banner

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 469 বার পঠিত

 

যেমন পোশাক তেমন সাজ

পোশাক শুধু মানুষের রুচিবোধকেই প্রকাশ করে না, ব্যক্তিত্ব আর সাজেও তা যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, জিনস-টপ বা পাশ্চাত্য ঘরানার যেকোনো পোশাক, যখন যা-ই পরা হোক না কেন, সঙ্গে সঙ্গেই সেই পোশাকের প্রভাবটা পড়ে সাজ আর ব্যক্তিত্বে। পুরো অবয়বটাই যেন বদলে যায়। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে বা বন্ধুদের আড্ডায় জিনস-কুর্তায় অভ্যস্ত মেয়েটি যখন শাড়িতে সেজে ওঠে, তখন তার পুরো অবয়বে আসে আমূল পরিবর্তন। অর্থাৎ পোশাক বদলের সঙ্গে সঙ্গে একটা পরিবর্তনের আঁচ লেগে যায় মনে।

এই যে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে সাজসজ্জায় এই পরিবর্তন, বিষয়টি কমবেশি সবার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। তখন শুধু সাজেই নয়, ব্যক্তিত্বেও এর প্রভাব পড়ে। পশ্চিমা পোশাকে যেমন উজ্জলতা আসে, তেমনি শাড়ি ব্যক্তিত্বে যোগ করে স্নিগ্ধতার আবহ। মডেল ও কোরিওগ্রাফার আজরা মাহমুদ মনে করেন, মনে হয় প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিত্ব যেমন আলাদা, তেমনি এক একটি উপাদানের কাপড় এক একটি বৈশিষ্ট্য বহন করে। যেমন মসলিন, জামদানি, সিল্ক বা সাটিন, তাঁতের বোনা সুতি—প্রতিটি কাপড়ে তৈরি পোশাকেরই স্বকীয়তা রয়েছে। সাজ বা ব্যক্তিত্বে সেই ছাপটা না থাকলে বেমানান মনে হয়। র্যা ম্পে বিভিন্ন ধরনের পোশাকের ভিন্নধর্মী উপস্থাপনা নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে এমনটাই জানালেন তিনি।
পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে আপনি কোথায়, কোন পরিবেশে যাচ্ছেন সেটিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেমন সব সময় পাশ্চাত্য ঘারানার পোশাকে অভ্যস্ত মডেল আঁখি আফরোজ। কিছুদিন আগে একটি পুরস্কার দেওয়ার অনুষ্ঠানে দেশীয় শাড়ি আর খোঁপায় জড়ানো বেলির মালায় সেজেছিলেন তিনি। তাঁর সাজ দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিল সেদিন। আঁখি জানালেন, সব জায়গায় তো সব ধরনের পোশাক পরে যাওয়া যায় না। পুরস্কারের সেই অনুষ্ঠানে দেশের সব বরেণ্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তাই এ ধরনের সাজটাই উপযুক্ত বলে মনে হয়েছিল। শুধু স্থানভেদেই নয়, সময়ের পার্থক্যেও সাজপোশাকে আসে ভিন্নতা—বলছিলেন পারসোনার পরিচালক নুজহাত খান। দিনের বেলায় যে রঙের পোশাকটা মানানসই, রাতের বেলায় সেটাকে বিদায় জানাতে হয়। মেকআপ চুল বাঁধার ক্ষেত্রেও সেই একই কথা।
ঐতিহ্যবাহী সিল্কের সঙ্গে এলো খোঁপাটা যেমন ভালো দেখায়, পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে সেটা একেবারেই বেমানান। তখন মুখের গড়ন, চুলের কাটছাঁটের সঙ্গে মিলিয়ে সাজতে হয়। নুজহাত খান বললেন, ‘সব শাড়িতেই যে একরকম সাজ ভালো লাগবে তা নয়। যেমন জামদানির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের ঐতিহ্য। তাই জামদানি গায়ে জড়ালেই একটা আভিজাত্য প্রকাশ পায়।

এ ধরনের শাড়ির সঙ্গে বাদামি আর ব্রোঞ্জের সমন্বয়ে স্মোকি চোখের সাজটা দেখতে ভালো লাগে। জামদানির সঙ্গে খুব বেশি জমকালো গয়না না পরে হালকা গয়না পরলে জামদানির সৌন্দর্য অটুট থাকে। ব্লো ডাই করে ছেড়ে রাখা চুল সঙ্গে যোগ করে স্নিগ্ধতা। কামিজ বা আনারকলি ঘরানার পোশাকের সঙ্গে সাজটা নির্ভর করবে কোথায় যাচ্ছেন তার ওপর। যদি কোনো সাধারণ অনুষ্ঠান হয়, তবে চোখ না সাজানোই ভালো। তখন টেনে লাইনার দিলে ভালো দেখাবে। লিপস্টিকে থাকবে বাদামি, লাল—এ রকম রঙের শ্যাড। চুলটাকে বেণি বা টেনে খোঁপা বাঁধতে পারেন।
একই পোশাকে জমকালো অনুষ্ঠানে যেতে চাইছেন? তখন ভারী মেকআপ করে নিন, দেখুন মুহূর্তেই উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ছে আপনার পুরো সাজপোশাকে।
নুজহাত খান বললেন, পাশ্চাত্য ঘরানার পোশাক যখন পরছেন তখন দেখবেন একটা উচ্ছলতা, আরামদায়ক ভাব কাজ করছে মনের ভেতর। মেকআপটা এড়িয়ে যাওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ। চোখের আইলাইনারের চিকন রেখা টেনে ব্লেন্ড করে নিন, তবে ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিকের ছোঁয়া দিতে পারেন। যেমন জিনস বা স্কার্ট-টপের সঙ্গে গাঢ় বাদামি, লাল লিপস্টিকগুলো বেশ ভালো দেখায়, আর ব্যক্তিত্বেও ফুটিয়ে তোলে উচ্ছলতার আমেজ। এদিকে মেসি করে ছেড়ে রাখা চুল বা উঁচু করে ভিক্টোরিয়ান আদলে বাঁধা খোঁপা মানিয়ে যাবে এ ধরনের পোশাকে।
স্থান-কাল বুঝে পোশাকের সঙ্গে ব্যক্তিত্বের সমন্বয় ঘটিয়ে সাজাটা কঠিন কিছু নয়। পোশাক গায়ে জড়ালে মনের ভেতর যে আবহটা কাজ করে, শুধু সেই রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলুন।
দেখুন, আপনার সাজপোশাকের ছটা কেমন রাঙিয়ে দিচ্ছে অন্যকেও।
বিপিএল উপলক্ষে ঢাকায় এসেছেন ভারতীয় অভিনেত্রী, মডেল ও উপস্থাপক শিনা চৌহান। এক ফাঁকে নকশার ফটোশুটে অংশ নিলেন। পরলেন বাংলাদেশের জামদানিসহ আরও কিছু পোশাক। পোশাক ও গয়না: আড়ং, সাজ: নুজহাত খান,

Facebook Comments