banner

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 801 বার পঠিত

 

কিশোরী নির্যাতন : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

নাছিমা আক্তার জলি : বর্তমানে কিশোরী নির্যাতন আমাদের সামাজিক, পারিবারিক এবং রাষ্ট্রীয় বাস্তবতার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি এখন এমন এক স্বাভাবিকতায় রূপান্তরিত হয়েছে যে, এটি আমাদের চোখে ও মনে কোনো প্রতিক্রিয়াই তৈরি করে না। আমরা এ নিয়ে তেমন কোনো প্রশ্ন করি না, প্রতিবাদ করি না, কখনও গভীরভাবে ভাবিও না। সাম্প্রতিককালে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো খুললেই যে সকল তথ্য পাওয়া যায়, তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, কিশোরী নির্যাতন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কিশোরী নির্যাতনের ধরন বাড়ছে, বাড়ছে এর মাত্রাও। প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হওয়ার ঝুঁকি কিশোরীদের মনে এক গভীর নিরাপত্তাহীনতার জন্ম দিচ্ছে। ফলে কিশোরীর বাধাহীন মানসিক বিকাশ এক প্রকার অসম্ভব হয়ে উঠছে। তার পৃথিবী হয়ে আসছে সঙ্কুচিত। তার প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন ক্রমশ দূরবর্তী করে তুলছে ‘উন্নয়ন, শান্তি ও সমতা’র অভিষ্ঠ লক্ষ্যকে।

02b33139078b975029239544d821fa1f

একজন কিশোরীর অস্তিত্ব যদি হুমকীর সম্মুখীন হয়, তার স্বাধীনতা যদি খণ্ডিত হয়, শারীরিক, মানসিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ যদি ব্যাহত হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তার অমিত সম্ভবনার দ্বারগুলো রুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে বাধাগ্রস্ত হয় জাতীয় উন্নয়নসহ সার্বিক উন্নয়ন। এজন্যই প্রয়োজন কিশোরী নির্যাতনের কারণ ও ধরন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করা এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা। যেনো সমাজে বিদ্যমান প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গী, সামাজিক ও পারিবারিক কুসংস্কারচ্ছন্নতা, ধর্মীয় অপব্যাখ্যা ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার ফলে উদ্ভূুত ঘৃণ্যতম কার্যক্রমগুলোর অবসান ঘটে।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং নতুন নতুন কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও লক্ষণীয় বিষয় হলো, কিশোরী নির্যাতনের হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০০ সালে প্রকাশিত দক্ষিণ এশিয়ার মানব উন্নয়ন রিপোর্ট অনুযায়ী, নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্থান তৃতীয়। অনেকের ধারণা, বর্তমানে এ বিষয়ে জরিপ পরিচালনা করা হলে, বিশ্বে নারী নির্যাতনে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশ হিসেবে শীর্ষ স্থানে অবস্থান করবে বাংলাদেশ।

 

একটি দেশের সাধারণ মানুষের অসচেতনতা, শিক্ষার অভাব, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা সর্বোপরি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অসচ্ছতা, দায়িত্বহীনতা এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ার কারণে বাংলাদেশের কিশোরী নির্যাতনসহ নারী নির্যাতনের মাত্রা ও ধরন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বিশেষত, কিশোরী মেয়েদের পথে ঘাটে উত্ত্যক্ত করা, বিভিন্ন ধরনের কু-প্রস্তাব দেয়া, এসকল প্রস্তাবে রাজি না হলে এসিড নিক্ষেপ করা, ধর্ষণ করা, ধর্ষণের পর হত্যা করা ইত্যাদি ভয়বহ আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

জাতিসংঘের তথ্য মতে, প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ওপর তার পুরুষ সঙ্গীর শারীরিক নির্যাতনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। বিবাহিতা নারীদের শতকরা ৬০ ভাগ স্বামীর হাতে মার খায়। ইউনিসেফ-এর তথ্য মোতাবেক, ১৮ বছর বয়সের মধ্যে বাংলাদেশের শতকরা ৫০ ভাগ কিশোরী বিবাহিতা। অল্প বয়সে বিয়ে, প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে অজ্ঞতা, জড়তা ইত্যাদি কারণে প্রতিনিয়তই তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। ফলে কিশোরী বধূর ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক জীবন হয়ে উঠে সংঘাতময় এবং সঙ্কটাপন্ন।

 

অধিকাংশ ক্ষেত্রে কিশোরী নির্যাতন শুরু হয় পরিবার থেকে। পরিবার থেকে যেসকল নির্যাতন করা হয় সেগুলোকে অত্যন্ত স্বাভাবিক নিয়ম হিসেবে মনে করা হয়। এছাড়া তারা সামাজিক নির্যাতন এবং কোনো কোনো সময় রাষ্ট্রীয়ভাবেও তারা নির্যাতনের শিকার হয়। সময়ের পরিক্রমায় বিভিন্ন গবেষণা ও অভিজ্ঞতা থেকে একটি বিষয় অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বেরিয়ে এসেছে যে, আমাদের দেশে শতকরা ৮০ ভাগ কিশোরী যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। এর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পরিবারের নিকটতম আত্মীয়ের দ্বারা সংঘটিত হয়। এসকল ক্ষেত্রে নির্যাতকরা সম্পূর্ণরূপে নাগালের বাইরে থাকে। কেননা কিশোরীরা লোকচক্ষুর ভয় এবং নালিশ করলে উল্টো অপবাদের ভয়ে মুখ খোলে না। অনেক সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও বিষয়গুলো বিশ্বাস করতে চায় না। এরূপ অবস্থায় কিশোরীর আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়। তাদের মধ্যে প্রচণ্ড রকমের পুরুষ বিদ্বেষী মনোভাব সৃষ্টি হয়, যা তাদের পরবর্তী জীবনকে বাধাগ্রস্ত করে।

 

কিশোরী নির্যাতনের কারণ ও ধরন
কিশোরী নির্যাতনের পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম কারণগুলো হলোÑ সমাজে প্রচলিত অপসংস্কৃতি, রেডিও-টিভিসহ গণমাধ্যমের কিছু বিভ্রান্তিমূলক তথ্য, পুরুষের বেকারত্ব, কিশোরীর বেকারত্ব, দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, পুরুষের ‘পৌরুষ’ বা ক্ষমতার প্রভাব খাটাবার এক অপপ্রয়াস ইত্যাদি।

 

পারিবারিক নির্যাতন: শিশুর জন্য সবচাইতে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হলো পরিবার। অথচ এই পরিবারই অনেক ক্ষেত্রে কিশোরীর নির্যাতনের প্রথম সোপান হয়ে দাঁড়ায়। কিশোরীর প্রয়োজনের তুলনায় পুষ্টি কম দেয়া হয়। শিক্ষার সুযোগ থেকে বি ত করা, স্বাস্থ্য এমনকি চিকিৎসা ক্ষেত্রেও যথাযথ যতœ নেওয়া হয় না। পরিবারের নিকট আত্মীয়দের দ্বারা বিভিন্ন সময়ে যৌন নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়। যা তারা প্রকাশ করে না বা করতে পারে না। এসকল সংঘটিত সহিংসতামূলক ঘটনাগুলো অনেক সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দৃষ্টির অগোচরেই রয়ে যায়।

 

দৈহিক নির্যাতন: বয়ঃসন্ধিকালে স্বভাবজাতভাবেই কিশোরীরা চনচল হয়ে উঠে। নিজেদের বোঝার অস্পষ্টতা ও অজ্ঞতার কারণে এমন কিছু কাজ করে যা তার ব্যক্তিগত জীবন এবং পারিবারিক জীবনকে বিড়ম্বনার বেড়াজালে আবদ্ধ করে। সামাজিকভাবেও এজন্য মাশুল দিতে হয়। কিশোরীকে গৃহে বা বাইরে দৈহিকভাবে আঘাত বা মারধর করা হয়।

 

মানসিক নির্যাতন: পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে প্রায়ই কিশোরীর উপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয়। অধিকাংশ সময়ই কিশোরীকে যেহেতু একজন মানুষ হিসেবে মনে করা হয় না, তাই তার মন বা স্বত্ত্বাকেও স্বীকার করা হয় না। পরিবারে তার মতামত প্রকাশের কোনো সুযোগ থাকে না। যদি ক্ষেত্র বিশেষে কোনো কিশোরী হঠাৎ কোনো মতামত প্রকাশও করে তাহলে তাকে ‘ইঁচরে পাকা’ বলে অভিযুক্ত করা হয়। পরিবারের সুনাম-খ্যাতি নষ্ট হবে এই অজুহাত প্রদর্শন করে অনেক সময়ই কিশোরীর স্বাভাবিক চলাফেরাকে প্রতিরোধ করা হয়। গৃহ নামক জেলখানায় বন্দী করে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয়। একজন কিশোরের ন্যায় খোলা মাঠে কিশোরী কখনই খেলতে পারে না। ইচ্ছে হলেই সে গাছের ডালে উঠতে পারে না, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে পারে না। কারণ তার প্রতি আঙ্গুল উঁচিয়ে বলা হয় Ñ গেছো মেয়ে, নষ্টা মেয়ে, পথভ্রষ্টা। ফলে কিশোরীর শারীরিক, মানসিক বিকাশসহ বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশও ব্যাহত হয়।

 

যৌন নির্যাতন: ধর্ষণ, গণধর্ষণ ঘরে বাইরে যৌন নিপীড়ন ও যৌন হয়রানী। কু-প্রস্তাব বা উত্ত্যক্তকরণের মাধ্যমে নির্যাতন: পথে ঘাটে বখাটে ছেলে, কখনো কখনো বয়স্ক পুরুষ কর্তৃকও বিভিন্ন ধরনের কু-প্রস্তাব প্রদান ও উত্ত্যক্ত করার মাধ্যমে নির্যাতন করা হয়। কু-প্রস্তাবে রাজি না হলেই কিশোরীর জীবন হুমকীর সম্মখীন হয়ে পড়ে।

 

প্রজনন অধিকারহরণ সংক্রান্ত নির্যাতন: কিশোরী বয়সে বিয়ে, গর্ভধারণ, গর্ভপাত এবং গর্ভনিরোধক ব্যবহারে বাধ্য করানো। ইউনিসেফ-এর তথ্য মোতাবেক, ১০-১৪ বছর বয়সী বিবাহিত কিশোরীর শতকরা ১৫.৬ ভাগ গর্ভনিরোধক পদ্ধতি গ্রহণ করে।

 

প্রচলিত রীতি-নীতি বা কুপ্রথাভিত্তিক নির্যাতন: যৌতুক সংক্রান্ত নির্যাতন, পারিবারিকভাবে পুত্রশিশুর তুলনায় কন্যাশিশুর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা। একতরফা বিচার করে কিশোরীসহ তার পরিবারকে এক ঘরে করা, দোররা মারা, রাস্তায় কু-প্রস্তাব বা উত্ত্যক্তকরণের পেছনেও কিশোরীকে দায়ী করে পারিবারিক সম্মান রক্ষার্থে কিশোরীকে হত্যা করা বা আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়া।
কিশোরীকে পণ্যে পরিণত করে নির্যাতন: দেহ ব্যবসা, পাচার, উটের জঁকি, বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে নারী দেহের যৌন আবেদনমূলক ব্যবহার, পর্ণোগ্রাফি বা নীল ছবি তৈরি ইত্যাদি।

 

যুদ্ধ-বিগ্রহ ও দ্বন্দ্ব-সংঘাতকালীন সময়ে কিশোরী নির্যাতন: যুদ্ধ ও সংঘাতময় পরিস্থিতিতে নানাভাবে কিশোরীরা নির্যাতনের শিকার হয়। যুদ্ধ, জাতিগত বা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হামলার সময়েও একটি বিষয়ে বিশেষভাবে লক্ষ্য করা গেছে যে, কিশোরীরা সবসময়েই নির্যাতনের লক্ষ্যভুক্ত জনগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

 

 

কিশোরী নির্যাতনের খেসারত বা মাশুল

কিশোরী নির্যাতনের ফলে কেবল মাত্র কিশোরীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না, এর মাশুল গোটা পরিবার, সমাজ তথা সমগ্র রাষ্ট্রব্যবস্থাকেই প্রদান করতে হচ্ছে। কিশোরী নির্যাতনের ফলে পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে পারস্পারিক অবিশ্বাস ও অনাস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে পড়ছে। ফলে অর্থনৈতিক কার্যক্রমেও তারা ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। রাষ্ট্রযন্ত্রটিকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রেও তারা পিছিয়ে আছে।

 

ইউনিনেফ-এর তথ্য মোতাবেক, কন্যাশিশুর খাদ্য ও পুষ্টির প্রতি অবহেলার কারণে কিশোরদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হারে কিশোরীরা যে সকল রোগে ভুগছে তা হলো- বাতজ্বর, সাধারণ জ্বর, আমাশয় এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা। ১৩-১৭ বছর বয়সী কিশোরীদের অর্ধেকের বেশি স্বাভাবিকের তুলনায় কৃশ। পরবর্তীতে এরাই ভিটামিন ‘এ’ ঘাটতির কারণে অধিক সময় অসুস্থ থাকে, গর্ভাবস্থায় মৃত্যু ঘটে এবং কর্মক্ষমতা কমে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আমাদের দেশে ২০ বছর বয়সী বা তার উর্ধ্বে নারীদের তুলনায় ১৮ বছর বয়সের কম প্রসূতিদের মৃত্যুর সম্ভবনা প্রায় ২-৫ গুণ বেশি।

 

কিশোরী নির্যাতনের হার ঘরে-বাইরে, সমাজে এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের হারাতে হচ্ছে রিমি, সীমি, মিমি, মহিমা, পিংকি, সিনথিয়া, কিশোরী বধূ জেনিদেরকে। এসিড সন্ত্রাসের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

এর ফলে আমাদের অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। সামাজিক এবং পারিবারিকভাবে অনেক ক্ষেত্রেই তারা হেয় প্রতিপন্ন হওয়ায় নিজেদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। ফলে নিজের সঙ্গে নিজে যুদ্ধ করে অনেক কিশোরীর পক্ষেই টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কেউ কেউ আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে।

 

কিশোরী তথা নারী নির্যাতন প্রতিরোধে জাতীয় ও সামাজিক উদ্যোগসমূহ
কিশোরী তথা নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বেশ কিছু জাতীয় উদ্যোগ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, যৌতুক নিরোধ আইন ১৯৮০, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ১৯২৯, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৩ (খসড়া), এসিড নিক্ষেপ আইন ২০০২, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেমনামূলক রায়, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০, মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯৭৪। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও কিশোরী নির্যাতন ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা প্রদানসহ আত্মনির্ভরশীলতার লক্ষ্যে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য বিষয়েও সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

 

 

আমাদের করণীয়

আমাদের দেশে ব্যাপক হারে কিশোরী নির্যাতন সংঘটিত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটিকে কোনো সমস্যাই মনে করা হয় না। বিশেষ করে গৃহাভ্যন্তরে সংঘটিত শারীরিক নির্যাতনকে একটি সাধারণ বিষয় হিসেবে দেখা হয়। মানসিক নির্যাতনের ক্ষেত্রেও এটি সমভাবে প্রযোজ্য। অথচ এই নানামুখী নির্যাতনের শিকার হয়ে কিশোরীরা হারাচ্ছে তাদের আত্মবিশ্বাস, সৃজনশীলতা এবং গতিময়তা। তাদের সামনে যে অফুরন্ত সম্ভবনার আলো রয়েছে তা ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এখনই সময়। কিশোরী নির্যাতনকে প্রতিহত করে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের গণজাগরণ সৃষ্টি করা। এ জাগরণের লক্ষ্য হলো সকল প্রকার নির্যাতনের অবসান করে ক্ষুধামুক্ত আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করা।

 

অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/ডিসেম্বর ২০১৪ই.

Facebook Comments