কানিজ ফাতিমা
কথা বলুন! আপনার সন্তানের সাথে আলোচনা করুন যে কোনো বিষয়ে এবং সকল বিষয়ে, আপনি সারা দিনে কী করেছেন তা নিয়ে, বিভিন্ন বিষয়ে আপনার অনুভূতি কী এবং আপনার সন্তান এটা-সেটা নিয়ে কী ভাবছে সে বিষয়ে। যোগাযোগকে অগ্রাধিকার দিন; আপনার সন্তানকে চিনুন, জানুন। আপনি আপনার চিন্তাকে কিভাবে প্রকাশ করছেন তা আপনার সন্তানের জানা জরুরী। সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো ছাড়াও ভাষার উন্নয়ন এবং স্পষ্টভাষিতার জন্যও কথা বলা জরুরী। আপনাকে যাতে ‘বিরক্ত’ না করতে পারে সেইজন্য দূরে রাখার উদ্দেশ্যে টেলিভিশন, ইন্টারনেট অথবা কম্পিউটার গেম দিয়ে তাকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন কথা বলার অভাবের ফল হলো নির্জীব মেধা এবং জড়তা।
যোগাযোগের মধ্যে যেমন থাকা উচিত গুরুগম্ভীর আলোচনা তেমনি এবং পারস্পরিক হাসি-কৌতুক। মা-বাবার অবশ্যই সন্তানদের সাথে হাসি-কৌতুক এবং খেলাধুলা করা উচিত। কারণ হাসি-কৌতুক সম্পর্ক মজবুত করে এবং একঘেয়েমি ভাব দূর করে। অনেকসময় বাচ্চাদেরকে বড় করার কাজে বাবা-মা এত বেশী ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে, তারা এ বিষয়টিকে উপভোগ করতে ভুলে যান । এটা একটি বড় ভুল। শিশুদের ভুবন আনন্দ আর খেলায় পরিপূর্ণ। তাদের আনন্দ করার এবং খেলাধুলার চাহিদা অসীম। সেসব বাবা-মা বাচ্চাকে নিয়ে খেলতে বা বাইরে ঘুরতে যাওয়ার বদলে টিভি বা কম্পিউটারে মুখ গুজে পরে থাকতে পছন্দ করেন বাচ্চারা তাদের প্রতি বিরক্ত হয়। জীবন যখন নানামুখী চাপ আর উদ্বেগে পরিপূর্ণ, তখন শিশুরাই পারে কিছুক্ষণের জন্য হলেও চাপ কমানোর সর্বোত্তম ওষুধ দিতে (মা-বাবাকে তাদের শিশুসুলভ জগতে হারিয়ে যেতে সাহায্য করার মাধ্যমে)। কিছু মা-বাবা মনে করেন বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা নিজেদের গাম্ভীর্য ও সিরিয়াস ব্যক্তিত্বের জন্য ক্ষতিকর; এর মানে হলো জীবনের ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কাজকে অবহেলা করা। বাস্তবতা হলো, আপনি যখন শিশুদের সাথে হাসেন, তখন তারা আপনার সঙ্গে সহজ ও নির্ভয় হতে ভরসা পায়। এতে আপনার সঙ্গে তাদের ভালোবাসার এক অদৃশ্য বন্ধন তৈরী হয় এবং বাচ্চারা তাদের আত্মপ্রকাশে সাবলীল হয়। কৌতুক এবং হাসি-ঠাট্টা করা যোগাযোগের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
–
অনুবাদ Parent Child Relations