banner

রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 318 বার পঠিত

 

বাস এলো শতাব্দীর জন্য

রাজধানীর শেওড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে: ‘মহিলাদের উঠতে দেওয়া যাবে না’, ‘মহিলা আসন খালি নেই’- প্রতিদিনের এমন অবজ্ঞা আজ আর শুনতে হয়নি। বরং বাসটাই অপেক্ষা করছিল মহিলাদের/নারীদের জন্য। সে বাসে  সেই মেয়ে এবং তারপরে একে একে স্কুলগামী অন্য মেয়েরা উঠলো। পরে বাস ছুটে চললো।

রোববার (১৩ মার্চ) ভোর ঠিক সাড়ে ৬টায় শেওড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রা শুরু করে বাসটি। এতে একই সঙ্গে অবসান হয় শতাব্দীর মতো শত শত মেয়ের কষ্ট।

শতাব্দী বাসে চড়ে পরবর্তী বাসস্ট্যান্ড ক্যান্টনমেন্ট এমইএস বাস বাসস্ট্যান্ডে নেমে গেলো। আর এখন থেকে এই বাস প্রতিদিন চলবে। শেওড়া থেকে মহাখালী পর্যন্ত মহিলা বাস সার্ভিস নামে সরকারের বিশেষ এই বাস সেবা।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে সরাসরি পেয়ে শামসুন্নাহার শতাব্দী গতকাল শনিবার (১২ মার্চ) প্রশ্ন করেছিল এই সড়কে কি কোনো মহিলা (নারী) বাসের প্রয়োজন নেই?

এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী সেই মুহুর্তেই বাসের ঘোষণা দিয়েছিলেন। মন্ত্রীর ঘোষণা মাত্রই তা কার্যকর হলো। এই সড়কের যেসব মহিলা যাত্রীদের আগে লোকাল বাসে উঠতে দেওয়া হতো না, বা উঠতে গেলে শত পুরুষ ঠেলে বেগ পেতে হতো- এখন তাদের জন্যই আলাদা একটি বাস অপেক্ষা করছে।

প্রথম দিনের বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাসে প্রথম যাত্রী ছিলেন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী শতাব্দী। তারপরে তাকে দেখে অন্য মেয়েরাও ছুটে আসে বাসের দিকে। শতাব্দী নিজে আরও মেয়েদের ডেকে নিয়ে আসে বাসে। হাসিমুখে একে একে বাসে উঠে উল্লাসিত মেয়েরা।

শতাব্দী  বলেন, আমাদের ক্লাস শুরু হয় সকাল ৭টায়। ৭টার আগ পর্যন্ত বিশ্বরোড শেওড়া বাসস্ট্যান্ডে শত শত মেয়ে এসে বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকে।

আগে বাসের জন্য আগে আসার প্রবণতা থাকতো। সময় নষ্ট হতো, এখন আর তা হবে না বলে মনে করেন শামসুন্নাহার শতাব্দী।

আর স্কুল শেষ হয় সোয়া ১২টায়। তবে আজকে সাড়ে ৯টায় শেষ হবে এবং তখনই এমইএস বাসস্ট্যান্ডে শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষায় থাকবেন বলে জানান, বাসটির চালক মিজানুর রহমান।

বাসের কন্ডাক্টর মো. আলমাস প্রথম দিন ডেকে-ডেকে মেয়েদের তুলেছেন।

‘কাল (সোমবার-১৪ মার্চ) থেকে আর ডাকা লাগবে না; দেখবেন এমনিতেই ভরে যাবে’-এমন আশাবাদ তারও।

শতাব্দী জানান, প্রতিদিন বাসের জন্য আগে আগে আসার যে প্রবণতা ছিল এবং তড়িঘড়ি করে জোরজবরদস্তি করে বাসে উঠতে হতো। সেটি এখন কমে যাবে। সময়টাও যে নষ্ট হতো এখন আর তা হবে না।

শতাব্দীর এই সাহসী উচ্চারণে বাস পেয়ে উল্লাসিত সকালে স্কুলগামী ওই গন্তব্যের অন্য মেয়েরাও।

প্রতিদিন শেওড়া থেকে সকাল ৬টা থেকে বিকেল পর্যন্ত শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য বিআরটিসির এই বাস চলবে।

Facebook Comments