সমাজ উন্নয়ন, কর্মক্ষেত্রে সফলতা এবং ব্যক্তিগত সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগে পাঁচজন নারীকে ‘অদম্য নারী পুরস্কার ২০২৪’ প্রদান করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও চট্টগ্রাম মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে এই সম্মাননা দেওয়া হয়।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম নগরের আইস ফ্যাক্টরি রোডের প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, এবং সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. জিয়া উদ্দিন।
সম্মাননা পাওয়া পাঁচজন নারীর প্রত্যেকেই সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মানিত হয়েছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার কামালপাড়া ইউনিয়নের নিগার শারমিন। শিক্ষা ও চাকরিক্ষেত্রে সফলতার স্বীকৃতি পেয়েছেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রেহেনা সুলতানা। সফল জননী হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার নাইখাইন গ্রামের চেমন আরা বেগম। সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য সম্মাননা পেয়েছেন কক্সবাজার জেলার মোহাজেরপাড়া এলাকার জাহানারা ইসলাম। এছাড়া নির্যাতনের বিভীষিকা কাটিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করার জন্য কক্সবাজার সদরের ঘোনার পাড়া গ্রামের ফাতেমা বেগম সম্মানিত হয়েছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেয়া খান বলেন, “সুবিধাবঞ্চিত অবস্থা থেকে উঠে এসে যারা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তাদের স্বীকৃতি দিতেই এই আয়োজন। এতে অন্য নারীরাও উৎসাহিত হবেন। আমাদের সমাজে এখনো নারীদের অনেক অবদান স্বীকৃত হয় না, তবে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। নারীদের এগিয়ে যেতে হলে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার ড. জিয়া উদ্দিন বলেন, “সমাজে মানুষে মানুষে বিভাজন আছে। মানসিক বাধা দূর করা দরকার। নারীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। উন্নত বিশ্বে নারী-পুরুষ কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করছে। শুধু চাকরি করলেই সফল বা স্বাধীন বলা যাবে না। আপনার নিজের জীবন নিয়ে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারলেই আপনি স্বাধীন।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, ‘অদম্য নারী পুরস্কার’ কর্মসূচির পরিচালক মনির হোসেন এবং চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার শাকিলা সোলতানা।
এই স্বীকৃতি শুধু পাঁচজন নারীর জন্য নয়, বরং সমস্ত সংগ্রামী নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। নারী উদ্যোক্তা, সমাজকর্মী, চাকরিজীবী, শিক্ষিকা এবং নির্যাতন থেকে ঘুরে দাঁড়ানো নারীদের সম্মানিত করে ‘অদম্য নারী পুরস্কার’ আবারও প্রমাণ করলো—নারীরা যেকোনো প্রতিকূলতাকে জয় করে এগিয়ে যেতে সক্ষম।