banner

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 278 বার পঠিত

 

এটাই কি খাদিজার প্রতি বদরুলের ভালোবাসা?

‘সখী, ভালোবাসা কারে কয়!/ সে কি কেবলই যাতনাময়।’—রবিঠাকুরের এই গানটি বর্তমানে খুব বেশি সময়োপযোগী। হয়তো তিনি তাঁর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে ভালোবাসা নামক শব্দের বিপরীত দিকটা খুব গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন, তা না হলে এমন গান কি লেখা যায়?
ভালোবাসা যে সত্যি যাতনাময় সেটা আরও একবার প্রমাণ হলো বাংলার বুকে। এই বাংলার মাটিতেই ভালোবাসা নামক শব্দের বলি হলো খাদিজার মতো এক নিরীহ প্রাণ! এটাই কি খাদিজার প্রতি বদরুলের ভালোবাসা? এই ভালোবাসা বুকে নিয়েই কি বদরুল দিনের পর দিন খাদিজার জন্য প্রতীক্ষা করেছে? প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেই তাকে রক্তাক্ত করতে হবে, আছে কি কোনো গ্রন্থে লেখা?
বদরুল কি সত্যি খাদিজাকে ভালোবেসেছিল? ভালোবাসাতো কখনো কারও ক্ষতি করে না! ভালোবাসার মানুষের অমঙ্গল কেউ কখনো কামনা করতেই পারে না। তাহলে খাদিজাতো ভুল করেনি মানুষরূপী পশু বদরুলকে চিনতে। আর চিনতে পেরেছিল বলেই আজ তার এমন করুন দশা।

বদরুল ছাত্রলীগ না ছাত্রদল সেটা বড় কথা নয়। আসল কথা হলো সে একজন মানুষ। আর মানুষের ভেতরের মনুষ্যত্ব তৈরি হয় শৈশবে। যা হয়তো বদরুলের ভেতরে ছিল না। কবি ঠিকই বলেছিলেন, মানুষেরই মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতে সুর-অসুর। প্রতিটি মানুষের ভেতরেই একটা পশু ঘাপটি মেরে বসে থাকে। মানুষের বিবেক সেই পশুটাকে জাগ্রত হতে বাঁধা দেয়। কিন্তু বিবেক যেখানে অস্তিত্বহীন, মনুষ্যত্ব সেখানে অসহায়।
খাদিজা-রিসার মতো আরও অসংখ্য নারী দিনের পর দিন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কারও মুখ অ্যাসিড দিয়ে ঝলসানো হচ্ছে, কাউকে ধর্ষণ করা হচ্ছে, কারও পেটে ছুরি ঢোকানো হচ্ছে আবার খাদিজার মতো চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করা হচ্ছে।
প্রেম-ভালোবাসার নামে যে পৈশাচিক, ন্যক্কারজনক ঘটনা একের পর এক ঘটে চলেছে তা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়। ভালোবাসা শব্দটির গভীরতা সম্বন্ধে ন্যূনতম ধারণা যাদের নেই শুধুমাত্র মোহের বসে তারা ফুলের মতো জীবনগুলো ধ্বংস করে চলেছে। এর কোনো প্রতিকার আজও আমাদের সমাজ করতে পারেনি। যদি শুরুতেই এসব অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হতো তাহলে দিনে দুপুরে সবার সামনে খাদিজাকে এভাবে আক্রমণ করতে পারত না।
দূর প্রবাস থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটাই আবেদন, বদরুলের মতো নরপিশাচের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়। পত্রিকার পাতায় আর কোনো খাদিজা-রিসা যেন হেডলাইন না হয়। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী সে দেশে সকল নারীর নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয়। আমরা প্রবাসীরা যেন মাথা উঁচু করে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতে পারি।

Facebook Comments