All posts by Oporajita

 

বৃহত্তম কবিরা গুনাহ কী?

শিরক ব্যতীত প্রত্যেক পাপের ক্ষেত্রেই আল্লাহ তাআলার ক্ষমা প্রাপ্তির একটি সম্ভাবনা আছে। তাওবাই শিরকের একমাত্র প্রতিকার। এমন বড় শিরক রয়েছে যা দীন ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ।

আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা যে কোনো বিচারে সবচেয়ে বড় হারাম ও মহাপাপ। আবু বাকরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

«أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الكَبَائِرِ؟» ثَلاَثًا، قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ…»

“আমি কি তোমাদেরকে বৃহত্তম কবীরা গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না (তিনবার)? সাহাবীগণ বললেন, অবশ্যই বলবেন, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শিরক করা …..”। [সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৯৭৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৮৭]

শিরক ব্যতীত প্রত্যেক পাপের ক্ষেত্রেই আল্লাহ তাআলার ক্ষমা প্রাপ্তির একটি সম্ভাবনা আছে। তাওবাই শিরকের একমাত্র প্রতিকার। আল্লাহ বলেছেন,

إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُ

“নিশ্চয় আল্লাহ তার সঙ্গে কৃত শির্ককে ক্ষমা করবেন না। তাছাড়া যত গুনাহ আছে তা তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৮]

এমন বড় শিরক রয়েছে যা দীন ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এরূপ শিরককারী ব্যক্তি যদি ঐ অবস্থায় মারা যায় তাহলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক মুসলিম দেশেই আজ শিরকের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

রান্নাঘরের টুকিটাকি দিয়ে তুলে ফেলুন মেকআপ

সুন্দরভাবে মেকআপ তোলার জন্য মেকআপ রিমুভার যে কত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি নারীই তা জানেন। সুন্দরভাবে মেকআপ করলে হয় না, এটি সঠিক নিয়মে তোলাটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মেকআপ সঠিক নিয়মে তোলা না হলে ত্বকে ব্রণ দেখা দেয়, শুধু ব্রণ নয় এটি বলিরেখাসহ ত্বকে নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। বাজার ঘুরলে নানা মেকআপ রিমুভার কিনতে পাওয়া যায়, কিন্তু বাজারের মেকআপ রিমুভার ত্বকে অনেক সময় নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার হাত থেকে বাঁচতে ব্যবহার করুন প্রাকৃতিক রিমুভার।

১। দুধ

দুধ বেশ ভাল প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। একটি তুলোর বল কাঁচা দুধে ভিজিয়ে নিন। এবার এটি ত্বকে আলতো হাতে ঘষে ঘষে মেকআপ তুলুন। দুধের প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বক থেকে ময়লা দূর করে, ত্বক ময়েশ্চার করে।

২। ময়দা এবং টকদইয়ের মেকআপ রিমুভার

এক টেবিল চামচ ময়দা, এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো এবং প্রয়োজনমতো টকদই একটি বাটিতে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে মুখ ২/৩ মিনিট ম্যাসাজ করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মেকআপ ত্বকের গভীর থেকে দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বক থাকবে সুস্থ।

৩। শসা

শসা কুচি করে রস তৈরি করে নিন। এবার শসার রস একটি এয়ার টাইট পাত্রে রেখে সংরক্ষণ করুন। মেকআপ তোলার সময় শসার রসের সাথে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল অথবা কাঁচা দুধ মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি মেকআপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার করুন।

৪। নারকেল তেল

মেকআপ তোলার সহজলভ্য এবং কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান হল নারকেল তেল। এটি সব ধরণের ত্বকে ব্যবহারযোগ্য। হাতের আঙ্গুলে অথবা একটি তুলোর বলে কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল নিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করে লাগান। তারপর ভেজা টাওয়াল দিয়ে মুছে ফেলুন। দেখুন সুন্দরভাবে মেকআপ উঠে গেছে।

৫। টকদই

রান্নাঘরের আরেকটি অন্যতম উপাদান হল টকদই। ত্বকের নানা সমস্যা দূর করতে টকদই ব্যবহার করা হয়। ত্বক পরিষ্কার করতেও টকদই বেশ কার্যকর। একটি তুলোর বলে টকদইয়ে ভিজিয়ে নিন। এরপর এটি ত্বকে ভাল করে ঘষে নিন। কিছুক্ষণ পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

এছাড়া মধু, বেবি অয়েল, অ্যালোভেরা জেল, সানফ্লাওয়ার অয়েল ইত্যাদি প্রাকৃতিক মেকআপ রিমভার হিসেবে কাজ করে।

লিখেছেন
নিগার আলম

 

ইমরানের গানের মডেল কল্পনা, সঙ্গে আশফাক-সায়রা

এ বছরের শুরুর দিকে প্রকাশিত হয় ইমরান-তাহসানের দ্বৈত অ্যালবাম ‘মন কারিগর’। অ্যালবামের সব গানের কথা লেখেন রবিউল ইসলাম জীবন এবং সুর এবং সঙ্গীতপরিচালনা করেন ইমরান। এই অ্যালবামেরই ‘নিশি রাতে চান্দের আলো’ শিরোনামের একটি গানের মিউজিক ভিডিও প্রকাশিত হতে যাচ্ছে খুব শিগগিরই। গল্পভিত্তিক এই মিউজিক ভিডিওতে মায়ের ভূমিকায় দেখা যাবে পরিচিত মুখ খালেদা আক্তার কল্পনাকে। প্রায় তিন বছর পর কোন মিউজিক ভিডিওর জন্য আবারও শুটিং করলেন কল্পনা। মিউজিক ভিডিওটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকবেন আশফাক রানা ও সায়রা। এটি নির্মাণ করছেন সৈকত রেজা।

এ প্রসঙ্গে খালেদা আক্তার কল্পনা  বলেন, ‘মিউজিক ভিডিওর জন্য অনেক প্রস্তাব আসে। কিন্তু গল্প পছন্দ না হওয়ায় ফিরিয়ে দিই। এই মিউজিক ভিডিওর গল্প শুনে পছন্দ হয়েছে বলেই রাজি হয়েছি। দর্শকরা ভালো কিছুই পেতে যাচ্ছে।‘

অন্যদিকে ইমরান বলেন, ‘খালেদা আক্তার কল্পনার অভিনয়ের ভক্ত আমি। আমার গানে তিনি অভিনয় করেছেন এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। অডিওতে গানটির জন্য অনেক সাড়া পেয়েছি। আশা করছি মিউজিক ভিডিও প্রকাশের পর সেই সাড়াতে নতুন মাত্রা যোগ হবে।‘

নির্মাতা সৈকত রেজা বলেন, ‘অনেক আগেই গানটি শুনেছি। মিউজিক ভিডিও নির্মাণের দায়িত্ব যখন আমার উপর পড়ল তখন থেকেই এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আশা করছি শ্রোতা-দর্শকদের ভালো কিছু উপহার দিতে পারবো।‘

উল্লেখ্য, ‘নিশি রাতে চান্দের আলো’ গানটি দিয়েই প্রথমবারের মতো কোন ফোক গানে কণ্ঠ দেন ইমরান। অ্যালবামটি বাজারে এনেছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিডি চয়েস।

 

মাগুরায় গাছে বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন, গ্রেফতার ২

ছাগলে সবজি ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগে মাগুরা সদর উপজেলার কুকনা গ্রামে মালতী রাণী (৪০) নামে এক গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার কুকনা ঘোষপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এলাকার কয়েকজন মালতী রাণীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে।

মালতী রানী জানান, সংসারে বাড়তি আর্থিক জোগানের জন্য তিনি হাঁস-মুরগি পালন করেন ও ফাঁকা মাঠে গরু-ছাগল চরান। এ নিয়ে প্রতিবেশী ভরত কুমার প্রায়ই তাকে বকাঝকা করেন। বিষয়টি এলাকার কয়েকজনকে জানালে ভরত কুমার তার ওপর ক্ষিপ্ত হন ও মালতীর একটি গরু সম্প্রতি লোক দিয়ে গোয়াল থেকে খুলে নিয়ে যান। ঘটনাটি মালতী মাগুরা সদর থানায় অবহিত করলে ভরত কুমার তার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হন। এরই এক পর্যায়ে গতকাল বিকালে মালতী রানীর পোষা ছাগল ভরত কুমার ঘোষের সবজি খেতে ঢুকে পড়লে ভরত কুমার ও অন্যরা তার নামে নানা কুৎসা রটিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেদম মারধর করে নির্যাতন চালান। বিষয়টি এলাকাবাসী পুলিশকে জানালে অভিযুক্তরা তার বাঁধন খুলে দেন।

নির্যাতিত মালতী রানী কুকনা গ্রামের রতন কুমার শীলের স্ত্রী।

এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ এসে মালতীকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সুলতা মাগুরা সদর থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

পরে শুক্রবার রাতে পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের হবে।

 

এক মিনিটে তৈরি করুন মজাদার চিজকেক

বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার হল “চিজকেক”। বড় বড় বেকারীতে গেলে দেখতে পাওয়া যায় নানান স্বাদের চিজকেক। অনেকেই আছেন যারা ঘরে কেক তৈরি করেন। আপনি চাইলে চিজকেকও ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন। তাও মাইক্রোওয়েভে! মাইক্রোওয়েভে মাত্র এক মিনিটে তৈরি করে নিন দারুন মজার তিনটি চিজকেক।

উপকরণ:

ওরিয়ো চিজকেক

৪ আউন্স(১১৫ গ্রাম) চিজ ক্রিম

১ কাপ(২২৫ গ্রাম) টকদই

১/২ চা চামচ ভ্যানিলা

৪ টেবিল চামচ চিনি

২টি ডিমের সাদা অংশ

১ টেবিল চামচ ময়দা

১/৩ কাপ ওরিয়ো চকলেট বিস্কুট গুঁড়ো

নিউটেলা চিজকেকের জন্য আরও প্রয়োজন হবে  
নিউটেলা
ওরিয়ো কুকিস

ফানফেটি চিজকেকের জন্য আরও প্রয়োজন হবে

দুটি চিনিমুক্ত বিস্কুট

১ টেবিল চামচ স্পার্কেলস

প্রণালী:

ওরিয়েও চিজকেক

১। একটি পাত্রে ক্রিম চিজ, টকদই, ভ্যানিলা, চিনির গুঁড়ো, ডিমের সাদা অংশ এবং ময়দা ভাল করে বিট করে নিন।

২। এখন মগে প্রথমে ওরিয়ো বিস্কুটের গুঁড়ো দিয়ে দিন।

৩। এবার চিজের মিশ্রণের সাথে ওরিয়ো বিস্কুটের গুঁড়ো ভাল করে মেশান। মিশ্রণটি মগে ঢেলে দিন।

৪। উপরে কিছুটা বিস্কুটের গুঁড়ো ছিটিয়ে মাইক্রোওয়েভে এক মিনিট বেক করতে দিন।

৫। এক মিনিট পর এটি বের করে ২ ঘন্টার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন।

৬। দুই ঘন্টার পর পেয়ে যান মজাদার ওরিয়ো চিজকেক।

নিউটেলা চিজকেকে

নিউটেলা চিজকেক তৈরির জন্য একটি পাত্রে নিউটেলা ভাল করে বিট করে নিন। এরসাথে চিজকেকের বেইজ (যেটি ওরিয়ো চিজকেক তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে) সেটি মিশিয়ে নিন। ব্যস তৈরি হয়ে গেল নিউটেলা চিজকেক।

ফানফেটি চিজকেক

ফানফেটি চিজকেক তৈরির জন্য পাত্রে প্রথমে বিস্কুটের গুঁড়ো দিয়ে তার উপর চিজকেকের বেইজ (যেটি ওরিয়ো কেকের জন্য তৈরি করা হয়েছে) দিয়ে দিন। এর সাথে  স্পার্কেলস দিয়ে দিন। তারপর ওরিয়েও চিজকেক তৈরির সম্পূর্ণ প্রণালীটি অনুসরণ করুন।

এইভাবে পছন্দমত চিজকেক তৈরি করে ফেলুন মাত্র এক মিনিটে।

 

সুপারহিরো চরিত্রের ১০ হলিউড সিনেমা

কমিকস বইয়ের পাতা থেকে একসময় শিশুদের কল্পনার জগতে বাস করত অতিমানবীয় শক্তির অধিকারী সুপারহিরোরা। সেখান থেকে একদল নির্মাতা তাদের তুলে ধরেছেন সেলুলয়েডের ফিতায়। সুপারহিরোদের কাজ নানান অভিযানে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করা। বর্তমান সময়ের দর্শকদের কাছে সুপারহিরো সিনেমা একটি বিশেষ আকর্ষন।

কমিক বুকের সুপারহিরো সিনেমার মূল বৈশিষ্ট্য সাধারণত পৃথিবী অথবা সমাজের প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী নেতিবাচক চরিত্রকে প্রতিরোধ করার মাধ্যমে সেই অতিমানব নায়ক পুরো মানবজাতিকেই রক্ষা করে। এখানে মূল চরিত্র বা নায়ক বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন হয় এবং তার প্রধান কাজ হচ্ছে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ভিলেনের বিরুদ্ধে লড়াই করা। ৪০ দশকে টিভির জন্য প্রথম সুপারহিরো সিনেমা নির্মিত হয়। ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রিচার্ড ডোনার পরিচালিত ‘সুপারম্যান’ প্রথম পূর্নদৈর্ঘ্য সুপারহিরো সিনেমা।

কমিক বই থেকে নির্মিত এমন ১০ সুপারহিরো চরিত্র নিয়ে নির্মিত সিনেমা নিয়ে আমাদের আজকের প্রতিবেদন-

১. আয়রন ম্যান
সুপারহিরো চরিত্রগুলোর মধ্যে আরও একটি অন্যতম চরিত্র আইরন ম্যান। এটিও মারভেল কমিকসের একটি চরিত্র। ২০০৮ সালে মুক্তি পেল ‘আয়রন ম্যান’। প্রথম পর্বের সাফল্যের পরে দ্বিতীয় পর্বটিও যথেষ্ট সাড়া পেয়েছে। এটি মারভেল সিনেমাটিক ইউনিভারস ফ্রাঞ্চাইজির প্রথম চলচ্চিত্র। পরবর্তীতে ২০১০ এবং ২০১৩ সালে এই সিরিজের পরবর্তী দুই চলচ্চিত্র আইরন মান টু এবং আইরন ম্যান থ্রি মুক্তি পায়। এই সুপারহিরো সিনেমার পরিচালক জন ফ্যাভ্রু। আয়রন ম্যান নামের মার্ভেল কমিকসের চরিত্রকে সিনেমায় রূপ দিয়েছেন এই পরিচালক। আয়রন ম্যান একজন সাধারণ মানুষ মাত্র, কিন্তু নিজের উদ্ভাবনী শক্তি এবং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিজেকে আয়রন ম্যানে রূপান্তর করেন। আয়রন ম্যান সিনেমায় স্টার্কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র, জেফ ব্রিজেস এবং গিনেথ প্যালট্রো।

২. টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল
অ্যাকশনধর্মী এ সুপারহিরো সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯০ সালে। এটি  টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল বা টি এম অ্যান টি ফ্রাঞ্চাইজিসের প্রথম চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন স্টিভ ব্যারন। এর পরে এই সিরিজের আরও চলচ্চিত্র যেমন- ১৯৯১ সালে মুক্তি পায় টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল : দ্য সিক্রেট অফ দ্য অজ, ১৯৯৩ সালে টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল থ্রি এবং সর্বশেষ ২০০৭ সালে মুক্তি পায় টি এম অ্যান টি চলচ্চিত্রটি। ২০১৪ সালের আগস্টে মুক্তি পায়  টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল এর আরেক পর্ব।

৩. অ্যান্ট ম্যান
২০০৬ সাল থেকে শুরু হয় ‘অ্যান্ট ম্যান’ ছবির প্রি প্রোডাকশনের কাজ। সব শেষে ২০১৫ সালে মুক্তি পায় ‘অ্যান্ট ম্যান’। সিনেমাটি নিয়ে এডগার রাইট থেকে শুরু করে জস ওয়েডন, সবারই প্রত্যাশা ছিল অ্যান্ট ম্যান হবে মার্ভেলের এ যাবতকালের সেরা সিনেমা। কিন্তু রাইট আর স্টুডিওর মতের মিল না হওয়ায় ছেড়ে গেলেন পরিচালক। নতুন পরিচালক হিসেবে আসলেন পেইটন রিড—যিনি গল্প ফাঁদলেন এমন এক সুপার হিরোর, যাতে ছিল এর উৎপত্তির ইতিহাস। পল রুড আর মাইকেল ডগলাসের অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয় এই ছবিতে।

৪. দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক
মারভেল কমিকসের অন্যতম আরও একটি চরিত্র হাল্ক। ২০০৩ সালে পরিচালক আং লি মারভেল কমিকসের এই চরিত্রের উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করেন হাল্ক নামক চলচ্চিত্রটি। ২০০৮ সালে নির্মিত হয় এই সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক। ২০০৮ সালে প্রথম কিস্তিতে দর্শক মন খুব একটা ভরাতে না পারলেও ’হাল্ক’ এর ‘সেমি-সিক্যুয়েল’, ‘সেমি-রিবুট’ দ্বিতীয় কিস্তি পূরণ করেছে সেই প্রত্যাশার অনেকটাই। কিছুটা মজা আর প্রথম থেকেই অ্যাকশনে পরিপূর্ণ ‘দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক’ এর অর্জনের পেছনে রয়েছেছে ‘ব্রুস ব্যানার’(এডওয়ার্ড নর্টন) এর অসাধারণ অভিনয়।

৫. ক্যাপ্টেন অ্যামেরিকা
মারভেল কমিকস থেকে ১৯৯০ সালে পরিচালক আলবার্ট পাইয়ুন নির্মাণ করেন ক্যাপ্টেন আমেরিকা ছবিটি। এটি আমেরিকান সুপারহিরো চলচ্চিত্র। কমিকস বইয়ের কাহিনি থেকে অবশ্য এই চলচ্চিত্রে কিছুটা ভিন্নতা নিয়ে আসা হয়েছিল। চলচ্চিত্রে ক্যাপ্টেন আমেরিকা চরিত্রে অভিনয় করেন ম্যাট সালিঙ্গার। ২০১২ সালে নির্মিত হয় এই সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ক্যাপ্টেন আমেরিকা- দ্য ফাস্ট অ্যাভেঞ্জার এবং ২০১৪ সালে মুক্তি পায় ক্যাপ্টেন আমেরিকা-দ্য উইন্টার সোলজার। এ বছর মে মাসে মুক্তি পায় ক্যাপ্টেন আমেরিকা: সিভিল ওয়ার। ছবিটি পরিচালনা করেন রুসো ব্রাদার্স।

৬. ব্যাটম্যান
টেলিভিশন সিরিজ হিসেবে আগে দেখা গেলেও সম্পূর্ণ চলচ্চিত্র হিসেবে সুপারহিরো ব্যাটম্যানকে চলচ্চিত্রের পর্দায় দেখা যায় ১৯৬৬ সালে ‘ব্যাটম্যান: দ্য মুভি’ শিরোনামে। এই চলচ্চিত্রে ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন অ্যাডাম ওয়েস্ট আর রবিন চরিত্রে অভিনয় করেন বার্ট ওয়াড। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন লেসলি এইচ মারটিন্সন। পরিচালক টিম বার্টন ১৯৯২ সালে ডি সি কমিকস এর সুপারহিরো ব্যাটম্যানকে নিয়ে ওয়ারনার ব্রস ফ্রাঞ্চাইজিসের দ্বিতীয় দফায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি নির্মাণ করেন ব্যাটম্যান রিটার্নস চলচ্চিত্রটি।

এছাড়া পরবর্তীতে এই সিরিজের ব্যাটম্যান ফরএভার ১৯৯৫ সালে, ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন ১৯৯৭ সালে, ব্যাটম্যান- সাব জিরো ১৯৯৮ সালে, ব্যাটম্যান বিয়ন্ড ১৯৯৯ সালে, ব্যাটম্যান বিয়ন্ড-রিটার্ন অফ জোকার ২০০০ সালে, ব্যাটম্যান- মিস্ট্রি অব ব্যাটওম্যান ২০০৩ সালে মুক্তি পায়। ২০০৫ সালে ব্যাটম্যান সিরিজের রিবুট হিসেবে পরিচালক ক্রিস্ট্রফার নোলান নির্মাণ করেন ব্যাটম্যান বিগেন্স। এই চলচ্চিত্রে ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন ক্রিশ্চিয়ান বেল। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ব্যাটম্যান-গোথাম নাইট, ২০১২ সালে ডার্ক নাইট রিটার্নস পার্ট ওয়ান, ডার্ক নাইট রাইজেস এবং ২০১৩ সালে ডার্ক নাইট রিটার্নস পার্ট টু মুক্তি পায়।

৭. সুপারম্যান
পরিচালক রিচার্ড ডোনার ডি সি কমিকসের সুপার হিরো চরিত্রটি থেকে নির্মাণ করেন সুপারম্যান চলচ্চিত্রটি। এ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭৮ সালে। সুপারম্যান চলচ্চিত্রটির ব্যাপক সাফল্যের কারণে ১৯৮০ সালে পরিচালক রিচার্ড লেসটার নির্মাণ করেন সুপারম্যান টু। এটি ছিল মূলত সুপারম্যান চলচ্চিত্রটির সিকুয়্যাল। এর গল্প এবং চিত্রায়ন অনেক প্রশংসিত হয়েছিল এবং এটি ছিল সেই বছরের তৃতীয় ব্যবসা সফল সিনেমা। এর আয় করে ১০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ডি সি কমিকস এর সুপারহিরো সুপারম্যানের কাহিনি নিয়ে নির্মিত সুপারম্যান থ্রি চলচ্চিত্রটি এর আগের দুইটি সিকুয়্যাল। এটিও পরিচালনা করেন পরিচালক রিচার্ড লেসটার। ১৯৮৩ সালে মুক্তি পাওয়া সুপারম্যান থ্রি আগের দুই সিরিজের তুলনায় কম ব্যবসা করে। এই সিরিজের চার নম্বর চলচ্চিত্র সুপারম্যান ফোর দ্য কুয়েস্ট ফর পিস চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ১৯৮৭ সালে। ২০০৬ সালে সুপারহিরো চলচ্চিত্র নির্মাতা ব্রায়ান সিঙ্গার আবারও ডি সি কমিকস চরিত্র সুপারম্যান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়া ২০০৭ সালে সুপারম্যান-ডুমস ডে, ২০১২ সালে সুপারম্যান ভার্সেস এলিট, ২০১৩ সালে ম্যান অব স্টিল ছবিটি মুক্তি পায়।

৮. এক্স-মেন
এক্স ম্যান সিরিজের প্রথম ছবিটি  মুক্তি পায় ২০০০ সালে। ১০৪ মিনিট দৈর্ঘের এই ছবিটির পরিচালক ছিলেন ব্রায়ান সিঙ্গার। এক্স ম্যান সিরিজের দ্বিতীয় ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৩ সালে। এর পর ২০০৬ সালে মুক্তি পায় এক্স ম্যান সিরিজের তৃতীয় ছবি ‘এক্সম্যান: দ্য লাস্ট স্ট্যান্ড’। ছবিটি পরিচালনা করেন ব্রিট রাটনার। টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স এবং মারভেল এন্টাটেইনমেন্টের যৌথ প্রযোজনায় ছবিটি পরিচালনা করেছেন এক্স-ম্যান সিরিজের প্রথম দুটি এবং শেষ ছবির পরিচালক ব্রায়ান সিঙ্গার। এই সিরিজের ছবি ‘এক্স-ম্যান ডেইজ অব ফিউচার পাস্ট’-এর পরবর্তী প্রেক্ষাপট নিয়েই তৈরি করা হয়েছে শেষ ছবিটি। সর্বশেষ এই বছর মুক্তি পায় এই সিরিজের ‘এক্স-ম্যান-অ্যাপোক্যালিপস’ ছবিটি।

৯. স্পাইডারম্যান
সুপারহিরো চলচ্চিত্র পরিচালক স্যাম রাইমি ২০০২ সালে মারভেল কমিকসের অন্যতম চরিত্র স্পাইডার ম্যান কে নিয়ে এই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন এবং নাম দেন ‘স্পাইডার ম্যান’। এটি ছিল কমিকস বইয়ের উপর ভিত্তি করে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র। ২০০৪ এই সিরিজের ‘স্পাইডারম্যান টু’ এবং ২০০৭ সালে ‘স্পাইডার ম্যান থ্রি’ মুক্তি পায়।

১০. দ্য গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি
২০১৪ সালের সুপারহিরো সিনেমা ‘দ্য গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি’। ক্রিস প্র্যাট, জো সালদানা, ভিন ডিজেল, ডেইভ বাতিস্তা, ব্র্যাডলি কুপারের মতো তারকাদের নিয়ে নির্মিত হলিউড ব্লকবাস্টার ‘গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি’ ছবিটি ডিজনির ব্যানারে মারভেল কমিকসের সুপারহিরোদের নতুন এক কাহিনী। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর বক্স অফিসে রীতিমতো ঝড় তোলে ‘পৃথিবীর রক্ষাকর্তা’দের নিয়ে বানানো ছবিটি।

 

পীরের ‌তরিকা কী ও কেন?

এভাবেই পীর ও মুরিদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং চেষ্টা-সাধনার মধ্য দিয়ে উভয়েই আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দায় রূপান্তরিত হবেন। পীর হবেন তার সৎপথ প্রদর্শনের অশেষ সওয়াব পেয়ে, আর মুরিদ হবেন সঠিক পথে আমলের মাধ্যমে আল্লাহর প্রেমে নিমজ্জিত হয়ে
মুসলমানদের আধ্যাত্ম সাধনার নিয়ম-নীতি ও পদ্ধতিকে তরিকা বলে। আধ্যাত্ম সাধনারত ব্যক্তিকে তরিকতপন্থী বা সালেক বলে। শরিয়ত অনুযায়ী আমল করার যেমন মাজহাব, আধ্যাত্মিক সাধনার জন্য তেমনি তরিকা। আন্তরিকতার সঙ্গে শরিয়ত অনুযায়ী আমল করার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি লাভ করে প্রজ্ঞাবান হওয়াই তরিকতের উদ্দেশ্য। কোরআন-হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত শরিয়তের আমল যথা- নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত ইত্যাদি প্রতিপালনের পাশাপাশি জিকির-ফিকির, ধ্যান, সৎসঙ্গ, কুরিপু দমন এবং সৎ স্বভাব ইত্যাদি যেমন কার্যাবলি প্রতিপালনের দ্বারা একজন ব্যক্তি নিজেকে পরিপূর্ণ ঈমানদার এবং মানবীয় গুণাবলির দ্বারা ভূষিত করতে পারে। এ সাধনায় অগ্রসর ব্যক্তি মহান প্রভু আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভে ধন্য হয়। সে ইহ এবং পারলৌকিক জীবনে আল্লাহ জাল্লা শানুহুর অফুরন্ত নেয়ামত দ্বারাও সিক্ত হয়। জান্নাতি এ নেয়ামতরাজির আকর্ষণে মানুষ তরিকতপন্থী হতে ছুটে আসে আধ্যাত্মিক জগতের শিক্ষক সুফি, দরবেশ, পীর এবং মুরশিদের কাছে। এ পথে যিনি যতটুকু অগ্রসর হন, তার স্প্রিহা তত বেড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে তারা দুনিয়াবিমুখ হয়ে মহান প্রভু এবং রাসূল (সা.) এর প্রেমে মাতোয়ারা আশেকি জীবন যাপনে ব্রতি হন।

বাংলাদেশে আধ্যাত্ম সাধনার এ ভুবনে হক্কানি পীর যেমন আছেন, তেমনি আছে বহু বাতিল ও বেশরা পীর-ফকির। তাদের খপ্পরে পড়ে মানুষ যেমন প্রতারিত হচ্ছে, তেমনি জান্নাত লাভের আশায় এসে ঈমানে দৌলতটুকু শিরকের সঙ্গে মিশ্রিত করে দোজখি হয়ে যাচ্ছে। তাই তরিকতপন্থী হওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। কার থেকে আমি তরিকা গ্রহণ করছি? তিনি সত্যিকারভাবে কামিল কিনা? আমাকে আল্লাহর সান্নিধ্যের দিকে পথ প্রদর্শনের যোগ্যতা তার আছে কিনা? এসব বিষয় নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়েই শুধু তরিকা লাভের জন্য তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করা যেতে পারে। এখানে মনে রাখতে হবে, পীর ধরতে হবে অধ্যাত্মিক সাধনার পথে ব্রতি হওয়ার জন্য। কোনোভাবে দুনিয়াবি স্বার্থে মুরিদ হওয়া সম্পূর্ণভাবে নাজায়েজ। তদ্রুপ যিনি মুরিদ করবেন, তিনিও নিছক আল্লাহর বান্দাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের পথের দিশা দিতেই সচেষ্ট থাকবেন। কোনো ধরনের দুনিয়াবি গরজ তার মধ্যে থাকবে না। এভাবেই পীর ও মুরিদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং চেষ্টা-সাধনার মধ্য দিয়ে উভয়েই আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দায় রূপান্তরিত হবেন। পীর হবেন তার সৎপথ প্রদর্শনের অশেষ সওয়াব পেয়ে, আর মুরিদ হবেন সঠিক পথে আমলের মাধ্যমে আল্লাহর প্রেমে নিমজ্জিত হয়ে।

শরিয়তের ওপর আমলের জন্য আগে অনেক মাজহাব থাকলেও কালের আবর্তে তা চারটি মাজহাবে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। তদ্রুপ তরিকতের ভুবনে বহু তরিকার সন্ধান পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা প্রসিদ্ধ চারজন বিখ্যাত পীরের নামে প্রতিষ্ঠিত চিশতিয়া, কাদেরিয়া, মোজাদ্দেদিয়া ও নকশবন্দিয়া তরিকা নামে বিশেষ করে ভারতবর্ষে সীমিত হয়ে গেছে। তরিকতপন্থী কোনো ব্যক্তি মাত্র একটি তরিকার সবক যথাযথভাবে আদায় করে কামালিয়াতের স্তরে উপনীত হতে পারেন। একাধিক তরিকার সবক সম্পন্ন করতে পারলে তা আরো ভালো। তবে যেহেতু তরিকতের এ অঙ্গন সম্পূর্ণরূপে অনুভূতিনির্ভর ও লোকচক্ষুর অন্তরালের বিষয়। এর কোনো কিছুই প্রকাশযোগ্য নয়। তাই এ পথের পথিকমাত্রই সর্বদা নিজেকে আড়াল করে রাখতে পছন্দ করেন। এ পথে যা কিছু অর্জন হয়, তা নিতান্তই আখেরাতের ও একান্তভাবে স্রষ্টা এবং সৃষ্টির গোপন অভিসার মাত্র। তারা নির্জনে রাতের আঁধারে প্রভুর কুদরতি কদমে লুটিয়ে পড়ে রোনাজারি করে আপন অপরাধ ও অক্ষমতার বিষয়ে ক্ষমা ভিক্ষা করে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন। দুনিয়ার যতবড় ক্ষতি হোক অথবা দুনিয়া তার পদতলে গড়াগড়ি খেলেও তার মধ্যে কোনোরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে না। প্রেমানলে দগ্ধ অতৃপ্ত হাহুতাশপূর্ণ আন্তরিক অবস্থায় তার জীবন কাটে।

ড. সৈয়দ মুহা. শরাফত আলী
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

যেখানে বসবাস করার জন্য পাওয়া যায় টাকা!

চমৎকার সুন্দর সব জায়গা। যেমন নিরিবিলি তেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আঁধার। সেখানে আপনি বসবাস করতে পারবেন বিনামূল্যে তো বটেই, থাকার জন্য টাকা এবং অন্যান্য সুবিধাদিও দেওয়া হবে এখানে! খুব কম মানুষই জানেন, এমন সুবিধাও পৃথিবীতে বিদ্যমান। বিভিন্ন কারণে প্রশাসন চান কিছু মানুষ এসব জায়গায় বসবাস করুক এবং সে জন্য পর্যাপ্ত স্বাচ্ছন্দ্য তারা নাগরিকদের প্রদান করেন। আসুন জেনে নিই এমন চমৎকার কয়েকটি জারগার কথা যেখানে আপনি ভিন্ন দেশী সংস্কৃতির মাঝে বাস করতে তো পারবেনই, একই সাথে দেওয়া হবে চমৎকার সব সুবিধা।
 
ডেট্রিয়ট-মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র
‘পশ্চিমের প্যারিস’ বলা হয় ডেট্রয়েটকে। যুক্তরাষ্ট্রের অটোমোবাইল রাজধানী এটি। বিংশ শতাব্দীর ২য় ভাগে শহরটি তার জৌলুস হারাতে শুরু করে এবং দিনে দিনে জনমানবশূন্য হয়ে যায়। কিন্তু প্রশাসন আবারও জীবন ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হয়েছেন এখানে। আর সেজন্যেই নেওয়া হয়েছে ‘চ্যালেঞ্জ ডেট্রয়েট’। এই প্রজেক্টের অধীনে ২৫০০ মানুষকে ফ্রি থাকার সুযোগ তো দেওয়া হবেই, তাদের জন্য কাজের ব্যবস্থাও করা হবে।
 
আলাস্কা, যুক্তরাষ্ট্র
আপনি কি শীত ভালবাসেন? তুষারবৃত অঞ্চলে বাস করতে চান? শুভ্র বরফময় সকাল আর শীতল আবহের ঘর নিয়ে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে আলাস্কা। এখানে সরকারের আলাদা একটি ফান্ড আছে যে পেশাদার লোকেরা আলাস্কায় বাস করতে চাইলে সরকার তাদের পূর্ণ সহযোগিতা করবে। এজন্য আপনাকে যে শর্তটি পালন করতে হবে তা হল, অন্তত ১ বছর আলাস্কায় বাস করতে হবে।
 
Saskatchewan Province, কানাডা
কানাডার এই প্রদেশটি নতুন যোগ্যতাসম্পন্ন গ্রাজুয়েট (২০১০ এর পর গ্রাজুয়েট করেছেন যারা) যারা এখনও তাদের ক্যারিয়ার কীভাবে গড়বেন ঠিক করেন নি তাদের জন্য রেখেছে অনন্য সুযোগ। তারা ৭ বছর পর্যন্ত ২০ হাজার কানাডিয়ান ডলার পাবেন এখানে থাকা এবং কাজ করার জন্য!
নায়াগ্রা ফলস, নিউ ইয়র্ক
পৃথিবীর সবচেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্য্যমন্ডিত জলপ্রপাতের একটি নায়াগ্রা ফলস। এর কাছে থাকার সুযোগ পাবেন আপনি, ভাবা যায়? সরকার গ্রাজুয়েট করা ছাত্রদের এখানে ৭০০০ ডলার পর্যন্ত অর্থ প্রদান করেন তারা যদি এখানে থাকতে চান এবং ফলসটির কাছাকাছি গড়ে ওঠা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট, হোটেলে কাজ করেন।
 
পনগা- অস্টারিয়াস, স্পেন
বিস্ময়কর ছোট গ্রামটি উত্তর-পূর্ব স্পেনের সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে অবস্থিত। এটি দেশটির অন্যতম সবচেয়ে পুরাতন গ্রাম। জনশক্তি বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার এখানে বসবাসকে উৎসাহিত করেন। এজন্য যেসব জুটি অন্য অঞ্চল থেকে এখানে বাস করতে আসেন তাদেরকে জুটি প্রতি ৩০০০ ইউরো প্রদান করা হয় এবং আরও ৩০০০ ইউরো প্রদান করা হয় তাদের প্রতিটি শিশুর জন্য। পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর গ্রামে বসবাসের এটি একটি চমৎকার সুযোগ।
Utrecht, নেদারল্যান্ডস
গভীর জ্ঞানচর্চা এবং সামাজিক বিজ্ঞানে পারদর্শীতার জন্য বিশেষভাবে খ্যাত নেদারল্যান্ডস। তারা এই শহরের জনগণের উপর একটি এক্সপেরিমেন্ট করছেন। সেই অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিককে ১০০০ ডলার পে করা হবে এখানে বসবাসের জন্য।
Curtis, Nebraska, USA
এখানে ঘটেছে অন্যরকম মজার একটি বিষয়। স্থানীয় জনগণ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, তারা গ্রামটির জন্য যতটা করা প্রয়োজন ততটা করছেন না। প্রশাসন জনগনকে একটি অফার দিয়েছেন যে, তারা জমি বিনামূল্যে পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। বিনিময়ে অঞ্চলটির সংস্কৃতি রক্ষা এবং উন্নতির জন্য কী কী গঠনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়ে ভাল পরামর্শ দিতে হবে।
 
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

প্রেশার কুকারে তৈরি করে নিন মজাদার আলুর দম

রুটি, লুচি অথবা পরোটার সাথে আলুর দম খাবারটি খেতে দারুন লাগে। ভারতীয় এই খাবারটি বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু আলুর দম তৈরি করা কিছুটা সময় সাপেক্ষ হওয়ায় অনেকেই এটি তৈরি করতে চান না। এবার আর চিন্তা নেই। খুব সহজে প্রেশার কুকারে তৈরি করে নিতে পারবেন রেস্টুরেন্টের স্বাদের আলুর দম।

উপকরণ:

১টি তেজপাতা

২টি দারুচিনি

১টি বড় এলাচ

১টি ছোট এলাচ

১ টেবিল চামচ জিরা

১ কাপ পেঁয়াজ কুচি

১/২ ইঞ্চি আদা কুচি

৩/৪ কোয়া রসূন কুচি

৭/৮ টি গোল মরিচ

১/২ টেবিল চামচ জিরা পাউডার

১/৪ কাপ দই

১০-১২ টি ছোট আলু সেদ্ধ

১ চা চামচ লাল মরিচ গুঁড়ো

১/৩ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো

১ টেবিল চামচ মেথি

১ চা চামচ ধনেপাতা কুচি

লবণ

পানি

তেল

প্রণালী:

১। চুলায় প্রেশার কুকার দিন। এরপর এতে তেল দিয়ে তেজপাতা, বড় এলাচ, ছোট এলাচ, দারুচিনি, গোল মরিচ, জিরা এবং পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নাড়ুন।

২। এরপর এতে আদা কুচি রসুন কুচি দিয়ে নাড়ুন। পেঁয়াজ নরম হয়ে আসলে এতে লবণ দিয়ে দিন।

৩। সবকিছু ভাল করে মেশান এবং পেঁয়াজ বাদামী না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।

৪। এবার এতে এক কাপ পানি দিয়ে দিন। ৫ থেকে ৬ টা শিসের জন্য অপেক্ষা করুন। শিস দেওয়া হয়ে গেলে, চুলা থেকে প্রেসার কুকার নামিয়ে ফেলুন।

৫। আরেকটি প্যানে তেল দিয়ে সিদ্ধ আলুগুলো দিয়ে দিন। এতে লবণ, মরিচ গুঁড়ো এবং হলুদ গুঁড়ো দিয়ে ভাজুন।

৬। তারপর মাঝারি আঁচে চুলায় প্রেসার কুকারটি দিন। এখন এতে পেঁয়াজের মিশ্রণটি দিয়ে দিন।

৭। পেঁয়াজ নরম হয়ে গেলে এতে বাদাম দুধ (কাজু বাদাম এবং দুধ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে তৈরি করে নিন বাদাম দুধ)দিয়ে দিন। এরপর এতে হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।

৮। এবার এতে টক দই দিয়ে দিন। টক দই দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়ার পর এতে মেথি পাতা দিয়ে দিন।

৯। তারপর এতে ভাজা আলুগুলো দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করুন। আপনি যদি গ্রেভি না রেখে কিছুটা পাতলা রাখতে চান, তবে এতে পানি দিয়ে রান্না করুন। ৫ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন।

১০। পরোটা অথবা লুচির সাথে পরিবেশন করুন মজাদার আলুর দম।

 

লেদার পোশাকের যত্ন নিবেন কিভাবে?

সুন্দর, চাকচিক্য ও আভিজাত্যের একটা স্পর্শ পাওয়া যায় লেদারের পোশাক পরার মধ্যে। আর প্রাচীনকাল কিংবা বর্তমানকাল যে সময়ের কথাই বলেন না কেন? এর চাহিদা সব সময়ই ছিল। আর যদি দেহের গড়নের সাথে পুড়োপুড়ি মিলে যায়! তাহলে তো কথাই নেই। এক কথায় দারুণ মানায়।

কিন্তু আপনি যে লেদারের পোশাকটি পরছেন সেটিরও তো নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। না হলে আপনার পছন্দসই কিংবা ফ্যাশনের আনুসাঙ্গিক হিসেবে ব্যবহারের এ বিষয়টি দেখতে অল্পতেই কুৎসিত হয়ে পড়বে। লেদারে ফাঙ্গাস জমে যাওয়া, ফেডেড এমনকী ফেটেও যেতে পারে। তাই লেদারের পোশাকে নিজেকে ফ্যাশনেবল দেখতে একটু বেশিই যত্ন নিন।

লেদার পোশাকের যত্ন নিবেন যেভাবে

১.লেদারের পোশাক নিজের হাতে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। যদি একান্তই ওয়াশিং মেশিনে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে তা হলে আগে পোশাকের গায়ে লেখা নির্দেশাবলী ভাল করে পড়ুন, আর তা মেশিনে দেওয়ার উপযুক্ত কি না।


২.হালকা গরম পানিতে লেদারের জামাকাপড় ধুয়ে রাখলে তা ভাল থাকে। সাবান হিসাবে ব্যবহার করুন কোনও শ্যাম্পু। কাচার আগে বেশ কিছু ক্ষণ শ্যাম্পুতে ডুবিয়ে রাখুন পোশাক।

৩.কাপড় কাচার ব্রাশ ব্যাবহার না করে হাত বা স্পঞ্জ দিয়ে ঘষুন। কাচার পর জল না চিপে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন। এতে পানি ঝরে যাবে।


৪.লেদার গারমেন্টসে কোনও মেটালের চেন, বোতাম বা বকলেস থাকলে সেটি শুকনো টাওয়েল দিয়ে মুছে ফেলুন। যাতে এতে মরচে না পরে।

৫.জল ঝরে যাওয়ার পর শুকনো টাওয়েল পেতে পোশাকটি তার ওপর রাখুন।

৬.সম্পূর্ণভাবে শুকিয়ে যাওয়ার পর পোশাক ভাল করে লেদার কন্ডিশনার, বা তেল লাগাতে হবে। যাতে লেদার নরম এবং নমনীয় থাকে।

সূত্র: আনন্দবাজার 

সম্পাদনা : গোরা

Save

Save

Save

Save

Save

 

সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০ নারী

নিজ অধিকার আদায়ে এখনো লড়ছেন নারী। তবে কাচের দেয়াল ভাঙতে শুরু করেছেন তাঁরা। বিশ্বের শীর্ষ ১০ জন ক্ষমতাধর নারীর একজন হয়ে উঠেছেন। তাঁদের গল্পই এখানে তুলে ধরা হলো:

আঙ্গেলা ম্যার্কেলআঙ্গেলা ম্যার্কেল
২০০৫ সালে জার্মানির প্রথম নারী চ্যান্সেলর হন ম্যার্কেল (৬২)। ২০১৩ সালে তিনি তৃতীয় বা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হন। বলা যেতে পারে, ইউরোপের অর্থনীতির হাল ধরেন ম্যার্কেল। ইউরোপের আর্থিক ও বাণিজ্যিক সংকটের সময় তাঁর মতামত খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। অভিবাসন সমস্যায়ও জোরালো ভূমিকা রেখেছেন তিনি। পদার্থবিজ্ঞানে ডক্টরেট করেছেন ম্যার্কেল। ২০১৫ সালে ফোর্বস সাময়িকী ম্যার্কেলকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী নির্বাচিত করে।

থেরেসা মেথেরেসা মে
মার্গারেট থ্যাচারের পর যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে (৫৯)। গত ১৩ জুলাই ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করার পর ক্ষমতায় আসেন থেরেসা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে যুক্তরাজ্যবাসী ভোট দেওয়ার পর থেরেসা মে ক্ষমতায় আসেন। ২০১০ সালের মে মাস থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যুক্তরাজ্যের ইইউতে থাকার পক্ষে তিনি ব্যাপক প্রচার চালান।

হিলারি ক্লিনটনহিলারি ক্লিনটন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম মনোনীত নারী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন (৬৮)। মার্কিন মুলুকে সব আলোচনা এখন তাঁকে ঘিরে। ১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির ফার্স্ট লেডি ছিলেন। এরপর নিউইয়র্কের স্টেট সিনেটর ও প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অং সান সু চিঅং সান সু চি
মিয়ানমারে গণতন্ত্রের প্রতীক নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অং সান সু চি (৭১)। সামরিক জান্তা সরকারের সাংবিধানিক বাধা থাকার কারণে তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। বছরের পর বছর গৃহবন্দী থাকার পর ২০১৫ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেন। বন্ধুর হাতে তুলে দেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার। সু চি এখন দেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অ্যালেন জনসন সারলিফঅ্যালেন জনসন সারলিফ
লাইবেরিয়ার লৌহমানবী বলে পরিচিতি পেয়েছেন অ্যালেন জনসন সারলিফ (৭৭)। ২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে আফ্রিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। নোবেল শান্তি পুরস্কারও পান। তিনি একজন অর্থনীতিবিদ। সাবেক আন্তর্জাতিক কর্মী। ২০১১ সালে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন।

মিশেল ব্যাশলেমিশেল ব্যাশলে
লাতিন আমেরিকার ক্ষমতাধর নারী চিলির প্রেসিডেন্ট মিশেল ব্যাশলে (৬৪)। তিনি বিরোধী দলের সাবেক নেতা। অগাস্তো পিনোশের শাসনামলে ব্যাশলের ওপর অত্যাচার চলে। ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চিলির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্যাশলে। এর আগে তিনি প্রথম নারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন।

ক্রিশ্চিন লেগার্দেক্রিশ্চিন লেগার্দে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রথম নারী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ক্রিশ্চিন লেগার্দে (৬০)। ২০১১ সালে তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি একজন সাবেক আইনজীবী। লেগার্দে ফ্রান্সের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

জ্যানেট ইয়েলেনজ্যানেট ইয়েলেন
২০১৩ সালে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন ইয়েলেন (৬৯)। ওই সময় এই পদে প্রধানত পুরুষেরাই থাকত। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রধান অর্থনীতিবিদও ছিলেন।

ইরিনা বোকোভাইরিনা বোকোভা
২০০৯ সালে বুলগেরিয়ার বোকোভা (৬৪) ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রথম নারী প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। নারীর সম-অধিকার আন্দোলনে বোকোভার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। জাতিসংঘের মহাসচিব পদে মনোনীত ব্যক্তিদের তালিকায়ও ছিলেন তিনি।

মার্গারেট চ্যানমার্গারেট চ্যান
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক মার্গারেট চ্যান (৬৮) বার্ড ফ্লু ও সার্স মহামারির সময় হংকংয়ের স্বাস্থ্য বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন ভালো চিকিৎসক। জাতিসংঘে নারীস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

সুত্রঃ প্রথম আলো

Save

 

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী আজ

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জে টুঙ্গীপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতার হত্যাকারীদের নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনিও শাহাদাত্ বরণ করেন।

শহীদ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মাত্র ৩ বছর বয়সে পিতা ও ৫ বছর বয়সে মাতাকে হারান। তার ডাক নাম ছিল ‘রেনু’। পিতার নাম শেখ জহুরুল হক ও মাতার নাম হোসনে আরা বেগম। দাদা শেখ কাসেম চাচাতো   ভাই শেখ লুত্ফর রহমানের পুত্র শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বেগম ফজিলাতুন্নেছার বিবাহ দেন। তখন থেকে ফজিলাতুন্নেছাকে তার শাশুড়ি অর্থাত্ বঙ্গবন্ধুর মাতা সাহেরা খাতুন নিজের সন্তানদের সঙ্গে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে তিনি প্রাথমিক লেখাপড়া করেন। অতঃপর সামাজিক রীতি-নীতির কারণে গ্রামে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেন।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মৃতি শক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিল। মনেপ্রাণে তিনি একজন আদর্শ বাঙালি নারী ছিলেন। অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা, অসীম ধৈর্য ও সাহস নিয়ে জীবনে যে কোনো পরিস্থিতি দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করতেন। তার কোনো বৈষয়িক চাহিদা ও মোহ ছিল না। স্বামীর রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বান্তকরণে সহযোগিতা করেছেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত দানশীল। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের রোগে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা, কারাগারে আটক নেতা-কর্মীদের খোঁজ-খবর নেয়া ও পরিবার-পরিজনের যে কোনো সংকটে পাশে দাঁড়াতেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী: বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখেছেন। এই মহীয়সী নারী আমাদের অহঙ্কার। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তিনি দলকে মূল্যবান পরামর্শ দিতেন ও সহযোগিতা করতেন। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে। তিনি ছিলেন বাঙালি নারীর আদর্শ প্রতিকৃতি।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, বঙ্গমাতা যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উত্স হয়ে থাকবে। আমার প্রত্যাশা, এই মহান নারীর জীবনী চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক অজানা অধ্যায় সম্পর্কে তারা ধারণা পাবে। একজন সাধারণ বাঙালি নারীর মত তিনি স্বামী-সংসার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পরে দেশের পুনর্গঠনে তার অসাধারণ ভূমিকার কারণে তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

বঙ্গমাতার জন্মদিন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় বনানী কবরস্থানে তার স্মরণে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো এ কর্মসূচিতে অংশ নেবে। বেলা ১১টায় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। বাদ আছর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। যুবলীগ পৃথক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। যুব মহিলা লীগ বঙ্গমাতার জন্মদিন উপলক্ষে পথশিশুদের মধ্যে বস্ত্র ও খাদ্য বিতরণ করবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশবাসীকে সাথে নিয়ে পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 

শ্মশান পরিচালনার কাজ করছেন এক নারী

সাধারণত কোন হিন্দু নারী শ্মশানে যান না। কিন্তু চেন্নাইয়ের এক নারী পারভিনা সলোমান সেখানকার বড় ও ব্যস্ত একটি শ্মশান পরিচালনার কাজ করছেন।

কেন তিনি এই পেশা বেছে নিয়েছেন?

চেন্নাইয়ের আন্না নগর জেলায় অবস্থিত ভালানকাডু শ্মশান সেখানকার বড় ও ব্যস্ততম একটি শ্মশান।

আর এখানকার পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন মিস সলোমান।

একটি মৃতদেহ এখানে আসার পর তা কিভাবে সৎকার করা হবে সেসব বিষয়ে তত্ত্বাবধান করেন তিনি।

তাঁর কাজ কিছুক্ষণ দেখলেই বুঝতে পারা যায় কতটা দক্ষতার সাথে তিনি এটি করছেন।

“তামিলনাড়ুতে শিক্ষার হার অনেক,এখানকার ৯০ শতাংশ নারী শিক্ষিত। কিন্তু তারপরও অনেক বাধা-নিষেধের মুখে পড়তে হয় এদের”-বিবিসিকে বলছিলেন মিস সলোমান।

“একটা নারী শ্মশানের কার্যক্রম পরিচালনা করছে অনেকেই এটা স্বাভাবিকভাবে নেয় না। কেউ আমাকে বিদ্রুপ করে, কেউ পাশ থেকে বাজে মন্তব্য করে। তারা প্রশ্ন করে যে আমি কোন ধরনের পরিবারের মানুষ? হয়তো খারাপ মানুষ তাই এ কাজে আসছি। এসব কথা আসলে কষ্ট দেয়”-বলেন পারভিনা সলোমান।

তারা প্রথমে মিস সলোমানকে এসিড নিক্ষেপের হুমকিও দেয়।

তবে আস্তে আস্তে তারা বুঝতে পারে তারা কারও চাকরি নেয়ার ক্ষমতা রাখে না। সময় বদলে গেছে।

প্রায় বারো বছর ধরে এই শ্মশান পরিচালনার কাজে সাথে যুক্ত আছেন পারভিনা সলোমান।

 

চাকরি চলে গিয়েছে? দ্রুত করুন এই কাজগুলো

হঠাৎ করে চাকরি চলে যাওয়ার অনুভূতি কেবল তারপক্ষেই বোঝা সম্ভব যার কিনা চাকরিটা চলে গিয়েছে। রাগ, কষ্ট, ক্ষোভ, হতাশা, দ্বিধা- সবকিছু একসাথে কাজ করতে থাকে যেন মনের ভেতরে সেসময়। বিশেষ করে চাকরিটা যদি কোন পূর্বাভাস ছাড়াই হুট করে চলে যায় তাহলে তো সেই অনুভূতিটা ঠিক ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যত- সবকিছু একসাথে কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে যায় এই সময়টিতে। বর্তমানকে তুচ্ছ মনে হয়, অতীতকে যন্ত্রণার আর ভবিষ্যতকে মনে হয় ভয়ের। কিন্তু এই অবস্থায় কি ঘরে বসে থাকাটা কোন কাজের কথা? একদম না! চাকরি চলে গিয়েছে তো কী হয়েছে? হাত পা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসুন আর করে ফেলুন চটজলদি এই কাজগুলো।

১. রেফারেন্সের সাথে কথা বলুন

আপনার চাকরি চলে গিয়েছে, তারমানে এই নয় যে আর কোন চাকরি আপনাকে করতে হবেনা। নতুন কোথাও আবার আপনাকে শুরু করতে হবেই। তাই সেখানে রেফারেন্স হিসেবে প্রাক্তন অফিসের বসকে ব্যবহার করুন আর সেজন্য কথা বলুন বসের সাথে। যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে সেখানে আপনাকে ভালো জানে এমন কারো সাথে যোগাযোগ করুন। মূলত, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কথাটি হচ্ছে এই যে, রেফারেন্সের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করুন আপনার পরবর্তী চাকরির জন্যে।

২. কারিকুলাম ভিটা ঠিকঠাক করুন

কয়েক বছর আগে লেখা কারিকুলাম ভিটাকে চাকরি পাওয়ার পর আর নতুন করে ঠিকঠাক করা হয়নি? সময় বা সুযোগ পাননি? এখনই সময় সেটাকে নতুন তথ্যগুলো দিয়ে ভরিয়ে ফেলার। কারণ চাকরি চলে যাওয়ার পর আপনার হাতে যেমন অঢেল সময় আছে, তেমনি রয়েছে পরের চাকরিতে আবেদন করার জন্যে কারিকুলাম ভিটার প্রয়োজনীয়তা। তাই এই ফাঁকে নিজের কারিকুলাম ভিটা ঠিক করে ফেলুন।

৩. সামাজিক যোগাযোগ বাড়ান

মেইল, লিঙ্কড ইন, ফেসবুক, টুইটারসহ সব সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ুন। বর্তমানে চাকরির বিষয়গুলো এসসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই সবচাইতে বেশি প্রকাশিত হয়। তাই প্রতিদিন খানিকটা সময় এগুলোর পেছনে ব্যয় করুন। যাদের কোম্পানিতে চাকরি করতে চান তাদের সাথে নিজের কথাগুলো বলুন আর সম্পর্ক তৈরি করতে শুরু করুন। কেবল তারা কী করছে সেটা জানতে নয়, অন্তত আপনি কী করছেন সেটা তাদেরকে জানাতে হলেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

৪. নিজের টাকা-পয়সার হিসেব নিন

মোট কত টাকা আছে আপনার? চাকরি যাওয়ার পরপর সেগুলো হিসেবে আনুন। মোট কত টাকা আর কী কী সম্পত্তি আছে আপনার আর সেগুলো দিয়ে মোট কতদিন চলতে পারবেন আপনি সেটা দেখুন। এতে করে পরের চাকরিটার জন্যে আপনার তাড়াহুড়োটা কতটা হবে, কেমন চাকরি আপনি চাইবেন সেগুলো বোঝাটা সহজ হয়ে দাঁড়াবে।

লিখেছেন-

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

 

কেএফসি স্টাইল চিকেন পপকর্ণ তৈরি করুন নিজেই

কেএফসি এর ফ্রাইড চিকেন বিশ্ব বিখ্যাত। কেএফসিতে খেতে গেলে প্রায় সবাই এই খাবারটি অর্ডার করেন। এই ফ্রাইড চিকেনের পর যে খাবারটি জনপ্রিয় তা হল চিকেন পপকর্ণ।  আপনি চাইলে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন কেএফসির মত চিকেন পপকর্ণ। ঝটপট অল্প কিছু উপাদান দিয়ে এই খাবারটি তৈরি করা সম্ভব। চিকেন পপকর্ণ তৈরির সহজ রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ:

মুরগির বুকের মাংস (ছোট করে টুকরো করা)

১/২ টেবিলচামচ লবণ

১/২ টেবিলচামচ গোল মরিচের গুড়া

১ টেবিলচামচ সয়াসস

১টি ডিম

১ টেবিলচামচ কর্ণ স্টার্চ

১ কাপ ময়দা

১ টেবিলচামচ মরিচের গুঁড়ো

 

প্রণালী:

১। প্রথমে মুরগির মাংসগুলোতে লবণ, গোল মরিচের গুঁড়ো, সয়াসস, ডিম দিয়ে ভাল করে মাখিয়ে নিন।

২। এরপর এতে কর্ণ স্টার্চ দিয়ে খুব ভাল করে মেশান।

৩। এবার আরেকটি পাত্রে ময়দা, লাল মরিচের গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।

৪। এখন মুরগির টুকরোগুলো ময়দার মিশ্রণে গড়িয়ে নিন। সবগুলো মুরগির টুকরো ময়দায় গড়িয়ে নিন।

৫। এবার একটি পাত্রে তেল গরম করতে দিন। তেল গরম হয়ে আসলে ময়দায় গড়ানো মুরগির টুকরোগুলোকে তেলে ছেড়ে দিন।

৬। মচমচে হয়ে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন।

৭। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার চিকেন পপকর্ণ। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মচমচে চিকেন পপকর্ণ।

 

নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে আরো ৪১ ট্রাইব্যুনাল

সারাদেশে আরো ৪১টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এ প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ।

গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে ব্যয় অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ক নথিপত্র আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন পাওয়া গেলে এ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

 

খুন হননি, আত্মহত্যাই করেছেন জিয়া খান

গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে আলোচিত বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জিয়া খান হত্যা মামলাটি। অভিযোগ ছিল তাকে খুন করা হয়েছে। সন্দেহের তীর ছিল বলিউডের ‘হিরো’ খ্যাত অভিনেতা ও জিয়ার প্রেমিক সুরজ পাঞ্চোলির দিকে। কিন্তু সমস্ত তদন্ত শেষে সিবিআই জানিয়েছে, জিয়াকে খুন নয়, তিনি আত্মহত্যাই করেছেন।

১ আগস্ট সোমবার মুম্বাই হাইকোর্টে জিয়া খান মৃত্যু মামলার তদন্ত রিপোর্ট উপস্থাপন করে সিবিআই। আর সেখানেই তাদের নিরপেক্ষ তদন্তটি নিয়ে কথা বলে মামলার তদন্তকারী। তারা জিয়া খানের মৃত্যুর মামলাটি তদন্ত করে জিয়া আত্মহত্যাই করেছেন বলে নিশ্চিত হয়েছেন।

অভিনেত্রী জিয়া খানকে ২০১৩ সালের ৩০ জুন তার ঘরেই ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। সাধারণভাবে বিষয়টি আত্মহত্যা মনে হলেও জিয়ার মা রাবেয়া খান এই মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি। তার দাবী ছিল, জিয়া কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে।

সিবিআইকে দেয়া তথ্যে জিয়ার মা সন্দেহ করে বলেছিলেন, জিয়া আত্মহত্যা করার মত মেয়ে না। তাকে কেউ হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। হয়তো তার ফ্ল্যাটের জানলা দিয়ে কেউ ঢুকে হত্যা করে গলায় ওড়না বেঁধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।

কিন্তু এমন অভিযোগ তদন্ত করে নাকচ করে দিয়েছে সিবিআই। রাবেয়ার সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে সিবিআই থেকে বলা হয়, জিয়াকে হত্যা করে ভেতর থেকে দরোজা লাগিয়ে জানালা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার মতো কোনো লক্ষণ তারা দেখতে পাননি। রাবিয়ার সন্দেহ অমূলক। আসলে জিয়া নিজের ওড়না দিয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

তবে জিয়া হত্যা মামলায় এখনই কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি আদালত। এমনকি অভিযুক্ত প্রেমিক সুরজ পাঞ্চোলিকেও জিঞ্জাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে সিবিআই। আর জিয়া হত্যা মামলার বিষয়টি আসছে ২৩ আগস্ট শেষ হতে পারে বলেও জানিয়েছে আদালত। কারণ এদিনই রায়ের দিন ঠিক করা হয়েছে।

 

রাশিফল ও মানব জীবনের ওপর গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব বিশ্বাস করা যাবে কি?

বিশ্বাস না করে কেবল মানসিক সান্তনা অর্জনের জন্য পড়লে তাতে শির্ক হবে না বটে; কিন্তু সে গোনাহগার হবে। কেননা শির্কী কোনো কিছু পাঠ করে সান্ত্বনা লাভ করা বৈধ নয়। তাছাড়া শয়তান কর্তৃক তার মনে উক্ত বিশ্বাস জন্মিয়ে দিতে কতক্ষণ? তখন এ পড়াই তার শির্কের মাধ্যম হয়ে দাঁড়াবে।

যায়েদ ইবন খালিদ আল-জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, হুদায়বিয়াতে এক রাতে আকাশ থেকে বৃষ্টি নাযিল হয়। সেদিন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজর সালাত শেষে লোকদের দিকে ফিরে বসেন এবং বলেন, ‘তোমাদের রব কী বলেছেন তা কি তোমরা জান? তারা বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেন, ‘আমার কিছু বান্দা আমার ওপর বিশ্বাসী হয়ে এবং কিছু বান্দা অবিশ্বাসী হয়ে ভোরে উপনীত হয়েছে। যারা বলে, আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহে বৃষ্টি হয়েছে তারা আমার প্রতি বিশ্বাসী ও গ্রহ-নক্ষত্রে অবিশ্বাসী। আর যারা বলে, অমুক অমুক গ্রহের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে তারা আমার প্রতি অবিশ্বাসী ও গ্রহ-নক্ষত্রে বিশ্বাসী।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৪৬; মিশকাত, হাদীস নং ৪৫৯৬]

গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ার কথা বিশ্বাস করা যেমন কুফুরী, তেমনি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত রাশিফলের আশ্রয় নেওয়াও কুফুরী। যে ব্যক্তি রাশিফলের ওপর গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবের কথা বিশ্বাস করবে, সে সরাসরি মুশরিক হয়ে যাবে। পত্র-পত্রিকা ও বই-পুস্তকে রাশিফলের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে সেগুলো পাঠ করা শিরক। তবে বিশ্বাস না করে কেবল মানসিক সান্তনা অর্জনের জন্য পড়লে তাতে শির্ক হবে না বটে; কিন্তু সে গোনাহগার হবে। কেননা শির্কী কোনো কিছু পাঠ করে সান্ত্বনা লাভ করা বৈধ নয়। তাছাড়া শয়তান কর্তৃক তার মনে উক্ত বিশ্বাস জন্মিয়ে দিতে কতক্ষণ? তখন এ পড়াই তার শির্কের মাধ্যম হয়ে দাঁড়াবে।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

মিষ্টি আর মুখরোচক স্বাদে পেয়ালা

রাজধানীতে  যাত্রা শুরুর পর থেকেই, পেয়ালা ক্যাফে মানুষের কাছে নিত্যনতুন মজাদার সব খাবার উপস্থাপন করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পেয়ালার মুখরোচক খাবার আর পানীয় দারুণ সুস্বাদু। সম্প্রতি তাদের মেন্যুতে যুক্ত হয়েছে তিনটি নতুন স্বাদের ভিন্নধর্মী আয়োজন- তান্দুরি চিকেন, বিফ রেনড্যাং এবং পালাক পনির।

গরম আর ভিন্নমাত্রা স্বাদের তান্দুরি চিকেন, পালং শাক মিশ্রণের পালাক পনির এবং সিজলিং বিফ রেনড্যাং, র‍্যাপ অথবা সালাদ দুটো পদের সাথেই যায়। তবে একটি কথা না বললেই নয়, যারা মাংস থেকে সবজি  বেশি পছন্দ করেন ও কখনই মুখোরোচক কোনো খাবার মিস করতে চান না, তাদের জন্য পালাক পনির হতে পারে সুস্বাদু খাবারের বিশেষ বিকল্প। তান্দুরি চিকেনের সুবাস নাকে এলেই ফিরে যাবেন সেই মুঘল যুগে। আর মজাদার মাংসের স্বাদের বিফ রেনড্যাং এর স্বাদ আপনাকে নিয়ে যাবে সুদূর ইন্দোনেশিয়ায়।

পেয়ালা শুধু মুখরোচক ঝাল খাবারের জন্যই নয়, বিশেষভাবে ডেজার্টের শিল্পকর্তাও বটে। এর প্রতিটি খাবারেই আছে ভিন্নতা। পেয়ালায় গত সপ্তাহে মেন্যুতে যোগ হয়েছে নতুন বেশ কয়েকটি ডেজার্ট। সুস্বাদু চকলেট ‘বোস্টন ব্রাউনি’। ১২০ টাকায় পাওয়া যাবে এই অসাধারণ স্বাদের আইটেম। আরেকটি কফি স্বাদের ‘মোকা ক্রিম ক্যারামেল’ যা মনকে সচেতজ করে তুলবে।

এছাড়াও আরেকটি নতুন আইটেম ‘ব্রাউনি-ও-ট্রাইফল’ যাতে ব্রাউনি, চকলেট পুডিং, হুইপড ক্রিম এবং সবার পছন্দের ওরিও-এর একাধিক স্তর আছে। গুলশান ২ এর ডিসিসি মার্কেটের নীচতলায় অবস্থিত পেয়ালা ক্যাফেতে গেলেই স্বাদ নিতে পারবেন এইসব মজাদার খাবারের।

গুলশান ২ ডিসিসি মার্কেটে পেয়ালা ক্যাফে অবস্থিত।

Save

Save

 

মেয়েদের ফ্যাশনে চুড়ির বাহার!

‘কিনে দে রেশমি চুড়ি নইলে যাব বাপের বাড়ি’। এই গানটি থেকেই স্পষ্ট মেয়েদের চুড়ির প্রতি দুর্বলতা কতটা। মেয়ে আর চুড়ি এই দুটো যেন একই মুদ্রার দুটো পিঠ। মেয়েরা সব ধরনের অনুষ্ঠানেই চুড়ি পরা পছন্দ করে এবং পরেও। আদিম যুগ থেকেই মেয়েদের চুড়ির প্রতি টান বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়।

একটা সময় ছিল যখন মেয়েরা শুধু কাঁচের চুড়ি পরত কিন্তু এখন নানারকমের ট্রেন্ডি চুড়ি বাজারে এসেছে। মেটাল, সুতো, চামড়া, ব্যাকেলাইট, রবার, কাঠ, মাটি, বিডস, পুঁতি, সিটি গোল্ডসহ নানা ধরনের চুড়ির ব্যবহার বাড়ছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় মেয়েরা এখন নবরুপে সেজে ওঠছে।

এখন আবার বিভিন্ন রকমের লাল নীল সবুজ কাঠের মোটা মোটা চুড়ির সঙ্গে মেটালের চুড়িও একসঙ্গে করে পরেন তাতে সেটা অনেক বেশি ট্রেন্ডি লাগে। অনেকে আবার ঠিক চুড়ি পরা পছন্দ করে না তারা বিভিন্নরকমের ব্রেসলেটে নিজেদের সাজিয়ে তোলেন।

ব্রেসলেট পশ্চিমী ও ভারতীয় সব ধরনের পোশাকের সঙ্গেই সমানভাবে যায়। তাই অনেকে খুবই পছন্দ করে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন রঙের সরু সরু প্লাস্টিকের চুড়িও অনেকে পরছেন, এটাও এখন বর্তমান ফ্যাশনে ইন। আবার এক রঙা অক্সাডাইসের চুড়িও বেশ লাগে শাড়ির সঙ্গে।

 

কী হবে এই ৬ বোনের?

একটি পরিবারে ৬টি সন্তান। আর এ ৬জনই হচ্ছে মেয়ে। তাদেরও স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে বাবা-মায়ের ছেলে সন্তানের অভাব দূর করার। কয়েক বছর আগে হারায় বাবাকে। তিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় মাও।  মাথার উপর থেকে যেনো শেষ ছায়াটুকু সরে যায়। এখন কী হবে অভিভাবকহীন এই ৬ বোনের?

গত রোববার সন্ধ্যায় ট্রাকচাপা পড়ে পার্বতীপুরের ফ্যাক্টরি পাড়া মোড়ে ওই বিধবা মা আরজিনা বেগম (৪৫) নিহত হন। পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুরগামী একটি ট্রাক তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ সময় তিনি তার একটি গাভী নিয়ে ওই পথে বাড়ি ফিরছিলেন।

নিহত আরজিনা মন্মথপুর ইউনিয়নের ছোট হরিপুর মুন্সীপাড়া গ্রামের মৃত মোফাখখারুল ইসলামের স্ত্রী।

প্রতিবেশীরা জানায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল স্ত্রী ও ৬ কিশোরী কন্যাকে রেখে মারা যান পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মোফাখখারুল ইসলাম। তার মৃতুর পর লেখাপড়া ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হন বড় দুই মেয়ে মুক্তা ও রিক্তা। তারা দুজনেই কাজ নেন ঢাকার দুই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে।

বর্তমানে মুক্তা (২৪), রিক্তা (২২) ও মোমিনা (১৮) তিনজনেই বিবাহযোগ্যা। এছাড়া ছোট বোন লিপি (১৩) ৮ম, মমতাজ ( ১৫) নবম শ্রেণি ও মুসরাত জাহান ইতি ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ছে। ৩ জনেই মেধাবী ছাত্রী।

প্রতিবেশী মেনহাজুল হক বলেন, পরিবারটির ৫ শতক বসত ভিটা ছাড়া তাদের আর কোনো আবাদি জমি নেই। মায়ের মৃত্যুর পর ছোট ৪ বোনকে বাড়িতে রেখে বড় দুই বোন আবার চাকরিস্থলে ফিরে যাবে, নাকি চাকরি ছেড়ে বোনদের সাথে বাড়িতে থাকবে এ নিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছে বড় দুই বোন মুক্তা ও রিক্তা।

মুক্তা ও রিক্তা কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, বাবা মার ইচ্ছা ছিল ৬ বোনকে শিক্ষিত করার। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে তারা দু’বোন সংসারের হাল ধরেছিল। এখন অবিভাবকহীন হয়ে তারা কীভাবে বোনদের পড়ালেখা ও সংসার চালাবে তা ভেবে পাচ্ছে না।

 

লক্ষ্য নির্ধারণ করুন বৈজ্ঞানিক কৌশলে

জীবনের লক্ষ্য খুঁজে পাওয়া খুবই জরুরি। একটি নির্দিষ্ট উদ্দ্যশ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া এনে দেয় সফলতা। নইলে আসলে দিক ভুল করব আমরা সবাই। অনেকটা সময় পেরিয়ে যাবে, কিন্তু আমাদের মনে হতে থাকবে কিছুই করা হল না, কিছুই পাওয়া হল না। ঘিরে ধরবে হতাশা।
হতাশা/বিষন্নতার মানসিক রোগ শুধু যে রোগীকে ভোগায় তাই নয়, এর কারণে বিপদগ্রস্থ হয় আশপাশের মানুষেরাও। হতাশাগ্রস্থ মানুষটির নিজ জীবনের অসন্তুষ্টি থেকে তৈরি হয় অপরের প্রতি ঈর্ষা, যা কখনো কখনো হয় মারাত্মক ক্ষতিকারক। তাই আসুন নিজ জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করি। এগিয়ে যাই লক্ষ্যের হাত ধরে। ভুলে যাই কি পাই নি। ঠিক করি, কি পাব! লক্ষ্য নির্ধারণের এই বৈজ্ঞানিক কৌশল সাহায্য করবে আপনাকে।
‘SMART’ এই শব্দে লুকিয়ে আছে লক্ষ্য নির্ধারণের চমৎকার কৌশলটি। দেখে নিন ব্যাখ্যাগুলো-
Specific-নির্দিষ্টতা
আপনার লক্ষ্যটি নির্দিষ্ট হতে হবে। ধরুন, আপনি ঠিক করলেন আপনি সফল হবেন। কিন্তু এটি কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য হল না। কারণ এখানে অনেক প্রশ্নের ফাঁক রয়ে গেল। আপনি কোন ক্ষেত্রে সফল হতে চান, কতটুকু পেলে আপনি সেটাকে সফলতা বলবেন ইত্যাদি অনেক প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। তাই আপনাকে আরও ভাল করে ভাবতে হবে। আপনার লক্ষ্য হবে একেবারে সঠিক পয়েন্টে। যেমন- আমি রোজ সকালে ৬টায় ঘুম থেকে উঠতে চাই। এটি একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য।
Measurable-পরিমাপযোগ্য
লক্ষ্যটি হতে হবে পরিমাপযোগ্য। আপনাকে মাপতে পারতে হবে, প্রতিদিন আপনি দেখতে পাবেন কতটুকু এগিয়ে গেলেন আর কতটুকু বেশি শ্রম দিলে আরও ভাল হত। সবচেয়ে ভালো কাজ রোজ মাইক্রোসফট এক্সেলে সবকিছু লিখে রাখা, আগের দিনের কাজের সাথে তুলনা করা এবং মাসিক লক্ষ্য অর্জন হতে আপনি আর কতাটা দূরে তা পরিমাপ করা।
Attainable- অর্জনযোগ্য
আমরা যদি আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার লক্ষ্য নিই তাহলে কি সেটা সম্ভব? আপনার লক্ষ্যটি অবশ্যই অর্জনযোগ্য হতে হবে। নিজের যোগ্যতা, অভ্যন্তরের গতি, গুণাবলি বুঝুন। একইসাথে বুঝুন নিজের ত্রুটিগুলোও। তারপর ঠিক করুন আপনি কি অর্জন করতে চান। প্রতিটি মানুষের কিছু সিমাবদ্ধতা থাকে। সেগুলো খেয়াল করুন।
 
Realistic-বাস্তবসম্মত
আপনার লক্ষ্যটি অবশ্যই বাস্তবসম্মত হতে হবে। ধরুন, আপনি টার্গেট ঠিক করলেন, আপনি বিল গেটস এর মত অর্থ-প্রতিপত্তির অধিকারী হবেন। লক্ষ্যটি মোটেই বাস্তবসম্মত নয়। আপনি ঠিক করতে পারেন, আপনি নির্দিষ্ট একটি অংকের টাকার মালিক হতে চান এবং সেই টাকার অংক অবশ্যই আপনার সাধ্যের মধ্যে। অবাস্তব লক্ষ্য আসলে লক্ষ্য নয়, কল্পনা।
Time- সময়
আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন। সেই সময়টা বেঁধে দিতে হবে আপনাকেই। আপনি যদি ঠিক করেন, আপনি একটি ভালো বেতনের চাকরিতে জয়েন করবেন। সেটা আপনি কতদিনে করবেন এই টাইম লিমিটও আপনাকে ঠিক করতে হবে। আপনি ঠিক করেছেন, টাইপিং শিখবেন। কতদিনে শিখবেন সেটাও নির্ধারণ করুন। অবাধ সময় কখনো সফলতা দেয় না।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

ভিন্ন স্বাদের এই পুডিংটি আগে তৈরি করেছেন কি?

মিষ্টি খাবারের মধ্যে পুডিং খাবারটি বেশ জনপ্রিয়। ডিম, দুধ ও চিনির সংমিশ্রণে তৈরি এই খাবারটি খেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুব কম আছেন। দুধ ডিম ছাড়াও পুডিং তৈরি করা সম্ভব! অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার কিছু নেই, দুধ ডিম ছাড়া সুজি দিয়ে তৈরি এই পুডিংটি তুরস্কে বেশ জনপ্রিয়। ভিন্ন স্বাদের এই পুডিংটি তৈরির রেসিপিটি আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ:  

সিরাপ তৈরির জন্য

১.৫ কাপ চিনি

১.৫ কাপ পানি

সুজির পুডিং তৈরির জন্য

৪ কাপ দুধ (১ লিটার)

৩ টেবিলচামচ সুজি

৩ টেবিলচামচ ময়দা

২ টেবিলচামচ কর্ণ ফ্লাওয়ার

১ টেবিলচামচ মাখন

১ টেবিলচামচ ভ্যানিলা এসেন্স

১ কাপ চিনি

চকলেট পুডিং তৈরির জন্য

৪ কাপ দুধ

৪ টেবিলচামচ চিনি

১ টেবিলচামচ ময়দা

২ টেবিলচামচ কর্ণ ফ্লাওয়ার

১.৫ টেবিলচামচ কোকো পাউডার

৮০ গ্রাম ডার্ক চকলেট

টোস্ট বিস্কুট

প্রণালী:

১। প্রথমে প্যানে ক্যারামেল সিরা তৈরি করার জন্য চিনি দিন। চিনিগুলো বাদামী রং হয়ে আসলে এতে কিছুটা পানি দিয়ে দিন।

২। ক্যারামেল সিরা তৈরি হয়ে গেলে চুলা থেকে প্যান নামিয়ে ফেলুন।

৩। এরপর ওভেন ট্রেতে টোস্ট বিস্কুটগুলো সাজিয়ে রাখুন এবং তার উপর ক্যারামেল সিরা দিয়ে দিন।

৪। এখন আরেকটি পাত্রে সুজি, কর্ণ ফ্লাওয়ার, ময়দা এবং চিনি দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়ুন।

৫। আস্তে আস্তে এর মধ্যে দুধ দিতে থাকুন এবং নাড়তে থাকুন।

৬। এটি ঘন হয়ে আসলে এতে মাখন এবং ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে দিন।

৭। মাখন গলে গেলে চুলা বন্ধ করে দিন।

৮। এবার বিস্কুটের উপর সুজির মিশ্রণটি ঢেলে দিন। ভাল করে বিস্কুটের উপর লাগিয়ে দিন। যেন একটি লেয়ার তৈরি হয়।

৯। একটি পাত্রে ময়দা, কর্ণ ফ্লাওয়ার, কোকো পাউডার, চিনি ভাল করে মেশান।

১০। তারপর এতে দুধ মিশিয়ে দিন। দুধ ভাল করে নাড়ুন। তারপর চুলায় জ্বাল হতে দিন।

১১। চুলায় দিয়ে বার বার নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে এলে এতে চকলেট দিয়ে দিন।

১২। চকলেট ঘন হয়ে এলে এটি বিস্কুট এবং সুজির উপর ঢেলে দিন।

১৩। ব্যস তৈরি হয় গেল মজাদার পুডিং টোস্টেড ব্রেড কেক।

টিপস:

আপনি চাইলে এটি কয়েক ঘন্টা ফ্রিজে রাখতে পারেন। ফ্রিজ থেকে বের করে পরিবেশন করতে পারেন।

 

উদ্যোগ ফেসবুকেই

চামড়ায় তৈরি ছেলেদের একটি স্যান্ডেলের ছবি। স্যান্ডেলের মাপ দেওয়া আছে। দাম দেওয়া আছে। ছবির নিচে অনেকেই স্যান্ডেলটি কেনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন। অনেকে ছবির মাপের চেয়ে ছোট বা বড় স্যান্ডেল আছে কি না জানতে চেয়েছেন। একইভাবে মডেল বিভিন্ন ধাঁচের ব্যাগ হাতে, কাঁধে নিয়ে বসে আছেন, দাঁড়িয়ে আছেন। আগ্রহীরা নানান কিছু জানতে চেয়েছেন। তারপর যিনি কিনতে চান তাঁর কাছে পৌঁছে গেছে ব্যাগ বা স্যান্ডেলটি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং ইন্টারনেটে ই-কমার্স অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। নতুন অনেকেই ঝুঁকছেন এ পদ্ধতিতে ব্যবসা করার জন্য। চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসার ক্ষেত্রে তানিয়া ওয়াহাবের নাম পরিচিত। প্রায় ১১ বছরের অভিজ্ঞতা। তবে এবারই প্রথম ঈদের আগে ফেসবুককে ব্যবহার করে নতুন আঙ্গিকে ব্যবসায় নেমেছেন বলে জানালেন ট্যানের স্বত্বাধিকারী তানিয়া ওয়াহাব। তিনি জানালেন ট্যানের ব্যাগ, ওয়ালেট, স্যান্ডেল, বেল্ট, টিস্যু বক্সসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির জন্য কোনো শোরুম নেই। ফ্যাক্টরি থেকে সরাসরি পণ্যের ছবি আপ হচ্ছে ফেসবুকে। স্যান্ডেলের বেলায় অনেকে মাপ বলতে পারেন না। তাঁদের ফেসবুকের ইনবক্সে তাঁর পায়ের মাপ পাঠাতে বললে সে অনুযায়ী স্যান্ডেল কুরিয়ার করে পাঠানো হচ্ছে।

তানিয়া ওয়াহাব বলেন, এখন যানজটসহ বিভিন্ন কারণে এক এলাকার মানুষ শপিংয়ের জন্য অন্য এলাকায় যেতে চান না। সব এলাকার মানুষের কাছে পণ্য পৌঁছাতে হলে বিভিন্ন এলাকায় শোরুম থাকতে হবে। খরচ অনেক বেশি। ফেসবুকে সে ঝামেলা নেই। জামালপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকার ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে ফেসবুকের কল্যাণে। লেদার নিয়ে নতুন নারী ব্যবসায়ীরা একটি সার্কেল বা দল করে ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছেন। টাকার বিনিময়ে ফেসবুকে পণ্যকে প্রমোট (ফেস বুস্ট) করার সুযোগ নিচ্ছেন অনেকে। তানিয়া ওয়াহাব কারিগরের একজন অংশীদার। আড়ংসহ বিভিন্ন জায়গায় কারিগরের পণ্য সাপ্লাই দেওয়া হচ্ছে।

তানিয়া ওয়াহাব বলেন, ‘কারিগরের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। সুনামের সঙ্গেই কারিগর তার নাম ধরে রেখেছে। তবে নিজের পরিচিতির জন্য ট্যান চালু করেছি। ট্যানারির একটি অংশ হিসেবেই ট্যান নামটি নেওয়া হয়েছে।’

 ‘গুটিপা’ নিয়ে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলেছেন নারী উদ্যোক্তা তাসলিমা মিজি। চামড়ায় তৈরি ব্যাগের ব্যবসা। এর আগে তিনি কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করেছেন আট বছর। তাসলিমা মিজি বলেন, দোকানভিত্তিক ব্যবসা বড় ব্যবসায়ীদের জন্য। কিন্তু বেশির ভাগ নারীর পুঁজি কম। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লোন পেতে অনেক ঝামেলা। নারীর নিজস্ব সম্পদ বলতেও তেমন কিছু নেই। অনেক সময় পরিবারও চায় না নারী ঘরের বাইরে গিয়ে ব্যবসা করুক। এই এত সব সমস্যার সমাধান ই-কমার্স বিজনেস। বর্তমানে বেশির ভাগ মানুষেরই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে বা ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। আধুনিক ক্যামেরা ও অন্যান্য প্রযুক্তির বদৌলতে ছবিতে একটি পণ্যের বলতে গেলে পুরোটাই তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে। বিভিন্ন ডিজিটাল এজেন্সি পণ্যটি দ্রুত সময়ে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।

তাসলিমা জানালেন মিরপুরে তাঁর কারখানা। বাসা এলিফ্যান্ট রোডে। সার্বক্ষণিক গৃহকর্মী না থাকায় সার্ভেন্ট রুমকে তিনি পণ্যের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছেন। পণ্য ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একজন এবং আরেকজন ডিজিটাল মার্কেটিং ম্যানেজার নিয়েই চলছে তাঁর এ ব্যবসা। ফেসবুক এবং অন্যান্য ই–কমার্সের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চলছে পণ্যের প্রচার ও ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ। আর ব্যাগের মডেল হচ্ছেন তাঁর নিজেরই বন্ধুবান্ধব। তবে তাসলিমা মিজি হেসেই বললেন, ব্যাগের ক্রেতা বন্ধুবান্ধবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।

 

ঘুরে দাঁড়িয়েছেন হনুফা

‘এমন সময় গ্যাছে, তিন-চাইর দিন ভাতের পাতিল পাহায় (চুলায়) বহাইতে পারি নাই। মাইনষের তোন চাইয়াচিন্তা পোলাপানরে খাওয়াইছি। মাছ-মুকরা (মুরগি) খাই নাই বচ্ছরের পর বচ্ছর। ঘর আছিল না। বিষ্টিতে ভিজজি, শীতে কোঁকড়া দিয়া রইছি। কী যে কষ্ট করছি হেই সময়।’
এভাবেই নিজের পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করেন ৫৫ বছর বয়সী হনুফা বিবি। তিনি মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করেন। আবার অনেক সময় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতেও কাজ করেন। একসময় দুবেলা খাবার জোটাতে না পারলেও নিজ প্রচেষ্টায় হনুফা বিবি তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। এখন আর না খেয়ে থাকতে হয় না। এমনকি স্থায়ী একটি মাথা গোঁজার ঠাঁইও তৈরি করেছেন।
১২ বছর বয়সে আদেল খলিফার দ্বিতীয় স্ত্রী হয়ে শ্বশুরবাড়ি আসেন হনুফা বিবি। হনুফার শ্বশুরবাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বোরাদী গরঙ্গল গ্রামে। বাবার বাড়ি পাশের গ্রাম কলাবাড়িয়ায়। শৈশব পেরোতেই শ্বশুরবাড়ি। আর শ্বশুরবাড়ি আসতে না-আসতেই হনুফাকে কাঁধে তুলে নিতে হয় স্বামীর আগের পক্ষের সন্তানের দায়িত্ব, সংসারের হাল। গত ৯ জুলাই বোরাদী গরঙ্গলের এক বাসায় কাজ করার ফাঁকে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
শুরু থেকেই সংসারে টানাপোড়েন। স্বামী কিছুদিন পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না। সে কারণে ঘরে চুলাও জ্বলে অনিয়মিত। ছেলেমেয়ে নিয়ে আধপেটা খেয়ে, কখনো না খেয়ে দিন কাটাতে হয়। এর মধ্যেই ধরা পড়ে স্বামীর ব্লাড ক্যানসার। হনুফা বলেন, ‘হ্যার ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। ডাক্তার দেহাইতে যাইয়া জাগা-জমিন হগল খুয়াইছি। হে ভালো অইল না। মইর্যাে গেল।’
স্বামীর মৃত্যুর সময় হনুফার বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। মেয়ে বিবাহযোগ্য। নিজের ছেলে রোগা। কোনো কাজ করতে পারে না। স্বামীর আগের পক্ষের ছেলে খোঁজ নেয় না। এদিকে স্বামীর চিকিৎসায় বাড়ি, সম্পত্তি সব বিক্রি করে দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় ছেলেমেয়ে নিয়ে কী করবেন, বুঝে উঠতে পারেন না। একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েন।
মাঝেমধ্যে অন্যের ফরমাশে কাঁথা সেলাই করলেও ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে—কখনো ভাবেননি হনুফা বিবি। কিন্তু বেঁচে থাকার তাগিদে ঘরের বাইরে পা রাখতে হয় তাঁকে। বলেন, ‘তহন পরথম নগরে (হিন্দুপাড়া) আহি। মাইনষের বাড়ি কাম করা শুরু করি। যে যহন বোলায়, হ্যার কামই করি। এরম কাম কইর্যাুই পোলা-মাইয়ার মুহে খাওন দেই। আস্তে আস্তে বাঁচনের স্বপন দেহি।’
বছরের ৩৬৫ দিনই হনুফা বিবি কাজ করেন। বাদ যায় না ঈদের দিনও। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, তীব্র শীতেও তাঁকে কাজ করতে হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। পারিশ্রমিক তিনবেলা খাবার, সঙ্গে দুই শ টাকা। রাতের খাবারটা বাড়িতে নিয়ে যান। তবে অনেকেই পারিশ্রমিকের চেয়ে বেশি টাকা দেন বলে জানান তিনি।
বাইরে পা দিয়ে হনুফা বিবি কেবল খাবারের ব্যবস্থাই করেননি, ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবতে শুরু করেন তিনি। খেয়ে না-খেয়েই করতে থাকেন সঞ্চয়। টাকা জমিয়ে ছোট হলেও একটি টিনের ঘর তোলেন; যেখানে ছেলে-ছেলেবউ-নাতি নিয়ে বসবাস করছেন। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।
মানুষের বাসায় কাজ করতে গিয়েই পড়াশোনার গুরুত্ব বুঝতে পারেন হনুফা। তিনি বলেন, ‘কাম করতে যাইয়াই বুজি লেহাপড়ার কদর। কষ্ট কইর্যারও পোলা-মাইয়ারে লেহাপড়া করাইলে আয়ের এট্টা উপায় হইত। মাইনষের বাড়ি কাম করা লাগদো না।’ তাই নাতিদের পড়াশোনায় জোর দেন তিনি। তাঁর ছেলের ঘরের এক নাতি প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আরেক নাতি পঞ্চম শ্রেণিতে, যার রোল নম্বর ১। নাতিদের লেখাপড়ার সব দায়িত্ব হনুফা বিবিই বহন করেন।
হনুফাকে ছাড়া এলাকার কোনো বিয়েবাড়ির কাজই হয় না। এতে তাঁর পারিশ্রমিকের সঙ্গে পাঁচ শ টাকা ও একটি শাড়ি বকশিশ হিসেবে নির্ধারিত। কেউ কেউ আবার বেশিও দেন। হনুফা বলেন, ‘হগলে আমারে ভালো পায়। কাম কইর্যাে যা পাওনের, হ্যার থিকা বেশি দেয়। না অইলে বাঁচতে পারতাম না।’
হনুফা বিবি কোনো রকমে নিজের নাম লিখতে পারলেও জীবনের বাস্তবতা ভালো বোঝেন। শেষ জীবনে কাজ করতে পারবেন না। বন্ধ হয়ে যাবে রোজগার। তবে এ সময় কারও কাছে বোঝা হতে চান না তিনি। এ জন্য ব্যাংকে ৬০ হাজার টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করেছেন। তিনি বলেন, ‘যহন বুড়া অইয়া যামু, এই টাহায় চলমু। কারও কাছে হাত পাতমু না।’

 

বগুড়ার জলকন্যাদের গল্প

ভোরের আলো তখনো ফোটেনি। ট্রাকস্যুট পরে একদল কিশোরী ছুটছে উদ্যানের দিকে। সকালে হাঁটতে বেরোনো কেউ কেউ তাদের দিকে তাকাচ্ছেন বিস্ময় নিয়ে। লিকলিকে গড়ন সবার। মলিন চেহারা। বয়স ১২ থেকে ১৬। কৌতূহলী ফিসফাস—এই পাতলা শরীরেও ‘মর্নিং ওয়াক’! একটু পর ঘোর কাটে তাঁদের। কৌতূহলী চোখ যায় পার্কের পুকুরঘাটে। সাঁতারের পোশাক পরে তারা দল বেঁধে পুকুরে নামছে। পুকুরের এপার-ওপার আগে থেকেই সাঁতারের জন্য আড়াআড়ি শোলা দিয়ে লাইন টানা রয়েছে। এক পাশের লাইনে প্রস্তুত মেয়েরা। অন্য পাশে একদল কিশোর সাঁতারু। মাঝখানে কোচ মাসুদ রানা বাঁশিতে ফুঁ দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ল মেয়েরা। অন্যের রেকর্ড ভাঙতে ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাঁতার শুরু করল তারা।
সকালে আর বিকেলে প্রত্যন্ত গ্রাম, শহরের পাড়া-মহল্লা থেকে আসা মেয়েদের এই সাঁতারচর্চার দৃশ্য দেখা যায় বগুড়া শহরের এডওয়ার্ড পার্কের পুকুরে। কোচ মাসুদ রানা বিনা পয়সায় প্রশিক্ষণ দেন সাঁতার শিখতে আসা মেয়েদের। গ্রাম-মহল্লা ঘুরে ঘুরে সাঁতারের জন্য মেয়েদের উৎসাহও দেন তিনি। সাঁতারের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে প্রথম দিকে কাদা-মাটির তৈরি ক্রেস্ট দেওয়া হতো মেয়েদের। এখন মাটির ক্রেস্টের বদলে মেয়েদের ঘরে ‘সোনার পদক’। বয়সভিত্তিক সাঁতারে জাতীয় পর্যায়ে বেশ কয়েকজন সোনাজয়ী হয়েছে। সাফল্যের ঝুড়িতে কারও কারও এক থেকে দুই ডজন সোনার পদক। বাংলাদেশ আনসার ও নৌবাহিনীর হয়েও সাঁতরায় কেউ কেউ। এই বয়সেই মাস গেলে বেতন পাচ্ছে। সাঁতারের সুবাদে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে মেয়েরা।
সাঁতারপাগল কোচ মাসুদ রানার বয়স ৪০ পেরিয়েছে। বগুড়া শহরের সূত্রাপুরে শৈশব কেটেছে তাঁর। পড়তেন সেন্ট্রাল হাইস্কুলে। পড়াশোনার চেয়ে সাঁতারেই ঝোঁক ছিল তাঁর বেশি। বড় তিন ভাইয়ের মতো তিনিও সোনাজয়ী সাঁতারু ছিলেন। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ে রেকর্ড গড়তে পারেননি। তবে সাঁতারের নেশা কাটেনি মাসুদ রানার। এখনো সাঁতার শেখাতে ছেলেমেয়েদের খুঁজে বেড়ান তিনি। কেউ আগ্রহ দেখালে শহরে এনে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেন। বেশির ভাগ ছেলেমেয়ের শহরে থাকার মতো সামর্থ্য থাকে না। মাসুদ রানা থাকার ব্যবস্থাও করে দেন। বর্তমানে তাঁর কাছে ১৯ জন মেয়ে সাঁতার প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এর মধ্যে সাতজনই একাধিক সোনা ও রুপার পদক জয় করেছে। মাসুদ রানা বলেন, ‘দেশসেরা সাঁতারু হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এখন সাঁতারে বগুড়ার মেয়েরা বিশ্বজয় করবে বলে স্বপ্ন দেখছি।’
প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বয়সভিত্তিক জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় ২৪টি সোনাজয়ী মরিয়ম আকতার এবং তার ছোট বোন তিনটি সোনাজয়ী রোকেয়া আকতার। এই দুই বোনের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বালিয়াদীঘি গ্রামে। বাবা ইউনুস আলীর অসচ্ছল সংসার। তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মরিয়ম আকতার সবার বড়। ২০০৭ সালে মরিয়ম তখন বাড়ির পাশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। ইউনুস আলী বললেন, ‘হঠাৎ একদিন বাড়িতে হাজির মাসুদ রানা। নিজেকে সাঁতারের কোচ পরিচয় দিলেন। মরিয়মকে সাঁতার শেখাতে চান। আকাশ থেকে পড়লাম। গ্রামের মানুষ। আমার মেয়ে মানুষের সামনে ছোট পোশাক পরে পুকুরে সাঁতার কাটবে! প্রথমে রাজি ছিলাম না। কিন্তু মেয়েটার ইচ্ছার কারণে না করতে পারলাম না। মরিয়মকে শহরের ইশকুলে ভর্তি করালেন মাসুদ রানা। নিজের বাসায় তাঁর মেয়ের কাছে রেখে দিলেন। এরপর ঘরে সোনা আনতে থাকল মেয়েটা। বড়টার সাফল্যে ছোট মেয়েটাকেও পাঠালাম তাঁর বাসায়।’

মরিয়ম বলল, ‘বগুড়ায় সেন্ট্রাল উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হলাম। সকাল-বিকেলে পার্কের পুকুরে মাসুদ রানা স্যারের কাছে অনুশীলন করতাম। ২০০৯ সালে ছয়টি রৌপ্যপদক দিয়ে সাফল্যের খাতা খুললাম। ২০১০ সালে রৌপ্যসহ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হলাম। ২০১১ সালে ১০০ মিটার সাঁতারে দুটি সোনা ও দুটি ব্রোঞ্জ এবং ২০০ মিটারে দুটি সোনা ও দুটি ব্রোঞ্জ পেয়ে বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় সেরা হলাম। ২০১২ সালে দুটি সোনা, ২০১৩ সালে আটটি সোনাসহ তিন বিভাগে রেকর্ডসহ চ্যাম্পিয়ন হলাম। ২০১৪ সালে ১০টি স্বর্ণসহ ছয়টিতে রেকর্ড গড়ে ফের চ্যাম্পিয়ন হলাম।’ ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কাতার ও চীনে প্রশিক্ষণ নিয়েছে মরিয়ম আকতার। এখন মেয়েদের জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতার জন্য অনুশীলন করছে। পাশাপাশি বগুড়া মহিলা মহাবিদ্যালয়ে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দলের সাঁতারু সে।
রোকেয়া আকতারও মাসুদ রানার বাসায় থেকে সাঁতার শিখছে। পড়াশোনা করছে সেন্ট্রাল উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে। ২০১৫ সালে জাতীয় বয়সভিত্তিক ২০০ মিটার বুকসাঁতারে ৩ মিনিট ৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে দুটি স্বর্ণ জয় করেছে।
বগুড়ার সেউজগাড়ি মহল্লার ফলের দোকানি রহেদুল ইসলামের তিন মেয়ের মধ্যে সবার ছোট রাশেদা খাতুন সাত বছর বয়স থেকেই পুকুরে ভাসছে। সাঁতারের পোশাক পরে পুকুরে সাঁতার কাটতে পরিবারের বাধা ছিল। কিন্তু শেষমেশ সেই বাধা অতিক্রম করেছে রাশেদা। রাশেদা বয়সভিত্তিক সাঁতারে ১৪টি সোনার পদক জয় করেছে। সাঁতরায় আনসার বাহিনীর দলের হয়ে।
বগুড়া শহরের জামিলনগরের মেয়ে মিতু আকতার পড়ে বগুড়ার সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে। বয়সভিত্তিক সাঁতারে এ পর্যন্ত ১৩টি স্বর্ণ জিতেছে মিতু।
তিনটি সোনাজয়ী বগুড়া সেন্ট্রাল হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী রুমি আকতারও এডওয়ার্ড পার্কের পুকুরে নিয়মিত অনুশীলনে আসে। ২০১২ সালে মহিলা গেমসে চ্যাম্পিয়ন ও পাঁচটি সোনাজয়ী শাহিনূর আকতারও কোচ মাসুদ রানার কাছে নিয়মিত সাঁতার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ ছাড়া রৌপ্যজয়ী নিশি আকতার এখনো নিয়মিত সাঁতার শিখছেন।
কোচ মাসুদ রানা বলেন, ‘বগুড়ার মেয়েরা বিশ্ব সাঁতার প্রতিযোগিতায় যেদিন বাংলাদেশের লাল-সবুজের জয়ের পতাকা ওড়াবে, সেদিনই নিজেকে ধন্য মনে করব। ১৯ জন মেয়েকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। একজন দেশসেরা হলেও আমার প্রচেষ্টা সার্থক হবে। মেয়েদের পাশাপাশি নয়ন ইসলাম নামের এক কিশোর সাঁতারু এখন পর্যন্ত ১৯টি স্বর্ণ জয় করেছে।

 

ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েদের জন্য পুষ্টিকর ৯ টি স্ন্যাক্স

ব্রেস্ট ফিডিং করালে অনেক এনার্জির প্রয়োজন হয়। তাই বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করান যে মায়েরা, তাদের ঘন ঘন ক্ষুধা পায়। এজন্য তাদের ক্ষুধা নিবৃত করাও প্রয়োজন। তাই বলে আপনার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে এমন অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াও উচিৎ নয়। পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী এমন কিছু স্ন্যাক্স খেতে পারেন ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েরা যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করবে। এমন কিছু স্ন্যাক্সের কথাই জেনে নিই চলুন।

১। বাদাম

প্রোটিনের পাওয়ার হাউজ হচ্ছে বাদাম। এতে স্বাস্থ্যকর পরিমাণে অসম্পৃক্ত চর্বি ও ফাইবার থাকে। তাই ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েদের জন্য ভাঁজা ও হালকা লবণাক্ত বাদাম হতে পারে তৃপ্তিকর একটি স্ন্যক্স। একমুঠো বাদাম দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।

২। সিদ্ধ ডিম

ডিমে উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। এছাড়াও ডিমে সবগুলো এমাইনো এসিড, ভিটামিন এবং মিনারেল ও থাকে। তাই ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েদের জন্য ডিম হতে পারে আদর্শ স্ন্যাক্স।

৩। আস্ত গমের তৈরি স্যান্ডউইচ

আস্ত গমের তৈরি পাউরুটি কিনে এর সাথে চর্বিহীন মাংস, টমেটো, গাজর ইত্যাদি যোগ করুন যাতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও প্রোটিন পাওয়া যায়। এই স্যান্ডউইচ আপনাকে তৃপ্তি দেবে।

৪। পিনাট বাটারের সাথে আপেল

আপেলের সাথে পিনাট বাটার মিশিয়ে খেলে প্রোটিন ও ফাইবারের সমন্বয় হয়। পিনাট  বাটার পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। পিনাট বাটারের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রোটিন এনার্জি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। খোসাসহ আপেলে প্রচুর ফাইবার থাকে।

৫। দই

দই ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চমৎকার উৎস। যা মধ্য বিকেলের চমৎকার স্ন্যাক্স হতে পারে। একে আরো পুষ্টিকর করার জন্য দইয়ের সাথে ফল মেশাতে পারেন। মিষ্টি ও সুগন্ধিযুক্ত মিল্কশেক এড়িয়ে চলুন।

৬। সালাদ

তাজা ফল ও সবজি দিয়ে তৈরি একবাটি সালাদ হতে পারে নতুন মায়েদের জন্য সহজ ও পুষ্টিকর একটি স্ন্যাক্স। সব্জিতে উচ্চমাত্রার পানি থাকে বলে আপনাকে হাইড্রেটেড থাকতে সাহায্য করবে।

৭। অ্যাভোকাডো

মনো ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ অ্যাভোকাডোতে ভিটামিন এবং ফাইবার ও থাকে,  যা নতুন মায়েদের জন্য পুষ্টিকর একটি খাবার। কুড়মুড়ে স্বাদের জন্য বিস্কুটের সাথে খেতে পারেন অ্যাভোকাডো।

৮। পনির

ক্যালসিয়াম ও আমিষের উৎস পনির। এছাড়া বি ভিটামিন ও থাকে এতে। হোল গ্রেইন ক্রেকারস বা পাউরুটির সাথে খেতে পারেন পনির।

৯। মিষ্টি আলু

শর্করার পাশাপাশি মিষ্টি আলুতে ভিটামিন, আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান ও থাকে। তাই স্ন্যাক্স হিসেবে মিষ্টি আলু খেতে পারেন ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েরা।

লিখেছেন-
সাবেরা খাতুন

 

অনলাইনে কিনুন পছন্দের জামদানি-কাতান

ইফাত শারমীন। মাস্টার্স শেষ করে একটি আইটি ফার্মে কাজ করেন ৬/৭ বছর। এরপর কুমিল্লার এই মেয়ে চিন্তা করেন নিজেই কিছু করবেন। শুরু করেন অনলাইনে জামদানি কাপড় বিক্রি করার ব্যবসা। মূলত ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে প্রথম জামদানি নিয়ে কিছু করার অনুপ্রেরণা পান। ছোট ভাই তখন বুয়েটে পড়তো। সে জামদানির ডিজাইন নিয়ে একটি থিসিস করে। সেজন্য ভাইকে জামদানির তৈরি কারিগরদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে থিসিসটি করতে হয়। দেখাদেখি শারমীনও তাঁতীদের কাছে গিয়ে জামদানি তৈরি দেখেন। এরপর শুরু করেন ব্যবসাটি। ২০১৫ সালে তার অনলাইন শপ চালু করেন। জামদানি ভিলি নামের শপটি দেখতে দেখতেই জনপ্রিয়তা পায়। এখন প্রতিদিন গড়ে ২টি দামি শাড়ির অর্ডার পান তিনি। এখন থেকে কমদামি শাড়িও বিক্রি করার চিন্তা করছেন। বর্তমানে তার বেশিরভাগ ক্রেতা দেশের বাইরে থেকেই অনলাইনে অর্ডার করেন। তিনি জামদানি শাড়ি, মসলিন শাড়ি, থ্রিপিস, টুপিস, পাঞ্জাবীর কাপড় বিক্রি করেন। জামদানি শুরু হয়েছে ৪০০০ টাকা থেকে। ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্তও জামদানি বিক্রি করে থাকেন তিনি। পাঞ্জাবী পিস ৮৫০ থেকে কাজের উপর ভিত্তি করে ২৩০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে।

অন্যদিকে এমডি ওমান থাকেন মিরপুর। ভারতের এই ছেলে ছোট বেলা থেকেই মিরপুরে তার বাবার তাতের শাড়ির দোকানে বসেন। এসএসসি পাশ করে একটি কলেজে এইচএসসিতে উন্মুক্ততে ভর্তি হন। নিজের খরচ নিজেই যোগান দিতে শুরু করেন অনলাইনে কাতান শাড়ি বিক্রির দোকান। বাবার দোকানে যখন বসতেন তখন বিভিন্ন অনলাইন ব্যবসায়ী মেয়েরা তার দোকানে আসতো শাড়ির ছবি নিতে। সেই ছবি অনলাইনে দিয়ে অর্ডার নিতো। আজকের ডিল নামক একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠানও তার কাছে এসেছিলো। এরপর তিনি নিজেই চিন্তা করেন অনলাইন ব্যবসা করবেন। এভাবেই শুরু। এখন মাসে দেড়শোটি শাড়ি তিনি অনলাইনে বিক্রি করেন। গড়ে ৫০/৬০ হাজার টাকা তার ইনকাম রয়েছে। পরিবারকেও তিনি টাকা দিয়ে সাহায্য করেন। কাতান, অপেরা কাতান, কাঞ্জপুরান, জোড়িকাটা, সিল্ক সব ধরনের শাড়িই তিনি বিক্রি করেন। ভারত থেকে বিভিন্ন কাতান পার্টিরা পাঠিয়ে দিলে সেগুলো তিনি বিক্রি করেন। এছাড়া গাউসিয়া থেকেও পাইকারি দরে শাড়ি কিনে তা অনলাইনে বিক্রি করেন। ১৭৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২৬০০০ টাকা দামের শাড়ি তিনি বিক্রি করে থাকেন।

তাই বলা চলে ফেসবুক তাদের ব্যবসার বড় একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। চাইলে আপনিও অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা শুরু করে নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারেন নিজের ভাগ্য। আর শাড়ি কিনতে চাইলে অনলাইনেই অর্ডার করুন। আর ঘরে বসেই পেতে পারেন পছন্দের প্রিয় শাড়ি।

ফেসবুক লিঙ্ক: কাতান শাড়ি হাউজ: https://www.facebook.com/katanashareehouse/

জামাদানী ভিলি: https://www.facebook.com/JamdaniVille/

 

আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করা যাবে কী?

অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে আমানত (আনুগত্য, ইবাদত, সম্পদ, গচ্ছিত দ্রব্য ইত্যাদি) এর নামে কসম করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়”। [সুনান আবু দাউদ; মিশকাত, হাদীস নং ৩৪২০]

আল্লাহ তাআলা তাঁর সৃষ্টির মধ্য থেকে যার নামে ইচ্ছা কসম করতে পারেন। কিন্তু সৃষ্টির জন্য আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করা জায়েয নেই। তা সত্ত্বেও অনেক মানুষের মুখেই নির্বিবাদে গায়রুল্লাহর নামে কসম উচ্চারিত হয়। কসম মূলতঃ এক প্রকার সম্মান, যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ পাওয়ার যোগ্য নয়।

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সাবধান! নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে তোমাদের পিতৃপুরুষের নামে শপথ করতে নিষেধ করেছেন। কারো যদি শপথ করতেই হয়, তবে সে যেন আল্লাহর নামে শপথ করে অথবা চুপ থাকে”। [সহীহ বুখার; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৩৪০৭]

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত আরেকটি হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে কসম করল, সে শিরক করল”। [সুনান আবু দাউদ; তিরমিযী, মিশকাত, হাদীস নং ৩৪১৯]

অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে আমানত (আনুগত্য, ইবাদত, সম্পদ, গচ্ছিত দ্রব্য ইত্যাদি) এর নামে কসম করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়”। [সুনান আবু দাউদ; মিশকাত, হাদীস নং ৩৪২০]

সুতরাং কাবা, আমানত, মর্যাদা, সাহায্য, অমুকের বরকত, অমুকের জীবন, নবীর মর্যাদা, অলীর মর্যাদা, পিতা-মাতা ও সন্তানের মাথা ইত্যাদি দিয়ে কসম খাওয়া নিষিদ্ধ। কেউ যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করে তবে তার কাফ্ফারা হলো ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করা। যেমন, সহীহ হাদীসে এসেছে, “যে ব্যক্তি শপথ করতে গিয়ে লাত ও উয্যার নামে শপথ করে বসে, সে যেন বলে, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ”। [সহীহ বুখারী; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৩৪০৯]

উল্লিখিত অবৈধ শপথের ধাঁচে কিছু শিরক ও হারাম কথা কতিপয় মুসলিমের মুখে উচ্চারিত হতে শোনা যায়। যেমন, বলা হয় ‘আমি আল্লাহ ও আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি’। ‘আল্লাহ আর আপনার ওপরই ভরসা’। ‘এটা আল্লাহ ও তোমার পক্ষ থেকে হয়েছে’। ‘আল্লাহ ও আপনি ছাড়া আমার আর কেউ নেই’। ‘আমার জন্য উপরে আল্লাহ আর নিচে আপনি আছেন’। ‘আল্লাহ ও অমুক যদি না থাকত’। ‘‘আমি ইসলাম থেকে মুক্ত বা ইসলামের ধার ধারি না’। ‘হায় কালের চক্র, আমার সব শেষ করে দিল’। ‘এখন আমার দুঃসময় চলছে’। ‘এ সময়টা অলক্ষণে’। ‘সময় বিশ্বাসঘাতকতা করেছে’ ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, সময়কে গালি দিলে সময়ের স্রষ্টা আল্লাহকেই গালি দেওয়া হয় বলে হাদীসে কুদসীতে এসেছে। সুতরাং সময়কে গালি দেওয়া নিষিদ্ধ। অনুরূপভাবে প্রকৃতি যা চেয়েছে বলাও একই পর্যায়ভুক্ত।

অনুরূপভাবে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের সাথে দাসত্ব বা দাস অর্থবোধক শব্দ ব্যবহারও এ পর্যায়ে পড়ে। যেমন আব্দুল মসীহ, আবদুর রাসূল, আবদুন নবী, আবদুল হুসাইন ইত্যাদি। আধুনিক কিছু শব্দ ও পরিভাষাও রয়েছে যা তাওহীদের পরিপন্থী। যেমন, ইসলামী সমাজতন্ত্র, ইসলামী গণতন্ত্র, জনগণের ইচ্ছাই আল্লাহর ইচ্ছা, দীন আল্লাহর আর দেশ সকল মানুষের, আরব্য জাতীয়তাবাদের নামে শপথ, বিপ্লবের নামে শপথ করে বলছি ইত্যাদি।

কোনো রাজা-বাদশাহকে ‘শাহানশাহ’ বা ‘রাজাধিরাজ’ বলাও হারাম। একইভাবে কোনো মানুষকে ‘কাযীউল কুযাত’ বা ‘বিচারকদের উপরস্থ বিচারক’ বলা যাবে না। অনুরূপভাবে কোনো কাফির বা মুনাফিকের ক্ষেত্রে সম্মানসূচক ‘সাইয়িদ’ তথা ‘জনাব’ বা অন্য ভাষার অনুরূপ কোনো শব্দ ব্যবহার করাও সিদ্ধ নয়। আফসোস, অনুশোচনা ও বিরাগ প্রকাশের জন্য ‘যদি’ ব্যবহার করে বলা (যেমন এটা বলা যে, ‘যদি এটা করতাম তাহলে ওটা হত না’), কারণ, এমন কথা বললে শয়তানের খপ্পরে পড়ে যেতে হয়। অনুরূপ ‘হে আল্লাহ! তুমি চাইলে আমাকে ক্ষমা করো’ এ জাতীয় কথা বলাও বৈধ নয়। [বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, মুজামুল মানাহিল লাফযিয়্যাহ, শাইখ বকর আবদুল্লাহ আবু যায়েদ]

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

চাকরির সিভি থেকে দূরে রাখুন এই শব্দগুলো

বর্তমান যুগে নিজের জীবনমান উন্নত করতে চাইলে দরকার পড়ে একটি ভালো চাকরির। যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পূর্বশর্ত হচ্ছে সিভি বা কারিকুলাম ভিটা। প্রথমেই কোন চাকরিপ্রার্থীকে সরাসরি দেখে বা তার কথা শুনে চাকরিদাতা কোন ধারণা করেন না। এক্ষেত্রে সবচাইতে আগে চাকরিদাতা যেটি দেখেন সেটা হল চাকরইপ্রার্থীর সিভি। এর ওপরই নির্ভর করে কেউ ইন্টারভিউয়ের ডাক পাবেন নাকি পাবেননা। তাই একটি ভালো চাকরিকে হাতের নাগালে আনতে চাইলে আপনার অবশ্যই মনোযোগ দেওয়া উচিত আপনার সিভির ওপরে। তবে একটি ভালো সিভির অধিকারী হওয়ার পরেও অনেক সময় চাকরি পেতে ব্যর্থ হতে পারেন আপনি একটি ছোট্ট ভুলের জন্যে। আর সেটি হচ্ছে সিভিতে ভুল শব্দের ব্যবহার। জানতে চান শব্দগুলো কী কী?

১. কঠোর পরিশ্রমী (Hardworking)

সিভিতে অনেকেই নিজেকে হার্ডওয়ার্কিং বা কঠোর পরিশ্রমী বলে উল্লেখ করে থাকেন। তবে এটি কেবল আপনার সিভির পৃষ্ঠা ভরানো আর চাকরিদাতাদের সময় নষ্ট ছাড়া আর কোন কাজেই আসেনা। চাকরিদাতাকে যখন আপনি এটাই বোঝাতে চান যে আপনি কঠোর পরিশ্রমী তখন কথায় নয়, বরং কাজে সেটা করে দেখান। এই যেমন- পড়াশোনার পাশাপাশি একটা চাকরি করা বা এ রকমের কিছু। এতে করে আপনি না বললেও তারা এমনিতেই বুঝে নেবে আপনি ঠিক কতটা পরিশ্রমী।

২. বেতন আলোচনাযোগ্য (Salary negotiable)

স্যালারি নেগোশিয়েবল বা এ রকমের কোন কথা যদি আপনি আপনার সিভিতেলিখে থাকেন তাহলে চাকরিদাতার কাছে এটাই মনে হবে যে আপনার নিজেকে তুলে ধরার আর কিছু ছিলনা বিধায় পৃষ্ঠা ভরাতে এমন কিছু লিখেছেন আপনি। এছাড়াও নীচে রেফারেন্স দেওয়া হল বা এ রকমের কথাগুলোর ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য। বেতনের ব্যাপারে আপনার মাথায় অবশ্যই একটি সংখ্যা থাকবে। তবে সেটা সিভিতে নয়, আলোচনা করুন ইন্টারভিউয়ে।

৩. দায়ী (Responsible for)

প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই আপনি কাজ করেন কারণ আপনাকে সেই কাজটি করতে দেওয়া হয়েছে। তাই রেসপনসিবল ফরের মতন শব্দ সিভিতে উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকুন। ব্যবহার করুন লেড (Led), ম্যানেজড (Managed) ধরণের শব্দগুলো। এতে করে আপনাকে কী কাজ দেওয়া হয়েছিল সেটা নয়, চাকরিদাতা জানতে পারবেন যে আপনি সেই কাজটি কতটা দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করতে পেরেছিলেন।

লিখেছেন-

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

ফিচার রাইটার

 

গরমে প্রাণ জুড়াবে ঠান্ডা ঠান্ডা ফালুদা

গরমে ঠান্ডা যে খাবারগুলো খাওয়া হয়, তার মধ্যে ফালুদা অন্যতম। রেস্টুরেন্টে গেলে অনেকেই এই খাবারটি অর্ডার করে থাকেন। বরফ, আইসক্রিম জেলটিনের সম্বনয়ে ফালুদা খেতে দারুন লাগে। মজাদার এই খাবারটি আপনি চাইলে এখন ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন পড়বে না খুব বেশি উপাদানের। আসুন তাহলে ফালুদা তৈরির সহজ রেসিপিটি জেনে নিই।

উপকরণ:

২-৩ টেবিল চামচ সিরাপ

১ চা চামচ সাবুদানা

১ কাপ নুডলস

২ কাপ দুধ

আইসক্রিম

স্ট্রবেরী জেলি

প্রণালী:

১। প্রথমে একটি প্যানে দুধ জ্বাল দিন। জ্বাল দেওয়ার সময় বার বার নাড়তে থাকুন, যাতে দুধ প্যানের নিচে না লেগে যায়।

২। যখন দুধ ফুটে আসবে তখন এতে চিনি দিয়ে দিন।

৩। এরপর এটি ৩-৪ মিনিট জ্বাল দিন।

৪। চুলা থেকে দুধ নামিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন কয়েক ঘন্টা।

৫। ঠান্ডা দুধের সাথে রোজ সিরাপ অথবা রুহ আফজা মেশান।

৬। নুডলস সিদ্ধ করে আলদা করে রাখুন।

৭। এবার পরিবেশন গ্লাসে প্রথমে সাগুদানা, তারপর নুডলস, জেলেটিন দিয়ে দিন।

৮। এতে সিরাপ মেশানো দুধ ঢেলে দিন।

৯। সবশেষে আইসক্রিমের টুকরো, পেস্তা বাদাম কুচি, কাঠা বাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ফালুদা।

 

যেভাবে শপিংয়ে কোয়ালিটি বুঝে নেবেন!

শপিংয়ের নাম শুনলেই মন ভালো হয়ে যায়। শপিংয়ের ক্রেজ নারীদেরই বেশি। এমন কোনও নারী নেই, কেনাকাটা করতে ভালোবাসেন না। পুরুষরাও যে একেবারে এই লিস্ট থেকে বাইরে, তাও নয়। শপিং প্রেমীদের কেনাকাটা করতে কোনও কারণ লাগে না। সময় পেলেই কারণে অকারণে ঢু মারেন শপিং মলে। কিন্তু শুধু কেনাকাটা করলে হবে কী? পোশাকের কোয়ালিটিও যাচাই  করে দেখা দরকার। এই আসল-নকলের যুগে কোনটা ভালো কোনটা নয়, মানে পোশাকের কোয়ালিটি বুঝে নিন এইভাবে –

১) ফিটিংস : সাধারণ দোকান থেকে কোনও পোশাক কিনুন আর কোনও ব্র্যান্ডেড পোশাক কিনুন। দুটোর মধ্যে পার্থক্যটা খুব ভালো বুঝতে পারবেন। ব্র্যান্ডেড ও কোয়ালিটি পোশাক সবসময় খুব ভালো ফিট করে। শরীরের গড়ন অনুযায়ী হয়। উলটো দিকে সাধারণ দোকানের পোশাকের ফিটিংস কখনই ভালো হয় না।

২) মেটেরিয়াল : সবচেয়ে ভালো সুতি, উল ও সিল্কের পোশাক। এইসব ফ্যাব্রিকের পোশাক পরেও যেমন আরাম, তেমনই অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।

৩) সেলাই : আলগা সেলাই মানেই, অল্পেতেই খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা। তাই পোশাক কেনার আগে ভালো করে তার সেলাই দেখে নিন। নয়তো কিনে আনার পরই দেখলেই সেলাই খুলে বিচ্ছিরি অবস্থা!

৪) ডিজাইন : পোশাকের ডিজাইন যাই হোক না কেন, তাতে সামঞ্জস্য থাকা মাস্ট। যেখানে সেখানে অহেতুক বোতাম, পকেটযুক্ত পোশাক একেবারেই বেমানান। পোশাক কেনার আগে এগুলো দেখে নিন।

সবশেষে পোশাক কেনার আগে, সামান্য ঘষলেই বুঝবেই তা কতটা ভালো। সামান্য ঘষাঘষিতেই যদি পোশাক খুঁজতে বিগড়ে যায়, সেটা হতে পারে খারাপ মেটিরিয়ালের। একবার পরার পরই পুরনো দেখাবে। তাই পোশাক কেনার আগে কোয়ালিটি বুঝে নেওয়া মাস্ট। আরে বাবা, শপিং করে মন খুশ হয়ে যায় ঠিকই। তা বলে কি নকল থেকে সাবধান থাকবেন না?

 

সন্তানের সুশিক্ষার দায়িত্ব পরিবারের

ট্রেন্ডটা অল্প দিনের হলেও আমরা বেশ কিছু বিষয়ে খুবই অভ্যস্ত। আর তা হল, ট্যাব বা মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখিয়ে, গান শুনিয়ে বা গেম খেলতে দিয়ে শিশুদের খাওয়ানো এবং ব্যস্ত রাখা। অথচ এতে শিশুটির অসম্ভব ক্ষতি হচ্ছে। সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক বিকাশ ব্যহত হচ্ছে। অথচ সন্তানের সুশিক্ষার দায়িত্ব নির্ভর করে পরিবারের ওপর।

বাবা-মা শিশুকে সময় দিলে, তার সঙ্গে গল্প করলে, বিনোদনের মধ্যে থাকলে যে বন্ধন গড়ে ওঠে, ফোন বা ট্যাবে ব্যস্ত রাখলে সেটা কখনই সম্ভব নয়। এতে করে ছোটবেলা থেকেই সে একা একা খেলা, কথা বলা, চিন্তা-ভাবনা করা শুরু করে। কোনো ঘটনা ঘটলেও তা বাবা-মায়ের কাছে না বলে চেপে রাখার অভ্যাস হয়ে যায় তার। তারপর ধীরে ধীরে একটা সময় অসামাজিক হয়ে পড়ে, তারপর মা-বাবা, পরিবারের কাছ থেকে দূরে সরে যায় সন্তানটি।

এসব দিকভ্রান্ত সন্তানদের কাছে স্কুল-কলেজের বন্ধু-বান্ধবই হয়ে ওঠে সব। অথবা পরবর্তীতে অন্য কোনো ব্যক্তি তাকে একটু স্নেহ, ভালোবাসা দিলে, ভালো কথা বললে, তার কথা শুনতে চাইলে, সেই ব্যক্তির জন্য জীবন বাজি রাখতেও প্রস্তুত হয়ে ওঠে ছেলেমেয়েরা। এমনকি সেই ব্যক্তির কথায় মানুষ খুন করতেও দ্বিধা করে না।

অনেক বাবা মা তাদের ছোট্ট সন্তানের জন্য ট্যাব কিনে দেন। অথচ এই সোনালী দিনগুলো হাস্যোজ্জ্বল রাখার দায়িত্ব বাবা মায়ের। সন্তানের এই বয়সটা বাবা-মায়ের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার। এই বয়সে বাবা মা সন্তানের মনে জাগিয়ে রাখবেন নীতি নৈতিকতার আদর্শ চর্চা। সঠিক জীবন যাপনের পথ বেছে দেবেন।

উঠতি বয়স সব সময়ই চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে। বাবা-মা বাদে অন্য কারো মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে কোনো সন্তান যদি এসব চ্যালেঞ্জের সুযোগ পায়, সামাজিক অঘটন ঘটানোর উপকরণ পায় তবে বেশিই আগ্রহ বোধ করে। বাবা-মা টের পাওয়ার আগেই হয়তো সন্তানটি মিশে যায় অন্ধকার জগতে। বড় কোনো ঘটনা ঘটার পর পরিবারের তখন কিছুই করার থাকে না। আর তাইতো শিশুরা আবেগহীন, অসামাজিক হয়ে ওঠার আগে তার মধ্যে যে আবেগ জাগিয়ে তুলতে পারেন একমাত্র মা-বাবাই।

 

ভালো বাবা-মায়ের সন্তান নষ্ট-খারাপ হয় কেন?

মোটা কথা, কাউকে ধিক্কার দেয়া এবং কারও পাপের কারণে তাকে লজ্জা দেয়ার ক্ষেত্রে তার জুড়ি মেলা ভার ছিলো। এই কথা শুনে আল্লাহর রাসূল সা.-এর হাদিস মনে এসে গেলো— কোনো ব্যক্তি কাউকে যদি তার পাপের কারণে লজ্জা দেয়, তবে মৃত্যুর পূর্বে নিজেই সেই পাপে সে জড়িয়ে পড়বে। নবি করিম সা. বলেছেন— কারও বিপদে খুশি হলে আল্লাহ তায়ালা তার দোষ গোপন রাখবেন না।

ইসমাঈল সাহেব যদিও আলেম ছিলেন না, কিন্তু অত্যন্ত ধর্মভীরু, তাহাজ্জুদগোজার ছিলেন এবং নিয়মিত জামাতে প্রথম তাকবিরের সঙ্গে নামাজ আদায়ে সচেষ্ট ছিলেন। তার সর্বমোট ছয়টি সন্তান ছিলো। ইন্তেকালের পূর্বে তিনি যে পরিমাণে কষ্টকর অস্থিরতা ও যন্ত্রণার মধ্যে ছিলেন, তা ছিলো কেবল সন্তানদের জন্যে প্রচ- দুশ্চিন্তা। তার তিনটি সন্তানের বিয়ে হয়েছিলো। কিন্তু ছেলেরা ছিলো এখনও অবিবাহিত। এদের মধ্যে দুটি ছোটো ছেলে তাদের জন্যে দুর্নামের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। তারা উল্টাসিধা ও ভবঘুরের মতো হয়ে গিয়েছিলো এবং পুরো মহল্লা ও এলাকার অধিবাসীরা তার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলো। দ্বিতীয় ছেলেটি সীমাহীন দুর্নামের অধিকারী হয়ে গিয়েছিলো।

এই সন্তানদের বাবা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কেঁদে কেঁদে বলতে থাকেন— হে আল্লাহ, আমার মনে পড়ছে না, আমি জীবনে এমন কী পাপ করেছি, যার কারণে আমাকে আজ এমন দুর্দিন দেখতে হচ্ছে। তার সমবয়সীরাও বলছিলো যে, তিনি ছেলেবেলা থেকেই সজ্জন ও ভালো মানুষ ছিলেন। সবসময় হারাম-হালাল বাছবিচার করে চলতেন। কখনো মাদক, ব্যভিচার ও জুয়াবাজির ধারেকাছেও ভেড়েন নি। একদিকে এমনই ছিলো তার ইতিবাচক অবস্থা, আর অন্যদিকে তার সন্তানদের নেতিবাচক পরিস্থিতি। এই কঠিন প্যাঁচের গেড়ো খুলছিলো না। কয়েকজন ব্যক্তি তার ব্যাপারে গভীর পর্যবেক্ষণ করলেন। এ ক্ষেত্রে সমকালীন এক বুজুর্গ সাহায্যে এগিয়ে এলেন এবং বিষয়টি শীঘ্রই বোঝা গেলো। তার বুজুর্গ সঙ্গীর বক্তব্য ছিলো— যৌবনকালে মসজিদে যাওয়ার সময় যখন দুষ্ট ছেলেরা তার সামনে পড়তো, তাদের তিনি ধিক্কার দিতেন যে, তোদের কোন বদমাশ বাবা জন্ম দিয়েছে রে? তোদের বাবা কি হারাম রোজগার করে আর সেগুলো তোদের খাওয়ায়, যার কারণে তোদের এই দুরবস্থা হয়েছে?

স্বজনদের কারও কোনো নেতিবাচক, অপছন্দনীয় ও অবিশাসযোগ্য কথা যদি কানে আসতো, তবে তিনি সবার সামনে মন্তব্য করতেন যে, ইতরদের সন্তান ইতরই হয়ে থাকে। এই ছেলেদের বাবাও যুবক থাকতে এমন কোনো কাজ করে থাকবে। এ জন্যেই তার ছেলেদের এই অবস্থা হয়েছে।

মোটা কথা, কাউকে ধিক্কার দেয়া এবং কারও পাপের কারণে তাকে লজ্জা দেয়ার ক্ষেত্রে তার জুড়ি মেলা ভার ছিলো। এই কথা শুনে আল্লাহর রাসূল সা.-এর হাদিস মনে এসে গেলো— কোনো ব্যক্তি কাউকে যদি তার পাপের কারণে লজ্জা দেয়, তবে মৃত্যুর পূর্বে নিজেই সেই পাপে সে জড়িয়ে পড়বে। নবি করিম সা. বলেছেন— কারও বিপদে খুশি হলে আল্লাহ তায়ালা তার দোষ গোপন রাখবেন না।

আমাদের এই কথাটি বেশ ভালো করে বুঝে নেয়া উচিত যে, সন্তানদের এই মন্দ পরিণতি যুবক বয়সে তার মন্দভাষণ ও অন্যদের ধিক্কার দেয়ার ফল হতে পারে। তার সেই বুজুর্গ বন্ধু এটাও বলেন— নিজের সন্তানদের ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত কঠোর আচরণ করতেন। তাদের কোনো অযাচিত কাজ তিনি কিছুতেই সহ্য করতেন না। ধমকাতেন, মারতেন এবং ক্ষুদ্ধ হয়ে কখনো সখনো তাদের ইবলিস, শয়তান, অভিশপ্ত ও প্রত্যাখ্যাত ইত্যাদিও বরতেন। হতে পারে, তা তক্ষুণি খোদার কাছে মঞ্জুর হয়ে গেছে। এ জন্যেই হয়তোবা আল্লাহ তায়ালা তার সন্তানদের শয়তানের বৈশিষ্ট্যধারী বানিয়ে দিয়েছেন। কেননা, সন্তানদের ব্যাপারে মা-বাবার দোয়া যেভাবে দ্রুত কবুল হয়, একইভাবে বাবা-মার বদ দোয়াও সন্তানদের বেলায় দ্রুত কার্যকর হয়ে দেখা দেয়। তাই কখনো মনের ভুলেও, রাগে ও উত্তেজিত হয়েও নিজের সন্তানদের ধমকানোর ক্ষেত্রে গলদ নামে ডাকা উচিত নয়। এমনও হতে পারে সেটাই কবুল হওয়ার সময় এবং তার প্রভাব প্রকাশ পেয়ে গেলো।

তিনি যদি তার সন্তানদের ক্ষেত্রে দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর নির্দেশিত নীতিমালা পালন ও দোয়া-প্রার্থনার মাধ্যমে নিজের সন্তানদের প্রতিপালন করতেন এবং অন্য কারও সন্তানকে খারাপ না বলতেন, সম্ভবত তাহলে এমন দুর্দিন তাকে দেখতে হতো না। আল্লাহর কাচে আমাদের প্রার্থনা করা উচিত— হে আল্লাহ, আমাদের এমন স্ত্রী ও সন্তান দান করুন, যারা আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা বয়ে আনে এবং আমাদের খোদাভীরুদের নেতা বানান।

সূত্র : বিখরে মোতি, খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ১১০১

লেখক : মাওলানা ইউনুস পালনপুরি রহ.
অনুবাদ : মাওলানা মনযূরুল হক

 

নামাজে ইচ্ছাপূর্বক ইমামের আগে রুকু-সিজদাহ করলে কী হয়?

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন একটু বুড়িয়ে যান এবং তাঁর নড়াচড়ায় মন্থরতা দেখা দেয়, তখন তিনি তাঁর পিছনের মুক্তাদীদের এ বলে সতর্ক করে দেন যে, “হে লোকেরা! আমার দেহ ভারী হয়ে গেছে। সুতরাং তোমরা রুকু-সাজদায় আমার আগে চলে যেও না”। [বায়হাকী; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ১৭২৫]

যে কোনো কাজে তাড়াহুড়া করা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, “মানুষ খুব দ্রুততা প্রিয়।” [বনী ইসরাঈল, আয়াত: ১১]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ধীরস্থিরতা আল্লাহর পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া শয়তানের পক্ষ থেকে”। [তিরমিযী; মিশকাত, হাদীস নং ৫০৫৫; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ১৭৯৫]

জামাআতের মধ্যে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, ডানে-বামে অনেক মুসল্লী ইমামের রুকু-সাজদায় যাওয়ার আগেই রুকু-সাজদায় চলে যাচ্ছে। এমনকি লক্ষ্য করলে নিজের মধ্যেও এ প্রবণতা দেখা যায়। উঠা-বসার তাকবীরগুলোতে তো এটা হরহামেশাই হতে দেখা যায়। এমনকি অনেকে ইমামের আগে সালামও ফিরিয়ে ফেলে। বিষয়টি অনেকের নিকটই গুরুত্ব পায় না। অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এজন্য কঠোর শাস্তির হুমকি শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, “সাবধান! যে ব্যক্তি ইমামের আগে মাথা তোলে তার কি ভয় হয় না যে, আল্লাহ তার মাথাটা গাধার মাথায় রূপান্তরিত করতে পারেন”? [সহীহ বুখারী; মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ১১৪১]

একজন মুসল্লীকে যখন ধীরে সুস্থে সালাতে উপস্থিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং তাড়াতাড়ি বা দ্রুত পায়ে নিষেধ করা হয়েছে । [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩৬; মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১০৯০০৬]

তখন স্বীয় সালাত যে ধীরে-সুস্থে আদায় করতে হবে তাতে আর সন্দেহ কি? আবার কিছু লোকের নিকট ইমামের আগে গমন ও পিছনে পড়ে থাকার বিষয়টি তালগোল পাকিয়ে যায়। তাই মুজতাহিদগণ এজন্য একটি সুন্দর নিয়ম উল্লেখ করেছেন। তা হলো, ইমাম যখন তাকবীর শেষ করবেন মুক্তাদী তখন নড়াচড়া শুরু করবে। ইমাম ‘আল্লাহু আকবার এর ‘র’ বর্ণ উচ্চারণ করা মাত্রই মুক্তাদী রুকু-সাজদাহয় যাওয়ার জন্য মাথা নীচু করা শুরু করবে। অনুরূপভাবে রুকু থেকে মাথা তোলার সময় ইমামের ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’-এর ‘হ’ বর্ণ উচ্চারণ শেষ হলে মুক্তাদী মাথা তুলবে। এর আগেও করবে না, পরেও না। এভাবে সমস্যাটা দূর হয়ে যাবে।

সাহাবীগণ যাতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগে চলে না যান সে বিষয়ে খুব সতর্ক ও সচেষ্ট থাকতেন। বারা ইবন আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে সালাত আদায় করতেন। যখন তিনি রুকু থেকে মাথা তুলতেন তখন আমি এমন একজনকেও দেখি নি যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কপাল মাটিতে রাখার আগে তার পিঠ বাঁকা করেছে। তিনি সাজদায় গিয়ে সারলে তারা তখন সাজদায় লুটিয়ে পড়তেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৭৪]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন একটু বুড়িয়ে যান এবং তাঁর নড়াচড়ায় মন্থরতা দেখা দেয়, তখন তিনি তাঁর পিছনের মুক্তাদীদের এ বলে সতর্ক করে দেন যে, “হে লোকেরা! আমার দেহ ভারী হয়ে গেছে। সুতরাং তোমরা রুকু-সাজদায় আমার আগে চলে যেও না”। [বায়হাকী; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ১৭২৫]

অপরদিকে ইমামকেও সালাতের তাকবীরে সুন্নাত মোতাবেক আমল করা জরুরি। এ সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে, “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে দাঁড়াতেন তখন শুরুতে তাকবীর বলতেন। তারপর যখন রুকুতে যেতেন তখন তাকবীর বলতেন। তারপর বলতেন, ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ যখন রুকু থেকে পিঠ সোজা করতেন। তারপর দাঁড়ানো অবস্থায় বলতেন, ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইবন সালেহ তার উস্তাদ লাইস থেকে বর্ণনা করেন, ‘ওয়ালাকাল হামদ’। অতঃপর যখন সাজদায় যেতেন তখন তাকবীর বলতেন। অতঃপর যখন সাজদাহ থেকে মাথা উঠাতেন তখন তাকবীর বলতেন, তারপর যখন (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতেন তখন তাকবীর বলতেন, সাজদাহ থেকে মাথা তুলতে তাকবীর বলতেন। এভাবে সালাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকবীর বলতেন। আর দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠক শেষে দাঁড়ানোর সময়ও তাকবীর বলতেন”। [সহীহ বুখারী; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৭৯৯]

সুতরাং এভাবে ইমাম যখন সালাতে উঠা-বসার সঙ্গে তার তাকবীরকে সমন্বিত করে একই সাথে আদায় করবেন এবং মুক্তাদীগণও উল্লিখিত নিয়ম মেনে চলবে তখন সবারই জামা‘আতের বিধান ঠিক হয়ে যাবে।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

ভ্রমণে চলুন পর্তুগাল

সমুদ্রবিলাসী মানুষের মন বার বার ছুটে যায় সমুদ্রের নীল জলের দিকে। প্রশান্তির হাতছানি দিয়ে ডাকে সমূদ্র, যে বিশ্রাম চায় তাকে দেয় শীতল আবেশ, যে রোমাঞ্চ চায় তার জন্য আছে অবাধ বিস্ময়ের ভান্ডার সমূদ্র তলদেশে। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের স্বচ্ছ জল হোক আর হোক বেলিজের নীল গহবর সমূদ্রের সব নীল এক নয়, সব উপত্যকায় তার ঢেউ একই ভাবে আচড়ে পড়ে না। সমূদ্রের স্বভাবের এই অনন্যতাই মানুষকে টানে, আগ্রহী করে ভিন্ন ভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন বিচ থেকে তাকে দেখার জন্য।
পর্তুগাল বিখ্যাত চমৎকার বিচগুলোর জন্য। একই সাথে একে আনন্দময় করেছে উষ্ণ আবহাওয়া, সমুদ্রের জলের গরম স্পর্শ। আসুন জেনে নিই আর কী কী অপেক্ষা করছে পর্তুগালে-
Praia da Rocha
চমৎকার আকার আর অবিশ্বাস্য সৌন্দর্য্যের জন্য এই বিচটি পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। পোরটামাও শহরের দক্ষিণ দিকে এর অবস্থান। বিস্তৃত সাদা বালুকা বেলা আর অসাধারণ পাথুরে ক্লিফ এই বিচকে দিয়েছে অনন্য বিশেষত্ত্ব। হোটেল্গুলো থেকেই উপভোগ করতে পারবেন সমুদ্রের ঢেউ, নীল জলরাশির অপূর্ব খেলা। ক্লিফগুলোতেও ঘুরে বেড়াতে পারবেন আপনি, সিড়ির মত ব্যবস্থা করা আহে সেখানে। আটলান্টিক মহাসাগরের ভিউ আরও নিবিড়ভাবে পেতে যেতে পারেন ১৭ শতকের Fortaleza de Santa Catarina তে।
Silves
পোরটামাও এর উত্তর-পূর্বে এর অবস্থান। শহরটি ছিল আলগ্রেভের মরিশ রাজধানী যতদিন পর্যন্ত না ক্রিশ্চিয়ান শক্তি একে দখল করে নেয়। শহরটি স্বাধীনতা হারায় ১২৪৯ সালে। আরাডে নদীর কাছে এই শহরটি আপনাকে শুধু অনন্য সৌন্দর্য্যের সাথেই মিলিত করবে না একই সাথে আপনার সামনে তুলে ধরবে মানবসভ্যতার অমূল্য ইতিহাস। Castelo dos Mouros নামের পর্বতচূড়ার ক্যাসল্টি নির্মিত হয়েছে লাল লাইমস্টোন দিয়ে। সিল্ভেসে গেলে অবশ্যই দেখে আসবেন এটি। কারণ হাজার বছর আগে কেমন ছিল পর্তুগাল তার পরিচয় পাবেন আপনি এখানে। এছাড়াও এই পর্বত থেকে গ্রামের প্যানারমিক ভিউ এক অবিস্মরণীয় সোউন্দর্য্যের সাথে সাক্ষাৎ, এই অভিজ্ঞতা মিস করবেন না যেন।
Albufeira
দক্ষিণ পর্তুগালের আরেকটি মরিশ শহর এটি। ১৩ শতকে দখল হয়ে যায় ক্রিশ্চিয়ান শক্তির দ্বারা। অনেকদিন পর্যন্ত এর নামই কেউ জানতো না। আলবুফেরিয়াকে সবাই যখন প্রায় ভুলেই গেছে তখন ১৯৬০ সালে আবার একে নতুন রূপে তুলে ধরা হয়। শহরটি অসাধারণ একটি বিচের অধিকারী। পর্যটকদের আগমণে আবার জেগে ওঠে শহরটি। প্রাচীন শহরটি, এর ঐতিহ্য, নিদর্শন এক্সপ্লোর করা একটি অভিনব অভিজ্ঞতা। Avenida Francisco Sá Carneiro এলাকাটি পরিচিত “The Strip” নামে। মাছ ধরা, স্কুভা ডাইভিং, বারে ঘুরে বেড়ানো সব মিলিয়ে রোমাঞ্চ এবং একই সাথে বিশ্রাম দুই ক্ষেত্রেই চমৎকার শহরটি।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

নতুন ট্রেন্ড এখন পোর্ট্রেট মেহেদি!

এই উপমহাদেশে বিয়ের ক্ষেত্রে মেহেদি অনেক জনপ্রিয় একটি প্রথা। বিয়ের আগে মেহেদি তাই অবশ্যই চাই। যদিও মেহেদী একটি অবাঙালি রীতি। তবে এখন ব্যাপারটা বদলে গেছে। বাঙালি-অবাঙালি নির্বিশেষে চারদিকে মেহেদি পরার খুব ধুম। দু’হাতে ও পায়ে মেহেদিতে ফুটে ওঠে নানা ডিজাইন ও কারুকার্য। মেহোদর বিভিন্ন ডিজাইন রয়েছে। তবে পোর্ট্রেট মেহেন্দি এখন নতুন ফ্যাশন। এখন হাতে আর শুধুমাত্র হবু বরের নামই নয়, ছবিও ফুটে উঠবে।

আপনিও চাইলে মনের মানুষটি ছবি নিজের হাতে ফুটিয়ে তুলতে পারেন।

কেনো পোর্ট্রেট মেহেদি 

১) অসাধারণ সুন্দর দেখায়। হাতের সৌন্দর্যটাই দ্বিগুণ বেড়ে যায় পোর্ট্রেট মেহেদিতে।

২) মেহোদর এই কারুকার্য খুব নিখুঁত। এনে দেয় বিশেষ আকর্ষণ।

৩) জীবনসঙ্গীর নাম বা তাঁর ছবি অনেকেই ট্যাটু করিয়ে থাকেন। তবে সে বড্ড যন্ত্রণার ব্যাপার। পোর্ট্রেট মেহোদর মনের সেই ইচ্ছা বিনা জ্বালা যন্ত্রণায় পূর্ণ হবে এই পোর্ট্রেট মেহোদ স্টাইলে।

৪) মনের মানুষটি সবসময় মনে তো থাকেই। তার উপর যদি হাতের মুঠোয় সেই মানুষটার প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে, তবে তো সোনায় সোহাগা!

তাই আর দেরি কেন! মেয়েরা তো এমনিতেই বিভিন্ন ডিজাইনের মেহেদি দিয়ে হাত পা সাজান। এবার তাহলে শুরু হোক নতুন একটি ট্রেন্ড। যেখানে মনের মানুষের ছবিও শোভা পাবে হাতে।

সূত্র: ইনাদুইন্ডিয়া

 

এই ৭টি কৌশল কর্মক্ষেত্রে আপনাকে করে তুলবে আত্মবিশ্বাসী

চাকরিতে সাফল্যা অর্জন করতে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার বিকল্প নেই। কর্মক্ষেত্রে সফল হতে হলে আপনাকে আত্নবিশ্বাসী হতেই হবে। এই আত্নবিশ্বাস আপনাকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে। কিন্তু অনেকেই তার কাজ, কাজের ক্ষেত্র নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগে থাকেন। এই হীনমন্যতা কাটিয়ে কর্মক্ষেত্রে আত্নবিশ্বাসী হয়ে উঠুন দারুন কিছু কৌশলে।

১। নেতিবাচকতা দূর করুন এবং ইতিবাচকতা নিয়ে আসুন

নিজের ভিতরে রাখা নেতিবাচকতা দূর করে দিন। “আমি এটা পারবো না”, “আমাকে দিয়ে হবে না” নিজের সম্পর্কে এইরকম নেতিবাচক কথা বলা বন্ধ করুন। এর পরিবর্তে নিজেকে বলুন “ আমি অব্যশই পারব” “আমিই পারবো”। হয়তো বর্তমান সময় ভাল যাচ্ছে না, তবুও নিজের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখুন। এই ইতিবাচক মনোভাব আপনার আত্ন বিশ্বাস ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

২। জ্ঞানের পরিধি বাড়ান

বিশ্বে প্রতিদিন নতুন কিছু না কিছু ঘটছে। সাম্প্রতিক বিশ্ব, নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানুন। এটি আপনার আত্নবিশ্বাসের বৃদ্ধি করে অন্যের কাছে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে।

৩। কাজের নতুন পদ্ধতিগুলো শিখে নিন

বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তন পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার হয়ছে। কাজের নতুন পদ্ধতিগুলো শিখে নিন। দেখুন একজন সফল মানুষ কীভাবে কাজ করে। এবং শিখে নিন তার কাজের ধরণটি। এটি আপনার কাজের দক্ষতা বাড়ানোর সাথে সাথে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে।

৪। নিজের শক্তির উপর বিশ্বাস করুন

সব সময় নিজের শক্তিকে গুরুত্ব দিন, দুর্বলতাকে নয়। আপনার ভাল কাজটির কথা মাথায় রাখুন। পরের কাজটি আরোও ভাল করার চেষ্টা করুন। একসময় দেখবেন আপনার কাজে কোন ভুল থাকছে না। আপানার প্রতিটা কাজ হচ্ছে একদম নির্ভুল।

৫। নিজেই কাজের পরিবেশ তৈরি করুন

চাকরি থেকে আপনি যা চাচ্ছেন তা নাও পেতে পারেন। তাই বলে চাকরি ছেড়ে দেওয়া সমস্যার সমাধান নয়। সমস্যা খুঁজে বের করে তা সমাধান করুন। আপনি যেমন পরিবেশন চান, তেমন পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করুন।

৬। পুনরাবৃত্তি করুন

কথায় আছে অনুশীলন সাফল্যের চাবিকাঠি। কোনো কাজে একবার ব্যর্থ হলে আবার করুন। একবার ভুল হলে পরের বার ভুল ঠিক করে আবার করুন। বার বার করতে করতে কাজটি থেকে সাফল্য আসার সাথে সাথে আপনি কাজটিতে দক্ষ হয়ে উঠবেন।

৭। সাফল্যের দিকে নজর রাখুন

যতক্ষণ না ভাল কিছু করছেন ততক্ষণ নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়বে না। কর্মক্ষেত্রে আপনার সাফল্যময় কাজগুলোকে মনে রাখুন। সফলতা এবং ব্যর্থতা মুদ্রার এইপিঠ ওপিঠ। সফল হতে হলে আপনাকে ব্যর্থতার স্বাদ নিতে হবে। তাই বলে ভেঙ্গে পড়া যাবে না। সফল কাজগুলোকে মনে করুন।

লিখেছেন
নিগার আলম
ফিচার রাইটার

 

মজাদার আমেরিকান চপস্যুয়ে তৈরি করুন ঘরেই

রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে ভিনদেশি যে খাবারগুলো অর্ডার করা হয়, তার মধ্যে আমেরিকান চপস্যুয়ে অন্যতম। ভাজা নুডলসের সাথে সবজি মাংস এবং ডিমের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় এই খাবারটি। ঘরে অনেকেই খাবারটি তৈরি করলেও পারফেক্ট রেস্টুরেন্টের মত তৈরি হয় না। এইবার তাহলে পারফেক্ট রেস্টুরেন্ট মত আমেরিকান চপস্যুয়ে তৈরির রেসিপিটি জেনে নিন।

উপকরণ:

৩০০ গ্রাম সিদ্ধ নুডলস

৪০০ গ্রাম হাড় ছাড়া মুরগির মাংস

২/৩ কোয়া রসুন কুচি

১ চা চামচ আদা কুচি

১টি পেঁয়াজ কুচি

বাঁধাকপি লম্বা করে কাটা

১ টি গাজর লম্বা করে কাটা

১ টি ক্যাপসিকাম লম্বা করে কাটা

৪/৫ টা বরবটি লম্বা করে কাটা

৬/৭ টা পালং শাক পাতা

১/২ চা চামচ সাদা গোলমরিচের গুঁড়া

১/২ চা চামচ চিনি

৪ টেবিল চামচ টমেটো কেচাপ

১ কাপ চিকেন স্টক

২ টেবিল চামচ কর্ণ ফ্লাওয়ার

প্রণালী:

১। প্রথমে নুডলস সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ করার সময় এক চামচ তেল দিয়ে নিন, এতে নুডলসগুলো একে অপরের সাথে লেগে যাবে না।

২। এবার একটি পাত্রে তেল গরম করতে দিন। তেল গরম হয়ে আসলে আস্তে আস্তে করে নুডলসগুলো দিয়ে দিন।

৩। আরেকটি প্যানে ডিম পোচ করে ফেলুন।

৪। ডিম পোচ হয়ে গেলে অন্য একটি প্যানে তেল দিয়ে এর মধ্যে রসুন কুচি, আদা কুচি, পেঁয়াজ কুচি দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন।

৫। তারপর এতে মুরগির মাংস দিয়ে দিন। আবার কিছুক্ষন ভাজুন।

৬। এরপর বাঁধাকপি, গাজর, ক্যাপসিকাম, বরবটি, পালং শাক পাতা দিয়ে দিন। ভাল করে ভাজুন।

৭। এবার এতে লবণ, সাদা গোল মরিচের গুঁড়া, চিনি, টমেটো কেচাপ দিয়ে ভালভাবে নাড়ুন।

৮। এরপর এতে চিকেন স্টক দিয়ে দিন। আবার কিছুক্ষণ নাড়ুন। সিদ্ধ হয়ে এলে এতে কর্ণ ফ্লাওয়ার দিয়ে দিন।

৯। এবার একটি ডিশে প্রথমে ভাজা নুডলস তার উপর রান্নার করা মাংস এবং সবশেষে ডিম পোচ দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার আমেরিকান চপস্যুয়ে।

 

জাসিয়া’র মাধ্যমে গহনা কিনুন ঘরে বসেই

পোশাকের সাথে মিলিয়ে পছন্দের গহনা পরতে সবাই ভালবাসেন। আর সেই পছন্দের গহনাটি এখন মিলবে ঘরে বসেই। ফেসবুক ভিত্তিক অলংকার বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান জাসিয়া দেশি-বিদেশি নানা রং ও বাহারি ডিজাইনের গহনা নিয়ে সাজিয়েছে তাদের অনলাইন শো-রুম। দেশি-বিদেশি গলার মালা, আংটি, কানের দুল, চুড়ি, পুঁথির মালা সহ নান্দনিক ডিজাইনের গহনা পাওয়া যাবে জাসিয়াতে।

দেশের যে কোন স্থান থেকে পছন্দের গহনাটি এখন অর্ডার করলেই পৌঁছে যাবে আপনার বাসায় কিংবা অফিসে। আমদানি ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জাসিয়াতে প্রতিটি পণ্যের দামও থাকছে হাতের নাগালের মধ্যে। বিস্তারিত জানতে- ফেসবুক পেজ : www.facebook.com/jasiaonline.

 

নারীরা যে কারণে জড়াচ্ছে জঙ্গিতে

ইদানিং দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে জঙ্গি সংগঠনের নারী সদস্যদের। মূলত পুরুষ সদস্যদের জেরা করেই তাদের বিষয়ে জানতে পারছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আর তাদের পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ধরা হচ্ছে নারী সদস্যদের।

গত রোববারই সিরাজগঞ্জ থেকে আটক করা হয়েছে ৪ নারীকে। যারা কিনা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম, ছয়টি ককটেল ও জিহাদি বইও জব্দ করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন- সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার বাদুল্যাপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী নাদিরা তাবাসসুম রানী (৩০), বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার ক্ষুদ্র ফুলকোটের মো. খালিদ হাসানের স্ত্রী হাবিবা আক্তার মিশু (১৮), এই উপজেলার পরানবাড়িয়ার সুজন আহমেদ বিজয়ের স্ত্রী রুমানা আক্তার রুমা (২১) ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মোচাদহ দক্ষিণপাড়ার মামরুল ইসলাম সরদারের স্ত্রী রুনা বেগম (১৯)।

সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ  জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোরের দিকে পৌর এলাকার মাছুমপুরে অভিযান চালিয়ে একটি বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের উদ্দেশে তারা ওই বাড়িতে বসে গোপন বৈঠক করছিল।

জঙ্গি ক্যাডার বললেই সাধারণত পুরুষদের কথাই সবাই মনে মনে চিন্তা করে। অথচ জেএমবিসহ বেশ কয়েটি সংগঠনে রয়েছে অনেক নারী সদস্য। মূলত জঙ্গি সংগঠনগুলোর পুরুষ সদস্যদের সাথে বিয়ের মাধ্যমে এই নারীরা যুক্ত হচ্ছেন বলে জানা গেছে। তারা স্বামীদের মাধ্যমে জঙ্গি মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন এবং সব কাজেই সহযোগিতা করেন। তাছাড়া ঘর ভাড়া পাওয়া, স্ত্রী-সন্তানসহ যাতায়াত করা, সহজেই অস্ত্র বহন করা, তথ্য সংগ্রহ- সবক্ষেত্রেই সুবিধাজনক হয় নারী সদস্যরা থাকলে।

এদিকে নারীদের জঙ্গি হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে তারই নিকটাত্মীয়রা। জঙ্গি সংগঠনগেুলোর সদস্যরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের অন্য সদস্যদের শ্যালিকা কিংবা বোনদেরই বিয়ে করে থাকেন। এতে করে নিজেদের তথ্য কিংবা অন্যান্য বিষয় বাইরে ফাঁস হয় না। জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়ে পড়ার অনেকেই তার বোনদেরও এ পথে আনার চেষ্টা করে। এমন দৃষ্টান্ত দেখা গেছে বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার আসামি শরিফুল ইসলাম ওরফে মুকুল রানার ক্ষেত্রে।

মুকুল রানা বিয়ে করেন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) গুরুত্বপূর্ণ নেতা বিএম মুজিবুর রহমানের বোন মহুয়া আক্তার রিমিকে। আর এ বিয়ের মধ্যস্থতা করেছিলেন সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া বিতর্কিত মেজর জিয়াউল হক।

সাংগঠনিক কারণেই মেজর জিয়ার সঙ্গে এবিটি নেতা মুজিবুরের ঘনিষ্ঠতা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের সূত্র ধরেই এবিটির সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আর মেজর জিয়ার মধ্যস্থতায় চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি যশোরের জগন্নাথপুরে মোহাম্মদ আলী বিশ্বাসের মেয়ে ও মুজিবুরের বোন রিমির সঙ্গে বিয়ে হয় মুকুল রানার। তবে তার স্ত্রী মহুয়া আক্তার রিমির জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া না গেলেও স্বামী আর বড়ভাই জঙ্গি হওয়ার কারণে তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন গভীর রাতে রাজধানীর মেরাদিয়ায় ডিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জঙ্গি নেতা মুকুল রানা নিহত হন। এর এক মাস আগে ১৯ মে মুকুল রানাসহ ৬ জঙ্গির ছবি প্রকাশ করে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘শুধু পুরুষরাই নয়, নারীদের জঙ্গি কার্যক্রমে লিপ্ত হওয়ার বিষয়টাও মনিটরিং করা হচ্ছে।’

নারীরা কেন জঙ্গি কার্যক্রমে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আদর্শগত মিলের কারণেই জঙ্গি কার্যক্রমে লিপ্ত নারী-পুরুষের বিয়ে হয়। এখান থেকেই পরবর্তী জেনারেশনও জঙ্গিবাদে ছড়িয়ে পড়ছে।’

 

সিআইডির কাছে ক্ষোভ জানালেন তনুর মা

ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলা নিয়ে সিআইডির কাছে ক্ষোভ জানিয়েছে তনুর পরিবার। সোমবার বিকেলে সিআইডির তদন্ত দল তাদের সেনানিবাসের বাসায় গেলে মামলার অগ্রগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তনুর মা আনোয়ারা বেগম।

তনুর মা মোবাইল ফোনে বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মো. ইব্রাহিমসহ সিআইডির একটি দল সোমবার সেনানিবাসে তনুর লাশ উদ্ধারের স্থান পরিদর্শন করে এবং বিকেলে বাসায় গিয়ে তাদের সান্ত্বনা দেয়।

তিনি আরো বলেন, সিআইডিকে বলেছি- তনু হত্যার ৪ মাস ৫ দিন হয়েছে।  এখনও কোনো আসামি ধরা পড়েনি।  ২০/৩০ জন ধরে নিয়ে গেলেই তো আসামি শনাক্ত হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে জানতে তনুর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মো. ইব্রাহিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার পাশের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  ২১মার্চ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে তার প্রথম ময়নাতদন্ত করেন ডা. শারমিন সুলতানা।  ওই দিন অজ্ঞাতদের আসামি করে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন।

গত ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ জেলার মুরাদনগরের মির্জাপুর গ্রামের কবর থেকে উত্তোলন ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

গত ৪ এপ্রিল দেয়া হয় প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন।  ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত না থাকায় সমালোচনার মুখে পড়ে ফরেনসিক বিভাগ।

গত ১৬ মে তনুর কাপড়ে ৩ পুরুষের শুক্রাণু পাওয়া যাওয়ার খবর সিআইডির কুমিল্লা অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আবারো আলোচনায় উঠে আসে প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন।

১২ জুন দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।  ওই প্রতিবেদনেও তনুর যৌন সম্পর্কের বিষয়ে আলামত পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়।  তবে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি এবারও অস্পষ্টই রেখে দেয় ফরেনসিক বিভাগ।

 

নাস্তায় মুখরোচক মাংস পুলি

বিকেল বা সন্ধ্যার নাস্তায়, অতিথি আপ্যায়নে মুখরোচক খাবারের প্রাধান্য থাকে বেশি। তেমনি মুখরোচক এবং উপাদেয় একটি খাবার মাংস পুলি। খুব সহজে তৈরি করা যায় অসাধারণ এই খাবার। তাই আসুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক মুখরোচক মাংস পুলির সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

১ কাপ ছোট করে কাটা মাংস সেদ্ধ, আধা কাপ আলু কুচি, আধা কাপ পেঁয়াজ মিহি কুচি, কাঁচা মরিচ কুচি ঝাল বুঝে, ১ চা চামচ কাবাব মসলা, ১ চা চামচ আদা-রসুন বাটা, ২ টি এলাচ, ১ খণ্ড দারুচিনি, ২ টি লবঙ্গ, ২ চা চামচ তেল বা ঘি, লবণ স্বাদমতো।

পিঠার জন্য

৫০০ গ্রাম আটা বা ময়দা, ৫০ গ্রাম সুজি, আধা কাপ ঘি, লবণ স্বাদমতো, পানি পরিমাণ মতো, তেল ভাজার জন্য।

যেভাবে করবেন

পুর তৈরি

প্রথমে প্যানে তেল দিয়ে গরম করে এতে আদা-রসুন বাটা দিয়ে নেড়ে নিন ভালো করে। একটু লালচে হয়ে এলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নরম করতে থাকুন। একে একে গরম মসলা ও কাবাব মসলা দিয়ে লবণ দিয়ে দিন। এরপর এতে আলু কুচি ও মাংস কুচি দিয়ে ভালো করে নেড়ে ভাজা ভাজা করতে থাকুন। আলু সেদ্ধ হয়ে ও মাংস ভাজা হয়ে এলে পুর তৈরি হয়ে যাবে। স্বাদ দেখে নামিয়ে রাখুন।

পিঠা তৈরি

আটা বা ময়দার সঙ্গে সুজি ভালো করে হাতে মিশিয়ে নিন ও সামান্য লবণ দিন। এরপর ঘি ঢেলে হাত দিয়ে মাখাতে থাকুন। এতে খাস্তা হবে। তারপর পানি দিয়ে মেখে ডো তৈরি করে নিন। রুটি বেলার মতো করে ডো তৈরি করতে হবে। এরপর ছোট ছোট করে গোল রুটি তৈরি করে নিন। এরপর ঠিক মাঝে পুর দিয়ে রুটিটি ভাঁজ করে পুলি পিঠার আকার দিতে হবে। একটি কাটা চামচ দিয়ে রুটির মুখ আটকে ফেলুন, যাতে পুর ভেতর থেকে বেরিয়ে না যায়। একটি বড় কড়াইয়ে ডুবো তেলে ভাজার জন্য তেল গরম করুন। অল্প আঁচে গরম করে নিন। এরপর বানানো পিঠা ছেড়ে দিন এবং অল্প আঁচেই লালচে করে ভেজে তুলে নিন। একটি কিচেন টিস্যুতে রেখে তেল শুষে ফেলুন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেলো মাংস পিঠা। এবার সসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

ঘরে বসেই করুন পার্লারের মত ব্লিচ

দ্রুত ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ব্লিচের জুড়ি নেই। বিশেষ কোন অনুষ্ঠানের আগে অনেকেই ব্লিচ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকেন। সাধারণত পার্লারে ব্লিচিং ক্রিম ব্যবহার করে ব্লিচ করা হয়। তবে ব্লিচিং ক্রিম অথবা ফেসিয়ালের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, বিধায় এটি ত্বকের ক্ষতি করে। আপনি চাইলে ঘরে করে ফেলতে পারেন ব্লিচিং। সহজে ঘরে থাকা উপাদান দিয়ে ব্লিচিং করা সম্ভব। আসুন তাহলে উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।

১। টকদই

হাতে কিছু পরিমাণ টকদই নিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রতিদিন একবার করুন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পার্থ্যক দেখতে পাবেন। এছাড়া এক টেবিল চামচ টকদইয়ের সাথে আধা টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে মুখ এবং ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন। এবার ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

২। ওটমিল ব্লিচিং

দুই টেবিল চামচ ওটমিল, এক টেবিল চামচ টকদই, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল একসাথে মিশিয়ে নিন। এবার এটি ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে রাখুন। ১৫-২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্যাকটি মুখে সম্পূর্ণভাবে শুকাতে দেবেন না। কিছুটা নরম থাকতেই পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন।

৩। বেসন

বেসন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকর। বেসন এবং গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এটি ত্বকে ব্যবহার করুন। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

৪। আলুর প্যাক       

আলুর খোসা ছড়িয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এরসাথে গোলাপজল, মধু এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এটি ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আলু ত্বকের কালো দাগ দূর করে। এর সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

৫। লেবু, মধু এবং দুধ

এক টেবিল চামচ গুঁড়ো দুধ, এক চা চামচ লেবুর রস,  এক চা চামচ মধু এবং আধা চা চামচ বাদাম তেল ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবার এটি ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার ব্যবহার করুন। এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশ কার্যকরী।

ব্লিচিং ক্রিম ব্যবহারে টিপস:

১। ব্লিচ হল অ্যামোনিয়া, এমনকি বাজারে যে ক্রিম কিনতে পাওয়া যায় তাতেও এটি ব্যবহার করা হয়। তাই প্রতিদিন ব্যবহার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তিন সপ্তাহে একবার ব্যবহার করা যেতে পারে।

২। ব্লিচিং ক্রিম ব্যবহারের আগে ত্বক ভাল করে পরিষ্কার করে নিন। তবে ক্লিঞ্জিং মিল্ক ব্যবহার করবেন না।

৩। গাড় ত্বকের অধিকারীরা বেশিক্ষণ ত্বকে ব্লিচিং ক্রিম রাখবেন না। সর্বোচ্চ ১০ মিনিট ত্বকে রাখবেন।

 

লিখেছেন
নিগার আলম

 

বিউটি পার্লার ব্যবসা বিনিয়োগ ও পরিচালনার কর্মশালা

বিউটি পার্লার ব্যবসার বিনিয়োগ ও পরিচালনার খুঁটিনাটি কৌশল নিয়ে দেশে প্রথমবারের মত কর্মশালার আয়োজন করতে যাচ্ছে লিংগারিং লুক ইনসটিটিউট। আগামী ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ ইং তারিখে এক দিনের এই কর্মশালায় থাকছে বিউটি পার্লার ব্যবসা  বিনিয়োগ এবং দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল। কোর্স শেষে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করা যাবে ০১৮১৭৭৫২২৪০ নম্বরে।

কর্মশালার বিষয়ঃ
বিউটি পার্লার ব্যবসা স্থাপন করার জন্য সম্পূর্ণ সমাধান।
বিউটি পার্লার ব্যবসার  পরিচালনার খুঁটিনাটি।

কর্মশালার পদ্ধতিঃ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা, ভিডিও প্রদর্শন, উন্মুক্ত আলোচনা। [কোর্স শেষে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।]

২৯ শে জুলাই, ২০১৬, সময়ঃ সকাল ১০ টা – বিকেল ৫ টা, লিংগারিং লুক ইনসটিটিউট, ১৮/১ রিং রোড [৩য় তলা], মোহাম্মাদপুর, ঢাকা।
ফিঃ ৩০০০/- টাকা।
যোগাযোগ করুনঃ ১৮১৭৭৫২২৪০

 

তিনি ছাত্রলীগনেত্রী, এভাবে বিয়ে করতেই পারেন!

দেখে মনে হলো ঠিক যেন বিয়ে বাড়ি কিংবা কমিউনিটি সেন্টার। মরিচ বাতিতে ফটক সাজানো। ভেতরের রাস্তাও একইভাবে জ্বলজ্বল করছে। ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেত্রীর গায়ে হলুদ উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় এভাবেই সেজেছিল রাজধানীর গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ক্যাম্পাস।

ধুমধাম করে কলেজ মিলনায়তনে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করলেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাসুমা আক্তার পলি। তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও।

কলেজের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী ২৪ জুলাই মাসুমা আক্তারের বিয়ে। এ উপলক্ষে তিনি কলেজের ছাত্রীদের জন্য গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। অনুষ্ঠানে তার হবু বরও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও দুই পরিবারের অনেক অতিথি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

ছাত্রীরা বলছেন, কলেজ হোস্টেলে থাকার নিয়ম অনুযায়ী, কেউ বিয়ে করলে তার সিট কেটে দেয়া হয়। কিন্তু ছাত্রলীগের অনেকে প্রভাব খাটিয়ে বিবাহিত হয়েও হোস্টেলে থাকেন। আর এবার কলেজের মিলনায়তনে বিয়ের আয়োজনই করা হল। পলি ছাত্রলীগনেত্রী বলেই এভাবে একটা মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে বিয়ে করতে পারছেন।

তারা বলছেন, নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে বহিরাগত কেউ প্রবেশ করার নিয়ম না থাকলেও গায়ে হলুদ উপলক্ষে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কলেজে এসেছেন। এর মধ্যে দুই পরিবারের সদস্যদের বাইরে ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মীও অংশ নেন।

অনুষ্ঠান উপলক্ষে কলেজ মিলনায়তনও সাজানো হয় মনোরম সাজে। সেখানে করা স্টেইজের পেছনে লেখা ছিল ‘সাইফ ও পলির হলুদ সন্ধ্যা।’

এ সম্পর্কে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান বলেন, ‘তিনি তো আগে কলেজের ছাত্রী। তারপর ছাত্রলীগের নেত্রী। কলেজ প্রশাসন যদি এক্ষেত্রে অনুমতি দেয় তবে একজন ছাত্রী এ ধরনের অনুষ্ঠান করতেই পারেন।’

সন্ধ্যা থেকে একাধিকবার কলেজের অধ্যক্ষ শামসুন্নাহারের মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

 

হাল ফ্যাশনে রূপার গয়না

রূপার গয়না হিসেবে আগেই আসে বাহারি মল, হাতের বাজু, কোমরের বিছা, নুপূরের নাম। অনেক আগেও এর ব্যবহার ছিল বেশ। তবে নারীদের কাছে স্বর্ণের বিপরীতে এর গুরুত্ব ছিল কম। সময়ের পরিবর্তনে রূপার গয়নার ডিজাইনে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। ঐতিহ্যবাহী রূপার গয়না গ্রামবাংলার গণ্ডি পেরিয়ে প্রভাব বিস্তার করেছে হাল ফ্যাশনের জগতে।

রূপার গোল্ডপ্লেটেড পাথর বসানো আংটি, চুড়ি, ব্রেসলেট, রূপার মল, গলার হার ইত্যাদির ব্যবহার বেড়ে চলেছে উল্লেখযোগ্যহারে। বাজারে অক্সিডাইজ রঙের রূপার মলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ফ্যাশন-সচেতন নারীদের কাছে রূপার গয়না এখন পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে। নারী ক্রেতাদের পাশাপাশি পুরুষের কাছেও রূপার ব্রেসলেট ও কানের রিং সমান জনপ্রিয়।

এ গয়নার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে হালকা-গাঢ় সব রঙের পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। জমকালো সালোয়ার কামিজ এবং ফতুয়ার সঙ্গেও রুপার বড় দুল বেশ চলছে। শাড়ির সঙ্গে পরার জন্য মেয়েরা রুপার ভারী গয়না বেশি পছন্দ করে।

ব্যবহারের পর গয়না ভালো করে নরম কাপড় বা টিস্যু দিয়ে মুছে নিতে হবে। তারপর ভালো করে টিস্যুতে মুড়িয়ে গয়নার বাক্সে রেখে দিন।  গয়না কালো হয়ে গেলে টুথপেস্ট অথবা তেতুল গোলা দিয়ে হালকা করে ঘষে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন।

ডিজাইন ও আকার ভেদে প্রতিটি রূপার নাকফুলের দাম পড়বে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। কানের দুল ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা। বালা ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। টিকলি দেড় হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। ব্রেসলেট ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা, খাড়ু ও বাজু ২ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা, মাদুলি সেট আড়াই হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। গয়নার সেট কিনতে খরচ হবে দশ হাজার থেকে পনের হাজার টাকার মধ্যে । তবে জাঁকজমকপূর্ণ গয়নার সেট কিনতে হলে খরচ করতে হবে ৫০ হাজার টাকার বেশি।

আধুনিক ডিজাইনের রূপার গয়নার বিশাল সংগ্রহ রয়েছে ফ্যাশন হাউস আড়ং-এ। এখানে রুপার মল, নাকফুল, আংটি, চুড়ি, ব্রেসলেট থেকে শুরু করে গলার হার পর্যন্ত নানা নকশার গয়না পাওয়া যাবে। দাম নির্ভর করবে কী কিনছেন, তার ওপর। ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’স- এ পাবেন  আধুনিক ডিজাইনের রূপার গয়না। এই ফ্যাশন হাউসের গয়নার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা মোটিফ ডিজাইনে ব্যবহার করা হয়েছে। বসুন্ধরা শপিং মল-এ পাবেন রূপার গয়না। এছাড়া ঢাকার গাউছিয়া, মেট্রো শপিং মল, ইস্টার্ন মল্লিকাসহ বেশির ভাগ শপিং মলেই রূপার গয়না পাবেন। অনেক গয়নার দোকান থেকেই আপনি নিজের পছন্দমতো নকশায় অর্ডার দিয়েও বানিয়ে নিতে পারেন রূপার গয়না।

 

মজার স্বাদের ফ্রুটস ফিরনি

ফিরনি অনেক খেয়েছেন। নিজেও হয়তো তৈরি করেছেন অনেক। কিন্তু মুখে লেগে থাকা স্বাদের ফিরনি কি সব সময় খাওয়া হয়? চাইলে আপনিও তৈরি করে নিতে পারেন মজার স্বাদের ফ্রুটস ফিরনি। অতিথি আপ্যায়নে ফ্রুটস ফিরনির জুড়ি নেই। তাই এক নজরে দেখে নিতে পারেন ফিরনির সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

দুধ ১ লিটার, পোলাওয়ের চাল ১০০ গ্রাম, চিনি ৪০০ গ্রাম, মিক্সস ফ্রুটস ২০০ গ্রাম- (আম, কলা, আনার, আপেল পেঁপে, আঙ্গুর), গোলাপজল ১ টেবিল চামচ, জাফরান ও কিসমিস।

যেভাবে করবেন

চাল আধা ভাঙা করে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার দুধ ও চাল একসঙ্গে চুলায় দিয়ে ফুটিয়ে সামান্য জাফরান দিয়ে ঘন ঘন নাড়ুন। তারপর অল্প করে চিনি দিতে থাকুন। সব চিনি দেয়া হলে ৫ মিনিট মৃদু আঁচে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে গোলাপজল ছিটিয়ে দিন। এভাবে কিছুক্ষণ নাড়ার পর নামিয়ে এনে ফিরনি ঠাণ্ডা করতে হবে। তারপর ফলের কুচি ফিরনির ওপরে দিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। পরিবেশন করার ৫ মিনিট আগে নামিয়ে আনলেই হবে।

 

নগরবাসী নারীর হয়রানি ও প্রতিরোধ

স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘অবিশ্বাস’, ‘মোমেন্টস’, ‘পায়রা’ ও ‘বিহাইন্ড দ্য সিনস’-এর পর নির্মাতা সংস্থা মোশন ভাস্কর এবার নিয়ে এলো সচেতনতামূলক ডকুড্রামা ‘নারী’। ডকুড্রামাটি পরিচালনা করেছেন ভিকি জাহেদ ও চিত্রগ্রহণে ছিলেন বিদ্রোহী দীপন। অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সাম্প্রতিক একটি ক্যাম্পেইন ‘সেইফ সিটি ফর ওমেন’ এর জন্য বানানো হয়েছে এই ভিডিওটি।

সচেতনতামূলক ডকুড্রামাটিতে মূলত নগরে নারীরা যে সব সমস্যার মুখোমুখি হন সে সব বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যৌন হয়রানি ও ইভ টিজিং সহ আরো অনেক বিষয়। এছাড়াও ডকুড্রামাটিতে উঠে এসেছে নারীদের সাহস, ইতিবাচক শক্তি এবং তাদের প্রতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে অন্যদের সংবেদনশীলতা।

উল্লেখ্য, মোশন ভাস্কর একটি স্বাধীন চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনী নির্মাণ সংস্থা। এর আগেও প্রতিষ্ঠানটি বিজ্ঞাপনচিত্রসহ টেলিভিশন চলচ্চিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে। ইতোমধ্যে সচেতনতামূলক প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাপক সাড়া ফেলছে।

 

স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য : হাদিসের নির্দেশনা

হাদিসের নির্দেশনা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর হাদিসে কোরান মাজিদের এসব নির্দেশনর প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা ও বিস্তারিত বর্ণনা এসেছে। তা স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহারের প্রতিদান ও স্ত্রীদের প্রতি স্বামীদের সদয় ও সহানুভূতিশীল হওয়ার কথা বলে।

মানুষের সর্বোত্তম ধনভান্ডার
হজরত ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে মানুষের সর্বোত্তম ধনভান্ডার সম্পর্কে বলব না, যা সে মজুত করবে? তা হল একজন গুণবতী স্ত্রী, যখনই সে তার দিকে দৃষ্টিপাত করে সে তাকে সন্তুষ্ট করে, যখন সে তাকে কোন আদেশ করে সে তা পালন করে এবং সে স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজেকে হেফাজত করে। (আবু দাউদ)

হজরত ছাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করল, কোন মানুষের সর্বোৎকৃষ্ট বস্ত্ত কি? তিনি উত্তর করলেন, সর্বোত্তম বস্ত্ত হল এমন জিহবা যা আল্লাহর স্মরণে রত থাকে, একটি কৃতজ্ঞ অন্তর ও একজন বিশ্বস্ত স্ত্রী, যে তাকে তার বিশ্বাসের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে। (আহমদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিযি)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পৃথিবী পুরোটাই সামগ্রী এবং পৃথিবীর সর্বোত্তম সামগ্রী হল একজন পূণ্যবতী স্ত্রী। (মুসলিম)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চারটি বস্ত্ত যাকে দান করা হয়েছে তাকে এই পৃথিবীর ও পরবর্তী জীবনের জন্য সর্বোত্তম বস্ত্ত দান করা হয়েছে: কৃতজ্ঞ অন্তর, আল্লাহর স্মরণে রত জিহবা, বিপদে ধৈর্যশীল শরীর এবং এমন স্ত্রী যে নিজের ও তার (স্বামীর) সম্পদে বিশ্বাসঘাতকতা করে না। (বায়হাকি)

এই হাদিস অনুসারে, মুমিনের সর্বোত্তম সম্পদের একটি হল পূণ্যবতী স্ত্রী। ইসলাম নারীদের মর্যাদাকেই বৃদ্ধি করে নি, বরং তাদেরকে সর্বোত্তম সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যদি কোন পুরুষ একজন পূণ্যবতী স্ত্রী লাভ করে তবে যেন সে তার যত্ন নেয় এবং মূল্যবান সম্পদ হিসেবে তার রক্ষণাবেক্ষণ করে।

সদয় আচরণ
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নারীদের সাথে সদয় আচরণ করবে। তাদেরকে একটি পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং পাঁজরের সবচেয়ে বাঁকা হাড় হল সবচেয়ে উপরের হাড়। যদি তুমি তাকে সোজা করতে চেষ্টা কর, তবে তুমি তাকে ভেঙে ফেলবে। আর যদি তুমি তাকে একা ছেড়ে দাও, তবে তা বাঁকাই থেকে যাবে। অতএব, নারীদেরকে তদনুসারে নসীহত করতে থাক। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) আরও বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় নারীদেরকে একটি পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। যা তোমার জন্য কখনো সোজা হবে না। অতএব, তার বক্রতা সত্ত্বেও তাকে উপভোগ কর। যদি তুমি তাকে সোজা করতে যাও, তবে তাকে ভেঙে ফেলবে। আর তাকে ভেঙে ফেলা মানে হল তালাক প্রদান করা। (মুসলিম)

স্ত্রীকে অপছন্দ করার নিষেধাজ্ঞা
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন পুরুষ যেন কোন মুসলিম নারীর বিরুদ্ধে ঘৃণা পোষণ না করে, যদিও সে তার মধ্যে একটি বিষয়কে অপছন্দ করে, সে তার মধ্যে অন্য এমন একটি গুণ খুঁজে পাবে যাতে সে সন্তুষ্ট হবে। (মুসলিম)

নারীদের অধিকার ও দায়িত্ব
হজরত আমর ইবনে আহওয়ায (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার কর। তারা তোমাদের বাড়িতে কয়েদীর মত। যদি তারা কোন গুরুতর অপরাধ করে তবে তোমরা তাদের বিছানা পৃথক করে দেবে এবং হালকা শাসন করতে পার। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। তোমাদের স্ত্রীদের কাছে তোমাদের অধিকার রয়েছে এবং তোমাদের উপর তাদের অধিকার রয়েছে। তোমাদের অধিকার হল যে, তারা এমন কাউকে তোমার বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি দেবে না যাকে তুমি অপছন্দ কর। আর তোমাদের উপর তাদের অধিকার হল যে, তোমরা তাদের খাওয়া পরার সুব্যবস্থা করবে। (তিরমিযি)

হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহর ইচ্ছায় তোমরা তাদেরকে বিয়ে করেছ এবং আল্লাহর কালিমার মাধ্যমে তোমরা তাদের শরীরকে তোমাদের জন্য হালাল করেছ। তাদের উপর তোমাদের একটি অধিকার রয়েছে। তাহল, তারা তোমাদের বিছানায় অন্য কাউকে অনুমতি দিবে না। যদি তারা তা করে তবে তাদেরকে এমনভাবে প্রহার করবে, যাতে আহত না হয়। তোমাদের উপর তাদের খাওয়া পরার অধিকার রয়েছে, তোমাদের সামর্থ অনুসারে। (বুখারি, মুসলিম)

নারীদের মৌলিক অধিকার
হজরত মুয়াবিয়া (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, একজন নারীর তার স্বামীর উপর কি অধিকার রয়েছে? তিনি বলেন, তাকে আহার করাও যেমনটি তুমি আহার কর। তাকে পরাও যেমনটি তুমি পরিধান কর। তার চেহারায় আঘাত করবে না। তাকে ভৎর্সনা করবে না এবং ঘরের ভেতরে ব্যতিত তোমাকে তার থেকে পৃথক করবে না। (আবু দাউদ, আহমদ, ইবনে মাজাহ)

আদর্শ স্বামী
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈমানের বিচারে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম চরিত্রের অধিকারী এবং তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তার স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণ করে। (তিরমিযি)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তার পরিবারের কাছে সর্বোত্তম। আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার পরিবারের কাছে সর্বোত্তম। (ইবনে মাজাহ, তিরমিযি)

একাধিক স্ত্রীর সাথে সাম্যের আচরণ
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন লোকের দুই স্ত্রী থাকবে এবং সে তাদের সাথে সমতার আচরণ করবে না সে কিয়ামতের দিন শরীরের এক অংশ ঝুলন্ত অবস্থায় আসবে। (আবু দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযি)

পরিবারের উপর ব্যয় করার প্রতিদান
হজরত আবু মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন মুসলমান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রতিদান পাওয়ার আশায় নিজের পরিবারের জন্য কোন কিছু ব্যয় করবে, তা তার আমলনামায় সদকা বা দান হিসেবে পরিগণিত হবে। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত ছাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সর্বোত্তম দীনার (মুদ্রা) যা মানুষ ব্যয় করে তা হল, যে দীনার সে নিজের পরিবারের জন্য ব্যয় করে এবং যে দীনার সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে যাওয়ার জন্য প্রাণী পালনে ব্যয় করে এবং যে দীনার সে ব্যয় করে তার বন্ধুদের উপর, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়। (মুসলিম)

হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে যা-ই তুমি ব্যয় কর তার প্রতিদান অবশ্যই রয়েছে। এমনকি তুমি যা তোমার স্ত্রীর মুখে দাও তারও। (বুখারি, মুসলিম)

এই হাদিসসমূহ মানুষকে তাদের স্ত্রীদের সাথে কেবল দয়া ও সহানুভূতির সাথে নয়, বরং উদারতার সাথেও আচরণ করতে অনুপ্রাণিত করে। ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা নারীদের এমন সম্মানজনক মর্যাদা দান করে।

পরিবারের উপর ব্যয় না করার নিন্দা
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আচ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যক্তির জন্যে পাপ হিসেবে ইহা যথেষ্ট যে, সে তার অধীনস্তদের উপর ন্যায্য ব্যয়ে ইতস্তত করবে। (আবু দাউদ, মুসলিম)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আচরণ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে যা কিছু বলেছেন, তিনি নিজেও তার স্ত্রীদের প্রতি তেমনটি আচরণ করতেন। তিনি ছিলেন সবচেয়ে আদর্শ স্বামী। নিচে তাঁর স্ত্রীদের প্রতি ভালবাসা ও তাদের দেখাশুনা সংক্রান্ত কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হল:

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি এক সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাথে ছিলেন। তিনি তার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন এবং এতে তিনি (আয়েশা (রা.)) তাকে হারিয়ে দেন। পরবর্তীতে যখন তিনি ( আয়েশা (রা.)) কিছুটা ভারি হয়ে যান, তাঁর সাথে পুনরায় দৌড় প্রতিযোগিতা দেন এবং তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হারিয়ে দেন। তখন তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, এটি পূর্বের প্রতিযোগিতার বদলা। (আবু দাউদ)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, আল্লাহর শপথ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার কক্ষের দরজায় দাঁড়ানো দেখতে পেলাম। তখন হাবশীরা বর্শা নিয়ে খেলা করছিল। তিনি তাঁর চাদর দ্বারা আমাকে ঢেকে দিলেন, যাতে আমি খেলা দেখতে পারি। যতক্ষণ আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলাম ততক্ষণ তিনি আমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) আরও বর্ণনা করেন, আমি আমার বান্ধবীদের সাথে পুতুল নিয়ে খেলা করছিলাম। যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলেন তারা আমার কাছ থেকে চলে গেল। তিনি তখন আমাকে তাদের কাছে ফেরত পাঠালেন এবং তারা পুনরায় আমার সাথে খেলা করতে লাগল। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি জিহাদ থেকে প্রত্যাবর্তন করেন এবং তাকে পুতুল নিয়ে খেলা করতে দেখেন। তার একটি ঘোড়াও ছিল, যার ছিল দুটি ডানা। যখন তিনি এটি দেখলেন, আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এটির উপর এগুলি কি? আমি বললাম, ডানা। তিনি বিস্মিত হয়ে বললেন, দুই ডানাবিশিষ্ট ঘোড়া! আমি বললাম, আপনি কি শুনেন নি যে, সুলায়মান আ. এর একটি ঘোড়া ছিল, যার অনেক ডানা ছিল? তা শুনে তিনি তিনি এতই হাসলেন যে, আমি তাঁর পেছনের দাঁত পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছিলাম। (আবু দাউদ)

আমাদের মনে রাখতে হবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল আল্লাহর একজন রাসূলই ছিলেন না, বরং মদীনার ইসলামি রাষ্ট্রের প্রধানও ছিলেন। তাঁর ছিল একটি খুব ব্যস্ত জীবন। বস্ত্তত অধিকাংশ সময় তিনি নিজেকে ইবাদতে নিয়োজিত রাখতেন। এতদসত্ত্বেও তিনি তাঁর স্ত্রীদের সাথে সময় কাটাতেন, তাদের সঙ্গ দিতেন এবং তাদের সাথে আনন্দ বিনোদনে অংশ নিতেও সময় বের করেন। এজন্যে কোরান মাজিদ বলে, নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর জীবনে রয়েছে একটি উত্তম আদর্শ।’ (৩৩:২১) আমাদের উচিৎ, আমাদের পারিবারিক জীবনে তাঁর সুন্নাতের অনুসরণ করা।

স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য
হজরত আবু ওমামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর ভয়ের পর একজন ঈমানদার পূণ্যবতী স্ত্রীর চেয়ে উত্তম কিছু পেতে পারে না। যদি সে তাকে কোন আদেশ করে তবে সে তা পালন করে, যদি সে তার দিকে তাকায় তবে সে তাকে তৃপ্ত করে, যদি সে তার থেকে কোন প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে, সে তা পূর্ণ করে এবং যদি সে অনুপস্থিত থাকে তবে সে তার আচরণ ও তার (স্বামীর) সম্পদকে হেফাজত করে। (ইবনে মাজাহ)

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কোন নারী সর্বোত্তম? তিনি উত্তর করলেন, যে তার স্বামীকে আনন্দ দেয়, যখন সে তার দিকে দৃষ্টিপাত করে। আর আদেশ পালন করে, যখন সে আদেশ করে এবং তার অসন্তুষ্টির আশংকায় নিজের ব্যাপারে ও তার (স্বামীর) সম্পদের ব্যাপারে বিশ্বাসঘাতকতা করা থেকে বিরত থাকে। (নাসায়ি)

স্বামীর প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি আমি কাউকে অন্যের প্রতি সিজদা করার আদেশ দিতাম তবে আমি স্ত্রীদের আদেশ দিতাম তাদের তাদের স্বামীদের সেবা করতে। (তিরমিযি)

হজরত কায়স ইবনে সাদ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি হীরায় গেলাম এবং তাদেরকে (হীরাবাসীদেরকে) তাদের নেতাদের সিজদা করতে দেখলাম। আমি চিন্তা করলাম, সিজদা লাভের ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চেয়ে আরো অধিক হকদার। তাই আমি তাঁকে বললাম, আমি হীরাবাসীদেরকে তাদের নেতাদের সিজদা করতে দেখেছি; অথচ আপনি সিজদা লাভের ব্যাপারে তাদের চেয়ে আরো অধিক বেশি হকদার। তিনি আমাকে বললেন, বল দেখি, যদি তুমি আমার কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম কর তবে কি তাতে সিজদা করবে? আমি উত্তর করলাম, না। অত:পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমাকে সিজদা কর না। যদি আমি কাউকে অন্য কারো উদ্দেশ্যে সিজদা করার আদেশ দিতাম তবে স্ত্রীদেরকে আদেশ দিতাম তাদের স্বামীদের সিজদা করতে। তা সেসব দায়িত্বের কারণে যা আল্লাহ তাআলা স্বামীদের প্রেক্ষিতে স্ত্রীদের উপর অর্পণ করেছেন। (আবু দাউদ, আহমাদ)

রোজা রাখতে স্বামীর অনুমতি
হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন নারী তার স্বামীর অনুমতি ব্যতিত রোজা রাখতে পারে না। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

হাদিসের ভাষ্যকারগণ বলেন, এ থেকে কেবল নফল রোজা উদ্দেশ্য। কোন স্বামীকেই আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে আদেশ প্রদানের অনুমতি দেয়া হয় নি। যদি সে তা করে তবে স্ত্রী তার আনুগত্য করবে না।

স্বামীর ডাকে সাড়া দেওয়া
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে, অথচ সে তা প্রত্যাখ্যান করে। আর স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রী যাপন করে, তখন ফেরেস্তারা সারা রাত্রী তার (স্ত্রীর) উপর অভিশাপ দিতে থাকে। ( বুখারি, মুসলিম)

হজরত তালাক ইবনে আলী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তার কামনা পূরনের জন্য আহবান করে, তখন সে যেন তার আহবানে সাড়া দেয়, যদিও সে চুলায় ব্যস্ত থাকে। (তিরমিযি)

স্বামীর আহবান প্রত্যাখ্যান করার নিন্দা
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঐ সত্ত্বার শপথ, যার হাতে আমার জীবন! যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে এবং সে তা ফিরিয়ে দেয়, তখন যিনি জান্নাতে আছেন’ তার উপর অসন্তুষ্ট হয়, যতক্ষণ না তার স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট হয়। (বুখারি, মুসলিম)

যিনি জান্নাতে আছেন’ থেকে উদ্দেশ্য হলেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাআলা। স্বামীর প্রতি একজন স্ত্রীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল তার শারিরীক চাহিদা পূরণ করা। যেমনটি ইতোপূর্বে উল্লিখিত হয়েছে। এই অধিকার আল্লাহ তাআলা প্রদান করেছেন। তাই যদি কোন নারী তার স্বামীর চাহিদা পূরণে সাড়া না দেয়, তবে সে যেন আল্লাহ তাআলারই আদেশ অমান্য করল এবং এর মাধ্যমে সে তার অসন্তুষ্টি লাভ করল। (বুখারি, মুসলিম)

স্বামীর সম্পদ যথাযথভাবে হেফাজতের প্রতিদান
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন নারী তার স্বামীর উপার্জন থেকে আল্লাহর রাস্তায় দান করে, যদিও তার অনুমতি ব্যতিত হয়, স্বামী তার অর্ধেক সওয়াব লাভ করবে। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন স্ত্রী তার গৃহ থেকে খাদ্যদ্রব্য নষ্ট না করে দান করে, তার জন্যে তার প্রতিদান রয়েছে। কারণ, সে দান করেছে। তাতে স্বামীরও প্রতিদান রয়েছে। কেননা, সে তা উপার্জন করেছে। কারও প্রতিদান এতে অন্যের প্রতিদানের চেয়ে কম হবে না। (বুখারি, মুসলিম)

যেহেতু, পুরুষরাই একটি মুসলিম পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি, তাই স্ত্রী তা থেকেই দান করে থাকে যা তার স্বামী উপার্জন করে। এ দানের জন্যে উভয়ে সমান প্রতিদান লাভ করবে।

স্বামীকে কষ্ট দেওয়ার নিন্দা
হজরত মু’আয ইবনে জাবাল (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন নারী পৃথিবীতে তার স্বামীকে কষ্ট দেয় তখন জান্নাতে অবস্থানরত তার আনত নয়না স্ত্রীগণ (হুরগণ) তাকে লক্ষ করে বলে, তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুক। তোমার কাছে সে কেবল একজন মেহমান মাত্র এবং সে অতি শীঘ্রই তোমাকে ছেড়ে আসবে এবং আমাদের সাথে যোগ দিবে। (ইবনে মাজাহ, তিরমিযি)

অবাধ্য স্ত্রীর ইবাদত গৃহিত হয় না
হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির ইবাদত কবুল হয় না; পলাতক গোলাম- যতক্ষণ না সে তার মালিকের কাছে ফিরে আসে। যে নারী রাত যাপন করে, অথচ স্বামী তার উপর অসন্তুষ্ট থাকে এবং এমন নেতা যাকে তার লোকেরা পছন্দ করে না। (তিরমিযি)

এই হাদিসটি স্ত্রীদেরকে তাদের স্বামীদের অনুগত হওয়া এবং যেসব কারণে স্বামীরা অসন্তুষ্ট হয় তা পরিহার করা সম্পর্কে আরেকটি সতর্কবাণী। যদি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে স্বামীকে অসন্তুষ্ট করে তবে তাদের ইবাদত ও প্রার্থনা কবুল হবে না। যদি স্বামী কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে স্ত্রীর উপর অসন্তুষ্ট হয়, তবে তখন সে অপরাধী সাব্যস্ত হবে না এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে তার ইবাদতও প্রত্যাখ্যাত হবে না।

স্বামীকে সন্তুষ্ট করার প্রতিদান
হজরত উম্মে সালামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় যে স্ত্রী মৃত্যুবরণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ( তিরমিযি)

একজন ঈমানদার স্বামী তার স্ত্রীর উপর তখনি সন্তুষ্ট হতে পারে যখন সে আল্লাহ তাআলার সকল আদেশ নিষেধ মেনে চলবে এবং একটি পূণ্যময় জীবন যাপন করবে।

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন নারী দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, রমজান শরীফের রোজা রাখবে, সতীত্ব রক্ষা করবে এবং স্বামীর আনুগত্য করবে সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করবে। (আহমদ, তাবরানি)

উপরে যা বর্ণিত হয়েছে তা প্রধানত, স্বামী স্ত্রীর জাগতিক ও শারিরীক দায়িত্ব ও কর্তব্য সংক্রান্ত। ইসলাম মনে করে, একজন ব্যক্তির আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় প্রয়োজন শারিরীক প্রয়োজনের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন প্রকৃত ঈমানদার প্রথম থেকেই আল্লাহ তাআলার আদেশের আনুগত্যের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি লাভ করতে সচেষ্ট থাকে। জাগতিক প্রয়োজন ও শারিরীক প্রশান্তি তার কাছে পরবর্তী মর্যাদা লাভ করে। কোরান মাজিদ বলে,

যে দুনিয়া চায় আমি সেখানে তাকে দ্রুত দিয়ে দেই, যা আমি চাই, যার জন্য চাই। তারপর তার জন্য নির্ধারণ করি জাহান্নাম, সেখানে সে প্রবেশ করবে নিন্দিত, বিতাড়িত অবস্থায়। (বনি ইসরাইল, ১৭:১৮-১৯)

একজন প্রকৃত ঈমানদারের চুড়ান্ত সফলতা, তার ধর্মপরায়ন জীবন যাপনের মধ্যে নিহিত, যা তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবে। কোরান মাজিদ বলে,

প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর অবশ্যই কিয়ামতের দিনে তাদের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সে-ই সফলতা পাবে। আর দুনিয়ার জীবন শুধু ধোঁকার সামগ্রী। (আলে ইমরান, ৩:১৮৫)

কোরান মাজিদে আরও ইরশাদ হয়েছে, হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার পরিজনকে আগুন হতে বাঁচাও। যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যেখানে রয়েছে নির্মম ও কঠোর ফেরেস্তাকুল, যারা আল্লাহ যা নির্দেশ দিয়েছেন সে ব্যাপারে অবাধ্য হয় না। আর তারা তা-ই করে যা তাদেরকে আদেশ করা হয়। (আত-তাহরীম, ৬৬:৬)

এ থেকে বুঝা যায় যে, একজন স্বামী ও তার স্ত্রীর মৌলিক দায়িত্ব হল, পরস্পরকে এমন একটি জীবন যাপনে সাহায্য করা, যা পরকালে তাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। যদি স্বামী তার স্ত্রীকে সর্বোত্তম বস্ত্ত সামগ্রী সরবরাহ করে, যার ফলে স্ত্রী তাকে সর্বোচ্চ ভালবাসা ও আনুগত্য প্রদান করে; কিন্তু উভয়ে পরস্পরকে আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা পেতে সহযোগিতা করে না তবে উভয়ে তাদের পারস্পরিক কর্তব্য পালনে ব্যর্থ বলে বিবেচিত হবে। নিম্নলিখিত হাদিসটি বিষয়টিকে আরও পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তোলে,

তোমাদের প্রত্যেকেই জিম্মাদার এবং প্রত্যেককে তাদের অধীনস্তদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সমাজপতি তার সমাজের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, স্বামী তার পরিবার সম্পর্কে দায়িত্বশীল এবং স্ত্রী তার স্বামীর ঘর ও সম্পদ সম্পর্কে দায়িত্বশীল। (বুখারি, মুসলিম)

হাদিসটি ইসলামে পারিবারিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের গুরুত্ব বর্ণনা করে। প্রথমত, স্বামী ও স্ত্রী তাদের পারিবারিক দায়িত্বের ক্ষেত্রে সমান মর্যাদা রাখে। দ্বিতীয়ত, উভয়কেই কিয়ামতের দিন তাদের স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে পৃথক পৃথকভাবে জিজ্ঞাসা করা হবে যে, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে কিনা। তৃতীয়ত, এই হাদিস সন্তানদের উপর মায়ের দায়িত্ব সম্পর্কে বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করে। আর তা এজন্যে যে, ছেলেমেয়েরা তাদের মায়ের খুব কাছাকাছি থাকে। বলা বাহুল্য যে, স্ত্রীর প্রতি একজন স্বামীর এবং স্বামী ও সন্তানের প্রতি একজন স্ত্রীর মৌলিক দায়িত্ব হল, একটি ন্যায়নিষ্ঠ ও ধার্মিক জীবন যাপনে পরস্পরকে সহযোগিতা করা। নিম্নলিখিত হাদিসটি বিষয়টিকে আরও পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তোলে:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা সেই স্বামীকে দয়া করুন যে রাতের বেলা ঘুম থেকে জেগে ওঠে এবং তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে। অতঃপর সে তার স্ত্রীকেও নিদ্রা থেকে জাগিয়ে তোলে যাতে সেও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারে। যদি সে জাগ্রত না হয় তবে যেন মুখে পানির ছিটা দেয়। আল্লাহ তাআলা সেই স্ত্রীকেও রহম করুন যে রাতের বেলা জাগ্রত হয় এবং তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে। অতঃপর সে তার স্বামীকে জাগিয়ে দেয় যাতে সেও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে পারে। যদি সে জাগ্রত না হয় তবে সে যেন তার চেহারায় পানির ছিটা দেয়। (নাসায়ি)

যখন কোন ব্যক্তি রাতের বেলা তার স্ত্রীকে জাগিয়ে দেয় এবং উভয়ে একত্রে দুরাকাত নামাজ আদায় করে, তাদের নাম আল্লাহ তাআলার স্মরণকারী পুরুষ ও নারীদের তালিকায় লেখা হয়। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

এই আলোচনা থেকে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ইসলামে বিয়ে কেবল দুটি বিপরীত লিঙ্গের শারিরীক আকর্ষণ কিংবা স্বামী স্ত্রীর জাগতিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে হয় না। বরং, তা স্বামী- স্ত্রী থেকে জাগতিক, বস্ত্তগত, শারিরীক ও আধ্যাত্মিক প্রয়োজন ভাগাভাগি ও চাহিদা পূরণ করার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে। এজন্যে ইসলামে বিয়ে একটি খুব সংরক্ষিত ও স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান। তাই ভগ্ন পরিবার, একক মাতৃপরিবার কিংবা একক পিতৃপরিবারের ঘটনা মুসলিম সমাজে নেই বললেই চলে।

মূল : ড. মাজহার ইউ কাজি
বাংলা অনুবাদ : মাওলানা ফয়জুল্লাহ মুজহিরি
সম্পাদনা : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক

 

ইসলামে সন্তান সন্তুতির অধিকার

ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই সন্তানের মধ্যে গণ্য। সন্তান সন্ততির অধিকার অনেক। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হচ্ছে শিক্ষা লাভের অধিকার। তবে আল্লাহর দ্বীন এবং চরিত্র গঠনের জন্যই এ শিক্ষা; যাতে তারা তাতে বেশ উৎকর্ষতা লাভ করতে সমর্থ হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُ [التحريم: ٦]

“হে ঈমানদারগণ, তোমরা তোমাদের নিজদেরকে ও তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে রক্ষা কর- যার ইন্ধন হবে মানুষ এবং পাথর।’ [সূরা আত-তাহরীম]

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِي أَهْلِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ»

তোমাদের প্রত্যেকেই প্রত্যেকের রাখাল (তত্ত্বাবধায়ক) এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তাই আখেরাতে তার রাখালির (তত্ত্বাবধান) জন্য জিজ্ঞাসিত হবে, একজন মানুষ তার পরিবারের রাখাল, তাকে সে রাখালিপনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ [বুখারি, মুসলিম]

প্রকৃত প্রস্তাবে সন্তান বা ছেলে মেয়েগণ হচ্ছে পিতা মাতার স্কন্ধে এক বিরাট আমানতস্বরূপ। অতএব, কিয়ামতের দিন তাদের উভয়কেই তাদের সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, এমতাবস্থায় পিতা মাতার দায়িত্ব হচ্ছে তাদেরকে ধর্মীয় এবং নৈতিক তথা উভয়বিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সংশোধন পূর্বক গড়ে তোলা। এরূপ করা হলেই তারা ইহকাল এবং আখেরাতে পিতা-মাতার জন্য চোখের শীতলতা তথা শান্তি বয়ে আনবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَٱتَّبَعَتۡهُمۡ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَٰنٍ أَلۡحَقۡنَا بِهِمۡ ذُرِّيَّتَهُمۡ وَمَآ أَلَتۡنَٰهُم مِّنۡ عَمَلِهِم مِّن شَيۡءٖۚ كُلُّ ٱمۡرِيِٕۢ بِمَا كَسَبَ رَهِينٞ ٢١ [الطور: ٢١]

আর সে সব লোক যারা আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে, অতঃপর তাদের সন্তানগণও ঈমানের সহিত তাদের পত অনুসরণ করেছে, তাদের সাথে তাদের সন্তানদেরকে আমি মিলিত করব। আর আমি তাদের কোন আমলই বিনষ্ট করবনা। প্রতিটি লোক যা কিছু আমল করে তা আমার নিকট দায়বদ্ধ থাকে।’ [সূরা আত-তূর: ২১]

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ: صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ»

যখন কোনো লোক মারা যায়, তখন তার তিনটি আমল’ ব্যতীত সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। উক্ত তিনটি কাজ বা আমল হচ্ছে সাদকায়ে জারিয়া, এমন ইলম বা জ্ঞান যা দ্বারা তার মৃত্যুর পরও লোকেরা উপকৃত হতে থাকে এবং এমন কোনো সুসন্তান, যে তার পিতার মৃত্যুর পর তার জন্য দোআ করে।’ [তিরমিযী, নাসাঈ]

ছেলে মেয়েদেরকে সুশিক্ষা ও শিষ্টাচারের সহিত গড়ে তোলার এইটাই হচেছ ফল, যে এই ধরণের ছেলে-মেয়েরাই পিতা-মাতার জন্য এমনকি তাদের মৃত্যুর পরও কল্যাণকামী হিসেবে পরিগণিত হয়। অনুতাপের বিষয় যে, আমাদের সমাজে অনেক পিতা-মাতাই এই অধিকারটাকে অত্যন্ত সহজ মনে করে নিয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে তারা তাদের ছেলে-মেয়েদের কে ধ্বংস করে দিচ্ছেন এবং তাদের কথা যেন ভুলেই গেছেন। মনে হয় যেন তাদের ব্যাপারে তাদের ওপর কোনো দায়িত্বই নেই। তাদের ছেলে-মেয়েরা কোথায় গেল এবং কখন আসবে, কাদের সাথে তারা চলা ফেরা করছে অর্থাৎ তাদের সঙ্গী-সাথী কারা এ সব ব্যাপারে তারা কোন খবরা খবরই রাখে না। এ ছাড়া তাদেরকে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ এবং মন্দ কাজ থেকে বিরতও রাখে না।

আরও আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এসব পিতা-মাতাই তাদের ধন সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং তার প্রবৃদ্ধির জন্য খুবই আগ্রাহান্বিত থাকেন, সদা জাগরুক থাকেন, অথচ এসব সম্পদ সাধারণত তারা অন্যের জন্যই রেখে যান। অথচ সন্তান-সন্তুতির ব্যাপারে তারা মোটেও যত্নবান নন, যার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হলে দুনিয়া ও আখেরাতের সবস্থানেই তারা কল্যান বয়ে আনতে পারে। অনুরূপভাবে পানীয় ও আহার্যের মাধ্যমে ছেলে মেয়েদের শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য খাদ্য দ্রব্যের যোগান দেওয়া, তাদের শরীরকে কাপড় দিয়ে ঢাকা যেমন পিতার উপর ওয়াজিব তেমনিভাবে পিতার জন্য অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে সন্তানের অন্তরকে ইলম ও ঈমানের মাধ্যমে তরতাজা রাখা এবং তাকওয়া ও আল্লাহ্‌ভীতির লেবাস পরিধান করিয়ে দেওয়া, কেননা তা তাদের জন্য অবশ্যই কল্যাণকর।

সন্তানের অধিকারের মধ্যে আর একটি অধিকার এই যে, পিতা মাতা তাদের জন্য সৎভাবে ব্যয় করবেন। তবে এ ব্যাপারে কার্পণ্য ও অমিতব্যয়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন না। কারণ, এটা তাদের ওপরে সন্তানের অধিকার ও কর্তব্য। আর আল্লাহ তাআলা তাকে যে নেয়ামত দান করেছেন, সে ব্যাপারে অবশ্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন। এটা কিছুতেই ঠিক হবে না যে, ধন সম্পদকে পিতা তার জীবদ্দশীয় ছেলে মেয়েদের ওপর ব্যয় না করে তা কুক্ষিগত করে রাখবেন অথচ তারা মৃত্যুর পর সে ছেলে-ময়েরাই তা লুফে নিয়ে যথেচ্ছ ব্যবহার করবে।

অতএব, পিতা যদি ধন সম্পদে আসক্তিবশত সন্তানদের ওপর ব্যয় করার ব্যাপারে কার্পণ্য করেন, তা হলে তাদের জন্য বৈধ হচ্ছে তাদের প্রয়োজনমাফিক সৎভাবে সে মাল থেকে গ্রহণ করা এবং ব্যয় করা। আর এরূপ অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিনদা বিনতে ওতবার ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।

সন্তানের অধিকারের মধ্যে আরেকটি অধিকার এই যে, উপহার-উপঢোকন এবং দানের ক্ষেত্রে তাদের একজনকে অন্যজনের উপরে অগ্রাধিকার দেয়া যাবে না। অতএব, সন্তানদের কাউকে কিছু দেওয়া এবং কাউকে তা থেকে বঞ্চিত করা অনুচিত। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, এটা নিতান্তই জুলুম। আর আল্লাহ কখনো জালেমদের ভালবাসেন না। এইরূপ করা হলে, যারা বঞ্চিত তাদের মধ্যে একটি বিতৃষ্ণা ও ঘৃণার ভাব উদ্রেক হয় এবং পুরস্কৃত ও বঞ্চিতদের মধ্যে একটি স্থায়ী শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এমনকি অধিকন্তু বঞ্চিত সন্তান-সন্ততি ও তাদের পিতা-মাতার মধ্যে একটি শত্রুতা ও তিক্ততা সৃষ্টি হয়।

আর কিছু সংখ্যক লোক আছে যারা তাদের উপর কৃত সদ্ব্যবহার ও অনুকম্পার প্রেক্ষিতে তাদের কোনো কোনো সন্তানকে অন্যদের ওপর বিশিষ্টতা দিয়ে থাকে। আর এ কারণেই যদি পিতা-মাতা তাকে দান-অনুদান এবং পারিতোষিক প্রদান করেন, তা হলে সেটা কখনো সঠিক হবে না। অর্থাৎ কারো সদ্ব্যবহার অথবা পূণ্যবান হওয়ার কারণে তার বিনিময়ে কিছু দেয়া জায়েয হবে না। কেননা, নেক কাজের পরিনাম ও ফলাফল আল্লাহর কাছেই রয়েছে। তাছাড়া কোনো সৎস্বভাব বিশিষ্ট সন্তানকে যদি অনুরূপ ভাবে অর্থাৎ তুলনামূলকভাবে বেশী দান করা হয়, তা হলে সে মনে মনে গর্বিত ও আত্মতুষ্ট না হয়ে পারে না এবং সে সব সময়ই তার একটি (বাড়তি) পজিশন আছে বলে ধরে নেবে, যার ফলে অন্যরা পিতা-মাতাকে ঘৃণার চোখে দেখতে শুরু করবে এবং তাদের ওপর জুলুম চালিয়ে যেতে থাকবে। অপর দিকে ভবিষ্যত সম্পর্কে আমরা আদৌ কিছু জানি না। এমনওতো হতে পারে যে, এখন যে অবস্থাটা কারো ব্যাপারে বিদ্যমান রয়েছে, তার আমুল পরিবর্তন হতে পারে। আর এ ভাবেই একজন অনুগত ও পুণ্যাত্মা আগামী দিনগুলোতে বিদ্রো্হী ও অত্যাচারী হয়ে যেতে পারে এবং একজন বিদ্রোহীও পুণ্যাত্মায় পরিণত হতে পারে। মানুষের অন্তরের বাগডোরতো আল্লাহর হাতেই নিবদ্ধ-তিনি যেদিকে চান সে দিকেই তা ঘুরাতে সক্ষম।

বোখারী এবং মুসলিম শরীফে আছে : নোমান বিন বশীর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তার পিতা বশীর ইবন সাদ তাকে একটি গোলাম দান করলেন। অতঃপর এই ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানানো হলো। তিনি বললেন: (হে, বশীর) তোমার প্রতিটি ছেলে কি এইরূপ পেয়েছে? তিনি বললেন: না। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তা হলে তা ফেরত নাও।’

অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে তিনি বলেন, আল্লাহকে ভয় কর এবং সন্তান-সন্তুতির মধ্যে ইনসাফ কায়েম করতে চেষ্টা কর।” তাছাড়া এভাবেও বর্ণিত রয়েছে যে তিনি বলেছেন, আমি এ ব্যতীত সব বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি জুলুমের ব্যাপারে ব্যাপারে সাক্ষ্য হবো না।’

মোটকথা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তান-সন্তুতির মধ্যে কাউকে কারো ওপরে গুরুত্ব দানের বিষয়টিকে জুলুম হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। আর জুলুম তো হারাম। কিন্তু সন্তানদের মধ্যে যদি কারো কোনো প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত হয় এবং অন্যদের তা প্রয়োজন না হয়, যেমন ছেলেমেয়েদের মধ্যে কোনো একটি সন্তানের লেখাপড়ার তথা বিদ্যালয়ের উপকরণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় অথবা রোগের চিকিৎসা অথবা বিবাহ ইত্যাদির প্রয়োজন হয়, এমতাবস্থায় সে ব্যাপারে খরচ মেটানোর ব্যবস্থা করা আদৌ দোষণীয় নয়। কারণ এটা নিতান্ত প্রয়োজনের প্রেক্ষিতেই করা হয়ে থাকে। আর এরূপ ব্যয় মূলত: সন্তান-সন্ততির খোরপোষ তথা লালন-পালনের ব্যয় ভারের মধ্যেই গণ্য হবে।

যখন পিতা তার সন্তানকে শিক্ষা-দীক্ষা দান ও তার প্রতি যা কিছু ব্যয় করা দরকার তা করার মাধ্যমে তার উপর ন্যস্ত কর্তব্য পালন করবে, তখন তার সন্তান ও পিতা-মাতার প্রতি মার্জিত আচরণ করবে এবং তার যাবতীয় অধিকারকে সংরক্ষণ করবে। আর পিতা যদি এ ব্যাপারে ত্রুটি করেন তাহলে সন্তানের অবাধ্যতার শিকার হওয়ার জন্য সে উপযুক্ত হবেই। কেননা, এই অবস্থায় সন্তান তার পিতার অধিকার অস্বীকার করবে এবং তার অবাধ্য আচরনের দ্বারা পিতাকে অনুরূপ শাস্তি প্রদান করবে। কাজেই যেমন কর্ম তেমন ফল।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উসাইমিন রহ.
অনুবাদ : মো. আব্দুল মতিন

 

কেমন হওয়া চাই আপনার কোম্পানির লোগো

নতুন ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন? নিশ্চয়ই ভাবছেন লোগোর কথা। লোগো তো চাই-ই। কিন্তু কেমন হবে সেটা? কী করলে আপনার লোগোটি হবে এমন যে চোখের এক পলকে তা মনে করিয়ে দেবে আপনার প্রতিষ্ঠানকে?
মিল্টন গ্লাসার, কিংবদন্তী গ্রাফিক ডিজাইনার, তিনি সবচেয়ে বেশী পরিচিত তার “I Love New York” লোগোর কারণে। তিনি বলেন,লোগো হতে হবে সিম্পল। গ্রাফিক ডিজাইন ব্লগ ডিজাইন ইনফর্মারে তিনি বলেন, “You want to move the viewer in a perception so that when they first look at [the logo]…they get the idea, because that act between seeing and understanding is critical” গ্লাসারের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেখলে লোগোর থাকা চাই এই চার বৈশিষ্ট্য-
ইউনিক বা অনন্য
আপনার লোগোটি অবশ্যই আলাদা হতে হবে। মার্কেটে হাজারো লোগো আছে। তার মাঝেই এমন একটি লোগো হতে হবে আপনারটি যেন চোখে পড়ে সবার আগে এবং দেখলেই চেনা যায়। সাইটপয়েন্ট.কম এর সহ প্রতিষ্ঠাতা Matt Mickiewicz পরামর্শ দেন, যেসকল আইকন যেমন গ্লোব, এরো বা তীরচিহ্ন যেগুলো ইতিমধ্যে ব্যবহার করা হয়ে গেছে সেগুলো বাদ দিন প্রথমেই। গ্রাফিক্স ডিজাইনার ডেভিড এরে বলেন, কোম্পানি কি কাজ করে সেটা তুলে ধরা কিন্তু লোগোর কাজ নয়। “The Mercedes logo isn’t a car. The Virgin Atlantic logo isn’t an airplane. The Apple logo isn’t a computer,” তাই মনে করবেন না, আপনার কফি শপের লোগোতে কফি বিন দেখানো জরুরি। জরুরি হল লোগোর ভিন্নতা, অনন্যতা।
এডাপ্টেবল
একটি শক্তিশালী লোগো সহজেই টান্সলেট করা যায়, বিভিন্ন মিডিয়ামে ব্যবহার করা যায়। আপনি যে লোগোটি করেছেন সেটি কি বিজনেস কার্ডে যেমন মানিয়ে যাচ্ছে তেমনি মানিয়ে যাবে বিলবোর্ডেও? “Keeping the design simple allows for flexibility in size,” লিখেছেন এরি, “Ideally, your design should work at a minimum of around one inch without loss of detail”। মিকিউইজ আরও যোগ করেন, যখন একটি লোগো ছোট স্কেলে জায়গা হয় না তখন এটি ব্রান্ডের পরিচ্ছন্নতা এবং সুনামের জন্য হুমকী হয়ে দাঁড়ায়। আরও মাথায় রাখুন, লোগোটি কিন্তু সাদা-কালোতেও বদলানোর যোগ্য হতে হবে। নাহলে সবরকম প্রিন্টারে ভাল আসবে না। ওয়াটার মার্ক করতেও সমস্যা হবে।
সময়ের বাধাহীন
মিল্টন গ্লাসার “I Love New York” লোগোটি তৈরি করেন ১৯৭৫ সালে। আজ এত বছর পড়েও সেই লোগো শার্ট, টি শার্ট, গিফট আইটেম সহ কত কিছুতেই না ব্যবহার হয়ে আসছে। তিনি বলেন, “You look at the clean lines, the symmetry, the modernist structure, the neutrality behind it… and it really exposes the timeless quality”। আপনার লোগোটিও হতে হবে এমন। আধুনিক, নিরপেক্ষ, স্টাইলিশ, সহজ। যে কোন ভাবে ব্যবহারযোগ্য, মানানসই। কোন সময়ের গন্ডিতে বাধা পড়বে না সেটি।
যথাযথ
যে কোন মার্কেটিং বা বিজ্ঞাপণের দিকে যাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই নির্ধারণ করতে হবে আপনার টার্গেট কে বা কারা! লোগোটিকেও হতে হবে তেমন। আপনার কাস্টমার যেন লোগোটিকে াপন করে নেয়। কোম্পানির সংস্কৃতি, ক্লাস, মূল্যবোধ সবই প্রকাশ করে লোগো। রঙ এর ব্যপারে খেয়াল রাখুন। খেয়াল রাখুন উদ্দেশ্যের ব্যাপারেও। “Different colors are associated with different meanings in different cultures. It’s important to think about how the colors in your logo reflect your brand values and the services or products you sell” বলেন মিকিউইয।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

বিকেলের নাস্তায় রাখুন মজাদার ডিম পাকোড়া

বিকেলের চায়ের সাথে ভাজাভুজি কোন খাবার হলেও দারুন হয়। আর তা যদি হয় পাকোড়া তবে তো কোন কথা নেই! সাধারণত সবজি পাকোড়া, আলুর পাকোড়া তৈরি করা হয়। অনেকে আবার মাংসের পাকোড়া তৈরি করে। ডিম দিয়েও পাকোড়া তৈরি করা সম্ভব। কি, অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার কিছু নেই, ডিম দিয়ে তৈরি করতে পারেন দারুণ ডিমের পাকোড়া। যারা ডিমের গন্ধের জন্য ডিম খেতে পারছেন না, তারা এই খাবারটি খেতে পারেন।

উপকরণ:

  • ১০০ গ্রাম বেসন
  • ৩টি ডিম
  • ১ টেবিল চামচ মরিচ গুঁড়ো
  • ১ চা চামচ মৌরি
  • লবণ
  • ১/২ চা চামচ আদা রসুনের পেস্ট
  • ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা
  • তেল

প্রণালী:

১। প্রথমে ডিম সিদ্ধ করে নিন। এবার ডিমগুলো অর্ধেক করে কেটে নিন।

২। আরেকটি পাত্রে বেসন, মরিচ গুঁড়ো, লবণ, আদা রসুনের পেস্ট, বেকিং সোডা, মৌরি দিয়ে ভাল করে মেশান। তারপর এতে সামান্য পরিমাণ তেল দিয়ে আবার মেশান।

৩। এবার এতে পানি দিয়ে কিছুটা ঘন গোলা তৈরি করে নিন। গোলা যেন খুব বেশি পাতলা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

৪। সিদ্ধ ডিম বেসনের গোলার মধ্যে ডুবিয়ে গরম তেলে  দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে পাকোড়াগুলো ভাজুন।

৫। বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।

৬। পাকোড়া অর্ধেক করে কেটে উপর গোলমরিচ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো ছিটিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ডিম পাকোড়া।

 

ফ্যাশনে ছোটরাও হোক অনন্যা…

দশ মাস দশ দিন বড় যত্নে মাতৃ গর্ভে পালন। মায়ের বড় আদরের ধন সে। কোনও অসুবিধা যাতে তার ছায়াও স্পর্শ করতে না পারে, তার জন্য সকলেই ব্যস্ত। ছোট্ট সোনাকে নিয়ে মাতোয়ারা বাড়ির সবাই। সদ্যজাত শিশুর চাই স্পেশাল কেয়ার। তাই আপনার ছোট্ট বেবির নিত্য প্রয়োজনের জন্য তৈরি করে ফেলুন নতুন ড্রেস। জেনে নিন, কী কী মজাদার জামাকাপড় নিজের হাতেই বানাতে পারেন। তাতে আপনার বেবিকে দেখাবে চমৎকার, আর আপনিও খুশি।

সে এতই ছোটো, কেনা জামাকাপড় তার গায়ে ফিট করে না। তাই নিজেই বানিয়ে ফেলুন ছোট পুচকিটার পোশাক। বাচ্চাদের জামার বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকতে হয়, যাতে কোনওরকম ইনফেকশন না হয়। সুতি ছাড়া অন্য কোনও ম্যাটিরিয়াল ব্যবহার করবেন না। সহজ সরল ডিজাইন বেছে নিন। ফিতে বা বোতাম দেওয়া জামাকাপড়ই বেশি ভালো। তাতে খুলতে পরতে সুবিধা হবে।

ওয়ান পিস আউটফিট

এই ধরনের জামাকাপড় ছোট বাচ্চাদের জন্য একদম পারফেক্ট। বার বার ন্যাপি পালটাতে এই জামাকাপড়ে সব থেকে সুবিধে।

শার্ট

সামনে বোতাম দেওয়া সুন্দর শার্টে আপনার ছোট্ট বেবিকে দিব্য মানাবে। শার্টের উপর পছন্দমতো ডিজাইন করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখুন, কাপড় যাতে বেশি মোটা না হয়। হালকা সুতির কাপড় বাচ্চার ত্বকের জন্য ভালো।

প্যান্ট

বাচ্চার প্যান্ট তৈরি করুন পছন্দমতো। তবে কোমরে ইলাস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো। তাতে বেবির নরম চামড়ায় আঘাত লাগতে পারে। বেশি টাইট করবেন না, তাতে খোলাতে পরাতে অসুবিধা হবে।

সোয়েটার

শীতে বাচ্চার জন্য বানিয়ে রাখতে পারেন রংবেরঙের সোয়েটার। তবে, সোয়েটার মাথা গলিয়ে পরালে বাচ্চারা খুব বিরক্ত বোধ হবে। কান্নাকাটি করতে থাকবে। তাই সোয়েটার বানানোর সময় অবশ্যই সামনের দিকে রাখুন।

টুপি

উল দিয়ে বানাতে পারেন টুপিও। তবে খেয়াল রাখবেন, ম্যাটিরিয়ালটি যাতে আরামদায়ক হয়।

মোজা

এত ছোট বাচ্চাকে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচাতে মোজা মাস্ট। পায়ের থেকে সামান্য বড় সাইজের মোজা বানিয়ে ফেলুন। যাতে ছোট্ট বেবিটার ছোট্ট পা দুটি যথেষ্ট জায়গা পায় নড়াচড়া করতে।

কাঁথা

সুতির কাপড়ে বানাতে পারেন রকমারি কাঁথা। ডিজাইন করতে পারেন পছন্দমতো। বাচ্চার নাম, ফুল বা টেডির ডিজাইনও করতে পারেন।

টুপি

আপনার বাচ্চাকে ফ্যাশনেবল লুকস্ দিতে তৈরি করতে পারেন মজাদার টুপি। ঘরে-বাইরে, দু-জায়গাতেই ব্যবহার করতে পারেন এই টুপি।

এক নজরে কয়েকটি সতর্কতা

সাবধানে তৈরি করতে হবে বাচ্চার জামাকাপড়। দেখবেন যাতে তা বেশি টাইট না হয়। বিশেষ করে গলায় যেন জামা শক্ত করে বসে না থাকে।  একটু ঢিলেঢালা জামায় বাচ্চা ফ্রিভাবে শ্বাস নিতে পারবে।

বোতাম, ফিতে বা অন্যান্য অ্যাক্সেসরিজ দেখে শুনে ব্যবহার করবেন। দেখে নিন, এগুলোর কারণে বাচ্চার যেন কোনও ক্ষতি না হয়।

 

গৃহকর্মী নির্যাতন হচ্ছেই

১১ বছর বয়সী গৃহকর্মী আদুরি। নাম আদুরি হলেও ওর ভাগ্যে কখনো আদর জোটেনি। বরং কাজ করতে এসে নানা ধরনের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আদুরিকে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হয়নি কখনো। মুখে আগুনের ছ্যাঁকা দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইস্ত্রি দিয়েও গায়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান ব্লেড দিয়ে সারা শরীর কেটে দিয়েছেন। নানা ধরনের বীভৎস নির্যাতন করেও ক্ষান্ত হননি তিনি। একদিন মারতে মারতে আদুরিকে মৃত ভেবে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়। রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএস এলাকার একটি ডাস্টবিন থেকে অর্ধমৃত অবস্থায় পাওয়া যায় আদুরিকে। এরপর হাসপাতালে নিলে দেখা যায়, লিকলিকে শরীরের আদুরির সারা গায়ে নির্যাতনের চিহ্ন। শরীরজুড়ে দগদগে ঘা। মাথার হাড়ে ফাটল। হাতে ব্যান্ডেজ। সূত্র: প্রথম আলো

পরিবার-নিজস্ব পরিবেশ ছেড়ে বেঁচে থাকার তাগিদে বহু শিশু ও নারী গৃহকর্মীর কাজ করেন। রাতদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় গৃহকর্ত্রীর মন জয় করতে। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই গৃহকর্মীদের ভাগ্যে জোটে নির্যাতন। কাজ একটু এদিক-সেদিক হলেই মারধর থেকে শুরু করে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, ধারালো ছুরি-ব্লেডের আঁচড় খেতে হয়। অনেকে আবার গৃহকর্মীকে ঠিকমতো খাবারও দেন না। এমনকি গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী দুজনে মিলেই গৃহকর্মীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালান। এমনকি গৃহকর্মী হত্যার ঘটনাও কম ঘটে না।

বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে গত পাঁচ বছরে ১৮২ জন নির্যাতিত গৃহকর্মীর মৃত্যু ঘটেছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৪৩ জন। এর মধ্যে ২০১৫ সালে মোট ৭৮ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দুমুঠো খাবার আর পরিবারের খরচ জোগাতে নীলফামারী থেকে রংপুরে আসে গৃহকর্মী রেশমা (ছদ্মনাম)। ১২ বছর বয়সে যখন স্কুলে থাকার কথা, তখন কাজ নেয় রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার এক সরকারি কর্মকর্তার বাসায়। কিন্তু রেশমার সে বাসায় কাজ করা হয়ে ওঠেনি। পরিবারকেও কোনো সাহায্য করা হয়নি। বরং তাকে আশ্রয় নিতে হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে। কারণ, গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার প্রথম দিন রাতেই গৃহকর্তা শিশুটির ওপর যৌন নির্যাতন চালান। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায় শিশুটি। সূত্র: প্রথম আলো

গৃহকর্মী নির্যাতনের এ রকম হাজারো উদাহরণ আছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির ‘বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে গৃহকর্মীর ওপর নির্যাতনের ঘটনা কমেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে মোট ৪৮ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৬ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ২০১৪ সালে সেখানে ১০৮ গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। অর্থাৎ ২০১৪ সালের তুলনায় গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা ৫৬ শতাংশ কমেছে।

এ বিষয়ে বিলসের মহাসচিব নজরুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, গৃহকর্মীর ওপর নির্যাতন হচ্ছেই। কারণ, গৃহকর্মী শ্রমিক হলেও তাঁদের শ্রমিক হিসেবে গণ্য করা হয় না। ফলে তাঁরা শ্রমিকের কোনো অধিকারই ভোগ করতে পারেন না। তাঁদের কোনো কর্মঘণ্টা নেই। ছুটি নেই। ঘুমানোর জায়গা নেই। ঠিকমতো বেতন পান না। আটকে রাখা হয়। আসলে তাঁরা খুবই মানবেতর জীবন যাপন করেন। এককথায় তাঁদের কর্মপরিবেশ যেমন অস্বাস্থ্যকর, তেমনি অনিরাপদ। ফলে কাজ করতে এসে তাঁরা শারীরিক নির্যাতন থেকে শুরু করে হত্যার শিকার পর্যন্ত হন।

সরকার ২০১৫ সালে গৃহকর্মীদের জন্য ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা’ অনুমোদন করেছে। এতে গৃহকর্ম শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। গৃহকর্মীরা বিশ্রামসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও পাবেন। গৃহকর্মীরা সবেতন চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছাড়াও অন্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন। শ্রম আইন অনুসারে, ১৪ বছরের কম বয়সীদের গৃহকর্মী নিয়োগ প্রদানে বিধিনিষেধ মানতে হবে। গৃহকর্মীদের শ্রমঘণ্টা এবং বেতন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে।

এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, শুধু আইন করলেই হবে না, আইনের সঠিক প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন থাকতে হবে। গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে।

নারী নির্যাতন প্রতিরোধে এবং শিশু সুরক্ষায় সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও গৃহকর্মীর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতার দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। বরং দিনকে দিন ভয়াবহতা ও নৃশংসতা বাড়ছে। এর কারণ হিসেবে নারীনেত্রী মালেকা বানু বলেন, সমাজের নেতিবাচক মানসিকতা গৃহকর্মীর ওপর সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। গৃহকর্মীর ওপর নির্যাতন কমাতে তাই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। পাশাপাশি একটা আনুষ্ঠানিক নিয়মের মধ্য দিয়ে তাঁদের কাজে নিয়োগ দিতে হবে। শ্রমিক হিসেবে তাঁদের সব ধরনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

 

মেঘের রাজ্যে শুভ-ফারিয়ার শুটিং

ন্দরবানের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন পাহাড়গুলোর একটি ‘পিক সিক্সটি নাইন’। সেই পাহাড়টির চূড়ায় চলছে নির্মাতা জাকির হোসেন রাজুর চলচ্চিত্র ‘প্রেমী ও প্রেমী’র শুটিং। আজ সকাল থেকে শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন আরিফিন শুভ ও নুসরাত ফারিয়া। কয়েক ঘন্টার জার্নি শেষে সমতল থেকে পাহাড়ের চূড়ায় উঠেছেন তারা। সেখানে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন আরিফিন শুভ, পাহাড়ের চারপাশাটা খুব সুন্দর। মেঘ হাতের পাশ দিয়েই উড়ে যাচ্ছে। এখানে আরও নয়দিনের মতো শুটিং করবো আমরা।’

ছবিটিতে নিজেকে নতুন রূপে উপস্থাপন করতে নিয়মিত জিম করেছেন শুভ। লুকেও বেশ পরিবর্তন এনেছেন। ইতিমধ্যেই ছবিটির প্রথম লটের শুটিং হয়েছে এফডিসিতে। বান্দরবানে শুটিং শেষে শিগগিরই দেশের বাইরে গানের শুটিং হবে।

ঈদের আগেই কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে শুভ-জলির চলচ্চিত্র ‘নিয়তি’। ছবিটি ওপার বাংলায় বেশ সাড়া ফেলেছে। শিগগিরই ছবিটি বাংলাদেশে মুক্তি পাবে। এছাড়া ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবির কাজ শেষ করেছেন।

অন্যদিকে নুসরাত ফারিয়া জিৎয়ের সঙ্গে জুটি বেধে অভিনয় করেছেন ‘বাদশা দ্যা ডন’। ছবিটি দেশজুড়ে চলছে।

 

কবরস্থানে গিয়ে কি কি কাজ করলে কবরপুজা হয়?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তার সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে তাকে আহ্বান করে, আর ঐ অবস্থায় (ঐ কাজ থেকে তাওবা না করে) মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪৯৭।]

মৃত ওলী-আউলিয়া মানুষের অভাব পূরণ করেন, বিপদাপদ দূর করেন, তাঁদের অসীলায় সাহায্য প্রার্থনা ও ফরিয়াদ করা যাবে ইত্যাকার কথা বিশ্বাস করা শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “তোমার রব চুড়ান্ত ফয়সালা দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করবে না”। [সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত: ২৩]

অনুরূপভাবে শাফাআতের নিমিত্তে কিংবা বালা-মুসীবত থেকে মুক্তির লক্ষ্যে মৃত-নবী-ওলী প্রমুখের নিকট দো‘আ করাও শির্ক। আল্লাহ তাআলা বলেন, “বল তো কে নিঃসহায়ের আহ্বানে সাড়া দেন যখন সে তাঁকে আহ্বান জানায় এবং দুঃখ-কষ্ট দূর করেন আর পৃথিবীতে তোমাদেরকে পূর্ববর্তীদের স্থলাভিষিক্ত করেন? আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে? [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৬২]

অনেকেই উঠতে, বসতে বিপদাপদে পীর মুরশিদ, ওলী-আউলিয়া, নবী-রাসূল ইত্যাকার মহাজনদের নাম নেওয়া অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছে। যখনই তারা কোনো বিপদে বা কষ্টে বা সংকটে পড়ে তখনই বলে ইয়া মুহাম্মাদ, ইয়া আলী, ইয়া হুসাইন, ইয়া বাদাভী, ইয়া জীলানী, ইয়া শাযেলী, ইয়া রিফাঈ। কেউ যদি ডাকে ‘আইদারূসকে তো অন্যজন ডাকে মা যায়নাবকে, আরেকজন ডাকে ইবন উলওয়ানকে। অথচ আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ ব্যতীত আর যাদেরকে তোমরা ডাক তারা তোমাদেরই মত দাস”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৯৪]

কিছু কবরপূজারী আছে যারা কবরকে তাওয়াফ করে, কবরগাত্র চুম্বন করে, কবরে হাত বুলায়, লাল শালুতে মাথা ঠেকিয়ে পড়ে থাকে, কবরের মাটি তাদের গা-গতরে মাখে, কবরকে সাজদাহ করে, তার সামনে মিনতিভরে দাঁড়ায়, নিজের উদ্দেশ্য ও অভাবের কথা তুলে ধরে। সুস্থতা কামনা করে, সন্তান চায় অথবা প্রয়োজনাদি পূরণ কামনা করে। অনেক সময় কবরে শায়িত ব্যক্তিকে ডেকে বলে, ‘বাবা হুযুর, আমি আপনার হুযূরে অনেক দূর থেকে হাযির হয়েছি। কাজেই আপনি আমাকে নিরাশ করবেন না’। অথচ আল্লাহ বলেন, “তাদের থেকে অধিকতর দিক ভ্রান্ত আর কে আছে, যারা আল্লাহ ব্যতীত এমন সব উপাস্যকে ডাকে যারা কিয়ামত পর্যন্তও তাদের ডাকে সাড়া দেবে না। অধিকন্তু তারা ওদের ডাকাডাকি সম্বন্ধে কোনো খবর রাখে না।” [সূরা আল-আহক্বাফ, আয়াত: ৫]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তার সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে তাকে আহ্বান করে, আর ঐ অবস্থায় (ঐ কাজ থেকে তাওবা না করে) মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪৯৭।]

কবর পূজারীরা অনেকেই কবরের পাশে মাথা মূণ্ডন করে। তারা অনেকে ‘মাযার যিয়ারতের নিয়মাবলী’ নামের বই সাথে রাখে। এসব মাযার বলতে তারা ওলী আউলিয়া বা সাধু-সন্তানদের কবরকে বুঝে থাকে। অনেকের আবার বিশ্বাস, ওলী আউলিয়াগণ সৃষ্টিজগতের ওপর প্রভাব খাটিয়ে থাকেন, তাঁরা ক্ষতিও করেন; উপকারও করেন। অথচ আল্লাহ বলেন, “আর যদি আপনার রব্ব আপনাকে কোনো অমঙ্গলের স্পর্শে আনেন, তবে তিনি ব্যতীত অন্য কেউ সেটার বিমোচনকারী নেই। আর যদি তিনি আপনার কোনো মঙ্গল করতে চান, তাহলে তাঁর অনুগ্রহকে তিনি ব্যতীত রূখবারও কেউ নেই”। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ১০৭]

একইভাবে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে মান্নত করাও শির্ক। মাযার ও দরগার নামে মোমবাতি, আগরবাতি মান্নত করে অনেকেই এরূপ শির্কে জড়িয়ে পড়েন।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

সফল হতে চাইলে ভুলেও যা করবেন না

সফলতার পেছনে দৌড়ালেই সফল হওয়া যায় না। সফল হতে হলে অনেক কিছু করতে হয় আবার বেশ কিছু জিনিস এড়িয়ে চলতে হয়। যে বিষয়গুলো সফলতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।

সফল হতে চাইলে যে কাজগুলো করবেন না, তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে আইএনসি ওয়েবসাইটে। আপনি চাইলে এই পরামর্শগুলো একবার দেখে নিতে পারেন।

সবকিছু সঠিক হবে এটা চিন্তা করা বন্ধ করুন

আমরা যখন কোনো কাজ করি, তখন ধরেই নেই যে সেটা আমাদের নিজেদের মনমতো হবে। যা মনে মনে চাচ্ছি সেটাই হোক, এমনটাই আশা করি। আর সেটা যখন না হয়, তখন বিষণ্ণ হয়ে পড়ি। অনেক বেশি হতাশা কাজ করে, যা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে নষ্ট করে দেয়। তাই কখনোই এই বাড়তি চাপ নেবেন না। জীবনে সবকিছু পারফেক্ট হয় না। একটাতে সফল না হলে আরেকটাতে হবেন। এই বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যান।

মনের বিরুদ্ধে কিছু করবেন না

অনেক সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধেই আমরা কাজ করি। যা আমাদের সফলতার পথের প্রধান বাধা। ‘না’ বলতে শিখুন। সফল হতে চাইলে যে বিষয়ে মন সায় দেবে না সেটা ভুলেও ‘হ্যাঁ’ বলবেন না।

নিজের দুর্বলতাকে পাত্তা দেবেন না

কোনো মানুষই পৃথিবীতে পারফেক্ট না। সবারই কিছু না কিছু দুর্বলতা থাকে। আর আপনি যদি নিজের দুর্বলতাকে বড় করে দেখেন আর ভাবেন এটা আপনাকে দিয়ে সম্ভব না তাহলে কখনোই সফল হতে পারবেন না। নিজের দুর্বলতাকে নিজের শক্তি বানান। দেখবেন, সহজেই সফলতাকে আপনাকে ধরা দেবে।

অন্যকে দোষ দেওয়া বন্ধ করুন

অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়ে নিজেকে সঠিক প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন না। আপনি যখন সফল হন তখন ভাবেন, সেটা নিজের যোগ্যতায় হয়েছেন। আর সফল না হলে চট করেই অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়ে দেবেন? এটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ না।

নেতিবাচক চিন্তাগুলো ঝেড়ে ফেলুন

নিজের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে মনের সব নেতিবাচক চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। আমি পারব না, আমাকে দিয়ে হবে না, আমার চেয়ে অন্যরা ভালো পারে- এ ধরনের চিন্তা যতদিন ধরে রাখবেন, ততদিন সফলতা আপনার থেকে অনেক দূরে থাকবে।

অতীতকে জোর করে ধরে রাখবেন না

অতীতে যা ঘটে গেছে, সেটার জন্য নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে লাভ কী? অতীতে বসবাস করলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দুটোই ডোবাবেন। তাই সফল হতে চাইলে অতীতকে চিরবিদায় জানান।

সবাইকে খুশি করার চিন্তা বাদ দিন

একজন মানুষ কখনোই একসঙ্গে সবাইকে খুশি করতে পারে না। তাই অযথা এর পেছনে দৌড়ে কোনো লাভ নেই। নিজের ভালোটা দেওয়ার চেষ্টা করুন। তাতে কেউ খুশি হবে, কেউ হবে না। এটা মনে নিতে শিখুন।

নেতিবাচক চিন্তার মানুষদের কাছ থেকে দূরে থাকুন

আমাদের জীবনে অন্যের কথার বেশ প্রভাব পড়ে। নিজের অজান্তেই সেই কথাগুলো আমাদের সফলতাকে নষ্ট করে। তাই এসব নেতিবাচক চিন্তার মানুষদের কাছ থেকে যতটা পারুন দূরে থাকুন।

কখনোই নিঃসঙ্গ থাকবেন না

একাকিত্ব মানুষের মনের উদ্যমতাকে নষ্ট করে দেয়। কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই একা না থাকার চেষ্টা করুন। পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গ আপনার মনকে চাঙ্গা রাখবে, আপনার কার্যক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।

 

খুশকি সমস্যার দারুণ সমাধান

মাথার ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক বা তৈলাক্ত হলে খুশকি হতে পারে। এমনি মানসিক দুশ্চিন্তার কারণেও খুশকি হয়। শুষ্ক আবহাওয়া বা ধুলাবালি খুশকির অন্যতম কারণ। যাদের প্রায় সারাবছর খুশকির সমস্যা আছে তাদের প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতেই হয়। চুল ও মাথার ত্বকের সামান্য যত্নে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। জেনে নিন খুশকি দূর করার কিছু উপায়।

– পুরনো তেঁতুল পানিতে গুলে চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগাতে হবে। ১০ থেকে ১২ মিনিট অপেক্ষার পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুদিন তেঁতুল গোলানো পানি মাথায় দিলে খুশকি এমনিতেই দূর হবে। একই সঙ্গে মাথার চুলকানিও কমে যাবে।

– টকদই খুশকি দূর করতে ও চুল ঝলমলে করতে খুবই কার্যকরী। ৬ টেবিল চামচ টকদই খুব ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ মেহেদি বাটা ভালোভাবে মেশান। মিশ্রণটি চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে লাগিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর চুল ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলেই যথেষ্ট।

– একটি ডিমের সাদা অংশ ও ৪ টেবিল চামচ টকদই খুব ভালোভাবে ফেটিয়ে নিতে হবে। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস মিশিয়ে মাথার ত্বকসহ পুরো চুলে লাগাতে হবে। ২০ মিনিট অপেক্ষা করে চুল ধুয়ে ফেলুন।

– মেথি চুলের খুবই উপকারী একটা জিনিস। নারকেল তেল গরম করে এতে মেথি গুঁড়া মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি পুরো চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টার পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য সপ্তাহে ৩ দিন এটি ব্যবহার করুন।

 

বৃষ্টির দিনে ভাপা ইলিশ

মাছের যেকোনো পদের সঙ্গে ভাপা ইলিশের স্বাদ মেলানো সম্ভব নয়। তৃপ্তিদায়ক এ খাবার অতিথি আপ্যায়ন বা নিজেদের খাওয়াকে দারুণ উপভোগ্য করে তোলে। বৃষ্টিমোড়া দিন হলে তো ইলিশের মিতালী চাই-ই। তাই শ্রাবণ ঘেরা এই দিন খাবার তালিকায় থাকতে পারে ভাপা ইলিশ। তার আগে এক নজরে দেখে নিতে পারেন ভাপা ইলিশের সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

১টি মাঝারি আকারের ইলিশ মাছ, আধা কাপ পেঁয়াজ কুচি, ৩ টেবিল-চামচ পেঁয়াজ বেরেস্তা কুচি, ১ চা-চামচ জিরা গুঁড়া, ২ চা-চামচ হলুদ গুঁড়া, আধা চা-চামচ লাল মরিচের গুঁড়া, ১ টেবিল-চামচ সরিষা কুচি, ৫টি কাঁচা মরিচ ও ১ টেবিল-চামচ লবণ।

যেভাবে করবেন

মাছের টুকরোগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। প্রেশার কুকারে ১ টেবিল-চামচ লবণ ও পানি দিন। এবার পাতলা কাপড় দিয়ে মাছটি প্রেশার কুকারে দেওয়া পানির আঁচে ৯০ মিনিট রাখুন। এবার একটি ফ্রাই প্যানে তেল গরম করে কুচি করা পেঁয়াজ বাদামি রঙ হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। কাঁচা মরিচ বাদ দিয়ে বাকি সব মসলা ও লবণ দিতে হবে। একটু পানি মিশিয়ে কিছুক্ষণ আঁচে রাখার পর কাঁচা মরিচ দিয়ে নামিয়ে নিন। এবার একটি প্লেটে মাছের টুকরাগুলো রেখে চারপাশে রান্না করা মসলা দিয়ে দিন। সালাদ ও ভাজা আলুর সঙ্গে পরিবেশন করুন অসাধারণ স্বাদের ভাপা ইলিশ।

 

মালালা যেভাবে কোটিপতি

কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন কে না দেখে। অনেকেই সেই স্বপ্ন দেখতে দেখতে বুড়ো হয়ে যান। তবুও অধরায় থেকে যায় কোটিপতির জীবন।

তবে কেউ কেউ আবার মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পান। কোটিপতি কী, সেটা বুঝার বয়স হয়ে উঠার আগেই হয়ে উঠেন কোটিপতি। এই যেমন মালালা ইউসুফজাই। বয়স মাত্র ১৮ বছর, অথচ এর মধ্যেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন পাকিস্তানের এই কিশোরী। সেটিও আবার স্রেফ বই বিক্রি আর বক্তৃতার পয়সায়!

নোবেল বিজয়ী মালালা মাত্র তিন বছরে এত বেশি সম্পদ আয় করেছেন যে ইচ্ছে করলেই তাকে মিলিওনিয়ারদের তালিকাভুক্ত করা যায়। এ অর্থের বেশিরভাগই এসেছে তার জীবনীগ্রন্থ ‘আই অ্যাম মালালা’ বিক্রি থেকে। এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য ডেইলি মেইল।

ডেইলি মেইল জানায়, সালার্জাই লিমিটেড কোম্পানি মালালার জীবনীগ্রন্থের স্বত্বটি দেখভাল করে। বই বিক্রি থেকে তাদের মোট মুনাফা এসেছে ১১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। এই কোম্পানিতে মালালা ও তার বাবা-মায়ের যৌথ মালিকানা রয়েছে। পত্রিকাটি জানায়, গত বছর আগস্ট মাসে ব্যাংকে ওই কোম্পানির অর্থের পরিমাণ ছিল ২২ কোটি ৭৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

সালার্জাই কোম্পানিটি গঠিত হয়েছে ২০১৩ সালে। মালালার আত্মজীবনীমূলক বইটির স্বত্ব ছাড়াও এই কোম্পানিটি তার দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘মালালা ফান্ড’ এর তদারকি করে থাকে। গোটা বিশ্বের মেয়েদের নিরাপদ শিক্ষা নিশ্চিত করতেই এই ফান্ড গঠন করা হয়েছে

 

তিন বছর আগে প্রকাশিত মালালার জীবনীগ্রন্থ ‘আই অ্যাম মালালা’ সারা বিশ্বে বিক্রি হয়েছে ২৮ লাখ ৭ হাজার কপি। এই জীবনীগ্রন্থ থেকেই মোট ২০ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার টাকা

শুধু বই বিক্রিই তার আয়ের একমাত্র উৎস নয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েও তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করেন। ২০১৪ সালে সবচাইতে কমবয়সি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পাওয়ার পর তার সম্মানি আরো বেড়েছে। এক একটি বক্তৃতা বাবদ তার আয় ১ কোটি ১৮ লাখ ৯ হাজার ২৬০ টাকা। সমসাময়িক কোনো নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিকে বক্তব্য রেখে এত বেশি আয় করতে দেখা যায়নি।

পাকিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক সাধারণ মেয়ে থেকে মালালার ধনকুবের হয়ে ওঠার কাহিনী যেন রূপকথাকেও হার মানায়। ২০১২ সালে তালেবান হামলায় গুরুতর আহত হন খাইবার পাখতুনখাওয়া এলাকার মেয়ে মালালা। উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৪ বছরের মালালাকে তখন লন্ডন নিয়ে আসা হয়। সেখানকার এক হাসপাতালে মাথায় অস্ত্রোপচারের পর সেরে ওঠেন মালালা।

এরপর আর মালালাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৪ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। বর্তমানে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। লেখাপড়া করছেন লন্ডনের এডজবাস্টোন হাই স্কুলে।

 

মন দিতে চাই পড়াশোনায়

আমি ঈদের আগে ভারতের কলকাতা আর মুম্বাইয়ে ছিলাম। ঈদের দিন দুপুরে ঢাকায় ফিরেছি। শুরুতে ভেবেছিলাম কলকাতায় ছবিটি দেখব, কিন্তু ব্যস্ততার কারণে সময় বের করতে পারিনি। ঢাকায় এসে ঈদের আট দিনের মাথায় যমুনা ব্লকবাস্টারে বোনের সঙ্গে চুপিসারে ছবিটি দেখেছি। দর্শকদের প্রতিক্রিয়া দেখে মন ভরে গেছে। আমার আর জিতের ‘বাদশা’ ছবিটির সঙ্গে কলকাতায় দেবের ‘কেলোর কীর্তি’ মুক্তি পেয়েছে। যে খবর আমার কাছে এসেছে, তাতে কলকাতায় ‘বাদশা’ বাজিমাত করেছে। সুপার-ডুপার হিট। আমি তো আসমানে উড়ছি। সবাই এও বলেছেন, তাঁরা একটা পরিপূর্ণ সিনেমা দেখেছেন। বাংলাদেশে অবশ্য ‘শিকারি’ ছবিটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহটা বেশি দেখা গেছে। এই ছবিতে শাকিব খানের লুক ছিল একেবারেই অন্য রকম। এমনিতে তিনি এ দেশের জনপ্রিয় হিরো। হিরোর কারণে সবাই হলে ছুটেছেন।
আপনার বোন ছবিটি দেখে কী বলেছেন?
সে তো শুধু আমার ভুল ধরে। কেন সংলাপটা এভাবে বললাম, কেন পোশাকটা এভাবে পরলাম—এ ধরনের আরকি। আমিও আমার পরিবারের সবার মতামতকে খুব গুরুত্ব দিই।
এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া অন্য ছবিগুলোর নায়িকারা হলেন অপু বিশ্বাস, তিশা ও ভারতের শ্রাবন্তী। তাঁরা কেমন করেছেন?
আমি তো তাঁদের ছবি দেখার সময়টা পাইনি। নিঃসন্দেহে তাঁরা অনেক ভালো করবেন। যাঁদের নাম আপনি বললেন, তাঁদের সবারই অভিনয় ক্যারিয়ার এক দশকের কম হবে না। আর আমার হচ্ছে মাত্র নয় মাস। ভাবছি ‘প্রেমী ও প্রেমী’র শুটিং থেকে ফিরেই বাকি তিনটি সিনেমা দেখে নেব।
‘প্রেমী ও প্রেমী’ সিনেমার পর নতুন কাজ কি শুরু করবেন?
আজ (শনিবার) বিকেলে আমরা বান্দরবান যাচ্ছি। ১২ দিন সেখানে থাকব। যেভাবে কাজ করছি আমরা, তাতে আগামী আগস্টে ‘প্রেমী ও প্রেমী’ সিনেমার পুরো কাজ শেষ হয়ে যাবে। এরপর তিন মাসের ছুটিতে যাচ্ছি।
কেন ছুটিতে যাচ্ছেন?
টানা কাজের কারণে আমার শারীরিক ফিটনেসের পাশাপাশি পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে। মন দিতে চাই পড়াশোনায়। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি বিবিএ সপ্তম সেমিস্টার পর্যন্ত শেষ করেছি।
সাক্ষাৎকার: মনজুর কাদের

 

কোনটা কবর জিয়ারত এবং কোনটা কবরপূজা?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তার সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে তাকে আহ্বান করে, আর ঐ অবস্থায় (ঐ কাজ থেকে তাওবা না করে) মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

মৃত ওলী-আউলিয়া মানুষের অভাব পূরণ করেন, বিপদাপদ দূর করেন, তাঁদের অসীলায় সাহায্য প্রার্থনা ও ফরিয়াদ করা যাবে ইত্যাকার কথা বিশ্বাস করা শিরক। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, তোমার রব চুড়ান্ত ফয়সালা দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করবে না। [সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত: ২৩]

অনুরূপভাবে শাফাআতের নিমিত্তে কিংবা বালা-মুসীবত থেকে মুক্তির লক্ষ্যে মৃত-নবী-ওলী প্রমুখের নিকট দোয়া করাও শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেন, বল তো কে নিঃসহায়ের আহ্বানে সাড়া দেন যখন সে তাঁকে আহ্বান জানায় এবং দুঃখ-কষ্ট দূর করেন আর পৃথিবীতে তোমাদেরকে পূর্ববর্তীদের স্থলাভিষিক্ত করেন? আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে? [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৬২]

অনেকেই উঠতে, বসতে বিপদাপদে পীর মুরশিদ, ওলী-আউলিয়া, নবী-রাসূল ইত্যাকার মহাজনদের নাম নেওয়া অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছে। যখনই তারা কোনো বিপদে বা কষ্টে বা সংকটে পড়ে তখনই বলে ইয়া মুহাম্মাদ, ইয়া আলী, ইয়া হুসাইন, ইয়া বাদাভী, ইয়া জীলানী, ইয়া শাযেলী, ইয়া রিফাঈ। কেউ যদি ডাকে ‘আইদারূসকে তো অন্যজন ডাকে মা যায়নাবকে, আরেকজন ডাকে ইবন উলওয়ানকে। অথচ আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ ব্যতীত আর যাদেরকে তোমরা ডাক তারা তোমাদেরই মত দাস”। [সূরা আল-আরাফ, আয়াত: ১৯৪]

কিছু কবরপূজারী আছে যারা কবরকে তাওয়াফ করে, কবরগাত্র চুম্বন করে, কবরে হাত বুলায়, লাল শালুতে মাথা ঠেকিয়ে পড়ে থাকে, কবরের মাটি তাদের গা-গতরে মাখে, কবরকে সাজদাহ করে, তার সামনে মিনতিভরে দাঁড়ায়, নিজের উদ্দেশ্য ও অভাবের কথা তুলে ধরে। সুস্থতা কামনা করে, সন্তান চায় অথবা প্রয়োজনাদি পূরণ কামনা করে। অনেক সময় কবরে শায়িত ব্যক্তিকে ডেকে বলে, ‘বাবা হুযুর, আমি আপনার হুযূরে অনেক দূর থেকে হাযির হয়েছি। কাজেই আপনি আমাকে নিরাশ করবেন না’। অথচ আল্লাহ বলেন, তাদের থেকে অধিকতর দিক ভ্রান্ত আর কে আছে, যারা আল্লাহ ব্যতীত এমন সব উপাস্যকে ডাকে যারা কিয়ামত পর্যন্তও তাদের ডাকে সাড়া দেবে না। অধিকন্তু তারা ওদের ডাকাডাকি সম্বন্ধে কোনো খবর রাখে না। [সূরা আল-আহক্বাফ, আয়াত: ৫]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তার সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে তাকে আহ্বান করে, আর ঐ অবস্থায় (ঐ কাজ থেকে তাওবা না করে) মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

কবর পূজারীরা অনেকেই কবরের পাশে মাথা মূণ্ডন করে। তারা অনেকে ‘মাযার যিয়ারতের নিয়মাবলী’ নামের বই সাথে রাখে। এসব মাযার বলতে তারা ওলী আউলিয়া বা সাধু-সন্তানদের কবরকে বুঝে থাকে। অনেকের আবার বিশ্বাস, ওলী আউলিয়াগণ সৃষ্টিজগতের ওপর প্রভাব খাটিয়ে থাকেন, তাঁরা ক্ষতিও করেন; উপকারও করেন। অথচ আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি আপনার রব্ব আপনাকে কোনো অমঙ্গলের স্পর্শে আনেন, তবে তিনি ব্যতীত অন্য কেউ সেটার বিমোচনকারী নেই। আর যদি তিনি আপনার কোনো মঙ্গল করতে চান, তাহলে তাঁর অনুগ্রহকে তিনি ব্যতীত রূখবারও কেউ নেই। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ১০৭]

একইভাবে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে মান্নত করাও শির্ক। মাযার ও দরগার নামে মোমবাতি, আগরবাতি মান্নত করে অনেকেই এরূপ শিরকে জড়িয়ে পড়েন।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

কলসিন্দুরে আলো জ্বলার পর

আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল ছোট্ট রায়হান মিয়া। সাবিনাদের বাড়ি খুঁজছি এমনটা বুঝেই এগিয়ে এল সে। খালি গা, পরনে হাফপ্যান্ট। ‘আপনারা এইহান দিয়া আইছুন ক্যা! রাস্তা তো পিছনে!’ পথ চেনার সুবিধার্থে রায়হানকে মোটরসাইকেলে তুলে নেওয়া হলো। সরু, কাদাময় রাস্তা ধরে কিছুদূর গিয়ে থামাতে হলো মোটরসাইকেল। এবার হাঁটাপথ। রায়হান বলল, ‘ওই যে, ওই মুহে।’ ওর কথায় ভরসা না পেয়ে অবশেষে পথচারীর দ্বারস্থ হলাম। তিনি উল্টো প্রশ্ন করলেন, ‘কোন সাবিনা? ফুটবল খেলে যে…?’ আমরা বললাম, ‘হ্যাঁ, ফুটবলার সাবিনার বাড়ি খুঁজছি।’

আলোকিত হয়েছে তহুরাদের ঘরও। ছবি: জগলুল পাশাঢাকা থেকে ময়মনসিংহ। সেখান থেকে ধোবাউড়ার কলসিন্দুর। তারপর রানীপুর গ্রাম। সেই ভোরে শুরু হওয়া ভ্রমণ বিকেলে এসে শেষ হলো বুঝি। মাথা নাড়তেই সেই পথচারী দেখিয়ে দিলেন সেদিকেই, যেদিকে রায়হান এগিয়েছে খানিকটা। পুকুর পাড়, খেতের আইল পেরিয়ে টিনের চালা ও বেড়ায় ঘেরা সাবিনাদের বাড়িতে পৌঁছার আগেই থামতে হলো। মাটির বাড়ির দেয়ালে একটা বৈদ্যুতিক মিটার। অন্য কোথাও হলে এই বস্তুতে বিশেষত্ব খুঁজে পাওয়ার কোনো কারণ ছিল না। কিন্তু কলসিন্দুরে বৈদ্যুতিক মিটার মানে অন্য রকম ব্যাপার। তাই সেটা দেখার জন্য না থেমে উপায় কি? ততক্ষণে আমাদের দেখে বাইরে বেরিয়ে এসেছেন বাড়ির বয়সী মানুষ হেলেনা খাতুন। বললেন, ‘কারেন পাইছি ওই সাবিনার জন্যই। অহন আর রাত্রে বেলা ঘুটঘুইটা অন্ধকার থাহে না। ঠিকঠাক চোহে দেহি। আর ওই যে পুকুরটা দেখেন, ওইটার মাঝখানে একটা লাইট জ্বালায়া দেই। পোকামাকড় আইসা পানিতে বসে। মাছ সেই পোকামাকড় খায়। এইবার শিং মাছের চাষ খুব ভালা হইছে।’

মাটির ঘরে জানালা দিয়ে ততক্ষণে মুখ বের করে দিয়েছে হেলেনা খাতুনের ছোট্ট নাতি। তাকে দেখিয়ে বললেন, ‘আগে আমার নাতি পড়ত কুপি জ্বালাইয়া, আর এহন পড়ে কারেনের আলোতে।’ হেলেনা খাতুন কখনো ভাবেননি তাঁর বাড়িতে বিদ্যুৎ আসবে। এ কারণেই তাঁর কাছে এই বৈদ্যুতিক আলোর গল্প বেশ দীর্ঘ। সে গল্প শোনা শেষ হলে আমরা পা বাড়াই সাবিনাদের বাড়ির দিকে। তাদের বাড়ির সামনে বিদ্যুতের নতুন খুঁটি। ঠিকঠাক করে বললে, খুঁটির বয়স হয়েছে ছয় মাসের বেশি।

কলসিন্দুরের মেয়ে ফুটবল দলের একজন সাবিনা আক্তার। ২৫ জুন ওদের বাড়িতে পা রেখেই কানে এল ঘরের ভেতরে বৈদ্যুতিক পাখার শব্দ। সাবিনার কাছে জানতে চাই, ‘খেলোয়াড় জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কী?’

 ফুটবল মাঠে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে কলসিন্দুরের এই মেয়েরা। ছবি: প্রথম আলো‘এহন গাঁয়ের লোকজন আমাগো পছন্দ করে। আদর করে। আর রাস্তায় বের হলে যেখানেই যাই কোনো গাড়িওয়ালা ভাড়া নিতে চায় না। শুধু ফুটবল খেলি বইলাই তো এত কিছু।’ বাড়ির বারান্দায় বসে লাজুক মুখে উত্তর দেয় সাবিনা। কলসিন্দুর ফুটবল দলের মধ্য মাঠের খেলোয়াড় সে। পুরো মাঠ আগলে রাখার মতো করে পুরো গ্রামটাই আগলে রাখে যেন!
গন্তব্য এবার ‘মেসি’র বাড়ি!
শুধু দলে নয়, গ্রামের মানুষও তাকে মেসি নামেই ডাকে। আসল নাম শরাবন তহুরা। আর্জেন্টিনার মেসি দেশকে কোনো শিরোপা দিতে পারেননি সত্যি, কিন্তু এই ‘মেসি’ ঠিকই মুক্তাগাছা গ্রামে আলো জ্বালিয়েছে। সুপারিগাছের সারি, মাছের ঘের, আর বেশ কয়েকটা খেতের আইল পেরিয়ে যখন ওদের বাড়িতে পৌঁছালাম, তখন বিকেল। ওর বাড়িতে পৌঁছার আগেই তহুরা-বন্দনা করলেন ওদের পাশের বাড়ির নুর আলী। বললেন, ‘এর আগে দুজনকে টাকা দিছিলাম কারেনের জন্য। কেউ আইনা দিতে পারে নাই। আর এই মেসি আমাগো ঠিকই কারেন আইনা দিল। অয় যে আরও কত কী করব কে জানে! বাইত্তে আপাতত দুইটা লাইট লাগাইছি। কয়েক দিনের মধ্যে ফ্যানও লাগামু।’ বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল তহুরা। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কদিন আগে ঢাকা থেকে ফিরেছে। তহুরাসহ কলসিন্দুর ফুটবল দলের ১০ জন খেলোয়াড় এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে ঢাকায়। সেখান থেকে হঠাৎ ছন্দপতন তার। তবে এরই মধ্যে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছে সে। খুব তাড়াতাড়ি ঢাকা যেতে চায় তহুরা।

সাবিনাদের বাড়ির পাশেই বসেছে বৈদ্যুতিক খুঁটি‘এত মানুষ প্রশংসা করছে, কেমন লাগে?’ প্রশ্ন শুনে তহুরা হাসে। ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া মেয়েটি যাবতীয় উত্তর যেন এক হাসিতে দিয়ে দেয়। হাসতে হাসতেই বলল, ‘ভালো। আমি আরও ভালো খেলতে চাই।’ বিদ্যুৎ, প্রশংসা কিংবা পড়াশোনা—এত কিছুর পেছনে শক্তি এই খেলাই। আমরা ওর পড়ার টেবিলের সামনে গিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাই। পড়ন্ত বিকেলের রোদে ঝকঝক করছে বিস্তীর্ণ মাঠ, দূরের কয়েকটা গাছ। এত সুবিশাল মাঠের সামনে বসে যে মেয়েটি পড়ে, তার স্বপ্ন তো এমনই হবে।
‘এখন টিভিতে ওগো খেলা দেহি’
ময়নাকে খুঁজছি জেনে আশপাশের কয়েক বাড়ি থেকে লোকজন চলে এল। ময়না এল খানিক পরে। দেরির কারণটাও বোঝা গেল হাতে ফুটবল দেখে। পাশেই অনুশীলন করছিল সে। ঢাকায় যে ১০ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, তাদের মধ্যে নেই বালশ্রী মানখিন ময়না। পরের বার যেন এই সুযোগ মিস না হয়, এ কারণেই বাড়তি পরিশ্রম। এখন টিভিতে কোনো ফুটবল খেলা দেখালেই বসে পড়ে সে। তার সঙ্গে এ পাড়ার অনেকেই। দল বেঁধে টিভি দেখার ব্যাপারটি শুরু হয়েছে মাস ছয়েক হলো। কারণ গামারিতলার ২০ ঘরে বিদ্যুৎ এসেছে ময়নার কল্যাণে। তাদের কাছে ময়না এখন রীতিমতো ‘নায়ক’। ময়না বলল, ‘আগে মানুষজন চিনত না অতটা। এখন চেনে। বিদ্যুৎ আসাতে যে এত পরিবর্তন হবে, আগে বুঝি নাই।’

ময়নার খালা লুতিমা মানখিন ঘরের দেয়ালে বৈদ্যুতিক মিটার দেখিয়ে বললেন, ‘কারেন আসা-যাওয়ার মধ্যে আছে। সন্ধ্যা হলেই চইলা যায়।’ বলতে বলতে বিদ্যুৎ একবার বিদায় নিল। অবশ্য ফিরে আসার একটু আগেই দেখা হলো ময়নার এনে দেওয়া বিদ্যুতের সঙ্গে। খালা বললেন, ‘এখন টিভিতেই ওগো খেলা দেহি। কী যে ভালো লাগে!’

বাড়ির সবাইকে নিয়ে টিভি দেখছে ময়না (ডানে চেয়ারে বসা‍)আরও কিছুর আশায়
কলসিন্দুর ফুটবল দলের ১৯ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে দুজনের বাড়িতে আগে থেকেই বিদ্যুৎ ছিল। বাকি ১৭ জনের বদৌলতে বিদ্যুৎ পেয়েছে নয় গ্রামের ৮০৩টি পরিবার। এ তালিকায় স্কুলের সভাপতি এমনকি সেই শিক্ষার্থীদের প্রিয় ‘মফিজ উদ্দিন স্যার’ও রয়েছেন। স্কুলের মাঠে বসে কথা হলো মফিজ স্যারের সঙ্গে। বললেন, ‘প্রথম আলোর কারণেই আমার শিক্ষার্থীদের চিনেছে সবাই। আর আনিসুল হকের কারণে এত তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎ এসেছে। আর সরকারের আন্তরিকতা তো ছিলই। আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া এটা।’
বলে রাখা ভালো, ২০১১ সালে কলসিন্দুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মফিজ উদ্দিন স্যার মেয়েদের নিয়ে গড়ে তোলেন ফুটবল টিম। এই দলটি ধীরে ধীরে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয় দুবার। এখন অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় দলের ১৮ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ১০ জনই কলসিন্দুর উচ্চবিদ্যালয়ের মেয়ে। গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথম আলোর ময়মনসিংহ প্রতিনিধি কামরান পারভেজ শনিবারের বিশেষ প্রতিবেদনে লেখেন ‘ফুটবল রাঙাচ্ছে কলসিন্দুরের মেয়েরা’। ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রথম আলো এই মেয়েদের নিয়ে তৈরি করে প্রামাণ্যচিত্র ‘অদম্য মেয়েরা’। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সুধী সমাবেশে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয় ওই গ্রামের ২০ ফুটবলার, কোচ মফিজ উদ্দিন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনতি রানী শীল আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিনকে।

এই শিক্ষার্থীদের চাওয়াতেই গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হয় কলসিন্দুরসহ আশপাশের গামারিতলা, পশ্চিম গামারিতলা, পঞ্চদন্দপুর, দক্ষিণ রানীপুর, মুক্তাগাছা, রামসিংহপুর, গৌরীপুর ও সোহাগীপাড়া গ্রামে।

আমরা যখন ফিরছি তখন দিনের আলো নিভে গেছে। আস্তে-ধীরে জ্বলে উঠছে বৈদ্যুতিক বাতি। মাঠ পেরিয়ে আমরা চলে যাচ্ছি দূরে। পেছনে আলোকিত হয়ে আছে ‘মেসি’দের গ্রাম!

ঈদ কেটেছে আনন্দে…

কলসিন্দুরের ফুটবলার মেয়েদের ঈদ কেটেছে আনন্দে। তবে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় অনুশীলন করতে যাওয়া ১০ জনকে ঈদ পালন করতে হয়েছে ঢাকায়। মফিজ উদ্দিন বললেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ওদের ফেডারেশন থেকে নতুন পোশাক দেওয়া হয়েছে। আর ঈদের দিন ভালোমানের খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন ছিল। ঈদের পরদিন থেকে যথারীতি আবার অনুশীলন শুরু হয়েছে ওদের। এ কারণে আর বাড়ি ফেরা হয়নি কারোরই।’ ১০ জনের মধ্যে তহুরা অসুস্থতার কারণে বাড়িতে গেলেও ঈদের আগেই এসে যোগ দিয়েছে ওই দলে। সবার সঙ্গে তার ঈদটাও দারুণ কেটেছে। ১০ জন ঢাকায় ঈদ করলেও বাকি ৯ জন ঈদ করেছে গ্রামে। ঈদের পরে কথা হলো সাবিনা আক্তারের সঙ্গে। বলল, ‘ঈদ উপলক্ষে নতুন জামা ও জুতা কিনেছি। ঈদের দিন পাশের বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছি। আর ঈদের পরে গিয়েছিলাম আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে। সবাই অনেক আদর করেছে।’

Save

Save

Save

Save

Save

 

পাড়াগাঁয়ের পারলার

তাপসী রাবেয়া বড় হয়েছেন ঢাকা শহরে। কিন্তু বিয়ে হলো নিভৃত গ্রামে। বাড়িটাও মাটির। এটা দেখে তাঁর মন খারাপ হয়নি। হয়েছিল গ্রামের মেয়েদের দেখে। তারা শহরের মেয়েদের দেখে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। বলে, শহরের মেয়েরা কী সুন্দর! তাপসী ভাবেন গ্রামের মেয়েরাও সুন্দর। কিন্তু তারা নিজের সৌন্দর্য হয়তো সেভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে না। এই মেয়েদের কথা ভেবে তিনি নিভৃত গ্রামের এই মাটির বাড়িতে একটি বিউটি পারলার গড়ে তুললেন। একে একে গ্রামের মেয়েরাও বিউটি পারলারে আসতে লাগল। খবর রটে গেল এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। এখন ১৫-২০টি গ্রামের মেয়েরা প্রতিনিয়ত আসে বিউটি পারলারে। শুধু তারা সাজতে আসছে তা-ই নয়, আসছে কাজ শিখতেও।

মাটির বাড়ির বিউটি পারলার

গ্রামটির নাম কালিগ্রাম। এটি নওগাঁর মান্দা উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবিস্থত। সম্প্রতি গ্রামের রাস্তাটা পাকা হলেও মানুষের বাড়িঘর এখনো মাটিরই রয়ে গেছে। এই গ্রামেই ১৯৯৭ সালে বউ হয়ে আসেন তাপসী রাবেয়া। পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা হলেও তাঁর জন্ম ঢাকা শহরে। বড় হয়েছেন ঢাকাতেই। শ্বশুরবাড়িতে এসে দেখেন, মাটির রাস্তা, মাটির ঘরবাড়ি। মানুষগুলো যেন মাটির মতন। শহরের মেয়েদের সাজ দেখে তারা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। তাদের কথা ভাবতে ভাবতে একসময় তাঁর মাথায় বিউটি পারলারের ভাবনা আসে। কিন্তু কিছুতেই গুছিয়ে উঠতে পারেন না। অবশেষে ২০১১ সালে তিনি ঢাকায় গিয়ে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিলেন। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে কাজটাকে পেশা হিসেবে নিতে পারলেন না। অনেকেই নিরুত্সাহিত করলেন। গাঁয়ে এটা চলবে না। শুধুই টাকা নষ্ট হবে। কিন্তু তাঁর মন মানে না। ২০১৩ সালে আবারও ঢাকায় কিছুদিন থেকে প্রশিক্ষণ নিলেন। এবার সিদ্ধান্ত নিলেন কাজটা তিনি শুরু করবেনই। কিন্তু টাকার দরকার প্রায় দেড় লাখ। নিজের কিছু ছিল। ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু সহযোগিতা নিলেন। তাও হলো না। শেষ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিলেন।

শুরু থেকেই গ্রামের মেয়েরা ভিড় জমাতে শুরু করে এই পারলারেঅবশেষে ২০১৪ সালের শুরুতে যাত্রা শুরু হলো ‘নবরূপা বিউটি পার্লার’-এর। গ্রামের বাড়িঘর যেহেতু মাটির। তিনি মাটির ঘরেই আয়োজন করলেন। মাটির ঘরটা সুন্দর করে রং করে নিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই গ্রামের মেয়েদের সাজ বদলে যেতে থাকল। এ খবর ছড়িয়ে পড়ল পাশের গ্রামগুলোতে। পর্যায়ক্রমে কালিগ্রাম থেকে শুরু করে উপজেলার কির্ত্তুলী, দেলুয়াবাড়ী, মহানগর, চৌবাড়িয়া, সাবাইহাট, কেশরহাট কামারপাড়া, কুসুম্বা, গাইহালা, কালীনগরসহ প্রায় ২০টি গ্রামের মেয়েরা আসতে শুরু করে।
সম্প্রতি রাজশাহী শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত কালিগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একটি দ্বিতল মাটির বাড়ি ঠিক ইটের বাড়ির মতো রং করা হয়েছে। গাঁয়ের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় রঙিন এই মাটির বাড়িটি যে কারও নজর কেড়ে নেবে। দূর থেকেই এই সাইনবোর্ড চোখে পড়বে ‘নবরূপা বিউটি পার্লার’। মাটির দেয়ালেই লেখা রয়েছে ‘এখানে অভিজ্ঞ বিউটিশিয়ানদের দ্বারা বউ সাজানো, ভ্রুপ্লাক, ফেসিয়াল, ম্যানিকিওর, পেডিকিওর, হেয়ার রিবন্ডিং, চুল কাটা, চুল কালার করা এবং মেশিন দ্বারা নাক-কান ফোঁড়ানোসহ মেয়েদের যাবতীয় রূপচর্চার কাজ করা হয়।’

কাজও শিখছে মেয়েরা

তাপসী রাবেয়া বললেন, তাঁর বিউটি পারলারের কারণে গ্রামের মেয়েরাও এখন সৌন্দর্য সচেতন হয়ে উঠেছে। শুধু বিয়ের সাজ নয়, নিয়মিত স্কুল-কলেজের মেয়েরা পারলারে আসছে। তিনি বলেন, তাঁর কাজ দেখে উত্সাহী হয়ে গ্রামের কিছু মেয়ে সারা দিন পারলারে এসে পড়ে থাকত। একপর্যায়ে তারা দেখতে দেখতে কাজ শিখে যায়। এদিকে তাঁর পারলারের গল্প যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, তখন কাজের চাপও বেড়ে যায়। তখন তিনি এই মেয়েদের পারিশ্রমিক দিয়ে তাঁর সহকারী হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন। তাদের মাসে ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দেন। সব সময় দুজন মেয়েকে তাঁর সহকারী হিসেবে রাখতে হয়। এই মেয়েরা স্কুল-কলেজে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে তাঁর সঙ্গে কাজ করে। ইতিমধ্যে সাতজন তাঁর কাছ থেকে কাজ শিখেছেন। তাঁদের কারও কারও বিয়ে হয়েছে। কেউ উচ্চতর পড়াশোনা করছেন।

পারলারে গিয়ে সহকারী শ্যামলী আক্তারকে পাওয়া গেল। তিনি স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। তিনি বলেন, তাঁরও ইচ্ছে রয়েছে বিয়ের পরে পরিবেশ পেলে এ রকম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন।

দেখা গেল সকালে চারজন মেয়ে এসে ফেসিয়াল করার জন্য বসে রয়েছে। তারা সবাই পার্শ্ববর্তী মহানগর বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে রিয়া খাতুন জানায়, তারা এখন পারলারের নিয়মিত মুখ। তাদের আর পারলার ছাড়া চলে না।

এই পারলার থেকে বিয়ের সাজ করেছিলেন পাকুড়িয়া গ্রামের বৃষ্টি খাতুন। মুঠোফোনে কথা হয় বৃষ্টির সঙ্গে। তিনি বলেন, তিনি নিয়মিত ওই পারলারে যেতেন। তাদের কাজের মান ভালো। গ্রামের ভেতরে হলেও উপজেলা সদরের চেয়ে তাদের কাজ ভালো। তাঁর বিয়ের সাজের সবাই প্রশংসা করেছে।

আসার সময় তাপসী রাবেয়া মজা করেই জানালেন, তিনি তাঁর ব্যাংকের ঋণ শোধ করে দিয়েছেন। তাঁর কিন্তু আর কোনো ধারদেনা নেই।

Save

Save

Save

Save

Save

Save

Save

Save

 

শ্রিম্প ফ্রাইড রাইস রান্না করুন সবচাইতে সহজ রেসিপিতে

সবার ফ্রিজেই সারা বছর খুঁজে পাওয়া যায় ডিম। আর এই ডিম এবং টুকিটাকি কিছু সবজি দিয়ে ফ্রাইড রাইস তৈরি করতে কারোই বেগ পেতে হয় না। এগ ফ্রাইড রাইস মোটামুটি সহজ হলেও শ্রিম্প ফ্রাইড রাইস কিন্তু অনেকেই তৈরি করতে ভয় পান, ভাবেন একটু এদিক ওদিক হলেই রান্না বরবাদ হয়ে যাবে। আসলে কিন্তু শ্রিম্প ফ্রাইড রাইস রান্না করাটা অনেক সহজ আর কম সময়েই হয়ে যায়। অল্প কিছু উপকরণ হাতের কাছে থাকলে আপনিও তৈরি করে ফেলতে পারবেন এই খাবারটি।
উপকরণ
– ২৫০ গ্রাম চিংড়ি, খোসা ও ময়লা ছাড়িয়ে নেওয়া
– দেড় কাপ ভাত
– ২টি বড় ডিম
– আধা কাপ মটরশুঁটি
– ১টি পিঁয়াজ
– লবণ ও গোলমরিচ গুঁড়ো স্বাদমতো
– সয়া সস স্বাদমতো
– ৪ টেবিল চামচ তেল
– স্রিরাচা সস
প্রণালী
১) ওভেনে বেক করে নিতে পারেন চিংড়ি। ৩ টেবিল চামচ তেল গরম করে নিন ফ্রাইং প্যানে। এতে এক মিনিট মাঝারি আঁচে সাঁতলে নিন পিঁয়াজ।
২) এরপর এতে রান্না করা ভাতটুকু দিয়ে দিন। ভাতটা দিয়ে একটু আঁচ বাড়িয়ে নিন। চামচ দিয়ে নেড়ে ছড়িয়ে নিন ভাতটুকু। ১-২ মিনিট ভাজুন। দরকার হলে আরও কিছুটা তেল দিন।
৩) একটি বাটিতে ডিম ভেঙ্গে হুইস্ক করে নিন। এবার এটাকে ভাতের মাঝে দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন যাতে পুরো ভাতের সাথে ডিম মিশে যায় ও রান্না হয়ে আসে। দরকার হলে আরও তেল দিতে পারেন।
৪) এরপর বেক হওয়া চিংড়ি এবং মটরশুঁটি দিয়ে দিন ভাতের মাঝে। ভালো করে নেড়েচেড়ে নিন যাতে সব উপকরণ একসাথে মিশে যায়।
৫) লবণ, গোলমরিচের গুঁড়ো এবং সয়া সস দিন নিজের পছন্দমত। সব উপকরণ মিশে যাবার জন্য নেড়েচেড়ে ফ্রাই করে নিন। মটরশুঁটি রান্না হলে এবং সুন্দর ফ্লেভার উঠলে নামিয়ে নিন।
পরিবেশন করুন ওপরে স্রিরাচা সস দিয়ে। ভালো করে বুঝতে দেখে নিন রেসিপির ভিডিওটি-
টিপস
– চিংড়িটাকে ইচ্ছে করলে ভেজেও নিতে পারেন বেক করার বদলে
– ফ্রিজে রেখে খেতে চাইলে পরের দিন গরম করার সময়ে একটু পানি দিয়ে নিন ওপরে
– রান্নার সময়ে একদম ঝরঝরে ভাত ব্যবহার করুন, নরম বা ভেজা ভাত ব্যবহার করবেন না
– ফ্রাইড রাইসের জন্য নতুন করে ভাত রান্না করলে সেটা ঠাণ্ডা করে তারপর ফ্রাই করুন

 

যেভাবে সস্তা কাপড়ও দামি দেখাবে

হাঁটাচলার পথে অনেকেই ফুটপাথ থেকে জামাকাপড় কিনে থাকেন। এর মূলেও রয়েছে যথেষ্ট কারণ। প্রথমত, শপিংমলে গিয়ে কেনাকাটি করার সময় নাও থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, রাস্তা থেকে কিনলে দর কষাকষি করা যায়। কিন্তু, অনেকেই সেকথা ফলাও করে জনসমক্ষে বলতে নারাজ। তাই পরনের পোশাকটি ফুটপাথে কেনার কথা আড়ালে রেখে, দামি জায়গা থেকে কেনা হয়েছে বলে দাবি করতে চান অনেকেই। কিন্তু দাবি করলেই তো আর হল না। পোশাক সত্যি সত্যি যেনো দামি দেখায় তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন। জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী-

১) রাস্তা থেকে কিনে আনা পোশাকটি নিজের শরীরে মাপ মতো ফিটিংস করিয়ে নিন। তাহলে সেটি পরলে আপনাকে আরও ভালো লাগবে দেখতে।

২) ফুটপাত থেকে কিনে আনা জামাকাপড়ের সেলাই অনেক সময়ই আলগা থাকে। তাই বাড়িতে নিজেই সেলাই করে চাপা দেওয়া যেতে পারে সেই খুঁত।

৩) হয়তো এক রঙের কোনও পোশাক কিনে এনেছেন। এবার তার উপর নিজের পছন্দের রঙিন কোনও কাপড়ের পকেট বসিয়ে নিতে পারেন। অথবে শিল্পীদের দিয়ে তার উপর আঁকিয়ে নিতে পারেন। দেখবেন তাতে একটা আলাদা অভিজাত লুক এসেছে।

৪) পোশাক যে দামেরই কিনুন। তার যথাযথ মেন্টেন্যান্স প্রয়োজন। তাই যেসব পোশাক ড্রাইওয়াশে দেওয়া দরকার সেগুলি বাড়িতে নিজে হাতে না কেচে ড্রাই ক্লিনিকেই পাঠানো উচিত। এতে পোশাক ভালো থাকবে।

৫) কাচা, ধোওয়ার পর অবশ্যই আয়রন করে নিন। তবেই সেটা স্মার্ট দেখাবে।

৬) ফুটপাথের জামাকাপড়ে রাস্তার ধুলো ময়লা পড়ে। তাই তা ব্যবহারের আগে ভালো করে ওয়াশ করে নেওয়া উচিত হাইজিনমুক্ত থাকতে।

 

বিশ্বের ২৬ দেশে রাষ্ট্র ও সরকারের নেতৃত্বে নারী

বিশ্বে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হিসেবে দেশ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত নারী নেতৃত্বের সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত নারী নেতাদের সংখ্যা ছিল ২৫, যা দেশ পরিচালনায় নারী নেতৃত্বের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। নারী নেতার কাতারে সর্বশেষ যুক্ত হচ্ছেন ব্রিটেনের টেরেসা মে। বুধবার (১৩ জুলাই) ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব নেয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বে নারী নেতাদের সংখ্যা পৌঁছবে ২৬-এ, যেটি হবে নারী নেতৃত্বে নতুন মাইলফলক।

দেশ পরিচালনায় ২০১৬ সালের জানুয়ারি এশিয়ার দ্বীপ দেশ তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সেই ইং-ওয়েন। একইমাসে মার্শাল আইল্যান্ডসের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন হিন্ডা হেইন। মধ্য জুলাইয়ে এসে সর্বশেষ নারী নেতাদের কাতারে যুক্ত হচ্ছেন ব্রিটেনের টেরেসা মে।

গত ২৩ জুন ব্রেক্সিট ভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসার গণভোটের পর রাজনৈতিক পালাবদলে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে সামনে চলে আসেন ৫৯ বছর বয়সী ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের এই নারী।

২০১৫ সালে ৪ দেশে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হিসেবে নেতৃত্বে যুক্ত হন নারীরা। দেশগুলো হচ্ছে সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, নামিবিয়া এবং নেপাল। তবে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব প্রতি বছর পরিবর্তন হওয়ায় ২০১৬ সালে ওই পদে দায়িত্বে আছেন জোহান স্নাইডার আম্মান।

২০১৪ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ২০ নারী। সে হিসেবে বছরটি ভবিষ্যত নারী নেতাদের অনুপ্রেরণারও। এরমধ্যে ২০১৬ সালে অনিয়মের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত হন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রউসেফ।

নারী নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় সরকার প্রধানের দায়িত্বে আছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল, যিনি ২০০৫ সালে প্রথম নির্বাচিত হয়ে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তৃতীয় দফায় দায়িত্ব পালন করছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময় রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্বে আছেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এ্যালেন জনসন সারলিফ। তিনি ২০০৬ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এছাড়া মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ সময় রাষ্ট্র পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আছেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ ডি কিচনার। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে তিনি প্রথম নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হন। সরকার পরিচালনায় যুক্ত হওয়া নারী নেতাদের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেন তিনি। ২০১৫ সালে নির্বাচনে জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

একইবছর ক্ষমতায় আসেন লিথুয়ারিয়ার প্রেসিডেন্ট ডালিয়া গ্রিবাউসকাইতে। গত ৭ বছর ধরে টানা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। ২০১০ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন কামলা পারসাদ বেসেসার। ৬ বছর ধরে এ দায়িত্ব পালন করছেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত কসোভোর রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন আতিফেত জাহজাগা ২০১১ সালে। রাষ্ট্র পরিচালনার অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন গত ৫ বছর ধরে। একই বছর ডেনমার্কের সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন হ্যালে থর্নিং স্মিথ। সেই থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১২ সালে জামাইকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন পর্সিয়া সিমপসন মিলার। সরকার পরিচালনায় দেশটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ নারী। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১৩ সালে দায়িত্ব নেন পার্ক গিউন হেই। ৪ বছর ধরে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

একই বছর নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন ইরনা সোলবার্গ। সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন ৪ বছর ধরে। ২০১৩ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্লোভেনিয়ার সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন অ্যালেঙ্কা ব্রাতুসেক। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৪ বছর ধরে অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন।

ওই বছর উত্তর সাইপ্রাসের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছে সাইবেল সাইবার। ৪ বছর ধরে সরকার পরিচালনা করছেন ওই পদে থেকে। ২০১৩ সালে সেনেগালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন অমিনতা তোরে। সরকার প্রধান হিসেবে ৪ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন এ নারী।

নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০১৩ সালে দায়িত্ব নেন ইরনা সোলবার্গ। সরকার প্রধান হিসেবে ৪ বছর ধরে এ দায়িত্ব পালন করছেন। লামিদোতা স্ট্রজুমা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাটভিয়ার ২০১৪ সালে। সরকার প্রধান হিসেবে সে দায়িত্ব পালন করে আসছেন ৩ বছর ধরে।

মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন ক্যাথেরিন সাবভা-পানজা। ২০১৪ সাল থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন এ নারী। চিলির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মিশেল ব্যাশেরেট। ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।

মাল্টার প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছেন মেরি লুই কোলেইরো প্রেকা। ২০১৪ সাল খেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দেশটি পরিচালনার। ২০১৪ সালে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন বেইতা জিডলো। তিন বছর ধরে সরকার পরিচালনা করে আসছেন তিনি।

২০১৫ সালে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন কালিন্দ গ্র্যাবার কিতারোভিচ, নেপালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব বুজে নেন বিদ্যা দেবি বান্দরি এবং মারিশাসের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নেন ম্যারিশা এ্যান মায়ার। নামিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন সারা কুগনগিলওয়ালা।

 

 

Save

Save

Save

Save

 

স্নানঘরেও সবুজের আবেশ

সৌখিন মনকে প্রশান্তি দিতে বাড়িকে সুন্দর করে সাজাতে সবাই কমবেশি চেষ্টা করেন। প্রয়োজনীয় আসবাবেব সঙ্গে স্থান পায় বাহারি ইনডোর প্লান্ট। কারণ, ঘরের মধ্যে প্রকৃতির সবুজ ছোঁয়া আলাদা আবেশ ছড়ায়। আজকাল সৌখিনতার প্রসার ঘটেছে আরও বেশি। থাকার ঘরের সঙ্গে ব্যবহৃত স্নানঘরটিও সাজিয়ে নিতে পারেন মনের মতো করে। সেখানেও স্থান পেতে পারে পছন্দের কোনো গাছ।

শহরের ফ্ল্যাট গুলোতে জায়গার খুবই অভাব। সেখানে সীমিত দৈর্ঘ্য-প্রস্থের স্নানঘরটির অবস্থা আরও করুন। কিন্তু শৈল্পিক মনটি সে কথা শুনবে কেন? স্নানঘরের মেঝেতে গাছের টব রাখা সম্ভব না হলে ক্ষতি নেই। বর্তমানে বাজারে আকর্ষণীয় ওয়ালটব পাওয়া যাচ্ছে। রোদ ছাড়া দীর্ঘদিন সতেজ থাকা গাছের সন্ধানও পাবেন খুব সহজে। তাই মনের মতো দুই তিনটি টবসহ গাছ কিনে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে লতানো গাছ বেশি মানানসই। আবার ছোট নজরকাড়া ডালাপালাযুক্ত গাছও মানাবে।

ওয়াসরুম বা স্নানঘরের জানালায় তার দিয়ে ঝুলিয়ে দিতে পারেন ছোট্ট একটি টব। সে টবে শোভা পেতে পারে ছোট্ট আকৃতির মানিপ্লান্ট বা লতানো যেকোনো গাছ। দেয়ালের গায়ে যদি টব ঝোলানোর সুযোগ থাকে তবে সৌন্দর্য বাড়াতে দিতে পারেন আরও কয়েকটি টব।

খেয়াল রাখতে হবে, ছোট্ট একটুকরো ওয়াসরুমের সৌন্দর্য বাড়াতে গাছের আধিক্যে আবার হিজিবিজি না হয়ে যায়। পরিমাণে বেশি হলেও ক্ষতি নেই, তবে ছোট ওয়াসরুমে ছোট্ট আকৃতির টবই মানানসই। আর খোলামেলা ওয়াসরুমে দেয়ালের কোণায় রাখতে পারেন পছন্দের গাছ। কেউ কেউ গাছের সৌন্দর্য আরও বাড়াতে রঙিন আলো ব্যবহার করে থাকেন।

সবকিছুর মূলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ওয়াসরুম। সেখানে আলো আর গাছের মধুর মিলন ঘটাতে পারলে তো কথায় থাকে না। আপনার মনের সৌন্দর্য গুণও প্রকাশ পেতে পারে ওয়াসরুমের এমন সাজে। অপরের কাছে প্রশংসা কুড়াতে ইনডোর প্লান্ট বেশ সাহায্যকারী।

ইন্ডোর প্লান্টের যত্ন

– সপ্তাহে অন্তত একদিন সব গাছ রোদে দিতে হবে। গাছের ঠিকমতো বেড়ে ওঠা এবং বেঁচে থাকার জন্য সূর্যের আলো জরুরি। তবে দুপুরের কড়া রোদে গাছ রাখবেন না। সকালের হালকা রোদে গাছ রাখুন।

– গাছে ঘন ঘন পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। অতিরিক্ত পানি দিলে গাছ পচে যেতে পারে। পানি দেওয়ার সময় টবের মাটি আর্দ্র আছে কি-না, লক্ষ্য করুন।

– গাছের পাতা ও ফুলের রং হালকা হতে থাকলে ঠাণ্ডা ও আলো কম পৌঁছায় এমন জায়গায় রাখুন। কারণ অতিরিক্ত আলো ও তাপের সংস্পর্শে এসে গাছের পাতা ও ফুলের রঙ হালকা হয়ে যায়।

– গাছের পাতায় বেশি ধুলো জমলে জোরে ঘসবেন না, নরম কাপড়ে অল্প পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন। অথবা স্প্রে করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। পাতার নিচের অংশও পরিষ্কার করুন। ধুলো-ময়লার সঙ্গে পোকা বাসা তৈরি করে পাতায়।

 

Save

Save

Save

Save

Save

 

গাম্বিয়ায় বাল্যবিবাহের শাস্তি ২০ বছরের কারাদণ্ড

মেয়েদের বাল্যবিবাহ রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্ট এ সংক্রান্ত একটি আইনে পাস করা হযেছে। ওই আইনে ১৮ বছরের আগে কোনো মেয়েকে বিয়ে দিলে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। প্রসঙ্গত, দেশটিতে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই এক তৃতীয়াংশ মেয়েশিশুরই বিয়ে হয়ে যায়।

গাম্বিয়া পার্লামেন্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু অধিকার বিষয়ক অঙ্গ সংগঠন ইউনিসেফ এবং লন্ডনভিত্তিক নারী অধিকার বিষয়ক সংগঠন ইক্যুয়ালিটি নাউ। এক বিববৃতিতে ইউনিসেফ বলেছে, ‘বাল্যবিবাহ রোধে পদক্ষেপ নেয়ায় আমরা দেশটির মহামান্য রাষ্ট্রপতির দৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসা করছি। আশা করছি, সরকার এ আইন বাস্তবায়ন এবং শিশুদের অধিকার পূরণে দেয় অঙ্গীকার পূরণে সচেষ্ট থাকবে।’

তবে পার্লামেন্টর এই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া জামেহ। তিনি বলেছেন, এ ধরনের কঠোর আইন দেশে বিদ্রোহের স্ফূলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

নখের পচন রোধের উপায়

বর্ষার এই মৌসুমে ইচ্ছা না থাকলেও নোংরা পানিতে হাঁটতে বাধ্য হন। এতে জুতার সঙ্গে পায়ের নখের অবস্থা হয় শোচনীয়। ঠিকমতো পরিচর্যা না করলে ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হতে পারে। তখন বিশেষ করে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখটি স্বাভাবিকের চেয়ে মোটা হয়ে যায়। নখে পচন ধরে, কাটতে অসুবিধা হয়, হলুদ বা বাদামী বর্ণ ধারণ করে। নখের নিচের মাংস শুকিয়ে আলগা হয়ে সহজেই ভেঙে যায়।

নখ ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হলে দেখতে বিশ্রী লাগে এবং সারিয়ে তোলাও বেশ কঠিন। একে অনকোমাইকোসিস বলা হয়। হাতের নখে সমস্যাটি হতে পারে তবে পায়ের নখেই বেশি হয়ে থাকে। উপায় জানা থাকলে এই সমস্যা ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে সারিয়ে তোলা যায়। আসুন জেনে নেই সেই ঘরোয়া উপায় গুলো।

ভিনেগার ও বেকিং সোডা

বেকিং সোডা ছত্রাক নাশক না কিন্তু ছত্রাকের বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়াকে রোধ করতে পারে। অপরদিকে ভিনেগার কিছুটা অ্যাসিডিক যা ত্বকের পিএইচ লেভেলের বিশেষ কোনো পরিবর্তন ছাড়াই ছত্রাক ধ্বংস করতে পারে। একটি পরিষ্কার পাত্রে ১ কাপ ভিনেগার ও এক লিটার পানি মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে ১৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পা মুছে আবার নতুন করে পানি ও কয়েক চামচ বেকিং সোডার মিশ্রণে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। তারপর পা মুছে নিন। এভাবে দিনে ২ বার করতে হবে সপ্তাহ দুয়েক। কাঙ্ক্ষিত উপকার পাবেন।

নারিকেল তেল

ফ্যাটি অ্যাসিড খুব ভালো ছত্রাক নাশক। নারিকেল তেলে প্রচুর ফ্যাটি অ্যাসিড আছে যা ছত্রাকের দেহের লিপিড স্তরে প্রবেশ করে ভেতর থেকে ছত্রাককে ধ্বংস করে। দিনে দুই তিনবার নারিকেল তেল লাগালে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন।

মাউথ ওয়াশ

মাউথ ওয়াশ যেভাবে মুখের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস করতে পারে ঠিক সেভাবে নখের ছত্রাকও নাশ করতে পারে। মাউথ ওয়াশের অ্যালকোহল শক্তিশালী অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে। একটি বোলে মাউথ ওয়াশ নিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। এভাবে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে পায়ের নখ পরিষ্কার করে নিন। তারপর পানি মুছে শুকিয়ে নিন। দিনে ১ থেকে ২ বার এভাবে করুন যতদিন না ভালো হয়।

 

সন্তানকে অযথা অভিশাপ দিলে কী হয়?

ইসলামের সার্বজনীন আদর্শের ধারাবাহিকতায় এ বিষয়টি সম্পর্কেও আমরা দিকনির্দেশনা পাই তারই কাছে। এ ব্যাপারেও ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়। ইসলাম কখনো কারো বিরুদ্ধে অভিশাপ দেয়া বা বদদু‘আ করাকে সমর্থন করে না। আপন সন্তানকে তো দূরের কথা জীবজন্তু এমনকি জড় পদার্থকে অভিশাপ দেয়াও সমর্থন করে না।

মাত্র কয়েকদিন আগের ঘটনা। আমাদের পাড়ার রাকিবের মা পানিতে ডুবে মরা কিশোর সন্তানটিকে বুকে জড়িয়ে পাগলপারা হয়ে কাঁদছেন। মায়ের বাঁধভাঙ্গা কান্না আর বিলাপ শুনে উপস্থিত কারো পক্ষেই চোখের পানি সংবরণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তিনি কাঁদছেন আর বিলাপ করে বলছেন, ‘ও বাবুর আব্বু তুমি আমাকে মেরে ফেল। আমিই তোমার সন্তানকে হত্যা করেছি। গতকালই ওর জ্বালা সহ্য করতে না পেরে আমি বলেছি, ‘তুই মরিস না; মরলে দশটা ফকিরকে খাওয়াতাম।’

হ্যা, সত্যিই তিনি আগেরদিন ছেলেটির দুরন্তপনায় অস্থির হয়ে এমন বলেছিলেন। তখন একজন পাগলেরও ভাবার অবকাশ ছিল না যে গর্ভধারিণী মা সত্যিই তার সন্তানের অমঙ্গল কামনা করছেন। কিন্তু অসচেতনভাবে কামনা করা দুর্ঘটনাও কখনো সত্য হয়ে দেখা দিতে পারে। রাকিবের মা গতকাল রাগের মাথায় যে কথা উচ্চারণ করেছিলেন কে জানত আজই তা বাস্তব হয়ে দেখা দেবে।

ঘটনা হলো, সেদিন দুপুরে ছেলেটি তার মায়ের সঙ্গে শুয়ে ছিল। তিনটার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে একরকম জিদ করেই সে মায়ের কাছ থেকে ছুটে গিয়েছিল বৃষ্টিতে ভিজতে। বাড়ির বাইরে এসে সে আশপাশের সমবয়সী আরও কয়েকটি কিশোরকে পেয়ে যায়। সবাই মিলে কোন বুদ্ধিতে যেন দল বেঁধে যায় পাশের মহল্লার একটি নতুন পুকুরে গোসল করতে। সেখানে গিয়ে সবার আগে সে-ই লাফ দেই পুকুরে। অবুঝ কিশোর ঠিক বুঝতে পারেনি লাফ দিলে পুকুরের প্রায় গভীরে গিয়ে পৌঁছবে সে। যেখানে সাঁতার না জানা একটি কিশোরের জন্য অপেক্ষা করছে অবধারিত মৃত্যু। ঘটনা যা হবার তাই হল। বাচ্চাগুলোর চোখের সামনেই সে পানিতে ডুবল। ওরা ভাবল সে বুঝি তাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে। কিছুক্ষণ পর তারা ওকে না পেয়ে ভয়ে আশপাশের লোকদের ডেকে আনল। ততক্ষণে অবশ্য তার ক্ষুদেকায় দেহ থেকে প্রাণপাখি উড়াল দিয়েছে।

মা তার সন্তানকে অবর্ণনীয় কষ্টে গর্ভে ধারণ করেন। অমানুষিক কষ্টে পৃথিবীর আলো-বাতাসে আনেন। তারপর নিজের ভালোবাসা আর ত্যাগের সবটুকু উজাড় করে অসহায় একটি শিশুকে যথাক্রমে সুস্থ, সবল, সজ্ঞান ও স্বাবলম্বী করে তোলেন। সন্তান মানুষ করতে গিয়ে বাবা-মাকে যে কতটুকু কষ্ট সহ্য করতে হয় তা শুধু বাবা-মায়েরাই জানেন। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে এ কষ্ট আরও বেশি। এখানে রোজ দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে লড়াই করে মানুষকে টিকে থাকতে হয়।

অভাবের কারণে একজন নবীন মাকেও একহাতে সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব আর অপরহাতে বুকের ধন সন্তানটিকে আগলাতে হয়। অনেক মা আছেন যারা সময়মত বাচ্চার খাবারটিও যোগাতে পারেন না রুচিমত। বিশেষত যেসব বাচ্চা জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ পায় না। দরিদ্র পরিবারে এসব শিশুকে যে কত কষ্টে মা জননী বড় করে তোলেন তা একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন। এ সময় মায়েদের অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার প্রয়োজন হয়।

অথচ প্রগলভ চরিত্রের অনেক মা’কে এ সময় ধৈর্যহারাও হতে দেখা যায়। অনেক মা সন্তানের ওপর বিরক্ত হয়ে তাকে অবলীলায় অভিশাপ দিয়ে দিয়ে বসেন। স্নেহময়ী জননী হয়তো তার জীবনের বিনিময়ে হলেও সন্তানের যে কোনো অনিষ্ট রোধ করতে চাইবেন। কিন্তু তিনিই আবার রাগের মাথায় অবচেতনে আদরের সন্তানটির অনিষ্ট কামনা করে বসেন। গ্রাম-বাংলায় প্রায়ই দেখা যায় সন্তানদের দুরন্তপনা বা দুষ্টুমিতে নাকাল হয়ে অনেক মা সরাসরি বাচ্চার মৃত্যু কামনা করে বসেন। ‘তুই মরিস না’, ‘তুই মরলে ফকিররে একবেলা ভরপেট খাওয়াতাম’, ‘আল্লাহ, আমি আর পারিনে’, ‘এর জ্বালা থেকে আমাকে নিস্তার দাও’- এ জাতীয় বাক্য আমরা অহরহই শুনতে পাই। বিশেষত কৈশোরে এসে গ্রাম-বাংলার শিশুদের দুরন্তপনা কখনো সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। ফলে কিশোর সন্তানকে উদ্দেশ করেই সাধারণত মায়েরা এমন অসহিষ্ণু বাক্যোচ্চারণ করে থাকেন। তাই এ সময় মাকে অনেক বেশি ত্যাগ ও ধৈর্যের পারাকাষ্ঠা দেখাতে হয়।

ইসলামের সার্বজনীন আদর্শের ধারাবাহিকতায় এ বিষয়টি সম্পর্কেও আমরা দিকনির্দেশনা পাই তারই কাছে। এ ব্যাপারেও ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়। ইসলাম কখনো কারো বিরুদ্ধে অভিশাপ দেয়া বা বদদু‘আ করাকে সমর্থন করে না। আপন সন্তানকে তো দূরের কথা জীবজন্তু এমনকি জড় পদার্থকে অভিশাপ দেয়াও সমর্থন করে না। জাবির ইবন আবদুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

سِرْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فِى غَزْوَةِ بَطْنِ بُوَاطٍ وَهُوَ يَطْلُبُ الْمَجْدِىَّ بْنَ عَمْرٍو الْجُهَنِىَّ وَكَانَ النَّاضِحُ يَعْتَقِبُهُ مِنَّا الْخَمْسَةُ وَالسِّتَّةُ وَالسَّبْعَةُ فَدَارَتْ عُقْبَةُ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ عَلَى نَاضِحٍ لَهُ فَأَنَاخَهُ فَرَكِبَهُ ثُمَّ بَعَثَهُ فَتَلَدَّنَ عَلَيْهِ بَعْضَ التَّلَدُّنِ فَقَالَ لَهُ شَأْ لَعَنَكَ اللَّهُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « مَنْ هَذَا اللاَّعِنُ بَعِيرَهُ ». قَالَ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ « انْزِلْ عَنْهُ فَلاَ تَصْحَبْنَا بِمَلْعُونٍ لاَ تَدْعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ وَلاَ تَدْعُوا عَلَى أَوْلاَدِكُمْ وَلاَ تَدْعُوا عَلَى أَمْوَالِكُمْ لاَ تُوَافِقُوا مِنَ اللَّهِ سَاعَةً يُسْأَلُ فِيهَا عَطَاءٌ فَيَسْتَجِيبُ لَكُمْ ».

বাতনে বুওয়াত যুদ্ধের সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে পথ চলছিলাম। তিনি মাজদী ইবন ‘আমর জুহানীকে খুঁজছিলেন। পানি বহনকারী উটগুলোর পেছনে আমাদের মধ্য থেকে পাঁচজন, ছয়জন ও সাতজন করে পথ চলছিল। উকবা নামক এক আনসারী ব্যক্তি তাঁর উটের পাশ দিয়ে চক্কর দিল এবং তাকে থামাল। তারপর তার পিঠে উঠে আবার তাকে চলতে নির্দেশ দিল। উটটি তখন একেবারে নিশ্চয় হয়ে গেল। তিনি তখন বললেন ধুত্তুরি। তোর ওপর আল্লাহর অভিশাপ। এ শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিজের উটকে অভিশাপদাতা এই ব্যক্তিটা কে? তিনি বললেন, আমি হে আল্লাহর রাসূল। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘তুমি এর পিঠ থেকে নামো। তুমি আমাদের কোনো অভিশপ্তের সঙ্গী করো না। তোমরা নিজেদের বিরুদ্ধে, তোমাদের সন্তান-সন্তুতির এবং তোমাদের সম্পদের বিরুদ্ধে দু‘আ করো না। তোমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন মুহূর্তের জ্ঞানপ্রাপ্ত নও, যখন যা কিছুই চাওয়া হয় তিনি তোমাদের তা দিয়ে দেবেন।’ [মুসলিম : ৭৭০৫]

হাদীসের ব্যাখ্যায় মোল্লা আলী কারী রহ. বলেন, অর্থাৎ তোমরা কোনো মুহূর্তেই নিজের বিরুদ্ধে, নিজের সন্তান বা সম্পদের বিরুদ্ধে বদদু‘আ করো না। কারণ, হতে পারে যে সময় তুমি দু‘আ করছো, তা দিনের মধ্যে ওই সময় যখন যা-ই দু‘আ করা হোক না কেন তা কবুল করা হয়। তোমরা তো এ সময় সম্পর্কে আল্লাহর পক্ষ থেকে জ্ঞান প্রাপ্ত নও। (মুবারকপুরী, মিরআতুল মাফাতীহ : ৭/৭০৩)

হাদীসটি বর্ণনা করে আরেক ব্যাখ্যাকার বলেন,

فالحديث يدل على النهي عن كون الإنسان يدعو على أهله وماله، وذلك عندما يحصل له غضب فيحصل منه الدعاء، وهو مشتمل أيضاً على بيان العلة والحكمة في ذلك، وأنه قد يكون هذا الدعاء يوافق ساعة إجابة فيستجاب للإنسان فيما سأل من الشر أو من الشيء الذي لا ينبغي لأهله وماله.

‘হাদীসটি রাগের মাথায় মানুষের তার পরিবার ও সম্পদের বিরুদ্ধে দু‘আ করার নিষিদ্ধতা প্রমাণ করে। হাদীসটি এর কারণও তুলে ধরে। আর তা হলো, এ দু‘আটি কবুলের বিশেষ মুহূর্তে পড়ে যেতে পারে। ফলে মানুষের সবই কবুল হয়ে যায় চাই তা ভালো হোক বা মন্দ, যা সে তার পরিবার বা সম্পদের ক্ষেত্রে প্রত্যাশা করে না।’ [আবদুল মুহসিন, শারহু সুনান আবী দাউদ : ৮/২৮৮]

নিজের সন্তানের বিরুদ্ধে দু‘আ করার অর্থ তো নিজেই নিজেকে হত্যার তথা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া। আর এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَلَا تُلۡقُواْ بِأَيۡدِيكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ

‘আর তোমরা নিজ হাতে নিজদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৯৫}

অতএব প্রতিটি মাকে ভেবে দেখতে হবে, আমার রাগের মাথায় উচ্চারণ করা বাক্য যদি সত্যে পরিণত তাহলে কেমন লাগবে? আমি কি তা সহ্য করতে পারব? এ জন্য রাগের মাথায়ও কখনো সন্তানের অমঙ্গল কামনা করা যাবে না। প্রসঙ্গত বলা দরকার যে শুধু মায়েদেরই নয়, আমাদের সবারই উচিত নিজের, নিজের সন্তান ও সম্পদের বিরুদ্ধে বদদু‘আ করা থেকে সংযত হওয়া। রাগের সময় সংযম ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেওয়া।

আর মেয়েদের সবিশেষভাবে বলতে চাই, মা, আপনি অনেক সয়েছেন, অনেক সবর করেছেন, আরেকটু সবর করুন। রাগের মাথায় সন্তানকে অভিশাপ দেয়া থেকে সংযত থাকুন। আল্লাহ আপনার সহায় হোন। আমীন।

আলী হাসান তৈয়ব
সহ-সম্পাদক, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

শ্রাবন্তীর বাগদান সম্পন্ন

অবশেষে বাগদানটা সেরেই ফেললেন টালিগঞ্জের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। পাত্র সুপার মডেল কৃষাণ ব্রজ। রোববার বাগদানের মধ্য দিয়েই তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বাগদানে শ্রাবন্তীর ছেলে ঝিনুকসহ টালিগঞ্জের তারকা অভিনয়শিল্পী নির্মাতারা উপস্থিত ছিলেন। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়েটা সেরে হানিমুনে ইউরোপ উড়াল দেবেন এ দম্পতি।

কৃষাণের সঙ্গে শ্রাবন্তীর পরিচয়টা অভিনয়ের সুবাদেই। সাক্ষাৎ হয়েছিল মুম্বাইয়ে, একটি বিজ্ঞাপনে জুটি বেঁধে কাজের সুবাদে। প্রেম জমতেও দেরি হয়নি। বেশ কিছুদিন আগে কৃষাণের সঙ্গে ফেসবুকে ছবিও পোস্ট করে শ্রাবন্তীই দুজনের সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।

এটি শ্রাবন্তীর দ্বিতীয় বিয়ে। এর আগে ২০০৩ সালেই প্রথম বিয়ে করেন পরিচালক রাজীব বিশ্বাসকে। তখন অবশ্য রাজীব সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করতেন ইন্ডাস্ট্রিতে। শ্রাবন্তীর বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর। বিয়ের পরই সিনেমার জগৎ থেকে সরে আসেন শ্রাবন্তী।

পাঁচ বছর পর শ্রাবন্তী রবি কিনাগির ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ছবি দিয়ে আবারো অভিনয়ে ফিরেন। তখন থেকেই শ্রাবন্তী এবং রাজীবের ডিভোর্স নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রচুর কানাঘুষো শোনা যায়। অনেকে বলেন, দেবের সঙ্গে শ্রাবন্তীর বন্ধুত্ব নিয়েই নাকি দু’জনের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। রাজীবও নাকি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

শ্রাবন্তীর ডিভোর্সের পরই ব্যবসায়ী বিক্রম শর্মার সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে শ্রাবন্তী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন বিক্রমের সঙ্গে তার সম্পর্ক বন্ধুত্বের এবং তাকে বিয়ে করা নিয়ে তিনি কিছু ভাবছেন না।  সত্যিই বলেছিলেন শ্রাবন্তী। কারণ কৃষ্ণকে নিয়েই তিনি বেশ আছেন। বয়ফ্রেন্ডের নামে নিজের হাতে ট্যাটুও করিয়েছেন শ্রাবন্তী। আবার কৃষ্ণর হাতেও রয়েছে শ্রাবন্তীর নাম লেখা।

শ্রাবন্তীর প্রথম ছবি স্বপন সাহার ‘মায়ের বাঁধন’ মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে। সেই ছবিতে হেভিওয়েট নায়ক-নায়িকা ছিলেন প্রসেনজিৎ, শতাব্দী রায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। শিশু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শ্রাবন্তী। আর প্রথম সবচেয়ে হিট ২০০৩ সালের ‘চ্যাম্পিয়ন’। রবি কিনাগির এই ছবিটি ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’র বাংলা সংস্করণ। নায়ক ছিলেন জিৎ। এবার ঈদে মুক্তি পেয়েছে শ্রাবন্তী-শাকিবের বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজিত সিনেমা ‘শিকারি’।

Save

Save

Save

Save

Save

Save

Save

 

শাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলত ও নিয়ম

আন নাসাঈ তার ‘সুবুল উস সালাম’ গ্রন্থে বলেছেন, যদি রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হয়, তাহলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। শরিয়ত অনুযায়ী প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে। তাহলে ৩৬টি রোজা ১০ গুণ পুরস্কারে পরিণত করলে তা ৩৬০টি রোজার সমতুল্য হবে।

শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা মুস্তাহাব। হাদিস শরিফে এই ছয় রোজার অনেক ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত আবু আইয়ুব আনসারী রা. সূত্রে বর্ণিত, মহানবি সা. বলেন, যে ব্যক্তি রমজানে সিয়াম পালন করবে, অতঃপর শাওয়ালের আরও ছয়টি সিয়াম পালন করবে সে সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব পাবে। (মুসলিম : ১১৬৪)

আন নাসাঈ তার ‘সুবুল উস সালাম’ গ্রন্থে বলেছেন, যদি রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হয়, তাহলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। শরিয়ত অনুযায়ী প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে। তাহলে ৩৬টি রোজা ১০ গুণ পুরস্কারে পরিণত করলে তা ৩৬০টি রোজার সমতুল্য হবে। অর্থাৎ সারা বছরের রোজার সমতুল্য হবে। কোনো কোনো আলেম বলেন, রমজানের শেষে শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখতে হবে, এমন কথা নেই একনাগাড়ে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, শাওয়াল মাসেই ছয়টি রোজা একনাগাড়ে রাখতে হবে এমন কথা নেই। শেষোক্ত মতামতটিই অধিক গ্রহণযোগ্য।

একটি বর্ণানায় পাওয়া যায়, প্রিয় নবী (সা.) আরও এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা শাওয়াল মাসের ৬ দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি ওই ৬ দিন রোজা রাখবে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক সৃষ্টি জীবের সংখ্যা হিসাবে তার আমলনামায় নেকি লিখে দেবেন, সমপরিমাণ বদি দূর করে নেবেন এবং পরকালে তার দরজা বুলন্দ করে দেবেন।

শাওয়ালের রোজা রাখার নিয়ম : মাসের শুরুতে মধ্যে বা শেষে যে কোনো সময় আদায় করতে পারবে। রোজা ছয়টি ধারাবাহিকভাবে বা মাঝে মাঝে ফাঁকা রেখেও আদায় করতে পারবে। নারীরা পিড়িয়ডের কারণে কাজা হওয়া রমজানের রোজা আলাদাভাবে আদায় করতে হবে। শাওয়ালের ছয় রোজার সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ত করতে পারবে না। বরং আগে কাজা শেষ করবে, পরে শাওয়ালের ছয় রোজা পালন করবে।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

৫টি অভ্যাস পৌঁছে দেবে স্বপ্নের দোরগোড়ায়

রাতে সুন্দর একটা ঘুম মানেই তরতাজা দিনের শুরু। ঝলমলে দিনে ঝটপট কাজে নেমে পড়া আর সহজে ক্লান্ত না হওয়ার প্রধান চাবিকাঠি রাতের নির্বিঘ্ন ঘুম। কিন্তু প্রায়ই প্রযুক্তির অত্যধিক ব্যবহার, স্ট্রেস, কাজের চাপ আমাদের ৮ ঘন্টার জরুরি ঘুমের রুটিনে ব্যাঘাত ঘটায়। আসুন জেনে নিই কয়েকটি সহজ কৌশল যা আপনার সকালকে উজ্জ্বল করবে, দিনকে করবে কর্মমূখী আর রাতের ঘুমকে করবে শান্তিময়।
ব্যায়াম
অফিস থেকে ফিরে সন্ধ্যায় করুন ব্যায়াম। ব্যায়াম মানেই এই নয় যে শারীরিক কসরত করতে হবে। হাটুন। প্রকৃতিকে অনুভব করুন। অনুভব করুন বাতাসের স্পন্দন, পাখির ঘরে ফেরা। মনকে মুক্ত করুন শান্ত। একই সাথে হাটা অথবা হালকা ব্যায়াম আপনার শরীরের জড়তা কাটিয়ে দেবে।
চিন্তাকে তুলে রাখুন
সারাদিনে আমাদের মস্তিষ্কে জমা হয় নানান রকম চিন্তা, দুশ্চিন্তা, সাফল্যের স্বপ্ন আর না পাওয়ার ভয়। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঝটপট লিখে ফেলুন সেগুলো একটি জার্নালের মত করে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এটি একজন মানুষের জন্য মানসিক থেরাপীর মত কাজ করে। একই সাথে মস্তিষ্কে জমা হওয়া অপয়োজনীয় জঞ্জাল পরিষ্কার করে এবং পরের দিন আপনার ফ্রেশ মনে সহজেই ভিড় করে নতুন নতুন আইডিয়া।
নিজেই হন নিজের গুরু
সবাই নিজের পার্ফর্মেন্স কোচ হতে পারে না। কিন্তু এই প্রাকটিস আপনার কাজের গতি বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুণে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে আপনার ৩ টি প্রধান কাজের তালিকা করুন কাজের গুরুত্ব অনুসারে। আপনি যদি জেনে থাকেন যে, আপনার ১৫টি কাজ রয়েছে টু ডু লিস্টে, তাহলেও সেটিকেও গুরুত্বের অনুসারে সাজান। এই একটি পরদিন আপনাকে সাহায্য করবে দ্রুত কাজ তুলে আনতে।
মনোযোগের অনুশীলন করুন
মনোযোগের অনুশীলন করা প্রয়োজন রোজ। মেডিটেশন করতে পারেন এজন্য। কিভাবে করবেন? আপনার জন্য একটি সহজ পদ্ধতি-
ধীরে ধীরে কিন্তু গভীর শ্বাস নিন আপনার নাক দিয়ে এবং ছেড়ে দিন মুখ দিয়ে।
মনে অনেক রকম চিন্তা আসবে, সেগুলোকে স্বীকার করুন এবং ধীরে ধীরে চলে যেতে দিন।
নিজের শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ সম্পর্কে সচেতন হোন। মাথার তালু থেকে শুরু করে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত অনুভব করার চেষ্টা করুন, রিল্যাক্স করার চেষ্টা করুন যতক্ষণ না আপনি সহজ বোধ করেন।
একটি চমৎকার বই
আপনি যখন সফলতার কথা ভাবেন তখন কার কথা মনে পড়ে সবার আগে? কে আপনার সেই আদর্শ যাকে আপনি অনুসরণ করেন? বিজ্ঞানী কুদরাত-ই-খুদা? রাজনীতিবিদ শের-এ-বাংলা? নাকি অর্থনীতিবিদ ডা. মোহাম্মাদ ইউনুস? কার মত হতে চান আপনি? এরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিত্ব। কিন্তু এদের সবার মাঝেই একটি গুণ রয়েছে সব সময়। প্রকৃতপক্ষে, সকল সফল ব্যক্তি মেনে চলেন এটি। ঘুমোতে যাওয়ার আগে তারা পড়েন বই। বই আপনার মনকে করবে ফ্রেশ, চিন্তাকে সরিয়ে নেবে ভিন্ন খাতে, কল্পনাকে নিয়ে যাবে ভিন্ন এক বাস্তবতার জগতে। তাই বই পড়ুন।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

তাঁরা ছুটে বেড়ান ঢাকার রাস্তায়

২৮ জুন। প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগের দিন রাতে তা জানিয়ে দেওয়া হয় মহসিনা খাতুনকে। যথারীতি পরদিন প্রস্তুত হয়ে নেমে পড়েন কাজে। দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা ঠিক রাখা। কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাব্যবস্থায়। মহসিনার বিশেষ একটি পরিচয় আছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যে ২৮ জন নারী সার্জেন্ট নিয়োগ পান, তাঁদেরই একজন তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে কাজে যোগ দেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে। বর্তমানে কাজ করছেন রাজধানীর পল্লবী ট্রাফিক জোনে।

মহসিনা যখন ভিভিআইপি দায়িত্বে ব্যস্ত, ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রের সামনে থাকা পুলিশ বক্সে কথা হচ্ছিল আরেক নারী সার্জেন্ট শারমিন আক্তার জাহানের সঙ্গে। কিন্তু আলাপ শুরু হতেই টেবিলে রাখা ওয়াকিটকিতে একটি সংকেত এল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দৌড়ে ছুটে গেলেন রাস্তায়। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের বাড়তি সতর্কতা ও ট্রাফিক-ব্যবস্থা দেখে বোঝা গেল, ভিভিআইপি পদমর্যাদার কেউ আসছেন। প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর রাস্তায় আবার যখন যান চলাচল শুরু হলো, তখন গাড়ির কাগজপত্র দেখছিলেন শারমিন। জানালেন, এসব নিয়মিত কাজেরই অংশ। ডিউটিতে কী কী কাজ করতে হয়? শারমিন বলেন, ‘সিগন্যাল ঠিক রাখা, মামলা দেওয়া, ভিভিআইপি ডিউটি—এসব দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হয়। একেক দিন একেক জায়গায় ডিউটি থাকে। সাধারণত সপ্তাহের শুরুতে জানা যায় ওই সপ্তাহের ডিউটি শিডিউল। তবে ভিভিআইপি ডিউটি থাকলে তা আগের দিন রাতে জানিয়ে দেন ফাঁড়ির মুনশি।

দৈনিক আট ঘণ্টা দায়িত্ব পালন শেষে বাসায় গিয়ে আবার পড়ার টেবিলে বসেন শারমিন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিসিএস পরীক্ষার। ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করা শারমিনের স্বপ্ন পুলিশের বড় কর্তা হওয়া। জানালেন, নিজের কাজের পরিধি বাড়াতে চান আরও। তাই এ স্বপ্ন। কিন্তু ঢাকার রাস্তায় এত দিনের কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? শারমিন বললেন, মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল চালকদের কাগজপত্র বেশির ভাগেরই ঠিক থাকে। ট্রাফিক আইন কড়াকড়ি হওয়ায় তাঁরা চেষ্টা করছেন নিয়ম মানার।
ঢাকার রাস্তায় যাঁদের নিয়মিত যাতায়াত আছে, তাঁদের নিশ্চয় চোখে পড়েছে মহসিনা, শারমিনদের। রাস্তায় শৃঙ্খলা রক্ষা করছেন তাঁরা। প্রতিরোধ করছেন আইন অমান্যকারীদের। ট্রাফিক আইন যাঁরা মানছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে এই নারীরা পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে মামলা করছেন। আর পথচারীরা জানাচ্ছেন বাহবা। একই দিন শেওড়াপাড়ার পুলিশ বক্সে দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট রেহানা পারভীন জানান, প্রথম দিকে তাঁরা যখন দায়িত্ব পালন করতেন, তখন পথচারীরা তাকিয়ে থাকত অবাক দৃষ্টিতে। আর এখন ধন্যবাদ জানায়। রাস্তার শৃঙ্খলা রাখতে সারাক্ষণই ছুটে বেড়ান বাগেরহাটের এই মেয়ে। জানালেন সড়কে যানজট, প্রতিবন্ধকতা দূর করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তিনি এমন সেবা দিতে চান, যা কিনা মানুষ মনে রাখে। ইডেন কলেজ থেকে দর্শনে পড়াশোনা শেষ করে পুলিশে যোগ দেন এই নারী সার্জেন্ট।

আর মহসিনার গল্প? রংপুরের কারমাইকেল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এই নারী সার্জেন্টের গল্প শুনতে হলে যেতে হবে মিরপুর-১০-এ। ভিভিআইপি ডিউটি শেষ করে মহসিনা ইসি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার আগেই ছুটতে চান নিজের কাজে। আর কাজ শেষে বলবেন কথা। বেলা দেড়টার দিকে মহসিনা মিরপুর-১০-এ যখন ফিরছিলেন, তখন রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট। তা দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন রাস্তায়। আর চেষ্টা করছেন তা দূর করার। কাজ শেষে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে ইউনিফর্মের প্রতি ভালো লাগা থেকে যোগ  দিয়েছি পুলিশে। কাজে জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা সহায়তা করায় সহজেই সেরে নিতে পারছি নিত্যদিনের দায়িত্ব।’ আগারগাঁও-মিরপুর সড়কের শৃঙ্খলা ঠিক করতে ২৮ জুন দায়িত্বে ছিলেন এই তিন নারী সার্জেন্ট।

পাঠক, মনে আছে কি আহমদ ছফার দূর্দানাকে? যে কিনা সাইকেল চালিয়ে ছুটে বেড়াত পুরো শহরে। মহসিনা খাতুন, শারমিন আক্তার জাহান, রেহানা পারভীনরাও ছুটে বেড়ান ঢাকার রাস্তায়। কখনো ওয়াকিটকি হাতে, কখনো মোটরসাইকেল চালিয়ে আবার কখনো রাস্তায় সিগন্যাল ঠিক রাখতে। আর তাই তো বনে গেছেন রাস্তার দূর্দানা, যাঁদের ঘুম ভাঙে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে। তারপরই প্রস্তুত হয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন সকাল সাড়ে ছয়টায়। থাকেন বেলা আড়াইটা পর্যন্ত।

 

সুস্বাদু আলু চাট

ঈদের সময় একাধারে মাংসের বিভিন্ন রেসিপি খেতে খেতে মুখে অরুচি ধরাটা স্বাভাবিক। এই ধারা থেকে বের হয়ে আসতে চাই ভিন্ন কিছু। কিন্ত সে খাবারটিও হওয়া চাই মুখরোচক। তাই এই সময়ে ঝটপট রান্না করে নিতে পারেন আলু চাট। খাবারে তৃপ্তি আনতে আলু চাট হতে পারে অসাধারণ একটি খাবার। নিজেদের খাওয়ার সঙ্গে অতিথি আপ্যায়নেও আলু চাট বেশ উপযোগী। তাই দেখে নিতে পারেন আলু চাটের সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

আলু কিউব সেদ্ধ ৪ কাপ, তেল ৩ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনে পাতা কুচি আধা কাপ।

চাট মসলার জন্য

ভাজা জিরা গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়ো সামান্য, আদা গুঁড়ো আধা চা চামচ, চিনি ২ চা চামচ, হিং সামান্য, বিটলবণ এক চিমটি, টেস্টিং সল্ট আধা চা চামচ।

যেভাবে করবেন

চাট মসলা তৈরির সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে আলাদা করে রাখতে হবে। এবার একটি ফ্রাই প্যান মাঝারি আঁচে গরম করে নিন। এতে তেল দিয়ে গরম হলে সেদ্ধ করে রাখা আলু দিয়ে ভেজে নিন। উপরে কিছুটা লবণ ছিটিয়ে লালচে করে ভেজে নিতে হবে। এরপর চুলার আঁচ বন্ধ করে আদা কুচি, ধনে পাতা কুচি, লেবুর রস, মরিচ কুচি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মেশানো হলে বানিয়ে রাখা চাট মসলা দেড় চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। ভাত, রুটি বা পরোটার সঙ্গে সুস্বাদু আলু চাটের জুড়ি মেলা দায়।

 

শাড়ি পরে ইয়াং এন্ড স্টাইলিস্ট ফ্যাশন

কলেজে ভর্তি শুরু হয়ে গেছে। শুরু হতে চলেছে নতুন জীবন। সেই নিয়ে উত্তেজনা প্রচুর, তাই না! ফ্রেশার্স পার্টিতে কোন শাড়ি পরলে ভালো মানাবে, এই নিয়ে বুঝি বন্ধুরা মিলে প্ল্যানিং চলেছে! তাহলে বলি, ট্রাই করতে হবে নতুন কিছু। পুরানো সাজগোজ আজকাল আর চলে না। আর নতুন স্কুল, কলেজে নিজের ইমপ্রেশনটাও তো জমাতে হবে নাকি! কথাতে আছে না, ফার্স্ট ইমপ্রেশন ইজ দা লাস্ট ইমপ্রেশন! তাই কেমন হবে শাড়ি, রইল তারই কিছু স্টাইলিশ টিপস –

রোম্যান্টিক ফ্লোরালস, শিমার অ্যান্ড নেট : ফ্রেশার্স পার্টি জমাতে করতে বেছে নেওয়া যেতে পারে পিওর নেটের হালকা রঙের শাড়ি। তার উপর ফ্লোরাল কারুকার্য দারুণ মানাবে। তার সঙ্গে ম্যাচ করে বেছে নিতে হবে সলিড কালারের ব্লাউজ। হালকা নীল রঙের শাড়ির সঙ্গে গোল্ডেন ব্লাউজ ভালো মানাবে। শাড়ির আঁচল খুলে, কানে একটা বড় দুল পরে নিলেই ব্যাস, বাজিমাত।

হালকা রং এবং শিফন : বিশেষ অনুষ্ঠান থাকলেই যা শাড়ি পরার হিরিক। তাছাড়া শাড়ি আর তেমন একটা পরাই হয় না আজকাল। কিন্তু ওই বিশেষ দিনটি শাড়ি পরতে ইচ্ছে হলে সবচেয়ে ভালো মানাবে শিফনের শাড়ি। পরতেও সুবিধা আবার সামলাতেও পারবেন সহজে। হালকা রঙের শাড়ির সঙ্গে ভালো মানাবে স্লিভলেস ডিপ রঙের কারুকার্য করা ব্লাউজ।

স্যাটিন এবং সুতি : হাইনেক সুতির ব্লাউজের সঙ্গে একটা সুন্দর হালকা রঙের স্যাটিন বা সুতির শাড়ি দারুণ মানাবে। সকলের নজর কাড়বে।

শির ব্লাউজ অ্যান্ড শিফন : সাদামাটা ব্লাউজজের বদলে জমাট কারুকার্য করা শির ব্লাউজ খুব স্টাইলিশ। তার সঙ্গে শিফনের শাড়ি। ব্যাস, সঙ্গে কোনও জুয়েলারি না পরলেও ক্ষতি নেই। দারুণ দেখাবে।

এক রঙা শাড়ি: পরতে কোনও অসুবিধা না থাকলে একরঙা সুতির শাড়িও কিন্তু মন্দ দেখাবে না। তার সঙ্গে ফ্লোরাল হাইনেক ও কোয়ার্টার স্লিভ ব্লাউজ বেছে নিতে হবে আপনাকে। সঙ্গে অবশ্যই গাঢ রঙ এর শাড়ি বাছুন।

 

গর্ভবতী মায়ের রোজা : ইসলাম কী বলে ?

এক রোজার পরিবর্তে এক ফিদইয়া ওয়াজিব হয়। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৬) যাদের জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া দেয়ার হুকুম রয়েছে তারা রমজান শুরু হওয়ার পর পুরো মাসের ফিদইয়া একত্রে দিয়ে দিতে পারবে। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৭)

গর্ভবতী মায়ের দুইটি অবস্থা হতে পারে : ১. রোজা রাখার দ্বারা তার স্বাস্থ্যের উপর কোন প্রভাব না পড়া। অর্থাৎ তার জন্য রোজা রাখাটা কষ্টকর না হওয়া এবং তার সন্তানের জন্যেও আশংকাজনক না হওয়া। এমন নারীর উপর রোজা রাখা ফরজ; তার জন্য রোজা ভাঙ্গা নাজায়েয।

২. রোজা রাখলে তার নিজের স্বাস্থ্য অথবা সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশংকা করা এবং তার জন্যে রোজা রাখাটা কষ্টকর হওয়া। এমন নারীর জন্য রোজা না-রাখা জায়েয আছে; তিনি এ রোজাগুলো পরবর্তীতে কাযা পালন করবেন।

তিনি উত্তরে বলেন, “গর্ভবতী ও দুগ্ধপানকারিনী নারীর জন্য কোন ওজর ছাড়া রমজান মাসের রোজা না-রাখা জায়েয নয়। যদি ওজরের কারণে রোজা না-রাখে তাহলে রোজা কাযা করতে হবে। দলিল হচ্ছে- আল্লাহর বাণী: “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্যদিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫] আর এ দুই শ্রেণীর নারী অসুস্থ ব্যক্তির পর্যায়ভুক্ত। যদি এ দুই শ্রেণীর নারীর ওজর হয় ‘তাদের সন্তানের স্বাস্থ্যহানির আশংকা’ তাহলে কোন কোন আলেমের মতে, এরা রোজাগুলোর কাযা পালনের সাথে প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে গম, চাল, খেজুর বা স্থানীয় প্রধান কোন খাদ্য সদকা করবে। আর কোন কোন আলেমের মতে, কোন অবস্থাতে তাদেরকে কাযা পালন ছাড়া আর কিছু করতে হবে না। কারণ খাদ্য প্রদানের পক্ষে কিতাব ও সুন্নাহর কোন দলিল নেই। আর দলিল সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত ব্যক্তি যে কোন প্রকার দায়িত্ব থেকে মুক্ত থাকা- মৌলিক বিধান। এটি ইমাম আবু হানিফার মাযহাব ও মজবুত অভিমত।”

যেসব কারণে রমজান মাসে রোজা ভঙ্গ করা যাবে তবে পরে কাজা করতে হয় তা হচ্ছে; ১. মুসাফির অবস্থায়। ২. রোগ বৃদ্ধির বেশি আশঙ্কা থাকলে। ৩. গর্ভের সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে। ৪. এমন তৃষ্ণা বা ক্ষুধা হয়, যাতে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকতে পারে। ৫. শক্তিহীন বৃদ্ধ হলে। ৬. কোনো রোজাদারকে সাপে দংশন করলে। ৭. মেয়েদের হায়েজ-নেফাসকালীন সময় রোজা ভঙ্গ করা যায়।

রোজার ফিদইয়া : রোজা রাখা দুঃসাধ্য হলে একটা রোজার পরিবর্তে একজন দরিদ্রকে অন্নদান করা কর্তব্য। শরিয়ত মোতাবেক রোজা রাখার সামর্থ্যহীন হলে প্রতিটি রোজার জন্য একটি করে ‘সাদাকাতুল ফিতর’-এর সমপরিমাণ গম বা তার মূল্য গরিবদের দান করাই হলো রোজার ‘ফিদইয়া’ তথা বিনিময় বা মুক্তিপণ। অতিশয় বৃদ্ধ বা গুরুতর রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, যার সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই অথবা রোজা রাখলে জীবনহানির আশঙ্কা থাকে, তারা রোজার বদলে ফিদইয়া আদায় করবে। পরবর্তী সময়ে ওই ব্যক্তি যদি সুস্থ হয়ে রোজা রাখার মতো শক্তি ও সাহস পায়, তাহলে তার আগের রোজার কাজা আদায় করতে হবে। তখন আগে আদায়কৃত ফিদইয়া সাদকা হিসেবে গণ্য হবে।

ফিদইয়া হলো, একজন মিসকিনকে দু’বেলা তৃপ্তিসহ খানা খাওয়ানো বা এর মূল্য দেয়া। এক সদকা ফিতরও দেয়া যায়। অর্থাত্ পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন— ‘আর যাদের জন্য রোজা অত্যন্ত কষ্টকর হয় তারা এর পরিবর্তে ফিদইয়া তথা মিসকিনকে খাদ্য দান করবে। (সূরা বাকারা ২ : ১৮৪)

এক রোজার পরিবর্তে এক ফিদইয়া ওয়াজিব হয়। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৬) যাদের জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া দেয়ার হুকুম রয়েছে তারা রমজান শুরু হওয়ার পর পুরো মাসের ফিদইয়া একত্রে দিয়ে দিতে পারবে। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৭)

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

ভ্রমণের ব্যাগে চাই প্রয়োজনীয় জিনিস

চাকরি বা ব্যবসা সূত্রে অনেকেই অবস্থান করেন দূরে। বাইরে থাকার এই অভ্যাসটা তাদের কাছে বাড়িকে করেছে অতি আপন। নাড়ীর টানে সেখানে বারবার মন ছুটে যায়। সে চাওয়ার পূর্ণতা মেলে ঈদ বা যেকোনো উৎসবে পাওয়া ছুটিতে। তাই যে যেখানেই থাকুন ছুটির আগে তল্পিতল্পা নিয়ে বাড়িতে যাওয়াটা চাই-ই। এসময় আগে দরকার প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করা।

বেড়াতে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে প্রয়োজনীয় জিনিস গোছানো নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। অনেকেই বেড়াতে যাওয়ার সময় কি নেবো কি রেখে যাবো সেটা নিয়ে মহা ঝামেলায় পড়েন। যারা চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ী তাদের ব্যস্ততার মুহূর্তে এটা আরও বেশি যন্ত্রণাদায়ক। তাই দরকার আগেভাগে সব গুছিয়ে রাখা।

এবারের ঈদটা রোদ-বৃষ্টির দোলাচলে দুলছে। কখনো ভ্যাপসা গরম আবার কখনো বৃষ্টিতে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। তারওপর আবার লম্বা ভ্রমণে আপনি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। এদিকে মাসজুড়ে রোজা করে খাওয়ার অভ্যাসটাও কিছুটা নাজুক হয়েছে। হঠাৎ করে বেশি খাবারের চাপে গণ্ডগোল দেখা দিতে পারে আপনার পেটে। সামান্য সর্দি-জ্বরেও ভুগতে পারেন। তাই সব ধরনের প্রতিকূলতার বিপরীতে নিজের শরীর-মন ফুরফুরে রাখতে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। সঙ্গে রাখতে পারেন ওরস্যালাইন, পারাসিটামল, এন্টিসেপ্টিক ক্রিম যেমন- সেভলন ক্রিম ( শেভ করার পরও ব্যাবহার করা যাবে ), ব্যান্ড – এইড, ডাক্তারি তত্ত্ববধানে থাকলে আপনার প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র।

উৎসবের এই সময়টাতে সাজগোজ খুব বড় একাটা ব্যাপার সৌন্দর্য প্রেমি সবার কাছে। তাই মেয়েরা প্রয়োজন অনুযায়ী হালকা গহনা ও সাজগোজের জিনিস নিতে ভুলবেন না। কারণ, আপনার ব্যবহৃত এসব অনুষঙ্গ মিলিয়ে অন্য কারো কাছে নাও পেতে পারেন। আর উল্টো-পালটা কিছু ব্যবহার করে ত্বকের বারোটা বাজানোর কোনো মানে হয় না।

ছেলেরা সঙ্গে রাখতে পারেন শেভিং জেল (ট্রাভেল সাইজ), রেজার, আফটার শেভ( স্যাভলন ক্রীম ও ব্যাব হার করা যাবে), হেয়ার জেল, সুগন্ধি।

তবে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্য যেসব জিনিস একান্ত প্রয়োজন তাহল, অল ইন ওয়ান ময়েশ্চারাইজার ও ভ্যাসলিন, সানস্ক্রিন (২৫-৫০ এস পি এফ), চিরুনি, টুথপেষ্ট, টুথব্রাশ, মিনিপ্যাক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার, শাওয়ার জেল (ট্রাভল সাইজ), সানগ্লাস, ফোল্ডিং ছাতা( প্রয়োজন অনুযায়ী), হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু পেপার ও ওয়েট টিস্যু, ডিওডোরেন্ট ও পারফিউম।

সবথেকে বড় বিষয় হলো পরিধেয় পোশাক। তাই প্রয়োজনীয় পোশাক, শোবার পোশাকের সঙ্গে জুতা-স্যান্ডেল নিয়ে নিন লাগেজে। সঙ্গে হাতমুখ মোছার জন্য ছোট্ট তোয়ালে নিতে ভুলবেন না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকা মানে আপনার অবকাশ যাপন উঠবে তুঙ্গে। এরই মধ্যে অনেকেই ব্যস্ত শহর ছেড়ে ছুটি চলেছেন গন্তব্যে। অনেকেই দুয়েকদিনের মধ্যেই যাবেন। তাই আনন্দের ঈদ উৎসবকে আরও বেশি আনন্দময় করে তুলতে সময় নিয়ে গুছিয়ে নিন নিজের লাগেজটি।

 

রোজা মানুষ মানুষকে ফাঁকি দেয়াও ভুলিয়ে দেয়

রোজা হচ্ছে ‘তাকওয়া’ অর্জনের সর্বোত্তম ট্রেনিংকোর্স। একজন মানুষ যতবড় পাপিষ্ঠ কিংবা যেমনই হোক না কেন রোজা রাখার পর তার অবস্থা এমন হয় যে, প্রচণ্ড গরমের দিনে পিপাসায় কাতর সে, একাকী কক্ষে, অন্য কেউ সাথে নেই, দরজা-জানালা বন্ধ, কক্ষে রয়েছে ফ্রিজ, ফ্রিজে রয়েছে শীতল পানি-এমনি মুহূর্তে তার তীব্র চাহিদা হচ্ছে, এ প্রচণ্ড গরমে এক ঢোক ঠাণ্ডা পানি পান করার। তবুও কি এ রোজাদার লোকটি ফ্রিজ থেকে শীতল পানি বের করে পান করে নিবে? না, কখনোই না। অথচ লোকটি যদি পান করে, জগতের কেউই জানবে না। তাকে কেউ অভিশাপ কিংবা গালমন্দও করবে না। জগতবাসীর কাছে সে রোজাদার হিসেবেই গণ্য হবে। সন্ধ্যায় বের হয়ে সে লোকজনের সাথে ইফতারও করতে পারবে। কেউই জানবে না তার রোজা ভঙ্গের কথা। কিন্তু সে পান করবে না। কারণ, সে ভাবে যে, অন্য কেউ না দেখলেও আমার মালিক যার জন্য রোজা রেখেছি তিনি তো আমায় দেখছেন। তাছাড়া আর কোনো কারণ নেই।

রোজার উদ্দেশ্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকওয়া অর্জন করতে বলেছেন। অর্থাৎ রোজার মাধ্যমে তিনি অন্তরের মাঝে তাকওয়া বা আল্লাহভীতির আলোক প্রজ্জ্বলিত করতে বলেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘রোজা আমার জন্যই, সুতরাং আমিই এর প্রতিদান নিজ হাতেই দেবো।’

আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হওয়ার এবং জবাবদিহিতার ভয়ের অনুভূতি হৃদয়ে জাগ্রত হওয়াকেই বলে ‘তাকওয়া’। এজন্যই শাহ আশরাফ আলী থানভী (রহ.) বলেছেন, ‘রোজা দ্বারা শুধুমাত্র পশুসুলভ চরিত্রের মৃত্যু ঘটবে এমন নয়, বরং বিশুদ্ধ রোজা মানেই তাকওয়ার উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন সিঁড়ি।’

ইমাম গাযযালী (রহঃ) তার স্বভাবসুলভ দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সিয়ামের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘আখলাকে ইলাহী তথা আল্লাহর গুণে মানুষকে গুণান্বিত করে তোলাই হচ্ছে সিয়ামের উদ্দেশ্য। সিয়াম মানুষকে ফেরেশতাদের অনুকরণের মাধ্যমে যতদূর সম্ভব নিজেকে প্রবৃত্তির গোলামী থেকে মুক্ত হওয়ার শিক্ষা দেয়। কেননা ফিরিশতাগণ সকল চাহিদা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত এবং মানুষের মর্যাদাও হচ্ছে পশুর চেয়ে বহু ঊর্ধ্বে। জৈবিক চাহিদা মুকাবিলা করার জন্য তাকে দান করা হয়েছে বিবেক ও বুদ্ধির আলো। অবশ্য এক দিক দিয়ে তার স্থান ফেরেশতাদের নীচে। জৈবিক চাহিদা ও পাশবিক কামনা অনেক সময় তার উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে সক্ষম হয় এবং তার ভেতরের এ পশুত্ব দমন করতে তাকে কঠোর সাধনা করতে হয়। তাই মানুষ যখন পাশবিক ইচ্ছার সুতীব্র স্রোতে গাঁ ভাসিয়ে দেয়, তখন সে নেমে আসে অধঃপতনের নিম্নতম স্থানে। অরণ্যের পশু আর লোকালয়ের মানুষে কোনো প্রভেদ থাকে না তখন। আর যখন সে তার পাশবিকতা দমন করতে সক্ষম হয়, তখন তার স্থান হয় নূরের ফেরেশতাদেরও ওপরে।’ (এহয়াউল উলুম, খণ্ড-১, পৃষ্টা ২১৬)

রোজার আরেকটি মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- আল্লাহ তা’আলার হুকুম পালন। এমনকি পুরো দ্বীনের মূল কথাই হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হুকুম পালন করা। যখন বলবেন, খাও তখন খাওয়াটাই ‘দ্বীন’। যখন বলবেন খেও না- তখন না খাওয়াটাই ‘দ্বীন’। আল্লাহ তা’আলার দাসত্ব স্বীকার আর আনুগত্যের এক বিস্ময়কর পদ্ধতি তিনি রোজার মাধ্যমে বান্দাকে দিয়েছেন। তিনি দিনব্যাপী রোজা রাখার হুকুম দিলেন, তার জন্য বহু সওয়াব বা প্রতিদান রাখলেন। অন্যদিকে সূর্যাস্তের সাথে সাথে তাঁর নির্দেশ- ‘তাড়াতাড়ি ইফতার করে নাও।’ ইফতারে তাড়াতাড়ি করাটা আবার মুস্তাহাব হিসেবে আখ্যায়িত করলেন। বিনাকারণে ইফতারে বিলম্ব করাকে মাকরুহ হিসেবে আখ্যায়িত করলেন।

কেন মাকরুহ? যেহেতু সূর্যাস্তের সাথে সাথে আল্লাহ তা’আলার হুকুম হচ্ছে ইফতার করে নেয়ার। যেহেতু এখন যদি না খাওয়া হয়, যদি ক্ষুধার্ত থাকা হয়, তবে এ ক্ষুধার্ত অবস্থা আল্লাহর নিকট পছন্দনীয় নয়। কারণ, সকল কিছুর মৌলিক উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর আনুগত্য-দাসত্ব প্রকাশ করা, নিজ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা নয়।

আবার সেহরির সময় বিলম্ব করে খাওয়া উত্তম। তাড়াতাড়ি খাওয়া সুন্নত পরিপন্থি। অনেকে রাত ১২টার সময় সাহরি খেয়ে শুয়ে পড়ে, এটা সুন্নতের পরিপন্থি। সাহাবায়ে কেরামের এ অভ্যাস ছিল যে, তাঁরা সাহরি শেষ সময় পর্যন্ত খেতেন। কারণ, সাহরি শেষ সময়ে খাওয়া শুধুমাত্র অনুমতিই নয়; বরং হুকুমও। আল্লাহ তা’আলার আনুগত্য তো এরই মাঝে নিহিত।

তাই হাকীমুল উম্মত হযরত আশরাফ আলী থানভী (রহ) বলেছেন, ‘যখনই আল্লাহ তা’আলা খাওয়ার নির্দেশ দেন, তখন বান্দা যদি বলে- খাবো না কিংবা বলে -আমি কম খাই, তাহলে এটা তো আনুগত্যের প্রকাশ হলো না। আরে ভাই! খাওয়ার আর না খাওয়ার মাঝে কিছু নেই। সকল কিছুই হচ্ছে তাঁর আনুগত্যের মাঝে। অতএব, যখন তিনি বলেন -খাও, তখন খাওয়াটাই ইবাদাত। তখন না খেয়ে নিজের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত আনুগত্য প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই।’

 

ঈদের দুপুরে নবাবি বিরিয়ানি

ঈদ মানেই বিশেষ আয়োজনের সমাহার। সাজগোজ, পোশাক আর খাবারে থাকে নবাবি আয়োজন। মনের মাঝে উৎসবের হাওয়া আর অতিথি আগমন পুরো পরিবেশকে করে আরও বেশি জাকজমকপূর্ণ। তাইতো এমন দিনে দুপুরের আয়োজনে নবাবি বিরিয়ানি থাকতেই পারে। আপনার পরিবারও কেন বাদ যাবে নবাবি বিরিয়ানির স্বাদ নেয়া থেকে। আজ দেখে নিতে পারেন নবাবি বিরিয়ানির রেসিপি।

যা যা লাগবে

বাসমতি চাল ১ কেজি, খাসির মাংস টুকরো করে কাটা ২ কেজি, পেঁয়াজ কুঁচি ৭টি, আদা রসুন বাটা ২ চা চামচ, গরম মশলা গুঁড়া ১ চা চামচ, শুকনা মরিচ ৫টি, দারুচিনি ৩ টুকরো, দই ২ কাপ (ফেটানো), এলাচ ৫টি, গোল মরিচ ৮টি, লবঙ্গ ৮টি, শাহীজিরা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, জাফরান সামান্য সঙ্গে আধা কাপ দুধ, ধনে বা পুদিনাপাতা কুঁচি ১ চা চামচ, আলুবোখারা, কিসমিস, বাদাম, শুকনো ফল, ঘি, লবণ স্বাদ মতো।

যেভাবে করবেন

পাত্রে ঘি গরম করে আলুবোখারা, কিসমিস, বাদাম, শুকনো ফল একটু লবণ দিয়ে ভেজে তুলুন। এবার পেঁয়াজ বেরেস্তা করে নিতে হবে। দই, আদা-পেঁয়াজ-রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে মাংস মেরিনেট করে রাখতে হবে আধা ঘণ্টা। এবার একটি পাত্রে ঘি গরম করে মাংস দিয়ে রান্না করুন। এবার অপর একটি পাত্রে ঘি গরম করে গোটা মসলাগুলো কিছুক্ষণ ভেজে চাল দিন। এখন লবণ দিয়ে পরিমাণ মতো গরম পানি দিয়ে পোলাও রান্না করুন। লক্ষ রাখবেন যেন পোলাও কিছুটা কম সেদ্ধ হয়। বড় একটি পাত্রে প্রথমে কিছু পোলাও তারপর মাংস দিয়ে একটু একটু গরম মসলার গুঁড়া দিন, এভাবে কয়েকটি লেয়ার করুন। জাফরান ভেজানো দুধ দিয়ে দিন। সবশেষে ভাজা আলুবোখারা, কিসমিস, বাদাম, শুকনো ফল দিন এবার ২০ মিনিটের জন্য চুলার আচঁ কমিয়ে পাত্রের মুখে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন। তারপর নবাবি বিরিয়ানি সার্ভিং ডিশে তুলে ওপরে ধনে বা পুদিনাপাতা কুঁচি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

চোখের আকার বুঝে সাজ

তরঙ্গময় উচ্ছ্বলতা প্রকাশে নারীর চোখই যথেষ্ট। তাই চোখের সাজ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চোখ সাজাতে চাই কাজল বা আইলাইনার। কিন্তু সমস্যা হয় তখন, যখন চোখের সঙ্গে মানানসই কাজল দিতে যাওয়া হয়। চেহারার সঙ্গে মানাতে মোটা করে চোখ আঁকলে ভালো লাগবে নাকি চিকন করে অথবা একটু টেনে দিলে ভালো লাগবে- তা নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান। জেনে নিতে পারেন, কেমন আকারের চোখে কোন সাজ বেশি মানাবে।

বাঁকা চোখ

বাঁকা আকৃতি অর্থাৎ সামনে একটু চোখা এবং শেষ কিনারার আগে একটু মোটা গড়নের চোখের আকৃতি হলে ভেতরের দিক থেকে কাজল দেয়া শুরু করতে হবে। চোখের শেষ কিনারায় গিয়ে একটু বেশি মোটা করে টেনে কাজল দিলে ভালো লাগবে। চোখের ওপর এবং নিচের পাতায় কাজল দিয়ে দুই লাইনের মাথা ঠিক রাখুন, এতেই বেশ ভালো মানাবে।

গোলাকার চোখ

বেশ বড় আকারের গোল চোখের গড়নটা বেশ আকর্ষণীয়। এইধরনের চোখে ওপরের পাতায় একেবারে কর্নার থেকে শুরু না করে একটু সরে এসে কাজল দেয়ার পদ্ধতিটি বেশি মানায়। চোখের বাইরের কিনারায় এসে কাজল মোটা করে এঁকে দেবেন। চোখের নিচের পাতার মাঝামাঝি থেকে কাজল দিয়ে চোখের শেষ কিনারায় এসে মিলিয়ে দিন।

কোটরের গভীরের চোখ

চোখের কোটর একটু গভীরে হলে এমনিতেই চোখ ছোট দেখায়। তাই অনেক মোটা করে কাজল বা আইলাইনার দেয়া থেকে বিরত থাকুন। চোখের ওপরের পাতার মাঝামাঝি থেকে যতোটা সম্ভব চিকন করে আইলাইনার টানুন। চোখের নিচের পাতার পাপড়ির নিচ দিয়ে চিকন করে আইলাইনার টেনে নিন। এতে চোখ খোলা ও বড় মনে হবে।

চোখের ওপরের পাতা ফোলা হলে

চাইনিজ, জাপানিজ কিংবা আমাদের দেশের উপজাতি যারা আছেন তাদের চোখের গড়ন মূলত এই ধরণের হয়ে থাকে। এমন চোখের উপরের পাতার কিনার থেকে চিকন করে আইলাইনার টেনে চোখের পাতার শেষ কিনারে মোটা করে আইলাইনার দিন। চোখের নিচের পাতায় একেবারেই লাইনার দেবেন না। চোখের পাপড়ি কার্ল করে দিন।

চোখ মুখের তুলনায় ছোট হলে নাক ও মুখের তুলনায় চোখের আকৃতি ছোট হলে ওপরের পাতায় চিকন থেকে মোটা করে আইলাইন দিয়ে টেনে দিন। চোখের নিচের পাতার মাঝামাঝি থেকে আইলাইনার শুরু করে শেষ কর্নারে উপরের পাতার আইলাইনারের সঙ্গে মিলিয়ে দিন। চোখের ভেতরের কর্নারে নিচের পাতায় সাদা আইশ্যাডো, কাজল বা হাইলাইটার দিয়ে নিন।

মুখের তুলনায় চোখ বড় হলে নাক ও মুখের তুলনায় চোখের আকৃতি বড় হলে উপরের পাতায় মোটা করে আইলাইন দিয়ে টেনে দিন। নিচের পাতায় পাপড়ির ভেতরের দিকে অর্থাৎ ওয়াটার লাইনে গাঢ় করে কাজল দিয়ে নিন। এতে চোখের আকৃতি একটু ছোটো দেখাবে যা মুখের সঙ্গে মানানসই হবে।

 

ধর্মান্ধতা দূর করে নারীকে এগিয়ে যেতে হবে

সমাজ থেকে সব ধরনের কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতা দূর করে নারী সমাজকে এগিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘নারী সমাজ পিছিয়ে থাকার মূল কারণ ধর্মান্ধতা। এ থেকে নারীদের বেরিয়ে আসতে হবে।’

মঙ্গলবার (২৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে কুড়িগ্রাম রুরাল ওমেন ডেভেলপমেন্ট সেন্টার আয়োজিত “অবহেলিত নারীর সংগ্রামী জীবন এবং কিছু কথা” শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সমাজে নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হয়। এমনকি শিক্ষিত নারীরাও বেশকিছু সামাজিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা কোন না কোনভাবে অবহেলিত। যার মূলে রয়েছে কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা। সমাজ থেকে এসব ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কার দূর করতে হবে।’

নারীকে ক্ষমতাহীন ও মর্যাদাহীন রেখে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘শুধুমাত্র ভোটের অধিকার দিলেই নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। ভোটের পাশাপাশি নারীর সম্পদ-শিক্ষা-কর্মসংস্থানের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নারী-পুরুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’

সংগঠনের সভাপতি বিউটি রানীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, আওয়ামী সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান দূর্জয় প্রমুখ।

 

সফল উদ্যোক্তারা যে ৫ নীতি অবশ্যই মেনে চলেন

চাকরী নয়, ব্যবসা করব- কঠিন একটি সিদ্ধান্ত! কিন্তু অসম্ভব কিছু নয়। কিছু সাধারণ মাইন্ডসেট আজকের সফল ব্যবসায়ীদের সফল করেছে। তারা যেমন নিজেদের গাইড করেছেন নিজেরাই, আবার কিছু নীতি মেনে চলেছেন সবসময়। এই নীতিগুলো তাদের শুধু ব্যবসায়ী হিসেবে সফল করে নি, বরং করেছে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। আসুন সাধারণ কিন্তু কার্যকরি নীতিগুলোর কথা জেনে নিই, যা আপনাকেও সাফল্য এনে দেবে নিশ্চিতরূপে।
 
প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন
সফল উদ্যোক্তারা সবসময় কথা দিয়ে কথা রাখেন। তারা গ্রাহকদের পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কখনো বিলম্ব করেন না। যেমন পণ্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, তেমন পণ্যই দেন। কোন সমস্যা হলে স্বীকার করে নেন। পণ্য যদি সঠিক সময়ে দিতে না পারেন তাহলে আগে থেকে দায়িত্ব নিয়ে জানান। শুধু গ্রাহকদের সাথেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন না তারা। যাদের কাছ থেকে কাঁচামাল ক্রয় করেন, অধীনস্ত কর্মচারী সবার সাথেই তারা এক কথা রক্ষা করেন। যার ফলে সার্বিক সহায়তা পান এবং সবাই মিলেই দায়িত্ব নেন তার সফলতার!
 
মানের সাথে আপোষ করেন না
সফল উদ্যোক্তারা প্রয়োজনে কম মুনাফা করেন, কিন্তু মানের সাথে কোন আপোষ করেন না। তারা যে করেই হোক, তাদের পণ্যকে সর্বদা বাজারের ১ নং পণ্য রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তারা জানেন, মান দিয়েই একসময় দাঁড়ায় ব্র্যান্ড, তৈরি হয় গুডউইল। আপনার প্রতিষ্ঠানের নামটি যখন একটি ভিন্ন আঙ্গিকের ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠবে তখন বাজারে আপনার অতুলনীয় আধিপত্য স্থাপিত হবে।
সুসম্পর্ক বজায় রাখেন
সফল উদ্যোক্তারা সব সময় সুসপর্ক বজায় রাখেন। বাজারে তাদের প্রতিযোগী যারাই থাকুন না কেন আর তারা তাঁর প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এগিয়ে যাওয়ার যত চেষ্টাই করুন না কেন একজন বিচক্ষণ উদ্যোক্তা কখনো সরাসরি তর্কে যান না। ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন উদ্যোক্তা এগিয়ে যেতে চান পরিশ্রম, মেধা দিয়ে। আপনার পণ্যের মান যদি ভাল হয় এবং তা যদি ক্রেতার চাহিদা মেটাতে পারে তাহলে অবশ্যই আপনি সফল হবেন। প্রতিযোগীদের সাথে লড়াই আপনার ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্নের উদ্রেক করবে। হ্যাঁ, বিশেষ প্রয়োজনে তারাও লড়াই করেন, তবে তা কৌশলে।
 
সঠিক তথ্য দেন
সফল উদ্যোক্তারা সফল হয়েছেন, কারণ তারা সৎ। অসৎ ব্যবসায়ী হয়ত দ্রুত অনেক অর্থ উপার্জন করেন, কিন্তু এক সময় তারা বাজারে টিকে থাকতে পারেন না। টিকে থাকতে হলে চাই সততা, দৃঢ়তা, একনিষ্ঠতা এবং ব্যবসায়িক কৌশল। তাই তারা নিজেদের পণ্য সম্পর্কে অতিরঞ্জিত তথ্য দেন না। বরং সঠিক তথ্য দেন।
 
গ্রাহকের স্বার্থ বিচার করেন
সফল ব্যবসায়ীরা প্রকৃতপক্ষে ক্রেতা বান্ধব হয়ে থাকেন। তারা ক্রেতার সুবিধা অনুযায়ী পণ্য তৈরি করেন। তাদের প্রথম বিবেচনা থাকে, ক্রেতা বা গ্রাহক কেমন পেলে আরও উপকৃত হবেন! এরপর সেই চাহিদাকে রূপায়ণ করেন বাস্তবে। এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যারা এমন পণ্য বাজারে এনেছেন যা আগে কখনোই ছিল না। তৈরি কোন বাজার নেই সেই পণ্যের। কিন্তু ক্রেতার প্রয়োজন বিবেচনা করে তারা নিজেরাই নতুন পণ্য উদ্ভাবন করেছেন। এভাবেই তারা হয়েছেন অনন্য, জনপ্রিয়।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

প্রাণ জুড়াতে এক গ্লাস আনারসের শরবত

গরমে প্রশান্তি মিলতে এক টুকরো আনারসের জুড়ি নেই। কাসুন্দি বলুন আর বিট লবণের গুড়ায় মাখা আনারসের ভক্ত ছোট বড় সবাই। তবে মজাদার এই ফলটির স্বাদে ভিন্নতার সংযোজনে খাওয়া যেতে পারে শরবত। স্বাদে ভরা ঠাণ্ডা একগ্লাস আনারস শরবত ইফতারিতে প্রাণ জুড়িয়ে দেবে। এক নজরে দেখে নিতে পারেন আনারস শরবতের সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

আনারস ২০০ গ্রাম, বিট লবণ সামান্য, চিনি, বরফ কুচি, আধা চামচ পুদিনা পাতা।

যেভাবে করবেন

আনারস পরিষ্কার করে কেটে নিন। এবার ব্লেন্ডারে একগ্লাস পানি, আনারস, বিট লবণ, স্বাদমতো চিনি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এবার তা ছেকে ২০ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। ব্যাস আনারস শরবত রেডি। পছন্দের শরবত গ্লাসে শরবত ঢেলে বরফ কুচি আর পুদিনা পাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করলেই হল।

 

ঈদের আগে বসার ঘরের সাজ

উৎসব এলে শুধু নিজেকে নয়, সাজানো চাই ঘরদোরও। সাজানো গোছানো ঘরটি মনকে উৎফুল্ল করতে দারুণ পারদর্শী। বাড়িতে আগত অতিথির চোখেও স্বস্তি জাগায় ঘরের সাজ। কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনে সব সময় ঘর সাজিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। তবে উৎসবের এই দিনে ছাড় দেয়া চলে না মোটেও।

ঘরের সাজে কেউ নতুন আসবাব কিনে থাকেন, কেউ পর্দা, কেউবা নতুন কার্পেট কেনেন। কিন্তু আর্থিক সংকট থাকায় তাও আবার অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। তারা পুরনো জিনিস নতুনভাবে বিন্যাস করে ঈদের দিনে বদলে নেন ঘরের সাজ। বাড়তি কোনো খরচ ছাড়া আপনার ঘরের সাজও বদলাতে পারেন সহজে।

ঈদে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে মিলনের সুযোগ আসে। তাদের নিয়ে আয়েসি ভঙ্গিতে গল্প শুরু হতে পারে বসার ঘরে।

প্রথমে ঘরে ঝুলে থাকা ফ্যানের ব্লেডটি পরিষ্কার করে নিন। দেয়াল বেশি ময়লা হলে পেইন্ট করিয়ে নিতে পারেন। ময়লা পড়ে দেয়ালে টাঙানো ছবিগুলো মুছে আবার টাঙিয়ে দিতে পারেন। কার্পেট থাকলে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন যতটা সম্ভব। নইলে কড়া রোদে দিয়ে ব্রাশ করে আবার বিছিয়ে দিন। আসবাব রঙ করানো সম্ভব না হলে একটা পাতলা কাপড় একটু কেরোসিন ভিজিয়ে আসবারের ওপর ঘষে নিন। দেখুন আসবাব কেমন ঝকঝকে হয়ে উঠেছে। এবার আসবাবগুলো একটু রদবদল করে সেট করুন, এতে ঘরে নতুনত্ব আসবে।

ঘরকে সুন্দর করে তোলার জন্য অন্যতম উপাদান সুন্দর পর্দা। কিন্তু পর্দা কেনার বাড়তি বাজেট নেই। তাই পুরনো পর্দা ধুয়ে ইস্ত্রি করে টাঙিয়ে দিন। আর যদি বাজেটে কুলায় তাহলে ফেব্রিক পেইন্ট অথবা ব্রাশ প্রিন্ট পর্দায় ফ্যাশন চলছে। এতে ঘরের উজ্জ্বলতা বাড়ে। এছাড়া এক রঙের নতুন পর্দা টাঙিয়ে ঘরের নতুনত্ব আনতে পারেন। তবে পর্দা সব সময় ঘরের আনুষঙ্গিক দ্রব্যসামগ্রীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করলে ভালো লাগে।

ফুল হচ্ছে ঘরের সাজের অন্যান্য উপাদানের মধ্যে অন্যতম। একমাত্র ফুলের সাজেই আপনার গৃহকোণ ঈদের খুশির জোয়ারে হয়ে উঠবে শিল্প নৈপুণ্যে অনন্য।

ঈদের দিন খাবার দাবারে থাকে স্পেশাল আয়োজন। তাই খাবার টেবিলটিও সাজাতে হবে শৈল্পিকভাবে। খাবার টেবিল সাজাতে ব্যবহার করতে পারেন শুকনো ফুল। শুকনো স্ট্র ফুল, গোলাপ রাখুন ফুলদানিতে। ফুলদানি রাখুন একটি সুদৃশ্য সিরামিকের থালার ওপর। থালার ওপর ছড়িয়ে রাখা মোমের আঙ্গুরের পাশে উল্টে রাখুন একটি ঝিনুক। ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে তাজা গাছের তুলনা হয় না। ঘরে নাটকীয় পরিবর্তন আনতেও তাজা গাছ সেরা। শুধু দরকার পছন্দমতো সাজিয়ে নেয়া।

 

সেরা শিক্ষক, ভালো বন্ধু তিনি

পড়াশোনা বিষয়টি বোঝার পর থেকে ইচ্ছা ছিল মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক হওয়ার। শিক্ষক তিনি হয়েছেন, তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এতে কোনো খেদ নেই তাসনীম চৌধুরীর। তাঁর কথা—‘বরং ভালোই হয়েছে। একজন মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর হচ্ছে তাঁর শৈশব। মনোবিকাশের প্রাথমিক স্তর এটি। এই সময়ে শিশুদের কাছে থাকার সুযোগ পাওয়া গেছে।’
তাসনীম চৌধুরী মৌলভীবাজার সদর উপজেলার লামা কাগাবলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ২০১৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষায় জাতীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা নির্বাচিত হয়েছেন। ৪ ফেব্রুয়ারি (২০১৬) জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে ঢাকার ওসমানী মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেছেন।
২০০৩ সালে তিনি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খুশহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। যদিও তাঁর কথায়, এই পেশায় বেশির ভাগ আসেন চাকরি করার মানসিকতা নিয়ে। কিন্তু শিক্ষকতা কোনো চাকরি নয়। সেবা এবং পেশা হিসেবে এটি মহান।
তাসনীম চৌধুরী বলেন, ‘আমি শিশুদের সঙ্গে শিশু হয়ে কাজ করি। তাদের মতো, তাদের সরলতার কাছাকাছি গিয়ে তাদের বন্ধু হলেই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।’ অনেক শিশুই অপুষ্টিতে ভোগে। তাই তিনি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত ‘খাদ্য, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য’ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে একটি চার্ট তৈরি করেছেন। পুষ্টি নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় জানার চেষ্টা করেন। সমস্যা-সম্ভাবনার জায়গাটুকু বুঝে সেভাবে পরামর্শ দেন। তাতে সুফল পাওয়া যায়। পিছিয়ে পড়া, প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেন। পড়ালেখার বাইরে কাজের একটি নমুনা দিয়ে বলেন, তায়রা আক্তার নামে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী শুধু লবণপানি দিয়ে ভাত খেত। ঝাল খেতে পারত না। এতে সে শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছিল। তার সঙ্গে মিশে ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে তার খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেছেন। এখন সে সবকিছু খেতে পারে।
কাগাবলা গ্রামের অভিভাবক যমুনা আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়ে এমেলি আক্তার আইএ পাস করেছে। এই মাস্টারনির সহযোগিতা না থাকলে এতদূর পড়া তার সম্ভব হতো না।’
মিলনপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সাগর দাস জানিয়েছে, সে ও তার এক বোন পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছে ম্যাডামের (তাসনীম চৌধুরী) কারণে। ম্যাডাম তাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতেন। সব বিষয়ে উৎসাহ দিতেন।
বাক্প্রতিবন্ধী পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী রিজওয়ানা আক্তারসহ অনেক ছাত্রছাত্রী আছে। যারা আলাদা মনোযোগ দাবি করে। তাদের ‘কেস স্টাডি’ তৈরি করেছেন। যা অনুসরণ করে এই শিশুদের প্রতি যত্ন ও শিক্ষা দেওয়া হয়। এর বাইরেও তিনি গান গেয়ে থাকেন, ছবি আঁকেন, প্রবন্ধ-নিবন্ধসহ বিভিন্ন ধরনের লেখালেখি করেন। সহজলভ্য জিনিস দিয়ে শিক্ষা উপকরণ তৈরি করে পাঠদান করেন। অর্ণবে অনন্তকাল নামে তাঁর একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। স্কুলে দেয়ালিকা প্রকাশ করেন।
দুই মেয়ে ও এক ছেলের মা তিনি। এদের সামলানোর দায়িত্ব পালন করছেন তাঁর মা বেগম নীহারিকা। মায়ের সহযোগিতা না থাকলে তাঁর পক্ষে স্কুল ও শিক্ষার্থীদের প্রতি যত্নশীল হওয়া সম্ভব হতো না। কাজের ক্ষেত্রে স্বামী শেখ বুরহান উদ্দিনেরও সমর্থন আছে। তিনিও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
তাঁর শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করছে। প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে তাঁর কিছু চিন্তাভাবনাও আছে। প্রাথমিক শিক্ষাকে আরও কার্যকর ও মানসম্মত করতে মনোবিজ্ঞানী দিয়ে শিক্ষকদের কাউন্সিলিং করা, পাঠ্যপুস্তকে নৈতিকতা-মানবিকতা ও সম্প্রীতিবিষয়ক উপভোগ্য রচনা সংযুক্ত করা, শিশুদের সৃজনশীলতা বাড়াতে শিশু একাডেমির শিশু পত্রিকা প্রতি বিদ্যালয়ে পাঠানো, পাঠাগার গড়ে তোলা, দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ, খাদ্যপুষ্টিবিষয়ক হালনাগাদ তথ্য সরবরাহ ও অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো, বাস্তবসম্মত ও কার্যকর মনিটরিং করা, শিক্ষার্থীদের একই পোশাক পরা ইত্যাদির ওপর জোর দিতে চান তিনি।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মারুফ আহমদ বলেন, ‘উপজেলার একটি প্রত্যন্ত স্কুলের শিক্ষক হিসেবে তাঁকে নির্বাচন করা হয়েছিল। জাতীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ হওয়ার মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত হয়েছে, আমাদের নির্বাচন সঠিক ছিল। তাঁর অনেক এক্সট্রা কারিকুলাম আছে। তিনি গান পরিবেশন, ছবি আঁকা ও লেখালেখি করেন। প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে ভাবেন। তাঁর এ সাফল্যে আমরা খুশি। তিনি জেলায় একটি মডেল। এতে অন্যরাও উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত হবেন।’

 

৫শ নারীর ভাগ্য বদলানো শ্রেষ্ঠ জয়িতার গল্প

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। এ প্রবাদ বাক্যটি নিজের জীবনে যেমন বাস্তবায়ন করেছেন তেমনি অন্যদের ভাগ্যের চাকাও বদলানের চেষ্টা করে যাচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরবংশী গ্রামের সফল মেয়ে আয়েশা।

তিনি মৃত আব্দুল হালিমের মেয়ে। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তিনি আজ সফল উদ্যোক্তা। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা নির্বাচিত হয়েছেন। তার সফলতায় নকশীতে লক্ষ্মীপুর জেলা এখন দেশের অন্যতম ব্যান্ডিং। শুধু ব্যান্ডিংই নয়, সেইসঙ্গে তিনি সৃষ্টি করেছেন ৫শ নারীর কর্মসংস্থান। সমাজের বঞ্চিত, উপেক্ষিত ও এলাকার দরিদ্র নারীদের নিয়ে নিজ বাড়িতে শুরু করেন ছোট একটি বুটিক কারখানা।

বর্তমানে রায়পুর উপজেলার চরবংশী এলাকার বিভিন্ন বাড়ি, চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার কাটাখালী ও সদর উপজেলার কামান খোলা এলাকার বাবুর বাড়িতে মিলে রয়েছে শতাধিক বুটিক ফ্রেম। এ সব ফ্রেম ভাড়া ঘরে ৩শ নারীদের নিয়ে গড়ে তোলেন বুটিক কারখানা। নিজ গ্রামেও এই কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে আরো প্রায় ২শ নারী। এসব নারী সদস্যদের হাতে কাজ করা বুটিক শাড়ি যাচ্ছে ঢাকা শহরের বসুন্ধরা মার্কেট, নিউ-মার্কেট ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কামানখোলার বাবুর বাড়িতে ঘিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে চলছে শাড়িতে বুটিকের কাজ। সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীরা ও লেখাপড়ার পাশাপাশি স্কুল পড়ুয়া মেয়েরা বুটিকের কাজ করে বাড়তি টাকা রোজগার করছে। আয়েশার নিজের এ উদ্যোগে ৫ শতাধিক নারী সাবলম্বী হতে চলছে।

সোমাবর কথা হয় ওই কারখানার সুপারভাইজার রোজিনার সঙ্গে। তিনি জানান, গ্রামীণ জনপদ ও ঘরোয়া পরিবেশে এসব নারীরা শাড়ি বুনিয়ে সাবলম্বী হতে চলছে। একটি শাড়িতে বুটিকের কাজ করতে ৫ জন নারী দরকার হয়। কাজ শেষ করতে তাদের এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। একটি শাড়ি বুনতে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। বিক্রি হয় ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। তবে বর্তমান বাজারে মেনট্রেসের দাম বৃদ্ধি পাওয়া আগের তুলনায় লাভ কম হচ্ছে। এখানকার কাজ করা এসব শাড়ি ঢাকা শহরের বিভিন্ন মার্কেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করে দরিদ্র নারীদের অন্ন যোগানোর পাশাপাশি দেশীয় অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

দুপুর গড়িয়ে ঠিক সাড়ে ৩টা বাজে। পরিচয় মিলে বুটিক কারখানার মূল উদ্যোক্তা আয়েশা বেগমের সঙ্গে। তার সঙ্গে আলাপকালে তিনি তুলে ধরেন তার জীবন কাহিনি।

আয়েশা বলেন, ‘১৯৮৮ সালের ১ জানুয়ারি উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের আব্দুল হালিমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। দরিদ্র দিনমজুর পরিবারের জন্ম নেয়া আয়েশা ৭ বোনের মধ্যে প্রথম। অভাবে সংসারে একের পর এক বোন হলে বাবা-মা তাকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে ঠিক তখনই তার বাল্যবিয়ে হয়ে যায় একই এলাকার কৃষক মোস্তফার সঙ্গে। বিয়ের কারণেই তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। বিয়ের ৪ বছরের মাথায় তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।

এতে আয়েশা আরো চিন্তিত হয়ে পড়ে। নিজের শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও শিক্ষিত হতে না পেরে ছেলেকে উচ্চ শিক্ষিত করার স্বপ্ন বুনেন। কিন্তু দিনমজুরি স্বামীর উপার্জন দিয়ে সংসার ও ছেলে লেখাপড়া চালানো প্রায় অসম্ভ হয়ে পড়ে। ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য সে নিজেই এলাকার একটি বুটিকের দোকানে মাসে ১৫শ টাকা বেতনে চাকরি নেয়। এর মাঝে আয়েশা তার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণের জন্য ‘বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের’ মাধ্যমিক শাখার ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া শুরু করেন।

এর মাঝে কিছু কাজ শেখা হলো আয়েশার। পরে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে আয়েশা নিজের ঘরেই একটি ছোট বুটিকের কারখানা গড়ে তুলেন। এ আয় দিয়ে ছেলের লেখাপড়া ও সংসার চলতে শুরু হয়। এতেই সংসারের কিছুটা অভাব দূর হয়। এভাবেই ৬ বছর পার হলে আয়েশা ‘বাংলাদেশ উম্মক্ত বিশ্ববিদ্যাল’ থেকে বিএ পাসও করেন। পরে সমাজের বঞ্চিত, উপেক্ষিত ও এলাকার দরিদ্র নারীদের স্বাবলম্বী করার জন্য নিজের ছোট বুটিকের আয় দিয়ে ১৩টি ফ্রেম দিয়ে গ্রামে গড়ে তুলেন একটি বড় কারখানা। ঘুরে যায় তার জীবনের গতি।

ভাবতে থাকে সমাজের পিছিয়েপড়া নারীদের কথা। পরে এসব নারীসহ আশপাশের গ্রামের সমাজের বঞ্চিত, উপেক্ষিত ও এলাকার দরিদ্র নারীদের নিয়ে চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার কাটাখালী এবং চলতি বছরের ১ জুলাই সদর উপজেলার কামানখোলা এলাকার বাবুর বাড়িতে তিনটি কারখানা গড়ে তোলেন। যার মধ্যে শতাধিক ফ্রেমে কাজ করছে ৩ শতাধিক নারী এবং চরবংশী নিজ গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে এই বুটিকের কাজ করে সাবলম্বী হচ্ছে আরো ২শ নারী।

আয়েশা ২০১৪ সালে জেলায় শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা নির্বাচিত হন। ওই বছরই চট্টগ্রাম বিভাগে ৫০টি উপজেলার ২৫০ নারীকে পিছনে ফেলে অর্থনীতিতে সাফল্য জনক ভূমিকার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা লাভ করে আয়েশা নির্বাচিত হন শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা হিসেবে।

আয়েশা বলেন, ‘আমার এ সম্মাননা সমাজের পিছিয়েপড়া নারীদের জন্য উৎসর্গ করেছি। তবে আমার বুটিক কারখানায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নারীর কর্মসংস্থান করাসহ উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পেত। শিল্পকেন্দ্রিক সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণে ভাগ্য বদল হতে পারে এ অঞ্চলের সমাজের পিছিয়েপড়া নারীদের। সরকারি বা কোনো দাতা সংস্থার সহযোগিতা পেলে এ পেশায় আরো বহু নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশী প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।’

 

রোজা তো প্রায় শেষ, এখন করণীয় কী?

কুরআনুল কারিম আরও বলছে, তারা কি আল্লাহর দিকে তাওবা করে ফিরে আসবে না এবং তাদের গুনাহগুলোর জন্য ক্ষমা চাইবে না? অথচ আল্লাহ তো ক্ষমাশীল এবং মেহেরবান। (সুরা মায়েদা :৭৪)

ইমাম গাজালি মিনহাজুল আবেদিন গ্রন্থে বলেন, তওবা হলো, পাপের জন্য অনুশোচনার মাধ্যমে সৃষ্ট মনের বিশেষ ভাব-তরঙ্গ। সেই অনুশোচনার ভাব হৃদয়ে ঢেউ খেললে মানুষ পবিত্র হয়। পাপ থেকে মুক্তি পায়। মন পরিচ্ছন্ন হয়। তওবার শুরুতে করণীয় হলো- হৃদয়ে পাপের প্রতি চরম ঘৃণা সৃষ্টি। পরকালের আজাব-গজবের ভয়ে আল্লাহর স্মরণ ও নিজের অক্ষমতার জন্য অনুশোচনা। তখন তওবা কবুলের সম্ভাবনা আছে। তওবার গুরুত্ব সম্পর্কে কোরআনে বর্ণিত- হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা কর, তওবায়ে নাসুহা বা বিশুদ্ধ তওবা। আল্লাহ পাপ মোচন করে দেবেন। ( সুরা তাহরীম : আয়াত ৮)

কুরআন আরও বলছে, যারা তাওবা করে, ঈমান আনয়ন করে এবং ভালো কাজ করে আল্লাহ তায়ালা তাদের খারাপ কাজগুলোকে ভালো কাজ দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু আর যারা তওবা করে এবং নেক কাজ করে আল্লাহর প্রতি তাদের তওবাই সত্যিকারের তওবা। (সুরা ফুরকান : ৭০-৭১)

কুরআনুল কারিম আরও বলছে, তারা কি আল্লাহর দিকে তাওবা করে ফিরে আসবে না এবং তাদের গুনাহগুলোর জন্য ক্ষমা চাইবে না? অথচ আল্লাহ তো ক্ষমাশীল এবং মেহেরবান। (সুরা মায়েদা :৭৪)

আল্লাহর দেওয়া ক্ষমার প্রতিটি মুহূর্তকে তওবা-ইসতেগফারে কাজে লাগানো। পাপের গ্লানিতে অনুতপ্ত হওয়া। বরফ গলা জীবনে তওবাই আশার আলো। এক জীবনের পাপ মাফ পাওয়ার একমাত্র অবলম্বন তওবা। হজরত আনাস রা. বলেন, আমি রাসুল সা. কে বলতে শুনেছি। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে বনি আদম, তুমি যতক্ষণ আমাকে ডাকবে ও আমার প্রতি প্রত্যাশা করবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, তোমার থেকে যত পাপই প্রকাশ পাক, এতে আমি কোনো পরোয়া করি না। হে বনি আদম, তোমার গুনাহ যদি ঊর্ধ্বগগন পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে আমি সামান্য পরোয়া করি না। হে বনি আদম, তুমি যদি আমার কাছে দুনিয়াভরা গুনাহ নিয়ে আস, অতঃপর শিরকে লিপ্ত না হয়ে আমার সঙ্গে সাক্ষাত কর, আমি তোমার নিকট জমিন ভরা ক্ষমা নিয়ে উপস্থিত হব। (তিরমিজি : ৩৬০৮)

রাসুল সা. বলেছেন, দুর্ভাগ্য ওই ব্যক্তির, যে রোজা পেয়েও নিজের পাপ মোচন করাতে পারল না। (তিরমিজি শরিফ)
বন্ধুরা, নীরবে ভাবুন। আমরা আজ রোজা পেয়েছি। আগামী দিন পাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই। গত বছর একসঙ্গে রোজা রেখেছি, তারাবি পড়েছি। এ বছর তাদের অনেকেই জীবিত নেই। আমাদের জীবনের মূল্যবান সময় বরফের মতো গলে গলে শেষ হয়ে যাচ্ছে। জীবনের অন্যায় অপরাধের ক্ষমার জন্যই এ মহান শক্তির কাছে যাব, যিনি বান্দাকে ক্ষমা করেই আনন্দ পান। যার প্রশস্ত দরবার বান্দার প্রার্থনা কবুল করে। পাপমুক্তির জন্য তওবার নিখুঁত পদ্ধতি সম্পর্কে ইমাম গাজালি এভাবে বলেছেন- তওবার আগে গোসল করবে, গায়ের জামাকাপড় পরিবর্তন করবে। নিভৃত স্থানে চার রাকাত নফল নামাজ পড়বে। সিজদায় পড়ে কপাল মাটিতে লুটিয়ে দেবে। পাপের অনুশোচনায় কাঁদবে।

মনকে প্রবোধ দেবে, আল্লাহর দরবারে মুক্তির পথ খোলা আছে। যে ব্যক্তি এই দুয়াটি পড়বে আল্লাহ তায়ালা তার সব গুনাহ মাফ করে দিবেন যদিও তার জন্য জাহান্নাম নিশ্চিত হয়ে থাকে। (তিরমিজি ৩৬৪৮)।

মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব
সিনিয়র বিভাগীয় প্রধান, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি

 

গরমে ঈদের সাজে স্নিগ্ধতা

ঈদের দিন নতুন পোশাক পরবো আর মনের মতো সাজগোজ থাকবে না তা কি হয়? কিন্তু এই সাজগোজের চরম শত্রু হল গরম। সাজ শেষ করার একটু পরেই ঘেমে খসে পড়ে শখের মেকআপ। তাই এবারের ঈদ বর্ষা আর গরমের মধ্যে হওয়ায় শখের সাজ-পোশাক নিয়ে একটু চিন্তায় পড়তেই হচ্ছে। সব চিন্তাকে দূরে ঠেলে গরমেও সাজের স্নিগ্ধতা বজায় রাখার কিছু কৌশল শিখে নিন এখনই।

– ভারি ফাউন্ডেশন ও বেশি ক্রিম ব্যবহার করা যাবে না। বেশি ক্রিম বা ফাউন্ডেশনে ত্বক ঘামলে তা গলে পড়বে, থকথকে দেখাবে। হালকা ফাউন্ডেশনের ওপর এসপিএফসহ ম্যাট পাউডার ব্যবহার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে পারেন।

– গরমে লিপ গ্লসের চেয়ে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করাই ভালো। গোলাপি লিপস্টিক গ্রীষ্মকালে বেশ মানানসই।

– গরমে চোখের মেকাআপ অত্যন্ত জটিল। নিউট্রাল টোনের স্টিক, পানিনিরোধী মাসকারা ও লাইনার ব্যবহার করতে পারেন। হালকা করে আইশ্যাডো দিয়ে রাঙিয়ে নিতে পারেন চোখের পাতা। গাঢ় আইলাইনার এই গ্রীষ্মের সন্ধ্যায় অসাধারণ লাগবে। তবে ডিপ আইশ্যাডো ইনডোর কোনো প্রোগ্রামেই মানানসই হতে পারে।

– পায়ের নখে উজ্জ্বল গাঢ় রঙের নেইল পলিশ লাগাতে পারেন। বর্তমান ট্রেন্ডে গাঢ় উজ্জ্বল রঙের লেইল পলিসের প্রচলন অনেক বেশি। বিশেষ করে পায়ের নখে তো বটেই। আপনি যদি খোলা জায়গায় হাঁটতে চান বা চপ্পল পায়ে হাঁটতে চান তাহলে অবশ্যই পোশাকের ভেতর থেকে গাঢ় একটি রঙ বাছাই করুন। এবার সেই রঙের নেইলপলিস লাগিয়ে পাকে দিতে পারেন জাঁকজমক একটি লুক। হাতের নখে দিতে পারেন নানা রকম আর্ট। হাতের পাঁচটি আঙুলে দুটি বা তিনটি রঙের নেইলপলিসের এখন দারুণ মিশ্রণ চলছে। সেভাবে সাজিয়ে নিতে পারেন আপনিও।

– সাজের সঙ্গে মানানসই টুকিটাকি অনুষঙ্গ খারাপ লাগবে না, বরং সাজকে পরিপূর্ণ করবে। আবার গরমে অস্বস্তিও বাড়াবে না।

 

বউকে নায়িকা বানাবেন তাসকিন!

ক্রিকেট মাঠের নক্ষত্ররা কখনো জ্বলে ওঠেন, কখনো থাকেন ঘোর আঁধারে। তবে সবকিছুর পরও তারা লাখো কোটি দর্শকের প্রিয় মুখ, প্রিয় মানুষ, ভালোবাসার মানুষ। তেমনই তিনজন ভালো লাগার ক্রিকেটার নিয়ে মাছরাঙা টেলিভিশন ঈদ উপলক্ষে আয়োজন করেছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘ক্রিকেট ক্রিকেট’।

ব্যাটসম্যন, পেসার এবং স্পিনার তিনজন সাব্বির, তাসকিন এবং আরাফাত সানীকে নিয়ে এ অনুষ্ঠানের ধারণ কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে।

মজার আড্ডায় সাব্বির জানিয়েছেন সুযোগ পেলে ক্যটরিনা কাইফ এবং কারিনা কাপুরের বিপরীতে অভিনয় করতে চান। তাসকিনের নিজের নায়িকা হিসেবে পছন্দ জ্যকলিন ফার্নান্দেজ আর আরাফাত সানীর পছন্দ মাধুরী দীক্ষিত ও বিদ্যা বালান। তিন তারকাই নতুন করে ঝলসে ওঠার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

তাসকিন বলেন, এমন একজন ক্রিকেটার হতে চাই যাতে করে আমাকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হোক। ১০-২০ বছর পর সে চলচ্চিত্রে আমি নিজেও অভিনয় করবো, নায়িকা হিসেবে থাকবেন আমার হবু স্ত্রী।

মজার এই আড্ডার সঞ্চালক অভিনেত্রী-মডেল ঈশিকা খান। তিন ক্রিকেটারের এমন গোপন খবরগুলো বের করে আনলেন তিনিই।

রুম্মান রশীদ খানের গ্রন্থনা, এস এম হুমায়ূন কবীরের প্রযোজনায় ‘ক্রিকেট ক্রিকেট’ প্রচারিত হবে ঈদের ৪র্থ দিন, সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে মাছরাঙা টেলিভিশনে।

 

চটপট বারবিকিউ চিকেন তৈরি হবে আপনার রান্নাঘরেই

রোজায় খাওয়া দাওয়া হয়ে পড়ে অনেকটাই বাঁধাধরা। ইফতারে ভাজাপোড়া, সন্ধ্যারাতে এবং সেহেরিতে ভাত। এই গৎবাধা রুটিন থেকে বের হয় অনেকেরই ইচ্ছে করে মুখরোচক কিছু খাওয়ার। বাইরে খাওয়ার সুযোগ না পেলে নিজেই ঘরে তৈরি করে নিন বারবিকিউ চিকেন। চলুন, দেখে নিই রেসিপিটি।
উপকরণ
– ১ টেবিল চামচ বারবিকিউ সস
– ৪টা বোনলেস চিকেন ব্রেস্ট
– ১টা মাঝারি গাজর, তেকোনা টুকরো করে কেটে সেদ্ধ করে রাখা
– অর্ধেকটা সবুজ জুকিনি, তেকোনা টুকরো করে কাটা
– অর্ধেকটা হলুদ স্কোয়াশ, তেকোনা টুকরো করে কাটা
– লবণ স্বাদমতো
– গোলমরিচের গুঁড়ো স্বাদমতো
– ১ টেবিল চামচ ওরচেস্টারশায়ার সস
– ৪ চা চামচ অলিভ অয়েল
– ৩/৪ কোয়া রসুন, ক্রাশ করা
– ৪/৬ টা পিঁয়াজ, অর্ধেক করা
– ১ চা চামচ শুকনো পার্সলি
– ১ চা চামচ ময়দা
– গার্নিশের জন্য ধনেপাতা, পুদিনাপাতা
প্রণালী
১) চিকেন ব্রেস্ট একটি পাত্রে নিন। এতে লবণ, গোলমরিচের গুঁড়ো দিন। ওরচেস্টারশায়ার সস, বারবিকিউ সস, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল দিন এবং ভালো করে মিশিয়ে নিন। ম্যারিনেট হতে দিন।
২) ২ চা চামচ অলিভ অয়েল একটি নন-স্টিক প্যানে গরম করে নিন। এতে রসুন দিয়ে সোনালি করে সাঁতলে নিন। এরপর পিঁয়াজ দিয়ে সোনালি করে ভেজে তুলুন।
৩) এতে গাজর, জুকিনি এবং স্কোয়াশ দিন। ভালো করে নেড়েচেড়ে নিন। এতে দিন লবণ, গোলমরিচ গুঁড়ো এবং শুকনো পার্সলি। নেড়েচেড়ে মাখিয়ে রান্না হতে দিন এক মিনিট। টস করে নামিয়ে নিন।
৪) ওই প্যানেই আবার বাকি অলিভ অয়েল গরম করে নিন। ম্যারিনেট হওয়া চিকেন ব্রেস্ট এতে দিয়ে দিন। দুই দিকে সমানভাবে সোনালি করে রান্না করে নিন। ঢাকনা চাপা দিয়ে রান্না করুন যাতে পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে আসে। প্লেটে নামিয়ে নিন।
৫) সস তৈরির জন্য আধা কাপ পানি গরম করে নিন ওই প্যানেই। এতে ময়দা দিয়ে হুইস্ক করে নিন। মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে লবণ ও গোলমরিচ গুঁড়ো দিয়ে দিন। ছেঁকে নামিয়ে রাখুন একটি বাটিতে।
চিকেন ব্রেস্ট স্লাইস করে প্লেটে নামিয়ে নিন। এর পাশে ভেজিটেবল রাখুন, চিকেনের ওপরে কিছু সস ছিটিয়ে দিন। ধনেপাতা-পুদিনাপাতা দিয়ে সার্ভ করুন গরম গরম।

 

কান্নার কারণে শিশুকে হত্যা করলেন মা

সন্তানের জন্য সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা কাকে সহ্য করতে হয়- এ প্রশ্নের সোজাসাপ্টা জবাব হচ্ছে মা। জন্মের পর শিশুসন্তানের জন্য রাতের পর রাত জেগে থাকতে হয় মাকে। অথচ সেই আদরের সন্তানকে নিজেই হত্যা করলেন এক মা। তাও স্রেফ কান্নার কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের চার্লোট শহরের উউটেনবার্গে এ ঘটনা ঘটেছে।

গত ২০ মে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ফুটফুটে শিশুর মা হন ২২ বছরের আইশিয়া মারি পাচেকো। তিনি তার ছেলের নাম রাখেন টেইলর। সন্তান জন্মের পর ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে মারি লিখেছিলেন, ‘আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। ওর মা হয়ে আমি গর্বিত।’

প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন, শিশুটিকে অনেক ভালোবাসতেন মারি। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে শেরিফের কার্যালয়ে জরুরি সাহায্য চেয়ে ৯১১ নাম্বারে ফোন করেন মারি। পুলিশ গিয়ে দেখতে পায় শিশুটির মুখ ও নাক অস্বাভাবিক লাল। সঙ্গে থাকা চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

তবে পুলিশের ধারণা, মঙ্গলবার নয়, সোমবার রাতেই মারা গেছে শিশুটি। সম্ভবত তার মা-ই তাকে হত্যা করেছে।

পুলিশকে মারি বলেছেন, শিশুটি খুব কান্নাকাটি করছিল। তিনি কিছুতেই তাকে শান্ত করতে পারছিলেন না। এ জন্য তিনি তাকে নিজের বুকের সঙ্গে শক্ত করে জাপটে ধরেছিলেন। এতেই শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায় সে।

স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে মারি বলেছেন,‘আমি দুঃখিত। কিন্তু আমি তাকে খুন করতে চাইনি। আমি কেবল তাকে শান্ত করতে চেয়েছিলাম।’

এ ঘটনায় মারিকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগও গঠন করা হয়েছে।

 

মেয়েদের ‘মেয়ে’ বলা যাবে না

যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি স্কুলগুলোতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ‘মেয়েরা’, ‘তরুণী’ ও ‘কিশোরীরা’ না বলার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীরা যাতে বিব্রত না হয় সেজন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন গার্লস স্কুলস অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি শিক্ষকদের এ সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়েছে। সংগঠনটি সবার জন্য একই টয়লেট নির্মাণেরও পরামর্শ দিয়েছে ।

সংগঠনটি শিক্ষকদের লিঙ্গ সমতা বোঝায় এমন শব্দ ব্যবহার করতে বলেছে। এ ক্ষেত্রে ‘মেয়েরা’, ‘তরুণী’ ও ‘কিশোরীরা’এসব শব্দের পরিবর্তে ‘শিক্ষার্থীরা’ শব্দটি ব্যবহার করতে বলেছে।

গার্লস স্কুলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও অক্সফোর্ডের হেডিংটন স্কুলের প্রধানশিক্ষক ক্যারোলিন জর্ডান বলেন, সমাবেশ শেষে ‘মেয়েরা পড়তে পড়তে যাও’ বলার পরিবর্তে শিক্ষকদের ‘শিক্ষার্থীরা পড়তে যাও’ বলা উচিৎ। আমি মনে করি প্রতি বছর অনেক তরুণ তাদের লিঙ্গ পরিচিতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছে।

লিঙ্গ ভিন্নতা নিয়ে কাজ করা সংগঠন জেন্ডারড ইন্টিলিজেন্সের চেয়ারম্যান জে স্টুয়ার্টই শিক্ষকদের এই সংগঠনকে এ পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি জানান,  মোট জনগোষ্ঠীর এক শতাংশ রুপান্তরকামী এবং চার বছর বয়স থেকে তারা নিজেদেরকে ভুল লিঙ্গের বলে ভাবতে শুরু করতে পারে।

 

আন্তর্জাতিক সম্মাননা প্রাপ্ত নারী ঝিনাইদহের নাজমা খাতুনের উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহন !

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আন্তর্জাতিক নারী সম্মাননা পদক প্রাপ্ত নারী নেত্রী মোছা নাজমা খাতুন কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন। ২৫ মে সমাজ সেবায় অবদান রাখা এই নারী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহন করেন। তাকে মন্ত্রানালয় থেকে আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয় ১২ জুন।
উল্লেখ্য কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান একাধিক মামলার পলাতক আসামী মুহাম্মদ তাজুল ইসলামকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে চিঠি দেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ণ ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব লুৎফুন নাহার।
গত ১৯ মে তারিখে পাঠানো এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সায়িকভাবে বরখাস্ত করার আদেশ জারী করেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয় কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ তাজুল ইসলামের নামে দায়েরকৃত ৩টি মামলার অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হয়। আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ায় তার দ্বারা উপজেলা পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ জনস্বার্থের পরিপন্থি মর্মে সরকার মনে করে।

এদিকে কোটচাঁদপুরের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা নাজমা খাতুনকে উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়ায় এলাকার মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রতিদিন দুর দুরান্ত থেকে তার বাড়িতে সাধরণ মানুষ ছুৃটে আসছেন সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য।
তবে নাজমা খাতুন মানুষের কষ্ট করার সে সুযোগ না দিয়ে তিনি নিজেই গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে বেড়াচ্ছেন। সুবিধা বঞ্চিত মানুষ তাকে কাছে পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন। এদিকে উপজেলা পরিষদের কর্মচারীরা তাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

 

বিজ্ঞাপন ছাড়াই ঈদ আয়োজন

আবারো ঈদ, আবারো ‘ব্রেক ফ্রি ঈদ ফেস্ট: স্বপ্নের আয়োজন, বিরতিহীন বিনোদন’ নিয়ে আসছে জিটিভি। তবে এবার দেশের সর্বপ্রথম কোন চ্যানেল হিসেবে ঈদের সাত দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত সকল অনুষ্ঠান বিজ্ঞাপন বিরতিহীন প্রচার করবে চ্যানেলটি। যা বাংলাদেশের টেলিভিশন সম্প্রচার ইতিহাসে একটি মাইলফলক।

গত ঈদ উল আজহায় সর্বপ্রথম রাত্রিকালীন সকল অনুঠান বিরতিহীনভাবে সম্প্রচার করে জিটিভি। সেই সফলতাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে, ধারাবাহিকভাবে এবারের ঈদ-উল-ফিতরের সকল নাটক, টেলিছবি, ছায়াছবি ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের মধ্যে কোন বিজ্ঞাপন বিরতি রাখবে না চ্যানেলটি।

শুধু তাই নয়, দর্শকদের শ্রেণী বিবেচনায় হলিউডের এনিমেটেড ও ব্লকবাস্টার সিনেমা আয়োজন: ‘কিডস্ সিনে ফেস্ট’ যাতে ‘আইস এইজে’র মত দুনিয়া কাঁপানো ছবি দেখানো হবে।

একাধিক ফেষ্টের সমন্বয়ে এবারের ঈদ আয়োজন সাজিয়েছে জিটিভি। এর মধ্যে নাটককে সাজিয়েছে ৩টি ক্যাটাগরিতে- রোমান্টিক সব একক নাটক নিয়ে চ্যানেলটি প্রচার করবে : ‘রোমান্টিক ফেস্ট’, মোশাররফ করিমের ৭টি কমেডি নাটক নিয়ে: ‘কমেডি ফেস্ট’ এবং ৭টি অঞ্চলের ভাষায় নির্মিত নাটক নিয়ে ‘আঞ্চলিক ফেষ্ট’ যাতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, নোয়াখালি, বরিশাল, পাবনা এবং খুলনার আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত নাটক প্রচারিত হবে। এছাড়াও মোশাররফ করিমের একটি ধারাবাহিক নাটক থাকবে।

অন্যদিকে ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্যে রয়েছে ‘আন্তর্জাতিক শর্ট ফিল্ম ফেষ্ট’। এতে বিজয়ী শর্ট ফিল্ম নিয়ে এই আয়োজনে বাংলাদেশ, ইরান, কোরিয়া, ভারত, ফ্রান্স, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশের শর্ট-ফিল্ম টিভিতে দেখতে পাবেন দর্শক।

বিরতিহীন ঈদ আয়োজনে আরও থাকছে- ‘টেলিফিল্ম ফেষ্ট’, দেশের জনপ্রিয় সব সেলিব্রেটিদের নিয়ে ‘সেলিব্রেটি ফেষ্ট’। সামিয়া আফরিনের উপস্থাপনায়  এই ফেষ্টে অংশগ্রহণ করবেন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও আয়েশা দম্পত্তি, তাসকিন আহমেদ, আল আমিন, অপি করিম, তারিন, শমী কায়সার, আফসানা মিমি, চঞ্চল চৌধুরী, অমিতাভ রেজা প্রমুখ।

ছায়াছবির দর্শকদের কথা বিবেচনায় প্রতিদিন তিনটি করে ছায়াছবি : ৭টি রোমান্টিক বাংলা ছায়াছবি নিয়ে ‘রোমান্টিক সিনে ফেষ্ট’, আরও ৭টি জনপ্রিয় বাংলা ছায়াছবি নিয়ে লেট নাইট সিনে ফেস্ট এবং দুপুরে সাতটি সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা ছায়াছবির ‘ওয়ার্ল্ড টিভি প্রিমিয়ার’ হবে জিটিভিতে।

 

ইতিকাফ : কেন করবেন, কীভাবে করবেন?

নবীজি ইতিকাফকে খুব গুরুত্ব দিতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রমজানের শেষ দশক (মসজিদে) ইতিকাফ করতেন। এ আমল তাঁর ইন্তেকাল পর্যন্ত কায়েম ছিল।’ (বুখারি ও মুসলিম)

ইতিকাফ বলতে কী বুঝায় বা এর পরিচয় কী?
পবিত্র রমজান মাসে বিভিন্ন ইবাদত-বন্দেগির মধ্যে এতেকাফ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ‘ইতিকাফ’ একটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ অবস্থান করা, স্থির থাকা, কোনো স্থানে আটকে পড়া বা আবদ্ধ হয়ে থাকা।

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় রমজান মাসের শেষ দশক বা অন্য কোনো দিন জাগতিক কাজকর্ম ও পরিবার-পরিজন থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে আল্লাহকে রাজি খুশি করার নিয়তে পুরুষের জন্য মসজিদে বা নারীদের ঘরে নামাজের নির্দিষ্ট একটি স্থানে ইবাদত করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করা ও স্থির থাকাকে ইতিকাফ বলে।

কোরআন-হাদিসে ইতিকাফ প্রসঙ্গ
পবিত্র কোরআনের আয়াতে সূরা বাকারা : ১৮৭নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন, আর তোমরা মসজিদে এতেকাফ কালে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করো না

নবীজি ইতিকাফকে খুব গুরুত্ব দিতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রমজানের শেষ দশক (মসজিদে) ইতিকাফ করতেন। এ আমল তাঁর ইন্তেকাল পর্যন্ত কায়েম ছিল।’ (বুখারি ও মুসলিম)

ইতিকাফ কত প্রকার ও কি কি?
ইতেকাফ তিন প্রকার- ১. ওয়াজিব, ২. মুস্তাহাব, ৩. সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ আলাল কিফায়া। ইতিকাফ করার মানত করলে সে ইতিকাফ আদায় করা ওয়াজিব। রমজানের শেষ ১০ দিনে ইতেকাফ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ আলাল কিফায়া। সুন্নতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া মানে হলো, একটি মহল্লা বা এলাকার সবার পক্ষে অন্তত একজন আদায় করতে হবে। না হয় পুরো এলাকাবাসীর গুনাহ হবে। আর রমজানের শেষ ১০ দিন ব্যতিরেকে যত ইতেকাফ করা হবে- তা মুস্তাহাব। কোনো ফুকাহা ইকরাম একে নফল ইতিকাফও বলেছেন।

ইতিকাফ আদায় করা বা সহিহ হওয়ার জন্য কী কী শর্ত রয়েছে?
ইতিকাফ আদায় করা বা সহিহ হওয়ার জন্য চারটি শর্ত রয়েছে: ১. পুরুষের মসজিদে এবং নারীদের জন্য ঘরে অবস্থান করা। ২. ইতিকাফের নিয়ত করা ৩. বড় না পাক থেকে পাবিত্রতা অর্জন করা। এবং ৪. রোজা রাখা

ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ইতেকাফ কী?
মসজিদুল হারামে আদায়কৃত ইতিকাফ ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ইতেকাফ। তারপর মসজিদে নববীর ইতিকাফ এবং তারপর বায়তুল মুকাদ্দাস। তারপর উৎকৃষ্ট ইতেকাফ হলো- কোনো জামে মসজিদে ইতিকাফ করা যেখানে রীতিমতো জামায়াতে নামায হয়। এরপর মহল্লার মসজিদে।

একজন মুসলিম কেন ইতিকাফ করবে?
১- একটি ইসলামের বিধান মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে । ২-মানবীয় পাশবিক প্রবণতা এবং অহেতুক কাজ থেকে দুরে থাকার চর্চা। ৩- শবে কদর তালাশ করার উদ্দেশ্যে।

মহানবী (সা.) বলেন, আমি লাইলাতুল কদরের সৌভাগ্য ও মহিমা অনুসন্ধানে প্রথম দশদিন ও মাঝের দশদিন এতেকাফ করেছি অবশেষে আমার কাছে একজন ফেরেশতা এসে বলেছেন, লাইলাতুল কদর শেষ দশকে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যারা লাইলাতুল কদরকে অর্জন করতে চায়, তারা যেন শেষ দশকে এতেকাফ করে।

৪- মসজিদে অবস্থানের অভ্যাস গড়ে তোলা। ৫- দুনিয়ামুখি মানসিকতা ত্যাগ ও বিলাসিতা থেকে দুরে থাকা। ৬. এছাড়া হাদিসে ইতিকাফ করার ফজিলতের কথা উল্লেখ রয়েছে, এইসব ফজিলত অর্জনের উদ্দেশ্যও ইতিকাফ করা যেতে পারে। যেমন এতেকাফের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রোজার শেষ ১০ দিন এতেকাফ করবে, সে ব্যক্তি দু’টি হজ ও দুটি ওমরার সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। (বুখারি ও মুসলিম)

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে অপর একটি হাদিস বর্ণিত, রাসূলে পাক (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে এতেকাফ করবে, আল্লাহ তায়ালা তার এবং জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তিনটি পরিখার দূরত্ব সৃষ্টি করবেন। প্রত্যেক পরিখার প্রশস্ততা দুই দিগন্তের চেয়েও বেশি। (বায়হাকি)।

ইতিকাফের সময় কি কি কাজ করা যাবে এবং কি কি কাজ করা যাবে না
এক. এতেকাফের মধ্যে যেসব কাজ করা জায়েজ বা করা যাবে
১. পেশাব পায়খানার জন্যে বাইরে যাওয়া জায়েয। মনে রাখতে হবে এসব প্রয়োজন এমন স্থানে পূরণ করতে হবে যা মসজিদের নিকটে হয়।
২. ফরয গোসলের জন্যেও এতেকাফের স্থান থেকে বাইরে যাওয়া জায়েয। তবে মসজিদেই গোসল করার ব্যবস্থা থাকলে সেখানেই গোসল করতে হবে।
৩. খানা খাওয়ার জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়া যায় যদি খানা নিয়ে আসর কোনো লোক না থাকে। খানা আনার লোক থাকলে মসজিদে খাওয়াই জরুরী।
৪. জুমা ও ঈদের নামাযের জন্যেও বাইরে যাওয়া জায়েয।
৫. যদি কোথাও আগুন লাগে, অথবা কেউ পানিতে পড়ে ডুবে যাচ্ছে অথবা কেউ কাউকে মেরে ফেলছে অথবা মসজিদ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে এসব অবস্থায় এতেকাফের স্থান থেকে বাইরে যাওয়া শুধু জায়েযই নয় বরঞ্চ জরুরী।
৬. জুমার নামায আদায়ের জন্য বা কোনো জরুরত পুরণ করার জন্যে বের হলো এবং এ সময়ে সে কোনো রোগীর সেবা করলো অথবা জানাযায় শরীক হলো তাহলে তাতে কোনো দোষ হবে না।
৭. যে কোনো প্রাকৃতিক অথবা শরীয়াতের প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয।
৮. যদি কেনাবেচার কোনো লোক না থাকে এবং বাড়ীতে খাবার কিছু না থাকে তাহলে প্রয়োজনমত কেনাবেচা করা এতেকাফকারীর জায়েয।
৯. আযান দেয়ার জন্যে মসজিদের বাইরে যাওয়া জায়েয।
১০. এতেকাফ অবস্থায় কাউকে দীন সম্পর্কে পরামর্শ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ দেয়া জায়েয। বিয়ে করা, ঘুমানো এবং আরাম করা জায়েয।

দুই. এতেকাফে যেসব কাজ করা না জায়েজ বা অবৈধ
১. এতেকাফ অবস্থায় যৌনক্রিয়া করা এবং স্ত্রীকে আলিঙ্গন করা হলে এতেকাফ নষ্ট হবে।
২. এতেকাফ অবস্থায় কোনো দুনিয়ার কাজে লিপ্ত হওয়া মাকরূহ তাহরিমী। বাধ্য হয়ে করলে জায়েয হবে।
৩. এতেকাফ অবস্থায় একেবারে চুপচাপ বসে থাকা মাকরূহ তাহরিমী। যিকির ফিকির, তেলাওয়াত প্রভৃতিতে লিপ্ত থাকা উচিত।
৪. মসজিদে বেচাকেনা করা। লড়াই-ঝগড়া করা, গীবত করা অথবা কোনো প্রকার বেহুদা কথা বরা মাকরূহ।
৫. কোনো প্রাকৃতিক ও শরয়ী প্রয়োজন ব্যতিরেকে মসজিদের বাইরে যাওয়া অথবা প্রাকৃতিক ও শরয়ী প্রয়োজনে বাইরে গিয়ে সেখানেই থেকে যাওয়া জায়েয নয়। তাতে এতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে।

কী কী কারণে ই‘তিকাফ ভঙ্গ হয়ে যায়?
১. স্বেচ্ছায় বিনা প্রয়োজনে মাসজিদ থেকে বের হলে
২. কোন শির্ক বা কুফরী কাজ করলে।
৩. পাগল বা বেঁহুশ হয়ে গেলে।
৪. নারীদের হায়েয-নিফাস শুরু হয়ে গেলে।
৫. স্ত্রীসহবাস বা যে কোন প্রকার যৌন সম্ভোগ করলে।

রাসুল [সা.] কীভাবে ইতেকাফ করতেন?
১. আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু-পূর্ব পর্যন্ত রমজানের শেষ দশ দিনে এতেকাফ পালন করেছেন। [বোখারি : ২০২৬।]

২. এতেকাফরত অবস্থাতেও রাসুল পাক-পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন।

৩. এতেকাফকালীন রাসুল কোন অসুস্থ ব্যক্তির দর্শনে যেতেন না, অংশ নিতেন না কোন জানাজায়, বর্জন করতেন স্ত্রী সংস্পর্শ বা সহবাস। আয়েশা রা. বলেন : এতেকাফকারীর সুন্নত হচ্ছে অসুস্থের দর্শনে গমন না করা, জানাজায় অংশ না নেয়া, নারী সংসর্গ ও সহবাস বর্জন করা এবং অত্যবশ্যকীয় কোন প্রয়োজন ব্যতীত এতেকাফ হতে বের না হওয়া। [আবু দাউদ : ২৪৭৩।]

৪. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যবশ্যকীয় কোন কারণ ব্যতীত এতেকাফগাহ হতে বের হতেন না। আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসুল এতেকাফরত অবস্থায় কোন কারণ ব্যতীত গৃহে প্রবেশ করতেন না। [বোখারি : ২০২৯।]

৫. এতেকাফরত অবস্থায় রাসুলের স্ত্রী-গণ তার সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং কথোপকথন করতেন তার সাথে। সাফিয়া রা. বলেন : রাসুল এতেকাফরত অবস্থায় আমি তার সাথে সাক্ষাতের জন্য এলাম, তার সাথে আলাপ করে অত:পর চলে এলাম…। [বোখারি : ৩০৩৯।] প্রমাণ করে, এতেকাফরত অবস্থাতেও রাসুল স্ত্রী-গণের সংবাদ নিয়েছেন। এতেকাফের ফলে যে মূর্খরা তাদের পরিবার-পরিজনের কথা ভুলে যায়, তারা এ থেকে শিক্ষা নিতে পারে।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

যে ৫টি ভুলে নিজেই ধ্বংস করছেন নিজের জীবন!

আপনি নিজেই নিজের জীবন ধ্বংস করছেন না তো? স্বার্থপর শব্দটা আমাদের সমাজে এত প্রচলিত যে, নিজের কথা ভাবা মানেই যেন অপরাধ। আশপাশের মানুষকে মনোযোগ দিতে দিতে আমরা ভুলে নিজের দিকে মনোযোগ দিতে। আমাদের মন সারাক্ষণ এই চিন্তায় ব্যাস্ত থেকে যে, কে কী ভাবলো, কে কী বলবে! আমরা চিন্তা করতে ভুলে যাই, আমরা কি চাই। জীবনের বড় বড় সিদ্ধান্তগুলো চোখ বন্ধ করে সবাই যেভাবে নেয় সেভাবে নিয়ে ফেলি। ভাবি না, আমাদের সুখ-দুঃখগুলো আমাদের স্বপ্নকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খায়। একটা ভুল সিদ্ধান্ত সারাজীবনের আনন্দ কেড়ে নিতে পারে! আসুন জেনে নিই, আপনার অজান্তেই হয়ত এই বিষয়গুলো ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে আপনার জীবনকে।
ভুল মানুষ পছন্দ করা
আপনার জীবনসঙ্গী যদি একজন ভুল মানুষ হয় তাহলে জীবনটাই ভুলে ভরে যায় যেন! সঠিক মানুষ কে? ভুল মানুষ মানে কি? সম্পর্কের কিছু শর্ত থাকে। যে মানুষটি সেই শর্তগুলো পূরণ করতে পারেন তিনিই আপনার জীবনের সঠিক মানুষ। এই শর্তগুলো আলাদা হয় মানুষ ভেদে। ভাল বোঝাপড়া, অর্থ-কড়ি, বন্ধুত্ব মিলে গেলেও অনেক সময় দাম্পত্য সুখের হয় না। কখনো কখনো জীবনের হতাশা গ্রাস করে বেঁচে থাকের সৌন্দর্য্যকে। কখনো আবার জন্ম নেয় অশ্রদ্ধা, ঈর্ষা! সম্পর্কের টানাপোড়েন মানসিক ক্ষয় ঘটায় সবচেয়ে বেশী। কারণ মানুষ আর যা কিছু ত্যাগ করেই বেঁচে থাকুক না কেন ভালবাসার সম্পর্কগুলো তার জীবনে থাকে অক্সিজেনের মত। এই অক্সিজেন ছাড়া জীবন দূর্বিসহ হয়ে ওঠে।
নিজের অনুভূতিকে অস্বীকার করা
আমরা নিজেদের মনের কথা প্রকাশ করতে ইতস্তত বোধ করি সবসময়। এজন্য যেমন অনেক সময় আমাদের অনুরোধে ঢেকি গিলতে হয় তেমনি অন্য দিকে হয়ত সময় পেরিয়ে যায় আর প্রিয়জনকে বলা হয় না, তিনি কতটা বিশেষ আমাদের জীবনে। এই ভুল করবেন না। প্রতিদিন যে মেয়েটাকে নিয়ে স্বপন সাজিয়ে চলেছেন, তাকে বলুন তাকে ছাড়া আর ভাবা যায় না সামনের দিনগুলির কথা। মাকে জড়িয়ে ধরে বলুন, তাকে কতটা ভালোবাসেন! আমরা খেয়াল করি না, কিন্তু মুখ ফুটে না বলা সম্পর্কে তৈরি করে শূন্যতা। কখনো কখনো এই শূন্যতায় হারিয়ে যায় মানুষটা। আর আমরা ডুবে যাই হতাশায়।
অতিরিক্ত প্রত্যাশা
জীবনের কাছে অতিরিক্ত প্রত্যাশাও জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারে। আমাদের স্বপন হওয়া উচিত আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী। স্বপন দেখার পাশাপাশি বাস্তবতার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে আমাদের। সফলতা আর ব্যর্থতা চলে পাশাপাশি। মেনে নিতে হবে ব্যার্থ হলেও। বেশীর ভাগ মানুষের জীবনে হতাশা নেমে আসে প্রাপ্তি এবং প্রত্যাশার হিসেব মেলে না বলে। কিন্তু আমাদের প্রত্যাশাকে পাড়ি দিতে হয় বন্ধুর পথ, মানিয়ে চলতে হয় অনেক পারিপার্শ্বিকতা। তার সাথে যোগ হয় নিজেদের ছোট ছোট ভুল পদক্ষেপ। ফলে সবসময় মেলে না সফলতার সুখপাখি। বাস্তবতা বোধের ঘাটতি জীবনকে ঠেলে দেয় ধ্বংসের দিকে।
অতীত দিয়ে বর্তমানকে বিচার করা
ফেলে আসা সময় দুই ভাবে প্রভাব ফেলতে পারে আমাদের জীবনে। এক, অতীতের ভয়ংকর কোন স্মৃতি কেড়ে নিতে পারে বর্তমানের প্রতি ভরসা। দুই, সুন্দর অতীতকে মনে করে বর্তমানের টানাপোড়েন মেনে নিতে কষ্ট হতে পারে আমাদের। দুইটাই খুব বড় ভুল, যা ক্ষমতা রাখে জীবন ধ্বংস করে দেওয়ার। ভাল থাকতে হলে জীবনে থাকা চাই সন্তুষ্টি। আর সেজন্য বর্তমানকে বর্তমান দিয়েই বিবেচনা করতে হবে। উপভোগ করতে হবে সবটা আনন্দ আজই, কারণ যা চলে গেছে তা ফিরে আসে না। যা আছে তা অমূল্য, তাকেই সাজাতে হয়। এভাবেই ভাল থাকা যায়।
নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা
আপনার বন্ধুরা আপনার চেয়ে বেশী সফল? আপনার ভাই বোনেরা আপনার চেয়ে অনেক ভাল আছে? সব সময় নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করে আপনি নিজেই হয়ত নিজেকে হিনমন্য করছেন। হিনমন্যতা রূপ নিতে পারে মানসিক ব্যাধিতে। এই ব্যাধি তিলে তিলে শেষ করে দেয় মানুষকে। নিজেকে ভালবাসুন, আপনার যা কিছু আছে তাই নিয়ে আরও ভাল জীবনযাপনের জন্য পরিশ্রম করুন। নিজের সফলতাকে শুধু নিজের দেওয়া শ্রমের সাথেই তুলনা করুন। অন্যের সাথে নয়।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

রেস্টুরেন্ট স্বাদের মজাদার চিকেন চাপ এখন তৈরি হবে ঘরে

চিকেন চাপ রেস্টুরেন্টে গেলে অনেকেই এই খাবারটি অর্ডার করে থাকেন। পরোটা, নান রুটি অথবা পোলাও সবকিছুর সাথে খেতে দারুন লাগে এই খাবারটি। ভারতে একটু ভিন্নভাবে তৈরি করা হয় চিকেন চাপ। রোজায় সেহেরিতে হোক অথবা ঈদে তৈরি করে নিতে পারেন মজাদার এই খাবারটি। আসুন তাহলে চিকেন চাপের রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ:

৫০০ গ্রাম মুরগির মাংস (বড় করে কাটা)

জাফরন

লবণ

২ চা চামচ মরিচের গুঁড়ো

১/২ চা চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো

২ চা চামচ ধনিয়া গুঁড়ো

১/২ চা চামচ চিনি

১ চা চামচ গরম মশলা

১টি ছোট পেঁয়াজের পেস্ট

১০০ মিলিগ্রাম টকদই

৫ টেবিল চামচ বেসন

১ টেবিল চামচ আদা রসুনের পেস্ট

তেল

২ টেবিল চামচ ঘি

১ চা চামচ গোলাপ জল

প্রণালী:

১। প্রথমে রান্না করার পাত্রে জাফরন গলানো পানি, লবণ, লাল মরিচ গুঁড়ো, গোলমরিচ গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, চিনি, গরম মশলার গুঁড়ো, পেঁয়াজের পেস্ট, টকদই, বেসন, আদা রসুনের পেস্ট ভাল করে মিশিয়ে নিন।

২। এরপর এর সাথে ৩ টেবিল চামচ তেল দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।

৩। মশলা তৈরি হয়ে গেলে এতে মুরগির টুকরো দিয়ে ৩০ মিনিট মেরিনেইট করার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন।

৪। চুলায় প্যান গরম করতে দিন। প্যান গরম হয়ে আসলে এতে ঘি দিয়ে দিন।

৫। তারপর এতে মেরিনেইট করা মাংসের টুকরোগুলো দিয়ে দিন। সাথে মশলা এবং প্রয়োজন পড়লে সামান্য পানি দিয়ে দিতে পারেন।

৬। অল্প আঁচে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৩০ মিনিট রান্না করুন।

৭। গোলাপ জল দিয়ে মাঝারি আঁচে আরও ৫ মিনিট রান্না করুন।

৮। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার চিকেন চাপ।