banner

রবিবার, ০৫ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 823 বার পঠিত

 

মায়া


 রায়হান আতাহার


১.
পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করছেন হাসান সাহেব৷ বিয়েও করেছেন৷ তার পুরো নাম জাহিদ হাসান। চাকরিতে ঢোকার আগে সবাই তাকে ‘জাহিদ’ নামে চিনতো। এখন অফিসের সবার মুখে ‘হাসান সাহেব’ শুনতে শুনতে যখন বাসায় বাবা-মা-সহধর্মিণী ‘জাহিদ’ নামে ডাকে তখন তার নিজের কাছেই অবাক লাগে। প্রতি বছর ঈদের মৌসুমে সবাইকে তিনি উপহার দিয়ে থাকেন। তিনি নিজেও উপহার পান। তাকে পেনশনের টাকা থেকে উপহার দেন তার বাবা। উপহার নিতে লজ্জা লাগে হাসান সাহেবের। বলেন, “বাবা, কী দরকার ছিলো? শুধু শুধু টাকা খরচ করলে।” উত্তরে বাবা বলেন, “ও তুই বুঝবি না।”

২.
হাসান সাহেবের বাবা-মা গত হয়েছেন বছর খানেক হল। এখন তিনি নিজের একমাত্র মেয়েকেই ‘মা’ বলে ডাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে মেয়ে বাসায় থাকতে পারে না। যখন ছুটিতে বাসায় আসে তখন এটা-ওটা কিনে মেয়েকে খাওয়াতে পছন্দ করেন মিস্টার এন্ড মিসেস হাসান। মেয়ে খেতে পছন্দ করলেও বাবা-মায়ের এরকম ভালোবাসা পেয়ে সে লজ্জা পায়৷ সে ভাবে- হলে তো সে না খেয়ে থাকে না। টিউশনি করে টুকটাক আয়-রোজগারও করে। বাবা-মা কী মনে করে সে না খেয়ে থাকে? এগুলো নিয়ে কিছু বললে বাবা-মা উত্তর দেন, “ও তুই বুঝবি না।”

সারমর্মঃ ছেলে-মেয়ে যত বড়ই হোক, বাবা-মার কাছে সন্তান কখনো বড় হয় না। সন্তান উপার্জন করলেও বাবা-মা খুশি হয়ে যা দেন, তা গ্রহণ করা উচিত। প্রত্যেক বাবা-মা চান সন্তানকে আগলে রাখতে। সময়ের প্রয়োজনে হয়তো তা সব সময় সম্ভব হয় না। কিন্তু সুযোগ পেলে বাবা-মায়ের দেয়া উপহারগুলো গ্রহণ করতে লজ্জা পাওয়া উচিত নয়। সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর সকল বাবা-মাকে ভালো রাখুন।

Facebook Comments