All posts by Oporajita

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হোক ব্যবসা

দিন বদলে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে ক্যারিয়ার আর ব্যবসার ধারণা। ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের থেকে শুরু করে বড় কর্পোরেট হাউজগুলো এখন নিত্য নতুন ব্যবসা নিয়ে হাজির হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে দুই কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করেন। ব্যবহারকারীরা কোনো না কোনো ভাবে একজন ভোক্তা। ফলে তাদের টার্গেট করেই মূলত এখন ব্যবসা পরিকল্পনা করছেন অনেকে। যেখানে পোস্টার, ব্যানার বা সংবাদমাধ্যমে শত কোটি টাকা খরচ করেও কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সেখানে স্বল্প খরচে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে সামাজিক এই মাধ্যমগুলো। ট্র্যাডিশনাল বিজ্ঞাপন মানুষ দেখতে চায় না। পত্রিকার প্রথম পাতায় বিজ্ঞাপন দিলে পেজ উল্টিয়ে আর টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিলে রিমোর্ট ঘুরিয়ে অন্যত্রে চলে যায় টার্গেট ক্লাইন্ট। সেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ নিজেই এসে সচল থাকে এসব বিজ্ঞাপনে। সাধারণ মানুষের কাছে শৈল্পিক উপায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব বিজ্ঞাপন পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানগুলো।

অনেকেই ব্যবসায়িক পরিকল্পনা করছেন। এছাড়া অনেকেই যারা আগে থেকে ই-কমার্স ব্যবসা করছেন তারাও মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর বেশি নির্ভরশীল। আপনার যে কোনো ছোট বা বড় ব্যবসাকেও প্রমোট করতে পারেন ফেসবুকের মাধ্যমে। তার আগে কেনো ব্যবসা ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহযোগিতা নেবেন বা কীভাবে এ খাতে ব্যবসার প্রসার ঘটাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যেতে পারে। প্রথমে জানতে হবে আপনার ব্যবসা কী? আপনার টার্গেট ক্লায়েন্ট কে? আপনার টার্গেট ইভেন্ট কোনটি? তবে ফেসবুক কীভাবে আপনার জন্য ব্যবসা নিয়ে আসছে? চলুন একপলকে জেনে নেওয়া যাক।

❏ ফেসবুকে খুঁজুন আপনার ক্লায়েন্টকে

আপনি যদি কনজিউমার কেন্দ্রিক কোনো ক্ষুদ্র ব্যবসায় শুরু করেন যেমন: ক্যাফে, বুটিক,পার্লার, ই-কমার্স বা এফ-কমার্স ওয়েবসাইট তবে অনেকেই ফেসবুকে আপনার পণ্য নিতে সরাসরি আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। এ জন্য লাগবে না বাড়তি কোনো দোকান ভাড়া কিংবা যাতায়াত খরচ। ব্যবসায় শুরু ও তার প্রচার যদি এভাবেই করা যায়, তাহলে তা লাভজনক না হয়ে উপায় কী?

❏ রেজিস্টার করুন ফেসবুক বিজনেস পেজে

যদি আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুজ অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে, তবে চাইলে আজই আপনি রেজিস্টার করে ফেলতে পারেন ফেসবুক বিজনেস পেজে। আপনার ব্যক্তিগত পেজই আপনার ভিজিটর বাড়াতে অনেক সাহায্য করবে। আর কখনো যদি জানতে চান ফেসবুক বিজনেস কেস স্টাডিজ তবে গুগল তো রয়েছেই। জাস্ট ক্লিক অ্যান্ড সার্চ।

❏ আপনার ব্যবসা সম্পর্কে মানুষকে জানান 

শুধু ফেসবুকেই থেমে থাকবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে। ফেসবুক ছাড়াও ব্যবহার করুন ইন্সটাগ্রাম, লিংকড ইন, টুইটার বা পিন্টারেস্ট। প্রত্যেক জায়গায় ছড়িয়ে দিন আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজের লিঙ্ক। জানান আপনার ই-মেইল ও ওয়েবসাইটের ঠিকানা।

❏ আপনার প্রোফাইল বা পেজকে করে তুলুন আকর্ষণীয়

আপনার প্রোফাইলের সার্থক ব্যবহার করুন। ফুটিয়ে তুলুন ইমেজ/ছবিতে আপনার ব্যবসায়ের ইউনিক অফার বা নতুন প্রোডাক্ট লাইন। তুলে ধরুন আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও সেবা সম্পর্কে বিস্তারিত। আপনার প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরুন।

❏ ব্যবহার করুন কী-ওয়ার্ড

দ্রুত ব্যবসার প্রসারে ব্যবহার করুন স্পেসিফিক কী-ওয়ার্ড। যেন মানুষ যে কোনো ডিভাইসেই (ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, মোবাইল) সার্চ করুক না কেন, তা যদি আপনার ব্যবসায়িক পণ্য বা সেবা সংশ্লিষ্ট হয় তবে সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং এ সবার প্রথমে যেন আপনার নাম আসে।

❏ সবাই পছন্দ করে এমন কন্টেন্ট ব্যবহার করুন

আপনারা হয়তো শুনে থাকবেন ‘কনটেন্ট ইজ দ্য কিং’ আর এটি আক্ষরিক ভাবে সত্য। আপনার কন্টেন্ট যদি আকর্ষণীয় না হয় তবে আপনার পোষ্টটি ক্লায়েন্টের দৃষ্টি এড়িয়ে যাবে। বিশেষ করে ছবি বা ভিডিওতে সবচেয়ে বেশি কমেন্ট পরে। এছাড়া জিআইএফ, অ্যানিমেশন এগুলো বেশি শেয়ার করা হয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের মতে ব্র্যান্ডেড প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কন্টেন্টের ৭৫ শতাংশ ইমেজে খরচ করে যার রেসপন্স রেট সবচেয়ে বেশি।

❏ যে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে

আপনার পেজ আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালু সৃষ্টিতে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে এমন কাজের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আপনার দেওয়া মেসেজ যেন বিতর্কিত না হয়; তবে এতেও এক ধরনের মার্কেটিং হবে যাকে বলা হয় ‘নেগেটিভ মার্কেটিং’। এ ধরনের মার্কেটিং কোনো কোনো সময় কাজে দেয় তবে সেটা কতটা কাজে দেবে বা ক্ষতি হতে পারে সেটাও চিন্তা করে নিতে হবে। এমন একটি সোশ্যাল মিডিয়া পলিসি ফলো করুন যেন তা মার্কেট ভাইব ধরতে পারে। প্রয়োজনে সোশ্যাল মিডিয়া এক্সপার্ট কোনো প্রতিষ্ঠানকে পেজ ও কন্টেন্ট ম্যানেজ করার দায়িত্ব দিতে পারেন।

❏ এনগেজমেন্ট বাড়ান

আপনার ফলোয়ারদের সাথে সরাসরি কথা বলুন। তাদের মতামত ও প্রশ্নের স্বতঃস্ফূর্ত জবাব দিন। তাদের আলচনার সুযোগ করে দিন। এতে আপনার এনডরসমেন্ট বৃদ্ধি পাবে। ব্যবসায় আপনি বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করতে পারবেন। আপনার ফেসবুক পেজ থেকে আপনার ভিজিটরকে ওয়েবসাইটে নিয়ে যান। তুলে ধরুন আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশেষত্ব। দরকার হলে তৈরি করুন ব্লগ ও সেখানে আলাদা একটি বিভাগ রাখুন পাঠক প্রতিক্রিয়া ও মতামতের। এতে আপনি আপনার ভোক্তারা আসলে কি চাচ্ছে তা অনুমান করতে পারবেন।

❏ আপনার ফেসবুক ফলোয়ারদের দিন কিছু এক্সট্রা বেনিফিট

কন্টেস্ট, কম্পিটিশন, ডিস্কাউন্ট প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখুন। আপনার ফেসবুক ফলোয়ারদের দিন এক্সট্রা বেনিফিট। তাদের কাছ থেকে রিভিউ নিয়ে পেজে অন্তর্ভুক্ত করুন। অনেকেই ফেসবুকে খুঁজে বেড়ান ইউনিক অফার, তারা হতে পারে আপনার প্রাইম কাস্টোমার। তাদের যদি আপনি সন্তুষ্ট রাখতে পারেন তারাই আপনাকে এনে দিবে আরও ক্লায়েন্ট।

❏ হিসেবে রাখুন প্রতিটি বিষয়

আপনার বিজেনেজ পেজে ঘটা যাবতীয় বিষয়ের হিসাব রাখুন। ফেসবুক পেজ ইনসাইট আপনাকে যাবতীয় তথ্য দিবে যে কোথা থেকে আপনার কাস্টোমাররা কীভাবে আপনার বিজনেসে যুক্ত হচ্ছে। এছাড়াও আপনি ফেসবুকের বিজ্ঞাপন ম্যানেজার ড্যাশবোর্ড থেকে জানতে পারবেন আপনার অ্যাড বিজনেস অবজেক্টের সাথে কেমন পারফর্ম করছে। বিশ্বাস করুন এই সবই করা সম্ভব শুধুমাত্র ফেসবুককে ব্যবহার করে। তাই আজই ভেবে নিন যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সহায়তা নেবেন কিনা। এই বৈশাখ থেকেই আপনার ব্যবসায় খুলুক নতুন দিগন্ত ফেসবুকের মাধ্যমে।

❏ ফেসবুক অ্যাড

আপনি যদি কোনো স্পেসিফিক গ্রুপের কাছে পৌঁছাতে চান তবে ফেসবুক অ্যাডভারটাইজিং সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ পন্থা হতে পারে। আপনি নির্ধারন করে দিতে পারেন কারা আপনার দেওয়া বিজ্ঞাপন দেখবে। যেটা টেলিভিশন বা পত্রিকা করতে পারে না। যেমন আপনি অনলাইনের মাধ্যমে গহনা বিক্রি করতে চান। এই গহনার টার্গেট ক্লাইন্ট কারা তা ঠিক করে দিতে পারবেন। এই ক্লাইন্ট ছেলে না মেয়ে হবে? বয়স ২৫ না ৫০ হবে? ঢাকার মানুষ দেখবে নাকি শুধু চট্টগ্রামের মানুষ এই বিজ্ঞাপন দেখবে তা ঠিক করে দেওয়া যায়। ফেসবুক অ্যাডের মাধ্যম আপনি পাবেন লোকেশন, ইন্টারেস্ট, জনসংখ্যা বিষয়ক তথ্য, বয়স ও ব্যবহারসহ আরও নানান তথ্য। এ জন্য কোনো ডিজিটাল মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিতে পারেন।

 

নিজের প্রতি যত্নশীল হোন

ভালোবাসা একটি গাছের মতো। শুধু প্রয়োজন একটু উর্বর মাটি আর তাতে পর্যাপ্ত পানি। সাথে যদি যুক্ত হয় একটু মায়ামমতা তবে সেই গাছ যেমন দ্রুত বাড়ে তেমনি ফল দেয়, ফুল দেয় আপনার মনের মতো। তাই আপনি যখন কাউকে তার পাওনা পর্যাপ্ত ভালোবাসা দেবেন তখনই কেবল তার মনের বাগানে আপনার দেওয়া বীজ থেকে চারা গজাবে। আর এসব কাজের জন্য চাই নিজের ভালো থাকা। আর নিজের ভালো থাকার অন্তরালে থাকে নিজেকে ভালোবাসা। নিজেকে যখন কেউ ভালোবাসে না, দেখে রাখে না, পর্যাপ্ত যত্ন নেয় না তখন আপনার শরীর আপনার সাথে মনোমালিন্য করে থাকে। আর তাতে দেখা দেয় নিজের প্রতি ভালোবাসাহীনতা। জীবনে উত্থান পতন এলেও আমরা সেই আমাদেরই দোষ দেই। অথচ এই আমাদের বাইরের আমি ভেতরের আমিটাকে কত না যত্ন করে আকড়ে রেখেছে। বাইরের ঝড়ে ভিতর তছনছ হয়ে গেলেও বাইরের আবরণে থাকা শক্ত এই মানব যন্ত্রটিকে রেখেছে সচল। তা কেবলই সম্ভব হয় আপনার নিজের প্রতি নিজের ভালোবাসার জন্য। খুব আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে আপনি আপনার নিজেকে প্রচণ্ড ভালোবাসেন বিধায়ই আপনার প্রতি একটু বেশি যত্ন রাখতে আরেকটি মানুষ খোঁজেন। সবকিছুর গোড়াতেই থাকে এই ভালোবাসার বীজ। তাই সবার আগে ভালো রাখতে হয় নিজেকে।

দ্রুত নয়, ধীরে

কোনো কাজই দ্রুত করলে তার ফল ভালো হয় না। তাই জীবনে করা যেকোনো কাজ ধীরে সুস্থে করুন। যখন কোন কাজ আপনি ধীরে করবেন তার ভালো একটি ফল আপনি দীর্ঘ সময় ধরে পাবেন। তাই নিজের প্রতি ভালোবাসাটাও আস্তে ধীরেই গড়ে তুলুন। আপনার পছন্দের কোনো কাজ ফেলে রাখবেন না। যত দ্রুত পারুন করে ফেলুন। দেখবেন নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসের সিঁড়ি দ্রুত উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে।

নিজের কাছে পরাজিত

নিজের কাছে নিজে যত পারুন পরাজিত হোন। নিজের গণ্ডিকে পেরিয়ে আরো বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করুন। আপনি যখন আপনাকে ছাপিয়ে সামনে যেতে পারবেন কেবল তখনই পারবেন নিজেকে সত্যিকার অর্থে ভালবাসতে। তখনই কেবল আপনার নিজের প্রতি আপনার আত্মবিশ্বাস পুনরায় জন্ম নেবে আর আপনি পারবেন হাসি মুখে নিজেকে ভালোবেসে প্রাণবন্ত থাকতে।

নিজের প্রতি আস্থা
না বলা কোনো কথা নিজের ভেতর চেপে রাখবেন না। এতে আপনার মনের সাথে আপনার তীব্র সমস্যা তৈরি হয়। আর যার ফলে আপনি ভুগেন সিদ্ধান্তহীনতায়। তাই নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাসের প্রতি আটল থাকুন। আর মনে এমন কোনো কথা এলে তা লিখে ফেলুন। তা না হলে তা এমন কারো সাথে শেয়ার করুন যে আপনার বিশ্বস্ত। আর এতে আপনার নিজের কথার প্রতি আস্থা ফিরে আসবে। আপনি এটা মানতে শুরু করবেন যে আপনার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা ভুল হয়নি। আর এতে নিজের প্রতি নিজের ভালোবাসা বাড়ায়।

নিজেকে উপহার দিন
কেউ আপনাকে কোনো উপলক্ষে উপহার দিলো কি না তা গুরুত্বপূর্ণ না। আপনি আপনাকে নিজে কী দিচ্ছেন তা বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই যেকোনো উপলক্ষ্যে নিজেকে নিজের পক্ষ থেকে উপহার দিন। তা হতে পারে আপনার পছন্দের আইসক্রিম কিংবা চকলেট। এতে করে আপনি আপনার নিজের সঙ্গ যেমন উপলব্ধি করতে পারবেন তেমনই নিজেকে উজাড় করে ভালোবাসতে পারবেন।

 

ফ্রুট কাস্টার্ড তৈরির সহজ রেসিপি

ফ্রুট কাস্টার্ড সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। এর রেসিপিও বেশ সহজ। দুধ, ডিম এবং ফল এর মিশ্রণে তৈরি করে ফেলতে পারেন পুষ্টিকর ও সুস্বাদু কাস্টার্ড। বাসায় অতিথি এলে কাস্টার্ড তৈরি করা থাকলে ঝটপট নাশতায় পরিবেশন করতে পারেন। কারণ এটি ফ্রিজে বেশ কিছু দিন রেখে খাওয়া যায়। রইলো রেসিপি

উপকরণ : দুধ এক লিটার, ডিমের কুসুম দুইটা, কাস্টার্ড পাউডার তিন টেবিল চামচ, চিনি ১/২ কাপ বা স্বাদ মত, কিসমিস দুই টেবিল চামচ, কাঠ বাদাম দুই টেবিল চামচ, ফল (কলা, আম, আপেল, আঙুর, লাল বা সবুজ চেরি ফল, ডালিম/আনার, স্ট্রবেরি) কিউব করে কাটা প্রায় ২ কাপ।

ফ্রুট কাস্টার্ড সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। এর রেসিপিও বেশ সহজ। দুধ, ডিম এবং ফল এর মিশ্রণে তৈরি করে ফেলতে পারেন পুষ্টিকর ও সুস্বাদু কাস্টার্ড। বাসায় অতিথি এলে কাস্টার্ড তৈরি করা থাকলে ঝটপট নাশতায় পরিবেশন করতে পারেন। কারণ এটি ফ্রিজে বেশ কিছু দিন রেখে খাওয়া যায়। রইলো রেসিপি

উপকরণ : দুধ এক লিটার, ডিমের কুসুম দুইটা, কাস্টার্ড পাউডার তিন টেবিল চামচ, চিনি ১/২ কাপ বা স্বাদ মত, কিসমিস দুই টেবিল চামচ, কাঠ বাদাম দুই টেবিল চামচ, ফল (কলা, আম, আপেল, আঙুর, লাল বা সবুজ চেরি ফল, ডালিম/আনার, স্ট্রবেরি) কিউব করে কাটা প্রায় ২ কাপ।

 

জেগে উঠুন, সতর্ক হোন !

‘’আমাদের হয়ত দোষ ছিলো,এতরাতে একটা পার্টিতে কেন গেলাম! আমি বলছিনা যে ছেলেদের সাথে মিশা যাবে না। আমরা যেখানে পড়ছি ছেলেদের সাথে পড়ছি।ছেলেদের সাথে হয়ত মেশার প্রয়োজন হবে ! তবে আমি বলব কেউ যেন আমাদের মতো বোকা না হয়!সবাইকে বিশ্বাস না করে। বিশেষ করে উচ্চবিত্ত শ্রেণীটা মনে হয় একটু বেশী অন্যরকম! এটা যাতে খেয়াল করে।‘’-এই কথাগুলো বলছিলেন বনানীর রেইনট্রিতে ধর্ষনের শিকার এক তরুণী একাত্তর চ্যানেলে একটি টক শোতে টেলি কনফারেন্সে।

তার প্রতি সমবেদনা রেখে বলছি ,তিনি যে উপলব্ধি করেছেন এই উপলব্ধিটা আমাদের প্রত্যেক নারীর মধ্যেই আসা উচিত।

‘’কেউ যেন আমাদের মতো বোকা না হয়!’’ হ্যা সত্যিই তাই!

এখন সময় এসেছে নারীদের সচেতন হবার।

বিশেষ করে একজন শিক্ষিত নারীকে তো অবশ্যই সচেতন হতে হবে।

যে কথা বহু বছর আগে বেগম রোকেয়া বলে গেছেন- ভগিনীরা ! চক্ষু রগড়াইয়া জাগিয়া উঠুন, অগ্রসর হোন!”

আমরা নারীরা কি জাগ্রত? আমরা কি আমাদের ক্ষমতা আর অধিকার সর্ম্পকে সচেতন?উত্তর গুলো অবশ্যই নেতিবাচ হবে । চোখ বন্ধ করে বলা যায় না আমরা সচেতন নই। যারা সচেতন তাদের সংখ্যা গুটিকতক।আমাদের নারীরা লেখাপড়ায় ভালো করছে, তথ্য-প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে,আত্ননির্ভশীল হিসেবে গড়ে উঠছে,বড় বড় পদে কর্মরত আছে, সব ঠিক । কিন্তু গোড়ায় গলদ!

দু:খজনক হলে সত্য যে ,উনিশ শতকে বেগম রোকেয়া যে বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন আজকের শিক্ষিত নারী সমাজের মাঝে এখন পযর্ন্ত সেই বোঝ তৈরী হয়নি! তিনি বলেছিলেন-‘’আমরা সমাজের অর্ধাঙ্গ, আমরা পড়িয়া থাকিলে সমাজ উঠিবে কিরূপে? কোনো ব্যক্তি এক পা বাঁধিয়া রাখিলে সে খোড়াইয়া খোড়াইয়া কতদূর চলিবে? পুরুষের স্বার্থ এবং আমাদের স্বার্থ ভিন্ন নহে। তাহাদের জীবনের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য যাহা আমাদের লক্ষ্য তাহাই।’

আমাদের নারীরা জানে না ,তার ভিতরের ক্ষমতা কত!সে কি করতে পারে।সমাজ বিনির্মানে তাকে যে ভূমিকা রাখতে হবে সে খেয়াল কয়জনের আছে!

মাতৃত্বের মতো বিশাল দায়িত্বের গুরুভার সর্ম্পকে আমাদের নারীরা কতটুকু সচেতন?

‘বন্ধু  ছাড়া লাইফটা ইম্পসিবল’,ফ্রি মিক্সিং,মডেলিং এর লোভনীয় অফার –এ সেন্সগুলো যে একধরনের লোভী পুরুয়ের ব্যবসায়ীক দৃস্টিভংগিতে তৈরী তা কি জানে আমাদের নারীরা?

প্রয়োজনে বন্ধু নিবার্চনের ক্ষেত্রে হ্যান্ডসাম, বিত্ত-বৈভব ইত্যাদির চেয়ে ছেলেটি কতটা চরিত্রবান সেটা কয়জন ভেবে দেখেন?

আমাদের নারীরা কেন এটা ভাবে না যে,বাংলাদেশে বেহেশতি বাতাস বইছেনা।এখানে অনেক চোর বদমাইশ আছে যাদের মেয়ে দেখলেই ছুয়ে দেখতে ইচ্ছে করে ।সুতরাং আমি নিরাপদ তো!নিজের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কেন সে সচেতন থাকবে না?

এমনিতর হাজারো প্রশ্ন রয়েছে,যার উত্তর খুজে দেখলে আমাদেরকে হতাশই হতে হয়।

তাই নারীদেরকে বলবো-

‘জেগে উঠুন, সতর্ক হোন!

পরিবারে,আত্নীয়-স্বজনের সামনে,প্রতিবেশীদের মাঝে,যে প্রতিষ্ঠানে আপনি রয়েছেন সেখানে নিজের অবস্থান এমন ভাবে গড়ে তুলুন যাতে আপনাকে টোকা দিয়ে দেখা তো দুরের কথা আপনার দিকে চোখ তুলে তাকাতে দ্বিধা বোধ করে।

মনে রাখতে হবে আপনার অধিকার কেউ আপনাকে দিয়ে যাবে না ,অধিকার আদায় করে নেয়ার মত যোগ্যতা আপনার মধ্যে থাকতে হবে।

নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে লোলুপ দৃষ্টির সামনে নিজেকে উপস্থাপনের চেয়ে মনোযোগী হোন আপনি আগামী প্রজন্মের কারিগর হিসাবে কতটা যোগ্য হয়ে গড়ে উঠছেন।সাবধান হয়ে যান আপনি যেন এমন মা না হন যার অবহেলা আর সঠিক পরিচর্যার অভাবে ছেলে ধর্ষক হয়ে গড়ে উঠে।

অবাধ মেলামেশা নয়, প্রয়োজনে ছেলেদের সাথে মিশতে হলে দুরত্ব  বজায় রাখুন।কারন আপনি যে ছেলেটির সাথে মিশছেন সে যতই আপনাকে ‘তুই তুকারি ‘ করুক না কেন,ছোট  বা বড় বোন মনে করুক না কেন,আপনার ফিগার,হিপের মাপ,ঠোট,চোখ,হাসলে আপনাকে কেমন দেখায় ইত্যাদি সব কিছুই তার দৃষ্টি সীমানায় ভেসে বেড়াবেই! ছেলেদের দৃষ্টি বিপদজনক বলেই আল্লাহ এক্ষেত্রে সংযত থাকতে বলেছেন।একমাত্র কঠোর পরহেযগার পুরুষ ছাড়া আর যে কোন পুরুষেরই এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রন নেই তা হলফ করে বলা যায়।

নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখুন।কারো সাথে একা কোথা দেখা করতে যায়া থেকে বিরত থাকুন।কারন সেখানে তৃতীয়জন থাকে শয়তান! হোক সে বয়ফ্রেন্ড, চাকুরির ইন্টারভিউ,কোন সুপারিশ,বড় ভাইয়ের বন্ধু,ডাকুনে চাচা,মামা ,খালু যে কেউ!

নারী শিল্পীদের বলছি,যারা নাটক সিনেমা আর মডেলিং করছেন,তারা আসুন একসাথে হোন আর যে সমস্ত স্ক্রীপ্টে নারীর অশ্লীল উপস্থাপন আছে তা বজর্ন করুন।নারীর মর্যাদাপূর্ণ উপস্থাপনকে হ্যা বলুন ,অশ্লীল উপস্থাপনকে না বলুন।

নিজের আব্রু রক্ষার ব্যাপারে সচেতন হোন।কেন আপনি নিজেকে জোড়া চোখের তীক্ষ্ন দৃষ্টি দ্বারা  ক্ষত বিক্ষত করবেন? কাদের জন্য আপনি চিত্তহরণী হবেন?যাদের জিভ সব সময় ঝুলে থাকে তাদের জন্য? অবশ্যই না।

থানা ,ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার,বিভিন্ন মহিলা সংস্থা,সাংবাদিক ইত্যাদির ফোন নাম্বার সংগ্রহে রাখুন।আক্রান্ত হবার পূর্বাভাস দেখলেই তাদেরকে ইনর্ফম করুন।

শিক্ষিত হয়েছেন  তো নিজের ব্যাপারে নিজে সচেতন হোন। যোগ্য হয়ে গড়ে উঠুন এসব ধর্ষকদের মুখে লাথি মারার জন্য।

লিখেছেন-আকলিমা ফেরদেৌসী

 

কালোই ছড়াচ্ছে আলো!

এত বঞ্চনার পরও থেমে থাকেননি গোলাপী। নিজের পায়ে দাঁড়াতে স্বাবলম্বী হতেই হবে? স্বামীর সংসার হয়নি তাতে কী হয়েছে? মা-বাবা, ভাইবোনকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে। ছুটে চললেন কাজের সন্ধানে। সেলাই প্রশিক্ষণ নিলেন। একটি মেশিনও কিনলেন। বাড়িতেই শুরু করলেন মেয়েদের জামা বানানোর কাজ। বদলে যেতে শুরু হলো তাঁর জীবনচিত্র। এর পাশাপাশি রংপুরে অবস্থিত একটি পোশাক কারখানায় চাকরিও করছেন।

কালো হওয়ার ‘অপরাধে’ বিয়ের রাতেই স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পর দমে যাননি। নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করে অর্থ উপার্জন করছেন। পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করছেন এমন উদাহরণের ঘটনায় ২০১৫ সালের ‘নারী’ ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতার পুরস্কার পেয়ে গেলেন গোলাপী আক্তার।

রংপুর শহরের দক্ষিণ কামারপাড়ায় ভ্যানচালক আবদুল গনির বড় মেয়ে গোলাপী আক্তার। অভাব-অনটনের সংসারে বেশি দূর পড়াশোনা এগোয়নি। মাত্র পঞ্চম শ্রেণিতেই পড়ালেখার পাট চুকে যায় তাঁর। এরপর ২০০৯ সালে রংপুর শহরের আদর্শপাড়া এলাকার আলী হোসেন নামের এক ভ্যানচালক তরুণের সঙ্গে ১৪ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। এ সময় যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। আর দেওয়া হয়েছিল নাকফুল ও কানের দুল। গোলাপী কি জানতেন, এক দিন পরই তাঁকে স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আসতে হবে?

একে তো বাল্যবিবাহ, তার ওপর যৌতুক, এই বিয়ের পরিণাম যা হওয়ার তা-ই হলো। সেই দিনের ঘটনা বলতে গিয়ে গোলাপী জানালেন, বিয়ের রাতেই (বাসর রাত) এলাকায় চোরের উপদ্রব রয়েছে, এমন অজুহাতে শাশুড়িসহ বাড়ির অন্যরা তাঁর শরীর থেকে খুলে নেন নাকফুল ও কানের দুল। শরীরের রং কালো হওয়ার গঞ্জনা শুনতে হয়েছে রাতভর। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে রাতটা কাটলেও পরদিন সকালে ফিরে যেতে হয় বাবার সেই চিরচেনা বাড়িতেই। আর ফিরে যাওয়া হয় না স্বামীর সংসারে।

এরপর গোলাপী এখানে-ওখানে ঘুরে ফিরেছেন। কী করবেন তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএসের মানবাধিকার কর্মী বিলকিস বেগমের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তাঁর মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানে আলোকিত ভুবনে এক বছরের সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিলেন গোলাপী। এরপর নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করলেন। এরই মধ্যে বিয়ের সম্পর্কটা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

২০১০ সালে যোগ দেন রংপুর শহরে অবস্থিত একটি পোশাক কারখানায়। প্রতি মাসের বেতন আর নিজের সেলাই মেশিন দিয়ে আয়ও হয় বেশ। ব্যাংকেও টাকা জমিয়েছেন। মা-বাবা, দুই ভাই, এক বোনসহ শহরের কামারপাড়ায় ভাড়া বাসায় থেকে জীবন ভালোই কাটছে তাঁদের। এক ভাই অষ্টম ও বোন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। আরেক ভাই পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে বাবার ভ্যান চালান। মা বর্তমানে অসুস্থ। তেমন একটা চলাফেরা করতে পারেন না।

গোলাপী বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতা নারী অন্বেষণে ২০১৫ সালে রংপুর সদর উপজেলা, জেলা পর্যায়ে নির্বাচিত হই। পরিবারের বড় মেয়ে হওয়ায় ইচ্ছে আছে অন্য সব ভাইবোনকে পড়ালেখা শিখিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার। আমার মতো অন্যদের জীবন যেন এ রকম না হয়।’ নিজেকেও প্রতিষ্ঠার অনেক দূরে নিয়ে যেতে চান। তাই মনেপ্রাণে চালিয়ে যাচ্ছেন জীবনযুদ্ধের লড়াই।

অসুস্থ মা সামেনা বেগম বলেন, ‘কত কষ্ট করি টাকাপয়সা জোগাড় করি মেয়েটাক বিয়া দিছি। তখন মোর জানা আছিল না ছোটকালে বেটির বিয়া দেওয়া যায় না।  সেই সংসার দুই দিনও টিকিল না। কালো বলিয়া এমন দুর্দশা হইল। কিন্তু তারপরও মেয়েটা কাজকাম করিয়া সংসারের বোঝা বহন করিয়া যাইতাছে। বেটি হামার হারে নাই।’

 

বাহুবলির নায়ক প্রভাসের আত্মত্যাগ

ভারতের সর্বকালের সেরা ব্যবসাসফল ছবি এস এস রাজমৌলির ‘বাহুবলি ২ : দ্য কনক্লুশন’। কিন্তু এই ‘বাহুবলি’ করতে গিয়েই প্রবল অর্থকষ্টে ভুগেছেন প্রভাস। ত্যাগও স্বীকার করতে হয়েছে অনেক। একসময় তার হাতে কার্যত অর্থই ছিল না! জি নিউজকে একথা জানিয়েছেন পরিচালক নিজেই।

রাজমৌলি জানিয়েছেন, বাহুবলির আগেও প্রভাসের তিনটি ছবি হিট ছিল। তাই অনেক প্রযোজকই বিগ বাজেটের ছবি নিয়ে তার পেছনে পড়েছিলেন। কিন্তু নিজেকে ‘ফোকাসড’ রাখতে প্রভাস সবাইকেই ফিরিয়ে দেন।

এমনকি ‘বাহুবলি’র জন্য কোনো পারিশ্রমিকও ‘দাবি’ করেননি তিনি। গত পাঁচ বছর ধরে নিজেকে উজাড় করে কেবল ‘বাহুবলি’কেই দিয়ে গেছেন প্রভাস। এজন্য তাকে একসময় প্রচণ্ড অর্থ কষ্টেও ভুগতে হয়েছে।

পাশাপাশি ‘বাহুবলি’ করার জন্য ছেড়ে দিয়েছেন ১৮ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন! বিভিন্ন জামা-কাপড়, জুতার ব্র্যান্ডের থেকেও তার কাছে বিশাল অঙ্কের এনডোর্সমেন্ট অফার আসে। কিন্তু মনোযোগে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় সেসবের দিকে ফিরেও তাকাননি তিনি।

মূলত প্রভাসের এই আত্মত্যাগের কারণেই সফলতাটাও এসেছে মধুর। বলিউডে হাজারির ক্লাব খোলার ঈর্ষণীয় সাফল্য ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। বাহুবলির কারণে হলিউডেও অফারও পেয়েছেন তিনি।

 

‘মা’ এ ধরণীর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত

ধরনীর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত ‘মা’। যার পদতলে রয়েছে জান্নাত। ‘মা’ পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ডাক। মানুষ যে ডাকে খুঁজে পায় সীমাহীন শান্তি। দুনিয়াতে মা-ই মানুষের একমাত্র নিরাপদ শান্তির ঠিকানা আর পরকালের মুক্তির অনন্য ঠিকানা।

আজ বিশ্ব মা দিবস। প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার এ দিবসটি পালন করা হয়। সে হিসেবে আজ (১৪ মে, রোববার) পৃথিবীর সর্বত্রই যথাযোগ্য মর্যাদা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হচ্ছে দিবসটি।

যদিও মায়ের ভালোবাসা কোনো নির্ধারিত দিনক্ষণের ওপর নির্ভর করে না। মা যেখানেই থাকুক মায়ের ভালোবাসা সন্তানের হৃদয়ে থাকবে নিরন্তর সবসময়।

১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ৮ মে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মার্কিন কংগ্রেসে মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে আন্তর্জাতিক মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।

পরে ১৯৬২ সালে দিবসটি আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এরপর থেকে দিবসটি বিশ্বব্যাপী মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালিত হয়ে আসছে।

মায়ের ভালোবাসা যেমন কোনো দিনক্ষণ দিয়ে হয় না; তেমনি মায়ের ভালোবাসা হয় সম্পূর্ণ শর্তহীন। পৃথিবীর শুরু থেকে আজ অবদি মাকে নিয়ে রচিত হয়েছে সুন্দর সুন্দর অসংখ্য ছন্দ, কবিতা, গান ও ছড়া।

মায়ের ভালোবাসা, মায়ের জন্য ভালোবাসা ও খিদমত প্রসঙ্গে রয়েছে কুরআন হাদিসে অসংখ্য উপদেশমালা।

কবির ভাষায়- ‘মা বড় ধন সবচে আপন, নেইকো যাহার তুল্য; এক ফোঁট দুধ অনেক দামি, কে দিবে তাঁর মূল্য’।

অন্য কবির ভাষায়- ‘মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু জেন ভাই; ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই।’

আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে রহমতের সুধা দিয়ে প্রতিটি মাকে সৃষ্টি করেছেন। মা সন্তানের জন্য করুণার আধার। সন্তানের জন্য মায়ের ভালোবাসা, করুণা ও মমত্ববোধ আল্লাহর অশেষ কুদরতেরই নিদর্শন। তাইতো সন্তানের দুনিয়া ও পরকালের সফলতা মায়ের সন্তুষ্টির ওপর নির্ভর করে।

মায়ের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন শুধুমাত্র মানুষের জন্যই প্রযোজ্য নয় বরং সমগ্র প্রাণিজগতের জন্য। সন্তান যখন কোনো বিপদাপদে পড়ে, তখন কারো ব্যাথা না লাগলেও মায়ের নাওয়া-খাওয়া-ঘুম বন্ধ হয়ে যায়।

কবি বলেন, ‘বিদেশে-বিরাজ্যে যাদের সন্তান মারা যায়; পশু-পাখি না জানিতে আগে জানে মায়’-এ কারণেই দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি খেদমত পাওয়ার অধিকার শুধুমাত্র মায়ের।

কুরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত সত্য হলো- আল্লাহ তাআলা এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হকের পর সবচেয়ে বেশি আবশ্যক পালনীয় হলো মায়ের হক।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।’ সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ওঠে এসেছে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এক হাদিসে-

বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এক সাহাবির নাম আলকামা। মৃত্যুকালীন সময়ে তাঁর জবান থেকে (তাওহিদের) কালেমা বের হচ্ছিল না। বিশ্বনবি এ খবর শুনে আলকামার ঘরে ছুটে গেলেন এবং আলকামার মাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি পুত্রের ওপর অসন্তুষ্ট?

উত্তরে তিনি বললেন, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমার ছেলে আমার চেয়ে তার স্ত্রীকে বেশি গুরুত্ব দিত। এ কারণে আমি তার প্রতি অসন্তুষ্ট।

তখন বিশ্বনবি উপস্থিত সাহাবাগণকে নির্দেশ দিলেন, কাঠ সংগ্রহ করে আলকামাকে জলন্ত আগুনে পুড়ে শেষ করে দাও।

আলকামার মা এ কথা শুনে গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমার চোখের সামনে আমার সন্তানকে আগুনে জ্বালিয়ে দিলে আমি মা হয়ে কিভাবে তা সহ্য করব?

বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন আলকামার মাকে অনুরোধ করলেন, হে আলকামার মা! তাহলে আপনানি আলকামাকে ক্ষমা করে দিন।

নতুবা আলকামা আপনার অসন্তুষ্টির কারণে পরকালে অনন্তকাল ধরে জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে। তখন আপনি তা কী করে সহ্য করবেন?

একথা শুনে আলকামার মায়ের মন নরম হয়ে যায়, তিনি সঙ্গে সঙ্গে তাকে ক্ষমা করে দেন। তারপর আলকামার জবানে (তাওহিদের) কালেমা জারি হয়ে যায় এবং কালেমা পড়তে পড়তেই ঈমানের সাথে হজরত আলকামা রাদিয়াল্লাহু আনহুর মৃত্যু হয়।

এ হলো মা। মায়ের দৃষ্টান্ত এমনই। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদিস থেকে বুঝা যায়, মা তার সন্তানকে শর্তহীনভাবে ভালোবাসেন।

তাই পৃথিবীর সব সন্তানের উচিত, শুধু মা দিবসে মাকে ভালোবাসা জানানো নয় বরং দুনিয়ায় প্রতিটি দিনই শর্তহীনভাবে মাকে ভালোবাসা। মায়ের খেদমত করা। মায়ের হক যথাযথভাবে আদায় করা।

কেননা সন্তানের প্রতি মায়ের সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি নিহিত রয়েছে। দুনিয়ার সফলতা ও পরকালে জান্নাত প্রাপ্তিতে মায়ের প্রতি সদাচরণ করা সন্তানের জন্য আবশ্যক করণীয়।

মায়ের অবাধ্যতার কারণে সন্তান যেমন দুনিয়াতে লাঞ্ছনার শিকার হয় তেমনি পরকালে কঠিন আজাবেরও সম্মুখীন হতে হবে।

পরিশেষে…
মায়ের হক আদায়ে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপদেশ মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। কেননা বিশ্বনবি বলেন, ‘দুনিয়াতে মায়ের দোয়া অতি দ্রুত আল্লাহর দরবারে কবুল হয়। আল্লাহ বান্দার সব গোনাহ ইচ্ছমতো ক্ষমা করতে পারেন।

কিন্তু মাতা-পিতার অবাধ্যতার গোনাহ আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না। বরং ওই অবাধ্য সন্তানকে এই পার্থিব জীবনেই মৃত্যুর আগে কঠিন শাস্তি দিয়ে থাকেন। (বায়হাকি)

হজরত আলকামা রাদিয়াল্লাহু আনহুর মৃত্যুকালীণ ঘটনাই তাঁর জলন্ত প্রমাণ। তাই মহান প্রভুর দরবারে প্রার্থনা। হে আল্লাহ! আপনি সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভে মাকে শর্তহীনভাবে ভালোবাসার; মায়ের খিদমত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা প্রচলনে আসছে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

দেশজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) শিক্ষা প্রচলনের জন্য এক হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ জন্য ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন’ (দ্বিতীয় পর্যায়) শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার জন্য এই প্রকল্পে শিখন প্রক্রিয়ায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একীভূতকরণ, শিক্ষা ব্যবস্থায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে টেকসই ও অর্জনক্ষম উন্নয়ন পরিকল্পনা, শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়িয়ে একটি শিক্ষক রিসোর্স পুল তৈরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রেরণাদায়ী প্রক্রিয়া সূচনা করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, নতুন এই প্রকল্পটিতে বিদেশি সাহায্য-সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে না। সম্পূর্ণ সরকারি তহবিলে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য প্রকল্পের যাবতীয় পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নের রূপরেখাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, আইসিটি একটি শক্তিশালী, সমৃদ্ধ ও আত্মবিশ্বাসী জাতি গঠনের লক্ষ্য অর্জন করতে বাংলাদেশের জন্য হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।

প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পের মাধ্যমে যেসব মূল কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে সেগুলো হলো- কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ ক্রয়, অফিস সরঞ্জাম কেনা, আসবাবপত্র সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ ব্যয় মেটানো, মনিটরিং ও মেনটরিং ব্যয়, প্রকল্প পরিচালন ব্যয়, সেমিনার ও কনফারেন্স খরচ এবং যানবাহন কেনা হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা (মাউশি) অধিদফতর মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ৩৫ হাজার প্রতিষ্ঠানসহ বিপুলসংখ্যক উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র। এ স্তরে আইসিটির মাধ্যমে শিক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে মাউশি অধিদফতর ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জুন মেয়াদে প্রথম পর্যায়ে ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে আইসিটির মাধ্যমে শিক্ষার প্রচলন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২৩ হাজার ৩৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ল্যাপটপ, ইন্টারনেট মডেম ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ডিজিটাল কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে ২৪ হাজার ২০৪ জন শিক্ষকও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে আইসিটির ব্যবহারকে আরও যুগোপযোগী করার জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রাথমিক প্রস্তাবে এক হাজার ৪৫২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় এবং ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হলেও পরে পরিকল্পনা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যয় কমিয়ে এক হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নের সময় ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ধরা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম জানান, ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা এ পরিকল্পনার আওতায় দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্য রয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সেকশন ১২.৩.২.এ আইসিটির মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নের বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। তাই এ ধরনের প্রকল্প সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করবে।

 

নবজাতক কোলে নিয়েই পরীক্ষা দিচ্ছেন দুই মা

চলছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষাকেন্দ্রের একটি কক্ষে একেবারে সামনের বেঞ্চে দুই ছাত্রী বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন। সাধারণ এক দৃশ্য। কিন্তু একটু খেয়াল করলেই অসাধারণত্বটা চোখে পড়ে। দুজনের কোলেই শিশু। নবজাতক। ২ এপ্রিল জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সরিষাবাড়ী পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে এই ঘটনা দেখা গেল।
‘আমি পরীক্ষা দেব, এটাই ছিল আমার ইচ্ছা। তাই দুই দিনের নবজাতককে নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছি।’ বললেন পরীক্ষার্থী বেবী আক্তার। ২০ বছর বয়সী বেবী আক্তার এবারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষার্থী। অদম্য তাঁর ইচ্ছাশক্তি। পরীক্ষার পর কথা বলে জানা গেল, ৩১ মার্চ রাত আটটায় সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই মায়ের কোল আলো করে আসে এক কন্যাসন্তান। সন্তান জন্মের দুই দিন পর পরীক্ষা। বেবী আক্তার তবু চলে আসেন পরীক্ষা দিতে। সন্তানের নাম রেখেছেন খাদিজা।
সরিষাবাড়ীর শিমলা বাজারের মো. জাকারিয়ার স্ত্রী বেবী আক্তার। স্বামী এখন সৌদি আরবে আছেন কর্মসূত্রে। বেবী আক্তার অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। পরিবারের সবাই তাঁকে সহায়তা করেছেন। ২০১৫ সালে উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের ছাতারিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদের মেয়ে বেবী আক্তারের সঙ্গে পৌর শহরের শিমলা বাজারের সোহরাব মণ্ডলের সৌদিপ্রবাসী ছেলে জাকারিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পরও বেবী আক্তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান। ২০১৫ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন স্থানীয় চর বাঙ্গালী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম কোর্সে।
বেবীর মা আনোয়ারা বেগম বললেন, ‘মেয়ে আমার ধৈর্যশীল ও সংগ্রামী।’ বেবী আক্তারের শ্বশুর সোহরাব মণ্ডল যোগ করলেন, ‘আমার পুত্রবধূ বিয়ের পর লেখাপড়া বন্ধ না করে রাত জেগে লেখাপড়া করেছে।’
বেবীর কথা হলো। এবার আসি একই বেঞ্চের আরেক পরীক্ষার্থী মা লিপি খাতুনের (২১) কথায়। তিনি ২৬ দিনের নবজাত শিশুকে কোলে নিয়ে একই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। সরিষাবাড়ীর মহাদান ইউনিয়নের সানাকৈর এসএস টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে লিপি খাতুন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এই মা শিশুর নাম রেখেছেন জানিক।
৪ এপ্রিল কথা হয় পরীক্ষাকেন্দ্রের কক্ষ পরিদর্শক রাশেদা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা চলার সময় মাঝেমধ্যে পরীক্ষার্থী মায়ের কাছ থেকে আমি এই দুই শিশুকে কোলে নিই। নতুন মায়েদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে ব্যাপারও দেখি।’
সরিষাবাড়ী পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এবং পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব সৈয়দ আবদুর রউফ বলেন, ‘আমার ৩৮ বছর শিক্ষকতা জীবনে এমন পরীক্ষার্থী মা কখনো দেখিনি। এ ধরনের পরীক্ষার্থী মায়েরা যেন হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিতে পারেন, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করব। পাশাপাশি এ রকম আত্মপ্রত্যয়ী মায়েরা যেন শিক্ষাজীবন শেষে কর্মসংস্থানের নিশ্চিত সুযোগ পান।’
৪ এপ্রিল পরীক্ষার সময় বেবী আক্তার ও লিপি খাতুনকে দেখতে যান উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আমাতুস জোহরা। তিনি বলেন, নারীরা এখন যে কত আত্মনির্ভরশীল হয়েছে, তার একটা দৃষ্টান্ত এই দুই পরীক্ষার্থী মা। নিজেদের মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে নারীরা আর পিছিয়ে থাকবে না।
বেবী আক্তার ও লিপি খাতুন এইচএসসির সব কটি পরীক্ষাই দেবেন তাঁদের নবজাত শিশুকে কোলে নিয়ে। এভাবে পরীক্ষা দিতে তাঁদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। নারীরা তাঁদের দেখে অনুপ্রাণিত হবেন এবং এগিয়ে যাবেন—এমনই প্রত্যাশা করছেন তাঁরা।

 

চকোলেট আইসক্রিম তৈরি করবেন যেভাবে

গরমে ঠান্ডা কিছু খাওয়ার জন্য মন তো আকুপাকু করবেই। কিন্তু তা খেতে হবে রয়ে সয়ে। কারণ এই গরমে একটু অসাবধনতায় আপনি পড়তে পারেন কঠিন অসুখে। তাই গরম তাড়াতে আইসক্রিম খান আর যা কিছুই খান, তা যেন স্বাস্থ্যকর হয়। তাই ঘরেই তৈরি করতে পারেন চকোলেট আইসক্রিম। চলুন জেনে নেই-

উপকরণ: গুঁড়া দুধ ২ কাপ, পানি আড়াই কাপ, চিনি ২ টেবিল-চামচ, চকলেটের দুটি ছোট বার, ক্রিম ১ টিন, ওভালটিন ৩ টেবিল-চামচ, তরল গ্লুকোজ ১ চা-চামচ, কনডেন্সড মিল্ক আধা টিন, জেলাটিন গোলানো ২-৩ টেবিল-চামচ, সিএমসি পাউডার গোলানো ১ টেবিল-চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল-চামচ।

প্রণালি :

প্রথমে গুঁড়া দুধ, পানি, কনডেন্সড মিল্ক, চিনি, ওভালটিন ও কর্নফ্লাওয়ার একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এবার মিশ্রণটি প্যানে ঢেলে চকলেট দিয়ে জ্বাল দিন। ঘন হয়ে উঠলে নামিয়ে তরল গ্লুকোজ মেলাতে হবে। এখন কিছুটা ঠান্ডা হওয়ার পর সিএমসি ও জেলাটিন গোলা মেলাতে হবে। ঠান্ডা হওয়ার পর ক্রিম মিলিয়ে বিট করে নিন। মিশ্রণটি ডিপ ফ্রিজে ২ ঘণ্টা রেখে জমাতে হবে। দুই ঘণ্টা পর পর বের করে বিট করতে হবে চার-পাঁচবার। শেষের বার মেরাং বানিয়ে একসঙ্গে মিলিয়ে জমাতে হবে। ২টি ডিমের সাদা অংশ ও গুঁড়া চিনি ২ টেবিল-চামচ একসঙ্গে বিট করে মেরাং বানাতে হবে। মিলিয়ে চূড়ান্তভাবে জমাতে হবে। ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা জমার পর পরিবেশন করুন।

 

নিজেকে ভালোবাসুন

ইংরেজিতে একটি কথা আছে, যার বাংলা অর্থ হচ্ছে জীবন ফুলের বিছানা নয়। জীবনে উত্থান, পতন, সমস্যা থাকবেই। নয়তো জীবন আপনার কাছে পানসে মনে হবে। আপনার কাছে জীবন শুধু দিন গিয়ে রাত আসার মতোই মনে হতে শুরু করবে। সময়ের কারণে আমরা নানাভাবে নানা কাজে যুক্ত হয়ে পড়ি। কখনো তা নিজের তাগিদে আবার কখনো তা কাছের মানুষকে খুশি করতে। এসবকিছুর মাঝে আমরা ভুলে যাই নিজের প্রতি নিজের মনোযোগ দিতে। কারো মাধ্যমে কাজ করিয়ে নিতে নিতে নিজেকে দিয়ে কাজ করানোর শক্তিতে জং পড়ে যায়। আপনি যদি আপনার ভেতরে থাকা কার্যক্ষমতা আর দক্ষতাকে বিচার করতে না পারেন তবে আপনার জীবনের যোগফলের খাতায় শূন্য আসা অসম্ভব কিছু না। তাই আত্মকেন্দ্রিকতাকে চাবি বানিয়ে জীবন নামে তালাটাকে খুলতে শিখুন। দেখবেন আপনার চারপাশটা কত রঙিন। আত্মকেন্দ্রিকতার খাতায় নিজের নাম জুড়ে দিতে চাই কিছু কাজ আর অধ্যাবসায়, যা আপনাকে নিজের প্রতি মনোযোগী করে তুলবে।

অন্যর সাথে তুলনা
সুন্দর এই পৃথিবীতে আমরা সবাই একে অন্যর থেকে আলাদা। আমাদের স্বপ্ন আলাদা, আমাদের কর্ম আলাদা। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিও আলাদা। তাই কাজের ক্ষেত্রেও আমাদের চলন, বলন, ভাব বিনময় সব কিছুতেই আছে তারতম্য। আমাদের অক্ষমতাতেও আছে ঠিক তেমনি পার্থক্য। আপনি যখন কোনোকিছুতে খুব ভালো করেন তখন আপনাকে কেউ তুলনা করেনা। কিন্তু যখনই খারাপ করবেন আপনাকে তুলে ধরবে সবার সামনে। আর এতেই সৃষ্টি হয় নিজেকে নিয়ে অন্যর সাথে তুলনা। যা আপনার নিজস্বতাকে গলা টিপে হত্যা করে। তাই নিজের আত্মমর্যাদা আর নিজের ক্ষমতাকে বাচিয়ে রাখতে বাঁচিয়ে রাখুন নিজস্বতাকে।

মনস্থির করা
আপনি যখন কোনো বিষয়ে অস্থির থাকবেন আপনার কোনো কিছুতেই মন বসবে না। বরং এই পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর কাজটিও আপনার কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে উঠবে। আর এই বিরক্তির ফলে আপনার দ্বারা ভুলভাল কাজ হতে পারে। তাই সবার আগে মনস্থির করুন, এরপরে কাজের দিকে পা বাড়ান আর নিজের ভেতরে থাকা শক্তিকে জাগ্রত করুন।

ভালোবেসে শিখে নিন
কোনোকিছু শেখার পেছনে থাকা মূল মন্ত্র হচ্ছে ভালোবাসা। আপনি যখন আপনাকে ভালোবাসবেন তখন আপনি আপনার জন্য কিছু শিখতে চাইবেন। ঠিক সেইভাবে, যেভাবে আপনি কাউকে ভালোবাসলে তার জন্য করেন। এই ভালোবাসাই আপনাকে আপনার জন্য কাজ করায় আর নিজেকে চিনতে উৎসাহ দেয়।

যাত্রা
জীবন যতদিন থাকবে এই যাত্রাও ঠিক ততদিন থাকবে। আর এই জীবনের যাত্রার একমাত্র সঙ্গী হচ্ছেন আপনি। গ্যালারির বাইরে থাকা দর্শকরা যেমন খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেয় তেমনই আপনার জীবনে থাকা গ্যালারির বাইরের মানুষগুলোও আপনাকে উৎসাহ দেয়। কিন্তু আপনাকে করতে হবে আপনার কাজগুলো তার জন্য প্রয়োজন আপনার নিজের প্রতি মনোযোগী হয়ে ওঠা।

 

বিশ্ব মা দিবস

আজ ১৪ মে রোববার বিশ্ব মা দিবস। মা দিবস একটি সম্মান প্রদর্শন জনক অনুষ্ঠান যা মায়ের সন্মানে এবং মাতৃত্ব, মাতৃক ঋণপত্র, এবং সমাজে মায়েদের প্রভাবের জন্য উদযাপন করা হয়। বিশ্বের সর্বত্র মায়ের এবং মাতৃত্বের অনুষ্ঠান উদযাপন করতে দেখা যায়।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে দিনটি পালন করা হয়। নরওয়েতে, মার্চের চতুর্থ রোববার আয়ারল্যান্ড, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাজ্যে মা দিবস পালিত হয় ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় রোববার। তবে বাংলাদেশে মা দিবস নির্ধারণ করা হয়েছে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার।

মা দিবসের প্রবক্তা আনা জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারা জীবন ব্যয় করেন অনাথ-আতুরের সেবায়। মেরি ১৯০৫ সালে মারা যান।

লোকচক্ষুর অগোচরে কাজ করা মেরিকে সম্মান দিতে চাইলেন মেয়ে আনা জার্ভিস। অ্যান মেরি রিভস জার্ভিসের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচার শুরু করেন। সাত বছরের চেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় মা দিবস।

দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের বিরোধিতা করে আনা জার্ভিস বলেছিলেন, ‘মাকে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো, তাকে দুই কলম লেখার সময় হয় না। চকলেট উপহার দেওয়ার অর্থ হলো, তা নিজেই খেয়ে ফেলা।’

দিবসটি উপলক্ষে দেশব্যাপী বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করছে। এ দিনে মায়েদের উপহার দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ফ্যাশন হাউসগুলো বিশেষ ধরনের শাড়ি বাজারজাত করছে। বাংলাদেশে দিবসটি ঘটা করে পালনের ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়।

নাগরিক জীবনে দিনটি পালনের তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে কয়েক বছর ধরে। গ্রামের চেয়ে শহরে এ আয়োজন থাকে বেশি। ঢাকায় আজ বিভিন্ন শপিংমলে মায়ের জন্য উপহার সামগ্রী কিনতে ভিড় করবেন সন্তানরা। ফোনে অনেকেই মাকে ভালোবাসা জানাবে।

মায়ের জন্য শাড়ি, গহনা, ব্যবহার্য জিনিসপত্র কিনবে সন্তানরা। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনদাতাও এ দিবসকে ঘিরে বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে। আজাদ প্রডাক্টস প্রতিবছরের ন্যায় রত্নগর্ভা মাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।

 

অন্যের সুখে অসুখী!

আগে প্রচুর ফেসবুকিং করতাম। ইদানীং কমিয়ে দিয়েছি। সেটা অন্য কারও ওপর রাগ করে নয়, নিজের ওপর বিরক্ত হয়ে। বিরক্তির কারণ হলো, আমি লক্ষ করলাম যে সামাজিক মাধ্যমে এসে আমার ভেতর নানা ধরনের অসামাজিক চিন্তাভাবনার জন্ম হচ্ছে। তার মধ্যে একটা হলো অন্যের সুখ দেখে হিংসা করা। দেখলাম নিউজ ফিডে কেউ যদি নিজের ব্যাপারে ভালো কিছু বলে বা নিজের জীবন নিয়ে ভালো কিছু শেয়ার করে, তাহলে তাদের জন্য খুশি না হয়ে আমার তাদের প্রতি হিংসা হচ্ছে। নিজের ব্যাপারে এটা ভালো লাগল না। ভাবলাম থাক, তাহলে আমি কয়েক দিন সামাজিক মাধ্যমে চলাফেরা কমিয়ে দিই।
দেশ থেকে শুরু করে বিদেশে থাকা আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুবান্ধবের খবর আমরা পাই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা টুইটার থেকে। কী খেলাম, কেমন আছি, কী পরব অথবা পড়ব, কোথায় যাচ্ছি, কোথায় যেতে ইচ্ছা করছে—সব জানাই ফেসবুকের মাধ্যমে। কেনাকাটা করি ফেসবুকে, সামাজিক দায়িত্ব পালন করি ফেসবুকে, এমনকি রক্তের প্রয়োজনে আশ্রয় নিই সামাজিক মাধ্যমের। ক্রমেই আমাদের একটা বড় জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক মাধ্যম আর শুধু বিনোদনের জায়গা নেই। সামাজিক মাধ্যম এবং বিশেষ করে, ফেসবুক অনেকের জন্যই একধরনের সমান্তরাল জগতে পরিণত হয়েছে।
এখন ফেসবুক বা সামাজিক মাধ্যমে আচরণ এবং অনুভূতির সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের আচরণ ও অনুভূতি আলাদা করে দেখার কোনো যৌক্তিকতা আমি দেখি না। সাধারণ জীবনে যদি ঈর্ষাবোধ বেড়ে যায়, তাহলে আমরা স্বভাবতই চিন্তিত হয়ে পড়ব। চেষ্টা করব কীভাবে নিজের ভেতর থেকে এ ধরনের নেতিবাচক চিন্তাভাবনা দূর করা যায়। তাহলে ফেসবুক ভিন্ন হবে কেন?
আমি চিন্তা করে দেখলাম, যেকোনো দাওয়াত বা যেকোনো জায়গায় গিয়ে যদি আমার আশপাশের মানুষের সুখ সহ্য না হয়, তাহলে আমি কী করব। প্রথমে হয়তো সেসব জায়গায় যাওয়া কয়েক দিনের জন্য বন্ধ রাখব। এ জন্যই আপাতত আমার ফেসবুকে যাওয়া-আসা কম। তবে এটা কোনো ধরনের স্থায়ী সমাধান নয়। কেন আমার ভেতরে নেতিবাচক চিন্তা বা অনুভূতি হচ্ছে, সেটা বুঝতে হবে এবং সেই চিন্তা বা অনুভূতিগুলো ঝেড়ে ফেলতে হবে।
অন্যদের সুখে কেন খুশি হতে পারছি না? অনেক চিন্তা করে দেখলাম, এর কারণ হয়তো-বা আমি আমার নিজের জীবন নিয়েই অসন্তুষ্ট। এই অসন্তুষ্টির সমাধান কী? সমাধান অনেক স্তরের। প্রথমত, চিন্তা কম করে যেসব কাজ করে মন আর শরীর ভালো লাগে, সেগুলো করা। আমার জন্য এ ধরনের কাজ মানে দৌড়ানো, অর্থাৎ ব্যায়াম করা আর ছবি তোলা। দৌড়ানো শুরু করলাম নতুন উদ্যমে। সিদ্ধান্ত নিলাম, যা-ই হোক না কেন সপ্তাহে অন্তত দুই দিন আমি ছবি তুলব।
আরেকটা জিনিস, যেটা করলে আমার মন আর শরীর হালকা হয়, সেটা হলো ঘুরে বেড়ানো। ব্যস্ত জীবন আমার। সব সময় বড় ছুটি নেওয়ার সুযোগ হয় না। তাই বলে হাত-পা গুটিয়ে রাগ আর হিংসা পুষে রাখা ঠিক হবে না। ঠিক করলাম আর কোথাও না যেতে পারলে চিড়িয়াখানায় যাব। নিজের মতো আরও কয়েকটা বানর দেখব। ছবি তোলা, দৌড়ানো, ঘর থেকে বেরিয়ে একটু ঘোরাঘুরি করা খুব জটিল কোনো কাজ নয়। কিন্তু অদ্ভুতভাবে লক্ষ করলাম, এই সহজ জিনিসগুলো কাজে দিচ্ছে। মন ভালো লাগছে। অন্যদের সুখও আমাকে আনন্দ দিচ্ছে। তবে এখানেই শেষ নয়।
ভেবে বের করলাম যে অসন্তুষ্টির আরেকটা কারণ হলো, নিজের যা আছে সেটার ব্যাপারে আমি যথেষ্ট কৃতজ্ঞ নই। অনেক সময় আমরা আমাদের জীবনের খারাপ দিকগুলো নিয়ে বেশি মনোযোগী হয়ে পড়ি। তখন নিজের জীবন দুর্বিষহ মনে হয়। অন্যদের সুখ দেখলে বিরক্ত লাগে। এই ফাঁদ থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা সহজ উপায়, প্রতিদিন অনুশীলনে নিজের জীবনে ভালো জিনিসগুলো নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবা এবং ভালোর জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া। তখন নিজের অস্তিত্বের প্রতি মমতা বাড়ে। অন্যদের সুখের প্রতি সহানুভূতি আসে।
সামান্য ফেসবুকে প্রতিহিংসাপরায়ণ হওয়া নিয়ে এত চিন্তা কেন? কারণ আগে যেটা বললাম। ফেসবুকের অনুভূতি আর সাধারণ জীবনের অনুভূতি পৃথক করার কিছু নেই। নেতিবাচক চিন্তা যেখানেই আসুক, দূর করতে হবে। এবং দূর করা সম্ভব।
লেখক: অভিনেতা

 

বিষণ্নতা দূর করবেন যেভাবে

জীবনে চলতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতা পার হতে হয় আমাদের। কখনো নিজের অজান্তেই হয় মন খারাপ। ভর করে বিষণ্নতা। আর এই বিষণ্নতা অল্প সময়ের জন্য হতেই পারে। কিন্তু সমস্য বাঁধে তখনই, যখন বিষণ্নতা দীর্ঘ সময়ের জন্য আসে। তবে বিষণ্নতায় ডুবে থাকা কোনো কাজের কথা নয়। বিষণ্নতা দূর করার জন্য সচেষ্ট হতে হবে আপনাকেই।

মন খারাপ হলে ভালো কোন স্যালোনে গিয়ে নিজের রেগুলার লুকটাকে কিছুটা পরিবর্তন করুন, হতে পারে সেটি হেয়ার কাট, হেয়ার কালার অথবা সেগুলো না চাইলে একটি ভালো ফেশিয়াল বা স্পা! অথবা চাইলে পরিবর্তন করতে পারেন পোশাকও। উজ্জ্বল রঙকে প্রাধান্য দিন, পছন্দের পোশাকটিকেও।

নিজে নিজেই কিছু তৈরি করুন, প্রিয়জনের জন্য কার্ড, ঘর সাজানোর জিনিস, পোস্টার, অরিগ্যামি করুন। দেখবেন কষ্ট অনেক কম লাগবে। কাছের মানুষগুলোকে বাইরে থেকে কিনে না দিয়ে নিজেই কিছু বানিয়ে দিন। যাকে দেবেন তিনিও প্রচুর খুশি হবেন,আপনার বিষণ্নতাও দূর হবে।

মন খারাপ হলে বৈরী কোনো পরিবেশে ঘুরতে যান, রোমাঞ্চকর কিছু করুন। দেখবেন যখন আপনি মজার কিছু নিয়ে উত্তেজিত থাকবেন, মন ভালো হয়ে যাবে।

মন খারাপের সময়টাতে নিজে ভিন্ন কিছু রান্না করুন অথবা চলে যান অপরিচিত কোনো খাবারের দোকানে, তাদের স্পেশাল বা আপনার জন্য নতুন এমন কোন একটি আইটেম ট্রাই করে দেখুন। দেখবেন ভালো খাবার আপনাকে অনেকখানি প্রশান্তি দিচ্ছে।

দূরে কোথাও যাওয়ার সময় অথবা সুযোগ না থাকলে কোনো পার্কেই না হয় কাটিয়ে আসুন সময়। রোলার কোস্টার রাইড খারাপ লাগবে না কোনভাবেই।

ছবি তুলুন বা আঁকুন, এমন না যে আপনাকে খুব সুন্দর পারতেই হবে, কিন্তু সুন্দর করার চেষ্টা করতে থাকুন, বিষণ্নতা কমবে।

 

এই গরমে হালকা সাজ

গরমের এই সময়ে সাজ নিয়ে সবাইকেই বেশ ঝামেলায় পরতে হয়। কোন সাজে আপনাকে সতেজ লাগবে আর আপনার ত্বকের সাথে মানিয়ে যাবে তা ভাবতে ভাবতেই পার্টিতে কিংবা গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। আর সাজের ক্ষেত্রে তা মন মতো না হলে আর তাতে নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে না পারলে সারাটা দিনই খারাপ কাটে। এই গরমে সাজ ঠিক রাখতে আর নিজেকে সতেজ দেখাতেই অনেকটা সময় চলে যায়। কিন্তু ছোট ছোট কিছু বিষয় খেয়াল করলে এই গরমেও আপনার সাজ থাকবে পরিপাটি।
হালকা মেকআপ
গরমে সময় সাজের দিকে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে মুখের মেকাপ। ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা ঠিক রেখে সাঁজের সব দিক ঠিক রাখা বেশ কঠিন। গরমের সময় যখনি মুখে মেখাপ লাগাতে যাবেন তার আগে মুখ ফেস ওয়াস দিয়ে দ্গুয়ে নিন। এর পরে  ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এরপরই বিবি ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। এতে মেকাপ করলে মুখে তা খুব সহজে বসবে এবং উঠে যাবে না। আর ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ত্বকে যেন ভালোভাবে ব্লেন্ড হয় সেদিকেও লক্ষ রাখুন। এতে আপনাকে সারাদিন বেশ সতেজ আর প্রাণবন্ত লাগবে

ব্লাশন
গরমে ব্লাশন লাগাতে একটু ভুল হলে তা সাঁজের পরো বিষয়টিই নষ্ট করে দেয়। তাই এই গরমে ক্রিম বেইজ ব্লাশন বেছে নেওয়া উচিত এটি  দীর্ঘস্থায়ী হয়। আর এই আবহাওয়ায় উজ্জ্বল রং এড়িয়ে হালকা ব্লাশন বেছে নেওয়াই ভালো। যার মধ্যে আপনি বেঁছে নিতে পারেন অ্যাপ্রিকোট বা কোরাল, হালকা গোলাপি ইত্যাদি রংগুলো। বাড়তি উজ্জ্বলতা যুক্ত করতে ব্লাশনের উপর হালকা করে ব্রোঞ্জার বুলিয়ে নিতে পারেন।

চোখের সাজ
গরমে চোখে সাঁজের সাঁজের ক্ষেত্রে চকচকে শ্যাডো এড়িয়ে  চলুন। হালকা রংয়ের শ্যাডো দিয়ে পাপড়ি ঘেষে লাইনার টেনে নিন। চাইলে রঙিন লাইনারও ব্যবহার করা যেতে পারে। চোখের নিচে দিতে পারেন কাজল, এরপর হালকা করে স্মাজ করে নিন। উপরের ও নিচের পাপড়িতে ঘন করে মাস্কারা লাগিয়ে নিতে পারেন। তবে তা ওয়াটার প্রুভ হলে সবচেয়ে ভালো হয় গরমের এই সময়ের সাঁজের ক্ষেত্রে।

লিপস্টিক
গরমের এই সময়ে হালকা রঙের আর ম্যাট লিপস্টিক আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো নির্বাচন হবে। মেজেন্টা, লাল, চড়া গোলাপি কিংবা বেগুনি রঙের ম্যাট লিপস্টিকেও আপনাকে দারুণ মানাবে আর সতেজ দেখাবে।

 

আম দিয়েই তৈরি করুন মজাদার ক্ষীর

আসছে আমের মৌসুম। বাজারে এখনই উঠতে শুরু করেছে পাকা আম। আম দিয়ে তৈরি করা যায় নানা উপাদেয় খাবার। দুধ দিয়ে ক্ষীর রান্না তো অহরহই করে থাকেন। এবার নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে যাক। আম দিয়েই তৈরি করে ফেলুন সুস্বাদু ক্ষীর। কীভাবে? রইলো রেসিপি-

উপকরণ :
দুধ ২ কেজি, পোলাও চাল / বাসমতি চাল ১ কাপ, চিনি ১ কাপ (কম বেশি করা যাবে), এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা কয়েকটা, আম এর পিউরি/টিন ম্যাঙ্গো পাল্প ১ টিন, ডাবল ক্রিম ৩০০ মি.লি.।

প্রণালি :
হাড়িতে দুধ দিয়ে সাথে পোলাও চাল/বাসমতি চাল ১ কাপ, চিনি ১ কাপ (কম বেশি করা যাবে) এলাচ দারুচিনি তেজপাতা কয়েকটা মিশিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। আস্তে আস্তে ঘন হতে থাকবে। খেয়াল রাখবেন যেন নিচে না লাগে। ঘন হলে নামিয়ে নিন। এবার আমের পাল্পটা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিয়ে ক্ষীরের সাথে মিশিয়ে নিন। (সরাসরি চুলায় আমের মিশ্রণটা দিলে দুধ ফেটে যাবার সম্ভবনা থাকে তাই ক্ষীর ঠান্ডা হবার পর আমের মিশ্রণটা মেশাবেন) সাথে ডাবল ক্রিম ৩০০ মি.লি. মিশিয়ে নিন। ক্ষীর এর উপর কিছুটা পাল্প সাজানোর জন্য দিতে পারেন। ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।

 

স্বপ্ন দেখে ভয় পেলে যে দোয়া পড়বেন

মানুষ কর্ম ব্যস্ত জীবনে ক্লান্ত শরীরে বিশ্রামে যায়। অনেক সময় ঘুমের ঘোরে দিনের ব্যস্ত সময়ের ভালো-মন্দ বিষয়গুলোর একটা প্রভাব তার মাঝে রয়ে যায়। মানুষ স্বপ্নে তা দেখে। অনেকে ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে থাকে।

আবার আল্লাহ তাআলা মানুষকে সতর্কতামূলক অনেক বিষয় স্বপ্নের মাধ্যমে অবহিত করে থাকেন। এ স্বপ্নের মাঝে থাকে ভালো ও মন্দের অনেক ইঙ্গিত। ঘুমের মধ্যে মন্দ বা বিপদাপদের স্বপ্ন দেখে মানুষ অনেক সময় অস্থির হয়ে যায়। আবার কেউ কেউ চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠে।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বপ্নের অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকতে আল্লাহর নিকট দোয়া করার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আমর ইবনে শোয়াইব রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পায়, তখন যেন সে বলে-

আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাজ্বাবিহি ওয়া ইক্বাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহি ওয়া মিন হামাযাতিশ শায়াত্বিনি ওয়া আঁই ইয়াহদুরুন। (আবু দাউদ, তিরিমজি, মিশকাত)

অর্থ : আমি আশ্রয় চাই আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্য সমূহের মাধ্যমে তাঁর ক্রোধ ও শাস্তি হতে, তাঁর বান্দাদের অপকারিতা হতে, শয়তানের কুমন্ত্রণা হতে এবং তাদের উপস্থিতি হতে।

সুতরাং ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে উক্ত দোয়া পড়া এবং স্বপ্নের অনিষ্ট হতে রক্ষা পেতে আল্লাহ তাআলা নিকট প্রার্থনা করা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঘুমে মধ্যে ভয় পেলে বা খারাপ স্বপ্ন দেখলে এ দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

স্বামী-স্ত্রীর কল্যাণে কুরআনে জাহেলি রীতির অপসারণ

সুখ ও দুঃখের সমন্বয়ে গঠিত হয় দাম্পত্য জীবন। সব সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মধুর সম্পর্ক থাকবে; এটা অনেক কঠিন ব্যাপার। আবার বিভিন্ন সময় বহুবিধ কারণে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়।

কিন্তু আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়াকে পছন্দ করেন না। তাই আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনে কসমের সময় সীমা নির্ধারণ করে তাদের উভয়ের জন্য কল্যাণকর বিধান নাজিল করেছেন। যাকে ফিকহি ভাষায় ঈলা বলা হয়।

জাহেলি যুগে সময় নির্ধারণ করে আলাদা থাকার শপথ তথা ‘ঈলা’ ছিল স্ত্রীদের জন্য জঘন্য তালাক এবং অত্যাচার। আল্লাহ তাআলা এ আয়াতদ্বয়ে যার অবসান করেছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন-

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ

সুরা বাকারার ২২৬  নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক অটুট রাখার পন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। আবার ২২৭ নং আয়াতে সম্পর্ক না রাখলে তালাকের বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কচ্ছেদ আল্লাহ তাআলার পছন্দনীয় নয়।

ঈলা
স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস না করার জন্যে যে কসম করা হয় তাকে ঈলা বলা হয়। তবে ঈলার জন্য এ কসম হতে হবে চার মাস। এ কসম বা ঈলার দু’টি পর্যায় রয়েছে-
>> চার মাসের কম সময়ের জন্য কসম করা। যদি চার মাসের কম সময়ের জন্য কসম করে, তবে সে সময় পর্যন্ত স্ত্রী ধৈর্য ধরবে। উল্লেখিত সময় শেষ হওয়ার পর স্ত্রী তার স্বামীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য দাবি করতে পারবে।
>> চার মাসের অধিক সময় নির্ধারিত করে কসম করা। যদি চার মাসের অধিক সময়ের জন্য কসম করে থাকে তবে চার মাস পূর্ণ হওয়ার পর স্ত্রী তার স্বামীর কাছে এ দাবি করার অধিকার পাবে যে, হয় সে তার সঙ্গে মিলিত হবে; নয়তো তাকে তালাক দিবে। এ সময় বিচারক স্বামীকে যে কোনো একটি গ্রহণ করতে বাধ্য করতে পারবেন। যাতে স্ত্রী জীবন-যাপনে ক্ষতি গ্রস্ত না হয়।

কোনো স্বামী যদি তার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করবে না বলে শপথ করে তবে তার জন্য আল্লাহ তাআলা চার মাস অবসর মঞ্জুর করেছেন। যদি এ সময়ের মধ্যে স্বামী তার স্ত্রীর নিকট গমন করে তবে তার বিবাহ অব্যাহত থাকবে। কিন্তু তাকে শপথ ভঙ্গ করে স্ত্রীর নিকট যাওয়ার কারণে কাফফারা আদায় করতে হবে।

পক্ষান্তরে যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এ চার মাসের মধ্যে মিলন না ঘটে এবং চার মাস অতিবাহিত হয় তবে তাদের বিবাহ ভঙ্গ হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য যে,
ঈলা হলো জাহেলি যুগের তালাক এবং অত্যাচার। যখন স্ত্রীর সঙ্গে কারো ভালবাসা থাকতো না এবং ওই সময় স্বামী চাইতো না যে, তার স্ত্রী তার সঙ্গে সংসার করুক আবার অন্য কেউ যেন তাকে বিবাহ না করে। তখন ওই সব লোক তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে এ ধরনের কসম করে বসতো।

ফলে স্ত্রীলোকটি স্বামীও পেত না এবং তালাক প্রাপ্তও হতো না। স্বামীবিহীন তার জীবন এভাবেই অতিবাহিত হতো।

ইসলামের প্রথমিক যুগেও এ নিয়মকে অনুসর করা হতো। অতঃপর ইসলাম এমন অবস্থায় সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে।

আলোচ্য আয়াত দুটি দ্বারা ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনে আলাদা থাকার শপথের সময় নির্ধারনের সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।

যদি স্বামী-স্ত্রী চার মাস অতিবাহিত হওয়ার আগে মিলিত হয়; তবে তারা কাফফার দিবে এবং সংসার করবে। কারণ স্ত্রী সহবাস না করার কসম ভঙ্গের বিষয়ে কাফফার বিধান প্রবর্তন করেছেন। আল্লাহ আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদর কল্যাণে ক্ষমাশীল এবং দয়ালু।

আর যদি চার মাস কসম পূর্ণ করে। তবে জাহেলি যুগের রীতি অনুযায়ী স্ত্রীর জন্য সময় ক্ষেপন করতে হবে না। বরং সে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এতে স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করার কোনো কারণ থাকবে না।

পড়ুন- সুরা বাকারার ২২৫ নং আয়াত

পরিষেশে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনে ঘোষিত বিধান অনুযায়ী দাম্পত্য জীবনে শপথের বিধানগুলো যথাযথ মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

নকশিকাঁথা নিয়ে স্পেনে সোনা রানী

দুমুখাডাঙ্গী গ্রামের একটি বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল আটজন গৃহবধূ ঘরের মেঝেতে নকশিকাঁথা তৈরি করছেন। তাঁদের একজন সোনা রানী রায়। তাঁর হস্তশিল্প স্পেনে আন্তর্জাতিক হস্তশিল্প মেলায় ‘সেরা’ তালিকায় স্থান পেয়েছে। সোনা রানীর ‘হোয়াইট অন হোয়াইট ময়ূর’ নামে নকশিকাঁথাটি স্পেনের লোয়েভে ক্রাফট প্রাইজের জন্য মনোনীত হয়েছে। বিশ্বখ্যাত লোয়েভে ফাউন্ডেশন–এর আয়োজক। তবে সোনা রানীর সহজ কথা—অত কিছু জানেন না তিনি। শুধু জানেন বড় পুরস্কারের জন্য নাম উঠেছে। ‘সবকিছু মিশায়েল ভাই জানেন।’

কেয়ারের রংপুর কার্যালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোডাকশন ম্যানেজার হোসনে মোবারক বলেন, মিশায়েল আজিজ আহমাদ কেয়ারের সামাজিক ব্যবসায় উদ্যোগ লিভিং ব্লুর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তাঁর সঙ্গে এর আগে সোনা রানী যুক্তরাষ্ট্রে সান্তাফে আন্তর্জাতিক ফোক আর্ট মার্কেট মেলায় অংশ নিয়েছিলেন।
বিদেশি ক্রেতারা তাঁদের কাজ অনেক পছন্দ করেন। চাহিদাও দেখেছেন। এর জন্য সোনা রানী কেয়ারকে ধন্যবাদ দেন। কারণ, আগেও নকশিকাঁথা সেলাই করতেন। এ ধরনের নিখুঁত সেলাই করতেন না। মিশায়েল আজিজ ও তাঁর দলের কর্মীরা তাঁকে আরও দক্ষ করে তুলেছেন। সোনা রানী বলেন, ‘২০০৬ সালে কেয়ার বাংলাদেশের দুজন কর্মকর্তা প্রথম তাঁদের দুটি নকশিকাঁথা তৈরি করতে বলেন। ওই কর্মকর্তারাই নকশা দেন। আমি, তাপসী ও বিউটি রানী মিলে ওই দুটি কাঁথা তৈরি করে দিয়েছিলাম। আমাকে যা সম্মাননা দেওয়া হয়ে থাকে, সেই কৃতিত্ব আমার একার নয়। দলের সব সদস্যদের।’

নকশিকাঁথার নকশার মধ্যে আছে গ্রামে চারচালা ঘরের আদলে চৌয়ারি ঘর, ময়ূরের পাখা ইত্যাদি। চারটা করে বল পাশাপাশি এঁকে যে কাঁথা, তার নাম দেওয়া হয়েছে বল প্রিন্ট। ফুলের পাতার শিরার সমন্বয়ে আটটি অংশ নিয়ে তৈরি আটটি পাতা, পুঁটি মাছের ঝাঁক, মৌমাছির চাক ইত্যাদি নকশায় গৃহবধূরা কাঁথা তৈরি করছেন।

নকশিকাঁথা তৈরির সব উপকরণ, নকশা ও কাজ এনে দেয় কোম্পানি। সোনা রানী রায় কোম্পানির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সেই কাজ ভাগ করে দেন সমিতির সদস্যদের মধে্য। কাজ শেষে পণ্য চলে যায় কোম্পানির অফিসে। বিক্রি হওয়ার পর কাঁথা তৈরির মজুরি দেওয়া হয়।

কী রকম মজুরি পান? জানতে চাইলে সূচিশিল্পীরা বলেন, ছয় ফুট প্রস্থ আর সাত ফুট দৈর্ঘ্যের একটা কাঁথা তৈরি করতে একজনের ২৫ দিন সময় লাগে। মজুরি পাওয়া যায় ২ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। ছোট-বড় একেক আকারের পণ্যের একেক রকম মজুরি দেওয়া হয়।

হোসনে মোবারক বলেন, ‘গ্রামীণ নারীদের জীবনমান উন্নয়ন ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাতে কেয়ার বাংলাদেশ এই উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে বিশ্ব পরিসরে তাঁদের কাজ তুলে ধরতে পারি আমরা।’

তাই তো আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেই স্বীকৃতি পাচ্ছে সোনা রানী রায়দের কাজ।

 

কঠিনেরে করেছি সহজ

নিজের মেয়েকে কথাগুলো বলেছিলেন মো. আবদুল মালেক। কিন্তু মেয়ে মালিহা মালেক কাদির কঠিন কাজটাই করতে চান। নিতে চান চ্যালেঞ্জ। একেবারে ‘ব্র্যান্ড নিউ চ্যালেঞ্জ’। কাজ যতই কঠিন হোক, মালিহা তা করতে চান সহজ করেই। অন্যদের জন্য কাজগুলোকে সহজ করে দিতে চান। তাই তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ‘সহজ ডটকম’। নাগরিক জীবনে সহজ ডটকম বেশ পরিচিতও বটে। সহজ ডটকম বাস ও লঞ্চের টিকিট বিক্রি করে। তথ্যপ্রযুক্তির ভাষায় এটি ই-কমার্স উদ্যোগ।

‘শাড়ি, গয়না ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করেও ই-কমার্স শুরু করতে পারতাম। কিন্তু চেয়েছি নতুন ও চ্যালেঞ্জিং কিছু করতে।’ মালিহার সঙ্গে কথা হচ্ছিল গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানে সহজ ডটকমের অফিসে বসে। মালিহা মালেক কাদির সহজের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সহজ ডটকম প্রতিষ্ঠার আগে আন্তর্জাতিক বেশ কটি প্রযুক্তি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে মালিহার।

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ঘোষিত ১০০ জন ইয়াং গ্লোবাল লিডারের (ওয়াইজিএল) তালিকায় স্থান পেয়েছে মালিহার নাম। প্রতিবছরই নানা ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ৪০ বছরের কম বয়সী ১০০ জন তরুণকে নিয়ে ওয়াইজিএল তালিকা বানায় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। দক্ষিণ এশিয়া থেকে ২০১৭ সালের তালিকায় নাম আছে নয়জনের। বাংলাদেশ থেকে শুধুই আছেন মালিহা। গত বছর এ তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ।

 সুইজারল্যান্ডভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ওয়েবসাইটে মালিহা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখা হয়েছে এমনটা—তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা। যাঁর স্টার্টআপ (নতুন ব্যবসায় উদ্যোগ) বাংলাদেশের পরিবহনশিল্পকে ডিজিটাইজ করে এর মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছে।

সহজ ডটকমের জন্যই ইয়াং গ্লোবাল লিডারস তালিকায় স্থান পেলেন? মালিহার জবাব, ‘আমার মনে হয় শুধু এটা নয়। আমার সব কাজ মিলেই হয়তো ওঁরা নির্বাচন করেছেন।’ দুই মাস আগে ফোনে মালিহাকে এই খবর জানানো হয়েছিল। ডব্লিউইএফের এই তরুণ বিশ্বনেতাদের কী করতে হয়? ‘বছরজুড়ে বিশ্বব্যাপী নানা আয়োজন থাকে এই ফোরামের। প্রতিবছর যে ১০০ জন তরুণ নির্বাচিত হন, তাঁরা এই আয়োজনগুলোতে আমন্ত্রণ পান। নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময়, নিজের দেশের কথা তুলে ধরার সুযোগ তৈরি হয়।’

ঢাকার সাউথ ব্রিজ ও স্কলাস্টিকায় পড়াশোনা করে মালিহা যান যুক্তরাষ্ট্রে। ২০০০ সালে স্মিড্‌থ কলেজ থেকে অর্থনীতি ও কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক হন। এরপর মরগ্যান স্ট্যানলিতে বিনিয়োগ ব্যাংকিং নিয়ে কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশের ব্র্যাকনেটেও কাজ করেন কিছুদিন। আবার ফিরে যান যুক্তরাষ্ট্রে, পড়াশোনা করেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর (এমবিএ) ডিগ্রি অর্জন করেন ২০০৮ সালে। এরপর যোগ দেন মুঠোফোন প্রতিষ্ঠান নকিয়া সিঙ্গাপুরে। সে সময় ব্যবসায় উন্নয়ন ব্যবস্থাপক হিসেবে ভারত, চীন, নাইজেরিয়া ও বাংলাদেশে নকিয়ার ডিজিটাল কনটেন্ট সেবা নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। নকিয়ার পর সিঙ্গাপুরে ডিজিটাল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভিস্তাপ্রিন্টে কাজ করেন।

নকিয়া আর ভিস্তাপ্রিন্টের অভিজ্ঞতার পরই সহজ ডটকমের ধারণা মাথায় আসে মালিহার। তিনি বললেন, ‘সব সময়ই দেশে ফিরে আসতে চাইছিলাম। আমার পড়াশোনা আর কাজে যেহেতু তথ্যপ্রযুক্তি, অর্থনীতি আর বাণিজ্যের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাই নিজের ব্যবসায় উদ্যোগ শুরু করতে চাইলাম। আর তা অবশ্যই তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক।’

অনেক দেশেই পরিবহনের টিকিট এখন অনলাইনে ঘরে বসে কাটা যায়। ‘বাংলাদেশেও এটা করা যায়-এমনটাই আমার মনে হয়েছে। তাই পুরো পরিকল্পনা করে, বিনিয়োগ ঠিক করে আটঘাট বেঁধে মাঠে নামি।’ ২০১৩ সালে দেশে ফিরে সহজ ডটকম চালু করেন মালিহা মালেক কাদির। প্রথমে বাসমালিকদের বোঝাতে হয়েছে, ক্রেতাদের বোঝাতে হয়েছে। তারপর ধীরে ধীরে মানুষ এখন অভ্যস্ত হচ্ছে, আস্থা পাচ্ছে অনলাইনে টিকিট কাটার ব্যাপারে। ‘পরিবহন খাতে সব দেশেই কিছু অনিশ্চয়তা থাকে। বাংলাদেশেও একই চিত্র। তাই আমরা বাস ও লঞ্চের টিকিট বিক্রির প্রচলিত ধারা ধরে সফটওয়্যার বানিয়েছি।’

সহজ ডটকমে এখন কাজ করছেন ৮০ জন কর্মী। ‘ভবিষ্যতে আরও বড় হবে এই প্রতিষ্ঠান। আরও অনেক কিছু নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে। তবে ই-কমার্স উদ্যোগকে লাভজনক করা অত্যন্ত দীর্ঘ এক প্রক্রিয়া। স্ট্রাগলটা করতে হয় অনেক দিন ধরে।’ বললেন মালিহা।

মালিহার বাবা মো. আবদুল মালেক আবাসনশিল্পে জড়িত। মা নার্গিস মালেক চাকরি করতেন জীবন বীমা করপোরেশনে। ২০০০ সালে মালিহা বিয়ে করেন খালিদ কাদিরকে। খালিদ কাদির এখন বাংলাদেশে ব্রামার অ্যান্ড ক্যাপিটাল পার্টনারস নামে একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের অংশীদার। তাঁদের দুই মেয়ে আনুশকা ও সোফিয়া।

এমন এক ব্যবসায় উদ্যোগ নিয়ে কাজ করেন মালিহা, যেখানে সব সময়ই সচেতন থাকতে হয়। যাত্রী মানে টিকিট ক্রেতা এবং পরিবহন কোম্পানির মধ্যে সমন্বয় চলতে থাকে সব সময়ই। অবসরে রান্নাবান্না করতে পছন্দ করেন। কাজের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বিভাজন করেন না। ‘যার মাথায় বুদ্ধি আছে, সেই ভালো করবে কর্মক্ষেত্রে। তবে মেয়েদের একটু বেশি পরিশ্রম আর নিজেকে একটু বেশি করে প্রমাণ করতে হয়।’

লক্ষ্য স্থির রাখার কথা বলেন মালিহা। ‘ছোটবেলাতেই ঠিক করেছিলাম হার্ভার্ডে পড়ব। কম্পিউটার বিজ্ঞান কঠিন মনে হতো, কিন্তু গণিতে ভালো ছিলাম। তাই ওই বিষয়েও পড়লাম।’ আর এখন তো মালিহা কঠিন একটা খাত বেছে নিয়েছেন নিজের ব্যবসায়ের জন্য। এই খাতের ভোক্তাদের দিতে চাইছেন সহজ সমাধান। নিজের উদ্যোগকে আরও বড় করে তোলাই মালিহার এখনকার লক্ষ্য।

 

কালোই ছড়াচ্ছে আলো!

এত বঞ্চনার পরও থেমে থাকেননি গোলাপী। নিজের পায়ে দাঁড়াতে স্বাবলম্বী হতেই হবে? স্বামীর সংসার হয়নি তাতে কী হয়েছে? মা-বাবা, ভাইবোনকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে। ছুটে চললেন কাজের সন্ধানে। সেলাই প্রশিক্ষণ নিলেন। একটি মেশিনও কিনলেন। বাড়িতেই শুরু করলেন মেয়েদের জামা বানানোর কাজ। বদলে যেতে শুরু হলো তাঁর জীবনচিত্র। এর পাশাপাশি রংপুরে অবস্থিত একটি পোশাক কারখানায় চাকরিও করছেন।

কালো হওয়ার ‘অপরাধে’ বিয়ের রাতেই স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পর দমে যাননি। নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করে অর্থ উপার্জন করছেন। পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করছেন এমন উদাহরণের ঘটনায় ২০১৫ সালের ‘নারী’ ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতার পুরস্কার পেয়ে গেলেন গোলাপী আক্তার।

রংপুর শহরের দক্ষিণ কামারপাড়ায় ভ্যানচালক আবদুল গনির বড় মেয়ে গোলাপী আক্তার। অভাব-অনটনের সংসারে বেশি দূর পড়াশোনা এগোয়নি। মাত্র পঞ্চম শ্রেণিতেই পড়ালেখার পাট চুকে যায় তাঁর। এরপর ২০০৯ সালে রংপুর শহরের আদর্শপাড়া এলাকার আলী হোসেন নামের এক ভ্যানচালক তরুণের সঙ্গে ১৪ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। এ সময় যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। আর দেওয়া হয়েছিল নাকফুল ও কানের দুল। গোলাপী কি জানতেন, এক দিন পরই তাঁকে স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আসতে হবে?

একে তো বাল্যবিবাহ, তার ওপর যৌতুক, এই বিয়ের পরিণাম যা হওয়ার তা-ই হলো। সেই দিনের ঘটনা বলতে গিয়ে গোলাপী জানালেন, বিয়ের রাতেই (বাসর রাত) এলাকায় চোরের উপদ্রব রয়েছে, এমন অজুহাতে শাশুড়িসহ বাড়ির অন্যরা তাঁর শরীর থেকে খুলে নেন নাকফুল ও কানের দুল। শরীরের রং কালো হওয়ার গঞ্জনা শুনতে হয়েছে রাতভর। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে রাতটা কাটলেও পরদিন সকালে ফিরে যেতে হয় বাবার সেই চিরচেনা বাড়িতেই। আর ফিরে যাওয়া হয় না স্বামীর সংসারে।

এরপর গোলাপী এখানে-ওখানে ঘুরে ফিরেছেন। কী করবেন তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএসের মানবাধিকার কর্মী বিলকিস বেগমের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তাঁর মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানে আলোকিত ভুবনে এক বছরের সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিলেন গোলাপী। এরপর নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করলেন। এরই মধ্যে বিয়ের সম্পর্কটা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

২০১০ সালে যোগ দেন রংপুর শহরে অবস্থিত একটি পোশাক কারখানায়। প্রতি মাসের বেতন আর নিজের সেলাই মেশিন দিয়ে আয়ও হয় বেশ। ব্যাংকেও টাকা জমিয়েছেন। মা-বাবা, দুই ভাই, এক বোনসহ শহরের কামারপাড়ায় ভাড়া বাসায় থেকে জীবন ভালোই কাটছে তাঁদের। এক ভাই অষ্টম ও বোন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। আরেক ভাই পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে বাবার ভ্যান চালান। মা বর্তমানে অসুস্থ। তেমন একটা চলাফেরা করতে পারেন না।

গোলাপী বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতা নারী অন্বেষণে ২০১৫ সালে রংপুর সদর উপজেলা, জেলা পর্যায়ে নির্বাচিত হই। পরিবারের বড় মেয়ে হওয়ায় ইচ্ছে আছে অন্য সব ভাইবোনকে পড়ালেখা শিখিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার। আমার মতো অন্যদের জীবন যেন এ রকম না হয়।’ নিজেকেও প্রতিষ্ঠার অনেক দূরে নিয়ে যেতে চান। তাই মনেপ্রাণে চালিয়ে যাচ্ছেন জীবনযুদ্ধের লড়াই।

অসুস্থ মা সামেনা বেগম বলেন, ‘কত কষ্ট করি টাকাপয়সা জোগাড় করি মেয়েটাক বিয়া দিছি। তখন মোর জানা আছিল না ছোটকালে বেটির বিয়া দেওয়া যায় না।  সেই সংসার দুই দিনও টিকিল না। কালো বলিয়া এমন দুর্দশা হইল। কিন্তু তারপরও মেয়েটা কাজকাম করিয়া সংসারের বোঝা বহন করিয়া যাইতাছে। বেটি হামার হারে নাই।’

 

বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শহীদ মিনারে লাকী আখন্দকে শেষ শ্রদ্ধা

প্রকৃতিও তার শূন্যতাটা টের পেয়ে গেছে গতকাল থেকেই! না হয় কেন গতকাল থেকেই আকাশটা আপন মনেই কেঁদে যাবে? আর আজ ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখন্দকে শেষ শ্রদ্ধা জানাত কেন্দ্রী শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নেমেছে তারকা শিল্পী ও সাধারণ মানুষের ঢল।

এদিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাকী আখন্দকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে। সেখানেই তাঁকে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার দেয়। আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে লাকী আখন্দের মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়। এর আগে সকাল ১০টায় পুরান ঢাকার আরমানিটোলা মাঠে লাকী আখন্দের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

লাকী আখন্দকে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘তার গান এ দেশের মানুষ মনে রাখবে। এই বীরমুক্তিযোদ্ধা-শব্দসৈনিক আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল। তার কন্যাকে বলতে চাই, আমাদের পক্ষ থেকে যা করণীয়, সেটা করবো। আপনাদের কোনও প্রত্যাশা থাকলেও জানাবেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আমার বন্ধু লাকীর জন্য যা করণীয় আমি করব। কথা দিলাম।’

এছাড়া শহীদ মিনারের মরদেহ রাখা হবে বেলা ১টা পর্যন্ত। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। সেখানেই লাকী আখন্দকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।

টানা আড়াই মাস হাসপাতাল জীবন শেষে গত সপ্তাহে আরমানিটোলার নিজ বাসায় ফিরেছিলেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লাকী আখন্দ। ২১ এপ্রিল দুপুর নাগাদ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সন্ধ্যার আগে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ কর্তব্যরত চিকিৎসক লাকী আখন্দকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৬১ বছর।

 

রঙের ছটায় বৈশাখী বসন

বর্ণিল পোশাকে হবে বর্ষবরণ, এটা এখন রীতি। এই একটা উৎসব, যা সবাই মিলে পালন করা হয়। উচ্ছ্বাস-আনন্দ তো থাকবেই। আর উৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ পোশাক বৈচিত্র্যময় না হলে ষোলো আনা তৃপ্তি থাকে না। কথাটি হাড়ে হাড়ে বোঝেন ফ্যাশন ডিজাইনাররাও। তাই পোশাকের ক্যানভাসে বাঙালি নানা মোটিফে আনে বৈচিত্র্যময় নকশা।
সাত-আট বছর পেছনে গেলে দেখা যাবে পয়লা বৈশাখের পোশাকে মোটিফ বলতে মুখোশ, হাতপাখা আর আলপনা। ধীরে ধীরে সেই ধারা ভেঙে পোশাকে এল পটচিত্র, নকশিকাঁথার ফোঁড়, ফুল, পাখি, কলস। এবার পোশাকের জমিনে মিলছে সাপলুডু, শখের হাঁড়ি, সন্দেশ, তাস, লক্ষ্মীপ্যাচা, মাছ, ফুলেল ছাপের মোটিফ। এ ছাড়া মেয়েদের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ ও পাঞ্জাবির জমিনে দেখা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জীবনানন্দ দাশের কবিতার লাইন। গামছা দিয়েও কয়েকটি ফ্যাশন হাউস পোশাক তৈরি করেছে। এসব পোশাক পরতে আরাম আবার বাঙালিয়ানাও ফুটে ওঠে। অনেকের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে গামছার শাড়ি, ফতুয়া, সালোয়ার–কামিজ ও পাঞ্জাবি।
আর রং? সে তো প্রতিবারই নিরীক্ষার টেবিলে। ডিজাইনাররা পোশাকে রীতিমতো রং নিয়ে খেলছেন। লাল-সাদার আবেদন চিরন্তন—এই প্রথা ভাঙে কার সাধ্য! তাই বলে অন্য রং আসবে না? এমন দোটানায় গেল কয়েক বছর নীল, হলুদ, বেগুনি, গোলাপি, হালকা আকাশি, ঘিয়ে রঙে করা পোশাকও চলেছে বেশ। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের পোশাকে নিরীক্ষাধর্মী কাজগুলো বেশি হয়েছে। তবে বরাবরের মতো উজ্জ্বল রং-ই রাজত্ব করছে এবার। এদিকে রং আর মোটিফে ভিন্নতা থাকলেও কাপড়ে চারদিকে সুতির জয়জয়কার। অবশ্য সংখ্যায় কম হলেও মসলিন, সিল্ক, পাতলা গরদও আছে।
চট্টগ্রামের ফ্যাশন হাউস শৈল্পিক, রওশনস, ডলস হাউস, আরিয়ন ফ্যাশন, শ্রেয়া, মুনমুনস, পিণন, ময়ূরাক্ষী, কৃষ্টি, মেঘ রোদ্দুর, মিয়াবিবি, মিরনস, ড্রিম ফ্যাশন হাউস, রমনীয়া, তুলিস ক্রিয়েশন প্রভৃতি বৈচিত্র্যময় বৈশাখী পোশাক নিয়ে এসেছে।
ডলস হাউসের কর্ণধার আইভি হাসান বলেন, ‘পোশাকে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার হয়েছে বেশি। নকশা হয়েছে লোকজ বিভিন্ন মোটিফে। আমি এবার শাড়িতে জীবনানন্দ দাশের কবিতা তুলে ধরেছি।’
এদিকে বড়দের পাশাপাশি ছোটদের পোশাকেও নিত্য নতুন ডিজাইন আনা হয়েছে। মেয়েশিশুদের জন্য রয়েছে ফ্রক, সালোয়ার কামিজ, ফ্রক, পালাজ্জো ও শাড়ি। আর ছেলেদের জন্য নকশা করা পাঞ্জাবি, টি-শার্ট ও ফতুয়া। পোশাকের কাটছাঁটে তেমন পরিবর্তন হয়নি। বরাবরই মাথায় রাখা হয়েছে পোশাকটা যেন আরামদায়ক হয়।

 

ভ্রমণে সতেজ থাকবেন যেভাবে

মানুষের মনকে সতেজ করে তুলতে ভ্রমণের চেয়ে ভালো ঔষধ আর হতে পারে না। এটি আপনাকে যেমন কাজ থেকে ছুটি দেয় তেমনি আপনাকে আপনার নিজের মাঝে আবার নিয়েও আসে। দীর্ঘ সময়ের কাজের চাপ, স্ট্রেস আর নানা ঝামেলা থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে এই ভ্রমণ। তবে এই ভ্রমণে যেতে যেতে আপনি হয়ে পরেন ক্লান্ত। কিন্তু কিছু ছোট ছোট টিপস আপনাকে হাজার ক্লান্তিতেও সতেজ রাখতে পারে আর সাথে সাথে আপনাকে সতেজতার সাথে সবার মাঝে উপস্থাপনও করতে পারে।

ভ্রমণে বের হবার আগে চাই ত্বকের যত্ন। তাই যেদিন ভ্রমণে বের হবেন তার ঠিক আগের দিন বেশি বেশি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।  এতে আগের দিন থেকেই ত্বকের হাইড্রেশন ঠিক অবস্থায় থাকবে। আপনার ত্বক বিশেষ করে হাত, পা কিংবা মুখের ত্বকে এটি আবরণ তৈরি করে রাখে, যাতে বাইরের তাপ বা এয়ার কন্ডিশনের আবহাওয়া আপনার ত্বককে রুক্ষ করতে পারে না।

আপনি যখন দূরে কোথাও ঘুরতে যাচ্ছেন তখন মুখে ফাউন্ডেশন বা ব্লাশন ব্যবহার না করাই ভালো। এর পরিবর্তে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এতে আপনার ত্বকে থাকা ময়লা ধুয়ে যাবে আর ময়েশ্চারাইজার আপনার ত্বকের রুক্ষতা দূর করবে।

ভ্রমণে বের হবার আগে নিজেকে সুন্দরভাবে সাজাতে সবাই পছন্দ করে। তবে তা যদি হয় দূরের পথের তবে কিছু বিষয় আপনাকে মাথায় রাকতে হবে। ভ্রমণে যাবার সময় উজ্জ্বল রঙের নেইল পলিশ নখে ব্যবহার করবেন না। কারণ ভ্রমণের ঝক্কি ঝামেলায় এর সৌন্দর্য মলিন হয়ে যায়। যাতে তা সৌন্দর্য বাড়ানোর বদলে তা কমিয়ে দেয়। তবে এই ক্ষেত্রে আপনি চাইলে নেইল পলিশের পরিবর্তে ন্যাচারাল কালার ব্যবহার করতে পারেন। আর যদি এক ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে থাকেন, তবে তার সঙ্গে অবশ্যই ক্লিনজার নিয়ে নেবেন। ঘুরে আসার পর অবশ্যই ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকে এসিডের পরিমাণ কমাবে।

বাইরে থাকা অবস্থায় হাতের স্পর্শ থেকে মুখ দূরে রাখবেন। হাতে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ময়লা লেগে থাকে যা আপনার হাতের মাধ্যমে মুখ পর্যন্ত খুব সহজে পৌঁছায়। আর ভ্রমণের সময় বারবার মুখ যেকোনো কাপড় দিয়ে মুছবেন না। নরম কাপড়, টিস্যু কিংবা রুমাল ব্যবহার করুন।

মেকআপ ব্যবহারের আগে হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে ভুলবেন না। চোখ সাজানোর ক্ষেত্রে চোখে মাস্কারা আর ঠোঁটের ক্ষেত্রে  দীর্ঘক্ষণ থাকে এমন লিপস্টিক ব্যবহার করবেন না। দূরের পথে ভ্রমণের সময় অনেকেই হালকা ঘুম দিয়ে থাকেন। এতে মাস্কারা বা লিপস্টিক নষ্ট হয়ে যায়। তাই দূরের পথে এসব থেকে দূরেই থাকুন। লিপস্টিক ঠোঁটকে শুষ্ক করে দেয়। এর চেয়ে বরং লিপ গ্লোস ব্যবহার করতে পারেন। গ্লোস মুছে গেলেও তা আবারো খুব সহজে ব্যবহার করা যায়।

দূরের যাত্রা পথে সাথে অবশ্যই আয়না রাখুন। ছোট ছোট কাজ যেমন চোখের কাজল ঠিক করা কিংবা ঠোঁটের লিপিস্টিকের ঠিক করতে এটি কাজে লাগে। এর সাথে ব্যাগে অবশ্যই পানি রাখুন।

 

হিট স্ট্রোক হলে কী করবেন

গরমের বিভীষিকা যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ছেই। মূলত গরমের কারণেই এই হিট স্ট্রোক হয়ে থাকে। পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া, রোদে বেশিক্ষণ অবস্থান করা আর একটি জায়গায় গরমের মাঝে গুটিশুটি হয়ে বসে থাকলে এই সমস্যা হয়ে থাকে। তবে এই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার কোন বয়সসীমা নেই। কোথায় কখন কিভাবে হিট স্ট্রোক হতে পারে তা আপনিও নিজে জানেন না। তাই জেনে রাখুন আপনার পাশের মানুষটির হিট স্ট্রোক হলে আপনি কি করবেন কিংবা কি করা উচিৎ।

শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে মূলত এই সমস্যাটি হয়। মূলত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেলে এই হিট স্ট্রোক হয়। যারা এই গরমে কায়িক শ্রম বেশি করেন যেমন রিক্সা চালক, কৃষক কিংবা শ্রমিক তাদের এই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। প্রচণ্ড গরমেও যে কারো হিট স্ট্রোক হতে পারে। অতিরিক্ত গরম আর তার উপর আঁটসাঁট করে পরা পোশাক আপনার হিট স্ট্রোকের অন্যতম কারণ।

আপনি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন কি না তা বুঝতে পারবেন কিছু লক্ষণ দেখে। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আগে আপনার প্রচুর পানি পিপাসা পাবে, কথা বলতে কষ্ট হবে। হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসবে। আপনি চারিদিক অন্ধকার দেখতে শুরু করবেন। সাথে বমিভাব, মাথাব্যাথা, ঝিমঝিম করা ইত্যাদি লক্ষণগুলো চোখে পরবে। তার সাথে আপনার ঘাম বন্ধ হয়ে যাবে। ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যাবে, নিঃশ্বাস দ্রুত নিতে শুরু করবেন, নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত গতির হবে, রক্তচাপ কমে যাবে, খিঁচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা, অস্বাভাবিক আচরণ, হ্যালুসিনেশন, অসংলগ্নতা লক্ষণ চোখে পড়বে। পাশাপাশি যুক্ত হতে পারে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া।

প্রতিকার
হালকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। কাপড় সাদা বা হালকা রঙের পোশাক হলে সবচেয়ে ভালো হয়। এই ক্ষেত্রে সুতি কাপড়ের প্রাধান্য বেশি। যথাসম্ভব ঘরের ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন।

বাইরে যেতে হলে মাথার জন্য চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপ বা সঙ্গে ছাতা ব্যবহার করুন। বাইরে যারা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকেন তারা মাথায় ছাতা বা মাথা ঢাকার জন্য কাপড়জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে পারেন।

প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল যেমন স্যালাইন, শরবত পান করুন। চা ও কফি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। বাইরের খাবার যেমন বার্গার, স্যান্ডউইচ, ঠান্ডা গোলা, পথের পাশের আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন। সঙ্গে পানির বোতল আর স্যালাইন রাখুন।

 

স্নিগ্ধ সারা দিন

বাঙালির বড় উৎসব পয়লা বৈশাখ। আর উৎসব মানেই তো সাজ-পোশাকে নতুনত্ব। বছরের প্রথম দিনটিতে নিজেকে একটু অনন্য দেখাক, এই বাসনা অনেক নারীরই। তবে আবহাওয়া ও খরতাপের কথা মাথায় রেখে ওই দিনটিতে সাজার পরামর্শ দিয়েছেন রূপবিশেষজ্ঞরা।

বিউটি পারলার নিউ লুকের স্বত্বাধিকারী নিগার সুলতানা মনে করেন, পয়লা বৈশাখের অন্তত দুদিন আগে থেকেই ত্বক ও চুলের যত্নে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। কারণ ত্বক ঠিকমতো পরিষ্কার না থাকলে মেকআপে ভালো ফিনিশিং আসে না। আর চুল বাঁধার ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়। অনেকেই যেহেতু সারা দিন বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন সে ক্ষেত্রে সাজগোজটি ছিমছাম থাকাই ভালো। মুখ ঘেমে যাতে মেকআপ নষ্ট হয়ে না যায়, সে জন্য সাজগোজের উপকরণের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

নিগার সুলতানা বলেন, যাঁরা বাসায় মেকআপ করবেন, তাঁরা মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে প্রাইমার লাগাবেন। তাতে মেকআপের বেজটা ভালো হবে। এরপর ফাউন্ডেশন লাগাতে হবে। চোখের সাজে মোটা নয়, চিকন করে আইলাইনার টেনে দিতে হবে। চাইলে কেউ আইল্যাশ ব্যবহার করতে পারেন। লিপস্টিকের ক্ষেত্রে ত্বকের রং বুঝে তা বেছে নেওয়া উচিত। আর যাঁরা দক্ষ বিউটিশিয়ানের হাতে সাজতে চান, তাঁদের কিন্তু ছুটতে হবে বিউটি পারলারে।

বৈশাখ উপলক্ষে এখন চলছে সৌন্দর্যচর্চার নানান সেবার ওপর বিশেষ ছাড়। নগরের কয়েকটি বিউটি পারলারের আয়োজনের কথা জানা যাক।

পারসোনা: এপ্রিল মাসজুড়ে চুল রিবন্ডিং ও রং করার ওপর ১২ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। পয়লা বৈশাখের দিনে থাকছে ১৭০০ টাকার একটি বিশেষ প্যাকেজ। প্যাকেজের আওতায় চুল বাঁধা, মেকআপ ও শাড়ি পরার সুযোগ পাবেন গ্রাহকেরা।

হাবিব তাজকিরাজ: পয়লা বৈশাখের দিন ৫৫৫ থেকে ২২২২ টাকার মধ্যে সাজের পাঁচটি বিশেষ প্যাকেজ রেখেছে হাবিব তাজকিরাজ। এ ছাড়া ১০ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সেবায় ১৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ২০ দিনের এই বিশেষ আয়োজনে নারীদের জন্য সৌন্দর্যচর্চার ওপর ১২৯৯ থেকে ১৯৯৯ টাকার মধ্যে তিনটি বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।

নিউ লুক: ২০০০ টাকায় ত্বক, চুল ও ম্যানিকিওর-পেডিকিওরের বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে নিউ লুক। পয়লা বৈশাখে সাজের জন্য ১৫০০ টাকার একটি বিশেষ প্যাকেজ রাখা হয়েছে।

বিউটি বাফে: এপ্রিল মাসজুড়ে যেকোনো সেবার ওপর ২০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে বিউটি পারলারটি। পয়লা বৈশাখের দিনে ৯০০ টাকায় চুল, মেকআপ ও শাড়ি পরার বিশেষ প্যাকেজ রয়েছে।

ফেয়ার টাচ: পয়লা বৈশাখে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে তিনটি সাজের প্যাকেজ রেখেছে ফেয়ার টাচ। এ ছাড়া ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ত্বকের যত্ন, চুলের রং ও রিবন্ডিং করানোর ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ছাড় চলছে।

 

আনন্দে বেঁচে থাকার ২১ সূত্র

ঘুম, খাওয়া, বিনোদন—এটাই কি বেঁচে থাকা? এই মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে সুন্দর একটা ভবিষ্যতের জন্য কাজ করাই বেঁচে থাকা? নাকি ঘড়ির কাঁটা ধরে সকাল-সন্ধ্যার জীবনটাই বেঁচে থাকা? টাইম সাময়িকীর মতে, জীবনকে একটি বই না ভেবে, ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র শব্দে উপভোগ করাই বিচক্ষণতা। বেঁচে থাকার সংজ্ঞা ব্যক্তি, মননভেদে ভিন্ন হয়, কিন্তু আনন্দে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা-চেষ্টা কিন্তু সবারই থাকে। সেই আনন্দে ইতিবাচক উপায়ে বেঁচে থাকার উপায়গুলো জানা যাক।

১ পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।
২ যদি আপনার কাউকে ভালো লাগে, আপনি যদি ভালোবাসতে চান, তাহলে নিজের অবস্থান থেকে ইতিবাচক উপায়ে তাকে ভালোবাসার কথা জানান। ভালোবাসা প্রকাশের ক্ষেত্রে নিজের মনন, মানসিক অবস্থানকে বিবেচনা করুন প্রথমেই।
৩ আজকের জন্য বেঁচে থাকার অভ্যাস করুন। গতকাল আর কখনোই ফিরে আসবে না। আর আজকের দিনটা দারুণ হলে আগামীকালটাও রঙিন হবে।
৪ যদি কোনো কিছু না বোঝেন, তাহলে ব্যাখ্যা জানার চেষ্টা করুন। ধোঁয়াশাচ্ছন্ন বা ভাসা-ভাসা ধারণা নিয়ে বেঁচে থাকা ভবিষ্যতে মানসিক অশান্তির কারণ হতে পারে।
৫ আপনি যদি কারও বন্ধুত্ব চান, প্রথমেই আপনার কাছ থেকে ডাক পাঠান। উষ্ণ আর রাঙানো বন্ধুত্ব কে না চায় বলুন!
৬ আপনার দোষ কিংবা ত্রুটি থাকলে অকপটে স্বীকার করুন।
৭ কাণ্ডজ্ঞানহীন মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকার অভ্যাস করুন। অন্যকে আপনি বদলাতে পারবেন না, কিন্তু নিজেকে নেতিবাচক চিন্তার মানুষের কাছ থেকে সরিয়ে আনতে পারবেন।
৮ প্রতিটি মুহূর্ত উদ্‌যাপন করাটাই জীবন। হতাশা, না পাওয়া নিয়ে টানাটানি বিষাদের সৃষ্টি করে। মনে রাখবেন, এই মুহূর্তকে নিয়েই অনেক মুহূর্তের যোগফলই আপনার আজ, গতকাল, আগামীকাল আর পুরো জীবন!
৯ গড়পড়তা সব সমস্যার শুরু আমাদের মাথা থেকে। নিজের মাথাকে সব সময় ইতিবাচক ধারণা তৈরি করার কাজে ব্যস্ত রাখুন।
১০ আপনি যেভাবে পৃথিবী দেখেন, পৃথিবী আসলে তা-ই! আয়নায় নিজের হতাশার চেহারা দেখলে যেমন হতাশ হয়ে যাই আমরা, পৃথিবীও তেমন। আপনি ইতিবাচক থাকলে পৃথিবী ইতিবাচক হবেই।
১১ সব সময় খেয়াল রাখুন, আর সুযোগ না-ও আসতে পারে। এক দিনের জন্য বেঁচে থাকাই রঙিন জীবন তৈরি করে।
১২ এমন কোনো কাজে নিজেকে যুক্ত করবেন না যা কিনা আপনার মস্তিষ্কে ও মননে চাপ তৈরি করে। বেশি চাপে সব ভেঙে পড়ে।
১৩ টেলিভিশন কিংবা ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মধ্যে জীবনকে আটকে রাখবেন না।
১৪ কর্মক্ষেত্রে বিদ্বেষ কিংবা সহকর্মী বা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়, এমন আচরণ পরিহারের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
১৫ নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলার অভ্যাস করুন, দিন শেষে আপনার শেষ ভরসা কিন্তু আপনিই।
১৬ সব সময় ধৈর্যশীল থাকার অভ্যাস করুন। যার যা সম্মান তাকে তার চেয়ে বেশি সম্মান দেখান।
১৭ কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার আগে নিজেকে তার জায়গায় কল্পনা করুন।
১৮ ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক নেটওয়ার্কের লাইক কিংবা জনপ্রিয়তা সব সময় বাস্তব জীবনের নয়, তা খেয়াল রাখুন।
১৯ জীবনকে সুন্দর করতে বই পড়ার বিকল্প নেই।
২০ নিজেকে পরিবার কিংবা অফিসের কনিষ্ঠ সদস্যদের জন্য অনুসরণের যোগ্য করে তুলুন। আপনি যখন থাকবেন না, তখন তারাই কিন্তু আপনার জীবনদর্শন ধারণ করবে।
২১ ‘বেঁচে থাকাই আনন্দ’, না ভেবে ‘আনন্দে বেঁচে থাকার উপকরণ’ দিয়ে নিজের জীবন আর সময়কে রাঙিয়ে তুলুন।
গ্রন্থনা: জাহিদ হোসাইন খান
ব্রাইটসাইড ডট কম

 

কোন ফলে কত ভিটামিন সি

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, কাটাছেঁড়া বা শল্যচিকিৎসার পর দ্রুত ঘা শুকাতে চিকিৎসকেরা বেশি করে ভিটামিন সি খেতে বলেন। ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস হলো নানা ধরনের ফল। বিশেষ করে টক ফল। গবেষকেরা বলেন, একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর প্রতিদিন ৭৫ মিলিগ্রাম ও পূর্ণবয়স্ক পুরুষের ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া উচিত। আসুন, জেনে নিই কোন ধরনের ফলে এই ভিটামিন সি বেশি আছে।

কমলা: একটা কমলায় প্রায় ৭০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আছে। গোটা কমলা বা কমলার রস ভিটামিন সি-এর চমৎকার উৎস। কমলার মতো অন্যান্য ফল, যেমন মাল্টা বা জাম্বুরায়ও ভিটামিন সি অনেক। ১০০ গ্রাম মাল্টায় আছে ৩২ মিলিগ্রাম এবং ১০০ গ্রাম জাম্বুরায় আছে ৬১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।

পেঁপে: পাকা পেঁপেতেও আছে বেশ ভালো পরিমাণে ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম পেঁপেতে ৬০ মিলিগ্রামের মতো ভিটামিন সি পাবেন।

পেয়ারা: পেয়ারা ভিটামিন সি-এর সবচেয়ে ভালো উৎস। একটা গোটা পেয়ারায় (৫৫ গ্রাম ওজনের) ১২৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

আনারস: আনারসের প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণে ভিটামিন সি-এর পরিমাণ ৪৭ মিলিগ্রামের মতো।

লেবু: দেশি সবুজ লেবুতেও ভিটামিন সি অনেক। ১০০ গ্রাম লেবুতে ৫৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাবেন।

 

ঝাল ঝাল প্যান কেক

আমাদের প্রায় সবারই ধারণা প্যানকেক বুঝি শুধু মিষ্টি স্বাদেরই হয়। ঝালপ্রেমীদের জন্য সুখবর হচ্ছে, শুধু মিষ্টি স্বাদেরই নয়, প্যানকেক হতে পারে ঝাল স্বাদেরও। আর সেজন্য খুব বেশিকিছুর প্রয়োজনও নেই। হাতের কাছে থাকা অল্পকিছু উপাদান দিয়ে খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন মজাদার ঝাল ঝাল প্যানকেক।

উপকরণ:
১ কাপ সেদ্ধ আলু পিষে নেয়া, আধা কাপ ময়দা, ১ টি ডিম, আধা কাপ মাংস হাতে ঝুরি করে নেয়া (সেদ্ধ বা রান্না করা মাংস অনায়েসেই হাতে ঝুরি করে নিতে পারেন), ধনে পাতা কুচি প্রয়োজনমতো, ৩ টি পেঁয়াজ মিহি কুচি, ৪/৫ টি কাঁচামরিচ মিহি কুচি, ১ চা চামচ আদা রসুন বাটা (না দিলেও চলবে), আধা চা চামচ জিরা গুঁড়ো, লবণ স্বাদমতো, টেস্টিং সল্ট সামান্য, ১ টেবিল চামচ সয়াসস, পানি প্রয়োজনমতো, তেল ও বাটার ভাজার জন্য।

পদ্ধতি:
আলু ও ডিম একসাথে ভালো করে মেখে নিন যেন আলুতে কোনো গোটা বা দলা না থাকে। এরপর তেল ও বাটার বাদে একে একে সব উপকরণ দিয়ে দিন। এবং ভালো করে মেখে ঘন ব্যটার তৈরি করে নিন। পানির পরিমাণ অল্প করে দেবেন যাতে আন্দাজ ঠিক থাকে।
এরপর একটি ননস্টিক ফ্রাইংপ্যানে বাটার দিন এবং এর সাথে অল্প তেল দিয়ে গরম করে নিন। তারপর নিজের পছন্দমতো আকারের প্যানকেকের ব্যটার ঢালুন প্যানে।

মাঝারি আঁচে দুই পাশ লালচে করে ভেজে তুলুন। এরপর পরিবেশন করুন গরম গরম সুস্বাদু এই ঝাল প্যানকেক।

 

২৪ বছরে মৌসুমীর চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার

ঢাকাই চিত্রনায়িকা হিসেবে মৌসুমীর ক্যারিয়ারের ২৪ বছর পূর্ণ হলো আজ (২৫ মার্চ)। ১৯৯৩ সালের আজকের এই তারিখে দর্শকেরা রূপালী পর্দায় নায়িকা মৌসুমীকে প্রথম দেখতে পান, সেটা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’  ছবির মাধ্যমে। তার সঙ্গে জুটি হয়েছিলেন প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ। প্রথম চলচ্চিত্র দিয়েই মৌসুমী দর্শকের মনে ঠাঁই পান। দুই যুগ পার হলেও আজও এক চিলতে ভাটা পড়েনি মৌসুমীর জনপ্রিয়তায়। এতগুলো বছরে অসংখ্য ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন তিনি। স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও কোটি ভক্তের দেয়া উপাধি ‘প্রিয়দর্শিনী’।

এ প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, ‘দেখতে দেখতে এতটা বছর পেরিয়ে গেল বুঝতেই পারিনি। আজ ভীষণভাবে মনে পড়ছে আমার আব্বুর কথা। তিনি আমাকে প্রেরণা না দিলে আমি এতদূর আসতে পারতাম না। তাছাড়া আমার ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই যারা আমাকে সাপোর্ট দিয়ে এসেছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার ভাষা আমার নেই।’

তিনি বলেন, ‘আর যে মানুষটির ভালোবাসায় এবং সহযোগিতায় আমি পূর্ণতা পেয়েছি, সে আমার সকল সুখ-দুঃখের সঙ্গী, আমার স্বামী ওমর সানী। আমি, আমার পরিবার ও দুই সন্তান ফারদিন এবং ফাইজাহর জন্য দোয়া করবেন সবাই।’

mou

মৌসুমীর দীর্ঘ ক্যারিয়ার নিয়ে তার স্বামী ওমর সানী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই আমার শশুর-শাশুড়ি, পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান, সুকুমার দাদা (এমপি), চলচ্চিত্র নির্মাতা মুশফিকুর রহমান গুলজার এবং সিরাজ ভাইকে। আমি কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে। প্রিয়দর্শিনী মহারানী মৌসুমীকে চলচ্চিত্রে আনার জন্য। চলচ্চিত্রে ২৪ বছর হলো তোমার মৌসুমী। আমি আরও কৃতজ্ঞ দর্শকদের কাছে। দোয়া করি হাজার বছর বেঁচে থাকো বাঙালির মানষপটে।’

চিত্রনায়িকা পরিচয়ের বাইরে আদর্শ স্ত্রী,  মা ও গৃহিণী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মৌসুমী সফল হয়েছেন প্রযোজক হিসেবেও। পরিচালনায়ও দেখিয়েছেন নির্মাণের মুন্সিয়ানা। শুধু তাই নয়, অভিনয়-মডেলিংয়ে প্রতিষ্ঠিত হলেও গান নিয়েও হাজির হয়েছেন মৌসুমী। বেশ কিছু চলচ্চিত্রে গেয়েছেন জনপ্রিয় অনেক গান। বর্তমানে তাকে চরিত্রভিত্তিক অভিনয়েই বেশি দেখা যায়। অভিনয় করছেন ছোট পর্দা ও বিজ্ঞাপনে।

দেশের শীর্ষ বিপণন প্রতিষ্ঠান আরএফএল এর শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া মৌসুমী বর্তমানে মনতাজুর রহমান আকবরের ‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’ এবং এ কে সোহেলের ‘পবিত্র ভালোবাসা’ ছবিতে অভিনয় করছেন। আগামীতে আরও কিছু নাম চূড়ান্ত না হওয়া ছবিতে অভিনয় করার কথা রয়েছে তার।

 

স্বাধীনতার অহংকার

স্বাধীনতা একটি দেশ ও জাতির পরিচয় বহন করে। তাই স্বাধীনতা দিবস মাথায় রেখে ফ্যাশন হাউসগুলোর বিশেষ আয়োজনে পোশাকের রঙ ও মোটিফ সবকিছুতেই উঠে এসেছে স্বাধীনতার আবহ। প্রতি বছর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করা হয় স্বাধীনতা দিবস। আর এ সবকিছুর মূলেই রয়েছে স্বাধীনতার চেতনাকে উজ্জীবিত রাখা। জাতীয় চেতনাকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে পোশাকও এখন অন্যতম একটি মাধ্যম। কয়েক বছর ধরে এ কাজটা খুবই আন্তরিকতার সাথে করে যাচ্ছেন আমাদের ফ্যাশন ডিজাইনাররা। তাদের পোশাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে রঙ, ডিজাইন, কাটিংয়ের মতো বিষয়গুলো।

জীবনধারা বদলের সঙ্গে সঙ্গে স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা আজ আমাদের সাজে-কাজে, চলনে-বলনে। লাল-সবুজ ভালোবাসার সেই রঙ আজ উঠে এসেছে আমাদের পোশাক-পরিচ্ছদ এবং সাজসজ্জায়। আর তাই এবারে পোশাকের ক্ষেত্রে দেশীয় বস্ত্রকেই প্রাধান্য দিয়েছেন বেশির ভাগ ফ্যাশন হাউস ও নামকরা ডিজাইনাররা।

স্বাধীনতার রং বলতে লাল-সবুজকেই বোঝায়। আর তাই এ দিবসের ফ্যাশনের প্রাধান্য পায় লাল আর সবুজ এই দুটি রং। তাই পোশাকে লাল-সবুজের ছোঁয়া থাকতেই হবে। পোশাকে না হোক, ওড়না, ব্যাগ অথবা অলঙ্কারে থাকা চাই লাল-সবুজের ছোয়া। স্বাধীনতা দিবস এলেই দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো নিজেদের সাজিয়ে নেয় লাল-সবুজ নানা রঙের ও ঢঙের পোশাকে। শাড়ি, পাঞ্জাবি, শার্ট, কুর্তা, ফতুয়া, স্কার্ট কিংবা শিশুদের জামার ডিজাইনে আনা হয় স্বাধীনতা আমেজ।

Sadinota

এখন মানুষের সৌখিনতা ও পছন্দের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ফ্যাশন হাউসগুলো বেশ রুচিশীল ও উত্সব নির্ভর পোশাক তৈরি করছে। আবার অনেকেই নিজের সৃজনশীলতায় রাঙিয়ে তৈরি করে নিচ্ছেন নিজের একদম আলাদা একটি স্বাধীনতা দিবসের স্টাইল। নারীরা লাল-সবুজ শাড়ি পরতে পারেন লম্বা হাতার ব্লাউজ। লাল-সবুজ শাড়ি পরতে না চাইলেও এক রঙা শাড়ির সঙ্গে লাল-সবুজের সংমিশ্রণে ব্লাউজ পরুন। এক্ষেত্রে সাদা, ঘিয়া কিংবা কালো শাড়ির সঙ্গে মানানসই লাল কিংবা সবুজ ব্লাউজের হাতায় লেস বসানো হলে দেখতে আরও সুন্দর লাগবে আপনার স্বাধীনতা দিবসের পোশাক।

পুরুষদের ক্ষেত্রেও লাল-সবুজ রঙের পছন্দের পাঞ্জাবি বা ফতুয়াটি বেছে নিতে পারেন। এদিন শিশুদেরও লাল-সবুজের পোশাক পরতে দিতে পারেন। এতে তাদের মধ্যেও দেশপ্রেমের চেতনা জাগ্রত হবে। বছরের যে কদিন পোশাকে দেশকে উপস্থাপনের সুযোগ পাওয়া যায় তার মধ্যে স্বাধীনতা দিবস একটি। এদিন আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে নিজেদের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিতে পেরেছি। তাই উৎসবের আমেজে রঙের ছটায় স্বাধীনতা দিবস হয়ে উঠুক রঙিন।

 

খাবারে রুচি নেই?

সামনে সাজানো অনেক মজার মজার খাবার। কিন্তু আপনার একটুও খেতে ইচ্ছে করছে না। আর সেজন্য হয়তো বকাও খাচ্ছেন, কেন খেতে ইচ্ছে করছে না, কেন খাচ্ছেন না। এজন্য হয়তো চিকিৎসকের শরণাপন্নও হয়েছেন, আর ওষুধ খেয়েও কাজ হচ্ছে না। খাবার দেখলেই অনীহা চলে আসছে। পাড়া-প্রতিবেশী আর আত্মীয়রাও কথা শোনাচ্ছে, কেন এমন পাঠকাঠির মতো দেখতে! খুব পরিচিত একটি মশলা, যা আমাদের দৈনন্দিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়, তা দিয়েই দূর করা সম্ভব আপনার এই অরুচি। বলুন তো সেটি কী? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, সেটি হচ্ছে আদা।

আদার রসে রয়েছে জিনজেরল নামের রাসায়সিক উপাদান, যা দেহের সিমপ্যাথেটিক সিস্টেমে বিটা এগনিস্ট হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ বন্ধ শ্বাসনালী খুলে দেয়, সাইনাসগুলোকে পরিষ্কার রাখে, শ্বাস-প্রশ্বাসে সাহায্য করে। হাঁপানি রোগে ব্যবহৃত বিটা এগনিস্ট ওষুধের প্রায় সমান কার্যকরী এই রস যা গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

শোগাওল নামের উপাদান মস্তিষ্কের বিভিন্ন কেন্দ্রের ওপর কাজ করে বমি ভাব বা বমি অনেকটাই কমাতে পারে।

Khabar

এন্টি ইনফ্লামেটেরি গুণ থাকায় বাত ব্যথার রোগীদেরও উপকারে আসে নিয়মিত আদা বা আদার রস সেবন। ফিলাডেলফিয়ায় এসিটামিনোফের বা প্যারাসিটামল ও আদার রস পাশাপাশি ব্যবহার করে ব্যথা-বেদনা কমাতে প্রায় সমান কার্যকারিতা পাওয়া গেছে।

যাত্রাকালীন অসুস্থতা বা মোশন সিকনেস কমানো এবং গর্ভবতী নারীদের মর্নিং সিকনেসে দারুণ কাজে আসে আদার রস। এটি পেটের ব্যথা, গ্যাস কমায়, রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।

khabar

আদা মাইগ্রেন রোগীদেরও আরাম দিতে পারে। আদার রস পাকস্থলীতে মিউকাস আবরণ তৈরিতে সাহায্য করে। এ কারণে ভারী খাবারের পর আদা চিবানো একটি প্রাচ্যদেশীয় অভ্যেস। এ ছাড়া এটি অন্ত্রে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের শোষণ বাড়ায়।

তাই মুখের রুচি বাড়াতে আদা খাওয়া শুরু করুন আজ থেকেই। কাঁচা খেতে ভালো না লাগলে আদা ধুয়ে কুচি করে রোদে শুকিয়ে বয়াম ভরে রাখতে পারেন। একটু একটু করে চুষে খেলেই রূচি আসতে বাধ্য। তবে আর দেরি কেন!

 

মজাদার ব্রেড অ্যান্ড চিজ রোল তৈরি করবেন যেভাবে

খুব সহজেই নাস্তার কোনো পদ তৈরি করতে চান? তবে তৈরি করতে পারেন রোল। আর সবচেয়ে সহজে যে রোলটি আপনি তৈরি করতে পারবেন সেটি হলো ব্রেড অ্যান্ড চিজ রোল। সামান্যকিছু উপাদান দিয়ে ঝটপট তৈরি করতে পারবেন সুস্বাদু এই খাবারটি। চলুন তবে এখনই শিখে নেয়া যাক-

উপকরণ :

তাজা পাউরুটি, চিজ স্লাইস (পাউরুটির সমপরিমাণ। গ্রেট করা চিজ হলে আন্দাজমত দেবেন।), চিকেন সসেজ (সমপরিমাণ), গোল মরিচ গুঁড়ো এক চিমটি, রসুন কুচি ২ কোয়া, তেল পরিমাণ মতো, পার্সলে বা পুদিনা কুচি ইচ্ছামতো।

প্রণালি :
পাউরুটির বাদামি অংশ কেটে ফেলে দিন। এবার অল্প পানিয়ে রুটি ভিজিয়ে ভালো করে চিপে নিন দুই হাতের তালুর মাঝে রেখে। রুটি মোটেও বেশি নরম হবে না কিংবা ভাঙবে না। কেবল হালকা একটু ভিজবে যেন ভাঁজ করা যায়। প্যানে তেল দিন অল্প, এতে রসুন কুচি দিয়ে দিন। একটু গন্ধ ছড়ালেই সসেজ গুলো দিয়ে দিন। রসুনের ফ্লেভারে সসেজ গুলো ভেজে নিন। পাউরুটির স্লাইস গুলো নিন। প্রত্যেক স্লাইসের ওপরে এক স্লাইস করে চিজ বা গ্রেট করা চিজ দিন। তারপর দিন ভাজা সসেজের কুচি। পুদিনা পাতা ও গোল মরিচ ছিটিয়ে নিন। তারপর সাবধানে রোল করে ফেলুন। রোলগুলো অল্প তেলে ভেজে নিন।

লক্ষ করুন :
যদি চান ফ্রিজে সংরক্ষণ করে পরে ভেজে খাবেন, সেক্ষেত্রে রোলগুলো ডিমের মাঝে চুবিয়ে বিস্কিটের গুঁড়োতে গড়িয়ে ফ্রিজে রাখুন। আর বাড়িতে হঠাৎ অতিথি এলে কিংবা বিকেলের নাস্তায় সময় নষ্ট না করেই ভেজে ফেলুন মজাদার ব্রেড অ্যান্ড চিজ রোল।

 

চিকেন কারি উইথ টমেটো

আমাদের খাদ্যতালিকায় সপ্তাহে অন্তত তিনদিন মুরগির মাংস থাকেই। এটি আমাদের পুষ্টিচাহিদা পূরণ করতে কার্যকর। চিকেনের নানা মুখরোচক পদ অনেকেরই পছন্দ। প্রতিদিনকার থেকে একটু আলাদা করেই এই মুরগির মাংস রান্না করতে পারেন আপনি চাইলেই। তেমনই একটি পদ চিকেন কারি উইথ টমেটো।

উপকরণ : মুরগির মাংস (দেড় কেজি) বা ১ টি, তেল ১/২ কাপ, টুকরা করা টমেটো ১ টি, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, রসুন কুচি ১/২ টেবিল চামচ, আদা কুচি ১/২ টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ কুচি ১/২ টেবিল চামচ, টমেটো পিউরি ২ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা চামচ, ধনেপাতা, কুচি দেড় টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী।

গুঁড়া মশলার জন্য : ছোট এলাচ ২ টি, দাড়চিনি দেড় টুকরা, বড় এলাচ ১ টি, লবঙ্গ ১ টি, জায়ফল ১/৪ অংশ চা চামচ, জয়ত্রি ১/২ চা চামচ বা ছোট টুকরা।

প্রণালি : মশলা আলাদা টেলে গুঁড়া করে একত্রে রাখুন। মুরগির চামড়া ছাড়িয়ে নিন। হাড় থেকে মাংস ছাড়িয়ে ছোট টুকরা করুন। তেলে পেঁয়াজ, রসুন ভেজে টমেটো টুকরা করে দিন। নাড়তে থাকুন। টমেটো নরম হলে আদা, মরিচ ও লবণ দিয়ে টমেটো পিউরি ও চিনি দিন। ২ মিনিট নেড়ে মাংস দিয়ে নেড়ে নেড়ে ভাজুন। ঢেকে রান্না করুন। মাঝে মাঝে নাড়ুন। পানি টেনে আসলে মাংস নেড়ে নেড়ে ভাজুন। মাংস সিদ্ধ এবং ভাজা হলে গুঁড়া মশলা এবং ধনেপাতা দিয়ে ২-৩ মিনিট ভেজে নামান।

 

সর্দি-কাশি সারাতে যা খাবেন

ঠান্ডা, ধুলোবালি কিংবা এ্যালার্জিজনিত কারণে সর্দি-কাশি দেখা দেয় অনেকেরই। ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার এই ইনফেকশনকে দূর করার জন্য অনেকে নিজে নিজেই ঔষধ গ্রহণ করেন, কেউ বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সাধারণ ঠান্ডা ও কাশি দূর করতে পারে কিছু আপনার ঘরে থাকা কিছু মশলা।

তীব্র কাশি ও ঠান্ডা এবং গলাব্যথা যাই হোকনা কেন রসুনের একটি কোয়া চিবানো প্রয়োজন আপনার। রসুনে অ্যালিসিন নামক ব্যাকটেরিয়া নাশক উপাদান থাকে যা ঠান্ডা-কাশি দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ১ টি টমাটো, ২ কোয়া রসুন ও লেবুর রস মিশিয়ে স্যুপ তৈরি করে পান করলে ভালো ফল পাবেন।

দারুচিনিতে ভাইরাস নাশক ও ব্যাকটেরিয়া নাশক উপাদান আছে যা শুধু ভারাসের ইনফেকশন প্রতিরোধই করেনা বরং নিরাময়েও সাহায্য করে। ১ কাপ গরম পানিতে দারুচিনি গুঁড়া, ১ চিমটি মরিচের গুঁড়া এবং মধু মিশান। দিনে অন্তত দুই বার এটি পান করুন ভালো ফল পেতে।

ব্যাকটেরিয়ানাশক উপাদানে পরিপূর্ণ গোলমরিচ। গোলমরিচ শুধুমাত্র খাবারে উষ্ণ ও মসলাযুক্ত স্বাদই যুক্ত করেনা বরং কফ নরম করে ও নাকের সর্দি পরা বন্ধ করতে সাহায্য করে। গরম স্যুপের উপর গোলমরিচ ছিটিয়ে নিন অথবা ১ চামচ মধুর সাথে ১ চিমটি গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে খালি পেটে খান। এতে ঠান্ডা ও কাশি দূর হবে।

নিঃশ্বাসের সজীবতা দিতে পারে লবঙ্গ। প্রতি গ্রাম লবঙ্গে অনেক বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। আধা কাপ জামে যে পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে ঠিক সেই পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে আধা চামচ লবঙ্গে।

ঠান্ডা ও কাশি দূর করার জন্য সকালে ১ কাপ গরম আদা চা পান করুন। ১ কাপ পানিতে ১ চামচ আদা কুচি ও চা-পাতা ফুটিয়ে নিন। এর সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। এতে গলায় শীতল অনুভূতি পাবেন। আদার অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান শুধু লালা নিঃসরণকেই উৎসাহিত করেনা বরং মিউকাস নিঃসরণেও সাহায্য করে। এর মাধ্যমেই কাশির উপসর্গ দূর হয়।

প্রাচীনকাল থেকেই সর্দি-কাশি দূর করার জন্য দাদী-নানীরা হলুধ-দুধ ব্যবহার করে আসছেন যা আসলেই অনেক কার্যকরী। হলুদ প্রদাহরোধী উপাদান, কারকিউমিন ও ভোলাটাইল অয়েলে পরিপূর্ণ। তাই হলুদ ঠান্ডা-কাশি ও গলাব্যথা থেকে পরিত্রাণ দিতে পারে।

পরিপাক প্রক্রিয়াকে শান্ত করতে ও নিঃশ্বাসে সজীবতা আনতে সাহায্য করে মৌরি। পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি ঠান্ডা ও কাশি দূর করতেও সাহায্য করে মৌরি।

 

ঘর সাজাতে কর্নার টেবিল

শিল্পচর্চার মাধ্যমে কখনো কখনো কুঁড়েঘরকেও নিজের মতো সাজিয়ে বিশাল অট্টালিকায় পরিবর্তিত করা যায়। ঘর যেমন সাজানো যায় নানা রঙের বাতি, ওয়ালমেট কিংবা ফুলের ঝাড় দিয়ে তেমনি সাজানো যায় সোপিস দিয়েও। আপনার ঘরে নান্দনিকতার ছোঁয়া আনতে সোপিসের তুলনা নেই। ঘরের একটি কোনায় থাকা সোপিসটি আপনার ঘরের সৌন্দর্য যেমন একদিকে বৃদ্ধি করছে তেমনি আপনার রুচিবোধের একটি ছাপ রেখে যাচ্ছে আপনার প্রতিটি কাজের মাধ্যমে।

তবে এই সোপিসের ক্ষেত্রেও আছে তারতম্য। সোপিস বলতেই আমরা কেবল ঘরের এক কোনে রাখা বা থাকা কাঁচের কিংবা মাটির অথবা চীনামাটির নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন কারুকাজের মূর্তি কিংবা নানা ধরনের ঘর, পুতুল কিংবা নানা অবয়বকে বুঝি। তবে এর বাইরেও আছে আরো সোপিস। এগুলো হয়ে থাকে বিশাল বিশাল আকৃতির। এগুলোর মধ্যর কর্নারে থাকা পাতলা এবং দেখতে বেশ চিকুন আকৃতির টেবিল অন্যতম। এগুলো হয়ে থাকে অ্যান্টিক সোপিস। এগুলো কেবল আপনার ঘরের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না সাথে সাথে ঘরে আনে এক ভিন্ন ধারা আর আপনার রুচিবোধের মাঝে এক বিশাল পার্থক্য।

কর্নারে থাকা এই টেবিল গুলোর উপরে আপনি রাখতে পারেন সুন্দর একটি রিসিভার ফোন কিংবা কাঁচের একটি সুন্দর ফুলদানী। এই টেবিলের উপরে থাকে ছোট একটি গোলাকার কাঁচ আর নিচের পায়াটি থাকে বিশাল আকৃতির। তাতে খোঁদাই করে আঁকা থাকে নানা কারুকাজ।

এই সমস্ত টেবিলের উপর রাখতে পারেন বিশাল বিশাল আয়নাও। এই আয়নাতেও থাকে নানা কাজ, যেমন লতাপাতা, কিংবা কোনো গৃহবধূ, কাঁথার বুকে সুঁই আর সুতার সই পাতাতে থাকা গ্রামের ঘোমটা মাথায় দেওয়া বউ।

সোপিস টেবিলের যে জায়গাটিতে থাকে বসানো আয়নাটি তার ভিত্তি থাকে কখনো কাঠের অথবা কাঁচের। এর আয়তন হয়ে থাকে ছোট। তবে এর পায়াতে থাকে নানা কারুকাজ। কখনো এটি গাছের মূলের মতো বিশাল হয়ে ছড়িয়ে থাকে মেঝেতে বা কার্পেটে অথবা একটির উপর আরেকটি বেনির মতো পেঁচিয়ে থাকে। তাতে আবার রঙের সাহায্যে আনা হয় বৈচিত্র্য।

কোথায় পাবেন :  বিভিন্ন অ্যান্টিকের দোকানে আপনি পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের এই অ্যান্টিক টেবিল সোপিসগুলো। এই অ্যান্টিক সোপিস টেবিলের দাম সাত হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

 

খাবার টেবিলে চামচ-ছুরির ব্যবহার

খাবার খেতে আমরা প্রায়শই রেস্টুরেন্টে যাই। আর সেখানে খাবার খাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে চামচ আর ছুরি। খাবার খাওয়ার যেমন কিছু নিয়ম আছে এবং তার মাধ্যমে কিংবা আপনার আচরণের মাধ্যমেও যেমন অনেক না বলা কথা প্রকাশ পায়, তেমনি টেবিলে রাখা চামচ এবং ছুরিটিও টেবিলে রাখার মাধ্যমে অনেক না বলা কথা বলে। টেবিলে রাখা চামচ আর ছুরির মাধ্যমে অনেক কিছু প্রকাশ করা যায়।

ছুরি চামচ কোণ করে রাখলে :
ছুরি ও চামচ কোণ করে প্লেটের মাঝে রাখার অর্থ হচ্ছে আপনি খাওয়ার ফাঁকে বিশ্রাম নিচ্ছেন। একটু পর আবার নতুন করে খাওয়া শুরু করবেন।

ছুরি চামচ যোগ চিহ্নের মতো করে রাখলে :
প্লেটের মাঝে ছুরি ও চামচ দিয়ে যোগ চিহ্নের মতো তৈরি করে রাখার অর্থ হচ্ছে আপনি দ্বিতীয় প্লেট খাবার জন্য প্রস্তুত এবং সেই হিসেবে ওয়েটার আপনাকে খাবার সরহরাহ করুক।

ছুরি চামচ পাশাপাশি লম্বা করে রাখলে :
ছুরি চামচ পাশাপাশি লম্বা করে রাখার অর্থ হচ্ছে আপনার খাওয়া শেষ ওয়েটার টেবিল পরিষ্কার করে নিতে পারেন।

ছুরি চামচ পাশাপাশি আড়াআড়ি করে রাখলে :
ছুরি চামচ পাশাপাশি আড়াআড়ি করে রাখার অর্থ আপনার খাওয়া শেষ এবং খাবার আপনার অত্যন্ত পছন্দ হয়েছে।

ছুরি চামচ একটির ভেতর অপরটি কোণ তৈরি করে রাখলে :
ছুরি চামচ একটির ভেতর অপরটি মূলত কাটা চামচের ভেতর ছুরি গেঁথে কোণ তৈরি করে রাখার অর্থ আপনার খাওয়া শেষ কিন্তু খাবার একেবারেই পছন্দ হয়নি আপনার।

ছুরি চামচের ব্যবহার সঠিক ব্যবহার :
খাওয়ার ছুরি কখনোই সাধারণ ছুরির মতো করে ধরবেন না। একবার টেবিল থেকে ছুরি চামচ তুলে তা আবার টেবিলে রাখবেন না। হাতে বা প্লেটে রাখুন।

চপস্টিকের ব্যবহার :
চপস্টিক খাবার বোল বা প্লেটের পাশে কখনোই রেখে দেবেন না। চপস্টিক রেস্টে রাখুন। খাবারে চপস্টিক খাড়া করে গেঁথে রাখা অভদ্রতা।

 

‘উন্নয়নের মূলধারায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন’

কর্মক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় উন্নয়নের মূলধারায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৭ উপলক্ষে মঙ্গলবার দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন আমরা সকলে মিলে কর্মক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় উন্নয়নের মূলধারায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ফলে রাজনীতি, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষা, চিকিৎসা, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সর্বক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতিসংঘের এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড, প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন, এজেন্ট অব চেঞ্জ, শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা আনার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কোর ‘শান্তি বৃক্ষ’ সহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছি। গ্লোবাল জেন্ডার গেপ রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় সকল দেশের ওপরে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সাল থেকে বিগত আট বছরে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন করে এর বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন-১৯২৯ এর স্থলে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ পাশ করা হয়েছে। পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০ পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা-২০১৩ ডিএনএ আইন-২০১৪ এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০২৫ প্রণয়ন করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসে উন্নীত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া বয়স্ক ভাতা, বিধবা-তালাকপ্রাপ্ত ও নির্যাতিত নারীদের ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের ভাতা চালু করা হয়েছে। ভিজিএফ, ভিজিডি ও জিআর কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমেও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি জাতীয় ও স্থানীয় সরকার কাঠামোতে প্রত্যক্ষ ভোটে নারীর অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়গুলোতে জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানে রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনের সকল কর্মকাণ্ডে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে সরকারি ও বেসরকারি সব পেশায় নারীরা নিয়োগে সমান সুযোগ পাচ্ছে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারীকে উন্নয়নের সক্রিয় অংশীদার করা হলে আমরা একটি সমতাভিত্তিক বিশ্ব গড়ে তুলতে সক্ষম হব।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৭ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের সব নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নারী জাগরণের অগ্রদূতদের, যাদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠায় নারীর সমঅধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সফল হয়েছে তাদের এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো ২ লাখ মা-বোন যাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মহান স্বাধীনতা- প্রধানমন্ত্রী তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

প্রতিবেদক:
অবনী আহমেদ

 

লা মেরিডিয়ানের বিশেষ আয়োজন

নারীদের গৌরব ও সাফল্যের স্বীকৃতি দিতে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে লা মেরিডিয়ান বিশেষ আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে।

লা মেরিডিয়ান ঢাকার লেটেস্ট রেসিপি, মেডিটেরিয়ান রেস্টুরেন্ট ওলেয়া, ল্যাটিটিউড ২৩ ও ইটালিয়ান রেস্টুরেন্ট ফ্যাভোলাতে নারী অতিথিরা টেবিল বুকিং দিলেই উপভোগ করতে পারবেন ২০ শতাংশ ছাড়।

অতিথিরা ৮ মার্চ এ আয়োজন উপভোগ করতে পারবেন সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। নারীদের জন্য দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই লা মেরিডিয়ান ঢাকার এ আয়োজন।

বিশেষ এ আয়োজন সম্পর্কে লা মেরিডিয়ান কর্তৃপক্ষ জানায়, একটি গ্লোবাল ব্র্যান্ড হিসেবে লা মেরিডিয়ান ঢাকা মনে করে অতিথি সেবা খাতে নারীদের অবদান উল্লেখযোগ্য। তাদের সাফল্যও অনেক এবং তাদের এ সফলতা নতুনদের ক্যারিয়ার তৈরিতে অনস্বীকার্য ভূমিকা রাখছে।

ফুড়িয়ে যাবার আগেই টেবিল বুক করতে অথবা আরও বিস্তারিত জানতে- ০১৯৯০ ৯০০৯০০ অথবা ০১৭৬৬৬ ৬৭৩৪৪৩ এ নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

 

এলাচি চা কেন খাবেন

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যে পানীয়টি থাকা আবশ্যকীয় সেটি হলো চা। এই চায়েরই আছে নানা রকম। কারো পছন্দ রং চা আবার কারো পছন্দ দুধ চা। এর বাইরেও আছে নানা রকম চা। এলাচি চা তার ভেতরে উল্লেখযোগ্য। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা এলাচি চা পান করেন তারা অন্যদের তুলনায় ফুরফুরে থাকেন এবং তাদের মনে বিষণ্ণতা ভর করতে পারে না। আপনার বিষণ্নতা অনেকটাই দূর করে দিতে পারে এই এলাচি চা। চলুন জেনে নেই কীভাবে এলাচি চা তৈরি করবেন।

উপকরণ : ২টি এলাচি, ১ চা চামচ মধু ও চা পাতা পরিমাণ মতো।

প্রণালি : এলাচি ও মধু দিয়ে পরিমাণমতো পানি সেদ্ধ করে তার মধ্যে চা পাতা ছেড়ে দিন। গরম গরম পান করুন এলাচি চা। ইচ্ছে করলে দুধ মিশিয়েও পান করতে পারেন।

 

মুসলিম পরিবারগুলোই আদর্শ ভারতের যে গ্রামে

বেআইনি হলে বিয়ের সময় যৌতুক নেয়া ভারতে অতি পরিচিত একটা ঘটনা। যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূর ওপরে অত্যাচারের ঘটনা নিয়মিতই সেখানে শোনা যায়। কিন্তু সেদেশেরই একটি প্রত্যন্ত গ্রামে এখন ঘটছে পুরো বিপরীত ঘটনা।

ঝাড়খন্ডকে মনে করা হয় ভারতের পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলোর একটি। কিন্তু সেই রাজ্যেরই একটা অঞ্চলে ঘটছে অভিনব এই ঘটনা। বিয়ের সময়ে যৌতুক হিসেবে যে অর্থ নিয়েছিল পাত্রপক্ষ, এখন সেই টাকাই তারা ফিরিয়ে দিচ্ছে কনে পক্ষকে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ চিত্র।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঝাড়খন্ড রাজ্যের পালামৌতে এই প্রক্রিয়া বছরখানেক ধরে চলছে, এর মধ্যেই প্রায় আটশো মুসলমান পরিবার ছেলের বিয়ের সময়ে নেয়া যৌতুক ফিরিয়ে দিয়েছে। ফিরিয়ে দেয়া এই যৌতুকের পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি রুপি।

মুসলমান পরিবারগুলোকে দেখে ওই অঞ্চলের অন্য ধর্মাবলম্বীরাও যৌতুক ফেরানো শুরু করেছেন।

এ বিষয়টি প্রথম শুরু হয় ঝাড়খন্ড রাজ্যের পোখারিটোলা গ্রামে। ছেলের বিয়ের সময়ে যে যৌতুক নিয়েছিল পোখারিটোলার মুসলমান পরিবারগুলো, সেই টাকা ফিরিয়ে দিতে শুরু করে তারা।

গ্রামের বাসিন্দা হাজি মুমতাজ আনসারিই এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা শুরু করেছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘অনেক লোক আমার কাছে এসে দুঃখ করতো যে মেয়ের বিয়ের পণ যোগাড় করতে গিয়ে কী অসুবিধায় পড়েছেন তারা। ধারদেনা তো বটেই, জমিও বিক্রি করতে হতো যৌতুকের টাকা যোগাড় করতে। সেই সব ঘটনা শুনেই আমার মনে হয় যে অনেক হয়েছে, আর না! বন্ধ করতে হবে এই পণ নেয়া। তখনই মানুষকে বোঝাতে শুরু করি বিষয়টা।’

এখনো পর্যন্ত ৮শ পরিবার যৌতুক ফিরিয়ে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে। যারা এখনও ফিরিয়ে দেয়নি তারাও সবার সামনে অঙ্গীকার করছে টাকা ফেরত দিয়ে দেবে।

india

মুমতাজ আনসারির কথায়, ‘মুসলমান পরিবারগুলোকে দেখে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও এগিয়ে আসছেন। তারাও টাকা ফিরিয়ে দিতে শুরু করেছেন।’

বিহার ঝাড়খন্ডে যৌতুকপ্রথা, বাল্যবিবাহ নিয়ে কাজ করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্রেকথ্রু। সংগঠনটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সোহিনী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন পোখারিটোলা গ্রামের খবর তাদের কাছেও পৌঁছেছে।

তিনি বলছেন, ‘যিনিই এই অভিযানটা শুরু করে থাকুন না কেন, দারুণ কাজ করেছেন। যদি ঠিকমতো চালিয়ে যেতে পারেন, তাহলে বহু মেয়ে এই যৌতুকের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পাবে।’

পোখারিটোলার এই যৌতুকবিরোধী অভিযান এতটাই সমর্থন পেয়েছে যে, পালামৌ অঞ্চলে এখন আর মুসলিম পরিবারগুলোর কাছে কেউ যৌতুক চাইতেই সাহস করছেন না।

আর যদি বা পাত্র পক্ষ এবং কন্যা পক্ষ নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে যৌতুকের ব্যবস্থা করেও ফেলে, তাহলে সমাজের মাথারা গিয়ে সেটা আটকিয়ে দিচ্ছেন। এমন কী যৌতুক নেয়ার কথা কানে এলে কাজী সাহেব সেই বিয়ে দিতেও সরাসরি অস্বীকার করছেন।

 

রাতে ঘুমানোর আগের আমল

রাত ও দিন আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। আল্লাহ তাআলা দিনকে করেছেন হালাল রুটি-রুজি অর্জনের মাধ্যম এবং রাতকে করেছেন প্রশান্তি লাভের মাধ্যম। মানুষ সাধারণত রাতে ঘুমায়। আর রাতের এ ঘুমও আল্লাহর ইবাদতে পরিণত হয়, যদি তা হাদিস অনুযায়ী করা যায়।

সাওয়াব লাভের নিয়তে হাদিসের যাবতীয় হিকমাত ও উপদেশ গ্রহণ করা সবার জন্যই প্রয়োজন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য রাতের বেলায় ঘুমানোর আগে এমনই একটি আমলের কথা হাদিসে তুলে ধরেছেন।

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একবার গম পেষার চাক্কি ঘুরানোর কারণে হজরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাতে ফোস্কা পড়ে যায়। তখন তিনি একজন খাদেম চেয়ে নেয়ার উদ্দেষে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গেলেন কিন্তু তাকে পেলেন না।

তখন তিনি তাঁর আসার উদ্দেশ্যটি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জানালেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ঘরে আসলেন তখন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁকে বিষয়টি জানালেন।

তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিকট এমন সময় আসলেন যখন আমরা বিছানায় বিশ্রাম গ্রহণ করছি। তখন আমি উঠতে চাইলে তিনি বললেন, নিজ জায়গায়ই থাকো। তারপর আমাদের মাঝে তিনি এমনভাবে বসলেন যে, আমি তাঁর দু`পায়ের শীতল স্পর্শ আমার বুকে অনুভব করলাম।

তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি আমল বলে (শিখিয়ে) দেব না? যা তোমাদের জন্য একটি খাদেমের চাইতেও অনেক বেশি উত্তম।

(তখন তিনি বললেন) যখন তোমরা শয্যা গ্রহণ করতে (রাতের বেলায় ঘুমাতে) যাবে, তখন তোমরা আল্লাহু আকবার (اَللهُ اَكْبَر) ৩৩ বার; সুবহানাল্লাহ (سُبْحَانَ الله) ৩৩ বার; আলহামদুলিল্লাহ (اَلْحَمْدُ لِله) ৩৩ বার পড়বে।

এটা তোমাদের জন্য একটি খাদেমের চাইতেও অনেক বেশি মঙ্গলজনক। ইবনে শিরিন বলেন, তাসবিহ ৩৪ বার। (বুখারি)

আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদিকে রাতের বেলায় ঘুমাতে যাওয়ার আগে ছোট্ট এ তাসবিহের আমলটি নিয়মিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

ইনডোর প্লান্টের যত্ন নেবেন যেভাবে

আমাদের এই ব্যস্ত জীবনে যখন নিজেদের জন্য আমাদের কাছে সময় নেই তখন সবুজের কাছে নিজেকে সমার্পণ করার সময় কোথায়। তবুও আমাদের জীবন ধারণ থেকে শুরু করে যেকোনো কিছুতেই গাছের ছোঁয়া জরুরি। তাই আপনি চাইলে আপনার ঘরেই গড়ে তুলতে পারেন সবুজের ছোট্ট একটি আবাস্থল। তবে এই ক্ষেত্রে আপনাকে জানতে হবে কিভাবে আপনি এই সবুজের যত্ন নেবেন আর তাকে দেখে রাখবেন।

ইনডোর প্লান্ট বেশি বড় করবেন না, ঘর অন্ধকার দেখাবে। এ কারণে বাড়তি পাতা ছেঁটে রাখুন। এ ছাড়া শুকনো ফুল ও পাতা ছেঁটে দিন সপ্তাহে এক থেকে দুবার গাছ রোদে দিতে হবে। সকালের হালকা রোদই উপকারী। নিয়ম মেনে গাছে পানি দিন।

সাত থেকে ১০ দিন পরপর টবের মাটি ওলটপালট করে দিন, এতে গাছের মাটির নিচের ক্ষতিকর গ্যাস বের হয়ে যাবে। তবে খুবই সাবধানে কাজটি করতে হবে। যাতে গাছের শিকড়ের কোনো ক্ষতি না হয়।

পচা পাতা গাছের কাছে জমিয়ে না রেখে দ্রুত ফেলে দিন। গাছের পাতা ও ফুলের রং হালকা হতে শুরু করলে গাছটিকে ঠাণ্ডা ও তাপ কম পৌঁছায় এমন স্থানে রাখুন। কারণ অতিরিক্ত তাপ লাগলে পাতা ও ফুলের রং হালকা হতে শুরু করে।

ফ্ল্যাট বাড়িতে কিংবা অফিসের ভেতর গাছ রাখার জন্য আমরা অনেকেই কারুকাজ সজ্জিত টব ব্যবহার করেন। কিন্তু যখনই দেখবেন গাছের শিকড় টবের নিচে থাকা ছিদ্রের দিকে বেড়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই নতুন টবে গাছ সরিয়ে ফেলুন। পানি দেয়ার পর লক্ষ রাখুন যেন বাড়তি পানি টবের নিচের ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে না যায়। টবের নিচে মাটির থালা ব্যবহার করুন, তাতে পানিতে ঘর ময়লা হবে না।

গাছের পাতায় একটা সাদা ছোপ ছোপ দেখা যায়, এটা এক ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন। সাবান পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থানটি মুছে ফেলুন, দেখবেন পাতা পরিষ্কার হয়ে গেছে। গাছের ধূলো পরিষ্কার করতে পালকের ডাস্টার ব্যবহার করবেন না। কারণ এ ধরনের ডাস্টার থেকে ছোট ছোট পোকা গাছের পাতায় গিয়ে গাছের ক্ষতি করতে পারে। পানি দিয়ে গাছ পরিষ্কার করা সবচেয়ে ভালো।

 

ফুলদানিতে সাজবে ঘর

ঘরকে নিজের মনের মতো কে না সাজাতে চায়! আর এর জন্য ইন্টেরিয়র ডিজাইন থেকে শুরু করে নিজের মনের ইচ্ছা পর্যন্ত কোনো পথটিই বাকি থাকে না। তবে আপনার ঘরের এই সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারেন খুব অল্প এবং ছোট কিছু ঘরে রাখার জিনিসের মাধ্যমে। যার মধ্যে আছে ফুলদানি। ঘরের কোণ, শোকেসের উপরে ফাঁকা জায়গা, টিভির উপর, ডেসিং টেবিলের উপর বা বেডসাইড টেবিলে রাখতে পারেন মনের মতো ডিজাইনের ফুলদানী। ফুলের ঘ্রাণ বেশি নিতে চাইলে বিছানার কাছেই রাখতে পারেন। মনে রাখবেন, যেখানেই ফুলদানি রাখুন না কেন, ঠিক মানিয়ে যাবে।

ফুল নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত পুরোটাই আপনার। ঘ্রাণের কথা চিন্তা করলে সাদা ফুল বেশি প্রাধান্য পাবে। রং আর সৌন্দর্যের কথা চিন্তা করলে বাহারি নানা জাতের ফুল প্রাধান্য পেতে পারে। শুধু ফুল রাখার পাত্র হিসেবেই নয়, শোপিস হিসেবেও ফুলদানির থাকে সমান কদর। তাই ফুলদানিতে শুধু তাজা ফুল প্রাধান্য পাবে তা নয়, রাখতে পারেন নানা রঙের কৃত্রিম ফুল। দেশি ফুলদানির পাশাপাশি চাইনিজ, জাপানিজ, থাই, ইরানি ও ইন্ডিয়ান ফুলদানিও জায়গা করে নিয়েছে।

বাজারে একটু ঘুরলে বাঁশ, কাঠ, বেত, মাটি থেকে শুরু করে সিরামিক, ক্রিস্টাল, কাচ, শক্ত প্লাস্টিক, ফাইবারসহ সব উপাদানের তৈরি কারুকার্যমণ্ডিত ফুলদানি পাওয়া যাবে। ছোট, মাঝারি কিংবা বড় তিন উচ্চতার ফুলদানি বাজারে পাবেন। ত্রিভুজ, চৌকোনা, সিলিন্ডার কিংবা ডিম্বাকৃতির ফুলদানি আছে রুচির ভিন্নতা দেখাতে। তবে অন্দর সজ্জার ক্ষেত্রে মেঝেতে ফুলদানি রাখলে সেটা বড় আকারের এবং টেবিলে রাখলে মাঝারি বা ছোট আকারের ফুলদানি হওয়া উচিৎ।

ঘরে দেশীয় আমেজ ধরে রাখতে আজকাল মাটির ফুলদানি বেশ ভালোই চোখে পড়ছে। কিছু ফুলদানিতে ঘড়ি কিংবা পেনহোল্ডার লাগানো, কোনোটা দেয়ালে ঝুলানো, আবার কোনোটা টেবিল ল্যাম্প সেট করা আছে। যা আপনার ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে কয়েকগুণ। এটি কেবল নান্দনিকতারই পরিচয় বহন করে না, বরং আপনার রুচিশীলতার পরিচয়ও বহন করে।

 

কোন পোশাকে কেমন জুতা

প্রতিদিনের সঙ্গী হয়ে যে জিনিসটি আমাদের সঙ্গে থাকে তা হলো জুতা। যেখানেই থাকুন আর যে পরিবেশেই থাকুন পায়ে যদি আরামদায়ক জুতা না থাকে তবে আপনি কোথাও আরাম করে সময় কাটাতে পারবেন না। ক্লাস, ইন্টারভিউ, কোথাও ঘুরতে যাওয়া অথবা প্রতিদিনের অফিস- একেক জায়গায় আপনার পোশাক যেমন ভিন্ন তেমনই আপনার পায়ের জুতাজোড়াও হয়ে থাকে ভিন্ন। তাই যখনই জুতা পরবেন পোশাকের সাথে তা মানিয়ে নিন আগে।

টি-শার্ট, জিন্স বা ট্রাউজার পরলেন অথচ পায়ে থাকল চটি, বুট কিংবা কাবলি সু, তাহলে কিন্তু সেটা আপনার জন্য মানানসই হলো না। আবার হয়তো ঈদের অনুষ্ঠান কিংবা বাঙালি ঘরানার অনুষ্ঠান, সেখানে আপনার পরনে একেবারে খাঁটি বাঙালিয়ানার পোশাক, এখানে চটি কিংবা নাগরা জুতা ছাড়া আপনার সাজসজ্জাই মাটি হয়ে যাবে। মেয়েরাও যখন এসব জায়গায় যায় তখন পোশাকের সাথে মানিয়ে জুতো পরতে হবে। যেমন শাড়ি পরে গেলে সেক্ষেত্রে চটি জুতাতেই ভালো লাগবে আপনাকে। আর সালোয়ার কামিজ কিংবা শার্ট-প্যান্ট কিংবা ফতুয়া পরলে সেক্ষেত্রে যে কোনো ধরণের হিলই মানাবে।

হয়তো চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন সে সময় যখন আপনি শার্ট-প্যান্ট পরলেন সেখানে আপনার পুরো লুকটাইকে কিন্তু একটা স্মার্ট সমাধান দিতে পারে একমাত্র বুটজুতা। ইন্টারভিউর ক্ষেত্রে মেয়েরা সাধারণত শাড়ি পরেই যায়। তখন মেয়েদের অবশ্য শাড়ির সঙ্গে চটি জুতোই মানানসই। আবার অফিসের বড় কর্তা হয়ে মনে করলেন, যেকোনো সাজই আমার জন্য যথেষ্ট। এমনটা ভাববেন না এখানেও আপনার পোশাকের সাথে মানিয়ে জুতা পরুন। শার্ট প্যান্ট ইন করলে অবশ্যই বুটজুতা পরবেন। পাঞ্জাবি পাজামার সাথে আবার বুট পরবেন না। এখানে মানানসই একজোড়া চটি জুতা পরুন।

অন্যদিকে হাওয়াই চপ্পলও কিন্তু বেশ আরামদায়ক। কিন্তু এ হাওয়াই চপ্পল কিছু সীমিত জায়গায় ব্যবহার উপযোগী। তাই হাওয়াই চপ্পল ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা রক্ষা করবেন। না বুঝেই যেকোনো কালারের জুতা কিনবেন না। ভেবে নিন কোন কোন রঙের জামার সাথে এটা ব্যবহার করতে পারবেন। তাই রঙ বুঝে জুতা কিনুন, যাতে একের বেশি পোশাকের সাথে তা বেমানান না হয়ে যায়।

 

যে কারণে ব্রোকলি খাবেন

ব্রোকলি সাধারণত সিদ্ধ কিংবা বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া হয়ে থাকে। অনেকে কাঁচাও খেয়ে থাকেন। এটি এমন একটি সবজি যাতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম কিন্তু ব্রোকলি ভিটামিন, মিনারেল আর ফাইবার এ পরিপূর্ণ। প্রত্যেকদিন খাবারে ব্রোকলি রাখলে তা আপনার সুস্বাস্থ্যের কারণ হতে পারে। এক কাপ রান্না করা ব্রোকলিতে একটি কমলা লেবুর সমপরিমাণ ভিটামিন সি থাকে। তাছাড়া এটি বিটা ক্যারটিনের উৎস হিসেবে কাজ করে। এতে আরও রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিংক।

ব্রোকলিতে রয়েছে অধিক পরিমাণে পটাশিয়াম, যা স্নায়ুতন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ করে একে সুস্থ আর রোগমুক্ত রাখে। তাছাড়া আমাদের পেশির নিয়মিত বর্ধণকে ত্বরান্বিত করে। অপটিমাল ব্রেইন ফাংশন রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও এর ভূমিকাও অপরিসীম। এতে ম্যাগনেশিয়াম আর ক্যালশিয়ামও রয়েছে, যা সুন্দরভাবে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে।

ব্রোকলিতে অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। ফাইবার আমাদের পরিপাকে কল্যাণকর ভূমিকা পালন করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাছাড়া নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ভিটামিন এ –এর ভালো উৎস হিসেবে কাজ করে। দৃষ্টিশক্তি বর্ধণে ভিটামিন এ অতি জরুরী।

প্রতিদিন ব্রোকলি খেলে তা রোগ প্রতিরোধের মাধ্যমে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধণ করতে সহায়তা করবে। এতে প্রাপ্ত ভিটামিন বি৬ হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকেরও ঝুঁকি কমায়।

ইনডোল-৩-কার্বিনোল নামে একটি অতি শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্ট যৌগ রয়েছে এই ব্রোকলিতে, যা সার্ভিকল ও অগ্রগ্রন্থ্রির ক্যান্সার এবং লিভার ফাংশন এর উন্নতি সাধণ করে।

এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ব্রোকলি ন্যাচারাল ফরমে খেলে, অকালে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। রোদ আর দূষণের কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হতে পারে, ব্রোকলি তা থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করে। তাছাড়া রিংকেল জনিত সমস্যা দূর করে ত্বকের স্বাভাবিকতা বজায় রাখে কোনো ধরনের ক্ষতি ছাড়াই।

 

ইলিশ মাছের ডিমের ঝুরি

ইলিশ অনেকেরই পছন্দের একটি মাছ। একই ইলিশের হাজার রকমের রান্না। সব রান্নাই সহজ এবং সুস্বাদু। ইলিশের ৩০ রেসিপি নামে ইলিশের সুস্বাদু ও ব্যতিক্রম সব রেসিপি প্রকাশ করা হচ্ছে জাগো নিউজের লাইফস্টাইল বিভাগে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ থাকছে ইলিশ ডিমের রেসিপি।

উপকরণ : ইলিশ মাছের ডিম ১ কাপ, পিঁয়াজ কুচি ১ কাপ, বেরেস্তা আধা কাপ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, আদা বাটা দেড় চা চামচ, সরিষা বাটা ১ টে চামচ, হলুদ গুঁড়ো আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়ো ১ চা চামচ, ধনিয়া গুঁড়ো ১ চা চামচ, তেজপাতা ১টি, এলাচ ২ টি , দারচিনি ১ পিস, রাঁধুনি গুঁড়ো আধা চা চামচ (ইচ্ছা), লবণ আধা চা চামচ বা পরিমান মতো, কাঁচা মরিচ ৪/৫ টি চিরে নেয়া, ধনে পাতা কুচি পরিমাণমতো বা ৪ টে চামচ, সরিষার তেল ৩ টে চামচ, সয়াবিন তেল ২ টে চামচ, পানি ১ কাপ

প্রণালি : ২ রকমের তেল মিশিয়ে গরম করে তেজপাতা ও গরম মসলা ফোড়ন দিন, এবার পিঁয়াজ সোনালি করে ভেজে বাটা ও গুঁড়ো মসলাগুলো দিয়ে কষিয়ে মাছের ডিম দিয়ে কষাতে হবে। কষানোর মাঝে একটু একটু করে পানি দিতে হবে। ১০ মিনিট অল্প আঁচে ডিম কষিয়ে বেরেস্তা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ঢেকে আরো ৫ মিনিট রান্না করুন। ধনে পাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

পানি প্রবাহে অলৌকিক পাথরের উৎস

দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি নেয়ামত প্রাপ্ত জাতি হলো বনি ইসরাইল। তাদের মধ্যে একবার প্রচণ্ড পানি সংকটের অবস্থা বিরাজ করছিল। বনি ইসরাইলের ১২ জাতি/গোষ্ঠীর প্রায় ৬ লক্ষাধিক মানুষ এ পানির কষ্টে পতিত হন। এ পাথরের উৎস কোথায়? কি এমন পাথর, যার মধ্যে আঘাত করলে পানির নহর প্রবাহিত হয়।

হজরত মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহ তাআলার নিকট তাঁর উম্মতের জন্য পানির আবেদন করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে একটি পাথরে আঘাত করার জন্য নির্দেশ দেন।

হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তাঁর জাতির জন্য আল্লাহর নির্দেশে যে পাথরকে আঘাত করেছেন, তা কি সাধারণ পাথর ছিল নাকি বিশেষ কোনো পাথর ছিল, এ ব্যাপারে একাধিক মতপার্থক্য রয়েছে। বিভিন্ন বর্ণনাগুলো হলো-

>> হজরত কাতাদাহ বর্ণনা করেন, পাথরটি ছিল তুর পাহাড়ের, বনি ইসরাইল তা সঙ্গে সঙ্গে রাখতো। যখন পানির প্রয়োজন হতো মুসা আলাইহিস সালাম স্বীয় লাঠি দ্বারা আঘাত করলে ১২টি নির্ঝর প্রবাহিত হতো এবং তা দিয়ে বনি ইসরাইলের ৬ লক্ষ মানুষ পানির প্রয়োজন পূরণ করতো। (তাফসিরে কবির)

>> এটি ছিল জান্নাতি পাথর। হজরত আদম আলাইহিস সালাম জান্নাত থেকে নিয়ে এসেছিলেন। আর লাঠিটিও ছিল জান্নাতি। এ দুটি নিজিস একের পর এক হাত বদল হতে হতে হজরত শোয়ায়েব আলাইহিস সালামের নিকট পৌঁছে। তিনি এগুলো হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে দান করেন। (তাফসিরে মাজহারি)

>> আল্লামা জমখশরি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এটি ছিল সাধারণ পাথর, যা মুসা আলাইহিস সালামের ওপর আদেশ হয়েছিল যে কোনো পাথরের ওপর আঘাত করার জন্য। মুসা আলাইহিস সালাম তাই করেছিলেন।

>> মুফাসসিরিনে কেরামগণ মুসা আলাইহিস সালামের একটি ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, মুসা আলাইহিস সালাম কখনো প্রকাশ্যে গোসল করতেন না বা উলঙ্গ হতেন না। যার ফলে তার কাওমের লোকেরা মনে করতো মুসা আলাইহিস সালাম একশিরা (অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া) রোগে আক্রান্ত।

একবার তিনি গোসল করার জন্য প্রসবণে ঢুকেছেন। তার পরিধেয় কাপড় খুলে একটি সাধারণ পাথরের উপর রাখেন। তিনি গোসল করার পর পাথরের দিকে উদ্যত হতেই দেখেন, পাথরটি দ্রুত বেগে ছুটে চলেছে।

মুসা আলাইহিস সালামও পাথরের পিছনে ছুটলেন। পাথরটি এলাকাবাসীর কাচারীর সামনে এসে থেমে যায়। যেখানে এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিল। তার কাওমের লোকেরা তাঁকে দেখে তাদের অহেতুক ধারণা পাল্টে নিল।

তার পর নির্দেশ হলো পাথরটি সংরক্ষণের জন্য। যা পরবর্তীতে কাজে আসবে। পাথরটি ছিল নরম এবং সাদা। প্রায় এক হাত পরিমান চতুর্ভূজ। প্রতিটি কোনে তিনটি উঁচু প্রান্ত ছিল। যেগুলো থেকে ১২টি নির্ঝর প্রবাহিত হতো।

পানি প্রবাহদানকারী পাথরটি ছিল হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও বনি ইসরাইল জাতির জন্য আল্লাহ তাআলার বিশেষ রহমত ও নেয়ামত। যা যুগে যুগে মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহ তাআলার মহা ক্ষমতার প্রমাণ বহন করবে। স্বীকৃতি প্রদান করবে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাতের।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব যুগের সব নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

প্রশিক্ষণ বদলে দিল শীলা, কাকলী, সাবিকুন্নাহারদের জীবন

টিনের চালের খোলা বারান্দা। সেখানে রাখা একটি কাঠের টেবিলে নেটের থান কাটছেন এক নারী। তিনি শীলা রানী। সফল একজন উদ্যোক্তা। নেটের ব্যাগ বানান আর সেগুলোর বিপণন করেন। এই ব্যবসায় তাঁর মাসিক আয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। শীলার সঙ্গে গ্রামের বেশ কয়েকজন নারীও কাজ করছেন। ৩২ বছর বয়সী এই নারীর জীবনের গল্প কিন্তু এমন ছিল না।
বিয়ের পর থেকেই শীলার সঙ্গী দারিদ্র্য আর স্বামীর নির্যাতন। স্বামী পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে তাঁকেই সংসারের দায়িত্ব নিতে হয়। তিনি গ্রাম থেকে গরুর দুধ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেন। এ কাজ করতে গিয়ে তাঁকে মানুষের কটূক্তি, উত্ত্যক্ত আচরণ সহ্য করতে হয়েছে।
২০১৪ সালে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে শীলা জানতে পারেন ব্র্যাক দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ নারীদের নারী উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। তিনি এই ‘ইকোনমিক এমপাওয়ারমেন্ট ফর পুওর অ্যান্ড ভালনারেবল উইমেন ইন বাংলাদেশ (ইইপি)’ প্রকল্পের অধীনে সাত দিনের প্রশিক্ষণ নেন।
প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা বলেন, নারায়ণগঞ্জের চারটি জায়গায় এ প্রকল্পে ৩ হাজার ৬০০ নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁরা বিউটি পারলার, সবজি চাষ, মোমবাতি তৈরি, কাটিং ও সেলাই কাজ, নার্সারিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। এ সময় জেন্ডার-বিষয়ক সচেতনতা তৈরিতেও ৩ হাজার ২৬০ জন নারী-পুরুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
গোলাম মোস্তফা আরও বলছেন, প্রশিক্ষণ পাওয়া ৩ হাজার ৩৩৮ জন নারী সরাসরি আয় করছেন। আর তাঁদের মধ্যে ১১ জন নারী মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জয়িতা পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে এ প্রকল্প। শেষ হচ্ছে চলতি মাসেই।
শিলা রানী বলেন, ‘প্রশিক্ষণ নেওয়ার দুই দিন পরেই ৮০০ টাকা ধার করে ২০০ গজ নেটের থান আনি। নিজে কেটে নিজে সেলাই করি। সেই থেকে শুরু।’ শীলার স্বামী অসুস্থ কালিপদও এখন খুশি। তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ। শীলা সংসার চালায়, আমার চিকিৎসার খরচ দেয়।’
এমন আরেক সফল উদ্যোক্তা সাবিকুন্নাহার। রূপগঞ্জের জাঙ্গীর গ্রামে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি ছাঁচে মোমের দ্রবণ ঢালছেন। সাবিকুন্নাহারও ব্র্যাকের এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন। তাঁর মাসিক আয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। গরমকালে আয়ের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়, বলেন সাবিকুন্নাহার।
সাবিকুন্নাহার সামাজিক কাজের অংশ হিসেবে গৃহনির্যাতন বন্ধে ঘরে ঘরে প্রচারণা ও পরিবারপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পাশাপাশি তিনি গ্রামে বাল্যবিবাহ বন্ধেও সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। ব্র্যাকের এক গবেষণা জরিপে দেখা যায়, দরিদ্র নারীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও দক্ষতামূলক কাজে সম্পৃক্ত করলে আয় দ্বিগুণ হয়। ২০১৪ সালে প্রশিক্ষিত নারীদের আয়মূলক কর্মকাণ্ড ছিল ৩২ শতাংশ। ২০১৫ সালে তাঁদের এ আয় বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৬২ শতাংশে। ১ হাজার ৪০০ নারীর ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
এ গবেষণায় আরও দেখা যায়, অর্থনৈতিক সক্ষমতার পাশাপাশি তাঁদের সিদ্ধান্তগ্রহণ ও সংসার পরিচালনায়ও দক্ষতা বাড়ে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়ার কারণে সমাজে তাঁদের মর্যাদা ও গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।
আরেক নারী উদ্যোক্তা কাকলী আক্তার। তিনি ওড়নায় কারচুপির কাজ করেন। ২৭ জানুয়ারি তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর স্বামী সুতায় রং করছেন। কাকলীর স্বামী বলেন, আগে অন্য কাজ করতাম। আয় বেশি হওয়ায় দুজনেই এখন এ কাজ করি। কাকলী সফল উদ্যোক্তা হিসেবে জয়িতা পুরস্কার পেয়েছেন।
তবে গ্রামের নারীদের এ কাজ করতে গিয়ে কম বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। পরিবারই ছিল সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। প্রশিক্ষণ নিতে দিতেই রাজি ছিল না অনেক পরিবার। তখন সেই পরিবারের শাশুড়িকে প্রশিক্ষণে যুক্ত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্পের কর্মসূচি সমন্বয়কারী খালেদা খানম বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের জন্য দরকার আত্মবিশ্বাস ও জেন্ডার-বিষয়ক সচেতনতা। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যেমন অনেক নারী অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। আবার পেয়েছেন সামাজিক মর্যাদা। পাশাপাশি, তাঁরা অন্য নারীদেরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করছেন। প্রকল্পের আওতায় নারীদের বাজার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (ব্যাংক) সঙ্গেও যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁদের ঋণ নেওয়া, কাঁচামাল সংগ্রহ, উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ সহজ হয়েছে।

 

দীর্ঘক্ষণ লিপস্টিক ধরে রাখার কৌশল

লিপস্টিক এর ব্যবহার যথার্থ হতে হবে। আপনার ত্বক, পোশাক, ব্যক্তিত্ব, দিনের সময়, চেহারা এই সবকিছু মাথায় রেখেই লিপস্টিক বেছে নিতে হবে। তবে অনেকেরই অভিযোগ হচ্ছে ঠোঁটে বেশিক্ষণ লিপস্টিক থাকেনা। আর একারণে বারবার লিপস্টিক ব্যবহার করতে হয়, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ। তাই চলুন জেনে নেই দীর্ঘক্ষণ লিপস্টিক ধরে রাখার উপায়।

প্রথমে লিপস্টিক লাগান। তার ওপরে পাউডার দিন। এবার হালকা করে টিস্যু পেপার দিয়ে দুই ঠোটেঁর মাঝে চাপা দিন।

যে লিপস্টিকই লাগান না কেন সরাসরি কখনো ঠোটেঁর ওপর লাগাবেন না। লিপব্রাশ দিয়ে হালকা ভাবে লাগাবেন।

লিপস্টিক লাগানোর আগে জিভ দিয়ে ঠোঁট সামান্য ভিজেয়ে নেবেন। লিপস্টিক ডানদিক থেকে বামদিকে লাগাবেন। ঠোটেঁর কোণের জন্য সামান্য ফাঁক রাখবেন।

যাদের ঠোঁট মোটা তারা লিপস্টিক লাগানোর আগে লিপ পেন্সিল দিয়ে ঠোঁটের বাইরের অংশ কিছুটা ছেড়ে এঁকে নিন।

লিপ পেন্সিল লাইনারের বাইরের অংশ কভার স্টিক ফাউন্ডেশন ও পাউডার দিয়ে ত্বকের রঙের সাথে মিলিয়ে দিনভর রাখতে পারেন। এরপর লিপ লাইন দিয়ে আঁকা ঠোঁটের ভেতরের অংশ ভরে দিন পছন্দসই বা মানানসই লিপস্টিক দিয়ে।

পাতলা ঠোঁট যাদের তারা ঠিক ঠোঁটের বর্ডার ধরে ভিতরটা রঙ করুন। যদি লিপস্টিক বর্ডার ছাপিয়ে বেরিয়েও যায় খুব একটা খারাপ লাগবে না।

 

ঘরেই গোলাপজল তৈরি করবেন যেভাবে

রূপচর্চায় গোলাপজলের ব্যবহার বেশ পুরানো। সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য রূপচর্চার অনন্য উপাদান হিসেবে নারীরা এর ওপর আস্থা রেখে আসছেন। তবে বাজার থেকে কিনে আনার চেয়ে ঘরে বসে তৈরি করে নিতে পারেন। আর তার জন্য খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। চলুন তবে শিখে নেই।

উপকরণ : গোলাপ ফুলের পাঁপড়ি, তাপ নিরোধোক কাঁচের পাত্র (ঢাকনা সহ), ঝর্ণার পানি (মিনারেল ওয়াটার হলেও হবে), ছাঁকনি।

প্রণালি : গোলাপের পাঁপড়ি নিন। নিজের বাগানের গোলাপ হলে সবচেয়ে ভালো, যদি না থাকে তবে দোকান থেকে কিনে নিতে হবে। কেনা গোলাপের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যেন সেগুলোতে কেমিকেল না থাকে, তাই ভালো করে ধুয়ে নেবেন। গোলাপ ফুল থেকে পাঁপড়ি আলাদা করে এক কাপ পরিমাণের মতো নিন ও কাঁচের পাত্রটিতে রাখুন। এবার ২ কাপ পানি সেদ্ধ করুন এবং ঐ গরম পানি পাঁপড়ি সহ কাঁচের পাত্রটিতে ঢেলে দিন। ঢাকনা দিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন। তারপর অন্য একটি পাত্রে ছাঁকনির সাহায্যে গোলাপের পাঁপড়িগুলো থেকে পানি আলাদা করে ফেলুন। সব শেষে বোতল ভরে রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করুন।

এই গোলাপজলে কোনো প্রিজারভেটিভ নেই, তাই এটি সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মতো ভালো থাকবে, এক সপ্তাহ পর অবশিষ্ট গোলাপ জল ফেলে দিয়ে নতুন করে তৈরি করতে হবে।

 

ইলিশ মাছের সুস্বাদু কাটলেট

বাঙালির ভোজনবিলাসে ইলিশ না হলে যেন চলেই না। একই ইলিশের হাজার রকমের রান্না। সব রান্নাই সহজ এবং সুস্বাদু। ইলিশের ৩০ রেসিপি নামে ইলিশের সুস্বাদু ও ব্যতিক্রম সব রেসিপি প্রকাশ করা হচ্ছে জাগো নিউজের লাইফস্টাইল বিভাগে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ থাকছে ইলিশ মাছের কাটলেট রেসিপি।

উপকরণ : ৪-৫ টুকরো ইলিশ মাছ, ৪ চা চামচ বেসন, ৫ টুকরা পাউরুটি দিয়ে তৈরি ব্রেড ক্রাম্বস, ১ কাপ তেল, ১টি মাঝারি আকৃতির পেঁয়াজ কুচি, ১ চা চামচ আদা রসুনের পেস্ট, ১/২ লেবুর রস, ২টি কাঁচা মরিচ কুচি, ১/২ চা চামচ মরিচ গুঁড়ো, লবণ স্বাদমতো, ১/২ চা চামচ গরম মশলা গুঁড়ো, ২ টেবিল চামচ ধনিয়া গুঁড়ো, ৫ চা চামচ কর্ণ ফ্লাওয়ার।

প্রণালি : মাছ পানি এবং ভিনেগার দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। ভিনেগার দিয়ে ধুলে মাছের গন্ধ দূর হয়ে যাবে। এবার মাছের টুকরোগুলো সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ করা মাছগুলোর কাঁটা বেছে নিন। এবার মাছের সাথে বেসন, ধনে পাতা কুচি, আদা রসুনের পেস্ট, কাঁচা মরিচ, লাল মরিচের গুঁড়ো, গরম মশলা গুঁড়ো এবং লবণ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এতে লেবুর রস এবং পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার প্যানে তেল গরম করতে দিন। মাছের মিশ্রণটি নিজের পছন্দমতো সাইজ করে প্রথমে ব্রেড ক্রাম্বস, তারপর কর্ণ ফ্লাওয়ার মেশানো পানিতে এবং আবার ব্রেড ক্রাম্বসে চুবিয়ে তেলে দিয়ে দিন। সোনালি রং হয়ে এলে নামিয়ে ফেলুন। টমেটো সস বা চাটনি দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ফিশ কাটলেট।

 

অকালেই বৃদ্ধ করে যেসব খাবার

বয়স ধরে রাখার প্রচেষ্টা থাকে সবার। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চেহারায়ও তার ছাপ পড়ে। তবে এমনকিছু খাবার আছে যা খেলে বয়সের আগেই বুড়িয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। এবং সেসব খাবার কম খেলে অথবা খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিলেই অকালেই বুড়িয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না। চলুন জেনে নেই।

অকাল বার্ধক্যের পিছনে মিষ্টির ভূমিকা আছে। বাড়তি মিষ্টি প্রোটিনের সঙ্গে মিশে অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন এন্ড প্রডাক্ট তৈরি করে। এই গ্লাইকেশনের কারণেই চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়তে থাকে।

বার্ধক্যের ব্যাপারে কফির ভূমিকা সকলেরই জানা। কফি ত্বকের অনেক রকম ক্ষতি করে। শরীরের আর্দ্রতা নষ্ট করে দেয়। শরীর রুক্ষ, শুষ্ক করে তোলে। অল্প বয়সেই দেখা দিতে থাকে বলিরেখা।

ভাত ধীরে ধীরে বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দেয়। ভাত ত্বকের কোলাজেন নষ্ট করে। চামড়া খুব তাড়াতাড়ি ঝুলতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দেখা মেলে বলিরেখারও।

অনেকেই পাতের এক পাশে কাঁচা লবণ নিয়ে খেতে বসেন। রান্নাতেও অতিরিক্ত লবণ খান। এর ফলে শরীরের রক্ত পানি হয়ে যায়। সেই পানি জমতে থাকে শরীরে। শরীর ফুলে যায়। দেখা দেয় বার্ধক্য।

লাবণ্য ধরে রাখতে রেড ওয়াইন যতটা ভালো, হোয়াইট ওয়াইন ততটাই খারাপ। ত্বক ক্ষতির পাশাপাশি হোয়াইট ওয়াইন দাঁতেরও ক্ষতি করে। হলদে করে দেয় দাঁত। তারপরই নড়বড় করতে শুরু করে।

অতিরিক্ত মদ্যপান লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করে। এবং সেই ক্ষতি ছাপ ফেলতে শুরু করে ত্বকে। মদের কারণে মুখে দেখা দিতে থাকে ব্রণ, ফুসকুড়ি। অকালে মাথা থেকে গুচ্ছগুচ্ছ চুল ঝরতে শুরু করে।

 

গ্রামীণ প্রেমের গল্পে জোভান-সাফা (ভিডিও)

জোভান-সাফা কবিরকে সবসময় শহুরে সাজে পাওয়া যায়। এবারই প্রথমবার তাদের পাওয়া গেল গ্রামীণ সাজে। তবে সেটা বাস্তবে নয়, ‘অক্ষর’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে। এটি নির্মাণ করেছেন ভিকি জাহেদ, গল্প ও চিত্রনাট্য তারই।

ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের একটি গান ইউটিউবে প্রকাশ পেয়েছে। গানটির শিরোনাম ‘এই যে আমি’। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন মাহামুদ হায়েৎ অর্পণ ও নাফিজা জাহান। সংগীত পরিচালনা করেছেন মাহামুদ হায়েৎ অর্পণ।

জোভান বলেন, ‘এই  প্রথমবার সাফার সঙ্গে স্বল্পদৈর্ঘ্যে জুটি বেঁধে স্বল্পদৈর্ঘ্যে কাজ করেছি। তাছাড়া ভিকি’র নির্মাণে এরআগে ‘মায়া’, ‘মোমেন্টস’এ কাজ করেছি। সেগুলো আমার ক্যারিয়ারের বিরাট সাফল্য বলা যায়। আশা করছি এই কাজটিও তেমন সাফল্য বয়ে আনবে।’

‘‘অক্ষর’ নাম শুনলেই বোঝা যাচ্ছে এখানে ভাষা সংক্রান্ত একটা ব্যাপার আছে। তবে শুধু ভাষা নয়, ভালোবাসা দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উভয়কেই উপজীব্য করে ‘অক্ষরে’র গল্প সাজানো হয়েছে। ‘অক্ষর’ হচ্ছে বিশুদ্ধ আবেগের গল্প। যে আবেগ মানুষকে সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে প্রিয়জনকে জয় করার সাহস সঞ্চারণ করে’’, বললেন ভিকি জাহেদ।

জোভান-সাফা কবির ছাড়াও এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে আরও অভিনয় করেছেন তাহসিন অহনা। নির্মাতা ভিকি জানান, শিগগির অক্ষর স্বল্পদৈর্ঘ্যটি চলচ্চিত্রটি প্রকাশ করা হবে। আহমেদ প্রডাকশনস এর ব্যানারে শর্টফিল্মটি প্রযোজনা করেছেন তাসনিয়া আতিক এবং সহযোগী প্রযোজক হিসেবে আছেন মিনহাজ আহমেদ।

 

অবৈধ কাজের আবেদন থেকে হেফাজত থাকার দোয়া

মানুষ অনেক বিষয়ে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করে। এমন অনেক দোয়া করে যে কাজ করা বৈধ নয়। যেমন- নিরাপদে চুরি বা ডাকাতি সম্পন্ন করার জন্য দোয়া, মানুষের সঙ্গে প্রতারণার নিয়তে কোনো কাজ করার শুরুতে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া ইত্যাদি।

এ ধরনের অন্যায় কাজ বা অন্যায় করে ফেললে তা থেকে মুক্তি লাভের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা করে ক্ষমা চাওয়া আবশ্যক।

হজরত নুহ আলাইহিস সালামের ছেলে (কেনান) যখন তাঁর অবাধ্য হয়ে প্লাবনের সময় নৌকায় আরোহন করেনি। তখন প্লাবনের ঢেউ তাকে ডুবিয়ে দিলো।

হজরত নুহ আলাইহিস সালাম আল্লাহকে বললেন, হে আল্লাহ! আমার পুত্রতো আমার পরিবারভূক্ত। তখন আল্লাহ বলেন, ‘নুহ যে তোমার কথা শোনে না, সে তোমার পরিবারভূক্ত নয়।

তখন নুহ আলাইহিস সালাম নিজের আবদার বা দোয়া যে সঠিক পদ্ধতিতে হয়নি তা বুঝতে পেরে উক্ত দোয়ার মাধ্যমে ক্ষমা চেয়েছিলেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়াটি কুরআনের কারিমে তুলে ধরেছেন। এ ধরনের কোনো অন্যায় করে ফেললে উক্ত দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পার্থনা করা জরুরি। যা তুলে ধরা হলো-

উচ্চারণ : রাব্বি ইন্নি আউজুবিকা আন্ আস্আলাকা মা-লাইসা লি বিহি ইলমুন; ওয়া ইল্লা তাগফিরলি ওয়া তারহামনি আকুম মিনাল খাসিরিন। (সুরা হুদ : আয়াত ৪৭)

অর্থ : হে প্রভু! যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই সে বিষয়ে চাওয়া থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না করো, দয়া না করো তাহলে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তরর্ভূক্ত হয়ে যাবো।

কুরআনের এ আয়াতটি মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা এবং কার্যকরী দোয়া। আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে সব অবৈধ চাওয়া-পাওয়ার পাপ থেকে হিফাজত করুন। আমিন।

 

ঘর ধুলোবালিমুক্ত রাখার উপায়

দিনশেষে প্রিয় ঘরটিই আমাদের প্রশান্তির জায়গা। সারাদিন যত ব্যস্ততাই থাকুক, সবাই চাই নিজের ঘরে একটু স্বস্তির দেখা পেতে। কিন্তু সেই ঘরটিই যদি হয় অপরিষ্কার কিংবা ঘরের এখানে সেখানে যদি ধুলোবালি জমে থাকে, আপনার নিশ্চয়ই ঘরে থাকতে মন চাইবে না। আর প্রশান্তির দেখাও মিলবে না। এসময় বাতাসের প্রচুর ধুলোবালি ঘরে ঢুকে সবকিছু ময়লা করে ফেলে। তাই চলুন জেনে নেই কীভাবে প্রিয় ঘরটিকে ধুলোবালিমুক্ত রাখা যায়।

পরিষ্কার করে নিলে আর কোনো সমস্যা থাকে না। ধুলোবালি আমাদের নিত্য সঙ্গী। ধুলোবালি কিছুতেই যেন পিছু ছাড়তে চায় না। আসুন ঘর পরিচ্ছন্ন রাখার কতগুলো উপায় জেনে নিই।

ঘর পরিষ্কার রাখতে সবসময় ঘরের দরজা না খুলে রাখাই ভালো। বিশেষ করে আপনার ঘরটি যদি নিচতলায় হয়, বিনা কারণে দরজা খোলা রাখবেন না। কারণ যত বেশি সময় ধরে দরজা খোলা রাখবেন, ঘরে ততই বাইরের ধুলো-ময়লা এসে ঢুকবে। ঘরে মোটা পর্দা ব্যবহার করা যেতে পারে ধুলোবালি প্রতিরোধ করার জন্য। শুধু দরজাতেই নয়, জানালাতেও পর্দা ব্যবহার করলে একই সাথে যেমন ঘরের সৌন্দর্য বর্ধন হবে তেমনি ধুলোবালি থেকে ঘরকে রক্ষাও করা যাবে।

ঘর সাজানোর জন্য যেসব কৃত্রিম ফুল বা ফুলের গাছ রাখা হয়, সেগুলোতে জমতে পারে ধুলো-ময়লা। তাই সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন এগুলো পরিষ্কার করতে হবে। আর এসব পরিষ্কারের নিয়ম হলো, শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট পানিতে মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে এসব ফুল বা ফুলের গাছ ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।

ঘর মোছার কাপড়টি ভেজাতে হবে ডেটল কিংবা স্যাভলনযুক্ত পানিতে। এতে ঘরের মেঝে পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি জীবাণুমুক্তও হবে। ঘরে যদি কার্পেট থাকে তবে সেই কার্পেট নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। কার্পেট পরিষ্কারের জন্য ব্রাশ ব্যবহার করা যেতে পারে। নিয়মিত ব্রাশ দিয়ে কার্পেট পরিষ্কার করলে ধুলো-ময়লা জমার সুযোগ পাবে না।

আসবাবপত্রে যেসব ধুলোবালি জমে সেগুলো অনেকেই ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে থাকেন, যেটা একদমই ঠিক নয়। কারণ ভেজা কাপড় দিয়ে আসবাবপত্র পরিষ্কার করতে গেলে সেগুলোর রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এমন কিছু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে যাতে রঙের কোনো ক্ষতি না হয়। সেজন্যে মোরগের পালকের তৈরি ঝাড় ব্যবহার করা যেতে পারে।

বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র পরিষ্কারের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে শক না লাগে। কারণ ধুলো-ময়লা জমে থাকা কোনো কোনো অংশ পরিষ্কার করতে গিয়ে ছিদ্র হয়ে থাকা তারের উপর হাত পড়তেই পারে।

 

ইলিশ মাছের কোফতা কারি

বাঙালির ভোজনবিলাসে ইলিশ না হলে যেন চলেই না। একই ইলিশের হাজার রকমের রান্না। সব রান্নাই সহজ এবং সুস্বাদু। ইলিশের ৩০ রেসিপি নামে ইলিশের সুস্বাদু ও ব্যতিক্রম সব রেসিপি প্রকাশ করা হচ্ছে জাগো নিউজের লাইফস্টাইল বিভাগে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ থাকছে ইলিশ মাছের কোফতা রেসিপি।

উপকরণ :
১. ইলিশ মাছের পেটির অংশ ৪ টুকরা, হলুদ আধা চা চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, ধনে গুঁড়া আধা চা চামচ, আদা-রসুন বাটা আধা চা চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা চামচ।

২. আলু সিদ্ধ ৩টি, পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ, আদা ও রসুন বাটা মিলিয়ে ১ টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, হলুদ ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ, কাঁচা মরিচ ফালি ৪টি, সরিষার তেল সিকি কাপ, ধনেপাতা কুচি ৩ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা চামচ।

প্রণালি :
ইলিশ মাছ ধুয়ে লবণ ও লেবুর রস দিয়ে মাখিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। ১ নম্বর ধাপের সব উপকরণের সঙ্গে ১ কাপ পানি দিয়ে মাছ সিদ্ধ করে নিন। এবার সিদ্ধ মাছের কাঁটা বেছে নিন। আলু সিদ্ধ করে ভালো করে কচলে নিন। এখন সব বেছে রাখা মাছ মিশিয়ে গোল গোল করে বল বানান। তেলে বাদামি করে ভেজে নিন। তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ বাটা দিয়ে ভাজুন। লালচে হলে তাতে আদা-রসুন বাটা ও সব গুঁড়া মসলা দিয়ে কষিয়ে নিন। মোট দুইবার কষিয়ে ভেজে রাখা কোফতা দিয়ে অল্প আঁচে ১০ মিনিট রান্না করুন। ধনেপাতা কুচি ও সবুজ মরিচ ফালি দিয়ে ২ মিনিট রেখে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

রিমুভার ছাড়াই মেকআপ তোলার উপায়

উৎসব-আনন্দে সাজগোজ করাটা নারীর প্রিয় কাজ। আর এই সাজগোজ করতে গিয়ে নিজেকে একটু অনন্য উপায়ে তুলে ধরার জন্য মেকআপ করে থাকেন অনেকেই। কিন্তু দিনশেষে সেই মেকআপ তুলে ফেলতে হয়। নয়তো ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। সবসময় হাতের কাছে মেকআপ রিমুভার নাও থাকতে পারে। এ অবস্থায় মেকআপ তোলার জন্য ব্যবহার করতে পারেন আপনার হাতের কাছেই থাকে এমনি কিছু জিনিস দিয়ে। চলুন জেনে নিই।

খুব দ্রুত মেকআপ তোলার জন্য সারা মুখে আপনার প্রিয় ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম অথবা লোশন মেখে নিন। এবার টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন সেটা। কয়েক সেকেন্ডেই মেকআপ উঠে আসবে।

মেকআপ তোলার জন্য দুধ ব্যবহার করা যায়। অল্প একটু দুধের সাথে মিশিয়ে নিন কয়েক ফোঁটা আমন্ড অয়েল। ব্যাস, একটা কটন বল দিয়ে এটাকে মুখে মাসাজ করে নিন। এরপর মুখ ধিয়ে নিলেই দেখবেন সব মেকআপ উঠে আসছে।

মেকআপ রিমুভার হিসেবেও নারিকেল তেল দারুণ। বেশ কিছুটা নারিকেল তেল মুখে মেখে নিন, মেকআপ গলে উঠে আসবে। এটা ওয়াটারপ্রুফ মাসকারার মতো কঠিন মেকআপ তুলতেও সহায়ক। এটা আপনার ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করার কাজটাও করে থাকে। বেবি অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন একইভাবে।

শিশুর ডায়াপার পাল্টানোর সময়ে যে বেবি ওয়াইপ ব্যবহার করা হয় সেগুলোই আপনার মেকআপ তোলার জন্য কাজে আসবে। মেকআপ রিমুভার ওয়াইপও পাওয়া যায়, সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।

 

খুসখুসে কাশি সারানোর উপায়

সাধারণত ঠান্ডা ও ফ্লুয়ের কারণে কাশি হয়। তবে অ্যালার্জি, অ্যাজমা, এসিড রিফ্লাক্স, শুষ্ক আবহাওয়া, ধূমপান, এমনকি কিছু ওষুধ সেবনের ফলেও এ সমস্যা তৈরি হতে পারে। একটানা খুসখুসে কাশি বিরক্তিকর। অনেক ক্ষেত্রে আবার কফ জমাট বেধে ভয়ানক কাশিও হয়। একটু সচেতন হলে ওষুধ না খেয়েও এই খুসখুসে কাশি থেকেও রেহাই পাওয়া সম্ভব।

আদার অ্যান্টি ইনফ্লামেটরী উপাদান গলার অস্বস্তিকরভাব দূর করে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক কাপ আদা চা পান করতে পারেন। এছাড়া এক কাপ পানিতে আদা কুচি জ্বাল দিয়ে দিনে ৩-৪ বার পান করে দেখুন, শুষ্ক কাশি কমে যাবে।

এক কাপ পানিতে সমপরিমাণ হলুদের গুঁড়ো এবং মৌরি দিয়ে হারবাল চা বানিয়ে দিনে তিনবার করে পান করলে উপকার পাওয়া যায়।

খুসখুসে কাশি দূর করতে পেঁয়াজ খুবই কার্যকর। আধচামচ পেঁয়াজের রস এবং এক চা চামচ মধু এক সঙ্গে মিশিয়ে  চায়ের মতো দিনে দুইবার করে পান করুন। পেঁয়াজের ঝাঁজ খুসখুসে কাশি কমাতে সহায়তা করবে।

প্রতিদিন ১-৩ বার  এক টেবিল চামুচ করে বিশুদ্ধ মধু গ্রহণ করুন। সবচেয়ে ভালো হয় ঘুমানোর আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিলে। মধুর অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান কাশি প্রতিরোধে কার্যকর।

এক চা চামচ করে হলুদে এবং গোলমরিচের গুঁড়ো আধকাপ পানিতে জ্বাল দিন। কিছুক্ষণ পরে এতে একটি লবঙ্গ দিয়ে আরও দুই মিনিট জ্বাল দিন। প্রতিদিন এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে এ চা পান করুন।

রসুন খুসখুসে কাশি সারাতে দারুণভাবে কাজ করে। রসুনে থাকা এক্সপেকটোরেন্ট এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান কাশি উপশমে কাজ করে। এক চা চামুচ ঘিয়ে রসুনের পাঁচটি কোয়া কুচি করে হালকা ভেজে কুসুম গরম অবস্থায় খেয়ে নিন।

 

শুভ বসন্ত

বছর ঘুরে আবারও ফাগুনের দেখা। ছয় ঋতুর বাংলায় বসন্তের রাজত্ব একেবারে প্রকৃত সিদ্ধ। ঋতুরাজ বসন্তের বর্ণনা কোনো রং-তুলির আঁচরে শেষ হওয়া নয়। কোনো কবি-সাহিত্যিক বসন্তের রূপের বর্ণনায় নিজেকে তৃপ্ত করতে পারেন না। তবুও বসন্ত বন্দনায় প্রকৃতি প্রেমীদের চেষ্টার যেন অন্ত নেই।

আজ পহেলা ফাল্গুন। প্রকৃতি সাজবে তার নতুর রূপে। গাছে গাছে ফুল ফুটুক আর নাই-বা ফুটুক, বসন্ত তার নিজস্ব রূপ মেলে ধরবেই। ফাগুনের আগুনে, মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হবে। বাঙালির ইতিহাস আবেগের। এ আবেগ যেমন মানুষে মানুষে ভালোবাসার, তেমনি মানুষের সঙ্গে প্রকৃতিরও বটে। দিন-ক্ষণ গুনে গুনে বসন্ত বরণের অপেক্ষায় থাকে বাঙালি।

কালের পরিক্রমায় বসন্ত বরণ আজ বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব। আবাল-বৃদ্ধা, তরুণ-তরুণী বসন্ত উন্মাদনায় মেতে উঠবে। শীতকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়েই বসন্ত বরণে চলবে ধুম আয়োজন। শীত চলে যায় রিক্ত হস্তে, আর বসন্ত আসে ফুলের ডালা সাজিয়ে। বাসন্তী ফুলের পরশ আর সৌরভে কেটে যাবে শীতের জরা-জীর্ণতা।

বসন্তকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় মেলা, সার্কাসসহ নানা বাঙালি আয়োজনের সমারোহ থাকবে। ভালোবাসার মানুষেরা মন রাঙাবে বাসন্তী রঙেই। শীতের সঙ্গে তুলনা করে চলে বসন্তকালের পিঠা উৎসবও। তরুণীরা বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে প্রকৃতির কোলে নিজেকে সপে দিতে চাইবে। অপরদিকে বসন্তের উদাস হাওয়ায় তরুণেরা নিজেকে প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে প্রকৃতির মন কাড়তে চাইবে। বসন্ত যেন মানব মন আর প্রকৃতির রূপ প্রকাশের লীলা-খেলা।

বসন্ত উৎসব বলি আর বরণই বলি, এটি মিশে আছে একেবারে আবহমান গ্রাম বাংলার মাটি-মানুষের সঙ্গে। শ্যামল বাংলার গাছ গাছালিতে পত্রপল্লবের নতুন কুড়ি যেন গ্রামীণ মানুষের অন্তরকে আরও শুভ্র করে, করে পবিত্রও।

তবে বসন্ত উৎসব আজ গ্রামীণ আয়োজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। শহুরে মানুষের কাছেও বসন্তের আবেদন ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। বিশেষ করে শহরের তরুণ-তরুণীরা বসন্ত বরণে দিনভর ব্যস্ত থাকে। ফুলে ফুলে ভরে যাবে তরুণীর চুলের খোপা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বসবে খাবারের মেলা। এ দিন দর্শনীয় স্থানগুলোতে মানুষের পদচারণায় যেন তিল ধরার ঠাঁই থাকে না।

বসন্তের আগমনে নব উদ্যমে জেগে উঠুক বাঙালি, জেগে উঠুক বাঙালির প্রাণ।

 

ক্ষমতাশীল ৬ নারীর ক্যারিয়ার পরামর্শ

নারীদের ক্যারিয়ার গড়া পুরুষের মতো সহজ হয়নি এখনো। আর এক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া নারীদের সামনে উদাহরণ হয়ে রয়েছেন বেশ কিছু উদ্যোক্তা কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে আসীন নারী, যারা নিজের যোগ্যতা দিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজেদের সাম্রাজ্য। এ লেখায় থাকছে তেমন কয়েকজন নারীর পরামর্শ। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ফোর্বস।
নিজে যা জানেন না, তা জেনে নিন
জেসিকা অ্যালবা জেসিকা অ্যালবা দ্য অনেস্ট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান ক্রিয়েটিভ অফিসার। তিনি বলেন, ‘আপনার চারপাশে এমন সব মানুষদের একত্রিত করুন, যারা আপনার চেয়ে স্মার্ট। আপনার কখনোই কক্ষের সবচেয়ে স্মার্ট ব্যক্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং যদি তা হয়ে যান তাহলে চিন্তার বিষয়।’
কাজের প্রতি আকর্ষণ
মেগ হুইটম্যান বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এইচপির সিইও মেগ হুইটম্যান। তিনি সম্প্রতি বলেন, ‘আমি আমার মায়ের কথার পুনরাবৃত্তি করতে পারি। তিনি বলেন, কাজের প্রতি আকর্ষণ থাকতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, হকি ও বাস্কেটবল কোচরা যেমন বলেন, আপনি যে শটটি নেননি তার মিস হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। এ কারণে সাহস করে চেষ্টা চালিয়ে যেতেই হবে।
নেতৃত্ব হলো গ্রহণ করার ক্ষমতা
অ্যান ফিনুক্যান ব্যাংক অব আমেরিকার ভাইস চেয়ারম্যান ও গ্লোবাল চিফ স্ট্রাটেজি অ্যান্ড মার্কেটিং অফিসার অ্যান ফিনুক্যান। তিনি ডারউইনের একটি প্রসঙ্গ টেনে নেতৃত্বকে গ্রহণ করার ক্ষমতা হিসেবেই তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ডারউইন বলেছিলেন, যারা টিকে থাকে তারা সবচেয়ে শক্তিশালী কিংবা সবচেয়ে বুদ্ধিমান নয়, এটা তারাই যারা পরিবর্তনকে মেনে নিতে পারে। আমার মনে হয় আমি যখন ছোট ছিলাম তখন এটি চিন্তা করেছিলাম যে আমি কখনোই সবচেয়ে শক্তিশালী কিংবা সবচেয়ে উজ্জ্বল হবো না। এক্ষেত্রে পরিবর্তন গ্রহণ করে নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তার অর্থ এই নয় যে, আপনার মূল্যবোধ নষ্ট করতে হবে। কিন্তু এটা আপনার চারপাশের পরিবেশ পরিবর্তন ও তা গ্রহণ করার বিষয়।’
সুযোগের জন্য প্রস্তুত থাকুন
ন্যান্সি পেলোসি ডেমোক্রেট নেত্রী ও মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর সদস্য ন্যান্সি পেলোসি। তিনি বলেন, ‘প্রস্তুত থাকুন। শুধু প্রস্তুত থাকুন। আপনার হয়ত জানা নেই, কোনো সুযোগ অপেক্ষা করছে আপনার সামনে।’ তিনি জানান, তিনি কখনোই কংগ্রেসের জন্য দৌড়াননি। তিনি নেতৃত্বের জন্যও এগোননি। অন্যরাই তাকে সামনে নিয়ে এসেছে।
নিজের সঙ্গে সত্যবাদী
অ্যাঞ্জেলা অ্যারেন্ডটস বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের অনলাইন স্টোরের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাঞ্জেলা অ্যারেন্ডটস। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় বলি, নিজের প্রতি সত্যবাদী থাকুন। আমাদের যা আছে তা নিয়েই আমরা জন্মগ্রহণ করেছি। আপনার যা আছে তা দিয়েই যা করা সম্ভব করুন। নিজেকে জানুন আপনার নিজের মতো করে জীবনকে অনুভব করুন। জীবন নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কারণ আমার মনে হয় আমাদের সবারই এ বিষয়ে অপরাধবোধ রয়েছে।’
সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে
গেইল কিংমিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও দ্য অপরাহ ম্যাগাজিনের একজন সম্পাদক গেইল কিং। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে রিল্যাক্স করতে বলি। সবকিছু নিজের মতো করে চলবে। আপনি যদি নিজের জীবনের দিকে দেখেন তাহলে বিষয়টি বুঝতে পারবেন।’

 

প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরাইলি হওয়ায় সৌদি নারী অ্যাথলেটের নাম প্রত্যাহার!

ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জাওয়াদ ফাহমি (Jude Fahmy) নামে এক সৌদি নারী ক্রীড়াবিদ রিও অলিম্পিক গেমস থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জাওয়াদ ফাহমি (Jude Fahmy) নামে এক সৌদি নারী ক্রীড়াবিদ রিও অলিম্পিক গেমস থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

জুডো প্রতিযোগির দ্বিতীয় রাউন্ডের ওই ম্যাচে তার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো ইসরাইলের প্রতিনিধি। তবে ইসরাইল ও সৌদির সংশ্লিষ্টদের দাবি, অন্য কারণে ফাহমি প্রতিযোগিতা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

ফাহমির এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আরব ও মুসলিম বিশ্বের সাধারণ জনগণ, বিশেষ করে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনি ফুটবল ফেডারেশনের সদস্য আবদুস সালাম হানিয়া ফাহমির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তার এ সিদ্ধান্ত নৈতিক অবস্থানের যথাযথ উপলব্ধি।

ইসরাইলের সংবাদ সংস্থার রিপোর্টে দাবি করা হয়, ফাহমি প্রথম রাউন্ডে মরিশাসের প্রতিযোগী ক্রিস্টাইন লেজেনটিলের বিরুদ্ধে জয়ী হলে পরবর্তী রাউন্ডে তাকে ইসরাইলি প্রতিযোগী গিলি কোহেনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। তাদের দাবি, ইসরাইলকে এড়াতেই ফাহমি ম্যাচ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

অন্যদিকে, ইসরাইলের এ দাবিকে নাকচ করে দিয়ে সৌদি অলিম্পিক ডেলিগেশন এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতা থেকে ফাহমির প্রত্যাহার ইনজুরির কারণে। অনুশীলন করার সময় ফাহমি আঘাত পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত। এখানে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।

সৌদি মেডিক্যাল টিম ফাহমিকে খেলায় অংশগ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন বলেও ওই টুইটে বলা হয়।

এদিকে সকল আরব ও মুসলিম ক্রীড়াবিদ ইসরাইলি খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রত্যাহারের বিষয়ে একমত হয়েছে। তারা মনে করছে, ইসরাইল একটি দখলদার রাষ্ট্র হওয়ায় এবং দেশটির খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলার অর্থ হচ্ছে ইসরাইলকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দান।

 

বেগম রোকেয়ার আদর্শ বনাম কথিত নারীবাদ

বেগম রোকেয়াকে বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বা বিশেষ করে মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত না বলে নারী জাগরণের অগ্রদূত বলাই শ্রেয়।কারন তিনি বিশেষ কোন নারী জাতির কথা বলেননি।বরং তিনি পুরা নারীজাতির জাগরণের কথাই তার লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন।তিনি যেমন ভারতবর্ষের মুসলিম নারীদের দুর্বলতার কথা বলে গেছেন,তেমনি হিন্দু এবং পাশ্চাত্য সমাজের নারীদের দুর্বলতার কথাও বলে গেছেন।তিনি তার লেখায় পুরো নারী জাতির মানুষিক দাসত্বের কথাই তুলে ধরেছেন বেশি বেশি।তার লেখনির মুল কথা ছিল এই যে , নারী জাতিকে যে হাত, পা, নাক, কান চোখ দেয়া হয়েছে তা নিয়ে যেন শুধু পুতুলের মত জীবন যাপন না করে, শুধু শুধু অনুর্বর না রেখে একে কাজে লাগানো হোক। অথচ আমাদের তথাকথিত নারীবাদী সমাজ বুঝল যে, শুধু পর্দা প্রথা ছিন্ন করে ঘরের বাইরে এসে স্বেচ্ছাচারিতা করে বেড়ালেই বেগম রোকেয়া হওয়া যায়!!
আমাদের এই নারীবাদী সমাজ তাকে শুধু পুরুষ বিদ্বেষী এবং ধর্ম বিদ্বেষী রুপেই উপস্থাপন করে রেখেছে।তার চিন্তা চেতনার মুল জায়গা থেকে তাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে রেখেছে।বেগম রোকেয়ার আদর্শের এই বিকৃত উপস্থাপনা এবং বর্তমান নারী সমাজের বেহায়াপনা দেখে কিছু মানুষ আবার বলে বসেন যে,নারীসমাজের এই যাবতীয় বেহায়াপনার নিমিত্তে যেই পাপ তা সব চাপবে এই  নারীর উপর যেহেতু তিনিই তাদেরকে এইভাবে ঘর থেকে বের করেছেন।

আমদের বর্তমান তথাকথিত নারীবাদী সমাজের মুল প্রতিমূর্তি হচ্ছে বয় কাট চুল,কপালে একটা বড় লাল অথবা কালো টিপ যা মুখটাকে গৌণ করে শুধু টিপটাকেই উপস্থাপন করে,স্লিভ্লেস ব্লাউজ আর গলায় ভর দিয়ে ইসলাম বিদ্বেষ ছড়ানো!! যে যত বেশি এই রূপ ধারণ করতে পারবে সে তত বেশি নারিবাদি!!।অথচ তিনি যদি আজ এই নারী সমাজের মধ্যে আবির্ভূত হতেন, তাহলে নিশ্চয় সম্মার্জনী নিয়ে তাড়াতে তাড়াতে তাদের ঘরের মধ্যে ঢুকাতেন!!

এই অশ্লীল বেশধারিরা,এই স্বেচ্ছাচারী নারীরা বেগম রোকেয়ার কোন আদর্শে মুগ্ধ হয়ে তাকে নারী জাগরণের অগ্রদূত বলেন তা বোধগম্য নয়। আজকের এই নারীবাদীরা যদি একটু ভালভাবে ওনার জীবন দর্শন করেন তাহলে নিশ্ছিতরূপেই দেখবেন যে,এই বেগম রোকেয়াই তাদের তথাকথিত প্রগতির চরম অন্তরায়।
আজকের নারীরা মনে করেন যে “পুরুষের সমান অধিকারই অর্থাৎ পুরুষকে যা দেয়া হচ্ছে নারিকেও তাই দেয়া হোক” এই মতবাদ প্রতিষ্ঠাই তার মুল লক্ষ্য ছিল। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তিনি বলতেন যে,পুরুষের মাথার শিরস্ত্রাণ তৈরি করতে যতখানি যত্ন ও অর্থ ব্যয় করা হয়, নারীর মাথা ঠাকার ওড়না তৈরিতেও ততখানি যত্ন ও অর্থ ব্যয় করা হক। একটা ছেলের শিক্ষা দিক্ষার জন্য যতখানি অর্থ ব্যয় করা হয়,একজন নারীর জন্যও যেন ততখানিই করা হয়।একটা পুরুষকে কোন কাজের জন্য যতটুকু মজুরি দেয়া হয় নারীকেও তাই দেয়া হোক। একটা নারীর সালোয়ার কামিজ পুরুষকে পরিয়ে বা একটা পুরুষের প্যান্ট শার্ট নারীকে পরিয়ে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা নয়।যার যেখানে যততুকু প্রাপ্য তাকে তত্তটুকু দেয়াই সমানাধিকার। তিনি মনে করতেন যে শুধু ঘরের বাইরে চাকুরি করার জন্য না ,একজন সুগৃহিনী হবার জন্যও একটা নারীর সুশিক্ষা দরকার,একজন সুমাতা হবার জন্যও তাদের সুশিক্ষা দরকার।কারন একটা সন্তান মায়ের জ্ঞান বুদ্ধির অধিকারী হয়ে থাকে অনেকটা।আর তিনি শুধু চাকুরি লাভের জন্য শিক্ষা অর্জনের খুবই পরিপন্থি ছিলেন।

নারীদের স্বাধীনভাবে পেশা গ্রহনের ব্যাপারে তিনি বলেছেন যে নারীরাও জজ,ব্যারিস্টার, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার সবই হতে পারে।যে পরিশ্রম দ্বারা নারীরা ঘরে কাজ করে সেই পরিশ্রম দ্বারা নারী স্বাধীনভাবে ব্যাবসাও তো করতে পারে।কিন্তু তিনি বলেছেন যে,”কৃষক প্রজা থাকতে জমিদার কেন কাঁধে লাঙ্গল নিতে যাবেন”। অর্থাৎ যেই কাজ করার জন্য যথেষ্ট পুরুষ লোকবল আছে কেন সেই একই কাজ মেয়েরাও কেন করতে যাবে!!জগত সংসারটা হচ্ছে একটা জয়েন্ট ভেঞ্চার।সবাই এখানে একই কাজে পড়ে থাকলে কি এই জয়েন্ট ভেঞ্চার সাকসেস্ফুল হবে !! ডাক্তার বা টিচার হওয়া খুব মহৎ পেশা বলে সবাই যদি বলে যে, সবাই এই মহৎ পেশা গ্রহণ করবে তাহলে খাবার উৎপাদনই বা করবে কে,পরনের কাপড়ই বা বানাবে কে,ডাক্তারের ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি বা তৈরি করবে কে!! আবার ডাক্তারকে দিয়ে যেমন ইঞ্জিনিয়ারের কাজ হবে না তেমনি ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়েও ডাক্তারের কাজ হবে না।তেমনি নারীদের ব্যাপারেও তিনি একই মত পোষণ করতেন।নারীর কাজ পুরুষকে দিয়ে হবে না আর পুরুষের কাজও নারীকে দিয়ে হবে না।

 

মুসলিম নারীদের পর্দার ব্যাপারে তার মতামত ছিল এইরকম যে,”ধর্ম বন্ধন ছিন্ন করে আমি তাদের ঘরের বাইরে আনতে চাই না”।আসলে তিনি শুধু মুসলিম না,কোন ধর্মের নারীদেরই তিনি তাদের ধর্ম ত্যাগের ব্যাপারে অতি উতসাহিত করে কথা বলেননি। আমাদের বর্তমান নারীবাদীরা যেই ইসলামে নারী অধিকাররের বিরুদ্ধে এত সোচ্চার,বেগম রোকেয়া কিন্তু ইসলামে নারীদের যেই অধিকার দেয়া হয়েছে সেটার সাথে বর্তমান নারী অধিকারের বৈপরীত্য দেখে খুবই মর্মাহত হতেন। মহানবী (সাঃ) ফাতিমাকে যেই আদর সোহাগ করতেন তা ভেবে তিনি জাতির কাছে প্রশ্ন করেন যে,”যদি ধরমগুরু মহানবী (সাঃ) জিজ্ঞাসা করেন যে তোমার কন্যার সাথে কিরুপ ব্যাবহার করেছিলে??তাহলে কি উত্তর দিবে?”।তিনি ইসলামকে কখনই নারী অধিকারের পরিপন্থি করে দেখেননি যেভাবে বর্তমানের নারীবাদীরা দেখে থাকেন।

 

স্মোকড ইলিশ তৈরির রেসিপি

ইলিশের সব রান্নাই সহজ এবং সুস্বাদু। তার মধ্যে ব্যতিক্রম একটি রান্না স্মোকড ইলিশ। ইলিশের ৩০ রেসিপি নামে ইলিশের সুস্বাদু ও ব্যতিক্রম সব রেসিপি প্রকাশ করা হচ্ছে জাগো নিউজের লাইফস্টাইল বিভাগে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ থাকছে স্মোকড ইলিশ রান্নার রেসিপি।

উপকরণ : ইলিশ মাছ দেড় কেজি, আদা বাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ চা-চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা আধা টেবিল চামচ, লবণ ১ চা-চামচ, ফিস সস আড়াই চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, সিরকা বা লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, লেমন রাইন্ড ১ চা-চামচ, আটা পরিমাণমতো।

প্রণালি : মাছের আঁশ ফেলে পেট পরিষ্কার করে ভালো করে ধুয়ে নিন। মাছ আস্ত থাকবে। মাছ সহজভাবে বসবে এমন একটি হাঁড়ি মাপমতো ঢাকনাসহ নিন। হাঁড়িতে মাছ বিছিয়ে আটা বাদে অন্য সব উপকরণ মিশিয়ে মেরিনেট করুন। ১৫ মিনিট পর মাছ ডুবিয়ে হাঁড়িতে পানি দিন। ঢেকে আটা দিয়ে হাঁড়ির মুখ বন্ধ করে দিন। যেন ভেতরের বাষ্প কোনোক্রমেই বের হতে না পারে। এক ঘণ্টা মাঝারি আঁচে রেখে আঁচ একেবারে কমিয়ে চুলায় রাখুন। ছয়-সাত ঘণ্টা পর চুলা বন্ধ করে দিন। ১০-১৫ মিনিট পর সাবধানে পরিবেশন পাত্রে মাছটি উঠিয়ে কোনাকুনি করে রাখুন। মাছ যেন ভেঙে না যায়। একপাশে লেটুস ও অন্য পাশে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন। স্মোকড ইলিশের কাঁটা গলে যাবে। হাঁড়িতে যে গ্রেভি থাকবে, তা চুলায় দিয়ে ঘন করে মাছের ওপর ঢেলে দিতে হবে।

 

ফ্যাশনে বাহারি কোটি

ফ্যাশনের দিক থেকে মানুষ পছন্দ করে নতুনত্ব। কতটা নতুনভাবে নিজেকে সাজানো যায়। নিজেকে বাহ্যিকভাবে কতটা গ্রহণযোগ্য করে সবার কাছে তুলে ধরা যায়। ফ্যাশনের নিজস্ব কোনো ভাষা নেই। আপনি ফ্যাশনকে যেভাবে ধারণ করবেন, সে আপনাকে সেভাবেই ফুটিয়ে তুলবে। ফ্যাশনের এই যোগসূত্রে বর্তমানে কোটি রয়েছে মেয়েদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে।

ফোরটাচ, লং স্লিভ, আনারকলি অথবা সিম্পল কামিজের সাথেও ব্যবহার করা হচ্ছে কোটি।  তবে টিনএজ বয়সী মেয়েদের মধ্যে কোটির ব্যবহার বেশি। কোটির ডিজাইনে এসেছে বেশ বৈচিত্র্য। সামনে কাটা পুরনো ডিজাইনের কোটি যেমন রয়েছে তেমনি টিউনিকের মতো ডিজাইনও করা হচ্ছে। এগুলোতে সাধারণ এক সাথে দুটো জামা দিয়ে ডিজাইন করা হয়।

অন্যদিকে শর্ট কামিজের মতো ডিজাইন দিয়েও কোটি করা হচ্ছে, এই কোটিগুলো শাড়ির সাথে বেশি পরতে দেখা যাচ্ছে। কোটির লেন্থেও রয়েছে বৈচিত্র্য। কখনো মাঝারি, কখনো ছোট আবার কখনো লম্বা লেন্থে কোটি বা টিউনিকের ডিজাইন করতে দেখা যাচ্ছে। কখনো জামার সাথেই যুক্ত করে কোটির ব্যবহার করা হয়েছে।

কোটিগুলোতে কালার কন্ট্রাস্ট বেশ উল্লেখযোগ্য। সিঙ্গেল কালার কোটিতে বিভিন্ন কন্ট্রাস্ট কালারের পাড় ব্যবহার করা হচ্ছে। কোনো কোটিতে জারদৌসি বা জরির কাজও দেখা যাচ্ছে। আবার কোনোটিতে সিম্পল লেস দিয়ে ডিজাইনে আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। ব্রাশ পেইন্ট ও ব্লকের ব্যবহারও উল্লেখ করার মতো।

তাছাড়া ফ্যাশনে কোটি এখন বেশ জনপ্রিয়। শর্ট কামিজ, ফ্রক, ডিজাইন করা জামা বা লং স্কার্টের সাথে কোটি পরলে বেশ স্মার্ট দেখায়, স্বাচ্ছন্দ্য লাগে। কোটি আবার আমাদের ফ্যাশনে নতুন অবয়বে ফিরে এসেছে। শুধু মেয়েদের নয়, ছেলেদের মধ্যেও এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।

 

উৎসবে চাই চুড়ি

সাজতে পছন্দ করে না এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। আয়নায় নিজেকে দীর্ঘ সময় দেখে নানাভাবে সাজিয়ে পছন্দের মানুষের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করার আনন্দই অন্যরকম। সব কাজ একপাশে রেখে মানুষ তার সৌন্দর্যকে সাজের মাধ্যমে বাইরে নিয়ে আসে শুধুমাত্র প্রিয় মানুষটির চোখে নিজেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে। আর এই প্রিয় মানুষটির চোখে নিজেকে প্রিয়ার রূপে দেখতে সব মেয়েই ভালোবাসে। ফাল্গুনের আগমনকে আনন্দের সাথে বরণ করতে চলছে নানা প্রস্তুতি। কখনো শাড়ির সাথে টিপ, আবার কখনো মিলিয়ে খোঁপার ফুল আর তার সাথে চুড়ি।

চুড়ির ক্ষেত্রে মেয়েদের পছন্দের তালিকায় থাকে কাঁচের চুড়ি। একরঙা কাঁচের চুড়ি কিংবা কয়েকটি রঙ মিলিয়ে হাত ভর্তি চুড়ি পরা। শাড়ির রঙ হোক কমলা কিংবা সবুজ কিংবা হলুদ চুড়ি কেউ পরে একরঙা আবার বাহারি রঙে রাঙায় হাত। এই চুড়িতে থাকে পুঁতির কাজ, স্টোনের কাজ আবার বিভিন্ন ধাতুর কাজ। চুড়ির ক্ষেত্রেও আছে ভিন্নতা। কাঁচের চুড়ির পাশাপাশি আছে কাঠের চুড়ি, স্টোনের চুড়ি, পুঁতির চুড়ি। তবে সবচেয়ে প্রাধান্য পায় হাতভর্তি একরঙা কাঁচের চুড়ি।

কাপড়ের তৈরি চুড়িও আছে। এই চুড়ির চাহিদাও আছে অনেক। এই চুড়িতে আছে লাল, সবুজ, নীল, হলুদ, কমলাসহ নানা রঙের ডিজাইন। কাঠের চুড়িতে আছে কাঠের খোঁদাই করা নানা কাজ। এছাড়া আছে রেশমি চুড়ি। এই রেশমি চুড়িতেও হাত সাজায় যে যার মনের মতো করে। এটি মূলত কাঁচ দিয়ে তৈরি চুড়ি। এছাড়া আসে দেবদাস চুড়ি। এই চুড়ির কদরও অনেক। এক সেটে ৪০ টি চুড়ি থাকে। ইদানিং আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের বাহারি নকশা করা মাটি ও অন্যান্য আনঅর্থডক্স ম্যাটেরিয়ালের চুড়ি পাওয়া যাচ্ছে।

কোথায় পাবেন
চকবাজার, নিউমার্কেট, যমুনা ফিউচার পার্ক, গ্রামীন চেক, বিবিয়ানা সহ আপনার আশেপাশে একটু দেখলে পেয়ে যাবেন আপনার মনের মতো চুড়ি।

দাম
রেশমি চুড়ি আপনি পাবেন ১০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। দেবদাস চুড়ি পাবেন ২০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া স্টোনের কাজ করা চুড়ি আপনি পাবেন ১০০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে। বৈশাখি চুড়ি পাবেন ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে।

 

কেমন হবে বইয়ের তাক

বই মানুষের সব সময়ের বন্ধু। আর এই বন্ধুকে খুব যত্নে রাখাও আপনার দায়িত্বের কাজ। আপনার কর্তব্য তাকে ভালো জায়গায় রাখা। আপনি যে জ্ঞান তার থেকে ধারণ করেছেন তা ঠিক মতো প্রকাশ করা। একটি বই হতে পারে আপনার সারা জীবনের বন্ধু আর বাড়াতে পারে আপনার ঘরের সৌন্দর্য। তাই নান্দনিকতার আলোকে আপনার ঘরে থাকা বইয়ের তাকটি হওয়া চাই  ঠিক আপনার মনের মতো।

ছোট বাড়ি  হলে
এরকম বাড়িতে দেয়ালই শেষ ভরসা। তবে বর্তমানে রেডিমেড বইয়ের তাক পাওয়া যায়। যা আপনি অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবেন। এর বাইরে আপনি যদি মনের মতো করে বইয়ের তাক বানাতে চান তবে কারিগরের সাহায্য নিয়ে ডিজাইন করে নিতে পারেন। এছাড়া বাড়ির সিড়ির অপরদিকে কিংবা সিড়ির ফাঁকা জায়গাটিও আপনি আপনার বই রাখার তাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

হাতের কাছে রাখুন
খুব উঁচু করে কিংবা খুব নিচু জায়গা বইয়ের তাক বানানো কিংবা রাখার জন্য নির্বাচন করবেন না। আর অবশ্যই খেয়াল রাখুন যাতে আপনি তাতে পর্যাপ্ত বই রাখতে পারেন। এর পাশাপাশি বই যেন পানি কিংবা দাহ্য কোন কিছুর সংস্পর্শে না আসে সেই স্থানটি নির্বাচন করুন।

বড় বাড়ি হলে
বড় বাড়ি হলে কোনো সমস্যা নেই। অনায়াসে একটি ঘর লাইব্রেরি বানিয়ে ফেলতে পারেন। পুরো ঘরজুড়েই করতে পারেন বই রাখার ব্যবস্থা। কিছু বই খোলা রাখলেন আবার কিছু বই বন্ধ আলমারিতে। চাইলে ক্যাটালগ করে রাখতে পারেন। এতে বই খুঁজে পেতে সুবিধে হবে।

একটু শৈল্পিকতা
এই ক্ষেত্রে আপনি আপনার মনকে প্রাধান্য দিবেন। যে ডিজাইন আপনার ভালো লাগবে, আপনি সেভাবেই বানিয়ে ফেলুন আপনার পছন্দের বইয়ের তাক। চাইলে প্রাচীন আমলের ডিজাইনগুলোও অনুসরণ করতে পারেন।

খরচাপাতি
কাঠের তাক বানাতে বা কিনতে চাইলে খরচ একটু বেশি পড়বে। ছোট মাপের বইয়ের তাকেরই দাম পড়বে প্রায় আট-নয় হাজার টাকার মতো। আর বড় মাপের বানাতে গেলে বার হাজার টাকার নিচে হবে না। তবে প্লাইউডের বানালে ছোট বইয়ের তাক তিন-চার হাজার টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। পছন্দ এবং স্থানভেদে এ খরচের তারতম্য হতে পারে।

 

পাকিস্তান জয়ে হৃত্বিক, ধাক্কা খেলেন শাহরুখ

‘রইস’ ও ‘কাবিল’ নিয়ে বলিউডের খ্যাতনামা দুই পরিবারে চলছে স্নায়ুবিক যুদ্ধ। খান ও রোশন পরিবারের সে কথার লড়াই এসেছে মিডিয়াতেও। বারবারই দুই রোশন- বাবা রাকেশ ও ছেলে হৃত্বিক অনুরোধ করেছেন খান সাহেব শাহরুখকে।

কিন্তু ব্যবসা ও সম্পর্ক আলাদা বিষয়বস্তু বলে একইদিনে ছবি মুক্তি দিয়েছেন শাহরুখ। তবে এবার কিং খান যেন একটু ধাক্কাই খেলেন। কারণ ভারত এবং বিদেশের মাটিতে সাফল্যের পর গত রবিবার পাকিস্তানে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল শাহরুখ এবং পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাহিরা খান অভিনীত ‘রইস’। কিন্তু মুসলিম সম্প্রদায়কে ‘নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের’ অভিযোগে সেন্সর বোর্ডে আটকে গেল ছবিটি। কিন্তু চলতি সপ্তাহেই দেশটিতে মুক্তি পেয়েছে ‘কাবিল; ছবিটি।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই পাকিস্তানের সিনেমা হলে ‘রইস’ ছবির মুক্তি নিয়ে নানা গুজব রটেছিল। সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবারই পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সেন্সর বোর্ড জানিয়ে দেয় পাকিস্তানে এই ছবির মুক্তি বন্ধ করা হয়েছে।
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত পাঞ্জাব সেন্সর বোর্ডের এক সদস্য জানিয়েছেন, সেন্সরবোর্ডের বেশিরভাগ সদস্যই মনে করেন, ছবিতে ইসলামকে ‘নেতিবাচক’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। মুসলিমদের ‘অপরাধী ও সন্ত্রাসী’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্ত পাঞ্জাব সেন্সর বোর্ড মেনে নেবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তবে সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ‘রইস’-এর এক সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন মাহিরা। পাকিস্তানে এই ছবির মুক্তি নিয়ে উচ্ছ্বাসও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার উচ্ছ্বাস খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এর কয়েকদিনের মধ্যেই বড় ধাক্কা খেল ‘রইস’।
এদিকে, বক্সঅফিস হিসাবে পাশাপাশিই চলছে ছবি দুটি। ১৩ দিনে ‘কাবিল’ ১২০ কোটি ও ‘রইস’ ১৫০কোটি রুপি তাদের ঘরে তুলেছে। ছবি দুটি ২৫ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছে।

 

ইন্টারনেটের ব্যয়কে আয়ে রুপান্তর করেছেন কাজী আফিয়া

ঘরে বসে অনলাইনের অলিগলি ঘুরে আয় করে কীভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত “কাজী আফিয়া আহমেদ”। তাঁর পেজ ‘ত্রি নিতী’ দিয়ে ২০১০ সালে অনলাইন ব্যবসায় আফিয়ার যাত্রা শুরু। যা ইতিমধ্যে জনপ্রিয়তার খাতায় নাম আছে।

শুরুটা জানতে চাইলে তিনি জানান, HSC এর পর  অবসর সময়ে তিনি প্রথমে ভাবতেন অযথা অনলাইনে সময় ব্যয় না করে কীভাবে তার এই অনলাইন জগতকে কাজে লাগানো যায়। ভাবলেন নিজের অনলাইনের বিলটি কীভাবে অনলাইন দিয়েই আয় করা যায়। সেই ভাবা অনুযায়ী  টুকটাক জুয়েলারি এবং মেকাপ সামগ্রী বিক্রি দিয়ে নিয়ে ‘ত্রি নীতি’ গ্রুপটির যাত্রা শুরু করেন, যার লাইকের সংখ্যা বর্তমানে ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এছাড়াও তিনি খেয়াল করলেন তার নিজের ডিজাইন করা পোশাকটি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এরপর তিনি কামিজ, নিজের পছন্দনীয় শাড়ি ডিজাইন শুরু করলেন, যাতে কখনো এমব্রয়ডারি বা কারচুপির কাজ থাকে এবং সেগুলো গ্রুপের মাধ্যমে প্রদর্শন করতে লাগলেন ‘বেস্ট এমব্রয়ডারিজ ঢাকা বাই আফিয়া’, ‘ইম্পোর্টেড শাড়িস বাই আফিয়া’ ইত্যাদি গ্রুপের মাধ্যমে এবং আবারো সাড়া পেতে থাকলেন। বিভিন্ন ডেলিভারি সার্ভিসের মাধ্যমে তিনি তার সামগ্রীগুলো পৌঁছে দিতেন ক্রেতাদের দোরগোড়ায়।

শুধু নিজের ডিজাইন করা ড্রেসে আর সীমাবদ্ধ থাকেননি আফিয়া। তিনি দেখলেন বিভিন্ন তারকাদের রেপ্লিকা ড্রেস ভালোলাগে এবং এদেশে বেশ চাহিদাও রয়েছে। তাই দেশের বাইরে থেকে যেমন পাশের দেশ ভারত এবং পাকিস্তান থেকে শিপিং এর মাধ্যমে রেপ্লিকাসহ নানা ডিজাইনের বিভিন্ন ড্রেস আনতে লাগলেন এবং তার গ্রুপের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে লাগলেন। এভাবেই  তিনি ক্রেতা চাহিদা অনুযায়ী এবং নিজের চিন্তাধারা থেকে হরদম ইমপোর্ট করে যাচ্ছেন। সাথে নিজের ডিজাইন তো রয়েছেই। তার মাসিক আয় এখন ন্যূনতম ৩০০০০ টাকা। যা যেকোনো ছেলে বা মেয়ের বেকারত্ব ঘোচাতে পারে।

তার নির্ধারিত ড্রেস শোভা পেয়েছে বিভিন্ন জনপ্রিয় তারকার পরনেও। যেমনঃ মেহের আফরোজ শাওন, আলিফ আলাউদ্দিন, বেনজির ইসরাতসহ আরো অনেকের।

তার সামনের ইচ্ছা একটি শো-রুম খোলা কিন্তু পুরোটাই নিজের ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে। ইন্টারনেটের অযথা ব্যয়কে আয়তে রুপান্তরের আহবান জানান কাজী আফিয়া। শুধু দরকার সততা, ধৈর্য এবং প্রবল মনোবল।

 

কন্যা সন্তানের প্রতি সুবিচার

হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যে ঘরের (পরিবারের) প্রথম সন্তান কন্যা হয়; সে ঘর হয় বরকতময়। বর্তমান সমাজে দেখা যায়, কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে অনেক নারীকে স্বামী পরিত্যাক্তা হতে হয়। কন্যা সন্তান জন্মের পরই শুরু হয় মা ও শিশুর প্রতি চরম অবহেলা।

কন্যা শিশু ও নারীর প্রতি চরম অবহেলা ও অবিচার হলো জাহেলী যুগের চরিত্র। যে সমাজে নারী কোনো মর্যাদা ছিল না। নারী ও কন্যাদেরকে ভোগ ও আনন্দ বিনোদনের সামগ্রী হিসেবে মনে করা হতো। আজকের আধুনিক দুনিয়ায়ও জাহেলী যুগের প্রেতাত্মারা সজাগ। তাদের প্রতি কুরআন ও হাদিসে রয়েছে সতর্ক বাণী।

কন্যা সন্তান জন্ম হলে জাহেলী যুগের সমাজপতিরাও নাখোশ হতো। তাদেরকে জীবন্ত কবর দেয়া হতো। কতই না নিকৃষ্ট ছিল তারা। আল্লাহ তাআলা তাদের বাস্তব অবস্থার কথা কুরআনে এভাবে তুলে ধরেছেন-

Konna

অর্থাৎ ‘আর যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়; তখন তাদের চেহারা কালো হয়ে যায়। আর সে থাকে দুঃখ ভারাক্রান্ত। তাকে যে সংবাদ দেয়া হয়েছে, সে দুঃখে সে কওমের থেকে আত্মগোপন করে। আপমান সত্ত্বেও কি একে (কন্যা সন্তানকে) রেখে দেবে, না মাটিতে পুঁতে ফেলবে? জেনে রেখ, তারা যা ফয়সালা করে, তা কতই না মন্দ!।’ (সুরা নহল : আয়াত ৫৮-৫৯)

কন্যা সন্তানের প্রতি সুবিচার ও যথাযথ দায়িত্ব পালন করা বিশ্বনবির নির্দেশ। তিনি কন্যাদের প্রতি সুবিচার করতে বলেছেন। তাছাড়া কন্যা সন্তান মানুষের জান্নাত লাভেরও উপায়। হাদিসে এসেছে-

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, ‘আমার কাছে এক মহিলা এলো। তার সঙ্গে তার দুই মেয়ে ছিল। সে আমার কাছে কিছু সাহায্য প্রার্থনা করল। আমার কাছ থেকে সে একটি খেজুর ছাড়া কিছুই পেল না। আমার কাছে থাকা খেজুরটি আমি তাকে দিয়ে দিলাম।

সে তা-ই গ্রহণ করল এবং তা (খেজুরটি) দুই টুকরো করে তার (ওই মহিলার) দুই মেয়ের মাঝে বণ্টন করে দিল। সে (মহিলা) তা থেকে কিছুই খেল না। তারপর সে (মহিলা) ও তার দুই মেয়ে উঠে পড়ল এবং চলে গেল।

এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন। আমি তাঁর কাছে ওই মহিলার কথা বললাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘যাকে কন্যা সন্তান দিয়ে কোনো কিছুর মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়; আর ওই ব্যক্তি তাদের (কন্যা সন্তানের) প্রতি যথাযথ আচরণ করে, তবে তা তার জন্য (জাহান্নামের) আগুন থেকে রক্ষাকারী হবে।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)

পরিশেষে…
কন্যা সন্তানদের প্রতি অবিচারকারী বা অবহেলাকারীদের প্রতি কুরআনের এ আয়াতটিই যথেষ্ট। আল্লাহ বলেন-

Konna

অর্থাৎ ‘নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল। (সুরা আশ-শুরা : আয়াত ৪৯-৫০)

সুতরাং সাবধান! কন্যা সন্তান জন্ম নিলেই কোনো নারীকে দোষারোপ করা ঠিক নয়; বরং কন্যা সন্তানের প্রতি সুবিচার করুন। ছেলে সন্তানের মতোই তাকে আদর-যত্নে, মায়া-মমতায় বেড়ে ওঠার সব দায়িত্ব পালন করুন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কন্যা সন্তান ও নারীদের প্রতি জাহেলী যুগের মতো আচরণ করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। তাদের প্রতি সদ্বয় হওয়ার এবং যথাযথ দায়িত্ব পালন করে হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

জীবন-যাপনে মুসলমানের জন্য যা আবশ্যক

কুরআন-সুন্নাহর বিধান পুরোপুরি মেনে চলা মুসলিম উম্মাহর নারী-পুরুষ সবার জন্য আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা মানুষকে এ বিধান বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। মানুষের অর্পিত এ দায়িত্ব হলো প্রথমে নিজেই কুরআন সুন্নাহর আনুগত্য মেনে নেয়া এবং পরবর্তীতে কুরআন-সুন্নাহর বিধান বাস্তবায়নে অন্যকে দাওয়াত দেয়া। এ বিষয় দুটি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

প্রথমত : কুরআন সুন্নাহর নির্দেশের আনুগত্য
কোনো শরিক ছাড়া একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগি করা এবং আল্লাহ ও রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্য করা। এ ছাড়া আল্লাহর নির্দেশিত বিধানগুলো বাস্তবায়ন করা এবং নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ পরিহার করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য কর এবং (এ বিধান) শোনার পর কখনো তা থেকে বিমখু হয়ো না।’ (সুরা আনফাল : আয়াত ২০)

দ্বিতীয় : কুরআন সুন্নাহর নির্দেশ মেনে চলার দাওয়াত প্রদান
আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করা, সৎ কাজের আদেশ দেয়া এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার দাওয়াত দেয়া। সমাজে প্রচলিত অন্যায় ও গর্হিত কাজ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখার দায়িত্ব পালন করা প্রত্যেক মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল থাকা উচিত, যারা (মানুষকে) কল্যাণের দিকে ডাকবে, সত্য ও ন্যায়ের আদেশ দিবে আর অসত্য ও অন্যায় কাজ থেকে (মানুষকে) বিরত রাখবে; অতঃপর যারা এ দলে শামিল হবে, সত্যিকারার্থে তারাই সাফলতা লাভ করবে।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১০৪)

কুরআন এবং সুন্নাহর আনুগত্যের পাশাপাশি এ নির্দেশ পালনের দাওয়াত প্রসঙ্গে বিশ্বনবির ঘোষণা-
Hadith

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘তোমাদের মধ্যে যে কেউ যদি কোনো ঘৃণ্য/নিন্দনীয়/অন্যায় কাজ সংঘটিত হতে দেখ;
তবে ওই ব্যক্তির কর্তব্য হলো- সম্ভব হলে (ওই মন্দ কাজ) হাত দ্বারা প্রতিহত বা মোকাবেলা করা;
আর যদি তা (হাত দ্বারা মোকাবেলা করা) অসম্ভব হয়, তবে মখু দ্বারা প্রতিবাদ করা;
আর যদি তাও (মুখে প্রতিবাদ করাও) অসম্ভব হয়, তবে মনে মনে ঘৃণা (নিরবে প্রতিবাদ) করা। আর এটাই ঈমানের দুর্বলতম অংশ। (মুসলিম)

নিরব প্রতিবাদ
সমাজে অন্যায় কাজ সংঘটিত হতে দেখলে হাত এবং মুখ দ্বারা প্রতিবাদ করার সাহস ও সামর্থ্য না থাকলে মনে মনে ঘৃণা করলে অন্যায় ও অত্যাচার বন্ধ হবে না। কিন্তু এ অন্যায় এবং অত্যাচার বন্ধ করার দায়িত্ব রয়েছে প্রত্যেক মুসলিম নারী ও পুরুষের ওপর।

এ দায়িত্ব পালনে প্রত্যেকেকেই নিরবে কাজ করে যেতে হবে। আর তা হলো- অন্যায় ও অত্যাচার বন্ধে যেভাবে কাজ করলে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি হবে না; সেভাবে কৌশল ব্যবহার করে অন্যায় ও অত্যাচার বন্ধ করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখাই হলো নিরব প্রতিবাদ।

অন্যায় ও অত্যাচারকে মনে মনে ঘৃণা মানে শুধু ঘৃণা নয়, বরং নিরবে নিরবে এ ঘৃণ্য কাজ সমাজ থেকে স্বমূলে উৎপাটন করতে কাজ করে যাওয়াই ঈমানের দুর্বলতম অংশ।

পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারী ও পুরুষকে উল্লেখিত ওয়াজিব কাজ সম্পাদনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার তাওফিক দান করুন।

কুরআন-সুন্নাহর অনুসরণ ও অনুকরণের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরে কুরআন-সুন্নাহর বিধান বাস্তবায়নে কাজ করার তাওফিক দান করুন।

সর্বোপরি কুরআন-সুন্নাহর বিধান সমাজের সর্বস্তরে বাস্তবায়নের জন্য নিরবে নিরবে ধীরে ধীরে দাওয়াতে দ্বীনের কাজ করে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

ইলিশ মাছের মালাইকারি

ইলিশের সব রান্নাই সহজ এবং সুস্বাদু। তার মধ্যে ব্যতিক্রম একটি রান্না ইলিশ মাছের মালাইকারি। ইলিশের ৩০ রেসিপি নামে ইলিশের সুস্বাদু ও ব্যতিক্রম সব রেসিপি প্রকাশ করা হচ্ছে জাগো নিউজের লাইফস্টাইল বিভাগে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ থাকছে ইলিশ মাছের মালাইকারি রেসিপি।

উপকরণ : বড় ইলিশ মাছের ৮ টুকরা। পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, পোস্ত বাটা ১ টেবিল চামচ। জিরা বাটা আধা চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ। শুকনা মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, কাঁচামরিচ ৫-৬টি, লবণ পরিমাণমতো। তেঁতুলের মাড় ১ টেবিল চামচ, তেল ১ কাপ, নারকেলের দুধ ২ কাপ, মশলার গুঁড়া আধা চা চামচ, চিনি স্বাদমতো।

প্রণালি : কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ ভেজে বেরেস্তা করে অর্ধেক বেরেস্তা উঠিয়ে রাখতে হবে। এবার কড়াইয়ে বেরেস্তার ভেতর এক কাপ করে সব বাটা ও গুঁড়ো মসলা কষিয়ে লবণ ও নারকেলের দুধ দিতে হবে। ফুটে উঠলে মাছ দিতে হবে, ঝোল কমে এলে নারকেলের মিষ্টি বুঝে চিনি দিতে হবে। বেরেস্তা হাতে ভেঙে গুঁড়ো করে দিতে হবে। তেঁতুলের মাড়, গরম মসলার গুঁড়ো, কাঁচামরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ চুলায় রেখে নামাতে হবে।

 

চুলের সাজে বাহারি খোঁপা

চুল লম্বা হোক কিংবা ছোট চুলের যে সাজটি আপনাকে অনন্য করে তুলতে পারে তা হচ্ছে খোঁপা। আপনার চেহারা থেকে শুরু করে এটি আপনার ব্যক্তিত্বেও আনে আলাদা গুরুত্ব। আপনি শুধুমাত্র বাহারি খোঁপার সাহায্যে নিজেকে একদম আলাদা ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। তাই নিজেকে আলাদাভাবে সাজিয়ে তুলতে চাইলে চটপট বাহারি খোঁপায় নিজেকে বদলে নিন।

কার্ল আপডু
যাদের চুল কার্লি তাদের জন্য এটি একটি পারফেক্ট খোঁপা। মাঝারি থেকে বড় সাইজের চুলে এটি করা যায়। তবে যাদের চুল সোজা তারাও এটি করতে পারবেন। এটি এলোমেলো খোঁপা নামেও অনেকের কাছে পরিচিত।

গ্রেসিয়ান আপডু
নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এটি গ্রিসের একটি জনপ্রিয় খোঁপা। তবে আমাদের দেশেও এটি এখন অনেক চলছে। শাড়ির সাথে দারুণ মানিয়ে যায় এ খোঁপাটি। তরুণী অথবা মধ্যবয়সী যে কোনো নারী এ খোঁপাটি করতে পারেন।

ভালেন্টাইন আপডু
খুবই সুন্দর একটি খোঁপা এটি। তরুণীরা লং ড্রেসের সাথে আনায়সে এটি ট্রাই করতে পারেন। অনেকে আবার এটির সাথে সামনের চুলগুলো কার্ল করে থাকেন। খোঁপার প্রতিটা অংশে স্টোন বা বিডস লাগাতে পারেন গরজিয়াস লুকের জন্য।

হাফ আপডু
যারা চুল খোলা রাখতে পছন্দ করেন তাদের জন্য খুব সিম্পল এ স্টাইলটি। সামনে দিয়ে চুল অনেক খানি টিজ করে উচু করা হয়। তারপর সফট কার্ল করে পেছনের চুল গুল ঘাড়ের কাছে এনে ছেড়ে রাখা হয়। এটি আসলে সত্তর দশকের খুব জনপ্রিয় একটি হেয়ার স্টাইল।

হাফ আপডু উইথ কার্ল
যারা গতানুগতিক ধারা থেকে বের হতে চান না তাদের জন্য এই হেয়ার স্টাইলটি। এটি উপরের হেয়ার ডু এর মতোই কিন্তু এখানে মাথার পেছনের চুলগুলো রোলার বা কার্লার দিয়ে কার্ল করা হয়। শাড়ি এবং কামিজ দুটোর সাথেই এটি ভালো যায়।

 

ঠোঁটের সাজে লিপস্টিক

সাজে পূর্ণতা আনতে যে প্রসাধনীটি না হলেই নয়, সেটি হচ্ছে লিপস্টিক। শুধু লিপস্টিক পরলেই সাজের অনেকটা সম্পূর্ণ হয়ে যায়। এই লিপস্টিকের রয়েছে হাজারটা রঙ, হরেক ধরন। নারীরা সাজের জন্য সবার আগে লিপস্টিককেই বেছে নেন। কিন্তু লিপস্টিকের সঠিক ব্যবহার না জানায় পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়।

ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানোর কিছু নিয়ম রয়েছে। যেমন লিপস্টিক লাগানোর আগে প্রথমে লিপব্রাশ দিয়ে ঠোঁটের মরা কোষ তুলে ফেলতে হয়।

যাদের ঠোঁট তৈলাক্ত তারা লিপস্টিক লাগানোর ক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অবলম্বন করলে ঠোঁটকে অনেক বেশি নান্দনিক করে তোলা যায়। তৈলাক্ত ঠোঁটে একবার লিপস্টিক লাগানোর পর পাউডার লাগিয়ে তারপর আরেকবার তা লাগাতে হয়। এতে লিপস্টিকের স্থায়ীত্বও বাড়বে।

শুষ্ক বা সাধারণ ঠোঁটের ক্ষেত্রে প্রথমে ভ্যাসলিন লাগিয়ে কিছু সময় রেখে টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। এরপর লিপস্টিক লাগালে ঠোঁটের সৌন্দর্য ফুটে উঠবে। মনে রাখতে হবে, যে লিপস্টিকই লাগান না কেন সরাসরি ঠোঁটের ওপর না লাগিয়ে, লিপব্রাশ দিয়ে আলতোভাবে লাগানো উচিৎ।

যাদের ঠোঁট মোটা তারা লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁটের বাইরের কিছুটা অংশ এঁকে তারপর লিপস্টিক লাগান। আর যাদের ঠোঁট পাতলা তারা বর্ডার ধরে লিপিস্টিক লাগান। মনে রাখতে হবে, ঠোঁট থেকে লিপস্টিক ওঠানোর সময় ভেজা নরম সুতি কাপড় অথবা টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।

রঙ নির্বাচনের ক্ষেত্রে বয়স ও স্থানকে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ। কর্মক্ষেত্রে হালকা রঙের লিপস্টিক দেয়া ভালো। পার্টিতে গাঢ় রঙের লিপস্টিক সাজের জমকালো ভাব এনে দেয়। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে লিপস্টিকের রঙ নির্বাচন করাই ভালো। যাদের গায়ের রঙ কালো তারা গাঢ় রঙের লিপস্টিক নির্বাচন করতে পারেন।

 

কিভাবে মুসলিমরাই সত্যিকারের নারীবাদী

নারীবাদীরা কেমন হয়?  আমেরিকান নারী হিসাবে আমারা সবাই ধারণা করি যে নারীবাদী সাধারণত সেইসব ফ্রি ল্যান্সার নারী, পৃথিবীতে যারা সব ধরণের যৌন স্বাধীনতা ভোগ করার সাহস করে থাকে ।  কিন্তু আমেরিকান নারীবাদের সবচেয়ে বড় সমস্যাই এটা । এই ধরণের নারীবাদের সবটাই মূলত যৌন বিষয় এবং আমাদের দেহের স্বাধীনতা নিয়ে । বিশেষকরে গর্ভপাত এবং গর্ভনিরোধ করার স্বাধীনতা এই স্বাধীনতার একটা অংশ । কিন্তু বর্তমান সমাজে নারীদের নারীবাদের লড়াই অন্যদিকে মোড় নিয়েছে এবং তাতে একটা আলাদা ধরণের সূর ধ্বনিত হচ্ছে ।

যেমন স্তনের স্বাধীনতার বিষয় নিয়ে কাজ করার কারণে আমাদের নারী দেহের প্রতি অন্যদের অসম্মান সৃষ্টিতে কাজ করছে; এমনকি এই বিষয়কে আরও উৎসাহিত করছে । আমাদের চারপাশে যারা আছে তাদের মধ্যে আমাদের নারী দেহের প্রতি অসম্মানজনক সাধারণ আচরণ প্রদর্শনে আরও বেশি প্রভাবিত করে থাকে।

যদি আমরা নারী হিসাবে সম্মান ও শ্রদ্ধা পেতে চাই তাহলে নারীবাদের নতুন উৎসের প্রতি আমামদের খেয়াল করা উচিত । আর সেই নতুন উৎস হচ্ছে মুসলিম নারী । সত্যিকারের মুসলিম নারী ও পুরুষ প্রত্যেকের দেহকে পবিত্র উপাসনালয় হিসাবে বিবেচনা করে থাকে । বিশেষ করে নারী দেহকে আরও বেশি পবিত্র মনে করে  । সবার সম্মুখে নিজেকে উন্মুক্ত না করার মনোভাব তাদেরকে বিনম্রতা প্রদান করেছে ।

আমেরিকার খুব জনপ্রিয় ধ্যান- ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত বিষয় এই যে “ইসলামে নারীর ক্ষমতায়নের একটি অসাধারণ সংস্কৃতি এবং ইতিহাস আছে ।” কোরআনে ইহা সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ আছে যে নারী ও পুরুষ উভয়েই সমান গুরুত্বের অধিকারী তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং দায়িত্বের দিক থেকে ।  পরিবার, দানশীলতা, শিশু, যৌনতা এবং অন্যান্য কর্তব্যের দিক থেকে নারী ও পুরুষ উভয়েরই প্রায় একই ধরণের কর্তব্য রয়েছে এবং এই কর্তব্য সমূহ সোজা সাপটা পথে পরিচালিত হবে ।

ইসলামের শুরুর দিকে মহিলাদের মধ্যে এই বিশ্বাস সদা উদ্ভাসিত ছিল । এই হিসাবে প্রথম মুসলিম নারী হচ্ছেন খাদিজা, মুহাম্মদের স্ত্রী । তার প্রভাব ছাড়া হয়তো ইসলাম যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাও না হতে পারতো । খাদিজা ছিলেন একজন ব্যবসায়ী নারী এবং আরব ভুমিতে একজন ভূস্বামী বা জমিদার স্বরূপ ছিলেন তিনি । যখন মুহাম্মদের উপর আয়াত নাজিল হতে থাকে তখন খাদিজাই প্রথম তাকে আস্বস্থ করেন যে তিনি মুহাম্মদ পাগল হচ্ছেন না । তিনি মুহাম্মদকে খুব পছন্দ করতেন এবং তাকে অনেক সাহস যোগাতেন ।খাদিজা  মুহাম্মদকে বলতেন প্রভু এবং তার পাঠানো ফেরেশতা যিনি প্রভু ও মুহাম্মদের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে কাজ করছেন তার কথা শুনতে । খাদিজাই মুহাম্মদকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করতেন এবং তার মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরিতে সহায়তা করতেন যে মুহাম্মদই শেষ নবী ।

খাদিজা যিনি একজন নারী তার মাঝে এমন শক্তি ছিল যে তিনিই ইসলামকে স্বরূপে প্রস্ফুটিত হতে সহায়তা করেছেন । এই উদাহরণই আমাদের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে সত্যিকারের মুসলিম নারীরা আসলে কেমন? তারা, স্বচালিত, নিশ্চিত, সাহসী এবং একজন নারীবাদের সর্বচ্চো চুড়ায় অবস্থান করে ।

অতএব ইহা এখন বলার কোন অপেক্ষা রাখে না যে বর্তমানে মুসলিম নারীরা এই প্রখ্যাত নারীর পরে কিভাবে নিজেদেরকে সবার সামনে অনুকরণীয় আদর্শ হিসাবে উপস্থাপন করছে ।

মুসলিম নারীরা দিকনির্দেশনার জন্য শক্তির নিদর্শনের দিকে দৃষ্টিপাত করে থাকে । সত্যিকারের মুসলিম নারীরা হিজাব পরে থাকে ।হিজাব হচ্ছে এক ধরণের হেড স্কার্ফ যা  অধিকাংশ মুসলিম  নারী পরিধান করে থাকে । এবং ইহা মনে করার কোন অবকাশ নেই যে সত্যিকারের হিজাবধারীরা স্বামী বা বাবার চাপে হিজাব পরে । হিজাব পরা আর না পারার বিষয়টা মুসলিম নারী তার নিজস্ব রুচিবোধ অনুসারে করে থাকে ।

আমার মনে হয় আমেরিকান সমাজে নারীবাদ মূলত একটা দেখানোর বিষয়ে পরিণত হয়েছে । এখানে নারীকে এমনভাবে দেখা হয় নারী মানেই শারীরিক মোহ প্রদর্শন করে থাকবে, লম্বা চুল রাখবে, মুখের নিখুঁত সৌন্দর্য থাকবে, অসাধারণ দেহাবয়ব থাকবে । আর যখন এসব প্রদর্শনের স্বাধীনতা আমাদের নারীরা অর্জন করে থাকে তখন আমরা ভাবি যে নারী হিসাবে আমরা স্বাধীন । আমাদের চারপাশে যেসব লোক আছে তাদের চোখে আমাদের কেমন দেখাচ্ছে এসব বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তায় মশগুল থাকার মাধ্যমে আমরা মূলত প্রাকৃতিক নারীত্বকে নষ্ট ও দমন করার চেষ্টা করছি । সমাজের সব সমালোচনা উপেক্ষা করে আমাদের এটা বলার সাহস নেই যে “ আমার দেহ প্রদর্শনের জন্য নয় ।”

কিন্তু আমি অনেক মুসলিম নারীকে দেখেছি তারা এই সৎ সাহস অর্জন করার চেষ্টা করেছে । এভাবে তারা প্রতিদিনের অযথা বাহ্যিক চাপ থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করেছে ।প্রকৃত পক্ষে তাদের এটা বলার সৎ সাহস আছে যে “ হেই আমি কোন আনন্দের সামগ্রী নই, আমি একজন নারী । আমি কেমন দেখাচ্ছি তার ভিত্তিতে নয়; আমি আসলে কি এর ভিত্তিতে আমাকে সম্মান ও মূল্যায়ন করা উচিত । ”

নিজেদেরকে স্বাধীন করার এমন সাহস আমেরিকান সংস্কৃতি থেকে তাদেরকে  আলদাভাবে উপস্থাপন করেছে । প্রদর্শনের বাহানায় নারীরা যেসব চাপের মধ্যে থাকে সেই চাপ থেকে নিজেদেরকে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন করার শক্তি মুসলিম নারীদের রয়েছে । তারা কখনও দেহ প্রদর্শনের কাজে মনোযোগ দেয় না বরং কিভাবে নিজের স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তা উপস্থাপন করা যায় সেদিকে মনোযোগ দেয় ।তারা সৌন্দর্য চর্চার পূজারী নয় । এর ফলে মুসলিম নারীরা সম্মান ও শ্রদ্ধা অর্জন করে থাকে এবং তাদের কমিউনিটিতে তাদেরকে বেশ গুরুত্ব দেয়া হয় ।

নারীবাদ যা হওয়া উচিৎ ইহা কি আসলে তাই নয়? এইভাবেই কি নারীরা সত্যিকারের মর্যাদা অর্জন করে না ? এইভাবে কি আমাদের নারীদের দেহের প্রতি তাকিয়ে বাজে মন্তব্য না করে কেউ একজন নারীর কথা শুনে না ? আমি বিশ্বাস করি যে এর উত্তর হবে “হ্যাঁ” । মুসলিম আমেরিকান কমিউনিটি এবং এমনকি বৃহত্তর মুসলিম বিশ্বের কিছু অংশে সভ্য নারী হিজাব পরুক বা হিজাব না পরুক সর্বদা শ্রদ্ধা অর্জন করে থাকে । এ ব্যাপারে আমাদের মূলধারার মিডিয়া আমাদের নানা কিছু উল্টা পাল্টা বুঝাক না কেন ।

কয়েক সপ্তাহ আগে আমি ইসলামে নারীবাদ বিষয়ে একটা লেকচার শুনতে গিয়েছিলাম ।এসব চিন্তাধারা আমার মাথার মধ্যে গুরপাক খেতে লাগলো । লেকচারার ছিলেন হিজাব পরা একজন মুসলিম নারী  । তিনি এতো সুন্দরভাবে কথা বলছিলেন যে সকলেই অভিভূত হয়ে তার বক্তব্যে মনোনিবেশ করেছিল ।বক্তব্য শুনার প্রায় দেড় ঘণ্টা খানেক পরে আমার মনে হতে লাগলো যে স্তন্য স্বাধীন করার নারীবাদ নিয়ে যারা ব্যস্ত আছে তারা কতটাই বস্তুবাদী ও পলকা বিষয় নিয়ে কাজ করছে । এই ধরণের বিষয় নিপাত যাওয়া উচিৎ । আমি ভাবতে থাকলাম আমরা কিভাবে বিশ্বাস করতাম যে আমেরিকান নারীরা স্বাধীন এবং মুসলিম নারীরা নিপীড়িত । এই বিষয়টা আমার কাছে উল্টে গেল ।আমি অবশেষে বুঝতে পারলাম পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কারা স্বাধীন এবং কারা নির্যাতিত । নির্যাতিত মূলত আমরাই আমেরিকান নারীরা, মুসলিম নারীরা নয় । যে নারীরা হিজাব পরে তারা মূলত পুরুষ এবং সমাজের নারীর দেহ দর্শনের মাধ্যমে বিবেচনা করার দাসত্ব থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করেছে । বস্তুবাদী নারীবাদীরা যা পারেনি; এভাবে তারা পুরুষতান্ত্রিক বিশ্বের গহীনে পতিত হয়ে গেছে এই বিশ্বাস নিয়ে যে তারা শ্রদ্ধা অর্জন করবে ।

তাই আমি বস্তবাদি চিন্তা ধারার তথা স্তনের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নারীবাদীদের বলতে চাই মুসলিম নারীদের দিকে দৃষ্টিপাত করুন । তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এমন এক নারীবাদের ধারা সৃষ্টি করুন যা সবাইকে শেখাবে যে নারীদেহ উপাসনালয়ের মতো, কোন খেলনা সামগ্রীর মতো নয় ।এখনই আমাদের নারীবাদকে অন্য দৃষ্টিতে দেখা উচিৎ । বিনম্রতা এবং আমাদের অমিয় সুধা পানের সাহস নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় । বিশ্বের মুসলিম নারীবাদীদের আহবান করুন ।

 

ওভেন বেকড ইলিশ

ইলিশ খেতে ভালোবাসেন না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ইলিশ মাছ হিসেবে যেমন পুষ্টিকর তেমনি আমাদের দেশের অর্থনীতির সহায়ক শক্তিও। ইলিশের রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা। হৃদরোগ, বাত, চোখের সমস্যা, ফুসফুসের সমস্যা, অবসাদ ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে ইলিশের। ইলিশের ৩০ রেসিপি নামে ইলিশের সুস্বাদু ও ব্যতিক্রম সব রেসিপি আজ থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে জাগো নিউজের লাইফস্টাইল বিভাগে। আজ থাকছে ওভেন বেকড ইলিশ রেসিপি।

উপকরণ : ইলিশ মাছ ১টা, লাল মরিচগুঁড়া ১ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল-চামচ, টকদই ২ টেবিল-চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল-চামচ, ভিনেগার ১ টেবিল-চামচ, সরিষার তেল ৩-৪ টেবিল-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, কাঁচা মরিচ (চপ করা) ৩-৪টি, আদার রস ১ টেবিল-চামচ, তন্দুরি মসলা ১ চা-চামচ, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল।

প্রণালি : আস্ত মাছকে ছুরি দিয়ে চিরে দিন, যাতে মসলা ভেতরে যেতে পারে। এবার লবণ মাখিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিন। বাটিতে সব মসলা মাখিয়ে নিন। মাখানো মসলা মাছের দুই পাশে ভালোভাবে লাগিয়ে ফয়েলের উপর রেখে ফয়েলটি মুড়িয়ে নিন। আভেন ফ্রি হিট করে ১৮০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৩০-৪০ মিনিট বেক করে নামিয়ে নিন। লেবু চাক চাক করে কেটে, মাছের চিড়ে নেওয়া জায়গাগুলোতে ঢুকিয়ে পরিবেশন করুন।

 

জুনে অমিতাভ রেজার নতুন ছবি

জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নির্মাতা অমিতাভ রেজা পরিচালিত ‘আয়নাবাজি’ ছবিটি গেল ৩০ সেপ্টেম্বর মুক্তি পায়। তারপর চারদিকে জোয়ার ওঠে ‘আয়নাবাজি’র। রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করে ছবিটি।

নতুন খবর হচ্ছে, নির্মাতা অমিতাভ রেজা ভাবছেন তার নতুন ছবি নির্মাণ নিয়ে।  তিনি বলেন, ‘আগামী জুন মাসেই নতুন ছবির ঘোষণা দেব। বর্তমানে কয়েকটি পাণ্ডুলিপির কাটাছেঁড়া করছি। এরমধ্য থেকেই গল্পের প্লট বের করছি।’

সে পর্যন্ত চলচ্চিত্রপ্রেমীদের অপেক্ষা করতে বললেন নির্মাতা অমিতাভ। তবে তিনি জানান, নিজের দ্বিতীয় ছবিতে অনেক চমক থাকবে।

‘আয়নাবাজি’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন চঞ্চল চৌধুরী ও নাবিলা।

 

পরকালের প্রথম মনজিল কবর

কবর হচ্ছে আখিরাতের প্রথম মঞ্জিল। যারা সহজে এ মঞ্জিল থেকে মুক্তি লাভ করবে। তার জন্য সবকিছু সহজ হয়ে যাবে। এ জন্য আম্বিয়ায়ে কেরাম, সাহাবায়ে কেরাম, আওলিয়ায়ে কেরামগণ সব সময় কবরের যাবতীয় বিষয়াবলী থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর নিকট রোনাজারি করতেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও কবরের সব ধরনের বিপদাপদ ও আজাব হতে আশ্রয় লাভের জন্য তাঁর উম্মতকে কুরআন-সুন্নাহর বিধান পালনের তাগিদ দিয়েছেন। দোয়া শিখিয়েছেন। আল্লাহর রহমত কামনা করতে বলেছেন।

হজরত বারা বিন আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে এক আনসারি সাহাবির জানাযায় অংশগ্রহণ করার জন্য বের হলাম।

তখনও ওই সাহাবার কবর খননের কাজ শেষ হয়নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিবলামুখী হয়ে বসে পড়লেন। আমরাও তাঁর চারপাশে বসে গেলাম।

তাঁর হাতে ছিল একটি কাঠি। তা দিয়ে তিনি মাটিতে খুঁচাতে থাকলেন আবার আকাশের দিকে তাকাতে থাকলেন। একবার জমিনের দিকে আবার আকাশের দিকে তাকাচ্ছিলেন। এভাবে তিনি তিনবার দৃষ্টি উঁচু-নিচু করলেন।

অতঃপর সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে কবরের আজাব থেকে আশ্রয়ের জন্য প্রার্থনা করো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথাটি দুই বার অথবা তিনবার বললেন।

অতঃপর তিনি পরকালের প্রথম মনজিল কবরের আজাব থেকে রক্ষা পেতে এ দোয়াটি করলেন-
kabar
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউ’জুবিকা মিন আ’জাবিল ক্ববরি।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই।

পরিশেষে…
পরকালের প্রথম মঞ্জিল হলো কবর। কবরের সব বিপদাপদ থেকে মুক্ত থাকাই একজন মুমিনের জীবনের প্রথম চাওয়া-পাওয়া। যে ব্যক্তি কবরের প্রশ্ন ও সময় সুন্দরভাবে অতিবাহিত করতে পারবে। তার পরবর্তী সব কাজগুলো সুন্দরভাবে সম্পন্ন হওয়ার আশা করা যায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরকালের প্রথম মনজিল কবরের আজাব থেকে রক্ষা করুন। কুরআন সুন্নাহর বিধি-বিধান যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। চিরস্থায়ী জীবনকে সুখ-শান্তিময় করুন। আমিন।

 

বাসযাত্রীরাও শাহনাজের পরিবার

গত বছরের ৮ নভেম্বর ২০১৬, সন্ধ্যা ছয়টা। রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বর পার হয়ে পূবালী ফিলিং স্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাসটি। আর বাসের গেটে দাঁড়িয়ে একজন নারী অনবরত বলে চলছেন, ‘শুধু মহিলা! মিরপুর ১০, ১১, ১২, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া’।
এই কাজ যিনি করছেন, তিনি শাহনাজ পারভীন। পেশায় একজন বাস কন্ডাক্টর। আর বাসটি নারী যাত্রীদের জন্য। নারীদের যাতায়াত সেবা দিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ঢাকায় ১৫টি এবং চট্টগ্রামে ২টি বাস চালু রেখেছে। এই বাসগুলোর সব কন্ডাক্টরই নারী।
সাত বছর ধরে বিআরটিসির বাসে কন্ডাক্টরের কাজ করছেন শাহনাজ। যাত্রীদের বাসে ডেকে তোলা, নামানো, ভাড়া নেওয়া, চালককে সহায়তা করাসহ সব কাজই তাঁকে সামলাতে হয়। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ শুরুতেই তাঁকে তিন মাসের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। রবি থেকে বৃহস্পতি—সপ্তাহের পাঁচ দিন তিনি এখানে কাজ করেন। বাসটি সকাল সাড়ে সাতটায় মিরপুর ১২ থেকে এবং সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় মতিঝিল থেকে ছাড়ে।
যাত্রী ডাকার ফাঁকে ফাঁকেই শাহনাজের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এর মধ্যেই এক-দুজন করে যাত্রী এসে বসতে শুরু করেন। শাহনাজ বলেন, ‘বিয়ের পরে স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় আসছি। একদিন আমার ভাই এসে বলে, বিআরটিসির মেয়েদের স্কুলবাসে চাকরি নিবি। আমি রাজি হই। সেই থেকে শুরু।’
বিআরটিসির মেয়েদের স্কুলবাসে পাঁচ বছর কাজ করার পর এখানে চাকরি নেন বরগুনার মেয়ে শাহনাজ। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয় তাঁর। এরপর আর পড়ালেখা এগোয়নি। জীবন নিয়ে শাহনাজের কোনো স্বপ্নও ছিল না।
শাহনাজ নিজ থেকেই বলেন, ‘মহিলা হয়েও এই কাজে আসার সাহস কী করে হলো, নিজেও জানি না। তবে আমি কাউরে ডরাই না। বাসের সবাইকে ফ্যামিলি মনে করি। সবাইকে লাইক করি। সবাই আমাকেও লাইক করে।’
তাঁর কথার সত্যতা মিলল প্রত্যেক যাত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময়ের ধরন দেখে। বাসের যাত্রীদের বেশির ভাগই তাঁর পরিচিত। মূলত ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করা নারীরাই এ বাসের যাত্রী। মিরপুর থেকে মতিঝিলের ভাড়া ২৫ টাকা।
শাহনাজ পারভীন l ছবি: খালেদ সরকাররাস্তায় তেমন কোনো সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় না শাহনাজকে। তিনি বলেন, প্রায়ই পুরুষ যাত্রী বাসে উঠে পড়েন। তাঁদের হেসে বলি, এটা শুধু মেয়েদের বাস। তখন তাঁরা সরি বলে নেমে যান। পুলিশও কোনো ঝামেলা করে না। মাঝেমধ্যে অবশ্য অন্য বাসের সহকারী বা রাস্তাঘাটে কিছু পুরুষের টিটকারি শুনতে হয়। এসব তিনি খুব একটা আমলে নেন না। শাহনাজ বলেন, ‘ইচ্ছা থাকলে যেকোনো কাজই করা যায়। কাজের আবার নারী-পুরুষ কী! অবশ্য মানুষের কথা কানে নেওয়া যাবে না।’
তিন বছর ধরে এই বাসে যাতায়াত করেন ব্যাংকার তহমিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘শাহনাজ আপা খুব সহযোগিতা করেন। তিনি যত্ন করে আমাদের নেওয়া-আনা করেন।’ এই বাসে নিয়মিত যাতায়াত করা সবার কাছে শাহনাজের মোবাইল নম্বর আছে। বাসটি কোথায় আছে জানতে তাঁরা যোগাযোগও করেন। অনেক সময় বাসটি দু-এক মিনিট যাত্রীদের জন্য দাঁড় করিয়েও রাখা হয়। রাস্তায় কোনো নারী যাত্রীকেই তিনি রেখে যেতে চান না। আবার অসুস্থ যাত্রীদের যত্নের সঙ্গে নামিয়ে দেন। নারীদের বাস হওয়ায় অনেক সময় স্বামী, ভাই বা বন্ধুকে রেখেই নারীকে বাসে তুলতে হয়। তখন একটু খারাপ লাগে শাহনাজের।
ফারজানা আলম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘মেয়েদের জন্য সব সময় লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাস দেয়। মাঝেমধ্যেই গাড়ি নষ্ট হয়। তখন খুব ঝামেলা হয়।’ এর সঙ্গে সহমত পোষণ করেন অন্য যাত্রীরাও। এ কারণে আগের তুলনায় যাত্রী কিছুটা কমে গেছে বলে জানান শাহনাজ। সুফিয়া তরফদার বলেন, ‘নারীদের জন্য আরও বাস থাকা উচিত। এতে নারীরা নির্যাতনের হাত থেকে কিছুটা রেহাই পাবে।’
শাহনাজকে দেখা যায়, মজা করতে করতেই ভাড়া তুলছেন। যাত্রীরা তাঁদের খাবার দিচ্ছেন শাহনাজকে। বাসের ভেতরে মোটামুটি একটা পারিবারিক পরিবেশ। যানজটে কষ্ট হয় শাহনাজের। তিনি বলেন, ‘খালি মনে হয় আপাদের কখন বাসায় পৌঁছাই দেব।’
কাজ করলে প্রতিদিন ২০০ টাকা করে নির্ধারিত বেতন শাহনাজের। বেতন নিয়মিত নয়—অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেন, ‘রোদ-বৃষ্টিতে ডিউটি করি, এখনো সাত-আট মাসের বেতন বকেয়া আছে।’ আর লাভ-লস যা-ই হোক, ভাড়া বাবদ দিন শেষে তাঁকে কর্তৃপক্ষকে জমা দিতে হয় ১ হাজার ৩০০ টাকা। এর বেশি আয় হলে তা শাহনাজের।
এ বিষয়ে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান  বলেন, নারীদের যাতায়াত সেবা দিতে সাধারণ বাসের চেয়ে নারীদের বাস থেকে তুলনামূলক কম ভাড়া নেওয়া হয়।
৩৫ বছর বয়সী শাহনাজের প্রিয় নায়ক রঞ্জিত মল্লিক, সালমান খান। সাজগোজ করতে ভালোবাসেন। প্রিয় রং লাল। তাঁর দাদি আদর করে ডাকতেন লাল বুড়ি। ড্রাইভিং লাইসেন্স পেলেও আপাতত চালক হওয়ার ইচ্ছে নেই তাঁর।
শাহনাজের দুই ছেলে। বড় ছেলে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষ আর ছোটটি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। স্বামী ওমানপ্রবাসী। মিরপুরে স্বামীর ও নিজের জমানো টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। সেখানেই তিনি ছেলেদের নিয়ে থাকেন।
স্বামী ও ছেলেরা চান, তিনি কাজটি ছেড়ে দিন। কিন্তু তাঁর কথা, ‘এ গাড়ির যাত্রীরাও আমার পরিবার। তাঁদের না দেখে আমি থাকতে পারি না। আর আমি না থাকলে আপাদের কোনো সমস্যা হলে কে দেখবে!’ সব আপাকে ঘরে পৌঁছে দিয়েই তাঁর শান্তি। তাঁদের সেবা দেওয়ার মধ্যেই তাঁর সুখ।

 

চিলি বিফ উইথ ক্যাপসিকাম রাঁধবেন যেভাবে

চিলি বিফ উইথ ক্যাপসিকাম অনেকেরই পছন্দের খাবার। তবে এর জন্য রেস্টুরেন্টে না গিয়ে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন। আর তা খুব সহজেই সম্ভব যদি জানা থাকে এর রেসিপি। চলুন তবে জেনে নেই-

উপকরণ : গরুর মাংস ৫০০গ্রাম, হলুদ ক্যাপসিকাম ১টি, লাল ক্যাপসিকাম ১টি, গাজর ২টি, ওয়েস্টার সস ২ টেবিল চামচ, কর্ণফ্লাওয়ার ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১/২ চা চামচ, রসুন বাটা ১/২ চা চামচ, কাঁচামরিচ ৫/৬ টি, গোলমরিচ পরিমাণমতো, বড় পেঁয়াজ ২টি, ডিম ১টি, ধনেপাতা পরিমাণ মতো।

প্রণালি : প্রথমে মাংস স্লাইস করে কেটে আদা, রসুন, গোলমরিচ, কর্ণফ্লাওয়ার ও ডিম দিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে। একটি ফ্রাই প্যানে তেল দিয়ে তা একটু গরম হলে তাতে মাখানো মাংস ভেজে নিতে হবে। আর একটি প্যানে তেল দিয়ে তাতে ২ রকম ক্যাপসিকাম, গাজর, টমেটো, কাঁচামরিচ হালকা ভেজে নিতে  হবে। এরপর এতে ভাজা মাংস আর ওয়েস্টার সস দিয়ে ১ মিনিট নাড়তে হবে। অল্প পানিতে কর্ণফ্লাওয়ার গুলিয়ে তা মাংসে ঢেলে ১ মিনিট নাড়তে হবে। সারভিং ডিশে নামিয়ে নিয়ে তার উপর ধনেপাতা ছড়িয়ে দিতে হবে।

 

নিপুনে ফাগুনের আয়োজন

শীত চলে যাচ্ছে, পাতাঝড়ার শব্দও শোনা যাচ্ছে। গাছের নতুন গজিয়ে ওঠা পাতা জানান দিচ্ছে ফাগুন এলো বলে। আর সেই সাথে রয়েছে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-ভালোবাসা দিবস। পরপর দুটি দিনে আনন্দ আর ভালোবাসায় মেতে থাকি আমরা সবাই। আর মনের আনন্দকে ভাগ করে নিতে শরীরে ওঠে ফাগুনের পোশাক।

ফাগুন এবং ভ্যালেন্টাইস ডে-র পোশাকের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে ফ্যাশন হাউজ নিপুন। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, ফ্রক এবং শিশুদের পোশাক রয়েছে এ আয়োজনে। আর পোশাকগুলোতে রঙ হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে বসন্তের রং হলুদ, সবুজ, কমলা, সরিষা হলুদ, অফ হোয়াইট এবং লাল। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ এবং শিশুদের পোশাকে এসেছে নানা ফ্লোরাল মোটিভ। সুতি, হাফ সিল্ক, লিলেন এবং তাঁতের কাপড়ের এসব পোশাকে করা হয়েছে ব্লক, অ্যাম্ব্রয়ডারি, অ্যাপ্লিক, হাতের কাজ, স্ক্রিনপ্রিন্টসহ ইত্যাদি। পোশাকের দামটাও রয়েছে হাতের নাগালেই।

পোশাকগুলো পাওয়া যাচ্ছে রাজধানীর হোসেন প্লাজা, মিরপুর জাতীয় স্টেডিয়ামের বিপরীত দিকে নিপুনের শোরুম, বসুন্ধরা দেশিদশ, সিলেট দেশিদশ, চট্রগ্রাম দেশিদশ এবং গুলশান দেশিদশের নিপুনের শোরুমে।

 

উপহার দেয়ার আগে যা খেয়াল রাখবেন

উৎসব-আনন্দে কিংবা নানা অনুষ্ঠানে সব জায়গাতেই যার দরকার পড়ে তা হলো উপহার। মেরেজ ডে থেকে শুরু করে জন্মদিন- ছোট ছোট এমন হাজারো অনুষ্ঠানে থাকে উপহার দেওয়ার বিষয়। আর এটিই আপনাকে নানাভাবে ভাবায়। কিভাবে উপহার দেবেন, কী ধরনের উপহার দেবেন, কোথা থেকে কিনবেন সবকিছু আপনার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। আপনি নিজেও বুঝে উঠতে পারেন না যে কোন উপহারটি আপনার কাছের মানুষটির জন্য ভালো হবে। তাই উপহার ঠিক করার আগে ছোট ছোট কিছু বিষয়ের উপর লক্ষ রাখুন। যা আপনাকে উপহার কিনতে ও তা নির্বাচন করতে সাহায্য করবে।

বাজেট
আপনি সবার আগে যা ঠিক করবেন তা হচ্ছে কত টাকার মধ্যে আপনি আপনার উপহারটি কিনতে চাচ্ছেন। তা কি আপনি আপনার সাধ্যর মধ্যে কিনতে পারবেন? এই খুঁটিনাটি বিষয়গুলো উপহার কেনার আগে হিসাব করে নিন। এতে আপনার বাজেট এবং উপহার দুটিরই সমন্বয় থাকবে। তাই সবার আগে বাজেট ঠিক করে নিন।

অনুষ্ঠান বুঝে উপহার
আপনি আপনার প্রিয় মানুষটিকে কোনো দিন উপলক্ষে উপহার দিচ্ছেন তা অবশ্যই মাথায় রাখুন। আপনাদের প্রথম দেখার দিন হলে এক রকম, আবার নিজেদের মধ্যকার আরো কোনো মধুর সময়ের দিন হলে সেই দিন হিসেব করে প্রিয় মানুষটিকে উপহার দিন।

রঙ
উপহার দেওয়ার সময় রঙের বিষয়টি অনেকেই খেয়াল করেন না। এটি আসলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি আপনার কাছের মানুষটিকে যখন কোনো উপহার দিতে যাচ্ছেন খেয়াল রাখুন তা যেন তার পছন্দের রঙের হয়। এতে গিফটের গুরুত্ব আর আপনার তার প্রতি ভালোবাসা আরো প্রকাশ পায়।

পছন্দ
কাউকে উপহার দিতে গেলে নিজের ইচ্ছার কথা না চিন্তা করে যাকে উপহার দিচ্ছেন তার কথা চিন্তা করুন। তার পছন্দের কথা মাথায় রেখে উপহার কিনতে যান। আর যাবার আগে যার জন্য উপহার কিনতে যাচ্ছেন তিনি কী পছন্দ করেন তা ভালো করে জেনে নিন। আপনার প্রিয় মানুষটির ছোট ছোট পছন্দের কথা মাথায় রেখে উপহার কিনুন। কারণ বড় বড় উপহার থেকে প্রিয় মানুষটি হয়তো আপনার দেওয়া ছোট ছোট উপহারেই বেশি খুশি হয়।

 

ইবাদত-বন্দেগি কবুলে যে দোয়া পড়বেন

আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম দোয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দোয়াই হলো ইবাদত।’ আর মানুষ আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া এবং ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমেই তাঁর নৈকট্য অর্জন করে থাকে।

মানুষের দোয়া ও ইবাদত-বন্দেগি যাতে আল্লাহ তাআলার দরবারে কবুল হয়, সে জন্য আল্লাহর দরবারে বেশি বেশি প্রার্থনা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে নসিহত করেছেন, তারা যেন দোয়া ও ইবাদত-বন্দেগি কবুলের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট বেশি বেশি প্রার্থনা করেন।

বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে রকম একটি দোয়া শিখিয়েছেন। তিনি একবার হজরত মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে অসিয়ত করেছেন, তিনি যেন ইবাদত-বন্দেগি কবুলের জন্য প্রত্যেক নামাজের পর এ দোয়াটি করেন-

উচ্চারণ:  আল্লা-হুম্মা আ’ইন্নি আ’-লা জিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ই’বা-দাতিক।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সাহায্য কর যেন, আমি তোমাকে স্মরণ করতে পারি, তোমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি এবং ভালোভাবে তোমার ইবাদত-বন্দেগি করতে পারি।’ (মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ, আবু দাউদ, মিশকাত)

আল্লাহ তাআলা যেন মুসলিম উম্মাহকে তাদের সব চাওয়া-পাওয়া, ইবাদত-বন্দেগি কবুল করতে বিশ্বনবির অসিয়ত করা দোয়া নিয়মিত পড়ার তাওফিক দান করেন। আমিন।

 

যে কারণে দক্ষ কর্মীরা চাকরি ছেড়ে চলে যান

প্রতিযোগীতার এই যুগে একটি ভালো চাকরি পাওয়া বেশ কঠিন। একজন চাকরিপ্রার্থীর জন্য ভালো চাকরি পাওয়া যেমন কঠিন তেমনি প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন দক্ষ কর্মী পাওয়া আরো বেশি কঠিন। প্রতিষ্ঠানের কিছু ভুলের জন্য দক্ষ কর্মীরা প্রতিষ্ঠানে ছেড়ে চলে যান। অনেক প্রতিষ্ঠান মনে করেন শুধুমাত্র অর্থের জন্য কর্মীরা চাকরির ত্যাগ করেন, বস্তুত অর্থ ছাড়াও আরো কিছু কারণেও একজন দক্ষ কর্মী প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করতে পারেন। তার মধ্যে অন্যতম কিছু কারণ নিয়ে আজকের এই ফিচার।

১। অসম্মানিত এবং তুচ্ছ হিসেবে পরিগণিত

আপনি যদি কর্মীদের মানুষের পরিবর্তে আসবাবপত্র হিসেবে গণ্য করেন, তবে তা কর্মীর জন্য অসম্মানজনক। অনেক সময় প্রতিষ্ঠান লাভ লোকসানের হিসাব নিকাশ করতে করতে ভুল যায় কর্মীরাও মানুষ। তাদেরকে আসবাবপত্রের মতো ব্যবহার করা হয়। কম বেতন দেওয়া, অসম্মান, কাজের অবমূল্যায়ন, অদক্ষ ব্যক্তির উন্নতি ইত্যাদি কর্মীদের প্রতিনিয়ত তুচ্ছ করে তোলে।

২। কর্মজীবনে উন্নতির অভাব

কোনো মানুষই একই কাজ প্রতিদিন করতে চান না।  সবাই চায় নতুন কিছু শিখতে, নতুন কিছু করতে। কর্মক্ষেত্রে উন্নতি কর্মীদের অন্যতম একটি চাহিদা। কর্মীরা আশা করেন তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজে আরো  দক্ষ করে তোলা হবে। কর্মীরা চান নিজেদের ক্যারিয়ারে উন্নতি। প্রত্যেক কর্মী আশা করেন প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করা হবে  সে অনুযায়ী কর্মীদের কাজে উন্নতি ঘটবে। কর্মক্ষেত্রে কাজের উন্নতি তাদের কাজে উৎসাহিত করে।     

৩। অসমতা

অসমতা কেউ পছন্দ করেন না। স্বজনপ্রীতি, বর্ণবাদী, বৈষম্যমূলক পরিবেশে কোনো দক্ষ কর্মী চাকরি করতে চান না। শুধুমাত্র অসমতার কারণে অনেক দক্ষ কর্মী এক বছরের মধ্যে চাকরি ছেড়ে দেন। সময় পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমান সময়ে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা অনেক। তাই  খুব বেশি সময় দক্ষ কর্মীরা বেকার থাকেন না।

৪। স্বীকৃতি বা পুরষ্কারের অভাব  

কাজের স্বীকৃতি সব কর্মীরা আশা করেনকাজের পুরষ্কারের জন্য  খুব বেশি কিছু করার প্রয়োজন তা কিন্তু নয়। একটি ছোট ধন্যবাদ কিংবা কাজের প্রশংসা হতে পারে কর্মীদের কাজের পুরষ্কার। ছোট এই কাজটুকু কর্মীদের কাজের দক্ষতা বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ।  কাজের স্বীকৃতি অভাব কর্মীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি করে,তারা নিজেকে  অকেজো, অপর্দাথ মনে করেন। তারা মনে করেন প্রতিষ্ঠানে তাদের কোনো প্রয়োজন নেই। চাকরি  ছেড়ে দেওয়ার জন্য এই কারণটি যথেষ্ট।

৫। নতুন কিছুতে নিরুৎসাহিত করা  

উদ্ভাবন এবং আইডিয়া যেকোনো প্রতিষ্ঠানের হৃদস্পন্দন।  প্রত্যেক মানুষ নতুন কিছু করতে চান। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা পরিবর্তনকে ভয় পায়। নতুন কিছু সহজে মেনে নিতে পারেন না। এইসকলে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা একই কাজ করতে করতে  আগ্রহ হারিয়ে একসময় প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

৬। অযোগ্য মানুষের পদন্নোতি

কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা ভুল বা অযোগ্য মানুষকে পদন্নোতি দিয়ে থাকেন। শুধুমাত্র সুসম্পর্কের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী নিয়োগ এবং পদন্নোতি দেন।  যেসকল প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতা বা কাজের মূল্য নেই সেসকল প্রতিষ্ঠানে দক্ষ কর্মীরা থাকতে চান না।

৭।  স্বৈরাচারী নেতৃত্ব

যেসকল প্রতিষ্ঠানে স্বৈরাচারী নেতৃত্ব বিদ্যমান সেখানে কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেন। কর্মীদের মতামত গুরুত্ব প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া উচিত। “বস ইজ অলওয়েজ রাইট” এই ধরনের নেতাদের কর্মীরা পছন্দ করেন না। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে দক্ষ কর্মীরা খুব বেশিদিন থাকেন না।

সূত্র: লাইফহ্যাক

 

ফাল্গুনের আগে ত্বকের যত্ন

শীতের বিদায়বার্তা বাজছে বাতাসে। বসন্ত এলো বলে! শীত ঠিকই চলে যাচ্ছে তবে আমাদের ত্বকে তার রুক্ষতার প্রভাব রেখে যাচ্ছে। ফাল্গুনে নিজেকে সাজাতে হলে চাই সুস্থ ও সতেজ ত্বক। আর তাই ত্বকের রুক্ষতা দূর করে লাবণ্যময় ত্বক পেতে আমাদের রয়েছে কিছু করণীয়। প্রতিদিন নিয়ম করে যত্ন নিলে সতেজ ত্বক পাবেন সহজেই।

গোসলের আগে লেমন টারমারিক ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্রিম শুধু ত্বক নরম করে না, সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের কালোভাব, সানট্যানের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। সাবান ও ক্লোরিনযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে ত্বকের যা ক্ষতি হয়, তা থেকে ত্বককে রক্ষা করতেও এই ক্রিম সাহায্য করে। হলুদের অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান ত্বকে ইনফেকশন প্রতিরোধ করে।

মুলতানি মাটি, কাঁচা হলুদ ও জলপাইয়ের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে মুখে, হাতে ও পায়ে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললেও ত্বক সতেজ হবে।

তিলের তেল, গ্লিসারিন ও গোলাপজল সমপরিমাণে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়।

সপ্তাহে একদিন মধু, গ্লিসারিন, লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে লাগাতে পারেন। এই মাস্ক পরিষ্কারের পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজারের কাজ করবে।

ত্বকে কালো দাগ হলে দাগযুক্ত স্থানে লেবুর রস ও মধু লাগান। লেবুর রস ও মধু ত্বকের কালো দাগ দূর করে।হাত-পায়ে গ্লিসারিন বা লোশন ম্যাসাজ করলে ত্বকের ভিতরে রক্ত-সঞ্চালনে হয়, ফলে ত্বক সজীব হয়ে ওঠে।

যাদের হাতের চামড়া অত্যাধিক পরিমাণে রুক্ষ, তারা ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার না করে ময়েশ্চারাইজারযুক্ত সাবান ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।

পানি ত্বকের ময়েশ্চারাইজ হিসেবে কাজ করে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে ত্বকের ময়েশ্চারাইজ বজায় থাকবে।

এ সময় প্রচুর তাজা ফলমূল ও শাক-সবজি পাওয়া যায়, এসব খেলেও ত্বক ভালো থাকে।

 

মচমচে পনির রোল

বিকেলের নাস্তা হিসেবে ঝটপট তৈরি করে ফেলতে পারেন মজাদার পনির রোল। খেতে সুস্বাদু এই আইটেমটি অতিথি আপ্যায়নেও পরিবেশন করতে পারবেন অনায়াসে।

জেনে নিন কীভাবে তৈরি করবেন পনির রোল-
উপকরণ
কাঁচামরিচ- ২/৩টি (কুচি)
পনির কুচি- দেড় কাপ
আলু- ১টি (সেদ্ধ করে চটকে নেওয়া)
পাউরুটি- ৮ টুকরা
ব্রেড ক্রাম্ব- আধা কাপ
ধনেপাতা কুচি- ২ টেবিল চামচ
প্রক্রিয়াজাত পনির- ৩ টেবিল চামচ (পাতলা করে কেটে নেওয়া)
মরিচ গুঁড়া- ১ চা চামচ
তেল- ভাজার জন্য
চাট মসলা- আধা চা চামচ
লবণ- স্বাদ মতো
প্রস্তুত প্রণালি
একটি বড় পাত্রে পাউরুটি বাদে সব উপকরণ নিয়ে ভালো করে মেখে নিন। পাউরুটির চারপাশের শক্ত অংশ ফেলে বেলে সমান করে নিন। মেখে রাখা পনিরের মিশ্রণ দিয়ে রোল করে নিন পাউরুটি। দুই পাশে কেটে সমান করে নিন। চাইলে মাঝ দিয়ে কেটে দুই ভাগ করে নিতে পারেন। চুলায় প্যান দিয়ে ডুবো তেলে ব্রাউন করে ভেজে তুলুন মচমচে পনির রোল। টমেটো সসের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

 

৩ ধাপেই ল্যাপটপ পরিষ্কার

দীর্ঘদিন ও নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ল্যাপটপের স্ক্রিনে দাগ পড়ে যায়। কি-বোর্ডেও জমে যায় ধুলাবালি। নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় এই মেশিনটি পরিষ্কার করতে খুব বেশি সময় ব্যয় হবে না।

জেনে নিন ৩ ধাপেই কীভাবে পরিষ্কার করবেন ল্যাপটপ-

  • সাদা ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে তৈরি করুন দ্রবণ। অ্যালকোহল অথবা অ্যামোনিয়া ব্যবহার করবেন না।
  • দ্রবণ স্প্রে বোতলে ভরে ল্যাপটপের স্ক্রিনের উপর হালকা করে স্প্রে করুন। ল্যাপটপ যেন বন্ধ থাকে সেদিকে লক্ষ রাখবেন অবশ্যই। স্ক্রিনে স্প্রে করে সঙ্গে সঙ্গে পাতলা ডিসপোজেবল কাপড়ের সাহায্যে চক্রাকারে মুছে নিন।
  • ল্যাপটপের কি-বোর্ড প্রথমে ব্রাশের সাহায্যে পরিষ্কার করুন। তারপর একটি চামচের উল্টো দিকে ভেজা টিস্যু পেঁচিয়ে চামচটি কি-বোর্ডের উপর হালকা করে বুলিয়ে নিন। সবশেষে হেয়ার ড্রায়ারের ধরে কি-বোর্ড শুকান। এতে আলগা ময়লা থাকলে সেটাও দূর হবে। তবে খুব কাছ থেকে হেয়ার ড্রায়ার ধরবেন না। ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের সাহায্যেও ল্যাপটপের কি-বোর্ড পরিষ্কার করতে পারেন।

তথ্য: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও উইকি হাউ

 

সুন্দর ত্বকের জন্য কয়েকটি ঘরোয়া প্যাক

সুন্দর ত্বকের জন্য প্রয়োজন নানারকম যত্নআত্তি। যত্নের অভাবে সুন্দর ত্বকও অনেকসময় ম্লান হয়ে যায়। শুধু যত্ন নিলেই হবে না, প্রয়োজন যত্ন নেয়ার সঠিক উপায়টি জানা। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে ব্যবহার করতে পারেন ঘরে তৈরি কিছু প্যাক। আর সেজন্য বাড়তি তেমন কিছুরই দরকার পড়বে না। আপনার হাতের কাছেই থাকে এমন কিছু দিয়ে তৈরি করে ফেলতে পারেন ত্বকের উপযোগী কার্যকরী কিছু প্যাক।

এক টেবিল চামচ শসার রস, এক চা চামচ লেবুর রস, এক চা চামচ হলুদের গুঁড়ো, এক চাচামচ গ্লিসারিন( শুষ্ক ত্বকের জন্য) মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কার্যকরী একটি প্যাক।

একটি পাকা কলার সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে নিন। ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ কলা ত্বকের কালো দাগ দূর করে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে দেয়।

এক টেবিল চামচ বেসন, এক টেবিল চামচ লেবুর রস, এক চাচামচ হলুদ গুঁড়ো এবং গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে ম্যাসাজ করে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ত্বকের কালো দাগ দূর করে থাকে এই প্যাকটি।

মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে লোমকূপের ছিদ্রগুলো ছোট করে দেয়। যারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান, এটি ব্যবহার করতে পারেন।

ত্বকের বলিরেখা রিংকেল দূর করতে স্ট্রবেরি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। স্ট্রবেরি ম্যাশ করে সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে নিতে পারেন। এছাড়া স্ট্রবেরির সাথে গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। প্রথমে এটি ত্বকে কিছুটা চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। কিছুক্ষণ পর তা চলে যায়। ভাল ফল পেতে সপ্তাহে দুইবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।

 

একাকিত্ব যেভাবে আপনাকে শক্তিশালী করবে

মানুষ এমন একটি প্রাণি যে একা পৃথিবীতে আসে কিন্তু একা থাকতে পারে না। মানুষ সবসময় সঙ্গী খুঁজে ফেরে। যার সাথে সে তার মনের কথাগুলো খুব সহজে খুলে বলতে পারবে। যাকে সে তার মতো করে না হলেও সেই মানুষের মতো করে তার মনে জায়গা করে দিতে পারে। কিন্তু খুব কম মানুষের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়। কখনো কখনো এমন সময় আসে যখন মানুষ একা থাকতে চায় না কিন্তু তাকে একা থাকতে হয়। আর এই একাকিত্ব মানুষকে একদিকে যেমন দুর্বল করে দেয় আবার অন্যদিকে করে তোলে শক্তিশালী।

সামলে নেয়া
আপনি যখন কোনো কারণে আপনার পরিবার থেকে দূরে থাকবেন কিংবা পরিবারের সাথে কোনো কারণে যোগাযোগ রাখতে পারবেন না তখন আপনার মাঝে চরম আকারের একাকিত্ববোধ কাজ করবে। আর এই একাকিত্ববোধ আপনাকে শুধু নিঃস্ব করবে না, আপনাকে কিছু জিনিস শিখিয়ে যাবে। আপনি জীবন কিভাবে একা একা কাটাবেন, কেউ যখন আপনার পাশে না থাকবে তখন নিজেকে কিভাবে সামলে নেবেন একাকিত্ব আপনাকে তাই শেখাবে।

যোগ্যতা
আপনি যখন একা থাকবেন, হাজারো মানুষের ভিড়ে আপনি যখন একা থাকবেন তখন আপনি নিজের যোগ্যতা অনুভব করতে পারবেন। আপনি নিজেকে কতটা সময়ের সঙ্গে উপযুক্ত করে তুলতে পেরেছেন তা অনেকাংশে নির্ভর করে আপনার এই যোগ্যতার ওপর। অনেকে অনেক কথাই বলবে। সবার কথার আড়ালে আপনি নিজেকে খুঁজে পাবেন কেবল এই একা থাকার সময়টুকুতেই।

বন্ধু
আপনার জীবনে আসল বন্ধু কে তা এই একা থাকার সময়টুকুতে বুঝতে পারবেন। আপনার বন্ধুদের আপনার জীবনে কতটুকু দরকার আর কে কে আপনাকে সত্যিকার অর্থে আপন ভাবে তা কেবল বোঝা যায় এই একা থাকার সময়টাতেই।

 

সহজেই রাঁধুন লবস্টার তন্দুরি

রেস্টুরেন্টে গিয়ে লবস্টার তন্দুরি নিশ্চয়ই অনেক খেয়েছেন। তবে চাইলে আপনি ঘরে বসেই তৈরি করতে পারেন সুস্বাদু এই খাবারটি। রেসিপি জানা নেই? রইলো রেসিপি-

উপকরণ : লবস্টার ৫০০ গ্রাম, গোলমরিচ সিকি চা চামচ, মরিচগুঁড়া আধা চা চামচ, লেবুর রস ১ চা চামচ, সরিষা বাটা আধা চা চামচ, মাখন ১ চা চামচ, অলিভ অয়েল ১ চা চামচ, ডিমের হলুদ অংশ ১ চা চামচ, বেড ক্রাম ২ টেবিল চামচ, চিজ ৫০ গ্রাম, গাজর টুকরা ১০ গ্রাম, ছোলোরি ১০ গ্রাম ও লবণ আধা চা চামচ।

প্রণালি : ফ্রাইপ্যানে মাখন ও অলিভ অয়েল অল্প গরম করুন। আস্ত লবস্টার পরিষ্কার করে লবণ, গোল মরিচ, মরিচগুঁড়া ও সরিষা বাটা দিয়ে মেরিনেট করে রাখুন। এরপর ফ্রাইপ্যানে অল্প ভেজে তুলে ফেলুন। এবার ফ্রাইপ্যানে বেডক্রাম, গাজর, ছোলোরি ও ডিমের হলুদ অংশ একত্রে মিশিয়ে সস তৈরি করে নিন। লবস্টার তৈরি করা সসের সঙ্গে মাখিয়ে চুলায় দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করে নামিয়ে ফেলুন। এরপর লবস্টারের ওপরে চিজ দিয়ে মাইক্রোওভেনে দুই মিনিট বেক করে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

দেশসেরা সবজিচাষি বেলি বেগম

শীতের সকালে গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে হেঁটে সবজিচাষি বেলি বেগম সবজি খামারে এলেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, চোখ ভরে দেখছিলেন নিজের সবুজ খেত। এক ফসলি জমি ছিল এখানে। এখন সেই বিস্তীর্ণ খেতজুড়ে সবজির সমারোহ। সবজি চাষে বিপ্লব ঘটেছে এ গ্রামে। আর এই সবজি চাষে বিপ্লবের কারণে দেশসেরা সবজিচাষি হিসেবে ৭ জানুয়ারি কৃষিতে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন বেলি বেগম।
বেলি বেগম এখন দেশের একজন আদর্শ সবজিচাষি। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে বেলি বেগমের বাড়ি। স্বামী সিদ্দিকুর রহমান। তিনিও জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক। বেলি বেগম তাঁর নিজ চেষ্টায় শূন্য থেকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন ‘বেলি কৃষি খামার’। ৪০ বিঘা জমির এই খামার বর্তমানে সবজি চাষের দেশসেরা অন্যতম আদর্শ খামার। এই খামার থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন কৃষি কলেজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী-শিক্ষক এবং ঢাকা খামার বাড়ির কৃষি কর্মকর্তারা আসেন। তাঁর এই কৃতিত্বের কাহিনি শোনালেন বেলি বেগম নিজেই।
বেলি বেগমের পুতুল খেলার বয়স পেরিয়ে যেতে না যেতেই বিয়ে হয়ে যায়। ১২ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ায় ছোট ভেবে শাশুড়ি তাঁকে খুব আদর করতেন। পরিবারে ছিল অসচ্ছলতা। থাকতেন পাকশী রেল কলোনিতে। সেখান থেকে চলে আসেন সলিমপুরের জগন্নাথপুর গ্রামে। গ্রামের বাড়ির আঙিনায় শাশুড়ি চালকুমড়ার চাষ করতেন। হাটে বিক্রির পর সেই টাকার কিছু অংশ তাঁকে দিতেন। সেখান থেকে পুঁজি বানিয়ে বেলি বেগম প্রথমে ১০টি মুরগির বাচ্চা কেনেন। কিন্তু কষ্টে তাঁর প্রাণ কেঁদে ওঠে। কারণ, ১০টির মধ্যে ৮টি বাচ্চা মারা যায়। তবু বেলি বেগম হতাশ হননি। সেই দুইটি মুরগি বড় হয়ে ডিম দেয়। খুশিতে আত্মহারা হয়ে ওঠেন বেলি বেগম। এভাবে ডিম থেকে ৪০টি মুরগির বাচ্চা পান। ডিম বিক্রি করে ২ হাজার ৫০০ টাকা পুঁজি হয়। এরপর কিছু টাকা ঋণ করে কেনেন একটি গরু। ছয়-সাত মাস রাখার পর সেটি বিক্রি করে দেন। এরপর কেনেন ২৬ হাজার টাকায় একটি গাভি। এক বছর পর গাভি একটি বাচ্চা দেয়। সেটিও ছিল গাভি। সেই দুইটি গরু থেকে প্রতিদিন সাত কেজি দুধ পাওয়া যেত। এভাবে বছর খানেক পর তাঁর জগন্নাথপুর গ্রামের বাড়ির আঙিনায় তিন কাঠা জমিতে গড়ে তোলেন একটি কুলের নার্সারি। সেখান থেকে কুলের চারা বিক্রি করতেন। বেলি বেগম তাঁর সেই নার্সারি থেকে শুরু করেন কুলের চারা বিক্রির কাজ। ২০০৭ সালে তিনি প্রথম আয় করেন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এভাবে ৪ বছরে তিনি ৪৭ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেন।
নিজ নামে কেনেন এক বিঘা পাঁচ কাঠার একটি জমি। সেখানে গড়ে তোলেন সবজি ও ফলের বাগান। তাঁর এই সবজির খামারে বর্তমানে গাজর, লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ধনেপাতাসহ নানা জাতের সবজি ও ফসল উৎপাদন হচ্ছে বিষমুক্ত পদ্ধতিতে। এখন আর বেলি বেগমকে অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না। খামার থেকে প্রতিবছর কয়েক লাখ টাকা আয় করেন।
বেলি বেগম বলেন, তাঁর এ সবজির খামার দেখে এলাকার অনেক নারী-পুরুষ উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তাঁরাও গড়ে তুলেছেন সবজির বাগান।
তবে শুধু সবজি চাষই নয়, তিনি সামাজিক বিভিন্ন কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। বেলি বেগম তাঁর স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমি তো তেমন লেখাপড়া জানি না। কিন্তু একজন নারী শিক্ষিত হওয়ার পরও স্বামী বা অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন অনেক সময়। তবে আমি কষ্ট হলেও নিজ পায়ে দাঁড়িয়েছি। আমার মতো দেশের সব নারীকে এভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানো উচিত।’ বেলি বেগম বলেন, তাঁর স্বামীর পাশাপাশি তাঁর মেয়ে স্মিতা খাতুনও তাকে এ কাজে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করে। খামারে প্রতিদিন ৪০ জন শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। স্মিতা খাতুন খামার শ্রমিকদের নির্দেশনা দেয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রওশন জামাল বলেন, বিষমুক্ত ও বাণিজ্যিকভিত্তিক সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি বেলি বেগম দেশের একজন অন্যতম নারী কৃষি উদ্যোক্তা। তাঁকে দেখে সবাই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন, এটা দেখে ভালো লাগছে।

 

নারীর মানসিক স্বাস্থ্যও অবহেলিত

পুরুষদের তুলনায় নারীরা মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন বেশি, কিন্তু চিকিৎসা পান কম। দেশের প্রধান দুটি মানসিক হাসপাতালে নারীদের জন্য শয্যার সংখ্যাও অনেক কম। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মানসিকভাবে অসুস্থ নারীর যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ার পথে বাধা—লোকলজ্জা, কুসংস্কার আর পরিবারের অবহেলা।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (এনআইএমএইচ) সাধারণ মানসিক অসুস্থতাগুলোর লক্ষণ বুঝতে এ বছর দুটি এলাকায় এক জরিপ চালায়। এতে দেখা যায়, নারী-পুরুষনির্বিশেষে জরিপে অংশগ্রহণকারী লোকজনের ৩৩ শতাংশ বিষণ্নতা, উদ্বেগ, শুচিবাই, সিজোফ্রেনিয়া বা অন্য কোনো মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন। তবে নারীদের মধ্যে এই হার বেশি। তাঁদের ৩৭ শতাংশ এমন অন্তত একটি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। পুরুষদের মধ্যে এমন সমস্যা রয়েছে ২৭ শতাংশের।

প্রকোপ বেশি বিষণ্নতার

জরিপে অংশগ্রহণকারী লোকজনের ১৩ শতাংশই বিষণ্নতায় ভুগছেন। পাবনা মানসিক হাসপাতালের সাবেক পরিচালক আহসানুল হাবীব অক্সফোর্ড হ্যান্ডবুক অব সাইকিয়াট্রির বরাত দিয়ে বলেন, দুনিয়াজুড়ে নারীদের মধ্যে বিষণ্নতার হার পুরুষের তুলনায় দ্বিগুণ। আর আত্মহত্যার ঘটনাগুলোর ৪০ শতাংশই বিষণ্নতার কারণে ঘটে থাকে।

 আহসানুল হাবীব বলেন, মাসিকের সময়, গর্ভধারণের সময়ে, প্রসবের পর ও মেনোপজ বা মাসিক বন্ধ হওয়ার সময়ে মেয়েদের বিষণ্নতাসহ নানা রকম মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা না নিলে, পরে সেগুলোই মানসিক রোগ ডেকে আনে। এভাবে পুরুষের তুলনায় নারীদের মানসিক অসুস্থতা বেশি হতে দেখা যায়।

এনআইএমএইচের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক মো. ফারুক আলম  বলেন, নারীরা সাধারণত বিষণ্নতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, হিস্টিরিয়া বা স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার মতো সমস্যায় বেশি ভোগেন। প্রজননচক্রের প্রভাব তো আছেই। মেয়েদের থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যাও বেশি হয়, যা থেকে এ ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসায় পিছিয়ে

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের হাসপাতাল। সম্প্রতি এই প্রতিবেদক হাসপাতালটিতে যান। তখন দুপুর ১২টা। বহির্বিভাগে ১০৫ নম্বর কক্ষের সামনে সাতজন রোগীর লাইন। নারী রোগী মাত্র একজন। ১০৩ নম্বর ঘরের সামনেও একই রকম দৃশ্য। এই ইনস্টিটিউট ও পাবনার মানসিক হাসপাতালের চিত্র বলছে, নারীদের সেবা নেওয়ার হার পুরুষের তুলনায় কম।

হাসপাতালের বহির্বিভাগে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরুষ রোগী এসেছেন ২১ হাজারের বেশি। তুলনায় বহির্বিভাগে ১৬ হাজারেরও কম নারী চিকিৎসা করিয়েছেন। ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা ছিল নারীর দ্বিগুণ।

পাবনা মানসিক হাসপাতালে অবশ্য বহির্বিভাগে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি এসেছেন। কিন্তু রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা নারীর সংখ্যার প্রায় চার গুণ। কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে এল শয্যাসংকটের কথা। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের হাসপাতালে মোট শয্যা আছে ২০০টি। এর মধ্যে নারীর জন্য বরাদ্দ মাত্র ৬৯টি। এসব শয্যায় শিশুদেরও রাখা হয়। পাবনা মানসিক হাসপাতালের ৫০০ শয্যার মধ্যে নারীদের জন্য আছে মাত্র ১০০টি।

ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. ফারুক আলমের মতে, পুরুষেরা যেহেতু হাসপাতালে বেশি আসেন, তাই তাঁদের জন্য বেশি শয্যা। তবে তিনি বলেন, নীতিগতভাবে বা রোগের ধরন অনুযায়ী মেয়েদের জন্য শয্যা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দরকার। তিনি লোকবল বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।

এদিকে পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক তন্ময় প্রকাশ মুঠোফোনে  বলেন, নারীদের মানসিক অসুস্থতা বেশি হওয়ায় তাঁরা হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসেন বেশি। কিন্তু শয্যা কম থাকায় অনেকে ভর্তি হতে পারেন না।

অবহেলা, লোকলজ্জা

অধ্যাপক মো. ফারুক আলম মনে করেন, বেশির ভাগ পরিবারে মূল উপার্জনকারীরা পুরুষ। তাই পুরুষের অসুখ-বিসুখে দ্রুত   ডাক্তার দেখানো হয়। মেয়েদের অসুখের কথা পরিবার আমলে   নেয় না, বিশেষ করে  শ্বশুরবাড়িতে। তা ছাড়া কোনো নারীর মানসিক সমস্যা হলে পরিবারের সদস্যরা বদনামের ভয়ে তাঁকে ডাক্তারের কাছে নিতে চান না। নারীরাও নিজেদের রোগ সম্পর্কে সচেতন নন। তাঁদের মধ্যে রোগ লুকোনোর একটি প্রবণতা থাকে।

ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে এনআইএমএইচের হাসপাতালে এসেছেন এক মা। মেয়ে তিন বছর ধরে বিষণ্নতায় ভুগছেন। কিন্তু চিকিৎসা শুরু হয়েছে দুই মাস আগে। মা বলেন, ‘মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে তো। এ জন্য চেষ্টা করেছি যাতে আমার পাড়াপ্রতিবেশী না জানেন।’ এখন অসুখের বাড়াবাড়ি হওয়ায় হাসপাতালে এনেছেন।

আরেক মা ঝিনাইদহ থেকে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। এইচএসসি পাসের পরে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিছুদিন পার হতেই মেয়ে কথা বলা কমিয়ে  দেন। এখন একদম চুপচাপ হয়ে গেছেন, শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। মেয়ের এমন অবস্থা পর্যায়ে এসেছে ছয়    বছরে। মা বলেন, ‘এত দিন বাড়িতে চিকিৎসা করে ভালো   করার চেষ্টা করছি। কিন্তু দিন দিন মেয়ের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল দেখে হাসপাতালে নিয়ে আসছি। এর জন্য অনেক টাকাও জমাতি হইছে।’

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহিত কামাল বলেন, মানসিক রোগ হলে অনেকে সেটা বুঝতে পারেন না। মেয়েদের উচিত হবে লুকিয়ে না রেখে মানসিক সমস্যার কথা খুলে বলা। আর পরিবারকে বুঝতে হবে এটি একটি রোগ। সময়মতো এর চিকিৎসা করানো দরকার।

 

চুলায় কেক তৈরি করার সহজ উপায়

কেক এখন আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার অংশ হয়ে গেছে। সকাল-বিকাল-সন্ধ্যায় কেক খাওয়া হয়ই। তবে তার বেশিরভাগই বাইরে থেকে কিনে আনা। প্লেইন কেক তৈরি করতে পারেন ঘরেও। আর তার জন্য ওভেনের দরকার পড়বে না। গ্যাসের চুলায় সুস্বাদু প্লেইন কেক তৈরি করার উপায় জেনে নেই-

উপকরণ : মাখন বা তেল ১/২ কাপ (মাখন ফ্রিজ থেকে বের করে নিবেন আগেই), চিনি ১/২ কাপ (অথবা আপনার রুচি অনুযায়ী দিন), ডিম ২টি (ফ্রিজ থেকে বের করে নিবেন আগেই), ময়দা ১ কাপ, বেকিং পাউডার ১ চা চামচ, গুড়ো দুধ ২ টেবিল চামচ, ভ্যানিলা এসেন্স ১ চা চামচ, কিসমিস, টুট্টি-ফ্রুট্টি, মোরব্বা ও বাদাম (নিজের ইচ্ছামত বা না দিলেও চলবে)।

প্রণালি : ময়দার সাথে বেকিং পাউডার মিশিয়ে চেলে নিন। ডিম ভেঙে কুসুম আলাদা করে রাখুন, এবার ডিমের সাদা অংশ বিটার দিয়ে ফোম তৈরি করুন। কুসুম, তেল/মাখন ও চিনি দিয়ে আরও ভালোভাবে বিট করুন। ভ্যানিলা এসেন্স ও গুড়ো দুধ দিয়ে বিট করে ভালো করে মিশিয়ে দিন এবার চালা ময়দা মিশিয়ে দিন ডিম ময়দার মিশ্রণে এক্ষেত্রে কখনোই বিটার ব্যবহার করবেন না। ময়দা দেওয়ার পরে যে দিকেই নাড়ুন না কেন একদিকেই নাড়বেন, নাহলে ফোমটা বসে যাবে এবং কেক ফুলবে না। এবার পছন্দমতো কিসমিস, বাদাম ইত্যাদির গায়ে অল্প ময়দা/কর্নফ্লাওয়ার লাগিয়ে কেকর মিশ্রণে মিশিয়ে দিন এবং বেকিং প্যানে অথবা চুলার দেবার জন্য সুবিধা মতো একটি পাত্রে ঢেলে নিন(পাত্রের ভিতরে মাখন মেখে নিবেন আগেই)।

একটি সসপ্যান বা হাঁড়ি নিন। স্টিলের স্ট্যান্ড থাকলে স্টিলের/লোহার স্ট্যান্ড প্যান এর উপর বসিয়ে দিন আর না থাকলে বালি দেড় থেকে ২ ইঞ্চি পুরু করে প্যানের ভিতরে দিন। মাঝারি আঁচে পাত্রটি গরম করুন। এবার কেকের বাটি স্ট্যান্ড অথবা বালির উপর বসিয়ে অল্প আঁচে সসপ্যান বা হাঁড়ি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। ১ ঘণ্টা পর টুথপিক দিয়ে কেক হয়েছে কিনা দেখুন। না হলে আরও ১৫/২০ মিনিট বেক করুন।

 

ছোট বাড়ির সুবিধা

বাড়ি মানেই শান্তির জায়গা। সারাদিন আপনি যতই ক্লান্ত থাকুন না কেন, কাজ শেষে যখন বাড়ি ফিরবেন তখন দেখবেন আপনার সারা দিনের কষ্ট মিলিয়ে গেছে। তবে বাড়ি যদি বিশাল হয় তবে তা দেখে শুনে রাখা কিছুটা কষ্টের। আর যদি ছোটখাটো হয় তবে যেমন সুবিধা আছে তেমনই হাজারটা অসুবিধা। বড় বাড়িতে যেমন সবাই খুব মজা করে আরাম করে থাকা যায়, ছোট বাড়িতে তেমনটা থাকা যায় না। আবার যাদের ছোট পরিবার তাদের জন্য কেবল ছোট বাড়িই ভালো। এছাড়াও আরো সুবিধা আছে এই ছোট বাড়িতে থাকার।

খরচ
ছোট বাড়িতে থাকা মানে খরচ কমে যাওয়া। একটি বাড়ি পরিষ্কার রাখতে কিংবা পরিবারকে চালাতে খরচের বিষয়টি কাজ করে। বাড়ি ছোট হলে টাকা কম খরচ হয় আর বাড়ি বিশাল হলে খরচও হয় অনেক।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা
বাড়ি বড় হলে পরিষ্কার করতে খুব কষ্ট হয়ে পরে। কিন্তু বাড়ি ছোট হলে তা পরিষ্কার করা খুব সহজ কাজ। আপনি কিংবা আপনার পরিবারে যারা আছেন তারা সবাই মিলে দিন কিংবা সময় ভাগাভাগি করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজটি সেরে নিতে পারেন।

জিনিসপত্র খুঁজে পাওয়া
আপনি যখন বড় একটি বাড়িতে থাকবেন তখন আপনার জিনিসপত্র নানা জায়গায় থাকবে। অন্যদিকে আপনি যখন ছোট বাড়িতে থাকবেন তখন আপনার ঘরে আসবাবপত্রও কম থাকবে এবং আপনি আপনার জিনিসপত্র খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রাখতে পারবেন। তাই নিজের জিনিসপত্র খুঁজে পেতে আপনার ছোট ঘরটি সবচেয়ে ভালো জায়গা।

সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা
আপনি যখন ছোট পরিসরের বাড়িতে থাকবেন তখন আপনি আপনার শোবার ঘর থেকে শুরু করে আপনার ড্রয়িং রুম এবং আপনার বারান্দা সব কিছু আপনি খুব পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখতে পারেন। এতে আপনার ঘরটি যেমন খুব অল্পের মাঝে সুন্দর লাগবে তেমনই আপনিও আপনার ঘরে শান্তিতে থাকতে পারবেন।

 

সৃষ্টির নামে কসম মারাত্মক অপরাধ

কসম দ্বারা সাধারণত আমরা প্রতিজ্ঞা বা হলফ করাই বুঝি। আর ইসলামি শরিয়তে কসম বলতে আল্লাহ তাআলার নামে কসম করাকেই বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য কারো নামে (আল্লাহর সৃষ্টির নামে) কসম করা শিরক বা কুফরি।

কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কাজের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার নামে কসম করে এবং তা বাস্তবায়ন না করে তবে সে গোনাহগার হিসেবে পরিগণিত হবে।

কসমকারী ব্যক্তি কসম বাস্তবায়ন না করলে ওই ব্যক্তিকে কসমের কাফফারা দিতে হবে।  তাছাড়া ইসলামি শরিয়তে কসম করার নিয়ম রয়েছে। কসমের শব্দগুলো হবে এমন-

‘উকসিমু বিল্লাহ; ওয়াল্লাহ; বিল্লাহ; তাল্লাহ ইত্যাদি শব্দ দ্বারা কসম করা। অর্থাৎ ‘আল্লাহ তাআলার নামে কসম করা।’

সাধারণ অর্থে যদিও কসম করা ঠিক নয়। তারপরও মানুষ কথায় কথায় অজ্ঞতাবশতঃ কসম করে বসে। শুধু তাই নয়, বরং মানুষ আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য ব্যক্তি ও বস্তুর নামে ‍শিরকি ও কুফরি কসম করে থাকে।

যেমন বলে থাকে যে, ‘পশ্চিম (কাবার) দিকে মুখ করে কসম; মসজিদে গিয়ে বা স্পর্শ করে কসম; ছেলে-মেয়ের নামে বা স্পর্শ করে কসম; মা-বাবাসহ অন্যান্য গাইরুল্লাহর নামে কসম। যা শিরক ও কুফরি কাজ।

প্রকৃত পক্ষে সৃষ্টি জগতের কসম শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য নির্ধারিত। যা কুরআনের বহু জায়গায় অনেকবার উল্লিখিত হয়েছে। অথচ মানুষ সৃষ্টির কসম করে থাকে।

একান্ত প্রয়োজনে যদি কসম করতেই হয় তবে কমস করতে হবে ইসলামি রীতি অনুযায়ী শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার নামে। জ্বিন-ইনসান তথা গাইরুল্লাহর নামে কসম করা কুফরি তথা শিরকে আসগার বা ছোট শিরক। এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে-

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর (আল্লাহ ব্যতীত অন্যের) নামে হলফ বা কসম করলো সে কুফরি বা শিরক করলো। (তিরমিজি, মুসতাদরেকে হাকিম)

পরিশেষে…
যদি কোনো কারণে কসম করতেই হয় তবে শুধুমাত্র আল্লাহর নামেই কসম করা। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করা কুফরি বা শিরক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কসম করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।

একান্তই যদি কসম করতে হয় তবে গাইরুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করা থেকেও বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

শিশুর নৈতিক শিক্ষায় অভিভাবকের করণীয়

শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। বড়রা যা করে; তা দেখে দেখে শিশুদের মাঝে সে অভ্যাস গঠন হয়। তাই শিশুদের সঙ্গে পরিবারের সদস্য,বাবা-মা অথবা অভিভাবকের আচরণ মার্জিত, সুন্দর এবং শিক্ষণীয় হওয়া আবশ্যক।

শিশুদের সঙ্গে এমন কোনো আচরণ করা যাবে না; যা তাদেরকে বিপথগামী করে বা তাদের কচি মনে কোনো অযাচিত প্রশ্নের উদ্রেক হয়।

এ বিষয়ে জনপ্রিয় অনলাইন ইলমফিড ডটকম-এ (www.ilmfeed.com) মুসলিম শিশুদের বেড়ে ওঠায় অভিভাবকদের করণীয় সম্পর্কিত ১৮টি টিপস লিখেছেন মুফতি ইসমাইল মেন্‌ক। যা এখানে তুলে ধরা হলো-

১. সন্তানের প্রশংসা করুন যদিও সে কোনো কাজে ১০-এর মধ্যে ৪ পায়। এমনকি অন্যদের সামনেও সন্তানের প্রশংসা করুন।

২. আপনার সন্তানকে কখনোই ভাবতে দিবেন না যে, তার কাজ করার যোগ্যতা নেই। কখনোই আপনার সন্তানের সামনে অন্যের সন্তানকে বড় করে না দেখা বা দেখানো।

৩. সবসময় আপনি সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন। কথা বলুন মায়া-মমতা ও স্নেহের সঙ্গে। যেমন তাকে বলুন- ধন্যবাদ, শুকরিয়া ইত্যাদি। কখনো তাদের সঙ্গে অভদ্র ভাষা বা শব্দ ব্যবহার করবেন না। যেমন- কোনো জিনিস চেয়ে বলবেন না যে, দে, যা ইত্যাদি। বরং তাদের সঙ্গে বিনয় ও নম্রতার সঙ্গে বলুন- দাও, যেতে পার, খেয়ে নাও ইত্যাদি।

৪. আপনার সন্তান যখন বড় হতে থাকবে তখনো ছোটবেলার মতো তাকে সমানভাবে সঙ্গ দিন। তারা বড় হয়েগেছে ভেবে তাদের খেলাধূলাসহ সব কাজ থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখা থেকে বিরত থাকুন। যদি তাদের এড়িয়ে চলেন, তবে সে মানসিকভাবে বিরূপ মনোভাবাপন্ন হয়ে যাবে।

৫. সিদ্ধান্ত গ্রহণে সন্তানকে সহায়তা করুন। সে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সঠিক উপায় আপনার কাছ থেকেই শিখবে। তাকে প্রতিশ্রুতি বা দিক-নির্দেশনা দিন, গাইড বা সঠিক নির্দেশক হিসেবে তাদের সঙ্গে কথা বলুন। যদি তারা কোনো কিছু করতে চায় বা কোথাও যেতে চায় তবে তাদের পরিকল্পনায় সহযোগিতা করুন।

৬. আপনি যখন কোনো কাজের সিদ্ধান্ত নিবেন তখন সন্তানের মতামত জানুন। যেমন- আপনি একটি গাড়ি ক্রয় করবেন। সেক্ষেত্রে সন্তানের কাছ থেকে জানতে চেষ্টা করুন কি ধরণের গাড়ি তার পছন্দ ইত্যাদি। এতে তাদের মাঝে পরমর্শসূলভ অভ্যাগ গড়ে ওঠবে।

৭. যদি সম্ভব হয় ঘরের একটা জায়গা তাদের জন্য নির্ধারিত করে দিন। যেখানে তাদের অর্জনগুলো তারা প্রদর্শন করতে পারে। সেখানে তাদের নাম লিখা থাকবে। যেমন- কোনো প্রতিযোগিতায় অর্জিত স্মারক বা উপহার সামগ্রী প্রদর্শন করে রাখার জন্য একটি শোকেস বা জায়গা নির্ধারণ করে দিন। যাতে তারা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে যে, তারাও ভালো কিছু করতে পারে।

৮. আপনার সন্তানকে নামাজের শিক্ষা দিন। গা ছাড়া ভাবে অর্থাৎ অবহেলা করে তাদের নামাজের কথা না বলে বরং জোর দিয়ে বলুন- তুমি নামাজ পড়; তোমার নামাজ পড়া আবশ্যক। আপনার এ দায়িত্ববোধ আপনার সন্তান জীবনভর মনে রাখবে।

আপনার সন্তানের বয়স যখন ৭ বছর হবে তখন থেকেই তাকে নামাজের তাগিদ দিন। যখন এ বয়সে তাকে নামাজের তাগিদ দিবেন তখন তারা বয়ঃসন্ধিকালে সে এ কথা উপলব্দি করবে যে, তাদের জন্য নামাজ পড়া জরুরি।

৯. আপনার সন্তানকে মতামত প্রদানের বা দ্বিমত পোষনের পদ্ধতি শিক্ষা দিন। তাদেরকে সামনে কখনো কথায় কথায় শপথ বাক্য বলা যাবে না। অথবা আক্রমনাত্মক কোনো শব্দ ব্যবহার করা যাবে না; যা তাদের মধ্যে এর কুপ্রভাব পড়ে। কেননা সন্তানরা সব সময় অনুকরণ প্রিয়।

১০. আপনার সন্তানের জানার আগ্রহকে বাড়িয়ে দিতে প্রশ্ন করার প্রতি উৎসাহিত করুন। সন্তানের করা প্রশ্নের সুন্দর তথা ইতিবাচক উত্তর দিন। অন্যথায় তারা ভুল উত্তর গ্রহণের প্রতি ঝুঁকে পড়বে। তাদের প্রত্যেকটি প্রশ্নের প্রসংশা করুন।

১১. সব সময় সন্তানের সঙ্গে করা প্রতিটি ওয়াদা বা প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করুন। সন্তানের সঙ্গে এমন কোনো ওয়াদা বা প্রতিজ্ঞা করবেন না, যা করতে আপনি অপারগ।

১২. আপনার সন্তানকে শিখান, কিভাবে একটি দলের সদস্য হিসেবে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হয়। দলগতভাবে সফলতা লাভ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রতিযোগিতার পরিবর্তে তার জীবনের সুপ্ত প্রতিভা খুঁজতে সহায়তা করে।

১৩. আপনার সন্তানের জন্য দোয়া করুন। এমনকি যদি আপনার সন্তান পথহারা হয়ে যায় বা বিপথে যায়। তারপরও সন্তানের কল্যাণে দোয়া করুন।

১৪. সন্তানকে বলুন- তুমি যদি কোনো বিষয়ে সফল না হও। তথাপিও হতাশ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাকে শিখান কিভাবে ব্যর্থতার বিপরীত সফল হওয়া যায়।

১৫. যদি আপনি কোনো ভুল করে বসেন তবে তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করুন। তাদেরকে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি শিক্ষা দিন। এ ভুল নিয়ে তার সঙ্গে বাড়াবাড়ি না করাই উত্তম। তাহলে সন্তান অন্যের সঙ্গে এর রকম বাড়াবাড়ি আচরণ করা শিখবে। তার মধ্যে অনুশোচন ফিরে আসবে।

১৬. বাড়িতে তার ভালো কাজের জন্য আপনার সন্তানকে পুরস্কৃত করুন। তার ভালো কাজের ব্যাখ্যা করে জানিয়ে দিন যে, তাকে কোনো ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করেছেন।

১৭. আপনার সন্তানের সাধ্যানুযায়ী পবিত্র কুরআনের কিছু অংশ পড়তে তাকে প্রশিক্ষণ দিন। এবং প্রতিদিন কুরআন পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করুন।

১৮. আপনার সন্তানকে কতবেশি ভালো বাসেন তা তাকে বার বার বলুন। তাদেরকে বুঝান তারা আপনার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাদেরকে জড়িয়ে আদর করুন। তাঁদেরকে চুমু খান। এটা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব অভিভাবককে তাদের শিশু সন্তানের সঙ্গে সব সময় উত্তম আচরণ ও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে তাদের নৈতিক শিক্ষা ও উন্নত মনোভাব গঠনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

স্মার্ট মানুষেরা যে কাজগুলো কখনো করে না

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি পদক্ষেপই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কোন পদে কোন সিদ্ধান্ত নেবেন তার উপর ভিত্তি করে আপনার পার্সোনাটিটি অনুমান করা হয়। আপনি যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন তাহলে যেমন সাহসিকতার খেতাব পাবেন ঠিক তেমনই আপনার চারপাশের মানুষগুলো আপনাকে নানাভাবে অনুসরণ করবে। আপনার কাজের মাধ্যমেই প্রমাণ পাওয়া যাবে আপনি কতটুকু স্মার্ট।

টাকা বাঁচানোর বুদ্ধি
আপনি যদি স্মার্ট পার্সোনালিটির মানুষ হয়ে থাকেন তবে আপনি কখনো কাউকে দেখিয়ে টাকা বাঁচাতে যাবেন না। আপনি যতটা খরচ করবেন ঠিক কিভাবে তা আপনি আপনার ঝুলিতে নিয়ে আসবেন তার চিন্তা করবেন। আপনি খরচ করতে যতটা না ভাববেন তার থেকে ভাববেন আয়ের উৎস বের করা যায়।

অন্যর ওপর আশা না করা
আপনি যখন কোনো ব্যবসা কিংবা কাজ করতে যাবেন আপনাকে কারো না কারো ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আর আপনি যখন কারো ওপর চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করবেন ঠিক তখনই সমস্যার সৃষ্টি হবে। আপনি নানাভাবে ঠকলেও কাউকে কিছু বলতে পারবেন না। কিন্তু যাদের মাঝে স্মার্টনেস বিষয়টি আছে তারা কখনো অন্যর ওপর আশা করবে না । সবসময় নিজের দিক থেকে আগে চিন্তা করবে। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সময় নেবে।

দ্বায়িত্বহীনতা
অনেকের মাঝেই এই ব্যপারটি থাকে যে সময়ের কাজ সময়ে না করা। কিন্তু যারা স্মার্ট তারা সময়ের কাজ ঠিক সময়ে করে ফেলে। কারণ এতে আপনাকে দিয়ে যে কাজ করাচ্ছে সে যেমন আপনার ওপর খুশি হবে তেমনই আপনি আগাম একটা কাজ পেয়েও যাবেন।

কথা বুঝে বলা
কথা এমন একটি বিষয় যা একবার বললে আর ফেরত নেয়া যায় না। তাই যারা স্মার্ট তারা কথা কম বলে। এবং কথা বলার আগে ভেবে নেয় যে কথা বলাটা ঠিক হচ্ছে কি না।

 

রাজধানীতে আজ থেকে বিয়ে উৎসব

‘বিয়ের বাজার দেশেই’ স্লোগান নিয়ে আজ শুক্রবার থেকে রাজধানীতে শুরু হচ্ছে বিয়ের উৎসব। আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র আজ সেজে উঠবে বিয়েবাড়ির সাজে এই উৎসব। বিয়ের গেট, বিয়ের পোশাক, গয়না, দাওয়াতপত্র, খাবার, গায়েহলুদ, গৃহসজ্জা, প্রসাধন ইত্যাদি সবই থাকবে এই উৎসবে।

উৎসবে বিয়ে আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত সেরা ব্র্যান্ড আর দেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে থাকবেন বিশেষজ্ঞরা। শাড়িটা কোন রঙের হবে, বরের শেরওয়ানিটাই বা কী হবে, বর-কনের মঞ্চটা কেমন হবে এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে বিয়ে উৎসবে থাকবে নামি দামি পরিচিত সেলিব্রেটিরা।

বিয়ের আগে ত্বকের পরিচর্যা কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে পরামর্শ দিতে উপস্থিত থাকবেন রূপ বিশেষজ্ঞরা, বিয়ের ছবি তোলার প্রস্তুতি নিয়ে জানাবেন আলোকচিত্রীরা, পোশাক বিষয়ে পরামর্শ দেবেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা।

আয়োজকদের একজন হাসান জানান, উৎসবে থাকবে বিয়ের পোশাক, গয়না, দাওয়াতপত্র, খাবার, গায়েহলুদ, গৃহসজ্জা, প্রসাধন, রূপসজ্জা, হানিমুনে বেড়ানো এমন নানা অনুষঙ্গের সেরা ব্র্যান্ডের স্টল ও প্যাভিলিয়ন। আর উৎসব উপলক্ষে সবকিছুতেই থাকবে ছাড় আর উপহারের ছড়াছড়ি।

 

টাকি মাছের ভর্তা তৈরির সহজ রেসিপি

টাকি মাছের ভর্তা একটি জনপ্রিয় পদ। গরম ভাতের সঙ্গে এর জুড়ি মেলা ভার। খেতে সুস্বাদু ও সহজেই তৈরি করা যায় বলে এটি রয়েছে অনেকেরই পছন্দের খাবারের তালিকায়। চলুন জেনে নেই এর রেসিপি-

উপকরণ : টাকি মাছ ১ কাপ, পেঁয়াজ স্লাইস ৩ টেবিল চামচ, আদা রসুন, বাটা ১ চা চামচ, পেঁয়াজ পাতা ২ টেবিল চামচ, জিরা বাটা ১ চা চামচ, রসুন মিহি ২ টেবিল চা, ধনে বাটা ১ চা চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, হলুদ বাটা ১/২ চা চামচ, মরিচ বাটা ১ /২ চা চামচ।

প্রণালি : মাছ সিদ্ধ করে কাটা বেছে ১ কাপ মেপে নিন। তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা বাদামী রং করে ভেজে বাটা মসলা ও সামান্য পানি এবং রসুন দিয়ে কষান। কষানো হলে পেয়াজপাতাসহ কচি পেঁয়াজ দিয়ে নাড়ুন। মাছ দিয়ে নেড়ে নেড়ে ভাজুন। লবণ দিন। মাছ হালুয়ার মতো তাল বাঁধলে নামান। মাছ যেন ঝুরি এবং শুকনা না হয়। এরপর চাইলে হাত দিয়ে গোল গোল বল বানিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার টাকি মাছের ভাজা ভর্তা।

 

সরিষার তেলের যত উপকারিতা

আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের তালিকায় যে তেলটি না থাকলেই নয় তা হলো সরিষার তেল। সরিষার তেল যেমন প্রয়োজনীয় তেমন উপকারীও। সরিষার তেল উদ্দীপক হিসাবে পরিচিত এবং অন্ত্রে পাচক রস উত্পাদনে  সাহায্য করে, তাই হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। এছাড়াও একই প্রক্রিয়ায় আমাদের সিস্টেমে পাচক রস উৎপাদন বাড়িয়ে  ক্ষুধা সহায়তা করে।

বিভিন্ন ভোজ্য তেলের উপর করা একটি তুলনামূলক সমীক্ষায় দেখা যায় সরিষার তেল ৭০ শতাংশ হৃৎপিণ্ডসংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমায়। সরিষার তেল ব্যবহারে শরীরে কলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায় যা হৃদরোগের সম্ভবনা হ্রাস করে।

এছাড়াও সরিষা তেল ঠান্ডা এবং কাশি উপশমে সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে যখন  বুকের সম্মুখে প্রয়োগ বা তার দৃঢ় সুবাস নিঃশ্বাসের মাধমে নেয়া হয়, এটা শ্বাসযন্ত্রের নালীর থেকে কফ অপসারণেও সাহায্য করে।

সরিষার তেল তামাটে এবং কালো দাগ দূর করে স্বাভাবিক ত্বক ফিরিয়ে দিতে সহায়তা করে। এটি সন্ধিস্থলের ব্যথাও হ্রাস করে।

ঠোঁটের শুস্কতা দূর করে এবং ত্বকের প্রদাহ দূর করে। সরিষার তেল সামান্য কাটা ছেঁড়ায় এন্টিসেপটিক এর কাজ করে।

সরিষার তেল ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং প্রদাহবিরোধী হিসাবে কাজ করে।

চুল পড়া প্রতিরোধ করে, খুসকি দূর করে এবং চুল বৃদ্ধি করে।