বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের উপর আমরা যথেষ্ট আস্থা রাখি, কিন্তু রাষ্ট্রের ভূমিকায় আমরা যথেষ্ট সন্তুষ্ট হতে পারছি না। আমরা এই দেশে ধর্ম, বর্ণ, দলিত, হরিজন, নারী-পুরুষ, শিশুসহ সকলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই।’
মঙ্গলবার (১৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী, সম্প্রদায় ও ব্যক্তির উপর ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
আয়শা খানম বলেন, ‘এদেশে মুক্তমনা শিক্ষক, ব্লগারসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে। যারা রাজনীতিকে পুঁজি করে সম্পদের মালিক হওয়ার চেষ্টায় একের পর এক অপরাধ করে যাচ্ছেন তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না।’
তনু হত্যাকাণ্ডের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের প্রতিবেদন আমাদের উদ্বিগ্ন করে।’ এসব হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে সাধারণ নাগরিকসহ সকল সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় বিচারহীনতাকে দায়ী করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে হত্যাকাণ্ড ঘটেই চলেছে। এর মূল কারণ অপরাধীর বিচার হচ্ছে না। তাই এই অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে।’
‘এখন শুধু সংখ্যালঘু নয়, দেশের সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ হচ্ছে রাষ্ট্র। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই’- বলেন মালেকা বানু।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সকলকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করারও আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের এই নিরাপত্তহীনতা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রশাসন ও সমাজের বিবেকবান মানুষের কাছে প্রশ্ন রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ।
গত ১৭ মাসে এধরনের ২৯টি ঘটনা ঘটেছে- এমন পরিসংখ্যান তুলে ধরে মানবন্ধন থেকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এসব ঘটনার দ্রুত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ ও আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানায়। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে রাষ্ট্র, সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আরও গভীর বিবেচনা ও প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানায় তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আন্দোলন সম্পাদক কাজী সুফিয়া আখতার, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনুস প্রমুখ।