All posts by Oporajita

 

নারী আসামিদের জন্য আলাদা হাজত: একটি শুভ উদ্যোগ

একটি খবর পড়ে মনে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি। খবরের শিরোনাম হচ্ছে, ‘নারী আসামিদের জন্য আলাদা হাজত’। খবরে বলা হয়েছে, নারী আসামিদের রাখার জন্য আলাদা হাজতখানা করার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা। ‘দেয়ালের দিকে নারী আসামির মুখ’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর ২২ মে বিকেলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা হাজতখানা পরিদর্শন করেন। নারীদের আলাদা হাজতখানা না থাকায় তিনি আদালত ভবনের প্রবেশপথের বাঁ পাশে একটি জায়গায় নারী হাজতখানা করতে বলেন।
খবরটি পড়ে আশ্বস্ত হলাম এ কারণে, অবশেষে স্বস্তি আসতে যাচ্ছে নারী আসামিদের জীবনে। তাঁদের হাজতখানায় আর পুরুষ আসামিদের হাতে হেনস্তা হতে হবে না। ঢাকা মহানগর দায়রা জজের এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।
১৯ মে প্রকাশিত ‘দেয়ালের দিকে নারী আসামির মুখ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে হাজতখানার যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা পড়ে আমি রীতিমতো শিউরে উঠি। ওই প্রতিবেদনে চিত্রিত হয়েছে নারী আসামিদের নিপীড়নের কাহিনি, হাজতে তাঁদের চরম দুর্দশার কথা। শ খানেক পুরুষ আসামির সঙ্গে জনা দশেক নারী আসামি। পুরুষ আসামিরা সেখানে শুয়ে-বসে আরাম করে আছেন। অথচ নারী আসামিরা আরাম করা তো দূরের কথা, তাঁরা বসতেও পারেন না। আলাদা কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পুরোটা সময় তাঁরা দাঁড়িয়ে থাকেন। শুধু যে দাঁড়িয়ে থাকেন তা-ও নয়, পুরুষ আসামিদের ভয়ে দেয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকেন। কারণ, এ সময় তাঁরা নানানভাবে পুরুষ আসামিদের দ্বারা নিপীড়নের শিকার হন। তাঁদের পুরুষ আসামিদের বিশ্রী অঙ্গভঙ্গি, নানা রকম কটূক্তি, অশ্লীল মন্তব্যসহ নানা বিব্রতকর ও অপমানজনক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত এই অবস্থা চলে। এখানেই শেষ নয়, হাজতখানায় শৌচাগার মাত্র একটি। প্রতিদিনই দেখা যায়, নারী শৌচাগারে ঢুকেছেন, এমন সময় বাইরে থেকে কেউ কড়া নাড়ছেন। এভাবেই নারী আসামিরা প্রতিদিন আদালতে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
শুধু যে হাজতখানায় থাকাকালে এই অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে নারীকে যেতে হয় তা-ই নয়, আদালতের কার্যক্রমের জন্য কারাগার থেকে পুলিশ ভ্যানে সকালে নারী আসামিদের নিয়ে আসা হয় এবং বিকেলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এই যাতায়াতের সময়ও তাঁদের জন্য আলাদা পরিবহন না থাকায় পুরুষ আসামি দ্বারা নিপীড়নের শিকার হন তাঁরা।
আমি ভাবি, আদালতপাড়ার হাজতখানাগুলোতে এভাবে পুরুষ আসামিদের হাতে নারী আসামিদের হেনস্তা অনেক দিন ধরেই হয়ে চলেছে। তাহলে কারও এত দিন টনক নড়েনি কেন? কেন মনে হয়নি এর একটা সমাধান হওয়া দরকার।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজের আদালতে নারীদের জন্য আলাদা হাজতখানা করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আমরা চাই তা দ্রুত বাস্তবায়িত হোক। শুধু মহানগর দায়রা জজ আদালতে নয়, দেশের সব আদালতে নারীদের জন্য আলাদা হাজতখানা তৈরি হোক। সেই সঙ্গে নারী আসামিদের বহনে আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করা হোক।

 

নিজেই করুন সানবার্ন ফেসিয়াল

প্রখর রোদ আর গরমের এই দিনে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখা খুবই কষ্টের। ঘরের বাইরে বের হলেই রোদে পুড়ে ত্বক কালো হয়ে যাওয়া বা সানবার্ন, ব্রণ, র‌্যাশ, ছোপ ছোপ কালো দাগ হওয়ার ভয় থাকে। এসময় তৈলাক্ত ত্বকে সানব্লক পাউডার আর শুষ্ক ত্বকে অবশ্যই সানব্লক ক্রিম লাগিয়ে বাইরে বের হতে হবে। এর পরেও সানবার্নের শিকার হলে ছোট্ট দুটি উপায়ে নিজেই করতে পারেন ফেসিয়াল।

প্রথমত

গরুর দুধ, লেবুর রস ও চন্দনের গুঁড়া একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার মুখের ত্বকের পুরোটা  জুড়ে ম্যাসাজ করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে। পরে ধুয়ে ফেলতে হবে স্বাভাবিক ঠাণ্ডা পানিতে। এতে সানবার্ন উধাও হবে।

দ্বিতীয়ত

ত্বকের যত্নে অপর একটি উপকারী প্যাক হচ্ছে অ্যালোভেরা জেল ও লেবুর রসের মিশ্রণ। উভয় উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও পোড়া দাগ দূর হবে। নিয়মিত যত্ন নিলে আপনি পাবেন দাগহীন কোমল মসৃণ ত্বক।

 

ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর হক

একজন স্ত্রী যেমন স্বামী ছাড়া পরিপূর্ণ নন তেমনি একজন স্বামীও স্ত্রী ছাড়া পরিপূর্ণ নন। সৃষ্টিগতভাবেই আল্লাহ মহান এদের একজনকে অপরজনের সহায়ক এবং মুখাপেক্ষী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। একজন আদম দ্বারা কখনোই পরিপূর্ণতা লাভ করত না এই ধরাধাম। একজন হাওয়ার আগমন ঘটিয়েছিলেন তাই আল্লাহ মহান। একজন স্ত্রীর দায়িত্বে স্বামীর যেমন কিছু হক বা অধিকার রয়েছে, একজন স্বামীর দায়িত্বেও তেমনি স্ত্রীর কিছু হক বা অধিকার রয়েছে।

স্ত্রী স্বামীরই অংশ
সূরা নিসার যে আয়াতটি বিবাহের খোতবায় তেলাওয়াত করা হয়, সে আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, দেখ! তুমি ও তোমার স্ত্রীর মাঝে জন্মগতভাবে কোনো পার্থক্য নেই। আল্লাহ্পাক হাওয়া আলাইহাস সালামকে আদম আলাইহিস সালাম থেকে সৃষ্টি করেছেন। তাই মহিলা পুরুষের অংশ। তোমার শরীরের যে কোনো স্থানে আঘাত লাগলে তুমি কষ্ট পাও। আঘাত যেন না লাগে, সে ব্যবস্থা কর। সে কারণে তোমার স্ত্রীর প্রতিও লক্ষ রাখবে, সে-ও তোমার শরীরের একটি অংশ। ইজাব কবুলের মাধ্যমে সে তোমার কাছে এসেছে, তুমি তোমার শরীরের সঙ্গে যেমন ব্যবহার কর, স্ত্রীর সঙ্গেও সেরূপ ব্যবহার কর। তুমি স্ত্রীর কাছ থেকে যেমন মহব্বতপূর্ণ মুলায়েম ও ভক্তিপূর্ণ কথা আশা কর, স্ত্রীর সঙ্গে তুমিও এমন কথা বল যেন তোমার কথা থেকে মহব্বত ও ভালোবাসা টপকে পড়ে। অন্য এক আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, ইসলামের প্রতিটি হুকুম স্বামী-স্ত্রী উভয়ই মেনে চলবে।

মহব্বত ও ভালোবাসার কারণে সীমা লক্সঘন করতে পারবে না এবং ঘৃণার কারণেও সীমা লক্সঘন করতে পারবে না। মোটকথা স্বামী-স্ত্রী একে অপরের অঙ্গস্বরূপ। সুতরাং একে অপরের হকের প্রতি লক্ষ রাখবে, তাতেই দাম্পত্যজীবন সুখের হবে। পুরুষদেরকে মহিলাদের হক আদায় করতে হবে। মহিলা বলতে শুধু স্ত্রী নয়। স্ত্রীর হক তো আছেই, স্ত্রীর ওপর স্বামীর যেসব হক রয়েছে, তারচেয়ে বেশি হক রয়েছে স্বামীর ওপর স্ত্রীর। স্বামী আগে স্ত্রীর হক আদায় করবে, তারপর স্ত্রী স্বামীর হক আদায় করবে। অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, স্বামী স্ত্রীর হক আদায় করলেই স্ত্রী স্বামীর হক আদায় করে। এমনিভাবে পিতা-মাতার ওপরও মেয়েদের হক রয়েছে। কিন্তু পিতা-মাতা তা যথাযথভাবে আদায় করে না। বিশেষ করে মীরাসের ব্যাপারে একেবারেই সীমা লক্সঘন করে থাকে। মৃত্যুর সময় সব অর্থ-সম্পদ ঘরবাড়ি সবই ছেলেদেরকে লিখে দেয়; মেয়েদের কিছুই দেয় না। এটি জঘন্যতম অপরাধ। আল্লাহপাক এটি ক্ষমা করবেন না। জনৈক সাহাবি একদিন তার এক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে বললেন, হুজুর! আমি দু’টি বিবাহ করেছি, এ হলো আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। আমি এখন বৃদ্ধ হয়ে গেছি, কোন সময় আল্লাহর ডাক এসে যায় জানা নেই। কাজেই এ ছেলেকে আমি কিছু অতিরিক্ত সম্পদ দিতে চাই। কিন্তু আমার স্ত্রী বলছে, এ ব্যাপারে আপনাকে সাক্ষী বানাতে। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন_ আচ্ছা, তোমার কি আরও সন্তান আছে? সাহাবি বললেন, জী হ্যাঁ। এবার নজীবী বললেন : তাদেরকেও দিয়েছ? সাহাবি জবাব দিলেন, জী না। এ কথা শুনে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারা রাগে লাল হয়ে যায়। তারপর সাহাবির প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, তুমি বড় জালেম। আমি জালেমের কাজের জন্য সাক্ষী হতে পারব না। আর বর্তমানে মেয়েদের সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা হয়। অনেক সময় মেয়ে বা বোনকে ভয় দেখিয়ে অথবা সামান্য টাকা-পয়সা দিয়ে তাদের সম্পদ এক প্রকার বল প্রয়োগ করে নিয়ে নেওয়া হয়। এমনিভাবে দেখা যায়, পিতা নিজস্ব স্বার্থ উদ্ধারের জন্য মেয়েকে অথর্বের কাছে বিবাহ দিয়ে দেয়। কিন্তু পিতার ওপর দায়িত্ব ছিল অর্থকড়ি যেমনই হোক, দীনদার ছেলে দেখে বিবাহ দেওয়া।

স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কর্তব্য
সুখকর দাম্পত্য জীবন, সুশৃঙ্খল পরিবার, পরার্থপরতায় ঋদ্ধ ও সমৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন অটুট রাখার স্বার্থে ইসলাম জীবন সঙ্গিনী স্ত্রীর উপর কতিপয় অধিকার আরোপ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এখানে প্রদত্ত হল।

১. স্বামীর আনুগত্য :
স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য। তবে যে কোন আনুগত্যই নয়, বরং যেসব ক্ষেত্রে আনুগত্যের নিম্ন বর্ণিত তিন শর্ত বিদ্যমান থাকবে।

(ক) ভাল ও সৎ কাজ এবং আল্লাহর বিধান বিরোধী নয় এমন সকল বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অবাধ্যতায় কোন সৃষ্টির আনুগত্য বৈধ নয়।

(খ) স্ত্রীর সাধ্য ও সামর্থ্যরে উপযোগী বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা। কারণ আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অতিরিক্ত দায়িত্বারোপ করেন না।

(গ) যে নির্দেশ কিংবা চাহিদা পূরণে কোন ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, সে ব্যাপারে স্বামীর আনুগত্য করা।

আনুগত্য আবশ্যক করে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ‘নারীদের উপর পুরুষগণ শ্রেষ্ঠত্ব ও কর্তৃত্বের অধিকারী।’ [বাকারা : ২২৭]

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন: ‘পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বকারী। কারণ আল্লাহ তাআলা-ই তাদের মাঝে তারতম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের বিধান রেখেছেন। দ্বিতীয়ত পুরুষরাই ব্যয়-ভার গ্রহণ করে।’ [নিসা : ৩৪] উপরন্তু এ আনুগত্যের দ্বারা বৈবাহিক জীবন স্থায়িত্ব পায়, পরিবার চলে সঠিক পথে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বামীর আনুগত্যকে এবাদতের স্বীকৃতি প্রদান করে বলেন— যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজান মাসের রোজা রাখে এবং নিজের লজ্জাস্থান হেফাজত করে ও স্বীয় স্বামীর আনুগত্য করে, সে,নিজের ইচ্ছানুযায়ী জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবে। [আহমাদ : ১৫৭৩]

স্বামীর কর্তব্য, এ সকল অধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে আল্লাহর বিধানের অনুসরণ করা। স্ত্রীর মননশীলতা ও পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে সত্য-কল্যাণ ও উত্তম চরিত্রের উপদেশ প্রদান করা কিংবা হিতাহিত বিবেচনায় বারণ করা।উপদেশ প্রদান ও বারণ করার ক্ষেত্রে উত্তম আদর্শ ও উন্নত মননশীলতার পরিচয় দেয়া । এতে সানন্দ চিত্তে ও স্বাগ্রহে স্ত্রীর আনগত্য পেয়ে যাবে।

২. স্বামী-আলয়ে অবস্থান:
নেহায়েত প্রয়োজন ব্যতীত ও অনুমতি ছাড়া স্বামীর বাড়ি থেকে বের হওয়া অনুচিত।মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ নারীদের ঘরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রীদের সম্বোধন করে বলেন—সকল নারীই এর অন্তর্ভুক্তঃ ‘তোমরা স্ব স্ব গৃহে অবস্থান কর, প্রাচীন যুগের সৌন্দর্য প্রদর্শনের মত নিজেদের কে প্রদর্শন করে বেড়িও না। ’ [আহজাব : ৩৩]

ত্রীর উপকার নিহিত এবং যেখানে তারও কোন ক্ষতি নেই, এ ধরনের কাজে স্বামীর বাধা সৃষ্টি না করা। যেমন পর্দার সাথে, সুগন্ধি ও সৌন্দর্য প্রদর্শন পরিহার করে বাইরে কোথাও যেতে চাইলে বারণ না করা। ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহর বান্দিদেরকে তোমরা আল্লাহর ঘরে যেতে বাধা দিয়ো না। [বুখারী: ৮৪৯ ]

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা: এর স্ত্রী যয়নব সাকাফী রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে বলতেন: তোমাদের কেউ মসজিদে যাওয়ার ইচ্ছে করলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। [মুসলিম : ৬৭৪]

৩. নিজের ঘর এবং সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা
স্বামীর সম্পদ সংরক্ষণ করা। স্বামীর সাধ্যের অতীত এমন কোন আবদার কিংবা প্রয়োজন পেশ না করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ স্ত্রী স্বীয় স্বামীর ঘরের জিম্মাদার। এ জিম্মাদারির ব্যাপারে তাকে জবাবদেহিতার সম্মুখীন করা হবে।’ [বুখারী: ২৫৪৬]

৪. নিজের সতীত্ব ও সম্মান রক্ষা করা
পূর্বের কোন এক আলোচনায় আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি হাদিস এ মর্মে উল্লেখ করেছি যে, নিজেকে কখনো পরীক্ষা কিংবা ফেতনার সম্মুখীন না করা।

৫. স্বামীর অপছন্দনীয় এমন কাউকে তার ঘরে প্রবেশের অনুমতি না দেয়া
হোক না সে নিকট আত্মীয় কিংবা আপনজন। যেমন ভাই-বেরাদার। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘তোমাদের অপছন্দনীয় কাউকে বিছানায় জায়গা না দেয়া স্ত্রীদের কর্তব্য।’ [মুসলিম : ২১৩৭]

স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত নফল রোজা না রাখা। কারণ, রোজা নফল—আনুগত্য ফরজ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ নারীর জন্য স্বামীর উপস্থিতিতে অনুমতি ছাড়া রোজা রাখা বৈধ নয়। অনুরূপ ভাবে অনুমতি ব্যতীত তার ঘরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়াও বৈধ নয়। [বুখারী : ৪৭৬৯]

স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার
স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য, সুখকর দাম্পত্য জীবন, সুশৃঙ্খল পরিবার, পরার্থপরতায় ঋদ্ধ ও সমৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন অটুট রাখার স্বার্থে ইসলাম জীবন সঙ্গী স্বামীর উপর কতিপয় অধিকার আরোপ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এখানে প্রদত্ত হল।

১. দেন মোহর : নারীর দেন মোহর পরিশোধ করা ফরজ। এ হক তার নিজের, পিতা-মাতা কিংবা অন্য কারো নয়। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ‘তোমরা প্রফুল্ল চিত্তে স্ত্রীদের মোহরানা দিয়ে দাও।’ [নিসা : ৪]

২. ভরন পোষণ : সামর্থ্য ও প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী স্ত্রীর ভরন-পোষণ করা স্বামীর কর্তব্য। স্বামীর সাধ্য ও স্ত্রীর মর্তবার ভিত্তিতে এ ভরন-পোষণ কম বেশি হতে পারে।অনুরূপ ভাবে সময় ও স্থান ভেদে এর মাঝে তারতম্য হতে পারে।আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “বিত্তশালী স্বীয় বিত্তানুযায়ী ব্যয় করবে। আর যে সীমিত সম্পদের মালিক সে আল্লাহ প্রদত্ত সীমিত সম্পদ হতেই ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যে পরিমাণ দিয়েছেন, তারচেয়ে’ বেশি ব্যয় করার আদেশ কাউকে প্রদান করেন না।” [তালাক : ৭]

৩. স্ত্রীর প্রতি স্নেহশীল ও দয়া-পরবশ থাকা : স্ত্রীর প্রতি রূঢ় আচরণ না করা। তার সহনীয় ভুলচুকে ধৈর্যধারণ করা। স্বামী হিসেবে সকলের জানা উচিত, নারীরা মর্যাদার সম্ভাব্য সবকটি আসনে অধিষ্ঠিত হলেও, পরিপূর্ণ রূপে সংশোধিত হওয়া সম্ভব নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : “তোমরা নারীদের ব্যাপারে কল্যাণকামী। কারণ, তারা পাঁজরের হাড় দ্বারা সৃষ্ট। পাঁজরের উপরের হাড়টি সবচে’ বেশি বাঁকা। (যে হাড় দিয়ে নারীদের সৃষ্টি করা হয়েছে) তুমি একে সোজা করতে চাইলে, ভেঙে ফেলবে। আবার এ অবস্থায় রেখে দিলে, বাঁকা হয়েই থাকবে। তাই তোমরা তাদের কল্যাণকামী হও, এবং তাদের ব্যাপারে সৎ-উপদেশ গ্রহণ কর।” [বুখারি]

৪. স্ত্রীর ব্যাপারে আত্মমর্যাদাশীল হওয়া : হাতে ধরে ধরে তাদেরকে হেফাজত ও সুপথে পরিচালিত করা। কারণ, তারা সৃষ্টিগতভাবে দুর্বল, স্বামীর যে কোন উদাসীনতায় নিজেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অপরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীর ফেতনা হতে খুব যতœ সহকারে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘আমার অবর্তমানে পুরুষদের জন্য নারীদের চে’ বেশি ক্ষতিকর কোন ফেতনা রেখে আসিনি।’ [বুখারী:৪৭০৬]

নারীদের ব্যাপারে আত্মম্ভরিতার প্রতি লক্ষ্য করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমরা সা’আদ এর আবেগ ও আত্মসম্মানবোধ দেখে আশ্চর্যান্বিত হচ্ছ। আমি তার চে’ বেশি আত্মসম্মানবোধ করি,আবার আল্লাহ আমারচে’ বেশি অহমিকা সম্পন্ন।’ [মুসলিম : ২৭৫৫]

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, যার মাঝে আত্মমর্যাদাবোধ নেই সে দাইয়ূছ (অসতী নারীর স্বামী, যে নিজ স্ত্রীর অপকর্ম সহ্য করে)। হাদিসে এসেছেঃ ‘দাইয়ূছ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ [দারামি : ৩৩৯৭]

মানুষের সবচেয়ে বেশি আত্মমর্যাদার বিষয় নিজের পরিবার। এর ভেতর অগ্রাধিকার প্রাপ্ত স্বীয় স্ত্রী। অতঃপর অন্যান্য আত্মীয় স্বজন এবং অধীনস্থগণ। পরিশেষে নির্ঘাত বাস্তবতার কথা স্বীকার করে বলতে হয়, কোন পরিবার সমস্যাহীন কিংবা মতবিরোধ মুক্ত নয়। এটাই মানুষের প্রকৃতি ও মজ্জাগত স্বভাব। এর বিপরীতে কেউ স্বীয় পরিবারকে নিষ্কণ্টক অথবা ঝামেলা মুক্ত কিংবা ফ্রেশ মনে করলে, ভুল করবে। কারণ, এ ধরাতে সর্বোত্তম পরিবার কিংবা সুখী ফ্যামিলির একমাত্র উদাহরণ আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরিবার ও ফ্যামিলি। সেখানেও আমরা মানবিক দোষ-ত্রুটির চিত্র দেখতে পাই, অন্য পরিবারের পবিত্রতা কোথায় ?

জ্ঞানী-গুণীজনের স্বভাব ভেবে-চিন্তে কাজ করা, ত্বরা প্রবণতা পরিহার করা, ক্রোধ ও প্রবৃত্তিকে সংযমশীলতার সাথে মোকাবিলা করা।কারণ, তারা জানে যে কোন মুহূর্তে ক্রোধ ও শয়তানের প্ররোচনায় আত্মমর্যাদার ছদ্মাবরণে মারাত্মক ও কঠিন গুনাহ হয়ে যেতে পারে।যার পরিণতি অনুসূচনা বৈকি? আবার এমনও নয় যে, আল্লাহ তাআলা সমস্ত কল্যাণ ও সুপথ বান্দার নখদর্পে করে দিয়েছেন। তবে অবশ্যই তাকে মেধা, কৌশল ও বুদ্ধি প্রয়োগ করতে হবে।

একজন স্বামীর ওপর স্ত্রীর হক বা অধিকার
১. সামর্থ্য অনুযায়ী ভরণ-পোষণ ও খরচাদি দিতে কোনো প্রকার অবহেলা না করা। ২. স্ত্রীকে দ্বীনি মাসআলা-মাসায়িল শিক্ষা প্রদান করা। ৩. ভালো কাজের প্রতি উদ্ভূত করা। ৪. যাদের সঙ্গে দেখা দেয়ার ব্যাপারে ইসলামের অনুমতি রয়েছে, তাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করার সুযোগ প্রদান করা। ৫. আÍীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার তাগিদ প্রদান করা। ৬. কোনো প্রকার ভুল বা অসাবধানতা হলে ধৈর্য ধারণ করা। ৭. শাসন ও সংশোধনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা। ৭. মহর আদায় করা। ৮. ইসলামি শরিয়তের সীমার মধ্যে থেকে স্ত্রীর মন জয় করা। ৯. একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের মধ্যে সমতা বজায় রাখা। ১০. নির্যাতন না করা।

যারা তাদের স্ত্রীর কাছে উৎকৃষ্ট…
নবিজি [সা.] বলেছেন, তোমাদের মধ্যে তারাই উৎকৃষ্ট, যারা তাদের স্ত্রীর কাছে উৎকৃষ্ট এবং আপন পরিবার-পরিজনের প্রতি স্নেনশীল। [তিরমিজি শরিফ] অপর এক হাদিসে রাসুল [সা.] বলেছেন, যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর কষ্টদায়ক আচরণে ধৈর্য ধারণ করবে, মহান আল্লাহ তাকে হজরত আইয়ুব (আ.)-এর সমান ‘সওয়াব’ দান করবেন। হজরত আবু হোরায়রা [রা.] থেকে বর্ণিত, রাসুল [সা.] বলেছেন, হে মানব জাতি! স্ত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার ব্যাপারে আমার হুকুম মান্য কর। পাজরের হাড় থেকে তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে, স্বভাবতই তারা বাঁকা। যদি তুমি বাঁকা হাড়কে শক্তির দ্বারা সোজা করতে যাও, তবে তা ভেঙে যাবে। তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে দাও, সব সময় বাঁকাই থাকবে। এজন্য আমার শেষ নির্দেশ হিসেবে কবুল কর, স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার কর। [বোখারী ও মুসলিম] স্ত্রীর সঙ্গে সুন্দর ও ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের আপন করে নিতে হবে। স্বামীর কাছ থেকে যখন কোনো স্ত্রী ভালোবাসা পাবে, তখন সে তার সবটুকু স্বামীর জন্য উজাড় করে দিবে। রাসুল [সা.] বলেছেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর উভয়ে যখন একে অপরের দিকে ভালোবাসার নজরে তাকাবে, মহান আল্লাহ তাদের দিকে রহমতের নজরে তাকাবেন।’

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

সরকার কর্তৃক দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা : কী বলে ইসলাম

অনেক সময় কোনো পণ্যের মূল্য দিনকে দিন বাড়তেই থাকে। সেসময় সরকারের পক্ষ থেকে মূল্যের একটি সীমারেখা নির্দিষ্ট করে তার অতিরিক্ত মূল্য আদায় করার উপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। একে আরবীতে তাসয়ীর এবং বাংলায় মূল্য নিয়ন্ত্রণ বলা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে এধরনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে জায়েয কিনা?

অনেক সময় কোনো পণ্যের মূল্য দিনকে দিন বাড়তেই থাকে। সেসময় সরকারের পক্ষ থেকে মূল্যের একটি সীমারেখা নির্দিষ্ট করে তার অতিরিক্ত মূল্য আদায় করার উপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। একে আরবীতে তাসয়ীর এবং বাংলায় মূল্য নিয়ন্ত্রণ বলা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে এধরনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে জায়েয কিনা?

শরীয়তের মূল বিধান হচ্ছে, যে কোনো পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারটি ক্রেতা ও বিক্রেতার অভিপ্রায়ের উপর ছেড়ে দেয়া হবে। বেশি দাম হোক বা কম দাম হোক, তাদের ইচ্ছাই চূড়ান্ত। কিছু কিছু পণ্যের কোয়ালিটি তথা গুণগত মানের তারতম্যের কারণেও মূল্যের মধ্যে তারতম্য ঘটে। এজন্য শরীয়ত রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মূল্য নিয়ন্ত্রণের পক্ষে নয়।

কিন্তু কিছু কিছু অবস্থায় বণিকশ্রেণী নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যে সীমাতিরিক্ত বৃদ্ধি করে জনগণকে কষ্টে ফেলেন। বরং এখনতো মুনাফাখোরের লোভ পরিস্থিতিকে এতটাই জঘন্য করে ফেলছে যে, রীতিমত জনগণকে লুণ্ঠন করার চক্রান্ত চলছে। হঠাৎ কিছু পণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী হয়ে যাচ্ছে। অগ্নিমূল্যের এ বাজারে একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে যৎসামান্য বেতন দিয়ে মাস কাটানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। এধরনের পরিস্থিতির কারণে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে সরকারের জন্য এ অনুমতি রয়েছে যে, অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ, সমাজ-বিজ্ঞান বিশ্লেষক ও দ্বীনদার বোধসম্পন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে পরামর্শ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ করে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করার উপর কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে; যাতে করে জনগণকে কষ্ট থেকে উদ্ধার করা যায়।
তথ্যসূত্র : আবু দাউদ : ২/২৪৪, তিরমিযী : ২/৫৩, হিদায়াহ, কিতাবুল বুয়ূ

মাওলানা আবদুল্লাহ আল ফারুক
লেখক : আলেম, লেখক ও বহু গ্রন্থ অনুবাদক

 

প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী ছাড়াই ক্যারিয়ার গড়ুন ৬টি উপায়ে

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এবং ডেভলপমেন্টের গবেষণা অনুযায়ী মাত্র ৪৬% ছাত্র-ছাত্রী তাদের পড়শোনা শেষ করেন। গবেষণায় আরও দেখা যায়, ২৫ থেকে ৩২ বছর বয়সী এইসব গ্রাজুয়েশন শেষ করতে না পারা ছাত্ররা আবার আয়ও করছে। আসলে আপনি যদি কাজ করতে চান তাহলে কাজ পাওয়া অসম্ভব নয়। আপনার ডিগ্রী থাকুক বা না থাকুক, প্রয়োজন মেধা এবং পরিশ্রমের। আসুন, জেনে নিই, ডিগ্রী না থাকলেও কিভাবে ক্যারিয়ার দাঁড় করাতে পারবেন আপনি।
সেবামূলক ব্যবসা শুরু করুন
এখন অনলাইনে সবাই নিত্য-নতুন ব্যবসা খুলছে। এদের প্রয়োজন কুরিয়ার সেবার। আপনি সেই সেবা নিয়ে হাজির হতে পারেন। আপনার বিশ্বস্ত সেবা শীঘ্রই আপনাকে জনপ্রিয় করে তুলবে। এরকম আরও অনেক আইডিয়া আছে যেখানে আপনি বিনিয়োগ করতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে খরচ খুবই কম, আপনার কোন ওয়েবসাইট লাগবে না শুরুতেই। শুধু দরকার সততা এবং পরিশ্রমের।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় বিনিয়োগ করুন
আপনার যদি পর্যাপ্ত মূলধন থাকে তাহলে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার কথা ভেবে দেখতে পারেন। নিজের প্রপার্টি ভাড়াও দিতে পারেন। কিন্তু আপনার যদি অভিজ্ঞতা কম থাকে তাহলে ক্ষতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডেভলপারের সাহায্য নিন। আপনার একান্ত বিশ্বস্ত কেউ হলেই কাজটি করুন। নয়ত বিপুল অংকের টাকা ক্ষতি হতে পারে।
কন্সালটিং সার্ভিস
ছোট ছোট বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে নিজেকে আরেকটু দক্ষ করে নিন। এখন স্বল্প খরচে এমনকি বিনা খরচে অনেক জায়গায় প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে। আপনি বিজনেজ ম্যানেজমেন্ট, হাও টু ফাইন্ড ইওর গোল, কি অফ অন্ট্রেপ্রেনরশীপ ইত্যাদি বিভিন্ন কোর্স করতে পারেন। অতঃপর নিজেই খুলতে পারেন পরামর্শ কনসাল্টিং ফার্ম।
 
ট্রেনিং সেন্টার
কর্মমূখী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিতে পারেন আপনি। যেমন পার্লারের কাজ শিখে পার্লার খোলেন অনেকে। ব্লক, বাটিকের কাজ শিখে বুটিক শপ খুলতে পারেন। আবার বিভিন্নরকম প্রশিক্ষণ নিয়ে একবারে খুলতে পারেন একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র। অনেক কম খরচেই প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন আপনি। আবার সার্টিফিকেটও থাকবে, তাই মূল্যায়ণও পাবেন।
নিজের জিনিস ভাড়া দিন
আপনার যদি গাড়ি থাকে ভাড়া দিতে পারেন সেটি। রেন্ট এ কারের আয় কিন্তু বেশ ভাল। আবার আপনার নিজের বাড়ি হলে ভাড়া দিতে কোচিং সেন্টার হিসেবে। ওভাবে বাড়ি যদি নাও থাকে, আপনার ফ্লাটের একটি রুম ভাড়া দিতে পারেন স্টুডিও হিসেবে। আপনার যদি অফিশিয়াল এমন কোন যন্ত্র থাকে যা ভাড়া দেওয়া যায় সেটিও ভাড়া দিতে পারেন।
শিল্পচর্চা
আপনার হয়ত কোন ডিগ্রী নেই। কিন্তু আপনি হয়ত ভাল গান করেন। বা নাচ করেন। গান, নাচের প্রশিক্ষণকেন্দ্র খুলতে পারেন। আপনার শিল্পের চর্চা হতে থাকল,পাশাপাশি দক্ষতা বাড়ল। এরপর আপনি সুযোগমত নিজের প্রতিভাকে আরও বড় পর্যায়ে সামনে নিয়ে আসুন। নিজেকে তুলে ধরুন সবার সামনে। আপনার সখই হতে পারে আপনার পেশা।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

কল্পনা রানী গ্রামের নারীদের ভরসা

কেউ ডাকেন ডাক্তার আপা, কেউ বৌদি, কেউ দিদি, আবার কেউবা মাসি। একটি এলাকার নারীদের জীবনে চলার সঙ্গী এই মানুষ। তাঁকে ছাড়া যেন স্বস্তি পান না গৃহিণীরা। মা ও শিশু স্বাস্থ্যের পরিচর্যা এবং পরিবার পরিকল্পনার সেবা দিতেন তিনি। হয়ে উঠেছেন সবার আপনজন।
এই সেবাদাতা নারীর নাম কল্পনা রানী সরকার। সরকারের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ‘পরিবার কল্যাণ সহকারী’ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ছিল তাঁর কর্মস্থল। ৩৯ বছর ধরে এখানেই চাকরি করেছেন। শ্বশুরবাড়ি একই এলাকায়। গত ২৬ জানুয়ারি তিনি অবসরে গেছেন। তারপরও এলাকার মানুষের ডাকে সাড়া দেন আগের মতো।
এ কাজপাগল মানুষকে ছাড়া যেমন এলাকার মানুষের চলে না। তেমনই পরিবার পরিকল্পনা বিভাগও দিয়েছে তাঁকে ভালো কাজের স্বীকৃতি। ১১ বার হয়েছেন উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ কর্মী। জেলায় শ্রেষ্ঠ হয়েছেন দুই বার। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মহাপরিচালক বেশ কয়েকবার তাঁকে সনদ দিয়েছেন। সনদের লেখাগুলো এ রকম: ‘আপনি পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের একজন অগ্রসৈনিক। আপনার এলাকায় মা ও শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যা এবং পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম বাস্তবায়নে আপনি পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং অনুকরণযোগ্য।’
২০০২ সালের অক্টোবরের এক শুক্রবারের বিকেল। বাচ্চাদের পোলিও টিকা খাওয়াতে হবে। তাই বাড়ি বাড়ি খবর দিচ্ছিলেন টিকা কেন্দ্রে আসার জন্য। হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। পা পিছলে পড়ে গিয়ে ডান হাতের কবজি ভেঙে যায়। কিন্তু হাতটি আর ভালো হয়নি। এখন ডান হাতটি অকেজো কল্পনার। লিখেন দুই হাতের সাহায্যে। সমস্যা হয় খাবার খেতে এবং নিজের অন্যান্য কাজে। কিন্তু দমে যাননি। এ অবস্থায় ঘরে বসে থাকেননি। এরপরও তাঁর উপস্থিতি এলাকার ঘরে ঘরে। এ অবস্থায়ও জেলার এবং উপজেলার শ্রেষ্ঠ কর্মী হয়েছেন।
লাহুড়িয়া ইউনিয়নের কচুবাড়িয়া, ছাইমনারচর, পশ্চিমপাড়া, হিন্দুপাড়া ও মোল্লাপাড়া—এই পাঁচটি এলাকায় ছিল তাঁর কাজ। এখানে বর্তমান লোকসংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। এলাকার নারীরা জানালেন, মেয়েলি রোগের সব কথা নিজের আপনজনকেও বলা যায় না। লজ্জা লাগে। ‘ডাক্তার আপা’-ই তাঁদের ভরসা। তাই দুই-এক দিন তাঁকে না দেখলেই অস্বস্তিতে ভোগেন তাঁরা। ওই এলাকার গৃহিণী দিপালী বেগম, কনক বেগম ও লাভলী জানালেন, গর্ভাবস্থায় এবং শিশুর যত্ন নিতে এলাকার নারীরা তাঁর ওপরই ভরসা করেন। তাঁর পরামর্শে সবাই লাভবান হয়েছেন। তিনি নিজের মায়ের মতো পাশে থাকেন। অনেক পরিবারের স্বামী ও অন্য সদস্যদের অবহেলা সহ্য না করে নিজেই গর্ভবতীকে নিয়ে ছোটেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। উপজেলা বা জেলা শহরের হাসপাতালে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে সেখানে পরিবারের সদস্যরা সঙ্গে নেই। বাচ্চা প্রসব করিয়েছেন নিজ দায়িত্বে।
কল্পনা রানী বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় গর্ভবতীর পেটে বাচ্চার অবস্থান ভালো নেই। অশিক্ষিত পরিবার। কবিরাজি বা ঝাড়-ফুঁকে নজর তাঁদের। আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো ও অন্যান্য চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচার না করালে মা ও শিশু মৃত্যুমুখে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ অবস্থায় নিজে দায়িত্ব নিই। পরে সবাই খুশি হয়।’
লাহুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জি এম নজরুল ইসলাম বললেন, কল্পনা রানী এলাকায় ‘গরিবের ডাক্তার আপা’ বলে পরিচিত। চাকরি নয় সেবাই তাঁর ধর্ম।
কল্পনা বলছিলেন, ‘চাকরিজীবনের প্রথম দিকে ৭০-৮০-এর দশকে পরিবার পরিকল্পনার কর্মী শুনে অনেক বাড়িতেই ঢুকতে দেয়নি। “না জায়েজ কাজ” বলে তাড়িয়েছে। দমে যাইনি। এলাকার শিক্ষক ও সচেতন মানুষের সাহায্য নিয়ে সেসব পরিবারে সফল হয়েছি। এখনের পরিবেশ এমন মনে হয়, সবার যেন অভিভাবক হয়ে গেছি।’
এসএসসি পাস কল্পনা রানী ১৯৭৪ সালে বিয়ে করেন। স্বামী ছিলেন বেকার। অর্থাভাবে বাধ্য হয়ে দুই বছর পর তাঁকে এই চাকরি নিতে হয়েছিল। তিন ছেলে তাঁর। সবাই বিয়ে করেছেন। সবাই ব্যবসায়ী। স্বামী ও সংসারের অন্যদের নিয়ে এখন সচ্ছল পরিবার। এখন তাঁর ভাঙা হাতটিতে ব্যথা, উচ্চরক্তচাপ ও হাঁটুতে ব্যথা। কিন্তু বোঝা যায় না। সেবায় রত সর্বক্ষণ। তিনি বললেন, ‘এলাকার পরিবারগুলোর খোঁজ রাখতে না পারলে সুখ পাই না। মনে হয়, অজ্ঞতার কারণে যদি কোনো মা ও শিশু মৃত্যুমুখে পতিত হয়!’
লোহাগড়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানভীর আহমেদের মতে, উপজেলা সদরের শেষ প্রান্ত (২০ কিলোমিটার দূরে) প্রত্যন্ত গ্রামে সাধারণ মানুষের সুচিকিৎসার পরামর্শে অন্যতম ভরসাস্থল কল্পনা রানী।

 

ঈদের নাস্তায় ডোনাট কাবাব

ঈদে পোলাও, বিরিয়ানির ভিড়ে থাকা চাই বিভিন্ন পদের সুস্বাদু নাস্তা। কারণ, উৎসবের এই দিনে আত্মীয় স্বজনের আনাগোনা থাকে উল্লেখ করার মতো। কোরবানির ঈদে মাংসের আধিক্য থাকায় নাস্তাতেও তার ছোঁয়া থাকা স্বাভাবিক। ঠিক এমনই একটি সুস্বাদু নাস্তার পদ হতে পারে ডোনাট কাবাব। বিকেলের বা সন্ধ্যার নাস্তায় নান অথবা পরোটার সঙ্গে ডোনাট কাবাব খুবই মানানসই। চাইলে ভাতের সঙ্গেও খেতে পারেন ডোনাট কাবাব। তাই আসুন শিখে নেয়া যাক ডোনাট কাবাবের সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

গরুর মাংসের কিমা আধা কেজি, ডিম ২টি, আদা বাটা আধা চা চামচ, রসুন বাটা আধা চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া আধা চা চামচ, টক দই ১ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণ মতো, কাঁচামরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, কাবাব মসলা ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, টমাটো সস ১ টেবিল চামচ, তেল ভাজার জন্য, বেরেস্তা ১ টেবিল চামচ।

যেভাবে করবেন

প্রথমে পেঁয়াজ কুচি ও কাঁচামরিচ কুচি সামান্য তেলে ভেজে নিতে হবে। এবার কিমার সঙ্গে ডিম ও তেল ছাড়া সব উপকরণ একসঙ্গে ভালো করে মেখে আধা ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এবার মাখানো কিমা ডোনাটের আকারে তৈরি করতে হবে। এরপর সেকা তেলে ডোনাট গুলো এপিঠ ওপিঠ ভেজে হালকা শক্ত করে নিতে হবে। তারপর গোলানো ডিমে ডোনাট গুলো চুবিয়ে ডুবো তেলে বাদামি করে ভেজে তুলে আনুন। ব্যাস হয়ে গেল ডোনাট কাবাব।

 

সরিষার তেলে ইলিশ তেহারি

বৃষ্টিভেজা দিনেই ইলিশের যেন বেশি খাতির। ভেজা আবহাওয়ায় আমাদের মন মাতাতেও চায় মোহনীয় গন্ধে ভরা ইলিশ আয়োজন। বাড়িতে অতিথি এলে বিশেষ আপ্যায়নে স্বগর্বে যোগ হতে পারে ইলিশ রেসিপি। সেখানে সরিষা তেলে ইলিশ তেহারি হলে তো কোনো কথায় থাকে না। তাই আজ শিখে নেয়া যাক ইলিশ তেহারি রান্নার সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

ইলিশ মাছ ১০ টুকরো, পোলাও চাল ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, টমেটো সস আধা কাপ, সরিষা তেল ১ কাপ, তেজপাতা ২ টা, দারুচিনি ২ টা, এলাচ ৪ টা, লবণ স্বাদমত, জয়ফল ১টা, জয়ত্রী ২ টা, সাদা গোলমরিচ ১ চা চামচ, আস্ত জিরা আধা চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, জিরা বাটা আধা চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ও ধনেপাতা বাটা ১ চা চামচ, শুকনো মরিচ বাটা ১ চা চামচ, সরিষা বাটা ২ চা চামচ, কাঁচা মরিচ ১০টা, সরিষা তেল ২ টেবিল চামচ।

যেভাবে করতে হবে

গরম মশলার সব উপকরন একসঙ্গে টেলে গুঁড়ো করে নিতে হবে। সমস্ত বাটা মসলা একটু পানি দিয়ে একসঙ্গে একটা পাত্রে ভালো করে মেশান। পোলাও চাল ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে। দুই লিটার পানি চুলায় গরম হতে দিন। অপর একটি হাঁড়ি চুলায় বসিয়ে গরম হলে আধ কাপ সরিষা তেল দিন। এবার বাটা মশলার মিশ্রণ, টমেটো সস ও ২ চা চামচ লবণ দিয়ে নাড়তে থাকুন। সুগন্ধ বেরোলে ধোয়া মাছ কষিয়ে নিন। এবার পরিমাণমত গরম পানি দিয়ে ১০ মিনিট সেদ্ধ করুন। মাছ সেদ্ধ হওয়ার পর যখন তেল বেরোবে এবং সামান্য ঝোল থাকবে, তখন চুলা বন্ধ করে দিন।

এবার পোলাও

অপর একটি বড় হাঁড়িতে বাকি আধ কাপ সরিষা তেল দিন। তেল গরম হলে আস্ত এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা ছেড়ে দিন। অল্প ভেজে পেঁয়াজ কুচি দিন। পেঁয়াজ নরম হলে চাল দিয়ে ১৫ মিনিট নেড়েচেড়ে ভাজুন। এবার ওই গরম ২ লিটার পানি দিন। পরিমাণমতো লবণ দিয়ে হাঁড়ি ঢেকে দিন। চাল ফুটে পানি যখন প্রায় শুকিয়ে আসবে তখন চুলা বন্ধ করে দিন। একটি পুরু তলার বড় হাড়িতে প্রথমে অর্ধেক পোলাও বিছিয়ে দিন। এবার মাছ গুলো সাবধানে তুলে পোলাওয়ের উপর বিছিয়ে কাঁচা মরিচ আর গরম মসলার গুঁড়া ছড়িয়ে বাকি পোলাওয়ে ঢেকে দিন। ওপরে পেঁয়াজ বেরেস্তা আর ২ চামচ সরিষা তেল ছিটিয়ে দিন। এখন চুলার ওপর তাওয়া রেখে তার ওপর হাঁড়ি রেখে চুলা জ্বেলে দিন। হাঁড়ির মুখ ঢাকনা দিয়ে লাগিয়ে নিন। চাইলে নরম আটা দিয়ে ঢাকনার কিনারে সীল করে দিতে পারেন। এভাবে অল্প আঁচে রাখুন ২০ মিনিট। ব্যস, হয়ে গেল মজাদার সরিষার তেলে ইলিশ তেহারি।

 

ব্র্যান্ডের ফ্যাশন হাউজগুলোতে চলছে বিশেষ ছাড়

আর মাত্র ১৫ দিন বাকি রোজা শুরু হওয়ার। ত্রিশ দিন রোজা শেষে মুসলিম দেশের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ। তাই বলা যায় ঈদকে ঘিরে সারা দেশের শপিং মলগুলোতে চলছে ধোয়া মোছার কাজ। সেই দিক থেকে ফ্যাশন হাউজের গত বছরের সব পোশাকগুলোও বিক্রি করে সবাই তাদের শোরুম সাজাচ্ছে নতুন সব পণ্যে। তাইতো চলছে প্রায় সব ফ্যাশন হাউজেই বিশেষ ছাড়। এসব দিক থেকে কোন ফ্যাশন হাউজই পিছিয়ে নেই। এই সময়ে কেউ কেনাকাটা করতে চাইলে জিতে যাবেন। পোশাক পাবেন একদম কম মূল্যে।

আজকে আমরা জানাচ্ছি এই মূহুর্তে কোথায় কোন ফ্যাশন হাউজে চলছে বিশেষ ছাড়।

ফ্যাশন হাউজ স্মার্টেক্স’য়ে পাবেন ১৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। বিশেষ বিশেষ পণ্যে এই অফারটি চলবে পুরো মে মাস জুড়ে।

ফ্যাশন হাউজ রিচম্যান’য়ে পাবেন ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। তাদের অফারটি শুরু হয়েছে এই দুই মে থেকে চলবে ২৩ মে পর্যন্ত। তবে অফারটি তারা আরো এক সপ্তাহ পর্যন্ত এক্সটেনশন করতে পারে বলে বসুন্ধরা সিটি শপ ম্যানেজার জানান। কোন ধরনের এক্সেসরিজে অফারটি প্রযোজ্য হবে না।

এছাড়া ফ্যাশন হাউজ রিচম্যান’য়ে এইচএসবিসি, স্টার্ন ব্যাংক ও স্ট্যার্ন্ডাড ব্যাংক, মিউচুয়াল ব্যাংকের কার্ড ইউজ করে পেতে পারেন ৮ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। তাদের নিজস্ব মেম্বারশীপ কার্ড হোল্ডাররা পাবেন ৮ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।

ফ্রিল্যান্ড ফ্যাশন হাউজ দিচ্ছে বিশেষ পোশাকের উপর ৫০ শতাংশ ছাড়। এই অফারটিও চলবে মে মাসের শেষ পর্যন্ত।

দর্জিবাড়ি ফ্যাশন হাউজে গেলে পাবেন মেগা সেল বা সামার সুপার সেল। সেখানে হাফ স্লিভ যে কোন পোশাক পাচ্ছেন শুধুমাত্র ৩১৫ টাকায়। আর ফুল স্লিভ পোশাক ও পাঞ্জাবীর পাচ্ছেন ৫২৫ টাকায়।

দেশের বর্তশান সময়ের আলোচিত ফ্যাশন হাউজ এক্সটেসি ও তানজিম ফ্যাশন হাউজ’য়ে একটি পণ্য পাচ্ছেন এটি ফ্রি। দুটি কিনলে পাচ্ছেন দুটি ফ্রি। তবে সীমিত পণ্যের উপর চলছে এই অফার। এছাড়া ডেনিম জিন্স পাচ্ছেন শুধুমাত্র ১৪৮০ টাকায়। তবে ৭০ শতাংশ পর্যন্তও তারা বিশেষ ছাড় দিচ্ছে রিজেক্ট ও পুরাতন পণ্যের উপর। কোন সমস্যা থাকলে তারা তা দেখিয়ে বিক্রি করছে। ৪৯০ থেকে ৫০০ টাকায়ও তারা ফ্লাট সেল করছে।

জুতা কিনতে চাইলে চলে যেতে পারেন বে ইম্পেরিয়াম ও এপেক্স জুতার শোরুমে। বে ইম্পেরিয়ামে চলছে ১০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। আর এপেক্স’য়েও পাবেন সমান মূল্য ছাড়। বাটায় পাবেন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।

ইনফিনিটি সুপার শপে পাচ্ছেন ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। সীমিত সংখ্যক পণ্যের উপর চলছে এই ডিসকাউন্ট। মেয়েদের সেলোয়ার কামিজ, ছোটদের পোশাক ও জুতায় পাচ্ছেন এই সুযোগ।

তাই আর দেরি কেন। কম দামে পছন্দের ব্র্যান্ড এর পোশাক কিনতে চাইলে আজই যোগাযোগ করুন এই সব শোরুমগুলোতে। আর উপভোগ করুন সামারের সব পোশাক।

 

ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে মডেল সাবিরার আত্মহত্যা

ঢাকা: আত্মহত্যা করেছেন মডেল সাবিরা হোসাইন। রাজধানীর মিরপুরের বাসায় তার মরদেহ পাওয়া গেছে।আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে একটি সুইসাইড নোট ও ভিডিও বার্তা দিয়ে গেছেন এ মডেল।

মঙ্গলবার (২৪মে) ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর মিরপুরে রূপনগরের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রূপনগর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জোহরা খাতুন বিষয়টি বাংলামেইলকে নিশ্চিত করেছেন। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে প্রেরণ করা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, নির্ঝর নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের জের ধরেই আত্মহননের পথ বেছে নেন সাবিরা। তাদের দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও বিয়ের ব্যাপারে অসম্মতি ছিল নির্ঝরের পরিবারের। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে সাড়ে ৯ মিনিটের ভিডিও বার্তায় ঘোষণা দিয়ে আত্মহত্যা করেন সাবিরা।

ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, ছুরি হাতে বারবার পেটে ও গলায় চাপ দেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু কাজ না হওয়ায় ৯ মিনিটের ওই ভিডিওর শেষে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যর্থ, আপাতত। ওকে নেক্সট অ্যাটেমপ্ট নেব।’

ভিডিও বার্তা যুক্ত করে ফেসবুক স্ট্যাটাসে সাবিরা লেখেন, ‘আমি তোমাকে দোষ দিচ্ছি না। এটা তোমার ছোট ভাইকে বলা। সে আমাকে যা ইচ্ছে বলেছে। আর বেস্ট পার্ট হল, সে আমাকে বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। আর আমার প্রশ্ন হল, তোমার কি একটুও ফিল হয়নি?’

তিনি আরো লিখেছেন, ‘আমাকে ব্যবহার করবে, সেক্স করবে, আর আমি সরে যাবো। এটাতো হতে পারে না। বিয়ের কথা বললে তোমার পরিবার অসুস্থ হয়ে যায় আর সেক্সের কথা বললে সব ঠিকঠাক।’

সবশেষে নির্ঝরকে ট্যাগ করে তিনি লেখেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য সে (নির্ঝর) দায়ী। যদি আমি মারা যাই, তাহলে এর দায় তার।’

জানা যায়, সাবিরার প্রেমিক নির্ঝর একজন আলোকচিত্রী। তার ফেসবুকে প্রোফাইলেওে সাবিরার সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ ছবি পাওয়া গেছে।

সাবিরা বেশ কিছু পণ্যের স্থিরচিত্রে মডেল হয়েছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন। মডেলিং ছাড়াও উপস্থাপনায়ও তাকে দেখা গেছে।মোহনা টিভি ও গানবাংলা টিভিতেও কাজ করতেন তিনি।

 

নজরুলের বিদ্রোহ সাম্যবাদ নারী ও প্রেম

‘বল বীর / চির উন্নত মম শীর’- মন্ত্রে মাথা তুলে দাঁড়াবার সাহসী উচ্চারণে শোনালেন বিদ্রোহের বাণী। তিনি আর কেউ নন। আমাদের প্রিয় কবি নজরুল ইসলাম। তাঁর বিদ্রোহের কেন্দ্রবিন্দুতে সাম্যবাদ, নারীর মর্যাদা ও মানুষে মানুষে গড়ে ওঠা প্রেম। যেহেতু একজন কবির দৃষ্টিভঙ্গি নির্ভর করে তার সমসাময়িক অবস্থা বা প্রেক্ষাপটের ওপর। কোনো সচেতন শিল্পী তার সময় ও সমাজকে কখনো অস্বীকার করতে পারেন না। কাজী নজরুল ইসলাম তার ব্যতিক্রম নন। তিনি দেশের এমন এক সঙ্কটময় মুহূর্তে আবির্ভূত হয়েছেন; যখন মুক্তি সংগ্রামের স্লোগান আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছে। ফলে এ আন্দোলন-সংগ্রামের প্রভাব পড়েছে তার কাব্যে। দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার নেশায় তিনি হয়ে উঠেছিলেন উন্মাদ। দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে হয়েছেন মহাবিদ্রোহী। কিন্তু তারপরও মানব মনের চিরন্তন প্রেমের বহিঃপ্রকাশও ঘটেছে তার কাব্যে। কখনো তার বিদ্রোহের মাঝে প্রেম; আবার কখনো প্রেমের মাঝে বিদ্রোহ। সবমিলিয়ে একাকার হয়ে যায় সাম্যবাদে। এসবই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়েছিল প্রিয়তমার মতো।

বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম স্বমহিমায় বাংলাসাহিত্যে চির ভাস্বর হয়ে আছেন। তাঁর ‘অগ্নিবীণা’, ‘বিষের বাঁশী’, ‘ঘুমভাঙার গান’, ‘ফণিমনসা’, ‘সর্বহারা’, ‘জিঞ্জির’, ‘সন্ধ্যা’, ‘প্রলয় শিখা’, ‘সাম্যবাদী’ ইত্যাদি কাব্যের মাধ্যমে তিনি জাগরণের গান শুনিয়েছেন মানুষকে। জাতির বন্দিত্ব মোচনের জন্য তার প্রচেষ্টা ছিল অকৃত্রিম। তিনি বিক্ষুব্ধ হয়ে বলেছেন:
‘লাথি মার ভাঙরে তালা,
যতসব বন্দীশালা,
আগুন জ্বালা আগুন জ্বালা।’
তার এ বিদ্রোহ অনাসৃষ্টির জন্য নয়। পুরাতনকে ভেঙে নতুন করে গড়ার বিদ্রোহ। দেশ-জাতি-সমাজকে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। তার বিদ্রোহ ছিল শাসক, যাজক ও সমাজপতিদের বিরুদ্ধে। তার এ বিদ্রোহ নিরন্তর। যতদিন না এর কোনো প্রতিকার হবে। তাইতো তিনি বলেছেন:
‘মহাবিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণ-ক্লান্ত।
আমি সেই দিন হব শান্ত।’
নিপীড়িত মানুষের মুক্তির পর কবির এ বিদ্রোহ সমাপ্ত হয়ে যাবে। বাস্তবিক অর্থে মানুষকে কতটা ভালোবাসলে এমন বিদ্রোহী হয়ে ওঠা যায়?

নিঃসন্দেহে কাজী নজরুল ইসলামের ‘অগ্নিবীণা’ একটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। এ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘বিদ্রোহী’ কবিতার জন্যই তিনি আজ সর্বত্র ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে সমাদৃত। বিদ্রোহী অভিধায় অভিসিক্ত হলেও কাজী নজরুল ইসলাম একজন খাঁটি প্রেমিক। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার জন্য কারাবরণ করলেও প্রেমের মহিমার ক্ষেত্রে আরো বেশি সমুজ্জ্বল তিনি। অন্তরে প্রেম না থাকলে কখনো এমন বিদ্রোহ আসে না। ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরি আর হাতে রণতূর্য’- এ যেন কবি নজরুলের অন্তরের কথা। এছাড়া নারীর প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও ভক্তি প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন গানে ও কবিতায়। নারীকে সর্বোচ্চ মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন তিনি। নারীকে যথাযথ মর্যাদা দিতে গিয়ে কবি বলেছেন:
‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের এ কথা আমরা কখনো অস্বীকার করতে পারি না।

‘আলগা করো গো খোঁপার বাঁধন’ কিংবা ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানী, দেব খোঁপায় তারার ফুল’- এ ধরনের গানে তার অপার্থিব প্রেমের উৎসরণ লক্ষ্য করা যায়। এ ক্ষেত্রে তাকে প্রেমিক কবি হিসেবে আখ্যায়িত করলেও অত্যুক্তি করা হবে না। বিদ্রোহী রূপের আড়ালে তার চিরায়ত কামনা-বাসনা-প্রেমকে ঢেকে রাখার সাধ্য আছে কার? কবি এও বলেছেন-
‘নারীর বিরহে, নারীর মিলনে, নর পেল কবি প্রাণ,
যত কথা তার হইল কবিতা, শব্দ হইল গান।’


মূলত নারীর উৎসাহ-প্রেরণা ও প্রেমের মহিমা তাকে বিদ্রোহী হতে উৎসাহ জুগিয়েছে। ‘বিদ্রোহী’ কবিতায়ও তার প্রেম প্রকাশিত হয়েছে। নারী হৃদয়ের ব্যর্থতা, ক্ষোভ ও বাসনাকে কবি নিজের বিদ্রোহের উপাদান হিসেবে গ্রহণ করেছেন।


কবি কাজী নজরুল ইসলাম একদিকে যেমন বিদ্রোহী; অন্যদিকে আবার রোমান্টিক কবি। দীর্ঘাকৃতির ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মধ্যেও প্রেমের মহিমাকে তিনি উচ্চকিত করে তুলেছেন। কবির ‘মানুষ’, ‘সাম্যবাদী’ ও ‘আমার কৈফিয়ত’ প্রভৃতি কবিতায় বিদ্রোহ ফুটে উঠলেও সেখানে অত্যাচারিত, নিপীড়িত, অবহেলিত, অসহায় মানুষের প্রতি ছিল তার সীমাহীন দরদ স্বার্থহীন ভালোবাসা। ‘সিন্ধু হিন্দোল’ কাব্যগ্রন্থে প্রেমের নিবিড়তা, চিরন্তনতা এবং বিচ্ছেদের তীব্র জ্বালার প্রকাশ দেখা যায়। সিন্ধুর অশান্ত রূপ কবিচিত্তের বিচ্ছেদ জ্বালা পথিকের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। কবি বলেছেন:
‘এক জ্বালা, এক ব্যথা নিয়া
তুমি কাঁদ আমি কাঁদি, কাঁদে মোর হিয়া।’

নজরুল ইসলামের কাব্যে প্রেম বা রোমান্টিসিজম সম্পর্কে বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেছেন: “প্রকৃতির মাঝে আত্মভাবের বিস্তার এবং একই সাথে প্রকৃতির উপাদান সান্নিধ্যে অন্তর ভাবনার উন্মোচন রোমান্টিক কবির সহজাত বৈশিষ্ট্য। ‘চক্রবাক’ কাব্যে নজরুলের এই রোমান্টিক সত্তার প্রকাশ বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ইতোপূর্বের কাব্যসমূহেও আমরা নজরুলের প্রকৃতি চেতনার পরিচয় পেয়েছি কিন্তু ‘চক্রবাক’-এ এসে লক্ষ্য করছি, এখানে প্রকৃতি নজরুলের প্রজ্ঞাশাসিত ও অভিজ্ঞতালব্ধ মানসতার স্পর্শে এসে হয়ে উঠেছে সংযত, সংহত এবং শূন্যতা তথা বেদনার প্রতীকী ধারক।’

কবি কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা ছাড়াও বহুবিচিত্র গান রচনা করেছেন। প্রেম-বিরহ, বিদ্রোহ-বিপ্লবের ওপর তার অসংখ্য গানও রয়েছে। গানে কী কবিতায় মানুষের কল্যাণে কবি পুরাতনকে ধ্বংস করতে চেয়েছেন। ধ্বংসের ভেতর থেকেই তিনি দেখেছেন নব সৃষ্টির উন্মাদনা। কবি সমস্ত অসুন্দরকে ধ্বংস করতে চেয়েছেন। তাইতো বিদ্রোহের পাশাপাশি আবার প্রেম সৌন্দর্যের সমন্বয় করেছেন। বিদ্রোহ করেছেন অন্যায়কে ধ্বংস করার জন্য, আর প্রেমের কথা বলেছেন মানবতাকে মজবুত করার জন্য। শুধু কি বিদ্রোহই ধরা পড়ে তার কবিতায়? না, তিনি প্রেমের কবিও বটে। সর্বোপরি মানুষের কবি। অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনায় লালিত একজন উদারপন্থী মানুষ। নারী তার কবিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। শুধু কি কল্পনার নারী? না, বাস্তবতার নিরিখেও নারীকে তুলে এনেছেন পরম যত্ন আর মমতায়। নারীকে কন্যা, জায়া ও জননী- সব রূপেই লক্ষ্য করা যায় তার কাব্যে। এমনকি বীর নারী, বেশ্যা নারী, প্রেমিকা নারী, আশাজাগানিয়া নারী, লোভী নারী ও হতাশাদায়িনী নারীও ধরা পড়েছে তার কলমে।

নারী ছাড়া নজরুলের কবিতা কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব। তিনি নারী চরিত্রগুলো নিজের দুঃখে, অশ্রুজলে, হাসিতে, কান্নায় সৃজন করেছেন আবার নিজেই ভেঙেছেন, নিজেই গড়েছেন। তিনি ‘নারী’ কবিতায় লিখেছেন:
‘বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি,
অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।
নরককুন্ড বলিয়া কে তোমা’ করে নারী হেয়-জ্ঞান?
তারে বলো, আদি পাপ নারী নহে, সে যে নর-শয়তান।’
তাঁর ‘বিদ্রোহী’ কবিতায়ও তিনি নারীর প্রসঙ্গ এনেছেন শৈল্পিক ভঙ্গিমায়। বিদ্রোহের প্রেরণা হিসেবে কল্পনা করেছেন নারীকে। কবির উচ্চারণ:
‘আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেণি, তন্বী নয়নে বহ্নি,
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!
আমি উন্মন, মন-উদাসীর,
আমি বিধবার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস, হা-হুতাশ আমি হুতাশীর।’

নারীর বিরহ-মিলন পুরুষের কাছে একটি দুর্বোধ্য প্রেমের পাঠ। সেই নারীর বিরহে-মিলনে কবিপ্রাণও জেগে ওঠে। তাই তো ‘নারী’ কবিতায় কবি বলেছেন:
‘নারীর বিরহে, নারীর মিলনে, নর পেল কবি প্রাণ,
যত কথা তার হইল কবিতা, শব্দ হইল গান।’
রমণীর ভালোবাসায় নজরুল কবি হয়ে উঠেছেন। এমন স্বীকারোক্তি লক্ষ্য করা যায় তার ‘কবি-রাণী’ কবিতায়। কবিই তো অন্যত্র বলেছিলেন, ‘প্রেমের পরশে প্রত্যেকেই কবি হয়ে ওঠে’। এ কথারই মিল খুঁজে পাওয়া যায় তার কবিতায়। কবি বলেছেন:
‘তুমি আমায় ভালোবাসো তাইতো আমি কবি।
আমার এ রূপ- সে যে তোমার ভালোবাসার ছবি।’

পাশাপাশি নারীর মর্যাদাও উচ্চকিত হয়েছে তার কবিতায়। পুরুষের যাবতীয় কৃতিত্বের অংশীদার করেছেন নারীকে। এমনকি সমাজের অস্পৃশ্য নারীকেও পরম শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখেছেন নজরুল। একজন বেশ্যার জন্মও সতী মায়ের গর্ভে হতে পারে। বেশ্যা বলে তাকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখা হবে কেন? ভাগ্যবিড়ম্বিত এ নারীর উদ্দেশ্যে কবির দৃঢ় অভিব্যক্তি:
‘কে তোমায় বলে বারাঙ্গনা মা, কে দেয় থুতু ও-গায়ে?
হয়তো তোমায় স্তন্য দিয়াছে সীতা-সম সতী মায়ে।’
তিনি ‘বারাঙ্গনা’ কবিতায় ‘বারাঙ্গনা’কে মা বলে অভিহিত করেছেন। বারাঙ্গনা মায়ের সন্তানদের স্বীকৃতির জন্য তিনি হিন্দু পুরাণসহ বিভিন্ন শাস্ত্র উল্লেখ করেছেন:
‘স্বর্গবেশ্যা ঘৃতাচী-পুত্র হ’ল মহাবীর দ্রোণ,
কুমারীর ছেলে বিশ্ব-পূজ্য কৃষ্ণ-দ্বৈপায়ন
কানীন-পুত্র কর্ণ হইল দান-বীর মহারথী
স্বর্গ হইতে পতিতা গঙ্গা শিবেরে পেলেন পতি,
বিস্ময়কর জন্ম যাহার-মহাপ্রেমিক সে যিশু!’

সামগ্রিকভাবে নজরুলের নারী এক স্বতন্ত্র স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত তার কাব্যে। তিনি বহুবর্ণ, বহু বিচিত্র নারী চরিত্রের সংস্পর্শে এসেছেন। তাদের ভালোবেসেছেন, ভালোবেসে দুঃখে কাতর হয়েছেন, অশ্রুবিসর্জন করেছেন; কিন্তু ভালোবাসার পাত্রীকে অভিশাপ দেননি। বরং সেই ব্যথাতুর অভিজ্ঞতা দিয়ে রচনা করেছেন একের পর এক কবিতা।
কবি বলেছেন:
‘বিদায় সখি, খেলা-শেষ এই বেলা-শেষের’ খনে!
এখন তুমি নতুন মানুষ নতুন গৃহকোণে।’
নজরুল নিজের অস্থির জীবন, আত্মত্যাগ এবং নারীর প্রতি বিশ্বস্ত থেকে সাহিত্যচর্চা করেছেন। নারীর প্রতি সহানুভূতি, সহমর্মিতা প্রদর্শনের পরিবর্তে নারীর অন্তর্গত অমিত শক্তিকে উন্মোচিত করে তিনি প্রকান্তরে সময়কেই অতিক্রম করেছেন। কবির ভাষায়:
‘হে মোর রাণী! তোমার কাছে হার মানি আজ শেষে।
আমার বিজয় কেতন লুটায় তোমার চরণ-তলে এসে।’
কখনো বা নারীকে তিরস্কারও করেছেন প্রচন্ড ক্ষোভে। নারীর অস্থিরতাকে দায়ী করেছেন কবি। নারীর লোভকেও ধিক্কার জানিয়েছেন কবিতার ভাষায়।
কবির উক্তি:
‘নারী কভূ নাহি চায় একা হতে কারো
এরা দেবী, এরা লোভী, যত পূজা পায়
এরা চায় তত আরো।’
তাই বলে নজরুল ইসলাম নারী বিদ্বেষী নন। নারীর প্রতি ক্ষোভের চেয়ে তার ভালোবাসার দুর্বলতাই বেশি উচ্চকিত হয়ে উঠেছে। তিনি নারীকে সম্মান দেখিয়েছেন। জাগ্রত হওয়ার মন্ত্র শিখিয়েছেন। যেহেতু বলতে গেলে কবিদের প্রেরণাই হচ্ছে নারী। নজরুলও তাদের চেয়ে ব্যতিক্রম নন। কেননা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি মানুষ আকর্ষণ সহজাত প্রবৃত্তি বা সৃষ্টিগত ব্যাপার। সর্বোপরি কাজী নজরুল ইসলাম নারীদের সমানাধিকার, নারীর প্রতি অবিচারের প্রতিবাদ, প্রেয়সীর প্রেমের অনিবার্যতা ও মাতৃভক্তির পদতলে যে পরিপূর্ণতা শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাক্ষর রাখতে পেরেছেন তা-ই নজরুলকে নজরুল করেছে।

তবে বিদ্রোহ-প্রেম-সাম্যবাদের মশাল হাতে আবির্ভূত হয়ে যুদ্ধ বিধ্বস্ত পৃথিবীতে যখন মানবতা ধুলায় লুণ্ঠিত তখন তার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে সাম্যবাদের গান। একই কণ্ঠে হামদ-নাত এবং শ্যামা সঙ্গীতের সুরের মূর্ছনায় মানবজাতিকে উপহার দিয়েছেন সাম্যবাদের মূলমন্ত্র। মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসায় কবি হয়ে উঠেছেন মানবতাবাদী।

নজরুলের সাম্যবাদের প্রধান ক্ষেত্র মানুষ। কে কুলি-মজুর আর কে সাহেব? সবাই তার দৃষ্টিতে সমান। আশরাফ আর আতরাফের কোনো ভেদাভেদ নেই এখানে। সবাই সৃষ্টির সেরা। সবাইকেই তিনি গভীরভাবে ভালোবেসেছেন। নজরুলের সাম্যবাদ তার অন্তরের প্রেরণালব্ধ বস্তু। কবি কল্পনার রঙে রঙিন। মানবতাবোধই তার সাম্যবাদের ভিত্তি। তিনি সব ধর্মের উর্ধ্বে উঠে মানবধর্মকেই উচ্চাসনে বসিয়েছেন। মানবের মাঝে তিনি স্রষ্টাকে আবিষ্কার করেছেন। তার সাম্যবাদ স্রষ্টাকে অস্বীকার করে নয়। কাল মার্কসের মতো তার সাম্যবাদ নাস্তিক্য সাম্যবাদ নয়। তার সাম্যবাদ আস্তিক্য সাম্যবাদ। অসাম্প্রদায়িক হলেও তিনি পুরোপুরি আস্তিক ছিলেন।

নজরুলের সাম্যবাদ প্রকাশ পেয়েছে তার ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থে। ১৯৫২ সালে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থে মোট ১১টি কবিতা স্থান পেয়েছে। যেমনথ ‘সাম্যবাদী’, ‘নারী’, ‘মানুষ’, ‘বারাঙ্গনা’, ‘রাজা-প্রজা’, ‘ঈশ্বর’, ‘পাপ’, কুলি-মজুর’, ‘চোর-ডাকাত’, ‘সাম্য’ ও ‘কান্ডারি হুঁশিয়ার’। মূলত ‘সাম্যবাদী’ কাব্যের কবিতাগুলোয় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের প্রভাব রয়েছে।
তার ‘সাম্যবাদী’ কাব্যের ‘নারী’ কবিতাটি বহুল প্রশংসিত। ‘নারী’ কবিতায় কবি নারী-পুরুষে সাম্যের বাণী উচ্চারণ করেছেন। কবি নারী-পুরুষের ভেদাভেদ অস্বীকার করেছেন। আর ‘বারাঙ্গনা’ কবিতাটি অধিক সমালোচিত। কবিতায় কবি বলেছেন:
‘কে তোমায় বলে বারাঙ্গনা মা, কে দেয় থুতু ও-গায়ে?
হয়তো তোমায় স্তন্য দিয়াছে সীতা-সম সতী মায়ে।’
তিনি মন্দির-কাবার চেয়ে মানুষের হৃদয়কে বড় জ্ঞান করেছেন। কবি বলেছেন, ‘এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোন মন্দির কাবা নাই।’ ‘সাম্য’ কবিতায় কবি স্রষ্টাকে মহিমাময় এবং মানুষের দেহ মনকেই তার ভজনালয় রূপে বিবেচনা করেছেন:
‘হেথা স্রষ্টার ভজন আলয় এই দেহ এই মন,
হেথা মানুষের বেদনায় তার দুঃখের সিংহাসন।
সাড়া দেন তিনি এখানে তাহারে যে নামে যে কেহ ডাকে,
যেমন ডাকিয়া সাড়া পায় শিশু যে নামে ডাকে সে মাকে।’

নজরুল মানুষের কবি। সাম্যের কবি। তার বড় পরিচয় তিনি সাম্যবাদী কবি। নজরুলের সাম্যবাদ সকল মানবের মহামিলন। কবি মানবতার জয়গান গেয়েছেন। মানুষকে কখনো তিনি ঘৃণার চোখে দেখেননি। তাই কবি বলেছেন:
‘বন্ধু, তোমার বুক ভরা লোভ, দু’চোখে স্বার্থ ঠুলি,
নতুবা দেখিতে, তোমারে সেবিতে দেবতা হয়েছে কুলি।’
মানুষকে তিনি সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কারো আসল পরিচয় হতে পারে না। আসল পরিচয় হলো, আমরা সবাই মানুষ। ‘কান্ডারি হুঁশিয়ার’ কবিতায় বলেছেন- ‘হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারি! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার।’
এছাড়াও তার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে:
‘জাতের চাইতে মানুষ সত্য
অধিক সত্য প্রাণের টান
প্রাণ ঘরে সব এক সমান।’

‘ঈশ্বর’ কবিতায় নজরুল ইসলাম ঈশ্বর অন্বেষণের ব্যাপারে বলেছেন, বনে-জঙ্গলে, পর্বত চূড়ায় ঈশ্বর অন্বেষণের কোনে প্রয়োজন নেই। ঈশ্বর মানব মনেই অধিষ্ঠিত। আর শাস্ত্র অন্বেষণে না গিয়ে সত্যের সন্ধানে অগ্রসর হতে বলেছেন। ঈশ্বর মানুষের মধ্যেই বিরাজিত, তাকে বাইরে না খুঁজে নিজের মধ্যে ডুব দিতে হবে। কবি বলেছেন, ‘স্রষ্টারে খোঁজো আপনারে তুমি আপনি ফিরিছ খুঁজে।’

সর্বোপরি কবি ‘সাম্য’ কবিতায় স্বপ্নের দেশথ আদর্শ দেশের কথা বলেছেন। এমন দেশ যেখানে রাজা-প্রজা নেই, ধনী-দরিদ্রের ভেদাভেদ নেই। ‘সাম্যবাদী’ এ স্থানে বর্ণবৈষম্য নেই, এখানে সাদা ও কালোদের জন্য আলাদা গোরস্তান বা গির্জা নেই। এখানে কোনো ধর্মের বা শাস্ত্রের ভেদ নেই, নেই কোলাহল। সেখানে পাদ্রী পুরুত মোল্লা এক পাত্রে জল খেলেও জাত যাবে না, স্রষ্টা বাতিল হবে না।

সবশেষে বলা যায়, বিদ্রোহ প্রেম নারী ও সাম্যবাদ বাংলা সাহিত্যে নতুন কোনো বিষয় নয়। কিন্তু কাজী নজরুল ইসলাম যে মমতায় মানবতা মিশ্রিত এ বিষয়গুলো প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন তা একান্তই অভিনব। এখানেই নজরুলের কবি চেতনার নতুন মাত্রা সংযোজিত হয়েছে।

 

গোপনে বিয়ে করলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি

অনেক নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বিয়ে করলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। গণমাধ্যমের চোখ এড়িয়ে হুট করেই বিয়ে করলেন এ নায়িকা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরাতে মাহির নিজের বাসায় বিয়ে সম্পন্ন হয়।

জানা যায়, পাত্র সিলেটের কদমতলীর ব্যবসায়ী মাহমুদ পারভেজ অপু। গত চার বছর যাবৎ তাদের পরিচয় থাকলেও উভয় পরিবারের সম্মতিতেই মাহি এবং অপুর বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে গত ১২ মে খুব গোপনে মাহি ও অপুর বাগদান সম্পন্ন হয়।

মাহি জানান, আগামীকাল বুধবার রাতে রাজধানীর উত্তরায় একটি স্থানীয় রেস্টুরেন্টে মাহি তার স্বামী অপুকে নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হবেন।

বিয়ে প্রসঙ্গে মাহি বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে খুব ভালো মনের একজন মানুষকে স্বামী হিসেবে পেয়েছি। অপু গ্রামের সহজ সরল সাধারণ একজন মানুষ। এমন একজন মানুষই আমার জীবনে আমার পাশে চেয়েছিলাম। আল্লাহ আমার সেই ইচ্ছে পূরণ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি, পাশাপাশি সংসার জীবনটাও নিজের মতো উপভোগ করতে চাই। তাই সবার কাছে দোয়া চাই যেন আমরা সুখে থাকতে পারি, ভালো থাকি।’

মাহিয়া মাহি আরও জানান, আগামী ২৪ জুলাই সিলেটে তার বৌ-ভাত সম্পন্ন হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে বন্ধুর সঙ্গে বিয়ের গুজব ওঠে মাহির। এছাড়া প্রযোজক আবদুল আজিজের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন ছিল মাহিকে নিয়ে সিনেমা পাড়ায় আলোচিত ঘটনা। সম্প্রতি আবদুল আজিজ মাহির সঙ্গে তার প্রেমের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আজিজের এমন তথ্য ফাঁসই মাহিকে গোপনে ত্বরিৎ বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করেছে।

 

পরপুরুষের সঙ্গে নারীর নির্জন সাক্ষাত : ইসলাম কী বলে

ইমাম শাওকানী [রহ.] বলেন- “পর-নারীর সাথে নির্জন সাক্ষাত ঐকমত্যে হারাম। হারাম হওয়ার কারণ তাদের তৃতীয়জন শয়তান, যা হাদীসেই স্পষ্ট। শয়তানের উপস্থিতি তাদেরকে হারাম লিপ্ত করবে, তবে মাহরামসহ সাক্ষাত বৈধ। কারণ, তার উপস্থিতিতে পাপ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।”

নবী [সা] বলেছেন- যে আল্লাহ ও পরকাল দিবসের প্রতি ঈমান রাখে সে এমন নারীর সাথে নির্জন সাক্ষাত করবে না যার সাথে মাহরাম নেই। কারণ, তাদের তৃতীয়জন হচ্ছে শয়তান।

আমের ইবন রাবিআহ [রা] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ [সা] বলেছেন- জেনে রেখ, কোনো পুরুষ এমন নারীর সাথে একান্ত সাক্ষাত করবে না, যে তার জন্য হালাল নয়। কারণ, তাদের তৃতীয়জন হয় শয়তান, যদি না সে পুরুষটি হয় মাহরাম।

ইমাম শাওকানী [রহ.] বলেন- “পর-নারীর সাথে নির্জন সাক্ষাত ঐকমত্যে হারাম। হারাম হওয়ার কারণ তাদের তৃতীয়জন শয়তান, যা হাদীসেই স্পষ্ট। শয়তানের উপস্থিতি তাদেরকে হারাম লিপ্ত করবে, তবে মাহরামসহ সাক্ষাত বৈধ। কারণ, তার উপস্থিতিতে পাপ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।” (নাইলুল আওতার, ৬/১২০)

কতক নারী ও তাদের অভিভাবক বেশ কিছু নির্জন সাক্ষাত সম্পর্কে শিথিলতা করেন ক. স্বামীর নিকটাত্মীয়দের সাথে নির্জন সাক্ষাত করা ও তাদের সামনে চেহারা উন্মুক্ত রাখা। বস্তুত তাদের সাথে নির্জন সাক্ষাত অন্যান্য সাক্ষাত থেকে বেশি ক্ষতিকর। নবী [সা] বলেন- খবরদার, তোমরা নারীদের নিকট প্রবেশ করবে না, তখন এক আনসারী ব্যক্তি বলল: হে আল্লাহর রাসূল, দেবর সম্পর্কে কী বলেন? তিনি বললেন- দেবর হচ্ছে মৃত্যুতুল্য হারাম।

অনেকে আবার ড্রাইভারের সাথে একাকী চলাফেরার ক্ষেত্রে শিথিলতা করে অথচ এটাও হারাম নির্জনতা। সৌদি আরবের মুফতি শাইখ মুহাম্মাদ ইবরাহীম [রহ.] বলেন- বর্তমান এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, অপরের গাড়িতে মাহরাম ব্যতীত পর-নারীর একাকী চড়া অনেক অনিষ্টের সঙ্গী হয়। এতে বহু অনিষ্ট রয়েছে যার ব্যাপারে শিথিলতা করা কখনো সমীচীন নয়। হোক সে লজ্জাশীল নারী কিংবা বেশি বয়সের পবিত্রা নারী, যে সাধারণত পুরুষের সাথে কথা বলে থাকে। যে ব্যক্তি তার মাহরাম নারীর জন্য এ জাতীয় আচরণ পছন্দ করে তার দীনদারী দুর্বল, সে পুরুষত্বহীন ও আত্মমর্যাদাবোধশূন্য। (মাজমুউল ফতোয়া ১০/৫২)

মূল : ড. সালেহ ইবনে ফাওজান
ভাষান্তর : মাওলানা মনযূরুল হক

 

বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর নামাজ ও দোআ

দাম্পত্য জীবনের প্রথম রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রত্যেক নব বিবাহিত দম্পতির উচিত বাসর রাতের গুরুত্বপূর্ণ সময়কে আনন্দ-উৎসবের নামে অবহেলা ও অনর্থক কাজে ব্যয় না করে নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নিকট কল্যাণ কামনা করা। মহান রাব্বুল আলামীন উম্মতে মুহাম্মদীকে বাসর রাতে উত্তম আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

মানব জীবনে বিয়ে অতি গুরুত্বপূর্ণ এক পর্ব। বিয়ের মধ্য দিয়ে একজন নারী ও পুরুষের মধ্যে গড়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ এক সম্পর্ক। প্রাপ্তবয়স্ক সক্ষম ব্যক্তিদের ওপর মহান রাব্বুল আলামীন বিয়ে ফরজ করেছেন। বিয়ের পর্ব সমাপ্তির পর বাসর রাতে স্বামী-স্ত্রীর প্রথম সাক্ষাতে স্বামীর উচিত স্ত্রীকে নিয়ে জামাআতের সহিত দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করা। এ নামাজ পড়া মুস্তাহাব। এটি উত্তম এক আমল। যে আমলে রহমত ও বরকত বৃদ্ধি পায়। নামাজের পর নব দম্পতি পরস্পরের জন্য দোয়া করবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর বর্ণনায় দোয়াটি তুলে ধরা হলো-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বারিক লি ফি আহলি ওয়া বারিক লাহুম ফিইয়্যা, আল্লাহুম্মাজমা’ বাইনানা মা জামা’তা বিখাইরিন ওয়া ফাররিক্ব বাইনানা ইজা ফাররাক্বতা ইলা খাইরিন। (আদাবুজ যিফাফ, মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক)

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমার জন্য আমার পরিবারে বরকত দান কর এবং তাদের স্বার্থে আমার মাঝে বরকত দাও। হে আল্লাহ! তুমি যা ভালো একত্রিত করেছ তা আমাদের মাঝে একত্রিত কর। আর যখন কল্যাণের দিকে বিচ্ছেদ কর তখন আমাদের মাঝে বিচ্ছেদ কর’।

দাম্পত্য জীবনের প্রথম রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রত্যেক নব বিবাহিত দম্পতির উচিত বাসর রাতের গুরুত্বপূর্ণ সময়কে আনন্দ-উৎসবের নামে অবহেলা ও অনর্থক কাজে ব্যয় না করে নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নিকট কল্যাণ কামনা করা। মহান রাব্বুল আলামীন উম্মতে মুহাম্মদীকে বাসর রাতে উত্তম আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

 

আসুন নারীর জন্য বিশ্ব গড়ি

সমাজ পরিবর্তনের প্রতিনিধি হিসেবে নারী ও বালিকাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি এবং তাদের ক্ষমতায়নে একসঙ্গে কাজ করার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, সমাজ পরিবর্তনের প্রতিনিধি হিসেবে নারী ও বালিকাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি, শিক্ষাসহ দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং তাদের ক্ষমতায়নে আমাদের এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনে আন্তরিক অঙ্গিকার এবং শক্তিশালী নেতৃত্ব থাকতে হবে। আসুন নারীর জন্য একটি সুষ্ঠু বিশ্ব গড়ে তুলতে আমরা নতুন করে অঙ্গীকার করি, যেখানে আমরা মর্যাদার সঙ্গে এবং সকল প্রকার ভয়-ভীতি থেকে মুক্ত হয়ে বসবাস করতে পারি।

বুধবার বিকেলে বুলগেরিয়ার সোফিয়ায় ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারিতে ‘গ্লোবাল উইমেন লিডার্স ফোরাম’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মূল বক্তব্যে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস) অর্জনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে গত বছর নিউইয়র্কে আমরা একটি পরিবর্তনশীল এজেন্ডা ২০৩০ গ্রহণ করেছি। নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে নতুন এজেন্ডা উপস্থাপন করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি একমাত্র জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য অর্জন করতে পারি।

অনুষ্ঠানে বুলগেরিয়ার প্রেসিডেন্ট রোজেন প্লেভনেলিয়েভ, উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং শ্রম ও সামাজিক নীতিবিষয়ক মন্ত্রী ইভায়লো কালফিন, জ্বালানি মন্ত্রী টামেনুজকা প্যাটকোভা, আঞ্চলিক উন্নয়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী লিলিয়ানা পাভলোভা, ইনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকভা, বুলগেরিয়া জাতীয় পরিষদের চেয়ারম্যান ট্যাসটাসকা টাচেভা এবং সিমেন্স বুলগেরিয়ার সিইও ও সে দেশের কাউন্সিল অব উইমেন ইন বিজনেসের চেয়ারপারসন বুরিয়ানা ম্যানোলোভাও বক্তব্য রাখেন।

 

শিক্ষক লাঞ্ছনায় তারকাদের কান ধরে প্রতিবাদ

কথায় আছে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। আর সেই জাতি গড়ে তুলতে একজন শিক্ষক প্রধান দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কিন্তু সেই শিক্ষকই যদি  লাঞ্ছিত হন মানুষে দ্বার তাহলে এ জাতি আগামীতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। এমন প্রশ্নই জেগে উঠেছে গোটা জাতির মনে।

গত ১৪ মে নারায়ণগঞ্জে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে গণধোলাই ও পরে সংসদ সদস্যের নির্দেশে কান ধরে উঠবসের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় দেশব্যাপী তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। আর এ সামলোচনা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে বেশি। একজন প্রধান শিক্ষককে এভাবে হেয়পতিপন্ন করায় ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা গেছে সবাই এর প্রতিবাদ করছেন কানে ধরা ছবি আপলোড করে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তারকারাও এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। তারাও কানে ধরে ছবি ইতিমধ্যেই আপলোড করেছেন ফেসবুকে।

তারকাদের মধ্যে রয়েছেন ইরেশ যাকের, রওনক হাসান, মাজনুন মিজান, রিমুসহ আরও অনেকে। এছাড়াও আরও অনেক মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রয়েছেন ছাড়া এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। সবাই একটি দাবীই করছেন করছেন যাতে করে এ ঘটনার একটি সুষ্ঠু বিচার হয়।

 

দাম্পত্য সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর নারীর করণীয় কী?

স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ দু’প্রকার- ক. জীবিত অবস্থায় বিচ্ছিন্ন হওয়া। খ. মৃত্যু দ্বারা বিচ্ছিন্ন হওয়া। উভয় অবস্থাতেই নারীর ওপর ইদ্দত ওয়াজিব, অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা।

স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ দু’প্রকার- ক. জীবিত অবস্থায় বিচ্ছিন্ন হওয়া। খ. মৃত্যু দ্বারা বিচ্ছিন্ন হওয়া। উভয় অবস্থাতেই নারীর ওপর ইদ্দত ওয়াজিব, অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা।

এই ইদ্দতের কারণ হলো, একটি পরিপূর্ণ বিয়ে ভাঙ্গার পর তার শেষ সীমা নির্ধারণ করাই । দ্বিতীয়ত গর্ভ থেকে জরায়ু মুক্ত করা, যেন বিবাহ বিচ্ছিন্নকারী ব্যতীত অন্য কারও সহবাসের বিষয়টি তার সাথে সম্পৃক্ত না থাকে, যদি এটা না করা হয় তবে গর্ভের সন্তানে মিশ্রণ ঘটবে ও বংশ বিনষ্ট হবে।

এ ছাড়া ইদ্দত দ্বারা স্ত্রী সাবেক বিয়ে-বন্ধনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনসহ, তালাকদাতা স্বামীর হকের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও বিচ্ছেদের কারণে শোক প্রকাশ করে।

মূল : ড. সালেহ ইবনে ফাওজান
ভাষান্তর : মাওলানা মনযূরুল হক

 

মাখনের ৭টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

বছরের পর বছর যাবত মাখনকে ফ্যাটি ফুড হিসেবে হৃদরোগ ও স্থূলতার জন্য দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি এটি স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। হ্যাঁ, এটি শুধু মুখরোচকই নয় স্বাস্থ্যকর ও বটে। মাখনের বিভিন্ন রকমের স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। মাখন সরাসরি পাউরুটির সাথে বা স্যান্ডউইচের সাথে খাওয়া যায়। আবার স্বাদ বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন রকম রান্নায় ও ব্যবহার করা যায়। মাখনের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।

১। খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, স্থূলতার সমস্যাটির সাথে ডেইরি প্রোডাক্ট গ্রহণের কোন সম্পর্ক নেই। মাখনে অ্যাক্টিভেটর এক্স নামক যৌগ থাকে যা দেহকে অত্যাবশ্যকীয় খনিজ উপাদান শোষণে সাহায্য করে। যখন আমাদের শরীর খনিজ উপাদান গ্রহণ করে তখন তা ক্ষুধা কমতে সাহায্য করে। মাখনে আয়োডিন, সেলেনিয়াম, লেসিথিন এবং লরিক এসিডের মত কার্যকরী খনিজ উপাদান থাকে।

২। মাখনে প্রয়োজনীয় ভিটামিন থাকে

মাখন ভিটামিন সমৃদ্ধ। এতে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি ও ভিটামিন ই থাকে যা ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। আশ্চর্যজনকভাবে মাখনে অনন্য ভিটামিন কে২ থাকে যা চর্বিকে দ্রবণীয় করতে পারে। কে২ ভিটামিন প্রোস্টেট ক্যান্সার, হাড় ভাঙ্গা এবং করোনারি হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি কমায়। মাখন খেলে নারীর উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।

৩। লিনোলেইক এসিড থাকে

মাখনে লিনোলেইক এসিড নামক যৌগ থাকে। এটি শরীরের বিপাকের উপর প্রভাব বিস্তার করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও মাখনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

৪। স্বাস্থ্যকর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে

বেশিরভাগ মানুষ মনে করে যে সব ধরণের স্যাচুরেটেড ফ্যাট খারাপ। কিন্তু অনেক গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, এদের মধ্যে কিছু আছে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয়ই না বরং অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। এই স্বাস্থ্যকর সম্পৃক্ত চর্বিগুলো ভালো কোলেস্টেরল HDL এর  বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই HDL কোলেস্টেরল ব্রেইন ও নার্ভাস সিস্টেমের ডেভেলপমেন্টে সহায়তা করে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে।

৫। ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিডের ভারসাম্য রক্ষা করে

মাখনে এরাকিডোনিক্স এসিড থাকে যা ব্রেইন ফাংশন, স্কিন হেলথ ও প্রোস্টাগ্লান্ডিনের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।

৬। উলজেন ফ্যাক্টর থাকে

হরমোনের মতোই একটি কার্যকরী পদার্থ উলজেন ফ্যাক্টর। এটি জয়েন্টের শক্ত হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে, সেই সাথে আরথ্রাইটিস ও প্রতিরোধ করে। এছাড়াও এই উপাদানটি ক্যালসিয়ামকে জয়েন্টের চেয়ে হাড়ে জমা হতে সাহায্য করে। এটি শুধুমাত্র এ্যানিমেল ফ্যাট যেমন- ক্রিম বা দুধে পাওয়া যায়। তবে উলজেন ফ্যাক্টর কাঁচা মাখন এবং ননীতে পাওয়া যায়।

৭। বিটা ক্যারোটিন

মাখনে উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন থাকে যা চোখের জন্য ভালো। এটি চোখের সুরক্ষায় অবদান রাখে। এছাড়াও কোষের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে, ছানির গতিরোধ করে, মেকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সুযোগ কমায় এবং চোখের অন্যান্য সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

সতর্কতা :  মাখনের এত পুষ্টি উপকারিতা সত্ত্বেও ভুলে গেলে চলবেনা যে এটি মূলত চর্বি জাতীয় খাদ্য।  অধিক পরিমাণে গ্রহণ করলে স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। তাই সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করুন।

 

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

 

প্রসূতি মায়েদের আপন হয়ে ওঠা এক ক্লিনিকের গল্প

হবিগঞ্জ:  মাত্র বছর দুয়েক পূর্বেও অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকতো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি । নাম মাত্র স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হতো কেন্দ্রটি থেকে। অন্য রোগীদের মতো প্রসূতিরাও ছুটে যেতেন  শহরের দিকে। কিন্তু বদলে গেছে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সেবা। প্রসূতি সেবাদানে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি আজ এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

আলোচিত এই সেবা প্রতিষ্ঠানটি হলো হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। যেটি এখন শুধুই স্বাস্থ্য কেন্দ্র নয়, প্রসূতিদের কাছে নিরাপদ সন্তান প্রসবের এক আপন ঠিকানা। অল্প দিনে এর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। এখানে দিনে রাতে ২৪ ঘন্টা প্রসূতি মায়েরা আসেন নিরাপদে সন্তান প্রসবের জন্য। পরিছন্ন পরিবেশে বিনা খরচে সন্তান প্রসব শেষে হাসি মুখে বাড়ি ফিরে যান তারা। তাই এখন শুধু বহরা ইউনিয়নের প্রসূতিরাই নন, আশে পাশের ইউনিয়ন এবং উপজেলার প্রসূতিরাও আসেন এখানে সেবা নিতে।

পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আহছানুল হক সুমন জানান, এক মাসে ১৭ শিশুর জন্মগ্রহণের সর্ব্বোচ্চ রেকর্ড গড়েছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। হঠাৎ কীভাবে কার উদ্যোগে বদলে গেল স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির চিত্র?

সেই মানুষটি হলেন বহরা ইউনিয়ন পরিষদেরই চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন। বদলে যাওয়ার কথা চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন জানালেন, এর আগেও একবার তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখনও এই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি এখানে ছিল কিন্তু সেবা কার্যক্রম নিয়ে তখন তিনি ততটা ভাবেননি। সর্বশেষ গত ইউপি নির্বাচনে তিনি আবার চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হয়ে ২০১৩ সালের শেষের দিকে ইউএসআইডি এর অর্থায়নে মা-মণি সীমান্তিক এর একটি  প্রকল্পের অধীনে এক কর্মশালায় যোগদান করার সুযোগ পান। ওই কর্মশালায় মা ও শিশু স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিশেষ করে নিরাপদ মাতৃত্ব নিয়ে যেসব আলোচনা হয়, তাতে তিনি বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট হন।

সিদ্ধান্ত নেন নিজের ইউনিয়নে অবহেলায় পড়ে থাকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিকে সেবাবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার। তিনি জানান, কর্মশালা ঘিরে পরিষদের সদস্যদের তার আগ্রহের কথা তুলে ধরলে তাঁরাও উৎসাহী হন। স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি মাধবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ শাহজাহান ও স্বাস্থ্য সেবায় সহযোগী ওই বেসরকারী প্রতিষ্ঠানটির সহযোগিতা চান তিনি। তারা সকলেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। মা-মণি সীমান্তিকের পক্ষ থেকে রুবিয়া খাতুন নামের একজন প্যারামেডিক দেওয়া হয়। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ থেকে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মাহমুদা খাতুন, পরিবার পরিকল্পানা পরিদর্শক আহছানুল হক সুমন সহ কিছুসংখ্যক জনবল নিয়ে প্রথম দিকে কার্যক্রম শুরু হয়। ১টি বেড(সিট) দিয়ে কার্যক্রম শুরু হলেও এখন বেড সিটের সংখ্যা ৩টি।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে  ঢুকতেই চোখে পড়ে আশে পাশের পরিচ্ছন্ন ও দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ। ভেতরে ঢোকার পরে দেখা যায় সামনে খোলা মেলা বারান্দায় ৭-৮জন নারী। কারও কারও সঙ্গে আছেন পুরুষও । তাদের প্রত্যেকের কোলে বিভিন্ন বয়সের শিশু। কারও কোলে নবজাতক। এরই মধ্যে ভেতরের একটি কক্ষ থেকে ভেসে আসে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ। কয়েক মিনিট পর কর্তব্যরত সেবিকা মাহমুদা আক্তার হাসতে হাসতে এগিয়ে আসেন নতুন তোয়ালে মোড়ানো ওই নবজাতককে কোলে। জানান দুইটা জমজ শিশু পৃথিবীর আলো দেখল দুজনই সুস্থ আছে।

কেমন লাগছে জানতে চাইলে সেবিকা মাহমুদা বলেন, অনেক ভালো। মায়ের গর্ভ থেকে সন্তান সুস্থ্যভাবে দুনিয়ায় এলে মা যেমন সব কষ্ট ভুলে যান, তেমনি আমাদের কাছেও খুব ভালো লাগে।

সেবা গ্রহণকারীদের বক্তব্য

উপজেলার বহরা ইউনিয়নের হরিপশাদপুরের তাছলিমা আক্তার জানান, গত কিছু দিন পূর্বে উপজেলা সদরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে তাকে নিয়ে গেলে একজন নারী চিকিৎসক বলেন গর্ভের বাচ্চা নাকি উপরে উঠে গেছে দ্রুত অস্ত্রেপাচার করতে হবে। তিনি দুশ্চিন্তা নিয়ে বাড়ি ফেরেন পরদিন লোকমুখে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কথা শুনে এখানে আসেন। এখানে বিনা অস্ত্রপাচারে তার একটি ছেলে সন্তান প্রসব হয়। শুধু তাছলিমাই নন, সেবা নিতে আসা একই ইউনিয়নের শরিফা খাতুন, পলি আক্তার স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে বিনা অস্ত্রোপাচারে নিয়মিত সন্তান প্রসব করানোর কথা বলেন।

পরিবার কল্যাণ পরির্দশিকা মাহমুদা আক্তার জানান, পুরো ইউনিয়নের গর্ভবতী মায়েদের তথ্য রয়েছে তাদের কাছে। পরিবার পরিকল্পানা পরিদর্শক আহছানুল হক সুমন বলেন, মাঠ পর্যায়ে থাকা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গর্ভবতী মায়েদের নাম ঠিকানা ও মুঠোফোন নাম্বার নিয়ে আসেন। এর মাসিক বৈঠকে ওয়ার্ড ও গ্রাম ভিত্তিক গর্ভবতী মায়েদের আলাদা দুটি মানচিত্র তৈরি করা হয়। এসব সার্বক্ষনিক তদারক করেন ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন।

মাধবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ শাহজাহান বহরা ইউনিয়নে অবহিতকরণ সভায় উপস্থিত থেকে প্রতিটি গর্ভবতী মাকে প্রসূতি সেবা নিতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করছেন। উপজেলার বহরা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি প্রসূতি সেবায় মডেল হিসেবে দাঁড়িয়েছে। গত ৮ মাসে এ কেন্দ্রে ১০৩ জন মা নিরাপদ প্রসব করেছে।

২৪ ঘন্টা ক্লান্তিবিহীন সেবা

স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের সামনে আশে পাশের বাজারে সাইন বোর্ড লাগানো হয়েছে। যাতে লেখা রয়েছে, এখানে ২৪ ঘন্টা নরমাল ডেলিভারি করা হয়। সাইনবোর্ডের লেখা অনুযায়ী সেবা দানে কোন হেরফের হয়না। অনেক সময় গভীর রাতে ঘুম থেকে উঠে সন্তান প্রসব করাতে হয় বলে জানালেন মা-মনি প্যারামেডিক রুবিয়া খাতুন।

বহরা ইউপি চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন জানালেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সেবা কেন্দ্রটির জন্য সাধ্যমতো সহায়তা করা হয়। বিভিন্ন বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা পরিষদ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়েছেন। তবে তার ইচ্ছা একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা।

মাধবপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আকিব উদ্দিন বলেন, বহরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ  কেন্দ্রটি সারা দেশের জন্য একটি মডেল হিসাবে ইতিমধ্যে পরিচিতি পেয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের অনেক কর্মকর্তাও এরই মধ্যে এ সফলতা দেখে গেছেন। একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইচ্ছে করলে কী না করতে পারেন আলাউদ্দিন সাহেব তার এ উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

মাধবপুর উপজেলার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সেবা পর্যবেক্ষন করেছেন সেইভ দি চিলড্রেনের কান্ট্রিডিরেক্টর এলিজাবেধ পির্য়াস, সাবেক স্বাস্থ্য সচিব হুমায়ুন কবীর, মি: জবি জর্জ সিওপি এমসিএইচ আইপি, মিস কান্তা জামিল, মিস সিনো কুনিয়া, ডা: জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া উপ-পরিচালক পরিবার পরিকল্পনা হবিগঞ্জ, ডাঃ দেবপ্রদ রায়, সিভিল সার্জন হবিগঞ্জ এর নেতৃত্বে একাধিক প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

 

নারী চাকরিজীবীদের দ্রুত তৈরি হওয়ার উপায়

আজকাল পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সমতালে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন। ফলে কর্মক্ষেত্রে নারীদের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে। তবে রাজধানীর যান্ত্রিক জীবনের মাঝে অসহনীয় যানজটে প্রায়ই অফিসে পৌঁছতে দেরি হয়ে যাচ্ছে তাদের। এছাড়া সকালবেলা সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম গুছিয়ে সঠিক সময়ে বাসা থেকে বের হওয়াটাও কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে কীভাবে সবকিছু বজায় রেখেও ঠিকমতো অফিসের উদ্দেশ্যে বের হওয়া যায় তার উপায় নিয়েই নিচে আলোচনা করা হলো :
রাতেই গুছিয়ে রাখুন : আগের দিন রাতেই ঠিক করুন পরের দিন অফিসে কি পরে যাবেন। সেইভাবে পোশাকের সাথে মিলিয়ে অনুষঙ্গগুলো গুছিয়ে রাখতে পারেন। তাহলে অফিসে যাওয়ার সময় খুব সহজেই তৈরি হতে পারবেন।

ছোট্ট মেকআপ পার্স : আপনার সাথে সব সময়েই ছোট্ট একটি মেকআপ পার্স রাখুন। সেখানে ফেস পাউডার, কাজল আর লিপস্টিক থাকবে। ঘরের থেকে সেজে বের হওয়ার সময় না পেলেও ট্রাফিক জ্যামে বসে অবসরটাকে কাজে লাগিয়ে ফেলতে পারেন নিজেকে একটু সাজিয়ে।

দীর্ঘস্থায়ী মেকআপ : কসমেটিকস কেনার সময়ে দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয় এমন প্রোডাক্ট কিনুন। যেগুলো খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যায় কিংবা ঘামলেই গলে যায় এমন মেকআপ পরিহার করুন। এতে একবার মেকআপ করলে বহুক্ষণ ভালো থাকবে আপনার মেকআপ।

৫ মিনিটের হেয়ারস্টাইল : ইন্টারনেটে একটু খুজলেই অনেকগুলো সহজ হেয়ারস্টাইল আছে যেগুলো মাত্র ৫ মিনিটেও করে নেওয়া যায়। দীর্ঘক্ষণ ধরে চুল স্ট্রেইট করার সময় না পেলে এমন চট জলদি হেয়ার স্টাইল করে নিন। আর কিছু না হলেও একটি পনিটেল করে নিতে পারেন। এতে অনেক বেশি সময় চুলের পেছনে ব্যয় করতে হবে না। আবার চুলের যেই স্টাইল আপনার ফেসের সাথে মানানসই এমন একটি স্টাইল বেছে নিতে পারেন।

মেকআপ কৌশল শিখুন : চটজলদি মেকআপ করার জন্য কিছু মেকআপ কৌশল শিখে নিন। নারীদের মূল সময়টা সাধারণত আইলাইনার লাগাতে গিয়ে নষ্ট হয়। এক্ষেত্রে লিকুইড আইলাইনার ব্যবহার না করে পেন্সিল আইলাইনার ব্যবহার করুন। এতে আপনার চোখের মেকআপ নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হবে না। সেই সঙ্গে লিপগ্লস না লাগিয়ে চট জলদি ম্যাট লিপস্টিক লাগিয়ে নিন। তড়িঘড়ি বেজ তৈরির জন্য ভালো কোনো ব্র্যান্ডের সি সি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এটি একই সাথে সানস্ক্রিনের কাজও করবে এবং ত্বকের ছোটখাটো দাগ ঢেকে ফেলবে।

 

দেরিতে বিয়ে হলে ৭ মানসিক সমস্যায় ভোগেন মেয়েরা

শিরোনামটি পড়ে অনেকেই ক্ষেপে উঠতে পারেন। তবে সত্য এটাই যে, সমাজে এখনও একজন নারীর শেষ গন্তব্য ও সাফল্য বিবেচনা করা হয় বিয়ে ও সংসারকেই। আর তাই, একটি নির্দিষ্ট বয়সের মাঝে বিয়ে না হলে, বেশিরভাগ নারীই কিছু মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন। এমনকি যারা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন নারী, তাদের মাঝেও দেখা যায় কিছু কিছু ব্যাপার। কখনও কাজ করে ঈর্ষা, কখনও সামাজিক চাপ, কখনও একাকীত্ব। সব মিলিয়ে অনেকেই নিজের মাঝে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

জেনে নিন এমন কিছু সমস্যা সম্পর্কে, যেগুলো তৈরি হয় বিয়ে দেরিতে হলে। সমস্যাগুলি চিহ্নিত করা গেলে সেটা থেকে বের হয়ে আসাও সহজ।

১) একাকীত্ব থেকে বিষণ্ণ হয়ে যাওয়া:
সমবয়সী সকল বোন বা বান্ধবীদের বিয়ে হয়ে গেছে, আর স্বভাবতই বিয়ের পর সকলেই নিজের পৃথিবী নিয়ে একটু বেশিই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এক্ষেত্রে যার বিয়ে হয়নি, তিনি হয়ে পড়েন একলা। প্রিয় বোন বা বান্ধবীদের খুব একটা কাছে পান না, কাটানো হয় না ভালো সময়। সবমিলিয়ে বিষণ্ণ হয়ে পড়েন, আর সেই বিষণ্ণতা থেকেই মনের মাঝে জন্ম নেয় হতাশা ও শূন্যতা। আর এই বোধ থেকে বের হয়ে আসার সেরা উপায় হচ্ছে নতুন বন্ধু বান্ধব তৈরি করা, যার কাছে আপনার জন্য পর্যাপ্ত সময় আছে।

২) নিজেকে অযোগ্য মনে করা:
সমবয়সী সকলে নিজের জীবন সঙ্গী পেয়ে গিয়েছে, আপনি হয়তো বারবার চেষ্টা করেও পারছেন না। হয়তো প্রেম সফল হয়নি, কিংবা পরিবার থেকে চেষ্টা করেও ফল হচ্ছে না। বিশেষ করে আমাদের দেশে পাত্রী দেখাবার প্রক্রিয়াটা খুব অপমানজনক। এক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যাত হবার পর নিজেকে অনেকেই অযোগ্য মনে করতে শুরু করেন। এত অযোগ্য যে, কোন ছেলেরই তাকে পছন্দ হচ্ছে না। এমনটা ভাবা মানে অকারণেই নিজেকে ছোট করা। মনে রাখবেন, কোন পুরুষের আপনাকে পছন্দ হয়নি মানেই আপনি অযোগ্য নন। এটা নিয়ে কষ্ট পাবার কিছু নেই। সম্ভব হলে ঘটা করে পাত্রী দেখার আয়োজনটা এড়িয়ে যান, অনেকটাই স্বস্তি পাবেন।

৩) খুব কাছের বোন বা বান্ধবীর প্রতিও ঈর্ষা হওয়া:
এটাও খুব সাধারণ একটা আবেগ। আমরা মানুষ, এমনটা হতেই পারে আমাদের সাথে। খুব কাছের বোন বা বান্ধবীটি হয়তো এখন আর আপনাকে সেভাবে সময় দিতে পারেন না, নিজের সংসার নিয়েই ব্যস্ত ও সুখী। এমন অবস্থায় ঈর্ষার একটা বোধ খোঁচা দিতেই পারে আপনাকে। এক্ষেত্রে নিজেকে বিষয়টা বোঝান। প্রথমত এটা ভাবুন যে তার জীবনে মোটেও আপনার গুরুত্ব কমেনি। আর দ্বিতীয়ত, একদিন আপনারও এমন চমৎকার একজন জীবনসঙ্গী হবে, তাই মন খারাপের কিছুই নেই।

৪) বিয়ে করার জন্য তাড়াহুড়া করতে গিয়ে নিজেকে হাস্যকর করে ফেলা:
অনেক নারীই এই কাজটি করে ফেলেন নিজের অজান্তেই। আর তা হল, একটি বিয়ে করার জন্য “ডেস্পারেট” হয়ে যান। ক্রমাগত সামাজিক ও পারিবারিক চাপ থেকে এটা হয়। মনের মাঝে ক্রমাগত ঘুরতে থাকে যে “বয়স পার হয়ে যাচ্ছে”! আর এই পার হয়ে যাওয়া বয়সকে টেক্কা দিতে একজন জীবনসঙ্গীর জন্য আকুল হয়ে ওঠেন অনেকেই। বারবার ঘটকের কাছে যাওয়া, অফিসে বা পরিচিত মহলে নিজেকে পাত্রী হিসাবে উপস্থাপন ইত্যাদি করতে গিয়ে নিজেকে হাসি ও করুণার পাত্রে পরিণত করে ফেলেন তারা। আপনিও কি এমন করছেন? তাহলে জেনে রাখুন, এসব করে কেবল সামাজিক মর্যাদাতেই খাটো হচ্ছেন আপনি। এসবের তেমন কোন ফল নেই।

৫) চাপের মুখে ভুল মানুষকে বেছে নেওয়া:
ক্রমাগত পারিবারিক ও সামাজিক চাপের কারণে অনেক নারীই ভুল মানুষটিকে বেছে নেন বিয়ের জন্য। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, যাকে সামনে পেলাম, তাকেই বিয়ে করে ফেললাম। কিংবা যে রাজি হল, তাকে পছন্দ না হলেও বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাওয়া। অনেকেই এই ব্যাপারটিকে ভালোবাসা ভেবে নিজেকে শান্তনাও দিতে চান। আবার অনেকে পরিবারকে খুশি করার জন্য নিজেকে রীতিমত চাপ দিয়ে বিয়েতে রাজি করায়। এই ভুলটি কখনও করবেন না। একটাই জীবন এবং এই জীবনে একটি ভুল বিয়ে আপনার অশান্তি কমবে না বরং বাড়বে।

৬) কারও ভালো সহ্য করতে না পারা:
এটাও একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকের মাঝেই দেখা যায়। যখন বিয়ে না হবার কারণে একজন মানুষ ক্রমাগত হয়রানির শিকার হতে থাকেন৷ তখন স্বভাবতই তার মাঝে জন্ম নেয় ক্ষোভ ও ক্রোধ। আর এই ক্ষোভ ও ক্রোধের কারণেই বিবাহিত সকলকে মনে হতে থাকে শত্রু। নিজের অজান্তেই একজন খিটখিটে মানুষে পরিণত হয়ে যাই আমরা, যার কাছে পৃথিবীর কারও ভালোটা ভালো লাগে না। কারও সাফল্য বা সুখ সহ্য হয় না। এই ব্যাপারটা দূর করার জন্য কাউন্সিলিং ভালো কাজ দিতে পারে।

৭) আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলা:
এটাই কি স্বাভাবিক না? যে সমাজে একজন মেয়ের সফলতা বা বিফলতা নির্ভর করে তার স্বামী ও সংসারের স্ট্যাটাসের ওপরে এবং সঠিক সময়ে বিয়ে না হলে মেয়েটি হয়ে ওঠে সকলের চক্ষুশূল, সেই সমাজে বিয়েতে দেরি হলে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। যখন ক্রমাগত নিজের কাছের মানুষেরাই বলতে থাকে যে “তুমি এত অযোগ্য যে পাত্র জোটে না”, তখন অনেক নারীই নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন আর ক্রমশ গুটিয়ে নিতে থাকেন জীবন থেকে। ভুলেও এই কাজটি করবেন না। জীবন আপনার। আর আপনার জীবনে মাথা উঁচু করে আপনাকেই বাঁচতে হবে। একবার ঘাড় নুইয়ে ফেললেই পরাজিত আপনি।

ভালো থাকুন নারীরা। নিজেকে বিয়ের বা সংসারের মাপকাঠিতে মাপবেন না। আপনি মানুষ, নিজেকে মাপুন কেবল নিজের যোগ্যতার মাপকাঠিতে।

 

বাড়িতে থেকেই টাকা আয়ের কিছু উপায়

এখন প্রতিযোগিতার বাজার। প্রচুর ডিগ্রি নিয়ে কত মানুষ বেকার হয়ে বাড়িতে বসে রয়েছেন। কিন্তু চাকরি পাচ্ছেন না। আর ভালো ভালো ডিগ্রি নিয়ে বেকার বসে থাকায় কনফিডেন্সও হারাচ্ছেন। তাই চাকরি না পেলেও এত ভেঙে পড়বেন না। আয় করার আরও অনেক পথ খোলা রয়েছে। অনেক মানুষ চাকরি না করেও আয় করে বেঁচে রয়েছেন। কীভাবে বাড়িতে বসে টাকা আয় করবেন, তার কয়েকটি উপায় বলে দেওয়া হল।

১) কনটেন্ট রাইটার:
এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা লিখতে ভালোবাসেন। অনেক কোম্পানি রয়েছে, যারা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য লোক চায়। যারা ইংরেজিতে ভালো, তারা সেই সমস্ত জায়গায় চেষ্টা করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনার আয়টাও মন্দ হবে না।

২) পেট ক্রেশ:
আপনি কি পোষ্য পছন্দ করেন। তাহলে আপনার জন্য খুবই ভালো একটি কাজের সুযোগ রয়েছে। নিজের বাড়িতে কিংবা কিছুটা বড় জায়গা ভাড়া নিয়ে পেট ক্রেশ খুলতে পারেন। পোষ্যদের দেখভালের জন্য প্রতি ঘণ্টা কিংবা দিনের হিসেবে পারিশ্রমিক নিন। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা বেড়াতে যাওয়ার জন্য কিংবা সঠিক দেখভালের জন্য তাদের পোষ্যকে এমন একটা জায়গায় রেখে যেতে চান, যেখানে তারা নিরাপদে থাকবে। আপনি সেই সমস্ত পোষ্যদের দেখভালের কাজ করুন। আর বিনিময়ে টাকাও আয় করুন।

৩) কাউন্সিলিং:
আপনি যদি ভালো কাউন্সিলর হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার বাইরে চাকরি করার কোন প্রয়োজন নেই। বাড়িতেই চেম্বার খুলতে পারেন। আর সেখানে শিশু থেকে বৃদ্ধ সমস্ত মানুষের কাউন্সিলিং করুন।

৪) ইউটিউব:
ইউটিউব শুধু সিনেমা দেখা কিংবা গান শোনার জন্যই নয়। ইউটিউব থেকে টাকাও আয় করা যায়। ইউটিউবের ভিডিও আপলোড করে আপনিও টাকা আয় করতে পারেন। আপনার কাছে যদি যে কোন বিষয়ের ওপর ভালো ভিডিও থাকে, তাহলে আপনি সেটা ইউটিউবে আপলোড করে টাকাও আয় করতে পারবেন।

৫) গ্যারাজ:
আপনার বাড়ি যদি শহরের মধ্যে হয়, আর আপনার বাড়িতে যদি বেশ খানিকটা জায়গা থাকে, তাহলে আপনি নিজের বাড়িতেই একটা গ্যারাজ খুলতে পারেন। অনেক মানুষ আছেন, যারা গাড়ি নিয়ে কাজের জায়গায় যান। আবার এমন অনেক মানুষ আছেন, যাদের বাড়িতে গাড়ি রাখার জায়গা নেই। তাদের গাড়ি আপনি আপনার গ্যারাজে রেখে দিলেন। আর তার পরিবর্তে ঘণ্টা কিংবা দিনের হিসেবে ভাড়া নিলেন।

 

রাতারগুল জলাবন আপনাকে মুগ্ধ করবে মুহুর্তেই…

রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন যা ‘সিলেটের সুন্দরবন’ নামে খ্যাত। এই অরণ্য বছরে ৪-৫ মাস পানির নিচে থাকে। তবে জলে কোমর ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমায় বেশি বর্ষার মৌসুমে। তখন অবশ্য ডিঙ্গি নৌকায় করে ঘুরতে হয়। ডিঙিতে চড়ে বনের ভিতর ঘুরতে ঘুরতে দেখা যাবে প্রকৃতির রূপসুধা। জলমগ্ন বলে এই বনে সাপের আবাসটাই বেশি, তবে ভাগ্য ভালো হলে দেখা হয়ে যেতে পারে দু-একটা বানরের সাথে। তাছাড়া চোখে পরার মত বনে সাদা বক, কানা বক, মাছরাঙ্গা, টিয়া, বুলবুলি, পানকৌড়ি, ঢুপি, ঘুঘু, চিলসহ নানা জাতের পাখিতো আছেই।
♦ অবস্থান: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে, গুয়াইন নদীর দক্ষিণে এই বনের অবস্থান। সিলেট শহর থেকে এর দূরত প্রায় ২৬ কিলোমিটার। যেতে লাগবে-  গাড়ি > ইঞ্জিন নৌকা > ডিঙ্গি নৌকা।
♦ যেভাবে যাবেন: রাতারগুল যেতে পারেন দু-দিক দিয়ে। এয়ারপোর্টের পেছন থেকে একটা বাইপাস রোড ফতেহপুর হয়ে হরিপুরে গিয়ে মিশেছে। এদিকেও যেতে পারেন। অথবা জাফলং রোডেও যেতে পারেন। তবে যেতে হবে সিলেট থেকেই।
যাইহোক, মানুষ ৬-৮ জন হলে প্রথমেই সিলেট শহরে ‘চৌহাট্টা থেকে একটা মাইক্রোবাস ঠিক করে নিন। আসা-যাওয়ার বাবদ খরচ পরবে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মত। মাইক্রোবাসে করে প্রায় ঘণ্টাখানেক যাওয়ার পর পৌছে যাবেন গোয়াইন নদীর তীরে।
এখানে নেমেই ড্রাইভারের মোবাইল নাম্বার নিয়ে নিন, যাতে পরে এসে খুঁজে পেতে সমস্যা না হয়। তারপর চলে যান সোজা নদীর ঘাট। সেখান থেকে যেতে হবে প্রায় আধঘণ্টা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে। খরচ পরবে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার মত।
মনে রাখবেন এই নৌকা কিন্তু বনের ভেতর ঢুকবে না। বনে ঢুকতে হবে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে। এই নৌকা আপনাকে বনের পাশে নামিয়ে দেবে। বনে নামার পর কিছুদূর গেলেই চোখে পড়বে ডিঙ্গি নৌকা। কথাবার্তা বলে একটা ঠিক করে নিন। ডিঙ্গি নৌকার ভাড়া পরবে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মত।
♦ সিলেটের আম্বরখানা মোড় থেকে সিএনজি বা অটোরিকশা করেও যেতে পারেন মোটরঘাট। যেতে সময় লাগবে প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। সেখান থেকে নৌকা রিজার্ভ করেও রাতারগুল যেতে পারবেন।
♦ সর্তকতা: বর্ষায় বনে জোঁক আর সাপের প্রকোপ বেশি থাকে। তাই সতর্ক থাকবেন। যাঁরা সাঁতার জানেন না, সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখতে পারেন। তাছাড়া বনে ঢুকে পানিতে হাত না দেয়াই ভালো। কারণ বিষাক্ত সব সাঁপ এখানে ঘুরে বেড়ায়! নৌকায় বসে কোন গাছের ডালে হাত দিতেও সতর্ক থাকুন।
♦ সিলেটের বাইরে থেকে যারা আসবেন তাদের জন্য আরেকটা সতর্কবাণী- রাতারগুল থাকা-খাওয়ার কোন ব্যাবস্থা নেই। যাওয়ার সময় হালকা পাতলা কিছু খাবার (চিপস, বিস্কিট, পানি ইত্যাদি) সাথে করে নিয়ে যেতে পারেন। আর থাকার জন্য ফিরে আসতে হবে সিলেটেই।
♦ পরামর্শ: রোদের জন্য ছাতা নিতে পারেন। তবে দুপুর টাইমে না যাওয়াই ভালো। খুব সকালে গেলে অনেক পাখি দেখতে পারবেন। তাদের কিচিরমিচিরে পরিবেশটা হবে অন্যরকম। আবহাওয়াটাও ঠাণ্ডা থাকবে। তাছাড়া শেষ বিকেলের দিকেও যেতে পারেন। আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হবে তখন গাঁ ছমছমে ভাব আসবে।

 

ফ্যাশনের সাথে গড়ে উঠুক আপনার ক্যারিয়ার

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং

এই মুহূর্তে ক্রিয়েটিভ ডিজ়াইনিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি গ্ল্যাম ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অন্যতম আকর্ষক পেশাই হল ফ্যাশন ডিজ়াইনিং।

আজকের দিনে সকলেই তাদের পোশাক-আসাক, লেটেস্ট ট্রেন্ড, কোনটা ইন, কোনটা আউট এসব নিয়ে বেশ সচেতন। তার উপর অনেকেই আবার চলতি কোনও একটা ট্রেন্ড অনুসরণ করার বদলে একটা নিজস্ব ট্রেন্ড চালু করতেই বেশি আগ্রহী। সেখান থেকেই এসেছে ফ্যাশন ডিজ়াইনিংয়ের ব্যাপারটা। অর্থাত্‌ নতুন ট্রেন্ড ভাবার সৃজনশীলতা এবং কল্পনাশক্তিই হল এই পেশায় আসার প্রধান শর্ত। টেকনিক্যাল শিক্ষা তো রয়েছেই, তবে ক্রিয়েটিভিটির কোনও বিকল্প এই পেশার ক্ষেত্রে নেই। মনে রাখতে হবে, ফ্যাশন ডিজ়াইনিং মানে কিন্তু শুধুমাত্র গ্ল্যামারাস সেলেব্রিটিদের জন্যই কাজ করা নয়, সেন্স অফ স্টাইল কিন্তু আনা যায় সব ধরনের পোশাকেই। যথাসম্ভব বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার মধ্যেই কিন্তু একজন ফ্যাশন ডিজ়াইনারের সার্থকতা লুকিয়ে থাকে।

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং বিষয়ে কাজ করার প্রধান ক্ষেত্রগুলোই হল কাপড়, বিভিন্ন পোশাক-আসাক অর্থাত্‌ টেক্সটাইল্স ডিজ়াইনিং। ভারতের ক্ষেত্রে ফ্যাশন ডিজ়াইনিং নিয়ে কাজ করার কিছু বাড়তি সুবিধে আছে, তার কারণ হল বিভিন্ন ধরনের সিল্ক বা রেশম, ট্র্যাডিশনাল হ্যান্ডলুম ফেব্রিক, রাস্টিক টেক্সচারে কাজ করতে পারার সুযোগ। ভারতের এই ধরনের কাজগুলোর চাহিদা সারা পবৃথিবীতেই রয়েছে। এই কারণেই আমাদের দেশের টিন জেনারেশন ফ্যাশন নিয়ে কেরিয়ার করার ব্যাপারে খুব বেশিই আগ্রহী হয়ে উঠছে।

কাজের ধরন

ফ্যাশন ডিজ়াইনার কাজই হল চলতি ট্রেন্ডের বিভিন্ন আকর্ষক ভ্যারাইটি তৈরির মাধ্যমে ক্রেতা বা ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করা। শুধুমাত্র লেটেস্ট ট্রেন্ডের কাজই নয়, মার্কেট কন্ডিশন এবং আবহাওয়ার ধরন বুঝেও ড্রেস মেটিরিয়াল নির্বাচন করতে হয়। মাথায় রাখতে হয় ফিট, স্টাইল, কালার, টেক্সচার এবং মেটিরিয়ালের কথাও।

যে পোশাকটি তৈরি করতে হবে, সেটি প্রথমে স্কেচ করতে হয়। তারপর এর বিভিন্ন অংশগুলো সঠিক সাইজ়ে একটি কাগজের উপর এঁকে কেটে নিতে হয়। সেগুলো সেলাই করে কোনও মডেল বা ম্যানিকুইনের গায়ে ফিট করে কি না দেখে নেওয়ার পর আসল ফেব্রিকের পোশাকটি তৈরি করা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে শেখার সময় কাগজ দিয়েই ট্রায়াল হয় বিভিন্ন পোশাকের। তারপর কাপড়ের সাহায্যে ফাইনাল স্ট্রাকচার তৈরির সময় দেখে নিতে হয় ফেব্রিক, উইভ, ড্রেপিং কোয়ালিটি, মেটিরিয়াল কালার এবং ডিজ়াইন।

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং-এ কাজের রকমফের

ফ্যাশন ডিজ়াইনিংয়ের পেশায় অনেক ধরনের কাজের আলাদা-আলাদা বিভাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে সাধারণ প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর বিভিন্ন বিভাগের জন্য আলাদা করেও প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়। এই পেশার অন্তর্গত দপ্তরগুলো হল,

ডিজ়াইন ডিপার্টমেন্ট : এটি হল প্রধানত ম্যানুফাকচারিং ইউনিট। এই বিভাগে যেসব পদে কাজ করা যায়, সেগুলো হল ডিজ়াইনার, কাটিং অ্যাসিসট্যান্ট, স্কেচিং অ্যাসিসট্যান্ট, জুনিয়র ডিজ়াইনার ইত্যাদি। এদের মাধ্যমেই বড় স্কেলে ডিজ়াইনার গারমেন্টস ম্যানুফাকচার করা হয়।

মার্কেটিং এবং মার্চেন্ডাইজ়িং : আজকের দিনে ফ্যাশনের ট্রেন্ড প্রতিমুহূর্তেই পালটাচ্ছে। তাই মার্কেটিং এবং মার্চেন্ডাইজ়িং বিভাগেও চলতি ফ্যাশন সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি সেল্স ডেটার উপর নজর রেখে মার্কেটিং অবজেক্টিভ তৈরি করার দায়িত্বও থাকে এই বিভাগের কর্মীদের উপর। এঁরাই বিভিন্ন প্রডাক্টের দাম, প্রয়োজনীয়তা, চাহিদা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় ইনপুট পৌঁছে দেন স্টাইলিং ডিপার্টমেন্টের কাছে।

ম্যানুফাকচারিং : ম্যানুফাকচারিং বিভাগটি চলে প্রডাকশন ম্যানেজারের অধীনে। তাঁর দায়িত্বে থাকে কাজের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং প্রডাকশনের কোয়ালিটি বজায় রাখা। কাজের প্রত্যেকটা পর্যায়ই প্রডাকশন ম্যানেজারকে কমবেশি নজরে রাখতে হয়।

ফ্যাশন কো-অর্ডিনেটর : এটিও ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। এঁদের কাজ হল ক্রেতা এবং প্রডাকশন ম্যানেজারের মধ্যে কো-অর্ডিনেট করানো। প্রডাকশন শেডিউল ঠিকমতো মেনে চলা, ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী ফেব্রিক, কালার, ডিজ়াইন এবং কোয়ালিটির উপর নজর রাখাই এদের প্রধান কাজ। এঁরা অনেকসময় ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজ়াইনার ওয়্যার এবং উপযুক্ত অ্যাকসেসরিজ়ও সাজেস্ট করে দেন। প্রডাকশনের ক্ষেত্রেও ক্রেতাদের ফিডব্যাক ফ্যাশন কো-অর্ডিনেটরদের মাধ্যমেই আসে।

কাজের প্রয়োজনীয় অ্যাপটিটিউড

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং নিয়ে কাজ করার বা ক্যারিয়ার তৈরির আগ্রহ টিনএজারদের মধ্যে ক্রমশই বাড়ছে। বিশেষত পোশাক-আসাকের ব্যাপারে যারা বরাবরই এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালবাসে, শিল্পবোধ এবং সৃজনশীলতা আছে, তাদের জন্য এই কেরিয়ার খুবই উপযুক্ত। তবে প্রথম থেকেই যে-কোনও আইডিয়া স্কেচ করে দেখানোর দক্ষতা বা অ্যাপটিটিউড গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজনীয়। খুব দক্ষ শিল্পী হওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে কালার, শেড এবং টোন নিয়ে কাজ করা বা ম্যাচিং-মিক্সিং করার সেন্স থাকাটা জরুরি। পাশাপাশি কাগজে-কলমে যা আঁকা বা প্ল্যান করা হল, থ্রি-ডায়মেনশনে তার ভিসুয়ালাইজ়েশন কেমন হবে, সেই বোধটাও ফ্যাশন ডিজ়াইনারের থাকতে হয়।

এই পেশায় ভাল করতে হলে শুধু ভাল শিল্পী হলেই হবে না। রীতিমতো পড়াশোনা করে চলতি ফ্যাশন ট্রেন্ডের খোঁজখবর রাখার প্রয়োজন হয়। একজন ফ্যাশন ডিজ়াইনারকে বাণিজ্যিক সাফল্য পেতে হলে অবশ্যই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের ফ্যাশন জার্নাল, ম্যাগাজ়িন বা টিভি চ্যানেলে নিয়মিত চোখ রাখতে হয়। শুধু তাই নয়, শিল্প এবং ইতিহাসভিত্তিক নানারকম মিউজ়িয়াম বা প্রদর্শনী থেকেও তাকে নানারকম আর্ট ফর্ম কালেক্ট করার প্রয়োজন হতে পারে। আবার ডিজ়াইনার হিসেবে নিজেকে আরও উন্নত করে তোলার জন্য প্রাথমিক টেলরিং-এর কাজও, যেমন, কাটিং, সিউয়িং, ড্রেপিং ইত্যাদিও তাকে শিখে রাখার প্রয়োজন হয়। এসব কিছুর পর, ডিজ়াইনারের কমিউনিকেশন স্কিলও খুব ভাল হওয়ার দরকার হয়, যাতে সে তার কাজ এবং আইডিয়া স্পষ্ট করে ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরতে পারে।

 

ঝলমলে চুল ধরে রাখতে ক্যাস্টর অয়েল

একগোছা ঝলমলের স্বপ্ন থাকে সবার। চেহারার সৌন্দর্য বাড়াতেও এমন সুন্দর চুলের তুলনা হয় না। কিন্তু বাতাসে ধুলাবালি আর বৈরি আবহাওয়া এবং সঠিক যত্নের অভাব চুল ঝরিয়ে দিতে সহায়তা করে। ফলে অচিরেই হারিয়ে যায় চুলের চাকচিক্য। তাই ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে চুলের যত্ন করবেন, তা নিয়েই রইল কিছু টিপস।

– ক্যাস্টর অয়েল চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। মাথার ত্বক শুষ্ক হলে খুশকির আধিক্য দেখা যায়। এই খুশকি রোধে ক্যাস্টর অয়েলের জুড়ি মেলা দায়। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন চুলে এই তেল লাগালে খুশকি কমে যাবে।

– ক্যাস্টর অয়েল চুল গজাতেও সহায়ক। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন, ভিটামিন ই, যা চুল পড়া রুখে নতুন চুল তৈরিতে সাহায্য করে।

– নিয়মিত মাথার ত্বকে ক্যাস্টর অয়েল ম্যাসাজ করলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। ফলে চুল হয় মজবুত ও ঝলমলে। – মাথার ত্বকের নিয়মিত যত্ন না নিলে অনেকসময়ই সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়। এর থেকেও রক্ষা করতে ক্যাস্টার অয়েল ওস্তাদ। এর অ্যান্টি ফাংগাল ও অ্যান্টি ব্যাকটিরিয়াল উপাদান সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।

ব্যবহার বিধি

অন্য কোনও তেলের সঙ্গে ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে মাথায় লাগান। এভাবে সারারাত রেখে দিন। পরদিন ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন। এভাবে টানা ১ মাস করুন। পার্থক্য নিজেই বুঝতে পারবেন।

 

খেতে মজা লেয়ার পুডিং

মজাদার পুডিং বিকালের নাস্তা বা বাচ্চাদের টিফিনে খেতে বেশ উপযোগী। ছোট বড় সবার কাছেও এটি বেশ প্রিয়। বাচ্চারা ডিম খেতে না চাইলে ডিমের পুডিং বানিয়ে দিলে মজা করে খায়। ফলে ডিমও খাওয়া হয়ে যায়, পুষ্টির যোগানও হয়। আপনার পছন্দের এই ডিমের পুডিংকে আরও মজাদার করার জন্য আজ লেয়ার পুডিং এর একটি নতুন রেসিপি দেয়া হল।

যা যা লাগবে

ডিম ৪টি, চিনি ১ কাপ, পানি ১ কাপ, ফুড কালার, কেরামেল ১ টেবিল-চামচ, গুঁড়া দুধ ১ কাপ, ভ্যানিলা এসেন্স কয়েক ফোঁটা।

যেভাবে করবেন

ডিম, চিনি, পানি, ভ্যানিলা এসেন্স ও গুঁড়া দুধ একসঙ্গে ৫ মিনিট ভালো করে ফেটে নিন। ফেটে নেয়ার পর মিশ্রণটি ৩টি আলাদা পাত্রে রাখুন। এখানে তিনটি লেয়ার করা হয়েছে তাই তিনটি পাত্রে আলাদা করে রাখা হয়েছে। আপনি যে কয়টা লেয়ার দিতে চান ততোটা পাত্রে আলাদা করে ভাগ করে রাখবেন।

প্রতিটি পাত্রের মিশ্রণের সঙ্গে একেকটা ফুড কালার মেশান। যে পাত্রে পুডিং জমাবেন সেই পাত্রে চিনি এবং অল্প ঘি ছিটিয়ে ১ মিনিট চুলায় বসিয়ে ক্যারামেল তৈরি করে নিন। এই পাত্রে প্রথমে একটি মিশ্রণ ঢেলে দিন। একে চুলায় বসিয়ে ১০ মিনিট ডাবল স্টিম করুন।

পুডিং তৈরি হয়ে গেলে এরপর অন্য পাত্রের মিশ্রণটি হয়ে যাওয়া পুডিংয়ের উপর দিয়ে আবারও স্টিম করুন ১০ মিনিট। এভাবে একটা একটা করে প্রতিটা লেয়ার তৈরি করে নিন। সব লেয়ার হয়ে গেলে পুডিং ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করুন।

 

মেয়েদের এখনো ধরে বাসে তোলতে হয়

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, ‘মেয়রা এখনো বাসে ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না। তাদেরকে কোমর ধরে বাসে তোলা হয়। তবে ঢাকার রাস্তায় নতুন বাস নামানো সম্ভব হলে এসব সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।’

রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‍‍‘শক্তিশালী, কার্যকর সিটি করপোরেশন ও নিরাপদ, নারী বান্ধব ঢাকা মহনগর’ শীর্ষক মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আন্দোলনের উপ-পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি এ মতবিনিময় সভা আয়োজন করে।

মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘আগামী ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে নারীরা নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করতে পারবেন। কেউ তাদের ইভটিজিং করার সাহস দেখাবে না। এছাড়া প্রতিটি সেক্টরে কাজ শুরু হয়েছে, আগামী ৪ বছরে ঢাকা শহর বদলে যাবে।’

আনিসুল হক বলেন, ‘সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬০০ সিসিটভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে আরও ৪০০ ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এটি উদ্বোধন করতে পারেন। ক্যামেরার পাশাপাশি এলএডি লাইট লাগানো হচ্ছে। কাঠবিড়ালী পার্ক, প্রজাপতি পার্ক ও খেলার মাঠের ব্যবস্থা হচ্ছে। তাছাড়া আগামী ৬/৯ মাসের মধ্যে নারীরা নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করতে পারবেন। কেউ তাদের ইভটিজিং করার সাহস দেখাবে না।’

গণপরিবহনের বিশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ খাত পরিচালনা করে একটি সিন্ডিকেট। একটি বাস পরিচালনায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ যদি ২০০ টাকা অফিসিয়াললি খরচ হয় তবে সিন্ডিকেটের জন্য লাগে ৭০০ টাকা। ফ্রানঞ্চাইজ পদ্ধতিতে নতুন করে ৩ হাজার বাস নামানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

মেয়র বলেন, ‘অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমি এবং আমার পরিষদ অত্যন্ত ঘনবসতির এই সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮৫ হাজার মানুষ বাস করে। এদের সব নাগরিকসেবা নিশ্চিত করা সহজ নয়। এসব সমস্যা কাটাতে অন্তত ৪ থেকে ৫ বছর সময় দরকার।’

মেয়র বলেন, ‘অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমি এবং আমার পরিষদ অত্যন্ত ঘনবসতির এই সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮৫ হাজার মানুষ বাস করে। এদের সব নাগরিকসেবা নিশ্চিত করা সহজ নয়। এসব সমস্যা কাটাতে অন্তত ৪ থেকে ৫ বছর সময় দরকার।’

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক তৌফিক ইমরোজ খালেদী, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বেগম, উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকার কাউন্সিলর রাশেদা আখতার ঝর্ণা, মাসুদা আক্তার, হাবিবুর রহমান মিজান প্রমুখ। মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম।

 

অপার সৌন্দর্যের থেগামুখ

‘নদীর এই বাঁকটা অনেক বেশি মোহময়’—নাদিয়ার মুখের কথা শেষ না হতেই দেখি চিকিৎসক নাজমুল হক নদীর বাঁকের ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তারপর যতই সামনে এগিয়েছি, কর্ণফুলী নদীর প্রতিটা বাঁক আমাদের শুধুই মুগ্ধ করেছে, বিস্ময়ভরে তাকিয়ে দেখেছি। কখনো ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত হয়েছি, আবার কখনো প্রকৃতি উপভোগ করে করে এগিয়েছি। পুরো দুই দিনের প্রায় ২৫ ঘণ্টা আমরা কর্ণফুলী নদীতে ভেসে বেড়িয়েছি। অসাধারণ ছিল সে নদীপথে চলার প্রতিটি মুহূর্ত।
ঠেগামুখ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী শেষ গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন থেগামুখ। এখানে চাকমা ও মারমা নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। থেগামুখের কথা জেনেছিলাম আগেই। সেই জানাটাকে উসকে দিয়েছিল বন্ধু সমীর মল্লিক। শুরু হলো পরিকল্পনা। বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ এল বাংলা নববর্ষের ছুটিতে। প্রথম আলোর রাঙামাটি প্রতিনিধি হরি কিশোর চাকমা ও বন্ধু গ্লোরি চাকমার সহযোগিতা নিলাম। নয়জনের দল নিয়ে আমরা রওনা হলাম। ১৩ এপ্রিল রাতে দেশ ট্র্যাভেলসের বাসে চললাম রাঙামাটির উদ্দেশে। নববর্ষের দিন রাঙামাটি থেকে পরদিন ভোরবেলা মিল্টন চাকমার ট্রলারে চেপে থেগামুখের উদ্দেশে সমতাঘাট থেকে শুরু হলো যাত্রা।
ঘণ্টা খানেক চলার পর পাহাড় ভেদ করে দাঁড়িয়ে থাকা বুদ্ধমূর্তি দেখে প্রথম যাত্রাবিরতি টানতে হলো। এভাবেই শুভলং, বরকল ও বাঙালটিলা হয়ে ঠিক সন্ধ্যায় আমরা ছোট হরিণা পৌঁছাই। সীমান্ত এলাকা, তাই নায়েক রহমতের পরামর্শে সেদিন আর সামনে না গিয়ে ছোট হরিণাতেই রাত কাটালাম আমরা।
পরের দিন ভোরের আলো তখনো ফোটেনি। অন্ধকার ভেদ করে আমরা যখন বের হলাম, সময় তখন ভোর চারটা হবে। ট্রলার চলা শুরু করতেই অনুভব করি স্বপ্নের মতো ঠান্ডা হাওয়া বইছে, চারিদিক ঝিরঝির। আমরা টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার গ্রাম ছোট হরিণা থেকে এগিয়ে চলি বড় হরিণার দিকে। বড় হরিণাতে আমাদের আবার যাত্রাবিরতি দিতে হয়। বড় হরিণা সীমান্তচৌকি বা বর্ডার আউটপোস্টে (বিওপি) আমাদের থেগামুখ যাত্রার বিষয়ে তথ্য জানানো ছিল। নাম লিখিয়ে বিজিবির দেওয়া হালকা চা-নাশতার আতিথেয়তা নিয়ে তবলাবাগ হয়ে ছুটে চলি থেগামুখের দিকে।
আবারও হুহু ঠান্ডা বাতাস আমাদের জড়িয়ে ধরল। আরাম পেয়েই কিনা সঙ্গী-সাথিরা ঘুমের অতলে তলিয়ে পড়ে। আমি না ঘুমিয়ে সারা রাতের ক্লান্তি সরিয়ে ট্রলারের ছাদে গিয়ে বসি। একটু পর দেখি আনিচ মুন্সি চলে এসেছেন। তারপর নওরিন এবং তারও পরে নাদিয়া চলে এল। এভাবে এক এক করে সবাই চলে আসে ট্রলারের ছাদে। এরই মধ্যে পুব আকাশে আলো দেখা দিয়েছে। তবে আকাশের গা থেকে পুরোপুরি অন্ধকার তখনো মুছে যায়নি। প্রচণ্ড গরমের দিনেও কেমন কুয়াশাভেজা প্রকৃতি। মধ্য এপ্রিলেও ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। সূর্যের আলোরা পাখা মেলতেই কর্ণফুলী নদী চকচক করে উঠল। পাখির ডাক ছিল আলো ফোটার আগে থেকেই, এবার শুরু হলো আমাদের কিচিরমিচির। দুপাশে পাহাড় আর সে পাহাড়ের ঘন জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত কর্ণফুলী নদী দিয়ে বড় হরিণা পেছনে ফেলে ট্রলার এগিয়ে চলল আরও সামনে বাংলাদেশের শেষ এবং সীমানা গ্রাম থেগামুখের দিকে। এখানে আমাদের ট্রলার ও এলাকার অন্যান্য ট্রলারের সঙ্গে ভারতের পতাকাবাহী ট্রলার চলতে দেখে দারুণ রোমাঞ্চিত আমরা। এ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা, মনে মনে ভাবলাম সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক একেই বলে।
থেগামুখ বিওপির প্রবেশমুখটা টাইটানিক জাহাজের মতো। ধারণার চেয়ে আধা ঘণ্টা দেরিতে থেগামুখ পৌঁছানোয় থেগাদোরের আঞ্চলিক কমান্ডার তাঁর উৎকণ্ঠার কথা জানালেন। তারপর হালকা নাশতায় আপ্যায়িত করলেন। নাশতা সেরে এবার আমরা বের হই থেগা গ্রাম ঘুরে দেখতে, পাশেই সাজেকের দিকে বয়ে গেছে থেগা নদী।
থেগামুখ সম্পর্কে যেমন ভেবেছিলাম তার উল্টোই দেখলাম। দুর্গম এলাকা হলেও সীমান্তঘেরা থেগামুখ বা থেগাদোর গ্রাম ছিমছাম, বেশ সাজানো-গোছানো। এখানে ১০০ পরিবারের বসবাস। তার মানে সব মিলে এখানে ১০০টির মতো বাড়ি বা ঘর আছে। একটা চমৎকার বাজার আছে। এখানকার কারবারি বা গ্রামপ্রধানের নাম পুলিন চাকমা। একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তখন ক্লাস চলছিল। আমাদের দেখে ছাত্ররা বের হয়ে চোখে বিস্ময় নিয়ে তাকাল। তারপর আমাদের ক্যামেরায় পোজ দেওয়া শুরু করল। এখানে রেস্ট হাউস বা রাত্রি যাপনেরও ব্যবস্থা আছে। রেস্ট হাউস বলতে চাকমা বা মারমাদের ঘর। খাবার হোটেল আছে, খেতে চাইলে আগে থেকে ফরমাশ দিয়ে রাখতে হবে। রেস্ট হাউসে আশপাশের এলাকার লোকজন বা পাশের ভারতের মিজোরামের ডেমাক্রির অতিথি ছাড়া অন্য আর কারও থাকার সৌভাগ্য হয়নি, খাবার ব্যবস্থাও তাঁদের জন্যই জানালেন কারবারি পুলিন চাকমা। সপ্তাহের বুধ ও শুক্রবার এখানে হাট বসে। সেই দুই দিন এলাকা বেশ সরগরম থাকে। হাটে আসা ক্রেতার বেশির ভাগই ওপার মিজোরামের। ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরামে বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা। স্কাই টিভির অ্যানটেনা প্রতিটি ঘরে ঘরে। আমরা পুরো গ্রাম ঘুরে থেগামুখ বাজারের বটগাছ তলায় বসে কারবারি পুলিন চাকমার আতিথেয়তা নিই। চা-বিস্কুট খাই, সঙ্গে মিজোরামের কোমল পানীয়। এভাবেই থেগামুখে ঘণ্টা দুয়েক কাটিয়ে লুসাই পর্বতমালা বা মিজোরামের নীল পাহাড়ের (ব্লু মাউনটেইন) জলধারার স্রোতের মিলনস্থল কর্ণফুলী নদীর উৎসমুখ দেখে আমরা ফিরতে থাকি। থেগামুখ তখন পেছনে।

.প্রয়োজনীয় তথ্য
রাঙামাটি থেকে ছোট হরিণা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল রয়েছে। ছোট হরিণা পর্যন্ত সাধারণের চলাচলের অনুমতি, তারপর আর নেই। বড় হরিণা হয়ে থেগামুখ যেতে হলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। অনুমতির জন্য রাঙামাটির জিএসও (ইন্টেলিজেন্স) ৩০৫ পদাতিক ব্রিগেড বরাবর আবেদন করতে হবে। অনুমতি মিললে রাঙামাটি হয়ে সমতাঘাট বা রিজার্ভ বাজার থেকে ছোট হরিণা হয়ে থেগামুখ। যাত্রাকালে পর্যাপ্ত শুকনা খাবার ও পানি সঙ্গে রাখবেন। থেগামুখে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসতে হবে। এক কিংবা দুই রাত আপনাকে ছোট হরিণা থাকতে হবে। রাত্রি যাপনের জন্য ছোট হরিণার বিদ্যুৎ ও টয়লেটবিহীন রেস্ট হাউসের ছোট্ট ঘরই একমাত্র ভরসা। দু-তিনটা খাবারের হোটেল থাকলেও আগে থেকে ফরমাশ না দিলে খাবার পাবেন না।

 

বরফশীতল রূপচর্চা!

ফ্রিজের ভেতরেই যদি থাকতে পারতাম! গরমে এর চেয়ে আরাম আর কোথায় পাওয়া যাবে? গরমের সময় ঠান্ডা যেকোনো কিছুই ভালো লাগে। এ সময় জীবনযাপনে শীতল স্পর্শ এনে দেয় কিছুটা আরাম। রূপচর্চাতেও নিয়ে আসতে পারেন এই শীতলতা। বরফের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন ত্বকের লাবণ্য। জানালেন আয়ুর্বেদ রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।
বিভিন্ন ফলের রস অথবা অন্য কোনো উপাদান দিয়ে বরফের কিউব বানিয়ে সেটা রূপচর্চায় ব্যবহার করা যায়। বিষয়টি সহজ, সময়ও বাঁচায়। কিশোরী বয়স থেকে যেকোনো ত্বকের অধিকারী বরফ কিউবের মাধ্যমে রূপচর্চা করতে পারবেন। যাঁরা মাথা ব্যথায় ভোগেন সাইনাস কিংবা মাইগ্রেনের কারণে, তাঁদের বেলায় শুধু নিষেধাজ্ঞা। বাইরে রোদ থেকে এসে ব্যবহার করা যাবে। আইস কিউব ব্যবহারে মেকআপ অনেকক্ষণ স্থায়ী হয়।
বিভিন্ন ধরনের আইস কিউব
* কাঁচা দুধ ও মধু মিশিয়ে বানানো আইস কিউব রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং বলিরেখা ও ত্বকের দাগ কমাতে সাহায্য করে। ভালো ফলের জন্য রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আইস কিউবটি পুরো মুখে মেখে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। এটা ত্বক ময়েশ্চারাইজার করবে, দূষণ ও সূর্যের ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মি থেকে ত্বকের পোড়া ভাব কমাবে। তবে তৈলাক্ত ত্বকে এই কিউবটি ব্যবহার করা যাবে না। এই শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযোগী।

* ব্রণ ও রোদে পোড়া দাগের জন্য ব্যবহার করুন গ্রিন টি দিয়ে তৈরি আইস কিউব।
* তরমুজের রস ও পুদিনা পাতা আইস কিউব ব্যবহারে ত্বক কোমল করে এবং ত্বকের ক্লান্তি ভাব দূর করে। এই গরমের জন্য খুবই উপকারী।
.* লেবুর রস, মধু ও পুদিনা পাতা রস দিয়েও তৈরি করা যায় আইস কিউব। এই আইস কিউব সূর্যের পোড়া ভাবের জন্য খুবই উপকার। এটি তৈলাক্ত ত্বক এবং সেনসিটিভ ত্বকের জন্য দারুণভাবে কাজ করে।
* শসার রসের আইস কিউব আপনার ত্বকে আনবে সজীবতা।
* নিমপাতা ও হলুদ জ্বাল দিতে হবে। ঠান্ডা করে সেই পানি আইস কিউব বাক্সে ঢেলে এবার ডিপফ্রিজে জমিয়ে নিন। এই আইস কিউব অসাধারণভাবে কাজ করে ব্রণ ও ব্ল্যাক হেডস দূর করতে। এটি যেকোনো ত্বকের অ্যালাজি এবং জ্বালা পোড়ার জন্যও কাজ করবে।
* বাঙ্গির রস দিয়েও বানিয়ে নিতে পারেন আইস কিউব। এটা শুষ্ক ও মিশ্র ত্বকের জন্য উপকারী।
* গোলাপ পানি ত্বকের জন্য উপকারী। এটা ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে গোলাপ পানির কিউব ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকে আনবে সতেজ ভাব। এটি সব রকম ত্বকের জন্যই উপযোগী।
আইস কিউব ব্যবহারের পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
আপনি দিনের যে সময়েই আইস কিউব ব্যবহার করুন না কেন, মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই ক্রিম লাগাতে হবে।

 

যা আগে কেউ করেনি, তেমন কাজ করতে ভালোবাসি

এবিসি রেডিও ৮৯.২ এফএমে প্রতি সোমবার রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত প্রচারিত হয় ‘কুয়াশা’। তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ এই অনুষ্ঠানটির বিশেষ পর্ব প্রচারিত হবে। অনুষ্ঠানটির প্রযোজক ও উপস্থাপক কথাবন্ধু শারমিন। মূল পরিকল্পনাও তাঁর। অনুষ্ঠানটি নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
রেডিওতে এমন একটি অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা কীভাবে মাথায় এল?
ছোটবেলা থেকেই ভৌতিক ও রোমাঞ্চধর্মী গল্প আমার খুব ভালো লাগত। শৈশবে গোয়েন্দা হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। শার্লক হোমস, ব্যোমকেশ বক্সী আমার প্রিয় কয়েকটি চরিত্র। সেভাবেই আসলে ‘কুয়াশা’র মতো একটি রেডিও অনুষ্ঠান করার ভাবনা মাথায় আসে। তা ছাড়া আমি বরাবরই নতুন কিছু করার চেষ্টা করি। যা আগে কেউ করেনি, যা অন্যদের নতুন করে ভাবায়, তেমন কাজ করতে ভালোবাসি।
এই অনুষ্ঠান নিয়ে সামনের পরিকল্পনা কী?
প্রথম দিকে সত্যি ঘটনা ও বিখ্যাত লেখকদের গল্প নিয়ে অনুষ্ঠানটা সাজিয়েছিলাম। এরপর এখানে মৌলিক গল্প যুক্ত করি। আমাদের অনুষ্ঠানে চিত্রনাট্যকারের একটি দল আছে। আবার শ্রোতারাও গল্প লিখে পাঠান। গত বছর শ্রোতাদের লেখা গল্প নিয়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম আমরা। অনেক বিখ্যাত রোমাঞ্চধর্মী গল্প নিয়েও রেডিও নাটক তৈরি করেছি। এভাবেই অনুষ্ঠানটিতে নিত্যনতুন বিষয় যুক্ত করছি এবং করব।
‘কুয়াশা’ নামে তো আপনার সম্পাদিত দুটি বইও বের হয়েছে।
হ্যাঁ, ‘কুয়াশা’তে প্রচারিত গল্প নিয়েই এই দুটি সংকলন। প্রথম বইটি বের হয় গত বছর অমর একুশে বইমেলায়। কুয়াশা-২ বাজারে আসে এ বছরের বইমেলায়। একদিন না একদিন তো ‘কুয়াশা’ অনুষ্ঠানটা শেষ হবেই, কিন্তু এই বইগুলো পাঠকদের সংগ্রহে থেকে যাবে সব সময়।
এই অনুষ্ঠানটি করতে গিয়ে মজার কোনো অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে?
অনুষ্ঠানে যখন ভৌতিক গল্পগুলো বর্ণনা করা হয়, তখন রহস্যজনক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নেপথ্যে সে রকম সুর বাজানো হয়। একবার অনুষ্ঠান চলাকালীন কী যেন একটা পড়ে ‘টুং’ করে শব্দ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি ভয় পেয়ে স্টুডিও থেকে ছুটে বের হয়ে গিয়েছিলাম!
সাক্ষাৎকার: নাদিয়া মাহমুদ

 

অশুভ শক্তি দমনে চলচ্চিত্র হতে পারে অন্যতম মাধ্যম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সমাজে অশুভ শক্তি দমনে চলচ্চিত্র হতে পারে অন্যতম মাধ্যম। দর্শকেরা ছবি দেখে যাতে কিছু শিখতে পারে, সে দিকটিতে খেয়াল রাখতে তিনি নির্মাতাদের অনুরোধ করেন।

গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৪ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ২৬টি বিভাগে ২৯ জন শিল্পী ও কলাকুশলীর হাতে পুরস্কার হিসেবে পদক ও অর্থের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

২০১৪ সালের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন ফেরদৌস আহমেদ এবং মৌসুমী ও বিদ্যা সিনহা মীম। আর আজীবন সম্মাননা লাভ করেছেন অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম এবং অভিনেত্রী রানী সরকার।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যবসা পরিবর্তনের স্বার্থে অনেক হলের মালিক তাঁদের সিনেমা হল ভেঙে ফেলছেন। অথচ এটিকে আরও আধুনিক করলে ব্যবসা ও সুস্থ সামাজিক বিনোদনের সুযোগ তৈরি করা যায়, যা সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশও বটে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণের মেধা, মনন ও শক্তি আমাদের দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের আছে।’ তিনি চলচ্চিত্রের কলাকুশলীদের এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

২০১৪ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীদের নাম ঘোষণা করা হয় এ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি। পুরস্কার বিতরণের জমকালো আসরটি বসে গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।

আজীবন সম্মাননা পাওয়া দুই অভিনয়শিল্পী সৈয়দ হাসান ইমাম ও অভিনেত্রী রানী সরকারকে দেড় লাখ করে, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ পরিচালককে ১ লাখ টাকা করে এবং অন্যদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট ১৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।

শ্রেষ্ঠ অভিনেতার (প্রধান চরিত্র) পুরস্কার পান এক কাপ চা চলচ্চিত্রের জন্য ফেরদৌস আহমেদ। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পান যৌথভাবে মৌসুমী ও বিদ্যা সিনহা মীম।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম রহমতউল্লাহ ও তথ্যসচিব মরতুজা আহমেদ।

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ-এর প্রযোজক হিসেবে এবং এই চলচ্চিত্রের গীতিকার হিসেবে দুটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন মাসুদ পথিক। মেঘমল্লার চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক হয়েছেন জাহিদুর রহমান অঞ্জন। শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে গাড়িওয়ালা। শ্রেষ্ঠ গায়ক হয়েছেন মাহফুজ আনাম জেমস এবং শ্রেষ্ঠ গায়িকা যৌথভাবে রুনা লায়লা ও মমতাজ।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (পার্শ্ব চরিত্র) শাহ মো. এজাজুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (পার্শ্বচরিত্র) চিত্রলেখা গুহ, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (খল চরিত্র) তারিক আনাম খান, শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা মিশা সওদাগর, শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক সাইম রানা, শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী আবির হোসাইন এবং শিশুশিল্পী হিসেবে বিশেষ পুরস্কার মারজান হোসাইন জারা। শ্রেষ্ঠ সুরকারের পুরস্কার পান বেলাল খান। শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার মরহুম আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন তাঁর ভাই নুরুজ্জামান ইলিয়াস। শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার সৈকত নাসির, শ্রেষ্ঠ সংলাপ জাহিদুর রহমান অঞ্জন, শ্রেষ্ঠ সম্পাদক তৌফিক হোসেন চৌধুরী, শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক মারুফ সামুরাই, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক মোহাম্মদ হোসেন, শ্রেষ্ঠ শব্দ গ্রাহক রতন পাল, শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জাকার কনকচাঁপা চাকমা এবং শ্রেষ্ঠ মেকআপ ম্যানের পুরস্কার পান আবদুর রহমান।

 

গরমে ত্বকের ৫ সমস্যা

গরম, রোদ আর ঘামের কারণে ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই এ সময় ত্বকের বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। জেনে নিন ত্বকের গ্রীষ্মকালীন কয়েকটি সমস্যা ও প্রতিকার:
ঘামাচি: ঘামাচি বা হিট র্যা শ প্রায় সবার হতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম, ঘাম ও আবদ্ধ জামাকাপড় এ সমস্যার জন্য দায়ী। ঘাড়, কুঁচকি, পিঠ, বগল ও বুকে ঘামাচি বেশি হয়। এটি প্রতিরোধের জন্য অতিরিক্ত গরম পরিবেশ এড়িয়ে চলুন, ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পরুন, নিয়মিত গোসল করুন। ঘামাচির সমস্যায় ক্যালামিন লোশন ব্যবহার করা যায়, পুঁজ হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
ছত্রাক সংক্রমণ: গরমে ঘামে ভিজে ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণ বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ঘাম হলে মুছে ফেলতে হবে। পোশাকও পাল্টানো উচিত। আক্রান্ত স্থানে পানি ও সাবান ব্যবহার কমিয়ে দিতে হবে। ছত্রাকনাশক ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
ব্রণ: গরমে প্রদাহসহ ব্রণের প্রবণতাও বাড়ে। ভালো করে বারবার মুখ ধুতে হবে যেন তেল-ময়লা জমে না থাকে। প্রসাধনীর ব্যবহার কমিয়ে ফেলুন। বাইরে থেকে এলে মুখমণ্ডলে ঠান্ডা পানির ঝাপটা বা বরফ ঘষে নিতে পারেন।
সানবার্ন: প্রখর রোদে ত্বক লাল হয়ে একটু ফুলে যেতে পারে ও ব্যথাও হতে পারে। ফরসা ত্বকে ও শিশুদেরই বেশি সানবার্ন হয়। তীব্র গরমে বাইরে থাকার দু-তিন ঘণ্টা পর থেকে শুরু হয়ে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে এ সমস্যা। পাশাপাশি জ্বর, ফোসকা বা বমির ভাবও হতে পারে। রোদে মুখ লাল হয়ে গেলে অতিসত্বর ঠান্ডা পানির ঝাপটা নিন। প্রচুর পানি পান করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অ্যালার্জি: বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রীর রাসায়নিক পদার্থ সূর্যালোকের উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া করে। এতে ত্বকের প্রদাহ বা একজিমা দেখা দেয়। এ সময় প্রসাধনী ও সানব্লক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি।
চর্ম বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল

 

কর্মজীবী নারীদের ইমোজি

সমাজের সবক্ষেত্র, সব ধরনের কাজ এখন নারীর বিচরণক্ষেত্র। স্বাস্থ্যসেবা, বিজ্ঞান কিংবা ব্যবসায়ের নানা ক্ষেত্রে নারীর এমনই কিছু প্রতিকৃতি ইমোজির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন গুগলের একদল প্রকৌশলী। নারীদের শক্তি এবং পৃথিবীতে তাঁদের অবদান সম্পর্কে জানানোই এর উদ্দেশ্য। কিন্তু এত কিছু থাকতে ইমোজি কেন বেছে নিলেন তাঁরা? ১৬ থেকে ২৪ বছরের নারীদের ৮২ শতাংশ ইন্টারনেট যোগাযোগে ইমোজি ব্যবহার করে থাকেন। বিশেষ করে এই তরুণীদের জন্যই এই ইমোজিগুলো।
গুগল প্রকৌশলীদের তৈরি ১৩টি ইমোজি সম্প্রতি ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে উপস্থাপন করা হয়। এই কনসোর্টিয়াম ঠিক করে কোন কোন ইমোজি ওয়েবসাইটে লেখার সঙ্গে ব্যবহার করা যাবে।
স্মার্টফোন এবং ওয়েবসাইটে ইদানীং ইমোজির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। একটি ছবিতে একসঙ্গে অনেক কথা বলা হয়ে যায়। জাপানি ই (ছবি) এবং মোজি (অক্ষর) শব্দ দুটির সমন্বয়ে তৈরি ‘ইমোজি’ ২০১৩ সালে দ্য অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারিতে যুক্ত করা হয়েছে। ১১ মার্চ মার্কিন সংবাদপত্র দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর সম্পাদকীয় পাতায় ওহিও ওয়েজলিয়ান ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অ্যামি বুচারের ‘ইমোজি ফেমিনিজম’ শিরোনামে লেখা বিশেষজ্ঞ মতামত এই গুগল কর্মীদের অনুপ্রেরণার উৎস বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
গুগলের নকশায় প্রযুক্তি, নির্মাণশিল্প, কৃষি এবং খাদ্য তৈরিতে নারী প্রতিকৃতি তুলে ধরা হয়েছে। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি প্রয়াত ইংরেজ গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা ও প্রযোজক ডেভিড বাওয়ির স্মরণে নারী সংগীতজ্ঞ ইমোজি বানানো হয়েছে।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের অনুমোদনক্রমে নতুন ইমোজি প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে। গুগল প্রকৌশলীদের তৈরি এই ইমোজিগুলো তাতে স্থান পাবে কি না, তা এখনই জানার উপায় নেই।
সূত্র: বিবিসি

 

বসবাস এবং চাকরীর জন্য সবচেয়ে উপযোগী ৫টি দেশ

একটা সময় ছিল একজন মানুষ যে দেশে জন্মেছে জীবন কাটিয়ে দিত সেখানেই। এখন আর দিন তেমন নেই। আমরা যেমন আছি তার চেয়ে ভাল থাকতে চাই। চাকরীর নিরাপত্তা চাই, বাড়াতে চাই সামাজিক মর্যাদা, সন্তানকে দিতে চাই নিশ্চিত ভবিষ্যত। আসুন জেনে নিই এমন কয়েকটি দেশের কথা যারা এই নিশ্চয়তাগুলো দিচ্ছে তাদের নাগরিককে।
যুক্তরাষ্ট্র
প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ পাড়ি জমায় যুক্তরাষ্ট্রে, নতুন করে আবাস গড়ে এখানে। এখানে খাপ খাওয়ানো সহজ, মানুষও বন্ধুত্বপূর্ণ। চাকরীর রয়েছে অবারিত সুযোগ, তেমনি বিনোদনের ব্যবস্থারও কোন অভাব নেই। এখানে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের বাস, তাই সখ্যতাটাও গড়ে ওঠে সেভাবেই।
সুইজারল্যান্ড
পর্বতময় অপরূপ দেশ সুইজারল্যান্ড জীবন যাত্রার উচ্চমান নিশ্চিত করেছে তার নাগরিকদের। দেশটির ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রি এবং অর্থনৈতিক বাজারে বিনিয়োগ করতে চায় অনেক দেশ। বিশেষ করে জুরিখে মানুষের জীবন যাত্রা খুবই উচ্চমানের। তাই এই ষরে বা এর আশেপাশে বেশীরভাগ মানুষ স্থান নিতে চান। দেশটির যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভাল। চিকিৎসাসেবাও উন্নত। আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের কথা তো বলাই বাহুল্য। গ্রীষ্ম হোক বা শীত অবসরে মন খুলে বেড়াতে পারবেন, থাকতে পারবেন প্রকৃতির কাছে।
ম্যাক্সিকো
সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে হলে ম্যাক্সিকো একটি ভাল পছন্দ বটে। দেশটি সুখময় ব্যক্তিজীবন এবং অবসরের জন্য ইতিমধ্যেই খ্যাত। কাজের নানান সুযোগ আছে এখানে। তবে ম্যাক্সিকোতে প্রবাস গ্রহণ করেন যারা তাদের ক্ষেত্রে চাকরী বা অন্যান্য প্রয়োজনের তুলনায় যে কারণটি বিশেষভাবে দেখা যায় তা হল, প্রেম। সঙ্গীর সাথে জীবন সাজাতেই এদেশে আগমণ ঘটে বেশীরভাগ বিদেশীর। তবে ব্যাক্তির নিরাপত্তা প্রদাণের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে দেশটি।
লুক্সেমবার্গ
ছোট ইয়োরোপিয়ান দেশটি চাকরীর চমৎকার সব সুযোগ দিয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা দেশটিকে বসবাসের এবং আর্থিক নিশ্চয়তা লাভের জন্য খুবই উপযোগী মনে করেন। স্বাস্থ্যসেবা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ ভাল এখানে। ট্যুরিজম এখানকার অর্থনীতিকে করেছে আরও গতিশীল। স্থানীয় মানুষেরা অবশ্য অত বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। একটু কষ্ট হবে মানিয়ে নিতে আর কি!
ইকুয়েডর
বিশেষজ্ঞরা ইকুয়েডরের আর্থিক অবস্থা নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। তাদের মতে দেশটি খুবই বন্ধুসুলভ, সহজে মিশে যাওয়ার উপযোগী। এখানে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার এই অনুভূতি হবে যে, এটা যেন আপনার নিজেরই দেশ। তবে সমস্যা একটাই, সেটা হল ভাষা। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, স্প্যানিশ না জানা থাকলে ইকুয়েডরে বসবাস খুবই কষ্টদায়ক। তবে আশার কথা হল, প্রতি ৩ জনের মধ্যে ১ জন বিশেষজ্ঞ এই মত দিয়েছেন যে, স্প্যানিশ খুবই সহজ একটি ভাষা। দ্রুতই শিখে ফেলতে পারবেন আপনি। বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবেও সুনাম আছে ইকুয়েডরের।

 

সিঙ্গাপুর
দেশটির আর্থিক অবস্থা উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে। জীবন নির্বাহের জন্য চাকরীর ভাল সুযোগ যেমন রয়েছে তেমনি নাগরিকদের মৈলিক চাহিদার খেয়ালও রাখে দেশটি। যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ ভাল আবার একই সাথে সিঙ্গাপুরের নাগরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশংসার দাবি রাখে। জীবন যাত্রা ব্যয় বহুল হলেও অনেকেই এখন পাড়ি দিচ্ছেন এই দেশে। কারণ কাজের নিরাপত্তা থাকলে অন্যান্য সংকট মোকাবেলা করা যায় সহজেই।

জার্মানি
ভাষা শেখা খুবই জরুরী এই দেশে আবাস গড়তে চাইলে। এখানকার মানুষ খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। চাকরীর নিরাপত্তা, নাগরিক জীবনের স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার সব দিক থেকেই নতুন আবাসন হিসেবে ইউরোপের এই দেশটির কথা ভাবতে পারেন আপনি। শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা ব্যবস্থাও ভাল। তাই নিজের জীবনের পাশাপাশি সুরক্ষিত হবে আপনার ভবিষ্যত প্রজন্মও।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

গুচির নতুন স্নিকারস

গত কয়েক সিজন থেকেই আলোচনায় আছে ফ্যাশন ব্র্যান্ড গুচি। আগামী বৃহস্পতিবার তারা বাজারে নিয়ে আসতে যাচ্ছে নতুন ২০ টি আইটেম।

এর আগে দেখে নেওয়া যাক তাদের পূর্বের কিছু সংগ্রহ। এর মধ্যে ফ্লোরাল প্রিন্টের এস ট্রেইনারস বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এই স্নিকারসটি অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে যে,এই আইটেমটি সবগুলো আইটেম সবার আগে বিক্রি হয়ে যাবে।

আপনিও চাইলে অনলাইন শপে এটি অর্ডার করতে পারেন যার নির্ধারিত মূল্য ৫২৫ মার্কিন ডলার।

 

স্বাদে অসাধারণ রেভানি হালুয়া

আমাদের কাছে সুস্বাদু রেভানি হালুয়ার পরিচিতি খুবই কম। এই অসাধারণ মিষ্টান্ন ধরণের খাবারটি মূলত তুর্কির ঐতিহ্য বহন করে। প্রতিবছর শবে বরাত এলেই নানা রকম হালুয়ার আয়োজন করা হয়। এবার আপনার আয়োজনে যোগ করতে পারেন দারুণ স্বাদের রেভানি হালুয়া। নিজেদের খাওয়ার সঙ্গে অতিথি আপ্যায়নে তৃপ্তি যোগাতেও সক্ষম। দেখে নেয়া যাক রেভানি হালুয়ার সহজ রেসিপি।

মিশ্রণের জন্য লাগবে

১ কাপ দই, ১ কাপ চিনি, ১ টি কমলার খোসা কোরানো, ১ কাপ ময়দা, ১ কাপ সুজি, আধা কাপ কোরানো নারকেল, আধা কাপ তেল, ৩ টি ডিম, ২ চা চামচ বেকিং পাউডার, ২ চা চামচ ভ্যানিলা এসেন্স।

সিরাপের জন্য লাগবে

সাড়ে ৩ কাপ চিনি, সাড়ে ৩ কাপ পানি, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস।

যেভাবে করবেন

প্রথমেই পানিতে চিনি মিশিয়ে জ্বাল করে সিরাপ তৈরি করে নিন। এতে লেবুর রস দিয়ে হালকা ঘন চিনির সিরাপ তৈরি করে আলাদা করে রাখতে হবে। এরপর একটি বড় পাত্রে ডিম ভেঙে চিনি দিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। তারপর তাতে দই আর তেল দিয়ে ভালো করে মেশান। এবার কোরানো নারকেল, সুজি, ময়দা ও বেকিং পাউডার দিয়ে ভালো করে মেশাতে থাকুন। তারপর ভ্যানিলা এসেন্স ও কোরানো কমলালেবুর খোসা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। সবশেষে একটি বড় কেক মোল্ড বা বড় ওভেনপ্রুফ ট্রে বা ছড়ানো বাটিতে সামান্য ঘি লাগিয়ে মিশ্রণটি ঢেলে দিন।

ওভেন ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে প্রি হিট করে নিয়ে ট্রেটি ওভেনে দিন এবং ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ১৮০ ডিগ্রীতে হিট কমিয়ে এনে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। কেকের মতোই টুথপিক দিয়ে দেখে নিন ভেতরে হয়েছে কিনা। এরপর মাঝে যোগ চিহ্নের মতো করে কেটে ঠাণ্ডা হয়ে আসা সিরাপ দিয়ে দিন যাতে ভেতরে সিরাপ ঢুকতে পারে। খানিকক্ষণ এভাবে রেখে সিরাপ শুষে নিতে দিন। তারপর পছন্দের আকারে কেটে উপরে বাদাম কুচি বা কিশমিশ ছিটিয়ে পরিবেশন করুন। চাইলে ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে খেতে পারেন স্বাদে অসাধারণ রেভানি হালুয়া।

 

সারাদেশে গড় পাসের হার ৮৮.২৯%

২০১৬ সালের মাধ্যমিক (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবার সারাদেশে সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি ১০ শিক্ষাবোর্ডে গড় পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ শিক্ষার্থী, গতবছরের তুলনায় পাসের হার বেড়েছে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ।

বুধবার (১১ মে) সকাল ১০টার দিকে শিক্ষামন্ত্রী সকল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারাংশ তুলে দেন।

এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৫১ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৮ লাখ ৪২ হাজার ৯৩৩ জন ছাত্র। ৮ লাখ ৮ হাজার ৫৯০ জন ছাত্রী।

সারাদেশের ১০টি শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হারে এগিয়ে আছে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড। তাদের পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭০। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম পাস করেছে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে ৭৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। তবে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের তথ্য এখনো জানা যায়নি।

অন্যান্য শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে পাসের হার কুমিল্লায় ৮৪ শতাংশ, দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড ৮৯ দশমিক ৫৯, চট্টগ্রামে ৯০ দশমিক ৪৪ শতাংশ, সিলেটে ৮৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ, যশোরে ৯১ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং বরিশাল শিক্ষাবোর্ড ৭৯ দশমিক ৪১। এছাড়াও মাদরাসা বোর্ডে পাসের হার ৮৮ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ১১।

সাধারণ আট শিক্ষাবোর্ডে পাস করেছে মোট ১১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫৩ জন, মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৩ জন। মাদরাসা বোর্ডে পাস করেছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬১৪ পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৬। কারিগরি বোর্ডে পাস করেছে ৪১ হাজার ৯২৮। পরীক্ষার্থী ছিল ৫৮ হাজার ৫০১ জন। পারেশর হার ৮৩.১১ শতাংশ।

গত বছরের তুলনায় এবারের পরীক্ষায় বিজ্ঞানে ৫৬ হাজার ২৮৬  জন এবং মোট পৌনে ২ লাখ পরীক্ষার্থী বেশি অংশ নেয়। বিদেশে আটটি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এ সব কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিল ৪০৪ জন।পরীক্ষা শুরু হয় ২ ফেব্রুয়ারি। তত্ত্বীয় বিষয় শেষ হয় ১০ মার্চ। ১৫-১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা।

 

ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা

২০১৬ সালের মাধ্যমিক (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে ছেলে শিক্ষার্থীর তুলনায় মেয়ে শিক্ষার্থীর পাসের হার বেশি। মেয়ে শিক্ষার্থীর সার্বিক পাসের হার ৮৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আর ছেলে শিক্ষার্থীর সার্বিক পাসের হার ৮৮ দশমিক ২০ শতাংশ। অর্থাৎ ছেলে শিক্ষার্থীর চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীর পাসের হার শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি।

এবার সারাদেশে সার্বিক (এসএসসি, দাখিল, কারিগরিসহ) গড় পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ, মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন। গতবছরের তুলনায় পাসের হার বেড়েছে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ।

বুধবার (১১ মে) সকাল ১০টার দিকে তিনি ফল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফলাফলের সারাংশ তুলে দেন।

সারাদেশে এসএসসিতে পাসের হার ৮৮ দশমিক ৭০ শতাংশ, মাদরাসা ৮৮ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ১১ শতাংশ।

ছেলে শিক্ষার্থীদের তুলনায় মেয়ে শিক্ষার্থীর সার্বিক পাসের হার বেশি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এবার মেয়েদের পাসের হার বেশি। পরের বার যেন ছেলেদের পাসের হারও বাড়ে। অন্তত সমান-সমান যেন হয়।

তিনি আরও বলেন, ছেলেরা আরেকটু বেশি মনোযোগ দিয়ে পড়লে তারা মেয়েদের সমান ফলাফল করতে পারবে।

ডিজিটাল এই বাংলাদেশে আগের মতো আর পরীক্ষার ফলাফল পেতে শিক্ষার্থীদের ছোটাছুটি করতে হয় না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, এখন ঘরে বসেই ফলাফল জানা যায়, কোথাও গিয়ে অপেক্ষা করে, পয়সা খরচ করে ফলাফল দেখতে হয় না।

এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৫১ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৮ লাখ ৪২ হাজার ৯৩৩ জন ছাত্র। ৮ লাখ ৮ হাজার ৫৯০ জন ছাত্রী।

গত বছরের তুলনায় এবারের পরীক্ষায় বিজ্ঞানে ৫৬ হাজার ২৮৬  জন এবং মোট পৌনে দুই লাখ পরীক্ষার্থী বেশি অংশ নেয়। বিদেশে আটটি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এ সব কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিল ৪০৪ জন। পরীক্ষা শুরু হয় ২ ফেব্রুয়ারি। তত্ত্বীয় বিষয় শেষ হয় ১০ মার্চ। ১৫-১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা।

 

নারীরা জানাজার পিছনে পিছনে যেতে পারবে কি?

সব প্রণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে । মৃত্যুর পরে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে নিজ নিজ আমল নিয়ে । সুতরাং প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে শরীয়তের আমলকেই প্রাধান্য দিতে হবে ।

সব প্রণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে । মৃত্যুর পরে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে নিজ নিজ আমল নিয়ে । সুতরাং প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে শরীয়তের আমলকেই প্রাধান্য দিতে হবে ।

মৃত ব্যক্তির জানাযা নামাজ পড়া হয়ে গেলে তার লাশ নিয়ে যখন গোরস্থানের যাওয়া হয়, তখন নারীরা সে সঙ্গে যেতে পারবে কি না, এ সম্পর্কে উম্মে আতিয়্যাহ [রা] থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন- আমাদেরকে জানাযার অনুসরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে তবে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয় নি।

হাদীসের বাহ্যিক ভাষা নারীদের জন্য জানাযার পিছনে চলা হারাম বোঝায়। তবে উম্মে আতিয়্যাহ [রা.]-এর কথা “আমাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয় নি”- এ সম্পর্কে শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ [রহ.] বলেন- “মনে হয় সাহাবয়িার উদ্দেশ্য হলো, নিষেধ করার বিষয়টিতে জোর দেয়া হয় নি”। এ কথা জানাযার অনুসরণ করা হারাম হওয়ার পরিপন্থী নয়। হয়তো তিনি ধারণা করেছেন, এ নিষেধাজ্ঞা হারাম নয়। এটা তার নিজস্ব বোধ, তার নিজস্ব বোধ শরীয়তের দলীল নয়, নবী [সা]-এর কথাই দলীল”।

সুতরাং মৃত ব্যক্তির জানাযার পিছনে পিছনে নারীদের চলা ইসলামি শরীয়তে নিষিদ্ধ ।

মূল : ড. সালেহ ইবনে ফাওজান
ভাষান্তর : মাওলানা মনযূরুল হক

 

দীর্ঘসময় বসে থাকা যেভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে আপনাকে!

সারা দিন-রাত মিলে ২৪ ঘন্টায় ঠিক কয় ঘন্টা জেগে থাকেন আপনি? কী করেন এই সময়ে? ঘরের কাজ, অফিসের কাজ, বাইরের টুকিটাকি কাজ- নিশ্চয় সবমিলিয়ে এতগুলো কাজের ফিরিস্তি দেবেন এখন? কিন্তু সেটার আগে একবার হিসেব করে দেখুন তো প্রতিদিন মোট কতক্ষণ চেয়ারে বসে থাকা হয় আপনার? যদি পরিমাণটা বেশি হয় তাহলে আপনার জন্যেই রয়েছে একটি মারাত্মক দুঃসংবাদ। আর সেটি হচ্ছে এই যে, চেয়ারে বসে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটানোটা আমাদেরকে কেবল আরামই দেয়না, সাহায্য করে নানারকম শারিরীক ঝামেলা থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত এগিয়ে যেতেও। কী করে?

দি এক্সপার্টসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, দীর্ঘসময় ধরে বসে থাকলে মানুষের শরীরে বেশকিছু ঝামেলা দেখা যেতে পারে। উদাহরনস্বরুপ-

১. হৃদপিন্ডের অসুখ

দীর্ঘসময় বসে থাকলে মাংসপেশীর নড়াচড়া কম হয় এবং ফ্যাট পোড়েনা। এছাড়াও রক্ত সঞ্চালনেও বেশ ঝামেলা তৈরি করে এটি। ফলে উচ্চ রক্তচাপ আর কোলেস্টরল বৃদ্ধির মতন ব্যাপার ঘটতে পারে এক্ষেত্রে যেটি কিনা কোনভাবেই হৃদপিন্ডের জন্যে ভালো কিছু নয়। দীর্ঘসময় বসে থাকেন এমন মানুষের অন্যদের চাইতে বেশি কার্ডিয়োভাসকুলার সংক্রান্ত রোগ-ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে জানা যায়।

২. ডায়াবেটিস

আমাদের শরীরের অগ্ন্যাশয় শরীরের যতটা সম্ভব প্রয়োজনীয় ইনসুলিন উত্পন্ন করার চেষ্টা করে। তবে অতিরিক্ত সময় ধরে বসে থাকলে এই অগ্ন্যাশয়ই স্বাভাবিকের চাইতে অতিরিক্ত মাত্রার ইনসুলিন তৈরি করে। ফলে সেটা আমাদেরকে নিয়ে যায় ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে আরো নানারকম জটিল রোগের দিকে।

৩. ক্যান্সার

গবেষকদের মতে, অত্যাধিক সময় বসে থাকলে সেটা আমাদের শরীরে ক্যান্সার কোষ জন্ম নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। আর এক্ষেত্রে সবচাইতে বেশি এগিয়ে থাকে উদর, বক্ষ আর কোলন ক্যান্সার। অতিরিক্ত ইনসুলিন উত্পন্ন হলে কোষের আকৃতি বেড়ে যায়। ফলে সেখান থেকেও কিছু ঝামেলা সৃষ্টি হয়। যা কিনা ক্যান্সারকে ত্বরান্বিত করে।

৪. মাংসপেশির সমস্যা

অতিরিক্ত সময় বসে থাকলে খুব স্বাভাবিকভাবেই আপনার শরীরের মাংসপেশী কোন কাজ করবেনা আর ঘন্টার পর ঘন্টা কোনরকম নড়াচড়া ছাড়াই পড়ে থাকবে। এক্ষেত্রে বেম কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রথমত, এভাবে এক স্থানে অনেকক্ষণ নড়াচড়া ছাড়া বসে থাকার ফলে আপনার পশ্চাত্ অংশে কিছু ত্বক ও চামড়া সংক্রান্ত সমস্যা ও মাংসপেশীর সংকুচিত হয়ে যাওয়ার মতন ঝামেলা ঘটতে পারে। তাছাড়া স্বাভাবিক নড়াচড়া না করার ফলে একটা সময় মাংসপেশী বেশ দূর্বল ও স্বাভাবিক চলত্ শক্তিহীনও হয়ে যেতে পারে।

৫. পায়ের সমস্যা

বেশি সময় কোন গতি ছাড়া পা এক স্থানে রেখে দিলে সারা শরীরের সাথে পায়ের রক্ত সঞ্চালনের বেশ ঝামেলা সৃষ্টি হয়। ফলে একটা সময় প্যারালাইসিস, ঝিঁঝিঁ ধরা সহ নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া এটা সত্যি যে, পায়ের গাড়কে শক্ত ও মজবুত করার জন্যে দরকার পড়ে সেটার অনুশীলনের। কিন্তু বেশিরভাগ সময় স্থিরভাবে কোন কাজ ছাড়া থাকলে পায়ের হাড় নাজুক হয়ে পড়ে।

৬. অন্যান্য…

এসব নানাবিধ সমস্যা ছাড়াও মস্তিষ্কে ক্ষতিকর প্রভাব রাখতে পারে স্থিরভাবে আপনার এই দিনের বেশিরভাগ সময বসে থাকা। ঘাড়ে ব্যাথা, কাঁধে সমস্যা, মেরুদন্ডের হাড়ে সমস্যা- এ ধরনের ব্যাপারগুলো তো অনেক বেশিই স্বাভাবিক হয়ে ওঠে এই ক্ষেত্রে।

ভাবছেন, তা হলে কি বসাই যাবেনা এখন থেকে আর? না! তা কেন? তবে বসার মাঝে একটু একটু করে নিজেকে সমসয় দিন। একটু উঠে হাঁটাহাঁটি করুন, ব্যায়াম করুন। আর বসতে গেলেও নিজের মেরুদন্ডকে সোজা রেখে, হাতকে কনুই বরাবর সোজা রেখে বসুন। যাতে করে পরবর্তীতে ঝামেলা না হয়।

লিখেছেন-

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

ফিচার রাইটার

 

চিংড়ি মাছের সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের রান্না গার্লিক শ্রিম্প

চিংড়ি মাছটি পছন্দ করেন এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। প্রায় সবাই চিংড়ি এবং চিংড়ির তৈরির খাবার খেতে পছন্দ করেন। চিংড়ির মালাইকারি, চিংড়ি দোপেঁয়াজি, চিংড়ি ভুনা খেতে খেতে একোঘেয়েমী চলে এসেছে? নতুন কোন চিংড়ির রেসিপি খুঁজছেন? তাহলে আজকের রেসিপিটি আপনার জন্য। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ভিন্ন স্বাদের রেসিপি গার্লিক শ্রিম্প।

উপকরণ:

  • ১/২ কেজি চিংড়ি মাছ
  • ১/২ কাপ অলিভ অয়েল
    ১/২ কাপ রসুন কুচি
  • ১ চা চামচ লাল শুকনো মরিচ গুঁড়ো
  • ২ চা চামচ পাপরিকা
  • লবণ স্বাদমত
  • ৩-৫ টেবিল চামচ লেবুর রস
  • ১/২ কাপ পার্সলি/ধনেপাতা কুচি

প্রণালী:

১। চিংড়ি মাছে খোসা ছড়িয়ে পরিষ্কার করে মাথা ফেলে দিন।

২। মাঝারি আঁচে প্যানে অলিভ অয়েল গরম করতে দিন।

৩। তেল গরম হয়ে আসলে এতে লাল শুকনো মরিচ গুঁড়ো, রসুন কুচি দিয়ে এক মিনিট ভাজুন।

৪। তারপর এতে চিংড়ি মাছগুলো দিয়ে মাঝারি আঁচে ভাজুন।

৫। এটি ৩ মিনিট রান্না করুন। খুব বেশি সময় ধরে রান্না করা থেকে বিরত থাকুন। বেশি সময় রান্না করলে চিংড়ি শক্ত রাবারের মত হয়ে যাবে।

৬। এর সাথে পাপরিকা, লবণ এবং গোলমরিচ গুঁড়ো দিয়ে দিন।

৭। মাছ সিদ্ধ হয়ে আসলে এতে লেবুর রস , পার্সলি পাতা কুচি দিয় দিন।

৮। সবগুলো উপাদান ভাল করে নেড়ে নামিয়ে ফেলুন।

৯। ভাত অথবা পোলাও এর সাথে পরিবেশন করুন মজাদার গার্লিক শ্রিম্প।

টিপস:

১। রসুনের পরিমাণটি আপনি নিজের স্বাদমতো আরও বাড়িয়ে দিতে পারেন।

 

বর–কনে প্রস্তুত তো?

বিয়ের অনুষ্ঠান তিন-চার দিনে শেষ হয়ে গেলেও এর প্রস্তুতি কিন্তু চলতে থাকে অনেক দিন থেকেই। বিয়ের মূল কেন্দ্রে থাকেন বর-কনে, তাই তাঁদের প্রস্তুতি নেওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। বিয়ের দিনটিতে সবাই চায় তাঁকে সুন্দর দেখাক। নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য তাই রূপচর্চার প্রস্তুতিও শুরু করে দেওয়া উচিত অনেক দিন আগে থেকেই।
রূপবিশেষজ্ঞদের মতে, এ সময় খুঁটিনাটি সব বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে বিয়ের কাজগুলো দায়িত্বশীল কয়েকজনের হাতে ভাগ করে দেওয়া যেতে পারে। মাথায় দুশ্চিন্তা থাকলে তার প্রভাব পড়বে চেহারাতেও। এ জন্য নিজের রূপচর্চা ও শারীরিক পরিচর্যার কাজটি বিয়ের কয়েক দিন আগে থেকেই শুরু করে দেওয়া প্রয়োজন।
বর ও কনে কীভাবে নিজেদের প্রস্তুত করবেন সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা ও কাজী কামরুল ইসলাম।
কাজী কামরুল ইসলাম মনে করেন, নিজেদের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য বিয়ের আগেই বর-কনেকে একজন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে রূপচর্চাবিষয়ক পরামর্শ নিতে হবে। ব্যস্ততার কারণে হয়তো দুই-এক মাস আগে থেকে সময় বের করে নিয়মিত রূপচর্চা করা সম্ভব নয়।
গায়েহলুদের অনুষ্ঠান দিয়েই সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি গায়েহলুদের এক বা দুই দিন আগে থেকেই শুরু করতে হবে। রাহিমা সুলতানাও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন।

চুল
বিয়ের একদম আগে বর বা কনের চুলের কাট বা রং নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত নয়। কারণ চেহারার সঙ্গে তা মানিয়ে যাওয়ার একটি বিষয় আছে। তাই অন্তত সাত দিন আগে এই কাজগুলো সেরে ফেলা উচিত।

ওয়্যাক্স ও থ্রেডিং
হলুদের অনুষ্ঠানের আগে এগুলো শেষ করে ফেলতে হবে। তবে অনেকেরই দ্রুত লোম গজানোর প্রবণতা থাকে। তাই দরকার হলে অনুষ্ঠানের আগের দিন ওয়্যাক্স ও থ্রেডিংয়ের কাজ করা উচিত।
ছেলেদের কানের কাছের লোমও ওয়্যাক্স করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন কাজী কামরুল ইসলাম।

ফেশিয়াল
বিয়ের কয়েক দিনে মেয়েদের ত্বকের ওপরে মেকআপের বড় রকমের একটা ধকল যায়। তাই বিয়ের অনুষ্ঠানের আগে নয় বরং পরেই ত্বকের ধরন ও প্রয়োজন বুঝে ফেিশয়াল করিয়ে নিতে হবে। গায়েহলুদের আগে ত্বক ভালোমতো পরিষ্কার করার জন্য ব্ল্যাক হেডস, হোয়াইট হেডস ওঠানোর জন্য একটি ফেস ক্লিনিং করানো যেতে পারে। অবশ্য ছেলেরা ফেশিয়ালের কাজটি হলুদের আগেই সেরে নিতে পারেন।

হেয়ার ট্রিটমেন্ট
এ ক্ষেত্রেও মেয়েরা অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার পর হেয়ার ট্রিটমেন্ট করিয়ে নিতে পারেন। ক্লান্তি দূর করার জন্য দুই দিন আগে একটি হট অয়েল ম্যাসাজ নেওয়া যেতে পারে। ছেলেরা হেয়ার ট্রিটমেন্ট বিয়ের আগে করিয়ে ফেললে সমস্যা নেই।

স্পা
বিয়ের আগের ক্লান্তি কাটাতে ফুল বডি স্পা করাতে পারেন। বর-কনে দুজনের জন্যই এটি প্রয়োজনীয়।

হাত ও পায়ের যত্ন
মেহেদি পরতে হবে বিয়ের ঠিক আগের রাতে। এর আগেই পেডিকিওর ম্যানিকিওর ও ওয়্যাক্সিং করে ফেলা ভালো।

পরিচ্ছন্নতা ও মেকআপ তোলা
কাজী কামরুল ইসলাম শরীর দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে এক মাস আগে থেকে রোজ এক বালতি পানিতে এক চামচ ফিটকিরি মিশিয়ে গোসল করার পরামর্শ দেন। দাঁতে স্কেলিংয়ের প্রয়োজন হলে তা বিয়ের ১৫ বা ৩০ দিন আগেই করিয়ে ফেলা উচিত।

অনুষ্ঠানের দিন
ঘুম থেকে উঠে ভালো করে গোসল করতে হবে অনুষ্ঠানের দিনটিতে। চুল শ্যাম্পু করে এরপর কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তারপর ভালোমতো শুকিয়ে নিন। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ত্বক শুষ্ক হলে কাঁচা হলুদ বা কোনো উপটান এদিন ব্যবহার করা উচিত হবে না, এতে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যাবে।
চুলে জেল লাগালে তা পরদিন ভালোমতো ধুয়ে ফেলতে হবে। আর যতই ক্লান্তি থাকুক, কনেরা যেন ঠিকমতো মেকআপ তুলতে ভুলে না যান। জলপাই তেল ও ক্লেনজার দিয়ে সম্পূর্ণ মেকআপ ভালোমতো তুলে ফেলতে হবে।
দিন শেষে চুলের ক্লিপ ও কাটা আস্তে আস্তে খুলে ফেলতে হবে, সেদিন চুলে আর কিছু করার দরকার নেই। পরদিন সকালে অনেক বেশি পরিমাণ তেল পুরো চুলে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর ভালোমতো শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগানোর পর মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আস্তে আস্তে করে চুলের জট ছাড়াতে হবে। তাড়াহুড়া করে জট ছাড়ানোর চেষ্টা করলে চুল ছিঁড়ে যাবে।

খাওয়া ও ঘুম
বিয়ের আগে উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনায় পাত্রপাত্রীর ঘুম গায়েব হবে, তবে এটি মোটেও কোনো কাজের কথা নয়। বিয়ের আগে নির্ভার থাকতে হবে। দুশ্চিন্তা করে ঘুম আর আহারে অনিয়ম করা যাবে না। বিয়ের দিন বেশির ভাগ মানুষই ঠিকমতো খেতে পারেন না, অনুষ্ঠানের সময় তখন দুর্বল বোধ করতে থাকেন। রাহিমা সুলতানা বিয়ের দিন কনে ও বরকে প্রচুর পরিমাণ তরল খাবার পানের পরামর্শ দেন। সঙ্গে অবশ্যই কিছু খেতে হবে। ভাত জাতীয় কিছু খেতে না পারলে মিষ্টি, চকলেট, টাটকা ফলের রস, ডাবের পানি একটু পরপর পান করতে হবে। বিয়ের আগে ভাজাপোড়া ও ভারী খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

 

ছাত্রী–কর্মজীবী নারী থাকবেন কোথায়?

নিশাত পারভেজ একটি বেসরকারি টেলিভিশনে কাজ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনার পাট চুকিয়েছেন সম্প্রতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপদ আবাসন হলও ছাড়তে হয়েছে। হল ছাড়ার পর থেকেই শুরু হলো বিড়ম্বনা।
একটি জুতসই আবাসনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঢুঁ দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টাওয়ার, পলাশীতে সাবলেটে (কোনো পরিবারের সঙ্গে বাসা ভাগাভাগি করে থাকা) থাকার সুযোগ ছিল। কিন্তু সেখানে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। অন্যদিকে ছোট রুম নিলেও তা তিনজনে নিতে হবে, শুধু এক রুমের জন্য ভাড়া ১০ হাজার টাকা। খাওয়ার পানিও বাইরে থেকে কিনে খেতে হবে। তাই সেখানে থাকার চিন্তা বাদ।
নিশাত বর্তমানে ঢাকা কলেজের বিপরীতে এক গলিতে কয়েকজন মিলে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন। একটি ছোট পরিবারের থাকার উপযোগী বাসাটি। এখানে চৌকি বসানোর জায়গাসহ আর খানিকটা জায়গা বরাদ্দ একেকজনের জন্য। ভাড়া চার হাজার টাকা। খাওয়ার খরচ নিজের। এই বাসায় অন্য একজন ভাড়া ছিলেন। ওই নারীর বিয়ে হয়ে গেলে তিনি এখন আবার ভাড়া দিয়েছেন। অর্থাৎ মালিক পরিবর্তিত হয়েছে। এখানে হোস্টেল বা সাবলেটের চেয়ে খরচ একটু বেশি হলেও নিরাপত্তা নিয়ে খুব একটা ভাবতে হয় না।
রাজধানীর ফার্মগেটে একটি নামকরা হোস্টেলের এক বাসিন্দা বললেন, ‘মন চাইলেই মালিক সিটের ভাড়া বাড়ান। ওয়াসার অজুহাত দেখিয়ে প্রায়ই পানি বন্ধ করে দেন। বাজে ব্যবহার তো আছেই। ঘর এতটাই ছোট যেন মনে হয় কবুতরের খাঁচায় বসবাস করছি। নিম্নমানের খাবার দেন, তাই নিজেই রান্না করি। কিন্তু খাবারের পুরো টাকাই দিতে হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়েও খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারি না। তবে হোস্টেলের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে কথা বলতে গেলেই মালিক সিট বাতিলের হুমকি দেন।’ প্রতিবাদ করার কারণে আগামী এক মাসের মধ্যে সিট ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে ওই বাসিন্দাকে।
উচ্চশিক্ষা এবং চাকরির জন্য রাজধানীতে আসা বিভিন্ন বয়সী নারীদের আবাসনের জন্য এ ধরনের ঝক্কি সামলাতে হচ্ছে। আর ব্যক্তিমালিকানাধীন বিভিন্ন হোস্টেল পরিচালিত হচ্ছে কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধেকেরও বেশি ছাত্রীর আবাসিক সুবিধা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা ১৮ হাজারের বেশি। পাঁচটি আবাসিক হল ও দুটি হোস্টেলে আবাসিক ছাত্রীর সংখ্যা ৬ হাজার ৩৪৪।

রাজধানীর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ছাত্রীদের আবাসনসংকট চরম আকার ধারণ করেছে। এই শিক্ষার্থীরা বাধ্য হচ্ছেন অলিগলিতে গজিয়ে ওঠা হোস্টেলগুলোতে থাকতে। গণমাধ্যম বা যেসব কর্মক্ষেত্র থেকে কাজ সেরে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়, সেসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারীদের হোস্টেলে সিট পাওয়াই কঠিন ব্যাপার।
হোস্টেলে থাকা নারীদের আবার খানিকটা ভিন্ন চোখেও দেখা হয়। ২০১৪ সালে মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডে সাতটি বাড়ি নিয়ে গড়ে তোলা ্একটি ছাত্রী হোস্টেলে বখাটেরা হামলা চালায়। প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবেদকের সামনেই হোস্টেলটির তত্ত্বাবধায়ক রাবেয়া সুলতানা এক ছাত্রীকে বলেন, ‘হামলা তো হবেই, তোমরা শার্ট-প্যান্ট পরো কেন?’ অর্থাৎ সব দোষ যেন মেয়েদেরই।
ভাড়াটেদের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করে—এমন ১৩টি সংগঠনের জোট বাংলাদেশ ভাড়াটিয়া ফেডারেশনের মহাসচিব মো. বাহরানে সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই বছর আগের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা শহরে একসঙ্গে কয়েকজন মিলে মেস করে থাকা ছেলে ও মেয়ের সংখ্যা ১৪ লাখ। এই হিসাবে তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার নারী ও পুরুষদেরও ধরা হয়েছে।’ ঢাকা শহরে মেয়েদের জন্য বেসরকারি হোস্টেলের সংখ্যা বা মোট কতজন হোস্টেলে থাকেন, সেই পরিসংখ্যান নেই এই ফেডারেশনের কাছে। বাহরানে সুলতান বলেন, ‘হোস্টেলে থাকা মেয়েদের নানা সমস্যার কথা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ না করলে আমাদের তেমন কিছু করার থাকে না।’
মেয়েদের হোস্টেল পরিচালনার জন্য আলাদা কোনো নীতিমালা নেই। ১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন এবং সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী হোস্টেলের নিবাসীদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়ার কথা। তবে তা মানা হচ্ছে না। ভাড়ার ব্যাপারে ফার্মগেটের নিবেদিকা হোস্টেলের একটি শাখার ব্যবস্থাপক সেকেন্দার আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও কোচিং মৌসুমে ছাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি হলো, তিন মাস পরে সিট খালিও থাকতে পারে। যোগ করলেন, ‘আমরা তো আর অন্যদের মতো ছয় মাসের চুক্তি করছি না। চুক্তি করলে তো ছয় মাসেরই ভাড়া দিতে হয়। সেই হিসাবে আমরা তো ভাড়া কমই নিচ্ছি।’
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সারা দেশে মোট সাতটি (ঢাকায় তিনটি) কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল পরিচালনা করছে। ঢাকার বাইরে পোশাকশিল্পের নারী শ্রমিকদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জাতীয় মহিলা সংস্থা রাজধানীতে কর্মজীবী নারীদের জন্য একটি হোস্টেল পরিচালনা করছে। এসব হোস্টেলে সিট না পাওয়া একাধিক নারী জানালেন, সরকারি হোস্টেলে সিট পেতে হলে সরকারের ওপর মহলের তদবির লাগে। এ ছাড়া মাসের পর মাস কেউ অপেক্ষা করতে পারলে, অর্থাৎ সবুরে মেওয়া ফললে ফলতেও পারে। কিন্তু অপেক্ষা করার তো সময় নেই।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, উচ্চশিক্ষা এবং কর্মে নারীদের এগিয়ে আনার জন্য সরকারের নীতি ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব নেই। কিন্তু তার বাস্তবায়ন সেভাবে হচ্ছে না। ব্যক্তিগত উদ্যোক্তা বা বেসরকারি খাত নারীদের আবাসনসংকট নিরসনের চেষ্টা করছে। তাদেরও একটি নিয়মনীতির আওতায় আনা প্রয়োজন।

 

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে তাপতুন

হঠাৎ করেই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের সহায়তা বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ড সাপোর্ট) থেকে একটি ই-মেইল আসে। ই-মেইলে তাপতুন নাসরীনের জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়। কথাও বলতে চায়। তাপতুনের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশ নেওয়ার কয়েকটি ছবি দিতে বলে। তারপর একদিন দেখা করার তারিখ নির্ধারিত হয়। নির্ধারিত তারিখে গিয়ে জানা গেল, সেদিনই রেকর্ডিং। শান্তিরক্ষী মিশনে অংশ নেওয়া তিনজনের কাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র তৈরি করা হবে। এই ভিডিও দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখানো হবে। যাতে করে অন্যরা এ ধরনের মিশনে কাজ করতে উৎসাহী হন। ঘটনাটি গত ফেব্রুয়ারি মাসের। ইউটিউবে এই বিজ্ঞাপনচিত্র সবাই দেখতে পাচ্ছেন।
তাপতুন নাসরীন অন্যদের উৎসাহিত করার জন্য ভিডিওতে অংশ নেওয়ার গল্প বলছিলেন। তবে সরাসরি গল্প শোনার অবকাশ নেই। কেননা বছর খানেক হলো তাপতুন নাসরীন নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পিসকিপিং অপারেশনস বিভাগে পলিসি অফিসার (পি ৪ লেভেল) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাই আলাপচারিতা চালাতে হলো টেলিফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।
তাপতুন জানালেন, দ্য রোল অব ল অ্যান্ড সিকিউরিটি ইনস্টিটিউশনে তাঁর বর্তমান পদে শান্তিরক্ষা বিষয়ে নানান নীতি, ম্যানুয়াল তৈরিসহ কাজের অন্ত নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্টারপোল, আমেরিকান পুলিশ কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ। দীর্ঘ দুই বছর নানান প্রক্রিয়া, অনলাইনে লিখিত পরীক্ষা, ইন্টারভিউ শেষেই মিলেছে এ কাজ। লিখিত পরীক্ষায় খুব কম সময়ে পিসকিপিং বিষয়ে একটি সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়, তবে তা হতে হবে জাতিসংঘ যেভাবে চায়। জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশের প্রতিযোগীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই তিনি এই পদে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালে ১৮তম বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু। ১৮ বছর ধরে দেশে ও বিদেশে নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ, অপারেশনস এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-বিষয়ক নানান কাজের অভিজ্ঞতা তাঁর। দেশে এবং আন্তর্জাতিক জার্নালে লেখালেখি ও প্রকাশিত গবেষণার সংখ্যাও অনেক। পুলিশে যোগ দেওয়ার পর থেকেই শুনতেন সবাই জাতিসংঘে কাজ করতে চান। সদর দপ্তরে কাজ করা ভাশুরের কাছ থেকেও নানান গল্প শুনে সেখানে কাজ করার স্বপ্নটা একটু একটু করে বড় হচ্ছিল।জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে
এক ছেলে ও এক মেয়ের মা। স্বামী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। বর্তমানে শিক্ষা ছুটিতে আছেন নিউইয়র্কে। অর্থাৎ পুরো পরিবার একসঙ্গে। শুধু এখানেই নয়, ২০০৫-২০০৬ সালেও স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে লাইবেরিয়া মিশনে যান। তখন দুই ছেলেমেয়েও সঙ্গে ছিল। সেখানে দায়িত্ব পান নির্বাচনের। লাইবেরিয়ার প্রথম নির্বাচন। চারপাশে সংক্ষুব্ধ মানুষ। সেবার আফ্রিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তবে শেষ বিচারে সেখানে দক্ষতা দেখাতে পেরেছিলেন, যার কারণেই ইউএন মেডেল পান তিনি। দেশে ফেরার পর আবার অস্ট্রেলিয়ায় বৃত্তি নিয়ে যান উচ্চতর শিক্ষার জন্য।
২০০০ সালে সাভারে যখন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করতেন, তখন ‘মহিলা’ পুলিশ দেখার জন্য রাস্তায় ভিড় জমে যেত। তাপতুন বলেন, সময় কিন্তু পাল্টেছে। মানুষ জানে, নারীরা কাজ করছেন। নারীদের কাজ তাকিয়ে দেখার বিষয় নয়। এখন বাংলাদেশের রাস্তায় নারী সার্জেন্টরা দাপটের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।
পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষা ও কর্মজীবনে ব্যাডমিন্টন, হ্যান্ডবল, টেবিল টেনিস, কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ নানান বিষয়েও সব সময় এগিয়ে থাকতেন তিনি। তাপতুন বলেন, সংসার ও ক্যারিয়ার দুটোই জীবনের অংশ। ফলে নারীদের ঘরে-বাইরে দুই জায়গায় সমানতালে কাজ করতে হয়। তবে এখনো অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের এগিয়ে যাওয়ার পথে ইচ্ছাকৃত কিছু প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। সেগুলো মোকাবিলা করেই নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন।
তাঁরা সাত বোন ও দুই ভাই। তাপতুনের বাবা এ এস এম নুরুল হোসাইন বেঁচে নেই। মা সৈয়দা রওশন আরার শরীরটা ভালো নেই। তাপতুনের মন ছুটে যায় মায়ের কাছে। তবে বাস্তবতার কাছে হার মানেন।

 

ভ্রমন পিপাসুদের জন্য কম খরচে ভ্রমনের কৌশল

মানুষ যতটাই খরুচে হোক না কেন, জীবনের কিছু সময়ে কোন না কোনভাবে সে কিছু না কিছু টাকা বাঁচাতে চায়-ই। বিশেষ করে ভ্রমণে গেলে তো কোন কথাই নেই। অনেকে তো ইচ্ছে করেই অন্যকে তাক লাগিয়ে দিতে কম খরচে ঘুরে আসতে চান বাইরে। কেউ আবার চাইলেও যেতে পারেননা হাতে পর্যাপ্ত টাকা থাকার অভাবে। তবে কারণ যেটাই হোক না কেন, যদি আপনি চান কম খরচে বাইরে বেশ ভালোভাবে ঘুরে আসতে তাহলে জেনে নিন এই ছোট্ট কিছু টিপস!

১. কম খরচের প্লেনে উঠুন
আপনার যাতায়াতের মাধ্যম যদি হয় বিমান তাহলে প্রথমেই খোঁজ নিন কম খরুচে বা বাজেট বিমানগুলোর দিকে। ভাবছেন সেগুলোর মান খুব বেশি খারাপ? তা কিন্তু নয়! কম খরচেই ওরা আপনাকে খাবার, ব্যাগ রাখার সুবিধা এবং আরামদায়ক ভ্রমণ- সবটাই দেবে। আর বাঁচিয়ে দেবে বড় একটা খরচের হাত থেকে!

২. বিনা খরচে থাকুন
বর্তমান যুগ হচ্ছে যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। আর তাই যুগের সুবিধাকে পুরোটা বুঝে নিয়ে নিজের নেটওয়ার্ক বাড়ান আর হোটেলে না থেকে স্থানীয় ও আপনাকে কিছুদিনের জন্যে মেহমান হিসেবে পেতে ইচ্ছুক মানুষের খোঁজ নিন। এতে করে হয়ে যাবে খরচ এড়ানো, সেই সাথে হবে আরো বেশি করে সেই দেশের সংস্কৃতির কাছে পৌঁছানোও। ভাবছেন কি করে এমনটা করেন? অনেক অনেক সাইট আছে নেটে। সেগুলোতে খোঁজ নিন আপনার গন্তব্যস্তলে এমন কেউ আছে কিনা। আর এজন্যে আপনার জন্য উপকারী হতে পারে- বি ওয়েলকাম, কোচসার্ফিং, হাউজসিট ম্যাচ, হাউজ কেয়ারারস, ট্রাস্টেড হাউজসিটারসের মতন সাইটগুলো।

৩. সহজ পরিকল্পনা করুন
ভ্রমনের ক্ষেত্রে সবাই চান দু-একদিনের ভেতরেই গন্তব্যের দেশটিকে পুরোপুরি দেখে নেওয়ার। ফলে অতিরিক্ত স্থানে ভ্রমণ করতে গিয়ে জট পাকিয়ে ফেলেন পুরোটাতে, খরচ করে ফেলেন বেশি, শক্তি আর সময়ের অপচয় করেন এবং মূলত কোনরকম সৌন্দর্যই উপভোগ করতে পারেননা শেষ অব্দি। আর তাই বাছুন কোন কোন জায়গাগুলো খুব ভালো করে সহজে দেখা যায়। কম ঘুরুন। কিন্তু উপভোগ করুন যেখানে ঘুরছেন সেখানটাকেই!

৪. ভাগ করে নেওয়া
খরচ ভাগ করে নিন। এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা আপনাকে এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। আর কিছু না হোক, বিশেষ করে আপনার ভ্রমণের জায়গাটিতে যাওয়ার খরচ ভাগ করে দেওয়ার মানুষ খুঁজতে! এভাবে অনেকটা খরচ বাঁচিয়ে ফেলতে পারেন আপনি। কোথায় পাবেন সাইটগুলো? কেন? নেটে! তবে আপনার সুইধার জন্যে এরকম কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হলো। খরচ ভাগ করে নিতে চাইলে আপনি ঢুঁ মারতে পারেন এয়ার বি এন বি, লাইক অ্যা লোকাল, স্পটেড বাই লোকালসের মতন জায়গাগুলোতে।

৫. ট্যুরিস্ট কার্ড
লন্ডন, প্যারিস কিংবা নিউ ইয়র্কের মতন স্থানে ঘুরে আসতে গেলে আপনি নিয়ে নিতে পারেন একটি ট্যুরিস্ট কার্ড। এমনিতে যা খরচ হবে তার অনেকটাই কমিয়ে দেবে এই কার্ড আর আপনাকে সুযোগ করে দেবে অনেক জায়গা দেখার!

৬. দলে ঘুরুন
একা একা না ঘুরতে গিয়ে বরং একটা দলের সঙ্গ নিন। একা একা কতটাই বা আর দেখা যায়? অনেক জিনিসের সৌন্দর্যও মাঝে মাঝে ফিকে হয়ে আসে সেটা বিনিময় করার সুযোগ না থাকলে। আর তাই দলে ভিড়ে যান! দলবেঁধে ঘোরার মজাটা যেমন পাবেন আপনি এখানে, ঠিক তার সাথে সাথে কমে যাবে ভ্রমণের অনেকটা খরচও!

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
তথ্যসুত্র: দেশে বিদেশে ডটকম।

 

পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা !

ভালভাবে শুরু করা মানে অর্ধেক এগিয়ে যাওয়া কথাটি আপনারা নিশ্চয়ই জানেন। টেলিভিশন সাংবাদিকতা এবং সংবাদ উপস্থাপনার শুরুটাও ভালভাবে করতে হবে। কিন্তু ভালভাবে শুরুর জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা নয়। প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য কিছুটা সময় নেয়া যেতে পারে।

প্রস্তুতি গ্রহণকে কাজের অংশ ধরা হলে এটাকে শুরু মনে করা যায়। আমি মনে করি এক্ষেত্রে ভাল শুরুর অপেক্ষা না করে আজই শুরু, এ মুহুর্ত থেকেই শুরু করতে হবে। অনেক মুসলমান বলেন আগামীকাল ফজর নামাজ থেকে নিয়মিত নামাজ পড়ব। কিন্তু সেটা আগামীকাল। নামাজ নিয়মিত পড়ার সিদ্ধান্ত নিলে আগামীকাল ফজরের জন্য অপেক্ষা না করে আজ মাগরিব, এশা থেকেই শুরু করতে হবে।টেলিভিশন সাংবাদিকতায় এখন তরুণরা দলে দলে অংশগ্রহন করছে এবং সাফল্য পাচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা পেশাগত কাজে প্রচুর পরিশ্রম, একাগ্রতা এবং ঝুকি নিয়ে কাজ করত। টেলিভিশন সাংবাদিকতায় যারা আছেন তারা আরো বেশি একাগ্রতা ও ঝুকি নিয়ে কাজ করছেন। হঠাৎ করে যারা টেলিভিশন সাংবাদিকতা শুরু করবেন তাদের পরিশ্রম, একাগ্রতা, নিষ্ঠা, ঝুকি যেমন বেশি তেমনি সাফল্য পেতে একটু সময় লাগতে পারে।লক্ষ্য করুন, প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা টেলিভিশন সাংবাদিকতায় যেমন সফল তেমনি অনেক সাংবাদিকরা সংবাদ উপস্থাপনায় সফল। সেজন্য টেলিভিশন সাংবাদিকতায় জড়িত হওয়ার পূর্বে প্রিন্ট মিডিয়ায় সাংবাদিকতা করা ভাল। সাংবাদিকতা শুরুর জন্য প্রিন্ট মিডিয়ায় রয়েছে প্রচুর সুযোগ। প্রিন্ট মিডিয়াকে সাংবাদিকতার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বলতে পারেন।প্রিন্ট মিডিয়া থেকে যারা টেলিভিশন সাংবাদিকতা শুরু করবেন তারা টেলিভিশন সাংবাদিকতার কিছু টেকনিক্যাল বিষয় জেনে নিয়েই যে কোন টেলিভিশন চ্যানেলে কাজ শুরু করতে পারেন। দেশে এখন ২৫টির অধিক স্যাটেলাইট টেলিভিশন সম্প্রচার অব্যাহত রেখেছে এবং চ্যানেলের সংখ্যা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেজন্য টেলিভিশন সাংবাদিকতায় প্রচুর সুযোগ তৈরি হচ্ছে। যে কোন টেলিভিশন চ্যানেলে রিপোর্টার, শিক্ষানবিশ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করার জন্য আজই আবেদন করুন এবং সাক্ষাৎকার দিয়ে টেলিভিশন সাংবাদিকতায় যুক্ত হয়ে যান।

এক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ যেন মনে করে টেলিভিশন সাংবাদিকতা সম্পর্কে আপনার ধারণা আছে এবং আপনি কাজটি পারবেন। সেজন্য আপনার কিছু প্রস্তুতি থাকা দরকার। রাজধানীতে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান একমাস বা তিন মাসব্যাপী টেলিভিশন সাংবাদিকতা, সংবাদপাঠ বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। আপনি এসব প্রতিষ্ঠানে একটি কোর্স করতে পারেন। এশিয়ান জার্নালিস্ট হিউম্যান রাইটস এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন (এজাহিকাফ) ১ দিনের টেলিভিশন সাংবাদিকতা ও সংবাদপাঠ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে।

এ কর্মশালায় অংশ নিয়ে আপনি কিছু ধারণা লাভ করতে পারবেন। সরকারী পর্যায়ে নিমকো ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। বেসরকারিভাবে বিসিডিজেসী, বিজেম, জবস এ ওয়ান, যাত্রীসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত টেলিভিশন সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করে আসছে। সংবাদ পাঠ বিষয়টি এখন পুরোপুরি সংবাদ উপস্থাপনা।

বর্তমানে সংবাদ উপস্থাপনা অনেক আধুনিক এবং উন্নত। সংবাদ উপস্থাপনার জন্য আপনাকে শুদ্ধ উচ্চারণ জানতে হবে এবং বাচন ভঙ্গি সুন্দর করতে হবে। শুদ্ধ উচ্চারণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসটি কেন্দ্রিক কয়েকটি প্রতিষ্ঠান/সংগঠন ৩ মাসব্যাপী কোর্স পরিচালনা করে। এর মধ্যে কন্ঠশীলন, স্বরশীলন, সংবৃতা, আবৃত্তিশীলনসহ বেশ কিছু সংগঠনের তিন মাসব্যাপী কোর্সে অংশগ্রহণ করলে আপনি শুদ্ধ উচ্চারণ রপ্ত করতে পারবেন।

শুদ্ধ উচ্চারণ রপ্ত করার পাশাপাশি টিভি চ্যানেলের সংবাদ উপস্থাপনা মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। এরপর কোন টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ উপস্থাপনার জন্য আবেদন করুন। যথাসময়ে সাক্ষাৎকার দিন এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করুন।

লায়ন সালাম মাহমুদ
লেখকঃ- সভাপতি, টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ (ট্রাব)।

লাইক দিয়ে পেইজের সাথে থাকুন ও আপনার বন্ধুদের ইনভাইট করুন পেইজে। এবং এ বিষয় সম্পর্কে অন্যদের জানাতে পোষ্টটি শেয়ার করতে পারেন……

 

মায়েদের যত সেরা উপদেশ

ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে থাকে মায়েরা। এর মধ্যে কিছু কিছু উপদেশ সন্তানের জন্য হয়ে থাকে চিরস্মরণীয়। মায়েদের পক্ষ থেকে সন্তানের পাওয়া এমন কিছু চিরন্তন উপদেশ জানার জন্য প্রশ্ন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্ন-উত্তর ভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘কিওরার’ কাছে। ওয়েবসাইটটির ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন এর উত্তর।

কিওরার এক ব্যবহারকারী সদ্য আইন ব্যবসা শুরু করা অ্যান্থনি জনসন জানিয়েছেন, তার মায়ের পক্ষ থেকে তার জন্য সেরা উপদেশ হচ্ছে, ‘সাধারণত্বের মধ্যেই অসাধারণদের অবস্থান।’ তার মা তাকে শিখিয়েছেন, একজন মানুষ নিজে তার নিজের কাছে যতটা গুরুত্বপূর্ণ, অন্যরাও তার কাছে ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। অ্যান্থনি জানান, এ শিক্ষাটি শিশুদের জন্য খুবই মূল্যবান। এতে তারা অপরের সাথে সমঝোতা করে চলতে শেখে। অন্যের সাথে সবকিছু ভাগাভাগি করে এবং তাদের সাথে জীবন যাপন করতে শেখে।

শ্যানন হলম্যান নামের একজন জানিয়েছেন, তার মা-বাবা তাকে ছোটবেলা থেকেই জ্ঞানার্জন করতে শিখিয়েছেন। তার প্রতি তার মায়ের সেরা উপদেশ হচ্ছে, ‘যাও, সবকিছু অনুসন্ধান করে দেখো’। তিনি লিখেছেন, তিনি সৌভাগ্যবান যে এক সেট বিশ্বকোষ কেনার মতো যথেষ্ট অর্থ তার পরিবারের ছিল। এই বিশ্বকোষটি পড়ে তিনি বুঝতে পেরেছেন, পৃথিবীর সবকিছুই একজন মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব না। কিওরাতে তিনি লিখেছেন, ১৯৮৩ সালের ওই বিশ্বকোষটি তার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম ছিল না। এটি তাকে শিখিয়েছে, সব বিষয়ে প্রশ্ন করা সহজ, তবে সব প্রশ্নের উত্তর থাকে না।

স্টিফেন বার্দাবাস নামের আরেকজন জানিয়েছেন, তিনি যখন ছোট ছিলেন, তার মা তাকে উপদেশ দিতো, ‘যদি তুমি একজন ব্যক্তি ভালো কি মন্দ- তা খুঁজে বের করতে চাও তবে তুমি দেখবে তারা কেরানি, ওয়েটার অথবা সেবাদানের কাজে নিয়োজিত অন্য ব্যক্তি, যারা নিজের পক্ষে অন্যের সাথে বাদানুবাদ করতে পারে না তাদের সাথে কেমন আচরণ করে।’

বার্দাবাস তার মায়ের এ উপদেশের ব্যাপারে লিখেছেন, ‘তিনি শত ভাগ সঠিক ছিলেন। আর আমিও কখনো তার এ উপদেশ ভুলে যাইনি। এর মাধ্যমে খুব সহজেই মানুষ চেনা যায়।’

চিত্রনাট্যকার কেন মিয়ামোতো লিখেছেন, তার পরিবারের সব সদস্য একে অপরকে খুবই ভালেবাসে। তাদের আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি আছে এবং কখনো কখনো তারা বিতর্কেও লিপ্ত হয়। তবে এর মাঝেও তার পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটি হচ্ছেন তার মা।

কয়েক বছর আগে মিয়ামোতো তার বাবা ও ভাইয়ের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়। এতে মিয়ামোতোই সঠিক অবস্থানে ছিলেন। এ সময় তার মা তাকে বলেন, ‘তুমি কি সঠিক অবস্থানে থাকতে চাও? নাকি, সবার সাথে সৌহার্দ্য বজায় রাখতে চাও?’ তখন তিনি বুঝতে পারলেন, সব সময় সঠিক থাকতে গেলে কোনো সম্পর্কই টিকে থাকতে পারে না। আর এটিই ছিল তার জীবনে মায়ের পক্ষ থেকে সেরা উপদেশ।

 

ছবির ঘরে নতুন অতিথি

অভিনেত্রী ফারজানা ছবির ঘরে এসেছে নতুন অতিথি। আবারো মা হয়েছেন তিনি। গত ১ মে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে দ্বিতীয় পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন ছবি। মা ও নবজাতক উভয়ই সুস্থ আছেন বলে জানা গিয়েছে।

পারিবারিকভাবে ২০১৪ সালে ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষক তন্ময় সরকারকে বিয়ে করেন ফারজানা ছবি। বিয়ের মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো মা হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এই দম্পতির প্রথম সন্তানের নাম অভিরূপ।

নতুন খবর হলো আবারো মা হয়েছে ছবি।  গত ১ মে দুপুরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে দ্বিতীয় পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি।

 

সড়ক দুর্ঘটনায় মা ও মেয়ে নিহত

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া মোড়ে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার আরোহী মা ও মেয়ে নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল আটটার দিকে সাতক্ষীরা-যশোর আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মা শাহেদা খাতুন (৪৫) ও মেয়ে সালমা খাতুন (১৭)। তাঁদের বাড়ি সদর উপজেলার চুপরিয়া গ্রামে। দুর্ঘটনায় অটোরিকশার আরও তিনজন আরোহী আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন সদর উপজেলার তুজুলপুর গ্রামের ফাতেমা খাতুন (৩৫), ঝাউডাঙা গ্রামের আমেনা খাতুন (৩৫) ও রনি সরদার (১৮)। তাঁরা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, যাত্রীদের নিয়ে অটোরিকশাটি ঝাউডাঙা গ্রাম থেকে সাতক্ষীরার দিকে যাচ্ছিল। ছয়ঘড়িয়া মোড়ে ঢাকা থেকে আসা যাত্রীবাহী বাস অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মা ও মেয়ে নিহত হন।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক শেখের ভাষ্য, লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বাসের চালককে ধরা যায়নি। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অটোরিকশার চালক রয়েছেন কি না, প্রাথমিকভাবে তা জানা যায়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি।

 

পুরস্কার পাচ্ছেন রত্নগর্ভা ৩৪ মা

রাঙামাটি জেলা সদর থেকে ১৪৬ কিলোমিটার উত্তর ভারতীয় সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত এক জনপদ উগলছড়ি। অর্থনৈতিক অনগ্রসর ওই এলাকার প্রান্তিক নারী প্রভাবতী চাকমা। বিয়ের পর জন্ম দেন একে একে তিনটি কন্যা সন্তান। এ কারণেও তাকে সইতে হয়েছে বঞ্চণা। সন্তানদের মানুষ করা নিয়ে পড়েন প্রবল বাধা-বিপত্তিতে। তারপরেও তিন সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেছেন তিনি। তারা এখন নিজ নিজ ক্ষেত্রে বেশ প্রতিষ্ঠিত। এসব হয়েছে প্রভাবতী চাকমার প্রবল ইচ্ছাশক্তি, শ্রম ও ভালোবাসার কারণে। এই মা তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাচ্ছেন ‘আজাদ প্রোডাক্টস অ্যাওয়ার্ড : রত্নগর্ভা মা-২০১৫’।

শুধু এই একজনা মা-ই নয় সমাজে তাদের সন্তানদের সুশিক্ষিত এবং আগামী দিনের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার নিপুণ স্থপতি, সত্য ও সুন্দরের প্রতীক হিসেবে আরও সফল ৩৩ মাকে দেয়া হচ্ছে আজাদ প্রোডাক্টস প্রবর্তিত ‘রত্নগর্ভা মা পুরস্কার-২০১৫’। তার মধ্যে সাধারণ ক্যাটাগরিতে ২৫ এবং বিশেষ ক্যাটাগরিতে ৯ জন পাচ্ছেন পুরস্কার। একজন বাবাকে দেয়া হচ্ছে ‘মাই ড্যাড ওয়ান্ডারফুল অ্যাওয়ার্ড’। এবার এ পুরস্কার পাচ্ছেন প্রখ্যাত নাট্যভিনেতা-নিদের্শক ড. ইনামুল হক।

আন্তর্জাতিক মা দিবস উপলক্ষে আগামীকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ. চৌধুরী সেন্টারে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। সভাপতিত্ব করবেন আজাদ প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

সাধারণ ক্যাটাগরিতে ২৫ পুরস্কৃত মা হচ্ছেন লুৎফুন নাহার বেগম, আমেনা বেগম, জামিলা আক্তার, হোসনে আরা বেগম জ্যোৎস্না, হোসনে আরা বেগম, সুফিয়া খানম, রেহানা সামাদ, সুলতানা রোকেয়া আখতার, জাহান-আরা বেগম, নূরে আলম মর্ত্তুজা বেগম, মঞ্জু রানী, শিখা বড়ূয়া, যোসপিন কোড়াইয়া, সৈয়দ শাহান আরা, সালিমা খাতুন, খুরশীদ জাহান, খোরশেদ আরা বেগম, লতিফা বেগম, মাকছুদা বেগম,  আনোয়ার বেগম, হাসিনা বানু, মায়মুনা বেগম ও ইউ কে এম ফরিদা বেগম।

বিশেষ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাচ্ছেন ৯ জন। তারা হলেন, মঞ্জু আরা, কামরুন নিসা দুলাল, অধ্যক্ষ তহুরা আক্তার খাতুন, শিরিন হক, সুলতানা রাজিয়া (নাছিমা), জিন্নাতুন নেসা, রেজিয়া বেগম, আফরোজা বেগম ও সেতারা বেগম।

শনিবার আজাদ সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজাদ প্রোডাক্টসের কর্ণধার আবুল কালাম আজাদ পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন।

 

লিচুতে নতুন ভাইরাস

লিচুতে নতুন ধরনের ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করেছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই ভাইরাসের কারণে ১০ বছরের নীচে কোনো ওই লিচু খেলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তবে পশ্চিমঙ্গের মালদার পাঁচটি ব্লকে উৎপাদিত লিচুতেই শুধু এ ভাইরাস পাওয়া গেছে।

২০১৪ সালের লিচু খেয়ে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয় পশ্চিমবঙ্গের ৭২ শিশু। তাদের মধ্যে ৩৪ শিশুরই মৃত্যু হয়। তখনই মৃত ও আক্রান্ত শিশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছিল পুনে ও অস্ট্রেলিয়ার একটি পরীক্ষাগারে। সেই সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল জেলায় উৎপাদিৎ লিচুও।

আর সেই পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। রিপোর্টে মালদার লিচুতে নতুন ধরনের ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে চলতি মওসুমে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য অফিস। ইতিমধ্যে এ নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে একটি বৈঠকও হয়েছে।

জেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দিলীপকুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, অসুস্থ শিশুদের পরীক্ষা করে তারা দেখেছেন, এই ভাইরাস আক্রান্ত লিচু খেলেই ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের শরীরে শর্করার মাত্রা দ্রুতহারে কমে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে বমি, খিঁচুনি, জ্বর, মাথাব্যথা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। তেমন প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরো জানান, শিশুদের কখনই খালি পেটে রাখা যাবে না। তারা যাতে খালি পেটে লিচু না খায় তার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মালদা জেলার ৫টি ব্লকসহ বিহারের মুজফ্ফরপুরেও গত বছর লিচু খেয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। যে এলাকাগুলোতে এ ঘটনা ঘটেছিল সেগুলোর ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক রয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, আর্সেনিকের প্রভাবেই এই ভাইরাসের উৎপত্তি।

তবে কীভাবে এই ভাইরাস থেকে লিচুকে রক্ষা করা যাবে, তা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।

 

মা দিবস : ইসলাম “মা” কে যেভাবে সম্মানিত করেছে

হজরত তালহা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে হাজির হয়ে এক ব্যক্তি জিহাদে অংশগ্রহণের আবেদন জানাল। নবীজী (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মা বেঁচে আছেন কি? লোকটি বলল, হ্যাঁ বেঁচে আছেন। রাসুল (সা.) বললেন, যথার্থভাবে তার সেবা করো, বেহেশত তার পদতলে। (বোখারি শরীফ)।

মে মাসের দ্বিতীয় রোববার আন্তর্জাতিক ‘মা দিবস’। অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ৮ মে (রবিবার) যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হবে বিশ্ব মা দিবস। বিশ্বজুড়ে এই ‘মা দিবস’র উদযাপন, এটি আসে মূলত আমেরিকানদের হাত ধরে। ১৮৭০ সালে সমাজসেবী জুলিয়া ওয়ার্ড হো আমেরিকার নারীদের যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান। সে সঙ্গে দিবসটিকে স্বীকৃতি দেওয়াার জন্য প্রচুর লেখালেখি করেন। ১৯০৫ সালে আনা জারভিস মারা গেলে তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সচেষ্ট হন। ওই বছর তিনি তার সান ডে স্কুলে প্রথম এ দিনটি মাতৃ-দিবস হিসেবে পালন করেন। ১৯০৭ সালের এক রোববার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই শুরু হয় মা দিবসের যাত্রা। এরপর পৃথিবীর দেশে দেশে মা দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ সারাবিশ্বের প্রায় ৬০টির মতো দেশে প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার একসঙ্গে মা দিবস পালিত হয়ে আসছে বহু যুগ ধরেই।

মা জাতি সম্মানি জাতি। মায়ের তুলনা একমাত্র মা। মাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানোর নির্দিষ্ট কোনো দিন নেই। মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রতি মুহূর্তের। সারাবছর মায়ের হক আদায়ে বেখবর, আর ৮ মে, ‘মা দিবস’ এলেই মায়ের প্রতি আবেগের ভালবাসা ঢেলে দেয়া অযৌক্তিক? বছরে একবার ঢোলঢাল পিঠিয়ে ভালবাসা প্রকাশ এটা ইসলাম সমর্থন করে না। মাকে ভালবাসতে হবে সমসময়ই। মাকে যথাযথ সম্মান ও ভালবাসার কথা স্বয়ং কুরআনুল কারীমে আল্লাহপাক নির্দেশ দিয়েছেন। মা পৃথিবির সবৃশ্রেষ্ট নেয়ামাত। পৃথিবীতে সন্তানের জন্য সর্বশ্রেষ্ট পাওয়া সম্পদ হলো মা। মা হচ্ছেন একজন সন্তানের পৃথিবীতে আসার মূল ও প্রধান উৎস এবং অস্তিত্ব ও বেঁচে থাকা থাকার একমাত্র অবলম্বন। মা শব্দটির কোনো বিকল্প নেই একজন সন্তানের কাছে। মায়ের মায়া-মমতার সাথে পৃথিবীর কোন কিছু তুলনা হয় না। মায়ের আদর এবং লালন পালনের কষ্ট সন্তান কোন দিন শোধ করতে পারবে না। শীত, তাপ, ক্ষুধা ও তৃষ্ণার জ্বালা যিনি সস্তানকে শৈশবে অনুধাবন করতে দেননি তিনি হলেন মা। সন্তানের অসুখে যিনি সারারাত জেগে থাকেন, সন্তান বাড়ি থেকে বের হয়ে ফেরার আগ পর্যন্ত যার চোখে ঘুম আসে না, সন্তানের বিপদ-মছিবতে সকল সুখ শান্তি যিনি বিসর্জন করে সর্বোচ্চ ত্যাগ দিয়ে সন্তানের বিপদ মুসিবত অসুখসহ যাবতীয় সমস্যা মোকাবিলা করেন থাকেন তিনি হলেন সকলের প্রাণপ্রিয় মা। মা সন্তানের জন্য পৃথিবীতে একটি বেহেশতের ফোটা ফুল। যার কাছে রয়েছে অসীম স্নেহ-মায়া-মমতা, আদর-ভালবাসা আর সান্তনা। মায়ের মতো আপন এ জগতে আর কেউ নেই। মায়ের তুলনা একমাত্র জন্মধাত্রি মা। সন্তানের উপর ফরজ কর্তব্য হলো সর্বদা মাকে যথাযথ সম্মান ও খিদমত করা। সার্বিক বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখা। শুধু বছরে একদিন মায়ের প্রতি আবেগের ভালবাসা নয়। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহপাক বলেন, ‘তোমরা কেবলমাত্র তারই ইবাদত করবে এবং পিতা মাতার সাথে সদ্বব্যবহার করবে। যদি তাদের মধ্যে একজন কিংবা দুজনই তোমার নিকটে বৃদ্ধ বয়সে উপনিত হয়ে যান তখন তাদেরকে ‘উফ’ শব্দও বলবে না এবং তাদেরকে ধমও দিবে না। আর তাদের জন্য দয়ার মধ্য থেকে নম্রতার বাহু ঝুঁকিয়ে দাও। আর তাদের জন্য দোয়াস্বরপ একথা বলবে, রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানী ছগীরা’। (হে আমার পালনকর্তা! তাদের দুজনের ওপর এরকম দয়া কর যেরকম তারা আমাকে ছোট বেলায় লালন পালন করেছিলেন) (-সুরা বনি ইসরাইল:২৩-২৪)

অন্যত্র আল্লাহপাক বলেন, ‘আমি মানুষকে বিশেষ তাগিদ দিয়েছি তার পিতামাতার সাথে সদয় ব্যবহার করার। তার মা তাকে (গর্ভে) রেখেছে এবং তাকে দুধপান ছাড়ানোর সময় দিয়েছে ত্রিশ মাস। পরিশেষে যখন সে পূর্ণশক্তিতে পৌছে যায় এবং চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হয় তখন সে যেন বলে হে আমার পালনকর্তা আপনি আমাকে শক্তি দান করুন যাতে আমি আপনার সেই সম্পদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি যা আপনি আমাকে এবং আমার মাতাপিতাকে পুরষ্কার দিয়েছেন। আর আমি যেন এমন ভালো কাজ করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন। আর আমার সন্তান সন্তুতিদের মধ্যেও আপনি ওই যোগ্যতা দান করুন। আমি আপনার কাছেই ফিরে এসেছি এবং আমি আপনার কাছে আত্মসমর্পণকারিদের মধ্যেও রয়েছি। (সূরা আহক্বাফ: ১৫)

হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা এক সাহাবি রাসুল (সা.)-এর খেদমতে হাজির হয়ে প্রশ্ন করলেন, ইয়া রাসুল্লাহ (সা.)! আমি সর্বাগ্রে কার সঙ্গে সদাচরণ করব? ওাসুলুল্লাহ (সা.) উত্তয়ে বললেন, তোমার মা। সাহাবি আবার বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। সাহাবি আবার জিজ্ঞেস করল তারপর কে? উত্তরে তিনি বললেন, তোমার মা। সাহাবি আবার জিজ্ঞেস করল অতঃপর কে? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার বাবা। (বোখারি শরিফ)

হজরত তালহা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে হাজির হয়ে এক ব্যক্তি জিহাদে অংশগ্রহণের আবেদন জানাল। নবীজী (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মা বেঁচে আছেন কি? লোকটি বলল, হ্যাঁ বেঁচে আছেন। রাসুল (সা.) বললেন, যথার্থভাবে তার সেবা করো, বেহেশত তার পদতলে। (বোখারি শরীফ)।

শেষ কথা, মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, মায়া, মমতা, ভালোবাসা ও দায়িত্বশীলতা প্রদর্শন একটি বিশেষ দিনের জন্য নয়; বরং তা প্রতিদিনের জন্য। মায়ের প্রতি আনুগত্য, মায়ের খেদমত, মায়ের হক আদায় ও বৃদ্ধাবস্থায় সেবা-যত্ন করা এবং পরকালীন মুক্তির জন্য দোয়া ও মাগফিরাত কামনা করা আমাদের সবার একান্ত কর্তব্য। যাদের মাতা পিতা জীবিত নেই তাদের জন্য মাগফিরাত কামনায় বেশি বেশি তিলাওয়াত কুরআন, নফল নামাজ, দান সদকা ও দোয়া দুরুদ পাঠ করা সন্তানের কর্তব্য । মাতাপিতাকে রুহের মাগাফরাত কামনায় নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, দান সদকা করা অতি উত্তম কাজ। মা আমাদের জন্য আল্লাহর এক বিরাট নেয়ামত। আমাদের উচিত এবং প্রধান কর্তব্য হলো জীবিত মা বাবার খেদমত এবং কবরবাসী মা-বার জন্য রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানি ছগীরার মাধ্যমে সর্বদা দোয়া করা।

মাওলানা এহসান বিন মুজাহির
সাংবাদিক, কলামিস্ট ও তরুণ আলেম

 

আমের স্বাদে মজাদার পুডিং

ডেজার্ট বা নাস্তায় পুডিং কার না পছন্দ। ভিন্ন সময়ে ভিন্ন স্বাদের পুডিং খাওয়ার মজা বাড়িয়ে দেয় অনেক বেশি। বাজারে চলে এসেছে নানা জাতের পাকা আমা। তাই পুডিংও হতে পারে আমের স্বাদে গন্ধে ভরা। প্রিয়জনের তৃপ্তির হাসি পেতে এক টুকরো আমের পুডিংই যথেষ্ট। তাই আজই নিজ হাতে বানিয়ে নিন আমের স্বাদে মজাদার পুডিং।

যা যা লাগবে

ঘন দুধ ৭৫০ গ্রাম, ডিম ৪ টা, পাকা আমের রস ১২৫ গ্রাম, চিনি ২০০ গ্রাম, বিস্কুট গুড়া ২ টেবিল চামচ।

যেভাবে করবেন

দুধের মধ্যে বিস্কুট গুড়া ভিজিয়ে রাখতে হবে আগে থেকে, যেন গলে যায়। এবার একটা পাত্রে আমের রস ও চিনি এক সঙ্গে জ্বাল দিয়ে পানি শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর ভালো করে ডিম ফেটে দুধ ও আমের রসের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। পুডিং পাত্রে চিনি ক্যারামেল করে মিশ্রণটি ঢেলে দিতে হবে। তারপর অপেক্ষাকৃত বড় পাত্রে পানি ফুটতে দিন। পানি ফুটে উঠলে পুডিং এর পাত্রটি বসিয়ে ভারি কিছু দিয়ে চাপা দিতে হবে, যাতে পানি ফুটন্ত অবস্থায় পাত্র হেলেদুলে না যায়। পুডিং জমানোর জন্য ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট অপেক্ষা করলেই হবে। তারপর নামিয়ে এনে ঠাণ্ডা হলে ছুরি দিয়ে কেটে ডিসে পরিবেশন করুন মজাদার আমের পুডিং। স্বাদ ও গন্ধে অনন্য আমের পুডিং অতিথি আপ্যায়নেও সেরা।

 

শোন তবে মা দিবসের কথা

‘মা’ ছোট্ট একটা শব্দ, কিন্তু কী বিশাল তার ব্যাপ্তি। সৃষ্টির সেই আদিলগ্ন থেকে মধুর এ শব্দটা শুধু মমতার নয়, ক্ষমতারও যেন সর্বোচ্চ আধার। মার অনুগ্রহ ছাড়া কোনো প্রাণীরই প্রাণ ধারণ করা সম্ভব ন। তিনি আমাদের গর্ভধারিণী মা।

আজ আমাদের মা দিবস। মা দিবসের মূল উদ্দেশ্য, মাকে যথাযথ সম্মান দেওয়া। যে মা জন্ম দিয়েছেন, লালন-পালন করেছেন, তাঁকে শ্রদ্ধা দেখানোর জন্য দিনটি পালন করা হয়।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে দিনটি পালন করা হয়। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় রোববার নরওয়েতে, মার্চের চতুর্থ রোববার আয়ারল্যান্ড, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাজ্যে। আর বাংলাদেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার।

বিশ্বের অনেক দেশে কেক কেটে মা দিবস উদ্যাপন করা হয়। তবে মা দিবসের প্রবক্তা আনা জার্ভিস দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, মাকে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো, তাঁকে দুই কলম লেখার সময় হয় না। চকলেট উপহার দেয়ার অর্থ হলো, তা নিজেই খেয়ে ফেলা।

আনা জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারা জীবন ব্যয় করেন অনাথ-আতুরের সেবায়। মেরি ১৯০৫ সালে মারা যান। লোকচক্ষুর অগোচরে কাজ করা মেরিকে সম্মান দিতে চাইলেন মেয়ে আনা জার্ভিস। অ্যান মেরি রিভস জার্ভিসের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচার শুরু করেন। সাত বছরের চেষ্টায় মা দিবস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়।

 

ইস্ত্রি না করে যেভাবে কাপড়ের কুঁচকানোভাব দূর করা যায়

জামাকাপড় কুঁচকে গেলে খুব খারাপ দেখায়। বিশেষ করে অফিস কাছারিতে যাওয়ার আগে নজরে আসে কুঁচকে যাওয়া শার্ট। অনেকের বাড়িতে ইস্তিরি থাকে না, অনেকে ইস্তিরি করতে পারেন না। কিন্তু তাতে কী, নিমেষের মধ্যে পোশাকের কুঁচকানোভাব দূর করতে পারবেন বিকল্প উপায়ে। রইল তারই কিছু টিপস্ –

১. পোশাকের কুঁচকানো দাগগুলি দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন হেয়ার স্ট্রেইটনার। তবে ব্যবহারের সময় স্ট্রেইটনারের তাপ যাতে বেশি না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। অবশ্যই স্ট্রেইটনার পরিষ্কার করার পরই ব্যবহার করুন।

২. কাজে লাগাতে পারেন হেয়ার ড্রায়ারও। হ্যাঙারে শার্ট বা ড্রেস রেখে হেয়ার ড্রায়ারটি চালিয়ে দিন। ড্রায়ারের উষ্ণ বাতাস কাপড়ের কুঁচকানো দাগ দূর করে দেবে।

৩. একটি স্প্রে বোতলে জল নিয়ে পোশাকের উপর স্প্রে করে দিন। হ্যাঙারে ঝুলিয়ে শুকতে দিন কিছুক্ষণ। তারপর দেখুন সব দাগ কেমন দূর হয়ে গেছে। দেখবেন, আর মনেই হবে না জামাটি ইস্তিরি করা নয়।

৪. যখন স্নান করছেন বা হট ওয়াটার বাথ নিচ্ছেন, হ্যাঙারে করে শার্টটি ঝুলিয়ে রাখুন। উষ্ণতা কাপড়ের কুঁচকানোভাব দূর করবে।

৫. পোশাক কুঁচকে গেলে, সেই পোশাকটি ও কয়েকটি বরফের টুকরো ড্রায়ারের মধ্যে দিয়ে দিন। ড্রায়ারটি চালু করে দিন। তাতে বরফ গলে কাপড়ে সব জল শুষে নেবে। ড্রায়ারের তাপ সেই জল বাষ্পে পরিণত করবে। কাপড়ের কুঁচকানো দাগ দূর করবে।

 

সপ্তাহের ৭ দিনের ইবাদতপূর্ণ নফল নামাজ

সালাতের আভিধানিক অর্থ হলো দোয়া, রহমত, ইস্তিগফার ইত্যাদি। ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। রাসূল (সা.) বলেছেন, কুফরি এবং মুমিনের মধ্যে পার্থক্য হলো নামাজ।

নামাজ আদায়ের বহু উপকারিতা ও ফজিলত রয়েছে। এ সব ফজিলত ও উপকার নফল ও ফরজ উভয় ইবাদতের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। মুসলমান হিসেবে আমাদেরকে ফরজ নামাজ অবশ্যই পড়তে হয়। কিন্তু ফরজের পাশাপাশি এমন কিছু নফল নামাজ রয়েছে যা পড়লে উভয় জাহানে ব্যাপক কল্যাণ অর্জন সম্ভব।

শনিবার রাতের ও দিনের নফল নামাজ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) ও হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, শনিবার রাতে চার রাকাত নফল নামাজ রয়েছে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি শনিবার দিন চার রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা পাঠাবেন, যারা কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকবে এবং কিরামান কাতেবিন তার জন্য শহীদের সওয়াব লিখতে থাকবে; সমুদ্রের ফেনা ও আকাশের তারকা সমান তার গোনাহ থাকলেও তা মাফ করে দেওয়া হবে।

রোববারের নফল নামাজ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, রোববার চার রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে।

সোমবারের নফল নামাজ
হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সোমবার দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, সে অসংখ্য সওয়াবের অধিকারী হবে। হজরত উমর (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি সোমবার দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, তার জীবনের সব পাপ মাফ করে দেয়া হবে।

মঙ্গলবার রাতের ও দিনের নফল নামাজ
হজরত সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, মঙ্গলবার রাতে ছয় রাকাত নফল নামাজ আছে। হজরত আনাস (রা.) বলেন, মঙ্গলবার দিনে ১০ রাকাত নফল নামাজ রয়েছে। হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) বর্ণনা করেন, মঙ্গলবার সূর্য ওঠার পর চার রাকাত নফল নামাজ পড়বে।

বুধবার রাতের ও দিনের নফল নামাজ
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, বুধবার রাতে চার রাকাত নফল নামাজ আছে। হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় চার রাকাত নফল নামাজ পড়বে। হজরত আনাস (রা.) বলেন, বুধবার দিনে চার রাকাত নফল নামাজ রয়েছে।

বৃহস্পতিবারের নফল নামাজ
হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, বৃহস্পতিবার আট রাকাত নফল নামাজ পড়বে। হজরত আনাস (রা.) বলেন, বৃহস্পতিবার আট রাকাত নামাজ রয়েছে।

জুমার রাতের নফল নামাজ
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, শবে জুমুআ বা জুমার রাতে (বৃহস্পতিবার বাদ এশা) দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে। এই নামাজ বিশেষ ফলপ্রদ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার রাতে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে, তার পঠিত প্রতিটি হরফে আলোর জ্যোতি তৈরি হবে। সেই আলো হাশরের দিন তার সামনে সামনে দৌড়াবে। তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে। দোজখ থেকে তাকে নিষ্কৃতি দেয়া হবে। সে ৭০ জন সগোত্রীয় পাপীর জন্য সুপারিশ করতে পারবে।

শুক্রবারের নফল নামাজ
জুমার দিনে মসজিদে গিয়ে চার রাকাত নফল নামাজ পড়া মুস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার দিনে মসজিদে গিয়ে চার রাকাত নফল নামাজ পড়লে ওই নামাজির জান, মাল, সন্তান, পরিজন এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সম্পদ আল্লাহ তা’আলা অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন।

 

আইনুন্নাহার: সফলতার আদর্শ

ময়মনসিংহের একজন সফল নারী উদ্যোক্তা আইনুন্নাহার। ২০০৩ সালে একটি সেলাই মেশিন নিয়ে শুরু করেছিলেন সেলাই কাজ। ১৩ বছরের পথচলায় তিনি এখন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে অনেকের আদর্শ। আইনুন্নাহারের নিজের কাজের পরিধি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাঁর উদ্যোগের জন্য তিনি অর্জন করেছেন স্বীকৃতি ও সম্মাননা।
২০০৩ সালে আইনুন্নাহার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে সেলাই প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণে প্রথম হয়ে তিনি একটি সেলাই মেশিন পান। ময়মনসিংহ শহরের ভাড়া বাড়িতে শুরু করেন সেলাই কাজ। প্রথমে পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের পোশাক তৈরি করে দিতেন। টাকাপয়সার চিন্তা মাথায় খুব বেশি ছিল না। কেউ খুশি হয়ে যা দিত তাতেই খুশি। ইচ্ছা ছিল বড় কিছু করার। এভাবে কেটে যায় চার বছর। চার বছরে আইনুন্নাহারের সেলাইয়ের কথা ছড়িয়ে পড়ে শহরের বিভিন্ন এলাকার নারীদের মধ্যে। আসতে শুরু করে নারী ও শিশুদের পোশাকের কাজের ফরমাশ। একা তিনি করতে পারছিলেন না। দরকার কয়েকজন কর্মী। আইনুন্নাহার কর্মী নিয়োগ না নিয়ে ২০ জন নারীকে নিয়ে নিজের বাড়িতেই আয়োজন করেন প্রশিক্ষণ। তিন মাসের বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ শেষে ৫ জনকে রেখে দেন নিজের সঙ্গে।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চারজনকে নিয়ে শুরু হয় আইনুন্নাহারের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোশাক তৈরি। ক্রমে বাড়তে থাকে কাজের পরিধি। নারী ও শিশুদের জন্য পোশাক তৈরি করে প্রথমে ময়মনসিংহের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করতে শুরু করেন। এর মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক তৈরির কাজ পেয়ে যান। বেড়ে যায় তাঁর কর্মী ও কাজ।
২০০৯ সালের ময়মনসিংহের উন্নয়ন সংস্থার আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক আবদুর রশিদ একদিন আইনুন্নাহারের কাজ দেখে মুগ্ধ হন। তিনি বিনা সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ দেন। পরে আইনুন্নাহার শুরু করেন নারী কর্মী তৈরির কাজ। আয়োজন করেন প্রশিক্ষণের। এরপর থেকে প্রতিবছর চলে চারটি ব্যাচের প্রশিক্ষণ। প্রতি ব্যাচে ৩০ জন করে নারী বিনা মূল্যে সেলাই ও বুটিকের কাজের প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন।
২০১৩ সালে নারী উন্নয়ন অধিদপ্তরের নিবন্ধন নিয়ে আইনুন্নাহার প্রতিষ্ঠা করেন তৃণমূল নারী উন্নয়ন সমিতি। বর্তমানে এই সমিতির মাধ্যমে নিয়মিত চলে নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ। প্রতিবছর বের হয়ে আসছেন অনেক দক্ষ নারী কর্মী। যাঁরা পরবর্তী সময়ে নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়েছেন। আইনুন্নাহারের রয়েছে তৃণমূল কারুপণ্য নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে তৈরি হয় ব্লক ও বুটিকের পোশাক। ময়মনসিংহ ছাড়াও ঢাকার রাপা প্লাজায় ‘জয়িতা’ নামের রয়েছে তাঁর একটি দোকান। রয়েছে ওই সব পণ্যের চাহিদা। দেশের বিভিন্ন মেলায় উদ্যোক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। দেশের বাইরে ভারতে দুবার, নেপালে একবার মেলায় স্টল নিয়েছে আইনুন্নাহারের তৃণমূল কারুপণ্য। চলছে চীনের মেলায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি। বর্তমানে আইনুন্নাহারের অধীনে কাজ করছেন ১৬০ জন নারী ও পুরুষ।
উদ্যোক্তা হিসেবে ১৩ বছর কাজ করে পেয়েছেন বিভিন্ন সম্মাননা ও স্বীকৃতি। উল্লেখযোগ্য পদকগুলো হলো ২০১০ সালে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে যুব উন্নয়ন থেকে পুরস্কার ও সম্মাননা। ২০১৩ সালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা, ময়মনসিংহ জেলা ও ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়ে ‘জয়িতা’ পুরস্কার লাভ। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে তিনি উদ্যোক্তা হিসেবে পেয়েছেন বেশ কিছু পুরস্কারের স্বীকৃতি। নারীদের দক্ষ কর্মী ও উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন নারী উন্নয়ন ফোরাম। বর্তমানে এটির নিবন্ধন-প্রক্রিয়া চলমান আছে। আইনুন্নাহার বলেন, ‘পড়াশোনা শেষে ইচ্ছা ছিল, চাকরি না করে নিজে কিছু করব। পাশাপাশি আমাদের সমাজের নারীদের কর্মী হিসেবে স্বাবলম্বী করা যায় এমন ভাবনা ছিল। সেই চিন্তা নিয়ে আস্তে আস্তে আমি অগ্রসর হয়েছি। নারী উন্নয়ন ফোরাম করে আমি নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ব্যাংক লোনসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার জন্য কাজ করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার পথচলায় স্বামী খোন্দকার ফারুক আহমেদসহ অনেকের অকৃত্রিম সহযোগিতা থাকায় কাজ করতে সুবিধা হয়েছে।’

 

আলো ছড়াচ্ছেন নূরজাহান

‘আপন আলোয় উদ্ভাসিত এক মানুষ নূরজাহান আক্তার। সুযোগ পেলে তিনিও হয়তো জ্বলে উঠবেন অনেকের মতো।’ ২০১১ সালের ২৭ জুলাই ‘আলোর পথে নূরজাহান’ প্রতিবেদনের শুরুটা ছিল এমনই। তিনি সুযোগ পেয়েছেন এবং সবাইকে অবাক করে জ্বলে উঠেছেন আত্মপ্রত্যয়ে। সেই নূরজাহান আক্তার এখন কাজ করছেন এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের মোটর ভেহিকেল ডিভিশনে ডকুমেন্টেশন অফিসার হিসেবে।
নূরজাহানের জীবনের শুরুটা এমন ছিল না। জীবনযুদ্ধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সুবিধাবঞ্চিত এই নারীকে চাকরির সুযোগ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। ২০১২ সাল থেকে তিনি এখানে কাজ করছেন।
নূরজাহান এখন আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছেন তাঁর পরিবারে, তাঁর কর্মস্থলে।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মেয়ে নূরজাহান। ‘চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছিলাম। অথচ কোনো চাকরি পাচ্ছিলাম না।’ একটু থেমে আবার বলতে শুরু করেন নূরজাহান। ‘কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। রাতে ঘুম আসত না নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। ’

অন্যের আশ্রয়ে থেকে যেখানে জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়ে, সেখানে নূরজাহান চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। এর পেছনে রয়েছে মা সালেহা বেগমের অবদান। নিজে পড়াশোনা না জানলেও মেয়েকে শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছেন। আর একজনের নাম না বললেই নয়। তিনি আশ্রয়দাতা শাহজাহান মোহাম্মদ মহিউদ্দিন; যাঁর সহযোগিতায় নূরজাহান মিরপুর বাঙলা কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন।

এনার্জিপ্যাকের মানবসম্পদ বিভাগের উপব্যবস্থাপক কাজী জান্নাতুল মাহ্ফুজা জানালেন নূরজাহানের কাজের ব্যাপারে। তিনি বললেন, ‘আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন নূরজাহানের চাকরির ব্যবস্থা করা। আর এটা সম্ভব হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ূন রশীদের চেষ্টায়। এনার্জিপ্যাক সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সব সময় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায়, হতে চায় আলোর পথের যাত্রীদের সহযোগী।’

১৭ এপ্রিল নূরজাহানের বাগদান হয়েছে সরকারি চাকরিজীবী নূরে আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে। নূরজাহানের চোখে এখন অনেক স্বপ্ন। সে স্বপ্ন কেবল নতুন সংসার বা নিজের পেশাজীবন নিয়ে নয়। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কোনো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান নূরজাহান। কাঁধে তুলে নিতে চান তাঁদের দায়িত্ব। হতে চান তাঁদের এগিয়ে চলার সহযাত্রী।

 

নারীদের তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়ার পরামর্শ চুমকির

পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
মঙ্গলবার রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় মহিলা সংস্থার বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অডিটরিয়ামে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাস্তবায়িত জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ (৬৪ জেলা) প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ পরামর্শ দেন।
 তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। নারীর পূর্ণ ক্ষমতায়ন তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান ছাড়া সম্ভব নয়।
জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক সচিব নাছিমা বেগম এবং জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক কবি মো. ফয়সাল শাহ বক্তব্য রাখেন।

 

নারীর গড় মজুরি কমেছে

দেশের মজুরি পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়নি। নারী-পুরুষনির্বিশেষে দুই বছরে মাসিক মজুরি বা বেতন গড়ে মাত্র ৪৯ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে শ্রমিক ও চাকরিজীবীরা প্রতি মাসে গড়ে ১১ হাজার ৫৪২ টাকা মজুরি পান। ২০১৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৪৯৩ টাকা।
আবার পুরুষদের গড় মজুরি বাড়লেও নারীদের কমেছে। দুই বছরের ব্যবধানে নারী শ্রমিক বা চাকরিজীবীদের মজুরি ৩১৯ টাকা কমে গড়ে ১০ হাজার ৮১৭ টাকা হয়েছে। আর ১১২ টাকা বেড়ে পুরুষদের হয়েছে ১১ হাজার ৭৩৩ টাকা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ ২০১৫ সালের ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এ তথ্য পাওয়া গেছে। জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ২ কোটি ৩১ লাখ নারী-পুরুষ মজুরি বা বেতন পান। দুই বছর আগে এমন কর্মজীবীর সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার।
বর্তমান শ্রমশক্তিতে ৬ কোটি ১৪ লাখ নারী-পুরুষ আছেন। এর মধ্যে কোনো না কোনোভাবে কাজে সম্পৃক্ত আছেন ৫ কোটি ৮৭ লাখ। যাঁরা সপ্তাহে কমপক্ষে এক ঘণ্টা করে কাজ করেন, তাঁদের কর্মজীবী হিসেবে ধরা হয়। শ্রমশক্তিতে থাকা বাকিরা সবাই বেকার। কর্মজীবীদের কয়েকটি ধরন আছে। যেমন প্রতিষ্ঠানের মালিক বা নিয়োগকর্তা, মজুরি কিংবা বেতনভুক্ত কর্মী, বিনা মজুরিতে সংসারের কাজে সহায়তাকারী। মজুরি বা বেতনভুক্ত এই বিপুলসংখ্যক কর্মীর মধ্যে ৩৮ শতাংশ বা ৮৭ লাখের বেশি দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি পান। আর অর্ধেক বা প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ নারী-পুরুষ মাস শেষে বেতন পান, চাকরি করেন।
বিবিএসের ২০১৩ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, সে সময়ে একজন নারী কর্মী মাসে গড়ে ১১ হাজার ১৩৬ টাকা মজুরি পেতেন। পরের দুই বছর তাঁদের গড় মজুরি তো বাড়েইনি, বরং কমে ১০ হাজার ৮১৭ টাকা হয়েছে। অন্যদিকে, পুরুষেরা এখন মাসে গড়ে ১১ হাজার ৭৩৩ টাকা মজুরি পান। দুই বছর আগে তাঁরা পেতেন ১১ হাজার ৬২১ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান বলেন, বিবিএস হিসাবটি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) করেছে। তাই পুরো বছরের চিত্র আসেনি। কিছু দিন পর ধান কাটার মৌসুম এলে, এ খাতের দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তবে এখনো পুরুষদের তুলনায় নারীদের মজুরি কম। আবার দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে নারীদের ধান কাটার কাজে নেওয়া হয় না।

বাংলাদেশের শ্রমবাজারের মজুরিভিন্নতা কেমন—সে চিত্রও উঠে এসেছে বিবিএসের সর্বশেষ জরিপে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপকেরা সবচেয়ে বেশি বেতন পান। তাঁরা মাসে গড়ে ২৫ হাজার টাকা পান। বর্তমানে সারা দেশে এমন সাড়ে আট লাখ চাকরিজীবী আছেন। মজুরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অবহেলিত কৃষি খাতের শ্রমিকেরা। তাঁদের মাসে গড় আয় ৮ হাজার ৫৪৩ টাকা। সেই হিসাবে দৈনিক মজুরির পরিমাণ ২৮৪ টাকা।

গ্রাম ও শহরের মধ্যে এ মজুরিবৈষম্য রয়েছে। শহরে একজন শ্রমিক বা চাকরিজীবী মাসে গড়ে ১৩ হাজার ৭৭৬ টাকা পান। আর গ্রামে এর পরিমাণ ১০ হাজার ১২০ টাকা।

বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, বিনা মজুরিতে গৃহস্থালির কাজে সহায়তাকারীর সংখ্যাও গত দুই বছরে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এখনো বিনা মজুরিতে ৭৩ লাখ লোক কাজ করেন। এঁদের অধিকাংশই নারী। গত দুই বছরে প্রায় ৩৩ লাখ লোক এই কাজ ছেড়ে মজুরি পাওয়া যায় এমন কাজে নিয়োজিত হয়েছেন। ২০১৩ সালের শ্রমশক্তি জরিপে বিনা মজুরিতে কাজ করা লোকের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৬ লাখ।

বিবিএসের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, মজুরিহীন কাজ থেকে মজুরি আছে এমন কাজে যোগ দিলে প্রথমে মজুরি কিছুটা কম পাওয়া যায়। এমন কাজে যোগদানকারীদের বেশির ভাগই নারী। তাই নারীর গড় মজুরি কমে গেছে।

 

গরমে আরাম দেবে ২ মিনিটের এই ৪টি খোঁপা

এই গরমে একটুখানি আরাম পাবার জন্য কত কিছুই না করছেন। বদলে ফেলেছেন পোশাক, বদলে ফেলেছেন পছন্দের মেকআপ এমনকি বদলে ফেলেছেন নিজের ফ্যাশন স্ট্যাইলটি। এত কিছু পরিবর্তন করার পরও গরমের হাত থেকে মেলে না রেহাই। বিশেষ করে যারা ঘরে বাইরে কাজ করেন, তাদের সকাল থেকে শুরু হয়ে যায় ছুটাছুটি। এত ব্যস্ততার মধ্যে চুলটি ঠিকমত বাঁধার সময় পান না অনেকেই। একটি হাত খোঁপা অথবা পনিটেল বেনী করে ছুটে যান কর্মস্থলে। আবার অনেকেই এই গরমে চুল আঁচড়ানোর ঝামেলা এড়াতে ছোট করে ফেলেন চুল।

এমন কোন হেয়ার স্টাইল হলে কেমন হয় বলুন তো, যা কম সময়ে দ্রুত করা যাবে। আবার এই গরমে আরামও দেবে। দারুন তাই না? এমনি ৪টি খোঁপার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব আজ আপনাদের। এই ৪টি খোঁপা করতে খুব বেশি সময় লাগে না। গরমে আরাম দেওয়ার পাশাপাশি আপনাকে দিবে স্টাইলিশ লুক।

শুধু কি অফিস? একদমই না, এই খোঁপা বাঁধতে পারেন যেকোন অনুষ্ঠানে। খোঁপার সাথে জুড়ে দিতে পারেন পছন্দের কোন ফুল।

আসুন তাহলে এলিগেণ্ট, স্টাইলিশ ৪টি খোঁপা শিখে নিন ছোট এই ভিডিওর মাধ্যমে।

 

এক্সপার্ট গ্রাফিক্স ডিজাইনার হউন এবং ফ্রিল্যান্সিং এ সফল ক্যারিয়ার গড়ুন

ফ্রিল্যান্সিং কি সে সম্পর্কে মোটামুটি সব মানুষই এখন জানে। তারপরও কারো অজানা থাকতেই পারে। ফ্রীল্যান্সিং হচ্ছে স্বাধীনভাবে কোন কাজ করা। বাংলায় যাকে বলা হয় মুক্ত পেশাজীবি। কিন্তু বর্তমানে ফ্রীল্যান্সিং বলতে যারা অনলাইনে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করে তাদেরকে বুঝায়।

গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ
বর্তমান সময়ের একটি আকর্ষণীয় পেশা হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইন । যারা নিজেদের ক্রিয়েটিভ ধারনাকে রঙ তুলির মাধমে প্রকাশ করতে চান তাদের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি অন্যতম মাধ্যম । অন্যান্য সব চাকরির থেকে গ্রাফিক্স ডিজাইন পেশাটি সবচেয়ে নিরাপদ ও ঝামেলা বিহীন। নিরাপদ ও ঝামেলাবিহীন বলার কারণ হলো অন্যান্য সব পেশার বিপরীতে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কোনো কাজের অভাব হয় না। এটা একটি সন্মানজনক পেশাও।বর্তমান সময়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা খুব বেশি। লোকাল মার্কেটপ্লেস এবং ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে গ্রাফিক্সের অভাবনীয় চাহিদা রয়েছে।

→ এবার তাহলে জেনে নেই গ্রাফিক্স ডিজাইন দ্বারা যে কাজ গুলো সচরাচর করা হয়ঃ
• Photo Editing
• Photo Retouching
• Image Manipulation
• Logo Design
• Web template
• Web Button
• Web Banner
• Advertisement Banner
• Business Cards
• Advertisements
• Book Design
• Brochures
• Billboards
• Product Packaging
• Posters
• Magazine Layout
• Newspaper Layout
• Greeting Cards
• Post Cards
• Flyer Design

→ গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের কর্মক্ষেত্রঃ
• ইন্টার‌অ্যাক্টিভ মিডিয়া
• জার্নাল
• কর্পোরেট রিপোর্টস
• মার্কেটিং ব্রোশিউর
• সংবাদপত্র
• ফ্রিল্যান্সার মার্কেটপ্লেস

→ একজন ভালমানের গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে হলে আপনাকে কি কি জানতে হবেঃ

১. Adobe Photoshop সমন্ধে জানতে হবেঃ
Photoshop এর নতুন ভার্সন Adobe Photoshop CC দিয়ে আপনি প্রায় সব ধরনের ডিজাইন করতে পারেন। সেজন্য আপনার থাকতে হবে একটু সৃজনশীল ধারণা।

২. Adobe Illustrator সমন্ধে জানতে হবেঃ
ভেক্টর গ্রাফিক্স এর কাজ করতে হলে আপনাকে অবসশ্যই Illustrator জানতে হবে। তবে আপনি শুধু Adobe Photoshop CC জেনেও এখানে কাজ করতে পারবেন।

৩. Adobe InDisign সমন্ধে জানতে হবেঃ
Adobe InDesign CC হচ্ছে ইনডিজাইনের সর্বশেষ ভার্সন। বড় মাগাজিনের টাইপোগ্রাফি, লেআউট, ব্রুশিয়ার, বাউচার, ক্যালেন্ডার, ইবুক InDesign এর সাহায্যে খুব সহজে করা যায়। যা Photoshop বা Illustrator দিয়ে করা অনেক সময়সাধ্য এবং কঠিন ব্যাপার।

৪. ডিজাইন সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকতে হবেঃ
একটি সৃজনশীল ডিজাইন দিয়েই আপনি আপনার রয়েলিটি আয় করতে পারবেন। সেজন্য আপনার থাকতে হবে সৃজনশীল ও রুচিশীল ডিজাইনের ধারণা। সেক্ষেত্রে অনেক অনলাইন কমিনিউটি রয়েছে যারা গ্রাফিক্স নবীন গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের সাহায্য করতে পারে। তবে কোন এক্সপার্ট ডিজাইনার আপনাকে সবচেয়ে ভাল সাহায্য করতে পারে।আপনার আশেপাশের এক্সপার্ট থেকে শিখতে পারেন যে কিনা ফ্রীল্যান্স মার্কেটে কাজ করে।

আজ এ পর্যন্তই। আরো নতুন কোন আইডিয়া এবং টিউটোরিয়াল নিয়ে পরর্বর্তীতে আবার হাজির হব। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন।
সবাইকে ধন্যবাদ।

 

দশ বছর পর তাঁদের একসঙ্গে অভিনয়

এ সময় নিয়ে অনেক গবেষণায় হয়েছে। সময় একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না। শুধু বসে বসে ভাবতে হয় আহা সময় যে বয়ে যায়। এই বয়ে যাওয়া সময়ের বছর হিসেবে ১০ বছর। মানে বলছি অভিনেতা জাহিদ হাসান ও অভিনেত্রী নোভার কথা। তারা দুজনই জনপ্রিয় মুখ। টেলিভিশনে এই জনপ্রিয় মুখ দুটো একত্রে দেখেছিলেন কবে বলুন তো পাঠক? নিশ্চয়ই মনে নেই আপনাদের। মনে করিয়ে দিচ্ছি। নির্মাতা অনিমেষ আইচের পরিচালনায় ২০০৬ সালে ‘প্রেম ও ঘামের গল্প’ নামের একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন তারা।

এটা ২০১৬ সাল। গুনে গুনে দশ বছর পর আবারো তারা একসঙ্গে অভিনয় করছেন। দর্শক এই মুখ দুটি আবারও দেখবেন পর্দায়। নাটকটির নাম ‘প্রিন্টিং মিসটেক’। এটি রচনা ও পরিচালনা করেছন জনিপ্রয় নির্মাতা অরণ্য আনোয়ার। ইত্যিমধ্যেই পহেলে মে পূবাইলের বিভিন্ন জায়গাতে নাটকটির দৃশ্যধারণ হয়েছে। আসছে ঈদুল ফিতরে নাটকটি প্রচার হবে একটি বেসরকারী চ্যানেলে।

 

মনে শান্তি এনে দেবে উপত্যকা ভ্রমণ

প্রকৃতি আমাদের প্রেরণা। যখন মন অশান্ত হয়, কিছুই ভাল লাগে না তখন আমরা প্রকৃতির কাছে যাই। মনকে প্রশান্ত করি। কর্মব্যস্ত জীবনের উদ্বেগ, হতাশা সব ভুলে আমরা শ্বাস নিতে চাই। নিজেকে কিছুদিন রাখতে চাই সব বাস্তবতা থেকে দূরে। এই চাওয়া পূরণ করতে হাজারো ভ্রমণপিপাসু মানুষ পাড়ি জমায় দেশ-বিদেশের নানান দিকে, সুন্দর যেখানে হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানায়, আলিঙ্গন করে ভালবেসে।

আপনার ভ্রমণ ডায়েরিতে এবার যোগ করুন উপত্যকা। বিশ্বের চমৎকার এইসব উপত্যকা যেমন শান্তিময় তেমনি চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য্যের আঁধার। আসুন জেনে নিই, বিশ্বের চমৎকার কিছু উপত্যকার কথা।

সাজেক ভ্যালি, বাংলাদেশ
চারিদিকে সবুজ সুউচ্চ পাহাড় আর আর তার মধ্যে অবর্ণনীয় সৌন্দর্য্যের বাস, যার নাম সাজেকভ্যালি। মেঘের রাজ্য সাজেক প্রতি বছর হাজারো দর্শনার্থীদের টেনে নেয় তার কাছে। শীত হোক বা গ্রীষ্ম সাজেক কখনোই হতাশ করবে না আপনাকে। তবে বর্ষায় সাজেকে চলে যাদুর খেলা। এই মেঘ এসে ঢেকে ফেলবে আপনাকে, আবার কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি, রংধণু। রাতের আকাশে তারা খসা দেখতে পারবেন হেলিপ্যাডে শুয়ে শুয়ে। শান্তির আবেশ পুরো গ্রামটিতে। যাতায়াত ব্যবস্থাও ভাল। স্বপ্নের মাঝে কাটিয়ে আসতে পারেন কয়েকটা দিন এখানে। রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত সাজেক ভ্যালি। তবে যেতে হয় খাগড়াছড়ি দিয়ে। দূরের নীল পাহাড় আর আকাশের মিলন হার মানায় রুপকথার গল্পকে।

বরুন ভ্যালি, নেপাল
বরুণ ভ্যালি হিমালয়ান এলাকাভুক্ত এবং মাকালু পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত। এখানে মালাকু বরুণ ন্যাশনাল পার্ক আছে, সারাদিন বেড়াতে পারেন এখানে। যখনই আপনি বরূণ এ যান, এর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের পাশাপাশি এই পার্কটিতে যেতে ভুলবেন না। চারিদিকের পর্বতের সবুজ আর তার মধ্য দিয়ে ছুটে আসা জলপ্রপাত আপনাকে নিশ্চিতভাবেই মুগ্ধ করবে। গভীর গিরিখাতগুলো এখানকার অন্যতম আকর্ষণ।

কালালাউ ভ্যালি, হাওয়াই
হাওয়াইএর কাওয়াই এর একটি দ্বীপে অবস্থান এই ভ্যালির। এই ভ্যালিতে আসতে আসতে চমৎকার যে বীচগুলো পেরিয়ে আসবেন তা ইতিমধ্যেই মন ভাল করে দেবে আপনার। কালালাউ বীচ তার অতুলনীয় সৌন্দর্য্যের জন্য অনেক ভ্রমণকারীরই বাকেট লিস্টে থাকে। আপনি যদি কালাউ ভ্যালি ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তবে জেনে রাখুন কোন যানবাহনই কিন্তু নেই সেখানে। পুরো ভ্যালি ট্রেকিং করে ভ্রমণ করতে হবে আপনাকে। তবে এর সৌন্দর্য্য আপনার সব ক্লান্তি দূর করে দেবে নিমেষে। এই ভ্যালিটিও ঘন সবুজ বৃক্ষে শ্যামল।

লটসচেন্তাল, সুইজারল্যান্ড
এই ভ্যালীটি শুধু বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ভ্যালীর একটিই নয়, এটি সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় আয়তনের ভ্যালী। আপনি যত চান ততো বেড়াতে পারবেন এখানে, ভ্যালীর কোণায় কোণায় ছড়ানো সৌন্দর্য্য, হতাশ হবেন না যেদিকেই যান। এটি ২৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ভ্যালীটিকে ঘিরে আছে অপরূপ সব পর্বতমালা যাদের উচ্চতা ৩০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এর সৌন্দর্য্যের বর্ণনা শেষ হবার নয়। এককথায় লটসচেন্তালের মৎ ২য় সুন্দর ভ্যালী হয় না, এটি অনন্য।

হারাউ ভ্যালি, ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রায় হারাউ ভ্যালির অবস্থান। হারাউ ভ্যালির প্রাকৃতিক দৃশ্য একবার চোখে দেখতে পারা যেন জীবন ধন্য হয়ে যাওয়া। আপনি যখন এই ভ্যালি ভ্রমণ করতে যাবেন পেরিয়ে আসতে হবে চোখ ধাঁধানো পর্বতের সারি, পাথুরে গঠনের ঘন বন আর ধানক্ষেত। আপনি হেঁটেই যেতে পারবেন ভ্যালিতে আর রাত কাটাতে পারবেন স্থানীয়দের ঘরে।

ভ্যালি অব টেন পিকস, কানাডা
এই ভ্যালিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে কানাডা ন্যাশনাল পার্ক। দশটি অপূর্ব ভিন্ন ভিন্ন পিক দ্বারা ঘেরা ভ্যালিটি বিশ্বের সেরা ভ্যালিগুলোর অন্যতম। এখানে একটি মোরিন লেকও আছে যার টলটলে পানিতে প্রতিফলিত হয় পর্বতের চূড়া, চূড়ায় জমে থাকা বরফ, ভ্যালির সবুজ। সবমিলিয়ে মায়াবি মোহময় এক দৃশ্যের সুচণা হয় এই ভ্যালিতে। পাহাড়ের চূড়াগূলোর নাম আগে ছিল ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সংখ্যা। তবে এখন ৭ পর্যন্ত রেখে বাকি ৩ টির ভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে। আপনি মোরিন লেকের তীর ধরে চলে যাওয়া পথ বেয়ে পৌছে যেতে পারেন চমৎকার এই উপত্যকায়।

লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

MRI সম্পর্কে ৯টি তথ্য যা আপনার জেনে রাখা জরুরী

আপনি কি MRI করানোর জন্য তারিখ নির্ধারণ করে ফেলেছেন?  MRI করানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে ফেলেছেন  ? তাহলে আপনার  কিছু তথ্য জানা প্রয়োজন যা আপনার ডাক্তার আপনাকে জানান না। MRI সম্পর্কে এমন কিছু কথাই আজ জেনে নেই চলুন।

১। অবিশ্বাস্য জোরে শব্দ হয়

MRI করার সময় হাতুড়ি পেটার মত বা ড্রিল মেশিন দিয়ে ছিদ্র করার মত প্রচন্ড শব্দ হয়। ৮২-১১৮ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ হতে পারে। তাই MRI টিউবে প্রবেশের পূর্বেই নিজেই ফোম বা সিলিকন এয়ার প্লাগ নিয়ে নিন অথবা তাদের কাছ থেকে চেয়ে নিন। শিশুদের বা কোন কোন বয়স্কদের যারা ভয় পেতে পারেন তাদের জন্য শান্ত থাকার বা ঘুমিয়ে থাকার ঔষধের প্রয়োজন হতে পারে।

২। অনেক বেশি সময় লাগতে পারে

কোন কোন সময় মাত্র ১৫ মিনিটের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে অনেক বেশি সময় লাগতে পারে। যার কারণে আপনার মনে হতে পারে যে ঘন্টার পর ঘন্টা সেখানে থাকছেন। সেজন্য পরীক্ষাটি করতে যাওয়ার সময় সাথে কিছু স্ন্যাক্স জাতীয় খাবার নিয়ে নিন এবং পরীক্ষাটি শুরুর আগে ওয়াশ রুম থেকে ঘুরে আসুন।

৩। উদ্বিগ্নতায় পেয়ে বসতে পারে

MRI মেশিনের ভেতরে আপনার ভয় লাগতে পারে বা আপনি আবদ্ধ অনুভব করতে পারেন। যার কারণে আপনার মধ্যে আংজাইটি দেখা দিতে পারে। তাই মেশিনটির ভেতরে প্রবেশের পূর্বে চোখ বন্ধ করে ফেলা ভালো এবং পরীক্ষাটি চলাকালীন চোখ বন্ধ করে রাখাটাই আপনার জন্য ভালো হবে। পরীক্ষাটি চলাকালীন চমৎকার কিছু চিন্তা করুন, তা হতে পারে আপনার প্রিয়জনদের কথা অথবা আপনার পোষা প্রাণীটির কথা ভাবা। কেউ কেউ এই উদ্বিগ্নতা থেকে মুক্তির জন্য অ্যান্টি অ্যাংজাইটি ঔষধও গ্রহণ করেন।

৪। গহনা খুলে রাখুন

আলগা কোন ধাতুর বস্তু আপনার শরীরে থাকলে আপনি আঘাত পেতে পারেন। কারণ এমআরআই করার সময় শক্তিশালী MRI চুম্বক দিয়ে টানা হয়। তাই আপনার শরীরে যেনো কোন ধরণের জুয়েলারি না থাকে সেই বিষয়ে সতর্ক হোন।

৫। মেকআপ করবেন না

কিছু কসমেটিকের মধ্যে ধাতব উপাদান থাকে যা MRI ম্যাগনেটের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। সেজন্য MRI করার দিন কোন মেকআপ করা ঠিক নয়, এমনকি নেইল পলিশও লাগাবেন না। চুলে কোন প্রসাধন লাগাবেন না, ঘাম নিরোধক বা সানস্ক্রিন ক্রিম ও লাগাবেন না যেগুলোতে ধাতব উপাদান থাকে। এগুলো মেনে চলবেন শুধুমাত্র আপনার নিরাপত্তার জন্য।

৬। আপনার শরীরে লুকানো কোন ট্যাটু থাকলে ডাক্তারকে জানান

এমআরআই করার সময় ত্বক বা চোখ জ্বালা করতে পারে, এমনকি ফার্স্ট ডিগ্রী বার্ন হতে পারে। ট্যাটুর রঞ্জক বা ট্যাটুর আইলাইনার গরম হয়ে এমন ঘটতে পারে। এদেরকে ঢেকে রাখলেও তেমন কোন লাভ হয়না। যতি ত্বকের জ্বালা শুরু হয় তাহলে MRI করা তখনই বন্ধ করে দিতে হবে পুড়ে যাওয়া রোধ করার জন্য।

৭। শান্ত থাকুন

যেহেতু MRI রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে করা হয়, তাই MRI করার সময় কিছুটা গরম লাগতে পারে। আপনার দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু ভয় পাবেন না – কারণ এটি বিপদজনক কিছু নয়।

৮। দ্বিতীয়বার করতে হতে পারে

যদি  MRI করার সময় আপনি নড়াচড়া করেন তাহলে আবারো ছবি তোলার প্রয়োজন হতে পারে। অর্থাৎ প্রক্রিয়াটি প্রথম থেকে শুরু করতে হতে পারে।

৯। এটি  CAT  স্ক্যান নয়

এমআরআই এ শক্তিশালী ম্যাগনেটিক ফিল্ড এবং রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করা হয়। এটি CT     বা      CAT    স্ক্যান নয় যা এক্সরে তে ব্যবহৃত হয়। তাই MRI করার সময় রেডিয়েশন বা বিকিরণ নিয়ে চিন্তা করবেন না।

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

 

শিশুর সুন্দর এবং অর্থবহ নামের গুরুত্ব

ইসলামে নামের গুরুত্ব সর্বাধিক কারণ কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদেরকে নাম এবং তার পিতার নাম ধরে ডাকবেন। হযরত আবু দারদা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের নামে এবং তোমাদের পিতার নামে। অতএব তোমাদের নামগুলো সুন্দর করে রাখ। (আবু দাউদ, বায়হাকী ও মুসনাদে আহমদ)

শিশুর জন্ম মানব মনে আনন্দের দোলা দিয়ে যায়। একটা নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয় একটা শিশুর জন্মের সাথে সাথে। বাচ্চার জন্ম হওয়ার পর বাবা-মা’র পরিচয় অনেক সময় পরিবারের পরিচয়ও সন্তানের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। মানুষজন বাবা-মাকে সন্তানের নামের সাথে মিলিয়ে ডাকতে শুরু করে। শিশু জন্মের পর প্রথম প্রয়োজন একটা সুন্দর আর্থবহ নামের, এটা তার মৌলিক অধিকার, এরশাদ হচ্ছে “আল্লাহ নিজে সুন্দর, তাই তিনি সুন্দরকে ভালবাসেন”। নাম সংস্কৃতি ও সভ্যতার পরিচায়ক, একটা জাতির স্বকীয়তা, সৌহার্দ ফুটে উঠে তাদের সন্তানদের নামের সাথে।শিশুর জন্য সুন্দর নাম নির্বাচন করা পিতা-মাতার অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। মানুষ মাত্রই সুন্দরের জন্য লালায়িত। একটি শিশু জন্ম গ্রহণের আগেই মা-বাবা একটি সুন্দর নামের খোঁজে সদা ব্যস্ত থাকেন। সুন্দর নাম রাখার চাইতে এই শিশুর জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার আর কিছু হতে পারে না। নামের প্রভাব সন্তানের উপর লক্ষণীয় ফলে সুন্দর নামের পাশাপাশি সুন্দর অর্থও থাকা জরুরী। আল্লাহর রাসুল সা কারো নামে অসংগতি বা নাম অপছন্দনীয় মনে হলে সাথে সাথে পরিবর্তন করে তিনি উত্তম নাম দিতেন। হযরত আবদুর রহমান (রা) বলেন, “আমি রাসূল (সা)এর নিকট উপস্থিত হলাম। তিনি প্রশ্ন করলেন? তোমার নাম কি? আমি বললাম, আমার নাম আবদুল উজ্জা। তিনি বললেন, ‘না তোমার নাম আবদুর রহমান, অন্য রেওয়ায়েতে আছে, আমার নাম আজিজ, মহানবী (সা) বললেন, ‘আজিজ তো আল্লাহ! (উজ্জা একটি মুর্তির নাম। আবদুল উজ্জা মানে হলো উজ্জার দাস এবং কাউকে আজিজ বলে ডাকাও নিষেধ।

ইসলামে নামের গুরুত্ব সর্বাধিক কারণ কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদেরকে নাম এবং তার পিতার নাম ধরে ডাকবেন। হযরত আবু দারদা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের নামে এবং তোমাদের পিতার নামে। অতএব তোমাদের নামগুলো সুন্দর করে রাখ। (আবু দাউদ, বায়হাকী ও মুসনাদে আহমদ)

নাম সুন্দর হওয়া এবং সুন্দর উচ্চারণে ডাকা কোনমতেই উপেক্ষার সুযোগ নেই।ইসলামের দৃষ্টিতে অর্থবহ এবং সুন্দর নাম বলতে বুঝায় ওই সমস্ত নাম,যে নামের মধ্য দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা,দাসত্ব প্রকাশ পায়। আল্লাহর প্রিয়পাত্র নবী-রাসুলদের বরকতময় নামসমূহ।যে নামের দ্বারা আল্লাহর রহমত, করুণা ও মহত্ত্ব ফুটে উঠে সে ধরনের নাম রাখা উত্তম।কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এরশাদ করেন “সুন্দরতম নাম সমূহের অধিকারী আল্লাহ, অতএব তোমরা সেসব নাম ধরে তাঁকে ডাকো। যারা তাঁর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন করো, তাদের কৃত কর্মের ফল তাদেরকে দেওয়া হবে।” (সূরা আরাফ-১৮০), আল্লাহর নিকট পছন্দনীয় নাম হলো আবদুল্লাহ এবং আবদুর রহমান। প্রিয় নাম হলো হারেস এবং হাম্মাম। অত্যন্ত অপছন্দের নাম হলো হারব ও মুররাহ। ইসলামী ঐতিহ্যের স্বয়ংসম্পুর্ন রুপরেখা সৌন্ধর্য চেতনা রক্ষাকরা সকল মুসলমানের দায়িত্ব কর্তব্য।এর জন্য প্রয়োজন একটা সুন্দর নামকরণের। ইসলামের চেতনা, সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক কোন নাম রাখা উচিত নয়।

মাওলানা সাকিব মুস্তানসির
আলেম ও বস্ত্র প্রকৌশলী

 

কোন কোন সময়ে নফল নামাজ পড়া মাকরুহ?

দিন রাতে সব মিলিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। এর বাইরে একজন মুসলিম যতো খুশি ব্যক্তিগত নফল নামাজ আদায় করতে পারে। যার কোনো সীমারেখা নির্ধারিত নেই। কিন্তু প্রতি ২৪ ঘণ্টায় কিছু সময় এমন আছে যখন নফল নামাজ পড়া মাকরুহ। নিচে এ সময়গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।

দিন রাতে সব মিলিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। এর বাইরে একজন মুসলিম যতো খুশি ব্যক্তিগত নফল নামাজ আদায় করতে পারে। যার কোনো সীমারেখা নির্ধারিত নেই। কিন্তু প্রতি ২৪ ঘণ্টায় কিছু সময় এমন আছে যখন নফল নামাজ পড়া মাকরুহ। নিচে এ সময়গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।

১. ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকে ফরজ নামাজের আগ পর্যন্ত ফজরের দুই রাকাত নামাজ ছাড়া অন্য কোনো নফল নামাজ পড়া মাকরুহ। হযরত হাফসা রা. বলেন, ‘ফজরের ওয়াক্ত শুরু হলে রাসুল (সা.) সংক্ষিপ্ত দুই রাকাত নামাজ ছাড়া আর কোনো নামাজ পড়তেন না।’ তবে এ সময়ে কাযা নামাজ পড়া যাবে।

২. মাগরিবের নামাজের পূর্বক্ষণে। ফিকহে হানাফী এবং ফিকহে মালেকীর মতে মাগরিবের ওয়াক্ত হওয়ার পর ফরজ নামাজের আগে কোনো নফল নামাজ পড়া জায়েয নেই। অবশ্য ফিকহে শাফেয়ী মতে এই সময়ে দুই রাকাত নামাজ পড়া সুন্নতে গাইয়ে মুয়াক্কাদা। আর ফিকহে হাম্বলী মতে এই সময়ে দুই রাকাত নামাজ পড়া জায়েয আছে বটে তবে তা সুন্নাত নয়।

৩. ইমাম খুতবা দেওয়ার জন্য নিজের জায়গা থেকে উঠে দাঁড়ালে। এ সময় কোনো নফল নামাজ পড়া জায়েয নেই। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন ইমাম সাহেব খুতবা দেওয়ার সময় যদি তুমি তোমার পাশের লোককে বল ‘চুপ কর’ তাহলেও তুমি অনর্থক কাজ করলে।’ (সুবুলুস সালাম ২/৫০) ফিকহে শাফেয়ী ও হাম্বলী মতে যদি ইমামের সাথে তাকবীরে উলা ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে এই সময়ে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়ার অবকাশ আছে। তবে শুধু নামাজের ওয়াজিবগুলো আদায়ের মাধ্যমে তা সংক্ষিপ্ত সময়ে শেষ করতে হবে।

৪. ঈদের নামাজের আগে ও পরে ঘরে ও ঈদগাহে এবং নামাজের পরে শুধু ঈদগাহে নফল নামাজ পড়া মাকরুহ। হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, ‘রাসুল (সা.) ঈদের দিন দুই রাকাত নামাজ পড়েছেন। তার আগে ও পরে কোনো নামাজ পড়েন নি।’ (সুবুলুস সালাম ২/৬৬)

৫. ফরজ নামাজের ইকামত দেওয়ার সময়। ফিকহে হানাফী মতে এ সময় সব ধরনের নফল নামাজ পড়া মাকরুহ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ফরজ নামাজের ইকামত দেওয়া হলে আর কোনো নামাজ পড়ার সুযোগ নেই।’ তবে ফজরের সুন্নতের ক্ষেত্রে এর একটু ব্যতিক্রম আছে। কারো যদি তাশাহহুদে শরীক হওয়ার মাধ্যমেও জামাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে জামাত শুরু হলেও ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়া যাবে।

৬. যদি ফরজ নামাজের সময় খুবই অল্প থাকে, যখন সুন্নাত পড়তে গেলে যথাসময়ে আর ফরজ পড়া যাবে না তখনও ফরজ ছাড়া ভিন্ন কোনো সুন্নাত নফল পড়া মাকরুহ।

৭. আরাফার দিন জোহর ও আসরের মাঝে ও আসরের পরে এবং মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার মাঝে ও এশার পরে নফল নামাজ পড়া মাকরুহ।

ফয়জুল আল আমীন

 

কুপনের মাধ্যমে পুরস্কারের আশায় পণ্য ক্রয় করা : কী বলে ইসলাম ???

এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান হল, যদি দোকানদার পণ্যের দাম বাজার মূল্যের সমান রাখে তাহলে পুরস্কার পাওয়ার আশায় তার কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করা জায়েয হবে এবং পুরস্কারের কুপন অথবা কার্ডের উপর লটারীর মাধ্যমে যেই পুরস্কার দেয়া হবে তা গ্রহণ করাও জায়েয হবে। এই পুরস্কারটি হবে দোকানদারের পক্ষ থেকে উপহার।

অনেক দোকানদার তাদের পণ্য বেশি বেশি বিক্রি করার জন্যে গ্রাহকদেরকে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করে থাকে। যদি কেউ তাদের দোকান থেকে তাদের পক্ষ থেকে নির্ধারিত পরিমাণের পণ্য ক্রয় করে তাহলে তাকে একটি কুপন বা কার্ড দেয়া হয়। এধরনের কুপন বা কার্ডে লটারীর নম্বর দেয়া থাকে। ক্রেতার নামের সাথে নম্বরটি লিখে রাখা হয়। অতপর ক্রেতা সেই কুপন বা কার্ড লটারীর বাক্সে রেখে দেয়। যদি তার নম্বর লেগে যায় তাহলে তাকে বিভিন্ন পুরস্কার দেয়া হয়।

এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান হল, যদি দোকানদার পণ্যের দাম বাজার মূল্যের সমান রাখে তাহলে পুরস্কার পাওয়ার আশায় তার কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করা জায়েয হবে এবং পুরস্কারের কুপন অথবা কার্ডের উপর লটারীর মাধ্যমে যেই পুরস্কার দেয়া হবে তা গ্রহণ করাও জায়েয হবে। এই পুরস্কারটি হবে দোকানদারের পক্ষ থেকে উপহার।

যা কোনো জিনিসের বিনিময়ে হবে না। আর যদি ক্রয়কৃত জিনিসের মূল্য পুরস্কারের কুপনের কারণে বাজারদরের চেয়ে বেশি রাখা হয়, অর্থাৎ ঐ পণ্যটি পুরস্কারের কুপন ছাড়া কিনলে কম দামে কেনা যাবে, তাহলে এমতবস্থায় সম্ভাবনাময় পুরস্কার পাওয়ার লোভ করা নাজায়েয ও হারাম হবে। অবশ্যই তা বর্জন করতে হবে। কেননা এটি তখন জুয়ার মধ্যে অন্তর্ভুক্তহয়ে যাবে। যা শরীয়তমতে হারাম। [আধুনিক লেনদেনের ইসলামী বিধান : ১৩৫]

মাওলানা আবদুল্লাহ আল ফারুক
লেখক, আলেম ও বহু গ্রন্থের অনুবাদক

 

সকালে, দুপুরে বা রাতে হয়ে যাক ইজি ঝাল ফ্রেজি

আজ আমরা নিয়ে এসেছি এমন একটা রেসিপি, যা কিনা সকালের ব্রেকফাস্ট টেবিলে দারুণ লাগবে রুটি বা পরোটার সাথে। আবার ভীষণ ভালো লাগবে দুপুর কিংবা রাতের গরম ভাতের সাথেও! ভীষণ মজার এই রেসিপিটি নিয়ে এসেছেন শৌখিন রন্ধনশিল্পী সায়মা সুলতানা।
প্রথমে যা করবেন-
হাড় ছাড়া মুরগির মাংশ টুকরা ২ কাপ
ডিম ১ টি
ময়দা ১/৪ কাপ
এরারুট ১ টেবল চামচ
টেস্টিং সল্ট ১ চা চামচ ( না দিয়েও করতে পারেন)
লাল মরিচ গুঁড়ো হাফ চা চামচ
লবণ স্বাদমত
লেবুর রস ১ টেবল চামচ
  • -উপরের সব উপকরণ একসাথে মাখিয়ে রাখুন ১ ঘন্টা , এবার মাখানো পিসগুলো ডুব তেলে হালকা বাদামী করে ভেজে তুলে রাখুন.
এবার গ্রেভি তে যা লাগবে-
আদা কুচি ২ চা চামচ
রসুন কুচি ২ চা চামচ
টমেটো সস ৩ টেবল চামচ
সয়া সস ২ টেবল চামচ
হলুদ গুঁড়ো হাফ চা চামচ
মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ ( কম বেশি করতে পারেন )
গরম মশলা গুঁড়ো ১ চা চামচ
পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ
তেল ৩ টেবল চামচ ( হেলদি করতে চাইলে কম দিতে পারেন )
প্রনালি
  • -এখন প্যানে তেল দিয়ে গরম হলে আদা রসুন দিন , এবার দিন টমেটো সস আর সয়া সস।
  • -নাড়াচাড়া করে একে একে বাকি সব মশলা দিন , অল্প পানি আর কিছু টমেটো টুকরা দিয়ে মশলা মিডিয়াম আঁচে কষিয়ে নিন।
  • -এবার এতে আপনার পছন্দ মত কেপসিকাম কিউব ( সবুজ ও লাল রঙের ) , স্বাদমত লবণ ,কাচামরিচ ফালি , আর ভেজে রাখা মুরগির পিসগুলো দিয়ে ভালোভাবে নেরে দিয়ে কম আঁচে রান্না করুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট।
  • -নামানোর সময় অল্প লেবুর রস ছিটিয়ে দিন,হয়ে এলে নামিয়ে গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন।
 পোলাও-এর সাথেও পরিবেশন করতে পারেন এই ঝাল ফ্রেজি !

 

মজুরি বৈষম্যের শিকার পঞ্চগড়ের নারী পাথরশ্রমিকরা

মোরগের ডাকে ঘুম থেকে উঠে সংসারে সবার খাবার আয়োজন। ছেলেমেয়েদের খাইয়ে স্কুলে পাঠানো। বাড়ির সব কাজ শেষ করে নিজে অল্প খেয়েই সকাল ৭টায় হাজির হতে হয় কর্মস্থলে। গ্রীষ্মের দুপুরের সূর্য দেবতার সবখানি তেজ লাগে তাদের সারাগায়ে। রোদে পুড়ে পুড়ে শরীরের চামড়া কালো হয়ে গেছে। চোখের নিচে কালো ছায়া পড়েছে। তবু দুচোখ ভরা স্বপ্ন ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাবার। স্বপ্ন একটু ভালভাবে বাঁচবার। দিনের দিনের পর দিন এভাবেই কাটে তাদের। সমান কাজ করেও মজুরি মিলে পুরুষের অর্ধেক। রোজগারের এ চিত্র পঞ্চগড়ের নারী পাথর শ্রমিকদের।

উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সনদে নারী পুরুষ সমঅধিকারের কথা বলে হলেও বাস্তবে তার ভিন্ন চিত্র দেখা মিলে দেশের সর্ব উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড় জনপদে। সারাদিন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের সমান শ্রম দিয়েও তাদের মজুরি মিলে অর্ধেক। কর্মস্থলে নেই নারীদের কাজ করার তেমন পরিবেশও। তবু জীবন জীবিকার তাগিদে এই কম মজুরিতেই হাজার হাজার নারী কাজ করে যাচ্ছেন এই জনপদে। ধরেছেন সংসার পরিচালনার হালও।

এক হিসাব মতে জানা গেছে পঞ্চগড়ের পাঁচ উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার নারী বিভিন্ন শ্রম পেশায় নিয়োজিত। এদের কেউ অবকাঠামো নির্মাণ কাজ, কেউ চা বাগানে, কেউ কৃষি কাজে, কেউ মাটি কাটা কাজে আবার কেউ পাথর শিল্পে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। তবে শুধুমাত্র পাথর শিল্পেই প্রায় ৩০ হাজার নারী শ্রমিক কাজ করে বলে জানা গেছে।

নারীদের এই বিরাট অংশ শ্রম পেশায় একদিনে আসেনি। ধীরে ধীরে নিজেদের প্রয়োজনে সকল বাধা পেরিয়ে তারা আজ নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়েছে।

এক সময় এই জনপদে শ্রম পেশায় নারীদের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। কিন্তু স্বাধীনতার পরে ব্যাপক অভাব অনটন দেখা দেয়ায় নিজেদের প্রয়োজনে তারা কাজে নেমে পড়ে। পঞ্চগড়ের আটোয়ারী, পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়ায় পাথর শিল্পের বিকাশ হলে নারীরাও কাজ করার সুযোগ পায়। এভাবেই একজনের দেখাদেখি আরেকজন কাজে যোগ দেয়। শুরুতে পাথর ব্যবসায়ীরা নারীদের কাজে নিতে চায়নি। এ সময় কাজ করতে লোকজনের নানা গুঞ্জনাও শুনতে হতো। তবু সব বাধা পেরিয়ে পাথর শিল্পে কাজ শুরু করে পঞ্চগড়ের নারীদের এই বিরাট অংশ। ক্রমে ক্রমে পঞ্চগড়ের পাথর শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে হাজার হাজার নারী শ্রমিকের জীবন।

‘কাজে ভাত’ এমন কথার উপর ভিত্তি করেই হাজার হাজার নারীরা আজ নিজেদের খোলস থেকে বের হয়ে কাজে যোগ দিয়েছে। নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরেছে নারীরা। একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে তারা।

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পেরিয়ে গেছে। বদলে গেছে লাল সবুজের বাংলাদেশ। তথ্য প্রযুক্তি আর নানা শিল্পে বাংলাদেশ এখন অন্যদের কাছে উদাহরণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আজও শ্রমের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নারীরা।

সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যে ৭টা পযন্ত ১২ ঘণ্টার রৌদ্রের খরতাপে কাজ করে একজন নারী শ্রমিক মজুরি পান ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। অন্যদিকে একই সমান কাজ করে পুরুষ শ্রমিকরা মজুরি পান ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

কম মজুরিতে নারী শ্রমিকদের দ্বারা বেশি কাজ আদায় করা যায় বলে পাথর ব্যবসায়ীরাও নারী শ্রমিকদের নিয়ে আগ্রহ দেখায়। মজুরি বেশি দাবি করলে তাদের আর কাজে নেয়া হয় না বলেও অভিযোগ করেন অনেকে। তাই ঘরে বসে থাকার চেয়ে কম মজুরিতেই কাজ করেন তারা। খাবার সময় শুধু একটু বিশ্রাম মিলে তাদের। সেই সময়ে সবাই বাড়ি থেকে রান্না করে আনা খাবার খায়।

অন্যদিকে, নারীদের কাজ করার মতো এখনো তেমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়নি অধিকাংশ পাথরের কর্মস্থলে। নেই কোনো ল্যাট্রিন ও বিশ্রামাগার। তাই দুপুরের খাবারের পর গাছের ছায়ায় পাথরের উপরই শুয়ে বসে একটু বিশ্রাম করে তারা। কোনো কারণে নারী শ্রমিকরা অসুস্থ বা আহত হলে তারা পায় না কোনো বিশেষ ভাতা ও মালিকদের সহায়তা। কিন্তু তারপরও চলে জীবিকার সংগ্রাম।

পঞ্চগড় জেলা সদরের ১০ মাইল পতিপাড়া এলাকার নারী পাথর শ্রমিক রাশিদা খাতুন (৬৫) জানান, তার আয় দিয়েই ৬ জনের সংসারের খরচের জোগান হয়। স্বামী বৃদ্ধ তাই তেমন রোজগার করতে পারেন না। মায়ের পাথর ভাঙার কাজের মজুরি দিয়েই বড় দুই ছেলে মানিক ও রাসেলকে হাফেজি মাদরাসায় ও মেয়ে জেসমিন আরা দশম শ্রেণিতে এবং সবার ছোট ছেলে তারেক কিন্ডার গার্টেন স্কুলে কেজি শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ দিয়ে যে সামান্য টাকা থাকে তাই দিয়েই কোনোমতে চলে সংসার। এদিকে ঋণের টাকাও শোধ করতে হয় রাশিদাকেই। প্রতি সপ্তাহে আশা এনজিওকে তার ৭০০ টাকা করে পরিশোধ করতে হয়।

তার মতো আরেক নারী পাথর শ্রমিক আমেনা খাতুন (৬২)। বাড়ি পঞ্চগড় জেলা সদরের ভিতরগড়। স্বামী মারা গেছেন বিশ বছর আগে। ১ ছেলে ১ মেয়েকে বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমেনাকে খাওয়ানোর ভার কেউ নেয়নি। তাই বেঁচে থাকতে বৃদ্ধ বয়সেও তাকে পাথর ভাঙার কাজ করতে হয়।

শুধু রাশিদা, আমেনা নয় এমন চিত্র হাজার হাজার পাথর শ্রমিকদেরই। নিজে রোদে পুড়ে পুড়ে হাসিমুখে তাদের সংসার বাঁচানোর সংগ্রাম সত্যিই সকল উদাহরণ হার মানিয়ে দেয়।

পাথর ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন জানান, এ এলাকার নারীরা তেমন অন্য কোনো কাজ পায় না তাই পাথর ভাঙার কাজ করতে আসে। আমরা সাধ্যমতো তাদের মজুরি দেয়ার চেষ্টা করি।

জেলা নারী বিষয়ক কর্মকর্তা রুখশানা মমতাজ জানান, আমরা কোনো দিবস আসলেই কেবল নারীদের সমঅধিকারের কথা বলি। কিন্তু বাস্তবে নারীরা সমঅধিকার পাচ্ছে না। নারী পাথরশ্রমিকরা পাচ্ছে না তাদের ন্যায্য অধিকার। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের একার পক্ষে এই আন্দোলন সফল করা সম্ভব নয়।  নারীদের অধিকার আদায়ে আমাদের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।

নারী পাথরশ্রমিকদের স্পর্শে এ অঞ্চলের পাথর শিল্প পৌঁছে গেছে দেশের সর্বত্র। তাই নারীদের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি নিশ্চিত করতে হবে তাদের অধিকার ও ন্যায্য মজুরি এমনটাই প্রত্যাশা জেলার সচেতন মহলের।

 

ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ ১০ জয়িতাকে সংবর্ধনা

পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ ১০ জয়িতাকে সংবর্ধনা দিয়েছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের আয়োজনে এ সংবধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।

অনুষ্ঠানে প্রথম শ্রেষ্ঠ ৫ জয়িতা নির্বাচিত হলেন- অর্থনীতেতে রাজিয়া বেগম, শিক্ষা ও চাকরিতে ড. শাহিদা আক্তার, সফল জননী সেলিনা আমিন, নির্যাতিতা হয়েও নতুন উদ্যোগে জীবন গড়ার পুরস্কৃত হয়েছেন মর্জিনা বেগম, সমাজসেবায় আরিফা ইয়াসমিন ময়ূরী।

এছাড়া দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ ৫ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন-  মমতাজ বেগম, প্রফেসর ড. শিরীন বেগম, মনোয়ারা বেগম, আমেনা বেগম ও মাজেদা বেগম।

ঢাকা বিভাগের ১৭টি জেলার মধ্যে থেকে এই শ্রেষ্ঠ ১০ জন জয়িতাকে বাছাই করা হয়েছিল বলে জানান ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমদ।

এর আগে ঢাকা বিভাগের ১৭টি জেলার ৭৩ জন নির্বাচিত সাধারণ জয়িতাকে ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেয়া হয়।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘জয়িতা মানে বিজয়ী। শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও যে সব নারী নিজেদের মেধা, শ্রম ও যোগ্যতা দিয়ে নিজেকে  এবং দেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে গেছেন তাদের সংবর্ধনা দেয়ার  জন্যই আজকের এই অনুষ্ঠান।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পিছিয়ে পড়া নারীদের এগিয়ে নিতে চাই। এজন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে তাদের ক্ষমতায়নের প্রয়োজন। আজকে যারা পুরস্কৃত হচ্ছে তারা দৃষ্টান্ত। তাদের দেখে অন্যদের এগিয়ে আসতে হবে।’

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাপতি রেবেকা মোমেন বলেন, ‘সরকার থেকে নারীদের সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু সাহায্য পেলেই নারীরা ওপরে উঠতে পারে না। তাদের দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয়। আমি আশা করি, আপনারা সবাই সমাজের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন। দৃঢ়তার সাথে আরো সাফল্যমণ্ডিতভাবে এগিয়ে যাবেন।’

ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য দেন- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহিন আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।

 

নারী উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দের দাবি

আসন্ন জাতীয় বাজেটে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ বাস্তবায়নকল্পে গৃহীত জাতীয়  কর্মপরিকল্পনার ধারাবাহিক বাস্তবায়ন এবং শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকরণে বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ।

বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বিষয়ের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ।

তিনি বলেন, জাতীয় নারীনীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নে প্রয়োজন নেতৃত্ব ও দক্ষতার সঙ্গে কার্যক্রম সম্পাদন, সমন্বয় ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার।

তিনি আরো বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের মোট বাজেটের মাত্র ২৬ দশমিক ৮০ ভাগ নারীদের জন্য বরাদ্দ ছিল। এভাবে বাজেটে উপেক্ষিত থাকলে নারীদের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।

এ সময় তিনি নারী ও কিশোরী নির্যাতন বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মেয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন থেকে আত্মরক্ষায় সক্ষম করে তুলতে বিদ্যালয়ে ও কমিউনিটিতে দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা বলেন, শহরে ও বিদ্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের চলাফেরা করতে হিমশিম খেতে হয়। তাই সবক্ষেত্রে মেয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিআইডিএসর  সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. প্রতিমা পাল মজুমদার বলেন, সঠিক মনিটরিং না থাকার কারণে নারী ও পুরুষের মজুরি সমান হচ্ছে না। কমিউনিটি ক্লিনিকে নারী চিকিৎসক না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমরা এখনো মাতৃ মৃত্যুহার কমাতে পারছি না। তাই এসব সেবা বৃদ্ধি করতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।

সভায় বক্তারা বলেন, বাজেটে নারীর গুরুত্ব তুলে ধরে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখতে হবে। তবেই নারীরা আরও গতি নিয়ে কাজ করতে পারবেন। নারীদের নিরাপত্তা বজায় রাখতে অবশ্যই বাজেটে বিশেষ কিছু রাখতে হবে এবং বরাদ্দগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির।

 

ইসলামের দৃষ্টিতে দাম্পত্য জীবন

স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে এটি ইসলামী পারিবারিক জীবনের কাম্য বিষয়। স্বামী কিংবা স্ত্রী কারও অবিশ্বস্ততাকে ইসলাম অনুমোদন করে না। কোনো স্বামী-স্ত্রীর বদলে অন্য কোনো নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তুললে তা ইসলামী অনুশাসনে মারাত্মক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। একইভাবে কোনো স্ত্রী পর পুরুষের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুললে সেটিও একই ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। রোজ কেয়ামতেও ব্যভিচারের অপরাধে জড়িত পুরুষ বা নারীর স্থান হবে জাহান্নাম।ইসলাম স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সদাচরণের ওপর গুরুত্ব দেয়। স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর অসদাচরণের জন্য তাকে যেমন রোজ কেয়ামতে জবাবদিহি করতে হবে, তেমন কোনো নারী স্বামীর সঙ্গে অসদাচরণ করলে তাকেও জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে বিরোধ মীমাংসা করা হবে তা হলো- এক স্বামী ও তার স্ত্রীর বিরোধ। আল্লাহর শপথ! (সে সময়) স্ত্রীর জিহ্বা কথা বলবে না, বরং তার হাত-পা সাক্ষ্য দেবে, পৃথিবীতে সে তার স্বামীর সঙ্গে এই এই আচরণ করেছে। আর স্বামীর হাত-পাও সাক্ষ্য দেবে, সে তার স্ত্রীর সঙ্গে এই এই ভালো আচরণ বা এই এই খারাপ আচরণ করেছে। অতঃপর আল্লাহর এজলাসে মনিব ও কর্মচারী সংক্রান্ত মামলা উঠবে। সেদিন কোনো আর্থিক জরিমানা করে বিরোধ মিটানো হবে না। বরং মজলুমকে জালিমের নেক আমলগুলো দিয়ে দেওয়া হবে এবং মজলুমের বদ আমলসমূহ জালিমের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হবে। অবশেষে প্রতাপশালী অহংকারী অত্যাচারীদের লোহার জিঞ্জিরে পেঁচিয়ে হাজির করা হবে। অনন্তর বলা হবে তাদের ধাবমান করে জাহান্নামে নিয়ে যাও।’ -তাবরানি।ইসলামের দৃষ্টিতে সেই ব্যক্তিই উত্তম, যে তার স্ত্রীর দৃষ্টিতে উত্তম। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি উত্তম হিসেবে বিবেচিত হবে কিনা তা তার স্ত্রীর সার্টিফিকেটের ওপর নির্ভর করবে। মানুষ যাতে স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকে তার আস্থা অর্জনের চেষ্টা করে পারস্পরিক ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয় তা উৎসাহিত করতে স্বামীর উত্তম হিসেবে বিবেচিত হওয়ার বিষয়টি স্ত্রীর বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইসলামের এ বিধান পারিবারিক জীবনে স্ত্রীর মর্যাদাকে মহিমান্বিত করেছে।আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ সাল্লিল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লাম এর নির্দেশনা অনুযায়ী চললে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।

 

কেমন হওয়া উচিত একজন নারীশ্রমিকের কর্মক্ষেত্র?

নারীবান্ধব পরিবেশ হওয়ার কারণে কর্মক্ষমতাও বেড়ে যাবে বহুগুণ, ফলে রাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা আরো সচল হবে । পাশাপাশি সমাজ থেকে ইভটিজিং, এসিড ও ধর্ষণের মত অপরাধ অনেক কমে আসবে । নারী পুরুষ আলাদা কর্মক্ষেত্রে থাকায় অনৈতিক সম্পর্কের সুযোগ কমে আসাবে ফলে পারিবারিক বন্ধন আরো দৃঢ় হবে । সর্বোপরি আল্লাহব হুকুম ফরজ পর্দা পালন করার মাধ্যমে ইহ ও পারলৌকিক সমৃদ্ধিতে বলিয়ান হবেন নারী শ্রমীক ।

বাংলাদেশের শিল্প কারখানায় নানা পেশায় ক্রমশ জড়িয়ে পরছে নারী শ্রমিক, পোশাক শিল্পের সাথে জরিত শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ৭৫/৮০ ভাগ নারীশ্রমিক । যে নারী বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা টেনে নিয়ে যাচ্ছে তার জন্য প্রথম প্রয়োজন নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশ , প্রয়োজন আলাদা কর্মক্ষেত্রের। যা তার জন্য পর্দার ফরজ হুকুম যথাযথ পালনের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করবে। পুরুষ নিয়ন্ত্রিত এই সব কর্মক্ষেত্রে নারিশ্রমিক প্রায়ই নিগৃহীত হচ্ছেন নানাভাবে । বৈতনিক অসমতা থেকে শুরু করে পুরুষ শ্রমিক দ্বারা মৌখিক ও শারিরিকভাবেও লাঞ্চিত হতে হচ্ছে অহরহ । পুরুষ শ্রমিকদের সাথে একই প্লাটফর্মে কাজ করার কারণে মানসিক চাপে ভোগেন অধিকাংশ নারীশ্রমিক । নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ থাকার কারণে শ্রমিকরা প্রায়শই জড়িয়ে যাচ্ছেন অনৈতিক সম্পর্কে। এতে সমাজের পারিবারিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে । অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে অনেকের ভবিষ্যৎ । অনেক সন্তান বাবা-মা হারিয়ে আর্তের মত জীবন যাপন করছে । ফলে সমাজে ইভটিজিং, এসিড, ধর্ষণের মত অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। চলমান এ অবস্থার পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি । প্রয়োজন নারীশ্রমিকের জন্য নারী-বান্ধব আলাদা কর্মক্ষেত্র।

নারীশ্রমিকের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে যা করা প্রয়োজন : ১. নারী শ্রমিকদের জন্য আলাদা শেডের ব্যাবস্থা করা। ২. মহিলা শ্রমিকদের জন্য মহিলা সুপারভাইজার, ইনচার্জ, ম্যানেজারের ব্যাবস্থা করা । ৩. উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করা ও ভারী কাজ থেকে বিরত রাখা । ৪. উপযুক্ত আবাসন ও প্রয়োজনীয় পরিবহনের ব্যাবস্থা । ৫. মহিলা চিকিৎসকের মাধ্যমে নিয়মীত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা । ৬. অসুস্থতাকালীন সময়ে কাজের চাপ কমিয়ে দেয়া । ৭. হাতের নাগালে পর্যাপ্ত খাবার পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যাবস্থা রাখা । ৮. পরিচ্ছন্ন খাবার ঘর ও নামাজ ঘরের ব্যাবস্থা রাখা । ৯. বিনোদন, সাপ্তাহিক তালিম , কোরআন ও প্রয়োজনীয় মাস’আলা মাসায়েল শিক্ষার ব্যাবস্থা করা । ১০. প্রসূতিকালীন ছুটি, বেতন ভাতা প্রদান ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রদান । ১১. বাচ্চা লালন-পালনের জন্য অভিজ্ঞ বেবি সিটারের ব্যাবস্থা করা । ১২. দুগ্ধদাতা মায়ের জন্য উপযুক্ত ব্যাবস্থা প্রদান । ১৩. সার্বিক নিরাপত্তা বিধান ও উপযুক্ত পারিশ্রমিক প্রদান । ১৪. নারী কন্যা, জায়া, জননি। শিক্ষিত নারী যেমন শিক্ষিত জাতি উপহার দেয় তেমনি বর্তমানে রাষ্ট্রের অর্থনীতির বোঝাও টেনে চলেছে একজন নারীই । নারীর জন্য যদি নারীবান্ধব আলাদা কর্মক্ষেত্র দেয়া সম্ভব হয় তবে নারীর আংশগ্রহণ আরো বাড়বে । নারীবান্ধব পরিবেশ হওয়ার কারণে কর্মক্ষমতাও বেড়ে যাবে বহুগুণ, ফলে রাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা আরো সচল হবে । পাশাপাশি সমাজ থেকে ইভটিজিং, এসিড ও ধর্ষণের মত অপরাধ অনেক কমে আসবে । নারী পুরুষ আলাদা কর্মক্ষেত্রে থাকায় অনৈতিক সম্পর্কের সুযোগ কমে আসাবে ফলে পারিবারিক বন্ধন আরো দৃঢ় হবে । সর্বোপরি আল্লাহব হুকুম ফরজ পর্দা পালন করার মাধ্যমে ইহ ও পারলৌকিক সমৃদ্ধিতে বলিয়ান হবেন নারী শ্রমীক ।

 

সুতি পোশাক যে কারণে সেরা

প্রচন্ড গরম এখন চারিদিক। তাপমাত্রার বাড়তি চাপে জীবন যখন অতিষ্ঠ। তা বলে বাড়িতে বসে থাকা যায় না। স্কুল, কলেজ, অফিস, জরুরি কোনও কাজে বাইরে যেতেই হয়। গরমকালে রোদের তাপ এড়াতে প্রয়োজন সঠিক পোশাকের। এমন জামাকাপড় বেছে নিতে হবে, যা বেশ আরামদায়ক। এই সময়ে সুতির জামাকাপড়ই সবচেয়ে ভালো।

১. গরমে শরীরে প্রচণ্ড পরিমাণ ঘাম হয়। এর হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে সুতির পোশাক।

২. সুতির জামাকাপড়ে হাওয়া চলাচল ভালো হয়। যা শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।শরীর ঠান্ডা রাখে।

৩. সুতির জামাকাপড় বেশ হালকা হয়। গরমকালে এমন হালকা পোশাক পরাই ভালো।

৪. সুতির জামাকাপড় সূর্যের তেজ শুষে নেয়। তাই গরম লাগার কোনও প্রশ্নই নেই।

৫. গরমকাল মানেই শরীরে ঘামাচি, অ্যালার্জি। জ্বালা যন্ত্রণায় ভুগতে হয়। এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে সুতির পোশাক ব্যবহার করা ভালো।

৬. কড়া রোদের হাত থেকে বাঁচতে বেছে নিতে হবে ফুলহাতা সুতির জামা। তাতে বেশি গরমও লাগবে না। হাতে ট্যান পড়ার ভয়ও থাকবে না।

 

উদ্বিগ্নতা যেভাবে নেতৃত্ব গুন বাড়ায়

অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন উদ্বিগ্নতার মত নেতিবাচক একটি বিষয় কিভাবে নেতৃত্বের জন্য ইতিবাচক হতে পারে? মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, উদ্বিগ্নতাকে কাজে লাগানো সম্ভব। শুধু আপনাকে হতে হবে একটু কৌশলী। উদ্বিগ্নতা যখন মানসিক ব্যাধি, তখন অবশ্যই এর চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। কিন্তু একটি মাত্রা পর্যন্ত আপনি এর সুবিধা নিতে পারেন! কীভাবে সম্ভব, আসুন জেনে নিই তার কয়েকটি ধাপ।
কাজের গতি বাড়ায় উদ্বিগ্নতা
“আমার অনেক কাজ, অনেক কিছু করতে হবে, কখন করব?” “আমি কি অসুস্থ হয়ে পড়ছি?” “আমার কি পেট ব্যথা? এই ব্যথা কি বাড়বে? তাহলে কি বিছানায় পড়ে থাকব? তাহলে আমার কাজের কী হবে?” এই অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা আপনার কাজের গতি বাড়ায়। যে কাজ আপনি করতে হয়ত অনেকটা সময় ব্যয় করতেন, সেই কাজ আপনি করে ফেলেন অনেক দ্রুত। কারণ আপনার উদ্বিগ্নতা আপনাকে ঘুমাতে দেয় না, অস্থির করে রাখে। কাজ শেষ করতে না পারার অনিশ্চয়তা আপনাকে অপেক্ষা করতে দেয় না, অলসতা করতে দেয় না। বরং বলে, “যা কাল হতে পারে, তা আজ কেন নয়?”
উদ্বিগ্নতার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলুন
আপনি অল্পতেই উদ্বিগ্ন হয়ে যান এই নিয়ে চিন্তিত না হয়ে বরং উদ্বিগ্নতার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। আপনার জীবন হয়তো আপনার কাছে খুবই কষ্টের, অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এই পর্যন্ত এসেছেন আপনি। এই নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগবেন না। বরং আপনার সংগ্রামের কথা সবাইকে বলুন। নিজের জীবন নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে আপনি কিজেই দেখবেন, উগ্বিগ্নতা আপনাকে কীভাবে সহায়তা করেছে। আপনি যখনি হতাশ হয়েছেন, যখনই থেমে যেতে চেয়েছেন, আপনার ভেতর থেকে উদ্বিগ্নতা তৈরি হয়েছে। আপনার মনে হয়েছে, আপনাকে পারতেই হবে। এই তাড়না থেকেই আপনি এতদূর এসেছেন। এভাবেই নেতা হওয়ার গুণ তৈরি হয়েছে আপনার মধ্যে।
উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করুন
আপনি যে উদ্বিগ্ন তা আপনার কর্মীদের বুঝতে দিন। আপনার ভেতরের তাড়না তাদের মাঝে ছড়িয়ে দিন। আপনি হয়তো ভাবছেন, কাজ নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা তো একটা বদভ্যাস। না। এই চিন্তাই আপনার কাজের গতি কীভাবে বাড়িয়ে দেয় তা আমরা দেখেছি। তাই একে বরং কাজে লাগান। আপনিও আপনার কাজ সময়মত করুন, অন্যদেরকেও কাজে উৎসাহী করে তুলুন। যে অনিশ্চয়তা আপনি বোধ করছেন, সেই অনিশ্চয়তা অন্যদের মনেও ঢুকিয়ে দিন। বার বার বলুন, কালকের জন্য ফেলে রাখা যাবে না কোন কাজ। আপনার কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা দেখে তারাও দায়িত্বশীল হবে। আর এভাবেই আপনি এগিয়ে যেতে থাকবেন একজন যোগ্য নেতা হিসেবে।
মনোযোগের চর্চা করুন
উদ্বিগ্নতা যেন মনোযোগকে ধূলিস্যাত না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন। আপনি আপনার কাজ নিয়ে, আপনার প্রতিষ্ঠানের উন্নতি নিয়ে চিন্তিত। খুবই ভাল কথা। কিন্তু অধিক চিন্তা যেন নার্ভাসনেস তৈরি না করে। মনে রাখবেন, উগ্বিগ্নতা আপনার এমন একটি গুণ যার নিয়ন্ত্রণ হারানো বিপজ্জনক। একে সামলে রাখতে হবে। তাই মনোযোগ হারাবেন না কোনভাবেই। কাজের সফলতা শুধু চিন্তা দিয়ে আসবে না। তাই পাশাপাশি মনোযোগ ধরে রাখার অনুশীলন করুন। সিদ্ধান্তগুলো চিন্তা করে, সময় নিয়ে, আলোচনা করে তারপর নিন। একটি সঠিক সিদ্ধান্ত আপনাকে অনেক বড় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে সবার চোখে। তাই উদ্বিগ্নতা এবং মনোযোগকে পাশাপাশি বজায় রাখুন।
মনে রাখুন, আপনি ঠিক আছেন
আপনি উদ্বিগ্ন, কিন্তু অসুস্থ নন। আপনি হয়ত অনেক ভুল করেন, কিন্তু তার চেয়েও অনেক বেশি সঠিক কাজ করেছেন, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জীবনে। নিজেকে দেখুন এবং শ্রদ্ধা করুন। আপনি নিজেই নিজেকে অবমূল্যায়ণ করলে অনুএরা আপনাকে মূল্য দিতে শিখবে না। উদ্বিগ্নতা আপনার হাতিয়ার, ব্যাধি নয়। তাই নিজের উপর ভরসা রাখুন। যোগ্য নেতা হয়ে উঠুন।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব নারী ব্যবসায়ীদের

চলতি অর্থবছরের ন্যায় আগামী বাজেটে (২০১৬-১৭) নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে নারী ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডব্লিউসিসিআই)।

একইসঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য জাতীয় টাক্সফোর্স গঠন, সবক্ষেত্রে ৪ শতাংশ ভ্যাট ও সিআইপি নির্ধারণে আলাদা কোটা রাখাসহ ৩১টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির সভাপতি সেলিমা আহমাদ এসব প্রস্তাব করেন।

সেলিমা আহমাদ বলেন, বাংলাদেশের জন্য তৃণমূল নারী উন্নয়ন জরুরি। অর্থমন্ত্রী নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা ঋণের ব্যবস্থা করেছেন। তাই চলতি অর্থবছরের মতো এবারও জাতীয় বাজেটে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ চলমান রাখা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, একইসঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স ফি পূর্বের হারে ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে নতুন উদ্যোক্তা এগিয়ে আসবে না। নারী উদ্যোক্তারা অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। ব্যবসা করতে গিয়ে মূসক, আয়কর দিয়ে দিন শেষে তাদের লাভের খাতা একেবারেই শূন্য থাকে। এ কারণে ব্যবসায় নারীদের অংশগ্রহণও অনেক কম।

নারীদের ব্যবসায় অন্তর্ভুক্ত করতে সর্বাবস্থায় ৪ শতাংশ ভ্যাট রাখা, নারীদের ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়কর সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আয় ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত রাখা ও মেশিনারি আমদানিতে কর মওকুফ করার প্রস্তাব করেন তিনি।

নারী উদ্যোক্তাদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়ে বিডব্লিউসিসিআই সভাপতি বলেন, নারীদের জন্য দেশের সব জায়গায় ব্যবসা সহজ নয়। এজন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাগুলোতে নিবন্ধন ফ্রি ও পাঁচ লাখ টাকার পণ্য ফি ছাড়া প্রবেশের সুযোগ দেওয়া দরকার। এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানকে রেয়াদ দেওয়া, সিআইপি নির্ধারণে নারী উদ্যোক্তা কোটা রাখার প্রস্তাব করছি।

নারী উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য আমদানি ও রপ্তানিতে অনেক সময় কাস্টমসে হয়রানির শিকার হন। তাই নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য আমদানি ও রপ্তানিতে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া দরকার বলে জানান তিনি।

সেলিমা আহমাদ বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সব ব্যাংকে ১৫ শতাংশ এসএমই লোন নির্ধারণ করে দেওয়া দরকার। সব কর্মাসিয়াল ব্যাংকে কমপক্ষে তিন শতাংশ পল্লী ঋণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পৃথক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও সুদের হার ৭-৮ শতাংশ নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান।

 

আবারও জুটিবদ্ধ রিয়াজ-মৌ

‘এবং তারপর’ নামের একটি টেলিছবিতে জুটিবদ্ধ হলেন চিত্রনায়ক রিয়াজ এবং মডেল ও অভিনেত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ। গল্প লিখেছেন ফ্যাশন ডিজাইনার এমদাদ হক। এর চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন মনসুর রহমান চঞ্চল ও পরিচালনা করেছেন নুজহাত আলভী। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার একসঙ্গে কাজ করলেন তারা। এতে আরও অভিনয় করেছেন সজল, হিমি, লায়লা হাসান, সুজন, চৈতি ও ইমরান।

টেলিছবিটির গল্পে দেখা যাবে, জীবনের একটা সময় প্রাণচাঞ্চল্যে, উদ্দীপনা আর উচ্ছ্বাসে ভরা ছিলো নবনীতার জীবন। ঠিক উল্টো অর্থাৎ চুপচাপ আর একটু নিজের মধ্যে গুটিয়ে থাকা স্বভাবের ছিলো অন্য বন্ধু পারভেজ। বিয়ের পর নবনীতা স্বামীর সঙ্গে আমেরিকায় চলে গেলেও দুটো কিডনিই বিকল হয়ে যাওয়ায় ফিরে আসে বাংলাদেশে। এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে নাটকের গল্প।

ইতিমধ্যেই টেলিছবিটির দৃশ্যধারণ শেষ হয়েছে ধানমন্ডি লেক ও পূবাইলে। আসছে ঈদুল ফিতরে একটি বেসরকারী চ্যানেলে প্রচার হবে টেলিছবিটি।

 

নারী উদ্যোক্তা ইফফাত ই ফারিয়ার সফলতার পেছনের গল্প

সাধারন মানুষের অসাধারন হয়ে ওঠার পেছনে একটা গল্প থাকে। সেই গল্পের বাঁকে বাঁকে থাকে সংগ্রাম। স্বাধীনচেতা মানুষেরা একটু বেশীই সংগ্রামী হয়। যেখানে সম্ভব নয় সেখানেই তারা বিজয়ের নিশান ওড়ান। কিন্তু সেই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রে যখন একজন নারী তখন তার পথটা বোধহয় আরও বেশী সংগ্রামের হয়। তেমনই একজন ইফফাত ই ফারিয়া (রঙ)।

নিজে কিছু করবে তেমনটাই ইচ্ছে ছোট থেকে। কিন্তু সেটা ঠিক কি তা নির্দিষ্ট না থাকলেও করতে হবে এতটুকু জানতেন। সারাদিন ফেসবুকিং করতে করতে হটাৎ করে ই-কমার্সের ব্যপারে ঘাটাঘাটি শুরু হয়। যতই জানার পরিধি বাড়তে থাকে ততই এ ব্যবসায়ের প্রতি আগ্রহ আরো বেড়ে যায়।

অন্যের কাছে নিজের পোশাক আশাকের প্রশংসা আর ভাল রান্না জানাটাকেই কাজে লাগাতে চাইলেন। এক দিনে ২টা পেজ খুলেন অনলাইনে। একটা ছিলো Pastels, আরেকটি Cookies, cupcakes & cardio. পোশাক আর ডেজার্ট দুটি ভিন্ন আইটেম  নিয়ে। আর এর পরবর্তীতে ভাললাগা আর সৃজনশীলতার জায়গা থেকে এখন পর্যন্ত কাজ করছেন পোশাক নিয়ে।

সফলতার দেখা পেয়েছেন ঠিকই কিন্তু তার পেছনে যে বাধা পেরিয়েছেন তা সত্যিই প্রেরণাদায়ক। প্রথম শুরুটা বাসা থেকেই। পুঁজি মাত্র ৬০০০ টাকা। পেজ খুলেই বেশ কিছু পোশাক আর খাবারের ছবি পেইজে আপলোড দেন। বুঝতে চেষ্টা করেন মানুষ কি চায়। দিন দিন তার পেইজে রেসপন্স বাড়তে থাকে। সেই সাথে জানান দেয় তার গ্রহন যোগ্যতা। পরিধি বাড়াতে একজন লোক আর কাজের জন্য একটি রুমও ভাড়া নেন।

কিন্তু যার মননে আরও বড় কিছু সে কিভাবে একটা রুমের মধ্যে আটকে থাকবে। তার ব্যবসা দিন দিন যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল তাতে সে সময়ে খুব প্রয়োজন অনুভব করছিলেন একটি শোরুমের। কিন্তু সার্মথ্য যা ছিল তাতে কোন মতেই সম্ভব ছিল না। পরিবার থেকে একমাত্র বাবা ছাড়া আর তেমন কারোও কোনো ধরনের সহায়তা পাননি।  বাবার সহায়তায় ট্রেড লাইসেন্স সহ সরকারি পারমিট নিয়ে হোম বেজড শোরুম দিলেন। সেই সাথে বন্ধু তানভীর অরণ্য, জিহাদ কবি, রাহা চৌধুরি, সারোয়াত বারি, মুবাসসির সাকিব এবং জয় আচার্য হাতে হাতে রাখলেন তার ব্যবসায়ে। দেখতে না দেখতে ব্যবসা পেল নতুন মাত্রা।

শুরু  হল প্যাস্টেলস শোরুমের চমক। দেশের গন্ডি পেরিয়ে পাকিস্তান, ভারত, চায়না, থাইল্যান্ড থেকে পোশাক আমদানি। সেই সাথে দেশের বাজারের পাশাপাশি ইসলামাবাদেও প্যাস্টেলস শোরুমের যাত্রা। সাজানো গোছানো ফ্যাক্টরিতে মেশিন আর কর্মী সংখ্যা বর্তমানে আট। কেউ করে কারচুপি, কেউ এম্ব্রয়ডারি, কেউ নকশীকাঁথা। সেই সাথে মাপ মতো কাটা এবং সেলাইয়ের জন্য আছে আলাদা মানুষ। প্যাস্টেলস এর জনপ্রিয়তার নেপথ্যে রয়েছে আপনার পছন্দমত বিয়ের পোশাক সহ যেকোন পোশাক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সল্প মূল্যে তৈরী করে দেওয়ার সুনাম।

যাত্রা পথের এই বাকেঁ সুনাম অজর্নের মধ্যেও  বিকৃত মনের মানুষের দ্বারা হ্যাক হয় তার ৬৫০০০ ফলোয়ারের ফেসবুক পেইজ। মুহুর্তেই থমকে যায় তার অনলাইন ব্যবসার গতি। কিন্তু দমে যাওয়ার পাত্রী সে নন। আর তাই পেইজ ফেরত আনার চেষ্টা না করে অদৃশ্যমান এ বিশাল ক্ষতি থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন পেইজ নিয়ে যাত্রা শুরু করে পরমুহুর্ত থেকেই। অফলাইনে ভাল পরিচিতি আর সুনামের কারনে অনলাইনের ধাক্কাটা সেভাবে বুঝতে না পারলেও মেধা দিয়ে হারানো বাজার ফিরে পেতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারপরও সল্প সময়ে তার এ অর্জন সত্যিই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।

সংগ্রামী এ নারী উদ্যোক্তা বর্তমানে পড়াশুনা করছেন ইউনিভারসিটি অফ মেলবোর্ন, ফাউন্ডেশন ইয়ার, কেমিকৌশল বিভাগে। অনলাইন আলাপচারিতার একপর্যায়ে তিনি বলছিলেন আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি, ফ্যাশান ডিজাইনিং এ আমার কোনো জ্ঞান নাই। যেটা ভাল্লাগে করি, বানিয়ে দেখি সবাই পছন্দ করছে।

নতুন যারা উদ্যোক্তা হতে চায় তাদের কি করা উচিত জানতে চেয়েছিলাম তার কাছে। খুব সাচ্ছন্দেই বলে যাচ্ছিলেন নতুনদের জন্য পরামর্শ দেওয়ার তেমন কিছু নাই। শুধু মন যেটা চায় সেটাই মস্তিস্ক দিয়ে উদ্ধার করে সেই কাজটি করে ফেলতে  হবে।

মাসুদুর রহমান মাসুদ

 

গরমের আরাম ভিন্ন স্বাদের মিল্কশেক

গরমে প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত, তখন হাত বাড়াই গ্লাস ভর্তি ঠাণ্ডা পানির দিকে। ক্লান্ত শরীরে আরেকটু ফুর্তির আমেজ আনতে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা মিল্কশেকের তুলনা হয় না। নিজের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিতে পারেন গরমে আরামদায়ক এই পানীয়। তীব্র গরমে তাদের তৃপ্তিভরা হাসি দেখতে পছন্দের মিল্কশেকই সেরা। মন জুড়ানো স্বাদে আর রূপ বাহারে আপনার হাতেই তৈরি হবে মিল্কশেক। এই গরমে অতিথি আপ্যায়নেও দারুণ উপযোগী এই পানীয়। তাই আসুন শিখে নেয়া যাক ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের কয়েক পদের মিল্কশেক প্রস্তুত প্রণালী।

আপেল মিল্কশেক- যা যা লাগবে

আপেল খোসাসহ টুকরো ৪ কাপ, দুধ ১ লিটার, কয়েক টুকরো কাজুবাদাম, কয়েক টুকরো দারুচিনি গুঁড়া, প্রয়োজনমতো বরফ ও চিনি।

যেভাবে করবেন

প্রয়োজনমতো চিনি দিয়ে টুকরো আপেলকে ব্লেন্ড করে নিন। এবার জ্বাল দিয়ে রাখা অর্ধেক পরিমাণ দুধ আপেলের মিশ্রণে দিয়ে আবার একটু ব্লেন্ড করতে হবে। সবশেষে বাকি অর্ধেক দুধ ঢেলে দিয়ে আবারও নেড়ে নিন। এবার গ্লাসে ঢেলে ২ থেকে ৩টি বরফের টুকরোসহ প্রয়োজনমত মিশ্রণটি নিন। এবার একটু দারুচিনি গুঁড়া ছিটিয়ে দিন। শেষে বাদাম এবং কাজুবাদামের টুকরোগুলো দিয়ে সুন্দরভাবে তা পরিবেশন করুন।

কলা ও চকলেট মিল্কশেক- যা যা লাগবে

চকলেট সিরাপ ১ থেকে ২ কাপ, কলা মাঝারি ২টি, ঘনদুধ ৪ কাপ, চিনি প্রয়োজনমতো, আইসক্রিম ১ কাপ।

যেভাবে করবেন

ছোট ছোট টুকরা করে কলা কেটে নিয়ে ব্লেন্ডারে নিন। এবার দুধ এবং চকলেট সিরাপ ঢেলে দিন। আপনি চাইলে প্রয়োজনমতো চিনি এবং আইসক্রিম যোগ করতে পারেন। উপকরণগুলো পুরো মিশে যাওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করতে থাকুন। এবার গ্লাসে ঢেলে মিল্কশেকেও ওপর চকলেট সিরাপ এবং আইসক্রিম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

ম্যাংগো মিল্ক শেক-যা যা লাগবে

ঘনদুধ ২ কাপ, চিনি ৪ চা চামচ, বরফ ১ কাপ, পাকা আম কুচি আধা কাপ, ম্যাংগো আইসস্ক্রিম ২ টেবিল চামচ।

যেভাবে করবেন

বারফ বাদে সব উপকরণ এক সঙ্গে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। পরিবেশনের আগে বরফ গুলোকে আলাদা ভেঙে মিশিয়ে দিন। চাইলে একসঙ্গে ব্লেন্ডও করতে পারেন। আম ছোট করে কেটে গ্লাসভর্তি মিল্কশেকের উপরে ছড়িয়ে সাজাতে পারেন। ব্যস হয়ে গেল সুস্বাদু ঠাণ্ডা ম্যাংগো মিল্ক শেক।

স্ট্রবেরি মিল্ক শেক-যা যা লাগবে

দুধ ২ কাপ, চিনি ৪ চা চামচ, বরফ ১ কাপ, স্ট্রবেরি ফ্লেভার ১ ফোঁটা, স্ট্রবেরি আইসস্ক্রিম ২ টেবিল চামচ, স্ট্রবেরি ৪ টি।

যেভাবে করবেন

সবগুলো উপকরণ এক সঙ্গে ব্লেন্ডারে নিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। পরিবেশনের আগে বরফ গুলোকে আলাদা ভেঙে দিতে পারেন। গ্লাসের উপরে কোনায় স্ট্রবেরি স্লাইস দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন স্ট্রবেরি মিল্ক শেক।

 

অভাব মোকাবেলায় কৃষিকাজে নারী

একটা সময় যে নারীরা ব্যস্ত থাকতো শুধু গৃহের কাজ নিয়ে, বাড়ির বাইরে যেতে দ্বিধা করতো, সেসব নারী এখন পুরুষদের পাশাপাশি কাজ করছে মাঠে-ময়দানে। অভাব মোকাবেলা করে ঘরে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে অবদান রাখছে সমানভাবে। সম্প্রতি সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে এমন দৃশ্য।

নারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা সবাই সিলেটের খাদিম চা বাগানের বাসিন্দা এবং চা শ্রমিক। সারা বছর তারা চা পাতা তোলে। কিন্তু চা পাতা সংগ্রহ করেও পরিবারের খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। তাই সংসারের আয় বাড়াতে আজ তারা কৃষি কাজে পুরুষের সঙ্গে মাঠে এসেছে।

কৃষি কাজ করছে এমন কয়েকজন জানান, সারা দিন চা পাতা তুলে মাত্র ৬৯ টাকা পান। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা ধান কাটলে তারা পুরুষদের মতো ৩০০ টাকা মজুরি নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন। তাই চা বাগান থেকে তারা ধান কাটতে এসেছেন।

সরেজমিন খাদিম এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নারীরা পুরুষের সঙ্গে ধান কাটছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ কাস্তে হাতে ধান কাটছেন। আবার কেউ কেউ আটিবাধা কাটা ধান মাথায় করে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন।

ধান কাটতে আসা খাদিম চা বাগানের বাসিন্দা রূপা রানী বলেন, বাগানে এখন কাজ কম। বৃষ্টি হয়েছে। মাত্র নতুন পাতা গজাচ্ছে। তাই আমি ধান কাটতে এসেছি।

তিনি বলেন, চা পাতা উত্তোলন করলে মাত্র ৬৯ টাকা মিলে। কিন্তু ধান কাটলে ৩০০ টাকা মজুরি মিলে। অভাবের সংসারে বাড়তি টাকা পেলে কিছু দিন আরাম করে থাকা যায়।

অনু রানী নামের আরেক চা শ্রমিক জানান, তিনি প্রতি বছরই খাদিমপাড়া এলাকায় ধান কাটতে আসেন। জামাল নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে ধান রোপন ও ধান কাটার এখানে কাজ মেলে।

তিনি জানান, একটু বাড়তি রোজগারের আশায় তারা বাগানের বাহিরে এসে কৃষি কাজ করেন। এই কাজ করতে কোনো সমস্যা হয় কি না জানতে চাইলে অনু বলেন, প্রথমে কিছু সমস্যা হতো। কিন্তু এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। তাই ধান কাটতে বা রোপন করতে কোনো সমস্যা হয় না।

অনু ও রূপার সঙ্গে কথা বলার পর কথা হয় তাদেরকে নিয়ে আসা জামালের সঙ্গে। তিনি জানান, নিজেও কৃষি কাজ করে সংসার চালান। প্রতি বছর তিনি ধান কাটা ও রোপনের সময় একটি টিম নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতে যান।

জামাল জানান, অতীতে কৃষি কাজের জন্য শ্রমিকের অভাব হতো না। কিন্তু এখন কৃষি কাজের শ্রমিক মিলে না। তাই তিনি বিগত কয়েক বছর থেকে খাদিম চা বাগান থেকে চা শ্রমিক এনে ধান কাটান এবং রোপন করেন। বিনিময়ে নারী চা শ্রমিকদের তিনি রোজ ৩০০ টাকা করে দিতে হয়।

তিনি নারী শ্রমিকদের প্রসংশা করে বলেন, ‘চা বাগানের নারীরা খুবই পরিশ্রম করতে পারে। তারা পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কৃষি জমিতে কাজ করছে। তাই তাদের পুরুষদের রোজ যত টাকা (মজুরি) দিতে হয় নারীদেরও তত টাকা দিতে হয়।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চা শ্রমিকরা এখন আর বাগানের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তারা চা পাতা উত্তোলনের পাশাপাশি ইট ভাঙ্গার কাজ, মাটি কাটার কাজ, ধানের চারা রোপণ, জমি পরিচর্যা, সার-কীটনাশক ছিটানো, ধান কাটা, মাড়াই এসব কাজ করছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে চা শিল্পের ইতিহাস ১৫০ বছরের। সিলেটে চা বাগান তৈরির শুরুর দিকে উন্নত জীবনযাপনের আশা নিয়ে জন্মভিটা ছেড়ে চা বাগানে কাজ করতে আসে দক্ষিণ ও মধ্য ভারতের অভাবী মানুষ। কিন্তু কাজে এসে তাদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যায়। তারা ফিরতে চায় নিজ দেশে। এ সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নির্বিচারে হাজার হাজার চা শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে। ১৯২১ সালের ২০ মের সেই রক্তাক্ত পরিণতিতে চা শ্রমিকদের দেশে ফেরার স্বপ্নও শেষ হয়ে যায়।

 

৮০ বছরের প্রথা ভেঙে মসজিদে যাচ্ছেন নারীরা

ভারতের কেরলা রাজ্যের এক ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন মসজিদে প্রথমবারের মত প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন স্থানীয় মুসলিম নারীরা। গত ৮০ বছরের পুরনো অনিন্দ্য সুন্দর এই মজিদটিতে এতদিন ধরে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে।

অপরূপ সুন্দর ‘তাজহাথানগাদি জুমা মসজিদটি’ কেরলার কোত্তায়াম এলাকায় অবস্থিত। মসজিদ কর্তৃপক্ষ ৮০ বছরের ঐতিহ্য ভেঙে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের নারীদের এই উপাসনালয়ে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন। তবে মাত্র একদিনের জন্য। আগামী ৯ মে রোববার সেখানকার নারীরা এই সুযোগ পাবেন। ওই দিন তারা কেবল মসজিদের স্থাপত্য সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। তারা এই সুন্নী মসজিদে নামাজ আদায় কিংবা অন্য কোনো ধরনের ধর্মীয় কাজে অংশ নিতে পারবেন না।

এ সম্পর্কে মসজিদের ইমাম মৌলবী সিরাজউদ্দীন হাসান এনডিটিভি’কে বলেছেন, ‘এই মসজিদে নারীদের নামাজ আদায়ের নিয়ম নেই। গত ৮০ বছর  ধরে প্রথাটি পালিত হয়ে আসছে। আমরা এটি ভাঙতে পারি না। প্রাচীন মসজিদের অপরূপ শৈলী উপভোগ করতে প্রতিদিন বিশ্বের নানা স্থান থেকে অসংখ্য পর্যটক এসে থাকে। ভারতের মুসলিম নারীরাও এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে চায়। আমরা তাদের দাবি মেনে নিয়েছি এবং নারীদের জন্য একটি দিন নির্ধারন করেছি। যাতে তারা ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করে এর স্থাপত্য শৈলী উপভোগ করতে পারে।’

মসজিদ কমিটির এই সিদ্ধান্তে দারুণ খুশী কেরলার মুসলিম নারীরা। ১৯ বছরের মেহরিন আমেনা নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেছেন,‘আমরা প্রথম মসজিদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারছি। আমার বিশ্বাস একদিন আমি পুরুষদের মত এই মসজিদে নামাজ আদায়েরও সুযোগ পাব।’ অনেক দিনের সংগ্রামের পর এটুকু সুযোগ পেল কেরলার মুসলিম নারীরা।

 

আকাশপথে ভ্রমনের আগে

বাঙালিরা ঘরকুনো এই অপবাদ কাটিয়ে উঠেছে অনেকটাই। এখন ছুটি পেলেই ঘুরতে যাওয়া আর বিলাসিতা নয়, জীবনকে উপভোগ করার একটা পথও বটে। ছোট্ট একটা দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। তাই দেশের মাঝে ভ্রমণ করতে হলে স্থল বা জলপথটাই যথেষ্ট। তবে দেশের বাইরে যেতে হলে সেক্ষেত্রে আকাশ পথেই ভ্রমন করতে হয়। কাজের প্রয়োজনে হোক বা আনন্দের উদ্দেশ্যে, প্লেনে ভ্রমনের আগে যদি আপনার কিছু বিষয় জানা থাকে তবে আপনার ভ্রমনটি আরও আনন্দদায়ক ও নির্ঝঞ্ঝাট হতে পারে। আসুন জেনে নেই সেই সবই।

  • -ভ্রমনের আগে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে রাখুন। এ জন্য ছোট পাউচ ব্যাগ বা হ্যান্ডব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। যদি বিদেশ ভ্রমন করতে যান তবে আগে থেকে আপনার পাসপোর্ট, টিকেট ও অন্যান্য কাগজ ঠিক করে রাখবেন। সেই সাথে আপনার ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে তা সাথে নিয়ে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে। হোটেল বুকিং দেয়া থাকলে তার কাগজটাও সাথে রাখবেন। এছাড়া অন্যান্য কোন দরকারি কাগজ থাকলে সব এক সাথে এক ব্যাগের মধ্যে রাখতে পারেন। এসব কাগজের ফটোকপি করে নিতে ভুলবেন না অবশ্যই, কেননা জিনিষটি কখন কি কাজে লেগে যেতে পারে তা বলা যায়না আগে থেকে। দেশের ভেতরে ভ্রমনের ক্ষেত্রে আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি সাথে রাখতে পারেন।
  • -যদি এয়ারপোর্টে ফ্লাইট ছাড়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে পৌঁছান ভালো, তাই বলে বেশি আগে গিয়ে বসে থাকার কোন মানে নেই। বরং বেশি আগে পৌছে গেলে সময় কাটানো ঝামেলার বিষয় হয়ে যেতে পারে। তাই ফ্লাইটের সময়সূচী অনুযায়ী হিসাব করে ঘর থেকে বের হওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে যদি গভীর রাতের ফ্লাইট হয় তবে আগে পৌঁছানটাই ভালো হবে।
  • -এয়ারপোর্টে ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে করতে সময় কাটানো বেশ ঝামেলার হতে পারে। তাই সময় কাটানোর জন্য সাথে কোন বই রাখতে পারেন। সেই সাথে ব্যাগে হাল্কা খাবার যেমন চকলেট, চিপস রাখতে পারেন। এয়ারপোর্টে বাইরের খাবার নিয়ে প্রবেশ নিষেধ থাকলে ভেতরের দোকান থেকেও কিনে নিতে পারেন।
  • -আপনার সাথে কোন মূল্যবান জিনিষপত্র থাকলে তা আপনার লাগেজে না রেখে আপনার কাছে হাত ব্যাগে রাখবেন। মনে রাখবেন অনেক সময় কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে লাগেজ হারানো যায়। আপনারটা কোনদিন যায়নি ভালো কথা, কিন্তু তার মানে এই না যে হারানো যেতে পারেনা। তাই আগে থেকে সতর্ক থাকা জরুরি। সেই সাথে এমন কিছু যদি সাথে থাকে যা ভেঙ্গে গেলে বা হারিয়ে গেলে রিপ্লেস করা সম্ভব না- যেমন ল্যাপটপ বা ক্যামেরা- তা নিজের সাথে রাখুন।
  • -প্লেনে বসে লম্বা ভ্রমন করা কষ্টদায়ক বটে। তাই ভ্রমণকে আনন্দদায়ক করতে সাথে বই নিতে পারেন। এছাড়া সাথে ল্যাপটপ বা কোন গান শোনার যন্ত্র যেমন আইপড বা অন্য কিছু থাকলে তাতে আপনার পছন্দের গান ভরে নিতে পারেন, ল্যাপটপে নিতে পারেন সিনেমা ও ছোটদের জন্য কার্টুনের কালেকশন।
  • -সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে থাকলে ভ্রমনের জন্য পোশাকটিও ঠিক করে ফেলুন। ভ্রমনের জন্য ঢিলেঢালা পোশাক পড়তে চেষ্টা করবেন। জুয়েলারি, বেল্ট, অতিরক্ত সাজগোজ এসব পরিহার করার চেষ্টা করবেন। লম্বা ভ্রমনের সময় এসব জিনিষ শুধু ঝামেলাই বাড়াবে। ফ্ল্যাট জুতা বা স্যান্ডেল পরবেন যেন দরকার পরলে দ্রুত খুলতে পারেন। লাগেজে ও হ্যান্ড বাগে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছুই নিতে যাবেন না।
  • – সাথে ছোট শিশু থাকলে তাদের প্রয়োজনীয় সব কিছু, যেমন- ডায়পার, দুধের বোতল, ন্যাপকিন ইত্যাদি সব সাথে নিয়ে নিন। কোনও জরুরি ওষুধ নিজের বা বাচ্চার প্রয়োজনে লাগলে সেটাও নিয়ে নিন। হাঁপানি রোগীরা ইনহেলার নিতেও ভুলবেন না।

ভ্রমন হল আপনার মনের খোরাক। প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে দুই দণ্ড ভাল করে শ্বাস নেবার জন্যই ঘুরতে যাওয়া হয়। আপনার ঘোরাঘুরিকে আরও আরামদায়ক ও নিশ্চিন্ত করতে ও আকাশপথে ভ্রমনের ঝামেলা এড়াতে সব কিছু গুছিয়ে নিতে ভুলবেন না যেন।

 

ঘুরে আসুন পদ্মা রিসোর্ট

ঢাকা বিভাগের মুন্সিগঞ্জ জেলার পদ্মা নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে নয়নাভিরাম ও অপরূপ সুন্দর একটি রিসোর্ট যার নাম পদ্মা রিসোর্ট। যারা কর্ম চঞ্চল শহরের গন্ডি পেড়িয়ে প্রকৃতি আর নদীর সান্নিধ্য পেতে চান তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান। বর্ষা মৌসুমে জল ঘেরা রিসোর্টে চাঁদনী রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করার মজাই ভিন্ন।

এখানে আছে ১৬টি ডুপ্লেক্স কটেজ। প্রতিটি কটেজে আছে একটি বড় বেডরুম, দুটি সিঙ্গেল বেডরুম, একটি ড্রইংরুম। আছে দুটি ব্যালকনি এবং একটি বাথরুম। শীতে কটেজের চারপাশ রঙ-বেরঙের ফুলে ভরে ওঠে আর বর্ষায় পানির রাজ্য। রিসোর্টের উঠোনে ইজি চেয়ারে রাতের তারা গুনতে পারেন। দিনে পারেন দেশি নৌকায় পদ্মা বেড়াতে। রিসোর্ট রেস্টুরেন্টে টাটকা ইলিশ পাবেন। শাকসবজি, গরু, মুরগি আর হাঁসের মাংসও পাবেন। মৌসুমি ফলফলাদিও মিলবে। ঢাকা থেকে রিসোর্টের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। মাওয়া ফেরিঘাট থেকে রিসোর্টের নিজস্ব স্পিডবোট আছে।

যেভাবে যেতে হবে
ঢাকার গুলিস্থান হতে বাসে করে যেতে হবে লৌহজং। সেখান হতে মাওয়া ফেরীঘাট। মাওয়া ফেরিঘাট হতে রিসোর্টের নিজস্ব স্পীডবোটে করে সরাসরি রিসোটে।

যা যা আছে পদ্মা রিসোর্টে-

আউটডোরে
বাইরে আছে লেভিশ বিচ চেয়ার যেখানে হেলান দিয়ে আপনি উপভোগ করতে পারবেন নদীর পারের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। এছাড়াও আছে ঘোড়া, এই ঘোড়ায় চরেও ঘুরে বেরাতে পারবেন আপনি।

রেস্টুরেন্ট
রিসোর্টের ভিতরে বেশ অনেকখানি জায়গা নিয়ে আছে সুসজ্জিত রেস্টোরেন্ট। এখানে ১২০ জনের মতো বসার জায়গা আছে।

রিভার ক্রুজের ব্যবস্থা

যারা নৌকা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন তাঁদের জন্য আছে বিভিন্ন রকম ছোট বড় নৌকার ব্যবস্থা। এখানে আছে রাবার বোট যাতে অনায়াসে ২-৬ জন বসতে পারবে। স্পিড বোটের ব্যবস্থাও আছে এখানে। আর এক ধরনের নৌকা হচ্ছে কান্ট্রি বোট, একটু বড় হয় এই নৌকাটা, এখানে একসাথে ২০-২৫ জন উঠতে পারবে। আর যারা নদীতে মাছ ধরার শখ রাখেন তারা ফিশিং বোটেও চড়তে পারেন। সব বোটেই লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা আছে।

খেলাধুলা
এখানে আপনি চাইলে আপনার বন্ধুদের সাথে মেতে উঠতে পারেন বিভিন্ন খেলায়- ফুটবল, বিচ ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, ঘুড়ি উড়ানো, ফ্রিজবি, এমনকি দেশীয় খেলা হাডুডুও চাইলে খেলতে পারবেন।

খাবার
এখানে আপনি পাবেন ফ্রেশ এবং ফরমালিনমুক্ত পদ্মা নদীর ইলিশ ও অন্যান্য মাছ। আর পাবেন সবজি, গরুর মাংস, মুরগির মাংস ও হাঁসের মাংস আর থাকছে এখানকার লোকাল মৌসুমি ফলমূল। দুপুর বা রাতের খাবারের জন্য খরচ হবে ৩০০ টাকা। সকালের নাস্তা জনপ্রতি ১০০ টাকা

কোথায় থাকবেন
এখানে ১৬ট ডুপ্লেক্স কটেজ রয়েছে। প্রতিটিতেই রাত্রি যাপন করা যায়

ভাড়া ও অন্যান্য
এক দিনে কটেজ ভাড়া (সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা) ২৩০০ টাকা। ২৪ ঘণ্টার জন্য (সকাল ১০টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা) ৩০০০ টাকা।

যোগাযোগ করতে চাইলে
এস এম নজরুল ইসলাম
জেনারেল ম্যানেজার
মোবাইলঃ ০১৭১২-১৭০৩৩০, ০১৭৫২-৯৮৭৬৮৮
টেলিফোনঃ ৮৭৫২৬১৭

 

সাগরকন্যা কুয়াকাটা

প্রকৃতির সাথে কিছুক্ষন থাকতে চান? নিরিবিলি কিছুসময় কাটাতে চান? তাহলে বেড়িয়ে পড়ুন কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে। এমন শান্ত ও নিরিবিলি সৈকত কোথাও পাবেন না এটা বলতে পারি। অনেকেই কক্সবাজারের সাথে কুয়াকাটার মিল খুজতে চান। অনেকেই বলে থাকেন কুয়াকাটায় দেখার মত কিছু নেই, এর থেকে কক্সবাজার অনেক সুন্দর। এখানে বলে রাখি কক্সবাজার আর কুয়াকাটার সৌন্দর্য সম্পূর্ন ভিন্ন রকমের। জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য অথবা গাংচিলের ওড়াওড়ি দেখেতে পাবেন একটু নজর রাখলেই।

পথে যেতে যেতেঃ

অনেকেই হয়তো শুনে থাকবেন কুয়াকাটার রাস্তা খুবই খারাপ। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতাটা এই যে কুয়াকাটার যাবার রাস্তা আসলে খুবই ভাল। শুধু শেষের কয়েক কিলোমিটার রাস্তা মোটামুটি হিসেবে চালিয়ে দেয়া যায়। কিন্তু ফেরিতে নদী পার হতে হয় চারটি। তবে আশার কথা হল তিনটি নদীতে সেতু নির্মান হচ্ছে।। একটির কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। তাই অচিরেই ফেরী পারাপারের হ্যাপাও আর থাকবে না।

বরিশাল বিভাগ পুরোটাতে অসংখ্য নদী দিয়ে ঘেরা। তাই নদীপারের জীবন যাত্রা দেখে অবিভূত হতে পারেন। রাস্তার দুপাশে যতদূর চোখযায় শুধু ধান ক্ষেত। নদী, ধান, খাল এই নিয়ে বরিশাল কথাটার সার্থকতা খুজে পাবেন। যত কুয়াকাটার দিকে যেতে থাকবেন ততই পাল্টাতে থাকবে আশেপাশের দৃশ্য। দেখা পাবেন সাগরের মাছ ধরার ট্রলার হয়তো সাগর থেকে ফিরছে। এদিকের মানুষের অনেকেরই প্রধান জীবিকা মাছ ধরা।
দূরে দেখতে পাবেন ম্যনগ্রোভ বনের সারি। এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে সময় কেটে যাবে বুঝতেও পারবেন না।

অবশেষে কুয়াকাটায়ঃ

কুয়াকাটায় গিয়ে প্রথম কাজ হবে কোন একটি হোটেলে ওঠা। যারা একটু নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করেন তাদের জন্য পর্যটন করপোরেশনের হোটেল অনেক ভাল লাগবে। চারদিকে নারিকেল গাছে সারি। সামনে বিশাল বাগান। পর্যটন করপোরেশনের হোটেলে একটু বাড়তি নিরাপত্তা দেয়। তাছাড়াও আছে অসংখ্য হোটেল। তার যে কোন একটিতে উঠতে পারেন।

নিরিবিলি সৈকতঃ

দুপুরের খাবার পর বেড়িয়ে পড়ুন সৈকত দেখতে। অনেক শান্ত নিরিবিলি একটি সৈকত। হেঁটে হেঁটে বহুদূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। কুয়াকাটার সমূদ্রের দৈর্ঘ্য মাত্র ২০ কিলোমিটার। কিন্তু সৈকতের প্রস্থ প্রায় দেড় কিলোমিটার। পূর্ব দিকে কয়েক কিঃমিঃ গেলে দেখা মিলবে ঝাউ গাছের বাগান। মাঝে মাঝে মাথা উচু করে আছে নারিকেল গাছ। সাগর পাড়ের ছোট ছোট বাচ্চারা সৈকতে ছোটাছুটি করে। ছোট ছোট কাঁকড়া মাটি খুড়ে তৈরী করছে সুন্দর সুন্দর নকশা। যেন কোন শিল্পী নিখুত আঁচড়ে এইসব শিল্পকর্ম তৈরী করছে। তাছাড়াও এখানে সৈকতে পেতে রাখা আছে কাঠের বেড। চাইলে এগুলো ভাড়া নিতে পারেন। প্রতিঘন্টা বেড ভাড়া ২০টাকা। দিনের কোলাহলের থেকে রাতের আঁধারে সমূদ্রের গর্জন বেশি শোনা যায়। চাইলে রাতেও কাঠের বেড গুলো ভাড়া নিতে পারেন। নিরাপত্তার কথা যদি বলি তাহলে দেখেছি রাতে পুলিশ সৈকতে পাহারা দেয়। তবুও রাতে সৈকতে থাকলে একটু সতর্ক থাকা ভাল।

হারিয়ে যান প্রকৃতির মাঝেঃ

ঘুরাঘুরির জন্য এখানে ভাড়াতে মটরসাইকেল পাওয়া যায়। মটরসাইকেল ভাড়ার নানান অফার পাবেন তাদের কাছ থেকে। দেখতে পাবেন সাগর পারের মানুষের মাছ ধরা ও তার জীবন যাত্রা। কেউবা ধরছে চিংড়ির পোনা। বিশাল সৈকতে রাখা আছে সারি সারি নৌকা। যেগুলো জেলেরা মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করেন।

জেলেদের সাথে উড়ে বেড়ায় গাংচিলের ঝাঁক। নিশ্চিন্তে হেঁটে বেড়ায় সি বিচে। এখানে তাদের কেউ উৎপাত করেনা। দেখা পাবেন গাংচিলের ঝাঁক মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত। সাথে আছে বিশাল আকাশ আর বিশাল সমূদ্র। হারিয়ে যান বিশালতার মাঝে।

ফাতরার চর ও লাল কাঁকড়ার চরঃ

ফাতরার চর মূলত সুন্দরবনের একটি অংশ। এখান থেকেই সুন্দরবনের এলাকা শুরু। চাইলে সুন্দরবনে ঘোরার সাধটি এখানেই অনেকটা মিটিয়ে নিতে পারেন। যদিও এখানে বন্যপ্রানী দেখার সম্ভাবনা অনেক কম। কিন্তু অনেক পাখি দেখতে পাবেন। এছাড়াও লাল কাঁকড়ার চরে যেতে পারেন। মূলত এই চরটির নাম গঙ্গামায়ার চর। এখানে হাজার হাজার লাল কাঁকড়া চোখে পড়বে আপনার। তাই অনেকে এটিকে লাল কাঁকড়ার চর বলে। এই দুই জায়গা ছাড়াও শুটকি পল্লীতে যাবার জন্য এখানকার সৈকত থেকে কয়েকটি ট্রলার ছেড়ে যায়। সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে ট্রলারগুলো ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি ৩০০টাকা। ফাতরার চর,লাল কাঁকড়ার চর, শুটকি পল্লী ইত্যাদি কয়েকটি স্পটের প্যাকেজ অনুযায়ী ট্রলারগুলো চলাচল করে।

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তঃ

কুয়াকাটার বিশেষত্ব হচ্ছে এখান থেকে একই সাথে সূর্য উদয় আর সূর্য অস্ত দেখা যায়। দক্ষিন এশিয়ার এই একটি মাত্র জায়গা থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। ভোর বেলা সূর্য রক্তিম আভা ছড়িয়ে সমূদ্রের বুক চিড়ে উদয় হয় আবার সন্ধ্যায় অস্ত যায়। এই একটি বিশেষত্বের কারনে অনেকে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। সূর্যাস্ত দেখার জন্য বিকেল থেকেই সৈকতে থাকতে হবে। সারাটা বিকেল জুড়ে কুয়াকাটার সৌন্দর্য পরিবর্তিত হতে থাকে। আকাশে মেঘ না থাকলে সহজেই সূর্যাস্ত দেখতে পারবেন। কিন্তু সূর্যদোয় দেখতে হলে খুব সকালে উঠতে হবে। সকালে উঠতে হলে তারাতারি ঘুমিয়ে পড়ুন। রাত জেগে থাকলে সূর্যদোয় মিস হয়ে যেতে পারে কিন্তু! সূর্যদোয় দেখার জন্য সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই যেতে হবে ঝাঊ বনের দিকে। এখান থেকেই সূর্যদোয় সব থেকে ভাল দেখা যায়।

আরো দেখুনঃ

হাতে সময় থাকলে ঘুরতে পারেন বৌদ্ধমন্দির ও রাখাইন পল্লী। এই বৌদ্ধমন্দিরের বৌদ্ধ মূর্তিটি ৩০ফুল লম্বা। আর রাখাইন পল্লী মূলত উপজাতীয়দের আবাসস্থল। যেতে পারেন জেলে পল্লীতে। মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলোকে কাছ থেকে দেখুন। এখান থেকে সুলভ মূল্যে ইলিশ কিনতে পারেন।

যাতায়াতঃ

ঢাকা থেকে বাস অথবা লঞ্চে কুয়াকাটা যেতে পারেন। এছাড়া সায়দাবাদ থেকে সরাসরি কিছু বাস যায় কুয়াকাটায়। সাকুরা পরিবহন ও বিআরটিসি পরিবহনের বাস গুলো একেবারে সিবিচের কাছেই নামিয়ে দেয়। লঞ্চে গেলে দুভাবে যেতে পারেন। ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা অথবা ঢাকা থেকে পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা। সদরঘাট থেকে লঞ্চে পটুয়াখালী হয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে পটুয়াখালীতে নেমে সেখান থেকে বাসে সোজা কুয়াকাটা যেতে হবে। লঞ্চে গেলে বরিশাল হয়ে যাওয়া অনেক সুবিধাজনক। বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যাবার বাস ভাড়া ২২০টাকা। বাস গুলো খুব বড় নয়। বরিশাল রূপাতলী বাসস্টান্ড ও বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে প্রতি ঘন্টায় বাস ছাড়ে। কুয়াকাটাতে গেলে হাতে কিছু সময় নিয়ে যান। দেখার মত অনেক কিছু আছে সেখানে। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল ফাতরার চর। যেটা আসলে সুন্দরবনের একটি অংশ।

থাকা ও খাওয়াঃ

কুয়াকাটাতে অনেক ভাল মানের হোটেল আছে। যেগুলোতে খুব কম খরচে থাকতে পারেন। তবে যারা একটু নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করেন তারা পর্যটন মোটেলে উঠতে পারেন। এখানে পর্যটন মোটেল ও ইয়ূথ ইন এ সিঙ্গেল বেডের রুম ১০০০টাকা ও ডাবল বেডের রুম ১৫০০ টাকাতে পাবেন। এছাড়া ৪ বেডের রুম ভাড়া ১৬০০ টাকা। পর্যটন করপোরেশনের হোটেল পর্যটন হলিডে হোমস এ খবচ একটু কম পরবে। হোটেল গুলোতে খাবারের ব্যবস্থা আছে। চাইলে খাবার রুম সার্ভিসে নিতে পারেন। তাতে অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে। এছাড়াও কুয়াকাটার আশেপাশে আরো ৪০-৫০টি ব্যাক্তি মালিকানাধীন হোটেল আছে। সেগুলোতে খরচ অনেক কম। এগুলোতে ১৫০ থেকে ১০০০টাকার মধ্যে থাকতে পারবেন। এছাড়া সি বিচে কম খরচের অনেক হোটেল পাবেন খাবার জন্য। কুয়াকাটায় গেলে সামূদ্রিক মাছ খেতে ভুলবেন না। এখানকার সামুদ্রিক মাছের অসাধারন রান্না আপনার মুখে অনেকদিন লেগে থাকবে। এখানে শুঁটকি পল্লী থাকায় সেখান থেকে কম মূল্যে শুঁটকি কিনে ফিরতে পারেন।


ছবি- ইন্টারনেট

 

গরমের ফোস্কা থেকে রেহাই পাওয়ার ঘরোয়া উপায়

গরমের সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কা পড়তে দেখা যায়। এই ফোস্কাগুলো তরলে পূর্ণ থাকে এবং এরা গুচ্ছাকারে থাকে। সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির প্রভাবে ফোস্কা পড়ে। এই ফোস্কা অস্বস্তিকর হয় এবং কখনো কখনো প্রচন্ড ব্যথা ও চুলকানি হয়। যদি এতে ইনফেকশন হয় তাহলে অনেক বেশি ব্যথা হয় ও ফুলে যায় এবং জ্বর আসে। এদের চামড়ার ভাঁজের মধ্যে হতে দেখা যায়। সাধারণত হাত বা পায়ে ফুসকুড়ি হতে দেখা যায় ঘষা বা চাপ দেয়া হয় বলে। চামড়ার নীচের ঘাম নালীর মধ্যে যদি ঘাম আটকে যায় তাহলে ছোট ফোলা অংশ বা ফুসকুড়ি হয়। সানবার্ন ব্লিস্টার সহজ ও ঘরোয়া উপায়ে নিরাময় করা যায়। ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমে ব্যথা কমে, ইনফেকশন প্রতিরোধ করে এবং দ্রুত নিরাময় হয়। ঘরোয়া প্রতিকারগুলো সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।

১। ঠান্ডা চাপ

গরমের ফোস্কার ব্যথা ও প্রদাহ কমতে সাহায্য করে ঠান্ডা চাপ। এজন্য ঠান্ডা পানির মধ্যে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত পানিটুকু চেপে ফেলে দিন এবং আক্রান্ত স্থানে তোয়ালেটি দিয়ে রাখুন। দিনে কয়েকবার এই প্রক্রিয়াটি করুন। এতে ফুসকুড়ির জ্বালা যন্ত্রণা কমবে।

সতর্কতা- কখনোই সরাসরি বরফের টুকরো ফোস্কার উপর দিবেন না। কারণ এতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। যতদিন ফোস্কা থাকে ততদিন গোসলের সময় গরম পানি ব্যবহার না করাই ভালো। এর পরিবর্তে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করুন। এতে ব্যথা কমতে সাহায্য করবে।

২। অ্যালোভেরা

হালকা পুড়ে যাওয়ার চিকিৎসায় ও সান বার্ন ব্লিস্টার ভালো করতে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী। এটি ব্যথা কমতে সাহায্য করে, ক্ষতিগ্রস্থ ত্বককে রি-হাইড্রেট করে এবং নিরাময়কে ত্বরান্বিত করে। একটি অ্যালোভেরার পাতার মাঝ বরাবর কেটে জেল বাহির করে নিন। ফুসকুড়ির উপরে এই জেল লাগান এবং শুকাতে দিন। অ্যালোভেরাতে এস্ট্রিঞ্জেন্ট বা কষাটে উপাদান থাকে যা ফুসকুড়ি পরিষ্কার রাখে ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

৩। আলু

কাঁচা আলু ত্বককে ঠান্ডা করতে পারে, ব্যথা কমাতে পারে এবং নিরাময়কে ত্বরান্বিত করতে পারে। কাঁচা আলু ভালো করে ধুয়ে নিয়ে মোটা করে টুকরা করুন। তারপর এদের ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ফুসকুড়ির উপরে লাগিয়ে শুষ্ক হতে দিন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতিদিন লাগান ফুসকুড়ি ভালো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত। আলুর সাথে শশার টুকরা মিশিয়ে নিতে পারেন।

এছাড়াও ভিনেগার, ওটমিল, হলুদ, ব্ল্যাক টি, টুথপেস্ট, টি ট্রি ওয়েল ও কর্ণস্টার্চ ব্যবহার করেও গরমের ফোস্কা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। গরম আর্দ্র আবহাওয়া ফোস্কা পড়ার জন্য উপযুক্ত। ফুসকুড়ি সুই দিয়ে ফুটো করা ঠিক নয়। এতে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় এবং আবারও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর পরিবর্তে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত এদের ব্যান্ডেজ করে রাখা ভালো। গরমের ফুসকুড়ি প্রতিরোধ করার জন্য সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঘরের ভিতরে থাকার চেষ্টা করুন। সব সময় হাইড্রেটেড থাকার চেষ্টা করুন পানি বা লেবুর জুস পান করে।

 

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

 

শাহরুখের সমান পারিশ্রমিক দাবি করলেন রণবীর সিং

‘বাজিরাও মাস্তানি’ ছবি বদলে দিয়েছে রণবীর সিংয়ের ভাগ্যের চাকা। অসংখ্য পুরস্কারও জিতেছেন সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত এই সিনেমার জন্য। সে কারণে নিজের পারিশ্রমিক বাড়াতেই পারেন এই অভিনেতা। খবরে প্রকাশ- ছবির জন্য নয়, লাইভ পারফরমেন্সের জন্য বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের সম পরিমাণ পারিশ্রমিক দাবি করছেন রণবীর।

হিন্দি সিনেমার ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন তিন খান। সাধারণত লাইভ পারফরমেন্স করতে কিং খান নিয়ে থাকেন দুই কোটির মতো। ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, ঠিক সেই অঙ্কের পারিশ্রমিক রণবীর চাইছেন স্টেজ পারফরমেন্স করতে।

 

কাফন-দাফনের সময় মৃত নারীর চুল কিভাবে রাখবে ?

আদম সন্তান মারা গেলে তার জানাযার সাথে কিছু বিধান রয়েছে, যা বাস্তবায়ন করা জীবিতদের ওপর জরুরি। মৃত নারীর ক্ষেত্রে বিধান হলো, নারীর চুল তিনটি বেণী করে পিছনে ফেলে রাখবে।

উম্মে ‘আতিয়্যাহ [রা.] নবী [সা]-এর মেয়ের গোসলের বর্ণনা দিয়ে বলেন- অর্থাৎ- আমরা তার চুলকে সমান তিনটি বেণী বানিয়ে পিছনে রেখে দিয়েছি। সুতরাং কাফনে নিয়োজিত নারীদের এ বিধানটির দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা দরকার ।

মূল : ড. সালেহ ইবনে ফাওজান
ভাষান্তর : মাওলানা মনযূরুল হক

 

ছোটদের জুতা কিনতে যা খেয়াল রাখা দরকার

আপনার ছোট্ট সোনাটি যখন হাঁটতে শেখে, তখন আনন্দই আনন্দ। শিশুর প্রথম পদক্ষেপ প্রত্যেক বাবা-মায়ের কাছে স্মরণীয় হয়ে রয়ে যায়। কিন্তু এই সময় আপনাকে হতে হবে সতর্ক। ছোট্ট সোনাটির জন্য বেছে নিতে হবে সঠিক জুতা। যাতে তার ছোট্ট ছোট্ট পায়ে কোনও আঘাত না লাগে। আরও একটা কারণ হয়, ছোটোবেলা থেকে সঠিক জুতা না পরালে সমস্যা দেখা দিতে পারে পরবর্তীকালে। তাই ছোটো বাচ্চাদের জুতা কেনার আগে এই বিষয়গুলি মাথায় রাখুন-

১. ফ্যান্সি জুতার বদলে আরামদায়ক হবে এমন জুতা বেছে নিন। বাচ্চাদের ফ্যাশনের থেকে বেশি জরুরি তাদের সুস্বাস্থ্য।

২. চামড়া বা সুতি কাপড়ের তৈরি জুতা বেছে নিন। ফ্যান্সি প্লাস্টিকের জুতা প্রথম থেকেই এড়িয়ে চলুন। নয়তো তা ওই ছোট্ট পায়ে অস্বস্তির কারণ দেখা দিলেও দিতে পারে।  দেখবেন, জুতার ওজনও যাতে বেশি না হয়।

৩. শক্ত চামড়ার জুতা এড়িয়ে চলাই ভালো। যেহেতু এই সময় বাচ্চারা খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়, তাই খুব টাইট জুতা বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে।

৪. জুতার সোল ভালো করে দেখে নিন। দেখে নিন বাচ্চা তাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে কি না।  খুব বেশি শক্ত সোল এড়িয়ে চলাই ভালো।

৫. ছোটো মেয়েদের হাইহিল স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।তাই বাচ্চাকে মনের মতো সাজাতে হলে বেছে নিন মনের মতো সুন্দর ও স্টাইলিশ জুতা।এমন জুতা যাতে হিল নেই, কিন্তু আরাম আছে।

৬. বাচ্চার জুতার সাইজ তার পায়ের মাপ বরাবর হওয়া প্রয়োজন।অতিরিক্ত বড় বা খুব টাইট জুতা একেবারেই পরাবেন না।

৭. ক্যানভাস জাতীয় জুতা কিনলে ভালো করে দেখে নিন, তা পায়ে ঠিক করে ফিট হয়েছে কি না।

৮. বাচ্চাদের বাড়ন্ত বয়সে সময় সময় জুতা বদলানো প্রয়োজন। একবার কিনে বহুদিন চলে যাবে এমন চিন্তাভাবনা জুতার ক্ষেত্রে না রাখাই ভালো।

 

নতুন চাকরি খুঁজছেন? এই ৬টি বিষয় মনে আছে তো?

পড়ালেখা শেষ করে একটি ভাল চাকরি পাবার চেষ্টা থাকে প্রতিটি মানুষের। কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাবার জন্য চলে কত চেষ্টা। প্রতিদিনই চাকরির জন্য বিভিন্ন কোম্পানিতে সিভি দিচ্ছেন। কিন্তু আপনি জানেন কি ছোট ছোট কিছু ভুল আপনার চাকরি খোঁজার কাজটি কঠিন করে দিচ্ছে? ভাল ফলাফল থাকার সত্ত্বেও এই ভুলগুলোর জন্য আপনি আপনার পছন্দের চাকরটি হারাচ্ছেন। প্রথম চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো অব্যশই বিবেচনা করবেন তা জেনে নিন আজকের ফিচারটি থেকে।

১। লক্ষ্য নির্ধারণ করা

চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে একজন ফ্রেশারকে প্রথম লক্ষ্য নির্ধারণ করে নেওয়া উচিত এমনটি মনে করেন Michael Provitera, associate professor of organizational behavior at Barry University. আপনি কোন ক্ষেত্রে চাকরি করতে চান, কোন স্থানে চাকরি পেলে আপনার সুবিধা হবে সেটি প্রথমে নির্ধারন করুন। নিজের পড়ালেখা সম্পৃক্ত কোম্পানিগুলো এবং পছন্দের প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পর্কে রিসার্চ করে নিজেকে সে অনুযায়ী প্রস্তুত করুন।

২। চাকরিক্ষেত্র সীমাহীন রাখুন

নিজের লক্ষ্য ঠিক রাখুন। তবে চাকরি ক্ষেত্রটির কোন সীমা রাখবেন না। ভবিষ্যৎ সবসময় অনিশ্চিত। আপনি জানেন না ভবিষ্যত কি হবে। হয়তো আপনার অপছন্দের চাকরটি করতে হতে পারে। সেভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখুন।

৩। ভাল মানের সিভি তৈরি

চাকরিদাতা আপনাকে দেখার আগে আপনার সিভি দেখে থাকেন। তাই কোন অবস্থাতে সিভিকে অবহেলা করবেন না। মনোযোগ দিয়ে সিভি তৈরি করুন। চেষ্টা করুন প্রফেশনাল সিভি তৈরি করতে। আর এই কাজটি করতে আপনাকে সাহায্য করবে ইন্টারনেট।

৪। প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন

প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে  পড়ালেখার পাশাপাশি প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়। প্রযুক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন কোর্স করতে পারেন। অনলাইনে নানা রকম কোর্স করানো হয়ে থাকে। এর অনেকগুলো কোর্সই ফ্রি। আপনি এর যেকোন একটি কোর্স করে নিতে পারেন।

৫। প্রতিষ্ঠান বিষয়ক জ্ঞান

কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টার্ভিউয়ের জন্য ডাক পেলে প্রথম কোন কাজটি করবেন? প্রথমে সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জেনে নিন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েব সাইট থাকে। সেই সাইট থেকে প্রতিষ্ঠান এবং তার কাজের ধরণ সম্পর্কে জেনে নিন।

৬। ইন্টার্ভিউয়ের দক্ষতা বৃদ্ধি করুন

নিয়মিত খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস করুন। বিশ্ব সম্পর্কে আপডেট থাকুন। এই কাজগুলো ইন্টার্ভিউয়ের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। ইন্টার্ভিউয় দেওয়ার সময় নার্ভাস হবেন না। আত্নবিশ্বাসের সাথে ইন্টার্ভিউয় ফেইস করুন। নার্ভাসের ভাব কাটানোর জন্য বাসায় আয়নার সামনে অথবা পরিবারের সামনে ইন্টার্ভিউয় দেওয়া প্যাকটিস করে নিন। এতে আপনার জড়তা কেটে যাবে। আত্নবিশ্বাসের সাথে ইন্টার্ভিউয় দিতে পারবেন।

মনে রাখবেন প্রথম সাক্ষাৎ একটি চাকরি পাওয়ার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই চেষ্টা করবেন ইন্টার্ভিউয়তে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে।

লিখেছেন

নিগার আলম

 

চুড়িতে কবিতার স্বপ্ন

রাজধানীর ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর সড়কে একটি বিপণিবিতানের সামনে চলছে বৈশাখী মেলা। সেখানে সার বেঁধে চুড়ি বিক্রি করছেন কয়েকজন। তাঁদেরই একজন কবিতা। লাল, নীল, সবুজ, বেগুনি রঙিন চুড়ির রিনিঝিনি শব্দের মাঝেই স্বপ্ন দেখেন। তবে চারপাশে রঙের খেলা থাকলেও নিজের জীবনে কোনো রং নেই।
কবিতার চার ছেলেমেয়ে। স্বপ্ন ছিল স্বামী-সন্তান নিয়ে দুবেলা দুমুঠো খেয়ে সুন্দরভাবে জীবন কাটাবেন। তাই নেমেছেন জীবনযুদ্ধে। স্বামী কিছু করেন না। স্বামী-সন্তান সবার দায়িত্ব নেওয়াও সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। তাই সন্তানদের নিয়ে আলাদা থাকেন।
শেরপুরের কলুরচর ব্যাপারীপাড়ায় বাড়ি কবিতার। চুড়ি বিক্রির টাকা দিয়ে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগে। দুই মেয়ে কাজ করে অন্যের বাসায়। বেতন পায় না, শুধু তিনবেলা খাওয়া জোটে। ছোট ছেলেটা একটা দোকানে কাজ করে। সামান্য কিছু টাকা পায়। বলতে গেলে পরিবারে তিনি একাই উপার্জনক্ষম।
কবিতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের আগে আগে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার টাকার চুড়ি বিক্রি হয়। চৈত্র মাসের শেষ দিনে বিক্রিবাট্টা হয় আরও একটু বেশি। সেটা কখনো পাঁচ-ছয় হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যায়। তাই শেরপুর থেকে চুড়ি বিক্রি করতে ঢাকায় আসি।’
পয়লা বৈশাখের আগের রাত পর্যন্ত বিপণিবিতানের সামনের ফুটপাতেই থাকেন তিনি। রাতে গাড়ির শব্দে ঠিকমতো ঘুমও হয় না। এপাশ-ওপাশ করে রাতটা পার করে দেন কোনো রকমে। আর প্রতিদিনের দুর্ভোগ তো আছেই। তারপরও পয়লা বৈশাখের আগে এই ১৩টি দিন কবিতার ঈদের মতোই লাগে। সারা বছর কবিতা চুড়ির পাশাপাশি তাঁর গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে মেয়েদের বিভিন্ন পোশাক, বিশেষ করে অন্তর্বাস বিক্রি করেন বাড়ি গিয়ে। কেননা গ্রামের নারীরা দোকান থেকে এ ধরনের জিনিস কিনতে অভ্যস্ত নন।
কবিতার দিনগুলো কষ্টেই কাটে। কোনো দিন এক বেলা আবার কোনো দিন দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন। তারপরও কবিতা থেমে নেই, জীবনের পথে রঙিন চুড়ির পসরা নিয়ে কবিতা চলছেন…।

 

জীবনজয়ী জেরিন

জীবনের সংকটময় মুহূর্তে হতাশা এসে ভর করে। কিন্তু আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তি তা মোকাবিলা করতে সক্ষম। নুসরাত জেরিন তেমনই একজন। ক্যানসারের সঙ্গে ১০ মাস ধরে যুদ্ধ করে তিনি এখন সুস্থ তো বটেই, শিক্ষকতা করছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির ছাত্রী জেরিন। যখন তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ে, তখন স্নাতকোত্তর পরীক্ষার তাত্ত্বিক অংশ শেষ হয়েছে। গবেষণাপত্র জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। হঠাৎ করে আসা ওই বিপদে বুঝতে পারেন না কী করবেন। স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। স্নাতকোত্তরেও তাঁর প্রথম হওয়ার স্বপ্ন। গবেষণাপত্র সময়ের মধ্যে জমা না দিলে পরীক্ষার ফল ভালো হবে না। এসবই মাথায় ঘুরছে জেরিনের।
পরিবার, বন্ধু ও শিক্ষকেরা সাহস দিলেন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন। নুসরাত জেরিন চিকিৎসার জন্য প্রথমে ভর্তি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে ২২ দিন চিকিৎসা নিয়ে গেলেন ভারতে। নুসরাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গবেষণাপত্র চূড়ান্তের কাজ করেছি। আমার বিভাগের শিক্ষকেরা সহযোগিতা করছেন। ই-মেইলে গবেষণাপত্র পাঠানোর পর বন্ধুরা তা জমা দিয়েছেন। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছি।’ সম্প্রতি তাঁর স্নাতকোত্তরের ফল প্রকাশিত হয়েছে। ক্যানসার তাঁকে সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতায় হারাতে পারেনি। এবারও তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছেন।
দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন জেরিন। তাঁর অসুস্থতার সময় অফিসের নির্ধারিত ছুটি শেষ করে বিনা বেতনে ছুটি নিতে হয়েছে বড় ভাইকে। জেরিন বলেন, ‘পরিবারের মানুষজনের কথা কী বলব। সবাই অনেক করেছে আমার জন্য। হাসপাতালের পুরো সময় মা সঙ্গেই ছিলেন। ছোট ভাই এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।’
এখন কেমন আছেন, জানতে চাইলে নুসরাত জেরিন বলেন, ‘অনেক ভালো আছি। আসছে মে মাসে কিছু পরীক্ষার জন্য আবার ভারতে যেতে হবে। জীবনের কঠিন আর অনিশ্চিত সময়গুলোতে মানুষ নতুন করে দেখতে শেখে জীবন-জগৎ। বদলে যায় সবকিছুর অর্থ।’ কথার একপর্যায়ে তাঁর এই বদলে যাওয়ার কথা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আগে পড়াশোনা নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতাম। বাইরে বের হওয়া বা মানুষের সঙ্গে তেমন একটা মেশা হতো না। কিন্তু এখন অনেক বদলে গেছি। এখন মনে হয়—জীবনটাকেও বোঝা উচিত, মানুষের কাছে যাওয়া উচিত।’
অসুস্থতার সময় চেনা-অচেনা যেসব মানুষের ভালোবাসা আর সহযোগিতা পেয়েছেন, কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসার কথা জানান তাঁদের প্রতি। স্মরণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কথা। তিনি বলেন, ‘কৃতজ্ঞতার কথা তো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তারপরও যাঁরা পাশে ছিলেন, তাঁদের প্রতি ভালোবাসা থাকবে আজীবন। আমার জন্যও দোয়া করবেন।’
কী করবেন সামনের দিনগুলোতে, জানতে চাইলে নুসরাত জেরিন বলেন, ‘জীবনের অনিশ্চয়তায় আমার স্বপ্নগুলো এলোমেলো হয়ে যায়নি। স্বপ্নগুলো পূরণ করতে চাই। পড়াশোনা আর গবেষণা নিয়েই থাকতে চাই।’

 

‘পাচার হওয়া বহু বাংলাদেশী নারী ভারতের জেলে’

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে আসা বহু মহিলাকে আটক করার পর বেআইনিভাবে জেলে রাখা হচ্ছে – যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট নির্দেশ আছে তাদের সরকারি হোমে রাখতে হবে।
বসিরহাট জেলে আটক এমনই তিনজন বাংলাদেশী মহিলার ব্যাপারে তারা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন।
রাজ্য পুলিশের কর্মকর্তারাও অবশ্য স্বীকার করছেন কে সত্যিকারের পাচার-হওয়া, সেটা নিরূপণ করা মুশকিল – আর এর দায় অনেকটাই সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের।
যশোরের ঝিকরগাছা থানা এলাকার তিন মহিলা, শাহিনূর, সারিনা খাতুন ও আমিনা বেগম ভারতের রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করার উদ্দেশে সীমান্ত পেরোনোর পর বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ায়।
প্রথম রাতটা স্বরূপনগর থানার লকআপে কাটানোর পর এখন তাদের ঠিকানা বসিরহাটের জেল – যদিও মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন এদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দেওয়াটাই সম্পূর্ণ অন্যায় হয়েছে।
মাসুমের কিরীটি রায় বলছিলেন, ‘এই মহিলারা কাজের সন্ধানে ভারতে এসেছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত বিএসএফ ও বিজিবি নিজেদের পোষা লাইনম্যানদের সাহায্যে পয়সা নিয়ে নিয়মিতই লোকজনদের সীমান্ত পারাপার করিয়ে থাকে। হতে পারে এই তিনজনের কাছ থেকে তারা পয়সা পায়নি বলেই বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছে’।
কিন্তু এই মহিলারা পাচারের ভিকটিম কি না, সেটা নির্ণয় করার যে পদ্ধতি আছে তা প্রায় কখনওই মানা হয় না – আর তাই তাদের প্রাপ্য সুবিধাগুলোও কখনওই তাদের জোটে না।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অ্যান্টি-ট্র্যাফিকিং ইউনিটের প্রধান শর্বরী ভট্টাচার্যর মতে, বিএসএফ-ই এর জন্য প্রধানত দায়ী।
তিনি সরাসরি বলছেন, ‘বিএসএফ আইনকানুন কিচ্ছু জানে না, তাদের বোঝাতে যাওয়াও বৃথা। তাদের টাকা দিলে সীমান্ত পেরোতে কোনও সমস্যা হয় না – টাকা না-পেলেই হয় মুশকিল। তখনই ওরা গরিবগুর্বো মানুষগুলোকে ধরে – বিশ বা ত্রিশজনের একটা দল বানিয়ে কাছের থানায় – ধরুন বনগাঁতে – জমা দিয়ে যায় কোনও রিপোর্ট ছাড়াই!’
‘এবার বলুন থানার অফিসার কী করতে পারেন? হাজারটা কাজ সামলে তার কি উপায় থাকে এদের নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করার, আলাদা করে কথা বলার? তার কি অবকাঠামো আছে এদের আদালতে নিয়ে হোমে পাঠানোর নির্দেশ বের করার? আর সরকারি হোম থেকেও তো পুলিশকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়!’
‘ফলে প্রায় বাধ্য হয়েই পুলিশ তখন এদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দিয়ে দেয় – আর এদের জেলে পচতে হয়!’, বলছিলেন শর্বরী ভট্টাচার্য।
                          বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত
অথচ সার্ক সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে, পাচার হওয়া নারী-শিশুদের এভাবে হেনস্থা হওয়ার কথাই নয়। কিরীটি রায় বলছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ থাকলেও পশ্চিমবঙ্গেই কিন্তু উদাসীনতা সবচেয়ে বেশি।
তার কথায়, ‘এ রাজ্যে সরকারি পদাধিকারীরা – আদালত হোক বা পুলিশ, তারা এই নির্দেশের কথা হয় জানতে চাইছেন না, বা জানলেও মানতে চাইছেন না। ফলে সব কিছু আগের মতোই চরছে এখানে।’
তার কথা প্রায় অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে স্বরূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিবিসিকে বলছিলেন এমন কোনও নির্দেশ তারা খুঁজেই পাননি।
‘আমি নেটে গিয়ে মিনিস্ট্রির সাইট ঘেঁটে দেখেছি – যেখানে ফরেনার্সদের নিয়ে বলা আছে সেখানেও খুঁজেছি – মানবাধিকারের লোকজন যেটা বলছেন ওখানে ওরকম কিন্তু কিছু পাইনি’, বলছিলেন ওই কর্মকর্তা।
শুধু তাই নয়, এই বাংলাদেশী মহিলাদের ভিকটিম হিসেবেও মানতে আপত্তি আছে পুলিশ কর্তৃপক্ষের।
‘আঠারোর ওপর যাদের বয়স, যারা জেনেবুঝে একটা দেশের সীমান্ত পেরোচ্ছে – তাদের কীভাবে ভিক্টিম বলব বলুন তো? বাচ্চা ছেলে তো নয় – এরা প্রাপ্তবয়স্ক, জেনেবুঝে একটা অন্যায় করছে। কীসের ভিক্টিম?’ বলছিলেন স্বরূপনগর থানার কর্মকর্তা।
ফলে পশ্চিমবঙ্গের জেলে কেন আজও এমন শত শত বাংলাদেশী নারী ও শিশু অকারণে জেলে কাটাচ্ছেন – তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই।
 

 

টিএসসিতে নারীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ পুলিশ সদস্যের, পরে ক্ষমা প্রার্থনা

পুলিশের হাতে অপমানের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সহ-সভাপতি হাবিবা জান্নাত। পরে মহানগর পুলিশের কনস্টেবল রুহুল আমিন অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করার পর ক্ষমা চেয়েছেন। হাবিবা জান্নাত নামের ওই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান, প্রাণ পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে থাকেন।
ঘটনার পর অভিযোগ পেয়ে রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এম আমজাদ আলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়সহ রমনা জোনের পুলিশ কর্মকর্তারা প্রক্টরের কার্যালয়ে যান। সেখানে মেয়েটির বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মী, ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ঘটনার জন্য পুলিশ সদস্য রুহুল আমিন দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট বরাবর স্থানে হাবিবাসহ কয়েকজন দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় সেখানে দায়িত্ব পালনরত রহুল আমিন পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) গাড়ি যাবে বলে তাদের সরতে বলেন। রহুল আমিন সেখানে দাঁড়ানো হাবিবার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করেন এবং তাঁকে উদ্দেশে করে কটূক্তি করেন। এ নিয়ে সেখানে থাকা হাবিবাসহ অন্যদের সঙ্গে পুলিশের কথা-কাটাকাটি হয়।
ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তাহসিন মাহমুদ বলেন, তাঁরা অভিযোগ করার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে আছেন। ওই পুলিশ সদস্য ক্ষমা চেয়েছেন। এখন আর কিছু বলার নেই।

 

বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে স্কুল ছাত্রীদের মানববন্ধন, ইউএনওর যুদ্ধ ঘোষনা

বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের শিবচরে পাচ্চরে কিলোমিটারব্যাপী এলাকা জুড়ে স্কুল ছাত্রীরা মানববন্ধন করেছে । এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ কর্মসুচীতে একাত্মতা প্রকাশ করে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেন।
জানা যায় , “সকল হাত এক করি , বাল্য বিবাহ বন্ধ করি ” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে রবিবার দুপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর এলাকায় পাঁচ্চর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় , পাঁচ্চর উচ্চ বিদ্যালয় , বাখরের কান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় , মাদবরচর আর এম উচ্চ বিদ্যালয়সহ ৪টি স্কুলের সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশ গ্রহনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মহাসড়কের প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এ মানববন্ধন। এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরান আহমেদ মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করেন ।এসময় শিবচর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হামিদা খানম , পাঁচ্চর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মোঃ সামসুল হক , পাঁচ্চর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহালম সিরাজী , মাদবরচর আর এম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোতালেব মিয়া , বাখরের কান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দূর্লভ চন্দ্র পাল , ব্রাকের শিবচর শাখার কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন । বেসরকারি সংস্থা ব্রাক মানববন্ধন অনুষ্ঠানে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন ।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরান আহমেদ বলেন , বাল্য বিবাহ একটি ব্যাধি যা শিক্ষিত সমাজ গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করে মাতৃ মৃত্যু হার বৃদ্ধি করে । বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে আমরা সোচ্চার । যে কোন মূল্যে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা হবে । আমি এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছি।

 

এক ভিন্নধর্মী ‘সীফুড’ উৎসব

ঢাকার গুলশান-১ এ শুরু হয়েছে এক ভিন্নধর্মী ‘সীফুড’ উৎসব !

এখানে আপনি পাবেন স্প্যানিশ সীফুড পায়ালা, মিশরীয় মাছের কোফতা, লেবাননের লাল স্ন্যাপার তাহিনী, ফ্রেঞ্চ বুলাবেইস এর মত অসংখ্য মজাদার সব ‘সীফুড’ নিয়ে ভিন্নধর্মী উৎসব আয়োজন করছে লা মেরিডিয়ান ঢাকা।

এখানে আপনি  বিভিন্ন দেশের সমুদ্রের তাজা মাছের  স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন।

২০ এপ্রিল ২০১৬ থেকে ২৪ এপ্রিল ২০১৬ রোজ সন্ধা ৭.০০টা থেকে রাত ১১.০০টা পর্যন্ত  সীফুডের নানান ধরনের স্বাদ উপভোগ করতে খরচ হবে প্রতি ব্যাক্তির জন্য ৪২০০ টাকা মাত্র।
লা মেরিডিয়ান ঢাকা-র মাষ্টার শেফ আবু নাসের এবং শামসের হোটেলের মেডিটেরিনিয়ান রুফটপ রেস্তোরা ‘ওলেয়া’ তে আধুনিক রন্ধনপ্রনালীর সাথে ভূমধ্যসাগর দেশীয় রন্ধনপ্রনালীর সংমিশ্রণে নানান স্বাদের সীফুড পরিবেশন করবেন।
অতিথিরা ঢাকায় পাবেন মরক্কোর কালামারি এবং শুকনো এপ্রিকোট দিয়ে চিংড়ির ত্যাজিন, ইতালীয় পদ্ধতিতে তৈরি জাফরান সস দিয়ে গলদা চিংড়ি, তিউনিসিয়ার হ্যারিসার স্বাদে ভাজা মাছ।
এই উৎসবের জন্য ওলেয়া রেস্তোরায় টেবিল রিজার্ভ করার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন +০১৯৯০৯০০৯০০ নম্বরে।

 

সংবাদপত্র খুললেই ধর্ষণ, নারীর প্রতি সহিংসতা

নারীর অগ্রগতির কথা বললেই হবে না, পাশাপাশি অগ্রগতির পথে যে বাধা আছে, সেগুলো চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সংবাদপত্র খুললেই ধর্ষণ, নারীর প্রতি সহিংসতা দেখতে হচ্ছে!

সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারীর অধিকার আদায়ের জন্য নারীদের একত্রিত করে কাজ করে যাচ্ছে। একদিকে মহিলা পরিষদের কাজ যেমন উল্লেখ করার মতো, অন্যদিকে এটাও ঠিক যে আজ আমরা সংবাদপত্র খুললেই ধর্ষণসহ নারীর প্রতি বিভিন্ন প্রকার সহিংসতার চিত্র দেখতে পাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে নারী-পুরুষের সমতার জন্য আমরা লড়ে যাচ্ছি। যতদিন না এদেশে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা হবে, ততদিন এর জন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।’

নরওয়ে রাষ্ট্রদূত মেরেতো লুনডেমো বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নের প্রশ্নে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ যদিও অনেক কাজ করছে, তারপরও সহিংসতা প্রতিরোধে এদেশে আরো অনেকটা পথ হাঁটতে হবে।’

সংগঠনের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, ‘অগ্রসর বাংলাদেশের যে চিত্র আমরা দেখি তার কাজ শুরু হয়েছিল রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সময় থেকে। সুলতানার স্বপ্ন’র একটি অংশ আজ সফল হচ্ছে। নারী রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, নারী পাহাড়ে উঠছে আবার নারী পাথর ভাঙছে। কিন্তু অন্যদিকে দেখি, নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্র।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় আজ নারীরা আছে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের কাজ করছে, কিন্তু তারপরও নারী সহিংসতার শিকার। সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যদি আমরা কাজ না করি তাহলে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না।’

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ২০০৭ সাল থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য নারীদের সম্মাননা দিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য ২৮ জন নারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এতে চলচ্চিত্রকার ২ জন, চ্যালেঞ্জিং পেশায় ৭ জন, তথ্য ও প্রযুক্তিতে ২ জন, সাংবাদিকতা পেশায় ৯ জন, নারী উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ী ২ জন, খেলাধুলায় ২ জনকে সম্মাননা দেয়া হয়।

সংগঠনের সভাপতি আয়শা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউএন উইমেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি তপতী সাহা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সহ-সম্পাদক চৈতালী ত্রিপুরা প্রমুখ।

 

শিশুকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল মা

পারিবারিক কলহের জের ধরেই খুন করা হয়েছে শিশু নেহাল সাদিককে। শিশুটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করার পর আত্মহত্যারও চেষ্টা চালিয়েছিলেন মা মুক্তি বেগম। তিনি গলায় জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সোমবার দিবাগত রাত ১২টা বা এর কিছু পরে রাজধানীর উত্তরখানে মাস্টারপাড়া সোসাইটির একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সিরাজুল হক বলেন, শিশুটির পেটের নাড়িভুড়ি বের হয়ে গেছে, যা দেখে ধারণা করা হচ্ছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার পেট কাটা হয়েছে।

এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে গেছে। উত্তরখান থানা পুলিশ সূত্র জানায়, বাবা সাজ্জাদ হোসেন পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী। স্বামী সাজ্জাদ হোসেন ও স্ত্রী মুক্তির উভয়ের ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। বেশ কিছু দিন ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল।

সোমবার সকালে স্বামী সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে স্ত্রী মুক্তির ঝগড়া হয়। ঝগড়ার মধ্যেই সাজ্জাদ সকালে গার্মেন্টেসে চলে যান। রাতে বাসায় ফিরে দেখেন সন্তান নেহাল সাদিক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আর এসময় স্ত্রী মুক্তির গলাও রক্তাক্ত দেখেন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন।

পরে রাতেই শিশুটিকে উদ্ধার কর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারিও রাজধানীর বনশ্রীতে দুই শিশুকে হত্যা করেন মা মাহফুজা মালেক। এ ঘটনা সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় প্রথমে পরিবারের পক্ষ থেকে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর কথা বলা হলেও লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে খুনের আলামত পাওয়া যায়। এরপর তদন্তে জানা যায়, শিশুদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়েই দুই শিশুকে খুন করে মা।

 

চিনে নিন বিশ্বজুড়ে চমৎকার গোলাপী বিচগুলো

গোলাপী রং এর বিচ? অবাক হচ্ছেন শুনে? হ্যাঁ, আমাদের এই বিচিত্র পৃথিবীতে বিভিন্ন রং এর চমৎকার বিচের মধ্যে গোলাপী রং এর বিচও আছে। এই বিচগুলি গোলাপী হওয়ার কিছু ব্যাখ্যা আছে অবশ্য। ছোট্ট লাল এক প্রকারের জীব এই গোলাপী রং এর জন্য দায়ী। এই জীবগুলো শেল এবং মৃত কোরালের উপর জন্মায়। পরে এগুলো সমুদ্রের পানিতে পড়ে এবং ঢেউয়ের সাথে ধুয়ে বিচে চলে আসে। বিচের বালিতে মিশে গিয়ে একটা গোলাপী রং এর তৈরি করে। আবার কখনো কখনো কোরাল অথবা শেল থেকে অমেরুদন্ডী জলজ জীব যেমন হার্মিট ক্রাবের ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের প্রাকৃতিক ফর্মুলেশন থেকে এই গোলাপী রং তৈরী হয়। কিছু বীচ অনেক বেশী গোলাপী আবার কিছু বিচের রংটা একটু ফ্যাকাসে। আসুন বিস্ময়কর কয়েকটি গোলাপী বিচের কথা জেনে নিই।
 
গ্রেট সান্তা ক্রুজ আইল্যান্ড
ফিলিপাইনের জামবোঙ্গা শহরে ছোট্ট দ্বীপের নাম গ্রেট সান্তা ক্রুজ আইল্যান্ড। এটি কোরালিন বালির অপূর্ব গোলাপী বিচ হিসেবে বিখ্যাত। এরকম বিচ খুবই বিরল পৃথিবীতে। ফিলিপাইনের অসংখ্য চমৎকার সব বিচের মধ্যে গ্রেট সান্তা ক্রুজই একমাত্র গোলাপী রং এর বিচ। লাল পিপি কোরাল বালির সাথে মিশে বিচটি গোলাপী রং ধারণ করেছ।
 
বার্বুডার গোলাপী বিচ
ক্যারাবিয়ান সমুদ্রের এই দ্বীপটি আসলে একটি জমজ বিচ, বার্বুডা এবং এন্টিগুয়া যা ক্যারাবিয়ান সমুদ্র এবং আটলান্টিক মহা সাগরের মাঝে অবস্থিত। বীচের পশ্চিম দিকটি ক্রমাগত প্রসারিত হচ্ছে এবং এর সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিচ্ছে চমৎকার গোলাপী বালি। দক্ষিণ-পশ্চীমের বিচটি সবচেয়ে সুন্দর। এরকম বিস্তৃত বিচ খুব একটা দেখা যায় না যা কিনা সূক্ষ্ম শঙ্খ-শেল রঙ, সাদা বালির প্যাচ দিয়ে বোনা।
 
বালোস লেগুন বিচ অফ ক্রীট
এই চমৎকার বিচটি অবস্থিত গ্রীসে। উপদ্বীপটি গ্রামভাউসা এবং কোস্ট অব ক্রীটের মাঝে রয়েছে। অগভীর এবং উষ্ণ জল গোলাপী বালির রেখা তৈরী করেছে, যা যে কোন ভ্রমণকারীকে অবাক করে দেবে। সূক্ষ এই গোলাপী রং তৈরি হয়েছে মিলিয়ন মিলিয়ন শেলের গুড়ো বালিতে মিশে। বিচে প্রচুর পাথর আর ক্লিফ রয়েছে যা উপদ্বীপটিকে ধরে রেখেছে।
টাংসি বিচ অফ লমবক
পশ্চীম নুসা টেঙ্গারার ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপ হল লমবক। এটি লেসার সান্দা দ্বীপের একটি অংশ। এর টাংগী বিচ বা গোলাপী বিচ একে পৃথিবীর অন্য সব বিচ থেকে আলাদা করে। এর এই অসাধারণ রংটি এসেছে কোরাল রীফের ভাঙন থেকে। এটি এতই প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত যে এখানে খুব একটা পর্যটক আসে না। তাই নির্জনতার সমূহ স্বাদ পাবেন এখানে আর দেখতে পাবেন প্যানারোমা ভিউ।
বোনাইর গোলাপী বিচ
ক্যারাবিয়ান দ্বীপে অবস্থিত লিউয়ার্ড এন্টাইলস-এর বিচ এটি, যা একত্রে আরুবা এবং কুরাকাও এর সাথে মিলে সাউথ আমেরিকার এ বি সি আইল্যান্ড তৈরি করেছে। বিচিত্র সব দৃশ্যের সমাহার এই বিচটি পর্যটক মনে তৈরী করে ভিন্ন এক আবেদন। মিহি গোলাপী বালি, অসীম আকাশ আর সমুদ্রের নীল সব মিলিয়ে বোনাইর বিচ মন ভরিয়ে দেয় স্নিগ্ধতায়।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

পেটের সমস্যা ও পানিশূন্যতা থেকে মুক্তি দেবে এই ৬টি পানীয়

গরমে অনেক সময় এমন অবস্থা হয় যখন আপনার প্রচণ্ড পেটে ব্যথা হয় তখন কিছু খেতেও ইচ্ছা করেনা। ইলেক্ট্রোলাইটের ব্যালেন্স যখন ক্ষতিগ্রস্থ হয় তখন পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়। ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে এবং পেটের সমস্যার উপসর্গগুলোকে কমাতে সাহায্য করে এমন কয়েকটি পানীয়ের কথা জেনে নেই আসুন।

১। চিনি ও লবণ পানি

অতি প্রাচীন কাল থেকেই আমাদের দাদী নানীরা এই পানীয়টি ব্যবহার করে আসছেন। চিনি ও লবণ মেশানো পানি পান করলে শুধু শরীরের তরলের ভারসাম্যই বজায় রাখতেই সাহায্য করেনা বরং তা ডায়রিয়ার ফলে সৃষ্ট দুর্বলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এনার্জি সরবরাহ করে।

২। ঘোল

তাজা দই ও একচিমটি লবণ দিয়ে তৈরি করা ঘোল পান করলে যে শিথিলতা পাওয়া যায় তা আর অন্য কিছুতে পাওয়া যায়না। এই পানীয়টি যে শুধু পাকস্থলীতে শীতল অনুভূতি প্রদান করে তাই নয়। এটি পাকস্থলীর এসিড প্রতিরোধ করে এবং অন্ত্রের কাজের উন্নতি ঘটায়। কারণ এটি প্রকৃতিগত ভাবে একটি প্রোবায়োটিক।

৩। ডাবের পানি

স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টি সমৃদ্ধ ডাবের পানি পান করা ডায়রিয়া ও ডিহাইড্রেশনের জন্য অনেক উপকারি। এই পানীয়টি শুধুমাত্র হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইট ও মিনারেলের ক্ষতিপূরণই করেনা, বরং পাকস্থলীর pH  কমিয়ে পরিপাক নালীকে শান্ত করে।

৪। শিকাঞ্জি

মশলাযুক্ত লেবু পানিকে শিকাঞ্জি বলে। শিকাঞ্জিতে থাকে বিট লবণ, চিনি, লেবুর রস, পানি, জিরা, গোলমরিচ ও আদা। এতে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান থাকে যা পেটের সমস্যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে। পানি ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করে। ফলে পানিশূন্যতা প্রতিরোধ হয়।

৫। মেন্থল ও ক্যামোমিল চা

পেটের ব্যথা কমতে সাহায্য করে মেন্থল ও ক্যামোমিল চা। এরা উভয়েই পাকস্থলীর এসিডকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে এবং বমি বমি ভাব ও বুক জ্বালাপোড়া করা কমায়। মেন্থল বা ক্যামোমিল চায়ের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিলে মিষ্টতার পাশাপাশি পেটের সমস্যার নিষ্পত্তিতেও সাহায্য করবে।

৬। আদা চা

পেটের সমস্যা দূর করতে আদা অত্যন্ত চমৎকারভাবে কাজ করে। সকালে আদা চা খাওয়া ভালো। দুই কাপ পানি ফুটিয়ে এর মাঝে আদার ২টি টুকরা দিয়ে অল্প আঁচে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর আদাটুকু ছেঁকে নিয়ে এর সাথে মধু মিশান। পেটের ব্যথা ১মিনিটেই উধাও হবে। আদা চায়ের মত পুদিনার চা ও পেটের ব্যথা প্রশমিত করতে পারে।

পানিশূন্যতা দূর করার জন্য প্রথমেই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানিশূন্যতার কারণেও শরীরে ব্যথা বেদনা ও অস্বস্তি হতে পারে। যখনই আপনি শরীরকে জলপূর্ণ করতে পারবেন তখনই দেখবেন সমস্ত অস্বস্তি দূর হয়ে গেছে। এছাড়াও সুপ খেতে পারেন। সুপে ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যা ডিহাইড্রেশনের পড়ে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন