banner

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং, ,

Daily Archives: April 23, 2024

 

একুশে বই মেলায় নবীন লেখিকা পরিচিতি (পর্ব-১)

অপরাজিতা ডেক্স


‘একটি হলেও নবীন লেখকের বই কিনুন’- প্রতিপাদ্য সামনে রেখে অমর একুশে বইমেলা চলে গিয়েছিল ২০১৭। এ বছর মানে ২০১৮ একুশে বইমেলার প্রতিপাদ্য বিষয় হল, ”পড়ব বই, গড়ব দেশ’। এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ১-২৮ ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী বইমেলা চলবে।

আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বইমেলায় নবীব দুজন লেখিকার পরিচয় এবং আর অনেক বিষয়। আসুন জানি তাদের সম্পর্কে।

মুক্তারা বেগম নদী

এসেছে এই বইমেলায় তার একক কবিতার বই “একলা পাখি”।

লেখক পরিচিতি:

মুক্তারা বেগম নদী, জন্ম চায়ের দেশ সিলেট বিভাগের, হবিগঞ্জ জেলায়। বাবার মার বড় সন্তান। পড়াশুনা, ইডেন মহিলা কলেজ থেকে অর্থনীতিতে এম.এ, ইংল্যান্ডের লন্ডন স্কুল অফ কমার্স থেকে এম.বি.এ.। বর্তমানে দেশের বিখ্যাত আইটি কোম্পানিতে কর্মরত। শখ: বই পড়া, লেখালেখি, মুভি দেখা, ছবি তোলা, গান শোনা, ঘুরে বেড়ানো, বাগান করা, রান্নাবান্না, সবচেয়ে বেশি পছন্দ বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানো।প্রিয় লেখক : সৈয়দ মুজতবা আলী, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শহিদুল্লাহ কায়সার, জাহানারা ইমাম, আহমেদ ছফা, জীবনানন্দ দাশ, হেলাল হাফিজ রুদ্র মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ,পুর্নেন্দ্র পত্রী, মাওলানা জালাউদ্দিন রুমী, খলীল জিবরান, এরিক মারিয়া রেমার্ক, ও হেনরী, আর্নেষ্ট হেমিংওয়ে। প্রিয় বই : শবনম, পদ্মা নদীর মাঝি, পথের পাঁচালি, একাত্তরের দিনগুলি, হাজার চুরাশির মা, সংশপ্তক, যদ্যাপী আমার গুরু, যে জলে আগুন জ্বলে, কবি, আ ফেয়ারওয়েল টু আর্মস, ত্রী কমরেডস, দ্যা ওল্ড ম্যান এ্যান্ড সী, অলিভার টুইষ্ট, ল্যা মিজারেবল, মা।

এক নজরে কোথায় পাবেন বইটি

নাম : মুক্তারা বেগম নদী
একক কবিতার বই ” একলা পাখি”
প্রচ্ছদ – হিমেল হক।
প্রকাশ করছে – কুঁড়েঘর প্রকাশনী লিমিটেড।
স্টল নং ১২২
গায়ের মূল্য :২০০ টাকা
কবিতা বিষয় : ভালবাসা প্রেম বিরহ অপেক্ষা আর প্রকৃতি।

লুনা লাবিব

“নীল খামে তোমার নাম” তার একক কবিতার বই প্রথম এসেছে এবারের বই মেলায়।

লেখক পরিচিতি:

লুনা পারভীন। জন্ম ১৯৭৫ সালের ২৭ অক্টোবর, পিতা মরহুম ডাঃ এস এম আলতাফ হোসেন, মাতা ডাঃ জাহেদা খান ইউসুফ জাই, পৈতৃক নিবাস খুলনার ডুমুরিয়া, ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির সাথে জড়িত! তৎকালীন শিশুদের ম্যাগাজিন নিয়মিত ছড়া লিখতেন। পরবর্তীতে মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন এন্ড কলেজ, উত্তরা থেকে এমবিবিএস পাশ করে বর্তমানে শিশু স্বাস্থ্যের উপর উচ্চতর ডিগ্রী সম্পন্ন করে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১১ বছর যাবত কর্মরত আছেন। লেখাপড়া ও পেশাগত কারণে লেখালেখি থেকে সাময়িক বিরতির পর আবার নতুন করে গত এক বছর যাবত বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপ ও পত্রিকায় লেখালেখির সাথে জড়িত আছেন। এবারের বই মেলায় তার প্রথম কবিতার বই ‘নীল খামে তোমার নামে প্রকাশিত হলো।

এক নজরে কোথায় পাবেন বইটি

“নীল খামে তোমার নাম”
কবি : লুনা লাবিব
প্রকাশক : শ্রাবনী মজুমদার
প্রকাশনী : আনন্দম
প্রচ্ছদ : জয়ী আলম
পাওয়া যাচ্ছে : ম্যাগনাম ওপাস
স্টল নং : ৩৮৯-৩৯০
বইমেলা মূল্য: ১২০ টাকা মাত্র।

 

 

মাতৃকথন_২

ফারিনা মাহমুদ


এই .. শোনো … শোনো,
আমার ছবি আপলোড করো না কিন্তু খবরদার ! আমাকে বাদ দিয়ে শুধু বাবুর ছবি দাও …।কিংবা গ্রুপ ছবি তোলার সময় নিজের বেখাপ্পা শরীরটাকে দুইজনের মাঝের চিপায় যথাসম্ভব ঢেকে দাঁড়ানোর চেষ্টা।
কি? কমন পড়ে? মা হবার পরে মুটিয়ে যাওয়া শরীরটা নিয়ে আমাদের আড়ষ্টতা কথা বলছি !

‘মাইক্রোস্কোপিক’ একটা জাইগোট থেকে জ্বলজ্যান্ত একটা মানবসন্তান প্রসব … একটা বিন্দু থেকে পূর্ণাঙ্গ স্বপ্নের জয়যাত্রা। না, বায়োলজি ক্লাসে পড়া ব্যাঙের জীবনচক্র নয়, মানুষের জীবনচক্রের যাত্রাপথ! সেই যাত্রা কি আর সিরাতুল মুস্তাকিম। মোটেই নয়। একটু একটু করে স্ফীত হয়ে ওঠা শরীরটা কারো কারো ক্ষেত্রে শ্রী হারাতে থাকে নানাভাবে।

জীবনে একটা আঁচড় পড়েনি যে শরীরে, সেই চামড়ায় চিঁড় ধরে। ক্রমশ সেটা রূপ নেয় ফাটলে।
নাকটা কেমন যেন ফুলে ওঠে, ঠোঁটটা কালচে হয়ে যায়। ঘাড়ের কাছে, মুখে, কপালে ছোপ ছোপ কালচে পিগমেন্টেশনের দাগ, ফুলে ঢোল হয়ে যাওয়া পা। আর সর্বশেষ সিজারিয়ানের আড়াআড়ি কাটা কিংবা নরমাল ডেলিভারির থ্রি ডিগ্রি টিয়ারের যন্ত্রনা!!! তবেই না “মা”!

আর যে মুহূর্ত থেকে আদরের ধন বুকে এলো, মায়ের কি আর সময় হয় নিজের দিকে তাকানোর? আমি নিজে ১৯ দিন পরে চুল আঁচড়ানোর সময় পেয়েছিলাম!

কেমন কেমন করে যেন সময় চলে যায়। বাবুটা বড় হয়। একসময় হঠাৎ মায়ের খেয়াল হয়।
একি! আমার এমন হতচ্ছাড়া শ্রী ! হাত পায়ের এ কি দশা? খিদায় তো জান বের হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু পেট ভরে খেতে গিয়ে দেখি আরেক বিপদ! জামা কাপড় কিছুই গায়ে লাগে না ! নিজেকে কেমন যেন দুনিয়ার সাথে অচল মনে হয়।

..কুরূপা কুৎসিত মোটা একটা মহিলা মহিলা লাগে ! কেউ কেউ আপ্রাণ চেষ্টা করেন সান্ত্বনা খুঁজে নিতে। মা হয়েছি, মোটা হওয়া জায়েজ এখন। কেউ কেউ ফ্রাস্টেশনে ধুঁকে ধুঁকে নিজেকে গুটিয়ে নেয় আরো!

সমাধানটা আসলে কি?
বাস্তব হলো, আমরা কেউ কেট মিডলটন না, যে প্রসবের ১২ ঘন্টা পর মেকআপ করে হাই হিল পরে ওটি থেকে বের হবো আর লোকে বলবে – মাইরালা !! বাচ্চা আসলে কই আসিলো আর কইত্তে বাইর হইলো?

কাজেই ওইসব রাজ-পুত্রবধুদের কভার করা ম্যাগাজিন দেখে আক্ষেপ করতে গেলে মা না হওয়াই ভালো। আমরা হলাম প্রজাবধু।
আমরা আমাদের শান্তির জন্য যা করতে পারি তা হলো,
♥স্রেফ নিজেকে ভালোবাসা,
♥নিজের একটু যত্ন নেয়া।

হ্যা, “বাচ্চা হয়েছে, বাচ্চাই আমার পৃথিবী” – এটা যেমন সত্য, তেমনি এটাও সত্য যে আপনিও আপনার বাচ্চাটার পৃথিবী। দিনের ২০ ঘন্টা ওর যত্ন নিচ্ছেন, কিন্তু আধটা ঘণ্টা নিজেকে দিন। নিজের শরীরটাকে দিন। নিজের দিকে তাকান, নিজের হাত পা গুলো ম্যানিকিউর-পেডিকিউর এর অভাবে খুব অসুন্দর দেখাচ্ছে?

বাবুকে দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে একটু পানিতে চুবিয়ে ফেলুন, তারপর বাবু ঘুমালে গোসলটা সেরে নিন। পরদিন চুলটাকে একটু তেল দিয়ে বাঁধুন, তার পরের দিন শরীরটা ভালো করে দেখুন, মুটিয়ে যাচ্ছেন? সঠিক ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কি করে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার একটু খোঁজ খবর শুরু করুন।

একদিন, দুদিন … দেখবেন হারিয়ে যাওয়া লাবণ্য ফিরে আসছে একটু একটু করে। ফিরে আসছে আত্মবিশ্বাস। এই আত্মবিশ্বাসটা খুব জরুরি আমাদের সবার জন্য।

স্বার্থপর হতে বলছি না মোটেই, মোটেই ছোট করছি না একজন মুটিয়ে যাওয়া মায়ের চির সাবলীল সৌন্দর্যকে। শুধু বলছি, নিজের জন্য একটু সময় বের করতে প্রতিদিন, যাতে আক্ষেপে না ভূগি। দীর্ঘশ্বাস না ফেলি পুরানো এ্যালবাম দেখে অথবা ক্যামেরার সামনে গেলেই আড়ষ্ট হয়ে না যাই।

দিনশেষে … প্রতিটি মা-ই অনন্যা। মাতৃত্বের গুনে সম্পূর্ণা। তাই একটু বাড়তি যত্ন, ভালোবাসা পাবার অধিকার তাঁদের সবার আগে। তো সেই ভালোবাসাটা না হয় সামান্য একটু নার্সিসিজম দিয়েই শুরু হোক !

কি বলেন ?
শুরু হোক, নিজেকে ভালোবাসা দিয়ে … একটু একটু করে !