banner

শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

আকাশপথে ভ্রমনের আগে

বাঙালিরা ঘরকুনো এই অপবাদ কাটিয়ে উঠেছে অনেকটাই। এখন ছুটি পেলেই ঘুরতে যাওয়া আর বিলাসিতা নয়, জীবনকে উপভোগ করার একটা পথও বটে। ছোট্ট একটা দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। তাই দেশের মাঝে ভ্রমণ করতে হলে স্থল বা জলপথটাই যথেষ্ট। তবে দেশের বাইরে যেতে হলে সেক্ষেত্রে আকাশ পথেই ভ্রমন করতে হয়। কাজের প্রয়োজনে হোক বা আনন্দের উদ্দেশ্যে, প্লেনে ভ্রমনের আগে যদি আপনার কিছু বিষয় জানা থাকে তবে আপনার ভ্রমনটি আরও আনন্দদায়ক ও নির্ঝঞ্ঝাট হতে পারে। আসুন জেনে নেই সেই সবই।

  • -ভ্রমনের আগে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে রাখুন। এ জন্য ছোট পাউচ ব্যাগ বা হ্যান্ডব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। যদি বিদেশ ভ্রমন করতে যান তবে আগে থেকে আপনার পাসপোর্ট, টিকেট ও অন্যান্য কাগজ ঠিক করে রাখবেন। সেই সাথে আপনার ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে তা সাথে নিয়ে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে। হোটেল বুকিং দেয়া থাকলে তার কাগজটাও সাথে রাখবেন। এছাড়া অন্যান্য কোন দরকারি কাগজ থাকলে সব এক সাথে এক ব্যাগের মধ্যে রাখতে পারেন। এসব কাগজের ফটোকপি করে নিতে ভুলবেন না অবশ্যই, কেননা জিনিষটি কখন কি কাজে লেগে যেতে পারে তা বলা যায়না আগে থেকে। দেশের ভেতরে ভ্রমনের ক্ষেত্রে আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি সাথে রাখতে পারেন।
  • -যদি এয়ারপোর্টে ফ্লাইট ছাড়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে পৌঁছান ভালো, তাই বলে বেশি আগে গিয়ে বসে থাকার কোন মানে নেই। বরং বেশি আগে পৌছে গেলে সময় কাটানো ঝামেলার বিষয় হয়ে যেতে পারে। তাই ফ্লাইটের সময়সূচী অনুযায়ী হিসাব করে ঘর থেকে বের হওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে যদি গভীর রাতের ফ্লাইট হয় তবে আগে পৌঁছানটাই ভালো হবে।
  • -এয়ারপোর্টে ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে করতে সময় কাটানো বেশ ঝামেলার হতে পারে। তাই সময় কাটানোর জন্য সাথে কোন বই রাখতে পারেন। সেই সাথে ব্যাগে হাল্কা খাবার যেমন চকলেট, চিপস রাখতে পারেন। এয়ারপোর্টে বাইরের খাবার নিয়ে প্রবেশ নিষেধ থাকলে ভেতরের দোকান থেকেও কিনে নিতে পারেন।
  • -আপনার সাথে কোন মূল্যবান জিনিষপত্র থাকলে তা আপনার লাগেজে না রেখে আপনার কাছে হাত ব্যাগে রাখবেন। মনে রাখবেন অনেক সময় কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে লাগেজ হারানো যায়। আপনারটা কোনদিন যায়নি ভালো কথা, কিন্তু তার মানে এই না যে হারানো যেতে পারেনা। তাই আগে থেকে সতর্ক থাকা জরুরি। সেই সাথে এমন কিছু যদি সাথে থাকে যা ভেঙ্গে গেলে বা হারিয়ে গেলে রিপ্লেস করা সম্ভব না- যেমন ল্যাপটপ বা ক্যামেরা- তা নিজের সাথে রাখুন।
  • -প্লেনে বসে লম্বা ভ্রমন করা কষ্টদায়ক বটে। তাই ভ্রমণকে আনন্দদায়ক করতে সাথে বই নিতে পারেন। এছাড়া সাথে ল্যাপটপ বা কোন গান শোনার যন্ত্র যেমন আইপড বা অন্য কিছু থাকলে তাতে আপনার পছন্দের গান ভরে নিতে পারেন, ল্যাপটপে নিতে পারেন সিনেমা ও ছোটদের জন্য কার্টুনের কালেকশন।
  • -সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে থাকলে ভ্রমনের জন্য পোশাকটিও ঠিক করে ফেলুন। ভ্রমনের জন্য ঢিলেঢালা পোশাক পড়তে চেষ্টা করবেন। জুয়েলারি, বেল্ট, অতিরক্ত সাজগোজ এসব পরিহার করার চেষ্টা করবেন। লম্বা ভ্রমনের সময় এসব জিনিষ শুধু ঝামেলাই বাড়াবে। ফ্ল্যাট জুতা বা স্যান্ডেল পরবেন যেন দরকার পরলে দ্রুত খুলতে পারেন। লাগেজে ও হ্যান্ড বাগে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছুই নিতে যাবেন না।
  • – সাথে ছোট শিশু থাকলে তাদের প্রয়োজনীয় সব কিছু, যেমন- ডায়পার, দুধের বোতল, ন্যাপকিন ইত্যাদি সব সাথে নিয়ে নিন। কোনও জরুরি ওষুধ নিজের বা বাচ্চার প্রয়োজনে লাগলে সেটাও নিয়ে নিন। হাঁপানি রোগীরা ইনহেলার নিতেও ভুলবেন না।

ভ্রমন হল আপনার মনের খোরাক। প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে দুই দণ্ড ভাল করে শ্বাস নেবার জন্যই ঘুরতে যাওয়া হয়। আপনার ঘোরাঘুরিকে আরও আরামদায়ক ও নিশ্চিন্ত করতে ও আকাশপথে ভ্রমনের ঝামেলা এড়াতে সব কিছু গুছিয়ে নিতে ভুলবেন না যেন।

 

ঘুরে আসুন পদ্মা রিসোর্ট

ঢাকা বিভাগের মুন্সিগঞ্জ জেলার পদ্মা নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে নয়নাভিরাম ও অপরূপ সুন্দর একটি রিসোর্ট যার নাম পদ্মা রিসোর্ট। যারা কর্ম চঞ্চল শহরের গন্ডি পেড়িয়ে প্রকৃতি আর নদীর সান্নিধ্য পেতে চান তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান। বর্ষা মৌসুমে জল ঘেরা রিসোর্টে চাঁদনী রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করার মজাই ভিন্ন।

এখানে আছে ১৬টি ডুপ্লেক্স কটেজ। প্রতিটি কটেজে আছে একটি বড় বেডরুম, দুটি সিঙ্গেল বেডরুম, একটি ড্রইংরুম। আছে দুটি ব্যালকনি এবং একটি বাথরুম। শীতে কটেজের চারপাশ রঙ-বেরঙের ফুলে ভরে ওঠে আর বর্ষায় পানির রাজ্য। রিসোর্টের উঠোনে ইজি চেয়ারে রাতের তারা গুনতে পারেন। দিনে পারেন দেশি নৌকায় পদ্মা বেড়াতে। রিসোর্ট রেস্টুরেন্টে টাটকা ইলিশ পাবেন। শাকসবজি, গরু, মুরগি আর হাঁসের মাংসও পাবেন। মৌসুমি ফলফলাদিও মিলবে। ঢাকা থেকে রিসোর্টের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। মাওয়া ফেরিঘাট থেকে রিসোর্টের নিজস্ব স্পিডবোট আছে।

যেভাবে যেতে হবে
ঢাকার গুলিস্থান হতে বাসে করে যেতে হবে লৌহজং। সেখান হতে মাওয়া ফেরীঘাট। মাওয়া ফেরিঘাট হতে রিসোর্টের নিজস্ব স্পীডবোটে করে সরাসরি রিসোটে।

যা যা আছে পদ্মা রিসোর্টে-

আউটডোরে
বাইরে আছে লেভিশ বিচ চেয়ার যেখানে হেলান দিয়ে আপনি উপভোগ করতে পারবেন নদীর পারের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। এছাড়াও আছে ঘোড়া, এই ঘোড়ায় চরেও ঘুরে বেরাতে পারবেন আপনি।

রেস্টুরেন্ট
রিসোর্টের ভিতরে বেশ অনেকখানি জায়গা নিয়ে আছে সুসজ্জিত রেস্টোরেন্ট। এখানে ১২০ জনের মতো বসার জায়গা আছে।

রিভার ক্রুজের ব্যবস্থা

যারা নৌকা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন তাঁদের জন্য আছে বিভিন্ন রকম ছোট বড় নৌকার ব্যবস্থা। এখানে আছে রাবার বোট যাতে অনায়াসে ২-৬ জন বসতে পারবে। স্পিড বোটের ব্যবস্থাও আছে এখানে। আর এক ধরনের নৌকা হচ্ছে কান্ট্রি বোট, একটু বড় হয় এই নৌকাটা, এখানে একসাথে ২০-২৫ জন উঠতে পারবে। আর যারা নদীতে মাছ ধরার শখ রাখেন তারা ফিশিং বোটেও চড়তে পারেন। সব বোটেই লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা আছে।

খেলাধুলা
এখানে আপনি চাইলে আপনার বন্ধুদের সাথে মেতে উঠতে পারেন বিভিন্ন খেলায়- ফুটবল, বিচ ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, ঘুড়ি উড়ানো, ফ্রিজবি, এমনকি দেশীয় খেলা হাডুডুও চাইলে খেলতে পারবেন।

খাবার
এখানে আপনি পাবেন ফ্রেশ এবং ফরমালিনমুক্ত পদ্মা নদীর ইলিশ ও অন্যান্য মাছ। আর পাবেন সবজি, গরুর মাংস, মুরগির মাংস ও হাঁসের মাংস আর থাকছে এখানকার লোকাল মৌসুমি ফলমূল। দুপুর বা রাতের খাবারের জন্য খরচ হবে ৩০০ টাকা। সকালের নাস্তা জনপ্রতি ১০০ টাকা

কোথায় থাকবেন
এখানে ১৬ট ডুপ্লেক্স কটেজ রয়েছে। প্রতিটিতেই রাত্রি যাপন করা যায়

ভাড়া ও অন্যান্য
এক দিনে কটেজ ভাড়া (সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা) ২৩০০ টাকা। ২৪ ঘণ্টার জন্য (সকাল ১০টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা) ৩০০০ টাকা।

যোগাযোগ করতে চাইলে
এস এম নজরুল ইসলাম
জেনারেল ম্যানেজার
মোবাইলঃ ০১৭১২-১৭০৩৩০, ০১৭৫২-৯৮৭৬৮৮
টেলিফোনঃ ৮৭৫২৬১৭

 

সাগরকন্যা কুয়াকাটা

প্রকৃতির সাথে কিছুক্ষন থাকতে চান? নিরিবিলি কিছুসময় কাটাতে চান? তাহলে বেড়িয়ে পড়ুন কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে। এমন শান্ত ও নিরিবিলি সৈকত কোথাও পাবেন না এটা বলতে পারি। অনেকেই কক্সবাজারের সাথে কুয়াকাটার মিল খুজতে চান। অনেকেই বলে থাকেন কুয়াকাটায় দেখার মত কিছু নেই, এর থেকে কক্সবাজার অনেক সুন্দর। এখানে বলে রাখি কক্সবাজার আর কুয়াকাটার সৌন্দর্য সম্পূর্ন ভিন্ন রকমের। জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য অথবা গাংচিলের ওড়াওড়ি দেখেতে পাবেন একটু নজর রাখলেই।

পথে যেতে যেতেঃ

অনেকেই হয়তো শুনে থাকবেন কুয়াকাটার রাস্তা খুবই খারাপ। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতাটা এই যে কুয়াকাটার যাবার রাস্তা আসলে খুবই ভাল। শুধু শেষের কয়েক কিলোমিটার রাস্তা মোটামুটি হিসেবে চালিয়ে দেয়া যায়। কিন্তু ফেরিতে নদী পার হতে হয় চারটি। তবে আশার কথা হল তিনটি নদীতে সেতু নির্মান হচ্ছে।। একটির কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। তাই অচিরেই ফেরী পারাপারের হ্যাপাও আর থাকবে না।

বরিশাল বিভাগ পুরোটাতে অসংখ্য নদী দিয়ে ঘেরা। তাই নদীপারের জীবন যাত্রা দেখে অবিভূত হতে পারেন। রাস্তার দুপাশে যতদূর চোখযায় শুধু ধান ক্ষেত। নদী, ধান, খাল এই নিয়ে বরিশাল কথাটার সার্থকতা খুজে পাবেন। যত কুয়াকাটার দিকে যেতে থাকবেন ততই পাল্টাতে থাকবে আশেপাশের দৃশ্য। দেখা পাবেন সাগরের মাছ ধরার ট্রলার হয়তো সাগর থেকে ফিরছে। এদিকের মানুষের অনেকেরই প্রধান জীবিকা মাছ ধরা।
দূরে দেখতে পাবেন ম্যনগ্রোভ বনের সারি। এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে সময় কেটে যাবে বুঝতেও পারবেন না।

অবশেষে কুয়াকাটায়ঃ

কুয়াকাটায় গিয়ে প্রথম কাজ হবে কোন একটি হোটেলে ওঠা। যারা একটু নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করেন তাদের জন্য পর্যটন করপোরেশনের হোটেল অনেক ভাল লাগবে। চারদিকে নারিকেল গাছে সারি। সামনে বিশাল বাগান। পর্যটন করপোরেশনের হোটেলে একটু বাড়তি নিরাপত্তা দেয়। তাছাড়াও আছে অসংখ্য হোটেল। তার যে কোন একটিতে উঠতে পারেন।

নিরিবিলি সৈকতঃ

দুপুরের খাবার পর বেড়িয়ে পড়ুন সৈকত দেখতে। অনেক শান্ত নিরিবিলি একটি সৈকত। হেঁটে হেঁটে বহুদূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। কুয়াকাটার সমূদ্রের দৈর্ঘ্য মাত্র ২০ কিলোমিটার। কিন্তু সৈকতের প্রস্থ প্রায় দেড় কিলোমিটার। পূর্ব দিকে কয়েক কিঃমিঃ গেলে দেখা মিলবে ঝাউ গাছের বাগান। মাঝে মাঝে মাথা উচু করে আছে নারিকেল গাছ। সাগর পাড়ের ছোট ছোট বাচ্চারা সৈকতে ছোটাছুটি করে। ছোট ছোট কাঁকড়া মাটি খুড়ে তৈরী করছে সুন্দর সুন্দর নকশা। যেন কোন শিল্পী নিখুত আঁচড়ে এইসব শিল্পকর্ম তৈরী করছে। তাছাড়াও এখানে সৈকতে পেতে রাখা আছে কাঠের বেড। চাইলে এগুলো ভাড়া নিতে পারেন। প্রতিঘন্টা বেড ভাড়া ২০টাকা। দিনের কোলাহলের থেকে রাতের আঁধারে সমূদ্রের গর্জন বেশি শোনা যায়। চাইলে রাতেও কাঠের বেড গুলো ভাড়া নিতে পারেন। নিরাপত্তার কথা যদি বলি তাহলে দেখেছি রাতে পুলিশ সৈকতে পাহারা দেয়। তবুও রাতে সৈকতে থাকলে একটু সতর্ক থাকা ভাল।

হারিয়ে যান প্রকৃতির মাঝেঃ

ঘুরাঘুরির জন্য এখানে ভাড়াতে মটরসাইকেল পাওয়া যায়। মটরসাইকেল ভাড়ার নানান অফার পাবেন তাদের কাছ থেকে। দেখতে পাবেন সাগর পারের মানুষের মাছ ধরা ও তার জীবন যাত্রা। কেউবা ধরছে চিংড়ির পোনা। বিশাল সৈকতে রাখা আছে সারি সারি নৌকা। যেগুলো জেলেরা মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করেন।

জেলেদের সাথে উড়ে বেড়ায় গাংচিলের ঝাঁক। নিশ্চিন্তে হেঁটে বেড়ায় সি বিচে। এখানে তাদের কেউ উৎপাত করেনা। দেখা পাবেন গাংচিলের ঝাঁক মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত। সাথে আছে বিশাল আকাশ আর বিশাল সমূদ্র। হারিয়ে যান বিশালতার মাঝে।

ফাতরার চর ও লাল কাঁকড়ার চরঃ

ফাতরার চর মূলত সুন্দরবনের একটি অংশ। এখান থেকেই সুন্দরবনের এলাকা শুরু। চাইলে সুন্দরবনে ঘোরার সাধটি এখানেই অনেকটা মিটিয়ে নিতে পারেন। যদিও এখানে বন্যপ্রানী দেখার সম্ভাবনা অনেক কম। কিন্তু অনেক পাখি দেখতে পাবেন। এছাড়াও লাল কাঁকড়ার চরে যেতে পারেন। মূলত এই চরটির নাম গঙ্গামায়ার চর। এখানে হাজার হাজার লাল কাঁকড়া চোখে পড়বে আপনার। তাই অনেকে এটিকে লাল কাঁকড়ার চর বলে। এই দুই জায়গা ছাড়াও শুটকি পল্লীতে যাবার জন্য এখানকার সৈকত থেকে কয়েকটি ট্রলার ছেড়ে যায়। সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে ট্রলারগুলো ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি ৩০০টাকা। ফাতরার চর,লাল কাঁকড়ার চর, শুটকি পল্লী ইত্যাদি কয়েকটি স্পটের প্যাকেজ অনুযায়ী ট্রলারগুলো চলাচল করে।

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তঃ

কুয়াকাটার বিশেষত্ব হচ্ছে এখান থেকে একই সাথে সূর্য উদয় আর সূর্য অস্ত দেখা যায়। দক্ষিন এশিয়ার এই একটি মাত্র জায়গা থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। ভোর বেলা সূর্য রক্তিম আভা ছড়িয়ে সমূদ্রের বুক চিড়ে উদয় হয় আবার সন্ধ্যায় অস্ত যায়। এই একটি বিশেষত্বের কারনে অনেকে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। সূর্যাস্ত দেখার জন্য বিকেল থেকেই সৈকতে থাকতে হবে। সারাটা বিকেল জুড়ে কুয়াকাটার সৌন্দর্য পরিবর্তিত হতে থাকে। আকাশে মেঘ না থাকলে সহজেই সূর্যাস্ত দেখতে পারবেন। কিন্তু সূর্যদোয় দেখতে হলে খুব সকালে উঠতে হবে। সকালে উঠতে হলে তারাতারি ঘুমিয়ে পড়ুন। রাত জেগে থাকলে সূর্যদোয় মিস হয়ে যেতে পারে কিন্তু! সূর্যদোয় দেখার জন্য সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই যেতে হবে ঝাঊ বনের দিকে। এখান থেকেই সূর্যদোয় সব থেকে ভাল দেখা যায়।

আরো দেখুনঃ

হাতে সময় থাকলে ঘুরতে পারেন বৌদ্ধমন্দির ও রাখাইন পল্লী। এই বৌদ্ধমন্দিরের বৌদ্ধ মূর্তিটি ৩০ফুল লম্বা। আর রাখাইন পল্লী মূলত উপজাতীয়দের আবাসস্থল। যেতে পারেন জেলে পল্লীতে। মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলোকে কাছ থেকে দেখুন। এখান থেকে সুলভ মূল্যে ইলিশ কিনতে পারেন।

যাতায়াতঃ

ঢাকা থেকে বাস অথবা লঞ্চে কুয়াকাটা যেতে পারেন। এছাড়া সায়দাবাদ থেকে সরাসরি কিছু বাস যায় কুয়াকাটায়। সাকুরা পরিবহন ও বিআরটিসি পরিবহনের বাস গুলো একেবারে সিবিচের কাছেই নামিয়ে দেয়। লঞ্চে গেলে দুভাবে যেতে পারেন। ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা অথবা ঢাকা থেকে পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা। সদরঘাট থেকে লঞ্চে পটুয়াখালী হয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে পটুয়াখালীতে নেমে সেখান থেকে বাসে সোজা কুয়াকাটা যেতে হবে। লঞ্চে গেলে বরিশাল হয়ে যাওয়া অনেক সুবিধাজনক। বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যাবার বাস ভাড়া ২২০টাকা। বাস গুলো খুব বড় নয়। বরিশাল রূপাতলী বাসস্টান্ড ও বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে প্রতি ঘন্টায় বাস ছাড়ে। কুয়াকাটাতে গেলে হাতে কিছু সময় নিয়ে যান। দেখার মত অনেক কিছু আছে সেখানে। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল ফাতরার চর। যেটা আসলে সুন্দরবনের একটি অংশ।

থাকা ও খাওয়াঃ

কুয়াকাটাতে অনেক ভাল মানের হোটেল আছে। যেগুলোতে খুব কম খরচে থাকতে পারেন। তবে যারা একটু নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করেন তারা পর্যটন মোটেলে উঠতে পারেন। এখানে পর্যটন মোটেল ও ইয়ূথ ইন এ সিঙ্গেল বেডের রুম ১০০০টাকা ও ডাবল বেডের রুম ১৫০০ টাকাতে পাবেন। এছাড়া ৪ বেডের রুম ভাড়া ১৬০০ টাকা। পর্যটন করপোরেশনের হোটেল পর্যটন হলিডে হোমস এ খবচ একটু কম পরবে। হোটেল গুলোতে খাবারের ব্যবস্থা আছে। চাইলে খাবার রুম সার্ভিসে নিতে পারেন। তাতে অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে। এছাড়াও কুয়াকাটার আশেপাশে আরো ৪০-৫০টি ব্যাক্তি মালিকানাধীন হোটেল আছে। সেগুলোতে খরচ অনেক কম। এগুলোতে ১৫০ থেকে ১০০০টাকার মধ্যে থাকতে পারবেন। এছাড়া সি বিচে কম খরচের অনেক হোটেল পাবেন খাবার জন্য। কুয়াকাটায় গেলে সামূদ্রিক মাছ খেতে ভুলবেন না। এখানকার সামুদ্রিক মাছের অসাধারন রান্না আপনার মুখে অনেকদিন লেগে থাকবে। এখানে শুঁটকি পল্লী থাকায় সেখান থেকে কম মূল্যে শুঁটকি কিনে ফিরতে পারেন।


ছবি- ইন্টারনেট

 

গরমের ফোস্কা থেকে রেহাই পাওয়ার ঘরোয়া উপায়

গরমের সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কা পড়তে দেখা যায়। এই ফোস্কাগুলো তরলে পূর্ণ থাকে এবং এরা গুচ্ছাকারে থাকে। সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির প্রভাবে ফোস্কা পড়ে। এই ফোস্কা অস্বস্তিকর হয় এবং কখনো কখনো প্রচন্ড ব্যথা ও চুলকানি হয়। যদি এতে ইনফেকশন হয় তাহলে অনেক বেশি ব্যথা হয় ও ফুলে যায় এবং জ্বর আসে। এদের চামড়ার ভাঁজের মধ্যে হতে দেখা যায়। সাধারণত হাত বা পায়ে ফুসকুড়ি হতে দেখা যায় ঘষা বা চাপ দেয়া হয় বলে। চামড়ার নীচের ঘাম নালীর মধ্যে যদি ঘাম আটকে যায় তাহলে ছোট ফোলা অংশ বা ফুসকুড়ি হয়। সানবার্ন ব্লিস্টার সহজ ও ঘরোয়া উপায়ে নিরাময় করা যায়। ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমে ব্যথা কমে, ইনফেকশন প্রতিরোধ করে এবং দ্রুত নিরাময় হয়। ঘরোয়া প্রতিকারগুলো সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।

১। ঠান্ডা চাপ

গরমের ফোস্কার ব্যথা ও প্রদাহ কমতে সাহায্য করে ঠান্ডা চাপ। এজন্য ঠান্ডা পানির মধ্যে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত পানিটুকু চেপে ফেলে দিন এবং আক্রান্ত স্থানে তোয়ালেটি দিয়ে রাখুন। দিনে কয়েকবার এই প্রক্রিয়াটি করুন। এতে ফুসকুড়ির জ্বালা যন্ত্রণা কমবে।

সতর্কতা- কখনোই সরাসরি বরফের টুকরো ফোস্কার উপর দিবেন না। কারণ এতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। যতদিন ফোস্কা থাকে ততদিন গোসলের সময় গরম পানি ব্যবহার না করাই ভালো। এর পরিবর্তে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করুন। এতে ব্যথা কমতে সাহায্য করবে।

২। অ্যালোভেরা

হালকা পুড়ে যাওয়ার চিকিৎসায় ও সান বার্ন ব্লিস্টার ভালো করতে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী। এটি ব্যথা কমতে সাহায্য করে, ক্ষতিগ্রস্থ ত্বককে রি-হাইড্রেট করে এবং নিরাময়কে ত্বরান্বিত করে। একটি অ্যালোভেরার পাতার মাঝ বরাবর কেটে জেল বাহির করে নিন। ফুসকুড়ির উপরে এই জেল লাগান এবং শুকাতে দিন। অ্যালোভেরাতে এস্ট্রিঞ্জেন্ট বা কষাটে উপাদান থাকে যা ফুসকুড়ি পরিষ্কার রাখে ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

৩। আলু

কাঁচা আলু ত্বককে ঠান্ডা করতে পারে, ব্যথা কমাতে পারে এবং নিরাময়কে ত্বরান্বিত করতে পারে। কাঁচা আলু ভালো করে ধুয়ে নিয়ে মোটা করে টুকরা করুন। তারপর এদের ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ফুসকুড়ির উপরে লাগিয়ে শুষ্ক হতে দিন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতিদিন লাগান ফুসকুড়ি ভালো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত। আলুর সাথে শশার টুকরা মিশিয়ে নিতে পারেন।

এছাড়াও ভিনেগার, ওটমিল, হলুদ, ব্ল্যাক টি, টুথপেস্ট, টি ট্রি ওয়েল ও কর্ণস্টার্চ ব্যবহার করেও গরমের ফোস্কা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। গরম আর্দ্র আবহাওয়া ফোস্কা পড়ার জন্য উপযুক্ত। ফুসকুড়ি সুই দিয়ে ফুটো করা ঠিক নয়। এতে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় এবং আবারও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর পরিবর্তে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত এদের ব্যান্ডেজ করে রাখা ভালো। গরমের ফুসকুড়ি প্রতিরোধ করার জন্য সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঘরের ভিতরে থাকার চেষ্টা করুন। সব সময় হাইড্রেটেড থাকার চেষ্টা করুন পানি বা লেবুর জুস পান করে।

 

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

 

শাহরুখের সমান পারিশ্রমিক দাবি করলেন রণবীর সিং

‘বাজিরাও মাস্তানি’ ছবি বদলে দিয়েছে রণবীর সিংয়ের ভাগ্যের চাকা। অসংখ্য পুরস্কারও জিতেছেন সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত এই সিনেমার জন্য। সে কারণে নিজের পারিশ্রমিক বাড়াতেই পারেন এই অভিনেতা। খবরে প্রকাশ- ছবির জন্য নয়, লাইভ পারফরমেন্সের জন্য বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের সম পরিমাণ পারিশ্রমিক দাবি করছেন রণবীর।

হিন্দি সিনেমার ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন তিন খান। সাধারণত লাইভ পারফরমেন্স করতে কিং খান নিয়ে থাকেন দুই কোটির মতো। ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, ঠিক সেই অঙ্কের পারিশ্রমিক রণবীর চাইছেন স্টেজ পারফরমেন্স করতে।

 

কাফন-দাফনের সময় মৃত নারীর চুল কিভাবে রাখবে ?

আদম সন্তান মারা গেলে তার জানাযার সাথে কিছু বিধান রয়েছে, যা বাস্তবায়ন করা জীবিতদের ওপর জরুরি। মৃত নারীর ক্ষেত্রে বিধান হলো, নারীর চুল তিনটি বেণী করে পিছনে ফেলে রাখবে।

উম্মে ‘আতিয়্যাহ [রা.] নবী [সা]-এর মেয়ের গোসলের বর্ণনা দিয়ে বলেন- অর্থাৎ- আমরা তার চুলকে সমান তিনটি বেণী বানিয়ে পিছনে রেখে দিয়েছি। সুতরাং কাফনে নিয়োজিত নারীদের এ বিধানটির দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা দরকার ।

মূল : ড. সালেহ ইবনে ফাওজান
ভাষান্তর : মাওলানা মনযূরুল হক

 

ছোটদের জুতা কিনতে যা খেয়াল রাখা দরকার

আপনার ছোট্ট সোনাটি যখন হাঁটতে শেখে, তখন আনন্দই আনন্দ। শিশুর প্রথম পদক্ষেপ প্রত্যেক বাবা-মায়ের কাছে স্মরণীয় হয়ে রয়ে যায়। কিন্তু এই সময় আপনাকে হতে হবে সতর্ক। ছোট্ট সোনাটির জন্য বেছে নিতে হবে সঠিক জুতা। যাতে তার ছোট্ট ছোট্ট পায়ে কোনও আঘাত না লাগে। আরও একটা কারণ হয়, ছোটোবেলা থেকে সঠিক জুতা না পরালে সমস্যা দেখা দিতে পারে পরবর্তীকালে। তাই ছোটো বাচ্চাদের জুতা কেনার আগে এই বিষয়গুলি মাথায় রাখুন-

১. ফ্যান্সি জুতার বদলে আরামদায়ক হবে এমন জুতা বেছে নিন। বাচ্চাদের ফ্যাশনের থেকে বেশি জরুরি তাদের সুস্বাস্থ্য।

২. চামড়া বা সুতি কাপড়ের তৈরি জুতা বেছে নিন। ফ্যান্সি প্লাস্টিকের জুতা প্রথম থেকেই এড়িয়ে চলুন। নয়তো তা ওই ছোট্ট পায়ে অস্বস্তির কারণ দেখা দিলেও দিতে পারে।  দেখবেন, জুতার ওজনও যাতে বেশি না হয়।

৩. শক্ত চামড়ার জুতা এড়িয়ে চলাই ভালো। যেহেতু এই সময় বাচ্চারা খুব তাড়াতাড়ি বড় হয়, তাই খুব টাইট জুতা বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে।

৪. জুতার সোল ভালো করে দেখে নিন। দেখে নিন বাচ্চা তাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে কি না।  খুব বেশি শক্ত সোল এড়িয়ে চলাই ভালো।

৫. ছোটো মেয়েদের হাইহিল স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।তাই বাচ্চাকে মনের মতো সাজাতে হলে বেছে নিন মনের মতো সুন্দর ও স্টাইলিশ জুতা।এমন জুতা যাতে হিল নেই, কিন্তু আরাম আছে।

৬. বাচ্চার জুতার সাইজ তার পায়ের মাপ বরাবর হওয়া প্রয়োজন।অতিরিক্ত বড় বা খুব টাইট জুতা একেবারেই পরাবেন না।

৭. ক্যানভাস জাতীয় জুতা কিনলে ভালো করে দেখে নিন, তা পায়ে ঠিক করে ফিট হয়েছে কি না।

৮. বাচ্চাদের বাড়ন্ত বয়সে সময় সময় জুতা বদলানো প্রয়োজন। একবার কিনে বহুদিন চলে যাবে এমন চিন্তাভাবনা জুতার ক্ষেত্রে না রাখাই ভালো।

 

নতুন চাকরি খুঁজছেন? এই ৬টি বিষয় মনে আছে তো?

পড়ালেখা শেষ করে একটি ভাল চাকরি পাবার চেষ্টা থাকে প্রতিটি মানুষের। কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাবার জন্য চলে কত চেষ্টা। প্রতিদিনই চাকরির জন্য বিভিন্ন কোম্পানিতে সিভি দিচ্ছেন। কিন্তু আপনি জানেন কি ছোট ছোট কিছু ভুল আপনার চাকরি খোঁজার কাজটি কঠিন করে দিচ্ছে? ভাল ফলাফল থাকার সত্ত্বেও এই ভুলগুলোর জন্য আপনি আপনার পছন্দের চাকরটি হারাচ্ছেন। প্রথম চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো অব্যশই বিবেচনা করবেন তা জেনে নিন আজকের ফিচারটি থেকে।

১। লক্ষ্য নির্ধারণ করা

চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে একজন ফ্রেশারকে প্রথম লক্ষ্য নির্ধারণ করে নেওয়া উচিত এমনটি মনে করেন Michael Provitera, associate professor of organizational behavior at Barry University. আপনি কোন ক্ষেত্রে চাকরি করতে চান, কোন স্থানে চাকরি পেলে আপনার সুবিধা হবে সেটি প্রথমে নির্ধারন করুন। নিজের পড়ালেখা সম্পৃক্ত কোম্পানিগুলো এবং পছন্দের প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পর্কে রিসার্চ করে নিজেকে সে অনুযায়ী প্রস্তুত করুন।

২। চাকরিক্ষেত্র সীমাহীন রাখুন

নিজের লক্ষ্য ঠিক রাখুন। তবে চাকরি ক্ষেত্রটির কোন সীমা রাখবেন না। ভবিষ্যৎ সবসময় অনিশ্চিত। আপনি জানেন না ভবিষ্যত কি হবে। হয়তো আপনার অপছন্দের চাকরটি করতে হতে পারে। সেভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখুন।

৩। ভাল মানের সিভি তৈরি

চাকরিদাতা আপনাকে দেখার আগে আপনার সিভি দেখে থাকেন। তাই কোন অবস্থাতে সিভিকে অবহেলা করবেন না। মনোযোগ দিয়ে সিভি তৈরি করুন। চেষ্টা করুন প্রফেশনাল সিভি তৈরি করতে। আর এই কাজটি করতে আপনাকে সাহায্য করবে ইন্টারনেট।

৪। প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন

প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে  পড়ালেখার পাশাপাশি প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়। প্রযুক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন কোর্স করতে পারেন। অনলাইনে নানা রকম কোর্স করানো হয়ে থাকে। এর অনেকগুলো কোর্সই ফ্রি। আপনি এর যেকোন একটি কোর্স করে নিতে পারেন।

৫। প্রতিষ্ঠান বিষয়ক জ্ঞান

কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টার্ভিউয়ের জন্য ডাক পেলে প্রথম কোন কাজটি করবেন? প্রথমে সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জেনে নিন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েব সাইট থাকে। সেই সাইট থেকে প্রতিষ্ঠান এবং তার কাজের ধরণ সম্পর্কে জেনে নিন।

৬। ইন্টার্ভিউয়ের দক্ষতা বৃদ্ধি করুন

নিয়মিত খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস করুন। বিশ্ব সম্পর্কে আপডেট থাকুন। এই কাজগুলো ইন্টার্ভিউয়ের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। ইন্টার্ভিউয় দেওয়ার সময় নার্ভাস হবেন না। আত্নবিশ্বাসের সাথে ইন্টার্ভিউয় ফেইস করুন। নার্ভাসের ভাব কাটানোর জন্য বাসায় আয়নার সামনে অথবা পরিবারের সামনে ইন্টার্ভিউয় দেওয়া প্যাকটিস করে নিন। এতে আপনার জড়তা কেটে যাবে। আত্নবিশ্বাসের সাথে ইন্টার্ভিউয় দিতে পারবেন।

মনে রাখবেন প্রথম সাক্ষাৎ একটি চাকরি পাওয়ার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই চেষ্টা করবেন ইন্টার্ভিউয়তে নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে।

লিখেছেন

নিগার আলম

 

চুড়িতে কবিতার স্বপ্ন

রাজধানীর ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর সড়কে একটি বিপণিবিতানের সামনে চলছে বৈশাখী মেলা। সেখানে সার বেঁধে চুড়ি বিক্রি করছেন কয়েকজন। তাঁদেরই একজন কবিতা। লাল, নীল, সবুজ, বেগুনি রঙিন চুড়ির রিনিঝিনি শব্দের মাঝেই স্বপ্ন দেখেন। তবে চারপাশে রঙের খেলা থাকলেও নিজের জীবনে কোনো রং নেই।
কবিতার চার ছেলেমেয়ে। স্বপ্ন ছিল স্বামী-সন্তান নিয়ে দুবেলা দুমুঠো খেয়ে সুন্দরভাবে জীবন কাটাবেন। তাই নেমেছেন জীবনযুদ্ধে। স্বামী কিছু করেন না। স্বামী-সন্তান সবার দায়িত্ব নেওয়াও সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। তাই সন্তানদের নিয়ে আলাদা থাকেন।
শেরপুরের কলুরচর ব্যাপারীপাড়ায় বাড়ি কবিতার। চুড়ি বিক্রির টাকা দিয়ে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগে। দুই মেয়ে কাজ করে অন্যের বাসায়। বেতন পায় না, শুধু তিনবেলা খাওয়া জোটে। ছোট ছেলেটা একটা দোকানে কাজ করে। সামান্য কিছু টাকা পায়। বলতে গেলে পরিবারে তিনি একাই উপার্জনক্ষম।
কবিতা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের আগে আগে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার টাকার চুড়ি বিক্রি হয়। চৈত্র মাসের শেষ দিনে বিক্রিবাট্টা হয় আরও একটু বেশি। সেটা কখনো পাঁচ-ছয় হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যায়। তাই শেরপুর থেকে চুড়ি বিক্রি করতে ঢাকায় আসি।’
পয়লা বৈশাখের আগের রাত পর্যন্ত বিপণিবিতানের সামনের ফুটপাতেই থাকেন তিনি। রাতে গাড়ির শব্দে ঠিকমতো ঘুমও হয় না। এপাশ-ওপাশ করে রাতটা পার করে দেন কোনো রকমে। আর প্রতিদিনের দুর্ভোগ তো আছেই। তারপরও পয়লা বৈশাখের আগে এই ১৩টি দিন কবিতার ঈদের মতোই লাগে। সারা বছর কবিতা চুড়ির পাশাপাশি তাঁর গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে মেয়েদের বিভিন্ন পোশাক, বিশেষ করে অন্তর্বাস বিক্রি করেন বাড়ি গিয়ে। কেননা গ্রামের নারীরা দোকান থেকে এ ধরনের জিনিস কিনতে অভ্যস্ত নন।
কবিতার দিনগুলো কষ্টেই কাটে। কোনো দিন এক বেলা আবার কোনো দিন দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন। তারপরও কবিতা থেমে নেই, জীবনের পথে রঙিন চুড়ির পসরা নিয়ে কবিতা চলছেন…।

 

জীবনজয়ী জেরিন

জীবনের সংকটময় মুহূর্তে হতাশা এসে ভর করে। কিন্তু আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তি তা মোকাবিলা করতে সক্ষম। নুসরাত জেরিন তেমনই একজন। ক্যানসারের সঙ্গে ১০ মাস ধরে যুদ্ধ করে তিনি এখন সুস্থ তো বটেই, শিক্ষকতা করছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির ছাত্রী জেরিন। যখন তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ে, তখন স্নাতকোত্তর পরীক্ষার তাত্ত্বিক অংশ শেষ হয়েছে। গবেষণাপত্র জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। হঠাৎ করে আসা ওই বিপদে বুঝতে পারেন না কী করবেন। স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। স্নাতকোত্তরেও তাঁর প্রথম হওয়ার স্বপ্ন। গবেষণাপত্র সময়ের মধ্যে জমা না দিলে পরীক্ষার ফল ভালো হবে না। এসবই মাথায় ঘুরছে জেরিনের।
পরিবার, বন্ধু ও শিক্ষকেরা সাহস দিলেন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন। নুসরাত জেরিন চিকিৎসার জন্য প্রথমে ভর্তি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে ২২ দিন চিকিৎসা নিয়ে গেলেন ভারতে। নুসরাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গবেষণাপত্র চূড়ান্তের কাজ করেছি। আমার বিভাগের শিক্ষকেরা সহযোগিতা করছেন। ই-মেইলে গবেষণাপত্র পাঠানোর পর বন্ধুরা তা জমা দিয়েছেন। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছি।’ সম্প্রতি তাঁর স্নাতকোত্তরের ফল প্রকাশিত হয়েছে। ক্যানসার তাঁকে সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতায় হারাতে পারেনি। এবারও তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছেন।
দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন জেরিন। তাঁর অসুস্থতার সময় অফিসের নির্ধারিত ছুটি শেষ করে বিনা বেতনে ছুটি নিতে হয়েছে বড় ভাইকে। জেরিন বলেন, ‘পরিবারের মানুষজনের কথা কী বলব। সবাই অনেক করেছে আমার জন্য। হাসপাতালের পুরো সময় মা সঙ্গেই ছিলেন। ছোট ভাই এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।’
এখন কেমন আছেন, জানতে চাইলে নুসরাত জেরিন বলেন, ‘অনেক ভালো আছি। আসছে মে মাসে কিছু পরীক্ষার জন্য আবার ভারতে যেতে হবে। জীবনের কঠিন আর অনিশ্চিত সময়গুলোতে মানুষ নতুন করে দেখতে শেখে জীবন-জগৎ। বদলে যায় সবকিছুর অর্থ।’ কথার একপর্যায়ে তাঁর এই বদলে যাওয়ার কথা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আগে পড়াশোনা নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতাম। বাইরে বের হওয়া বা মানুষের সঙ্গে তেমন একটা মেশা হতো না। কিন্তু এখন অনেক বদলে গেছি। এখন মনে হয়—জীবনটাকেও বোঝা উচিত, মানুষের কাছে যাওয়া উচিত।’
অসুস্থতার সময় চেনা-অচেনা যেসব মানুষের ভালোবাসা আর সহযোগিতা পেয়েছেন, কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসার কথা জানান তাঁদের প্রতি। স্মরণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কথা। তিনি বলেন, ‘কৃতজ্ঞতার কথা তো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তারপরও যাঁরা পাশে ছিলেন, তাঁদের প্রতি ভালোবাসা থাকবে আজীবন। আমার জন্যও দোয়া করবেন।’
কী করবেন সামনের দিনগুলোতে, জানতে চাইলে নুসরাত জেরিন বলেন, ‘জীবনের অনিশ্চয়তায় আমার স্বপ্নগুলো এলোমেলো হয়ে যায়নি। স্বপ্নগুলো পূরণ করতে চাই। পড়াশোনা আর গবেষণা নিয়েই থাকতে চাই।’

 

‘পাচার হওয়া বহু বাংলাদেশী নারী ভারতের জেলে’

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে আসা বহু মহিলাকে আটক করার পর বেআইনিভাবে জেলে রাখা হচ্ছে – যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট নির্দেশ আছে তাদের সরকারি হোমে রাখতে হবে।
বসিরহাট জেলে আটক এমনই তিনজন বাংলাদেশী মহিলার ব্যাপারে তারা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন।
রাজ্য পুলিশের কর্মকর্তারাও অবশ্য স্বীকার করছেন কে সত্যিকারের পাচার-হওয়া, সেটা নিরূপণ করা মুশকিল – আর এর দায় অনেকটাই সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের।
যশোরের ঝিকরগাছা থানা এলাকার তিন মহিলা, শাহিনূর, সারিনা খাতুন ও আমিনা বেগম ভারতের রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করার উদ্দেশে সীমান্ত পেরোনোর পর বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ায়।
প্রথম রাতটা স্বরূপনগর থানার লকআপে কাটানোর পর এখন তাদের ঠিকানা বসিরহাটের জেল – যদিও মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন এদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দেওয়াটাই সম্পূর্ণ অন্যায় হয়েছে।
মাসুমের কিরীটি রায় বলছিলেন, ‘এই মহিলারা কাজের সন্ধানে ভারতে এসেছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত বিএসএফ ও বিজিবি নিজেদের পোষা লাইনম্যানদের সাহায্যে পয়সা নিয়ে নিয়মিতই লোকজনদের সীমান্ত পারাপার করিয়ে থাকে। হতে পারে এই তিনজনের কাছ থেকে তারা পয়সা পায়নি বলেই বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছে’।
কিন্তু এই মহিলারা পাচারের ভিকটিম কি না, সেটা নির্ণয় করার যে পদ্ধতি আছে তা প্রায় কখনওই মানা হয় না – আর তাই তাদের প্রাপ্য সুবিধাগুলোও কখনওই তাদের জোটে না।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অ্যান্টি-ট্র্যাফিকিং ইউনিটের প্রধান শর্বরী ভট্টাচার্যর মতে, বিএসএফ-ই এর জন্য প্রধানত দায়ী।
তিনি সরাসরি বলছেন, ‘বিএসএফ আইনকানুন কিচ্ছু জানে না, তাদের বোঝাতে যাওয়াও বৃথা। তাদের টাকা দিলে সীমান্ত পেরোতে কোনও সমস্যা হয় না – টাকা না-পেলেই হয় মুশকিল। তখনই ওরা গরিবগুর্বো মানুষগুলোকে ধরে – বিশ বা ত্রিশজনের একটা দল বানিয়ে কাছের থানায় – ধরুন বনগাঁতে – জমা দিয়ে যায় কোনও রিপোর্ট ছাড়াই!’
‘এবার বলুন থানার অফিসার কী করতে পারেন? হাজারটা কাজ সামলে তার কি উপায় থাকে এদের নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করার, আলাদা করে কথা বলার? তার কি অবকাঠামো আছে এদের আদালতে নিয়ে হোমে পাঠানোর নির্দেশ বের করার? আর সরকারি হোম থেকেও তো পুলিশকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়!’
‘ফলে প্রায় বাধ্য হয়েই পুলিশ তখন এদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দিয়ে দেয় – আর এদের জেলে পচতে হয়!’, বলছিলেন শর্বরী ভট্টাচার্য।
                          বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত
অথচ সার্ক সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে, পাচার হওয়া নারী-শিশুদের এভাবে হেনস্থা হওয়ার কথাই নয়। কিরীটি রায় বলছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ থাকলেও পশ্চিমবঙ্গেই কিন্তু উদাসীনতা সবচেয়ে বেশি।
তার কথায়, ‘এ রাজ্যে সরকারি পদাধিকারীরা – আদালত হোক বা পুলিশ, তারা এই নির্দেশের কথা হয় জানতে চাইছেন না, বা জানলেও মানতে চাইছেন না। ফলে সব কিছু আগের মতোই চরছে এখানে।’
তার কথা প্রায় অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে স্বরূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিবিসিকে বলছিলেন এমন কোনও নির্দেশ তারা খুঁজেই পাননি।
‘আমি নেটে গিয়ে মিনিস্ট্রির সাইট ঘেঁটে দেখেছি – যেখানে ফরেনার্সদের নিয়ে বলা আছে সেখানেও খুঁজেছি – মানবাধিকারের লোকজন যেটা বলছেন ওখানে ওরকম কিন্তু কিছু পাইনি’, বলছিলেন ওই কর্মকর্তা।
শুধু তাই নয়, এই বাংলাদেশী মহিলাদের ভিকটিম হিসেবেও মানতে আপত্তি আছে পুলিশ কর্তৃপক্ষের।
‘আঠারোর ওপর যাদের বয়স, যারা জেনেবুঝে একটা দেশের সীমান্ত পেরোচ্ছে – তাদের কীভাবে ভিক্টিম বলব বলুন তো? বাচ্চা ছেলে তো নয় – এরা প্রাপ্তবয়স্ক, জেনেবুঝে একটা অন্যায় করছে। কীসের ভিক্টিম?’ বলছিলেন স্বরূপনগর থানার কর্মকর্তা।
ফলে পশ্চিমবঙ্গের জেলে কেন আজও এমন শত শত বাংলাদেশী নারী ও শিশু অকারণে জেলে কাটাচ্ছেন – তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই।
 

 

টিএসসিতে নারীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ পুলিশ সদস্যের, পরে ক্ষমা প্রার্থনা

পুলিশের হাতে অপমানের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সহ-সভাপতি হাবিবা জান্নাত। পরে মহানগর পুলিশের কনস্টেবল রুহুল আমিন অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করার পর ক্ষমা চেয়েছেন। হাবিবা জান্নাত নামের ওই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান, প্রাণ পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে থাকেন।
ঘটনার পর অভিযোগ পেয়ে রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এম আমজাদ আলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়সহ রমনা জোনের পুলিশ কর্মকর্তারা প্রক্টরের কার্যালয়ে যান। সেখানে মেয়েটির বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মী, ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ঘটনার জন্য পুলিশ সদস্য রুহুল আমিন দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট বরাবর স্থানে হাবিবাসহ কয়েকজন দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় সেখানে দায়িত্ব পালনরত রহুল আমিন পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) গাড়ি যাবে বলে তাদের সরতে বলেন। রহুল আমিন সেখানে দাঁড়ানো হাবিবার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করেন এবং তাঁকে উদ্দেশে করে কটূক্তি করেন। এ নিয়ে সেখানে থাকা হাবিবাসহ অন্যদের সঙ্গে পুলিশের কথা-কাটাকাটি হয়।
ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তাহসিন মাহমুদ বলেন, তাঁরা অভিযোগ করার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে আছেন। ওই পুলিশ সদস্য ক্ষমা চেয়েছেন। এখন আর কিছু বলার নেই।

 

বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে স্কুল ছাত্রীদের মানববন্ধন, ইউএনওর যুদ্ধ ঘোষনা

বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের শিবচরে পাচ্চরে কিলোমিটারব্যাপী এলাকা জুড়ে স্কুল ছাত্রীরা মানববন্ধন করেছে । এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ কর্মসুচীতে একাত্মতা প্রকাশ করে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেন।
জানা যায় , “সকল হাত এক করি , বাল্য বিবাহ বন্ধ করি ” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে রবিবার দুপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর এলাকায় পাঁচ্চর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় , পাঁচ্চর উচ্চ বিদ্যালয় , বাখরের কান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় , মাদবরচর আর এম উচ্চ বিদ্যালয়সহ ৪টি স্কুলের সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশ গ্রহনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মহাসড়কের প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এ মানববন্ধন। এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরান আহমেদ মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করেন ।এসময় শিবচর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হামিদা খানম , পাঁচ্চর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মোঃ সামসুল হক , পাঁচ্চর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহালম সিরাজী , মাদবরচর আর এম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোতালেব মিয়া , বাখরের কান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দূর্লভ চন্দ্র পাল , ব্রাকের শিবচর শাখার কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন । বেসরকারি সংস্থা ব্রাক মানববন্ধন অনুষ্ঠানে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন ।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরান আহমেদ বলেন , বাল্য বিবাহ একটি ব্যাধি যা শিক্ষিত সমাজ গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করে মাতৃ মৃত্যু হার বৃদ্ধি করে । বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে আমরা সোচ্চার । যে কোন মূল্যে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা হবে । আমি এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছি।