banner

রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 766 বার পঠিত

 

আমার বই পড়া (দ্বিতীয় পর্ব)

রায়হান আতাহার


“হ্যাল্লো কিশোর বন্ধুরা-
আমি কিশোর পাশা বলছি অ্যামিরিকার রকি বীচ থেকে। জায়গাটা লস অ্যাঞ্জেলসে, প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে, হলিউড থেকে মাত্র কয়েকমাইল দূরে। যারা এখনও আমাদের পরিচয় জানো না, তাদের বলছি, আমরা তিন বন্ধু একটা গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছি। নাম- তিন গোয়েন্দা।

আমি, বাঙালী। থাকি চাচা-চাচীর কাছে। দুই বন্ধুর একজনের নাম মুসা আমান, ব্যায়ামবীর, অ্যামিরিকার নিগ্রো। আরেকজন রবিন মিলফোর্ড, আইরিশ অ্যামিরিকান, বইয়ের পোকা। একই ক্লাসে পড়ি আমরা। পাশা স্যালভিজ ইয়ার্ডে লোহা-লক্কড়ের জঞ্জালের নিচে পুরোন এক মোবাইল হোম-এ আমাদের হেডকোয়ার্টার। তিনটি রহস্যের সমাধান করতে চলেছি, এসো না , চলে এসো আমাদের দলে…”

আমার সবচেয়ে প্রিয় লাইনগুলোর মধ্যে প্রথম দিকে থাকবে এই লাইনগুলো। ক্লাস সিক্সে উঠার পর এক বন্ধুর কল্যাণে “তিন গোয়েন্দা”-র সাথে পরিচয় হয়। এরপর আমাকে আর পায় কে! এক নাগাড়ে পড়তে থাকলাম। ঐ সময়টাতে “তিন গোয়েন্দা” ছাড়া কিছু ভাল লাগতো না।

কিশোর-মুসা-রবিনের পাশাপাশি রাশেদ পাশা, মেরি চাচী, জর্জিনা পারকার, রাফিয়ান, টেরিয়ার ডয়েল, ওমর শরীফ, ডেভিস ক্রিস্টোফার, ভিক্টর সাইমন, ফগ র‍্যাম্পারকট, হ্যানসন সবাইকে বাস্তবে খুঁজে ফিরতাম। এখনো ভালোলাগা অনুভূতিটুকু একটুও কমেনি।

তিন গোয়েন্দার সবগুলো ভলিউম সংগ্রহ করা আমার জীবনের অন্যতম একটি লক্ষ্য। কৈশোরের যে এডভেঞ্চার প্রীতি “তিন গোয়েন্দা” দিয়ে শুরু হয়েছিলো তা পূর্ণতা পায় “শার্লক হোমস” দিয়ে। একুশে বইমেলায় “শার্লক হোমস রচনাসমগ্র” কিনেছিলাম, যা আজ অবধি আমার সংগ্রহকৃত অন্যতম সেরা বই।

বিশ্ববিখ্যাত গোয়েন্দা কাহিনী লেখক স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের অনবদ্য কীর্তি “শার্লক হোমস”। শার্লক হোমস, ডাক্তার ওয়াটসন, মাইক্রফট হোমস, প্রফেসর জেমস মরিয়ার্টি, মিসেস হাডসন- প্রতিটি চরিত্র যেন একেকটি মুগ্ধতার নাম। রচনাসমগ্র পড়তে যেয়ে “দ্য ফাইনাল প্রব্লেম” গল্পে শার্লক হোমসের মৃত্যুর ঘটনা পেলাম। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম গল্পটি পড়ে। আবার অবাকও হলাম, কারণ রচনাসমগ্র শেষ হতে তখনো বাকি ছিলো। পরে জানতে পেরেছি, শার্লক হোমসকে পাঠকের চাপে ফিরিয়ে এনেছিলেন ডয়েল। কী যে ভালো লেগেছিলো!

শার্লক হোমসের গোয়েন্দাগিরি তখন আমাকে পেয়ে বসেছিলো। নিজের মাঝে “গোয়েন্দা গোয়েন্দা” ভাব! তবে সেটি স্বাভাবিকভাবেই বেশি দূর এগোয়নি। কিন্তু বইয়ের পাতায় শার্লককে খুঁজেছি বারবার। আমার মত অলস প্রকৃতির পাঠক, যে কিনা এক বই সহজে দ্বিতীয়বার পড়ে না, সেই আমি রচনা সমগ্রটি কতবার পড়েছি তার কোন হিসেব নেই। “২২১/বি, বেকার স্ট্রীট, লন্ডন”- এখনো আমাকে ঠিক আগের মতই টানে। টিভি সিরিজ কিংবা মুভিতে যখনই শার্লককে দেখার সুযোগ পেয়েছি, হাতছাড়া করিনি।
অগণিত এডভেঞ্চারপ্রেমীদের মতো শার্লক হোমস আমার স্মৃতিতে বেঁচে থাকবেন আজীবন।

…..চলবে

১ম পর্ব

Raihan Atahar
Postgraduate Researcher at Bernal Institute
Material and Metallurgical Engineering at BUET

Facebook Comments