরামর্শ মেনে চললে যার অধিকাংশই প্রতিকার বা প্রতিরোধ করা যায়। একেবারেই কমন কিছু সমস্যার সমাধান নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি।

১. বমিবমি ভাব এবং বমি :

দেখা যায় যে প্রতি ১০০ জন গর্ভবতীর প্রায় ৭৫ জনেরই এ সমস্যাটা থাকে। সাধারণত সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই এ সমস্যা হয়।
-সকালে ঘুম থেকে উঠেই, বলা হয়ে থাকে বিছানাতেই শুকনো খাবার যেমন : টোস্ট, বিস্কিট, মুড়ি ইত্যাদি খেতে।
-প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে বলা হয়।
-অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হয়।
-একবারে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান।

২. কোমর ব্যথা :

প্রতি ১০০ জনের প্রায় ৫০ জনেরই এ সমস্যা দেখা দেয়।
-অনেক বেশি ওজন বাড়িয়ে ফেলা পরিহার করতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে, মোট দশ ঘণ্টা।
-পা কিছুটা উঁচুতে রেখে যেমন : পায়ের নিচে একটা বা দুটো বালিশ রেখে বিশ্রাম নিন।
-শক্ত বিছানায় শোয়া ভালো।
-উঁচু হিলযুক্ত জুতো পরা যাবে না।
– কুঁজো হয়ে বসা বা কোনো জিনিস নিচ থেকে তোলা পরিহার করা শ্রেয়।
– দাঁড়ানোর সময় সোজা হয়ে দাঁড়াবেন।
– ভারী এবং পরিশ্রমের কাজ করবেন না।
– কোমরে ম্যাসাজ করতে পারেন।
– গরম বা ঠাণ্ডা কিছু দিয়ে স্যাঁক দিতে পারেন।

৩. কোষ্ঠকাঠিন্য :

-প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে।
– আঁশজাতীয় খাবার যেমন : শাকসবজি এবং তাজা ফলমূল বেশি করে খেতে হবে।
-ইসপগুলের ভূষি খাওয়া যেতে পারে।
– চাপ এলে টয়লেটে যেতে বিলম্ব করা যাবে না।
– কিছুটা হাঁটাচলার অভ্যেস করা ভালো, দিনে ২০-৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৩ দিন হাঁটা যেতে পারে।

৪. পায়ে খিল ধরা :

-পায়ে ম্যাসাজ করতে হবে।
– গরম স্যাঁক দিলে উপকার পাওয়া যায়।
-চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সেবন করা যেতে পারে।

৫. পায়ে পানি আসা/ পা ফোলা :

-বিশ্রাম নিন এবং পা দুটো একটা বা দুটো বালিশের ওপর রাখুন।
– একটানা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবেন না।
-আরামদায়ক জুতো পরুন।
– বেশি করে পানি পান করুন।

৬. বুক জ্বালাপোড়া, এসিডিটি :

-একসাথে অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলা পরিহার করতে হবে।
– খাবার পরপরই বিছানায় শুতে চলে যাওয়া যাবে না।
– বিছানায় যাবার অনেকক্ষণ আগেই খাবার খেয়ে ফেলুন।
– উঁচু বালিশে শুলে আরাম পাওয়া যায়।
– এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

৭. পায়ে আঁকাবাঁকা শিরা, পাইলস :

-পায়ে আঁকাবাঁকা শিরার জন্যে ক্রেপ ব্যাণ্ডেজ ব্যবহার এবং বিশ্রামের সময় পা উঁচু করে রাখতে বলা হয়।

-পাইলসের জন্যে নিয়মিত টয়লেট সারা জরুরি; কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয়ে যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। টয়লেট সারার সময় বেশি চাপ দেওয়া যাবে না। বাম কাত হয়ে শোয়া ভালো। গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

৮.মাসিকের রাস্তায় সাদা স্রাব :

-ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এর প্রধান চিকিৎসা।
-নরম সূতি আন্ডারগার্মেন্টস ব্যবহার করা ভালো।

তবে সবকথার শেষকথা হচ্ছে প্রতিজন গর্ভবতী নারীরই নিয়মিতভাবে চিকিৎসকের কাছে ভিজিটে যেতে হবে, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে এবং তার প্রেস্ক্রাইব করা ওষুধপত্র নিয়মিত খেতে হবে।

 

রামপুরার বাসা থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার


নারী সংবাদ


রাজধানীর রামপুরা কুঞ্জবন এলাকার একটি বাসা থেকে নার্গিস বেগম (২৯) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ তার স্বামী মুখলেসুর রহমানকে আটক করেছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ৩৩৬/১১ নম্বর বাসা থেকে নার্গিসের লাশ উদ্ধার করে। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়।
রামপুরা থানার উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের জানান, কুঞ্জবন এলাকার ওই বাসা থেকে নার্গিসের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তিনি আরো বলেন, নার্গিসের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে এখনও স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় তার স্বামী মুখলেসুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। নার্গিসের লাশের ময়নাতদন্ত হওয়ার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সুত্র: নয়া দিগন্ত।

 

ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জন্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান 


নারীর জন্য আইন


সংবিধানের ১৩- ১ এ এই বিধানটি লেখা রয়েছে। যেখানে ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে যদি কোন মেয়ে যদি সন্তানকে জন্ম দেয় তাহলে শিশুর ভরণপোষণ ব্যাপারে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জন্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান হল-

১[ ১৩৷ (১) অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধর্ষণের কারণে কোন সন্তান জন্মলাভ করিলে-

(ক) উক্ত সন্তানকে তাহার মাতা কিংবা তাহার মাতৃকুলীয় আত্মীয় স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা যাইবে;

(খ) উক্ত সন্তান তাহার পিতা বা মাতা, কিংবা উভয়ের পরিচয়ে পরিচিত হইবার অধিকারী হইবে;

(গ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহণ করিবে;

(ঘ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ব্যয় তাহার বয়স একুশ বত্সর পূর্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রদেয় হইবে, তবে একুশ বত্সরের অধিক বয়স্ক কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে তাহার বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় ভরণপোষণের যোগ্যতা অর্জন না করা পর্যন্ত প্রদেয় হইবে৷

(২) সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ প্রদেয় অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ করিবে৷

(৩) এই ধারার অধীন কোন সন্তানকে ভরণপোষণের জন্য প্রদেয় অর্থ সরকার ধর্ষকের নিকট হইতে আদায় করিতে পারিবে এবং ধর্ষকের বিদ্যমান সম্পদ হইতে উক্ত অর্থ আদায় করা সম্ভব না হইলে, ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হইবেন সেই সম্পদ হইতে উহা আদায়যোগ্য হইবে৷]

সুত্র: বাংলাদেশ সংবিধান।

 

একটি শিশুর আর্তনাদ-১


আফরোজা হাসান


টেবিলে কিছু একটা রাখার শব্দ শুনে তন্দ্রা ছুটে গেলো অধরার। কফির মিষ্টি ঘ্রাণ নাকে এসে লাগতেই চোখ খুলে তাকালো। ধূমায়িত কফি দেখেই শরীর ও মনকে জাপটে ধরে থাকা তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব কিছুটা যেন শিথিল হয়ে এলো। মাথা তুলে তাকালো সহকর্মীর দিকে। কফি রেখে ততক্ষণে নিজের জায়গায় গিয়ে বসে তার দিকেই হাসিমুখে তাকিয়ে আছে শাহরিন।

কফির জন্য এক লক্ষ শুকরিয়া। সেমিনার টক রেডি করতে গিয়ে সারারাত ঘুমাতে পারিনি। এখন ঘুমে মাথা সোজা করে রাখতে পারছিলাম না। হাসি মুখে বলল অধরা।

শাহরিন হেসে বলল, ‘একটি শিশুর আর্তনাদ’! তোমার বিষয় নির্বাচনটা ঠিক বুঝে আসছে না আমার।

এই আর্তনাদটা আসলে ছোট্ট কোন শিশুর আর্তনাদ নয়।

তাহলে?

আমাদের সবার মনের মাঝেই ছোট্ট একটা শিশু বাস করে সেটা তো জানোই। এই আর্তনাদ আসলে সেই শিশুর। অর্থাৎ, পরিণত মানুষের মনের মাঝে বসে থাকা সেই শিশু যে কোন না কোন ভাবে বঞ্চিত হয়েছে তার শৈশব থেকে। শৈশবের হাসি, আনন্দ, উল্লাস থেকে। যা কিনা প্রতিটি শিশুর অধিকার থাকে। একটু ভেবে দেখো একটা শিশুর চাহিদা কতটুকু থাকে? বাবা-মার সাথে আনন্দঘন সময় কাটানো, মাঝে মাঝে বেড়াতে যাওয়া, পছন্দের খেলনা, চকলেট, আইসক্রিম, কারণে অকারণে ছোট ছোট উপহার। এই তো তাই না? সবসময় বাবা-মার পক্ষে হয়তো এই চাহিদাগুলো পূরণ করা সম্ভব হয় না। সেই কারনটা যদি বাবা-মা বুঝিয়ে বলেন সন্তানদেরকে তাহলে ছোটবেলায় কষ্ট বা মনখারাপ করলেও, বড় হবার পর সেটা উপলব্ধি করতে পেরে স্বস্থি খুঁজে পায় মনে। কিন্তু বুঝিয়ে না বলার কারণে মনে তৈরি হয় গোপন কষ্ট ও অভিমান। যখনই বাবা-মার আদর ভালোবাসায় সিক্ত কাউকে দেখে তাদের মনে বেজে ওঠে হাহাকার ঘেরা আর্তনাদ।

কিছুক্ষণ চুপ থেকে শাহরিন বলল, এমন আর্তনাদ তো আমার মনেও কিছুটা আছে। বাবার আদর কাকে বলে? বাবারা কি সন্তানকে আদর করে? কিভাবে করে? বুকে জড়িয়ে ধরে কখনো? কপালে কি আদর এঁকে দেয়? বাবা মাথায় হাত বুলালে কেমন লাগে? নাহ কিছুই জানি না আমি। এই ব্যাপারে কোন অভিজ্ঞতাই যে নেই আমার। নিজের শৈশব আঁতিপাঁতি করে খুঁজেও এমন একটি মুহুর্ত আমি খুঁজে পাই না যেখানে বাবা আমাকে আদর করেছেন। আমাকে কোন উপহার দিয়েছেন, কোথাও বেড়াতে নিয়ে গিয়েছেন। কারণ বাবার ছেলের শখ ছিল। কিন্তু আমি মেয়ে। তাও আবার পাঁচ নাম্বার মেয়ে।

সদা হাসিখুশি, প্রাণবন্ত সহকর্মীর মুখ থেকে কথাগুলো শোনার পর কিছুটা থমকে গেলো অধরা। বলার মত কোন শব্দই খুঁজে পেলো না। শুধু মনেহলো ‘জীবন কারো তরেই নয় সাজানো ফুল বাগান! নিজ নিজ পরীক্ষায় সবাইকে হতে হয় পেরেশান! ছোট ছোট দুঃখ-সুখে ঘেরা প্রতিটি মনের ভুবন! আনন্দ-হাসি উল্লাসের ভিড়ে লুকানো থাকে অদেখা কন্দন!’ তাই হয়তো মনের কোণে জমানো কষ্ট নিয়েও অন্যের মনের ক্ষতগুলোতে সহমর্মীতার পরশ বুলিয়ে যেতে চেষ্টা করে শাহরিন।

অনেকটা ক্ষণ নীরবতার পর শাহরিন বলল, সত্যি অনেক দরকারি একটা বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছো তুমি। আমারো মনেহয় যে বাবা-মাকে মানসিকভাবে কাছে পেলে জীবনের অপ্রাপ্তি গুলোও অনেক সহজে মেনে নেয়া সম্ভব হয়। কিন্তু বাবা-মার সাথে মানসিক দুরুত্ব জীবনের প্রাপ্তিগুলোকেও ফিকে করে দেয়।

একদম ঠিক বলেছো। আমার যেমন সবসময় আপ্রাণ চেষ্টা থাকে আমার সন্তানদের মানসিক ও আত্মিক বিকাশের ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার। শারিরীক যে কোন সমস্যা চোখে দেখা যায় কিন্তু মানসিক অবস্থা দেখা যায় না বলেই বেশি সতর্ক থাকার প্রয়োজন হয় বেশি। যেমনটা বলা হয় যে, শিশুদের মন কাদা মাটির মত, পানির মত, মোমের মত ইত্যাদি। অর্থাৎ, যে পাত্রে রাখা হবে শিশুরা সেটারই আকার ধারণ করবে। কিংবা এভাবেও বলা যায় যেমন খুশি তেমন আকারে গড়া সম্ভব শিশুদেরকে। তাই সতর্ক থাকি কোন ভাবেই যাতে আমার কোন ভুলের কারণে ব্যহত না হয় সন্তানদের সঠিক আকার গঠন। কিন্তু নানান ধরণের ব্যস্ততার কারণে মাঝে মাঝে খেয়াল করতে পারি না ছোট ছোট অনেক বিষয়। তাই বাচ্চাদের সাথে যাতে কোন রকমের দুরুত্ব তৈরি হয়ে না যায় সেজন্য আমি ডায়েরি বেছে নিয়েছি। মানে হচ্ছে ওদেরকে একটা ডায়েরি কিনে দিয়েছি শুধু সেইসব কথা লেখার জন্য যা বলতে চেয়েও নানা কারণে আমাকে বলতে পারে না সময়, সুযোগ বা পরিস্থিতির কারণে।

শাহরিন হেসে বলল, বাহ বেশ মজার তো!

অধরাও হেসে বলল, হুম! এই পদ্ধতিটার উদ্ভাবক আমার ছোট পুত্র। ওর বয়স যখন পাঁচ বছর তখন একদিন একটা কারণে একটু বিরক্ত হয়েছিলাম ওর উপরে। দুষ্টুমির জন্য একটু বকে দিয়ে আমি রান্নাঘরে চলে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি সে তার হোয়াইট বোর্ডটা ঠেলতে ঠেলতে রান্নাঘরে নিয়ে আসছে। রান্নাঘরের দরজা দিয়ে বোর্ডটা ঢুকিয়ে দিয়েই চলে গেলো। আমি কাছে গিয়ে দেখলাম বোর্ডে যে তার মনের অভিমানী শব্দমালা লিখেছে ছবি আর শব্দের সংমিশ্রণে। অদ্ভুত একটা অনুভূতি হয়েছিল আমার তখন। মনে হয়েছিল বকে দেবার আগে উচিত ছিল দুষ্টুমি করাটা কেন ঠিক হয়নি সেটা বুঝিয়ে বলা। এবং ওকেও নিজের পক্ষে কথা বলতে দেয়া। বেশ কয়েকদিন আগে যেমন একটা ডকুমেন্টরি দেখছিলাম আমি জমজ বাচ্চাদের উপরে। একে অন্যের সাথে জোড়া লাগানো জমজ বাচ্চাদের ছবি দেখে আমার মেয়ে বলল, মামণি কতই না ভালো হতো যদি তুমি আর আমি এমন হতাম। তাহলে তুমি সারাক্ষণ আমার সাথে সাথে থাকতে। ব্যস্ততার সময়ও আমাকে তোমার সাথে রাখতেই হতো। ঐ মুহুর্তে হাসলেও পরে আমি এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলেছি মেয়ের সাথে। ওকে বুঝিয়ে বলেছি আমার ব্যস্ততার কারণ এবং এরপর থেকে চেষ্টা করি আরো কিছুটা সময় বেশি কাটাতে বাচ্চাদের সাথে।

কেন পৃথিবীর সব বাবা-মায়েরা এমন হয় না বলো তো অধরা? কেন সন্তান জন্ম দেয়া আর ভরণ পোষণেই সীমাবদ্ধ থাকে বাবা-মার চিন্তা ভাবনা। খুব খুব কষ্ট হয় যখন পেশেন্টরা বাবা-মা আর পরিবারের সদস্যদেরকে ঘিরে তার মনের মধ্যে জমে থাকা অভিমানী কথাগুলো বলে অশ্রু ভেজা চোখে। মনে পড়ে যায় নিজের অপ্রাপ্তি আর নিরানন্দে ঘেরা এলোমেলো শৈশবের কথা। তুমি ঠিক বলেছো যখনই বাবা-মার আদর ভালোবাসায় সিক্ত কাউকে দেখি আমার মনে বসে থাকা শিশুটা আর্তনাদ করে উঠে। যখন আমার হাজবেন্ডকে দেখি আমাদের মেয়েকে আদর করতে, ভালোবাসতে। অনুভব করি নিজের জীবনে বাবার আদর-ভালোবাসার অভাব।

আমার দেখা অনেক মানুষের ভেতর থেকেই এই আর্তনাদটা শুনতে পেয়েছি আমি। সেজন্যই এই বিষয়টাকেই বেছে নিয়েছি আমি।

আর কিছু না বলে চুপচাপ নিজের কাজে মনযোগ দিলো শাহরিন। অধরা বুঝতে পারছে বিষয়টা নিয়ে ভাবতে ও কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে বলেই শাহরিন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। নিজের ভেতরটাও ভারী হয়ে এলো অধরার।এমন নিরাশার আঁধার কালো পর্দা টেনে নিশ্চুপ বসে থাকা মনগুলোকে যখন দেখে ইচ্ছে করে বিজলীর মতো প্রচন্ড গর্জন করে চারিদিক আলোকিত করে ঝলসে উঠতে। হতাশার ঘোর অমানিশা ছিন্ন ভিন্ন করে ভঙ্গ করে দিতে নিস্তব্ধতা। ধূ ধূ মরুভূমির মত ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া ধূলো ধূসরিত পিপাসাক্ত হৃদয়গুলোতে ঝরঝর শ্রাবণও ধারা হয়ে ঝরে যেতে ইচ্ছে করে যে পর্যন্ত না মিটে যায় শুষ্কতার ছাপ। ঘুণপোকার কুড়ে কুড়ে খাওয়া ক্ষতে বুলিয়ে যেতে ইচ্ছে করে আশা জাগানিয়া পরশ।

 

নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের নারীরা


নারী সংবাদ


অবশেষে ভুটানের মাঠে টানা ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হয়ে এলে বাংলাদেশের ফুটবল। রোববার সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ মহিলা ফুটবলের ফাইনালে নেপালকে ১-০ তে হারিয়ে প্রথমবার আয়োজিত এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ। ম্যাচের ৫০ মিনিটে মাসুরা পারভীনের গোলে লাল-সবুজরা এখন সাফ সেরা।

অথচ আগস্টেই থিম্পুর এই চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবলের ভারতের কাছে ট্রফি হারায় গোলাম রাব্বানী ছোটনের দল। এবার ফাইনালে ভারতকে না পেলেও নেপাল বধের মাধ্যমে লাল-সবুজের উল্লাস মাঠ ও গ্যালারী জুড়ে। বাংলাদেশ এবার শিরোপার সাথে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারও জিতেছে। সিরাত জাহান স্বপ্না ৮ গোল করে এই ট্রফি জয় করেন।

তুমুল লড়াই করার জন্য খ্যাতি আছে নেপালীদের। ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেভাবেই শুরু নেপালের। মারজিয়ার বদলে খেলতে নামা লাল-সবুজদের স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্নাকে কড়া মার্কিংয়ে রাখে তারা। মিডফিল্ডে সুবধিা করতে দিচ্ছিলনা মারিয়া, মনিকাদের। নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না অধিনায়ক মৌসুমী ও সানজিদা। এরপরও ৭ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। রুপনা চাকমার গোল কিক থেকে মাঝ রেখার কাছে ফাঁকায় বল পান কৃষ্ণা রানী সরকার। তার সামনে শুধুই নেপালী গোলরক্ষক। বল নিয়ে ঢুকে পড়েন তিনি। এরপর এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল জালে পাঠাতে গিয়ে তিনি মারেন বাইরে। অথচ তিনি যতটুকু সময় পেয়েছিলেন তাতে গোলরক্ষককে কাটিয়ে বল জালে পাঠাতে পারতেন।

২২ মিনিটে আরেকটি ভুল করেন অনূর্ধ্ব -১৬ জাতীয় দলের সাবেকই অধিনায়ক কৃষ্ণা । বল ফাঁকায় দাঁড়ানো স্বপ্নাকে না দিয়ে নিজেই মারেন গোলরক্ষক সোজা। এর আগে ১৫ আঁখি খাতুন মিস করেন গোল। এই অর্ধে নেপাল দুটি হায় চান্স পেলেও তা থেকে গোল আদায় করতে পারেনি।

বিরতির পর পরই লিড বাংলাদেশের। মনিকা চাকমার নেয়া ফ্রি-কিকে ডিফেন্স থেকে উঠে আসা মাসুরা পারভীনের হেড গড়িয়ে গড়িয়ে চলে যায় জালে। অবশ্য পরের মিনিটেই সমতার খুব কাছে চলে যায় নেপাল। আঁখি খাতুনের দৃঢ়তায রক্ষা। ফ্রি-কিক থেকে আসা বলে গোলরক্ষক রুপনা চাকমা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। তাতে এক নেপালী ফুটবলারের নেয়া ভলি পোস্টে লাগার পর ক্লিয়ার করেন আঁখি। লিডের পর কিছুটা রক্ষনাত্মক হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এই সুযোগে ৭৪ মিনিটে নেপালের পাওয়া সুযোগ নষ্ট করেন মনীষা। তার শট বার ঘেঁষে চলে যায়। একটু ফাটলও দেখা যায় ছোটন বাহিনীর ডিফেন্স লাইনে। নেপালীরা এই সময়ে অলআউট অ্যাটাকে গেলে বাংলাদেশ কাউন্টার অ্যাটাকে বিপক্ষ রক্ষনভাগ ভাঙার চেষ্ঠা করে। অবশ্য তাতেও ব্যবধান বাড়েনি।

আসরের সব কটি ম্যাচ জিতেই ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে দিয়েছে ২৩ গোল। এই নেপালকে হারিয়েই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। আর ফাইনালেও বাংলাদেশের সামনে দাড়াতে পারেনি হিমালয় কন্যারা। ফলে দেশের ফুটবল সমর্থকদের আরো একবার আনন্দে ভাসাল অনূর্ধ-১৮ নারী ফুটবলাররা।

 

ফতুল্লায় স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় স্বামীর আত্মসমর্পণ


নারী সংবাদ


নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আফরিন আক্তার রানী (২৩) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন তার স্বামী। স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী মেহেদী হাসান (৩০) নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন।
গত শুক্রবার দুপুরে ফতুল্লার চাঁদনী হাউজিং এলাকার ওমর ফারুকের বাড়ির দ্বিতীয় তলার বাসা থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত আফরিন আক্তার রানী নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার সরদীয়া এলাকার আবদুর রহিমের মেয়ে।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মামুন আল আবেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে মোবাইলে চার্জ দেয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে মেহেদী তার স্ত্রী রানীকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যার পর মেহেদী সারা রাত বাসাতেই ছিলেন। শুক্রবার দুপুরে পাঁচ মাসের শিশু সন্তানকে বাসায় রেখে ফতুল্লা থানায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
এসআই মামুন আল আবেদ আরো জানান, মেহেদী হাসানের আগের সংসারে স্ত্রী-সন্তান রয়েছে এবং আফরিন আক্তার রানীরও স্বামী-সন্তান রয়েছে। তারা উভয়ই আগের সংসার রেখে পরকীয়া সম্পর্কের পর বিয়ে করে আলাদা সংসার শুরু করে। তাদের সংসার জীবনে আগের সংসার নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো বলে জানা গেছে।

 

অনলাইন বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন নারী উদ্যোক্তারা


নারী সংবাদ



রুবাইয়াত উর্মি। নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ-এমবিএ করে চাকরি না খুঁজে ছোট পরিসরে নিজের ফেসবুকে গ্রুপ খুলে এফ-কমার্সের মাধ্যমে শুরু করেন অনলাইন বাণিজ্য। এর মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার বড় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন।
উর্মি ছাত্রজীবন থেকেই স্বপ্ন দেখেন ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার। তাই প্রথমে ছোট আকারে খুব অল্প পুঁজিতে শুরু করেন। পরে আস্তে আস্তে পরিধি ডালপালা ছড়ায়। উর্মির এফ-কমার্স পেজের নাম ‘ফ্যাশন প্যাশন’। তিনি লোকাল বাজার থেকে কাপড় কিনে ডেভেলপ করেন। যেহেতু আমাদের দেশে অনেকেই দেশীয় পণ্য ব্যবহারে আগ্রহী নন, তাই দেশীয় বিভিন্ন পোশাক কিভাবে গর্জিয়াস কাজ করে পার্টি ড্রেস বানানো যায় তা নিয়ে কাজ করছেন উর্মি।
আলেয়া আফরিন। একটি অ্যাড ফার্মে চাকরির পাশাপাশা আরেকটু স্বাবলম্বী হওয়ার জন্যই এই এফ-কমার্সে তার যাত্রা। এইচএসসি পাস করতেই বাবা সমস্যায় পড়ে চাকরি ছাড়েন। ঠিক তখনি বড় মেয়ে হিসেবে সংসারের হাল ধরার দায়িত্ব পড়ে আলেয়ার ঘাড়ে। আলেয়া খুব সামান্য বেতনে ছোট একটি চাকরি শুরু করেন। প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল তার পড়ালেখা। সামান্য বেতনে পরিবারে ছোট ভাইসহ অন্যদের দেখভালেই চলে যায়, পড়াশোনার খরচ যোগানোই দায়। তখনি এই এফ-কমার্সে চিন্তা এলো এবং সেভাবেই শুরু তার ‘বিবির আয়না’ নামে এফ-কমার্স পেজের। তারপর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স। এখনো চাকরি করছেন ভালো কোম্পানিতে। পাশাপাশি তার সেই এফ-কমার্স ব্যবসাও ধরে রেখেছেন। মাত্র ২৫ হাজার টাকা ধার করে শুরু করেছেন, এখন প্রায় তিন লাখ টাকার প্রোডাক্ট রয়েছে বিবির আয়নায়।
উর্মি আর আলেয়ার মতো শত শত উদ্যোগী মেয়ে অনলাইন বাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে ও সফল হচ্ছে। দেশ এখন আলিবাবা, দারাজ, আজকের ডিল, পিকাবোসহ অন্যান্য ই-কমার্স সাইটে সয়লাব। বর্তমান যান্ত্রিক কর্মব্যস্ত দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রই তো প্রযুক্তিনির্ভর। পিছিয়ে নেই ঘরের নারীরাও। বর্তমানে নারীর ঝোঁক বাড়ছে অনলাইন ব্যবসায়। অনলাইন ফ্যাশন হাউজ, জুয়েলারি হাউজসহ নিত্যপণ্যের সম্ভার এখন প্রায়ই চোখে পড়ে। ঘরে বসে কল করে কিংবা মেসেজ পাঠিয়ে পছন্দের পণ্যটি ক্রেতাদের হাতের নাগালে পৌঁছে দিচ্ছেন এ নারী উদ্যোক্তারা। শুধু সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ফেসবুক ব্যবহার করেই তারা এগিয়ে নিচ্ছেন নিজেদের ব্যবসা।
ফেসবুকের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তির এই সম্ভাবনার যুগে নারীর পথচলা আরও সুগম হয়েছে। ঘর-সংসার-সন্তান সব সামলে অনেক নারী এখন অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত এফ-কমার্সে।
বর্তমানে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিসের) তালিকাভুক্ত প্রায় তিন হাজার ফেসবুক পেজ আছে। এর মধ্যে প্রায় ৭০০ পেজ নারী উদ্যোক্তাদের। ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ (এফ-কমার্সের) সুবিধা হলো- অল্প পুঁজিতে এমনকি বিনা পুঁজিতেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াই ব্যবসা করা যায়। বর্তমান তথ্য অনুযায়ী আট হাজার ফেসবুক পেজ আছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক পেজ চালান নারী উদ্যোক্তারা।
এ প্রসঙ্গে লেখিকা আমেনা খানম মীনা বলেন, খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, ১০ থেকে ১৫ বছর আগেও আইসিটি বা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে একচেটিয়া বিচরণ ছিল পুরুষদের। মূল কারণ, কম্পিউটার তথা আইসিটি খাতে শিক্ষা, সেবা ও ব্যবসায় যারা নিয়োজিত ছিলেন, তাদের বেশির ভাগই ছিলেন পুরুষ। কিন্তু এখন আর সে অবস্থা নেই। খুব ধীরে হলেও পাল্টেছে এ চিত্র। বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে এসেছেন তথ্যপ্রযুক্তিতে।
তথ্যপ্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো ও নারী সচেতনতার জন্য বেশকিছু পদক্ষেপও নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় মহিলা সংস্থার একটি প্রকল্প ছিল ‘জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ’।
নানা বাধা পেরিয়েও দেশের আইসিটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা নারীর সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নিয়োজিত নারীরা নিজেদের অবস্থা সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তুলছেন। বাংলাদেশেও গড়ে উঠছে এমন সংগঠন। তেমনি একটি ‘বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি’ বা বিডব্লিউআইটি। সংগঠনটির নারীরা কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের সাথে জড়িত। বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে পেশাগতভাবে জড়িত নারীদের এখন পর্যন্ত প্রধান সংগঠন এটি। সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য আইটি খাতের সাথে জড়িত নারীদের একত্রিত করে তাদের পরিচিতির ব্যবস্থা করা। সঙ্গে সঙ্গে তাদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করা। সংগঠনটি তরুণীদের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে এবং এই শিল্পে উদ্যোগী হতে উৎসাহিত করে থাকে। নারী উদ্যোক্তা এবং পেশাজীবীদের আইসিটিতে সাফল্য অর্জনের জন্য নেতৃত্ব গুণাবলীসহ অন্যান্য দক্ষতা বাড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টাও করা হয় এই সংগঠনের পক্ষ থেকে। কাজেই যে নারীরা বাংলাদেশের আইসিটি খাতের সঙ্গে যুক্ত তারা খুব সহজেই বিডব্লিউআইটির সদস্য হতে পারেন।
সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোনো জোরালো ভূমিকা নেই। এই খাতে নারীরা যে পিছিয়ে পড়ছেন এ জন্য যে পরিমাণ জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন, তা দেখা যাচ্ছে না। দেখা যায়, দেশে কারিগরি জ্ঞান প্রশিক্ষণ দেয় যেসব প্রতিষ্ঠান আছেÑ সেখানে পুরুষের সমানতালে নারীরাও আসছেন না। এর জন্য সরকার পক্ষ কিংবা বিভিন্ন এনজিও যারা নারী উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে এমন অনেক সংস্থা বাংলাদেশে আছে। তারা নারীদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীদের পুরুষের পাশাপাশি এগিয়ে আসার জন্য কাজ একেবারেই কম। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অল্পশিক্ষিত নারীরা স্বল্প কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন কাজে সাফল্য পাচ্ছেন। নারীর পূর্ণ ক্ষমতায়ন প্রযুক্তি জ্ঞান ছাড়া সম্ভব নয়। এ জন্য আইসিটি খাতে নারীদের এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে আইন করে হলেও আইসিটিতে নারীদের এগিয়ে আসা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। এই বিশাল জনশক্তিকে প্রযুক্তির জ্ঞানে দীক্ষিত করতে পারলে তারা আমাদের বোঝা হবে না, হবে দেশের সম্পদ। আমাদের দেশে অনেক নারী ঘর থেকে বের হতে চান না। তাদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে ইন্টারনেটে নিজের ঘরে বসে আউট সোর্সিং ফ্রিল্যান্সিং করে দেশি-বিদেশি প্রচুর মুদ্রা অর্জন করতে পারবেন। স্বল্প শিক্ষিত নারীদের সামান্য প্রশিক্ষণ দিতে পারলে ভালো সফলতা পাওয়া যাবে।
আমাদের দেশের অনেক নারী আছেন, যারা ঘরের বাইরে গিয়ে চাকরি করতে পারছেন না। কিন্তু তারা স্বাবলম্বী হতে চান। সেদিক থেকে ই-কমার্সের মাধ্যমে তারা ঘরে বসে ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ই-কমার্সের সুবিধা হলো- অল্প পুঁজিতে এমনকি বিনা পুঁজিতেও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াই ব্যবসা করা যায়। ই-কমার্স মেয়েদের স্বাবলম্বী হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। বাংলাদেশের নারীদের ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে ই-কমার্স। এই সেক্টরে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তা আমাদের দেশের জন্য অবশ্যই ইতিবাচক।

সুত্র: বাসস।

 

বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীকে চমক ওবামার


নারী সংবাদ


আগেও বহুবার প্রকাশ্যে স্ত্রীয়ের প্রতি তার অকুণ্ঠ ভালোবাসার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এবার বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রী মিশেলকে হৃদয়গ্রাহী বার্তা দিয়ে ফের একবার নিজের রোমান্টিক সত্তা প্রকাশ করলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। গত বুধবার ছিল বারাক-মিশেলের ২৬তম বিবাহ বার্ষিকী। এই বিশেষ দিনে স্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে ট্যুইটারকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মিশেলের একটি সুন্দর ছবি পোস্ট করে ৫৭ বছরের বারাক লেখেন, ‘বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা। গত ২৬ বছর ধরে তুমি একজন অসাধারণ সঙ্গী হিসেবে আমার সঙ্গে আছো। তুমি এমন একজন, যে আমাকে হাসাতে পারে, যাঁকে সঙ্গে নিয়ে আমি গোটা পৃথিবী দেখতে চাই।’

সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডিও কম যান না। উত্তরে তিনি স্বামীকে ধন্যবাদ জানিয়ে লেখেন, ‘গত ২৬ বছর ধরে আমাকে অগাধ ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং মর্যাদা দেয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। তুমি সেই মানুষটি, যে আমাকে ও আমাদের মেয়েদের সবসময় উৎসাহ এবং সম্মান দিয়ে এসেছে। প্রতিটা দিন আমি তোমাকে সঙ্গে আছি। তুমিই আমাদের আসল সম্পদ।’

১৯৯১ সালে বাগদান সেরে পরের বছরই অক্টোবর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বারাক ও মিশেল। তাদের দুই মেয়ে রয়েছে — মালিয়া অ্যান ওবামা ও সাশা ওবামা।

 

ভারতে ‘পবিত্র’ গঙ্গা নদীর পাশেই নারী ধর্ষিত!


নারী সংবাদ


ভারতের পাটনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র বলে বিবেচিত গঙ্গা নদীর পাশে একজন নারীকে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, ওই দুই ব্যক্তি পালাক্রমে ওই নারীকে নির্যাতন করেছে এবং তা ভিডিও করেছে।

জানা যাচ্ছে, রোববার ভোরে গঙ্গা নদীতে গোছল করার সময় ওই দুই ব্যক্তি তাকে ধরে নিয়ে যায়।

ভিডিওতে শোনা যায়, গঙ্গা নদীর পবিত্রতার কথা বলে তাকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করছেন নির্যাতনের শিকার নারী, যাকে তিনি ‘মা’ বলেও উল্লেখ করেন।

পুলিশ বলছে, যে মোবাইল ফোনে ওই ঘটনা ভিডিও করা হয়, সেটি জব্দ করে ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশ কিভাবে এই ঘটনার কথা জানতে পেরেছে, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ দাবি করেছে, অনলাইনে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পরেই তারা এই ঘটনা কথা জানতে পারে।

তবে স্থানীয় খবরে বলা হচ্ছে যে, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থানায় গিয়েছিলেন ওই নারী, কিন্তু মামলা নিয়ে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

স্থানীয় পুলিশের কর্মকর্তা আনন্দ কুমার বুধবার বলছেন, ‘ওই ভয়াবহ ঘটনার পর থেকে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং সেটা কাউকেই জানাননি।’

ওই নারী এবং তার ওপর হামলাকারীরা একই গ্রামের বাসিন্দা বলে তিনি বলছেন। এখন ওই নারী এ বিষয়ে অভিযোগ দিতে রাজি হয়েছেন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে প্রতি ১৩ মিনিটে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়, কিন্তু এ নিয়ে সামাজিক ট্যাবুর কারণে অনেক ঘটনাই চাপা পড়ে থাকে।

২০১২ সালে দিল্লিতে একজন ছাত্রীকে বাসে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা এবং তারপর ব্যাপক বিক্ষোভের পর থেকে দেশটিতে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে কড়াকড়ি পদক্ষেপ বেড়েছে।

এরপর মৃত্যুদণ্ডের বিধান থেকে ধর্ষণ বিরোধী শক্ত আইন জারি করে দেশটির সরকার। সুত্র: নয়া দিগন্ত

 

মালয়েশিয়াতে বিবাহবিচ্ছেদ সমস্যা


রেহনুমা বিনত আনিস


সুপ্রিয়া,

আপনি জানতে চেয়েছেন মালয়দের মাঝে বিবাহবিচ্ছেদ এবং পরকীয়া এত বেশি কেন। নারীপুরুষের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কর্মক্ষেত্রে বিচরণের ক্ষেত্রে এত তারতম্য কেন। আমি ঘরকুনো মানুষ। ঘরের বাইরে দুরে থাক, নিজের রুমের বাইরেই যাই কম। তবে যখন বেরোতে বাধ্য হই, প্রচুর মানুষের সাথে কথা বলি, তাঁদের পর্যবেক্ষণ করি, ফলে কিছু বিষয় জানার সুযোগ হয়। তার ওপর ভিত্তি করে যতটুকু উপলব্ধি হয়েছে সেটা আপনার সাথে শেয়ার করছি।

মালয়শিয়ার ব্যপারে আমাদের মাঝে একটা ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। এটি মুসলিম দেশ নয়। এমনকি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বলাও কঠিন। এখানে মাত্র ৬১% মুসলিমের বসবাস যেখানে বাংলাদেশে এই অনুপাত ৯০%। মালয়রা দেশটিকে মুসলিমদের জন্য অনুকূল বাসস্থান হিসেবে গড়ে নিয়েছে, কিন্তু মূলত এটি ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডের অন্তর্ভুক্ত এবং এদের চালচলন তেমনই।

এখানকার মুসলিম বাবামায়েরা ইসলামে প্রদত্ত তিনটি দায়িত্বের মাঝে একটি খুব ভালভাবে পালন করে, একটি আধাআধি পালন করে, আরেকটি করেনা। ওরা সন্তানের সুন্দর নাম রাখে, ইসলামের বেসিকটুকু শেখায়, কিন্তু সন্তানের বিয়ের ব্যপারে কোন দায়িত্ব গ্রহণ করেনা। মালয় ছেলেমেয়েরা অল্প বয়সে বিয়ে করে থাকে, নিজের পছন্দে। প্যারেন্টাল গাইডেন্স ব্যতীত গৃহীত এই সিদ্ধান্ত কতটুকু বাস্তবতার ওপর প্রতিষ্ঠিত আন্দাজ করতে পারছেন নিশ্চয়ই। ফলে গোঁড়াতেই গলদ রয়ে যায়।

ওরা সাধারনত সমবয়সী বিয়ে করে। একটি বৈবাহিক সম্পর্কে অন্তত একজন ম্যচিউর চিন্তাভাবনাসম্বৃদ্ধ হলে বিয়েটাকে ফলপ্রসূ করা সহজ হয়। কিন্তু দুজনই যদি অপরিপক্ব হয় তাহলে কেউই বিয়ের তাৎপর্য, দায়বদ্ধতা কিংবা দায়িত্ব সম্যকভাবে উপলব্ধি করতে পারেনা। ফলে বিবাহবিচ্ছেদের বীজ প্রোথিত হয়ে যায়।

ওদের পুরুষরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে অলস এবং অকর্মন্য হয়ে থাকে। ফলে নারীদের এগিয়ে আসা ব্যতীত উপায় থাকেনা। লেখাপড়ায় এগিয়ে থাকার ফলে চাকরীর ক্ষেত্রেও স্বাভাবিকভাবেই নারীরা এগিয়ে থাকে। ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিগুলোতে বিয়ের ক্ষেত্রে সমযোগ্যতা ফ্যাক্টর নয়। তাই শিক্ষাগত যোগ্যতার পার্থক্য বিয়ের জন্য প্রতিবন্ধক নয়। উপরন্তু পুরুষদের সংখ্যাস্বল্পতা খুব একটা বাছাবাছি করার সুযোগ রাখেনা। ক্যানাডাতেও একই চিত্র দেখেছি।

এখানে বিয়ের সময় থেকেই দুজনে মিলে স্থির করা হয় সংসারের কোন খরচ কে দেবে। ফলে নারীদের কাজ না করে উপায় থাকেনা। নারীরা ঘরে বাইরে সবদিকে কাজে ব্যস্ত থাকে। সে সুযোগে অনেক পুরুষ নতুন নতুন গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কয়েকবার ধরা পড়ার পর নারীরা বিরক্ত হয়ে যায়। ফলে পরিস্থিতি দুটি বাজে দিকের মাঝে আবর্তিত হতে থাকে – একটি পরকীয়া, আরেকটি বিবাহবিচ্ছেদ।

পরকীয়ার পেছনে মূলত দুটি ফ্যাক্টর কাজ করে। একটি বিবাহের ক্ষেত্রে অপরিপূর্ণতা, অপরটি বিপরীত জেন্ডারের সাথে মেলামেশার সুযোগের সহজলভ্যতা। পুরুষদের অকর্মন্যতা, উপরন্তু বিশ্বাসঘাতকতার কথা তো বললাম। এখানকার নারীরা ঘরেবাইরে এত কাজ করে যে বাইরে বেরোনো, পুরুষদের সাথে ওঠাবসা ওদের জন্য ডালভাতে পরিণত হয়। আমি দেখে অবাক হয়েছি ওরা নারীপুরুষের মাঝে মিনিমাম ডিস্টেন্স বজায় রাখেনা। পাশে বসা, গা ঘেঁষে চলাফেরা, গায়ে হাত দিয়ে কথা বলা এমন অকল্পনীয় ব্যপারগুলো ওদের কাছে খুব স্বাভাবিক, এমনকি আপাতদৃষ্টে পর্দানশীন মেয়েদের মাঝেও।

অধিকাংশ নারীপুরুষ মিনিমাম লেভেলে ইসলাম মেনে চলে। টাইটফিটিং প্যন্টশার্টের সাথে মাথায় একটা হিজাব বেঁধে খুশি হয়ে যায়। আবার মসজিদে গেলে পর্দার অভাব ঢাকতে আলাদা পোশাক পরে নামাজ পড়ে। এভাবে ছাড় দিতে দিতে আল্লাহর প্রতি দায়বদ্ধতা যে পর্যায়ে পৌঁছয় সেটা তখন আর অন্যায়ের পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে যথেষ্ট মজবুত সাপোর্ট দিতে পারেনা।

সাংসারিক দায়িত্বের পরিমাণ যত বাড়তে থাকে গান বাজনা নাটক সিনেমার মোহময় আবেশে নিমজ্জিত মানুষগুলোর কাছে বাস্তবতা বড় কঠিন মনে হতে থাকে। এক পর্যায়ে কেউ কেউ পুরাতন স্বপ্ন ফেলে রেখে নতুন স্বপ্নের উদ্দেশ্যে উড়াল দেয়। ফলে আমি এমন নারী দেখেছি যে প্রাক্তন স্বামীর কাছে থেকে একটি ফুটো পয়সা সাহায্য ব্যতিরেকে সন্তানদের প্রতিপালন করছে। এমন পুরুষও দেখেছি যারা মায়ের কাছ থেকে এক বিন্দু স্নেহ ব্যতিরেকে সন্তানদের মানুষ করছে।

তবে এই অবস্থা মনে হয় এখন মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র। গতকাল একজন গবেষকের সাথে দীর্ঘ আলোচনা হল। তাঁর বাবা মালয়শিয়ার আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, তিনি নিজে পি এইচ ডি। বর্তমানে ভারতীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীর মাঝে ডিভোর্সের আশঙ্কাজনকভাবে ক্রমবর্ধমান হার নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু ডিভোর্সের কারণগুলো মোটামুটি একই – বৈবাহিক জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি করার ব্যর্থতা, পারস্পরিক সম্মানবোধ এবং বিশ্বস্ততার অভাব, দায়বদ্ধতার অভাব, দায়িত্বানুভূতির অভাব, অর্থনৈতিক চাপ, কোন কোন ক্ষেত্রে আত্মীয়স্বজনদের দ্বারা সৃষ্ট চাপ, চারিত্রিক দৃঢ়তার অভাব এবং সর্বোপরি আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতির অভাব।

আল্লাহ ক্কুরআনে বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাঁর রাহমাত এবং বারাকাহ তাদের জন্যই নির্ধারিত যারা তাঁর পথকে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করে, এই পথে অবিচল থাকার সংকল্প রাখে এবং তাঁর জন্য ত্যাগ স্বীকার করে। সত্যি কথা বলতে আমরা একটি জ্ঞানবিমুখ, আমলবিহীন, গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে যাওয়া নামসর্বস্ব এবং কেবল বাহ্যিকভাবে মুসলিম জাতিতে পরিণত হয়েছি। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দুর্বলতা আমাদের অন্যান্য সম্পর্কগুলোকেও অস্থায়ী করে ফেলছে। কারণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও পাশে থাকা একমাত্র আল্লাহর প্রতি দায়বদ্ধতার কারণেই সম্ভব। নইলে এই কষ্ট মানুষ কাঁধে তুলে নিতে পারেনা। ঝড়ের প্রথম আভাসেই পালিয়ে যায়।

আমার স্বল্প জ্ঞান এবং অল্প অভিজ্ঞতায় এগুলোই কারণ হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছি। আপনার মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।

 

মেয়েটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন


নারী সংবাদ


ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্যাহ কায়সার সড়কে মেডিস্ক্যান হাসপাতালের পেছনে একটি বাসায় শিশু গৃহকর্মী অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্ত্রী লাভলী আক্তারকে গতকাল সোমবার রাতে আটক করেছে পুলিশ।

নির্যাতিতা মেয়েটি ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত রোজার পর থেকে বৃষ্টি (১২) ইতালি ভবনের ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয়। সে পরশুরাম উপজেলার ধনিকুন্ডা গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। গৃহকর্ত্রীর অমানুষিক নিযাতন সইতে না পেরে মেয়েটি সোমবার সকালে পালিয়ে যায়। এক ব্যক্তির সহায়তায় বিকালে শহরের মেডিনোভা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এলে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। মেয়েটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন।

খবর পেয়ে পুলিশ বৃষ্টিকে ওই হাসপাতাল থেকে নিয়ে যায়।

ফেনী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম জানান, মেয়েটিকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে । পুলিশ তাৎক্ষণিক গৃহকর্ত্রী লাভলীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে । লাভলী দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের জহির উদ্দিনের স্ত্রী। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান ।

গৃহকর্মী নির্যাতনকারী আফরোজা গ্রেফতার

ফেনী সংবাদদাতা, ১২ জুলাই ২০১৭
ফেনী শহরের বিরিঞ্চি এলাকায় শিশু গৃহকর্মী আমেনার নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী আফরোজাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফেনী মডেল থানা পুলিশ আফরোজাকে ধরতে রাজধানীতে অভিযান চালায়। রাজধানীর বাসা থেকে তার মেয়ে ও অপর বাসা থেকে ছেলেকে আটক করে তাদের মাধ্যমে ফাঁদ পেতে আফরোজাকে মঙ্গলবার ভোরে ফেনীর ধলিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। ছেলেমেয়ের ফোন পেয়ে আফরোজা সিএনজি অটোরিকশায় ধলিয়ার সাইনবোর্ড নামক স্থানে পৌঁছলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

ফেনী মডেল থানার ওসি রাশেদ খান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আফরোজা গৃহকর্মী আমেনাকে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১০ ফেব্রুয়ারি শহরের বিরিঞ্চি এলাকার নুরিয়া মসজিদসংলগ্ন হাজী মঞ্জিলের তৃতীয়তলায় আফরোজার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ নেয় ১০ বছরের আমেনা। সেখানে গৃহকর্র্ত্রী আফরোজার নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে সারা পিঠ ঝলসে যায় আমেনার। গত শনিবার রাতে তাকিয়া রোডে আমেনাকে কান্নারত দেখে জনৈক মিজানুর রহমানসহ আশপাশের লোকজন তাকে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এক কান দুই কান হয়ে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

একপর্যায়ে রোববার রাতে সদর হাসপাতালে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) উক্য সিং। ততক্ষণে শিশুটির স্বজনেরাও হাসপাতালে পৌঁছে যান। পরিচয় মেলে গৃহকর্ত্রী আফরোজার। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) উক্য সিংয়ের নেতৃত্বে আফরোজার বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানের টের পেয়ে পালিয়ে যায় গৃহকর্ত্রী আফরোজা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

নির্যাতিতা আমেনা পরশুরামের বিলোনীয়া এলাকার আবুল কাশেমের মেয়ে। তাকে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় রোববার রাতে আমেনার ফুফু ফুলজান বেগম টুনি বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

সুত্র: নয়াদিগন্ত

 

‘আজ না হলেও কাল হবেই’


সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- ফাতেমা শাহরিন


শর্মিলী রহমান একজন শিক্ষার্থী একজন উদ্যোক্তাও বটে। এই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পড়াশুনার পাশাপাশি দীর্ঘ পথ ধরে যে প্রতিষ্ঠান নিয়ে হাটছেন সেই প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মিলন্তিকা’। BBA চতুর্থ বর্ষের এই শিক্ষার্থী প্রথম দিকে স্বল্প পরিসরে গড়ে তোলেন ‘মিলন্তিকা’। কিন্তু বর্তমানে তা ঢাকা-চাঁদপুর সহ সারা দেশে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মিলন্তিকায় মুলত পাওয়া যাবে অরিজিনাল cosmetics প্রোডাক্ট এবং imported প্রোডাক্টস।

অপরাজিতা সাথে কিছু কথা হল ‘মিলন্তিকা’র প্রতিষ্ঠাতা শর্মিলী রহমানের সাথে-

অপরাজিতাঃ মিলন্তিকা শুরুর গল্পটা আমাদেরকে একটু বলুন?
শর্মিলী : ছোটো বেলা থেকে স্বপ্ন ছিল নিজের মত কিছু করা। নিজের একটা পরিচিতি গড়ে তোলার অদম্য ইচ্ছে। একসময় মনে হলো এখনই উপযুক্ত সময় কিছু না কিছু করার। যেই চিন্তা সেই কাজ, ‘আমি চাঁদপুর শহরে থাকি সেই সুবাদে চাঁদপুর কেন্দ্রিক কিছু করার চিন্তা করি। ভেবে দেখলাম আমাদের এখানে অরিজিনাল cosmetics প্রোডাক্ট এবং imported প্রোডাক্টস এর সুবিধা কম। তখনই আরও ভাল ভাবে চিন্তা টা মাথায় আসে। শুধু চিন্তা আসলেই তো হবে না। লাগবে মূলধন , প্রচার , আর সাহস এবং যোগ্যতা। তাই প্রাথমিক দিকে খুব কাছের বন্ধু মিলে মূলধন জোগাড় করলাম। প্রচার করতে ফেসবুক সাহায্য করেছে, সাথে কাছের বন্ধুরা। যখন সবাই ভালো প্রোডাক্টস পেয়ে বুঝতে পেরেছে। তখন এমনিতেই খুব জলদি প্রচার হয়ে যাচ্ছিলো। আমার বেস্ট ফ্রেন্ডরা আর আমার বোন এবং আমার মা আমাকে শুরু থেকে অনেক সাহস জুগিয়েছেন এবং এখনও পাশে আছেন। যার কারণে আজ হয়তো এখানে আসতে পেরেছি। আর এখন আলহামদুলিল্লাহ মিলন্তিকা ঢাকা-চাঁদপুর সহ সারা দেশে সুবিধা দিচ্ছে।

অপরাজিতাঃ শুরুতে দিকে ‘মিলন্তিকা’ প্রচার প্রডাক্ট সিলেক্ট কে কে সাহায্য করেছে?
শর্মিলী: শুরু তেই বলে নিচ্ছি যে উদ্যোগটা আমার একার অবশ্যই ছিলো না। বন্ধুদের সাহায্য নিয়েই এই পথ চলা। হা তবে বলতে পারি এর প্রচার থেকে প্রসারের মূল ভূমিকায় আমি ছিলাম। আর cosmetics প্রোডাক্টস সম্পর্কে আমার বেশ ভালো ধারণা থাকায় এই সেক্টর টাকেই গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করি।

অপরাজিতাঃ আপনার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে জানতে চাই কেউ যদি আপনার মত উদ্যোক্তা হতে চায় তাহলে আপনার পরামর্শ কি?
শর্মিলী: দেখুন, নিজ উদ্যোগে স্বল্প পরিসরে খুব সহজেই করা যাবে এই সব বিজনেস। যদি কেউ করতে চান। শুধু মনোবল রাখতে হবে দৃঢ়ভাবে। যে কোনো একটা ভিন্ন ধরণের প্রোডাক্টস যা অরিজিনাল এবং সহজলভ্য নয় তা দিয়ে শুরু করতে হবে। তা সীমিত মূল্যের হলেও চলবে। যেমন প্রথম amader6 ব্যবসাটি অরিজিনাল ইন্ডিয়ান কাভেরি মেহেদি দিয়ে শুরু করেছিলাম আমি।কারণ জানতাম তখন আশে পাশে যেখানেই কাভেরি ছিল maximum নকল। তাই যখন আসল টা এনেছিলাম খুব সাড়া পেয়েছিলো। কম মূল্যে দেওয়ায় সবাই টেস্ট করতে হলেও নিয়েছিলো অরিজিনাল কিনা। পরে বোঝার পর এমন আরো অনেক অর্ডার এসেছিল।

অপরাজিতাঃ এ সেক্টরে অসহায় মেয়েদের কর্মসংস্থানের কতটুকু সুযোগ আছে?
শর্মিলী: সুযোগ অবশ্যই আছে। আমি আমার ‘মিলন্তিকা’ তে অতিশীঘ্রই কিছু কর্মী নিয়োগ করব। যারা অসহায় কিন্তু মেধাবী তাদের কে বেশি গুরুত্ব দিবো। এখন দেখা যায় বেশির ভাগ কোম্পানি গুলো ৫/৬ বছর যোগ্যতা চায় যার কারণে অনেক শিক্ষিত অসহায় মেয়ে চাকরি না পেয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। স্বপ্ন হারিয়ে ফেলে আমি তাদেরকে সুযোগ করে দিতে চাই। যাতে ঘরে বসেও কাজ করতে পারে। এটাই আমার স্বপ্ন।

অপরাজিতাঃ আবার মিলন্তিকা ফিরে আসি, একজন নারী হিসেবে এ পথ চলা, কেমন ছিল, সহজ কিংবা কঠিন?
শর্মিলী: একজন নারী হিসেবে পথ চলা মোটেই সহজ ছিলো না। শুরুতেই ফ্যামিলি বাঁধা দিয়েছিল। বড় বোন ছাড়া .. সবাই বলছিলো মেয়েদের ব্যবসা করার দরকার কি ? বিপদ আসবে, পড়ালেখার ক্ষতি হবে ইত্যাদি। সব বাঁধা ডিঙ্গিয়ে আসার দিন গুলো adventurous বলা যায় হাহাহা ..। কিন্তু কঠিন ছিল না মোটেই। কারণ তাদের বিশ্বাস জোগাড় দায়িত্বে লাগতে গিয়েই সব দিক ঠিক রাখতে হয়েছিল। পড়ালেখা , ব্যবসা এবং সব কিছু।

অপরাজিতাঃ নতুন উদ্দ্যোক্তাদের কিভাবে উৎসাহ দিবেন?
শর্মিলী: শুরু টা কখনোই মধুর হয় না। অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা প্রতিবন্ধকতা আসবে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সমস্যার জন্ম হবে। হাল না ছেড়ে দিয়ে নিজ যোগ্যতা সাথে এগিয়ে যাওয়া টাই বুদ্ধিমানের কাজ। আজ না হলেও কাল কিছু হবেই।

অপরাজিতাঃ মিলন্তিকা নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
শর্মিলী: ‘মিলন্তিকা’ আমার স্বপ্ন। ভবিষ্যতে আমি চাঁদপুর, ঢাকা সহ দেশের সব যায়গাতেই মিলন্তিকার ব্রাঞ্চ ওপেন করতে চাই। মিলন্তিকা যেনো একদিন নামকরা ব্র্যান্ড এ পরিচিতি পায়। সবার দোয়া প্রার্থী।

️মিলন্তিকার কিছু পণ্যের ছবি,

২.

 

‘যৌন হয়রানি দায়ে শিক্ষককে গণপিটুনি’


নারী সংবাদ


সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ছাত্রীদের প্রতি আপত্তিকর মন্তব্য ও নানা সময় বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির অভিযোগে ঐ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক সাইদুর রহমান ওরফে বাবুলকে শিক্ষার্থীগণ ও অভিভাবকেরা গণপিটুনি দিয়েছেন। পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে অভিভাবকরা।

সবার অভিযোগ, ‘শিক্ষক? সাঈদুর রহমান ওরফে বাবুল প্রায়শ ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানিমূলক প্রস্তাব দিতেন ও অশালীন মন্তব্য করতেন। বিষয়টি একাধিকবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদারকে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এভাবে চলতে থাকলে রবিবার সকালে এসব অভিযোগ নিয়ে ছাত্রীরা ক্লাসে গেলে প্রধান শিক্ষক উল্টো তাদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় তিনি সাঈদুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নিবেন না মর্মে শিক্ষার্থীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল ছাত্রীরা ক্লাস বর্জন এবং ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে অভিভাবক ও ছাত্রীরা সাঈদুর রহমানকে কঠিন গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাসোপর্দ করে।

টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার ওসি সায়েদুর রহমান জানান, ওই শিক্ষককে স্কুলের ছাত্রী ও অভিভাবকরা পিটুনি দেওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। পরে ওই শিক্ষককে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহরিয়ার রহমান ওই শিক্ষককে এক বছরের কারাদণ্ড দেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদার তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাঈদুর রহমান ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। এ জন্য ছাত্রী ও অভিভাবকরা বিক্ষুব্ধ হয়েছে।

 

‘সুসানে গীতি’ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম নারী মেজর


নারী সংবাদ


‘সুসানে গীতি’ ক্যাপ্টেন পদবিতে যোগদান করেন ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী ডাক্তার হিসেবে। সশস্ত্র বাহিনীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম নারী মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হয়েছেন ডাঃ সুসানে গীতি।

৩০ সেপ্টেম্বর রবিবার সেনা সদরদপ্তরে তাঁকে মেজর জেনারেল পদবির র্যাং ক ব্যাজ পরিয়ে দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ সামছুল হক।
এই সর্ব প্রথম নারীর ক্ষমতায়নে এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত দেখা গেল সেনাবাহিনীতে মহিলা অফিসারের এ পদোন্নতি।

মেজর জেনারেল ডাঃ সুসানে গীতি ১৯৮৫ সালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী ডাক্তার হিসেবে ক্যাপ্টেন পদবিতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রথম নারী হিসেবে হেমাটোলজি’তে এফসিপিএস ডিগ্রী অর্জন করেন।

এছাড়াও তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন এবং বিভিন্ন সামরিক হাসপাতালে প্যাথলজি বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।