banner

বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 574 বার পঠিত

 

মাদ্রিদে কাটানো মায়াবী মুহূর্তগুলো …


হালিমা সাদিয়া খাতুন


জীবনের বালুচড়ে চলার পথে সয্তনে কুঁড়িয়ে নেয়া নুড়ি গুলোর সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে বন্ধুত্বের মায়াবী নীড়। যে নীড়ের প্রতিটি নূড়ি অমূল্য এবং অনন্য যার ভাঁজে ভাঁজে জড়িয়ে আছে, লুকিয়ে আছে বন্ধুত্বের মূল্যবান প্রাপ্তি। যে প্রাপ্তির উপলব্ধি মনে ভালোলাগার দোলা দিয়ে যায়, রেখে যায় গুচ্ছ গুচ্ছ ভালোবাসার সুখের শিশির বিন্দু ..
জানুয়ারীতে আমাদের ভ্যাকেশন উপলক্ষে উড়াল দিয়েছিলাম আফরোজা হাসান পরিবার ডোরে । সেখানে কাটানো সময়গুলো বন্ধুত্বের নীড় কে করেছে সমৃদ্ধ , দিয়েছে চির অমলীন মূল্যবান কিছু মুহূর্ত যা কখনো ভুলবার নয়!
আমাদের এখান থেকে মাদ্রিদ যেতে লেগেছিলো মাত্র দু ঘন্টা। এয়ারপোর্ট থেকে আফরোজার বাসাও খুব কাছে, পূর্ব পরিচিত ভাতিজার সাথে মাদ্রিদ শহরের গল্প শুনে এবং দৃশ্য উপভোগ করতে করতে অল্প সময়েই পৌঁছে গিয়েছিলাম ওদের বাসায় ।
দীর্ঘ বিরতির পর দেখা, কাছে পাওয়া আর মধুর আলিংগনটুকু মুছে দিয়েছিলো সমস্ত ক্লান্তি। গল্প, হাসি কথা মালায় দু পরিবারের পুনর্মিলন মুহূর্তেই জমিয়ে তুলেছিলো গুন গুন কথা -স্মৃতি চারণ সন্মেলন!

ঘুরাঘুরি ১- হেরোন সিটি
সন্ধা বেলায় বেড়িয়েছিলাম হেরোন সিটির উদ্দেশ্যে। মাদ্রিদ শহরটি পুরোটাই পাহাড়ের মাঝে, রাস্তায় বে্রোলেই চোখে পড়বে উঁচু নিচু রাস্তা, কখনো আঁকা বাঁকা মোড় তো আবার কখনো লম্বা টানেল । টানেলগুলো সব পাহাড় কেটে কেটে তৈরি করা হয়েছে। রাত হয়ে গিয়েছিলো, রাস্তার দুপাশের ল্যাম্পপোস্টের আলোর সাথে সাঁ সাঁ করে ছুটে চলা সাথে ছিলো ননস্টপ মধুঝরা গল্প!

ঘুরাঘুরি ২- আতোচা স্টেশন
রাজধানী মাদ্রিদের চমৎকার স্থান গুলোর একটা হলো এই আতোচা স্টেশন । এই স্টেশনটির নির্মান কাজ ১৮৮৯ সালে প্রথম শুরু হলেও পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে আর্কিটেক্ট রাফায়েল মোনেও এর অধীনে স্টেশনটির ডিজাইনে মডিফিকেশন করা হয় । দূর দূরান্তের ক্লান্ত পথিকরা যখন স্টেশনটিতে আসবেন, স্টেশনটির সৌন্দর্য দেখে এক পলকেই মুগ্ধ হবেন । ঘন সবুজ সুউচ্চ প্লাম ট্রি, নানান রকমের পাতাবাহার, বিভিন্ন ধরণের লাগানো গাছগুলোর সজীবতা তো আছেই সাথে কবুতর, ঝাঁকে ঝাঁকে ছোট মাছ আর কচ্ছপ বাহিনীর লম্ফ ঝম্ফ উপভোগ করার মতোন।
শুধু সুন্দরের দিক থেকেই নয় বরং ইউরোপের প্রথম দশটি সেরা স্টেশন এর মধ্যে স্পেনের মাদ্রিদের এই আতোচা স্টেশন সেরা তিন নাম্বারের গৌরব অর্জন করে আছে সুদীর্ঘ সময় কাল থেকে!

ঘুরাঘুরি ৩- স্টেডিয়াম রিয়েল মাদ্রিদ
বিখ্যাত স্টেডিয়াম রিয়েল মাদ্রিদের নাম শুনেন নি এমন মানুষ কম। নাম আমিও অনেক শুনেছি, সুযোগ যখন পেলাম তাই এবার স্টেডিয়াম এর সামনে দিয়ে ঘুরে কিছু ছবি তুলে চলে আসলাম। স্টেডিয়ামটির মূল নাম হলো Santiago Bernabéu Stadium।

ঘুরাঘুরি ৪- জোয়ান কার্লোস পার্ক স্পেনিশ উচ্চারণে খোয়ান 🙂
মাদ্রিদ এর উত্তর পূর্বকোনে অবস্থিত জোয়ান কার্লোস পার্ক টি প্রায় ১৬০ হেক্টর জায়গা নিয়ে গঠিত, এই পার্কটি মাদ্রিদের সবচাইতে বড় পার্ক গুলোর একটি। শিশু থেকে বয়স্ক সবার জন্য রয়েছে নির্মল বিনোদনের ব্যবস্থা। এতে রয়েছে দশ হাজার ভিন্ন প্রজাতির গাছ এবং নব্বই হাজার প্রজাতির ফুলের সমাবেশ । বিকেল থাকতেই রওয়ানা হয়েছিলাম আমরা , ঘুরে ফিরে ক্লান্ত হয়ে যখন সবাই বাসায় ফিরছিলাম তাকিয়ে দেখলাম মাদ্রিদ গগনে বিশাল পূর্নিমার চাঁদ মিটি মিটি হেসে আলো ছড়াচ্ছে….

ঘুরোঘুরি ৫- বৃষ্টি ভেজা সন্ধায় চুররোস উইথ কাপুচিনো
আমি, আফ্রু আর সারামণি মিলে বাসার নিচের চুররোস শপে-

ঘুরাঘুরি ৬- হালাল বার্গার এর সন্ধানে
এদিন আমরা দুই পরিবারের সব সদস্যরা মিলে রাটের খাবার খেতে এসেছিলাম আমাদের ভাতিজার হালাল বার্গার শপে।

ঘুরাঘুরি ৭- মাদ্রিদ সেন্টার কাইয়ো
এদিন অবশ্য আমরা শুধু পতি -পত্নী মিলে বের হয়েছিলাম। যেতে হয়েছিলো মেট্রো দিয়ে। ভয় পেতে পেতে অবশেষে ঠিক ভাবে এসে পৌঁছেছিলাম সেন্টারে । আনন্দরা মুঠো মুঠো সুখ ছড়িয়েছিলো সর্বক্ষণ …
ঘুরে ফিরে দুজনে পথ হারিয়েছিলাম তবু টেনশন লাগে নি একটুও! পাশে উনি আছেন এটা ছিলো পরম নির্ভরতার কারণ! তারপর আবার পথ খুঁজে পেয়ে মেট্রো ধরে বাসায় ফিরে এসেছিলাম, স্মৃতিরা কল্পনার বুননে এঁকে নিয়েছিলো নতুন স্বপ্ন কাঁথা!

Facebook Comments