banner

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং, ,

পোস্টটি 930 বার পঠিত

 

পুরস্কার প্রাপ্ত দেশের ১০ নারী ফ্রিল্যান্সার।

অপরাজিতা ডেস্কঃ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আউটসোর্সিংয়ে অবদান রাখায় ১০ নারীকে সংবর্ধনা দিয়েছে । বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং জগতে নারীদের অবস্থান প্রায় ৯% যার মধ্যে সম্ভাবনাময়ী এবং প্রতিষ্ঠিত এই দশ টি মুখ। অপরাজিতাবিডির আজকের সংখ্যায় আজ আমরা জানবো তাদের সম্পর্কে ,তাদের কাজ সম্পর্কে এবং এই পেশায় তাদের অবস্থান সম্পর্কে …

তানিয়া তাহমিনা

10385274_987552751260063_1845829035155788451_n

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (এআইইউবি) কম্পিউটার বিজ্ঞানে এমএসসি করছেন তানিয়া। বন্ধুদের কাছ থেকে জেনে যুক্ত হন অনলাইন মার্কেট প্লেসে। কাজ শুরু করেন এসইও নিয়ে। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম ক্লায়েন্ট পান। এখন কাজ করছেন এইচটিএমএল কোডিং নিয়ে। মাসে আয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। পাশাপাশি অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আরো ভালো করতে শিখছেন গ্রাফিকস, জাভাস্ক্রিপট, পিএইচপি। চাকরি করার কোনো ইচ্ছাই নেই। নারীদের জন্য কর্মক্ষেত্র তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছেন তানিয়া। প্রতিষ্ঠা করতে চান একটি আউটসোর্সিং ফার্ম।

জুঁই সাহা
2_179125
ইডেন মহিলা কলেজে গণিতে স্নাতকোত্তর করছেন জুঁই সাহা। মায়ের কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন ২০১১ সালে। এসইও দিয়ে শুরু তাঁর ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের। বিভিন্ন বাংলা ব্লগ আর ইউটিউব ছিল তাঁর কাজ শেখার প্রধান উৎস। কয়েক মাসের মধ্যেই নিজের দক্ষতায় এসইও কাজ দিয়ে মার্কেটপ্লেসেও ভালো একটা অবস্থান পেয়ে যান। পরবর্তী সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং আর ই-মেইল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করেন। ফলে সরাসরি বায়ারদের সঙ্গেও কাজ করার সুযোগ হয়ে যায়। ভবিষ্যতে আরো ভালো ক্যারিয়ারের জন্য কাজ করার পাশাপাশি ওয়ার্ডপ্লেস ডেভেলপমেন্টের কাজও শিখছেন। বর্তমানে প্রতি মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকা আয় করেন জুঁই।
ফারজানা তিথি
3_179126
মূলত চিত্রশিল্পী। তাই গ্রাফিকসে আগ্রহ বেশি। হাইটেক পার্কের অর্থায়নে বৃত্তি পেয়ে বিনা মূল্যে গ্রাফিকস প্রশিক্ষণ নেন ক্রিয়েটিভ আইটিতে। এরপর ২০১৪ থেকে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। তিথি বলেন, ‘আমি কাজ করি দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। দিনের কাজ শুরু হয় ক্লায়েন্টের ই-মেইল চেক ও উত্তর দিয়ে। প্রতিদিন গড়ে ছয় ঘণ্টা কাজ করি।’ বর্তমানে ক্রিয়েটিভ কিটেন্স নামে একটি গ্রুপের হয়ে কাজ করছেন। নতুনদের জন্য পরামর্শ দিতে গিয়ে তিথি বলেন, ‘ভালো ইংরেজি বলতে ও পড়তে শিখুন। কাজ যা শিখেছেন তার বাইরেও গুগল সার্চ করে টিউটরিয়ালগুলো দেখুন। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কাজগুলোর স্টাইল, রং, ফন্ট দেখুন। দক্ষতা বাড়বে।’
শবনম ইয়াসমিন
10338846_1588036561411036_375320732933279130_n
কম্পিউটার বিজ্ঞানের ছাত্রী হওয়ায় অনলাইন সম্পর্কে আগেই জানাশোনা ছিল। শিক্ষকদের কাছে শুনেছিলেন ফ্রিল্যান্সিংয়ের কথা। পরে নিজ আগ্রহেই ওডেস্কে অ্যাকাউন্ট খোলেন। ২০১০ সালে এভাবেই শুরু হয় শবনমের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার। পরে চাকরিজীবনে প্রবেশ করায় তা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। কিন্তু সন্তান হওয়ার পর বাচ্চার দেখাশোনা করতে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আবারও ফ্রিল্যান্সিংয়ে মনোনিবেশ করেন। ঘরের অন্যান্য কাজের পাশাপাশি দিনে তিন-চার ঘণ্টা ফ্রিল্যান্সিং কাজে ব্যয় করেন। বর্তমানে প্রতি মাসে গড়ে ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি। শবনম বলেন, অনেকেরই ধারণা শুধু কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের ব্যবহার জানা থাকলেই সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায়। কিন্তু নির্দিষ্ট বিষয়ে স্পেশালাইজড না হতে পারলে কাজ পাওয়া খুব কঠিন।
ফৌজিয়া ইয়াসমিন
5_179128
ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা শেষ করে স্বাধীন ব্যবসা করার ইচ্ছা ছিল। তাই কলেজে থাকাকালেই একটি ফ্যাশন হাউস খোলেন ফৌজিয়া। কিন্তু পড়াশোনার চাপে সেটি বন্ধ করে দিতে হয়। তাঁর বোন ওডেক্সে এসইওর কাজ করতেন। তাঁকে দেখে একসময় তিনিও শুরু করেন। পরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিবিসি) থেকে ওয়েব ডিজাইন ও এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে ই-মার্কেটিং কোর্সও শেষ করেন কৃতিত্বের সঙ্গে। ২০১১ সালে এসইও দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করা ফৌজিয়া এখন পুরোদস্তুর অনলাইন পেশাজীবী। মাসে আয় গড়ে ৬০ হাজার টাকা। ফ্রিলান্সিংয়ে আসতে চান এমন মেয়েদের ধৈর্য ও ইংরেজিতে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ তাঁর।
আমেনা আক্তার
10389356_425344570954259_7565731174149690949_n
বাংলাদেশে চাকরি করতে গিয়ে নারীদের হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনা বিরল নয়। এ প্রেক্ষাপটে চাকরি করার চেয়ে ঘরে বসে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিংকে নারীদের জন্য উপযুক্ত মনে করেন আমেনা আক্তার। ২০১১ থেকে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন। প্রথমবার লিংকবিল্ডিংয়ের কাজ করে আয় করেন ১৫ ডলার। এর পরেরবার চারটি কাজের জন্য একসঙ্গে উত্তোলন করেছিলেন ৫৩৫ ডলার। এভাবেই এগিয়ে চলা। বর্তমানে প্রতি মাসে তাঁর গড় আয় প্রায় ৬০ হাজার টাকা। ফ্রিল্যান্সিংয়ে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতেও কাজ করছেন তিনি। তাই এ বিষয়ে নারীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিতে খুলেছেন টেরিস্ট্রিয়াল আইটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
জিনিয়া সওদাগর
8_179131
ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রথম কাজেই ৭৬ ডলার আয় করেছিলেন আশা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির শিক্ষার্থী জিনিয়া। পড়াশোনার পাশাপাশিই ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করেন। উৎসাহ পেয়েছিলেন মায়ের কাছ থেকে। আর কাজ শিখেছেন নিজে নিজেই, অনলাইনে ঘাঁটাঘাঁটি করে। শুরু করেন ২০১৩ সালে। বর্তমানে ওয়েব রিসার্চ, আর্টিকেল রাইটিং, এসইও বিষয়ে কাজ করছেন। পড়াশোনার বিষয় ইংরেজি সাহিত্য হওয়ায় বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন সহজেই। পারদর্শিতা আছে ইন্টারনেট ব্যবহারেও। পড়াশোনার পাশাপাশি জিনিয়া মাসে গড়ে ৩০ হাজার টাকার মতো আয় করেন।
তানজিন আক্তার
7_179130
মার্চেন্ডাইজার হিসেবে চাকরি করছিলেন তানজিন। কিন্তু সন্তান হওয়ার পর চাকরিটা চালিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ল। অনলাইন মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে ধারণা ছিল আগে থেকেই। তাই ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিলেন। প্রশিক্ষণ নিলেন এসইও আর ওয়েব ডিজাইনের ওপর। প্রথম কাজ মেডিক্যাল ইলাস্টেশনের জন্য সম্মানী পান ১০০ ডলার। এখন মাসে আয় করছেন ৬০ হাজার টাকারও বেশি। ঘরে বসে না থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে উপার্জনকে নারীর জন্য ভালো সুযোগ বলে মনে করেন তিনি।
আয়েশা সিদ্দিকা
9_179132
আয়েশা ২০১০ সাল থেকে শখের বশে লেখালেখি করলেও আর্টিকেল রাইটার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন মূলত ২০১১ সালের শেষ দিকে। পাশাপাশি নিজের ফ্যাশন ব্লগ সাইটের ইমেজ এডিটিংয়ের কাজটাও করতেন নিজেই। শুরুতে গ্রাফিকস ডিজাইনের কাজগুলো শেখেন গুগল আর ইউটিউব দেখে। এরপর দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ নেন ক্রিয়েটিভ আইটিতে। মার্কেটপ্লেসে প্রথম কাজে আয় করেন ৬০ ডলার। এখন দৈনিক পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা অনলাইনে কাজ করে মাসে আয় করছেন ৪০ হাজার টাকার মতো।
নাঈমা চৌধুরী
10_179133
চাকরি পরাধীনতা না হলেও এটি আত্মতৃপ্তি দিতে পারে না। চাকরি করে এমন উপলব্ধিই স্বাধীনভাবে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহী করে তুলে নাইমা চৌধুরীকে। একসময় ফ্রিল্যান্সিংকেই ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেন। আউটসোর্সিংয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন ২০১৩ সালে। এরপর গ্রাফিকস ডিজাইনিংয়ের কোর্স করেন তিন মাস। কোর্স শেষে ভার্চুয়াল ওয়েব ডিজাইন-সংশ্লিষ্ট কাজ শুরু করেন। এখন তাঁর আয় মাসে ৩০ হাজার টাকার মতো। ভবিষ্যতে নারীদের নিয়ে নিজের একটা ছোট্ট টিম গড়ার স্বপ্ন দেখেন নাইমা।
Facebook Comments