চান্দিনায় সেহেরী রান্নার সময় গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা : বাধা দেয়ার স্বামী খুন
নারী সংবাদ
কুমিল্লার চান্দিনায় সেহেরী রান্নার সময় এক গৃহবধূকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এতে বাধা দেয়ায় ছুরিকাঘাতে ওই গৃহবধূর স্বামীকে খুন করেছে প্রতিবেশি মামা। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে চান্দিনা থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে চান্দিনা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড ছায়কোট এলাকায় এ ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটে।
গৃহবধূর স্বামী নিহত ফারুক হোসেন (২৬) ছায়কোট এলাকার মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় নিহতের প্রতিবেশি দুই মামা- হত্যাকারী জানে আলম (৩৫) ও তার ভাই মোর্শেদকে (৩৭) আটক করেছে চান্দিনা থানা পুলিশ। তারা একই এলাকার রহমান ড্রাইভারের ছেলে।
স্থানীয় ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার দিবাগত রাত ২টায়। আর ওই ঘটনার রেশ ধরে বৃহস্পতিবার ইফতারের পর গৃহবধূর স্বামীকে ছুরিকাঘাত করে ধর্ষণের চেষ্টাকারী জানে আলম। পরে রাত ১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু ঘটে তার।
নিহতের মা নাছিমা বেগম জানান, ‘গত সোমবার দিবাগত রাত ২টায় আমার পুত্রবধূ রান্না ঘরে সেহেরী তৈরি করছিল। এসময় প্রতিবেশী জানে আলম আমার পুত্রবধূকে রান্নাঘর থেকে মুখ চেপে ধরে পাশের একটি জমিতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় পুত্রবধূর চিৎকার শুনে আমার দুই ছেলে ফারুক ও জালালসহ বাড়ির লোকজন বের হয়। এ সময় জানে আলম তাকে ছেড়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপর আমার দুই ছেলেসহ অন্যান্যরা জানে আলমের বাড়িতে গেলে জানে আলম উল্টো আমার ছেলেদের মেরে ফেরার হুমকি দেয়।
পরদিন মঙ্গলবার সকালে আমরা এলাকার কাউন্সিলরসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি জানাই এবং তারা জানে আলমের বাড়িতে গিয়ে তাকে পায়নি। মঙ্গলবার ভোর থেকেই জানে আলম আত্মগোপন করে।
বৃহস্পতিবার ইফতারের পর প্রচন্ড গরমে আমার ছেলে ফারুক হোসেন আমাদের বসতঘর সংলগ্ন একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিল। এসময় জানে আলম ও তার ভাই মোর্শেদ এসে বিষয়টি কেন এলাকায় জানাজানি হলো বলেই আমার ছেলের পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।’
ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল সালাম জানান, ‘দুটি পরিবারই হতদরিদ্র। তবে জানে আলম মাদকাসক্ত এবং চরিত্রহীন। ভোর রাতের সেহেরী তৈরি করার উদ্দেশ্যেই গৃহবধূ বাইরের রান্না ঘরে রান্না করছিল। এসময় গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে জানে আলম। ঘটনার পর সে আত্মগোপন করে এবং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফারুককে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই ছুরি নিয়ে বাড়িতে আসে।’
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল ফয়সল জানান, ছুরিকাঘাত করার পরপর নিহতের মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা রাত ৯টায় ধর্ষণের ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলা গ্রহণ করি। রাত সাড়ে ১২টার মধ্যে ঘটনার মূলহোতা জানে আলমসহ তার বড় ভাই মোর্শেদকে আটক করি। রাত অনুমান ১টার দিকে ঢামেকে মৃত্যু হয় ছুরিকাঘাতে আহত ফারুক হোসেনের। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।