banner

রবিবার, ০৫ মে ২০২৪ ইং, ,

Monthly Archives: April 2024

 

সেলিনার বনসাই রাজ্য

সেলিনা পারভিন চেনা-অচেনা কিংবা বিলুপ্তপ্রায় গাছের সমারোহ ঘটিয়েছেন তাঁর আঙিনায়।  কুষ্টিয়ার মেয়ে সেলিনা পারভিন কলেজে পড়ার সময় নিয়মিত ম্যাগাজিন পড়তেন। সেই ম্যাগাজিনে প্রকাশিত পছন্দের বিষয়ের লেখাগুলা কেটে রাখতেন। একদিন কুষ্টিয়ারই ছেলে কাজল মাহমুদের সঙ্গে ঘর-সংসার পাতলেন। স্বামীর কর্মস্থল মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর চা-বাগান। চলে এলেন এখানে। কাজল মাহমুদ ওই চা-বাগানের ব্যবস্থাপক।

চা-বাগানের নীরব-নিভৃত, কোলাহলমুক্ত স্থানটিই যেন তাঁর ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা সৃষ্টিমুখরতাকে জাগিয়ে তুলল। প্রশিক্ষণ ছাড়াই ম্যাগাজিন থেকে কেটে রাখা লেখাগুলো পড়ে, ছবি দেখে হাত দিলেন নতুন এক শিল্পে। যার নাম বনসাই। সেটা ১৯৯৮ সালের কথা। বললেন, ‘কেউ প্রশংসা করবে। এ জন্য কাজটি করিনি। নিজের ভেতরের ভালো লাগা থেকেই কাজটিতে হাত দেওয়া।’

সেই যে শুরু হলো। ধীরে ধীরে বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করলেন গাছ। টবে লাগানো হলো। কোনোটি পুরোনো গাছের গোড়ায় জড়িয়ে দেওয়া হলো। এক নিবিড় শ্রম ও অধ্যবসায় পেয়ে বসে তাঁকে। গাছটির বয়স হচ্ছে, কিন্তু ওটা একটি সীমিত উচ্চতায় আটকে আছে। গাছটির সারা শরীরজুড়ে লাবণ্যের কমতি নেই। সবুজ পাতা, অনেক বছরের আলো-জল খাওয়া শাখাগুলোও সময়ের সমৃদ্ধ মেজাজ নিয়ে দুলছে। এই পরিবেশটাকে গাছের শরীরজুড়ে ধরে রাখতে লাগে অনেক সময় ও পরিচর্যা। দিতে হয় নিয়মিত সেচ ও সার। সামান্য হেলাফেলার সুযোগ নেই। স্বামী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসারে বনসাইগুলোও সমান যত্ন-আত্তি পায়। এই কাজটির মধ্য দিয়ে চার দেয়ালে আটকে না রেখে নিজেকে ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ তৈরি করেছেন তিনি।

স্বামী কাজল মাহমুদ সমানে তাঁকে উৎসাহ জুগিয়ে চলছেন। সেলিনা পারভিনের শিল্প সৃষ্টির এই কাজ এখন আর তাঁর নিজের পরিধিতেই আটকে নেই। তাঁর এই বনসাই দেখে বাংলাদেশ বনসাই সোসাইটি তাঁকে সদস্য করেছে। তিনি বনসাই সোসাইটির একাধিক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। প্রশংসিত হয়েছেন। ২০১৫ সালে তাঁর প্রদর্শিত বনসাই পেয়েছে প্রথম পুরস্কার। বাণিজ্যিকভাবেও বনসাইয়ের সম্ভাবনা আছে। অনেকেই ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি কিংবা গাছের প্রতি মমতা থেকেই নানা জাতের বনসাই কিনে থাকেন। একটি বনসাইয়ের দাম ১ হাজার থেকে ৪-৫ লাখ টাকাও হতে পারে। তিনি এ পর্যন্ত প্রদর্শনীতে ১ থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত একেকটি বনসাই বিক্রি করেছেন। পরিবহনের অসুবিধার জন্য প্রদর্শনীতে নেওয়া বনসাইগুলো ছিল ছোট আকারের।

সেলিনা পারভিন বলেন, ‘অনেকে মনে করছেন এটাকে ছোট করে রাখা হয়। এটা আসলে ঠিক না। বরং এ চর্চার মাধ্যমে গাছের আরও প্রসার বাড়ছে। দেখা যাবে অনেক গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এই চর্চার মাধ্যমে অনেকে অনেক গাছ এখন চিনতে পারছে। বনসাই প্রদর্শনীতে এসে অনেকে প্রকৃতিপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।’

বনসাইচর্চার পাশাপাশি তিনি বনসাইয়ের ওপর বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করেন। ছবিও আঁকেন। বই পড়েন। লেখেন কবিতা। সেলিনা পারভিন নিজের শিল্পসত্তাকে ঘর-সংসারের গতানুগতিকতায় বেঁধে না রেখে মুক্ত করেছেন শিল্পের আঙিনায়। তাঁর উঠোনজুড়েই প্রকৃতির রাগ-রং ফুটে আছে।

 

পিতা-মাতার নাম উল্লেখ ছাড়া কি বিয়ে বৈধ হবে?

হ্যাঁ, পিতা-মাতার নাম উল্লেখ না করলেও বিয়ে শুদ্ধ হবে। বিয়ে শুদ্ধ হতে ছেলে এবং মেয়ের পক্ষে পিতা বা অভিভাবকের ইজাব কবুল করলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়। হানাফি মাজহাব অনুসারে সাবালিকা মেয়ে নিজেই বিয়ের সম্মতি দিতে পারে।

আপনার পরিচিত ঐ মেয়ে এবং ছেলের বিয়েতে পাত্রের পিতা-মাতার নাম উল্লেখ করা ছাড়াও বিয়ে শুদ্ধ হবে। কেননা ওই বিয়েতে যে দুজনের বিয়ে হয়েছে তারা দুজনই উপস্থিত ছিলেন এবং সাক্ষীরা নির্দিষ্ট করতে পেরেছেন যে কার মধ্যে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। শুকরিয়া।

 

এবারের ঈদেও শাকিব ছাড়া গতি নাই!

ঢাকাই ছবিতে শাকিব খান একক আধিপত্য বিস্তার করেই চলছেন। সেটা বহুদিন ধরেই। ক্ষমতাবলে নয়, অভিনয়গুণে, দর্শকদের ভালোবাসার কারণে। এবারের আসছে ঈদুল আজহায় ব্যতিক্রম ঘটছে না। ‘শিকারি’ ও ‘নবাব’ এর মতো বিগ বাজেট ও মানসম্পন্ন ছবি না থাকলেও আসছে ঈদে প্রদর্শক সমিতির সভাপতি সূত্রে জানা গেছে- মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির চূড়ান্ত তালিকায় এখন পর্যন্ত তিনটি ছবি রয়েছে।

আর দুটি ছবিতেই রয়েছেন নায়ক শাকিব খান। তারমধ্যে ছবি দুটি হলো- আবদুল মান্নানের ‘রংবাজ’, শাহাদৎ হোসেন লিটন পরিচালিত ‘অহংকার’। অন্য আরেকটি ছবি হল জাহাঙ্গীর আলম সুমন পরিচালিত চিত্রনায়িকা পপি অভিনীত ‘সোনাবন্ধু’। হামলা, বহিস্কার, নিষিদ্ধ, অবাঞ্চিত ও মামলা যাই হোক না কেনো, চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এই সময়ে শাকিব ছাড়া আর কোন গতি নাই!

কারণ অন্য নায়ক যারা রয়েছেন তারা ফিল্মি পলেটিক্স ও নানান কারণে নিজেদেরকে সেভাবে ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করতে পারেননি। যেহেতু বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে শাকিবের ছবিরই কাটতি বেশী, তাই সিনেমা দুটি নিয়ে পরিবেশক, হল মালিক থেকে শুরু করে দর্শকেরও আগ্রহ সেদিকেই। ইতোমধ্যেই ঈদের ছবির বড় বড় পোস্টার, বিলবোর্ড ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সিনেমাপাড়া খ্যাত কাকরাইলসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক নির্ধারিত প্রেক্ষাগৃহগুলো।

‘রংবাজ’ ও ‘অহংকার’ ছবি দুটির হল বুকিং ঈদুল ফিতরের পরপরই শুরু হয়েছে। ছবি দুটির প্রযোজক ও পরিচালক সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে শতাধিক হল চূড়ান্তও হয়ে গেছে ছবি দুটির। শাকিব এবারের ঈদের ছবি প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি ঈদে দর্শকের জন্য ভালো ছবি উপহার দেয়ার চেষ্টা করি। বিগত ঈদগুলোতে দর্শকরা আমার ছবি পছন্দ করেছে। ছবিগুলো মুক্তির পর তাদের কাছ থেকে বেশ সাড়া পেয়েছি আমি। এবারের ঈদেও তেমনটিই আশা করছি। দুটি ছবিই দুই ধরনের গল্পের। দুটি ছবিতেই দর্শক দুই শাকিবকে খুঁজে পাবে।’

এদিকে মাস খানেক আগেও শোনা গিয়েছে এবারের ঈদে আটটি ছবি মুক্তি পাবে। কিন্তু সে তালিকায় কাটছাট হয়ে পাঁচটি ছবিই বাদ পড়ে গেল। সে ছবিগুলোর প্রযোজনা সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছু বিষয়ে জটিলতা ও সঠিক সময়ে শুটিং শেষ করতে না পারায় তারা ছবিগুলো দর্শকদের আগ্রহ থাকা স্বত্বেও মুক্তি দিতে পারছে না।

গেল ঈদে শাকিবের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কলকাতার আরেক জনপ্রিয় নায়ক জিত। এর আগের ঈদেও ছিলেন। পরপর দুটি ঈদে শাকিবের ছবির সঙ্গে জিতের ‘বাদশা’ ও ‘বস ২’ ছবি দুটি মুক্তি পায়। ‘বাদশা’ ছবি দিয়ে জিৎ শাকিবের ‘শিকারি’ ছ’বির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও, গেল ঈদে শাকিবের ‘নবাব’-এর কাছে জিতের ‘বস ২ টিকতেই পারেনি।

এবার শাকিবের বিপরীতে অন্য কারও বিগ বাজেটের ছবি নেই। যার কারণে ধরে নেওয়াই যায় ফিল্মি মাঠ এবারও শাকিবের দখলে। এদিকে এগিয়ে রয়েছেন বুবলিও। এবারের তিনটি ছবির মধ্যে দুটি ছবির নায়ক শাকিবের নায়িকাই শবনম বুবলিই। বিষয়টা কাকতালীয় হলেও গত বছর ঈদুল আজহায় শাকিব খানের বিপরীতে একসঙ্গে দুটি ছবি মুক্তির মধ্য দিয়ে অভিষেক হয়েছিল বুবলীর।

চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের খুব বেশি সময় পার না হলেও এরইমধ্যে অনেক বিষয়েই আলোচনায় এসেছেন চিত্রনায়িকা শবনম বুবলি। তবে নিজের জায়গাটা বেশ আঁটসাটভাবেই বেঁধেছেন তিনি। এবার কোরবানির ঈদেও দুটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে তার। তিনি বলেন, ‘আমি নিজের কাজে প্রাধান্য দিয়েই চলতে চাই। আসছে ঈদে দুটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে। দর্শকদের দেখার আহ্বান জানাই।’

এদিকে ঢাকাই ছবির এক সময়ের ভীষণ জনপ্রিয় নায়িকা পপি। যদিও সে তকমায় এখন ভাটা পড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরেই তার কোন ছবি ঈদে মুক্তি পায় নি। তবে আসছে ঈদে ব্যাতিক্রম ঘটতে যাচ্ছে। পপি অভিনীত ‘সোনাবন্ধু’ ছবিটিও মুক্তি পাবে। আর এ কারণে দারুণ উচ্ছ্বসিত এ নায়িকা।

এ ছবিটি নিয়ে পপি বলেন, ‘সোনাবন্ধু’ একটি গ্রামীণ গল্পের ছবি। এতে ভিন্ন ধরনের একটি চরিত্রে কাজ করতে পেরে আমার অনেক ভালো লেগেছে। সম্প্রতি ছবিটি সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। আমি এ ছবিতে রশ্মি নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। এখানে বেশিরভাগ সময় দর্শক আমাকে সাদা কাপড়ে বিধবা মেয়ে হিসেবে দেখতে পাবে। আমার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ডি এ তায়েব।’

কিন্তু ছবি মুক্তি পেতে আরও বেশ কিছুদিন বাকি থাকলেও ইউটিউবে ছবির গান, ট্রেলার ও টিজার প্রকাশ হয়ে গেছে। যার কারণে সে মাধ্যমগুলোতে ছবিগুলো নিয়ে বেশ আলোচনা ও সমালোচনা চলছে রীতিমত। তবে যে বিষয়টি সবচেয়ে আলোচনায় এসেছে। ‘রংবাজ’ ছবিটির ট্রেলার আনুষ্ঠানিক মুক্তির আগেই ইউটিউবে ফাঁস হয়েছে গিয়েছে!

 

হিজড়ারা কী মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতে পারবে?

হিজড়া- মানব সমাজে বসবাসকারী একটি মানব সম্প্রদায়। যারা নারী নয় আবার পুরুষও নয়। তবে কী তারা? তারা হিজড়া। মানব সমাজের একটি বিশেষ শ্রেণিই হিজড়া নামে পরিচিত। স্বাভাবিক দশটা নারী বা দশটা পুরুষের মতো হিজড়া সম্প্রদায় স্বাভাবিক জীবন ধারণ করতে পারে না। কারণ তারা নাকি স্বাভাবিক মানুষ নয়। এটা একান্তই এই সমাজের চাপিয়ে দেয়া নিয়ম। প্রচলিত রীতি।

ইসলাম অন্য দশজন নারী ও পুরুষের মতো হিজড়াদের অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। মহান আল্লাহ তাদের জন্য দিয়েছেন মানবিক ও ভারসাম্যপূর্ণ বিধান। একজন স্বাভাবিক নারী ও পুরুষের মতো তারাও আল্লাহ মহানের সৃষ্টি। তারা স্বাভাবিক নিয়মে ইবাদাত করতে এবং মহান স্রষ্ঠার হুকুম-আহকাম মান্য করবে। অন্যান্য মুসলিমদের মতো মুসলিম হিজড়ারা রীতিমত নামাজ আদায় করতে, রোজা রাখবে এবং জাকাত ফরজ হলে তা আদায় করবে। এসব ইবাদতের মাধ্যমে অন্য মুসলিমরা যেমন পূণ্য বা সাওয়াব লাভ করে তারাও সেভাবে লাভ করবে। তারাও সমানভাবে অংশীদার হবেন কল্যাণে-অকল্যাণের।

হিজড়া কারা কিংবা কীভাবে নির্ধারিত হবে? এটা নিয়ে আমাদের সমাজে বিভিন্ন প্রকারের ব্যাখ্যা ও গবেষণা রয়েছে। তবে ইসলাম এক্ষেত্রে সবচেয়ে সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ কথা বর্ণনা করেছে। হাদিসে এসেছে। হজরত আলি (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে প্রসূত বাচ্চা পুরুষ-নারী নির্ধারণ করতে না পারলে তার বিধান কি-তা জানতে চাইলে রাসূলুল্লাহ (সা.) জবাব দিলেন, ‘সে মিরাস পাবে যেভাবে প্রস্রাব করে।’ [সুনানে বায়হাকি কুবরা, হাদিস ১২৯৪;  কানজুল উম্মাল, হাদিস ৩০৪০৩;  মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক, হাদিস ১৯২০৪]

ইবাদত ও আরাধনার ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন জাগতে পারে, নামাজ আদয় করার জন্য হিজড়ারা কী মসজিদে যেতে পারবে, নাকি ঘরে বসেই নামাজ আদায় করবে? প্রথম কথা হলো, হিজড়াদের ওপর জামাতের সাথে বা মসজিদে গিয়ে জামাতে উপস্তিত হয়ে নামাজ আদায় করা ওয়াজিব নয়। তাই তারা ঘরেই নামাজ আদায় করবে বা করতে পারবে এবং এতে কোনো সমস্যা হবে না। নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। [আশ–শরহুল মুমতি ৪/১৪০] তবে যদি কোনো হিজড়া মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে তাহলে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। [মওসুআতুল ফিকহ ২৫/২০]

এক্ষেত্রে আরো একটি বিষয় লক্ষণীয় হলো- যদি মসজিদে পড়তেই হয় তাহলে পুরুষ ও শিশুদের পেছন কাতার করে দাঁড়াবে। সামনের কাতারে দাঁড়াবে না। [মাওসুআতুল ফিকহ ২০/২৩]

কোনো হিজড়া নামাজের ইমাম হতে পারবে না। এমনকি শুধুমাত্র হিজড়াদের জামাতেও তারা ইমামতি করতে পারবে না। ইমাম হবেন অন্য পুরুষ। [মওসুআতুল ফিকহ, ৬/২০৪] সর্বোপরি কথা হলো, একজন সাধারণ নারীর মতো হিজড়াদের জন্য ঘরে নামাজ পড়া উত্তম। তবে নামাজ আদায় করতে হবে। বিনা কারণে নামাজ ত্যাগ করা যাবে না বা উচিত হবে না।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

ক্যারিয়ারে পরিবর্তন চাইছেন? এমবিএ খুলে দিচ্ছে সম্ভাবনার দ্বার!

আপনি কি এরই মাঝে ক্যারিয়ার পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? ভাবছেন, ক্যারিয়ার জীবনে কী করে একটু ইম্প্রুভমেন্ট করা যায়? তাহলে আপনার জন্যই আমাদের এই প্রতিবেদন।

আপনি যদি পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী হবে এ বিষয়ে অনিশ্চিত হয়ে থাকেন তাহলে এখনই সময় নিজেকে পুনরায় যাচাই করার। বর্তমান চাকরির বাজার অসম্ভব প্রতিযোগিতার একটি ক্ষেত্র। এই ক্ষেত্রে টিকে থাকতে হলে নিজেকে নতুনভাবে গড়তে হবে, পরিবর্তন করতে হবে। আপনাকে হতে হবে বুদ্ধিমান, পারিপার্শ্বিক পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে শিখতে হবে। পাশাপাশি যেকোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মনমানসিকতা রাখতে হবে। এ সবকিছুই আপনি শিখতে পারবেন একটি মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন(এমবিএ) কোর্সের মাধ্যমে।

এমবিএ (মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)

এটি আন্তার্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি মাস্টার ডিগ্রি। এতে-

  • ব্যবসা বিষয়ে তাত্ত্বিক ভিত্তির আলোচনা করা হয়।

  • ইন্টার্নশিপ, গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট এবং আলাাদা প্রজেক্টের বাস্তবিক কিছু সুযোগ থাকে ছাত্রছাত্রীদের ইম্প্রুভ করার জন্য।

  • ম্যানেজমেন্ট এবং নেতৃত্ব বিষয়ে দক্ষ করে তোলা হয়।

  • কম্যুনিকেশন, মোটিভেশন এবং নেগোসিয়েশন বিষয়ে দক্ষ করে তোলা হয়।

  • ক্যারিয়ারে বৈশ্বিক সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়।

  • স্বাধীন ব্যবসায় যোগ্য করে তোলা হয়।

এমবিএ মূলত একটি প্রফেশনাল কোর্স যা একজন শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ারে উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়তে সহায়তা করে। বর্তমান বাংলাদেশে শুধু যে ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষার্থীরাই এমবিএ পড়ে থাকেন তা না অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এই কোর্সটি করতে আগ্রহী হন। কেননা এই কোর্সে একটি ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য যা যা প্রয়োজন এর সবকিছুই শেখানো হয়।

কোর্স ডিটেইল:

মোটামুটি ২ ধরনের প্রোগ্রামে এমবিএ করানো হয়। একটি রেগুলার এমবিএ যেখানে যেকোনো সাবজেক্ট থেকে স্নাতক করা ছাত্রছাত্রী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে। আরেকটি হলো এক্সিকিউটিভ এমবিএ বা ইএমবিএ। এতে শিক্ষার্থীর কমপক্ষে ৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। একটি পরিপূর্ণ কোর্সে মোট ৬৪ ক্রেডিট থাকে যার ৬০ ক্রেডিট ২০ টি সাবজেক্টে, ২ ক্রেডিট থিসিসে এবং ২ ক্রেডিট ভাইভাতে থাকে। ইএমবিএ এর জন্য থাকে ৪৫-৫০ ক্রেডিট। এমবিএ তে পড়ানোর বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ফিন্যান্স, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, বিপণন, ব্যবস্থাপনা, হিসাবরক্ষণ, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, পর্যটন ও হোটেল ব্যবস্থাপনাসহ মোট ২০ টা সাবজেক্ট এবং ১ টা থিসিস থাকে। এগুলোর যেকোনো একটিকে মেজর হিসেবে নিয়ে কোর্সটি সম্পন্ন করতে হয়। প্রতি সেমিস্টারে সর্বোচ্চ ৫ টা এবং সর্বনিম্ন ২ টা সাবজেক্ট নেয়া যায়। পুরো কোর্সটি সম্পন্ন করতে সময় লাগে ১ বছর ৪ মাস থেকে ২/৩ বছর পর্যন্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। কোর্স ফি বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।

 

‘আমি এখন সাইকেলে আসি’

এদের একজন শারমিন আক্তার কমলগঞ্জ উপজেলার হাজি মো. উস্তোওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বাড়ি বিদ্যালয় থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে চক কবিরাজী গ্রামে। প্রতিদিন বাসে করে স্কুলে আসতে হতো তাকে। বাস না পেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশায়। এতে ভাড়া লাগত ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

শারমিন আক্তার বলে, ‘আগে সাইকেল চালাতে পারতাম না। সাইকেল পাওয়ার পর শিখেছি। এখন আর প্রতিদিন ভাড়া লাগে না। আমি এখন সাইকেলে স্কুলে আসি।’ একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির আরেক ছাত্রী তামান্না জান্নাতও আসে সাইকেলে।

কালীপ্রসাদ উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মৌমি রানি বৈদ্য থাকে দেওরাছড়া চা-বাগানে। বিদ্যালয় থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে। এখন সে-ও বাইসাইকেলে আসা-যাওয়া করে। এ রকম সাইকেলের গতিতে ছোটা ছাত্রীর সংখ্যা কমলগঞ্জে ৮০।

মিরতিঙ্গা চা-বাগানের মতি বারাইকের মেয়ে সাধনা বারাইক পড়ে কালীপ্রসাদ উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে। এখন মেয়ের সাইকেল হয়েছে। এতে খুব খুশি মতি বারাইক। বলেন, ‘মেয়ে আগে হেঁটে যাইত।’ এ রকম মেয়ে সাইকেল পাওয়ায় খুশি দেওরাছড়া চা-বাগানের আরেক অভিভাবক লক্ষ্মী নারায়ণ কুর্মী। এই অভিভাবকেরা মেয়েদের সঙ্গে অনুষ্ঠানস্থলে এসেছিলেন। এই মেয়েরা মিলনায়তনে আসার আগে সাইকেল শোভাযাত্রা করেছে। এটাও এলাকার মানুষের চোখে একটা নতুন ঘটনা। মাস দু-এক আগে এই সাইকেলগুলো হাতে পেয়েছে তারা।

এই সাইকেলের একটা ইতিহাস আছে। তখন নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হয়ে কমলগঞ্জে যোগ দিয়েছেন মো. মাহমুদুল হক। একদিন উপজেলার একদম দক্ষিণ সীমান্তের চাম্পারায় চা-বাগান এলাকায় গিয়েছেন। দেখেন অনেক মেয়ে দল বেঁধে হেঁটে যাচ্ছে। তিনি গাড়ি থামিয়ে ছাত্রীদের কাছে জানতে চাইলেন, তারা কোথায় পড়ে। বাড়ি কোথায়। জানতে পারলেন, তারা পদ্মা মেমোরিয়াল পাবলিক হাইস্কুলে পড়ে। পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার দূর থেকে হেঁটে তারা স্কুলে আসা-যাওয়া করে। তখনই বাইসাইকেলের বিষয়টি তাঁর মাথায় আসে। তিনি কথা বলেন উপজেলা পরিষদের সব সদস্যের সঙ্গে। সবাই সম্মতি দেন। ৮০টি বাইসাইকেল কেনা হয়। খুঁজে খুঁজে স্কুলের দূরবর্তী ও দরিদ্র পরিবারের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রীদের বাছাই করা হলো। মাস দু-এক আগে এই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সাইকেল। এরা যত দিন স্কুলে আসা-যাওয়া করবে, এই সাইকেল তাদের। পড়া ছেড়ে দিলে, এসএসসি পাস করলে সাইকেল নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমা দিয়ে দেবে—এটাই শর্ত।

ইউএনও মো. মাহমুদুল হক বলেন, এই বাইসাইকেলের মাধ্যমে অনেকগুলো সূচক একসঙ্গে এগিয়ে নেওয়া যায়। প্রতিদিন বাইসাইকেলে চড়ে আসা-যাওয়া করলে মেয়েরা শারীরিকভাবে সক্ষমতা অর্জন করবে। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপরও এর প্রভাব পড়বে। অনেক ছাত্রীই এই বাইসাইকেল চালানো উপভোগ করছে। অনেক অভিভাবক তাঁদের মেয়েদের বাইসাইকেল কিনে দিচ্ছেন। শিক্ষার অগ্রগতিতে নারীর ক্ষমতায়ন বাড়বে।

সেদিন (৭ আগস্ট) এরা সবাই এসেছিল এমন একটি অনুষ্ঠানে, যেখানে কেন বাল্যবিবাহ হচ্ছে, কেন বাল্যবিবাহ ঠেকানো যাচ্ছে না, বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা ঘোষণার পর কতটা বাল্যবিবাহ কমেছে—এমন কথাবার্তা হচ্ছিল। ইউএনও বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা ঘোষণার বছরপূর্তিতে আয়োজন করেছিলেন এই পর্যালোচনা সভার। এতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

পদ্মা মেমোরিয়াল পাবলিক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামা কান্ত সিংহ বলেন, ‘আমার স্কুলে ১২টা সাইকেল পেয়েছি। যারা পেয়েছে তাদের বাড়ি কলাবন, সোনারায় এলাকায়। স্কুল থেকে পাঁচ-সাত কিলোমিটার দূরে। ওরা খুব আনন্দ করে আসে। তাদের উপস্থিতি ভালো। এই উদ্যোগটা চমৎকার। তাদের সাইকেল নিয়ে অন্য মেয়েরা প্র্যাকটিস করে। অন্য অভিভাবকেরাও উৎসাহিত হয়েছেন তাঁদের মেয়েদের সাইকেল কিনে দিতে।’

 

বাড়িতেই তৈরি করুন মুচমুচে চিকেন কাটলেট

উপকরণ

# মুরগীর বুক- ৪ টি (বোন লেস হলে ভালো। তাতে সময় বাঁচবে। বোনলেস না পেলে পাখার ১ ইঞ্চি করে হাড় মাংসের সঙ্গে লাগানো রেখে বাকি হাড় মাংস থেকে তুলে ফেলুন। ১ ইঞ্চি হাড় কাটলেটে বোঁটার মতো থাকবে। বোনলেস হলে এই হাড়টা থাকবে না। তবে সব ক্ষেত্রেই মাংস হালকা হাতে ছুরি দিয়ে কেঁচে নিন ভালো করে। তবে মাংস যেন বেশি ভর্তা না হয়ে যায়।)

# টমেটো সস-২ টেবিল চামচ,

# কাঁচামারিচ বাটা-১ চা চামচ,

# সরষের গুঁড়ো-১ চা চামচ,

# গোলমরিচ গুঁড়ো- আধা চা চামচ,

# আদা বাটা সিকি চা চামচ,

# রসুন বাটা-সিকি চা চামচ,

# লবণ-আন্দাজমতো

# ওয়েসটার সস-২ চা চামচ,

# ময়দা-২ টেবিল চামচ,

# ডিম-ফেটান-১টি,

# টোস্ট বিস্কুটের গুঁড়ো-পরিমাণ মত

# তেল ভাজার জন্য-পরিমাণ মতো।

প্রস্তুত প্রনালী

– টোস্টের গুঁড়ো বাদে সব মশলা একসাথে মেশান।

– মেশানো মশলায় মুরগী ভালোভাবে মাখিয়ে এক ঘণ্টা রাখুন।

– প্রত্যেক টুকরো মাংস টোস্টের গুঁড়োয় গড়িয়ে কাটলেটের আকার নিন। টোস্টের গুঁড়োর সাথে খানিকটা কর্ণ ফ্লেক্স গুঁড়ো মিশিয়ে নিলে কাটলেট হবে আরও মুচমুচে।

– গরম তেলে কাটলেট বাদামি করে ভেজে তুলুন।

সসের সঙ্গে পরিবেশন করুন। আর সাথে একটু সালাদ হলে তো কথাই নেই!

 

মেঘের মতো ডিম পোচ

সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে ডিমের একটি খাবার খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। ‘ক্লাউড এগ’ (মেঘসদৃশ্য ডিম) নামক ডিমের এই পোচ ইনস্টাগ্রামে নতুন ট্রেন্ড হিসেবে সাড়া ফেলেছে।

ক্লাউড এগ দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, খেতেও সুস্বাদু। অনেকেই ক্লাউড এগ-এর ছবি হ্যাশট্যাগে শেয়ার করেছেন ইনস্টাগ্রামে।

ইউটিউবে বাড়ছে এর রেসিপির ভিউয়ার। খুবই সহজ মেঘসদৃশ্য এই ডিম পোচ বানানো। যখন তখন বানিয়ে নিজে তো খেতে পারেনই, মেহমানদারিতে পরিবেশন করেও প্রশংসায় ভাসতে পারেন। আর খাওয়ার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন; লাইকের অভাব হবে না।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এর রেসিপি। উপকরণ হিসেবে লাগবে- ১টি ডিম, শক্ত ঝুরা পনির, এক চিমটি লবণ।

প্রথম একটি বাটিতে ডিমের সাদা অংশ থেকে কুসুম আলাদা করে অন্য একটি বাটিতে রাখুন। এবার ডিমের সাদা অংশ মিক্সারে মিক্স করতে থাকুন। ভালোমতো মিক্স হয়ে গেলে এর মধ্যে শক্ত ঝুরা পনির ও লবণ দিয়ে ভালোমতো নাড়ুন যতক্ষণ না সাদা হালুয়ার মতো দেখায়।

একটি ট্রেতে বেকিং পেপার বিছিয়ে তার মধ্যে সাদা হালুয়া কিছুটা ছড়িয়ে দিয়ে  মাঝখানে গর্তের মতো করুন। এটিকে ওভেনে ৪৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৪-৫ মিনিট রাখুন। এরপর বের করে এনে তার মধ্যে ডিমের কুসুম ছেড়ে দিন। এবার ওভেনে ২ মিনিট রাখলেই হয়ে যাবে ক্লাউড এগ।

 

গরম কিংবা বর্ষায় টিউনিক

এখন ফ্যাশন মানেই ফিউশন। দেশি এবং পাশ্চাত্যের মিশেল রয়েছে বেশিরভাগ পোশাকে। সেই ধারায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের টপস, টিউনিক, শার্ট, স্কার্ট। আর এগুলো মধ্যে টিউনিক অন্যতম।

কাঁধ থেকে দেহের মধ্যভাগের নিচ পর্যন্ত কিংবা হাঁটু সমান লম্বা এই পোশাকের প্রচলন হয়ত এসেছে প্রাচীন রোম থেকে।

পোশাকবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘টিউনিক’ শব্দটা এসেছে রোমান ‘টিউনিকা’ থেকে। সেই সময় রোমান নাগরিকরা সাধারণত উৎসবে ই পোশাক পরতো।

শুধু রোমনরা নয়, প্রাচীন গ্রিসেও টিউনিক ঘরানার পোশাকের প্রচলন ছিল। পরে এই পোশাক মধ্যযুগ পার করে বর্তমান যুগে এসেও ঠেকেছে।

পাশ্চাত্যে প্রথম দিকে এই ধরনের পোশাক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য পরার প্রচলন ছিল। পরে সেটা সাধারণ মানুষের মধ্যেও জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। আর এই উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টিউনিক ধাঁচের পোশাকের যে প্রচলন আছে সেটা ‘কুর্তা’ নামেই পরিচিত।

টিউনিক সাধারণত একটু পাতলা ধরনের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। তাই গরমে যেমন পরতে আরাম তেমনি বর্ষায় ভিজলেও শুকায় তাড়াতাড়ি। বৃষ্টি আর স্যাঁতস্যাঁতে গরম আবহাওয়ায় পোশাক ব্যবহারে আরামের কথা বিবেচনা করে বেছে নেওয়া যায় সুতি কাপড়, সিল্ক, মসলিন, এন্ডি সিল্ক, জয়শ্রী, এন্ডি কটন, জর্জেট, শিফনসহ অন্যান্য আরামদায়ক কাপড়। কারচুপি, এম্ব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক, স্টিচিং নকশা উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তোলে।

হাল ফ্যাশনে টিউনিক সম্পর্কে দেশীয় ব্র্যান্ড ‘লা রিভ’য়ের জ্যেষ্ঠ ডিজাইনার বিপ্লব বিপ্রদাস বলেন, “আসলে ওয়েস্টার্ন স্টাইলের সঙ্গে দেশি ঘরানার ফিউশন করে কিছু টপসের ডিজাইনকেই আমরা টিউনিক বলে থাকি। কুর্তি এবং টিউনিকের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। কুর্তি হল কামিজেরই একটি আলাদা স্টাইল। সেক্ষেত্রে টিউনিক টপস এবং দেশি স্টাইলের ফিউশন। আসলে দেশীয়ভাব বজায় রেখে ওয়েস্টার্ন পোশাকের ধাঁচে তৈরি করা হয় এখানকার টিউনিক।”

কিশোরি এবং তরুণিদের মধ্যেই এই পোশাক বেশি জনপ্রিয়। জিন্স বা পালাজ্জোর সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যায়। চাইলে স্কার্ট বা ধুতি-পায়জামার সঙ্গে মিলিয়ে পরা যায়। ফ্যাশনে ভিন্নতার জন্যই নতুন প্রজন্মের কাছে টিউনিক বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া যেকোনো পরিবেশের সঙ্গেই মানিয়ে যায়। বিপ্লব বলেন, “মূলত নতুন প্রজন্মের কথা চিন্তা করেই টিউনিক ডিজাইন করা হয়। তবে নিজের সঙ্গে মানিয়ে যেকোনো বয়সি নারীরাই টিউনিক পরতে পারেন।”

“টিউনিকের ডিজাইনে ভিন্নতা আনার স্বাধীনতা রয়েছে। কাপড়ের ধরণ বুঝে চাইলেই মন মতো ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা পায়। টিউনিকের নিচের অংশ, গলার স্টাইল, হাতা বিভিন্ন ক্ষেত্রেই নতুনত্ব আনার সুযোগ রয়েছে। হাল ফ্যাশনে মূলত টিউনিকের কাট এবং হাতার স্টাইলে ভিন্নতা আনা হচ্ছে। আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে মূলত পোশাকের কাপড় বাছাই করা হয়।” বললেন বিপ্লব।

তিনি আরও বলেন, “এখন বৃষ্টির কারণে জর্জেট, ভিসকস এবং সিল্ক কাপড় বেছে নেওয়া হচ্ছে টিউনিক তৈরিতে। তবে গরমের মৌসুমে সুতি কাপড়ের তৈরি টিউনিক বেছে নিতে হবে। তাছাড়া ভিসকসের সঙ্গে সুতি বা সিল্কের সঙ্গে সুতির মিশেল কাপড়গুলোও উঠে এসেছে পছন্দের তালিকায়।”

“প্রতিদিনের পোশাক হিসেবে টিউনিক বেশ মানানসই। তাছাড়া স্টাইলের পাশাপাশি পোশাকটি বেশ আরামদায়কও বটে তাই অনেকেরই পছন্দের তালিকায় রয়েছে এই ফিউশন পোশাকট।” মতামত দিলেন এই ডিজাইনার।

যেকোনো পোশাক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিজের শারীরিক গঠন এবং পোশাকটি পরে কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন সেই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। আর সব কিছু মিলে যদি যায় তবে যেকোনো পোশাকে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব।

 

কেমন হবে বসার ঘরের সাজ

অতিথির বসার জন্য এই ঘরের বিকল্প নেই। পরিবারের সবাই অবসরে বসে টিভি দেখে, বই পড়ে, গান শুনে বা বিশ্রামের জন্য কিছুটা সময় কাটায় এই বসার ঘরে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বসার ঘরটি থাকে থাকে খোলা, অর্থাৎ নির্দিষ্ট কোনো দরজা থাকে না। তাই সাজানোটা নির্ভর করে ঘরের কোন অংশে এর অবস্থান তার ওপর।

বসার ঘর কর্ণারে হলে একপাশে ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, ডিনার ওয়াগন, ওভেন ইত্যাদি রাখুন। এগুলো সবারই প্রয়োজন। আর একপাশে ইচ্ছামতো বসার ব্যবস্থা করে টিভি রাখুন। লো হাইট সোফা বা ফ্লোরিংয়ের সঙ্গে কয়েকটি মোড়া বা টুলও রাখতে পারেন। দুই সোফার মাঝে রাখতে পারেন ল্যাম্প শেড। তার ভেতরে ইচ্ছামতো রঙের বাতি। রাতে সেটা জেলে দিলে জমকালো আবহ সৃষ্টি করবে।

বাসার মাঝখানে হলে দুই পাশে কম উচ্চতার সোফা এবং এক কোণে টিভি রাখতে পারেন। চাইলে কার্পেট, শতরঞ্জি বা শীতলপাটি দিয়ে ফ্লোরিংও করতে পারেন। এর ওপর ছোট-বড় কয়েকটি রঙিন কুশন দিন। সঙ্গে রাখুন কিছু ইনডোর প্লান্ট।

ঘরটি একটু বড় হলে দেয়ালজুড়ে একটা বইয়ের তাক বানাতে পারেন। টিভি দেখার পাশাপাশি অবসরে বই পড়ার চমৎকার জায়গা হতে পারে এটি। ঘরে বাচ্চা থাকলে একটি কর্নার সাজাতে পারেন তার জন্য। ছোট আকারে তৈরি করুন একটি খেলাঘর, সেখানে রাখুন পুতুল, গাড়ি, ছোট একটি টেবিল, ছবি আকার সরঞ্জাম ইত্যাদি। সামনের দেয়লটি সাজাতে পারেন বিভিন্ন কার্টুন চরিত্র মিকি মাউস, সিনড্রেলা, ডোরেমন এবং অ্যানিমেশন ছবি দিয়ে।

দেয়ালে শোপিস র্যাকও রাখতে পারেন। এখানে মনের মতো ইনডোর প্লান্ট আর শোপিস শোভা পেতে পারে। সামর্থের মধ্যে সিলিংএ দিতে পারেন ঝাড় বাতিও। কম খরচে দিতে চাইলে রঙিন হ্যাংগিং বাতি দিতে পারেন। বসার ঘরে ঢোকার দরজায় থাকতে পারে নানা ডিজাইনের দোরঘণ্টি।

বসার ঘরের দেয়ালও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই দেয়াল সাজাতে পারেন পারিবারিক ছবির ফ্রেম দিয়ে। তবে তা অবশ্যই হতে হবে সবার সম্মিলিত হাসি মাখা মুহূর্তের। পারিবারিক ছবি রাখতে না চাইলে কোনো পেইন্টিং, সিনারি বা ফ্লোরাল ফ্রেম দিয়ে সাজান।

 

নারী মূলায়ন : সেকাল-একাল

`নারী’ কেবলমাত্র একটি সত্তার নাম নয় বরং সে একটি চাহিদা শক্তি যাকে ছাড়া পুরো পৃথিবী স্তব্ধ- স্থবির। মহান আল্লাহ নারীকে প্রকৃতির অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। সভ্যতা বিনির্মানে যুগে যুগে পুরুষের পাশাপাশি নারীও অবদান রেখে এসেছে সমানাংশে। সভ্যতার ইতিহাস আমাদেরকে বলে, কোনো সভ্যতার উর্ধ্বগতি বা অধোগতি নির্ভর করে নারী-পুরুষের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয়ের উপরে। মহান আল্লাহ নারীকে প্রকৃতির অপরিহার্য অংগ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।
 
১। বিভিন্ন ধর্ম ও প্রাচীন সভ্যতায় নারীর মূল্যায়ন
প্রাচীন সভ্যতা এবং ধর্মগুলো নারীদের ব্যাপারে বিরুপ মনোভাব দেখিয়েছে। সেই সমাজে নারী স্বাধীন ছিলো না। নারী ছিলো পুরুষের দাসী। নারীর মৌলিক মানবিক অধিকার হরণ করাই ছিলো সেই সমাজের বৈশিষ্ট্য।
ইহুদী ধর্ম নারীকে পুরুষের প্রতারক বলে অভিহিত করেছে। তাদের সমাজে নারীদেরকে চাকরানীর মতো মনে করা হতো।
খ্রীষ্ট ধর্ম নারীদের ব্যাপারে নিকৃষ্টতম অবস্থান গ্রহণ করেছে। বাইবেল বলছে: প্রথম পাপের সমস্ত দোষ মাতা হাওয়ার। আর যেহেতু নারী আদি পাপের উৎস , মানুষের জন্মগত পাপের কারণ , তাই সব র্ভৎসনা অবস্থা ও ঘৃণার পাত্র সেই।
প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রে বলা হয়েছে, মৃত্যু , নরক, বিষ , সর্প এবং আগুন এর কোনটিই নারী অপেক্ষা খারাপ নয়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে নারী হচ্ছে সকল অসৎ প্রলোভনের ফাঁদ।
বিভিন্ন সভ্যতায় নারীর মূল্যায়নের চিত্রগুলো খুবই নীচ, হীন এব লজ্জাকর।
গ্রীসের জাতীয় উন্নয়নের প্রাক্কালে নারীর অবস্থা ছিলো শোচনীয়। সপ্তদশ শতাব্দীতে রোম নগরীতে নর সমাজ তাদের Council of the wise সভায় সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, Women has no soul নারীর কোন আত্মা নেই। ৫৮৭ সালে ফ্রান্সে এক সভার সভাদষগণ মহিলাদের মর্যাদা নিরুপনের সময় এভাবে তাদের মত প্রকাশ করেন whether a women could truly be considered a human being or not.
নারীদের মর্যাদা চরমভাবে ভুলন্ঠিত হয়েছে সভ্যতার দাবীদার ইংল্যান্ডে। ৮ম হেনরী মেয়েদের বাইবেল পড়তে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। মধ্যযুগের ক্যাথলিক চার্চের গুরুগণ মহিলাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক মনে করতো। ১৯৬৪ সালের আগে অক্সফোর্ড এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে মেয়েদের সমান অধিকার ছিলোনা। ১৮৫০ সালের পূর্ব পর্যন্ত মহিলারা ইংল্যান্ডের নাগরিক হিসেবে গণ্য হতোনা। ১৮৮২ সালের আগে ইংলিশ মহিলাদের ব্যক্তিগত অধিকার বলে কিছু ছিলো না।
 
২. পাশ্চাত্য সমাজে নারীদের মূল্যায়ন
পাশ্চাত্য সমাজে নারী ছিলো গৃহকোণে আবদ্ধ এবং পুরুষের সেবাদাসী। সব রকমের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার থেকে সম্পূর্ণরুপে বঞ্চিত রাষ্ট্রের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। নারী স্বাধীনতার জিগির সেই সমাজ থেকেই উঠেছে। আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতায় নারী পুরুষের যে সম্পর্ক আমরা লক্ষ্য করি তা বেশ কয়েকটি বিপ্লবের ফল। অষ্টাদশ শতাব্দীর শিল্প বিল্পব নারীকে পুরুষের সান্নিধ্যে আসার বিরাট সুযোগ করে দেয়।
শিল্প বিপ্লবের সমসাময়িককালে সংঘটিত ফরাসী বিপ্লব (১৭৮৯ খৃ.) নর- নারীকে দেয় অসীম ব্যক্তি স্বাধীনতা। এই দর্শন ক্রমশ মানুষকে স্বার্থপর করে তোলে। ব্যক্তি স্বাধীনতার এই দর্শনকে জনপ্রিয় করে তুললো সাহিত্য জগতের যৌন- আন্দোলন। এই আন্দোলনের সূচনা হয় ফ্রান্সে। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ফরাসী ঔপন্যাসিক George sand এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এই নারী তার উপন্যাসকে অবাধ যৌনতা প্রচারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন। এরপর ঘটলো আরেক বিপ্লব-মিডিয়ার বিপ্লব। আবিষ্কৃত হলো সিনেমা এবং টেলিভিশন। নগ্নতা এবং যৌনচার ক্রমশ গ্রহণযোগ্য করে তোলার চেষ্টা চলতে লাগলো। এভাবে চিত্র দর্শন নাটক, সিনেমা , বিজ্ঞাপন, প্রভূতির অবিরাম প্রচেষ্টায় নারী পুরুষের মধ্যে সমস্ত ব্যবধান দূর হয়ে গেল। আর এ পথ ধরে সমাজে প্রবেশ করলো অসংখ্য সমস্যা।
কয়েকটি বিপ্লব ও ইউরোপের দেশগুলোর বিশ্বব্যপী রাজনৈতিক প্রাধান্য বিস্তারের ফলে পাশ্চাত্য সমাজে নারী গৃহ অংশের বাইরে চলে আসে নারীরা পুরুষের সমান অধিকারের দাবীতে সোচ্চার হয়ে ওঠে। পুরুষের আরোপিত বাধা-নিষেধের সমস্ত বেড়াজাল ছিন্নভিন্ন করে তারা অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে পুরোপুরি অংশ গ্রহণ করতে চায়। পুরুষদের কোনো প্রকার প্রাধান্য বিস্তার তারা চায়না। আর পুরুষরাও তাদের হাজার হাজার বছরের প্রাধান্য এক নিমিষে ধুলিস্মাত করতে রাজি হয়না। এভাবে পাশ্চাত্য সমাজ ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে প্রসারিত হতে থাকে। বিগত তিনশ বছর থেকে পাশ্চাত্য সভ্যতা সারা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করেছে। সর্বত্র প্রায় তার একাচ্ছত্ব রাজত্ব। পাশ্চাত্য সমাজে নারী স্বাধীনতার জিগির তোলা হয়েছে ঠিকই কিন্তু নারী তার অধিকার লাভ করতে পারেনি। নারী তার পৃথক স্বাধীন সত্তা নিয়ে সমাজে নারী হিসেবে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারেনি। পুরুষের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে সে আজ কক্ষচ্যুত। তার নারীত্ব আজ লুন্ঠিত দ্রব্য।
 
৩. মুসলিম সমাজে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ঢেউ
প্রাচ্যের মুসলিম সমাজেও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ঢেউ লেগেছে। পাশ্চাত্যের শত বছরে শাসন ও শিক্ষা ব্যবস্থা প্রাচ্যের মুসলিম সমাজের মূল্যবোধ পাল্টে দিয়েছে। মুসলিম সমাজের মেয়েরাও সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে নিজেদেরকে অসহায় ভাবছে। তারাও পাশ্চাত্যে নারীর মতো পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন কেটে বাইরে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, গত হাজার বছরে মুসলিম সমাজ ইসলামের সামাজিক বিধান থেকে অনে দূরে সরে এসেছে। যার ফলে আমাদের দেশের মুসলিম মেয়েরা সামাজিক অনিরাপত্তা নির্যাতন এবং অর্থনৈতিক অবিচারের ক্ষেত্রে নিজেদেরকে অমুসলিম মেয়েদের সমপর্যায়ভুক্ত দেখতে পাচ্ছে। রাসূল সা. ও সাহাবীদের যুগে মুসলিম মেয়েরা যে সামাজিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করেছিলো এ অধিকারগুলো পুন:প্রতিষ্ঠিত হলেই মুসলিম নারীদের অধিকারহীনতার অনুভূতির বিলুপ্তি ঘটবে। তারা তাদের পূর্ণ মানবিক অংশ ও সামাজিক মর্যাদা লাভে সক্ষম হবে। এইতো মাত্র চল্লিশ বছরের মধ্যে মুসলিম মেয়েদের একটি বিরাট অংশ প্রকাশ্য রাজপথে নেমে পড়েছে। তারা চায় তাদের অধিকার । কিন্তু ইসলাম নারীদের কি অধিকার দিয়েছে সে সম্পর্কে তারা সজাগ নয়।
৪. ইসলামে নারীর মর্যাদা
ইসলামে নারী ও পুরুষ সমান মর্যাদার অধিকারী। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে:
“তোমরা পুরুষ হও বা নারী, আমি তোমাদের কারো কাজ বিনষ্ট করবো না।” (সূরা ৩: ১৯৫)
নারীর প্রকৃতিগত অবস্থানকে সামনে রেখে ইসলাম তার দায়-দায়িত্বের পারিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। যা নারীর অবমূল্যায়ন বা পরাধীনতা নয়, বরং তার জন্যে মর্যাদা স্বরুপ। ইসলাম নারীকে যে সম্মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে তার সঠিক মূল্যায়নই নারীর যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। ইসলামে নারীর মর্যাদা সংক্ষেপে নিম্নরুপ:
মা হিসাবে মর্যাদা: রাসূল স. কে একজন জিঞ্জাসা করলেন আমার সর্বাপেক্ষা সদ্ব্যবহার পাওয়ার যোগ্য কে? তিনি বললেন তোমার মা। লোকটি জানতে চাইলো, তারপর কে ? রাসূল সা: বললেন তোমার মা। লোকটি জানতে চাইলো, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি আবার জানত চাইলো তারপর কে? তিনি বললেন তোমার পিতা। (সহীহ বুখারী)
এভাবে ইসলামের পিতার চেয়ে মাতাকে সম্মান- মর্যাদার দিক দিয়ে তিনগুন বেশি মর্যাদার অধিকারী করেছেন।
কন্যা শিশুর মর্যাদা: যে কন্যা সন্তানের ভাগ্যে জীবন্ত প্রোথিত হওয়া অনিবার্য ছিল তার সর্ম্পকে ইসলামের ঘোষণা –
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত ,রাসূল সা. বলেছেন- “যে ব্যক্তি তিনটি কন্যা সন্তানকে কিংবা অনুরূপ তিনটি বোনকে লালন-পালন করেছে, শিষ্ঠাচার শিক্ষা দিয়েছে, স্বাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত এদের সাথে সদয় ব্যবহার করেছে, মহান আল্লাহ তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দিয়েছেন।
স্ত্রী হিসাবে মর্যাদা : বিবাহের পর স্ত্রীর সকল ধরণের দায়দায়িত্ব পুরুষের উপর চাপিয়ে ইসলাম স্ত্রীর ব্যক্তিত্ব ও মর্যাদাকে সমুন্নত করেছেন। স্বামীর ব্যাপারে স্ত্রীর মূল্যায়নকে সর্বোচ্চ মান প্রদান করে ইসলাম মূলত: নারীকে সর্বোত্তম মর্যাদা দান করা হয়েছে। রাসূল সা. বলেছেন- তোমাদেরকে মধ্যে সে-ই সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম।
 
৫. নারীর মূল্যায়ন : বর্তমান অবস্থা
নারীর অবস্থান উন্নয়নে সময়ের সাথে সাথে প্রণীত হচ্ছে বিভিন্ন নীতিমালা, বিভিন্ন আইন, বিভিন্ন পদক্ষেপ। কিন্তু তবুও পরিবর্তন ঘটছেনা নারীর অবস্থার। তাই একবিংশ শতাব্দীর আলো ঝলমলে পৃথিবীতে দাঁড়িয়েও নারী আজ বড় অসহায়, বড় বিপর্যস্ত। বর্তমান সময়েও ঘটেছে নারী নির্যাতনের নানা ধরনের ঘটনা কখনোবা এর ধরণ পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু সব ধরনের নির্যাতনের সোচ্চার প্রতিবাদ শোনা বা দেখা যায়না। কিছু ঘটনার প্রতিবাদ হলেও তা এক সময় আবার থেমে যায়। মিডিয়ার দৃষ্টিও চলে যায় অন্যদিকে। শেষ পর্যন্ত নির্যাতিত নারীকে একাই তার কষ্ট দিয়ে থাকতে হচ্ছে।
নারীকে কখনো একজন মা, কখনো একজন স্ত্রী, কখনো ছেলের বউ, কখনোবা বোন, কন্যা হিসাবে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় প্রতিনিয়তই। এই নির্যাতন শুধু পুরুষ দ্বারাই নয় নারী কর্তৃক ও হচ্ছে। নারীর মত প্রকাশের স্বাধীনতা অধিকাংশ পরিবারগুলোতেই, অনুপস্থিত।
যৌতুক প্রথা সমাজে একটি সংক্রামক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। দেশীয় আইন ১৯৮০ ও ২০০০ সালে এ নির্যাতন প্রতিরোধে আইন পাশ হলেও মিলছেনা প্রতিকার।
তালাক নারী নির্যাতনের রেকর্ডে যোগ করেছে আরেকটি নিমর্মতা। সামান্য কথা কাটাকাটি থেকে রাগের বশে তালাক দেয়ার ঘটনা ইদানিং খুব স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পারিবারিক ক্ষেত্রে অনেক সময়ই নারীর অবদান ও কষ্টকে খাটো করে দেখা হয়। অনেক পরিবারে নারীদের নূন্যতম খরচের স্বাধীনতাও থাকেনা। চাকুরিজীবি স্ত্রী থেকে স্বামী জোর করে বেতনের টাকাটা নিয়ে নেয়া এটাও স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। কন্যা শিশু থেকে বৃদ্ধা বয়সী নারীরা পর্যন্ত প্রতিনিয়তই শিকার হচ্ছে যৌন নির্যাতনের। বাস, ট্রেন, গৃহ কোন স্থানই আজ নিরাপদ নয়। বিভিন্ন বয়সের পুরুষের দ্বারা ইভটিজিং এর শিকার নারীরা মানসিক পীড়ন থেকে শুরু করে শিক্ষাজীবন, কর্মজীবন এমনকি নিজেদের জীবনেও ইতি ঘটাতে বাধ্য হচ্ছে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও নারী আজ বৈষম্যর শিকার। নারীদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে সম্পত্তি থেকে। নারীদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে উপার্জনের ক্ষেত্রে।
 
৬. আধুনিক বিশ্বে নারী সমস্যার ভয়াবহ চিত্র :
ইংল্যান্ডে প্রতি ৪ জনে তিন জন মেয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হন। বেশির ভাগ নির্যাতনকারী হয় উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কিংবা সহকর্মী।
ভারতে নারী ভ্রুণ হত্যা এবং নারী সন্তান হত্যার জন্য, বিগত শতকে ৫০ মিলিয়ন নারী নিখোঁজ রয়েছ্। ২০০০ সালে পারিবারিক সম্মান রক্ষার নামে ১০০০ নারীকে খুন বা করা হয়েছে।
বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে কমপক্ষে ১২.৫ লাখ অবিবাহিত কিশোরী গর্ভধারণ করে।
সুসভ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি হাজারে ৩০৭ জন নারী সহকর্মীদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। সেখানে প্রতি মিনিটে একজন নারী হারায় তার সম্ভ্রম।
সৌন্দর্যের লীলাভূমি ফ্রান্সে ২৪০টিরও বেশি সেক্সক্লাব রয়েছে।
নারী দিবসের পেছনে কোটি কোটি টাকা ব্যয়কারী চীনও কন্যা সন্তান রফতানি করে আয় করে ১৫০ কোটি ডলার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১০-১৪ বছর বয়সী শিশু-কিশোর আত্মহত্যার চিত্র শতকরা ৭৬ ভাগ।
অষ্ট্রিয়ায় কর্মস্থলে শতকরা ৮০ জনের মত মহিলা জীবনে একবার কিংবা একাধিকবার বিভিন্ন মাত্রার যৌন নির্যাতনের শিকার হন।
৭. বাংলাদেশে নারীর অবস্থা
সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের পেছনে নারীর অগ্রগতি বড় ভূমিকা রাখলেও নারীর প্রতি প্রায় সব ধরনের সহিংসতা বেড়েই চলেছে। নারী কেন্দ্রীক বিভিন্ন সমস্যার বিষবাষ্পে জর্জরিত আমাদের প্রিয় এ জন্মভূমির চারপাশ।
২০ মার্চ ২০১৬ কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল নিরাপত্তার চাদরে আবৃত কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায়। এ ঘটনা দেশবাসীকে করে তুলেছিল ক্ষুব্ধ ও স্তব্ধ। তনু আজ একটি ইতিহাস যা সময়ের স্বাভাবিক প্রবাহে তলিয়ে গেছে।
ভায়োলেন্স এগেইন্সট উইমেন সার্ভে ২০১৫ শীর্ষক জরিপে প্রকাশিত হয়েছে, দেশে বর্তমানে ৮০ শতাংশ বিবাহিত নারীই নির্যাতনের শিকার এবং দেন মোহর পান মাত্র ১২ শতাংশ নারী।
বিগত কয়েক বছরে জ্যামিতিক হারে ধর্ষনের ঘটনা বাড়ছে। ২০১৫ সালের ১০৬৯ জন নারী ও শিশু ধর্ষনের মতো বর্বরোচিত সহিংসতার শিকার হয়েছে যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৩৫% বেশী।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, আইন ও সালিস কেন্দ্র এবং আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের ২০১৫ সালের নারী নির্যাতনের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় :
o ধর্ষনের শিকার- ৭৪২
o ধর্ষনের পর হত্যার শিকার- ৮২
o যৌন নির্যাতনের শিকার-৫৯
o এসিড সহিংসতার শিকার- ৩৫
o অপহরণ- ৯২
o যৌতুকের কারণে হত্যা- ১৯২
o যৌতুকের কারণে নির্যাতিত- ১৭৩
o গৃহ পরিচারিকা নির্যাতন- ৩৬
o আত্মহত্যা- ২৯৮
o উত্যক্তের শিকার- ৩১৯
o শ্লীলতাহানির শিকার- ৯৩
 
৮. নারীর অবমূল্যায়নের নেপথ্যের কারণ :
কেন আজ নারীর এই অসহায়ত্ব, কেন হচ্ছে এই নির্যাতন, তা পরিপূর্ণভাবে নির্ণয়ের চেষ্টা করা হচ্ছেনা। তাই নির্যাতন ক্রমাগত বেড়েই চলছে। মূলত যে কারণগুলো নারীর মূল্যায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেগুলো নি¤œরূপ:
o মহান আল্লাহ প্রদত্ত নারীর মর্যাদা ও অধিকারের ব্যাপারে অসচেতনতা।
o সমাজে নারীর সঠিক অবস্থান নির্ণয়ে ব্যর্থতা।
o নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা কাঠামো।
o অশ্লীল লেখনী, অশ্লীল মুভি ও পর্ণোগ্রাফির সহজলভ্যতা ।
o তথাকথিত নারী স্বাধীনতা ও অযৌক্তিক সমানাধিকার দাবীর মাধ্যমে নারীর কাঁধে কয়েকগুন বোঝা চাপিয়ে দেয়া।
o নিজেদের সম্মান মর্যাদার প্রতি নারীদেরই উদাসীনতা ও আত্মবিশ্বাসের অভাব।
o নারী নির্যাতনকারীদের প্রতিরোধে আইনের প্রয়োগে উদাসীনতা।
তাই নারী মুক্তি আজ যুগের অনিবার্য দাবী। আল্লাহ প্রদত্ত নারীর মর্যাদা ও অধিকারের ব্যাপারে সচেতনতা আজ বড় প্রয়োজন। প্রয়োজন সমাজের সার্বিক দৃষ্টিভংগীর পরিবর্তন। প্রয়োজন একটি সমন্বিত কর্মসূচি ও তৎপরতা, যা রোধ করতে পারবে নারী নির্যাতন। নারী নির্যাতনকারীদের প্রতিরোধে শক্তিশালী আইনের প্রয়োগের ম্যাধমে নির্যাতন রোধ করা সম্ভব।
 
আর সর্বোপরি নিজেদের সম্মান মর্যাদার প্রতি নারীদের দৃঢ় সচেতনতা আর বলিষ্ঠ আত্মবিশ্বাসই তাদেরকে নিয়ে যেতে পারবে মুক্তির দ্বারপ্রান্তে।
 
তথ্যসূত্র:
১। আবদুল হালীম আবু শুক্কাহ: রাসূলের যুগে নারী স্বাধীনতা।
২। ড. মুস্তাফা আস সিবায়ী: ইসলাম ও পাশ্চাত্য সমাজে নারী।
৩। নারী নির্যাতন বিষয়ক ওয়েবসাইন ও অনলাইন পত্রিকা।
 
লেখক: সাজেদা হোমায়রা

 

ঈদের চমক নিয়ে আসছেন অপূর্ব-মম

জাফরিন সাদিয়ার রচনায় ও রুবেল হাসানের পরিচালনায় গত ঈদ উল ফিতর এ ‘খুঁজি তোমায়’ নাটকটির জনপ্রিয়তা ও দর্শক পায়। এই জুটি এবার আসছেন একটি রোমান্টিক টেলেফিল্ম ‘ওয়ানস’ নিয়ে।

ভালোবাসার গল্পে দেখা যাবে মফস্বলের সহজ-সরল মেয়ে অর্শি স্থানীয় মাস্তানদের হাতে নির্যাতিত হয়। বাবা মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শহরে তার বোনের বাসায় নিয়ে আসে। ফুপুর বাসায় থেকেই অর্শি পড়াশোনা করে। পরিচয় হয় শহরের অতি স্মার্ট ও সুদর্শন জারিফের সাথে।

জারিফ সহজ-সরল অর্শিকে স্বপ্ন দেখায়। এক সময় প্রেমে পড়ে যায় অর্শি। এভাবে গল্প এগিয়ে যায়। গল্পের ক্লাইম্যাক্স সম্পর্কে জানতে চাইলে জাফরিন সাদিয়া বলেন, ক্লাইম্যাক্সটি দর্শকদের জন্য একটি চমক। টেলিফিল্মটিতে অর্শির চরিত্রে অভিনয় করছেন জাকিয়া বারি মম ও জারিফের চরিত্রে থাকছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব।

টেলিফিল্মে আরও অভিনয়ে করেছেন খালেকুজ্জামান, শারমীন আঁখি, রাজিয়া রশিদ, শিখা খান, মাহদী হাসান পিয়াল, সাইদুর এমন প্রমুখ।

জাফরিন সাদিয়া তার নাটকের প্রেজেন্টেশন ও ওয়েব পাবলিসিটিতে গ্রাফিক্স ডিজাইন দিয়ে আলাদা মাত্রা যোগ করেন। যা নাটক প্রচারের আগেই দর্শককে আকর্ষিত করে।

এবার ওয়ানস টেলিফিল্মটির জন্য ৩টি টিসার ইউটিউবে ইতিমধ্যে ছাড়া হয়েছে, দর্শকের আগ্রহ ও আকর্ষণ কাড়তে টেলিফিল্মটির এই আয়োজন।

ভালোবাসার এই টেলিফিল্মটিতে সংগীতায়োজন করেছেন অরূপ। জাফরিন সাদিয়ার কথায় কণ্ঠ দিয়েছেন রাফি আহমেদ ও আদনীন মৌরিন।

টেলিফিল্মটির নির্বাহী প্রযোজক মাসুদ উল হাসান। প্রযোজনা করেছেন সাব্বির চৌধুরী, রাসেল আলম ও জাফরিন সাদিয়া। আসছে ঈদ উল আজহায় ‘ওয়ানস’ টেলিছবিটি প্রচার হবে বাংলা টিভিতে।

 

হজ সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে প্রশ্নোত্তর

হজ মুসলিম উম্মাহর সর্বোত্তম ইবাদত। ইচ্ছা করলেই কেউ হজে যেতে পারে না। হজের জন্য সর্ব প্রথম শর্তই হলো আর্থিকভাবে সামর্থ থাকতে হবে। অতঃপর শারীরিক সক্ষমতা লাগবে। আর মানসিক প্রস্তুতিও হজের জন্য আবশ্যক বিষয়।

হজ হলো আল্লাহ তাআলা কিছু অনন্য নিদর্শন স্বচক্ষে দেখার জন্য পবিত্র নগরী মক্কা মুকাররমার ওই সব স্থানে স্বশরীরে উপস্থিত হওয়া এবং যথাযথ মন নিয়ে পালন করার নাম।

ওই সব নিদর্শন তারই হুকুম পালনকারী প্রিয় বান্দা নবি-রাসুলদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি স্মারক বা ঘটনা। যে ঘটনাগুলো আল্লাহ তাআলার অনেক পছন্দ হয়ে যায়। আর তার পরিদর্শনকে আল্লাহ তাআলা ইসলামের রোকন হিসেবে সাব্যস্ত করেন।

হজের নিদর্শন সম্পর্কিত কিছু তথ্য প্রশ্নোত্তর আকারে তুলে ধরা হলো-

>> পবিত্র কাবা শরিফ কে তৈরি করেছেন?
উত্তর : হজরত ইবরাহিম আলাইহি সালাম পবিত্র কাবা শরিফ নির্মাণ করেন। কাবার স্মৃতি চিহ্ন মুছে যাওয়ার পর আল্লাহর নির্দেশে তিনি হজরত ইসমাইলকে সঙ্গে নিয়ে কাবার জন্য নির্ধারিত স্থানেই কাবা নির্মাণ করেন।

>> পবিত্র কাবা শরিফের চারদিকে তাওয়াফ করতে কোন দিককে নির্দেশ করা হয়েছে?
উত্তর : কাবা শরিফকে বাম দিকে তাওয়াফ করতে হবে। সহজে বুঝার সুন্দর উপমা হলো- ঘড়ির কাঁটা যে দিকে ঘুরে তার বিপরীত দিকে কাবা শরিফ তাওয়াফ করতে হবে।

>> হাজরে আসওয়াদ কী?
উত্তর : এটি একটি পাথর। যা প্রিয়নবি বাইতুল্লাহর দক্ষিণ-পূর্ব কোনো নিজ হাতে স্থাপন করেছেন। এখান থেকেই বাইতুল্লাহর দরজার দিকে তাওয়াফ শুরু করতে হয়।

>> মাকামে ইবরাহিম কী?
উত্তর : একটি পাথরের নাম ‘মাকামে ইবরাহিম’। এ পাথরে দাঁড়িয়ে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম বাইতুল্লাহ নির্মাণ করেছিলেন। বাইতুল্লাহ নির্মাণে যা লিফটের কাজ করেছিল। অর্থাৎ প্রয়োজন অনুযায়ী এ পাথরটি হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে নিয়ে ওপরে ওঠেছিল এবং নিচে নেমেছিল।

>> মুলতাজেম কী?
উত্তর : হাজরে আসওয়াদ ও বাইতুল্লাহর দরজার মধ্যবর্তী কাবা শরিফের প্রাচীরই হলো মুলতাজেম। যেখানে বুক লাগিয়ে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করে।

>> হাতিমে কাবা কী?
উত্তর : হাতিমে কাবা হলো রুকনে শামি ও রুকনে ইরাকির মধ্যবর্তী গোলাকার আকৃতির স্থান। যা বাইতুল্লাহর অংশ।

>> পানি সন্ধানে কে সাফা ও মারওয়ায় দৌড়েছিলেন?
উত্তর : হজরত হাজেরা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) তাঁর সন্তান হজরত ইসমাইলের জন্য পানির সন্ধানে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে দৌড়েদৌড়ি করেছিলেন।

>> ‘ঝমঝম’ অর্থ কী?
উত্তর : ঝমঝম শব্দের অর্থ হলো বন্ধ বা থামা। হজরত হাজেরা রাদিয়াল্লাহু আনহা এ শব্দটি ব্যবহার করে বলেছিলেন ‘ঝমঝম’। যখন পানির খোঁজে বিবি হাজেরা দৌড়াদৌড়ি করছিলেন। তখন এসে দেখেন শিশু ইসমাইলের পায়ের তলা থেকে পানির ফোয়ারা প্রবাহিত হওয়া শুরু করে। তখন তিনি পানি প্রবাহিত হওয়া বন্ধের জন্য বলেন, ‘ঝমঝম’।

>> হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের কোন ছেলে নিজেকে আল্লাহর জন্য কুরবানিতে প্রস্তুত ছিলেন?
উত্তর : হজর ইসমাইল আলাইহিস সালাম। যার উপাধি ছিল ‘জবিহুল্লাহ’।

>> হজ সম্পর্কিত অনেক আয়াত সম্বলিত একটি সুরা রয়েছে কুরআনে। তার নাম কি?
উত্তর : সুরা হজ। কুরআনুল কারিমের ১৭তম পারায় রয়েছে এ সুরাটি। এর আয়াত সংখ্যা ৭৮। যেখানে হজ সম্পর্কিত অনেক আয়াত রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য সুরায়ও হজের ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্নভাবে হজের আলোচনা রয়েছে।

>> হজের কার্যক্রম শুরু হয় কত তারিখ থেকে?
উত্তর : ৮ জিলহজ থেকে হজ শুরু হয়। মূল হজ হলো ৯ তারিখ। আর আল্লাহ তাআলা শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজকে হজের মাস হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

>> আরাফাতের ময়দানে কত তারিখ উপস্থিত হতে হয়?
উত্তর : ৯ জিলহজ দ্বিপ্রহরের আগে। দ্বিপ্রহরের পর থেকে সুর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হলো হজ।

>> আরাফাতের ময়দানে ৯ তারিখ দিন কাটানোর পর হজযাত্রীরা রাত কাটাবেন কোথায়?
উত্তর : মুযদালিফায়। ৯ তারিখ সুর্যাস্তের পর আরাফাতের ময়দান থেকে মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা হবে হজযাত্রীরা। খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করবেন হজযাত্রীরা।

সেখানে রাত যাপন করা সুন্নাত। আর ফজরের নামাজের পর থেকে সুর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত এ মুহূর্তকাল সময় অবস্থান করা ওয়াজিব।

>> ইহরামের সময় পুরুষরা কি মাথায় কিছু ব্যবহার করবে?
উত্তর : না, পুরুষদের জন্য ইহরামের সময় মাথায় কিছু ব্যবহার করা যাবে না। কোনো টুপি, কাপড় বা পাগড়ি কোনো কিছুই ব্যবহার করতে পারবে না।

>> কোন স্থানকে তাবুর নগরী বলা হয়?
উত্তর : মিনাকে তাবুর নগরী বলা হয়।

>> হজের সময় তীর্থযাত্রীরা সবচেয়ে বেশি কী পড়ে করে?
উত্তর : হজের সময় তীর্থ যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি তালবিয়া পড়ে। প্রত্যেক হজযাত্রীকে অবশ্যেই তালবিয়া পড়ার মাধ্যমেই ইহরাম বাঁধার কাজ সমাপ্ত করতে হবে। তালবিয়াই হলো আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেয়ার ঘোষণা।

যেভাবে দুনিয়ার শ্রেণিকক্ষে ছাত্ররা শিক্ষকের নিকট হাজিরার সময় ‘ইয়েস স্যার’, উপস্থিত, লাব্বাইক; ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে।

আল্লাহ তাআলার নিকট তালবিয়া পড়া হলো সে রকমই।

লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক; লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক; ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক; লা শারিকা লাক।’

‘আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি হাজির; আমি হাজির, আপনার কোনো শরিক নেই, আমি হাজির; নিঃসন্দেহে সব প্রসংশা এবং নেয়ামত রাজি আপনার এবং পৃথিবীর একচ্ছত্র ক্ষমতাও আপনার; আপনার কোনো অংশীদার নেই।’

>> পাথর নিক্ষেপের জন্য পিলার বা ওয়াল কতটি? এগুলোর নাম কি?
উত্তর : পাথর নিক্ষেপের জন্য ৩টি পিলার বা ওয়াল রয়েছে। এগুলোকে জামারাত বা পাথর নিক্ষেপের স্থান বলা হয়।

হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে কুরবানির সময় শয়তান প্ররোচনা দিয়েছিল আর তখন পিতা ও পুত্র শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করেছিল। সে স্মৃতি স্মরণেই শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করা হয়।

-জামারাহ উলা বা জামারাহ সোগরা (ছোট জামারাহ)
– জামারাহ ওয়াস্তা বা মধ্যম জামারাহ
– জামারাহ আকাবা বা জামারাহ কুবরা (বড় জামারাহ)

>> কোনটিকে হজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়?
উত্তর : আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়া। প্রিয়নবি বলেছেন- ‘আরাফাই হজ।’ যারা আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হতে পারবে না, তাদের হজ হবে না।

>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কতবার হজ ও ওমরা করেছেন?
উত্তর : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১০ম হিজরিতে ১বার হজ করেছেন।

আর সে হজেই তিনি উম্মতের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ নসিহত পেশ করেছেন। ইসলামের ইতিহাসে এটি বিদায় হজ নামে পরিচিত।

আর প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪বার ওমরা পালন করেছেন-
ওমরা ১ : ৬ষ্ঠ হিজরিতে হুদায়বিয়ার সন্ধির বছর। যদিও সে বছর তিনি ওমরা পালনে কাবা যেতে পারেননি তথাপিও তিনি মাথা মুণ্ডন করেছেন এবং আল্লাহর নামে পশু উৎসর্গ করেছেন। আর সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় তিনি পরবর্তী বছর ওমরা পালন করবেন।
ওমরা ২ : হুদায়বিয়ার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি ৭ম হিজরিতে ওমরা পালন করেন।
ওমরা ৩ : হুনাইনের যুদ্ধ থেকে ফেরার তিনি ৮ম হিজরিতে ওমরা পালন করেন।
ওমরা ৪ : ১০ম হিজরিতে হজ সময় তিনি ওমরা পালন করেছিলেন।

 

সফল হতে চাইলে এ ব্যাপারগুলো এড়িয়ে চলুন…

সফল হতে চাইলে সবাইকে খুশি রেখে চলতে পারবেন না আপনি। যতো বেশি আপনি কাউকে পাত্তা দিবেন, ততো কম আপনি পাত্তা পাবেন। এসব মানুষকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন এবং নিজের লক্ষ্য ও স্বপ্নের দিকে মনোযোগ দিন। বিষাক্ত মানুষ থেকে দূরে থাকুন। অনেক দেরি কিংবা অনেক দ্রুত বলতে কিছু নেই। আপনার ইচ্ছাশক্তি অনুযায়ী কাজ করুন। কিন্তু দরকারী ব্যাপার থেকে কিভাবে অদরকারী ব্যাপার আলাদা করবেন? আমরা একটি তালিকা তৈরি করেছি যেন আপনি সহজেই সাফল্যের রাস্তা খুঁজে পেতে পারেন। আজ আমাদের প্রতিবেদনের মূল বক্তব্য হলো-  সফল হওয়ার জন্য কোন ব্যাপারগুলো এড়িয়ে চলবেন। চলুন জেনে আসা যাক-

অন্য মানুষের বিচার

এক সময় পুরো পৃথিবী নীরব হয়ে যাবে, তখন শুধুমাত্র আপনি নিজের বিবেককে শুনতে পাবেন। সেটিই আপনাকে জানান দিবে যে আদতে আপনার কী করা উচিত। সমস্যা হচ্ছে, আমরা প্রায়শই অন্য মানুষের মতামতকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে বসি যার দরুণ নিজের ইচ্ছা ও পছন্দের কথাই ভুলে যাই। তবে সফল হতে হলে এ অভ্যাস বদলাতে হবে। আপনার সফলতার জন্য আপনার কী দরকার, তা আপনি ছাড়া অন্য কেউ বুঝবেনা কখনোই।

অতীতের পুরনো স্মৃতিচারণ

অতীতে কি হয়েছে না হয়েছে তা হাজার চেষ্টা করলেও আপনি বদলাতে পারবেন না। তার দরকারও নেই। আপনি বরং নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যান। যে দিন চলে গিয়েছে তার কথা ভেবে সময় নষ্ট করার কোন মানেই হয় না।

কঠোর পরিশ্রমের পেছনের বেদনা

পৃথিবীতে দুই ধরনের বেদনা আছে। একটি হলো, যেটি আপনাকে কষ্ট দেয় এবং অপরটি হলো যেটি আপনাকে শিক্ষা দেয়। জীবনে যা যা কষ্ট আপনি পাছেন, সবগুলো থেকেই যদি শিক্ষা গ্রহণ করেন তবে আপনিই জয়ী হবেন। কোন কিছু অর্জন করতে হলে আপনাকে কষ্ট সহ্য করতে হবে, এটিই স্বাভাবিক। মনে রাখবেন, দিন শেষে কাজই কথা বলবে। সুতরাং, আপনি আপনার মতন কাজ করে যান।

হ্যাঁ এবং না বলা

আপনার নিজেরই এটা ঠিক করতে হবে যে কখন আপনি হ্যাঁ বলবেন এবং কখন না বলবেন। একেবারেই খুব বেশি চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই, তাহলে আপনি বিভ্রান্ত হয়ে যাবেন। নিজের লক্ষ্যের দিকে মনোযোগ দিন। মানুষকে সন্তুষ্ট করতে করতে নিজেকে ভুলে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। এতে আপনার কোন লাভ হবে না।

অধৈর্যশীল চিন্তা

কঠোর পরিশ্রম করার সময় ধৈর্য ধারণ করা শিখুন। যতদূরই আপনি যান না কেন ধৈর্যকে আপনার সাথে রাখুন। অধৈর্যশীল চিন্তা আপনার সাফল্যের শিখরে পৌছতে বাধা সৃষ্টি করে। মাঝে মাঝে হয়তো ফল না পেয়ে কিংবা দেরিতে পেয়ে আপনি কষ্ট পাবেন কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে চলবে না।

অনিয়ন্ত্রিত বিষয়সমূহ

কখনো কোন কাজ জোর করে করাতে চাইবেন না বরং সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে শিখুন।  যা হবার তা হবেই। সমস্যাগুলোর কথা না ভেবে সমাধানের কথা চিন্তা করুন। প্রত্যেকটি পরিবর্তনের পেছনেই উদ্দেশ্য থাকে। প্রথম প্রথম হয়তো আপনার খুব কষ্ট হবে কিন্তু ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে।

প্রতিদিনের ছোটখাটো ব্যর্থতা

খারাপ দিন আসেই মানুষের জীবনে। কিন্তু সেটি কখনো থেমে থাকে না। মনে রাখবেন, আপনার ভুল থেকেই অনেক কিছু শেখার আছে। সুতরাং কোন ভুল কিংবা ব্যর্থতাকে সীমাবদ্ধতা না ভেবে আশীর্বাদ মনে করুন।

বিউটি স্ট্যান্ডার্ড

আপাতদৃষ্টিতে যেসব বিষয় আপনি সৌন্দর্য হিসেবে ধরে এসেছিলেন, সেগুলো বদলানোর সময় এসেছে এবার। ধবধবে সাদার দৃষ্টিকোণ থেকে এবার বের হয়ে বাদামী সৌন্দর্যকে আপন করে নিন।

ভয়-ভীতি

জীবন মানেই ঝুঁকি। আপনি যদি ঝুঁকি না নেন তবে কখনোই সামনে এগোতে পারবেন না। ভয়গুলোর সাথে মোকাবেলা করুন। থেমে থাকলে চলবে না।মনে রাখবেন, জীবন তার আপন গতিতেই এগিয়ে চলে।

মানসিক শঙ্কা

কষ্টের দিনগুলোতেও নিজের উপর ভরসা রাখুন। ভুল মানুষই করে। কেউ না জেনে ভুল করে, আবার কেউ কাউকে কষ্ট দেওয়ার জন্য ভুল করে। বিশ্বাস রাখুন, জীবন একদিন আপনাকে উপহার দিবেই। এই ভরসাই আপনাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।

 

রক্তের ছোপ আর গুলির চিহ্নের জাদুঘরে

যে সিঁড়িতে গুলিবিদ্ধ বঙ্গবন্ধু পড়ে ছিলেন, সেখানে কাচের এপারে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি আমরা। বঙ্গবন্ধু ও শেখ ফজিলাতুন্নেছার রক্তমাখা পোশাক দেখে শিউরে ওঠেন ফারজানা, মলি ও শাহনাজ। এমন মৃত্যু কি প্রাপ্য ছিল জাতির জনকের? তিনজনই বলে ওঠেন একসঙ্গে।

টিপটিপ বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল সকাল এসে হাজির তাঁরা তিনজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীদের মধ্যে বিশেষ একটি মিল আছে—তাঁরা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকেন। ফারজানা আকতার ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর করছেন, মলি হালদার দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষে ও শাহনাজ কবীর ব্যবস্থাপনা বিভাগে তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। ফারজানা ও মলি হলের রুমমেট। তবে শাহনাজের সঙ্গে সেদিনই পরিচয় হয় বাকি দুজনের। ফজিলাতুন্নেছা হলের এই তিন ছাত্রীকে নিয়ে ১১ আগস্ট গিয়েছিলাম ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে। চাপা একটা উত্তেজনা ছিল তাঁদের মধ্যে। গেটের বাইরে ফলক পড়ার সময় জানালেন, আগে আসার সুযোগ হয়নি। এবারই প্রথম আসা তিনজনের।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের বর্ধিত ভবনের শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সায়রা খাতুন প্রদর্শনী গ্যালারি থেকে দেখা শুরু হয়। আমাদের সঙ্গে ছিলেন জাদুঘরের গাইড বরুণ রাহা। হলে নিয়মিত অনুষ্ঠান হয়, প্রতিবছর আগস্ট মাসে অনুষ্ঠানের কারণে বঙ্গবন্ধুর পরিবার, বিশেষ করে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সম্পর্কে জেনেছেন এই তিন ছাত্রী।

‘বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে সারা জীবন বঙ্গবন্ধুকে নানাভাবে সমর্থন দিয়েছেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল (১০ আগস্ট) আমাদের হলে অনুষ্ঠান ছিল। আগামীকাল (১২ আগস্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছার স্মরণে অনুষ্ঠান হবে। প্রতিবছরই হয়। নিজের আগ্রহ থেকেই যাই। এভাবেই তাঁর সম্পর্কে জানতে পেরেছি।’ বললেন শাহনাজ। তবে মলির জানাবোঝা একটু বেশি। জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের ছবি দেখে তার পেছনের ইতিহাস বলতে শুরু করেন তিনি।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে বঙ্গবন্ধুর যাওয়ার কথা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেটা কি জানা আছে এই তিনজনের? হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়েন। বর্ধিত ভবন থেকে আমরা গেলাম পুরোনো ভবনে। একতলায় রান্নাঘর দেখে দোতলায় উঠি আমরা। কাচঘেরা রক্তের ছোপ ও গুলির চিহ্ন দেখে ফারজানা, মলি ও শাহনাজ যেন কিছুক্ষণ কথা বলতে পারেন না। ‘আমার খুব খারাপ লাগছে। কী ভয়াবহ ছিল সেই রাত, এখানে না এলে বুঝতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ওপর দিয়ে কী দুর্যোগ গিয়েছে, ভাবতেই পারছি না। যারা মেরেছে, তারা আসলে মানুষ হতেই পারে না। মানুষ মানুষকে এভাবে মারতে পারে?’ ফারজানা বলেন। চোখভর্তি পানি তিনজনেরই।

কত বই এখানে! বঙ্গবন্ধুর লাইব্রেরি ছিল যেখানে, সেটা দেখে তাঁরা অবাক হলেন। শেখ কামাল ও শেখ জামালের শোয়ার ঘর দেখে বিস্ময়ের শেষ নেই। বাহুল্য নেই, কিন্তু রুচিশীল। শেখ কামালের ঘরে কি-বোর্ড, সেতার দেখে শাহনাজ বলেন, ‘শেখ কামাল সংগীতচর্চা করতেন, সুলতানা কামাল কত বড় অ্যাথলেট ছিলেন। সুলতানা কামালের মিষ্টি হাসির সৌরভ যেন এখনো ছড়িয়ে আছে ঘরময়—তাই না?’ তাঁর সঙ্গে সম্মত হন বাকি সফরসঙ্গীরা। কিন্তু মলি ও ফারজানার মন খুব খারাপ হয়ে গেছে। মলি বলেন, ‘এখানে না এলে জীবনে একটা অপূর্ণতা থাকত। আসব আসব করে এখানে আসা হচ্ছিল না। ধন্যবাদ, তাদের এই উদ্যোগের কারণে আসা হলো।’

‘শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে এখন কত বড় হতেন, তাঁর জন্য খুব খারাপ লাগছে।’ একটা দীর্ঘশ্বাসের পর ফারজানা আকতার বলেন। যে নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটেছে তাঁদের জন্মের আগে, সেই ঘটনায় যেন ফিরে গেলেন তাঁরা। নতুন প্রজন্ম জানল, যে বাড়িতে তাঁরা দাঁড়িয়ে, সেখানে ঘটেছিল ইতিহাসের কালো অধ্যায়।

পুরো জাদুঘর ঘুরে দেখার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান এই তিন ছাত্রীকে ঘুরতে আসার জন্য ধন্যবাদ দেন। বলেন, ‘শিগগিরই আমরা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীদের এখানে নিয়ে এসে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করব। যেখানে শেখ ফজিলাতুন্নেছার জীবন নিয়ে স্মৃতিকথা বলবেন বিশিষ্টজনেরা।’

তিন ছাত্রী যখন বেরিয়ে এলেন, মন ভারী তাঁদের। ইতিহাসের নিষ্ঠুরতার কালো ছায়া তখন তাঁদের মন ছেয়ে গেছে। প্রকৃতিও যেন তা বুঝতে পেরেছিল। আবারও আকাশ তাই ছেয়ে গেল কালো মেঘে।

 

চিজ বার্গার তৈরির সহজ রেসিপি

ফাস্টফুডের মধ্যে বার্গার খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। আর তা যদি হয় চিজ বার্গার তাহলে তো কথাই নেই। তবে এই খাবারটি আপনি তৈরি করতে পারেন ঘরে বসেও। কীভাবে? চলুন শিখে নেই-

উপকরণ :
প্যাটি বানানোর জন্য: মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম, গোলমরিচের গুঁড়া ২ চা-চামচ, লবণ ১ চা-চামচ, তেল ১ চা-চামচ।

বার্গারের জন্য: বার্গার বান ৪টি (মাঝখান থেকে ২ ভাগ করা), মেয়নেজ, বার্গার চিজ ৪টি বা, পছন্দ করলে ৮টি, লেটুসপাতা বড় করে কাটা, টমেটো মোটাকুচি কয়েকটি, পেঁয়াজ মোটাকুঁচি কয়েকটি, সরিষাবাটা ২ চা-চামচ।

প্রস্তুত প্রণালি :
প্যাটির সব উপকরণ ভালোভাবে মাখিয়ে নিন। ৪ ভাগেভাগ করুন। গোল গোল প্যাটি বানিয়ে অল্প তেল দিয়ে দুই দিকে ভালোভাবে ভেজে নিন। চাইলে গ্রিল করে নিতে পারেন। এবার বার্গার বানের নিচের বানে আগে অল্প সরিষাবাটা দিন। তারপর লেটুস পাতা দিয়ে একটি প্যাটি দিন। এর উপর মেয়নেজ দিয়ে টমেটোকুচি আর পেঁয়াজকুচিও দিন। চিজ দিন। চিজ বেশি পছন্দ করলে একেবারে নিচেও আরেকটা দিন। উপরের বানটা দিয়ে বানিয়ে ফেলুন মজাদার বার্গার।

 

হালকা মেকআপে গর্জিয়াস

নারীর সাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি প্রসাধনী হচ্ছে মেকআপ। নিজেকে আরেকটু আকর্ষণীয় আর অনন্যা করে তুলতে মেকআপ ব্যবহার করে থাকেন বেশিরভাগ নারী। তবে এই মেকআপের আধিক্য আমাদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলার বদলে অনেকটাই কমিয়ে দেয়। বরং হালকা মেকআপেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন গর্জিয়াস।

বেইজ মেকআপের ক্ষেত্রে ভারী ফাউন্ডেশন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। দিনের বেলা ম্যাট ফাউন্ডেশন দিয়ে বেইজ করা ভালো। ত্বক তৈলাক্ত হলে প্রথমে সারা মুখে লুজ পাউডার লাগিয়ে তারপর ফাউন্ডেশন লাগাতে হবে। এতে মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী হবে। ত্বক যা-ই হোক, কমপ্যাক্ট পাউডার দিয়ে বেইজ মেকআপ শেষ করা ভালো।

রাতের সাজে তৈলাক্ত ত্বকে দিন ‘লিকুইড ফাউন্ডেশন’। আর শুষ্ক ত্বকে ‘ক্রিম ফাউন্ডেশন’। তারপর প্যানকেক দিন। জমকালো আর ভারী সাজেই কেবল প্যানকেক মানানসই। সাধারণত হলুদ আর গোলাপি এই দু’টি রংয়ের প্যানকেক ব্যবহৃত হয়। প্রথমে হলুদ প্যানকেক দিয়ে তারপর ত্বকের রংয়ের সঙ্গে মিলিয়ে গোলাপি শেইডের প্যানকেক দিন।

সব ক্ষেত্রেই মেইকআপ ব্লেন্ডিং খুব জরুরি। ত্বকের সঙ্গে বেইজ যত ভালোভাবে মিশে যাবে ততই ‘ন্যাচারাল লুক’ আসবে। তারপর কমপ্যাক্ট পাউডার দিন। রাতের জমকালো অনুষ্ঠানে চাইলে ‘শিমার পাউডার’ ব্যবহার করতে পারেন।

নাক একটু টিকালো দেখানোর জন্য নাকের দুপাশে গাঢ় শেইডের কনসিলার দিয়ে উপরে লম্বা করে হালকা শেডের কনসিলার দিন। একইভাবে চোয়ালের শেপ ঠিক করে নিন। কনসিলার ছাড়াও ব্রোঞ্জিং পাউডার দিয়েও কনট্যুর ও হাইলাইট করা যায়। চাইলে চোখও হাইলাইট করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ঠোঁটের জন্য ‘ন্যাচারাল স্কিন কালার’ মানানসই। হালকা বা ভারী- সাজ যা-ই হোক, চোখ আর ঠোঁটের সাজ হবে বিপরীত।

চোখের সাজে লাইনার, মাসকারা আর শ্যাডো ব্যবহার করা হয়। দিনের সাজে তিনটি একসঙ্গে ব্যবহার না করে যে কোনো দুটি বা একটিতে সীমাবদ্ধ রাখা যেতে পারে। কাজল ও আইলাইনারের চেয়ে মাসকারা প্রাধান্য দিন।

চোখের পাতা ঘন দেখালে আরও আকর্ষণীয় লাগবে চোখ। সেজন্য কাজল বা আইলাইনার টেনে দিতে পারেন। তিনটি একসঙ্গে কেবল রাতের সাজেই চলতে পারে। ঠোঁটে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করুন। ব্লাশন সব সময়ই হালকা হলে ভালো লাগে। এমনকি রাতের পার্টিতেও এখন গাঢ় ব্লাশনের চল নেই।

 

ঘরকন্নার দরকারি টিপস

প্রতিদিনের ঘরের কাজগুলো গুছিয়ে করতে ভালোবাসি আমরা। তবু মাঝেমাঝে একটু এলোমেলো হয়ে যায়। হয়তো রান্নায় লবণ বেশি অথবা কম হয়ে যায়, কখনোবা অসাবধানতাবশত কাপড়ে দাগ লেগে যায়। এরকম আরো কত কী! তাই প্রতিদিনের ঘরকন্নার কাজটাই গুছিয়ে করতে আপনার জন্য রইলো কিছু জরুরি টিপস। অসাবধানতাবশত তরকারিতে লবণ বেশি দিয়ে ফেললে একদলা মাখানো ময়দা ছেড়ে দিন। তরকারি নামানোর আগে ময়দার দলাটি তুলে নিন দেখবেন লবণের মাত্রা কমে গেছে।

  রান্নার সময়ে পাত্রের তলদেশে খাদ্যদ্রব্য আটকে যাওয়া থেকে এবং গরম তেল বাইরে ছিটকে পড়া থেকে রেহাই পেতে হলে সামান্য পরিমাণ লবণ ছিটিয়ে দিন।

আরও পড়ুন: তেলাপোকার উপদ্রব থেকে বাঁচতে যা করবেন

অনেক সময় পোলাও রান্না করতে গেলে দেখা যায় একটু বেশি নরম হয়ে যায় তখন নিজের কাছে খুবই খারাপ লাগে। একটি পরিষ্কার শুকনো তোয়ালে বিছিয়ে তার উপরে পোলাওগুলো ঢেলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখুন পোলাওগুলো কেমন ঝরঝরে হয়ে যায়!

নেতিয়ে যাওয়া লেটুস পাতা তরতাজা করতে হলে একটু আলুর খোসা ছাড়িয়ে কুচিকুচি করে লেটুস পাতা সহ ঠান্ডা পানিতে ছেড়ে দিন দেখবেন কেমন তরতাজা হয়ে উঠেছে।

ফ্রেঞ্চফ্রাই বাচ্চাদের অনেক প্রিয় একটা খাবার। এটি তৈরি করার আগে কিছুক্ষণ ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে তারপর শুকিয়ে ভাজলে তা অনেক বেশি মচমচে ও অধিক স্বাদের হয়।

আরও পড়ুন: মশা-মাছি তাড়ানোর উপায়

ফ্রিজ দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে এক টুকরো লেবু কেটে ফ্রিজে রেখে দিন। দেখবেন ফ্রিজে আর কোন গন্ধ থাকবেনা। তবে ফ্রিজ নিয়মিত পরিষ্কার করতে ভুলবেন না।

পেঁয়াজের স্বাদ ও গন্ধ টাটকা পেতে হলে পেঁয়াজ ভাজার আগে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে দুধে ভিজিয়ে তারপর ভাজতে হবে।

দুধ ফেটে যাওয়ার ভয় থাকলে জ্বাল দেবার আগে সামান্য পরিমাণ খারাব সোডা মিশিয়ে দিন।

পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে চাল বা আটা ময়দার পাত্রের মধ্যে একটা তেজ পাতা রেখে সংরক্ষণ করুন।

দই তাড়াতাড়ি জমাতে হলে দুধে এক চা চামচ কর্ণফ্লাওয়ার মিশিয়ে দিন।

 

ভালো লাগবে সবকিছু

‘কিছুই ভালো লাগে না’ বা ‘কিছুই করতে ইচ্ছা করে না’ অনেক সময় নানা চাপের কারণে খানিকটা ঝিমিয়ে পড়লে আমরা এ ধরনের কথা বলি। আপনি যদি একটা দীর্ঘ সময় ধরে এই অনুভূতির ভেতর দিয়ে যেতে থাকেন, তবে এখনই সময় সচেতন হওয়ার। বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে একঘেয়ে হয়ে যাই বা কর্মক্ষেত্রে দিনের পর দিন অপছন্দের কাজ করতে হচ্ছে, সে ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে।
এসব ক্ষেত্রে নিজেকে নব উদ্যমে ফিরিয়ে আনতে কয়েকটা বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো আসে, সেগুলো নিয়ে আমাদের হয় আগ্রহ কম থাকে, না হয় আমাদের প্রস্তুতি কম থাকে। যার কারণে আমরা পিছিয়ে আসি। ধীরে ধীরে আমাদের আশপাশের অন্যান্য বিষয় নিয়েও একধরনের খারাপ লাগা কাজ করে। তাই নিজেকে নব উদ্যমে ফিরিয়ে আনতে প্রথমেই জানতে হবে আমার জীবনে কাজটির গুরুত্ব কতটুকু এবং কাজটির ফলাফল কেমন হবে। শুধু তা-ই নয়, এ ক্ষেত্রে সময়জ্ঞানও অনেক জরুরি। কাজটি যেমনই হোক, আপনি যখনই কাজটি সময়ের মধ্যে শেষ করতে সক্ষম হবেন, তখনই আপনার মাঝে একটা ভালো লাগা কাজ করবে।’
যেসব কাজের চর্চা আপনাকে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে—

কঠিন দিয়েই শুরু
নতুন উদ্যমে ফিরে আসতে কঠিন বা আপনার অপছন্দের কাজটি দিয়েই দিন শুরু করতে পারেন। যেহেতু কাজটি আপনার ভালো লাগার জায়গায় নেই, সেহেতু আপনি অবশ্যই চাইবেন কাজটি যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে। শুধু তা-ই নয়, অপছন্দের কাজ বা কঠিন কাজ কিন্তু কেউই বারবার করতে পছন্দ করে না। তাই পুরো মনোযোগ দিয়ে একবারে কাজ শেষ করবেন।

সময় ধরে কাজ
কাজ করার আগ্রহ যদি একেবারেই না থাকে, তবে চেষ্টা করুন সময় ধরে কাজ করার। ধরা যাক, প্রথম দিকে আপনি ঠিক করলেন টানা ২৫ মিনিট আমি কাজ করব এবং এই ২৫ মিনিটে কাজের বাইরে আর কিছুই করব না। ২৫ মিনিট পর আমি একটু বিরতি নেব, এভাবেই ২৫ মিনিটে সারা দিনের কাজ ভাগ করে নিন। প্রথম প্রথম ২৫ মিনিট পুরোপুরি না-ও হতে পারে। তবে ধীরে ধীরে আপনার কাজের গতি বাড়তে শুরু করবে। শুধু তা-ই নয়, একটা সময় আপনি দেখবেন আপনার কাজের প্রতি মনোযোগ এবং আগ্রহ দুটোই বেড়ে গেছে।

সাহায্য নিন
অনেক সময় আমরা একা একা নিজেদের সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারি না। আমাদের তখন আশপাশের মানুষের সাহায্য দরকার হয়। মনে রাখুন, কারও সাহায্য চাওয়া খারাপ কিছু নয় বা এতে করে আপনার নিজেকে ছোট ভাবার কোনো অবকাশ নেই। আপনি যেহেতু কাজ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন, সেহেতু আপনার বন্ধু বা বড় কাউকে বলুন আপনার কাজটি পর্যবেক্ষণ করতে। আপনার কাজটির ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিতে। এতে আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে। একান্তই যদি আপনি কারও দ্বারা প্রভাবিত হতে না চান, তবে নিজেই পর্যবেক্ষণ করতে পারেন নিজেকে।

সময়ের কাজ সময়ে
আমাদের কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলার আরেকটি অন্যতম কারণ সময়ের কাজ সময়ে না করা। যখনই আমরা একটা কাজ ফেলে রাখি, তখনই সেই কাজের চাপ আমাদের ভালো না লাগার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই চেষ্টা করুন ‘পরে করব’ এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার। নিজেকে বলুন, আমি আজই করব এবং সঠিকভাবেই কাজটি করব।

শান্তভাবে শুরু হোক
কোনোভাবেই যখন ভালো লাগছে না, তখন বুঝতে হবে আমার মাঝে একটা অস্থিরতা রয়ে গিয়েছে। নিজের মাঝে স্থিরতা আনতে প্রকৃতির কাছাকাছি কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন অথবা কোনো এক ছুটির দিনে নিজেকে সময় দিতে পারেন। ঘুম থেকে উঠেই এক কাপ চা কিংবা কফি পান করতে পারেন জানালার পাশে কিংবা বারান্দায় বসে। এরপর তৈরি করুন কী কী কাজ এখনো পড়ে আছে, তার তালিকা ঠিক করুন, এর মাঝে কোনটি করতে আপনি প্রস্তুত। শুরু করে দিন কাজটি। একটা সময়ের পর দেখবেন, ভালো লাগছে সবই।

 

গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ?

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ মা ও গর্ভস্থ শিশুর জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। গর্ভাবস্থায় তাই নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করা জরুরি। রক্তচাপ বেশি হলে তার চিকিৎসা নিয়ে অবহেলা করা উচিত নয়।

গর্ভাবস্থার প্রথম ৫ মাসের মধ্যে রক্তচাপ বেড়ে গেলে সেই মায়ের আগে থেকেই খানিকটা উচ্চ রক্তচাপ ছিল বলে ধরে নেওয়া যায়। যাঁদের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ আছে এবং ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁরা সন্তান নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন। কিছু রক্তচাপের ওষুধ গর্ভাবস্থায় খাওয়া যায় না। তাই প্রয়োজনে চিকিৎসক আগে থেকেই ওষুধ পরিবর্তন করে দিতে পারেন। সেই সঙ্গে রক্তচাপ পুরোপুরি স্বাভাবিক আছে কি না এবং উচ্চ রক্তচাপের কোনো জটিলতা আছে কি না, তা-ও পরীক্ষা করে নেওয়া যাবে।

গর্ভাবস্থার পাঁচ মাস পর যদি রক্তচাপ বেড়ে যায়, তবে তাকে জেসটেশনাল হাইপারটেনশন বা গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়। এটি সন্তান প্রসবের তিন মাসের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যায়। কিন্তু গর্ভকালীন রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া নিয়ে সতর্ক থাকা উচিত। নিয়মিত রক্তচাপ মেপে নিয়ন্ত্রণে না রাখলে নানা জটিলতা হতে পারে। মায়ের পা ফোলা, শরীরে পানি জমা, মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, শ্বাসকষ্ট, হার্ট ফেইলিউর, রক্তক্ষরণ, খিঁচুনি ইত্যাদি হতে পারে। প্রি-একলাম্পসিয়া ও একলাম্পসিয়ার প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। যাঁদের ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, থাইরয়েডের সমস্যা আছে তাঁদের ঝুঁকি বেশি। ওজনাধিক্য, পরিবারে গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকলে বা ২০ বছরের কম বা ৪০-এর বেশি বয়সে মা হলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

*গর্ভকালীন নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন। রক্তচাপ বেশি থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ওষুধ নিন। নিয়মিত প্রস্রাবে আমিষ ও অন্যান্য কিছু পরীক্ষা করুন।

*আলাদা লবণ খাবেন না। অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবারও নয়। যেমন সালাদে বা ফলের সঙ্গে লবণ দেওয়া হয়। আচার, চানাচুর, সয়াসস ও টেস্টিং সল্টযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণ থাকে।

*অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, গরু-খাসির মাংস, ভাজা-পোড়া এড়িয়ে চলুন। কিন্তু প্রচুর তাজা শাকসবজি ফলমূল খান। দুধ, ডিম, মাছ খান।

* ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান। দুধ, দই, পনির, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ, শিম, গাজর ইত্যাদিতে ক্যালসিয়াম আছে।

* চিকিৎসকের পরামর্শমতো নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন। রক্তচাপ ১৫০ (সিস্টোলিক) ও ১০০ (ডায়াস্টোলিক) এর বেশি হলেই ওষুধ লাগবে।

* ধূমপান, জর্দা, তামাক, অ্যালকোহল একেবারেই নিষিদ্ধ।

* উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা দেখা দিলে বা রক্তচাপ ১৭০/১১০ বা তার বেশি উঠে গেলে দ্রুত হাসপাতালে যান।

ডা. শরদিন্দু শেখর রায়

 

মৈনট ঘাট: বাড়ির কাছে ‘মিনি কক্সবাজার’!

মৈনট ঘাট থেকে দূরে তাকালে সমুদ্রের বেলাভূমির খানিকটা আভাস মেলে। দিগন্ত ছুঁয়ে থাকা পদ্মার উত্তাল ঢেউয়ের মাথায় দুলতে থাকা নৌকা, প্রায় ডুবুডুবু স্পিডবোটের ছুটে চলা, পাড়ে সারিবদ্ধ বাহারি রঙের ছাতার তলায় পেতে রাখা হেলান-চেয়ার। ঘাটের কাছাকাছি দুই পাশে হোটেলের সারি। সেগুলোর সাইনবোর্ডে ঘাটের পরিচিতি ‘মিনি কক্সবাজার’।

ঢাকার দোহার উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর কোলে মৈনট ঘাট। দোহার থেকে দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। নদীর অপর পাড়ে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন। পদ্মা ভাঙতে ভাঙতে দোহারের প্রান্তে এখন চরমোহাম্মদপুরে এসে ঠেকেছে। এখানেই ঘাট। ঢাকার গুলিস্তান থেকে সরাসরি পাকা সড়ক চলে এসেছে ঘাট পর্যন্ত। এই রুটে বাস সার্ভিসও চালু আছে বহুদিন থেকে। এখন জনপ্রতি ভাড়া ৯০ টাকা। ঢাকা থেকে বাসে আসতে সময় লাগে ঘণ্টা তিনেক। আসলে সময় নির্ভর করে পথের যানজটের ওপর।

মৈনট ঘাটের এই হঠাৎ খ্যাতি ঘাটের দক্ষিণ পাশের চরটির জন্য। ঘাটের মাঝি চরমোহাম্মদপুরের বাবুল মোল্লার কাছে জানা গেল, নদীর পাশের এই নিচু জমিটি ২০১৫ সালে বন্যায় তলিয়ে যায়। উত্তর পাশে বালু পড়লেও দক্ষিণের অংশে পুরু হয়ে পলি পড়ে। পানি নেমে যাওয়ার পরে পলি মাটি জমে থাকা জায়গাটি অনেকটা সমুদ্রসৈকতের মতো দেখায়। বালু না থাকায় চলাফেরাও বেশ সুবিধাজনক। নদী পারাপারের সময় অনেকে এখানে এসে ছবি তোলেন। ফেসবুকে সেই ছবি দিতে থাকেন। সেই ছবি দেখে লোকে এখানে বেড়াতে আসতে থাকে। লোকসমাগম গত বছর থেকে বেশি হচ্ছে। এ বছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে এখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিল। এ ছাড়া শুক্র-শনিবার আর ছুটির দিনেও ১০ হাজারের মতো লোক এখানে বেড়াতে আসে।

মৈনট ঘাটের বয়স কত, তা কেউ সঠিক বলতে পারে না। তবে মিনি কক্সবাজার হিসেবে তার এই নয়া পরিচিতি বছর দুই হলো, মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে।

দ্রুত খ্যাতি লাভ করার প্রতিক্রিয়া ভালো-মন্দ উভয়ই প্রকারেরই। সমুদ্রসৈকত ভেবে গোসল করতে নেমে গত দেড় বছরে এখানে নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর ধরনে বাড়ির কাছেই সমুদ্রসৈকতের আবহ উপভোগ করতে প্রচুর লোকসমাগম হচ্ছে এখানে। গড়ে উঠেছে বেশ কিছু খাবার হোটেল। শুকনো মরিচ সহযোগে ডুবো তেলে ইলিশ ভাজার সৌরভ ছড়িয়ে পড়ছে পদ্মার বুক ছুঁয়ে ধেয়ে আসা ঘাটপাড়ের ভেজা হাওয়ায়।

মৈনট ঘাট থেকে পদ্মা পার হয়ে লোকে ফরিদপুর যাতায়াত করে। ঘাটে নদী পার হওয়ার বাহনও সদা প্রস্তুত। বাহন দুই ধরনের—ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে ৭০-৮০ জন যাত্রী ওঠে। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। আর স্পিডবোটে ওঠে ১৫-২০ জন, ভাড়া ১৬০ টাকা। স্পিডবোটের যাত্রীদের জন্য কোনো লাইফ জ্যাকেট নেই। ঝুঁকি নিয়েই তারা নদী পারাপার হয়। ঘাটের কিনারে ইজারাদারের টোল আদায়ের ঘর। সেখানে দায়িত্ব পালনকারী ইজাদারের প্রতিনিধি মো. জিয়া দাবি করলেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটে না। তাই লাইফ জ্যাকেটের দরকার নেই। এ বছর তিন কোটি টাকায় তাঁরা ঘাটের ইজারা নিয়েছেন বলে জানালেন তিনি।

লোকসমাগম বাড়তে থাকায় বেশ কিছু নতুন হোটেল হয়েছে। নদীতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছাউনি দেওয়া নৌকা এসেছে ডজনখানেক। নৌকায় বেশ ভালোই আয় হচ্ছে। তাই বাবুল মোল্লাও এমন একটি নৌকা নামিয়েছেন এ বছর। ঘণ্টাপ্রতি নৌকা ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকা। শতকরা ৪০ টাকা টোল দিতে হয় বলে ভাড়া বেশি—জানালেন বাবুল। এ কারণে ঘাট পার হতে যাত্রীভাড়াও বেশি। স্পিডবোটে ১৬০ টাকা ভাড়ার টোল ১০০ টাকা, ট্রলারে ৮০ টাকা ভাড়ার টোল ৫০ টাকা।

ছাতার তলায় পাতা চেয়ারগুলো ভাড়া নেওয়া যায় প্রতিটি ১০০ টাকা ঘণ্টায়। এগুলো পেতেছেন মিজানুর রহমান ও তাঁর চার বন্ধু।  মিজানুর জানালেন, তিনি ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী। পাশের গ্রামেই তাঁর বাড়ি। একটু আয়-রোজগারের আশায় ২০টি চেয়ার পেতেছেন পাঁচ বন্ধু মিলে।

আয়-রোজগার যে মন্দ হচ্ছে না, তা দেখা গেল। ছাতার তলায় খোলা হাওয়ায় বসে উদার প্রকৃতির অকৃত্রিম শোভা উপভোগ করছিলেন রেহান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী নাদিয়া জামান। তাঁদের ছেলে আর ভাগনেরা সামনের পলিমাটির চরে ছোটাছুটিতে মগ্ন। রেহান দম্পতি জানালেন, ফেসবুক থেকেই তাঁরা মৈনট ঘাট সম্পর্কে জেনে এখানে বেড়াতে এসেছেন। থাকেন ঢাকার জিগাতলায়। গুলিস্তান থেকে বাসে এসেছেন। বেশ ভালোই লাগছে তাঁদের এখানে এসে।

এ রকম আরেকটি দলের দেখা পাওয়া গেল খানিকটা দূরে। দলটি বেশ বড়। পরিবার-পরিজনের ১০ সদস্যের দলের নেতৃত্বে আছেন একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মনসুরুল হক। ঢাকার কলাবাগান থেকে নিজেদের গাড়িতে এসেছেন প্রায় দুই ঘণ্টায়। তাঁরা বিস্মিত। ‘ঢাকার এত কাছে এ রকম সুন্দর জায়গা আছে, না এলে বুঝতেই পারতাম না’—এই হলো মনসুরুলের প্রতিক্রিয়া। অন্যরা তখন ব্যস্ত নৌকা ভাড়া করতে।

প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা হবে চরটি। অনেকে হাঁটাহাঁটি করছেন, কেউবা হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দেখছেন পদ্মা। সাহস করে নেমেও পড়ছেন কেউ কেউ। তবে প্রহরারত পুলিশ সদস্যরা তাঁদের সতর্ক করে দিচ্ছেন, ‘সাঁতার না জানলে পানিতে নামবেন না।’ পুলিশ সদস্যদের কাছে জানা গেল, গত প্রায় দেড় বছরে এখানে নদীতে নেমে নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।

অনেকের ধারণা, কক্সবাজারের মতো জায়গাটি ক্রমশ ঢালু হয়ে নেমে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এটি নদী, সমুদ্র নয়। এখানে পাড় একেবারে খাড়া। সে কারণে নামলেই গভীরে পড়তে হয়। দক্ষ সাঁতারু না হলে সেখান থেকে ওঠা মুশকিল। এ কারণেই নদীতে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। এখন বহু লোক আসছে। নিরাপত্তার জন্য দোহার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি থেকে সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানালেন কর্তব্যরত সহকারী উপপরিদর্শক সাজেদুল ইসলাম।

পদ্মার পাড়ে এসে ইলিশের স্বাদ না নিয়ে ফিরলে মনে যেন আক্ষেপ না হয়, সেই ব্যবস্থা করে রেখেছেন হোটেলওয়ালারা। আস্ত ইলিশ ভাজা থেকে শুরু করে ইলিশ ভর্তা পর্যন্ত ইলিশেরই হরেক রকম পদ পাওয়া যাবে হোটেলগুলোতে। ইলিশ ছাড়া নদীর অন্য মাছ, খাসি-মুরগির তেল-ঝালের তরকারির সঙ্গে বিনা মূল্যের ডাল। পদ্মা রোজ নিউ খাবার হোটেলের মালিক জুলহাস ভূঁইয়া জানালেন, তিনি ২০০০ সাল থেকে এখানে হোটেল ব্যবসা করছেন। তাঁর হোটেলটিসহ আগে এখানে মোটে তিনটি হোটেল ছিল। লোকজনের যাতায়াত কম ছিল। এখন লোকসমাগম বাড়ায় হোটেল হয়েছে ১০টি। এ ছাড়া আছে অনেকগুলো চায়ের দোকান। বিকেলে নদীর চরে ফুচকা চটপটিওয়ালারা যায়। সব মিলিয়ে বেশ জমজমাট পরিবেশ।

মৈনট ঘাটে বেড়াতে গিয়ে ইলিশের স্বাদ নিন, নৌকায় ভেসে যান কিংবা ছাতার তলায় অলস বসে খোলা হাওয়ার ঝাপটায় শরীর জুড়িয়ে নিন; কোনো সমস্যা নেই, নারী-পুরুষ যে-ই হোন, মনে রাখতে হবে সেই গানটি—‘আমার যেমন বেণি তেমনি রবে চুল ভেজাব না…’। কারণ, পদ্মা প্রমত্তা। তার স্রোত প্রখর, খাড়া পাড় অনেক গভীর। দুঃসাহসী হয়ে ওঠার প্রলোভনে নেমে পড়লে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ বিপদ।