banner

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 746 বার পঠিত

 

ফিতরা

দ্য স্লেভ


আমরা যাকাতের বিষয়ে জানি কিন্তু ফিতরার বিষয়ে অবগত নই বললেই চলে। যাকাত অবশ্য সঠিকভাবে প্রদান করিনা আমরা। আর রমজানেই কেবল যাকাত নিয়ে আলোচনা করাই তার প্রমান। অথচ বিষয়টা রমজান কেন্দ্রীক নয়। এটা নিসাব পরিমান অর্থ সংক্রান্ত এবং তা এক বছর অতিবাহিত হতে হবে।

জাকাতের ২টা পরিমাপক আছে, একটা স্বর্ণ অন্যটা রৌপ্য। যেটার সাথে মিলে, সেটায় নিয়মানুযায়ী জাকাত দিতে হবে। যদি রুপার তুলা(প্রায় ১০ গ্রাম) ৫০০ টাকা হয় তাহলে সাড়ে ৫২ তুলার দাম ২৬২৫০(রুপার বর্তমান দাম সম্ভবত আরেকটু বেশী) হয় । আর এই পরিমান টাকা কারো ব্যাংকে বা ঘরে ১ বছর পড়ে থাকলে তার উপর ২.৫% জাকাত দিতে হবে। জাকাত সর্ব প্রথম আপন লোকদেরকে দিতে হবে, এতে জাকাতও আদায় হবে আবার আত্মীয়তাও রক্ষিত হবে। এমনকি স্ত্রী তার গরিব স্বামীকেও জাকাত দিতে পারে।

কিন্তু ফিতরার ব্যাপারে আমরা প্রায় জানিনা বললেই চলে। এটা রমজানে প্রদান করতে হয় শেষের দিকে এবং ঈদের নামাজের পূর্বে। ভালো হয় যদি ঈদের আগের দিন প্রদান করা হয়। রসূল(সাঃ) খেজুর,কিসমিস,বার্লি ইত্যাদীর এক সা(আনুমানিক আড়াই কেজী বা ৩ কেজী বা কিছু কম বেশী পরিমান) পরিমান ফিতরা দিতেন। তবে আলেমরা বলেন এটা প্রচলিত প্রধান খাদ্য দ্বারাও আদায় করা যাবে। তবে কেউ খেজুর বা উক্ত দামী খাদ্য দ্বারাও করতে পারে। বিশেষ করে ধনীরা ফিতরা দিবে দামী খাবারের পরিমানে। সেটাই উত্তম।

ফিতরা খাদ্য দ্বারা দিতে হবে এটাই সুন্নাহ কিন্তু অনেকে উক্ত পরিমান টাকা দ্বারাও ফিতরা দেওয়া যাবে বলেছেন। তবে খাদ্য দ্বারা দেওয়াই উত্তম। যারা বিদেশে আছে এবং আশপাশে গরিব মানুষ নেই, তারা দেশে টাকা পাঠালে সেটা দিয়ে অন্যরা খাদ্য কিনে খেতে পারে। এটা প্রত্যেক সক্ষম ব্যক্তি আদায় করবে যার মোটামুটি খেয়ে পরে চলে যায়। ফিতরার জন্যে যাকাতের নিসাব পরিমান সম্পদ হওয়া জরুরী নয়।

আমি ভাবছিলাম খেজুর কিনে দেব, কিন্তু মসজিদ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা টাকা সংগ্রহ করছে এবং এটা দ্বারা তারা খাদ্য কিনে এখানে বসবাসকারী গরিবদেরকে প্রদান করবে। ইমাম বললেন খাদ্য দিয়েই ফিতরা দিতে হবে,, তাদের হাতে টাকা দিলে হবেনা। এর একটা আলাদা অর্থ আছে। ঈদে গরিব লোকেরা যাবে ভালো খাবার খেতে পারে তার জন্যেই ফিতরা। বাস্তবে দেখা গেছে গরিবদেরকে টাকা দিলে তারা সেটা দিয়ে পরিবারের জন্যে খাবার না কিনে গরিবি হালে ঈদ করে, এতে তাদের পরিবার ভালো খাবার খেতে পারেনা। ফিতরা আসলে তাদের ঈদের দিন উত্তম খাবার নিশ্চিত করে।

সুন্নাহ থেকে আমার মনে হয়েছে যেই লোক যেই মানের খাবার ঈদের দিন খায়,তিনি সেই মানের খাবার ফিতরা হিসেবে প্রদান করবেন। এ কারনেই তৎকালীন আরবের বিভিন্ন ধরনের প্রচলিত খাদ্যের উপর রসূল(সাঃ) ফিতরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমার লেখা পড়ে যারা ভাবছেন ফিতরা তার উপর কর্তব্যরূপে আরোপিত হয়েছে কিনা,,, তারা এত না ভেবে ফিতরা দিয়েই ঈদের নামাজ পড়তে যাবেন দয়া করে

আল্লাহ আমাদের সকল ইবাদতকে কবুল করুন এবং সম্মান বৃদ্ধি করুন।

Facebook Comments