banner

বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 24 বার পঠিত

 

মাউন্ট এভারেস্ট জয়ী নারীদের অনুপ্রেরণামূলক গল্প

মাউন্ট এভারেস্ট-পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করা সব পর্বতারোহীর স্বপ্ন। এটি শুধুমাত্র শারীরিক শক্তির পরীক্ষা নয়, মানসিক দৃঢ়তারও প্রতীক। বাচেন্দ্রী পাল থেকে শুরু করে বাংলাদেশি নারী নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীন পর্যন্ত, অনেক সাহসী নারী তাদের অসীম সাহস ও সংকল্প নিয়ে এই চূড়ায় পৌঁছেছেন। এই নারীরা শুধু ইতিহাস সৃষ্টি করেননি, বরং নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

প্রথম ভারতীয় নারী: বাচেন্দ্রী পাল
১৯৮৪ সালের ২২ মে, বাচেন্দ্রী পাল প্রথম ভারতীয় নারী হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। এই অভিযানে তাকে ভয়াবহ বরফ ধসের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। কিন্তু তিনি দমে না গিয়ে সফল হন। তার এই সাফল্য ভারতীয় পর্বতারোহণ ইতিহাসের একটি বড় অধ্যায়।

প্রথম বাংলাদেশি নারী: নিশাত মজুমদার
নিশাত মজুমদার ২০১২ সালের ১৯ মে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। তার এই সাফল্য বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত। নিশাতের এই অর্জন বাংলাদেশি নারীদের স্বপ্ন দেখতে এবং তা অর্জনে সাহসী হতে অনুপ্রাণিত করেছে।

ওয়াসফিয়া নাজরীন: সেভেন সামিট বিজয়ী
২০১২ সালের ২৬ মে ওয়াসফিয়া নাজরীন দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন। তিনি কেবল এভারেস্ট জয় করেই থেমে যাননি; তিনি সাতটি মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ (সেভেন সামিটস) জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। তার এই সাফল্য বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

অরুণিমা সিনহা: অদম্য মনোবলের প্রতীক
ভারতের প্রাক্তন ভলিবল খেলোয়াড় অরুণিমা সিনহা, যিনি একটি ট্রেন দুর্ঘটনায় পা হারান, ২০১৩ সালে এভারেস্ট জয় করেন। তার কৃত্রিম পায়ের সাহায্যে এই শৃঙ্গ জয় বিশ্বজুড়ে সাহসিকতার একটি মাইলফলক হয়ে উঠেছে।

মালাভাথ পূর্ণা: সর্বকনিষ্ঠ নারী এভারেস্টজয়ী
মাত্র ১৩ বছর বয়সে মালাভাথ পূর্ণা ২০১৪ সালে এভারেস্ট জয় করেন। তিনি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নারী পর্বতারোহী হিসেবে রেকর্ড গড়েছেন। তার এই কৃতিত্ব তরুণদের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা।

পিয়ালি বসাক: অক্সিজেন ছাড়া এভারেস্ট জয়
পশ্চিমবঙ্গের পিয়ালি বসাক ২০২২ সালে অক্সিজেন ছাড়াই মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। তার এই অসাধারণ সাফল্য ভারতীয় নারীদের সাহসিকতার আরেকটি উদাহরণ।

নারীদের এই সাফল্যের প্রতীকী গুরুত্ব
ভারত ও বাংলাদেশের নারীদের এই কৃতিত্ব শুধু তাদের ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং তারা প্রমাণ করেছেন যে দৃঢ় সংকল্প এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।

বাচেন্দ্রী পাল থেকে শুরু করে নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীন পর্যন্ত, এই নারীদের গল্প আমাদের শেখায় যে শৃঙ্গ জয় করা মানে শুধু পাহাড়ে চড়া নয়, বরং প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে নতুন দিগন্তের সন্ধান করা। তাদের এই অনুপ্রেরণামূলক কাহিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে।

Facebook Comments