banner

মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 2887 বার পঠিত

 

‘পুরুষের একাধিক বিয়ে’ পর্ব-১

ডা. ফাতিমা খান


ইসলাম ধর্মে একাধিক বিয়ের অনুমোদনকে কেন্দ্র করে জনসাধারণের মাঝে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারনা বিরাজ করছে। বিশেষত: আরব সমাজে এই অনুমোদনের অপচর্চা লক্ষ্য করা যায়। কোন কোন ইসলাম বিদ্বেষী ধর্মাবলম্বীরা ইসলামে একাধিক বিয়ের অনুমোদনের কিছু ভুল ব্যাখ্যা মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। যার ফলে সীমিত জ্ঞানের অধিকারী সাধারণ মুসলিমরাও কখনও কখনও বিভ্রান্ত হয়ে যায়।

ইহুদী ও খ্রীষ্টান ধর্মেও বহুবিবাহের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়নি। কিন্তু ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্মের অনুকরণে নয় বরং সম্পূর্ণ স্বকীয়ভাবে ইসলাম একাধিক বিয়ে সম্পর্কে এমন কতগুলো বিধি-বিধান প্রদান করে ও মানুষকে আত্ন-সংযমের শিক্ষা দেয় যা তাদেরকে একাধিক বিয়েতে অনুৎসাহিত করে। এ আইনের উপর ইসলামের পুরোপুরি কোন নিষেধাজ্ঞা প্রদান না করার কারন হল, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও সামাজিক বেশ কিছু সমস্যার সমাধান করা যায় একাধিক বিয়ের মাধ্যমে।

সময় ও পরিস্থিতি ভেদে বিয়ের এই নিয়ন্ত্রিত আইন অনেকগুলো অনৈসলামিক কাজ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। তাই ইসলাম একাধিক বিয়ের অনুমোদন দেয়ার সাথে সাথে এর কিছু সীমাবদ্ধতাও প্রদান করেছে, একে মানবতাবাদী পন্থা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং সব স্ত্রীদের সমান অধিকারের আদেশ দিয়েছে, আবার প্রয়োজন ছাড়া একের অধিক বিয়ে নিষিদ্ধ করেছে।

বহুবিবাহ নয়, বরং একটি বিয়েই ইসলামের সাধারণ রীতি। কিন্তু নারী ও পুরুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক নানাবিধ সমস্যা ও সংস্কৃতির কথা বিবেচনা করে সীমাবদ্ধ আইনের মধ্যে থেকে একাধিক বিয়ের অনুমোদন ইসলামের অত্যন্ত বাস্তবধর্মী দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ। একটি উদাহরণ দিয়ে যদি বলতে চাই, তাহলে বলতে হয় যে একটি সমুদ্রে একটি ডুবন্ত জাহাজের যাত্রীদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য যেমন ক্যাপ্টেনকে জাহাজের মালপত্র গুলো সমুদ্রে ফেলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়…ঠিক তেমন বড় গুনাহ ও সামাজিক বিপর্যয় থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য দুটো খারাপের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম খারাপটিকে অনুমোদন দিয়েছেন।

চলবে…

ডা. ফাতিমা খান
লেখিকা কর্মরত: আল হিবা মেডিক্যাল গ্রুপ, জেদ্দা, সৌদি আরব।

শেষ পর্ব

Facebook Comments