banner

বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 672 বার পঠিত

 

নিজের প্রতি যত্ন নিন

নিজের প্রতি যত্ন নিন


মিথিলা ফেরদৌস


একবার এক ভাইয়া বলেছিলো,”যেদিন তোমার জামাই তোমার নামে সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিবে, সেদিন বুঝবা,তোমার চেহারা খারাপ হয়ে গেছে। সে তোমাকে নিয়ে এখন নিশ্চিন্ত।”

সেদিন, আমার জামাই হঠাৎ ঘোষণা দিলো, সে কিছুদিন পরে তার সমস্ত সম্পত্তি আমার নামে লিখে দিবে। হঠাৎ হকচকায় উঠি। তারমানে চেহারার কি এতই দুরাবস্থা এখন আমার? আরেক বিপদ, আলতাফের সম্পত্তি বলতে কিছু পুরান সার্ট, প্যান্ট, জুতা, শেভিং কিটস, শাওয়ার জেল এইসব আলতু ফালতু জিনিস ছাড়া আর তেমন কিছু তো নাই।এইসব দিয়া আমি করবো কি? তারমানে কি? আমি কি আম ছালা দুইটাই হারাচ্ছি?!! ব্যাপার ক্লিয়ার হওয়ার জন্যে, জিগাইলাম-

♥তোমার সম্পত্তি মানে?

♦তিন বছর পর,ফ্লাটের জন্যে লোন পাবো,সেইটা তোমার নামে লিখে দিবো।

♥ মানে কি?লোনের গ্রান্টার কে?

♦ তুমি, আবার কে?

♥আজব,আমার সম্পত্তির দরকার নাই,আমার লোনের বাড়ির দরকার নাই।মাফ চাই।ভাড়া বাড়ি আমার ভীষন পছন্দ।

প্রতি মধ্য বয়সি মহিলারা, এই এক সমস্যায় ভোগে।

সংসার, চাকরী, বাচ্চা, ক্যারিয়ার, বাড়ি,
গাড়ি, ব্যাংক ব্যালান্স করতে গিয়ে নিজের প্রতি যত্ন নিতেই ভুলে যায়। অথচ এই সময় একটা মেয়ে সৌন্দর্য পরিপুর্নতা পায়। এর ফলে সে কিছু ক্রাইসিসে ভোগে। সে দিনে দিনে ইন্সিকিউরড হয়ে পরে, তাছাড়া জীবনটাকে পুর্নভাবে ইনজয় করতে পারেনা।
এখন অবশ্য ফেসবুক হয়ে, একটা সুবিধা হয়েছে, অনেকেই সাইজা গুইজা কিছু ছবি আপলোডায়, তাতে কিছু কমেন্ট থাকে এমন, excellent, very nice, beautiful, অসাধারণ, খুব সুন্দর ইত্যাদি। সত্য হোক, মিথ্যা হোক শুনতে কিন্তু ভালোই লাগে। আমি অবশ্য এই গ্রুপে পরি। ফেসবুকে ছবি আপলোড ছাড়া, চুলটাও আচড়াতেও ইচ্ছা করেনা।রুপচর্চাতো দুরে কথা। খুব কম সংখ্যক আছে, যারা রুপচর্চা, পরচর্চা, পার্টি-ফাংশন নিয়া বিজি, এদের জামাইরা ভীষণ কর্মঠ । এরা হইলো রাজকপালী গ্রুপের।

একইভাবে প্রতি মধ্যবয়সি পুরুষদের বেশিরভাগ ছোটে বাচ্চার ভবিষৎ ভেবে।কিছু বিপথে যায়, তারা আবার নিজের চেহারার ব্যাপারে অতি যত্নশীল (এদের বউরা সাধারণত অতিশয় কর্মঠ হয়, ফলে এদের সংসারের প্রতি তেমন কোন দায়িত্ব থাকেনা), কিছু পথ বিপথ কোন পথেই থাকেনা। আকাম্মা গ্রুপের মানুষ এরা।

মানুষের জীবনের মুল্যবান সময়টুকু টাকার পিছনে ঘুরে নষ্ট করার কোন মানে নাই। বুড়া বয়সে ঔষধপত্রের খরচ ছাড়া এই টাকা কোন কাজেই দিবে না। আর ছেলে মেয়েকে তার নিজের ভবিষ্যৎ ভাবতে দিন। যাকে যত কম ভাবতে দিবেন, সে ততই অপদার্থ হবে। তবে তার শৈশব কৈশোরের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতাও নিশ্চিত করা জরুরী। তার সাথে নিজের জীবনকেও ইনজয় করার ও দরকার। তাই ঠিক যতটুকু দরকার ততটুকুই ছুটুন, তার বাইরে না।

© মিথিলা ফেরদৌস

Facebook Comments