banner

শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ ইং, ,

Monthly Archives: May 2025

 

বেলাল খানের সুরে তিন তারকার ‘একই স্বপ্ন’

সংগীতের দুই তারকা বোন ফাহমিদা নবী ও সামিনা চৌধুরী। ব্যক্তিজীবনে দু’জনার মধ্যে মধুর সম্পর্ক থাকলেও সচরাচর এক অ্যালবামে পাওয়া যায় না তাদের গান। তবে এবার সেটি পাওয়া যাচ্ছে। দু’জনে গেয়েছেন ‘একই স্বপ্ন’ শিরোনামের একটি বিশেষ অ্যালবামে।

এতে দুই বোনের সঙ্গে এবারই প্রথম অ্যালবামে গাইলেন সংগীতের আরেক প্রিয় মুখ শারমিন রমা। গানের পাশাপাশি যাকে সংবাদ পাঠিকা হিসেবেও জেনে থাকেন দর্শকরা। আসছে ঈদ উপলক্ষে সদ্য রেকর্ড শেষ হওয়া বিশেষ এই অ্যালবামটির সুর করেছেন বেলাল খান। গান লিখেছেন রবিউল ইসলাম জীবন ও নীহার আহমেদ।

এই ঈদে সিএমভির ব্যানার হয়ে জিপি মিউজিকে প্রকাশ পাচ্ছে তিন গানের ‘একই স্বপ্ন’। অ্যালবামটি প্রসঙ্গে বেলাল খান বলেন, ‘এটা আমার সৌভাগ্য। তিনজন অসম্ভব গুণী শিল্পীর কাজ করেছি এবার। আমি চেষ্টা করেছি নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার। এ ক্ষেত্রে উনাদের সহযোগিতাও পেয়েছি। আশা করছি উনাদের কণ্ঠে এবার নতুন কিছু পাবেন শ্রোতারা।’

এদিকে সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘বেলাল খুবই ভালো কাজ করছে এখন। আমাকে অসাধারণ একটি গান গাইতে দিয়েছে সে। এক কথায় মুগ্ধ গানটি গেয়ে।’

‘একই স্বপ্ন’ অ্যালবামের গান তিনটি হলো, ‌’পিপিলিকা’, ‘একই স্বপ্ন’ এবং ‘আমি প্রশ্ন হয়ে যাই’।

 

তাহাজ্জুদের নামাজ কি, কেন এবং কীভাবে আদায় করতে হয়?

রাসূল (সা.) যেভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন- কখনও মধ্যরাতে, কখনও তার কিছু আগে অথবা পরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুর কয়েক আয়াত পড়তেন। তারপর মিসওয়াক ও অজু করে নামাজ পড়তেন। অর্ধ রাতের পরে, রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম।

তাহাজ্জুদ শব্দটি আরবি। এর ব্যবহার পবিত্র কোরআনে আছে। তাহাজ্জুদ শব্দটি নিদ্রা যাওয়া ও জাগ্রত হওয়া এই পরস্পরবিরোধী দুই অর্থে ব্যবহৃত হয়। পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ইসরাইলে ৭৯ নং আয়াতের অর্থ এই যে, রাতের কিছু অংশ কোরআন পাঠসহ জাগ্রত থাকুন। আয়াতে উল্লেখিত ‘বিহী’ সর্বনাম দ্বারা কোরআন বোঝানো হয়েছে। (মাজহারি)। কোরআন পাঠসহ জাগ্রত থাকার অর্থ নামাজ পড়া। এ কারণেই শরিয়তের পরিভাষায় রাত্রিকালীন নামাজকে তাহাজ্জুদ নামাজ বলা হয়। সাধারণত এর অর্থ এভাবে নেয়া হয় যে, কিছুক্ষণ নিদ্রা যাওয়ার পর যে নামাজ পড়া হয় তাই তাহাজ্জুদের নামাজ। কিন্তু তফসিরে মাজহারিতে এভাবে বলা হয়েছে, আয়াতের অর্থ এতটুকুই যে, রাতের কিছুক্ষণ নিদ্রা যাওয়ার পর জাগ্রত হয়ে নামাজ আদায় করলে যেমন এ অর্থ ঠিক থাকে, তেমনি প্রথমেই নামাজের জন্য নিদ্রাকে পিছিয়ে নিলেও এ অর্থের ব্যতিক্রম হয় না। তাই তাহাজ্জুদের জন্য প্রথমে নিদ্রা যাওয়ার শর্ত কোরআনের অভিপ্রেত অর্থ নয়।

তাছাড়া কোনো কোনো হাদিস দ্বারা তাহাজ্জুদের এ সাধারণ অর্থ প্রমাণ করা হয়েছে। হজরত হাসান বসরি (রা.) বলেন, এশার পরে পড়া হয় এমন প্রত্যেক নামাজকে তাহাজ্জুদ বলা যায়। তবে প্রচলিত পদ্ধতির কারণে কিছুক্ষণ নিদ্রা যাওয়ার পর পড়ার অর্থে বোঝা দরকার। এর সারমর্ম এই যে, তাহাজ্জুদের আসল অর্থে নিদ্রার পরে হওয়ার শর্ত নেই এবং কোরআনের ভাষায়ও এরূপ শর্তের অস্তিত্ব নেই; কিন্তু সাধারণত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম শেষ রাতে জাগ্রত হয়ে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন। তাই এভাবে পড়াই উত্তম। (ইবনে কাসির)। তাহাজ্জুদ নামাজের প্রচলন ঠিক কখন থেকে শুরু হয়েছিল তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও তাহাজ্জুদ নামাজের নির্দেশ সর্বপ্রথম পাওয়া যায় সূরা মুজ্জাম্মিলের প্রথম দিকের আয়াত নাজিল হওয়ার পর। আর সূরা মুজ্জাম্মিল যেহেতু ইসলামের শুরুতে কোরআন অবতরণের প্রাথমিক যুগে অবতীর্ণ হয়েছে। তাই বলা যায়, ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকেই তাহাজ্জুদের যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু শুরু থেকে তাহাজ্জদু নামাজ ফরজ ছিল।

হজরত আয়েশা (রা.) ও বাগভী (রহ.) বলেন, সূরা মুজ্জাম্মিলের নির্দেশানুযায়ী তাহাজ্জুদ তথা রাতের নামাজ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সমগ্র উম্মতের ওপর ফরজ ছিল। ওই আয়াত দ্বারা তাহাজ্জুদ নামাজ কেবল ফরজই করা হয়নি, বরং তাতে রাতের কমপক্ষে এক-চতুর্থাংশ মশগুল থাকাও ফরজ করা হয়েছিল। কারণ আয়াতের মূল আদেশ হচ্ছে কিছু অংশ বাদে সারা রাত নামাজে মশগুল থাকা। ইমাম বাগভী (রহ.) বলেন, এ আদেশ পালনার্থে রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম অধিকাংশ রাত তাহাজ্জুদের নামাজে ব্যয় করতেন। ফলে তাদের দুই পা ফুলে যেত এবং আদেশটি বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এভাবে পূর্ণ একবছর অতিবাহিত হওয়ার পর সূরা মুজ্জাম্মিলের শেষ আয়াত নাজিল হওয়ায়, দীর্ঘক্ষণ নামাজে দ-ায়মান হওয়ার বাধ্যবাধকতা রহিত করে দেয়া হয় এবং বিষয়টি ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দিয়ে ব্যক্ত করা হয় যে, যতক্ষণ নামাজ পড়া সহজ মনে হয়, ততক্ষণ নামাজ পড়াই তাহাজ্জুদের জন্য যথেষ্ট। এ বিষয়বস্তু আবু দাউদ ও নাসাঈতে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে। তাহাজ্জুদ নামাজের এ বিধান বলবৎ ছিল পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মেরাজের রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আদেশ অবতীর্ণ হলে তাহাজ্জুদ নামাজের ফরজ হুকুম রহিত হয়ে যায়। তবে তারপরও তাহাজ্জুদ সুন্নত রয়ে যায়। কারণ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরাম সর্বদা নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়তেন। (মাজহারি)। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে থাক। এ নামাজ তোমার জন্য অতিরিক্ত। শিগগিরই আল্লাহ তোমাকে মাকামে মাহমুদ দান করবেন। (বনি ইসরাইল : ৭৯)।

হাদিসে কুদসিতে রয়েছে, যে বান্দা আমাকে ভালোবাসার বাদী করে অথচ সারা রাত ঘুমিয়ে কাটায় সে তার দাবিতে মিথ্যাবাদী। এ জন্য যে, সে কেমন প্রেমিক যে, তার মাহবুবের মহব্বত কামনা করেন। অথচ আমি তার অপেক্ষায় থাকি। সে যদি তার দাবিতে সত্যবাদী হতো তাহলে অবশ্যই আমার ডাকে সাড়া দিত। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, হজরত আবদুল্লাহ বিন সালাম (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) যখন মদিনায় তাশরিফ আনেন, তখন প্রথম যে কথাগুলো তাঁর মুখ থেকে শুনি তা হলো- হে লোকজন! ইসলামের প্রচার-প্রসার করো, মানুষকে আহার দান করো। আত্মীয়তা অটুট রাখো, আর যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকবে তখন তোমরা রাতে নামাজ পড়তে থাকবে। তাহলে তোমরা নিরাপদে বেহেশতে যাবে। (হাকেম, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি)। রাসূল (সা.) বলেছেন, ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট নামাজ হলো রাতে পড়া তাহাজ্জুদ নামাজ। (মুসলিম, আহমাদ)।

রাসূল (সা.) যেভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন- কখনও মধ্যরাতে, কখনও তার কিছু আগে অথবা পরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে সূরা আলে ইমরানের শেষ রুকুর কয়েক আয়াত পড়তেন। তারপর মিসওয়াক ও অজু করে নামাজ পড়তেন। অর্ধ রাতের পরে, রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম। ফজরের নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত পড়া যায়। তবে ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে এশার নামাজের পর পড়লে তাহাজ্জুদের সুন্নত আদায় হবে। তাহাজ্জুদ নামাজ সর্বনিম্ন দু’রাকাত। সর্বোচ্চ আট রাকাত পড়া উত্তম। তবে আরও বেশি পড়া জায়েজ আছে। দু’রাকাত দু’রাকাত করে যথাসম্ভব রুকু, সেজদা ও কেরাত লম্বা করে একাগ্রচিত্তে পড়া ভালো। তাহাজ্জুদের নামাজ ঘরে পড়া উত্তম। তবে মসজিদে পড়লেও ক্ষতি নেই। রমজান ছাড়া মাঝে মাঝে জামাতে পড়া জায়েজ আছে। তবে নিয়মিত নয়। কিরাত আস্তে অথবা জোরে পড়া জায়েজ আছে। তবে কারও কষ্ট হলে আস্তে পড়া ভালো।

তাহাজ্জুদের নামাজ হলো আল্লাহর দিদার লাভের সর্বোত্তম উপায়। যুগে যুগে যত মানুষ আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের প্রধান আমল ছিল রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া। অতএব আমাদের সবার উচিত তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব দেয়া।

সময়
অর্ধ রাতের পরে। রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া উত্তম। তবে ঘুম থেকে না জাগার সম্ভাবনা থাকলে এশার নামাজের পর দুই রাকাত সুন্নত ও বিতরের আগে তা পড়ে নেয়া জায়েজ আছে।

রাকাত সংখ্যা
সর্বনিম্ন দুই রাকাত। আর সর্বোচ্চ ৮ রাকাত পড়া উত্তম। তবে আরও বেশি পড়া জায়েজ আছে। এরপরে বিতর নামাজ পড়া।

পড়ার নিয়ম
দুই রাকাত দুই রাকাত করে যথাসম্ভব লম্বা কেরাত, লম্বা রুকু ও সেজদা সহকারে একান্ত নিবিষ্ট মনে পড়া।

পড়ার স্থান
ঘরে পড়া উত্তম। তবে মসজিদে পড়াও জায়েজ আছে।

কেরাত
উঁচু বা নিচু উভয় আওয়াজে পড়া জায়েজ আছে। তবে কারও কষ্টের কারণ হলে চুপিচুপি পড়া কর্তব্য।

জামাতে পড়া
রমজান ছাড়া অন্য সময় মাঝেমধ্যে জামাতে পড়া জায়েজ আছে। তবে নিয়মিতভাবে নয়।

লিখেছেন : মুহাম্মদ আরিফুর রহমান জসিম
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

নতুন কোম্পানির নাম হবে কেমন?

নামে কি আসে যায়? শেক্সপিয়ার বলেছিলেন, “a rose by any other name would smell as sweet”। কিন্তু কোম্পানির ক্ষেত্রেও কি তাই? না। একটা কোম্পানির নাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন নতুন ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন তখন অবশ্যই নাম নির্বাচনে বিশেষ গুরুত্ব দিন। খেয়াল রাখুন এই বিষয়গুলো-
 
সহজ একটি শব্দ নিন
জটিল অর্থবহ কোন শব্দকে নাম হিসেবে বেছে নিতে হবে এমন নয়। বরং নামটি হতে পারে একেবারেই সাধারণ একটি শব্দ। যেমন- অ্যাপল। সহজ একটি শব্দ। কিন্তু সহজেই মনে থাকবে, উচ্চারণে সহজ, পরিচিত একটি শব্দ। এধরণের শব্দ আমাদের মনে ছাপ ফেলে দ্রুত।
পরিচিত শব্দ
ভিন্ন ভাষার শব্দের চেয়ে পরিচিত দেশী কোন শব্দ বেছে নিতে পারেন। বিদেশী শিব্দ হলেও সেটা যেন জনসাধারণের শব্দ ভান্ডারের কোন শব্দ হয়। যেমন, ইংরেজী শব্দগুলো বিদেশী হলেও আমরা বুঝতে পারি। গ্রীক অনেক শব্দই আমাদের পরিচিত। এই বিভিন্ন ধরনের শব্দ থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দেরটি।
প্রাসঙ্গিকতা জরুরী নয়
আপনার কোম্পানি হয়ত পোশাক বিক্রী করবে। তাই বলে কোম্পানির নামও পোশাক সংশ্লিষ্ট হতে হবে তা নয়। বেশীরভাগ বিখ্যাত কোম্পানির দিকে খেয়াল করুন, তাদের পণ্য এবং নাম একেবারে আলাদা। এটা ক্রেতার মনোযোগ আকর্ষণের একটি কৌশল। ভিন্ন একটি শব্দ সহজেই মনে খটকা তৈরি করে, প্রশ্ন তৈরি করে। ফলে সেটার প্রতি মনোযোগ বেশী দেওয়া হয়।
কমন কিন্তু ভিন্ন একটি শব্দ নিন
বাজারে অনেক কোম্পানি। নতুনভাবে আপনার কোম্পানির নাম শুনে ক্রেতা কিভাবে সেটা মনে রাখবে এই দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। এমন একটি শব্দ নাম হিসেবে বেছে নিন যেটা মূহূর্তে ভাল লাগা তৈরি করে। অ্যাপলের কথাই ভাবুন। সফটওয়্যার কোম্পানি কিন্তু ফলের নামে নাম। নাম শুনেই আপনার মনে হবে, এটা কেমন কথা! কিন্তু নামটি মনে রয়ে যাবে আপনার ওই প্রশ্নটির জন্যই।
দীর্ঘসময়ের কথা চিন্তা করুন
আপনার কোম্পানি নিয়ে নিশ্চয়ই আপনার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আছে। নাম একবার রেখে পরিবর্তন করা, নতুন নাম আবার পরিচিত করা খুবই ঝামেলার কাজ। তাই আগেই দেখুন, যে নামটি আপনি নিচ্ছেন সেটি আগেই অন্য কোন কোম্পানি ব্যবহার করছে না তো? ভাল করে যাচাই-বাছাই করে নিন। শুধু অনলাইনে নয়, অফলাইনেও। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, নাম নিবন্ধনের সময় জানা যায় নামটি আগেই নিবন্ধিত। দীর্ঘমেয়াদে কাজে লাগাতে হলে সব দিকে খোঁজ নিন।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

সবুজ আপেল যে কারণে বেশি বেশি খাওয়া ভালো

সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় যে ফলটি তা হচ্ছে আপেল। বেশিরভাগ মানুষই লাল আপেল খেয়ে থাকেন। যেহেতু লাল আপেল হজমে সাহায্য করে, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, দাঁতের ছিদ্র হওয়া প্রতিরোধ করে এবং নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে। আপেল নিয়ে প্রচলিত জনপ্রিয় প্রবাদ – “প্রতিদিন একটি আপেল খেলে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়না” এর কথা মনে আসলেই আমাদের মনে পড়ে লাল আপেলের কথা। লাল আপেলের নিকটাত্মীয় হচ্ছে সবুজ আপেল যার কৃতিত্বের স্বীকৃতি সে পায়না। সবুজ আপেল ভিটামন এ, সি ও কে তে সমৃদ্ধ। এছাড়াও সবুজ আপেল আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্ল্যাভোনয়েডের সমৃদ্ধ উৎস। নিয়মিত সবুজ আপেল খাওয়ার উপকারিতাগুলোর বিষয়ে জেনে নিই চলুন।

১। ফুসফুসের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়

গবেষণায় জানা যায় যে, সবুজ আপেল খেলে অ্যাজমার ঝুঁকি কমে যেহেতু এটি ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ। অ্যাজমার ঝুঁকি কমানোর সাথে ফ্ল্যাভোনয়েড সম্পর্কযুক্ত বলে  দাবী করেন গবেষকেরা। এটি ছাড়াও সবুজ আপেল ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় নারীদের ক্ষেত্রে ২১% পর্যন্ত।

২। ব্লাড ক্লট প্রতিরোধে সাহায্য করে

সবুজ আপেলে রুটিন নামক রাসায়নিক যৌগের উপস্থিতির কারণে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর কারণ হচ্ছে রুটিন রক্ত জমাট বাঁধার এনজাইমকে আটক করে ফেলে। গবেষকেরা বলেন এই আবিষ্কারটি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে। এক গ্লাস  সবুজ আপেলের জুস বা আস্ত সবুজ আপেল খেলে আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।

৩। মেটাবোলিজমের উন্নতি ঘটায়

সবুজ আপেল হজমের জন্য অত্যন্ত ভালো। এটি পেট ফাঁপা প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং পাকস্থলী থেকে যেকোন বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে সাহায্য করে। সবুজ আপেলে ফাইবার থাকে বলে সহজে হজম হয় এবং বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি হতে পারে আদর্শ স্ন্যাক্স যা ক্ষুধা নিবারণ করে এবং অন্য চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখে।

৪। হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়

সবুজ আপেল খাওয়া নারীদের জন্য বিশেষ উপকারী কারণ এটি পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে এ পরিপূর্ণ থাকে। গবেষণায় জানা গেছে যে, ভিটামিন কে নারীদের অষ্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে এবং সার্বিক হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।

৫। অকালে ত্বকের বয়স বৃদ্ধির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে

সবুজ আপেল ভিটামিন এ, সি এমনকি অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ও ভালো উৎস। তাই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধ করে এবং ত্বককে স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে সবুজ আপেল।

৬। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে

যদি আপনি আপনার চোখ ও দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে চান তাহলে সবুজ আপেল খাওয়া শুরু করুন। যেহেতু সবুজ আপেলে ভিটামিন এ থাকে তাই এটি চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় কাজ করে।

৭। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ভালো

যদি আপনি ডায়াবেটিকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে লাল আপেলের পরিবর্তে সবুজ আপেল খান। ডাক্তারদের মতে সবুজ আপেলে লাল আপেলের তুলনায় চিনির পরিমাণ কম থাকে এবং ফাইবার বেশি থাকে। সবুজ আপেল টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

৮। কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ প্রতিরোধ করে

সবুজ আপেল এবং ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ অন্যান্য খাদ্য খেলে কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজের ঝুঁকি ৩৫% কমে। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সমস্ত নারীরা লাল ও সবুজ আপেল উভয়টিই নিয়মিত খান তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ১৩-২২% পর্যন্ত কমে। এর কারণ এই ফলটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে।

 

লিখেছেন-
সাবেরা খাতুন
ফিচার রাইটার

 

সিঙ্গাপুরের জালে বাংলাদেশের গোল উৎসব

এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বে বাংলাদেশের জয়রথ ছুটছেই। প্রথম ম্যাচে ইরানকে ৩-০ গোলে হারানোর পর আজ সোমবার সিঙ্গাপুরের জালে গোল উৎসব করেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী দল।

সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে সিঙ্গাপুরকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে গোল করেছেন কৃষ্ণা রাণী ও অনুচিং মগিনি। বাকি গোলটি করেন মৌসুমী।

এদিন খেলার শুরুর থেকেই সিঙ্গাপুরকে চাপে রাখে বাংলাদেশ। একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে সানজিদা-মারজিয়া-মৌসুমীরা। বাররার প্রতিপক্ষের রক্ষনভাগ পরাস্ত করলেও গোলমুখে এসে খেই হারিয়ে ফেলছিলেন তারা।

প্রথম গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৩৯ মিনিট পর্যন্ত। সানজিদার উড়ন্ত ক্রসে ডি বক্সে দাঁড়ানো কৃষ্ণা জোরালো হেডে বল জড়িয়ে দেন জালে। ১-০ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

বিরতির পর দ্বিতীয় মিনিটেই দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। এবারো গোলদাতা কৃষ্ণা। মারিজিয়ার বাঁকানো ক্রসে বল পান কৃষ্ণা। সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক নুর ইজ্জাতিকে পরাস্ত করতে একটুও বেগ পেতে হয়নি তাকে।

৮৩ মিনিটে তৃতীয় গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। বদলি ফরোয়ার্ড অনুচিং মগিনি করেন গোলটি। আরেক বদলি ফরোয়ার্ড তহুরার মাটি কামড়ানো শট নুর ইজ্জাতির হাত ফসকে গেলে তাতে টোকা দিয়ে গোলটি করেন তিনি।

তিন মিনিট পর আবারও গোল। এবার বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন মৌসুমি। এরপর শেষ বাঁশি বাজার কিছুক্ষন আগে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান অনুচিং মগিনি। ফলে ৫-০ এর বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

এই বাছাই পর্বের গ্রুপসেরা দল পাবে ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে মূল আসরে খেলার টিকেট। তাতে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশের মেয়েরা। বাংলাদেশের পরবর্তী খেলা কিরগিজস্তানের বিপক্ষে, ৩১ আগস্ট।

 

না​ইবা দেখতে পেলাম

পারুল, হোসনে আরা, হাসনা হেনা, রেণু আরা—তাঁরা চার বোন। চারজনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তবে রান্নাসহ সংসারের প্রায় সব কাজ নিজেরাই করেন। শুধু এই চারজনই নন, তাঁদের আপন ভাইয়ের ছেলে ও মেয়েও চোখে দেখেন না। অনেক আগে চিকিৎসক দেখিয়েছেন। তবে কোনো লাভ হয়নি। চার বোনই এখন সরকারের প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। আট বোনের মধ্যে চার বোনই এখন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তাঁদের চার ভাই চোখে দেখেন।

গত ৩১ জুলাই ময়মনসিংহ শহরের ব্রাহ্মপল্লির ১১৫/এ বকুলতলা ঠিকানায় গিয়ে দেখা মেলে দুই বোন ও ভাতিজা-ভাতিজির। এক বোনের কাছ থেকে মুঠোফোনে খবর পেয়ে অন্য দুই বোনও হাজির হন। দুই বোন এক ভাইয়ের আশ্রয়ে আছেন। অন্য দুই বোন এক যুগের বেশি সময় আগে সরকারের কাছ থেকে একটি করে ঘর বরাদ্দ পেয়েছিলেন। সেসব ঘরে মূলত তাঁদের ছেলেরা থাকছেন। ছেলেদের সংসারে তাঁরা খুব একটা ভালো থাকছেন, তা জোর দিয়ে বলতে পারলেন না। কথা হলো চার বোনের সঙ্গে।

ভাইয়ের আশ্রয়ে পাওয়া টিনের ছোট এক চিলতে ঘর হোসনে আরার। ঘরে একটি খাট, সস্তা কাঠের নেট লাগানো ছোট একটি আলমারি, ছোট টেবিলে একটি গ্যাসের চুলা আর পাশেই একটি চেয়ার। ঘরে দিনের আলোতেও তেমন কিছু দেখা যায় না। ঘরটি এতটাই ছোট যে, বিছানা থেকে নামার পর কাজ করতে গেলে বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যায়।

হোসনে আরা এই প্রতিবেদকের সামনেই সকালের নাশতা খাওয়ার জন্য নুডলস রান্না করলেন। গ্যাসের চুলা ধরানো, মরিচ, পেঁয়াজ কাটাসহ সব কাজ একাই করলেন। তিনি জানালেন, বেশ কয়েক বছর একজনের বাসায় রান্নার কাজও করেছেন।

জাতীয় প্রতিবন্ধী সেবা সংস্থা নামের একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান হোসনে আরা। বিভিন্ন ধরনের ২৬২ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এ সংগঠনের সদস্য। অর্থের অভাবে বর্তমানে সংগঠনটির কার্যক্রম নেই বললেই চলে।

হোসনে আরা জানালেন, একটু বড় হওয়া পর্যন্ত চোখে দেখতেন। এখন কিছুই দেখেন না। স্বামী তাঁকে ফেলে চলে গেছেন। ১২ বছর বয়সী ছেলের দায়িত্বও এখন হোসনে আরার কাঁধে।

হাসনা হেনার বিয়ে হয় ছোট বয়সেই। তাঁর চোখের সমস্যারও শুরু অল্প বয়স থেকেই। বিয়ের পরে স্বামীর সংসারে ১০ দিন থাকার পর স্বামী তাঁকে ফেলে চলে যান। এখন থাকেন হোসনে আরার পাশের ঘরে, ভাইয়ের আশ্রয়ে। ভাইয়ের সংসারের রান্না করা ছাড়াও কাপড় ধোয়া, ঘর ঝাড়ু দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজ করে দেন। হাতের ইশারায় সব করতে পারেন বলে জানালেন।

আরেক বোন পারুলের বয়সের কারণে সামনের দুটি দাঁত পড়ে গেছে। স্বামী মারা গেছেন। তাঁর দুই ছেলে, এক মেয়ে। ছেলেমেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। একবার রান্না করার সময় গায়ে আগুন লেগে গিয়েছিল। তিনি এবং তাঁর আরেক বোন রেণু আরা ১৩ বছর আগে সরকারের কাছ থেকে একটি ঘর পেয়েছেন। ওই ঘরে থাকলেও পরিবারের আপনজনেরাই অনেক সময় এমন কথা বলেন, যা শুনে তাঁদের কষ্ট হয় বলে জানালেন।

রেণু আরার এক ছেলে, এক মেয়ে। তাঁরও স্বামী মারা গেছেন। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ঘরে ছেলে ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে থাকেন। এখন ভিক্ষা করে রেণু আরা নিজের খাদ্যের সংস্থান করেন। ছেলের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ নেই। তিনি বললেন, ‘ছেলেরই সংসার চলে না। ১০ জনের কাছে চাইলে একজন কিছু দেয়। তা দিয়েই চলে আমার।’ এই চার বোন সরকারের কাছ থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে তিন মাসে ১ হাজার ৫০০ করে টাকা পাচ্ছেন।

এই চারজনের আরেক বোন (চোখে দেখেন) রুমা বললেন, ‘দুই বোন সরকারের কাছ থেইক্যা ঘর পাইছে। অন্য দুই বোন দরখাস্ত দিছে। কিন্তু এখন তো টাকা চায়। টাকা না দিলে কোনো কিছু পাওয়া যায় না। এই দুই বোনের একটা গতি হইলে সবাই বাইচ্যা যাইত।’

হোসনে আরাসহ চার বোনের অনেক কষ্টের স্মৃতি আছে। হোসনে আরা বলেন, ‘ছেলের মুখ দেখতে পাইলাম না আজ পর্যন্ত। খালি চোখের পানি ফালাই। ছেলের মুখটা যদি দেইখ্যা যাইতে পারতাম।’ তিনি চার বোনের মধ্যে সবার ছোট।

হাসনা হেনা বললেন, ‘মানুষ কানা ডাকলে খারাপ লাগে। এইটা তো একটা গালি। তার চাইতে অন্ধ কইলেও হয়। ঘরের বাইরে বাইর হইলেই মানুষ খারাপ কথা কয়।’

এক বোন ছাড়া অন্য তিন বোন মানুষের কাছে হাত পাতেন না। তবে কেউ কিছু দিলে তা ফিরিয়ে দেন না। কেননা মানুষের সহায়তায় তাঁরা এখন পর্যন্ত অন্তত বেঁচে তো থাকতে পারছেন।

বাবার রেখে যাওয়া সামান্য সম্পত্তি নিয়ে বড় ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধের জের আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বলে জানালেন হোসনে আরা। যে ভাইয়ের আশ্রয়ে দুই বোন থাকতে পারছেন, ওই ভাইও তাঁদের ফেলে দিলে তাঁদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। হোসনে আরা বললেন, ‘আমরা বেশি কিছু চাই না। খালি চলার মতন একটি গতি হইলেই খুশি।’

 

সাফল্যের দৌড়ে সুমি

গল্পটা এভাবে বলি। ভাবুন, এ দেশেরই কোনো গ্রামের দুরন্ত এক কিশোরী। সারা দিন দৌড়ঝাঁপ আর খেলাধুলায় দিন কাটে তার। অন্য মেয়েদের মতো রান্নাবাটি খেলায় মন নেই, সারা দিন শুধু দুরন্তপনা! স্থির হওয়ার সময় যেন তার নেই। তাকে ছুটতে হবে, দূর থেকে বহু দূরে। যত দূরে গেলে মুঠো ভর্তি করে নেওয়া যায় সাফল্যের রত্নভান্ডার!

ক্রীড়াবিদ হতে হবে—এটাই জানেন সুমি l ছবি: এভারেস্ট একাডেমিগল্পের চরিত্রটার নামও জেনে নেওয়া যাক তবে। নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে ১২ আগস্ট এভারেস্ট একাডেমি আয়োজন করে ‘ঢাকা উইমেন্স ম্যারাথন’-এর প্রথম আসর। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়োজনে এই ম্যারাথনে প্রথম হয়েছেন সুমি আক্তার। বলছিলাম তাঁর গল্পই! সেনাবাহিনীর এই সৈনিক দৌড়েছেন ১০ জন নয়, ১০০, ২০০-ও নয়, অন্তত ৩০০ মেয়ের সঙ্গে। আর ৪৮ মিনিট ২২ সেকেন্ড খরচ করে প্রথম হওয়ার আগে ছুটেছেন টানা ১০ কিলোমিটার পথ!
সুমি আক্তারের পরিচয়টা অবশ্য এতটুকুই নয়। এর আগে ২০১৪ সালে জাতীয় পর্যায়ে ৮০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতেছিলেন তিনি। গত বছর তো ৮০০ মিটার, ১০০০ মিটার ও ১৫০০ মিটার—তিন ইভেন্টেই জিতেছেন সোনা। অপেক্ষায় আছেন এ বছরের জাতীয় পর্যায়ের ইভেন্টের।
সুমি ছোটবেলা থেকেই জানতেন, আর কিছু নয়, ক্রীড়াবিদই হতে চান। ‘ছোটবেলা থেকেই আমি বুঝতে পেরেছি, খেলাধুলা ছাড়া কিছুতেই আমি তেমন ভালো করতে পারব না। খেলাধুলাটা আমি ভালো পারি, তাই সেদিকেই আমার এগোনো উচিত।’

এগোতে চাইলেই নিশ্চয় তা খুব সহজ হয় না। জন্ম মানিকগঞ্জের এক গ্রামে। পরিবারের সহযোগিতা ছাড়া তো তা অসম্ভবের কাছাকাছি! দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে পরিবারে সবার ছোট মেয়ে সুমি নিজেও বললেন তা-ই। পরিবারের সহযোগিতা ছাড়া দৌড়ে যত পারদর্শীই হন না কেন, এত দূর আসা হতো না কখনোই! তবে তাঁর মুখের কাঠিন্য ও আত্মবিশ্বাসটা এমন, যেন ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা কখনো মনে উঁকিও দেয়নি!

১০ কিলোমিটারের এই ম্যারাথনেও শুধু অংশগ্রহণের জন্য নয়, জিততে পারেন, এই সম্ভাবনা মাথায় রেখেই অংশ নিয়েছিলেন, ‘আমরা যারা সেনাবাহিনীতে আছি, আমাদের প্রতিদিনই সাত-আট কিলোমিটার দৌড়াতে হয়। যখন ম্যারাথনের কথা জানলাম, ভাবলাম অল্প একটু চেষ্টা করলে জিতে যেতেই পারি।’ আর দৌড়ের সময় অর্ধেক পথ পার করে অনেকটা নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিলেন, এই দুস্তর পারাবার তিনিই সবার আগে পেরোবেন!

সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দিয়েছেন ২০১৪ সালে। পড়ালেখার আগ্রহটাও হারাননি, আগামী বছর এইচএসসি পরীক্ষা দেবেন তিনি। অগ্রযাত্রাতেই যাঁর সাফল্য, ভবিষ্যতে তিনি নিশ্চয়ই পেরোবেন আরও অনেক পথ। বললেনও তা-ই, ‘ভবিষ্যতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের জন্য গর্ব বয়ে আনতে চাই। দেশকে নিজের নাম দিয়ে আরও উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরতে চাই বিশ্বের মানচিত্রে।’

এই ম্যারাথন যে জন্য, অর্থাৎ নারীর ক্ষমতায়ন, সে ব্যাপারে কী ভাবেন সুমি? সুমির ভাবনা, ‘সমাজ ও জীবনের সব পর্যায়ে নিজের স্বতন্ত্র অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করা, নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারা এবং সে পথেই নিজের জীবনকে পরিচালনা করার পর্যায়ে পৌঁছানোই নারীর ক্ষমতায়ন।’

কথাবার্তা শেষের পথে, ছবি তোলার পালা। জয়ে যে খুব উচ্ছ্বসিত তিনি, এমনটা ছবি তোলার সময়ও মনে হলো না। যেন ‘এ আর এমন কী, আমাকে তো ছুটতে হবে আরও অনেক, অনেক দূর’!

সুত্রঃ প্রথম আলো

Save

Save

Save

Save

 

বিবাহিত নারীর সাথে করমর্দন করা যাবে কিনা?

নিঃসন্দেহে এটা হাতের যিনা। যেমন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দুচোখ যিনা করে, দুহাত যিনা করে, দুপা যিনা করে এবং লজ্জাস্থানও যিনা করে”। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৩৯১২; সহীহুল জামে, হাদীস নং ৪১২৬]

আজকের সমাজে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা অবারিতভাবে চলছে। ফলে অনেক নারী-পুরুষই নিজেকে আধুনিক হিসাবে যাহির করার জন্য শরী‘আতের সীমালংঘন করে পরস্পরে মুসাফাহা করছে। তাদের ভাষায় এটা হ্যান্ডশেক বা করমর্দন। আল্লাহর নিষেধকে থোড়াই কেয়ার করে বিকৃত রূচি ও নগ্ন সভ্যতার অন্ধ অনুকরণে তারা এ কাজ করছে এবং নিজেদেরকে প্রগতিবাদী বলে যাহির করছে। আপনি তাদেরকে যতই বুঝান না কেন বা দলীল-প্রমাণ যতই দেখান না কেন তারা তা কখনই মানবে না। উল্টো আপনাকে প্রতিক্রিয়াশীল, সন্দেহবাদী, মোহাচ্ছন্ন, আত্মীয়তাছিন্নকারী ইত্যাদি বিশেষণে আখ্যায়িত করবে।

চাচাত বোন, ফুফাত বোন, মামাত বোন, খালাত বোন, ভাবী, চাচী, মামী প্রমুখ আত্মীয়ের সঙ্গে মুসাফাহা করা তো এসব লোকদের নিকট পানি পানের চেয়েও সহজ কাজ। শরী‘আতের দৃষ্টিতে কাজটি কত ভয়াবহ তা যদি তারা দূরদৃষ্টি দিয়ে দেখত তাহলে কখনই তারা এ কাজ করত না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় তোমাদের কারো মাথায় লোহার পেরেক ঠুকে দেওয়া ঐ মহিলাকে স্পর্শ করা থেকে অনেক শ্রেয়, যে তার জন্য হালাল নয়”। [ত্বাবরাণী; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ২২৬।]

নিঃসন্দেহে এটা হাতের যিনা। যেমন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দুচোখ যিনা করে, দুহাত যিনা করে, দুপা যিনা করে এবং লজ্জাস্থানও যিনা করে”। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৩৯১২; সহীহুল জামে, হাদীস নং ৪১২৬]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অধিক পবিত্র মনের মানুষ আর কে আছে? অথচ তিনি বলেছেন, “আমি নারীদের সাথে মুসাফাহা করি না”। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ২৭৫৩; সহীহুল হাদীস, হাদীস নং ২৫৯০]

তিনি আরও বলেছেন, “আমি নারীদের হাত স্পর্শ করি না”। [ত্বাবরাণী; কাবীর, ২৪/৩৪২; সহীহুল জামে‘, হাদীস নং ৭০৫৪]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, “আল্লাহর শপথ, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাত কখনই কোনো বেগানা নারীর হাত স্পর্শ করে নি। তিনি মৌখিক বাক্যের মাধ্যমে তাদের বায়আত নিতেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮৬৬]

সুতরাং আধুনিক সাজতে গিয়ে যারা নিজেদের বন্ধুদের সাথে মুসাফাহা না করলে স্ত্রীদের তালাক দেওয়ার হুমকি দেয় তারা যেন হুঁশিয়ার হয়। জানা আবশ্যক যে, মুসাফাহা কোনো আবরণের সাহায্যে হোক বা আবরণ ছাড়া হোক উভয় অবস্থাতেই হারাম।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

৪টি কৌশলে হয়ে উঠুন পারফেক্ট ম্যানেজার

আমাদের পৃথিবী দিনে দিনে আরও গতিশীল হচ্ছে। ইন্টারনেটের দরুণ আগেই পৃথিবী চলে এসেছিল হাতের মুঠোয়, এখন স্মার্টফোন তাকে নিয়ে এসেছে নখদর্পনে। এই গতিশীলতার সাথে তাল মেলাতে হলে আমাদেরও হতে হবে দ্রুতগামী।
আপনি যখন নতুন একটি ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন প্রতিযোগিতার বাজারে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে ঝড়ের গতিতে। তৈরি করতে হবে এমন নেটওয়ার্ক যা যে কোন পরিস্থিতিতে আপনার কাজে লাগবে। আপনার টিম হতে হবে এমন যারা নির্দেশ পাওয়ার সাথে সাথে বাস্তবায়ণ করতে নেমে পড়বে আপনার স্বপ্নকে। কীভাবে হবেন এমন ম্যানেজার? জেনে নিন কৌশলগুলো-
১। টিম কমিউনিকেশন খুবই জরুরী
যোগাযোগ নেই মানেই ভুল বোঝাবুঝি। আপনার টিমের সাথে আপনাকে থাকতে হবে সারাক্ষণ সম্পৃক্ত। কখন কোন অর্ডার হল, সেটা কবে ডেলিভারি হবে, স্টকে আছে কিনা প্রতিটি বিষয়ে ওয়াকিভাল থাকতে হবে আপনাকে। আপনি যদি এতটুকু হাল ছেড়ে দেন, দেখবেন আপনার কর্মীরা ঠিকমত কাজ করছে না। কারণ জানতে চাইলে একজন আরেকজনকে দোষারোপ করছে। এই সুযোগ দেবেন না। নিজেই সব খোঁজ নেবেন। ফোন করে সাথে সাথে জেনে নেবেন। কোন তথ্য মনে রাখার চেষ্টা না করে লিখে রাখুন এবং একমাত্র লিখিত তথ্যের উপর বিশ্বাস করুন।
 
২। প্রতিষ্ঠানের অর্থের ব্যাপারে সবাইকে সিদ্ধান্ত নিতে দেবেন না
কথায় আছে ‘অধিক সন্নাসীতে গাজন নষ্ট’। আপনার সকল অর্থনৈতিক চুক্তি হতে হবে দুইটি পক্ষের মধ্যে। কোণ মধ্যস্থতাকারী রাখবেন না। টাকা যেমন সকল সুখের জন্য প্রয়োজন তেমনি এই টাকাই সকল অনর্থের মূল। তাই প্রতিষ্ঠানে আপনার যত আত্মার আত্মীয় থাকুক না কেন, সকল অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিজে নিন। হ্যাঁ, পরামর্শ নিতে পারেন। তবে মূল নেতৃত্ব নিজের হাতে রাখুন। একজন হিসাবরক্ষক রাখুন। এতে আপনার স্ট্রেস কমবে, হিসেব রাখতেও সুবিধা হবে।
৩। একটা ট্রাকিং মেথড মেনে চলুন
প্রতিষ্ঠানের শুরুতে হয়ত আপনার সম্পদ কম থাকবে। কিন্তু আপনার টার্গেট থাকবে আরও সম্পদ বাড়ানোর, প্রতিষ্ঠানকে বড় করার। আয় এবং ব্যায় ট্রাক করতে পারা শুরুতে একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। সব রকম হিসেন নিকেশের পরও মনে হবে টাকা যে কোথায় খরচ হয়ে যাচ্ছে! আগে প্রতিষ্ঠানে লোক রাখা হত আলাদা করে এগুলো খাতায় লিখে রাখার জন্য। এখন যুগ বদলেছে। আমরা প্রযুক্তিনির্ভর হয়েছি। অফিসের কাজের সহযোগী এপ্স ব্যবহার করুন। একদম প্রথম থেকে প্রতিটি ট্রাকজেকশন ডাটা লিখে রাখুন। ‘মাত্র তো শুরু’ এই চিন্তা করে শুরুতে হেলাফেলা করলে সেই কোম্পানির হিসেবের লাগাম ধরা অনেক পরেও আর সম্ভব হয়ে ওঠে না।
৪। প্রভাব বিস্তার করুন
সিদ্ধান্ত হবে আপনার আর আপনার সিদ্ধান্তকে সবাই মানবে খুশী মনে। আপনার কর্মীরা সবার আগে গুরুত্ব দেবে আপনাকে, বিশ্বাস করবে আপনাকে। সবার উপর নিজের এই প্রভাব বিস্তার করুন। “It’s all about the delegation” এটি এখনকার প্রতিষ্ঠানের মূল মোটো হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক সময় কর্মীরা কম শিক্ষিত হতেন, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা অন্যরকম কঠিন ব্যাপার। এখনকার উচ্চ শিক্ষিত কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করা আরেক্রকম কঠিন। নেতার ইতিবাচক প্রভাব না থাকলে টিমওয়ার্ক করা কঠিন। এক কথার মানুষ হন, হন কৌশলী। কর্মীদের প্রতি সদয় হন।
বলা যতটা সহজ, করা ততটাই কঠিন। একজন ম্যানেজার এই কঠিন কাজটি করে যান প্রতিনিয়ত। আপনার বুদ্ধিমত্তার সাথে সাথে খেয়াল করুন এই পরামর্শগুলো। আরও সহজ হবে ম্যানেজ করা।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

গ্রামীণ ইউনিক্লো এনেছে ঈদ কালেকশন

ঈদের খুশিতে প্রতিটি মানুষই চায় প্রতিমুহূর্তে আনন্দে থাকতে। তাই উৎসবের বিভিন্ন মুহূর্তের সাথে মানিয়ে গ্রামীণ ইউনিক্লো নিয়ে এসেছে ঈদ কালেকশন। হোক সে ঈদের দিনে বেড়ানো বা প্রিয়জনের সাথে আনন্দের মুহূর্তগুলো ভাগ করে নেওয়ার, দূর দূরান্তে ঘুরে বেড়ানো বা প্রকৃতিকে উপভোগ করার সব মুহূর্তেই চাই আরামদায়ক ও পরিবেশ উপযোগি পোশাক। ঈদে গ্রামীণ ইউনিক্লো নিয়ে এলো এমনই আরামদায়ক ও যে কোন পরিবেশ উপযোগি পোশাকের সমারহ।

ঈদে অন্যান্য পোশাকের সাথে লিনেন শার্ট পাচ্ছেন ১৪৯০ টাকায়, পোলো শার্ট পাচ্ছেন ৯৯০ টাকায়, বিভিন্ন ফাংশনাল জিনস পাচ্ছেন ১৫৯০ টাকায়, চিনো প্যান্ট পাচ্ছেন ১৬৯০ টাকায়, গ্রাফিক টি-শার্ট পাচ্ছেন ৪৯০ টাকায়। এছাড়া মেয়েদের কামিজ পাবেন ১৬৯০ ও ২৪৯০ টাকায়। কামিজের সাথে মানানসই লেগিংস পাবেন ৩৫০ টাকায় ও পালাজ্জো  ৭৯০ টাকায়। এছাড়াও ট্রেন্ডি পেন্সিল প্যান্ট পাচ্ছেন ৯৯০ টাকায়। ঈদ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সফট এন্ড কালেকশনে একের অধিক কিনলেই পাবেন ছাড়।

গ্রামীণ ইউনিক্লো এর বর্তমানে ৯টি আউটলেট আছে। গ্রামীণ ইউনিক্লো আউলেট লোকেশন: বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচারপার্ক, ধানমন্ডি সাইন্সল্যাব মোড়, কাঁটাবন মোড়(এলিফ্যান্ট রোড), খিলগাঁও তালতলা, নয়াপল্টন, মিরপুর-০১, মোহাম্মদপুর রোড এবং গুলশান বাড্ডা লিংক রোডে।

 

বিকেলের নাস্তায় তৈরি করুন মুচমুচে খাস্তা কচুরি

বিকেলের নাস্তায় পুরি, আলুর চপ, বেগুনি খেতে খেতে একঘেয়ামি চলে আসছে? নতুন কিছু তৈরি করতে চান? অনেকেই কচুরি তৈরি করে থাকেন। এইবার একটু ভিন্নধরণের খাস্তা কচুরি তৈরি করে নিন।

উপকরণ:

পুরের জন্য:

১/২ কাপ মুগ ডাল

২ চা চামচ মরিচের গুঁড়ো

১ চা চামচ ধনিয়া গুঁড়ো

১/২ চা চামচ জিরা গুঁড়ো

২ চা চামচ আমচূর গুঁড়ো

১ চা চামচ গরম মশলা

১ চা চামচ মৌরি গুঁড়ো

লবণ

১/২ চা চামচ চিনি

১.৫ টেবিল চা চামচ তেল

ডোয়ের জন্য:

১ কাপ ময়দা

১ কাপ আটা

১/২ চা চামচ বেকিং সোডা

৩ টেবিল চামচ ঘি

লবণ

২/৩ কাপ পানি

তেল

প্রণালী:

১। মাঝারি আঁচে মুগ ডাল ভেজে নিন। বাদামী রং হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন।

২। এবার ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে গুঁড়ো করে নিন।

৩। মুগ ডালের গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, আমচূর পাউডার, গরম মশলা, মৌরি গুঁড়ো, লবণ এবং চিনি ভাল করে মেশান। এর সাথে কিছুটা পানি ভাল করে মেশান।

৪। এবার আরেকটি পাত্রে ময়দা, আটার সাথে ঘি দিয়ে ভাল করে মেশান। ব্রেড ক্রাবসের মত গুঁড়ো না হওয়া পর্যন্ত মেশাতে থাকুন।

৫। এরপর এতে লবণ, বেকিং সোডা এবং পানি দিয়ে ভাল করে ডো তৈরি করুন।

৬। ডোটি একটি পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে ১০ মিনিট রেখে দিন।

৭। ডোটি থেকে ১২টি লেচি কেটে নিন।

৮। এরপর লেচি দিয়ে ছোট রুটি তৈরি করে এর ভিতর মুগ ডালের মিশ্রণটি দিয়ে রুটির মুখটি বন্ধ করুন। তারপর হালকা করে বেলে নিন।

৯। গরম তেলে কচুরিগুলো দিয়ে দিন। অল্প আঁচে কচুরিগুলো ভাজুন।

১০। বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।

১১। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার খাস্তা কচুরি।

 

ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারবেন যে ৭টি ফল

বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস খুব পরিচিত এবং সাধারণ একটি রোগ। ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ খাওয়ার চেয়ে ডায়েট বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কী খাবেন আর কী খাবেন না এই নিয়ে অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্ব কাজ করে ডায়াবেটিস রোগীদের। এই সময় মিষ্টি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়, বিধায় ফল খাওয়া নিয়া তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অথচ কিছু ফল আছে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারি। নির্ভাবনায় এই ফলগুলো ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন।

১। আপেল

প্রচলিত আছে প্রতিদিন একটি আপেল খান আর ডাক্তার দূরে রাখুন। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। আপেলের ফাইবার, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, এবং ভিটামিন সি ক্যালরি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া টাইপ-২ ডায়াবেটিস কমিয়ে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ করে।

২। কমলা এবং লেবু জাতীয় ফল

কমলা ফাইবারের অন্যতম উৎস। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে লেবু জাতীয় ফল ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। কিন্তু এই জাতীয় ফলের রস আবার ডায়াবেটিস বৃদ্ধি করে থাকে। কমলার গ্লুকোজ ইনডেক্স (GI) ৪০ কিন্তু চিনি ছাড়া কমলার রসের গ্লুকোজ ইনডেক্স (GI) ৫০। তাই এই সকল ফলের রস পান করার চেয়ে ফল খাওয়া বেশি স্বাস্থ্যকর।

৩। কালো জাম

কালো জাম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। কালো জাম রক্তের চিনির পরিমানে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও কালো জামের বীজ গুঁড়ো করে খেলেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৪। চেরি

চেরি রক্তে ৫০% পর্যন্ত ইনসুলিন তৈরি করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং লো কার্বোহাইড্রেইডের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি আর্দশ ফল। প্রতিদিন চেরি ফল খাদ্য তালিকায় রাখুন।

৫। পেয়ারা

ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফল হল পেয়ারা। পেয়ারার মধ্যে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘সি’ এবং ভিটামিন ‘এ’ আছে, যা সুগার রোগীদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। বিনা সংকোচে খেতে পারেন এই ফল।

৬। কিউয়ি

একটা সময় ছিল বিদেশি এই ফল বাংলাদেশে তেমন একটা পাওয়া যেত না। কিন্তু আজকাল আমাদের দেশের বাজারে এটি দেখা যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বেশ স্বাস্থ্যকর একটি ফল। এই ফলটি রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখে।

৭। কামরাঙ্গা

দেশি এই টক ফলটা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কামরাঙ্গায় আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

এছাড়া আমড়া, আমলকী, টক বরই ইত্যাদি দেশি ফল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

লিখেছেন
নিগার আলম
ফিচার রাইটার

 

শরয়ী কারণ ছাড়া স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর কাছে তালাক প্রার্থনা করার বিধান

সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কোনো মহিলা যদি বিনা দোষে স্বামীর নিকট তালাক প্রার্থনা করে, তাহলে জান্নাতের সুগন্ধি তার জন্য হারাম হয়ে যাবে”। [মুসনাদে আহমদ; তিরমিযী; মিশকাত, হাদীস নং ৩২৭৯]

এমন অনেক স্ত্রীলোক আছে যারা স্বামীর সঙ্গে একটু ঝগড়া-বিবাদ হলেই কিংবা তার চাওয়া-পাওয়ার একটু ব্যত্যয় ঘটলেই তার নিকট তালাক দাবী করে। অনেক সময় স্ত্রী তার কোনো নিকট আত্মীয় কিংবা অসৎ প্রতিবেশী কর্তৃক এরূপ অনিষ্টকর কাজে প্ররোচিত হয়। কখনো সে স্বামীকে লক্ষ্য করে তার জাত্যভিমান উষ্কে দেওয়ার মত শব্দ উচ্চারণ করে। যেমন সে বলে, ‘যদি তুমি পুরুষ হয়ে থাক তাহলে আমাকে তালাক দাও। কিন্তু তালাকের যে কি বিষময় ফল তা সবার জানা আছে। তালাকের কারণে একটি পরিবারে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। সন্তানরা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এজন্য অনেক সময় স্ত্রীর মনে অনুশোচনা জাগতে পারে। কিন্তু তখন তো আর করার কিছুই থাকে না। এসব কারণে শরীআত কথায় কথায় তালাক প্রার্থনাকে হারাম করে সমাজের যে উপকার করেছে তা সহজেই অনুমেয়।

সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কোনো মহিলা যদি বিনা দোষে স্বামীর নিকট তালাক প্রার্থনা করে, তাহলে জান্নাতের সুগন্ধি তার জন্য হারাম হয়ে যাবে”। [মুসনাদে আহমদ; তিরমিযী; মিশকাত, হাদীস নং ৩২৭৯]

উক্ববা ইবন আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, “সম্পর্কছিন্নকারিণী ও খোলাকারিণী নারীগণ মুনাফিক”। [ত্বাবরানী ফিল কাবীর, ১৭/৩৩৯, সহীহুল জামে‘ ১৯৩৪]

হ্যাঁ যদি কোনো শরঈ ওযর থাকে যেমন-স্বামী সালাত আদায় করে না, অনবরত নেশা করে কিংবা স্ত্রীকে হারাম কাজের আদেশ দেয়, অন্যায়ভাবে মারধর করে, স্ত্রীর শরঈ অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করে। কিন্তু স্বামীকে নছীহত করেও ফেরানো যাচ্ছে না এবং সংশোধনেরও কোনো উপায় নেই সেক্ষেত্রে তালাক দাবী করায় স্ত্রীর কোনো দোষ হবে না। বরং দীন ও জীবন রক্ষার্থে তখন সে তালাক প্রার্থনা করতে পারে।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

মৃতব্যক্তির পক্ষে বা তার নামে কোরবানি করার বিধান

যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানি করার অসিয়ত করে যায় এবং অসিয়ত অনুযায়ী কোরবানি করা হয় তবে সেই কোরবানির গোশত গরিব মিসকিনদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া ওয়াজিব। এ গোশত ধনী এবং সৈয়দ বংশের লোকদের দেয়া জায়েজ নয়। (ফিকহুস সুন্নাহ।)

একাধিক মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে উট বা মহিষ কোরবানি করলে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য আলাদা আলাদা অংশ থাকা আবশ্যক। একাধিক মৃত ব্যক্তির জন্য এক অংশ কোরবানি করা জায়েজ নয়। তবে নিজের পক্ষ থেকে নফল কোরবানি করে তার সওয়াব জীবিত বা মৃত এক বা একাধিক ব্যক্তির উদ্দেশে দান করা জায়েজ আছে। রাসূল (সা.) তার জীবদ্দশায় একটি কোরবানির সওয়াব তার সমগ্র উম্মতের জন্য দান করেছিলেন। (সহিহ বোখারি)।

যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানি করার অসিয়ত করে যায় এবং অসিয়ত অনুযায়ী কোরবানি করা হয় তবে সেই কোরবানির গোশত গরিব মিসকিনদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া ওয়াজিব। এ গোশত ধনী এবং সৈয়দ বংশের লোকদের দেয়া জায়েজ নয়। (ফিকহুস সুন্নাহ।)

যদি মৃত ব্যক্তির সম্পদ থেকে কোরবানি না করে কোনো ব্যক্তি মৃতের পক্ষে নিজ সম্পদ থেকে কোরবানি করে, এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তি অসিয়ত করে যাক বা না যাক এরকম কোরবানির গোশতের বিধান নিজের সম্পদ থেকে কোরবানি করার মতোই। এর গোশত নিজেও খেতে পারবে এবং ধনী ও সৈয়দদেরও খাওয়াতে পারবে। (ফাতাওয়ায়ে রহীমীয়া, ইমদাদুল ফাতাওয়া।)

লিখেছেন : আল ফাতাহ মামুন
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

শিগগিরই উন্মুক্ত করা হবে স্টার সিনেপ্লেক্স

রাজধানীর জনপ্রিয় শপিংমলগুলোর একটি বসুন্ধরা সিটি। সম্প্রতি সেখানে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে সাময়িক বন্ধ রয়েছে দেশের অন্যতম প্রেক্ষাগৃহ ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’। অগ্নিকাণ্ডের ফলে ২৬ আগস্ট এখানে দেশ-বিদেশের নতুন কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। গত রোববার থেকে প্রদর্শিত হয়ািন কোনো ছবিও।

তবে শিগগিরই এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্টার সিনেপ্লেক্স-এর মিডিয়া ও বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি জানান, ‘শিগগিরই সিনেমা প্রদর্শনসহ স্টার সিনেপ্লেক্স চালু হবে। এর জন্য আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্টার সিনেপ্লেক্সের সবগুলো হলই সুরক্ষিত রয়েছে। আগুনে না পুড়লেও ধোঁয়ার কারণে সার্বিক পরিবেশ কিছুটা বিপন্ন হয়েছে। সেটা সংস্কারে এখন খুব দ্রুত কাজ চলছে। শিগগিরই স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে এনে সিনেমা প্রদর্শনসহ যাবতীয় কার্যক্রম পুরোদমে চালু করতে পারব বলে আমরা আশা করছি।’

একই সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার জন্য দর্শকদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশও করেছে সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, গত ২১ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে বসুন্ধরা সিটির লেভেল ছয়ে আগুন লাগে। পরে প্রায় ২০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অভিযানের পর পুরো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট।

 

৫টি কার্যকরী উপায়ে করুন অনলাইনে পণ্যের মার্কেটিং

আজকের তরুণ সমাজ আর বেকার নেই। সবাই কিছু না কিছু করছে। ফেসবুকে বিনামূল্যে পেজ খুলে ছোট পরিসরে ব্যবসা খুলছেন অনেকে। স্বল্প মূলধন লাগে বলে বিনিয়োগ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় না তেমন। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চমৎকার এই সুযোগ গ্রহণ করছেন অনেক উদ্যোক্তা। কিন্তু ব্যবসা তো নাহয় খোলা গেল কম খরচে। ব্যবসা বাড়াতে হলে প্রচারে তো যেতেই হবে। এছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই।
বেছে নিন এই কৌশলগুলো-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করুন
আপনার কাজগুলো ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করুন। এটি প্রচারণার সবচেয়ে সহজ বুদ্ধি। আপনার প্রফাইল থেকে সহজেই বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দিন নিজের কাজ। ফেসবুক পেজ থেকেই আপনি পাচ্ছেন ‘ইনভাইট’ অপশন। সেটি ব্যবহার করে সরাসরি বন্ধুদের আহবান করুন ‘লাইক’ দিতে। বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার দিন। আপনার পণ্যের ক্রেতা হতে পারে এমন মানুষদের মাঝে ট্যাগ দিন পণ্যের ছবিতে। তবে অবশ্যই আগে অনুমতি নিয়ে নিন।
নিজস্ব বক্তব্য প্রচার করুন
পেজ এ পণ্যের সাথে অবশ্যই জুড়ে দিন কিছু কথা আপনার ক্রেতাকে সহজে আকৃষ্ট করবে। মানুষ এখন নানান দিকে ঠকতে ঠকতে ক্লান্ত। তারা ভরসা করতে চায়। বিশ্বাস করতে চায়। আপনার প্রচারণামূলক বক্তব্যে তাদেরকে আস্থা দেবার চেষ্টা করুন পণ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে। আপনি যে পণ্য বিক্রী করছেন সে সম্পর্কে পড়াশোনা করুন, আর্টিকেল লিখুন। এতে ক্রেতা জানবে যে আপনি যা করছেন বুঝেই করছেন। এভাবেই তৈরি হবে বিশ্বাস।
বন্ধুদের সাহায্য নিন
প্রচারণায় বন্ধুদের সাহায্য নিন। আপনার যদি ফেসবুকে ২০০ জন বন্ধুও থাকে তাহলে তাদের মাধ্যমে আরও ২০০ জন করে ৪০,০০০ মানুষের কাছে পৌছতে পারবেন আপনি। আপনার বন্ধুরা আপনার শক্তি। এই শক্তি কাজে লাগান। তাদেরকে উতসাহিত করুন পণ্যের ছবি শেয়ার দিতে, ছড়িয়ে দিতে যতটুকু পারা যায়।
সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন মাধ্যম হল গ্রাহক
আপনার গ্রাহককে খুশী করুন। একজন গ্রাহক যখন আপনার পণ্য পেয়ে খুশী হয়ে আরও ১০ জনকে এর সুনাম করে তখন কিন্তু চমৎকার একটি প্রচারণা হয়ে যায়। এর চেয়ে কার্যকরি এবং বিশ্বস্ত প্রচারণা আর হয় না। তাই ক্রেতাকে সবসময় ভাল পণ্য দিন। পণ্যের গুণের সাথে কখনো সমঝোতা করবেন না।
ক্রিয়েটিভ হন
আপনার পণ্যের উপস্থাপনায় প্রকাশ করুন ভিন্নতা। হাজারো একই পণ্যের বাজারে আপনার কোম্পানির পণ্যটি যাতে চোখে পড়ে সেদিকে খেয়াল করুন। মন কাড়তে, চোখকে আকৃষ্ট করতে ভিন্নধর্মী উপস্থাপনার বিকল্প নেই। অবশ্যই একইসাথে শব্দের ক্ষমতার কথা ভুলবেন না। পণ্যের বৈশিষ্ঠ্য তুলে ধরুন এমন শব্দে যেন পড়েই মনে হয় এটি একটি বিশেষ পণ্য। অন্য সব পণ্যের মত দেখতে হলেও আসলে সব পণয় থেকে আলাদা।
 
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

ভিন্ন স্বাদের কাশ্মীরি চা আগে তৈরি করেছেন কি?

ক্লান্তি দূর করতে বলুন অথবা ঘুম তাড়াতে চায়ের বিকল্প নেই। কম বেশি সবাই চা পান করতে পছন্দ করেন। দুধ চা, রং চা, মশলা চা নানা ধরণের চা পাওয়া যায়। কাশ্মীরি  চা নামক এক ধরণের চা আছে যা বেশ জনপ্রিয় এবং প্রচলিত। আজ আপনাদের সেই কাশ্মীরি  চায়ের রেসিপিটি জানিয়ে দেব।

উপকরণ:

২ কাপ পানি

২ চা চামচ গ্রিন টি

২ চিমটি বেকিং সোডা

২ চিমটি লবণ

১ চিমটি জায়ফল গুঁড়ো

১ চিমটি জয়ত্রি গুঁড়ো

৪টি এলাচ

২টি লবঙ্গ

২ টেবিল চামচ পেস্তা বাদাম কুচি

২ টেবিল চামচ কাঠাবাদাম কুচি

চিনি

২.৫ কাপ ফুল ফ্যাট দুধ

১.৫ কাপ বরফ ঠান্ডা পানি

প্রণালী:

১। একটি পাত্রে উচ্চ তাপে পানি জ্বাল দিন।

২। পানি বলক আসলে এতে দুই চা চামচ গ্রিন টি দিয়ে মাঝারি আঁচে ১০ মিনিট জ্বাল দিন।

৩। এরপর এর সাথে বেকিং সোডা (গোলাপী রং হওয়ার জন্য), লবণ, এলাচ এবং লবঙ্গ দিয়ে ১০ মিনিট মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন।

৪। ১০ মিনিট পর চুল বন্ধ করুন। এর সাথে ঠান্ডা পানি মেশান এবং ৩-৪ মিনিট এটি নাড়ুন।

৫। তারপর চুলা জ্বালিয়ে এতে জায়ফলের গুঁড়ো, জয়ত্রি গুঁড়ো, পেস্তা বাদাম, কাঠবাদাম, দুধ দিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন।

৬। গোলাপি রং হয়ে আসলে এতে চিনি দিন এবং ৫ মিনিট অল্প আঁচে জ্বাল দিন।

৭। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার কাশ্মীরি  চা। পেস্তা বাদাম কুচি, কাঠবাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

 

ব্লাউজের স্টাইলের রকমফের

শাড়ি বাঙালি নারীর প্রথম পছন্দ। তাই তো শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ হওয়া চাই স্টাইলিশ। যাতে কেউ চোখ ফেরাতে না পারে। ভিড়ের মাঝেও সবার নজর কাড়তে এইসব স্টাইলিশ ব্লাউজের ডিজাইন বেছে নিতে পারেন আপনিও…

টাই-আপ ব্লাউজ ব্যাক নেক ডিজাইন : অন্যতম আকর্ষণীয় ব্লাউজের ডিজাইন। ফ্যান্সি শাড়ির সঙ্গে এই ধরনের ব্লাউজ ভালো মানায়। পিঠের দিকটা বেশ অনেকখানি কাটা হয় এবং রিবন দিয়ে ক্রস আকারে করা থাকে বাঁধার জন্য।

বোট নেক : স্ট্রেট বোট নেক এখন ফ্যাশনে খুব চলতি। এই ডিজাইনার ব্লাউজের সঙ্গে সিম্পল শাড়ি পরলেও খুব ভালো মানাবে।

V-শেপ ব্লাউজ ব্যাক নেক ডিজাইন : এই ধরনের নকশা কাটা ব্লাউজ়ের ডিজাইন খুব ইউনিক এবং ততটাই সুন্দর। ট্র্যাডিশনাল অথচ সাজে আধুনিক টাচ রাখতে এই ধরনের ব্লাউজ বাজিমাত করবে।

এমবেলিশড্ ব্যাক ব্লাউজ সঙ্গে টাসেল : ক্রেপ সিল্কের শাড়ির সঙ্গে এই ধরনের ব্লাউজ সবচেয়ে ভালো মানায়। শরীরের গড়ন খুব ভালো ফুটে ওঠে।

দড়ি স্টাইল ব্লাউজ : পিঠে দড়ি বাঁধা ব্লাউজের স্টাইল নতুন নয়। ফ্যাশনে বহুদিন ধরে রয়েছে। সেই ফ্যাশনে নয়া বিষয়টি হল, ব্লাউজের পিঠে উপর-নীচে দড়ি দেওয়া, সেই সঙ্গে বড় বড় স্টোন বা পুঁথি দড়ির সঙ্গে বাঁধা।

হাই নেক ব্লাউজ : নেট, জার্দৌসি এবং রেশমের কারুকার্য করা এই ব্লাউজ এখন খুব ফ্যাশনেবল। সোনালি বা লাল রঙের এই স্টাইলের একটি ব্লাউজ থাকলে, যে কোনও শাড়ির সঙ্গে পরতে পারবেন।

কাট-ওয়ার্ক ব্লাউজ ডিজাইন: সাজকে স্পেশাল করে তুলতে শিফন বা সিল্কের শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন কাট-ওয়ার্ক ব্লাউজ। জরি ও স্টোনের কারুকার্য করা এই ব্লাউজের ডিজাইন সকলের নজর কাড়বে।

 

ফিলিপাইনে মাদক যুদ্ধ: একজন নারী ঘাতকের গল্প

দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ফিলিপাইনের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট রুদ্রিগো দুতার্তে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। আর তাতে এক সপ্তাহেই প্রায় দুই হাজার মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

যারা এই খুনগুলো করছে, তাদেরই একজন মারিয়া, যদিও এটি তার আসল নাম নয়। মাদক বিরোধী লড়াইয়ের অংশ হিসাবে সরকারের পক্ষ হয়ে টাকার বিনিময়ে তিনি অন্তত ছয়টি খুন করেছেন।

যদিও এই নারীকে দেখে কোন খুনি বলে মনে হবে না, বরং একজন স্বন্ত্রস্ত, ভীত নারী বলে মনে হবে, যার কোলে আবার একটি শিশুও রয়েছে।

মারিয়া জানান, কাছাকাছি একটি প্রদেশে ২ বছর আগে তিনি প্রথম খুন করেন। প্রথমবার বলে তার সত্যিই খুব ভয় লেগেছিল।

যে ‘হিট টিমে’ মারিয়া কাজ করেন, সেখানে মোট তিনজন নারী রয়েছে। তাদের দলে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়, কারণ একজন পুরুষের তুলনায় কোন সন্দেহ তৈরি না করেই তারা শিকারের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারেন।

মারিয়া জানান, তার বসের নির্দেশেই ‘পুলিশের একজন কর্মকর্তা’ এসব হত্যা করেছেন তিনি।

পুলিশের নির্দেশে একজন ঘাতক হিসাবে কাজ করতেন মারিয়ার স্বামী। কিন্তু একদিন সেই পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করলেন, তাদের একজন নারী খুনী দরকার।

মারিয়া বলছেন, ‘একদিন তাদের একজন নারী দরকার হলো। আমার স্বামীই সেই কাজের জন্য আমাকে ফাঁদে ফেললেন। কাজে নেমে পরার পর যখন আমি সেই ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম, যাকে আমার খুন করার কথা, আমি তার কাছাকাছি গিয়ে গুলি করলাম।’

ম্যানিলার কাছাকাছি একটি এলাকা থেকে এসেছেন মারিয়া এবং তার স্বামী। টাকার বিনিময়ে খুনের কাজ শুরুর আগে তাদের নিয়মিত কোন আয়-রোজগারও ছিল না। এখন তারা প্রতি হত্যার জন্য ৪৩০ ডলার করে পান, যা দলের আরও তিন চারজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে হয়।

নিম্ন আয়ের ফিলিপিনোদের জন্য একটি আর্শীবাদ। কিন্তু মারিয়ার জন্য যেন সেটি একটি ফাঁদ, কারণ তার এ থেকে বেরিয়ে আসার উপায় নেই।

চুক্তির বিনিময়ে হত্যাকাণ্ড ফিলিপাইনে নতুন কিছু নয়, কিন্তু এখনকার মতো এত ব্যস্ত সময় তারা আর কখনোই কাটায়নি। কারণ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট দুতার্তে। নির্বাচনের আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, নির্বাচিত হলে প্রথম ছয়মাসেই তিনি এক লক্ষ অপরাধীকে হত্যা করবেন।

এ বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তবে ফিলিপাইনের স্থানীয় মানুষের কাছে তার এই অভিযান বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

এই অভিযানের ভয়ে যারা মৃত্যুভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাদের একজন রজার, যদিও তারও এটি আসল নাম নয়।

তরুণ বয়সে শাবু নামের অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন রজার। এরপর নিজেও মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন, পাশাপাশি মাদক বিক্রিও শুরু করেন। অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল।

মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন রজারের মতো অনেকে, ছবি: বিবিসি।

কিন্তু এখন তাকে প্রতিদিন এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

রজার এ বিষয়ে বলেন, ‘প্রতিদিন, প্রতি ঘণ্টায়, এক মুহূর্তের জন্যও আমি ভয় থেকে দূরে থাকতে পারি না। আপনার সামনেই যে ব্যক্তি দাড়িয়ে আছে, সেই গিয়ে আপনার সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দেবে না, বা আপনাকে খুন করবে না, আপনি জানেন না। রাতেও ঘুমানো যায় না। সামান্য একটি শব্দেই আমি জেগে উঠি। সবচেয়ে কষ্টকর ব্যাপার হলো, কাউকেই আমি বিশ্বাস করতে পারি না’।

স্ত্রী এবং বাচ্চাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন রজার। নিজের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত রজার, কিন্তু সেই ভুল শোধরানোর আর কোন রাস্তা খোলা আছে কিনা, তা তার জানা নেই।

কিন্তু যারা তাকে হত্যার জন্য খুঁজছে, তাদেরকেও অপরাধবোধ তাড়া করছে। মারিয়া যেমন বলছেন, ‘আমি নিজেই অপরাধবোধে ভুগি’।

এই কাজে তার সন্তানরা আসুক বা তাদের কাজ সম্পর্কে জানুক, সেটা তিনি চাননা।

তবে ইচ্ছা করলেই ভাড়াটে খুনির পেশা থেকে বেরিয়ে আসাও তার পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ তার বস, পুলিশ কর্মকর্তা তাদের এর মধ্যেই হুমকি দিয়েছেন, কেউ যদি এই গুপ্তঘাতকের দল থেকে বেরিয়ে যাবার চেষ্টা করে, তাহলে তাকেও হত্যা করা হবে।

তাই মারিয়ারও মনে হয়, সেও যেন ফাঁদে আটকে রয়েছে।

 

আনারস দিয়ে তৈরি করুন ভিন স্বাদের পাইনঅ্যাপল জর্দা পোলাও

আনারস ফল হিসেবে অনেকে পছন্দ করেন আবার অনেকে পছন্দ করেন না। ফল ছাড়া আনারস বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহার করা যায়। যেমন জর্দা রান্না করতে অনেকেই কিশমিশ, মোরব্বার সাথে আনারস দিয়ে থাকেন। এমনি একটি রেসিপি পাইনঅ্যাপল জর্দা পোলাও।

উপকরণ:

১ কাপ বাসমতি চাল

১.৪ কাপ পানি

১ কাপ চিনি

৩ টেবিল চামচ ঘি

১ কাপ আনারস কুচি

লবণ

১/৪ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো

৫টি পেস্তা

৫টি কাঠবাদাম

৫০ গ্রাম খোয়া

জাফরণ

প্রণালী:

১। প্রথমে প্যানে ঘি দিয়ে দিন। এরপর এতে আনারসের টুকরোগুলো দিন।

২। কিছুক্ষণ নাড়ুন। তারপর এতে সামান্য পানি যোগ করুন।

৩। এবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে তিন থেকে চার মিনিট জ্বাল দিন।

৪। আনারস নরম হয়ে আসলে এতে চিনি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।

৫। আরেকটি প্যানে পানি দিন। পানির মধ্যে ঘি, জাফরণ এবং চাল দিয়ে দিন।

৬। এর মধ্যে এক চিমটি লবণ দিয়ে দিবেন।

৭। এটি ৫ মিনিট রান্না করুন।

৮। তারপর বাসমতি চাল সিদ্ধ হয়ে আসলে এতে আনারসের মিশ্রণ দিয়ে দিন। তার সাথে দারুচিনি গুঁড়ো, এলাচ গুঁড়ো, কাঠবাদাম, খোয়া, পেস্তা বাদাম মিশিয়ে দিন।

৯। অল্প আঁচে ৩ মিনিট রান্না করুন। পানি শুকিয়ে গেলে চুলা বন্ধ করে দিন।

১০। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার পাইনঅ্যাপল জর্দা পোলাও।

টিপস:

বাসমতি চাল কমপক্ষে তিন ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন।

 

ফ্যাশনে নয় কোন বাধা!

নিজের রুচিতে খাও আর পরের রুচিতে পর। এমন কথা আজকাল আর চলে না। মর্ডান যুগে সবাই নিজের রুচিকেই বেশি প্রাধান্য দেন। সেটা করাই উচিত। তবে হ্যাঁ, যাতে লোকে আপনার রুচি ও পছন্দের বিষয়ে কটুক্তি না করে সেই কথা মাথায় রেখে জিনিসপত্র বেছে নেওয়া ভালো। নিজের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট গড়তে ফ্যাশনে কোনও বিধিনিষেধ থাকা উচিতই নয়। বরং নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দিন, তবেই সকলের নজর কাড়তে পারবেন –

১) অনেক অফিসেই জিন্স পরা মানা। তবে ডেনিমও কিন্তু ফরমাল ড্রেস হিসেবে পরা যেতে পারে। ডেনিম জিন্সের সঙ্গে সাদা শার্ট পরে অফিস যাওয়াই যায়। আবার অফিস পার্টি বা কোনও ফরমাল মিটিংয়েও ডেনিম পরতে পারেন। লাইট ডেনিম শার্ট বা পেনসিল ডেনিম স্কার্ট অফিস যাওয়ার সময় পরতে পারেন মহিলারা।

২) বিয়ে মানেই লাল রঙের পোশাক। মহিলারা লাল শাড়ি ছাড়া অন্য কোনও রঙের কথা ভাবতে পারেন না, অন্যদিকে পুরুষরাও লাল রঙের ধুতি বা লাল সেরওয়ানি পছন্দ করেন। কিন্তু লাল রং ছাড়াও বিয়েতে বেছে নেওয়া যেতে পারে বিভিন্ন রং। তাতে আপনার স্টাইল সেন্স অন্যদের প্রভাবিত করবে, সেই সঙ্গে নজিরও গড়বে।

৩) ভালো পোশাক পরার জন্য সুন্দর মাজাঘষা শরীর থাকা মাস্ট! এটা একেবারেই ভুল কথা। সঠিক পোশাক বেছে নিলে, যে কাউকে ভালো মানায়। তার জন্য মডেলদের মতো মাজাঘষা শরীরের কোনও প্রয়োজন নেই। নিজের চেহারা অনুযায়ী রুচিসম্মত পোশাক বেছে নিন।

৪) দিনের বেলা বেশি ঝকমকে পোশাক পরা মানা। এমনটা নয়। আপনার ইচ্ছে হলে দিনের বেলাও ঝকমকে পোশাক নির্দ্বিধায় পরতে পারেন। তবে অবশ্যই মাত্রা বুঝে।

৫) পিঙ্ক বা গোলাপি মানেই মেয়েলি বিষয়! পুরুষরা পিঙ্ক কালারের পোশাক পরলেই রুচি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আচ্ছা বলুন তো এমনটা কি কোথাও উল্লেখ আছে, যে পুরুষরা পিঙ্ক কালারের পোশাক পরতে পারবেন না? পুরুষরাও নির্দ্বিধায় পরতে পারেন এই রঙের পোশাক।

 

নিজের অতীতের কথা সন্তানকে জানানো কি ঠিক?

আমাদের সন্তান যেন একই সময় ফিরিয়ে নিয়ে আসে আমাদের সামনে। যে শৈশব আমরা ফেলে এসেছি, যে কৈশোর হারিয়ে গেছে কালের অতল গভীরে তার সাথে যেন আবার আমরা মুখোমুখি হই। মেয়েটিই যেন মায়ের হারিয়ে যাওয়া জীবনের ছবি, ছেলেটি যেন তার বাবারই পূনর্জন্ম।
আমাদের চোখের সামনে যখন একই সময় কাটায় ছোট্ট শিশুটি তখন তাকে সতর্ক করার জন্য, বোঝানোর জন্য অনেক সময়ই নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরি আমরা। কখনো নিজেকে তার চেয়ে ভাল ছিলাম বলে দাবি করি, কখনো বা আরও কত খারাপ ছিলাম বলে সান্ত্বনা দিই। সন্তানকে নিজের অতীত জানানো কি আদৌ ঠিক? এতে কি সন্তানটির সামনে আপনার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে? জেনে নিন মনোবিজ্ঞানীদের মত-
আপনি কী বলছেন খেয়াল করুন
আপনার সন্তানের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেসব বিষয় যা আপন তার সামনে ইতিবাচক রূপে তুলে ধরবেন! আপনি যদি ছেলেবেলায় ভুতের গল্প শুনে কেমন ভয় পেয়ে যেতেন সে কথা তার সাথে শেয়ার করেন তাহলে তার ভয় আরও বেড়ে যেতে পারে। অথবা সে আপনাকে ভীতু ভাবতে পারে। তাই বলার আগে সিদ্ধান্ত নিন, আপনার গল্পটি তার উপর কিরূপ প্রভাব ফেলবে।
সংকোচকে বিদায় দিন
অনেক সময় আমরা দরকারি অনেক কথা শিশুদের বলি না। যেগুলো তাদের জানা খুবই জরুরী। আপনার শিশুটি ছেলে হোক বা মেয়ে শারীরিকভাবে এবিউজ হতে পারে যে কোন সময়। আপনি যদি তার সাথে এই ব্যাপারে নিজের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করেন তাহলে হয়ত সে সতর্ক হবে এবং এই ধরণের বাজে অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে। আমরা প্রায়ই সন্তানদের নিরাপত্তার চিন্তা থেকে ‘এটা কর না’, ‘ওখানে যেও না’ এসব নিষাধাজ্ঞা জার করি। ‘না’ সূচক কথা শিশুরা বুঝতে পারে না। এতে তারা বিরক্ত হয়। কিন্তু আপনি যখন নিজের অভিজ্ঞতা তাকে বলবেন তখন সে বিষয়টি বুঝতে পারবে।
শিশুকে হীনমন্যতায় ফেলবেন না
আমরা বাবা মায়েরা প্রায়ই শিশুকে বলি, ‘আমার রেজাল্ট তোমার চেয়ে অনেক ভাল ছিল”, ‘আমাদের সময় আমরা অনেক ভাল কাজ করতাম, এযুগের ছেলেমেয়েরা করে না’। এভাবে আমরা শিশুদের মাঝে একরকম হীনমন্যতা প্রবেশ করিয়ে দিই। তারা কখনো নিজেদের আলাদা স্বত্ত্বা ভাবতে শেখে না। তার পরিস্থিতি এবং আপনার সময়ের বাস্তবতার ভিন্নতা বোঝে না। তাকে ভিন্নভাবে উপদেশ দিন। বলুন, ‘তুমিও পারবে। তুমি বরং আমার চেয়ে ভাল পারবে’।
ভাল মন্দ চিনতে সাহায্য করে
আপনার সন্তানের উপর একটা বয়স পর্যন্ত আপনার প্রভাব থাকে সবচেয়ে বেশী। কিন্তু এক সময় বন্ধুবান্ধবের প্রভাব বাড়তে থাকে। তাকে নিজের জীবনের গল্প এমনভাবে বলুন যাতে অসৎ সঙ্গ তাকে বদলে দিতে না পারে। আপনি মা হয়ে ছেলেকে যখন কৈশোরে কিভাবে পারার ছেলেদের দ্বারা মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেছেন সেই গল্প বলবেন, তখন আপনার কষ্ট দেখে আপনার সন্তান আরেকটি মেয়েকে টিজ করার আগে ভাববে। এভাবেই মানুষ মানুষ হয়ে গড়ে ওঠে। শুধু গড়ে তোলার দায়িত্বটা সঠিকভাবে নিতে হয়।
আপনার সন্তান আপনার অংশ। তার কাছে মহৎ হওয়ার যেমন কিছু নেই তেমনি ক্ষুদ্র হওয়ারও কিছু নেই। তাকে গড়ে তোলাই মুখ্য। শুধু সেদিকেই মনোযোগ দিন। দেখবেন, আপনার মত শ্রদ্ধা সে আর কাউকে করবে না।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

মধ্যবয়সেও তারুণ্য

বিয়ের বছর খানেক পর শখ করে হয়তো একটি শাড়ি কিনেছিলেন। অনেক দিন পর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গায়ের ওপর মেলে ধরতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। কারণ, তখনকার ছিপছিপে গড়ন আর নেই। মুখের বলিরেখাগুলোও যেন একটু আগেভাগে হাজির হয়েছে। এখন কি আর সেই শাড়িতে মানাবে? মধ্যবয়সী নারীদের জীবনের খুব পরিচিত চিত্র এটি। তবে, বিপরীত উদাহরণও দেখানো যাবে। নিয়মমাফিক জীবন, নিজের প্রতি ভালোবাসা, পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় মাঝবয়সের পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে অনেকেই সহজে মানিয়ে নিতে পারেন। বয়স যে কেবল একটি সংখ্যা, তা কিন্তু কথার কথা নয়। সত্যিকার অর্থেই বয়স যা-ই হোক না কেন, তারুণ্যের বাস মানুষের মনের মধ্যেই।

এই বয়সে এসেও পছন্দমতো পোশাক পরা যাবেহরমোনের পরিবর্তনের ওপর নেই কারও নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু নিজের জীবনযাপনের ওপর তো আছে। কুড়িতেই বুড়ি—এ ধরনের প্রচলিত কথাকে বুড়ো আঙুল দেখাতে হলে সবার আগে প্রয়োজন মনোবল। মাঝবয়সে এসে বেশির ভাগ নারীই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। চামড়ায় ভাঁজ পড়ে গেছে, চুল পড়ে যাচ্ছে, সাজগোজ করে আর কী হবে?—এমন ধারণা মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা মনে করেন, প্রতিটি বয়সেরই একটি আলাদা সৌন্দর্য আছে। আর তার চেয়েও বড় কথা, নিজের সৌন্দর্য নিজের কাছে। বললেন, ‘নিজের সাজসজ্জা অন্যের জন্য নয়।’ রাহিমা সুলতানা নিজে এই মধ্যবয়সে এসেও নিজের পছন্দমতো সাজেন, ইচ্ছা হলে খোঁপায় ফুল গুঁজে নেন। যেমন পোশাকে মানায় তেমন পোশাক পরেন। এই কথাগুলো তিনি বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই জানালেন। নারীর জীবনে ঠিক এই আত্মবিশ্বাসেরই প্রয়োজন।
কথা হলো মধ্যবয়স অর্থাৎ চল্লিশ পেরোনো কয়েকজন নারীর সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে আলাপ করে বোঝা গেল, মাঝবয়সেও সুস্থ, সতেজ থাকতে চাইলে শরীরকে ফিট রাখতে হবে। ত্বক সতেজ রাখতে রূপচর্চা করতে হবে। তার সঙ্গে সুষম ডায়েটের প্রয়োজনীয়তার কথাও বিশেষভাবে উঠে এসেছে।

ভালোবাসুন নিজেকে
নারী গৃহিণী হতে পারে, কর্মজীবী-পেশাজীবীও হতে পারে। দুই ক্ষেত্রেই চল্লিশের ঘরে পৌঁছে গেলে নারীকে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। পেশাজীবনে কাঁধে এসে পড়ে নানা গুরুভার। সংসারের দেখভাল, সন্তান লালন-পালন আর বাড়তি সামাজিক কর্তব্য তো আছেই। সব দিক সামলাতে গিয়ে নারী নিজের প্রতিই হয়ে ওঠে সবচেয়ে অমনোযোগী। অথচ মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তনের জন্য এই সময়টাতেই তার প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। এই বিষয়ে কথা হচ্ছিল বারডেম হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের প্রধান আখতারুন নাহার আলোর সঙ্গে। ‘সবাইকে ভালো রাখতে হলে আগে নিজেকে ভালো থাকতে হবে।’ এভাবেই কথা শুরু করলেন তিনি।
নারীর শরীরের একটা বড় পরিবর্তন আসে মা হওয়ার পর। গর্ভকালীন খাদ্যাভ্যাসের যে পরিবর্তন আসে, তাতে সঠিক সময় লাগাম দিতে হবে। আখতারুন নাহারের পরামর্শ অনুযায়ী সন্তান জন্মের কয়েক মাস আগে থেকে সন্তান জন্মের ছয় মাস পর পর্যন্ত নারীকে অনেক বেশি আমিষ ও ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে। সন্তান বুকের দুধ ছেড়ে দিলেই ফিরে যেতে হবে পুরোনো সেই পরিমিত খাদ্যাভ্যাসে। তাহলেই শরীরের স্বাভাবিক গঠন ধরে রাখা যাবে। তবে, অনেক সময় হরমোনের পরিবর্তনের জন্যও স্বাস্থ্য বাড়তে থাকে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

এই বয়সে খাবারদাবার
রাজধানীর ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ ও বারডেম জেনারেল হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সামসাদ জাহান বলেন, সন্তান জন্মের পর তাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মায়ের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম বের হয়ে যায়। আবার মেনোপোজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্যও দেহ আর আগের মতো ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে না। ফলে হাড় ক্ষয় হতে থাকে। মাঝবয়সে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। অবশ্য, সুষম খাদ্য ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করে এসব রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে দেহে আয়রনের ঘাটতিও দেখা দেয়। এ ছাড়া চল্লিশ পেরোলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধিও পেতে পারে। পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী, কায়িক শ্রম কম করলে এই বয়সে খাদ্যতালিকায় ক্যালরির পরিমাণ একেবারে কমিয়ে আনতে হবে। শর্করা ও তেলযুক্ত খাবার নামমাত্র খেয়ে আমিষজাতীয় খাবারের পরিমাণ পর্যাপ্ত রাখুন।
খেতে হবে—
* ·মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, দই, বাদাম।
* ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে ডাল, শুঁটকি মাছে।
* খেতে হবে ভিটামিন ডি। দুধ, সামুদ্রিক মাছ, ডিম থেকে এটি পাওয়া যায়। সকাল ৯-১০টার দিকে সূর্যের যে আলো আসে, তা শরীরে লাগালেও ত্বকের নিচেই ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়।
* কচুশাক, লালশাক, কলমিশাক, পুদিনা পাতা থেকে মিটবে আয়রনের ঘাটতি।
* আয়রনকে শোষণ করতে দরকার ভিটামিন সি। লেবু ও টক ফলে পাওয়া যাবে এই ভিটামিন। এ ছাড়া প্রতিদিন একটি আমলকী ভিটামিন সি-এর চাহিদাই কেবল পূরণ করে না, একে বলা হয় অকালবার্ধক্য রোধক। ত্বক, চুল আর দাঁতের জন্যও এটি ভালো।
* দুধ খেলে যদি সমস্যা হয়, তাহলে সয়াবিন দুধ, সয়া নাগেট, সয়াবিনের বীজ থেকে ক্যালসিয়াম নিন।
* ডায়াবেটিস না থাকলে প্রচুর ফল খেতে হবে। যদি থাকে, তাহলেও নিয়ম অনুযায়ী রোজ কিছু না কিছু ফল ও টাটকা শাকসবজি খাবেন।

 

চল্লিশ পার হলেই কি বন্ধ হয়ে যাবে সাজগোজ?মন থাকুক ফুরফুরে

দেহ সুস্থ থাকলে মনও ভালো থাকে। বয়স বেড়ে চলেছে—এই চিন্তাকে উড়িয়ে দিয়ে জীবনটা উপভোগ করুন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কোথাও ঘুরতে বেরিয়ে যান। মন চাইলে প্রিয় বান্ধবীর সঙ্গে সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরিয়ে একটু ফুচকা খেয়ে আসুন। ছুটির দিনে কোনো ভালো সিনেমা দেখে আসুন।পছন্দের লেখকের বই পড়ুন। সংসারের ঘানি টানার ফাঁকেই নিজের জন্য এই সময়টুকু বের করে নিতে পারলে ভালো।

এ সময় বেশির ভাগ নারীর মনেই বিষণ্নতার মেঘ জমে। অনেকে নিজেকে অপ্রয়োজনীয় ভাবতে শুরু করেন। এমন ধারণা যদিও ভ্রান্ত। তবে এমনটা ভাবার কিছুর কারণও আছে। এসব বিষয়ে রাহিমা সুলতানা বেশ খোলামেলা আলোচনা করেছেন। মেনোপোজের সময় যখন এগিয়ে আসতে থাকে, তখন হরমোনের নানা রকম পরিবর্তন হয়। মেনোপোজ হয়ে গেলে শারীরিক কিছু পরিবর্তনের জন্য কারও কারও দাম্পত্য জীবনের সুখও বিঘ্নিত হয়। নারীর মেজাজ তখন খিটমিটে থাকে। একসময় চামড়া কুঁচকে যাওয়া, চোখের নিচে কালি পড়া আর চুল পেকে যাওয়ায় সে নিজেকে অসুন্দর মনে করতে শুরু করে।

এই সময় সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে স্বামীকে। স্ত্রীকে ভালোবাসতে হবে। তাঁর মনে সাহস জোগাতে হবে। সন্তানদেরও এ সময় দায়িত্ব আছে। মাকে এ সময় বেশি সঙ্গ দিতে হবে। সাদামাটা পোশাক উপহার না দিয়ে রঙিন পোশাক পরতে তাঁকে উৎসাহিত করতে হবে।

হাসিখুশি থাকা, কিছুক্ষণের জন্য আড্ডা দেওয়া, ঘুরে বেড়ানো, বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়ার মতো কাজগুলোও করা চাইডিজাইনার মাহিন খান মনে করেন, সুন্দর আর রঙিন পোশাক পরলে মনটা বেশ ফুরফুরে লাগে। বয়স যেন তখন কয়েক বছর কমে যায়! খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা করে ফিট থাকতে পারলে মধ্য বয়সেও স্টাইলিশ পোশাক পরা যাবে। এই বয়সে কামিজের কাটছাঁটে বৈচিত্র্য আনতে পারেন। শাড়ি আর ব্লাউজের মধ্যে একটির রং হালকা হলে অন্যটি গাঢ় দেখে বেছে নিন। পশ্চিমা ঘরানার পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলে তা-ও পরতে পারেন।
তবে, জীবনের এই পর্যায়ে এসে সমাজ ও পরিবারের কাছে ব্যক্তির একটি ভাবমূর্তি তৈরি হয়ে যায়। সেটাকে ভেঙেচুরে একেবারে নতুন কিছু করার চেষ্টা না করাই ভালো। এই বয়সে ফ্যাশন ধারণা হওয়া চাই পরিপক্ব। এমন মত রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খানের।
এ বয়য়ে ফ্যাশন নিয়েও মনে কিছু দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করে। ডিজাইনার শাহরুখ আমিন বলেন, ‘বয়স বাড়তে থাকলে চামড়ায় ভাঁজ পড়তে শুরু করে, চুলের রঙেও আসে পরিবর্তন। এ সময়টায় তাই সাজপোশাক একটু বুঝেশুনে পরা উচিত। তাই বলে মধ্যবয়সীরা যে ফ্যাশন করতে পারবেন না বা তাঁদের হালকা রংই সব সময় বেছে নিতে হবে, তেমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
এই বয়সে টকটকে বা ফ্লোরোসেন্ট রংগুলো এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি। তবে গাঢ় রঙের লিপস্টিক চলতে পারে। এ ছাড়া এই বয়সে বেশির ভাগেরই শরীর কিছুটা মুটিয়ে যায়; এটাও মাথায় রাখতে হবে। উদাহরণ টেনে শাহরুখ আমিন বলেন, মসলিন শাড়ি যেমন এখন খুব চলছে। কিন্তু এটি ভীষণ পাতলা হয়। মাঝবয়সী নারী মসলিনের বদলে জামদানি পরতে পারেন, এতেও কিন্তু কম সুন্দর দেখাবে না। ব্লাউজের কাটছাঁট বা প্রিন্টে বৈচিত্র্য নিয়ে এলে আপনার উপস্থিতিটা হবে আরও নজরকাড়া।
অবশ্য মাঝবয়সেও যদি কেউ ছিপছিপে শরীরের অধিকারী হন তাহলে শিফন, নেট, মসলিন শাড়ি পরা যেতেই পারে। পালাজ্জো বা স্ট্রেট কাট প্যান্টের সঙ্গে লম্বা কুর্তা, কামিজ—সবই চলতে পারে।

নির্ভর করে ব্যক্তিত্বের ওপর

বড় কথা হলো কে কেমন পোশাক পরবেন, সেটি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে তার ব্যক্তিত্বের ওপর। পেশা ও জীবনযাপনের ধরনও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। অভিনেত্রী কুমকুম হাসান যেমন ৫৫ বছরে পা দিয়েও ফ্যাশনে তারুণ্য ধরে রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘স্টাইল করি কিন্তু অমার্জিত কিছু পরি না কখনোই। স্লিভলেসও পরি। তবে, সেটা দেখতে যেন খারাপ না লাগে নিজেকে সেভাবেই উপস্থাপন করার চেষ্টা করি সব সময়। বয়স হয়ে গেছে বলে যে ফ্যাশনের বর্তমান চল অনুসরণ করতে পারব না, সেটা একদম মনে করি না।’ কুর্তা, পালাজ্জো প্রায়ই পরেন তিনি। খুব আঁটসাঁট না পরে একটু ঢিলেঢালা পোশাক পরার পক্ষে এই অভিনেত্রী। একদম হালকা রং আর সব সময় ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করেন।

করতে পারেন যোগব্যায়ামরূপ সচেতনতা
বাইরের লেবাসে তারুণ্য আনার আগে মনটাকেও তো প্রফুল্ল রাখতে হবে। রোজ এক ঘণ্টা হাঁটা, নিয়ম মেনে শরীরচর্চা, যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন করলে মন হালকা লাগবে। মন ভালো থাকলে চেহারায় ক্লান্তির ছাপ দূর হয়ে ভেতরের সৌন্দর্য ফুটে উঠবে। ত্বকের যত্নে কয়েকটি ফেস প্যাকের প্রণালি দিয়েছেন রাহিমা সুলতানা—
* একটি কলা, একটি ফেটানো ডিম, ১ চা-চামচ মধু, ১ চা-চামচ লেবুর রস ও ১ চা-চামচ গ্রিন টি পাউডার মিশিয়ে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
* ১ চামচ আমলকী বাটা, আধা চামচ ধনে গুঁড়া, ১ চামচ নিম পাতা বাটা, আধা চামচ চন্দন গুঁড়া ও ২ চামচ গোলাপজলের মিশ্রণ প্রস্তুত করে তা মুখে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটিও ১৫ মিনিট রাখতে হবে।
* কাঁচা হলুদ বাটা ও আঙুরের রস ১ চামচ ও টমেটোর রস ২ চামচ মুখে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
* পাকা পেঁপের রস, গুঁড়া দুধ ও গোলাপজল এক চা-চামচ। চন্দন গুঁড়া আধা চা-চামচ ও আলুর রস দুই চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

চুলের পরিচর্যায়—
* লেবুর রসের সঙ্গে ত্রিফলার চূর্ণ মিশিয়ে সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করলে চুলের গোড়া শক্ত হয় ও চুল দ্রুত বাড়ে। এই মিশ্রণটি ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখার পর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।

* পেঁয়াজ ও জবা ফুলের মিশ্রণ চুল গজাতে সাহায্য করে।

* সমপরিমাণ পেস্তা বাদামের তেল, লেবু ও আমলকীর রস নিয়মিত চুলের গোড়ায় মালিশ করলে চুল পাকার হার কমে যায়।

* এ ছাড়া চুলে নিয়মিত নিম পাতার তেল ব্যবহার করলেও চুল পেকে যাওয়াসহ অনেক সমস্যা রোধ হয়।

মেনে নিতেই হবে, পঁচিশে যা ছিলেন, পঞ্চাশে এসে তার অনেক কিছুই হয়তো হারিয়ে যাবে। তবে এই বয়সে পৌঁছানোর পথে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে, সেগুলোকে ইতিবাচকভাবে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। খেয়াল করলেই বুঝবেন, নিজে সতেজ থাকলে অন্যদের দিকেও খেয়াল রাখা হবে খুশিমনে।

Save

Save

 

পুরুষের মাঝে সুগন্ধি মেখে নারীর চলাফেরা : কী বলে ইসলাম

বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠানে, হাটে-বাজারে, যানবাহনাদিতে, নানা ধরনের মানুষের সমাবেশে, এমনকি রমযানের রাতে মসজিদে আসার সময় তথা সর্বত্র নারীরা যে সুগন্ধিযুক্ত প্রসাধনী আতর, সেন্ট, আগর, ধূনা, চন্দনকাঠ ইত্যাদি নিয়ে যাতায়াত করছে। অথচ শরীয়ত তো শুধু নারীদের জন্য সে আতরের অনুমোদন দিয়েছে যার রঙ হবে প্রকাশিত পক্ষান্তরে গন্ধ হবে অপ্রকাশিত।

আজকাল আতর, সেন্ট ইত্যাদি নানা প্রকার সুগন্ধি মেখে নারীরা ঘরে-বাইরে পুরুষদের মাঝে চলাফেরা করছে। অথচ মহানবী [সা.] এ বিষয়ে কঠোর সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেন, “পুরুষরা গন্ধ পাবে এমন উদ্দেশ্যে আতর মেখে কোনো মহিলা যদি পুরুষদের মাঝে গমন করে তাহলে সে একজন ব্যভিচারিণী বলে গণ্য হবে।” [মুসনাদে আহমদ; সুনান নাসাঈ; মিশকাত, হাদিস নং ১০৬৫]

অনেক নারী তো এ ব্যাপারে একেবারে উদাসীন কিংবা তারা বিষয়টিকে লঘুভাবে গ্রহণ করছেন। তারা সেজেগুজে সুগন্ধি মেখে ড্রাইভারের সাথে গাড়িতে উঠছেন, দোকানে যাচ্ছেন, স্কুল-কলেজে যাচ্ছেন; কিন্তু শরীআতের নিষেধাজ্ঞার দিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ করছেন না। নারীদের বাইরে গমনকালে শরীয়ত এমন কঠোরতা আরোপ করেছে যে, তারা সুগন্ধি মেখে থাকলে অপবিত্র হেতু ফরয গোসলের ন্যায় গোসল করতে হবে। এমনকি যদি মসজিদে যায় তবুও। নবী [সা.] বলেছেন, “যে নারী গায়ে সুগন্ধি মেখে মসজিদের দিকে বের হয় এজন্য যে, তার সুবাস পাওয়া যাবে, তাহলে তার সালাত তদবধি গৃহীত হবে না যে পর্যন্ত সে অপবিত্রতার নিমিত্ত ফরয গোসলের ন্যায় গোসল না করে।” [মুসনাদে আহমদ ২/৪৪৪; সহীহুল জামে‘, হাদিস নং ২৭০৩]

বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠানে, হাটে-বাজারে, যানবাহনাদিতে, নানা ধরনের মানুষের সমাবেশে, এমনকি রমযানের রাতে মসজিদে আসার সময় তথা সর্বত্র নারীরা যে সুগন্ধিযুক্ত প্রসাধনী আতর, সেন্ট, আগর, ধূনা, চন্দনকাঠ ইত্যাদি নিয়ে যাতায়াত করছে তার বিরুদ্ধে একমাত্র আল্লাহর কাছেই সকল অভিযোগ। অথচ শরীয়ত তো শুধু নারীদের জন্য সে আতরের অনুমোদন দিয়েছে যার রঙ হবে প্রকাশিত পক্ষান্তরে গন্ধ হবে অপ্রকাশিত। আল্লাহর নিকট আমাদের প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ না হন। অপগণ্ড নর-নারীর কাজের জন্য সৎ লোকদের পাকড়াও না করেন এবং সবাইকে সিরাতুল মুস্তাকীমে পরিচালিত করেন। আমীন!

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ

সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

তওবা কী, কেন এবং কীভাবে?

তওবা সম্পর্কিত কোরআনের দুটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। প্রথম ঘটনা হলো, তাবুক যুদ্ধের সময় দশজন সাহাবি বিনা কারণে সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। তাদের মধ্যে সাতজন সাহাবি কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়ে নিজেদের মসজিদের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখে অনুশোচনা প্রকাশ করেছিলেন। (সূরা তওবা : ১০২)।

তওবা মানবজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তওবা মানুষের বিকশিত হওয়ার হাতিয়ার। দোষগুণ এ দুইয়ের সমন্বয়ে মানুষের জীবন পরিচালিত হয়। মানুষ দোষ করবে এটাই স্বাভাবিক প্রকৃতি। কিন্তু দোষ বা অন্যায় বা পাপ যেন অভ্যাসে পরিণত না হয়, সেটাই লক্ষণীয়। তওবা শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো, ফিরে আসা, ক্ষমা প্রার্থনা করা, অনুতপ্ত হওয়া, বিশুদ্ধ হওয়া ইত্যাদি।

ইসলামী পরিভাষায় কোনো অন্যায় বা অপরাধমূলক কাজ হয়ে যাওয়ার পর অনুতপ্ত হয়ে সেই কাজের জন্য মহান প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং সেই অন্যায় কাজ ছেড়ে ভালো পথে ফিরে আসাকে তওবা বলে। ইসলামের নির্দেশ অনুযায়ী প্রত্যেক গুনাহ তথা অন্যায় থেকে তওবা করা ওয়াজিব। তওবার ব্যাপারে কোরআনের বহু আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি সম্পূর্ণ একটি সূরার নামকরণ করা হয়েছে। কেননা ওই সূরায় মুসলমানদের তওবার বর্ণনা রয়েছে। তাই তার নাম তওবা রাখা হয়েছে। (মাজহারি)।

তওবা সম্পর্কিত কোরআনের দুটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। প্রথম ঘটনা হলো, তাবুক যুদ্ধের সময় দশজন সাহাবি বিনা কারণে সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। তাদের মধ্যে সাতজন সাহাবি কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়ে নিজেদের মসজিদের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখে অনুশোচনা প্রকাশ করেছিলেন। (সূরা তওবা : ১০২)। বাকি তিনজন যথাক্রমে কাব ইবনে মালিক, মারার ইবনে রাবিয়া ও হিলাল ইবনে উমাইয়া (রা.)। যারা প্রকাশ্যে এভাবে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেননি। রাসূল (সা.) তাদের সঙ্গে সালাম, দোয়া আদান-প্রদান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তাদের সমাজচ্যুত করে রাখেন ৫০ দিন। এভাবে একঘরে করে রাখেন। কিন্তু রাসূল (সা.) সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রাখলেন, ক্ষমা করবেন কী করবেন না। তখন তাদের ব্যাপারে সূরা তওবার ১০৬নং আয়াত নাজিল করেন। (বোখারি ও মুসলিম)।

অন্য ঘটনাটি হলো, হজরত মুসা (আ.) যখন আল্লাহর সঙ্গে তুর পাহাড়ে দেখা করতে গেলেন, তখন ইসরাইলি সম্প্রদায়ের নেতা সামেরি যিনি আগে থেকেই অনেক পরিচিত ছিলেন, তিনি মুসা (আ.) এর অনুপস্থিতিতে তাদের লোকদের স্বর্ণ-গয়না জমা রাখলেন। আর আগে থেকে তার কাছে জিবারইল (আ.) বাহনের ক্ষুরার নিচের মাটি ছিল। স্বর্ণ-গয়না ও মাটি মিলিয়ে জাদুর মাধ্যমে একটি বাছুরের মূর্তি বানালেন এবং তাকে খোদা বলে সাব্যস্ত করলেন। আর বললেন, মুসা তোমাদের ধোঁকা দিয়েছেন, খোদা এখানে চলে এসেছেন। তখন মহান আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসা (আ.) এর মাধ্যমে সতর্ক করলেন আর তওবা করতে বললেন। কিন্তু তওবার জন্য কঠোর শর্ত দিলেন যে, তাদের একজন অন্যজনকে হত্যা করতে থাকলেই তাদের তওবা কবুল হবে। আল্লাহর শর্তানুযায়ী তারা তা পালন করলেন। অতঃপর মুসা (আ.) আল্লাহর নির্দেশে তাদের ডেকে বললেন, প্রভু তোমাদের সবার তওবাই কবুল করেছেন। এ হত্যাযজ্ঞে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তারা শহীদ হয়েছেন। আর যারা বেঁচে রয়েছেন তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত। এখানে প্রতীয়মান হয়, যেসব লোক মন্দ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তা সে কাজ যত বড়ই পাপ হোক, কুফরিও যদি হয়, তবুও পরবর্তী সময়ে তওবা করে নিলে এবং ঈমান ঠিক করে ঈমানের দাবি অনুযায়ী নিজের আমল বা কর্ম সংশোধন করে নিলে আল্লাহ তাকে নিজ রহমতে ক্ষমা করে দেবেন। কাজেই কোনো পাপ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা থেকে তওবা করে নেয়া একান্ত কর্তব্য। (তাফসিরে মারেফুল কোরআন)।

তওবা কোনো আনুষ্ঠানিকতার নাম নয়। তওবা মূলত অন্তরের ব্যাপার। অন্যায় বা পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার আন্তরিক ইচ্ছাই হলো তওবা। কিন্তু তওবা কবুল হওয়ার জন্য কতগুলো শর্ত বিদ্যমান। যদি শরিয়তের দৃষ্টিতে অপরাধমূলক কাজ তথা গুনাহ আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে হয় ও তার সঙ্গে কোনো মানুষের হক জড়িত না থাকে, তবে তা থেকে তওবা করার তিনটি শর্ত রয়েছে। আর তা তওবা কবুলের শর্তও বটে। প্রথমত, তওবাকারীকে গুনাহ থেকে বিরত থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, সে তার কৃত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত। তৃতীয়ত, তাকে পুনরায় গুনাহ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে হবে। আর যদি অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে গুনাহের কাজটি সংশ্লিষ্ট থাকে, ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী তা থেকে তওবা করার ওপরের তিনটি শর্ত ছাড়া আরও একটি শর্ত আছে, যা বান্দার হকের সঙ্গে জড়িত। চতুর্থ শর্তটি হচ্ছে, তওবাকারীকে হকদার ব্যক্তির হক আদায় করতে হবে। শর্ত থাকে যে, প্রাপক জীবিত থাকলে তাকে তার ধনসম্পদ ফেরত দিতে হবে অথবা মাফ করিয়ে নিতে হবে। প্রাপক জীবিত না থাকলে তার ওয়ারিশদের ফেরত দেবে। কোনো ওয়ারিশ না থাকলে বায়তুল মালে জমা দেবে। যদি বায়তুল মালও না থাকে অথবা তার ব্যবস্থাপনা সঠিক না হয়, তবে প্রাপকের পক্ষ থেকে সদকা করে দেবে।

এছাড়া কোনো অন্যায় দোষারোপ এবং অন্য কোনো বিষয় থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে তার শাস্তি ভোগ করতে হবে অথবা তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। গিবত বা পরনিন্দার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। সব তওবার জন্য অবশ্যই গুনাহ বর্জনীয়। শারীরিক দুর্বলতা ও অক্ষমতার কারণে গুনাহ বর্জন করলে তওবা কবুল হবে না। যাবতীয় গুনাহ থেকে বিরত থাকা ও তওবা করাই শরিয়তের কাম্য। কিন্তু কোনো বিশেষ গুনাহ থেকে তওবা করলেও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতানুযায়ী সে গুনাহ মাফ হবে। তবে অন্যান্য গুনাহ বহাল থাকবে। এ সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা মন্দ কাজ করে, তারপর তওবা করে নেয় এবং ঈমান আনে, তবে নিশ্চয়ই তোমার প্রভু তওবার পর অবশ্য ক্ষমাকারী করুণাময়। (সূরা আল আরাফ : ১৫৩)।

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, তিনি তার বান্দাদের তওবা কবুল করেন, পাপগুলো মার্জনা করেন এবং তোমরা যা কর, সে বিষয় তিনি অবগত রয়েছেন। (সূরা আশশুরা : ২৫)।

হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, হজরত আবু মুসা আবদুল্লাহ ইবনে কায়েস আশয়ারি (রা.) রাসূল (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ পশ্চিম (আকাশ) দিক থেকে সূর্যোদয় (কেয়ামত) না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতে তার ক্ষমার হাত সম্প্রসারিত করতে থাকেন। যাতে রাতে গুনাহগার তওবা করে। (মুসলিম)। উল্লিখিত আলোচনা পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় যে, তওবার গুরুত্ব অপরিসীম। তওবা করার জন্য আসলে নির্দিষ্ট কোনো দোয়া বা পন্থা নেই, যার দ্বারা তওবা করা যায়। তবে প্রসিদ্ধ আছে যে, ‘আসতাগফিরুল্লাহ রাব্বি মিন কুল্লি জানবিউ ওয়াতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লা হিল আলিয়িল আজিম’- এটা বলে মূলত তওবা করা হয়। এছাড়াও কয়েকটি দোয়া পড়া হয়। তবে মনে মনে বিশুদ্ধ নিয়ত করলেই তওবা কার্যত হয়ে যাবে। মোট কথা হলো, মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন কিছু নিয়মনীতি, বিধিবিধানের মাধ্যমে। আল্লাহ তায়ালা যেসব কাজ-কর্ম আমাদের জন্য বৈধ করে দিয়েছেন, এর বাইরে কিছু হয়ে গেলে তা থেকে তওবা করে নেয়াটাই উচিত। খালেছ নিয়তে বিশুদ্ধ তওবাই মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ।

লিখেছেন : মুহাম্মদ আরিফুর রহমান জসিম
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

ঘুরে দাঁড়িয়েছেন হনুফা

‘এমন সময় গ্যাছে, তিন-চাইর দিন ভাতের পাতিল পাহায় (চুলায়) বহাইতে পারি নাই। মাইনষের তোন চাইয়াচিন্তা পোলাপানরে খাওয়াইছি। মাছ-মুকরা (মুরগি) খাই নাই বচ্ছরের পর বচ্ছর। ঘর আছিল না। বিষ্টিতে ভিজজি, শীতে কোঁকড়া দিয়া রইছি। কী যে কষ্ট করছি হেই সময়।’
এভাবেই নিজের পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করেন ৫৫ বছর বয়সী হনুফা বিবি। তিনি মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করেন। আবার অনেক সময় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতেও কাজ করেন। একসময় দুবেলা খাবার জোটাতে না পারলেও নিজ প্রচেষ্টায় হনুফা বিবি তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। এখন আর না খেয়ে থাকতে হয় না। এমনকি স্থায়ী একটি মাথা গোঁজার ঠাঁইও তৈরি করেছেন।
১২ বছর বয়সে আদেল খলিফার দ্বিতীয় স্ত্রী হয়ে শ্বশুরবাড়ি আসেন হনুফা বিবি। হনুফার শ্বশুরবাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বোরাদী গরঙ্গল গ্রামে। বাবার বাড়ি পাশের গ্রাম কলাবাড়িয়ায়। শৈশব পেরোতেই শ্বশুরবাড়ি। আর শ্বশুরবাড়ি আসতে না-আসতেই হনুফাকে কাঁধে তুলে নিতে হয় স্বামীর আগের পক্ষের সন্তানের দায়িত্ব, সংসারের হাল। গত ৯ জুলাই বোরাদী গরঙ্গলের এক বাসায় কাজ করার ফাঁকে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
শুরু থেকেই সংসারে টানাপোড়েন। স্বামী কিছুদিন পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না। সে কারণে ঘরে চুলাও জ্বলে অনিয়মিত। ছেলেমেয়ে নিয়ে আধপেটা খেয়ে, কখনো না খেয়ে দিন কাটাতে হয়। এর মধ্যেই ধরা পড়ে স্বামীর ব্লাড ক্যানসার। হনুফা বলেন, ‘হ্যার ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। ডাক্তার দেহাইতে যাইয়া জাগা-জমিন হগল খুয়াইছি। হে ভালো অইল না। মইর্যাে গেল।’
স্বামীর মৃত্যুর সময় হনুফার বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। মেয়ে বিবাহযোগ্য। নিজের ছেলে রোগা। কোনো কাজ করতে পারে না। স্বামীর আগের পক্ষের ছেলে খোঁজ নেয় না। এদিকে স্বামীর চিকিৎসায় বাড়ি, সম্পত্তি সব বিক্রি করে দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় ছেলেমেয়ে নিয়ে কী করবেন, বুঝে উঠতে পারেন না। একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েন।
মাঝেমধ্যে অন্যের ফরমাশে কাঁথা সেলাই করলেও ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে—কখনো ভাবেননি হনুফা বিবি। কিন্তু বেঁচে থাকার তাগিদে ঘরের বাইরে পা রাখতে হয় তাঁকে। বলেন, ‘তহন পরথম নগরে (হিন্দুপাড়া) আহি। মাইনষের বাড়ি কাম করা শুরু করি। যে যহন বোলায়, হ্যার কামই করি। এরম কাম কইর্যাুই পোলা-মাইয়ার মুহে খাওন দেই। আস্তে আস্তে বাঁচনের স্বপন দেহি।’
বছরের ৩৬৫ দিনই হনুফা বিবি কাজ করেন। বাদ যায় না ঈদের দিনও। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, তীব্র শীতেও তাঁকে কাজ করতে হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। পারিশ্রমিক তিনবেলা খাবার, সঙ্গে দুই শ টাকা। রাতের খাবারটা বাড়িতে নিয়ে যান। তবে অনেকেই পারিশ্রমিকের চেয়ে বেশি টাকা দেন বলে জানান তিনি।
বাইরে পা দিয়ে হনুফা বিবি কেবল খাবারের ব্যবস্থাই করেননি, ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবতে শুরু করেন তিনি। খেয়ে না-খেয়েই করতে থাকেন সঞ্চয়। টাকা জমিয়ে ছোট হলেও একটি টিনের ঘর তোলেন; যেখানে ছেলে-ছেলেবউ-নাতি নিয়ে বসবাস করছেন। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।
মানুষের বাসায় কাজ করতে গিয়েই পড়াশোনার গুরুত্ব বুঝতে পারেন হনুফা। তিনি বলেন, ‘কাম করতে যাইয়াই বুজি লেহাপড়ার কদর। কষ্ট কইর্যারও পোলা-মাইয়ারে লেহাপড়া করাইলে আয়ের এট্টা উপায় হইত। মাইনষের বাড়ি কাম করা লাগদো না।’ তাই নাতিদের পড়াশোনায় জোর দেন তিনি। তাঁর ছেলের ঘরের এক নাতি প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আরেক নাতি পঞ্চম শ্রেণিতে, যার রোল নম্বর ১। নাতিদের লেখাপড়ার সব দায়িত্ব হনুফা বিবিই বহন করেন।
হনুফাকে ছাড়া এলাকার কোনো বিয়েবাড়ির কাজই হয় না। এতে তাঁর পারিশ্রমিকের সঙ্গে পাঁচ শ টাকা ও একটি শাড়ি বকশিশ হিসেবে নির্ধারিত। কেউ কেউ আবার বেশিও দেন। হনুফা বলেন, ‘হগলে আমারে ভালো পায়। কাম কইর্যাে যা পাওনের, হ্যার থিকা বেশি দেয়। না অইলে বাঁচতে পারতাম না।’
হনুফা বিবি কোনো রকমে নিজের নাম লিখতে পারলেও জীবনের বাস্তবতা ভালো বোঝেন। শেষ জীবনে কাজ করতে পারবেন না। বন্ধ হয়ে যাবে রোজগার। তবে এ সময় কারও কাছে বোঝা হতে চান না তিনি। এ জন্য ব্যাংকে ৬০ হাজার টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করেছেন। তিনি বলেন, ‘যহন বুড়া অইয়া যামু, এই টাহায় চলমু। কারও কাছে হাত পাতমু না।’

 

সেঁজুতি মানে সন্ধ্যাপ্রদীপ

১৯৯৩ সালের এক সন্ধ্যায় মেয়েটি পৃথিবীকে দেখল প্রথম। মায়াবী আলোয় মাখামাখি ফুলের মতো একটি মুখ। মা-বাবা তার নাম রাখল সেঁজুতি চৌধুরী। সেঁজুতি মানে সন্ধ্যাপ্রদীপ। কিন্তু তখন কি আর বোঝা গেছে নিজের মধ্যে সন্ধ্যার এক টুকরো অন্ধকারও সে বয়ে এনেছে!
ওর বয়স ছয় বা সাত মাস পেরোতেই সেটি বোঝা গেল। ডাক দিলে শোনে না। জোরে চিৎকার করলে শোনে না! পাশে সশব্দে মিউজিক প্লেয়ারে গান বাজলে, জোরে টিভি চললে মেয়েটির মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না। মা জয়শ্রী চৌধুরীর বুকটা কেঁপে ওঠে। সংগোপনে চোখ মোছেন, তবে কি মেয়েটা মূক ও বধির হয়ে জন্মাল? চিকিৎসককে দেখালে ওটাই চরম এক সত্যি হয়ে ধরা পড়ল। ডাক্তার বললেন, প্রায় বিকল শ্রবণেন্দ্রিয় নিয়ে জন্মেছে মেয়েটি। তবে কথা বলতে পারবে। তবে সে জন্যও পাড়ি দিতে হবে অনেক চড়াই-উতরাই। সরকারি চাকরির সুবাদে বাবা সুপ্রীতি চৌধুরী থাকতেন বগুড়ায়। সেখান থেকেই চিকিৎসার শুরু। তারপর কলকাতা, চেন্নাই, ঢাকা। ফুটফুটে মেয়েটিকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থেকে একটু স্বাভাবিক করে তুলতে কী প্রাণান্ত চেষ্টা!
মা জয়শ্রী চৌধুরী, বাবা সুপ্রীতি চৌধুরী, কাকা সজল চৌধুরী বা গোটা পরিবারের শ্রম-ঘাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা আজ সার্থক। সেঁজুতি আজ পার নওগাঁর চৌধুরী পরিবারের গর্ব। ২০১১ সালে ঢাকার প্রিপারেটরি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ সে মাধ্যমিক পরীক্ষায়, ২০১৩ সালে হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক। ইচ্ছে ছিল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। বাক, শ্রবণ বা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের নেওয়া হয় না—প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নোটিশটা দেখে ওর মন খারাপ হয়ে যায়। মেধার মূল্যায়ন কেন করবে না দেশের শীর্ষ সারির এই শিক্ষায়তন? ও প্রতিজ্ঞা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। ওই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হয় ফার্মেসি বিভাগে। এখন তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। মেধার স্বাক্ষর রেখে এগিয়ে চলেছে দৃপ্ত পায়ে।
ঢাকার সোসাইটি ফর অ্যাসিস্ট্যান্স টু হিয়ারিং ইম্পেয়ার্ড চিলড্রেন (সাহিক) থেকেই কথা বলা শেখানো হয়েছে তাকে। তবু কথা বলে খুব ধীরে। সে কথা শুনতেও কাছের লোকদের কষ্ট কম হয় না। দেড় বছর বয়স থেকেই কানে উঠেছে শ্রবণযন্ত্র। প্রায় দেড়-দুই লাখ টাকা দামের যন্ত্র কানে লাগিয়ে চলতে হয়। গান তার ভীষণ প্রিয়। কিন্তু শুনতে তো পারে না, টেলিভিশন বা সরাসরি কোনো অনুষ্ঠানে শিল্পীদের ঠোঁটের ভাষা পড়ে বুঝে নেয়। নাচতে পারে। সুন্দর ছবি আঁকে। সবচেয়ে ভালো সে লেখাপড়ায়। সব প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে সেটির প্রমাণ সেঁজুতি দিয়ে চলেছে নিরন্তর। ওর ক্লাসের বন্ধুরা ওকে দেখে বিস্মিত হয়, গৌরব বোধ করে—শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে চলা একজন তাঁদের সহপাঠী! ক্লাসে বসে একেবারে সামনের বেঞ্চে। তবুও কথা শুনতে পারে না। শিক্ষকদের নোট তুলে নেয় খাতায়। বাসায় নিয়ে আসে অডিও ক্লিপিংস। তাতেই সেরা ছাত্রদের একজন। ওর বন্ধু ফ্লোরা, অন্তরা, ঐশী, তিথি, তুলতুল ওকে তো একেবারে চোখে হারায়। আর শিক্ষকেরা? ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, অন্যান্য শিক্ষক যেমন সামিউল স্যার, সীতেশ চন্দ্র বাছার স্যারদের কাছে খুব প্রিয় ছাত্রী সেঁজুতি। এই তো কিছুদিন আগে সামিউল স্যার এক গবেষণার কাজে ২৫ জন ছাত্রের মধ্যে নির্বাচিত করেছেন ওকে। একমাত্র ছোট ভাইটি ভর্তি হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিবারে গর্ব আর আনন্দ জড়াজড়ি করে থাকে।
কিন্তু পেছনের দিনগুলোর কথা ভাবতে গেলেই সেঁজুতির মা জয়শ্রী একটু বিহ্বল হয়ে পড়েন। জীবনের ওপর দিয়ে কী ঝড়টাই না বয়ে গেছে। নিজের ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন মেয়েকে সমাজের আর দশটি প্রতিভাবান মেয়ের মতো বড় করে তুলবেন, তিনি পেরেছেন। আর এই লড়াইয়ে জয়শ্রী সবচেয়ে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সাহিকের শিক্ষক মমতাজ খানমকে। নিজে একবার সাহিক নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ মায়ের খেতাব পেয়েছেন, তবু বলেন, ‘মমতাজ আপা না থাকলে সেঁজুতিকে মানুষ করতে পারতাম না।’
একদিন সেঁজুতিদের বাসায় গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। কথা তো নয়, খাতার পাতায় লিপি বিনিময়। ভবিষ্যতে তুমি কী করবে সেঁজুতি? মুক্তোর মতো হস্তাক্ষরে সে লিখে জানায়, ‘ফার্মাসিস্ট হতে চাই। আর যদি সুযোগ পাই, কাজ করব গবেষক হিসেবে। উচ্চতর শিক্ষা নিতে যাব বিদেশে।’
সেঁজুতির এই ইচ্ছে যে পূরণ হবে, সেই বিশ্বাস আছে ওর মা-বাবার। আছে ওর ক্লাসের বন্ধু আর শিক্ষকদের। নাম সন্ধ্যাপ্রদীপ, আঁধারে আলো জ্বালানোই যে তার কাজ!

 

পরিবারেও নারী-পুরুষের সমান সুযোগ থাকা জরুরি

সম্প্রতি একটি গোলটেবিল বৈঠকে কারখানার সুযোগ-সুবিধা-মান (কমপ্লায়েন্স) সম্পর্কে বলতে গিয়ে ‘ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স’-এর কথা উল্লেখ করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। এই ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টি কী—তা জানিয়েছেন নাজনীন আহমেদ। ২১ আগস্ট ঢাকায় বিআইডিএস কার্যালয়ে তাঁর সাক্ষাৎ​কার নিয়েছেন মুসলিমা জাহান

ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টি কী?
নাজনীন আহমেদ:
 টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিল্পকারখানায় কমপ্লায়েন্স রাখা হয়। সেখানে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা যাতে মানসম্পন্ন পরিবেশে কাজ করতে পারেন সে বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হয়। তাঁদের বেতন, ছুটি, কর্মপরিবেশসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার নিশ্চয়তা থাকে। ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রেও তা-ই। ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স মানে একটি আদর্শ বা অধিকার-সচেতন পরিবার, যেখানে সব সদস্য নারী-পুরুষভেদে কারও অধিকার খর্ব না করে জীবনযাপনের সমান সুযোগ অর্জন করবেন। সর্বক্ষেত্রেই তাঁরা সমান অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন, কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব হবে না। পরিবারের মধ্যে কোনো ধরনের প্রভুত্ব থাকবে না। সবার মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় থাকবে।

আমাদের দেশে নারীরা কি পারিবারিকভাবে সম-অধিকার ভোগ করে থাকেন?
না. আ.:
 সংবিধান অনুযায়ী নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রাপ্তির কথা উল্লেখ থাকলেও সামাজিক ও ঐতিহ্যগতভাবে প্রতিটি পরিবারে একজনকে কর্তা হিসেবে দেখা হয়। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেই কর্তা হন একজন পুরুষ। আমাদের দেশে পরিবারে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের বিষয়টি চর্চা তো হয়-ই না, এমনকি বিষয়টি অপ্রয়োজনীয়ও মনে করা হয়। এ জন্য পরিবারে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্যগুলো স্পষ্ট।

বৈষম্যগুলো কোথায়-কীভাবে ঘটে?
না. আ.:
 ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টির চর্চা হয় না বললেই চলে। পরিবারে যিনি গৃহিণী, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত পরিবারের; তিনি দিনরাত কায়িক-মানসিক পরিশ্রম করছেন। অথচ গৃহিণীদের কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটে। দেখা যায়, পুরুষ বাইরে কাজ শেষে এসে অবসর সময় কাটান। খুব বেশি হলে সন্তানদের পড়াশোনার খোঁজ নেন। কিন্তু নারীকে বাইরের কাজ শেষ করে সন্তান পালনসহ ঘরের সব কাজ করতে হয়। নারীর কোনো অবসর বা ছুটি নেই। এমনকি ছুটির দিনেও ছুটি নেই।

খাবারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, দিন শেষে নারী সবার পরে খাচ্ছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, দরিদ্র পরিবারের অন্য সদস্যদের তুলনায় নারীরা বেশি অপুষ্টিতে ভুগছেন। তার মানে কি নারীরা এখানে উপেক্ষিত?ধনী পরিবারের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটে। আমরা খেয়াল করি না নারী সদস্য পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছেন কি না। তাঁর জন্য যথেষ্ট খাবার আছে কি না।

খাবারের বণ্টন থেকে শুরু করে সব বিষয়ে বৈষম্য আছে। দেখা যায় একই পরিবারের ছেলেকে ব্যবসার জন্য পুঁজি দেওয়া হলেও, মেয়েকে দেওয়া হয় না। হয়তো মেয়েটির উৎপাদনশীলতা বেশি। সে ব্যবসা করলে বেশি ভালো করতে পারত। এই বৈষম্য থাকলে তাকে আমরা আদর্শ পরিবার বলতে পারি না। এতে যোগ্যতার সর্বোচ্চ ব্যবহার হয় না।

গৃহিণীর কাজের স্বীকৃতি বিষয়টি কীভাবে হতে পারে?
না. আ.: অনেকে মনে করেন গৃহিণীর কাজের স্বীকৃতি মানে জিডিপির অন্তর্ভুক্তীকরণ। আমি এর পক্ষপাতী নই। আমি চাই ঘরের কাজের একটি সামাজিক স্বীকৃতি থাকবে। একে ‘কাজ’ বলে মূল্যায়ন করা হবে। তবে এর অর্থনৈতিক মূল্যায়নও হতে পারে। একজন গৃহিণীর যে ছুটি দরকার, অবসর দরকার, সেটা দেখা হয় না। এই বিষয়গুলোতে আমাদের মনোযোগী হতে হবে।

এ বিষয়টি গৃহকর্মীর জন্যও প্রযোজ্য। তাঁদের আমরা ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে বাধ্য করি। তিনি কখন ঘুমাবেন, কখন উঠবেন, তা-ও আমরা নির্ধারণ করে দিই। একজন মানুষ হিসেবে যে তাঁর ছুটি, বিনোদন, বা অবসরের দরকার আছে, তা ভাবিই না। এ বিষয়টি ভাবতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁরাও আমাদের পরিবারের অংশ।

পরিবারে সম-অধিকার কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে? এ জন্য কি আইন করা প্রয়োজন?
না. আ.:
 সবকিছু ছকে বেঁধে বা আইন করে করতে হবে বিষয়টি তেমন নয়। প্রথমত নারী-পুরুষভেদে সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এ জন্য আমরা যখন নারী অধিকার নিয়ে কথা বলব, তখন ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টি তুলে নিয়ে আসতে হবে। এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানাতে হবে। সরকার নারী উন্নয়ননীতি বাস্তবায়নে অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, সেখানে ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স বিষয়টির উল্লেখ থাকতে হবে। বৃহৎ পরিসরে পরিবারে সম-অধিকারের বিষয়টি আলোচিত হলে এর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করবে। তা ছাড়া স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। বিজ্ঞাপন, নাটকের মাধ্যমেও এই বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করা যায়।

কখন বোঝা যাবে পরিবারের মধ্যে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বা সবাই সমান সুযোগ পাচ্ছে?
না. আ.:
 সমাজ থেকে মানুষের সুখী হওয়ার হার কমে যাচ্ছে। তার বড় একটি কারণ পরিবারে পারস্পরিক শ্রদ্ধার অভাব। পরিবারে হয়তো সহিংসতা নেই। কিন্তু শান্তি নেই। ফ্যামিলি কমপ্লায়েন্স থাকলে এই সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। তখন পরিবারের সবাই সম-অধিকার ভোগ করতে পারবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সমান সুযোগ পাবে। যে যে বিষয়ে পারদর্শী, সেখানে মতামত দিতে পারবে। পারস্পরিক সম্মানবোধ বজায় থাকবে। নারীদের সিদ্ধান্তের মূল্যায়ন হবে। স্ত্রী নন, সঙ্গীকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

এতে পরিবারটি কীভাবে উপকৃত হবে?
না. আ.:
 যে পরিবারে শোষণ নেই অর্থাৎ কমপ্লায়েন্স বা মানসম্পন্ন ফ্যামিলি, সেখানে সবাই সমান সুযোগ পাবে। ফলে পরিবারটি অন্য পরিবারের তুলনায় বেশি উৎপাদনশীল হবে। অর্থনীতিতে বেশি অবদান রাখতে পারবে। মেধা বা যোগ্যতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারবে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটবে। মায়েরা অপুষ্টি থেকে রেহাই পাবে। সন্তানেরা পরিবার সম্পর্কে একটি ইতিবাচক ধারণা নিয়ে বড় হবে। যাতে ভবিষ্যতে প্রতিটি পরিবারের সবাই সম-অধিকার ভোগ করতে পারবে। পরিবারটি হয়ে উঠবে সবার শান্তির জায়গা।

সুত্রঃ প্রথম আলো

 

মজাদার চিজ কর্ন বল

হঠাৎ বাসায় অতিথি আসলে ঝটপট তৈরি করে ফেলতে পারেন সুস্বাদু চিজ কর্ন বল। শিশুদের জন্য বিকেলের নাস্তায়ও রাখতে পারেন মজাদার আইটেমটি।

জেনে নিন কীভাবে তৈরি করবেন-

উপকরণ

আলু- ১০০ গ্রাম (সেদ্ধ ও খোসা ছাড়ানো)
পনির- ১০০ গ্রাম (কুচি)
সুইট কর্ন- ৫০ গ্রাম
কাঁচামরিচ- ৫টি (কুচি)
কর্ন ফ্লাওয়ার- ২ টেবিল চামচ
তেল- প্রয়োজন অনুযায়ী
লবণ- স্বাদ মতো

প্রস্তুত প্রণালি

একটি পাত্রে সুইট কর্ন, সেদ্ধ আলু ও পনির একসঙ্গে মেশান।লবণ ও কাঁচামরিচ কুচি দিয়ে দিন মিশ্রণে। ভালো করে মাখিয়ে ছোট ছোট বল তৈরি করুন।

প্যানে তেল গরম করে নিন। বলগুলো কর্ন ফ্লাওয়ারে গড়িয়ে ডুবো তেলে ভাজুন। বাদামি রং হয়ে আসলে নামিয়ে নিন। পুদিনা সস অথবা টমেটো সসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন চিজ কর্ন বল।

 

এই গরমে মাত্র ২ মিনিটে তৈরি করুন মজাদার স্ট্রবেরি আইসক্রিম

ভ্যানিলা, চকলেট নানা ফ্লেভারের আইসক্রিমের মধ্যে স্ট্রবেরি বেশ জনপ্রিয় একটি আইসক্রিম ফ্লেভার। আগে এই ফলটি সুপার শপগুলো ছাড়া পাওয়া যেত না। এখন কাঁচা বাজারের ভ্যানেই কিনতে পাওয়া যায় এই ফলটি। সহজলভ্য এই ফলটি দিয়ে আপনি নিজেও তৈরি করে নিতে পারেন মজাদার স্ট্রবেরি আইসক্রিম। এরজন্য প্রয়োজন নেই কোন আইসক্রিম মেকারের। আইসক্রিম মেকার ছাড়া মাত্র দুই মিনিটে তৈরি করে নিতে পারেন স্ট্রবেরি আইসক্রিম।

উপকরণ:
৩/৪ কাপ দুধ

১/২ কাপ কনডেন্সড মিল্ক

১ টেবিল চামচ লেবুর রস

৩ কাপ স্ট্রবেরি

প্রণালী:

১। প্রথমে স্ট্রবেরি ভাল করে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।

২। এবার একটি ব্লেন্ডারে দুধ, কনডেন্সড মিল্ক, লেবুর রস এবং স্ট্রবেরি দিয়ে ব্লেন্ড করুন।

৩। ভাল করে কয়েকবার  ব্লেন্ড করে নিন।

৪। এবার মিশ্রণটি একটি আইসক্রিমের বক্সে ঢেলে রাখুন।

৫। বক্সটি ফ্রিজে ৫ ঘন্টা অথবা সারা রাত রেখে দিন।

৬। সকালে পেয়ে যান  দারুণ স্ট্রবেরি আইসক্রিম।

 

ফ্যাশনের সাথে গড়ে উঠুক আপনার ক্যারিয়ার

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং

এই মুহূর্তে ক্রিয়েটিভ ডিজ়াইনিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি গ্ল্যাম ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অন্যতম আকর্ষক পেশাই হল ফ্যাশন ডিজ়াইনিং।

আজকের দিনে সকলেই তাদের পোশাক-আসাক, লেটেস্ট ট্রেন্ড, কোনটা ইন, কোনটা আউট এসব নিয়ে বেশ সচেতন। তার উপর অনেকেই আবার চলতি কোনও একটা ট্রেন্ড অনুসরণ করার বদলে একটা নিজস্ব ট্রেন্ড চালু করতেই বেশি আগ্রহী। সেখান থেকেই এসেছে ফ্যাশন ডিজ়াইনিংয়ের ব্যাপারটা। অর্থাত্‌ নতুন ট্রেন্ড ভাবার সৃজনশীলতা এবং কল্পনাশক্তিই হল এই পেশায় আসার প্রধান শর্ত। টেকনিক্যাল শিক্ষা তো রয়েছেই, তবে ক্রিয়েটিভিটির কোনও বিকল্প এই পেশার ক্ষেত্রে নেই। মনে রাখতে হবে, ফ্যাশন ডিজ়াইনিং মানে কিন্তু শুধুমাত্র গ্ল্যামারাস সেলেব্রিটিদের জন্যই কাজ করা নয়, সেন্স অফ স্টাইল কিন্তু আনা যায় সব ধরনের পোশাকেই। যথাসম্ভব বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার মধ্যেই কিন্তু একজন ফ্যাশন ডিজ়াইনারের সার্থকতা লুকিয়ে থাকে।

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং বিষয়ে কাজ করার প্রধান ক্ষেত্রগুলোই হল কাপড়, বিভিন্ন পোশাক-আসাক অর্থাত্‌ টেক্সটাইল্স ডিজ়াইনিং। ভারতের ক্ষেত্রে ফ্যাশন ডিজ়াইনিং নিয়ে কাজ করার কিছু বাড়তি সুবিধে আছে, তার কারণ হল বিভিন্ন ধরনের সিল্ক বা রেশম, ট্র্যাডিশনাল হ্যান্ডলুম ফেব্রিক, রাস্টিক টেক্সচারে কাজ করতে পারার সুযোগ। ভারতের এই ধরনের কাজগুলোর চাহিদা সারা পবৃথিবীতেই রয়েছে। এই কারণেই আমাদের দেশের টিন জেনারেশন ফ্যাশন নিয়ে কেরিয়ার করার ব্যাপারে খুব বেশিই আগ্রহী হয়ে উঠছে।

কাজের ধরন

ফ্যাশন ডিজ়াইনার কাজই হল চলতি ট্রেন্ডের বিভিন্ন আকর্ষক ভ্যারাইটি তৈরির মাধ্যমে ক্রেতা বা ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করা। শুধুমাত্র লেটেস্ট ট্রেন্ডের কাজই নয়, মার্কেট কন্ডিশন এবং আবহাওয়ার ধরন বুঝেও ড্রেস মেটিরিয়াল নির্বাচন করতে হয়। মাথায় রাখতে হয় ফিট, স্টাইল, কালার, টেক্সচার এবং মেটিরিয়ালের কথাও।

 

যে পোশাকটি তৈরি করতে হবে, সেটি প্রথমে স্কেচ করতে হয়। তারপর এর বিভিন্ন অংশগুলো সঠিক সাইজ়ে একটি কাগজের উপর এঁকে কেটে নিতে হয়। সেগুলো সেলাই করে কোনও মডেল বা ম্যানিকুইনের গায়ে ফিট করে কি না দেখে নেওয়ার পর আসল ফেব্রিকের পোশাকটি তৈরি করা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে শেখার সময় কাগজ দিয়েই ট্রায়াল হয় বিভিন্ন পোশাকের। তারপর কাপড়ের সাহায্যে ফাইনাল স্ট্রাকচার তৈরির সময় দেখে নিতে হয় ফেব্রিক, উইভ, ড্রেপিং কোয়ালিটি, মেটিরিয়াল কালার এবং ডিজ়াইন।

ডিজ়াইনিংয়ের পেশায় অনেক ধরনের কাজের আলাদা-আলাদা বিভাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে সাধারণ প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর বিভিন্ন বিভাগের জন্য আলাদা করেও প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়। এই পেশার অন্তর্গত দপ্তরগুলো হল,

ডিজ়াইন ডিপার্টমেন্ট : এটি হল প্রধানত ম্যানুফাকচারিং ইউনিট। এই বিভাগে যেসব পদে কাজ করা যায়, সেগুলো হল ডিজ়াইনার, কাটিং অ্যাসিসট্যান্ট, স্কেচিং অ্যাসিসট্যান্ট, জুনিয়র ডিজ়াইনার ইত্যাদি। এদের মাধ্যমেই বড় স্কেলে ডিজ়াইনার গারমেন্টস ম্যানুফাকচার করা হয়।

মার্কেটিং এবং মার্চেন্ডাইজ়িং : আজকের দিনে ফ্যাশনের ট্রেন্ড প্রতিমুহূর্তেই পালটাচ্ছে। তাই মার্কেটিং এবং মার্চেন্ডাইজ়িং বিভাগেও চলতি ফ্যাশন সম্বন্ধে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি সেল্স ডেটার উপর নজর রেখে মার্কেটিং অবজেক্টিভ তৈরি করার দায়িত্বও থাকে এই বিভাগের কর্মীদের উপর। এঁরাই বিভিন্ন প্রডাক্টের দাম, প্রয়োজনীয়তা, চাহিদা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় ইনপুট পৌঁছে দেন স্টাইলিং ডিপার্টমেন্টের কাছে।

ম্যানুফাকচারিং : ম্যানুফাকচারিং বিভাগটি চলে প্রডাকশন ম্যানেজারের অধীনে। তাঁর দায়িত্বে থাকে কাজের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা, কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং প্রডাকশনের কোয়ালিটি বজায় রাখা। কাজের প্রত্যেকটা পর্যায়ই প্রডাকশন ম্যানেজারকে কমবেশি নজরে রাখতে হয়।

ফ্যাশন কো-অর্ডিনেটর : এটিও ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। এঁদের কাজ হল ক্রেতা এবং প্রডাকশন ম্যানেজারের মধ্যে কো-অর্ডিনেট করানো। প্রডাকশন শেডিউল ঠিকমতো মেনে চলা, ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী ফেব্রিক, কালার, ডিজ়াইন এবং কোয়ালিটির উপর নজর রাখাই এদের প্রধান কাজ। এঁরা অনেকসময় ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজ়াইনার ওয়্যার এবং উপযুক্ত অ্যাকসেসরিজ়ও সাজেস্ট করে দেন। প্রডাকশনের ক্ষেত্রেও ক্রেতাদের ফিডব্যাক ফ্যাশন কো-অর্ডিনেটরদের মাধ্যমেই আসে।

কাজের প্রয়োজনীয় অ্যাপটিটিউড

ফ্যাশন ডিজ়াইনিং নিয়ে কাজ করার বা ক্যারিয়ার তৈরির আগ্রহ টিনএজারদের মধ্যে ক্রমশই বাড়ছে। বিশেষত পোশাক-আসাকের ব্যাপারে যারা বরাবরই এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালবাসে, শিল্পবোধ এবং সৃজনশীলতা আছে, তাদের জন্য এই কেরিয়ার খুবই উপযুক্ত। তবে প্রথম থেকেই যে-কোনও আইডিয়া স্কেচ করে দেখানোর দক্ষতা বা অ্যাপটিটিউড গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজনীয়। খুব দক্ষ শিল্পী হওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে কালার, শেড এবং টোন নিয়ে কাজ করা বা ম্যাচিং-মিক্সিং করার সেন্স থাকাটা জরুরি। পাশাপাশি কাগজে-কলমে যা আঁকা বা প্ল্যান করা হল, থ্রি-ডায়মেনশনে তার ভিসুয়ালাইজ়েশন কেমন হবে, সেই বোধটাও ফ্যাশন ডিজ়াইনারের থাকতে হয়।

এই পেশায় ভাল করতে হলে শুধু ভাল শিল্পী হলেই হবে না। রীতিমতো পড়াশোনা করে চলতি ফ্যাশন ট্রেন্ডের খোঁজখবর রাখার প্রয়োজন হয়। একজন ফ্যাশন ডিজ়াইনারকে বাণিজ্যিক সাফল্য পেতে হলে অবশ্যই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের ফ্যাশন জার্নাল, ম্যাগাজ়িন বা টিভি চ্যানেলে নিয়মিত চোখ রাখতে হয়। শুধু তাই নয়, শিল্প এবং ইতিহাসভিত্তিক নানারকম মিউজ়িয়াম বা প্রদর্শনী থেকেও তাকে নানারকম আর্ট ফর্ম কালেক্ট করার প্রয়োজন হতে পারে। আবার ডিজ়াইনার হিসেবে নিজেকে আরও উন্নত করে তোলার জন্য প্রাথমিক টেলরিং-এর কাজও, যেমন, কাটিং, সিউয়িং, ড্রেপিং ইত্যাদিও তাকে শিখে রাখার প্রয়োজন হয়। এসব কিছুর পর, ডিজ়াইনারের কমিউনিকেশন স্কিলও খুব ভাল হওয়ার দরকার হয়, যাতে সে তার কাজ এবং আইডিয়া স্পষ্ট করে ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরতে পারে।

 

পিতা-মাতার প্রতি কর্তব্য ও মেয়েদের পিতা-মাতা

আমি এমন অনেক নাটক, সিনেমা দেখেছি যাতে দেখানো হয়েছে ছেলের বাবা বা মাকে ছেলের বউ সহ্য করতে পারছে না ৷ কিন্তু এমন কোনো নাটক, সিনেমা দেখিনি যাতে দেখানো হয়েছে মেয়ের বাবা-মা বৃদ্ধ বয়সে কোথাও যাবার জায়গা পাচ্ছেন না; মেয়েটি চেষ্টা করছে যতটা সম্ভব সাহায্য করার, কিন্তু মেয়েটির স্বামী বা শ্বশুর বাড়ীর লোক সহ্য করতে পারছে না৷ আশেপাশের লোক বলছে মেয়ের বাড়ী থাকবেন, কেমন দেখায়? কিন্তু এই মেয়েটির জন্যও তার বাবা -মায়ের অনেক ত্যাগ ছিল, এই মেয়েটির জন্যও তারা রাত জেগেছেন, ভেজা বিছানায় শুয়েছেন ৷ উপরন্তু তার নিরাপত্তার জন্য বাড়তি উদ্বেগ সহ্য করেছেন; মেয়েটির বিয়ে দেবার সময় ছেলে পক্ষের যৌক্তিক-অযৌক্তিক সব দাবী মেনে নিয়েছেন, জামাই বা জামাই বাড়ীর কেউ আসলে টাকা থাকুক বা নাই থাকুক বাজারের বড় মাছ কিনেছেন; কোমরে ব্যাথা নিয়েও হাসি মুখে জামাইয়ের জন্য রান্না করেছেন৷ এত কিছুর পরেও কেন এই বাবা-মায়ের ত্যাগ , কষ্ট কোথাও মূল্যায়ণ পায় না? শুধু ‘মেয়ের বাবা-মা’ হওয়ার কারণে? আমি যখনি কোনো নাটক বা সিনেমায় সন্তানের জন্য মায়ের ত্যাগ দেখেছি আশ্চর্যজনক ভাবে সন্তানটি সর্বদাই ছেলে সন্তান ছিল, একবারের জন্যও আমি মেয়ে সন্তান দেখিনি। কারনটা কি হতে পারে? -আমি অনেকবার ভাবার চেষ্টা করেছি। মায়েরা কি ছেলেদের জন্য বেশী ত্যাগ করে যা ছেলেদের মনে রাখা উচিত? মায়েদের ছেলে সন্তানের প্রতি আকর্ষণটা একটু বেশী হতে পারে (অনেক মনোবিজ্ঞানী মনে করেন) কিন্তু ত্যাগ তো তারা মেয়েদের জন্য একটুও কম করেন না। তাহলে কেন মেয়ের মায়েদের ত্যাগটা সবসময় অনুচ্চারিতই থেকে যায়? আবার ভাবার চেষ্টা করেছি মেয়েরা হয়তো এমনিতেই বাবা মায়ের প্রতি যত্নশীল , ছেলেদের বরঞ্চ মনে করিয়ে দিতে হয় বাবা-মা তার জন্য কী কষ্ট করেছে । এটা হয়ত কোনো কোনো ক্ষেত্রে সত্যি হতে পারে কিন্তু যদি আমরা ছেলেদের জন্য বাবা মা কতটা কষ্ট করেছেন শুধু তাই পুনঃ পুনঃ উচ্চারণ করতে থাকি তবে কি মেয়ের বাবা-মায়েদের ত্যাগ ঢাকা পড়ে যাচ্ছে না? এ তো গেলো এ দুনিয়ার কথা ৷ মৃত্যু পরবর্তী দুনিয়ার ব্যাপারেও ছেলের বাবা মায়ের সুবিধা মেয়ের বাবা মায়েদের থেকে বেশী দেখানো হয় ৷ ‘মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত’ কথাটা শুনলেই কেন যেন আমাদের মনে এক মা আর তার ছেলে এমন একটা ছবি ভেসে ওঠে ৷ একবার এক মফঃস্বলের এক মাওলানা যিনি ওই এলাকার মাদ্রাসার শিক্ষক এবং নিয়মিত ঈদের জামাতে ইমামতি করেন ও খুতবা দেন (অর্থাৎ একজন ধর্মীয় শিক্ষক এবং নেতা ) আমাকে বলছিলেন, “মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশত এবং বিয়ের পরে মেয়েদের জন্য মা-বাবার স্থান নিয়ে নেয় তার শ্বশুড়- শ্বাশুড়ী ৷” তিনি আমাকে যা বোঝাতে চাইছিলেন তার অর্থ দাঁড়ায় ছেলেদের বেহেশত সর্বদাই মায়ের পায়ের নীচে থাকে কিন্তু মেয়েদের বেহেশত বিয়ের সময় তার মায়ের পায়ের নীচ থেকে সরে গিয়ে স্থান নেয় শ্বাশুড়ীর পায়ের নীচে ৷ অর্থাৎ বিয়ের সময় মেয়ের মায়েরা বেহেশত হারান আর ছেলের মায়েরা বাড়তি একটি লাভ করেন ৷ এই সুত্র অনুযায়ী কোনো মহিলার যদি দুটি ছেলে থাকে তবে তিনি চারটি বেহেশতের উপরে দাড়িয়ে থাকেন কিন্তু যার দুটি মেয়ে তিনি মেয়েদের বিয়ে দেবার সাথে সাথে বেহেশতশূণ্য হয়ে যান ৷ এই যদি হয় অবস্থা তাহলে কোন নারী চাইবে মেয়ের মা হতে? কে চাইবে কষ্ট করে মেয়ে পেটে ধরে, তার জন্ম দিয়ে, তাকে বড় করার সব কষ্ট সয়েও বেহেশতশূণ্য হতে? তার থেকে ভালো ছেলের মা হওয়া – ছেলের জন্য কষ্ট করার পুরস্কার হিসাবে পার্মানেন্ট একটা বেহেশত তো থাকবেই তার উপরে বোনাস হিসাবে মেয়ের মায়েরটাও পাওয়া যাবে। এভাবে কি আমরা সবাই মিলে এমন একটা সামাজিক চাপ তৈরী করছি না যাতে সবার মধ্যে ছেলে সন্তান পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাড়ে, আর মেয়ে সন্তানের আকাঙ্ক্ষা কমে? আর এ থেকে তৈরী হয় ভারসাম্যহীনতা আর পরিনামে জন্ম নেয় নানা রকম পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা । আমরা জানি রাসুল (সঃ) এর সময় মক্কার লোকেরা মেয়ে শিশু সন্তানদের জীবন্ত কবর দিত; কেন? যে বাবা এ কাজটি করত তার কি একটুও কষ্ট হতনা ? অবশ্যই হত। ইতিহাস সাক্ষী যে একাজ করার সময় তাদের বুক ফেটে যেত; চোখের পানিতে মুখ ভেসে যেত; তারপরও কেন তারা এটা করত? কারণ সমাজের চাপ। সমাজ এমন এক পরিবেশ তৈরী করে রেখেছিল যাতে ছেলের পিতা-মাতা নানা ভাবে সুবিধা ভোগ করত আর মেয়ের পিতা-মাতাদের পড়তে হত অসুবিধা জনক অবস্থানে – কাজেই কেউই মেয়ে সন্তান চাইতো না । আমাদের এই আধুনিক যুগেও যদি আমরা নাটক, সিনেমা, সাহিত্য সর্বত্র ছেলের বাবা-মায়েদের ত্যাগ কে হাইলাইট করি আর মেয়ের বাবা-মাদের ত্যাগ কে অবহেলা (over look) করি তবে আমরাও এমন এক পরিবেশ তৈরী করছি যাতে সবার মধ্যে ছেলের বাবা- মা হওয়ার ইচ্ছা বাড়ে, আর মেয়ের বাবা- মা হওয়ার ইচ্ছা অনুৎসাহিত হয়। আমরা কি এভাবে মেয়ে ফীটাস এবরশন কে উত্সাহিত করছি না? আমি একবার খুব নামকরা একজন ধর্মীয় বক্তার ওয়াজ শুনছিলাম ‘পিতা মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য’ এর উপর । বক্তব্যের শব্দ চয়ন এবং ধরন (Tone) এমন ছিল যে ওখানে উপস্থিত সব পুরুষের মনে হলো বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে তারা যথেষ্ট মনোযোগী হতে পারছেন না এবং এর সম্ভাব্য কারণ বা বাধা হলো স্ত্রী । অপরপক্ষে উপস্থিত প্রতিটা নারীর মনে হলো যে শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর প্রতি দায়িত্ব পালনে তার ভূমিকা সমালোচিত হলো । এমন ব্যাখ্যা নিঃসন্দেহে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে ভালো প্রভাব ফেলবে না । শুধু তাই না, এধরনের ব্যাখ্যা যেহেতু ছেলের মায়েদের সুবিধা জনক স্থানে রাখছে সেহেতু ওই ওয়াজে উপস্থিত সব নারীর মনেই (আমার নিজেরও ) ছেলের মা হওয়ার ইচ্ছা তৈরী হয়েছে, মেয়ের মা হতে তেমন কারোই সেদিন ইচ্ছা হয়নি। ওয়াজগুলো কি এমন হতে পারে না যা শুনে প্রত্যেকটা পুরুষ ভাবতে পারে, সন্তান হিসাবে তার বাবা মায়ের সাথে সে নিজে ভালো আচরণ করছে কিনা?

লিখেছেন:  কানিজ ফাতিমা

 

কোন স্ত্রীর ওপর ফেরেশতারা সারারাত অভিশাপ দিতে থাকে?

অনেক মহিলাকেই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীতে একটু খুনসুটি হলেই স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার মানসে তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা বন্ধ করে বসে। এতে অনেক রকম ক্ষতি দেখা দেয়। পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। স্বামী দৈহিক তৃপ্তির জন্য অবৈধ পথও বেছে নেয়, অন্য স্ত্রী গ্রহণের চিন্তাও তাকে পেয়ে বসে। এভাবে বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন কোনো স্বামী তার স্ত্রীকে স্বীয় শয্যা গ্রহণ বা দৈহিক মিলনের জন্য আহবান জানায়, কিন্তু স্ত্রী তা অস্বীকার করায় স্বামী তার ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে রাত কাটায়, তখন ফিরিশতাগণ সকাল পর্যন্ত ঐ স্ত্রীর ওপর অভিশাপ দিতে থাকে”। [সহীহ বুখারী; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৩২৪৬]

অনেক মহিলাকেই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীতে একটু খুনসুটি হলেই স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার মানসে তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা বন্ধ করে বসে। এতে অনেক রকম ক্ষতি দেখা দেয়। পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হয়। স্বামী দৈহিক তৃপ্তির জন্য অবৈধ পথও বেছে নেয়, অন্য স্ত্রী গ্রহণের চিন্তাও তাকে পেয়ে বসে। এভাবে বিষয়টি হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সুতরাং স্ত্রীর কর্তব্য হবে স্বামী ডাকামাত্রই তার ডাকে সাড়া দেওয়া। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে তার সঙ্গে দৈহিক মিলনের জন্য ডাকবে, তখনই যেন সে তার ডাকে সাড়া দেয়। এমনকি সে যদি ক্বাতবের পিঠেও থাকে। ” [যাওয়াইদুল বাযযার ২/১৮১ পৃ; সহীহুল জামে, হাদীস নং ৫৪৭] ‘ক্বাতব’ হচ্ছে, উঠের পিঠে রাখা গদি যা সওয়ারের সময় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

স্বামীরও কর্তব্য হবে, স্ত্রী রোগাক্রান্ত্র, গর্ভবতী কিংবা অন্য কোনো অসুবিধায় পতিত হলে তার অবস্থা বিবেচনা করা। এতে করে তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় থাকবে এবং মনোমালিন্য সৃষ্টি হবে না।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

ওলি-আউলিয়াদের কারামত কী ও কেন?

ওলি ওই ব্যক্তি, যিনি আল্লাহ তায়ালার জাত ও সিফাতগুলোর মারেফাত তথা পরিচয় লাভ করেছেন। সাধ্যানুযায়ী ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত রয়েছেন। যাবতীয় কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা ও আনন্দ-উপভোগ থেকে বিমুখতা অবলম্বন করেন এবং যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকেন।

আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দাদের বৈশিষ্ট্যের সর্বোচ্চ নিদর্শন ‘মোজেজা’ ও ‘কারামত’। মোজেজা প্রকাশ পায় নবী ও রাসূলদের মাধ্যমে আর কারামত হক্কানি আউলিয়ায়ে কেরামদের জন্য নির্ধারিত।
‘কারামত’ শব্দটি আরবি একবচন। বহুবচনে ‘কারামাত’। এর অর্থ বিশেষ ক্ষমতা, মর্যাদা ও সম্মান ইত্যাদি। ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে কারামত হলো- মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর পছন্দনীয় বান্দাদের থেকে এমন কিছু কাজ প্রকাশ করেন, যা দ্বারা তিনি তাদের সম্মানিত করেন, যা অস্বাভাবিক ও অলৌকিক। নবী-রাসূলদের পরই এই বান্দাদের মর্যাদা- যাদের ওলি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন, ‘জেনে রাখ, নিশ্চয় যারা আল্লাহর ওলি তাদের নেই কোনো ভয় এবং নেই কোনো চিন্তা।’ (সূরা ইউনুস-৬২)।

ইমামে আজম আবু হানিফা (রহ.) ‘আল ফিকহুল আকবর’-এ ওলির সংজ্ঞায় বলেছেন, ওলি ওই ব্যক্তি, যিনি আল্লাহ তায়ালার জাত ও সিফাতগুলোর মারেফাত তথা পরিচয় লাভ করেছেন। সাধ্যানুযায়ী ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত রয়েছেন। যাবতীয় কামনা-বাসনা, লোভ-লালসা ও আনন্দ-উপভোগ থেকে বিমুখতা অবলম্বন করেন এবং যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকেন।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা হচ্ছে, ‘কারামাতুল আউলিয়ায়ে হাক্কুন’, অর্থাৎ আউলিয়ায়ে কেরামদের কারামত সত্য। এগুলো তাদের উচ্চ কামালাত তথা মর্যাদার সাক্ষ্য বহন করে বটে; কিন্তু কখনও তারা এসবের মাধ্যমে নিজেদের জনসমাজে প্রকাশ করেন না। ওলিদের যে কারামত সংঘটিত হয়, এগুলো তাদের অনিচ্ছায় এবং আল্লাহর ইচ্ছায় অলৌকিকভাবে সম্পন্ন হয়। ঘটনাচক্রে বা ক্ষেত্রবিশেষে ওলিদের মাধ্যমে কারামত প্রকাশ পায়।

প্রকৃতপক্ষে যিনি আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দা অর্থাৎ যারা আল্লাহর ওলি তাদের কারামত আল্লাহ পাকের জাত, সিফাত ও এলমে মারফতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যে ব্যক্তি শরিয়তের পূর্ণ অনুসারী কেবল তার দ্বারা কোনো অলৌকিক ঘটনা ঘটলেই এটিকে কারামত বলা হয়।

যে ব্যক্তি আমলের ক্ষেত্রে শরিয়তের খেলাপ করে সে যদি চেষ্টা-সাধনা করে কোনোরূপ অলৌকিক কাজ প্রদর্শন করে তবে এটিকে কারামত বলে না। তাই জাদুকর, কাফের বা যোগী-সন্ন্যাসীদের দ্বারা যে অস্বাভাবিক কাজ প্রদর্শিত হয় সেগুলো কখনও কারামত নয়। এসবকে ‘এসতেদরাজ’ বলে। ওলি থেকে কারামত প্রকাশ পাওয়া জায়েজ ও অস্বাভাবিক। এটি সহিহ দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত। প্রকৃত মুসলমান একে অস্বীকার করতে পারে না। কারণ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ওলিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। সূরা তওবার ১১৯নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও। এখানে সত্যবাদী বলতে ওলিদের বোঝানো হয়েছে।

লেখক : মুহাম্মদ আনিসুর রহমান নূরী
সম্পাদনা ও গ্রন্থনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

দক্ষ টিমওয়ার্কের জন্য জরুরি ৫টি কৌশল

এগিয়ে যেতে হলে দল বেঁধেই এগিয়ে যেতে হয়। একা একা বড় হওয়া খুবই কঠিন। যারা একাই সফলতার শীর্ষে পৌঁছে যেতে চান তারা প্রায়শই কিছু পথ পেরিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। একসাথে কাজ করলে মানসিক চাপ কারও একার ওপর পড়ে না। বিনিয়োগ বড় হয়, কাজ ভাগ করে নেওয়া যায়।
কিন্তু নানান মতের, নানান ধরণের মানুষকে নিয়ে একটি টিম একই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে কাজটি কিন্তু ভাবতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে আদতে তত সহজ নয়। কীভাবে টিমওয়ার্ক ভাল হতে পারে আসুন জেনে নিই সে বিষয়ে কিছু টিপস-
আপনার কর্মীরা যত কাছে থাকবে তত তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে
আপনার দলকে একত্র রাখার দায়িত্ব নিতে হবে আপনাকেই। কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে থাকলে তাদের কাজের খোঁজ নেওয়া, তাদের মাঝে ইউনিটি তৈরি করা, ভুল ধরিয়ে দেওয়া সবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কাজের অবস্থানের দূরত্ব অনেক রকম ভুল তথ্য ছড়াতে সাহায্য করে। কর্মীরা একজন আরেকজনকে ঈর্ষা করা, দ্বন্দ তৈরি করার মত কাজে জড়িয়ে পড়েন। এতে ব্যহত হয় প্রজেক্টের গতি।
লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বার বার তুলে ধরুন
কর্মীদের মাঝে কাজের গুরুত্ব বার বার তুলে ধরুন। মাঝে মাঝে মিটিং করুন। মিটিং ছাড়াও কর্মীদের প্রায়ই মনে করিয়ে দিন কাজের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। এভাবে তারা কখনো ঝিমিয়ে যাবেন না। কোম্পানির কর্পোরেট ভ্যালু যেন তারা ভাল ভাবে বোঝেন সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। হতে পারে এটি আপনার একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, কিন্তু আপনি আপনার কর্মীদের মানসিকতাকে পরিচালিত করতে পারেন একটি চমৎকার সংস্কৃতির দিকে। গড়ে তুলতে পারেন এমন একটি টিম যা শুধু কাজ করে না তুলে ধরে ব্রান্ড ভ্যালু।
 
কোম্পানিকে নিজের ভাবতে শেখান
আপনার কমীদের মাঝে কৃতজ্ঞতা তৈরি করুন। তাদেরকে এমনভাবে কোম্পানির কথা বলুন যেন তারা বুঝতে পারেন তারাই শুধু কোম্পানিকে শ্রম দেন না, কোম্পানিও তাদের কথা ভাবেন। সময় মত তাদের বেতন পরিশোধ করুন, বাড়তি কাজের টাকাও পরিশোধ করুন। মাঝে মাঝে সম্ভব হলে ইন্টেন্সিভ বোনাস দিন। দৃশ্যত এটি কোম্পানির বাড়তি খরচ মনে হলেও আসলে কর্মীদের কর্মচাঞ্চল্য মুনাফা হয়ে কোম্পানির ফান্ডেই ফিরে আসে।
প্রশংসা করুন
কর্মীদের কাজ ভাল হলে অবশ্যই প্রশংসা করুন। ভাল কাজের স্বীকৃতি দিন। যোগ্যতা অনুযায়ী পুরস্কৃত করুন। আপনি যদি টিমে স্বজনপ্রীতি বা বিশেষ কারও প্রতি ভালোবাসার চর্চা করেন তাহলে সেটি অন্যদের কাজও করার আগ্রহকে নষ্ট করবে। কারণ আপনার কর্মীরা ধরেই নেবেন, তারা যতই পরিশ্রম করুন না কেন স্বীকৃতি পাবেন না। তখন তারা কোম্পানির জন্য কষ্ট করতে চান না। এভাবেই কোম্পানি দক্ষ কর্মী হারায়।
বিশ্বস্ততা তৈরি করুন
কর্মীদের সাথে সৎ হন। বিশ্বস্ততা না থাকলে টিমওয়ার্ক কখনো সফল হয় না, দীর্ঘস্থায়ী হয় না। টিম মেম্বারদের কাছে পরিচ্ছিন্নভাবে কোম্পানির কাজ তুলে ধরুন। তাদেরকে বোঝান, এটি তাদের সকলের কোম্পানি। এর গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব সকলের। মিটিং এ সকলকে মতামত প্রকাশের সুযোগ দিন। আপনার একার মস্তিষ্ক অনেক বুদ্ধিদীপ্ত হতে পারে। কিন্তু আপনি যখন আরও অন্যদের আইডিয়া শুনবেন তখন আরও অনেক পথ খুঁজে পাবেন। একই সাথে কর্মীদের এই সম্মান দিলে তারা কোম্পানিকে নিজের মনে করবে। কোম্পানির লাভ হোক আর লস হোক, পাশে থাকবেন। কখনো টিম ভেঙ্গে চলে যাবেন না।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

তৈরি করুন মজাদার চিকেন কাঠি রোল

মুরগি মাংসের যেকোন খাবার খেতে দারুন লাগে। মুরগি মাংস দিয়ে নানা খাবার তৈরি করা যায়। বাচ্চাদের টিফিনে কি খাবার দেবে তা নিয়ে মায়েদের চিন্তার শেষ নেই। বাচ্চাদের টিফিনের সমস্যা সমাধান করে দেবে চিকেন কাঠি রোল। সহজে অল্প কিছু উপকরণ দিয়ে এই কাবাবটি তৈরি করে নিন।

উপকরণ:  

ডো তৈরির জন্য:

২ কাপ ময়দা

১ কাপ আটা

১ চা চামচ লবণ

পুররের জন্য:

২৫০ গ্রাম মুরগির মাংস

৫টি পেঁয়াজ কুচি

১ চা চামচ আদা রসুনের পেস্ট

১ চা চামচ জিরা গুঁড়ো

১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো

১ চা চামচ মরিচ গুঁড়ো

২ চা চামচ চিকেন মশলা পাউডার

১ চা চামচ চ্যাট মশলা

৩ চা চামচ লেবুর রস

তেল

১টি শসা কুচি

২টি পেঁয়াজ কুচি

১ চা চামচ লেবুর রস

১ চা চামচ চ্যাট মশলা

২টি ডিম ফাটানো

লবণ

চাটনি (পুদিনা পাতা, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ, লবঙ্গ, লেবুর রস এবং লবণ)

প্রণালী:

১। একটি পাত্রে ময়দা, আটা, লবণ এবং পানি মিশিয়ে ডো তৈরি করে নিন।

২। চুলায় প্যান দিয়ে তাতে তেল গরম করতে দিন। তেল গরম হয়ে আসলে জিরা দিয়ে দিন।

৩। জিরা ফুটে আসলে এতে পেঁয়াজ কুচি, আদা রসুনের পেস্ট দিয়ে দিন।

৪। পেঁয়াজ নরম হয়ে আসলে এতে হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো দিয়ে দিন।

৫। এরপর এতে মুরগির টুকরো এবং লবণ দিয়ে ১০ মিনিট রান্না করুন।

৬। চিকেন মশলা দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করুন। এরপর এতে গরম মশলা, চ্যাট মশলা এবং লেবুর রস দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করুন।

৭। রান্না হয়ে গেলে এটি নামিয়ে রাখুন।

৮। ডো দিয়ে রুটি তৈরি করে নিন। অল্প তেলে রুটি ভেজে নিন।

৯। রুটি ভাজা হয়ে গেলে একটি ডিম ফেটে প্যানে দিয়ে দিন। ডিমটির উপর রুটি দিয়ে ভাজুন।

১০। শসা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, লেবুর রস, চ্যাট মশলা, এবং লবণ দিয়ে সালাদ তৈরি করে রাখুন।

১১। ডিম রুটির উপর চাটনি, মুরগির মাংস এবং সালাদ দিয়ে রোল তৈরি করুন।

১২। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার চিকেন কাঠি রোল।

 

সালোয়ার কামিজের সঙ্গে যে ধরণের জুতো মানানসই

বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানে অনেক নারী শাড়ির বদলে সালোয়ার কামিজেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই সালোয়ার কামিজের সাদামাটা সাজকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে সঙ্গে থাকা চাই স্টাইলিশ জুতো –

হাই হিল : হাই হিলের কথা নতুন করে  বলার অপেক্ষা রাখে না। স্টাইলিশ লুকের ক্ষেত্রে স্টিলেটোর কোন তুলনা নেই। রাতের জমকালো পার্টিতে অনায়াসে সালোয়ার কামিজের সঙ্গে হাই হিলের জুটি গড়তে পারেন।

পাম্প শু : অনুষ্ঠানে অনায়াসে পরে ফেলতে পারেন সলিড গোল্ড পাম্প শু। ট্র্যাডিশনাল হোক বা এথনিক, যেকোনও সালোয়ার কামিজের সঙ্গে ভালো মানাবে এই শু।

জরির কাজ করা স্যান্ডেল : যে কোনও অনুষ্ঠানে এই জুতো পরতে পারেন। দেখতে সুন্দর তো বটেই, তাছাড়া এই জুতো পরতেও বেশ আরামদায়ক। বিশেষ করে সোনালি বা রুপোলি রঙের জরির কারুকার্য করা জুতো দারুণ দেখায়।

কোলাপুরি চপ্পল : যেকোনও ধরনের ট্র্যাডিশনাল সালোয়ারের সঙ্গে পরতে পারবেন কোলাপুরি জুতো। বিশেষ করে পোশাকের সঙ্গে মানানসই রং বেছে নিতে সাজগোজে বিশেষ মাত্রা যোগ করতে পারেন।

 

এগিয়ে যাচ্ছে মুসলিম নারীরা

দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বিশ্ব।তার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে সবা্ই,পিছনে ফিরে তাকানোর ফুসরত যেন কারো নেই।আমরা জানি না এই অগ্রযাত্রার শেষ কোথায়।

ইতিহাস সাক্ষ্যি ছুটে চলার এই প্রতিযোগীতায় সব সময় এগিয়ে গিয়েছে পূরুষ পিছিয়ে পড়েছে নারী।

আবার এগিয়েছে নারী পিছিয়ে পড়েছে মুসলিম নারীরা,যারা ইসলামকে ধারন করেন।

‘মুসলিম নারী’ শব্দটি উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথেই চোখের সামনে ভেসে উঠে আপাদমস্তক আবৃত ঘরের কোনে আবদ্ধ এক নারী চিত্র!

পশ্চিমা বিশ্ব আমাদেরকে এ ভাবেই শিখিয়েছে।

তবে সময়ের আর্বতনে এক্ষেত্রে এবার পরিবতর্নের জোয়ার এসেছে।বিশ্বের বিভিন্ন্ প্রান্তে মুসলিম নারীরা তাদের পশ্চিমা বিশ্বের দেয়া চিরায়িত রুপকে অস্বীকার করে নিজেদেরকে দক্ষতা আর যোগ্যতার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সমানতালে।নীতি নির্ধারনী পযার্য়ে,রাজনীতি,অর্থনীতি ও সমাজিক ক্ষেত্রে,শিক্ষা ব্যবস্থায় এবংপ্রযুক্তি ইত্যাদি প্রায় সব ক্ষেত্রে মুসলিম নারীদের দৃপ্ত পদচারনা উল্লেখ করার মত।বিশ্বখ্যাত এই মহীয়সীদের কয়েকজনকে এখানে তুলে ধরা হলো-

বিশ্বের সেরা শিক্ষক ফিলিস্তিনের হানান

14012028_10205848761092785_1301377234_n

বিশ্বের সবচেয়ে সহিংস স্থানে শিশুদের অহিংসার দিক্ষা দিয়ে বিশ্বসেরা শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন ফিলিস্তিনি শিক্ষিকা হানান আল-হ্রব।
ফিলিস্তিনের বেথেলহেমে উদ্বাস্তু শিবিরে বেড়ে ওঠা মহান এ শিক্ষিকা সারাজীবন লড়াই করে যাচ্ছেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে।
তারই পুরস্কার হিসেবে তিনি পেয়েছেন এক মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৮ কোটি টাকা) গ্লোবাল টিচার প্রাইজ। খবর দ্যা টেলিগ্রাফের।
ফিলিস্তিনের সামিহা খলিল হাই স্কুলের ওই শিক্ষিকাকে ভার্কে ফাউন্ডেশন গ্লোবাল টিচার প্রাইজ ২০১৬ এর জন্য  নির্বাচন করা হয়।  সোমবার হানান আল-হ্রবকে ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৮ কোটি টাকা তুলে দেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম।

পুরস্কার নেয়ার সময় উৎফুল্ল হানান বলেন, একজন ফিলিস্তিনি নারী শিক্ষক হিসেবে এ মঞ্চে দাঁড়াতে পেরে আমি গর্বিত। এই পুরস্কার শুধু আমার একার নয়। সব শিক্ষক বিশেষ করে ফিলিস্তিনি শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আমি এটি গ্রহণ করছি।
দ্বিতীয় বারের মতো এই পুরস্কার দেয়া হলো।
এর আগে এক সাক্ষাৎকারে ৪৩ বছর বয়সী হানান বলেছিলেন, আমার শিক্ষা পদ্ধতিতে খেলার মাধ্যমে শিক্ষা এবং অহিংসার দিক্ষা দেয়া।
তিনি বলেন, তার শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে মূল্যবোধ শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কিছু আচরণগত সমস্যার সমাধান হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইসরাইলি দখলদারিত্বের কারণে আমাদের ছেলেমেয়েদের মধ্যে অনেক আচরণগত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এ শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে আমি এসব আচরণগত সমস্যার সমাধান করতে পারছি এবং একটি শান্তিপ্রিয় ও সহযোগিতামূলক প্রজন্ম তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছি।
হানান জানান, ২০০০ সালে আল-আকসা মসজিদ কেন্দ্রীক ইন্তিফাদার (বিদ্রোহ) সময় পশ্চিমতীরে তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করেন ইসরাঈলি বাহিনী।তিনি বলেন াামার স্বামী প্রথমে ইসরাঈলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন।তাকে এ সময় হাসপাতালে না নিতে দিয়েবরং ইসরাঈলি বাহিনী বিদ্রুপ করে তাকে মৃত্যু মুখে ঠেরে দেয়।হানান বলেন তার উদ্ভাবিত শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে তার সন্তানরা আবার সুস্থ্য হয়ে উঠে ও আত্ন বিশ্বাস ফিরে পায়।দুবাইয়ে গ্লোবাল ইডুকেশন এন্ড স্কিলড ফোরামের ওই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে মহান ওই শিক্ষিকাকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান পোপ ফ্রান্সিস।

নোবেল বিজয়ী প্রথম আরব নারী তাওয়াক্কুল কারমান

13989454_10205848763292840_776402699_n

তাওয়াক্কুল কারমান পেশায় একজন সাংবাদিক,রাজনীতিবিদ্ ও মানবাধিকার কর্মী।ইয়ামেনী এই নারীর জন্ম ১৯৭৯ সালে। আরব নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।তার দেশে অনেক দিন ধরেই বাকস্বাধীনতার জন্য তিনি কাজ করছিলেন।২০০৫সালে তিনি ‘ইউমেন জার্নালিস্ট ইউদাউট চেইনস’     নামে একটি প্রচারনা গ্রুপ তৈরী করেন। প্রতিষ্টার দুই বছর পর থেকে এ গ্রুপটি ইয়ামেনের রাজধানীতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু করে।

14030934_10205848764212863_865865395_n

আর্ন্তজাতিক দৃশ্যপটে কারমানের আবির্ভাব মূলত ২০১১ সালে।তৎকালীন ইয়ামেনী প্রেসিডেন্ট আলী আব্দুললাহ সালেহ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে।তিনি ২০১১ তে নোবেল পুরস্কার পান।নোবেল পুরস্কার গ্রহন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন ,‘আমি সব সময় বিশ্বাস করি যে,কোন ধরনের সহিংসতা ছাড়াই নিযার্তন ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়।আমি আরো বিশ্বাস করি মানব সভ্যতা হচ্ছে নারী পুরুষ উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠার ফল।’নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির পর থেকে তিনি আরব বসন্ত উত্তর দেশ সমূহে ব্যাপক সফর করেন এবং সে সব দেশের মানুষের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন।গত বছর কারমান ঘোষনা দেন যে, তিনি নোবেল পুরস্কার হিসাবে প্রাপ্ত ৫লক্ষ ডলার আত মানবতার সেবায় ব্যায় করবেন।বিশেষ করে আরব বসন্তে ইয়ামেনের যে সকল মানুষ আহত হয়েছেন  ও যে সবল পরিবার স্বজন হারিয়েছেন তাদের কল্যানে তিনি এ অর্থ ব্যয় করবেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম মহিলা কেবিনেট মন্ত্রী শেখ লুবনা আল কাশেমী

14011871_10205848765332891_1190405004_n

শেখ লুবনা আল কাশেমী সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম মহিলা কেবিনেট মন্ত্রী যিনি বর্তমানে আর্ন্তজাতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রানালয়ের দায়িত্বে আছেন।মন্ত্রী হিসাবে শেখ লুবনা প্রথম দায়িত্ব প্রাপ্ত হন ২০০৪ সালে। তখন তিনি অর্থনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রলয়ের দায়িত্ব পালন করেন।প্রভাবশালী মহিলাদের তালিকায় এ নিয়ে পরপর চারবার শেখ লুবনা আল কাশেমী শীষস্থানে রয়েছেন।

শেখ লুবনা মূলত একজন আইটি বিশেষজ্ঞ।তিনি দুবাই এয়ারপোর্টে কার্গো বিমানের মালামাল খালাসের সময় উল্লেখযোগ্য ভাবে কমিয়ে আনার জন্য প্রশংসিত হন।২০০০সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম অন লাইন মার্কেট প্লেস।তার প্রতিষ্ঠিত এ ব্যবসা এখন দুবাইয়ের সবচেয়ে সফল ব্যবসা গুলোর একটি।তার ব্যবসার শাখা ছড়িয়েছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে।

মন্ত্রানালয়ের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি দুবাইচেম্বার অব কর্মাসের বোড অব ডাইরেক্টরস এর সদ্যস।এছাড়া আমিরাত পারমানবিক শক্তি সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান।ন্যাশনাল ইউএস আরব চেম্বার অব কর্মাসের একজন বোড মেম্বার এবং শেখ লুবনা আমিরাত ফাউন্ডেশন আবুধাবী ফ্রেন্ডশ অব ক্যান্সার পেশেন্ট এর একজন বোড মেম্বার।

তিনি ক্যালির্ফোনিয়া স্টেট ইউনির্ভাসিটি অব সিকাগো থেকে বি এস সি  ডিগ্রি অর্জন করেনএবং আমেরিকা ইউনির্ভাসিটি অব শারজাহ থেকে এম বি এ ডিগ্রি অর্জন করেন্।

 

বিশ্বখ্যাত ইসলামিক স্কলার মুসলিমা পারমুল

14010088_10205848765972907_511937096_n

মুসলিমা পারমুল উত্তর কেরোলিনার রেলি শহরে জন্মগ্রহন করেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ডিয়াগোতে বেড়ে উঠেন।১৯৮০র দশকে তার পিতামাতা আফগানিস্থান থেকে যুক্তরাট্রে আসেন। তিনি কেলিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘রিলিজিয়াস স্টাডিজ’ ও ‘সিডল ইর্স্টান স্টাডিজ’বিষয়ে ডিগ্রী লাভ করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সময় তিনি এম.এস.এ..ইউ.সি.এস.ডি এবং এম এস এ পশ্চিমে বিভিন্ন্ দায়িত্ব পালন করেন।ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে তিনি মিশরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আল আজাহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক শরিয়াহ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অজর্ন করেন।আমেরিকান ইউনিভার্সিটি কায়রোতে দুইবছর ইসলামি স্টাডিজ বিষয়ে অধ্যায়ন  করেন।কাযরোতে পড়াশুনা করার সময় তিনি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলারস’ এর ফিউচার স্কলারস প্রোগ্রামে অংশগ্রহন করেন।

বতর্মানে তিনি ইসলামিক সেন্টার আরভিন এ ইয়াং মুসলিমের প্রোগ্রাম পরিচালক হিসাবে কাজ করছেন।এ সেক্টরে তিনি যুবক ও তরুন পেশাজীবিদের ধর্মীয় শিক্ষা ও লিডারশীপের প্রশিক্ষন দেন ও বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করেন।

জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন সমাবেশে ইসলামিক আইন,নৈতিকতা ও অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষন দেন ও গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।তিনি আমেরিকায় ইয়াং মুসলিমদের মাঝে ইসলাম প্রচারে নিবেদিত প্রান হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

গুগলের শীর্ষ বক্তা বাংলাদেশের রাখশান্দা রুখাম

13988917_10205848766732926_1574669391_n

বিশ্বের সব থেকে বড় প্রযুক্তি সম্মেলন ‘গুগল আইও’ সম্মেলনের ডেভেলপার সামিটের শীর্ষ বক্তা নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের গুগল উইমেন টেকমেকারসের লিড রাখশান্দা রুখাম।১০০ দেশের ৫০০ অংশগ্রহণকারী ডেভেলপারদের ভোটে শীর্ষ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রাখশান্দা।

গত ১৮ থেকে ২০ মে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউয়ে অনুষ্ঠিত হয় দশমবারের মতো গুগলের এই বার্ষিক সম্মেলন। যেখানে অংশ নেয় গুগল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত বিশ্বের শীর্ষ ডেভেলপার, ডিজিটাল এক্সপার্টস এবং প্রযুক্তি পেশাজীবীরা। সম্মেলনের আগের দিন প্রি-ইভেন্ট হিসেবে প্রতিবছরই আয়োজিত হয় গুগল ডেভলপার সামিট। যেখানে ১০০টি দেশের প্রায় ৫০০ ডেভেলপার গ্রুপ ম্যানেজার, গুগল ডেভেলপার রিলেশন টিমের সদস্য এবং গুগল ডেভেলপার এক্সপার্টরা অংশ নেন। যেখানে বাংলাদেশ থেকে এবার চারজন অংশ নিয়েছেন।এ সম্মেলনে অন্যতম ম্যানেজার রাখশান্দা শীর্ষ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হন ১০০টি দেশের ভোটে। তিনি উইমেন টেকমেকার্স নির্বাচিত হন ২০১৫ সালে। আর গুগল ডেভেলপার গ্রুপের ম্যানেজার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন ২০১৬ সালে ।

তিনি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় টেলিকমিউনিকেশনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে ইনোভেটিভ ডিজিটাল প্রডাক্ট ডিজাইনে এবং আইসিটি খাতে মেয়েদের অংশগ্রহণ নিয়ে কাজ করেন।

রাখশান্দা বলেন, বাংলাদেশ আর শুধু অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে নয় বরং সম্মেলনের গুরুতপূর্ণ অংশ হিসেবে তুলে ধরতে চাই। আমি চেষ্টা করব বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে যেতে। একদিন বাংলাদেশীরা গুগলের প্রধান নির্বাহীর মত পদে বসতে পারবে।

 

 

ফ্যাশনে রঙ পরিবর্তিত শার্ট

১৯৯০ এর দিকে হাইপার কালার অর্থাৎ রঙ পরিবর্তন হওয়া শার্ট বেশ জনপ্রিয় ছিল। ততদিন এটি ফ্যাশনে ট্রেন্ড হিসেবে ছিল, যতদিন পর্যন্ত না ক্রেতারা বুঝতে পারল কয়েকবার ধোয়ার পর তাদের প্রিয় শার্টের রঙ ফিকে হতে শুরু করে। তবে সম্প্রতি নিউইয়র্কের ডিজাইনার নিকোলাস বেনটেল আবারও ফ্যাশনে নিয়ে এলেন হাইপার কালার। দুষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই আবারও এই ধারনাটি নিয়ে এসেছেন এই ফ্যাশন ডিজাইনার। আগের ডিজাইনের শার্টগুলো তাপমাত্রার সঙ্গে তার রং পরিবর্তন করত। আর এবার বেনটিলের শার্টগুলো দুষণের কাছাকাছি আসলে তাদের রং পরিবর্তন করবে।

বেরটিলের প্রত্যেকটা শার্ট দুষণ এবং তেজস্ক্রিয়তার কাছাকাছি এলে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। উদাহরণ হিসেবে বেনটিল দেখিয়েছেন, তার তৈরি শার্ট কার্বণ মনোক্সাইডের সংস্পর্শে এলে রঙ পরিবর্তন করবে। এছাড়া ধুলাবালি এবং ধোঁয়া পেলেও বদলাবে কাপড়ের রঙ।

বেনটিলের দাবি, এই প্রযুক্তিতে তৈরি শার্টের প্রচার ঠিক মত হলে চারদিকে বেশ সাড়া পড়ে যাবে। তার আবিস্কার প্রশংসা তো পাবেই, সেই সঙ্গে হবে বেশ জনপ্রিয়। শার্টটি কার্বণ মনোক্সাইডের দাগ আবিস্কারক হিসেবে কাজ করবে। এতে লোকজন পরিবেশ দুষণের ব্যাপারে আরো সচেতন হবে। কাপড় ব্যবহারকারী তার স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতে রং পরিবর্তনের সতর্কতা পাবেন।

 

লেডি সার্জেন্টদের স্কুটি প্রদান করল ডিএমপি

সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া লেডি সার্জেন্টদের স্কুটি প্রদান করল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া দেশের প্রথম নারী সার্জেন্টদের হাতে স্কুটির চাবি তুলে দেন। এরপরই স্কুটি নিয়ে রাজপথে দায়িত্ব পালনে নেমে যান লেডি সার্জেন্টরা।

২৮ জন নারী সার্জেন্ট প্রশিক্ষণ নিলেও ২২ জন ডিএমপিতে দায়িত্বরত রয়েছেন। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের মোটরসাইকেল মেকানিক্স সেকশন ইনচার্জ কনস্টেবল নাজমুল হুদা খান জানান, ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে তাদের হাতে চাবি তুলে দেওয়া হলো।

গত ৩০ জুলাই থেকে পুলিশ লাইন্সের মাঠে লেডি সার্জেন্টদের মোটরসাইকেল চালানোর প্রশিক্ষণ শুরু হলেও তারা এখন সড়কে চালাতে পারদর্শী হয়ে উঠেছেন। প্রশিক্ষণ শেষে ডিএমপির হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত স্কুটি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ২০ লেডি সার্জেন্ট উপস্থিত ছিলেন। একজন অসুস্থ থাকায় এবং অন্যজনের মাস্টার্স পরীক্ষা থাকায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। ২০১৫ সালে দেশে প্রথমবারের মতো নারী সার্জেন্ট নিয়োগ দেয় সরকার। তারা ২০১৫ সালের ২২ মে চাকরিতে যোগদান করেন। ঢাকায় ২২ জনের পদায়ন হয় গত জানুয়ারিতে।

 

বৃহত্তম কবিরা গুনাহ কী?

শিরক ব্যতীত প্রত্যেক পাপের ক্ষেত্রেই আল্লাহ তাআলার ক্ষমা প্রাপ্তির একটি সম্ভাবনা আছে। তাওবাই শিরকের একমাত্র প্রতিকার। এমন বড় শিরক রয়েছে যা দীন ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ।

আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা যে কোনো বিচারে সবচেয়ে বড় হারাম ও মহাপাপ। আবু বাকরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

«أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الكَبَائِرِ؟» ثَلاَثًا، قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ…»

“আমি কি তোমাদেরকে বৃহত্তম কবীরা গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না (তিনবার)? সাহাবীগণ বললেন, অবশ্যই বলবেন, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শিরক করা …..”। [সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৯৭৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৮৭]

শিরক ব্যতীত প্রত্যেক পাপের ক্ষেত্রেই আল্লাহ তাআলার ক্ষমা প্রাপ্তির একটি সম্ভাবনা আছে। তাওবাই শিরকের একমাত্র প্রতিকার। আল্লাহ বলেছেন,

إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُ

“নিশ্চয় আল্লাহ তার সঙ্গে কৃত শির্ককে ক্ষমা করবেন না। তাছাড়া যত গুনাহ আছে তা তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৮]

এমন বড় শিরক রয়েছে যা দীন ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এরূপ শিরককারী ব্যক্তি যদি ঐ অবস্থায় মারা যায় তাহলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক মুসলিম দেশেই আজ শিরকের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

রান্নাঘরের টুকিটাকি দিয়ে তুলে ফেলুন মেকআপ

সুন্দরভাবে মেকআপ তোলার জন্য মেকআপ রিমুভার যে কত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি নারীই তা জানেন। সুন্দরভাবে মেকআপ করলে হয় না, এটি সঠিক নিয়মে তোলাটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মেকআপ সঠিক নিয়মে তোলা না হলে ত্বকে ব্রণ দেখা দেয়, শুধু ব্রণ নয় এটি বলিরেখাসহ ত্বকে নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। বাজার ঘুরলে নানা মেকআপ রিমুভার কিনতে পাওয়া যায়, কিন্তু বাজারের মেকআপ রিমুভার ত্বকে অনেক সময় নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার হাত থেকে বাঁচতে ব্যবহার করুন প্রাকৃতিক রিমুভার।

১। দুধ

দুধ বেশ ভাল প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। একটি তুলোর বল কাঁচা দুধে ভিজিয়ে নিন। এবার এটি ত্বকে আলতো হাতে ঘষে ঘষে মেকআপ তুলুন। দুধের প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বক থেকে ময়লা দূর করে, ত্বক ময়েশ্চার করে।

২। ময়দা এবং টকদইয়ের মেকআপ রিমুভার

এক টেবিল চামচ ময়দা, এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো এবং প্রয়োজনমতো টকদই একটি বাটিতে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে মুখ ২/৩ মিনিট ম্যাসাজ করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মেকআপ ত্বকের গভীর থেকে দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বক থাকবে সুস্থ।

৩। শসা

শসা কুচি করে রস তৈরি করে নিন। এবার শসার রস একটি এয়ার টাইট পাত্রে রেখে সংরক্ষণ করুন। মেকআপ তোলার সময় শসার রসের সাথে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল অথবা কাঁচা দুধ মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি মেকআপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার করুন।

৪। নারকেল তেল

মেকআপ তোলার সহজলভ্য এবং কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান হল নারকেল তেল। এটি সব ধরণের ত্বকে ব্যবহারযোগ্য। হাতের আঙ্গুলে অথবা একটি তুলোর বলে কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল নিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করে লাগান। তারপর ভেজা টাওয়াল দিয়ে মুছে ফেলুন। দেখুন সুন্দরভাবে মেকআপ উঠে গেছে।

৫। টকদই

রান্নাঘরের আরেকটি অন্যতম উপাদান হল টকদই। ত্বকের নানা সমস্যা দূর করতে টকদই ব্যবহার করা হয়। ত্বক পরিষ্কার করতেও টকদই বেশ কার্যকর। একটি তুলোর বলে টকদইয়ে ভিজিয়ে নিন। এরপর এটি ত্বকে ভাল করে ঘষে নিন। কিছুক্ষণ পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

এছাড়া মধু, বেবি অয়েল, অ্যালোভেরা জেল, সানফ্লাওয়ার অয়েল ইত্যাদি প্রাকৃতিক মেকআপ রিমভার হিসেবে কাজ করে।

লিখেছেন
নিগার আলম

 

ইমরানের গানের মডেল কল্পনা, সঙ্গে আশফাক-সায়রা

এ বছরের শুরুর দিকে প্রকাশিত হয় ইমরান-তাহসানের দ্বৈত অ্যালবাম ‘মন কারিগর’। অ্যালবামের সব গানের কথা লেখেন রবিউল ইসলাম জীবন এবং সুর এবং সঙ্গীতপরিচালনা করেন ইমরান। এই অ্যালবামেরই ‘নিশি রাতে চান্দের আলো’ শিরোনামের একটি গানের মিউজিক ভিডিও প্রকাশিত হতে যাচ্ছে খুব শিগগিরই। গল্পভিত্তিক এই মিউজিক ভিডিওতে মায়ের ভূমিকায় দেখা যাবে পরিচিত মুখ খালেদা আক্তার কল্পনাকে। প্রায় তিন বছর পর কোন মিউজিক ভিডিওর জন্য আবারও শুটিং করলেন কল্পনা। মিউজিক ভিডিওটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকবেন আশফাক রানা ও সায়রা। এটি নির্মাণ করছেন সৈকত রেজা।

এ প্রসঙ্গে খালেদা আক্তার কল্পনা  বলেন, ‘মিউজিক ভিডিওর জন্য অনেক প্রস্তাব আসে। কিন্তু গল্প পছন্দ না হওয়ায় ফিরিয়ে দিই। এই মিউজিক ভিডিওর গল্প শুনে পছন্দ হয়েছে বলেই রাজি হয়েছি। দর্শকরা ভালো কিছুই পেতে যাচ্ছে।‘

অন্যদিকে ইমরান বলেন, ‘খালেদা আক্তার কল্পনার অভিনয়ের ভক্ত আমি। আমার গানে তিনি অভিনয় করেছেন এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। অডিওতে গানটির জন্য অনেক সাড়া পেয়েছি। আশা করছি মিউজিক ভিডিও প্রকাশের পর সেই সাড়াতে নতুন মাত্রা যোগ হবে।‘

নির্মাতা সৈকত রেজা বলেন, ‘অনেক আগেই গানটি শুনেছি। মিউজিক ভিডিও নির্মাণের দায়িত্ব যখন আমার উপর পড়ল তখন থেকেই এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আশা করছি শ্রোতা-দর্শকদের ভালো কিছু উপহার দিতে পারবো।‘

উল্লেখ্য, ‘নিশি রাতে চান্দের আলো’ গানটি দিয়েই প্রথমবারের মতো কোন ফোক গানে কণ্ঠ দেন ইমরান। অ্যালবামটি বাজারে এনেছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিডি চয়েস।

 

মাগুরায় গাছে বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন, গ্রেফতার ২

ছাগলে সবজি ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগে মাগুরা সদর উপজেলার কুকনা গ্রামে মালতী রাণী (৪০) নামে এক গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার কুকনা ঘোষপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এলাকার কয়েকজন মালতী রাণীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে।

মালতী রানী জানান, সংসারে বাড়তি আর্থিক জোগানের জন্য তিনি হাঁস-মুরগি পালন করেন ও ফাঁকা মাঠে গরু-ছাগল চরান। এ নিয়ে প্রতিবেশী ভরত কুমার প্রায়ই তাকে বকাঝকা করেন। বিষয়টি এলাকার কয়েকজনকে জানালে ভরত কুমার তার ওপর ক্ষিপ্ত হন ও মালতীর একটি গরু সম্প্রতি লোক দিয়ে গোয়াল থেকে খুলে নিয়ে যান। ঘটনাটি মালতী মাগুরা সদর থানায় অবহিত করলে ভরত কুমার তার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হন। এরই এক পর্যায়ে গতকাল বিকালে মালতী রানীর পোষা ছাগল ভরত কুমার ঘোষের সবজি খেতে ঢুকে পড়লে ভরত কুমার ও অন্যরা তার নামে নানা কুৎসা রটিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেদম মারধর করে নির্যাতন চালান। বিষয়টি এলাকাবাসী পুলিশকে জানালে অভিযুক্তরা তার বাঁধন খুলে দেন।

নির্যাতিত মালতী রানী কুকনা গ্রামের রতন কুমার শীলের স্ত্রী।

এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ এসে মালতীকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সুলতা মাগুরা সদর থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

পরে শুক্রবার রাতে পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের হবে।

 

এক মিনিটে তৈরি করুন মজাদার চিজকেক

বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার হল “চিজকেক”। বড় বড় বেকারীতে গেলে দেখতে পাওয়া যায় নানান স্বাদের চিজকেক। অনেকেই আছেন যারা ঘরে কেক তৈরি করেন। আপনি চাইলে চিজকেকও ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন। তাও মাইক্রোওয়েভে! মাইক্রোওয়েভে মাত্র এক মিনিটে তৈরি করে নিন দারুন মজার তিনটি চিজকেক।

উপকরণ:

ওরিয়ো চিজকেক

৪ আউন্স(১১৫ গ্রাম) চিজ ক্রিম

১ কাপ(২২৫ গ্রাম) টকদই

১/২ চা চামচ ভ্যানিলা

৪ টেবিল চামচ চিনি

২টি ডিমের সাদা অংশ

১ টেবিল চামচ ময়দা

১/৩ কাপ ওরিয়ো চকলেট বিস্কুট গুঁড়ো

নিউটেলা চিজকেকের জন্য আরও প্রয়োজন হবে  
নিউটেলা
ওরিয়ো কুকিস

ফানফেটি চিজকেকের জন্য আরও প্রয়োজন হবে

দুটি চিনিমুক্ত বিস্কুট

১ টেবিল চামচ স্পার্কেলস

প্রণালী:

ওরিয়েও চিজকেক

১। একটি পাত্রে ক্রিম চিজ, টকদই, ভ্যানিলা, চিনির গুঁড়ো, ডিমের সাদা অংশ এবং ময়দা ভাল করে বিট করে নিন।

২। এখন মগে প্রথমে ওরিয়ো বিস্কুটের গুঁড়ো দিয়ে দিন।

৩। এবার চিজের মিশ্রণের সাথে ওরিয়ো বিস্কুটের গুঁড়ো ভাল করে মেশান। মিশ্রণটি মগে ঢেলে দিন।

৪। উপরে কিছুটা বিস্কুটের গুঁড়ো ছিটিয়ে মাইক্রোওয়েভে এক মিনিট বেক করতে দিন।

৫। এক মিনিট পর এটি বের করে ২ ঘন্টার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন।

৬। দুই ঘন্টার পর পেয়ে যান মজাদার ওরিয়ো চিজকেক।

নিউটেলা চিজকেকে

নিউটেলা চিজকেক তৈরির জন্য একটি পাত্রে নিউটেলা ভাল করে বিট করে নিন। এরসাথে চিজকেকের বেইজ (যেটি ওরিয়ো চিজকেক তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে) সেটি মিশিয়ে নিন। ব্যস তৈরি হয়ে গেল নিউটেলা চিজকেক।

ফানফেটি চিজকেক

ফানফেটি চিজকেক তৈরির জন্য পাত্রে প্রথমে বিস্কুটের গুঁড়ো দিয়ে তার উপর চিজকেকের বেইজ (যেটি ওরিয়ো কেকের জন্য তৈরি করা হয়েছে) দিয়ে দিন। এর সাথে  স্পার্কেলস দিয়ে দিন। তারপর ওরিয়েও চিজকেক তৈরির সম্পূর্ণ প্রণালীটি অনুসরণ করুন।

এইভাবে পছন্দমত চিজকেক তৈরি করে ফেলুন মাত্র এক মিনিটে।

 

সুপারহিরো চরিত্রের ১০ হলিউড সিনেমা

কমিকস বইয়ের পাতা থেকে একসময় শিশুদের কল্পনার জগতে বাস করত অতিমানবীয় শক্তির অধিকারী সুপারহিরোরা। সেখান থেকে একদল নির্মাতা তাদের তুলে ধরেছেন সেলুলয়েডের ফিতায়। সুপারহিরোদের কাজ নানান অভিযানে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করা। বর্তমান সময়ের দর্শকদের কাছে সুপারহিরো সিনেমা একটি বিশেষ আকর্ষন।

কমিক বুকের সুপারহিরো সিনেমার মূল বৈশিষ্ট্য সাধারণত পৃথিবী অথবা সমাজের প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী নেতিবাচক চরিত্রকে প্রতিরোধ করার মাধ্যমে সেই অতিমানব নায়ক পুরো মানবজাতিকেই রক্ষা করে। এখানে মূল চরিত্র বা নায়ক বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন হয় এবং তার প্রধান কাজ হচ্ছে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ভিলেনের বিরুদ্ধে লড়াই করা। ৪০ দশকে টিভির জন্য প্রথম সুপারহিরো সিনেমা নির্মিত হয়। ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রিচার্ড ডোনার পরিচালিত ‘সুপারম্যান’ প্রথম পূর্নদৈর্ঘ্য সুপারহিরো সিনেমা।

কমিক বই থেকে নির্মিত এমন ১০ সুপারহিরো চরিত্র নিয়ে নির্মিত সিনেমা নিয়ে আমাদের আজকের প্রতিবেদন-

১. আয়রন ম্যান
সুপারহিরো চরিত্রগুলোর মধ্যে আরও একটি অন্যতম চরিত্র আইরন ম্যান। এটিও মারভেল কমিকসের একটি চরিত্র। ২০০৮ সালে মুক্তি পেল ‘আয়রন ম্যান’। প্রথম পর্বের সাফল্যের পরে দ্বিতীয় পর্বটিও যথেষ্ট সাড়া পেয়েছে। এটি মারভেল সিনেমাটিক ইউনিভারস ফ্রাঞ্চাইজির প্রথম চলচ্চিত্র। পরবর্তীতে ২০১০ এবং ২০১৩ সালে এই সিরিজের পরবর্তী দুই চলচ্চিত্র আইরন মান টু এবং আইরন ম্যান থ্রি মুক্তি পায়। এই সুপারহিরো সিনেমার পরিচালক জন ফ্যাভ্রু। আয়রন ম্যান নামের মার্ভেল কমিকসের চরিত্রকে সিনেমায় রূপ দিয়েছেন এই পরিচালক। আয়রন ম্যান একজন সাধারণ মানুষ মাত্র, কিন্তু নিজের উদ্ভাবনী শক্তি এবং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিজেকে আয়রন ম্যানে রূপান্তর করেন। আয়রন ম্যান সিনেমায় স্টার্কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র, জেফ ব্রিজেস এবং গিনেথ প্যালট্রো।

২. টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল
অ্যাকশনধর্মী এ সুপারহিরো সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯০ সালে। এটি  টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল বা টি এম অ্যান টি ফ্রাঞ্চাইজিসের প্রথম চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন স্টিভ ব্যারন। এর পরে এই সিরিজের আরও চলচ্চিত্র যেমন- ১৯৯১ সালে মুক্তি পায় টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল : দ্য সিক্রেট অফ দ্য অজ, ১৯৯৩ সালে টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল থ্রি এবং সর্বশেষ ২০০৭ সালে মুক্তি পায় টি এম অ্যান টি চলচ্চিত্রটি। ২০১৪ সালের আগস্টে মুক্তি পায়  টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল এর আরেক পর্ব।

৩. অ্যান্ট ম্যান
২০০৬ সাল থেকে শুরু হয় ‘অ্যান্ট ম্যান’ ছবির প্রি প্রোডাকশনের কাজ। সব শেষে ২০১৫ সালে মুক্তি পায় ‘অ্যান্ট ম্যান’। সিনেমাটি নিয়ে এডগার রাইট থেকে শুরু করে জস ওয়েডন, সবারই প্রত্যাশা ছিল অ্যান্ট ম্যান হবে মার্ভেলের এ যাবতকালের সেরা সিনেমা। কিন্তু রাইট আর স্টুডিওর মতের মিল না হওয়ায় ছেড়ে গেলেন পরিচালক। নতুন পরিচালক হিসেবে আসলেন পেইটন রিড—যিনি গল্প ফাঁদলেন এমন এক সুপার হিরোর, যাতে ছিল এর উৎপত্তির ইতিহাস। পল রুড আর মাইকেল ডগলাসের অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয় এই ছবিতে।

৪. দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক
মারভেল কমিকসের অন্যতম আরও একটি চরিত্র হাল্ক। ২০০৩ সালে পরিচালক আং লি মারভেল কমিকসের এই চরিত্রের উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করেন হাল্ক নামক চলচ্চিত্রটি। ২০০৮ সালে নির্মিত হয় এই সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক। ২০০৮ সালে প্রথম কিস্তিতে দর্শক মন খুব একটা ভরাতে না পারলেও ’হাল্ক’ এর ‘সেমি-সিক্যুয়েল’, ‘সেমি-রিবুট’ দ্বিতীয় কিস্তি পূরণ করেছে সেই প্রত্যাশার অনেকটাই। কিছুটা মজা আর প্রথম থেকেই অ্যাকশনে পরিপূর্ণ ‘দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক’ এর অর্জনের পেছনে রয়েছেছে ‘ব্রুস ব্যানার’(এডওয়ার্ড নর্টন) এর অসাধারণ অভিনয়।

৫. ক্যাপ্টেন অ্যামেরিকা
মারভেল কমিকস থেকে ১৯৯০ সালে পরিচালক আলবার্ট পাইয়ুন নির্মাণ করেন ক্যাপ্টেন আমেরিকা ছবিটি। এটি আমেরিকান সুপারহিরো চলচ্চিত্র। কমিকস বইয়ের কাহিনি থেকে অবশ্য এই চলচ্চিত্রে কিছুটা ভিন্নতা নিয়ে আসা হয়েছিল। চলচ্চিত্রে ক্যাপ্টেন আমেরিকা চরিত্রে অভিনয় করেন ম্যাট সালিঙ্গার। ২০১২ সালে নির্মিত হয় এই সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ক্যাপ্টেন আমেরিকা- দ্য ফাস্ট অ্যাভেঞ্জার এবং ২০১৪ সালে মুক্তি পায় ক্যাপ্টেন আমেরিকা-দ্য উইন্টার সোলজার। এ বছর মে মাসে মুক্তি পায় ক্যাপ্টেন আমেরিকা: সিভিল ওয়ার। ছবিটি পরিচালনা করেন রুসো ব্রাদার্স।

৬. ব্যাটম্যান
টেলিভিশন সিরিজ হিসেবে আগে দেখা গেলেও সম্পূর্ণ চলচ্চিত্র হিসেবে সুপারহিরো ব্যাটম্যানকে চলচ্চিত্রের পর্দায় দেখা যায় ১৯৬৬ সালে ‘ব্যাটম্যান: দ্য মুভি’ শিরোনামে। এই চলচ্চিত্রে ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন অ্যাডাম ওয়েস্ট আর রবিন চরিত্রে অভিনয় করেন বার্ট ওয়াড। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন লেসলি এইচ মারটিন্সন। পরিচালক টিম বার্টন ১৯৯২ সালে ডি সি কমিকস এর সুপারহিরো ব্যাটম্যানকে নিয়ে ওয়ারনার ব্রস ফ্রাঞ্চাইজিসের দ্বিতীয় দফায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি নির্মাণ করেন ব্যাটম্যান রিটার্নস চলচ্চিত্রটি।

এছাড়া পরবর্তীতে এই সিরিজের ব্যাটম্যান ফরএভার ১৯৯৫ সালে, ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন ১৯৯৭ সালে, ব্যাটম্যান- সাব জিরো ১৯৯৮ সালে, ব্যাটম্যান বিয়ন্ড ১৯৯৯ সালে, ব্যাটম্যান বিয়ন্ড-রিটার্ন অফ জোকার ২০০০ সালে, ব্যাটম্যান- মিস্ট্রি অব ব্যাটওম্যান ২০০৩ সালে মুক্তি পায়। ২০০৫ সালে ব্যাটম্যান সিরিজের রিবুট হিসেবে পরিচালক ক্রিস্ট্রফার নোলান নির্মাণ করেন ব্যাটম্যান বিগেন্স। এই চলচ্চিত্রে ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন ক্রিশ্চিয়ান বেল। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ব্যাটম্যান-গোথাম নাইট, ২০১২ সালে ডার্ক নাইট রিটার্নস পার্ট ওয়ান, ডার্ক নাইট রাইজেস এবং ২০১৩ সালে ডার্ক নাইট রিটার্নস পার্ট টু মুক্তি পায়।

৭. সুপারম্যান
পরিচালক রিচার্ড ডোনার ডি সি কমিকসের সুপার হিরো চরিত্রটি থেকে নির্মাণ করেন সুপারম্যান চলচ্চিত্রটি। এ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭৮ সালে। সুপারম্যান চলচ্চিত্রটির ব্যাপক সাফল্যের কারণে ১৯৮০ সালে পরিচালক রিচার্ড লেসটার নির্মাণ করেন সুপারম্যান টু। এটি ছিল মূলত সুপারম্যান চলচ্চিত্রটির সিকুয়্যাল। এর গল্প এবং চিত্রায়ন অনেক প্রশংসিত হয়েছিল এবং এটি ছিল সেই বছরের তৃতীয় ব্যবসা সফল সিনেমা। এর আয় করে ১০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ডি সি কমিকস এর সুপারহিরো সুপারম্যানের কাহিনি নিয়ে নির্মিত সুপারম্যান থ্রি চলচ্চিত্রটি এর আগের দুইটি সিকুয়্যাল। এটিও পরিচালনা করেন পরিচালক রিচার্ড লেসটার। ১৯৮৩ সালে মুক্তি পাওয়া সুপারম্যান থ্রি আগের দুই সিরিজের তুলনায় কম ব্যবসা করে। এই সিরিজের চার নম্বর চলচ্চিত্র সুপারম্যান ফোর দ্য কুয়েস্ট ফর পিস চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ১৯৮৭ সালে। ২০০৬ সালে সুপারহিরো চলচ্চিত্র নির্মাতা ব্রায়ান সিঙ্গার আবারও ডি সি কমিকস চরিত্র সুপারম্যান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়া ২০০৭ সালে সুপারম্যান-ডুমস ডে, ২০১২ সালে সুপারম্যান ভার্সেস এলিট, ২০১৩ সালে ম্যান অব স্টিল ছবিটি মুক্তি পায়।

৮. এক্স-মেন
এক্স ম্যান সিরিজের প্রথম ছবিটি  মুক্তি পায় ২০০০ সালে। ১০৪ মিনিট দৈর্ঘের এই ছবিটির পরিচালক ছিলেন ব্রায়ান সিঙ্গার। এক্স ম্যান সিরিজের দ্বিতীয় ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৩ সালে। এর পর ২০০৬ সালে মুক্তি পায় এক্স ম্যান সিরিজের তৃতীয় ছবি ‘এক্সম্যান: দ্য লাস্ট স্ট্যান্ড’। ছবিটি পরিচালনা করেন ব্রিট রাটনার। টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স এবং মারভেল এন্টাটেইনমেন্টের যৌথ প্রযোজনায় ছবিটি পরিচালনা করেছেন এক্স-ম্যান সিরিজের প্রথম দুটি এবং শেষ ছবির পরিচালক ব্রায়ান সিঙ্গার। এই সিরিজের ছবি ‘এক্স-ম্যান ডেইজ অব ফিউচার পাস্ট’-এর পরবর্তী প্রেক্ষাপট নিয়েই তৈরি করা হয়েছে শেষ ছবিটি। সর্বশেষ এই বছর মুক্তি পায় এই সিরিজের ‘এক্স-ম্যান-অ্যাপোক্যালিপস’ ছবিটি।

৯. স্পাইডারম্যান
সুপারহিরো চলচ্চিত্র পরিচালক স্যাম রাইমি ২০০২ সালে মারভেল কমিকসের অন্যতম চরিত্র স্পাইডার ম্যান কে নিয়ে এই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন এবং নাম দেন ‘স্পাইডার ম্যান’। এটি ছিল কমিকস বইয়ের উপর ভিত্তি করে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র। ২০০৪ এই সিরিজের ‘স্পাইডারম্যান টু’ এবং ২০০৭ সালে ‘স্পাইডার ম্যান থ্রি’ মুক্তি পায়।

১০. দ্য গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি
২০১৪ সালের সুপারহিরো সিনেমা ‘দ্য গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি’। ক্রিস প্র্যাট, জো সালদানা, ভিন ডিজেল, ডেইভ বাতিস্তা, ব্র্যাডলি কুপারের মতো তারকাদের নিয়ে নির্মিত হলিউড ব্লকবাস্টার ‘গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি’ ছবিটি ডিজনির ব্যানারে মারভেল কমিকসের সুপারহিরোদের নতুন এক কাহিনী। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর বক্স অফিসে রীতিমতো ঝড় তোলে ‘পৃথিবীর রক্ষাকর্তা’দের নিয়ে বানানো ছবিটি।

 

পীরের ‌তরিকা কী ও কেন?

এভাবেই পীর ও মুরিদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং চেষ্টা-সাধনার মধ্য দিয়ে উভয়েই আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দায় রূপান্তরিত হবেন। পীর হবেন তার সৎপথ প্রদর্শনের অশেষ সওয়াব পেয়ে, আর মুরিদ হবেন সঠিক পথে আমলের মাধ্যমে আল্লাহর প্রেমে নিমজ্জিত হয়ে
মুসলমানদের আধ্যাত্ম সাধনার নিয়ম-নীতি ও পদ্ধতিকে তরিকা বলে। আধ্যাত্ম সাধনারত ব্যক্তিকে তরিকতপন্থী বা সালেক বলে। শরিয়ত অনুযায়ী আমল করার যেমন মাজহাব, আধ্যাত্মিক সাধনার জন্য তেমনি তরিকা। আন্তরিকতার সঙ্গে শরিয়ত অনুযায়ী আমল করার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি লাভ করে প্রজ্ঞাবান হওয়াই তরিকতের উদ্দেশ্য। কোরআন-হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত শরিয়তের আমল যথা- নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত ইত্যাদি প্রতিপালনের পাশাপাশি জিকির-ফিকির, ধ্যান, সৎসঙ্গ, কুরিপু দমন এবং সৎ স্বভাব ইত্যাদি যেমন কার্যাবলি প্রতিপালনের দ্বারা একজন ব্যক্তি নিজেকে পরিপূর্ণ ঈমানদার এবং মানবীয় গুণাবলির দ্বারা ভূষিত করতে পারে। এ সাধনায় অগ্রসর ব্যক্তি মহান প্রভু আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভে ধন্য হয়। সে ইহ এবং পারলৌকিক জীবনে আল্লাহ জাল্লা শানুহুর অফুরন্ত নেয়ামত দ্বারাও সিক্ত হয়। জান্নাতি এ নেয়ামতরাজির আকর্ষণে মানুষ তরিকতপন্থী হতে ছুটে আসে আধ্যাত্মিক জগতের শিক্ষক সুফি, দরবেশ, পীর এবং মুরশিদের কাছে। এ পথে যিনি যতটুকু অগ্রসর হন, তার স্প্রিহা তত বেড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে তারা দুনিয়াবিমুখ হয়ে মহান প্রভু এবং রাসূল (সা.) এর প্রেমে মাতোয়ারা আশেকি জীবন যাপনে ব্রতি হন।

বাংলাদেশে আধ্যাত্ম সাধনার এ ভুবনে হক্কানি পীর যেমন আছেন, তেমনি আছে বহু বাতিল ও বেশরা পীর-ফকির। তাদের খপ্পরে পড়ে মানুষ যেমন প্রতারিত হচ্ছে, তেমনি জান্নাত লাভের আশায় এসে ঈমানে দৌলতটুকু শিরকের সঙ্গে মিশ্রিত করে দোজখি হয়ে যাচ্ছে। তাই তরিকতপন্থী হওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। কার থেকে আমি তরিকা গ্রহণ করছি? তিনি সত্যিকারভাবে কামিল কিনা? আমাকে আল্লাহর সান্নিধ্যের দিকে পথ প্রদর্শনের যোগ্যতা তার আছে কিনা? এসব বিষয় নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়েই শুধু তরিকা লাভের জন্য তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করা যেতে পারে। এখানে মনে রাখতে হবে, পীর ধরতে হবে অধ্যাত্মিক সাধনার পথে ব্রতি হওয়ার জন্য। কোনোভাবে দুনিয়াবি স্বার্থে মুরিদ হওয়া সম্পূর্ণভাবে নাজায়েজ। তদ্রুপ যিনি মুরিদ করবেন, তিনিও নিছক আল্লাহর বান্দাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের পথের দিশা দিতেই সচেষ্ট থাকবেন। কোনো ধরনের দুনিয়াবি গরজ তার মধ্যে থাকবে না। এভাবেই পীর ও মুরিদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং চেষ্টা-সাধনার মধ্য দিয়ে উভয়েই আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দায় রূপান্তরিত হবেন। পীর হবেন তার সৎপথ প্রদর্শনের অশেষ সওয়াব পেয়ে, আর মুরিদ হবেন সঠিক পথে আমলের মাধ্যমে আল্লাহর প্রেমে নিমজ্জিত হয়ে।

শরিয়তের ওপর আমলের জন্য আগে অনেক মাজহাব থাকলেও কালের আবর্তে তা চারটি মাজহাবে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। তদ্রুপ তরিকতের ভুবনে বহু তরিকার সন্ধান পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা প্রসিদ্ধ চারজন বিখ্যাত পীরের নামে প্রতিষ্ঠিত চিশতিয়া, কাদেরিয়া, মোজাদ্দেদিয়া ও নকশবন্দিয়া তরিকা নামে বিশেষ করে ভারতবর্ষে সীমিত হয়ে গেছে। তরিকতপন্থী কোনো ব্যক্তি মাত্র একটি তরিকার সবক যথাযথভাবে আদায় করে কামালিয়াতের স্তরে উপনীত হতে পারেন। একাধিক তরিকার সবক সম্পন্ন করতে পারলে তা আরো ভালো। তবে যেহেতু তরিকতের এ অঙ্গন সম্পূর্ণরূপে অনুভূতিনির্ভর ও লোকচক্ষুর অন্তরালের বিষয়। এর কোনো কিছুই প্রকাশযোগ্য নয়। তাই এ পথের পথিকমাত্রই সর্বদা নিজেকে আড়াল করে রাখতে পছন্দ করেন। এ পথে যা কিছু অর্জন হয়, তা নিতান্তই আখেরাতের ও একান্তভাবে স্রষ্টা এবং সৃষ্টির গোপন অভিসার মাত্র। তারা নির্জনে রাতের আঁধারে প্রভুর কুদরতি কদমে লুটিয়ে পড়ে রোনাজারি করে আপন অপরাধ ও অক্ষমতার বিষয়ে ক্ষমা ভিক্ষা করে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন। দুনিয়ার যতবড় ক্ষতি হোক অথবা দুনিয়া তার পদতলে গড়াগড়ি খেলেও তার মধ্যে কোনোরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে না। প্রেমানলে দগ্ধ অতৃপ্ত হাহুতাশপূর্ণ আন্তরিক অবস্থায় তার জীবন কাটে।

ড. সৈয়দ মুহা. শরাফত আলী
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

 

যেখানে বসবাস করার জন্য পাওয়া যায় টাকা!

চমৎকার সুন্দর সব জায়গা। যেমন নিরিবিলি তেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আঁধার। সেখানে আপনি বসবাস করতে পারবেন বিনামূল্যে তো বটেই, থাকার জন্য টাকা এবং অন্যান্য সুবিধাদিও দেওয়া হবে এখানে! খুব কম মানুষই জানেন, এমন সুবিধাও পৃথিবীতে বিদ্যমান। বিভিন্ন কারণে প্রশাসন চান কিছু মানুষ এসব জায়গায় বসবাস করুক এবং সে জন্য পর্যাপ্ত স্বাচ্ছন্দ্য তারা নাগরিকদের প্রদান করেন। আসুন জেনে নিই এমন চমৎকার কয়েকটি জারগার কথা যেখানে আপনি ভিন্ন দেশী সংস্কৃতির মাঝে বাস করতে তো পারবেনই, একই সাথে দেওয়া হবে চমৎকার সব সুবিধা।
 
ডেট্রিয়ট-মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র
‘পশ্চিমের প্যারিস’ বলা হয় ডেট্রয়েটকে। যুক্তরাষ্ট্রের অটোমোবাইল রাজধানী এটি। বিংশ শতাব্দীর ২য় ভাগে শহরটি তার জৌলুস হারাতে শুরু করে এবং দিনে দিনে জনমানবশূন্য হয়ে যায়। কিন্তু প্রশাসন আবারও জীবন ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হয়েছেন এখানে। আর সেজন্যেই নেওয়া হয়েছে ‘চ্যালেঞ্জ ডেট্রয়েট’। এই প্রজেক্টের অধীনে ২৫০০ মানুষকে ফ্রি থাকার সুযোগ তো দেওয়া হবেই, তাদের জন্য কাজের ব্যবস্থাও করা হবে।
 
আলাস্কা, যুক্তরাষ্ট্র
আপনি কি শীত ভালবাসেন? তুষারবৃত অঞ্চলে বাস করতে চান? শুভ্র বরফময় সকাল আর শীতল আবহের ঘর নিয়ে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে আলাস্কা। এখানে সরকারের আলাদা একটি ফান্ড আছে যে পেশাদার লোকেরা আলাস্কায় বাস করতে চাইলে সরকার তাদের পূর্ণ সহযোগিতা করবে। এজন্য আপনাকে যে শর্তটি পালন করতে হবে তা হল, অন্তত ১ বছর আলাস্কায় বাস করতে হবে।
 
Saskatchewan Province, কানাডা
কানাডার এই প্রদেশটি নতুন যোগ্যতাসম্পন্ন গ্রাজুয়েট (২০১০ এর পর গ্রাজুয়েট করেছেন যারা) যারা এখনও তাদের ক্যারিয়ার কীভাবে গড়বেন ঠিক করেন নি তাদের জন্য রেখেছে অনন্য সুযোগ। তারা ৭ বছর পর্যন্ত ২০ হাজার কানাডিয়ান ডলার পাবেন এখানে থাকা এবং কাজ করার জন্য!
নায়াগ্রা ফলস, নিউ ইয়র্ক
পৃথিবীর সবচেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্য্যমন্ডিত জলপ্রপাতের একটি নায়াগ্রা ফলস। এর কাছে থাকার সুযোগ পাবেন আপনি, ভাবা যায়? সরকার গ্রাজুয়েট করা ছাত্রদের এখানে ৭০০০ ডলার পর্যন্ত অর্থ প্রদান করেন তারা যদি এখানে থাকতে চান এবং ফলসটির কাছাকাছি গড়ে ওঠা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট, হোটেলে কাজ করেন।
 
পনগা- অস্টারিয়াস, স্পেন
বিস্ময়কর ছোট গ্রামটি উত্তর-পূর্ব স্পেনের সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে অবস্থিত। এটি দেশটির অন্যতম সবচেয়ে পুরাতন গ্রাম। জনশক্তি বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার এখানে বসবাসকে উৎসাহিত করেন। এজন্য যেসব জুটি অন্য অঞ্চল থেকে এখানে বাস করতে আসেন তাদেরকে জুটি প্রতি ৩০০০ ইউরো প্রদান করা হয় এবং আরও ৩০০০ ইউরো প্রদান করা হয় তাদের প্রতিটি শিশুর জন্য। পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর গ্রামে বসবাসের এটি একটি চমৎকার সুযোগ।
Utrecht, নেদারল্যান্ডস
গভীর জ্ঞানচর্চা এবং সামাজিক বিজ্ঞানে পারদর্শীতার জন্য বিশেষভাবে খ্যাত নেদারল্যান্ডস। তারা এই শহরের জনগণের উপর একটি এক্সপেরিমেন্ট করছেন। সেই অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিককে ১০০০ ডলার পে করা হবে এখানে বসবাসের জন্য।
Curtis, Nebraska, USA
এখানে ঘটেছে অন্যরকম মজার একটি বিষয়। স্থানীয় জনগণ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, তারা গ্রামটির জন্য যতটা করা প্রয়োজন ততটা করছেন না। প্রশাসন জনগনকে একটি অফার দিয়েছেন যে, তারা জমি বিনামূল্যে পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। বিনিময়ে অঞ্চলটির সংস্কৃতি রক্ষা এবং উন্নতির জন্য কী কী গঠনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়ে ভাল পরামর্শ দিতে হবে।
 
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

প্রেশার কুকারে তৈরি করে নিন মজাদার আলুর দম

রুটি, লুচি অথবা পরোটার সাথে আলুর দম খাবারটি খেতে দারুন লাগে। ভারতীয় এই খাবারটি বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু আলুর দম তৈরি করা কিছুটা সময় সাপেক্ষ হওয়ায় অনেকেই এটি তৈরি করতে চান না। এবার আর চিন্তা নেই। খুব সহজে প্রেশার কুকারে তৈরি করে নিতে পারবেন রেস্টুরেন্টের স্বাদের আলুর দম।

উপকরণ:

১টি তেজপাতা

২টি দারুচিনি

১টি বড় এলাচ

১টি ছোট এলাচ

১ টেবিল চামচ জিরা

১ কাপ পেঁয়াজ কুচি

১/২ ইঞ্চি আদা কুচি

৩/৪ কোয়া রসূন কুচি

৭/৮ টি গোল মরিচ

১/২ টেবিল চামচ জিরা পাউডার

১/৪ কাপ দই

১০-১২ টি ছোট আলু সেদ্ধ

১ চা চামচ লাল মরিচ গুঁড়ো

১/৩ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো

১ টেবিল চামচ মেথি

১ চা চামচ ধনেপাতা কুচি

লবণ

পানি

তেল

প্রণালী:

১। চুলায় প্রেশার কুকার দিন। এরপর এতে তেল দিয়ে তেজপাতা, বড় এলাচ, ছোট এলাচ, দারুচিনি, গোল মরিচ, জিরা এবং পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নাড়ুন।

২। এরপর এতে আদা কুচি রসুন কুচি দিয়ে নাড়ুন। পেঁয়াজ নরম হয়ে আসলে এতে লবণ দিয়ে দিন।

৩। সবকিছু ভাল করে মেশান এবং পেঁয়াজ বাদামী না হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।

৪। এবার এতে এক কাপ পানি দিয়ে দিন। ৫ থেকে ৬ টা শিসের জন্য অপেক্ষা করুন। শিস দেওয়া হয়ে গেলে, চুলা থেকে প্রেসার কুকার নামিয়ে ফেলুন।

৫। আরেকটি প্যানে তেল দিয়ে সিদ্ধ আলুগুলো দিয়ে দিন। এতে লবণ, মরিচ গুঁড়ো এবং হলুদ গুঁড়ো দিয়ে ভাজুন।

৬। তারপর মাঝারি আঁচে চুলায় প্রেসার কুকারটি দিন। এখন এতে পেঁয়াজের মিশ্রণটি দিয়ে দিন।

৭। পেঁয়াজ নরম হয়ে গেলে এতে বাদাম দুধ (কাজু বাদাম এবং দুধ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে তৈরি করে নিন বাদাম দুধ)দিয়ে দিন। এরপর এতে হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।

৮। এবার এতে টক দই দিয়ে দিন। টক দই দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়ার পর এতে মেথি পাতা দিয়ে দিন।

৯। তারপর এতে ভাজা আলুগুলো দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করুন। আপনি যদি গ্রেভি না রেখে কিছুটা পাতলা রাখতে চান, তবে এতে পানি দিয়ে রান্না করুন। ৫ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন।

১০। পরোটা অথবা লুচির সাথে পরিবেশন করুন মজাদার আলুর দম।

 

লেদার পোশাকের যত্ন নিবেন কিভাবে?

সুন্দর, চাকচিক্য ও আভিজাত্যের একটা স্পর্শ পাওয়া যায় লেদারের পোশাক পরার মধ্যে। আর প্রাচীনকাল কিংবা বর্তমানকাল যে সময়ের কথাই বলেন না কেন? এর চাহিদা সব সময়ই ছিল। আর যদি দেহের গড়নের সাথে পুড়োপুড়ি মিলে যায়! তাহলে তো কথাই নেই। এক কথায় দারুণ মানায়।

কিন্তু আপনি যে লেদারের পোশাকটি পরছেন সেটিরও তো নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। না হলে আপনার পছন্দসই কিংবা ফ্যাশনের আনুসাঙ্গিক হিসেবে ব্যবহারের এ বিষয়টি দেখতে অল্পতেই কুৎসিত হয়ে পড়বে। লেদারে ফাঙ্গাস জমে যাওয়া, ফেডেড এমনকী ফেটেও যেতে পারে। তাই লেদারের পোশাকে নিজেকে ফ্যাশনেবল দেখতে একটু বেশিই যত্ন নিন।

লেদার পোশাকের যত্ন নিবেন যেভাবে

১.লেদারের পোশাক নিজের হাতে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। যদি একান্তই ওয়াশিং মেশিনে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে তা হলে আগে পোশাকের গায়ে লেখা নির্দেশাবলী ভাল করে পড়ুন, আর তা মেশিনে দেওয়ার উপযুক্ত কি না।


২.হালকা গরম পানিতে লেদারের জামাকাপড় ধুয়ে রাখলে তা ভাল থাকে। সাবান হিসাবে ব্যবহার করুন কোনও শ্যাম্পু। কাচার আগে বেশ কিছু ক্ষণ শ্যাম্পুতে ডুবিয়ে রাখুন পোশাক।

৩.কাপড় কাচার ব্রাশ ব্যাবহার না করে হাত বা স্পঞ্জ দিয়ে ঘষুন। কাচার পর জল না চিপে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখুন। এতে পানি ঝরে যাবে।


৪.লেদার গারমেন্টসে কোনও মেটালের চেন, বোতাম বা বকলেস থাকলে সেটি শুকনো টাওয়েল দিয়ে মুছে ফেলুন। যাতে এতে মরচে না পরে।

৫.জল ঝরে যাওয়ার পর শুকনো টাওয়েল পেতে পোশাকটি তার ওপর রাখুন।

৬.সম্পূর্ণভাবে শুকিয়ে যাওয়ার পর পোশাক ভাল করে লেদার কন্ডিশনার, বা তেল লাগাতে হবে। যাতে লেদার নরম এবং নমনীয় থাকে।

সূত্র: আনন্দবাজার 

সম্পাদনা : গোরা

Save

Save

Save

Save

Save

 

সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০ নারী

নিজ অধিকার আদায়ে এখনো লড়ছেন নারী। তবে কাচের দেয়াল ভাঙতে শুরু করেছেন তাঁরা। বিশ্বের শীর্ষ ১০ জন ক্ষমতাধর নারীর একজন হয়ে উঠেছেন। তাঁদের গল্পই এখানে তুলে ধরা হলো:

আঙ্গেলা ম্যার্কেলআঙ্গেলা ম্যার্কেল
২০০৫ সালে জার্মানির প্রথম নারী চ্যান্সেলর হন ম্যার্কেল (৬২)। ২০১৩ সালে তিনি তৃতীয় বা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হন। বলা যেতে পারে, ইউরোপের অর্থনীতির হাল ধরেন ম্যার্কেল। ইউরোপের আর্থিক ও বাণিজ্যিক সংকটের সময় তাঁর মতামত খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। অভিবাসন সমস্যায়ও জোরালো ভূমিকা রেখেছেন তিনি। পদার্থবিজ্ঞানে ডক্টরেট করেছেন ম্যার্কেল। ২০১৫ সালে ফোর্বস সাময়িকী ম্যার্কেলকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী নির্বাচিত করে।

থেরেসা মেথেরেসা মে
মার্গারেট থ্যাচারের পর যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে (৫৯)। গত ১৩ জুলাই ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করার পর ক্ষমতায় আসেন থেরেসা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে যুক্তরাজ্যবাসী ভোট দেওয়ার পর থেরেসা মে ক্ষমতায় আসেন। ২০১০ সালের মে মাস থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যুক্তরাজ্যের ইইউতে থাকার পক্ষে তিনি ব্যাপক প্রচার চালান।

হিলারি ক্লিনটনহিলারি ক্লিনটন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম মনোনীত নারী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন (৬৮)। মার্কিন মুলুকে সব আলোচনা এখন তাঁকে ঘিরে। ১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির ফার্স্ট লেডি ছিলেন। এরপর নিউইয়র্কের স্টেট সিনেটর ও প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অং সান সু চিঅং সান সু চি
মিয়ানমারে গণতন্ত্রের প্রতীক নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অং সান সু চি (৭১)। সামরিক জান্তা সরকারের সাংবিধানিক বাধা থাকার কারণে তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। বছরের পর বছর গৃহবন্দী থাকার পর ২০১৫ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেন। বন্ধুর হাতে তুলে দেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার। সু চি এখন দেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অ্যালেন জনসন সারলিফঅ্যালেন জনসন সারলিফ
লাইবেরিয়ার লৌহমানবী বলে পরিচিতি পেয়েছেন অ্যালেন জনসন সারলিফ (৭৭)। ২০০৫ সালের নভেম্বর মাসে আফ্রিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। নোবেল শান্তি পুরস্কারও পান। তিনি একজন অর্থনীতিবিদ। সাবেক আন্তর্জাতিক কর্মী। ২০১১ সালে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন।

মিশেল ব্যাশলেমিশেল ব্যাশলে
লাতিন আমেরিকার ক্ষমতাধর নারী চিলির প্রেসিডেন্ট মিশেল ব্যাশলে (৬৪)। তিনি বিরোধী দলের সাবেক নেতা। অগাস্তো পিনোশের শাসনামলে ব্যাশলের ওপর অত্যাচার চলে। ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চিলির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্যাশলে। এর আগে তিনি প্রথম নারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন।

ক্রিশ্চিন লেগার্দেক্রিশ্চিন লেগার্দে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রথম নারী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ক্রিশ্চিন লেগার্দে (৬০)। ২০১১ সালে তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি একজন সাবেক আইনজীবী। লেগার্দে ফ্রান্সের প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

জ্যানেট ইয়েলেনজ্যানেট ইয়েলেন
২০১৩ সালে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন ইয়েলেন (৬৯)। ওই সময় এই পদে প্রধানত পুরুষেরাই থাকত। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রধান অর্থনীতিবিদও ছিলেন।

ইরিনা বোকোভাইরিনা বোকোভা
২০০৯ সালে বুলগেরিয়ার বোকোভা (৬৪) ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রথম নারী প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। নারীর সম-অধিকার আন্দোলনে বোকোভার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। জাতিসংঘের মহাসচিব পদে মনোনীত ব্যক্তিদের তালিকায়ও ছিলেন তিনি।

মার্গারেট চ্যানমার্গারেট চ্যান
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক মার্গারেট চ্যান (৬৮) বার্ড ফ্লু ও সার্স মহামারির সময় হংকংয়ের স্বাস্থ্য বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন ভালো চিকিৎসক। জাতিসংঘে নারীস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

সুত্রঃ প্রথম আলো

Save

 

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী আজ

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জে টুঙ্গীপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতার হত্যাকারীদের নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনিও শাহাদাত্ বরণ করেন।

শহীদ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মাত্র ৩ বছর বয়সে পিতা ও ৫ বছর বয়সে মাতাকে হারান। তার ডাক নাম ছিল ‘রেনু’। পিতার নাম শেখ জহুরুল হক ও মাতার নাম হোসনে আরা বেগম। দাদা শেখ কাসেম চাচাতো   ভাই শেখ লুত্ফর রহমানের পুত্র শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বেগম ফজিলাতুন্নেছার বিবাহ দেন। তখন থেকে ফজিলাতুন্নেছাকে তার শাশুড়ি অর্থাত্ বঙ্গবন্ধুর মাতা সাহেরা খাতুন নিজের সন্তানদের সঙ্গে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে তিনি প্রাথমিক লেখাপড়া করেন। অতঃপর সামাজিক রীতি-নীতির কারণে গ্রামে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেন।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মৃতি শক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিল। মনেপ্রাণে তিনি একজন আদর্শ বাঙালি নারী ছিলেন। অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা, অসীম ধৈর্য ও সাহস নিয়ে জীবনে যে কোনো পরিস্থিতি দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করতেন। তার কোনো বৈষয়িক চাহিদা ও মোহ ছিল না। স্বামীর রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বান্তকরণে সহযোগিতা করেছেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত দানশীল। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের রোগে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা, কারাগারে আটক নেতা-কর্মীদের খোঁজ-খবর নেয়া ও পরিবার-পরিজনের যে কোনো সংকটে পাশে দাঁড়াতেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী: বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখেছেন। এই মহীয়সী নারী আমাদের অহঙ্কার। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তিনি দলকে মূল্যবান পরামর্শ দিতেন ও সহযোগিতা করতেন। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে। তিনি ছিলেন বাঙালি নারীর আদর্শ প্রতিকৃতি।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, বঙ্গমাতা যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উত্স হয়ে থাকবে। আমার প্রত্যাশা, এই মহান নারীর জীবনী চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন, বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক অজানা অধ্যায় সম্পর্কে তারা ধারণা পাবে। একজন সাধারণ বাঙালি নারীর মত তিনি স্বামী-সংসার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পরে দেশের পুনর্গঠনে তার অসাধারণ ভূমিকার কারণে তিনি ছিলেন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

বঙ্গমাতার জন্মদিন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় বনানী কবরস্থানে তার স্মরণে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো এ কর্মসূচিতে অংশ নেবে। বেলা ১১টায় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। বাদ আছর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। যুবলীগ পৃথক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। যুব মহিলা লীগ বঙ্গমাতার জন্মদিন উপলক্ষে পথশিশুদের মধ্যে বস্ত্র ও খাদ্য বিতরণ করবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশবাসীকে সাথে নিয়ে পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 

শ্মশান পরিচালনার কাজ করছেন এক নারী

সাধারণত কোন হিন্দু নারী শ্মশানে যান না। কিন্তু চেন্নাইয়ের এক নারী পারভিনা সলোমান সেখানকার বড় ও ব্যস্ত একটি শ্মশান পরিচালনার কাজ করছেন।

কেন তিনি এই পেশা বেছে নিয়েছেন?

চেন্নাইয়ের আন্না নগর জেলায় অবস্থিত ভালানকাডু শ্মশান সেখানকার বড় ও ব্যস্ততম একটি শ্মশান।

আর এখানকার পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন মিস সলোমান।

একটি মৃতদেহ এখানে আসার পর তা কিভাবে সৎকার করা হবে সেসব বিষয়ে তত্ত্বাবধান করেন তিনি।

তাঁর কাজ কিছুক্ষণ দেখলেই বুঝতে পারা যায় কতটা দক্ষতার সাথে তিনি এটি করছেন।

“তামিলনাড়ুতে শিক্ষার হার অনেক,এখানকার ৯০ শতাংশ নারী শিক্ষিত। কিন্তু তারপরও অনেক বাধা-নিষেধের মুখে পড়তে হয় এদের”-বিবিসিকে বলছিলেন মিস সলোমান।

“একটা নারী শ্মশানের কার্যক্রম পরিচালনা করছে অনেকেই এটা স্বাভাবিকভাবে নেয় না। কেউ আমাকে বিদ্রুপ করে, কেউ পাশ থেকে বাজে মন্তব্য করে। তারা প্রশ্ন করে যে আমি কোন ধরনের পরিবারের মানুষ? হয়তো খারাপ মানুষ তাই এ কাজে আসছি। এসব কথা আসলে কষ্ট দেয়”-বলেন পারভিনা সলোমান।

তারা প্রথমে মিস সলোমানকে এসিড নিক্ষেপের হুমকিও দেয়।

তবে আস্তে আস্তে তারা বুঝতে পারে তারা কারও চাকরি নেয়ার ক্ষমতা রাখে না। সময় বদলে গেছে।

প্রায় বারো বছর ধরে এই শ্মশান পরিচালনার কাজে সাথে যুক্ত আছেন পারভিনা সলোমান।

 

চাকরি চলে গিয়েছে? দ্রুত করুন এই কাজগুলো

হঠাৎ করে চাকরি চলে যাওয়ার অনুভূতি কেবল তারপক্ষেই বোঝা সম্ভব যার কিনা চাকরিটা চলে গিয়েছে। রাগ, কষ্ট, ক্ষোভ, হতাশা, দ্বিধা- সবকিছু একসাথে কাজ করতে থাকে যেন মনের ভেতরে সেসময়। বিশেষ করে চাকরিটা যদি কোন পূর্বাভাস ছাড়াই হুট করে চলে যায় তাহলে তো সেই অনুভূতিটা ঠিক ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যত- সবকিছু একসাথে কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে যায় এই সময়টিতে। বর্তমানকে তুচ্ছ মনে হয়, অতীতকে যন্ত্রণার আর ভবিষ্যতকে মনে হয় ভয়ের। কিন্তু এই অবস্থায় কি ঘরে বসে থাকাটা কোন কাজের কথা? একদম না! চাকরি চলে গিয়েছে তো কী হয়েছে? হাত পা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসুন আর করে ফেলুন চটজলদি এই কাজগুলো।

১. রেফারেন্সের সাথে কথা বলুন

আপনার চাকরি চলে গিয়েছে, তারমানে এই নয় যে আর কোন চাকরি আপনাকে করতে হবেনা। নতুন কোথাও আবার আপনাকে শুরু করতে হবেই। তাই সেখানে রেফারেন্স হিসেবে প্রাক্তন অফিসের বসকে ব্যবহার করুন আর সেজন্য কথা বলুন বসের সাথে। যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে সেখানে আপনাকে ভালো জানে এমন কারো সাথে যোগাযোগ করুন। মূলত, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কথাটি হচ্ছে এই যে, রেফারেন্সের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করুন আপনার পরবর্তী চাকরির জন্যে।

২. কারিকুলাম ভিটা ঠিকঠাক করুন

কয়েক বছর আগে লেখা কারিকুলাম ভিটাকে চাকরি পাওয়ার পর আর নতুন করে ঠিকঠাক করা হয়নি? সময় বা সুযোগ পাননি? এখনই সময় সেটাকে নতুন তথ্যগুলো দিয়ে ভরিয়ে ফেলার। কারণ চাকরি চলে যাওয়ার পর আপনার হাতে যেমন অঢেল সময় আছে, তেমনি রয়েছে পরের চাকরিতে আবেদন করার জন্যে কারিকুলাম ভিটার প্রয়োজনীয়তা। তাই এই ফাঁকে নিজের কারিকুলাম ভিটা ঠিক করে ফেলুন।

৩. সামাজিক যোগাযোগ বাড়ান

মেইল, লিঙ্কড ইন, ফেসবুক, টুইটারসহ সব সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ুন। বর্তমানে চাকরির বিষয়গুলো এসসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই সবচাইতে বেশি প্রকাশিত হয়। তাই প্রতিদিন খানিকটা সময় এগুলোর পেছনে ব্যয় করুন। যাদের কোম্পানিতে চাকরি করতে চান তাদের সাথে নিজের কথাগুলো বলুন আর সম্পর্ক তৈরি করতে শুরু করুন। কেবল তারা কী করছে সেটা জানতে নয়, অন্তত আপনি কী করছেন সেটা তাদেরকে জানাতে হলেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

৪. নিজের টাকা-পয়সার হিসেব নিন

মোট কত টাকা আছে আপনার? চাকরি যাওয়ার পরপর সেগুলো হিসেবে আনুন। মোট কত টাকা আর কী কী সম্পত্তি আছে আপনার আর সেগুলো দিয়ে মোট কতদিন চলতে পারবেন আপনি সেটা দেখুন। এতে করে পরের চাকরিটার জন্যে আপনার তাড়াহুড়োটা কতটা হবে, কেমন চাকরি আপনি চাইবেন সেগুলো বোঝাটা সহজ হয়ে দাঁড়াবে।

লিখেছেন-

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

 

কেএফসি স্টাইল চিকেন পপকর্ণ তৈরি করুন নিজেই

কেএফসি এর ফ্রাইড চিকেন বিশ্ব বিখ্যাত। কেএফসিতে খেতে গেলে প্রায় সবাই এই খাবারটি অর্ডার করেন। এই ফ্রাইড চিকেনের পর যে খাবারটি জনপ্রিয় তা হল চিকেন পপকর্ণ।  আপনি চাইলে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন কেএফসির মত চিকেন পপকর্ণ। ঝটপট অল্প কিছু উপাদান দিয়ে এই খাবারটি তৈরি করা সম্ভব। চিকেন পপকর্ণ তৈরির সহজ রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ:

মুরগির বুকের মাংস (ছোট করে টুকরো করা)

১/২ টেবিলচামচ লবণ

১/২ টেবিলচামচ গোল মরিচের গুড়া

১ টেবিলচামচ সয়াসস

১টি ডিম

১ টেবিলচামচ কর্ণ স্টার্চ

১ কাপ ময়দা

১ টেবিলচামচ মরিচের গুঁড়ো

 

প্রণালী:

১। প্রথমে মুরগির মাংসগুলোতে লবণ, গোল মরিচের গুঁড়ো, সয়াসস, ডিম দিয়ে ভাল করে মাখিয়ে নিন।

২। এরপর এতে কর্ণ স্টার্চ দিয়ে খুব ভাল করে মেশান।

৩। এবার আরেকটি পাত্রে ময়দা, লাল মরিচের গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।

৪। এখন মুরগির টুকরোগুলো ময়দার মিশ্রণে গড়িয়ে নিন। সবগুলো মুরগির টুকরো ময়দায় গড়িয়ে নিন।

৫। এবার একটি পাত্রে তেল গরম করতে দিন। তেল গরম হয়ে আসলে ময়দায় গড়ানো মুরগির টুকরোগুলোকে তেলে ছেড়ে দিন।

৬। মচমচে হয়ে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন।

৭। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার চিকেন পপকর্ণ। সস দিয়ে পরিবেশন করুন মচমচে চিকেন পপকর্ণ।

 

নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে আরো ৪১ ট্রাইব্যুনাল

সারাদেশে আরো ৪১টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এ প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ।

গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে ব্যয় অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ক নথিপত্র আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন পাওয়া গেলে এ ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

 

খুন হননি, আত্মহত্যাই করেছেন জিয়া খান

গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে আলোচিত বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জিয়া খান হত্যা মামলাটি। অভিযোগ ছিল তাকে খুন করা হয়েছে। সন্দেহের তীর ছিল বলিউডের ‘হিরো’ খ্যাত অভিনেতা ও জিয়ার প্রেমিক সুরজ পাঞ্চোলির দিকে। কিন্তু সমস্ত তদন্ত শেষে সিবিআই জানিয়েছে, জিয়াকে খুন নয়, তিনি আত্মহত্যাই করেছেন।

১ আগস্ট সোমবার মুম্বাই হাইকোর্টে জিয়া খান মৃত্যু মামলার তদন্ত রিপোর্ট উপস্থাপন করে সিবিআই। আর সেখানেই তাদের নিরপেক্ষ তদন্তটি নিয়ে কথা বলে মামলার তদন্তকারী। তারা জিয়া খানের মৃত্যুর মামলাটি তদন্ত করে জিয়া আত্মহত্যাই করেছেন বলে নিশ্চিত হয়েছেন।

অভিনেত্রী জিয়া খানকে ২০১৩ সালের ৩০ জুন তার ঘরেই ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। সাধারণভাবে বিষয়টি আত্মহত্যা মনে হলেও জিয়ার মা রাবেয়া খান এই মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি। তার দাবী ছিল, জিয়া কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে।

সিবিআইকে দেয়া তথ্যে জিয়ার মা সন্দেহ করে বলেছিলেন, জিয়া আত্মহত্যা করার মত মেয়ে না। তাকে কেউ হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। হয়তো তার ফ্ল্যাটের জানলা দিয়ে কেউ ঢুকে হত্যা করে গলায় ওড়না বেঁধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।

কিন্তু এমন অভিযোগ তদন্ত করে নাকচ করে দিয়েছে সিবিআই। রাবেয়ার সন্দেহ উড়িয়ে দিয়ে সিবিআই থেকে বলা হয়, জিয়াকে হত্যা করে ভেতর থেকে দরোজা লাগিয়ে জানালা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার মতো কোনো লক্ষণ তারা দেখতে পাননি। রাবিয়ার সন্দেহ অমূলক। আসলে জিয়া নিজের ওড়না দিয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

তবে জিয়া হত্যা মামলায় এখনই কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি আদালত। এমনকি অভিযুক্ত প্রেমিক সুরজ পাঞ্চোলিকেও জিঞ্জাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে সিবিআই। আর জিয়া হত্যা মামলার বিষয়টি আসছে ২৩ আগস্ট শেষ হতে পারে বলেও জানিয়েছে আদালত। কারণ এদিনই রায়ের দিন ঠিক করা হয়েছে।

 

রাশিফল ও মানব জীবনের ওপর গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব বিশ্বাস করা যাবে কি?

বিশ্বাস না করে কেবল মানসিক সান্তনা অর্জনের জন্য পড়লে তাতে শির্ক হবে না বটে; কিন্তু সে গোনাহগার হবে। কেননা শির্কী কোনো কিছু পাঠ করে সান্ত্বনা লাভ করা বৈধ নয়। তাছাড়া শয়তান কর্তৃক তার মনে উক্ত বিশ্বাস জন্মিয়ে দিতে কতক্ষণ? তখন এ পড়াই তার শির্কের মাধ্যম হয়ে দাঁড়াবে।

যায়েদ ইবন খালিদ আল-জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, হুদায়বিয়াতে এক রাতে আকাশ থেকে বৃষ্টি নাযিল হয়। সেদিন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজর সালাত শেষে লোকদের দিকে ফিরে বসেন এবং বলেন, ‘তোমাদের রব কী বলেছেন তা কি তোমরা জান? তারা বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেন, ‘আমার কিছু বান্দা আমার ওপর বিশ্বাসী হয়ে এবং কিছু বান্দা অবিশ্বাসী হয়ে ভোরে উপনীত হয়েছে। যারা বলে, আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহে বৃষ্টি হয়েছে তারা আমার প্রতি বিশ্বাসী ও গ্রহ-নক্ষত্রে অবিশ্বাসী। আর যারা বলে, অমুক অমুক গ্রহের প্রভাবে বৃষ্টি হয়েছে তারা আমার প্রতি অবিশ্বাসী ও গ্রহ-নক্ষত্রে বিশ্বাসী।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৪৬; মিশকাত, হাদীস নং ৪৫৯৬]

গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ার কথা বিশ্বাস করা যেমন কুফুরী, তেমনি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত রাশিফলের আশ্রয় নেওয়াও কুফুরী। যে ব্যক্তি রাশিফলের ওপর গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবের কথা বিশ্বাস করবে, সে সরাসরি মুশরিক হয়ে যাবে। পত্র-পত্রিকা ও বই-পুস্তকে রাশিফলের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে সেগুলো পাঠ করা শিরক। তবে বিশ্বাস না করে কেবল মানসিক সান্তনা অর্জনের জন্য পড়লে তাতে শির্ক হবে না বটে; কিন্তু সে গোনাহগার হবে। কেননা শির্কী কোনো কিছু পাঠ করে সান্ত্বনা লাভ করা বৈধ নয়। তাছাড়া শয়তান কর্তৃক তার মনে উক্ত বিশ্বাস জন্মিয়ে দিতে কতক্ষণ? তখন এ পড়াই তার শির্কের মাধ্যম হয়ে দাঁড়াবে।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

মিষ্টি আর মুখরোচক স্বাদে পেয়ালা

রাজধানীতে  যাত্রা শুরুর পর থেকেই, পেয়ালা ক্যাফে মানুষের কাছে নিত্যনতুন মজাদার সব খাবার উপস্থাপন করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পেয়ালার মুখরোচক খাবার আর পানীয় দারুণ সুস্বাদু। সম্প্রতি তাদের মেন্যুতে যুক্ত হয়েছে তিনটি নতুন স্বাদের ভিন্নধর্মী আয়োজন- তান্দুরি চিকেন, বিফ রেনড্যাং এবং পালাক পনির।

গরম আর ভিন্নমাত্রা স্বাদের তান্দুরি চিকেন, পালং শাক মিশ্রণের পালাক পনির এবং সিজলিং বিফ রেনড্যাং, র‍্যাপ অথবা সালাদ দুটো পদের সাথেই যায়। তবে একটি কথা না বললেই নয়, যারা মাংস থেকে সবজি  বেশি পছন্দ করেন ও কখনই মুখোরোচক কোনো খাবার মিস করতে চান না, তাদের জন্য পালাক পনির হতে পারে সুস্বাদু খাবারের বিশেষ বিকল্প। তান্দুরি চিকেনের সুবাস নাকে এলেই ফিরে যাবেন সেই মুঘল যুগে। আর মজাদার মাংসের স্বাদের বিফ রেনড্যাং এর স্বাদ আপনাকে নিয়ে যাবে সুদূর ইন্দোনেশিয়ায়।

পেয়ালা শুধু মুখরোচক ঝাল খাবারের জন্যই নয়, বিশেষভাবে ডেজার্টের শিল্পকর্তাও বটে। এর প্রতিটি খাবারেই আছে ভিন্নতা। পেয়ালায় গত সপ্তাহে মেন্যুতে যোগ হয়েছে নতুন বেশ কয়েকটি ডেজার্ট। সুস্বাদু চকলেট ‘বোস্টন ব্রাউনি’। ১২০ টাকায় পাওয়া যাবে এই অসাধারণ স্বাদের আইটেম। আরেকটি কফি স্বাদের ‘মোকা ক্রিম ক্যারামেল’ যা মনকে সচেতজ করে তুলবে।

এছাড়াও আরেকটি নতুন আইটেম ‘ব্রাউনি-ও-ট্রাইফল’ যাতে ব্রাউনি, চকলেট পুডিং, হুইপড ক্রিম এবং সবার পছন্দের ওরিও-এর একাধিক স্তর আছে। গুলশান ২ এর ডিসিসি মার্কেটের নীচতলায় অবস্থিত পেয়ালা ক্যাফেতে গেলেই স্বাদ নিতে পারবেন এইসব মজাদার খাবারের।

গুলশান ২ ডিসিসি মার্কেটে পেয়ালা ক্যাফে অবস্থিত।

Save

Save

 

মেয়েদের ফ্যাশনে চুড়ির বাহার!

‘কিনে দে রেশমি চুড়ি নইলে যাব বাপের বাড়ি’। এই গানটি থেকেই স্পষ্ট মেয়েদের চুড়ির প্রতি দুর্বলতা কতটা। মেয়ে আর চুড়ি এই দুটো যেন একই মুদ্রার দুটো পিঠ। মেয়েরা সব ধরনের অনুষ্ঠানেই চুড়ি পরা পছন্দ করে এবং পরেও। আদিম যুগ থেকেই মেয়েদের চুড়ির প্রতি টান বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়।

একটা সময় ছিল যখন মেয়েরা শুধু কাঁচের চুড়ি পরত কিন্তু এখন নানারকমের ট্রেন্ডি চুড়ি বাজারে এসেছে। মেটাল, সুতো, চামড়া, ব্যাকেলাইট, রবার, কাঠ, মাটি, বিডস, পুঁতি, সিটি গোল্ডসহ নানা ধরনের চুড়ির ব্যবহার বাড়ছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় মেয়েরা এখন নবরুপে সেজে ওঠছে।

এখন আবার বিভিন্ন রকমের লাল নীল সবুজ কাঠের মোটা মোটা চুড়ির সঙ্গে মেটালের চুড়িও একসঙ্গে করে পরেন তাতে সেটা অনেক বেশি ট্রেন্ডি লাগে। অনেকে আবার ঠিক চুড়ি পরা পছন্দ করে না তারা বিভিন্নরকমের ব্রেসলেটে নিজেদের সাজিয়ে তোলেন।

ব্রেসলেট পশ্চিমী ও ভারতীয় সব ধরনের পোশাকের সঙ্গেই সমানভাবে যায়। তাই অনেকে খুবই পছন্দ করে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন রঙের সরু সরু প্লাস্টিকের চুড়িও অনেকে পরছেন, এটাও এখন বর্তমান ফ্যাশনে ইন। আবার এক রঙা অক্সাডাইসের চুড়িও বেশ লাগে শাড়ির সঙ্গে।

 

কী হবে এই ৬ বোনের?

একটি পরিবারে ৬টি সন্তান। আর এ ৬জনই হচ্ছে মেয়ে। তাদেরও স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে বাবা-মায়ের ছেলে সন্তানের অভাব দূর করার। কয়েক বছর আগে হারায় বাবাকে। তিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় মাও।  মাথার উপর থেকে যেনো শেষ ছায়াটুকু সরে যায়। এখন কী হবে অভিভাবকহীন এই ৬ বোনের?

গত রোববার সন্ধ্যায় ট্রাকচাপা পড়ে পার্বতীপুরের ফ্যাক্টরি পাড়া মোড়ে ওই বিধবা মা আরজিনা বেগম (৪৫) নিহত হন। পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুরগামী একটি ট্রাক তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ সময় তিনি তার একটি গাভী নিয়ে ওই পথে বাড়ি ফিরছিলেন।

নিহত আরজিনা মন্মথপুর ইউনিয়নের ছোট হরিপুর মুন্সীপাড়া গ্রামের মৃত মোফাখখারুল ইসলামের স্ত্রী।

প্রতিবেশীরা জানায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল স্ত্রী ও ৬ কিশোরী কন্যাকে রেখে মারা যান পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মোফাখখারুল ইসলাম। তার মৃতুর পর লেখাপড়া ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হন বড় দুই মেয়ে মুক্তা ও রিক্তা। তারা দুজনেই কাজ নেন ঢাকার দুই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে।

বর্তমানে মুক্তা (২৪), রিক্তা (২২) ও মোমিনা (১৮) তিনজনেই বিবাহযোগ্যা। এছাড়া ছোট বোন লিপি (১৩) ৮ম, মমতাজ ( ১৫) নবম শ্রেণি ও মুসরাত জাহান ইতি ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ছে। ৩ জনেই মেধাবী ছাত্রী।

প্রতিবেশী মেনহাজুল হক বলেন, পরিবারটির ৫ শতক বসত ভিটা ছাড়া তাদের আর কোনো আবাদি জমি নেই। মায়ের মৃত্যুর পর ছোট ৪ বোনকে বাড়িতে রেখে বড় দুই বোন আবার চাকরিস্থলে ফিরে যাবে, নাকি চাকরি ছেড়ে বোনদের সাথে বাড়িতে থাকবে এ নিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছে বড় দুই বোন মুক্তা ও রিক্তা।

মুক্তা ও রিক্তা কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, বাবা মার ইচ্ছা ছিল ৬ বোনকে শিক্ষিত করার। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে তারা দু’বোন সংসারের হাল ধরেছিল। এখন অবিভাবকহীন হয়ে তারা কীভাবে বোনদের পড়ালেখা ও সংসার চালাবে তা ভেবে পাচ্ছে না।

 

লক্ষ্য নির্ধারণ করুন বৈজ্ঞানিক কৌশলে

জীবনের লক্ষ্য খুঁজে পাওয়া খুবই জরুরি। একটি নির্দিষ্ট উদ্দ্যশ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া এনে দেয় সফলতা। নইলে আসলে দিক ভুল করব আমরা সবাই। অনেকটা সময় পেরিয়ে যাবে, কিন্তু আমাদের মনে হতে থাকবে কিছুই করা হল না, কিছুই পাওয়া হল না। ঘিরে ধরবে হতাশা।
হতাশা/বিষন্নতার মানসিক রোগ শুধু যে রোগীকে ভোগায় তাই নয়, এর কারণে বিপদগ্রস্থ হয় আশপাশের মানুষেরাও। হতাশাগ্রস্থ মানুষটির নিজ জীবনের অসন্তুষ্টি থেকে তৈরি হয় অপরের প্রতি ঈর্ষা, যা কখনো কখনো হয় মারাত্মক ক্ষতিকারক। তাই আসুন নিজ জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করি। এগিয়ে যাই লক্ষ্যের হাত ধরে। ভুলে যাই কি পাই নি। ঠিক করি, কি পাব! লক্ষ্য নির্ধারণের এই বৈজ্ঞানিক কৌশল সাহায্য করবে আপনাকে।
‘SMART’ এই শব্দে লুকিয়ে আছে লক্ষ্য নির্ধারণের চমৎকার কৌশলটি। দেখে নিন ব্যাখ্যাগুলো-
Specific-নির্দিষ্টতা
আপনার লক্ষ্যটি নির্দিষ্ট হতে হবে। ধরুন, আপনি ঠিক করলেন আপনি সফল হবেন। কিন্তু এটি কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য হল না। কারণ এখানে অনেক প্রশ্নের ফাঁক রয়ে গেল। আপনি কোন ক্ষেত্রে সফল হতে চান, কতটুকু পেলে আপনি সেটাকে সফলতা বলবেন ইত্যাদি অনেক প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। তাই আপনাকে আরও ভাল করে ভাবতে হবে। আপনার লক্ষ্য হবে একেবারে সঠিক পয়েন্টে। যেমন- আমি রোজ সকালে ৬টায় ঘুম থেকে উঠতে চাই। এটি একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য।
Measurable-পরিমাপযোগ্য
লক্ষ্যটি হতে হবে পরিমাপযোগ্য। আপনাকে মাপতে পারতে হবে, প্রতিদিন আপনি দেখতে পাবেন কতটুকু এগিয়ে গেলেন আর কতটুকু বেশি শ্রম দিলে আরও ভাল হত। সবচেয়ে ভালো কাজ রোজ মাইক্রোসফট এক্সেলে সবকিছু লিখে রাখা, আগের দিনের কাজের সাথে তুলনা করা এবং মাসিক লক্ষ্য অর্জন হতে আপনি আর কতাটা দূরে তা পরিমাপ করা।
Attainable- অর্জনযোগ্য
আমরা যদি আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার লক্ষ্য নিই তাহলে কি সেটা সম্ভব? আপনার লক্ষ্যটি অবশ্যই অর্জনযোগ্য হতে হবে। নিজের যোগ্যতা, অভ্যন্তরের গতি, গুণাবলি বুঝুন। একইসাথে বুঝুন নিজের ত্রুটিগুলোও। তারপর ঠিক করুন আপনি কি অর্জন করতে চান। প্রতিটি মানুষের কিছু সিমাবদ্ধতা থাকে। সেগুলো খেয়াল করুন।
 
Realistic-বাস্তবসম্মত
আপনার লক্ষ্যটি অবশ্যই বাস্তবসম্মত হতে হবে। ধরুন, আপনি টার্গেট ঠিক করলেন, আপনি বিল গেটস এর মত অর্থ-প্রতিপত্তির অধিকারী হবেন। লক্ষ্যটি মোটেই বাস্তবসম্মত নয়। আপনি ঠিক করতে পারেন, আপনি নির্দিষ্ট একটি অংকের টাকার মালিক হতে চান এবং সেই টাকার অংক অবশ্যই আপনার সাধ্যের মধ্যে। অবাস্তব লক্ষ্য আসলে লক্ষ্য নয়, কল্পনা।
Time- সময়
আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন। সেই সময়টা বেঁধে দিতে হবে আপনাকেই। আপনি যদি ঠিক করেন, আপনি একটি ভালো বেতনের চাকরিতে জয়েন করবেন। সেটা আপনি কতদিনে করবেন এই টাইম লিমিটও আপনাকে ঠিক করতে হবে। আপনি ঠিক করেছেন, টাইপিং শিখবেন। কতদিনে শিখবেন সেটাও নির্ধারণ করুন। অবাধ সময় কখনো সফলতা দেয় না।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

ভিন্ন স্বাদের এই পুডিংটি আগে তৈরি করেছেন কি?

মিষ্টি খাবারের মধ্যে পুডিং খাবারটি বেশ জনপ্রিয়। ডিম, দুধ ও চিনির সংমিশ্রণে তৈরি এই খাবারটি খেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুব কম আছেন। দুধ ডিম ছাড়াও পুডিং তৈরি করা সম্ভব! অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার কিছু নেই, দুধ ডিম ছাড়া সুজি দিয়ে তৈরি এই পুডিংটি তুরস্কে বেশ জনপ্রিয়। ভিন্ন স্বাদের এই পুডিংটি তৈরির রেসিপিটি আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।

উপকরণ:  

সিরাপ তৈরির জন্য

১.৫ কাপ চিনি

১.৫ কাপ পানি

সুজির পুডিং তৈরির জন্য

৪ কাপ দুধ (১ লিটার)

৩ টেবিলচামচ সুজি

৩ টেবিলচামচ ময়দা

২ টেবিলচামচ কর্ণ ফ্লাওয়ার

১ টেবিলচামচ মাখন

১ টেবিলচামচ ভ্যানিলা এসেন্স

১ কাপ চিনি

চকলেট পুডিং তৈরির জন্য

৪ কাপ দুধ

৪ টেবিলচামচ চিনি

১ টেবিলচামচ ময়দা

২ টেবিলচামচ কর্ণ ফ্লাওয়ার

১.৫ টেবিলচামচ কোকো পাউডার

৮০ গ্রাম ডার্ক চকলেট

টোস্ট বিস্কুট

প্রণালী:

১। প্রথমে প্যানে ক্যারামেল সিরা তৈরি করার জন্য চিনি দিন। চিনিগুলো বাদামী রং হয়ে আসলে এতে কিছুটা পানি দিয়ে দিন।

২। ক্যারামেল সিরা তৈরি হয়ে গেলে চুলা থেকে প্যান নামিয়ে ফেলুন।

৩। এরপর ওভেন ট্রেতে টোস্ট বিস্কুটগুলো সাজিয়ে রাখুন এবং তার উপর ক্যারামেল সিরা দিয়ে দিন।

৪। এখন আরেকটি পাত্রে সুজি, কর্ণ ফ্লাওয়ার, ময়দা এবং চিনি দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়ুন।

৫। আস্তে আস্তে এর মধ্যে দুধ দিতে থাকুন এবং নাড়তে থাকুন।

৬। এটি ঘন হয়ে আসলে এতে মাখন এবং ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে দিন।

৭। মাখন গলে গেলে চুলা বন্ধ করে দিন।

৮। এবার বিস্কুটের উপর সুজির মিশ্রণটি ঢেলে দিন। ভাল করে বিস্কুটের উপর লাগিয়ে দিন। যেন একটি লেয়ার তৈরি হয়।

৯। একটি পাত্রে ময়দা, কর্ণ ফ্লাওয়ার, কোকো পাউডার, চিনি ভাল করে মেশান।

১০। তারপর এতে দুধ মিশিয়ে দিন। দুধ ভাল করে নাড়ুন। তারপর চুলায় জ্বাল হতে দিন।

১১। চুলায় দিয়ে বার বার নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে এলে এতে চকলেট দিয়ে দিন।

১২। চকলেট ঘন হয়ে এলে এটি বিস্কুট এবং সুজির উপর ঢেলে দিন।

১৩। ব্যস তৈরি হয় গেল মজাদার পুডিং টোস্টেড ব্রেড কেক।

টিপস:

আপনি চাইলে এটি কয়েক ঘন্টা ফ্রিজে রাখতে পারেন। ফ্রিজ থেকে বের করে পরিবেশন করতে পারেন।

 

উদ্যোগ ফেসবুকেই

চামড়ায় তৈরি ছেলেদের একটি স্যান্ডেলের ছবি। স্যান্ডেলের মাপ দেওয়া আছে। দাম দেওয়া আছে। ছবির নিচে অনেকেই স্যান্ডেলটি কেনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন। অনেকে ছবির মাপের চেয়ে ছোট বা বড় স্যান্ডেল আছে কি না জানতে চেয়েছেন। একইভাবে মডেল বিভিন্ন ধাঁচের ব্যাগ হাতে, কাঁধে নিয়ে বসে আছেন, দাঁড়িয়ে আছেন। আগ্রহীরা নানান কিছু জানতে চেয়েছেন। তারপর যিনি কিনতে চান তাঁর কাছে পৌঁছে গেছে ব্যাগ বা স্যান্ডেলটি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং ইন্টারনেটে ই-কমার্স অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। নতুন অনেকেই ঝুঁকছেন এ পদ্ধতিতে ব্যবসা করার জন্য। চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসার ক্ষেত্রে তানিয়া ওয়াহাবের নাম পরিচিত। প্রায় ১১ বছরের অভিজ্ঞতা। তবে এবারই প্রথম ঈদের আগে ফেসবুককে ব্যবহার করে নতুন আঙ্গিকে ব্যবসায় নেমেছেন বলে জানালেন ট্যানের স্বত্বাধিকারী তানিয়া ওয়াহাব। তিনি জানালেন ট্যানের ব্যাগ, ওয়ালেট, স্যান্ডেল, বেল্ট, টিস্যু বক্সসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির জন্য কোনো শোরুম নেই। ফ্যাক্টরি থেকে সরাসরি পণ্যের ছবি আপ হচ্ছে ফেসবুকে। স্যান্ডেলের বেলায় অনেকে মাপ বলতে পারেন না। তাঁদের ফেসবুকের ইনবক্সে তাঁর পায়ের মাপ পাঠাতে বললে সে অনুযায়ী স্যান্ডেল কুরিয়ার করে পাঠানো হচ্ছে।

তানিয়া ওয়াহাব বলেন, এখন যানজটসহ বিভিন্ন কারণে এক এলাকার মানুষ শপিংয়ের জন্য অন্য এলাকায় যেতে চান না। সব এলাকার মানুষের কাছে পণ্য পৌঁছাতে হলে বিভিন্ন এলাকায় শোরুম থাকতে হবে। খরচ অনেক বেশি। ফেসবুকে সে ঝামেলা নেই। জামালপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকার ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে ফেসবুকের কল্যাণে। লেদার নিয়ে নতুন নারী ব্যবসায়ীরা একটি সার্কেল বা দল করে ফেসবুকে প্রচার চালাচ্ছেন। টাকার বিনিময়ে ফেসবুকে পণ্যকে প্রমোট (ফেস বুস্ট) করার সুযোগ নিচ্ছেন অনেকে। তানিয়া ওয়াহাব কারিগরের একজন অংশীদার। আড়ংসহ বিভিন্ন জায়গায় কারিগরের পণ্য সাপ্লাই দেওয়া হচ্ছে।

তানিয়া ওয়াহাব বলেন, ‘কারিগরের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। সুনামের সঙ্গেই কারিগর তার নাম ধরে রেখেছে। তবে নিজের পরিচিতির জন্য ট্যান চালু করেছি। ট্যানারির একটি অংশ হিসেবেই ট্যান নামটি নেওয়া হয়েছে।’

 ‘গুটিপা’ নিয়ে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলেছেন নারী উদ্যোক্তা তাসলিমা মিজি। চামড়ায় তৈরি ব্যাগের ব্যবসা। এর আগে তিনি কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করেছেন আট বছর। তাসলিমা মিজি বলেন, দোকানভিত্তিক ব্যবসা বড় ব্যবসায়ীদের জন্য। কিন্তু বেশির ভাগ নারীর পুঁজি কম। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লোন পেতে অনেক ঝামেলা। নারীর নিজস্ব সম্পদ বলতেও তেমন কিছু নেই। অনেক সময় পরিবারও চায় না নারী ঘরের বাইরে গিয়ে ব্যবসা করুক। এই এত সব সমস্যার সমাধান ই-কমার্স বিজনেস। বর্তমানে বেশির ভাগ মানুষেরই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে বা ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। আধুনিক ক্যামেরা ও অন্যান্য প্রযুক্তির বদৌলতে ছবিতে একটি পণ্যের বলতে গেলে পুরোটাই তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে। বিভিন্ন ডিজিটাল এজেন্সি পণ্যটি দ্রুত সময়ে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।

তাসলিমা জানালেন মিরপুরে তাঁর কারখানা। বাসা এলিফ্যান্ট রোডে। সার্বক্ষণিক গৃহকর্মী না থাকায় সার্ভেন্ট রুমকে তিনি পণ্যের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছেন। পণ্য ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একজন এবং আরেকজন ডিজিটাল মার্কেটিং ম্যানেজার নিয়েই চলছে তাঁর এ ব্যবসা। ফেসবুক এবং অন্যান্য ই–কমার্সের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চলছে পণ্যের প্রচার ও ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ। আর ব্যাগের মডেল হচ্ছেন তাঁর নিজেরই বন্ধুবান্ধব। তবে তাসলিমা মিজি হেসেই বললেন, ব্যাগের ক্রেতা বন্ধুবান্ধবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।

 

ঘুরে দাঁড়িয়েছেন হনুফা

‘এমন সময় গ্যাছে, তিন-চাইর দিন ভাতের পাতিল পাহায় (চুলায়) বহাইতে পারি নাই। মাইনষের তোন চাইয়াচিন্তা পোলাপানরে খাওয়াইছি। মাছ-মুকরা (মুরগি) খাই নাই বচ্ছরের পর বচ্ছর। ঘর আছিল না। বিষ্টিতে ভিজজি, শীতে কোঁকড়া দিয়া রইছি। কী যে কষ্ট করছি হেই সময়।’
এভাবেই নিজের পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করেন ৫৫ বছর বয়সী হনুফা বিবি। তিনি মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করেন। আবার অনেক সময় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতেও কাজ করেন। একসময় দুবেলা খাবার জোটাতে না পারলেও নিজ প্রচেষ্টায় হনুফা বিবি তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। এখন আর না খেয়ে থাকতে হয় না। এমনকি স্থায়ী একটি মাথা গোঁজার ঠাঁইও তৈরি করেছেন।
১২ বছর বয়সে আদেল খলিফার দ্বিতীয় স্ত্রী হয়ে শ্বশুরবাড়ি আসেন হনুফা বিবি। হনুফার শ্বশুরবাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বোরাদী গরঙ্গল গ্রামে। বাবার বাড়ি পাশের গ্রাম কলাবাড়িয়ায়। শৈশব পেরোতেই শ্বশুরবাড়ি। আর শ্বশুরবাড়ি আসতে না-আসতেই হনুফাকে কাঁধে তুলে নিতে হয় স্বামীর আগের পক্ষের সন্তানের দায়িত্ব, সংসারের হাল। গত ৯ জুলাই বোরাদী গরঙ্গলের এক বাসায় কাজ করার ফাঁকে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
শুরু থেকেই সংসারে টানাপোড়েন। স্বামী কিছুদিন পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না। সে কারণে ঘরে চুলাও জ্বলে অনিয়মিত। ছেলেমেয়ে নিয়ে আধপেটা খেয়ে, কখনো না খেয়ে দিন কাটাতে হয়। এর মধ্যেই ধরা পড়ে স্বামীর ব্লাড ক্যানসার। হনুফা বলেন, ‘হ্যার ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। ডাক্তার দেহাইতে যাইয়া জাগা-জমিন হগল খুয়াইছি। হে ভালো অইল না। মইর্যাে গেল।’
স্বামীর মৃত্যুর সময় হনুফার বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। মেয়ে বিবাহযোগ্য। নিজের ছেলে রোগা। কোনো কাজ করতে পারে না। স্বামীর আগের পক্ষের ছেলে খোঁজ নেয় না। এদিকে স্বামীর চিকিৎসায় বাড়ি, সম্পত্তি সব বিক্রি করে দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় ছেলেমেয়ে নিয়ে কী করবেন, বুঝে উঠতে পারেন না। একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েন।
মাঝেমধ্যে অন্যের ফরমাশে কাঁথা সেলাই করলেও ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে—কখনো ভাবেননি হনুফা বিবি। কিন্তু বেঁচে থাকার তাগিদে ঘরের বাইরে পা রাখতে হয় তাঁকে। বলেন, ‘তহন পরথম নগরে (হিন্দুপাড়া) আহি। মাইনষের বাড়ি কাম করা শুরু করি। যে যহন বোলায়, হ্যার কামই করি। এরম কাম কইর্যাুই পোলা-মাইয়ার মুহে খাওন দেই। আস্তে আস্তে বাঁচনের স্বপন দেহি।’
বছরের ৩৬৫ দিনই হনুফা বিবি কাজ করেন। বাদ যায় না ঈদের দিনও। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, তীব্র শীতেও তাঁকে কাজ করতে হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেন। পারিশ্রমিক তিনবেলা খাবার, সঙ্গে দুই শ টাকা। রাতের খাবারটা বাড়িতে নিয়ে যান। তবে অনেকেই পারিশ্রমিকের চেয়ে বেশি টাকা দেন বলে জানান তিনি।
বাইরে পা দিয়ে হনুফা বিবি কেবল খাবারের ব্যবস্থাই করেননি, ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবতে শুরু করেন তিনি। খেয়ে না-খেয়েই করতে থাকেন সঞ্চয়। টাকা জমিয়ে ছোট হলেও একটি টিনের ঘর তোলেন; যেখানে ছেলে-ছেলেবউ-নাতি নিয়ে বসবাস করছেন। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।
মানুষের বাসায় কাজ করতে গিয়েই পড়াশোনার গুরুত্ব বুঝতে পারেন হনুফা। তিনি বলেন, ‘কাম করতে যাইয়াই বুজি লেহাপড়ার কদর। কষ্ট কইর্যারও পোলা-মাইয়ারে লেহাপড়া করাইলে আয়ের এট্টা উপায় হইত। মাইনষের বাড়ি কাম করা লাগদো না।’ তাই নাতিদের পড়াশোনায় জোর দেন তিনি। তাঁর ছেলের ঘরের এক নাতি প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আরেক নাতি পঞ্চম শ্রেণিতে, যার রোল নম্বর ১। নাতিদের লেখাপড়ার সব দায়িত্ব হনুফা বিবিই বহন করেন।
হনুফাকে ছাড়া এলাকার কোনো বিয়েবাড়ির কাজই হয় না। এতে তাঁর পারিশ্রমিকের সঙ্গে পাঁচ শ টাকা ও একটি শাড়ি বকশিশ হিসেবে নির্ধারিত। কেউ কেউ আবার বেশিও দেন। হনুফা বলেন, ‘হগলে আমারে ভালো পায়। কাম কইর্যাে যা পাওনের, হ্যার থিকা বেশি দেয়। না অইলে বাঁচতে পারতাম না।’
হনুফা বিবি কোনো রকমে নিজের নাম লিখতে পারলেও জীবনের বাস্তবতা ভালো বোঝেন। শেষ জীবনে কাজ করতে পারবেন না। বন্ধ হয়ে যাবে রোজগার। তবে এ সময় কারও কাছে বোঝা হতে চান না তিনি। এ জন্য ব্যাংকে ৬০ হাজার টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করেছেন। তিনি বলেন, ‘যহন বুড়া অইয়া যামু, এই টাহায় চলমু। কারও কাছে হাত পাতমু না।’

 

বগুড়ার জলকন্যাদের গল্প

ভোরের আলো তখনো ফোটেনি। ট্রাকস্যুট পরে একদল কিশোরী ছুটছে উদ্যানের দিকে। সকালে হাঁটতে বেরোনো কেউ কেউ তাদের দিকে তাকাচ্ছেন বিস্ময় নিয়ে। লিকলিকে গড়ন সবার। মলিন চেহারা। বয়স ১২ থেকে ১৬। কৌতূহলী ফিসফাস—এই পাতলা শরীরেও ‘মর্নিং ওয়াক’! একটু পর ঘোর কাটে তাঁদের। কৌতূহলী চোখ যায় পার্কের পুকুরঘাটে। সাঁতারের পোশাক পরে তারা দল বেঁধে পুকুরে নামছে। পুকুরের এপার-ওপার আগে থেকেই সাঁতারের জন্য আড়াআড়ি শোলা দিয়ে লাইন টানা রয়েছে। এক পাশের লাইনে প্রস্তুত মেয়েরা। অন্য পাশে একদল কিশোর সাঁতারু। মাঝখানে কোচ মাসুদ রানা বাঁশিতে ফুঁ দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ল মেয়েরা। অন্যের রেকর্ড ভাঙতে ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাঁতার শুরু করল তারা।
সকালে আর বিকেলে প্রত্যন্ত গ্রাম, শহরের পাড়া-মহল্লা থেকে আসা মেয়েদের এই সাঁতারচর্চার দৃশ্য দেখা যায় বগুড়া শহরের এডওয়ার্ড পার্কের পুকুরে। কোচ মাসুদ রানা বিনা পয়সায় প্রশিক্ষণ দেন সাঁতার শিখতে আসা মেয়েদের। গ্রাম-মহল্লা ঘুরে ঘুরে সাঁতারের জন্য মেয়েদের উৎসাহও দেন তিনি। সাঁতারের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে প্রথম দিকে কাদা-মাটির তৈরি ক্রেস্ট দেওয়া হতো মেয়েদের। এখন মাটির ক্রেস্টের বদলে মেয়েদের ঘরে ‘সোনার পদক’। বয়সভিত্তিক সাঁতারে জাতীয় পর্যায়ে বেশ কয়েকজন সোনাজয়ী হয়েছে। সাফল্যের ঝুড়িতে কারও কারও এক থেকে দুই ডজন সোনার পদক। বাংলাদেশ আনসার ও নৌবাহিনীর হয়েও সাঁতরায় কেউ কেউ। এই বয়সেই মাস গেলে বেতন পাচ্ছে। সাঁতারের সুবাদে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে মেয়েরা।
সাঁতারপাগল কোচ মাসুদ রানার বয়স ৪০ পেরিয়েছে। বগুড়া শহরের সূত্রাপুরে শৈশব কেটেছে তাঁর। পড়তেন সেন্ট্রাল হাইস্কুলে। পড়াশোনার চেয়ে সাঁতারেই ঝোঁক ছিল তাঁর বেশি। বড় তিন ভাইয়ের মতো তিনিও সোনাজয়ী সাঁতারু ছিলেন। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ে রেকর্ড গড়তে পারেননি। তবে সাঁতারের নেশা কাটেনি মাসুদ রানার। এখনো সাঁতার শেখাতে ছেলেমেয়েদের খুঁজে বেড়ান তিনি। কেউ আগ্রহ দেখালে শহরে এনে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেন। বেশির ভাগ ছেলেমেয়ের শহরে থাকার মতো সামর্থ্য থাকে না। মাসুদ রানা থাকার ব্যবস্থাও করে দেন। বর্তমানে তাঁর কাছে ১৯ জন মেয়ে সাঁতার প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এর মধ্যে সাতজনই একাধিক সোনা ও রুপার পদক জয় করেছে। মাসুদ রানা বলেন, ‘দেশসেরা সাঁতারু হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এখন সাঁতারে বগুড়ার মেয়েরা বিশ্বজয় করবে বলে স্বপ্ন দেখছি।’
প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বয়সভিত্তিক জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় ২৪টি সোনাজয়ী মরিয়ম আকতার এবং তার ছোট বোন তিনটি সোনাজয়ী রোকেয়া আকতার। এই দুই বোনের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বালিয়াদীঘি গ্রামে। বাবা ইউনুস আলীর অসচ্ছল সংসার। তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মরিয়ম আকতার সবার বড়। ২০০৭ সালে মরিয়ম তখন বাড়ির পাশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। ইউনুস আলী বললেন, ‘হঠাৎ একদিন বাড়িতে হাজির মাসুদ রানা। নিজেকে সাঁতারের কোচ পরিচয় দিলেন। মরিয়মকে সাঁতার শেখাতে চান। আকাশ থেকে পড়লাম। গ্রামের মানুষ। আমার মেয়ে মানুষের সামনে ছোট পোশাক পরে পুকুরে সাঁতার কাটবে! প্রথমে রাজি ছিলাম না। কিন্তু মেয়েটার ইচ্ছার কারণে না করতে পারলাম না। মরিয়মকে শহরের ইশকুলে ভর্তি করালেন মাসুদ রানা। নিজের বাসায় তাঁর মেয়ের কাছে রেখে দিলেন। এরপর ঘরে সোনা আনতে থাকল মেয়েটা। বড়টার সাফল্যে ছোট মেয়েটাকেও পাঠালাম তাঁর বাসায়।’

মরিয়ম বলল, ‘বগুড়ায় সেন্ট্রাল উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হলাম। সকাল-বিকেলে পার্কের পুকুরে মাসুদ রানা স্যারের কাছে অনুশীলন করতাম। ২০০৯ সালে ছয়টি রৌপ্যপদক দিয়ে সাফল্যের খাতা খুললাম। ২০১০ সালে রৌপ্যসহ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হলাম। ২০১১ সালে ১০০ মিটার সাঁতারে দুটি সোনা ও দুটি ব্রোঞ্জ এবং ২০০ মিটারে দুটি সোনা ও দুটি ব্রোঞ্জ পেয়ে বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় সেরা হলাম। ২০১২ সালে দুটি সোনা, ২০১৩ সালে আটটি সোনাসহ তিন বিভাগে রেকর্ডসহ চ্যাম্পিয়ন হলাম। ২০১৪ সালে ১০টি স্বর্ণসহ ছয়টিতে রেকর্ড গড়ে ফের চ্যাম্পিয়ন হলাম।’ ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কাতার ও চীনে প্রশিক্ষণ নিয়েছে মরিয়ম আকতার। এখন মেয়েদের জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতার জন্য অনুশীলন করছে। পাশাপাশি বগুড়া মহিলা মহাবিদ্যালয়ে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দলের সাঁতারু সে।
রোকেয়া আকতারও মাসুদ রানার বাসায় থেকে সাঁতার শিখছে। পড়াশোনা করছে সেন্ট্রাল উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে। ২০১৫ সালে জাতীয় বয়সভিত্তিক ২০০ মিটার বুকসাঁতারে ৩ মিনিট ৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে দুটি স্বর্ণ জয় করেছে।
বগুড়ার সেউজগাড়ি মহল্লার ফলের দোকানি রহেদুল ইসলামের তিন মেয়ের মধ্যে সবার ছোট রাশেদা খাতুন সাত বছর বয়স থেকেই পুকুরে ভাসছে। সাঁতারের পোশাক পরে পুকুরে সাঁতার কাটতে পরিবারের বাধা ছিল। কিন্তু শেষমেশ সেই বাধা অতিক্রম করেছে রাশেদা। রাশেদা বয়সভিত্তিক সাঁতারে ১৪টি সোনার পদক জয় করেছে। সাঁতরায় আনসার বাহিনীর দলের হয়ে।
বগুড়া শহরের জামিলনগরের মেয়ে মিতু আকতার পড়ে বগুড়ার সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে। বয়সভিত্তিক সাঁতারে এ পর্যন্ত ১৩টি স্বর্ণ জিতেছে মিতু।
তিনটি সোনাজয়ী বগুড়া সেন্ট্রাল হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী রুমি আকতারও এডওয়ার্ড পার্কের পুকুরে নিয়মিত অনুশীলনে আসে। ২০১২ সালে মহিলা গেমসে চ্যাম্পিয়ন ও পাঁচটি সোনাজয়ী শাহিনূর আকতারও কোচ মাসুদ রানার কাছে নিয়মিত সাঁতার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ ছাড়া রৌপ্যজয়ী নিশি আকতার এখনো নিয়মিত সাঁতার শিখছেন।
কোচ মাসুদ রানা বলেন, ‘বগুড়ার মেয়েরা বিশ্ব সাঁতার প্রতিযোগিতায় যেদিন বাংলাদেশের লাল-সবুজের জয়ের পতাকা ওড়াবে, সেদিনই নিজেকে ধন্য মনে করব। ১৯ জন মেয়েকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। একজন দেশসেরা হলেও আমার প্রচেষ্টা সার্থক হবে। মেয়েদের পাশাপাশি নয়ন ইসলাম নামের এক কিশোর সাঁতারু এখন পর্যন্ত ১৯টি স্বর্ণ জয় করেছে।

 

ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েদের জন্য পুষ্টিকর ৯ টি স্ন্যাক্স

ব্রেস্ট ফিডিং করালে অনেক এনার্জির প্রয়োজন হয়। তাই বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করান যে মায়েরা, তাদের ঘন ঘন ক্ষুধা পায়। এজন্য তাদের ক্ষুধা নিবৃত করাও প্রয়োজন। তাই বলে আপনার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে এমন অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াও উচিৎ নয়। পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী এমন কিছু স্ন্যাক্স খেতে পারেন ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েরা যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করবে। এমন কিছু স্ন্যাক্সের কথাই জেনে নিই চলুন।

১। বাদাম

প্রোটিনের পাওয়ার হাউজ হচ্ছে বাদাম। এতে স্বাস্থ্যকর পরিমাণে অসম্পৃক্ত চর্বি ও ফাইবার থাকে। তাই ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েদের জন্য ভাঁজা ও হালকা লবণাক্ত বাদাম হতে পারে তৃপ্তিকর একটি স্ন্যক্স। একমুঠো বাদাম দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।

২। সিদ্ধ ডিম

ডিমে উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। এছাড়াও ডিমে সবগুলো এমাইনো এসিড, ভিটামিন এবং মিনারেল ও থাকে। তাই ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েদের জন্য ডিম হতে পারে আদর্শ স্ন্যাক্স।

৩। আস্ত গমের তৈরি স্যান্ডউইচ

আস্ত গমের তৈরি পাউরুটি কিনে এর সাথে চর্বিহীন মাংস, টমেটো, গাজর ইত্যাদি যোগ করুন যাতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও প্রোটিন পাওয়া যায়। এই স্যান্ডউইচ আপনাকে তৃপ্তি দেবে।

৪। পিনাট বাটারের সাথে আপেল

আপেলের সাথে পিনাট বাটার মিশিয়ে খেলে প্রোটিন ও ফাইবারের সমন্বয় হয়। পিনাট  বাটার পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। পিনাট বাটারের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও প্রোটিন এনার্জি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। খোসাসহ আপেলে প্রচুর ফাইবার থাকে।

৫। দই

দই ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চমৎকার উৎস। যা মধ্য বিকেলের চমৎকার স্ন্যাক্স হতে পারে। একে আরো পুষ্টিকর করার জন্য দইয়ের সাথে ফল মেশাতে পারেন। মিষ্টি ও সুগন্ধিযুক্ত মিল্কশেক এড়িয়ে চলুন।

৬। সালাদ

তাজা ফল ও সবজি দিয়ে তৈরি একবাটি সালাদ হতে পারে নতুন মায়েদের জন্য সহজ ও পুষ্টিকর একটি স্ন্যাক্স। সব্জিতে উচ্চমাত্রার পানি থাকে বলে আপনাকে হাইড্রেটেড থাকতে সাহায্য করবে।

৭। অ্যাভোকাডো

মনো ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ অ্যাভোকাডোতে ভিটামিন এবং ফাইবার ও থাকে,  যা নতুন মায়েদের জন্য পুষ্টিকর একটি খাবার। কুড়মুড়ে স্বাদের জন্য বিস্কুটের সাথে খেতে পারেন অ্যাভোকাডো।

৮। পনির

ক্যালসিয়াম ও আমিষের উৎস পনির। এছাড়া বি ভিটামিন ও থাকে এতে। হোল গ্রেইন ক্রেকারস বা পাউরুটির সাথে খেতে পারেন পনির।

৯। মিষ্টি আলু

শর্করার পাশাপাশি মিষ্টি আলুতে ভিটামিন, আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান ও থাকে। তাই স্ন্যাক্স হিসেবে মিষ্টি আলু খেতে পারেন ব্রেস্ট ফিডিং করান এমন মায়েরা।

লিখেছেন-
সাবেরা খাতুন

 

অনলাইনে কিনুন পছন্দের জামদানি-কাতান

ইফাত শারমীন। মাস্টার্স শেষ করে একটি আইটি ফার্মে কাজ করেন ৬/৭ বছর। এরপর কুমিল্লার এই মেয়ে চিন্তা করেন নিজেই কিছু করবেন। শুরু করেন অনলাইনে জামদানি কাপড় বিক্রি করার ব্যবসা। মূলত ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে প্রথম জামদানি নিয়ে কিছু করার অনুপ্রেরণা পান। ছোট ভাই তখন বুয়েটে পড়তো। সে জামদানির ডিজাইন নিয়ে একটি থিসিস করে। সেজন্য ভাইকে জামদানির তৈরি কারিগরদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে থিসিসটি করতে হয়। দেখাদেখি শারমীনও তাঁতীদের কাছে গিয়ে জামদানি তৈরি দেখেন। এরপর শুরু করেন ব্যবসাটি। ২০১৫ সালে তার অনলাইন শপ চালু করেন। জামদানি ভিলি নামের শপটি দেখতে দেখতেই জনপ্রিয়তা পায়। এখন প্রতিদিন গড়ে ২টি দামি শাড়ির অর্ডার পান তিনি। এখন থেকে কমদামি শাড়িও বিক্রি করার চিন্তা করছেন। বর্তমানে তার বেশিরভাগ ক্রেতা দেশের বাইরে থেকেই অনলাইনে অর্ডার করেন। তিনি জামদানি শাড়ি, মসলিন শাড়ি, থ্রিপিস, টুপিস, পাঞ্জাবীর কাপড় বিক্রি করেন। জামদানি শুরু হয়েছে ৪০০০ টাকা থেকে। ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্তও জামদানি বিক্রি করে থাকেন তিনি। পাঞ্জাবী পিস ৮৫০ থেকে কাজের উপর ভিত্তি করে ২৩০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে।

অন্যদিকে এমডি ওমান থাকেন মিরপুর। ভারতের এই ছেলে ছোট বেলা থেকেই মিরপুরে তার বাবার তাতের শাড়ির দোকানে বসেন। এসএসসি পাশ করে একটি কলেজে এইচএসসিতে উন্মুক্ততে ভর্তি হন। নিজের খরচ নিজেই যোগান দিতে শুরু করেন অনলাইনে কাতান শাড়ি বিক্রির দোকান। বাবার দোকানে যখন বসতেন তখন বিভিন্ন অনলাইন ব্যবসায়ী মেয়েরা তার দোকানে আসতো শাড়ির ছবি নিতে। সেই ছবি অনলাইনে দিয়ে অর্ডার নিতো। আজকের ডিল নামক একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠানও তার কাছে এসেছিলো। এরপর তিনি নিজেই চিন্তা করেন অনলাইন ব্যবসা করবেন। এভাবেই শুরু। এখন মাসে দেড়শোটি শাড়ি তিনি অনলাইনে বিক্রি করেন। গড়ে ৫০/৬০ হাজার টাকা তার ইনকাম রয়েছে। পরিবারকেও তিনি টাকা দিয়ে সাহায্য করেন। কাতান, অপেরা কাতান, কাঞ্জপুরান, জোড়িকাটা, সিল্ক সব ধরনের শাড়িই তিনি বিক্রি করেন। ভারত থেকে বিভিন্ন কাতান পার্টিরা পাঠিয়ে দিলে সেগুলো তিনি বিক্রি করেন। এছাড়া গাউসিয়া থেকেও পাইকারি দরে শাড়ি কিনে তা অনলাইনে বিক্রি করেন। ১৭৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২৬০০০ টাকা দামের শাড়ি তিনি বিক্রি করে থাকেন।

তাই বলা চলে ফেসবুক তাদের ব্যবসার বড় একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। চাইলে আপনিও অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা শুরু করে নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারেন নিজের ভাগ্য। আর শাড়ি কিনতে চাইলে অনলাইনেই অর্ডার করুন। আর ঘরে বসেই পেতে পারেন পছন্দের প্রিয় শাড়ি।

ফেসবুক লিঙ্ক: কাতান শাড়ি হাউজ: https://www.facebook.com/katanashareehouse/

জামাদানী ভিলি: https://www.facebook.com/JamdaniVille/