banner

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 1142 বার পঠিত

 

সঙ্গীকে ধন্যবাদ দিতে ভুলে গেছেন কি?(দাম্পত্য টিপস)

ফাতেমা শাহরিন


বিয়ে মানে অনেক স্বপ্ন, ইচ্ছা, আশা সবকিছুতে বেশি বেশি ভাললাগা টাইপ আমাদের ধ্যানধারণায়। রাইট কিংবা রং কিছু বলছি না। ভাবনা ত ভাবনা। আসলে এমন অনুভূতিকে আমরা ‘বিয়ে’ শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারি না আদৌ। ‘বিয়ে’ মানে বিশাল কিছু। বলা যায়, ক্ষুদ্র রাষ্ট্র বা পরিবার গঠন। দুইজন মানুষের সঙ্গে, সঙ্গে দুইটি পরিবার, সব আত্মীয়তার বন্ধন। বিয়ে সমাজের ধারক ও বাহক। একটি নতুন পরিবার। একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রের অংশ।

আসুন দেখি, বৈবাহিক জীবনের জন্য সুন্দর বাধন গড়তে কি কি প্রস্তুতি আছে আজকের আর্টিকেলে। দাম্পত্য জীবনে সুখের জন্য দরকার একে অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং বিশ্বাস। আর ছেলে ও মেয়ে উভয়ের আবেগকে সমান দৃষ্টিকোণে গুরুত্ব দেওয়া।

দাম্পত্য টিপস

প্রশংসা
বিবাহিত সম্পর্ক সুন্দর রাখতে চাইলে ধরে রাখুন সবসময় কৃতজ্ঞতা ও মুগ্ধতাময় প্রশংসামুলক বানী। সঙ্গীকে ধন্যবাদ দিন ছোট খাট কাজেও। সামান্য পানির গ্লাস হাতে নিয়ে মুছকি হাসি দিয়ে ধন্যবাদ দিন। ধন্যবাদের গুরুত্ব অনেক। প্রশংসা পেলে মুহূর্তেই মনটা খুশিতে ভরে ওঠে। প্রশংসাকারীর জন্য ভালো কিছু করতে ইচ্ছা করে।

দুঃখ প্রকাশ
কোন কারণে খারাপ ব্যবহার করে ফেলতে বা কেউ আঘাত হলে কথা, কাজ, বা আচরণে নিজ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা এবং সরি বলা। কোন কারণে বাইরের কার সামনে ধমক দেয়া একে অন্যকে অসম্মান করা ঠিক না। কাউকে অপমান করা আপনার প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধকে কমিয়ে দিবে।

উচ্ছ্বসিত আবেগ
সঙ্গীর ছোটখাট উচ্ছ্বসিত আবেগকে মূল্যায়িত করুন। ছোট ছোট কাজে এখন প্রত্যাশা অনুযায়ী তা পূরণ করুন অল্প হলেও অভিমানকে প্রকাশ করতে দিন। একে অপরের প্রতি প্রশংসা, মুগ্ধতা আর কৃতজ্ঞতাই কিন্তু সব সময় সম্পর্কে সুন্দর করে।

উপহার
পারস্পরিক কথাবার্তা আর ‘সময়’ হল সম্পর্কের জন্য সবচেয়ে বড় উপহার। তার প্রতি আপনার কর্তব্য রয়েছে, আপনার কিছু দায়িত্ব রয়েছে। কিছুটা অল্প দামী ব্যক্তির পছন্দের জিনিস মাঝেমধ্যে পাওয়ার অধিকার রাখে সঙ্গীরা। এই বিষয়টি খেয়াল রাখুন।

সুন্দর ব্যবহার
সুন্দর বিনয়ের সাথে কথা এবং আচরণ করলেও সঙ্গীরা খুশি হন সবচেয়ে বেশি।ভাল কিছুর জন্য যদি আমরা সুন্দর আচরণ করি তবে সেই ভাল কাজটা তার কাছ থেকে বারে বারে ফিরে বসবে ।

ভরসা ও বিশ্বাস
কখনো সন্দেহ নয় বরং ভরসা এবং বিশ্বাসের সাথে সংশয় দূর করুন। সন্দেহ সম্পর্ককে ধ্বংস করে তাই কোন বিষয়ে সন্দেহ কাজ করলে দুজনে বসে খোলামেলা আলোচনা করা ভরসা করা।জীবনসঙ্গী আপনার মত মানুষ খুব কাছের মানুষ এটা সত্যি কিন্তু খুঁতখুঁত করে যদি তার বিষয়ে অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করেন, আপনি নিঃসন্দেহে হতাশ হবেন। মানুষ কখনো নিখুঁত নয়। তাই বিশ্বাস আর ভালবাসাকে সাথে নিয়ে এগিয়ে চলুন।

ক্ষুদ্র আবেগকে গুরুত্ব
ভালোবাসার প্রকাশ থাকাটা খুবই প্রয়োজন। তাই কার অভিমান, আবদার, রাগ, ভাল লাগা, ভালবাসার ক্ষুদ্র আবেগকে মূল্য দেওয়া এবং শ্রদ্ধা করা উচিত। পছন্দ, ভালোলাগা কিংবা কথাবার্তাকে গোণায় ধরা এবং সন্মান দেয়া। সালাম দিয়ে, উত্তর দেওয়া। বেশ কিছুদিন যাবৎ খুব আগ্রহ নিয়ে কিছু বলছে আপনি ব্যস্ত হলে পরে বিশেষভাবে সময় নিয়ে কথাটি শুনুন।

ক্ষমা করা
ক্ষমা হল সংসার জীবনে ভালোবাসাকে প্রাণবন্ত করে রাখবার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। ঠিক যেমন সুঘ্রাণময় ফুলকে আপনি পানি দিয়ে আরো বেশি জীবন্ত করে রাখেন। দু’জন দু’জনকে জেনে-বুঝে তবেই তো সঙ্গী করা। দুজনে মানুষ। তাই ভুল ভাবনা, ভুল আচরণ, ভুল কোন ঘটনার জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং ক্ষমা করে দেওয়া দুইটি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার জন্য তার সবটুকু নিয়ে সংসার বাঁধা। ঘরে বাইরে যত রকম অভিজ্ঞতা হোক, হৃদয়ের প্রিয়তম কুঠুরিটা আপনার জন্যই তিনি বরাদ্দ রেখেছেন। তাই ক্ষমা করুন। ক্ষমা চান।

অভিমানটুকু যত্ন করে তুলে রেখে বাসুন সঙ্গীকে ভালো। ভালোবাসা আপনাকে বড় করে দিবে। ভালোবাসা তার কাছে আপনার ওজন বহুগুন বাড়িয়ে দিবে।ভালোবেসে, আপনারা নিজেদের কাছে সম্মানিত এবং আরো প্রিয় পাত্র হয়ে উঠুন।
আপনিই পারেন ভালোবাসা পাওয়ার একটি পথ তৈরি করতে… তাই আজকে থেকে ভাল থাকুন।
রেফারেন্স: বই-সুখী ও সুন্দর জীবন।

সাইকোলজি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

Facebook Comments