banner

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 500 বার পঠিত

 

‘প্যারেন্টিং’ কোন শর্টকাট পদ্ধতি নেই

‘প্যারেন্টিং’ কোন শর্টকাট পদ্ধতি নেই


ফাতিমা কানিজ


পারেন্টিং এর কোনো শর্টকাট রাস্তা নেই। বাচ্চাকে প্রচুর সময় দেয়া এবং তাকে নিয়ে বিরামহীন পরিকল্পনা করাই নিশ্চিত করবে আপনি কতটা ভালোভাবে বাচ্চাকে মানুষ করছেন। মনে রাখবেন, আপনার সঙ্গে আপনার বাচ্চার সম্পর্ক অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে তার সঠিক বেড়ে ওঠার জন্য বেশী জরুরী ৷ আজ ব্যস্ততার অজুহাতে যা অবহেলা করবেন কাল হয়ত তা আপনার হাতের নাগাল থেকে বেরিয়ে যাবে। কথায় আছে – সময়ের এক ফোঁড় আর অসময়ের দশ ফোঁড়। সময়ে এক ফোঁড়ে আজ যা সম্ভব হবে অসময়ে দশ ফোঁড় দিয়েও পরে হয়তো তা আর সম্ভব হবে না।

বাচ্চাদের সঙ্গে সময়দানের ক্ষেত্রে আর একটি ভুল ধারণা হলো আমাদের সমাজে অনেকে মনে করেন মায়েরাই বাচ্চাদের সময় দেবে, বাবাদের ততটা সময় দেবার দরকার নেই; মা পর্যাপ্ত সময় দিলে বাবাদের না দিলেও চলে। প্রকৃত ব্যাপারটা তা নয়। প্রাকৃতিকভাবে বাচ্চা যেহেতু মায়েদের সঙ্গে বেশী সম্পর্কযুক্ত (যেমন গর্ভধারণ, স্তন্যদান) সেহেতু স্বাভাবিক ভাবেই সন্তানরা মায়েদের সঙ্গে বেশী সময় পার করে থাকে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বাবাদের সময় দেয়া শুধু সন্তানদের শাসন আর আদেশ উপদেশে সীমাবদ্ধ থাকবে। বাবা ও মা দু’জনকেই বাচ্চাকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। বাবা আর্থিক রোজগারের কারণে বাইরে হয়তো বেশী সময় দিতে বাধ্য হন কিন্তু তারপরও রুটিন করে বাবাকে বাচ্চার জন্য নিয়মিত সময় বের করে নিতে হবে। বাচ্চাদের জীবনে প্রথম পুরুষ রোল মডেল হিসেবে বাবার ভূমিকা অনেক। বিশেষ করে ছেলে বাচ্চাদের জন্য তাদের বাবারা তাদের পরবর্তী জীবনের এক বড় আদর্শ।

সন্তানদের সময় দেয়ার ক্ষেত্রে অনেকসময় আবার বিপরীত একটা ভুলধারণাও তৈরী হয়। অনেকে মানে করেন সন্তানকে সময় দেবার মানে হলো আর কাউকে কোনো সময় দেয়া যাবেই না, কেবলমাত্র সন্তানদের নিয়েই পরে থাকতে হবে। আপনার বাবা বা মায়ের অসুখ করেছে – আপনার সন্তানদের লেখাপড়ার চাপ রয়েছে বলে আপনি বাবা-মাকে সময় দেবেন না, দেখতে যাবেননা, তাদের সেবা করবেন না – এটাকে সন্তানকে সময় দেয়া বলে না। বরং এটা সন্তানের সামনে ভুল একটা উদাহরণ পেশ করা। সন্তানকে সময় দিতে গিয়ে আপনার পরিবার-পরিজন; আত্মীয়-স্বজনদের প্রয়োজনীয় সময় না দিলে সন্তানরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে বড় হয়। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন ব্যালান্স খুবই জুরুরী।

আবার কখনো কখনো দেখা যায় সন্তাদের সময় দেবার অজুহাতে নিজের স্পাউজকে তার দিকের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। আত্মীয়দের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় সন্তানদের প্রয়োজনকে কৌশলে সমানে এনে স্পাউজকে এই যোগাযোগে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। এধরণের কাজ আপনার সন্তানদের জন্য কখনোই মঙ্গল বয়ে আনবে না। বরং সন্তানদের সঙ্গে আপনার নিজের সময় দেবার সাথে সাথে তাদেরকে আপনার দিকের আত্মীয় ও আপনার স্পাউজের দিকের আত্মীয়দের সঙ্গে ভালো যোগাযোগের ও সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ করে দিন।

Facebook Comments