banner

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 173 বার পঠিত

চট্টগ্রামে ১১জন সফল নারী উদ্যোক্তাকে সম্মাননা প্রদান।

 ১১ সফল নারী উদ্যোক্তাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদানের মাধ্যমে সম্মাননা জানালো চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিডব্লিউসিসিআই)। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ব্যবসা শুরু করে সফলতা অর্জন করায় তাদের এ সম্মান জানালো প্রতিষ্ঠানটি।

রোববার চট্টগ্রাম বিভাগের ১১জন সফল নারীর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.আতিউর রহমান। এর আগে এফবিসিসিআই এর প্রথম সহ সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী বলেন, এক সময় চট্টগ্রামে নারী উদ্যোক্তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখন হাজার হাজার উদ্যোক্তা।

সফল এই নারী উদ্যোক্তারা হলেনচট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বারের সভাপতি কামরুন মালেক(চট্টগ্রাম), নুর জাহান আক্তার চামেলি(কুমিল্লা), শামসুন্নাহার রানী(চাঁদপুর), রোকসানা হক সুচি(ব্রাহ্মণ বাড়িয়া), জোহরা বেগম (ফেনী), সুপ্তা চাকমা(খাগড়াছড়ি), মমতাজ বেগম(লক্ষীপুর), পপি রহমান(নোয়াখালী), সুশীলা চাকমা(রাঙামাটি), জাহানারা বেগম(কক্সবাজার) এবং শার্লী প্রো(বান্দরবান)

সম্মাননা প্রদানের সময় চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বারের সভাপতি কামরুন মালেকের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও সফলতার গল্প প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।

১৯৮০ সালে পিতার লবন ব্যবসার সাথে যুক্ত হন। সুযোগ পেলে নারীরাও যে পুরুষের থেকে পিছিয়ে থাকে না, তা প্রমাণের চ্যালেঞ্জটাও কাজ করেছিল নিজের মধ্যে। প্রথম চ্যালেঞ্জ সফলতার সাথে মোকাবেলার পর ১৯৮৫ সাল থেকে খলিফাপট্টিতে ডেইরি ফার্ম ব্যবসায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। আর উদ্যোক্তা হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি আসে ১৯৯২ সালে। ডেইরি ফার্ম ব্যবসার জন্য ওই বছর সরকারিভাবে পুরকৃত হন তিনি।

নিজের কর্মস্পৃহা, স্বামীর অনুপ্রেরনার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার তাগিদে যুক্ত হন বিভিন্ন সংগঠনের সাথে। ১৯৮০ সাল থেকে লায়ন্সের সাথে যুক্ত আছেন। ছিলেন চিটাগাং লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট। দায়িত্ব পালন করেছেন লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল ৩১৫/বি৪ এর জোন চেয়ারম্যান ও রিজিওন চেয়ারম্যান হিসেবে। বর্তমানে তিনি গভর্নর এডভাইজর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৩ সালে উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, চিটাগংয়ের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট মিসেস মনোয়ারা হাকিম আলীর অনুরোধে যুক্ত হন তিনি এ সংগঠনের সাথে। ২০১৩ সাল থেকে উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, চিটাগং এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের সফলতার প্রমাণ রেখে চলেছেন সাবলীল দক্ষতায়। আজাদী প্রিন্টার্স ও কোহিনূর ইলেকট্রিক প্রেসের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। পাশাপাশি ডায়াবেটিক সমিতি, চট্টগ্রাম, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং মা ও শিশু হাসপাতালসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে অবহেলিত চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন অবিরাম।

কামরুন মালেক বিশ্বাস করেন, সমাজের প্রতি প্রত্যেক মানুষেরই কিছু দায়িত্ব থাকে, যা পালনে তিনি দায়বদ্ধ। তাঁর আজকের সামাজিক অবস্থানের জন্য তিনি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ করুণা বলেই মনে করেন। পাশাপাশি স্বামী এম এ মালেকের সার্বক্ষনিক উৎসাহ দা তো আছেই। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে তিনি আমৃত্যু চট্টগ্রামের অবহেলিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত নারীদের পাশে থাকতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন, একদিন সকল বৈষম্যের অবসান হবে, নারী পুরুষ, ধনীগরীব সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অবহেলিত চট্টগ্রামকে পৌঁছে দেবে তার কাঙিক্ষত ঠিকানায়।

সফল এই নারী উদ্যোক্তার জন্ম দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ঐতিহ্যবাহী সরকার বাড়িতে ১৯৪৮ সালের ১০ জুন। মাবাবা আদর করে নাম রেেেখছিলেন কামরুন নাহার। গৃহীনি মা সামশুন নাহার আর বাবা মরহুম বজলুল করিম চৌধুরী ছিলেন এলাকার জমিদার। তবে এলাকার যে কারো বিপদে পাশে দাঁড়াতে ছিলেন তিনি সদা তৎপর। পিতার এই গুণটুকু পুরোপুরি নিজের করে নিয়েছিলেন তিনি। চট্টগ্রামের ১৯৬৪ সালে পেকুয়া জিএমসি ইন্সটিটিউশন থেকে মাধ্যমিক পাশের পর নাসিরাবাদ সরকারি মহিলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এ অঞ্চলের প্রথম মুসলিম ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেকের সন্তান এম এ মালেকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর থেকে তিনি কামরুল মালেক নামেই পরিচিত। 

সূত্র- আজাদী।

 

Facebook Comments