banner

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 233 বার পঠিত

 

নারীদের মিলনমেলা

তরুণ প্রজন্মের নারীরা শোনালেন তাঁদের বিজয়ের কথা, জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার কথা। নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে এই নারীরা এগিয়ে চলেছেন তাঁদের নিজ গন্তব্যে। স্বপ্ন তাঁদের আরও বড়। যেতে চান বহুদূরে। এসব নারীর এগিয়ে চলার গল্পে আবেগাপ্লুত নানা শ্রেণি-পেশার সফল নারীরাও। তাঁরাও বললেন, এঁরাই আমাদের নায়িকা, এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা।
অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন কিরণ চন্দ্র রায় ও চন্দনা মজুমদারগতকাল সোমবার ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবন মিলনায়তনে বিকেল সাড়ে চারটায় শুরু হয় নারী দিবসের অনুষ্ঠান। এবারের আয়োজনের বিষয় ছিল ‘আমার কাজ, আমাদের অর্জন’। সেই অনুষ্ঠানে কলসিন্দুরের মেয়েরা, সাফ গেমসে সোনা বিজয়ী দুই নারী আর ভারতে নির্যাতিত আয়শা সিদ্দিকা শোনালেন জীবনযুদ্ধের কথা, সফলতার কথা। সেখানে আরও এসেছিলেন নানা শ্রেণি-পেশার সফল নারীরা। তারুণ্যের বিজয়ের কথা শুনে কখনো অতিথিরা হেসেছেন, কখনো কেঁদেছেন। হাসি-কান্না-আড্ডায় সফলতার গল্প শুনেছেন তাঁরা।
কলসিন্দুর গ্রামের দুই ফুটবলার সানজিদা ও মারিয়া জানাল তাদের কথা। কতটা বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে তারা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে, সেই বর্ণনা ছিল তাদের সহজ-সরল ভাষায়। তারা বলল, ভালো খেলে তারা দেশকে ও নিজেদের অনেক দূর নিয়ে যেতে চায়। তাদের স্কুলের শিক্ষক মিনতি রানী সাহা গ্রামের মেয়েদের জন্য সবার সহযোগিতা চান।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম কুড়ানো ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের নারী ফুটবলাররাও এসেছিলেন। সঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিনতি রানী সাহাভারোত্তোলনে সোনাজয়ী মাবিয়া আক্তার আর সাঁতারে দুটি সোনা বিজয়ী মাহফুজা খাতুন শোনালেন তাঁদের কথা, এগিয়ে যাওয়ার কথা। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সোনা বিজয়ী মাবিয়ার কান্নার সেই ভিডিও ফুটেজ বিমোহিত করে অনুষ্ঠানে আসা সবাইকে। সবাই দাঁড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান এই দুই নারীকে। জবাবে তাঁরা দুজনই ভবিষ্যতে অলিম্পিকসহ বড় আসরে বাংলাদেশের সম্মান আরও বাড়ানোর জন্য কাজ করবেন বলে জানান।

অনুষ্ঠানে আসা বিভিন্ন ক্ষেত্রের সফল নারীরা বললেন, নারী-পুরুষের পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া কেউই এগোতে পারবে না। কোনো উন্নয়নও স্থিতিশীল হবে না। নারী-পুরুষকে একসঙ্গে চলতে হবে। যার যা প্রতিভা, সেটা বিকশিত হতে একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে। দুজনে সমান না হলে কেউই টিকে থাকতে পারবে না।

অনুষ্ঠানের শুরুতে তিন ভাইবোন স্বাগতা, সভ্যতা আর সন্ধির গাওয়া ‘আমরা করব জয়’ গানটির সঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন সবাই। সবাই মিলে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। জয়ের প্রত্যয় নিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানটির সমাপ্তিও হয় জয়ী হওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে।

সাবেক খাদ্যসচিব ও ট্যারিফ কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান মুশফেকা ইকফাৎ​ বলেন, মেয়েদের অর্জনের পথটা সহজ ছিল না। তাঁদের ব্যাচের নারীরাই প্রথম জেলা প্রশাসক ও সচিব হয়েছেন। এখন তো অনেকেই বড় পদে যাচ্ছেন।

শাহলা খাতুন বললেন, নারীরা একা উঠে আসতে পারবে না। তাদের বাবা, ভাই ও বন্ধুদের সহযোগিতা লাগবে। একইভাবে পুরুষের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তাই নারী-পুরুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

মার্শা বার্নিকাট বলেন, নারী-পুরুষকে হাতে হাত রেখে এগোতে হবে। আলাদা করে কিছু হবে না। এখানে সবাই সবার গাইড।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন গানের কিছু অংশ গেয়ে শোনান। নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নাচ করার কারণে কোনো নারীকেই যেন নিগৃহীত হতে না হয়, সেটাই চাওয়া।

 নারীরা নানা বাধা ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে। এমন অসংখ্য বাধা পেরোনোর ঘটনা নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানের শেষে গান গেয়ে শোনান কিরণ চন্দ্র রায় ও চন্দনা মজুমদার। তাঁদের গানের মধ্য দিয়েই শেষ হয় নারী দিবসের অনুষ্ঠান।

Source Of: Prothom-alo

Facebook Comments