All posts by Oporajita

 

টাকি মাছের ভর্তা তৈরির সহজ রেসিপি

টাকি মাছের ভর্তা একটি জনপ্রিয় পদ। গরম ভাতের সঙ্গে এর জুড়ি মেলা ভার। খেতে সুস্বাদু ও সহজেই তৈরি করা যায় বলে এটি রয়েছে অনেকেরই পছন্দের খাবারের তালিকায়। চলুন জেনে নেই এর রেসিপি-

উপকরণ : টাকি মাছ ১ কাপ, পেঁয়াজ স্লাইস ৩ টেবিল চামচ, আদা রসুন, বাটা ১ চা চামচ, পেঁয়াজ পাতা ২ টেবিল চামচ, জিরা বাটা ১ চা চামচ, রসুন মিহি ২ টেবিল চা, ধনে বাটা ১ চা চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, হলুদ বাটা ১/২ চা চামচ, মরিচ বাটা ১ /২ চা চামচ।

প্রণালি : মাছ সিদ্ধ করে কাটা বেছে ১ কাপ মেপে নিন। তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা বাদামী রং করে ভেজে বাটা মসলা ও সামান্য পানি এবং রসুন দিয়ে কষান। কষানো হলে পেয়াজপাতাসহ কচি পেঁয়াজ দিয়ে নাড়ুন। মাছ দিয়ে নেড়ে নেড়ে ভাজুন। লবণ দিন। মাছ হালুয়ার মতো তাল বাঁধলে নামান। মাছ যেন ঝুরি এবং শুকনা না হয়। এরপর চাইলে হাত দিয়ে গোল গোল বল বানিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার টাকি মাছের ভাজা ভর্তা।

 

সরিষার তেলের যত উপকারিতা

আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের তালিকায় যে তেলটি না থাকলেই নয় তা হলো সরিষার তেল। সরিষার তেল যেমন প্রয়োজনীয় তেমন উপকারীও। সরিষার তেল উদ্দীপক হিসাবে পরিচিত এবং অন্ত্রে পাচক রস উত্পাদনে  সাহায্য করে, তাই হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। এছাড়াও একই প্রক্রিয়ায় আমাদের সিস্টেমে পাচক রস উৎপাদন বাড়িয়ে  ক্ষুধা সহায়তা করে।

বিভিন্ন ভোজ্য তেলের উপর করা একটি তুলনামূলক সমীক্ষায় দেখা যায় সরিষার তেল ৭০ শতাংশ হৃৎপিণ্ডসংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমায়। সরিষার তেল ব্যবহারে শরীরে কলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায় যা হৃদরোগের সম্ভবনা হ্রাস করে।

এছাড়াও সরিষা তেল ঠান্ডা এবং কাশি উপশমে সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে যখন  বুকের সম্মুখে প্রয়োগ বা তার দৃঢ় সুবাস নিঃশ্বাসের মাধমে নেয়া হয়, এটা শ্বাসযন্ত্রের নালীর থেকে কফ অপসারণেও সাহায্য করে।

সরিষার তেল তামাটে এবং কালো দাগ দূর করে স্বাভাবিক ত্বক ফিরিয়ে দিতে সহায়তা করে। এটি সন্ধিস্থলের ব্যথাও হ্রাস করে।

ঠোঁটের শুস্কতা দূর করে এবং ত্বকের প্রদাহ দূর করে। সরিষার তেল সামান্য কাটা ছেঁড়ায় এন্টিসেপটিক এর কাজ করে।

সরিষার তেল ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং প্রদাহবিরোধী হিসাবে কাজ করে।

চুল পড়া প্রতিরোধ করে, খুসকি দূর করে এবং চুল বৃদ্ধি করে।

 

মশা থেকে বাঁচতে

যতই অসহ্য হোক, মশার যন্ত্রণা আমাদের সহ্য করতেই হয়। যতদিন মানুষ আছে, মশাও ততদিন! মশা শুধু একটি বিরক্তিকর প্রাণিই নয়, এটি নানা রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে দেয়। ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া জ্বর হয় মশার কারণেই। তাছাড়া এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়। ভয়ংকর এসব রোগে ভোগার চেয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা ভালো। মশার কামড় থেকে রেহাই পেতে রয়েছে মশারি, মশা মারার ব্যাট, কয়েল।

বেশির ভাগ কয়েলেই এখন আর মশা কাবু হয় না। কয়েলের ধোঁয়ায় আবার অনেকেরই শ্বাসকষ্ট হয়। দম বন্ধ হয়ে আসে। তাদের ভরসা কিন্তু মশারি আর মশা মারার ব্যাট। সবসময় তো আর মশারি টানিয়ে রাখা যায় না, এ ক্ষেত্রে মশা মারার ব্যাটগুলো বেশি কার্যকর।

রিচার্জেবল এসব ব্যাট দুই থেকে তিন ঘণ্টা ব্যাকআপ দিয়ে থাকে। মশা মারার এ ব্যাট দিয়ে মশাকে মারতে পারেন অনায়াসেই। এসব ব্যাটে আবার এল-ই-ডি লাইটও থাকে। অন্ধকারে যা আপনার উপকারে আসবে।

ঘুমানোর সময় মশার হাত থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে পারেন মশারি। মশারি বিভিন্ন সাইজ ও কোয়ালিটির হয়ে থাকে। নেটের মশারিতে বাতাস ঢুকতে সমস্যা হয়। বাতাস চলাচল করতে পারে না। বাজারে পাওয়া যায় বিশেষ এক ধরনের মশারি। ম্যাজিক মশারি। ম্যাজিক মশারিতে বাতাস চলাচল করতে পারে অনায়াসেই।

দরদাম
মশারি বিভিন্ন সাইজ ও মানের হয়ে থাকে। সাইজ ও মানভেদে এদের দাম নির্ভর করে থাকে। ডাবল সাইজের মশারি ৩২০ থেকে ৬৫০ টাকা। সেমি ডাবল ২৮০ থেকে ৫৫০ টাকা। সিঙ্গেল সাইজের মশারি ২০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। ম্যাজিক মশারি ৪৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। ছোট বাচ্চাদের মশারির দাম ২৫০ থেকে ৭০০ টাকা, ফেমের কুশনের দাম ৬০ থেকে ১৫০ টাকা। ফাইবারের কুশন ১৩০ থেকে ৪০০ টাকা। মশা মারার ব্যাট বিভিন্ন কোয়ালিটির হয়ে থাকে। মশা মারার ব্যাট একদাম ২২০ থেকে ৫০০ টাকা।

 

শীত ফ্যাশনে কাশমিরি শাল

ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত পোশাকগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কাশমিরি শাল। কাশমিরি শাল যেমন সমগ্র বিশ্বে বিখ্যাত তেমন এটা আমাদের অনেক ঐতিহ্য বহন করে। সম্রাট আকবর এই শিল্পকে আরও অনুপ্রাণিত করেছিলেন এবং সেসময়ে তিনি ইংল্যান্ডের রাণী ইলিজাবেথকে একটি শাল উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। এই শাল আরও অনেক জনপ্রিয়তা পায় যখন নেপোলিয়ন এটি সম্রাট জোসেফাইনকে উপহার দিয়েছিলেন।

কাশমিরি শালের প্রথম রেকর্ড পাওয়া যায় ষোড়শ শতাব্দী থেকে। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে ফেব্রিক বার্নিয়ারের বিবরণে পশমিনা শালের উল্লেখ আছে যা পরবর্তীতে কাশমিরি শাল নামে পরিচিতি পায়। এরপরের শতকের শেষাংশে মহারাজা রণবীর শিং এর শাসনামলে এর উৎপাদন কমে যায়। কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইউরোপে এর জনপ্রিয়তা ও চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এই শিল্পকে নতুন উদ্যমে চালু করা হয়।

কাশমিরি শালের বিশেষত্ব হচ্ছে ইহা তৈরি হয় পশমিনা ছাগলের লোম থেকে। হিমালয় পর্বতে এদের বাস। প্রচন্ড শীত এবং কঠোর আবহাওয়ার বিরুদ্ধে টিকে থাকার জন্য এদের শরীরে বিশেষ এক ধরনের লোম গজায়। এই ছাগলের লোমগুলো অনেক নরম এবং মানুষের চুলের চেয়ে ছয় গুণ মসৃণ। এই লোম সংগ্রহ করে তৈরি হয় কাশমিরি শাল।

কাশমিরি শালের কাপড় খুবই উন্নত মানের। এই কাপড়গুলো খুব হালকা এবং শীতের জন্য খুবই উপযুক্ত। তবে বর্তমান বাজারে কৃত্রিম পলিস্টারের এক প্রকার কাপড় ‘পশমিনা’ নামেই বিক্রি হচ্ছে যার বাণিজ্যিক নাম দেওয়া হয়েছে ‘অথেন্টিক ভিসকোস পশমিনা’ যা কাশমিরি শাল থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু আসল কাশমিরি শাল এর চেয়ে অনেক সুন্দর এবং এক একটি তৈরি হতে এক বছরের ওপর সময় লাগে।

কাশমিরি শাল তৈরি দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। তাই বর্তমান বাজারে কাশমিরি সালে সিল্কের কিছুটা মিশ্রণ পাওয়া যায়। যেমনঃ শতকরা ৫০ ভাগ কাশমিরি এবং ৫০ ভাগ সিল্ক। আবার কিছু আছে ৭০ ভাগ কাশমিরি এবং ৩০ ভাগ সিল্ক। তবে শতকরা ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ কাশমিরি বাজারে এখনও পাওয়া যায়।

কাশমিরি শাল যেমন সুন্দর তেমন অভিজাত একটি পোশাক। তবে অভিজাত পোশাক হলেও এর বাজার মূল্য সেই তুলনায় অনেক কম। শীতের জন্য উপযুক্ত এই কাপড়গুলো অনেক টেকসই এবং পরতে পারবেন কয়েক বছর ধরে। আর এই পোশাক যে আরও অনেক বছর ফ্যাশনে রাজত্ব করবে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত থাকাই যায়।

বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক শপিং মলসহ বিভিন্ন অনলাইন শপে কাশমিরি শাল পাওয়া যায়। তবে এর সবচেয়ে বড় কালেকশনটি রয়েছে ঢাকার নিউ মার্কেটে। এছাড়া প্রতিবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার অন্যতম আকর্ষণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে বিখ্যাত এই শাল। এর মূল্য সাধারণত ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

 

শীতে হিজাব পরতে পারেন কোটের সঙ্গে

কে বলেছে শীতে কেবল গাঢ় রঙের পোশাক পরতে হবে! এটা একটি পুরানো মতবাদ। বর্তমানে বিভিন্ন রঙের পোশাক গাঢ় রঙের পোশাকের চেয়েও বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। শীতে আবহাওয়া থাকে কিছুটা কঠোর এবং আকাশ থাকে ধূসর। তাই নিজের হাসিখুশি ভাব ফুটিয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরাই উত্তম।

প্রথমে ধরে নেওয়া যাক শীতের পোশাকের জন্য আগে জনপ্রিয় রঙ ছিল কালো, ধূসর এবং ক্যামেল। এগুলো এখনও ফ্যাশনে আছে এবং প্রায় সবার ওয়ারড্রবে এগুলো আছে। এখন চিন্তা করুণ নিয়মটি কীভাবে ভাঙা যায় এবং শীতকালকে উজ্জ্বল রঙের পোশাকে কীভাবে উপভোগ করা যায়। এর জন্য উজ্জ্বল রঙের ট্রেন্ডগুলো দেখে নেওয়া যাক।

কোটের সঙ্গে রঙ মিল রেখে হিজাব পরতে পারেন। 

হিজাবি নারীদের কাছে এখন গাঢ় লাল রঙের ট্রেঞ্চ কোট বেশ প্রিয় এবং এর সাথে সাদা ও লালের চেকের স্কার্ফ বেশ ভাল মানায়। এরপর আছে জলপাই রঙের মিলিটারি কোট। শীতকালের পোশাকের জন্য অন্যান্য জনপ্রিয় রঙগুলোর মধ্যে আছে বেইজ এবং নেভি ব্লু। বেইজ রঙের কোটের সাথে হিজাব পরুন ঠিক এর চেয়ে আরেকটু উজ্জ্বল বেইজ রঙের স্কার্ফ নিয়ে। আর মিলিটারি হিজাব ট্রেন্ডের জন্য বেছে নিতে পারেন একটু মোটা ধরনের স্কার্ফ। তবে যে স্টাইলই বেছে নিন না কেনো, মনে রাখবেন আপনি নিজে যেন সেই স্টাইলে আরামদায়ক অনুভব করেন।

বর্তমানে শীতের ফ্যাশন হিসেবে বিভিন্ন রঙের জ্যাকেট প্রায় সব কাপড়ের মার্কেটেই পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং নিজের মতোই স্টাইল তৈরি করুণ আর উপভোগ করুণ শীতকাল।

সূত্র: জাস্টট্রেন্ডিগার্ল

 

ইসলামের বিধান লঙ্ঘন মারাত্মক অপরাধ

আল্লাহ তাআলার আনুগত্য স্বীকার করে শয়তানের পদাংক অনুসরণ না করাই হলো মানুষের একমাত্র কাজ। কারণ শয়তান মানুষকে অন্যায় ও পাপ কাজের দিকে ধাবিত করে। আল্লাহ তাআলার ওপর মিথ্যা অপবাদ দেয়ার জন্য প্ররোচিত করে। কারণ শয়তান ও তার দলের ইচ্ছা হলো যে, দুনিয়ার সব মুসলমান জাহান্নামে যায়।

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা ঈমানদারদেরকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশের কথা বলেছেন। ইসলামের বিধান লঙ্ঘন করা মরাত্মক অপরাধ। অনন্তর যারা ইসলামের এ বিধান নাজিলের পরও সত্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে প্রতিদান দেয়ার ক্ষেত্রে প্রবল পরাক্রান্ত। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা পরবর্তী আয়াতে ইরশাদ করেন-

Quran

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২০৯ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করার পরও যারা ইসলামের বিধান পালনে এগিয়ে আসেনি তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা বিচার দিবসে তাদেরকে প্রতিদান দিতে হবেন মহাপরাক্রমশালী।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিম উম্মাহর জন্য যে শরিয়ত বা জীবন-বিধান নিয়ে এসেছেন তা যেমন সম্পূর্ণ, তেমনি যুক্তিপূর্ণ, সুস্পষ্ট, বাস্তবের পরীক্ষায় বার বার পরীক্ষিত।

তারপরও যারা এ সব বিধানের অমান্য করবে, এমনকি ঈমান আনার পরও অন্য মতবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয় তবে তার পরিনাশ হবে শোচনীয় শাস্তি। যা বান্দার জন্য প্রতিদান দিবসে অবধারিত। কেননা আল্লাহ তাআলা মহাপরাক্রমশালী ও সর্বশক্তিমান।

তাঁর শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়ার সাধ্য কারো নেই। এমনকি কখন কাকে কিভাবে শাস্তি প্রদান করবেন তাও তিনি জানেন। কারণ তিনি মহাজ্ঞানী। তাই কারো প্রতি শাস্তি প্রদানে তিনি তাড়াহুড়ো করবেন না। আবার কারো প্রতি তিনি অবিচারও করবেন না।

পড়ুন- সুরা বাকারার ২০৮ নং আয়াত

পরিষেশে…
ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশের পর পুনরায় কেউ যেন ইসলাম থেকে বের হয়ে না যায়। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর নাজিলকৃত কুরআনের সুস্পষ্ট ও স্বচ্ছ বিধান বাস্তবায়ন করা প্রত্যেক ঈমানদারের ঈমানি দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের সুস্পষ্ট বিধান পালন করে পরিপূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ করে আল্লাহ তাআলা নৈকট্য লাভ করার তাওফিক দান করুন। তাঁর অবাধ্যতা থেকে হিফাজত থাকুন। আমিন।

Save

Save

 

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যেমন হওয়া উচিত

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে (স্ত্রী) সৃষ্টি করেছেন; আর (পৃথিবীতে) বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। (সুরা নিসা : আয়াত ১)

উল্লেখিত আয়াতে কারিমা থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে স্বামী- স্ত্রীর মাধ্যমেই বংশ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছেন। আর মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং তাদের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্কটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা জেন রেখ, তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের ওপর অধিকার আছে। আর তোমাদের স্ত্রীদেরও অধিকার আছে তোমাদের ওপর।’

পুরুষদেরকে উদ্দেশ্য করে অন্য হাদিসে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের প্রতি কল্যাণকামী হও।’

স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক বা ভালোবাসা কেমন হবে; দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ক কেমন হবে; তার বিবরণ ফুটে ওঠেছে স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পারিবারিক জীবনে। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ।

>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে খেলাধূলা করতেন। একবার তিনি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা দিয়ে ইচ্ছা করে হেরে যান। কিছুদিন পর পুনরায় দৌঁড় প্রতিযোগিতায় হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হেরে যান।

অতপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়েশা! আজ আমি তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি, তুমি আমার সঙ্গে পারনি। এটা হলো প্রথম প্রতিযোগিতায় জিতে যাওয়ার বদলা।

>> বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক সময় স্ত্রীদের সঙ্গে বসে বিভিন্ন ঘটনা, কাহিনি ও আন্যান্য আলোচনা করতেন। এমনকি প্রত্যেক স্ত্রীও বিশ্বনবিকে পালাক্রমে নতুন নতুন কিসসা-কাহিনি শুনাতেন।  তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে নিজেও তাঁদেরকে কিসসা শুনাতেন।

>> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তিনি আমাদের সঙ্গে এমনভাবে হাসতেন, কথা বলতেন ও বসে থাকতেন, আমাদের মনেই হতো না যে তিনি একজন মহান রাসুল।

>> তিনি কখনো তাঁর স্ত্রীদের ভৎসনা, তিরস্কার করতেন না এবং তাদের সঙ্গে কটাক্ষ ভাষায় কথা বলতেন না। বরং মায়া-মমতায় মন জুড়ানো আকর্ষণীয় কথা বলতেন। তাঁর কথার ভাবভঙ্গিতে স্ত্রীদের মন জুড়িয়ে যেতো।

>> বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের কোনো কথা তাঁর মনের বিপরীত হলে তাদের সে কথা থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে অন্য চিন্তা করতেন। তিনি স্ত্রীগণকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাদের চুমু দিতেন এবং কখনো কখনো তাদের উরুতে মাথা রেখে শুয়ে বিশ্রাম নিতেন।

>> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা পাত্রের যে স্থানে মুখ দিয়ে পানি পান করতেন, বিশ্বনবিও সে স্থানে মুখ দিয়েই পানি পান করতেন।

আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাঁড়ের যে জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন হজরত আশয়া রাদিয়াল্লাহু আনহাও হাড়ের ঐ জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন।’

এ থেকেও প্রমাণিত হয় যে, বিশ্বনবির দাম্পত্য জীবনে স্ত্রীদের সঙ্গে কত মধুর সম্পর্ক ছিল।

>> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত খুশি মনে মুচকি হাসতে হাসতে গৃহে প্রবেশ করতেন এবং দরদমাখা কণ্ঠে সালাম দিতেন। বিশ্রামের সময় বিছানার ব্যাপারে কোনো দোষ ধরতেন না, এমনকি বিছানা যেভাবে পেতেন তার উপরই শুয়ে পড়তেন।

>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তম স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম স্বামী যে তার স্ত্রীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে। আমি আমার স্ত্রীদের সঙ্গে সবার চাইতে ভাল ব্যবহার করি।

পরিশেষে…
বিশ্বনবির দাম্পত্য জীবনের আলোকে বুঝা যায় যে, সুখ ও শান্তিময় জীবন যাপনে স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্কে বিকল্প নেই। জীবনকে সুখ-শান্তি ও আনন্দময় করে তুলতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণ আবশ্যক কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাদের প্রত্যেকের দাম্পত্য জীবনকে সুখ ও শান্তিময় করে গড়ে তুলতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাম্পত্য জীবনের মতো করেই রাঙিয়ে নেয়া জরুরি।

আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে তাঁর মতো করে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে তোলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

খাবার খান ওজন কমান

শিরোনাম দেখে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই। সবাই খাবারের তালিকা কাটছাঁট করে ওজন কমাতে চান আর এখানে কি না খাবার খেয়েই ওজন কমাতে বলা হচ্ছে! হ্যাঁ, খাবার অবশ্যই খাবেন এবং ওজনও কমবে। এমনকিছু খাবার রয়েছে যা আপনার শরীরে পুষ্টি যোগানোর পাশাপাশি বাড়তি ওজন ঝরাতেও সাহায্য করবে। এবং সেই খাবারগুলো রয়েছে আপনার হাতের কাছেই। চলুন জেনে নেই-

মটরশুটিতে কম মেদ হয় কিন্তু এটি শরীরে অনেক শক্তি ও প্রোটিন যোগায়। মটরশুটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এটি বিপাকীয় পরিবেশের জন্য উত্তম খাদ্য।

প্রতিদিন আপেল খেলে শরীরের মেদ সেল কমতে থাকে। আপেলের খোসা অকল্পনীয়ভাবে শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।

আদা  খাদ্য হজমের সমস্যা সমাধান করে। এটা খাওয়ার পর শরীরে অস্বস্তিকরভাবকমায় ও রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এসিড সমস্যা সমাধান করে আদা। যদি আপনি ওজন কমাতে চান তাহলে প্রতিদিনের খাবারে আদা রাখুন এবং ক্যালরি সঞ্চয় করুন এবং মেদ কমান।

আখরোট লিনোলিনিক এসিড তৈরি করে এবং শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি করে আখরোট খেলে আপনার স্বাস্থ্য ঠিক রেখে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলবে।

গ্রীন টি এন্টি-অক্সিডেন্ট তৈরি করে শরীরের পরিবেশকে ঠিক রাখে। এটা ক্যান্সার প্রতিরোধী কাজ করে থাকে এবং কলেস্টেরলের পরিমান ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

মেদ কমানোর অন্যতম একটি খাদ্য ডিম। ডিমের কুসুমের পাশের সাদা অংশ মেদ ও ক্যালরি কমানোর একটি অন্যতম উপাদান। খাদ্যে বিদ্যমান কলেস্টেরল ব্যাপক প্রভাব ফেলে শরীরের রক্তের কলেস্টেরলে। ডিমের সাদা অংশ অনেক বেশি ফ্যাটি এসিড এবং প্রোপটন সমৃদ্ধ যা সমন্বয় করে শরীরের মেদ কমায়।

প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন। এটা একটা গুরুত্বপূর্ন উপাদান আমাদের শরীরের জন্য। যদি আপনি পরিমাণমতো পানি পান না করেন তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যে শুষ্কতা অনুভব করবেন। তাই নিয়মিত পানি পান করুন।

ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতকে মজবুত করতে সাহায্য করে। কিন্তু এটাও সত্যি যে ক্যালসিয়াম ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। দুধের তৈরি ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার এবং অন্যান্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার শরীরের মেদকে কমিয়ে দেয় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে।

 

সহজেই তৈরি করুন সুস্বাদু কুনাফা

মিষ্টিজাতীয় খাবারের ভেতরে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কুনাফা। সেমাই দিয়ে তৈরি মজাদার এ খাবারটি বিভিন্ন উৎসব ছাড়াও পরিবেশন করা যায় অতিথি আপ্যায়নে কিংবা ঘরোয়া আড্ডায়। ঝটপট তৈরি করা যায় বলে যে কেউ এটি তৈরি করতে পারবেন। তবে তার আগে জানা থাকা চাই এর রেসিপি-

উপকরণ : লাচ্ছা সেমাই এক প্যাকেট, তরল দুধ আধা লিটার, মজেরেলা চিজ এক কাপ, চিনি স্বাদমতো, নারকেল কোরানো ১/৪ কাপ, কনডেন্সড মিল্ক এক কাপ, কাস্টার্ড পাউডার এক চা চামচ, ঘি দুই টেবিল চামচ।

প্রণালি : লাচ্ছা সেমাই নারকেল, চিনি ও ঘি দিয়ে ভেজে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন হয়ে এলে কাস্টার্ড পাউডার, কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে নামিয়ে নিন। বেকিং মোল্ডে ঘি ব্রাশ করে এতে সেমাইয়ের উপরে দুধের মিশ্রণ ও চিজ দিয়ে আবার সেমাই দিন। ওভেনে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট বেক করুন। নামিয়ে চিনি সিরা ঢেলে ঠান্ডা করে উপরে কিশমিশ ও বাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

 

সহজেই সুন্দর চুল পেতে যা করবেন

সুন্দর চুল পেতে আমরা নানারকম পরিচর্যা করে থাকি। তবে ঝক্কিঝামেলার কথা ভেবে অনেকেই আবার সঠিক পরিচর্যা থেকে পিছিয়ে যান। তবে সহজ কিছু উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি ফিরে পেতে পারেন আপনার চুলের হারানো সৌন্দর্য। চলুন জেনে নেই-

তাজা মেদেহি পাতা বেটে এর মধ্যে ২/৩ টেবিল চামচ চায়ের লিকার দিয়ে রাখুন সারা রাত। পরের দিন ১টি ডিম, ৩ চা চামচ টকদই, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং ১ টেবিল চামচ নারিকেল তেল খুব ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন ২ ঘণ্টা। এরপর হালকা কোনো শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১ বার ব্যবহারে চুলের রুক্ষতা দূর হবে একেবারে।

দুটি পাকা কলা বাটিতে নিয়ে চামচের সাহায্যে পিষে নিন ভালো করে। এরপর এতে ২ টেবিল চামচ মেয়োনেজ এবং ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন ভালো করে। এ মিশ্রণটি চুলে ১ ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন। এবং ভালো করে ধুয়ে নিন। কলা চুল নরম এবং উজ্জ্বল করে তুলবে।

২টি কলা নিয়ে পিষে নিন ভালো করে। এরপর এতে ১টি ডিমের কুসুম এবং ১ চা চামচ তাজা লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মেশান। এ মিশ্রণটি পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন ৩০-৪০ মিনিট। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১ দিন ব্যবহারে চুলের রুক্ষতা দূর হবে দ্রুত। এ প্যাকটি চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করবে এবং চুল পড়াও বন্ধ করবে।

চুলে প্রোটিনের ঘাটতি হলে চুল অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে পরে। তাই ব্যবহার করুন এ প্যাকটি। ১টি ডিমের কুসুম, ১ টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল, ১ টেবিল চামচ মধু খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান। ৩০ মিনিট পরে ভালো করে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ৩ বার ব্যবহারে এতে চুলে পুষ্টি পৌঁছাবে এবং চুলের রুক্ষতা দূর হবে।

৫/৬টি স্ট্রবেরি ধুয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন, চাইলে চামচ দিয়ে পিষে নিতে পারেন। এতে ১টি ডিমের কুসুম, ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণটি পুরো চুলে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ বার ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।

 

চুল ও দাঁত সুস্থ রাখে কিসমিস!

সেমাই কিংবা ক্ষীর সাজাতে কিসমিস ব্যবহার করা হয়। তবে জানেন কি কিসমিসের নিজস্ব বেশকিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে? নিয়মিত কিসমিস খেলে দূরে থাকতে পারবেন বিভিন্ন রোগ থেকে।

জেনে নিন কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে-

  • নিয়মিত কিসমিস খেলে ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়ে না। কিসমিসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে।
  • কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে।
  • দাঁত ও মাড়ি শক্তিশালী রাখে কিসমিস। এতে থাকা ওলিয়ানোলিক অ্যাসিড দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। এছাড়া কিসমিসে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁত ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
  • রোদের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচায় কিসমিস। এতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড ত্বকের নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
  • অকালে চুল পাকা প্রতিরোধ করে কিসমিস। কিসমিসে থাকা ভিটামিন সি, আয়রন ও বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান চুল প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর ও কালো রাখে।

তথ্য: বোল্ডস্কাই

 

কেওক্রাডং ও বগা লেকে ভ্রমণ প্যাকেজ

অপরূপ বাংলাদেশের চমৎকার সব ভ্রমণ স্থানের মাঝে বগা লেক, কেওক্রাডং এখন বেশ জনপ্রিয়। যারা পাহাড় ভালোবাসেন, ভালোবাসেন মেঘ আর অবারিত সবুজ তারা বার বারই ছুটে যান এখানে। বাংলার অভিযাত্রী নামক ফেসবুক গ্রুপের আয়োজনে আবারও বেড়িয়ে আসতে পারেন এখানে। শীতের সময়ে পাহাড়ের আনন্দই আলাদা।

বগা লেক থেকে দার্জিলিং পাড়া হয়ে যেতে হয় কেওক্রাডং। এটি এক সময় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত ছিলো। কেওক্রাডং-এ দাঁড়িয়ে যে অনুভূতি হয় তা কখনো ভোলার নয়। আর কেওক্রাডং এর সুর্যোদয়, সে তো এক মোহনীয় জাদুকরী মুহূর্ত।

 

তাজমহলের ছায়ায় নান্দনিক আগ্রা ফোর্ট

আগ্রার তাজমহল দেখে মুগ্ধ মাতোয়ারা যখন সবাই তখন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল মুগ্ধতার আরেক খনি আগ্রা ফোর্ট। অপূর্ব এই দূর্গের গল্প শুনেছি অনেক। অনেক বলেন তাজকেও নাকি হার মানায় এটি। একবার আগ্রা ফোর্ট দেখলে আর ভালো লাগে না কোন কিছুই। মনের মাঝে অদম্য কৌতুহল। ইন্ডিয়ান হাই কমিশনের আহবানে বাংলাদেশ থেকে শত যুবার যে দলটি ভারত ভ্রমণে যায় আমি ছিলাম তাদের একজন। আগ্রা ফোর্ট ভ্রমণ ছিল আমার জন্য জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইচ্ছাপূরণ।

লাল ইটে মোড়ানো পথ বেয়ে লাল উঁচু প্রাচীরে ঘেরা প্রাসাদে প্রবেশ করলাম আমরা। তাজে যে সম্রাট-সম্রাজ্ঞীর সমাধি দেখে এলাম তাদের বাস ছিল এই প্রাসাদে। নাটকে, উপন্যাসে, চলচ্চিত্রে, ইতিহাসের বইয়ে কতবার কতভাবে জেনেছি তাদের কথা। এ যেন সেই সময়ের সংস্পর্শে আসা, সময়কে দেখা খুব কাছ থেকে।

আগ্রা ফোর্টের দেয়ালে দেয়ালে কারুকাজ। আবাসনের পাশাপাশি রাজ পরিবারের বিনোদন, গান-নাচের আসর, রাজকার্যের জন্য দরবার হল কী নেই এখানে। তবে এই প্রাসাদের নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল একেবারে ভিন্ন। যদিও তাজমহল আর আগ্রা ফোর্টের নাম একই সাথে শোনা যায় তবে এর নির্মাণ হয়েছে আরও অনেক আগে। প্রকৃত অর্থেই, আগ্রা দূর্গ ছিল একটি দূর্গ। এর ইতিহাস বদলেছে সেই ইব্রাহিম লোদী থেকে শুরু করে বাবর, হুমায়ূন, আকবর, জাহাঙ্গীর, শাহজাহান, আওরঙ্গজেবের হাত ধরে। একে দূর্গের জটিল অবয়ব দেন সম্রাট আকবর।  তবে এর গঠন সর্বোচ্চ নান্দনিকতা পায় শাহজাহানের হাতে। সেনাদের দূর্গকে তিনি পরিণত করেন রাজপ্রাসাদে।

attr_1617

আগ্রা ফোর্টের ভেতরের একাংশ। ছবি- সংগৃহীত।

যমুনার তীরে নির্মিত দূর্গটির চারদিকে এমনভাবে দেয়াল তোলা হয়েছে যাতে বোঝা না যায় কোনটা ঠিক এর প্রবেশ পথ। দেয়ালের গঠন আর নকশার চাতুর্যই এর কারণ। রাজা মানসিং এর রাজপুত ফোর্টের নির্মাণ শৈলীর সাথে এর মিল রয়েছে। পরে আবার আগ্রা ফোর্টের আদলে তৈরি হয় দিল্লীর লাল দূর্গ। আকবর যখন শাসনভার নেন তখন তিনি পেয়েছিলেন এর ধ্বংসাবশেষ। তার ইতিহাসবিদ আবুল ফজল জানান এর নাম ছিল বাদলগর। এরপর রাজস্থান থেকে লাল বেলেপাথর এনে তিনি পুনর্নির্মাণ করেন এটি।

তবে শাহজাহানের ভালবাসা ছিল সাদা মার্বেলের প্রতি। তাই দূর্গের ভেতরে ভবন নির্মাণে তিনি ব্যবহার করেছেন শ্বেতপাথর।

সম্রাজ্ঞী যোধা বাই এর ভবনটি লাল, কারণ এর নির্মাতা আকবর। অন্যান্য ভবনগুলোর নাম জাহাঙ্গীর-ই মহল, খাস মহল, দরবারই খাস, আর শীষ মহল।

Sheesh_mahal

শিষ মহল। ছবি- সংগৃহীত।

আগ্রা ফোর্টের আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে এর শিষ মহল। হাম্মাম অর্থাৎ রাজ গোসলখানায় অসাধারণ ওয়াটার ইঞ্জিয়ারিং করা হয়েছে। সম্ভবত পানি গরম করার জন্য ল্যাম্প ব্যবহার করা হত এখানে। মার্বেলের চেয়েও দামী আয়না দিয়ে খচিত শিষ মহলের দেয়াল। শতকোটি প্রতিবিম্ব চোখ ধাঁধিয়ে দেবে আপনার।

আগ্রা ফোর্টের নিচে আছে ফাঁপা সুড়ঙ্গ, যার মধ্য দিয়ে যমুনার পানি বয়ে যেত। ফলে সমগ্র মহলটি থাকত ঠান্ডা। বিশাল এলাকা জুড়ে দূর্গের বিস্তার। রানীরা থাকতেন নিচের দিকের ঘরগুলোতে, যাতে ঠান্ডা আবহাওয়া পেতে পারেন সবসময়। দূর্গের ছাদে বসত গান নাচের আসর। সম্রাটের এবং শিল্পীর জন্য বাঁধানো মঞ্চ দেখতে পাবেন এখনো।

site

আগ্রা ফোর্ট থেকে তাজমহল। ছবি- সংগৃহীত।

আগ্রা ফোর্টেই বন্দী ছিলেন শাহজাহান, সন্তান আওরঙ্গজেব বন্দী করে রেখেছিলেন তাকে। নিজ প্রাসাদ থেকে তিনি দেখতে পেতেন যমুনার ওপারে তাজমহলকে। স্মৃতিচারণ করতেন প্রিয় সহধর্মিনী মমতাজকে। যোধা বাই এর মহল থেকেও তাজকে দেখা যায়। তবে কালের বিবর্তনে যমুনার জল আর নেই তেমন।

আগ্রা ফোর্টের নির্মাণ শৈলীতে হিন্দুয়ানি সংস্কৃতির ছাপ রয়েছে সুস্পষ্ট। হাতি, পাখি, ড্রাগনের প্রতিমূর্তি বা ছবি ইসলাম স্থাপত্যে দেখা যায় না। কিন্তু আগ্রা ফোর্টে আপনি পাবেন তার দেখা।

আগ্রা ফোর্টের আরেকটি বিশেষত্ব হল, এটির মাঝে শুধু নারীদের নামাজ পড়ার জন্য আলাদা মসজিদ আছে। এর নাম নাগিনা মসজিদ।

আগ্রা ফোর্টে সানন্দ্যে ঘুরে বেড়ায় কাঠবিড়ালী। খুবই বন্ধুবাৎসল এরা। একটু সময় দিলেই চলে আসে হাতে। সব মিলিয়ে আগ্রা ফোর্টে একদিন একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

Save

Save

Save

 

সেলাই মেশিনে সাফল্যের বুনন

২০০৩ সালের কথা। স্বামী মাত্র ১ হাজার ২০০ টাকা বেতনের চাকরি করেন। সংসারের আয় বাড়াতে হবে। এমন তাড়না থেকে ওই বছরই যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে সেলাই প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণে প্রথম স্থান অর্জন করে পান একটি সেলাই মেশিন। পারবেন, নাকি পারবেন না, এমন উৎকণ্ঠা আর শঙ্কা নিয়ে একটি সেলাই মেশিন নিয়েই শুরু করেন কাজ। ক্রমেই বাড়তে থাকে কাজের ব্যাপ্তি। ১৩ বছর পর এখন সফল নারী উদ্যোক্তা তিনি। তাঁর নাম আইনুন্নাহার। দীর্ঘ ১৩ বছরে অর্জনের ঝুলিতে জমা হয়েছে বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা। গত বছরের ১ নভেম্বর নারী কোটায় পেয়েছেন জাতীয় যুব পুরস্কার। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সফল ও অনুকরণীয় নারী উদ্যোক্তা হিসেবে।
আইনুন্নাহারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৩ সালে ময়মনসিংহ শহরের একটা ভাড়া বাড়িতে যখন সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন, তখন পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের পোশাক তৈরি করে দিতেন। উপার্জন কেমন হবে, তা নিয়ে ছিল না কোনো চাহিদা। চিন্তা ছিল একটাই—সফল হতেই হবে। কাজের শেষে গ্রাহকেরা যা দিতেন, তাতেই সন্তুষ্ট হতেন। কাজের গুণে দ্রুতই নিজের ও আশপাশের পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে আইনুন্নাহারের কাজের কথা। ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন এলাকার নারীরা নিজের পোশাক বানাতে তাঁর কাছে আসতে শুরু করেন। বাড়তে থাকে কাজের ফরমাশ ও ব্যাপ্তি।

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই একা কাজ করে কুলাতে পারছিলেন না। আইনুন্নাহার কর্মী নিয়োগ না নিয়ে ২০ জন নারীকে নিজের বাড়িতেই প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। তিন মাসের বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ শেষে পাঁচজনকে নিয়োগ দেন নিজের উদ্যোগে। ওই পাঁচজনকে নিয়ে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোশাক তৈরি শুরু হয়। ক্রমে বাড়তে থাকে কাজের পরিধি। নারী ও শিশুদের জন্য পোশাক তৈরি করে প্রথমে ময়মনসিংহের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করতে শুরু করেন। এর মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক তৈরির কাজ পেয়ে যান। বেড়ে যায় তাঁর কাজ ও কর্মীর সংখ্যাও।
ময়মনসিংহের আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক আবদুর রশিদ একদিন আইনুন্নাহারের কাজ দেখে মুগ্ধ হন। সেটা ২০০৯ সাল। আসপাডা থেকে আইনুন্নাহার ঋণ নেন ৫০ হাজার টাকা। ওই সময় তিনি মন দেন দক্ষ কর্মী তৈরিতে। আয়োজন করেন প্রশিক্ষণের। প্রতিবছর চলতে থাকে চারটি করে ব্যাচের প্রশিক্ষণ। প্রতি ব্যাচে ৩০ জন করে নারী বিনা মূল্যে সেলাই ও বুটিকের কাজের প্রশিক্ষণ নেন।

২০১৩ সালে নারী উন্নয়ন অধিদপ্তরের নিবন্ধন নিয়ে আইনুন্নাহার প্রতিষ্ঠা করেন তৃণমূল নারী উন্নয়ন সমিতি। বর্তমানে এই সমিতির মাধ্যমে নিয়মিত চলে নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিবছর বের হয়ে আসছেন দক্ষ কর্মী। তাঁদের অনেকেই পরবর্তী সময়ে নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়েছেন।

আইনুন্নাহারের রয়েছে তৃণমূল কারুপণ্য নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে তৈরি হয় ব্লকপ্রিন্ট ও বুটিকের পোশাক। দেড় বছর ধরে নিজের প্রতিষ্ঠানে তৈরি করছেন পাটের ব্যাগ ও অফিস ফাইল। ঢাকার রাপা প্লাজায় জয়িতাতেও ছিল তাঁর পোশাক বিক্রির জায়গা। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ময়মনসিংহ শহরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চালু করেছেন তৃণমূল কারুপণ্য দোকান।

দেশের বিভিন্ন মেলায় উদ্যোক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। দেশের বাইরে ভারতে দুবার, নেপালে একবার মেলায় স্টল নিয়েছে আইনুন্নাহারের তৃণমূল কারুপণ্য। সম্প্রতি চীনের একটি মেলায় অংশ নেয় এই প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে আইনুন্নাহারের অধীনে কাজ করছেন ১৬০ জন নারী ও পুরুষ।

আইনুন্নাহার বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমার কাজের সেরা স্বীকৃতি ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর নারী জাতীয় যুব পুরস্কার পাওয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পদক নেওয়া আমার জীবনে স্মরণীয় এক ঘটনা।’ কাজের ব্যাপারে স্বামী খোন্দকার ফারুক আহমেদের কাছ থেকে সব সময় সহযোগিতা পেয়েছেন। বললেন, ‘কাজের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অকৃত্রিম বন্ধু ও সহযোগীর ভূমিকায় থেকেছেন আমার স্বামী। তাঁর সহযোগিতা না পেলে এত দূর আসতে পারতাম কি না, সন্দেহ।’

২০১০ সালে সফল উদ্যোক্তা হিসেবেও আইনুন্নাহার পুরস্কার পেয়েছেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে। ২০১৩ সালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা, ময়মনসিংহ জেলা ও ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়ে ‘জয়িতা’ পুরস্কার ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি পেয়েছেন বেশ কিছু পুরস্কারের স্বীকৃতি। নারীদের দক্ষ কর্মী ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন নারী উন্নয়ন ফোরাম। বর্তমানে এটির নিবন্ধন-প্রক্রিয়া চলছে।

আইনুন্নাহার বলেন, ‘পড়াশোনা শেষে ইচ্ছা ছিল চাকরি না করে নিজে কিছু করব। পাশাপাশি আমাদের সমাজের নারীদের কর্মী হিসেবে স্বাবলম্বী করা যায়, এমন ভাবনা ছিল। সেই ভাবনা নিয়ে আস্তে আস্তে আমি এগিয়েছি। প্রয়োজনই মানুষকে অনেক কিছু করতে সাহসী করে।’ সেই সাহস থেকেই আজ একজন সফল উদ্যোক্তা আইনুন্নাহার।

 

বিশেষ কৌশলে ভালো রাখুন দাম্পত্যের সম্পর্ক

একটি সম্পর্কে জড়ানো যতটা সহজ, সেটাকে টিকিয়ে রাখা তারচেয়ে অনেক বেশি কঠিন। সম্পর্ক থাকলে  খুনসুটি, ভুল বোঝবুঝি, ঝগড়া থাকবে। তা সে যে সম্পর্কই হোক না কেন। আপনাকে এই বিষয়গুলো কিছুটা কৌশলে সামলে নিতে হবে। সম্পর্ককে সুন্দর করে তুলবে কিছু কৌশল। আসুন জেনে নিই সম্পর্ককে আরও সুন্দর করে তোলার সেই গোপন কৌশলগুলো।

১। খোলাখুলিভাবে কথা বলুন

প্রতিটি সম্পর্কে ঝগড়া, খুনসুটি, মান-অভিমান হয়। কিন্তু একটি সুখী দম্পতি জানেন এই বিষয়গুলোকে কীভাবে মানিয়ে নিতে হবে। যে বিষয়ে মতে অমিলে হবে সে বিষয়ে খোলাখুলিভাবে একে অপরের সাথে কথা বলুন। যখনই বিষয়টি বেরিয়ে আসবে দেখবেন আর আপনাদের মধ্যে মতের অমিল হচ্ছে না। ফোন বা ইন্টারনেট এই মাধ্যমগুলোতে কথা না বলে সরাসরি কথা বলুন।

২। ছোট বিষয়গুলোকে অবহেলা করবেন না

আমরা আমাদের সঙ্গীর সাথে কথা বলার সময় ধন্যবাদ, প্লিজ এই শব্দগুলো ব্যবহার করি না। আমরা মনে করি প্রিয় মানুষের সাথে কেন এই সৌজন্যতা! অথচ এই ছোট বিষয়গুলো আপনাদের সম্পর্কে আরও মজবুত করে দিবে। সঙ্গীর কাজকে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করুন। ধন্যবার জানানে সবকিছুর জন্য যা সে আপনার জন্য করছে।

৩। নিজেকে পরিবর্তন করুন, সঙ্গীকে নয়

আপনি যদি সত্যি কাউকে ভালবাসেন তবে তাকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে নিজের অভ্যাস পরিবর্তন করুন তার জন্য। আপনি যদি তার কোন অভ্যাস অপছন্দ করেন, তবে সরাসরি তার সাথে কথা বলুন। কিন্তু তাকে জোর করবেন না। বুঝিয়ে বলুন দেখবেন সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।

৪। একসাথে রাতের খাবার খান

প্রচলিত আছে একসাথে খাবার খান, আর থাকুন একসাথে। খাবার টেবিলে সবাই একসাথে হন, নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মত  যা সম্পর্কগুলোকের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে। সারাদিনে একে অন্যের কাজের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় এই সময়ে।

৫। একসাথে সময় কাটান

নিজেরা একসাথে সময় কাটান। কাজ, অফিস বাদে নিজেদেরকে সময় দিন। বছরে একবার দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন। একসাথে সময় কাটানোর সুযোগে নিজেদের মধ্যে কোন বিষয় নিয়ে  ভুল বুঝাবুঝি থাকলে তা দূর হয়ে যাবে।

৬। রাগ কম করুন

রাগ করে কোন সমস্যার সমাধান করা যায় না। এটি শুধু সময় এবং সম্পর্ক নষ্ট করে। সঙ্গীর ভূল ধরা বাদ দিন। তার খারাপ দিকগুলো না দেখে ভাল দিকগুল দেখুন। রাগ না করে তার ভূলগুলো তাকে বুঝিয়ে বলুন। দেখবেন সে তার ভূল বুঝতে পেরেছে।

৭। বন্ধু হোন

শুনতে কিছুটা অদ্ভূত শোনালেও,এটি সত্য। সম্পর্কে বন্ধুত্ব  থাকাটা অনেক বেশি জরুরি। এতে সম্পর্কটি অনেক সহজ হয়ে যায়। নিজেদের মধ্যে বোঝাপোড়াটি ভাল হয়।

ছোট একটি ভূল বা ঝগড়ার কারণে একটি সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। নিজেদেরকে সময় দিন, বোঝার চেষ্টা করুন। হঠাৎ কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না, যা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

 

গান থামিয়ে তরুণীর ইজ্জত বাঁচালেন আতিফ

কনসার্ট চলছিল পুরোদমে। এমন সময় মঞ্চে দাঁড়িয়ে গায়ক আতিফ আসলাম খেয়াল করলেন দর্শক আসনে এক তরুণীকে হেনস্তা করছে কয়েকজন যুবক। সেই পরিস্থিতিতেই দারুণ সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

মাঝপথে গান থামিয়ে দিয়ে ওই তরুণীর বাঁচালেন তিনি। গায়ক আতিফ আসলামের এই কাজকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা বিশ্ব।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়, ঘটনা গত শনিবারের (১৪ জানুয়ারি)। করাচিতে একটি অনুষ্ঠানে গান করছিলেন পাকিস্তানি এই গায়ক। অনুষ্ঠান চলাকালীন দর্শকদের মধ্যে একটি অস্বাভাবিক বিষয় তার নজরে আসে। খেয়াল করে দেখেন কয়েকজন যুবক মিলে এক তরুণীকে উত্যক্ত করছে। তখনই তিনি তার সহ-শিল্পীদের থামিয়ে দেন। নিজেও গান থামিয়ে সোজা ওই যুবকদের কাছে চলে যান।

প্রচণ্ড ধমক দিয়ে জানতে চান, ‘কখনও মেয়ে দেখোনি? তোমাদের ঘরে মা-বোন নেই?’  গায়কের এই চিৎকারে স্তম্ভিত হয়ে যান উপস্থিত শ্রোতারা। চলে আসেন নিরাপত্তারক্ষীরাও। এরপরই ওই তরুণীকে তারা নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান।

ঘটনা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ উদ্যোক্তাদের। তবে সোশ্যাল মিডিয়া মারফত এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। বাহবা পাচ্ছেন আতিফ আসলামও।

 

নামাজের শারীরিক উপকারিতা

নামাজ ফরজ ইবাদাত। আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন সব মুসলমানের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে ফরজ করেছেন। এ নামাজ পরকালের মুক্তি লাভের অন্যতম মাধ্যম। কারণ পরকালে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। যে ব্যক্তি নামাজের হিসাব সুন্দরভাবে দিতে পারবে, তার পরবর্তী হিসাব সহজ হয়ে যাবে।

আবার নামাজ দুনিয়ায় সব ধরনের অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। শুধু তাই নয়, নামাজের মাধ্যমে নামাজি ব্যক্তি অনেক শারীরিক উপকার লাভ করে। যার কিছু তুলে ধরা হলো-

দাঁড়ানো
মানুষ যখন নামাজে দাঁড়ায়; তখন সব চোখ সিজদার স্থানে স্থির থাকে। ফলে মানুষের একাগ্রতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

রুকু
নামাজি ব্যক্তি যখন রুকু করে এবং রুকু থেকে ওঠে সোজা হয়ে দাঁড়ায় তখন মানুষের কোমর ও হাঁটুর ভারসাম্য রক্ষা হয়। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। ফলে কোমর ও হাটু ব্যাথা উপশম হয়।

সিজদা
নামাজে যখন সিজদা করা হয় তখন নামাজি ব্যক্তির মস্তিস্কে দ্রুত রক্ত প্রবাহিত হয়। ফলে তার স্মৃতি শক্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আবার সিজদা থেকে ওঠে যখন দুই সিজদার মাঝখানে বসে এতে তার পায়ের উরু ও হাঁট সংকোচন এবং প্রসরণ ঘটে। এতে করে মানুষের হাঁটু ও কোমরের ব্যথা উপশম হয়।

ওঠা বসা
নামাজের সময় নামাজি ব্যক্তিকে দাঁড়ানো, রুকুতে যাওয়া, রুকু থেকে ওঠে সোজা হয়ে স্থির দাঁড়ানো, আবার সিজদায় যাওয়া, সিজদা থেকে ওঠে স্থিরভাবে বসা, আবার সিজদা দিয়ে দাঁড়ানো বা বসা। এ সবই মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যায়াম। এতে মানুষের শারীরিক বহুবিদ উপকার সাধিত হয়।

মানসিকতার পরিবর্তন
নামাজের মাধ্যমে মানুষের মন ও মানসিকতায় অসাধারণ পরিবর্তন আসে। গোনাহ, ভয়, নীচুতা, হতাশা, অস্থিরতা, পেরেশানি ইত্যাদি দূরভীত হয়। ফলে বিশুদ্ধ মন নিয়ে সব কাজে সম্পৃক্ত হওয়া যায়।

দেহের কাঠামোগত উন্নতি
নামাজ মানুষের দেহের কাঠামোগত ভারসাম্যতা বজায় রাখে। ফলে স্থুলতা ও বিকলঙ্গতা হার কমে যায়। মানুষ যখন নামাজে নড়াচড়া করে তখন অঙ্গগুলো স্থানভেদে সংবর্ধিত, সংকুচিত হয়ে বিশেষ কাজ করে থাকে। অঙ্গ ও জোড়াগুলোর বর্ধন ও উন্নতি এবং শক্তি বৃদ্ধি পায়।

পরিচ্ছন্ন রাখে
নামাজের জন্য মানুষকে প্রতিদিন পাঁচবার অজু করতে হয়। আর এতে মানুষের ত্বক পরিষ্কার থাকে। ওজুর সময় মানুষের দেহের মূল্যবান অংশগুলো পরিষ্কার হয় য দ্বারা বিভিন্ন প্রকার জীবানু হতে মানুষ সুরক্ষিত থাকি।

চেহারার লাবন্যতা বৃদ্ধি
নামাজের জন্য মানুষ যতবার অজু করে, ততবারই মানুষের মুখমণ্ডল ম্যাসেস হয়ে থাকে। যাতে মুখমণ্ডলে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। ফলে মানুষের চেহারার লাবন্যতা বৃদ্ধি পায়, মুখের বলিরেখা ও মুখের দাগ কমে যায়।

বিশেষ করে…
নামাজ মানুষের মানসিক, স্নায়ুবিক, মনস্তাত্ত্বিক, অস্থিরতা, হতাশা-দুশ্চিন্তা, হার্ট অ্যাটাক, হাড়ের জোড়ার ব্যাথা, ইউরিক এসিড থেকে সৃষ্ট রোগ, পাকস্থলীর আলসার, প্যারালাইসিস, ডায়াবেটিস মেলিটাস,  চোখ এবং গলা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

হার্টের রোগীদের প্রতিদিন বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা উচিত,নামাজ মানুষকে সব সময় সতেজ রাখে, অলসতা এবং অবসাদগ্রস্ততাকে শরীরে বাড়তে দেয় না।

পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মের মধ্যে নামাজের মতো এমন সামগ্রিক ইবাদত আর নেই। নামাজির জন্য এটা একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য যে, এটা একান্তই সামগ্রিক ব্যায়াম। যার প্রভাব মানুষের সব অঙ্গগুলোতে পড়ে এবং মানুষের প্রতিটি অঙ্গ নড়াচড়ার ফলে শক্তি সৃষ্টি হয় এবং সুস্বাস্থ্য অটুট থাকে।

পরিশেষে…
নামাজের উপকারিতায় আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ শুধু তাই নয়, নামাজ মানুষের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক পবিত্রতা সাধনের অনন্য হাতিয়ার।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সময়মতো নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। নামাজ আদায়ের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

হতাশা ভুলে বদলে দিন জীবনের পথ

জীবন সুন্দর। বেঁচে থাকতে ভালবাসি আমরা সবাই। তবু জীবনে কখনো কখনো এমন সময় আসে যখন সবকিছু অর্থহীন মনে হয়! ক্যারিয়ারের ব্যর্থতা মানসিকভাবে দূর্বল করে দিতে পারে আপনাকে। মনে হতে পারে আর কোন আশা নেই, আলো নেই। যখন আপনি ডুবে আছেন হতাশার অন্ধকারে তখনো পৃথিবীতে বিরাজ করছে সম্ভাবনা। তাই মুখ তুলে তাকান। জীবনকে সাজান আবার নতুন করে। অবলম্বন করুন এই কৌশলগুলো-

আগামীকাল বলে কিছু নেই, এমনভাবে ঘুমান 
আপনার শরীর একটি যন্ত্র। চমৎকার জটিল একটি যন্ত্র। আপনার কম্পিউটারটি যেমন সারাক্ষণ চালু রাখা যায় না, একে বিশ্রাম দিতে হয়, ঠিক তেমনি আপনার শরীরেরও প্রয়োজন বিশ্রামের। প্রতিরাতে নিজেকে নির্বিঘ্ন একটি ঘুম দিন। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতের সুন্দর ঘুম মস্তিষ্কে সারাদিনের জমে থাকা সকল টক্সিন দূর করে দেয়। এজন্যই প্রতিরাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম আপনাকে তৈরি করে পরেরদিনের জন্য, আপনার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যেও এটি খুব প্রয়োজন। প্রতিদিনের ঘুমের সময়ের সাথে আরও ৩০ মিনিট যোগ করুন। দেখবেন, আপনার কাজের গতি বেড়ে গেছে, কাজ করতে ভাল লাগছে, ফ্রেশ মস্তিষ্ক থেকে নতুন নতুন আইডিয়া আসছে।

মনোযোগ দিয়ে খাবার গ্রহণ করুন
খাওয়ার সময় শুধু খাওয়ার দিকে মনোযোগ দেওয়া একটি অনুশীলনের বিষয়। বিশেষ করে তখন যখন আপনি এক হাতে খাবার গ্রহণ এবং অন্য হাতে ইমেইল বা ম্যাসেঞ্জারে উত্তর দিতে ব্যস্ত থাকেন। আপনি মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছেন মানে হল, আপনি প্রতিটি খাদ্য উপাদানের স্বাদ গ্রহণ করছেন। এতে আপনি কী গ্রহণ করছেন আর কী বাদ রয়ে গেল প্রয়োজনীয় খাদ্য তালিকা থেকে সে বিষয়ে সচেতন হয়ে ওঠেন। ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে। গবেষণায় দেখা গেছে, মনোযোগ দিয়ে খাওয়া আপনার মন ভাল রাখে, স্ট্রেস কমায়, বাড়তি ওজন কমাতে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করে।

ক্যাফেইন ত্যাগ করুন
ক্যাফেইন সরাসরি আপনার নার্ভাস সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলে। এজন্যই কফি পান করলে আপনি তরতাজা অনুভব করেন, মস্তিষ্ক কাজ করছে বলে মনে হয়। কিন্তু আপনি যদি চরম হতাশাগ্রস্থ একজন মানুষ হোন এবং জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে থাকেন তাহলে এই সাময়িক সমাধান আপনার জন্য নয়। প্রাকৃতিক এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধান গ্রহণ করুন। শরীরচর্চা করুন, ধ্যান করুন। সকালে এক মগ কফি আপনাকে যতটা সতেজতা দেবে ৩০ মিনিটের ব্যায়াম তার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরি হবে।

 

কর্মমূখী হোন

মনকে আবার জাগ্রত করুন, ফিরিয়ে আনুন কাজে। আপনি যখন হতাশাগ্রস্থ তখন কাজ ছেড়ে দিয়ে ব্যার্থতার সময়গুলোকে মনে করার কোন মানে নেই। এরচেয়ে বরং কাজ করুন। যখন আপনার চাকরি হচ্ছে না বা ব্যবসায় আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না তখন এই সময়টাকে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজে লাগান। আবার নতুন করে নির্ধারণ করুন আপনার লক্ষ্য। ফোকাস করুন। সকাল শুরু করুন শরীরচর্চা দিয়ে। সফল মানুষেরা নিজেকে কর্মমূখী করেছেন সকাল থেকেই। ধীরে কাজ করা আপনার মস্তিষ্ককে ঝিমিয়ে দেয়। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট বেশী কাজ করতে শুরু করুন।

 

নীরবতার শান্তিকে গ্রহণ করুন
মনকে শান্ত করতে আমরা কত কি না করি। আপনার নানান দিকে খরচ করা টাকা এবং সময় উভয়ই বেঁচে যাবে আপনি যদি শান্তির জন্য সঠিক পথটি বেছে নিতে পারেন। মনের ক্ষত দূর করা, শান্ত-পরিশুদ্ধ করা, আবারও উজ্জ্বীবিত করার চাবি আছে আপনারই হাতে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় মেডিটেশন করেন তারা খুজে পান নিজের মাঝেই শান্তি বা ইনার পিস। প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট মেডিটেশন আপনার পুরো দিনটিকেই ঝরঝরে উজ্জ্বল করে দেবে। রাতে ভাল ঘুম হবে, কমে যাবে উদ্বিগ্নতা, হতাশা। মস্তিষ্ক কাজ করবে আরও চমৎকারভাবে।

স্বাস্থ্যকর ত্বকের রুটিন
ত্বক ভাল থাকলে মনও ভাল থাকে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর একটি অভ্যাস গড়ে তুলতে অনেক সময় প্রয়োজন। একটি অভ্যাস গড়ে তুলতে অন্তত ২১ দিন সময় লাগে। আপনি যদি সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে চান তাহলে কষ্ট করে নির্দিষ্ট সময়টিতে ২১ দিন উঠুন। এরপর আর কষ্ট হবে না। এমনিতেই ঘুম ভেঙ্গে যাবে আপনার। একইভাবে শরীরের সুস্থতা, ত্বকের যত্ন পরিণত হতে পারে একটি অভ্যাসে। স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয় গ্রহণ করুন। ত্বকের ধরণ বুঝে মনোযোগের সাথে এর যত্ন নিন।

 

অহমের জন্য নয় আত্মার শান্তির জন্য কাজ করুন
কাজ সেটাই করুন যেটা করতে আপনার ভাল লাগে। কোন কাজ করে আপনি সফলতার শিরোপা জয় করতে পারবেন বা বিখ্যাত হবেন সেই তৃষ্ণা থেকে কাজ না করে আত্মার তুষ্টির জন্য কাজ করুন। আপনার কাজ যখন আপনার মনে যোগ করবে শান্তি, আনন্দ তখন আপনি এমনিই ভাল থাকবেন। সফল হওয়া মানেই কোটিপতি হওয়া নয়। আপনি তখনি সফল যখন আপনি সন্তুষ্ট।

মনের কথা শুনুন
আমরা অনেক সময় টের পাই না আমাদের কী প্রয়োজন, কিন্তু টের পায় আমাদের শরীর। খুব ঘুম পাচ্ছে? ছোট একটি ন্যাপ নিন। দৈনন্দিন জীবন অসহ্য লাগছে? কোথাও ঘুরে আসুন। যখনই মনে হচ্ছে কিছু ঠিক নেই, তখনই নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন কী চাই! জীবন হোক উপভোগের, টিকে থাকার লড়াই নয়।

জীবনের হতাশাকে ঝেড়ে ফেলে জীবনকে দিন একটি নতুন শুরু। জেগে উঠুন। সবার আগে গুছিয়ে নিন আপনাকে। নিজেকে ভালোবেসে শুরু করুন আবার। গড়ে তুলুন সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী মানুষটিকে যাকে হারাতে পারবে না কেউ।

সূত্র: ব্রাইটসাইড

 

পানির অপর নাম আনুরার জীবন

ক্লান্ত শহরটি নীরব-নিঝুম, সবাই তখন ঘুমের ঘোরে। এ রকম একটি সময়ে জেগে ওঠেন একজন নারী। সময়-সংসার তাঁকে যেন তাড়া করে। ঘুমিয়ে থাকলে চলে না তাঁর। তিনি মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিম বাজার এলাকার আনুরা বেগম। বয়স কত! এটা বলা তাঁর কাছে কঠিন। তবু জানান পঞ্চাশ, হয়তোবা তার কাছাকাছি।

আনুরার শুধু এটুকু মনে আছে, ১৩ কি ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল একজন ইউনিয়ন পরিষদ কর্মচারীর সঙ্গে। মূল বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। তবে বিয়ের পর থেকে মৌলভীবাজারেই বসবাস। সংসার চলছিল ভালোই। সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়েও এসে গেছে। কিন্তু হঠাৎ করেই ছেদ পড়ে। প্রায় ১৯ বছর আগে মারা যান স্বামী। এর এক-দুই বছর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্বামী শিক্ষক ছিলেন। এই সংসারে এল দুই কন্যা। কোনোভাবে ঠেলেঠুলে সন্তানদের নিয়ে সংসার চলছিল। ছেলেমেয়েরাও বড় হচ্ছিল। দ্বিতীয় স্বামীও একসময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এত দিন দুজনের শ্রমে, আয়-উপার্জনে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে যে সংসার চলছিল, সেই সংসারের পুরোটাই ঝুপ করে আনুরার কাঁধে এসে পড়ে।

ছেলেমেয়েদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করা। ছোট মেয়ে দুটোকে লেখাপড়া করানো। কী করবেন, ভেবে কোনো দিশা মিলছিল না। একসময় চার দেয়ালের ভেতর আর তাঁর থাকা সম্ভব হলো না। দেয়াল তাঁকে ভাঙতেই হলো। হাতের কাছে যা পেলেন, তাই মনে হলো আকাশের চাঁদ। এটা প্রায় সাত বছর আগের কথা। শুরু করলেন মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিমবাজার এলাকার কাঁচাবাজারের শাকসবজির দোকান ও আশপাশের ছোটখাটো হোটেল-রেস্তোরাঁয় পানি বিক্রি।

প্রথম দিকে বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি এনে বিক্রি করতেন। পরে অনেকেই আর বিনি পয়সায় পানি দিতে চাইল না। এক জায়গা থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকার পানি কিনতেন। সেই পানি ড্রামে করে দোকানে দোকানে পৌঁছে দিতেন। প্রতিদিন রোজগারের ১০০ টাকা চলে যাওয়ায় মনটা খচখচ করে। টাকাটা বাঁচানো গেলে সংসারের কাজে আসত। একদিন এলাকার কাউন্সিলর অলিউর রহমানকে বিষয়টি জানালেন। কাউন্সিলর দুই হাজার টাকা দিলে নিজের মতো করে পানি নেওয়ার একটা ব্যবস্থা করলেন।

প্রতিদিন রাত তিনটায় ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা তখনো ঘুমে। পানির লাইনের কাছে ছুটে যান। দু-একজন নৈশপ্রহরী ছাড়া আর কোনো জনমানুষ তখন থাকে না। এরপর একটা একটা করে ছোট-বড় ড্রাম ভরে তা রিকশাভ্যানে সাজিয়ে তোলেন। ড্রামগুলো পানিতে ভরে গেলে ভ্যান ঠেলে নিয়ে আসেন বাজারের কাছে। তখনো দোকানিরা আসেন না। আনুরা বেগম নির্দিষ্ট স্থানে রাখা পানির পাত্র ভরে রাখেন। সকাল নয়টা পর্যন্ত তাঁর এই পানি সরবরাহের কাজ চলে। সব কটি স্থানে পানি ভরা শেষ হলে তাঁর দিনের ছুটি। পানির পাত্র অনুযায়ী মেলে দাম। নিচে ৫ টাকা এবং ওপরে ৪০ টাকা। এতে প্রতিদিন তাঁর ৫০০ টাকার মতো আয় হয়। এই পানি বেঁচেই এখন তাঁর সংসার চলে। দুই মেয়ের একজন পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, একজন সপ্তম শ্রেণিতে। এ থেকেই তাদের পড়ালেখার খরচ জোগান। বড় ছেলেটি অসুস্থ। তার ছেলেমেয়েকেও দেখাশোনা করতে হচ্ছে। দুই কাঁধে অনেক দায় তাঁর।

আনুরা বেগম বলেন, ‘সাত বছর ধরি এই কাজ করছি। মানুষের ছুটিছাটা আছে। আমার ঈদে-চান্দেও রেস্ট নাই। জীবনে তো কিচ্ছু নাই। কষ্ট করি বাইচ্চাইনতোরে পাড়াইতেছি। বাইচ্চাইনতর লাগিই এই কষ্ট কররাম। তবে এখন ব্যবসা নাই। দোকান কমে গেছে। আয়টাও তাই বাড়ছে না।’

রাতজাগা আর জলভেজা শীত-বর্ষার এই জীবন তাঁর চেহারায় ক্লান্তির ছাপ ফেলেই রেখেছে। কিন্তু কথা বলেন হেসেখেলেই। হয়তো তিনি ধরেই নিয়েছেন পানি চক্রের এই জীবন থেকে তাঁর বের হওয়ার কোনো রাস্তা নেই। এই পথ ধরেই যে তাঁকে বাকি জীবনের অনেকটা পথ যেতে হবে।

 

সহজেই রাঁধুন দরবারি মোরগ পোলাও

মোরগ পোলাও মানেই রাজকীয় একটা ভাব। বিয়েবাড়িতে কিংবা অতিথি আপ্যায়নে মোরগ পোলাও না হলে যেন চলেই না। তবে সবসময় অন্যের ওপর নির্ভর না করে নিজেই তৈরি করতে পারেন মজাদার এই খাবারটি। রেসিপি জানা নেই? রইলো রেসিপি-

উপকরণ : মোরগ অথবা মুরগি একটি, বাসমতি চাল ৫০০ গ্রাম, ঘি এক কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা এক টেবিল চামচ, টক দই আধা কাপ, কিসমিস এক টেবিল চামচ, কাজুবাদাম বাটা এক টেবিল চামচ, পোস্ত বাটা এক টেবিল চামচ, শাহী জিরা এক চামচ, গরম মশলা গুঁড়া এক চা চামচ, জাফরান এক চিমটি, লবণ স্বাদমতো, ঘন দুধ এক কাপ, চিনি সামান্য, বেরেস্তা আধা কাপ, গোলাপ জল এক চা চামচ।

প্রণালি : মোরগ/মুরগির সঙ্গে সব মশলা মেখে এক ঘণ্টা রেখে দিন। প্যানে ঘি দিয়ে মোরগ/মুরগিটা রান্না করুন। অন্য একটা পাত্রে পোলাও রান্না করে নিন। অর্ধেকটা পোলাও তুলে এর ভেতরে মোরগ/মুরগিটা দিন। এবার বেরেস্তা, ঘি, কিসমিস, পোলাও, দুধ ও ঘি উপরে জাফরান, গোলাপজল দিয়ে মুখ ঢেকে ১৫ মিনিট দমে রাখুন।

 

শীতের দিনের পার্টি সাজ

শীত মানেই নানা রকম পার্টি আর দাওয়াত। যারা সাজতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত সময়। শীতের সময়ে ঘেমে যাওয়ার ভয় থাকে না বলেই মনের মতো সাজগোজ করা যায়। তবে দিনের আলোতে একটু হালকা আর রাতের কৃত্রিম আলোতে একটু ঝলমলে সাজেই আপনাকে বেশি সুন্দর লাগবে। দিনের বেলা সাজের ক্ষেত্রে হালকা ধরনের মেকআপই আপনাকে অনন্য সাধারণ করে তুলবে।

মুখটা ভালো করে পরিষ্কার করে হালকা ফেস পাউডার বুলিয়ে নিন। পার্টির আমেজ আনতে চিরচেনা কাজলই একটু গাঢ় করে চোখের কোলে বুলিয়ে নিন। আপনার পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে নানা রঙের পেন্সিল ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু সবার আগে লক্ষ্য রাখবেন কোন রঙ আপনাকে মানায়। চোখের বাইরে কাজল দিলে মাশকারা ও আইলাইনার না দিলেও চলবে।

আপনার পোশাকের রঙের আইশ্যাডো ব্লেন্ড করেও দিতে পারেন। লিপস্টিকের ক্ষেত্রে প্রথমে একই রঙের লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট সুন্দর করে এঁকে নিয়ে লিপস্টিক দিয়ে ভরাট করে দিন। আপনি যদি গ্লসি পছন্দ করেন তবে এর উপরে নরমাল কালারের লিপগ্লস ব্যবহার করতে পারেন। চুলের স্টাইল নির্ভর করবে আপনার পোশাকের ওপর।

যদি শাড়ি পরেন তাহলে হাত খোঁপা করে চুলে ফুল লাগাতে পারেন। যা আপনাকে স্নিগ্ধতা এনে দেবে। আর আপনার চুল যদি ছোট হয় তাহলে ছেড়ে দিতে পারেন। এখন চলছে চুল রিবন্ডিং করার ট্রেন্ড। তাই অনুষ্ঠানের আগে ভালো হেয়ার আয়রন দিয়ে চুলটা সোজা করে নিতে পারেন।

ভারী গহনা বাদ দিয়ে পরতে পারেন মেটাল, এন্টিক, রূপার গহনা। অন্যরকম লুকের জন্য মাটির গহনাও দারুণ। শাড়ি অথবা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে পরুন চুড়ি অথবা ব্রেসলেট।

 

সুখ খুঁজে নেয়ার উপায়

সুখ খুঁজে পাবার জন্য দূরে কোথাও যেতে হয় না। এর জন্য প্রয়োজন কিছুটা নিজের জন্য সময় আর আশেপাশের সুন্দর পরিবেশ। আপনি হয়তো কখনো মনের অজান্তেই নিজের সুখকে দুঃখতে পরিণত করে দেন। আর এই ব্যস্ত জীবনে নিজেকে সুখী রাখা সবচেয়ে কঠিন কাজ। কাজটি কঠিন হলেও খুব সহজ কিছু পদ্ধতিতে আপনি হাসিখুশি থাকতে পারবেন। তাই নিজেকে সুখী রাখতে সুখ সুখ করে সুখের পেছনে না ঘুরে একটু সময় নিয়ে ভাবুন। আপনি ঠিক কোন কাজটি দিয়ে দুঃখ পাচ্ছেন।

উপায়
উপায় হচ্ছে সেই শব্দ যা দিয়ে আপনি আপনার সুখের সন্ধান পেতে পারেন। আপনি যখন কোনো কিছুর জন্য পথ খুঁজে না পান তখন এই উপায় শব্দটি হয়ে থাকে আপনার একমাত্র অবলম্বন। তাই যখন আপনি অনুভব করবেন যে আপনি সুখে নেই ঠিক সেই সময়েই তার কারণ খুঁজে বের করুন। কারণ খুঁজে বের করার পরের যে কাজটি আপনি করবেন তা হচ্ছে তাকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার উপায় খুঁজে বের করা। যদিও কাজটি এত সহজ না, এরপরেও আপনাকে উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের মাঝে মন খারাপ হলে একটি ব্যাপার কাজ করে আর তা হচ্ছে মন খারাপ নিয়ে বসে থাকা। এটি কোনো উপায় হতে পারেন না। তাই মন ভালো করার উপায় আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে।

স্রোতে গা না ভাসনো
কারো মুখে আপনার প্রশংসা শুনলেন, এতেই আপনি বিমোহত হয়ে যাবেন না। কারণ যে মানুষটি আপনাকে প্রশংসার সাগরে ভাসাতে পারে সে পরক্ষণেই পারে আপনাকে সমস্যা এবং দুঃখের সাগরে ফেলতে। তাই কারো কথার মাঝে সুখকে খুঁজে ফিরবেন না। আপনিই আপনার সুখের মালিক। তাই যতো খারাপ অবস্থাই যাক আপনার মাঝে এতটুকু শক্তি রাখুন যে আপনাকে দিয়ে সুখের মুখ দেখা সম্ভব।

মন্ত্র
যে কাজগুলো করতে ভালোবাসেন তা করতে থাকুন। কখনো কারো জন্য নিজের সুখের কারণ থেকে দূরে সরে আসবেন না। মন দিয়ে নিজের কাজটাই করুন তবে খেয়াল রাখবেন তা যেন কারো ক্ষতির কারণ না হয়। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এটি আপনাকে যেমন সুস্বাস্থ্যর অধিকারী করে রাখবে তেমনই আপনাকে সুখে থাকতেও সাহায্য করবে নানা ভাবে।

 

ঘরের ভেতরকার পরিবেশ ভালো রাখবেন যেভাবে

আপনি সারাদিন যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, দিন শেষে আপনার ঘরটাই হয়ে থাকে আপনার ক্লান্ত দিনের শেষ আশ্রয়। তবে সেই আশ্রয়টি যদি সুন্দরভাবে না থাকে তবে তাতে যারা বসবাস করে কিংবা একটা লম্বা সময় ধরে থাকে তাদের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়া ঘরের কিংবা বাড়ির অভ্যান্তরীণ আবহাওয়া ভালো না থাকলে তা সরাসরি মানুষের মনের ওপর প্রভাব ফেলে। আপনার ভালো মনকে খারাপ করে দিতে ঘরের গুমোট আবহাওয়াই যথেষ্ট।

ভ্যান্টিলেটর এবং জানালা পরিষ্কার রাখুন
আবহাওয়া চলাচলের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে জানালা কিংবা ভ্যান্টিলেটর। এসব জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখলে এবং বাড়ির জানালা বড় না থাকলে দেখা যায় পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাস ঘরে প্রবেশ করে না। এর ফলে ঘরে বাসা বাঁধে অসুখ। তাই প্রতি সপ্তাহে সময় করে একটি নির্দিষ্ট দিনে ভ্যান্টেলেটর এবং জানালা পরিষ্কার রাখুন। এতে আপনার আশেপাশের পরিবেশ এবং আপনার ঘরের ভেতরের পরিবেশ থাকবে সুন্দর।

ধূমপান এড়িয়ে চলুন
ধূমপানের কারণে ঘরের ভেতরের আবহাওয়াতে পরিবর্তন আসে। এর নিকোটিন এবং ধোঁয়া শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে শিশুদের মানসিক অবস্থার ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। এছাড়া ঘরের ভেতরে একটি বাজে পরিবেশ সৃষ্টি করে। এমন আবহাওয়াতে ছোট শিশুরা এবং গর্ভবতী মায়েরা থাকে তাদের স্বাস্থ্যর সাথে সাথে মানসিক অবস্থাতেও মারাত্মক হানি ঘটে। তাই ঘরের ভেতরে ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।

ময়লা আবর্জনা
ময়লা আবর্জনা যাতে ঘরে জমে না থাকে তার প্রতি খেয়াল রাখুন। এটি আপনার ঘরের সৌন্দর্যের যেমন বারোটা বাজাবে তেমনই আপনার ঘরের অভ্যান্তরীণ আবহাওয়ারও। আর এই অপরিষ্কার আবহাওয়াতে যাদের শরীর সবার আগে খারাপ হয় তারা হচ্ছে বয়স্ক এবং শিশুরা। তাই ঘরের আবহাওয়ার পাশাপাশি পরিষ্কারের দিকেও নজর দিন।

প্রতিদিনের যত্ন
অনেকেই মনে করেন সপ্তাহে কিংবা মাসে একটু ঝেরে মুছে রাখলেই ঘরের পরিবেশ সুন্দর থাকবে। যা মোটেও ঠিক নয়। তাই প্রতিদিন আপনার খাবার টেবিল, চেয়ার, ফ্যান, জানাল এবং পর্দা ঝেরে মুছে রাখুন। এতে আপনি যেমন ভালো থাকবেন ঠিক তেমনই ভালো থাকবে আপনার আশেপাশের মানুষগুলো।

 

শাহী কোপ্তা কোরমা তৈরির রেসিপি

অতিথি আপ্যায়নে কিংবা বিভিন্ন উৎসবে রান্না হয়ে থাকে নানা সুস্বাদু খাবার। তেমনই একটি পদ হলো শাহী কোপ্তা কোরমা। রেসিপি জানা থাকলে খুব সহজেই তৈরি করা যায় এটি। তাই বাড়িতে অতিথি এলেও আপ্যায়ন নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। চলুন শিখে নেই-

উপকরণ :
কোপ্তার জন্য : গরুর মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম, পাউরুটি দুই পিস, আদা ও রসুন বাটা দুই চা চামচ, গরম মশলা গুঁড়া এক চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিজ আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, মরিচ কুচি ৫টি।

গ্রেভির জন্য : টকদই আধা কাপ, ঘন দুধ এক কাপ, জাফরান একটি, ঘি এক টেবিল চামচ, ফ্রেশ ক্রিম আধা কাপ, বাদাম বাটা এক টেবিল চামচ, কিসমিস বাটা এক টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, আদা বাটা এক চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, এলাচ ৪টি, দারুচিনি দুটি।

প্রণালি :
কোপ্তার সব উপকরণ দিয়ে মেখে বল করে ভেতরে চিজ দিয়ে ভেজে নিন। কড়াইতে ঘি, এলাচ, দারুচিনি, পেঁয়াজ ভেজে অন্যসব উপকরণ দিয়ে কষিয়ে তরল দুধ দিন। ফুটে উঠলে কোপ্তা দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন। দুধে ভেজানো জাফরান দিন। ফ্রেশ ক্রিম দিয়ে নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

মেঝে ঝকঝকে রাখার উপায়

দিনশেষে ঘরই আমাদের ঠিকানা। হাজারটা ব্যস্ততার পরে একটুকরো অবসরে সবাই চায় নিজের ঘরটিতে বিশ্রাম নিতে। আর সেই ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে মনও থাকে ফুরফুরে। নানা কারণেই ঘরের মেঝে নোংরা হতে পারে। সুন্দর ঘরের প্রথম শর্ত হচ্ছে পরিষ্কার মেঝে। মেঝে ঝকঝকে না হলে ঘরের সৌন্দর্য অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায়। চলুন জেনে নিই ঘরের মেঝে পরিষ্কার রাখার কিছু সহজ উপায়-

মোছার সময় হালকা গরম পানিতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল জাতীয় লিক্যুইড ব্যবহার করুন। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের এ লিকুইড ক্লিনার পাওয়া যাচ্ছে। আর এ লিকুইড ব্যবহার করলে আরশোলা, মশা এবং মাছির উপদ্রব কমে যাবে।

প্রতিদিন ক্লিনার দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করুন। এরপর নরম কাপড় বা দিয়ে ভালো করে মুছে নিন। কারণ খসখসে কাপড় ব্যবহার করলে মেঝেতে অ্যাচ পড়ে যেতে পারে।

অনেক সময় মার্বেলের মেঝেতে অসাবধানতার কারণে চা-কফি পড়ে গিয়ে দাগ বসে যায়। চিন্তার কারণ নেই। আমাদের প্রায় সবার ঘরেই ভিনেগার থাকে। তাই এক ভাগ সাদা ভিনেগারের সঙ্গে দু’ভাগ পানি মিশিয় স্প্রে বোতলে ভরে দাগের ওপর স্প্রে করুন। কিছুক্ষণ পর শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। চা বা কফির দাগ চলে যাবে।

দীর্ঘদিন ব্যবহার করার পর সাদা মার্বেলের মেঝে হলুদ হয়ে যায়। তাই তারপিন তেলে অল্প লবণ মিশিয়ে ভালো করে মার্বেলের ওপর মুছে নিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, দেখবেন সাদা রং আবার আগের মতো হয়ে যাবে।

টাইলসের মেঝেতে অনেক সময় দাগ বসে গিয়ে আঠালো হয়ে যায়। এরকম অবস্থায় দাগ তোলার জন্য হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে টাইলসের মেঝে মুছে নিন। লবণ ও পানি ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। দেখুন আপনার মেঝে কেমন ঝকঝক করছে।

 

চুল পড়া রোধ করবে যে তেল

সুস্থ ও সুন্দর চুলের আকাঙ্ক্ষা থাকে সবারই। আর তাই নানা উপায়ে নেয়া হয় চুলের যত্ন। চুলের যত্নে সাধারণত বাজারের নারকেল তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চুল পড়া রোধ করতে বেশ কার্যকর আমলকীর তেল। চুল পড়া প্রতিরোধে এই তেলটি ব্যবহার করতে পারেন।

যারা সময়ের অভাবে চুলের যত্ন নিতে পারছেন না, তারাও ব্যবহার করতে পারেন আমলকির তেল। খুব সহজে মাত্র দুটি উপাদান দিয়ে এই তেলটি তৈরি করা সম্ভব।

এক কাপ নারকেল তেল ৪-৫ মিনিট জ্বাল দিন। এর সাথে শুকনো আমলকী দিয়ে দিন। আমলকীসহ এই তেল জ্বাল দিতে থাকুন। বাদামী রং হয়ে আসলে চুলা থেকে এটি নামিয়ে ফেলুন। এরপর তেলটি ছেঁকে আমলকী থেকে আলাদা করে নিন।

তেলটি মাথায় কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করে লাগান। সারা রাত রাখুন, পরের দিন শ্যাম্পু করে ফেলুন।

আমলকির তেল শুধু নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে না। মাথার তালুতে রক্ত চলাচলও বৃদ্ধি করে থাকে। আমলকী চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। এটি সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করুন।

 

প্রতি মাসে পরিচালক সমিতিতে অনুদান দেবেন ডিপজল

এখন থেকে প্রতি মাসে পরিচালক সমিতিতে ৫০ হাজার করে টাকা দেবেন ঢাকাই ছবির ডেঞ্জারাম্যানখ্যাত অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। তার এই টাকা দেয়ার উদ্দেশ্য একেবারেই নিঃস্বার্থ; অসহায়, দুস্থ, পরিচালকদের সাহায্য করা।

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার অদূরে সাভারে ডিপজলের শুটিং বাড়িতে ডিপজল প্রযোজিত নতুন ছবির মহরত অনুষ্ঠানে একথা বলেন এক সময়ের আলোচিত এই অভিনেতা।

জাদরেল এই অভিনেতা বলেন, ‘নতুন বছরের শুরু থেকেই প্রতি মাসে পরিচালক সমিতিতে ৫০ হাজার করে টাকা দেব। যাতে আর শুনতে না হয় পরিচালক, শিল্পী-কলাকুশলী বিনা চিকিৎসায় অর্থের অভাবে ধুকে ধুকে মারা গেছেন।’

ডিপজল আরো বলেন, ‘চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি প্রয়াত বিনোদন সাংবাদিক আওলাদ হোসেনের পরিবারের জন্য এক লাখ টাকা দেয়া হবে। এছাড়া অসুস্থ সাংবাদিক ঝুটন চৌধুরীর চিকিৎসার জন্য এক লাখ টাকা দেয়া হবে।’

এছাড়া চলচ্চিত্র উন্নতির স্বার্থে সবসময় ঢাকাই ছবির পাশে থাকার আশা ব্যক্ত করেন ডিপজল।

প্রসঙ্গত, অনেকদিন পর আবারো চলচ্চিত্রে ফিরছেন ডিপজল। একসঙ্গে পাঁচটি ছবি নিয়ে চলচ্চিত্রে আগের মতো মনোযোগী হচ্ছেন তিনি। সে কারণে আজ দুটি ছবির মহরত করেন। ছবি দুটি হচ্ছে ‘এক কোটি টাকা’ এবং ‘মেঘলা’। ছবি দুটি পরিচালনা করবেন ছটকু আহমেদ এবং ডিপজল কন্যা ওলিজা মনোয়ার।

আগামীকাল রোববার (১ জানুয়ারি) থেকে ‘এক কোটি টাকা’ ছবির কাজ শুরু হবে। ছবিতে অভিনয় করবেন বাপ্পী-অমৃতা ছাড়াও আরো অনেকে। আর ‘মেঘলা’ ছবিটি বানাবেন ওলিজা। কিন্তু ছবির অভিনয় শিল্পী কারা থাকবেন সেটি জানানো হয়নি।

মহরত অনুষ্ঠানে ডিপজল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ইলিয়াস ভূঁইয়া, চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহীন সুমন, মুশফিকুর রহমান গুলজার, মমতাজুর রহমান আকবর, বাপ্পী, অমৃতা প্রমুখ।

 

বিবাহের সময় কাবিনের প্রয়োজনীয়তা

মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিবাহ নিবন্ধন বা কাবিননামা বর-কনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। নিবন্ধন বা কাবিননামা ব্যতীত বিবাহ প্রমাণ করা কঠিন হয়ে যায়। ফলে মেয়েদের প্রতারিত হবার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয় সবচেয়ে বেশি।

দেনমোহর, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের অভিভাবকত্ব ইত্যাদি দাবির ক্ষেত্রে বিবাহ নিবন্ধন বা বিবাহের কাবিননামা বিচারিক আদালতে আইনগত দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়। তাছাড়া পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে কাবিননামার গুরুত্ব ব্যাপক।

বিশেষ করে কাবিননামায় বয়স উল্লেখ করতে হয় বিধায় বাল্য বিবাহ রোধও সম্ভব। এটি বিবাহিত ছেলে-মেয়ে উভয়ের ভবিষ্যত আইনগত অধিকার সংরক্ষণ করে। বিবাহ সম্পর্কে উভয় পক্ষ থেকেই যে কোন সময় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, তখন কাবিননামা প্রমাণ পত্র হিসেবে কাজ করে।

নিবন্ধনবিহীন বিবাহের কারণে যেমন অনেক নারী নির্যাতিত, লাঞ্ছিত ও স্বামীর অধিকার, সম্পদের উত্তরাধিকার, নিজ সন্তানের পিতৃত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। আবার অনেক পুরুষও বিবাহ নিবন্ধন বা কাবিননামা না থাকায় নারীদের আক্রমণের শিকার।

এ কারণেই রাষ্ট্রীয়ভাবেই বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রমকে অত্যাবশক করা হয়েছে। এ নিবন্ধনের মাধ্যমেই বরকনের পরিপূর্ণ তথ্য নির্ধারিত নিবন্ধন বইতে সংরক্ষিত থাকে। যাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের অধিকার রক্ষা হয়।

যদিও বিবাহের ক্ষেত্রে কাবিন আবশ্যক। তথাপিও কাবিন বিবাহের কোনো অংশ নয়। কাবিন ছাড়া বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে সে বিবাহ বৈধ হবে। দাম্পত্য জীবনে এক সঙ্গে বসবাস করা যাবে। এ বিষয়ে ইসলামে কোনো অসুবিধা নেই।

মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য দেশের প্রচলিত বিধান অনুযায়ী বিবাহের নিবন্ধন অত্যন্ত জরুরি। কেননা দেশে রাষ্ট্রকর্তৃক নির্ধঅরিত মুসলিম বিবাহ আইন রয়েছে। আর বিবাহের এ নিবন্ধনকেই বলা হয় কাবিন। আর যিনি এ নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পাদন করেন তাকে প্রচলিত ভাষায় বলা হয় কাজি।

দেশের প্রতিটি প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডেই সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আলাদা আলাদা কাজি বা বিবাহ নিবন্ধনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিয়োজিত রয়েছে। যারা বিবাহের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর ও কনের ব্যক্তিগত ও বিয়ে সংক্রান্ত তথ্য বিবাহ নিবন্ধন (বালাম) বইতে লিপিবদ্ধ করেন।

বিবাহ নিবন্ধনের সময় কাজী বর-কনেসহ বিবাহের সাক্ষী, বর-কনের অভিভাবক, যে ব্যক্তি বিবাহ পড়িয়েছেন তাদের সবার নাম ও সাক্ষর রাখেন। বিবাহের সময় নির্ধারিত মহর কত ইত্যাদি তথ্য সংযোজন করেন।

বিবাহ নিবন্ধনের মাধ্যমেই বর ও কনের সব তথ্য সরকারের তথ্যভাণ্ডারে নথিভুক্ত হয়। যা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই সামাজিক নিরাপত্তার রক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে। তবে কাবিন প্রক্রিয়া নারীদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়েই প্রতারণা ফাঁদ থেকে বেঁচে থাকতে যথেষ্ট কার্যকরী এ কাবিন। স্ত্রীর জন্য স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর জন্য উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাহ নিবন্ধন বা কাবিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যারা সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত, নারী হোক কিংবা পুরুষ; উভয়ের জন্যই কাবিন অনেক জরুরি বিষয়।

আবার পারিবারিক বন্ধন বিচ্ছিন্ন তথা তালাকের ক্ষেত্রে বিবাহ নিবন্ধন বা কাবিন আরো বেশি প্রয়োজন। কারণ এ নিবন্ধন ওপর ভিত্তি করেই তালাক সংক্রান্ত ফয়সালা নির্ধারিত হয়।

স্বামী-স্ত্রী উভয়ে আদালত তথা বিচারিক কার্যক্রমে অধিকার নিশ্চিত করতে এ কাবিন বা বিবাহ নিবন্ধনের তথ্য প্রয়োজন হয়। যা স্বামী-স্ত্রীর জন্য একটি আবশ্যকীয় প্রমাণ।

সুতরাং বর-কনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও সহাবস্থান এবং সত্যতা নিরূপনে কাবিনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক। দেশের প্রতিটি সচেতন ব্যক্তি ও পরিবারের উচিত বিবাহের সময় বর-কনের নিরাপত্তা ও পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার লাভে বিবাহের নিবন্ধন (কাবিন) কার্যক্রম সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা।

 

নববর্ষ উদযাপনে ইসলামি মূল্যবোধ

নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার উৎসব পালনের সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও ইতিহাস পর্যালোচনা করলে যে বিষয়টি সুস্পষ্ট তা হলো প্রথম প্রথম ঘরোয়া পরিবেশে পরিবার-পরিজন নিয়ে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে নতুন বছরের প্রথম দিন সৌজন্যবোধ বিনিময়, ভালো খাবার-দাবারের আয়োজন, নতুন পোশাক গ্রহণের মধ্যেই বর্ষবরণ উদযাপন সীমাবদ্ধ ছিল।

বিশাল আকারে আয়োজন করে কখনো কোনো অনুষ্ঠান উদযাপন করা হতো না। সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঘটা করে বর্তমান সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘বর্ষবরণ’ অনুষ্ঠান উদযাপন হয়।

ইসলামে ‘বর্ষবরণ’ উপলক্ষে কোনো রুসুম-রেওয়াজ বা আনন্দ অনুষ্ঠানের অনুমোদন নেই। হোক ইংরেজি, বাংলা কিংবা আরবি নববর্ষের বেলায়।

বর্তমান সময়ে উপমহাদেশ থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা আচার-অনুষ্ঠান পালনের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ তথা নববর্ষ উদযাপন করা হয়।

এ সব আয়োজনের মধ্যে রয়েছে- আতশবাজি, ঘণ্টাধ্বনি, ফল খাওয়া, কাঁচ তথা তৈজশপত্র ছুঁড়ে মারা, যৌবন হারানো ও চুল-ভ্রু সাদা হওয়ার ভয়ে নির্ঘুম রজনী অতিবাহিত করাসহ ইত্যাদি নতুন নতুন আবিষ্কার। অথচ ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে এ সবের কোনো ভিত্তি নেই।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্দিষ্ট সময়ে এবং নতুন সূর্যকে স্বাগত জানাতে প্রত্যেক বছর ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২ টা ০১ মিনিটে বর্ষবরণের নামে নববর্ষ উদযাপনের উদ্দেশ্যে  বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নাচ-গান, আতশবাজি, যুবক-যুবতির ফ্রি স্টাইলে ফুর্তিসহ বিভিন্ন আনন্দ উৎসব শুরু হয়।

যার ফলশ্রুতিতে ঘটে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ইসলাম এ সব অন্যায় ও যৌন উত্তেজনামূলক কোনো কর্মকাণ্ড এবং আতশবাজিসহ অপচয়মূলক কোনো বিষয়ই সমর্থন করে না।

ইসলামি মূল্যবোধে বর্ষবরণ
রাতের গুরুত্বপূর্ণ যে সময়টি পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে টগবগে যৌবনের লাগামছাড়া উন্মাদনা ও নেশা মেটানোর সময় হিসাবে বেছে নেয়া হয়। ইসলামে গভীর রাতের এ সময়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

গভীর রাতের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে এসে আহ্বানকারীকে(সাহায্য প্রার্থীকে), অসুস্থ ব্যক্তিকে, ক্ষমাপ্রার্থীকে (চাহিদা অনুযায়ী) যা ইচ্ছা তা ডেকে ডেকে দিয়ে যান। (মুসলিম, মিশকাত)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা অন্ধকার রাতের ঘনঘটার ন্যায় ফেতনার পূর্বে দ্রুত আমল কর, (যখন) ব্যক্তি ভোর অতিবাহিত করবে মুমিন অবস্থায়, সন্ধ্যা করবে কাফির অবস্থায়, অথবা সন্ধ্যা অতিবাহিত করবে মুমিন অবস্থায়, ভোর অতিবাহিত করবে কাফির অবস্থায়। মানুষ তার দ্বীনকে বিক্রি করে দিবে দুনিয়ার সামান্য কিছুর বিনিময়ে।’ (মুসলিম)

এমন হলে কেমন হতো-
নতুন বছর উপলক্ষে বর্ষবরণের ইসলামি সংস্কৃতি এ রকম হওয়া উচিত ছিল যে, গভীর রজনীতে পুরনো বছরের বিদায় মুহূর্তে নতুন বছরের শুরুতে বিদায় নেয়া বছরের সব অন্যায় ও অপরাধমূলক কাজের জন্য আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করা।

নতুন বছরের আগত দিনগুলোতে সুন্দর ও সৎ জীবনযাপনের দৃপ্ত শপথে আল্লাহ তাআলার দয়া ও সাহায্য চাওয়া।

পরিতাপের বিষয়-
বর্তমান সময়ে ইসলামি আক্বিদা বিশ্বাসের মানুষরাও ভিন্নধর্মী সংস্কৃতির মানুষের আচার-আচরণে আকৃষ্ট হয়ে দ্বীন ও ঈমানের কথা ভুলে অপসংস্কৃতি ও অন্যায় কাজে নিজেদের আমলি জিন্দেগিকে করছে কুলষিত।

অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রাতের মধ্যে এমন একটি সময় আছে, যদি কোনো মানুষ সে সময় লাভ করতে পারে, তবে আল্লাহর নিকট ইহকাল ও পরকালের কোনো কল্যাণ চাইলে আল্লাহ তাকে তা দান করেন। আর এ সময়টি প্রতি রাতেই রয়েছে। (মুসলিম, মিশকাত)

অনুষ্ঠান যদি করতেই হয়-
বর্ষবরণের অনুষ্ঠান ‘নববর্ষ’ যদি উদযাপন করতেই হয় তবে, ইসলামি আক্বিদা বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত মুসলমানের উচিত, রাত্রি জাগরণ করে আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করে বিগত জীবনে ভুলত্রুটি থেকে ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণে বিনিদ্র রজনী অতিবাহিত করা।

আতশবাজি, ঘণ্টাধ্বনি, কল্যাণের উদ্দেশ্যে ফল খাওয়া, কাঁচ তথা তৈজশপত্র ছুঁড়ে মারা, যৌবন হারানো ও চুল ভ্রু সাদা হয়ে যাওয়ার ভয়ে নির্ঘুম রজনী অতিবাহিত করাসহ বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার, নগ্ন নারীর পুরুষসংমিশ্রণ ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকা। যা প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানের জন্য আবশ্যক করণীয়।

পরিশেষে…
মুসলিম উম্মাহর প্রতি কুরআনের ছোট্ট একটি আয়াতের উদাত্ত আহবান করতে চাই। আর তা হলো- ‘আল্লাহ জীবন-মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষা করার জন্য, কে সবচেয়ে বেশি সুন্দর আমল করতে পারে।’ (সুরা মুলক : আয়াত ২)

আসুন, নববর্ষ উদযাপনে বর্ষবরণের অশ্লীল ও অপচয়মূলক কাজ থেকে বিরত থেকে সুন্দর ও কল্যাণমূলক জীবন গঠনের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হই।

বর্তমান সময়ের যাবতীয় ফেতনা, ঘোর মূর্খতা ও কুসংস্কারের অন্ধকার পরিহার করে সঠিক পথ খুজে পাওয়ার জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করি।

বিশেষ করে বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে নিজেদেরকে দ্বীনি ও ইসলামি আদর্শের বাস্তবায়নে সমাজ পরিবর্তনের সংস্কৃতি চালু করি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গভীর রজনীতে পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্তুতি নিয়ে বিগত জীবনের গোনাহ এবং আগত নতুন বছরের কল্যাণ কামনা করার সংস্কৃতি চালু করার তাওফিক দান করুন। অন্যায় ও ফাহেশা কাজ থেকে হেফাজত করে কল্যাণের পথে এগিয়ে যাওয়া তাওফিক দান করুন। আমিন।

Save

Save

Save

Save

Save

 

রুই মাছের মুড়িঘণ্ট রাঁধবেন যেভাবে

খাবারের তালিকায় মুড়িঘন্টের কদর আলাদা। বিয়েবাড়ি কিংবা অতিথি আপ্যায়নে অনেক সময় প্রাধান্য পায় এই পদটি। তবে এর রন্ধন প্রণালি মোটেই কঠিন কিছু নয়। রেসিপি জানা থাকলে আপনি নিজেই তৈরি করতে পারেন জনপ্রিয় এই খাবারের পদটি। রইলো রেসিপি-

উপকরণ : রুই মাছের মাথা একটি, মুগডাল ২৫০ গ্রাম, আদাবাটা দুই চা চামচ, রসুনবাটা দুই চা চামচ, মরিচ গুঁড়া এক চা চামচ, হলুদ গুঁড়া এক চা চামচ, ধনে গুঁড়া আধা চা চামচ, ভাজা জিরা গুঁড়া এক চা চামচ, গরম মশলার গুঁড়া আধা চা চামচ, টমেটো কুচি একটি, আস্ত জিরা আধা চা চামচ, তেজপাতা দুটি, তেল আধা কাপ, ঘি এক টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি দুই টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ চার/পাঁচটি, লেবুর রস এক টেবিল চামচ, এলাচ ও দারুচিনি দুটি করে, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজবাটা দুই টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি তিন টেবিল চামচ।

প্রণালি : মাছের মাথা কেটে ভালো করে ধুয়ে হলুদ, লবণ ও লেবুর রস মেখে হালকাভাবে ভেজে নিন। আগেই মুগডাল ভেজে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার একটি কড়াইতে তেল দিয়ে গরম হলে আস্ত জিরা, তেজপাতা, এলাচ ও দারুচিনির ফোড়ন দিন। টমেটো কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে গরম মশলার গুঁড়া, ধনেপাতা কুচি, কাঁচামরিচ বাদে অন্যসব মশলার উপকরণ দিয়ে মশলা ভালো করে কষিয়ে নিন।

এবার মুগডাল পানি ঝরিয়ে ঢেলে দিন কড়াইতে। মুগডাল কষিয়ে নিন মশলার সঙ্গে। এবার অল্প সেদ্ধ হলে মাছের মাথা দিয়ে কষিয়ে পরিমাণমতো গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিন। মুগডাল সেদ্ধ হয়ে এলে গরম মশলার গুঁড়া দিন। এবার ঘি, কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা কুচি দিয়ে দুই/তিন মিনিট পর চুলা বন্ধ করে দিন। কিছুক্ষণ পর পরিবেশন ডিশে ঢেলে নিন।

 

যেভাবে সাজাবেন নতুন বছর

নতুন মানেই সাজে ভিন্নতা, উপস্থাপনায় ভিন্নতা আর প্রত্যাশায় ভিন্নতা। তাই এই নতুনকে ঘিরে সবারই থাকে আশা আর স্বপ্ন। পুরানো যত গ্লানি ঝেড়ে মুছে নতুন করে কিছু পাওয়ার আশায় নতুনের আগমনকে ঘিরে যত আনন্দ। তাই একে ঘিরে তৈরি হয় আমাদের মাঝে কত আকাঙ্ক্ষা। নিজের মাঝে কিছু পরিবর্তন আর আশেপাশের পরিবর্তনকে নিজের মাঝে স্বাভাবিকভাবে নেওয়াই হলো নতুন বছরের আগমনের আশা আর প্রত্যাশা। নতুন বছরকে সবারই প্রত্যাশা থাকে নতুন কিছু করার আর নতুনকে ভালোবেসে গ্রহণ করার। তাই নিজের মাঝেও চাই কিছু পরিবর্তন আর গোছানো মনোভাব। যাতে আপনি নতুন বছরটিকে সাজিয়ে তুলতে পারেন নিজের মনের মতো করে।

চিন্তাধারা
প্রাপ্তির আনন্দ আর অপ্রাপ্তির বেদনা নিয়েই আমাদের জীবন। অনেক সময় প্রাপ্তিগুলোকে মনে না রেখে না অপ্রাপ্তিকে ঘিরে আমাদের মাঝে থাকে হতাশা। আমাদের মাঝে এই আকাঙ্ক্ষা থাকে যেন নতুন বছরটি ভালো কাটে। নতুন বছরে শুধু আশাই নয়, বিশ্বাস রাখুন নিজের ওপর। আপনি পারবেন। আপনাকে দিয়ে সম্ভব হবে সব অপূর্ণ কাজগুলো। আপনার এই মনোবল আর বিশ্বাস পারবে আপনার নতুন বছরকে নতুনের মতো সাজিয়ে তুলতে। যেখানে কেবল স্বপ্ন না থাকবে আপনার চিন্তাধারার বাস্তবায়িত রূপ।

কাজ
গত বছরে যে কাজটি শেষ করতে পারেননি কিংবা আপনাকে দিয়ে যে কাজটি সম্পূর্ণ হয়নি নতুন বছরেও আপনি সেটি পারবেন না, এরকম চিন্তা বাদ দিন। পূর্বের কাজের ক্ষেত্রে যে জায়গাগুলোতে ভুল ছিলো তা খুঁজে বের করুন। তার পেছনের কারণ খুঁজে বের করুন। এরপরে সেই কাজটি আবার শুরু করুন। দেখবেন এবার আপনাকে দিয়েই সেই কাজটি সবচেয়ে ভালোভাবে সম্পন্ন হবে।

পড়াশুনা
পড়াশোনার ফলাফল নিয়েও চিন্তিত থাকেন অনেকেই। কখনো খুব ভালো রেজাল্ট আবার কখনো তা নাও হতে পারে। তাতে হতাশ হয়ে পড়বেন না। নিজের ভুলগুলো এবং আপনার দুর্বলতার দিক বের করে তাতে মনোযোগ দিন। দেখবেন এই বছরে আপনার না পাওয়া জায়গাগুলো দখল করবে আপনার পাওয়া পূর্ণতা।

 

ঘর সুরভিত রাখার উপায়

দিনশেষে ঘরে ফিরে সবাই চায় একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে। যত জায়গায়ই ঘুরে বেড়ানো হোক না কেন সবার কাছে প্রিয় স্থান নিজের ঘরটাই। ঘরকে দুর্গন্ধমুক্ত ও সুরভিত রাখাটা জরুরি। নয়তো স্বস্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চলুন জেনে নেই কিছু উপায়।

প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য ঘরের সব দরজা জানালা খুলে দিন। এর ফলে রোদ, বাতাসে ঘরের জীবাণু দূর হয়ে ঘরে একটা সতেজ ভাব ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। বাড়ির যেখানে বেশি ধূমপান করা হয় সেখানে একটি বাটিতে সাদা ভিনেগার রেখে দিন। সিগারেটের খারাপ গন্ধ থেকে মুক্তি পাবেন। প্রতি সপ্তাহে বিছানার চাদর, বালিশের কভার, তোয়ালে বদলে ফেলুন।

প্রতিদিন ঘরের মেঝে পরিষ্কার করার সময় পানির সঙ্গে যে কোনো ভালো ব্র্যান্ডের ফ্লোর ক্লিনার ব্যবহার করুন। কিছু টাটকা ফুল ঘরে রাখুন। তবে ফুলদানির পানি প্রতিদিন বদলাতে হবে। ঘরের গন্ধ কাটাতে রুম ফ্রেশনার বা অ্যারোমা মোমবাতির জুড়ি নেই। কয়েক টুকরা লেবু ১০ মিনিট ওভেনে রেখে বেক করুন। এরপর ওভেনের দরজা খুলে দিন, ঘরের সব গন্ধ উড়ে যাবে।

লেবু পাতা এবং কমলা লেবুর শুকনা খোসা রুম ফ্রেশনার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। চন্দন গুঁড়ার সঙ্গে অল্প শুকনো নিমপাতা মিশিয়ে আলমারির এক কোণায় রেখে দিন। সুগন্ধ তো ছড়াবেই, সেই সঙ্গে পোকামাকড়ও দূরে থাকবে। তেজপাতা, দারুচিনি ও লেবুর টুকরো একটা বাটিতে ঘরের এক কোণে রেখে দিন অসাধারণ রুম ফ্রেশনার হিসেবে কাজ করবে।

পরিষ্কার থাকা সত্ত্বেও রান্নাঘরে যদি গন্ধ বের হয় তাহলে দারুচিনি, এলাচি ও তেজপাতা পানিতে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। পানি ফুটে গেলে আঁচ কমিয়ে কিছুক্ষণ চুলাতেই রাখুন। এতে করে সারা ঘরে সুন্দর একটা গন্ধ ছড়িয়ে পড়বে। মাছ কাটার পর ঘরে একটা আঁশটে দুর্গন্ধ থেকে যায়। তাই অলিভ অয়েলের সঙ্গে এক টুকরো দারুচিনি দিয়ে কিছুক্ষণ চুলোয় রাখুন।

বাথরুম মানে যে সব সময় ভেজা থাকবে তা কিন্তু নয়। তাই শুকনো রাখার চেষ্টা করুন সব সময়। শাওয়ার কার্টেন ও পাপোশ ব্যবহার করুন। ভিজে কাপড় বাথরুমে জমিয়ে রাখবেন না। চটজলদি বাথরুমের গন্ধ দূর করতে হলে একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ।

 

রঙ লাগলো চোখে

চোখের সৌন্দর্য তার সাজে। চোখের ভাষায় আপনি মনের কথা বলে দিতে পারেন অনায়াসেই। একটি সময় চোখের সাজ মানেই ছিল কাজল। সময়ের সাথেসাথে তা পাল্টে আগমন ঘটেছে নতুনভাবে। অফিস, ভার্সিটি, পার্টি থেকে শুরু করে আড্ডার স্থল সব জায়গাতেই আপনি চোখ সাজাতে পারবেন কাজল দিয়ে। কালো কাজলের পাশাপাশি এখন নানা রঙের কাজলের চাহিদা তরণীদের কাছে এখন সবচেয়ে বেশি।

আপনার চোখের আকৃতি যেমনই হোক তাতে কাজল খুব সহজেই মানিয়ে যায়। এটি নানা রঙের খেলায় আপনার চোখকে ফুটিয়ে তোলে। তবে যাদের চোখ কিছুটা ভিতরের দিকে থাকে, তাদের ভাসাভাসা ভাব আনতে, চোখে কাজল লাগানোর পর আঙ্গুল দিয়ে হালকা ব্লেন্ড করে দিতে হবে। এতে চোখে নমনীয়তা আর সজীবতা দুটোই ফিরে আসবে।

পোশাকের সাথে কাজলের রং মিলিয়ে চোখে নিয়ে আসতে পারেন আকর্ষণীয় লুক। যাদের চোখ ছোট তারা চোখের নিচের পাতায় সাদা কাজল ব্যবহার করুন এবং উপরের পাতায় মোটা করে পছন্দ মতো রঙের কাজল টানুন। এতে আপনার চোখ বড় দেখাবে।

যাদের চোখ বড় তারা শুধু উপরের পাতায় চিকন করে কাজল ব্যবহার করুন। যাদের চোখের পাতা ঘেমে যায় তারা কাজল দেওয়ার পূর্বে চোখের পাতায় ভালো করে পাউডার দিয়ে কাজল লাগাতে পারেন, এতে কাজল ছড়াবে না।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে আপনি চোখে রঙিন কাজন লাগাতে পারেন। কাজলকে আধুনিকরূপে সাজাতে ব্লেন্ড গোল্ডেন অথবা সিলভার আইশ্যাডো দিয়ে চোখ হাইলাইট করতে হবে। এবার পছন্দমতো কাজল দিয়ে চোখের ভেতর থেকে বাইরে পর্যন্ত টেনে দিন।

কাজল ব্যবহারে অবশ্যই ওয়াটারপ্রুভ কাজল ব্যবহার করতে হবে। নতুবা কাজল লেপটে মেকআপ নষ্ট হবার সম্ভবনা থাকতে পারে। ওয়াটার প্রুভ কাজল না থাকলে, কাজল ব্যবহারের পর একই রঙের আইশ্যাডোদিয়ে হালকা করে ব্লেন্ড করে দিতে হবে। এতে কাজল অনেক্ষণ সুন্দর থাকবে

দামদর
রঙ্গিন কাজলের ক্ষেত্রে আছে লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, বেশুনী সহ আরো অনেক রঙ। এই কাজলগুলোর দাম পরবে ২৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে।

কোথায় পাবো
নিউ মার্কেট, মৌচাক, যমুনা ফিউচার পার্ক, গাওছিয়া সহ আপনার কাছে শপিং মলগুলোতেও আপনি পাবেন আপনার মনের মতো রঙ্গিন কাজল।

 

একাই ছুটির দিনটি উপভোগ করবেন যেভাবে

ছুটি মানেই কাজ থেকে বিদায় নেয়া। একরাশ ঝামেলা কাঁধ থেকে নামিয়ে নিজেকে সময় দেওয়া। আর এই ছুটির দিনগুলোতে আমরা সবাই চাই বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে সময় কাটাতে। তবে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় আপনার ছুটির সময় তাদের ছুটি শেষ কিংবা ছুটিছাটার বালাই নেই। সেই মূহুর্তে আপনাকে একাই হতে হয় আপনার এই ছুটির সময়ের সঙ্গী। ছুটির সময়কে কীভাবে আপনি আনন্দের করে তুলতে পারেন তা জানা খুব সহজ। কিন্তু একাকী এই সময়কে নিজের মতো করে আনন্দে পরিপূর্ণ করাটা কঠিন কাজ। তারপরেও এই কঠিন কাজকে খুব সহজে সহজ করা যায় কিছু কাজের দ্বারা।

শুভ সকাল
কাজের কারণে সকাল সকাল প্রায় সবাইকেই ঘুম থেকে উঠতে হয়। কিন্তু ছুটির দিনের সকাল ঘুমানোর জন্য আদর্শ একটি সময়। যখন আপনাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়ার যেমন কেউ নেই তেমনি দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার জন্য বকা দেওয়ার কেউ নেই। ছুটির দিনটিতে আপনি যখন খুশি তখন ঘুম থেকে উঠতে পারবেন। এরপরেই আপনি খেতে পারেন আপনার পছন্দের সকালের নাস্তা। সচারচর খাওয়া হয়না কিংবা সময়ের জন্য তৈরি করতে পারেন না, এমন কিছু দিয়ে নাস্তাটা সেরে ফেলুন। এরপরেই হাতে গরম গরম কফির মগ কিংবা এক পেয়ালা চা নিয়ে বসে যান টিভির সামনে কিংবা ফেসবুকে সময় দিন বন্ধুদের।

শখ
কর্মক্ষেত্রের কাজ আমাদের শখের তালিকায় পরে না। কেউ পছন্দ করেন ফটোগ্রাফি, কেউ পছন্দ করেন গান গাইতে, কেউ আবার কবিতা লিখতে আবার কেউ ঘুরতে। আপনি আপনার ছুটির দিনটিতে শখের তালিকায় থাকা কাজটি খুব সহজেই করে ফেলতে পারেন। এতে আপনার পাশে কেউ না থাকলেও হবে। শখের কাজের ক্ষেত্রে সবসময় নিজের সময়টুকুই গুরুত্বের জায়গায় থাকে। তাই ছুটির সময়ে শখের ফেলে রাখা কাজগুলো গুছিয়ে নিন।

টেকনোলোজি থেকে দূরে
ছুটির দিনে কম্পিউটার, মোবাইল এসব থেকে কিছুটা দূরে থাকুন। নিজেকে সবুজের কাছে কিংবা অনেকদিন ধরে পরিকল্পনা করছেন এমন জায়গায়  ঘুরতে যান। এতে নিজেকে কিছুটা সময় যেমন দেওয়া হবে তেমনি আপনি ছুটিকে উপভোগ করতে পারবেন।

কেনাকাটা
কয়েকমাস ধরে শুধু ভেবেই যাচ্ছেন যে কিনতে হবে? শুধু সময় বের করতে পারছেন না! তাহলে আপনার জন্য ছুটির এই সময়টা হতে পারে সবচেয়ে ভালো একটি সময়। এতে একাকী ছুটি কাটানোও আপনার যেমন খারাপ লাগবেনা তেমনি আপনি সারা মাসের কেনাকাটাও শেষ করে ফেলতে পারবেন।

 

সহজেই তৈরি করুন আচারি চিকেন

চিকেনের আইটেমগুলোর মধ্যে দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে যে খাবারটি সেটি হলো আচারি চিকেন। আচার তো সব বাসায়ই থাকে। আর খাবারের তালিকায় চিকেনও থাকে সপ্তাহের দু-তিন দিন। তাই সহজেই তৈরি করতে পারেন আচারি চিকেন। গরম ভাত, খিচুড়ি কিংবা পোলাওয়ের সঙ্গে খেতে বেশ লাগবে। রইলো রেসিপি-

উপকরণ : মুরগি এক কেজি (৮ টুকরা), টক দই তিন টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়া এক চা চামচ, হলুদ গুঁড়া এক চা চামচ, ধনে ও জিরা গুঁড়া এক চা চামচ, পাঁচফোড়ন আধা চা চামচ (আধা ভাঙা), পেঁয়াজবাটা তিন টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ৩ টেবিল চামচ, আদাবাটা এক টেবিল চামচ, রসুনবাটা দুই চা চামচ, কাঁচামরিচ কুচি তিন/চারটা, শুকনা মরিচ দুটি, মৌরি গুঁড়া আধা চা চামচ, পাঁচফোড়ন গুঁড়া আধা চা চামচ, তেজপাতা দুটি, সরিষার তেল আধা কাপ, লবণ পরিমাণমতো, আমের আচার দুই-তিন টেবিল চামচ, সরিষাবাটা আধা চা চামচ, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি : আচার পাঁচফোড়ন, তেজপাতা, শুকনা মরিচ, কাঁচামরিচ, বেরেস্তা, মৌরি গুঁড়া ও অর্ধেক তেল বাদে অন্যসব উপকরণ দিয়ে মুরগির মাংস মেখে এক ঘণ্টা মেরিনেট করুন। এবার কড়াইতে তেল দিয়ে গরম হলে পাঁচফোড়ন, তেজপাতা ও শুকনা মরিচের ফোড়ন দিন। এবার মাখানো মাংস কড়াইতে ঢেলে নেড়েচেড়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন অল্প আঁচে।

১০/১৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ভালো করে কষিয়ে নিন। এবার আচার, বেরেস্তা, পাঁচফোড়ন গুঁড়া, মৌরি গুঁড়া দিয়ে নেড়েচেড়ে আবার ঢেকে দিন। পানি দিতে হবে না। মাংসের পানিতেই সেদ্ধ হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে তেলের উপর উঠে এলে কাঁচামরিচ কুচি দিয়ে পাঁচ মিনিট রেখে চুলা বন্ধ করে দিন। এবার পরিবেশন ডিশে ঢেলে নিন।

 

যেসব স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা উচিত নয়

মানুষের কষ্ট হয়ে, মানুষ মন্দ কথা বলতে বাধ্য হয় এমন সকল স্থানে প্রস্রাব পায়খানা করা উচিত নয়। চলার পথে, গাছের ছায়ায় সেখানে মানুষ বসে বিশ্রাম নেয় কিংবা পুকুর, ঝর্না, পানির হাউজ ইত্যাদি স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। কারণ এতে করে সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়। (আবু দাউদ) অনুরূপভাবে যেখানে বসে সাধারণ মানুষ গল্প করে সেখানেও প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (ফাতহুল আযীয শরহে সুহাযাব ১:৪৬১)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অনুগ্রহ শুধু মানব জাতীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি ছিলেন সারা জাহানের রহমত। তাই তার ছিলো সকল প্রকার সৃষ্টির মাঝেই দয়াপূর্ণ দৃষ্টি। এই জন্য তিনি যে কোনো ছিদ্রে প্রস্রাব-পায়খানা করতে নিষেধ করেছেন (আবু দাউদ) কারণ এতে ছিদ্রে বসবাসরত কীট-পতঙ্গের কষ্ট হবে। তা ছাড়া এর পরিণতি অনেক সময় মানুষকেও ভোগ করতে হয়।

ফলবান গাছের কাছেও প্রস্রাব করা নিষেধ (ফাতহুল আযীয ১.৪৬৫) কবরে এবং কবরের পাশে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। মসজিদে প্রসাব-পায়খানা করা হারাম। যদি বিশেষ কোন পাত্রে করা হয় এবং মসজিদ নষ্ট না হয় তবুও (আল ফিকহুল ওয়া আদিল্লাতুহু ১.২০৬)। তবে বিশেষ প্রয়োজনে যদি ঘরে কোনো পাত্র রাখা হয় এবং তাতে প্রস্রাব- পায়খান করা হয় তাহলে সেটা জায়েজ আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাছেও অনুরূপ পাত্র রাখা থাকত (আল মুগনি, ১১০)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত জোর দিয়ে বলেছেন, স্থির পানিতে কখনও প্রস্রাব করবে না, (বুখারি) এর অর্থ এই নয় যে প্রবাহমান পানিতে প্রস্রাব করা যাবে। এর অর্থ হলো-বদ্ধ ও কম পানিতে প্রস্রাব করা হলে তা সর্বাবস্থায়ই নাপাক হয়ে যাবে। এই কারণে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। বেশি পানিতে প্রস্রাব কারা মাকরুহ। আর যদি অধিক হারে প্রস্রাব করার কারণে পানির স্বাভাবিক স্বাদ, রঙ ও গন্ধ বিকৃত হয়ে যায় তাহলে অধিক পানিও নাপাক হয়ে যাবে। (আল মুগনি: ১:১০৮) অনুরুপভাবে গোসল খানাতেও প্রস্রাব পায়খানা করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। (আবু দাউদ)।

 

এই শীতে যেভাবে নেবেন কাপড়ের যত্ন

বছর ঘুরে আবারও এল শীতকাল। শুরু হয়েছে গরম কাপড় কেনার ধুম। অথবা যারা আর্থিক ভাবে একটু অসচ্ছ্বল, তারা পুরনো কাপড় ধুয়ে পরছেন এই শীতে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, শীত চলে গেলে আমরা যেন গরম কাপড়ের কথা ভুলেই যাই। আমরা যে ভুলটা করি তা হল শীতের কাপড়ের যত্ন না নিয়ে হেলাফেলা করে রেখে দিই পরের বছরের জন্য। ওদিকে যত্নের অভাবে আপনার শখের শীতের পোশাক তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। এ দেশে তেমন হাড়কাপানো শীত খুব কম সময়ের জন্যই পড়ে। এ সময় ঘাম কম হয় বলে কাপড় খুব একটা ধোয়ার প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া এই সময় সূর্যের তাপ কম থাকায় কাপড় সহজে শুকায় না। তাই শীতের পোশাক পরার পরে তা কিছুক্ষণের জন্য বাতাসে মেলে দেওয়া ভালো।

এমন অনেক ব্যাপার আছে, যেগুলো মাথায় রাখলেই আপনার শীতের পোশাক থাকবে পরের বছর পরার উপযোগী। তাই চলুন জেনে নিই কীভাবে যত্ন নিতে হবে শীতের পোশাকগুলোর-

উল
উলের পোশাক ধোয়ার ক্ষেত্রে বেশি যত্নশীল হওয়া উচিত। ডিটারজেন্ট বা লিকুইড ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা ভালো। ডিটারজেন্ট ভালো করে পানির সাথে মিশিয়ে ২০/৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে উলের কাপড় হালকা হাতে কেঁচে ধুয়ে ফেলতে হবে। মনে রাখতে হবে বেশি জোরে কাঁচা বা নিংড়ানো যাবে না। উলের কাপড় ওয়াশিং মেশিনেও ধোয়া যাবে না। উলের কাপড়ে যদি কোনো দাগ পড়লে ধোয়ার আগে ঐ দাগের উপর লেবু ঘষে নিতে হবে। উলের পোশাকের ক্ষেত্রে একটু বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। এই কাপড়ের পোশাকে ধুলা-ময়লা লাগে বেশি। তাই ব্যবহারের পর ভালো মতো ঝেড়ে রাখতে হবে। উলের কাপড় ধোয়ার পর তা না ঝুলিয়ে সমতল স্থানে শুকাতে দিতে হবে। তা নাহলে এর আকৃতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ফ্লানেল ও পশমি
ফ্লানেল কাপড় ধুতে ডিটারজেন্ট বা লিকুইড ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন। ভালো করে পানির সাথে মিশিয়ে ২০/৩০ মিনিট  ভিজিয়ে রেখে কেঁচে ধুয়ে ফেলা যায়। এ কাপড় ওয়াশিং মেশিনে ধোয়ার আগে কিছুক্ষণ ভিনেগার পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। কারণ ফ্লানেল কাপড়ের বাড়তি রং থাকলে তা চলে যাবে।

পশমি কাপড় ধোয়ার জন্য আপনাকে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এই কাপড় ওয়াশিং মেশিনে ধোয়া যায় না। শুধু লিকুইড ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুতে হয়। তার জন্য আপনাকে মাত্র ৫/১০ মিনিট ভিজিয়ে নিয়ে কচলে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং পানি চেপে চেপে ফেলতে হবে। পশমি কাপড় গুলোকে কখনো অন্য কাপড়ের সাথে ভিজানো বা ধোয়া যাবে না। তাহলে পশম গুলো অন্যান্য কাপড়ে লেগে যাবে।

চাইলে ড্রাই ওয়াশ করাতে পারেন। কাপড় ধোয়ার পর টিস্যু পেপার দিয়ে মুড়িয়ে ভাজ করে পলিথিনে করে বা হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। গরম কাপড়ের মধ্যে সাধারণত পশম, ফ্লানেল ইত্যাদির পোশাক তৈরি হয়ে থাকে। এইসব উপাদানের পোশাক খুব সহজে পোকায় ধরতে পারে। তাই অব্যবহৃত বা কম ব্যবহৃত পোশাক রোদে শুকিয়ে ন্যাপথলিনের সাহায্যে সংরক্ষণ করা যায়।

পশম কাপড় শ্যাম্পু দিয়ে ধুলে উজ্জ্বলতা অটুট থাকে। পশমের কাপড়ে ঘামের দাগ লাগলে তা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললেই হয়। পুরনো ঘামের দাগ ও রঙিন কাপড়ের দাগ উঠাতে অ্যামোনিয়া হাইড্রোজেন পার অক্সাইড এবং সোডিয়াম হাইপো সালফাইডের দ্রবণে পরপর ভিজিয়ে শুকাতে হবে। অথবা বোরাক্স পাউডার প্রয়োগ করে রোদে শুকাতে হবে।

লেদার
লেদারের জ্যাকেট বারবার ওয়াশ করা যায় না। তাই মাঝে মাঝে অল্প রৌদ্রে দিয়ে ব্রাশ করে ঝেড়ে ফেলতে হবে। বছরে ১/২ বার ড্রাই ওয়াশ করানোই ভালো। অবশ্যই লেদারের জ্যাকেট হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। অনেক দিন ব্যবহার না করার ফলে জ্যাকেটের জিপার জ্যাম হতে পারে। জিপারের চেইনে মোম বা নারিকেল তেল দিয়ে ঘষে নিলে সহজ হয়ে যাবে।

কাশ্মিরি
কাশ্মিরি শাল বা সোয়েটার লিকুইড ডিটারজেন্ট দিয়ে ঘরেই ধোয়া যায়। তবে হালকা ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে পানি বের করতে হবে এবং ছায়া যুক্ত স্থানে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে শুকাতে হবে। ইস্ত্রি করার সময় একটি তোয়ালে বা সুতির কাপর বিছিয়ে নিয়ে তার উপর আয়রন করতে হবে। কাশ্মিরি শাল বা সোয়েটার শুকানোর পর হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে বা ভাঁজ করে পলিথিন ব্যাগে করে ন্যাপথলিন দিয়ে রাখুন।

এছাড়া শীতের কাপড় গুলোকে মাঝে মাঝে রোদে দিতে হবে। কিন্ত খেয়াল রাখতে হবে যাতে বেশি রোদ না পায়, তাহলে  পোশাকটির রং জ্বলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সকালে ১০-১২ মিনিট রোদই যথেষ্ট। দুপুর বেলার কড়া রোদে কাপড় নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। অবশ্যই আলমারিতে রাখার আগে ন্যাপথলিন দিয়ে রাখুন। কাপড়ে পারফিউম দিয়ে রাখবেন না তাহলে কাপড়ে দাগ পড়ে থাকবে। শীতের কাপড়ের সঠিক যত্ন নিলে তা দীর্ঘদিন উজ্জ্বল ও টেকসই হয়ে থাকে।

 

শিশুর জন্য সানগ্লাস

বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও এখন বেশ ফ্যাশন সচেতন। তবে শুধু ফ্যাশনের জন্যই নয়, শিশুর চোখের সুরক্ষায়ও যে জিনিসটি জরুরি তা হলো সানগ্লাস। শিশুকে তার পছন্দমতো সানগ্লাস পছন্দ করতে দিন। আর আপনি পছন্দ করে কিনলেও শিশুর বয়স মাথায় রেখেই কিনুন।

শিশুর সানগ্লাসের জগৎ এখন অনেক বেশি রঙিন ও নকশাদার। আর শিশুরা পছন্দও করছে এগুলো। প্লাস্টিকের বাহারি রঙ ও নকশার সানগ্লাস শিশুদের জন্য বেশ মানানসই। এগুলো হালকা হওয়ায় তারা পরেও আরাম পায়।

সানগ্লাস পরা এবং খোলার সময় দুহাত দিয়ে খুলতে হয় এবং ভাঁজ করে রাখার সময় আগে বাম অংশটি এবং তার ওপর ডান অংশটি ভাঁজ করে রাখতে হয়, শিশু সানগ্লাস ব্যবহারের সময় এটি শিখিয়ে দিন।

সানগ্লাস পরিষ্কার করার সময় সব সময় বক্সের সঙ্গে দেয়া নরম কাপড়টিই ব্যবহার করতে শিশুকে বলে দিন। অন্য কিছু দিয়ে পরিষ্কার করলে সানগ্লাসে দাগ পড়ে যেতে পারে।

শিশুদের জন্যও রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের সানগ্লাস। বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্যানেল, পুমা, রেবন, গুচ্চি, ফাস্ট ট্র্যাক, আরমানি, পুলিশ, ওকলে প্রভৃতি। এর মধ্যে গুচি ১৫০০-৩০০০ টাকা, আরমানি ২০০০-১০০০০ টাকা, পুলিশ ২০০০-১০০০০ টাকা, ডিএনজি ১৫০০-৩০০০ টাকা, রেবন ৫০০-৪০০০ টাকায় পাওয়া যায়। নন ব্র্যান্ডের সানগ্লাস কিনতে পারবেন ২০০-৫০০ টাকাতেই।

বিজয়নগর, মেট্রো শপিং মল, পিংক সিটি, সেঞ্চুরি অর্কিড, এলিফেন্ট রোড, বসুন্ধরা সিটি, ধানমণ্ডিসহ বিভিন্ন মার্কেটে শিশুর জন্য ভালো মানের এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের সানগ্লাস রয়েছে।

 

বাড়তি জিনিস কাজে লাগাবেন যেভাবে

সঠিক মাপে রান্না করা কিংবা যেকোনো কিছু তৈরি করা সবসময় সম্ভব হয় না। কোনো কোনো সময় ব্যবহার জানা না থাকার কারণে অনেক জিনিস ফেলে দিতে হয়। তবে বাড়তি জিনিসের সঠিক ব্যবহার করে তৈরি করা যায় নতুন কোনো পদ। চলুন জেনে নিই-

কমলা লেবুর খোসা ফেলে না দিয়ে চা পাতা ফোটানোর সময় অল্প কয়েকটা কমলা লেবুর খোসা দিয়ে দিন। এতে চায়ে সুন্দর ফ্লেভার হবে।

আদা-রসুন বাটা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হয়ে গেলে লবণ ও তেল মিশিয়ে স্টোর করে রাখুন। এ ছাড়া এয়ার টাইট কন্টেনারে ভরে ফ্রিজে রাখতে পারেন। অনেক দিন ধরে ব্যবহার করতে পারবেন।

অনেক সময় ক্ষীর রান্না করার সময় প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হয়ে যায়। তখন ক্ষীর ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে ঠাণ্ডা করুন। এরপর কুলফি বা আইস কিউব ট্রেতে ঢেলে রাখুন। জমে গেলে আইসক্রিম বা কুলফির মতো হয়ে যাবে। খেতেও ভালো লাগবে।

অনেক সময় দেখা যায় বিস্কুট ভেঙে গুঁড়া হয়ে যায়। তাই ফেলে না দিয়ে পরোটা, রুটি বা লুচি তৈরির করার সময় ময়দার সঙ্গে বিস্কুটের গুঁড়া মিশিয়ে ময়ান করে বানাতে পারেন।

টমেটো অনেক সময় বেশি থাকলে নরম হয়ে যায়। তাই ঠাণ্ডা পানিতে অল্প লবণ দিয়ে টমেটোগুলো সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন টমেটোগুলো ফ্রেশ এবং শক্ত হয়ে যাবে।

নিমকি তৈরির জন্যও বিস্কুটের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া ফিশফ্রাই, কাটলেট, নাগেটস বানানোর সময় ব্রেড ক্রামের বদলে বিস্কুটের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন।

অনেক সময় নারকেলের মালা একসঙ্গে পুরোটা লাগে না। তাই অর্ধেক নারকেলের মালা ফ্রিজে রাখার সময় লবণ মাখিয়ে রাখুন। ফ্রেশ তো থাকবেই আর নারকেল শক্ত হয়ে যাবে না।

দইয়ের পানি ময়দা বা আটা মাখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। রুটি, পরোটা যাই তৈরি করুন না কেন নরম হবে।

টমেটো পিউরি বেশি হলে প্লাস্টিকের কৌটায় ভরে ফ্রিজে রাখুন। তাড়াতাড়ির সময় টমেটোর গ্রেভি করতে হলে উপকারে লাগবে।

 

নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করার নিয়ম-বিধান

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রেই রাহনুমা করে গেছেন। ঘরে ও বাইরে এমন কোন দিক নেই যা রাসূল (সা.) আমাদের সামনে তুলে ধরেননি। তার এই সামগ্রিক শিক্ষার তুলনা পৃথিবীর আর কোনো ধর্মেই ছিল না। তিনি যেভাবে স্বামী-স্ত্রীর অধিকার স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন এবং পারিবারিক জীবনের প্রতিটি সমস্যার সমাধান আমাদের সামনে খোলাসা করেছেন। আর এটা কেউ আগে কখনো করেনি।

সেই ব্যপকতার একটি অংশ হলো নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করার বিধান। কোনো কোনো বর্ণনায় নাভির নিচের লোশ মুণ্ডন করার কথা আবার কোনো কোনো বর্ণনায় লোহার তৈরি ধারলো কোন যন্ত্র দিয়ে পরিষ্কার করার কথা উদ্ধৃত হয়েছে। আর এটাই মুস্তাহাব। এতে উম্মতের কারও কোনো দ্বিমত নেই। (আল ইতহাফ)।

যদি এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীকে সাহায্য করতে বলে তাহলে স্ত্রীর জন্য এটা ওয়াজিব বলে বিবেচিত হবে। (শরহে মুহায্যাব) এই ক্ষেত্রে ৪০ দিনের চেয়ে বেশি দেরি করা মাকরূহ। সর্বনিম্ন কোনো মেয়াদ নির্ধারিত নেই। বরং ব্যক্তির পশম বড় হওয়ার ওপরই এর বিধান নির্ভরশীল। তাই এই ক্ষেত্রে এক একজনের এক এক ধরনের মেয়াদ হতে পারে। (শরহে মুহায্যাব।

মূল উদ্দেশ্য হলো পরিচ্ছন্নতা- সেটা ক্ষুর দিয়ে হোক বা অন্য কিছু দিয়ে। (ফতওয়ায়ে আলমগিরী) এই ক্ষেত্রে নিজের কাজ নিজে করাই উত্তম। তবে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে সাহায্য করতে পারে। তাও মাকরূহ মুক্ত নয় (শরহে মুহায্যাব)। নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করার সময় উপর দিক থেকে শুরু করা উত্তম। (ফতওয়ায়ে আলমগিরী)।

সম্পাদনা: ফকির কামরুল

 

সফলরা যেভাবে সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করেন

সময় একটি পণ্য। অনেকের মতে, এটি জীবনের সবচেয়ে দামি পণ্য। সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করলে খুব দ্রুত সাফল্য লাভ করা যায়। কিন্তু সময় নিয়ে অনেকের মনেই বিভ্রান্তি আছে।

উদ্যোক্তা ব্রায়ান ডি. ইভান্স বিজনেস ইনসাইডারে এ নিয়ে চমৎকার একটি নিবন্ধ লিখেছেন।

ব্রায়ান ডি. ইভান্স লিখেছেন, সময় নিয়ে সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তিকর ধারণা হচ্ছে, তুমি সময় বাঁচাতে পারো। কিন্তু সত্য কথা হচ্ছে, তুমি শুধু সময় ব্যয়ই করতে পারো। একবার সময় চলে গেলে সেটি আর কোনোভাবে ফেরত পাওয়া সম্ভব নয় এবং তুমি কোথাও সেটি জমাও রাখতে পারো না। কিন্তু সময় ‘তৈরি’ করা যায়। কীভাবে, সেটি এ নিবন্ধে দেখানো হবে।

রিচার্ড ব্রানসন, অপরাহ উইনফ্রে, বিল গেটস, মার্ক কুবান, এলন মাস্ক, ওয়ারেন বাফেটের মতো সফল ও বিলয়নিয়াররা এসব নিয়ম মেনে চলেন।

১. লক্ষ্যে অবিচল না থাকাটা হচ্ছে সময়ের অপচয়

আপনার লক্ষ্য যদি নির্দিষ্ট না থাকে, তাহলে ফেসবুকে ঢুকে আপনি উদ্দেশ্যহীনভাবে নিউজ ফিড স্ক্রল করতে থাকবেন। এটা বোঝার আগেই আপনি হয়তো কোনো ভিডিওতে বুঁদ হয়ে যাবেন। আপনি এমন কিছুর পেছনে সময় নষ্ট করবেন, যা আপনার উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

ওয়ারেন বাফেটের একটা বিশেষ পদ্ধতি আছে এ ক্ষেত্রে। তিনি মানুষকে তাদের জীবনের ২৫টি প্রধান লক্ষ্যের একটি তালিকা তৈরি করতে বলেন। এরপর এ ২৫টি লক্ষ্য থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৫টি লক্ষ্য বাছাই করতে বলেন। অনেকে ভাবেন যে, এ পাঁচটি লক্ষ্যের পাশাপাশি অন্যগুলোর দিকেও এক-অাধটু সময় ব্যয় করা যেতে পারে। কিন্তু বাফেট বলেন, যেকোনো মূল্যে বাকি ওই ২০টি লক্ষ্যকে গুরুত্ব দেওয়া বন্ধ করুন। আগে প্রধান পাঁচটি লক্ষ্য অর্জন করুন। তারপর সময় থাকলে বাকিগুলোর দিকে তাকান।

২. লক্ষ্যগুলো লিখে রাখলে সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়ে শতকরা ৪২ ভাগ

লক্ষ্যগুলো আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপনাকে জানতে হবে, আপনি কী লক্ষ্য অর্জন করতে যাচ্ছেন, আপনার হাতে কী পরিমাণ সময় আছে এবং আপনি ইতোমধ্যে কি পরিমাণ সময় হারিয়ে ফেলেছেন?

’দ্য সিক্রেট’ বইয়ের লেখক জন আশরাফের মতে, লক্ষ্যগুলো অর্জনের সম্ভাবনা ৪২ শতাংশ বেড়ে যায়, যখন আপনি শুধু সেগুলোকে লিখে রাখবেন। কারণ লিখে রাখলে মনে হবে, আপনার লক্ষ্যগুলো অনেকটাই বাস্তব। উদ্যোক্তারা অন্যতম বড় যে সমস্যাটি মোকাবেলা করেন, সেটি হচ্ছে তারা কোথায় তাদের সময় ও শক্তি ব্যয় করবেন, সেটি বুঝতে পারেন না। নির্দিষ্ট কিছু কাজ করার পরিবর্তে তারা একসাথে ১০০টি কাজ করতে চান।

তাই আপনি কি করতে চান, সেটি আপনাকে জানতে হবে। যদি আপনার লক্ষ্য সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত থাকেন, তাহলে বিচ্যূত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আপনি যদি সবকিছুই করতে যান, তাহলে দেখবেন আপনার অত সময় নেই, কিংবা কিছুই হচ্ছে না।

৩. দায়িত্ব বণ্টন করে অন্যদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা

এটা অন্যতম কঠিন একটা কাজ, কিন্তু সবচেয়ে লাভজনক এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি নিজে নিজেই একটি কাজ শেষ করে ফেলতে চান, তাহলে আপনার হাতে দিনে সময় আছে ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত একজনকে দায়িত্বের অংশীদার করেন, তাহলে আপনার হাতে দিনে সময় আছে ৪৮ ঘণ্টা। মানুষের মধ্যে দায়িত্ব যত বণ্টন করে দিবেন, অাপনার সময়ের পরিমাণও তত বাড়বে, সাফল্যের সম্ভাবনাও বাড়বে।

এখানে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, দায়িত্ব কাদের মধ্যে বণ্টন করব? তাদের কোথায় পাব? রিচার্ড ব্রানসন এ প্রশ্নে সবচেয়ে ভালো জবাবটা দিয়েছেন। তার মতে, ‘কর্মীদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দাও, যাতে তারা যোগ্য হয়ে ওঠে। তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করো, যাতে তাদের মধ্যে কোনো শূন্যতাবোধ তৈরি না হয়’।

৪. মানুষের চেয়ে প্রযুক্তিকে বেশি কাজে লাগান

মাঝে মাঝে মানুষের চেয়ে প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার বেশি সহজ। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা সব ধরনের কাজই করতে পারে, কিন্তু প্রয়োগের আগে সেটি কার্যকরী হবে কিনা, সেটি নিশ্চিত হতে হবে। কারণ প্রযুক্তির সামান্য সমস্যাও অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

৫. নিয়ম ভাঙতে ভয় পাওয়া যাবে না

সফল ও ধনী মানুষরা নিয়ম ভাঙার জন্য প্রসিদ্ধ। প্রতিটি নিয়ম ভাঙার জন্যই কেউ না কেউ আছে।

সম্পাদনা: তানজিল রিমন

 

সহজেই তৈরি করুন দুধ চিতই

শীতের পিঠা মানেই চিতই। কখনো ঝাল ঝাল ভর্তার সঙ্গে, কখনো মাংসের ঝোল আবার কখনো রসে ভেজানো চিতই পিঠা। এর বাইরে আরেকটি আইটেম হলো দুধে ভেজানো চিতই। যাকে বলা হয় দুধ চিতই পিঠা। খুব সহজেই ঘরে বসে তৈরি করতে পারেন এই সুস্বাদু পিঠাটি।

উপকরণ : চালের গুঁড়া ২ কাপ, পানি ১ কাপ, দুধ দেড় লিটার, খেজুর গুড় দেড় কাপ, লবণ স্বাদমতো, ডিম ১টি।

প্রণালি : চালের গুঁড়ার সঙ্গে লবণ, ডিম ও ১ কাপ পানি দিয়ে খুব ভালোভাবে ফেটিয়ে মসৃণ গোলা তৈরি করুন। মাঝারি ঘনত্বের গোলা হবে। গুড় দেড় কাপ পানি দিয়ে জ্বাল দিয়ে ছেঁকে রাখুন। দেড় লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে ১ লিটার করে নিন। চুলায় খোলা বসিয়ে তেল মেখে নিন। খোলা খুব গরম হলে ডালের চামচে ২ চামচ গোলা দিয়ে ঢেকে দিন। ঢাকনার চারপাশে পানি ছিটিয়ে দিন। পিঠা হলে ৩-৪ মিনিট পর খোলা থেকে তুলে নিন। খোলা থেকে পিঠা তুলে গুড়ের সিরায় ফেলুন। চুলায় দিয়ে জ্বাল দিন। জ্বাল করা পিঠা ঠাণ্ডা হলে জ্বাল দেয়া ঘন দুধ দিন। পাত্র ঝাঁকিয়ে চারদিকে দুধ মিশিয়ে দিন। ৭-৮ ঘণ্টা ভিজিয়ে পিঠা পরিবেশন করুন।

 

বিশ্বসেরা ৫০ শিক্ষকের একজন তিনি

‘স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রায়ই ইভ টিজিংয়ের শিকার হতাম। বখাটেদের ভয়ে টানা ১৫ দিন ঘরে বসে শুধু কেঁদেছি। এরপর আবার স্কুল। বখাটেদের ভয়ে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবা-মা বিয়ে দিলেন। বাল্যবিবাহের কারণে স্বপ্ন ভেঙে গেল। তবে তাতে হাল ছাড়িনি। কষ্ট-সংগ্রাম করে এত দূর এসেছি।’ বগুড়ার শেরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনাজ পারভীনের সঙ্গে কথা শুরু হয়েছিল এভাবেই।

শাহনাজ পারভীনের এই ‘এত দূর’ আসা আসলে কত দূর? আর কেনই-বা তিনি এখন পাদপ্রদীপের আলোয়। কারণটা শুধু শাহনাজের নিজের জন্যই নয়, দেশের জন্যই গৌরবের। বিশ্বের সেরা ৫০ শিক্ষকের তালিকায় উঠেছে শাহনাজ পারভীনের নাম। বললেন, ‘শেষ পর্যন্ত গ্লোবাল টিচার পুরস্কার জিতলে আরও ভালো লাগবে।’ ১৮ ডিসেম্বর শেরপুর উপজেলা সদরের টাউন কলোনি-শান্তিনগরে তাঁর বাড়ির পাশে পথশিশু ও প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয়ে বসে কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে।

শাহনাজ পারভীনবিশ্বের সেরা শিক্ষক নির্বাচনের জন্য ২০১৫ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ভারকি ফাউন্ডেশন ‘গ্লোবাল টিচার পুরস্কার’ প্রবর্তন করেছে। এ বছর বিশ্বের ১৭৯টি দেশের ২০ হাজার আবেদনকারীর মধ্য থেকে শীর্ষ ৫০ শিক্ষককে বাছাই করা হয়েছে। এই তালিকায় ১৬ জন নারীর মধ্যে আছে বাংলাদেশের শাহনাজ পারভীনের নাম। মনোনয়ন পাওয়া ৫০ জনের মধ্য থেকে আগামী বছরের ১৯ মার্চ দুবাইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। বিজয়ীকে অর্থ পুরস্কার দেওয়া হবে ১০ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে ফিলিস্তিনের সামিহা খলিল সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষক হান্নান আল হুরাব এবং ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টিচিং অ্যান্ড লার্নিং সেন্টারের শিক্ষক ন্যানসি অ্যাটওয়েল গ্লোবাল প্রাইজ জেতেন।
ঘড়ির কাঁটা সকাল নয়টায় গড়ানোর আগেই বিদ্যালয়ের পথে পা বাড়ালেন শাহনাজ পারভীন। আমরাও সঙ্গী হলাম। নিজের জীবনের কথা বলতে থাকেন শাহনাজ পারভীন, ‘যৌথ পরিবারের বাড়ির বড় বউ। সব দায়িত্ব কাঁধে এসে চাপল। দিনভর খাটাখাটনির পর রাতে শাশুড়ির পানবাটায় সুপারি কেটে দিয়ে পরদিন কী দিয়ে রান্না হবে, তা বুঝে নিতে হতো। সংসারের রান্না, শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা, ননদ-দেবরের আদর-যত্ন থেকে সবকিছুই সামলাতে হতো। সকালের রান্নাবান্না শেষে ক্লাসে যেতাম। বিকেলে ক্লাস থেকে ফিরে ফের রসুইঘরে। রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে সবাই যখন ঘুমাতে যেত, আমি রাত জেগে পড়তাম।’ এভাবে ১৯৯২ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে আলিম পরীক্ষায় মেধা তালিকায় সারা দেশে মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয় হন শাহনাজ। মেডিকেল কলেজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন। ‘কিন্তু শেষ পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ির আপত্তির কারণে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হলাম। ভর্তির পর কোল আলো করে কন্যাসন্তান এল। রাতের খাবার শেষে সবাই ঘুমিয়ে পড়ত। মেয়েকে দোলনায় শুয়ে রেখে পায়ের নখের সঙ্গে দড়ি বেঁধে টান দিতাম আর রাতভর পড়াশোনা করতাম। সকালে মায়ের কাছে ওকে রেখে কলেজে যেতাম।’

এভাবেই স্নাতক-স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিলেন শাহনাজ পারভীন। স্নাতকে পড়ার সময় বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। ২০০৩ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিলেন। বিএড, এমএডসহ বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জন করেন এবং প্রশিক্ষণ নেন। শাহনাজ পারভীন বললেন, ‘শৈশবে খেলার সঙ্গীরা মাটির খেলনা দিয়ে “সংসার-সংসার” খেলত। আমি খেলতাম “স্কুল-স্কুল”। ওই বয়সেই ঘর এঁকে শিক্ষার্থী পড়াতাম। তবে বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল চিকিৎসক হই। বাবা-মা দুজনই ছিলেন শিক্ষক। অল্প বয়সে যাঁর সঙ্গে বিয়ে হলো, তিনিও শিক্ষক।’ এ কারণেই আপাদমস্তক নিজেকে শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছা জাগে শাহনাজ পারভীনের মনে।

শেরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের পর প্রথমে পড়ানো বিষয়টা তেমন বুঝতেন না। প্রধান শিক্ষক নাজির উদ্দিন হাতেকলমে তা শিখিয়ে দেন। ‘এরপর ভালো শিক্ষক হওয়াটাই ছিল আমার ধ্যানজ্ঞান। ঝরে পড়া রোধ করার পাশাপাশি পাঠদানকে আনন্দময় ও কোনো বিষয় সহজভাবে শিশুদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করতাম।’ বললেন শাহনাজ। এর ফলও পেলেন তিনি। ২০০৯-১০ সালে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ নারী শিক্ষক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ইউনেসকোর মনোনয়নে ভারকি ফাউন্ডেশনের গ্লোবাল টিচার পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন।

গ্লোবাল টিচার পুরস্কারের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ছয়জন শিক্ষকের কাছ থেকে গত ১৩ জুলাই আবেদনপত্র আহ্বান করে। সেই অনুযায়ী আবেদন করেন শাহনাজ পারভীন—জানালেন শেরপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. নার্গিস পারভিন। ১৩ ডিসেম্বর তাঁদের ওয়েবসাইটে সেরা ৫০ জন শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ানোর পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের পড়াতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজের বাসায় শেরপুর শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন। সেই বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেল, সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা পড়াশোনার সুযোগের পাশাপাশি বই-খাতা-কলম, স্কুলের পোশাক, ব্যাগ, টিফিন সবই বিনা মূল্যে পাচ্ছে। শাহনাজ বলেন, ‘প্রতিদিন ভোরে আমার দুই মেয়েকে স্কুলবাসে তুলে দিতে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে আসতাম। ছোট সেলুন, চায়ের দোকান, হোটেলে কাজ করত শিশুরা। তারা ফ্যালফ্যাল করে আমার মেয়ের স্কুলব্যাগের দিকে চেয়ে থাকত। একদিন সেলুন শ্রমিক সাদমান ও লেদযন্ত্রের শ্রমিক শামীমকে জিজ্ঞাসা করলাম, তোমরা কি লেখাপড়া করবা? তারা রাজি হলো।’ ২০১৩ সালে দু-তিনজন শিশুকে বাড়িতে ডেকে এনে পড়ানো শুরু করলেন শাহনাজ। দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। স্বামী মোহাম্মদ আলীর সহযোগিতায় একটা ঘর ভাড়া নিয়ে শেরপুর শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করলেন। বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলে এ স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে এ স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০। শিক্ষার্থীরা সবাই কর্মজীবী।

শাহনাজ পারভীনের দুই মেয়ে। মাসুমা মরিয়ম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক এবং ছোট মেয়ে আমেনা মুমতারিন বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।

Save

Save

Save

Save

 

নিজের গল্পটা নিজেই বদলে দিলেন তাসলিমা

গল্পটা হতে পারত এমন, স্কুলে পড়া দরিদ্র পরিবারের একটি মেয়ে।  লেখাপড়া আর খেলাধুলার উচ্ছল দিন কাটত তার। মেধাবী ছাত্রী সে। কিন্তু মা-বাবা ভাবলেন অভাবের সংসার, খরচ চালানো যাচ্ছে না। ছোট মেয়েটি বড় হচ্ছে। তাই শিশু বয়সেই মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেওয়া হলো বিয়ে। তারপর যা ঘটল—বিয়ের পর কিশোরী বয়সেই দুই-তিন সন্তানের মা হলো মেয়েটি। অসময়ে সন্তান ধারণের কারণে শরীর ভেঙে যেতে লাগল। অভাবের সংসার। সন্তানেরা অপুষ্টিতে ভুগছে। বিয়ের কয়েক বছর পর মেয়েটির চোখে-মুখে হতাশার ছাপ।
কিন্তু গল্পটা এমন হয়নি। হয়েছে উল্টোটাই। গল্পটা এখন এমন, যে মেয়েকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল সেই মেয়ে ‘দেশ জয়’ করতে চাচ্ছে। আর তাই নিজের জীবনকে সুন্দর করে সাজাতে মেয়েটি তার কিশোর বয়সে প্রথম জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছে। আজ সে জয়িতা। বাল্যবিবাহ না করায় তার লেখাপড়া ও কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।মায়ের সঙ্গে তাসলিমা আক্তার
যে মেয়ের কাহিনি নিয়ে গল্প বলা হচ্ছিল তাঁর নাম তাসলিমা আক্তার। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের ফরিদপুর মধ্যপাড়া গ্রামের রমিজ উদ্দিন শেখের ছোট মেয়ে তিনি। শিক্ষাগ্রহণ ও কর্মক্ষেত্রে অবদান রাখায় তাসলিমা আক্তারকে এবার ঈশ্বরদী প্রশাসন ও উপজেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সেরা জয়িতার পুরস্কার দিয়েছে। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে সম্মাননা ও সনদপত্র এবং একটি ক্রেস্ট।
১১ ডিসেম্বর দুপুরে যাওয়া হয় তাসলিমার গ্রাম ফরিদপুরে। পাকা সড়ক থেকে অনেক দূরে গ্রামের আঁকাবাঁকা কাঁচা রাস্তা ধরে যেতে হয় তাঁর বাড়িতে। একখণ্ড জমির ওপর তাসলিমাদের বসতভিটা। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে তাসলিমা সবার ছোট। বাবা ছিলেন দরিদ্র কৃষক। মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। তিনি ছাড়া বাকি ভাইবোনদের বিয়ে হয়ে গেছে। সবার আলাদা সংসার। তাসলিমা বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। পশ্চাৎপদ এই গ্রামে প্রায় বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটে। কিন্তু গ্রামের সব কুসংস্কার দূরে ঠেলে দিয়ে তাসলিমা লেখাপড়া করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে আসছেন। মেধাবী হলেও বাড়িতে লেখাপড়ার তেমন পরিবেশ ছিল না। তবুও তাসলিমা ২০১০ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ এবং ২০১২ সালে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এখন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে লেখাপড়া করছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের দুটো পরীক্ষাতেই তিনি প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

তাসলিমা বলেন, ‘অভাবের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। ভাবতে পারিনি এত দূর লেখাপড়া করতে পারব। তবুও একটা স্বপ্ন ছিল আমার। স্বপ্নটা হলো নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। বাল্যবিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্ত রাখা।’ কিন্তু তাসলিমার সে স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হচ্ছিল ২০১১ সালের দিকে। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৫ বছর।

‘সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছি। এরই মধ্যে বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করে। পাত্র ঠিক করা ছিল। কিন্তু কিছুতেই রাজি হইনি। আমি জানতাম বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি। এখন বিয়ে হয়ে গেলে আমার স্বপ্নটা ভেঙে যাবে। বাল্যবিবাহের পরিণতি আমি জানি। এমন ভাবনা থেকেই বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে তখন সংগ্রাম শুরু করলাম। বললাম, কিছুতেই এই বয়সে বিয়ে করব না। আমি লেখাপড়া করতে চাই। বন্ধ হয়ে গেল বিয়ে।’ বললেন তাসলিমা। এরপর নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করলেন লেখাপড়া।

কলেজে ভর্তির পর দেখা দিল আরেক সমস্যা। প্রচণ্ড অর্থসংকট। একে তো পরিবারে অভাব-অনটন। কেউ তাঁর লেখাপড়া ও কলেজে যাতায়াতের খরচ দিতে রাজি হয়নি। তাই লেখাপড়া ও নিজের খরচ জোগাড় করার জন্য শেখেন কিছু কাজ। প্রথম দিকে শার্টের বোতাম লাগানোর কাজ করতেন। পরে গ্রামের শিশুদের প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন। এ থেকে লেখাপড়ার খরচ ও সংসারের জন্য কিছু জোগান দেওয়া সম্ভব হয়। তবুও খরচ চালানো যাচ্ছিল না।

এরপর জমানো কিছু টাকা দিয়ে কয়েকটি ছাগল কিনে লালন-পালন শুরু করেন তাসলিমা। এক বছর পর থেকে ছাগল বিক্রি করে যে টাকা পেতেন তা দিয়ে পড়াশোনার খরচ চালাতেন। তাসলিমা বলেন, ‘এভাবেই আমি এগিয়ে যাচ্ছি। এখন স্বপ্ন দেখি বাল্যবিবাহমুক্ত দেশের।’

কথা হয় তাসলিমার মা ছালমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছোটকালে মাইয়াড্যারে বিয়া দিবার চাইছিলাম। হেঁয় (সে) তো দেখতে সুন্দর। বিয়া ঠিকও করছিলাম। কিন্তু মাইয়াড্যা আমার রাজি হয় নাই। এখন বুঝতাছি, ছোটবেলা   বিয়া দিলে মাইয়াড্যা এত দূর আগাইতে পারত না।’

Save

Save

Save

 

ত্বকের সৌন্দর্যে প্রাকৃতিক উপাদান

সুন্দর ত্বকের আকাঙ্ক্ষা থাকে সবার। সুস্থ ও সুন্দর ত্বক পেতে হলে প্রয়োজন সঠিক উপায়ে রূপচর্চা। আর রূপচর্চার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত উপাদান হলো প্রাকৃতিক উপাদান। এমনই কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ও তার ব্যবহার জেনে নেয়া যাক-

টমেটো
নিয়মিত সৌন্দর্যচর্চার উপাদান হিসেবে টমেটো আপনাকে দিতে পারে উজ্জ্বল ও পরিচ্ছন্ন ত্বক। ত্বক পরিষ্কার করতে বেসন বা উপটানের সঙ্গে টমেটোর রস মিশিয়ে মুখে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। মুখ ভর্তি দাগ বা ব্রণ দূর করতে টমেটোর রস, কাঁচা হলুদ আর মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করুন। ত্বকের পোড়াভাব দূর করতে বাইরে থেকে ফিরে মুখে, গলায় ও হাতে টমেটোর রস লাগান। শুকিয়ে গেলে আরো একবার লাগান। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে রোদে পোড়া দাগ থাকবে না।

লেবু
লেবু রূপচর্চার উপাদান হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। এ ছাড়া লেবু  চুলের খুশকি প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দুধ ও লেবুর মিশ্রণ চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩-৪ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করলে খুশকি দূর হবে। শ্যাম্পু করার পর পানিতে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে চুল ধুলে চুল ঝকঝকে রেশম কোমল ও মনোরম হয়ে ওঠে।

মেহেদি
প্রাচীনকাল থেকেই মেহেদিকে সৌন্দর্য উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এই মেহেদি পাতা বেটে হেনা ডাই হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই গাছের পাতা, সুগন্ধী ফুল ও মূল লতা গুল্ম সমন্বিত গুণাগুণ চুলের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়, ঝলমলে করে তোলে, চুলের অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব ও খুশকি দূর করে, মাথাও ঠান্ডা রাখে। মেহেদি পাতা বাটা, টকদই, লেবুর রস ইত্যাদি মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পরে চুল ধুয়ে ফেলুন।

মেথি
মেথির চুল কন্ডিশনিং এবং জীবাণুনাশক গুণাগুণ মাথার চামড়ার সংক্রমণ প্রতিরোধ ও চুল পড়া বন্ধ করে এবং মাথা ঠান্ডা রাখে। ২ চা চামচ মেথি রাতে অল্প পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন নরম হলে মিহি করে বেটে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। ২ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে নিন। চুল পড়া বন্ধে এটি অব্যর্থ ঔষধ।

 

সিল্ক শাড়ির যত্ন নেবেন যেভাবে

ফ্যাশন সচেতন নারীদের কাছে সিল্ক শাড়ি পছন্দের অপর নাম। শীতের সময়টা সিল্ক শাড়ি পড়ার জন্য উপযুক্ত সময়। কারণ এটি শুধু ফ্যাশনেবলই করে তোলে না, শীতের ছোঁয়া থেকেও দূরে রাখে। এই সিল্ক শাড়ি শুধু পরলেই হবে না, চাই বিশেষ যত্ন। নয়তো নষ্ট হয়ে যেতে পারে আপনার সাধের সিল্ক শাড়িটি।

সিল্কের শাড়িতে কোনো দাগ লেগে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ড্রাই ক্লিন করে নিন। বাড়িতে দাগ তোলার চেষ্টা না করাই ভালো। কারণ পানি ব্যবহার করলে দাগ স্থায়ী হয়ে যাবে।

বেশিক্ষণ সিল্কের শাড়ি পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন না। একবার পানিতে ভিজিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তুলে ফেলুন।

খুব জোরে কাপড় কাচবেন না। ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করবেন না। শুকাতে দেয়ার সময় হালকা করে পানি ঝরিয়ে ছায়ায় শুকাতে দিন।

সিল্কের শাড়ি বাড়িতে ইস্ত্রি করার চেষ্টা করুন। অথবা ভিজে থাকতে হাতের ডান দিক থেকে বাঁ দিকে ইস্ত্রি করুন। খুব গরম করে ইস্ত্রি করবেন না। উল্টো দিক থেকে করতে পারলে ভালো। আঁচল ও পাড়ে ভারী নকশা থাকলে ওপরে নরম কাপড় রেখে উল্টো করে ইস্ত্রি করুন। প্লাস্টিকের প্যাকেটে সিল্কের শাড়ি রাখবেন না।

ভারী কাজ কিংবা এমব্রয়ডারি করা শাড়ি হ্যাঙ্গারে না ঝুলিয়ে ভাঁজ করে রাখুন।

সিল্কের শাড়ির মধ্যে ন্যাপথলিন বল রাখবেন না। এতে শাড়ি নষ্ট হতে পারে। এছাড়া কাপড়ে ন্যাপথলিনের গন্ধ রয়ে যাবে। তবে এর পরিবর্তে দারুচিনি, লবঙ্গ ব্যবহার করতে পারেন।

মসলিনের কাপড়ে মুড়ে সিল্কের শাড়ি অন্ধকার জায়গায় রাখুন। কখনও ড্যাম্প জায়গায় শাড়ি স্টোর করবেন না।

শাড়িতে তেল মশলাযুক্ত দেয়া গ্রেভি বা তেলযুক্ত কোনো দাগ লেগে গেলে ট্যালকম পাউডার ছড়িয়ে দিন। এরপর ব্রাশ দিয়ে অতিরিক্ত পাউডার ঝেড়ে ফেলুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে পারিষ্কার করুন।

কড়া রোদে সিল্কের শাড়ি শুকাতে দেবেন না। কারণ এর ফলে রং হালকা হয়ে যাবে।

 

ক্ষীরসা পাটিসাপটা তৈরি করবেন যেভাবে

শীত মানেই মজার সব পিঠাপুলি। খেজুর রসের ম ম ঘ্রাণ আর পিঠার স্বাদে হারিয়ে যাওয়া। শহুরে আবহাওয়ায় শীতও ঠিকভাবে আসতে পারে না আর শীতের পিঠার স্বাদও তেমনভাবে মেলে না। তবু একটু অবসরে ঘরেই তৈরি করে নেয়া যায় প্রিয়জনদের জন্য শীতের মজাদার পিঠা। আজ রইলো ক্ষীরসা পাটিসাপটা তৈরির রেসিপি-

যা লাগবে : পোলাও চালের গুঁড়া ২ কাপ, ময়দা কোয়ার্টার কাপ, গুঁড়া দুধ ২ টেবিল চামচ, ডিম ১টি, চিনি (বা খেজুর গুড়) কোয়ার্টার কাপ, লবণ ১ চিমটি, তেল (ফ্রাইপ্যানে ব্যবহারের জন্য) পরিমাণ মতো, বেকিং পাউডার আধা চা চামচ।

ক্ষীরসা : দুধ ২ লিটার, পোলাও চালের গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, মালাই আধা কাপ, চিনি ৩ টেবিল চামচ।

যেভাবে করবেন : তেল ছাড়া সব উপকরণ পরিমাণ মতো পানি দিয়ে মেখে রাখুন ২ ঘণ্টা। পাতলা গোলা হবে। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিন। চালের গুঁড়া শুকনা খোলায় টেলে নিন। কিছু দুধ তুলে ঠান্ডা করে চালের গুঁড়া গুলিয়ে দুধে ঢেলে দিন। চাল সিদ্ধ হলে চিনি ও মালাই দিন। ঘন করে নামান। ফ্রাইপ্যানে তেল লাগিয়ে গরম হলে ডালের চামচে ২ চামচ গোলা দিয়ে ছড়িয়ে দিন রুটির মতো করে। রুটি শুকিয়ে এলে লম্বা করে ক্ষীরসা দিয়ে পাটির মতো মুড়ে নিন। ঠান্ডা অথবা গরম পরিবেশন করুন।

 

ঘর সাজাতে ফটোফ্রেম

নিজের ঘরকে ঘিরে সবারই থাকে এক একটি স্বপ্ন। কেউ চায় কর্নার টেবিল ধরে ঘরটাকে সাজাতে। আবার কেউ ডায়নিং স্পেস ধরে সোজা রুম ধরে বেলকনি সাজাতে চায়। তবে যে যেভাবেই সাজাক ঘরকে নিজের মতো করে ফুটিয়ে তোলাই থাকে মূল উদ্দেশ্য। এই ঘর সাজাতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে ছোট্ট একটি জিনিস। আর তা হচ্ছে ফটোফ্রেম। জিনিসটি খুব বড় না হলেও এটি খুব সহজে আপনার ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারে। তাই ঘর সাজাতে আপনি ব্যবহার করতে পারেন ফটোফ্রেম।

বসার ঘর
বসার ঘরের প্রতি বাইরের মানুষের যেমন এক প্রকার আকর্ষণ থাকে ঠিক তেমনি তাকে ফুটিয়ে তুলতে থাকে ঘরের মানুষগুলোর প্রয়াস। এই বসার ঘর সাজাতে আপনি রাখতে পারেন ফটোফ্রেম। নানা পশুপাখির ছবি, কখনো আবার প্রকৃতির ছবি আবার ফ্যামিলির আদরের ছোট কোনো সদস্যর ছবি রাখতে পারেন। এর পাশাপাশি টেবিলেও রাখতে পারেন ফটোফ্রেম।

দেয়াল
দেয়াল সাজাতে ফটোফ্রেমের জুড়ি নেই। সিঁড়ির পাশের দেয়াল কিংবা সদর দরজা দিয়ে ঢুকতেই যে দেয়াল চোখে পড়ে তা সাজাতে পারেন এই ফটোফ্রেম দিয়ে। সারি করে কিংবা গোলাকার ভাবে আবার কখনো ছোট ফ্রেম থেকে বড় ফ্রেম এভাবে সারি সারি করে সাজিয়ে আপনি আপনার দেয়াল যেমন সাজাতে পারেন ঠিক তেমনি পারেন আপনার ঘরকে সাজাতে।

শোবার ঘর
শোবার ঘরকে সাজাতে চাইলে আপনি সাজাতে পারেন ফটোফ্রেম দিয়ে। আপনার শোবার খাটের মাথার উপর রাখতে পারেন এই ফটোফ্রেমের তৈরি ঘড়ি দিয়ে। চারটি বড় ফটোফ্রেম আর আটটি ছোট ফটোফ্রেম দিয়ে আপনি বানিয়ে নিতে পারেন এই ফটোফ্রেম ঘড়ি। এতে আপনি আপনার বাচ্চাদের আনন্দ এবং খুনশুটির মুহুর্ত যেমন আটকে রাখতে পারেন তেমনি পারেন আপনার এবং আপনার প্রিয় মানুষের ছবি দিয়েও এভাবে দেয়াল সাজাতে। আর ঘরকে ফটোফ্রেম দিয়ে সাজিয়েও তুলতে পারেন।

ঘর সাজাতে খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। আপনার রুচিশীলতা এবং আপনার পছন্দ এই দুই মিলিয়ে আপনি আপনার ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারেন। আর ঘর হালকা ভাবেই সাজালে ভালো লাগে। তাই ঘর সাজালে তার যতটা সম্ভব ছিমছামভাবেই সাজান।

 

আদর্শ মা-বাবা হবেন যেভাবে

মা-বাবা হওয়া জীবনের একইসঙ্গে সবচেয়ে সহজ এবং কঠিন কাজ। আপনার মমতা, স্নেহ এবং ভালোবাসার ওপর নির্ভর করে আপনার সন্তানের বেড়ে ওঠা। আপনি কী ধরনের কাজ করছেন কিংবা আপনার আয় কেমন তা কখনই সম্পূর্ণভাবে আপনার সন্তানের বেড়ে ওঠার পেছনে মূল কারণ নয়। অনেকেই মনে করেন শাসন করলে বা কোনো কিছু করতে মানা করলে সন্তান বিগড়ে যাবে। তাই সে ভয়ে সন্তানকে তারা কিছুই বলে না। একটি সময় সন্তান মা-বাবার কাছ থেকে দূরে যেতে থাকে। আর অনেকসময় তাতে সন্তান কেবল বিপথেই যায় না  সেইসাথে তাদের মা-বাবা সমাজের কাছে নানাভাবে হন অপমানিত, লজ্জিত।

সন্তানকে ভালোবাসা দিন
সন্তানকে কতখানি ভালোবাসেন তা মুখে ফুটে না বলাই ভালো। তাকে আপনার কাজ দিয়ে বোঝান। কৈশোরে মা-বাবার কাছে বকা খেয়ে অনেক সন্তানই খারাপ পথে চলে যায়। তাই এসময় একমাত্র কাজ হচ্ছে ভালোবাসা। তাকে ভালোবেসে, বুঝিয়ে বলুন। তবে তাকে লোভ দেখিয়ে কোনো ধরনের কাজ করাবেন না। এতে তার মধ্যে কাজের বিনিময়ে বড় ধরনের কিছু পাবার প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে।

পুরস্কৃত করুন
সন্তানকে সব সময় সব কাজে অনুপ্রাণিত করুন। অনেক সময় শুধু মুখের কথায় আর ভালোবাসায় অনেক কিছু হয় না। তাকে ছোট ছোট কাজে পুরস্কৃত করুন। সে যদি গণিত করতে অমনোযোগী হয় আর আপনি যদি তাকে বুঝিয়ে বলে কিংবা ভালোবেসে বলে করাতে পারেন। তাকে ছোট ছোট উপহার যেমন কালার পেন্সিল, কলম কিংবা তার পছন্দের রঙের খাতা উপহার দিন।

তুলনা
অনেক মা বাবাই আছেন যারা নিজের সন্তানের সাথে অন্যর সন্তানের তুলনা করেন। কোনো শিশু কোনো বিষয়ে সেরা হতে নাই পারে। এই বিষয়টি বেশি দেখা যায় পড়াশুনার ক্ষেত্রে। সর্বদা ওই না পারা শিশুটিকে নানাভাবে অবহেলা আর হেয় চোখে দেখা হয়। তার মনের মধ্যে এই ব্যাপারটি সৃষ্টি করে দেওয়া হয় যে সে কিছুই পারে না। আর তাকে দিয়ে কিছু সম্ভব না। এমনটি কখনোই করা উচিত নয়।

 

ঘড়ির প্রতি আমার দুর্বলতা আছে : সাইমন সাদিক

ঢালিউডের একটি সম্ভাবনাময় নাম সাইমন সাদিক। তার জন্ম ৩০ আগস্ট ১৯৮৫ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার কলাপাড়া গ্রামে। কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। তার অভিনয় জীবনের শুরু জাকির হোসেন রাজুর `জ্বী হুজুর` চলচ্চিত্রে  অভিনয়ের মাধ্যমে। এছাড়া তিনি স্যাটেলাইট চ্যানেল এনটিভি আয়োজিত `সুপার হিরো সুপার হিরোইন` প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে পোড়ামন ছবির মাধ্যমে পরিচিতি পান তিনি। অভিনয় জীবন ছাড়াও তিনি ব্যক্তিগত জীবনে প্রচন্ড ফ্যাশন সচেতন। সাইমন সাদিকের ফ্যাশন এবং লাইফস্টাইল নিয়ে কথা বলেন জাগো নিউজের সাথে। সঙ্গে ছিলেন ফারিন সুমাইয়া-

সাইমনের ব্যস্ততা শুরু হয় সকাল থেকেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে ঝটপট নাস্তা সেরে ছোটেন কর্মস্থলের দিকে। কাজের ক্ষেত্রে তিনি যেকোনো কাজই গুছিয়ে করতে ভালোবাসেন। শুটিংয়ের ক্ষেত্রে আগে থেকে কস্টিউম তৈরি করে এবং স্ক্রিপ্ট পড়ে রাখেন। ছুটির দিন তিনি পছন্দ করেন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, পরিবারের সাথে সময় কাটাতে। অবসর সময়ে ঘুমাতে পছন্দ করেন। শুটিংয়ের কারণে ঘুমে প্রায়ই ব্যাঘাত ঘটে। আর অবসরে তাই এই ঘুমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা।

সাইমন সাদিক রূপচর্চা একেবারেই করেন না। তবে তিনি প্রতিদিন ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করে থাকেন। যেকোনো ঝাল ধরনের খাবার তার পছন্দের। সকালে হালকা নাস্তা, দুপুরে ভাত এবং রাতে বাসায় খাওয়া হলে ভাত আর বাইরে খাওয়া হলে হালকা খাবার খেয়ে নেন। তবে কিছু সময় পর পর তিনি খাবার খান। সকালের নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবার তিনি অল্প করে খেয়ে থাকেন।

এক্সেসরিজের ক্ষেত্রে তার পছন্দ সানগ্লাস আর ঘড়ি। ঘড়ির প্রতি তার বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। ঘড়ির ক্ষেত্রে তার পছন্দের ব্র্যান্ড র্যাডো, রোলেক্স। আর সানগ্লাসের ক্ষেত্রে যেকোনো ভালো ব্র্যান্ড। তার প্রিয় ব্যক্তি তার মা। শখের ক্রিকেট খেলা, বন্ধুদের সঙ্গে গান করা, ছবি দেখা। পছন্দের গায়ক জেমস আর পছন্দের নায়ক সালমান শাহ্। তার কাছে ফ্যাশন মানে কী তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, `ফ্যাশন হচ্ছে তা যা আপনি ক্যারি করতে পারবেন। যাতে আপনি স্বাছন্দ্যবোধ করতে পারছেন তাই ফ্যাশন`।

 

কীভাবে বোঝাবেন কতটা ভালোবাসেন

ভালোবাসা শব্দটি খুব ছোট হলেও এর ব্যপ্তি অনেক। প্রত্যকটি ভালোবাসার মানুষ চায় তার কাছের মানুষটির থেকে উজাড় করা ভালোবাসা আর বিশ্বাস। নিজের যতটুকু সামর্থ্য আছে প্রত্যকটি মানুষ চায় তার সর্বোচ্চ দিয়ে তার ভালোবাসার মানুষকে কাছে রাখতে। তবে আপনি যদি ভালোবাসার মানুষকে আপনার ভালোবাসার কথা না বলেন তবে হয়তো আপনার অনেক অনুভূতিগুলো শব্দহীন হয়ে থাকবে। কিছু ক্ষেত্রে অনেকে মনে মনে ভাবতে থাকে যে কেন ভালোবাসার কথা প্রিয় মানুষটির মুখে শুনছে না। আর এতে আপনিও মনে মনে কষ্ট পান। তাই সঙ্গীকে আপনার কার্যকলাপ দিয়ে বোঝান যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন।

ভালোবাসা প্রকাশের ভঙ্গী
ভালোবাসা প্রকাশের ধরন একেকজনের কাছে একেকরকম। কেউ ফুল হাতে প্রিয়ার হাতে হাত রেখে, আবার কেউ রাতের পর রাত জেগে কথা বলে, আবার কেউ খুদে বার্তা দিয়ে। যে যেভাবেই বলুক না কেন ভালোবাসা প্রকাশ হচ্ছে মূল বিষয়। তবে খেয়াল রাখুন যে আপনার সঙ্গী আপনার এই ভালোবাসা প্রকাশের ভঙ্গী বুঝতে পারছে কি না। তার কাছে এই প্রকাশভঙ্গী স্বাভাবিক লাগছে কি না? নাকি তা কেবলই আপনাকে খুশি করার জন্য আপনার হাতে হাত মেলাচ্ছে। আপনার ভালোলাগার সাথেসাথে তার ভালোলাগাগুলোকেও প্রাধান্য দিন। যেকোনো সারপ্রাইজ দেয়ার ক্ষেত্রে তাকে মাথায় রেখে প্ল্যান করুন।

মনযোগ দিয়ে কথা শোনা
প্রায় সময়েই ভালোবাসার মানুষের কাছে অপর পক্ষের মানুষটির একটিই আবদার থাকে। তা হচ্ছে সে যেন তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে। ভালোবাসার মানুষটির সাথে থাকলেও দেখা যায় অনেক কাজে ব্যস্ত থাকা হয়। কখনো তা ফোনে আবার কখনো তা মেইলে। কাছের মানুষটির কথা ইচ্ছে থাকলেও মনোযোগ দিয়ে শোনা হয় না। আর যাতে সৃষ্টি হয় দূরত্ব। তাই যতটুকু সময় সম্ভব হয়, তার কথা শুনুন মনযোগ দিয়ে।

পরস্পরকে সময় দিন
সময় দেওয়া একটি সম্পর্কে অনেক বড় কিছু। আপনি আপনার প্রিয় মানুষটিকে কতটুকু ভালোবাসেন তা সময়ের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। সম্পর্কে মাঝে একে অন্যকে কিছুটা সময় দেওয়া প্রয়োজন। এতে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা যেমন বোঝা যায় তেমনি তা বাড়ে কয়েকগুণ। কাছাকাছি থাকা হলে অনেক সময় একে অন্যর গুরুত্ব বোঝা যায় না। যা বোঝা যায় কেবল দূরে থাকলে। তাই সম্পর্কে মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করেই একটু দূরত্ব বাড়ান। তবে তা সময় এবং অবস্থান বুঝে। আর তারপর আবার কাছাকাছি এসে বোঝান যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন!

 

যে কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি

কুরআন এবং হাদিসে মানুষের ভালো-মন্দ বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। যা  মানুষকে অন্যায়-অনাচার থেকে হিফাজত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষ সামান্য ভুলের কারণে মারাত্মক অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়ে।

যে সব অন্যায়ের কারণে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের ময়দানে কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর (মানুষের) সঙ্গে আল্লাহ তাআলা কথা বলবেন না। এমনকি তাদের প্রতি দয়ার দৃষ্টিতেও তাকবেন না। বরং তারা কঠিন আজাবে নিপতিত হবে। আর তা হলো-

বৃদ্ধাবস্থায় ব্যভিচার
এর মানে এই নয় যে, যৌবন কালে ব্যভিচার করা দোষণীয় নয়। বরং ব্যভিচার সর্বাবস্থায়ই মারাত্মক অপরাধ। কিন্তু বৃদ্ধাবস্থায় ব্যভিচারকারীদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বনের কারণ হলো, বৃদ্ধাবস্থায় সাধারণত যৌনক্ষুধা নিবৃত থাকে এবং মৃত্যুর সময় সন্নিকটে বিধায় বৃদ্ধাবস্থায় কোনো ব্যক্তির ব্যভিচারের মতো গর্হিত কাজে কোনো ভাবেই কাম্য নয়। এ কারণেই তা সীমাহীন জঘন্য অন্যায় বলে পরিগণিত।

শাসকের মিথ্যা কথা বলা
মিথ্যা সব পাপের জননী। আর তাই মিথ্যা সবার জন্যই মারাত্মক অপরাধ। এখানে শাসকের কথা গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করার কারণ হলো, বাদশাহ বা শাসকগণতো কারো ভয়ে ভীত হওয়ার কথা নয় এবং কারো বাধ্যও নয়। ক্ষমতা ও প্রভাব থাকা সত্ত্বেও শাসকের মিথ্যা বলা সাধারণ মানুষ অপেক্ষা মারাত্মক অপরাধ। তাই সমাজের সব দায়িত্বশীলদেরকে মিথ্যা পরিহার করা জরুরি।

গরিবের অহংকার
বাদশাহ-ফকির, ধনী-গরিব, উঁচু-নীচু, ছোট-বড় সবার জন্যই অহংকার করা মারাত্মক অপরাধ। কিন্তু দরিদ্র মানুষের অহংকার করা বড়ই আশ্চর্যের বিষয়। কেননা গরিব মানুষের মধ্যে অংকারবোধ জাগ্রত হওয়ার কোনো কারণ থাকার কথা নয়। এ কারণে কোনো গরিব মানুষ যদি অহংকার করে বসে তা মারাত্মক অপরাধ।

পরিশেষে…
মানুষ যুবক হোক আর বৃদ্ধ হোক ব্যভিচার থেকে হিফাজত থাকা জরুরি। বিশেষ করে বৃদ্ধদের তা একেবারেই কাম্যনয়। আবার রাজা হোক আর প্রজা হোক মিথ্যা পরিহার করা আবশ্যক। বিশেষ করে যারা সমাজে মিথ্যার প্রচলন দূর করবে তাদের মিথ্যার আশ্রয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঠিক এমনিভাবে ধনী হোক আর গরিব হোক অহংকার থেকে মুক্ত থাকা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ব্যভিচার, মিথ্যা এবং অহংকারের মতো মারাত্মক অন্যায় থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। উল্লেখিত তিনটি বিষয় থেকে বিরত থেকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার নেক দৃষ্টি এবং দয়া লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

কোর্মা বিরিয়ানি তৈরি করবেন যেভাবে

বিরিয়ানি খেতে যারা পছন্দ করেন তাদের কাছে একটি জনপ্রিয় পদ হচ্ছে কোর্মা বিরিয়ানি। চেটেপুটে খেতে ভালোবাসলেও অনেকেই হয়তো এই খাবারটি তৈরির রেসিপি জানেন না। হঠাৎ কোনো অতিথি এলে বা ঘরোয়া পার্টিতে চাইলে রাঁধতে পারেন কোর্মা বিরিয়ানি। রইলো রেসিপি-

উপকরণ : খাসির মাংস ছোট করে কাটা ১ কেজি, বাসমতি চাল আধা কেজি, টক দই আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ ধনে গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ভাজা জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ, ছোট এলাচ ৪ টি, কিশমিশ সিকি কাপ, আলুবোখারা ৭/৮ টি, পুদিনা পাতা ২ টেবিল চামচ, ধনে পাতা ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৫/৬ টি, শাহি জিরা আধা চা-চামচ, জর্দার রং সামান্য, সিরকা ১ টেবিল চামচ, ঘি-তেল দেড় কাপ, কেওড়া জল ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো। কোর্মার মসলা (ছোট এলাচ ৬ টি, বড় এলাচ ৩ টির বিচি, লবঙ্গ ৪ টি, সাদা গোলমরিচ ৬টি ও দারুচিনি ৪/৫টা। এই মসলাগুলো চুলার পাশে রেখে মচমচে করে গুঁড়া করে নিতে হবে)।

প্রণালি : দই, আদা-রসুন বাটা, ধনে গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া ভাজা, জিরা, লবণ, সিকি কাপ তেল, ২ টেবিল চামচ ঘি,১ টেবিল চামচ কেওড়াজল ও কোর্মার মসলা অর্ধেক দিয়ে মাংস মেখে রাখুন। পাত্রের ১ কাপ তেল ও ঘি দিয়ে বেরেস্তা করে অর্ধেক তুলে নিন। বাকি অর্ধেক বেরেস্তার মধ্যে মাংস দিয়ে কোর্মার মতো রান্না করুন। নামানোর আগে বাকি অর্ধেক মসলা দিয়ে দিন।

চাল ২০ মিনিট ভিজিয়ে পানি ছেঁকে নিন। অন্য পাত্রে চালের ৪ গুণ গরম পানি করে তাতে কাঁচামরিচ ৫/৬ টি, এলাচ ৪/৫ টি, পুদিনাপাতা ২ টেবিল চামচ, ধনে পাতা ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, দারুচিনি ২/৩ টুকরা ও শাহি জিরা আধা চা-চামচ দিন। পানি ফুটে গেল ভেজানো চাল দিন। চাল আধা সেদ্ধ হলে নামিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার বিরিয়ানি রান্নার পাত্রে ১ টেবিল চামচ ঘি ছড়িয়ে দিন।

এবার কিছুটা আধা সেদ্ধ চাল ছড়িয়ে অর্ধেক পরিমাণ মাংস ঢেলে দিন। এর ওপর বেরেস্তা ও কিশমিশ ছড়িয়ে দিন। মাংসের ওপর আবার একইভাবে রান্না করা ভাত ও মাংসের স্তর সাজান। ওপরে আবার চাল দিন। এখানে ভাতের স্তর হবে তিনটি এবং মাংসের স্তর হবে দুটি। সবার ওপরে বাকি ঘি এবং দুধে ভেজানো কেওড়া ছড়িয়ে দিয়ে আলু বোখারা গুজে দিন। এবার ঢাকনা দিয়ে ২০ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

চোখ সাজাতে আইশ্যাডো

চোখের সাজে মনের কথা ফুটে ওঠে। তাইতো কতভাবে কত ঢঙে এই চোখকে ফুটিয়ে তোলা হয়। কখনো কাজলের স্পর্শে আবার কখনো বাহারি রঙের ছটায়। প্রিয় মানুষটির ছায়া নিজের চোখে দেখতে কে না পছন্দ করে। আর চোখ সাজাতে জুড়ি নেই আইশ্যাডোর। এটি চোখকে যেমন ফুটিয়ে তোলে তেমনই এর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। তবে এই আইশ্যাডো দেয়ার আছে কিছু নিয়ম। যার সাহায্য আপনার চোখকে আরো সুন্দর করে তুলতে পারেন।

চোখের আকার, রুচি, পোশাকের ধরণ ও রং, সাজের ধরন এবং আপনার ব্যক্তিত্ব আর স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী বেছে নিন শ্যাডো। তবে  সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে হালকা রং যেমন গোলাপি, হালকা নীল, সোনালি, হালকা সবুজের যেকোনো শেড। ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে চোখে মোটা করে কাজল বা স্মোকি আই সবচেয়ে মানানসই।

দিনের বেলা ব্যবহারের জন্য সংগ্রহে রাখতে পারেন বাদামি, ছাই (এশ), মভ, পিচের মতো আর্থ বা বেইজ টোনের রঙগুলো। আর রাতে ব্যবহারের জন্য অরেঞ্জ বা কমলা, বেগুনি, লাল, হলুদ, সবুজ, নীল, ডিপ ম্যাজেন্টা রঙগুলো থাকা চাই বিউটি বক্সে।

আইশ্যাডো বাছায়ের জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার গায়ের রঙের দিকে নজর রাখতে হবে। যাদের গায়ের রং ফর্সা তারা দিয়ে হালকা আর রাতে গাড় শেড ব্যবহার করুন, আর যাদের গায়ের রং শ্যামলা তারা সোনালি, সিলভার, গাঢ়, বেগুনি, বারগ্যান্ডি, বাদামি, পিচ, মভ ইত্যাদি।

চোখের আকারের সাথে সাথে আবার আইশ্যাডো লাগানোর ধরণে আসে বৈচিত্র্য। যেমন যাদের দু’চোখের দূরত্ব কম তারা নাকের কাছাকাছি থেকে চোখের ভেতরের দিকে শ্যাডো ব্যবহার করুন।

অন্যদিকে যাদের চোখের দূরত্ব বেশি, তারা চোখের ভেতরের অর্ধেক অংশজুড়ে মাঝারি থেকে গাঢ় টোনের যেকোনো রঙের শ্যাডো লাগান। ছোট চোখে হালকা রঙের আইশ্যাডোগুলো ভালো দেখায়।

শ্যাডো লাগানোর ক্ষেত্রে স্পঞ্জ বা ব্রাশ অ্যাপ্লিকেটর ব্যবহার করতে পারেন। আঙুল দিয়েও কাজ সেরে নেয়া যাবে। পছন্দমতো আইশ্যাডো নিয়ে আইল্যাশের কিনারা থেকে চোখের পাতার উপরের ভাঁজ পর্যন্ত লাগিয়ে নিন।

শ্যাডো লাগানোর ব্রাশ বা স্পঞ্জ বহুব্যবহৃত বা পুরনো হলে সেটি ব্যবহার করবেন না। এতে করে চোখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং আপনার আইশ্যাডো কাজে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

চোখের সাজের ক্ষেত্রে সময় নিয়ে সাজুন। খেয়াল রাখুন যাতে চোখের ভেতর চলে না যায়। চোখের সাজের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের পন্য ব্যবহার করলে ভালো হয়। আর অবশ্যই আপনার গায়ের রঙ এবং পোশাকের সাথে মিলিয়ে আইশ্যাডো চোখে লাগান।

 

রুমানার ত্রিমাত্রিক বইয়ের জগৎ

রুমানা আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) স্থাপত্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষে পড়ার সময় ত্রিমাত্রিক বই তৈরির কাজ শুরু করেন। রুমানা বলেন, ‘এখন সময় স্মার্টফোনের। মানুষ বই পড়তে চায় না। শিশু-কিশোরেরাও বই পড়তে চায় না। শিশুদের স্মার্টফোন থেকে বই পড়ার দিকে কীভাবে মনোযোগী করা যায়, সেই চিন্তা থেকেই আমার পপ-আপ বই তৈরি শুরু।’

নিজের উদ্যোগে, অর্থায়নে কাজ শুরু করেছেন রুমানা শারমীন। প্রথমে নিজের হাতে বই তৈরি করে বিক্রি করতেন। চাহিদা বাড়ায় এখন উৎপাদন করছেন। তাঁদের প্রতিষ্ঠান লাভজনক অবস্থায় আছে বলে জানালেন। গত কয়েক মাসে দুই হাজার কার্ডবোর্ডের উপযোগী ভার্চ্যুয়াল রিয়্যালিটি ছবি ও বই বিক্রি হয়েছে।

রুমানাদের প্রকাশিত সব বইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে রং-বেরঙের পপ-আপ। বইগুলো দেশেই তৈরি হচ্ছে দেশীয় গল্প আর দেশীয় ডিজাইনারদের হাতে। এটা একাধারে হস্তশিল্প ও প্রকাশনা সংস্থা। ২০১৫ সালের একুশে বইমেলায় শিশুতোষ গল্পের পপ-আপ বই আনার পর তাঁরা দারুণ সাড়া পান। একটি ব্যাংক থেকে ঋণও পান। উদ্যোক্তা হিসেবে এখন রুমানা বেশ পরিচিতি পেয়েছেন।

 

ঢেউয়ের বিরুদ্ধে হাল ধরেছেন নয় নারী

নদের নাম বুড়াগৌরাঙ্গ। তবে বয়োবৃদ্ধ নয়। ভাটার সময়ও তীব্র স্রোতের টান, ঢেউ আছড়ে পড়ে দুপাড়ে। জোয়ার এলে তো কথাই নেই। ঝড় কিংবা জলোচ্ছ্বাসের সময় যেন দানব হয়ে ওঠে বঙ্গোপসাগর-ঘেঁষা পটুয়াখালীর এই নদ।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নদীর রূপ যা-ই হোক না কেন, বুড়াগৌরাঙ্গ কিন্তু হার মেনেছে কয়েকজন নারীর কাছে। প্রশস্ত এই নদের ঢেউ চিরে তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছেন দ্রুতগামী জলযান, ইংরেজি ‘স্পিডবোট’ নামে সবাই যাকে চেনে। ক্ষিপ্রগতিতে স্পিডবোট চালিয়ে তাঁরা উপার্জন করছেন অর্থ, হাল ধরেছেন দারিদ্র্যের কবলে পড়ে ধুঁকতে থাকা সংসারের।
নদের স্রোতের বিরুদ্ধে এভাবে হাল ধরেছেন মাত্র নয়জন—কুলসুম বেগম, খাদিজা বেগম, নূপুর আক্তার, ফাতেমা বেগম, নীলুফার, মমতাজ, সুজাই রানী, সালেহা ও নূরজাহান। ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সের এসব নারী থাকেন পটুয়াখালীর গলাচিপার চর বিশ্বাস ও চর কাজল ইউনিয়নে। জন্ম থেকেই এই চরাঞ্চলকে ঘিরে থাকা দুরন্ত সব নদ-নদী তাঁদের চিরচেনা।
দুর্গম এ চরাঞ্চলে বাল্যবিবাহের প্রচলন আছে। মাছ ধরা আর কৃষিকাজ ছাড়া পুরুষদের অন্য কোনো কাজ নেই। বর্ষার পর কার্তিকের ধানকাটা হলে তাঁরা প্রায় কর্মহীন। এর ওপর কেউ যদি স্বামী পরিত্যক্ত হন, কিংবা কারও স্বামী যদি মারা যান, তাহলে নারীদের একপ্রকার পানিতেই পড়ে যেতে হয়। এই নয়জন নারীই এভাবে অসহায়ত্বের কবলে পড়েছিলেন।
ব্যবসায়ী আদু আকন্দ বছর কয়েক আগে মরণঘাতী ক্যানসারে ভুগে মারা যান। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন খাদিজা আক্তার। একইভাবে ফাতেমা আক্তারের স্বামী আবদুর রহমান খানের আয়-রোজগারে সংসারে অভাব-অনটন লেগেই ছিল। ওদিকে মধ্যপ্রাচ্যে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নূপুরের স্বামী দুই সন্তানের জনক শাহ আলম।
কিন্তু যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান অ্যাকশনএইডের আর্থিক সহায়তায় চরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের (পিআরসিডি) অধীনে চর বিশ্বাস ও চর কাজলে অসহায় নারীদের জন্য শুরু হয় স্পিডবোট প্রশিক্ষণ। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে অ্যাকশনএইডের অংশীদার সাউথ এশিয়ান পার্টনারশিপ (স্যাপ)। ৯ জন নারী ও ১১ জন পুরুষকে স্পিডবোট চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ছয় মাসে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন তাঁরা। বর্তমানে চার মাস ধরে বুড়াগৌরাঙ্গসহ আশপাশের নদ-নদীতে স্পিডবোট চালিয়ে আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন কুলসুম, খাদিজা, নূপুর, ফাতেমা, নীলুফাররা।
২১ নভেম্বর দুপুরে বন্যাতলী ঘাটে কথা হয় খাদিজা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এমন কু-কথা নাই যে আমারে শুনতে হয়নি। বোট যেন চালাইতে না পারি, হের লইগা আমারে নিয়া প্রভাবশালীরা সালিস বসাইছে। আমার স্বামী না থাকার সুযোগ যারা নিতে চাইছে, তারাই আবার অপবাদ দিসে।’
নূপুর অনেকটা কান্না মেশানো কণ্ঠে বলেন, ‘ভাই, আমাগো এই চরে কাম করনের সুযোগ নাই। হাতও পাততে চাই না। পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে আইসা স্পিডবোট চালানো শিখছি। অহন এই বোট চালাইতে পারলে বাচ্চা দুইডার মুখে খাওন দিতে পারমু। ভাই, খুব কষ্টে আছি।’
স্পিডবোট মাত্র একটি। চালক নয়জন নারী। বোট চালাতে মেরিন অফিস থেকে নিবন্ধন করা হয়েছে। এখন বন্যাতলী থেকে চর কাজল ঘাট পর্যন্ত চালাতে রুট পারমিটের আবেদন করা হবে। এরপরই বাণিজ্যিকভাবে স্পিডবোট চালানো শুরু হবে বলে জানান পিআরসিডির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক ভুঁইয়া ফরিদউদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন গর্ভবতী মা-সহ অসুস্থ রোগীদের দুর্গম চরাঞ্চল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেওয়া, লাশ বহনের সেবামূলক কাজ করা হয় এই স্পিডবোটের মাধ্যমে। পর্যটক, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন কার্যক্রমের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। এই টাকার একটি অংশ স্পিডবোটের নারী চালকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। বাকি অংশ একটি ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। এভাবে নতুন স্পিডবোট কেনা হবে। তবে অ্যাকশনএইড থেকে
নতুন আরও একটি অত্যাধুনিক স্পিডবোট কেনা হবে, যার আসন ১৬টি।

 

সাজাই শিশুর চুল

নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা কার না থাকে! বড়দের বেলায় কথাটা যেমন সত্য, ছোটদের বেলাতেও তাই। বিশেষ করে ছেলেদের চুলের কাটছাঁটে একটু স্টাইল যোগ করাই যায়। এই সময়ে যেহেতু নানা ধরনের অনুষ্ঠান বা দাওয়াত থাকে, শিশুর চুলের স্টাইলই বাজিমাত করবে সেখানে।

বড়দের মতো ছোটরাও চুলে নানা ধরনের কাট দিচ্ছে আজকাল। আবার স্টাইল পরিবর্তন সব সময় কাটের মধ্যে দিয়েই হতে হবে এমনটাও না। পানি, জেল বা একটা চিরুনি দিয়েই নানা স্টাইলে শিশুর চুল সেট করে নিতে পারেন।

কিছু চুলের স্টাইল বড় চুলে আবার কিছু ছোট চুলের জন্য। সে জন্য কাটের দিকেও নজর দিতে হয়। তবে শিশুদের হেয়ারস্টাইল করার আগে মনে রাখতে হবে তারা ঘোরাফেরা, খেলাধুলা, দুরন্তপনায় মেতে থাকতে ভালোবাসে।

তারা যাতে আরামবোধ করে এবং খেলাধুলা করতে স্বস্তি পায়, সেভাবে তাদের চুলের কাট দেওয়া ভালো। এতে চুল আঁচড়ে সহজে সেট করে নেওয়া যায়।

বানথাই বারবার অ্যান্ড বিউটি স্যালনের হেয়ার এক্সপার্ট কাজী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুর চুলের স্টাইল নিয়ে অনেক বাবা-মা দোটানায় ভোগেন। কেউ আরামের জন্য ছোট চুল রাখতে ভালোবাসেন। আবার কেউ বড় চুল কেটে ছোট করতে চান না। সময়ের সঙ্গে চুলের কাটে ভিন্নতা এনে শিশুকে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করেন কেউ কেউ।

বড়দের চুলের স্টাইল অনেকটা নির্ভর করে মুখের গড়নের ওপর। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে সবার মুখের গড়ন একই, তাই তাদের সব ধরনের স্টাইলেই মানায়।’

ছোট চুলে স্পাইক করতে চাইলে ওপরে সামনের দিকে এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল রাখতে হবেচুলের নানা স্টাইল
পারসোনা অ্যাডামসের ব্রাঞ্চ ইনচার্জ মাসুম বিল্লাহ খান বলেন, ‘ছোট ছেলেদের চুল কাটানোর চেয়ে আঁচড়ে সেট করে নেওয়াই ভালো। তবে যেকোনো হেয়ারস্টাইলের জন্য চুলের দৈর্ঘ্যটা গুরুত্বপূর্ণ।’.
শিশুর চুলে স্পাইক কাট রাখতে পারেন। কোনো অনুষ্ঠান বা দাওয়াতের দিন জেল দিয়ে চুল ইচ্ছেমতো সেট করে নেওয়া যাবে। স্পাইক ছোট বা বড়—যেকোনো চুলেই করা যায়। ছোট চুলে স্পাইক করতে ওপরে এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল রাখতে হবে। আর পাশে থাকবে আধা ইঞ্চি লম্বা। তবে একেবারে গোলমুখের শিশুদের স্পাইকের বদলে অন্য কাট ভালো দেখাবে।
আবার শিশু লম্বা স্পাইক কাটের মধ্যে ব্যাকব্রাশ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে পেছনে ছোট রেখে সামনে আড়াই ইঞ্চি বড় রাখতে হবে।
চুল চারদিকে ছোট করে সামনে এক গোছা ফেলে রাখা যায়আবার স্পাইক কাটে মাথার সব দিকের চুলই ছোট করে কেটে জেল ব্যবহার করে স্টাইল বজায় রাখা যায়।
স্পাইক ছাড়াও কোথাও যাওয়ার আগে কিছুটা বড় করে রাখা চুল সামনের দিকে ছড়িয়ে দিলেও ভালো দেখাবে। এর জন্য সামনে আড়াই ইঞ্চি বড় রাখতে হবে। যেসব ছেলে-বাচ্চার চুল কম, তাদের চুল বড় না করে সাইডে এবং ওপরে ছোট করে কেটে চিরুনি দিয়ে এক পাশে দিয়ে সেট করতে পারেন। আবার যাদের পেছনের চুল পাতলা, তাদের চুল চারদিকে ছোট করে সামনে এক গোছা ফেলে রাখা যায়। এ জন্য সামনে চুল দরকার হবে আড়াই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা চুল। মাঝে মাঝে শিশুদের একটু রকিং ভাব আনার জন্য মাঝারি লম্বা চুল এলোমেলো স্টাইলে হেয়ার স্প্রে দিয়ে সেট করে নিতে পারেন।
একটু ভিন্নতা আনতে সেলুন থেকে এক পাশটা সম্পূর্ণ ট্রিম করে আরেক পাশে চুল ফেলে দিতে পারেন। এ ছাড়া পাশের চুল ছোট করে মাঝের চুল ড্রায়ার দিয়ে ফুলিয়ে সামনে একটু জেল লাগিয়ে রাখলেও ভালো দেখাবে। এ জন্য পাশের চুল ছোট রেখে ওপরে দুই ইঞ্চি চুল রাখতে হবে। সেলুন থেকে শিশুর চুল এমনভাবে কাটিয়ে আনতে পারেন, যাতে করে সেটা নানা স্টাইলে সেট করে নেওয়া যায়। তাহলে একেক সময় একেকভাবে রাখা যাবে।

 

কিমা স্যান্ডউইচ তৈরি করবেন যেভাবে

স্যান্ডউইচ খেতে ভালোবাসেন অনেকেই। শিশুদের টিফিনে কিংবা ঘরোয়া আড্ডায় নাস্তা হিসেবে স্যান্ডউইচের কদর রয়েছে বেশ। তবে রেস্টুরেন্ট থেকে কিনে না এনে ঘরেই তৈরি করতে পারেন এই মজাদার খাবারটি। আজ রইলো কিমা স্যান্ডউইচ তৈরির রেসিপি-

উপকরণ : মাংসের কিমা – ২০০ গ্রাম, ছোটো সাইজের পেঁয়াজ – ২টি, আদা বাটা – ১ চা চামচ, রসুন বাটা – ১ চা চামচ, মরিচের গুঁড়া – ১ চা চামচ, সামান্য হলুদ, তেল – আড়াই চামচ, ধনেপাতা কুচানো, লবণ – আন্দাজমতো, মাখন – ৮ চা চামচ, পাউরুটি – ৮ পিস।

প্রণালি : প্রথমে মাখন, পাউরুটি, ধনেপাতা বাদে বাকি সব উপকরণ ভালো করে তেলে কষিয়ে নিতে হবে। এবার এতে সামান্য পানি দিতে হবে। ভালো করে কিমা সিদ্ধ হলে পানি কড়াইতেই শুকিয়ে নেবেন। এবার তাতে ধনে পাতা মিশিয়ে দিন। ঠান্ডা হতে দিন। পাউরুটির ওপরে মাখন লাগান। একটার ওপরে পুরটা দিয়ে আরেকটা পাউরুটির স্লাইস চাপা দিন। পুর দেওয়া হলে ছুরি দিয়ে তিনকোণা করে কেটে নিন।

 

শীতের সকালে অলসতা কাটাবেন যেভাবে

শীতের সকাল মানেই ধোয়া ওঠা গরম চায়ের কাপ কিংবা গরম গরম পিঠা। কখনো সকালের উষ্ণ মিষ্টি রোদ আবার কখনো লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুম। আর এই ঘুম আপনাকে কখনো কখনো পৌঁছতে দেরি করিয়ে দেয় আপনার কর্মস্থলে। তাছাড়া যাদের সকালে স্কুল কিংবা ভার্সিটি থাকে তাদের এই শীতের সকালের জড়তা কাটাতে বেশ বেগ পেতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় সকালে বিছানার পাশে রাখা অ্যালার্ম ক্লক আপনি নিজে নিজে বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ছেন। যারা উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিকের রোগী তাদের সকালে হাঁটতে হয় কিংবা ব্যায়ামের মাধ্যমে রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। যা এই শীতের সকাল আপনাকে করতে দেয় না। তবে কিছু কাজ আপনাকে এই শীতের সকালের জড়তা কাটাতে সাহায্য করবে।

গরম পানি দিয়ে গোসল
শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠলেও অনেকেরই সেই ঘুমঘুম ভাবটা থেকে যায়। যার ফলে দেখা যায় ঠিকমতো কাজে মন দিতে পারছেন না যেমন ঠিক তেমনই মেজাজ ও খারাপ হয়ে আছে। তাছাড়া শীতের সকালে জড়তা একটা ভাব থেকে যায় যা কাটতে চায় না। তাই এই জড়তা কাটাতে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই। দেখবেন আপনি যেমন ফ্রেশ অনুভব করছেন ঠিক তেমনি আপনার ভেতর প্রাণবন্ত ভাব লাগছে। যা আপনাকে এই জড়তাভাব কাটিয়ে কাজে মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।

কফি বা চা
শীতের সকাল মানেই আলসেমিতে ভরপুর। এই আলসেমি আর জড়তা ভরা সকালকে চাঙ্গা করতে আপনার সঙ্গী হতে পারে এক মগ গরম কফি কিংবা এক কাপ গরম চা। যা আপনাকে সারা দিনের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে। এবং আপনি জড়তা কাটিয়ে পুনরায় কাজে ফিরে যাওয়ার প্রাণশক্তি পাবেন।

স্বাস্থ্যকর নাস্তা
সকালের নাস্তায় গরম দুধ, মধু, মাখন এই সব রাখার চেষ্টা করুন। এই সমস্ত খাবার আপনাকে এই শীতের জড়তা কাটাতে সাহায্য করবে। সাথে সাথে মৌসুমী ফল রাখতে পারেন যা আপনার এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি করে আপনাকে শীতের সকালের জড়তা এড়াতে সাহায্য করবে।

ব্যায়াম
ব্যায়াম কেবল আপনাকে রোগা করে না। বরং এটি আপনার শরীরে রক্ত চলাচলের মাত্রা ঠিক রেখে আপনাকে কাজে মনোযোগী করে তোলে। এর পাশাপাশি আপনি শীতের সকালে যে জড়তা অনুভব করেন তা নিমিষেই কেটে যাবে এই ব্যায়ামের মাধ্যমে। তাই শীতের সকালকে উপভোগ করতে আর জড়তা কাটাতে ব্যায়াম করুন।

 

শীত তাড়ানোর যন্ত্র

হিম শীতল বাতাসের কাঁপন জানান দিচ্ছে শীতের উপস্থিতি। শীতের বেশি কাতর হয়ে পড়েন বয়স্ক এবং শিশুরা। শীতের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম পানি। পানি এতটাই ঠান্ডা থাকে যে এর থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই যেন নিজেকে বাঁচানো যায়। তাছাড়া যাদের এ্যাজমা কিংবা ঠান্ডাজনিত সমস্যা আছে তাদের জন্য শীতের সময়টা কাটে কষ্টে।

যাদের বাতের ব্যথাজনিত সমস্যা আছে তাদের দেখা যায় দিনের প্রায় অর্থেক সময়টা পার করতে হয় লেপের ভেতর নয়তো কম্বল জড়িয়ে। তাদের এই সমস্যা থেকে রক্ষা করতে পারে রুম হিটার। এটি ঘরকে চারিদিক থেকে ধীরে ধীরে গরম করে ফেলে। আর এর উষ্ণতা থাকে লম্বা একটা সময়জুড়ে। রুম হিটার বহনে সহজ তাই দেখা যায় ঘরের একটি কোনায় থেকেই এটি সারা ঘরকে নিমিষেই গরম করে ফেলছে।

পানি ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবন কল্পনার বাইরে। আর এই শীতের সময় আপনার কাজকে কিছুটা সহজ করতে পারে গিজার। শীতের প্রকোপ কমাতে গিজারের বিকল্প নেই। টয়লেটের ফলস ছাদে গিজার বসানো হয়ে থাকে। গোসল কিংবা যাদের ঠান্ডা পানিতে সমস্যা তারা পানি ব্যবহারের আগে ১০ মিনিট গিজার চালিয়ে রাখুন। গিজার চালু করার পর পানি প্রয়োজন মতো গরম হলে গিজার আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যাবে।

শীতের সময়ের আরেকটি সঙ্গী হচ্ছে ইলেকট্রিক কেটলি। এই ইলেকট্রিক কেটলির পানি ধারণক্ষমতা থেকে চার থেকে দশ লিটার পর্যন্ত। আর এই ইলেকট্রিক কেটলির জন্য আলাদা বৈদুত্যিক লাইন ব্যবহার করা ভালো।

দরদাম
লোকাল  গিজার  ৪৫  লিটির  ৩  হাজার  ৫০০ টাকা,  ৬৫ লিটার  ৩  হাজার  ৮০০  টাকা,  ৯০  লিটার  ৫  হাজার  ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।, কোরিয়ান হুন্দাই ৯ হাজার টাকা, সেনবো তুর্কি ১২ হাজার টাকায় কিনতে পারবেন।  এছাড়া বিভিন্ন মডেলের হিটারের মধ্যে হিটাচির হিটার পাবেন দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে। নোভা দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকায়। এ ছাড়া মিয়াকো এবং নোভিনার হিটার ১৫০০ থেকে চার হাজার ৫০০ টাকার মধ্যেই পাবেন। সঙ্গে এক বছরের ওয়ারেন্টি। ইলেকট্রিক কেটলির দাম পরবে ৯০০ থেকে ২০০০ এর  মধ্যে।

কোথায় পাবেন
শীতে ব্যবহার করা এসব যন্ত্রপাতি পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা শহরের বসুন্ধরা সিটি শপিং মল (লেভেল-১), মিরপুর ১০, এলিফ্যান্ট রোডের স্যানিটারি কিংবা টাইলসের শোরুমগুলোতে, মৌচাক মার্কেট, নিউমার্কেট, বিভিন্ন ইলেকট্রনিকসের ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোতে।

 

শীতকাল ইবাদতের জন্য বসন্তকাল

হেমন্তকাল পেরিয়ে শুরু হয়েছে শীতকাল। শীতের আবরনে আচ্ছাদিত হচ্ছে প্রকৃতি। আল্লাহ তাআলা মানুষের কল্যাণেই প্রকৃতির এ পরিবর্তণ ঘটিয়ে থাকেন। যাতে রয়েছে আল্লাহ তাআলার কুদরতের নির্দশন।

আল্লাহ তাআলা বান্দার উপকারেই দুনিয়ার সব উপকরণ সৃষ্টি করেছেন। চন্দ্র-সূর্য, আলো-বাতাস এমনকি রাত, দিন, ঋতু এবং কালের সৃষ্টিও বান্দার কল্যাণে করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ দিন ও রাত্রির পরিবর্তন ঘটান। এতে অর্ন্তদৃষ্টি-সম্পন্নগণের জন্যে চিন্তার উপকরণ রয়েছে।’ (সুরা নূর : আয়াত ৪৪)

বাংলাদেশ ৬ ঋতুর দেশ বলা হলেও এদেশে প্রায় ৩ থেকে চার মাসব্যাপী শীতের আবহ থাকে। তবে দিন দিন শীতকালের স্থায়ীত্ব হ্রাস পাচ্ছে। শীতকাল মুমিন বান্দার ইবাদত-বন্দেগির জন্য বসন্তকাল। তা মুমিন বান্দার জন্য গণীমত স্বরূপও বটে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, শীতকাল মুমিনের জন্য গণীমতস্বরূপ। শীতকালীন রাত লম্বা হয়। তাতে মুমিন বান্দা (রাত জেগে) ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করতে পারে। আর দিন ছোট হয়; তাতে মুমিন বান্দা রোজা পালন করতে পারে।’  শীতের রাতে ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি দিনের বেলা রোজা রাখা সহজ হয়।

বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মাতে মুহাম্মদিকে উদ্দেশ্য করে নসিহত স্বরূপ আরো বলেছেন, ‘শীতকালীন রাত লম্বা হয়, ঘুমিয়ে ইহাকে ছোট কর না। এবং দিন আলোকিত সুতরাং ইহাকে পাপ কার্যের দ্বারা অন্ধকার কর না।’

শীতকালে দিন ছোট হওয়ায় রোজা পালন করা সহজ। আবার রাত দীর্ঘ হওয়ায় নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াতসহ দীর্ঘ সময় ইবাদত-বন্দেগি করে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় ঘুমানো যায়। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহ তাআলার নিয়ামত।

সুতরাং আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য যে সব ঋতু দিয়েছেন, তার ওপর সন্তুষ্ট থাকা, সবর করা এবং নিআমাত তথা গণীমত মনে করে তা গ্রহণ করা অনেক কল্যাণকর।

পরিশেষে…
যেহেতু মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়, সেহেতু শীতকালের দীর্ঘ রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগি এবং দিনের স্বল্প সময়ে রোজা আদায় করা প্রত্যেক ঈমানদারের জন্য আল্লাহ রহমতও বটে।

আল্লাহ তাআলা এ শীতকালকে রহমত হিসেবে গ্রহণ করে ইবাদত-বন্দেগি ও রোজা পালনের জন্য মুসলিম উম্মাহকে তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

কুশনে সাজুক ঘর

ঘরের সাজের বেলায় সবাই চায় তার ঘরকে একটু আলাদা ভাবে সাজাতে। কিছুটা রঙের ছোঁয়াতে কিছুটা আবার শিল্পীর তুলিতে। কখনো বাহারি আলোর আভা দিয়ে সাজানো হয় ঘর। আবার কখনো শোপিস দিয়ে সাজানো থাকে ঘরের এ কোণ সেই কোণ। তবে এসব ছাড়াও আপনার ঘরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে পারে আরো একটি জিনিস। আর তা হচ্ছে কুশন। কুশনের কথা শুনলেই মাথায় যা প্রথমে আসে তা হচ্ছে বিছানার কথা। কিন্তু কুশন এখন কেবল বিছানাতেই আটকে নেই। এটি ব্যবহার হচ্ছে ঘর সাজাতেও। সোফা থেকে শুরু করে ডিভান সব জায়গাতে আছে এই কুশন। হেলান দিয়ে আরাম করে বসার ক্ষেত্রে কুশনের জুড়ি নেই।

কুশন আপনার শোবার ঘর ছাড়া থাকতে পারে বসার ঘরে। ড্রয়িং রুমে কুশন সোফা থেকে কিছুটা ছোট রাখার চেষ্টা করুন। এটি দেখতে সুন্দর লাগবে। দেয়ালের কালারের সাথে মিলিয়ে আপনি কুশনের রঙ নির্বাচন করতে পারেন। এই কুশনে থাকতে পারে এর পাশের অংশে পুঁতি বা ছোট পাথর বসানো কিংবা ঝুলানো নানা রঙের রেশমি কাপড়। এতে থাকতে পারে নানা ডিজাইন।

বড়দের ঘরের ক্ষেত্রে হালকা সবুজ, খয়েরি, বাদামি রঙ নির্বাচন করতে পারেন। এর পাশাপাশি সবুজের আভা ঘরে আনতে সবুজ রঙের কুশন ঘরে রাখতে পারেন। ছোটদের ক্ষেত্রে তাতে থাকতে পারে কার্টুন চরিত্র। কিংবা পুরো কুশনটিই হতে পারে কখনো মিকিমাউস আবার কখনো টম আবার জেরি। কখনো ফলের আকৃতি আবার কখনো হতে পারে টমেটো কিংবা পশুর ন্যায়। যা আপনার শিশুকে আনন্দ দেবে।

ঘরের কোণে থাকা ডিভানেও আপনি কুশন পিলো রাখতে পারেন। হেলান দিয়ে যাতে আরামে বসা যায় তার জন্য। এক্ষেত্রে কেনার সময় কাপড়ের দিকে লক্ষ রাখুন। আর বিছানাতেও রাখতে পারেন কুশুন। নানা রঙের কুশন আপনার ঘরকে উপস্থাপন করবে নান্দনিকতার সাথে।

 

খাবেন নাকি এফডিসির কালাভুনা?

শাকিব খান দুপুরে কী খান? কালাভুনা? প্রশ্নটি করা হলো সচীনকে। না, খেলোয়াড় শচীন নন, বাবুর্চি সচীনকে। এই সচীন রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) বিভিন্ন শুটিং ফ্লোর ও স্পটে খাবার সরবরাহ করেন। খানিক আগে তাঁর একটা ভিজিটিং কার্ড দিয়েছেন। নাম-ঠিকানার মাঝে সেখানে লেখা, ‘এখানে নাটক, টেলিফিল্ম, বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্রসহ সকল প্রকার অর্ডারের খাবার সরবরাহ করা হয়’।
শাকিবের বেশি পছন্দ হলুদ ছাড়া দেশি মুরগি রান্না এবং চিংড়ি ও পাবদা মাছ। তবে এখন আর তিনি এখানকার খাবার খান না। বাড়ি থেকেই নাকি খাবার আসে। বলেন সচীন।
শুধু শাকিবই নন, সচীনের সব তারকার পছন্দের খাবারের তালিকাই মুখস্থ। শুধু বলে দিলেই হয় আজ শুটিং স্পটে কোন তারকা আছেন! ঠিকঠাক পছন্দের খাবার গিয়ে হাজির হয় ওই তারকার পাতে।
এসেছি ‘এফডিসির খাবার’ বলে যে খাবার খান রুপালি পর্দার মানুষেরা, তার খোঁজ করতে। কারওয়ান বাজার রেলগেট পার হয়ে এফডিসির আগে যেসব গাড়ির গ্যারেজ আছে, সেগুলোর ভেতর দিয়ে একটু এগিয়ে গেলেই চোখে পড়ে তিনটি হোটেল। এখান থেকেই খাবার যায় এফডিসিসহ বিভিন্ন শুটিং স্পটে। ৫ ডিসেম্বর বিকেলে কথা হচ্ছিল এখানকার হোটেল মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে। তবে সব কথা ছাপিয়ে সবার আগে চলে এল বিখ্যাত সেই ‘গরুর মাংসের কালাভুনা’ প্রসঙ্গ।
সচীন বলেন, ‘১৮ বছর ধরে এফডিসিতে খাবার সাপ্লাই দিই। এর মধ্যে সবার পছন্দ ওই কালাভুনাই।’ সাধারণ গরুর মাংসকে কালাভুনায় রূপ দেওয়ার রহস্যটা কী?
‘কিছুই না। যেভাবে গরুর মাংস রান্না করা হয়, সেভাবেই রান্না করি আমরা। তবে মাটির চুলায় রান্না হয় বলেই সম্ভবত মাংসগুলো দ্রুত কালো হয়ে যায়।’ কিন্তু চট্টগ্রামের বিখ্যাত কালাভুনার সঙ্গে এর বেশ পার্থক্য রয়েছে বলে জানালেন পাশেই বসা আরেক খাবার সরবরাহকারী আবু সালেহ মুনশি। মসলা দেওয়ার মতো করে তিনি যোগ করলেন আরও এক তথ্য। ‘এটা বাবুর্চির একটা কেরামতি, সব কেরামতি কি আর কওন যায়?’
চলচ্চিত্রের বেশির ভাগ তারকাই কালাভুনা পছন্দ করেন। তালিকা করলে সেটা বেশ লম্বাই হবে। সচীন বলেন, ‘এমন কোনো তারকা নেই, যিনি কালাভুনা পছন্দ করেন না। তবে শরীর ঠিক রাখতে একটু কম খান, এই যা।’
এফডিসির লোক তো বটেই, বিশেষ কেরামতির এই কালাভুনার স্বাদ যে কেউ নিতে পারবেন। যেকোনো দিন দুপুরে কারওয়ান বাজার রেলগেটের কাছে এসে ‘এফডিসির খাবার কোথায় রান্না হয়’ বললেই দেখিয়ে দেবে স্থানীয় যে কেউ। তবে আসতে হবে শুধু দুপুরে। সকাল আর সন্ধ্যায় বন্ধ থাকে এই হোটেল। শুটিং স্পটের রাতের খাবারের অর্ডার থাকলেই খাবার রান্না করা হয় এখানে।
এখানে কালাভুনা, মুরগি, মাছের যেকোনো একটি এবং তিন পদের ভর্তা-ভাজি, পাতলা ডাল, ভাতসহ প্যাকেজ পড়বে ১০০ টাকা। একসঙ্গে বেশি অর্ডার হলে দামটা কমে আসে। তবে বাড়তি কিছু খেতে চাইলে আগাম অর্ডার দিতে হয়।
খাবারের এই তিনটি হোটেলই বেশ জমজমাট। ঢাকাসহ বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় খাবার সরবরাহে এগুলোর বেশ সুনাম আছে। এখানকার ভাই ভাই ক্যাটারিংয়ের (পরিচিতি পেয়েছে কালুর হোটেল নামে) ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বললেন, ‘সব সময়ই ঢাকার বাইরে আমাদের চার-পাঁচটা দল থাকে, যারা ওখানেই রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থা করে।’
ঢাকার মধ্যে বা বাইরে খাবারের দাম একই। শুধু পরিবহনের খরচটাই বাড়তি দিতে হবে। কথা শেষ করে ফেরার সময়ই অ্যালুমিনিয়ামের কলস, ডেকচি, টিফিন বাটিসহ খাবার বহনের বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে ফিরছিলেন কালুর হোটেলের কর্মী রায়হান মিয়া।
তিনি বলেন, শুধু এখানেই নয়, শুটিং স্পটে খাবার সরবরাহের জন্য বেগুনবাড়ী, তেজগাঁও এবং উত্তরার শুটিং বাড়ির আশপাশে বেশ কিছু খাবার সরবরাহকারী রয়েছেন।
তাঁর কথায় বোঝা গেল, যেখানে শুটিং থাকে, সেখানেই পৌঁছে যায় তাঁদের খাবার। চাইলে সেখানে থাকে সবার পছন্দের কালাভুনাও।

 

শীতে যা খেলে পাবেন ঝকমকে মুখ

শীতকালে অনেকের মুখের ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। ত্বক সতেজ করতে অনেকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন। তবে ত্বকে সজীবতার জন্য ভেতর থেকে শক্তি প্রয়োজন। শীতের মৌসুমে কিছু খাবার আছে, যা খেলে ত্বক ঝকমকে হয়ে উঠবে। জেনে নিন প্রাণবন্ত ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় কয়েকটি খাবারের নাম।

কমলালেবু: শীতকালে লেবুজাতীয় ফল ত্বকের জন্য দারুণ কার্যকর। এর মধ্যে কমলালেবু মুখের ত্বকের জন্য বেশি উপকারী। এতে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। ভিটামিন সি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।

গাজর: সুন্দর ত্বকের জন্যও গাজর খেতে পারেন। এটি আপনার ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করবে। এর ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করবে। সেই সঙ্গে ভিটামিন এ ত্বকের অযাচিত ভাঁজ পড়া, কালো দাগ দূর করে।

অ্যাভোক্যাডো: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকায় অ্যাভোক্যাডো আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।


তৈলাক্ত মাছ:
স্যামন, টুনা, সার্ডিনের মতো সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমানে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আছে। রুক্ষ, শুষ্ক ত্বকে উজ্জ্বলতা আনতে এটি সাহায্য করে।


অলিভ ওয়েল:
প্রতিদিন ২ চা চামচ পরিমাণ অলিভ ওয়েল গ্রহণ করলে ৩১ শতাংশ ক্ষেত্রে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে। অলিভ ওয়েলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে সজীব রাখে।


টমেটো:
ত্বকের যত্নে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান টমেটো। যারা প্রতিদিন পাঁচ চা চামচ পরিমাণ টমেটো স্যুপ খায় এবং সঙ্গে এক চামচ করে অলিভ ওয়েল পান করে তাদের ত্বক অন্যদের তুলনায় বেশি সজীব থাকে।

গ্রিন টি: গ্রিন টি খুবই উপকারী। ঠান্ডা লাগার হাত থেকেও আমাদের রক্ষা করে গ্রিন টি। যারা দৈনিক গ্রিন টি পান করেন তাদের ত্বক বেশি মসৃণ ও নমনীয় হয়। এ ছাড়াও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা পায়। গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকে রক্তের প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বক সুস্থ রাখে।


তথ্যসূত্র: জিনিউজ।

 

দুধের পাতিল কোলে ফিরে গেলেন গীতা

গীতা রানীর কোলের ওপর দুধের পাতিল। যে রিকশায় এসেছিলেন, সেই রিকশাতেই তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন ব্যবসায়ী। চায়ের দোকানে দুধ দিতে এসেছিলেন। কিন্তু দোকানে চুলা জ্বালাতে পারলেন না।

পবার নওহাটা থেকে মুলা নিয়ে এসেছিলেন ব্যবসায়ী গোলাম রসুল। সকাল নয়টা বাজলেও তিনি বস্তার মুখ খুলতে পারেননি। দুপুর ১২টা বাজার অপেক্ষায় বসে রয়েছেন। সকালে রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার এলাকায় গিয়ে হরতালের এই চিত্র দেখা যায়।

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের ডাকে রাজশাহী নগরে অর্ধদিবস হরতাল চলছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বাড়ানো হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিলসহ চার দফা দাবিতে এই হরতাল ডাকা হয়েছে।

সকালে রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দু-একটা রিকশা ও অটোরিকশা চললেও নগরের আরডিএ মার্কেটের সামনে দিয়ে ব্যবসায়ীরা কোনো রিকশা পার হতে দিচ্ছেন না। মুলার ব্যবসায়ী গোলাম রসুল বলেন, ‘যে দলেরই হরতাল হোক মাস্টারপাড়ার এই রাস্তায় পাইকারি সবজি বিক্রি কোনো দিন বন্ধ থাকতে দেখিনি।’ এ জন্যই মুলা নিয়ে এসেছিলেন। এই প্রথম দেখলেন এই সড়ক ফাঁকা পড়ে রয়েছে।
রাজশাহী নগরের আরডিএ মার্কেটের নির্মাণশ্রমিক এরফান আলী সকাল থেকে সাহেব বাজার কাঁচাবাজারের গেটে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো হরতালেই কাঁচাবাজার বন্ধ থাকতে দেখিনি। এ কোন হরতাল যে কাঁচাবাজারের গেটে তালা লাগাইয়া দিছে।’ সেখানেই একজন পিকেটার দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বললেন, ‘চাচা, ১২টার পরে আসেন।’
নগরের ষষ্ঠীতলা এলাকায় থাকেন রাজশাহী কলেজের ছাত্র সবুজ সরকার। তিনি বলেন, সাহেব বাজারের কাঁচাবাজার থেকে ফিরে গিয়ে নিউমার্কেটের কাছে অল্প করে খোলা একটা দোকান থেকে বেশি দামে সবজি কিনেছেন।
সংগ্রাম পরিষদের অন্য দাবিগুলো হলো—অস্বাভাবিক হারে বর্ধিত ট্রেড লাইসেন্স ফি বাতিল, আরোপিত সাইনবোর্ড ফি প্রত্যাহার এবং আরোপিত ভ্যাট সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা।

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক এনামুল হককে সকাল নয়টার দিকে নগরের সাহেব বাজার এলাকায় হরতালে পিকেটিং করতে দেখা গেছে। তিনি বললেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন বাসাবাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে নগরবাসীর জন্য নতুন বিপদ ডেকে এনেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০-১২ গুণেরও বেশি এই ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। এতে নগরের বাসাবাড়ির মালিকেরাই শুধু নন, ভাড়া বাড়ানোর আশঙ্কায় ভাড়াটেরাও হুমকির মুখে পড়েছেন।
অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ও ওষুধের দোকান হরতালের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু অটোরিকশা রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে। রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটে বাস চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের এই হরতালে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ, মহানগর মেস মালিক সমিতি, হেরিটেজ রাজশাহী, আরডিএ মালিক সমিতি, নদী বাঁচাও আন্দোলনসহ আটটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন সমর্থন জানিয়েছে।

 

রাগ দমনে বিশ্বনবির উপদেশ

ক্রোধ বা রাগ মানুষের জন্য বহু অনিষ্টের কারণ। রাগের ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হয় আবার এ রাগই মানুষকে জাহান্নামের ইন্ধনে পরিণত করে দেয়। রাগ এমন এক জিনিস; যা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এ জন্য রাগ বা ক্রোধ নিয়ন্ত্রণকারীকে হাদিসে বীর পুরুষ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ওই ব্যক্তি বীর পুরুষ নয় যে অন্যকে ধরাশায়ী করে; বরং সেই প্রকৃত বীর যে রাগ বা ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)

এ রাগের ফলে মানুষ অনেক নির্দয় ও অত্যাচারমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে যার জন্য লজ্জিত হতে হয় আবার ক্ষেত্র বিশেষ অনেক কঠিন খেসারত দিতে হয়। তাই মানুষের উচিত কোনো অবস্থাতেই রাগ বা ক্রোধ প্রকাশ না করা।

মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় একজন আরেকজনকে ক্ষমা করে দেয়া সহজ ব্যাপার; কিন্তু রাগের সময় ক্ষমা করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। প্রকৃত মুমিন যারা তারা রাগের সময়ও অন্যকে ক্ষমা করে দেয়। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের প্রশংসায় বলেন, ‘এবং যখন তারা ক্রোধান্বিত হয় তখনও তারা ক্ষমা করে দেয়।’ (সুরা শুরা : আয়াত ৩৭)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে রাগ থেকে নিজেদের হিফাজত করার ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছেন। বর্তমান সময়ে চিকিৎসক ও আল্লাহওয়ালা ব্যক্তিগণ যে উপদেশগুলো মানুষকে দিয়ে থাকেন, তার মধ্যে রাগ থেকে নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা অন্যতম। রাগের কারণে মানুষের দ্বারা অত্যাচার থেকে শুরু করে অধিক উত্তেজিত হওয়ার ফলে জীবনহানির সম্মুখীন হয়।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ওসিয়ত (উপদেশ) করুন। তিনি বললেন, রাগ করবে না। লোকটি বারবার তার কথাটি বলতে থাকলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও একই জবাব দিলেন এবং বললেন রাগ করবে না।’ (বুখারি, মিশকাত)

রাগ বা ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকতে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, রাগ বো ক্রোধ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। আর শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুনকে পানি দ্বারা ঠাণ্ডা বা নিভানো যায়। যদি কেউ রাগ বা ক্রোধান্বিত হয়; তবে তার উচিত অজু করে নেয়া। (আবু দাউদ, মিশকাত)

অন্য হাদিসে হজরত আবু যর গিফারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যদি দাঁড়ানো অবস্থায় কেউ রাগ বা ক্রোধান্বিত হয়, তবে সে যেন বসে যায়। এতেও যদি তা প্রশমিত না হয় তবে সে যেন শুয়ে পড়ে। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি)

পরিশেষে…
সুস্থ ও সুন্দর জীবন গঠনে দুনিয়া ও পরকালের শান্তি ও কল্যাণ লাভে সর্বাবস্থায় রাগ বা ক্রোধ থেকে নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। অযথা রাগের কারণে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়।

রাগের যাবতীয় অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকার জন্য বিশ্বনবির ছোট্ট একটি হাদিসই যথেষ্ট। আর তা হলো- ‘রাগ মানুষের ঈমানকে নষ্ট করে দেয় যেমনিভাবে তিক্ত ফল মধুকে নষ্ট করে দেয়।’ (বাইহাকি, মিশকাত)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রাগ বা ক্রোধের অনিষ্ট থেকে হিফাজত করুন। সুস্বাস্থ্য ও ‍সুন্দর জীবন গঠন এবং ঈমান রক্ষায় আত্মনিয়োগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

স্বামী-স্ত্রীর মিলনের সময় দোয়া পাঠের ফজিলত

স্বামী যখন স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করার ইচ্ছা পোষণ করে, তখন তার জন্য হাদিসের শেখানো দোয়া পড়া সুন্নত। হাদিসে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রী সহবাসের সময় এ দোয়া পড়তে বলেছেন, ‘বিসমিল্লাহ্‌। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও  জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা। অর্থাৎ আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ, আমাদের শয়তান থেকে বাঁচান এবং আমাদের যদি কোনো সন্তান দান করেন, তাকেও শয়তান থেকে বাঁচান।’ (বুখারি ও মুসলিম)

দোয়া পড়ার ফজিলত
>> হজরত ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যদি তোমাদের কেউ স্ত্রী সহবাসের সময় ‘বিসমিল্লাহ্‌। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও  জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা’ বলে এবং তাদের ভাগ্যে সন্তান নির্ধারণ করা হয়, তবে শয়তান কখনো তার ক্ষতি করবে না।’
>> বুখারির বর্ণনায় রয়েছে, ‘শয়তান তার ক্ষতি করবে না, এবং তার উপর শয়তানকে প্রভাব বিস্তার করতে দেয়া হবে না।

এ বর্ণনার ব্যাখ্যায় কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়-

>> কেউ বলেছেন,‘ যে ব্যক্তি স্ত্রী সহবাসের দোয়া  পড়বে, ওই মিলনে সন্তান হলে সে সন্তানটি নেককারদের অন্তর্ভুক্ত হবে, যার উপর শয়তানের কর্তৃত্ব থাকবে না।

>> অনেকে বলেছেন, স্ত্রী সহবাসের সময় দোয়া পড়লে এবং ওই মিলনে সন্তান হলে শয়তান তাকে (সে সন্তানকে) পরাস্ত করতে পারবে না, অথবা শয়তান তাকে কুফরির মাধ্যমে গোমরাহ করতে পারবে না, অথবা তার জন্মের সময় পিতার সঙ্গী হতে পারবে না যখন সে তার মায়ের সাথে সহবাস করে।

>> এ প্রসঙ্গে কাজি ইয়াজ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, শয়তান তাকে পরাস্ত করতে পারবে না। কেউ বলেছেন : জন্মের সময়, অন্যান্য সন্তানের বিপরীতে,  শয়তান তাকে খোঁচা দেবে না। তিনি বলেন : তবে সকল ক্ষতি, শয়তানি ওয়াসওয়াসা ও পথভ্রষ্টতা থেকে সে সুরক্ষা পাবে এ অর্থ কেউ করেন নি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে স্ত্রী সহবাসের দোয়া পড়ে তার ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। সৎ ও নেক সন্তান দান করুন। আমিন।

 

সফল অর্থব্যবস্থাপনার জন্য গড়ে তুলুন এই ৩টি অভ্যাস

সফল ব্যবসায়ী হতে হলে অর্থের হিসেবটাও সফলভাবে রাখতে হবে আপনাকে। তাই না? অর্থ ব্যবস্থাপনা একটি কঠিন দক্ষতার বিষয়। আপনি যখন একজন উদ্যোক্তা তখন আপনাকে সামলাতে হবে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি দিক। সকল প্রয়োজন তখনই পূরুণ করা সহজ হবে যখন আপনার হাতে থাকবে অর্থ। যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই একমাত্র এটি করা সম্ভব। সফলতার সূত্র লুকিয়ে আছে এখানেই।

 

প্রতিষ্ঠানের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার করতে এবং অর্থ সমাগম বাড়াতে গড়ে তুলুন এই ৩টি অভ্যাস-

 

সঞ্চয় মানসিকতা
সুস্থ আর্থিক জীবনযাপনের জন্য অর্থ সঞ্চয় করা খুবই জরুরি। এটি যেমন আপনার ব্যক্তিজীবনের জন্য সত্য তেমনি সত্য আপনার ব্যবসার জন্যেও। নতুন ব্যবসার শুরুতে হয়ত আপনার পক্ষে সঞ্চয় করা সম্ভব হবে না। কারণ আপনি যা আয় করবেন তার সিংহভাগই চলে যাবে ঋণশোধ করতে বা পুনঃবিনিয়োগে।

 

কিন্তু সঞ্চয় থাকতে হবে আপনার পরিকল্পনায়। একবার ঋণ করে ব্যবসা শুরু করেছেন। আবার বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই আবারো ঋণ করবেন না! তাই অল্প অল্প করে টাকা জমানো শুরু করুন। প্রতিমাসে সঞ্চয় করুন। অর্থ সঞ্চয় হোক আপনার নিয়মিত অভ্যাস।

 

মিতব্যায়ী হন

আপনি যখন একজন উদ্যোক্তা তখন ইচ্ছেমত খরচ করা আপনার জন্য হতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকারক। অন্যের অধীনে কাজ করার সময় আপনি মাসিক চুক্তিতে আয় করেন। তখন আপনি নিশ্চিত জানেন যে, মাস শেষে কী পরিমাণ অর্থ আপনি পাবেন। কিন্তু নিজের ব্যবসায় উপার্জন নির্দিষ্ট হয় না কখনো। তাই বুঝে শুনে খরচ করা উচিত।

 

নতুন ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যবসা ভালমত দাঁড় করানোর আগে স্বাধীনমত খরচ করা মোটেই ঠিক নয়। প্রতিষ্ঠানকে নিয়মানুবর্তিতায় নিয়ে আসতে মিতব্যায়িতা খুবই জরুরি।

 

সকল ক্রয়ের হিসেব
আপনার প্রতিটি খরচের হিসেন আপনাকে রাখতে হবে এবং অবশ্যই লিখিত রাখতে হবে। লিখিত না রাখলে মাস শেষে আপনি মেলাতে পারবেন না কোথায় কোনখাতে কত খরচ হল এবং কোন খরচ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কোন খরচ না করলেও চলতো অথবা কোন কর্মী আপনার অর্থের অপব্যবহার করছে কিনা। তাই অবশ্যই সকল ব্যায়ের নগদান হিসেব করতে হবে। মাস শেষে ব্যালেন্স সিট করে ফাইনাল একাউন্ট করে পরের মাস শুরু করতে হবে।

 

খুব সহজে তৈরি করুন মজাদার জাপানিজ চিজকেক

বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় একটি কেক হলো চিজকেক। কিন্তু মজাদার এই কেকটি সব বেকারিতে কিনতে পাওয়া যায় না। অনেকে মনে করেন চিজকেক তৈরি করা বেশ কঠিন। কঠিন এই কেকটিও সহজে তৈরি করা সম্ভব। আসুন আজ জেনে নেওয়া যাক চিজ কেকের সহজ রেসিপিটি।

উপকরণ:

৬টি ডিম

২৫০ গ্রাম ক্রিম চিজ

৫০ গ্রাম মাখন

১০০ মিলিলিটার দুধ

১/২ চা চামচ ভ্যানিলা এসেন্স

১ টেবিল লেবুর রস

৬০ গ্রাম ময়দা

২.৫ টেবিল চামচ কর্ণস্টার্চ

১/৪ চা চামচ লবণ

২/৩ কাপ চিনি

প্রণালী:

১। প্রথমে ওভেন ৩২৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট(১৬০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে) প্রি হিট করে নিন।

২। একটি পাত্রে মাখন, ক্রিম চিজ এবং দুধ একসাথে মেশান।

৩। এবার চুলায় প্যানে গরম পানির মধ্যে পাত্রটি রাখুন। সবগুলো উপাদান মিশে ক্রিম হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন।

৪। এরসাথে ভ্যানিলা এসেন্স, ডিমের কুসুম(সাদা অংশ ছাড়া), লেবুর রস মিশিয়ে নিন।

৫। এই মিশ্রণের সাথে ময়দা, কর্ণস্টার্চ, লবণ মেশান।

৬। আরেকটি পাত্রে ডিমের সাদা অংশ বিট করুন। ডিমের অংশ ফেনা উঠে আসলে এতে চিনি দিয়ে আবার বিট করুন।

৭। ময়দার মিশ্রণের সাথে অল্প অল্প করে ডিম চিনির মিশ্রণে মেশাতে থাকুন।

৮। কেকের ট্রেতে মিশ্রণটি ঢেলে দিন। বেকিং-এর আগে বেকিং ট্রেটি ফয়েল পেপার দিয়ে পেঁচিয়ে নিন।

৯। এটি ১ ঘন্টা ১০ মিনিট বেক করুন। ওভেন বন্ধ করার ১৫-৩০ মিনিট পর কেকটি বের করুন।

১০। কেকের উপরে আইসিং সুগার দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

 

শীতে চাই শাল

শীতের হাওয়ার কাঁপন জানান দিয়ে যাচ্ছে যে শীত চলে এসেছে। পৌষ এবং মাঘ এই দুই মাস শীতকাল। চারিদিকের হিম হিম বাতাসের সাথে গরম কাপড় আর গরম চা ছাড়া যেন সকালটাই জমে না। এই শীতের মৌসুম ফ্যাশন প্রিয় মানুষদের কাছে খুবই পছন্দের একটি সময়। শীতের হরেক ফ্যাশনের মধ্যে তরুণ-তরুণী সবার পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে শাল।

শাল নানা ধরনের হতে পারে। কোনোটি হালকা আবার কোনোটি ভারী। বহনে শাল যেমন সহজ তেমনই এটি শীতে আরামদায়ক। শালের ক্ষেত্রে খাদি শাল সবার পছন্দের শীর্ষে। এছাড়া শীতের শালের উপর উলের কাজ কিংবা নানা সুতার কাজ শাল এর মাঝে নিয়ে এসেছে নতুনত্ব।

শাল যে শুধু খাদির হয়ে তা কিন্তু নয়। বর্তমানের ফ্যাশন হাউজগুলো ফ্যাশন প্রিয় মানুষদের কথা চিন্তা করে তৈরি করছে সিল্ক, পশমি সুতা, মোটা সুতি ইত্যাদি কাপড়ের শাল। এসব চাদরে এখন আবার যুক্ত হয়েছে নানা নকশা। তাতে কখনো কখনো যুক্ত হচ্ছে পুঁতি, চুমকি এবং দুই রঙা কাপড়ের ব্যবহার। অফিসে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা বাড়িতে সব জায়গাতেই ছেলেমেয়ে উভয়ের কাছেই শালের চাহিদা সমান।

শালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শাল হচ্ছে কাশ্মীরি শাল। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এই শাল সংগ্রহ করে। এই কাপড়ে রয়েছে উষ্ণতা তা শীতকে আপনার কাছে থেকে অনেক দূরে রাখে। শালের ক্ষেত্রে বাইরের শালের কদরও কম নয়। নানা রঙের আর ডিজাইনের শালের চাহিদা অনেক। বাইরের দেশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশের শালের চাহিদাও কম নয়। মানুষ আগ্রহ নিয়ে দেশীয় পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। দেশে তৈরি শালের মধ্য পশমিনা শাল উল্লেখযোগ্য। এছারা রয়েছে লুধিয়ানা, জয়পুরি, চায়নিজ, বার্মিজ সহ আরো অনেক শাল।

শীতের শুরু থেকেই শালের গ্রহণযোগ্যতা থাকে অনেক। হালকা শীতে আপনি বাছাই করে নিতে পারেন খাঁদি, তাঁত, গ্রামীণ চেক সহ প্রিন্ট এবং এম্ব্রয়ডারি আর হাতের কাজ করা শাল। এসব শাল আপনি ঘরে পরার পাশাপাশি কাজের ক্ষেত্রে পড়ে যেতে পারেন। তবে পার্টির ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন ধরনের শাল পছন্দ করা উচিৎ। এসব জায়গার জন্য আপনার পছন্দে রাখতে পারেন সিল্কের, ফেব্রিক্সের উপর নকশিকাঁথার সহ নানা ধরনের ভারী কাজের শাল। আরেকটু জমকালো ভাব আনতে চাইলে তাতে পুঁতি কাঁচ বসিয়ে নিতে পারেন। রঙের ক্ষেত্রে সাদা-কালো, সবুজ, বাদামী, ম্যাজেন্ডা রঙ পছন্দ করতে পারেন।

শালের ক্ষেত্রে রঙের পাশাপাশি এর কাজের প্রতিও সমানভাবে নজর দিন। অনেকে কেবল রঙ আর নকশা দেখে শাল কিনে নেয়। এ কাজটি করা ঠিক নয়। শালের ক্ষেত্রে উষ্ণতার কথা সবার আগে মাথায় রাখতে হবে। আর এই শীতের হিম শীতল বাতাসকে ঢেকে নিন শালের উষ্ণ পরশে।

 

বিশ্বের যেসব নারী নেত্রী লড়ে যাচ্ছেন মানবাধিকার রক্ষার লক্ষ্যে

নেতৃত্বে নারীর অবদান অনেক আগে থেকেই। সেই প্রচীন কালে কৃষিকাজে, এরপর সংসার নামক প্রতিষ্ঠানে। মাঠে-ময়দানে, রাজনীতিতেও সে সমানে পা মিলিয়েছে পুরুষের সাথে। আসলে যারা সব শেকল ভেঙ্গে নিজের অধিকারের জন্য, গোষ্ঠীর অধিকারের জন্য সূর্যের নিচে প্লাকার্ড হাতে আন্দোলনে নেমেছেন তারা আর নিজেকে নারীত্বের গন্ডিতে বেঁধে রাখেন নি। তারা সেই সীমা পেরিয়ে মানুষ হয়ে দাড়িয়েছেন, নিজের মুক্তিই শুধু নয়, মুক্তির পথ করেছেন জাতির। তাই তো তারা নেতা। বিশ্বের এমন সব সাহসী নারীর কথা জানব।
 
শিরিন এবাদি
ইরানের মত একটি দেশে শিরিন এবাদি একজন সফল মানবাধিকার কর্মী। এই মৌলবাদি দেশেই তিনি তাঁর কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। শুরুটা হয় ১৯৭৯ সালে। এবাদি ছিলেন একজন ইরানের প্রথম নারী বিচারক, কিন্তু কোর্টের একজন সাধারণ ক্লার্ক হিসেবে তাঁর ডিমোশন রিয়ে দেওয়া হয়। কারণ? কারণ তিনি একজন নারী। হতাশ হওয়ার বদলে, পিছিয়ে পড়াকে মেনে নেওয়ার বদলে তিনি নিজের প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। সেই লড়াই-ই পরবর্তীতে তাঁকে মানবাধীকারের প্রশ্নে সোচ্চার করে। নিজের প্রতি হওয়া অন্যায় তাঁকে সকল অবিচারের প্রতি লড়তে উৎসাহী করে তোলে। একজন লইয়ার হিসেবে তিনি সহযোগিতা করেছেন অসহায় কিন্তু ন্যায়বিচার প্রত্যাশী মানুষদের। তাদের মধ্যে ছিল নারীরা, রাজনৈতিক বিপ্লবীরা। তিনি ইরানের বিবাহ সংক্রান্ত আইন সংশোধনেও অবদান রাখেন, বিশেষ করে তালাকের ক্ষেত্রে, সন্তানের দায়িত্ব কার কাছে যাবে সেসব বিষয়ে। পরিবর্তনের জন্য তাঁর এই লড়াই এর মূল্য তাঁকে দিতে হয় নিজের স্বাধীনতা দিয়ে। ৩ সপ্তাহ জেলে আটকে রাখা হয় তাঁকে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় যখন তাঁকে তাঁর পেশায় ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এতসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও জয় হয় তাঁর। ২০০৩ সালে প্রথম মুসলিম নারী শিরিন এবাদি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। নিজের প্লার্টফর্মকে তিনি এখন স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধীকার সচেতনতার কার্যক্রমে ব্যবহার করেন।
 
রানী রানিয়া
রানী রানিয়া আল-আব্দুল্লাহ জর্ডানের রানী হন ২৯ বছর বয়সে, যখন প্রিন্স ২য় আব্দুল্লাহ বিন আল-হুসেইন ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় বসেন। কিন্তু তিনি আর দশ জন ক্ষমতাবান সুন্দরী নারীদের মতই বিলাসী জীবনযাপন করেন নি। তিনি মানবাধীকারের জন্য কাজ করেছেন, সহায়তা দিয়েছেন নারী ও শিশুদের, আইনি পরামর্শ দিয়েছেন তাদের অধিকারের পক্ষে। তিনি জর্ডান মানবাধিকার কমিশনের প্রধান, ফ্যামিলি সেফটি কাউন্সিল এবং ইউনিসেফ গ্লোবাল লিডারশিপ ইনিশিয়েটিভের মেম্বার। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বৈষম্যমূলক আইন সংশোধনে কাজ করে যাচ্ছেন। মানবাধিকার এবং সাংস্কৃতিক সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আইটি বিভাগকে সামনে নিয়ে আসতেও পছন্দ করেন তিনি। তিনি বিশ্বাস করেন শিক্ষা এবং সুযোগ মানুষের প্রতিভাকে তুলে ধরতে সাহায্য করে। তিনি ২০০২ সালে বিশ্ব ইকনোমিক ফোরামের বোর্ড মেম্বার হন। প্রতিষ্ঠা করেন ‘The Queen Rania Center for Entrepreneurship’। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দেন এবং যাবতীয় অর্থনৈতিক গন্ডি পেরিয়ে আসার জন্য সহায়তা দেন।
 
ওবিয়াগেলি এজেক্বেসিলি
২০১৪ সালে বোকো হারামের অধীনে চরমপন্থীরা মেয়েদের ডর্মে হামলা করে এবং ২০০ জন স্কুলছাত্রীকে অপরণ করে। এই ভয়ংকর ঘটনার প্রেক্ষিতে শুরু হয় #BringBackOurGirls ক্যাম্পেইন। এই ক্যাম্পাইনে মিশেল ওবামা, মালালা ইউসুফজাই, এমা ওয়াটসনের মত ব্যাক্তিত্বরা একই হ্যাশট্যাগ দিয়ে টুইট করে সমর্থন জানান। কিভাবে শুরু হয়েছিল এই আন্দোলনের? ওবিয়াগেলি মানবাধীকার কর্মী হওয়ার পাশাপাশি নাইজেরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রী এবং বিশ্ব ব্যাংক আফিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি যোগাযোগ করেন সরকারি এজেন্সিগুলোর সাথে, টিভি স্টেশনে এবং রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের সাথে যাতে তাঁর মেয়েদের ফিরিয়ে আনা যায়। তিনি তাঁর সবরকম ক্ষমতা ব্যবহার করেন, শ্রম দেন এবং আরও ২ জন নাইজেরিয়ান নারীসহ বিশাল আন্দোলনটি দাঁড় করান। তিনি তাঁর ক্যাম্পাইন শুরু করেছিলেন নাইজেরিয়ার রাজধানী আজুবায়। এই টুইটার হ্যাশট্যাগ পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময় এবং সৃষ্টি করে অপ্রতিরোধ্য অনলাইন আন্দোলনের।
 
তাওয়াক্কুল কারমান
তিনি একজন বিস্ময়কর আত্মবিশ্বাসী নারী মানবাধীকারকর্মী। ইয়েমেন তাঁর দেশ, যে দেশ কিনা বিশ্ব ইকনোমিক ফোরাম দ্বারা নারীদের জন্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট দেশ হিসেবে স্বীকৃত। ইয়েমেনে নারীকে থাকতে বলা হয় ঘরে, চাকরী তো দূরের কথা পড়াশোনা থেকেও দূরে রাখা হয় তাদের। ৮ বছর বয়স থেকেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় কন্যা শিশুদের। তালাকের ক্ষেত্রেও তারা হয় বৈষম্যের শিকার। শুধু নারী নয়, মৌলিক অধিকার অনেক ক্ষেত্রে পায় না পুরুষও। এমন একটি দেশে সম্পূর্ণ স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে গণমানুষের অধিকারের জন্য কাজ করেছেন কারমান। মানবাধীকার এখানে অনেক রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। সাংবাদিকদের লাবচিত করা হয়, তরুণ বিদ্রোহীদের মেরে পর্যন্ত ফেলা হয়। এমনই অন্ধকার সময়ে ‘mother of the revolution’ কারমান কাজ করে গেছেন। তিনি একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম Women Journalists without Chains (WJWC)। প্রতিষ্ঠানটি মিডিয়া কর্মীদের অধিকার এবং তাদের প্রতি হওয়া অবিচার নিয়ে কাজ করে। “Mother of the revolution” এর পাশাপাশি তাঁকে ‘Iron Woman’ ও বলা হয়। তাঁর কন্ঠস্বর তরুণ সমাজ সহ অধীকারের লড়াইয়ে সোচ্চার প্রতিটি মানুষকে। এজন্যে তাঁকে অনেকবার লাঞ্চিত হতে হয়েছে। জেলেও যেতে হয়েছে। ২০১১ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরষ্কার পান।

 

বর্তমান বাস্তবতায় চিরঞ্জীব রোকেয়া

আপনার ১৩৬তম জন্মদিনে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা জানাচ্ছি। আপনার সঙ্গে প্রথম পরোক্ষ পরিচয় ঘটেছিল ১৯৫৯ সালে। ঢাকার নারী শিক্ষা মন্দির স্কুলে নবম শ্রেণিতে দ্রুতপঠন হিসেবে পাঠ্য ছিল রোকেয়া জীবনী। আপনার পরম স্নেহের শামসুন্নাহার মাহমুদ লিখেছিলেন সেই জীবনী বইটি। নারী শিক্ষা মন্দির স্কুলের শুভানুধ্যায়ী পরিদর্শক ছিলেন আপনার অন্যতম স্নেহের ‘ফুলকবি’ সুফিয়া কামাল। সেই সময় আমার এবং সহপাঠী সকলের হৃদয়ে আপনি শিক্ষাব্রতী তপস্বী রূপে আরাধ্য হয়ে উঠলেন।

আপনাকে প্রত্যক্ষ জানলাম বাংলা একাডেমি, ঢাকা থেকে ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত রোকেয়া রচনাবলী পাঠ করে। পাতায়-পাতায় আপনার হৃৎস্পন্দন অনুভব করা সেই যে শুরু হলো, আজ অবধি তার বিরাম নেই। আপনার লেখাগুলোর মধ্যে দেশ-কাল-সময়ের সীমানা ছাড়িয়ে যুগ যুগ ধরে আপনার অস্তিত্ব প্রবহমান থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

আপনার দুজন স্নেহভাজন ব্যক্তিত্ব, শামসুন্নাহার মাহমুদ (১৯০৮-৬৪) ও সুফিয়া কামাল (১৯১১-৯১) লিখেছেন স্মৃতিকথা। ১০০ বছর আগে আপনার প্রতিষ্ঠিত (১৯১৬) নারী সংগঠন ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতীনে ইসলাম’-এর সদস্যদের অনেকেই এবং আপনার প্রতিষ্ঠিত ‘সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুল’ (১৬ মার্চ, ১৯১১)-এর ছাত্রীদের কয়েকজন আপনার লেখা ও কাজের কথা লিখেছেন তাঁদের স্মৃতিকথায়। সেসব কর্মকাণ্ড আপনি চালিয়েছেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের কলকাতায়। জন্ম আপনার (৯ ডিসেম্বর, ১৮৮০) বাংলাদেশের তৎকালীন পূর্ববঙ্গের রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে। সেই গ্রামের জমিদার জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের ও রাহাতুন্নেসা সাবেরা দম্পতির পঞ্চম সন্তান ছিলেন আপনি। আপনার বড় ভাই আবোল আসাদ ইব্রাহিম সাবের এবং বড় বোন করিমুন্নেসা খানম আপনার ইংরেজি-বাংলা ভাষা সাহিত্য শিক্ষাচর্চার শিক্ষক ছিলেন। এসব তথ্য আপনার লেখা থেকে আমরা জানতে পারছি।
আপনার সময়কালে যাঁরা সরাসরি আপনার সঙ্গে কাজ করেছেন শিক্ষাকেন্দ্রে ও নারী সংগঠনে, তাঁরা এবং যাঁরা কলকাতায় পড়াশোনা করেছেন ১৯৪৭-এর আগে তাঁরা ১৯৪৭-এর দেশভাগের পরে পূর্ব বাংলায় ফিরে নারীশিক্ষার বিস্তারে ও নারী আন্দোলনে যুক্ত হতে শুরু করেন। তাঁদের এসব কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণাদাত্রী ছিলেন আপনি। আপনার আশৈশব চেনাজানা পূর্ববঙ্গের ঢাকায় আপনি ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বরের আগে কোনো একসময় বোনের মেয়ের (সম্ভবত) বিয়ে উপলক্ষে এসেছিলেন। দেশভাগের পর সেই পূর্ববঙ্গের মুসলিম নারী জাগরণের মধ্যমণি হয়ে উঠলেন আপনি।

ব্যাপকভাবে বাংলাদেশের নারী আন্দোলনে সামাজিক-রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপে ‘রোকেয়া চর্চা ও গবেষণার স্বর্ণযুগ’ উৎসারিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে। শৈশব-কৈশোর থেকে আমরা এবং আমাদের পূর্বসূরি নারী ব্যক্তিত্বরা যারা আপনার জীবনসংগ্রাম থেকে নারীর অধিকার অর্জনের বিপ্লবী দীক্ষা পেয়েছিলাম তারা সকলে দলমত-নির্বিশেষে আপনাকে মধ্যমণি করে নারীশিক্ষা ও নারীর মানবাধিকার অর্জনের আন্দোলন গড়ে তুলেছি স্বাধীন বাংলাদেশে।

১৯৮০ সালে আপনার জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের স্বতঃস্ফূর্ত জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল নারী আন্দোলনের নেতৃত্বে। রাজনৈতিক বৈরিতা থাকা সত্ত্বেও সব বাধা ডিঙিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে আপনার নামে শতবর্ষ উপলক্ষে আপনার ছবিসহ একটি ডাকটিকিট প্রকাশে এবং বাংলাদেশের সব বিদ্যালয়ে ছুটির ঘোষণা (৯ ডিসেম্বর, ১৯৮০) দিতে বাংলাদেশের নারী সংগঠন আন্দোলনের দাবি বাস্তবায়িত হয়েছিল। সেই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও ঘোষণা থেমে গেছে। আপনার নাম প্রচার বা আপনার স্মৃতি অক্ষয় রাখার প্রচেষ্টামাত্র বলে আমরা সেসব উদ্যোগ অব্যাহত রাখার কথা ভাবিনি। এসব কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের নতুন ধরনের ‘অবরোধবাসিনী’দের মুক্তি অভিলাষ রূপেই আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।
আপনি যত দূরেই থাকুন না কেন, আমরা প্রতিনিয়ত আপনার লেখা, চিন্তাধারা, জীবনচর্চা, নারী প্রগতির লক্ষ্যে আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ, জীবনযুদ্ধ এবং সাফল্য থেকে আমাদের এই যুগের নারী আন্দোলনের শক্তি ও পথ তৈরি করে চলেছি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিচ্ছি। আপনার অমলিন হাসিমাখা মুখ দেখার জন্য মানসপটে যখন চোখ রাখছি তখন আপনার হাসি ও বেদনামিশ্রিত মুখ ভেসে উঠল। আপনি যেন আবারও বলে উঠলেন ‘আগুন লেগেছে ঘরে, আমি শুধু এনেছি সংবাদ! সুখ-নিদ্রা দিয়াছি ভাঙায়ে!

আপনি জানতেন এবং জীবনভর বলে গেছেন, এমনকি শেষনিশ্বাস ফেলার আগেও ‘নারী অধিকার’ (অসমাপ্ত) লেখাটিতে ‘তালাক’-এর বিষয়ে পুরুষের একতরফা অপ-অধিকার নিয়ে হাস্যরসের বয়ানে তীব্র কশাঘাত করেছেন সমাজ-রাষ্ট্র-আইনের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে। লিখেছেন: আমাদের ধর্মমতে বিবাহ হয় পাত্র-পাত্রীর সম্মতি দ্বারা। তাই খোদা না করুক, বিচ্ছেদ যদি আসে, তবে সেটা আসবে উভয়ের সম্মতিক্রমে। কিন্তু এটা কেন হয় একতরফা, অর্থাৎ শুধু স্বামী দ্বারা? (নারীর অধিকার, ৯ মার্চ, ১৯৩২)

বাংলাদেশের নারী আন্দোলন এই বিষয়ে তীব্র আন্দোলন চালিয়েছে, আন্তর্জাতিক সিডও সনদের সমর্থন পেয়েছে কিন্তু বাস্তবে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সরকার নারী-পুরুষের অসম বিবাহবিচ্ছেদের আইনের পক্ষেই স্থির থাকল, দিল ধর্মের দোহাই।

বাল্যবিবাহ বন্ধ বিষয়ে আপনার এবং রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরসহ বহু সমাজসংস্কারকের ইতিবাচক পদক্ষেপ অনুসরণ করে বাংলাদেশে ১৯৪৭ থেকে আজ অবধি ৬৯ বছর ধরে সকল জাতি-ধর্মনির্বিশেষে সর্বস্তরের নারী ও সামাজিক-মানবাধিকার-আইনজীবী সমিতিগুলোর দাবি উপেক্ষা করে সম্প্রতি সরকার দোদুল্যমান আইন তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছে। বিস্তারিত জেনে নারী আন্দোলন সংগঠনগুলো বাল্যবিবাহ বিষয়ে সরকারের নেতিবাচক ঘোষণা ও আইনের পদক্ষেপবিরোধী কর্মসূচি নিচ্ছে।

এসব শুনে যেন আপনি আবারও বলে উঠলেন, ‘আমরা অকর্মণ্য পুতুল-জীবন বহন করিবার জন্য সৃষ্ট হই নাই, একথা নিশ্চিত।’ (স্ত্রী জাতির অবনতি)
আবারও বলছেন আপনি, ‘বর দুর্লভ হইয়াছে বলিয়া কন্যাদায়ে কাঁদিয়া মরি কেন? কন্যাগুলিকে সুশিক্ষিত করিয়া কার্যক্ষেত্রে ছাড়িয়া দাও, নিজের অন্নবস্ত্র উপার্জন করুক।’ (স্ত্রী জাতির অবনতি)
যেন বলছেন, ‘আমাদের যথা সম্ভব অধঃপতন হওয়ার পর দাসত্বের বিরুদ্ধে কখনও মাথা তুলিতে পারি নাই; তাহার প্রধান কারণ এই বোধ হয়, যখনই কোন ভগ্নি মস্তক উত্তোলনের চেষ্টা করিয়াছেন, অমনই ধর্মের দোহাই বা শাস্ত্রের বচন রূপ অস্ত্রাঘাতে তাহার মস্তক চূর্ণ হইয়াছে।’ (স্ত্রী জাতির অবনতি)
শেষে একটি জোর আহ্বান জানালেন আপনি, ‘অতএব জাগো, জাগো গো ভগিনি।’
আপনার প্রতিটি আহ্বানে আমরা এগিয়ে চলেছি। আজ বাংলাদেশে একদিকে সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-রাষ্ট্রীয় সাফল্যের পথ খুলেছে, নারীর অদম্য পদযাত্রা চলেছে। অন্যদিকে নারীর পারিবারিক, সামাজিক ও আইনগত অধিকারের পথগুলো বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এই বাধাগুলো সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পারিবারিক, রাষ্ট্রীয় প্রেক্ষাপটে নারী নির্যাতনের বহুবিধ অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে। বলা যায়, নারীর বিরুদ্ধে পরিবার, সমাজ, সংস্কৃতি, প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্র একধরনের জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটাচ্ছে। প্রগতির পথ বন্ধ করছে। এই পরিস্থিতিতে আপনার জীবনসংগ্রাম এবং নারী আন্দোলনের বাস্তব পথনির্দেশ আমাদের নারী আন্দোলনের জন্য আজও যুগোপযোগী বলেই আমার বিশ্বাস।
আপনি বলেছেন যৌতুক প্রথার বিষময় পরিণতির বিষয়ে, বলেছেন দাম্পত্য সম্পর্ক বিষয়ে, পারিবারিক সম্পত্তিতে ভাই-বোন, নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা, আরও বলেছেন ‘স্বাধীনতা অর্থে পুরুষের ন্যায় উন্নত অবস্থা বুঝিতে হইবে।…পুরুষের সমকক্ষতা লাভের জন্য আমাদিগকে যাহা করিতে হয়, তাহাই করিব। যদি এখন স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জন করিলে স্বাধীনতা লাভ হয়, তবে তাহাই করিব।…যে পরিশ্রম আমরা স্বামীর গৃহকার্যে ব্যয় করি, সেই পরিশ্রম দ্বারা কি স্বাধীন ব্যবসা করিতে পারিব না?’
আমরা আপনার কথাগুলোই যেন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলে যাচ্ছি বছরের পর বছর নতুন যুগের পথ সন্ধানে। আপনি সেই ১৯০৪ সালে মতিচুর বইয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা সমাজেরই অর্ধঅঙ্গ। আমরা পড়িয়া থাকিলে সমাজ উঠিবে কিরূপে? কোনো ব্যক্তির এক পা বাঁধিয়া রাখিলে সে খোঁড়াইয়া কতদূর চলিবে?’ সেই লেখাতেই বলেছিলেন, ‘জগতের যে সকল সমাজের পুরুষেরা সঙ্গিনীসহ অগ্রসর হইতেছে, তাঁহারা উন্নতির চরম সীমায় উপনীত হইতে চলিয়াছেন।’
কী আশ্চর্য এবং দুঃখের কথা, আজ ১১২ বছর পরেও আমরা সেই কথাই বলে চলেছি। প্রগতিশীল পুরুষ সমাজও বলে চলেছে, আহ্বান জানাচ্ছে ‘নারীর পাশে পুরুষ’ স্লোগান নিয়ে। এগিয়ে চলতে চলতে, হোঁচট-বাধা-নির্যাতনের শিকার হতে হতে সেসবের প্রতিবাদে ধর্মমত-নির্বিশেষে বাংলাদেশের নিরক্ষর দরিদ্র, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, উপার্জনশীল, উচ্চবিত্ত শ্রেণির ও অবস্থার নারীরা একই সারিতে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করছেন।
আপনার জীবনী পাঠ্য হিসেবে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুলে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর শিক্ষাকেন্দ্রে রোকেয়া পাঠ এখন ‘জেন্ডার সচেতনতা’ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কার্যকর হয়েছে। আপনার রচনাবলি এখন বাংলাদেশের নারীবাদী তাত্ত্বিক হিসেবে আপনাকে বৈশ্বিক নারীবাদী তাত্ত্বিকদের সমপর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে। নারী আন্দোলনের এই সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জনের ক্ষেত্রে Sultana’s Dream বা সুলতানার স্বপ্ন সর্বশ্রেষ্ঠ দিশারি বললে ভুল হবে না। তবে আপনার সমগ্র রচনাবলি একই পথের দিশারি হয়ে আছে।
আপনার দেখানো পথ আরও প্রশস্ত হবে যুগে যুগে, এই বিশ্বাসই আমাদের এ বছরের রোকেয়া দিবসের বহু অর্জনকে সফল করবে বলে বিশ্বাস করি।

 

হলে মুক্তি পাবে শাহরুখের নতুন ছবির ট্রেলার

বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের ছবি ‌‌‘ডিয়ার জিন্দেগী’ মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। আলিয়া ভাটের সঙ্গে বেশ ভালোই সাড়া পেয়েছে এটি। এদিকে মুক্তির অপেক্ষায় শাহরুখের নতুন ছবি ‘রইস’।

ছবিটি নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছেন নায়ক। এক্সেল এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে নির্মিত ছবিটির ট্রেলার মুক্তি নিয়ে সবাইকে অবাক করে দিতে চান তিনি। ট্রেলার মুক্তির সময় এমন কিছু করার ঘোষণা দিয়েছেন, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।

জানা গেছে, ভারতের ৯টি শহরের সিনেমা হলে ট্রেলারটি মুক্তি দেয়া হবে। সেসব শহরের আনুমানিক সাড়ে তিন হাজার প্রেক্ষাগৃহে ট্রেলারটি মুক্তি পাবে। শহরগুলো হচ্ছে- দিল্লি, ইন্দোর, আহমেদাবাদ, কলকাতা, ব্যাঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, জয়পুর, মুম্বাই ও পাঞ্জাবের মগা। এসব শহরে শাহরুখ-নওয়াজুদ্দিনের সঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারেন রিতেশ সিদ্বানী ও ফারহান আখতার।

তবে একেবারে সশরীরে উপস্থিত হবেন না শাহরুখ ও অন্যরা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারা দর্শকদের সঙ্গে কথা বলবেন, তাদের কথা শুনবেন।

 

তাওবার নিয়ামত অফুরন্ত

আল্লাহর কাছে তাওবা এক মহান ইবাদত। কুরআনের অনেক জায়গায় তাওবা সম্পর্কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। একজন গোনাহগার বান্দা খাঁটি তাওবার মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যেই আল্লাহর একান্ত আপনজনে পরিণত হন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যাভিচারের অপরাধে তাওবা-সম্পর্কিত একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। হাদিসটি তুলে ধরা হলো-

Hadith

হজরত আবি নুজাইদ ইমরান ইবনে হোসাইন আল-খুযাঈ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, জুহাইনা গোত্রের এক মহিলা ব্যাভিচারের মাধ্যমে গর্ভবতী হয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে এসে নিবেদন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমি ব্যাভিচারের (জিনা) অপরাধ করেছি; আমাকে শাস্তি দিন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার অভিভাবককে ডেকে বললেন, এর সঙ্গে সদাচরণ করবে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আমার কাছে নিয়ে আসবে। লোকটি (অভিভাবক) তা-ই করলো।

অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে (ওই মহিলাকে) ব্যাভিচারের শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দিলেন। তার শরীরে ভালোভাবে কাপড় বেঁধে দেয়া হলো এবং নির্দেশমোতাবেক তাকে পাথর মেরে হত্যা করা হলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জানাজা নামাজও পড়ালেন।

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ মেয়েটি তো ব্যাভিচার (জিনা) করেছে। তবু আপনি এর জানাজার নামাজ পড়াচ্ছেন।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ মেয়েটি এমন তাওবা করেছে যে, তা ৪০ জন মদিনাবাসীর মধ্যে বণ্টন করে দিলেও সবার জন্য পর্যাপ্ত হয়ে যেতো।

যে মেয়েটি নিজের জীবনকে মহান আল্লাহর জন্য স্বেচ্ছায় বিলিয়ে দিতে পারে; তার এ তাওবার চেয়ে ভালো কোনো কাজ তোমার জানা আছে কি? (মুসলিম)।

অপরাধ যতো কঠিনই হোক না কেন; বান্দা যদি আল্লাহ তাআলার দরবারে একনিষ্ঠ মনে তাওবা করে তাঁর দিকে ফিরে আসে, আল্লাহ তাআলা ওই বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। আর তাওবার ফলে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে অফুরন্ত নিয়ামত দান করেন। যা তিনি ৪০ জন মদিনাবাসীকে দিয়েও শেষ করা যাবে না বলে উল্লেখ করে তাওবার অফুরন্ত নিয়ামতের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন।

পরিশেষে…
যেহেতু মানুষ তাওবার মাধ্যমে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়; তাই তাওবার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেছেন।

হাদিসটি হজরত আবু মুসা আশআরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন- ‘পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয় না হওয়া পর্যন্ত (কিয়ামত না আসা পর্যন্ত) মহান আল্লাহ প্রতি রাতে তাঁর ক্ষমার হাত প্রসারিত করতে থাকেন; যাতে দিনের গোনাহগার লোকেরা তাওবা করে নিতে পারে। আবার তিনি দিনের বেলা তাঁর ক্ষমার হাত প্রসারিত করে থাকেন; যাতে করে রাতের গোনাহগার লোকেরা তাওবা করে নিতে পারে।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে খাঁটি তাওবা করে তাঁর পথে ফিরে আসার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের পরিপূর্ণ কল্যাণ দান করুন। আমিন।

 

অনলাইন ব্যবসায় চাই স্মার্ট প্রচারণা কৌশল!

ব্যবসা অনলাইন হোক বা অফলাইন প্রচারণা খুবই জরুরি। তবে অফলাইনের চাইতে অনলাইন ব্যবসায় চ্যালেঞ্জ অনেক বেশী। মার্কেটিং পলিসিতে একটু যদি অবহেলা করেছেন তবেই পড়ে যাবেন আরও অসংখ্য ব্যবসায়ীর পেছনে। প্রতিযোগিতা এখন তুঙ্গে। একইরকম পণ্যের রয়েছে অসংখ্য ওয়েবসাইট, তারও চেয়ে কয়েকগুণ বেশী অনলাইন পেজ। এরই মাঝে ক্রেতার নজর কাড়তে মেনে চলুন এই কৌশলগুলো-

টার্গেট ভোক্তার দিকে নজর দিন

সহজ হিসেব। আপনার বিজ্ঞাপন বা প্রচারণা সবার জন্য নয়। কি পণ্য তৈরি করছেন আপনি, সেটা কোন বয়সের মানুষ ব্যবহার করবেন, পণ্যের মূল্য অনুযায়ী কোন শ্রেণীর মানুষ পণ্যটি ক্রয় করবেন, লিঙ্গভেদে তার ভোক্তা আলাদা হবে কিনা- এই সব প্রশ্নের উত্তর আপনাকে জানতে হবে। শুধু সেই সব ভোক্তার কাছেই পৌছতে হবে আপনাকে যাদেরকে আপনার প্রয়োজন। ভোক্তা নির্দিষ্ট করার পর দেখতে হবে সেই ভোক্তারা কী খুঁজছেন, তারা পণ্যের কেমন মান চাইছেন, কেমন ডিজাইন চাইছেন! বিজ্ঞাপণে তেমন ছবিই ব্যবহার করতে হবে আপনাকে, সেভাবেই তুলে ধরতে হবে পণ্যের নানান দিক।

ভোক্তার সাথে আন্তরিক সংযুক্তি
গুগলে বিজ্ঞাপন কেনা বা জটিল একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন করা দীর্ঘ সময় এবং খরচের ব্যাপার। তার পরিবর্তে একটা সিম্পল ব্লগ লিখুন নিজের ব্যবসার নানান দিক নিয়ে। একটা ইন্সটাগ্রাম বা ফেসবুক প্রোফাইল আপনার প্রচারণাকে আরো বেশী সহজ করতে পারে। নিয়ে যেতে পারে ভোক্তার হাতে হাতে। আপনার যোগাযোগের ধরণটি হতে পারে আন্তরিক, বন্ধুর মত। যাতে ভোক্তারা আরো বেশী সংযুক্ত বোধ করেন। এজন্য ছবি নয়, ছবির সাথে যুক্ত করুন কিছু বক্তব্য। যুক্ত করুন আপনার গল্প, পণ্যটির পেছনের শ্রমের গল্প, আবেগের গল্প।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
অনলাইনে ব্যবসা বাড়াতে চাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবসময় সক্রিয় থাকা খুবই জরুরি। ওয়ার্ডপ্রেস এ চাইলেই কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে পারেন আপনি। কিন্তু ব্লগ বা এজাতীয় যে কোন প্রচারণাকে কার্যকর করতে অবশ্যই তাকে জুড়ে দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে। ফেসবুক, লিঙ্ক ইন এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। স্মার্টফোনে নিউজফিড স্ক্রল করতে করতে খুব সহজেই কিন্তু জানা যাবে আপনার ব্যবসার তথ্যটিও। একইসাথে একাউন্ট খুলতে পারেন পিন্টারেস্টে, ইন্সটাগ্রামে।

এসইও
গুগল এসইও একটি সামাজিক মাধ্যম যার কথা অনেকেই জানেন না। ভোক্তার সাথে যোগাযোগের জন্য এটি খুবই কার্যকরি একটি টুলস। সার্চ ইঞ্জিনে পণ্য খুজলে সহজেই চলে আসে কোন পণ্য বা ব্রান্ডগুলো? যাদের র‍্যাংকিং ভাল, সহজে ট্রাক করা যায়। গুগলে এসইও কৌশল ব্যবহার করে আপনিও আপনার ওয়েবসাইট র‍্যাংকিং বাড়াতে পারেন। তবে আপনাকে প্রতিনিয়ত নিজের সাইটে স্বক্রিয় থাকতে হবে। ছবি, ভিডিও আপলোড করা, পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া চালিয়ে যেতে হবে। বর্ণনায় ব্যবহার করতে হবে জনপ্রিয় ‘কি ওয়ার্ড’ গুলো যা ব্যবহার করেই মানুষ এধরণের পণ্য খোঁজে। ছোট ছোট কৌশল, কিন্তু এগুলোই আপনার র‍্যংকিং বাড়াবে।

মোবাইল গ্রাহক
ডিজিটাল বিশ্ব এখন নিয়ন্ত্রিত হয় মোবাইল দ্বারা। এপ্রিল ২০১৬ এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল থেকে। আপনার মার্কেটিং তাই মোবাইল উপযোগী করে তৈরি করুন। এমন ছবি ব্যবহার করুন যা মোবাইলে ভাল দেখতে ভাল লাগে। ছবি সাইজও সেই অনুযায়ী নির্ধারণ করুন। মোবাইলের গ্রাহকদের জন্য ভিন্ন ভাবেই সাজান আপনার মার্কেটিং কৌশল।

তথ্যসূত্র-
১। Life hack- 5 Marketing Tips for a Successful Online Business
২। CIO- 8 Expert Online Marketing Tips for Small Businesse
৩। Medianovak- Successful Internet Marketing Tips | 5 Small Business Internet Marketing Tips

 

বার্গার স্টেক তৈরি করবেন যেভাবে

ভোজনবিলাসীদের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি খাবারের নাম বার্গার স্টেক। সাধারণত বিফ স্টেক দিয়ে এটি তৈরি করা হলেও আপনি চাইলে মাটনও ব্যবহার করতে পারেন। আমেরিকায় এটা অনেক প্রচলিত হলেও এখন আমাদের দেশেও অনেক দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। তবে দোকানে না গিয়ে বার্গার স্টেকের স্বাদ পেতে চাইলে ঝটপট শিখে নিন রেসিপিটি-

উপকরণ : গরু বা খাসির মাংস আধা কেজি, কাঁচামরিচ কুচি আধা টেবিল-চামচের একটু বেশি, আদা বাটা ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, পুদিনাপাতা ৪-৫টা, গোলমরিচ ছেঁচা ২-৩টা, কাবাব মসলা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি করা ১ কাপ, ডিম ১টা, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতা ২ টেবিল-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, তেল ২ টেবিল-চামচ, ময়দা বা ব্রেডক্রাম ২ টেবিল-চামচ।

প্রণালি : প্রথমে মাংস কিমা করে ওপরের সব উপকরণ একসঙ্গে মেখে কমপক্ষে ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। এবার কিমা ৬ ভাগ করে প্রত্যেক ভাগ নিয়ে বড় চ্যাপ্টা করে স্টেক তৈরি করতে হবে। পলিথিনের ভেতর তেল মাখিয়ে কিমা চেপে স্টেক করা যেতে পারে। এবার ফ্রাইপ্যানে ছ্যাঁকা তেলে ফ্রাই করতে হবে। ইচ্ছা করলে ওভেনে ১৮০ ডিগ্রিতে ১৫ মিনিট বেক করা যাবে। বনরুটির ভেতর বিফস্টেক, বিভিন্ন রকমের পনির, সস দিয়ে পরিবেশন করুন।

 

বিয়ের আগে কনের প্রস্তুতি

জীবনের অনেক আকাঙ্ক্ষিত মুহূর্তের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিয়ের মুহূর্ত। আর বিয়েতে একটি মেয়ে যখন কনের সাজে সেজে ওঠে তখন নিজেকে তার কোনো রাজ্যের রানীর চেয়ে কম মনে হয় না! পারিবারিকভাবেই হোক কিংবা দীর্ঘ প্রেমের পরিণতি, সবকিছুর শেষ ঠিকানা হয় বিয়ে। এটি একদিকে যেমন মহাখুশির সংবাদ অপরদিকে একটু সামলে চলার সময়। মানুষের জীবনে জন্মদিন, বিয়েবার্ষিকী আরো অনেক কিছু ঘুরে-ফিরে এলেও বিয়ে একবারই আসে। তাই বিয়েতে কনে চায়, নিজেকে সবচেয়ে সুন্দরী আর আলাদা দেখতে। আর এর জন্য চাই কিছু প্রস্তুতি। বিশেষ করে শীতের এই সময়টায় চারদিকে বিয়ের আয়োজন চোখে পড়ে। আপনিই যদি হয়ে থাকেন বিয়ের কনে, তবে এখন থেকেই নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকুন।

ত্বকের যত্ন
বেশি চা, কফি খাওয়া খেতে বিরত থাকুন। বেশি চা, কফি খেলে নার্ভ উত্তেজিত হয় এবং শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বেরিয়ে যায়। পারলে ফলের রস খান। প্রচুর পানি পান করুন; দিনে অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।

ভিটামিন এ ও ই সমৃদ্ধ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস ও জিঙ্কসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। অবশ্যই বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন লাগানোর চেষ্টা করবেন। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম ও পরিমিত খাবার খান।

বাসায় নিয়মিত কিছু ফেইস প্যাকও ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের যে কোনো দাগ দূর করার জন্য পাকা পেঁপের জুড়ি নেই। পাকা পেঁপে চটকে তাতে টকদই মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে পারেন। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে উঠিয়ে ফেলুন। এরপর মুখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

পাকা পেঁপে চটকে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে মুখে, গলা ও হাতে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিতে পারেন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে তুলে ফেলুন। চালের গুঁড়া, টকদই, মুলতানি মাটি, কমলালেবুর খোসার গুঁড়ার সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে এবং গলায় লাগান। এই প্যাক নিয়মিত লাগালে ত্বক উজ্জ্বল ও সতেজ হবে।

চুলের যত্ন
প্রতিদিন একটি করে ডিম মাথার ত্বক ও চুলে ম্যাসাজ করে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। অথবা তিনটা অ্যালোভেরার পাতা থেকে ভালো করে জেল বের করে নিয়ে এতে মধু মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে বিশ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার করে তিন মাস এভাবে পরিচর্যা করতে থাকুন।

চুলের রুক্ষতা দূর করতে সপ্তাহে ৩ দিন চুলে তেল লাগিয়ে এ প্যাকটি ব্যবহার করুন। এক চামচ নারিকেল তেল, এক চামচ কাস্টার অয়েল, এক চামচ ভিনেগার, এক চামচ শ্যাম্পু, একটা পাকা কলা ও এক চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন ৪০ মিনিট। এরপর পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

পরিমিত ঘুম
বিয়েতে নিজেকে প্রাণবন্ত দেখাতে হলে আপনাকে পরিমিত ঘুমাতে হবে প্রতিদিন। শুধু বিয়ের আগে রাতে পরিমিত ঘুমালেই হবে না।
সবসময়ই চেষ্টা করতে হবে রাতে যেন একটানা ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে পারেন। এতে করে ত্বকের ক্লান্তিভাব কাটবে ও ত্বক আরো উজ্জ্বল লাগবে।

ঠোঁট
১ চা চামচ মধু, ১ চা চামচ লেবুর রস ও ১ চা চামচ চিনি মিশিয়ে স্ক্রাব বানিয়ে প্রতিদিন ৩/৪ মিনিট ঠোঁটে হাল্কা করে ম্যাসাজ করুন। ঠোঁটের কালো দাগও উঠে যাবে ধীরে ধীরে।

বিয়েতে হাজার ঝামেলা থাকে। হাজারটা ব্যস্ততায় হয়তো নিজের প্রতি নজর দেয়ার সময়টাই থাকে না। তাই আগে থেকেই অল্প অল্প করে নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকুন। আর জীবনসঙ্গীর চোখে সবচেয়ে সুন্দর মানবী হিসেবে ধরা দিন।

 

গর্ভবতী মায়ের জন্য ‘স্মার্ট চুড়ি’

গর্ভবতী মা ও অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গ্রামীণ ইনটেল ‘স্মার্ট চুড়ি’ তৈরি করেছে। হাতে থাকলে এই চুড়ি গর্ভধারণের পুরো সময় মাকে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক বার্তা শোনাবে, তথ্য দেবে। ক্ষতিকর মাত্রার ধোঁয়ার ব্যাপারেও সতর্ক করবে এ চুড়ি।

তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে গ্রামীণ ইনটেল সোশ্যাল বিজনেস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আগামী মার্চে এই চুড়ি বাংলাদেশের বাজারে আসবে। উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর এ চুড়ি ১ হাজার ২০০ টাকার কমে কিনতে পাওয়া যাবে।

দশমিক ৮ ইঞ্চি চওড়া ও দশমিক ৩ ইঞ্চি পুরু প্লাস্টিকের এ চুড়িতে মাইক্রোচিপ, মেমোরি কার্ড, স্পিকার, ব্যাটারি, কার্বন মনোক্সাইড শনাক্তের জন্য সেন্সর এবং এলইডি বাতি থাকবে। এই চুড়িতে আগে থেকে ধারণ করা (প্রি-রেকর্ডেড) গর্ভকালের ১০ মাসের স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক বার্তা আছে। কিছু প্রয়োজনীয় তথ্যও আছে। সপ্তাহে এসব বার্তা মা দুবার শুনতে পাবেন। যেমন হাতের চুড়ি বলবে, ‘গর্ভকালে আপনার ও আপনার অনাগত সন্তানের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে অন্তত চারবার ক্লিনিকে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। সেখান থেকে আপনাকে আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট দেওয়া হবে। নিজের ও শিশুর সুস্থতার জন্য এগুলো প্রতিদিন খেতে হবে।’

চুড়ি সচল রাখতে ইন্টারনেট সংযোগের দরকার হবে না। গর্ভধারণের দিনের পরিপ্রেক্ষিতে বার্তাগুলো সেট করে দেওয়া হবে। গর্ভকালের প্রতিটি সপ্তাহের উপযোগী করে বার্তাগুলো তৈরি। এতে মোট ৮০টি সতর্কতামূলক বার্তা আছে।

গ্রামীণ ইনটেলের উপমহাব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভবতী মায়েদের জন্য যে করণীয় নির্ধারণ করেছে, তার ওপর ভিত্তি করে চুড়ির বার্তা তৈরি করা হয়েছে।

বার্তাগুলো তৈরি করেছে মোবাইল অ্যালায়েন্স ফর ম্যাটারনাল অ্যাকশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে এই চুড়ির কারিগরি দিক নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা হয়েছে।

এই চুড়ির ব্যাপারে জানতে চাইলে অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক রওশান আরা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, দেশের অনেক গর্ভবতী ঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে যান না, সঠিক পরামর্শ পান না। গর্ভবতীকে সচেতন করার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ।

বাংলাদেশের নারীরা বিশেষ করে গ্রামের নারীরা ক্ষতিকর ধোঁয়ার মধ্যে থেকে রান্না করেন। ধোঁয়ায় থাকা কার্বন মনোক্সাইড স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এই চুড়িতে থাকা সেন্সর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মাত্রায় কার্বন মনোক্সাইড শনাক্ত করতে পারে। রান্নাঘরে বা কোথাও ক্ষতিকর মাত্রায় কার্বন মনোক্সাইড থাকলে চুড়িতে থাকা এলইডি বাতি জ্বলে ওঠে। পাশাপাশি জানালা-দরজা খুলতে বলে এবং ব্যবহারকারীকে নির্মল বায়ু আছে এমন স্থানে যেতে অনুরোধ জানানো হতে থাকে।

এই চুড়ির ওজন প্রায় তিন ভরি। চুড়িতে থাকা ব্যাটারি রিচার্জের দরকার হয় না। পানিতে ভিজলে বা ১৫ ফুট পানির নিচে গেলেও এর কার্যকারিতা নষ্ট হবে না বলে গ্রামীণ ইনটেল দাবি করেছে।

 

যেমন পোশাক তেমন সাজ

পোশাক শুধু মানুষের রুচিবোধকেই প্রকাশ করে না, ব্যক্তিত্ব আর সাজেও তা যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, জিনস-টপ বা পাশ্চাত্য ঘরানার যেকোনো পোশাক, যখন যা-ই পরা হোক না কেন, সঙ্গে সঙ্গেই সেই পোশাকের প্রভাবটা পড়ে সাজ আর ব্যক্তিত্বে। পুরো অবয়বটাই যেন বদলে যায়। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে বা বন্ধুদের আড্ডায় জিনস-কুর্তায় অভ্যস্ত মেয়েটি যখন শাড়িতে সেজে ওঠে, তখন তার পুরো অবয়বে আসে আমূল পরিবর্তন। অর্থাৎ পোশাক বদলের সঙ্গে সঙ্গে একটা পরিবর্তনের আঁচ লেগে যায় মনে।

এই যে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে সাজসজ্জায় এই পরিবর্তন, বিষয়টি কমবেশি সবার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। তখন শুধু সাজেই নয়, ব্যক্তিত্বেও এর প্রভাব পড়ে। পশ্চিমা পোশাকে যেমন উজ্জলতা আসে, তেমনি শাড়ি ব্যক্তিত্বে যোগ করে স্নিগ্ধতার আবহ। মডেল ও কোরিওগ্রাফার আজরা মাহমুদ মনে করেন, মনে হয় প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিত্ব যেমন আলাদা, তেমনি এক একটি উপাদানের কাপড় এক একটি বৈশিষ্ট্য বহন করে। যেমন মসলিন, জামদানি, সিল্ক বা সাটিন, তাঁতের বোনা সুতি—প্রতিটি কাপড়ে তৈরি পোশাকেরই স্বকীয়তা রয়েছে। সাজ বা ব্যক্তিত্বে সেই ছাপটা না থাকলে বেমানান মনে হয়। র্যা ম্পে বিভিন্ন ধরনের পোশাকের ভিন্নধর্মী উপস্থাপনা নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে এমনটাই জানালেন তিনি।
পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে আপনি কোথায়, কোন পরিবেশে যাচ্ছেন সেটিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেমন সব সময় পাশ্চাত্য ঘারানার পোশাকে অভ্যস্ত মডেল আঁখি আফরোজ। কিছুদিন আগে একটি পুরস্কার দেওয়ার অনুষ্ঠানে দেশীয় শাড়ি আর খোঁপায় জড়ানো বেলির মালায় সেজেছিলেন তিনি। তাঁর সাজ দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিল সেদিন। আঁখি জানালেন, সব জায়গায় তো সব ধরনের পোশাক পরে যাওয়া যায় না। পুরস্কারের সেই অনুষ্ঠানে দেশের সব বরেণ্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তাই এ ধরনের সাজটাই উপযুক্ত বলে মনে হয়েছিল। শুধু স্থানভেদেই নয়, সময়ের পার্থক্যেও সাজপোশাকে আসে ভিন্নতা—বলছিলেন পারসোনার পরিচালক নুজহাত খান। দিনের বেলায় যে রঙের পোশাকটা মানানসই, রাতের বেলায় সেটাকে বিদায় জানাতে হয়। মেকআপ চুল বাঁধার ক্ষেত্রেও সেই একই কথা।
ঐতিহ্যবাহী সিল্কের সঙ্গে এলো খোঁপাটা যেমন ভালো দেখায়, পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে সেটা একেবারেই বেমানান। তখন মুখের গড়ন, চুলের কাটছাঁটের সঙ্গে মিলিয়ে সাজতে হয়। নুজহাত খান বললেন, ‘সব শাড়িতেই যে একরকম সাজ ভালো লাগবে তা নয়। যেমন জামদানির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের ঐতিহ্য। তাই জামদানি গায়ে জড়ালেই একটা আভিজাত্য প্রকাশ পায়।

এ ধরনের শাড়ির সঙ্গে বাদামি আর ব্রোঞ্জের সমন্বয়ে স্মোকি চোখের সাজটা দেখতে ভালো লাগে। জামদানির সঙ্গে খুব বেশি জমকালো গয়না না পরে হালকা গয়না পরলে জামদানির সৌন্দর্য অটুট থাকে। ব্লো ডাই করে ছেড়ে রাখা চুল সঙ্গে যোগ করে স্নিগ্ধতা। কামিজ বা আনারকলি ঘরানার পোশাকের সঙ্গে সাজটা নির্ভর করবে কোথায় যাচ্ছেন তার ওপর। যদি কোনো সাধারণ অনুষ্ঠান হয়, তবে চোখ না সাজানোই ভালো। তখন টেনে লাইনার দিলে ভালো দেখাবে। লিপস্টিকে থাকবে বাদামি, লাল—এ রকম রঙের শ্যাড। চুলটাকে বেণি বা টেনে খোঁপা বাঁধতে পারেন।
একই পোশাকে জমকালো অনুষ্ঠানে যেতে চাইছেন? তখন ভারী মেকআপ করে নিন, দেখুন মুহূর্তেই উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ছে আপনার পুরো সাজপোশাকে।
নুজহাত খান বললেন, পাশ্চাত্য ঘরানার পোশাক যখন পরছেন তখন দেখবেন একটা উচ্ছলতা, আরামদায়ক ভাব কাজ করছে মনের ভেতর। মেকআপটা এড়িয়ে যাওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ। চোখের আইলাইনারের চিকন রেখা টেনে ব্লেন্ড করে নিন, তবে ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিকের ছোঁয়া দিতে পারেন। যেমন জিনস বা স্কার্ট-টপের সঙ্গে গাঢ় বাদামি, লাল লিপস্টিকগুলো বেশ ভালো দেখায়, আর ব্যক্তিত্বেও ফুটিয়ে তোলে উচ্ছলতার আমেজ। এদিকে মেসি করে ছেড়ে রাখা চুল বা উঁচু করে ভিক্টোরিয়ান আদলে বাঁধা খোঁপা মানিয়ে যাবে এ ধরনের পোশাকে।
স্থান-কাল বুঝে পোশাকের সঙ্গে ব্যক্তিত্বের সমন্বয় ঘটিয়ে সাজাটা কঠিন কিছু নয়। পোশাক গায়ে জড়ালে মনের ভেতর যে আবহটা কাজ করে, শুধু সেই রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলুন।
দেখুন, আপনার সাজপোশাকের ছটা কেমন রাঙিয়ে দিচ্ছে অন্যকেও।
বিপিএল উপলক্ষে ঢাকায় এসেছেন ভারতীয় অভিনেত্রী, মডেল ও উপস্থাপক শিনা চৌহান। এক ফাঁকে নকশার ফটোশুটে অংশ নিলেন। পরলেন বাংলাদেশের জামদানিসহ আরও কিছু পোশাক। পোশাক ও গয়না: আড়ং, সাজ: নুজহাত খান,

 

হাল ফ্যাশনে শীতের পোশাক

দেখতে দেখতে চলে এলো শীত। হাড় কাঁপানো শীত না হলেও হিম হিম বাতাস ঠিকই জানান দিচ্ছে, শীত জেঁকে বসতে চলেছে। তাই শীতকে বাধা দিতে শুরু হয়ে গেছে নানা প্রস্তুতি। বাড়িতে বাড়িতে যেমন পিঠা তৈরির প্রস্তুতিসহ নানা শীতকালীন খাবার রান্না হচ্ছে, তেমনি শুরু হয়েছে শীতের পোশাক কেনার পরিকল্পনা।

মানুষ এখন যথেষ্ট ফ্যাশন-সচেতন। একটি সময় ছিল যখন গরম কাপড় বলতে শুধু শীত নিবারণকেই বোঝাতো। কিন্তু এখন শীতকে তাড়ানোর পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ফ্যাশন-সচেতনতা ফুটিয়ে তোলা যায় শরীরে চাপানো শীতের পোশাকটির মাধ্যমে। শীতের পোশাকে যোগ হচ্ছে নানারকম নতুনত্ব। সালোয়ার কামিজ পরা মেয়েদের জন্য আছে লং জ্যাকেট, পঞ্চ। ফুলহাতা উজ্জ্বল রঙের লম্বা পাঞ্জাবিও আছে, যা চুড়িদার পায়জামার সঙ্গে পরে তার ওপর একটা শাল জড়িয়ে নিলে ফ্যাশন তো হবেই সঙ্গে সঙ্গে তা হবে আরামদায়কও।

বর্তমানে তরুণীরা অবশ্য পছন্দ করছে মোটা কাপড়ের টপস, লেগিংস আর বাহারি ডিজাইনের কার্ডিগান। শাড়ির ক্ষেত্রে ফুলস্লিভ ব্লাউজ আর শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে শাল জড়িয়ে হয়ে উঠতে পারেন অনন্য। টি-শার্ট বা শার্ট পরলে উপরে পরতে পারেন হাতাকাটা সোয়েটার। অথবা একটু ঢিলেঢালা পুলওভার।

ছেলেদের ক্ষেত্রে জ্যাকেটের পাশাপাশি ফুলহাতা টি-শার্ট, ফুলহাতা শার্ট, খদ্দর কাপড়ের আরামদায়ক ট্রাউজারও আছে। এবারে শীতে আঁটসাঁট নয় বরং ঢিলেঢালা পোশাকই পরতে আগ্রহী কিশোরী আর তরুণীরা। পশমি বা উলের ক্রুসকাটার কাজ করা সোয়েটার পরছেন অনেকেই। সোজা কাটের পোশাকের সঙ্গে বেছে নিতে পারেন হাঁটু পর্যন্ত লম্বা ব্লেজার।

দরদাম
ছেলেদের জন্য রয়েছে ভেস্ট, সোয়েটার, কার্ডিগান, হুডি, মেয়েদের কার্ডিগান পাচ্ছেন ৯৯০ টাকায়। ছেলেদের ভেস্ট মাত্র ৭৯০, সোয়েটার ৯৯০, কার্ডিগান ১ হাজার ৯০, হুডি ১ হাজার ২৯০, জ্যাকেট ও ব্লেজার ২ হাজার ৯৯০ টাকায়। কার্ডিগান পাচ্ছেন ৯৯০ টাকায়। ছেলেদের ভেস্ট মাত্র ৭৯০, সোয়েটার ৯৯০, কার্ডিগান ১ হাজার ৯০, হুডি ১ হাজার ২৯০, জ্যাকেট ও ব্লেজার ২ হাজার ৯৯০ টাকায়।

শীতের পোশাকের ক্ষেত্রে নতুনত্ব এলেও এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার ওপর, যে আপনি কীভাবে নিজেকে দেখতে চাচ্ছেন। ফ্যাশনকে আপনি কীভাবে দেখছেন- এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পছন্দের শীতের কাপড়টিই তাহলে হয়ে যেতে পারে আপনার কাছে নতুন ফ্যাশন। আর ফ্যাশনটি নিজের ভেতর ধারণের ক্ষেত্রে দেখুন তাতে আপনাকে কেমন লাগছে। মনে রাখবেন, যা আপানকে মানাচ্ছে, তাই আপনার কাছে ফ্যাশন।

 

খুব সহজে তৈরি করে ফেলুন মজাদার মালপোয়া পিঠা

পিঠা খেতে কে না পছন্দ করে। আর শীতকালে পিঠার কদর একটু বেশিই বলা চলে। আমরা কম-বেশি অনেক পিঠার সাথেই পরিচিত। জনপ্রিয় অনেক ধরনের পিঠার মাঝে একটি হল মালপোয়া পিঠা। ঝটপট অল্প সময়ে তৈরি করা যায় এই মজাদার পিঠাটি। কীভাবে তৈরি করবেন? আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এর সহজ রেসিপিটি।

উপকরণ :

১/২ লিটার দুধ

১ কাপ চিনি

১ কাপ পানি

১ চা চামচ এলাচ গুঁড়ো

জাফরান

১/২ কাপ ময়দা

১/২ কাপ দুধ

১ টেবিল চা চামচ চিনির গুঁড়ো

১ টেবিল চামচ ঘি

১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা

প্রণালী :

১। প্রথমে একটি প্যানে এক লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে  আধা লিটারে নিয়ে আসুন। ফুটন্ত দুধ আধা লিটার হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন।

২। আরেকটি পাত্রে সিরা তৈরির জন্য চিনি এবং পানি একসাথে জ্বাল দিন। সিরা ঘন হয়ে এলে চুলা নিভিয়ে ফেলুন।

৩। চিনির সিরার উপরে জাফরান এবং এলাচ গুঁড়ো দিয়ে দিন।

৪। এরপর ঘন দুধের সাথে ময়দা ভাল করে মিশিয়ে নিন। এমনভাবে মেশাবেন যেন ময়দা দানা দানা না থাকে।

৫। দুধ এবং ময়দার মিশ্রণ ঘন হয়ে এলে তাতে তরল দুধ ভাল করে মিশিয়ে নিন। পরে চিনির গুঁড়ো দিয়ে আবার মিশিয়ে নিন। এর সাথে বেকিং পাউডার ভাল করে মিশিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন মিশ্রণটি যেন খুব বেশি ঘন না হয়।

৬। প্যান গরম হয়ে আসলে এতে ঘি দিয়ে দিন।

৭। এবার গরম তেলে মিশ্রণটি ছোট ছোট পিঠা আকারে ছেড়ে দিন।

৮। পিঠাগুলো ভাজা হয়ে গেলে নামিয়ে চিনির সিরায় কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন।

৯। সবশেষে চিনির সিরা থেকে নামিয়ে মালপোয়া পিঠাগুলোর উপরে বাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

 

শিঙ্গায় ফুৎকারের সময় সৃষ্টির অবস্থা

কিয়ামত বা মহাপ্রলয় ঘটাতে আল্লাহ তাআলা হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামকে শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত করে রেখেছেন। তিনি যেদিন আল্লাহর হুকুমে শিঙ্গায় ফুৎকার দিবেন, সেদিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় মানুষের অবস্থা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ; যা আল্লাহ তাআলা কুরআন এবং হাদিসে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।

হাদিসে এসেছে- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় শিঙ্গার মালিক (হজরত ইসরাফিল)-এর দৃষ্টি আরশের দিকে; যেদিন থেকে তাঁকে এ কাজের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে; সেদিন থেকে তিনি অনবরত আরশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। এ ভয়ে যে, তাঁকে নির্দেশ করা হবে তাঁর দৃষ্টি নিক্ষেপের পূর্বেই। আর তাঁর চোখ দুটি যেন উজ্জ্বল দুটি তারকার মতো।’ (মুসতাদরেকে হাকিম)

আল্লাহ তাআলা হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামকে শিঙ্গায় প্রথম ফুৎকার দেয়ার জন্য নির্দেশ করবেন। আর সেই প্রথম ফুৎকারটি হবে সৃষ্টিকুলকে বেহুঁশ করার জন্য। প্রথম ফুৎকারের ফলে আকাশ এবং পৃথিবীতে যারা থাকবে, আল্লাহ ব্যতীত সব সৃষ্টিই বেহুঁশ হয়ে পড়বে অর্থাৎ সবাই মৃত্যুমুখে পতিত হবে।

শিঙ্গায় ফুৎকার সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, ফলে আকাশ ও পৃথিবীতে যারা আছে সবাই বেহুঁশ হয়ে যাবে, তবে যাদেরকে আল্লাহ তাআলা রক্ষা করতে ইচ্ছা করবেন তারা নয়।’(সুরা যুমার : আয়াত ৬৮)

কিয়ামতের দিন দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকারের মুহূর্তটিও হবে অত্যন্ত ভয়ংকর। সে সময় একজন অপরজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার জন্য হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালামকে নির্দেশ দিবেন। আর এটি হবে পুনরুত্থানের ফুৎকার। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর আবার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, তখন ওরা (সব সৃষ্টি) দণ্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৬৮)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা সে দিনের ভয়াবহতার বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ‘অতএব আপনি তাদের থেকে মখু ফিরিয়ে নিন। যেদিন আহ্বানকারী আহ্বান করবে এক অপ্রিয় পরিণামের দিকে; তারা তখন অবনমিত চোখে কবর থেকে বের হবে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের ন্যায়। তারা আহ্বানকারীর দিকে দৌড়াতে থাকবে। অবিশ্বাসীরা (কাফেররা) বলবে, এটা কঠিন দিন।’ (সুরা কামার : আয়াত ৬-৮)

শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার পর মানুষ দলে দলে জমায়েত হতে থাকবে। তাদের সবাই ভয় ও চিন্তা মধ্যে নিমজ্জিত থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছা করবেন, তারা ব্যতীত নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যারা আছে, তারা সবাই ভীতবিহবল হয়ে পড়বে এবং সবাই তাঁর কাছে আসবে বিনিত অবস্থায়।’

পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কিয়ামতের সময় উপস্থিত হওয়ার আগে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সময়ের যাবতীয় ভয়াবহতা থেকে হিফাজত করুন। আমিন।

 

বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রী যে দোয়া করবেন

বিয়ের পরপর স্বামী তার স্ত্রীর মাথায় হাত রেখে দোয়া করবে। আর মুসতাহাব হলো স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একসঙ্গে দু’রাকাআত নামাজ আদায় করবে। নামাজ আদায়ের পর স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরের জন্য দোয়া করবে। বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। স্বামী ও স্ত্রীর একসঙ্গে নামাজের পর হাদিসে একটি দোয়া রয়েছে, যা তুলে ধরা হলো-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত যে, নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন মহিলা তার স্বামীর কাছে আসবে, তখন স্বামী দাঁড়াবে এবং তার পেছনে তার স্ত্রীও দাঁড়াবে এবং উভয়ে দু’রাকাআত নামাজ পড়বে। অতঃপর বলবে (দোয়া করবে)-

Doa-Inner

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারিক লি ফি আহলি, ওয়া বারিক লিআহলি ফি; আল্লাহুম্মার্‌যুক্বহুম মিন্নি, ওয়ারযুক্বনি মিনহুম; আল্লাহুম্মাঝ্‌মাআ’ বাইনানা মা ঝামাআ’তা ফি খাইরিন; ওয়া ফার্‌রিক্ব বাইনানা ইজা ফারাক্বতা ফি খাইরিন।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমার পরিবারে আমার স্বার্থে বরকত দিন এবং আমার মাঝে পরিবারের স্বার্থে বরকত দিন। হে আল্লাহ! তাদের আমার পক্ষ থেকে রিজিক দান করুন এবং আমাকে তাদের পক্ষ থেকে রিজিক দান করুন। হে আল্লাহ! যে কল্যাণ আপনি জমা করেছেন, তা আপনি আমাদের মাঝে জমা করুন। আর যদি আপনি কল্যাণকে পৃথক করেন, তাহলে আমাদের মাঝে পৃথক করুন।’ (তাবারানি)।

পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নববিবাহিত নারী-পুরুষকেই বাসর রাতে দু’রাকাআত নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে এ দোয়ার মাধ্যমে সুখী জীবন কামনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

ব্লাউজে বৈচিত্র্য

শাড়ি বাঙালি নারীর সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে কয়েকগুণ। আর বর্তমান সময়ে শাড়ি তরুণীদেরও পছন্দের তালিকায়। তবে এই শাড়ির সঙ্গে যদি মানানসই ব্লাউজ না হয়, তবে সেই সাজের মানেই হয় না। আর এই ব্লাউজেও আছে নানা ধরন। বাহারি নামের আর বাহারি কাটিংয়ের ব্লাউজে নারীকে মানিয়ে যায় দারুণভাবে। চলুন জেনে নেই ফ্যাশনেবল সেসব ব্লাউজ সম্পর্কে।

স্টোন ওয়ার্ক করা ব্লাউজ
পাথরের কাজ করা ব্লাউজ অনেক দিন ধরেই জনপ্রিয় নারীদের কাছে। বোট কলার দিয়ে ব্লাউজ তৈরি করে পেছনের পুরোটা ঢেকে দিতে হবে নেট দিয়ে। স্টোনের কাজটা থাকবে সেই নেটে। স্টোন বসানো নেট এখন বাজারে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। ব্লাউজের পেছন দিকটা তাই কাপড় দিয়ে তৈরি করলে দারুণ লাগবে।

গলায় ফ্রিল দেয়া ব্লাউজ
যেকোনো ধরনের গলার ডিজাইনে পাতলা কাপড় দিয়ে ফ্রিল দেয়া ব্লাউজ এবারের নতুন ফ্যাশন। কমবয়সী মেয়েদের জন্য মানানসই হবে এই ব্লাউজ। ব্লাউজ হবে স্লিভ লেস কিংবা ফুল স্লিভ। ছোট হাতার ব্লাউজে ফ্রিল ভালো লাগবে না।

ঘটি হাতা গ্ল্যাডিয়েটর ব্লাউজ
তরুণীদের মানাবে ছোট ঘটি হাতা দিয়ে পেছনে ক্রিসক্রস ফিতার ডিজাইন দেয়া ব্লাউজ।

ভারি কাজ করা ফুল হাতা ব্লাউজ
গত দু’বছর ধরেই চলছে ভারি কাজ করা হাই নেক ব্লাউজ। এবার হাই নেকে বদলে দেখা যাবে বড় গলার ফুল হাতা ব্লাউজ, সঙ্গে ভারি কাজ তো থাকবেই।

একপাশে এমব্রয়ডারি ও পেছনে বাঁধা
এবার বছরজুড়েই থাকবে এমব্রয়ডারি ব্লাউজের ফ্যাশন। একপাশে এমব্রয়ডারিটাও চলবে খুব। একইসঙ্গে আশির দশকের পেছনে বাঁধা ব্লাউজগুলোও এবার ফ্যাশনে ফিরে আসতে যাচ্ছে।

 

ঝটপট কিমা-পটেটো চপ

বিকেলের নাস্তায় চপ কিংবা কাটলেট হলে আর কী চাই!। চপের মধ্যে সবচেয়ে সহজ উপায়ে যে চপটি তৈরি করা যায় সেটি হচ্ছে আলুর চপ। আলুর চপের একঘেয়ামি দূর করতে সাথে যোগ করতে পারেন মাংসের কিমা। আর তাতেই তৈরি হবে মজার স্বাদের কিমা-পটেটো চপ। চলুন জেনে নিই-

উপকরণ : গরুর মাংস কিমা করা ১ কাপ, আলু আধা কেজি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, বিট লবণ ১ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, সয়াসস ১ চা চামচ, গরম মসলার গুঁড়া ১ চা চামচ, আদা-রসুন বাটা সিকি চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, কাঁচামরিচ কুচি ও পুদিনাপাতা, কুচি পছন্দমতো, ডিম ১টা ফেটানো, টোস্টের গুঁড়া ২ কাপ, তেল পরিমাণ মতো।

প্রণালি : আলু সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে গরম অবস্থায় চটকে নিতে হবে। তাতে বেরেস্তা, গোলমরিচের গুঁড়া, পরিমাণমত লবণ, সামান্য বিট লবণ দিয়ে মাখিয়ে ৮-১০ ভাগ করে রাখতে হবে। মাংসের কিমা, সয়াসস, গরম মসলার গুঁড়া, আদা বাটা, রসুন বাটা ও সামান্য লবণ দিয়ে অল্প পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে এবং সামান্য তেলে পেঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ কুচি ও পুদিনাপাতা দিয়ে ভেজে নিতে হবে। আলুর মধ্যে কিমার পুর ভরে পছন্দমতো চপের আকার করে ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে ও টোস্টের গুঁড়ায় গড়িয়ে নিয়ে ডুবো তেলে চপগুলো বাদামি রঙ করে ভেজে নিন।

 

বেলকনিতে শখের বাগান

কথায় আছে শখের তোলা হাজার টাকা। তাই তো ইটপাথরের এই ছোট্ট বাসায় থেকেও মানুষ চায় এক টুকরো বাগান করতে। আজকাল আমরা যে বাড়িগুলোতে বাস করি তাতে উঠান থাকা আকাশ-কুসুম কল্পনা মাত্র। একটা সময় ছিল যখন বাড়িজুড়ে থাকতো বিশাল উঠান। ছেলেমেয়েদের ছোটাছুটির সঙ্গে সঙ্গে দেখা মিলতো হাজার ধরনের গাছের। পাতা বাহারের সমাহার, কোনোটি গোলাপের চারা আবার কোনোটি বেলিফুল, কোনোটি গন্ধরাজ। আমগাছ, জামগাছ, কাঁঠাল, কলা কী থাকতো না সেই বাগানে। সেই সময়ের বাগান হারিয়ে গেলেও এখনো আছে মানুষের মনে সেই ইচ্ছা। তাই তো এখনো বাড়ির বেলকনিতে মানুষ অল্প পরিসরে গড়ে তোলেন শখের বাগান!

বেলকনিতে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে প্রথমেই দরকার পড়ে টবের। মাটির টব আপনার আশপাশের নার্সারিতে পেয়ে যাবেন খুব সহজে। বেলকনিতে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে পাতা বাহার। মাটি আর পর্যাপ্ত পানি হলেই আপনার গাছ খুব অল্প সময়ের মধ্যে বেড়ে উঠবে। এছাড়া আপনি ছোট ছোট টবে লাগাতে পারেন অর্কিড। শৌখিন মানুষেরা প্রায়শই তাদের বেলকনির শখের বাগানে অর্কিড রোপণ করে থাকেন। অর্কিড রোপণ করতে পুরো গাছ না হলেও চলবে। গাছের কাণ্ড হলেও আপনি লাগাতে পারবেন। টবে মাটির সঙ্গে নারিকেলের ছোবরা, ছোট কনি পাথর আর ইটের মিশ্রণের মাধ্যমে রোপণ করা হয় অর্কিড।

একটি জায়গা বেশি হলে আপনি আপনার শখের বাগানে রাখতে পারেন ড্রাম। যাতে প্রচুর মাটি দিয়ে আপনি বনসাই আম, কাঁঠাল গাছ লাগাতে পারেন। তার সঙ্গে বনসাই ছাড়াও লেবু গাছ, মরিচ গাছ লাগানো যেতে পারে। ফুলের ক্ষেত্রে গন্ধরাজ, রজনীগন্ধা, গোলাপের গাছ লাগাতে পারেন আপনার শখের বাগানে। এসব গাছের মাটি একটি সময় পরপর পরিবর্তন করে দিতে হয়। সপ্তাহে কিংবা মাসে তিনবার অন্তর অন্তর নিড়ানি দিতে হয় মাটিতে। তার সঙ্গে সঙ্গে গাছের গোড়ায় দিতে হয় গোবর। এই সার গাছকে দ্রুত বেড়ে তুলতে সাহায্য করে।

গাছ আমাদের বন্ধু। এটি আমাদের যেমন অক্সিজেন দেয় তেমনি কার্বনডাইঅক্সাইড টেনে নেয়। এটি আমাদের দেয় সবুজ পরিবেশ, যা বায়ুমণ্ডলকে রাখে শান্ত। তাই একটি হলেও গাছ লাগান। এবং পরিবেশকে রাখুন সুস্থ, সুন্দর আর নির্মল।

 

ফেসবুক সেলিব্রেটি হতে চান না অন্তরা

অন্তরার সঙ্গে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) রাতে যখন প্রথমে কথা হলো তখন তিনি ছিলেন রাস্তায়, শ্যুটিং সেরে বাসায় ফিরছিলেন। মুঠোফোনের ওপাশ থেকে বললেন, ‘ভাইয়া, জ্যামে আটকে পড়েছি। ফ্রি হয়ে কথা বলছি।’ ঘণ্টাখানেক পরে তিনি নিজেই ফোন করলেন।

অন্তরা প্রথমেই জানালেন তার ব্যস্ততার কথা। ক’দিন আগে তিনি নেপাল থেকে অনিরুদ্ধ রাসেলের পরিচালনায় ‘টাইম’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটকের শ্যুটিং করে এসেছেন। দৃকের পরিবেশনায় নাটকটি চ্যানেল নাইনে প্রচারিত হচ্ছে।

নেপালে টানা কুড়ি দিন ছিলেন অন্তরা। আরো ছিলেন ছোটপর্দার ১৫ জন শিল্পী। শুটিংয়ের ফাঁকে অন্তরা নেপালের কাঠমান্ডু শহরটা ঘুরে দেখেছেন, সিনেমা দেখেছেন। তার মতে, এই ট্যুরটা ছিল এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো! মানে শ্যুটিং হলো, আবার ঘোরাঘুরিও। বেশ উপভোগ্য ছিল সময়গুলো।’

বর্তমানে অন্তরা কাজ করছেন আরো কয়েকটি ধারাবাহিক নাটকে। এর মধ্যে রয়েছে এশিয়ান টিভিতে মাবরুর রশিদ বান্নাহর ‘ব্যাকবেঞ্চারস’, দেশটিভিতে আর বি প্রীতিমের ‘কমিউনিটি’, আরটিভিতে শ্রাবণী ফেরদৌসের ক্রাইম ফিকশন ‘অনাকাঙ্ক্ষিত সত্য’ ইত্যাদি।

এ তো গেলো নাটক, বিজ্ঞাপনের খবরা-খবর আছে? অন্তরা বললেন, ‘আমি আসলে খুব বেশি বিজ্ঞাপনে কাজ করিনি। তবে হ্যাঁ, ক’দিন আগে আরএফএল গ্যাসের চুলার একটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। যেটি ভাইরাল ক্যাম্পেইন হবে। পুরান ঢাকার আবহে, চমৎকার কনসেপ্টে বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করেছেন মাসুদ জাকারিয়া সাবিন।’

ontora

এদিকে, গত ঈদে অন্তরা-অভিনীত সাতটি নাটক প্রচার হয়েছে। এর মধ্যে কাজল আরেফিন অমির ‘ভিডিও’ এবং ‘ট্যাটু’ নামের দুটি নাটকে কাজ করে প্রচুর রেসপন্স পেয়েছেন বলে জানালেন। বললেন, ‘নাটক দুটিতে আমার উপস্থিতি ছিল একেবারেই অন্যরকম। এর মধ্যে ‘ট্যাটু’ নাটকে অভিনেতা নিশো ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ডের চরিত্রটি দিয়ে প্রশংসা পেয়েছি। আমার ভীষণ ইচ্ছে আগামীতে এ ধরনের ব্যতিক্রমী সব গল্প এবং চরিত্রের নাটকে অভিনয় করবো।’

রুপালি পর্দাতেও কাজের ইচ্ছে আছে অন্তরার। তবে সেটা তিনটি ভালোকে সঙ্গে নিয়ে। ভালো গল্প, ভালো চরিত্র এবং ভালো নির্মাতা। যদি এই তিনটি ব্যাটে-বলে টাইমিং হয়, তবে ফুলটাস কিংবা হাফবলি যাই হোক না কেন রুপালি পর্দায় ছক্কা হাঁকাতে চান তিনি।

অন্তরার ভাষ্য, ‘এখন তো আমাদের ফিল্ম ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। নতুন নির্মাতারা আসছেন। আরো কিছুদিন সময় নিয়ে চলচ্চিত্রে কাজের জন্য মনোযোগী হবো।’

বর্তমানে রাজধানীর নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তরা। তার পুরো নাম অন্তরা আজিম হলেও বন্ধুমহল এবং মিডিয়ায় অন্তরা নামেই পরিচিত। জন্ম, শৈশব, কৈশোর- পুরোটাই কেটেছে ঢাকাতে। ছোটবেলা থেকে তিনি টুকটাক গান করতেন। তবে আগের মতো আর গানে সময় দিতে পারেন না।’

সদালাপি আর মিশুক প্রকৃতির মেয়ে অন্তরা সবসময় আড্ডা দিতে এবং এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন। আর পাঁচটা মেয়ের মতো খুব বেশি সাজগোজের প্রতি ঝোঁক নেই অন্তরার। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এখন অভিনয়ে মনোযোগী তিনি।

অন্তরা বলেন, ‘ছোটবেলা তো দূরের কথা সাত বছর আগেও ভাবিনি আমি মিডিয়ায় কাজ করবো, অভিনেত্রী হবো। ২০১১ সালে শখের বশে একটি ফ্যাশন হাউসে স্বাধীনতা দিবসের পোশাক কালেকশনের ফটোশুটে অংশ নিয়েছিলাম। সেটি প্রকাশ হয়েছিল অনেক বিলবোর্ড, পত্র-পত্রিকায়। তারপর টুকটাক পত্রিকার ফটোশুটে অংশ নিতাম। এসব শখের বশেই করতাম।’

ontora

এরপর ২০১৩ সালে নির্মাতা আদনান আল রাজীবের নির্দেশনায় ‘মিডলক্লাস সেন্টিমেন্ট’ টেলিফিল্মে প্রথম অভিনয় করি। তারপর আস্তে আস্তে অনেক নাটকে কাজ করেছি।

আরো বলেন, ‘প্রতিনিয়ত নতুন করে নিজেকে অবিষ্কার করছি। আমার সবচেয়ে ভালো লাগে অভিনেত্রী নওশীন আপুকে। তার অভিনয় আমাকে অনুপ্রাণিত করে। তাছাড়া আমার পরিবার থেকে আমার মা আমাকে অভিনয়ের ব্যাপারে অনেক উৎসাহ দেন। তিনি আমার কাজের ভালো-মন্দ সমালোচনা করেন।’

যোগ করে অন্তরা বলেন, ‘আগে অভিনয় করতাম একেবারেই শখের বশে। ভালো লাগতো কাজ করতে, এখন আরো বেশি করে। তবে ইদানীং কাজের প্রতি দায়িত্ববোধ বেড়ে যাচ্ছে, আর অভিনয়টা নিয়ে প্রফেশনালি ভাবছি। আমি ফেসবুক সেলিব্রেটি হতে চাই না। সুবর্ণা মুস্তাফা, বিপাশা, তারিন আপুরা তো ফেসবুক দিয়ে আজকের অবস্থানে আসেননি। তারা এসেছেন তাদের অভিনয় দিয়ে। আমিও আগামীতে পেশাদার অভিনেত্রী হয়ে মিডিয়ায়ই থিতু হতে চাই। সবার অন্তরে ঠাঁই পেতে চাই।’

অন্তরা তার অন্তর থেকে চান অভিনয়ের আঙিনায় নিজের নামটি অম্লান করে রাখতে। সেই লক্ষ্য নিয়েই পথ চলছেন তিনি। কোনো তাড়াহুড়া নেই। তিনি বিশ্বাস করেন, পরিশ্রমই সৌভাগ্যের প্রসূতি।

 

রিযিক বৃদ্ধির কুরআনি আমল

কুরআন মানুষের জীবন পরিচালনার গাইড। আল্লাহ তাআলা মানুষ এবং জিন জাতিকে পৃথিবীতে তাঁর ইবাদাত-বন্দেগি করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। এ জীবন পরিচালনার জন্য তিনি গাইডস্বরূপ কুরআনুল কারিম নাজিল করেছেন।

কুরআনে মানুষের সব সমাধান রয়েছে। কুরআনের বিধান পালনের সঙ্গে সঙ্গে কুরআনি আমল করাও মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরি। ইবাদাত কবুলের পূর্বশর্তই হলো হালাল জীবিকা উপার্জন করা। তাই হালাল রিযিক লাভের কুরআনি আমল তুলে ধরা হলো-

Doa

উচ্চারণ : আল্লাহু লাতিফুম্ বি-ই’বাদিহি ইয়ারযুকু মাইঁয়্যাশায়ু, ওয়া হুয়াল কাওইয়্যুল আজিজ।

অর্থ : আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছা রিযিক দান করেন। তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী। (সুরা শুরা : আয়াত ১৯)।

আমল
প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে, একনিষ্ঠতার সঙ্গে ৭০ বার এ আয়াত পড়া। যে বা যারা নিয়মিত এ আমল করবে; আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তিকে রিযিকের সংকট থেকে মুক্তি দান করবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর বিধি-বিধান পালনের সঙ্গে সঙ্গে কুরআনের উল্লিখিত আয়াতে আমলটি নিয়মিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

সহজেই তৈরি করুন চিকেন বল স্যুপ

শীত পড়তে শুরু করেছে। জমিয়ে স্যুপ খাওয়ার এইতো সময়। রেস্টুরেন্টে গিয়ে স্যুপ তো খাওয়া হয়ই, চাইলে সুস্বাদু সব স্যুপ তৈরি করতে পারেন ঘরেও। আজ থাকলো মজাদার চিকেন বল স্যুপ তৈরির রেসিপি-

উপকরণ : স্যুপ পাউডার এক প্যাকেট, মুরগির মাংস বাটা এক কাপ, মুরগির স্টক চার কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া দুই চা-চামচ, আদা-রসুন বাটা আধা চা-চামচ, কাঁচামরিচ বাটা তিন/চারটি, কাঁচামরিচ ফালি তিন/চারটি, থাই বা লেমন গ্রাস দুই/তিন টুকরা, লাল-সবুজ-হলুদ ক্যাপসিকাম কিউব আধাকাপ, গাজার-পেঁয়াজকলি কুচি দুই টেবিল চামচ, টেস্টিং সল্ট সামান্য, কর্নফ্লাওয়ার দুই টেবিল চামচ, মাখন বা ঘি দুই টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি : একটি পাত্রে মাংস বাটা আদা-রসুন এক চা-চামচ, গোলমরিচ কাঁচামরিচ বাটা, লবণ, কর্নফ্লাওয়ার সামান্য পানি দিয়ে ভালোভাবে মেখে ছোট ছোট বল বানিয়ে মাখন বা ঘিয়ে হাল্কা ভেজে নিন। হাঁড়িতে স্টক, স্যুপ পাউডার, লেমন গ্রাস, কাঁচামরিচ, টেস্টিং সল্ট ও লবণ দিয়ে মৃদু আঁচে জ্বাল দিন। পানি ফুটে এলে বল, ক্যাপসিকাম, গাজর, পেঁয়াজকলি দিয়ে পাঁচ মিনিট রান্না করুন। এবার ডিম ফেটে অল্প অল্প করে দিয়ে ক্রমাগতভাবে নাড়তে থাকুন। দুই মিনিট পর গোলমরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে সস দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পারাটাই ফ্যাশন : মারিয়া নূর

খেলা নিয়ে ছেলেবেলা থেকেই ছিল প্রবল আগ্রহ তার। তখন থেকেই চাইতেন খেলা নিয়ে কাজ করতে। তার সাথে সাথে তার স্বপ্ন ছিল মিডিয়া এবং ফ্যাশনকে ঘিরে। বলছিলাম মডেল, রেডিও-জকি, উপস্থাপক মারিয়া নূরের কথা। মিডিয়া জীবনের শুরুতে তিনি কাজ করেছেন বিটিভিতে শিশুতোষ একটি অনুষ্ঠানে উপস্থাপক হিসেবে। এর পরেই তিনি যাত্রা শুরু করেন রেডিও জকি হিসেবে এবিসি রেডিওতে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই হাসিমুখের এই তরুণী শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নেয়। তিনি রেডিও জকি হিসেবে কাজ করেছেন ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত। এরপরে তিনি কাজ শুরু করেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোর- এর একটি লাইফস্টাইল রিলেটেড অনুষ্ঠানে। তিনি একাধারে ভিডিও জকিও ছিলেন। এসবের পাশাপাশি তিনি প্রচুর মডেলিং এবং টিভিসিতে কাজ করেছেন। মারিয়া নূর একজন ফ্যাশন সচেতন ব্যক্তি। তার কাছে ফ্যাশন মানে কী এবং তিনি কীভাবে তার লাইফস্টাইল মেইন্টেইন করেন তা নিয়ে তিনি কথা বলেন , সঙ্গে ছিলেন ফারিন সুমাইয়া।

মারিয়া নূরের প্রতিটিদিন কাটে ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে। খুব অল্প সময় পান অবসরের জন্য কিংবা ছুটি কাটানোর জন্য। কাজের চাপ বেশি থাকলে কখনো কখনো দুই বা তিন ঘণ্টা পান ঘুমের জন্য। কাজের খাতিরে কখনো ভোর চারটায়ও ঘুম থেকে উঠতে হয় আবার কখনো বা ঘুমাতে হয় তিনটা থেকে চারটায়! অবশ্য ছুটির দিনে এর চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। ছুটির দিন ঘুমিয়ে কাটাতেই পছন্দ করেন এই শোবিজ তারকা। তবে অবসর সময় কাটে কিছুটা ভিন্নভাবে। অবসরে লম্বা ছুটি পেলে তিনি ঘুরতে চলে যান। ঘুরতে যাওয়া তার পছন্দের তালিকায় অন্যতম। এছাড়া তিনি রান্না করতে ভালোবাসেন এবং সারাসপ্তাহের জমে থাকা নাটক কিংবা সিনেমা অবসরেই দেখে নেন।

রূপচর্চার বিষয়ে তার কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন রূপচর্চা বলতে আমার কাছে ফ্রেশ থাকা। তিনি ভারী মেকআপ করেন না এবং সারাদিনে যেটুকু মেকআপ করেন তা যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি তুলে ফেলার চেষ্টা করেন। শরীর চর্চার ক্ষেত্রে তিনি ডায়েট চার্ট অনুসরণ করেন। তিনি ভাত সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলেন। তার সাথে সাথে কোমল পানিয় এবং কার্বোহাইড্রেট আছে এমন খাবার তিনি এড়িয়ে চলেন। তার পছন্দের খাবার পেরিপেরি চিকেন। আর পছন্দ ঝাল জাতীয় খাবার।

সকালের নাস্তায় মারিয়া নূর খেয়ে থাকেন ব্রাউন ব্রেড, চিকেন সালসা আর সবজি। দুপুরে ফ্রুট আর রাতে হালকা কিছু খাবার। তবে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে পরে তিনি অল্প অল্প করে কিছু না কিছু খেয়ে থাকেন।

পোশাকের ক্ষেত্রে তার পছন্দ ওয়েস্টার্ন পোশাক। ভারী কাজের পোশাক তার পছন্দ না। এক্সেসরিজ হিসেবে পছন্দ সানগ্লাস আর ঘড়ি। সানগ্লাসের ক্ষেত্রে মারিয়া নূরের পছন্দের ব্র্যান্ড আরমানি আর ঘড়ির ক্ষেত্রে গুচি এবং ওবাকু। তার পছন্দের গায়ক অর্ণব, আর গায়িকা কণা এবং লানা ডেল। মারিয়ে নূরের পছন্দের লেখক হুমায়ূন আহমেদ এবং প্রিয় ব্যক্তি তার মা ।

মারিয়া নূরের কাছে ফ্যাশন মানে কী তা জানতে চাইলে তিনি বলেন ফ্যাশন ট্রেন্ড অনুসরণ না করে যার মাধ্যমে আপনি নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। যা আপনি ক্যারি করতে পারেন তাই আমার কাছে ফ্যাশন।

 

নারী উদ্যোক্তাদের সুষ্ঠু ব্যাংকিং সহায়তা দেওয়ার আহ্বান

নারী উদ্যোক্তারা যেন সহজে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পান, সে জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)। নারী উদ্যোক্তাদের ওপর আইএফসি-এর এক গবেষণা রিপোর্ট দেখা গেছে, বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন প্রায় ১০ হাজার কোটি ঋণ। কিন্তু তাদের সরবরাহ করা হচ্ছে, মাত্র ৪ হাজার কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার স্থানীয় এক হোটেলে নারী উদ্যোক্তাদের ওপর আইএফসির রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

রিপোর্টে বলা হয়, ব্যাংকিং খাত এখন পর্যন্ত নারী উদ্যোক্তাদের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি কিন্তু এ উদ্যোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী ঋণ সরবরাহ করলে তারা ব্যাংকিং খাতের জন্য বিশাল সম্ভাবনা বয়ে আনবে।

বাংলাদেশের মোট ৭৮ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মধ্যে ২.৩ শতাংশের মালিক নারী এবং এই উদ্যোক্তারা গড়ে তাদের আয়ের ৯০ শতাংশ পরিবারের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষার পেছনে ব্যয় করে।
৫০০ নারী উদ্যোক্তার ওপর জরিপ চালিয়ে এক বছর গবেষণা করে এ রিপোর্টটি প্রস্তুত করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, নারী উদ্যোক্তারা এগুতে চায় কিন্তু তাদের সবচেয়ে বড় বাধা অর্থায়ন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী বলেন, ‘একুশ শতকে নারী উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়ে সমৃদ্ধশালী হওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আইএফসি-এর রিপোর্টটি নারী উদ্যোক্তাদের কিভাবে আরও বেশি করে ঋণ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে ব্যাংকগুলো।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কানাডিয়ান রাষ্ট্রদূত পিয়েরে বেনো লাঘামে ও আইএফসি-এর বাংলাদেশ প্রধান ওয়েন্ডি ওয়ার্নার।

 

সাপ্তাহিক ছুটিতে বিশ্বভ্রমণকারী এক নারীর গল্প

নতুন নতুন দেশ ঘুরে বেড়ানোটা কারোর কাছে শখ, কারোর কাছে বিলাসিতা আবার কারোর কাছে নেশা! অনেকে ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনলে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে তৈরি হয়ে যান। আবার এমন মানুষও আছেন ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনলে ছুটি, সময়, খরচের একশ একটা বাহানা তৈরি করেন। আসলেই কী ঘুরতে যাওয়ার জন্য অনেক বেশি টাকা এবং সময়ের প্রয়োজন?  আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তবে আপনার ধারণা পরিবর্তন করে দেবে ইলোনা কারাফিন।

ইলোনা কারাফিন মাত্র ২৩ বছর বয়সে ঘুরে বেড়িয়েছেন ১০টিরও বেশি দেশে! সপ্তাহিক ছুটিতে তিনি ছুটে বেড়াচ্ছেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে। মাত্র ১০ বছর বয়সে বোন ক্যান্সারে আক্রান্ত হোন। দুই বছর চিকিৎসা করার পর বর্তমানে তিনি পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু এই ক্যান্সার তার চিন্তা চেতনাকে ব্যাপক পরিবর্তন করেছে।

“ আমার যখন ১০ বছর বয়স তখন ক্যান্সার ধরা পড়ে। আর তখন আমি উপলব্ধি করতে পারি আমার সমবয়সী কিংবা আমার থেকে বড় সবাই এমন কাজ করছে যার মধ্যে তাদের কোন আগ্রহ নেই”।

“আমি আমার যৌবন নষ্ট করতে চাই না, আমি চাই না অন্যরা তাদের যৌবন নষ্ট করুক, শুধুমাত্র টাকা অথবা সময় অভাবের কারণে”।

তাই ইলোনা প্রতি সপ্তাহের ছুটিতে ঘুরতে চলে যান নিউ ইয়র্কের কাছের কোন দেশে। তা হতে পারে বালি কিংবা পোল্যান্ড বা প্যারিস, পতুগার্ল নয়তো নতুন কোন দেশ। কখনও তিনদিন আবার কখনও দুইদিন হয়ে থাকে ভ্রমণের স্থায়িত্ব। খাওয়া, থাকা, যাতায়াত সব মিলে তার ১০০০ ডলারের থেকেও কম খরচ হয়। সময় কম থাকলে ঘুরে আসে নিউ ইয়র্ক শহরের আশেপাশে কোন জায়গা।

ইলোনে মনে করেন “ আপনার সময় আছে, সেই সময়টি বের করুন। এমনকি সবচেয়ে ব্যস্ত মানুষটিরও সময় আছে, শুধু সেটি খুঁজে বের করতে হবে। আর সেই সময়টি আমি বের করে নিয়েছি”।

ইলোনে একটি ই-কমার্স কোম্পানিতে আর্থিক বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করছেন। এর পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সাহায্য করার জন্য checkmatecancer.org নামক একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন।

ভ্রমণ বিষয়ক ব্লগ ইলোনা দ্যা এক্সপোলারে তিনি কিছু টিপস দিয়েছেন। তার মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু তুলে ধরা হলো।

১। ঘুরতে যাওয়ার ব্যাপারে আপনাকে নমনীয় হতে হবে। এরজন্য অনেক কিছু ছাড় দেওয়া প্রয়োজন পড়তে পারে। সেটিকে সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে।

২। যেখানে ঘুরতে যাবেন, তার সম্পর্কে ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে নিবেন। আর এই কাজটি করতে সাহায্য করবে বিভিন্ন ওয়েবসাইট।

৩। ট্রাভেলিং সাইটগুলো ব্রাউজ করার আগে আপনার ব্রাউজারের কুকিস সরিয়ে নিন। অনেক সাইট আপনার কুকিস ব্যবহার করে আপনাকে মনে রাখে।

৪। ভ্রমণে যাওয়ার আগে অব্যশই একটি আর্থিক বাজেট পরিকল্পনা করে নিবেন। সেখানে খাওয়া থেকে শুরু করে শপিং পর্যন্ত সবকিছু তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রাখুন।

৫। সম্পূর্ণ ভ্রমণটি নিয়ে একটি পরিকল্পনা করে নিন। যেমন প্রথম দিন কোথায় যাবেন, দ্বিতীয় দিন কোথায় যাবেন ইত্যাদি। এটি প্ল্যান এ, প্ল্যান বি নাম দিয়ে রাখতে  পারেন।

৬। অনলাইনে হোটেল বুকিং দেওয়ার আগে ভালো করে খোঁজ খবর নিয়ে তারপর বুকিং করার পরামর্শ দেন ইলোনা।

 

পার্লার বাড়ায় স্ট্রোকের ঝুঁকি?

মাসে না হলেও বছরে বেশ কয়েকবার বিউটি পার্লারে ঘুরে আসা খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনা হয়ে গিয়েছে এখন আমাদের দেশের নারীদের কাছে। হয়তো তাদের ভেতরে পড়ে যান আপনিও! কিন্তু আপনি কি জানেন যে আপনার এই বিউটি পার্লারে যাতায়াতই হতে পারে আপনার শরীরের জন্য বেশ অসুস্থতার কারণ? ভাবছেন তেমন আর কি হবে সামান্য বিউটি পার্লারে গেলে! এই নাহয় খানিকটা ঘাড়ব্যথা, একটু কোমর লেগে যাওয়ার মতন ব্যাপার- এই তো? আপনারা যারা এটা ভাবছেন আর বিউটি পার্লারে নিয়মিত ঘুরে আসছেন তাদেরকেই বলছি- না, কেবল এই ছোটখাটো ব্যাপারই নয়, বিউটি পার্লার আপনার শরীরের জন্যে এনে দিতে পারে স্ট্রোকের মতন ভয়াবহ অসুস্থতাও!

ভাবছেন কী করে? চলুন তাহলে শুনি আসি এক ভুক্তভোগীর কথা। পার্লারে গিয়ে চুলের পরিচর্যার জন্যে শ্যাম্পু করাটা প্রথমেই দরকার পরে। আর সেবার আর সব সময়ের মতনই পার্লারে গিয়ে নিজের চুলের শ্যাম্পু করান স্যান ডিয়াগোর বাসিন্দা অ্যালিজাবেথ স্মিথ নামের একজন নারী। শ্যাম্পু করে বাসায় ফেরার কয়দিন পরেই হঠাৎ প্রচন্ড বমিসহ মাথা গরম হয়ে যাওয়া আর দূর্বলতার সম্মুখীন হন তিনি। পরবর্তীতে চিকিত্সকেরা জানান যে অ্যালিজাবেথ স্ট্রোক করেছেন!

বিশেষজ্ঞদের মতে বিউটি পার্লারে যাতায়াতকারীদের জন্যে এটা খুব সাধারণ ঘটনা। বাজফিডের তথ্যানুসারে, ঘাড়ের অতিরিক্ত বৃদ্ধি বা উঁচু করে তোলার প্রবণতা আমাদের ঘাড়ের আর্টারিগুলোকে ভেঙ্গে বা কেটে ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এই ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে আর্টারিগুলোতে অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহিত হয় এবং চাপ সৃষ্টি হয়। সেই চাপ থেকেই মাথা আক্রাণ্ত হয় আর স্ট্রোকের মতন ঘটনা ঘটে থাকে।

সবচাইতে ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে এখনো অব্দি সরাসরিভাবে বিউটি পার্লারের সাথে স্ট্রোকের খুব বেশি সম্পর্ক বের করতে পারেননি বলে চিকিত্সকেরা এর বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারেন না। আর সত্যি বলতে গেলে এটা খুব কম ঘটে থাকে। খুব বেশি ঘাড় বাঁকানোর ফলেই ঘটনাটি ঘটে থাকে। তাই এখনো পর্যন্ত ঘটনার ভয়াবহতা জানার পরেও এ ব্যাপারে চুপ করে আছেন চিকিত্সকেরা।

তাহলে কি বিউটি পার্লারে আর যাওয়া যাবে না? না, তা কেন যাবেনা! অবশ্যই যাবেন। তবে পরের বার শ্যাম্পু থেকে শুরু করে যেকোন রূপচর্চার আগে নিজের ঘাড়কে সুরক্ষিত করে নিতে ভুলবেননা। বিশেষ করে শ্যাম্পু করার সময় ঘাড়ের সাথে কার্যকরীভাবে কাজ করে এমন কোন পদ্ধতি কিংবা দরকারে একটা তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখবেন গলায় ( পপসুগার )। এতে করে হয়তো খানিকটা ভিজে যাবেন আপনি। তবে স্ট্রোকের সম্ভাবনা তো কমবে!

 

 

স্ত্রী বুদ্ধিমতি হলে বাড়বে আপনার আয়ু!

বুদ্ধিমতি আপনার সঙ্গী, কিন্তু বেশিদিন বেঁচে থাকার আশির্বাদ লাভ করলেন আপনি! কেমন হয় তাহলে? গবেষকরা কিন্তু এমন সম্ভাবনার কথাই বলছেন! সাম্প্রতিক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য যে আপনার সঙ্গীর বুদ্ধিমত্তা বাড়িয়ে দিতে পারে আপনার আয়ু।
 
আপনি যখন আপনার হবু স্ত্রীর কথা কল্পনা করেন তখন কি থাকে আপনার প্রথম চাওয়া? নিশ্চয়ই একজন সুন্দরী রমনীকে দেখেন আপনি। দেখেন তিনি কেমন রান্না করছেন, কেমন যত্ন নিচ্ছেন আপনার এবং আপনার পরিবারের। তিনি প্রখর বুদ্ধমতি, দূর্দান্ত স্মার্ট, যে কোন সমস্যা সমাধান করে ফেলেন মূহুর্তে এটা ভাবতে হয়ত গলা শুকিয়ে আসে আপনার। আমাদের উপমাহাদেশের পুরুষেরা নারীকে তার চেয়ে এগিয়ে থাকা অবস্থায় কল্পনাই করতে পারেন না। কিন্তু এই কল্পনা এবং এর বাস্তয়ায়ণ আপনার বেঁচে থাকার সময়কে দীর্ঘ করে দেবে। কীভাবে? আসুন জেনে নিই গবেষকদের মতামত।
গবেষকরা বলছেন, যে সকল পুরুষেরা বুদ্ধিমান নারীদের জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন তারা কম অসুস্থতায় ভোগেন। তাদের জীবনে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কমে যায়, স্ট্রেস কমে যায়। ফলে তারা কম মানসিক চাপে ভোগেন। এছাড়াও তারা Alzheimer’s বা dementia রোগে কম ভোগেন। এটা সবাই জানেন যে, বুদ্ধিদীপ্ত খেলা মানুষকে এধরণের ব্যাধি থেকে রক্ষা করে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, একজন বুদ্ধিমান সহধর্মিনী আপনার বুদ্ধির চর্চাকে ধরে রাখে, থেমে যেতে দেয় না। তাই তিনি আপনাকে রাখতে পারেন এধরণের ব্যাধিমুক্ত।
 
অবিশ্বাস্য হল, স্টাডিতে দেখা গেছে কিছু পুরুষ যারা উচ্চ বুদ্ধিসম্পন্ন নারীদের বিয়ে করেছেন তারা শারীরিকভাবে দূর্বল মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া স্বত্ত্বেও তাদের মাঝে মানসিক স্বাস্থ্যজণিত কোন সমস্যা দেখা যায় নি। তারা বরং নিজেদের মানসিক যোগ্যতা এবং দক্ষতা নিয়ে খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।
 
নারীদের উচিৎ তাদের বুদ্ধি নিয়ে গর্বিত হওয়া এবং ছোটবেলা থেকেই তাদের গড়ে তোলা উচিৎ দায়িত্বশীল এবং স্বাধীনচেতা মানুষ হিসেবে। পুরুষের উচিৎ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারীকে সমমর্যাদা দেওয়া, পরিবারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখা। এভাবেই জীবন স্বাস্থ্যকর হয়, জীবনের বাড়তি অনেক প্রেশার কমে যায়। কিন্তু দূঃখজনক হল, আমরা নারীদের যোগ্যতা বলতে এখনও শুধু সৌন্দর্য্যকে বুঝি, ঘর-সংসার গুছিয়ে রাখার দক্ষতাকে বুঝি। নিজেদের প্রয়োজনেই আমাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর সময় এসেছে।

 

আত্নবিশ্বাস বৃদ্ধি করুন ৭টি কৌশলে

যেকোন কাজে সফল হতে হলে আত্নবিশ্বাসী হওয়া প্রয়োজন। আত্নবিশ্বাস এমন একটি অদৃশ্য শক্তি যা আপনাকে সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে যাবে। একজন আত্নবিশ্বাসী মানুষ হাসিমুখে ঝুঁকি গ্রহণ করার সাহস রাখেন। আর জীবনে লক্ষ্য পৌঁছানোর জন্য ঝুঁকি গ্রহণের বিকল্প নেই। তবে অনেকেই আত্নবিশ্বাস ধরে রাখতে পারেন না। কিছু কৌশল আছে যা আপনার আত্নবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

১। নেতিবাচকতা থেকে দূরে থাকুন

সকল নেতিবাচক বিষয় এবং মানুষ থেকে দূরে থাকুন। সব পরিস্থিতিতে ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করুন। অনেক সময় তা থাকা সম্ভব হবে না। ধৈর্য ধরুন, সময় নিন, মাথা ঠান্ডা রাখুন, বিষয়টি ভাবুন। দেখবেন নেতিবাচক একটি বিষয় থেকে ইতিবাচক কিছু খুঁজে পাবেন।

২। লক্ষ্য স্থির রাখুন

নিজের সাথে অন্য কারোর তুলনা করা থেকে বিরত থাকুন। এটি আপনার জীবন, অতএব আপনার জীবনের সমস্যা আপনাকেই সমাধান করতে হবে। অন্য কেউ তা করতে পারবে না। তাই নিজের লক্ষ্য স্থির রেখে সামনের দিকে এগিয়ে চলুন। দেখবেন সাফাল্য আপনার হাতের মুঠোয় চলে আসছে।

৩। ভয়কে জয় করুন

ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক। তাই বলে ভয়ে পেয়ে লক্ষ্য থেকে সরে আসবেন না। নিজের ভয়কে খুঁজে বের করুন, সেটির মুখোমুখি হোন। আপনি যতক্ষণ না ভয়ের মুখোমুখি হবেন ততক্ষণ ভয়কে জয় করতে পারবেন না।

৪। ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া

মানুষ মাত্রই ভুল করে। আপনিও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। একবার করা ভুল দ্বিতীয়বার করা থেকে বিরত থাকুন। আর এই ছোট বিষয়টি আপনার আত্নবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

৫। পরিষ্কার পোশাক পরিধান

কথিত আছে “আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী”। আসলেই পোশাক আপনার আত্নবিশ্বাসকে অনেক প্রভাবিত করে। চেষ্টা করুন পরিষ্কার এবং মার্জিত পোশাক পরিধান করার, এটি আপনার আত্নবিশ্বাস বৃদ্ধি করার পাশাপাশি অন্যের চোখে আপনার ভাল একটি ভাবমূর্তি তৈরি করবে।

৬। নিজেকে জানুন

নিজের দূর্বলতাকে জানুন। ভয়কে জয় করার পূর্ব শর্ত হল ভয়ের কারণ খুঁজে বের করা। নিজের দূর্বলতাগুলোর একটি লিস্টে লিখে রাখুন। এবার একটি একটি করে দূর্বলতা থেকে বের হওয়ার উপায় খুঁজে বের করুন। দেখবেন এক সময় আপনার দূর্বলতাই  আপনার শক্তিতে পরিণত হয়েছে। ঠিক তেমনি নিজের প্রতিভাকে খুঁজে বের করুন। আপনি একবার যদি নিজের প্রতিভাকে খুঁজে বের করতে পারেন, দেখবেন আপনার আত্নবিশ্বাস অনেকখানি বেড়ে গেছে।

৭। ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তা অর্জন করুন

প্রথমেই বড় লক্ষ্য নির্ধারণ না করে ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। ছোট লক্ষ্যগুলোতে যখন সফল হবেন আপনার আত্নবিশ্বাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে।

 

শূন্য থেকে ফারজানা আখির সফলতার গল্প

পিছিয়ে থাকার সময় অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তাইতো শূন্য হাতে শুরু করে এখন সফল উদ্যোক্তা। তবে এই সফলতার পেছনে রয়েছে শ্রম ও আনন্দ সুখের অনেক কাব্য। তাদেরই একজন বুটিক হাউস ‘আখি’স’এর স্বত্বাধিকারী ফারজানা আখি। তিনি জানিয়েছেন শখ নিয়ে সময় কাটানো থেকে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প।
৯৯ সালের কথা।

মাত্র আড়াই হাজার টাকা নিয়ে আখি ঘরে বসেই নিজ হাতে হরেক ডিজাইনের সালোয়ার-কামিজ সেলাই করতে লাগলেন। বাজার থেকে শাড়ি কিনে তাতে হাতের কাজ করতেন। যারা তার ক্রেতা ছিলেন পোশাক পরার পর তারা তার প্রশংসা করতেন। ক্রেতাদের প্রশংসা তার মনোবল আরো বাড়িয়ে দেয়। সময়ের সাথে অর্ডার বাড়তে থাকে। কিন্তু পুজি না থাকায় আটকে যান।

কিন্তু থেমে থাকেননি। বন্ধুদের সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে থাকেন। অল্প অল্প করে বাড়তে থাকে পরিচিতি। এরই মধ্যে বাটিক ও নকশার কাজ করা সালোয়ার-কামিজ, থ্রিপিস, শাড়ি, বিছানার চাঁদর, কুশন কভার, শাল চাদরের ব্যাপক চাহিদা বাড়তে লাগল। পরিস্থিতি বলে দিল একটি দোকান ঘর নেবার। কিন্তু পুজি সংকটে ঘাবড়ে যান। সর্বশেষ দারস্থ হন ব্যাংকের। সেখানে থেকে প্রথমে মাত্র আড়াই লাখ টাকা ঋন নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি দোকান দেন। নাম দিলেন ‘আখি’স’ এরপর আর তাকে পেছন তাকাতে হয়নি।

আলাদীনের চেরাগের যাদুর মতো দ্রুত বদলে গেল সব। তার ডিজাইন করা কাপড়ের চাহিদা এমন বেড়ে গেল যে অর্ডার ডেলিভারি দিতে তাকে হিমশিম খেতে হয়। আখি বলেন, অল্প দিনেই এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল ‘আখি’স’ এর পরিচিতি। তখন রাজধানীতে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। তিনি বলেন, ‘নিজেই ব্যবসাতে বসতাম। কাঁচামাল কিনতাম। নিজেই ব্যাংক করতাম। নিজেই পাইকারি অর্ডার নিতাম। একজন নারী হয়ে দোকানে বসে ক্রেতা সামলানোর বিষয়টি তখন অনেকেই ভালো চোখে দেখেনি। কিন্তু বাবা-ভাই-বোন উৎসাহ দিতেন। এসবের মধ্যে ভাগ্য খুলে যায়। ক্রেতাদের ভালবাসায় মাথায় ব্যবসার পোকা ঢুকে যায়। মনস্থির করি, আমাকে ব্যবসায় সফল হতে হবে। সেই যুদ্ধ শুরু। এরপর প্রায় শূন্য থেকে আজকের এই অবস্থান।

তিনি জানান, ব্যবসার পাশাপাশি সংসারের দেখভাল করতে হয়েছে। ফলে অবসর বলে কিছু ছিল না। তবে ব্যবসা মেয়েদের জন্য খুব কঠিন, এমনটি কখনো মনে হয়নি। চেষ্টা থাকলে যেকোনো নারীই ব্যবসা বা কর্মক্ষেত্রে সফল হতে পারবেন।’ এসব কথা যখন বলছিলেন, তখন তার মুখে সাফল্যর তৃপ্তির হাসি। বললেন, ‘পরিচিত কোনো মেয়ে যখন চাকরি করার কথা বলেন, আমি তাঁদের উৎসাহ দিই ব্যবসা করো। কারণ, আমাদের একটাই লক্ষ্য, চাকরি করব না, চাকরি দেব। তার মতে কেউ যদি শতভাগ সততার সঙ্গে কাজ করে, সাফল্য তার মুঠোবন্দী হতে বাধ্য।

 

ভ্রমণের সময় এই ৭টি গ্যাজেট সাথে রাখুন

ভ্রমণপিপাসুরা খুব বেশিদিন ভ্রমণ না করে থাকতে পারেন না। আজ পাহাড় তো কাল সমুদ্র, পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে প্রতিনিয়ত ছুটে বেড়াচ্ছেন। দেশে কিংবা দেশের বাইরে আপনি যেখানেই যান না কেন ঘুরতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন পড়ে কিছু প্রস্তুতির। জামা কাপড়ের সাথে ভ্রমণে রাখুন কিছু গ্যাজেট। যা আপনার ভ্রমণ সহজ করার পাশাপাশি আপনাকে রক্ষা করবে অনেক বিপদের হাত থেকে।

১। পোর্টেবল ইউএসবি ব্যাটারি  

একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পূর্ণ পোর্টেবল ইউএসবি ব্যাটারি আপনার স্মার্টফোনটিকে দীর্ঘ সময় চার্জ দেবে। পাহাড়ে ট্র্যাকিং হোক কিংবা সমুদ্রে সারফিং করতে যান, আপনার ফোনটি যেকোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ইউএসবি ব্যাটারির মাধ্যমে আপনি আপনার ফোনটি চার্জ করে নিতে পারবেন যেকোন সময়ে।

২। সোলার ব্যাটারি চার্জার

আপনি মোবাইল চার্জ দেওয়ার জন্য সবসময় বিদ্যুৎ পাবেন এমন কিন্তু নয়। জরুরি মুহুর্তে মোবাইল চার্জ দেওয়ার জন্য সোলার ব্যাটারি চার্জার রাখুন। সোলার চার্জার সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে মোবাইল চার্জ করে, তাই বিদ্যুৎবিহীন স্থানেও ঘুরে আসতে পারবেন নির্ভাবনায়।

৩। ই-রিডার

বই পড়তে পছন্দ করেন? তাহলে ভ্রমণে সাথে রাখুন ই-রিডার। বইয়ের থেকে ভালো সঙ্গী আর একটিও নেই। ই-রিড়ার সঙ্গীর অভাব পূরণ করবে তারসাথে নিরানন্দ ভ্রমণকেও আনন্দময় করে তুলতে পারে ই-রিডার।

৪। ব্লুটুথ কি বোর্ড      

ল্যাগেজে ট্যাবটি রাখার সাথে সাথে একটি ব্লুটুথ কি বোর্ডও রাখুন। জরুরি প্রয়োজনে এই কি বোর্ডটি ট্যাব বা আই প্যাডের সাথে ব্যবহার করতে পারবেন।

৫। স্ট্যান্ডিং কেস অফ ট্যাবলেট

দূরে কোথাও ঘুরতে গেলে ট্যাবলেট রাখার জন্য স্ট্যান্ডিং কেস রাখুন। এটি আপনার ঘাড়কে আরাম দেওয়ার সাথে সাথে আপনার কাজকেও সহজ করবে।

৬। ব্যাকআপ ফোন

কোন কারণে আপনার স্মার্ট ফোনটি নষ্ট হয়ে গেল, তখন কী করবেন? এই সমস্যা সমাধানে সাথে একটি ব্যাকআপ ফোন রাখুন। বিপদের সময় এই ফোনটি হয়তো আপনার প্রাণ বাঁচাবে।

৭। ডিজিটাল ক্যামেরা

ভ্রমণের প্রতি মুহুর্ত ধরে রাখার জন্য সাথে রাখুন ভালো মানের কোন ডিজিটাল ক্যামেরা।

 

সেলস পার্সনদের জন্য বিক্রি বাড়ানোর ৫টি কৌশল

সময়ের মূল্য আপনার জন্য হিসেব হয় টাকায়। প্রতি মিনিটের হিসেব আপনাকে দিতে হয় কোম্পানিকে। কোম্পানির পণ্য বিক্রির জন্য যেমন নানান পরিকল্পনা আপনাকে করতে হয় তেমনি গ্রাহকের কাছে কীভাবে পণ্যকে তুলে ধরলে তা বিক্রি হবে সেই কৌশলও আপনাকে ঠিক করতে হয়। প্রতিমাসের টার্গেট নিশ্চিতভাবে পূরণের জন্য আপনি অনুসরণ করতে পারেন এই কৌশলগুলো-
 
কঠিন কাজগুলো আগে করুন
প্রত্যেকটি মানুষেরই এমন কিছু কাজ থাকে যা সে কোনমতেই করতে পছন্দ করেন না। কেউ কেউ গ্রাহককে ফোন করে আপডেট দিতে অপছন্দ করেন। কেউ আবার মেইলের উত্তর দেওয়া বা মেইলে আলোচনা করা পছন্দ করেন না। কারও মিটিং ডেকে কাজ বুঝিয়ে দিতে হবে এটা ভাবতেই গায়ে জ্বর আসে। কারও হয়ত প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে কষ্ট হয়। আপনার কাছে এগুলো কঠিন কাজ। আর এগুলোর কারণেই হয়ত পরের কাজগুলো যা করা খুবই জরুরি সেগুলো বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
 
আপনি যদি সময় ব্যবস্থাপনায় মাস্টার হতে চান তাহলে ‘ইচ্ছে করে না’ জাতীয় সমস্যা থেকে আপনাকে বেরিয়ে আসতে হবে। সেই কাজগুলোই আগে দ্রুত গতিতে করে ফেলুন যা আপনার মূল কাজের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
 
মাল্টিটাস্কিং বন্ধ করুন
একজন মানুষ একসাথে অনেক কাজ করতে পারেন এটাকে খুব গৌরবের মনে করি আমরা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি আপনার দক্ষতার পথকে আটকে দেয়। মনোযোগ ভাগ হয়ে গেলে আপনার কাজের গতিও ধীর হয়ে আসে। যে পার্ফরমেন্স আপনার একটি কাজে দেওয়ার কথা ছিল তা ভাগ হয়ে যায়।
 
আপনি যদি মনে করেন, এমন হয় না, আপনি সব কাজ সমান দক্ষতার সাথে করতে পারেন তাহলে আপনি জানেন না আপনি আরো কত চমৎকারভাবে আপনার মেধার ব্যবহার করতে পারতেন যদি আপনি একটি কাজ করতেন! অন্য একটি কাজে হাত দেওয়ার আগে প্রথম কাজটি শেষ করুন। যখন যে কাজটি করবেন সে কাজে পূর্ণ মনোযোগ দিন। এতে আপনার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অবশ্যই পূরণ হবে।
 
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রাখুন
প্রতিষ্ঠানের কাজ করার সময় শুধু কাজগুলোই করুন। এসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বন্ধ করুন। এখন আমাদের হাতে হাতে স্মার্ট ফোন হওয়ায় এখন মেইল, ফেসবুক নোটিফিকেশন সব কিছুই প্রতিমুহুর্তে তাদের আগমন জানাতে থাকে। এতে তৈরি হয় মনোযোগের বিচ্ছিন্নতা। তাই ইন্টারনেটের ব্যবহার বন্ধ রাখুন, অন্তত মোবাইলে।
 
অনেক সেলস পার্সনই এই কাজ করতে ভয় পাবেন কারণ তাদের মনে হবে এই সময় গুরুত্বপূর্ণ কোন গ্রাহকের বার্তা আসতে পারে বা দরকারি কোনকিছু মিস হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি এমন একটি একাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন যেখানে শুধু গুরুত্বপূর্ণ মানুষেরাই থাকবেন। দেখবেন অনেকটা সময় বেঁচে যাবে, একই সাথে পণ্যের বিক্রিও বাড়াতে পারবেন সানন্দে।
 
কার্যকরি কাজটি করুন
আজকের দিনে কোন ধরণের যোগাযোগটি বেশী কার্যকরি সেটি বেছে নিন। যেমন ইমেইলের চেয়ে এখন ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ জনপ্রিয়। ফোনে কল করার চেয়ে ভাইবার বা হোয়াটস এপ্স এ ভিডিও কল বেশী স্মার্ট। তবে কোন কোন কোম্পানি পুরাতন যোগাযোগের ধরণকেই প্রফেশনাল মনে করতে পারেন। খেয়াল করুন কার জন্য কোনটা বেশী কার্যকরি।
 
একজন গ্রাহক যে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারে তেমন অভ্যস্ত নন তাকে মেসেজ না দিয়ে কল করুন। যে গ্রাহক সারাক্ষণ মিটিং এ থাকেন, খুবই ব্যস্ত মানুষ, তিনি নিশ্চয়ই নিয়মিত মেইল চেক করেন। তাকে কল করে বিরক্ত না করে মেইল করুন। এভাবে আপনার যোগাযোগের ধরণ গ্রাহকের মাঝে এক প্রকার সন্তুষ্টি তৈরি করবে এবং তিনি আপনার সাথেই যোগাযোগে আগ্রহী হবেন সবসময়।
 
প্রতিদিনকার কাজে গুরুত্বের ক্রম তৈরি করুন
আপনার প্রতিদিনকার কাজ ঠিকমত হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য কাজগুলো লিখে ফেলুন এবং অবশ্যই গুরুত্ব অনুসারে লিখুন। সবচেয়ে দরকারি কাজটি আগে লিখুন। ক্রম অনুসারে তালিকা তৈরি করুন। এটি করতে আপনার হয়ত প্রতিদিন সকালে ১০ মিনিট ব্যয় হবে। কিন্তু এই কাজটি নিয়মিত করলে আপনি অপ্রত্যাশিত অনেক ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন। ফলে আপনার পার্ফরমেন্স হবে দিনে দিনে দূর্দান্ত।

 

ঝটপট তৈরি করুন প্রন ফ্রিটার্স

বিকেলের নাস্তায় ঝাল ঝাল মুখরোচক হলে জমে বেশ। তৈরিতে সময় কম লাগে অথচ সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর এমন খাবার তৈরিই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাই বিকেলের নাস্তায় কিংবা অতিথি আপ্যায়নে তৈরি করতে পারেন প্রন ফ্রিটার্স। রইলো রেসিপি-

উপকরণ : চিংড়ি মাথা ও খোসা ছাড়িয়ে কুচি করে কাটা দেড় কাপ, ডিম ২টি, বেকিং পাউডার ১ চা চামচ, ময়দা আধা কাপ, কর্নফ্লাওয়ার সিকি কাপ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, লাইট সয়াসস ১ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, তেল (ভাজার জন্য) ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি সিকি কাপ, কাঁচামরিচ মিহি কুচি ১ টেবিল চামচ।

প্রণালি : চিংড়ি কুচি সয়াসস মাখিয়ে ২০ মিনিট রাখতে হবে। ময়দা, কর্নফ্লাওয়ার, বেকিং পাউডার একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। ডিম, পেঁয়াজ, গোলমরিচ, কাঁচামরিচ, লবণ একসঙ্গে মাখিয়ে অল্প অল্প করে মিশ্রিত ময়দার সঙ্গে মিশিয়ে চিংড়ি দিয়ে মেশাতে হবে। কড়াইয়ে তেল গরম করে বড়ার মতো অল্প অল্প করে চিংড়ির মিশ্রণ দিয়ে মচমচে করে ভেজে ওঠাতে হবে। প্রন ফির্টাস গারলিক সস, রেড চিলি সস অথবা টমেটো সসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করা যায়।

 

কম খরচে ঘরকে করুন আলোকিত

দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত শক্তির অপচয় রোধে কতকিছুই তো করছেন আপনি। কিন্তু একবারের জন্যেও ঘরের বাতিটির কথা ভাবছেন কি? আপনার ঘরের বাল্ব বা আলোর মাধ্যমটি কি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী? আচ্ছা, বিদ্যুৎ খরচের কথা নাহয় নাইবা ভাবলেন, একবার কি ভেবেছেন এই আলোর মাধ্যমটি পকেট সাশ্রয়ী কিনা? আপনার অনেকটা বাড়তি খরচ হয়ে যাচ্ছে না তো ভুল উপায়ে ঘরকে আলোকিত করতে গিয়ে? চলুন জেনে আসি কম খরচে, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে ঘরের আলোর মাধ্যম বেছে নেওয়ার কিছু পদ্ধতি।

১. সঠিক বাল্ব বেছে নেওয়া

বাজারে এখন অত্যন্ত কম দামে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্ব বা এনার্জী সেভিং বাল্ব কিনতে পাওয়া যায়। সেগুলো আপনার বাড়ির অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচকে যেমন থামিয়ে দেবে, তেমনি কমিয়ে দেবে পকেটের খরচাটাও। সাধারণত ঘরের আলোর পেছনে সাংসারিক খরচের ৫ শতাংশ টাকা চলে গেলেও এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়োডস), সিএফএল (কমপ্যাক্ট ফ্লুরোসেন্ট ল্যাম্প) বা হ্যালোজেন ইনক্যানডেসেন্টসহ বাজারে আসা উন্নতমানের বাল্ব কিনে সেই খরচটা কমিয়ে ফেলতে পারেন আপনি। পুরোন ঘরানার বাল্বগুলোর ক্ষেত্রে শতকরা ৯০ শতাংশ শক্তি তাপ হয়েই বেরিয়ে যেত। সেই পরিমাণটাকে কমিয়ে দেয় এই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্ব। সেইসাথে আপনার কাঙ্ক্ষিত মাত্রার আর রংয়ের আলো বেছে নেওয়ার সুযোটাও দেয়।

২. প্রাকৃতিক আলোর উপর নির্ভরতা বাড়ান

শক্তির বিনাশ নেই বটে। তবে সেটার পরিমাণ দেশভেদে ভিন্ন। নবায়নযোগ্য শক্তি আছে। কিন্তু তারপরেও আমাদের উচিত সেইদিকে না তাকিয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্র থেকে যতটা সম্ভব কম বিদ্যুৎ খরচ করা যায় সেই চেষ্টা করা। আর তাই দিনের বেলায় ঘরের আলো যাতে না জ্বালানো থাকে সেটা খেয়াল করুন। কখনো কখনো দিনের বেলাতেও দুই-তিনটি বাল্ব জ্বালিয়ে রাখেন অনেকে। হয়তো অনেকটা অসচেতনভাবেই। কিন্তু এবার থেকে সচেতন হয়ে উঠুন। সকালে ঘুম থেকে উঠেই গ্যারেজ আর সিড়ির লাইট বন্ধ করুন। ঘরের ক্ষেত্রেও যতটা সম্ভব লাইট না জ্বালানোর চেষ্টা করুন।

৩. আনুষঙ্গিক শক্তি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার

লাইটের সাথে ডিমার, ফটোসেল বা টাইমারের মতন যন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন যেগুলো দরকার মতন আলোকে কমাতে বাড়াতে বা ব্যবহার না হলে বন্ধও করে দিতে পারে। তবে চেষ্টা করুন যে বাল্বটি ব্যবহার করছেন তার সাথে মানানসই কিছু একটা বেছে নেওয়ার।

তবে গ্যারেজ বা বাইরে খোলামেলা পরিবেশের জন্যে সেই সিএফএল বা এলইডি লাইটটি ব্যবহার করুন যেটা বাইরের পরিবেশের জন্যে মাননসই। বাজারে এমন কিছু সিএফএল ও এলইডি বাল্ব পাওয়া যায় যেগুলো বর্ষা, শীত, গ্রীষ্ম- সবকালেই থাকবে ঠিকঠাক। সেইসাথে কম খরচে চলবেও অনেকদিন। অসচেতন ব্যবহারে প্রতিদিন ঘরের আলোর পেছনে আমাদের যথেষ্ট বিদ্যুৎ আর টাকা খরচ হয়ে যায়। তাই ঘরের আলো নির্ধারণের আগে এই সব ব্যাপারগুলো মাথায় রাখুন।