All posts by Oporajita

 

ফ্যাশন হাউজ এসএ ওয়ার্ল্ডের যাত্রা শুরু

বানিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের পর এবার রাজধানী ঢাকার মিরপুরে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে বিশ্বমানের ফ্যাশন সামগ্রী সংগ্রহশালা ও বিক্রয়কেন্দ্র এসএ ওয়ার্ল্ড।

শুক্রবার (২৪ জুন) এসএ ওয়ার্ল্ড লাইফ স্টাইল শপের উদ্বোধন করবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। এ উপলক্ষ্যে উদ্বোধনীর দিন বিকেল ৪টায় মিরপুর ৬ এর এসএ হেইটস(প্লট-১৬, ব্লক-কেএ, সেকশন-৬ মিরপুর, ঢাকা-১২১৬)’-এ অনুষ্ঠিত হবে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী আয়োজন। এ আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন দেশের জনপ্রিয় মডেল জুটি নোবেল ও মৌ।

বুধবার রাজধানীর কাকরাইলের এসএ পয়েন্টে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই আয়োজনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন এসএ ওয়ার্ল্ড ও এসএ গ্রুপ অব কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাহ্ উদ্দিন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন এস এ গ্রুপের ডিরেক্টর সামসুল আলম পান্থ, এসএ চ্যানেলের সিইও সৈয়দ সালাহ উদ্দিন জাকী, এসএ গ্রুপের কো-অর্ডিনেটর হাসান মঞ্জুর এবং এসএ ওয়ার্ল্ডের জিএম পিনাকী চক্রবর্তী।

সংবাদ সম্মেলনে সালাহ্ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এসএ গ্রুপ অব কোম্পানিজের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় যুক্ত হয়েছে এসএ ওয়ার্ল্ড। এসএ ওয়ার্ল্ড মূলত আন্তর্জাতিক মানের একটি লাইফ স্টাইল শপ। বিশ্বখ্যাত ব্রান্ডেড পণ্যসমূহ বাংলাদেশের মানুষের হাতের নাগালে এনে দিতেই এসএ ওয়ার্ল্ডের যাত্রা। এসএ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মানের এই ফ্যাশন হাউসটির প্রথম শাখা বিগত ৪জুন চালু হয় চট্টগ্রামের পূর্ব নাসিরাবাদে এসএ পরিবহন পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিসের ভবনে। এবার ঢাকার মিরপুরে চালু হতে যাচ্ছে। এরপর রংপুরসহ দেশের সব বিভাগীয় শহরে এর শাখা সম্প্রসারিত হবে।

তিনি বলেন, এই ফ্যাশন হাউজে বিশ্বমানের ব্র্যান্ডের পণ্য সামগ্রী ন্যায্য দামে সীমিত লাভে এবং কিছু পণ্য লাভ ছাড়ায় দেশের মানুষের হাতে তুলে দেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে থেকে জানানো হয় ঢাকার মিরপুর ৬ নম্বরের এসএ ওয়ার্ল্ড এর নিজস্ব ভবনের এই দ্বিতীয় শাখায় থাকবে নারী, পুরুষ ও শিশুদের সব ধরনের পোশাক, প্রশাধনী, জুয়েলারি ও আন্তর্জাতিকমানের আকর্ষণীয় ব্র্যান্ড পণ্য। এসএস ওয়ার্ল্ড এর ফ্যাশন হাউসে ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বের নামিদামি শপিংমলের আদলে সব ধরনের উন্নত প্রযুক্তি। থাকবে হালফ্যাশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত একদল আধুনিক দক্ষ কর্মীবাহিনী।

 

মিষ্টি দিদি

স্বামীর মৃত্যুর পর ভেঙে পড়ার কথাই ছিল লিপিকা দেবনাথের। কিন্তু দুটি শিশুসন্তান নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। স্বামী রঞ্জন দেবনাথের মৃত্যুর দুই দিন পর লিপিকা স্বামীর রেখে যাওয়া মিষ্টির দোকানের হাল ধরেন। অভিজ্ঞতা ছাড়াই দুই বছর ধরে নিজে চালাচ্ছেন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এখন সংসার আর ব্যবসা দুটোই সামলাচ্ছেন তিনি।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী বাজারে লিপিকা দেবনাথের মিষ্টির দোকান। আমাদের সমাজে একজন বিধবা নারীর পক্ষে এ ধরনের ব্যবসা করতে হলে মানসিক শক্তি প্রয়োজন। আর তা লিপিকাকে দেখলেই বোঝা যায়। উচ্চশিক্ষিত লিপিকা দেবনাথ চাইলেই চাকরি করতে পারতেন। কিন্তু চাকরির পেছনে না ছুটে তিনি হয়েছেন একজন উদ্যোক্তা। তাঁর দোকানে ছয়জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
গত ২৩ মে সকালে মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী বাজারে লিপিকা দেবনাথের সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারি মিষ্টির দোকানে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। লিপিকার বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দীঘলদি গ্রামে। ভোলা সরকারি কলেজ থেকে বিএ এবং বরিশাল বিএম কলেজ থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি করেছেন। ২০০৪ সালে যোগ দেন একটি বেসরকারি সংস্থায়। চাকরির সুবাদে চলে আসেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায়। ২০০৬ সালে পরিচয় হয় তুষখালী বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী রঞ্জন দেবনাথের সঙ্গে। প্রথমে ভালো লাগা এরপর দুই পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা বিয়ে করেন। বিয়ের পর চাকরি ছেড়ে দেন লিপিকা। দেড় বছর পর প্রথম সন্তান তন্ময় দেবনাথের (৮) জন্ম। চার বছর পর লিপিকার কোলজুড়ে আসে আরও এক সন্তান (তীর্থ দেবনাথ-৪ বছর)।

স্বামী আর দুই সন্তান নিয়ে সুখে চলছিল দিনগুলো। ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে রঞ্জন দেবনাথ মারা যান। রঞ্জনের মৃত্যুর পর ব্যবসা দেখভালের মতো কেউ ছিলেন না। শ্বশুর নেই। একমাত্র দেবর আলাদা ব্যবসা করেন। মিষ্টির দোকান চালানোর কোনো অভিজ্ঞতাও ছিল না। বাধ্য হয়ে স্বামীর ব্যবসার দায়িত্ব নেন লিপিকা। সেই থেকে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন তিনি। প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে বেলা আড়াইটা আবার বিকেল চারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত দোকানে বসেন তিনি। দোকানের ব্যবস্থাপকের কাজ, মিষ্টি মোড়কজাত করা ও পরিমাপের কাজ তিনি নিজেই করেন। তাঁর দোকানে ছয়জন কর্মচারী ও কারিগর রয়েছেন। স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতি মাসে ছয় হাজার টাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে দোকান চালাচ্ছেন।

লিপিকা দেবনাথ বলেন, ‘শুরুতে দ্বিধা ছিল। তবে আমার স্বামী রঞ্জন দেবনাথ সদালাপী ছিলেন। সবাই তাঁকে ভালোবাসতেন। সবাই আমাকে ব্যবসায় আসার ব্যাপারে সাহায্য করেছেন।’

দোকান-ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন ও সংসারের খরচ শেষে প্রতি মাসে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা সঞ্চয় করেন তিনি। দুই সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য ওই টাকা জমাচ্ছেন।

কীভাবে সংসার ও ব্যবসা সামলান একসঙ্গে? লিপিকা দেবনাথ বললেন, ‘শাশুড়ি ছোট দেবরের সঙ্গে থাকেন। ছোট ছেলেকে মায়ের কাছে ভোলায় রেখে এসেছি। বড় ছেলে দিনে শাশুড়ির কাছে আর রাতে আমার কাছে থাকে।’ রান্নাবান্না দোকানের পেছনে রান্নাঘরে করা হয়। কর্মচারীদের নিয়ে তিন বেলা খাবার দোকানেই খেয়ে নেন। দোকানের মালামাল কেনা, মিষ্টান্ন তৈরি—সব কাজ নিজে তদারক করেন।

লিপিকা বলেন, গান করা ও বই পড়া পছন্দ করলেও কাজের ব্যস্ততায় এগুলো করার সুযোগ পান না। এখন দুই সন্তানকে লেখাপড়া করানো আর স্বামীর ব্যবসাকে আগলে ধরে বাকি জীবন পার করতে চান তিনি।

দোকানের কর্মচারীরা বলেন, ‘লিপিকা দেবনাথের মিষ্টি ব্যবহার ও দোকানের সুনামের কারণে ব্যবসা ভালোই চলছে। অন্যান্য দোকানের চেয়ে আমাদের দোকানে বিক্রি বেশি হয়।’ তুষখালী বাজারের ব্যবসায়ী শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘দিদির (লিপিকা) দোকানের মিষ্টি ভালো। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ হওয়ায় ওই দোকানে ক্রেতা বেশি।’

তুষখালী আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ এম আকরামুল ইসলাম বলেন, লিপিকা দেবনাথকে দেখে প্রথমে আমরা অবাক হয়েছি। আমাদের সমাজে একজন গ্রামীণ নারীর পক্ষে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা খুব সহজ ছিল না। তবে লিপিকা দেবনাথের অসীম মনোবল ও ধৈর্যশক্তির জন্য তিনি এ ধরনের কাজে সফল হয়েছেন।

 

বাজেটে নারীর হিস্যা ২৭%!

আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নারীর জন্য বা নারী উন্নয়নের জন্য কী আছে? তা জানার কৌতূহল থাকতে পারে নারী-পুরুষ সবারই।
টাকার অঙ্কটাই আগে জেনে নেওয়া যাক। অঙ্কের হিসাবে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেটে নারীর হিস্যা ৯২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ ৭১ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা থেকে তা আগামী অর্থবছরের জন্য ২০ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা বেশি। বুঝতে একটু অসুবিধাই হওয়ার কথা। নারী উন্নয়নে এত টাকা! কই, কীভাবে খরচ হয়!
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে প্রতিবারই ‘জেন্ডার বাজেট প্রতিবেদন’ উপস্থাপন করে আসছেন। প্রথমবার ছিল ৪টি মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন। তবে, কয়েক বছর থেকেই এ প্রতিবেদন করা হচ্ছে ৪০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নিয়ে। এই প্রতিবেদনেই বছরওয়ারি বাজেটে মোট বরাদ্দে নারী উন্নয়নের অংশ ও পরিমাণ দেওয়া রয়েছে।
প্রতিবেদনে ৪০টি মন্ত্রণালয়কে তিন ভাগে ভাগ করে দেখানো হয়েছে। বলা হয়েছে, সাতটি মন্ত্রণালয় নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রমবাজার ও আয়বর্ধক কাজে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে জড়িত ৯টি মন্ত্রণালয়। আর বাকি ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ জড়িত সরকারি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীর সুযোগ বৃদ্ধিসংক্রান্ত।
জেন্ডার বাজেটের আলাদা প্রতিবেদন করায় কী লাভ হলো তা অবশ্য সরকারই এখনো জানে না। অর্থমন্ত্রী তাই বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, ‘এ উদ্যোগ নারী উন্নয়নে কতটা ভূমিকা রেখেছে তা মূল্যায়নে একটি সমীক্ষা পরিচালনার কথা ভাবছি।’
আলাদা প্রতিবেদন করা হয়েছে বলেই কিনা বাজেট বক্তব্যে নারী উন্নয়ন নিয়ে বিশদ কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী। শুধু বলেছেন, ‘নারীদের জন্য সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ তৈরি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আমরা কাজ করছি।’
রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে কর্মজীবী হোস্টেল নির্মাণ, বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) পরীক্ষার জন্য ৭টি পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠা এবং আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগের কথাও বলেছেন অর্থমন্ত্রী।
নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থমন্ত্রী চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন। আরও বলেছেন, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নের জন্য প্রত্যেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন ইউনিট খোলা হবে। আর সুবিধাবঞ্চিত নারীদের জামানতবিহীন ঋণ দিতে করা হবে ‘চ্যালেঞ্জ তহবিল’ নামে একটি তহবিল।
তাহলে নারী উন্নয়নে ৯২ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দের হিসাবটি কী? অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে যত নারী আছে, তাঁদের জন্য এই টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, বিষয়টি মোটেও তেমন নয়। নারী সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা, বেসরকারি স্কুল-কলেজের নারী শিক্ষকদের বেতন-ভাতা, নারী নির্যাতন বন্ধসহ নারীর জন্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যেসব সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যয়ভারের যোগফলই হচ্ছে বাজেট বরাদ্দের এই টাকা।
বাজেট বরাদ্দে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য রাখা ১০০ কোটি টাকা নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সেলিমা আহমাদ। প্রথম আলোকে কয়েক দিন আগে তিনি বলেন, বরাদ্দ থাকলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সরকার টাকা ছাড় করে না। যেমন চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা থেকে শেষ পর্যন্ত ছাড় হবে ৩৪ কোটি টাকা।
জেন্ডার বাজেট প্রতিবেদনের মুখবন্ধে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী এবং নারীর সার্বিক উন্নয়নে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতা অর্জনে আমাদের আরও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার যে ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে, এই সাফল্যের পেছনে অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল নারীর ক্ষমতায়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনীতির মূলধারায় নারীর সম্পৃক্ত হওয়া।

 

রোজা সংক্রান্ত নারীর প্রয়োজনীয় কিছু মাসয়ালা

অন্যান্য মাসের ওপর রমজানের শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর সম্মানিত মাস তোমাদের নিকট এসে গেছে। এটি বড় বরকতপূর্ণ মাস। আল্লাহতাআলা এই মাসে তোমাদের তার রহমতের আলিঙ্গনে গ্রহণ করেন এবং নাজিল করেন তার বিশেষ রহমত। গুণাহসমূহ ক্ষমা করেন এবং আনন্দ ও গর্বের সঙ্গে তা ফেরেস্তাদের দেখান। অতএব, হে লোকসকল! এই মোবারক মাসে তোমাদের পক্ষ থেকে আল্লাহকে উত্তমবস্তুই প্রদর্শন কর। সেই ব্যক্তি বড়ই বদনসীব, যে ব্যক্তি রহমতের এই মৌসুমেও আল্লাহর থেকে মাহরুম থাকে।’ (তারগীব ও তারহীব) এ রোজা শুধু মুসলিম পুরুষের জন্য নয়, নারীর জন্যও। তাই নারীর জন্য রমজান মাস সংক্রান্ত জরুরি কিছু মাসায়েল সংক্ষিপ্ত আকারে এখানে উল্লেখ করা হলো।

১. রমজান মাসে সুবহে সাদেকের পর যদি কোনো মহিলার হায়েজ, নেফাস বন্ধ হয়ে যায় এবং সে এই সময়ের মধ্যে কোনো কিছু পানাহার না করে এমতাবস্থয় যদি সে রোজার নিয়ত করে তাহলে ওই দিনের রোজা শুদ্ধ হবে না ববং পরবর্তীতে উক্ত রোজার কাজা করতে হবে, কারণ সে দিনের শুরুলগ্নে অপবিত্র ছিল।

২. পবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার পর যদি হায়েজ শুরু হয় বা সন্তান প্রসব হয়, তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং পরে তা কাজা করতে হবে। চাই সেটা ফরজ বা নফল রোজা হোক।

৩. রমজান মাসে মহিলাদের পিরিয়ডের রোজা না রাখলে অথবা রোজা রাখার পর পিরিয়ড শুরু হলে তার জন্য পানাহার করা বৈধ। তবে অন্য লোকদের সামনে পানাহার করা উচিত নয়। দিনের বেলায় যদি ঋতু বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, তাহলে দিনের বাকি অংশে রোজাদারের মতো পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করা ওয়াজিব। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২০)

৪. হায়েজ (মাসিক), নেফাসের (প্রসব-পরবর্তী স্রাব) সময়গুলোতে রোজা রাখা নিষেধ, তবে পরবর্তীতে এ দিনগুলোর রোজার কাজা করতে হবে।

৫. যদি কেউ পূর্ণ ১০ দিন ১০ রাত পর, রাতের শেষভাগে গিয়ে পবিত্র হয় এবং তখন রাতের এতটুকু সময়ও হাতে নেই যার মধ্যে একবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে পারে। তবুও পরের দিনের রোজা ওয়াজিব। আর যদি ১০ দিনের কমে হায়েজ বন্ধ হয় এবং এতটুকু রাত অবশিষ্ট থাকে, যার মধ্যে তাড়াহুড়া করে গোসল করে নিতে পারে তবে ১ বারও ‘আল্লাহু আকবার’ বলা যায় না। তবুও পরের দিনের রোজা ওয়াজিব হবে। এমতাবস্থায় গোসল না করে থাকলে গোসল ছাড়াই রোজার নিয়ত করে নিবে, আর যদি সময় তার চেয়েও কম থাকে তাহলে রোজা হবে না, তাই সে রোজা রাখবে না। তবে সারাদিন তাকে রোজাদারের মতোই থাকতে হবে এবং পরে কাজা করতে হবে।

৬. হায়েজ, নেফাস অবস্থায় কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করা মুখস্থ হোক বা দেখে হোক জায়েজ নয়।

৭. কোনো নারীর হেফজ করা অবস্থায় হায়েজ এসে গেলে এবং মুখস্থ করার জন্য তেলাওয়াতের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে বা কোনো হাফেজা মেয়ের হায়েজ অবস্থায় কোরআন হেফজ করার জন্য তেলাওয়াত জারি রাখতে চাইলে মনে মনে তেলাওয়াত করবে মুখে উচ্চারণ করবে না।

৮. হায়েজ, নেফাস অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত ছাড়া যাবতীয় জিকির-আজকার, দোয়া-দুরুদ ও তাসবিহ-তাহলিল পাঠ করা জায়েজ আছে। এমনকি দোয়ার নিয়তে কোরআনের আয়াতও পাঠ করা জায়েজ আছে।

৯. দুধ পান করানোর দ্বারা মহিলাদের রোজা ও অজু ভাঙ্গে না। রোজা এ জন্য ভাঙ্গে না, দুধ বের হওয়াই স্বাভাবিক। রোজা তো পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকার নাম। (ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৫/৪০৮)

১০. হায়েজ, নেফাস অবস্থায় কোরআন শরিফ স্পর্শ করা যেমন জায়েজ নয় অনুরূপভাবে কোরআনের আয়াত কোথাও লেখা থাকলে তাও স্পর্শ করা জায়েজ নয়। তবে যদি এমন কোনো কিতাব হয় যার মধ্যে কোরআনের আয়াত অপেক্ষা অন্য কোনো লেখা বেশি থাকে তাতে হাত লাগানো যাবে, তবে আয়াতের ওপর হাত লাগানো যাবে না।

১১. গর্ভবর্তী বা স্তন্যদানকারিনী রোজাদার মহিলার যদি রোজা রাখার কারণে বাচ্চার বা তার প্রাণহানি মা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির প্রবল আশঙ্কা হয়, তবে রোজা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ; অন্যথায় জায়েজ হবে না।

১২. ইস্তিহাযা (অসুস্থতাজনিত কারণে দেখা দেয়া স্রাব, নিয়মিত পিরিয়ডকালীন সময়ের বেশি সময়ে যা দেখা দেয়) অবস্থায় রোজা রাখা সহিহ এবং জরুরি। রোজা না রাখার অনুমতি নেই।

১৩. ইস্তিহাযা অবস্থায় মহিলারা নিজ ঘরে ওয়াজিব, সুন্নত ও নফল ইতিকাফ করতে পারবে তাতে কোনো অসুবিধা নেই।

১৪. প্রাপ্ত বয়স্ক নারীদের প্রতিমাসে মাসিক হওয়া আল্লাহ প্রদত্ত একটি প্রাকৃতিক নিয়ম। নিয়মিত মাসিক হওয়া স্বাস্থ্যের জন্যেও উপকারী। এ জন্য ইসলামি শরিয়ত তাদের এ দিবসগুলোতে রোজা না রাখার বিধান রেখেছে। এতদসত্ত্বেও যদি কোনো নারী ঔষধ সেবনের মাধ্যমে মাসিক বন্ধ রাখে তাহলে শরিয়তের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার বাধা-নিষেধ নেই। তবে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় এরূপ না করায় উত্তম। তা সত্ত্বেও যদি কেউ এমন ব্যবস্থা নেয়, তাহলে তার রোজা হয়ে যাবে। (আল বাহরুর রায়েক: ২/৪৪৯, ফতোয়ায়ে হক্কানি : ৪/১৫৮)

১৫. বাচ্চা জন্ম দেয়ার পর প্রসূতি অথবা রুগ্ন দুর্বল মহিলা, যে রোজা রাখতে পারে না, এমতাবস্থায় তার পক্ষে ফিদইয়া দেয়া যথেষ্ট নয়। যদি ফিদইয়া দিয়ে দেয় এবং পরে সুস্থ হয় এবং রোজা রাখার সক্ষমতা এসে যায়, তাহলে ওই রোজার কাজা করা জরুরি। (ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৬/৪৭৮)

ফয়জুল আল আমীন

 

অপ্রাপ্তবয়স্ক হাফেজের পেছনে তারাবির নামাজের বিধান

ইমাম সাহেবের কথা ঠিক না, তার ঐ কথা ঠিক নয়। তারাবীর নামাযেও নাবালেগের ইমামতি সহীহ নয়। উমর বিন আবদুল আযীয ও আতা রাহ. বলেন, নাবালেগ ছেলে যেন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে ইমামতি না করে। ফরয নামাযেও নয়, অন্য নামাযেও নয়।

রমযানে এক এলাকার মসজিদে একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হাফেয তারাবীর নামায পড়িয়েছে। সে এলাকার মসজিদের ইমাম সাহেব মাসআলা বলেছেন, নাবালেগের পিছনে তারাবীর নামায পড়া জায়েয আছে।

ইমাম সাহেবের কথা ঠিক না, তার ঐ কথা ঠিক নয়। তারাবীর নামাযেও নাবালেগের ইমামতি সহীহ নয়। উমর বিন আবদুল আযীয ও আতা রাহ. বলেন, নাবালেগ ছেলে যেন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে ইমামতি না করে। ফরয নামাযেও নয়, অন্য নামাযেও নয়।

[মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৫২৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৮৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫৯; রদ্দুল মুহতার ১/৫৭৭]

গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান
সৌজন্যে : মাসিক আল কাউসার

 

ঈদ সাজে চুলের নতুন কাট

ঈদ মানেই নতুন পোশাকে নতুন সাজ। আর নতুন সাজে চাই চুলের কাটে বৈচিত্র্য। নতুন পোশাকের সঙ্গে নিজেকেও নতুন লুক দিতে মানানসই চুলের কাটই সেরা। অনেকেই গরমের এ সময়টাতে শর্ট হেয়ারকাট দিতে পছন্দ করেন। শর্ট হেয়ারে চুলের বিশেষ যত্ন নেয়ার সুযোগ হয়। তবে অনেকেই নিজের প্রিয় চুলকে কেটে ছোট করতে রাজি নন। তাদেরও নিরাশ হবারও কিছু নেই। কারণ লম্বা চুলের কাটেও আছে পছন্দের নানা ধরন।

বর্তমানে ছোট চুলের ছাটের মধ্যে এসেছে অনেক ধরন। ইদানিং অনেকেই পিক্সি কাট, সামার বব আর ক্লাসিক বব কাট দিচ্ছে। জনপ্রিয় হচ্ছে বব স্যাগও। এসব কাট একেবারেই ছোট নয়। ঘাড় ছুঁয়ে কিছুটা নিচে নেমে আসে এমন কাটও মানায় ভালো।

লেয়ার, ব্যাংস আর স্টেপের বাইরে লম্বা চুলে বৈচিত্র্য আসতে পারে ইমো কাটের মধ্য দিয়ে। ইমো কাটে একটা অংশের চুল ঢেকে রাখবে এক চোখের একপাশ। সামনের চুলগুলো এতে একটু বড় থাকবে। একে বলা হয় ইমো সুইফট।

মূলত আপনার চাল-চলনের ওপর নির্ভর করে ইমো কাট দেয়া যেতে পারে। ইমো কাটের আরেকটি ধরনের নাম হচ্ছে সিন ইমো। এতে সামনের চুলগুলো অনেক ছোট করে কাটা থাকে। আর পেছনের চুলে থাকে লেয়ার কাট। তবে লম্বা চুলে এই কাটে নিচের অংশ পাতলা হয়ে যায়।

অনেকেই চুলে পছন্দের কালার করতেও পছন্দ করেন। থ্রিপিস, শাড়ি, জিনস-টপসের সঙ্গে মানিয়ে চুলের কাট যেমন ভিন্ন হয় তেমনি চুলের রঙও হয় ভিন্ন। তাই রূপ বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় আপনার সঙ্গে মানায় এমন চুলের সাজটি মেছে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

ঈদের দশ দিন আগে হেয়ারকাট নেয়া সবচেয়ে উপযুক্ত। কারণ দেখা যায় হেয়ারকাট নেয়ার পর পার্লার থেকে দারুণ সেট হলেও বাসায় ফিরে তা নিজের সঙ্গে মানাতে সময় লাগে বেশ। তাই ঈদের কয়েক দিন আগে চুলের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পছন্দের কাট দেয়া প্রয়োজন। এতে করে ঈদের আয়োজনে নতুন হেয়ারস্টাইলকে আপনাকেও দেখাবে নতুন।

 

পাউরুটি দিয়ে মনলোভা রসমালাই

ঢাকা : রসমালাইয়ের নাম শুনলে যে কারো জিভে পানি চলে আসে। মজাদার এই মিষ্টান্ন সাধারণত ছানা দিয়ে তৈরি হয়। তবে ঘরে থাকা পাউরুটি দিয়েও অভিন্ন স্বাদে তৈরি করা যায় মনলোভা রসমালাই। খুব সহজে অল্প সময়ে এটি তৈরি করা যায়। ইফতারিতে রসমালাইটি হতে পারে মনলোভা একটি খাবার। তাই এক নজরে দেখে নিতে পারেন সহজ রেসিপিটি।

যা যা লাগবে

দুধ ১ লিটার, ৪টুকরো পাউরুটি, চিনি ৫০ গ্রাম, ১০ থেকে ১২টি কাজুবাদাম কুচি, ১০ থেক ১২টি পেস্তা বাদাম, ৮ থেকে ১০টি কাঠবাদাম কুচি, ২ চিমটি জাফরান।

যেভাবে করবেন

প্রথমে ভালো করে দুধ জ্বাল করে নিতে হবে। এরপর দুধকে অল্প আঁচে জ্বাল দিয়ে আধা লিটারে নিয়ে আসুন। এবার তাতে চিনি, কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম, পেস্তা বাদাম, জাফরান দিয়ে জ্বাল দিয়ে আবারও অর্ধেকে নিয়ে আসুন। তারপর দুধ ঠাণ্ডা হলে পাউরুটিগুলোকে গোল করে কেটে রসের ভেতর দিয়ে দিন। দুধ গরম অবস্থায় দিলে পাউরুটি ভেঙ্গে যেতে পারে। পাউরুটি দুধে ভিজে নরম হয়ে গেলে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে নিতে পারেন। এবার পরিবেশন প্লেটে কাজুবাদাম, কাঠবাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার রসমালাই।

 

ভিনগ্রহের তিন বাসিন্দার সঙ্গে আলমগীর

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নির্মিত ‘ইত্যাদি’তে থাকছে ৪ মিনিটের একটি বিশেষ পর্ব। যেখানে দেখা যাবে ভিনগ্রহের তিন বাসিন্দার পৃথিবী নামক গ্রহে আগমন ও ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে যাওয়া। ব্যতিক্রমী এই নাট্যাংশে অংশ নিয়েছেন অভিনেতা ও পরিচালক শহীদুজ্জামান সেলিম, মীর সাব্বির, মডেল ও অভিনেতা ঈমন এবং একটি বিশেষ চরিত্রে  মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক আলমগীর।

দীর্ঘ এক দশক পর বিটিভিতে অভিনয় চিত্রনায়ক আলমগীর। যেখানে শুরুতে দেখা যাবে ভিনগ্রহের তিন বাসিন্দার পৃথিবী নামক গ্রহে আগমন ও ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে যায়। যার পরপরই মঞ্চে এসে উপস্থিত হন আলমগীর। যার শেষ অংশে একটি দেশাত্মবোধক গানের পরিবেশনায় ৩০ জন শিশু শিল্পীর সঙ্গে অংশ নিয়েছেন  এই নায়ক। বিদ্রূপাত্মক ও রসালো এই পর্বটিতে উঠে এসেছে অনেকগুলো সমসাময়িক বিষয়।

‘ইত্যাদি’ বিটিভির ঈদ অনুষ্ঠানমালায় প্রচারিত হবে। রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত।

 

ঈদের জন্য জনপ্রিয় কিছু হিজাব ট্রেন্ডস

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের আর মাত্র প্রায় ২ সপ্তাহ বাকি। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে শপিং নিয়েও অনেকে এখন হয়তো ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক সামনের এই ঈদের জনপ্রিয় কিছু হিজাব ট্রেন্ড সম্পর্কে।

ঢোলা ম্যাক্সি ড্রেসের সাথে ফুলেল প্রিন্টের পোশাক এই সিজনের জন্য বেশ উপযুক্ত। ফুলেল প্রিন্টের ম্যাক্সির সাথে পরতে পারেন সাদা ব্লাউজ এবং ম্যাক্সির সাথে ম্যাচিং হিজাব। এতে আপনার যেমন ক্লাসিক লুক বজায় থাকবে তেমনি এই পোশাক পরে ঈদের দিন সকালে বেড়াতে যেতে পারেন যে কারো বাসায়।

ঈদের জন্য আরও পরতে পারেন লম্বা হাতাযুক্ত আবায়া। আপনি যদি মনে করেন, ঈদের দিন সকালে আপনার বাসায় মেহমান আসব্‌ তাহলে এই পোশাকটি বেছে নিতে পারেন।

আপনি যদি আরেকটু ক্যাজুয়াল এবং স্পোর্টি লুক বেছে নিতে চান, তাহলে সাধারণ প্যান্টস এবং লম্বা হাতাযুক্ত টপস বেছে নিতে পারেন। এবং টপসের সাথে ম্যাচিং করে হিজাব করতে পারেন। সাথে পরতে পারেন ট্রেঞ্চ সামার জ্যাকেট এবং স্নিকারস অথবা ফ্ল্যাট শু।

ভেস্ট এবং লম্বা হাতাযুক্ত আইটেম এই সিজনের সবচেয়ে জনপ্রিয় আইটেম। সুতরাং ফুলেল প্রিন্টের একটি পোশাক বেছে নিন। চাইলে এটি পরতে পারেন জিন্সের সাথেও। ঈদে আপনার সঙ্গে মানানসই হিজাব ট্রেন্ডকে উপভোগ করুন। পরিবারের সঙ্গে আপনার ঈদ উদযাপনের শুভকামনা রইল।

 

রমজানে রাসুল [সা.] ঘরোয়া কাজে স্ত্রীদের কি করতেন ?

আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি ইবনে হিব্বানের সূত্রে বলেন, আয়েশা বলেছেন- রাসুল নিজের কাপড় সেলাই করতেন। জুতা মেরামত ও সাংসারিক যাবতীয় কাজে অংশ নিতেন। (ফতহুল বারী-১৩/৭০)

রমজানে ঘরোয়া কাজে স্ত্রীদের সহযোগিতা করতেন রাসুল [সা.]

আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, তরজমা : মুমিন নারী-মুমিন পুরুষ পরষ্পর বন্ধু। (সুরা তওবা-৭১) প্রেম-ভালোবাসা ও আন্তরিকতার আঁচল ধরেই বন্ধুত্বের সেতু রচনা হয়। বন্ধু একে অপরের প্রতি হৃদয়বান। পরষ্পরে থাকে সহযোগীতার মনোভাব। নারী-পুরুষের পারিবারিক জীবনে সহযোগিতার মনোভাব আরও অপরিহার্য। আজকের উত্তরাধুনিক যুগের মায়েরা সাংসারিক দায়িত্বের সঙ্গে সঙ্গে নানা সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাজে অংশ নিচ্ছেন। সেই অংশ নেওয়াটা অর্থবহ করতে হলে সংসার পারস্পরিক সহযোগিতায় গড়ে তোলার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেকেই তার স্বতন্ত্র স্বাধীন সত্ত্বার অধিকারী হয়ে বাঁচবে। তা না হয় সংসার ভেঙ্গে পড়বে।

বছর জুড়েই মায়েরা ঘর গোছায়, রান্না করে, খাবার পরিবেশন করে, ছেলেমেয়ের পড়াশোনা, খাবার, গোসল ও স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়। মেয়েরা সবার আগে বিছানা ছাড়ে, ক্লান্ত শরীরে ঘুমঘরে যায় সবার পরে। সাংসারিক এসব কাজে আমাদের পুরুষদের সামান্যতম অংশ নেই। কারো বেলায় ব্যতিক্রম হতেই পারে। অথচ ইসলামের নবি মুহম্মদ সা.-এর জীবনের চিত্র দেখুন। বোখারি শরিফে আছে- তিনি বলেন, আমি আয়েশা রা.-কে জিজ্ঞেস করলামÑ রাসুল সা. ঘরে কী কাজ করতেন? প্রতি উত্তরে আয়েশা রা. বলেন, রাসুল সা. ঘরোয়া মানুষদের সেবায় নানা কাজে অংশ নিতেন। নামাজের সময় হলে বেরিয়ে যেতেন। ( হাদীস-৫০৪৮)

আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি ইবনে হিব্বানের সূত্রে বলেন, আয়েশা বলেছেন- রাসুল নিজের কাপড় সেলাই করতেন। জুতা মেরামত ও সাংসারিক যাবতীয় কাজে অংশ নিতেন। (ফতহুল বারী-১৩/৭০)

আমাদের সমাজের পুরুষদের আরও দায়িত্ব সচেতন ও সহযোগিতার মনোভাব হওয়া জরুরি। প্রয়োজনে ঘরের কাজে মায়েদের সহযোগিতা করা বিশেষ করে রোজার মাসে মেয়েরা সব দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে নানা স্বাদের ইফতার-সেহরি তৈরি করে। বিশাল ইফতার তৈরির আয়োজনে আমরাও অংশ নিই। কুরআন শরিফে বলা হয়েছে- তোমরা মঙ্গলময় কাজে প্রতিযোগিতা কর। (সুরা বাকারাহ, আয়াত-১৪৮) রোজাদারকে খাওয়ানো খাবার তৈরি, পরিবেশন সবই ইবাদত। সওয়াব অর্জনের বসন্তকাল রোজায় পারিবারিক কাজে সহযোগিতা করেও সওয়াবের পাল্লা ভারী করতে পারি আমরা। তবে মায়েদের কাজের ব্যাপারে সুরা আল ইমরান-এর ১৯৫ নং আয়াতে আল্লাহ বলে- আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিই। তোমাদের নারী-পুরুষের মঙ্গল কোনো কাজ বিনিময়হীন বিফল করি না। তোমরা একে অপরের সহযোগী।

মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব
সিনিয়র বিভাগীয় প্রধান, দৈনিক আর্থনীতি

 

আত্মীয়-স্বজনকেকে কি যাকাত দেওয়া যায়?

প্রকাশ থাকে যে, যাকাত গ্রহণ করতে পারে এমন আত্মীয়স্বজনকে যাকাত দিলে যাকাত দেওয়ার সওয়াবের পাশাপাশি আত্মিয়তার সম্পর্কের হক আদায়ের সাওয়াবও হবে।

যে ব্যাক্তির নিকট প্রয়োজনীয় সামান্য অর্থ সম্পদ আছে অথবা কিছুই নেই তাকে যাকাত দেওয়া যাবে। তদ্রƒপভাবে যার কাছে ৫২.৫ তোলা রূপার মূল্য সমপরিমাণ প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ নেই তাকেও যাকাত দেওয়া যাবে। অনুরূপভাবে যার কাছে এ পরিমান সম্পদ আছে কিন্তু সে এমন ঋণগ্রস্থ যে, ঋণ পরিশোধ করে দিলে তার কাছে এ পরিমাণ সম্পদ থাকে না তাকেও যাকাত দেওয়া যাবে। তবে শিল্পঋণের হুকুম এ থেকে ভিন্ন। অর্থাৎ কারো যদি ব্যক্তি মালিকানায় নেসাব পরিমাণ যাকাতযোগ্য সম্পদ থাকে এবং শিল্পঋণও থাকে তাহলে সে ব্যক্তিগত যাকাতযোগ্য সম্পদের যাকাত আদায় করবে। ব্যক্তিগত সম্পদ থেকে শিল্পঋণ বাদ দিবে না।

আর ভাই বোন ভাতিজা, ভাগনে, চাচা, মামা, ফুফু, খালা, শ্বশুড়-শাশুড়ী প্রমুখ আত্মীয় স্বজন গরীব অসহায় হলে তাদেরকে যাকাত দেওয়া যাবে। তবে নিজের পিতা-মাতা,দাদা-দাদী, নানা-নানী, প্রমুখ ঊর্ধ্বতন আত্মীয় স্বজন এবং ছেলে, মেয়ে, নাতি, নাতনি প্রমুখ অধস্তন আত্মীয়-স্বজন গরীব হলেও তাদেরকে যাকাত দেওয়া জাযেয হবে না। তদ্রƒপ স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে যাকাত দিতে পারবে না।

প্রকাশ থাকে যে, যাকাত গ্রহণ করতে পারে এমন আত্মীয়স্বজনকে যাকাত দিলে যাকাত দেওয়ার সওয়াবের পাশাপাশি আত্মিয়তার সম্পর্কের হক আদায়ের সাওয়াবও হবে।

[আলমাবসূত, সারাখসী ৩/৮, ১১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪০-২৪৩; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯,৩৪৩, ৩৪৬]

গ্রন্থনা ও সম্পানা : মাওলানা মিরাজ রহমান
সৌজন্যে : মাসিক আল কাউসার

 

ফারজানা হাসিনের সাফান ট্রেডস

বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তা সংখ্যা এখনো বেশ কম। এর বড় কারণ সামাজিক ও পারিবারিক দিক থেকে বিভিন্ন প্রতিকূলতা। বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অবস্থা এখনো নারী উদ্যোক্তাবান্ধব হয়ে ওঠেনি। তবু নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে অনেক নারী উদ্যোক্তা হয়েছেন। তেমনই একজন ফারজানা হাসিন। গতানুগতিক চাকরি ছেড়ে নারায়ণগঞ্জের এই তরুণ উদ্যোক্তা গড়ে তুলেছেন তৈরি পোশাক ও অনলাইনে পণ্য বিক্রয়ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সাফান ট্রেডস।

ফারজানা হাসিনের উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প বেশি পুরনো নয়। ২০০৮ সালে রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ফার্মেসিতে অনার্স সম্পন্ন করেন। ২০০৯ সালে অপর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেনএকই বিষয়ে মাস্টার্স। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন তিনি। প্রতিদিন ছিল ৮টা-৫টা গৎবাঁধা কাজ। একঘেয়ে এই কাজে নিজের মেধার কোনো মূল্যায়ন হয়নি বলে মনে করেন ফারজানা। চাকরির শুরু থেকেই তিনি নিজের একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর স্বপ্ন দেখতেন।

নিজের প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছার কথা পরিবারকে জানানো হলে সমর্থনের পরিবর্তে বিরোধিতাই পান ফারজানা হাসিন। এখানেই দমে যাননি তিনি। নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন। অবশ্য পরিবারে অসহযোগিতা পেলেও মায়ের সমর্থন পেয়েছেন তিনি।

চাকরি করার সময়ই উদ্যোক্তা হওয়ার পরিকল্পনা ছিল ফারজানা হাসিনের। তাই ওই সময় থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাত সম্পর্কে তিনি জানার চেষ্টা করেন। তিনি বুঝতে পারেন  তৈরি পোশাকের শিল্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে এগিয়ে। তাই এই খাতকেই নিজের উদ্যোগের জন্য বেছে নেন ফারাজানা। উদ্যোগ শুরুর আগেই এই পেশায় জড়িত কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করেন। উদ্যোগের জন্য প্রয়োজন ছিল পণ্যের ভোক্তা ও সরবরাহকারী। বাণিজ্য উন্নয়ন বিষয়ে চাকরির দক্ষতা তাঁর উদ্যোগের যথার্থতা নিরুপণে কাজে দেয়। তৈরি পোশাকের বিপণন নিয়ে উদ্যোগের একটি পরিকল্পনা দাঁড় করান ফারজানা হাসিন। তৈরি করেন ভোক্তা ও সরবরাহকারীদের তালিকা।

মোটামুটি একটা পরিকল্পনা নিয়ে ২০১৪ সালের মাঝামাঝি উদ্যোগের শুরু করেন ফারাজানা হাসিন। নিজের কোম্পানির নাম সাফান ট্রেডস ঠিক করে ফেসবুকে প্রোফাইল করেন। সরবরাহকারী ও ভোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন তাঁরা। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি অনেক সরবরাহকারী ও ভোক্তা জোগাড় করেন। বাজারে চাহিদার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ২০১৪ সালের এপ্রিলের শেষ দিকে ফারজানা পণ্য কেনা ও বিক্রয় শুরু করেন । জুন-জুলাই (২০১৪) সালে একজন কর্মচারী নিয়োগ করেন। ধীরে ধীরে কর্মীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাতজনে। এরই মধ্যে মালয়েশিয়া, দুবাই, সৌদি আরব, ঘানা, কাতার, ব্রাজিলসহ কয়েকটি দেশে সীমিত আকারে পণ্য রপ্তানি করে সাফান ট্রেডস।

ফারজানা হাসিন উদ্যোগের শুরুতে পূঁজি ছিল মাত্র এক লাখ টাকা। তৈরি পোশাকের উদ্যোগের জন্য এই পূঁজি যে অত্যন্ত কম তা অল্প কদিনেই বুঝতে পারেন তিনি। তবে এ কারণে ফারজানার উদ্যোগ থেমে থাকেনি। আর্থিক সংকটের মধ্যে তিনি সাফান ট্রেডের কাজ চালিয়ে গেছেন।

শুরুর দিকে ফারজানা হাসিনের সাফান ট্রেডস যোগাযোগের মধ্যেমে গার্মেন্টের বিশেষ পণ্যগুলো সংগ্রহ করে সুবিধাজনক মূল্যে দেশ-বিদেশের ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিত। বর্তমানে সাফান ট্রেডের ছায়ায় আরো দুটি উদ্যোগ চালানো হয়। একটি হলো ফেসবুক-ভিত্তিক ই-কমার্স পেজ ‘ওয়ান শপ বিডি’ অপরটি হলো নিজস্ব পণ্য ‘ববস গিয়ার’। এ ছাড়া অনলাইন-ভিত্তিক আরো বেশ কিছু ব্যবসায়িক প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন ফারজানা হাসিন।

চলতি বছরের শুরুতে নারায়ণগঞ্জ থেকে উত্তরায় চলে আসেন ফারজানা হাসিন ও তাঁর পরিবার। এ কারণে আবার নতুন উদ্যোগে কাজকর্ম শুরু করেছেন তিনি। একই সঙ্গে নতুন করে কর্মী নিয়োগ করা হয়।

সাফান ট্রেডের স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ এপ্রিল রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে ‘চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব’ গ্রুপের পক্ষ থেকে ফারজানা হাসিনকে নবীন উদ্যোক্তা স্মারক-২০১৪ দেওয়া হয়।

ফারজানা হাসিনের পরবর্তী লক্ষ্য হলো নিজস্ব পণ্য ‘ববস গিয়ার’কে প্রতিষ্ঠিত করা। এই লক্ষ্যে তিনি কাজ করে চলেছেন। এ ছাড়া ওষুধ শিল্প নিয়েও কাজ করতে চান ফারজানা।

ফারজানা হাসিনের মতে, তাঁর মতো ছোট উদ্যোক্তারা নিজেদের সামান্য বিনিয়োগে একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছেন। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত সাহায্যের অভাবে অনেকে বেশিদূর যেতে পারছেন না। সরকারি বা বেসরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে আরো অনেক তরুণ উদ্যোক্তারা উৎসাহী হবেন এবং আরো অনেক উদ্যোক্তা তৈরি হবে।

 

অফিসে মেনে চলুন এই ১২টি আদবকায়দা

কর্মজীবী মানুষের দিনের বড় একটা সময় অফিসে কাটাতে হয়। অফিস আমাদের জীবনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবার অফিসে কেমন আচরণ করছেন তার উপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। আপনার পদোন্নতি, সহকর্মীর সাথে সম্পর্ক, কাজের মান ইত্যাদি সব কিছু নির্ভর করছে আপনার আচরণের উপর। অফিসে একটু অসচেতন হলে সম্মুখীন হতে হয় প্রতিকূল কোন পরিস্থিতির। অফিসে কিছু আদবকেতা সবার মেনে চলা উচিত। এমন কিছু আদবকেতা নিয়ে আজকের এই ফিচার।

১। সহকর্মীদের আলোচনার মাঝে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। দুইজন সহকর্মী যখন নিজেদের মধ্যে কথা বলেন, তখন তাদের মাঝে কথা বলাটা যেমন অভদ্রতা তেমনি তা সহকর্মীদের বিরক্তির কারণ হয়।

২। অফিসে জোরে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। শান্তভাবে আস্তে আস্তে কথা বলুন। আপনার কথার আওয়াজ অন্যের সমস্যা কারণ যেন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

৩। যেসব অফিসে নির্দিষ্ট পোশাক পরার নিয়ম নেই তারা পোশাকের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন। অফিসে নিজেকে যতটা সম্ভব মার্জিত, ভদ্র,  রুচিসম্মত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং স্মার্টলি উপস্থাপন করুন।

৪। যেসব জুতা থেকে হাঁটার সময় শব্দ হয় এমন জুতা ব্যবহার না করা ভাল।

৫। সহকর্মীদের সাথে জাদুকরী দুটি শব্দ সবসময় বলুন। তা হল থ্যাংক ইউ এবং প্লিজ। ছোট এই দুটি শব্দ সহকর্মীর সাথে আপনার সম্পর্ক আরও সহজ এবং সুন্দর করে তুলবে।

৬। কড়া গন্ধযুক্ত খাবার অফিসে আনা থেকে বিরত থাকুন।

৭। কড়া গন্ধের সুগন্ধি বা আতর ব্যবহার করবেন না। হাল্কা ঘ্রানের বডি স্প্রে/ ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করুন।

৮।   নিজের ডেস্ক এবং ব্যবহার্য জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার অভ্যাস করুন।

৯। মোবাইল ফোনের রিঙ টোন নিয়ন্ত্রণ রাখুন। এমন রিঙ টোন ব্যবহার করুন যাতে অন্য সহকর্মীর কাজে সমস্যা না হয়।

১০। অফিসে অতিরিক্ত ফোনে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। আপনি অফিসে কাজ করতে এসেছেন, ফোনে কথা বলতে নয়। খুব বেশি  জরুরি প্রয়োজন না হলে অফিসের টেলিফোন দিয়ে বাড়িতে পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলা পরিহার করুন।

১১। হাতের কাজ, জরুরি অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করেই অফিস ত্যাগ করা উচিত, অর্ধসমাপ্ত কিংবা অসমাপ্ত অবস্থায় কাজ রেখে যাওয়া উচিত নয়।

১২। অফিসে অন্যের সমালোচনা, পরনিন্দা, পরচর্চা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। আপনার সাথে সহকর্মীর সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে এই একটি কাজ।

লিখেছেন

নিগার আলম

ফিচার রাইটার

 

ইফতারে ঝটপট চাইনিজ এগ নুডলস

ইফতারে দশ বারো রকমের আইটেম করা হয় অনেক বাসায়। অনেকে আবার এত ঝামেলা করতে মোটেই পছন্দ করেন না। একটি ডিশেই যদি পেট ভরে যায়, তাহলে অনেকটা কষ্ট কমে। একাই একশো এমন একটি ডিশ হলো চাইনিজ নুডলস। চলুন দেখে নিই খুব সহজ একটি নুডলসের রেসিপি। তা তৈরি করতে পারবেন আপনার রান্নাঘরে থাকা টুকিটাকি উপকরণ দিয়েই।

উপকরণ
– প্লেইন নুডলস ২৫০ গ্রাম
– ১টা সবুজ ক্যাপসিকাম
– ৩টা ডিম
– ১ কাপ বাধাকপি কুচি
– ১ টেবিল চামচ ঘন সয়া সস
– ১ টেবিল চামচ সাদা ভিনেগার
– আধা চা চামচ মরিচ গুঁড়ো
– সিকি চা চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো
– তেল ৪ টেবিল চামচ
– লবণ স্বাদমতো
প্রণালী
১) তলাভারি একটি সসপ্যানে পানি ফুটিয়ে নিন। এতে অল্প করে লবণ এবং তেল দিন। এরপর নুডলস দিয়ে দিন এতে। ৩-৪ মিনিট বা আধাসেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত নুডলস চুলায় রাখুন। এরপর নামিয়ে গরম পানি ঝরিয়ে নিন এবং কল ছেড়ে ঠাণ্ডা পানির নিচে রাখুন নুডলস।
২) ফ্রাইপ্যান বা তাওয়া গরম করে নিন। এতে তেল দিয়ে গরম করে নিন।
৩) তেল গরম হয়ে এলে এতে ডিম ভেঙ্গে দিন। ডিম অমলেটের মতো সেট হওয়া শুরু করলে চামচ দিয়ে ভেঙ্গে ঝুরঝুরে করে নিন।
৪) এবার এতে ক্যাপসিকাম এবং বাধাকপি দিয়ে কয়েক মিনিট নেড়েচেড়ে নিন।
৫) লবণ, মরিচের গুঁড়ো এবং গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে নিন।
৬) সয়া সস এবং ভিনেগার দিয়ে আবার মিশিয়ে নিন।
৭) এতে সেদ্ধ নুডলস দিয়ে দিন। উচ্চ তাপে নেড়েচেড়ে রান্না করুন ২-৩ মিনিট। খেয়াল রাখুন যেন সব উপকরণ ভালোভাবে মিশে যায়। এরপর চুলা বন্ধ করে দিন।
চুলা থেকে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন চাইনিজ এগ নুডলস।

 

নজরকাড়া পোশাকে লা রিভের ঈদ আয়োজন

আসছে ঈদ, চলছে কেনাকাটার ধুম। নজরকাড়া নকশা ও কারুকাজ খচিত পোশাকের সমাহার নিয়ে ক্রেতাদের স্বাগত জানাচ্ছে দেশের জনপ্রিয় ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড লা রিভ।

লা রিভ এবারের ঈদ আয়োজনে অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করেছে গ্লোবাল কমিউন। পোশাকে তুলে এনেছে বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবহৃত প্রাচীন মোটিফ, কারচুপি, স্কিন প্রিন্ট, এমব্রয়ডারির সমন্বয়, বিভিন্ন ডাইটেকনিক যেমন টাইডাই, অম্ব্রিডাই, গ্লাস ওয়ার্ক ইত্যাদি।

লা রিভ এর ডিরেক্টর ডিজাইন এন্ড ক্রিয়েটিভ মন্নুজান নার্গিস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চলমান ফ্যাশনকে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে সমসাময়িক এবং ফ্যাশনেবল পোশাক তৈরি করে লা রিভ এর ভোক্তাদের উপহার দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।’

এবারের ঈদ আয়োজনে মেয়েদের জন্য আছে নতুন নকশার সালোয়ার-কামিজ, টিউনিক, লং কামিজ, টপস, লেডিস শার্ট, ফতুয়া, স্কার্ট ইত্যাদি। এসব পোশাকে সংযোজন করা হয়েছে শাইনি এবং গ্লসিএমব্রয়ডারি ও প্যাচওয়ার্ক। প্রিন্টের পোশাকের সঙ্গে হাতের কাজ এবং এমব্রয়ডারির সমন্বয় রয়েছে। এতে দেয়া হয়েছে ফয়েল প্রিন্ট এবং চাইনিজ স্টাইল এর নেকলাইন এবং বোতাম ও বিভিন্ন ধরণের সিলভেট।

এবার মেয়েদের পোশাকে জনপ্রিয় কিমানো স্টাইলে রাফলড আপ টিউনিক, অ্যাসিমেট্রিক প্যাটার্ন (পেছন এবং সামনের লম্বার ভিন্নতা), স্লিভ ডিজাইন এবং বেল্টের ব্যবহার করা হয়েছে। পোশাকে রঙের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে ইনডিগো টোন: ব্লু, হোয়াইট, রোজ কোয়ার্টজ, পার্ল, বাটারকাপ ইয়েলো, লিলিয়াক গ্রে, কফি, গ্রিন, ম্যাজেন্টা, পিঙ্ক ইত্যাদি। কাপড় নির্বাচনে উজ্জ্বল এবং আরামদায়ক বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। হাফসিল্ক, সিল্ক, ভিসকস, জর্জেট, ক্যাশমিলান এবং সুতি ও সুতির মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়েছে।

ছেলেদের জন্য পোশাকে রয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাচীন মোটিফ সমৃদ্ধ পাঞ্জাবি, বিভিন্ন চেক এবং স্ট্রাইপের আরামদায়ক কাপড়ের ক্যাজুয়্যাল শার্ট, পোলো শার্ট, টি-শার্ট, ডেনিম, চিনোস, বারমুডা, শর্টস ইত্যাদি। রঙের ক্ষেত্রে অফ হোয়াইট এর একটা রেঞ্জ, ইন্ডিগো ব্লু, বেইজ, ব্রাউন, সাদা, মেরুন, বেগুনী এবং কালোকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কাপড়ের ক্ষেত্রে সুতি, সুতির মিশ্রণ, ভিসকস, ভয়েল, মাল্টি কালার স্ট্রাইপ, জ্যাকার্ড এবং ডবি ব্যবহার করা হয়েছে।

লা রিভে এবারের ঈদ আয়োজনে বাচ্চাদের জন্য রয়েছে আরামদায়ক এবং উজ্জ্বল রঙের নতুন স্টাইল এবং ডিজাইনের পোশাক। ছেলে বাচ্চাদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি, শার্ট, পোলো শার্ট, টি-শার্ট, ডেনিম, টুইল এবং মেয়ে বাচ্চাদের জন্য রয়েছে সালোয়ার-কামিজ, ঘাগরা-চোলি, ফ্রক, টিউনিক, টি-শার্ট, স্কার্ট-টপস, থ্রি কোয়ার্টার, ডেনিম ইত্যাদি। এছাড়া নবজাতকদের জন্যও রয়েছে সালোয়ার-কামিজ, ঘাগরা-চোলি, ফ্রক, নিমা, পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট সেট ইত্যাদি।

লা রিভের ঈদ কালেকশন পাওয়া যাচ্ছে বনশ্রী, ধানমণ্ডি, মিরপুর-১, উত্তরা, ওয়ারী, বেইলি রোড, যমুনা ফিউচার পার্ক, পুলিশ প্লাজা কনকর্ড ও বসুন্ধরা সিটিসহ নারায়ণগঞ্জ এবং সিলেট শোরুমগুলোতে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট  থেকে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে যে কেউ খুব সহজে পছন্দের পণ্যটি অর্ডার করতে পারবেন। অনলাইনে লা রিভ পণ্য কিনতে ভিজিট করতে পারেন-www.lerevecraze.com

 

রোজা থেকে গ্যাসের সমস্যা এড়াতে

রোজা রেখে অনেকেই গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন। এমনকি যাদের সাধারণ সময়ে গ্যাসের সমস্যা নেই তাদেরও এই সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। রোজার সময় গ্যাসের সমস্যার মূল কারণ হিসেবে ধরা হয় ইফতারিতে ভাজাপোড়া খাওয়া এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খাওয়াকে। গ্যাসের ব্যথার কারণে রোজা ভেঙে ফেলতে বাধ্য হন। কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হন।

রোজার সময় সুস্থ থাকতে ইফতারে যতটা সম্ভব ভাজা পোড়া খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ। শরীরের উপযোগী ইফতারের তালিকায় থাকতে পারে ফলমূল জাতীয় খাবার। যাদের দুধে গ্যাস হয় না তারা দুধ চিড়া খেতে পারেন। এছাড়া হজমের সমস্যা দূর করার জন্য ইসুবগুলের ভুসির শরবত খেতে পারেন।

সেহরিতে এমন খাবার খাওয়া উচিৎ যা থেকে গ্যাসের কোনো ভয় থাকবে না। সেহরিতে শাক, ডাল, ডিম এই জাতীয় তরকারি যতটা পারা যায় এড়িয়ে চলা ভালো। ঠাণ্ডা জাতীয় খাবার বিশেষ করে দই, শসা ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া সেহরিতে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি মেনে চলা প্রয়োজন তা হল পর্যাপ্ত পানি পান করা। একমাত্র পানি আপনাকে সারাদিন সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে পারে। তাই সেহরিতে প্রধান খাবার গ্রহণের পরে তিন থেকে চার গ্লাস পানি পান করুন।

অনেকেই আছেন যারা সেহরিতে খাবার খান না। আবার অনেকেই আছেন সেহরিতে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন। সেহরিতে খুব বেশি খাওয়াও যেমন ঠিক না তেমনি সেহরি একেবারে না খাওয়াও ঠিক না। খুব বেশি খাবার খেলে হজমে সমস্যা হয় আবার সেহরিতে একেবারে কিছু না খেলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। বেশি সময় পেট খালি থেকেও গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই এমনভাবে খেতে হবে যেন শারীরিক কোনো অসুস্থতা না দেখা দেয়। এক্ষেত্রে পুরো পেট ভরে না খেয়ে একটু ক্ষুধা রেখে খেতে হবে। তারপর কিছুক্ষণ পর পানি খেতে হবে। প্রতিবেলার খাবার হতে হবে সহজপাচ্য, পরিমিত ও শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী।

এসময় চিনি যুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। কেননা এটা খুব তাড়াতাড়ি রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ে এবং ওজনও বাড়ে।

রমজান মাসে রোজা রাখার কারণে যাদের ওষুধ খাওয়ার নিয়মের সমস্যা হয় বা অনেকেই আছেন খাওয়ার আগে ওষুধ খেতে ভুলে যান তারা রেবিপ্রাজল ২০ এমজি (বাজারে রেব , রেবিজল ,ফিনিক্স ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়) খেতে পারেন। এই ওষুধের একটি বিশেষ সুবিধা হল আপনি যদি খাবার আগে ওষুধ খেতে ভুলেও যান, খাবার পরেও এই ওষুধটি খেতে পারেন।

 

নারী ও শিশুনির্যাতন প্রতিরোধে আসছে মোবাইল অ্যাপস

নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার বর্তমানে একটি মোবাইল অ্যাপস প্রবর্তন করতে যাচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার হতে যাচ্ছে অথবা হয়েছে এরকম নারী ও শিশুদের সহায়তা করবে এই অ্যাপস। আগামী ৮ আগস্ট এই অ্যাপস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে নারী ও শিশুর উন্নয়নে গৃহীত ও বাস্তবায়িত কার্যক্রমের উপর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি একথা জানান।

তিনি বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে ভিকটিমের জন্য ঘটনা ঘটার সময় প্রয়োজনীয় সাহায্য চাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে অপরাধ প্রমাণ করাও দুঃসাধ্য হয়। এই সকল সমস্যার সমাধানে স্মার্ট ফোনে ব্যবহারযোগ্য ‘জয় : নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে একটি আইসিটি ভিত্তিক টুল’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপস উদ্ভাবন করা হয়েছে।

এই অ্যাপসে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের ৩টি মোবাইল নম্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার (১০৯২১), নিকটস্থ থানা এবং পুলিশ কন্ট্রোল রুমের নম্বর সংরক্ষণ করা যাবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘যদি কোনো নারী সমস্যার মধ্যে পড়ে, তাহলে তিনি মোবাইলে অ্যাপসের আইকনে স্পর্শ করলে এটি সংরক্ষিত নম্বরসমূহে একটি সংক্ষিপ্ত বার্তা পাঠাবে। হেল্পলাইন সেন্টার এবং পুলিশের নিকট জিপিএস লোকেশনসহ এই বার্তাটি যাবে। ফলে পুলিশ, হেল্পলাইন সেন্টার এবং ভিকটিমের আত্মীয়রা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবেন।’

এই অ্যাপস স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাপচারিতা সংরক্ষণ করবে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর ছবি তুলবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ সকল তথ্য মোবাইলে সংরক্ষিত থাকবে। যদি ব্যবহারকারী অনলাইনে থাকেন তাহলে তথ্যসমূহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টারের সার্ভারে প্রেরিত হবে। এসব তথ্য পরবর্তীতে অপরাধ প্রমাণে সহায়তা করবে। নারীর নিরাপত্তা ও অধিকার সম্পর্কিত তথ্য বাংলা ও ইংরেজিতে এই অ্যাপসে দেয়া থাকবে।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে পাইলট ভিত্তিতে পথশিশু পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কার্যক্রমের আওতায় কমলাপুর ও কাওরান বাজার উন্মুক্ত পথশিশু স্কুলে শিশুদের জন্য উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

পথশিশু পুনর্বাসনের আওতাধীন উন্মুক্ত পথশিশু স্কুল কমলাপুরে এ বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত মোট ২৪৬ জন শিশু তালিকাভুক্ত হয় এবং কাওরান বাজার এলাকায় মোট ২২১ জন শিশু তালিকাভুক্ত হয়েছে।

ওই শিশুদের জন্য সকাল, দুপুর ও রাতে খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে। শিশুদের রাত্রিযাপনের জন্য শেল্টার হোমেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান মেহের আফরোজ চুমকি।

 

কর্মজীবী মায়ের সন্তান কি শুধু কষ্টেই থাকে?

কর্মজীবী মায়ের সন্তান হিসাবে ছোটবেলায় প্রায়ই একটা কথা শুনতাম যে ইশ কি কষ্ট না, সারাদিন একা থাক, মাকে কাছে পাও না, এই রকম নানা আহা উহু। কিন্তু আমি আসলে কিছুতেই বুঝতে পারতাম না যে একা থাকলে সমস্যাটা ঠিক কোথায়? আমি তো দিব্য স্কুল থেকে এসে হোম ওয়ার্ক করে, বই পড়ে, পড়াশুনা করে নিজের মতনভাবে জীবন যাপন করছি। সময় মত ঘুম থেকে উঠছি, বা অন্যান্য সব করছি। আমার তো কোন সমস্যা হচ্ছে না বরং যখন যা দরকার নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে করছি, বইয়ে পড়ি যে নিজের কাজ নিজে করতে হয়, আমি ঠিক তাইই করছি। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? ঠিক কোন জায়গায়? আমার ক্লাস থ্রি থেকে সিক্স আব্বু সিঙ্গাপুরে ছিল, পোস্টিং ছিল তাঁর ওখানে আর আম্মার সরকারী চাকুরী সুবাদে আমরা বাংলাদেশে থাকতাম, মাঝেমধ্যে যেতাম সেখানে, কিন্তু কেউ কিন্ত আমাকে বলত না যে ইশ কি কষ্ট, বেচারা বাবার কাছ থেকে দূরে আছে ;-)। আমার প্রতি এই অহেতুক বেদনা প্রদর্শন আর আম্মার কাজকে অবহেলা করার জন্য আমি এই সকল আত্মীয়দের উপর খুব ই বিরক্ত হতাম। আর মনে মনে ভাবতাম এরা তো দেখি আমার চেয়েও ছোট, একা থাকতে পারে না, সারাক্ষণ মা দরকার এদের! তো যাই হোক যেটা বলছিলাম, স্কুলে বা কলেজে আমি কুইজ টিম রিপ্রেজেন্ট করতাম, এছাড়া গার্ল গাইড করতাম, সেখানে অনেক সময়ই নানা বিষয়ে প্রশ্ন আসলে বা মতামত দেয়ার হলে আমি বেশ ভালভাবে অংশ নিতে পারতাম। তো তখন অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করত কিভাবে এত কিছু জানা সম্ভব হল? বা সাহিত্যের জ্ঞান, সাধারন জ্ঞানের জন্য আমি কোন বিশেষ ট্রেনিং নেই কিনা বা এর জন্য আমি অন্য কিছু করি কিনা। আমি মনে মনে হাসতাম আর খুব শান্ত হয়ে বলতাম এর সিংহভাগ কৃতিত্ব আসলে আম্মার। তখন আবার সম্পূরক প্রশ্ন, তোমার মা না সারাদিন বাসায় থাকে না! তাহলে? আমিও মুখ টিপে হেসে জবাব দিতাম আম্মা বাসায় থাকলে আর জানা হত না, থাকেনা দেখেই না জানতে পারছি। ওরা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যেত। আসলে আম্মা যখন অফিস থেকে আসত তখন প্রতিদিনের বই, ম্যাগাজিন, পত্রিকা কিছু না কিছু নিয়ে আসত। সিনেমা থেকে শুরু করে ক্রীড়া, অর্থনীতি থেকে শুরু করে বাংলা সাহিত্য, কোন কিছু বাদ নাই। আর আমার কাজ ছিল এই সব বাসায় একা থেকে মন দিয়ে পড়া আর পরের দিন আবার নতুন কিছুর জন্য অপেক্ষা করা। ফলে আমি খুব ছোটবেলায় সিনেমার জন্য আলাদা পত্রিকা আছে, ক্রীড়া জগতের কারা নক্ষত্র, তাদের নিয়ে লেখা , বা সমসাময়িক রাজনীতি সব জেনে যাই, এমন কি কেউ কেউ যে সংবাদ বিকৃত করার হীন চেষ্টা চালায় সেগুলো বুঝতেও কোন সমস্যা হত না, অথচ তখন আমার বয়স আক্ষরিক অর্থে বার বা তের! এছাড়াও আমি একদিন আগ্রহবশত গুনে দেখেছিলাম যে বাসায় ছোট-বড় সব মিলায় ডিকশনারি ছিল প্রায় আট থেকে দশটা। সবই আমার আম্মার অবদান। উচ্চারন-বানান-আঞ্চলিক কী নাই? আমার ভাষা নিয়ে মারাত্মক সংবেদনশিলতা আছে, তবে এমন যার শৈশব তাঁর ভাষার প্রতি এত স্পর্শকাতরতা না থাকার কি কোন যৌক্তিক কারণ আছে কি? ভাবা যায় আম্মু আমাকে বর্ণমালা শিখিয়েছেন ছড়ার ক্যাসেটের মাধ্যমে! সেটা সেই তিন দশক আগের কথা। তখন বাংলা একাডেমী থেকে ছড়ার ক্যাসেট পাওয়া যেত, আমাকে আম্মা ছয়টা ক্যাসেট কিনে দিয়েছিল, একটা সংখ্যার, একটা এবিসিডির, একটা স্বরবর্ণের, একটা ব্যাঞ্জন বর্ণের, আর বাকী দুইটা বাংলা ও ইংরেজি ছড়ার। ফলে সঠিক উচ্চারনে বাংলা শিখেছি আমি, অনেকের চেয়ে আগেই, অন্তত যারা আমাকে নিয়ে আহা-উহু করতে তাদের ছেলেমেয়েদের চেয়ে তো আগে বটেই। আম্মা আমাকে সব কিছু খাওয়ানোর অভ্যাস করিয়েছেন, কাটা মাছ থেকে কলার মোচা ঘণ্ট, সরিষা বাটা দিয়ে সাজনাসহ শক্ত চালের ভাত সব। শক্ত চালের ভাত এই জন্য বললাম যে জীবনে ভাত শক্ত একদিন হতেই পারে, প্রতিদিন সেটা ঠিক হবে না আর হয়ে গেলেও এতে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায় না, একটু কষ্ট করে খেয়ে নিতে হয়, এই শিক্ষাও আম্মার। আসলে আম্মা কর্মজীবী হওয়ার কারনে যে কত সুবিধা পেয়েছি বলার নয়। শুধু আর্থিক ভাবে যে তা নয়, মানসিক সাপোর্ট এবং যে কোন সমস্যার বাস্তব সমস্যা সমাধানে আম্মার কোন জুড়ি ছিল না। আম্মু …স্কুলের এই ফর্ম ফিল আপ করব কি করে? ঠিক মত দরখাস্ত ভাঁজ কিভাবে করে? কোন কাজে কি ধরনের খাম ব্যবহার করতে হয়? কাগজপত্র বিভিন্ন ফাইলে গুছায় রাখতে হয় কিভাবে? আম্মু ব্যাঙ্ক একাউন্ট করে কি করে? আম্মু অফিসিয়াল চিঠি কেমন করে লেখা? আম্মু এই কবিতার বই লাগবে… আম্মু অফিস থেকে আসার সময় আমার জন্য অমুক দোকানের চানাচুর নিজে দাড়ায় থেকে বানায় নিয়ে আসবা, বা আমি বাসায় পিজা বানাব, বইয়ে পড়েছি যে এর জন্য ইস্ট চাই, সেটা কোথায় পাব? আম্মু হয়ত বলল নিজেই গিয়ে নিয়ে আস, দেখ সাবধানে রাস্তা পার হবা, একা একা কাজ করতে শিখ। এই সবই আম্মা হাতে ধরে শিখিয়েছেন। আবার স্কুলে স্ক্র্যাপবুক বানাতে হবে, আমার তো //আমার মা সব জানে// এই সুবিধা আছেই, তাই আম্মুর কাছেই প্রশ্ন স্ক্র্যাপ বই কোথায় পাওয়া যায় ? স্ট্যাম্প জমাচ্ছি , স্ট্যাম্প এ্যালবাম কিনে দাও, নিচে খেলার জন্য ভালো ব্যডমিন্টন কর্ক এনে দাও ইত্যাদি নানান কিছু আছে যেগুলো আমি এখন বুঝি যে শুধু আম্মা চাকুরি করত দেখেই এই ব্যবহারিক জ্ঞান ধারন করত, নতুনা কোনভাবেই সম্ভব নয়। এখনও যে কোন কিছু খুজে বের করতে , কিনতে যে আমার তেমন কোন সমস্যা হয় না , কাউকে জিজ্ঞেস করা লাগে না সেটা আম্মার কারনেই। কাপড়ের যত্ন নেয়া কাকে বলে সেটাও আম্মার কাছ থেকেই শেখা, সিল্কের কাপড়ের জন্য আলাদা ওয়াশিং পাওডার হয়, সেটা নিউমার্কেটের পিছনে একটা দোকান আছে সেখানে পাওয়া যায় ( নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ের কথা বলছি, তখন সুপারশপ হয় নাই)। আবার শীতের কাপড়ের ভাজে ভাঁজে নিম পাতা দিয়ে রাখলে সেগুলো ভাল থাকে এই তথ্যও আম্মু জানিয়েছেন। শুধু যে আম্মা আমার একজন মেন্টর হিসাবে কাজ করেছেন তা নয়, চাচাত-ফুফাত-মামাত-খালাত ভাই-বোন যে যখন আম্মার কাছে হেল্প চেয়েছে আম্মা সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারতেন করেছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটা আম্মা করেছেন আসলে আমি যখন সিক্স থেকে সেভেন এ উঠি তখন, এর আগ পর্যন্ত আমি পড়াশুনা করেছি রীতিমত খেলার ছলে, ইচ্ছা হলে পড়েছি না হলে নাই, কিন্তু আম্মু প্রেশার দেন নাই, তাঁর কথা, আগে দেখি ওর আগ্রহ বা দুর্বলতা কোথায়? আগে বেসিকটা ঠিক হতে হবে। অন্য অনেকের অভিভাবকেরা যখন কেন বাংলায় এক নম্বর কম পেল এই নিয়ে পেরেশান আম্মা তখন আমার ঔষধ, ওষুধ আর অষুধের পার্থক্য বুঝাচ্ছেন! ক্লাস সেভেনে উঠার আগ দিয়ে তাঁর মনে হল যে এখন একটু অঙ্কে জোর দেয়া দরকার, কারন এখন বীজগনিত শুরু হবে, এখন ভিত্তি শক্ত না হলে পরে ও বিপদে পড়বে, এমনিতে পাটীগনিত তো খারাপ পারে না ও, বীজগণিতও ভাল করে পারুক। তো আমার এক ভাইয়াকে বললেন একটু দেখানোর জন্য, প্রেশার দেয়ার দরকার নাই। আর আমি এই নতুন এবিসি (!) দিয়ে লেখা গনিতে এত আনন্দ পেলাম যে কিছুদিনের মধ্যেই আমার বীজগনিতের প্রতি মারাত্মক মায়া জন্মে গেল। সেই মায়া এমনই প্রবল হল আর কাটলই না, পদার্থ বিজ্ঞান যে পরে পড়েছি সেটার কারনও ছিল আম্মার সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ, আমার কোনদিকে পারদর্শিতা ছিল সেটা তিনি ধরতে পেরেছিলেন। মাকে ছোটবেলায় চাকুরি করতে দেখেছি বলেই হয়ত আমি মারাত্মক কাজপাগল, কাজ ছাড়া আমি এক মুহূর্ত থাকতে পারি না, অন্তত যেটা আমার ভাল লাগে আমি সেইটুকু করতে চাই। এই চাই বলেই হয়ত নিজের কর্মজীবন পনের বছর হয়ে গেল দেখতে দেখতেই। আম্মার কথা অনুযায়ী কোন কাজই ছোট নয় এটা শুনে টিউশনি দিয়ে শুরু করা, পড়াশুনার পাশাপাশি চার বছর চাকুরি করা, তারপর শিক্ষকতা শুরু করে বিদেশে পড়তে যাওয়া, বেশ দ্রুত ও কোন ঝামেলা ছাড়াই পিএইচডি করে ফেলা, পরে আবার দেশে ফিরে চাকুরি করা, সঙ্গে সংসার করা ও ব্যবসা আরম্ভ করা সব কিছুই তো হয়ে যাচ্ছে বেশ আনায়াসেই। আর এখন যখন সেই আত্মীয় বা প্রতিবেশী বা অন্যরা আগের সেই যুক্তিই দিয়ে যাচ্ছে মা বাসায় না থাকলে বা চাকুরী করলে ছেলে-মেয়ে বখে যাবে, নষ্ট হবে তখন নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করি আমি আসলে কি তাহলে ব্যতিক্রম? না উনাদের বুদ্ধির লেভেল……থাক আর বললাম না, তবে আমার ছোটবেলায় নেয়া সিদ্ধান্ত কোনভাবেই তো এরা পরিবর্তন করতে পারলনা… কি আর করা, সবাই সব কিছু পারে না, মা লাগে এদের সব সময়!

 

ইসলামি পটভূমিতে বিয়ে : হাদিসের নির্দেশনা

হাদিসের নির্দেশনা
বিয়ের প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে হাদিস শরীফে আরও সার্বজনীন ও বিস্তারিত নির্দেশনা এসেছে। নিম্নে কতিপয় নির্দেশনা তুলে ধরা হল:

বিয়ের প্রতি উৎসাহ প্রদান
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যার ক্ষমতা আছে সে যেন বিয়ে করে। কেননা, তা চক্ষুকে নত করে এবং লজ্জাস্থানকে অধিক হেফাজত করে। আর যে ব্যক্তি বিয়ে করতে সক্ষম নয়, সে যেন রোজা রাখে। (বুখারি, মুসলিম)

আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি পূত পবিত্র অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করতে চায় সে যেন স্বাধীন নারীকে বিয়ে করে। (ইবনে মাজাহ)

আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে আরও বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তি বিয়ে সম্পাদন করল সে নিশ্চয় অর্ধেক দীন পূর্ণ করল। অতঃপর বাকি অর্ধেকের ব্যাপারে যেন সে সতর্ক থাকে। (তিরমিযি)

বিয়ের ক্ষেত্রে কাম্যবস্ত্ত
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চার কারণে কোন নারীকে বিয়ে করা হয়- তার সম্পদের কারণে, তার বংশমর্যাদার কারণে, তার সৌন্দর্যের কারণে এবং তার ধর্মানুরাগের কারণে। অতএব, তুমি ধর্মপরায়ণ নারীকে বিয়ে করে সফলকাম হও। (বুখারি, মুসলিম)

আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তুমি কোন নারীকে তার ধর্মভীরুতা ও সচ্চরিত্রের কারণে বিয়ে করতে ইচ্ছুক হও, তবে তাকে বিয়ে করে নাও। (তিরমিযি)

বিয়ের পূর্বে বর কনে পরস্পরকে দেখা
জাবের (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ কোন নারীকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক হয় সে যেন তাকে নারীকে দেখে নেয়। (আবু দাউদ)

মুগীরা ইবনে শুবা (রা.) বর্ণনা করেন, আমি একজন নারীকে বিয়ে করতে ইচ্ছা করলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি তাকে দেখেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তবে তাকে দেখে নাও। কেননা, খুব সম্ভব এতে তোমাদের মধ্যে ভালবাসা সৃষ্টি হবে। (আহমদ, ইবনে মাজাহ, নাসায়ী, তিরমিযি)

যদিও ইসলাম বিপরীত লিঙ্গের সাথে অবাধ মেলামেশার অনুমতি দেয় না, তা সেই পুরুষ ও নারীকে পরস্পর দেখে নেয়ার অনুমতি দেয় যারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে ইচ্ছুক। যদি উভয়ের কেউ অপরজনকে অপছন্দ করে তবে তা প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে উভয়ের সমান স্বাধীনতা রয়েছে।

বিয়ের অনুমতি
আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন পূর্ব বিবাহিতা রমণীর বিয়ে ততক্ষণ হতে পারে না, যতক্ষণ সে অনুমতি দেয়। আর না কোন কুমারী নারীকে বিয়ে দেয়া যেতে পারে যতক্ষণ না তার অনুমতি চাওয়া হয়। যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, কিভাবে তার অনুমতি চাওয়া হবে? তখন তিনি উত্তরে বললেন, যদি সে চুপ থাকে, তবে তা হল তার অনুমতি। (বুখারি, মুসলিম)

আবু হুরাইরা (রা.) আরও বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একজন বালেগা মেয়েকে তার বিয়ের ব্যাপারে অনুমতি চাইতে হবে। যদি সে চুপ থাকে তবে এটাই তার অনুমতি বলে বিবেচিত হবে। যদি সে অস্বীকার করে তবে বিয়ের ব্যাপারে তার উপর কোন জোর খাটানো যাবে না। (আবু দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযি)

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, একটি মেয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে অভিযোগ করল যে, তার পিতা তাকে এমন লোকের সাথে বিয়ে দিয়েছে যাকে সে পছন্দ করে না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিয়ে অক্ষুণ্ণ রাখার কিংবা ভেঙে দেয়ার স্বাধীনতা প্রদান করলেন। (আবু দাউদ)

সকলের স্মরণ রাখা উচিৎ যে, প্রাক ইসলামি যুগে নারীদেরকে চতুষ্পদ জন্তু ও ক্রীত দাস-দাসীর মত মনে করা হত এবং সমাজে তাদেরকে কোন মর্যাদা দেওয়া হত না। পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে এখনো এই প্রথা প্রচলিত রয়েছে। বিশেষত, ভারতে। ইসলাম নারীর মর্যাদাকে সমুন্নত করেছে এবং তাকে তার পছন্দমত বরকে বিয়ে করার অধিকার প্রদান করেছে। আর যে ব্যক্তি তার স্বামী হিসেবে তার প্রতি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তার কাছ থেকে তালাক চেয়ে নেয়ার (খোলার) অধিকারও তাকে প্রদান করেছে।

নারীদের ইচ্ছার স্বাধীনতা
আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, বুরাইদা (রা.) (&এক দাসী)- এর কিছু পারিবারিক সমস্যা ছিল এবং তাকে তার স্বামী থেকে পৃথক করে দেয়া হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, যদি তুমি তোমার স্বামীর কাছে ফিরে যাও, তবে কি এমন ক্ষতি হবে? বুরাইদা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি আমাকে আদেশ করছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর করলেন, না, আমি কেবল সুপারিশ করছি।’ তা শুনে বুরাইদা (রা.) বললেন, তাকে আমার প্রয়োজন নেই। (বুখারি)

এ ঘটনাটি দুটি মৌলিক বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রথমত, সাহাবায়ে কেরাম- পুরুষ হোক কিংবা নারী- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইচ্ছাকে নিজেদের ইচ্ছার উপর প্রাধান্য দিতেন। বুরাইদা তার স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চান নি, তারপরও জিজ্ঞাসা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তেমনটি করতে আদেশ দিচ্ছেন কিনা। যদি তিনি হ্যাঁ বলতেন তবে বুরাইদা তার স্বামীর কাছে ফিরে যেতেন। দ্বিতীয়ত, ইসলামে বিয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর সমান অধিকার রয়েছে। আরও উল্লেখ্য যে, বুরাইদা (রা.) ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারের একজন দাসী। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ইসলাম একজন দাসীকেও এই অধিকার প্রদান করেছে চৌদ্দশ বছরেরও অধিক কাল পূর্বে। বিশ্বের অন্যান্য সমাজ নারীদেরকে এই অধিকার প্রদান করেছে কেবল কয়েক দশক পূর্বে। অধিকন্তু, পৃথিবীতে এখনও অনেক সমাজ আছে যারা নারীদেরকে এখনো এই অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে।

সাক্ষী ব্যতিত বিয়ে
আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তারা ব্যভিচারী যারা স্বাক্ষী ব্যতিত বিয়ে সম্পাদন করে। (তিরমিযি)

ইসলামে বিয়ে ব্যক্তিগতভাবে গোপনে সম্পাদন করা যায় না। তা জনসাধারণের সামনে নিদেনপক্ষে দুজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে সম্পাদন করতে হয়। যারা বরের প্রস্তাব ও স্ত্রীর সম্মতির সাক্ষ্য কাজীর কাছে প্রদান করবে এবং তার সত্যায়ন করবে। কোরান মাজিদ বলে:

আর তোমরা তোমাদের মধ্য থেকে দুজন সাক্ষী রাখ। অতঃপর যদি তারা উভয়ে পুরুষ না হয়, তাহলে একজন পুরুষ ও দুজন নারী যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর। (আল বাকারা, ২:২৮২)

ফুকাহায়ে কেরামের মতে সাক্ষী অবশ্যই প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ বিবেকসম্পন্ন মুসলিম হতে হবে। ইসলাম এভাবে সকল ব্যক্তিগত দুর্ভিসন্ধি ও গোপন সম্পর্কের দ্বারকে রুদ্ধ করে দেয় এবং বিয়েকে খুব সুস্পষ্ট ও টেকসই প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে।

বিয়ের ঘোষণা
মুহাম্মদ ইবনে হাতিব বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বৈধ ও অবৈধ বিয়ের মধ্যে পার্থক্য হল ঘোষণা প্রদান ও দফ পেটানো। (তিরমিযি, আহমদ, ইবনে মাজাহ, নাসায়ী)

কোরান মাজিদ বলে যে, পবিত্র রমণীরাই বিয়ের জন্য স্বীকৃত হয়। যেমনটি ইরশাদ হয়েছে,

আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের সচ্চরিত্রা নারীদের সাথে তোমাদের বিবাহ বৈধ। যখন তোমরা তাদেরকে মোহর দিবে, বিবাহকারী হিসেবে, প্রকাশ্য ব্যভিচারকারী বা গোপনপত্নী গ্রহণকারী হিসেবে নয়।’ (৫:৫)

অতএব, বিয়ের ঘোষণা জনসমক্ষেই হতে হবে। ইহা সমাজকে অবৈধ ও গোপন সম্পর্ক থেকে অধিক রক্ষা করে এবং স্বামী ও স্ত্রীর স্বার্থেরও নিরাপত্তা বিধান করে।

বিয়েতে আনন্দ উৎসব
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, এক নারী এক আনসারী পুরুষের সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তার সাথে কি কোন আতিথ্য পাঠানো হয়েছিল? আনসাররা আতিথ্য খুব পছন্দ করে থাকে। (বুখারি)

আয়েশার (রা.) আরও বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বিয়ে সম্পর্কে বলেন, এই বিয়ের ঘোষণা প্রদান কর এবং মসজিদে তা সম্পাদন কর। আর এজন্যে দফ পেটাও। (তিরমিযি)

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, আয়েশা (রা.) তার এক আত্মীয়া নারীকে বিয়ে দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তারা কি এমন কাউকে তার সাথে পাঠিয়েছে যে গাইতে পারে? যখন তিনি না বোধক উত্তর দিলেন, তখন তিনি বললেন, খুব ভাল হত যদি তোমরা তার সাথে পাঠাতে যারা গাইতে পারে-তোমাদের কাছে আমরা এসেছি, তোমাদের কাছে আমরা এসেছি। অতএব, আমাদেরকে স্বাগতম এবং তোমাদেরকে স্বাগতম। (ইবনে মাজাহ)

ইসলাম সব ধরনের বৈধ চিত্তবিনোদন ও খেলাধুলার অনুমতি প্রদান করে। বিয়ের উৎসব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আনন্দ ও খুশির আমেজ নিয়ে আসে। পাশাপাশি তা বিয়ের ঘোষণারও কাজ দেয়। যার ফলে তা অধিক প্রকাশ্য ও টেকসই হয়।

বিয়ের খুতবা
আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক সেসব বিয়ে যাতে তাশাহহুদ’ (আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রিসালতের সাক্ষ্য প্রদান) পাঠ হয় না তা কর্তিত হাতের মত। (তিরমিযি)

আবু হুরাইরা (রা.) আরও বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক মর্যাদাপূর্ণ কাজ যা আল্লাহর প্রশংসা সহকারে সম্পাদিত হয় না তা (আল্লাহর দয়া ও বরকত থেকে) কর্তিত হয়। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

বিয়ের খুতবা হল ইসলামের এক বিশেষ ধর্মীয় রীতি যার মাধ্যমে বিয়ে সম্পাদিত হয়। বর কনে উভয়ের পক্ষ থেকে সাক্ষী নেওয়া হয়। তারা প্রথমে কনের কাছে প্রস্তাব পাঠায় এবং তাকে বলা হয় যে, তাকে অমুকের পুত্র অমুকের সাথে এই পরিমাণ মোহরানার বিনিময়ে বিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং জিজ্ঞাসা করা হয়, সে এই বিয়েতে রাজী আছে কিনা? মেয়ের অভিভাবক এই প্রস্তাবে মেয়ের সম্মতি কিংবা অসম্মতি শুনার জন্যে অবশ্যই সেখানে উপস্থিত থাকে। যদি সে সম্মতি প্রদান করে তবে তারা বরের প্রতি মনোযোগী হয় এবং তাকে একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। যখন সে তার সম্মতি প্রদান করে তখন তারা কাজীর কাছে যায় এবং বর কনে উভয়ের সম্মতির কথা জানায়। অতঃপর কাজী সাহেব উচ্চ স্বরে বিয়ের খুতবা পাঠ করেন। খুতবাটি স্বামী ও স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য সংক্রান্ত কিছু কুরআনের আয়াত ও হাদিসের সমন্বয়ে প্রদান করা হয়। এতে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি দরূদও অন্তর্ভুক্ত থাকে। এটি বর কনের জন্যে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের মাধ্যম এবং সমাজে বিয়ের ঘোষণার মাধ্যম হিসেবেও কাজ দেয়।

বিয়ের মোহরানা
ওকবা ইবনে আমের (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিয়ের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম ও ন্যায্য শর্ত (মোহরানা) হল যা তোমরা পূরণ করতে সক্ষম হও। যার মাধ্যমে তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করেছ। (বুখারি, মুসলিম)

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেগার’ বিয়ে থেকে বারণ করেছেন। শেগার’ বিয়ে হল, কোন ব্যক্তি তার কন্যাকে ছেলের পিতার সাথে এই শর্তে বিয়ে দেবে যে, সেও (বরের পিতা) পরবর্তীতে তার কন্যাকে তার (কনের পিতার) ছেলের সাথে বিয়ে দেবে এবং তাদের মধ্যে বিয়েতে কোন মোহরানা থাকবে না। (বুখারি, মুসলিম)

মোহরানা’ হল কোন সামগ্রী কিংবা টাকা পয়সা যা বিয়ের সময় স্বামী স্ত্রীকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। এটি বিয়ের অন্যতম পূর্বশর্ত। কোরান মাজিদ বলে, হে নবি, আমি তোমার জন্যে তোমার স্ত্রীদেরকে হালাল করেছি যাদেরকে তুমি মোহরানা দিয়েছ। (আল-আহযাব, ৩৩:৫০)

কনে যদি উক্ত মোহরানায় স্বীকৃত না হয় তবে বিয়ে সিদ্ধ হয় না। মোহরানার পরিমাণ সম্পর্কে কোরান ও হাদিসে কোন বাঁধা ধরা নিয়ম বর্ণিত হয় নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রীর সামাজিক মর্যাদা অনুসারে স্বামী বিয়ের সময় মোহরানা হিসেবে একটি অর্থের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। অনেক সমাজে, উদাহরণস্বরূপ হিন্দু সমাজে কন্যার পিতা বরকে অর্থ প্রদান করতে হয়, কেননা সে তার মেয়ের বিয়ে করেছে । ইসলামি আইন নারীদের অনুকুলে। একজন পুরুষকে গ্রহণযোগ্য পরিমাণ অর্থ তার স্ত্রীকে প্রদান করতে হয়।

অলীমা বা বিয়ে ভোজ
আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুর রাহমান ইবনে আওফ (রা.) এর উপর একটি হলুদ দাগ লক্ষ করেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটি কি? সে উত্তর করল, আমি পাঁচ দেরহাম পরিমাণ স্বর্ণের মোহরানার বিনিময়ে এক নারীকে বিয়ে করেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অলীমার ভোজের ব্যবস্থা কর। যদিও তা একটি ছাগলের মাধ্যমে হয়। (বুখারি, মুসলিম)

আনাস ইবনে মালেক (রা.) আরও বর্ণনা করেন, যখন জায়নাব বিনতে জাহাশ (রা.)কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর গৃহে আনা হয় তখন তিনি অলীমার ভোজের আয়োজন করেন। তাতে লোকেরা পরিতৃপ্তি সহকারে রুটি ও গোশত আহার করে।

অলীমা সেই ভোজের নাম যা বিয়ের পর বরের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়। এটি ইসলামি বিয়ের একটি প্রশংসনীয় আমল এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাতও বটে। অলীমার ভোজ বিয়ের উৎসবকে আরও শ্রীবৃদ্ধি করে এবং বিয়ের প্রচারে সহায়ক হয়।

অলীমার ক্ষেত্রে কিছু কাঙ্খিত নির্দেশনা
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিকৃষ্ট প্রকারের অলীমার ভোজন হল তা যাতে ধনীরা আমন্ত্রিত হয় এবং গরীবরা উপেক্ষিত থাকে। যে ব্যক্তি অলীমার ভোজনে (কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিত) যোগদান করা থেকে বিরত থাকে সে আল্লাহ তাআলা ও তার রাসূলের অবাধ্য হয়। (বুখারি, মুসলিম)

এই হাদিস আমাদেরকে দুটি মৌলিক বিষয় শিক্ষা দেয়। প্রথমত, ধনী গরীব উভয় শ্রেণীকেই অলীমায় দাওয়াত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, দাওয়াত গ্রহণ করা ও বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা বাঞ্চনীয়।

মূল : ড. মাজহার ইউ কাজি
বাংলা অনুবাদ : মাওলানা ফয়জুল্লাহ মুজহিরি
সম্পাদনা : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক

 

যেসব সিনেমা দেখে হলেই প্রাণ হারালো দর্শক

সিনেমা মানুষের বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম। বিভিন্ন ধরনের জেনর এখন সিনেমায় চোখে পড়ে। এরমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘হরর সিনেমা’গুলো। শুরুতে হরর সিনেমাগুলো যেমন ছিল, বর্তমানে আর সেই চেহেরায় নেই। সিনেমায় টেকনোলজির উৎকর্ষতার ফলে যারা এই ধরনের সিনেমা নির্মাণ করেন তারা সবসময়ই তার সিনেমাটি একেবারে ন্যাচারাল করে উপস্থাপন করতে চান। মানে ভিএফক্সসহ অত্যাধুনিক কৌশল অবলম্বন করে তিনি সিনেমাটি একেবারে বাস্তব রূপ দেন। যা পর্দায় দেখে দুর্বল চিত্তের মানুষেরা সেইসব দৃশ্যগুলো মানসিকভাবে নিতে পারেন না। যার ফলে অনেক সময় ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সম্প্রতি তেমনি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল ভারতের তামিলনাড়ুতে।

যারা ভূতের সিনেমা দেখতে ভালবাসেন তারা একেকটি নতুন হরর সিনেমার জন্য তুমুল অপেক্ষায় থাকেন। সদ্য মুক্তি পাওয়া আলোচতি সিনেমা ‘কনজিউরিং-২’ তেমন একটি সিনেমা। জেমস ওয়ান পরিচালিত মার্কিন সুপার ন্যাচারাল হরর ফিল্ম গোটা দুনিয়ায় আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। আর এই সিনেমা দেখেই প্রেক্ষাগৃহে বসেই মৃত্যু হল তামিলনাড়ুর এক দর্শকের। যে বিষয়টি গোটা দুনিয়ায় সাড়া ফেলে দিয়েছে।

এমন ঘটনার পর প্রশ্ন আসছে, তাহলে আগেও কোনো সুপার ন্যাচারাল সিনেমা দেখে পৃথিবীতে মানুষ মারা যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে? অতীত ঘেটে এসব তথ্য বের করেছে হোয়াটকালচার.কম। দুর্বল চিত্তের যারা আছেন তাদের হয়তো ‘হরর সিনেমা’ প্রবল চাপ তৈরি করতে পারে। যার ফলে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটে। কিন্তু এমন সিনেমা দেখেও অনেকে মারা গেছেন যা আসলে হরর সিনেমা নয়। পুরোদমে কমেডি সিনেমা দেখে হাসতে হাসতেও মারা গেছেন অনেকে। প্রেক্ষাগৃহে বসে দর্শক সিনেমার ক্লাইমেক্স-এর সঙ্গে বুঁদ হয়ে প্রাণ হারানো এমন কিছু সিনেমা ও সেইসব ঘটনা জেনে নিতে পারেন এখানে:

‘এ ফিশ কলড্ ওয়ান্ডা’ ছবির একটি দৃশ্য…

দর্শকের মৃত্যুর কারণ কমেডি সিনেমা ‘এ ফিশ কলড্ ওয়ান্ডা’:
‘এ ফিশ কলড ওয়ান্ডা’ সিনেমাটির ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে যে, কমেডি সিনেমা হিসেবে সর্বকালের সেরা সিনেমা এটি। সুপার ন্যাচারাল কোনো ব্যাপারই আসলে ছবিটিতে নেই। অথচ ভরপুর এই হাসির ছবিটি দেখেও মারা গেছেন একজন দর্শক।

১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটি প্রথমবার ডেনমার্কে মুক্তি পায় ১৯৮৯ সালে। আর তখনই একজন ডেনিশ অডিওলজিস্ট সিনেমাটি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে যান। কেউ বিশ্বাস করুক আর নাই করুক, এই ছবিটি এতোটাই কমেডি ছিল যে হাসতে হাসতে সিনেমা হলেই প্রাণ গেল সেই ডেনিশ ব্যক্তিটির। যার নাম ছিল অলে বেনতেজ।

‘অ্যাবাটার’ দেখে অধিক উত্তেজনায় এক তাইওয়ান দর্শকের মৃত্যু:
এটা বলা অতুক্তি হবে না যে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে আলোড়ন ফেলা দেয়া সিনেমার নাম ‘অ্যাবাটার’। বিখ্যাত নির্মাতা জেমস ক্যামেরনের এই ছবিটি দেখতে অপেক্ষায় থাকেনি এরকম সিনেমা দর্শক পৃথিবীতে কী ছিল আদৌ?

২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রটি যখন তাইওয়ানের সিনেমা হলে মুক্তি পায় তখন ছবিটির থ্রিডি ভার্সন দেখতে জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে সব বয়সী দর্শকের মত হাজির ছিলেন ৪৫ বছর বয়সী এক দর্শক। ছবিটিতে স্পেশাল ইফেক্ট-এর ব্যবহার দেখে তিনি এতোটায় আপ্লুত ছিলেন যে অধিক উত্তেজনায় প্রেক্ষাগৃহে বসেই স্ট্রোক করে বসেন। দ্রুত বেগে তাকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ছবি দেখে অতি উত্তেজনার কথায় বলেন। শেষ পর্যন্ত ১১দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মারা যান তিনি।

‘প্যাশন অব দ্য ক্রাইস্ট’-এ ক্রুশবিদ্ধ যিশুর ছবি দেখে হলেই কুপোকাত এক নারী:
বিখ্যাত নির্মাতা মেল গিবসন। তার সবচেয়ে আলোচিত সিনেমাগুলোর একটি ‘প্যাশন অব দ্য ক্রাইস্ট’। না এটা কোনো ভৌতিক গল্পের ছবি নয়, কিন্তু তারপরও ছবিটি দেখে হলে বসেই মারা যান এক বৃদ্ধ নারী। কারণ ছবিতে যে পরিমাণ নিষ্ঠুরতা মেল গিবসন দেখিয়েছেন তা সহ্য করতে পারেননি ওই।

২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটির শেষ অংশে যখন অভিনেতা জিম ক্যাভিজেলকে নিষ্ঠুরতমভাবে ক্রুশে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয় তখন সেই বর্বরতম দৃশ্যটি পর্দার সামনে বসে মেনে নিতে পারেননি ৫৬ বছর বয়সী পেগি স্কট নামের এক নারী। তার মৃত্যুর পর ব্যাপক সমালোচনাও শুনতে হয়েছিল নির্মাতা মেল গিবসনকে। কারণ ওই নারী বয়স হলেও তিনি ছিলেন পুরোপুরি সুস্থ একজন মানুষ। কারণ পেগির মৃত্যুর পর চিকিৎসকরাও তেমনটিই জানিয়েছিলেন। সবাই সেসময় মেল গিবসনকে ওই নারীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করছিলেন। কেননা ছবিতে তখন কোনো ধরনের স্পেশাল ইফেক্টও ব্যবহার করেননি নির্মাতা। কিন্তু তারপরেও নির্মমভাবে এমন নিষ্ঠুরতা দেখানোকে অপরাধ হিসেবেও বলা হয়েছিল।

এছাড়া এই ছবির পোস্টার দেখেও একজন ব্রাজিলিয়ানের হার্ট অ্যাটাক হয়ে মারা যাওয়ার কথা শোনা গেছে।

‘টুইলাইট: একলিপস’ দেখে এক মদ্যপের মৃত্যু:
না। অন্য সিনেমার মত ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট ও রবার্ট পেটিসন অভিনীত ‘টুইলাইট: একলিপস’-এর কোনো নির্মম দৃশ্য দেখে কেউ মারা যাননি। তবে এই সিনেমাটি দেখতে দেখতেই সিনেমা হলে বসেই মারা গেছেন এক মদ্যপ। যুক্তরাজ্যে যখন সিনেমাটি চলছিল তখন সন্ধ্যার শো’তে জনি ওয়াকার নামের এক মদ্যপ সিনেমাটি দেখতে বসেন। তার হাতে তখন ছিল একটি মদের বোতল। ছবি দেখতে দেখতেই ওই প্রেক্ষাগৃহেই ঘুমিয়ে যান তিনি। এই ঘুম তার আর ভাঙেনি। পরবর্তীতে শোয়ের আগে যখন পরিচ্ছন্নকর্মীরা থিয়েটার পরিস্কারের জন্য আসেন, তখন ওই সিনেমা দর্শককে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। ডাক্তাররা তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘অতিরিক্ত মদ্যপান’কেই দায়ী করেছিলেন। কিন্তু তারপরও ওই লোকের মৃত্যুর ব্যাপারটি জড়িয়ে যায় ‘‘টুইলাইট: একলিপস’-এর সাথে।

‘ব্ল্যাক সওয়ান’ প্রদর্শনকালে উচ্চস্বরে পপকর্ন খাওয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক দর্শকের মৃত্যু:  
বিখ্যাত নির্মাতা ডেরেন আরনোফস্কি’র জনপ্রিয় সিনেমা ‘ব্ল্যাক সওয়ান’ মুক্তি পায় ২০১০ সালে। তার ঠিক এক বছর পর ছবিটি প্রদর্শীত হয় লাটভিয়ায়। ছুটির দিনের এক শো’তে মাল্টিপ্লেক্সে বসে সবাই মনোযোগ দিয়ে দেখছিলেন ছবিটি। কিন্তু একজন দর্শকের উচ্চশব্দে পপকর্ন খাওয়ার বিষয়টি যেন একটু পীড়া দিচ্ছিল লাটভিয়া নাগরিককে। কয়েকবার বলার পরও ওই লোকটি উচ্চ শব্দে পপকর্ন খেতে থাকলে ধপাস করে সিনেমা হলের মধ্যে নিজের পিস্তল দিয়ে পাশের আরেক দর্শক গুলি বরে বসেন। সেখানেই মৃত্যু হয় ওই পপকর্ন খাওয়া দর্শকের। এটা জোকসের মতো শোনালেও সত্যিই সে সময় বিষয়টি খুব আলোচিতও হয়েছিল।

এছাড়া ভারতীয় কমেডি সিনেমা ‘গ্র্যান্ড মাস্তি’ দেখে হাসতে হাসতে মুঙ্গেশ ভোগল নামের এক ব্যক্তি, এবং হরর সিনেমা দেখে ভয়ে একজন ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যু হওয়ার কথা জানা গেছে।

Save

 

যারা সেহরি খায় তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন

সিয়াম পালনের জন্য সেহরি খাওয়া সুন্নত। তাই আমাদের সবার উচিত নিদৃষ্ট সময় হওয়ার পূর্বে সেহরি খেয়ে নেয়া। সেহরি খাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
تسحروا، فإن في السحور بركة
অর্থ : ‘তোমরা সেহরি খাও, কারণ সেহরিতে বরকত রয়েছে’। (বর্ণনায় : বোখারি ও মুসলিম)

মনে প্রশ্ন জাগতে পারে সেহরি না খেয়ে সিয়াম পালন করলে যখন সিয়াম আদায় হবে। তবে সেহরি খাবেন কেন?

ক. সেহরি খাওয়া সুন্নত। রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেহরি খাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন।

খ. ক্ষুধা-পিপাসা মোকাবিলা করার জন্য।

গ. সেহরি খেলে সিয়াম পালনে কষ্ট কম হয় ও সিয়াম পালন সহজ হয়।

ঘ. ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধাচরণ করা। কারণ তারা সিয়াম পালন করতে সেহরি খায় না। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
فصل ما بين صيامنا وصيام أهل الكتاب أكلة السحور
অর্থ : ‘আমাদের ও ইহুদি-খ্রিস্টানদের সিয়ামের মাঝে পার্থক্য হল সেহরি খাওয়া’। (বর্ণনায় : মুসলিম)

ঙ. সেহরির মাধ্যমে শেষ রাতে তাহাজ্জুদ ও কিয়ামুল লাইল করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

চ. ফজরের সালাত জামাআতের সাথে আদায় করা নিশ্চিত হয়।

তাই সেহরি খাওয়ার ব্যাপারে আমাদের গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। তবে সেহরির খাওয়া হালকা হওয়া ভালো। এমন বেশি খাওয়া উচিত নয় যাতে দিনের বেলা কাজকর্মে অলসতা দেখা দেয়। যে কোনো হালাল খাবার সেহরিতে গ্রহণ করা যায়। রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
نعم سحور المؤمن التمر
অর্থ : ‘মোমিনের উত্তম সেহরি হল খেজুর’। (বর্ণনায় : আবু দাউদ)

তিনি আরো বলেন:
السحور أكلة بركة فلا تدعوه، ولو أن بجرع أحدكم جرعة من ماء، فإن الله وملائكته يصلون على المتسحرين

অর্থ : ‘সেহরি হল একটি বরকতময় খাদ্য। তাই তা তোমরা ছেড়ে দিয়ো না। এক ঢোক পানি দ্বারা হলেও সেহরি করে নাও। কেননা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও ফেরেশ্‌তাগণ সেহরিতে অংশ গ্রহণকারীদের জন্য দোয়া করে থাকেন’। (বর্ণনায় : আহমদ)

 

সফল ব্যবসার শুরু ঘর থেকেই: ৫ কৌশলে

গুগল, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, ডিজনি এবং হওলেট প্যাকার্ড আজকের বিশ্বের প্রথম সারির কোম্পানি। আপনি কি জানেন এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে মিল কোথায়? মাল্টি বিলিয়ন ডলার কর্পোরেশন হওয়ার পাশাপাশি আরেকটি মজার মিল হল, এই ছয়টি কোম্পানির প্রত্যেকটির যাত্রাই শুরু হয়েছিল প্রতিষ্ঠাতার গ্যারেজে!
অবাক হচ্ছেন? এই প্রতিষ্ঠানগুলোই আজকের উদাহরণ, যা বলছে, ব্যবসা ঘর থেকে শুরু হতে পারে কিন্তু সেই ব্যবসাই একসময় চলে যেতে পারে নেতৃত্বের পর্যায়ে। বরং ঘর থেকে শুরু করাই বুদ্ধিমানের কাজ, কারণ মূলধন কম লাগে!
আপনি যদি পরিশ্রমী হন এবং লক্ষ্যে অটল থাকেন তাহলে শুরুটা ঘরেই হতে পারে। একটি স্থায়ী অফিস নেওয়ার আগ-পর্যন্ত এখান থেকেই হতে পারে সব কাজ। আনা জনসন তার গবেষণার ফলাফলে বলছেন, এই পাঁচটি কৌশল মেনে চললে ব্যবসার শুরু যেখানেই হোক, সফল আপনি হবেনই। আনা ওয়াশিংটনের অলিম্পিয়ার একজন ফ্রিল্যান্স রাইটার, গবেষক, বিজনেস কলসাল্ট্যান্ট।
১। ব্যবসায়িক ভিত্তি মজবুত করুন
আপনার ব্যবসার শুরু হয়ত খুবই স্বল্প পরিসরে। কিন্তু এখনই এর ভিত্তি মজবুত করুন। একটি প্রতিষ্ঠান শুরুর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের প্রচলিত নিয়মগুলো সম্পর্কে জানুন, নিয়মমত আপনার কোম্পানিটি নিবন্ধন করান। অনেক সময় দেখা যায়, আপনি একটি নামে কোম্পানি শুরু করেছেন, অনেক দিন পর যখন নামটি নিবন্ধন করতে গেছেন তখন দেখলেন সেই নামে আরেকটি কোম্পানি আগেই নিবন্ধিত হয়ে আছে! হয়ত অন্য এলাকায় বলে আপনি জানতেন না বিষয়টি। অনেক সময় আপনার কোম্পানিকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা থেকেও এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। তাই শুরুতেই ভিত পাকা করুন, সকল দিক থেকে আপনার প্রতিষ্ঠানকে আইনসঙ্গত করুন।
২। অফিসের সময় নির্দিষ্ট করুন
আপনার নির্দিষ্ট একটি অফিস নেই। কিন্তু তাই বলে কি অফিসের সময় বলে কিছু থাকবে না? আপনি যদি ব্যবসায় দ্রুত সফলতা পেতে চান তাহলে আপনাকে অনেক বেশী ফরমাল হতে হবে। বাসা বা গ্যারেজ যেখানেই হোক শুরু প্রতিষ্ঠানের নিয়ম আরোপ করা শুরু করুন। আপনি হয়ত অল্প কয়েকজন লোক নিয়োগ করেছেন মাত্র। তবু তাদেরকেই অফিসের সময় বেঁধে দিন। শুরু থেকেই সিরিয়াস হতে হবে আপনাকে। আপনার মনে হতে পারে, শুরুর দিকে এত নিয়ম-কানুনের কোন মানে নেই। কিন্তু ব্যবসায়িক বিশ্ব বলে, অর্জন আসে নিয়মের পথে। তাই, নিয়মের বেলায় কোন ছাড় দেওয়া যাবে না।
৩। পর্যাপ্ত জায়গা বের করুন
কাজের জন্য জায়গা খুবই জরুরি। আপনার একটি দরকারি ফাইল হারিয়ে যাওয়া আপনার প্রতিষ্ঠানকে অনেক বড় বিপত্তিতে ফেলতে পারে। তাই সব জিনিস গুছিয়ে রাখা জরুরি। আবার একই সাথে জায়গার স্বল্পতা কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করতে পারে। কারণ নির্দিষ্ট জায়গা না থাকলে আসলেই কাজের সমস্যা হয়। এজন্যই অফিসে প্রত্যেক কর্মীকে আলাদা ডেস্ক দেওয়া হয়। কাজের উপর ভিত্তি করে এই জায়গার প্রয়োজনীয়তার পার্থক্য হতে পারে।
ঘরে আলাদা স্পেস বের করা খুবই সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভাঁজ করে রাখা যায় এমন চেয়ার টেবিল ব্যবহার করতে পারেন। একই আসবাব কিন্তু ব্যবহার বিভিন্ন এমন ডিজাইনের আসবাব তৈরি করতে পারেন।
৪। সঠিক প্রযুক্তি ব্যবহার করুন
সঠিক প্রযুক্তি আপনার প্রতিষ্ঠানকে সহজেই অনেক দূর এগিয়ে দেবে। আপনার প্রতিষ্ঠান যদি অনলাইন নির্ভর হয়, তাহলে পত্রিকার সাথে লিফলেট বিলি না করে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেওয়াই বুদ্ধমানের কাজ হবে। ওয়েবসাইট করা, নিজের কোম্পানির ভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা আপনার কোম্পানিকে আরও ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেবে। অনলাইন ব্যবসা না হলে আপনার প্রযুক্তির অস্ত্রের ব্যবহার হবে ভিন্ন। তখন আপনাকে বেশী নজর দিতে আকর্ষণীয় একটি ব্যানার তৈরির দিকে। এমন একটি লোগো তৈরি করতে হবে যা অনেক দূর থেকেও দেখা যাবে। এমন ছোট ছোট কৌশলে নিজের কোম্পানিকে তুলে ধরুন।
৫। মাইন্ডসেট
সফলতার জন্য জরুরি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, দায়িত্বশীলতা, গতি এবং ধৈর্য্য। বিশ্বের সফল ব্যবসায়ীরা কখনো তাদের মাইন্ডসেট থেকে সরে যান নি। যত প্রতিকূলতাই আসুক তারা একটা কথাই স্মরণ করেছেন, পারতে তাদের হবেই। আপনার আইডিয়াকে সবচেয়ে সুন্দর করে বাস্তবায়ন করতে পারেন আপনি নিজে। আপনার চেয়ে ভাল কেউ পারবে না সেটা। নিজের উপর এই বিশ্বাস রাখুন। আত্মবিশ্বাস বদলে দেয় আমাদের ভাব। আপনার আত্মবিশ্বাসী চোখ আপনার কর্মীদের সিরিয়াসনেস বাড়িয়ে দেবে বহুগুণে।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

ইফতারে প্রাণ জুড়াবে ভিন্ন স্বাদের খেজুরের মিল্কশেক

সারাদিন রোজা রাখার পর প্রাণ জুড়াতে এক গ্লাস ঠান্ডা শরবতের জুড়ি নেই। শরবতের পরিবর্তে অনেকেই বিভিন্ন ফলের জুস পান  করে থাকেন। প্রতিদিন একইরকম পানীয় পান করতে করতে একঘেয়ামি চলে আসে। তাই পানীয়তে চাই ভিন্ন কিছু, নতুন কিছু। আমের জুস, কলার জুস অথবা কমলার জুস অনেক তো হল, এইবার তৈরি করুন মজাদার খেজুরের মিল্কশেক। মজাদার এই মিল্কশেকটি অল্প কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি করা সম্ভব। ইফতারিতে ঝটপট তৈরি করুন খেজুর মিল্কশেক।

উপকরণ:  

১৫ থেকে ২০টি খেজুর

৩ থেকে ৪ কাপ দুধ

৭-৮টি দারুচিনি গুঁড়ো

বরফের টুকরো

প্রণালী:

১। প্রথমে খেজুরের ভিতর থেকে বীচি আলাদা করে নিন। এলাচের খোসা ছাড়িয়ে গুঁড়ো করে নিন।

২। এইবার ব্লেন্ডারে খেজুর, এলাচ গুঁড়ো, দুধ এবং বরফের টুকরো দিয়ে ব্লেন্ড করুন।

৩। খেজুর, দুধ ভাল করে ব্লেন্ড না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করতে থাকুন।

৪। পরিবেশন পাত্রে ঢেলে বাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন ভিন্ন স্বাদের মজাদার খেজুরের মিল্কশেক।

টিপস:

১। আপনি চাইলে খেজুরের সাথে একটি পাকা কলা, কাঠবাদাম কুচিও যোগ করতে পারেন। এটি মিল্কশেকের স্বাদ বৃদ্ধির সাথে সাথে এর পুষ্টিগুণ করে দেবে দ্বিগুণ।

 

মেহাজাবীন এ বিখ্যাত ডিজাইনারদের পোশাক

আসছে ঈদ উপলক্ষে মেহাজাবীন নিয়ে এসেছে দেড়শ’র বেশি নতুন ডিজাইনের পোশাক। এসব পোশাকের মধ্যে রয়েছে এক্সক্লুসিভ শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, লেহেঙ্গা, বাচ্চাদের ড্রেস, টপস, পাঞ্জাবি, শার্ট ও টি-শার্ট ইত্যাদি। এরই মধ্যে এক্সক্লুসিভ ডিজাইনার শপ হিসেবে আলাদা নাম কুড়িয়েছে মেহাজাবীন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গায়িকা রুনা লায়লার ডিজাইন করা ড্রেস ‘সিগনেচার বাই রুনা লায়লা’ পাওয়া যাচ্ছে কেবল মেহাজাবীনেই। ভারতের বিখ্যাত ডিজাইনার মনিশ মালহোত্রা ও সব্যসাচীর ডিজাইন করা ড্রেসও পাওয়া যাচ্ছে মেহাজাবীন এ।

এছাড়া মেহাজাবীনের ব্রাইডাল, অলঙ্কার, কসমেটিক্স, জুতা, স্যান্ডেল ও এক্সেসরিজ কালেকশনও বৈচিত্র্যধর্মী। উল্লেখ্য, এই ঈদে কেউ যদি অন্য আট দশজনের চেয়ে অন্যরকমভাবে সাজাতে চান নিজেকে, তাহলে একবার ঢু মারতেই পারেন মেহেজাবীন এ! বনানী ১১নং রোড শাখা ও যমুনা ফিউচার পার্কের ডি ব্লক, নিচতলার শোরুম দুটিতে পাওয়া যাচ্ছে ড্রেসগুলো। মোবাইল: ০১৯৪১০৭৪৯৭২

 

বাংলাদেশি সন্দেহে আসামে ৮৫ বছরের বৃদ্ধার জেল

গত ৫০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আসছেন ভারতের আসাম রাজ্যের ৮৫ বছরের বৃদ্ধা সুভদ্রা সরকার। এমন কি দুমাস আগে যে নির্বাচন হয়েছে, সেখানেও তিনি ভোট দিয়েছেন। অথচ এতো বছর পর তাকে বাংলাদেশি সন্দেহে জেলে পাঠিয়েছেন বিদেশি চিহ্নিতকরণের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। তারা ওই নারীকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

অনেকের অভিযোগ, ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার অনেক এলাকাতেই বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে হয়রানি শুরু হয়েছে নতুন করে। আর এ কারণেই আসামের বঙাইগাঁও জেলার বাসিন্দা বৃদ্ধা সুভদ্রাকে আজ কোকরাঝাড় জেলের মধ্যে একটি বিশেষ আটক-শিবিরে আটক থাকতে হচ্ছে।

বঙাইগাঁও জেলার সীমান্ত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি পুলিশ সুপার রঞ্জিত বর্মন বলেন, ‘ওই নারীর কাছে কয়েক দফায় নোটিশ পাঠানো হয়েছিল আদালতে হাজির হয়ে নিজের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে। কিন্তু তিনি আসেননি, তাই ট্রাইবুনাল একতরফা রায় দিয়ে দিয়েছেন। এখানে পুলিশের কিছু করার নেই। তারা এবার হাইকোর্টে গিয়ে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে প্রমাণ করতে পারেন।’

এ ব্যাপারে অবশ্য বৃদ্ধার নাতি প্রহ্লাদ সরকার বলেন, ‘কয়েক দফায় নোটিশ এসেছিল ঠাকুমার নামে। কিন্তু তিনি অত্যন্ত অসুস্থ, আদালাতে যেতে পারেননি। আমার কাকা সব নথি নিয়ে গিয়েছিল। তাই মামলাটা ঝুলে ছিল। হঠাৎই ঠাকুমাকে নিয়ে এসপির অফিসে যেতে বলা হয়। সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়।’

তাছাড়া সত্তরের শেষ আর আশির দশকের মাঝ পর্যন্ত চলা আসাম আন্দোলনের শেষে যে চুক্তি হয়েছিল, তাতেও বলা আছে- ২৫ মার্চ ১৯৭১ এর পরে যারা বাংলাদেশ থেকে আসামে আসবেন, তাদের বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী বলে চিহ্নিত করা হবে। অথচ ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে সুভদ্রা সরকারের। তাহলে তিনি কী করে অনুপ্রবেশকারী হন?

সম্প্রতি আসামে বিজেপির নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার তৈরি হয়েছে। তাদের ভোটের মূল স্লোগানই ছিল অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে। তবে বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে যদি কেউ পালিয়ে আসামে চলে আসেন, তাদের আশ্রয় দেয়ার কথা সরকারি ভাবেই ঘোষণা করেছে বিজেপি।

অবশ্য এর প্রতিবাদও জানিয়েছে বাঙলাভাষী হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষায় আন্দোলন করে আসা ‘সারা আসাম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন’। সংগঠনটির বঙাইগাঁও জেলা সভাপতি সম্রাট ভাওয়ালের দাবি, রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরই বাংলাভাষী হিন্দুদের ওপর হয়রানি বেড়ে গেছে। একটু এদিক ওদিক হলেই ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিচ্ছে। মূলত যারা একদম গরীব, অশিক্ষিত তাদেরই বেছে বেছে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। তারা রোজগারের কথা ভাববে না নথি নিয়ে কোর্টে দৌড়াবে?

 

রোজাদারের সুস্থতায় ইসুবগুল ভুসি

তীব্র গরমের এই দিনে একমাস রোজা রাখা প্রতিটি মুমিনের জন্য জোরতর ঈমানের পরীক্ষা। এসময় অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীরে পানিশূন্যতা ও দুর্বলতা দেখা দেয়। নিয়ম অনুযায়ী রোজা রাখতে সব রকম পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। এসময় পরিশ্রমী বা স্পর্শকাতর যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। অথচ সব সমস্যা এড়িয়ে নির্বিঘ্নে রোজা রাখার প্রধান সহায়ক হতে পারে ইসুবগুল ভুসির শরবত। রোজাদারের শরীরে পানিশূন্যতা দূর করে প্রাণবন্ত রাখতে এই শরবতের তুলনা নেই। শুধু পানিশূন্যতা দূর নয় ইসুবগুলের আছে আরও নানা গুণ। আসুন জেনে নেয়া যাক।

– ইসুবগুলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে দারুণ উপকারী।

– পাকস্থলী শীতল রাখতে ইসুবগুলের তুলনা নেই।

– কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, ওজন হ্রাস ইত্যাদিতে ইসবগুলের ভুসি উপকারী।

– পেটব্যথায় দ্রুত উপকার পাওয়া যায় একগ্লাস ইসুবগুল শরবতে।

– পাইলস সমস্যায় ভুগলে প্রতিদিন তিন-চারবার ইসুবগুল শরবত খাওয়া উচিৎ।

– হজমের সমস্যা দূর করতেও ইসুবগুলের তুলনা নেই।

– পেটে সমস্যা দেখা দিলে তিন টেবিল চামচ ভুসি এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ বা পানির সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন এক থেকে দুইবার খাওয়া যেতে পারে। তবে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা, তারা দিনে তিনবারও খেতে পারেন।

– প্রতিদিন ইসবগুলের ভুসি খেলে আমাশয় ও অর্শ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

– প্রতিরাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস ইসব গুলের ভুষির শরবত খেলে যৌনতা বৃদ্ধি পায়।

– ডায়েবেটিস রোগিদের রক্তে চিনির মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে ইসুবগুলের ভুসি খাওয়া ঠিক নয়।

 

দুস্থ মহিলাদের কোনো পরিসংখ্যান নেই সরকারের কাছে

বর্তামানে দেশে দুস্থ মহিলাদের প্রকৃত পরিসংখ্যান মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে সংরক্ষিত নেই বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।

শনিবার (১৮ জুন) জাতীয় সংসদে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। এর আগে সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

তিনি বলেন, ‘দুস্থ মহিলাদের প্রকৃত পরিসংখ্যান মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে সংরক্ষিত না থাকলেও ভবিষ্যতে বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে দেশের দুস্থ মহিলাদের সংখ্যা নির্ণয় করা যেতে পারে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের গ্রামীণ দুস্থ ও অসহায় মহিলাদের কর্মসংস্থান ও তাদের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার তার পরিকল্পনা অনুযায়ী মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতের আওতায় সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করছে।’

তিনি জানান, ‘ময়মনসিংহ জেলায় বেশ কিছু কার্যক্রম গৃহিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ভিজিডি কর্মসূচি, মার্তৃত্বকালীন ভাতা কর্মসূচি, অনুদান বিতরণ, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ, সেলাই মেশিন বিতরণ, মহিলা ও শিশু কল্যাণ তহবিল, দুস্থ মহিলা ও শিশু সাহায্য তাহবিল ইত্যাদি।’

 

“থ্রিপিস” কিনছেন? জেনে নিন প্রয়োজনীয় যত তথ্য

একটু কম দামে ভালো জিনিস ই বা মিলবে কোথায়? সবকিছু নিয়ে চিন্তার শেষ নেই কারোর। যারা এবার ঈদে পোশাক হিসেবে ‘থ্রি পিস’ কে বেছে নেবেন ভাবছেন, তাদের জন্যই আজকের এই আয়োজন। জেনে নিন কোথায় পাবেন কী ধরণের থ্রি পিস। দরদামই বা হবে কেমন!

গুছিয়ে নিন আপনার বাজেট আর সময়
তাড়াহুড়া করার চেয়ে একটু সময় নিয়ে গুছিয়ে কেনাকাটা করাটা বুদ্ধিমতীর কাজ। তাই প্রথমেই গুছিয়ে নিন সবকিছু। এই যেমন কতগুলো পোশাক কিনতে চান, কী রঙের কিনতে চান, কী উপাদানের থ্রিপিস কিনতে চান এসব ঠিক করে ফেলুন প্রথমে। সব ঠিক হলে বের হয়ে যান কেনাকাটা করার জন্য।

পাইকারি পোশাকের বাজার ‘ইসলামপুর’
হাতে একটু বেশি সময় নিয়ে চলে যান পুরান ঢাকার ইসলামপুরে। আপনার পছন্দের যে কোন পোশাকই কম দামে পেয়ে যাবেন এখানে। পাকিস্তানি লন এর থ্রি পিস গুলো পাবেন ৮০০ – ১৬০০টাকার ভেতর। সুতি লন ও পাবেন আবার শিফনের হাতা আর ওড়নার লন ও পাবেন। এম্ব্রোয়ডারি করা থ্রিপিসগুলো পাবেন ১০০০-১২০০ এর মধ্যে। খুব জমকালো পোশাক ইসলামপুরে পাওয়া যায় না, তবে বিভিন্ন ধরনের গজ কাপড় কাপড় পাওয়া যায়। ৬০ – ২০০০টাকার মাঝে দরদাম উঠা নামা করে। গজ কাপড় কিনে থ্রি পিস বানাতে চাইলে কোন রকম দ্বিধা না করে এখান থেকে পছন্দের রঙের, পছন্দের গজ কাপড় কিনে ফেলতে পারেন।

ঘরের কাছের নিউমার্কেট, চাঁদনি চক
রাজধানীর নারীদের কেনাকাটার একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে নিউমার্কেট। নিন্মবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত প্রায় সকলেরই আনাগোনা রয়েছে এখানে। নানারঙের নানা ঢঙের থ্রিপিস পাবেন এখানে। সুতি থ্রিপিসগুলোর দাম ৫০০টাকা থেকে শুরু করে ২০০০টাকা পর্যন্ত। কাপড়ের মান ভেদে দাম উঠানামা করে। ব্লকের থ্রিপিস কিনতে চাইলে চাদনিচকে পাবেন বেশ বাহারি ডিজাইনে। দাম ৬০০টাকা থেকে ১৫০০টাকার ভেতর।

ঈদ উপলক্ষে একটু জমকালো পোশাক কিনতে চাইলেও এখানে পাবেন। সেগুলোর দাম ৩হাজার থেকে শুরু। নিউমার্কেট, চাদনি চক এলাকায় অবশ্য পোশাকের দাম উঠানামা করে নিজের উপর। মানে আপনি চাইলে ২৫০০টাকা দাম বলা পোশাক ও দরদাম করে হাজার টাকায় কিনে ফেলতে পারেন।

গজ কাপড় কিন্তু ভরপুর নিউ মার্কেট এলাকায়। ২০০টাকা থেকে শুরু করে ২৫০০টাকা অব্দি গজ কাপড় পাবেন এখানে। একরঙা, প্রিন্ট, সুতি, জর্জেট সব ধরনের কাপড় ই পাবেন।

শাহবাগে আছে আজিজ সুপার মার্কেট
একটু সময় করে চলে যেতে পারেন আজিজ সুপার মার্কেটে। মধ্যবিত্ত এবং কলেজ/ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রীদের পছন্দ ও চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এখানকার পোশাকগুলো সাজানো হয়েছে। দামও হাতের নাগালেই বলা চলে। মোটামুটি কম দামে ভালোমানের পোশাক পাবেন এখানে। সুতি থ্রিপিস গুলো ৪০০ থেকে শুরু করে ৩হাজার পর্যন্ত রয়েছে। ভারী কাজের থ্রি পিস পাবেন ২৫০০ থেকে ৫হাজার টাকার ভেতর।

এম্ব্রোয়ডারির জন্য আছে ‘প্রিয়াঙ্গন’
ধানমন্ডির সায়েন্স ল্যাব মোড়েই প্রিয়াঙ্গন শপিং মল। তুলনামূলক কম টাকায় ভালো এম্রোয়ডারি করাতে চাইলে চলে যেতে পারেন এখানে। ডিজাইনের উপর দরদাম নির্ভর করবে। হালকা ডিজাইন থেকে শুরু করে খুব ভারী কাজ করাতে পারেন আপনি। ৫০০ থেকে শুরু করে ৬০০০টাকা খরচ হবে ডিজাইনের উপর নির্ভর করে। আমার পছন্দের ডিজাইনের ছবি দেখালেই তাঁরা হবুহু অমন করে এম্ব্রোয়ডারি করে দিতে পারবে আপনাকে।

আরো কিছু শপিং মল
ইস্টার্ন প্লাজা, সুভাস্তু টাওয়ার, মোহাম্মাদপুর কৃষি মার্কেট, মিরপুর ১০ এর শাহ আলি মার্কেট, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর ১ এর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট এগুলোতেও ঢু মেরে দেখতে পারেন। কমদামে ভালোমানের থ্রিপিস পেয়ে যাবেন এসব জায়গায়। তবে নিউমার্কেট বা ইসলামপুরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি হবে।

জেনে নিলেন তো প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য। এবার দেরী না করে তাড়াতাড়ি বের হয়ে পড়ুন নতুন থ্রিপিস কিনতে। নিজেকে রাঙিয়ে নিন প্রিয় রঙে।

 

কান ফোঁড়ানোর আগে ও পরে ?

আদরের সোনামণিটা কানে পরবে বাহারি দুল। আর তার জন্য যে চাই কান ফোঁড়ানো। তাই তো ছোট থাকতেই কান ফোঁড়ানো হয় বাচ্চাদের। আগেরদিনে নানী দাদীরা সোনামুখী সুঁই দিয়ে বাচ্চাদের কান ফুঁড়িয়ে দিতেন বাড়িতেই। কিন্তু আধুনিক যুগে সে দায়িত্ব নিয়েছে পার্লারগুলো। অনেকে খুব ছোটবেলায় কান ফুঁড়িয়ে থাকে। এখন দিন বদলের সাথে সেই সময়টিও বদলে গেছে। “আগে ৬ মাসের বাচ্চাদেরও কান ফোঁড়ানো হত। কিন্তু এখন কিছুটা বড় হওয়ার পর কান ফোঁড়ানো হয়। সাধারণত ১০ বছরের আগে কান না ফোঁড়ানো ভাল।”-এভাবেই প্রিয়.কম কে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল হতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও বর্তমানে ধানমণ্ডির নাজিনূর হাসপাতালে কর্মরত ত্বক বিশেষজ্ঞ নার্গিস সুলতানা।

কী কী বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত

কান ফোঁড়ানোর সময় আমাদের কিছু কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে।

  • -প্রথমে যার কান ফোঁড়ানো হবে তাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। সেজন্য একটু বড় হওয়ার পর কান ফোঁড়ানো উচিত।
  • -কান ফোঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই কানে গোল্ড প্লেটেড বা ইমিটেশনের কানের দুল না পরানোই ভাল।
  • -পার্লারে যে মেশিন দিয়ে কান ফোঁড়ানো হবে তা যেন জীবাণুমুক্ত হয়। আর যদি ঘরে কান ফোঁড়ানো হয় তবে যে সুঁই দিয়ে কান ফোঁড়ানো হবে তা যেন অব্যশই গরম পানিতে সিদ্ধ করে জীবাণুমুক্ত করা হয়। কান ফোঁড়ানোর সতর্কতা বিষয়ে প্রিয়.কম কে বলেন ত্বক বিশেষজ্ঞ নার্গিস সুলতানা
  • -যেদিন কান ফোঁড়ানো হবে তার আগে শরীরে কোন ইনফেকশন আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। যদি কোন ইনফেকশন থাকে তবে সেদিন কান না ফোঁড়ানোই উচিত না। সুস্থ হলে তারপর কান ফোঁড়াতে হবে।

কান ফোঁড়ানোর পর যা যা করণীয়

  • -কান বারবার স্পর্শ করা যাবে না। কান স্পর্শ করার পূর্বে হাত ভাল করে ধুয়ে তারপর স্পর্শ করতে হবে।
  • -রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কানের দুল কান থেকে খুলে রাখতে হবে। যাতে কানে চাপ পড়ে কান পেকে না যায়।
  • -দিনে দুবার কানের সুতা বা দুল ঘোরান। যাতে করে কানের ফোঁটাটা বড় হয়। এতে কানের ফোঁটা বন্ধ হবে না।
  • -চেষ্টা করুন সেভলন বা ডেটল দিয়ে কানের ফোঁটার চারপাশে ভাল করে মুছে দিতে। এটি দিনে একবার করুন। তাহলে কান ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
  • -কান ফোঁড়ানোর পরে লেবু, কমলার মতো ভিটামিন সি আছে এমন খাবার খেলে তাড়াতাড়ি ক্ষতস্থান শুকিয়ে যায়।
  • -যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব একেবারেই খাওয়া যাবে না।
  • -ফোঁড়ানোর স্থানে নিজে বা অন্য কেউ হাত দেওয়ার আগে অব্যশই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে।

ইনফেকশনে হলে কী করণীয়

অনেক সময় কান ফোঁড়ানো স্থানে ইনফেকশন হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে ত্বক বিশেষজ্ঞ নার্গিস সুলতানা বলেন, “ আমাদের শরীরের সবচেয়ে নরম অংশ হল কানের লতি। এতে কোন হাড় নেই। তাই এখানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনাটা বেশী থাকে। যদি কানের লতিতে ইনফেকশন হয় তবে অ্যান্টিব্যাক্টোরিয়াল ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন”। ঘরোয়া উপায় হিসাবে তিনি বলেন “ সরিষার তেল গরম করে কানে লাগানো যেতে পারে”। এটি দিনে দুবার করার জন্য পরামর্শ দেন।

খুব বেশী ইনফেকশন হলে তিনি একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে বলেন।

আরও তথ্য সুত্র

 

মুখরোচক সেমাই বরফি

ইফতারের তালিকায় ঝালের পাশাপাশি মিষ্টি খাবারের থাকে সমান চাহিদা। মুখরোচক সেমাই বরফি পছন্দের তালিকায় থাকা তেমন একটি খাবার। খুব সহজে অসাধারণ স্বাদের এই খাবারটি তৈরি করতে পারেন আপনিও। তাই ঝটপট শিখে নিতে পারেন সেমাই বরফির রেসিপি।

যা যা লাগবে

সেমাই আধা প্যাকেট, তরল দুধ ১ লিটার, গুঁড়া দুধ ৩ টেবিল চামচ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, চিনি পরিমানমতো, পেস্তা বা কাজু বাদাম কুচি ইচ্ছামতো, কিশমিশ ৭ থেকে ৮ টি, এলাচ ২ থেকে ৩ টি, দারুচিনি ২ টি।

যেভাবে করবেন

প্যানে ঘি দিয়ে সেমাই অল্প আঁচে লালচে করে ভাজুন। আরেকটি পাত্রে দুধ, এলাচ, দারুচিনি দিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। এবার একটি বাটিতে সামান্য তরল দুধ ও গুঁড়া দুধ মিশিয়ে নিতে হবে। দুধ ঘন হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। এবার ভাজা সেমাই ও কিশমিশ দিয়ে দিন। ৫ থেকে ৭ মিনিট পর পরিমানমতো চিনি দিয়ে নাড়তে হবে। সেমাই হয়ে গেলে দারুচিনি ও এলাচ দিয়ে নামিয়ে আনতে হবে। তারপর সমান ট্রেতে ঢেলে উপরে বাদাম কুচি ছিটিয়ে দিন। ঠাণ্ডা করে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখতে হবে। এবার ফ্রিজ থেকে বের করে ইচ্ছামতো শেপে কেটে নিন। ব্যাসহয়ে গেল পছন্দের সেমাই বরফি।

 

রোজার প্রয়োজনীয় বিশেষ ৫টি দোয়া!

রমজান মাসে এশার নামাজের পরে বিশ রাকাত তারাবি নামাজ পড়া হয়। বর্ণিত আছে যে, সাহাবায়ে কেরাম রা. তারাবি নামাজে চার রাকাত পরপর বিভিন্ন দোয়া পাঠ করতেন। কোনো সাহাবারা এই দোয়াটিও পাঠ করতেন।

প্রস্তুতিমূলকভাবে রোজার মাসের জন্য নিচের ৫টি দোয়া এখনই মুখস্থ করে রাখা যেতে পারে।

প্রথম দোয়া : রোজার চাঁদ দেখার দোয়া

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমান, ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।

তরজমা : হে আল্লাহ! এ চাঁদকে আমাদের ওপর উদিত করো শান্তি, ঈমান এবং নিরাপত্তার জন্য। ইসলামের সঙ্গে। হে চাঁদ! আমার ও তোমার প্রতিপালক আল্লাহ!

তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ রা.-এর বর্ণনায় নবিজি সা. নতুন চাঁদ দেখে এই দোয়া পড়তেন। (সুনানে দারেমী, হাদীস নং ১৬৮৮)

দ্বিতীয় দোয়া : রোজার নিয়ত

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আসূমা গাদাম্ মিন্ শাহরি রমাদ্বা-নাল মুবা-রাকি ফারদ্বাল্লাকা ইয়া- আল্লাহু ফাতাক্বাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আনতাস্ সামিউল আলিম।

তরজমা : হে আল্লাহ! আগামীকাল পবিত্র রমজানের ফরজ রোজা রাখার জন্য আমি নিয়ত করছি। তুমি তা আমার পক্ষ থেকে কবুল করো। নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রেতা, সর্বজ্ঞানী। (জেনে রাখা ভালো, রোজা রাখার জন্য নিয়ত করা ফরজ। তবে মুখে আরবি উচ্চারণ করা জরুরি নয়। নিয়ত শব্দের অর্থ হলো অন্তরের ইচ্ছা। অন্তরের পরিকল্পনাই মূলত নিয়ত। কোনো ব্যক্তি রোজা রাখার নিয়তে যদি মনে মনে এই ভাবেন যে, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আগামীকাল রোজা রাখব, তাহলে তার এই নিয়ত আদায় হয়ে যাবে।)

তৃতীয় দোয়া : ইফতারের দোয়া

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা- রিজক্বিকা আফত্বারতু বি-রাহমাতিকা ইয়া- আরহামার রাহিমিন।

তরজমা : হে আল্লাহ! তোমার জন্য আমি রোজা রেখেছি এবং তোমার দেওয়া রিজিক থেকে ইফতার করছি হে পরম দয়ালু, দাতা!

চতুর্থ দোয়া : তারাবির নামাজের দোয়া
রমজান মাসে এশার নামাজের পরে বিশ রাকাত তারাবি নামাজ পড়া হয়। বর্ণিত আছে যে, সাহাবায়ে কেরাম রা. তারাবি নামাজে চার রাকাত পরপর বিভিন্ন দোয়া পাঠ করতেন। কোনো সাহাবারা এই দোয়াটিও পাঠ করতেন।

উচ্চারণ : সুবহানা জিলমুলকি ওয়ালমালাকুতি সুবহানা জিল ইজ্জাতি ওয়াল আজমাতি ওয়ালহাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারুত সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিলল্লাজি লা ইয়ানুমু ওয়া লা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা। সুববুহুন কুদ্দুসুন রাববুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ।

তরজমা : আল্লাহ পবিত্রময় সারাজ্য ও মহত্ত্বের মালিক। তিনি পবিত্রময় সম্মান মহত্ত্ব ও প্রতিপত্তিশালী সত্তা। ক্ষমতাবান, গৌরবময় ও প্রতাপশালী তিনি পবিত্রময় ও রাজাধিরাজ যিনি চিরঞ্জীব, কখনো ঘুমান না এবং চির মৃত্যুহীন সত্তা। তিনি পবিত্রময় ও বরকতময় আমাদের প্রতিপালক, ফেরেশতাকুল এবং জিবরাইল আ.-এর প্রতিপালক।

পঞ্চম দোয়া : ১টি দোয়ায় হাজার বছরের সওয়াব!

উচ্চারণ : জাযাল্লাহু আন্না মুহাম্মাদান মা-হুয়া আহলুহ।

তরজমা : নবি করীম সা. বলেন, যে ব্যক্তি ১ বার এই দোয়া পাঠ করবে, ৭০ জন ফেরেশতা এক হাজার দিন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে তার সওয়াব লিখতে থাকবেন। (মাজমাউয জাওয়ায়েদ হাদীস নং-১৭৩০৫) এটা রমজান মাস সেহেতু সকল ইবাদতের সওয়াব হবে ৭০ গুণ।

মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব
বিভাগীয় প্রধান, আমাদের অর্থনীতি

 

বিনা খরচায় বাড়িয়ে তুলুন নিজের যোগ্যতা

হাতে একদম টাকা নেই। নেই কোনরকম খরচ-খরচা করার ইচ্ছেও। তবে পরীক্ষার পর কিংবা বিশেষ কোন কারণে হঠাৎ পেয়ে বসা লম্বা ছুটিটাতে নিজেকে আরো বেশি যোগ্য করে তোলার ইচ্ছে আছে পুরোদমে। কিন্তু কোনরকম আর্থিক ঝামেলা ছাড়া কী করে কোন প্রশিক্ষণ পাওয়া যাবে? আর কেমনই বা সেই ব্যাপারগুলো যেগুলোর চাহিদা অনেক বেশি হলেও খরচটা বলতে গেলে একেবারেই নেই? চলুন তাহলে এক পলকে দেখে আসি এমন কিছু কাজকে যেগুলো আপনার যোগ্যতাকে বাড়িয়ে তুলবে অনেক বেশি, তাও আবার কোনরকম খরচ ছাড়াই!

১. জনসম্মুখে কথা বলা

সম্প্রতি স্নাতক পাশ করা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিতে গিয়ে একটি বিশেষ যোগ্যতার দিকে বারবার সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওয়ারেন বাফেট। আর সেটি হচ্ছে সবার সাথে যোগাযোগ করা ও জনসম্মুখে স্বতস্ফূর্তভাবে কথা বলতে পারার অভ্যাস। মূলত, এটি এমন একটি গুণ যেটি কিনা যে কোন স্থানে, যে কোন পর্যায়ে আপনার জন্যে হয়ে উঠবে সাহায্যকারী। আপনার অর্থনৈতিক, মানসিক, সামাজিক ও পেশাগত দিককে দ্রুত ইতিবাচক পথে নিয়ে যাবে এই যোগ্যতাটি।

যেখানে যাবেন- বিভিন্ন ধরনের ক্লাব ও গ্রুপ খুঁজে পাবেন আপনি আপনার চারপাশে, যারা অন্যকে সাহায্য করার মাধ্যমে নিজের জনসম্মুখে কথা বলার অভ্যাসটিকেও রপ্ত করে নেয়। এর ভেতরে অন্যতম একটি ক্লাব হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল টোস্টমাস্টার অর্গানাইজেশন। খুঁজে দেখুন আপনার পাশেও হয়তো এমন একটা উপকারী কিছু খুঁজে পাবেন আপনি।

২. বিদেশী ভাষা শেখা

এটা তো খুব স্বাভাবিক ব্যাপার যে, আপনি যতগুলো নতুন ভাষা শিখবেন ঠিক ততগুলো নতুন নতুন দ্বার খুলে যাবে আপনার সামনে। আর এই দরজাগুলো হচ্ছে সাফল্যের, সামনে এগোবার। পেশাগত জীবনেও আপনাকে অনেক বেশি সুযোগ করে দিতে পারে নতুন কোন ভাষা। আর তাই যদি আপনি হাতে খানিকটা সময় পেয়েই যান তাহলে বিনা খরচেই বিভিন্নরকম মাধ্যমে শিখে নিন নতুন কোন ভাষা।

যেখানে যাবেন- ইউটিউবের নানারকম টিউটোরিয়াল তো আছেই, এছাড়া নানারকম অনলাইন সংস্থা ও গ্রুপ রয়েছে নতুন ভাষা শেখার। বিশেষ করে এক্ষেত্রে ডুয়োলিঙ্গোর সাহায্য নিতে পরেন আপনি। নিতে পারেন ভাষা শেখার ওয়েবসাইট রাইপের সাহায্যও, যেটা কিনা টানা ৭ দিন আর ২৪ ঘন্টাই নিজেদের সেবা দিয়ে থাকে।

৩. ওয়েব ডেভলপমেন্ট

বর্তমন সময়ে বেশ ভালোরকম চাহিদা আর অর্থসংযোগ রয়েছে যেই কাজটির সেটি হচ্ছে ওয়েব ডেভলপমেন্ট। ভাবছেন, এটা শিখতেতো বেশ ভালোরকমের টাকা খরচ হয়ে যাবে। তাহলে আপনাকেই বলছি, এদম না। বরং নিজের হাতে থাকা সময়টুকু দিয়ে নিজের মতন করেই কোডিং শিখতে পারেন আপনি।

যেখানে যাবেন- কোডিং শেখার জন্যে নানারকম প্রতিষ্ঠান আছে এটা ঠিক। তবে সেটা একটু খরচার। তারচাইতে কোডিং শিখে ওয়েব ডেভলপমেন্টে বেশ ভালো হাত পাকিয়ে ফেলতে পারেন আপনি কোড একাডেমি নামক এই ওয়েবসাইটটিতে গিয়ে। এছাড়াও অনলাইনে খুঁজলে এমন অনেক জায়গা খুঁজে পাবেন আপনি যেগুলোতে কোডিং শেখায়।

লিখেছেন-

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

ফিচার রাইটার

 

ঝটপট কিমা পরোটা

হরেক রকম ইফতারিতে ঝাল কিছু তো থাকা চাই-ই। সেখানে পছন্দের সসের সঙ্গে মুখরোচক কিমা পরোটা হলে তো কথায় নেই। তৃপ্তির ষোল আনা এখানেই হয়ে যায়। ইফতারিতে ভিন্নতার স্বাদ খুঁজে পেতে আজই বানিয়ে নিতে পারেন মজাদার কিমা পরোটা। রেস্টুরেন্টের মতো আপনার হাতের পরোটার স্বাদও হবে অসাধারণ। তাই ঝটপট দেখে নিন কিমা পরোটা বানানোর সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

গরুর মাংসের মিহি কিমা ২ কাপ, পেঁয়াজ মিহি কুচি ২ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ মিহি কুচি ৪টি, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ১ টেবিল চামচ।

খামির জন্য যা লাগবে

ময়দা ২ কাপ, লবণ স্বাদমতো, ঘি ২ টেবিল চামচ, ডিম ১টি, দুধ ২ টেবিল চামচ, ভাজার জন্য তেল।

যেভাবে করবেন

ডিম দুধ বাদে ময়দা চেলে খামির সব উপকরণ দিয়ে ভালো করে মেখে ময়ান করুন। এভাবে ২০ মিনিট ঢেকে রাখতে হবে।

এবার ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও কাঁচামরিচ দিয়ে অল্প ভাজতে হবে। এবারে একে একে কিমা, জিরা, গরম মসলা, গোলমরিচ গুঁড়া, লবণ দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিতে হবে। কিমার পানি শুকিয়ে গেলে ধনেপাতা কুচি দিয়ে হালকা ভেজে নামাতে হবে।

এবার ময়ান দেয়া আটা ভালো করে মেখে রুটি বানাতে হবে। একটি করে রুটি নিয়ে তাতে রান্না করা কিমা ছড়িয়ে দিয়ে উপরে আরেকটি রুটি বসিয়ে কিনারা ভালো করে জোড়া দিতে হবে। ছোট একটি বাটিতে ডিম ও দুধ এক সাথে মেশাতে হবে। পরোটা এর দুই পাশে ডিম-দুধের এর মিশ্রণ মাখিয়ে ফ্রাইপ্যানে ২ টেবিল চামচ তেল দিয়ে ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে। ভাজা হলে প্রতিটি রুটি পছন্দ মত টুকরো করে সস দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

ঈদ বাজারে সবার শীর্ষে সারারা

লম্বা ঝুলের কামিজ, তার সঙ্গে কটি। কোটিতে নানা ধরনের সুতা, চুমকি ও জরির জমকালো কারুকাজে তরুণীদের নজরকাড়া এ পোশাকটির নাম সারারা। বিখ্যাত হিন্দি চলচ্চিত্রকার করণ জোহরের ‘মেরে ইয়ার কি শাদি হ্যায়’ সিমেমার জনপ্রিয় গান ‘সারা-রা, সারা-রা, মে হু এক সারা-রা’ গানের সাথে যে ডিজাইনের পোশাক পরে দর্শকের মাতিয়ে তোলেছেন অভিনেত্রী সুস্মিতা শেঠি সেই পোশাক ‘সারারা’ এবার ঈদের বাজারে জায়গা করে নিয়েছে পছন্দের তালিকায় সবার শীর্ষে।

রাজধানীর অভিজাত শপিংমল গুলোতে বিশেষ জায়গা করে নেয়া ভারতীয় ডিজাইনের সুতা, রঙের বাহারে ঝলমলে ও নান্দনিক এ পোশাকটি বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পযর্ন্ত।

জমকালো এ পোশাকটি জর্জেট আর সিল্কের ওপর জরি-চুমকি-পাথরের কটিওলা লং জামার সঙ্গে সালোয়ারেও রয়েছে প্রচুর কাজ। সঙ্গে হালকা কাজের চিকন পাড়ের ওড়না। বিক্রেতারা জানান, এবারের ঈদের বাজারে তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে স্থান করে নিয়েছে ‘সারারা’ নামের এ পোশাকটি। তবে শুধু বড় নয় ছোটদের জন্যও সারারা পাওয়া যাচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে।

বসুন্ধরা শপিং সেন্টারের ‘বুটিকস’ শোরুমের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বুটিকসের কালেশানের মধ্যে সারারা পোশাকটি পাওয়া যাবে ৫ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে।

এবারের ঈদে সারারা একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে বিরাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেচা-বিক্রি এখনও তেমন জমে ওঠেনি তাই প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার পোশাক। সারারার প্রায় ১০ ভাগের একভাগ বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য পোশাক।

এদিকে বসুন্ধরা শপিং সেন্টারের ‘নামেসা’ বিপনী বিতানের বিক্রয় প্রতিনিধি রাসেল  জানান, সারারার এ পোশাকগুলো সাধারনত ফ্রি সাইজে থাকার কারণে মোটা-চিকন সবাই পরতে পারে। সাড়ে ৪ থেকে ৫ ফিটের নারীদের জন্য এ পোশাক। প্রয়োজনে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ করে বডি ফিট করে নেওয়া যায়। টাকা দিলে আমরাও এটা করে দেই।

রাসেল জানায়, এখন বিক্রি তেমন হচ্ছে না। তবে ১০ রোজার পর থেকে বিক্রি বেড়ে যাবে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

একই মার্কেটের ‘দারুল জান্নাত’র শোরুম ঘুরে দেখা গেছে এ শোরুমের ‘সারারা’ পোশাকটি অন্যদের থেকে কিছুটা আলাদা এবং উন্নত মানের। এখানকার বিক্রয় প্রতিনিধি কাইয়ূম  বলেন, এখন পযর্ন্ত তাদের শোরুমে ৬০ হাজার টাকা দামের সারারা উঠানো হয়েছে। তবে কিছু দিনের মধ্যেই ১ লাখ টাকা দামের সারারাও এখানে পাওয়া যাবে।

কাইয়ূম জানান, সারা-রা কামিজের ওপর যে কটি থাকছে তা মূলত ভেলভেট বা মখমলের তৈরি। এ কারণেই এ পোশাকের দামটা একটু বেশি।

এদিকে নিজের ও বোনের মেয়ে নিয়ে শপিং করতে ধানমণ্ডি থেকে এখানে আসছেন শিরিন আক্তার। তিনি  বলেন, আসলে ‘সারারা’ এখন মেয়েরা বেশি পছন্দ করছে। তবে এ সুযোগ নিয়ে বিক্রেতারাও ইচ্ছে মতো দাম হাঁকছে। বলতে গেলে এটা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।

এবারের ঈদে ‘সারারা’ পোশাক ছাড়াও তরুণীরা ঝুঁকছেন ‘বলিউড গাউন’র দিকে। এটি ‘ফ্লোর টাচ গাউন’ ও ব্রাইডাল গাউন হিসেবে পরিচিত। এই পোশাকগুলোও পছ্ন্দ করছেন অনেকে। এছাড়া পছন্দের তালিকায় আছে ভারতীয় সিরিয়ালের কিরনমালা, জরি ও সূতার কাজ করা বাহারি ডিজাইনের লং কামিজ। সিরিয়াল দেখেই পোশাক নির্বাচনের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে বলে জানালেন বিক্রেতারা।

বসুন্ধরা শপিং সেন্টার ছাড়াও অরচার্ট পয়েন্ট, নিউমার্কেট, পলওয়েল মার্কেট, মৌচাক মার্কেট ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। সবখানে পছন্দের তালিকার শীর্ষে আছে সারারা। ঈদকে সামনে রেখে এটি সরাসরি ভারতের বোম্বে থেকে আমদানি করা হচ্ছে বলে জানানেল ব্যবসায়ীরা।

 

অ্যাপ বানিয়ে চমকে দিল ৯ বছরের অনবিতা

অনবিতা বিজয়। বয়স গুণে গুণে নয় বছর। এই বয়সে কী এমন করতে পারে শিশুরা? কিন্তু সে দেখিয়েছে। এই বয়সে মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে চমকে দিয়েছে হাই টেক বিশ্বকে। এমনকী, অ্যাপলের ডব্লিউ ডব্লিউ ডিসি ২০১৬-র সবথেকে কনিষ্ঠ ডেভলপারও হতে চলেছে সে।

এই বয়সে কীভাবে শিখল এমন কঠিন কোড? প্রশ্ন করা হলে তার সাবলীল জবাব, ‘কোডিং আমার খুব ভাল লাগে। নতুন নতুন কোড শিখতে ইউটিউবে বিভিন্ন টিউটোরিয়ালস দেখি। সেখান থেকেই নতুন নতুন কোড শিখেছি।’

অনবিতা এই বয়সে দু’দুটো অ্যাপ বানিয়ে ফেলেছে। তার প্রথম অ্যাপ স্মার্টকিনস অ্যানিম্যালের দ্বারা যে কোনো শিশু অনায়াসে পশু পাখির নাম ও আওয়াজ শিখতে পারবে। আর দ্বিতীয় অ্যাপটি শেখাবে কীভাবে রঙ চিনবেন। এখানেই অনবিতা থেমে নেই। এখন সে আরও একটি নতুন অ্যাপ নিয়ে কাজ করছে। এই সব ক’টি অ্যাপই আইওএস (iOS) ফরম্যাটে সাপোর্ট করবে।

 

আস্থা আছে, তবে রাষ্ট্রের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নই

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের উপর আমরা যথেষ্ট আস্থা রাখি, কিন্তু রাষ্ট্রের ভূমিকায় আমরা যথেষ্ট সন্তুষ্ট হতে পারছি না। আমরা এই দেশে ধর্ম, বর্ণ, দলিত, হরিজন, নারী-পুরুষ, শিশুসহ সকলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই।’

মঙ্গলবার (১৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী, সম্প্রদায় ও ব্যক্তির উপর ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

আয়শা খানম বলেন, ‘এদেশে মুক্তমনা শিক্ষক, ব্লগারসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে। যারা রাজনীতিকে পুঁজি করে সম্পদের মালিক হওয়ার চেষ্টায় একের পর এক অপরাধ করে যাচ্ছেন তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না।’

তনু হত্যাকাণ্ডের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের প্রতিবেদন আমাদের উদ্বিগ্ন করে।’ এসব হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে সাধারণ নাগরিকসহ সকল সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় বিচারহীনতাকে দায়ী করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে হত্যাকাণ্ড ঘটেই চলেছে। এর মূল কারণ অপরাধীর বিচার হচ্ছে না। তাই এই অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে।’

‘এখন শুধু সংখ্যালঘু নয়, দেশের সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ হচ্ছে রাষ্ট্র। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই’- বলেন মালেকা বানু।

চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সকলকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করারও আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশের এই নিরাপত্তহীনতা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রশাসন ও সমাজের বিবেকবান মানুষের কাছে প্রশ্ন রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ।

গত ১৭ মাসে এধরনের ২৯টি ঘটনা ঘটেছে- এমন পরিসংখ্যান তুলে ধরে মানবন্ধন থেকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এসব ঘটনার দ্রুত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ ও আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানায়। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে রাষ্ট্র, সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আরও গভীর বিবেচনা ও প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানায় তারা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আন্দোলন সম্পাদক কাজী সুফিয়া আখতার, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনুস প্রমুখ।

 

অ্যালার্জি থেকে বাঁচতে করণীয়

পীড়াদায়ক চুলকানি সৃষ্টি করে অ্যালার্জি। যে কোনো বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। অ্যালার্জির কারণে হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়ে বা নাক বন্ধ হয়ে যায়, কারও কারও চোখ দিয়েও পানি পড়ে এবং চোখ লাল হয়ে যায়, শরীরে গোটা দেখা দেয়, সঙ্গে অস্থিরতা সৃষ্টি করে।

আসবাবে জমে থাকা পুরনো ধুলাবালি, পরাগ রেণু, পোষা প্রাণীর পশম বা চুলের সঙ্গে নানা ধরনের ছত্রাক, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদির কারণেও অ্যালার্জি হতে পারে। বংশগত কারণেও অনেক সময় এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারও বাবা-মা বা ভাইবোনের এ রোগ থাকলে তার দেহেও এ রোগ সংক্রমিত হতে পারে।

আবহাওয়া বা বাতাসের আর্দ্রতার তারতম্যের কারণেও এ রোগ হতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি জাতীয় খাদ্য যেমন- চিংড়ি, ইলিশ মাছ, ডিম, পাকাকলা, গরুর মাংস, বেগম, দুধ, তামাক ইত্যাদি গ্রহণ করলেও অ্যালার্জি হয়।

অ্যালার্জি জনিত সমস্যা দুই ধরনের। যেমন-

সিজনাল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস

বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে অ্যালার্জির প্রোকোপ দেখা দিলে তাকে সিজনাল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বলে।

পেরিনিয়াল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস

সারা বছর ধরে হলে খুটিনাটি সমস্যাতে অ্যালার্জি দেখা দিলে তাকে পেরিনিয়াল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বলে।

লক্ষণ

কাশি, ঘন ঘন শ্বাসের সঙ্গে বাঁশির মতো শব্দ হওয়া বা বুকে চাপ চাপ লাগা, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ঠাণ্ডা লাগা। বুকের ভেতর বাঁশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ, শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট, দম খাটো অর্থাৎ ফুসফুস ভরে দম নিতে না পারা, ঘন ঘন কাশি, বুকে আঁটসাঁট বা দম বন্ধ ভাব, নিশ্বাসে কষ্টের কারণে রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকা সবই অ্যালার্জির কারণে হতে পারে। অ্যালার্জির কারণে ত্বক লালচে হয়ে ফুলে ওঠে ও চুলকায়। হাত-পা ফুলে যেতে পারে। ফোলা অংশ কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী থাকে, কখনও বারবার হতে পারে।

করণীয়

অ্যালার্জির টেস্ট করে কারণ নির্ণয় করে তা পরিহার করে চলা উচিৎ। ঠাণ্ডা বাতাস, ধুলোবালি, ফুলের রেণু বা যেসব খাবারে এমন সমস্যা দেখা দেয় তা পরিহার করে চলা উচিৎ। এছাড়া ডাক্তারি পরামর্শে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং সালবিউটামল ইনহেলার নেয়া যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি ভালো থাকার জন্য স্টেরয়েড ইনহেলার নেয়া যেতে পারে।

ভ্যাকসিন পদ্ধতি

উন্নত দেশগুলোতে ভ্যাকসিন পদ্ধতিতে অ্যালার্জির চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। এটা অ্যালার্জি রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ থাকার চিকিৎসা পদ্ধতি। আগে ধারণা ছিল অ্যালার্জি একবার হলে আর সারে না। বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। উন্নত দেশের সব প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা বর্তমানে বাংলাদেশেই রয়েছে।

 

স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য : কোরান মাজিদের নির্দেশনা

স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য
মানুষ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে নারীদের সাথে অবিচার ও তাদের শোষণ করে আসছিল। নারীদেরকে পুরুষের তুলনায় নিকৃষ্ট মনে করা হত। আইনের দৃষ্টিতে তাদের কোন অধিকার ছিল না। আর না সমাজে তাদের কোন মর্যাদা ছিল। তারা তুচ্ছ ভোগ্যবস্ত্ত কিংবা পরিবারের অন্যান্য আসবাব পত্রের মত ব্যবহৃত হত। ইসলাম পূর্ব আরব সমাজে এটি একটি সাধারণ রীতি ছিল যে, পিতার মৃত্যুর পর ছেলেরা পরিবারের অন্যান্য সামগ্রীর মত তার স্ত্রীদেরও মালিক হত। তার মাও তখন তার স্ত্রী ও দাসী হিসেবে কাজ করত। পৃথিবীর কোন কোন অংশে নারীদেরকে আত্মাহীন একটি প্রাণী কিংবা তাদের কোন স্বতন্ত্র জীবন আছে বলে মনে করা হত না। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে যখন কোন মৃত স্বামীকে চিতায় আগুনে পোড়ানো হত; তার জীবন্ত স্ত্রীকেও সেই জ্বলন্ত আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মাহুতি দিতে বলা হত। তার কোন স্বতন্ত্র জীবন যাপনের অধিকার বলতে ছিল না। স্বামী যতদিন জীবিত থাকত ততদিনই সে বেঁচে থাকার অধিকার লাভ করত এবং যখন তার স্বামী মৃত্যুবরণ করত তাকেও তখন স্বেচ্ছায় জীবন বিসর্জন দিতে হত। এখনো ভারতের কোন কোন অঞ্চলে এই প্রথা প্রচলিত রয়েছে। কেননা, এটি হিন্দু মতবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি। অনেক সমাজে নারীদের মনে করা হত দুষ্টকর্মের উৎস, যারা বেহেস্তে ঈভ (হাওয়া আ.) এর প্রথম অপরাধের কলঙ্ক বহন করছে।

ইসলামের আবির্ভাব নারীদের মর্যাদার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসে। ইসলাম তাদের মর্যাদাকে পুরুষের সমান্তরালে নিয়ে আসে। তা তার সকল নৈতিক অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করে এবং তার জীবনের প্রতিটি বিষয় পছন্দমত নির্বাচন করার স্বাধীনতা প্রদান করে। এটি তাকে সমাজে সকল মর্যাদা ও সম্মানের প্রতিমূর্তিতে পরিণত করে এবং তাকে সব ধরনের শোষণ থেকে নিরাপত্তা প্রদান করে।

কোরান মাজিদ বারংবার নারী ও পুরুষকে পৃথক সত্তা হিসেবে উল্লেখ করেছে, যা আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মৌলিক মানবাধিকারের ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী সমান। কোরান মাজিদ বলে:

নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়াম পালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফেরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্ত্তত করে রেখেছেন। (আল-আহযাব, ৩৩:৩৫)

আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (আত-তাওবা, ৯:৭১)

আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে এবং (ওয়াদা দিচ্ছেন) স্থায়ী জান্নাতসমূহে পবিত্র বাসস্থানসমূহের। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড়। এটাই মহা সফলতা। (আত-তাওবা, ৯:৭২)

আর তোমরা আকাঙ্খা কর না সেসবের, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের একজনকে অন্যজনের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। পুরুষদের জন্য রয়েছে অংশ, তারা যা উপার্জন করে তা থেকে এবং নারীদের জন্য রয়েছে অংশ, যা তারা উপার্জন করে তা থেকে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ চাও। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত। (আন-নিসা, ৪:৩২)

কোরান মাজিদ আরও ঘোষণা করে যে, পুরুষ ও নারী একই উৎস থেকে এসেছে এবং আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মানসিক ও আধ্যাত্মিক যোগ্যতার বিচারে উভয়েই সমান। কোরান মাজিদ বলে: হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চেয়ে থাক। আর ভয় কর রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। (আন-নিসা, ৪:১)

স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য
কোরান মাজিদে নারীদের (নিসা) নামে একটি পৃথক সূরা রয়েছে। যাতে স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বর্ণিত হয়েছে। যদিও পুরুষ ও নারী বিয়ের ক্ষেত্রে সমান অংশীদার, দায়িত্বের একটি বৃহত্তর অংশ বহন করতে হয় পুরুষকে । পুরুষকে পরিবারের প্রধান বিবেচনা করা হয় এবং তাকে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য অতিরিক্ত দায়িত্বভার বহন করতে হয়। এজন্যে কোরান ও হাদিস স্বামীদেরকে তাদের স্ত্রীদের সাথে আচরণের ব্যাপারে একটি সার্বজনীন ও সবিস্তার নির্দেশনা প্রদান করে। এই নির্দেশনাসমূহ সেসব নির্দেশনা থেকে অনেক ব্যতিক্রম যা স্বামীদের সাথে স্ত্রীদের আচরণের প্রেক্ষিতে প্রদান করা হয়েছে। নারীদের মর্যাদা ও অধিকার সংরক্ষণের জন্য অন্য কোন ধর্ম কিংবা মানব সমাজ এত বেশি গুরুত্ব দেয় নি। নিম্নে কিছু নির্দেশনা তুলে ধরা হল:

আর তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও, অতঃপর তা থেকে খুশি হয়ে যদি তারা কিছু ছাড় দেয়, তাহলে তোমরা তা সানন্দে তৃপ্তিসহকারে খাও। (সূরা আন-নিসা, ৪:৪)

মোহরানা প্রদান বিয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত। যখন কোন পুরুষ কোন নারীর সাথে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার প্রস্তাব করে তখন তাকে একটি বিশেষ পরিমাণ মোহরানা প্রদানে স্বীকৃত হতে হয়। আর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হল যে, তাকে সমাজে তার নিজের অবস্থান ও স্ত্রীর মর্যাদা অনুসারে মোহরানার পরিমাণ ধার্য করতে হবে। কোরান মাজিদ বলে:

তোমাদের কোন অপরাধ নেই যদি তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও, এমন অবস্থায় যে, তোমরা তাদেরকে স্পর্শ কর নি কিংবা তাদের জন্য কোন মোহর নির্ধারণ কর নি। আর উত্তমভাবে তাদেরকে ভোগ-উপকরণ দিয়ে দাও, ধনীর উপর তার সাধ্যানুসারে এবং সংকটাপন্নের উপর তার সাধ্যানুসারে। সুকর্মশীলদের এটি আবশ্যক। (বাকারা, ২:২৩৬)

মেয়েদের সেই মোহরানায় স্বীকৃত হওয়া কিংবা তা প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রয়েছে। মোহরানার উপর রাজি হওয়া ব্যতিরেকে বিয়ে বৈধ হয় না। কোরান মাজিদ বলে:

হে নবি, আমি তোমার জন্য তোমার স্ত্রীদেরকে হালাল করেছি যাদেরকে তুমি মোহরানা দিয়েছ…। (আল-আহযাব, ৩৩:৫০)

তোমরা তাদেরকে বিয়ে করলে কোন অপরাধ হবে না, যদি তোমরা তাদেরকে তাদের মোহরানা প্রদান কর। (আল-মুমতাহিনা, ৬০:১০)

মোহরানা একবার দিয়ে দেয়া হলে তা স্ত্রীর নিজস্ব সম্পত্তিতে পরিণত হয়। স্বামী তা পুনরায় ফিরিয়ে নিতে পারে না; এমনকি যদি সে তাকে তালাকও প্রদান করে। কোরান মাজিদ বলে:

আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রীকে বদলাতে চাও আর তাদের কাউকে প্রদান করেছ প্রচুর সম্পদ, তবে তোমরা তা থেকে কোন কিছু নিও না। তোমরা কি তা নেবে অপবাদ ও প্রকাশ্য গুনাহের মাধ্যমে? (আন-নিসা, ৪:২০)

মৌলিক চাহিদার প্রতি যত্নবান হওয়া
পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজেদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। (আন-নিসা, ৪:৩৪)

এই আয়াতের উপর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, স্ত্রীর জীবনের মৌলিক চাহিদার যোগান দেওয়া একজন স্বামীরই দায়িত্ব। যদি সে তা না করে তবে সে আল্লাহ তাআলার আদেশ লংঘন করে। অধিকন্তু মুসলিম পরিবারে স্ত্রীকে উপার্জন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় নি। অবশ্য সে স্বামীর অনুমতি স্বাপেক্ষে কোন কাজ করতে পারে। আর যে অর্থ সে উপার্জন করবে তা তার নিজস্ব এবং তার সম্পদের উপর স্বামীর কোন বৈধ অধিকার নেই।

নারীদের সমান অধিকার
তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। (আল-বাকারা, ২:১৮৭)

আর নারীদের আছে বিধি মোতাবেক অধিকার। যেমন আছে তাদের উপর (পুরুষদের) অধিকার। ( আল-বাকারা, ২:২২৮)

আরও উল্লেখ্য যে, পুরুষ ও নারীর মধ্যে সমানাধিকারের ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি ও পশ্চিমা ধারণার মধ্যে মৌলিক ফারাক রয়েছে। ইসলাম উভয়কে একই ধরনের মৌলিক মানবাধিকার প্রদান করে। কিন্তু সমান দায়িত্বভার অর্পণ করে না। একজন পশ্চিমা নারীকে রান্নাঘরে কাজ করতে হয়, শিশুদের খাওয়াতে হয়, ছেলেমেয়েদের লালন পালন করতে হয়, আবার যুগপৎভাবে পারিবারিক ব্যয় নির্বাহ করার জন্যে স্বামীকে সহযোগিতাও করতে হয়। সে সমরাস্ত্রও বহন করে এবং দেশ প্রতিরক্ষায়ও অংশ নেয়। ইসলাম পুরুষ ও নারীর মধ্যে এমন দায়িত্বসংক্রান্ত সমতার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে। তা বুঝে যে, পুরুষ ও নারীর শরীরতন্ত্র ও শারিরিক গঠনের ক্ষেত্রে অনেক ভিন্নতা এবং তাদের উভয়ের মাঝে বিশেষ যৌন স্বাতন্ত্র রয়েছে। অধিকন্তু তাদের আবেগিক চাহিদা ও মানসিক বিচার বুদ্ধির ক্ষেত্রেও অনেক পার্থক্য রয়েছে। একারণে ইসলাম পুরুষ ও নারীকে ভিন্ন ভিন্ন দুই গোচ্ছ দায়িত্ব প্রদান করে। মুসলিম সমাজে পুরুষ হল পারিবারিক কর্মকান্ডের প্রধান। তাদের প্রথমিক দায়িত্ব হল পরিবারের সদস্যদের জন্য উপার্জন করা। পক্ষান্তরে, নারীরা ঘরের ঘরের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত থাকে। তাদের প্রধান দায়িত্ব হল সন্তান লালন পালন করা। পুরুষরা এভাবে দায়িত্বের একটি বড় বোঝা বহন করে। কোরান মাজিদে তা খুব পরিষ্কারভাবে বর্ণিত হয়েছে:

আর নারীদের আছে বিধি মোতাবেক অধিকার। যেমন আছে তাদের উপর (পুরুষদের) অধিকার। আর পুরুষদের রয়েছে তারে উপর মর্যাদা এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। ( আল-বাকারা, ২:২২৮)

আর তোমরা আকাঙ্খা কর না সেসবের, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের একজনকে অন্য জনের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। পুরুষদের রয়েছে অংশ, তারা যা উপার্জন করে তা থেকে এবং নারীদের রয়েছে অংশ তারা যা উপার্জ করে তা থেকে। (আন-নিসা, ৪:৩২)

স্ত্রীর প্রতি দয়া প্রদর্শন
আর তোমরা তাদের সাথে সদভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যান রাখবেন। (&আন-নিসা, ৪:১৯)

এমন কোন নারী পাওয়া দুষ্কর যে তার জীবনের সব দিক দিয়ে পরিপূর্ণ। কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে এভাবে কোন কারনে অপছন্দ করা শুরু করতে পারে। এক্ষেত্রে কোরান মাজিদ স্বামীকে বলে, তার দুর্বলতাকে এড়িয়ে যেতে এবং তার সাথে দয়া ও সহানুভূতির আচরণ করতে। কোরান মাজিদ আরও সুসংবাদ প্রদান করে যে, স্বামীর এই কাজের জন্য আল্লাহ তাআলা তাকে প্রভূত কল্যান দান করবেন।

স্ত্রীকে ক্ষমা করে দেওয়া
হে মুমিনগণ, তোমাদের স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের কেউ কেউ তোমাদের দুশমন। অতএব, তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। আর যদি তোমরা মার্জনা কর, এড়িয়ে যাও এবং মাফ করে দাও তবে নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। (আত-তাগাবুন, ৬৪:১৪)

কোন কোন ক্ষেত্রে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের চাহিদা আল্লাহ তাআলার বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে। পরিবারের এধরনের সদস্যরা আমাদের শত্রু। কোরান মাজিদ আমাদেরকে বলে যে, আমাদের পরিবারের এসব সদস্যদের কেবল ক্ষমা করে দেয়াই উচিৎ তা নয়, বরং তাদের দোষ-ত্রুটি ও দুর্বলতাকে গোপন রাখতে হবে। তাদের দোষ প্রকাশ করলে তা তাদের জন্য মানহানির কারণ হবে, যা ইসলামে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ।

স্ত্রীর সম্ভ্রম রক্ষা
যারা সচ্চরিত্রা সরলমনা মুমিন নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত। আর তাদের জন্য রয়েছে মহা আযাব। (আন-নূর, ২৪:২৩)

আর তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচার করে, তোমরা তাদের উপর তোমাদের মধ্য থেকে চারজন স্বাক্ষী উপস্থিত কর। (আন-নিসা, ৪:১৫)

ইসলামি আইনে কোন অপরাধীকে শায়েস্তা করার জন্যে তার অপরাধ প্রমাণ করতে দুইজন স্বাক্ষী আবশ্যক হয়। ইসলামে একজন নারীর সম্ভ্রম ও সতীত্বকে এতই মর্যাদা দেয়া হয়েছে যে, ইসলামি আইন তার অপরাধ প্রমাণের জন্য চারজন স্বাক্ষী পেশ করাকে অপরিহার্য করেছে। অন্যথায় সে নিরপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

সালিশ নিয়োগের সমান অধিকার
যদি কোন নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে কোন দুর্ব্যবহার কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে, তাহলে তারা উভয়ে কোন মীমাংসা করলে তাদের কোন অপরাধ নেই। (আন-নিসা, ৪:১২৮)

স্ত্রীর প্রতি দয়া প্রদর্শন, এমনকি তালাক প্রদানের পরও
আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দেবে অতঃপর তারা তাদের ইদ্দতে পৌঁছবে তখন তোমরা তাদেরকে বাধা দিয়ো না যে, তারা তাদের স্বামীদেরকে বিয়ে করবে যদি তারা পরস্পরে তাদের বিধি মোতাবেক সম্মত হয়। (আল-বাকারা, ২:২৩২)

এগুলি কোরান মাজিদের এমন কিছু নির্দেশনা, যা ইসলাম নারীদের যে সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করেছে তার চিত্রকে ফুটিয়ে তোলে। পৃথিবীর অন্য কোন ধর্ম কিংবা সমাজ এমনকি এর ধারে কাছেও আসে না।

মূল : ড. মাজহার ইউ কাজি
বাংলা অনুবাদ : মাওলানা ফয়জুল্লাহ মুজহিরি
সম্পাদনা : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক

 

ইন্টারভিউ বোর্ডে কখনো করবেন না এই ভুলগুলো

পড়াশোনা শেষ? এবার তো ভাবতে হবে ক্যারিয়ারের কথা! একটা মানানসই চাকরির জন্য জমা দিতে হবে সিভি। অনেকক্ষেত্রে আমাদের সিভি মেইল করতে হয়। কোথাওবা সিভি পাঠাতে হয় ডাকযোগে। অনেক অফিস পছন্দ করেন ‘Walk in interview’ নিতে। ইন্টারভিউ বোর্ডে নার্ভাস হয়ে যাওয়া খুবই সাধারণ ঘটনা। কিন্তু এর সাথেই জড়িয়ে থাকে চাকরি না পাওয়ার মত বিপত্তিটি। আসুন জেনে নিই, চাকরির এই সাক্ষাতকারে কোন ভুলগুলো করা যাবে না একেবারেই।
নার্ভাস হয়ে ভুল উত্তর দেওয়া
হয়ত আপনি একেবারেই নতুন। প্রথমবার ইন্টারভিউ দিতে এসেছেন। কিন্তু প্রথমবার হোক আর বহুবার মুখোমুখি পরীক্ষায় নার্ভাস হন না এমন মানুষ খুব কমই আছেন। তাই আপনার যে ভয়ের অনুভূতিটি হচ্ছে সেটি খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু তবু নিজেকে সামলে নিতে হবে আপনার। ভেতরে যতই ভয় কাজ করুক না কেন, বাইরে একদম প্রকাশ পেলে চলবে না। আর উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই হতে সাবধানী। জানা উত্তর যেন ভুল না হয় কোনভাবেই।
পাল্টা প্রশ্ন করা
ইন্টারভিউ বোর্ডে কখনো পালটা প্রশ্ন করা যাবে না। আপনাকে যে প্রশ্ন করা হবে ঠিক সে প্রশ্নের জবাব দিতে হবে শুধু। বাড়তি কথা বলা কোনমতেই পছন্দ করেন না ইন্টারভিউয়াররা। তারা পুরো সময়টাতেই আপনার মাইন্ড রিড করে চলেছেন। যতটুকু সময় আপনি আছেন, তারা সারাক্ষণই আপনাকে খেয়াল করছেন। বাড়তি জ্ঞান দেখানো বা পালটা প্রশ্ন করা আপনার জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে।
ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া
যদি জিজ্ঞেস না করা হয় তাহলে অবশ্যই ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া থেকে বিরিত থাকুন। আমাদের দেশে ইন্টারভিউ বোর্ডে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে প্রচুর এলোমেলো প্রশ্ন করা হয়। অনেক সময় প্রশ্ন কর্মসংশ্লীষ্টতা ছাড়িয়ে চলে যায় ব্যক্তি পর্যায়ে। নিজের স্মার্টনেস ব্যবহার করুন। যত কম তথ্য দিয়ে উত্তর দিতে পারবেন ততই ভাল।
দক্ষতা না তুলে ধরা
নিজের দক্ষতা তুলে ধরুন। আপনি যদি ভাল ইংরেজি বলতে জানেন, তাহলে উত্তর দেওয়ার সময় এই দক্ষতা প্রকাশ করুন। এটি আপনার সম্পর্কে ভাল ইম্প্রেশন তৈরি করবে। আবার হয়ত আর কোন ভাষা জানেন আপনি। টেকনোলজির ব্যবহার ভাল পারেন, এটাও হতে পারে। তবে অবশ্যই সেটা আপনার চাকরির সাথে মানানসই হতে হবে। আমরা অনেক সময়ই নিজের দক্ষতা থাকা স্বত্তেও ইতস্তত করে সেটা প্রকাশ করি না, পরে আফসোস করি।
পোশাক নির্বাচন
ইন্টারভিউতে পোশাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পোশাক আপনার প্রথম ইম্প্রেশন তৈরি করে। কিন্তু তরুণদের মধ্যে পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রায়ই ভুল হতে দেখা যায়। অবশ্যই সাক্ষাতকারের সময় অতি উজ্জ্বল রঙের পোশাক পড়া উচিৎ নয়। চাকরি যেমনই হোক, পোশাক ফরমাল হওয়া চাই। চুল বাধা, জুতা মেলানো সব কিছুতে প্রকাশ পাওয়া চাই আপনার ব্যক্তিত্ব।
অপ্রয়োজনে হেসে ফেলা
আপনাকে যত অদ্ভুত প্রশ্নই করা হোক না কেন অপ্রাসঙ্গিকভাবে হেসে ফেলবেন না। নিজের গাম্ভীর্য বজায় রাখুন। কোনভাবেই আপনাকে যেন বোকা মনে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। নার্ভাসনেসের কারণে অনেক সময় আমরা খেয়াল না করে হেসে ফেলি, যা পুরো বিষয়টিকে হালকা করে দিতে পারে।
অপ্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করা
আপনাকে নিজের জীবনের কোন অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে বলা হতে পারে। অনেক সময় আমরা খুজে পাই না কি বলব। এমন কোন অভিজ্ঞতা হয়ত শেয়ার করে ফেললাম যা চাকরির সাথে যায় না কোনদিক থেকেই। জ্বী, এই অভিজ্ঞতাও চাকরি সংশ্লীষ্ট হওয়া জরুরি। বরং এটাই সুযোগ আপনার যোগ্যতা প্রকাশ করার।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

জমে উঠছে ঈদের বাজার

ঈদ মানেই খুশি অফুরান। মুখরোচক খাবার-দাবার, ঘোরাঘুরি আর নতুন পোশাকের গন্ধে মাতোয়ারা হওয়া যেন ঈদের আরেক অর্থ। মুসলমানদের এই প্রধান ধর্মীয় উৎসবে আয়োজনটা একটু বেশিই থাকে। বেশ আগ থেকেই শুরু হয় ঈদের কেনাকাটা। ঈদের আগে একমাস জুড়ে সিয়াম সাধনা যেমন চলে, তেমন খুশির দিনে রঙিন হওয়ার জল্পনা কল্পনাও চলে পুরোদমে। তাইতো রমজানের কয়েকটা দিন যেতে না যেতেই পূর্ণ উদ্যামে জমে উঠেছে ঈদের বাজার।

রাজধানীর বিপনি বিতান গুলোতে শুরু হয়েছে উপচে পড়া ভিড়। সকাল থেকে বিক্রি তেমন না দেখা গেলেও ইফতারের আগেই বেচা-বিক্রির ভিড় বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। রোববার দুপুর থেকে বিকেল পযর্ন্ত রাজধানীর কয়েকটি মার্কেট ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর মৌচাক, আনারকলি, ফরচুন শপিং কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের নজর কাড়তে দোকানের সাজসজ্জা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের রঙিন বাতি, অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা সংবলিত রঙিন ব্যানার, বিভিন্ন ধরনের অপারের পোস্টার দিয়ে সাজিয়ে রাখছেন তারা। এসবের ফাঁক দিয়েই হয়তো উঁকি মারছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দ।

এ মার্কেট গুলোতে শিশু ও তরুণীদের জন্য ফ্রক, জিপসি, লেহেঙ্গা, থ্রিপিস, ফ্লোরটাচ, সিনথেটিক ফ্রক, কিরনমালা, সাবারিয়া জামা বিক্রি হচ্ছে। এ পোশাকগুলো দাম এক থেকে সাত হাজার টাকার মধ্যে। শাড়ির ক্ষেত্রে আছে গ্যাস সিল্ক, দোতারি সিল্ক, সিল্ক জামদানি, মিরপুরের লেহেঙ্গা শাড়ি, টাঙ্গাইলের সুতি কাতান, স্বর্ণকাতান ও বেনারসি কাতান। ছেলেদের জন্য প্যান্ট ও শার্টের পিস পাঁচশ থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১ম রমজান থেকে প্রতিদিন বেচা বিক্রি বেড়ে চলছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে ঈদের বিকিকিনি পুরোদমে জমে উঠবে।

প্রতিবছরই ঈদ উপলক্ষে বাজারে আসে বাহারি নাম ও ডিজাইনের রঙ বেরঙের পোশাক-পরিচ্ছদ। ফরচুন শপিং কমপ্লেক্সের জান্নাত ফ্যাশানের নতুন কালেকশান রয়েছে সারারা, ড্যান্সিং স্টার, বাজরঙ্গি ভাইজান, শাড়ি লেহেংগা, লংকটি, গ্রাউন স্টাইল, বিন্দাজসহ মেয়েদের বিভিন্ন পোশাক।

এখানকার বিক্রয় প্রতিনিধি মো. সাগর  জানান, এসব পোশাকই বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে তরুণীদের কাছে বেশি প্রিয় পোশাক সারারার কাটতি। এসব পোশাকের মূল্য ৩ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া এ দোকানে নারীদের পোশাকের মধ্যে ফ্লোরটাচ, সিংগেল কটি, আওয়ারাসহ বিভিন্ন পোশাক ভালো বিক্রি হচ্ছে।

এ মার্কেটের নিত্যসাজ দোকানে ছোট বাচ্চাদের জামা-কাপড়ের মধ্যে আছে মেয়ে বাচ্চোদের পার্টি ফ্রক ১৫শ থেকে ৭ হাজার টাকা দামের। প্লাজো সেট ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, স্কার্ট ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা, সুতি ফ্রক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে, গাউন সেট ৮০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে।

ছেলে বাচ্চাদের মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে মোদি সেট, বাবা সেট, জিন্স প্যান্ট, টি শার্ট। এসব পোশাক ৫ থেকে ৭শ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বড়দের থ্রিপিস, গাউন, লেহেঙ্গা, রাউন্ড ফ্রকের বেশ কদর রয়েছে বলে জানালেন নিত্য সাজের বিক্রয় প্রতিনিধি জীবন।

বর্তমানে দৈনিক ২০ থেকে ২৫  হাজার টাকার পোশাক বিক্রি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঈদের আগে বাজার জমলে বিক্রি অনেক বেড়ে যাবে। ঈদের বাজার জমে উঠলে ছোট দোকান গুলো ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার পোশাক বিক্রি করলেও বড় দোকান গুলোতে বিক্রি হয় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা।

এদিকে মৌচাকের তৌকির ফ্যাশানের বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম  জানান, বেচা-বিক্রি এখনও তেমন জমে নাই। তবে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পযর্ন্ত বিক্রি কম হলেও ইফতারের আগে বিক্রি কয়েকগুন বেড়ে যায়। এখন পযর্ন্ত  শিশুদের পোশাক আইটেমই বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে ১০ থেকে ১২ রোজার পর বড়দের পোশাকও বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছেন এই বিক্রেতা।

 

বরফ ঠাণ্ডা জাম-দইয়ের স্লাশ

সারাদিন তৃষ্ণায় ছটফট করার পর ইফতারে খাবারের চাইতে পানীয়ের প্রতিই বেশি আকর্ষণ থাকে। প্রতিদিন একই রকমের জুস বা আইসক্রিম পছন্দ না হলে চেখে দেখতে পারেন এই দুইয়ের মাঝামাঝি একটি দারুণ খাবার, ফলের স্লাশ। ফ্রেশ ফল এবং বরফের মিশেলে প্রাণ জুড়াতে স্লাশ অতুলনীয়। আজ দেখে নিন জাম এবং দইয়ের স্বাদে একটি স্লাশের রেসিপি।
উপকরণ
– ১৫/২০টা জাম, বিচি ফেলে হালকা ভর্তা করে নেওয়া
– ২ কাপ দই
– ১ চা চামচ ভ্যানিলা এসেন্স
– ১ টেবিল চামচ লেবুর রস
– ২/৩ টেবিল চামচ গুঁড়ো চিনি
– পরিবেশনের জন্য মধু এবং বাদামের কুচি
প্রণালী
১) জামগুলোকে আলদা আলাদা গ্লাসে নিন। একেকটি গ্লাসের সিকি অংশে জাম নেবেন।
২) ব্লেন্ডারে দই, ভ্যানিলা এসেন্স, লেবুর রস এবং চিনি নিন এবং ব্লেন্ড করে নিন। ভালোমত মিশে গেলে এতে আইস কিউব দিন। আইস কিউব কুচি কুচি হয়ে যাওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন।
৩) গ্লাসে রাখা জামের ওপরে দইয়ের এই মিশ্রণ দিন। এর ওপরে মধু ঢেলে দিন অল্প করে। এর ওপরে কুচি করা কাঠবাদাম এবং পেস্তাবাদাম ছড়িয়ে দিন।
ব্যস, তৈরি হয়ে গেলো বরফ ঠাণ্ডা জাম-দইয়ের স্লাশ। সাথে সাথেই পরিবেশন করুন।

 

হলিউডের নারী তারকাদের মেকআপ বিরোধী আন্দোলন

হলিউডের নারী তারকাদের যেন উন্মুক্তভাবে দেখার সময় চলছে। তবে সেটি পোশাকের ক্ষেত্রে নয়, শুধুমাত্র তাদের চেহারায় থাকছে না কোন আবরণ। এবং সেটি হচ্ছে মেকআপ। মার্কিন গায়িকা আলিসিয়া কিস এই আন্দোলনে শামিল হতে চলেছেন। তার মত প্রাকৃতিক লুকে থাকার এই আন্দোলনে আরও আগে থেকেই রয়েছেন অন্যান্য বিখ্যাত নারীরা।

আলিসিয়া সম্প্রতি একটি প্রবন্ধ লিখেছেন যার শিরোনাম ‘উন্মোচন করার সময়ে আলিসিয়া কিস’। এখানে তিনি তার চেহারায় মেকআপের আবরণ সরিয়ে প্রাকৃতিক লুকে নিজেকে মজবুত করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। আলিসিয়ার ভাষায়, ‘আমি বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বেশ উদ্বিগ্ন থাকতাম আমার চেহারা নিয়ে এবং মেকআপ নিয়ে। মেকআপ ছাড়া বের হলে যদি কেউ আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চায়, এরপর সেই ছবি যদি সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করে দেয়, এই ধরনের নিরাপত্তাহীন ভাবনায় থাকতাম।’

তবে এরপর একজন ফটোগ্রাফার তার নতুন অ্যালবাম ‘ইন কমন’-এর কভারের জন্য    মেকআপ ছাড়া ছবি তুলতে উৎসাহ দেয়। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এভাবে সামনে আসার পর থেকে নিজেকে মজবুত ভাবা শুরু করছি। কারণ আমার প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল নিজেকে উপলব্ধি করা। এরপর থেকে আমি নিজেকে কোন আবরণে আটকে রাখতে চাই না। শুধু আমার চেহারাই নয়, আমার মন, আমার আত্মা, আমার চিন্তাভাবনা, আমার স্বপ্ন, আমার পরিশ্রম এবং আমার আবেগও উন্মুক্ত রাখতে চাই।’

প্রসঙ্গত, হলিউডে মেকআপ ব্যবসা থেকে প্রচুর লাভজনক। মেকআপহীন সেলফির প্রচলন আজকাল তেমনভাবে দেখা না গেলেও এর মধ্যে কিছু তারকা এই জোয়ার থেকে আলাদা পদক্ষেপ নিয়েছেন। মেকআপ ছাড়াই তারা আসছেন ভক্ত দর্শকদের সামনে।

এই ফেব্রুয়ারিতে কিন্ডি ক্রোফোর্ড তার ৫০ তম জন্মদিনে মেকআপ ছাড়া সেলফি পোস্ট করেছিলেন সোশ্যাল সাইটে। এছাড়াও অন্যান্য নারী তারকা যেমন লেডি গাগা, সালমা হায়েক এবং কাইলি জেনারও তাদের প্রাকৃতিক চেহারা দেখিয়েছেন দুনিয়াবাসীকে।

 

খেজুর দিয়ে ইফতার করা মুস্তাহাব

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার আয়োজনে ঘরে-বাইরে হরেক রকম খাবারের পসরা বসে। ইফতার আয়োজনের সেই সব রকমারি খাবারের মধ্যে কিছু খাবার রয়েছে যা গ্রহণ করা মুস্তাহাব।

এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে— খেজুর দ্বারা ইফতার করা মুস্তাহাব। তারপর কোনো মিষ্টি জিনিস দ্বারা। তারপর পানি দ্বারা। (আবু দাউদ : হাদিস ২৩৫৫)

عن أنس بن مالك رضي الله عنه قال :كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يفطر على رطبات قبل أن يصلي، فإن لم يكن رطبات فتمرات،فإن لم يكن تمرات، حسا حسوات من ماء. رواه أحمد

আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতের পূর্বে তাজা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি তাজা খেজুর না পাওয়া যেত তবে শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি শুকনো খেজুর না পাওয়া যেত তাহলে কয়েক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন। (বর্ণনায় : আহমদ)

এ হাদিস আমাদের শিক্ষা দেয় যে, ইফতারির আদব হল, মাগরিবের নামাজের পূর্বে ইফতার করা। তাজা খেজুর বা শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করা। খেজুর দিয়ে ইফতার করার উপকারিতা হল, খেজুর সহজপ্রাপ্য। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার কারণে খাওয়ার পর যে সমস্যা হওয়ার কথা খেজুর খেলে তা হয় না। এ ছাড়াও খেজুর হালকা খাবারের একটি। পানি, খেজুর এগুলো দ্বারা ইফতার করলে আলস্য সৃষ্টি হয় না। দ্বিতীয়ত পেট পুরে পানাহার ইসলাম সমর্থন করে না।

রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন—

ما ملأ ابن آدم وعاء بطنه، بحسب ابن آدم لقيمات يقمن صلبه، فإن كان لا محالة فاعلا فثلث لطعامه، وثلث لشرابه، وثلث لنفسه. رواهالترمذي

মানুষ সে সকল পাত্র পূর্ণ করে তার মাঝে মানুষের পেট অপেক্ষা আর কোনো খারাপ পাত্র নেই। মানুষের কোমর সোজা রাখার জন্য কয়েকটি লোকমাই যথেষ্ট। এর থেকেও বেশি যদি প্রয়োজন হয়, তবে পেটের এক তৃতীয়াংশ খাদ্যের জন্য, এক তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য এবং অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাস চলাচলের জন্য রেখে দেয়া উচিত। (বর্ণনায় : তিরমিজি)

 

কুষ্টিয়ায় ট্রাকের ধাক্কায় ৪ নারী শ্রমিক নিহত

কুষ্টিয়ায় ট্রাকের ধাক্কায় তামাকের প্রোসেসিং কারখানার (বিটিসি) চার নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো পাঁচজন।

সোমবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের ভাদালিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রমিকরা হলেন- জেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার লক্ষ্মীপুর এলাকার মৃত পিতাহার মির্জার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন (৬৫), মৃত আক্কাস মণ্ডলের স্ত্রী কমেলা খাতুন (৬৩), মৃত তফায় শেখের স্ত্রী ফজিরন খাতুন (৪৫) ও একই উপজেলার মধুপুর এলাকার লিয়াকতের স্ত্রী নুখীজন নেছা (৪৭)।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন চৌধুরী জানান, সকালে তামাকের প্রোসেসিং কারখানায় (বিটিসি) কাজের উদ্দেশ্যে ওই নারীরা শ্যালোইঞ্জিনচালিত আগলামনে করে কুষ্টিয়া আসছিল। এ সময় ভাদালিয়া বাজারের কাছে পৌঁছালে পিছন থেকে একটি ট্রাক তাদের গাড়িটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই নারীর মৃত্যু হয়। এছাড়া আহত হন আরো ৬ জন যাত্রী। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে আরো দুইজনের মৃত্যু হয়।

কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়ার স্টেশন ম্যানেজার আলী সাজ্জাদ বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা উদ্ধার তৎপরতার চেষ্টা করেছি। আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

সব হারানো ফারজানার সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

রাজধানীর মিরপুরে কালশীর বিহারি ক্যাম্পে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে একই পরিবারের নয় জনসহ ১০ জনকে হত্যার ঘটনার দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। ওই ঘটনায় পল্লবী থানায় দায়ের করা ছয়টি মামলার তদন্ত এখন স্থবির হয়ে আছে। দীর্ঘ দুই বছরেও জড়িতদের কাউকেই শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। নেই তদন্তের কোনো অগ্রগতি।

নিহত ব্যক্তিদের স্বজন ও ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, কালশী বিহারি ক্যাম্পের জায়গা দখলের উদ্দেশ্যেই ১০ জনকে হত্যা করা হয়। পল্লবী থানার পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এ কারণেই প্রথমে পল্লবী থানার পুলিশ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চায়। পরে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্তভার পেলেও ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শোনেনি।

তদন্তকারীরা কয়েকজনের সাক্ষ্য নিয়েছে, অথচ তারা ঘটনাস্থলেই ছিল না। তবে ডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, অপরাধীদের ধরতে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছেন তারা। সেই তদন্তে এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি।

এদিকে সেদিনের হামলায় পরিবারের নয় সদস্যকে হারানো কিশোরী ফারজানাকে এখনো তাড়া করে ফেরে সেই দুঃসহ স্মৃতি। পরিবারের কেউ বেঁচে না থাকায় সে এখন মোহাম্মদপুরে এক খালুর বাসায় আছে।

গত বছরের ১৩ জুন শবেবরাতের রাতে পটকা ফোটানো নিয়ে পল্লবীর কালশী এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ভোরের দিকে কালশীর বিহারি ক্যাম্পের একটি বাড়িতে আগুন ধরে যায়। এতে আগুনে পুড়ে ও গুলিবিদ্ধ হয়ে ১০ জন মারা যায়। তাদের মধ্যে একই পরিবারের নয় জন রয়েছে।

নিহতরা হলো- ইয়াসিন আলীর স্ত্রী বেবী আক্তার (৪৫), ছেলে আশিক (২৫), তিন মেয়ে শাহানি (২০), আফসানা (১৮), রুখসানা (১৪), যমজ ছেলে লালু (১২) ও ভুলু (১২), পুত্রবধূ শিখা (১৯) এবং শাহানির ছেলে মারুফ (৩)। এছাড়া ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আজাদ নামে এক শ্রমিক নিহত হন।

স্বজনদের অভিযোগ, হামলায় সরাসরি অংশ নেয়া সন্ত্রাসী ও এর নেপথ্যে কারা ছিল, তা সবাই জানে। তারা সবাই ছিল বাউনিয়া বাঁধ এলাকার সরকারদলীয় লোকজন, যারা স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লার সহযোগী। পুলিশ তাদের সঙ্গে মিলেই হামলা চালায়। পরে তদন্তে নেমে পুরো ঘটনাই ধামাচাপা দিতে চায়। ডিবি পুলিশ তদন্ত করেও রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে না। দুর্বৃত্তরা নয়টি ঘরের দরজায় বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে আগুন দেয়। এ ঘটনায় ১০ জন মারা গেলেও পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে চায়নি।

পরে ওই ঘটনায় পল্লবী থানায় ছয়টি মামলা হয়। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়েছে চারটিতে। বাকি দুটি মামলার বাদী হয়েছেন মোবারক হোসেন নামে এক ব্যক্তি ও স্থানীয় এক চা বিক্রেতা। পাঁচ মামলাতেই আসামি করা হয়েছে হামলার শিকার ক্যাম্পের বাসিন্দাদের। আসামির সংখ্যা তিন হাজার ৭১৪। তবে পুলিশের দায়ের করা হত্যা মামলার আসামি অজ্ঞাত। বাকি মামলাগুলো হয়েছে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে।

উর্দু স্পিকিং ইয়ুথ পিপলস রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্টের দপ্তর সম্পাদক ইমরান খান  বলেন, ‘বিহারি ক্যাম্পের জায়গা দখল করতেই হামলা করা হয়। আগুনে পুড়ে ও গুলিতে মারা গেছে বিহারিরা। অথচ মামলায় এই সম্প্রদায়ের লোকজনকেই আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর সাতজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু এখনও কোনো বিষয়ে কথা বলতে গেলে ওইসব মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখানো হয়।’

তিনি বলেন, ‘গত বছরের জুনে তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের সঙ্গে দেখা করেন। তখন তারা মন্ত্রীকে সেই ঘটনার কিছু ভিডিওচিত্র দেন। তাতে দেখা যায়, পুলিশের উপস্থিতিতেই বিহারি ক্যাম্পে আগুন দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। সে সময় মন্ত্রী এক মাসের মধ্যেই ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। এক বছরেও সেই তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।’

ডিবির উপ-কমিশনার (পশ্চিম) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘কালশীর সংঘর্ষ-সহিংসতার ঘটনার মামলাগুলোর তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। সবগুলো মামলাই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হলে কারা জড়িত বা প্রকৃত ঘটনা কী তা বলা যাবে না।’

স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করছেন, তদন্তভার পাওয়ার পর স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশ ও সরকারদলীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে ডিবির তদন্তকারীরা। তাদের মধ্যে ইসলাম নামের একজন ছিলেন, যিনি ঘটনার সময় দিনাজপুরে ছিলেন। ঢাকায় ফেরেন পাঁচদিন পর। এভাবে ডিবি পুলিশ অনেকের বক্তব্য নিয়েছে, যারা প্রত্যক্ষদর্শী নয় এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ থাকলেও তা আমলে নেয়নি তদন্তকারীরা।

দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে মা, তিন ভাই, তিন বোন, ভাবি ও ভাগ্নের সঙ্গে দগ্ধ হয়েছিল কিশোরী ফারজানা আক্তার। সৌভাগ্যবশত সে বেঁচে গেলেও মারা যায় পরিবারের নয়জন। বেঁচে ছিলেন তার বাবা ইয়াসিন মিয়াও। তবে আগুন দেয়ার ঘটনার আড়াই মাস পর আকস্মিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় তারও মৃত্যু হয়।

এখন খালা সাহিদা বেগম ও খালু আসলাম খানের সঙ্গে তাদের মোহাম্মদপুর মার্কেট ক্যাম্পের বাসায় থাকছে ফারজানা। সে স্থানীয় একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ফারজানা  বলে, ‘সেই কথা মনে পড়লে আমার ভয় লাগে। সাংবাদিকদের বলে কী লাভ! যারা মারছে তাদের তো বিচার হয় না।’

সে জানায়, পড়ালেখা শেষ করে সে দুস্থ-অসহায় মানুষের সেবায় কাজ করতে চায়। সবার দোয়ও চায় সে।

ফারজানার খালু সেলুনকর্মী আসলাম খান  বলেন, ‘ছোট্ট একটি ঘরে তারা সাতজন থাকেন। তার সামান্য আয়ে সংসারের খরচ ও ফারজানার লেখাপড়া চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। প্রথমে কিছু সহায়তা পাওয়া গেছে। যা ফারজানার চিকিৎসায়ই খরচ হয়ে গেছে। এখন মেয়েটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা।

 

ইসলামি পটভূমিতে বিয়ে : কোরান মাজিদের নির্দেশনা

ইসলাম কেবল একটি ধর্মই নয়; বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এটি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের মত সমাজ জীবনেরও পুরোপুরি নির্দেশনা প্রদান করে। আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া পেতে হলে আমাদেরকে এসব বিধি-বিধান সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখতে হবে এবং তা পালনে সচেষ্ট হতে হবে। প্রত্যেক মুসলমানের একটি সামাজিক দায়িত্ব হল পারস্পরিক শ্রদ্ধবোধ, সাম্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। এই দায়িত্ব ও কর্তব্যের সূচনা হয় ইসলামি মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি পরিবার গঠনের মাধ্যমে। সুদৃঢ় পারিবারিক বন্ধনের ভিত্তিতে গঠিত একটি পরিশীলিত পরিবার ইসলামি সমাজের কেন্দ্রবিন্দু। এভাবে বিয়ে একজন মুসলমানের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি ইসলামের পরিশীলিত পারিবারিক জীবনের বুনিয়াদ, যা একজন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে প্রতিযোগিতা নয়; বরং পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।

ইসলাম প্রত্যেক ব্যক্তিকে বিয়ে করতে এবং পরিবার গঠন করতে উদ্বুদ্ধ করে। এটি স্বামী ও স্ত্রীর যথার্থ অধিকারের নিরাপত্তা বিধান করে, যারা পরবর্তীতে তাদের ছেলেমেয়ের সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। আর এভাবেই একটি সুস্থ পরিবার ও সুস্থ সমাজ বিনির্মিত হয় এবং সমাজের প্রতিটি সদস্যের অধিকার নিরাপত্তা সংরক্ষিত হয়।

ইসলামি ফিকাহশাস্ত্রে বিয়ে সংক্রান্ত কিছু সাধারণ নীতিমালা বিধৃত হয়েছে। সকল প্রাপ্তবয়স্ক সাধারণ মুসলমানের জন্যে বিয়ে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। যদি কারও মধ্যে স্ত্রী সঙ্গ লাভের বাসনা উদগ্র হয় এবং বিয়ে না করলে পাপে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়, তবে তার জন্যে বিয়ে করা ওয়াজিব। অবশ্য যে ব্যক্তি পরিবারের ভরণ পোষণ প্রদানে অক্ষম কিংবা কোন উপযুক্ত পাত্রী খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয় তার জন্যে বিয়ে করা মাকরূহ (অপছন্দনীয়)।

কোরান মাজিদ আমাদেরকে বিয়ে সংক্রান্ত মৌলিক নীতিমালা প্রদান করেছে এবং রাসূলের সুন্নাহ এ সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা তুলে ধরেছে। নিম্নে কোরান মাজিদের কিছু বুনিয়াদী নীতিমালা তুলে ধরা হল:

কোরান মাজিদের নির্দেশনা
আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিয়ে দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী। আর যাদের বিয়ের সামর্থ নেই আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে। (আন-নূর, ২৪:৩২-৩৩)

এই আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কেবল দুই কারণে বিয়ে বিলম্বিত হতে পারে; উপযুক্ত সঙ্গী খুঁজে না পাওয়া কিংবা পরিবারের ভরণ পোষণ প্রদানে অক্ষম হওয়া। যদি এই দুই শর্ত পাওয়া না যায় তবে তাহলে বিয়ে করা আল্লাহ তাআলার আদেশে পরিণত হয়, যা পালন ও অনুসরণ করা আবশ্যক।

আর যদি কেউ কোন কারণে বিয়ে করতে না পারে, তাহলে কোরান আমাদেরকে আমাদের প্রবৃত্তির বাসনাকে নিয়ন্ত্রণ ও ইসলামের সংযম ও পবিত্রতার নীতিমালা অনুসরণের আদেশ প্রদান করে। যা উপর্যুক্ত আয়াতের দ্বিতীয় অংশে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কোরান মাজিদে আরও ইরশাদ হয়েছে:

নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফ, সদাচার ও নিকটাত্মীয়দের দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও সীমালঙ্ঘন থেকে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।

বল, আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ- যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরিক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেন নি এবং আল্লাহর উপর এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না। (আল-আরাফ, ৭:৩৩)

আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ। (বনি ইসরাঈল, ১৭:৩২)

বিয়ের জন্য ইসলাম সর্বপ্রথম যে শর্ত প্রদান করেছে তা হল একজন ঈমানদার কেবল একজন ঈমানদারকেই বিয়ে করতে পারবে। অমুসলিমকে বিয়ে করার অনুমতি ইসলামে নেই। কোরান মাজিদে ইরশাদ হয়েছে :

আর তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে এবং মুমিন দাসী মুশরিক নারীর চেয়ে নিশ্চয় উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। আর মুশরিক পুরুষদের সাথে বিয়ে দিয়ো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। আর একজন মুমিন দাস একজন মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। তারা তোমাদেরকে আগুনের দিকে আহবান করে, আর আল্লাহ তাঁর অনুমতিতে তোমাদেরকে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন এবং মানুষের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে। (আল-বাকারা, ২:২২১)

ইসলাম আহলে কিতাবদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নিয়ম রেখেছে। তা আমাদেরকে ধার্মিক ও পূতঃপবিত্র রমণীদের বিয়ের অনুমতি দেয়, এমনকি আহলে কিতাবদের মধ্য থেকেও। তা আরও বলে যে, এধরনের ক্ষেত্রে কোন অসদিচ্ছা কিংবা জাগতিক সম্পদ অর্জন উদ্দেশ্য থাকবে না। বরং, পবিত্রতার সংরক্ষণই হবে মূল উদ্দেশ্য। কোরান মাজিদে ইরশাদ হয়েছে :

আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের পূর্বে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের সচ্চরিত্রা নারীদের সাথে তোমাদের বিবাহ বৈধ। যখন তোমরা তাদেরকে মোহর দেবে, বিবাহকারী হিসেবে, প্রকাশ্য ব্যভিচারকারী কিংবা গোপনপত্নী হিসেবে নয়। (আল- মায়েদা, ৫:৫)

এই আয়াত থেকে পরিষ্কার হয় যে, প্রথম যে গুণ কোন ব্যক্তি একটি পাত্রীর মধ্যে অনুসন্ধান করবে তা হল চারিত্রিক পবিত্রতা ও ধর্মানুরাগিতা। কোরান মাজিদ আমাদেরকে এ বিষয়েও সতর্ক করে যে, যদি আমরা একজন পূতঃপবিত্র ও ধার্মিক পাত্রী কামনা করি তবে আমাদেরকেও আমাদের আচার আচরণে পরিশুদ্ধ ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী ধার্মিক হতে হবে। আল-কোরানে ইরশাদ হয়েছে :

দুশ্চরিত্রা নারীরা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা নারীদের জন্য। আর সচ্চরিত্রা নারীরা সচ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষরা সচ্চরিত্রা নারীদের জন্য; লোকেরা যা বলে, তারা তা থেকে মুক্ত। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিয্ক। (আন্ নূর, ২৪:২৬)

এসব আয়াত থেকে বুঝা যায়, ইসলামে বিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কিছু সাধারণ বিশ্বাস ও সমন্বিত মূল্যবোধের ভিত্তিতে কায়েম হয়ে থাকে। এগুলো বিয়ের মূল বুনিয়াদ ও ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। যতদিন এই ভিত্তি বিদ্যমান থাকে তাদের মধ্যে মায়া মমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। একারণে ইসলামে বিয়ে একটি খুব টেকসই প্রতিষ্ঠান। পক্ষান্তরে, পশ্চিমা সমাজে বিয়ে কেবল তুচ্ছ ভালবাসা ও নারী পুরম্নষের মধ্যে প্রণয়মূলক আকর্ষণের ভিত্তিতে সম্পন্ন হওয়া একটি বিষয়। যখন একজন পুরুষ ও নারীর মধ্যে ভালবাসা চরম পর্যায়ে পৌঁছে তখন তা তাদের বিয়ের ক্ষেত্রে মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। এভাবে তাদের সমাজে পুরো বিয়ের প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে একটি বৈষয়িক আবেগ-উচ্ছাসের ভিত্তির উপর। বাস্তবতা প্রমাণ করে যে, এটি বিয়ের জন্যে একটি নেহায়েত দুর্বল ও নড়বড়ে ভিত্তি।

ইসলামে একাধিক বিয়ে
ইসলামে কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে একাধিক বিয়ের অনুমতি রয়েছে। বস্ত্তত: কোরান মাজিদ এই শর্তে কোন ব্যক্তিকে তার অনুমতি দেয় যে, তাকে অবশ্যই সকল স্ত্রীর সাথে ন্যায্য আচরণ করতে হবে। যদি কেউ ভয় করে যে, সে তা করতে পারবে না, তখন তাকে কেবল একজন স্ত্রী নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কোরান মাজিদ বলে:

আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতিমদের ব্যাপারে তোমরা ইনসাফ করতে পারবে না, তবে তোমরা বিয়ে কর নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমার ভাল লাগে; দুটি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটি অথবা তোমাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে। এটা অধিকতর নিকটবর্তী যে, তোমরা যুলম করবে না। (আন-নিসা, ৪:৩)

একাধিক বিয়ে সমাজকে অনেক দুষ্কর্ম থেকে রক্ষা করে। যাদের অতিরিক্ত শারিরীক চাহিদা রয়েছে, তাদেরকে এই আয়াত একাধিক স্ত্রী রাখার অনুমতি প্রদান করে, যা সমাজকে ধর্ষণ, ব্যভিচার, অনাচার ইত্যাদির মত নানা অপকর্ম এবং সকল প্রকার সামাজিক ষড়যন্ত্র ও হিংসা বিদ্বেষ থেকে রক্ষা করে। একাধিক বিয়ে সমাজে অনেক নারীর অধিকারকেও সংরক্ষণ করে। একজন নারী দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হয়ে তার বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে অক্ষম হতে পারে। তাছাড়া, কোন কোন ক্ষেত্রে একজন স্ত্রী স্বামীর ইচ্ছানুসারে সন্তান ধারণ করতে পারে না, একাধিক বিয়ের বিধি এমন নারীদেরকে তালাক প্রদানের অনুমতি নয়, বরং দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি প্রদান করে। অধিকন্তু, যুদ্ধের কারণে অনেক সময় পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা অধিক হয়ে থাকে কিংবা পিতাহারা সন্তানসহ অনেক বিধবা নারী থাকে। একাধিক বিয়ের বিধান তাদেরকে তাদের সন্তানসহ দ্বিতীয়বার পরিবার গঠনের সুযোগ করে দেয়। সর্বোপরি, একাধিক বিয়েপ্রথা সমাজ থেকে পতিতাবৃত্তির মত দুষ্কর্ম উচ্ছেদ করতে সহায়তা করে। উল্লেখ্য যে, স্বাভাবিক অবস্থায় একাধিক বিয়ে না পছন্দনীয়, আর না তার প্রতি ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে। অধিকন্তু, ইসলাম একজন স্ত্রীকে তার বিবাহ ভেঙ্গে ফেলার অধিকার দিয়েছে, যদি সে তার স্বামীর কাছে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে থাকতে অপছন্দ করে। এজন্যেই বস্ত্ততঃ মুসলিম সমাজে একাধিক বিয়ের প্রচলন রয়েছে।

ইসলাম আরও বলে যে, একজন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে সর্বাধিক অন্তরঙ্গ ও প্রেমময় সম্পর্ক থাকতে হবে। প্রত্যেককে অপর সঙ্গীর স্বার্থ সংরক্ষণ, গোপনীয়তা রক্ষা ও তার নিরাপত্তা বিধান করতে হবে। কোরান মাজিদ বলে:

তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। (আল-বাকারা, ২:১৮৭)

এই আয়াতটি ইসলামে বিয়ের মৌলিক ধারণার বর্ণনা প্রদান করে।

প্রথমত, পুরুষ ও নারীকে বিবেচনা করা হয়েছে পরস্পর পরস্পরের পোশাক হিসেবে, যা নির্দেশ করে যে, বিয়ের দায়িত্ব ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে উভয়ের সমান মর্যাদা রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, পোশাক শরীরকে এমনভাবে আবৃত করে যে, পোশাক ও শরীরের মধ্যে কোন অন্তরাল থাকে না। স্বামী এবং স্ত্রীকেও এমন কাছাকাছি ও অন্তরঙ্গ হতে হবে যে, তাদের মধ্যে কোন গোপনীয়তা থাকবে না। উভয়কে পরস্পরের উপর পূর্ণরূপে বিশ্বাস রাখতে হবে এবং স্ব স্ব জীবনের কোন বিষয়কে গোপন রাখা যাবে না।

তৃতীয়ত, পোশাকের কাজ হল, শরীরকে বাহ্যিক বিপদাপদ ও ক্ষতিকর বিষয় থেকে রক্ষা করা। অনুরূপভাবে, স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরকে সব ধরনের বাহ্যিক বিপদাপদ থেকে রক্ষা করবে।

চতুর্থত, একটি পোশাক কেবল শরীরকে আচ্ছাদিতই করে না, বরং তার সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে থাকে। অনুরূপভাবে, স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরকে আচ্ছাদন ও প্রতিরক্ষার চেষ্টাই করবে না, বরং তার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির চেষ্টাও করবে।

উপরন্তু পোশাক ব্যতিত কেউ থাকতে পছন্দ করে না। অতএব পুরুষদেরকে নারীদের বিয়ে করার প্রতি উৎসুক থাকতে হবে যাতে একে অপরকে পোশাকের ন্যায় উপকৃত করতে পারে। কোরান মাজিদ আরও বলে,

আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই সৃষ্টি করেছেন স্ত্রীদেরকে, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য যারা চিন্তা করে। (আর-রূম, ৩০:২১)

তিনিই সেই সত্ত্বা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক ব্যক্তি থেকে এবং তার থেকে বানিয়েছেন তার সঙ্গিনীকে, যাতে সে তার নিকট প্রশান্তি লাভ করে। (আল আরাফ, ৭:১৮৯)

এই আয়াতগুলো ইসলামে বিয়ের রঙ-রূপ সম্পর্কে আরও সবিস্তার বিবরণ প্রদান করে। এটি পারস্পরিক ভালবাসা, সঙ্গ ও সুসামঞ্জস্যপূর্ণ ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক। স্বামীর মধ্যে স্ত্রী এমন এক ব্যক্তিকে খুঁজে পায় যার সাথে সে তার ভালবাসা ভাগাভাগি করতে এবং যার কাছে সে তার নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা কামনা করতে পারে। অনুরূপভাবে, স্বামীও একটি শান্তিপূর্ণ নীড় ও প্রাত্যহিক জীবনের দুঃখ কষ্ট থেকে বেরিয়ে একটি প্রশান্তিপূর্ণ আশ্রয়স্থল রচনা করতে স্ত্রীর সহযোগিতা ও স্বান্তনা কামনা করে।

মূল : ড. মাজহার ইউ কাজি
বাংলা অনুবাদ : মাওলানা ফয়জুল্লাহ মুজহিরি
সম্পাদনা : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক

 

রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করলে কি হয় ?

যারা ঈমানদার, তারা যখন আল্লাহর নাম নেয়, নরম হয় তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে কুরআন পাঠ করা হয়, তাদের ঈমান সজীব হয়ে ওঠে, তারা মওলার প্রেমে আত্মনিবেদিত হয়। (সুরা আনফাল : ২)

দুয়ার খুলেছে রহমতের। শুরু হলো রমজান। রহমতের উৎসব। রমজানের অবারিত রহমতে ভরে যাক আমাদের জীবন। যে কুরআনের প্রেমময়তায় আজ রমজান রহমতে ভরপুর, কুরআনের মুগ্ধতায় লাইলাতুল কদর হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ রাত! কুরআন এসেছিল বলে মক্কা-মদিনা পৃথিবীর মর্যাবান শহর! কুরআনের নবি হজরত মুহাম্মদ নবিদের সরদার! কুরআনের সেই প্রেম, মুগ্ধতা ও মর্যাদা আমাদের কতোাঁ আলোকিত করেছে?

মাস, রাত আর মক্কা-মদিনার মর্যাদা বাড়াতে কুরআন আসেনি পৃথিবীতে। কুরআন এসেছে মানুষের জীবন রাঙাতে। শুধু রাত শ্রেষ্ঠ হবে না; কুরআনের মানুষেরাও হবে আশরাফুল মাখলুকাত। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষ। কুরআন সে তো আল্লাহ প্রেমের চিঠি। পাঠে পাঠে সজীব হয় দেহমন। যোগায় আত্মিক শক্তিও। প্রেমের চিঠি প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালাও বলেন,

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ

যারা ঈমানদার, তারা যখন আল্লাহর নাম নেয়, নরম হয় তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে কুরআন পাঠ করা হয়, তাদের ঈমান সজীব হয়ে ওঠে, তারা মওলার প্রেমে আত্মনিবেদিত হয়। (সুরা আনফাল : ২)

পবিত্র রমজানে পৃথিবীর ২৫ লাখ মসজিদে কুরআনুল কারিমের তেলাওয়াত হয়। এদেশের প্রায় ৫ লাখ মসজিদে তারাবির নামাজেও ভাব আবেগ ও মুগ্ধতায় পাঠ হয় পবিত্র কুরআন। হজরত রাসুল সা. বলেন,

عن عبد الله بن مسعود رضي الله عنه قال: قال رسول الله : (من قرأ حرفاً من كتاب الله فله به حسنة، والحسنة بعشر أمثالها، لا أقول: الم حرف، ولكن ألف حرف، ولام حرف، وميم حرف).

অর্থ, কুরআন তেলাওয়াতকারী প্রতিটি বর্ণে দশটি সওয়াব পায়। আমি বলছি না, ‘আলিফ লাম মিম’ এর মধ্যে একটি অক্ষর। বরং আলিফ আলাদা, লাম আলাদা, মিম আলাদ বর্ণ। প্রতিটির জন্য ভিন্ন সওয়াব। (সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩০৭৫)

সওয়াবের নেশায় রাতজাগা চোখ-কান শুনবে তেলাওয়াত। বরাবরের মতো হাফেজ সাহেবরা কুরআন পাঠ করবেন। আমরা শুনবো। মনভরে উপভোগ করবো কুরআনের সুর। নেকি লাভ করবো। কিন্তু আমরা যদি কুরআনের চর্চায় আত্ম নিয়োগ করি। বিশুদ্ধ পাঠের সঙ্গে সঙ্গে কুরআনের ভাব ভাষা অনুধাবন করি; দীর্ঘ জীবনে আমিও হয়ে ওঠতে পারি কুরআনের একজন ছাত্র। কুরআনের অলিগলি ভ্রমণকারী শিক্ষার্থী। আমাদের যাপিত জীবনে কুরআন হয়ে ওঠবে আরাধ্য।

কুরআনের উৎসবমুখর মাস রমজান। মানুষ হেদায়াতের প্রত্যাশায় মুখিয়ে থাকে। রমজানে মসজিদ ভরে যায় মুসল্লিতে। ফরজ নামাজ তো বটেই, তারাবি হয়ে ওঠে কুরআনের উৎসব। ইফতার উপলক্ষেও কানায় কানায় ভরে যায় মসজিদ। রোজার জুমায় মানুষের ঢল। কিয়ামুল লাইল বা শেষ রাতের তাহাজ্জুদেও মসজিদ প্রাণবন্ত থাকে। মসজিদমুখী মানুষেরা কুরআনের আলোয় জীবন রাঙাতে চায়। হেদায়াতের নেশায় ব্যাকুল মানুষেরা শুনতে চায় কুরআনের মর্মকথা। কুরআনের ইতিহাস ও গল্পে ফিরে যেতে চায় আগের নবি-রাসুলদের জীবনে। জান্নাতের হৃদয়কাড়া বর্ণনা ও জাহান্নামের ভয়াবহতা কুরআনের ভাষায় স্বাদ নিতে চায় মানুষেরা। কুরআনের পরিবার ও সমাজনীতি শিখতে চায় মুসল্লিরা। ইসলামের জীবন সৌন্দর্য্য কুরআনে কিভাবে আছে? আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনায় কুরআনের মনোভাব কী? এমনসব প্রশ্নের জবাব জানতে আগ্রহী মানুষেরা। আল্লাহর প্রেমে মজে থাকার এই প্রেমপত্র পাঠ করে বুঝতে চায় অভাগারা। কিন্তু কই? কে শোনাবে তাদের কুরআনের গল্প? কে দিবে কোটি পিপাসার্ত হৃদয়ে কুরআনের সবক?

দেশের প্রতিটি মসজিদে ইমাম-খতিব, বিজ্ঞ আলেম, মুফতি, মুফাসসিরগণ যদি মসজিদমুখী মানুষদের এই প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে আসতেন! সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি মানুষকে কুরআনের ছাত্রে পরিণত করতেন! প্রতিদিন তারাবির আগে-পরে বা অন্য কোনো সময় ধারাবাহিক বলতেন আজকের পঠিত আয়াতের তরজম-তাফসির বা কুরআনের বিশেষ আলোচনা! প্রতিদিন যদি বসতো কুরআনের উৎসব! মানুষ কুরআন চর্চায় অভ্যস্থ হয়ে উঠতো। যাপিত জীবনে আসতো কুরআনিক ছোঁয়া। জীবনে এমন কয়েকটি রমজান পেলে কুরআনময় হয়ে ওঠতো প্রতিটি মানুষের জীবন। রমজান শেষে মুসল্লিশূন্য হতো না মসজিদগুলো। কুরআনের পরশে বছরব্যাপী প্রাণবন্ত থাকতো মানুষের মন। কিন্তু কুরআনের কার্যকর প্রেম, ভালোবাসা, অর্থ ও মর্ম বোঝার গতি ক্রমেই কমে আসছে আমাদের জীবনে। শিল্পনন্দিত মুদ্রিত কুরআন বুকে নয়, আমরা সাজিয়ে রাখি শোকেসে। মাঝে-মধ্যে চুমো খেয়ে সম্মান জানাই। এমনও হয়, শ্রদ্ধাভরে ঘরের কুরআনটি পাঠিয়ে দিই মসজিদে। বাসা-বাড়িতে এত সামগ্রীর ভিড়ে কুরআন রাখবো কোথায়! ওই আদুরে ছেলের মতো, যে মাকে উদ্দেশ্য করে বলে, বাসায় তোমার কষ্ট হয়, বৃদ্ধাশ্রম ভালো লাগবে। বৃদ্ধ বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমের জীবন্ত কবরে পাঠিয়ে ছেলে যে তৃপ্তি পায়, ঘরের কুরআন মসজিদে পাঠিয়েও আমাদের সে রকম উপলব্ধি। সত্যিই কুরআনের মর্মকথা আমরা বুঝি না। খুব সহজে রঙিন মোড়কে আমরা কুরআন পেয়েছি বলে। বুখারি শরিফে আছে-

قال عبد الله بن عباس كنت أنا وجار لي من الأنصار في بني أمية بن زيد وهم من عوالي المدينة وكنا نتناوب النزول على النبي صلى الله عليه و سلم فينزل يوما وأنزل أنا فإذا نزلت جئته بما حدث من خبر ذلك اليوم من وحي أو غيره وإذا نزل فعل مثل ذلك

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেন, বনু উম্মায়ার আনসারী প্রতিবেশী ও আমি কুরআনের আয়াতের জন্য পালা বদল করে নবিজির দরবারে আসা যাওয়া করতাম। এমন হতো, একদিন আমি যেতাম, আরেক দিন তিনি। আমরা নবিজির দরবার থেকে শুনে আসা কুরআন পরস্পর শোনাতাম।

একটি আয়াতের জন্য সাহাবির দিনের পর দিন পথে অপেক্ষার কষ্ট আমরা কি অনুভব করতে পারব?

আল্লাহ বলেন,

كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِيَدَّبَّرُوا آيَاتِهِ وَلِيَتَذَكَّرَ أُولُو الْأَلْبَابِ

এক কল্যাণময় কিতাব আমি অবতীর্ণ করেছি। যাতে মানুষ কুরআন অনুভব করে। বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা তা উপদেশ হিসেবে গ্রহণ করে। (সুরা সদ : ২৯)

মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব
প্রিন্সিপাল, জামিয়াতুস সালাম ঢাকা

 

কেমন হওয়া উচিত আপনার বিজনেস কার্ড?

একটি বিজনেস কার্ড শুধু যে আপনার তথ্য দেয় তাই নয় এটির মাধ্যমে আপনি তুলে ধরেন আপনার পরিচয়। তাই যেমন-তেমন করে কখনই বিজনেস কার্ড তৈরি করা ঠিক নয়। বরং কার্ডটি হওয়া উচিত এমন যা আপনার সম্পর্কে সঠিক তথ্য তো দেবেই এর পাশাপাশি আপনার ভিন্নতাকেও তুলে ধরবে অন্যের কাছে কার্ডটিকে এর আকৃতি, রঙ, ধরণ দিয়ে যেমন অনন্য করে তুলতে পারেন তেমনি তথ্যের ক্ষেত্রেও যাতে উদ্দেশ্য সফল হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
আসুন জেনে নিই, বিজনেস কার্ডকে অনন্য করতে এর কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত।
 
১। লোগো এবং ট্যাগলাইন
আপনার বিজনেস কার্ডে অবশ্যই আপনার প্রতিষ্ঠানের লোগো থাকতে হবে। তার সাথে থাকবে একটি ট্যাগ লাইন। এই দুইয়ের সমন্বয়ে যাতে সহজেই বোঝা যায়, আপনার প্রতিষ্ঠানের কাজ কী, এখান থেকে কী কী সেবা পাওয়া যাবে বা যাকে কার্ডটি দিচ্ছেন তার আগ্রহের কী আছে আপনার প্রতিষ্ঠানে। মোট কথা, এক দেখায় যেন পরিচয় হয়ে যায় আগন্তুক ব্যক্তিটির আপনার প্রতিষ্ঠানের সাথে।
 
২। নাম এবং পদবী
অবশ্যই এই দু’টি বিষয় যুক্ত হবে আপনার কার্ডে। তবে আপনার সার্টিফিকেটে যদি এক নাম থাকে আর আপনি যদি সাধারণভাবে অন্য নামে পরিচিত হন তাহলে সেই ডাকনামটি জুড়ে দিন কার্ডে। অবশ্য প্রতিষ্ঠান যদি আপনার নিজস্ব হয় তাহলেই এমনটি করুন। কারণ চাকরীক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক নামেই পরিচিত হতে হবে আপনাকে। নিজের পদবী দিন নামের নিচেই। সেটি হওয়া চাই এমন একটি শব্দ যা প্রকাশ করে আপনার দায়িত্ব।
৩। যোগাযোগের তথ্য
আপনার সাথে যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিন। তবে কয়েকটি ইমেইল আইডি ব্যবহার করলে প্রত্যেকটিই দেবেন না ভুলেও। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে যে আইডিটি ব্যবহার করেন সেটিই দিন কেবল। ফোন নম্বরের ক্ষেত্রেও তাই করুন।
৪। ওয়েবসাইট
বিজনেস কার্ডে আপনার ওয়েব এড্রেস দিন। কিন্তু আপনি নিশ্চই চান আপনার এড্রেসটি টাইপ করে মানুষটি আপনাকে খুঁজে বের করুক। সেজন্য খেয়াল করুন আপনার ওয়েবসাইটের URL যেন ছোট হয়, সহজেই টাইপ করা যায়।
৫। সোশ্যাল মিডিয়া প্রফাইল
আপনার ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন সব মিলিয়ে ৮/১০টি প্রফাইল থাকতে পারে। কিন্তু বিজনেস কার্ডে কি তার সবই তুলে দেবেন? বিজনেস কার্ড যথাসম্ভব সিম্পল হওয়া খুবই জরুরি। তাই শুধু সেই প্রফাইলের লিঙ্কটিই দিন যা আপনার ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব তুলে ধরে।
৬। White Space
বিজনেস কার্ডে হোয়াইট স্পেস থাকা খুবই জরুরি। কার্ডটি কোন ভাবেই যেন চোখে বিরক্তি তৈরি না করে। আপনার লেখার ফন্ট, রঙ, অবস্থানে এমন সমন্বয় থাকা জরুরি যাতে সেটি দৃষ্টিনন্দন হয়। এবং অবশ্যই যেন কিছু অংশ ফাকা থাকে। এর মানে এই নয় যে, কার্ডটির একটি অংশ সাদা থাকবে। রঙ যে কোনটাই হতে পারে, প্রয়োজন ফাকা কিছু জায়গা যা কার্ডের সিমপ্লিসিটি বজায় রাখে।
৭। সৃষ্টিশীলতা
কার্ডটি অন্য আর দশজনের বিজনেস কার্ডের মাঝে বিশেষ করে স্মরনীয় করতে এত যোগ করুন কিছু সৃজণশীল আইডিয়া। রংটি হতে পারে এমন যাতে আলাদা করে মনে থাকে, চোখে লাগে লোগোটি। অথবা ভিন্নতা আসতে পারে আকারে। সবার কার্ড কেন হতে হবে একঘেয়ে চারকোণা? একটা ভিন্ন আইডিয়ার কার্ড মুহুর্তেই আপনার এবং আপনার প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে আগ্রহ বাড়িয়ে দেবে অপরিচিত মানুষটির।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

খুব সহজে তৈরি করুন মজাদার চিকেন টিক্কা

চিকেন টিক্কা কাবাবের নাম শুনলেই জিভে পানি চলে আসে। অনেকেই রেস্টুরেন্টে গেলে এই খাবারটি অর্ডার করে থাকেন। নান রুটি, পরোটা, এমনকি সাধারণ রুটির সাথে মানিয়ে যায় এই খাবারটি। কিন্তু সবসময় রেস্টুরেণ্টে যাওয়া সম্ভব হয় না। তখন উপায়? আপনি চাইলে খুব সহজে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন দারুন স্বাদের চিকেন টিক্কা কাবাব। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক চিকেন টিক্কা কাবাবের সহজ রেসিপিটি।

উপকরণ:

  • ৩০০ গ্রাম হাড়ছাড়া মুরগির বুকের মাংস (কিউব করে কাটা)
  • ১ টেবিল চামচ ধনিয়া গুঁড়ো
  • ১ চা চামচ মরিচ গুঁড়ো
  • ১/২ চা চামচ গরম মশলা
  • লবণ
  • ১ টেবিল চামচ আদা রসুনের পেস্ট
  • ৪ টেবিল চামচ টকদই
    ১টি লেবুর রস
  • ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
  • ১টি পেঁয়াজ কিউব করে কাটা
  • ১টি ক্যাপসিকাম কিউব করে কাটা
  • ২ টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি
  • এক চিমটি খাবারের রং

প্রণালী:

১। একটি পাত্রে মুরগির মাংস, টকদই, পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম, গরম মশলা, মরিচ গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, লবণ, আদা রসুনের পেস্ট এবং লেবুর রস দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।

২। এরপর এতে অলিভ অয়েল, ধনেপাতা কুচি, খাবারের রং দিয়ে আরও কিছুক্ষণ মাখুন।

৩। মুরগির মিশ্রণটি মেরিনেট করার জন্য ফ্রিজে ২-৩ ঘন্টা রেখে দিন। যতো বেশি সময় ফ্রিজে রাখতে পারবেন তত ভাল।

৪। এবার শাসলিক কাঠি বা শিকে মেরিনেট করা মুরগির টুকরো, ক্যাপসিকামের টুকরো এবং পেঁয়াজের টুকরো দিয়ে সাজিয়ে নিন।

৫। ওভেন ২৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে প্রি হিট করে নিন।

৬। এবার কাবাবের কাঠিগুলো ওভেনে ১৫-২০ মিনিট বেক করুন। মাংস নরম হয়ে বাদামী রং হয়ে এলে বের করে ফেলুন।

৭। আপনি চাইলে এটি গ্যাসের চুলায় করতে পারেন। গ্যাসের চুলায় একটি গ্রিল ফ্রাইংপ্যান নিয়ে এতে তেল ব্রাশ করে এতে কাবাবের কাঠিগুলো ঘুরিয়ে ভাল করে রান্না করে নিন।

৮। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার চিকেন টিক্কা কাবাব।

 

ঈদ আয়োজনে নিপুণের সম্ভার

ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হবার সময় চলে এসেছে। আপনার ঈদ আয়োজনে সঙ্গী হতে পছন্দসই পোশাকের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে দেশের অন্যতম দেশীয় ফ্যাশন হাউজ নিপুণ।

ফ্যাশনেবল, আরামদায়ক একইসঙ্গে দৃষ্টিনন্দন সব পোশাক রয়েছে এবারে নিপুণে। বাড়ির ছোট বড় সবার জন্য একই ছাদের নিচে পোশাক পাচ্ছেন নিপুণে। নিপুণ এবারের ঈদের পোশাক তৈরিতে বেছে নিয়েছে এন্ডি কটন, জয়সিল্ক, তাঁত, লিলেন, ভয়েল, স্ল্যাব-কটন, মসলিন কাপড়।

নিপুণের কাপড়ে করা হয়েছে হ্যান্ড অ্যাম্ব্রয়ডারি, মেশিন অ্যাম্ব্রয়ডারি, এপ্লিক, ব্লক প্রিন্ট এবং স্ক্রিণ প্রিন্ট। আর পোশাক হিসেবে রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া, কুর্তি, পুরুষের জন্য পাঞ্জাবি, হাফ স্লিভ প্রিন্টেড শার্ট, শিশুদের জন্য ফ্রক, স্লিভলেস ফতুয়া, ছেলে শিশুর পাঞ্জাবি, টিনএজারদের জন্য ফ্রক, পাঞ্জাবি।

ঈদ কালেকশনের সব পোশাকই পাওয়া যাচ্ছে নিপুণের সবগুলো শো-রুমে।

 

আটক রবিনই অনুসরণকারী যুবক?

চট্টগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ যুবক শাহজামান ওরফে রবিনকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, রবিনই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়া অনুসরণকারী যুবক।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি)  নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান কমিশনার ইকবাল বাহার। তিনি জানান, শনিবার সকালে রবিন নামে এই যুবককে নগরীর বায়েজিদ থানার শীতলঝর্ণা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, রবিন লাকসামের জনৈক শাহজাহানের পুত্র। পড়াশুনা করেছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘড়ির কাঁটায় তখন ৬টা ৩২ মিনিট। এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু তার সন্তান মাহিরের হাত ধরে গলির মুখে এসে পৌঁছান। ঠিক এর ১৫ সেকেন্ড পর বিপরীত প্রান্তে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগে থেকেই অপেক্ষায় থাকা এক যুবক মোবাইলে কথা বলতে বলতে তাকে অনুসরণ করে পেছন পেছন হাঁটতে থাকেন।

৬টা ৩২ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে তিনি ওয়েল ফুডের সামনে পৌঁছানোর সাথে ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে পেছন থেকে দৌঁড়ে মিতুর দিকে এগিয়ে যায় ঘাতক। ঠিক একই সময়ে মোটরসাইকেল নিয়ে আগে থেকেই নিরিবিলি হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুবক মিতুর উপর হামলা করে। হামলা শুরু এবং শেষ করে মোটরসাইকেলে উঠতে ঘাতকরা সময় নিয়েছে মাত্র ১৭ সেকেন্ড! এর মধ্যে মাহমুদা খানম মিতুর শরীরে করা হয়েছে ৮টি ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও দুটি গুলি।

৬টা ৩৩ মিনিট ০৫ সেকেন্ডে খুনিরা কিলিং মিশন শেষ করে মোটরসাইকেলে চেপে বসে। তবে মোটরসাইকেলটি চালু হতে সময় নেয় ১৯ সেকেন্ড। ৬টা ৩৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে তিন খুনি মোটর সাইকেলে চড়ে পালিয়ে যায়।

যে মোটর সাইকেল চালাচ্ছিল, তার মাথায় ছিল হেলমেট। বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫। তার পেছনে দুজন বসা ‍দুজনের মধ্যে মাঝখানে বসা যুবকের হাতে ছিল ছুরি। আর পেছনে বসা তৃতীয়জনের হাতে ছিল পিস্তল। ধারণা করা হচ্ছে, এই তৃতীয়জনই ছিল আটক রবিন।

এর আগে গত ৭ জুন রাতে হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম ফরহাদাবাদ থেকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাবেক শিবির নেতা আবু নছর গুন্নুকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন কালো রঙের মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে মাইক্রোবাসের চালককেও।

গত ৫ জুন সকাল ৭টার দিকে নগরীর জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে গুলি করে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ছেলেকে নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। অতি সম্প্রতি বাবুল আক্তারের পদোন্নতির পর ঢাকায় অবস্থান করলেও তার স্ত্রী ছেলে-মেয়েকে নিয়ে নগরীর জিইসি এলাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন।

 

ছাত্র থেকেই শুরু হোক ব্যবসা যদি হতে চান আগামীর উদ্যোক্তা

আমাদের দেশের কাধে বেকারত্বের হার প্রতি বছরই বাড়ছে। সরকার পারছে না তাদেরকে সুযোগ তৈরী করে দিতে। আর আমাদের নিজেদের মানুষিকতারও পরিবর্তন ঘটাতে পারছি না আমরা। এর পেছনের কারন খুঁজতে চলুন ফেলে আসা সময়ে একটু ঘুরে আসি….

বৃটিশ আমাদের অনেক কিছুই শিক্ষা দিয়েছে কিন্তু আমরা আজও তা অনুভব করতে পারিনি। বাঙালীর হাতে চায়ের কাপ তুলে দিয়ে নিজেদের ব্যবসাকে সে সময় করেছিল সমৃদ্ধ এই বৃটিশ। নীল চাষে বাংলার কৃষকদের বাধ্য করে মসলিন কারিগরদের সমৃদ্ধ ব্যবসার ইতি টানতেও বাধ্য করেছিল তারা।

বৃটিশরা নিজেরা ব্যবসায়িক সফলতার শীর্ষে থাকলেও তারা এ বাংলার মানুষের মনে দাসত্বটা ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে। তারা বাঙালীর মনে খুব ভালভাবে ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে যে চাকুরীতেই সম্মান আর নিশ্চয়তা। আর আজও আমরা সেই শৃঙ্খল ভাঙতে পারিনি। নিজেকে তাই চাকর যার শ্রুতিমধুর উচ্চারন চাকুরীর মধ্যে আটকে রেখেছি।

সেই বৃত্ত থেকে নিজেকে বের করে আনতে হবে। প্রতিষ্ঠিত করতে হবে নিজের স্বকীয়তাকে। প্ররিশ্রম আর মেধার সমন্বয় করতে হবে ছাত্র জীবন থেকেই। আপনি নিশ্চয় জানেন ছাত্র জীবনের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ উক্তিটি। সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। তাহলে আপনি কেন ছাত্র অবস্থায় ব্যবসা করতে পারবেন না? আপনি লেখাপড়া শেষ করবেন তারপর ব্যবসা করবেন ততদিনে আপনি আপনার জীবন থেকে কতটা বছর পিছিয়ে পড়বেন তা কি ভেবেছেন? যে সময়ে এসে পড়াশুনা শেষ করবেন ততদিনে আপনার ব্যবসায়িক জীবনে প্রতিষ্ঠাও পেয়ে যেতে পারেন।

আপনি প্রথমত সিদ্ধান্ত নিন আপনি কি শিক্ষা জীবন শেষে শিক্ষিত চাকর হবেন নাকি নিজেই হবেন শিক্ষিত চাকরদের বস?

আপনি পড়াশুনা করেন, কি ধরনের ব্যবসা করবেন পড়াশুনার পাশাপাশি? পড়াশুনার সাথে ব্যবসা করার টাইম কিভাবে ম্যানেজ করবেন? আপনার পারিবারিক ভাবে কতটা সাপোর্ট পাবেন? পড়াশুনা আর ব্যবসা দুটো একসাথে কি করে করা সম্ভব? এসব প্রশ্ন জট থেকে বেড়িয়ে আসুন।

নিজেকে স্থির করুন আপনার দুটোই করা সম্ভব। প্ররিশ্রম আর মেধাকে কাজে লাগান। লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে কাজে নেমে পড়ুন। আর ব্যবসার আয়কে ভবিষ্যতের বড় বিনিয়োগ করতে সঞ্চয় করুন।

ছোট থেকে কিছু করার চেষ্টা করুন। শর্টকাটে বড় হওয়ার চিন্তা মাথায় থাকলে আগে থেকেই বাদ দিয়ে দিন। বিলগেটস এর থেকে বড় ধনী হতে আপনাকে খুব বেশী ভাল ছাত্র হতে হবে না। তবে ধৈয্যের প্রয়োজন হবে। লেগে পড়ে থেকে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুজতে হবে। সুযোগের সদ্ব্যবহার করা জানতে হবে। আপনার কাজ নিয়ে যে যা মন্তব্য করুক তাতে আপনার কি যায় আসে? আগে আপনি সন্তুষ্ট হন আপনি যে কাজ করবেন তার ওপর।

কত ধরনের ব্যবসা মানুষ করছে? আপনার কাছে যেটা পছন্দ তা থেকেই বেছে নিন না একটা। হতে পারে সেটা মোবাইল রিচার্জ এর ব্যবসা, কিংবা কোচিং সেন্টার, নার্সারী কিংবা বাড়িতে বসেই হাস, মুরগী, কোয়েল পাখি পালন, গরুর মাংশ উৎপাদন অথবা দুগ্ধ খামার। কবুতর পালন করে মুক্তির স্বাদও নিতে পারেন নিজেকে সাবলম্বী করে।

বেকারত্ব ঘুচাতে করে ফেলতে পারেন হস্ত কিংবা কুটির শিল্পের ছোট্ট একটা শপ কিংবা শো পিসের দোকান। যারা একটু তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে ভালবাসেন তারা দিতে পারেন কম্পিউটার বা মোবাইল এর দোকান কিংবা সার্ভিসিং সেন্টার। সৃজনশীল যারা আছেন সেই সাথে ফ্যশন সচেতন তারা কেন ফ্যাশন হাউজ বা গার্মেন্টস এর তৈরী পোষাকের ব্যবসা থেকে দূরে থাকবেন।

অধিকাংশ মেয়েদের প্রিয় খাবার চটপটি ফুসকার দোকানও করতে পারেন কিংবা ফাষ্ট ‍ফুডের দোকান করতে পারেন। অফিস পাড়ায় দুপুরে বিরিয়ানী বিক্রি করে যে আয় কম নয় তাও কিন্তু না।

গ্রামে আছেন শহুরে ব্যবসার সুযোগ নেই। তাতে কি আপনার নিজের জমি অথবা পাশেরই কারো জমি লীজ নিয়ে করতেপারেন শাক-সবজির চাষ। মজা-পচা ‍পুকুরটা পরিস্কার করে মাছ চাষ করতে পারেন। আপনার পাশেরই বাজারে কিংবা হাটে ফসল বেচাকেনার কোন একটা ব্যবসা করেও হতে পারেন সফল। উন্নত প্রযুক্তির সেবা কৃষকদের সরবরাহ করেও হতে পরেন সফল ব্যবসায়ী।

আরও যে কত কত ধরনের ব্যবসা আছে তা আপনি করে যেতে পারেন নিঃসংকোচে। আপনার দ্বারা সৃষ্টি হতে পারে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের। আপনি চাইলেই পারবেন চলমান ব্যবসার নতুন কোন ব্যবসায়িক রুপ দিতে কিংবা নতুন কোন ব্যবসায়ের সৃষ্টি করতে। যেটা আপনার নাম বহন করে এনে দিবে দাসত্বমুক্ত পরিচয়। সফল উদ্যোক্তার পরিচয়।

 

 

পাকিস্তানে পালিয়ে বিয়ে করায় মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা করলেন মা

পাকিস্তানে পরিবারের সম্মতি ছাড়া বিয়ে করায় নিজের মেয়েকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তার মা। পুলিশ ওই ঘটনায় মেয়েটির মাকে গ্রেফতার করেছে।

বুধবার পাকিস্তানের লাহোর শহরে ঘটনাটি ঘটেছে।

পুলিশ জানায়, এক সপ্তাহ আগে আদালতে গিয়ে পছন্দের ছেলে হাসান খানকে বিয়ে করেন জিনাত রফিক। পরে তার বাবা-মা জিনাতের স্বামীর বাড়িতে যান। জিনাতকে তারা প্রতিশ্রুতি দেন, ধর্মীয় ও পারিবারিক আইন মেনে আবার তাদের বিয়ে দেওয়া হবে। এ লোভ দিয়ে জিনাতকে তাদের সঙ্গে নিয়ে আসেন।

পুলিশ আরও জানায়, জিনাত রফিকের দেহে নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে। হত্যার বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ।

ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত হওয়ার দুই দিন আগে তরুণীটির পরিবার তাকে বাড়ি ফিরে আসতে বলে। অপরাধ ক্ষমা করে দিবে ভেবে পরিবারের কাছে ফিরেও আসে মেয়েটি। শেষ পর্যন্ত বাড়িতে ফিরে আসার পর তার মা মেয়ের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

স্টেশন হাউজ কর্মকর্তা শেখ হাম্মাদ আখতার জানান, নিহত ওই তরুণী লাহোরের মাস্ট ইকবাল রোডের বাসিন্দা।পালিয়ে পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করার বিষয়টি পরিবার মেনে নিতে পারে নি।

পুলিশের কাছে ওই তরুণীর মা আগুনে পুড়িয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ নিহতের লাশ মর্গে পাঠিয়েছে এবং হত্যার দায়ে অভিযুক্ত মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ সুপার ইবাদাত নিসার জানিয়েছেন, মৃত তরুণীর দুবাই ফেরৎ বড় ভাই ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাকে খুঁজছে।

প্রসঙ্গত, গত এক মাসের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তানে এমন ঘটনা ঘটলো। দেশটিতে প্রেম করে বিয়ে করাকে সামাজিকভাবে ঘৃণার চোখে দেখা হয়। এসব ক্ষেত্রে নারীদের ওপর সহিংসতার ঘটনাও বেশি।

গত সপ্তাহে ইসলামাবাদে একটি স্কুল এক শিক্ষিকা বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার গায়ে আগুন দেয়া হয়। পরে ওই শিক্ষিকা মারা যান। এরও একমাস আগে বন্ধুকে পালিয়ে বিয়ে করতে সাহায্য করায় এক কিশোরীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

 

ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর অধিকার

মানুষের বৈবাহিক জীবনের কতেক ফলাফল এবং প্রয়োজনীয় চাহিদা রয়েছে। আর বিয়ে হচ্ছে এমন একটি সম্পর্ক যা স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই পারস্পরিক অধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই অধিকারগুলো হচ্ছে শারীরিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, এবং অর্থনৈতিক অধিকার।

এ কারণেই স্বামী-স্ত্রী উভয়ের এটা অবশ্য কর্তব্য যে, তারা সৌহার্দ্যপূর্ণ জীবন যাপন করবে এবং কোনো প্রকার মানসিক অসন্তুষ্টি ও দ্বিধা বাতিরেকেই তাদের যা কিছু আছে একে অন্যের জন্য অকাতরে ব্যয় করবে! আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

وَعَاشِرُوهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ [النساء: ١٩

আর তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) সাথে উত্তম ব্যবহার কর।’ [সূরা আন-নিসা: ১৯]

আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন,

وَلَهُنَّ مِثۡلُ ٱلَّذِي عَلَيۡهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ وَلِلرِّجَالِ عَلَيۡهِنَّ دَرَجَةٞۗ [البقرة: ٢٢٨]

আর স্ত্রীদের যা কিছু পাওনা রয়েছে তা উত্তম আচরণের মাধ্যমে পৌঁছে দাও। আর তাদের উপর পুরুষদের একটি উঁচু মর্যাদা রয়েছে।’ [সূরা আল-বাকারাহ: ২২৮]

স্ত্রীর জন্য তার স্বামীর যেরূপ অর্থ-সম্পদ ব্যয় করা কর্তব্য, তেমনিভাবে স্ত্রীরও এটা কর্তব্য যে সে যেন তার স্বামীর জন্য তার সাধ্যানুসারে যা প্রদান করার তা প্রদান করে। আর এভাবেই যখন স্বামী-স্ত্রী উভয়ই তাদের পারস্পরিক কর্তব্যগুলো আদায় করার জন্য প্রস্তুত হবে, তখনই তাদের উভয়ের জীবন হবে অতীব সুখময় এবং তাদের সম্পর্ক হবে চিরস্থায়ী। আর যদি এর বিপরীত হয়, তাহলে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ ও বিচ্ছেদ দেখা দেবে বৈকি। ফলে তাদের জীবন হয়ে পড়বে পুঁতিগন্ধময়।

স্ত্রীলোকদের সঠিক অবস্থার প্রতি দৃষ্টি রেখে তাদের প্রতি উত্তম ব্যবহার ও উপদেশ দানের ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে অসংখ্য বাণী উদ্ধৃত হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ، فَإِنَّ المَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ، وَإِنَّ أَعْوَجَ شَيْءٍ فِي الضِّلَعِ أَعْلاَهُ، فَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهُ كَسَرْتَهُ، وَإِنْ تَرَكْتَهُ لَمْ يَزَلْ أَعْوَجَ، فَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ»

স্ত্রীলোকদের ব্যাপারে তোমরা কল্যাণের উপদেশ গ্রহণ কর। কেননা তাদেরকে তৈরীই করা হয়েছে পাঁজরের হাড় থেকে, আর পাজরের যা সবচেয়ে বক্র তা উপরের অংশে থাকে। তুমি যদি তা সোজা করতে যাও তবে তা ভেঙ্গে যাবে। আর যদি এমনি ছেড়ে দাও তবে তা চিরদিন বক্রই থেকে যাবে। অতএব, তাদের ব্যাপারে কল্যাণের অসিয়ত গ্রহণ কর।’ [বুখারি, ৩৩৩১; মুসলিম, ১৪৬৮]

অন্য একটি বর্ণনায় আছে-

«إِنَّ الْمَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ لَنْ تَسْتَقِيمَ لَكَ عَلَى طَرِيقَةٍ، فَإِنِ اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ بِهَا وَبِهَا عِوَجٌ، وَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهَا، كَسَرْتَهَا وَكَسْرُهَا طَلَاقُهَا»

মেয়েলোককে পাঁজরের হাড় থেকে তৈরী করা হয়েছে। তুমি কোনো অবস্থায়ই সোজাপথে দৃঢ় পাবে না। তার কাছ থেকে ফায়দা গ্রহণ করতে চাইলে তা গ্রহণ কর, কিন্তু তার মধ্যে বক্রতা থাকবেই । তুমি যদি তা সোজা করতে চাও, তবে তা ভেঙ্গে যাবে, আর ভেঙ্গে যাবার শেষ পরিণতি হচ্ছে বিচ্ছেদ বা তালাক।’ [মুসলিম, ১৪৬৮]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لَا يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً، إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا آخَرَ»

কোন মুমিন পুরুষ যেন কেন মমিন স্ত্রীকে তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞা না করে। তার আচার আচরনের কোনো একটি অপছন্দনীয় হলেও অন্যটি সন্তোষজনক হতে পারে।’ [মুসলিম, ১৪৬৯]

আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এসব হাদীসে পুরুষ লোকেরা তাদের স্ত্রীদের সাথে কি ধরনের আচরন করবে সে ব্যাপারে তার উম্মাতের প্রতি দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। তিনি এটাই জানাচ্ছেন যে, পুরুষদের কর্তব্য হচ্ছে এই যে, সহজ উপায়ে তাদের নিকট থেকে যতটুকু সুব্যবহার পাওয়া সম্ভব, তারা যেন তাই গ্রহণ করে। কারণ, সৃষ্টিগত কারণেই তাদের প্রকৃতির মধ্যে পুরুষদের চেয়ে কিছুটা অসম্পূর্ণতা রয়েছে, পূর্ণভাবে কোনো কিছু তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, তাদের মধ্যে একটি বক্রতা রয়েছে। অতএব, যাদেরকে যে প্রকৃতির ওপর সৃষ্টি করা হয়েছে, তাকে অস্বীকার করে তাদের কাছ থেকে কোনো প্রকার কল্যাণ বা ফায়দা লাভ করা সম্ভব নয়।

তাছাড়া এসব হাদীসে আরও এসেছে যে, মানুষের কর্তব্য হচ্ছে স্ত্রীলোকদের মধ্যকার ভালো ও মন্দ স্বাভাবগুলো তুলনা করে দেখা। এটা এজন্য যে, যদি কোনো পুরুষ তার কোনো আচরণে ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট হয় তাহলে এমন একটি স্বভাবের সাথে তা তুলনা করে দেখা প্রয়োজন যা দ্বারা সে সন্তুষ্ট হতে পারে। তার প্রতি শুধু ঘৃণা ও রাগস্বরে তাকাবে না।

আর অনেক পুরুষ এমন রয়েছে যারা তাদের স্ত্রীদের মধ্যে পরিপূর্ণ অবস্থা প্রত্যাশা করে অথচ বস্তুত:ই এটা সম্ভব নয়। আর এ কারণেই একটি তিক্ততা সৃষ্টি হয় তাদের মধ্যে ! আর সে জন্যই তাদের স্ত্রীদের দ্বারা তারা কোনো প্রকার উপকৃত হতে পারে না। বরং অধিকন্তু এই তিক্ততা সৃষ্টিতাপূর্ণ অবস্থা তাদেরকে বিচ্ছেদের দিকে ধাবিত করে। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তুমি যদি তাকে সোজা করতে চাও তা হলে ভেঙ্গে ফেলবে- আর এর চুড়ান্ত পরিণতি হচ্ছে তালাক।’ এমতাবস্থায় পুরুষের কর্তব্য হচ্ছে দ্বীন এবং শরীয়তের পরিপন্থী নয় এমন কিছু কাজ যা স্ত্রী করে সে ব্যাপারে সে যেন সহজভাবে গ্রহণ করে এবং দেখেও না দেখার অবস্থায় থাকা।

স্বামীর ওপর স্ত্রীর অধিকার এই যে, স্বামী তার খাবার, পোশাক পরিচ্ছদ, বাসস্থান এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র সরবরাহ করবে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কালামে বলেছেন,

وَعَلَى ٱلۡمَوۡلُودِ لَهُۥ رِزۡقُهُنَّ وَكِسۡوَتُهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ [البقرة: ٢٣٣

স্ত্রীলোকদের খোর-পোষ এবং পরিধেয় বস্ত্র উত্তমভাবে সরবরাহ করা তাদের ওপর অবশ্য কর্তব্য।’ [সূরা আল-বাকারাহ: ২৩৩]

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ»

তোমাদের (পুরুষদের) ওপর কর্তব্য হচ্ছে তাদের খাদ্য-সামগ্রী এবং বস্ত্রাদি প্রদান করা।’ [মুসলিম, ১২১৮]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এই মর্মে প্রশ্ন করা হলো যে, আমাদের কারো স্ত্রী থাকলে তার ওপর স্ত্রীর কি অধিকার রয়েছে। তিনি বললেন,

«أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ، وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ، أَوِ اكْتَسَبْتَ، وَلَا تَضْرِبِ الْوَجْهَ، وَلَا تُقَبِّحْ، وَلَا تَهْجُرْ إِلَّا فِي الْبَيْتِ»

তুমি খেয়ে থাকলে তাকেও খাওয়াবে, তুমি পরিধান করল তাকেও পরিধেয় বস্ত্র প্রদান করবে, আর তার মুখমণ্ডলে কখনো আঘাত করবে না এবং তাকে গালিও দিবে না এবং তাকে ঘর ছাড়া অন্য কোথাও ত্যাগ করবে না’। [আবু দাউদ, ২১৪২]

স্ত্রীর অধিকারের মধ্যে আরেকটি অধিকার হচ্ছে এই যে, স্বামীর যদি একাধিক স্ত্রী থাকে তাহলে তাদের মধ্যে সে ইনসাফ কায়েম করবে। ইনসাফ কায়েম করতে হবে তাকে তাদের খাদ্য-সামগ্রী, বাসস্থান এবং সহঅবস্থানের ক্ষেত্রে। অর্থাৎ সার্বিক ব্যাপারেই তাদের সাথে সম্ভাব্য আদল রক্ষা করতে হবে। তাদের একজনের দিকে অত্যাধিক ঝুঁকে পড়া বড় বড় গুণাহসমূহের মধ্যে একটি।

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مَنْ كَانَتْ لَهُ امْرَأَتَانِ فَمَالَ إِلَى إِحْدَاهُمَا، جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّهُ مَائِلٌ»

যদি কারো দু’জন স্ত্রী থাকে এবং তার একজনের দিকে যদি সে বেশী ঝুকে পড়ে তাহলে সে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপনীত হবে যে, তার শরীরের একাংশ অনুরূপ ঝুঁকে থাকবে।’ [আবু দাউদ, ২১৩৩]

কিন্তু প্রেম ও ভালোবাসা এবং অন্তরের প্রশান্তি ইত্যাদির ব্যাপারে মানুষের কোনো হাত থাকে না। কারণ এগুলো একান্তই মানসিক ব্যাপার। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে যদি আদল সম্ভব না হয় এবং কিছুটা তারতম্য ঘটে তা হলে তাতে কোনো পাপ হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

وَلَن تَسۡتَطِيعُوٓاْ أَن تَعۡدِلُواْ بَيۡنَ ٱلنِّسَآءِ وَلَوۡ حَرَصۡتُمۡۖ [النساء: ١٢٩

তোমাদের ইচ্ছা থাকলেও (একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে) তোমরা আদল রক্ষা করতে সক্ষম হবে না।’ [সূরা আন-নিসা: ১২৯]

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিবিদের ক্ষেত্রে (সময়) বণ্টন করে নিতেন এবং আদল রক্ষা করতেন। তিনি এ ব্যাপারে এই বলে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করতেন,

«اللَّهُمَّ هَذَا قَسْمِي، فِيمَا أَمْلِكُ فَلَا تَلُمْنِي، فِيمَا تَمْلِكُ، وَلَا أَمْلِكُ»

হে আল্লাহ ! যে ব্যাপারে আমার কর্তৃত্ব ও মালিকানা রয়েছে সে ব্যাপারে আমার বন্টন ব্যবস্থা এই। আর যে ব্যাপারে আমার কোনো মালিকানা বা কর্তৃত্ব নেই বরং তুমিই তার মালিক সে ব্যাপারে আমাকে ভৎর্সনা করো না।’ [আবু দাউদ, ২১৩৪]

কিন্তু দু’জন স্ত্রীর ক্ষেত্রে এক জনের সম্মতিক্রমে যদি দ্বিতীয় জনের সাথে অবস্থানের অনুমতি নেওয়া হয়, তবে তাতে কোনো ক্ষতি নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ দৃষ্টান্ত রয়েছে যে, তিনি আয়েশার জন্য তার (প্রাপ্য) দিনটি এবং সাওদা কর্তৃক আয়েশার জন্য প্রদত্ত দিনটিও আয়েশার জন্য বণ্টন করে দিয়েছেন। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু শয্যায় শায়িত অবস্থায়ও জিজ্ঞেস করছিলেন,

«أَيْنَ أَنَا غَدًا؟ أَيْنَ أَنَا غَدًا؟»

আমি আগামীকাল কোথায় থাকব? আমি আগামীকাল কোথায় থাকবো?’

অতঃপর তাঁর স্ত্রীগণ তাঁকে এই মর্মে অনুমতি দিলেন যে তিনি যেখানে ইচ্ছা সেখানেই থাকতে পারেন। অতঃপর তিনি আয়েশার গৃহেই অবস্থান করেন এবং সেখানেই মারা যান।

স্ত্রীর ওপর স্বামীর অধিকার স্ত্রীর অধিকারের চেয়েও বড়। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَلَهُنَّ مِثۡلُ ٱلَّذِي عَلَيۡهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ وَلِلرِّجَالِ عَلَيۡهِنَّ دَرَجَةٞۗ [البقرة: ٢٢٨]

তাদের ওপর যে রূপ সদাচার প্রয়োজন, তাদের জন্যও অনুরূপ প্রয়োজন এবং তাদের ওপর পুরুষদের একটি মর্যাদা রয়েছে।’ [সূরা আল-বাকারাহ: ২২৮]

পুরুষই হচ্ছে স্ত্রীর পরিচালক। কারণ পুরুষ লোক স্ত্রী লোকের সুযোগ-সুবিধা সরবরাহ, শিষ্টাচার শিক্ষাদান এবং দেখা-শোনার ব্যাপারে দায়িত্বশীল। আল্লাহ তাআলা বলেন,

ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ وَبِمَآ أَنفَقُواْ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡۚ [النساء: ٣٤]

পুরুষগণ মহিলাদের অভিভাবক এবং দায়িত্বশীল। এটা এজন্য যে, আল্লাহ তাআলা তাদের একের ওপর অন্যদের বিশিষ্টতা দান করেছেন এবং যেহেতু পুরুষগণ তাদের সম্পদ থেকে তাদের স্ত্রীদের জন্য ব্যয় করে থাকে।’ [সূরা আন-নিসা: ৩৪]

স্ত্রীর ওপর পুরুষের অধিকারের মধ্যে আরও রয়েছে, আল্লাহর অবাধ্যতা ব্যতিরেকে সর্বক্ষেত্রে সে তার স্বামীর আনুগত্য করবে এবং তার ধন-সম্পদ ও তার গোপনীয়তার সংরক্ষণ করবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ المَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا»

যদি আমি কোনো মানুষ অপর কারও জন্য সিজদা করার অনুমতি দিতাম, তবে মহিলাকে তার স্বামীকে সিজদা করতে নির্দেশ দিতাম’। [তিরমিযি, ১১৫৯]

অন্য হাদীসে এসেছে,

«إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا المَلاَئِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ»

যদি কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে তার সাথে শয্যাশায়ী হতে আহ্বান জানায় এবং যদি উক্ত স্ত্রী তা অস্বীকার করে এবং স্বামী তার ওপর রাগাম্বিত অবস্থায় রাত কাটায়, তাহলে সকাল পর্যন্ত ফিরিশতাগণ তার ওপর অভিশম্পাত বর্ষণ করেন’। [বুখারি, ৩২৩৭]

স্ত্রীর ওপর স্বামীর আরেকটি অধিকার এই যে, স্বামীর কোনো বৈধ স্বার্থে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে এমন কোনো কাজ স্ত্রী করবে না, চাই তা কোনো (নফল) ইবাদতের মাধ্যমেই হোক না কেন। রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لاَ يَحِلُّ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تَصُومَ وَزَوْجُهَا شَاهِدٌ إِلَّا بِإِذْنِهِ، وَلاَ تَأْذَنَ فِي بَيْتِهِ إِلَّا بِإِذْنِهِ»

স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে স্ত্রীর রোজা (নফল) রাখাও জায়েয হবে না এবং স্বামীর অনুমতি ব্যতিত তার ঘরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়াও স্ত্রীর জন্য বৈধ নয়।’ [বুখারি, ৫১৯৫]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতে প্রবেশের উপায়সমূহের মধ্যে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর সন্তোষকে একটি অন্যতম উপায় বলে গণ্য করেছেন। উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«أَيُّمَا امْرَأَةٍ مَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَنْهَا رَاضٍ دَخَلَتِ الجَنَّةَ»

যদি কোনো স্ত্রী এমতাবস্থায় মারা যায় যে তার স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট, তা হলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ [তিরমিযি, ১১৬১]

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উসাইমিন রহ.
অনুবাদ : মো. আব্দুল মতিন
সম্পাদনা : আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

 

দীর্ঘদিন খাবার ভালো রাখার উপায়

ব্যস্ততার কারণে বারবার কেনাকাটার ঝামেলায় যেতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু পচনের জন্য একসঙ্গে বেশি খাদ্যদ্রব্য কিনে রাখার উপায় নেই। তীব্র গরমে ঘরে রাখার খাদ্যদ্রব্যে সহজে পচন ধরে। ঠিক তেমনি বৃষ্টির দিনেও আদ্র আবহাওয়াতে সেই পচন বেড়ে যায় অনেক বেশি। খাদ্যদ্রব্য অল্প সময়ে নষ্ট হয়ে ঘটায় আর্থিক ক্ষতি। এই সমস্যা সমাধানেও রয়েছে বেশ কিছু উপায়। এতে খাদ্যদ্রব্য ভালো থাকবে দীর্ঘদিন ধরে।

– মুগডাল ও সুজিতে খুব দ্রুত পোকা ধরে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হালকা করে ভেজে ঠাণ্ডা করে নিন। তারপর কৌটার মাঝে ভরে রাখুন। সুজি চাইলে ফ্রিজেও রাখতে পারেন, পোকা ধরবে না।

– চাল, মসুরের ডালে পোকা হওয়া ঠেকাতে বেশ কিছু তেজপাতা কৌটার মাঝে ভালো করে মিশিয়ে রাখুন।

– বুটের ডালে পোকা হওয়া ঠেকাতে ফ্রিজে রাখতে পারেন। এছাড়াও কৌটায় তেজপাতা দিয়ে রাখতে পারেন। তবে বুটের ডাল মাঝে মাঝেই বের করে রোদে দিলে বেশি ভালো থাকে।

– বেসন বা ময়দা তেতো হয়ে যাওয়া ঠেকাতে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন।

– বিস্কুট কৌটায় রাখার সময় ভেতরে এক টুকরো ব্লটিং পেপার দিয়ে দিন। এটা না থাকলে পাতলা কাপড়ে কিছু চাল পুঁটুলি বেঁধে বিস্কুটের সঙ্গে রাখুন। সহজে নেতিয়ে যাবে না।

– লবণ বা চিনি গলে পানি হওয়া ঠেকাতে চালের পুঁটুলি রাখুন। এছাড়া লবণ দানীতে লবণ ঝরঝরে রাখতে কয়েক দানা চাল ফেলে দিন।

– পেঁয়াজকে সংরক্ষণ করতে চাইলে ভালো করে বেছে নিন। তারপর রোদে শুকিয়ে ঝরঝরে করে ফেলুন। এবার একটি ঝুড়িতে খবরের কাগজ বিছিয়ে তার মাঝে পেঁয়াজ রেখে দিন।

 

যেসব কারণে রোজা ভাঙার অনুমতি আছে

রমজান মাসে রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য ফরজ করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই ইবাদত পালনীয় নাও হতে পারে। তাই যেসব কারণে রোজা ভেঙে ফেলার অনুমতি রয়েছে পাঠকদের জন্য সেসব বিষয় তুলে ধরা হলো।

► যদি এমন অসুস্থ হয়ে পড়ে যে রোজা রাখার শক্তি নেই বা রোজা রাখার দ্বারা অসুস্থতা বেড়ে যাবে, তাহলে তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে। তবে হ্যাঁ, যখনই সুস্থ হয়ে যাবে, তখনই তার ওপর রোজা কাজা করে নেয়া ওয়াজিব। (আপকে মাসায়েল : খ. ৩, পৃ. ২০২)

► যে ব্যক্তি এমন দুর্বল হয়ে যায় যে রোজা রাখার শক্তি নেই। (আপকে মাসায়েল : খ. ৩, পৃ. ২০৩)

► এমন ক্ষুধা বা পিপাসা লাগে যে প্রাণ চলে যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। (আলমগিরি : খ. ১, পৃ. ২০৭)

► গর্ভধারিণী বা স্তন্যদানকারিণী মহিলা যদি নিজের অথবা নিজের বাচ্চার প্রাণপাতের আশঙ্কা করেন, তাহলে তার জন্য রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ আছে। (আলমগিরি : খ. ১, পৃ. ২০৭)

► রোজা থাকার কারণে যদি জীবনযাপনের সামগ্রী উপার্জন করতে দুর্বল হয়ে যায়, তাহলে তার জন্য রোজা ভেঙে ফেলার অনুমতি রয়েছে। তবে তা পরে কাজা করে নিতে হবে। তা-ও সম্ভব না হলে ফিদিয়া আদায় করবে এবং প্রতি রোজার পরিবর্তে সদকায়ে ফিতর পরিমাণ দান করে ফিদিয়া আদায় করবে। (শামি : খ. ৩, পৃ. ৪০০)

► অনুরূপভাবে ফসল কর্তন করার ক্ষেত্রে। যদি রোজা থাকা অবস্থায় ফসল কর্তন করা সম্ভব না হয়। অন্যদিকে দেরি হলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। তাহলে রোজা না রাখার অনুমতি আছে এবং অন্য সময় কাজা করে নেবে। (শামি : খ. ৩, পৃ. ৪০০)

 

শিশুদের রোজা পালনে অভ্যস্ত করার পন্থা

শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে ৯ বছরের ছেলে সিয়াম পালনে মুকাল্লাফ (দায়িত্বপ্রাপ্ত) নয়। কারণ সে এখনও সাবালক হয়নি। তবে আল্লাহ তা’আলা ইবাদতের ওপর সন্তানদের লালন-পালনের দায়িত্ব বাবা-মা’র ওপর অর্পণ করেছেন। ৭ বছর বয়সী সন্তানকে নামাজ শিক্ষা দেয়ার জন্য বাবা-মার প্রতি আদেশ জারি করেছেন। নামাজে অবহেলা করলে ১০ বছর বয়স থেকে বেত্রাঘাত করার নির্দেশও দিয়েছেন। সাহাবীরা তাদের সন্তানদের ছোটবেলা থেকে রোজা রাখাতেন, যেন তারা এ মহান ইবাদত পালনে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারে। এ আলোচনা থেকে সন্তান-সন্ততিকে উত্তম গুণাবলী ও ভালো কাজের ওপর গড়ে তোলার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

রোজার ব্যাপারে এসেছে :

রুবাই বিনতে মুআওয়েজ ইবনে আফরা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আশুরার সকালে মদিনার আশেপাশে আনসারদের এলাকায় (এই ঘোষণা) পাঠালেন : ‘যে ব্যক্তি রোজা অবস্থায় সকাল শুরু করেছে, সে যেন তার রোজা পালন সম্পন্ন করে। আর যে ব্যক্তি বে-রোজদার হিসেবে সকাল করেছে সে যেন বাকি দিনটুকু রোজা পালন করে।’ এরপর থেকে আমরা আশুরার দিন রোজা পালন করতাম এবং আমাদের ছোট শিশুদেরও রোজা রাখাতাম।
আমরা শিশুদের নিয়ে মসজিদে যেতাম এবং তাদের জন্য উল দিয়ে খেলনা তৈরি করে রাখতাম। তাদের কেউ খাবারের জন্য কাঁদলে তাকে সেই খেলনা দিয়ে ইফতারের সময় পর্যন্ত সান্ত্বনা দিয়ে রাখতাম। (হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারি। নং ১৯৬০ ও মুসলিম, নং ১১৩৬)

যে বয়সে শিশু রোজা পালনে সক্ষমতা লাভ করে সে বয়স থেকে বাবা-মা তাকে প্রশিক্ষণমূলক রোজা রাখাবেন। এটি শিশুর শারীরিক গঠনের ওপর নির্ভর করে। আলেমরা কেউ কেউ এ সময়কে ১০ বছর বয়স থেকে নির্ধারণ করেছেন।

 শিশুদের রোজা পালনে অভ্যস্ত করে তোলার কিছু পন্থা :

# শিশুদের কাছে রোজার ফজিলত সম্পর্কিত হাদিসগুলো তুলে ধরতে হবে। তাদের জানাতে হবে সিয়াম পালন জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম। জান্নাতের একটি দরজার নাম হচ্ছে ‘আর-রাইয়্যান’। এ দরজা দিয়ে শুধু রোজাদাররা প্রবেশ করবে।

# রমজান আসার আগেই কিছু রোজা রাখানোর মাধ্যমে সিয়াম পালনে তাদের অভ্যস্ত করে তোলা। যেমন-শা’বান মাসে কয়েকটি রোজা রাখানো। যাতে তারা আকস্মিকভাবে রমজানের রোজার সম্মুখীন না হয়।

# প্রথমদিকে দিনের কিছু অংশে রোজা পালন করানো। ক্রমান্বয়ে সেই সময়কে বাড়িয়ে দেয়া।

# একেবারে শেষ সময়ে সেহেরি গ্রহণ করা। এতে করে তাদের জন্য দিনের বেলায় রোজা পালন সহজ হবে।

# প্রতিদিন বা প্রতি সপ্তাহে পুরস্কার দেয়ার মাধ্যমে তাদের রোজা পালনে উৎসাহিত করা।

# ইফতার ও সেহেরির সময় পরিবারের সকল সদস্যের সামনে তাদের প্রশংসা করা। যাতে তাদের মানসিক উন্নয়ন ঘটে।

# যার একাধিক শিশু রয়েছে তাদের মাঝে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করা। তবে খুবই সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখতে হবে যাতে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া শিশুটির প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করা না হয়।

# তাদের মধ্যে যাদের ক্ষুধা লাগবে তাদের ঘুম পাড়িয়ে অথবা বৈধ খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখা। এমন খেলনা যাতে পরিশ্রম করতে হয় না। যেভাবে মহান সাহাবীরা তাঁদের সন্তানদের ক্ষেত্রে করতেন। নির্ভরযোগ্য ইসলামী চ্যানেলগুলোতে শিশুদের উপযোগী কিছু অনুষ্ঠান রয়েছে এবং রক্ষণশীল কিছু কার্টুন সিরিজ রয়েছে। এগুলো দিয়ে তাদেরকে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে।

# ভালো হয় যদি বাবা তার ছেলেকে মসজিদে নিয়ে যান। বিশেষতঃ আসরের সময়। যাতে সে নামাজের জামাতে হাজির থাকতে পারে। বিভিন্ন দ্বীনি ক্লাসে অংশ নিতে পারে এবং মসজিদে অবস্থান করে কুরআন তিলাওয়াত ও আল্লাহ তা’আলার জিকিরে রত থাকতে পারে।

# যেসব পরিবারের শিশুরা রোজা রাখে তাদের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য দিনে বা রাতের কিছু সময় নির্দিষ্ট করে নেয়া। যাতে তারা সিয়াম পালন অব্যাহত রাখার প্রেরণা পায়।

# ইফতারের পর শরিয়ত অনুমোদিত ঘুরাফিরার সুযোগ দেয়া। অথবা তারা পছন্দ করে এমন খাবার, চকলেট, মিষ্টি, ফল-ফলাদি ও শরবত প্রস্তুত করা।

আমরা এ ব্যাপারেও লক্ষ্য রাখতে বলছি যে, শিশুর যদি খুব বেশি কষ্ট হয় তবে রোজাটি পূর্ণ করতে তার ওপর অতিরিক্ত চাপ দেয়া উচিত নয়। যাতে তার মাঝে ইবাদতের প্রতি অনীহা না আসে অথবা তার মাঝে মিথ্যা বলার প্রবণতা তৈরি না করে অথবা তার অসুস্থতা বৃদ্ধির কারণ না ঘটায়। কেননা ইসলামী শরিয়তে সে মুকাল্লাফ (ভারার্পিত) নয়। তাই এ ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত এবং সিয়াম পালনে আদেশ করার ব্যাপারে কড়াকড়ি না করা উচিত।

 

চুল রঙ করা কি ইসলামে জায়েজ আছে?

অতএব উক্ত মহিলার জন্য চুলে কালো কলপ ব্যবহার করা জায়েজ নয়। তবে মেহেদী রং করতে পারবেন। [শরহু মুসলিম, নববী ১৪/৮০; তাকমিলা, ফাতহুল মুলহিম ৪/১৪৯; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/২৯৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫৬; আলমুগনী ১/১২৭]

বয়সের কারণে চুল সাদা হলে কালো কলপ ব্যবহার করা জায়েজ নয়। হাদীস শরীফে আছে, হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আবু কুহাফা রা. (আবু বকর রা.-এর পিতা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলেন। তখন তার মাথার চুল ও দাঁড়ি ছিল ‘ছাগামা’ নামক উদ্ভিদের ফুলের মতো তীব্র সাদা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখে বললেন,তোমার এই চুল ও দাঁড়ির শুভ্রতা কোনো কিছু দ্বারা পরিবর্তন কর। তবে তোমরা কালো কলপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাক। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৪৬৬)\

অন্য হাদীসে আছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আখেরি যামানায় কিছু লোক কবুতরের বুকের মতো কালো রংয়ের কলপ ব্যবহার করবে। তারা জান্নাতের খোশবুও পাবে না। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২০৯)

অতএব উক্ত মহিলার জন্য চুলে কালো কলপ ব্যবহার করা জায়েজ নয়। তবে মেহেদী রং করতে পারবেন। [শরহু মুসলিম, নববী ১৪/৮০; তাকমিলা, ফাতহুল মুলহিম ৪/১৪৯; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/২৯৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫৬; আলমুগনী ১/১২৭]

মেয়েদের জন্য সর্ব প্রকার সাজই জায়েজ আছে। যদি তা কোন খারাপ উদ্দেশ্য না হয় বা শরীয়তে নিষিদ্ধ সাজ না হয়। স্বামীকে খুশি করার জন্য চুলে মেহেদী দেয়া বা কালো ছাড়া অন্য রং করা মহিলাদের জন্য জায়েজ আছে। কোন সমস্যা নেই। তবে যদি পর-পুরুষকে দেখানোর জন্য হয়,তাহলে জায়েজ নেই। চুলে দাড়িতে খেজাব দেয়া মুস্তাহাব। লাল ও হলুদ এবং এমন লাল খেজাব যা কিছুটা কালোর দিকে ধাবিত এমন খেজাব লাগানো জায়েজ পুরুষ মহিলা উভয়ের জন্য। তবে কালো খেজাব মুজাহিদ ব্যতিত অন্য কারো জন্য জায়েজ নয়।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

সৃজনশীল কাজের জন্যে সঠিক সময়!

সৃষ্টিশীল কাজের প্রতি আগ্রহ? এমন কোন চাকরি করছেন যেখানে খানিকটা নিজস্বতা আর বৈচিত্র্য না থাকলেই নয়? কিংবা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন সৃজনশীল কোন মাধ্যমকে? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্যেই। কারণ আপনার চাইতে আর কেউ ভালো জানেনা যে সৃজনশীল কাজ তৈরি করা যায়না। সেটা আপনা আপনিই তৈরি হয়। কিন্তু কোন সেই সময়টা যখন সৃজনশীল কাজে বেশি কার্যকরী হয়ে ওঠা যায়? পাওয়া যায় একটু বেশি সুফল? সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা খানিকটা গবেষণা করেন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে। আর উত্তর? চলুন দেখে আসি।

অনেকে সকালবেলায় ঠিক ঠিক সময় মেনে ঘুম থেকে উঠে নির্দিষ্ট সময়ে প্রস্তুত হয়ে কাজের স্থানে পৌঁছে যান। চেষ্টা করেন নিজের ডেস্কের চারপাশের আলো, আবহাওয়া আর বাকী সবকিছু ঠিকঠাক রাখতে। যাতে করে আরো বেশি উত্পাদনশীল হতে পারেন তিনি। সৃজনশীল প্রক্রিয়ায় আরো ভালোভাবে কাজ করতে পারে তার মাথা। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এরকম কোন কিছুতেই নয়, বরং একমাত্র ক্লান্তিই পারে মানসিকভাবে মানুষকে আরো বেশি সৃষ্টিশীল করে তুলতে।

গবেষকরা এক্ষেত্রে মানুষকে দিন ও রাতের কাজের ভিত্তিতে ভাগ করেন আর দেখতে পান যে মানুষের মস্তিষ্ক তখনই অত্যন্ত প্রখরভাবে কাজ করতে পারে যখন কিনা তার হাতে প্রচুর কাজ থাকে, অর্থাৎ দিনের বেলায়। এসময় প্রচুর পরিমাণ কাজের চাপে কর্মক্ষম হয়ে থাকে মানুষের শরীর আর মস্তিষ্ক হয়ে পড়ে প্রচন্ডভাবে কর্মঠ।

অন্যসময়, অর্থাৎ, দিনের শেষের ভাগে, যখন মানুষের কাজের চাপ কমে যায় তখন ধীরে ধীরে একটু একটু করে সারাদিনের কাজের ক্লান্তি চেপে বসতে থাকে তার মন ও মস্তিষ্কে। ফলে খুব বেশি কাজ করতে পারেনা মস্তিষ্ক। চিন্তার পরিসর, যুক্তির সীমা আস্তে আস্তে কমে আসতে থাকে আর সামনে যা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে তার বাইরেও একটা বড় পরিসর মাথার ভেতরে খেলা করে মানুষের। ক্লান্ত মস্তিষ্ক নানারকম অদ্ভূত সব ভাবনা নিয়ে খেলতে থাকে। সৃষ্টিশীল হয়ে উঠতে থাকে মানুষ।

বেশ অদ্ভুত আর হাস্যকর শোনালেও এই ব্যাপারটি কিন্তু বেশ কার্যকরী। আর তাই নিজের ভেতরে সৃজনশীলতাকে বাড়িয়ে তুলতে বেশকিছু ব্যাপার মাথায় রাখুন।

প্রথমত, চেষ্টা করুন হাতের কাছেই একটা কলম আর খাতা রাখতে। এতে করে দিনের যেকোন সময়েই ক্লান্ত মস্তিষ্কের কাছ থেকে ভিন্ন কোন সৃজনশীল ধারণা পেতে পারেন আপনি।

এছাড়াও নিজেকে একটু সময় দিন। প্রতিদিন রাতে চেষ্টা করুন দু কলম লেখার। প্রচুর পরিমাণ কাজ করুন দিনের বেলায়। যাতে করে মস্তিষ্ক খুব দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যায় আর মেতে ওঠে সৃষ্টিশীলতার খেলায়।

 

লিখেছেন-

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

 

ইফতারে স্বাদ বদলে মজাদার চিকেন ব্রেড পিজ্জা

এই রোজায় ইফতারে কি খাচ্ছেন? সেই সবসময়ের মতো পিঁয়াজু-বেগুনি-আলুর চপ? একটু স্বাদ বদলে চমকপ্রদ কিছু তৈরি করতে চাইলে দেখে নিন আজকের চিকেন ব্রেড পিজ্জার রেসিপিটি। মাংস, পনির এবং ক্যাপসিকামের দারুণ স্বাদে ইফতারে আপনার মনটাই ভালো হয়ে যাবে। পেট ভরাতে সহায়ক এই স্ন্যাক্সটি ইফতার পার্টিতে পরিবেশন করতে পারেন, আবার প্রতিদিনের ইফতারেও রাখতে পারেন। চলুন দেখে নিই সহজ রেসিপিটি।
উপকরণ
– ২টা গ্রিলড চিকেন ব্রেস্ট, শ্রেড করা
– ৮টা পাউরুটির স্লাইস
– পিজ্জা সস প্রয়োজনমতো
– ২ টেবিল চামচ মাখন
– ১ চা চামচ রসুন কুচি
– আধা চা চামচ শুকনো মরিচ
– ৩/৪টা ফ্রেশ বেসিল পাতা
– ১ কাপ বিভিন্ন রঙের ক্যাপসিকামের লম্বা টুকরো
– ২০০ গ্রাম মোজারেলা চিজ, ছোট কিউব করে কাটা
– ফ্রেশ অরিগানো প্রয়োজনমতো
প্রণালী
১) ওভেন ১৮০ ডিগ্রিতে প্রিহিট হতে দিন।
২) একটি পাত্রে মাখন নিন। এতে শুকনো মরিচ ভেঙ্গে নিন। রসুন এবং বেসিল পাতা ছিঁড়ে দিন। ভালো করে মিশিয়ে নিন।
৩) মাখনের মিশ্রণ প্রতিটি রুটির স্লাইসের ওপরে মাখিয়ে নিন এবং একটি বেকিং ট্রেতে রাখুন। এবার প্রিহিটেড ওভেনে দিয়ে ৪-৬ মিনিট বা মুচমুচে হওয়া পর্যন্ত বেক করে নিন।
৪) মুচমুচে এই ব্রেড স্লাইসের ওপরে পিজ্জা সস দিয়ে নিন। এর ওপরে চিকেন, ক্যাপসিকামের টুকরো, মোজারেলার টুকরো এবং কিছু অরিগানো দিয়ে দিন। এবার প্রিহিটেড ওভেনে আবার দিয়ে দিন। চিজ গলে যাওয়া পর্যন্ত বেক করে নিন।

 

বিপ্লব সাহার এক ফ্রেমে বন্দি সিনিয়র তারকারা

এই ছবিটি নিয়ে একটি সুন্দর গল্প আছে। গিয়েছিলাম হায়াত আঙ্কেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানের শেষের দিকে আঙ্কেলের সব নায়িকারা তখন এক সঙ্গে হায়াত আঙ্কেলের সঙ্গে ছবি তুলছে। আমি ভাবতে থাকি যে যদি উনাদের সবাইকে এক ফ্রেমে বাধা যায় তাহলে অনেক ভালো হবে।

আমি হায়াত আঙ্কেলকে পরে জানাই। তিনি রাজি হন। সবাইকে ফোন করতেই ভাগ্যবশত আমি তাদের সবার সময় পেয়ে যাই। সিনিয়র শিল্পীদের সবাইকে একত্র করা অনেক বড় কাজ। কারণ তারা অনেক ব্যস্ত থাকেন। আমি সত্যিই ভাগ্যবান।

শুটিংটা হয়েছিলো বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। এক বন্ধুর বাড়িতে। সেদিন সকালে ছিল প্রচণ্ড গরম। সবার জীবন তখন গরমে অতিষ্ঠ। এর মধ্যে একে একে সবাই আসতে থাকেন। প্রথমে আসেন দিলারা জামান, পরে শর্মিলী আন্টি, আফরোজা বানু আন্টিরা আসেন। তারমধ্যে আন্টিরা সবাই একত্রে মজা করছে একদম ইয়ং মেয়েদের মতো। একজন আর একজনকে বলছে কাকে ভালো লাগছে, আর কাকে পঁচা লাগছে। আবহটা ছিল অনেকটা পিকনিকের মতো।

এরমাঝে দুপুরের খাবার এর সময় হয়। হায়াত আন্টি তখনও আসেনি। জানতে পারলাম উনি আসতে চাচ্ছেন না। তাকে ফোন দেই। বলি তিনি না আসলে আমরাও খাবো না। পরে তিনি আসেন। আমাদের ছবি তোলার আসর জমে উঠে। সবাই মিলে দুপুরের খাবার খাই আমরা। আমাদের বিশ্বরঙ এর শুটিং সবাই নিজের মনে করেন। তাই সবাই তারকা ইমেজের বাইরেই থাকেন। এটা হয়েছে, কারণ সবাই আমাকে অনেক পছন্দ করেন, ভালোবাসেন।

পরে আমরা আরো একটা ছবি তুলি যেখানে হায়াত আন্টিকে আঙ্কেল ধরে আছেন। আর তার সব নায়িকারা কেমন করে যেন তাকিয়ে আছেন আমার কাছে মনে হচ্ছিলো যেনবা তারা বুঝি হিংসা করছেন। ছবিটা অনেক সুন্দর হয়েছিলো। পরে সময় করে সেই ছবিও একদিন দেখাবো। আর আমাদের এই ফটোশুট যখন চলছিলো, তখন হায়াত আন্টি দূর থেকে বলছিলো আরে ধরো ধরো, আমার স্বামীর হাত ধরো কোন সমস্যা নেই। কারণ তখন হায়াত আঙ্কেলের নায়িকারা আন্টির সামনে আঙ্কেলের হাত ধরতে একটু ইতস্ততঃ করছিলো। এরকমই অনেক ফান হয়েছিলো সেদিন।

এটি মূলত বিশ্বরঙ এর একটি আলাদা বিভাগ আছে ‘শ্রদ্ধা’ নামে। যেখানে বয়োজোষ্ঠদের জন্য সব ধরনের পোশাক পাওয়া যায়। সেই শ্রদ্ধার জন্যই এই ফটোশুটটির আয়োজন করেছিলাম।

গল্পটি বলেছেন বিপ্লব সাহা। দেশিয় ফ্যাশন হাউজ ‘বিশ্বরঙ’ এর কর্ণধার। একাধারে ফ্যাশন ডিজাইনার ও গায়কও বটে। শখের বশে গান করে থাকেন। ভিন্ন ধারার ফ্যাশন হাউজ হিসেবে মিডিয়ায় বিশ্বিরঙ আজ একটি পরিচিত নাম। আর সেই সুবাদে তিনিও বেশ পরিচিত মুখ।

 

দুর্যোগ মোকাবেলায় সীমাবদ্ধতাই নারীর প্রধান সমস্যা

দুর্যোগ মোকাবেলায় নানা ক্ষেত্রে বিচরণে সীমাবদ্ধতার কারণে নারীরা পুরুষের তুলনায় ২৪ শতাংশ কম সক্ষমতাসম্পন্ন। আর অর্থনৈতিক, সামাজিক, অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় নারীরা যথাযথভাবে অবদান রাখতে পারছে না।  ‘উইমেন রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স : কমিউনিটি সিচুয়েশন’ বিষয়ক একশনএইড বাংলাদেশ পরিচালিত নতুন জরিপ প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য উঠে এসেছে। উইমেন রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স গবেষণাটি পটুয়াখালী, বরগুনা ও ফরিদপুর জেলার ৪টি ইউনিয়নে পরিচালনা করা হয়। এতে অংশ নেয় ২৬১ জন যাদের মধ্যে ১৩২ জন ছিল নারী। ৪টি বিভাগের ৪০টি নির্দেশকের মাধ্যম গবেষণার তথ্য-উপাত্ত উঠে আসে।  গবেষণার তথ্যানুসারে, অর্থনৈতিক, সামাজিক, অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক সূচকসমূহে নারীর বিচরণের মান ৪০ যেখানে পুরুষের ৫৫।   সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘মিজারিং রেসিলিয়েন্স: উইমেন’স পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।   গবেষণা প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বরিশালের কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘মূলত দুর্যোগ মোকাবেলায় গ্রামীণ পর্যায়ে নারীরা খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না। এর প্রধান কারণ এ বিষয়ে তাদের জ্ঞান নেই বললেই চলে। আর এটি উত্তরণে সর্বপ্রথম সামাজিক প্রতিবদ্ধকতা দূর করতে হবে। আর নারীদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’  গবেষণা আর ‘সাউথ এশিয়ান উইমেন’স রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স’ অনুসারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নানা দুর্যোগের কারণে ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং ১৫ হাজার ৭১৯ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।   উইমেন রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স প্রতিবেদনটি, অর্থনৈতিক সম্পদ, নির্ভযোগ্য অবকাঠামো, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ নীতি ও পরিকল্পনা এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় রাষ্ট্রের ক্ষমতার উপর তৈরি করা হয়েছে। এবং সেখানে বিশেষভাবে জোর দেয়া হয়েছে এসব ক্ষেত্রে নারীর অভিজ্ঞতার উপর। জাপান একমাত্র উচ্চ আয়ের দেশ যেখানে দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধির অধিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং তাদের স্কোর হলো ৮০.৪। আর বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেপাল, ভারত এবং মালদ্বীপের সামগ্রিক স্কোর হলো ৪০ থেকে ৪০.৬, যা দেশগুলোর দুর্বলতাকেই প্রকাশ করে।   প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত স্কোর হলো ২২.৩, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয় নারীরা দুর্যোগ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিতে পারে না।   বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক গবেষণাটির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে বিষয়টি বিষদভাবে দেখার জন্য নতুন গবেষণাটি করে একশনএইড বাংলাদেশ। যেখানে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলের এখনও শতকরা ৩৭ জন নারীর জীবিকা নির্বাহের জন্য বাজারে প্রবেশাধিকার নেই। আর যেসব নারী আয়ের ব্যবস্থা করতে পেরেছেন তাদের ৯৪ শতাংশের দৈনিক আয় ১০০ টাকা বা তারও কম। তবে এসব নারীর শতকরা ৪৯ জনের নিজস্ব আয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ৭১ শতাংশ নারীই নিজ গ্রামের বাইরে যেতে ভয় পান। নিরাপত্তার অভাবে নানা দুর্যোগের সময়ও শতকার ৫৫ জন নারী আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে নিরাপদ মনে করেন না।   গবেষণায় আরো পাওয়া যায় যে, ৫১ শতাংশ নারী প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা পায় না। আর স্বাস্থ্য সেবা পেতে ৭১ শতাংশেরই অন্য কারো উপর নির্ভর থাকতে হচ্ছে। আর এসব কারণেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব হচ্ছে না।   একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবিরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারীনেত্রী সালমা আক্তার, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক ড. সালিমুল হক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াজেদ, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাশ্বতী বিপ্লব।

 

এই গরমে রোজার কষ্ট এড়ানোর উপায়

পবিত্রতা আর সাধনার সঙ্গে পালিত হয় রোজা। রোজা শেষে ইফতারির উৎসব মুখর পরিবেশে আয়োজন থাকে হাজার পদের খাবার। স্বাস্থ্যের জন্য ভালো-মন্দ বিচার না করেই খাওয়া চলে ভাজা পোড়া মুখরোচক খাবার। স্বাস্থ্য সম্মত খাবার হলেও অনেকে আবার অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন। এতো সব খাবারের ভিড়ে পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে ভুলে যায়। তাই এসব খাবার আমাদের পেটে গিয়ে সৃষ্টি করে নানা অনাসৃষ্টি। হতে পারে হজমের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া এবং পানিশূন্যতা। পরে দেখা যায় ইচ্ছা থাকলেও রোজা রাখা সম্ভব হয় না। অথচ এই গরমে কষ্ট এড়িয়ে সুস্থতার সঙ্গে রোজা পালন করা সম্ভব। সেজন্য..

– রোজা রাখলে সারাদিন আপনাকে সকল প্রকার পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। ইফতারির খাবারকে মুখরোচক করতে টেস্টিং সল্ট বা সাধারণ লবণের ব্যবহার বেশি চলে। খাবারে ব্যবহৃত অতিরিক্ত লবণ আপনার পানির তৃষ্ণা বাড়িয়ে দেয়। ফলে রোজা রাখা আপনার জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। তাই খাবারের লবণ স্বাভাবিক মাত্রায় রাখা ভালো।

– এই গরমে রোজার কষ্ট মূলত পানি তৃষ্ণায়। সেই তৃষ্ণাকে একদমই ভুলিয়ে দিতে খেতে পারেন ইসুপগুল-মিছরি শরবত, আখের গুড়ের শরবত অথবা ঘৃতকুমারির-তোকমারির শরবত। সেহরিতে একগ্লাস শরবত আপনাকে সারাদিনে পানি পিপাসার কথা একবারও মনে করতে দেবে না।

– ইফতারিতে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার বর্জন করা স্বাস্থ্যের জন্য উপকার। সারাদিন অভুক্ত পেটে এসব খারার গিয়ে হজমের সমস্যা করে। তাই যতদুর সম্ভব তেলচর্বি ও ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলা ভালো। হালকা মিষ্টি বা ঝাল জাতীয় রান্না খাবার হতে পারে আপনার আদর্শ ইফতারি।

– পানিশূন্যতা দুর করতে বেশি চিনির শরবত অথবা সফট ড্রিঙ্কসের ওপর নির্ভর না করাই ভালো। ঘরে তৈরি লেবু, বেল অথবা অন্য কোনো শরবত খেতে পারেন। আম, তরমুজ, শশা, আনারসের জুস খাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকায় লেবুর শরবত একদম খালি পেটে খাওয়া উচিৎ নয়। সামান্য কিছু খেয়ে তবেই খেয়ে নিন প্রাণ চাঙা করা একগ্লাস লেবুর শরবত।

– ইফতার এবং সেহরিতে যথেষ্ট ফল ও শাক সবজি খেতে হবে। তাজা শাক-সবজি, মাছ ও ফল আপনার স্বাভাবিক হজমে দারুণভাবে সহায়তা করবে। দেহের পানিশূন্যতা দূর করে প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেবে।

– ইফতারি বা সেহরিতে যতটা সম্ভব মাংস এড়িয়ে চলা ভালো। মাংস যদি খেতেই হয় তবে লাল মাংস বাদ দেয়া উচিৎ।

 

সব নবিদের যুগেই রোজা প্রচলিত ছিল

রোজা সব যুগেই প্রচলিত ছিল। পূর্ববর্তী বিভিন্ন ধর্মে রোজা পালনের নিয়ম ছিল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আদিমানব সর্বপ্রথম নবী হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত প্রত্যেক নবী-রাসুলই রোজা পালন করেছেন। রোজা শুধু নবী করিম (সা.)-এর প্রতি ফরজ করা হয়নি, পূর্ববর্তী নবী-রাসুলদের প্রতিও ফরজ করা হয়েছিল।

বছর ঘুরে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে আবারও হাজির রমজানুল মোবারক। পুরো একমাস রোজা রাখার সাধনার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভে ব্যাকুল হয়ে উঠবে বিশ্বের সকল মুসলমান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘ওহে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল, যেন তোমরা খোদাভীতি অর্জন করতে পার।’ (সুরা আল-বাকারা : আয়াত-১৮৩)

রোজা সব যুগেই প্রচলিত ছিল। পূর্ববর্তী বিভিন্ন ধর্মে রোজা পালনের নিয়ম ছিল। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আদিমানব সর্বপ্রথম নবী হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত প্রত্যেক নবী-রাসুলই রোজা পালন করেছেন। রোজা শুধু নবী করিম (সা.)-এর প্রতি ফরজ করা হয়নি, পূর্ববর্তী নবী-রাসুলদের প্রতিও ফরজ করা হয়েছিল।

হজরত নূহ (আ.)-কে ‘দ্বিতীয় আদম’ বলা হয়। তাঁর যুগেও সিয়াম পালন করা হয়েছিল। হজরত আদম (আ.) থেকে হজরত নূহ (আ.) পর্যন্ত চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ ‘আইয়ামে বিজ’-এর রোজা ফরজ ছিল। তাফসিরে ইবনে কাসিরে বর্ণিত আছে, হজরত নূহ (আ.)-এর যুগে প্রত্যেক মাসে তিনটি রোজা পালনের বিধান ছিল। তাফসিরবিদ হজরত কাতাদাহ (র.) বলেন, ‘মাসে তিন দিন রোজা রাখার বিধান হজরত নূহ (আ.)-এর যুগ থেকে শুরু করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগ পর্যন্ত বলবৎ ছিল।’

কেউ কেউ লিখেছেন, মুসলিম মিল্লাতের পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর যুগে ৩০টি রোজা ছিল। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর পর আসমানি কিতাব ‘তাওরাত’প্রাপ্ত প্রসিদ্ধ নবী হজরত মুসা (আ.)-এর যুগেও সিয়াম ছিল। হজরত মুসা (আ.) তুর পাহাড়ে আল্লাহর কাছ থেকে তাওরাতপ্রাপ্তির আগে ৪০ দিন পানাহার ত্যাগ করেছিলেন। ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে বর্ণিত আছে, হজরত মুসা (আ.) তুর পাহাড়ে ৪০ দিন পানাহার না করে কাটিয়েছিলেন। তাই ইহুদিরা সাধারণভাবে হজরত মুসা (আ.)-এর অনুসরণে ৪০টি রোজা রাখা ভালো মনে করত। হজরত দাউদ (আ.)-এর যুগেও রোজার প্রচলন ছিল।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় রোজা হজরত দাউদ (আ.)-এর রোজা। তিনি এক দিন রোজা রাখতেন এবং এক দিন বিনা রোজায় থাকতেন।’ (বুখারি ও মুসলিম) অর্থাৎ হজরত দাউদ (আ.) অর্ধেক বছর রোজা রাখতেন এবং অর্ধেক বছর বিনা রোজা থাকতেন। প্রাচীন খ্রীস্টানরা বুধবার, শুক্রবার ও শনিবারে রোজা রাখত। তারা তাদের ওপর আপতিত বিপদ মুক্তির জন্য রোজা রাখত। চতুর্থ খ্রীষ্টাব্দের শুরুতে খ্রীস্টানদের ওপর মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসে। সে বিপদ থেকে মুক্তির জন্য নবী মুসা (আ.)-এর অনুকরণে তারা ৪০ দিনব্যাপী বড় রোজা রাখত।

ইসলামের সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়াত লাভের আগে আরবের মুশরিকদের মধ্যেও সিয়ামের প্রচলন ছিল। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় হিজরত করে ইহুদিদের আশুরার দিনে রোজা অবস্থায় পেলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজকে তোমরা কিসের রোজা করছ?’ তারা বলল, ‘এটা সেই মহান দিন যেদিন আল্লাহ তাআলা হজরত মুসা (আ.) ও তাঁর কওমকে (বনী ইসরাইল) মুক্ত করেছিলেন এবং ফেরাউন ও তার জাতিকে নীল দরিয়ায় ডুবিয়ে মেরেছিলেন। ফলে শুকরিয়াস্বরূপ হজরত মুসা (আ.) ওই দিনে রোজা রেখেছিলেন, তাই আমরা আজকে রোজা করছি।’ এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আমি তোমাদের অপেক্ষা হজরত মুসা (আ.)-এর অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিন সওম পালন করেন এবং সবাইকে রোজা রাখার নির্দেশ দেন।’ (বুখারি ও মুসলিম) পরিশেষে মাহে রমজানের সিয়াম যখন ফরজ হয় তখন তিনি আশুরার রোজা ছেড়ে দেন। (বুখারি ও মুসলিম) ইসলামের প্রাথমিক যুগে তিন দিন রোজা রাখার বিধান ছিল। পরে দ্বিতীয় হিজরি সালে উম্মতে মুহাম্মদির ওপর মাহে রমজানের রোজা ফরজ হলে তা রহিত হয়ে যায়।

ফয়জুল আল আমীন

 

ইফতারিতে মজাদার খাসির হালিম

ইফতারিতে মিষ্টি জাতীয় খাবারের পাশাপাশি ঝাল খাবারের গুরুত্ব থাকে সমান হারে। আর তাইতো ইফতারিতে নিয়মিত স্থান করে নেয় সুস্বাদু হালিম। রুটি, পরোটার সঙ্গে বা শুধু খেতে হালিমের জুড়ি নেই। মজাদার হালিম খেতে রোজ রোজ খাবারের দোকানের ওপর নির্ভর করতে হয়। অথচ, চাইলে খুব সহজে নিজেই রান্না করে নিতে পারেন। দেখে নিতে পারেন মজাদার খাসির হালিম রান্নার উপায়।

যা যা লাগবে

খাসির মাংস ১ কেজি, মুগ ডাল আধা কাপ, মসুর ডাল আধা কাপ, বুটের ডাল আধা কাপ, খেসারি ডাল আধা কাপ, মাষ কলাই ডাল আধা কাপ, আদারসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, দারুচিনি-এলাচ ৮টি, তেজপাতা ২টি, পোলাও চাল আধা কাপ, গমের গুঁড়া আধা কাপ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, আদা কুচি ২ টেবিল চামচ, ধনে পাতা ও কাঁচামরিচ কুচি ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস পরিমাণমতো।

যেভাবে করবেন

প্রথমে খাসির মাংস আদা, রসুন, দারুচিনি, এলাচ, হলুদ, মরিচ ও অন্যান্য মসলা দিয়ে ভালো করে রান্না করতে হবে। সব ডাল একসঙ্গে আলাদা পাত্রে সেদ্ধ করে রান্না করা মাংসের মধ্যে দিয়ে আবার কিছুক্ষণ রান্না করুন। এবার পোলাও চাল ও গমের গুঁড়া দিয়ে আবার কিছুক্ষণ রান্না করুন। পরিবেশনের সময় আদা কুচি, লেবুর রস, পেঁয়াজ ওপরে ছড়িয়ে দিলেই হল

 

বিশ্বের ৩৬ নম্বর ক্ষমতাধর নারী শেখ হাসিনা

ফোর্বস ম্যাগাজিনের করা বিশ্বের ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৩৬ নম্বর ক্ষমতাধর নারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ গতবছর এ তালিকায় শেখ হাসিনার স্থান ছিল ৫৯ নম্বরে। সোমবার এ তালিকা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত ব্যবসাভিত্তিক এ ম্যাগাজিনটি।

ওই তালিকায় এবারো জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলেই বিশ্বের শীর্ষ ক্ষমতাধর নারী। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।

তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছেন গতবার চতুর্থ স্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জ্যানেট ইয়েলেন। আর চতুর্থ স্থানে চলে গেছেন গতবছর তৃতীয় স্থানে থাকা মাইক্রোসফটের মালিক বিল গেইটসের স্ত্রী মেলিন্ডা গেইটস।

আরো মজার বিষয় হচ্ছে এবার শীর্ষ দশে ঠাঁই হয়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। তিনি এক ধাক্কায় ১৩ নম্বরে নেমে গেছেন। অবশ্য আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিনা লগার্ড এবারও ষষ্ঠ স্থানেই আছেন।

ফোর্বস জানিয়েছে, এই ১০০ নারী এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পদ নিয়ন্ত্রণ এবং বিশ্বের অর্ধেক মানুষকে প্রভাবিত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে ফোর্বস বলেছে, ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই নারী।

রাজনীতি, ব্যবসা, প্রযুক্তি ও সেবা খাতে প্রতিনিধিত্বকারী ২৯ দেশের নারীরা আছেন ১০০ জনের এ তালিকায়। যার ৫১ জনই যুক্তরাষ্ট্রের, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নয়জন চীনের। এছাড়া তালিকায় ৩২ জন প্রধান নির্বাহী, ১২ জন বিশ্বনেতা ও ১১ জন বিলিয়নিয়ার রয়েছেন।

 

ওরা নারী অগ্রযাত্রার প্রতীক

দিনাজপুর অঞ্চলের গ্রাম বাংলার সড়কে এটা কোনো শোভাযাত্রা বা সাইকেল র‌্যালি নয়। কোনো এনজিওর কর্মসূচিও নয়। এটা নারী অগ্রযাত্রার এক মূর্ত প্রতীক। এ দৃশ্যই বলে দিচ্ছে নারীরা আর পিছিয়ে নাই। তারাও আজ পারবে নিজেরাই সামনে এগিয়ে যেতে।

এটা প্রতিনিয়তই স্কুল ছুটির পর ফিরে যাওয়া বাংলার গ্রামীণ পথের দৃশ্য। দিনাজপুরের সদর, বিরল, বীরগঞ্জসহ বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কেই এভাবেই স্কুল যেতে দেখা যায় মেয়েদের। দূর-দূরান্ত থেকে মেয়েরা দলবেঁধে নিজেরাই সাইকেল চালিয়ে স্কুলে আসছে।

স্কুল ছুটির সময় একসঙ্গে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় মনে হতে পরে এটা হয়তো সাইকেল র‌্যালি। সকল প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ প্রত্যয় নিয়ে তারা প্রতিনিয়তই এগিয়ে যাচ্ছে।

এ অদম্য শিক্ষার্থীরা কেউ ১ থেকে ৯ কিলোমিটার পর্যন্ত সাইকেলেই স্কুলে যাওয়া আসা করে। যদিও বৃষ্টি এলে স্কুলে আসতে সমস্যা হয়। সাইকেল না হলে পায়ে হেঁটেই আসতে হতো অথবা কিছুটা পথ হেঁটে এসে হয়তো রিকশা-অটোভ্যানে আসতে হতো। কিন্তু স্বাধীনভাবে নিজে সাইকেল চালিয়ে এলে সময় ও সুবিধা দুটোই পাওয়া যায়।

বিরলের অকড়া গ্রাম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রী কামরুন নাহার প্রায় ৮কিলোসিমটার পথ সাইকেল চালিয়ে বিরল পাইলট হাইস্কুলে আসে। এই স্কুলে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরের মহেশপুর গ্রাম থেকে আসে ৫ জন, পুড়িয়া গ্রাম থেকে ৬ জন। এভাবে দূরের গ্রাম থেকে বিভিন্ন শ্রেণির ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রী আসে একইভাবে।

এ ব্যাপারে কামরুজ্জামানের কন্যা কামরুন নাহার জানায়, আমাদের আসতে কোনো অসুবিধা হয় না। তবে বৃষ্টি-ঝড়ে সমস্যাই পড়তে হয়।

এ ব্যাপারে বিরলের রঘুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হোসেন আলী বলেন, ‘বর্তমানে এ স্কুলে শতকরা ৩৫ ভাগ মেয়েরা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে আসে। যখন শতকরা ৮০ ভাগ মেয়েরা সাইকেলিং করে স্কুলে যাতায়াত করবে তখন মনে করবো মেয়েরা লেখাপড়া থেকে সকল দিকে এগিয়ে গেছে তারই প্রতিফলন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি যে সকল মেয়েরা সাইকেলিং করে স্কুলে যাতায়াত করে তাদের মাঝে কোনো প্রকার জড়তা থাকে না। তারা অনেকটা অগ্রগামী হয়। তাই আমি সকল ছাত্রীদের সাইকেল নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়ে থাকি। কেননা বাইরে সামাজিকভাবে মেয়েদের সাইকেলিংয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।  তবে অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্তেও সাইকেল নিয়ে আসতে পারে না। এছাড়াও রাস্তায় কোনো প্রকার সমস্যা হলে কিংবা কেউ বিরক্ত করলে জানার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিব বলে তাদের জানিয়েছি।’

দেশের সার্বিক উন্নতি হলেও গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ও নারীরা এখনও পিছিয়ে রয়েছে। এখনও অনেক গ্রামে ভালো রাস্তা-ঘাট নেই, শিশুরাও স্কুলে যেতে পারছেন না। কিংবা উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে হচ্ছে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিয়ে। ধর্মীয় বাধা বা মোল্লাদের ভয়-ভীতির কমে গেছে। আজ দিন পাল্টেছে নারীরা নিজেদের জীবনের উন্নতি করতে চায়। চায় পুরুষদের পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রে অবদান রাখতে। আর ঘরে থাকতে তারা চায় না।
তাই তারা বেরিয়ে পড়েছে শিক্ষার আলো নিতে, বিশ্বকে জানতে। সমাজের পরিবর্তন ঘটিয়ে নারীদের ন্যায্য সম্মানসহ সকল পেশায় দক্ষতার ছাপ রাখতে।

 

দুর্যোগ মোকাবিলায় নারীরা পিছিয়ে

বরগুনা সদরের পাথরঘাটা ইউনিয়নের পাখি বেগম ফিরে গেলেন ২০০৭ সালের সিডরের দিনে। এত বড় বন্যা হবে তিনি বুঝতে পারেননি। টেলিভিশনে খবর দেখে পাখি বেগমের ভাই চট্টগ্রাম থেকে বোনকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু স্বামী শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিশ্বাস করেননি সেদিন কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বললে চৌকিতে শুয়ে থাকা স্বামী গালাগালও করেন। তবে একসময় পানির তোড়ে পাখি বেগম ছোট মেয়ের হাত ধরে সাঁতরে বের হন। স্বামী ও অন্য ছেলেমেয়েরাও বের হতে পেরেছিলেন। তবে পানির তোড়ে ঘর, ১৪টি ছাগল, পুকুরের মাছ—সবই ভেসে যায়।
পাখি বেগম শুধু অচেনা ভিটেতে ফিরে আসেন, তবে দমে যাননি। স্থানীয় এক সংগঠনের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর সেলাই মেশিন পান। বাজার থেকে টুকরা কাপড় কিনে শুরু করেন ব্যবসা। পাথরঘাটার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের এই নারীর অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হলেও তিনি তাঁর বড় মেয়েকে ডিগ্রি পর্যন্ত পড়িয়ে বিয়ে দিয়েছেন। আরেক মেয়ে স্নাতক পড়ছেন। ছেলেকে পড়িয়েছেন এসএসসি পর্যন্ত। শুধু তা-ই নয়, পাখি বেগম বর্তমানে সুন্দরবন নারী দলের সভাপতি। তিনি গ্রামের নারীদের নিয়ে উঠান বৈঠক করে দুর্যোগ মোকাবিলার কথা বলেন।
এ ধরনের প্রশিক্ষণে আসলেই কোনো লাভ হয় কি না জানতে চাইলে পাখি বেগম দৃঢ়ভাবেই বললেন, ২০০৭ সালের পর বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগে ও পরে তিনি যে বিষয়গুলো শিখেছেন, তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। অন্য ব্যক্তিরাও এখন অনেক সচেতন। আর পাখি বেগমের ভাষায় বড় পরিবর্তন হচ্ছে, ‘স্বামীও এখন আমার কথা শোনে। আগে বাড়ির বাইরে যাইতে পারতাম না, আর এখন ঢাকা পর্যন্ত আসতে পারছি।’
গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘মিজারিং রেসিলিয়েন্স: উইমেনস পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে কথা হয় পাখি বেগমের সঙ্গে। এই সভায় শুধু পাখি বেগম নন, পাথরঘাটার পদ্মা নদী নারী দলের সভাপতি শাহিদা, ফরিদপুরের নর্থ চ্যানেল চরের দক্ষ ধাই হিসেবে কাজ করা সূর্য বেগম, ফরিদপুরেরই রাশেদা বেগম, পটুয়াখালীর কলাপাড়া থেকে আসা লাইলী বেগমসহ কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা হয়। অ্যাকশনএইডের সহায়তায় স্থানীয় বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ পেয়ে তাঁরা এখন জানেন, কীভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। এই নারীরাই অ্যাকশনএইড পরিচালিত ‘উইমেন রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স: কমিউনিটি সিচুয়েশন’ বিষয়ক পরিচালিত নতুন জরিপেও অংশ নেন।
গতকাল এই জরিপের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। জরিপ অনুযায়ী, নারীদের যাতায়াতসহ নানা সীমাবদ্ধতার কারণে দুর্যোগ মোকাবিলায় নারীরা পুরুষের তুলনায় ২৪ শতাংশ কম সক্ষমতাসম্পন্ন। অর্থনৈতিক, সামাজিক, অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক সূচকে নারীর স্কোর ৪০ আর পুরুষের স্কোর ৫৫।
সভার বক্তাদের মতে, দুর্যোগের সময় নারীরা নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারলে তা আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অ্যাকশনএইড এর আগে ‘সাউথ এশিয়ান উইমেনস রেসিলিয়েন্স ইনডেক্স’ শীর্ষক আরেকটি জরিপ চালায়, সেখানে দক্ষিণ এশিয়ার (আফগানিস্তান ছাড়া) দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। দক্ষিণ এশিয়ায় পরিচালিত জরিপকে সামনে রেখেই বাংলাদেশে পটুয়াখালী, বরগুনা ও ফরিদপুর জেলার চারটি ইউনিয়নে বর্তমান জরিপটি পরিচালনা করা হয়। এতে অংশ নেন ২৬১ জন, যাঁদের মধ্যে ১৩২ জন ছিলেন নারী। ৩৬টি প্রশ্নের ভিত্তিতে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। এতে উঠে এসেছে, ৫৩ শতাংশ নারী দুর্যোগের সংকেত পাওয়ার পরও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেন না।
গতকাল সভায় জাতিসংঘের নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) কমিটির সাবেক চেয়ারপারসন সালমা খান বলেন, নির্যাতনের শিকার নারীকে তথ্য দেওয়া হলেও তাঁরা আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়াসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতে পারবেন কি না, তা-ও একটি বড় প্রশ্ন।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের দেশীয় পরিচালক ফারাহ্ কবির বলেন, দুর্যোগের সময় নারীর চিন্তা থাকে পরিবার ও সন্তানকে নিয়ে। নিজের জন্য আলাদা করে চিন্তা করার অবকাশ নেই। তবে নারীর এ অবস্থান স্বীকৃতি পায়নি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ, ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পরিচালক সলিমুল হক, অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনের জ্যেষ্ঠ প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাশ্বতী বিপ্লব আলোচনায় অংশ নেন।

 

দেশে নারীর আত্মহত্যার হার বেশি

স্বামী ও দুই সন্তানসহ সেলিনা বেগম রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় বাস করতেন। কিন্তু আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে স্বামীর ইচ্ছায় তাঁকে গ্রামের বাড়ি ফিরে যেতে হয়। বাধ্য হয়ে গ্রামে এই ফিরে যাওয়াটা মেনে নিতে পারেননি ২৭ বছরের এই গৃহবধূ। তাই বেছে নেন আত্মহননের পথ। এক সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করে নিজে ঝুলে পড়েন ঘরের আড়ার সঙ্গে। ঘটনাটি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ভান্ডারদহ গ্রামে ঘটেছে। (সূত্র: প্রথম আলো)।
প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও কোনো না কোনো নারী আত্মহত্যা করছেন। শিশুকন্যা থেকে বাদ যাচ্ছে না ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধাও। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার তুলনামূলক অনেক বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘প্রিভেনটিং সুইসাইড: আ গ্লোবাল ইমপেরাটিভ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই নারীদের তুলনায় পুরুষেরা বেশি আত্মহত্যা করে থাকে। অথচ বাংলাদেশে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি আত্মহত্যা করে থাকে। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও নারীর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পুরুষ আত্মহত্যা করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০১২ সালে ১০ হাজার ১৬৭ জন মানুষ আত্মহত্যা করেছে, যার মধ্যে ৫ হাজার ৭৭৩ জন নারী। অন্যদিকে ৪ হাজার ৩৯৪ জন পুরুষ আত্মহত্যা করেছে। বিশ্বে আত্মহত্যায় বাংলাদেশের অবস্থান দশম। ২০১৪ সালে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রতিবছর বিশ্বে আট লাখের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করে। আর প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন। ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী মানুষ যে কয়টি কারণে মারা যায়, তার মধ্যে আত্মহত্যা দ্বিতীয়। বিশ্বে নারীদের তুলনায় প্রায় তিন গুণ পুরুষ আত্মহত্যা করে। তবে এই হার অনুন্নত দেশের তুলনায় উন্নত দেশে তুলনামূলক বেশি।
বাংলাদেশে নারীদের বেশি মাত্রায় আত্মহত্যার কারণ হিসেবে নির্যাতন, সহিংসতা, নিরাপত্তাহীনতা, অবহেলাকেই চিহ্নিত করেছেন বিশিষ্টজনেরা। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে যত নারী আত্মহত্যা করেছে, তাদের মধ্যে শতকরা ৮৬ ভাগই পারিবারিক নির্যাতনের শিকার। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল হোসেন ঢালী বলেন, ‘আমাদের সামাজিক কাঠামোটি এমনভাবে গড়ে উঠেছে, যেখানে নারীকে সবকিছুর জন্য “দোষারোপ” করা হয়। নারীর আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও থাকে না অধিকাংশ সময়। পাশাপাশি পুরুষতান্ত্রিক পরিবেশের কারণে নারীর কষ্ট, অপমান বা মানসিক চাপ কমানোর তেমন কোনো সুযোগ নেই।’
তবে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ বা চাপ সামলানোর কৌশল না জানা অথবা এ সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে আত্মহত্যা হয় বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সালাহ্উদ্দীন কাউসার। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে নারীকে স্বাভাবিকভাবেই বেশি মাত্রায় অবদমন করাসহ বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করে রাখা হয়।’ আত্মহত্যা অবশ্যই প্রতিরোধ করা সম্ভব, উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘স্কুল পর্যায় থেকেই একটি বাচ্চাকে শেখাতে হবে, কী করে বিভিন্ন রকম চাপ সামলাতে হবে, নিজের রাগ বা আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বুঝতে হবে জীবনের থেকে কোনো কিছুই মূল্যবান নয়। নিজেকে ভালোবাসাতে হবে।’
আত্মহত্যা প্রতিরোধে পরিবারের পাশাপাশি ভিকটিমের নিজের সচেতনতাও খুব জরুরি বলে মনে করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও নারীনেত্রী মালেকা বানু। কাউন্সেলিংই এর অন্যতম সমাধান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেসব নারী আত্মহত্যা করে, তারা কোনো না কোনো ট্রমায় ভুগে থাকে। অথচ পরিবার সে বিষয়টি আমলে নেয় না। তাদের কাউন্সেলিং করানো হয় না। আত্মহত্যা বন্ধ করতে সরকারসহ সবাইকে কাজ করতে হবে।’

 

ভিড়ের মাঝেও হয়ে উঠুন সবার মনোযোগের পাত্র!

আর দশজন সাধারণ মানুষের ভেতরে গণ্য হতে কার ভালো লাগে? বিশেষ করে যদি আপনি কোন অনুষ্ঠানে যান তাহলে তো বেশ মানসিক অস্বস্তিতেই পড়ে যেতে হয়। এমনটাতো ইচ্ছে করতেই পারে আপনার যে, সবাই আরো অনেকের মতন আপনার দিকেও বেশ খানিকটা ঈর্ষা ভরা চোখ নিয়ে তাকাবে। গুনবে একটু আলাদা আর অন্যরকমের তালিকায়। মনোযোগ দেবে আরো একটু বেশি। কিন্তু কী করে সেটা সম্ভব? চলুন জেনে আসি।

১. পোশাকে ভিন্নতা আনুন

পোশাক যে কোন স্থানে আপনাকে আর আপনার চিন্তা-ভাবনাকে ফুটিয়ে তোলার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে। তাই তেমনটাই পোশাক বাছুন যেটা আপনার রুচিকে পরিপূর্ণভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে। সেইসাথে পোশাকের আকৃতির দিকেও লক্ষ্য রাখুন। খুব ঢিলে বা আঁটসাট পোশাক পরিধান করার চাইতে দুটোর মিশেলে পোশাক বাছুন। অর্থাৎ, পোশাকের একটি অংশ ঢিলে হলে অন্য অংশটি আঁটসাট দেখে পরিধান করুন। আর এর সাথে নজর রাখুন আনুষাঙ্গিক ব্যবহার্যের দিকেও। চেষ্টা করুন পোশাকে নিজের সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলতে। কারণ এতে করে কেবল নিজেকে একেবারে অন্যরকমভাবেই ফুটিয়ে তুলবেন না আপনি, হয়ে উঠবেন সবার চোখে শ্রদ্ধার পাত্রও।

২. অন্যকে মনোযোগ দিন

এটি পরীক্ষামূলকভাবে সত্যি যে, মানুষ তার কথাই বেশি মনযোগ দিয়ে মোনে যে নিজে অন্যের কথা শুনতে পছন্দ করে। তাই অন্যদের মনোযোগ নিজের দিকে টানতে হলে তাদেরকেও গুরুত্ব দিন। তাদের চিন্তা-ভাবনা যে পথে পরিচালিত হচ্ছে সেদিক নিয়েও কথা বলুন। কেবল নিজের কথা না ভেবে অন্যদেরকেও গুরুত্ব দিন। তারাও আপনাকে মনোযোগ দেবে।

৩. সবাইকে অংশগ্রহন করতে দিন

পুরো ঘরটাতে অনেক মানুষ আর কেউ আপনার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না? কথা বলছেন অথচ একদমই মনোযোগ দিয়ে শুনছে না? থামুন। আপনি কী নিয়ে বলছেন, কীভাবে বলছেন একবার ভাবুন তো? কোন মানুষের সামনে কী নিয়ে বলছেন আপনি সেটার ওপর অনেকটা নির্ভর করে আপনার কথা সবাই মন দিয়ে শুনবে কিনা। এ কারণেই খুব ভালো কোন কথাও আপনার দিকে অন্যদেরকে টানবে না যদিনা ঠিক তাদের মতন করে আপনি সেটা বলেন। সামনের মানুষগুলোকে গুরুত্ব দিন। তাদেরকে প্রশ্ন করুন। তাদের মতামত জানতে চান। সবাই এতে করে আপনার কথা শুনবে আর মনোযোগটাও দেবে।

 

লিখেছেন-

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

 

দারুণ সুন্দর ব্লু ভেলভেট কেক তৈরি করুন নিজেই

ইদানিং বেশ জনপ্রিয় একটি কেক হলো রেড ভেলভেট কেক। প্রচলিত চকলেট বা ভ্যানিলার চাইতে একটু অন্যরকম স্বাদ, ফ্লেভার সেইসাথে লালচে রঙের কেকটা পছন্দ করেন অনেকেই। একইভাবে অভিনব একটি কেক হলো ব্লু ভেলভেট কেক। উজ্জ্বল নীল রঙের এই কেকটি তৈরি করুন নিজেই আর চমকে দিন সবাইকে।
উপকরণ
  • – ১ কাপ মাখন
  • – সোয়া এক কাপ কাস্টর সুগার
  • – ২টা ডিম
  • – নীল ফুড কালার
  • – ২ কাপ ময়দা
  • – ১ চা চামচ বেকিং পাউডার
  • – আধা কাপ বাটারমিল্ক
  • – সাজানোর জন্য ক্রিম চিজ এবং স্প্রিংকল
প্রণালী
১) মাখন এবং চিনি হ্যান্ড বিটার দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এর সাথে একটি একটি করে দুইটি ডিম ভেঙ্গে বিট করে নিন।
২) ফুড কালারের বোতলের ক্যাপে করে দুই ক্যাপ নীল কালার এতে। ভালো করে বিট করে নিন যাতে পুরো মিশ্রণে রং সমানভাবে ছড়িয়ে যায়।
৩) ঝাঁঝরি দিয়ে ময়দা এবং বেকিং পাউডার দিন এই মিশ্রণে। ফোল্ড করে নিন যতক্ষণ না ব্যাটার মসৃণ হয়ে আসে। এরপর এতে আধা কাপ বাটারমিল্ক দিয়ে মিশিয়ে নিন।
৪) বেকিং প্যানে মিশ্রণটি দিয়ে ১৮০ ডিগ্রিতে বেক করে নিন ৩৫-৪০ মিনিট।
কেকটাকে প্যান থেকে বের করে নিন। পাশের গাড় অংশগুলো কেটে বাদ দিন। এবার কেকটাকে ছোট ছোট চৌকো টুকরো করে কেটে নিন। ওপরে ক্রিম চিজের পাইপিং এবং রঙ্গিন স্প্রিংকল দিয়ে পরিবেশন করুন অভিনব ব্লু ভেলভেট কেক।

 

বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান হ্যান্ডব্যাগ

সম্প্রতি নিলামে বিক্রি হল বিরল একটি বার্কিন হ্যান্ডব্যাগ। এই নিলামটি ছাড়িয়ে গেল পূর্বের সকল নিলামের রেকর্ডকে। ক্রিস্টি’স এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী এতে রয়েছে হিমালয় নাইলোটিকাস ক্রোকোডাইল ডায়মন্ড, ৩০ সেন্টিমিটার বার্কিন, ১৮ ক্যারেটের হোয়াইট গোল্ড এবং ডায়মন্ড। জানা যায়, এই সকল আনুষঙ্গিক এশিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যক্তিগতভাবে সংগ্রহ করা হয়েছিল। নিলামে হ্যান্ডব্যাগটির দাম উঠেছে ৩,০০,১৬৮ মার্কিন ডলার।

ক্রিস্টি’স এর একটি প্রেসে বলা হয়, ‘হারমিসের বানানো ডায়মন্ডের টুকরাগুলো দারুণ চমৎকার। কিন্তু একটিও হিমালয়ের মতো নয় দেখতে।’ সেখানে আরও বলা হয়- ‘অনেকের ধারণা, বছরে একটি অথবা দু’টি হিমালয় ডায়মন্ড তৈরি করা হয় যাতে করে বিশ্বজুড়ে এই হ্যান্ডব্যাগের উৎপাদন কম থাকে।’

এই ব্যাগটি ২০০৮ সালে তৈরি হয় এবং সিএনএন এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী ২০০৯ সালে এটি বিক্রির রেকর্ড ছিল ২,২২,০০০ মার্কিন ডলার।

[বার্কিন হ্যান্ডব্যাগ- অত্যন্ত মূল্যবান হ্যান্ডব্যাগ হিসেবে পরিচিত বিশ্বব্যাপি। বিখ্যাত অভিনেত্রী জেন বার্কিনের নাম অনুসারে এই ব্যাগের নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে বড় সেলিব্রেটিরা এই ব্যাগ ব্যবহার করে থাকেন। এবং যারা এই ব্যাগ ব্যবহার করেন, তাদেরকে ধনী হিসেবে বিবেচনা করা হয়]

 

বাবার জন্যই বিজিবিতে জাহানারা

বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। তাকে দেখেই শৈশব থেকে বাহিনীতে চাকরির স্বপ্ন বুনেছিলেন বিজিবিতে সদ্য নিয়োগ পাওয়া জাহানারা আক্তার। বগুড়ার মেয়ে জাহানারা বিজিবির ৮৮তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করে ৯৭ নারীর সদস্যদের মধ্যে সেরা হয়েছেন।

রোববার (৫ জুন) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় অবস্থিত বিজিবির প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে জাহানারার হাতে পুরস্কার তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

পুরস্কার গ্রহণ শেষে জাহানারা  বলেন, ‘বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। ছোটবেলা থেকে তাকে সব কিছু নিয়মের মধ্যে করতে দেখেছি। সেখান থেকেই আমারও বাহিনীতে চাকরির স্বপ্ন জাগে। আজ আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। পরিবার বিশেষ করে বাবা, যার অনুপ্রেরণায় আমি বিজিবিতে যোগদান করেছি। আমার এমন অর্জনে বাবা অনেক খুশি হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘৬ মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণে আমি সেরাদের সেরা হয়েছি। আমার বিশ্বাস পরে যারা আসবে তারা আরো ভালো করবে।’

প্রশিক্ষক হিসেবে আসা আনসারবাহিনীর প্রশিক্ষক রূপালী আক্তারও জাহানারার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণে অনেক সিরিয়াস ছিল জাহানার আক্তার। আর এই কারণেই সে সেরা হয়েছে।’

এদিকে জাহানারার বাবা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওর জন্য আজ আমার সত্যিই গর্ব হচ্ছে। পড়াশুনাতেও জাহানারা যেমন সিরিয়াস ছিল, বাহিনীতে যোগ দেয়ার বিষয়েও তার আগ্রহের কমতি ছিল না।’

উল্লেখ্য, বিজিবি ৮৮ তম ব্যাচে ৯৭ নারীসহ সর্বোমোট ১১ শ ৪৪ জনকে পাসিং আউটের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন।

 

রোজা রাখতে ডায়াবেটিক রোগীর প্রস্তুতি

রমজানে সৃষ্টিকর্তার অপরিমেয় রহমত থেকে বঞ্চিত হতে রাজি নন কোনো ধর্মপ্রাণ মুসলিম। শত কষ্টের পরেও রোজা রাখার নিয়ত করেন আপন মনে। চরম বিপর্যস্ত বিপাকীয় তন্ত্রের অধিকারী ডায়াবেটিক রোগীরাও বাদ যান না সে নিয়ত থেকে। প্রচণ্ড ধর্মীয় আবেগ আর আগ্রহের কারণে তারা রোজা রাখতে চান। তবে দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকলে শারীরিক কিছু সমস্যা হতে পারে। তাই রোজা রাখার কারণে সম্ভাব্য সমস্যা ও প্রতিকার সম্পর্কে আগেই জেনে নিতে হবে।

রক্তে গ্লুকোজ কমতে পারে

খাদ্য গ্রহণে দীর্ঘসময় বিরত থাকলে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমতে থাকে। রোজা রাখা অবস্থায় টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীর রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা ৪.৭ গুণ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিকের ক্ষেত্রে ৭.৫ গুণ বেশি থাকে।

রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যেতে পারে

রোজা রাখার কারণে টাইপ-১ ও টাইপ-২ উভয় ধরনের ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রেই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়ারও কিছুটা ঝুঁকি থাকে। তবে টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে তা মারাত্মক হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে এ থেকে জীবননাশের ঘটনাও ঘটতে পারে।

ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস

টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে রক্তের গ্লুকোজ মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। বিশেষ করে অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিক রোগীর ক্ষেত্রে এধরনের সমস্যা বেশি হয়।

পানিশূন্যতা

দীর্ঘ সময় পানি বা পানীয় খাদ্য গ্রহণে বিরত থাকার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। গরম ও বেশি আদ্র আবহাওয়ায় পানিশূন্যতা আরও প্রকট হতে পারে। যাদের রোজা রেখে কঠোর শারীরিক শ্রম দিতে হয় তাদেরও পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া, রক্তে বেশি মাত্রায় গ্লুকোজ থাকলে শরীর থেকে পানি ও খনিজ পদার্থ বের হয়ে যাওয়ার হার অনেক বেড়ে যায়। ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ুবিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

প্রতিকারের উপায়

ঘন ঘন রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা দেখতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে তিনবার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দেখতে হবে। টাইপ ১ ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে খুব সতর্কতার সঙ্গে রক্তের গ্লুকোজ লক্ষ্য রাখতে হবে।

প্রতিদিনের খাদ্যের পুষ্টিমান অন্যান্য সময়ের মতোই রাখার চেষ্টা করতে হবে। স্বাভাবিক দৈহিক ওজন ধরে রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে। গবেষণায় দেখা যায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ডায়াবেটিক রোগীর দৈহিক ওজন কমে বা বাড়ে। ইফতারে চর্বি সমৃদ্ধ খাদ্য এবং তেলে ভাজা খাবার গ্রহণ করা হতে যতটা সম্ভব বিরত থাকতে হবে। দ্রুত হজম হয় এমন খাবার খাওয়া উপযোগী। ডায়াবেটিক রোগীর ইফতারের পর পরই খুব দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ সরবরাহ করার ব্যবস্থা করতে হবে। ডায়াবেটিক রোগীর প্রচুর পানি পান করা এবং তরল জাতীয় খাবার খাওয়া উচিৎ।

শারীরিক শ্রম বা ব্যায়াম স্বাভাবিক শারীরিক কর্মকাণ্ড চালানো যেতে পারে এ সময়। তবে খুব বেশি কঠোর শ্রম বা ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে করে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। বিকেল বেলায় একদমই কঠোর শ্রম করা যাবে না।

প্রতিটি ডায়বেটিক রোজাদারের শরীরে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কোনো লক্ষণ দিলেই দ্রুত গ্লুকোজ, চিনি, মিষ্টি জাতীয় খাদ্য বা শরবত খেয়ে নিতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতা থাকলে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ খুব সহজেই বোঝা যায়। যাদের তেমন অভিজ্ঞতা হয়নি, তারা বুক বড়ধড়ফড়ানি, মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগা, ঘাম হওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, চোখে অন্ধকার দেখা, মাথা ঘোরা ইত্যাদির এক বা একাধিক লক্ষণ দেখলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

যেসব ডায়াবেটিক রোগী সব ঝুঁকির কথা জেনেও রোজা রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, তাদের রোজা শুরুর কমপক্ষে ১ মাস আগে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতে হবে। এর মধ্যে আছে খালি পেটে ও খাবার ২ ঘণ্টা পর মোট ৬ বার রক্তের গ্লুকোজ, খালি পেটে রক্তের লিপিড, লিভার, কিডনি ও হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতার পরীক্ষা এবং এইচবিএ১ সি ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিতে হবে।

ডায়াবেটিক রোগী রোজা রাখার সময় খাবার দাবারে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

– সময় শেষ হওয়ার অল্প কিছুক্ষণ আগে সেহরি খেতে হবে।

– ইফতারের সময় মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাবার পরিমিত খাওয়া ভালো।

– ডায়াবেটিক রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এতে তাদের দেহ পানিশূন্যতার হাত থেকে রক্ষা পান।

– ফলমূল, শাকসবজি, ডাল, ডাবের পানি ও টক দই খেতে পারেন। ভাজা পোড়া খাবার যেমন- পেঁয়াজু, বেগুনি, পুরি, পরোটা কাবাব খেলেও খুব অল্প পরিমাণে খেতে হবে।

– রমজানের আগে যে পরিমাণ ক্যালরি যুক্ত খাবার খেতেন রমজানে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রেখে খাবার খাবার খেতে হবে।

 

দুই থেকে তিন হাজার টাকায় শুরু হোক মাশরুমের ব্যবসা

মাশরুম চাষ কিভাবে করা যায়, চাষ করার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কিনা,  এর পুষ্টিমান এবং সর্বোপরি এর মাধ্যমে কিভাবে বাড়তি আয় করা সম্ভব, সেই বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।

‘‘মাশরুম” ব্যাঙের ছাতার মতো এক ধরণের ছত্রাক জাতীয় গাছ। মাশরুম ও ব্যাঙের ছাতা দেখতে একই রকম হলেও এদের মাঝে অনেক পার্থক্য আছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে জন্ম নেওয়া কোন কোন মাশরুম বিষাক্ত হয় এবং সেগুলো খাওয়া যায় না। সূর্যের আলোয় প্রাকৃতিকভাবে খুব বেশি মাশরুম জন্মাতে পারে না তাই প্রাকৃতিক উপায়ে খাবারের জন্য বেশি করে মাশরুম পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে অনেক স্থানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাশরুম চাষ করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষকরা মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। আমাদের দেশের অনেক জায়গায় বিশেষ করে ঢাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, মধুপুর প্রভৃতি স্থানে এখন ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মাশরুম চাষ ও বাজারজাত করা হচ্ছে। মাশরুম চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বাড়তি আয় করাও সম্ভব। মাশরুম চাষ করতে আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না।

বাজার সম্ভাবনা
আমাদের দেশের বড় বড় শহরগুলোর বিভিন্ন হোটেল ও চাইনিজ হোটেলগুলোতে মাশরুমের চাহিদা আছে। তাই আপাত দৃষ্টিতে মাশরুমের বাজার মূলত শহরে গড়ে উঠেছে। এছাড়া বিদেশে এর চাহিদা রয়েছে। মাশরুম শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিদেশে সবজি ও কাঁচামাল পাঠায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
প্রয়োজনীয় মূলধন

মাশরুম চাষ করার জন্য ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার প্রয়োজন হবে। যদি ব্যক্তিগত পূঁজি না থাকে তাহলে মূলধন সংগ্রহের জন্য নিকট আত্মীয়স্বজন, ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এসব সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) শর্ত সাপেক্ষে ঋণ দিয়ে থাকে।

ব্যাংকঃ
সোনালী ব্যাংকঃ http://www.sonalibank.com.bd/
জনতা ব্যাংকঃ http://www.janatabank-bd.com/
রূপালী ব্যাংকঃ http://www.rupalibank.org/rblnew/
অগ্রণী ব্যাংকঃ http://www.agranibank.org/
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকঃ www.krishibank.org.bd/

এনজিও
আশাঃ http://asa.org.bd/
গ্রামীণ ব্যাংকঃ http://www.grameen-info.org/
ব্রাকঃ http://www.brac.net/
প্রশিকাঃ http://www.proshika.org/

আয়-ব্যয়
অয়েস্টার মাশরুমের পাপড়ি বেশি ছড়ানোর আগেই তুলে গোড়া থেকে সামান্য কেটে ফেলতে হবে। পলি প্রোপাইলিনের প্যাকেটে কয়েকটা ছিদ্র করে এর মধ্যে মাশরুমগুলো ভার মুখ বন্ধ করে এই প্যাকেট বাজারজাত করতে হবে। প্রতিটি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ২০০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যায়। সুতরাং ২০০টি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ৪০ কেজি মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মাশরুমের দাম প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।

আমাদের দেশে সাধারণত খাবারের উপযোগী তিন জাতের মাশরুম চাষ হয় –

স্ট্র মাশরুম : ধানের খড়, শিমুল তুলা, ছোলার বেসন ও চাউলের কুড়া ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করে স্ট্র মাশরুম চাষ করা হয়। আমাদের দেশে সাধারণত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এর চাষ করা যায়।

ইয়ার মাশরুম: সাধারণত বর্ষাকালে প্রাকৃতিকভাবে আম গাছে ইয়ার মাশরুম পাওয়া যায়। ইয়ার মাশরুম দেখতে কালচে রঙের। ইয়ার মাশরুম সারাবছর চাষ করা গেলেও সাধারণত বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়।

অয়েস্টার মাশরুম: আমাদের দেশে এই জাতের মাশরুম চাষ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। সারাবছরই এই মাশরুম চাষ করা যায় তবে শীত ও বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়। অয়েস্টার মাশরুম খুব সহজে চাষ করা যায় এবং এর জন্য খুব অল্প জায়গার প্রয়োজন হয়।

মাশরুম উৎপাদন কৌশল

চাষের উপযোগী স্থান
মাশরুম খোলা জায়গায় চাষ করা যায় না। তাই এর জন্য আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না। মাশরুম চাষ করার জন্য ছায়াযুক্ত জায়গায় ছন বা বাঁশের চালা দিয়ে ঘর তৈরি করতে হয়। মাটির দেওয়াল দিয়েও ঘর তৈরি করা যায়। আবার বাঁশের বেড়াও দেওয়া যায়। ঘরের ভেতর যাতে আলো ঢুকতে না পারে সেজন্য বাঁশের বেড়ায় মাটি লেপে দিতে হয়।

অয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি
অয়েস্টার মাশরুম বীজ বা স্পন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করে মাশরুম চাষ শুরু করা যাবে। ধাপে ধাপে মাশরুম চাষ করতে হয়।

১ম পদ্ধতি
মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে মাশরুমের বীজ বা স্পন প্যাকেট সংগ্রহ করতে হবে। বীজ বা স্পনের দুই পাশে কিছুটা গোল করে কেটে চেঁছে নিতে হবে।
মাশরুমের প্যাকেট পানিতে ৩০ মিনিটের জন্য ডুবিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পরে পানি থেকে মাশরুমের প্যাকেট উঠিয়ে নিতে হবে।
অতিরিক্ত পানি ঝরানোর জন্য মাশরুমের প্যাকেট ৫ থেকে ১০ মিনিট উপুড় করে রাখতে হবে। পানি ঝরে গেলে ঘরের নির্ধারিত জায়গায় রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এর উপর তিন থেকে চারবার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
সাধারণত ৩ থেকে ৪ দিন পর কাটা জায়গা থেকে অঙ্কুর গজায়। অঙ্কুর গজানোর পর মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
খাওয়ার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হতে ৫ বা ৬ দিন সময় লাগে। খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হলে তা গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
বীজের যে জায়গা কাটা হয়েছিল তা ব্লেড দিয়ে একটু চেঁছে দিতে হবে। এই বীজ থেকে আবার মাশরুম গজাবে।
একটা আধা কেজি ওজনের বীজ বা স্পন প্যাকেট থেকে ৩-৪ বার মাশরুম পাওয়া যায়। এতে মোট ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যাবে।

২য় পদ্ধতি
মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে বীজ বা স্পন সংগ্রহ করতে হবে। এক কেজি ওজনের একটি বীজের পলিথিন খুলে ভিতরের কম্পোস্ট গুঁড়ো করে নিতে হবে।
দুই কেজি পরিমাণ ধানের পরিষ্কার ও শুকনো খড় সংগ্রহ করতে হবে। খড়গুলোকে এক ইঞ্চি মাপে কেটে টুকরা করতে হবে।
পরিমাণ মতো পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। খড়গুলো জীবাণুমুক্ত করার জন্য ফুটন্ত পানিতে খড়ের টুকরোগুলো এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
খড়গুলো পানি থেকে তুলে চিপে পানি শূন্য করে একটি পাত্রে রাখতে হবে।
পাঁচটি পলিব্যাগ নিয়ে পলিব্যাগের ভেতরে প্রথমে কিছু খড় বিছিয়ে নিতে হবে। খড়ের উপর মাশরুম বীজের গুঁড়ো দিতে হবে। এভাবে একটি পলিব্যাগে চার স্তরে খড় আর মাশরুম বীজের গুঁড়ো বিছিয়ে দিতে হবে। শেষ স্তরে আবার খড় বিছিয়ে দিতে হবে।
খড় বিছানো শেষ হলে খুব শক্ত করে পলিব্যাগ বাঁধতে হবে। এভাবে প্রতিটি পলিব্যাগ বাঁধতে হবে।
পলিব্যাগের চার দিকে ১০-১২টি ছিদ্র করতে হবে। এরপর ব্যাগগুলোকে বীজে পরিণত হওয়ার জন্য ১৫-১৮ দিন রেখে দিতে হবে।
১৫-১৮ দিন পরে পলিব্যাগগুলো খুলে বীজের দলাগুলো বের করে নিতে হবে।
প্রতিটি বীজের দলা শিকায় করে ঝুলিয়ে রাখতে হবে এবং প্রতিদিন ৪-৫ বার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
৩-৪ দিন পর চারদিক দিয়ে মাশরুমের অঙ্কুর গজাতে শুরু করবে। ৪-৬ দিন পর খাওয়ার উপযোগী মাশরুম গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
এভাবে মাশরুম চাষে লাভ বেশি হবে। কারণ প্রতিটি পলিব্যাগ থেকে প্রায় আধা কেজি মাশরুম পাওয়া যাবে। সুতরাং পাঁচটি ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই কেজি মাশরুম উৎপন্ন হবে।
সাবধানতা
বীজ বা স্পনে কোনভাবেই সূর্যের আলো পড়তে দেওয়া যাবে না। সবসময় ঘরটি ঠান্ডা রাখতে হবে। খুব বেশি গরম পড়লে ঘরের চারদিকে বস্তা ঝুলিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
মাশরুম ঘর ও ঘরের বাইরের চারদিক সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় মাশরুম ফ্লাই নামের পোকা মাশরুমের ক্ষতি করে।
কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না।

মাশরুমের উপকারিতা
মাশরুমে প্রচুর প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে। তাই খাদ্য হিসেবে এটা খুবই পুষ্টিকর। এর উপকারিতাসমূহ হল-
রক্তে চিনির সমতা রক্ষা করে ফলে ডায়াবেটিক রোগী এবং যারা স্থুল বা স্বাস্থ্যবান তাদের জন্য উপযুক্ত খাবার।
মাশরুম দেহের ক্ষয়পূরণ, হাড় গঠন ও দাঁত মজবুত করে।
রক্তহীনতা, বেরিবোধ, হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
খাবারের উপযোগী মাশরুম

প্রশিক্ষণ
সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ঢাকা জেলার সাভারে অবস্থিত ‘মাশরুম চাষ কেন্দ্র’ আছে। এছাড়া বাংলাদেশের নানা স্থানে “মাশরুম চাষ কেন্দ্রের” ১৬টি শাখা আছে। মাশরুম চাষ করে ব্যবসা করার জন্য এসব মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে নেওয়া যাবে। এছাড়া মাশরুম চাষ সম্পর্কে বাজারে অনেক বই পাওয়া যায়। এসব বই পড়ার মাধ্যমেও মাশরুম চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। এছাড়া অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে মাশরুম চাষের বিস্তারিত জেনে নিলে চাষ করতে সুবিধা হবে এবং উন্নতমানের মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে।

প্রশিক্ষন প্রদানকারী সংস্থা:
ব্রাকঃ http://www.brac.net/
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরঃ www.dyd.gov.bd
বিসিকঃ http://www.bscic.gov.bd/
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরঃ http://www.dwa.gov.bd/

মাশরুম মূল্যবান সবজি। বিদেশে এর যথেষ্ট চাহিদা আছে। মাশরুমের পুষ্টি ও ঔষধি গুণের কথা বলে সাধারণ মানুষকে মাশরুম খাওয়ার জন্য উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। তাহলে সাধারণ বাজারেও এর চাহিদা বাড়বে। আমাদের দেশে এখনও যে খাদ্য ঘাটতি আছে, মাশরুম কিছুটা হলেও তা পূরণ করতে পারে।

 

সুখী দাম্পত্য জীবনের ১০টি মূলনীতি

যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছু অবহিত। [৪:৩৫]

কুরআন-সুন্নাহর আলোকে দাম্পত্য বন্ধনের কিছু মূলনীতি একত্রিত করার চেষ্টা করেছি, যা আমাদের সবার কাজে লাগবে ইনশা’আল্লাহ।

১. বিবাহ একটি পবিত্র বন্ধন। চারপাশের পরিবেশে হারাম যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে বিবাহের মতো পবিত্র বন্ধন বরং মহামূল্যবান রত্নের ন্যায়। এটা এক হীরক টুকরো। স্বামী-স্ত্রী ও উভয়ের পরিবারের যথাসম্ভব চেষ্টা করা উচিৎ যেন এই হীরার টুকরোটিতে আঁচ না লাগে, বা ভেঙে না যায়। এ বন্ধন ভেঙে যাওয়া মানে উভয় পক্ষের জন্য হাজারো গোনাহের দরজা খুলে দেয়া, যা নিশ্চয় আমরা চাইব না।

২. আমরা আল্লাহর আবদ বা গোলাম। তাঁর সন্তুষ্টিই আমাদের সন্তুষ্টি। তাঁর তাকওয়া বা ভীতি আমাদের জীবন চলার পথের রসদ। কাজেই যা কিছুই করি না কেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও বিধানের মাপকাঠিতে তাকে পরখ করে দেখতে হবে। আমরা এমন কিছু করছি না তো, যা তাঁকে অসন্তুষ্ট করে! সেজন্য নিজে পড়াশোনা করতে হবে, আলেমদের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

৩. শয়তান সর্বদা মানুষের পেছনে লেগে আছে। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে দূরত্ব তৈরি করার মাঝেই তার চূড়ান্ত সফলতা।

ক. রাসূল স. বলেন,

إِنَّ الشَّيْطَانَ يَجْرِي مِنِ ابْنِ آدَمَ مَجْرَى الدَّمِ

শয়তান মানুষের মাঝে রক্তের ন্যায় চলাচল করে। [সহীহ বুখারী: ৭১৭১]

খ. স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করা সৃষ্টি করা শয়তানের জন্য নতুন নয়। সুলায়মান আ. এর সময়কালে শয়তানদের কার্যক্রম বর্ণনায় আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা মানুষকে যাদুবিদ্যা শেখাত।

فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ

অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যদ্দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। [আল-কুরআন, ২:১০২]

গ. স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ তৈরিকারী শয়তান-সরদার ইবলিসের কাছে বেশি প্রিয়।

عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ إِبْلِيسَ يَضَعُ عَرْشَهُ عَلَى الْمَاءِ ثُمَّ يَبْعَثُ سَرَايَاهُ فَأَدْنَاهُمْ مِنْهُ مَنْزِلَةً أَعْظَمُهُمْ فِتْنَةً يَجِيءُ أَحَدُهُمْ فَيَقُولُ فَعَلْتُ كَذَا وَكَذَا فَيَقُولُ مَا صَنَعْتَ شَيْئًا قَالَ ثُمَّ يَجِيءُ أَحَدُهُمْ فَيَقُولُ مَا تَرَكْتُهُ حَتَّى فَرَّقْتُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ امْرَأَتِهِ – قَالَ – فَيُدْنِيهِ مِنْهُ وَيَقُولُ نِعْمَ أَنْتَ ”

জাবির রা. বর্ণনা করেন, রাসূল স. বলেছেন, নিশ্চয় ইবলিস পানির ওপর তার সিংহাসন বসায়, অতঃপর তার বাহিনীকে পাঠায় (মানুষকে বিপথগামী করার জন্য)। তাদের মধ্যে তার কাছে সবচেয়ে নিকটবর্তী সে-ই হয় যে সবচেয়ে বড় ফিতনা তৈরি করতে পারে। তো, কেউ এসে জানায়, আমি ওটা করেছি, সেটা করেছি; ইবলিস বলে, এটা তেমন কিছু করো নি। অতঃপর অন্য একজন এসে জানায়, আমি অমুককে ততক্ষণ পর্যন্ত ছাড়ি নি, যতক্ষণ না তার ও তার স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছি। ইবলিস তাকে কাছে টেনে নিয়ে বলে, হ্যাঁ তুমি বেশ করেছ।” [সহীহ মুসলিম: ২৮১৩]

৪. আমরা কেউই ১০০% পারফেক্ট নই। কিছু ভালো ও কিছু মন্দ দিক নিয়েই আমাদের জীবন চলা। ভালো দিকগুলো দেখে খারাপগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ ۚ فَإِن كَرِهْتُمُوهُنَّ فَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا

নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন। [আল-কুরআন, ৪:১৯]

وَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَىٰ أَن تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ

পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়ত কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়ত কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুত: আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না। [আল-কুরআন, ২:২১৬]

৫. ক. রাগ কোনো বীরত্ব নয়। বরং রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারাই বীরত্ব।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ، إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ “.

আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূল স. বলেছেন, বীরত্ব শক্তির লড়াইয়ে জেতায় নয়, বরং প্রকৃত বীর সে-ই, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। [সহীহ বুখারী ৬১১৪]

খ. রাগ মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়। আল্লাহ তায়ালা রাসূলের স. নম্র স্বভাবের প্রশংসা করে বলেন,

فَبِمَا رَحْمَةٍ مِّنَ اللَّهِ لِنتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ

আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন। পক্ষান্তরে আপনি যদি রাগ ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফেরাত কামনা করুন এবং কাজে কর্মে তাদের পরামর্শ করুন। অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা করুন আল্লাহ তাওয়াককুল কারীদের ভালবাসেন। [আল-কুরআন, ৩:১৫৯]

এই আয়াতের আরো তিনটা শিক্ষা হলো: ক. ক্ষমা করা। খ. পরামর্শ করা। গ. কোনো বিষয়ে দৃঢ় সংকল্প হলে আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা

৬. স্ত্রীর সাথে নমনীয় ব্যবহার কাপুরুষতা নয়, বরং তা শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয়।

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لأَهْلِهِ وَأَنَا خَيْرُكُمْ لأَهْلِي

উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল স. বলেন, তোমাদের মাঝে সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে সর্বোত্তম। এবং আমি আমার স্ত্রীদের কাছে সর্বোত্তম। [সুনান তিরমিযী ৪২৬৯]

৭. স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পরিচ্ছদ, সবক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগী।

هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ

তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। [আল-কুরআন, ২: ১৮৭]

৮. স্বামীর হালাল নির্দেশ পরিপালন দাসত্ব নয়, বরং শরীয়তের নির্দেশ:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ يَحِلُّ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تَصُومَ وَزَوْجُهَا شَاهِدٌ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، وَلاَ تَأْذَنَ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، وَمَا أَنْفَقَتْ مِنْ نَفَقَةٍ عَنْ غَيْرِ أَمْرِهِ فَإِنَّهُ يُؤَدَّى إِلَيْهِ شَطْرُهُ “.

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল স. বলেন, স্বামী উপস্থিত থাকাবস্থায় তার অনুমতি গ্রহণ ছাড়া স্ত্রীর জন্য (নফল) রোজা রাখা হালাল নয়। অনুরূপভাবে স্বামীর ঘরে অন্য কাউকে তার অনুমতি ছাড়া প্রবেশের অনুমতি দেয়া হালাল নয়। এবং নির্দেশ ছাড়া স্বামীর সম্পদ থেকে যা খরচ করবে (দান হিসেবে) তার অর্ধেক সওয়াব স্বামী পাবে। [সহীহ বুখারী ৫১৯৫]

৯. স্বামীর নেতৃত্ব তার মর্যাদার চূড়ান্ত স্বীকৃতি নয়, বরং সংসার নাম প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে
স্বামীর জন্য এ এক বিরাট দায়িত্ব, এবং এ দায়িত্ব সম্পর্কে সে জিজ্ঞাসিত হবে।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ، فَالإِمَامُ رَاعٍ وَهْوَ مَسْئُولٌ وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِهِ وَهْوَ مَسْئُولٌ وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ زَوْجِهَا وَهْىَ مَسْئُولَةٌ، وَالْعَبْدُ رَاعٍ عَلَى مَالِ سَيِّدِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ، أَلاَ فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ “.

আব্দুল্লাহ বিন উমার রা. বর্ণনা করেন, তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে। নেতা দায়িত্বশীল এবং সে জিজ্ঞাসিত হবে। পুরুষ তার স্ত্রীর ব্যাপারে দায়িত্বশীল এবং সে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীর বাড়ির ব্যাপারে দায়িত্বশীল এবং সে জিজ্ঞাসিত হবে। গোলাম তার মুনিবের সম্পদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল এবং সে জিজ্ঞাসিত হবে। মনে রেখো, তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে। [বুখারী ৫১৮৮]
চূড়ান্ত মর্যাদার নির্ণায়ক একমাত্র তাকওয়া বা আল্লাহভীতি।

إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ ﴿الحجرات: ١٣﴾

নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্মানিত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। [আল-কুরআন, ৪৯:১৩]

১০. সর্বোপরি আমাদের আদর্শ রাসূল স. তাঁর স্ত্রীদেরকে সময় দিয়েছেন, কথা শুনেছেন, হালাল বিনোদনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং তাদের সাথে পরামর্শ করেছেন। সীরাহ চর্চায় এমন বহু ঘটনার দেখা মেলে।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে দুটো কথা:

১. ব্যক্তিগত পর্যায়ে ব্যর্থ হলে পারিবারিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা।

وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِّنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِّنْ أَهْلِهَا إِن يُرِيدَا إِصْلَاحًا يُوَفِّقِ اللَّهُ بَيْنَهُمَا إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا خَبِيرًا

যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছু অবহিত। [৪:৩৫]

২. অনেক ভেবেচিন্তে, ইস্তিখারা করে, পরামর্শ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। কারণ,

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ ”

ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী স. বলেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় হালাল হচ্ছে তালাক। [সুনান আবু দাউদ ২১৭৮]

আল্লাহ আমাদের হালাল বন্ধনকে মজবুত করে দিন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম করে দিন। আমীন।

মুফতি ইউসুফ সুলতান
গবেষণা সহকারী, ইসরা কনন্সালটেন্সি, কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া

 

নারীর রমজান প্রস্তুতি যেমন হওয়া উচিত

আবার শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে সম্মিলিত পরিবারের ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিন্ন ধরনের সমস্যা। বউয়ের চাকরি-বাকরি করাকে এখনও অনেক পরিবারে সাধুবাদ জানানো হয় না। তাই চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপের কথা মাথায় রেখে এ মাসে ঘর ও অফিসের কাজকে সমানভাবে ভাগ করে নিতে হবে।

জীবনে যে কোনো কাজে সফলতার জন্য প্রয়োজন সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ। সর্বপ্রথম প্রস্তুতি নিতে হয় মানসিক, অর্থাৎ নিয়ত পোক্ত করা। নিয়ত পোক্ত না হলে গুরুত্বপূর্ণ কাজেও অবহেলা চলে আসে। এমন মহিমান্বিত মাসে অবহেলা মানে কতটা ক্ষতিকর, সচেতন মুসলমান মাত্রই তা বুঝতে পারে। তাই ইবাদতের এ মাসে নারীদের বাহ্যিক অতিরিক্ত কিছু প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। এখানে এ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।

১. পরিবারের সদস্যদের রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বোঝানো এবং আমলের প্রতি উৎসাহিত করা।
২. রমজান আসার আগেই ঘরদোর ঝেড়ে-মুছে পরিষ্কার করে নেওয়া। সোফার কাভার, জানালা-দরজার পর্দা ইত্যাদি ধুয়ে পরিপাটি করে রাখা। রমজানের জন্য ভারি কোনো কাজ ফেলে না রাখা। যাতে এসব করতে গিয়ে দুর্বলতা পেয়ে না বসে, আমলে কোনো ধরনের ব্যাঘাত না ঘটে।
৩. সংযমের এ মাসে প্রত্যেক গৃহিণীর উচিত সংসারের অতিরিক্ত খরচ কমানো, যা দরকার নেই তা বর্জন করা।
৪. ছোলা, চিনি, তেল, খেজুর, বেসন, ডালসহ বিভিন্ন ধরনের শুকনো বাজারসদাই যথাসম্ভব আগেই কিনে সংরক্ষণ করা। এতে রমজানে জিনিসপত্রের আকাশচুম্বী দামও এড়ানো যাবে আবার বাজারের ঝামেলাও কমবে।
৫. কোনো অবস্থাতেই ঈদের কেনাকাটা রমজানের জন্য ফেলে রাখা ঠিক হবে না। এতে ইবাদতে বিশাল বিঘœ ঘটে।
৬. রোজার দিনগুলো কীভাবে পার করবে তার একটা খসড়া তৈরি করা। অর্থাৎ দিনের কোন সময়টাতে কোরআন তেলাওয়াত করবে, কোন সময়টাতে নফল নামাজ পড়বে এবং জিকির আজকার ও দোয়ায় কোন সময়টা কতটুকু ব্যয় করবেÑ এসব কিছু রুটিন করে রাখা উচিত। এমনকি ঘুমের সময়টুকুও নির্ধারণ করা উচিত।

চাকরিজীবী নারীর পরিকল্পনা : চাকরিজীবী নারীদের রোজার মাসে অফিসের পাশাপাশি অন্য সকল কাজ চালিয়ে যাবার লক্ষ্যে অবশ্যই আগে থেকে পরিকল্পনা সাজিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে জীবনসঙ্গীর সহযোগিতা একান্ত কাম্য। কেননা একজন নারীকে যখন মা হিসেবে সন্তানের ঈদের নানা চাহিদা পূরণ, পরিবারের সকলের জন্য রোজার সেহেরি, ইফতারির ব্যবস্থা করার পাশাপাশি চাকরি চালিয়ে যেতে হয়- তখন তা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। আবার শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে সম্মিলিত পরিবারের ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিন্ন ধরনের সমস্যা। বউয়ের চাকরি-বাকরি করাকে এখনও অনেক পরিবারে সাধুবাদ জানানো হয় না। তাই চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপের কথা মাথায় রেখে এ মাসে ঘর ও অফিসের কাজকে সমানভাবে ভাগ করে নিতে হবে।

ফয়জুল আল আমীন

 

নারীদের সফলতার পেছনে রয়েছে এই ৩টি কারণ

আপনি পুরুষ হন বা নারী সফল হতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। শ্রম, বুদ্ধিমত্তা, নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা একজন সফল ব্যবসায়ীর মাঝে থাকে বলেই তারা এক সময় সফল হন। তবে আলাদাভাবে নারীর সফলতায় আমরা বেশী বিস্মিত হই কারণ আমাদের সমাজে নারীর চলার পথ পুরুষের তুলনায় অনেক দূর্গম।
একজন নারীর দায়িত্ব থাকে বহুমূখী। তাকে পরিবারের খুঁটিনাটি এত দিকে খেয়াল রাখতে হয় যে এর বাইরে গিয়ে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা হয়ে দাঁড়ায় খুবই কঠিন। তবু অনেক নারীই তাদের পেশায় সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই বলা হয়, নারীরা মাল্টিটাস্কার। আসুন জেনে নিই, কোন ৩টি গুণ বিশেষভাবে সহযোগিতা করে একজন নারীকে সব প্রতিকূলতার মাঝেও মাথা তুলে দাঁড়াতে!
দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
সফল নারীরা কখনো প্রতিজ্ঞা থেকে সরে দাঁড়ান না। যত প্রতিকূলতাই আসুক তারা তাদের স্বপ্ন সফল করার কাজে একান্তভাবে মনোনিবেশ করেন। আজকের নারীরা বিয়ের পর শুধু শ্বশুর বাড়ির পরিবারের দায়িত্ব নেন না, তারা নিজের পরিবারের দায়িত্বও পালন করেন। এত কাজের মাঝেও যারা সফল হতে চান তারা কখনোই ক্যারিয়ারের স্বপ্ন ছেড়ে দেন না। তাদেরকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায় তাদের দৃঢ়তা।
Twyla Tharp, একজন নৃত্যশিল্পী। তার লেখা বইয়ের নাম “The Creative Habit”। তিনি বলেন, ‘প্যাশন ছাড়া পৃথিবীর কোন দক্ষতাই সৃষ্টিতে পরিণত হয় না’। আপনি যদি আপনার কাজের প্রতি প্যাশনেট থাকেন তাহলে দেরিতে হলেও তার ফল পাবেন। একজন সৃষ্টিশীল মানুষ হিসেবে আপনাকে হাল ছাড়লে চলবে না, নিজেই নিজেকে উতসাহিত করতে হবে এবং পরিশ্রম করে যেতে হবে।
আত্মবিশ্বাস
সফল নারীরা ভীষণ আত্মবিশ্বাসী হন। আপনি নিজে যদি নিজের উপর বিশ্বাস না করেন অন্যরা যতই আপনার প্রশংসা করে আপনাকে শক্তি দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, আপনি হেরে যেতে থাকবেন। বিপরীত দিকে আপনার পারিপার্শ্বিক অবস্থা যতই প্রতিকূল থাকুক না কেন, আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে আপনি পারবেন, তাহলে অবশ্যই পারবেন। কারণ মানুষের শক্তি আসলে মানুষ নিজেই।
USA নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা কে কোপলোভিটয বলেন, ‘আপনাকে বুঝতে হবে যে, আপনি একান্তই আপনার মত করে ভাবতে পারেন এবং প্রত্যাশামত ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন। নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকতেই হবে এবং এটাই সফলতার ভিত্তি।
 
ঝুঁকি নিতে ভয় না পাওয়া
ঝুঁকি ছাড়া জীবনের কি কোন মানে আছে? ঝুঁকি না থাকলে সফলতাও ধরা দেয় না। পরিবর্তনের জন্য নতুন পথ বেছে নিতে হয়। আর নতুন পথে সবসময়ই আশঙ্কা থাকে, অনিশ্চয়তা থাকে। তবু আজকে যার সফল হয়েছেন, সফলতার এই শিখরে পৌছবার পথে ঝুঁকি নিতে পিছ পা হন নি কখনো। তবে অবশ্যই ঝুঁকি নেওয়ার ব্যাপারে আপনার সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত হওয়া চাই।
আমাদের সমাজের বাস্তবতায় একজন নারীকে কখনো কখনো তার সংসার এবং ক্যারিয়ারের মাঝে যে কোন একটিকে বেছে নিতে হয়। এখন পরিস্থিতি অনেক বদলেছে। পরিবারগুলো অনেক সাপোর্ট দেয়। কিন্তু শতকরার হিসেবে তা অতি নগন্য। এর মাঝেও যেসব নারীরা সফল তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
 
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

নুডলস দিয়ে ঝটপট তৈরি করুন স্প্রিং রোল

নুডলস খাবারটি ছোট বড় সবার বেশ পছন্দ। আর এই নুডলস দিয়ে তৈরি করা যায় নানা মজাদার খাবার। নুডলস কাটলেট, নুডলস চপ, নুডলস রোল আরও কত কি। এইবার নুডলস দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন স্প্রিং রোল। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সম্পূর্ণ রেসিপিটি।

উপকরণ:

১/৪ কাপ বাঁধাকপি কুচি

১/২ ক্যাপসিকাম চিকন করে কাটা

১টি পেঁয়াজ কলি চিকন করে কাটা

৪-৫টি বরবটি কুচি

ম্যাগি নুডলস এবং এর টেস্ট মেকার

১ কাপ টমেটো সস

১ টেবিল চামচ তেল

১/২ চা চামচ আদা মরিচের পেস্ট

১ চা চামচ চাট মশলা

লবণ

টাবাসকো সস

ময়দার পেস্ট

প্রণালী:

১। প্যানে তেল দিয়ে ক্যাপসিকাম এবং মটরশুঁটি দিয়ে ২ মিনিট ভাজুন।

২। এতে ম্যাগি নুডলস দিয়ে দিন। পানি এবং টেস্ট মেকার দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন।

৩। এবার এতে আদা কাঁচামরিচের পেস্ট, চাট মশলা, টমেটো কেচাপ, বাঁধাকপি কুচি এবং পেঁয়াজ কলি কুচি এবং লবণ দিয়ে মিশিয়ে নিন।

৪। রোল শিট নিয়ে এতে নুডলসের মিশ্রণটি দিয়ে দিন। এবার শিট একপাশ থেকে রোল করে অন্যপাশে নিয়ে আসেন। ময়দা এবং পানির মিশ্রণ দিয়ে রোলের মুখ লাগিয়ে দিন।

৫। এবার তেল গরম হয়ে আসলে রোলগুলো দিয়ে দিন।

৬। বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার নুডলস স্প্রিং রোল।

 

চলছে বাংলাদেশ ফ্যাশন কার্নিভ্যাল

রেড কার্পেট ৩৬৫ লি: আয়োজিত ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ ফ্যাশন  কার্নিভ্যাল ২০১৬ গুলশান ১ এর এমানূয়েল’স ব্যানকুট হল এ গত ২৫ মে থেকে ৫দিনের একটি আকর্ষণীয় আন্তর্জাতিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে ৬টি দেশ থেকে ৪৫টি কোম্পানি।

ঈদুল ফিতর- এর বিশাল বাণিজ্যিক সমাহারকে সামনে রেখে আয়োজিত এই মেলার স্লোগান হলো, “আমাদের সাথে করুন আপনার ঈদের কেনাকাটা’। এই মেলা সর্বসাধারন ও বাণিজ্যিক দর্শনার্থীদের জন্য সকাল ১০ থেকে রাত ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকবে।

বাংলাদেশ ফ্যাশন  কার্নিভ্যাল এর সূত্র জানিয়েছে, দেশ ও বিদেশের উন্নত পোশাক ও ফ্যাশন দ্রব্য পরিদর্শকদের সামনে উপস্থাপনের জন্য এই আয়োজন। এই আন্তর্জাতিক ফ্যাশন  কার্নিভ্যাল-এ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গার নিজস্ব পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ গ্রহণ করে বিদেশি ও দেশি ক্রেতার সামনে উপস্থাপনের সুযোগ রয়েছে এই মেলায়।

প্রদর্শনে রয়েছে মহিলাদের কাপড়, শাড়ি, ফ্যাশন ওয়্যার, ফতুয়া, গৃহস্থালী টেক্সটাইল, কুর্তা, প্রিমিয়াম ক্লথ, রেডিমেড পোশাক, সালোয়ার কামিজ, থ্রিপিস, শাল, প্রসাধনী, সৌন্দর্য চর্চার উপকরণ, ফ্যাশন হাউজ, উপহার সামগ্রী, হিজাব, ও সৌন্দর্য সেবায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এই মেলাতে বাংলাদেশ ছাড়াও ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, ইরান, ফিলিপাইন্স ও তুরস্ক থেকে প্রোডাক্ট নিয়ে কোম্পানি আংশগ্রহন করছে।

 

এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রাম জিইসি মোড়ে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানমকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।রোববার সকাল ৭টার দিকে ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।তাঁর লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।জঙ্গিবিরোধী অভিযানে এসপির সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।জানা গেছে, এসপি বাবুল আক্তারের বাসা চট্টগ্রাম নগরের ওআর নিজাম রোডে। তাঁদের ছেলে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ে। সকালে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে পায়ে হেঁটে স্কুলের বাসে তুলে দিতে যান মা মাহমুদা খানম। বাসার কাছাকাছি ওয়েল ফুডের দোকানের সামনে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে করে আসা তিন দুর্বৃত্ত তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এরপর ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজামউদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামে জঙ্গি দমনে বাবুল আক্তার সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি অনেক জঙ্গি ধরেছেন। এ কারণেই তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

বাবুল আক্তার সবশেষ নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত উপকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে এসপি হন। গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দেন তিনি। তাঁর কর্মস্থল এখনো নির্ধারিত হয়নি।

 

স্বপ্নপূরণের পথে ৯৭ নারী

পুরুষের পাশাপাশি এবার থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত পাহারা দেবে নারীরাও। সীমান্ত পাহারার পাশাপাশি নারী ও শিশু পাচার এবং চোরাচালান বন্ধেও নারী সদস্যরা বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলেই আশা। তাই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৩২ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সৈনিক পদে ৯৭ জন নারীকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। পার্সিং আউটের মাধ্যমে ওই নারীদের সেই স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে।

রোববার সকালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পার্সিং আউট অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে শনিবার সকালেই প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে উপস্থিত হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদু্জ্জামান খাঁন কামাল ও বিজিবির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।

এদিকে ৯৭ নারী সদস্যর পার্সিং আউট উপলক্ষে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সেজেছে বিজিবির পুরো ক্যাম্প। ভবন থেকে শুরু করে প্রতিটি গাছেও রয়েছে আলোকছটা। রাত জেগে তৈরি করা হচ্ছে পার্সিং আউট উপভোগের প্যান্ডেল।

শনিবার রাতে বিজিবির প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজিবির ডিজির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে বিজিবির ৮৮তম রিক্রুট ব্যাচের সদস্যরা অংশ নেয়।

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, এদিন ৮৮তম রিক্রুট ব্যাচের ১ হাজার ১৪৪ নবীন সৈনিকের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাধন গ্রহণ করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় এই ব্যাচের সৈনিকদের মধ্য থেকে বিষয়ভিত্তিক প্রথম স্থান অর্জনকারী ও সর্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ নবীন সৈনিকের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্র আরো জানায়, নানা পেশায় পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিজিবিতে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো নারী সৈনিক নিয়োগ দেয়া হয়। চট্টগ্রামে মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে রোববার নারী সৈনিকদের প্রথম ব্যাচটি বিজিবির কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে। এ বছর আরো ১০০ নারী সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাদের মৌলিক প্রশিক্ষণ জুলাই মাসেই শুরু হবে।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, যোগদানের পরপরই তাদেরকে টেকনাফ ও বেনাপোলের মতো যেসব এলাকায় নারী পাচারকারীদের আনাগোনা সেখানে পোস্টিং দেয়া হবে। এছাড়াও বিজিবির গেটগুলোতেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে নারীরা।

তাছাড়া মাদক চোরাচালানের জন্য বেশিরভাগই নারীদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফলে নারীদের দেহ তল্লাশির ক্ষেত্রে নানা জটিলতায় পড়তে হয় বিজিবির পুরুষ সদস্যদের। এক্ষেত্রে নারী সদস্যরা বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

 

বিজিবিতে প্রথমবার নিয়োগ পাচ্ছে ৯৭ নারী

বিজিবিতে প্রথমবারের মতো ৯৭ নারী নিয়োগ পেতে যাচ্ছে। আগামী ৫ জুন চট্টগ্রাম সাতকানিয়ায় পাসিং আউট শেষে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুরে বিজিবি সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘যোগদানের পরপরই তাদের টেকনাফ ও বেনাপোলের মতো যেসব এলাকায় নারী পাচারকারীদের আনাগোনা সেখানে তাদের পোস্টিং দেয়া হবে।’ এছাড়াও বিজিবির গেটগুলোতেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে নারীরা। আগামী জুলাই মাসে আরো ১০০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বিগত বছরে বিজিবির সফলতা তুলে ধরে মহাপরিচালক বলেন, ‘২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর খেলাধুলা বিজিবির সদস্যদের একটু ছন্দপতন হয়েছিল। তবে এখন বিজিবি খুব ভালো খেলছে। এবছর মোট আটটি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে পাঁচটিতে চ্যাম্পিয়ন ও তিনটিতে রানার্সআপ হয়েছে।’

 

মাগুরায় পায়ে শিকল বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন, শাশুড়ি আটক

মাগুরা সদর উপজেলার বরই গ্রামে মাহফুজা খাতুন নামে এক গৃহবধূকে বারান্দার খুঁটির সঙ্গে পায়ে শিকল বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।

বুধবার বিকেলে পুলিশ উপজেলার বরই পশ্চিম গ্রামের গৃহবধূ মাহফুজা খাতুনকে উদ্ধার করেছে। তিনি গ্রামের শুকুর শেখের স্ত্রী। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে তার শাশুড়ি কমলা বেগমকে।

নির্যাতনের শিকার মাহফুজা সাংবাদিকদের জানান, মা-বাপ মরা তার ভাইয়ের ছেলে হিরণ (১৮) অনেকদিন ধরে তার কাছে এনে রেখেছিলেন। এক পর্যায়ের ভাতিজার সঙ্গে ভাসুর মন্টু মিয়ার মেয়ে সোনিয়ার প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্বামী শুকুর মিয়া ও ভাসুর মন্টু মিয়াসহ পরিবারের সবাই ঘটনার জন্য তাকে দায়ী করেন। এজন্য তাকে নানাভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।

এক পর্যায়ে বুধবার সকাল ১০টার দিকে স্বামী শুকুর, ভাসুর মন্টু, দেবর নান্নু, অতিয়ার, জহির ও শাশুড়ি কমলা তার পায়ে শেকল বেঁধে ঘরের খুঁটির সঙ্গে তালা মেরে দেয়। এরপর বেদম মারপিট শুরু করে।

আটককৃত মাহফুজার শাশুড়ি কমলা জানান, মাহফুজা আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ায় তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল।

সদর থানার ওসি আজমল হুদা বলেন, বরই গ্রামে এ নারীকে নির্যাতনের পর খুঁটির সঙ্গে শিকল-তালা তিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে সাংবাদিকদের কাছ থেকে এমন খবর পেয়ে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে স্বামী, ভাসুর, দেবররা পালিয়ে গেলেও পুলিশ ওই নারীর শাশুড়ি কমলা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে।

এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি।

 

পরীক্ষা’য় ফেল, নববধূকে ত্যাগ

সতীত্বের পরীক্ষা’য় ফেল করায় পঞ্চায়েতের নির্দেশে বিয়ের মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই নববধূকে ত্যাগ করেছেন এক যুবক। মধ্যযুগীয় এ ঘটনা সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিক জেলায় ঘটেছে।

জানা গেছে, গত মাসের ২২ মে বিয়ে করেছিলেন নাসিক জেলার ওই যুবক। এর পরেই স্থানীয় খাপ গ্রাম পঞ্চায়েত ওই যুবককে তার স্ত্রীর সতীত্ব পরীক্ষা নেওয়ার উপদেশ দেয়। পঞ্চায়েতের নির্দেশে যুবক ফুলশয্যার রাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাঁর স্ত্রীর সতীত্বের পরীক্ষা নেন। এর পর পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিয়ের আগেই নববধূ সতীত্ব হারিয়েছেন। তাই নববধূকে ছেড়ে দিতে হবে। পঞ্চায়েতের এই পরামর্শেই বিয়ের মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ওই যুবক তাঁর স্ত্রীকে ত্যাগ করেন।

এ ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকার সমাজসেবী রঞ্জনা গাভান্দে জানিয়েছেন, নববধূর পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, বিয়ের আগে তিনি পুলিশে চাকরির চেষ্টা করেছিলেন। সেই চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য দৌড়, হাইজাম্প, লংজাম্প, সাইকেল চালানোসহ তাঁকে নানা রকমের শারীরিক কসরত করতে হয়েছিল। এ ছাড়া ওই নারী নিয়মিত খেলাধুলাও করতেন বলেও জানান তিনি। ফলে তাঁর সতীচ্ছেদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ওই নারী সতীত্ব নিয়ে টানাটানি করা কিংবা তার চরিত্র সম্পর্কে অপবাদ দেওয়া কোনোভাবেই উচিত নয় বলে জানান রঞ্জনা গাভান্দে। এই একই ধরনের মত প্রকাশ করেছেন এলাকার অন্যান্য সমাজসেবীও। এ ঘটনায় ওই নারীর পরিবার পাত্রপক্ষ ও  স্থানীয় খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।

 

এক ‘রোহিঙ্গা প্রিন্সেসের’ মনোমুগ্ধকর কাহিনী

ইয়াঙ্গুন: মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়কে দেশটির ধারাবাহিক সরকারগুলো এতোটাই নিপীড়ন করেছে যে তাদের মধ্যে কোনো নেতৃত্বও বলতে গেলে তৈরি হয়নি। ফলে রোহিঙ্গারা মার খেলেও তাদের কোনো প্রতিবাদী কণ্ঠ দেখতে পাই না আমরা।
তবে আশার আলো দেখাচ্ছেন ওয়াই ওয়াই নু নামের এক সংগ্রামী তরুণী।

তিনি যখন তার নিপীড়িন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে কথা বলেন তখন তার মায়াবী মুখটি বদলে যায়, তার চোখ গাঢ় হয়ে আসে, তার দৃপ্তপৃষ্ঠ যেন উত্তেজনার বার্তা দেয়, তার কণ্ঠ বজ্রনিনাদী হয়ে ওঠে।

‘সরকার এখন অস্বীকার করে বসছে যে কোনোকালে আমাদের অস্তিত্ব ছিল,’ বলেন ওয়াই ওয়াই।
মিয়ানমারে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার বাস। কয়েক শতাব্দী ধরে তারা দেশটিতে বাস করলেও তাদেরকে নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে সরকার। বহু রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে দেশান্তরিত হয়েছেন কিংবা আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয় শিবিরে।

২৯ বছর বয়সী ওয়াই ওয়াই এখন নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।  পেশায় আইনজীবী এই নারী বিশ্বাস করেন যে তিনি মিয়ারমারের নতুন সরকারকে বোঝাতে সক্ষম হবেন যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা দরকার।
ওয়াই ওয়াই বলেন, এজন্য তিনি প্রয়োজনে সন্ন্যাসব্রতের জীবন বেছে নেবেন এই অর্থে যে তিনি তার ব্যক্তিগত জীবন বিসর্জন দেবেন। তার লক্ষ্য বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ২ লাখ লোককে রাখাইনের পুলিশ পাহারার আশ্রয়শিবির থেকে মুক্ত করা।

জাতীয়তাবাদের বিষবাষ্প, অবিচার আর বৈষম্য এই তরুণীর জীবনেও ট্যাঙ্কের মত গড়িয়ে পড়েছে।  মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বিশ্বাস করতো যে একজন রোহিঙ্গা রাজনীতিকের কন্যার স্বাধীনতার অধিকার থাকতে পারে না।
এই অপরাধে তাকে ১৭ থেকে ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত রেঙ্গুনের একটি কারাগারে জীবন কাটাতে হয়েছে।

ওয়াই ওয়াইর বাবা দেশটির নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদ্য কিয়াও মিনকে ৪৭ বছর কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। ওয়াই ওয়াই তখন আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। দুই মাস পরে তার মা, তার বোন এবং ভাইকেও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
জেলের খাবার, কারাগারের পরিবেশ সবই আমি মেনে  নিয়েছিলাম কিন্তু আমি আর লেখাপড়া করতে পারব না, এটা মেনে নিতে পারছিলাম না,’ ডেইলি বিস্ট পত্রিকাকে বলছিলেন ওয়াই ওয়াই।

জেলে তার মত আরো রোহিঙ্গা তরুণী ছিল। তিনি তাদের সাথে কথা বলতেন। তাদের অনেকে হতাশায় ভেঙে পড়ে মাদকগ্রহণ ও পতিতাবৃত্তিতেও জড়িয়ে পড়ে। এসব দেখে ওয়াই ওয়াই সিদ্ধান্ত নেন তিনি নারী অধিকারকর্মী হবেন এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ব
আট বছর কারাবন্দি থাকার পর ওয়াই ওয়াই নু এবং তার উইমেন’ পিস নেটওয়ার্ক ‘ন্যায়বিচার’ এবং মানবাধিকার সম্পর্কে ৫০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়, যাদের বেশিরভাগই নারী।

কয়েক মাস আগে ওয়াই ওয়াই এবং তার বাবা রোহিঙ্গাদের একটি উদ্বাস্তু শিবিরে যান। তারা দেখেন সেখানকার তরুণ তরুণীরা হতাশায় ভেঙে পড়েছেন।
তিনি তাদের আশার বাণী শোনান যে শিগগিরই তাদের জীবনে স্বাধীনতা আসবে।

এখন ওয়াই ওয়াই নুকে তার অনেক ফেসবুক ফ্রেন্ড ‘রোহিঙ্গা প্রিন্সেস’ বলে ডেকে থাকেন। তবে এ উপাধি তার পছন্দ নয়। তিনি মাঠের সৈনিক হিসেবেই কাজ করতে চান।
আমি প্রিন্সেস নই। আমি জানি না এখনই কীভাবে এসব সংখ্যালঘুকে মুক্ত করতে হবে। কিন্তু আমি একটি জিনিস জানি যে আমার স্বপ্ন আছে। আমি ভালো মানুষ হতে চাই এবং এসব লোকদের জীবনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা চাই।’

আট বছরের কারাবন্দি জীবনে ওয়াই ওয়াইর অনুপ্রেরণা ছিলেন দুজন মানুষ। একজন মিয়ানমারের নোবেলজয়ী গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সুচি, যিনি সে সময় গৃহবন্দি ছিলেন এবং অন্যজন আমেরিকান রাজনীতিক এবং তৎকালীন সিনেটর বারাক ওবামা (বর্তমানে প্রেসিডেন্ট)।
আমার মনে হয়েছে ওবামা নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি শুধু যুক্তরাষ্ট্রকেই বদলে দেবেন না, তিনি পুরো বিশ্বকেই বদলে দেবেন।

গত বছর ওই তরুণীকে হোয়াইট হাউজের নৈশভোজে দাওয়াত দেন ওবামা। সে সময় তিনি মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সুযোগ পান।
সেই নৈশভোজের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ওয়াই ওয়াইর মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যায়।

‘আমি ছিলাম টেবিলে একমাত্র বিদেশি। বাকি আটজন ছিল আমেরিকান। মজার ব্যাপার হলো সেখানে যখন আমার নিজের পরিচয় দেয়ার সময় এলো তখন আমাকে কিছু বলতে হলো না। প্রেসিডেন্টই আমার সম্পর্কে সব কথা বলে দিলেন। কিন্তু আমি সম্ভবত প্রেসিডেন্টকে হতাশ করেছিলাম এই বলে যে মিয়ানমার সম্পর্কে তার নীতি কোনো সফলতার গল্প নয়। কারণ আমরা দেখছি মিয়ানমারজুড়েই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যে বর্বরতা চলছে।’
তরুণ তরুণীদের মনে আশার সঞ্চার করতে তিনি সপ্তাহে সাতদিনই খুব ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করেন।

তার প্রশিক্ষণ পাওয়া ১৮ বছরের এক তরুণী পায়ে সোন সু বলছিলেন, ‘ওয়াই ওয়াই নুর প্রশিক্ষণ ক্লাসে আসার পর থেকে আমার জীবনটা বদলে গেছে। তিনি আমার বোন, শিক্ষক এবং অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়েছেন।’
প্রেসিডেন্ট ওবামার দাওয়াত পেলেও এখনো তার আরেক রোল মডেলে সুচির পক্ষ থেকে দাওয়াত পাননি ওয়াই ওয়াই নু।

সুচি এখন মিয়ানমারের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে।
ওয়াই ওয়াই নুর আশা সুচি সহসাই রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু করবেন।

তার আশা তিনি সুচির সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন এবং তখন সুচিকে বলবেন, ‘তিনি দেশকে গণতন্ত্রে রূপান্তরের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা তখনই স্বার্থক হবে যখন এই প্রক্রিয়ায় সবাই অংশ  নেয়ার সুযোগ পাবেন।’

 

নিঃসন্তান হওয়া কি পাপ?

নিঃসন্তান হওয়া নেপথ্যে মানুষের কোনো হাত নেই। তবে হ্যা যদি কেউ ইচ্ছা করে সন্তান গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। তবে সে এই সন্তান গ্রহণ না করার জন্য গুনাহগার হবে। আল্লাহ মহানের তাকদিরের ফয়সালা মোতাবেক নিঃসন্তান হওয়া পাপ নয় কিন্তু নিজেদের ইচ্ছা মতো সন্তান গ্রহণ করা থেকে বিরত থেকে নিঃসন্তান থাকা পাপ- মহাপাপ।

মানুষকে সন্তান-সন্তুতি দানকারী একমাত্র আল্লাহ মহান। মানুষের কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই যে সে ইচ্ছা স্বাধীন মতো সন্তান গ্রহণ করবে আবার ইচ্ছা স্বাধীন মতো সন্তান গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। অথচ কন্যা বা পুত্র সন্তান জন্মদানে মানুষের কিছুই করার থাকে না।

পুত্র বা কন্যাশিশু হয়ে থাকে মহান আল্লাহর ইচ্ছায়। তাই তিনি জানিয়ে দিচ্ছেন- ‘যাকে ইচ্ছা দেন কন্যা সন্তান/ করেন ইচ্ছা হলে পুত্র প্রদান। আবার যখন এমন ইচ্ছা তাঁর হয়/ পুত্র ও কন্যা দেন একত্রে উভয়। যাকে ইচ্ছা তিনি বন্ধ্যা করান/ সর্বজ্ঞ নিশ্চয়ই এক মহাশক্তিমান’।। (কাব্যানুবাদ : শুরা-৪৯, ৫০)

নিঃসন্তান হওয়া নেপথ্যে মানুষের কোনো হাত নেই। তবে হ্যা যদি কেউ ইচ্ছা করে সন্তান গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। তবে সে এই সন্তান গ্রহণ না করার জন্য গুনাহগার হবে। আল্লাহ মহানের তাকদিরের ফয়সালা মোতাবেক নিঃসন্তান হওয়া পাপ নয় কিন্তু নিজেদের ইচ্ছা মতো সন্তান গ্রহণ করা থেকে বিরত থেকে নিঃসন্তান থাকা পাপ- মহাপাপ।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

আবারও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিচারক ফারুকী

প্রথমবারের মত একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে গত বছরের শেষ দিকে ‘অ্যাপসা’র মত বিশাল আয়োজনে বিচারক ও সেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন দেশের মেধাবী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বছর পেরুতেই আবারও ভিনদেশে বাংলাদেশের সিনেমা নির্মাতা হিসেবে গৌরবের খবর বয়ে নিয়ে এলেন তিনি। আর এবার যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী ‘ইস্ট এন্ড ফিল্ম ফেস্টিভাল ২০১৬’-এর বিচারক হিসেবে!

আগামি ২৩ জুন থেকে দশ দিনব্যাপী (৩ জুলাই পর্যন্ত) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসছে বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রভাবশালী ইস্ট এন্ড ফিল্ম ফেস্টিভাল।আর এই ফেস্টিভালে প্রথমবারের মত বিচারকের দায়িত্ব পালন করবেন দেশের মেধাবী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এই ফেস্টিভালে ‘ফিচার ফিল্ম’ বিভাগের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।

তবে এমন দাপুটে ফিল্ম ফেস্টিভালে বিচারকের দায়িত্ব পেলেও সেখানে উপস্থিত হতে পারছেন না ফারুকী। তার আগামি সিনেমা ‘ডুব’-এর পোস্ট প্রোডাকশনের কাজে ব্যস্ত থাকায় জুন অনুষ্ঠিতব্য যুক্তরাজ্যের সেই চলচ্চিত্র উৎসবে স্বশরীরে যেতে পারছেন না তিনি।

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলামেইল২৪ডটকম’কে জানান,‘ফিজিক্যালি আমি আমার আগামি সিনেমা ‘ডুব’-এর জন্য যেতে পারছি না। কিন্তু ফেস্টিভালের আয়োজক যারা আছেন তারা আমাকে চূড়ান্ত পর্বে স্থান করে নেয়া যে সিনেমাগুলো আছে সেগুলো ইন্টারনেটে দেখার একটি লিঙ্ক দিয়ে দিবেন। সেগুলো আমি তাদের দেয়া অনলাইন লিঙ্ক থেকে দেখে ফেস্টিভালে ‘ফিচার ফিল্ম’ জুরিবোর্ডের আর যারা আছেন তাদের সাথে আলোচনা করে স্কোরিং করবো। মানে আমি স্বশরীরে ফেস্টিভালে উপস্থিত থাকছি না ঠিকই, কিন্তু জুরি হিসেবে যে কাজটা তা আমি এখান থেকেই করছি।’

বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে জিজ্ঞেস করতেই নির্মাতা জানান,‘ডুব-এ আছি। আর কোনো ব্যস্ততা নেই আপাতত। তবে নতুন বিজ্ঞাপন চিত্রের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি’।

আসছে ঈদে টিভির জন্য কোনো নতুন চমক থাকছে কিনা জানতে চাইলে ফারুকী বলেন, গত প্রায় দশ বছর ধরে ঈদে টিভির জন্য কোনো কাজ করছি না। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।

‘ইস্ট এন্ড ফিল্ম ফেস্টিভাল’-এ ফিচার ফিল্মের পাঁচ বিচারকের মধ্যে বাংলাদেশের নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ছাড়াও আছেন টার্কিশ মেধাবী তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা টোলগা কারলিক, আমেরিকান জনপ্রিয় অভিনেতা রন পার্লম্যান, অভিনেতা ও প্রযোজক কালিম আফতাব এবং ব্রিটিশ নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা সারাহ গেব্রন।

 

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রথম সন্তান ছেলে হওয়া ভালো নাকি মেয়ে?

আর প্রথম সন্তান মেয়ে হ্ওয়ার ফযীলত সম্পর্কে হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল, হযরত আব্দুল্লাহ উমর (রা.) বর্ণনা করেন,রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,ঐ মহিলা বরকতময়ী ও সৌবাগ্যশালী,যার প্রথম সন্তান মেয়ে হয়। কেননা,(সন্তানদানের নিয়ামত বর্ণনা করার ক্ষেত্রে)আল্লাহ তায়ালা মেয়েকে আগে উল্লেখ করে বলেন,তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন আর যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।”(কানযুল উম্মাহ ১৬:৬১১)

প্রথম সন্তান ছেলে বা মেয়ে যাই হোক না কেন ইসলামের দৃষ্টিতে এর মাঝে কোনো পার্থক্য বা মর্যাদাগত কোনো কম-বেশি নেই। কারণ ইসলাম কন্যা শিশু ও ছেলে শিশু উভয়কেই সমান দুষ্টিতে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে কারো প্রথম সন্তান কন্যা হলে তার জন্য হাদিস শরিফে বিশেষ ফজিলতের কথা উল্লেখ রয়েছে।

(১) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলনে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করনে, যার গৃহে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করল,অতঃপর সে ঐ কন্যাকে কস্ঠ্ও দেয়নি,তার উপর অসন্তুষ্টও হয়নি এবং পুত্র সন্তানকে তার উপর প্রধান্য দেয়নি,তাহলে ঐ কন্যার কারনে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবশে করাবেন।(মুসনাদে আহমদ ১;২২৩)

(২) রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,যে ব্যাক্তি দ”টি মেয়েকে বয়ঃপ্রাপ্ত হ্ওয়া পর্যন্ত লালন পালন করল সে কিয়ামতের দিন এরূপ অবস্থায় উঠবে যে আমি আর সে এরকম মিলিত অবস্থায় থাকব,এই বলে তিনি স্বীয় আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে দেখালেন।(মুসলিম শরীফ)

(৩) রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, “কন্যা সন্তান হল উত্তম সন্তান। কেননা,তারা হচ্চে অধিক গুনের অধিকারিনী বিনম্র ও মিস্ঠভাষী।

এছাড়া তারা পিতা-মাতার সেবা -শুশ্রষার জন্য সদাসর্বদা প্রস্তুত থাকে এবং তারা মায়া মমতাকারীনী,স্নেহময়ী,বিনয়ী ও বরকতময়ী।”(ফিরদাউস ৪;২৫৫)

আর প্রথম সন্তান মেয়ে হ্ওয়ার ফযীলত সম্পর্কে হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল, হযরত আব্দুল্লাহ উমর (রা.) বর্ণনা করেন,রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,ঐ মহিলা বরকতময়ী ও সৌবাগ্যশালী,যার প্রথম সন্তান মেয়ে হয়। কেননা,(সন্তানদানের নিয়ামত বর্ণনা করার ক্ষেত্রে)আল্লাহ তায়ালা মেয়েকে আগে উল্লেখ করে বলেন,তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন আর যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।”(কানযুল উম্মাহ ১৬:৬১১)

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

৬ টি ভিন্ন অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

আজকের দিনে অনলাইন ব্যবসা উপার্জনের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। বিভিন্ন রকম ব্যবসা রোজ চালু হচ্ছে অনলাইনে। কেউ ফেসবুক পেজে, কেউ বড় পরিসরে ওয়েবসাইটে ব্যবসা করছেন। সব ব্যবসা কি লাভজনক হচ্ছে? একই রকম ব্যবসা যখন আরও দশজন করছে তখন সেই একই ধরণের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলে কীভাবে নজরে আসবেন? তার চেয়ে আপনার বুদ্ধিটি যদি হয় একটু আলাদা কিন্তু মানুষের কাজে আসবে এরকম? আসুন ব্যবসার ভিন্ন ভিন্ন কিছু আইডিয়ার সাথে পরিচিত হই।
১। ওয়েব ডিজাইনিং
আপনার যদি ওয়েব ডিজাইন এবং HTML সম্পর্কে জ্ঞান থাকে তাহলে ওয়েব ডিজাইন করার কাজটিকে ব্যবসা হিসেবে নিতে পারেন। এখন এমন অনেকে অনলাইনে ব্যবসা করছেন যারা অচীরেই ওয়েবসাইট খুলতে আগ্রহী। যাদের ওয়েবসাইট আছে, তাদেরও অনেকের সাইট অনেক দূর্বল ডিজাইনের কারণে আকর্ষণিয় হচ্ছে না। এই বাজারটি ধরতে পারেন কিনা দেখুন।
 
২। রিজিউম লেখা
চাকরি সন্ধানী একজন ব্যক্তির প্রথম প্রয়োজন ভাল একটি রিজিউম এর। আইডিয়াটি হয়ত অদ্ভুত লাগছে আপনার। কিন্তু একটি ভাল, আকর্ষণীয় রিজিউম কিন্তু সবাই লিখতে পারে না। নীলক্ষেতের ফটোকপির দোকানে রিজিউম লেখায় এমন কত বেকার যুবক-যুবতী। যাদের দিয়ে লেখায় তাদের নিজেদের শিক্ষার দৌড় আর কতটুকু? আপনি একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষ হয়ে যদি এটিকে পেশা হিসেবে নেন কেমন হবে ভেবে দেখুন তো!
৩। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অনেক পেইজে বা সাইটে প্রডাক্টের নীচে আমরা কাস্টমারের কমেন্ট দেখি। কমেন্ট পড়ে ক্রেতা আরও আগ্রহী হয়। একজন ক্রেতা যখন পণ্য সম্পর্কে আরেকজন ক্রেতার ইতিবাচক বক্তব্য পড়েন তখন পণ্যটির যাথার্থতার আর কোন সার্টিফিকেট লাগে না। এমন অনেক সাইট আছে যারা পজেটিভ কমেন্টের জন্য টাকা দেয়। এমন সাইট খুঁজে বের করতে পারেন। কোন পেইজ বা সাইট ছাড়াই আয় হবে আপনার।
৪। নিউট্রিশন কোচ
এই পেশাটি একটু জটিল। এরকম একটি ব্যবসায় আপনাকে মানুষের স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি সঙ্ক্রান্ত তথ্যের জন্য অর্থের বিনিময়ে পরামর্শ দিতে পারেন। আপনি নিজে যদি নিউট্রিশনিস্ট নাও হন, একজন দক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিন। এমন অনেক জিম ইন্সট্রাক্টর এবং প্রশিক্ষক আছেন যারা পার্ট টাইম হিসেবে এই কাজটি করতে রাজী হবেন। সাথে সাজসজ্জার পরামর্শ যদি যোগ করতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই!
৫। ই-বুক লেখা
অনেক লেখক আছেন যারা বই লেখেন কিন্তু প্রকাশকরা তাদের বই প্রকাশ করছেন না বলে থেমে আছেন। মানুষ কিন্তু এখন কাগজের বই এর বাইরে অনলাইনে বই পড়তে আগ্রহী হচ্ছে। অনলাইনে খুবই কম খরচে ই-বুক হিসেবে নিজের লেখা প্রকাশ করতে পারেন। নিজের মেধাকে প্রকাশিত করে পরিচিতি বাড়াতে পারেন সহজেই।
 
৬। টেকনিকাল এসিস্ট্যান্ট
অনেক ছোটখাট অনলাইন কোম্পানি আছে যাদের অনেক টেকনিক্যাল সমস্যা থাকে এবং প্রয়োজনে অন্যদের ফোন করে সাহায্য নিতে হয় তাদের। এটিকে ব্যবসা হিসেবে নিতে পারেন আপনি। টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান হওয়া সহজ কাজ নয়। আগে দক্ষতা অর্জন করতে হবে আপনাকে। বড় বড় সাইটগুলো এজন্য আলাদেভাবে লোক নিয়োগ করেন। স্বাধীন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনি স্বল্প ব্যয়ে এই কাজটি করতে শুরু করলে অনেক ব্যবসায়ী আপনার ক্লায়েন্ট হয়ে যাবে দেখবেন।
ব্যবসা তো সবাই করে। ব্যবসার সমস্যা নিয়ে ব্যবসা করা কিন্তু আজকের সময়ের প্রয়োজন। একজন সফল ব্যবসায়ী হোক বা নতুন উদ্যোক্তা তাদের সবারই সাহায্যের প্রয়োজন হয়। আপনি হতে পারেন সেই সাহায্যকারী।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

সুস্বাদু মোলায়েম ম্যাংগো আইসক্রিম

গরমের দিনে নানা অজুহাতে ঠাণ্ডা খাওয়ার বাহানা। আর তাইতো আইসক্রিমটাও খুব প্রিয় হয়ে ওঠে সবার কাছে। কিন্তু সুস্বাদু আইসক্রিম খেতে দোকানের ওপরই নির্ভর করতে হয়। অথচ এই মধুমাসে আমের স্বাদে আপনিও বানিয়ে নিতে পারেন সুস্বাদু মোলায়েম ম্যাংগো আইসক্রিম। পরিবারের সদস্যদের তৃপ্তির হাসি ছড়াতেও সাহায্য করবে ম্যাংগো আইসক্রিম। তাই ঝটপট শিখে নিন ম্যাংগো আইসক্রিম বাবানোর সহজ উপায়।

যা যা লাগবে

গুড়া দুধ ২ কাপ, পানি আড়াই কাপ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল-চামচ, চিনি ১ কাপ, ক্রিম ১ টিন, জেলাটিন গোলানো ১ টেবিল-চামচ, তরল গ্লুকোজ ১ চা-চামচ, পাকা আমের রস ১ কাপ, ২টি ডিমের সাদা অংশ।

যেভাবে করবেন

গুড়া দুধ, পানি, কর্নফ্লাওয়ার ও চিনি একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। মিশ্রণ প্যানে ঢেলে কিছুক্ষণ জ্বালিয়ে ঘন করে নিন। গরম অবস্থায় তরল গ্লুকোজ মেলাতে হবে। ঠাণ্ডা হয়ে এলে জেলাটিন মেশাতে হবে। তারপর ক্রিম ও আমের রস দিয়ে আবার ভালো করে মিশিয়ে ডিপে জমাতে হবে তিন ঘণ্টা। এরপর আবারও ব্লেন্ড করে জমাতে হবে। ২ ঘণ্টা পর পর বের করে ডিমের সাদা অংশ ও চিনির পরিমাণ দেখে ব্লেন্ড করে জমাতে হবে। তারপর ইচ্ছামতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

 

কাপড়ের দাগ দূর করুন নিমিষে

পছন্দের কাপড়ে দাগ পড়ে গেলে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। আর যদি দাগটি তোলা না যায় তবে খারাপ লাগাটা বেড়ে যায় অনেক বেশি। কারণ দাগ লাগার পরে তা আর ব্যবহারের উপযোগী থাকে না। অথচ এই দাগ তোলার সহজ পদ্ধতি জানা থাকলে দাগ দূর হবে নিমিষে। তাই জেনে নিতে পারেন কাপড় থেকে বিভিন্ন রকমের দাগ তোলার সহজ কিছু পদ্ধতি।

চা-কফির দাগ

প্রথমে কাপড়টি মিনিট দশেক পানিতে ভালো করে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর কাপড় ধোয়ার সাবান বা লিক্যুইড ডিটারজেন্ট বা ডিজারজেন্টের সঙ্গে পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এরপর পেস্টটি কাপড়ের দাগের ওপর কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন। হালকা শুকিয়ে গেলে কাপড়টি গরম পানিতে ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দাগ উঠে যাবে নিমিষেই।

তেলের দাগ

কাপড়ে খাবার পড়ে তেলের দাগ হয়ে গেলে দাগের জায়গাটিতে ট্যালকম পাউডার ছড়িয়ে দিন। ওই অংশটির ঠিক নিচের দিকে একটি ব্লটিং পেপার রাখুন। এবার আরও কিছুটা পাউডার নিয়ে দাগের জায়গাটিতে ভালো করে ঘষে লাগান। এতে দাগ অনেকটাই উঠে যাবে। বাকি হলদে ভাব তোলার জন্য ডিটারজেন্ট পানিতে ঘন করে গুলে নিয়ে দাগের ওপর মাখিয়ে কাপড়টা রোদে শুকাতে দিন। কিছু সময় পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, দাগ উঠে যাবে ।

চকলেটের দাগ

কাপড়ে যদি চকলেট লেগে থাকে তা যতোটা সম্ভব তুলে ফেলার চেষ্টা করুন। এরপর ডিটারজেন্ট মেশানো গরম পানিতে কাপড়টি ভিজিয়ে রাখুন। যদি এরপরও কাপড়ে বাদামী দাগ থেকে যায় তাহলে পানিতে সামান্য স্যানিটাইজার মিশিয়ে আরও খানিকক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। এরপর গরম পানি দিয়েই কাপড় ধুয়ে নিন।

মরিচার দাগ

সাদা কাপড়ে লোহার মরিচার দাগ লেগে গেলে বিচ্ছিরি দেখায়। এই দাগ তোলার জন্য প্রথমে ভিনেগার ও লবণের পেস্ট তৈরি করুন। তারপর দাগ লাগা অংশে পেস্ট লাগিয়ে রোদে রাখুন অথবা গরম পানি স্টিলের বাটিতে নিয়ে তাপ দিন। তারপর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।

ঘামের দাগ

আধা মগ পানিতে ৪ টেবিল চামচ বেকিং সোডা দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি কাপড়ের ঘামের দাগের অংশে ভালো করে লাগাতে হবে। কিছুক্ষণ পরে ঘষে দাগ তুলে ফেলন। তারপর আবার ১ ঘণ্টা এভাবেই কাপড়টি রেখে দিন। এরপর সাধারণ নিয়মে কাপড় ধুয়ে ফেলুন। শুকিয়ে গেলে ঘামের দাগ একেবারেই থাকবে না।

পানের পিক

জামা কাপড় থেকে পানের পিকের দাগ তুলতে দাগের তলায় এক টুকরা পুরানো কাপড় রেখে আলু দিয়ে দাগের জায়গাটি ঘষে নিন, দাগ সহজে উঠে যাবে ।

 

আত্মরক্ষার্থে মার্শাল শিখছে কুষ্টিয়ার ছাত্রীরা

এবার ইভটিজিং, যৌন হয়রানীসহ নানা সামাজিক নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ নিচ্ছে কুষ্টিয়ার গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। পাশাপাশি এসব সামাজিক ব্যাধি রুখতে তারা শ্রেণি কক্ষে বিশেষ পাঠ গ্রহণ করছে।

এই প্রশিক্ষণ নিয়ে মেয়েদের মনোবল আর আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়েছে। এতে খুশি অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা মানসিক সমর্থন দিচ্ছে এই ছাত্রীদের। একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই উদ্যোগে সহায়তা দিচ্ছে।

ইভটিজিং, যৌন হয়রানি, ধর্ষণসহ পদে পদে নানা নির্যাতনের শিকার হতে হয় আমাদের সমাজের নারীদের। নতুন নতুন আইন, প্রশাসনের তৎপরতা কোনো কিছুই যেন রুখতে পারছে না এই সামাজিক ব্যাধিকে। এমন প্রেক্ষাপটে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা নিজেদের রক্ষায় মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তারা পড়ার ফাঁকে ফাঁকে বিদ্যালয় চত্বরে নিয়মিত এই প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছে।

এই প্রশিক্ষণের পাশাপাশি শ্রেণি কক্ষে বিশেষ পাঠ্য পুস্তক পড়ানোর মাধ্যমে ছাত্রীদের হয়রানি ও নির্যাতনসহ নানা  সামাজিক নিপীড়ন সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হচ্ছে। এতে নিজেদের সামাজিক মর্যাদা ও আত্মসম্মান রক্ষায় আত্মবিশ্বাস ও মনোবল বেড়েছে।

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া মিরপুর উপজেলার পাহাড়পুর-লক্ষ্মীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী বিলকিস বানু জানায়, এই প্রশিক্ষণ নিয়ে তার মনোবল বেড়েছে। আগে স্কুলে যাতায়াতের সময় সে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত থাকতো। এখন সেই শঙ্কা বা ভয় আর নেই।

একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী আরজিনা খাতুন বলেন, ‘আগে নিজেকে খুব দুর্বল মনে হতো। তাই নিজেকে নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখতাম। তবে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন আমার ভেতরে এক আত্মবিশ্বাস জন্মেছে।’

মিরপুর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন শেখ বলেন, ‘আগে মেয়ে স্কুলে গেলে ভয়ে ভয়ে থাকতাম। মেয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরবে তো ? এমন আশঙ্কা বুকে বাজতো সব সময়। তবে মেয়ে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ নেয়ায় এখন সেই ভয় অনেকটায় কেটে গেছে।’

পাহাড়পুর-লক্ষ্মীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিহাদ আলী খান জানান, এই উদ্যোগ সব স্কুল গ্রহণ করলে নারী নির্যাতন বিশেষ করে স্কুলগামী মেয়েদের ওপর নিপীড়ন অনেকটা কমবে। এতে স্কুলে মেয়েদের উপস্থিতির হারও বাড়বে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ নামের একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা ছাত্রীদের এই প্রশিক্ষণ ও পাঠদানে আর্থিক ও কারিগরি সাহায্য দিচ্ছে। সংস্থাটির জেলা সমন্বয়কারী হাসান ইকবাল রাসেল জানান, মেয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে অবাধে ও নির্ভয়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারে এবং সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে তাদের যাতে কম বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে না হয় সেই লক্ষ্য সামনে রেখে এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

 

মহাসড়ক থেকে কর্মস্থল, কোথাও নিরাপদ নয় নারী

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীরা এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও ঘরে-বাইরে নারীদের জীবন ক্রমে আরো ‘ঝুকিপূর্ণ’ হয়ে উঠছে। মহাসড়ক থেকে কর্মস্থল কোথাও নারীরা আজ নিরাপদ নয়।

শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে শহীদ তাজুল মিলনায়তনে শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কোনো সমাজ ও দেশ নিজেদের সভ্য বলে দাবি করতে পারে না, টেকসই কোনো উন্নয়নও সম্ভব নয়। বস্তুত, নারীমুক্তি ছাড়া সামাজিক মুক্তি নেই।

কাউন্সিল অধিবেশনে তারা আরো বলেন, গত আড়াই দশক ধরে নারী নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হলেও বাস্তবে পুরুষতন্ত্রের জোয়াল থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারেননি। সে কারণে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, গুম, পাচারসহ নারীর প্রতি সহিংসতা কমছে না; এখন পর্যন্ত নারীর সম-অধিকার বিরোধী রীতি-নীতি ও আইন-কানুন বিদ্যমান, নারীকে অমর্যাদাকরভাবে বিজ্ঞাপনী প্রচারণায় ব্যবহার করা হচ্ছে। সমান কাজের জন্য অনেক ক্ষেত্রে নারীরা এখনও সমান মজুরি পাচ্ছে না।

বক্তারা আরো বলেন, ‘সংবিধানে নারী-পুরুষের ক্ষমতার কথা বলা হলেও বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, সন্তান ধারণ, অভিভাবকত্ব ও সম্পত্তির উত্তরাধিকার এখনও নারীদের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায়নি।’

পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নারীর অধিকার ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত, মজুরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে এবং নারী মুক্তির লড়াই এগিয়ে নিতে নারীদের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

সংগঠনের আহ্বায়ক বহ্নিশিখা জামালীর সভাপতিত্বে কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাম মোর্চার নেতা অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শম্পা বসু, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সদস্য সচিব আবু হাসান টিপু, বিপ্লবী কৃষক সংহতির সভাপতি আনছার আলী দুলাল, খেতমজুর ইউনিয়নের আকবর খান, বিপ্লবী ছাত্র সংহতির সাধারণ সম্পাদক ফায়জুর রহমান মনির, পাদুকা শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ, শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলাম প্রমুখ। অধিবেশন পরিচালনা করেন স্নিগ্ধা সুলতানা ইভা।

 

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়?

হৃদপিণ্ডের একটি রোগ হার্ট অ্যাটাক। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম হল মায়কার্ডিয়াল ইনফার্কশন। ছোট্ট করে একে বলা হয় এমআই। হার্টে রক্ত বহনকারী ধমণীগুলো সরু হয়ে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে রক্ত প্রবাহ আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়। হার্টের কোষ গুলো মরে যায়। এই পরিস্থিতির নাম ইশকেমিয়া। ইশকেমিয়া হলে বুকে তীব্র চাপ ও ব্যথা অনুভুত হয়। তখন এই সমস্যাটিকে বলে এনজাইনা পেক্টোরিস বা বুকে ব্যথা। যদি ইশকেমিয়া চলতেই থাকে তবে হার্টের কোষ গুলো একসময় মারা যায়। এই অবস্থাটি হার্ট অ্যাটাক হিসেবে পরিচিত।

ইশকেমিয়া হলে রোগীর বুকের বাম দিকে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। অনেকে আবার বুকের ওপর ভীষণ ভারী কিছু চেপে রাখার মতো অনুভব করেন। ব্যথার তীব্রতা বুকে বেশি থাকলেও এটা বুক থেকে গলা, গাল, মাড়ি, কান, বাম হাত এবং আশেপাশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। একে রেফার্ড পেইন বলা হয়। বুকের ব্যথা ১ থেকে ৩ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তবে এই ব্যথা কখনই ৩০ সেকেন্ড সময়ের কম নয়, আবার ১৫ মিনিটের বেশিও নয়। এনজাইনা বা ব্যথা শুরু হয় সাধারণত কোনো পরিশ্রমের কাজ করার সময়- যেমন দৌড়ানো বা জোরে হাঁটা ইত্যাদি। তবে পেট ভরে খাবার খাওয়া, যৌনক্রিয়া এমনকি হঠাৎ রেগে যাওয়া বা উত্তেজিত হলেও এনজাইনা শুরু হয়ে যেতে পারে। ব্যথার সঙ্গে রোগীর অন্য উপসর্গ যেমন শ্বাসকষ্ট, পেট ফাপা লাগা, অস্থির লাগা, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদিও থাকতে পারে। পরিশ্রম বন্ধ করে বিশ্রাম নিলে এই ব্যথা সাময়িকভাবে কমে যেতে পারে।

শতকরা  ৮৫ ভাগ হার্ট অ্যাটাক বয়সের কারণে হয়ে থাকে। পুরুষের প্রথম হার্ট অ্যাটাকের জন্য গড় বয়স ৬৬ এবং নারীদের ৭০। তবে, নারীদের হার্ট অ্যাটাকের বয়স ৫৫ থেকে শুরু হয় এবং বয়স ৬৫ থেকে নারী ও পুরুষ যেকোনো সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়াও অনেক কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে-

– রক্তের কলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে।

– অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস থাকলে।

– অতিরিক্ত তেল এবং চর্বিযুক্ত খাবার খেলে।

– হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে।

– স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন থাকলে।

– অতিরিক্ত মদ্যপান, ধুমপান এবং শারীরিক পরিশ্রম না করা।

– বংশগত এবং অতিরিক্ত কোকেন জাতীয় ওষুধ খাওয়া এই রোগের কারণ হতে পারে।

বুকের ব্যথার কারণ হিসেবে এনজাইনা বা এমআই সন্দেহ হলে প্রথম একটি ১২ লিডের ইসিজি করানো লাগতে পারে। ব্যথার শুরুর দিকে ইসিজির রিপোর্ট স্বাভাবিক আসতে পারে। সঠিক তথ্য জানতে পর্যায়ক্রমে বেশ কয়েকবার ইসিজি করতে হয়। এরপরও যদি কোনো ত্রুটি ধরা না পড়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ নিশ্চিত করেন। এছাড়াও প্রয়োজনে আরও অনেক পরীক্ষা করতে হতে পারে।

করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ এর চিকিৎসা অবশ্যই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ (কার্ডিওলজিস্ট) এর তত্ত্বাবধানে করা উচিৎ। কারণ, কেবল হৃদরোগ বিশেষজ্ঞই রোগীর সঠিক অবস্থা বিবেচনা করে আদর্শ চিকিৎসা দিতে পারেন।

 

সিরিয়াস নয় সিনসিয়ার হোন সফলতা অর্জনে….

সফলতা তো আমরা সবাই পেতে চাই। কিন্তু সফলতা বলতে জীবনের কোন পর্যায়কে বুঝাবেন আপনি? আপনি কিসে নিজেকে সফল মনে করবেন? বেশীরভাগ মানুষই বিশাল পরিমান অর্থবিত্ত আর সম্মানের অধিকারী হওয়াকে সফলতা মনে করেন। কিন্তু আসলে বিষয়টি কি সে রকম কিছু?

সফলতা একটা যাত্রা যার শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই। সফলতা মানুষের জীবনে বার বার আসে। প্রথম যেদিন হাঁটতে শিখেছিলেন সেদিন আপনি সফল হয়েছিলেন, প্রথম যেদিন সাইকেল চালাতে শিখেছিলেন সেদিন সফল হয়েছিলেন, যেদিন সাঁতার কাটতে পেরেছিলেন সেদিন সফল হয়েছিলেন, যেদিন পড়াশুনা করে প্রথম সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন সেদিন সফল হয়েছিলেন, এভাবে প্রতিটা কাজের যেদিন সুখময় সমাপ্তি টানতে পেরেছেন সেদিনই আপনি সফল হয়েছেন। তাহলে সফলতা সফলতা করে মাথা ঠুকার কি কারন?

এভাবে যদি হিসেব করেন তাহলে আপনার জীবনে হাতে গোনা কয়েকটি বিফলতা ছাড়া দেখবেন সফলতার পরিমানই বেশী। সত্যিকার অর্থে সফলতা হল আপনার জীবনের সেই সুখকর মুহুর্তগুলো যখন আপনি নতুন কিছু করতে পেরেছিলেন। আকাশের সীমানা আর সমুদ্রের বিশালতা যেমন পরিমাপ করা সম্ভব নয় ঠিক তেমনি আপনিও নিজেকে জীবনের কোন একটা পর্যায়ে এসে বলতে পারবেন না আমি সফল। তাই সফলতার যাত্রায় আপনি যতটা অর্জন দিয়ে সাজিয়ে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারবেন ঠিক ততটাই সফল হবেন আপনি।

প্রতিটা ব্যাপারে ভারসাম্য থাকা খুব জরুরী। যেমনটা পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা করছে মধ্যাকর্ষন শক্তি ঠিক তেমনি। কোন কিছু নিয়ে খুব আবেগী না হওয়া আবার কোন কিছু নিয়ে খুব বেশী উত্তেজিত না হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। সার্মথ্যের বাইরে কোন কিছু করতে গেলে তার ফলাফল অনুকূলে না আসাটাই স্বাভাবিক। কাছের মানুষটি ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় চাকুরির প্রমোশনের মজা যেমন উপভোগ করতে পারবেন না তেমনি বিছানায় ছারপোকা রেখে শান্তিতে ঘুমাতেও পারবেন না।

জীবনটা চামচে মার্বেল রেখে দৌড় খেলার মতই। আপনি দৌড়ে প্রথম হলেও চামচে থেকে মার্বেল পড়ে গেলে আপনার অর্জন শূন্য। দৌড়ে প্রথম হয়েও লাভ হবে না। জীবনে যা কিছু করছেন তা আপনি, আপনার পরিবার, আপনজনদের জন্যই। সফলতার যাত্রায় স্বাস্থ্য আর সম্পর্কের সমন্বয়টা খুবই জরুরী। আপনার  প্রচেষ্টার মুল্য তখনই থাকবে যখন আপনি সব কিছুর সাথে সমন্বয় করতে পারবেন। না হলে সফল হয়ত হবেন কিন্তু থাকবে না জীবনের উচ্ছাস-উত্তেজনা, থাকবে না কোন অনুভূতি। জ্বালানী বিহীন গাড়ির মত হয়ে যাবে জীবন, থাকবে না কোন গতি।

জীবন নিয়ে খুব সিরিয়াস হওয়ার দরকার নেই। প্রিপেইড কার্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার মত জীবন আমাদের। কারন এ পৃথিবীতে আমরা ক্ষনিকের অতিথি। মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমি আড্ডায় সময় কাটানো, দুই একদিন স্কুল কিংবা অফিস  ফাঁকি দেওয়া, হটাৎ করে প্রেমে পড়া,  প্রিয় মানুষটির সাথে অকারনে অল্পসল্প ঝগড়া, অভিমান, খুনসুটি তো দোষের কিছু নয়।  প্রত্যেকেই মানুষ আমরা যন্ত্র তো নয়। সুতরাং সিরিয়াস হওয়ার থেকে সিনসিয়ার হওয়াটা বেশী প্রয়োজন।

শুভকামনা নিরন্তর।

 

একাধিক বিয়ের গুঞ্জন সম্পর্কে যা বললেন মাহি

গত ২৫ মে দীর্ঘদিনের বন্ধু অপুকে বিয়ে করেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। শোবিজ মিডিয়ায় মাহির বিয়ের আমেজ ফুরিয়ে যেতে না যেতেই ২৭ মে সন্ধ্যা থেকে মাহির বিয়ে নিয়ে শুরু হয় নতুন গুঞ্জন। ফেসবুকে ভেসে আসে কিছু ছবি। ছবিগুলোর বরাত দিয়ে খবর প্রচার করা হচ্ছিল মাহি এর অাগেও বিয়ে করেছিলেন। ছবিতে বিয়ের সাজে মাহিকে দেখা যায় তার কথিত বর শাওনের সঙ্গে। বন্ধু শাওনের সঙ্গে মাহির বিয়ের খবর প্রকাশিত হয়েছিল গত বছরেই। সেসময় মাহি বিষয়টিকে ফেক বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।

তবে ২৭মে প্রকাশিত ছবিগুলোতে মাহি ও শাওনকে বিয়ের পোশাকে খুঁজে পাওয়ার পরও মাহি একই কথা বললেন।

মাহি জানিয়েছেন ছবিগুলো ফেক। একটি শুটিং সেটে মাহিকে বিয়ের সাজে দেখে দুষ্টুমি করে তার সঙ্গে ছবি তুলেছেন শাওন।

ইতোমধ্যেই টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হওয়া ঘটনাটিকে শুধু ফেইক বলেই ক্ষান্ত হননি মাহি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যারা অনলাইনে ছবিগুলো ছড়িয়ে দিয়েছেন ও যেসব অনলাইন ভুল খবর প্রকাশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে তিনি মামলাও করবেন।

 

নারীর সুগন্ধি ব্যবহার : ইসলাম কী বলে

এক্ষেত্রে কোনো মেয়ের শরীর থেকে যদি কোনো দূর্গন্ধ প্রকাশিত হওয়ার সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে সুগন্ধি ব্যবহার ছাড়া নিজেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারেন। প্রয়োজনে প্রতি ঘণ্টা অন্তর অন্তর নিজেকে পরিস্কার করে নিতে পারেন। সমস্যা খানিকটা জচিল হলে তিনি একজন চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ মতো বৈধ কিছু ব্যবহার করতে পারেন।

অনেক মহিলা বাইরে বের হওয়ার সময় পর্দা করে বের হয় বটে, কিন্তু পারফিউম বা অন্য সুগন্ধি ব্যবহার করে । মহিলাদের বাইরে বের হওয়ার সময় সুগন্ধি ব্যবহার করা নাজায়েয। এতে পর্দা লঙ্ঘন হয়। শরঈ পর্দা আদায় হয় না। হাদিস শরিফে ওই সব মহিলার উপর অভিসম্পাত করা হয়েছে যারা সুগন্ধি মেখে বের হয়।

পর্দার সাথে হলেও মহিলা পারফিউম বা সেন্ট জাতীয় কোন সুগন্ধি ব্যবহার করে বাইরে যেতে পারে না। কারণ তাতে ফিতনা আছে। মহানবি সা. বলেছেন, “প্রত্যেক চক্ষুই ব্যাভিচারী। আর মহিলা যদি (কোন প্রকার) সুগন্ধি ব্যবহার করে কোন (পুরুষের) মজলিসের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে, তবে সে ব্যভিচারিণী (বেশ্যার মেয়ে)।” (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে হিব্বান, ইবনে খুযাইমাহ, হাকেম, সহীহুল জামে, ৪৫৪০ নং)

এমন কি মসজিদে নামায পড়ার উদ্দেশ্যে যেতেও সে সেন্ট ব্যবহার করতে পারে না। মহানবি সা. বলেন, “আল্লাহ্র বান্দীদেরকে মসজিদে আসতে বারণ করো না, তবে তারা যেন খোশবু ব্যবহার না করে সাধাসিধাভাবে আসে।” (আহমাদ, আবূ দাঊদ, সঃ জামে ৭৪৫৭ নং)

যে মহিলা সেন্ট ব্যবহার করে মসজিদে যাবে, সে মহিলার গোসল না করা পর্যন্ত কোন নামায কবুল হবে না।” (ইবনে মাজাহ ৪০০২)

এক্ষেত্রে কোনো মেয়ের শরীর থেকে যদি কোনো দূর্গন্ধ প্রকাশিত হওয়ার সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে সুগন্ধি ব্যবহার ছাড়া নিজেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারেন। প্রয়োজনে প্রতি ঘণ্টা অন্তর অন্তর নিজেকে পরিস্কার করে নিতে পারেন। সমস্যা খানিকটা জচিল হলে তিনি একজন চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ মতো বৈধ কিছু ব্যবহার করতে পারেন।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

লিডারশীপ ডেভেলপ করার সহজ ৪ স্টেপ

লিডারশীপ হচ্ছে নিজের খেয়ে, অন্যকে দিয়ে বনের মোষ তাড়ানো। আরো সোজা কথায় বললে, যাকে অন্যরা ফলো করে সে-ই লিডার। সেটা ভার্সিটির ক্লাব, ভলান্টিয়ার অর্গানাইজেশন, কিংবা ট্যুরে বের হওয়া ফ্রেন্ডদের গ্রুপেও হতে পারে। তবে লিডারশীপ কোয়ালিফিকেশনের কথা শুনলেই বেশিরভাগ পোলাপান হাফ প্যান্ট খুলে দৌড় মেরে বাকি জীবন দুধ-ভাত হয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ লিডারশীপ ডেভেলপ করা খুবই খুবই সোজা। সিম্পল ৪ টা স্টেপ ফলো করলে যে কেউ লিডার হতে পারবে।

স্টেপ-১: বি এভেইলএবল: 

কম্পিউটারের খাঁচা, খেলা দেখার নেশা, বাথরুমের চিপা থেকে একটু সময় বের করতে হবে। ক্যাম্পাসে প্রায়ই কালচারাল ইভেন্ট, ক্যারিয়ার ক্লাব, ডিপার্টমেন্টের প্রোগ্রাম, ভলান্টিয়ার এক্টিভিটি হয়। এরকম একটা বা দুইটা ইভেন্টে যাবা।নির্ধারিত সময়ের একটু আগে গিয়ে কোনার মধ্যে লুকিয়ে না থেকে, অর্গানাইজাররা যেখানে ছোটাছুটি করতেছে তার আশেপাশে ঘুরাঘুরি করবা। তেমন কিছু বলার বা করার দরকার নাই। জাস্ট দেখো, খেয়াল করো, অবজার্ভ করো। কেউ ভারি কিছু একা একা সরাইতে না পারলে একটু হেল্প করো। ব্যস, এই টুকুই। এর বেশি কিছু না।

স্টেপ-২: বি হেল্পফুল: 

অর্গানাইজাররা যখন দেখবে তুমি হেল্প করতেছ এবং বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে বুঝাই দিচ্ছ তুমি এভেইলএবল। তখন তারাই বলবে, রিসেপশনের যে থাকার কথা সে এখনো আসে নাই। তুমি কি ওই খানে একটু বসতে পারবা? কোন গেস্ট আসলে সামনের সারিতে এনে বসবা। বা এই খাবারের প্যাকেটগুলার সাথে একটা করে ড্রিংকস দিতে পারবা? তখন হাসি মুখে বলবা- অবশ্যই। এই “অবশ্যই” শব্দটা বলে তুমি একটা অর্গানাইজেশনের আনঅফিসিয়াল মেম্বার হয়ে গেছ। এইভাবে দুই-তিনটা ইভেন্টে হেল্প করলে, ওরাই তোমাকে পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারি বা ফুড সেক্রেটারি বানায় দিবে। ব্যস, তোমার সিভিতে বড় বড় করে লেখার মতো একটা জিনিস পেয়ে গেলা। যারা রুমে বসে বসে গেইম অফ থ্রোন দেখতেছে তাদের চেয়ে এগিয়ে গেলা।

স্টেপ-৩: বি এ ফলোয়ার:

একটা অর্গানাইজেশনের সাথে যুক্ত হলেই সেটার সাথে দিনরাত ২৪ ঘন্টা লেগে থাকা লাগে না। মাসে ৩-৪ ঘন্টা বা সেমিস্টারে ১০-১৫ ঘন্টা সময় দিলেই হয়। তবে তোমাকে যেসব দায়িত্ব দিবে সেগুলা সিনসিয়ারলি করবা। যেখানে যেতে বলবে সেখানে যাবা। পড়ালেখা ঠিক মতো করো বা না করো, এই কাজে কোন ফাঁকিবাজি করবা না। সিনিয়ররা যেসব ডিসিশন নিচ্ছে, সেগুলা খেয়াল করবা। বেশিরভাগ জিনিসই কমন সেন্স। তোমার কোন অভিমত থাকলে জানাবা। বি এ গুড ফলোয়ার। গুড লিসেনার। রিলায়েবল টিম মেম্বার। আর কিছু না।

স্টেপ-৪: বি এ লিডার: 

তুমি যখন থার্ড ইয়ারের শেষ দিকে যাবা, তখনই সিনিয়রদের বিদায় ঘন্টা বেজে উঠবে। তারা চাইবে তাদের প্রাণপ্রিয় অর্গানাইজেশনটা কোন ইফেক্টিভ এবং সিনসিয়ার পারসনের হাতে তুলে দিতে। তুমি যেহেতু এত দিন ধরে দায়িত্ব নিয়ে হেল্প করেছ। তোমাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ পদ দিবে। তারপর থেকে তুমিই জুনিয়রদের কাজে লাগাবা। তুমিই ডিসিশন মেক করবা। মানে তুমিই লিডার হয়ে যাবা।

সো, লিডার হওয়ার জন্য হেল্প করার মেন্টালিটি নিয়ে এখন যারা লিড দিচ্ছে তাদের ফলো করতে থাকো। সময়ের আবর্তনে সুযোগ তোমার কাছে চলে আসবে। এতদিন সিনিয়ররা যা কিছু করতো সেগুলা কপি-পেষ্ট করলেই তোমার ভিতরে সাহস বেড়ে যাবে, ক্লাবের ভিশন ডেভেলপ হয়ে যাবে। কাকে দিয়ে কিভাবে কাজ করিয়ে নিতে হবে সেই বুদ্ধি গজাবে। হচ্ছে না, হচ্ছে না বলেও, শেষ মুহূর্তে স্পন্সর জোগাড় হয়ে যাবে। ঠেকায় পড়ে, পোস্টার ডিজাইন, ম্যাগাজিন প্রিন্ট, টি-শার্ট ডিজাইন শিখে ফেলবে। দশ-পনের জনের একটা টিম চালানোর দক্ষতার আবির্ভাব হয়ে যাবে। এভাবে কাজে নেমে পড়লে ঠিক সময়ে লিডারশীপ স্কিলও পয়দা হয়ে যাবে।

জীবনে সফল হওয়ার জন্য কনফিডেন্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কনফিডেন্স, পিপল ম্যানেজমেন্ট আর লিডারশীপ স্কিল ডেভেলপ করার জন্য ভার্সিটি লাইফ এবং ভার্সিটির অর্গানাইজেশনের চাইতে মামুলি জায়গা আর নাই। তাই যখন কোন টিমের সদস্য হবা তখন লিডার হওয়ার আগে ভালো টিম মেম্বার হও। কোন কিছু চাপিয়ে দেয়ার আগে, সেটা সবার সাথে ডিসকাস করে সবার ভিতর থেকে বের করে আনার চেষ্টা করো। অন্যের উপর কাজ চাপিয়ে না দিয়ে, সবাই মিলে দায়িত্ব ভাগ করে নাও। পজিটিভলি চিন্তা করো। আটকে গেলে, সিনিয়র বা স্যারদের পরামর্শ নিবে। যারা নতুন আসবে তাদেরকে কিভাবে কি করতে হবে বলে দিবে। এগুলাই লিডারশীপ। এগুলা করার জন্য ইচ্ছা আর চেষ্টাই যথেষ্ট।

 

এবার আম দিয়ে তৈরি হবে মজাদার ম্যাঙ্গো পুডিং

আম খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে মেলা ভার। রসালো এই ফলটি দিয়ে তৈরি করা যায় মজাদার সব খাবার। পুডিং সাধারণত ডিম, দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়। আমের পুডিং খেয়েছেন কখনও? আম দিয়ে তৈরি করা যায় মজাদার ম্যাঙ্গো পুডিং। আসুন জেনে নিন মজাদার এই খাবারের রেসিপিটি।

উপকরণ:

  • ৩টি  ডিমের কুসুম
  • ৩ টেবিল চামচ চিনি
  • ১ কাপ আম
  • ৫০০ মিলিলিটার দুধ
  • ১ টেবিল চামচ জেলাটিন
  • ২ টেবিল চামচ পানি
  • সাজানোর জন্য
  • হুইপড ক্রিম
  • ১/২ কাপ টুকরো করা আম
  • ১/৪ কাপ ডালিম
  • পুদিনা

প্রণালী:

১। পানিতে জেলাটিন কয়েক মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।

২। একটি পাত্রে ডিমের কুসুম, চিনি এবং দুধ ভাল করে ফেটে নিন। ভাল করে মেশানো হয়ে গেলে এতে জেলাটিন দিয়ে দিন।

৩। জেলাটিন দেওয়ার পর চুলা নিভিয়ের ফেলুন।

৪। চুলা থেকে জেলাটিন ভাল করে মেশান। তারপর এতে আমের রস দিয়ে দিন।

৫। আমের রস দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নাড়ুন।

৬। এরপর পরিবেশ পাত্রে ঢেলে ফ্রিজে ২ ঘন্টার জন্য রেখে দিন।

৭। দুই ঘণ্টা পর ফ্রিজ থেকে বের করে হুইপড ক্রিম, আমের টুকরো, ডলিম এবং পুদিনা পাতা দিয়ে পরিবেশন করুন।