banner

শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ ইং, ,

Monthly Archives: May 2025

 

আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করা যাবে কী?

অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে আমানত (আনুগত্য, ইবাদত, সম্পদ, গচ্ছিত দ্রব্য ইত্যাদি) এর নামে কসম করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়”। [সুনান আবু দাউদ; মিশকাত, হাদীস নং ৩৪২০]

আল্লাহ তাআলা তাঁর সৃষ্টির মধ্য থেকে যার নামে ইচ্ছা কসম করতে পারেন। কিন্তু সৃষ্টির জন্য আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করা জায়েয নেই। তা সত্ত্বেও অনেক মানুষের মুখেই নির্বিবাদে গায়রুল্লাহর নামে কসম উচ্চারিত হয়। কসম মূলতঃ এক প্রকার সম্মান, যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ পাওয়ার যোগ্য নয়।

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সাবধান! নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে তোমাদের পিতৃপুরুষের নামে শপথ করতে নিষেধ করেছেন। কারো যদি শপথ করতেই হয়, তবে সে যেন আল্লাহর নামে শপথ করে অথবা চুপ থাকে”। [সহীহ বুখার; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৩৪০৭]

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত আরেকটি হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে কসম করল, সে শিরক করল”। [সুনান আবু দাউদ; তিরমিযী, মিশকাত, হাদীস নং ৩৪১৯]

অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে আমানত (আনুগত্য, ইবাদত, সম্পদ, গচ্ছিত দ্রব্য ইত্যাদি) এর নামে কসম করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়”। [সুনান আবু দাউদ; মিশকাত, হাদীস নং ৩৪২০]

সুতরাং কাবা, আমানত, মর্যাদা, সাহায্য, অমুকের বরকত, অমুকের জীবন, নবীর মর্যাদা, অলীর মর্যাদা, পিতা-মাতা ও সন্তানের মাথা ইত্যাদি দিয়ে কসম খাওয়া নিষিদ্ধ। কেউ যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করে তবে তার কাফ্ফারা হলো ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পাঠ করা। যেমন, সহীহ হাদীসে এসেছে, “যে ব্যক্তি শপথ করতে গিয়ে লাত ও উয্যার নামে শপথ করে বসে, সে যেন বলে, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ”। [সহীহ বুখারী; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৩৪০৯]

উল্লিখিত অবৈধ শপথের ধাঁচে কিছু শিরক ও হারাম কথা কতিপয় মুসলিমের মুখে উচ্চারিত হতে শোনা যায়। যেমন, বলা হয় ‘আমি আল্লাহ ও আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি’। ‘আল্লাহ আর আপনার ওপরই ভরসা’। ‘এটা আল্লাহ ও তোমার পক্ষ থেকে হয়েছে’। ‘আল্লাহ ও আপনি ছাড়া আমার আর কেউ নেই’। ‘আমার জন্য উপরে আল্লাহ আর নিচে আপনি আছেন’। ‘আল্লাহ ও অমুক যদি না থাকত’। ‘‘আমি ইসলাম থেকে মুক্ত বা ইসলামের ধার ধারি না’। ‘হায় কালের চক্র, আমার সব শেষ করে দিল’। ‘এখন আমার দুঃসময় চলছে’। ‘এ সময়টা অলক্ষণে’। ‘সময় বিশ্বাসঘাতকতা করেছে’ ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, সময়কে গালি দিলে সময়ের স্রষ্টা আল্লাহকেই গালি দেওয়া হয় বলে হাদীসে কুদসীতে এসেছে। সুতরাং সময়কে গালি দেওয়া নিষিদ্ধ। অনুরূপভাবে প্রকৃতি যা চেয়েছে বলাও একই পর্যায়ভুক্ত।

অনুরূপভাবে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের সাথে দাসত্ব বা দাস অর্থবোধক শব্দ ব্যবহারও এ পর্যায়ে পড়ে। যেমন আব্দুল মসীহ, আবদুর রাসূল, আবদুন নবী, আবদুল হুসাইন ইত্যাদি। আধুনিক কিছু শব্দ ও পরিভাষাও রয়েছে যা তাওহীদের পরিপন্থী। যেমন, ইসলামী সমাজতন্ত্র, ইসলামী গণতন্ত্র, জনগণের ইচ্ছাই আল্লাহর ইচ্ছা, দীন আল্লাহর আর দেশ সকল মানুষের, আরব্য জাতীয়তাবাদের নামে শপথ, বিপ্লবের নামে শপথ করে বলছি ইত্যাদি।

কোনো রাজা-বাদশাহকে ‘শাহানশাহ’ বা ‘রাজাধিরাজ’ বলাও হারাম। একইভাবে কোনো মানুষকে ‘কাযীউল কুযাত’ বা ‘বিচারকদের উপরস্থ বিচারক’ বলা যাবে না। অনুরূপভাবে কোনো কাফির বা মুনাফিকের ক্ষেত্রে সম্মানসূচক ‘সাইয়িদ’ তথা ‘জনাব’ বা অন্য ভাষার অনুরূপ কোনো শব্দ ব্যবহার করাও সিদ্ধ নয়। আফসোস, অনুশোচনা ও বিরাগ প্রকাশের জন্য ‘যদি’ ব্যবহার করে বলা (যেমন এটা বলা যে, ‘যদি এটা করতাম তাহলে ওটা হত না’), কারণ, এমন কথা বললে শয়তানের খপ্পরে পড়ে যেতে হয়। অনুরূপ ‘হে আল্লাহ! তুমি চাইলে আমাকে ক্ষমা করো’ এ জাতীয় কথা বলাও বৈধ নয়। [বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, মুজামুল মানাহিল লাফযিয়্যাহ, শাইখ বকর আবদুল্লাহ আবু যায়েদ]

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

চাকরির সিভি থেকে দূরে রাখুন এই শব্দগুলো

বর্তমান যুগে নিজের জীবনমান উন্নত করতে চাইলে দরকার পড়ে একটি ভালো চাকরির। যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পূর্বশর্ত হচ্ছে সিভি বা কারিকুলাম ভিটা। প্রথমেই কোন চাকরিপ্রার্থীকে সরাসরি দেখে বা তার কথা শুনে চাকরিদাতা কোন ধারণা করেন না। এক্ষেত্রে সবচাইতে আগে চাকরিদাতা যেটি দেখেন সেটা হল চাকরইপ্রার্থীর সিভি। এর ওপরই নির্ভর করে কেউ ইন্টারভিউয়ের ডাক পাবেন নাকি পাবেননা। তাই একটি ভালো চাকরিকে হাতের নাগালে আনতে চাইলে আপনার অবশ্যই মনোযোগ দেওয়া উচিত আপনার সিভির ওপরে। তবে একটি ভালো সিভির অধিকারী হওয়ার পরেও অনেক সময় চাকরি পেতে ব্যর্থ হতে পারেন আপনি একটি ছোট্ট ভুলের জন্যে। আর সেটি হচ্ছে সিভিতে ভুল শব্দের ব্যবহার। জানতে চান শব্দগুলো কী কী?

১. কঠোর পরিশ্রমী (Hardworking)

সিভিতে অনেকেই নিজেকে হার্ডওয়ার্কিং বা কঠোর পরিশ্রমী বলে উল্লেখ করে থাকেন। তবে এটি কেবল আপনার সিভির পৃষ্ঠা ভরানো আর চাকরিদাতাদের সময় নষ্ট ছাড়া আর কোন কাজেই আসেনা। চাকরিদাতাকে যখন আপনি এটাই বোঝাতে চান যে আপনি কঠোর পরিশ্রমী তখন কথায় নয়, বরং কাজে সেটা করে দেখান। এই যেমন- পড়াশোনার পাশাপাশি একটা চাকরি করা বা এ রকমের কিছু। এতে করে আপনি না বললেও তারা এমনিতেই বুঝে নেবে আপনি ঠিক কতটা পরিশ্রমী।

২. বেতন আলোচনাযোগ্য (Salary negotiable)

স্যালারি নেগোশিয়েবল বা এ রকমের কোন কথা যদি আপনি আপনার সিভিতেলিখে থাকেন তাহলে চাকরিদাতার কাছে এটাই মনে হবে যে আপনার নিজেকে তুলে ধরার আর কিছু ছিলনা বিধায় পৃষ্ঠা ভরাতে এমন কিছু লিখেছেন আপনি। এছাড়াও নীচে রেফারেন্স দেওয়া হল বা এ রকমের কথাগুলোর ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য। বেতনের ব্যাপারে আপনার মাথায় অবশ্যই একটি সংখ্যা থাকবে। তবে সেটা সিভিতে নয়, আলোচনা করুন ইন্টারভিউয়ে।

৩. দায়ী (Responsible for)

প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই আপনি কাজ করেন কারণ আপনাকে সেই কাজটি করতে দেওয়া হয়েছে। তাই রেসপনসিবল ফরের মতন শব্দ সিভিতে উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকুন। ব্যবহার করুন লেড (Led), ম্যানেজড (Managed) ধরণের শব্দগুলো। এতে করে আপনাকে কী কাজ দেওয়া হয়েছিল সেটা নয়, চাকরিদাতা জানতে পারবেন যে আপনি সেই কাজটি কতটা দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করতে পেরেছিলেন।

লিখেছেন-

সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

ফিচার রাইটার

 

গরমে প্রাণ জুড়াবে ঠান্ডা ঠান্ডা ফালুদা

গরমে ঠান্ডা যে খাবারগুলো খাওয়া হয়, তার মধ্যে ফালুদা অন্যতম। রেস্টুরেন্টে গেলে অনেকেই এই খাবারটি অর্ডার করে থাকেন। বরফ, আইসক্রিম জেলটিনের সম্বনয়ে ফালুদা খেতে দারুন লাগে। মজাদার এই খাবারটি আপনি চাইলে এখন ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন পড়বে না খুব বেশি উপাদানের। আসুন তাহলে ফালুদা তৈরির সহজ রেসিপিটি জেনে নিই।

উপকরণ:

২-৩ টেবিল চামচ সিরাপ

১ চা চামচ সাবুদানা

১ কাপ নুডলস

২ কাপ দুধ

আইসক্রিম

স্ট্রবেরী জেলি

প্রণালী:

১। প্রথমে একটি প্যানে দুধ জ্বাল দিন। জ্বাল দেওয়ার সময় বার বার নাড়তে থাকুন, যাতে দুধ প্যানের নিচে না লেগে যায়।

২। যখন দুধ ফুটে আসবে তখন এতে চিনি দিয়ে দিন।

৩। এরপর এটি ৩-৪ মিনিট জ্বাল দিন।

৪। চুলা থেকে দুধ নামিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন কয়েক ঘন্টা।

৫। ঠান্ডা দুধের সাথে রোজ সিরাপ অথবা রুহ আফজা মেশান।

৬। নুডলস সিদ্ধ করে আলদা করে রাখুন।

৭। এবার পরিবেশন গ্লাসে প্রথমে সাগুদানা, তারপর নুডলস, জেলেটিন দিয়ে দিন।

৮। এতে সিরাপ মেশানো দুধ ঢেলে দিন।

৯। সবশেষে আইসক্রিমের টুকরো, পেস্তা বাদাম কুচি, কাঠা বাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ফালুদা।

 

যেভাবে শপিংয়ে কোয়ালিটি বুঝে নেবেন!

শপিংয়ের নাম শুনলেই মন ভালো হয়ে যায়। শপিংয়ের ক্রেজ নারীদেরই বেশি। এমন কোনও নারী নেই, কেনাকাটা করতে ভালোবাসেন না। পুরুষরাও যে একেবারে এই লিস্ট থেকে বাইরে, তাও নয়। শপিং প্রেমীদের কেনাকাটা করতে কোনও কারণ লাগে না। সময় পেলেই কারণে অকারণে ঢু মারেন শপিং মলে। কিন্তু শুধু কেনাকাটা করলে হবে কী? পোশাকের কোয়ালিটিও যাচাই  করে দেখা দরকার। এই আসল-নকলের যুগে কোনটা ভালো কোনটা নয়, মানে পোশাকের কোয়ালিটি বুঝে নিন এইভাবে –

১) ফিটিংস : সাধারণ দোকান থেকে কোনও পোশাক কিনুন আর কোনও ব্র্যান্ডেড পোশাক কিনুন। দুটোর মধ্যে পার্থক্যটা খুব ভালো বুঝতে পারবেন। ব্র্যান্ডেড ও কোয়ালিটি পোশাক সবসময় খুব ভালো ফিট করে। শরীরের গড়ন অনুযায়ী হয়। উলটো দিকে সাধারণ দোকানের পোশাকের ফিটিংস কখনই ভালো হয় না।

২) মেটেরিয়াল : সবচেয়ে ভালো সুতি, উল ও সিল্কের পোশাক। এইসব ফ্যাব্রিকের পোশাক পরেও যেমন আরাম, তেমনই অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।

৩) সেলাই : আলগা সেলাই মানেই, অল্পেতেই খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা। তাই পোশাক কেনার আগে ভালো করে তার সেলাই দেখে নিন। নয়তো কিনে আনার পরই দেখলেই সেলাই খুলে বিচ্ছিরি অবস্থা!

৪) ডিজাইন : পোশাকের ডিজাইন যাই হোক না কেন, তাতে সামঞ্জস্য থাকা মাস্ট। যেখানে সেখানে অহেতুক বোতাম, পকেটযুক্ত পোশাক একেবারেই বেমানান। পোশাক কেনার আগে এগুলো দেখে নিন।

সবশেষে পোশাক কেনার আগে, সামান্য ঘষলেই বুঝবেই তা কতটা ভালো। সামান্য ঘষাঘষিতেই যদি পোশাক খুঁজতে বিগড়ে যায়, সেটা হতে পারে খারাপ মেটিরিয়ালের। একবার পরার পরই পুরনো দেখাবে। তাই পোশাক কেনার আগে কোয়ালিটি বুঝে নেওয়া মাস্ট। আরে বাবা, শপিং করে মন খুশ হয়ে যায় ঠিকই। তা বলে কি নকল থেকে সাবধান থাকবেন না?

 

সন্তানের সুশিক্ষার দায়িত্ব পরিবারের

ট্রেন্ডটা অল্প দিনের হলেও আমরা বেশ কিছু বিষয়ে খুবই অভ্যস্ত। আর তা হল, ট্যাব বা মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখিয়ে, গান শুনিয়ে বা গেম খেলতে দিয়ে শিশুদের খাওয়ানো এবং ব্যস্ত রাখা। অথচ এতে শিশুটির অসম্ভব ক্ষতি হচ্ছে। সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক বিকাশ ব্যহত হচ্ছে। অথচ সন্তানের সুশিক্ষার দায়িত্ব নির্ভর করে পরিবারের ওপর।

বাবা-মা শিশুকে সময় দিলে, তার সঙ্গে গল্প করলে, বিনোদনের মধ্যে থাকলে যে বন্ধন গড়ে ওঠে, ফোন বা ট্যাবে ব্যস্ত রাখলে সেটা কখনই সম্ভব নয়। এতে করে ছোটবেলা থেকেই সে একা একা খেলা, কথা বলা, চিন্তা-ভাবনা করা শুরু করে। কোনো ঘটনা ঘটলেও তা বাবা-মায়ের কাছে না বলে চেপে রাখার অভ্যাস হয়ে যায় তার। তারপর ধীরে ধীরে একটা সময় অসামাজিক হয়ে পড়ে, তারপর মা-বাবা, পরিবারের কাছ থেকে দূরে সরে যায় সন্তানটি।

এসব দিকভ্রান্ত সন্তানদের কাছে স্কুল-কলেজের বন্ধু-বান্ধবই হয়ে ওঠে সব। অথবা পরবর্তীতে অন্য কোনো ব্যক্তি তাকে একটু স্নেহ, ভালোবাসা দিলে, ভালো কথা বললে, তার কথা শুনতে চাইলে, সেই ব্যক্তির জন্য জীবন বাজি রাখতেও প্রস্তুত হয়ে ওঠে ছেলেমেয়েরা। এমনকি সেই ব্যক্তির কথায় মানুষ খুন করতেও দ্বিধা করে না।

অনেক বাবা মা তাদের ছোট্ট সন্তানের জন্য ট্যাব কিনে দেন। অথচ এই সোনালী দিনগুলো হাস্যোজ্জ্বল রাখার দায়িত্ব বাবা মায়ের। সন্তানের এই বয়সটা বাবা-মায়ের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার। এই বয়সে বাবা মা সন্তানের মনে জাগিয়ে রাখবেন নীতি নৈতিকতার আদর্শ চর্চা। সঠিক জীবন যাপনের পথ বেছে দেবেন।

উঠতি বয়স সব সময়ই চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে। বাবা-মা বাদে অন্য কারো মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে কোনো সন্তান যদি এসব চ্যালেঞ্জের সুযোগ পায়, সামাজিক অঘটন ঘটানোর উপকরণ পায় তবে বেশিই আগ্রহ বোধ করে। বাবা-মা টের পাওয়ার আগেই হয়তো সন্তানটি মিশে যায় অন্ধকার জগতে। বড় কোনো ঘটনা ঘটার পর পরিবারের তখন কিছুই করার থাকে না। আর তাইতো শিশুরা আবেগহীন, অসামাজিক হয়ে ওঠার আগে তার মধ্যে যে আবেগ জাগিয়ে তুলতে পারেন একমাত্র মা-বাবাই।

 

ভালো বাবা-মায়ের সন্তান নষ্ট-খারাপ হয় কেন?

মোটা কথা, কাউকে ধিক্কার দেয়া এবং কারও পাপের কারণে তাকে লজ্জা দেয়ার ক্ষেত্রে তার জুড়ি মেলা ভার ছিলো। এই কথা শুনে আল্লাহর রাসূল সা.-এর হাদিস মনে এসে গেলো— কোনো ব্যক্তি কাউকে যদি তার পাপের কারণে লজ্জা দেয়, তবে মৃত্যুর পূর্বে নিজেই সেই পাপে সে জড়িয়ে পড়বে। নবি করিম সা. বলেছেন— কারও বিপদে খুশি হলে আল্লাহ তায়ালা তার দোষ গোপন রাখবেন না।

ইসমাঈল সাহেব যদিও আলেম ছিলেন না, কিন্তু অত্যন্ত ধর্মভীরু, তাহাজ্জুদগোজার ছিলেন এবং নিয়মিত জামাতে প্রথম তাকবিরের সঙ্গে নামাজ আদায়ে সচেষ্ট ছিলেন। তার সর্বমোট ছয়টি সন্তান ছিলো। ইন্তেকালের পূর্বে তিনি যে পরিমাণে কষ্টকর অস্থিরতা ও যন্ত্রণার মধ্যে ছিলেন, তা ছিলো কেবল সন্তানদের জন্যে প্রচ- দুশ্চিন্তা। তার তিনটি সন্তানের বিয়ে হয়েছিলো। কিন্তু ছেলেরা ছিলো এখনও অবিবাহিত। এদের মধ্যে দুটি ছোটো ছেলে তাদের জন্যে দুর্নামের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। তারা উল্টাসিধা ও ভবঘুরের মতো হয়ে গিয়েছিলো এবং পুরো মহল্লা ও এলাকার অধিবাসীরা তার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলো। দ্বিতীয় ছেলেটি সীমাহীন দুর্নামের অধিকারী হয়ে গিয়েছিলো।

এই সন্তানদের বাবা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কেঁদে কেঁদে বলতে থাকেন— হে আল্লাহ, আমার মনে পড়ছে না, আমি জীবনে এমন কী পাপ করেছি, যার কারণে আমাকে আজ এমন দুর্দিন দেখতে হচ্ছে। তার সমবয়সীরাও বলছিলো যে, তিনি ছেলেবেলা থেকেই সজ্জন ও ভালো মানুষ ছিলেন। সবসময় হারাম-হালাল বাছবিচার করে চলতেন। কখনো মাদক, ব্যভিচার ও জুয়াবাজির ধারেকাছেও ভেড়েন নি। একদিকে এমনই ছিলো তার ইতিবাচক অবস্থা, আর অন্যদিকে তার সন্তানদের নেতিবাচক পরিস্থিতি। এই কঠিন প্যাঁচের গেড়ো খুলছিলো না। কয়েকজন ব্যক্তি তার ব্যাপারে গভীর পর্যবেক্ষণ করলেন। এ ক্ষেত্রে সমকালীন এক বুজুর্গ সাহায্যে এগিয়ে এলেন এবং বিষয়টি শীঘ্রই বোঝা গেলো। তার বুজুর্গ সঙ্গীর বক্তব্য ছিলো— যৌবনকালে মসজিদে যাওয়ার সময় যখন দুষ্ট ছেলেরা তার সামনে পড়তো, তাদের তিনি ধিক্কার দিতেন যে, তোদের কোন বদমাশ বাবা জন্ম দিয়েছে রে? তোদের বাবা কি হারাম রোজগার করে আর সেগুলো তোদের খাওয়ায়, যার কারণে তোদের এই দুরবস্থা হয়েছে?

স্বজনদের কারও কোনো নেতিবাচক, অপছন্দনীয় ও অবিশাসযোগ্য কথা যদি কানে আসতো, তবে তিনি সবার সামনে মন্তব্য করতেন যে, ইতরদের সন্তান ইতরই হয়ে থাকে। এই ছেলেদের বাবাও যুবক থাকতে এমন কোনো কাজ করে থাকবে। এ জন্যেই তার ছেলেদের এই অবস্থা হয়েছে।

মোটা কথা, কাউকে ধিক্কার দেয়া এবং কারও পাপের কারণে তাকে লজ্জা দেয়ার ক্ষেত্রে তার জুড়ি মেলা ভার ছিলো। এই কথা শুনে আল্লাহর রাসূল সা.-এর হাদিস মনে এসে গেলো— কোনো ব্যক্তি কাউকে যদি তার পাপের কারণে লজ্জা দেয়, তবে মৃত্যুর পূর্বে নিজেই সেই পাপে সে জড়িয়ে পড়বে। নবি করিম সা. বলেছেন— কারও বিপদে খুশি হলে আল্লাহ তায়ালা তার দোষ গোপন রাখবেন না।

আমাদের এই কথাটি বেশ ভালো করে বুঝে নেয়া উচিত যে, সন্তানদের এই মন্দ পরিণতি যুবক বয়সে তার মন্দভাষণ ও অন্যদের ধিক্কার দেয়ার ফল হতে পারে। তার সেই বুজুর্গ বন্ধু এটাও বলেন— নিজের সন্তানদের ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত কঠোর আচরণ করতেন। তাদের কোনো অযাচিত কাজ তিনি কিছুতেই সহ্য করতেন না। ধমকাতেন, মারতেন এবং ক্ষুদ্ধ হয়ে কখনো সখনো তাদের ইবলিস, শয়তান, অভিশপ্ত ও প্রত্যাখ্যাত ইত্যাদিও বরতেন। হতে পারে, তা তক্ষুণি খোদার কাছে মঞ্জুর হয়ে গেছে। এ জন্যেই হয়তোবা আল্লাহ তায়ালা তার সন্তানদের শয়তানের বৈশিষ্ট্যধারী বানিয়ে দিয়েছেন। কেননা, সন্তানদের ব্যাপারে মা-বাবার দোয়া যেভাবে দ্রুত কবুল হয়, একইভাবে বাবা-মার বদ দোয়াও সন্তানদের বেলায় দ্রুত কার্যকর হয়ে দেখা দেয়। তাই কখনো মনের ভুলেও, রাগে ও উত্তেজিত হয়েও নিজের সন্তানদের ধমকানোর ক্ষেত্রে গলদ নামে ডাকা উচিত নয়। এমনও হতে পারে সেটাই কবুল হওয়ার সময় এবং তার প্রভাব প্রকাশ পেয়ে গেলো।

তিনি যদি তার সন্তানদের ক্ষেত্রে দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর নির্দেশিত নীতিমালা পালন ও দোয়া-প্রার্থনার মাধ্যমে নিজের সন্তানদের প্রতিপালন করতেন এবং অন্য কারও সন্তানকে খারাপ না বলতেন, সম্ভবত তাহলে এমন দুর্দিন তাকে দেখতে হতো না। আল্লাহর কাচে আমাদের প্রার্থনা করা উচিত— হে আল্লাহ, আমাদের এমন স্ত্রী ও সন্তান দান করুন, যারা আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা বয়ে আনে এবং আমাদের খোদাভীরুদের নেতা বানান।

সূত্র : বিখরে মোতি, খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ১১০১

লেখক : মাওলানা ইউনুস পালনপুরি রহ.
অনুবাদ : মাওলানা মনযূরুল হক

 

নামাজে ইচ্ছাপূর্বক ইমামের আগে রুকু-সিজদাহ করলে কী হয়?

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন একটু বুড়িয়ে যান এবং তাঁর নড়াচড়ায় মন্থরতা দেখা দেয়, তখন তিনি তাঁর পিছনের মুক্তাদীদের এ বলে সতর্ক করে দেন যে, “হে লোকেরা! আমার দেহ ভারী হয়ে গেছে। সুতরাং তোমরা রুকু-সাজদায় আমার আগে চলে যেও না”। [বায়হাকী; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ১৭২৫]

যে কোনো কাজে তাড়াহুড়া করা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, “মানুষ খুব দ্রুততা প্রিয়।” [বনী ইসরাঈল, আয়াত: ১১]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ধীরস্থিরতা আল্লাহর পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া শয়তানের পক্ষ থেকে”। [তিরমিযী; মিশকাত, হাদীস নং ৫০৫৫; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ১৭৯৫]

জামাআতের মধ্যে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, ডানে-বামে অনেক মুসল্লী ইমামের রুকু-সাজদায় যাওয়ার আগেই রুকু-সাজদায় চলে যাচ্ছে। এমনকি লক্ষ্য করলে নিজের মধ্যেও এ প্রবণতা দেখা যায়। উঠা-বসার তাকবীরগুলোতে তো এটা হরহামেশাই হতে দেখা যায়। এমনকি অনেকে ইমামের আগে সালামও ফিরিয়ে ফেলে। বিষয়টি অনেকের নিকটই গুরুত্ব পায় না। অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এজন্য কঠোর শাস্তির হুমকি শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, “সাবধান! যে ব্যক্তি ইমামের আগে মাথা তোলে তার কি ভয় হয় না যে, আল্লাহ তার মাথাটা গাধার মাথায় রূপান্তরিত করতে পারেন”? [সহীহ বুখারী; মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ১১৪১]

একজন মুসল্লীকে যখন ধীরে সুস্থে সালাতে উপস্থিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং তাড়াতাড়ি বা দ্রুত পায়ে নিষেধ করা হয়েছে । [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩৬; মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১০৯০০৬]

তখন স্বীয় সালাত যে ধীরে-সুস্থে আদায় করতে হবে তাতে আর সন্দেহ কি? আবার কিছু লোকের নিকট ইমামের আগে গমন ও পিছনে পড়ে থাকার বিষয়টি তালগোল পাকিয়ে যায়। তাই মুজতাহিদগণ এজন্য একটি সুন্দর নিয়ম উল্লেখ করেছেন। তা হলো, ইমাম যখন তাকবীর শেষ করবেন মুক্তাদী তখন নড়াচড়া শুরু করবে। ইমাম ‘আল্লাহু আকবার এর ‘র’ বর্ণ উচ্চারণ করা মাত্রই মুক্তাদী রুকু-সাজদাহয় যাওয়ার জন্য মাথা নীচু করা শুরু করবে। অনুরূপভাবে রুকু থেকে মাথা তোলার সময় ইমামের ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’-এর ‘হ’ বর্ণ উচ্চারণ শেষ হলে মুক্তাদী মাথা তুলবে। এর আগেও করবে না, পরেও না। এভাবে সমস্যাটা দূর হয়ে যাবে।

সাহাবীগণ যাতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগে চলে না যান সে বিষয়ে খুব সতর্ক ও সচেষ্ট থাকতেন। বারা ইবন আযিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে সালাত আদায় করতেন। যখন তিনি রুকু থেকে মাথা তুলতেন তখন আমি এমন একজনকেও দেখি নি যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কপাল মাটিতে রাখার আগে তার পিঠ বাঁকা করেছে। তিনি সাজদায় গিয়ে সারলে তারা তখন সাজদায় লুটিয়ে পড়তেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৭৪]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন একটু বুড়িয়ে যান এবং তাঁর নড়াচড়ায় মন্থরতা দেখা দেয়, তখন তিনি তাঁর পিছনের মুক্তাদীদের এ বলে সতর্ক করে দেন যে, “হে লোকেরা! আমার দেহ ভারী হয়ে গেছে। সুতরাং তোমরা রুকু-সাজদায় আমার আগে চলে যেও না”। [বায়হাকী; সিলসিলা সহীহাহ, হাদীস নং ১৭২৫]

অপরদিকে ইমামকেও সালাতের তাকবীরে সুন্নাত মোতাবেক আমল করা জরুরি। এ সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে, “রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে দাঁড়াতেন তখন শুরুতে তাকবীর বলতেন। তারপর যখন রুকুতে যেতেন তখন তাকবীর বলতেন। তারপর বলতেন, ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ যখন রুকু থেকে পিঠ সোজা করতেন। তারপর দাঁড়ানো অবস্থায় বলতেন, ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইবন সালেহ তার উস্তাদ লাইস থেকে বর্ণনা করেন, ‘ওয়ালাকাল হামদ’। অতঃপর যখন সাজদায় যেতেন তখন তাকবীর বলতেন। অতঃপর যখন সাজদাহ থেকে মাথা উঠাতেন তখন তাকবীর বলতেন, তারপর যখন (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতেন তখন তাকবীর বলতেন, সাজদাহ থেকে মাথা তুলতে তাকবীর বলতেন। এভাবে সালাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকবীর বলতেন। আর দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠক শেষে দাঁড়ানোর সময়ও তাকবীর বলতেন”। [সহীহ বুখারী; সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৭৯৯]

সুতরাং এভাবে ইমাম যখন সালাতে উঠা-বসার সঙ্গে তার তাকবীরকে সমন্বিত করে একই সাথে আদায় করবেন এবং মুক্তাদীগণও উল্লিখিত নিয়ম মেনে চলবে তখন সবারই জামা‘আতের বিধান ঠিক হয়ে যাবে।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

ভ্রমণে চলুন পর্তুগাল

সমুদ্রবিলাসী মানুষের মন বার বার ছুটে যায় সমুদ্রের নীল জলের দিকে। প্রশান্তির হাতছানি দিয়ে ডাকে সমূদ্র, যে বিশ্রাম চায় তাকে দেয় শীতল আবেশ, যে রোমাঞ্চ চায় তার জন্য আছে অবাধ বিস্ময়ের ভান্ডার সমূদ্র তলদেশে। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের স্বচ্ছ জল হোক আর হোক বেলিজের নীল গহবর সমূদ্রের সব নীল এক নয়, সব উপত্যকায় তার ঢেউ একই ভাবে আচড়ে পড়ে না। সমূদ্রের স্বভাবের এই অনন্যতাই মানুষকে টানে, আগ্রহী করে ভিন্ন ভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন বিচ থেকে তাকে দেখার জন্য।
পর্তুগাল বিখ্যাত চমৎকার বিচগুলোর জন্য। একই সাথে একে আনন্দময় করেছে উষ্ণ আবহাওয়া, সমুদ্রের জলের গরম স্পর্শ। আসুন জেনে নিই আর কী কী অপেক্ষা করছে পর্তুগালে-
Praia da Rocha
চমৎকার আকার আর অবিশ্বাস্য সৌন্দর্য্যের জন্য এই বিচটি পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। পোরটামাও শহরের দক্ষিণ দিকে এর অবস্থান। বিস্তৃত সাদা বালুকা বেলা আর অসাধারণ পাথুরে ক্লিফ এই বিচকে দিয়েছে অনন্য বিশেষত্ত্ব। হোটেল্গুলো থেকেই উপভোগ করতে পারবেন সমুদ্রের ঢেউ, নীল জলরাশির অপূর্ব খেলা। ক্লিফগুলোতেও ঘুরে বেড়াতে পারবেন আপনি, সিড়ির মত ব্যবস্থা করা আহে সেখানে। আটলান্টিক মহাসাগরের ভিউ আরও নিবিড়ভাবে পেতে যেতে পারেন ১৭ শতকের Fortaleza de Santa Catarina তে।
Silves
পোরটামাও এর উত্তর-পূর্বে এর অবস্থান। শহরটি ছিল আলগ্রেভের মরিশ রাজধানী যতদিন পর্যন্ত না ক্রিশ্চিয়ান শক্তি একে দখল করে নেয়। শহরটি স্বাধীনতা হারায় ১২৪৯ সালে। আরাডে নদীর কাছে এই শহরটি আপনাকে শুধু অনন্য সৌন্দর্য্যের সাথেই মিলিত করবে না একই সাথে আপনার সামনে তুলে ধরবে মানবসভ্যতার অমূল্য ইতিহাস। Castelo dos Mouros নামের পর্বতচূড়ার ক্যাসল্টি নির্মিত হয়েছে লাল লাইমস্টোন দিয়ে। সিল্ভেসে গেলে অবশ্যই দেখে আসবেন এটি। কারণ হাজার বছর আগে কেমন ছিল পর্তুগাল তার পরিচয় পাবেন আপনি এখানে। এছাড়াও এই পর্বত থেকে গ্রামের প্যানারমিক ভিউ এক অবিস্মরণীয় সোউন্দর্য্যের সাথে সাক্ষাৎ, এই অভিজ্ঞতা মিস করবেন না যেন।
Albufeira
দক্ষিণ পর্তুগালের আরেকটি মরিশ শহর এটি। ১৩ শতকে দখল হয়ে যায় ক্রিশ্চিয়ান শক্তির দ্বারা। অনেকদিন পর্যন্ত এর নামই কেউ জানতো না। আলবুফেরিয়াকে সবাই যখন প্রায় ভুলেই গেছে তখন ১৯৬০ সালে আবার একে নতুন রূপে তুলে ধরা হয়। শহরটি অসাধারণ একটি বিচের অধিকারী। পর্যটকদের আগমণে আবার জেগে ওঠে শহরটি। প্রাচীন শহরটি, এর ঐতিহ্য, নিদর্শন এক্সপ্লোর করা একটি অভিনব অভিজ্ঞতা। Avenida Francisco Sá Carneiro এলাকাটি পরিচিত “The Strip” নামে। মাছ ধরা, স্কুভা ডাইভিং, বারে ঘুরে বেড়ানো সব মিলিয়ে রোমাঞ্চ এবং একই সাথে বিশ্রাম দুই ক্ষেত্রেই চমৎকার শহরটি।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

নতুন ট্রেন্ড এখন পোর্ট্রেট মেহেদি!

এই উপমহাদেশে বিয়ের ক্ষেত্রে মেহেদি অনেক জনপ্রিয় একটি প্রথা। বিয়ের আগে মেহেদি তাই অবশ্যই চাই। যদিও মেহেদী একটি অবাঙালি রীতি। তবে এখন ব্যাপারটা বদলে গেছে। বাঙালি-অবাঙালি নির্বিশেষে চারদিকে মেহেদি পরার খুব ধুম। দু’হাতে ও পায়ে মেহেদিতে ফুটে ওঠে নানা ডিজাইন ও কারুকার্য। মেহোদর বিভিন্ন ডিজাইন রয়েছে। তবে পোর্ট্রেট মেহেন্দি এখন নতুন ফ্যাশন। এখন হাতে আর শুধুমাত্র হবু বরের নামই নয়, ছবিও ফুটে উঠবে।

আপনিও চাইলে মনের মানুষটি ছবি নিজের হাতে ফুটিয়ে তুলতে পারেন।

কেনো পোর্ট্রেট মেহেদি 

১) অসাধারণ সুন্দর দেখায়। হাতের সৌন্দর্যটাই দ্বিগুণ বেড়ে যায় পোর্ট্রেট মেহেদিতে।

২) মেহোদর এই কারুকার্য খুব নিখুঁত। এনে দেয় বিশেষ আকর্ষণ।

৩) জীবনসঙ্গীর নাম বা তাঁর ছবি অনেকেই ট্যাটু করিয়ে থাকেন। তবে সে বড্ড যন্ত্রণার ব্যাপার। পোর্ট্রেট মেহোদর মনের সেই ইচ্ছা বিনা জ্বালা যন্ত্রণায় পূর্ণ হবে এই পোর্ট্রেট মেহোদ স্টাইলে।

৪) মনের মানুষটি সবসময় মনে তো থাকেই। তার উপর যদি হাতের মুঠোয় সেই মানুষটার প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে, তবে তো সোনায় সোহাগা!

তাই আর দেরি কেন! মেয়েরা তো এমনিতেই বিভিন্ন ডিজাইনের মেহেদি দিয়ে হাত পা সাজান। এবার তাহলে শুরু হোক নতুন একটি ট্রেন্ড। যেখানে মনের মানুষের ছবিও শোভা পাবে হাতে।

সূত্র: ইনাদুইন্ডিয়া

 

এই ৭টি কৌশল কর্মক্ষেত্রে আপনাকে করে তুলবে আত্মবিশ্বাসী

চাকরিতে সাফল্যা অর্জন করতে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার বিকল্প নেই। কর্মক্ষেত্রে সফল হতে হলে আপনাকে আত্নবিশ্বাসী হতেই হবে। এই আত্নবিশ্বাস আপনাকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে। কিন্তু অনেকেই তার কাজ, কাজের ক্ষেত্র নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগে থাকেন। এই হীনমন্যতা কাটিয়ে কর্মক্ষেত্রে আত্নবিশ্বাসী হয়ে উঠুন দারুন কিছু কৌশলে।

১। নেতিবাচকতা দূর করুন এবং ইতিবাচকতা নিয়ে আসুন

নিজের ভিতরে রাখা নেতিবাচকতা দূর করে দিন। “আমি এটা পারবো না”, “আমাকে দিয়ে হবে না” নিজের সম্পর্কে এইরকম নেতিবাচক কথা বলা বন্ধ করুন। এর পরিবর্তে নিজেকে বলুন “ আমি অব্যশই পারব” “আমিই পারবো”। হয়তো বর্তমান সময় ভাল যাচ্ছে না, তবুও নিজের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখুন। এই ইতিবাচক মনোভাব আপনার আত্ন বিশ্বাস ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

২। জ্ঞানের পরিধি বাড়ান

বিশ্বে প্রতিদিন নতুন কিছু না কিছু ঘটছে। সাম্প্রতিক বিশ্ব, নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানুন। এটি আপনার আত্নবিশ্বাসের বৃদ্ধি করে অন্যের কাছে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে।

৩। কাজের নতুন পদ্ধতিগুলো শিখে নিন

বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তন পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার হয়ছে। কাজের নতুন পদ্ধতিগুলো শিখে নিন। দেখুন একজন সফল মানুষ কীভাবে কাজ করে। এবং শিখে নিন তার কাজের ধরণটি। এটি আপনার কাজের দক্ষতা বাড়ানোর সাথে সাথে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে।

৪। নিজের শক্তির উপর বিশ্বাস করুন

সব সময় নিজের শক্তিকে গুরুত্ব দিন, দুর্বলতাকে নয়। আপনার ভাল কাজটির কথা মাথায় রাখুন। পরের কাজটি আরোও ভাল করার চেষ্টা করুন। একসময় দেখবেন আপনার কাজে কোন ভুল থাকছে না। আপানার প্রতিটা কাজ হচ্ছে একদম নির্ভুল।

৫। নিজেই কাজের পরিবেশ তৈরি করুন

চাকরি থেকে আপনি যা চাচ্ছেন তা নাও পেতে পারেন। তাই বলে চাকরি ছেড়ে দেওয়া সমস্যার সমাধান নয়। সমস্যা খুঁজে বের করে তা সমাধান করুন। আপনি যেমন পরিবেশন চান, তেমন পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করুন।

৬। পুনরাবৃত্তি করুন

কথায় আছে অনুশীলন সাফল্যের চাবিকাঠি। কোনো কাজে একবার ব্যর্থ হলে আবার করুন। একবার ভুল হলে পরের বার ভুল ঠিক করে আবার করুন। বার বার করতে করতে কাজটি থেকে সাফল্য আসার সাথে সাথে আপনি কাজটিতে দক্ষ হয়ে উঠবেন।

৭। সাফল্যের দিকে নজর রাখুন

যতক্ষণ না ভাল কিছু করছেন ততক্ষণ নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়বে না। কর্মক্ষেত্রে আপনার সাফল্যময় কাজগুলোকে মনে রাখুন। সফলতা এবং ব্যর্থতা মুদ্রার এইপিঠ ওপিঠ। সফল হতে হলে আপনাকে ব্যর্থতার স্বাদ নিতে হবে। তাই বলে ভেঙ্গে পড়া যাবে না। সফল কাজগুলোকে মনে করুন।

লিখেছেন
নিগার আলম
ফিচার রাইটার

 

মজাদার আমেরিকান চপস্যুয়ে তৈরি করুন ঘরেই

রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে ভিনদেশি যে খাবারগুলো অর্ডার করা হয়, তার মধ্যে আমেরিকান চপস্যুয়ে অন্যতম। ভাজা নুডলসের সাথে সবজি মাংস এবং ডিমের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় এই খাবারটি। ঘরে অনেকেই খাবারটি তৈরি করলেও পারফেক্ট রেস্টুরেন্টের মত তৈরি হয় না। এইবার তাহলে পারফেক্ট রেস্টুরেন্ট মত আমেরিকান চপস্যুয়ে তৈরির রেসিপিটি জেনে নিন।

উপকরণ:

৩০০ গ্রাম সিদ্ধ নুডলস

৪০০ গ্রাম হাড় ছাড়া মুরগির মাংস

২/৩ কোয়া রসুন কুচি

১ চা চামচ আদা কুচি

১টি পেঁয়াজ কুচি

বাঁধাকপি লম্বা করে কাটা

১ টি গাজর লম্বা করে কাটা

১ টি ক্যাপসিকাম লম্বা করে কাটা

৪/৫ টা বরবটি লম্বা করে কাটা

৬/৭ টা পালং শাক পাতা

১/২ চা চামচ সাদা গোলমরিচের গুঁড়া

১/২ চা চামচ চিনি

৪ টেবিল চামচ টমেটো কেচাপ

১ কাপ চিকেন স্টক

২ টেবিল চামচ কর্ণ ফ্লাওয়ার

প্রণালী:

১। প্রথমে নুডলস সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ করার সময় এক চামচ তেল দিয়ে নিন, এতে নুডলসগুলো একে অপরের সাথে লেগে যাবে না।

২। এবার একটি পাত্রে তেল গরম করতে দিন। তেল গরম হয়ে আসলে আস্তে আস্তে করে নুডলসগুলো দিয়ে দিন।

৩। আরেকটি প্যানে ডিম পোচ করে ফেলুন।

৪। ডিম পোচ হয়ে গেলে অন্য একটি প্যানে তেল দিয়ে এর মধ্যে রসুন কুচি, আদা কুচি, পেঁয়াজ কুচি দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন।

৫। তারপর এতে মুরগির মাংস দিয়ে দিন। আবার কিছুক্ষন ভাজুন।

৬। এরপর বাঁধাকপি, গাজর, ক্যাপসিকাম, বরবটি, পালং শাক পাতা দিয়ে দিন। ভাল করে ভাজুন।

৭। এবার এতে লবণ, সাদা গোল মরিচের গুঁড়া, চিনি, টমেটো কেচাপ দিয়ে ভালভাবে নাড়ুন।

৮। এরপর এতে চিকেন স্টক দিয়ে দিন। আবার কিছুক্ষণ নাড়ুন। সিদ্ধ হয়ে এলে এতে কর্ণ ফ্লাওয়ার দিয়ে দিন।

৯। এবার একটি ডিশে প্রথমে ভাজা নুডলস তার উপর রান্নার করা মাংস এবং সবশেষে ডিম পোচ দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার আমেরিকান চপস্যুয়ে।

 

জাসিয়া’র মাধ্যমে গহনা কিনুন ঘরে বসেই

পোশাকের সাথে মিলিয়ে পছন্দের গহনা পরতে সবাই ভালবাসেন। আর সেই পছন্দের গহনাটি এখন মিলবে ঘরে বসেই। ফেসবুক ভিত্তিক অলংকার বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান জাসিয়া দেশি-বিদেশি নানা রং ও বাহারি ডিজাইনের গহনা নিয়ে সাজিয়েছে তাদের অনলাইন শো-রুম। দেশি-বিদেশি গলার মালা, আংটি, কানের দুল, চুড়ি, পুঁথির মালা সহ নান্দনিক ডিজাইনের গহনা পাওয়া যাবে জাসিয়াতে।

দেশের যে কোন স্থান থেকে পছন্দের গহনাটি এখন অর্ডার করলেই পৌঁছে যাবে আপনার বাসায় কিংবা অফিসে। আমদানি ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জাসিয়াতে প্রতিটি পণ্যের দামও থাকছে হাতের নাগালের মধ্যে। বিস্তারিত জানতে- ফেসবুক পেজ : www.facebook.com/jasiaonline.

 

নারীরা যে কারণে জড়াচ্ছে জঙ্গিতে

ইদানিং দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে জঙ্গি সংগঠনের নারী সদস্যদের। মূলত পুরুষ সদস্যদের জেরা করেই তাদের বিষয়ে জানতে পারছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আর তাদের পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ধরা হচ্ছে নারী সদস্যদের।

গত রোববারই সিরাজগঞ্জ থেকে আটক করা হয়েছে ৪ নারীকে। যারা কিনা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম, ছয়টি ককটেল ও জিহাদি বইও জব্দ করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন- সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার বাদুল্যাপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী নাদিরা তাবাসসুম রানী (৩০), বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলার ক্ষুদ্র ফুলকোটের মো. খালিদ হাসানের স্ত্রী হাবিবা আক্তার মিশু (১৮), এই উপজেলার পরানবাড়িয়ার সুজন আহমেদ বিজয়ের স্ত্রী রুমানা আক্তার রুমা (২১) ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মোচাদহ দক্ষিণপাড়ার মামরুল ইসলাম সরদারের স্ত্রী রুনা বেগম (১৯)।

সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ  জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোরের দিকে পৌর এলাকার মাছুমপুরে অভিযান চালিয়ে একটি বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের উদ্দেশে তারা ওই বাড়িতে বসে গোপন বৈঠক করছিল।

জঙ্গি ক্যাডার বললেই সাধারণত পুরুষদের কথাই সবাই মনে মনে চিন্তা করে। অথচ জেএমবিসহ বেশ কয়েটি সংগঠনে রয়েছে অনেক নারী সদস্য। মূলত জঙ্গি সংগঠনগুলোর পুরুষ সদস্যদের সাথে বিয়ের মাধ্যমে এই নারীরা যুক্ত হচ্ছেন বলে জানা গেছে। তারা স্বামীদের মাধ্যমে জঙ্গি মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন এবং সব কাজেই সহযোগিতা করেন। তাছাড়া ঘর ভাড়া পাওয়া, স্ত্রী-সন্তানসহ যাতায়াত করা, সহজেই অস্ত্র বহন করা, তথ্য সংগ্রহ- সবক্ষেত্রেই সুবিধাজনক হয় নারী সদস্যরা থাকলে।

এদিকে নারীদের জঙ্গি হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে তারই নিকটাত্মীয়রা। জঙ্গি সংগঠনগেুলোর সদস্যরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের অন্য সদস্যদের শ্যালিকা কিংবা বোনদেরই বিয়ে করে থাকেন। এতে করে নিজেদের তথ্য কিংবা অন্যান্য বিষয় বাইরে ফাঁস হয় না। জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়ে পড়ার অনেকেই তার বোনদেরও এ পথে আনার চেষ্টা করে। এমন দৃষ্টান্ত দেখা গেছে বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার আসামি শরিফুল ইসলাম ওরফে মুকুল রানার ক্ষেত্রে।

মুকুল রানা বিয়ে করেন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) গুরুত্বপূর্ণ নেতা বিএম মুজিবুর রহমানের বোন মহুয়া আক্তার রিমিকে। আর এ বিয়ের মধ্যস্থতা করেছিলেন সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া বিতর্কিত মেজর জিয়াউল হক।

সাংগঠনিক কারণেই মেজর জিয়ার সঙ্গে এবিটি নেতা মুজিবুরের ঘনিষ্ঠতা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের সূত্র ধরেই এবিটির সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আর মেজর জিয়ার মধ্যস্থতায় চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি যশোরের জগন্নাথপুরে মোহাম্মদ আলী বিশ্বাসের মেয়ে ও মুজিবুরের বোন রিমির সঙ্গে বিয়ে হয় মুকুল রানার। তবে তার স্ত্রী মহুয়া আক্তার রিমির জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া না গেলেও স্বামী আর বড়ভাই জঙ্গি হওয়ার কারণে তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন গভীর রাতে রাজধানীর মেরাদিয়ায় ডিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জঙ্গি নেতা মুকুল রানা নিহত হন। এর এক মাস আগে ১৯ মে মুকুল রানাসহ ৬ জঙ্গির ছবি প্রকাশ করে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘শুধু পুরুষরাই নয়, নারীদের জঙ্গি কার্যক্রমে লিপ্ত হওয়ার বিষয়টাও মনিটরিং করা হচ্ছে।’

নারীরা কেন জঙ্গি কার্যক্রমে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আদর্শগত মিলের কারণেই জঙ্গি কার্যক্রমে লিপ্ত নারী-পুরুষের বিয়ে হয়। এখান থেকেই পরবর্তী জেনারেশনও জঙ্গিবাদে ছড়িয়ে পড়ছে।’

 

সিআইডির কাছে ক্ষোভ জানালেন তনুর মা

ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলা নিয়ে সিআইডির কাছে ক্ষোভ জানিয়েছে তনুর পরিবার। সোমবার বিকেলে সিআইডির তদন্ত দল তাদের সেনানিবাসের বাসায় গেলে মামলার অগ্রগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তনুর মা আনোয়ারা বেগম।

তনুর মা মোবাইল ফোনে বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মো. ইব্রাহিমসহ সিআইডির একটি দল সোমবার সেনানিবাসে তনুর লাশ উদ্ধারের স্থান পরিদর্শন করে এবং বিকেলে বাসায় গিয়ে তাদের সান্ত্বনা দেয়।

তিনি আরো বলেন, সিআইডিকে বলেছি- তনু হত্যার ৪ মাস ৫ দিন হয়েছে।  এখনও কোনো আসামি ধরা পড়েনি।  ২০/৩০ জন ধরে নিয়ে গেলেই তো আসামি শনাক্ত হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে জানতে তনুর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মো. ইব্রাহিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার পাশের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  ২১মার্চ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে তার প্রথম ময়নাতদন্ত করেন ডা. শারমিন সুলতানা।  ওই দিন অজ্ঞাতদের আসামি করে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন।

গত ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ জেলার মুরাদনগরের মির্জাপুর গ্রামের কবর থেকে উত্তোলন ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

গত ৪ এপ্রিল দেয়া হয় প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন।  ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত না থাকায় সমালোচনার মুখে পড়ে ফরেনসিক বিভাগ।

গত ১৬ মে তনুর কাপড়ে ৩ পুরুষের শুক্রাণু পাওয়া যাওয়ার খবর সিআইডির কুমিল্লা অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আবারো আলোচনায় উঠে আসে প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন।

১২ জুন দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।  ওই প্রতিবেদনেও তনুর যৌন সম্পর্কের বিষয়ে আলামত পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়।  তবে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি এবারও অস্পষ্টই রেখে দেয় ফরেনসিক বিভাগ।

 

নাস্তায় মুখরোচক মাংস পুলি

বিকেল বা সন্ধ্যার নাস্তায়, অতিথি আপ্যায়নে মুখরোচক খাবারের প্রাধান্য থাকে বেশি। তেমনি মুখরোচক এবং উপাদেয় একটি খাবার মাংস পুলি। খুব সহজে তৈরি করা যায় অসাধারণ এই খাবার। তাই আসুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক মুখরোচক মাংস পুলির সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

১ কাপ ছোট করে কাটা মাংস সেদ্ধ, আধা কাপ আলু কুচি, আধা কাপ পেঁয়াজ মিহি কুচি, কাঁচা মরিচ কুচি ঝাল বুঝে, ১ চা চামচ কাবাব মসলা, ১ চা চামচ আদা-রসুন বাটা, ২ টি এলাচ, ১ খণ্ড দারুচিনি, ২ টি লবঙ্গ, ২ চা চামচ তেল বা ঘি, লবণ স্বাদমতো।

পিঠার জন্য

৫০০ গ্রাম আটা বা ময়দা, ৫০ গ্রাম সুজি, আধা কাপ ঘি, লবণ স্বাদমতো, পানি পরিমাণ মতো, তেল ভাজার জন্য।

যেভাবে করবেন

পুর তৈরি

প্রথমে প্যানে তেল দিয়ে গরম করে এতে আদা-রসুন বাটা দিয়ে নেড়ে নিন ভালো করে। একটু লালচে হয়ে এলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নরম করতে থাকুন। একে একে গরম মসলা ও কাবাব মসলা দিয়ে লবণ দিয়ে দিন। এরপর এতে আলু কুচি ও মাংস কুচি দিয়ে ভালো করে নেড়ে ভাজা ভাজা করতে থাকুন। আলু সেদ্ধ হয়ে ও মাংস ভাজা হয়ে এলে পুর তৈরি হয়ে যাবে। স্বাদ দেখে নামিয়ে রাখুন।

পিঠা তৈরি

আটা বা ময়দার সঙ্গে সুজি ভালো করে হাতে মিশিয়ে নিন ও সামান্য লবণ দিন। এরপর ঘি ঢেলে হাত দিয়ে মাখাতে থাকুন। এতে খাস্তা হবে। তারপর পানি দিয়ে মেখে ডো তৈরি করে নিন। রুটি বেলার মতো করে ডো তৈরি করতে হবে। এরপর ছোট ছোট করে গোল রুটি তৈরি করে নিন। এরপর ঠিক মাঝে পুর দিয়ে রুটিটি ভাঁজ করে পুলি পিঠার আকার দিতে হবে। একটি কাটা চামচ দিয়ে রুটির মুখ আটকে ফেলুন, যাতে পুর ভেতর থেকে বেরিয়ে না যায়। একটি বড় কড়াইয়ে ডুবো তেলে ভাজার জন্য তেল গরম করুন। অল্প আঁচে গরম করে নিন। এরপর বানানো পিঠা ছেড়ে দিন এবং অল্প আঁচেই লালচে করে ভেজে তুলে নিন। একটি কিচেন টিস্যুতে রেখে তেল শুষে ফেলুন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেলো মাংস পিঠা। এবার সসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।

 

ঘরে বসেই করুন পার্লারের মত ব্লিচ

দ্রুত ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ব্লিচের জুড়ি নেই। বিশেষ কোন অনুষ্ঠানের আগে অনেকেই ব্লিচ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকেন। সাধারণত পার্লারে ব্লিচিং ক্রিম ব্যবহার করে ব্লিচ করা হয়। তবে ব্লিচিং ক্রিম অথবা ফেসিয়ালের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, বিধায় এটি ত্বকের ক্ষতি করে। আপনি চাইলে ঘরে করে ফেলতে পারেন ব্লিচিং। সহজে ঘরে থাকা উপাদান দিয়ে ব্লিচিং করা সম্ভব। আসুন তাহলে উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।

১। টকদই

হাতে কিছু পরিমাণ টকদই নিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রতিদিন একবার করুন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পার্থ্যক দেখতে পাবেন। এছাড়া এক টেবিল চামচ টকদইয়ের সাথে আধা টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে মুখ এবং ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন। এবার ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

২। ওটমিল ব্লিচিং

দুই টেবিল চামচ ওটমিল, এক টেবিল চামচ টকদই, দুই টেবিল চামচ লেবুর রস এবং এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল একসাথে মিশিয়ে নিন। এবার এটি ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে রাখুন। ১৫-২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্যাকটি মুখে সম্পূর্ণভাবে শুকাতে দেবেন না। কিছুটা নরম থাকতেই পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন।

৩। বেসন

বেসন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকর। বেসন এবং গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এটি ত্বকে ব্যবহার করুন। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

৪। আলুর প্যাক       

আলুর খোসা ছড়িয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এরসাথে গোলাপজল, মধু এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এটি ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আলু ত্বকের কালো দাগ দূর করে। এর সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

৫। লেবু, মধু এবং দুধ

এক টেবিল চামচ গুঁড়ো দুধ, এক চা চামচ লেবুর রস,  এক চা চামচ মধু এবং আধা চা চামচ বাদাম তেল ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবার এটি ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার ব্যবহার করুন। এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশ কার্যকরী।

ব্লিচিং ক্রিম ব্যবহারে টিপস:

১। ব্লিচ হল অ্যামোনিয়া, এমনকি বাজারে যে ক্রিম কিনতে পাওয়া যায় তাতেও এটি ব্যবহার করা হয়। তাই প্রতিদিন ব্যবহার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তিন সপ্তাহে একবার ব্যবহার করা যেতে পারে।

২। ব্লিচিং ক্রিম ব্যবহারের আগে ত্বক ভাল করে পরিষ্কার করে নিন। তবে ক্লিঞ্জিং মিল্ক ব্যবহার করবেন না।

৩। গাড় ত্বকের অধিকারীরা বেশিক্ষণ ত্বকে ব্লিচিং ক্রিম রাখবেন না। সর্বোচ্চ ১০ মিনিট ত্বকে রাখবেন।

 

লিখেছেন
নিগার আলম

 

বিউটি পার্লার ব্যবসা বিনিয়োগ ও পরিচালনার কর্মশালা

বিউটি পার্লার ব্যবসার বিনিয়োগ ও পরিচালনার খুঁটিনাটি কৌশল নিয়ে দেশে প্রথমবারের মত কর্মশালার আয়োজন করতে যাচ্ছে লিংগারিং লুক ইনসটিটিউট। আগামী ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ ইং তারিখে এক দিনের এই কর্মশালায় থাকছে বিউটি পার্লার ব্যবসা  বিনিয়োগ এবং দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল। কোর্স শেষে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করা যাবে ০১৮১৭৭৫২২৪০ নম্বরে।

কর্মশালার বিষয়ঃ
বিউটি পার্লার ব্যবসা স্থাপন করার জন্য সম্পূর্ণ সমাধান।
বিউটি পার্লার ব্যবসার  পরিচালনার খুঁটিনাটি।

কর্মশালার পদ্ধতিঃ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা, ভিডিও প্রদর্শন, উন্মুক্ত আলোচনা। [কোর্স শেষে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।]

২৯ শে জুলাই, ২০১৬, সময়ঃ সকাল ১০ টা – বিকেল ৫ টা, লিংগারিং লুক ইনসটিটিউট, ১৮/১ রিং রোড [৩য় তলা], মোহাম্মাদপুর, ঢাকা।
ফিঃ ৩০০০/- টাকা।
যোগাযোগ করুনঃ ১৮১৭৭৫২২৪০

 

তিনি ছাত্রলীগনেত্রী, এভাবে বিয়ে করতেই পারেন!

দেখে মনে হলো ঠিক যেন বিয়ে বাড়ি কিংবা কমিউনিটি সেন্টার। মরিচ বাতিতে ফটক সাজানো। ভেতরের রাস্তাও একইভাবে জ্বলজ্বল করছে। ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেত্রীর গায়ে হলুদ উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় এভাবেই সেজেছিল রাজধানীর গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ক্যাম্পাস।

ধুমধাম করে কলেজ মিলনায়তনে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করলেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাসুমা আক্তার পলি। তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও।

কলেজের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী ২৪ জুলাই মাসুমা আক্তারের বিয়ে। এ উপলক্ষে তিনি কলেজের ছাত্রীদের জন্য গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। অনুষ্ঠানে তার হবু বরও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও দুই পরিবারের অনেক অতিথি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

ছাত্রীরা বলছেন, কলেজ হোস্টেলে থাকার নিয়ম অনুযায়ী, কেউ বিয়ে করলে তার সিট কেটে দেয়া হয়। কিন্তু ছাত্রলীগের অনেকে প্রভাব খাটিয়ে বিবাহিত হয়েও হোস্টেলে থাকেন। আর এবার কলেজের মিলনায়তনে বিয়ের আয়োজনই করা হল। পলি ছাত্রলীগনেত্রী বলেই এভাবে একটা মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে বিয়ে করতে পারছেন।

তারা বলছেন, নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে বহিরাগত কেউ প্রবেশ করার নিয়ম না থাকলেও গায়ে হলুদ উপলক্ষে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কলেজে এসেছেন। এর মধ্যে দুই পরিবারের সদস্যদের বাইরে ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মীও অংশ নেন।

অনুষ্ঠান উপলক্ষে কলেজ মিলনায়তনও সাজানো হয় মনোরম সাজে। সেখানে করা স্টেইজের পেছনে লেখা ছিল ‘সাইফ ও পলির হলুদ সন্ধ্যা।’

এ সম্পর্কে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান বলেন, ‘তিনি তো আগে কলেজের ছাত্রী। তারপর ছাত্রলীগের নেত্রী। কলেজ প্রশাসন যদি এক্ষেত্রে অনুমতি দেয় তবে একজন ছাত্রী এ ধরনের অনুষ্ঠান করতেই পারেন।’

সন্ধ্যা থেকে একাধিকবার কলেজের অধ্যক্ষ শামসুন্নাহারের মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

 

হাল ফ্যাশনে রূপার গয়না

রূপার গয়না হিসেবে আগেই আসে বাহারি মল, হাতের বাজু, কোমরের বিছা, নুপূরের নাম। অনেক আগেও এর ব্যবহার ছিল বেশ। তবে নারীদের কাছে স্বর্ণের বিপরীতে এর গুরুত্ব ছিল কম। সময়ের পরিবর্তনে রূপার গয়নার ডিজাইনে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। ঐতিহ্যবাহী রূপার গয়না গ্রামবাংলার গণ্ডি পেরিয়ে প্রভাব বিস্তার করেছে হাল ফ্যাশনের জগতে।

রূপার গোল্ডপ্লেটেড পাথর বসানো আংটি, চুড়ি, ব্রেসলেট, রূপার মল, গলার হার ইত্যাদির ব্যবহার বেড়ে চলেছে উল্লেখযোগ্যহারে। বাজারে অক্সিডাইজ রঙের রূপার মলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ফ্যাশন-সচেতন নারীদের কাছে রূপার গয়না এখন পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে। নারী ক্রেতাদের পাশাপাশি পুরুষের কাছেও রূপার ব্রেসলেট ও কানের রিং সমান জনপ্রিয়।

এ গয়নার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে হালকা-গাঢ় সব রঙের পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। জমকালো সালোয়ার কামিজ এবং ফতুয়ার সঙ্গেও রুপার বড় দুল বেশ চলছে। শাড়ির সঙ্গে পরার জন্য মেয়েরা রুপার ভারী গয়না বেশি পছন্দ করে।

ব্যবহারের পর গয়না ভালো করে নরম কাপড় বা টিস্যু দিয়ে মুছে নিতে হবে। তারপর ভালো করে টিস্যুতে মুড়িয়ে গয়নার বাক্সে রেখে দিন।  গয়না কালো হয়ে গেলে টুথপেস্ট অথবা তেতুল গোলা দিয়ে হালকা করে ঘষে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন।

ডিজাইন ও আকার ভেদে প্রতিটি রূপার নাকফুলের দাম পড়বে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। কানের দুল ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা। বালা ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। টিকলি দেড় হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। ব্রেসলেট ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা, খাড়ু ও বাজু ২ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা, মাদুলি সেট আড়াই হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। গয়নার সেট কিনতে খরচ হবে দশ হাজার থেকে পনের হাজার টাকার মধ্যে । তবে জাঁকজমকপূর্ণ গয়নার সেট কিনতে হলে খরচ করতে হবে ৫০ হাজার টাকার বেশি।

আধুনিক ডিজাইনের রূপার গয়নার বিশাল সংগ্রহ রয়েছে ফ্যাশন হাউস আড়ং-এ। এখানে রুপার মল, নাকফুল, আংটি, চুড়ি, ব্রেসলেট থেকে শুরু করে গলার হার পর্যন্ত নানা নকশার গয়না পাওয়া যাবে। দাম নির্ভর করবে কী কিনছেন, তার ওপর। ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’স- এ পাবেন  আধুনিক ডিজাইনের রূপার গয়না। এই ফ্যাশন হাউসের গয়নার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা মোটিফ ডিজাইনে ব্যবহার করা হয়েছে। বসুন্ধরা শপিং মল-এ পাবেন রূপার গয়না। এছাড়া ঢাকার গাউছিয়া, মেট্রো শপিং মল, ইস্টার্ন মল্লিকাসহ বেশির ভাগ শপিং মলেই রূপার গয়না পাবেন। অনেক গয়নার দোকান থেকেই আপনি নিজের পছন্দমতো নকশায় অর্ডার দিয়েও বানিয়ে নিতে পারেন রূপার গয়না।

 

মজার স্বাদের ফ্রুটস ফিরনি

ফিরনি অনেক খেয়েছেন। নিজেও হয়তো তৈরি করেছেন অনেক। কিন্তু মুখে লেগে থাকা স্বাদের ফিরনি কি সব সময় খাওয়া হয়? চাইলে আপনিও তৈরি করে নিতে পারেন মজার স্বাদের ফ্রুটস ফিরনি। অতিথি আপ্যায়নে ফ্রুটস ফিরনির জুড়ি নেই। তাই এক নজরে দেখে নিতে পারেন ফিরনির সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

দুধ ১ লিটার, পোলাওয়ের চাল ১০০ গ্রাম, চিনি ৪০০ গ্রাম, মিক্সস ফ্রুটস ২০০ গ্রাম- (আম, কলা, আনার, আপেল পেঁপে, আঙ্গুর), গোলাপজল ১ টেবিল চামচ, জাফরান ও কিসমিস।

যেভাবে করবেন

চাল আধা ভাঙা করে কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার দুধ ও চাল একসঙ্গে চুলায় দিয়ে ফুটিয়ে সামান্য জাফরান দিয়ে ঘন ঘন নাড়ুন। তারপর অল্প করে চিনি দিতে থাকুন। সব চিনি দেয়া হলে ৫ মিনিট মৃদু আঁচে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে গোলাপজল ছিটিয়ে দিন। এভাবে কিছুক্ষণ নাড়ার পর নামিয়ে এনে ফিরনি ঠাণ্ডা করতে হবে। তারপর ফলের কুচি ফিরনির ওপরে দিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। পরিবেশন করার ৫ মিনিট আগে নামিয়ে আনলেই হবে।

 

নগরবাসী নারীর হয়রানি ও প্রতিরোধ

স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘অবিশ্বাস’, ‘মোমেন্টস’, ‘পায়রা’ ও ‘বিহাইন্ড দ্য সিনস’-এর পর নির্মাতা সংস্থা মোশন ভাস্কর এবার নিয়ে এলো সচেতনতামূলক ডকুড্রামা ‘নারী’। ডকুড্রামাটি পরিচালনা করেছেন ভিকি জাহেদ ও চিত্রগ্রহণে ছিলেন বিদ্রোহী দীপন। অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের সাম্প্রতিক একটি ক্যাম্পেইন ‘সেইফ সিটি ফর ওমেন’ এর জন্য বানানো হয়েছে এই ভিডিওটি।

সচেতনতামূলক ডকুড্রামাটিতে মূলত নগরে নারীরা যে সব সমস্যার মুখোমুখি হন সে সব বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যৌন হয়রানি ও ইভ টিজিং সহ আরো অনেক বিষয়। এছাড়াও ডকুড্রামাটিতে উঠে এসেছে নারীদের সাহস, ইতিবাচক শক্তি এবং তাদের প্রতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে অন্যদের সংবেদনশীলতা।

উল্লেখ্য, মোশন ভাস্কর একটি স্বাধীন চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনী নির্মাণ সংস্থা। এর আগেও প্রতিষ্ঠানটি বিজ্ঞাপনচিত্রসহ টেলিভিশন চলচ্চিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে। ইতোমধ্যে সচেতনতামূলক প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাপক সাড়া ফেলছে।

 

স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য : হাদিসের নির্দেশনা

হাদিসের নির্দেশনা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর হাদিসে কোরান মাজিদের এসব নির্দেশনর প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা ও বিস্তারিত বর্ণনা এসেছে। তা স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহারের প্রতিদান ও স্ত্রীদের প্রতি স্বামীদের সদয় ও সহানুভূতিশীল হওয়ার কথা বলে।

মানুষের সর্বোত্তম ধনভান্ডার
হজরত ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে মানুষের সর্বোত্তম ধনভান্ডার সম্পর্কে বলব না, যা সে মজুত করবে? তা হল একজন গুণবতী স্ত্রী, যখনই সে তার দিকে দৃষ্টিপাত করে সে তাকে সন্তুষ্ট করে, যখন সে তাকে কোন আদেশ করে সে তা পালন করে এবং সে স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজেকে হেফাজত করে। (আবু দাউদ)

হজরত ছাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করল, কোন মানুষের সর্বোৎকৃষ্ট বস্ত্ত কি? তিনি উত্তর করলেন, সর্বোত্তম বস্ত্ত হল এমন জিহবা যা আল্লাহর স্মরণে রত থাকে, একটি কৃতজ্ঞ অন্তর ও একজন বিশ্বস্ত স্ত্রী, যে তাকে তার বিশ্বাসের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে। (আহমদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিযি)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পৃথিবী পুরোটাই সামগ্রী এবং পৃথিবীর সর্বোত্তম সামগ্রী হল একজন পূণ্যবতী স্ত্রী। (মুসলিম)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, চারটি বস্ত্ত যাকে দান করা হয়েছে তাকে এই পৃথিবীর ও পরবর্তী জীবনের জন্য সর্বোত্তম বস্ত্ত দান করা হয়েছে: কৃতজ্ঞ অন্তর, আল্লাহর স্মরণে রত জিহবা, বিপদে ধৈর্যশীল শরীর এবং এমন স্ত্রী যে নিজের ও তার (স্বামীর) সম্পদে বিশ্বাসঘাতকতা করে না। (বায়হাকি)

এই হাদিস অনুসারে, মুমিনের সর্বোত্তম সম্পদের একটি হল পূণ্যবতী স্ত্রী। ইসলাম নারীদের মর্যাদাকেই বৃদ্ধি করে নি, বরং তাদেরকে সর্বোত্তম সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যদি কোন পুরুষ একজন পূণ্যবতী স্ত্রী লাভ করে তবে যেন সে তার যত্ন নেয় এবং মূল্যবান সম্পদ হিসেবে তার রক্ষণাবেক্ষণ করে।

সদয় আচরণ
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নারীদের সাথে সদয় আচরণ করবে। তাদেরকে একটি পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং পাঁজরের সবচেয়ে বাঁকা হাড় হল সবচেয়ে উপরের হাড়। যদি তুমি তাকে সোজা করতে চেষ্টা কর, তবে তুমি তাকে ভেঙে ফেলবে। আর যদি তুমি তাকে একা ছেড়ে দাও, তবে তা বাঁকাই থেকে যাবে। অতএব, নারীদেরকে তদনুসারে নসীহত করতে থাক। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) আরও বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় নারীদেরকে একটি পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। যা তোমার জন্য কখনো সোজা হবে না। অতএব, তার বক্রতা সত্ত্বেও তাকে উপভোগ কর। যদি তুমি তাকে সোজা করতে যাও, তবে তাকে ভেঙে ফেলবে। আর তাকে ভেঙে ফেলা মানে হল তালাক প্রদান করা। (মুসলিম)

স্ত্রীকে অপছন্দ করার নিষেধাজ্ঞা
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন পুরুষ যেন কোন মুসলিম নারীর বিরুদ্ধে ঘৃণা পোষণ না করে, যদিও সে তার মধ্যে একটি বিষয়কে অপছন্দ করে, সে তার মধ্যে অন্য এমন একটি গুণ খুঁজে পাবে যাতে সে সন্তুষ্ট হবে। (মুসলিম)

নারীদের অধিকার ও দায়িত্ব
হজরত আমর ইবনে আহওয়ায (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার কর। তারা তোমাদের বাড়িতে কয়েদীর মত। যদি তারা কোন গুরুতর অপরাধ করে তবে তোমরা তাদের বিছানা পৃথক করে দেবে এবং হালকা শাসন করতে পার। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। তোমাদের স্ত্রীদের কাছে তোমাদের অধিকার রয়েছে এবং তোমাদের উপর তাদের অধিকার রয়েছে। তোমাদের অধিকার হল যে, তারা এমন কাউকে তোমার বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি দেবে না যাকে তুমি অপছন্দ কর। আর তোমাদের উপর তাদের অধিকার হল যে, তোমরা তাদের খাওয়া পরার সুব্যবস্থা করবে। (তিরমিযি)

হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহর ইচ্ছায় তোমরা তাদেরকে বিয়ে করেছ এবং আল্লাহর কালিমার মাধ্যমে তোমরা তাদের শরীরকে তোমাদের জন্য হালাল করেছ। তাদের উপর তোমাদের একটি অধিকার রয়েছে। তাহল, তারা তোমাদের বিছানায় অন্য কাউকে অনুমতি দিবে না। যদি তারা তা করে তবে তাদেরকে এমনভাবে প্রহার করবে, যাতে আহত না হয়। তোমাদের উপর তাদের খাওয়া পরার অধিকার রয়েছে, তোমাদের সামর্থ অনুসারে। (বুখারি, মুসলিম)

নারীদের মৌলিক অধিকার
হজরত মুয়াবিয়া (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, একজন নারীর তার স্বামীর উপর কি অধিকার রয়েছে? তিনি বলেন, তাকে আহার করাও যেমনটি তুমি আহার কর। তাকে পরাও যেমনটি তুমি পরিধান কর। তার চেহারায় আঘাত করবে না। তাকে ভৎর্সনা করবে না এবং ঘরের ভেতরে ব্যতিত তোমাকে তার থেকে পৃথক করবে না। (আবু দাউদ, আহমদ, ইবনে মাজাহ)

আদর্শ স্বামী
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈমানের বিচারে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম চরিত্রের অধিকারী এবং তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তার স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণ করে। (তিরমিযি)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে তার পরিবারের কাছে সর্বোত্তম। আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার পরিবারের কাছে সর্বোত্তম। (ইবনে মাজাহ, তিরমিযি)

একাধিক স্ত্রীর সাথে সাম্যের আচরণ
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন লোকের দুই স্ত্রী থাকবে এবং সে তাদের সাথে সমতার আচরণ করবে না সে কিয়ামতের দিন শরীরের এক অংশ ঝুলন্ত অবস্থায় আসবে। (আবু দাউদ, নাসায়ী, তিরমিযি)

পরিবারের উপর ব্যয় করার প্রতিদান
হজরত আবু মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন মুসলমান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রতিদান পাওয়ার আশায় নিজের পরিবারের জন্য কোন কিছু ব্যয় করবে, তা তার আমলনামায় সদকা বা দান হিসেবে পরিগণিত হবে। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত ছাওবান (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সর্বোত্তম দীনার (মুদ্রা) যা মানুষ ব্যয় করে তা হল, যে দীনার সে নিজের পরিবারের জন্য ব্যয় করে এবং যে দীনার সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে যাওয়ার জন্য প্রাণী পালনে ব্যয় করে এবং যে দীনার সে ব্যয় করে তার বন্ধুদের উপর, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায়। (মুসলিম)

হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে যা-ই তুমি ব্যয় কর তার প্রতিদান অবশ্যই রয়েছে। এমনকি তুমি যা তোমার স্ত্রীর মুখে দাও তারও। (বুখারি, মুসলিম)

এই হাদিসসমূহ মানুষকে তাদের স্ত্রীদের সাথে কেবল দয়া ও সহানুভূতির সাথে নয়, বরং উদারতার সাথেও আচরণ করতে অনুপ্রাণিত করে। ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা নারীদের এমন সম্মানজনক মর্যাদা দান করে।

পরিবারের উপর ব্যয় না করার নিন্দা
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আচ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যক্তির জন্যে পাপ হিসেবে ইহা যথেষ্ট যে, সে তার অধীনস্তদের উপর ন্যায্য ব্যয়ে ইতস্তত করবে। (আবু দাউদ, মুসলিম)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আচরণ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে যা কিছু বলেছেন, তিনি নিজেও তার স্ত্রীদের প্রতি তেমনটি আচরণ করতেন। তিনি ছিলেন সবচেয়ে আদর্শ স্বামী। নিচে তাঁর স্ত্রীদের প্রতি ভালবাসা ও তাদের দেখাশুনা সংক্রান্ত কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হল:

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি এক সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সাথে ছিলেন। তিনি তার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন এবং এতে তিনি (আয়েশা (রা.)) তাকে হারিয়ে দেন। পরবর্তীতে যখন তিনি ( আয়েশা (রা.)) কিছুটা ভারি হয়ে যান, তাঁর সাথে পুনরায় দৌড় প্রতিযোগিতা দেন এবং তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হারিয়ে দেন। তখন তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, এটি পূর্বের প্রতিযোগিতার বদলা। (আবু দাউদ)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, আল্লাহর শপথ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার কক্ষের দরজায় দাঁড়ানো দেখতে পেলাম। তখন হাবশীরা বর্শা নিয়ে খেলা করছিল। তিনি তাঁর চাদর দ্বারা আমাকে ঢেকে দিলেন, যাতে আমি খেলা দেখতে পারি। যতক্ষণ আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলাম ততক্ষণ তিনি আমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) আরও বর্ণনা করেন, আমি আমার বান্ধবীদের সাথে পুতুল নিয়ে খেলা করছিলাম। যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলেন তারা আমার কাছ থেকে চলে গেল। তিনি তখন আমাকে তাদের কাছে ফেরত পাঠালেন এবং তারা পুনরায় আমার সাথে খেলা করতে লাগল। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি জিহাদ থেকে প্রত্যাবর্তন করেন এবং তাকে পুতুল নিয়ে খেলা করতে দেখেন। তার একটি ঘোড়াও ছিল, যার ছিল দুটি ডানা। যখন তিনি এটি দেখলেন, আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এটির উপর এগুলি কি? আমি বললাম, ডানা। তিনি বিস্মিত হয়ে বললেন, দুই ডানাবিশিষ্ট ঘোড়া! আমি বললাম, আপনি কি শুনেন নি যে, সুলায়মান আ. এর একটি ঘোড়া ছিল, যার অনেক ডানা ছিল? তা শুনে তিনি তিনি এতই হাসলেন যে, আমি তাঁর পেছনের দাঁত পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছিলাম। (আবু দাউদ)

আমাদের মনে রাখতে হবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল আল্লাহর একজন রাসূলই ছিলেন না, বরং মদীনার ইসলামি রাষ্ট্রের প্রধানও ছিলেন। তাঁর ছিল একটি খুব ব্যস্ত জীবন। বস্ত্তত অধিকাংশ সময় তিনি নিজেকে ইবাদতে নিয়োজিত রাখতেন। এতদসত্ত্বেও তিনি তাঁর স্ত্রীদের সাথে সময় কাটাতেন, তাদের সঙ্গ দিতেন এবং তাদের সাথে আনন্দ বিনোদনে অংশ নিতেও সময় বের করেন। এজন্যে কোরান মাজিদ বলে, নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর জীবনে রয়েছে একটি উত্তম আদর্শ।’ (৩৩:২১) আমাদের উচিৎ, আমাদের পারিবারিক জীবনে তাঁর সুন্নাতের অনুসরণ করা।

স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব ও কর্তব্য
হজরত আবু ওমামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর ভয়ের পর একজন ঈমানদার পূণ্যবতী স্ত্রীর চেয়ে উত্তম কিছু পেতে পারে না। যদি সে তাকে কোন আদেশ করে তবে সে তা পালন করে, যদি সে তার দিকে তাকায় তবে সে তাকে তৃপ্ত করে, যদি সে তার থেকে কোন প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে, সে তা পূর্ণ করে এবং যদি সে অনুপস্থিত থাকে তবে সে তার আচরণ ও তার (স্বামীর) সম্পদকে হেফাজত করে। (ইবনে মাজাহ)

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কোন নারী সর্বোত্তম? তিনি উত্তর করলেন, যে তার স্বামীকে আনন্দ দেয়, যখন সে তার দিকে দৃষ্টিপাত করে। আর আদেশ পালন করে, যখন সে আদেশ করে এবং তার অসন্তুষ্টির আশংকায় নিজের ব্যাপারে ও তার (স্বামীর) সম্পদের ব্যাপারে বিশ্বাসঘাতকতা করা থেকে বিরত থাকে। (নাসায়ি)

স্বামীর প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যদি আমি কাউকে অন্যের প্রতি সিজদা করার আদেশ দিতাম তবে আমি স্ত্রীদের আদেশ দিতাম তাদের তাদের স্বামীদের সেবা করতে। (তিরমিযি)

হজরত কায়স ইবনে সাদ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি হীরায় গেলাম এবং তাদেরকে (হীরাবাসীদেরকে) তাদের নেতাদের সিজদা করতে দেখলাম। আমি চিন্তা করলাম, সিজদা লাভের ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চেয়ে আরো অধিক হকদার। তাই আমি তাঁকে বললাম, আমি হীরাবাসীদেরকে তাদের নেতাদের সিজদা করতে দেখেছি; অথচ আপনি সিজদা লাভের ব্যাপারে তাদের চেয়ে আরো অধিক বেশি হকদার। তিনি আমাকে বললেন, বল দেখি, যদি তুমি আমার কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম কর তবে কি তাতে সিজদা করবে? আমি উত্তর করলাম, না। অত:পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমাকে সিজদা কর না। যদি আমি কাউকে অন্য কারো উদ্দেশ্যে সিজদা করার আদেশ দিতাম তবে স্ত্রীদেরকে আদেশ দিতাম তাদের স্বামীদের সিজদা করতে। তা সেসব দায়িত্বের কারণে যা আল্লাহ তাআলা স্বামীদের প্রেক্ষিতে স্ত্রীদের উপর অর্পণ করেছেন। (আবু দাউদ, আহমাদ)

রোজা রাখতে স্বামীর অনুমতি
হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন নারী তার স্বামীর অনুমতি ব্যতিত রোজা রাখতে পারে না। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

হাদিসের ভাষ্যকারগণ বলেন, এ থেকে কেবল নফল রোজা উদ্দেশ্য। কোন স্বামীকেই আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে আদেশ প্রদানের অনুমতি দেয়া হয় নি। যদি সে তা করে তবে স্ত্রী তার আনুগত্য করবে না।

স্বামীর ডাকে সাড়া দেওয়া
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে, অথচ সে তা প্রত্যাখ্যান করে। আর স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রী যাপন করে, তখন ফেরেস্তারা সারা রাত্রী তার (স্ত্রীর) উপর অভিশাপ দিতে থাকে। ( বুখারি, মুসলিম)

হজরত তালাক ইবনে আলী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তার কামনা পূরনের জন্য আহবান করে, তখন সে যেন তার আহবানে সাড়া দেয়, যদিও সে চুলায় ব্যস্ত থাকে। (তিরমিযি)

স্বামীর আহবান প্রত্যাখ্যান করার নিন্দা
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঐ সত্ত্বার শপথ, যার হাতে আমার জীবন! যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে এবং সে তা ফিরিয়ে দেয়, তখন যিনি জান্নাতে আছেন’ তার উপর অসন্তুষ্ট হয়, যতক্ষণ না তার স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট হয়। (বুখারি, মুসলিম)

যিনি জান্নাতে আছেন’ থেকে উদ্দেশ্য হলেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাআলা। স্বামীর প্রতি একজন স্ত্রীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল তার শারিরীক চাহিদা পূরণ করা। যেমনটি ইতোপূর্বে উল্লিখিত হয়েছে। এই অধিকার আল্লাহ তাআলা প্রদান করেছেন। তাই যদি কোন নারী তার স্বামীর চাহিদা পূরণে সাড়া না দেয়, তবে সে যেন আল্লাহ তাআলারই আদেশ অমান্য করল এবং এর মাধ্যমে সে তার অসন্তুষ্টি লাভ করল। (বুখারি, মুসলিম)

স্বামীর সম্পদ যথাযথভাবে হেফাজতের প্রতিদান
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন নারী তার স্বামীর উপার্জন থেকে আল্লাহর রাস্তায় দান করে, যদিও তার অনুমতি ব্যতিত হয়, স্বামী তার অর্ধেক সওয়াব লাভ করবে। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন স্ত্রী তার গৃহ থেকে খাদ্যদ্রব্য নষ্ট না করে দান করে, তার জন্যে তার প্রতিদান রয়েছে। কারণ, সে দান করেছে। তাতে স্বামীরও প্রতিদান রয়েছে। কেননা, সে তা উপার্জন করেছে। কারও প্রতিদান এতে অন্যের প্রতিদানের চেয়ে কম হবে না। (বুখারি, মুসলিম)

যেহেতু, পুরুষরাই একটি মুসলিম পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি, তাই স্ত্রী তা থেকেই দান করে থাকে যা তার স্বামী উপার্জন করে। এ দানের জন্যে উভয়ে সমান প্রতিদান লাভ করবে।

স্বামীকে কষ্ট দেওয়ার নিন্দা
হজরত মু’আয ইবনে জাবাল (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন নারী পৃথিবীতে তার স্বামীকে কষ্ট দেয় তখন জান্নাতে অবস্থানরত তার আনত নয়না স্ত্রীগণ (হুরগণ) তাকে লক্ষ করে বলে, তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুক। তোমার কাছে সে কেবল একজন মেহমান মাত্র এবং সে অতি শীঘ্রই তোমাকে ছেড়ে আসবে এবং আমাদের সাথে যোগ দিবে। (ইবনে মাজাহ, তিরমিযি)

অবাধ্য স্ত্রীর ইবাদত গৃহিত হয় না
হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির ইবাদত কবুল হয় না; পলাতক গোলাম- যতক্ষণ না সে তার মালিকের কাছে ফিরে আসে। যে নারী রাত যাপন করে, অথচ স্বামী তার উপর অসন্তুষ্ট থাকে এবং এমন নেতা যাকে তার লোকেরা পছন্দ করে না। (তিরমিযি)

এই হাদিসটি স্ত্রীদেরকে তাদের স্বামীদের অনুগত হওয়া এবং যেসব কারণে স্বামীরা অসন্তুষ্ট হয় তা পরিহার করা সম্পর্কে আরেকটি সতর্কবাণী। যদি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে স্বামীকে অসন্তুষ্ট করে তবে তাদের ইবাদত ও প্রার্থনা কবুল হবে না। যদি স্বামী কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে স্ত্রীর উপর অসন্তুষ্ট হয়, তবে তখন সে অপরাধী সাব্যস্ত হবে না এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে তার ইবাদতও প্রত্যাখ্যাত হবে না।

স্বামীকে সন্তুষ্ট করার প্রতিদান
হজরত উম্মে সালামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট থাকা অবস্থায় যে স্ত্রী মৃত্যুবরণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ( তিরমিযি)

একজন ঈমানদার স্বামী তার স্ত্রীর উপর তখনি সন্তুষ্ট হতে পারে যখন সে আল্লাহ তাআলার সকল আদেশ নিষেধ মেনে চলবে এবং একটি পূণ্যময় জীবন যাপন করবে।

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন নারী দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, রমজান শরীফের রোজা রাখবে, সতীত্ব রক্ষা করবে এবং স্বামীর আনুগত্য করবে সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করবে। (আহমদ, তাবরানি)

উপরে যা বর্ণিত হয়েছে তা প্রধানত, স্বামী স্ত্রীর জাগতিক ও শারিরীক দায়িত্ব ও কর্তব্য সংক্রান্ত। ইসলাম মনে করে, একজন ব্যক্তির আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় প্রয়োজন শারিরীক প্রয়োজনের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন প্রকৃত ঈমানদার প্রথম থেকেই আল্লাহ তাআলার আদেশের আনুগত্যের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি লাভ করতে সচেষ্ট থাকে। জাগতিক প্রয়োজন ও শারিরীক প্রশান্তি তার কাছে পরবর্তী মর্যাদা লাভ করে। কোরান মাজিদ বলে,

যে দুনিয়া চায় আমি সেখানে তাকে দ্রুত দিয়ে দেই, যা আমি চাই, যার জন্য চাই। তারপর তার জন্য নির্ধারণ করি জাহান্নাম, সেখানে সে প্রবেশ করবে নিন্দিত, বিতাড়িত অবস্থায়। (বনি ইসরাইল, ১৭:১৮-১৯)

একজন প্রকৃত ঈমানদারের চুড়ান্ত সফলতা, তার ধর্মপরায়ন জীবন যাপনের মধ্যে নিহিত, যা তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবে। কোরান মাজিদ বলে,

প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর অবশ্যই কিয়ামতের দিনে তাদের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সে-ই সফলতা পাবে। আর দুনিয়ার জীবন শুধু ধোঁকার সামগ্রী। (আলে ইমরান, ৩:১৮৫)

কোরান মাজিদে আরও ইরশাদ হয়েছে, হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার পরিজনকে আগুন হতে বাঁচাও। যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যেখানে রয়েছে নির্মম ও কঠোর ফেরেস্তাকুল, যারা আল্লাহ যা নির্দেশ দিয়েছেন সে ব্যাপারে অবাধ্য হয় না। আর তারা তা-ই করে যা তাদেরকে আদেশ করা হয়। (আত-তাহরীম, ৬৬:৬)

এ থেকে বুঝা যায় যে, একজন স্বামী ও তার স্ত্রীর মৌলিক দায়িত্ব হল, পরস্পরকে এমন একটি জীবন যাপনে সাহায্য করা, যা পরকালে তাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। যদি স্বামী তার স্ত্রীকে সর্বোত্তম বস্ত্ত সামগ্রী সরবরাহ করে, যার ফলে স্ত্রী তাকে সর্বোচ্চ ভালবাসা ও আনুগত্য প্রদান করে; কিন্তু উভয়ে পরস্পরকে আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা পেতে সহযোগিতা করে না তবে উভয়ে তাদের পারস্পরিক কর্তব্য পালনে ব্যর্থ বলে বিবেচিত হবে। নিম্নলিখিত হাদিসটি বিষয়টিকে আরও পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তোলে,

তোমাদের প্রত্যেকেই জিম্মাদার এবং প্রত্যেককে তাদের অধীনস্তদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সমাজপতি তার সমাজের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, স্বামী তার পরিবার সম্পর্কে দায়িত্বশীল এবং স্ত্রী তার স্বামীর ঘর ও সম্পদ সম্পর্কে দায়িত্বশীল। (বুখারি, মুসলিম)

হাদিসটি ইসলামে পারিবারিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের গুরুত্ব বর্ণনা করে। প্রথমত, স্বামী ও স্ত্রী তাদের পারিবারিক দায়িত্বের ক্ষেত্রে সমান মর্যাদা রাখে। দ্বিতীয়ত, উভয়কেই কিয়ামতের দিন তাদের স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে পৃথক পৃথকভাবে জিজ্ঞাসা করা হবে যে, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে কিনা। তৃতীয়ত, এই হাদিস সন্তানদের উপর মায়ের দায়িত্ব সম্পর্কে বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করে। আর তা এজন্যে যে, ছেলেমেয়েরা তাদের মায়ের খুব কাছাকাছি থাকে। বলা বাহুল্য যে, স্ত্রীর প্রতি একজন স্বামীর এবং স্বামী ও সন্তানের প্রতি একজন স্ত্রীর মৌলিক দায়িত্ব হল, একটি ন্যায়নিষ্ঠ ও ধার্মিক জীবন যাপনে পরস্পরকে সহযোগিতা করা। নিম্নলিখিত হাদিসটি বিষয়টিকে আরও পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তোলে:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা সেই স্বামীকে দয়া করুন যে রাতের বেলা ঘুম থেকে জেগে ওঠে এবং তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে। অতঃপর সে তার স্ত্রীকেও নিদ্রা থেকে জাগিয়ে তোলে যাতে সেও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারে। যদি সে জাগ্রত না হয় তবে যেন মুখে পানির ছিটা দেয়। আল্লাহ তাআলা সেই স্ত্রীকেও রহম করুন যে রাতের বেলা জাগ্রত হয় এবং তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করে। অতঃপর সে তার স্বামীকে জাগিয়ে দেয় যাতে সেও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে পারে। যদি সে জাগ্রত না হয় তবে সে যেন তার চেহারায় পানির ছিটা দেয়। (নাসায়ি)

যখন কোন ব্যক্তি রাতের বেলা তার স্ত্রীকে জাগিয়ে দেয় এবং উভয়ে একত্রে দুরাকাত নামাজ আদায় করে, তাদের নাম আল্লাহ তাআলার স্মরণকারী পুরুষ ও নারীদের তালিকায় লেখা হয়। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

এই আলোচনা থেকে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ইসলামে বিয়ে কেবল দুটি বিপরীত লিঙ্গের শারিরীক আকর্ষণ কিংবা স্বামী স্ত্রীর জাগতিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে হয় না। বরং, তা স্বামী- স্ত্রী থেকে জাগতিক, বস্ত্তগত, শারিরীক ও আধ্যাত্মিক প্রয়োজন ভাগাভাগি ও চাহিদা পূরণ করার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করে। এজন্যে ইসলামে বিয়ে একটি খুব সংরক্ষিত ও স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান। তাই ভগ্ন পরিবার, একক মাতৃপরিবার কিংবা একক পিতৃপরিবারের ঘটনা মুসলিম সমাজে নেই বললেই চলে।

মূল : ড. মাজহার ইউ কাজি
বাংলা অনুবাদ : মাওলানা ফয়জুল্লাহ মুজহিরি
সম্পাদনা : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক

 

ইসলামে সন্তান সন্তুতির অধিকার

ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই সন্তানের মধ্যে গণ্য। সন্তান সন্ততির অধিকার অনেক। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হচ্ছে শিক্ষা লাভের অধিকার। তবে আল্লাহর দ্বীন এবং চরিত্র গঠনের জন্যই এ শিক্ষা; যাতে তারা তাতে বেশ উৎকর্ষতা লাভ করতে সমর্থ হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُ [التحريم: ٦]

“হে ঈমানদারগণ, তোমরা তোমাদের নিজদেরকে ও তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে রক্ষা কর- যার ইন্ধন হবে মানুষ এবং পাথর।’ [সূরা আত-তাহরীম]

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِي أَهْلِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ»

তোমাদের প্রত্যেকেই প্রত্যেকের রাখাল (তত্ত্বাবধায়ক) এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তাই আখেরাতে তার রাখালির (তত্ত্বাবধান) জন্য জিজ্ঞাসিত হবে, একজন মানুষ তার পরিবারের রাখাল, তাকে সে রাখালিপনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ [বুখারি, মুসলিম]

প্রকৃত প্রস্তাবে সন্তান বা ছেলে মেয়েগণ হচ্ছে পিতা মাতার স্কন্ধে এক বিরাট আমানতস্বরূপ। অতএব, কিয়ামতের দিন তাদের উভয়কেই তাদের সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, এমতাবস্থায় পিতা মাতার দায়িত্ব হচ্ছে তাদেরকে ধর্মীয় এবং নৈতিক তথা উভয়বিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সংশোধন পূর্বক গড়ে তোলা। এরূপ করা হলেই তারা ইহকাল এবং আখেরাতে পিতা-মাতার জন্য চোখের শীতলতা তথা শান্তি বয়ে আনবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَٱتَّبَعَتۡهُمۡ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَٰنٍ أَلۡحَقۡنَا بِهِمۡ ذُرِّيَّتَهُمۡ وَمَآ أَلَتۡنَٰهُم مِّنۡ عَمَلِهِم مِّن شَيۡءٖۚ كُلُّ ٱمۡرِيِٕۢ بِمَا كَسَبَ رَهِينٞ ٢١ [الطور: ٢١]

আর সে সব লোক যারা আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে, অতঃপর তাদের সন্তানগণও ঈমানের সহিত তাদের পত অনুসরণ করেছে, তাদের সাথে তাদের সন্তানদেরকে আমি মিলিত করব। আর আমি তাদের কোন আমলই বিনষ্ট করবনা। প্রতিটি লোক যা কিছু আমল করে তা আমার নিকট দায়বদ্ধ থাকে।’ [সূরা আত-তূর: ২১]

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ: صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ»

যখন কোনো লোক মারা যায়, তখন তার তিনটি আমল’ ব্যতীত সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। উক্ত তিনটি কাজ বা আমল হচ্ছে সাদকায়ে জারিয়া, এমন ইলম বা জ্ঞান যা দ্বারা তার মৃত্যুর পরও লোকেরা উপকৃত হতে থাকে এবং এমন কোনো সুসন্তান, যে তার পিতার মৃত্যুর পর তার জন্য দোআ করে।’ [তিরমিযী, নাসাঈ]

ছেলে মেয়েদেরকে সুশিক্ষা ও শিষ্টাচারের সহিত গড়ে তোলার এইটাই হচেছ ফল, যে এই ধরণের ছেলে-মেয়েরাই পিতা-মাতার জন্য এমনকি তাদের মৃত্যুর পরও কল্যাণকামী হিসেবে পরিগণিত হয়। অনুতাপের বিষয় যে, আমাদের সমাজে অনেক পিতা-মাতাই এই অধিকারটাকে অত্যন্ত সহজ মনে করে নিয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে তারা তাদের ছেলে-মেয়েদের কে ধ্বংস করে দিচ্ছেন এবং তাদের কথা যেন ভুলেই গেছেন। মনে হয় যেন তাদের ব্যাপারে তাদের ওপর কোনো দায়িত্বই নেই। তাদের ছেলে-মেয়েরা কোথায় গেল এবং কখন আসবে, কাদের সাথে তারা চলা ফেরা করছে অর্থাৎ তাদের সঙ্গী-সাথী কারা এ সব ব্যাপারে তারা কোন খবরা খবরই রাখে না। এ ছাড়া তাদেরকে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ এবং মন্দ কাজ থেকে বিরতও রাখে না।

আরও আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এসব পিতা-মাতাই তাদের ধন সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং তার প্রবৃদ্ধির জন্য খুবই আগ্রাহান্বিত থাকেন, সদা জাগরুক থাকেন, অথচ এসব সম্পদ সাধারণত তারা অন্যের জন্যই রেখে যান। অথচ সন্তান-সন্তুতির ব্যাপারে তারা মোটেও যত্নবান নন, যার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হলে দুনিয়া ও আখেরাতের সবস্থানেই তারা কল্যান বয়ে আনতে পারে। অনুরূপভাবে পানীয় ও আহার্যের মাধ্যমে ছেলে মেয়েদের শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য খাদ্য দ্রব্যের যোগান দেওয়া, তাদের শরীরকে কাপড় দিয়ে ঢাকা যেমন পিতার উপর ওয়াজিব তেমনিভাবে পিতার জন্য অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে সন্তানের অন্তরকে ইলম ও ঈমানের মাধ্যমে তরতাজা রাখা এবং তাকওয়া ও আল্লাহ্‌ভীতির লেবাস পরিধান করিয়ে দেওয়া, কেননা তা তাদের জন্য অবশ্যই কল্যাণকর।

সন্তানের অধিকারের মধ্যে আর একটি অধিকার এই যে, পিতা মাতা তাদের জন্য সৎভাবে ব্যয় করবেন। তবে এ ব্যাপারে কার্পণ্য ও অমিতব্যয়ের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন না। কারণ, এটা তাদের ওপরে সন্তানের অধিকার ও কর্তব্য। আর আল্লাহ তাআলা তাকে যে নেয়ামত দান করেছেন, সে ব্যাপারে অবশ্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন। এটা কিছুতেই ঠিক হবে না যে, ধন সম্পদকে পিতা তার জীবদ্দশীয় ছেলে মেয়েদের ওপর ব্যয় না করে তা কুক্ষিগত করে রাখবেন অথচ তারা মৃত্যুর পর সে ছেলে-ময়েরাই তা লুফে নিয়ে যথেচ্ছ ব্যবহার করবে।

অতএব, পিতা যদি ধন সম্পদে আসক্তিবশত সন্তানদের ওপর ব্যয় করার ব্যাপারে কার্পণ্য করেন, তা হলে তাদের জন্য বৈধ হচ্ছে তাদের প্রয়োজনমাফিক সৎভাবে সে মাল থেকে গ্রহণ করা এবং ব্যয় করা। আর এরূপ অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিনদা বিনতে ওতবার ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।

সন্তানের অধিকারের মধ্যে আরেকটি অধিকার এই যে, উপহার-উপঢোকন এবং দানের ক্ষেত্রে তাদের একজনকে অন্যজনের উপরে অগ্রাধিকার দেয়া যাবে না। অতএব, সন্তানদের কাউকে কিছু দেওয়া এবং কাউকে তা থেকে বঞ্চিত করা অনুচিত। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, এটা নিতান্তই জুলুম। আর আল্লাহ কখনো জালেমদের ভালবাসেন না। এইরূপ করা হলে, যারা বঞ্চিত তাদের মধ্যে একটি বিতৃষ্ণা ও ঘৃণার ভাব উদ্রেক হয় এবং পুরস্কৃত ও বঞ্চিতদের মধ্যে একটি স্থায়ী শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এমনকি অধিকন্তু বঞ্চিত সন্তান-সন্ততি ও তাদের পিতা-মাতার মধ্যে একটি শত্রুতা ও তিক্ততা সৃষ্টি হয়।

আর কিছু সংখ্যক লোক আছে যারা তাদের উপর কৃত সদ্ব্যবহার ও অনুকম্পার প্রেক্ষিতে তাদের কোনো কোনো সন্তানকে অন্যদের ওপর বিশিষ্টতা দিয়ে থাকে। আর এ কারণেই যদি পিতা-মাতা তাকে দান-অনুদান এবং পারিতোষিক প্রদান করেন, তা হলে সেটা কখনো সঠিক হবে না। অর্থাৎ কারো সদ্ব্যবহার অথবা পূণ্যবান হওয়ার কারণে তার বিনিময়ে কিছু দেয়া জায়েয হবে না। কেননা, নেক কাজের পরিনাম ও ফলাফল আল্লাহর কাছেই রয়েছে। তাছাড়া কোনো সৎস্বভাব বিশিষ্ট সন্তানকে যদি অনুরূপ ভাবে অর্থাৎ তুলনামূলকভাবে বেশী দান করা হয়, তা হলে সে মনে মনে গর্বিত ও আত্মতুষ্ট না হয়ে পারে না এবং সে সব সময়ই তার একটি (বাড়তি) পজিশন আছে বলে ধরে নেবে, যার ফলে অন্যরা পিতা-মাতাকে ঘৃণার চোখে দেখতে শুরু করবে এবং তাদের ওপর জুলুম চালিয়ে যেতে থাকবে। অপর দিকে ভবিষ্যত সম্পর্কে আমরা আদৌ কিছু জানি না। এমনওতো হতে পারে যে, এখন যে অবস্থাটা কারো ব্যাপারে বিদ্যমান রয়েছে, তার আমুল পরিবর্তন হতে পারে। আর এ ভাবেই একজন অনুগত ও পুণ্যাত্মা আগামী দিনগুলোতে বিদ্রো্হী ও অত্যাচারী হয়ে যেতে পারে এবং একজন বিদ্রোহীও পুণ্যাত্মায় পরিণত হতে পারে। মানুষের অন্তরের বাগডোরতো আল্লাহর হাতেই নিবদ্ধ-তিনি যেদিকে চান সে দিকেই তা ঘুরাতে সক্ষম।

বোখারী এবং মুসলিম শরীফে আছে : নোমান বিন বশীর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তার পিতা বশীর ইবন সাদ তাকে একটি গোলাম দান করলেন। অতঃপর এই ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানানো হলো। তিনি বললেন: (হে, বশীর) তোমার প্রতিটি ছেলে কি এইরূপ পেয়েছে? তিনি বললেন: না। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : তা হলে তা ফেরত নাও।’

অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে তিনি বলেন, আল্লাহকে ভয় কর এবং সন্তান-সন্তুতির মধ্যে ইনসাফ কায়েম করতে চেষ্টা কর।” তাছাড়া এভাবেও বর্ণিত রয়েছে যে তিনি বলেছেন, আমি এ ব্যতীত সব বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি জুলুমের ব্যাপারে ব্যাপারে সাক্ষ্য হবো না।’

মোটকথা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তান-সন্তুতির মধ্যে কাউকে কারো ওপরে গুরুত্ব দানের বিষয়টিকে জুলুম হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। আর জুলুম তো হারাম। কিন্তু সন্তানদের মধ্যে যদি কারো কোনো প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত হয় এবং অন্যদের তা প্রয়োজন না হয়, যেমন ছেলেমেয়েদের মধ্যে কোনো একটি সন্তানের লেখাপড়ার তথা বিদ্যালয়ের উপকরণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় অথবা রোগের চিকিৎসা অথবা বিবাহ ইত্যাদির প্রয়োজন হয়, এমতাবস্থায় সে ব্যাপারে খরচ মেটানোর ব্যবস্থা করা আদৌ দোষণীয় নয়। কারণ এটা নিতান্ত প্রয়োজনের প্রেক্ষিতেই করা হয়ে থাকে। আর এরূপ ব্যয় মূলত: সন্তান-সন্ততির খোরপোষ তথা লালন-পালনের ব্যয় ভারের মধ্যেই গণ্য হবে।

যখন পিতা তার সন্তানকে শিক্ষা-দীক্ষা দান ও তার প্রতি যা কিছু ব্যয় করা দরকার তা করার মাধ্যমে তার উপর ন্যস্ত কর্তব্য পালন করবে, তখন তার সন্তান ও পিতা-মাতার প্রতি মার্জিত আচরণ করবে এবং তার যাবতীয় অধিকারকে সংরক্ষণ করবে। আর পিতা যদি এ ব্যাপারে ত্রুটি করেন তাহলে সন্তানের অবাধ্যতার শিকার হওয়ার জন্য সে উপযুক্ত হবেই। কেননা, এই অবস্থায় সন্তান তার পিতার অধিকার অস্বীকার করবে এবং তার অবাধ্য আচরনের দ্বারা পিতাকে অনুরূপ শাস্তি প্রদান করবে। কাজেই যেমন কর্ম তেমন ফল।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উসাইমিন রহ.
অনুবাদ : মো. আব্দুল মতিন

 

কেমন হওয়া চাই আপনার কোম্পানির লোগো

নতুন ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন? নিশ্চয়ই ভাবছেন লোগোর কথা। লোগো তো চাই-ই। কিন্তু কেমন হবে সেটা? কী করলে আপনার লোগোটি হবে এমন যে চোখের এক পলকে তা মনে করিয়ে দেবে আপনার প্রতিষ্ঠানকে?
মিল্টন গ্লাসার, কিংবদন্তী গ্রাফিক ডিজাইনার, তিনি সবচেয়ে বেশী পরিচিত তার “I Love New York” লোগোর কারণে। তিনি বলেন,লোগো হতে হবে সিম্পল। গ্রাফিক ডিজাইন ব্লগ ডিজাইন ইনফর্মারে তিনি বলেন, “You want to move the viewer in a perception so that when they first look at [the logo]…they get the idea, because that act between seeing and understanding is critical” গ্লাসারের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেখলে লোগোর থাকা চাই এই চার বৈশিষ্ট্য-
ইউনিক বা অনন্য
আপনার লোগোটি অবশ্যই আলাদা হতে হবে। মার্কেটে হাজারো লোগো আছে। তার মাঝেই এমন একটি লোগো হতে হবে আপনারটি যেন চোখে পড়ে সবার আগে এবং দেখলেই চেনা যায়। সাইটপয়েন্ট.কম এর সহ প্রতিষ্ঠাতা Matt Mickiewicz পরামর্শ দেন, যেসকল আইকন যেমন গ্লোব, এরো বা তীরচিহ্ন যেগুলো ইতিমধ্যে ব্যবহার করা হয়ে গেছে সেগুলো বাদ দিন প্রথমেই। গ্রাফিক্স ডিজাইনার ডেভিড এরে বলেন, কোম্পানি কি কাজ করে সেটা তুলে ধরা কিন্তু লোগোর কাজ নয়। “The Mercedes logo isn’t a car. The Virgin Atlantic logo isn’t an airplane. The Apple logo isn’t a computer,” তাই মনে করবেন না, আপনার কফি শপের লোগোতে কফি বিন দেখানো জরুরি। জরুরি হল লোগোর ভিন্নতা, অনন্যতা।
এডাপ্টেবল
একটি শক্তিশালী লোগো সহজেই টান্সলেট করা যায়, বিভিন্ন মিডিয়ামে ব্যবহার করা যায়। আপনি যে লোগোটি করেছেন সেটি কি বিজনেস কার্ডে যেমন মানিয়ে যাচ্ছে তেমনি মানিয়ে যাবে বিলবোর্ডেও? “Keeping the design simple allows for flexibility in size,” লিখেছেন এরি, “Ideally, your design should work at a minimum of around one inch without loss of detail”। মিকিউইজ আরও যোগ করেন, যখন একটি লোগো ছোট স্কেলে জায়গা হয় না তখন এটি ব্রান্ডের পরিচ্ছন্নতা এবং সুনামের জন্য হুমকী হয়ে দাঁড়ায়। আরও মাথায় রাখুন, লোগোটি কিন্তু সাদা-কালোতেও বদলানোর যোগ্য হতে হবে। নাহলে সবরকম প্রিন্টারে ভাল আসবে না। ওয়াটার মার্ক করতেও সমস্যা হবে।
সময়ের বাধাহীন
মিল্টন গ্লাসার “I Love New York” লোগোটি তৈরি করেন ১৯৭৫ সালে। আজ এত বছর পড়েও সেই লোগো শার্ট, টি শার্ট, গিফট আইটেম সহ কত কিছুতেই না ব্যবহার হয়ে আসছে। তিনি বলেন, “You look at the clean lines, the symmetry, the modernist structure, the neutrality behind it… and it really exposes the timeless quality”। আপনার লোগোটিও হতে হবে এমন। আধুনিক, নিরপেক্ষ, স্টাইলিশ, সহজ। যে কোন ভাবে ব্যবহারযোগ্য, মানানসই। কোন সময়ের গন্ডিতে বাধা পড়বে না সেটি।
যথাযথ
যে কোন মার্কেটিং বা বিজ্ঞাপণের দিকে যাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই নির্ধারণ করতে হবে আপনার টার্গেট কে বা কারা! লোগোটিকেও হতে হবে তেমন। আপনার কাস্টমার যেন লোগোটিকে াপন করে নেয়। কোম্পানির সংস্কৃতি, ক্লাস, মূল্যবোধ সবই প্রকাশ করে লোগো। রঙ এর ব্যপারে খেয়াল রাখুন। খেয়াল রাখুন উদ্দেশ্যের ব্যাপারেও। “Different colors are associated with different meanings in different cultures. It’s important to think about how the colors in your logo reflect your brand values and the services or products you sell” বলেন মিকিউইয।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

বিকেলের নাস্তায় রাখুন মজাদার ডিম পাকোড়া

বিকেলের চায়ের সাথে ভাজাভুজি কোন খাবার হলেও দারুন হয়। আর তা যদি হয় পাকোড়া তবে তো কোন কথা নেই! সাধারণত সবজি পাকোড়া, আলুর পাকোড়া তৈরি করা হয়। অনেকে আবার মাংসের পাকোড়া তৈরি করে। ডিম দিয়েও পাকোড়া তৈরি করা সম্ভব। কি, অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার কিছু নেই, ডিম দিয়ে তৈরি করতে পারেন দারুণ ডিমের পাকোড়া। যারা ডিমের গন্ধের জন্য ডিম খেতে পারছেন না, তারা এই খাবারটি খেতে পারেন।

উপকরণ:

  • ১০০ গ্রাম বেসন
  • ৩টি ডিম
  • ১ টেবিল চামচ মরিচ গুঁড়ো
  • ১ চা চামচ মৌরি
  • লবণ
  • ১/২ চা চামচ আদা রসুনের পেস্ট
  • ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা
  • তেল

প্রণালী:

১। প্রথমে ডিম সিদ্ধ করে নিন। এবার ডিমগুলো অর্ধেক করে কেটে নিন।

২। আরেকটি পাত্রে বেসন, মরিচ গুঁড়ো, লবণ, আদা রসুনের পেস্ট, বেকিং সোডা, মৌরি দিয়ে ভাল করে মেশান। তারপর এতে সামান্য পরিমাণ তেল দিয়ে আবার মেশান।

৩। এবার এতে পানি দিয়ে কিছুটা ঘন গোলা তৈরি করে নিন। গোলা যেন খুব বেশি পাতলা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

৪। সিদ্ধ ডিম বেসনের গোলার মধ্যে ডুবিয়ে গরম তেলে  দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে পাকোড়াগুলো ভাজুন।

৫। বাদামী রং হয়ে আসলে নামিয়ে ফেলুন।

৬। পাকোড়া অর্ধেক করে কেটে উপর গোলমরিচ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো ছিটিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ডিম পাকোড়া।

 

ফ্যাশনে ছোটরাও হোক অনন্যা…

দশ মাস দশ দিন বড় যত্নে মাতৃ গর্ভে পালন। মায়ের বড় আদরের ধন সে। কোনও অসুবিধা যাতে তার ছায়াও স্পর্শ করতে না পারে, তার জন্য সকলেই ব্যস্ত। ছোট্ট সোনাকে নিয়ে মাতোয়ারা বাড়ির সবাই। সদ্যজাত শিশুর চাই স্পেশাল কেয়ার। তাই আপনার ছোট্ট বেবির নিত্য প্রয়োজনের জন্য তৈরি করে ফেলুন নতুন ড্রেস। জেনে নিন, কী কী মজাদার জামাকাপড় নিজের হাতেই বানাতে পারেন। তাতে আপনার বেবিকে দেখাবে চমৎকার, আর আপনিও খুশি।

সে এতই ছোটো, কেনা জামাকাপড় তার গায়ে ফিট করে না। তাই নিজেই বানিয়ে ফেলুন ছোট পুচকিটার পোশাক। বাচ্চাদের জামার বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকতে হয়, যাতে কোনওরকম ইনফেকশন না হয়। সুতি ছাড়া অন্য কোনও ম্যাটিরিয়াল ব্যবহার করবেন না। সহজ সরল ডিজাইন বেছে নিন। ফিতে বা বোতাম দেওয়া জামাকাপড়ই বেশি ভালো। তাতে খুলতে পরতে সুবিধা হবে।

ওয়ান পিস আউটফিট

এই ধরনের জামাকাপড় ছোট বাচ্চাদের জন্য একদম পারফেক্ট। বার বার ন্যাপি পালটাতে এই জামাকাপড়ে সব থেকে সুবিধে।

শার্ট

সামনে বোতাম দেওয়া সুন্দর শার্টে আপনার ছোট্ট বেবিকে দিব্য মানাবে। শার্টের উপর পছন্দমতো ডিজাইন করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখুন, কাপড় যাতে বেশি মোটা না হয়। হালকা সুতির কাপড় বাচ্চার ত্বকের জন্য ভালো।

প্যান্ট

বাচ্চার প্যান্ট তৈরি করুন পছন্দমতো। তবে কোমরে ইলাস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো। তাতে বেবির নরম চামড়ায় আঘাত লাগতে পারে। বেশি টাইট করবেন না, তাতে খোলাতে পরাতে অসুবিধা হবে।

সোয়েটার

শীতে বাচ্চার জন্য বানিয়ে রাখতে পারেন রংবেরঙের সোয়েটার। তবে, সোয়েটার মাথা গলিয়ে পরালে বাচ্চারা খুব বিরক্ত বোধ হবে। কান্নাকাটি করতে থাকবে। তাই সোয়েটার বানানোর সময় অবশ্যই সামনের দিকে রাখুন।

টুপি

উল দিয়ে বানাতে পারেন টুপিও। তবে খেয়াল রাখবেন, ম্যাটিরিয়ালটি যাতে আরামদায়ক হয়।

মোজা

এত ছোট বাচ্চাকে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচাতে মোজা মাস্ট। পায়ের থেকে সামান্য বড় সাইজের মোজা বানিয়ে ফেলুন। যাতে ছোট্ট বেবিটার ছোট্ট পা দুটি যথেষ্ট জায়গা পায় নড়াচড়া করতে।

কাঁথা

সুতির কাপড়ে বানাতে পারেন রকমারি কাঁথা। ডিজাইন করতে পারেন পছন্দমতো। বাচ্চার নাম, ফুল বা টেডির ডিজাইনও করতে পারেন।

টুপি

আপনার বাচ্চাকে ফ্যাশনেবল লুকস্ দিতে তৈরি করতে পারেন মজাদার টুপি। ঘরে-বাইরে, দু-জায়গাতেই ব্যবহার করতে পারেন এই টুপি।

এক নজরে কয়েকটি সতর্কতা

সাবধানে তৈরি করতে হবে বাচ্চার জামাকাপড়। দেখবেন যাতে তা বেশি টাইট না হয়। বিশেষ করে গলায় যেন জামা শক্ত করে বসে না থাকে।  একটু ঢিলেঢালা জামায় বাচ্চা ফ্রিভাবে শ্বাস নিতে পারবে।

বোতাম, ফিতে বা অন্যান্য অ্যাক্সেসরিজ দেখে শুনে ব্যবহার করবেন। দেখে নিন, এগুলোর কারণে বাচ্চার যেন কোনও ক্ষতি না হয়।

 

গৃহকর্মী নির্যাতন হচ্ছেই

১১ বছর বয়সী গৃহকর্মী আদুরি। নাম আদুরি হলেও ওর ভাগ্যে কখনো আদর জোটেনি। বরং কাজ করতে এসে নানা ধরনের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আদুরিকে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হয়নি কখনো। মুখে আগুনের ছ্যাঁকা দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইস্ত্রি দিয়েও গায়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান ব্লেড দিয়ে সারা শরীর কেটে দিয়েছেন। নানা ধরনের বীভৎস নির্যাতন করেও ক্ষান্ত হননি তিনি। একদিন মারতে মারতে আদুরিকে মৃত ভেবে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়। রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএস এলাকার একটি ডাস্টবিন থেকে অর্ধমৃত অবস্থায় পাওয়া যায় আদুরিকে। এরপর হাসপাতালে নিলে দেখা যায়, লিকলিকে শরীরের আদুরির সারা গায়ে নির্যাতনের চিহ্ন। শরীরজুড়ে দগদগে ঘা। মাথার হাড়ে ফাটল। হাতে ব্যান্ডেজ। সূত্র: প্রথম আলো

পরিবার-নিজস্ব পরিবেশ ছেড়ে বেঁচে থাকার তাগিদে বহু শিশু ও নারী গৃহকর্মীর কাজ করেন। রাতদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় গৃহকর্ত্রীর মন জয় করতে। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই গৃহকর্মীদের ভাগ্যে জোটে নির্যাতন। কাজ একটু এদিক-সেদিক হলেই মারধর থেকে শুরু করে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা, ধারালো ছুরি-ব্লেডের আঁচড় খেতে হয়। অনেকে আবার গৃহকর্মীকে ঠিকমতো খাবারও দেন না। এমনকি গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী দুজনে মিলেই গৃহকর্মীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালান। এমনকি গৃহকর্মী হত্যার ঘটনাও কম ঘটে না।

বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে গত পাঁচ বছরে ১৮২ জন নির্যাতিত গৃহকর্মীর মৃত্যু ঘটেছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৪৩ জন। এর মধ্যে ২০১৫ সালে মোট ৭৮ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দুমুঠো খাবার আর পরিবারের খরচ জোগাতে নীলফামারী থেকে রংপুরে আসে গৃহকর্মী রেশমা (ছদ্মনাম)। ১২ বছর বয়সে যখন স্কুলে থাকার কথা, তখন কাজ নেয় রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার এক সরকারি কর্মকর্তার বাসায়। কিন্তু রেশমার সে বাসায় কাজ করা হয়ে ওঠেনি। পরিবারকেও কোনো সাহায্য করা হয়নি। বরং তাকে আশ্রয় নিতে হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে। কারণ, গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার প্রথম দিন রাতেই গৃহকর্তা শিশুটির ওপর যৌন নির্যাতন চালান। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায় শিশুটি। সূত্র: প্রথম আলো

গৃহকর্মী নির্যাতনের এ রকম হাজারো উদাহরণ আছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির ‘বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে গৃহকর্মীর ওপর নির্যাতনের ঘটনা কমেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে মোট ৪৮ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৬ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ২০১৪ সালে সেখানে ১০৮ গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। অর্থাৎ ২০১৪ সালের তুলনায় গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা ৫৬ শতাংশ কমেছে।

এ বিষয়ে বিলসের মহাসচিব নজরুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, গৃহকর্মীর ওপর নির্যাতন হচ্ছেই। কারণ, গৃহকর্মী শ্রমিক হলেও তাঁদের শ্রমিক হিসেবে গণ্য করা হয় না। ফলে তাঁরা শ্রমিকের কোনো অধিকারই ভোগ করতে পারেন না। তাঁদের কোনো কর্মঘণ্টা নেই। ছুটি নেই। ঘুমানোর জায়গা নেই। ঠিকমতো বেতন পান না। আটকে রাখা হয়। আসলে তাঁরা খুবই মানবেতর জীবন যাপন করেন। এককথায় তাঁদের কর্মপরিবেশ যেমন অস্বাস্থ্যকর, তেমনি অনিরাপদ। ফলে কাজ করতে এসে তাঁরা শারীরিক নির্যাতন থেকে শুরু করে হত্যার শিকার পর্যন্ত হন।

সরকার ২০১৫ সালে গৃহকর্মীদের জন্য ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা’ অনুমোদন করেছে। এতে গৃহকর্ম শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। গৃহকর্মীরা বিশ্রামসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও পাবেন। গৃহকর্মীরা সবেতন চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছাড়াও অন্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন। শ্রম আইন অনুসারে, ১৪ বছরের কম বয়সীদের গৃহকর্মী নিয়োগ প্রদানে বিধিনিষেধ মানতে হবে। গৃহকর্মীদের শ্রমঘণ্টা এবং বেতন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে।

এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, শুধু আইন করলেই হবে না, আইনের সঠিক প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন থাকতে হবে। গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে।

নারী নির্যাতন প্রতিরোধে এবং শিশু সুরক্ষায় সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও গৃহকর্মীর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতার দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। বরং দিনকে দিন ভয়াবহতা ও নৃশংসতা বাড়ছে। এর কারণ হিসেবে নারীনেত্রী মালেকা বানু বলেন, সমাজের নেতিবাচক মানসিকতা গৃহকর্মীর ওপর সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। গৃহকর্মীর ওপর নির্যাতন কমাতে তাই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। পাশাপাশি একটা আনুষ্ঠানিক নিয়মের মধ্য দিয়ে তাঁদের কাজে নিয়োগ দিতে হবে। শ্রমিক হিসেবে তাঁদের সব ধরনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

 

মেঘের রাজ্যে শুভ-ফারিয়ার শুটিং

ন্দরবানের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন পাহাড়গুলোর একটি ‘পিক সিক্সটি নাইন’। সেই পাহাড়টির চূড়ায় চলছে নির্মাতা জাকির হোসেন রাজুর চলচ্চিত্র ‘প্রেমী ও প্রেমী’র শুটিং। আজ সকাল থেকে শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন আরিফিন শুভ ও নুসরাত ফারিয়া। কয়েক ঘন্টার জার্নি শেষে সমতল থেকে পাহাড়ের চূড়ায় উঠেছেন তারা। সেখানে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানালেন আরিফিন শুভ, পাহাড়ের চারপাশাটা খুব সুন্দর। মেঘ হাতের পাশ দিয়েই উড়ে যাচ্ছে। এখানে আরও নয়দিনের মতো শুটিং করবো আমরা।’

ছবিটিতে নিজেকে নতুন রূপে উপস্থাপন করতে নিয়মিত জিম করেছেন শুভ। লুকেও বেশ পরিবর্তন এনেছেন। ইতিমধ্যেই ছবিটির প্রথম লটের শুটিং হয়েছে এফডিসিতে। বান্দরবানে শুটিং শেষে শিগগিরই দেশের বাইরে গানের শুটিং হবে।

ঈদের আগেই কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে শুভ-জলির চলচ্চিত্র ‘নিয়তি’। ছবিটি ওপার বাংলায় বেশ সাড়া ফেলেছে। শিগগিরই ছবিটি বাংলাদেশে মুক্তি পাবে। এছাড়া ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবির কাজ শেষ করেছেন।

অন্যদিকে নুসরাত ফারিয়া জিৎয়ের সঙ্গে জুটি বেধে অভিনয় করেছেন ‘বাদশা দ্যা ডন’। ছবিটি দেশজুড়ে চলছে।

 

কবরস্থানে গিয়ে কি কি কাজ করলে কবরপুজা হয়?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তার সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে তাকে আহ্বান করে, আর ঐ অবস্থায় (ঐ কাজ থেকে তাওবা না করে) মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪৯৭।]

মৃত ওলী-আউলিয়া মানুষের অভাব পূরণ করেন, বিপদাপদ দূর করেন, তাঁদের অসীলায় সাহায্য প্রার্থনা ও ফরিয়াদ করা যাবে ইত্যাকার কথা বিশ্বাস করা শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “তোমার রব চুড়ান্ত ফয়সালা দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করবে না”। [সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত: ২৩]

অনুরূপভাবে শাফাআতের নিমিত্তে কিংবা বালা-মুসীবত থেকে মুক্তির লক্ষ্যে মৃত-নবী-ওলী প্রমুখের নিকট দো‘আ করাও শির্ক। আল্লাহ তাআলা বলেন, “বল তো কে নিঃসহায়ের আহ্বানে সাড়া দেন যখন সে তাঁকে আহ্বান জানায় এবং দুঃখ-কষ্ট দূর করেন আর পৃথিবীতে তোমাদেরকে পূর্ববর্তীদের স্থলাভিষিক্ত করেন? আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে? [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৬২]

অনেকেই উঠতে, বসতে বিপদাপদে পীর মুরশিদ, ওলী-আউলিয়া, নবী-রাসূল ইত্যাকার মহাজনদের নাম নেওয়া অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছে। যখনই তারা কোনো বিপদে বা কষ্টে বা সংকটে পড়ে তখনই বলে ইয়া মুহাম্মাদ, ইয়া আলী, ইয়া হুসাইন, ইয়া বাদাভী, ইয়া জীলানী, ইয়া শাযেলী, ইয়া রিফাঈ। কেউ যদি ডাকে ‘আইদারূসকে তো অন্যজন ডাকে মা যায়নাবকে, আরেকজন ডাকে ইবন উলওয়ানকে। অথচ আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ ব্যতীত আর যাদেরকে তোমরা ডাক তারা তোমাদেরই মত দাস”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৯৪]

কিছু কবরপূজারী আছে যারা কবরকে তাওয়াফ করে, কবরগাত্র চুম্বন করে, কবরে হাত বুলায়, লাল শালুতে মাথা ঠেকিয়ে পড়ে থাকে, কবরের মাটি তাদের গা-গতরে মাখে, কবরকে সাজদাহ করে, তার সামনে মিনতিভরে দাঁড়ায়, নিজের উদ্দেশ্য ও অভাবের কথা তুলে ধরে। সুস্থতা কামনা করে, সন্তান চায় অথবা প্রয়োজনাদি পূরণ কামনা করে। অনেক সময় কবরে শায়িত ব্যক্তিকে ডেকে বলে, ‘বাবা হুযুর, আমি আপনার হুযূরে অনেক দূর থেকে হাযির হয়েছি। কাজেই আপনি আমাকে নিরাশ করবেন না’। অথচ আল্লাহ বলেন, “তাদের থেকে অধিকতর দিক ভ্রান্ত আর কে আছে, যারা আল্লাহ ব্যতীত এমন সব উপাস্যকে ডাকে যারা কিয়ামত পর্যন্তও তাদের ডাকে সাড়া দেবে না। অধিকন্তু তারা ওদের ডাকাডাকি সম্বন্ধে কোনো খবর রাখে না।” [সূরা আল-আহক্বাফ, আয়াত: ৫]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তার সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে তাকে আহ্বান করে, আর ঐ অবস্থায় (ঐ কাজ থেকে তাওবা না করে) মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪৯৭।]

কবর পূজারীরা অনেকেই কবরের পাশে মাথা মূণ্ডন করে। তারা অনেকে ‘মাযার যিয়ারতের নিয়মাবলী’ নামের বই সাথে রাখে। এসব মাযার বলতে তারা ওলী আউলিয়া বা সাধু-সন্তানদের কবরকে বুঝে থাকে। অনেকের আবার বিশ্বাস, ওলী আউলিয়াগণ সৃষ্টিজগতের ওপর প্রভাব খাটিয়ে থাকেন, তাঁরা ক্ষতিও করেন; উপকারও করেন। অথচ আল্লাহ বলেন, “আর যদি আপনার রব্ব আপনাকে কোনো অমঙ্গলের স্পর্শে আনেন, তবে তিনি ব্যতীত অন্য কেউ সেটার বিমোচনকারী নেই। আর যদি তিনি আপনার কোনো মঙ্গল করতে চান, তাহলে তাঁর অনুগ্রহকে তিনি ব্যতীত রূখবারও কেউ নেই”। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ১০৭]

একইভাবে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে মান্নত করাও শির্ক। মাযার ও দরগার নামে মোমবাতি, আগরবাতি মান্নত করে অনেকেই এরূপ শির্কে জড়িয়ে পড়েন।

মূল : শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
অনুবাদক : মু. সাইফুল ইসলাম
সম্পাদক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
গ্রন্থনায় : ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

সফল হতে চাইলে ভুলেও যা করবেন না

সফলতার পেছনে দৌড়ালেই সফল হওয়া যায় না। সফল হতে হলে অনেক কিছু করতে হয় আবার বেশ কিছু জিনিস এড়িয়ে চলতে হয়। যে বিষয়গুলো সফলতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।

সফল হতে চাইলে যে কাজগুলো করবেন না, তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে আইএনসি ওয়েবসাইটে। আপনি চাইলে এই পরামর্শগুলো একবার দেখে নিতে পারেন।

সবকিছু সঠিক হবে এটা চিন্তা করা বন্ধ করুন

আমরা যখন কোনো কাজ করি, তখন ধরেই নেই যে সেটা আমাদের নিজেদের মনমতো হবে। যা মনে মনে চাচ্ছি সেটাই হোক, এমনটাই আশা করি। আর সেটা যখন না হয়, তখন বিষণ্ণ হয়ে পড়ি। অনেক বেশি হতাশা কাজ করে, যা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে নষ্ট করে দেয়। তাই কখনোই এই বাড়তি চাপ নেবেন না। জীবনে সবকিছু পারফেক্ট হয় না। একটাতে সফল না হলে আরেকটাতে হবেন। এই বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যান।

মনের বিরুদ্ধে কিছু করবেন না

অনেক সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধেই আমরা কাজ করি। যা আমাদের সফলতার পথের প্রধান বাধা। ‘না’ বলতে শিখুন। সফল হতে চাইলে যে বিষয়ে মন সায় দেবে না সেটা ভুলেও ‘হ্যাঁ’ বলবেন না।

নিজের দুর্বলতাকে পাত্তা দেবেন না

কোনো মানুষই পৃথিবীতে পারফেক্ট না। সবারই কিছু না কিছু দুর্বলতা থাকে। আর আপনি যদি নিজের দুর্বলতাকে বড় করে দেখেন আর ভাবেন এটা আপনাকে দিয়ে সম্ভব না তাহলে কখনোই সফল হতে পারবেন না। নিজের দুর্বলতাকে নিজের শক্তি বানান। দেখবেন, সহজেই সফলতাকে আপনাকে ধরা দেবে।

অন্যকে দোষ দেওয়া বন্ধ করুন

অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়ে নিজেকে সঠিক প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন না। আপনি যখন সফল হন তখন ভাবেন, সেটা নিজের যোগ্যতায় হয়েছেন। আর সফল না হলে চট করেই অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়ে দেবেন? এটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ না।

নেতিবাচক চিন্তাগুলো ঝেড়ে ফেলুন

নিজের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে মনের সব নেতিবাচক চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। আমি পারব না, আমাকে দিয়ে হবে না, আমার চেয়ে অন্যরা ভালো পারে- এ ধরনের চিন্তা যতদিন ধরে রাখবেন, ততদিন সফলতা আপনার থেকে অনেক দূরে থাকবে।

অতীতকে জোর করে ধরে রাখবেন না

অতীতে যা ঘটে গেছে, সেটার জন্য নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে লাভ কী? অতীতে বসবাস করলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দুটোই ডোবাবেন। তাই সফল হতে চাইলে অতীতকে চিরবিদায় জানান।

সবাইকে খুশি করার চিন্তা বাদ দিন

একজন মানুষ কখনোই একসঙ্গে সবাইকে খুশি করতে পারে না। তাই অযথা এর পেছনে দৌড়ে কোনো লাভ নেই। নিজের ভালোটা দেওয়ার চেষ্টা করুন। তাতে কেউ খুশি হবে, কেউ হবে না। এটা মনে নিতে শিখুন।

নেতিবাচক চিন্তার মানুষদের কাছ থেকে দূরে থাকুন

আমাদের জীবনে অন্যের কথার বেশ প্রভাব পড়ে। নিজের অজান্তেই সেই কথাগুলো আমাদের সফলতাকে নষ্ট করে। তাই এসব নেতিবাচক চিন্তার মানুষদের কাছ থেকে যতটা পারুন দূরে থাকুন।

কখনোই নিঃসঙ্গ থাকবেন না

একাকিত্ব মানুষের মনের উদ্যমতাকে নষ্ট করে দেয়। কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই একা না থাকার চেষ্টা করুন। পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গ আপনার মনকে চাঙ্গা রাখবে, আপনার কার্যক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।

 

খুশকি সমস্যার দারুণ সমাধান

মাথার ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক বা তৈলাক্ত হলে খুশকি হতে পারে। এমনি মানসিক দুশ্চিন্তার কারণেও খুশকি হয়। শুষ্ক আবহাওয়া বা ধুলাবালি খুশকির অন্যতম কারণ। যাদের প্রায় সারাবছর খুশকির সমস্যা আছে তাদের প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতেই হয়। চুল ও মাথার ত্বকের সামান্য যত্নে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। জেনে নিন খুশকি দূর করার কিছু উপায়।

– পুরনো তেঁতুল পানিতে গুলে চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগাতে হবে। ১০ থেকে ১২ মিনিট অপেক্ষার পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুদিন তেঁতুল গোলানো পানি মাথায় দিলে খুশকি এমনিতেই দূর হবে। একই সঙ্গে মাথার চুলকানিও কমে যাবে।

– টকদই খুশকি দূর করতে ও চুল ঝলমলে করতে খুবই কার্যকরী। ৬ টেবিল চামচ টকদই খুব ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ মেহেদি বাটা ভালোভাবে মেশান। মিশ্রণটি চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে লাগিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর চুল ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলেই যথেষ্ট।

– একটি ডিমের সাদা অংশ ও ৪ টেবিল চামচ টকদই খুব ভালোভাবে ফেটিয়ে নিতে হবে। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস মিশিয়ে মাথার ত্বকসহ পুরো চুলে লাগাতে হবে। ২০ মিনিট অপেক্ষা করে চুল ধুয়ে ফেলুন।

– মেথি চুলের খুবই উপকারী একটা জিনিস। নারকেল তেল গরম করে এতে মেথি গুঁড়া মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি পুরো চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টার পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য সপ্তাহে ৩ দিন এটি ব্যবহার করুন।

 

বৃষ্টির দিনে ভাপা ইলিশ

মাছের যেকোনো পদের সঙ্গে ভাপা ইলিশের স্বাদ মেলানো সম্ভব নয়। তৃপ্তিদায়ক এ খাবার অতিথি আপ্যায়ন বা নিজেদের খাওয়াকে দারুণ উপভোগ্য করে তোলে। বৃষ্টিমোড়া দিন হলে তো ইলিশের মিতালী চাই-ই। তাই শ্রাবণ ঘেরা এই দিন খাবার তালিকায় থাকতে পারে ভাপা ইলিশ। তার আগে এক নজরে দেখে নিতে পারেন ভাপা ইলিশের সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

১টি মাঝারি আকারের ইলিশ মাছ, আধা কাপ পেঁয়াজ কুচি, ৩ টেবিল-চামচ পেঁয়াজ বেরেস্তা কুচি, ১ চা-চামচ জিরা গুঁড়া, ২ চা-চামচ হলুদ গুঁড়া, আধা চা-চামচ লাল মরিচের গুঁড়া, ১ টেবিল-চামচ সরিষা কুচি, ৫টি কাঁচা মরিচ ও ১ টেবিল-চামচ লবণ।

যেভাবে করবেন

মাছের টুকরোগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। প্রেশার কুকারে ১ টেবিল-চামচ লবণ ও পানি দিন। এবার পাতলা কাপড় দিয়ে মাছটি প্রেশার কুকারে দেওয়া পানির আঁচে ৯০ মিনিট রাখুন। এবার একটি ফ্রাই প্যানে তেল গরম করে কুচি করা পেঁয়াজ বাদামি রঙ হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। কাঁচা মরিচ বাদ দিয়ে বাকি সব মসলা ও লবণ দিতে হবে। একটু পানি মিশিয়ে কিছুক্ষণ আঁচে রাখার পর কাঁচা মরিচ দিয়ে নামিয়ে নিন। এবার একটি প্লেটে মাছের টুকরাগুলো রেখে চারপাশে রান্না করা মসলা দিয়ে দিন। সালাদ ও ভাজা আলুর সঙ্গে পরিবেশন করুন অসাধারণ স্বাদের ভাপা ইলিশ।

 

মালালা যেভাবে কোটিপতি

কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন কে না দেখে। অনেকেই সেই স্বপ্ন দেখতে দেখতে বুড়ো হয়ে যান। তবুও অধরায় থেকে যায় কোটিপতির জীবন।

তবে কেউ কেউ আবার মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পান। কোটিপতি কী, সেটা বুঝার বয়স হয়ে উঠার আগেই হয়ে উঠেন কোটিপতি। এই যেমন মালালা ইউসুফজাই। বয়স মাত্র ১৮ বছর, অথচ এর মধ্যেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন পাকিস্তানের এই কিশোরী। সেটিও আবার স্রেফ বই বিক্রি আর বক্তৃতার পয়সায়!

নোবেল বিজয়ী মালালা মাত্র তিন বছরে এত বেশি সম্পদ আয় করেছেন যে ইচ্ছে করলেই তাকে মিলিওনিয়ারদের তালিকাভুক্ত করা যায়। এ অর্থের বেশিরভাগই এসেছে তার জীবনীগ্রন্থ ‘আই অ্যাম মালালা’ বিক্রি থেকে। এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য ডেইলি মেইল।

ডেইলি মেইল জানায়, সালার্জাই লিমিটেড কোম্পানি মালালার জীবনীগ্রন্থের স্বত্বটি দেখভাল করে। বই বিক্রি থেকে তাদের মোট মুনাফা এসেছে ১১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। এই কোম্পানিতে মালালা ও তার বাবা-মায়ের যৌথ মালিকানা রয়েছে। পত্রিকাটি জানায়, গত বছর আগস্ট মাসে ব্যাংকে ওই কোম্পানির অর্থের পরিমাণ ছিল ২২ কোটি ৭৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

সালার্জাই কোম্পানিটি গঠিত হয়েছে ২০১৩ সালে। মালালার আত্মজীবনীমূলক বইটির স্বত্ব ছাড়াও এই কোম্পানিটি তার দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘মালালা ফান্ড’ এর তদারকি করে থাকে। গোটা বিশ্বের মেয়েদের নিরাপদ শিক্ষা নিশ্চিত করতেই এই ফান্ড গঠন করা হয়েছে

 

তিন বছর আগে প্রকাশিত মালালার জীবনীগ্রন্থ ‘আই অ্যাম মালালা’ সারা বিশ্বে বিক্রি হয়েছে ২৮ লাখ ৭ হাজার কপি। এই জীবনীগ্রন্থ থেকেই মোট ২০ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার টাকা

শুধু বই বিক্রিই তার আয়ের একমাত্র উৎস নয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েও তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করেন। ২০১৪ সালে সবচাইতে কমবয়সি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পাওয়ার পর তার সম্মানি আরো বেড়েছে। এক একটি বক্তৃতা বাবদ তার আয় ১ কোটি ১৮ লাখ ৯ হাজার ২৬০ টাকা। সমসাময়িক কোনো নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিকে বক্তব্য রেখে এত বেশি আয় করতে দেখা যায়নি।

পাকিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক সাধারণ মেয়ে থেকে মালালার ধনকুবের হয়ে ওঠার কাহিনী যেন রূপকথাকেও হার মানায়। ২০১২ সালে তালেবান হামলায় গুরুতর আহত হন খাইবার পাখতুনখাওয়া এলাকার মেয়ে মালালা। উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৪ বছরের মালালাকে তখন লন্ডন নিয়ে আসা হয়। সেখানকার এক হাসপাতালে মাথায় অস্ত্রোপচারের পর সেরে ওঠেন মালালা।

এরপর আর মালালাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৪ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। বর্তমানে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। লেখাপড়া করছেন লন্ডনের এডজবাস্টোন হাই স্কুলে।

 

মন দিতে চাই পড়াশোনায়

আমি ঈদের আগে ভারতের কলকাতা আর মুম্বাইয়ে ছিলাম। ঈদের দিন দুপুরে ঢাকায় ফিরেছি। শুরুতে ভেবেছিলাম কলকাতায় ছবিটি দেখব, কিন্তু ব্যস্ততার কারণে সময় বের করতে পারিনি। ঢাকায় এসে ঈদের আট দিনের মাথায় যমুনা ব্লকবাস্টারে বোনের সঙ্গে চুপিসারে ছবিটি দেখেছি। দর্শকদের প্রতিক্রিয়া দেখে মন ভরে গেছে। আমার আর জিতের ‘বাদশা’ ছবিটির সঙ্গে কলকাতায় দেবের ‘কেলোর কীর্তি’ মুক্তি পেয়েছে। যে খবর আমার কাছে এসেছে, তাতে কলকাতায় ‘বাদশা’ বাজিমাত করেছে। সুপার-ডুপার হিট। আমি তো আসমানে উড়ছি। সবাই এও বলেছেন, তাঁরা একটা পরিপূর্ণ সিনেমা দেখেছেন। বাংলাদেশে অবশ্য ‘শিকারি’ ছবিটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহটা বেশি দেখা গেছে। এই ছবিতে শাকিব খানের লুক ছিল একেবারেই অন্য রকম। এমনিতে তিনি এ দেশের জনপ্রিয় হিরো। হিরোর কারণে সবাই হলে ছুটেছেন।
আপনার বোন ছবিটি দেখে কী বলেছেন?
সে তো শুধু আমার ভুল ধরে। কেন সংলাপটা এভাবে বললাম, কেন পোশাকটা এভাবে পরলাম—এ ধরনের আরকি। আমিও আমার পরিবারের সবার মতামতকে খুব গুরুত্ব দিই।
এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া অন্য ছবিগুলোর নায়িকারা হলেন অপু বিশ্বাস, তিশা ও ভারতের শ্রাবন্তী। তাঁরা কেমন করেছেন?
আমি তো তাঁদের ছবি দেখার সময়টা পাইনি। নিঃসন্দেহে তাঁরা অনেক ভালো করবেন। যাঁদের নাম আপনি বললেন, তাঁদের সবারই অভিনয় ক্যারিয়ার এক দশকের কম হবে না। আর আমার হচ্ছে মাত্র নয় মাস। ভাবছি ‘প্রেমী ও প্রেমী’র শুটিং থেকে ফিরেই বাকি তিনটি সিনেমা দেখে নেব।
‘প্রেমী ও প্রেমী’ সিনেমার পর নতুন কাজ কি শুরু করবেন?
আজ (শনিবার) বিকেলে আমরা বান্দরবান যাচ্ছি। ১২ দিন সেখানে থাকব। যেভাবে কাজ করছি আমরা, তাতে আগামী আগস্টে ‘প্রেমী ও প্রেমী’ সিনেমার পুরো কাজ শেষ হয়ে যাবে। এরপর তিন মাসের ছুটিতে যাচ্ছি।
কেন ছুটিতে যাচ্ছেন?
টানা কাজের কারণে আমার শারীরিক ফিটনেসের পাশাপাশি পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে। মন দিতে চাই পড়াশোনায়। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি বিবিএ সপ্তম সেমিস্টার পর্যন্ত শেষ করেছি।
সাক্ষাৎকার: মনজুর কাদের

 

কোনটা কবর জিয়ারত এবং কোনটা কবরপূজা?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তার সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে তাকে আহ্বান করে, আর ঐ অবস্থায় (ঐ কাজ থেকে তাওবা না করে) মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

মৃত ওলী-আউলিয়া মানুষের অভাব পূরণ করেন, বিপদাপদ দূর করেন, তাঁদের অসীলায় সাহায্য প্রার্থনা ও ফরিয়াদ করা যাবে ইত্যাকার কথা বিশ্বাস করা শিরক। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, তোমার রব চুড়ান্ত ফয়সালা দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করবে না। [সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত: ২৩]

অনুরূপভাবে শাফাআতের নিমিত্তে কিংবা বালা-মুসীবত থেকে মুক্তির লক্ষ্যে মৃত-নবী-ওলী প্রমুখের নিকট দোয়া করাও শিরক। আল্লাহ তাআলা বলেন, বল তো কে নিঃসহায়ের আহ্বানে সাড়া দেন যখন সে তাঁকে আহ্বান জানায় এবং দুঃখ-কষ্ট দূর করেন আর পৃথিবীতে তোমাদেরকে পূর্ববর্তীদের স্থলাভিষিক্ত করেন? আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে? [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৬২]

অনেকেই উঠতে, বসতে বিপদাপদে পীর মুরশিদ, ওলী-আউলিয়া, নবী-রাসূল ইত্যাকার মহাজনদের নাম নেওয়া অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছে। যখনই তারা কোনো বিপদে বা কষ্টে বা সংকটে পড়ে তখনই বলে ইয়া মুহাম্মাদ, ইয়া আলী, ইয়া হুসাইন, ইয়া বাদাভী, ইয়া জীলানী, ইয়া শাযেলী, ইয়া রিফাঈ। কেউ যদি ডাকে ‘আইদারূসকে তো অন্যজন ডাকে মা যায়নাবকে, আরেকজন ডাকে ইবন উলওয়ানকে। অথচ আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ ব্যতীত আর যাদেরকে তোমরা ডাক তারা তোমাদেরই মত দাস”। [সূরা আল-আরাফ, আয়াত: ১৯৪]

কিছু কবরপূজারী আছে যারা কবরকে তাওয়াফ করে, কবরগাত্র চুম্বন করে, কবরে হাত বুলায়, লাল শালুতে মাথা ঠেকিয়ে পড়ে থাকে, কবরের মাটি তাদের গা-গতরে মাখে, কবরকে সাজদাহ করে, তার সামনে মিনতিভরে দাঁড়ায়, নিজের উদ্দেশ্য ও অভাবের কথা তুলে ধরে। সুস্থতা কামনা করে, সন্তান চায় অথবা প্রয়োজনাদি পূরণ কামনা করে। অনেক সময় কবরে শায়িত ব্যক্তিকে ডেকে বলে, ‘বাবা হুযুর, আমি আপনার হুযূরে অনেক দূর থেকে হাযির হয়েছি। কাজেই আপনি আমাকে নিরাশ করবেন না’। অথচ আল্লাহ বলেন, তাদের থেকে অধিকতর দিক ভ্রান্ত আর কে আছে, যারা আল্লাহ ব্যতীত এমন সব উপাস্যকে ডাকে যারা কিয়ামত পর্যন্তও তাদের ডাকে সাড়া দেবে না। অধিকন্তু তারা ওদের ডাকাডাকি সম্বন্ধে কোনো খবর রাখে না। [সূরা আল-আহক্বাফ, আয়াত: ৫]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তার সমকক্ষ বা অংশীদার মনে করে তাকে আহ্বান করে, আর ঐ অবস্থায় (ঐ কাজ থেকে তাওবা না করে) মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

কবর পূজারীরা অনেকেই কবরের পাশে মাথা মূণ্ডন করে। তারা অনেকে ‘মাযার যিয়ারতের নিয়মাবলী’ নামের বই সাথে রাখে। এসব মাযার বলতে তারা ওলী আউলিয়া বা সাধু-সন্তানদের কবরকে বুঝে থাকে। অনেকের আবার বিশ্বাস, ওলী আউলিয়াগণ সৃষ্টিজগতের ওপর প্রভাব খাটিয়ে থাকেন, তাঁরা ক্ষতিও করেন; উপকারও করেন। অথচ আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি আপনার রব্ব আপনাকে কোনো অমঙ্গলের স্পর্শে আনেন, তবে তিনি ব্যতীত অন্য কেউ সেটার বিমোচনকারী নেই। আর যদি তিনি আপনার কোনো মঙ্গল করতে চান, তাহলে তাঁর অনুগ্রহকে তিনি ব্যতীত রূখবারও কেউ নেই। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ১০৭]

একইভাবে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে মান্নত করাও শির্ক। মাযার ও দরগার নামে মোমবাতি, আগরবাতি মান্নত করে অনেকেই এরূপ শিরকে জড়িয়ে পড়েন।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

কলসিন্দুরে আলো জ্বলার পর

আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল ছোট্ট রায়হান মিয়া। সাবিনাদের বাড়ি খুঁজছি এমনটা বুঝেই এগিয়ে এল সে। খালি গা, পরনে হাফপ্যান্ট। ‘আপনারা এইহান দিয়া আইছুন ক্যা! রাস্তা তো পিছনে!’ পথ চেনার সুবিধার্থে রায়হানকে মোটরসাইকেলে তুলে নেওয়া হলো। সরু, কাদাময় রাস্তা ধরে কিছুদূর গিয়ে থামাতে হলো মোটরসাইকেল। এবার হাঁটাপথ। রায়হান বলল, ‘ওই যে, ওই মুহে।’ ওর কথায় ভরসা না পেয়ে অবশেষে পথচারীর দ্বারস্থ হলাম। তিনি উল্টো প্রশ্ন করলেন, ‘কোন সাবিনা? ফুটবল খেলে যে…?’ আমরা বললাম, ‘হ্যাঁ, ফুটবলার সাবিনার বাড়ি খুঁজছি।’

আলোকিত হয়েছে তহুরাদের ঘরও। ছবি: জগলুল পাশাঢাকা থেকে ময়মনসিংহ। সেখান থেকে ধোবাউড়ার কলসিন্দুর। তারপর রানীপুর গ্রাম। সেই ভোরে শুরু হওয়া ভ্রমণ বিকেলে এসে শেষ হলো বুঝি। মাথা নাড়তেই সেই পথচারী দেখিয়ে দিলেন সেদিকেই, যেদিকে রায়হান এগিয়েছে খানিকটা। পুকুর পাড়, খেতের আইল পেরিয়ে টিনের চালা ও বেড়ায় ঘেরা সাবিনাদের বাড়িতে পৌঁছার আগেই থামতে হলো। মাটির বাড়ির দেয়ালে একটা বৈদ্যুতিক মিটার। অন্য কোথাও হলে এই বস্তুতে বিশেষত্ব খুঁজে পাওয়ার কোনো কারণ ছিল না। কিন্তু কলসিন্দুরে বৈদ্যুতিক মিটার মানে অন্য রকম ব্যাপার। তাই সেটা দেখার জন্য না থেমে উপায় কি? ততক্ষণে আমাদের দেখে বাইরে বেরিয়ে এসেছেন বাড়ির বয়সী মানুষ হেলেনা খাতুন। বললেন, ‘কারেন পাইছি ওই সাবিনার জন্যই। অহন আর রাত্রে বেলা ঘুটঘুইটা অন্ধকার থাহে না। ঠিকঠাক চোহে দেহি। আর ওই যে পুকুরটা দেখেন, ওইটার মাঝখানে একটা লাইট জ্বালায়া দেই। পোকামাকড় আইসা পানিতে বসে। মাছ সেই পোকামাকড় খায়। এইবার শিং মাছের চাষ খুব ভালা হইছে।’

মাটির ঘরে জানালা দিয়ে ততক্ষণে মুখ বের করে দিয়েছে হেলেনা খাতুনের ছোট্ট নাতি। তাকে দেখিয়ে বললেন, ‘আগে আমার নাতি পড়ত কুপি জ্বালাইয়া, আর এহন পড়ে কারেনের আলোতে।’ হেলেনা খাতুন কখনো ভাবেননি তাঁর বাড়িতে বিদ্যুৎ আসবে। এ কারণেই তাঁর কাছে এই বৈদ্যুতিক আলোর গল্প বেশ দীর্ঘ। সে গল্প শোনা শেষ হলে আমরা পা বাড়াই সাবিনাদের বাড়ির দিকে। তাদের বাড়ির সামনে বিদ্যুতের নতুন খুঁটি। ঠিকঠাক করে বললে, খুঁটির বয়স হয়েছে ছয় মাসের বেশি।

কলসিন্দুরের মেয়ে ফুটবল দলের একজন সাবিনা আক্তার। ২৫ জুন ওদের বাড়িতে পা রেখেই কানে এল ঘরের ভেতরে বৈদ্যুতিক পাখার শব্দ। সাবিনার কাছে জানতে চাই, ‘খেলোয়াড় জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কী?’

 ফুটবল মাঠে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে কলসিন্দুরের এই মেয়েরা। ছবি: প্রথম আলো‘এহন গাঁয়ের লোকজন আমাগো পছন্দ করে। আদর করে। আর রাস্তায় বের হলে যেখানেই যাই কোনো গাড়িওয়ালা ভাড়া নিতে চায় না। শুধু ফুটবল খেলি বইলাই তো এত কিছু।’ বাড়ির বারান্দায় বসে লাজুক মুখে উত্তর দেয় সাবিনা। কলসিন্দুর ফুটবল দলের মধ্য মাঠের খেলোয়াড় সে। পুরো মাঠ আগলে রাখার মতো করে পুরো গ্রামটাই আগলে রাখে যেন!
গন্তব্য এবার ‘মেসি’র বাড়ি!
শুধু দলে নয়, গ্রামের মানুষও তাকে মেসি নামেই ডাকে। আসল নাম শরাবন তহুরা। আর্জেন্টিনার মেসি দেশকে কোনো শিরোপা দিতে পারেননি সত্যি, কিন্তু এই ‘মেসি’ ঠিকই মুক্তাগাছা গ্রামে আলো জ্বালিয়েছে। সুপারিগাছের সারি, মাছের ঘের, আর বেশ কয়েকটা খেতের আইল পেরিয়ে যখন ওদের বাড়িতে পৌঁছালাম, তখন বিকেল। ওর বাড়িতে পৌঁছার আগেই তহুরা-বন্দনা করলেন ওদের পাশের বাড়ির নুর আলী। বললেন, ‘এর আগে দুজনকে টাকা দিছিলাম কারেনের জন্য। কেউ আইনা দিতে পারে নাই। আর এই মেসি আমাগো ঠিকই কারেন আইনা দিল। অয় যে আরও কত কী করব কে জানে! বাইত্তে আপাতত দুইটা লাইট লাগাইছি। কয়েক দিনের মধ্যে ফ্যানও লাগামু।’ বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল তহুরা। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কদিন আগে ঢাকা থেকে ফিরেছে। তহুরাসহ কলসিন্দুর ফুটবল দলের ১০ জন খেলোয়াড় এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে ঢাকায়। সেখান থেকে হঠাৎ ছন্দপতন তার। তবে এরই মধ্যে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছে সে। খুব তাড়াতাড়ি ঢাকা যেতে চায় তহুরা।

সাবিনাদের বাড়ির পাশেই বসেছে বৈদ্যুতিক খুঁটি‘এত মানুষ প্রশংসা করছে, কেমন লাগে?’ প্রশ্ন শুনে তহুরা হাসে। ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া মেয়েটি যাবতীয় উত্তর যেন এক হাসিতে দিয়ে দেয়। হাসতে হাসতেই বলল, ‘ভালো। আমি আরও ভালো খেলতে চাই।’ বিদ্যুৎ, প্রশংসা কিংবা পড়াশোনা—এত কিছুর পেছনে শক্তি এই খেলাই। আমরা ওর পড়ার টেবিলের সামনে গিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাই। পড়ন্ত বিকেলের রোদে ঝকঝক করছে বিস্তীর্ণ মাঠ, দূরের কয়েকটা গাছ। এত সুবিশাল মাঠের সামনে বসে যে মেয়েটি পড়ে, তার স্বপ্ন তো এমনই হবে।
‘এখন টিভিতে ওগো খেলা দেহি’
ময়নাকে খুঁজছি জেনে আশপাশের কয়েক বাড়ি থেকে লোকজন চলে এল। ময়না এল খানিক পরে। দেরির কারণটাও বোঝা গেল হাতে ফুটবল দেখে। পাশেই অনুশীলন করছিল সে। ঢাকায় যে ১০ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, তাদের মধ্যে নেই বালশ্রী মানখিন ময়না। পরের বার যেন এই সুযোগ মিস না হয়, এ কারণেই বাড়তি পরিশ্রম। এখন টিভিতে কোনো ফুটবল খেলা দেখালেই বসে পড়ে সে। তার সঙ্গে এ পাড়ার অনেকেই। দল বেঁধে টিভি দেখার ব্যাপারটি শুরু হয়েছে মাস ছয়েক হলো। কারণ গামারিতলার ২০ ঘরে বিদ্যুৎ এসেছে ময়নার কল্যাণে। তাদের কাছে ময়না এখন রীতিমতো ‘নায়ক’। ময়না বলল, ‘আগে মানুষজন চিনত না অতটা। এখন চেনে। বিদ্যুৎ আসাতে যে এত পরিবর্তন হবে, আগে বুঝি নাই।’

ময়নার খালা লুতিমা মানখিন ঘরের দেয়ালে বৈদ্যুতিক মিটার দেখিয়ে বললেন, ‘কারেন আসা-যাওয়ার মধ্যে আছে। সন্ধ্যা হলেই চইলা যায়।’ বলতে বলতে বিদ্যুৎ একবার বিদায় নিল। অবশ্য ফিরে আসার একটু আগেই দেখা হলো ময়নার এনে দেওয়া বিদ্যুতের সঙ্গে। খালা বললেন, ‘এখন টিভিতেই ওগো খেলা দেহি। কী যে ভালো লাগে!’

বাড়ির সবাইকে নিয়ে টিভি দেখছে ময়না (ডানে চেয়ারে বসা‍)আরও কিছুর আশায়
কলসিন্দুর ফুটবল দলের ১৯ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে দুজনের বাড়িতে আগে থেকেই বিদ্যুৎ ছিল। বাকি ১৭ জনের বদৌলতে বিদ্যুৎ পেয়েছে নয় গ্রামের ৮০৩টি পরিবার। এ তালিকায় স্কুলের সভাপতি এমনকি সেই শিক্ষার্থীদের প্রিয় ‘মফিজ উদ্দিন স্যার’ও রয়েছেন। স্কুলের মাঠে বসে কথা হলো মফিজ স্যারের সঙ্গে। বললেন, ‘প্রথম আলোর কারণেই আমার শিক্ষার্থীদের চিনেছে সবাই। আর আনিসুল হকের কারণে এত তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎ এসেছে। আর সরকারের আন্তরিকতা তো ছিলই। আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া এটা।’
বলে রাখা ভালো, ২০১১ সালে কলসিন্দুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মফিজ উদ্দিন স্যার মেয়েদের নিয়ে গড়ে তোলেন ফুটবল টিম। এই দলটি ধীরে ধীরে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয় দুবার। এখন অনূর্ধ্ব-১৪ জাতীয় দলের ১৮ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ১০ জনই কলসিন্দুর উচ্চবিদ্যালয়ের মেয়ে। গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথম আলোর ময়মনসিংহ প্রতিনিধি কামরান পারভেজ শনিবারের বিশেষ প্রতিবেদনে লেখেন ‘ফুটবল রাঙাচ্ছে কলসিন্দুরের মেয়েরা’। ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রথম আলো এই মেয়েদের নিয়ে তৈরি করে প্রামাণ্যচিত্র ‘অদম্য মেয়েরা’। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সুধী সমাবেশে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয় ওই গ্রামের ২০ ফুটবলার, কোচ মফিজ উদ্দিন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনতি রানী শীল আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিনকে।

এই শিক্ষার্থীদের চাওয়াতেই গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হয় কলসিন্দুরসহ আশপাশের গামারিতলা, পশ্চিম গামারিতলা, পঞ্চদন্দপুর, দক্ষিণ রানীপুর, মুক্তাগাছা, রামসিংহপুর, গৌরীপুর ও সোহাগীপাড়া গ্রামে।

আমরা যখন ফিরছি তখন দিনের আলো নিভে গেছে। আস্তে-ধীরে জ্বলে উঠছে বৈদ্যুতিক বাতি। মাঠ পেরিয়ে আমরা চলে যাচ্ছি দূরে। পেছনে আলোকিত হয়ে আছে ‘মেসি’দের গ্রাম!

ঈদ কেটেছে আনন্দে…

কলসিন্দুরের ফুটবলার মেয়েদের ঈদ কেটেছে আনন্দে। তবে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় অনুশীলন করতে যাওয়া ১০ জনকে ঈদ পালন করতে হয়েছে ঢাকায়। মফিজ উদ্দিন বললেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ওদের ফেডারেশন থেকে নতুন পোশাক দেওয়া হয়েছে। আর ঈদের দিন ভালোমানের খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন ছিল। ঈদের পরদিন থেকে যথারীতি আবার অনুশীলন শুরু হয়েছে ওদের। এ কারণে আর বাড়ি ফেরা হয়নি কারোরই।’ ১০ জনের মধ্যে তহুরা অসুস্থতার কারণে বাড়িতে গেলেও ঈদের আগেই এসে যোগ দিয়েছে ওই দলে। সবার সঙ্গে তার ঈদটাও দারুণ কেটেছে। ১০ জন ঢাকায় ঈদ করলেও বাকি ৯ জন ঈদ করেছে গ্রামে। ঈদের পরে কথা হলো সাবিনা আক্তারের সঙ্গে। বলল, ‘ঈদ উপলক্ষে নতুন জামা ও জুতা কিনেছি। ঈদের দিন পাশের বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছি। আর ঈদের পরে গিয়েছিলাম আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে। সবাই অনেক আদর করেছে।’

Save

Save

Save

Save

Save

 

পাড়াগাঁয়ের পারলার

তাপসী রাবেয়া বড় হয়েছেন ঢাকা শহরে। কিন্তু বিয়ে হলো নিভৃত গ্রামে। বাড়িটাও মাটির। এটা দেখে তাঁর মন খারাপ হয়নি। হয়েছিল গ্রামের মেয়েদের দেখে। তারা শহরের মেয়েদের দেখে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। বলে, শহরের মেয়েরা কী সুন্দর! তাপসী ভাবেন গ্রামের মেয়েরাও সুন্দর। কিন্তু তারা নিজের সৌন্দর্য হয়তো সেভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে না। এই মেয়েদের কথা ভেবে তিনি নিভৃত গ্রামের এই মাটির বাড়িতে একটি বিউটি পারলার গড়ে তুললেন। একে একে গ্রামের মেয়েরাও বিউটি পারলারে আসতে লাগল। খবর রটে গেল এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। এখন ১৫-২০টি গ্রামের মেয়েরা প্রতিনিয়ত আসে বিউটি পারলারে। শুধু তারা সাজতে আসছে তা-ই নয়, আসছে কাজ শিখতেও।

মাটির বাড়ির বিউটি পারলার

গ্রামটির নাম কালিগ্রাম। এটি নওগাঁর মান্দা উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবিস্থত। সম্প্রতি গ্রামের রাস্তাটা পাকা হলেও মানুষের বাড়িঘর এখনো মাটিরই রয়ে গেছে। এই গ্রামেই ১৯৯৭ সালে বউ হয়ে আসেন তাপসী রাবেয়া। পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা হলেও তাঁর জন্ম ঢাকা শহরে। বড় হয়েছেন ঢাকাতেই। শ্বশুরবাড়িতে এসে দেখেন, মাটির রাস্তা, মাটির ঘরবাড়ি। মানুষগুলো যেন মাটির মতন। শহরের মেয়েদের সাজ দেখে তারা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। তাদের কথা ভাবতে ভাবতে একসময় তাঁর মাথায় বিউটি পারলারের ভাবনা আসে। কিন্তু কিছুতেই গুছিয়ে উঠতে পারেন না। অবশেষে ২০১১ সালে তিনি ঢাকায় গিয়ে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিলেন। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে কাজটাকে পেশা হিসেবে নিতে পারলেন না। অনেকেই নিরুত্সাহিত করলেন। গাঁয়ে এটা চলবে না। শুধুই টাকা নষ্ট হবে। কিন্তু তাঁর মন মানে না। ২০১৩ সালে আবারও ঢাকায় কিছুদিন থেকে প্রশিক্ষণ নিলেন। এবার সিদ্ধান্ত নিলেন কাজটা তিনি শুরু করবেনই। কিন্তু টাকার দরকার প্রায় দেড় লাখ। নিজের কিছু ছিল। ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু সহযোগিতা নিলেন। তাও হলো না। শেষ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিলেন।

শুরু থেকেই গ্রামের মেয়েরা ভিড় জমাতে শুরু করে এই পারলারেঅবশেষে ২০১৪ সালের শুরুতে যাত্রা শুরু হলো ‘নবরূপা বিউটি পার্লার’-এর। গ্রামের বাড়িঘর যেহেতু মাটির। তিনি মাটির ঘরেই আয়োজন করলেন। মাটির ঘরটা সুন্দর করে রং করে নিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই গ্রামের মেয়েদের সাজ বদলে যেতে থাকল। এ খবর ছড়িয়ে পড়ল পাশের গ্রামগুলোতে। পর্যায়ক্রমে কালিগ্রাম থেকে শুরু করে উপজেলার কির্ত্তুলী, দেলুয়াবাড়ী, মহানগর, চৌবাড়িয়া, সাবাইহাট, কেশরহাট কামারপাড়া, কুসুম্বা, গাইহালা, কালীনগরসহ প্রায় ২০টি গ্রামের মেয়েরা আসতে শুরু করে।
সম্প্রতি রাজশাহী শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত কালিগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একটি দ্বিতল মাটির বাড়ি ঠিক ইটের বাড়ির মতো রং করা হয়েছে। গাঁয়ের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় রঙিন এই মাটির বাড়িটি যে কারও নজর কেড়ে নেবে। দূর থেকেই এই সাইনবোর্ড চোখে পড়বে ‘নবরূপা বিউটি পার্লার’। মাটির দেয়ালেই লেখা রয়েছে ‘এখানে অভিজ্ঞ বিউটিশিয়ানদের দ্বারা বউ সাজানো, ভ্রুপ্লাক, ফেসিয়াল, ম্যানিকিওর, পেডিকিওর, হেয়ার রিবন্ডিং, চুল কাটা, চুল কালার করা এবং মেশিন দ্বারা নাক-কান ফোঁড়ানোসহ মেয়েদের যাবতীয় রূপচর্চার কাজ করা হয়।’

কাজও শিখছে মেয়েরা

তাপসী রাবেয়া বললেন, তাঁর বিউটি পারলারের কারণে গ্রামের মেয়েরাও এখন সৌন্দর্য সচেতন হয়ে উঠেছে। শুধু বিয়ের সাজ নয়, নিয়মিত স্কুল-কলেজের মেয়েরা পারলারে আসছে। তিনি বলেন, তাঁর কাজ দেখে উত্সাহী হয়ে গ্রামের কিছু মেয়ে সারা দিন পারলারে এসে পড়ে থাকত। একপর্যায়ে তারা দেখতে দেখতে কাজ শিখে যায়। এদিকে তাঁর পারলারের গল্প যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, তখন কাজের চাপও বেড়ে যায়। তখন তিনি এই মেয়েদের পারিশ্রমিক দিয়ে তাঁর সহকারী হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন। তাদের মাসে ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দেন। সব সময় দুজন মেয়েকে তাঁর সহকারী হিসেবে রাখতে হয়। এই মেয়েরা স্কুল-কলেজে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে তাঁর সঙ্গে কাজ করে। ইতিমধ্যে সাতজন তাঁর কাছ থেকে কাজ শিখেছেন। তাঁদের কারও কারও বিয়ে হয়েছে। কেউ উচ্চতর পড়াশোনা করছেন।

পারলারে গিয়ে সহকারী শ্যামলী আক্তারকে পাওয়া গেল। তিনি স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। তিনি বলেন, তাঁরও ইচ্ছে রয়েছে বিয়ের পরে পরিবেশ পেলে এ রকম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন।

দেখা গেল সকালে চারজন মেয়ে এসে ফেসিয়াল করার জন্য বসে রয়েছে। তারা সবাই পার্শ্ববর্তী মহানগর বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে রিয়া খাতুন জানায়, তারা এখন পারলারের নিয়মিত মুখ। তাদের আর পারলার ছাড়া চলে না।

এই পারলার থেকে বিয়ের সাজ করেছিলেন পাকুড়িয়া গ্রামের বৃষ্টি খাতুন। মুঠোফোনে কথা হয় বৃষ্টির সঙ্গে। তিনি বলেন, তিনি নিয়মিত ওই পারলারে যেতেন। তাদের কাজের মান ভালো। গ্রামের ভেতরে হলেও উপজেলা সদরের চেয়ে তাদের কাজ ভালো। তাঁর বিয়ের সাজের সবাই প্রশংসা করেছে।

আসার সময় তাপসী রাবেয়া মজা করেই জানালেন, তিনি তাঁর ব্যাংকের ঋণ শোধ করে দিয়েছেন। তাঁর কিন্তু আর কোনো ধারদেনা নেই।

Save

Save

Save

Save

Save

Save

Save

Save

 

শ্রিম্প ফ্রাইড রাইস রান্না করুন সবচাইতে সহজ রেসিপিতে

সবার ফ্রিজেই সারা বছর খুঁজে পাওয়া যায় ডিম। আর এই ডিম এবং টুকিটাকি কিছু সবজি দিয়ে ফ্রাইড রাইস তৈরি করতে কারোই বেগ পেতে হয় না। এগ ফ্রাইড রাইস মোটামুটি সহজ হলেও শ্রিম্প ফ্রাইড রাইস কিন্তু অনেকেই তৈরি করতে ভয় পান, ভাবেন একটু এদিক ওদিক হলেই রান্না বরবাদ হয়ে যাবে। আসলে কিন্তু শ্রিম্প ফ্রাইড রাইস রান্না করাটা অনেক সহজ আর কম সময়েই হয়ে যায়। অল্প কিছু উপকরণ হাতের কাছে থাকলে আপনিও তৈরি করে ফেলতে পারবেন এই খাবারটি।
উপকরণ
– ২৫০ গ্রাম চিংড়ি, খোসা ও ময়লা ছাড়িয়ে নেওয়া
– দেড় কাপ ভাত
– ২টি বড় ডিম
– আধা কাপ মটরশুঁটি
– ১টি পিঁয়াজ
– লবণ ও গোলমরিচ গুঁড়ো স্বাদমতো
– সয়া সস স্বাদমতো
– ৪ টেবিল চামচ তেল
– স্রিরাচা সস
প্রণালী
১) ওভেনে বেক করে নিতে পারেন চিংড়ি। ৩ টেবিল চামচ তেল গরম করে নিন ফ্রাইং প্যানে। এতে এক মিনিট মাঝারি আঁচে সাঁতলে নিন পিঁয়াজ।
২) এরপর এতে রান্না করা ভাতটুকু দিয়ে দিন। ভাতটা দিয়ে একটু আঁচ বাড়িয়ে নিন। চামচ দিয়ে নেড়ে ছড়িয়ে নিন ভাতটুকু। ১-২ মিনিট ভাজুন। দরকার হলে আরও কিছুটা তেল দিন।
৩) একটি বাটিতে ডিম ভেঙ্গে হুইস্ক করে নিন। এবার এটাকে ভাতের মাঝে দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন যাতে পুরো ভাতের সাথে ডিম মিশে যায় ও রান্না হয়ে আসে। দরকার হলে আরও তেল দিতে পারেন।
৪) এরপর বেক হওয়া চিংড়ি এবং মটরশুঁটি দিয়ে দিন ভাতের মাঝে। ভালো করে নেড়েচেড়ে নিন যাতে সব উপকরণ একসাথে মিশে যায়।
৫) লবণ, গোলমরিচের গুঁড়ো এবং সয়া সস দিন নিজের পছন্দমত। সব উপকরণ মিশে যাবার জন্য নেড়েচেড়ে ফ্রাই করে নিন। মটরশুঁটি রান্না হলে এবং সুন্দর ফ্লেভার উঠলে নামিয়ে নিন।
পরিবেশন করুন ওপরে স্রিরাচা সস দিয়ে। ভালো করে বুঝতে দেখে নিন রেসিপির ভিডিওটি-
টিপস
– চিংড়িটাকে ইচ্ছে করলে ভেজেও নিতে পারেন বেক করার বদলে
– ফ্রিজে রেখে খেতে চাইলে পরের দিন গরম করার সময়ে একটু পানি দিয়ে নিন ওপরে
– রান্নার সময়ে একদম ঝরঝরে ভাত ব্যবহার করুন, নরম বা ভেজা ভাত ব্যবহার করবেন না
– ফ্রাইড রাইসের জন্য নতুন করে ভাত রান্না করলে সেটা ঠাণ্ডা করে তারপর ফ্রাই করুন

 

যেভাবে সস্তা কাপড়ও দামি দেখাবে

হাঁটাচলার পথে অনেকেই ফুটপাথ থেকে জামাকাপড় কিনে থাকেন। এর মূলেও রয়েছে যথেষ্ট কারণ। প্রথমত, শপিংমলে গিয়ে কেনাকাটি করার সময় নাও থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, রাস্তা থেকে কিনলে দর কষাকষি করা যায়। কিন্তু, অনেকেই সেকথা ফলাও করে জনসমক্ষে বলতে নারাজ। তাই পরনের পোশাকটি ফুটপাথে কেনার কথা আড়ালে রেখে, দামি জায়গা থেকে কেনা হয়েছে বলে দাবি করতে চান অনেকেই। কিন্তু দাবি করলেই তো আর হল না। পোশাক সত্যি সত্যি যেনো দামি দেখায় তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন। জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী-

১) রাস্তা থেকে কিনে আনা পোশাকটি নিজের শরীরে মাপ মতো ফিটিংস করিয়ে নিন। তাহলে সেটি পরলে আপনাকে আরও ভালো লাগবে দেখতে।

২) ফুটপাত থেকে কিনে আনা জামাকাপড়ের সেলাই অনেক সময়ই আলগা থাকে। তাই বাড়িতে নিজেই সেলাই করে চাপা দেওয়া যেতে পারে সেই খুঁত।

৩) হয়তো এক রঙের কোনও পোশাক কিনে এনেছেন। এবার তার উপর নিজের পছন্দের রঙিন কোনও কাপড়ের পকেট বসিয়ে নিতে পারেন। অথবে শিল্পীদের দিয়ে তার উপর আঁকিয়ে নিতে পারেন। দেখবেন তাতে একটা আলাদা অভিজাত লুক এসেছে।

৪) পোশাক যে দামেরই কিনুন। তার যথাযথ মেন্টেন্যান্স প্রয়োজন। তাই যেসব পোশাক ড্রাইওয়াশে দেওয়া দরকার সেগুলি বাড়িতে নিজে হাতে না কেচে ড্রাই ক্লিনিকেই পাঠানো উচিত। এতে পোশাক ভালো থাকবে।

৫) কাচা, ধোওয়ার পর অবশ্যই আয়রন করে নিন। তবেই সেটা স্মার্ট দেখাবে।

৬) ফুটপাথের জামাকাপড়ে রাস্তার ধুলো ময়লা পড়ে। তাই তা ব্যবহারের আগে ভালো করে ওয়াশ করে নেওয়া উচিত হাইজিনমুক্ত থাকতে।

 

বিশ্বের ২৬ দেশে রাষ্ট্র ও সরকারের নেতৃত্বে নারী

বিশ্বে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হিসেবে দেশ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত নারী নেতৃত্বের সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত নারী নেতাদের সংখ্যা ছিল ২৫, যা দেশ পরিচালনায় নারী নেতৃত্বের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। নারী নেতার কাতারে সর্বশেষ যুক্ত হচ্ছেন ব্রিটেনের টেরেসা মে। বুধবার (১৩ জুলাই) ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব নেয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বে নারী নেতাদের সংখ্যা পৌঁছবে ২৬-এ, যেটি হবে নারী নেতৃত্বে নতুন মাইলফলক।

দেশ পরিচালনায় ২০১৬ সালের জানুয়ারি এশিয়ার দ্বীপ দেশ তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সেই ইং-ওয়েন। একইমাসে মার্শাল আইল্যান্ডসের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন হিন্ডা হেইন। মধ্য জুলাইয়ে এসে সর্বশেষ নারী নেতাদের কাতারে যুক্ত হচ্ছেন ব্রিটেনের টেরেসা মে।

গত ২৩ জুন ব্রেক্সিট ভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসার গণভোটের পর রাজনৈতিক পালাবদলে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে সামনে চলে আসেন ৫৯ বছর বয়সী ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের এই নারী।

২০১৫ সালে ৪ দেশে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হিসেবে নেতৃত্বে যুক্ত হন নারীরা। দেশগুলো হচ্ছে সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, নামিবিয়া এবং নেপাল। তবে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব প্রতি বছর পরিবর্তন হওয়ায় ২০১৬ সালে ওই পদে দায়িত্বে আছেন জোহান স্নাইডার আম্মান।

২০১৪ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ২০ নারী। সে হিসেবে বছরটি ভবিষ্যত নারী নেতাদের অনুপ্রেরণারও। এরমধ্যে ২০১৬ সালে অনিয়মের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত হন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রউসেফ।

নারী নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় সরকার প্রধানের দায়িত্বে আছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল, যিনি ২০০৫ সালে প্রথম নির্বাচিত হয়ে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তৃতীয় দফায় দায়িত্ব পালন করছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময় রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্বে আছেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এ্যালেন জনসন সারলিফ। তিনি ২০০৬ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এছাড়া মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ সময় রাষ্ট্র পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আছেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ ডি কিচনার। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে তিনি প্রথম নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হন। সরকার পরিচালনায় যুক্ত হওয়া নারী নেতাদের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেন তিনি। ২০১৫ সালে নির্বাচনে জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

একইবছর ক্ষমতায় আসেন লিথুয়ারিয়ার প্রেসিডেন্ট ডালিয়া গ্রিবাউসকাইতে। গত ৭ বছর ধরে টানা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। ২০১০ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন কামলা পারসাদ বেসেসার। ৬ বছর ধরে এ দায়িত্ব পালন করছেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত কসোভোর রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন আতিফেত জাহজাগা ২০১১ সালে। রাষ্ট্র পরিচালনার অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন গত ৫ বছর ধরে। একই বছর ডেনমার্কের সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন হ্যালে থর্নিং স্মিথ। সেই থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১২ সালে জামাইকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন পর্সিয়া সিমপসন মিলার। সরকার পরিচালনায় দেশটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ নারী। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১৩ সালে দায়িত্ব নেন পার্ক গিউন হেই। ৪ বছর ধরে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

একই বছর নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন ইরনা সোলবার্গ। সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন ৪ বছর ধরে। ২০১৩ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্লোভেনিয়ার সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন অ্যালেঙ্কা ব্রাতুসেক। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৪ বছর ধরে অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন।

ওই বছর উত্তর সাইপ্রাসের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছে সাইবেল সাইবার। ৪ বছর ধরে সরকার পরিচালনা করছেন ওই পদে থেকে। ২০১৩ সালে সেনেগালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন অমিনতা তোরে। সরকার প্রধান হিসেবে ৪ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন এ নারী।

নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০১৩ সালে দায়িত্ব নেন ইরনা সোলবার্গ। সরকার প্রধান হিসেবে ৪ বছর ধরে এ দায়িত্ব পালন করছেন। লামিদোতা স্ট্রজুমা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাটভিয়ার ২০১৪ সালে। সরকার প্রধান হিসেবে সে দায়িত্ব পালন করে আসছেন ৩ বছর ধরে।

মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন ক্যাথেরিন সাবভা-পানজা। ২০১৪ সাল থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন এ নারী। চিলির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মিশেল ব্যাশেরেট। ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।

মাল্টার প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছেন মেরি লুই কোলেইরো প্রেকা। ২০১৪ সাল খেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দেশটি পরিচালনার। ২০১৪ সালে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন বেইতা জিডলো। তিন বছর ধরে সরকার পরিচালনা করে আসছেন তিনি।

২০১৫ সালে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন কালিন্দ গ্র্যাবার কিতারোভিচ, নেপালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব বুজে নেন বিদ্যা দেবি বান্দরি এবং মারিশাসের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নেন ম্যারিশা এ্যান মায়ার। নামিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন সারা কুগনগিলওয়ালা।

 

 

Save

Save

Save

Save

 

স্নানঘরেও সবুজের আবেশ

সৌখিন মনকে প্রশান্তি দিতে বাড়িকে সুন্দর করে সাজাতে সবাই কমবেশি চেষ্টা করেন। প্রয়োজনীয় আসবাবেব সঙ্গে স্থান পায় বাহারি ইনডোর প্লান্ট। কারণ, ঘরের মধ্যে প্রকৃতির সবুজ ছোঁয়া আলাদা আবেশ ছড়ায়। আজকাল সৌখিনতার প্রসার ঘটেছে আরও বেশি। থাকার ঘরের সঙ্গে ব্যবহৃত স্নানঘরটিও সাজিয়ে নিতে পারেন মনের মতো করে। সেখানেও স্থান পেতে পারে পছন্দের কোনো গাছ।

শহরের ফ্ল্যাট গুলোতে জায়গার খুবই অভাব। সেখানে সীমিত দৈর্ঘ্য-প্রস্থের স্নানঘরটির অবস্থা আরও করুন। কিন্তু শৈল্পিক মনটি সে কথা শুনবে কেন? স্নানঘরের মেঝেতে গাছের টব রাখা সম্ভব না হলে ক্ষতি নেই। বর্তমানে বাজারে আকর্ষণীয় ওয়ালটব পাওয়া যাচ্ছে। রোদ ছাড়া দীর্ঘদিন সতেজ থাকা গাছের সন্ধানও পাবেন খুব সহজে। তাই মনের মতো দুই তিনটি টবসহ গাছ কিনে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে লতানো গাছ বেশি মানানসই। আবার ছোট নজরকাড়া ডালাপালাযুক্ত গাছও মানাবে।

ওয়াসরুম বা স্নানঘরের জানালায় তার দিয়ে ঝুলিয়ে দিতে পারেন ছোট্ট একটি টব। সে টবে শোভা পেতে পারে ছোট্ট আকৃতির মানিপ্লান্ট বা লতানো যেকোনো গাছ। দেয়ালের গায়ে যদি টব ঝোলানোর সুযোগ থাকে তবে সৌন্দর্য বাড়াতে দিতে পারেন আরও কয়েকটি টব।

খেয়াল রাখতে হবে, ছোট্ট একটুকরো ওয়াসরুমের সৌন্দর্য বাড়াতে গাছের আধিক্যে আবার হিজিবিজি না হয়ে যায়। পরিমাণে বেশি হলেও ক্ষতি নেই, তবে ছোট ওয়াসরুমে ছোট্ট আকৃতির টবই মানানসই। আর খোলামেলা ওয়াসরুমে দেয়ালের কোণায় রাখতে পারেন পছন্দের গাছ। কেউ কেউ গাছের সৌন্দর্য আরও বাড়াতে রঙিন আলো ব্যবহার করে থাকেন।

সবকিছুর মূলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ওয়াসরুম। সেখানে আলো আর গাছের মধুর মিলন ঘটাতে পারলে তো কথায় থাকে না। আপনার মনের সৌন্দর্য গুণও প্রকাশ পেতে পারে ওয়াসরুমের এমন সাজে। অপরের কাছে প্রশংসা কুড়াতে ইনডোর প্লান্ট বেশ সাহায্যকারী।

ইন্ডোর প্লান্টের যত্ন

– সপ্তাহে অন্তত একদিন সব গাছ রোদে দিতে হবে। গাছের ঠিকমতো বেড়ে ওঠা এবং বেঁচে থাকার জন্য সূর্যের আলো জরুরি। তবে দুপুরের কড়া রোদে গাছ রাখবেন না। সকালের হালকা রোদে গাছ রাখুন।

– গাছে ঘন ঘন পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। অতিরিক্ত পানি দিলে গাছ পচে যেতে পারে। পানি দেওয়ার সময় টবের মাটি আর্দ্র আছে কি-না, লক্ষ্য করুন।

– গাছের পাতা ও ফুলের রং হালকা হতে থাকলে ঠাণ্ডা ও আলো কম পৌঁছায় এমন জায়গায় রাখুন। কারণ অতিরিক্ত আলো ও তাপের সংস্পর্শে এসে গাছের পাতা ও ফুলের রঙ হালকা হয়ে যায়।

– গাছের পাতায় বেশি ধুলো জমলে জোরে ঘসবেন না, নরম কাপড়ে অল্প পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন। অথবা স্প্রে করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। পাতার নিচের অংশও পরিষ্কার করুন। ধুলো-ময়লার সঙ্গে পোকা বাসা তৈরি করে পাতায়।

 

Save

Save

Save

Save

Save

 

গাম্বিয়ায় বাল্যবিবাহের শাস্তি ২০ বছরের কারাদণ্ড

মেয়েদের বাল্যবিবাহ রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্ট এ সংক্রান্ত একটি আইনে পাস করা হযেছে। ওই আইনে ১৮ বছরের আগে কোনো মেয়েকে বিয়ে দিলে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। প্রসঙ্গত, দেশটিতে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই এক তৃতীয়াংশ মেয়েশিশুরই বিয়ে হয়ে যায়।

গাম্বিয়া পার্লামেন্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু অধিকার বিষয়ক অঙ্গ সংগঠন ইউনিসেফ এবং লন্ডনভিত্তিক নারী অধিকার বিষয়ক সংগঠন ইক্যুয়ালিটি নাউ। এক বিববৃতিতে ইউনিসেফ বলেছে, ‘বাল্যবিবাহ রোধে পদক্ষেপ নেয়ায় আমরা দেশটির মহামান্য রাষ্ট্রপতির দৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসা করছি। আশা করছি, সরকার এ আইন বাস্তবায়ন এবং শিশুদের অধিকার পূরণে দেয় অঙ্গীকার পূরণে সচেষ্ট থাকবে।’

তবে পার্লামেন্টর এই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া জামেহ। তিনি বলেছেন, এ ধরনের কঠোর আইন দেশে বিদ্রোহের স্ফূলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

নখের পচন রোধের উপায়

বর্ষার এই মৌসুমে ইচ্ছা না থাকলেও নোংরা পানিতে হাঁটতে বাধ্য হন। এতে জুতার সঙ্গে পায়ের নখের অবস্থা হয় শোচনীয়। ঠিকমতো পরিচর্যা না করলে ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হতে পারে। তখন বিশেষ করে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখটি স্বাভাবিকের চেয়ে মোটা হয়ে যায়। নখে পচন ধরে, কাটতে অসুবিধা হয়, হলুদ বা বাদামী বর্ণ ধারণ করে। নখের নিচের মাংস শুকিয়ে আলগা হয়ে সহজেই ভেঙে যায়।

নখ ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত হলে দেখতে বিশ্রী লাগে এবং সারিয়ে তোলাও বেশ কঠিন। একে অনকোমাইকোসিস বলা হয়। হাতের নখে সমস্যাটি হতে পারে তবে পায়ের নখেই বেশি হয়ে থাকে। উপায় জানা থাকলে এই সমস্যা ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে সারিয়ে তোলা যায়। আসুন জেনে নেই সেই ঘরোয়া উপায় গুলো।

ভিনেগার ও বেকিং সোডা

বেকিং সোডা ছত্রাক নাশক না কিন্তু ছত্রাকের বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়াকে রোধ করতে পারে। অপরদিকে ভিনেগার কিছুটা অ্যাসিডিক যা ত্বকের পিএইচ লেভেলের বিশেষ কোনো পরিবর্তন ছাড়াই ছত্রাক ধ্বংস করতে পারে। একটি পরিষ্কার পাত্রে ১ কাপ ভিনেগার ও এক লিটার পানি মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে ১৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পা মুছে আবার নতুন করে পানি ও কয়েক চামচ বেকিং সোডার মিশ্রণে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। তারপর পা মুছে নিন। এভাবে দিনে ২ বার করতে হবে সপ্তাহ দুয়েক। কাঙ্ক্ষিত উপকার পাবেন।

নারিকেল তেল

ফ্যাটি অ্যাসিড খুব ভালো ছত্রাক নাশক। নারিকেল তেলে প্রচুর ফ্যাটি অ্যাসিড আছে যা ছত্রাকের দেহের লিপিড স্তরে প্রবেশ করে ভেতর থেকে ছত্রাককে ধ্বংস করে। দিনে দুই তিনবার নারিকেল তেল লাগালে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন।

মাউথ ওয়াশ

মাউথ ওয়াশ যেভাবে মুখের ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস করতে পারে ঠিক সেভাবে নখের ছত্রাকও নাশ করতে পারে। মাউথ ওয়াশের অ্যালকোহল শক্তিশালী অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে। একটি বোলে মাউথ ওয়াশ নিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। এভাবে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে পায়ের নখ পরিষ্কার করে নিন। তারপর পানি মুছে শুকিয়ে নিন। দিনে ১ থেকে ২ বার এভাবে করুন যতদিন না ভালো হয়।

 

সন্তানকে অযথা অভিশাপ দিলে কী হয়?

ইসলামের সার্বজনীন আদর্শের ধারাবাহিকতায় এ বিষয়টি সম্পর্কেও আমরা দিকনির্দেশনা পাই তারই কাছে। এ ব্যাপারেও ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়। ইসলাম কখনো কারো বিরুদ্ধে অভিশাপ দেয়া বা বদদু‘আ করাকে সমর্থন করে না। আপন সন্তানকে তো দূরের কথা জীবজন্তু এমনকি জড় পদার্থকে অভিশাপ দেয়াও সমর্থন করে না।

মাত্র কয়েকদিন আগের ঘটনা। আমাদের পাড়ার রাকিবের মা পানিতে ডুবে মরা কিশোর সন্তানটিকে বুকে জড়িয়ে পাগলপারা হয়ে কাঁদছেন। মায়ের বাঁধভাঙ্গা কান্না আর বিলাপ শুনে উপস্থিত কারো পক্ষেই চোখের পানি সংবরণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তিনি কাঁদছেন আর বিলাপ করে বলছেন, ‘ও বাবুর আব্বু তুমি আমাকে মেরে ফেল। আমিই তোমার সন্তানকে হত্যা করেছি। গতকালই ওর জ্বালা সহ্য করতে না পেরে আমি বলেছি, ‘তুই মরিস না; মরলে দশটা ফকিরকে খাওয়াতাম।’

হ্যা, সত্যিই তিনি আগেরদিন ছেলেটির দুরন্তপনায় অস্থির হয়ে এমন বলেছিলেন। তখন একজন পাগলেরও ভাবার অবকাশ ছিল না যে গর্ভধারিণী মা সত্যিই তার সন্তানের অমঙ্গল কামনা করছেন। কিন্তু অসচেতনভাবে কামনা করা দুর্ঘটনাও কখনো সত্য হয়ে দেখা দিতে পারে। রাকিবের মা গতকাল রাগের মাথায় যে কথা উচ্চারণ করেছিলেন কে জানত আজই তা বাস্তব হয়ে দেখা দেবে।

ঘটনা হলো, সেদিন দুপুরে ছেলেটি তার মায়ের সঙ্গে শুয়ে ছিল। তিনটার দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে একরকম জিদ করেই সে মায়ের কাছ থেকে ছুটে গিয়েছিল বৃষ্টিতে ভিজতে। বাড়ির বাইরে এসে সে আশপাশের সমবয়সী আরও কয়েকটি কিশোরকে পেয়ে যায়। সবাই মিলে কোন বুদ্ধিতে যেন দল বেঁধে যায় পাশের মহল্লার একটি নতুন পুকুরে গোসল করতে। সেখানে গিয়ে সবার আগে সে-ই লাফ দেই পুকুরে। অবুঝ কিশোর ঠিক বুঝতে পারেনি লাফ দিলে পুকুরের প্রায় গভীরে গিয়ে পৌঁছবে সে। যেখানে সাঁতার না জানা একটি কিশোরের জন্য অপেক্ষা করছে অবধারিত মৃত্যু। ঘটনা যা হবার তাই হল। বাচ্চাগুলোর চোখের সামনেই সে পানিতে ডুবল। ওরা ভাবল সে বুঝি তাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে। কিছুক্ষণ পর তারা ওকে না পেয়ে ভয়ে আশপাশের লোকদের ডেকে আনল। ততক্ষণে অবশ্য তার ক্ষুদেকায় দেহ থেকে প্রাণপাখি উড়াল দিয়েছে।

মা তার সন্তানকে অবর্ণনীয় কষ্টে গর্ভে ধারণ করেন। অমানুষিক কষ্টে পৃথিবীর আলো-বাতাসে আনেন। তারপর নিজের ভালোবাসা আর ত্যাগের সবটুকু উজাড় করে অসহায় একটি শিশুকে যথাক্রমে সুস্থ, সবল, সজ্ঞান ও স্বাবলম্বী করে তোলেন। সন্তান মানুষ করতে গিয়ে বাবা-মাকে যে কতটুকু কষ্ট সহ্য করতে হয় তা শুধু বাবা-মায়েরাই জানেন। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে এ কষ্ট আরও বেশি। এখানে রোজ দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে লড়াই করে মানুষকে টিকে থাকতে হয়।

অভাবের কারণে একজন নবীন মাকেও একহাতে সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব আর অপরহাতে বুকের ধন সন্তানটিকে আগলাতে হয়। অনেক মা আছেন যারা সময়মত বাচ্চার খাবারটিও যোগাতে পারেন না রুচিমত। বিশেষত যেসব বাচ্চা জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ পায় না। দরিদ্র পরিবারে এসব শিশুকে যে কত কষ্টে মা জননী বড় করে তোলেন তা একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন। এ সময় মায়েদের অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার প্রয়োজন হয়।

অথচ প্রগলভ চরিত্রের অনেক মা’কে এ সময় ধৈর্যহারাও হতে দেখা যায়। অনেক মা সন্তানের ওপর বিরক্ত হয়ে তাকে অবলীলায় অভিশাপ দিয়ে দিয়ে বসেন। স্নেহময়ী জননী হয়তো তার জীবনের বিনিময়ে হলেও সন্তানের যে কোনো অনিষ্ট রোধ করতে চাইবেন। কিন্তু তিনিই আবার রাগের মাথায় অবচেতনে আদরের সন্তানটির অনিষ্ট কামনা করে বসেন। গ্রাম-বাংলায় প্রায়ই দেখা যায় সন্তানদের দুরন্তপনা বা দুষ্টুমিতে নাকাল হয়ে অনেক মা সরাসরি বাচ্চার মৃত্যু কামনা করে বসেন। ‘তুই মরিস না’, ‘তুই মরলে ফকিররে একবেলা ভরপেট খাওয়াতাম’, ‘আল্লাহ, আমি আর পারিনে’, ‘এর জ্বালা থেকে আমাকে নিস্তার দাও’- এ জাতীয় বাক্য আমরা অহরহই শুনতে পাই। বিশেষত কৈশোরে এসে গ্রাম-বাংলার শিশুদের দুরন্তপনা কখনো সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। ফলে কিশোর সন্তানকে উদ্দেশ করেই সাধারণত মায়েরা এমন অসহিষ্ণু বাক্যোচ্চারণ করে থাকেন। তাই এ সময় মাকে অনেক বেশি ত্যাগ ও ধৈর্যের পারাকাষ্ঠা দেখাতে হয়।

ইসলামের সার্বজনীন আদর্শের ধারাবাহিকতায় এ বিষয়টি সম্পর্কেও আমরা দিকনির্দেশনা পাই তারই কাছে। এ ব্যাপারেও ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়। ইসলাম কখনো কারো বিরুদ্ধে অভিশাপ দেয়া বা বদদু‘আ করাকে সমর্থন করে না। আপন সন্তানকে তো দূরের কথা জীবজন্তু এমনকি জড় পদার্থকে অভিশাপ দেয়াও সমর্থন করে না। জাবির ইবন আবদুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

سِرْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- فِى غَزْوَةِ بَطْنِ بُوَاطٍ وَهُوَ يَطْلُبُ الْمَجْدِىَّ بْنَ عَمْرٍو الْجُهَنِىَّ وَكَانَ النَّاضِحُ يَعْتَقِبُهُ مِنَّا الْخَمْسَةُ وَالسِّتَّةُ وَالسَّبْعَةُ فَدَارَتْ عُقْبَةُ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ عَلَى نَاضِحٍ لَهُ فَأَنَاخَهُ فَرَكِبَهُ ثُمَّ بَعَثَهُ فَتَلَدَّنَ عَلَيْهِ بَعْضَ التَّلَدُّنِ فَقَالَ لَهُ شَأْ لَعَنَكَ اللَّهُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « مَنْ هَذَا اللاَّعِنُ بَعِيرَهُ ». قَالَ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ « انْزِلْ عَنْهُ فَلاَ تَصْحَبْنَا بِمَلْعُونٍ لاَ تَدْعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ وَلاَ تَدْعُوا عَلَى أَوْلاَدِكُمْ وَلاَ تَدْعُوا عَلَى أَمْوَالِكُمْ لاَ تُوَافِقُوا مِنَ اللَّهِ سَاعَةً يُسْأَلُ فِيهَا عَطَاءٌ فَيَسْتَجِيبُ لَكُمْ ».

বাতনে বুওয়াত যুদ্ধের সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে পথ চলছিলাম। তিনি মাজদী ইবন ‘আমর জুহানীকে খুঁজছিলেন। পানি বহনকারী উটগুলোর পেছনে আমাদের মধ্য থেকে পাঁচজন, ছয়জন ও সাতজন করে পথ চলছিল। উকবা নামক এক আনসারী ব্যক্তি তাঁর উটের পাশ দিয়ে চক্কর দিল এবং তাকে থামাল। তারপর তার পিঠে উঠে আবার তাকে চলতে নির্দেশ দিল। উটটি তখন একেবারে নিশ্চয় হয়ে গেল। তিনি তখন বললেন ধুত্তুরি। তোর ওপর আল্লাহর অভিশাপ। এ শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিজের উটকে অভিশাপদাতা এই ব্যক্তিটা কে? তিনি বললেন, আমি হে আল্লাহর রাসূল। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘তুমি এর পিঠ থেকে নামো। তুমি আমাদের কোনো অভিশপ্তের সঙ্গী করো না। তোমরা নিজেদের বিরুদ্ধে, তোমাদের সন্তান-সন্তুতির এবং তোমাদের সম্পদের বিরুদ্ধে দু‘আ করো না। তোমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন মুহূর্তের জ্ঞানপ্রাপ্ত নও, যখন যা কিছুই চাওয়া হয় তিনি তোমাদের তা দিয়ে দেবেন।’ [মুসলিম : ৭৭০৫]

হাদীসের ব্যাখ্যায় মোল্লা আলী কারী রহ. বলেন, অর্থাৎ তোমরা কোনো মুহূর্তেই নিজের বিরুদ্ধে, নিজের সন্তান বা সম্পদের বিরুদ্ধে বদদু‘আ করো না। কারণ, হতে পারে যে সময় তুমি দু‘আ করছো, তা দিনের মধ্যে ওই সময় যখন যা-ই দু‘আ করা হোক না কেন তা কবুল করা হয়। তোমরা তো এ সময় সম্পর্কে আল্লাহর পক্ষ থেকে জ্ঞান প্রাপ্ত নও। (মুবারকপুরী, মিরআতুল মাফাতীহ : ৭/৭০৩)

হাদীসটি বর্ণনা করে আরেক ব্যাখ্যাকার বলেন,

فالحديث يدل على النهي عن كون الإنسان يدعو على أهله وماله، وذلك عندما يحصل له غضب فيحصل منه الدعاء، وهو مشتمل أيضاً على بيان العلة والحكمة في ذلك، وأنه قد يكون هذا الدعاء يوافق ساعة إجابة فيستجاب للإنسان فيما سأل من الشر أو من الشيء الذي لا ينبغي لأهله وماله.

‘হাদীসটি রাগের মাথায় মানুষের তার পরিবার ও সম্পদের বিরুদ্ধে দু‘আ করার নিষিদ্ধতা প্রমাণ করে। হাদীসটি এর কারণও তুলে ধরে। আর তা হলো, এ দু‘আটি কবুলের বিশেষ মুহূর্তে পড়ে যেতে পারে। ফলে মানুষের সবই কবুল হয়ে যায় চাই তা ভালো হোক বা মন্দ, যা সে তার পরিবার বা সম্পদের ক্ষেত্রে প্রত্যাশা করে না।’ [আবদুল মুহসিন, শারহু সুনান আবী দাউদ : ৮/২৮৮]

নিজের সন্তানের বিরুদ্ধে দু‘আ করার অর্থ তো নিজেই নিজেকে হত্যার তথা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া। আর এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَلَا تُلۡقُواْ بِأَيۡدِيكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ

‘আর তোমরা নিজ হাতে নিজদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৯৫}

অতএব প্রতিটি মাকে ভেবে দেখতে হবে, আমার রাগের মাথায় উচ্চারণ করা বাক্য যদি সত্যে পরিণত তাহলে কেমন লাগবে? আমি কি তা সহ্য করতে পারব? এ জন্য রাগের মাথায়ও কখনো সন্তানের অমঙ্গল কামনা করা যাবে না। প্রসঙ্গত বলা দরকার যে শুধু মায়েদেরই নয়, আমাদের সবারই উচিত নিজের, নিজের সন্তান ও সম্পদের বিরুদ্ধে বদদু‘আ করা থেকে সংযত হওয়া। রাগের সময় সংযম ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দেওয়া।

আর মেয়েদের সবিশেষভাবে বলতে চাই, মা, আপনি অনেক সয়েছেন, অনেক সবর করেছেন, আরেকটু সবর করুন। রাগের মাথায় সন্তানকে অভিশাপ দেয়া থেকে সংযত থাকুন। আল্লাহ আপনার সহায় হোন। আমীন।

আলী হাসান তৈয়ব
সহ-সম্পাদক, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ

 

শ্রাবন্তীর বাগদান সম্পন্ন

অবশেষে বাগদানটা সেরেই ফেললেন টালিগঞ্জের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। পাত্র সুপার মডেল কৃষাণ ব্রজ। রোববার বাগদানের মধ্য দিয়েই তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বাগদানে শ্রাবন্তীর ছেলে ঝিনুকসহ টালিগঞ্জের তারকা অভিনয়শিল্পী নির্মাতারা উপস্থিত ছিলেন। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়েটা সেরে হানিমুনে ইউরোপ উড়াল দেবেন এ দম্পতি।

কৃষাণের সঙ্গে শ্রাবন্তীর পরিচয়টা অভিনয়ের সুবাদেই। সাক্ষাৎ হয়েছিল মুম্বাইয়ে, একটি বিজ্ঞাপনে জুটি বেঁধে কাজের সুবাদে। প্রেম জমতেও দেরি হয়নি। বেশ কিছুদিন আগে কৃষাণের সঙ্গে ফেসবুকে ছবিও পোস্ট করে শ্রাবন্তীই দুজনের সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।

এটি শ্রাবন্তীর দ্বিতীয় বিয়ে। এর আগে ২০০৩ সালেই প্রথম বিয়ে করেন পরিচালক রাজীব বিশ্বাসকে। তখন অবশ্য রাজীব সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করতেন ইন্ডাস্ট্রিতে। শ্রাবন্তীর বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর। বিয়ের পরই সিনেমার জগৎ থেকে সরে আসেন শ্রাবন্তী।

পাঁচ বছর পর শ্রাবন্তী রবি কিনাগির ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ছবি দিয়ে আবারো অভিনয়ে ফিরেন। তখন থেকেই শ্রাবন্তী এবং রাজীবের ডিভোর্স নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রচুর কানাঘুষো শোনা যায়। অনেকে বলেন, দেবের সঙ্গে শ্রাবন্তীর বন্ধুত্ব নিয়েই নাকি দু’জনের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। রাজীবও নাকি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

শ্রাবন্তীর ডিভোর্সের পরই ব্যবসায়ী বিক্রম শর্মার সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে শ্রাবন্তী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন বিক্রমের সঙ্গে তার সম্পর্ক বন্ধুত্বের এবং তাকে বিয়ে করা নিয়ে তিনি কিছু ভাবছেন না।  সত্যিই বলেছিলেন শ্রাবন্তী। কারণ কৃষ্ণকে নিয়েই তিনি বেশ আছেন। বয়ফ্রেন্ডের নামে নিজের হাতে ট্যাটুও করিয়েছেন শ্রাবন্তী। আবার কৃষ্ণর হাতেও রয়েছে শ্রাবন্তীর নাম লেখা।

শ্রাবন্তীর প্রথম ছবি স্বপন সাহার ‘মায়ের বাঁধন’ মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে। সেই ছবিতে হেভিওয়েট নায়ক-নায়িকা ছিলেন প্রসেনজিৎ, শতাব্দী রায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। শিশু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শ্রাবন্তী। আর প্রথম সবচেয়ে হিট ২০০৩ সালের ‘চ্যাম্পিয়ন’। রবি কিনাগির এই ছবিটি ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’র বাংলা সংস্করণ। নায়ক ছিলেন জিৎ। এবার ঈদে মুক্তি পেয়েছে শ্রাবন্তী-শাকিবের বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজিত সিনেমা ‘শিকারি’।

Save

Save

Save

Save

Save

Save

Save

 

শাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলত ও নিয়ম

আন নাসাঈ তার ‘সুবুল উস সালাম’ গ্রন্থে বলেছেন, যদি রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হয়, তাহলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। শরিয়ত অনুযায়ী প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে। তাহলে ৩৬টি রোজা ১০ গুণ পুরস্কারে পরিণত করলে তা ৩৬০টি রোজার সমতুল্য হবে।

শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা মুস্তাহাব। হাদিস শরিফে এই ছয় রোজার অনেক ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত আবু আইয়ুব আনসারী রা. সূত্রে বর্ণিত, মহানবি সা. বলেন, যে ব্যক্তি রমজানে সিয়াম পালন করবে, অতঃপর শাওয়ালের আরও ছয়টি সিয়াম পালন করবে সে সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব পাবে। (মুসলিম : ১১৬৪)

আন নাসাঈ তার ‘সুবুল উস সালাম’ গ্রন্থে বলেছেন, যদি রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ছয়টি রোজা যুক্ত হয়, তাহলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬টি। শরিয়ত অনুযায়ী প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে। তাহলে ৩৬টি রোজা ১০ গুণ পুরস্কারে পরিণত করলে তা ৩৬০টি রোজার সমতুল্য হবে। অর্থাৎ সারা বছরের রোজার সমতুল্য হবে। কোনো কোনো আলেম বলেন, রমজানের শেষে শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখতে হবে, এমন কথা নেই একনাগাড়ে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, শাওয়াল মাসেই ছয়টি রোজা একনাগাড়ে রাখতে হবে এমন কথা নেই। শেষোক্ত মতামতটিই অধিক গ্রহণযোগ্য।

একটি বর্ণানায় পাওয়া যায়, প্রিয় নবী (সা.) আরও এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা শাওয়াল মাসের ৬ দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি ওই ৬ দিন রোজা রাখবে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক সৃষ্টি জীবের সংখ্যা হিসাবে তার আমলনামায় নেকি লিখে দেবেন, সমপরিমাণ বদি দূর করে নেবেন এবং পরকালে তার দরজা বুলন্দ করে দেবেন।

শাওয়ালের রোজা রাখার নিয়ম : মাসের শুরুতে মধ্যে বা শেষে যে কোনো সময় আদায় করতে পারবে। রোজা ছয়টি ধারাবাহিকভাবে বা মাঝে মাঝে ফাঁকা রেখেও আদায় করতে পারবে। নারীরা পিড়িয়ডের কারণে কাজা হওয়া রমজানের রোজা আলাদাভাবে আদায় করতে হবে। শাওয়ালের ছয় রোজার সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ত করতে পারবে না। বরং আগে কাজা শেষ করবে, পরে শাওয়ালের ছয় রোজা পালন করবে।

মাওলানা মিরাজ রহমান

 

৫টি অভ্যাস পৌঁছে দেবে স্বপ্নের দোরগোড়ায়

রাতে সুন্দর একটা ঘুম মানেই তরতাজা দিনের শুরু। ঝলমলে দিনে ঝটপট কাজে নেমে পড়া আর সহজে ক্লান্ত না হওয়ার প্রধান চাবিকাঠি রাতের নির্বিঘ্ন ঘুম। কিন্তু প্রায়ই প্রযুক্তির অত্যধিক ব্যবহার, স্ট্রেস, কাজের চাপ আমাদের ৮ ঘন্টার জরুরি ঘুমের রুটিনে ব্যাঘাত ঘটায়। আসুন জেনে নিই কয়েকটি সহজ কৌশল যা আপনার সকালকে উজ্জ্বল করবে, দিনকে করবে কর্মমূখী আর রাতের ঘুমকে করবে শান্তিময়।
ব্যায়াম
অফিস থেকে ফিরে সন্ধ্যায় করুন ব্যায়াম। ব্যায়াম মানেই এই নয় যে শারীরিক কসরত করতে হবে। হাটুন। প্রকৃতিকে অনুভব করুন। অনুভব করুন বাতাসের স্পন্দন, পাখির ঘরে ফেরা। মনকে মুক্ত করুন শান্ত। একই সাথে হাটা অথবা হালকা ব্যায়াম আপনার শরীরের জড়তা কাটিয়ে দেবে।
চিন্তাকে তুলে রাখুন
সারাদিনে আমাদের মস্তিষ্কে জমা হয় নানান রকম চিন্তা, দুশ্চিন্তা, সাফল্যের স্বপ্ন আর না পাওয়ার ভয়। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঝটপট লিখে ফেলুন সেগুলো একটি জার্নালের মত করে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, এটি একজন মানুষের জন্য মানসিক থেরাপীর মত কাজ করে। একই সাথে মস্তিষ্কে জমা হওয়া অপয়োজনীয় জঞ্জাল পরিষ্কার করে এবং পরের দিন আপনার ফ্রেশ মনে সহজেই ভিড় করে নতুন নতুন আইডিয়া।
নিজেই হন নিজের গুরু
সবাই নিজের পার্ফর্মেন্স কোচ হতে পারে না। কিন্তু এই প্রাকটিস আপনার কাজের গতি বাড়িয়ে দিতে পারে বহুগুণে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে আপনার ৩ টি প্রধান কাজের তালিকা করুন কাজের গুরুত্ব অনুসারে। আপনি যদি জেনে থাকেন যে, আপনার ১৫টি কাজ রয়েছে টু ডু লিস্টে, তাহলেও সেটিকেও গুরুত্বের অনুসারে সাজান। এই একটি পরদিন আপনাকে সাহায্য করবে দ্রুত কাজ তুলে আনতে।
মনোযোগের অনুশীলন করুন
মনোযোগের অনুশীলন করা প্রয়োজন রোজ। মেডিটেশন করতে পারেন এজন্য। কিভাবে করবেন? আপনার জন্য একটি সহজ পদ্ধতি-
ধীরে ধীরে কিন্তু গভীর শ্বাস নিন আপনার নাক দিয়ে এবং ছেড়ে দিন মুখ দিয়ে।
মনে অনেক রকম চিন্তা আসবে, সেগুলোকে স্বীকার করুন এবং ধীরে ধীরে চলে যেতে দিন।
নিজের শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ সম্পর্কে সচেতন হোন। মাথার তালু থেকে শুরু করে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত অনুভব করার চেষ্টা করুন, রিল্যাক্স করার চেষ্টা করুন যতক্ষণ না আপনি সহজ বোধ করেন।
একটি চমৎকার বই
আপনি যখন সফলতার কথা ভাবেন তখন কার কথা মনে পড়ে সবার আগে? কে আপনার সেই আদর্শ যাকে আপনি অনুসরণ করেন? বিজ্ঞানী কুদরাত-ই-খুদা? রাজনীতিবিদ শের-এ-বাংলা? নাকি অর্থনীতিবিদ ডা. মোহাম্মাদ ইউনুস? কার মত হতে চান আপনি? এরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিত্ব। কিন্তু এদের সবার মাঝেই একটি গুণ রয়েছে সব সময়। প্রকৃতপক্ষে, সকল সফল ব্যক্তি মেনে চলেন এটি। ঘুমোতে যাওয়ার আগে তারা পড়েন বই। বই আপনার মনকে করবে ফ্রেশ, চিন্তাকে সরিয়ে নেবে ভিন্ন খাতে, কল্পনাকে নিয়ে যাবে ভিন্ন এক বাস্তবতার জগতে। তাই বই পড়ুন।
লিখেছেন
আফসানা সুমী
ফিচার রাইটার

 

তাঁরা ছুটে বেড়ান ঢাকার রাস্তায়

২৮ জুন। প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগের দিন রাতে তা জানিয়ে দেওয়া হয় মহসিনা খাতুনকে। যথারীতি পরদিন প্রস্তুত হয়ে নেমে পড়েন কাজে। দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা ঠিক রাখা। কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাব্যবস্থায়। মহসিনার বিশেষ একটি পরিচয় আছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যে ২৮ জন নারী সার্জেন্ট নিয়োগ পান, তাঁদেরই একজন তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে কাজে যোগ দেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে। বর্তমানে কাজ করছেন রাজধানীর পল্লবী ট্রাফিক জোনে।

মহসিনা যখন ভিভিআইপি দায়িত্বে ব্যস্ত, ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রের সামনে থাকা পুলিশ বক্সে কথা হচ্ছিল আরেক নারী সার্জেন্ট শারমিন আক্তার জাহানের সঙ্গে। কিন্তু আলাপ শুরু হতেই টেবিলে রাখা ওয়াকিটকিতে একটি সংকেত এল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দৌড়ে ছুটে গেলেন রাস্তায়। মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের বাড়তি সতর্কতা ও ট্রাফিক-ব্যবস্থা দেখে বোঝা গেল, ভিভিআইপি পদমর্যাদার কেউ আসছেন। প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর রাস্তায় আবার যখন যান চলাচল শুরু হলো, তখন গাড়ির কাগজপত্র দেখছিলেন শারমিন। জানালেন, এসব নিয়মিত কাজেরই অংশ। ডিউটিতে কী কী কাজ করতে হয়? শারমিন বলেন, ‘সিগন্যাল ঠিক রাখা, মামলা দেওয়া, ভিভিআইপি ডিউটি—এসব দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হয়। একেক দিন একেক জায়গায় ডিউটি থাকে। সাধারণত সপ্তাহের শুরুতে জানা যায় ওই সপ্তাহের ডিউটি শিডিউল। তবে ভিভিআইপি ডিউটি থাকলে তা আগের দিন রাতে জানিয়ে দেন ফাঁড়ির মুনশি।

দৈনিক আট ঘণ্টা দায়িত্ব পালন শেষে বাসায় গিয়ে আবার পড়ার টেবিলে বসেন শারমিন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিসিএস পরীক্ষার। ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করা শারমিনের স্বপ্ন পুলিশের বড় কর্তা হওয়া। জানালেন, নিজের কাজের পরিধি বাড়াতে চান আরও। তাই এ স্বপ্ন। কিন্তু ঢাকার রাস্তায় এত দিনের কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? শারমিন বললেন, মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল চালকদের কাগজপত্র বেশির ভাগেরই ঠিক থাকে। ট্রাফিক আইন কড়াকড়ি হওয়ায় তাঁরা চেষ্টা করছেন নিয়ম মানার।
ঢাকার রাস্তায় যাঁদের নিয়মিত যাতায়াত আছে, তাঁদের নিশ্চয় চোখে পড়েছে মহসিনা, শারমিনদের। রাস্তায় শৃঙ্খলা রক্ষা করছেন তাঁরা। প্রতিরোধ করছেন আইন অমান্যকারীদের। ট্রাফিক আইন যাঁরা মানছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে এই নারীরা পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে মামলা করছেন। আর পথচারীরা জানাচ্ছেন বাহবা। একই দিন শেওড়াপাড়ার পুলিশ বক্সে দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট রেহানা পারভীন জানান, প্রথম দিকে তাঁরা যখন দায়িত্ব পালন করতেন, তখন পথচারীরা তাকিয়ে থাকত অবাক দৃষ্টিতে। আর এখন ধন্যবাদ জানায়। রাস্তার শৃঙ্খলা রাখতে সারাক্ষণই ছুটে বেড়ান বাগেরহাটের এই মেয়ে। জানালেন সড়কে যানজট, প্রতিবন্ধকতা দূর করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। তিনি এমন সেবা দিতে চান, যা কিনা মানুষ মনে রাখে। ইডেন কলেজ থেকে দর্শনে পড়াশোনা শেষ করে পুলিশে যোগ দেন এই নারী সার্জেন্ট।

আর মহসিনার গল্প? রংপুরের কারমাইকেল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এই নারী সার্জেন্টের গল্প শুনতে হলে যেতে হবে মিরপুর-১০-এ। ভিভিআইপি ডিউটি শেষ করে মহসিনা ইসি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার আগেই ছুটতে চান নিজের কাজে। আর কাজ শেষে বলবেন কথা। বেলা দেড়টার দিকে মহসিনা মিরপুর-১০-এ যখন ফিরছিলেন, তখন রাস্তায় প্রচণ্ড যানজট। তা দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন রাস্তায়। আর চেষ্টা করছেন তা দূর করার। কাজ শেষে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে ইউনিফর্মের প্রতি ভালো লাগা থেকে যোগ  দিয়েছি পুলিশে। কাজে জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা সহায়তা করায় সহজেই সেরে নিতে পারছি নিত্যদিনের দায়িত্ব।’ আগারগাঁও-মিরপুর সড়কের শৃঙ্খলা ঠিক করতে ২৮ জুন দায়িত্বে ছিলেন এই তিন নারী সার্জেন্ট।

পাঠক, মনে আছে কি আহমদ ছফার দূর্দানাকে? যে কিনা সাইকেল চালিয়ে ছুটে বেড়াত পুরো শহরে। মহসিনা খাতুন, শারমিন আক্তার জাহান, রেহানা পারভীনরাও ছুটে বেড়ান ঢাকার রাস্তায়। কখনো ওয়াকিটকি হাতে, কখনো মোটরসাইকেল চালিয়ে আবার কখনো রাস্তায় সিগন্যাল ঠিক রাখতে। আর তাই তো বনে গেছেন রাস্তার দূর্দানা, যাঁদের ঘুম ভাঙে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে। তারপরই প্রস্তুত হয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন সকাল সাড়ে ছয়টায়। থাকেন বেলা আড়াইটা পর্যন্ত।

 

সুস্বাদু আলু চাট

ঈদের সময় একাধারে মাংসের বিভিন্ন রেসিপি খেতে খেতে মুখে অরুচি ধরাটা স্বাভাবিক। এই ধারা থেকে বের হয়ে আসতে চাই ভিন্ন কিছু। কিন্ত সে খাবারটিও হওয়া চাই মুখরোচক। তাই এই সময়ে ঝটপট রান্না করে নিতে পারেন আলু চাট। খাবারে তৃপ্তি আনতে আলু চাট হতে পারে অসাধারণ একটি খাবার। নিজেদের খাওয়ার সঙ্গে অতিথি আপ্যায়নেও আলু চাট বেশ উপযোগী। তাই দেখে নিতে পারেন আলু চাটের সহজ রেসিপি।

যা যা লাগবে

আলু কিউব সেদ্ধ ৪ কাপ, তেল ৩ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনে পাতা কুচি আধা কাপ।

চাট মসলার জন্য

ভাজা জিরা গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়ো সামান্য, আদা গুঁড়ো আধা চা চামচ, চিনি ২ চা চামচ, হিং সামান্য, বিটলবণ এক চিমটি, টেস্টিং সল্ট আধা চা চামচ।

যেভাবে করবেন

চাট মসলা তৈরির সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে আলাদা করে রাখতে হবে। এবার একটি ফ্রাই প্যান মাঝারি আঁচে গরম করে নিন। এতে তেল দিয়ে গরম হলে সেদ্ধ করে রাখা আলু দিয়ে ভেজে নিন। উপরে কিছুটা লবণ ছিটিয়ে লালচে করে ভেজে নিতে হবে। এরপর চুলার আঁচ বন্ধ করে আদা কুচি, ধনে পাতা কুচি, লেবুর রস, মরিচ কুচি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মেশানো হলে বানিয়ে রাখা চাট মসলা দেড় চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। ভাত, রুটি বা পরোটার সঙ্গে সুস্বাদু আলু চাটের জুড়ি মেলা দায়।

 

শাড়ি পরে ইয়াং এন্ড স্টাইলিস্ট ফ্যাশন

কলেজে ভর্তি শুরু হয়ে গেছে। শুরু হতে চলেছে নতুন জীবন। সেই নিয়ে উত্তেজনা প্রচুর, তাই না! ফ্রেশার্স পার্টিতে কোন শাড়ি পরলে ভালো মানাবে, এই নিয়ে বুঝি বন্ধুরা মিলে প্ল্যানিং চলেছে! তাহলে বলি, ট্রাই করতে হবে নতুন কিছু। পুরানো সাজগোজ আজকাল আর চলে না। আর নতুন স্কুল, কলেজে নিজের ইমপ্রেশনটাও তো জমাতে হবে নাকি! কথাতে আছে না, ফার্স্ট ইমপ্রেশন ইজ দা লাস্ট ইমপ্রেশন! তাই কেমন হবে শাড়ি, রইল তারই কিছু স্টাইলিশ টিপস –

রোম্যান্টিক ফ্লোরালস, শিমার অ্যান্ড নেট : ফ্রেশার্স পার্টি জমাতে করতে বেছে নেওয়া যেতে পারে পিওর নেটের হালকা রঙের শাড়ি। তার উপর ফ্লোরাল কারুকার্য দারুণ মানাবে। তার সঙ্গে ম্যাচ করে বেছে নিতে হবে সলিড কালারের ব্লাউজ। হালকা নীল রঙের শাড়ির সঙ্গে গোল্ডেন ব্লাউজ ভালো মানাবে। শাড়ির আঁচল খুলে, কানে একটা বড় দুল পরে নিলেই ব্যাস, বাজিমাত।

হালকা রং এবং শিফন : বিশেষ অনুষ্ঠান থাকলেই যা শাড়ি পরার হিরিক। তাছাড়া শাড়ি আর তেমন একটা পরাই হয় না আজকাল। কিন্তু ওই বিশেষ দিনটি শাড়ি পরতে ইচ্ছে হলে সবচেয়ে ভালো মানাবে শিফনের শাড়ি। পরতেও সুবিধা আবার সামলাতেও পারবেন সহজে। হালকা রঙের শাড়ির সঙ্গে ভালো মানাবে স্লিভলেস ডিপ রঙের কারুকার্য করা ব্লাউজ।

স্যাটিন এবং সুতি : হাইনেক সুতির ব্লাউজের সঙ্গে একটা সুন্দর হালকা রঙের স্যাটিন বা সুতির শাড়ি দারুণ মানাবে। সকলের নজর কাড়বে।

শির ব্লাউজ অ্যান্ড শিফন : সাদামাটা ব্লাউজজের বদলে জমাট কারুকার্য করা শির ব্লাউজ খুব স্টাইলিশ। তার সঙ্গে শিফনের শাড়ি। ব্যাস, সঙ্গে কোনও জুয়েলারি না পরলেও ক্ষতি নেই। দারুণ দেখাবে।

এক রঙা শাড়ি: পরতে কোনও অসুবিধা না থাকলে একরঙা সুতির শাড়িও কিন্তু মন্দ দেখাবে না। তার সঙ্গে ফ্লোরাল হাইনেক ও কোয়ার্টার স্লিভ ব্লাউজ বেছে নিতে হবে আপনাকে। সঙ্গে অবশ্যই গাঢ রঙ এর শাড়ি বাছুন।