banner

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: May 6, 2024

 

ববিতার আহ্বান “সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে আসুন দাঁড়াই”

গত ২৩ মার্চ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার আদায় ও শিশুশ্রম রোধে সচেতনতামূলক কনসার্ট ‘কনসার্ট ফর চিলড্রেন’র আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ডিসট্রেস চিলড্রেন অ্যা- ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল-ডিসিআইআই।

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকা ববিতা। এই অনুষ্ঠানে ডিসিআইআই’র গুলউইল অ্যাম্বাসেডর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়িকা ববিতা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে সবাইকে উৎসাহিত করেন।

ববিতা বলেন, ‘প্রায় দশ বছর যাবত ডিসিআইআই’র গুডউইল অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও ডিসি আই আই’র হয়ে আমি আমার দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করে আসছি শুরু থেকেই।

যারা আমাকে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত রেখেছেন তাদের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। গত শুক্রবার ডিসিআইআই আয়োজিত অনুষ্ঠানে সবার আন্তরিক অংশগ্রহণ আমাকে মুগ্ধ করেছে।

আমি বিশ্বাস করতে ভালোবাসি যে আমরা চাইলেই যার যার অবস্থানে থেকে আমরা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পারি। সবাই পাশে দাঁড়ালেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুরাও মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠবে। আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে তারাও।’

ডিসিআইআই’র প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ড.এহসান হক বলেন, ‘ববিতা আপা শুরু থেকেই ডিসিআইআই’র সাথে আছেন। তিনি সবসময়ই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য স্বপ্রণোদিত হয়েই কাজ করছেন।’ ডিসিআইআই এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার আদায়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা সৃষ্টির করার মধ্য দিয়ে দারিদ্র বিমোচন করা।

ড. এহসান জানান ডিসিআইআই’র নিজস্ব অর্থায়নে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ৫০জনেরও বেশি এতিম শিশুদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষার সুযোগ দেবার পাশাপাশি দেশের সরকারী, বেসরকারী এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহযোগিতা করে থাকে। এটা শুধু ঢাকায়ই নয় ঢাকার বাইরেও এই ধরনের সহযোগিতা করে থাকে ডিসিআইআই।

শুক্রবারের সচেতনতামূলক কনসার্টে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সাবিনা ইয়াসমিন’সহ আরো অনেকে।
ছবি: দীপু খান

 

এক স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রহর গুনছি

ফাতিমা শাহীন


অনেকদিন ধরেই মেলবোর্ন বৃষ্টিবিহীন। সামার এখন শেষের পথে। গাছের পাতার সবুজ রঙের পেলবতাও উধাও সেই সঙ্গেই। বাগানের ছিটেফোঁটা শাকসবজির শেকড়ের তৃষ্ণা যেন মিটছিলো না হোস পাইপের মেপে দেয়া পানিতে। একটা বৃষ্টির আকাঙ্ক্ষা তাই ছিল সবার অন্তরে।

আজকের ওয়েদার ফোরকাস্টে বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিলো। চাতক মন তাই ছিল বৃষ্টির, আকাঙ্ক্ষায় উন্মুখ। তবুও ভোর সকালে আকাশের মেঘলা মন দেখে মনেও মেঘ এসে ভর করলো যেন। কি যে হবে! সব ঠিকঠাক থাকবে তো! কারণ আজকে MMC ( Melbourne Multicultural Centre) তে কংক্রিট ঢালাই হবে। পানিতে কোন সমস্যা না হয়ে যায়! একসময় শুরু হল মুষলধারে বৃষ্টি। আকাশে মেঘ রাজ্যের কোন শেষ দেখতে পাচ্ছি না। একসময় শেষ হল বৃষ্টি। মেঘ কেটে ঝলমল করে উঠল সূর্য। দেখতে গেলাম কাজ কেমন এগোচ্ছে। বুকের ভেতর দুরু দুরু। একশোটা ঢাক যেন একসঙ্গে বেজে চলেছে অন্তরে।

MMC চত্বরে ঢুকে তাকাতেই চোখ জুড়িয়ে এলো, মন প্রশান্ত হল। ঢালাই শেষে পরবর্তী কাজ করে চলেছেন নির্মাণ কর্মীরা। চারিদিকে কি প্রশান্ত পরিবেশ! ঘুরে ঘুরে বেড়ালাম সবদিকে, মহিলাদের নামাজের স্থানের দিকে এগুতেই কেন যেন অকারণেই বুক হু হু করে উঠল। এই নির্মাণ কাজ শেষে এখানে যখন বোনদের অবনত শির আল্লাহর দিকে সিজদাবনত হবে, তার মধ্যে একজন হিসেবে কি আল্লাহ আমায় কবুল করবেন!

চতুর্দিকে নির্মাণ সামগ্রীর নানারকম শব্দ, কিন্তু তার ভেতরেই সাদা সাদা প্রজাপতিরা যৎসামান্য হয়ে ফুটে থাকা জংলী ফুলগুলোয় উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে পরম নিশ্চিন্তে। আমার তখন কেবলি মনে হচ্ছিল, প্রকৃতি ও বাস্তবের এমন নিবিড় মেলবন্ধন আমাদেরকে প্রতি মুহূর্তে যেন স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল, বাস্তবতায় আমরা যতই আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকি না কেন, রবের রুবুবিয়াতের কাছে , তার সৃষ্ট প্রকৃতির কাছেই আমাদের আত্মসমর্পণ অবশ্যম্ভাবী।

সকালের বৃষ্টিতে ভেজা পথ , এখানে ওখানে অল্পস্বল্প পানি জমে আছে। ভেজা বালিতে পা ছোঁয়ালাম। আজ এখানে আমার পায়ের চিহ্ন, সেই দিন দূরে নেই , যেদিন আমাদের প্রজন্ম আমাদের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের কাজের দায়িত্ব বর্তাবে তাদের হাতে। তাদেরকে এখন থেকেই এই কাজের উপযুক্ত করে গড়ে তুলি। এই মসজিদের জন্য আমাদের হৃদয় গহীনে জমে থাকা একসমুদ্র ভালোবাসার উথাল পাথাল ঢেউ এর শব্দ যেন তারাও শুনতে পায়।

তাদের ভেতরে দানের অভ্যাস এখন থেকেই গড়ে তুলি। আমাদের সবরকম নেক পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন প্রচেষ্টা , আমাদের সন্তানদের দ্বীনের প্রতি ভালোবাসা ও আমলে সালেহের প্রতি অকুণ্ঠচিত্তে এগিয়ে যাওয়া আমাদের অন্ধকার কবরে আলো ছড়াতে থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত, ইনশাআল্লাহ।

 

সলিমুল্লাহ মেডিকেলে ‘গর্ভাবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা’ বিষয়ক এক বৈজ্ঞানিক আলোচনা

অপরাজিতা ডেক্স


মানসিক সমস্যাগ্রস্থ মায়ের গর্ভকোষে শিশুর সুরক্ষায় ব্যবহৃত নিরাপদ ঔষধসমূহ ও বয়ঃসন্ধিকাল, গর্ভাবস্থা ও রজঃনিবৃত্তি জনিত মানসিক রোগের উপসর্গ সমূহ নিয়ে সম্প্রতি এক বৈজ্ঞানিক আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত ২১শে মার্চ (বুধবার) রাজধানীর ২য় বৃহত্তম সরকারী মেডিকেল কলেজ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে,উক্ত কলেজের মানসিক বিভাগের সাইকোথেরাপী ইউনিট এর উদ্দ্যোগে নিম্নোক্ত বিষয়াদির বিষদ বর্ননা করা হয়,
1)Peri-partum disorders & its causes with Management
2)Ethnic Variations in prescription of Lurasidon
3) Interpersonal Psychotherapy VS Couple Therapy,
Which one preferable?

সেই আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে ডা.তৌহিদ মূল প্রবন্ধ পেপার উপস্থাপন করেন এবং সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভূতপূর্ব কনসাল্ট্যন্ট সাইকিয়াট্রিস্ট ও মালয়েশিয়ার AIMST -এর সহযোগী অধ্যাপক ডা. কবীর জুয়েল সকলের নানাবিধ প্রশ্নের উত্তর দেন। এছাড়া আলোচনার উপসংহারে আরও বক্তব্য রাখেন মনোরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান ডা.শোয়েবুর রেজা চৌধুরী।

সাহিত্যিক দৃষ্টিকোণে নারীর তিন রূপ
১.কন্যা, ২.জায়া ও ৩.জননী। তবে মানসিক বিশেষজ্ঞ গণের মতে নারীকূলকে আরো কয়েকধাপ বেশী স্তর পার হতে হয়। নারীর শরীরবৃত্তীয়
পরিবর্তনে বেশ কিছু হরমোন বিশেষ ভূমিকা পালন করে, তার-মধ্যে ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্ট্রন ও কর্টিসল অন্যতম, তাই নারীর বয়ঃসন্ধি হওয়া থেকে শুরু করে রজঃনিবৃত্তি পর্যন্ত তাদের Reproductive Life – এ বিভিন্ন চড়াই উতরাই লক্ষ্য করা যায়, সে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কতোটুকু ভাবি,গর্ভকালীন সময়ে মা-কে সব ধরনের ঔষধ দেয়া যায় না,ভুলক্রমে দিয়ে দিলে নবজাতকের নানাবিধ সমস্যার মাধ্যমে সেই মাশুল গুনতে হয়।

গর্ভবতী মহিলারা সাধারণত অন্যান্য বয়সের তুলনায় বেশি মানসিক সমস্যা এবং গর্ভধারণ সংক্রান্ত নানান অসুবিধার সম্মুখীন হন। দুটি তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ:

১.গর্ভাবস্থায় মানসিক সমস্যার খুঁটিনাটি তথ্য।
২.কি ধরনের ওষুধ খাচ্ছেন তারা তা জানাও অবশ্যই জরুরি।

গর্ভাবস্থায় আনন্দের ও সুন্দর সময় তবে, কাঙ্ক্ষিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত যেভাবেই হোক, গর্ভধারণ সময় শারীরিক ও মানসিক স্বাভাবিকভাবেই নানান পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন বাবা ও মা এর বিশেষ করে ‘মায়ের’ মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বেড়ে যায়। নারীর গর্ভকালীন সময়ের মানসিক চাপ ও উদ্বেগের পরিমান যদি স্বাভাবিকের থেকে বেশী হয়, তবে তা গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতা ও অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্ম দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতা বলতে বোঝায়?

বিষণ্ণতা একধরনের আচরণগত সমস্যা যার ফলে মানুষের মন সার্বক্ষণিক খারাপ থাকে এবং কোন কাজেই আনন্দ খুঁজে পায় না। টানা এক সপ্তাহ বা এর বেশি সময় জুড়ে থাকে।

বিষণ্ণতার লক্ষনগুলো কি কি ?

১.কোন কিছুতে আগ্রহ ও আনন্দ না পাওয়া।
২.খুব পছন্দের কোন কাজ বা ঘটনাতেও আনন্দ অনুভূতি না পাওয়া।
৩.গভীর দুঃখবোধ এবং হতাশা
সবসময় কান্না আসা।
৪.খাবার আগ্রহ কমে যাওয়া বা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া।
৫.অকারণে বেশি অস্থির লাগা। খুব বিরক্ত বোধ ও ক্লান্ত, অল্পতেই রাগ উঠে যাওয়া
৬.কোন কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা।
৭.খুব বেশী ঘুম অথবা সম্পূর্ণ ঘুমহীন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাওয়া।
৮.অপরাধ বোধে ভোগা,গ্লানি বোধ হওয়া, নিজেকে খুব খারাপ মনে হওয়া।
৯.বেঁচে থাকার আগ্রহ কমে যাওয়া বা বার বার মৃত্যুর কথা চিন্তা করা।

উপরোক্ত যেকোনো ৫ টি বা তার বেশি বৈশিষ্ট্য আপনার মধ্যে ২ সপ্তাহের বেশি অপরিবর্তনীয় অবস্থায় থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন এবং আপনার সাহায্য দরকার।

গর্ভধারণের আগে এবং গর্ভাবস্থায় যে বিষণ্ণতা দেখা দেয় তা কিন্তু প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতা (postpartum depression ) থেকে ভিন্ন। postpartum depression সাধারণত বাচ্চা প্রসবের পর দেখা যায়।

গর্ভাবস্থায়য় মানসিক রোগের প্রাদুর্ভাব বিগত ১০ বছরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে বর্তমানে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিষণ্নতা, উদ্বেগজনিত মানসিক রোগ, মনোদৈহিক মানসিক সমস্যা ইত্যাদি।

উক্ত গবেষণায় আরো দেখা যায় মানসিক রোগের প্রাদুর্ভাগ শহরে ও গ্রামে প্রায় একই রকম এবং মহিলাদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে পুরুষদের তুলনায় মানসিক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। এছাড়াও মানসিক রোগে আক্রান্তদের মধ্যে শারীরিক লক্ষণ যেমন- মাথা ব্যথা, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা, জ্বালাপোড়া, ঘুমের সমস্যা, অস্থিরতা, দুর্বলতা, খাবারের অরুচি নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে আসেন যা বেশিরভাগ সময়ই গুরুত্ত্ব পায় না।”

অনুষ্ঠানটিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন মেডিকেল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও পরিচালক, শিক্ষক ও চিকিৎসকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

PMRH (Psychiatric Management for Reproductive Health) – এর মাধ্যমে বেসরকারীভাবে টিমের সদস্যরা তৃনমূল পর্যায়ে ‘মায়ের গর্ভকোষে শিশুর সুরক্ষায় ব্যবহৃত নিরাপদ ঔষধ ও বয়ঃসন্ধিকাল, গর্ভাবস্থা ও রজঃনিবৃত্তি জনিত মানসিক রোগের উপসর্গ’ সমূহ নিয়ে এ সেবা গুলো দিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত।

পরিবারের আসন্ন নতুন সদস্যটির জন্য সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ উপহার দিতে গর্ভাবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা উপর গুরুত্ব দিতে এরূপ আয়োজন করে আয়োজকবৃন্দ।