banner

বুধবার, ০১ মে ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 576 বার পঠিত

 

অ্যান এস মুর- একজন সফল সিইও থেকে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আত্নপ্রকাশ।

বর্তমান বিশ্বের ব্যবসা জগতের অন্যতম নারীমুখ অ্যান মুর মনে করেন, একজন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কখনোই খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না এবং প্রতিটা  সফলতার পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে উপযুক্ত পরিকল্পনা। আর তাই কর্মজীবনের শুরুটা যেভাবেই হোক না কেন,নিজের সঠিক পরিকল্পনাই পারে ব্যক্তিকে তার কাংখিত সফলতা এনে দিতে।

বিশ্ব বিখ্যাত মিডিয়া কোম্পানী টাইম ইঙ্ক ডট কম এর প্রথম মহিলা সিইও এবং চেয়ারম্যান অ্যান মুর এর কর্মজীবন শুরু হয়েছিলো হার্ভার্ড থেকে এমবিএ শেষ করে ১৯৭৮ সালে ‘টাইম ইঙ্ক ডট কম’ এ একজন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস্ট হিসেবে। দীর্ঘ ৩৫বছরের কর্মজীবনে পরিশ্রমী,প্রচন্ড আগ্রহী এবং সফল পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে অ্যান মুরের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। ১৯৯১সালে তিনি ‘পিপল’স ম্যাগাজিনের’ প্রকাশক হিসেবে আত্নপ্রাকাশ করেন,১৯৯৩ সালে তাকে নাম দেয়া হয় ‘পিপল’স প্রেসিডেন্ট’,এরপর ২০০১ সালে তিনি টাইম ইঙ্ক এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন।

ছাত্রজীবন থেকেই অ্যান ‘টাইম ইঙ্ক’ ম্যাগাজিনের নিয়মিত পাঠক ছিলেন,এবং তিনি তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতেন নিজেকে এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হিসেবে। আর তাই অনেক ভালো ভালো অফার থাকা স্বত্বেও ‘টাইম ইঙ্ক’ থেকে অফার পাওয়া মাত্রই তুলনামূলক কম স্যালারী হওয়া স্বত্ত্বেও জয়েন করে ফেলেন এবং কর্মজীবনের পুরো সময়টা তিনি এখানেই ব্যয় করেন।

অ্যান এর এই রকম সিদ্ধান্তে তখন তার বন্ধুরা যথেষ্ট অবাক হয়েছিলো!কেউ কেউ তো তাকে ‘বোকা’ ‘পাগল’ ভেবেই বসেছিলো! কিন্তু অ্যান সব রকমের মন্তব্য কে এক পাশে রেখে নিজের লক্ষ্য অর্জনের জন্য এগিয়ে যাওয়ায় মনোযোগী ছিলেন। এবং শেষ পর্যন্ত তিনি প্রমাণ করতে পেরেছেন,তার পরিকল্পনা আর টিকে থাকার আগ্রহ তাকে নিয়ে গিয়েছে সফলতার শীর্ষে।

অ্যান মুর ২০০২ সালের জুলাই মাসে ‘টাইম ইঙ্ক’ এর ইতিহাসে প্রথম মহিলা সিইও হিসেবে জয়েন করেন, কৃতিত্বের সাথে দীর্ঘ সময় সিইও এবং ‘টাইম ইঙ্ক ডট কম’ এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ২০১০ সাল পর্যন্ত।

IMG_0119-1

বিখ্যাত ‘ফরচুন ম্যাগাজিন’ মোট দশবার অ্যান মুর কে ‘আমেরিকার পাওয়ার ফুল বিজনেস উইমেন’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এবং ‘ফোর্বস ম্যাগাজিনে’ এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১০০জন ক্ষমতাধর নারীর মধ্যে অ্যান মুর একজন।

অ্যান মুর এর খুব বিখ্যাত একটি উক্তি যা তিনি প্রায় প্রোগ্রামেই বলে থাকেন আর তা হলো,’ তোমার জীবন নিয়ে অবশ্যই তোমার কোন পরিকল্পনা থাকতে হবে,তোমার সম্পূর্ণ জীবনের জন্য তুমি,একমাত্র তুমিই রেসপন্সিবল বা দায়ী।’

২০১০ সালে চাকরী জীবন থেকে অবসর নেবার পর অ্যান নিজেকে বললেন নেলসন ম্যান্ডেলার সেই বিখ্যাত স্টেটমেন্ট ‘No is a complete sentence’ । এবং প্রায় ৪বছর অ্যান মুর সময় কাটালেন তার সম্পূর্ণ জীবনের অর্জন,অপ্রাপ্তি নিয়ে গবেষনা করেন,দীর্ঘ সময়ের স্মৃতি গুলো নিয়ে। অ্যান তার সেই অবসর সময়েই পরিকল্পনা নিলেন,এমন কিছু করার যা তার বাকী জীবনের কর্মক্ষম সময়কে উজ্জ্বল করবে এবং তার মৃত্যুর পরেও টিকে থাকবে সগৌরবে।

আর তার ই ধারাবাহিকতায় তিনি শুরু করলেন তার নিজস্ব উদ্যোগে ‘দ্যা কিউরেটোর গ্যালারী’। সেই সাথে একজন সফল সিইও এরপর নিজের নামের সাথে যুক্ত করলেন একজন সফল ‘উদ্যোক্তা’ উপাধি। খুব শীঘ্রই ‘কিউরেটোর গ্যালারী’ সানফ্রান্সিসকোর পর নিউ ইয়র্কে শুরু করতে যাচ্ছে তাদের ‘আর্ট কালেকশন সেন্টার’। নিজের ছেলেকে সাথে নিয়ে শুরু করা অ্যান মুরের ‘কিউরেটোর গ্যালারী’ লক্ষ্য হচ্ছে,এমন কিছু ছবি বা শিল্পকর্মের আত্নপ্রকাশ করানো যা তৈরী করতে নতুন উদ্দ্যোম এবং এগিয়ে যাবার প্রত্যাশা,সেই সাথে সফল শিল্প কর্ম গুলো কে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া।

মার্কিন বিজনেস কমিউনিটি অ্যান মুর এর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বিজনেস আর শিল্প জগতে নতুন দ্বার উন্মোচনের সূচনা হিসেবে প্রত্যাশা করছেন। একজন ‘উইমেন এন্টারপ্রেনার বা নারী উদ্যোক্তা’ হিসেবে আত্নপ্রকাশের পর অ্যান মুর মনে করেন, ‘কোন কিছু করার পরিকল্পনা যদি থাকে,তাহলে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য খুব সময়ের প্রয়োজন কখনোই হয় না। দরকার সঠিক পরিকল্পনা এবং টিকে থাকার আগ্রহ আর জানা থাকতে হবে,সময়ের সাথে নিজের ব্যবসা কে এগিয়ে নেবার কৌশল।’

সূত্র- ‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিনকে দেয়া অ্যান মুর এর একটি সাক্ষাৎকার। সম্পাদনা করেছেন, স্বপ্নকথা।

 

 

Facebook Comments