banner

বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1175 বার পঠিত

 

আমার বই পড়া (প্রথম পর্ব)

রায়হান আতাহার 


ছোটবেলায় রিডিং পড়তে শেখার আগে আমার মায়ের মুখে ছড়া শুনে ওগুলো মুখস্ত করে ফেলতাম। এরপর যখন রিডিং পড়তে শিখলাম, তখন থেকে কোন লেখা রিডিং করে পড়তে পারার মাঝে অদ্ভুত আনন্দ পেতাম। রাস্তায় বের হলেই আম্মুকে বিরক্ত করে ফেলতাম। বিভিন্ন পোস্টার, বিলবোর্ড রিডিং পড়তাম আর আম্মু ঠিক হয়েছে কিনা বলে দিত। ভুল হলে শুদ্ধ করে দিত।

আমার মনে আছে, একবার রাগ করে ছিলাম। আব্বু বাসায় ফেরার পথে একটা ভূতের গল্পের বই নিয়ে আসলো। আমার রাগ নিমেষেই গায়েব। ঐ বইটাই পাঠ্য বইয়ের বাইরে আমার পড়া প্রথম বই।

যে স্কুলে পড়তাম, সে স্কুলে একবার ছোটখাটো একটা বইমেলা হচ্ছিলো। নিজের পছন্দ অনুযায়ী সেবারই প্রথম বই কিনলাম। কিনেছিলাম “ছোটদের আরব্য রজনী”। কিনে আনার ঘন্টা খানেকের মধ্যে বই পড়া শেষ। খুব মন খারাপ হয়েছিল কেন যে এত তাড়াতাড়ি বই শেষ হয়ে গেল। ঐ বই ফেরত দিয়ে অন্য বই আনার চিন্তাও মাথায় এসেছিল, যদিও বাস্তবায়ন করা হয়নি।

বাসায় এক হুজুর আরবি পড়াতেন। উনি একবার গিফট করলেন সুকুমার রায়ের “পাগলা দাশু”। খুব ভাল লেগেছিল। ভাল লাগার পরিমাণ এতটাই ছিল যে, গত বছরেও সুকুমার রায়ের সব গল্পগুলো আবার পড়েছিলাম।

ছোটবেলায় একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত একেক ধরনের বই পড়ার অভ্যাস ছিল। (এখন অবশ্য সর্বভুক)

প্রথম যখন স্কুলে যাওয়া শুরু করি, তখন কমিকস বইয়ের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। বিশেষত চাচা চৌধুরীর কমিকস। চাচা চৌধুরী, সাবু, রকেট, পিংকি, বিল্লু, এমনকি চাচাজির গাড়ি ডগডগ- এগুলোর জন্য পাগল ছিলাম বলা যায়। প্রতিটি কমিকস কম করে হলেও একশ বার করে পড়া ছিল।

চাচা চৌধুরী চরিত্রের নির্মাতা হলেন কার্টুনিস্ট প্রাণ। মজার ব্যাপার হল, আমি ভাবতাম কার্টুনিস্ট প্রাণ হলেন বাংলাদেশের প্রাণ কোম্পানির মালিক। তাই ঐ সময় প্রাণের জুস ছাড়া অন্য কোন কোম্পানির জুস খেতে চাইতাম না।

একটু বড় হয়ে যাওয়ার পর কমিকসগুলো ছোট এক কাজিনকে দিয়েছিলাম পড়তে। আর ফেরত পাই নাই।

(চলবে)

লেখক পরিচিতি:

Raihan Atahar
Postgraduate Researcher at Bernal Institute
Material and Metallurgical Engineering at BUET

Facebook Comments