banner

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: April 2024

 

ভারতে নারীদের জন্য বছরে ১০ দিন বাড়তি ছুটি

নারীদের জন্য বছরে ১০ দিন বাড়তি ছুটির ঘোষণা করল ভারতের ওড়িষা রাজ্য সরকার।

আজ মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এতদিন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন অফিসে কর্মরত নারী কর্মচারীরা বছরে ১৫টি ক্যাজুয়াল লিভ (সিএল) পেতেন। এখন থেকে তাদের ক্যাজুয়াল লিভের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২৫টি।

নতুন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ওড়িষার মুখ্যন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। ‍মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে নারী সরকারি কর্মচারীদের বাড়িতে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। তাদের ওপর বাড়তি চাপ থাকে। সেটা বিবেচনা করেই ক্যাজুয়াল লিভের সংখ্যা ১০টি বাড়ানো হয়েছে।

অনেকে বলছেন, আসন্ন লোকসভা আর বিধানসভা নির্বাচনে নারী ভোটারদের মন জয় করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিল ওড়িষা সরকার। ইতোমধ্যে সরকারি চাকরিতে নারীদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষিত আসন রাখা হয়েছে।

গত বছরের অক্টোবরে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল স্কুটার কেনার জন্য দুই লাখ নারীকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেবে সরকার। সেজন্য কোনো সুদ দিতে হবে না। সেই প্রকল্পের আওতায় সুদ বহন করার জন্য পট্টনায়েক সরকারের তরফে ৫২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

 

ইফতারের আয়োজনে মজাদার কাস্টার্ড

 

ইফতারে পেট ও মনকে প্রশান্তি এনে দিবে এমন খাবারের খোঁজেই থাকেন অনেকে। যারা স্বাদ, পুষ্টি দুটো বিষয়কে এক সূতায় বাঁধতে চান তারা ইফতার আয়োজনে রাখতে পারেন ফ্রুট কাস্টার্ড।

আসুন জেনে নেই রেসিপি-

উপকরন
ইভাপোরেটেড মিল্ক ৩৫৪ মিলি (ইভাপোরেটেড মিল্ক না থাকলে আধা লিটার দুধ ঘন করে নিলেই হবে)
হেভি ক্রিম আধা কাপ
চিনি ৩ টেবিল চামচ বা স্বাদমত
কর্ণফ্লাওয়ার দেড় টেবিল চামচ
ডিমের কুসুম ১ টি
ভ্যানিলা এসেন্স ১ চা চামচ
ইচ্ছামত ফ্রুট (স্ট্রবেরি, কলা, আপেল, আঙ্গুর, আম, বেদানা)
জেলো আধা কাপ (২ ফ্লেভারের)

প্রস্তুত প্রণালী

প্রথমে প্যাকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলো তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিন সেট হবার জন্য।

এরপর একটি পাত্রে ইভাপোরেটেড মিল্ক, হেভি ক্রিম, চিনি, কর্ণফ্লাওয়ার, ভ্যানিলা এসেন্স এবং ডিমের কুসুম নিয়ে সব একসঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
পাত্রটি চুলায় বসিয়ে দিয়ে মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন। মিশ্রণটি ঘন ঘন নাড়ুন যাতে দুধ পাত্রের নিচে না লেগে যায়।
জ্বাল দিতে দিতে দুধের মিশ্রণ ঘন হয়ে গেলে চুলা বন্ধ করে দিয়ে পাত্র চুলা থেকে নামিয়ে নিন।

এখন রুম টেম্পারেচারে দুধ ঠাণ্ডা করে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন ২ ঘণ্টা।
সবশেষে পছন্দসই ফল এবং জেলো কেটে কাস্টার্ডের সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

 

ইফতার ও সেহরির খাবার কেমন হওয়া উচিত?

ইফতার : শুরু করা উচিত একগ্লাস পানি দিয়ে। ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে। কৃত্রিম শরবতের চেয়ে লেবুর শরবত স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে এক গ্লাসের বেশি শরবত না খাওয়াই ভালো। খেজুর অবশ্যই খাওয়া যেতে পারে।

 

ডায়াবেটিস রোগীরা একটি বা দুটি খেজুর খেলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে কম। ডায়াবেটিস রোগীরা চাইলে কম মিষ্টিযুক্ত খেজুর সংগ্রহ করতে পারেন। আলজেরিয়া থেকে আমাদের দেশে যেসব খেজুর আসে সেগুলোর মিষ্টি অনেক কম।

শসা খাওয়া যেতে পারে যেহেতু এখন পর্যন্ত এর মধ্যে রাসায়নিক পদার্থ মেশানো হয়নি। তরমুজ খেতে চাইলে সাবধানে খেতে হবে। কারণ তরমুজ টকটকে লাল রং করার জন্য অভিনব উপায়ে রঙিন রাসায়নিক পদার্থ তরমুজে প্রবেশ করানো হয়। পেট ভরে ইফতার করবেন না। এর ফলে পেটের সমস্যা ছাড়াও নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদত করতে সমস্যা হবে।

অনেক সুস্থ মানুষ এমনভাবে ইফতার করেন যে, পরের দিন ইফতার পর্যন্ত ক্ষুধা লাগে না। এভাবে খাবার গ্রহণ রোজার আদর্শ বিরোধী। মনে রাখতে হবে রোজার মাসে সব কিছুর মাঝে সংযম থাকতে হবে।

ইফতারের সময় রেস্টুরেন্ট এবং ফুটপাথে যেসব শরবত বিক্রি করা হয় তাতে বরফ মেশানো হয় যা মূলত সরবরাহ করা হয় মাছের জন্য ব্যবহৃত বরফ, এমনকি মৃত মানুষ সংরক্ষণ করার জন্য ব্যবহƒত বরফ থেকে। মাঝে মাঝে ছোটখাটো কারখানা থেকে নদীর দূষিত পানি দিয়ে বরফ তৈরি করে তা বাজারে সরবরাহ করা হয়।

শুধু ইফতারের শরবত নয় বরং রমজান মাসে কেনাকাটা করার সময় মেয়েরা বিশেষ করে লাচ্ছি এবং ফালুদা খাবেই। লাচ্ছি এবং ফালুদাতেও একই বরফ মেশানো হয়। মুড়ি, ছোলা, পিঁয়াজু, ঘুগনি, জিলাপি, ধনেপাতা সবকিছু এক করে মিশিয়ে সবাই মিলে ভাগাভাগি করে খাওয়ার মাঝে এক অন্য ধরনের আনন্দ রয়েছে।

কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে মুড়িকে বড় এবং সাদা করার জন্য ইউরিয়া মেশানো হয়। ইউরিয়া মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ইউরিয়া হজমের জন্য প্রয়োজনীয় ইউরিয়েজ এনজাইম মানব দেহে না থাকার জন্য মানুষ ইউরিয়া হজম করতে পারে না ফলে ইউরিয়া দেহের অভ্যন্তরে থেকে যায়। ইউরিয়া খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন জটিলতা সহ মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সাদা মুড়ি বর্জন করে হাতে ভাজা মুড়ি খেতে হবে।

ইফতারে কলা খেতে চাইলে কেনার সময় দেখেশুনে কিনতে হবে যেন কলাতে কার্বাইড মেশানো না থাকে। কার্বাইড পাকানো কলার বোঁটা হালকা সবুজ থাকে এবং কলার খোসা বা উপরিভাগ দাগহীন পরিষ্কার হলুদ রঙের হয়ে থাকে। স্বাভাবিক কলা কখনোই এরকম দাগহীন পরিষ্কার হলুদ রঙের হয় না। তবে ব্যতিক্রম দেখা যেতে পারে। ছোট চিনি চম্পা কলা অথবা বিচি কলা কিনতে পারেন। দাম কম বলে এবং লাভ কম হয় বলে রাসায়নিক মিশ্রণের সম্ভাবনা কম থাকে।

রমজান মাসে কেউ যদি হোটেলে খেতে বাধ্য হন তাহলে ভাতের সঙ্গে মুরগির মাংস না খাওয়াই ভালো। ঢাকা শহরের অধিকাংশ হোটেলে ভালো মুরগির সঙ্গে মরা মুরগিও রান্না করা হয়। তাই হোটেলে একান্তই খেতে হলে মুরগির পরিবর্তে মাছ খাওয়াই উত্তম।

কিডনি রোগীরা যদি রোজা রাখেন তাহলে ইফতারের সময় ডালের তৈরি কোনো ইফতার সামগ্রী গ্রহণ করবেন না। বেগুনি না খাওয়াই ভালো। বিভিন্ন রঙিন জিলাপি খাবেন না। রঙিন জিলাপিতে কৃত্রিম রং মেশানো থাকে। এটি আপনার কিডনির অবস্থা আরও খারাপ করে ফেলবে।

শুধু তাই নয় কৃত্রিম রং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। হালিম খাওয়া আপনার জন্য বিষের মতো। ইফতারের সময় কিডনি রোগীরা শুধু পানি দিয়ে ইফতার শুরু করবেন। ফলের মধ্যে আপেল, নাশপাতি খাবেন। দু একটি খেজুর খেতে পারেন। পালংশাক, পুঁইশাক, অথবা অন্য কোনো শাকের পাকুড়া খাবেন না। কাবাব জাতীয় খাবার খাবেন না। সামান্য ইফতার করে নামাজ পড়ার পর আপনি আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রাতের খাবার খেয়ে নেবেন। তরকারি হিসাবে চিচিঙ্গা, ধুন্দুল এবং লাউ খেতে পারেন।

সেহরি : সেহরি খাবার পর চা বা কফি পান করবেন না। সেহরিতে কোমল পানীয় অর্থাৎ কোল্ড ড্রিংকস খাবেন না। এতে দিনের বেলায় আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যাবে। ডিহাইড্রেশন হতে পারে। তখন আপনার রোজা রাখতে বেশ কষ্ট হবে। যারা মুখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন তারা সেহরি খাবার পর মলম জাতীয় ওষুধ মুখের অভ্যন্তরে ব্যবহার করবেন না।

রোজারত অবস্থায় মলম গলার অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে রোজা ভেঙে যাবে। রোজা রাখা অবস্থায় দিনের বেলায় টুথপেস্ট ব্যবহার করা যাবে না। মেসওয়াক করতে পারেন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে ইফতার থেকে শুরু করে সেহরি পর্যন্ত।

লেখক :ডা. মো. ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
চেম্বার : ইমপ্রেস ওরাল কেয়ার, বর্ণমালা সড়ক, ইব্রাহিমপুর, ঢাকা।

 

শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তি চান নারী গৃহকর্মীরা

শ্রম আইনে গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি এবং ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন ৫ শতাধিক গৃহকর্মী।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ-এর সুনীতি প্রকল্প আয়োজিত ‘গৃহকর্মী জাতীয় সম্মেলন ২০২৪’ শীর্ষক সম্মেলনে এই আহ্বান জানায় গৃহকর্মীরা।

‘সময় এখন গৃহকর্ম এবং গৃহকর্মীর’ প্রতিপাদ্যে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৫ শতাধিক গৃহকর্মীর অংশগ্রহণে আয়োজিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশিষ দামলে। সভাপতিত্ব করেন ডিএসকে’র নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শামসুল আলম বলেন, ‘সরকার নানানভাবে দেশের উন্নয়ন করছে। গৃহকর্মীদের জন্যেও এই সরকার সংবেদনশীল। তারই প্রমাণ ২০১৫ সালে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ প্রণয়ন করা। আমি মনে করি এ যাবতকাল পর্যন্ত গৃহকর্মীরা নিগৃহীত শ্রেণির। তাদের ছুটিছাটা নেই, যেখানে রান্না করেন সেখানেই ঘুমান, তারা নির্যাতিত হন এমনকি তাদের হত্যা পর্যন্ত করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহকর্মীদের মানবেতর জীবন থেকে সুস্থ জীবনে নিয়ে আসা, সেটাও একটা মানবিক সংগ্রাম। গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও শ্রমআইনে অন্তর্ভুক্তির দাবির সাথে আমি একমত। গৃহকর্মী নীতি ঠিকভাবে মনিটরিং হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, দেশে প্রায় ৪০ লাখ গৃহকর্মী রয়েছেন, আসন্ন জাতীয় বাজেটে তাদের জন্য সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখা যেতে পারে। সর্বশেষ, গৃহকর্মী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সন্তানদের মাধ্যমিক পর্যন্ত উপবৃত্তি প্রদান করা যায় কিনা ভাবতে হবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার বলেন, ‘গৃহকর্মীদের কোনও ছুটি নেই, কাজের নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই, নেই কোনও নিয়োগপত্র, স্বাস্থ্যসুবিধা এবং ন্যূনতম মজুরি। গৃহকর্মীরা যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। তাদের সামাজিক মর্যাদা নেই এবং পেশা হিসেবে কাজের কোনও স্বীকৃতি নেই।’

এসময় নিজের অধিকারের কথা, বঞ্চনার কথা, সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন গৃহকর্মীদের একাধিক প্রতিনিধি। তাদের বক্তব্যে ন্যূনতম মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন, পর্যাপ্ত ছুটি না থাকা বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।

 

শিশুর ভিটামিন ডি এর ঘাটতির লক্ষণ

ভিটামিন ‘ডি’ আমাদের শরীরের অপরিহার্য উপাদান যা হাড় ও মাংসপেশিতে ক্যালসিয়াম ও ফসফেট শোষনে সাহায্য করে। বিশেষ করে শিশুদের শারীরিক বিকাশে এই ভিটামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। এই ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবে শিশুদের রিকেটস ও অস্টিওম্যালেশিয়ার মতো রোগ হতে পারে।

 

দুর্বলতা ও ক্লান্তিভাব

দুর্বলতা ও ক্লান্তিভাব শিশুদের শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ অভাবজনিত প্রধান লক্ষন। এছাড়া মাংপেশিতে ব্যাথা ও যেকোনো কিছুতে শিশুর মনোযোগ না দেয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

ফ্যাকাশে ত্বক

শরীর ভিটামিন ‘ডি’ কোষ ভালো রাখতে কাজ করে। ভিটামিন ‘ডি’ সূর্য থেকে সরাসরি গ্রহন করলে ত্বক স্বাস্থ্যকর থাকে। এর ঘাটতি হলে শিশুর ত্বক ফ্যাকাশে ভাব দেখা দিতে পারে।

খাদ্যে অনীহা

ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। সবসময় শরীরে ক্লান্তিভাব থাকায় অনেকক্ষেত্রে শিশুর খাদ্যে অনিহা দেখা দিতে পারে। এতে ওজন কমে যেতে পারে।

অপর্যাপ্ত ঘুম

ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবে শিশুদের স্লিপ ডিসঅর্ডাররের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রাতে সহজে ঘুম না আসা বা কম ঘুম হওয়ার মতো সমস্যার কারনে শিশুর মধ্যে দুর্বলতা কাজ করে। এসব লক্ষণ শিশুদের মধ্যে দেখা দিলে তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার পাচ্ছেন ফওজিয়া করিম

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড) পাচ্ছেন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফওজিয়া করিম ফিরোজ। আগামী ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘোষণা দেয়।

ফওজিয়া করিম ফিরোজসহ বিভিন্ন দেশের ১২ জন এ বছর আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার পাচ্ছেন। আগামী সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ওয়াশিংটন ডিসিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ফওজিয়া করিম ফিরোজ সম্পর্কে বলেছে, তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন। তিনি বর্তমানে তাঁর নিজস্ব ল চেম্বারের প্রধান এবং ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এফএলএডি) চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে এফএলএডি গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি বিষয়ে একটি রায়ে জিতেছিল।

ফওজিয়া ফিরোজ ব্যক্তিগতভাবে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পক্ষে তাঁদের নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রায় তিন হাজার মামলা করেছেন।

তিনি বাংলাদেশ স্বাধীন গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ফেডারেশন (বিআইজিইউএফ) এবং গৃহকর্মী নির্দেশিকা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছেন।
ফওজিয়া করিম ফিরোজ এর আগে ২০০৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এসিড সারভাইভরস ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি। ২০২৩ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন যৌন হয়রানির মামলা পর্যালোচনা এবং আদালতে সুপারিশ করার জন্য তাদের পাঁচ সদস্যের কমিটিতে ফওজিয়া ফিরোজকে নির্বাচিত করেছে।

 

নারী উদ্যোক্তা : বাংলাদেশের ৪ ধ্রুপদী নারীর সফলতার গল্প

 

“বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।”

সাম্যের কবি নজরুল ঠিকই বলেছেন। বিশ্বের অর্ধেক জনসংখা যেখানে নারী সেখানে নারীকে বাদ দিয়ে এই পৃথিবীর সামগ্রিক উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও কথাটি পুরোপুরি সত্য। তবে অপ্রিয় সত্য হচ্ছে, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ সবসময়েই কম। তবে আশার কথা এই যে, নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ এবং অবদান দিন দিন বাড়ছে। আজ নারী ঘরের বাইরে বেরোচ্ছে, নানা প্রতিযোগিতামূলক কাজে অংশ নিচ্ছে পুরুষের পাশাপাশি সমান তালেই। নারী আজ শুধু চাকরিই নয়, উদ্যোগী হচ্ছে নানা স্বাধীন ব্যবসায়। নারী দিবসের প্রাক্কালে আজ হাজির হয়েছি বাংলাদেশের চারজন স্বনামধন্য এবং সফল নারী উদ্যোক্তার গল্প নিয়ে। তারা শত বাঁধাকে জয় করে আজ নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে হাজারো নারী উদ্যোক্তার প্রেরণা স্বরুপ কাজ করছেন প্রতিনিয়ত।

তসলিমা মিজি

আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে তিনি এসেছেন বাংলাদেশের টেক ইন্ডাস্ট্রিতে। প্রযুক্তিকে আপন করে নিয়ে একজন নারী হিসেবে শুরু করেছেন নিজের স্বাধীন ব্যবসা। ২০১৮ সালে এসেও দেশের টেক জগতে যখন খুব একটা ‘নারী পদচারণা’ চোখে পড়ে না, তখন তসলিমা মিজির কথা অবশ্যই বলতে হয়।

স্বাধীন নারী উদ্যোক্তা তসলিমা মিজি প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান টেকম্যানিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা এবং চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (CEO)। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি হার্ডওয়্যার, হার্ডওয়্যার বিষয়ক বিভিন্ন সেবা এবং নেটওয়ার্কিং বিষয়ক ব্যবসার সাথে জড়িত। এটি বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির একটি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। একজন নারীর পক্ষে ২০০৮ সালের দিকে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার খাতে ব্যাবসা শুরু করা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। ছিল প্রতিযোগিতা, নারী হিসেবে একটা খাতে প্রথম কাজ শুরু করবার প্রতিকূলতা। বিশেষ করে সাংবাদিকতার জগত থেকে উঠে আসা একজন মহিলা খুব একটা আন্তরিক পরিবেশ পাননি শুরুর সময়টাতে। কিন্তু অদম্য সাহসী মিজি থেমে থাকেননি কখনোই। নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য সুন্দর জায়গা নির্বাচন করে কাজ শুরু করেন তিনি। সময়ের সাথে সাথে একটু একটু করে গড়ে তোলেন তার নিজের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, যা আজকে বাংলাদেশের কম্পিউটার ব্যবসায় নিজের জায়গা করে নিয়েছে বেশ ভালভাবেই।

তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি মিজির পরামর্শ অনেকটা এরকম–

“সবসময় লক্ষ্যটা ঠিক রাখুন। প্রতিকূলতা আসবে, কখনো হতাশ হবেন না। প্রচেষ্টাগুলোকে ঠিক জায়গায় ব্যবহার করুন। আপনি অবশ্যই সফল হবেন।“

সামিরা জুবেরি হিমিকা

নিজের প্রতিষ্ঠান গড়ার আগে তিনি কাজ করছেন দেশি-বিদেশি নানা যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠানে। অভিজ্ঞতার ঝুলি করেছেন সমৃদ্ধ, শিখেছেন অনেক কিছুই। শেষে নিজেই আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে গড়ে তোলেন টিম ইঞ্জিন নামের প্রতিষ্ঠান, যার ম্যানেজিং ডিরেক্টর তিনি নিজেই। সামিরা জুবেরি হিমিকা’র কথা বলছি।

দেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করে তিনি কাজ শুরু করেন ইউএনডিপিতে। পরবর্তীতে কাজ করেন বিবিসি ওয়াল্ড সার্ভিস, বাংলাদেশের ডেপুটি প্রধান হিসেবে। এরপরে কাজ করেন জিপি হাউজ আর্ট হাব নামের এক প্রজেক্টে। এটি ছিল কোনো বেসরকারি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে পরিচালিত প্রথম উদ্যোগ। প্রায় ৫-৬ বছর এভাবে কাজ করে তিনি নিজেই একদিন উদ্যোগী শুরু করেন নিজের প্রতিষ্ঠানের। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘টিম ইঞ্জিন’ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা নীতি নির্ধারণী বিষয়ে কাজ করছে।

একজন মহিলা হিসেবে টেলিকম সেক্টরে কাজ শুরু করা মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু হিমিকার নানা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাকে সাহায্য করেছে এক্ষেত্রে। নিজের প্রতিষ্ঠান বাদেও তিনি বেসিসের একজন এক্সিকিউটিভ কমিটি সদস্য। বাংলাদেশে প্রযুক্তি স্টার্ট-আপ ক্ষেত্রে তিনি এখন এক অতি পরিচিত নাম। বিভিন্ন কম্যুনিটি ইভেন্টে প্রায়ই দেখতে পাই আমরা। তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি তার পরামর্শ অনেকটা এরকম-

“অভিজ্ঞতা অনেক জরুরি একটা বিষয়। অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করুন। অভিজ্ঞতা কাজে লাগবেই। কখনো দাম্ভিকতা দেখাবেন না। এটা নিজের উন্নতির পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।“

সাবিলা ইনুন

তিনি বিশ্বখ্যাত সংস্থা ব্র্যাকের শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন দেড় বছরের বেশি সময় ধরে। পরবর্তীতে একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে ডিক্যাস্টালিয়া (DCastalia) নামক প্রতিষ্ঠানের সাথে আছেন শুরু থেকেই। দেখাশোনা করছেন প্রতিষ্ঠানটির ‘যোগাযোগ এবং ব্যবসা উন্নয়ন’ বিভাগ। কথা বলছি দেশের স্বনামধন্য নারী উদ্যোক্তা সাবিলা ইনুন সম্পর্কে।

কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা করা সাবিলা কাজ করেছেন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক নামকরা প্রতিষ্ঠানেই। তথ্য প্রযুক্তি এবং উন্নয়ন ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে তার কর্মযজ্ঞ। বিজনেস ইন্টেলিজেন্স হিসেবে কাজ করেছেন গ্রামীণফোনে, কাজ করেছেন সেল বাজারে, ডি নেটে, তিনি কাজ করেছেন সিস্টেম সাপোর্ট প্রকৌশলী হিসেবে। অতঃপর ২০১২ সালে নাইকি ফাউন্ডেশনের গার্ল ইফেক্ট প্রজেক্টের ডিজাইন ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে যোগ দেন। এই প্রজেক্টের অধীনে তিনি ব্র্যাক এবং পরবর্তীতে ফ্রগ ডিজাইন নামের নামকরা আমেরিকান প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেছেন। এছাড়াও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইউএনডিপির এসআইসিটি প্রজেক্টে কাজ করেছেন একজন ট্রেইনার ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে।

বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে একজন নারী হিসেবে তিনিও সম্মুখীন হয়েছেন নানা প্রতিবন্ধকতার। কিন্তু কখনো থেমে যাননি তিনি। অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করা সাবিলা উনুন বাংলাদেশের নারীদের জন্য বিশেষ করে তরুণী নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণা স্বরুপ। প্রবল ইচ্ছা এবং যোগ্যতা থাকলে কোনো বাঁধা যে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, তার অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন সাবিলা উনুন।

আইভি হক রাসেল

তিনি ছিলেন একজন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার, কিন্তু স্বপ্ন দেখতেন বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া মহিলা জনগোষ্ঠীর জন্য কিছু করবেন। হঠাৎ করেই একদিন আইডিয়া এলো, মহিলাদের স্বাস্থ্য এবং নানা রকম সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি অনলাইন ভিত্তিক কোনো ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে পারেন। চাকরি ছেড়ে দিলেন, প্রতিষ্ঠা করলেন অনলাইনভিত্তিক ওয়েবসাইট– মায়া। আইভি হক রাসেলের কথা বলছি, যিনি এখন ‘মায়া আপা’ নামেই বেশি পরিচিত।

আইভি হক তার নানা উদ্ভাবনী ধারণা এবং ব্যবসাকেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনার জন্য সুপরিচিত। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্স এবং অর্থনীতির উপরে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। অনেক আগে থেকেই মানুষকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করার এক অনবদ্য প্রচেষ্টা কাজ করতো তার মধ্যে। মূলত এ কারণেই পড়াশোনার জায়গা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে এসে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন কিছু করার চিন্তা করেন, যা আগে কেউ কখনো করেনি। সেই চিন্তা থেকেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন অনলাইন প্লাটফর্ম মায়ার, যা মূলত কাজ করে নারীদের নিয়েই। নারীদের জন্য দরকারি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য এবং সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মায়ার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই একবিংশ শতাব্দীতে নারীদের কাছে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোর অবাধে যেন পৌঁছে যায়, এই ব্রত নিয়েই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে আইভি হক রাসেলের প্রতিষ্ঠান মায়া।

তার আজকের এই অবস্থানে আসাটা কখনো সহজ হয়নি, এসেছে নানা প্রতিবন্ধকতা। তিনি শুরুর সময়টাতে কারো কাছ থেকে তেমন কোনো সাহায্যই পাননি। কিন্তু তিনি যে থেমে থাকার পাত্রী নন। কাজ চালিয়ে গিয়েছেন নানা বাঁধাকে উপেক্ষা করেই। আজ তার প্রতিষ্ঠান দেশের মহিলাদের কাছে তাদের দরকারি সব তথ্য এবং সেবা পৌঁছে দিতে কার্যকরী অবদান রাখছে। হাজারো নতুন তরুণী উদ্যোক্তার কাছে তিনি আজ এক অনুপ্রেরণার নাম।

 

সূত্রঃ দ্য ফিন্যান্স টুডে