banner

রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ইং, ,

Monthly Archives: May 2025

 

সহজেই তৈরি করুন আচারি চিকেন

চিকেনের আইটেমগুলোর মধ্যে দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে যে খাবারটি সেটি হলো আচারি চিকেন। আচার তো সব বাসায়ই থাকে। আর খাবারের তালিকায় চিকেনও থাকে সপ্তাহের দু-তিন দিন। তাই সহজেই তৈরি করতে পারেন আচারি চিকেন। গরম ভাত, খিচুড়ি কিংবা পোলাওয়ের সঙ্গে খেতে বেশ লাগবে। রইলো রেসিপি-

উপকরণ : মুরগি এক কেজি (৮ টুকরা), টক দই তিন টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়া এক চা চামচ, হলুদ গুঁড়া এক চা চামচ, ধনে ও জিরা গুঁড়া এক চা চামচ, পাঁচফোড়ন আধা চা চামচ (আধা ভাঙা), পেঁয়াজবাটা তিন টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ৩ টেবিল চামচ, আদাবাটা এক টেবিল চামচ, রসুনবাটা দুই চা চামচ, কাঁচামরিচ কুচি তিন/চারটা, শুকনা মরিচ দুটি, মৌরি গুঁড়া আধা চা চামচ, পাঁচফোড়ন গুঁড়া আধা চা চামচ, তেজপাতা দুটি, সরিষার তেল আধা কাপ, লবণ পরিমাণমতো, আমের আচার দুই-তিন টেবিল চামচ, সরিষাবাটা আধা চা চামচ, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি : আচার পাঁচফোড়ন, তেজপাতা, শুকনা মরিচ, কাঁচামরিচ, বেরেস্তা, মৌরি গুঁড়া ও অর্ধেক তেল বাদে অন্যসব উপকরণ দিয়ে মুরগির মাংস মেখে এক ঘণ্টা মেরিনেট করুন। এবার কড়াইতে তেল দিয়ে গরম হলে পাঁচফোড়ন, তেজপাতা ও শুকনা মরিচের ফোড়ন দিন। এবার মাখানো মাংস কড়াইতে ঢেলে নেড়েচেড়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন অল্প আঁচে।

১০/১৫ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ভালো করে কষিয়ে নিন। এবার আচার, বেরেস্তা, পাঁচফোড়ন গুঁড়া, মৌরি গুঁড়া দিয়ে নেড়েচেড়ে আবার ঢেকে দিন। পানি দিতে হবে না। মাংসের পানিতেই সেদ্ধ হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে তেলের উপর উঠে এলে কাঁচামরিচ কুচি দিয়ে পাঁচ মিনিট রেখে চুলা বন্ধ করে দিন। এবার পরিবেশন ডিশে ঢেলে নিন।

 

যেসব স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা উচিত নয়

মানুষের কষ্ট হয়ে, মানুষ মন্দ কথা বলতে বাধ্য হয় এমন সকল স্থানে প্রস্রাব পায়খানা করা উচিত নয়। চলার পথে, গাছের ছায়ায় সেখানে মানুষ বসে বিশ্রাম নেয় কিংবা পুকুর, ঝর্না, পানির হাউজ ইত্যাদি স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। কারণ এতে করে সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়। (আবু দাউদ) অনুরূপভাবে যেখানে বসে সাধারণ মানুষ গল্প করে সেখানেও প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (ফাতহুল আযীয শরহে সুহাযাব ১:৪৬১)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অনুগ্রহ শুধু মানব জাতীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি ছিলেন সারা জাহানের রহমত। তাই তার ছিলো সকল প্রকার সৃষ্টির মাঝেই দয়াপূর্ণ দৃষ্টি। এই জন্য তিনি যে কোনো ছিদ্রে প্রস্রাব-পায়খানা করতে নিষেধ করেছেন (আবু দাউদ) কারণ এতে ছিদ্রে বসবাসরত কীট-পতঙ্গের কষ্ট হবে। তা ছাড়া এর পরিণতি অনেক সময় মানুষকেও ভোগ করতে হয়।

ফলবান গাছের কাছেও প্রস্রাব করা নিষেধ (ফাতহুল আযীয ১.৪৬৫) কবরে এবং কবরের পাশে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। মসজিদে প্রসাব-পায়খানা করা হারাম। যদি বিশেষ কোন পাত্রে করা হয় এবং মসজিদ নষ্ট না হয় তবুও (আল ফিকহুল ওয়া আদিল্লাতুহু ১.২০৬)। তবে বিশেষ প্রয়োজনে যদি ঘরে কোনো পাত্র রাখা হয় এবং তাতে প্রস্রাব- পায়খান করা হয় তাহলে সেটা জায়েজ আছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাছেও অনুরূপ পাত্র রাখা থাকত (আল মুগনি, ১১০)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত জোর দিয়ে বলেছেন, স্থির পানিতে কখনও প্রস্রাব করবে না, (বুখারি) এর অর্থ এই নয় যে প্রবাহমান পানিতে প্রস্রাব করা যাবে। এর অর্থ হলো-বদ্ধ ও কম পানিতে প্রস্রাব করা হলে তা সর্বাবস্থায়ই নাপাক হয়ে যাবে। এই কারণে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। বেশি পানিতে প্রস্রাব কারা মাকরুহ। আর যদি অধিক হারে প্রস্রাব করার কারণে পানির স্বাভাবিক স্বাদ, রঙ ও গন্ধ বিকৃত হয়ে যায় তাহলে অধিক পানিও নাপাক হয়ে যাবে। (আল মুগনি: ১:১০৮) অনুরুপভাবে গোসল খানাতেও প্রস্রাব পায়খানা করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। (আবু দাউদ)।

 

এই শীতে যেভাবে নেবেন কাপড়ের যত্ন

বছর ঘুরে আবারও এল শীতকাল। শুরু হয়েছে গরম কাপড় কেনার ধুম। অথবা যারা আর্থিক ভাবে একটু অসচ্ছ্বল, তারা পুরনো কাপড় ধুয়ে পরছেন এই শীতে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, শীত চলে গেলে আমরা যেন গরম কাপড়ের কথা ভুলেই যাই। আমরা যে ভুলটা করি তা হল শীতের কাপড়ের যত্ন না নিয়ে হেলাফেলা করে রেখে দিই পরের বছরের জন্য। ওদিকে যত্নের অভাবে আপনার শখের শীতের পোশাক তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। এ দেশে তেমন হাড়কাপানো শীত খুব কম সময়ের জন্যই পড়ে। এ সময় ঘাম কম হয় বলে কাপড় খুব একটা ধোয়ার প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া এই সময় সূর্যের তাপ কম থাকায় কাপড় সহজে শুকায় না। তাই শীতের পোশাক পরার পরে তা কিছুক্ষণের জন্য বাতাসে মেলে দেওয়া ভালো।

এমন অনেক ব্যাপার আছে, যেগুলো মাথায় রাখলেই আপনার শীতের পোশাক থাকবে পরের বছর পরার উপযোগী। তাই চলুন জেনে নিই কীভাবে যত্ন নিতে হবে শীতের পোশাকগুলোর-

উল
উলের পোশাক ধোয়ার ক্ষেত্রে বেশি যত্নশীল হওয়া উচিত। ডিটারজেন্ট বা লিকুইড ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা ভালো। ডিটারজেন্ট ভালো করে পানির সাথে মিশিয়ে ২০/৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে উলের কাপড় হালকা হাতে কেঁচে ধুয়ে ফেলতে হবে। মনে রাখতে হবে বেশি জোরে কাঁচা বা নিংড়ানো যাবে না। উলের কাপড় ওয়াশিং মেশিনেও ধোয়া যাবে না। উলের কাপড়ে যদি কোনো দাগ পড়লে ধোয়ার আগে ঐ দাগের উপর লেবু ঘষে নিতে হবে। উলের পোশাকের ক্ষেত্রে একটু বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। এই কাপড়ের পোশাকে ধুলা-ময়লা লাগে বেশি। তাই ব্যবহারের পর ভালো মতো ঝেড়ে রাখতে হবে। উলের কাপড় ধোয়ার পর তা না ঝুলিয়ে সমতল স্থানে শুকাতে দিতে হবে। তা নাহলে এর আকৃতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ফ্লানেল ও পশমি
ফ্লানেল কাপড় ধুতে ডিটারজেন্ট বা লিকুইড ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন। ভালো করে পানির সাথে মিশিয়ে ২০/৩০ মিনিট  ভিজিয়ে রেখে কেঁচে ধুয়ে ফেলা যায়। এ কাপড় ওয়াশিং মেশিনে ধোয়ার আগে কিছুক্ষণ ভিনেগার পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। কারণ ফ্লানেল কাপড়ের বাড়তি রং থাকলে তা চলে যাবে।

পশমি কাপড় ধোয়ার জন্য আপনাকে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এই কাপড় ওয়াশিং মেশিনে ধোয়া যায় না। শুধু লিকুইড ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুতে হয়। তার জন্য আপনাকে মাত্র ৫/১০ মিনিট ভিজিয়ে নিয়ে কচলে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং পানি চেপে চেপে ফেলতে হবে। পশমি কাপড় গুলোকে কখনো অন্য কাপড়ের সাথে ভিজানো বা ধোয়া যাবে না। তাহলে পশম গুলো অন্যান্য কাপড়ে লেগে যাবে।

চাইলে ড্রাই ওয়াশ করাতে পারেন। কাপড় ধোয়ার পর টিস্যু পেপার দিয়ে মুড়িয়ে ভাজ করে পলিথিনে করে বা হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। গরম কাপড়ের মধ্যে সাধারণত পশম, ফ্লানেল ইত্যাদির পোশাক তৈরি হয়ে থাকে। এইসব উপাদানের পোশাক খুব সহজে পোকায় ধরতে পারে। তাই অব্যবহৃত বা কম ব্যবহৃত পোশাক রোদে শুকিয়ে ন্যাপথলিনের সাহায্যে সংরক্ষণ করা যায়।

পশম কাপড় শ্যাম্পু দিয়ে ধুলে উজ্জ্বলতা অটুট থাকে। পশমের কাপড়ে ঘামের দাগ লাগলে তা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললেই হয়। পুরনো ঘামের দাগ ও রঙিন কাপড়ের দাগ উঠাতে অ্যামোনিয়া হাইড্রোজেন পার অক্সাইড এবং সোডিয়াম হাইপো সালফাইডের দ্রবণে পরপর ভিজিয়ে শুকাতে হবে। অথবা বোরাক্স পাউডার প্রয়োগ করে রোদে শুকাতে হবে।

লেদার
লেদারের জ্যাকেট বারবার ওয়াশ করা যায় না। তাই মাঝে মাঝে অল্প রৌদ্রে দিয়ে ব্রাশ করে ঝেড়ে ফেলতে হবে। বছরে ১/২ বার ড্রাই ওয়াশ করানোই ভালো। অবশ্যই লেদারের জ্যাকেট হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। অনেক দিন ব্যবহার না করার ফলে জ্যাকেটের জিপার জ্যাম হতে পারে। জিপারের চেইনে মোম বা নারিকেল তেল দিয়ে ঘষে নিলে সহজ হয়ে যাবে।

কাশ্মিরি
কাশ্মিরি শাল বা সোয়েটার লিকুইড ডিটারজেন্ট দিয়ে ঘরেই ধোয়া যায়। তবে হালকা ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে পানি বের করতে হবে এবং ছায়া যুক্ত স্থানে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে শুকাতে হবে। ইস্ত্রি করার সময় একটি তোয়ালে বা সুতির কাপর বিছিয়ে নিয়ে তার উপর আয়রন করতে হবে। কাশ্মিরি শাল বা সোয়েটার শুকানোর পর হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে বা ভাঁজ করে পলিথিন ব্যাগে করে ন্যাপথলিন দিয়ে রাখুন।

এছাড়া শীতের কাপড় গুলোকে মাঝে মাঝে রোদে দিতে হবে। কিন্ত খেয়াল রাখতে হবে যাতে বেশি রোদ না পায়, তাহলে  পোশাকটির রং জ্বলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সকালে ১০-১২ মিনিট রোদই যথেষ্ট। দুপুর বেলার কড়া রোদে কাপড় নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। অবশ্যই আলমারিতে রাখার আগে ন্যাপথলিন দিয়ে রাখুন। কাপড়ে পারফিউম দিয়ে রাখবেন না তাহলে কাপড়ে দাগ পড়ে থাকবে। শীতের কাপড়ের সঠিক যত্ন নিলে তা দীর্ঘদিন উজ্জ্বল ও টেকসই হয়ে থাকে।

 

শিশুর জন্য সানগ্লাস

বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও এখন বেশ ফ্যাশন সচেতন। তবে শুধু ফ্যাশনের জন্যই নয়, শিশুর চোখের সুরক্ষায়ও যে জিনিসটি জরুরি তা হলো সানগ্লাস। শিশুকে তার পছন্দমতো সানগ্লাস পছন্দ করতে দিন। আর আপনি পছন্দ করে কিনলেও শিশুর বয়স মাথায় রেখেই কিনুন।

শিশুর সানগ্লাসের জগৎ এখন অনেক বেশি রঙিন ও নকশাদার। আর শিশুরা পছন্দও করছে এগুলো। প্লাস্টিকের বাহারি রঙ ও নকশার সানগ্লাস শিশুদের জন্য বেশ মানানসই। এগুলো হালকা হওয়ায় তারা পরেও আরাম পায়।

সানগ্লাস পরা এবং খোলার সময় দুহাত দিয়ে খুলতে হয় এবং ভাঁজ করে রাখার সময় আগে বাম অংশটি এবং তার ওপর ডান অংশটি ভাঁজ করে রাখতে হয়, শিশু সানগ্লাস ব্যবহারের সময় এটি শিখিয়ে দিন।

সানগ্লাস পরিষ্কার করার সময় সব সময় বক্সের সঙ্গে দেয়া নরম কাপড়টিই ব্যবহার করতে শিশুকে বলে দিন। অন্য কিছু দিয়ে পরিষ্কার করলে সানগ্লাসে দাগ পড়ে যেতে পারে।

শিশুদের জন্যও রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের সানগ্লাস। বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্যানেল, পুমা, রেবন, গুচ্চি, ফাস্ট ট্র্যাক, আরমানি, পুলিশ, ওকলে প্রভৃতি। এর মধ্যে গুচি ১৫০০-৩০০০ টাকা, আরমানি ২০০০-১০০০০ টাকা, পুলিশ ২০০০-১০০০০ টাকা, ডিএনজি ১৫০০-৩০০০ টাকা, রেবন ৫০০-৪০০০ টাকায় পাওয়া যায়। নন ব্র্যান্ডের সানগ্লাস কিনতে পারবেন ২০০-৫০০ টাকাতেই।

বিজয়নগর, মেট্রো শপিং মল, পিংক সিটি, সেঞ্চুরি অর্কিড, এলিফেন্ট রোড, বসুন্ধরা সিটি, ধানমণ্ডিসহ বিভিন্ন মার্কেটে শিশুর জন্য ভালো মানের এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের সানগ্লাস রয়েছে।

 

বাড়তি জিনিস কাজে লাগাবেন যেভাবে

সঠিক মাপে রান্না করা কিংবা যেকোনো কিছু তৈরি করা সবসময় সম্ভব হয় না। কোনো কোনো সময় ব্যবহার জানা না থাকার কারণে অনেক জিনিস ফেলে দিতে হয়। তবে বাড়তি জিনিসের সঠিক ব্যবহার করে তৈরি করা যায় নতুন কোনো পদ। চলুন জেনে নিই-

কমলা লেবুর খোসা ফেলে না দিয়ে চা পাতা ফোটানোর সময় অল্প কয়েকটা কমলা লেবুর খোসা দিয়ে দিন। এতে চায়ে সুন্দর ফ্লেভার হবে।

আদা-রসুন বাটা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হয়ে গেলে লবণ ও তেল মিশিয়ে স্টোর করে রাখুন। এ ছাড়া এয়ার টাইট কন্টেনারে ভরে ফ্রিজে রাখতে পারেন। অনেক দিন ধরে ব্যবহার করতে পারবেন।

অনেক সময় ক্ষীর রান্না করার সময় প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হয়ে যায়। তখন ক্ষীর ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে ঠাণ্ডা করুন। এরপর কুলফি বা আইস কিউব ট্রেতে ঢেলে রাখুন। জমে গেলে আইসক্রিম বা কুলফির মতো হয়ে যাবে। খেতেও ভালো লাগবে।

অনেক সময় দেখা যায় বিস্কুট ভেঙে গুঁড়া হয়ে যায়। তাই ফেলে না দিয়ে পরোটা, রুটি বা লুচি তৈরির করার সময় ময়দার সঙ্গে বিস্কুটের গুঁড়া মিশিয়ে ময়ান করে বানাতে পারেন।

টমেটো অনেক সময় বেশি থাকলে নরম হয়ে যায়। তাই ঠাণ্ডা পানিতে অল্প লবণ দিয়ে টমেটোগুলো সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন টমেটোগুলো ফ্রেশ এবং শক্ত হয়ে যাবে।

নিমকি তৈরির জন্যও বিস্কুটের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া ফিশফ্রাই, কাটলেট, নাগেটস বানানোর সময় ব্রেড ক্রামের বদলে বিস্কুটের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন।

অনেক সময় নারকেলের মালা একসঙ্গে পুরোটা লাগে না। তাই অর্ধেক নারকেলের মালা ফ্রিজে রাখার সময় লবণ মাখিয়ে রাখুন। ফ্রেশ তো থাকবেই আর নারকেল শক্ত হয়ে যাবে না।

দইয়ের পানি ময়দা বা আটা মাখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। রুটি, পরোটা যাই তৈরি করুন না কেন নরম হবে।

টমেটো পিউরি বেশি হলে প্লাস্টিকের কৌটায় ভরে ফ্রিজে রাখুন। তাড়াতাড়ির সময় টমেটোর গ্রেভি করতে হলে উপকারে লাগবে।

 

নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করার নিয়ম-বিধান

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রেই রাহনুমা করে গেছেন। ঘরে ও বাইরে এমন কোন দিক নেই যা রাসূল (সা.) আমাদের সামনে তুলে ধরেননি। তার এই সামগ্রিক শিক্ষার তুলনা পৃথিবীর আর কোনো ধর্মেই ছিল না। তিনি যেভাবে স্বামী-স্ত্রীর অধিকার স্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন এবং পারিবারিক জীবনের প্রতিটি সমস্যার সমাধান আমাদের সামনে খোলাসা করেছেন। আর এটা কেউ আগে কখনো করেনি।

সেই ব্যপকতার একটি অংশ হলো নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করার বিধান। কোনো কোনো বর্ণনায় নাভির নিচের লোশ মুণ্ডন করার কথা আবার কোনো কোনো বর্ণনায় লোহার তৈরি ধারলো কোন যন্ত্র দিয়ে পরিষ্কার করার কথা উদ্ধৃত হয়েছে। আর এটাই মুস্তাহাব। এতে উম্মতের কারও কোনো দ্বিমত নেই। (আল ইতহাফ)।

যদি এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীকে সাহায্য করতে বলে তাহলে স্ত্রীর জন্য এটা ওয়াজিব বলে বিবেচিত হবে। (শরহে মুহায্যাব) এই ক্ষেত্রে ৪০ দিনের চেয়ে বেশি দেরি করা মাকরূহ। সর্বনিম্ন কোনো মেয়াদ নির্ধারিত নেই। বরং ব্যক্তির পশম বড় হওয়ার ওপরই এর বিধান নির্ভরশীল। তাই এই ক্ষেত্রে এক একজনের এক এক ধরনের মেয়াদ হতে পারে। (শরহে মুহায্যাব।

মূল উদ্দেশ্য হলো পরিচ্ছন্নতা- সেটা ক্ষুর দিয়ে হোক বা অন্য কিছু দিয়ে। (ফতওয়ায়ে আলমগিরী) এই ক্ষেত্রে নিজের কাজ নিজে করাই উত্তম। তবে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে সাহায্য করতে পারে। তাও মাকরূহ মুক্ত নয় (শরহে মুহায্যাব)। নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করার সময় উপর দিক থেকে শুরু করা উত্তম। (ফতওয়ায়ে আলমগিরী)।

সম্পাদনা: ফকির কামরুল

 

সফলরা যেভাবে সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করেন

সময় একটি পণ্য। অনেকের মতে, এটি জীবনের সবচেয়ে দামি পণ্য। সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করলে খুব দ্রুত সাফল্য লাভ করা যায়। কিন্তু সময় নিয়ে অনেকের মনেই বিভ্রান্তি আছে।

উদ্যোক্তা ব্রায়ান ডি. ইভান্স বিজনেস ইনসাইডারে এ নিয়ে চমৎকার একটি নিবন্ধ লিখেছেন।

ব্রায়ান ডি. ইভান্স লিখেছেন, সময় নিয়ে সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তিকর ধারণা হচ্ছে, তুমি সময় বাঁচাতে পারো। কিন্তু সত্য কথা হচ্ছে, তুমি শুধু সময় ব্যয়ই করতে পারো। একবার সময় চলে গেলে সেটি আর কোনোভাবে ফেরত পাওয়া সম্ভব নয় এবং তুমি কোথাও সেটি জমাও রাখতে পারো না। কিন্তু সময় ‘তৈরি’ করা যায়। কীভাবে, সেটি এ নিবন্ধে দেখানো হবে।

রিচার্ড ব্রানসন, অপরাহ উইনফ্রে, বিল গেটস, মার্ক কুবান, এলন মাস্ক, ওয়ারেন বাফেটের মতো সফল ও বিলয়নিয়াররা এসব নিয়ম মেনে চলেন।

১. লক্ষ্যে অবিচল না থাকাটা হচ্ছে সময়ের অপচয়

আপনার লক্ষ্য যদি নির্দিষ্ট না থাকে, তাহলে ফেসবুকে ঢুকে আপনি উদ্দেশ্যহীনভাবে নিউজ ফিড স্ক্রল করতে থাকবেন। এটা বোঝার আগেই আপনি হয়তো কোনো ভিডিওতে বুঁদ হয়ে যাবেন। আপনি এমন কিছুর পেছনে সময় নষ্ট করবেন, যা আপনার উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

ওয়ারেন বাফেটের একটা বিশেষ পদ্ধতি আছে এ ক্ষেত্রে। তিনি মানুষকে তাদের জীবনের ২৫টি প্রধান লক্ষ্যের একটি তালিকা তৈরি করতে বলেন। এরপর এ ২৫টি লক্ষ্য থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৫টি লক্ষ্য বাছাই করতে বলেন। অনেকে ভাবেন যে, এ পাঁচটি লক্ষ্যের পাশাপাশি অন্যগুলোর দিকেও এক-অাধটু সময় ব্যয় করা যেতে পারে। কিন্তু বাফেট বলেন, যেকোনো মূল্যে বাকি ওই ২০টি লক্ষ্যকে গুরুত্ব দেওয়া বন্ধ করুন। আগে প্রধান পাঁচটি লক্ষ্য অর্জন করুন। তারপর সময় থাকলে বাকিগুলোর দিকে তাকান।

২. লক্ষ্যগুলো লিখে রাখলে সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়ে শতকরা ৪২ ভাগ

লক্ষ্যগুলো আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপনাকে জানতে হবে, আপনি কী লক্ষ্য অর্জন করতে যাচ্ছেন, আপনার হাতে কী পরিমাণ সময় আছে এবং আপনি ইতোমধ্যে কি পরিমাণ সময় হারিয়ে ফেলেছেন?

’দ্য সিক্রেট’ বইয়ের লেখক জন আশরাফের মতে, লক্ষ্যগুলো অর্জনের সম্ভাবনা ৪২ শতাংশ বেড়ে যায়, যখন আপনি শুধু সেগুলোকে লিখে রাখবেন। কারণ লিখে রাখলে মনে হবে, আপনার লক্ষ্যগুলো অনেকটাই বাস্তব। উদ্যোক্তারা অন্যতম বড় যে সমস্যাটি মোকাবেলা করেন, সেটি হচ্ছে তারা কোথায় তাদের সময় ও শক্তি ব্যয় করবেন, সেটি বুঝতে পারেন না। নির্দিষ্ট কিছু কাজ করার পরিবর্তে তারা একসাথে ১০০টি কাজ করতে চান।

তাই আপনি কি করতে চান, সেটি আপনাকে জানতে হবে। যদি আপনার লক্ষ্য সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত থাকেন, তাহলে বিচ্যূত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আপনি যদি সবকিছুই করতে যান, তাহলে দেখবেন আপনার অত সময় নেই, কিংবা কিছুই হচ্ছে না।

৩. দায়িত্ব বণ্টন করে অন্যদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা

এটা অন্যতম কঠিন একটা কাজ, কিন্তু সবচেয়ে লাভজনক এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি নিজে নিজেই একটি কাজ শেষ করে ফেলতে চান, তাহলে আপনার হাতে দিনে সময় আছে ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত একজনকে দায়িত্বের অংশীদার করেন, তাহলে আপনার হাতে দিনে সময় আছে ৪৮ ঘণ্টা। মানুষের মধ্যে দায়িত্ব যত বণ্টন করে দিবেন, অাপনার সময়ের পরিমাণও তত বাড়বে, সাফল্যের সম্ভাবনাও বাড়বে।

এখানে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, দায়িত্ব কাদের মধ্যে বণ্টন করব? তাদের কোথায় পাব? রিচার্ড ব্রানসন এ প্রশ্নে সবচেয়ে ভালো জবাবটা দিয়েছেন। তার মতে, ‘কর্মীদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দাও, যাতে তারা যোগ্য হয়ে ওঠে। তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করো, যাতে তাদের মধ্যে কোনো শূন্যতাবোধ তৈরি না হয়’।

৪. মানুষের চেয়ে প্রযুক্তিকে বেশি কাজে লাগান

মাঝে মাঝে মানুষের চেয়ে প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার বেশি সহজ। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা সব ধরনের কাজই করতে পারে, কিন্তু প্রয়োগের আগে সেটি কার্যকরী হবে কিনা, সেটি নিশ্চিত হতে হবে। কারণ প্রযুক্তির সামান্য সমস্যাও অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

৫. নিয়ম ভাঙতে ভয় পাওয়া যাবে না

সফল ও ধনী মানুষরা নিয়ম ভাঙার জন্য প্রসিদ্ধ। প্রতিটি নিয়ম ভাঙার জন্যই কেউ না কেউ আছে।

সম্পাদনা: তানজিল রিমন

 

সহজেই তৈরি করুন দুধ চিতই

শীতের পিঠা মানেই চিতই। কখনো ঝাল ঝাল ভর্তার সঙ্গে, কখনো মাংসের ঝোল আবার কখনো রসে ভেজানো চিতই পিঠা। এর বাইরে আরেকটি আইটেম হলো দুধে ভেজানো চিতই। যাকে বলা হয় দুধ চিতই পিঠা। খুব সহজেই ঘরে বসে তৈরি করতে পারেন এই সুস্বাদু পিঠাটি।

উপকরণ : চালের গুঁড়া ২ কাপ, পানি ১ কাপ, দুধ দেড় লিটার, খেজুর গুড় দেড় কাপ, লবণ স্বাদমতো, ডিম ১টি।

প্রণালি : চালের গুঁড়ার সঙ্গে লবণ, ডিম ও ১ কাপ পানি দিয়ে খুব ভালোভাবে ফেটিয়ে মসৃণ গোলা তৈরি করুন। মাঝারি ঘনত্বের গোলা হবে। গুড় দেড় কাপ পানি দিয়ে জ্বাল দিয়ে ছেঁকে রাখুন। দেড় লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে ১ লিটার করে নিন। চুলায় খোলা বসিয়ে তেল মেখে নিন। খোলা খুব গরম হলে ডালের চামচে ২ চামচ গোলা দিয়ে ঢেকে দিন। ঢাকনার চারপাশে পানি ছিটিয়ে দিন। পিঠা হলে ৩-৪ মিনিট পর খোলা থেকে তুলে নিন। খোলা থেকে পিঠা তুলে গুড়ের সিরায় ফেলুন। চুলায় দিয়ে জ্বাল দিন। জ্বাল করা পিঠা ঠাণ্ডা হলে জ্বাল দেয়া ঘন দুধ দিন। পাত্র ঝাঁকিয়ে চারদিকে দুধ মিশিয়ে দিন। ৭-৮ ঘণ্টা ভিজিয়ে পিঠা পরিবেশন করুন।

 

বিশ্বসেরা ৫০ শিক্ষকের একজন তিনি

‘স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রায়ই ইভ টিজিংয়ের শিকার হতাম। বখাটেদের ভয়ে টানা ১৫ দিন ঘরে বসে শুধু কেঁদেছি। এরপর আবার স্কুল। বখাটেদের ভয়ে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবা-মা বিয়ে দিলেন। বাল্যবিবাহের কারণে স্বপ্ন ভেঙে গেল। তবে তাতে হাল ছাড়িনি। কষ্ট-সংগ্রাম করে এত দূর এসেছি।’ বগুড়ার শেরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনাজ পারভীনের সঙ্গে কথা শুরু হয়েছিল এভাবেই।

শাহনাজ পারভীনের এই ‘এত দূর’ আসা আসলে কত দূর? আর কেনই-বা তিনি এখন পাদপ্রদীপের আলোয়। কারণটা শুধু শাহনাজের নিজের জন্যই নয়, দেশের জন্যই গৌরবের। বিশ্বের সেরা ৫০ শিক্ষকের তালিকায় উঠেছে শাহনাজ পারভীনের নাম। বললেন, ‘শেষ পর্যন্ত গ্লোবাল টিচার পুরস্কার জিতলে আরও ভালো লাগবে।’ ১৮ ডিসেম্বর শেরপুর উপজেলা সদরের টাউন কলোনি-শান্তিনগরে তাঁর বাড়ির পাশে পথশিশু ও প্রতিবন্ধীদের বিদ্যালয়ে বসে কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে।

শাহনাজ পারভীনবিশ্বের সেরা শিক্ষক নির্বাচনের জন্য ২০১৫ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ভারকি ফাউন্ডেশন ‘গ্লোবাল টিচার পুরস্কার’ প্রবর্তন করেছে। এ বছর বিশ্বের ১৭৯টি দেশের ২০ হাজার আবেদনকারীর মধ্য থেকে শীর্ষ ৫০ শিক্ষককে বাছাই করা হয়েছে। এই তালিকায় ১৬ জন নারীর মধ্যে আছে বাংলাদেশের শাহনাজ পারভীনের নাম। মনোনয়ন পাওয়া ৫০ জনের মধ্য থেকে আগামী বছরের ১৯ মার্চ দুবাইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। বিজয়ীকে অর্থ পুরস্কার দেওয়া হবে ১০ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে ফিলিস্তিনের সামিহা খলিল সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষক হান্নান আল হুরাব এবং ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টিচিং অ্যান্ড লার্নিং সেন্টারের শিক্ষক ন্যানসি অ্যাটওয়েল গ্লোবাল প্রাইজ জেতেন।
ঘড়ির কাঁটা সকাল নয়টায় গড়ানোর আগেই বিদ্যালয়ের পথে পা বাড়ালেন শাহনাজ পারভীন। আমরাও সঙ্গী হলাম। নিজের জীবনের কথা বলতে থাকেন শাহনাজ পারভীন, ‘যৌথ পরিবারের বাড়ির বড় বউ। সব দায়িত্ব কাঁধে এসে চাপল। দিনভর খাটাখাটনির পর রাতে শাশুড়ির পানবাটায় সুপারি কেটে দিয়ে পরদিন কী দিয়ে রান্না হবে, তা বুঝে নিতে হতো। সংসারের রান্না, শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা, ননদ-দেবরের আদর-যত্ন থেকে সবকিছুই সামলাতে হতো। সকালের রান্নাবান্না শেষে ক্লাসে যেতাম। বিকেলে ক্লাস থেকে ফিরে ফের রসুইঘরে। রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে সবাই যখন ঘুমাতে যেত, আমি রাত জেগে পড়তাম।’ এভাবে ১৯৯২ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে আলিম পরীক্ষায় মেধা তালিকায় সারা দেশে মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয় হন শাহনাজ। মেডিকেল কলেজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন। ‘কিন্তু শেষ পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ির আপত্তির কারণে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হলাম। ভর্তির পর কোল আলো করে কন্যাসন্তান এল। রাতের খাবার শেষে সবাই ঘুমিয়ে পড়ত। মেয়েকে দোলনায় শুয়ে রেখে পায়ের নখের সঙ্গে দড়ি বেঁধে টান দিতাম আর রাতভর পড়াশোনা করতাম। সকালে মায়ের কাছে ওকে রেখে কলেজে যেতাম।’

এভাবেই স্নাতক-স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিলেন শাহনাজ পারভীন। স্নাতকে পড়ার সময় বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। ২০০৩ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিলেন। বিএড, এমএডসহ বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জন করেন এবং প্রশিক্ষণ নেন। শাহনাজ পারভীন বললেন, ‘শৈশবে খেলার সঙ্গীরা মাটির খেলনা দিয়ে “সংসার-সংসার” খেলত। আমি খেলতাম “স্কুল-স্কুল”। ওই বয়সেই ঘর এঁকে শিক্ষার্থী পড়াতাম। তবে বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল চিকিৎসক হই। বাবা-মা দুজনই ছিলেন শিক্ষক। অল্প বয়সে যাঁর সঙ্গে বিয়ে হলো, তিনিও শিক্ষক।’ এ কারণেই আপাদমস্তক নিজেকে শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছা জাগে শাহনাজ পারভীনের মনে।

শেরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের পর প্রথমে পড়ানো বিষয়টা তেমন বুঝতেন না। প্রধান শিক্ষক নাজির উদ্দিন হাতেকলমে তা শিখিয়ে দেন। ‘এরপর ভালো শিক্ষক হওয়াটাই ছিল আমার ধ্যানজ্ঞান। ঝরে পড়া রোধ করার পাশাপাশি পাঠদানকে আনন্দময় ও কোনো বিষয় সহজভাবে শিশুদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করতাম।’ বললেন শাহনাজ। এর ফলও পেলেন তিনি। ২০০৯-১০ সালে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ নারী শিক্ষক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ইউনেসকোর মনোনয়নে ভারকি ফাউন্ডেশনের গ্লোবাল টিচার পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন।

গ্লোবাল টিচার পুরস্কারের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ছয়জন শিক্ষকের কাছ থেকে গত ১৩ জুলাই আবেদনপত্র আহ্বান করে। সেই অনুযায়ী আবেদন করেন শাহনাজ পারভীন—জানালেন শেরপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. নার্গিস পারভিন। ১৩ ডিসেম্বর তাঁদের ওয়েবসাইটে সেরা ৫০ জন শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ানোর পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের পড়াতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজের বাসায় শেরপুর শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন। সেই বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেল, সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা পড়াশোনার সুযোগের পাশাপাশি বই-খাতা-কলম, স্কুলের পোশাক, ব্যাগ, টিফিন সবই বিনা মূল্যে পাচ্ছে। শাহনাজ বলেন, ‘প্রতিদিন ভোরে আমার দুই মেয়েকে স্কুলবাসে তুলে দিতে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে আসতাম। ছোট সেলুন, চায়ের দোকান, হোটেলে কাজ করত শিশুরা। তারা ফ্যালফ্যাল করে আমার মেয়ের স্কুলব্যাগের দিকে চেয়ে থাকত। একদিন সেলুন শ্রমিক সাদমান ও লেদযন্ত্রের শ্রমিক শামীমকে জিজ্ঞাসা করলাম, তোমরা কি লেখাপড়া করবা? তারা রাজি হলো।’ ২০১৩ সালে দু-তিনজন শিশুকে বাড়িতে ডেকে এনে পড়ানো শুরু করলেন শাহনাজ। দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। স্বামী মোহাম্মদ আলীর সহযোগিতায় একটা ঘর ভাড়া নিয়ে শেরপুর শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করলেন। বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চলে এ স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে এ স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০। শিক্ষার্থীরা সবাই কর্মজীবী।

শাহনাজ পারভীনের দুই মেয়ে। মাসুমা মরিয়ম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক এবং ছোট মেয়ে আমেনা মুমতারিন বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।

Save

Save

Save

Save

 

নিজের গল্পটা নিজেই বদলে দিলেন তাসলিমা

গল্পটা হতে পারত এমন, স্কুলে পড়া দরিদ্র পরিবারের একটি মেয়ে।  লেখাপড়া আর খেলাধুলার উচ্ছল দিন কাটত তার। মেধাবী ছাত্রী সে। কিন্তু মা-বাবা ভাবলেন অভাবের সংসার, খরচ চালানো যাচ্ছে না। ছোট মেয়েটি বড় হচ্ছে। তাই শিশু বয়সেই মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেওয়া হলো বিয়ে। তারপর যা ঘটল—বিয়ের পর কিশোরী বয়সেই দুই-তিন সন্তানের মা হলো মেয়েটি। অসময়ে সন্তান ধারণের কারণে শরীর ভেঙে যেতে লাগল। অভাবের সংসার। সন্তানেরা অপুষ্টিতে ভুগছে। বিয়ের কয়েক বছর পর মেয়েটির চোখে-মুখে হতাশার ছাপ।
কিন্তু গল্পটা এমন হয়নি। হয়েছে উল্টোটাই। গল্পটা এখন এমন, যে মেয়েকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল সেই মেয়ে ‘দেশ জয়’ করতে চাচ্ছে। আর তাই নিজের জীবনকে সুন্দর করে সাজাতে মেয়েটি তার কিশোর বয়সে প্রথম জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছে। আজ সে জয়িতা। বাল্যবিবাহ না করায় তার লেখাপড়া ও কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।মায়ের সঙ্গে তাসলিমা আক্তার
যে মেয়ের কাহিনি নিয়ে গল্প বলা হচ্ছিল তাঁর নাম তাসলিমা আক্তার। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের ফরিদপুর মধ্যপাড়া গ্রামের রমিজ উদ্দিন শেখের ছোট মেয়ে তিনি। শিক্ষাগ্রহণ ও কর্মক্ষেত্রে অবদান রাখায় তাসলিমা আক্তারকে এবার ঈশ্বরদী প্রশাসন ও উপজেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর সেরা জয়িতার পুরস্কার দিয়েছে। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে সম্মাননা ও সনদপত্র এবং একটি ক্রেস্ট।
১১ ডিসেম্বর দুপুরে যাওয়া হয় তাসলিমার গ্রাম ফরিদপুরে। পাকা সড়ক থেকে অনেক দূরে গ্রামের আঁকাবাঁকা কাঁচা রাস্তা ধরে যেতে হয় তাঁর বাড়িতে। একখণ্ড জমির ওপর তাসলিমাদের বসতভিটা। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে তাসলিমা সবার ছোট। বাবা ছিলেন দরিদ্র কৃষক। মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। তিনি ছাড়া বাকি ভাইবোনদের বিয়ে হয়ে গেছে। সবার আলাদা সংসার। তাসলিমা বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। পশ্চাৎপদ এই গ্রামে প্রায় বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটে। কিন্তু গ্রামের সব কুসংস্কার দূরে ঠেলে দিয়ে তাসলিমা লেখাপড়া করে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে আসছেন। মেধাবী হলেও বাড়িতে লেখাপড়ার তেমন পরিবেশ ছিল না। তবুও তাসলিমা ২০১০ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ এবং ২০১২ সালে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এখন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে লেখাপড়া করছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের দুটো পরীক্ষাতেই তিনি প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

তাসলিমা বলেন, ‘অভাবের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি। ভাবতে পারিনি এত দূর লেখাপড়া করতে পারব। তবুও একটা স্বপ্ন ছিল আমার। স্বপ্নটা হলো নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। বাল্যবিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্ত রাখা।’ কিন্তু তাসলিমার সে স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হচ্ছিল ২০১১ সালের দিকে। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৫ বছর।

‘সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছি। এরই মধ্যে বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করে। পাত্র ঠিক করা ছিল। কিন্তু কিছুতেই রাজি হইনি। আমি জানতাম বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি। এখন বিয়ে হয়ে গেলে আমার স্বপ্নটা ভেঙে যাবে। বাল্যবিবাহের পরিণতি আমি জানি। এমন ভাবনা থেকেই বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে তখন সংগ্রাম শুরু করলাম। বললাম, কিছুতেই এই বয়সে বিয়ে করব না। আমি লেখাপড়া করতে চাই। বন্ধ হয়ে গেল বিয়ে।’ বললেন তাসলিমা। এরপর নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করলেন লেখাপড়া।

কলেজে ভর্তির পর দেখা দিল আরেক সমস্যা। প্রচণ্ড অর্থসংকট। একে তো পরিবারে অভাব-অনটন। কেউ তাঁর লেখাপড়া ও কলেজে যাতায়াতের খরচ দিতে রাজি হয়নি। তাই লেখাপড়া ও নিজের খরচ জোগাড় করার জন্য শেখেন কিছু কাজ। প্রথম দিকে শার্টের বোতাম লাগানোর কাজ করতেন। পরে গ্রামের শিশুদের প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন। এ থেকে লেখাপড়ার খরচ ও সংসারের জন্য কিছু জোগান দেওয়া সম্ভব হয়। তবুও খরচ চালানো যাচ্ছিল না।

এরপর জমানো কিছু টাকা দিয়ে কয়েকটি ছাগল কিনে লালন-পালন শুরু করেন তাসলিমা। এক বছর পর থেকে ছাগল বিক্রি করে যে টাকা পেতেন তা দিয়ে পড়াশোনার খরচ চালাতেন। তাসলিমা বলেন, ‘এভাবেই আমি এগিয়ে যাচ্ছি। এখন স্বপ্ন দেখি বাল্যবিবাহমুক্ত দেশের।’

কথা হয় তাসলিমার মা ছালমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছোটকালে মাইয়াড্যারে বিয়া দিবার চাইছিলাম। হেঁয় (সে) তো দেখতে সুন্দর। বিয়া ঠিকও করছিলাম। কিন্তু মাইয়াড্যা আমার রাজি হয় নাই। এখন বুঝতাছি, ছোটবেলা   বিয়া দিলে মাইয়াড্যা এত দূর আগাইতে পারত না।’

Save

Save

Save

 

ত্বকের সৌন্দর্যে প্রাকৃতিক উপাদান

সুন্দর ত্বকের আকাঙ্ক্ষা থাকে সবার। সুস্থ ও সুন্দর ত্বক পেতে হলে প্রয়োজন সঠিক উপায়ে রূপচর্চা। আর রূপচর্চার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত উপাদান হলো প্রাকৃতিক উপাদান। এমনই কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ও তার ব্যবহার জেনে নেয়া যাক-

টমেটো
নিয়মিত সৌন্দর্যচর্চার উপাদান হিসেবে টমেটো আপনাকে দিতে পারে উজ্জ্বল ও পরিচ্ছন্ন ত্বক। ত্বক পরিষ্কার করতে বেসন বা উপটানের সঙ্গে টমেটোর রস মিশিয়ে মুখে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। মুখ ভর্তি দাগ বা ব্রণ দূর করতে টমেটোর রস, কাঁচা হলুদ আর মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করুন। ত্বকের পোড়াভাব দূর করতে বাইরে থেকে ফিরে মুখে, গলায় ও হাতে টমেটোর রস লাগান। শুকিয়ে গেলে আরো একবার লাগান। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে রোদে পোড়া দাগ থাকবে না।

লেবু
লেবু রূপচর্চার উপাদান হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। এ ছাড়া লেবু  চুলের খুশকি প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দুধ ও লেবুর মিশ্রণ চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩-৪ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করলে খুশকি দূর হবে। শ্যাম্পু করার পর পানিতে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে চুল ধুলে চুল ঝকঝকে রেশম কোমল ও মনোরম হয়ে ওঠে।

মেহেদি
প্রাচীনকাল থেকেই মেহেদিকে সৌন্দর্য উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এই মেহেদি পাতা বেটে হেনা ডাই হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই গাছের পাতা, সুগন্ধী ফুল ও মূল লতা গুল্ম সমন্বিত গুণাগুণ চুলের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়, ঝলমলে করে তোলে, চুলের অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব ও খুশকি দূর করে, মাথাও ঠান্ডা রাখে। মেহেদি পাতা বাটা, টকদই, লেবুর রস ইত্যাদি মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পরে চুল ধুয়ে ফেলুন।

মেথি
মেথির চুল কন্ডিশনিং এবং জীবাণুনাশক গুণাগুণ মাথার চামড়ার সংক্রমণ প্রতিরোধ ও চুল পড়া বন্ধ করে এবং মাথা ঠান্ডা রাখে। ২ চা চামচ মেথি রাতে অল্প পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন নরম হলে মিহি করে বেটে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। ২ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে নিন। চুল পড়া বন্ধে এটি অব্যর্থ ঔষধ।

 

সিল্ক শাড়ির যত্ন নেবেন যেভাবে

ফ্যাশন সচেতন নারীদের কাছে সিল্ক শাড়ি পছন্দের অপর নাম। শীতের সময়টা সিল্ক শাড়ি পড়ার জন্য উপযুক্ত সময়। কারণ এটি শুধু ফ্যাশনেবলই করে তোলে না, শীতের ছোঁয়া থেকেও দূরে রাখে। এই সিল্ক শাড়ি শুধু পরলেই হবে না, চাই বিশেষ যত্ন। নয়তো নষ্ট হয়ে যেতে পারে আপনার সাধের সিল্ক শাড়িটি।

সিল্কের শাড়িতে কোনো দাগ লেগে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ড্রাই ক্লিন করে নিন। বাড়িতে দাগ তোলার চেষ্টা না করাই ভালো। কারণ পানি ব্যবহার করলে দাগ স্থায়ী হয়ে যাবে।

বেশিক্ষণ সিল্কের শাড়ি পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন না। একবার পানিতে ভিজিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তুলে ফেলুন।

খুব জোরে কাপড় কাচবেন না। ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করবেন না। শুকাতে দেয়ার সময় হালকা করে পানি ঝরিয়ে ছায়ায় শুকাতে দিন।

সিল্কের শাড়ি বাড়িতে ইস্ত্রি করার চেষ্টা করুন। অথবা ভিজে থাকতে হাতের ডান দিক থেকে বাঁ দিকে ইস্ত্রি করুন। খুব গরম করে ইস্ত্রি করবেন না। উল্টো দিক থেকে করতে পারলে ভালো। আঁচল ও পাড়ে ভারী নকশা থাকলে ওপরে নরম কাপড় রেখে উল্টো করে ইস্ত্রি করুন। প্লাস্টিকের প্যাকেটে সিল্কের শাড়ি রাখবেন না।

ভারী কাজ কিংবা এমব্রয়ডারি করা শাড়ি হ্যাঙ্গারে না ঝুলিয়ে ভাঁজ করে রাখুন।

সিল্কের শাড়ির মধ্যে ন্যাপথলিন বল রাখবেন না। এতে শাড়ি নষ্ট হতে পারে। এছাড়া কাপড়ে ন্যাপথলিনের গন্ধ রয়ে যাবে। তবে এর পরিবর্তে দারুচিনি, লবঙ্গ ব্যবহার করতে পারেন।

মসলিনের কাপড়ে মুড়ে সিল্কের শাড়ি অন্ধকার জায়গায় রাখুন। কখনও ড্যাম্প জায়গায় শাড়ি স্টোর করবেন না।

শাড়িতে তেল মশলাযুক্ত দেয়া গ্রেভি বা তেলযুক্ত কোনো দাগ লেগে গেলে ট্যালকম পাউডার ছড়িয়ে দিন। এরপর ব্রাশ দিয়ে অতিরিক্ত পাউডার ঝেড়ে ফেলুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে পারিষ্কার করুন।

কড়া রোদে সিল্কের শাড়ি শুকাতে দেবেন না। কারণ এর ফলে রং হালকা হয়ে যাবে।

 

ক্ষীরসা পাটিসাপটা তৈরি করবেন যেভাবে

শীত মানেই মজার সব পিঠাপুলি। খেজুর রসের ম ম ঘ্রাণ আর পিঠার স্বাদে হারিয়ে যাওয়া। শহুরে আবহাওয়ায় শীতও ঠিকভাবে আসতে পারে না আর শীতের পিঠার স্বাদও তেমনভাবে মেলে না। তবু একটু অবসরে ঘরেই তৈরি করে নেয়া যায় প্রিয়জনদের জন্য শীতের মজাদার পিঠা। আজ রইলো ক্ষীরসা পাটিসাপটা তৈরির রেসিপি-

যা লাগবে : পোলাও চালের গুঁড়া ২ কাপ, ময়দা কোয়ার্টার কাপ, গুঁড়া দুধ ২ টেবিল চামচ, ডিম ১টি, চিনি (বা খেজুর গুড়) কোয়ার্টার কাপ, লবণ ১ চিমটি, তেল (ফ্রাইপ্যানে ব্যবহারের জন্য) পরিমাণ মতো, বেকিং পাউডার আধা চা চামচ।

ক্ষীরসা : দুধ ২ লিটার, পোলাও চালের গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, মালাই আধা কাপ, চিনি ৩ টেবিল চামচ।

যেভাবে করবেন : তেল ছাড়া সব উপকরণ পরিমাণ মতো পানি দিয়ে মেখে রাখুন ২ ঘণ্টা। পাতলা গোলা হবে। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিন। চালের গুঁড়া শুকনা খোলায় টেলে নিন। কিছু দুধ তুলে ঠান্ডা করে চালের গুঁড়া গুলিয়ে দুধে ঢেলে দিন। চাল সিদ্ধ হলে চিনি ও মালাই দিন। ঘন করে নামান। ফ্রাইপ্যানে তেল লাগিয়ে গরম হলে ডালের চামচে ২ চামচ গোলা দিয়ে ছড়িয়ে দিন রুটির মতো করে। রুটি শুকিয়ে এলে লম্বা করে ক্ষীরসা দিয়ে পাটির মতো মুড়ে নিন। ঠান্ডা অথবা গরম পরিবেশন করুন।

 

ঘর সাজাতে ফটোফ্রেম

নিজের ঘরকে ঘিরে সবারই থাকে এক একটি স্বপ্ন। কেউ চায় কর্নার টেবিল ধরে ঘরটাকে সাজাতে। আবার কেউ ডায়নিং স্পেস ধরে সোজা রুম ধরে বেলকনি সাজাতে চায়। তবে যে যেভাবেই সাজাক ঘরকে নিজের মতো করে ফুটিয়ে তোলাই থাকে মূল উদ্দেশ্য। এই ঘর সাজাতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে ছোট্ট একটি জিনিস। আর তা হচ্ছে ফটোফ্রেম। জিনিসটি খুব বড় না হলেও এটি খুব সহজে আপনার ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারে। তাই ঘর সাজাতে আপনি ব্যবহার করতে পারেন ফটোফ্রেম।

বসার ঘর
বসার ঘরের প্রতি বাইরের মানুষের যেমন এক প্রকার আকর্ষণ থাকে ঠিক তেমনি তাকে ফুটিয়ে তুলতে থাকে ঘরের মানুষগুলোর প্রয়াস। এই বসার ঘর সাজাতে আপনি রাখতে পারেন ফটোফ্রেম। নানা পশুপাখির ছবি, কখনো আবার প্রকৃতির ছবি আবার ফ্যামিলির আদরের ছোট কোনো সদস্যর ছবি রাখতে পারেন। এর পাশাপাশি টেবিলেও রাখতে পারেন ফটোফ্রেম।

দেয়াল
দেয়াল সাজাতে ফটোফ্রেমের জুড়ি নেই। সিঁড়ির পাশের দেয়াল কিংবা সদর দরজা দিয়ে ঢুকতেই যে দেয়াল চোখে পড়ে তা সাজাতে পারেন এই ফটোফ্রেম দিয়ে। সারি করে কিংবা গোলাকার ভাবে আবার কখনো ছোট ফ্রেম থেকে বড় ফ্রেম এভাবে সারি সারি করে সাজিয়ে আপনি আপনার দেয়াল যেমন সাজাতে পারেন ঠিক তেমনি পারেন আপনার ঘরকে সাজাতে।

শোবার ঘর
শোবার ঘরকে সাজাতে চাইলে আপনি সাজাতে পারেন ফটোফ্রেম দিয়ে। আপনার শোবার খাটের মাথার উপর রাখতে পারেন এই ফটোফ্রেমের তৈরি ঘড়ি দিয়ে। চারটি বড় ফটোফ্রেম আর আটটি ছোট ফটোফ্রেম দিয়ে আপনি বানিয়ে নিতে পারেন এই ফটোফ্রেম ঘড়ি। এতে আপনি আপনার বাচ্চাদের আনন্দ এবং খুনশুটির মুহুর্ত যেমন আটকে রাখতে পারেন তেমনি পারেন আপনার এবং আপনার প্রিয় মানুষের ছবি দিয়েও এভাবে দেয়াল সাজাতে। আর ঘরকে ফটোফ্রেম দিয়ে সাজিয়েও তুলতে পারেন।

ঘর সাজাতে খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। আপনার রুচিশীলতা এবং আপনার পছন্দ এই দুই মিলিয়ে আপনি আপনার ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারেন। আর ঘর হালকা ভাবেই সাজালে ভালো লাগে। তাই ঘর সাজালে তার যতটা সম্ভব ছিমছামভাবেই সাজান।

 

আদর্শ মা-বাবা হবেন যেভাবে

মা-বাবা হওয়া জীবনের একইসঙ্গে সবচেয়ে সহজ এবং কঠিন কাজ। আপনার মমতা, স্নেহ এবং ভালোবাসার ওপর নির্ভর করে আপনার সন্তানের বেড়ে ওঠা। আপনি কী ধরনের কাজ করছেন কিংবা আপনার আয় কেমন তা কখনই সম্পূর্ণভাবে আপনার সন্তানের বেড়ে ওঠার পেছনে মূল কারণ নয়। অনেকেই মনে করেন শাসন করলে বা কোনো কিছু করতে মানা করলে সন্তান বিগড়ে যাবে। তাই সে ভয়ে সন্তানকে তারা কিছুই বলে না। একটি সময় সন্তান মা-বাবার কাছ থেকে দূরে যেতে থাকে। আর অনেকসময় তাতে সন্তান কেবল বিপথেই যায় না  সেইসাথে তাদের মা-বাবা সমাজের কাছে নানাভাবে হন অপমানিত, লজ্জিত।

সন্তানকে ভালোবাসা দিন
সন্তানকে কতখানি ভালোবাসেন তা মুখে ফুটে না বলাই ভালো। তাকে আপনার কাজ দিয়ে বোঝান। কৈশোরে মা-বাবার কাছে বকা খেয়ে অনেক সন্তানই খারাপ পথে চলে যায়। তাই এসময় একমাত্র কাজ হচ্ছে ভালোবাসা। তাকে ভালোবেসে, বুঝিয়ে বলুন। তবে তাকে লোভ দেখিয়ে কোনো ধরনের কাজ করাবেন না। এতে তার মধ্যে কাজের বিনিময়ে বড় ধরনের কিছু পাবার প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে।

পুরস্কৃত করুন
সন্তানকে সব সময় সব কাজে অনুপ্রাণিত করুন। অনেক সময় শুধু মুখের কথায় আর ভালোবাসায় অনেক কিছু হয় না। তাকে ছোট ছোট কাজে পুরস্কৃত করুন। সে যদি গণিত করতে অমনোযোগী হয় আর আপনি যদি তাকে বুঝিয়ে বলে কিংবা ভালোবেসে বলে করাতে পারেন। তাকে ছোট ছোট উপহার যেমন কালার পেন্সিল, কলম কিংবা তার পছন্দের রঙের খাতা উপহার দিন।

তুলনা
অনেক মা বাবাই আছেন যারা নিজের সন্তানের সাথে অন্যর সন্তানের তুলনা করেন। কোনো শিশু কোনো বিষয়ে সেরা হতে নাই পারে। এই বিষয়টি বেশি দেখা যায় পড়াশুনার ক্ষেত্রে। সর্বদা ওই না পারা শিশুটিকে নানাভাবে অবহেলা আর হেয় চোখে দেখা হয়। তার মনের মধ্যে এই ব্যাপারটি সৃষ্টি করে দেওয়া হয় যে সে কিছুই পারে না। আর তাকে দিয়ে কিছু সম্ভব না। এমনটি কখনোই করা উচিত নয়।

 

ঘড়ির প্রতি আমার দুর্বলতা আছে : সাইমন সাদিক

ঢালিউডের একটি সম্ভাবনাময় নাম সাইমন সাদিক। তার জন্ম ৩০ আগস্ট ১৯৮৫ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার কলাপাড়া গ্রামে। কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। তার অভিনয় জীবনের শুরু জাকির হোসেন রাজুর `জ্বী হুজুর` চলচ্চিত্রে  অভিনয়ের মাধ্যমে। এছাড়া তিনি স্যাটেলাইট চ্যানেল এনটিভি আয়োজিত `সুপার হিরো সুপার হিরোইন` প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে পোড়ামন ছবির মাধ্যমে পরিচিতি পান তিনি। অভিনয় জীবন ছাড়াও তিনি ব্যক্তিগত জীবনে প্রচন্ড ফ্যাশন সচেতন। সাইমন সাদিকের ফ্যাশন এবং লাইফস্টাইল নিয়ে কথা বলেন জাগো নিউজের সাথে। সঙ্গে ছিলেন ফারিন সুমাইয়া-

সাইমনের ব্যস্ততা শুরু হয় সকাল থেকেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে ঝটপট নাস্তা সেরে ছোটেন কর্মস্থলের দিকে। কাজের ক্ষেত্রে তিনি যেকোনো কাজই গুছিয়ে করতে ভালোবাসেন। শুটিংয়ের ক্ষেত্রে আগে থেকে কস্টিউম তৈরি করে এবং স্ক্রিপ্ট পড়ে রাখেন। ছুটির দিন তিনি পছন্দ করেন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, পরিবারের সাথে সময় কাটাতে। অবসর সময়ে ঘুমাতে পছন্দ করেন। শুটিংয়ের কারণে ঘুমে প্রায়ই ব্যাঘাত ঘটে। আর অবসরে তাই এই ঘুমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা।

সাইমন সাদিক রূপচর্চা একেবারেই করেন না। তবে তিনি প্রতিদিন ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করে থাকেন। যেকোনো ঝাল ধরনের খাবার তার পছন্দের। সকালে হালকা নাস্তা, দুপুরে ভাত এবং রাতে বাসায় খাওয়া হলে ভাত আর বাইরে খাওয়া হলে হালকা খাবার খেয়ে নেন। তবে কিছু সময় পর পর তিনি খাবার খান। সকালের নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবার তিনি অল্প করে খেয়ে থাকেন।

এক্সেসরিজের ক্ষেত্রে তার পছন্দ সানগ্লাস আর ঘড়ি। ঘড়ির প্রতি তার বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। ঘড়ির ক্ষেত্রে তার পছন্দের ব্র্যান্ড র্যাডো, রোলেক্স। আর সানগ্লাসের ক্ষেত্রে যেকোনো ভালো ব্র্যান্ড। তার প্রিয় ব্যক্তি তার মা। শখের ক্রিকেট খেলা, বন্ধুদের সঙ্গে গান করা, ছবি দেখা। পছন্দের গায়ক জেমস আর পছন্দের নায়ক সালমান শাহ্। তার কাছে ফ্যাশন মানে কী তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, `ফ্যাশন হচ্ছে তা যা আপনি ক্যারি করতে পারবেন। যাতে আপনি স্বাছন্দ্যবোধ করতে পারছেন তাই ফ্যাশন`।

 

কীভাবে বোঝাবেন কতটা ভালোবাসেন

ভালোবাসা শব্দটি খুব ছোট হলেও এর ব্যপ্তি অনেক। প্রত্যকটি ভালোবাসার মানুষ চায় তার কাছের মানুষটির থেকে উজাড় করা ভালোবাসা আর বিশ্বাস। নিজের যতটুকু সামর্থ্য আছে প্রত্যকটি মানুষ চায় তার সর্বোচ্চ দিয়ে তার ভালোবাসার মানুষকে কাছে রাখতে। তবে আপনি যদি ভালোবাসার মানুষকে আপনার ভালোবাসার কথা না বলেন তবে হয়তো আপনার অনেক অনুভূতিগুলো শব্দহীন হয়ে থাকবে। কিছু ক্ষেত্রে অনেকে মনে মনে ভাবতে থাকে যে কেন ভালোবাসার কথা প্রিয় মানুষটির মুখে শুনছে না। আর এতে আপনিও মনে মনে কষ্ট পান। তাই সঙ্গীকে আপনার কার্যকলাপ দিয়ে বোঝান যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন।

ভালোবাসা প্রকাশের ভঙ্গী
ভালোবাসা প্রকাশের ধরন একেকজনের কাছে একেকরকম। কেউ ফুল হাতে প্রিয়ার হাতে হাত রেখে, আবার কেউ রাতের পর রাত জেগে কথা বলে, আবার কেউ খুদে বার্তা দিয়ে। যে যেভাবেই বলুক না কেন ভালোবাসা প্রকাশ হচ্ছে মূল বিষয়। তবে খেয়াল রাখুন যে আপনার সঙ্গী আপনার এই ভালোবাসা প্রকাশের ভঙ্গী বুঝতে পারছে কি না। তার কাছে এই প্রকাশভঙ্গী স্বাভাবিক লাগছে কি না? নাকি তা কেবলই আপনাকে খুশি করার জন্য আপনার হাতে হাত মেলাচ্ছে। আপনার ভালোলাগার সাথেসাথে তার ভালোলাগাগুলোকেও প্রাধান্য দিন। যেকোনো সারপ্রাইজ দেয়ার ক্ষেত্রে তাকে মাথায় রেখে প্ল্যান করুন।

মনযোগ দিয়ে কথা শোনা
প্রায় সময়েই ভালোবাসার মানুষের কাছে অপর পক্ষের মানুষটির একটিই আবদার থাকে। তা হচ্ছে সে যেন তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে। ভালোবাসার মানুষটির সাথে থাকলেও দেখা যায় অনেক কাজে ব্যস্ত থাকা হয়। কখনো তা ফোনে আবার কখনো তা মেইলে। কাছের মানুষটির কথা ইচ্ছে থাকলেও মনোযোগ দিয়ে শোনা হয় না। আর যাতে সৃষ্টি হয় দূরত্ব। তাই যতটুকু সময় সম্ভব হয়, তার কথা শুনুন মনযোগ দিয়ে।

পরস্পরকে সময় দিন
সময় দেওয়া একটি সম্পর্কে অনেক বড় কিছু। আপনি আপনার প্রিয় মানুষটিকে কতটুকু ভালোবাসেন তা সময়ের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। সম্পর্কে মাঝে একে অন্যকে কিছুটা সময় দেওয়া প্রয়োজন। এতে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা যেমন বোঝা যায় তেমনি তা বাড়ে কয়েকগুণ। কাছাকাছি থাকা হলে অনেক সময় একে অন্যর গুরুত্ব বোঝা যায় না। যা বোঝা যায় কেবল দূরে থাকলে। তাই সম্পর্কে মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করেই একটু দূরত্ব বাড়ান। তবে তা সময় এবং অবস্থান বুঝে। আর তারপর আবার কাছাকাছি এসে বোঝান যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন!

 

যে কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি

কুরআন এবং হাদিসে মানুষের ভালো-মন্দ বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। যা  মানুষকে অন্যায়-অনাচার থেকে হিফাজত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষ সামান্য ভুলের কারণে মারাত্মক অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়ে।

যে সব অন্যায়ের কারণে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের ময়দানে কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর (মানুষের) সঙ্গে আল্লাহ তাআলা কথা বলবেন না। এমনকি তাদের প্রতি দয়ার দৃষ্টিতেও তাকবেন না। বরং তারা কঠিন আজাবে নিপতিত হবে। আর তা হলো-

বৃদ্ধাবস্থায় ব্যভিচার
এর মানে এই নয় যে, যৌবন কালে ব্যভিচার করা দোষণীয় নয়। বরং ব্যভিচার সর্বাবস্থায়ই মারাত্মক অপরাধ। কিন্তু বৃদ্ধাবস্থায় ব্যভিচারকারীদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বনের কারণ হলো, বৃদ্ধাবস্থায় সাধারণত যৌনক্ষুধা নিবৃত থাকে এবং মৃত্যুর সময় সন্নিকটে বিধায় বৃদ্ধাবস্থায় কোনো ব্যক্তির ব্যভিচারের মতো গর্হিত কাজে কোনো ভাবেই কাম্য নয়। এ কারণেই তা সীমাহীন জঘন্য অন্যায় বলে পরিগণিত।

শাসকের মিথ্যা কথা বলা
মিথ্যা সব পাপের জননী। আর তাই মিথ্যা সবার জন্যই মারাত্মক অপরাধ। এখানে শাসকের কথা গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করার কারণ হলো, বাদশাহ বা শাসকগণতো কারো ভয়ে ভীত হওয়ার কথা নয় এবং কারো বাধ্যও নয়। ক্ষমতা ও প্রভাব থাকা সত্ত্বেও শাসকের মিথ্যা বলা সাধারণ মানুষ অপেক্ষা মারাত্মক অপরাধ। তাই সমাজের সব দায়িত্বশীলদেরকে মিথ্যা পরিহার করা জরুরি।

গরিবের অহংকার
বাদশাহ-ফকির, ধনী-গরিব, উঁচু-নীচু, ছোট-বড় সবার জন্যই অহংকার করা মারাত্মক অপরাধ। কিন্তু দরিদ্র মানুষের অহংকার করা বড়ই আশ্চর্যের বিষয়। কেননা গরিব মানুষের মধ্যে অংকারবোধ জাগ্রত হওয়ার কোনো কারণ থাকার কথা নয়। এ কারণে কোনো গরিব মানুষ যদি অহংকার করে বসে তা মারাত্মক অপরাধ।

পরিশেষে…
মানুষ যুবক হোক আর বৃদ্ধ হোক ব্যভিচার থেকে হিফাজত থাকা জরুরি। বিশেষ করে বৃদ্ধদের তা একেবারেই কাম্যনয়। আবার রাজা হোক আর প্রজা হোক মিথ্যা পরিহার করা আবশ্যক। বিশেষ করে যারা সমাজে মিথ্যার প্রচলন দূর করবে তাদের মিথ্যার আশ্রয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঠিক এমনিভাবে ধনী হোক আর গরিব হোক অহংকার থেকে মুক্ত থাকা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ব্যভিচার, মিথ্যা এবং অহংকারের মতো মারাত্মক অন্যায় থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। উল্লেখিত তিনটি বিষয় থেকে বিরত থেকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার নেক দৃষ্টি এবং দয়া লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

কোর্মা বিরিয়ানি তৈরি করবেন যেভাবে

বিরিয়ানি খেতে যারা পছন্দ করেন তাদের কাছে একটি জনপ্রিয় পদ হচ্ছে কোর্মা বিরিয়ানি। চেটেপুটে খেতে ভালোবাসলেও অনেকেই হয়তো এই খাবারটি তৈরির রেসিপি জানেন না। হঠাৎ কোনো অতিথি এলে বা ঘরোয়া পার্টিতে চাইলে রাঁধতে পারেন কোর্মা বিরিয়ানি। রইলো রেসিপি-

উপকরণ : খাসির মাংস ছোট করে কাটা ১ কেজি, বাসমতি চাল আধা কেজি, টক দই আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ ধনে গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ভাজা জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ, ছোট এলাচ ৪ টি, কিশমিশ সিকি কাপ, আলুবোখারা ৭/৮ টি, পুদিনা পাতা ২ টেবিল চামচ, ধনে পাতা ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৫/৬ টি, শাহি জিরা আধা চা-চামচ, জর্দার রং সামান্য, সিরকা ১ টেবিল চামচ, ঘি-তেল দেড় কাপ, কেওড়া জল ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো। কোর্মার মসলা (ছোট এলাচ ৬ টি, বড় এলাচ ৩ টির বিচি, লবঙ্গ ৪ টি, সাদা গোলমরিচ ৬টি ও দারুচিনি ৪/৫টা। এই মসলাগুলো চুলার পাশে রেখে মচমচে করে গুঁড়া করে নিতে হবে)।

প্রণালি : দই, আদা-রসুন বাটা, ধনে গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া ভাজা, জিরা, লবণ, সিকি কাপ তেল, ২ টেবিল চামচ ঘি,১ টেবিল চামচ কেওড়াজল ও কোর্মার মসলা অর্ধেক দিয়ে মাংস মেখে রাখুন। পাত্রের ১ কাপ তেল ও ঘি দিয়ে বেরেস্তা করে অর্ধেক তুলে নিন। বাকি অর্ধেক বেরেস্তার মধ্যে মাংস দিয়ে কোর্মার মতো রান্না করুন। নামানোর আগে বাকি অর্ধেক মসলা দিয়ে দিন।

চাল ২০ মিনিট ভিজিয়ে পানি ছেঁকে নিন। অন্য পাত্রে চালের ৪ গুণ গরম পানি করে তাতে কাঁচামরিচ ৫/৬ টি, এলাচ ৪/৫ টি, পুদিনাপাতা ২ টেবিল চামচ, ধনে পাতা ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, দারুচিনি ২/৩ টুকরা ও শাহি জিরা আধা চা-চামচ দিন। পানি ফুটে গেল ভেজানো চাল দিন। চাল আধা সেদ্ধ হলে নামিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার বিরিয়ানি রান্নার পাত্রে ১ টেবিল চামচ ঘি ছড়িয়ে দিন।

এবার কিছুটা আধা সেদ্ধ চাল ছড়িয়ে অর্ধেক পরিমাণ মাংস ঢেলে দিন। এর ওপর বেরেস্তা ও কিশমিশ ছড়িয়ে দিন। মাংসের ওপর আবার একইভাবে রান্না করা ভাত ও মাংসের স্তর সাজান। ওপরে আবার চাল দিন। এখানে ভাতের স্তর হবে তিনটি এবং মাংসের স্তর হবে দুটি। সবার ওপরে বাকি ঘি এবং দুধে ভেজানো কেওড়া ছড়িয়ে দিয়ে আলু বোখারা গুজে দিন। এবার ঢাকনা দিয়ে ২০ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

চোখ সাজাতে আইশ্যাডো

চোখের সাজে মনের কথা ফুটে ওঠে। তাইতো কতভাবে কত ঢঙে এই চোখকে ফুটিয়ে তোলা হয়। কখনো কাজলের স্পর্শে আবার কখনো বাহারি রঙের ছটায়। প্রিয় মানুষটির ছায়া নিজের চোখে দেখতে কে না পছন্দ করে। আর চোখ সাজাতে জুড়ি নেই আইশ্যাডোর। এটি চোখকে যেমন ফুটিয়ে তোলে তেমনই এর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। তবে এই আইশ্যাডো দেয়ার আছে কিছু নিয়ম। যার সাহায্য আপনার চোখকে আরো সুন্দর করে তুলতে পারেন।

চোখের আকার, রুচি, পোশাকের ধরণ ও রং, সাজের ধরন এবং আপনার ব্যক্তিত্ব আর স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী বেছে নিন শ্যাডো। তবে  সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে হালকা রং যেমন গোলাপি, হালকা নীল, সোনালি, হালকা সবুজের যেকোনো শেড। ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে চোখে মোটা করে কাজল বা স্মোকি আই সবচেয়ে মানানসই।

দিনের বেলা ব্যবহারের জন্য সংগ্রহে রাখতে পারেন বাদামি, ছাই (এশ), মভ, পিচের মতো আর্থ বা বেইজ টোনের রঙগুলো। আর রাতে ব্যবহারের জন্য অরেঞ্জ বা কমলা, বেগুনি, লাল, হলুদ, সবুজ, নীল, ডিপ ম্যাজেন্টা রঙগুলো থাকা চাই বিউটি বক্সে।

আইশ্যাডো বাছায়ের জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার গায়ের রঙের দিকে নজর রাখতে হবে। যাদের গায়ের রং ফর্সা তারা দিয়ে হালকা আর রাতে গাড় শেড ব্যবহার করুন, আর যাদের গায়ের রং শ্যামলা তারা সোনালি, সিলভার, গাঢ়, বেগুনি, বারগ্যান্ডি, বাদামি, পিচ, মভ ইত্যাদি।

চোখের আকারের সাথে সাথে আবার আইশ্যাডো লাগানোর ধরণে আসে বৈচিত্র্য। যেমন যাদের দু’চোখের দূরত্ব কম তারা নাকের কাছাকাছি থেকে চোখের ভেতরের দিকে শ্যাডো ব্যবহার করুন।

অন্যদিকে যাদের চোখের দূরত্ব বেশি, তারা চোখের ভেতরের অর্ধেক অংশজুড়ে মাঝারি থেকে গাঢ় টোনের যেকোনো রঙের শ্যাডো লাগান। ছোট চোখে হালকা রঙের আইশ্যাডোগুলো ভালো দেখায়।

শ্যাডো লাগানোর ক্ষেত্রে স্পঞ্জ বা ব্রাশ অ্যাপ্লিকেটর ব্যবহার করতে পারেন। আঙুল দিয়েও কাজ সেরে নেয়া যাবে। পছন্দমতো আইশ্যাডো নিয়ে আইল্যাশের কিনারা থেকে চোখের পাতার উপরের ভাঁজ পর্যন্ত লাগিয়ে নিন।

শ্যাডো লাগানোর ব্রাশ বা স্পঞ্জ বহুব্যবহৃত বা পুরনো হলে সেটি ব্যবহার করবেন না। এতে করে চোখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং আপনার আইশ্যাডো কাজে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

চোখের সাজের ক্ষেত্রে সময় নিয়ে সাজুন। খেয়াল রাখুন যাতে চোখের ভেতর চলে না যায়। চোখের সাজের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের পন্য ব্যবহার করলে ভালো হয়। আর অবশ্যই আপনার গায়ের রঙ এবং পোশাকের সাথে মিলিয়ে আইশ্যাডো চোখে লাগান।

 

রুমানার ত্রিমাত্রিক বইয়ের জগৎ

রুমানা আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) স্থাপত্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষে পড়ার সময় ত্রিমাত্রিক বই তৈরির কাজ শুরু করেন। রুমানা বলেন, ‘এখন সময় স্মার্টফোনের। মানুষ বই পড়তে চায় না। শিশু-কিশোরেরাও বই পড়তে চায় না। শিশুদের স্মার্টফোন থেকে বই পড়ার দিকে কীভাবে মনোযোগী করা যায়, সেই চিন্তা থেকেই আমার পপ-আপ বই তৈরি শুরু।’

নিজের উদ্যোগে, অর্থায়নে কাজ শুরু করেছেন রুমানা শারমীন। প্রথমে নিজের হাতে বই তৈরি করে বিক্রি করতেন। চাহিদা বাড়ায় এখন উৎপাদন করছেন। তাঁদের প্রতিষ্ঠান লাভজনক অবস্থায় আছে বলে জানালেন। গত কয়েক মাসে দুই হাজার কার্ডবোর্ডের উপযোগী ভার্চ্যুয়াল রিয়্যালিটি ছবি ও বই বিক্রি হয়েছে।

রুমানাদের প্রকাশিত সব বইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে রং-বেরঙের পপ-আপ। বইগুলো দেশেই তৈরি হচ্ছে দেশীয় গল্প আর দেশীয় ডিজাইনারদের হাতে। এটা একাধারে হস্তশিল্প ও প্রকাশনা সংস্থা। ২০১৫ সালের একুশে বইমেলায় শিশুতোষ গল্পের পপ-আপ বই আনার পর তাঁরা দারুণ সাড়া পান। একটি ব্যাংক থেকে ঋণও পান। উদ্যোক্তা হিসেবে এখন রুমানা বেশ পরিচিতি পেয়েছেন।

 

ঢেউয়ের বিরুদ্ধে হাল ধরেছেন নয় নারী

নদের নাম বুড়াগৌরাঙ্গ। তবে বয়োবৃদ্ধ নয়। ভাটার সময়ও তীব্র স্রোতের টান, ঢেউ আছড়ে পড়ে দুপাড়ে। জোয়ার এলে তো কথাই নেই। ঝড় কিংবা জলোচ্ছ্বাসের সময় যেন দানব হয়ে ওঠে বঙ্গোপসাগর-ঘেঁষা পটুয়াখালীর এই নদ।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নদীর রূপ যা-ই হোক না কেন, বুড়াগৌরাঙ্গ কিন্তু হার মেনেছে কয়েকজন নারীর কাছে। প্রশস্ত এই নদের ঢেউ চিরে তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছেন দ্রুতগামী জলযান, ইংরেজি ‘স্পিডবোট’ নামে সবাই যাকে চেনে। ক্ষিপ্রগতিতে স্পিডবোট চালিয়ে তাঁরা উপার্জন করছেন অর্থ, হাল ধরেছেন দারিদ্র্যের কবলে পড়ে ধুঁকতে থাকা সংসারের।
নদের স্রোতের বিরুদ্ধে এভাবে হাল ধরেছেন মাত্র নয়জন—কুলসুম বেগম, খাদিজা বেগম, নূপুর আক্তার, ফাতেমা বেগম, নীলুফার, মমতাজ, সুজাই রানী, সালেহা ও নূরজাহান। ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সের এসব নারী থাকেন পটুয়াখালীর গলাচিপার চর বিশ্বাস ও চর কাজল ইউনিয়নে। জন্ম থেকেই এই চরাঞ্চলকে ঘিরে থাকা দুরন্ত সব নদ-নদী তাঁদের চিরচেনা।
দুর্গম এ চরাঞ্চলে বাল্যবিবাহের প্রচলন আছে। মাছ ধরা আর কৃষিকাজ ছাড়া পুরুষদের অন্য কোনো কাজ নেই। বর্ষার পর কার্তিকের ধানকাটা হলে তাঁরা প্রায় কর্মহীন। এর ওপর কেউ যদি স্বামী পরিত্যক্ত হন, কিংবা কারও স্বামী যদি মারা যান, তাহলে নারীদের একপ্রকার পানিতেই পড়ে যেতে হয়। এই নয়জন নারীই এভাবে অসহায়ত্বের কবলে পড়েছিলেন।
ব্যবসায়ী আদু আকন্দ বছর কয়েক আগে মরণঘাতী ক্যানসারে ভুগে মারা যান। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন খাদিজা আক্তার। একইভাবে ফাতেমা আক্তারের স্বামী আবদুর রহমান খানের আয়-রোজগারে সংসারে অভাব-অনটন লেগেই ছিল। ওদিকে মধ্যপ্রাচ্যে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নূপুরের স্বামী দুই সন্তানের জনক শাহ আলম।
কিন্তু যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান অ্যাকশনএইডের আর্থিক সহায়তায় চরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের (পিআরসিডি) অধীনে চর বিশ্বাস ও চর কাজলে অসহায় নারীদের জন্য শুরু হয় স্পিডবোট প্রশিক্ষণ। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে অ্যাকশনএইডের অংশীদার সাউথ এশিয়ান পার্টনারশিপ (স্যাপ)। ৯ জন নারী ও ১১ জন পুরুষকে স্পিডবোট চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ছয় মাসে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন তাঁরা। বর্তমানে চার মাস ধরে বুড়াগৌরাঙ্গসহ আশপাশের নদ-নদীতে স্পিডবোট চালিয়ে আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন কুলসুম, খাদিজা, নূপুর, ফাতেমা, নীলুফাররা।
২১ নভেম্বর দুপুরে বন্যাতলী ঘাটে কথা হয় খাদিজা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এমন কু-কথা নাই যে আমারে শুনতে হয়নি। বোট যেন চালাইতে না পারি, হের লইগা আমারে নিয়া প্রভাবশালীরা সালিস বসাইছে। আমার স্বামী না থাকার সুযোগ যারা নিতে চাইছে, তারাই আবার অপবাদ দিসে।’
নূপুর অনেকটা কান্না মেশানো কণ্ঠে বলেন, ‘ভাই, আমাগো এই চরে কাম করনের সুযোগ নাই। হাতও পাততে চাই না। পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে আইসা স্পিডবোট চালানো শিখছি। অহন এই বোট চালাইতে পারলে বাচ্চা দুইডার মুখে খাওন দিতে পারমু। ভাই, খুব কষ্টে আছি।’
স্পিডবোট মাত্র একটি। চালক নয়জন নারী। বোট চালাতে মেরিন অফিস থেকে নিবন্ধন করা হয়েছে। এখন বন্যাতলী থেকে চর কাজল ঘাট পর্যন্ত চালাতে রুট পারমিটের আবেদন করা হবে। এরপরই বাণিজ্যিকভাবে স্পিডবোট চালানো শুরু হবে বলে জানান পিআরসিডির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক ভুঁইয়া ফরিদউদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন গর্ভবতী মা-সহ অসুস্থ রোগীদের দুর্গম চরাঞ্চল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেওয়া, লাশ বহনের সেবামূলক কাজ করা হয় এই স্পিডবোটের মাধ্যমে। পর্যটক, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন কার্যক্রমের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। এই টাকার একটি অংশ স্পিডবোটের নারী চালকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। বাকি অংশ একটি ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। এভাবে নতুন স্পিডবোট কেনা হবে। তবে অ্যাকশনএইড থেকে
নতুন আরও একটি অত্যাধুনিক স্পিডবোট কেনা হবে, যার আসন ১৬টি।

 

সাজাই শিশুর চুল

নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা কার না থাকে! বড়দের বেলায় কথাটা যেমন সত্য, ছোটদের বেলাতেও তাই। বিশেষ করে ছেলেদের চুলের কাটছাঁটে একটু স্টাইল যোগ করাই যায়। এই সময়ে যেহেতু নানা ধরনের অনুষ্ঠান বা দাওয়াত থাকে, শিশুর চুলের স্টাইলই বাজিমাত করবে সেখানে।

বড়দের মতো ছোটরাও চুলে নানা ধরনের কাট দিচ্ছে আজকাল। আবার স্টাইল পরিবর্তন সব সময় কাটের মধ্যে দিয়েই হতে হবে এমনটাও না। পানি, জেল বা একটা চিরুনি দিয়েই নানা স্টাইলে শিশুর চুল সেট করে নিতে পারেন।

কিছু চুলের স্টাইল বড় চুলে আবার কিছু ছোট চুলের জন্য। সে জন্য কাটের দিকেও নজর দিতে হয়। তবে শিশুদের হেয়ারস্টাইল করার আগে মনে রাখতে হবে তারা ঘোরাফেরা, খেলাধুলা, দুরন্তপনায় মেতে থাকতে ভালোবাসে।

তারা যাতে আরামবোধ করে এবং খেলাধুলা করতে স্বস্তি পায়, সেভাবে তাদের চুলের কাট দেওয়া ভালো। এতে চুল আঁচড়ে সহজে সেট করে নেওয়া যায়।

বানথাই বারবার অ্যান্ড বিউটি স্যালনের হেয়ার এক্সপার্ট কাজী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুর চুলের স্টাইল নিয়ে অনেক বাবা-মা দোটানায় ভোগেন। কেউ আরামের জন্য ছোট চুল রাখতে ভালোবাসেন। আবার কেউ বড় চুল কেটে ছোট করতে চান না। সময়ের সঙ্গে চুলের কাটে ভিন্নতা এনে শিশুকে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করেন কেউ কেউ।

বড়দের চুলের স্টাইল অনেকটা নির্ভর করে মুখের গড়নের ওপর। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে সবার মুখের গড়ন একই, তাই তাদের সব ধরনের স্টাইলেই মানায়।’

ছোট চুলে স্পাইক করতে চাইলে ওপরে সামনের দিকে এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল রাখতে হবেচুলের নানা স্টাইল
পারসোনা অ্যাডামসের ব্রাঞ্চ ইনচার্জ মাসুম বিল্লাহ খান বলেন, ‘ছোট ছেলেদের চুল কাটানোর চেয়ে আঁচড়ে সেট করে নেওয়াই ভালো। তবে যেকোনো হেয়ারস্টাইলের জন্য চুলের দৈর্ঘ্যটা গুরুত্বপূর্ণ।’.
শিশুর চুলে স্পাইক কাট রাখতে পারেন। কোনো অনুষ্ঠান বা দাওয়াতের দিন জেল দিয়ে চুল ইচ্ছেমতো সেট করে নেওয়া যাবে। স্পাইক ছোট বা বড়—যেকোনো চুলেই করা যায়। ছোট চুলে স্পাইক করতে ওপরে এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল রাখতে হবে। আর পাশে থাকবে আধা ইঞ্চি লম্বা। তবে একেবারে গোলমুখের শিশুদের স্পাইকের বদলে অন্য কাট ভালো দেখাবে।
আবার শিশু লম্বা স্পাইক কাটের মধ্যে ব্যাকব্রাশ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে পেছনে ছোট রেখে সামনে আড়াই ইঞ্চি বড় রাখতে হবে।
চুল চারদিকে ছোট করে সামনে এক গোছা ফেলে রাখা যায়আবার স্পাইক কাটে মাথার সব দিকের চুলই ছোট করে কেটে জেল ব্যবহার করে স্টাইল বজায় রাখা যায়।
স্পাইক ছাড়াও কোথাও যাওয়ার আগে কিছুটা বড় করে রাখা চুল সামনের দিকে ছড়িয়ে দিলেও ভালো দেখাবে। এর জন্য সামনে আড়াই ইঞ্চি বড় রাখতে হবে। যেসব ছেলে-বাচ্চার চুল কম, তাদের চুল বড় না করে সাইডে এবং ওপরে ছোট করে কেটে চিরুনি দিয়ে এক পাশে দিয়ে সেট করতে পারেন। আবার যাদের পেছনের চুল পাতলা, তাদের চুল চারদিকে ছোট করে সামনে এক গোছা ফেলে রাখা যায়। এ জন্য সামনে চুল দরকার হবে আড়াই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা চুল। মাঝে মাঝে শিশুদের একটু রকিং ভাব আনার জন্য মাঝারি লম্বা চুল এলোমেলো স্টাইলে হেয়ার স্প্রে দিয়ে সেট করে নিতে পারেন।
একটু ভিন্নতা আনতে সেলুন থেকে এক পাশটা সম্পূর্ণ ট্রিম করে আরেক পাশে চুল ফেলে দিতে পারেন। এ ছাড়া পাশের চুল ছোট করে মাঝের চুল ড্রায়ার দিয়ে ফুলিয়ে সামনে একটু জেল লাগিয়ে রাখলেও ভালো দেখাবে। এ জন্য পাশের চুল ছোট রেখে ওপরে দুই ইঞ্চি চুল রাখতে হবে। সেলুন থেকে শিশুর চুল এমনভাবে কাটিয়ে আনতে পারেন, যাতে করে সেটা নানা স্টাইলে সেট করে নেওয়া যায়। তাহলে একেক সময় একেকভাবে রাখা যাবে।

 

কিমা স্যান্ডউইচ তৈরি করবেন যেভাবে

স্যান্ডউইচ খেতে ভালোবাসেন অনেকেই। শিশুদের টিফিনে কিংবা ঘরোয়া আড্ডায় নাস্তা হিসেবে স্যান্ডউইচের কদর রয়েছে বেশ। তবে রেস্টুরেন্ট থেকে কিনে না এনে ঘরেই তৈরি করতে পারেন এই মজাদার খাবারটি। আজ রইলো কিমা স্যান্ডউইচ তৈরির রেসিপি-

উপকরণ : মাংসের কিমা – ২০০ গ্রাম, ছোটো সাইজের পেঁয়াজ – ২টি, আদা বাটা – ১ চা চামচ, রসুন বাটা – ১ চা চামচ, মরিচের গুঁড়া – ১ চা চামচ, সামান্য হলুদ, তেল – আড়াই চামচ, ধনেপাতা কুচানো, লবণ – আন্দাজমতো, মাখন – ৮ চা চামচ, পাউরুটি – ৮ পিস।

প্রণালি : প্রথমে মাখন, পাউরুটি, ধনেপাতা বাদে বাকি সব উপকরণ ভালো করে তেলে কষিয়ে নিতে হবে। এবার এতে সামান্য পানি দিতে হবে। ভালো করে কিমা সিদ্ধ হলে পানি কড়াইতেই শুকিয়ে নেবেন। এবার তাতে ধনে পাতা মিশিয়ে দিন। ঠান্ডা হতে দিন। পাউরুটির ওপরে মাখন লাগান। একটার ওপরে পুরটা দিয়ে আরেকটা পাউরুটির স্লাইস চাপা দিন। পুর দেওয়া হলে ছুরি দিয়ে তিনকোণা করে কেটে নিন।

 

শীতের সকালে অলসতা কাটাবেন যেভাবে

শীতের সকাল মানেই ধোয়া ওঠা গরম চায়ের কাপ কিংবা গরম গরম পিঠা। কখনো সকালের উষ্ণ মিষ্টি রোদ আবার কখনো লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুম। আর এই ঘুম আপনাকে কখনো কখনো পৌঁছতে দেরি করিয়ে দেয় আপনার কর্মস্থলে। তাছাড়া যাদের সকালে স্কুল কিংবা ভার্সিটি থাকে তাদের এই শীতের সকালের জড়তা কাটাতে বেশ বেগ পেতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় সকালে বিছানার পাশে রাখা অ্যালার্ম ক্লক আপনি নিজে নিজে বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ছেন। যারা উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিকের রোগী তাদের সকালে হাঁটতে হয় কিংবা ব্যায়ামের মাধ্যমে রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। যা এই শীতের সকাল আপনাকে করতে দেয় না। তবে কিছু কাজ আপনাকে এই শীতের সকালের জড়তা কাটাতে সাহায্য করবে।

গরম পানি দিয়ে গোসল
শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠলেও অনেকেরই সেই ঘুমঘুম ভাবটা থেকে যায়। যার ফলে দেখা যায় ঠিকমতো কাজে মন দিতে পারছেন না যেমন ঠিক তেমনই মেজাজ ও খারাপ হয়ে আছে। তাছাড়া শীতের সকালে জড়তা একটা ভাব থেকে যায় যা কাটতে চায় না। তাই এই জড়তা কাটাতে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই। দেখবেন আপনি যেমন ফ্রেশ অনুভব করছেন ঠিক তেমনি আপনার ভেতর প্রাণবন্ত ভাব লাগছে। যা আপনাকে এই জড়তাভাব কাটিয়ে কাজে মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।

কফি বা চা
শীতের সকাল মানেই আলসেমিতে ভরপুর। এই আলসেমি আর জড়তা ভরা সকালকে চাঙ্গা করতে আপনার সঙ্গী হতে পারে এক মগ গরম কফি কিংবা এক কাপ গরম চা। যা আপনাকে সারা দিনের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে। এবং আপনি জড়তা কাটিয়ে পুনরায় কাজে ফিরে যাওয়ার প্রাণশক্তি পাবেন।

স্বাস্থ্যকর নাস্তা
সকালের নাস্তায় গরম দুধ, মধু, মাখন এই সব রাখার চেষ্টা করুন। এই সমস্ত খাবার আপনাকে এই শীতের জড়তা কাটাতে সাহায্য করবে। সাথে সাথে মৌসুমী ফল রাখতে পারেন যা আপনার এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি করে আপনাকে শীতের সকালের জড়তা এড়াতে সাহায্য করবে।

ব্যায়াম
ব্যায়াম কেবল আপনাকে রোগা করে না। বরং এটি আপনার শরীরে রক্ত চলাচলের মাত্রা ঠিক রেখে আপনাকে কাজে মনোযোগী করে তোলে। এর পাশাপাশি আপনি শীতের সকালে যে জড়তা অনুভব করেন তা নিমিষেই কেটে যাবে এই ব্যায়ামের মাধ্যমে। তাই শীতের সকালকে উপভোগ করতে আর জড়তা কাটাতে ব্যায়াম করুন।

 

শীত তাড়ানোর যন্ত্র

হিম শীতল বাতাসের কাঁপন জানান দিচ্ছে শীতের উপস্থিতি। শীতের বেশি কাতর হয়ে পড়েন বয়স্ক এবং শিশুরা। শীতের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম পানি। পানি এতটাই ঠান্ডা থাকে যে এর থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই যেন নিজেকে বাঁচানো যায়। তাছাড়া যাদের এ্যাজমা কিংবা ঠান্ডাজনিত সমস্যা আছে তাদের জন্য শীতের সময়টা কাটে কষ্টে।

যাদের বাতের ব্যথাজনিত সমস্যা আছে তাদের দেখা যায় দিনের প্রায় অর্থেক সময়টা পার করতে হয় লেপের ভেতর নয়তো কম্বল জড়িয়ে। তাদের এই সমস্যা থেকে রক্ষা করতে পারে রুম হিটার। এটি ঘরকে চারিদিক থেকে ধীরে ধীরে গরম করে ফেলে। আর এর উষ্ণতা থাকে লম্বা একটা সময়জুড়ে। রুম হিটার বহনে সহজ তাই দেখা যায় ঘরের একটি কোনায় থেকেই এটি সারা ঘরকে নিমিষেই গরম করে ফেলছে।

পানি ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবন কল্পনার বাইরে। আর এই শীতের সময় আপনার কাজকে কিছুটা সহজ করতে পারে গিজার। শীতের প্রকোপ কমাতে গিজারের বিকল্প নেই। টয়লেটের ফলস ছাদে গিজার বসানো হয়ে থাকে। গোসল কিংবা যাদের ঠান্ডা পানিতে সমস্যা তারা পানি ব্যবহারের আগে ১০ মিনিট গিজার চালিয়ে রাখুন। গিজার চালু করার পর পানি প্রয়োজন মতো গরম হলে গিজার আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যাবে।

শীতের সময়ের আরেকটি সঙ্গী হচ্ছে ইলেকট্রিক কেটলি। এই ইলেকট্রিক কেটলির পানি ধারণক্ষমতা থেকে চার থেকে দশ লিটার পর্যন্ত। আর এই ইলেকট্রিক কেটলির জন্য আলাদা বৈদুত্যিক লাইন ব্যবহার করা ভালো।

দরদাম
লোকাল  গিজার  ৪৫  লিটির  ৩  হাজার  ৫০০ টাকা,  ৬৫ লিটার  ৩  হাজার  ৮০০  টাকা,  ৯০  লিটার  ৫  হাজার  ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।, কোরিয়ান হুন্দাই ৯ হাজার টাকা, সেনবো তুর্কি ১২ হাজার টাকায় কিনতে পারবেন।  এছাড়া বিভিন্ন মডেলের হিটারের মধ্যে হিটাচির হিটার পাবেন দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে। নোভা দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকায়। এ ছাড়া মিয়াকো এবং নোভিনার হিটার ১৫০০ থেকে চার হাজার ৫০০ টাকার মধ্যেই পাবেন। সঙ্গে এক বছরের ওয়ারেন্টি। ইলেকট্রিক কেটলির দাম পরবে ৯০০ থেকে ২০০০ এর  মধ্যে।

কোথায় পাবেন
শীতে ব্যবহার করা এসব যন্ত্রপাতি পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা শহরের বসুন্ধরা সিটি শপিং মল (লেভেল-১), মিরপুর ১০, এলিফ্যান্ট রোডের স্যানিটারি কিংবা টাইলসের শোরুমগুলোতে, মৌচাক মার্কেট, নিউমার্কেট, বিভিন্ন ইলেকট্রনিকসের ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোতে।

 

শীতকাল ইবাদতের জন্য বসন্তকাল

হেমন্তকাল পেরিয়ে শুরু হয়েছে শীতকাল। শীতের আবরনে আচ্ছাদিত হচ্ছে প্রকৃতি। আল্লাহ তাআলা মানুষের কল্যাণেই প্রকৃতির এ পরিবর্তণ ঘটিয়ে থাকেন। যাতে রয়েছে আল্লাহ তাআলার কুদরতের নির্দশন।

আল্লাহ তাআলা বান্দার উপকারেই দুনিয়ার সব উপকরণ সৃষ্টি করেছেন। চন্দ্র-সূর্য, আলো-বাতাস এমনকি রাত, দিন, ঋতু এবং কালের সৃষ্টিও বান্দার কল্যাণে করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ দিন ও রাত্রির পরিবর্তন ঘটান। এতে অর্ন্তদৃষ্টি-সম্পন্নগণের জন্যে চিন্তার উপকরণ রয়েছে।’ (সুরা নূর : আয়াত ৪৪)

বাংলাদেশ ৬ ঋতুর দেশ বলা হলেও এদেশে প্রায় ৩ থেকে চার মাসব্যাপী শীতের আবহ থাকে। তবে দিন দিন শীতকালের স্থায়ীত্ব হ্রাস পাচ্ছে। শীতকাল মুমিন বান্দার ইবাদত-বন্দেগির জন্য বসন্তকাল। তা মুমিন বান্দার জন্য গণীমত স্বরূপও বটে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, শীতকাল মুমিনের জন্য গণীমতস্বরূপ। শীতকালীন রাত লম্বা হয়। তাতে মুমিন বান্দা (রাত জেগে) ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করতে পারে। আর দিন ছোট হয়; তাতে মুমিন বান্দা রোজা পালন করতে পারে।’  শীতের রাতে ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি দিনের বেলা রোজা রাখা সহজ হয়।

বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মাতে মুহাম্মদিকে উদ্দেশ্য করে নসিহত স্বরূপ আরো বলেছেন, ‘শীতকালীন রাত লম্বা হয়, ঘুমিয়ে ইহাকে ছোট কর না। এবং দিন আলোকিত সুতরাং ইহাকে পাপ কার্যের দ্বারা অন্ধকার কর না।’

শীতকালে দিন ছোট হওয়ায় রোজা পালন করা সহজ। আবার রাত দীর্ঘ হওয়ায় নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াতসহ দীর্ঘ সময় ইবাদত-বন্দেগি করে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় ঘুমানো যায়। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহ তাআলার নিয়ামত।

সুতরাং আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য যে সব ঋতু দিয়েছেন, তার ওপর সন্তুষ্ট থাকা, সবর করা এবং নিআমাত তথা গণীমত মনে করে তা গ্রহণ করা অনেক কল্যাণকর।

পরিশেষে…
যেহেতু মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়, সেহেতু শীতকালের দীর্ঘ রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগি এবং দিনের স্বল্প সময়ে রোজা আদায় করা প্রত্যেক ঈমানদারের জন্য আল্লাহ রহমতও বটে।

আল্লাহ তাআলা এ শীতকালকে রহমত হিসেবে গ্রহণ করে ইবাদত-বন্দেগি ও রোজা পালনের জন্য মুসলিম উম্মাহকে তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

কুশনে সাজুক ঘর

ঘরের সাজের বেলায় সবাই চায় তার ঘরকে একটু আলাদা ভাবে সাজাতে। কিছুটা রঙের ছোঁয়াতে কিছুটা আবার শিল্পীর তুলিতে। কখনো বাহারি আলোর আভা দিয়ে সাজানো হয় ঘর। আবার কখনো শোপিস দিয়ে সাজানো থাকে ঘরের এ কোণ সেই কোণ। তবে এসব ছাড়াও আপনার ঘরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে পারে আরো একটি জিনিস। আর তা হচ্ছে কুশন। কুশনের কথা শুনলেই মাথায় যা প্রথমে আসে তা হচ্ছে বিছানার কথা। কিন্তু কুশন এখন কেবল বিছানাতেই আটকে নেই। এটি ব্যবহার হচ্ছে ঘর সাজাতেও। সোফা থেকে শুরু করে ডিভান সব জায়গাতে আছে এই কুশন। হেলান দিয়ে আরাম করে বসার ক্ষেত্রে কুশনের জুড়ি নেই।

কুশন আপনার শোবার ঘর ছাড়া থাকতে পারে বসার ঘরে। ড্রয়িং রুমে কুশন সোফা থেকে কিছুটা ছোট রাখার চেষ্টা করুন। এটি দেখতে সুন্দর লাগবে। দেয়ালের কালারের সাথে মিলিয়ে আপনি কুশনের রঙ নির্বাচন করতে পারেন। এই কুশনে থাকতে পারে এর পাশের অংশে পুঁতি বা ছোট পাথর বসানো কিংবা ঝুলানো নানা রঙের রেশমি কাপড়। এতে থাকতে পারে নানা ডিজাইন।

বড়দের ঘরের ক্ষেত্রে হালকা সবুজ, খয়েরি, বাদামি রঙ নির্বাচন করতে পারেন। এর পাশাপাশি সবুজের আভা ঘরে আনতে সবুজ রঙের কুশন ঘরে রাখতে পারেন। ছোটদের ক্ষেত্রে তাতে থাকতে পারে কার্টুন চরিত্র। কিংবা পুরো কুশনটিই হতে পারে কখনো মিকিমাউস আবার কখনো টম আবার জেরি। কখনো ফলের আকৃতি আবার কখনো হতে পারে টমেটো কিংবা পশুর ন্যায়। যা আপনার শিশুকে আনন্দ দেবে।

ঘরের কোণে থাকা ডিভানেও আপনি কুশন পিলো রাখতে পারেন। হেলান দিয়ে যাতে আরামে বসা যায় তার জন্য। এক্ষেত্রে কেনার সময় কাপড়ের দিকে লক্ষ রাখুন। আর বিছানাতেও রাখতে পারেন কুশুন। নানা রঙের কুশন আপনার ঘরকে উপস্থাপন করবে নান্দনিকতার সাথে।

 

খাবেন নাকি এফডিসির কালাভুনা?

শাকিব খান দুপুরে কী খান? কালাভুনা? প্রশ্নটি করা হলো সচীনকে। না, খেলোয়াড় শচীন নন, বাবুর্চি সচীনকে। এই সচীন রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) বিভিন্ন শুটিং ফ্লোর ও স্পটে খাবার সরবরাহ করেন। খানিক আগে তাঁর একটা ভিজিটিং কার্ড দিয়েছেন। নাম-ঠিকানার মাঝে সেখানে লেখা, ‘এখানে নাটক, টেলিফিল্ম, বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্রসহ সকল প্রকার অর্ডারের খাবার সরবরাহ করা হয়’।
শাকিবের বেশি পছন্দ হলুদ ছাড়া দেশি মুরগি রান্না এবং চিংড়ি ও পাবদা মাছ। তবে এখন আর তিনি এখানকার খাবার খান না। বাড়ি থেকেই নাকি খাবার আসে। বলেন সচীন।
শুধু শাকিবই নন, সচীনের সব তারকার পছন্দের খাবারের তালিকাই মুখস্থ। শুধু বলে দিলেই হয় আজ শুটিং স্পটে কোন তারকা আছেন! ঠিকঠাক পছন্দের খাবার গিয়ে হাজির হয় ওই তারকার পাতে।
এসেছি ‘এফডিসির খাবার’ বলে যে খাবার খান রুপালি পর্দার মানুষেরা, তার খোঁজ করতে। কারওয়ান বাজার রেলগেট পার হয়ে এফডিসির আগে যেসব গাড়ির গ্যারেজ আছে, সেগুলোর ভেতর দিয়ে একটু এগিয়ে গেলেই চোখে পড়ে তিনটি হোটেল। এখান থেকেই খাবার যায় এফডিসিসহ বিভিন্ন শুটিং স্পটে। ৫ ডিসেম্বর বিকেলে কথা হচ্ছিল এখানকার হোটেল মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে। তবে সব কথা ছাপিয়ে সবার আগে চলে এল বিখ্যাত সেই ‘গরুর মাংসের কালাভুনা’ প্রসঙ্গ।
সচীন বলেন, ‘১৮ বছর ধরে এফডিসিতে খাবার সাপ্লাই দিই। এর মধ্যে সবার পছন্দ ওই কালাভুনাই।’ সাধারণ গরুর মাংসকে কালাভুনায় রূপ দেওয়ার রহস্যটা কী?
‘কিছুই না। যেভাবে গরুর মাংস রান্না করা হয়, সেভাবেই রান্না করি আমরা। তবে মাটির চুলায় রান্না হয় বলেই সম্ভবত মাংসগুলো দ্রুত কালো হয়ে যায়।’ কিন্তু চট্টগ্রামের বিখ্যাত কালাভুনার সঙ্গে এর বেশ পার্থক্য রয়েছে বলে জানালেন পাশেই বসা আরেক খাবার সরবরাহকারী আবু সালেহ মুনশি। মসলা দেওয়ার মতো করে তিনি যোগ করলেন আরও এক তথ্য। ‘এটা বাবুর্চির একটা কেরামতি, সব কেরামতি কি আর কওন যায়?’
চলচ্চিত্রের বেশির ভাগ তারকাই কালাভুনা পছন্দ করেন। তালিকা করলে সেটা বেশ লম্বাই হবে। সচীন বলেন, ‘এমন কোনো তারকা নেই, যিনি কালাভুনা পছন্দ করেন না। তবে শরীর ঠিক রাখতে একটু কম খান, এই যা।’
এফডিসির লোক তো বটেই, বিশেষ কেরামতির এই কালাভুনার স্বাদ যে কেউ নিতে পারবেন। যেকোনো দিন দুপুরে কারওয়ান বাজার রেলগেটের কাছে এসে ‘এফডিসির খাবার কোথায় রান্না হয়’ বললেই দেখিয়ে দেবে স্থানীয় যে কেউ। তবে আসতে হবে শুধু দুপুরে। সকাল আর সন্ধ্যায় বন্ধ থাকে এই হোটেল। শুটিং স্পটের রাতের খাবারের অর্ডার থাকলেই খাবার রান্না করা হয় এখানে।
এখানে কালাভুনা, মুরগি, মাছের যেকোনো একটি এবং তিন পদের ভর্তা-ভাজি, পাতলা ডাল, ভাতসহ প্যাকেজ পড়বে ১০০ টাকা। একসঙ্গে বেশি অর্ডার হলে দামটা কমে আসে। তবে বাড়তি কিছু খেতে চাইলে আগাম অর্ডার দিতে হয়।
খাবারের এই তিনটি হোটেলই বেশ জমজমাট। ঢাকাসহ বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় খাবার সরবরাহে এগুলোর বেশ সুনাম আছে। এখানকার ভাই ভাই ক্যাটারিংয়ের (পরিচিতি পেয়েছে কালুর হোটেল নামে) ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বললেন, ‘সব সময়ই ঢাকার বাইরে আমাদের চার-পাঁচটা দল থাকে, যারা ওখানেই রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থা করে।’
ঢাকার মধ্যে বা বাইরে খাবারের দাম একই। শুধু পরিবহনের খরচটাই বাড়তি দিতে হবে। কথা শেষ করে ফেরার সময়ই অ্যালুমিনিয়ামের কলস, ডেকচি, টিফিন বাটিসহ খাবার বহনের বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে ফিরছিলেন কালুর হোটেলের কর্মী রায়হান মিয়া।
তিনি বলেন, শুধু এখানেই নয়, শুটিং স্পটে খাবার সরবরাহের জন্য বেগুনবাড়ী, তেজগাঁও এবং উত্তরার শুটিং বাড়ির আশপাশে বেশ কিছু খাবার সরবরাহকারী রয়েছেন।
তাঁর কথায় বোঝা গেল, যেখানে শুটিং থাকে, সেখানেই পৌঁছে যায় তাঁদের খাবার। চাইলে সেখানে থাকে সবার পছন্দের কালাভুনাও।

 

শীতে যা খেলে পাবেন ঝকমকে মুখ

শীতকালে অনেকের মুখের ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। ত্বক সতেজ করতে অনেকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন। তবে ত্বকে সজীবতার জন্য ভেতর থেকে শক্তি প্রয়োজন। শীতের মৌসুমে কিছু খাবার আছে, যা খেলে ত্বক ঝকমকে হয়ে উঠবে। জেনে নিন প্রাণবন্ত ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় কয়েকটি খাবারের নাম।

কমলালেবু: শীতকালে লেবুজাতীয় ফল ত্বকের জন্য দারুণ কার্যকর। এর মধ্যে কমলালেবু মুখের ত্বকের জন্য বেশি উপকারী। এতে প্রচুর ভিটামিন সি আছে। ভিটামিন সি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।

গাজর: সুন্দর ত্বকের জন্যও গাজর খেতে পারেন। এটি আপনার ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করবে। এর ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করবে। সেই সঙ্গে ভিটামিন এ ত্বকের অযাচিত ভাঁজ পড়া, কালো দাগ দূর করে।

অ্যাভোক্যাডো: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকায় অ্যাভোক্যাডো আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।


তৈলাক্ত মাছ:
স্যামন, টুনা, সার্ডিনের মতো সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমানে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আছে। রুক্ষ, শুষ্ক ত্বকে উজ্জ্বলতা আনতে এটি সাহায্য করে।


অলিভ ওয়েল:
প্রতিদিন ২ চা চামচ পরিমাণ অলিভ ওয়েল গ্রহণ করলে ৩১ শতাংশ ক্ষেত্রে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে। অলিভ ওয়েলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে সজীব রাখে।


টমেটো:
ত্বকের যত্নে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান টমেটো। যারা প্রতিদিন পাঁচ চা চামচ পরিমাণ টমেটো স্যুপ খায় এবং সঙ্গে এক চামচ করে অলিভ ওয়েল পান করে তাদের ত্বক অন্যদের তুলনায় বেশি সজীব থাকে।

গ্রিন টি: গ্রিন টি খুবই উপকারী। ঠান্ডা লাগার হাত থেকেও আমাদের রক্ষা করে গ্রিন টি। যারা দৈনিক গ্রিন টি পান করেন তাদের ত্বক বেশি মসৃণ ও নমনীয় হয়। এ ছাড়াও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা পায়। গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকে রক্তের প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বক সুস্থ রাখে।


তথ্যসূত্র: জিনিউজ।

 

দুধের পাতিল কোলে ফিরে গেলেন গীতা

গীতা রানীর কোলের ওপর দুধের পাতিল। যে রিকশায় এসেছিলেন, সেই রিকশাতেই তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন ব্যবসায়ী। চায়ের দোকানে দুধ দিতে এসেছিলেন। কিন্তু দোকানে চুলা জ্বালাতে পারলেন না।

পবার নওহাটা থেকে মুলা নিয়ে এসেছিলেন ব্যবসায়ী গোলাম রসুল। সকাল নয়টা বাজলেও তিনি বস্তার মুখ খুলতে পারেননি। দুপুর ১২টা বাজার অপেক্ষায় বসে রয়েছেন। সকালে রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার এলাকায় গিয়ে হরতালের এই চিত্র দেখা যায়।

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের ডাকে রাজশাহী নগরে অর্ধদিবস হরতাল চলছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বাড়ানো হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিলসহ চার দফা দাবিতে এই হরতাল ডাকা হয়েছে।

সকালে রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দু-একটা রিকশা ও অটোরিকশা চললেও নগরের আরডিএ মার্কেটের সামনে দিয়ে ব্যবসায়ীরা কোনো রিকশা পার হতে দিচ্ছেন না। মুলার ব্যবসায়ী গোলাম রসুল বলেন, ‘যে দলেরই হরতাল হোক মাস্টারপাড়ার এই রাস্তায় পাইকারি সবজি বিক্রি কোনো দিন বন্ধ থাকতে দেখিনি।’ এ জন্যই মুলা নিয়ে এসেছিলেন। এই প্রথম দেখলেন এই সড়ক ফাঁকা পড়ে রয়েছে।
রাজশাহী নগরের আরডিএ মার্কেটের নির্মাণশ্রমিক এরফান আলী সকাল থেকে সাহেব বাজার কাঁচাবাজারের গেটে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো হরতালেই কাঁচাবাজার বন্ধ থাকতে দেখিনি। এ কোন হরতাল যে কাঁচাবাজারের গেটে তালা লাগাইয়া দিছে।’ সেখানেই একজন পিকেটার দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বললেন, ‘চাচা, ১২টার পরে আসেন।’
নগরের ষষ্ঠীতলা এলাকায় থাকেন রাজশাহী কলেজের ছাত্র সবুজ সরকার। তিনি বলেন, সাহেব বাজারের কাঁচাবাজার থেকে ফিরে গিয়ে নিউমার্কেটের কাছে অল্প করে খোলা একটা দোকান থেকে বেশি দামে সবজি কিনেছেন।
সংগ্রাম পরিষদের অন্য দাবিগুলো হলো—অস্বাভাবিক হারে বর্ধিত ট্রেড লাইসেন্স ফি বাতিল, আরোপিত সাইনবোর্ড ফি প্রত্যাহার এবং আরোপিত ভ্যাট সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা।

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক এনামুল হককে সকাল নয়টার দিকে নগরের সাহেব বাজার এলাকায় হরতালে পিকেটিং করতে দেখা গেছে। তিনি বললেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন বাসাবাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে নগরবাসীর জন্য নতুন বিপদ ডেকে এনেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০-১২ গুণেরও বেশি এই ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। এতে নগরের বাসাবাড়ির মালিকেরাই শুধু নন, ভাড়া বাড়ানোর আশঙ্কায় ভাড়াটেরাও হুমকির মুখে পড়েছেন।
অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ও ওষুধের দোকান হরতালের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু অটোরিকশা রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে। রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটে বাস চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের এই হরতালে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ, মহানগর মেস মালিক সমিতি, হেরিটেজ রাজশাহী, আরডিএ মালিক সমিতি, নদী বাঁচাও আন্দোলনসহ আটটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন সমর্থন জানিয়েছে।

 

রাগ দমনে বিশ্বনবির উপদেশ

ক্রোধ বা রাগ মানুষের জন্য বহু অনিষ্টের কারণ। রাগের ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হয় আবার এ রাগই মানুষকে জাহান্নামের ইন্ধনে পরিণত করে দেয়। রাগ এমন এক জিনিস; যা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এ জন্য রাগ বা ক্রোধ নিয়ন্ত্রণকারীকে হাদিসে বীর পুরুষ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ওই ব্যক্তি বীর পুরুষ নয় যে অন্যকে ধরাশায়ী করে; বরং সেই প্রকৃত বীর যে রাগ বা ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)

এ রাগের ফলে মানুষ অনেক নির্দয় ও অত্যাচারমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে যার জন্য লজ্জিত হতে হয় আবার ক্ষেত্র বিশেষ অনেক কঠিন খেসারত দিতে হয়। তাই মানুষের উচিত কোনো অবস্থাতেই রাগ বা ক্রোধ প্রকাশ না করা।

মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় একজন আরেকজনকে ক্ষমা করে দেয়া সহজ ব্যাপার; কিন্তু রাগের সময় ক্ষমা করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। প্রকৃত মুমিন যারা তারা রাগের সময়ও অন্যকে ক্ষমা করে দেয়। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের প্রশংসায় বলেন, ‘এবং যখন তারা ক্রোধান্বিত হয় তখনও তারা ক্ষমা করে দেয়।’ (সুরা শুরা : আয়াত ৩৭)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে রাগ থেকে নিজেদের হিফাজত করার ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছেন। বর্তমান সময়ে চিকিৎসক ও আল্লাহওয়ালা ব্যক্তিগণ যে উপদেশগুলো মানুষকে দিয়ে থাকেন, তার মধ্যে রাগ থেকে নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা অন্যতম। রাগের কারণে মানুষের দ্বারা অত্যাচার থেকে শুরু করে অধিক উত্তেজিত হওয়ার ফলে জীবনহানির সম্মুখীন হয়।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ওসিয়ত (উপদেশ) করুন। তিনি বললেন, রাগ করবে না। লোকটি বারবার তার কথাটি বলতে থাকলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও একই জবাব দিলেন এবং বললেন রাগ করবে না।’ (বুখারি, মিশকাত)

রাগ বা ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকতে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, রাগ বো ক্রোধ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। আর শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুনকে পানি দ্বারা ঠাণ্ডা বা নিভানো যায়। যদি কেউ রাগ বা ক্রোধান্বিত হয়; তবে তার উচিত অজু করে নেয়া। (আবু দাউদ, মিশকাত)

অন্য হাদিসে হজরত আবু যর গিফারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যদি দাঁড়ানো অবস্থায় কেউ রাগ বা ক্রোধান্বিত হয়, তবে সে যেন বসে যায়। এতেও যদি তা প্রশমিত না হয় তবে সে যেন শুয়ে পড়ে। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি)

পরিশেষে…
সুস্থ ও সুন্দর জীবন গঠনে দুনিয়া ও পরকালের শান্তি ও কল্যাণ লাভে সর্বাবস্থায় রাগ বা ক্রোধ থেকে নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। অযথা রাগের কারণে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়।

রাগের যাবতীয় অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকার জন্য বিশ্বনবির ছোট্ট একটি হাদিসই যথেষ্ট। আর তা হলো- ‘রাগ মানুষের ঈমানকে নষ্ট করে দেয় যেমনিভাবে তিক্ত ফল মধুকে নষ্ট করে দেয়।’ (বাইহাকি, মিশকাত)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রাগ বা ক্রোধের অনিষ্ট থেকে হিফাজত করুন। সুস্বাস্থ্য ও ‍সুন্দর জীবন গঠন এবং ঈমান রক্ষায় আত্মনিয়োগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

স্বামী-স্ত্রীর মিলনের সময় দোয়া পাঠের ফজিলত

স্বামী যখন স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করার ইচ্ছা পোষণ করে, তখন তার জন্য হাদিসের শেখানো দোয়া পড়া সুন্নত। হাদিসে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রী সহবাসের সময় এ দোয়া পড়তে বলেছেন, ‘বিসমিল্লাহ্‌। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও  জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা। অর্থাৎ আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ, আমাদের শয়তান থেকে বাঁচান এবং আমাদের যদি কোনো সন্তান দান করেন, তাকেও শয়তান থেকে বাঁচান।’ (বুখারি ও মুসলিম)

দোয়া পড়ার ফজিলত
>> হজরত ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যদি তোমাদের কেউ স্ত্রী সহবাসের সময় ‘বিসমিল্লাহ্‌। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও  জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা’ বলে এবং তাদের ভাগ্যে সন্তান নির্ধারণ করা হয়, তবে শয়তান কখনো তার ক্ষতি করবে না।’
>> বুখারির বর্ণনায় রয়েছে, ‘শয়তান তার ক্ষতি করবে না, এবং তার উপর শয়তানকে প্রভাব বিস্তার করতে দেয়া হবে না।

এ বর্ণনার ব্যাখ্যায় কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়-

>> কেউ বলেছেন,‘ যে ব্যক্তি স্ত্রী সহবাসের দোয়া  পড়বে, ওই মিলনে সন্তান হলে সে সন্তানটি নেককারদের অন্তর্ভুক্ত হবে, যার উপর শয়তানের কর্তৃত্ব থাকবে না।

>> অনেকে বলেছেন, স্ত্রী সহবাসের সময় দোয়া পড়লে এবং ওই মিলনে সন্তান হলে শয়তান তাকে (সে সন্তানকে) পরাস্ত করতে পারবে না, অথবা শয়তান তাকে কুফরির মাধ্যমে গোমরাহ করতে পারবে না, অথবা তার জন্মের সময় পিতার সঙ্গী হতে পারবে না যখন সে তার মায়ের সাথে সহবাস করে।

>> এ প্রসঙ্গে কাজি ইয়াজ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, শয়তান তাকে পরাস্ত করতে পারবে না। কেউ বলেছেন : জন্মের সময়, অন্যান্য সন্তানের বিপরীতে,  শয়তান তাকে খোঁচা দেবে না। তিনি বলেন : তবে সকল ক্ষতি, শয়তানি ওয়াসওয়াসা ও পথভ্রষ্টতা থেকে সে সুরক্ষা পাবে এ অর্থ কেউ করেন নি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে স্ত্রী সহবাসের দোয়া পড়ে তার ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। সৎ ও নেক সন্তান দান করুন। আমিন।

 

সফল অর্থব্যবস্থাপনার জন্য গড়ে তুলুন এই ৩টি অভ্যাস

সফল ব্যবসায়ী হতে হলে অর্থের হিসেবটাও সফলভাবে রাখতে হবে আপনাকে। তাই না? অর্থ ব্যবস্থাপনা একটি কঠিন দক্ষতার বিষয়। আপনি যখন একজন উদ্যোক্তা তখন আপনাকে সামলাতে হবে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি দিক। সকল প্রয়োজন তখনই পূরুণ করা সহজ হবে যখন আপনার হাতে থাকবে অর্থ। যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই একমাত্র এটি করা সম্ভব। সফলতার সূত্র লুকিয়ে আছে এখানেই।

 

প্রতিষ্ঠানের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার করতে এবং অর্থ সমাগম বাড়াতে গড়ে তুলুন এই ৩টি অভ্যাস-

 

সঞ্চয় মানসিকতা
সুস্থ আর্থিক জীবনযাপনের জন্য অর্থ সঞ্চয় করা খুবই জরুরি। এটি যেমন আপনার ব্যক্তিজীবনের জন্য সত্য তেমনি সত্য আপনার ব্যবসার জন্যেও। নতুন ব্যবসার শুরুতে হয়ত আপনার পক্ষে সঞ্চয় করা সম্ভব হবে না। কারণ আপনি যা আয় করবেন তার সিংহভাগই চলে যাবে ঋণশোধ করতে বা পুনঃবিনিয়োগে।

 

কিন্তু সঞ্চয় থাকতে হবে আপনার পরিকল্পনায়। একবার ঋণ করে ব্যবসা শুরু করেছেন। আবার বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই আবারো ঋণ করবেন না! তাই অল্প অল্প করে টাকা জমানো শুরু করুন। প্রতিমাসে সঞ্চয় করুন। অর্থ সঞ্চয় হোক আপনার নিয়মিত অভ্যাস।

 

মিতব্যায়ী হন

আপনি যখন একজন উদ্যোক্তা তখন ইচ্ছেমত খরচ করা আপনার জন্য হতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকারক। অন্যের অধীনে কাজ করার সময় আপনি মাসিক চুক্তিতে আয় করেন। তখন আপনি নিশ্চিত জানেন যে, মাস শেষে কী পরিমাণ অর্থ আপনি পাবেন। কিন্তু নিজের ব্যবসায় উপার্জন নির্দিষ্ট হয় না কখনো। তাই বুঝে শুনে খরচ করা উচিত।

 

নতুন ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যবসা ভালমত দাঁড় করানোর আগে স্বাধীনমত খরচ করা মোটেই ঠিক নয়। প্রতিষ্ঠানকে নিয়মানুবর্তিতায় নিয়ে আসতে মিতব্যায়িতা খুবই জরুরি।

 

সকল ক্রয়ের হিসেব
আপনার প্রতিটি খরচের হিসেন আপনাকে রাখতে হবে এবং অবশ্যই লিখিত রাখতে হবে। লিখিত না রাখলে মাস শেষে আপনি মেলাতে পারবেন না কোথায় কোনখাতে কত খরচ হল এবং কোন খরচ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কোন খরচ না করলেও চলতো অথবা কোন কর্মী আপনার অর্থের অপব্যবহার করছে কিনা। তাই অবশ্যই সকল ব্যায়ের নগদান হিসেব করতে হবে। মাস শেষে ব্যালেন্স সিট করে ফাইনাল একাউন্ট করে পরের মাস শুরু করতে হবে।

 

খুব সহজে তৈরি করুন মজাদার জাপানিজ চিজকেক

বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় একটি কেক হলো চিজকেক। কিন্তু মজাদার এই কেকটি সব বেকারিতে কিনতে পাওয়া যায় না। অনেকে মনে করেন চিজকেক তৈরি করা বেশ কঠিন। কঠিন এই কেকটিও সহজে তৈরি করা সম্ভব। আসুন আজ জেনে নেওয়া যাক চিজ কেকের সহজ রেসিপিটি।

উপকরণ:

৬টি ডিম

২৫০ গ্রাম ক্রিম চিজ

৫০ গ্রাম মাখন

১০০ মিলিলিটার দুধ

১/২ চা চামচ ভ্যানিলা এসেন্স

১ টেবিল লেবুর রস

৬০ গ্রাম ময়দা

২.৫ টেবিল চামচ কর্ণস্টার্চ

১/৪ চা চামচ লবণ

২/৩ কাপ চিনি

প্রণালী:

১। প্রথমে ওভেন ৩২৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট(১৬০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে) প্রি হিট করে নিন।

২। একটি পাত্রে মাখন, ক্রিম চিজ এবং দুধ একসাথে মেশান।

৩। এবার চুলায় প্যানে গরম পানির মধ্যে পাত্রটি রাখুন। সবগুলো উপাদান মিশে ক্রিম হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন।

৪। এরসাথে ভ্যানিলা এসেন্স, ডিমের কুসুম(সাদা অংশ ছাড়া), লেবুর রস মিশিয়ে নিন।

৫। এই মিশ্রণের সাথে ময়দা, কর্ণস্টার্চ, লবণ মেশান।

৬। আরেকটি পাত্রে ডিমের সাদা অংশ বিট করুন। ডিমের অংশ ফেনা উঠে আসলে এতে চিনি দিয়ে আবার বিট করুন।

৭। ময়দার মিশ্রণের সাথে অল্প অল্প করে ডিম চিনির মিশ্রণে মেশাতে থাকুন।

৮। কেকের ট্রেতে মিশ্রণটি ঢেলে দিন। বেকিং-এর আগে বেকিং ট্রেটি ফয়েল পেপার দিয়ে পেঁচিয়ে নিন।

৯। এটি ১ ঘন্টা ১০ মিনিট বেক করুন। ওভেন বন্ধ করার ১৫-৩০ মিনিট পর কেকটি বের করুন।

১০। কেকের উপরে আইসিং সুগার দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

 

শীতে চাই শাল

শীতের হাওয়ার কাঁপন জানান দিয়ে যাচ্ছে যে শীত চলে এসেছে। পৌষ এবং মাঘ এই দুই মাস শীতকাল। চারিদিকের হিম হিম বাতাসের সাথে গরম কাপড় আর গরম চা ছাড়া যেন সকালটাই জমে না। এই শীতের মৌসুম ফ্যাশন প্রিয় মানুষদের কাছে খুবই পছন্দের একটি সময়। শীতের হরেক ফ্যাশনের মধ্যে তরুণ-তরুণী সবার পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে শাল।

শাল নানা ধরনের হতে পারে। কোনোটি হালকা আবার কোনোটি ভারী। বহনে শাল যেমন সহজ তেমনই এটি শীতে আরামদায়ক। শালের ক্ষেত্রে খাদি শাল সবার পছন্দের শীর্ষে। এছাড়া শীতের শালের উপর উলের কাজ কিংবা নানা সুতার কাজ শাল এর মাঝে নিয়ে এসেছে নতুনত্ব।

শাল যে শুধু খাদির হয়ে তা কিন্তু নয়। বর্তমানের ফ্যাশন হাউজগুলো ফ্যাশন প্রিয় মানুষদের কথা চিন্তা করে তৈরি করছে সিল্ক, পশমি সুতা, মোটা সুতি ইত্যাদি কাপড়ের শাল। এসব চাদরে এখন আবার যুক্ত হয়েছে নানা নকশা। তাতে কখনো কখনো যুক্ত হচ্ছে পুঁতি, চুমকি এবং দুই রঙা কাপড়ের ব্যবহার। অফিসে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা বাড়িতে সব জায়গাতেই ছেলেমেয়ে উভয়ের কাছেই শালের চাহিদা সমান।

শালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শাল হচ্ছে কাশ্মীরি শাল। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এই শাল সংগ্রহ করে। এই কাপড়ে রয়েছে উষ্ণতা তা শীতকে আপনার কাছে থেকে অনেক দূরে রাখে। শালের ক্ষেত্রে বাইরের শালের কদরও কম নয়। নানা রঙের আর ডিজাইনের শালের চাহিদা অনেক। বাইরের দেশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশের শালের চাহিদাও কম নয়। মানুষ আগ্রহ নিয়ে দেশীয় পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। দেশে তৈরি শালের মধ্য পশমিনা শাল উল্লেখযোগ্য। এছারা রয়েছে লুধিয়ানা, জয়পুরি, চায়নিজ, বার্মিজ সহ আরো অনেক শাল।

শীতের শুরু থেকেই শালের গ্রহণযোগ্যতা থাকে অনেক। হালকা শীতে আপনি বাছাই করে নিতে পারেন খাঁদি, তাঁত, গ্রামীণ চেক সহ প্রিন্ট এবং এম্ব্রয়ডারি আর হাতের কাজ করা শাল। এসব শাল আপনি ঘরে পরার পাশাপাশি কাজের ক্ষেত্রে পড়ে যেতে পারেন। তবে পার্টির ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন ধরনের শাল পছন্দ করা উচিৎ। এসব জায়গার জন্য আপনার পছন্দে রাখতে পারেন সিল্কের, ফেব্রিক্সের উপর নকশিকাঁথার সহ নানা ধরনের ভারী কাজের শাল। আরেকটু জমকালো ভাব আনতে চাইলে তাতে পুঁতি কাঁচ বসিয়ে নিতে পারেন। রঙের ক্ষেত্রে সাদা-কালো, সবুজ, বাদামী, ম্যাজেন্ডা রঙ পছন্দ করতে পারেন।

শালের ক্ষেত্রে রঙের পাশাপাশি এর কাজের প্রতিও সমানভাবে নজর দিন। অনেকে কেবল রঙ আর নকশা দেখে শাল কিনে নেয়। এ কাজটি করা ঠিক নয়। শালের ক্ষেত্রে উষ্ণতার কথা সবার আগে মাথায় রাখতে হবে। আর এই শীতের হিম শীতল বাতাসকে ঢেকে নিন শালের উষ্ণ পরশে।

 

বিশ্বের যেসব নারী নেত্রী লড়ে যাচ্ছেন মানবাধিকার রক্ষার লক্ষ্যে

নেতৃত্বে নারীর অবদান অনেক আগে থেকেই। সেই প্রচীন কালে কৃষিকাজে, এরপর সংসার নামক প্রতিষ্ঠানে। মাঠে-ময়দানে, রাজনীতিতেও সে সমানে পা মিলিয়েছে পুরুষের সাথে। আসলে যারা সব শেকল ভেঙ্গে নিজের অধিকারের জন্য, গোষ্ঠীর অধিকারের জন্য সূর্যের নিচে প্লাকার্ড হাতে আন্দোলনে নেমেছেন তারা আর নিজেকে নারীত্বের গন্ডিতে বেঁধে রাখেন নি। তারা সেই সীমা পেরিয়ে মানুষ হয়ে দাড়িয়েছেন, নিজের মুক্তিই শুধু নয়, মুক্তির পথ করেছেন জাতির। তাই তো তারা নেতা। বিশ্বের এমন সব সাহসী নারীর কথা জানব।
 
শিরিন এবাদি
ইরানের মত একটি দেশে শিরিন এবাদি একজন সফল মানবাধিকার কর্মী। এই মৌলবাদি দেশেই তিনি তাঁর কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। শুরুটা হয় ১৯৭৯ সালে। এবাদি ছিলেন একজন ইরানের প্রথম নারী বিচারক, কিন্তু কোর্টের একজন সাধারণ ক্লার্ক হিসেবে তাঁর ডিমোশন রিয়ে দেওয়া হয়। কারণ? কারণ তিনি একজন নারী। হতাশ হওয়ার বদলে, পিছিয়ে পড়াকে মেনে নেওয়ার বদলে তিনি নিজের প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। সেই লড়াই-ই পরবর্তীতে তাঁকে মানবাধীকারের প্রশ্নে সোচ্চার করে। নিজের প্রতি হওয়া অন্যায় তাঁকে সকল অবিচারের প্রতি লড়তে উৎসাহী করে তোলে। একজন লইয়ার হিসেবে তিনি সহযোগিতা করেছেন অসহায় কিন্তু ন্যায়বিচার প্রত্যাশী মানুষদের। তাদের মধ্যে ছিল নারীরা, রাজনৈতিক বিপ্লবীরা। তিনি ইরানের বিবাহ সংক্রান্ত আইন সংশোধনেও অবদান রাখেন, বিশেষ করে তালাকের ক্ষেত্রে, সন্তানের দায়িত্ব কার কাছে যাবে সেসব বিষয়ে। পরিবর্তনের জন্য তাঁর এই লড়াই এর মূল্য তাঁকে দিতে হয় নিজের স্বাধীনতা দিয়ে। ৩ সপ্তাহ জেলে আটকে রাখা হয় তাঁকে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় যখন তাঁকে তাঁর পেশায় ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এতসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও জয় হয় তাঁর। ২০০৩ সালে প্রথম মুসলিম নারী শিরিন এবাদি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। নিজের প্লার্টফর্মকে তিনি এখন স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধীকার সচেতনতার কার্যক্রমে ব্যবহার করেন।
 
রানী রানিয়া
রানী রানিয়া আল-আব্দুল্লাহ জর্ডানের রানী হন ২৯ বছর বয়সে, যখন প্রিন্স ২য় আব্দুল্লাহ বিন আল-হুসেইন ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় বসেন। কিন্তু তিনি আর দশ জন ক্ষমতাবান সুন্দরী নারীদের মতই বিলাসী জীবনযাপন করেন নি। তিনি মানবাধীকারের জন্য কাজ করেছেন, সহায়তা দিয়েছেন নারী ও শিশুদের, আইনি পরামর্শ দিয়েছেন তাদের অধিকারের পক্ষে। তিনি জর্ডান মানবাধিকার কমিশনের প্রধান, ফ্যামিলি সেফটি কাউন্সিল এবং ইউনিসেফ গ্লোবাল লিডারশিপ ইনিশিয়েটিভের মেম্বার। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বৈষম্যমূলক আইন সংশোধনে কাজ করে যাচ্ছেন। মানবাধিকার এবং সাংস্কৃতিক সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আইটি বিভাগকে সামনে নিয়ে আসতেও পছন্দ করেন তিনি। তিনি বিশ্বাস করেন শিক্ষা এবং সুযোগ মানুষের প্রতিভাকে তুলে ধরতে সাহায্য করে। তিনি ২০০২ সালে বিশ্ব ইকনোমিক ফোরামের বোর্ড মেম্বার হন। প্রতিষ্ঠা করেন ‘The Queen Rania Center for Entrepreneurship’। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দেন এবং যাবতীয় অর্থনৈতিক গন্ডি পেরিয়ে আসার জন্য সহায়তা দেন।
 
ওবিয়াগেলি এজেক্বেসিলি
২০১৪ সালে বোকো হারামের অধীনে চরমপন্থীরা মেয়েদের ডর্মে হামলা করে এবং ২০০ জন স্কুলছাত্রীকে অপরণ করে। এই ভয়ংকর ঘটনার প্রেক্ষিতে শুরু হয় #BringBackOurGirls ক্যাম্পেইন। এই ক্যাম্পাইনে মিশেল ওবামা, মালালা ইউসুফজাই, এমা ওয়াটসনের মত ব্যাক্তিত্বরা একই হ্যাশট্যাগ দিয়ে টুইট করে সমর্থন জানান। কিভাবে শুরু হয়েছিল এই আন্দোলনের? ওবিয়াগেলি মানবাধীকার কর্মী হওয়ার পাশাপাশি নাইজেরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রী এবং বিশ্ব ব্যাংক আফিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি যোগাযোগ করেন সরকারি এজেন্সিগুলোর সাথে, টিভি স্টেশনে এবং রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের সাথে যাতে তাঁর মেয়েদের ফিরিয়ে আনা যায়। তিনি তাঁর সবরকম ক্ষমতা ব্যবহার করেন, শ্রম দেন এবং আরও ২ জন নাইজেরিয়ান নারীসহ বিশাল আন্দোলনটি দাঁড় করান। তিনি তাঁর ক্যাম্পাইন শুরু করেছিলেন নাইজেরিয়ার রাজধানী আজুবায়। এই টুইটার হ্যাশট্যাগ পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময় এবং সৃষ্টি করে অপ্রতিরোধ্য অনলাইন আন্দোলনের।
 
তাওয়াক্কুল কারমান
তিনি একজন বিস্ময়কর আত্মবিশ্বাসী নারী মানবাধীকারকর্মী। ইয়েমেন তাঁর দেশ, যে দেশ কিনা বিশ্ব ইকনোমিক ফোরাম দ্বারা নারীদের জন্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট দেশ হিসেবে স্বীকৃত। ইয়েমেনে নারীকে থাকতে বলা হয় ঘরে, চাকরী তো দূরের কথা পড়াশোনা থেকেও দূরে রাখা হয় তাদের। ৮ বছর বয়স থেকেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় কন্যা শিশুদের। তালাকের ক্ষেত্রেও তারা হয় বৈষম্যের শিকার। শুধু নারী নয়, মৌলিক অধিকার অনেক ক্ষেত্রে পায় না পুরুষও। এমন একটি দেশে সম্পূর্ণ স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে গণমানুষের অধিকারের জন্য কাজ করেছেন কারমান। মানবাধীকার এখানে অনেক রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। সাংবাদিকদের লাবচিত করা হয়, তরুণ বিদ্রোহীদের মেরে পর্যন্ত ফেলা হয়। এমনই অন্ধকার সময়ে ‘mother of the revolution’ কারমান কাজ করে গেছেন। তিনি একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম Women Journalists without Chains (WJWC)। প্রতিষ্ঠানটি মিডিয়া কর্মীদের অধিকার এবং তাদের প্রতি হওয়া অবিচার নিয়ে কাজ করে। “Mother of the revolution” এর পাশাপাশি তাঁকে ‘Iron Woman’ ও বলা হয়। তাঁর কন্ঠস্বর তরুণ সমাজ সহ অধীকারের লড়াইয়ে সোচ্চার প্রতিটি মানুষকে। এজন্যে তাঁকে অনেকবার লাঞ্চিত হতে হয়েছে। জেলেও যেতে হয়েছে। ২০১১ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরষ্কার পান।

 

বর্তমান বাস্তবতায় চিরঞ্জীব রোকেয়া

আপনার ১৩৬তম জন্মদিনে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা জানাচ্ছি। আপনার সঙ্গে প্রথম পরোক্ষ পরিচয় ঘটেছিল ১৯৫৯ সালে। ঢাকার নারী শিক্ষা মন্দির স্কুলে নবম শ্রেণিতে দ্রুতপঠন হিসেবে পাঠ্য ছিল রোকেয়া জীবনী। আপনার পরম স্নেহের শামসুন্নাহার মাহমুদ লিখেছিলেন সেই জীবনী বইটি। নারী শিক্ষা মন্দির স্কুলের শুভানুধ্যায়ী পরিদর্শক ছিলেন আপনার অন্যতম স্নেহের ‘ফুলকবি’ সুফিয়া কামাল। সেই সময় আমার এবং সহপাঠী সকলের হৃদয়ে আপনি শিক্ষাব্রতী তপস্বী রূপে আরাধ্য হয়ে উঠলেন।

আপনাকে প্রত্যক্ষ জানলাম বাংলা একাডেমি, ঢাকা থেকে ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত রোকেয়া রচনাবলী পাঠ করে। পাতায়-পাতায় আপনার হৃৎস্পন্দন অনুভব করা সেই যে শুরু হলো, আজ অবধি তার বিরাম নেই। আপনার লেখাগুলোর মধ্যে দেশ-কাল-সময়ের সীমানা ছাড়িয়ে যুগ যুগ ধরে আপনার অস্তিত্ব প্রবহমান থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

আপনার দুজন স্নেহভাজন ব্যক্তিত্ব, শামসুন্নাহার মাহমুদ (১৯০৮-৬৪) ও সুফিয়া কামাল (১৯১১-৯১) লিখেছেন স্মৃতিকথা। ১০০ বছর আগে আপনার প্রতিষ্ঠিত (১৯১৬) নারী সংগঠন ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতীনে ইসলাম’-এর সদস্যদের অনেকেই এবং আপনার প্রতিষ্ঠিত ‘সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুল’ (১৬ মার্চ, ১৯১১)-এর ছাত্রীদের কয়েকজন আপনার লেখা ও কাজের কথা লিখেছেন তাঁদের স্মৃতিকথায়। সেসব কর্মকাণ্ড আপনি চালিয়েছেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের কলকাতায়। জন্ম আপনার (৯ ডিসেম্বর, ১৮৮০) বাংলাদেশের তৎকালীন পূর্ববঙ্গের রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে। সেই গ্রামের জমিদার জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের ও রাহাতুন্নেসা সাবেরা দম্পতির পঞ্চম সন্তান ছিলেন আপনি। আপনার বড় ভাই আবোল আসাদ ইব্রাহিম সাবের এবং বড় বোন করিমুন্নেসা খানম আপনার ইংরেজি-বাংলা ভাষা সাহিত্য শিক্ষাচর্চার শিক্ষক ছিলেন। এসব তথ্য আপনার লেখা থেকে আমরা জানতে পারছি।
আপনার সময়কালে যাঁরা সরাসরি আপনার সঙ্গে কাজ করেছেন শিক্ষাকেন্দ্রে ও নারী সংগঠনে, তাঁরা এবং যাঁরা কলকাতায় পড়াশোনা করেছেন ১৯৪৭-এর আগে তাঁরা ১৯৪৭-এর দেশভাগের পরে পূর্ব বাংলায় ফিরে নারীশিক্ষার বিস্তারে ও নারী আন্দোলনে যুক্ত হতে শুরু করেন। তাঁদের এসব কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণাদাত্রী ছিলেন আপনি। আপনার আশৈশব চেনাজানা পূর্ববঙ্গের ঢাকায় আপনি ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বরের আগে কোনো একসময় বোনের মেয়ের (সম্ভবত) বিয়ে উপলক্ষে এসেছিলেন। দেশভাগের পর সেই পূর্ববঙ্গের মুসলিম নারী জাগরণের মধ্যমণি হয়ে উঠলেন আপনি।

ব্যাপকভাবে বাংলাদেশের নারী আন্দোলনে সামাজিক-রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপে ‘রোকেয়া চর্চা ও গবেষণার স্বর্ণযুগ’ উৎসারিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে। শৈশব-কৈশোর থেকে আমরা এবং আমাদের পূর্বসূরি নারী ব্যক্তিত্বরা যারা আপনার জীবনসংগ্রাম থেকে নারীর অধিকার অর্জনের বিপ্লবী দীক্ষা পেয়েছিলাম তারা সকলে দলমত-নির্বিশেষে আপনাকে মধ্যমণি করে নারীশিক্ষা ও নারীর মানবাধিকার অর্জনের আন্দোলন গড়ে তুলেছি স্বাধীন বাংলাদেশে।

১৯৮০ সালে আপনার জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের স্বতঃস্ফূর্ত জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল নারী আন্দোলনের নেতৃত্বে। রাজনৈতিক বৈরিতা থাকা সত্ত্বেও সব বাধা ডিঙিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে আপনার নামে শতবর্ষ উপলক্ষে আপনার ছবিসহ একটি ডাকটিকিট প্রকাশে এবং বাংলাদেশের সব বিদ্যালয়ে ছুটির ঘোষণা (৯ ডিসেম্বর, ১৯৮০) দিতে বাংলাদেশের নারী সংগঠন আন্দোলনের দাবি বাস্তবায়িত হয়েছিল। সেই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও ঘোষণা থেমে গেছে। আপনার নাম প্রচার বা আপনার স্মৃতি অক্ষয় রাখার প্রচেষ্টামাত্র বলে আমরা সেসব উদ্যোগ অব্যাহত রাখার কথা ভাবিনি। এসব কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের নতুন ধরনের ‘অবরোধবাসিনী’দের মুক্তি অভিলাষ রূপেই আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।
আপনি যত দূরেই থাকুন না কেন, আমরা প্রতিনিয়ত আপনার লেখা, চিন্তাধারা, জীবনচর্চা, নারী প্রগতির লক্ষ্যে আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ, জীবনযুদ্ধ এবং সাফল্য থেকে আমাদের এই যুগের নারী আন্দোলনের শক্তি ও পথ তৈরি করে চলেছি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিচ্ছি। আপনার অমলিন হাসিমাখা মুখ দেখার জন্য মানসপটে যখন চোখ রাখছি তখন আপনার হাসি ও বেদনামিশ্রিত মুখ ভেসে উঠল। আপনি যেন আবারও বলে উঠলেন ‘আগুন লেগেছে ঘরে, আমি শুধু এনেছি সংবাদ! সুখ-নিদ্রা দিয়াছি ভাঙায়ে!

আপনি জানতেন এবং জীবনভর বলে গেছেন, এমনকি শেষনিশ্বাস ফেলার আগেও ‘নারী অধিকার’ (অসমাপ্ত) লেখাটিতে ‘তালাক’-এর বিষয়ে পুরুষের একতরফা অপ-অধিকার নিয়ে হাস্যরসের বয়ানে তীব্র কশাঘাত করেছেন সমাজ-রাষ্ট্র-আইনের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে। লিখেছেন: আমাদের ধর্মমতে বিবাহ হয় পাত্র-পাত্রীর সম্মতি দ্বারা। তাই খোদা না করুক, বিচ্ছেদ যদি আসে, তবে সেটা আসবে উভয়ের সম্মতিক্রমে। কিন্তু এটা কেন হয় একতরফা, অর্থাৎ শুধু স্বামী দ্বারা? (নারীর অধিকার, ৯ মার্চ, ১৯৩২)

বাংলাদেশের নারী আন্দোলন এই বিষয়ে তীব্র আন্দোলন চালিয়েছে, আন্তর্জাতিক সিডও সনদের সমর্থন পেয়েছে কিন্তু বাস্তবে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সরকার নারী-পুরুষের অসম বিবাহবিচ্ছেদের আইনের পক্ষেই স্থির থাকল, দিল ধর্মের দোহাই।

বাল্যবিবাহ বন্ধ বিষয়ে আপনার এবং রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরসহ বহু সমাজসংস্কারকের ইতিবাচক পদক্ষেপ অনুসরণ করে বাংলাদেশে ১৯৪৭ থেকে আজ অবধি ৬৯ বছর ধরে সকল জাতি-ধর্মনির্বিশেষে সর্বস্তরের নারী ও সামাজিক-মানবাধিকার-আইনজীবী সমিতিগুলোর দাবি উপেক্ষা করে সম্প্রতি সরকার দোদুল্যমান আইন তৈরি করার ঘোষণা দিয়েছে। বিস্তারিত জেনে নারী আন্দোলন সংগঠনগুলো বাল্যবিবাহ বিষয়ে সরকারের নেতিবাচক ঘোষণা ও আইনের পদক্ষেপবিরোধী কর্মসূচি নিচ্ছে।

এসব শুনে যেন আপনি আবারও বলে উঠলেন, ‘আমরা অকর্মণ্য পুতুল-জীবন বহন করিবার জন্য সৃষ্ট হই নাই, একথা নিশ্চিত।’ (স্ত্রী জাতির অবনতি)
আবারও বলছেন আপনি, ‘বর দুর্লভ হইয়াছে বলিয়া কন্যাদায়ে কাঁদিয়া মরি কেন? কন্যাগুলিকে সুশিক্ষিত করিয়া কার্যক্ষেত্রে ছাড়িয়া দাও, নিজের অন্নবস্ত্র উপার্জন করুক।’ (স্ত্রী জাতির অবনতি)
যেন বলছেন, ‘আমাদের যথা সম্ভব অধঃপতন হওয়ার পর দাসত্বের বিরুদ্ধে কখনও মাথা তুলিতে পারি নাই; তাহার প্রধান কারণ এই বোধ হয়, যখনই কোন ভগ্নি মস্তক উত্তোলনের চেষ্টা করিয়াছেন, অমনই ধর্মের দোহাই বা শাস্ত্রের বচন রূপ অস্ত্রাঘাতে তাহার মস্তক চূর্ণ হইয়াছে।’ (স্ত্রী জাতির অবনতি)
শেষে একটি জোর আহ্বান জানালেন আপনি, ‘অতএব জাগো, জাগো গো ভগিনি।’
আপনার প্রতিটি আহ্বানে আমরা এগিয়ে চলেছি। আজ বাংলাদেশে একদিকে সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-রাষ্ট্রীয় সাফল্যের পথ খুলেছে, নারীর অদম্য পদযাত্রা চলেছে। অন্যদিকে নারীর পারিবারিক, সামাজিক ও আইনগত অধিকারের পথগুলো বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এই বাধাগুলো সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পারিবারিক, রাষ্ট্রীয় প্রেক্ষাপটে নারী নির্যাতনের বহুবিধ অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে। বলা যায়, নারীর বিরুদ্ধে পরিবার, সমাজ, সংস্কৃতি, প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্র একধরনের জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটাচ্ছে। প্রগতির পথ বন্ধ করছে। এই পরিস্থিতিতে আপনার জীবনসংগ্রাম এবং নারী আন্দোলনের বাস্তব পথনির্দেশ আমাদের নারী আন্দোলনের জন্য আজও যুগোপযোগী বলেই আমার বিশ্বাস।
আপনি বলেছেন যৌতুক প্রথার বিষময় পরিণতির বিষয়ে, বলেছেন দাম্পত্য সম্পর্ক বিষয়ে, পারিবারিক সম্পত্তিতে ভাই-বোন, নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা, আরও বলেছেন ‘স্বাধীনতা অর্থে পুরুষের ন্যায় উন্নত অবস্থা বুঝিতে হইবে।…পুরুষের সমকক্ষতা লাভের জন্য আমাদিগকে যাহা করিতে হয়, তাহাই করিব। যদি এখন স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জন করিলে স্বাধীনতা লাভ হয়, তবে তাহাই করিব।…যে পরিশ্রম আমরা স্বামীর গৃহকার্যে ব্যয় করি, সেই পরিশ্রম দ্বারা কি স্বাধীন ব্যবসা করিতে পারিব না?’
আমরা আপনার কথাগুলোই যেন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলে যাচ্ছি বছরের পর বছর নতুন যুগের পথ সন্ধানে। আপনি সেই ১৯০৪ সালে মতিচুর বইয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা সমাজেরই অর্ধঅঙ্গ। আমরা পড়িয়া থাকিলে সমাজ উঠিবে কিরূপে? কোনো ব্যক্তির এক পা বাঁধিয়া রাখিলে সে খোঁড়াইয়া কতদূর চলিবে?’ সেই লেখাতেই বলেছিলেন, ‘জগতের যে সকল সমাজের পুরুষেরা সঙ্গিনীসহ অগ্রসর হইতেছে, তাঁহারা উন্নতির চরম সীমায় উপনীত হইতে চলিয়াছেন।’
কী আশ্চর্য এবং দুঃখের কথা, আজ ১১২ বছর পরেও আমরা সেই কথাই বলে চলেছি। প্রগতিশীল পুরুষ সমাজও বলে চলেছে, আহ্বান জানাচ্ছে ‘নারীর পাশে পুরুষ’ স্লোগান নিয়ে। এগিয়ে চলতে চলতে, হোঁচট-বাধা-নির্যাতনের শিকার হতে হতে সেসবের প্রতিবাদে ধর্মমত-নির্বিশেষে বাংলাদেশের নিরক্ষর দরিদ্র, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, উপার্জনশীল, উচ্চবিত্ত শ্রেণির ও অবস্থার নারীরা একই সারিতে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করছেন।
আপনার জীবনী পাঠ্য হিসেবে বন্ধ হয়ে গেছে স্কুলে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর শিক্ষাকেন্দ্রে রোকেয়া পাঠ এখন ‘জেন্ডার সচেতনতা’ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কার্যকর হয়েছে। আপনার রচনাবলি এখন বাংলাদেশের নারীবাদী তাত্ত্বিক হিসেবে আপনাকে বৈশ্বিক নারীবাদী তাত্ত্বিকদের সমপর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে। নারী আন্দোলনের এই সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জনের ক্ষেত্রে Sultana’s Dream বা সুলতানার স্বপ্ন সর্বশ্রেষ্ঠ দিশারি বললে ভুল হবে না। তবে আপনার সমগ্র রচনাবলি একই পথের দিশারি হয়ে আছে।
আপনার দেখানো পথ আরও প্রশস্ত হবে যুগে যুগে, এই বিশ্বাসই আমাদের এ বছরের রোকেয়া দিবসের বহু অর্জনকে সফল করবে বলে বিশ্বাস করি।