All posts by Oporajita

 

টমেটো ভর্তা রেসিপি

 

টমেটো ভর্তা বাঙালির খাবারের এক অনন্য স্বাদযুক্ত অংশ। নিচে ৫ রকমের টমেটো ভর্তার রেসিপি দেওয়া হলো

১. সাধারণ টমেটো ভর্তা
উপকরণ:

টমেটো – ২-৩টি
পেঁয়াজ কুচি – ১টি
কাঁচা মরিচ – ২টি
সরিষার তেল – ১ টেবিল চামচ
লবণ – স্বাদমতো

প্রস্তুত প্রণালি:
১. টমেটোগুলো হালকা পুড়িয়ে নিন।
২. টমেটোর খোসা ছাড়িয়ে, পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ, লবণ ও সরিষার তেল দিয়ে মেখে পরিবেশন করুন।

২. সরিষা টমেটো ভর্তা
উপকরণ:

টমেটো – ৩টি
সরিষা বাটা – ১ টেবিল চামচ
রসুন কুচি – ২ কোয়া
কাঁচা মরিচ – ২টি
সরিষার তেল – ২ টেবিল চামচ
লবণ – স্বাদমতো

প্রস্তুত প্রণালি:
১. টমেটো ভেজে বা পুড়িয়ে নিন।
২. সরিষা বাটা, রসুন, কাঁচা মরিচ ও লবণ দিয়ে টমেটো মেখে নিন।
৩. উপরে সরিষার তেল দিয়ে পরিবেশন করুন।

৩. শুঁটকি দিয়ে টমেটো ভর্তা

উপকরণ:

টমেটো – ৩টি
শুঁটকি (পুঁটি/চিংড়ি) – ২ টেবিল চামচ
পেঁয়াজ কুচি – ১টি
কাঁচা মরিচ – ৩টি
সরিষার তেল – ১ টেবিল চামচ
লবণ – স্বাদমতো

প্রস্তুত প্রণালি:
১. টমেটো ও শুঁটকি আলাদা করে পুড়িয়ে নিন।
২. শুঁটকিকে গরম পানিতে ভিজিয়ে নরম করে নিন।
৩. পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ,শুঁটকি ও টমেটো একসাথে বেটে বা ব্লেন্ড করে নিন। লবণ ও সরিষার তেল দিয়ে মেখে ভর্তা তৈরি করুন।

৪. ডাল টমেটো ভর্তা

উপকরণ:
টমেটো – ৩টি
সেদ্ধ মসুর ডাল – ৩ টেবিল চামচ
রসুন বাটা – ১ চা চামচ
শুকনা মরিচ ভাজা – ২টি
সরিষার তেল – ১ টেবিল চামচ
লবণ – স্বাদমতো

প্রস্তুত প্রণালি:
১. টমেটো পুড়িয়ে নরম করে নিন।
২. টমেটো ও সেদ্ধ ডাল একসঙ্গে বেটে বা ব্লেন্ড করে নিন।
৩. রসুন বাটা, শুকনা মরিচ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে মেখে পরিবেশন করুন।

৫. নারকেল টমেটো ভর্তা
উপকরণ:
টমেটো – ২টি
নারকেল কোরানো – ৩ টেবিল চামচ
শুকনা মরিচ ভাজা – ২টি
সরিষার তেল – ১ টেবিল চামচ
লবণ – স্বাদমতো

প্রস্তুত প্রণালি:
১. টমেটো পুড়িয়ে নরম করে নিন।
২. নারকেল কোরানো, শুকনা মরিচ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে মিশিয়ে ভালোভাবে মেখে নিন।
৩. সরিষার তেল দিয়ে পরিবেশন করুন।

যেকোনো ধরনের ভর্তা গরম ভাতের সঙ্গে দারুণ উপভোগ্য!

 

একজন জলবায়ু বিজ্ঞানী গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী একজন বিশিষ্ট জলবায়ু গবেষক। প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব এবং উপকূলীয় নারীদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরিতে তার অবদান অনস্বীকার্য। পরিবেশ সংরক্ষণ ও বিপন্ন প্রাণী সুরক্ষায় তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২২ সালে তিনি ওডব্লিউএসডি-এলসিভিয়ার ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।

প্লাস্টিক দূষণ কীভাবে গঙ্গা নদী থেকে সাগরে গিয়ে পরিবেশ ও প্রাণীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক একটি গবেষণা দলের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। গবেষণার মাধ্যমে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি নীতিমালা প্রণয়নেও ভূমিকা রেখেছেন।
সুন্দরবনের পরিবেশগত ক্ষতি কমাতে তিনি পরিত্যক্ত মাছ ধরার জাল পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে কার্পেট ও অন্যান্য পণ্য তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি উপকূলীয় নারীদের বিকল্প কর্মসংস্থানও তৈরি হচ্ছে। এছাড়া, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে এটি পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তিরও প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।

নারী নির্যাতন ও বৈষম্য রোধে পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দেন ড. গাউসিয়া। তার মতে, মা-বাবার উচিত সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই নারীদের সম্মান করতে শেখানো। নারীদের পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং নারীবিজ্ঞানীদের যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করাই বিজ্ঞানে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে সহায়ক হবে।

শৈশব থেকেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতেন গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা। চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও পারিবারিক দুর্যোগের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে বন্ধুদের উৎসাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গবেষণা ও শিক্ষকতার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও সংস্কৃতিমনা পরিবারে বেড়ে ওঠা গাউসিয়া তার শিক্ষা জীবনে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। নারী হিসেবে গবেষণাক্ষেত্রে বহুবার বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন, তবে কখনো থেমে যাননি। তার ভাষায়, “যেখানেই ‘না’ শুনেছি, সেখানে ‘হ্যাঁ’ করার জন্য লড়ে গেছি। কারণ আমার উদ্যোগে যদি একজনও উপকৃত হয়, তাহলে সেটি বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত।”

কমনওয়েলথ একাডেমিক স্টাফ স্কলারশিপের অধীনে ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন তিনি। ছোটবেলায় বিজ্ঞানীদের কাজ পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে গবেষণার প্রতি আগ্রহী হন এবং পরিবেশ, প্রাণী ও মানবকল্যাণে গবেষণাকে নিজের জীবন লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন।
ড. গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী তার গবেষণা ও কর্মসূচির মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন, সংকল্প ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কেউ সমাজের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। পরিবেশ রক্ষা, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নারীর ক্ষমতায়নে তার উদ্যোগ আগামী দিনগুলোতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

মাউন্ট এভারেস্ট জয়ী নারীদের অনুপ্রেরণামূলক গল্প

মাউন্ট এভারেস্ট-পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করা সব পর্বতারোহীর স্বপ্ন। এটি শুধুমাত্র শারীরিক শক্তির পরীক্ষা নয়, মানসিক দৃঢ়তারও প্রতীক। বাচেন্দ্রী পাল থেকে শুরু করে বাংলাদেশি নারী নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীন পর্যন্ত, অনেক সাহসী নারী তাদের অসীম সাহস ও সংকল্প নিয়ে এই চূড়ায় পৌঁছেছেন। এই নারীরা শুধু ইতিহাস সৃষ্টি করেননি, বরং নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

প্রথম ভারতীয় নারী: বাচেন্দ্রী পাল
১৯৮৪ সালের ২২ মে, বাচেন্দ্রী পাল প্রথম ভারতীয় নারী হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। এই অভিযানে তাকে ভয়াবহ বরফ ধসের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। কিন্তু তিনি দমে না গিয়ে সফল হন। তার এই সাফল্য ভারতীয় পর্বতারোহণ ইতিহাসের একটি বড় অধ্যায়।

প্রথম বাংলাদেশি নারী: নিশাত মজুমদার
নিশাত মজুমদার ২০১২ সালের ১৯ মে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। তার এই সাফল্য বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত। নিশাতের এই অর্জন বাংলাদেশি নারীদের স্বপ্ন দেখতে এবং তা অর্জনে সাহসী হতে অনুপ্রাণিত করেছে।

ওয়াসফিয়া নাজরীন: সেভেন সামিট বিজয়ী
২০১২ সালের ২৬ মে ওয়াসফিয়া নাজরীন দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন। তিনি কেবল এভারেস্ট জয় করেই থেমে যাননি; তিনি সাতটি মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ (সেভেন সামিটস) জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। তার এই সাফল্য বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

অরুণিমা সিনহা: অদম্য মনোবলের প্রতীক
ভারতের প্রাক্তন ভলিবল খেলোয়াড় অরুণিমা সিনহা, যিনি একটি ট্রেন দুর্ঘটনায় পা হারান, ২০১৩ সালে এভারেস্ট জয় করেন। তার কৃত্রিম পায়ের সাহায্যে এই শৃঙ্গ জয় বিশ্বজুড়ে সাহসিকতার একটি মাইলফলক হয়ে উঠেছে।

মালাভাথ পূর্ণা: সর্বকনিষ্ঠ নারী এভারেস্টজয়ী
মাত্র ১৩ বছর বয়সে মালাভাথ পূর্ণা ২০১৪ সালে এভারেস্ট জয় করেন। তিনি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নারী পর্বতারোহী হিসেবে রেকর্ড গড়েছেন। তার এই কৃতিত্ব তরুণদের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা।

পিয়ালি বসাক: অক্সিজেন ছাড়া এভারেস্ট জয়
পশ্চিমবঙ্গের পিয়ালি বসাক ২০২২ সালে অক্সিজেন ছাড়াই মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। তার এই অসাধারণ সাফল্য ভারতীয় নারীদের সাহসিকতার আরেকটি উদাহরণ।

নারীদের এই সাফল্যের প্রতীকী গুরুত্ব
ভারত ও বাংলাদেশের নারীদের এই কৃতিত্ব শুধু তাদের ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং তারা প্রমাণ করেছেন যে দৃঢ় সংকল্প এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।

বাচেন্দ্রী পাল থেকে শুরু করে নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরীন পর্যন্ত, এই নারীদের গল্প আমাদের শেখায় যে শৃঙ্গ জয় করা মানে শুধু পাহাড়ে চড়া নয়, বরং প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে নতুন দিগন্তের সন্ধান করা। তাদের এই অনুপ্রেরণামূলক কাহিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে।

 

শবে মেরাজ: মক্কার চ্যালেঞ্জ ও আধ্যাত্মিক শিক্ষার আলো

শবে মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা, যা শুধুমাত্র মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জীবনে নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য গভীর তাৎপর্য বহন করে। এই অলৌকিক ঘটনার পটভূমি এবং আধ্যাত্মিক গুরুত্ব গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে আমরা এক অনবদ্য শিক্ষা ও অনুপ্রেরণার সন্ধান পাই।

মক্কার শত্রুদের চাপ এবং মহানবী (সা.)-এর সংকটময় সময়

শবে মেরাজের প্রাক্কালে মহানবী (সা.)-এর জীবনে এক কঠিন সময় চলছিল। মক্কার কুরাইশরা তাঁর ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে, কারণ তিনি তাওহিদের (আল্লাহর একত্ববাদের) বার্তা প্রচার করছিলেন। তাঁর এই দাওয়াত মক্কার নেতাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, কারণ এটি তাদের প্রচলিত সমাজব্যবস্থা এবং ক্ষমতার কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করেছিল।

এই সময়ে মহানবী (সা.)-এর জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে যখন তিনি তাঁর দুই প্রধান সমর্থক—প্রিয় চাচা আবু তালিব এবং স্ত্রী খাদিজা (রা.)-কে হারান। এই “আমুল হুযন” বা শোকের বছরে তিনি ব্যক্তিগত এবং সামাজিকভাবে এক গভীর সংকটের মধ্যে ছিলেন। মক্কার কুরাইশ নেতারা মুসলিমদের প্রতি নিষ্ঠুরতা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং তাঁকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে। এই চরম সময়ে মহানবী (সা.) এক মহাসান্ত্বনার সন্ধান পান, যা তাঁকে নতুন উদ্যম ও শক্তি দেয়।

শবে মেরাজের ঘটনা

এই সংকটময় পরিস্থিতিতে শবে মেরাজ মহানবী (সা.)-এর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশেষ উপহার। মেরাজের রাতে মহানবী (সা.)-কে মক্কা থেকে বায়তুল মাকদিস এবং সেখান থেকে সপ্তাকাশে আরশের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এই যাত্রায় তিনি আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং মানবজাতির জন্য বিশেষ নির্দেশনা লাভ করেন।

শবে মেরাজের আধ্যাত্মিক শিক্ষা

শবে মেরাজ কেবল একটি অলৌকিক ঘটনা নয়; এটি মুসলিমদের জন্য এক চিরন্তন আধ্যাত্মিক শিক্ষা।

১. আল্লাহর অসীম ক্ষমতার প্রকাশ:
মেরাজের ঘটনা দেখায় যে আল্লাহর ক্ষমতা সীমাহীন। আল্লাহ মহানবী (সা.)-কে এমন এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিয়ে গেলেন, যা মানুষের কল্পনার বাইরে। এটি আমাদের আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস রাখতে শেখায়।

২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান:
মেরাজের রাতে আল্লাহ মহানবী (সা.)-কে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান প্রদান করেন। নামাজ হল মুসলিমদের জন্য আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এটি আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য এবং নৈতিকতার শিক্ষা দেয়।

৩. ধৈর্যের প্রেরণা:
মেরাজের ঘটনা মহানবী (সা.)-এর জীবনে এক বিশাল সান্ত্বনা এবং ধৈর্যের শিক্ষা নিয়ে আসে। এটি আমাদের শেখায় যে জীবনের কঠিন সময়েও আল্লাহর উপর নির্ভরশীল থাকা এবং ধৈর্য ধারণ করা উচিত।

৪. জান্নাত ও জাহান্নামের দর্শন:
মেরাজের সফরে মহানবী (সা.) জান্নাত এবং জাহান্নামের বিভিন্ন দৃশ্য দেখেন। এটি মানুষের সামনে তাদের কাজের পরিণতি তুলে ধরে, যা সৎ কাজের প্রতি উৎসাহিত করে এবং পাপ থেকে দূরে থাকার জন্য প্রণোদনা দেয়।

৫. মানবজাতির ঐক্যের বার্তা:
মেরাজের সময় মহানবী (সা.) বিভিন্ন নবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যা নবীদের ঐক্যের প্রতীক। এটি আমাদের মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য বজায় রাখার গুরুত্ব শেখায়।

৬. আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য:
মেরাজের শিক্ষাগুলোর অন্যতম একটি হলো আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ আনুগত্য। এই আনুগত্যের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার জীবনে শৃঙ্খলা ও শুদ্ধতার পরিপূর্ণতা আনতে পারে।

৭. জীবনের কঠিন সময়ে আশার আলো:
মেরাজের ঘটনা প্রমাণ করে যে, কঠিন সময়ের মধ্যেও আল্লাহ তাঁর বান্দার জন্য সাহায্যের পথ তৈরি করেন। এটি আমাদের শেখায় যে, জীবনের যেকোনো চ্যালেঞ্জে আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে।

৮. আত্মশুদ্ধির প্রেরণা:
মেরাজের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নিজের আত্মশুদ্ধির দিকে মনোনিবেশ করতে পারে। এটি আমাদের ভেতরের বিশ্বাসকে মজবুত করে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য পথ দেখায়।

উপসংহার

শবে মেরাজ একদিকে মহানবী (সা.)-এর জীবনের সংকটময় সময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে সান্ত্বনা ও অনুপ্রেরণা, অন্যদিকে মানবজাতির জন্য এক চিরন্তন শিক্ষা। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, জীবনের কঠিন সময়েও আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখলে তিনি পথ প্রদর্শন করেন। শবে মেরাজ আমাদের জীবনকে আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করার এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের মাধ্যমে ধৈর্য ও নৈতিকতার পথ অনুসরণের নির্দেশনা দেয়।

তামান্না সাদিকা
লেখিকা ও গণমাধ্যম কর্মী

 

নুডলস পাকোড়া: ঝটপট তৈরি, স্বাদে অদ্বিতীয়

 

উপকরণ:
নুডলস: ১ প্যাকেট (সেদ্ধ করা)
ডিম: ১টি
পেঁয়াজ কুচি: ২ টেবিল চামচ
১/২টা কাঁচামরিচ কুচি
কর্নফ্লাওয়ার: ২ টেবিল চামচ
লবণ: পরিমাণমতো
গোলমরিচ গুঁড়া:হাফ চা চামচ(যারা ঝাল পছন্দ করেন)
ধনেপাতা কুচি: ১ টেবিল চামচ (ঐচ্ছিক)

প্রস্তুত প্রণালী:

একটি বড় বাটিতে সেদ্ধ করা নুডলস নিন।
ডিম, পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ কুচি, কর্নফ্লাওয়ার, লবণ, গোলমরিচ ও ধনেপাতা সহ সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে ছোট ছোট বল তৈরি করুন।

এখন গরম তেলে এই নুডুলসের বলগুলো দিয়ে সোনালি রঙের মচমচে হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিন,ভাজা পাকোড়া গুলো কিচেন পেপারে রাখুন যাতে বাড়তি তেল ঝরে পড়ে।

বিকেলের নাস্তায় একটুখানি সময় বের করে তৈরি করুন, আর পরিবারের সবাইকে খুশি করুন

 

নাজমুন নাহার: বাংলাদেশের পতাকাবাহী প্রথম বিশ্বজয়ী পরিব্রাজক

 

নাজমুন নাহার, বাংলাদেশের গর্ব, বিশ্বজয়ী পরিব্রাজক হিসেবে ১৭৮টি দেশ ভ্রমণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তিনি বিশ্বের প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে এই অনন্য অর্জন গড়েছেন। সর্বশেষ ১৭৮তম দেশ হিসেবে তিনি ভ্রমণ করেছেন পাপুয়া নিউগিনি। পাপুয়া নিউগিনির উপ-প্রধানমন্ত্রী জন রোসো তাঁর এই দৃষ্টান্তমূলক রেকর্ডকে সম্মান জানান। এর আগে তিনি ১৭৭তম দেশ সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমণ করেন, যেখানে তাঁর সংগ্রাম ও সাফল্য নিয়ে তাভুলি নিউজে একটি বিশেষ ফিচার প্রকাশিত হয়।

নাজমুন নাহারের এই অনন্য অভিযাত্রা শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবময় অধ্যায়। তাঁর প্রতিটি যাত্রায় তিনি বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে গেছেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের পরিচয়। দেশে ফিরে তিনি ১২ ডিসেম্বর “প্রাইড অব বাংলাদেশ” সম্মাননায় ভূষিত হন।

নাজমুন তাঁর ভ্রমণকে শুধু নিজের ইচ্ছা পূরণের জন্য সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি বিশ্বজুড়ে শান্তি, ঐক্য এবং পরিবেশ রক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। ওশেনিয়ার ফিজি, টোঙ্গা, ভানুয়াতু, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং পাপুয়া নিউগিনি ভ্রমণের সময় তিনি সামুদ্রিক দেশগুলোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আবিষ্কার করেছেন এবং বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্বভ্রমণে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে নাজমুনকে। বহুবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও তিনি ছিলেন তাঁর স্বপ্ন পূরণে দৃঢ়।
২০০০ সালে ভারতের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর ভ্রমণের সূচনা হয়। এরপর ২০১৮ সালে জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের সীমান্তে ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতে ১০০তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক অর্জন করেন। ২০২১ সালে তিনি সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে ভ্রমণ করে ১৫০টি দেশের যাত্রা সম্পন্ন করেন এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১৭৫টি দেশ ভ্রমণের আরেকটি মাইলফলক সৃষ্টি করেন।

লক্ষ্মীপুরে জন্মগ্রহণ কারী এই ভ্রমণ পিপাসুর অনুপ্রেরণা ছিল তাঁর দাদা আহমদ উল্লাহ, যিনি নিজেও আরব অঞ্চলে ১৪টি দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। ছোটবেলা থেকে সাহস, অধ্যবসায় এবং অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাঁকে আজকের অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। তিনি সুইডেনে উচ্চশিক্ষা লাভ করার পাশাপাশি প্রস্তুতি নেন বিশ্বজয়ের।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, গণমাধ্যম, এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বরা নাজমুন নাহারকে সংবর্ধনা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি পিস টর্চ বিয়ারার অ্যাওয়ার্ডসহ প্রায় ৫৫টি পুরস্কার পেয়েছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি মোটিভেশনাল বক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করে তরুণ প্রজন্মকে বড় স্বপ্ন দেখতে এবং সেগুলো পূরণ করতে উৎসাহিত করেছেন।

নাজমুন নাহার কেবল একজন পরিব্রাজক নন; তিনি একটি অনুপ্রেরণার নাম। তাঁর গল্প শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়ে নারীদের জন্য একটি উদাহরণ। বেগম রোকেয়া বা প্রীতিলতার মতোই তিনি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আলোর পথ দেখাবেন।একজন নাজমুন নাহার সত্যিই আমাদের লাল-সবুজের পতাকাবাহী তারকা এবং গর্ব।

#NazmunNahar #WorldTraveller #BangladeshiPride #178Countries #GlobalExplorer #FlagBearer #Inspiration #WomenEmpowerment #PeaceAdvocate #EnvironmentalAwareness
#নাজমুননাহার #বিশ্বপরিব্রাজক #বাংলাদেশেরগর্ব #১৭৮দেশ #লালসবুজেরপতাকাবাহী #নারীরপ্রেরণা #শান্তিরদূত #পরিবেশসংরক্ষণ

 

ভারতে বাংলাদেশি নারী ধর্ষনের পর হত্যা:প্রতিবাদ উঠুক

 

ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করা এক বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা আমাদের হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। এটি কেবল একটি অমানবিক ঘটনা নয়, বরং ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, এবং নাগরিক নিরাপত্তার প্রতি চরম অবহেলার একটি উদাহরণ।
ভারত, যে দেশ নিজেকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে, সেখানে একজন বাংলাদেশি নারীকে এভাবে নির্যাতনের পর হত্যা করা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বৈধভাবে বসবাসরত যেকোনো বিদেশি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট দেশের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু এই ঘটনায় তা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
নিহত নারীর পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান এবং এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবিও জানাই।
আমরা চাই, এ ধরনের অমানবিকতার পুনরাবৃত্তি বন্ধ হোক। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা যেন কেবল কাগজে-কলমে না থেকে বাস্তবায়িত হয়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে আমরা কখনো নীরব থাকবো না।

 

প্রথম সৌদি নারী নভোচারীর:রায়নাহ বারনাভি

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) প্রথম সৌদি নারী নভোচারী রায়নাহ বারনাভি যাত্রা শুরু করেছেন। স্পেসএক্সের ফ্যালকন রকেটটি নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ২০২৩ সালের ২১ মে (রোববার) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৩৭ মিনিটে উৎক্ষেপণ করা হয়।

রায়নাহ বারনাভির সঙ্গে ছিলেন সৌদি রয়্যাল এয়ার ফোর্সের ফাইটার পাইলট আলি আল-কার্নি, মার্কিন ব্যবসায়ী জন শফনার এবং দলের নেতা নাসার সাবেক নভোচারী পেগি হুইটসন। দলটি ২২ মে (সোমবার) মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছায়।
মহাকাশ স্টেশনে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় কাটিয়ে, দলটি ৩০ মে (মঙ্গলবার) পৃথিবীতে ফিরে আসে। ফ্লোরিডা উপকূলের কাছাকাছি এলাকায় তারা অবতরণ করেন।

এই মিশনে রায়নাহ বারনাভি স্টেম (STEM)সেল গবেষণা এবং শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, “এই অভিজ্ঞতা আমার জন্য স্বপ্ন পূরণের মুহূর্ত। এটি আমাদের প্রমাণ করে, মহাকাশ যাত্রা সবার জন্য সম্ভব।”

হিউস্টনভিত্তিক কোম্পানি এক্সিওম স্পেসের আয়োজনে পরিচালিত এই মিশনে অংশগ্রহণের জন্য প্রতি সিটের সম্ভাব্য ভাড়া ছিল সাড়ে পাঁচ কোটি ডলার। যাত্রার সময় তাদের দৈনিক খাবার খরচ ছিল দুই হাজার ডলার এবং অন্যান্য সরঞ্জামের জন্য ব্যয় হয়েছে আরও বেশ কয়েক হাজার ডলার।

এই মিশন সৌদি আরবের মহাকাশ গবেষণায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

 

ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তির আবেদন নাকচ: ন্যায়বিচারের প্রশ্নে নতুন বিতর্ক

 

সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তির আবেদন নাকচ করেছে। ড. আফিয়া সিদ্দিকী ২০১০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে বন্দি, যেখানে তাকে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হচ্ছে।
তার বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে এফবিআই এজেন্টকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। তবে এই অভিযোগ ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ।

সম্প্রতি ড. আফিয়া সিদ্দিকীর পক্ষ থেকে তার আইনজীবী ক্লাইভ স্ট্যাফোর্ড স্মিথ বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে ক্ষমার আবেদন জমা দেন।সাথে ৭৬,৫০০ শব্দের বিশাল দলিলে তার নির্দোষিতা তুলে ধরা হয়। তবে বাইডেন প্রশাসন এই আবেদন সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে।

ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মামলাটি শুরু থেকেই বিতর্কিত। অভিযোগের পক্ষে প্রমাণের অভাব, বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার ঘাটতি এবং তার ওপর কারাগারে অমানবিক আচরণ মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছে। তার আটক ও বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত।
তবে সম্প্রতি আবেদনের প্রত্যাখ্যানের পর ন্যায়বিচারের প্রশ্নে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

 

শিশু অধিকার আইন ২০২৫: ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের ওপর কেমন প্রভাব পড়বে

 

বাংলাদেশে প্রস্তাবিত “শিশু অধিকার আইন ২০২৫” নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিশেষ করে, অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণ থেকে জন্ম নেওয়া সন্তানকে মায়ের স্বেচ্ছায় পরিত্যাগ করার সুযোগ দেওয়া ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সমাজ ও ধর্মীয় নেতারা।
আইনের একটি ধারায় বলা হয়েছে, কোনো নারী যদি অনিচ্ছাকৃত গর্ভধারণ থেকে জন্ম নেওয়া সন্তান লালন-পালনের ইচ্ছা বা সক্ষমতা না রাখেন, তবে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সন্তানকে রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে হস্তান্তর করতে পারবেন। এই ধারা সমর্থকরা বলছেন, এটি নারীদের মানসিক ও আর্থিক চাপ কমানোর পাশাপাশি পরিত্যক্ত শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে।
তবে, এই আইনের বিরোধিতা করছেন ধর্মীয় ও সমাজবিজ্ঞানীরা। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, সন্তানকে পরিত্যাগ করা কোরআন ও হাদিসের শিক্ষার পরিপন্থী। সন্তানকে মহান আল্লাহর দান হিসেবে দেখার যে শিক্ষা, তা এই আইনের মাধ্যমে অবহেলিত হবে। হিন্দু ও খ্রিস্টান নেতারাও আইনটিকে ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অভিহিত করেছেন।
সমাজবিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, এই ধারা পরিবার কাঠামোকে দুর্বল করে তুলতে পারে। এটি অপব্যবহার করে অনেকেই দায়িত্ব এড়ানোর সহজ উপায় হিসেবে নিতে পারেন। তাছাড়া, এই আইনের ফলে নৈতিক অবক্ষয় এবং অসামাজিক কার্যকলাপ বাড়ার ঝুঁকিও রয়েছে।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, আইনটি এখনও খসড়া পর্যায়ে রয়েছে এবং এর চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার আগে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মতামত নেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আইনটি বাস্তবায়নের আগে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সংশোধন প্রয়োজন। পাশাপাশি, অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ এবং নৈতিক অবক্ষয় রোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

 

ভিক্টর ফ্র্যাঙ্কল এর ম্যানস সার্চ ফর মিনিং

 

“ম্যানস সার্চ ফর মিনিং” বইটি বিশিষ্ট মনস্তত্ত্ববিদ ভিক্টর ফ্র্যাঙ্কলের রচিত এক অনবদ্য সৃষ্টি। ১৯৪৬ সালে প্রকাশিত এই বইটি তার নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে থাকার অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে লেখা।
ফ্র্যাঙ্কল কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী অবস্থায় শারীরিক, মানসিক এবং আত্মিক নির্যাতন সহ্য করেছিলেন, কিন্তু এই অভিজ্ঞতাগুলোর মধ্য দিয়ে তিনি জীবনের গভীর অর্থ এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে মূল্যবান শিক্ষা লাভ করেন।

ফ্র্যাঙ্কল এই বইতে বলেছেন, “মানুষ যেকোনো পরিস্থিতিতে তার জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে সক্ষম।” এই বইয়ে তিনি তার “লোগোথেরাপি” নামক থেরাপিউটিক পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন। ফ্র্যাঙ্কল বিশ্বাস করতেন, মানুষের আসল শক্তি তার মনোভাব এবং নিজের জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে নিহিত। জীবন সংগ্রামে, এমনকি সর্বোচ্চ কষ্টের মধ্যেও একটি অর্থপূর্ণ লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।

বইটির প্রথম ভাগে, ফ্র্যাঙ্কল তার নিজস্ব কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, কিভাবে বন্দীদের শারীরিক নির্যাতন, ক্ষুধা, দুর্ভোগ এবং মৃত্যুর মুখোমুখি করে তোলা হয়েছিল। তবে তিনি এটিও বলেছেন, যে ব্যক্তি মানসিকভাবে তার জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য খুঁজে পায়, সে চরম শাস্তির মধ্যেও নিজেকে সংরক্ষণ করতে পারে। এই অভিজ্ঞতাগুলি তার থেরাপির ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করে।

বইটির দ্বিতীয় ভাগে, ফ্র্যাঙ্কল তার “লোগোথেরাপি” পদ্ধতির মাধ্যমে জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার উপায় ব্যাখ্যা করেন। লোগোথেরাপি মানে হলো, জীবনের উদ্দেশ্য এবং অর্থ খোঁজা। ফ্র্যাঙ্কল বলেন, জীবনের তিনটি প্রধান পথ হতে পারে:
১. সৃজনশীল কাজ বা অর্জন – যা মানুষের কাজের মাধ্যমে তার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে।
২. ভালোবাসা এবং সম্পর্ক – অন্যদের প্রতি যত্ন এবং ভালোবাসা অনুভব করাও জীবনের উদ্দেশ্য হতে পারে।
৩. দুর্দশা এবং কষ্ট সহ্য করা– যখন কোনো পরিস্থিতি পরিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন সেই পরিস্থিতিতেও মানসিক শক্তি খুঁজে বের করার ক্ষমতা।

“ম্যানস সার্চ ফর মিনিং” বইটি শুধু মনস্তত্ত্ববিদ বা চিকিৎসকদের জন্য নয়, বরং সকল সাধারণ মানুষের জন্যই একটি অনুপ্রেরণাদায়ক গ্রন্থ। ফ্র্যাঙ্কল জানান, আমাদের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো কেবল শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে না, বরং আমাদের মানসিক দৃঢ়তা, কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা এবং জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়ার ইচ্ছা এর মূল ভিত্তি। এই বইটি পাঠকদের উদ্বুদ্ধ করে তাদের জীবনে কঠিন মুহূর্তে সত্যিকার অর্থ খুঁজে পেতে এবং তাদের জীবনের লক্ষ্য স্পষ্ট করতে।

 

সমাজে নারীর অবস্থান:আন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তনের ধারা

 

নারী আন্দোলন নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। এটি কেবল নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক নয়, বরং একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সমতাপূর্ণ সমাজ গড়ার আন্দোলন।

নারী আন্দোলনের শিকড় বহু প্রাচীন, তবে উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে এটি সুসংগঠিত রূপ পায়। বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং সুফিয়া কামাল নারীর সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অধিকারের জন্য কাজ করেন।
ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধেও নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নারী আন্দোলনের মাধ্যমেই নারীর স্বাধিকার, সমান অংশগ্রহণ এবং স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়।

সেই ধারাবাহিকতায় আজ নারীরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করে যাচ্ছে। NASA International Space Apps Challenge 2023-এ বাংলাদেশি নারীদের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া নারীসাফল্যের একটি দৃষ্টান্ত। এছাড়া, উদ্যোক্তা নারীরা ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করছেন। রাজনীতি, বিজ্ঞান, শিক্ষা, এবং সংস্কৃতিতে নারীর দৃঢ় পদচারণা আমাদের সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা দেয়।

নারীর সাফল্যের গল্প যতই অনুপ্রেরণাদায়ক হোক, পিতৃতান্ত্রিক সমাজ এখনও নারীর অগ্রগতির পথে বড় বাধা। সামাজিক কুসংস্কার, লিঙ্গ বৈষম্য, এবং সহিংসতা নারীর উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘SHE’ কর্মশালার মতো প্রকল্পগুলো নারীদের ক্ষমতায়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। তবুও, নারীর প্রকৃত সমানাধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।

নারী আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে চাই সমন্বিত প্রচেষ্টা। নারীর জন্য মানসম্মত শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়ানো অপরিহার্য। আইনি সহায়তা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি নারীর উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। তাছাড়া, নারীর প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে পরিবার,ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা এবং গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

নারী আন্দোলন শুধু নারীদের নয়, সমগ্র সমাজের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। অতীতের সংগ্রাম এবং বর্তমানের সাফল্য আমাদের আশাবাদী করে যে, নারীর সমানাধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজ আরও সমৃদ্ধ হবে।

 

পারিবারিক ভাঙনে বাড়ছে বৃদ্ধাশ্রম

 

সালেহ(কাল্পনিক চরিত্র) এক সময় ছিলেন একটি সুখী পরিবারের প্রধান।
তার স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করছিলেন।
কিন্তু কয়েক বছর আগে ছেলেরা চাকরি সুবাদে শহরে চলে যায়, মেয়েও তার পরিবার নিয়ে পাড়ি জমায় দূর শহরে।বছরে একবারো আসার সময় করতে পারেনা তার আদরের সন্তানেরা। স্ত্রীর মৃত্যু পর একদমই একা হয়ে পড়েন সালেহ, একাকীত্বের চাপ থেকে মুক্তি পেতে তিনি শেষ আশ্রয় হিসেবে বেচে নেন বৃদ্ধাশ্রমকে

এটা আজকের বাস্তবতা। পারিবারিক ভাঙনের কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে বৃদ্ধাশ্রমের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাচ্ছে।
সাধারণত; গ্রামীণ সমাজে পারিবারিক সম্পর্ক অনেক দৃঢ় ছিল, কিন্তু আধুনিকতার প্রভাবে ছোট পরিবারের কাঠামো, উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের শহরে চলে যাওয়া, এবং পরিবারের সদস্যদের কর্মব্যস্ততা বৃদ্ধাশ্রমে প্রবেশকারী বৃদ্ধদের সংখ্যা দিনদিন বাড়িয়েছে।

বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশে দ্রুত সামাজিক পরিবর্তন ঘটেছে। আধুনিকতা, বিশ্বায়ন এবং আর্থিক চাপের কারণে অনেক পরিবারে মুলতঃ একটাই সঙ্কট- পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি। শহরাঞ্চলে, অনেক তরুণ-তরুণী বাবা-মায়ের সাথে সময় কাটানোর চেয়ে তাঁদের কর্মজীবনে বেশি মনোযোগী।এর ফলে বৃদ্ধরা একাকী জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে, বয়সজনিত অসুস্থতার জন্য তারা তাদের সন্তানদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাননা। ফলে বৃদ্ধাশ্রমকে শেষ অবলম্বন করে নিতে হচ্ছে অনেককে।

বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বৃদ্ধাশ্রম

বাংলাদেশের সমাজে পরিবার এবং সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই মূল্যবোধে হ্রাস দেখা যাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি শহরেই বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বাড়ছে, যা উদ্বেগজনক। শহরকেন্দ্রিক জীবনযাত্রার পরিবর্তন, অতিরিক্ত আবাসন খরচ এবং চাকরি নিয়ন্ত্রণের কারণে শহরে বৃদ্ধদের জন্য দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। শহরগুলির মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্কও কমে গেছে, এবং এখানকার পরিবারগুলোর মধ্যে আন্তঃসম্পর্কও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ হলো পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি। সরকার এবং সমাজের উচিত, পরিবারগুলির মাঝে ভালোবাসা এবং যত্নের বন্ধন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।নৈতিক এবং ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে হবে, যাতে ছেলে-মেয়েরা তাদের বাবা-মার প্রতি দায়িত্বশীল হয়।
পাশাপাশি, বৃদ্ধাশ্রমের মান উন্নয়ন এবং সেখানে বসবাসরতদের জন্য মানসিক সহায়তা দেওয়া দরকার। শুধুমাত্র বৃদ্ধাশ্রমই নয়, বরং পরিবার ও সমাজকে আরও সহানুভূতিশীল এবং বন্ধুত্বপূর্ণ হতে হবে, যাতে বৃদ্ধরা সুখী এবং শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারেন।

 

আসন্ন বিশ্ব নারী দিবসে স্বপ্নজয়ী নারী সম্মাননা’২৫

 

আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘স্বপ্নজয়ী নারী সম্মাননা-২০২৫’ এর দ্বিতীয় আসর। এ আয়োজনে দেশ ও প্রবাসের বিভিন্ন অঙ্গনের সফল ও প্রতিষ্ঠিত ২০ জন নারীকে সম্মানিত করা হবে।

বিজনেস এশিয়া ম্যাগাজিনের উদ্যোগে এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে থাকছে বিশেষ চমক। বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত দুটি বিশেষ প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হবে।

এছাড়াও, এই আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন দেশ-বিদেশের প্রায় সহস্রাধিক অতিথি। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠানটি হবে আরও প্রাণবন্ত।

এ আয়োজনের আরেকটি পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ৬ মার্চ ২০২৫, ঢাকার শেরাটন হোটেলে। এখানেও ২০ জন সফল নারীকে সম্মানিত করা হবে।

উল্লেখ্য, ‘স্বপ্নজয়ী নারী সম্মাননা’ প্রথমবার আয়োজিত হয় ২০২৪ সালে, যেখানে ৩০ জন উদ্যোক্তা ও পেশাজীবী নারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছিল।

 

২০বছরের বন্দীদশা থেকে মুক্তির পথে ড. আফিয়া সিদ্দিকী

 

মার্কিন কারাগারে বন্দি পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে শিগগিরই মুক্তি দেওয়া হতে পারে। তার মুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তদবিরকারী প্রতিনিধি দলের সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইকবাল জাইদি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. জাইদি জানান, ড. আফিয়া গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন। তবে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা ছাড়ার আগে তার সাজা কমিয়ে দিতে পারেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ড. জাইদি আরও জানান, তিন সদস্যের একটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিদল এই বিষয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিল। যদিও তাদের মূল লক্ষ্য ছিল প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা, কিন্তু ভিসা জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এর পরিবর্তে তারা মার্কিন সিনেটর এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মানবিক কারণে ড. আফিয়ার মুক্তির আহ্বান জানিয়ে বাইডেনকে একটি চিঠি দিয়েছেন। যদি বাইডেন ব্যবস্থা না নেন, তাহলে পাকিস্তান সরকার নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করবেন।
২০০৩ সালে করাচি থেকে তিন সন্তানসহ আটক হওয়ার পর ড. আফিয়ার জীবন এক অবিশ্বাস্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এটি এমন একটি অপরাধ যার জন্য মার্কিন আইনে সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর।
ড. জাইদি বলেন, ড. আফিয়া ২০ বছর ধরে তার সন্তানদের থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন।
তার এই মুক্তি ২৫ কোটি পাকিস্তানি এবং বিশ্বের ২ বিলিয়ন মুসলমানের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি উন্নত করবে।

ড. আফিয়া সিদ্দিকীর এই মুক্তির বিষয়ে পাকিস্তানসহ বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আগ্রহ ও প্রতীক্ষা তৈরি হয়েছে।

 

নিকাব পরে টকশো করতে নিষেধাজ্ঞা;বিতর্কে চ্যানেল আই

সম্প্রতি চ্যানেল আই-এ একটি টকশোতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক নাফিসা ইসলাম সাকাফি। তবে নিকাব পরে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত জানালে প্রথমে চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ তাকে টকশোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়নি। পরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার প্রেক্ষিতে চ্যানেল আই নিকাব পরে অংশগ্রহণের অনুমতি দিলেও, নাফিসা অফিশিয়ালি ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানান।

নাফিসা জানান, এটি তার জন্য ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং দেশে ইসলামবিদ্বেষের একটি উদাহরণ। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অতীতে রমজানে টিএসসিতে নামাজের ব্যবস্থা করায় ছাত্রলীগের দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। তখন নিকাব না করার কারণে সমালোচিত হয়েছিলেন, আর এখন নিকাব পরার কারণে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নাফিসা ইসলাম সাকাফিসহ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ চিন্তকরা ইসলামবিদ্বেষ নিয়ে ”ইসলামোফোবিয়া: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ” শিরোনামে আলোচনার জন্য ২০জানুয়ারি রাত ৯টায় লাইভে আসবেন।

 

ছবি সূত্রঃ রিপাবলিক টেলিভিশন

 

ড. রাইসা খান তারেক: বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও অনুপ্রেরণার নাম

 

জন্ম বাংলাদেশে হলেও ড. রাইসা খান তারেকের শৈশব কেটেছে সুইডেনে। ছোটবেলা থেকেই রসায়নের প্রতি বিশেষ ভালোবাসা থাকলেও তার নানির ক্যান্সারে মৃত্যুর ঘটনাই তাকে মেডিক্যাল কেমিস্ট্রিতে ক্যারিয়ার গড়ার প্রেরণা দেয়।

২০১৪ সালে রাইসা নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রিতে অনার্স সম্পন্ন করেন এবং ২০১৮ সালে সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিক্যাল কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ ভিত্তিক কোম্পানি Evonetix-এ সিন্থেটিক কেমিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।

রাইসা এবং তার দল একটি “ডিএনএ প্রিন্টার” তৈরি নিয়ে কাজ করছেন, যা দ্রুত ও নির্ভুলতার সাথে ডিএনএ সিকোয়েন্স তৈরি করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তি স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধ শিল্প এবং ডেটা স্টোরেজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। এই উদ্ভাবন গবেষণার সময় ও খরচ কমিয়ে বিশ্বব্যাপী ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি এবং গবেষণাগারের কাজকে সহজ করবে।

পেশাগত সাফল্যের পাশাপাশি ড. রাইসা একজন জনপ্রিয় ভ্লগার। তার ইউটিউব ও ফেসবুক চ্যানেল Dr Raysa’s-এ তিনি বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য সচেতনতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কন্টেন্ট আপলোড করেন। এতে তাকে সহায়তা করেন তার স্বামী নাজমুস সাকিব তারেক, যিনি আইন ও স্টার্টআপ বিষয়ে কাজ করছেন।

ড. রাইসা STEM (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন আউটরিচ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে ভূমিকা রাখছেন।

ড. রাইসার মতে, নারীদের বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে সামাজিক বাধা দূর করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার কাজ ও জীবনসংগ্রাম বাংলাদেশের STEM ক্ষেত্রে নারীদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

 

আপনার সন্তানকে নিয়মিত খেলতে দিন

 

খেলা একটি শিশুর শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উপায়। প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে পড়াশোনা, কোচিং, এবং প্রযুক্তি আসক্তির কারণে শিশুরা প্রকৃত খেলার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে খেলার গুরুত্ব অনুধাবন করে শিশুদের নিয়মিত খেলতে দেওয়া প্রত্যেক অভিভাবকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

খেলা শিশুর শারীরিক বিকাশে সহায়ক। নিয়মিত খেলার মাধ্যমে শরীর মজবুত হয়, মাংসপেশি শক্তিশালী হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি, খেলাধুলা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্বদানের গুণাবলী এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করে।

খেলা শিশুদের সামাজিক সম্পর্ক গড়তেও সাহায্য করে। দলগত খেলাগুলোর মাধ্যমে শিশুরা পরস্পরের প্রতি সহযোগিতা, সহমর্মিতা এবং শ্রদ্ধাবোধ শেখে। এ ছাড়া, খেলার সময় শিশুরা নিয়ম মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল হওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে।

অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত অল্প সময় খেলার জন্য উৎসাহ দেওয়া। প্রাকৃতিক পরিবেশে খেলাধুলার সুযোগ দিলে তারা আরও বেশি উপকৃত হবে।

আপনার সন্তানকে নিয়মিত খেলতে দিন

 

খেলা একটি শিশুর শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উপায়। প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে পড়াশোনা, কোচিং, এবং প্রযুক্তি আসক্তির কারণে শিশুরা প্রকৃত খেলার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে খেলার গুরুত্ব অনুধাবন করে শিশুদের নিয়মিত খেলতে দেওয়া প্রত্যেক অভিভাবকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

খেলা শিশুর শারীরিক বিকাশে সহায়ক। নিয়মিত খেলার মাধ্যমে শরীর মজবুত হয়, মাংসপেশি শক্তিশালী হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি, খেলাধুলা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্বদানের গুণাবলী এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করে।

খেলা শিশুদের সামাজিক সম্পর্ক গড়তেও সাহায্য করে। দলগত খেলাগুলোর মাধ্যমে শিশুরা পরস্পরের প্রতি সহযোগিতা, সহমর্মিতা এবং শ্রদ্ধাবোধ শেখে। এ ছাড়া, খেলার সময় শিশুরা নিয়ম মেনে চলা এবং দায়িত্বশীল হওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে।

অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত অল্প সময় খেলার জন্য উৎসাহ দেওয়া। প্রাকৃতিক পরিবেশে খেলাধুলার সুযোগ দিলে তারা আরও বেশি উপকৃত হবে।

 

স্তন ক্যানসার সারাতে ভাইরোথেরাপি সফল ড. বিটা হালাসি

ক্রোয়েশিয়ার খ্যাতনামা ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. বিটা হালাসি দীর্ঘদিন ধরে স্তন ক্যানসারে ভুগছিলেন। বাম স্তনে টিউমার শনাক্ত হওয়ার পর তিনবার অস্ত্রোপচার ও কেমোথেরাপি করেও তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বারবার টিউমার ফিরে আসায় চিকিৎসার প্রচলিত পদ্ধতিতে আশাহত হয়ে তিনি নতুন পথ খোঁজেন।

শেষমেশ নিজের ওপরই পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করেন অনলোলাইটিক ভাইরোথেরাপি (ওভিটি)। এই পদ্ধতিতে ভাইরাসের ডিএনএ পরিবর্তন করে তা রোগীর দেহে প্রবেশ করানো হয়। এটি ক্যানসারের নির্দিষ্ট কোষগুলোকে টার্গেট করে ধ্বংস করে, অন্য কোনো সুস্থ কোষের ক্ষতি না করে। ড. বিটা নিজেই ভাইরাসটি জৈবিকভাবে পরিবর্তন করে নিজের দেহে প্রয়োগ করেন। অবিশ্বাস্যভাবে তিনি পুরোপুরি সেরে ওঠেন।

তবে এই চিকিৎসাপদ্ধতি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং প্রচলিত চিকিৎসার অংশ নয়। ড. বিটার এই পদক্ষেপে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলেও বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়েছে। নিয়ম মেনে ক্লিনিকাল ট্রায়াল সম্পন্ন না করে নিজেই নিজের ওপর এই থেরাপি প্রয়োগ করায় তাঁর গবেষণাপত্র বহু আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রত্যাখ্যাত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ড. বিটার অভিজ্ঞতা অনলোলাইটিক ভাইরোথেরাপি নিয়ে আরও গবেষণার পথ সুগম করতে পারে। তবে নিয়মিত ব্যবহারের আগে এটি যথাযথ প্রমাণ এবং অনুমোদনের প্রয়োজন।

ড. বিটার এই সাহসী পদক্ষেপ ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করলেও তা নিয়ে বিতর্ক এখনো অব্যাহত।

 

ধনেপাতার সস,বছরজুড়ে সংরক্ষণের জন্য

উপকরণ:
ধনেপাতা: ২৫০ গ্রাম
জলপাই: ২টি
আদা-রসুন বাটা: ২ টেবিল চামচ
কাঁচা মরিচ: ৩-৪টি(যারা ঝাল পছন্দ করেননা বাদ দিতে পারেন)
সরিষার তেল: ৪ টেবিল চামচ
লেবু: ১টি (রস)
ভিনেগার: ৩ টেবিল চামচ
লবণ: স্বাদ অনুযায়ী

প্রস্তুত প্রণালী:
ধনেপাতা, জলপাই, আদা-রসুন বাটা, লেবুর রস, কাঁচা মরিচ, লবণ এবং সরিষার তেল একসাথে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করুন।

পানি একেবারেই ব্যবহার করা যাবেনা,ব্লেন্ড করা সস একটি পরিষ্কার কাচের জারে রেখে উপরে ভিনেগার দিয়ে মুখ ভালমতো বন্ধ করে দিন।

দীর্ঘদিন সংরক্ষনের জন্য জারটি টানা ৭দিন রোদে দিন।

এই সস ভাত বা যেকোন স্ন্যাকস এর সাথে খেতে দারুণ।ট্রাই করবেন নাকি!?

 

নতুন নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে ‘SHE’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

 

৮ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘Students Heed to Entrepreneurship (SHE)’ শীর্ষক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা তৈরি।

কর্মশালায় ২০০ জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, মেন্টর এবং অতিথি অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় তিনজন সফল নারী উদ্যোক্তা তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তাঁরা হলেন:
জনাবা নিলুফার ইয়াসমিন নীলা, স্বত্বাধিকারী, এস এন ফ্যাশন।
জনাবা নিশাত মাসফিকা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক- রেইনড্রপস টেক এবং ফাউন্ডার- দেশজ ক্রাফটস।
জনাবা হানিয়ম মারিয়া চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও-তাহুর।

তাঁরা তাঁদের ব্যবসায়িক যাত্রা, চ্যালেঞ্জ এবং সাফল্যের গল্প তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করেন।
এছাড়া NASA International Space Apps Challenge 2023-এর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টিম তাঁদের উদ্যোগ এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথপরিক্রমা নিয়ে আলোচনা করেন।

কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. খোরশেদ আলম। প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক জনাবা ফারজানা খান।
বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন -রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের উপাধ্যক্ষ,শিক্ষক সহ বিভিন্ন অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তা প্রতিনিধিগণ।

উল্লেখ্য, এসএমই ফাউন্ডেশন শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে দেশব্যাপী এ ধরনের কর্মশালা আয়োজন করে আসছে। এই ধরনের কর্মশালা শিক্ষার্থীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

 

দেশে প্রথমবারের মত নারীর দেহে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত

 

রাজধানীর এক ৩০ বছর বয়সী নারীর শরীরে প্রথমবারের মতো হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) শনাক্ত হয়েছে। কিশোরগঞ্জের ওই নারী নিউমোনিয়ার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং বর্তমানে আইইডিসিআর এ চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এইচএমপিভি সাধারণত শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সময়মতো চিকিৎসা পেলে এ ভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে ভাইরাসটির সংক্রমণ এড়াতে নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক পরা এবং অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

 

নুসাইবা বিনতে কা’ব (রা.):রাসুল (সা.) এর প্রতিরক্ষায় সাহসী নারী

 

হযরত নুসাইবা বিনতে কা’ব (রা.), যিনি উম্মে আম্মারা নামে পরিচিত,ইসলামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নারী সাহাবী।
তিনি মদিনার বনু খাযরাজ গোত্রে জন্মগ্রহ করেন।
এমন এক সাহসী নারী, যিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতিরক্ষার জন্য নিজের জীবন বাজি রাখতে দ্বিধা করেননি।

উহুদ যুদ্ধে নুসাইবা (রা.) আহতদের পানি সরবরাহ এবং তাদের সেবা করার দায়িত্ব পালন করছিলেন। যখন তিনি দেখতে পেলেন যুদ্ধের ময়দানে বিশৃঙ্খলা তৈরী হওয়াতে শত্রুরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করছে, তখন তিনি আর পিছিয়ে থাকেননি।
সঙ্গে থাকা তলোয়ার ও ঢাল হাতে তুলে নেন এবং শত্রুদের মোকাবিলা করতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পাশে দাঁড়ান। নিজেকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করর একের পর এক শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সুরক্ষিত রাখেন। তাঁর এই বীরত্বের ঘটনা স্মরণ করে রাসুল (সা.) বলেন
“আজ আমি যেদিকেই তাকাই, দেখি নুসাইবা আমার প্রতিরক্ষায় লড়ছেন।”

যুদ্ধের পর নুসাইবা (রা.)-এর শরীরে অন্তত ১২টি গভীর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এক আঘাত এত গুরুতর ছিল যে সেরে উঠতে অনেক দিন সময় লাগে। তিনি নিজের জীবনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাসুল (সা.)-কে শত্রুর তীর ও অস্ত্র থেকে রক্ষা করেন।

হযরত নুসাইবা (রা.) শুধু যোদ্ধা ছিলেন না; তিনি ইসলামের দাওয়াত ছড়িয়ে দেওয়ার কাজেও ছিলেন সক্রিয় ।
উহুদ যুদ্ধ ছাড়াও তিনি হুনাইন যুদ্ধ এবং হুদাইবিয়ার সন্ধিতে উপস্থিত ছিলেন।
তাঁর স্বামী এবং সন্তানরাও ছিলেন ইসলামের জন্য নিবেদিত।

হযরত নুসাইবা বিনতে কা’ব (রা.) ছিলেন ইসলামের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার সাহসিকতা, আত্মত্যাগ এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তিনি দেখিয়েছেন, ঈমান ও সাহস যদি মজবুত হয়, তবে যে কেউ ইসলামের জন্য এক বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে।

 

আফিয়া সিদ্দিকী :ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় এক নিরপরাধ নারী

 

এটি শুধুমাত্র একটি নীরব কষ্টের গল্প নয়। এটি মানবাধিকারের এক গ্লানিময় অধ্যায়, যেখানে একজন নিরপরাধ মুসলিম নারীকে শুধুমাত্র তার বিশ্বাস, পরিচয় এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অত্যাচারিত ও বন্দী করা হয়েছে। তার নাম—ড. আফিয়া সিদ্দিকী। একজন মেধাবী নিউরো-সায়েন্টিস্ট, একজন মা, এবং একজন মুসলিম নাগরিক—যিনি আজ বছরের পর বছর ধরে একটি শত্রু রাষ্ট্রের কারাগারে নিঃসঙ্গ বন্ধী অবস্থায় রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো এতটাই বিতর্কিত এবং ভিত্তিহীন যে, এটি কোনভাবেই ন্যায়বিচারের প্রতীক হতে পারে না।

ড. আফিয়া সিদ্দিকীর কাহিনি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিষ্ঠুরতা এবং অবিচারের একটি জলন্ত উদাহরণ। ২০০৩ সালে, পাকিস্তানের করাচি থেকে তাকে তার তিন সন্তানসহ অপহরণ করা হয়। এরপর, ২০০৮ সালে আফগানিস্তানে গ্রেপ্তার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বন্দী হন। তাকে নিয়ে যে মামলা চলছে, তা বিশ্বব্যাপী মানুষের মনে এক গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তাকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এবং সবশেষে, ২০১০ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের আদালত তাকে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে, কিন্তু সেই বিচারের পেছনে কোনো দৃশ্যমান প্রমাণ নেই।

ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে যে এক ভয়াবহ চক্রান্তের শিকার হতে হয়েছে, তা স্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এবং তাদের সহযোগী শক্তিরা, তাকে একটি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। ২০০৩ সালে যখন আফিয়া সিদ্দিকী ও তার তিন সন্তানকে অপহরণ করা হয়, তখন তারা কেবল একটি সাধারণ পরিবার , কিন্তু তাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাকে “আল-কায়দার সহযোগী” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর, আফিয়া সিদ্দিকীকে যে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে, তা সত্যি হৃদয়বিদারক। ২০০৮ সালে তাকে আফগানিস্তানের বাগরাম কারাগারে বন্দী রাখে। সেখানে তাকে শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়, অমানবিকভাবে মারধর করা হয় এবং তার মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তাকে কয়েক মাস ধরে অন্ধকার সেলে রাখা হয়েছিল, খাবার ও পানি দেওয়া হত না, এবং পরপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো।

বিশ্ব মানবাধিকারের মূল্যবোধ যখন নিঃশেষিত, তখন একটি আদর্শ রাষ্ট্রের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ন্যায়বিচার। এই ন্যায়বিচারের জন্য আমাদের আওয়াজ উঠাতে হবে। আমরা যদি আমাদের কর্তব্য হিসেবে মানবাধিকার ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে না পারি, তাহলে আমাদের মৌলিক বিশ্বাসগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আফিয়া সিদ্দিকীকে অন্যায়ভাবে বন্দী করা হয়েছে , শুধু ব্যক্তি হিসেবে নয়,সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য এটা এক গুরুতর পরীক্ষা। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে তার মুক্তির জন্য আওয়াজ তোলা এখন সময়ের দাবি।

এটি শুধুমাত্র একজন নারীর মুক্তি নয়, এটি আমাদের সম্মানের, আমাদের বিশ্বাসের, এবং আমাদের নৈতিকতার লড়াই।
আমরা কি এই অবিচারের বিরুদ্ধে চুপ করে থাকতে পারি? আফিয়া সিদ্দিকী এবং তার মতো অন্যান্য নিরপরাধ বন্দীদের জন্য কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে আমরা কিভাবে একটি ন্যায়বিচারহীন পৃথিবীতে বাস করব? এটাই আমাদের দায়, আমাদের কর্তব্য।
আমরা যদি এই মুহূর্তে এক হয়ে দাঁড়াতে না পারি, তাহলে আফিয়া সিদ্দিকী এমন একটি ইতিহাসের অংশ হয়ে যাবে, যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের জন্য লজ্জাজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে।

 

আল কোরআনে নারীর অধিকার

 

ইসলাম নারীকে মর্যাদা ও অধিকার প্রদান করেছে, যা মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে নারীর মর্যাদা ও অধিকারকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন।

ইসলামের আগমনের পূর্বে সমাজে নারী অবহেলিত ও নিগৃহীত ছিল।
পরবর্তীতে কোরআনের নির্দেশনা ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ নারীদের জীবনে আশীর্বাদ রূপে আসে।

কোরআনে নারীর মর্যাদা
পবিত্র কোরআনে নারী -পুরুষকে সম মর্যাদা দান করে-
“আর আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি, একজন নারী ও একজন পুরুষ থেকে। আর তাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যেন তারা পরস্পর পরিচিত হতে পারে। তবে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে মর্যাদাবান সে, যে সবচেয়ে বেশি তাকওয়াবান।”
— (সূরা আল-হুজুরাত: ১৩)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, নারীর মর্যাদা আল্লাহর কাছে পুরুষের সমান। ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য সৃষ্টি করেনি; বরং তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পৃথকভাবে নির্ধারণ করেছে।

নারীর অধিকার
১. জীবনের অধিকার:

ইসলাম পূর্বে নারী শিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। আল্লাহ এ বর্বর প্রথাকে নিষিদ্ধ করেছেন এবং ঘোষণা করেছেন:
“যখন জীবিত কবর দেওয়া কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, ‘তোমাকে কেন হত্যা করা হয়েছিল?’”
— (সূরা আত-তাকওয়ির: ৮-৯)

২. শিক্ষার অধিকার:

ইসলামে জ্ঞান অর্জন নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ফরজ। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন:
“তোমরা কি জানো না? যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে?”
— (সূরা আয-যুমার: ৯)
এ আয়াত নারীসহ সকল মানুষের জন্য শিক্ষার গুরুত্বকে নির্দেশ করে।

৩. অর্থনৈতিক অধিকার:

ইসলাম নারীদের সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করেছে। উত্তরাধিকার ও ব্যবসায় তাদের নিজস্ব সম্পত্তি রাখার স্বাধীনতা রয়েছে। আল্লাহ বলেন:
“পুরুষের জন্য রয়েছে তার উপার্জনের ভাগ এবং নারীর জন্য রয়েছে তার উপার্জনের ভাগ।”
— (সূরা আন-নিসা: ৩২)

৪. বিবাহের ক্ষেত্রে অধিকার:

ইসলাম বিয়ের ক্ষেত্রে নারীর সম্মতিকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“সাবালিকা মেয়েকে তার অনুমতি ব্যতীত বিয়ে দেওয়া যাবে না, তারা বলল: হে আল্লাহর রাসূল (সা.), তার অনুমতির পদ্ধতি কী? তিনি বলেন: তার চুপ থাকা”।
— (সহিহ বুখারি, ৪৮৪৩)

৫. মাতৃত্বের মর্যাদা:

মা হিসেবে নারীর মর্যাদা ইসলামে সর্বোচ্চ। কোরআনে আল্লাহ বলেন:
“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্টের মধ্যে গর্ভে ধারণ করেছে।”
— (সূরা লুকমান: ১৪)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন:
“তোমার মায়ের প্রতি সদ্ব্যবহার করো, তারপর তোমার পিতার প্রতি।”
— (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৯৭১)

পৃথিবীর যাবতীয় মতবাদ একত্রিত হয়েও নারীর সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে যেখানে ব্যর্থ,
পবিত্র কোরআন সেখানেই বিজয়ী। ইসলাম নারীদের আত্মমর্যাদার স্বীকৃতি ও জীবনাযাপনের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে তাদের জীবনে নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করেছে।

 

শীতের মুখরোচক স্ন্যাক্স ফুলকপি পাকোড়া

উপকরণ:
ফুলকপি – ১টা মাঝারি (ছোট টুকরো করে কেটে ধুয়ে নিন)

বেসন – ১ কাপ
চালের গুঁড়া – ২ টেবিল চামচ (খাস্তা করার জন্য)
লবণ – স্বাদমতো
হলুদ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ মরিচ গুঁড়া – ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
ধনিয়া পাতা কুচি – ২ টেবিল চামচ

প্রস্তুত প্রণালি:
ফুলকপির ছোট ছোট টুকরোগুলো সামান্য লবণ দেওয়া ফুটন্ত পানিতে ২-৩ মিনিট সেদ্ধ করে নিন। তারপর পানি ঝরিয়ে ঠান্ডা করে নিন।

একটি বাটিতে বেসন, চালের গুঁড়া, লবণ, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া মিশিয়ে নিন। এতে অল্প অল্প করে পানি যোগ করে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্ট যেন বেশি পাতলা না হয়।
ফুলকপি ডুবিয়ে নিন
সেদ্ধ করা ফুলকপির টুকরোগুলো মিশ্রণে ডুবিয়ে ভালো করে কোট করে নিন।

এবার কড়াইতে তেল গরম করে মাঝারি আঁচে কোট করা ফুলকপির টুকরোগুলো সোনালি বাদামি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।

অতিরিক্ত তেল শুষে নেওয়ার জন্য টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন।

এবার উপভোগ করুন গরম গরম ফুলকপি পাকোড়া টমেটো সস বা ধনিয়া চাটনির সাথে।

 

সায়েন্স ফিকশন: তৃতীয় মাধ্যাকর্ষণ

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে বসে ছিল তরুন বিজ্ঞানী ও গবেষক ড.সিনান। মাথার মধ্যে এক দারুণ চিন্তা ঘুরছিল। পৃথিবী, গ্রহ, তারা—এসব সবসময় তাকে আকর্ষণ করেছে। কিন্তু তার গবেষণার বিষয় ছিল নতুন কিছু। সে এমন এক প্রযুক্তি তৈরি করতে চেয়েছিল, যা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির পরিবর্তন ঘটাতে পারবে। এর মাধ্যমে পৃথিবীর মহাকর্ষ শক্তি কমানো যাবে, ফলে মহাকাশযান বা উপগ্রহ উৎক্ষেপণের জন্য কম শক্তির প্রয়োজন হবে।

যদিও এটা ছিল এক অসম্ভব স্বপ্ন তবুও ড. সিনান এবং তার দল কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন।
২০৩৫ সাল, যখন পৃথিবী ক্রমশ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছিল, তখন এই প্রযুক্তি অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মহাকাশ গবেষণায় বড় ধরনের অগ্রগতি না হলে মানুষ ভবিষ্যতে মহাকাশের রিসোর্স কাজে লাগাতে পারবে না।

ড.সিনানের চিন্তা ছিল পৃথিবীকে টেকসই, শক্তিশালী ও শক্তির দিক থেকে আরো স্বাধীন করা।
একদিন তার পরীক্ষামূলক যন্ত্রটির কাজ শেষ হয়ে যায়। এটি “নিউট্রো-এন” নামক একটি ডিভাইস, যা পৃথিবীর আকর্ষণ শক্তিকে স্থানিকভাবে সামান্য কমিয়ে দিতে সক্ষম। এটি পুরো পৃথিবীতে প্রয়োগের জন্য তৈরি হয়নি, কিন্তু একটি ছোট অঞ্চলে পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারবে।

তারা প্রথমে যন্ত্রটি শহরের ছোট্ট অঞ্চলে দিয়ে পরীক্ষা শুরু করে। যন্ত্রটি চালু করতেই ড.সিনান অনুভব করেন, পৃথিবীর আকর্ষণ কমে যাচ্ছে, আর কিছু সময় পর পুরো অঞ্চলটি হালকা হয়ে উঠছে। নীচের থেকে উপরের দিকে পাখির মতো ছোটো জিনিসগুলো ভেসে উঠতে শুরু করে, এটা ছিল এক অভূতপূর্ব দৃশ্য!

কিন্তু সমস্যা শুরু হয় কিছুদিন পর। যখন যন্ত্রটি কাজ করতে থাকে, তখন কিছু অদ্ভুত ফলাফল দেখা দেয়। অনেক কিছু হঠাৎ অদ্ভুত আচরণ করতে শুরু করে। যন্ত্রের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কিছু অঞ্চলে গাছপালা ও পশু-পাখির চলাফেরা অসম্ভব হয়ে পড়ছিল,পৃথিবীর মৌলিক শর্তগুলো বদলে যাচ্ছিল।

এরপরে পৃথিবী ফের যখন তার সাধারণ নিয়মে ফিরছিল, তখন ড. সিনান বুঝতে পারছিল যে তিনি যা চেয়েছিলেন, তা সম্ভব হলেও
মহাবিশ্বের প্রাকৃতিক নিয়মে অনেক জটিলতা নিয়ে আসবে।

এবার তাকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পালা—যন্ত্রটি পৃথিবীর অন্যান্য অংশে পরীক্ষা করবে কি না, অথবা তাকে ফের নতুন কোনো পথ খুঁজে বের করতে হবে।তার এই পরীক্ষামূলক গবেষণার কারনে পৃথিবী ছিল তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নিয়ন্ত্রণের এক বিপজ্জনক যাত্রায়।

শেষমেশ; বিজ্ঞানী সিনান এবং তার দল সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা আরো উন্নত গবেষণা করবে এবং যন্ত্রটির ত্রুটি ঠিক করতে চেষ্টা করবে।
কিন্তু একথা পরিষ্কার, পৃথিবীর সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ অনেক বড়।

– আরওয়া আনাম

 

এডব্লিউই প্রোগ্রামে পুরষ্কার পেলো ৬ নারী উদ্যোক্তা

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত একাডেমি ফর উইমেন অন্ট্রোপ্রেনরস (এডব্লিউই) বিজনেস পিচ প্রতিযোগিতায় ছয়জন নারী উদ্যোক্তাকে তাদের সৃজনশীল ব্যবসায়িক ধারণার জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে। বিজয়ীরা প্রত্যেকে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার পেয়েছেন।

গত সপ্তাহে ঢাকার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কালচারাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার এলিনা শেনসি। তিনি বলেন, “নারীরা যখন নেতৃত্বে আসে, তখন সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। এডব্লিউই প্রোগ্রাম নারীদের উদ্ভাবনী শক্তিকে বিকশিত করতে সহায়ক।”

এডব্লিউই প্রোগ্রামটি ২০২২ সালে বাংলাদেশে শুরু হয়। এটি বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। এ বছর প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে ২৫ জন নারী উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করেন। তাদের মধ্য থেকে সেরা ছয়জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
বিজয়ীরা সিলেট, কুমিল্লা, বরিশাল, খাগড়াছড়ি, যশোর, এবং ঢাকার প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের ব্যবসাগুলো পরিবেশবান্ধব পণ্য, নারীদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা প্রযুক্তি এবং কৃষি উদ্ভাবনের মতো খাতে অবদান রাখছে।

এডব্লিউই প্রোগ্রাম নারীদের জন্য ৩ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং মেন্টরশিপ সেশন পরিচালনা করে। এতে অংশগ্রহণকারীরা ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরির পাশাপাশি মার্কেটিং ও অর্থায়নের কৌশল শেখেন।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা জানান, এই উদ্যোগ নারীদের ব্যবসায়িক দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখছে। বিজয়ীরা তাদের পুরস্কারের অর্থ ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে ব্যবহার করবেন।

 

হযরত জুবাইদা (রহ.) :ইসলামী সভ্যতার মহান নারী উদ্যোক্তা

 

ইসলামের ইতিহাসে রাণী জুবাইদা (রহ.) একজন বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী এবং নবী কারিম (সা.)-এর বংশধর। তার প্রকৃত নাম আমাতুল আজিজ হলেও দাদা খলিফা আবু জাফর মানসুরের দেওয়া আদুরে ডাকনাম ‘জুবাইদা’ নামেই তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।

জুবাইদার জন্ম ১৪৯ হিজরিতে ইরাকের মসুলে। ছোটবেলা থেকেই তিনি প্রাসাদে শিক্ষা লাভ করেন এবং কোরআন, হাদিস, ধর্মতত্ত্ব, ইতিহাস, ভূগোল, ও জ্যামিতিতে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। তিনি বিদ্বান, পরোপকারী এবং বুদ্ধিমতী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তার দানশীলতা ও কর্মধারার জন্য তিনি সবার কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে ওঠেন।

রাণী জুবাইদার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান হলো “নহরে জুবাইদা”। ১৯৩ হিজরিতে খলিফা হারুনুর রশিদের মৃত্যুর পর তিনি হজপালনে যান। সেখানে হাজীদের পানির কষ্ট দেখে তিনি ব্যথিত হন এবং পানির সংকট সমাধানে একটি খাল খননের উদ্যোগ নেন। ওয়াদি নোমান থেকে আরাফাত ময়দান এবং হুনাইন থেকে মক্কা পর্যন্ত খালটি খনন করা হয়। এতে প্রায় ১৭ লাখ দিনার খরচ হয়, যা সে সময়ের এক বিশাল অঙ্ক।

খালটি আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়াই পাথর কেটে এবং ভূগর্ভস্থ টানেল নির্মাণের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। খালের পাশেই পানির স্টেশন স্থাপন করা হয়, যাতে স্থানীয় জনগণ সহজে পানি সংগ্রহ করতে পারে। এই নহর শুধু হাজীদের পানির সমস্যা দূর করেনি; বরং মক্কা ও আশপাশের কৃষকদেরও পানির অভাব মেটায়।

রাণী জুবাইদার দানশীলতার উদাহরণ এখানেই শেষ নয়। তিনি কুফা থেকে মক্কা ও মদিনা পর্যন্ত ১৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করেন। এছাড়াও মক্কায় আরও ৫টি জলাধার ও অনেক অজুখানা নির্মাণ করেন। তার প্রাসাদে ১০০ নারী হাফেজা কোরআন তেলাওয়াত করতেন, যা ২৪ ঘণ্টা চলত।

রাণী জুবাইদার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় মানবতার জন্য উৎসর্গীকৃত। ২১৬ হিজরির ২৬ জমাদিউল উলা মোতাবেক ১০ জুলাই ৮৩১ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন। এই মহীয়সী নারীর কর্ম ও অবদান আজও বিশ্ব মুসলিমকে অনুপ্রাণিত করে।

 

পাওলো কোয়েলহোর ‘দি আলকেমিস্ট’: আত্ম-উপলব্ধি ও স্বপ্নপূরণের গল্প

দি আলকেমিস্ট (The Alchemist) হলো পাওলো কোয়েলহোর একটি অনুপ্রেরণামূলক উপন্যাস, যা স্বপ্নপূরণ এবং আত্ম-উপলব্ধির গুরুত্ব নিয়ে লেখা। এর কেন্দ্রীয় চরিত্র সান্তিয়াগো নামের এক আন্দালুসীয় রাখাল, যে তার জীবনকে বদলে দিতে একটি স্বপ্নকে অনুসরণ করে।

গল্পটি শুরু হয় সান্তিয়াগোর এক রহস্যময় স্বপ্ন দিয়ে, যেখানে সে দেখে মিশরের পিরামিডের কাছে একটি গুপ্তধন লুকানো রয়েছে। এই স্বপ্ন তাকে ভাবনায় ফেলে দেয়। এক জিপসি ভবিষ্যদ্বক্তা এবং এক রহস্যময় বৃদ্ধ (মেলসিজেদেক, যিনি নিজেকে সালেমের রাজা হিসেবে পরিচয় দেন) তাকে তার স্বপ্ন অনুসরণ করার পরামর্শ দেয়। তারা তাকে শেখায় যে প্রত্যেকের জীবনে একটি “ব্যক্তিগত কিংবদন্তি” (Personal Legend) রয়েছে, যা পূরণ করাই জীবনের মূল লক্ষ্য।

সান্তিয়াগো নিজের গৃহ ত্যাগ করে এবং গুপ্তধনের সন্ধানে আফ্রিকার মরক্কো পৌঁছে। সেখানে তার প্রথম ধাক্কা আসে, যখন সে প্রতারিত হয় এবং তার সব অর্থ হারায়। তবে এই প্রতিকূলতা তাকে ভেঙে ফেলে না। সে একটি স্ফটিক দোকানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ শুরু করে। দোকানের মালিকের জীবনদর্শন থেকে সান্তিয়াগো শিখে যে স্বপ্ন পূরণে ঝুঁকি নেওয়ার প্রয়োজন।

মরুভূমি অতিক্রম করতে গিয়ে সান্তিয়াগোর দেখা হয় একজন ইংরেজের সঙ্গে, যে বেড়িয়েছে আলকেমির (তাত্ত্বিক সোনা তৈরির বিজ্ঞান) সন্ধানে। তারা মরুভূমি পেরিয়ে এক মরূদ্যানে পৌঁছায়। এখানে সান্তিয়াগোর পরিচয় হয় ফাতিমার সঙ্গে । ফাতিমা তাকে তার স্বপ্ন পূরণের জন্য উৎসাহ দেয়, যদিও সান্তিয়াগো তাকে ছেড়ে যেতে দ্বিধান্বিত থাকে।

মরূদ্যানেই সান্তিয়াগোর সঙ্গে পরিচয় হয় এক প্রকৃত আলকেমিস্টের। আলকেমিস্ট তাকে শেখায় জীবনের গভীর অর্থ এবং প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের পদ্ধতি। সে সান্তিয়াগোকে বোঝায় যে মানুষ যতক্ষণ স্বপ্ন অনুসরণ করে, ততক্ষণ প্রকৃতি তার পক্ষে কাজ করে।

আলকেমিস্টের সহায়তায় সান্তিয়াগো শেষ পর্যন্ত মিশরের পিরামিডে পৌঁছায়। তবে সেখানে সে বুঝতে পারে যে আসল গুপ্তধন পিরামিডে নয়, বরং তার যাত্রার শুরুতে ছিল। এই উপলব্ধি তাকে শেখায় যে যাত্রার অভিজ্ঞতাই আসল গুপ্তধন।

সান্তিয়াগোর এই যাত্রা আমাদের শেখায় যে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত এবং বাধা আমাদের ব্যক্তিগত লক্ষ্য পূরণে ভূমিকা রাখে। এটি এমন একটি কাহিনি, যা আত্ম-উপলব্ধি, প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ, এবং জীবনের গভীর অর্থ অনুসন্ধানকে তুলে ধরে।

 

চাইল্ড সাইকোলজি: শিশুর মানসিক বিকাশে সেরা অভিভাবকত্ব কৌশল

শিশুর মানসিক বিকাশ তার ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি তৈরি করে। শৈশবকালীন অভিজ্ঞতা, পারিবারিক পরিবেশ এবং অভিভাবকের দিকনির্দেশনা শিশুদের আবেগ, চিন্তাধারা এবং আচরণে গভীর প্রভাব ফেলে। চাইল্ড সাইকোলজি বা শিশুর মনস্তত্ত্ব এই বিকাশকে বুঝতে এবং শিশুর অনুভূতি, সমস্যা ও প্রয়োজন বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।

শিশুরা তাদের অনুভূতি ও চাহিদা সরাসরি প্রকাশ করতে পারে না। তাদের আচরণ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাদের মনস্তত্ত্ব বোঝা যায়। জিন পিয়াজে বলেন, “Play is the work of childhood.” তার এই উক্তি ইঙ্গিত করে যে শিশুরা খেলার মাধ্যমে শেখে এবং তাদের কল্পনা, চিন্তা ও আবেগ বিকশিত করে। এই শেখার প্রক্রিয়ায় অভিভাবকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিশুর মানসিক বিকাশ ধাপে ধাপে এগিয়ে চলে। শূন্য থেকে দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা তাদের চারপাশের পরিবেশ এবং পরিচর্যাকারীর ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল থাকে। তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সে তারা কল্পনাশক্তি এবং শেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এ সময় তারা প্রশ্ন করতে শুরু করে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে আগ্রহী হয়। ছয় থেকে বারো বছর বয়সে তাদের সামাজিক দক্ষতা এবং আত্মপরিচয় গঠিত হয়। এই বয়সে শিশুরা তাদের আশপাশ থেকে মূল্যবোধ এবং নিয়ম-কানুন শিখে।

শিশুর মানসিক বিকাশে অভিভাবকের সঠিক দিকনির্দেশনা ও সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে কথা বলা এবং তাদের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। তাদের ছোট ছোট সাফল্যকে স্বীকৃতি দিয়ে উৎসাহ প্রদান করা তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। শিশুরা বড়দের আচরণ থেকে শিক্ষা নেয়, তাই অভিভাবকদের ধৈর্যশীল ও নম্র হতে হবে। তাদের সঙ্গে সময় কাটানোও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শিশুদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে এবং সম্পর্ক দৃঢ় করে।

এরিক এরিকসন উল্লেখ করেছেন, “Children love and want to be loved, and they very much prefer the joy of accomplishment over the triumph of hateful failure.” এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে শিশুরা ভালোবাসার পরিবেশে বেড়ে উঠতে চায় এবং তাদের অর্জনের জন্য স্বীকৃতি পেলে তারা আত্মবিশ্বাসী ও সুখী হয়।

বর্তমান যুগে প্রযুক্তি শিশুর মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর হতে পারে। অভিভাবকদের উচিত শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করা এবং তাদের প্রকৃতির সঙ্গে সংযুক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করা।

সামগ্রিকভাবে, শিশুর মানসিক বিকাশে অভিভাবকের ভূমিকা অপরিসীম। শিশুরা তাদের সাথে ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতা এবং ভালোবাসার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে। সচেতন অভিভাবকত্ব, ইতিবাচক পরিবেশ এবং সঠিক দিকনির্দেশনা শিশুদের জীবনকে গঠনমূলক ও অর্থবহ করে তুলতে পারে।

 

বাংলাদেশে বিজ্ঞানে নারীর অবদান: অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। একসময় এই ক্ষেত্রে পুরুষদের প্রাধান্য থাকলেও এখন নারীরাও সমান দক্ষতায় অবদান রাখছেন। তাদের উদ্ভাবন ও গবেষণা শুধু দেশের উন্নয়নই ত্বরান্বিত করছে না, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের পরিচিতি বাড়াচ্ছে।

ড. ফেরদৌসী কাদরী বাংলাদেশের একজন গর্বিত বিজ্ঞানী, যিনি ডায়রিয়া ও কলেরার টিকা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি “লরিয়েল-ইউনেস্কো ফর উইমেন ইন সায়েন্স” পুরস্কার লাভ করেন। তরুণ বিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা শিশুদের সংক্রামক রোগের জিনোমিক গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তনিমা তাসনিম অনন্যা ব্ল্যাকহোল গবেষণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)ব্যবহার করে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। অন্যদিকে, ফারহানা সুলতানা পাটের আঁশ দিয়ে পরিবেশবান্ধব স্যানিটারি প্যাড তৈরি করে নারী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিপ্লব ঘটিয়েছেন।

তবে নারীদের বিজ্ঞানচর্চার পথে চ্যালেঞ্জও কম নয়। সামাজিক বাধা, গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ও সুযোগের অভাব, এবং লিঙ্গ বৈষম্য তাদের অগ্রযাত্রায় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। পারিবারিক দায়িত্ব ও পেশাগত জীবনের সমন্বয়ও অনেক সময় কঠিন হয়ে ওঠে।

এই বাধাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য নারীদের জন্য গবেষণা তহবিল বৃদ্ধি, সচেতনতা বাড়ানো, এবং কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সঠিক সহায়তা পেলে নারী বিজ্ঞানীরা বাংলাদেশের অগ্রগতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। তাদের অবদান ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে বিজ্ঞানমনস্ক ও টেকসই রাষ্ট্রে পরিণত করবে।

 

নেকাব পরার কারণে বহিষ্কার, শিক্ষার্থীর অভিযোগে তোলপাড়

 

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজে বাউবি’র সমাজতত্ত্ব পরীক্ষা চলাকালে এক শিক্ষার্থীকে নেকাব খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়। উম্মে আনজুমানয়ারা নামের ওই শিক্ষার্থী মহিলা পরীক্ষক বা অন্য নারীর সামনে নেকাব খোলার প্রস্তাব দেন। তবে হলের দুই শিক্ষক ও প্রিন্সিপাল তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বহিষ্কার করেন।

শিক্ষার্থীর অভিযোগ, তিনি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এবং আগের দুইবার গর্ভপাত হওয়ায় শারীরিক ঝুঁকি নিয়েই পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ তার বক্তব্য শোনেনি। এমনকি, হলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষ্য উপেক্ষা করে তাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, তার আইডি কার্ড জব্দ করা হয় এবং প্রিন্সিপাল তাকে “ভুয়া পরীক্ষার্থী” বলে আখ্যায়িত করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ৯৯৯-এ কল করলে মাটিরাঙ্গা থানার ওসি উপস্থিত হন। কিন্তু প্রিন্সিপাল তার বক্তব্যে পুলিশকে বিভ্রান্ত করে পরিস্থিতি জটিল করে তোলেন।

উম্মে আনজুমানয়ারা প্রশ্ন তোলেন, নেকাব না খুলে পরীক্ষা দেওয়ার অধিকার কি নেই? বড় আদালতগুলোও নারীদের জন্য পর্দার ব্যবস্থা রাখে। তাহলে পরীক্ষা হলে এমন বৈষম্য কেন? তিনি কর্তৃপক্ষের নিকট সুবিচার দাবি করেছেন।

এই ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ দাবি করে সচেতন মহল। প্রাসঙ্গিক নীতিমালা না থাকলে তা প্রণয়নেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

ইসলামের ইতিহাসের প্রথম নারী চিকিৎসক

 

ইসলামের ইতিহাসে নারী সাহাবীদের অবদান অনস্বীকার্য। তাঁদের মধ্যে হযরত রুফাইদা বিনতে সাআদ আল-আসলামিয়া (রাঃ) অন্যতম। তিনি ছিলেন ইসলামি চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রদূত এবং নার্সিং পেশার প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর অসামান্য সেবা ও দক্ষতা ইসলামি ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

হযরত রুফাইদা রাঃ মদিনার বানু আসলাম গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাআদ বিন খায়সামার কন্যা। ইসলামের আগেই তিনি চিকিৎসাশাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে তাঁর দক্ষতাকে মুসলিম উম্মাহর সেবায় নিবেদন করেন।

 

চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবদান

রুফাইদা রাঃ-কে ইসলামের প্রথম নারী চিকিৎসক বলা হয়। তিনি চিকিৎসাশাস্ত্রে গভীর জ্ঞান অর্জন করেছিলেন এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের সেবায় নিজেকে নিবেদন করেন। নবী করিম (সাঃ)-এর অনুমতিক্রমে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সাহাবীদের চিকিৎসা করতেন।

 

খন্দক যুদ্ধের সময় ভূমিকা

খন্দক যুদ্ধের সময় রুফাইদা একটি তাঁবু স্থাপন করেন, যা কার্যত একটি মিনি হাসপাতালের মতো কাজ করত। এখানে আহত সাহাবীদের চিকিৎসা করা হতো। তিনি নিজ হাতে আহতদের ব্যান্ডেজ করতেন, রক্তপাত বন্ধ করতেন এবং তাঁদের সান্ত্বনা দিতেন।

প্রাথমিক নার্সিং প্রতিষ্ঠা

রুফাইদা একদল নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, যারা তাঁর সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবায় অংশ নিতেন। এটি ইসলামের প্রথম সংগঠিত নার্সিং সেবা হিসেবে বিবেচিত।

ব্যক্তিগত গুণাবলি

রুফাইদা ছিলেন অত্যন্ত সহানুভূতিশীল, দক্ষ এবং পরিশ্রমী। তিনি চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক সেবায়ও মনোযোগী ছিলেন। যুদ্ধের সময় আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসার পাশাপাশি তাঁদের মানসিক শক্তি জোগাতেন।

নবী করিম (সাঃ)-এর প্রশংসা

হযরত রুফাইদার সেবামূলক কাজ নবী করিম (সাঃ)-এর বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তিনি রুফাইদার চিকিৎসা দক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাঁকে অনুমতি দেন তাঁর তাঁবুতে আহত সাহাবীদের চিকিৎসা করার।

অন্যান্য চিকিৎসা কার্যক্রম

যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়াও রুফাইদা মদিনার সাধারণ মানুষের সেবায় নিবেদিত ছিলেন। তিনি দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতেন। তিনি বিশেষ করে নারীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ইতিহাসে অবদান

রুফাইদার কাজ কেবল চিকিৎসা বিজ্ঞানের দিক থেকেই নয়, বরং ইসলামে নারীদের ভূমিকার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। তিনি প্রমাণ করেছেন যে নারীরাও সমাজের উন্নয়ন এবং সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

———–

হযরত রুফাইদা বিনতে সাআদ আল-আসলামিয়া (রাঃ)-এর জীবন ও কর্ম মানবসেবার এক অনন্য উদাহরণ। তিনি ছিলেন এমন এক মহীয়সী নারী, যিনি নিজের জ্ঞান, দক্ষতা এবং সহানুভূতির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন। তাঁর অবদান প্রমাণ করে, নারীরাও জ্ঞান, কর্ম ও মানবিকতার মাধ্যমে সমাজে গভীর প্রভাব রাখতে পারে। রুফাইদার জীবন আমাদের শেখায় যে, নিষ্ঠা, মানবিকতা এবং সেবার চেতনা মানুষকে সত্যিকার অর্থে শ্রেষ্ঠ করে তোলে। তাঁর অনুপ্রেরণামূলক জীবনচর্চা আজও নারী-পুরুষ সকলের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে আছে।

 

কুড়িগ্রামের রিক্তা আক্তার বানু বিবিসির ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায়

 

কুড়িগ্রামের চিলমারীর নারী উদ্যোক্তা ও সমাজসেবী রিক্তা আক্তার বানু স্থান পেয়েছেন বিবিসির ২০২৪ সালের অনুপ্রেরণাদায়ী ১০০ নারীর তালিকায়। তার সংগ্রামী জীবনের গল্প এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ তাকে এই স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা

রিক্তা আক্তার বানু একজন জ্যেষ্ঠ নার্স হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করলেও তার প্রকৃত পরিচিতি এসেছে একজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে। তার মেয়ে তানভীন দৃষ্টি মনি সেরিব্রাল পালসি ও অটিজমে আক্রান্ত। মেয়েকে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে গিয়ে যখন তিনি সমাজের নেতিবাচক মনোভাবের মুখোমুখি হন, তখনই তিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন।

২০০৯ সালে তিনি নিজের জমি বিক্রি করে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রিক্তা আক্তার বানু (লুৎফা) বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়’। বর্তমানে বিদ্যালয়টি প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষাদান ও মানসিক বিকাশের সুযোগ করে দিচ্ছে।

বিশ্বের স্বীকৃতি

বিবিসি প্রতি বছর তাদের তালিকায় এমন নারীদের অন্তর্ভুক্ত করে যারা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন। রিক্তা আক্তার বানু এই তালিকায় বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিভাগে স্থান পেয়েছেন। তিনি তার কাজের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ববাসীর কাছেও অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।

এই তালিকায় তার পাশাপাশি রয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী নাদিয়া মুরাদ, নভোচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং হলিউড অভিনেত্রী শ্যারন স্টোনসহ বিশ্বের অন্যান্য প্রভাবশালী নারী।

সমাজে পরিবর্তনের পথিকৃৎ

রিক্তার বিদ্যালয় শুধু শিক্ষাদানেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি সমাজে প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব বদলাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তার এই উদ্যোগ কুড়িগ্রামের মতো একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীদের ক্ষমতায়ন ও সামাজিক উন্নয়নে উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের জন্য গর্ব

রিক্তা আক্তার বানুর অর্জন বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবময় অধ্যায়। তিনি প্রমাণ করেছেন, সঠিক উদ্যোগ এবং আত্মবিশ্বাস দিয়ে সমাজে পরিবর্তন আনা সম্ভব।

উল্লেখযোগ্য কাজ:

২০০৯ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।

প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষার সুযোগ।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথ তৈরি।

উপসংহার

বিশ্বের মঞ্চে রিক্তা আক্তার বানুর এই স্বীকৃতি প্রমাণ করে, মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তি কিভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তার এই অর্জন দেশের অন্য নারীদেরও অনুপ্রেরণা যোগাবে।

সংবাদ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

 

ড. লামিয়া মাওলার নেতৃত্বে আবিষ্কৃত “ফায়ারফ্লাই স্পার্কল” গ্যালাক্সি: জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের যুগান্তকারী সাফল্য

 

বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. লামিয়া মাওলা এবং তার নেতৃত্বাধীন ২১ জন গবেষকের একটি দল নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST) থেকে প্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করে প্রাথমিক মহাবিশ্বের একটি নতুন গ্যালাক্সি আবিষ্কার করেছেন। গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ১১ ডিসেম্বর বিশ্বখ্যাত Nature জার্নালে প্রকাশিত হয়।

গবেষণার শিরোনাম ছিল:
“Formation of a low-mass galaxy from star clusters in a 600-million-year-old Universe”।

এই গ্যালাক্সির নাম দেওয়া হয়েছে “ফায়ারফ্লাই স্পার্কল”, যা বিগ ব্যাংয়ের মাত্র ৬০০ মিলিয়ন বছর পরে গঠিত হয়েছিল। এটি মহাবিশ্বের প্রথমদিকের গ্যালাক্সিগুলোর গঠন ও বিকাশ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ নতুন তথ্য দিয়েছে।

“ফায়ারফ্লাই স্পার্কল” গ্যালাক্সির বৈশিষ্ট্য

গবেষণা অনুযায়ী, “ফায়ারফ্লাই স্পার্কল” গ্যালাক্সিটি গঠিত ১০টি কম্প্যাক্ট স্টার ক্লাস্টার এবং দুটি ছোট গ্যালাক্সি নিয়ে। দুটি ছোট গ্যালাক্সির নাম রাখা হয়েছে:

ফায়ারফ্লাই নিউ বেস্ট ফ্রেন্ডগ্যালাক্সিটি থেকে যে আলো পৃথিবীতে পৌঁছেছে, তা এখানে আসতে সময় নিয়েছে প্রায় ১৩.২ বিলিয়ন বছর। তবে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের কারণে এটি এখন আমাদের থেকে আরও অনেক দূরে রয়েছে।

গবেষণার গুরুত্ব:
ড. লামিয়া মাওলার মতে, “ফায়ারফ্লাই স্পার্কল” গ্যালাক্সির গঠন অনেকটাই আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির প্রথমদিককার গঠনের মতো। এটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারলে আমাদের গ্যালাক্সির জন্ম এবং বিকাশ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা পাওয়া যাবে।

ড. লামিয়া মাওলা: বাংলাদেশের গর্ব

ড. লামিয়া মাওলা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের ওয়েলেসলি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (IUB)-এর সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি, স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স (CASSA)-এর সহযোগী সদস্য।

CASSA বাংলাদেশে জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা ও শিক্ষা প্রচারের একমাত্র প্ল্যাটফর্ম। ড. লামিয়ার এই অবদান বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও মহাকাশ গবেষণার জন্য এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।

বাংলাদেশের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস

ড. লামিয়া মাওলার নেতৃত্বে এই গবেষণা বাংলাদেশের জন্য গর্বের একটি মুহূর্ত। এটি প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা আন্তর্জাতিক গবেষণায় বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট:

গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে: Nature জার্নাল

গ্যালাক্সির নাম: ফায়ারফ্লাই স্পার্কল

আলো আসতে সময় নিয়েছে: ১৩.২ বিলিয়ন বছর

নেতৃত্বে: ড. লামিয়া মাওলা

আপনার মতামত:

এই আবিষ্কার সম্পর্কে আপনার কী মতামত? নিচের কমেন্ট সেকশনে জানান!

 

নারীর জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা: সুস্থ ও সুখী জীবনের চাবিকাঠি

নারীর সুস্বাস্থ্য শুধু তার ব্যক্তিগত কল্যাণের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং একটি পরিবার ও সমাজের মেরুদণ্ড শক্তিশালী রাখার জন্য অপরিহার্য। দৈনন্দিন জীবনের চাপে অনেক নারী নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দিতে পারেন না। তবে, সুস্থ থাকা মানে শুধু শারীরিক সুস্থতা নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াও সমানভাবে জরুরি।

স্বাস্থ্য সচেতন নারীদের জন্য কার্যকর টিপস

১. সুষম খাদ্যাভ্যাস

সুস্থ থাকার প্রথম শর্ত হলো সঠিক পুষ্টি। আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবার যুক্ত করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চেষ্টা করুন বেশি করে শাক-সবজি, ফল, বাদাম এবং দুধজাত পণ্য খেতে।

২. নিয়মিত ব্যায়াম

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। হাঁটাহাঁটি অথবা সহজ কিছু ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়াম যেমন স্কোয়াট করতে পারেন। এটি আপনার শরীরকে ফিট রাখার পাশাপাশি মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করবে।

৩. পর্যাপ্ত ঘুম

ঘুমের ঘাটতি মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর জন্য প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৪. মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিন

আপনার মনের যত্ন নিন। প্রতিদিন অন্তত কিছু সময় নিজের জন্য রাখুন। বই পড়া, অথবা নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন। কোনো সমস্যা বা মানসিক চাপ থাকলে বন্ধু বা পরিবারের সাথে আলোচনা করুন অথবা একজন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।

৫. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা

প্রতি বছর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। বিশেষত, যেসব নারীর পরিবারে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা ক্যানসারের ইতিহাস আছে, তাদের জন্য এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য প্রেরণা-
সুস্থ থাকা মানে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী এবং আত্মবিশ্বাসী থাকা। আপনি সুস্থ থাকলে আপনার পরিবার এবং কাছের মানুষগুলোর আরও ভালোভাবে যত্ন নিতে পারবেন।

নারীর স্বাস্থ্য সচেতনতা কেবল তার নিজের নয়, তার পরিবার ও সমাজের ভবিষ্যতের ওপরও প্রভাব ফেলে। সুতরাং, আসুন আমরা নিজেদের স্বাস্থ্যের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিই এবং একসঙ্গে একটি শক্তিশালী ও সুস্থ সমাজ গড়ে তুলি।

 

বুকার পুরস্কার পেলেন ব্রিটিশ লেখক সামান্থা হার্ভে

 

আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে নভোচারীদের কাটানো একটি দিন নিয়ে বিস্তারিতভাবে লেখা ‘অরবিটাল’ উপন্যাসের জন্য ব্রিটিশ লেখক সামান্থা হার্ভে ‘২০২৪ সালের বুকার পুরস্কার’ পেয়েছেন।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিচারক প্যানেলের চেয়ারপারসন এডমুন্ড ডে ওয়াল ঘোষণা করেন, বিচারকদের সর্বসম্মতিক্রমে হার্ভেকে বুকার পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

মহাকাশকেন্দ্রে ছয় নভোচারীর এক দিনের কাটানো জীবন নিয়ে লেখা ‘অরবিটাল’ উপন্যাসটিতে পৃথিবী থেকে মহাকাশকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়েছে।

উপন্যাসটি’র কাহিনি অনুসারে, ছয় নভোচারীর মধ্যে দুজন পুরুষ ও চারজন নারী। তারা মহাকাশে একত্রিত হয়ে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেন। এছাড়া আবহাওয়ার পরিবর্তন, সীমানা, টাইম জোনের জটিলতা এবং মহাকাশের সৌন্দর্য পর্যবেক্ষণ করেন।

বিচারক এডমুন্ড ডে ওয়াল উপন্যাসটি সম্পর্কে বলেন, অরবিটাল উপন্যাসটি একটি ক্ষতবিক্ষত পৃথিবীর গল্প। যেখানে মহাকাশচারীরা পৃথিবীর পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির প্রতি গভীর মনোযোগ দেয়। নিজেদের পৃথিবী থেকে অনেক দূরে, তাদের অস্তিত্বকে নতুনভাবে উপলব্ধি করেন। এডমুন্ড ডে ওয়াল বলেন, উপন্যাসে প্রত্যেকেই একটি বিষয়বস্তু আবার কেউই বিষয়বস্তু নয়।

পুরস্কার ঘোষণার পর লেখক হার্ভে বলেন, তিনি এই ৫০,০০০ পাউন্ড পুরস্কারের অর্থ সেই সব মানুষদের উৎসর্গ করছেন, যারা পৃথিবীর পক্ষে কথা বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেন এবং মানবতার সেবা করেন।

অরবিটাল উপন্যাসটির পৃষ্ঠার সংখ্যা ১৩৬, যা ইতিহাসে বুকার পুরস্কার পাওয়া দ্বিতীয় সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত বই। এ ছাড়া এটি প্রথম কোনো মহাকাশভিত্তিক উপন্যাস, যা এই পুরস্কার অর্জন করেছে।

হার্ভে, যিনি কোভিড-১৯ মহামারির সময় লকডাউনের মধ্যে অরবিটাল বইটি বেশিরভাগ অংশ লিখেছেন। তিনি বলেন, লকডাউনে যখন সবাই একে অপরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। তখন মহাকাশচারীদের একে অপরের সঙ্গে থাকা এবং মহাকাশের নির্জনতায় পৃথিবীকে দেখা, তা আমার কাছে অনেক বেশি সম্পর্কযুক্ত মনে হয়েছিল।

চলতি বছর বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত শর্টলিস্টে হার্ভে ছাড়া আরও চারজন লেখক ছিলেন। তাদের মধ্যে মার্কিন লেখক র‍্যাচেল কুশনার (‘ক্রিয়েশন লেক’ বইয়ের জন্য) এবং কানাডীয় লেখক অ্যান মাইকেলস (‘হেল্ড’ বইয়ের জন্য) ছিলেন।

 

আলোচনায় ট্রাম্পের নতুন গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী

 

হাওয়াইয়ের সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসওম্যান এবং কট্টর ট্রাম্প সমর্থক তুলসী গ্যাবার্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরবর্তী প্রধান হিসেবে বেছে নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্যাবার্ড একজন ইউএস আর্মি রিজার্ভ কর্মকর্তা। তার গোয়েন্দাবিষয়ক গভীর অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও, তিনি তার মস্কোর প্রতি সহানুভূতিশীল যুদ্ধবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত। তবে ট্রাম্পের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে তুলসীকে বেছে নেওয়া অস্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে তিনি ১৮টি গুপ্তচর সংস্থার নেতৃত্ব দেবেন এবং ৭৬ বিলিয়ন ডলারের বাজেট তদারকি করবেন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে বিতর্ক প্রস্তুতিতে ট্রাম্পকে সহায়তা করা তুলসী গ্যাবার্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর একটি পুরস্কার যে পাবেন, তা আগেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের মতো পদ যে পাবেন, তা বোধহয় কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। কারণ এ বিষয়ে তার কাজের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। ট্রাম্প মূলত দেশের গোয়েন্দা সেবাগুলোর সংস্কার করতে চান, কারণ সেগুলো তিনি সন্দেহের চোখে দেখেন। এই ক্ষেত্রে, বিদেশি নীতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা গ্যাবার্ডের নিয়োগকে ট্রাম্পের পরিবর্তনের পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গ্যাবার্ডকে নির্বাচন করার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘দুই দশকের বেশি সময় ধরে তুলসী আমাদের দেশের এবং সব আমেরিকানের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। একজন সাবেক ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তিনি উভয় দলেই ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন, এখন তিনি গর্বিত রিপাবলিকান।’

কে এই তুলসী গ্যাবার্ড?: আমেরিকান সামোয়ায় জন্মগ্রহণ করা ৪৩ বছর বয়সী তুলসী গ্যাবার্ড হাওয়াইয়ের চারবারের কংগ্রেস সদস্য, ডেমোক্র্যাটদের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এবং আর্মি রিজার্ভের লেফটেন্যান্ট কর্নেল। তিনি ইরাকে সামরিক সেবা দিয়েছেন। গ্যাবার্ডের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। তবে তিনি ২১ বছর বয়স থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি তখন হাওয়াই হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪২তম জেলা থেকে সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি সিনেমাটোগ্রাফার আব্রাহাম উইলিয়ামসকে বিয়ে করেন। তার বাবা মাইক গ্যাবার্ড হাওয়াই স্টেট সিনেটর, যিনি রিপাবলিকান থেকে ডেমোক্র্যাটে যোগদান করেন।

প্রতিনিধি পরিষদে প্রথম হিন্দু: ২০১২ সালে ১১৩ তম কংগ্রেসে তুলসী গ্যাবার্ড ইউএস হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে আসন জিতেন। তিনি রিপাবলিকান কাওভিকা ক্রাউলিকে পরাজিত করেছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রথম হিন্দু হিসেবে কংগ্রেসে নির্বাচিত হন এবং প্রথম আমেরিকান সামোয়ান হিসেবে কংগ্রেসের সদস্য হন। নাম শুনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মনে হলেও তুলসীর সঙ্গে ভারতের কোনো যোগসূত্র নেই। তিনি আমেরিকাতেই জন্মেছেন এবং বড় হয়েছেন। আসলে তার মা হাওয়াই যাওয়ার পর হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। আর নিজের সন্তানদের সবার নামকরণ করেছিলেন হিন্দু নামেই। তার প্রথম শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গ্যাবার্ড ভগবৎ গীতার ওপর শপথ নেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করার ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাসী।’

তুলসী গ্যাবার্ড ২০২০ সালের ১১৭ তম কংগ্রেসে পুনঃনির্বাচনের প্রার্থী হননি। তবে ২০২২ সালে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টি ত্যাগ করেন এবং অভিযোগ করেন, পার্টি ‘একটি অভিজাত যুদ্ধে আগ্রহী গোষ্ঠী’। এরপর গ্যাবার্ড ২০২২ সালে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিবিরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন জানান এবং রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন।

 

এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত ও নিরাপদ: ওজিএসবি

 

জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের বিরুদ্ধে চলমান এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর বলে জানিয়েছে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি)।

সংগঠনটি বলছে, এই টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্ব, গর্ভধারণ ক্ষমতা নষ্ট বা প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি এই টিকা নেওয়ার ফলে গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন কোনো জটিলতা হয় না বরং এই টিকা ক্যানসার থেকে জরায়ুমুখ সুরক্ষিত রাখে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) ওজিএসবির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারহানা দেওয়ান ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. সালমা রউফ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারের উদ্যোগে দেশে জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন গত ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিভাগ ছাড়া অবশিষ্ট সাতটি বিভাগে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৫ লক্ষাধিক এবং ঢাকা বিভাগ বহির্ভূত অবশিষ্ট সাতটি বিভাগে প্রায় ৪২ লাখ কিশোরীকে ১ ডোজ এইচপিভি টিকা সফলভাবে দেওয়া হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭০ শতাংশ।

টিকা প্রসঙ্গে বলা হয়, এই বাইভ্যালেন্ট এইচপিভি টিকা বেলজিয়ামে তৈরি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত। এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত নিরাপদ ও কার্যকর। মনে রাখবেন এই টিকার সঙ্গে বন্ধ্যাত্ব, গর্ভধারণ ক্ষমতা নষ্ট বা প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই, এই টিকা নেওয়ার ফলে গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন কোনো জটিলতা হয় না। এই টিকা ক্যানসার থেকে জরায়ুমুখ সুরক্ষিত রাখে। সারা বিশ্বে ১৪৩টি দেশ এই টিকাদান কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করছে ও তার মধ্যে ১৭টি দেশই মুসলিম দেশ।

এই অবস্থায় টিকাদান কার্যক্রম সম্পর্কিত ভুল ও অপপ্রচার রোধ এবং অভিভাবক কিশোরীদের উদ্বুদ্ধ করে সার্বিক কার্যক্রমকে সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহায়তা করার জন্য অনুরোধও জানায় ওজিএসবি।

আরও বলা হয়, নারীদের ক্যানসারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ জরায়ুমুখ ক্যানসার। নারীরা যেসব ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তার মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার বৈশ্বিকভাবে চতুর্থ সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশি নারীদের ক্ষেত্রে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার জন নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন, যার মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার জন মৃত্যুবরণ করে থাকেন, যার প্রায় ৯৪ শতাংশ মৃত্যুই বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশে ঘটে থাকে।

দেশে জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রকোপ ভয়াবহ আকারে বাড়ছে উল্লেখ করে ওজিএসবি জানায়, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮ হাজার ২৬৮ জন নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন এবং তার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের ক্যানসারজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যানসার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জরায়ুমুখ ক্যানসার এইচপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ দ্বারা হয়ে থাকে। সাধারণত এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হওয়া থেকে জরায়ুমুখ ক্যানসার লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৫-২০ বছর সময় লাগে। এজন্য এই রোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়।

আরও বলা হয়, আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই প্রায় শেষ পর্যায়ে শনাক্ত হন, যখন রোগ থেকে সেরে ওঠা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। একমাত্র এইচপিভি টিকা এই ক্যানসার প্রতিরোধে প্রায় শতভাগ সফল। সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় কিশোরীদের নির্দিষ্ট বয়সে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ সুপারিশ অনুযায়ী একডোজ এইচপিভি টিকা দিলে এই ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

 

পারিবারিক সম্পর্কঃ ভালো সম্পর্ক গড়ার ১০টি উপায়

 

পারিবারিক সম্পর্ক  আমাদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরিবারে ভালো সম্পর্ক, একে অপরের প্রতি ভালোবাসা এবং সমর্থন একজন ব্যক্তির মানসিক শান্তি এবং সুখী জীবনের মূল চাবিকাঠি হতে পারে। তবে, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো রাখা সবসময় সহজ নয়। একে অপরের সঙ্গে সঠিকভাবে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং সমস্যার সমাধান করা অনেক সময় জটিল হতে পারে।

আসুন জেনে নেই এমন কিছু সহজ এবং কার্যকর উপায় যার মাধ্যমে আপনি আপনার পরিবারে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী এবং ভালো রাখতে পারেন। এখানে এমন ১০টি উপায় তুলে ধরা হলো যা পরিবারে ভালো সম্পর্ক গড়তে সহায়ক হতে পারে-

১. যোগাযোগ রাখুন
পরিবারের সদস্যদের সাথে মন খুলে কথা বলা, নিজেদের অনুভূতি ও ভাবনা শেয়ার করা সম্পর্কের গুণগত মান উন্নত করে। যখন আপনি অন্যদের অনুভূতিগুলি শুনবেন এবং নিজের অনুভূতিও সৎভাবে প্রকাশ করবেন, তখন তা সম্পর্ককে আরও গভীর এবং মধুর করে তোলে।

টিপ: চেষ্টা করুন দিনশেষে পরিবারের সদস্যদের সাথে সেদিনের অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি শেয়ার করতে। এটি সম্পর্কের মধ্যে বিশ্বাস এবং একে অপরের প্রতি সম্মান বাড়াতে সাহায্য করবে।

২. একান্ত সময় কাটান
দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ধরে রাখতে, মাঝে মাঝে একে অপরের জন্য সময় বের করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দাম্পত্য জীবন, মা-বাবা এবং সন্তানের সম্পর্ক বা ভাই-বোনের সম্পর্ক—সবক্ষেত্রেই একে অপরের জন্য সময় বের করা প্রয়োজন। একে অপরের সঙ্গে বিনোদনমূলক বা আগ্রহের বিষয় নিয়ে সময় কাটানোর মাধ্যমে সম্পর্ক মধুর এবং শক্তিশালী হয়।

টিপ: সপ্তাহে অন্তত একদিন পরিবারের সকল সদস্যের সঙ্গে বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন, সেক্ষেত্রে ফোন বা অন্যান্য গ্যাজেট থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করুন।

৩. প্রত্যেক ব্যাপারে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করুন 
ভালো সম্পর্ক গড়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো ছোট ছোট বিষয়েও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। পরিবারের সদস্যরা মাঝে মাঝে আপনার উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন, তবে তাদের প্রতি আপনার সম্মান এবং শ্রদ্ধা অবশ্যই রাখতে হবে। কিছু ছোট বাক্য যেমন “ধন্যবাদ”, “দুঃখিত”, “দয়া করে” ইত্যাদি খুব বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

টিপ: পরিবারের সদস্যদের প্রতি আপনার আচরণে মমতা এবং সম্মান প্রদর্শন করুন, এটি সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।

৪. একসাথে সমস্যা সমাধান করুন
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যে কোনো বিরোধ বা সমস্যা আসতেই পারে। তবে, একটি ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে সমস্যা গুলি একসাথে সমাধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একে অপরের প্রতি খোলামেলা মনোভাব এবং সহানুভূতি পোষণ করলে, তা সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।

টিপ: যদি কোনো সমস্যা বা বিতর্ক তৈরি হয়, তবে তা সমাধান করার জন্য শান্ত এবং সঠিকভাবে আলোচনা করুন। আক্রমণাত্মক বা রেগে গিয়ে কথা না বলাই ভালো।

৫. একাধিক দায়িত্ব ভাগ করুন
পরিবারের মধ্যে দায়িত্ব ভাগাভাগি করা সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করে। যদি ঘরের কাজ, সন্তান লালন-পালন, অর্থনৈতিক বা অন্য কোনো দায়িত্ব ভাগ করা যায়, তবে তা পারিবারিক বন্ধন আরও শক্তিশালী করবে। একে অপরকে সাহায্য করা এবং সহযোগিতা প্রদর্শন পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটায়।

টিপ: পরিবারের সকল সদস্যকে তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিন এবং সেটা তারা যেন সঠিকভাবে পালন করে, সেজন্য একটি সিস্টেম তৈরি করুন।

৬. আশাবাদী মনোভাব রাখুন
বিপদ বা দুশ্চিন্তার মুহূর্তে আশাবাদী মনোভাব ধরে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশাবাদী মনোভাব রাখলে, আপনি পরিবারের সদস্যদেরও উৎসাহিত করতে পারবেন। এর মাধ্যমে তারা মনে করবে যে, কোনো সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ থাকলেও একে অপরকে সমর্থন করতে হবে এবং একটি সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব।

টিপ: সংকটময় সময়ে পরিবারের সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের উৎসাহিত করুন এবং একে অপরকে আশাবাদী হতে সাহায্য করুন।

৭. সহানুভূতির সাথে আচরণ করুন
সহানুভূতির মাধ্যমে আপনি অন্যদের অনুভূতিতে মনোযোগ দিতে পারেন এবং তাদের মনের অবস্থা বুঝতে পারবেন। যখন পরিবারের সদস্যরা খারাপ সময়ের মধ্যে থাকে, তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সহানুভূতির সাথে কথা বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

টিপ: যখন কেউ আপনার কাছে দুঃখ, কষ্ট বা হতাশা শেয়ার করবে, তখন তার অনুভূতির প্রতি সহানুভূতি দেখান এবং তাকে ভালো লাগানোর চেষ্টা করুন।

৮. ঐক্য এবং সমর্থন প্রদান করুন
একটি পরিবারে একতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারে সবাই একে অপরকে সমর্থন করবে এবং একটি দল হিসেবে কাজ করবে—এটা পরিবারের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে। একে অপরকে সমর্থন দেওয়া এবং রক্ষা করা পারিবারিক বন্ধনকে মজবুত করে।

টিপ: যদি পরিবারের কোনো সদস্য সমস্যার মধ্যে থাকে, তবে তাকে সাহস দিন এবং তাকে মনে করিয়ে দিন যে সে একা নয়, পরিবারের সবাই তার পাশে আছেন।

৯. পরস্পরকে বুঝুন
অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেক সদস্যের ব্যক্তিগত জায়গাও গুরুত্বপূর্ণ। কখনো কখনো একে অপরকে কিছু সময়ের জন্য একা থাকতে দেওয়াও প্রয়োজন। এটি সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক।

টিপ: পরিবারে ব্যক্তিগত সময় কাটানোর সুযোগ দিন। এটা সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী এবং সুন্দর করবে।

১০. ধৈর্য্য রাখুন
অনেক সময় সম্পর্কের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে, তবে ধৈর্য্য এবং শান্ত থাকার মাধ্যমে সবকিছু সমাধান করা সম্ভব। পরিবারের সদস্যদের প্রতি ধৈর্য্য এবং মমতা প্রদর্শন করলে সম্পর্ক শক্তিশালী হয়।

টিপ: প্রয়োজনে একটু বেশি সময়ের জন্য বিরতি নিয়ে শান্ত হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করুন এবং তারপর আবার আলোচনা করুন।

পরিবার হলো আমাদের জীবনের ভিত্তি, এবং ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আমাদের নিজেদের মধ্যে খোলামেলা, সহানুভূতি, এবং শ্রদ্ধাশীল আচরণ বজায় রাখতে হবে। নিজেকে ভালো রাখার জন্যই পরিবারের সঙ্গে আরও মজবুত এবং আনন্দদায়ক সম্পর্ক গড়ে তুলার জন্য সচেতন থাকতে হবে।

 

উদ্যোক্তার কাতারে গারো নারীরা

 

টাঙ্গাইলের মধুপুর বনাঞ্চলের পার্বত্য এলাকা গারো নারীদের জীবনাচরণে এক অনন্য চিত্র তুলে ধরে। পাহাড় আর বনাঞ্চলের মধ্যে গারো সমাজের বিশেষত্ব শুধু তাদের ঐতিহ্যিক চাষাবাদে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাদের মাতৃতান্ত্রিক পরিবারব্যবস্থা, যা সম্পত্তি এবং বংশ পঞ্জি মা-পিতার বদলে শুধুমাত্র মায়ের দিক থেকেই অর্জিত হয়, সেই বিষয়টিও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গারো সমাজে নারীরা পরিবার ও সমাজে এক বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান লাভ করে থাকে, যা তাদের স্বাধীনতা ও আত্মবিশ্বাসকে আরো দৃঢ় করে।

গারো নারীদের জীবনাচরণ একটি উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে পুরুষরা গৃহকর্তা হিসেবে নয়, বরং শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে এবং ঘরের কাজকর্ম ও সন্তানদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করে। এই পরম্পরা, যা শতাব্দীকাল ধরে চলে আসছে, গারো সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে আধুনিক প্রযুক্তি এবং সমাজে পরিবর্তনের ধারায়, গারো নারীরা শুধু কৃষি কাজেই নয়, বরং ব্যবসাবাণিজ্যে নিজেদের সাফল্যের কৃতিত্ব তুলে ধরছে।

মাতৃতান্ত্রিক পরিবারের মধ্যে নারীদের আর্থিক অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি সমাজে নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সহায়তা করছে। চাষাবাদে অভ্যস্ত গারো নারীরা এখন নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা হিসেবে উঠছেন, যেখানে ব্যবসা ও বাণিজ্য তাদের নতুন জীবনের পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছে।

এই পরিবর্তন গারো সমাজের ইতিহাসে একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এখন গারো নারীরা আধুনিক সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসায়িক ও পেশাগত ক্ষেত্রে নিজেদের পরিচিতি তৈরি করছে। তাদের উদ্যোক্তা সত্ত্বা শুধু পরিবারের মধ্যে নয়, বৃহত্তর সমাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

তাদের জীবনযাত্রায় আধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্যোগের মিশেলে গারো নারী সমাজ আরো শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। এই পরিবর্তনের ধারায়, প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কারের সঙ্গে নতুন সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে গারো নারীরা। তাদের আত্মবিশ্বাস, সংগ্রাম এবং কঠোর পরিশ্রম তাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, এবং তারা আজ শুধুমাত্র নিজেদের পরিবারের নয়, বরং সমাজেরও শক্তিশালী চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে।

গারো সমাজে নারী শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও নতুন পেশায় নিয়োজিত নারীরা নিজেদের প্রতিভা এবং দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। সরকারের সহায়তায় এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে তারা আরো অধিক সাফল্য অর্জন করছে। তবে তাদের সামাজিক অবস্থান আজও সম্মানজনক ও শক্তিশালী, এবং তারা নিজেদের উদ্যোগে সমাজে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

এমন এক সময় যখন আধুনিকতার ছোঁয়া পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে, গারো নারী সমাজ তার পুরনো ঐতিহ্য ও সংস্কার ধরে রেখে, আধুনিকতার পথে পা বাড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের এই অবিচল পথচলা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং তাদের অদম্য উদ্যোগ ভবিষ্যতে নতুন এক সম্ভাবনার সূচনা করবে।

 

জরিপে এগিয়ে গেলেন কমলা, ট্রাম্পের জন্য দুঃসংবাদ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত আইওয়া অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে গেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। আইওয়ার ডেজ মইনেস রেজিস্ট্রার/মিডিয়াকম আইওয়ার পোলের প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্পের থেকে ৩ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন কমলা। যদিও সেপ্টেম্বরের জরিপে এই রাজ্যেই ৪ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন ট্রাম্প।

গত ২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পরিচালিত এই জরিপে মোট ৮০৮ জন ভোটার অংশ নেন।

গতকাল শনিবার জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। জরিপে কমলা ৪৭ শতাংশ ও ট্রাম্প ৪৪ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। এর পেছনে সেখানকার নারী, বিশেষ করে বয়স্ক ও রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ নারী ভোটাররা ভূমিকা রেখেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্প ২০১৬ সালে আইওয়ায় ৯ শতাংশের বেশি পয়েন্ট ব্যবধানে এবং ২০২০ সালে ৮ পয়েন্ট ব্যবধানে জিতেছিলেন।

শেষ মুহূর্তে জরিপে এগিয়ে যাওয়া কমলার জন্য সুখবর হলেও তা নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছে। তবে ১ ও ২ নভেম্বর পরিচালিত অন্য একটি জরিপে উল্টো চিত্র পাওয়া গেছে। এমারসন কলেজ পোলিং/রিয়ালক্লিয়ারডিফেন্স এই জরিপ পরিচালনা করে। এই জরিপে ট্রাম্প কমলার চেয়ে ১০ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।

আইওয়ায় ২০১৬ ও ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সহজ জয় পেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

 

রাজধানীতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ৫০ শতাংশ শিশু গৃহকর্মী

 

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে পেশকৃত অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) পরিচালিত ‘সিচুয়েশন অব চাইল্ড ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স ইন ঢাকা সিটি’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের প্রায় ৫০ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। আর ৩১ দশমিক ৪৫ শতাংশ গৃহকর্মী অত্যধিক কাজের চাপে থাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২টি থানা এলাকায় এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। ৩৫২ জন গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশু এই জরিপে অংশ নেয়।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন এএসডির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউ কে এম ফারহানা সুলতানা। নির্যাতনের শিকার শিশুদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ শারীরিক আঘাতের শিকার। মারধরের শিকার ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ, বকাঝকার শিকার ২০ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং যৌন নির্যাতনের শিকার ১ দশমিক ৭ শতাংশ।

এএসডির নির্বাহী কমিটির সভাপতি ড. আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. তরিকুল আলম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপ–পরিচালক ও শিশু অধিকার কমিটির সদস্য সচিব এম. রবিউল ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (স্বাস্থ্য) ডা. বিশ্বজিৎ রায়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মোছা. সালমা আক্তার, শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক এস এম এনামুল হক, এএসডির নির্বাহী পরিচালক এম এ করিম, স্ক্যান এর সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম বলেন, গৃহকর্মী শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। অনেক আগে থেকে শিশু শ্রমিক নির্যাতন চলে আসছে। তবে এটা সত্য, আগের তুলনায় শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন অনেকাংশে কমে আসছে। আমরা চাই, এটা শতভাগ বন্ধ হোক।

শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যে ৪৩টি কাজ চিহ্নিত করা আছে, তার সঙ্গে গৃহকর্মকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

মানবাধিকার কমিশনের এম. রবিউল ইসলাম বলেন, গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় মানবাধিকার সব সময় সক্রিয় আছে। শিশু নির্যাতনের ঘটনা বন্ধে সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে কাজ চলছে। নীতিমালা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের পাশাপাশি আইন প্রণয়নে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে আইনের খসড়া প্রণয়ন হয়েছে। দ্রুতই তা চূড়ান্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জরিপ প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় আইন ও নীতিমালা সংশোধনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। গৃহকাজকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিদ্যমান নীতিমালা ও আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির করতে হবে। নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় হতে হবে। নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার শিশুদের স্বাস্থ্য ও আইনি সেবা প্রদান কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আলোচকেরা বলেন, বিগত সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করলেও সেই নীতিমালা গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের (গৃহকর্মী) সুরক্ষা দিতে পারছে না। তাঁরা দ্রুত গৃহকর্মী সুরক্ষা আইন পাসের তাগিদ দেন। একই সঙ্গে গৃহকর্মকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

 

কোনো কাজই সময়মতো গুছিয়ে করতে না পারলে কী করবেন

প্রোক্রাস্টিনেশন বা কার্য সম্পাদনে দেরি করা আমাদের জীবনে একটি সাধারণ সমস্যা। অনেকেই লক্ষ্য করেন যে তারা গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো পরে রাখেন, যার ফলে চাপ ও উদ্বেগ বৃদ্ধি পায়। এই অভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু কার্যকরী উপায় নিচে আলোচনা করা হলো।

১. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

প্রথমে আপনি যে কাজটি করতে চান, তার একটি স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। লক্ষ্য যত সুনির্দিষ্ট হবে, তত সহজে আপনি কাজটি শুরু করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, “আমি একটি রিপোর্ট লিখব” বলার পরিবর্তে “আমি আগামী বুধবারের মধ্যে রিপোর্টের প্রথম খসড়া শেষ করব” বলুন।

২. কাজগুলো ভাগ করুন

বৃহৎ কাজগুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন। প্রতিটি ছোট কাজ সম্পন্ন করা অনেক সহজ হয় এবং এর ফলে আপনি কাজের প্রতি উৎসাহিত হবেন। উদাহরণস্বরূপ, একটি গবেষণা প্রবন্ধ লেখার জন্য তা অধ্যায় অনুযায়ী ভাগ করুন।

৩. সময় নির্ধারণ করুন

আপনার কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন। এটি হতে পারে একটি সময়সীমা বা একটি টাইম ব্লক। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করলে আপনার মনোযোগ বাড়বে।

৪. পরিবেশ সাজান

আপনার কাজের পরিবেশটি পরিচ্ছন্ন এবং সুগঠিত রাখুন। এলোমেলো পরিবেশ আপনার মনোযোগকে বিঘ্নিত করতে পারে। একটি শান্ত ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে কাজ করলে আপনার ফোকাস বাড়বে।

৫. বিরতি নিন

কাজ করতে করতে মাঝে মাঝে বিরতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার মনকে সতেজ করবে এবং নতুন উদ্যমে কাজ করার সুযোগ দেবে। ২৫-৩০ মিনিট কাজ করার পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন।

৬. প্রযুক্তি ব্যবহার করুন

প্রযুক্তি আপনার প্রোক্রাস্টিনেশন কাটাতে সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন অ্যাপস যেমন ‘টম্যাটো টিমার’ বা ‘টাস্ক ম্যানেজার’ ব্যবহার করে আপনার কাজের তালিকা তৈরি করুন এবং সময় নির্ধারণ করুন।

৭. স্বয়ংক্রিয় প্রেরণা

নিজেকে উৎসাহিত রাখতে কিছু স্বয়ংক্রিয় প্রেরণা ব্যবহার করুন। একটি চেকলিস্ট তৈরি করুন এবং প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করার পর সেটি চেক করুন। এটি আপনাকে সাফল্যের অনুভূতি দেবে।

৮. ইতিবাচক চিন্তা করুন

নিজেকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিন যে কাজটি শেষ হলে আপনার কাছে কতটা আনন্দ ও সাফল্য আসবে। ইতিবাচক চিন্তা আপনাকে কাজের প্রতি আগ্রহী করবে।

উপসংহার

প্রোক্রাস্টিনেশন কাটানো একটি অভ্যাস যা সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়। উপরোক্ত উপায়গুলো চেষ্টা করে দেখুন এবং ধীরে ধীরে আপনার কার্যসম্পাদনে পরিবর্তন আনুন। মনে রাখবেন, শুরু করা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। সফলতা আপনার হাতের মুঠোয়!

 

কোনো উদযাপন করতে চান না সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী হান কাং

 

দক্ষিণ কোরিয়ার নোবেল বিজয়ী লেখক হান কাং জানান, তিনি তাঁর পুরস্কার উদযাপন বা সংবাদ সম্মেলন করতে আগ্রহী নন। এই সিদ্ধান্তের পেছনে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মতো দুঃখজনক বিশ্ব পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেন।

কোরিয়া টাইমসে হান কাং বলেন,

“যখন বিশ্বে যুদ্ধ বাড়ছে এবং অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে, তখন নোবেল পুরস্কার উদযাপনের এটা সঠিক সময় নয়।”

৫৩ বছর বয়সী এই লেখক বৃহস্পতিবার জানতে পারেন, তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম লেখক হিসেবে স্বীকৃত হয়েছেন, এবং তিনি তাঁর বাবা হান সিউংয়ের মাধ্যমে জানান যে, এই মুহূর্তে উদযাপনের কোনো ইচ্ছা নেই।

৮৫ বছর বয়সী হান সিউং-ওন শুক্রবার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাঁর মেয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে চান না। তিনি আরও জানান, তিনি তাঁর মেয়ের জন্য একটি উদযাপনের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু হান কাং সেই উদযাপন থেকেও বিরত থাকার অনুরোধ করেন।

হান কাং কোরিয়া টাইমসে বলেন,

“আমরা যখন পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া এই দুঃখজনক ঘটনাগুলো দেখছি, তখন দয়া করে কোনো উদযাপন করবেন না। সুইডিশ একাডেমি আমাকে আনন্দ দেওয়ার জন্য এই পুরস্কার দেয়নি।”

তবে, তিনি জানিয়েছেন যে, পরবর্তীতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য তাঁকে উৎসাহিত করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে তিনি স্টকহোমে পুরস্কার গ্রহণ করতে যাবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।

হান কাং তাঁর ‘সাক্ষী-সাহিত্য’ রচনার জন্য পরিচিত, যেখানে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসের দুঃখজনক ও হিংসাত্মক ঘটনাবলী নিয়ে কাজ করেন। তাঁর বাবা কোরিয়া টাইমসে বলেন, “তাঁর মেয়ে কোরিয়ায় লেখক হিসেবে বিশ্বব্যাপী সচেতনতার দিকে ক্রমাগত অগ্রসর হচ্ছে।”

হান কাং জানান, তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়ে বিস্মিত ও সম্মানিত। নোবেল ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছেন, কোরিয়ার সময় সন্ধ্যায় তিনি পুরস্কারের খবর পান এবং তারপর এক কাপ চা নিয়ে তার ছেলে সাথে কিছুটা উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

 

শনিবার শপথ নেবেন দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী অতীশি

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এএপি জানায়, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন অতীশি। পরে তার মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও শপথ নেবেন।

দীর্ঘ ছয় মাস কারাভোগ শেষে কারামুক্তির মাত্র দুদিন পর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। স্থানীয় সময় রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দিল্লিতে আয়োজিত দলীয় এক অনুষ্ঠানে কেজরিওয়াল পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

এরপর মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিনি লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনার সঙ্গে তার বাসভবনে দেখা করে আনুষ্ঠানিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

ওইদিন সকালের দিকে কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি (এএপি) জানায়, দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন অতীশি মারলেনা। এক বৈঠকে এএপির জাতীয় আহ্বায়ক অতীশির নাম প্রস্তাব করেন এবং তার এ প্রস্তাবে পার্টির সব বিধায়ক উঠে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানান এবং তাকে আইনসভা দলের নেতা নির্বাচন করা হয়।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে। তার আগ পর্যন্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন অতীশি। যদিও, কেজরিওয়াল আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন।

 

শিল্পীর তুলির অপ্রতিরোধ্য শক্তি পর্ব-১

 

অপরাজিতা ডেস্কঃ একুশ শতকে শিল্পীর তুলির আধুনিকায়ন হয়েছে। বিভিন্ন এক্টিভিস্ট তুলির আচড়ের সাথে সাথে গ্রাফিক্স ডিজাইনসহ বিভিন্নভাবে শৈল্পিকভাবে প্রকাশ করছে নিজেদের কথা এবং আলোড়ন তুলছে পুরো বিশ্বে।

আসুন জেনে নেই কয়েকজন নারীর কথা যারা অদম্য সাহসের সাথে নিজ কমিউনিটিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য শৈল্পিক উপায়ে আলোড়ন তুলেছে-

প্রথম পর্বে আমরা জানবো ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের জন্য আর্ট থেরাপির গল্প-

মনোবিজ্ঞানী ও আর্ট থেরাপিস্ট কাটেরিনা শুক ২০২২ সাল থেকে একজন শরনার্থী হিসেবে জীবন যাপন করছেন। ইউক্রেনে পূর্ণ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর কাটেরিনা ইউক্রেনের মারিউপোলে তার বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়ে পোল্যান্ডে চলে যান।

আমরা মনে করি যুদ্ধ এমন কিছু- যা অন্য লোকেদের সাথে ঘটে, যতক্ষণ না এটি আপনার সাথে ঘটে ততক্ষন পর্যন্ত! -ক্যাটরিনা শুক

তারপর থেকে, তিনি অন্যান্য ইউক্রেনীয় নারীদের তাদের ক্ষতি এবং ট্রমা সহ্য করার জন্য সহযোগিতা করছেন। নারীদের তাদের অনুভূতি প্রকাশ, পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে সুন্দর কিছু তৈরি করার পথ-নির্দেশনা দেয় এ আর্ট থেরাপি।

আর্ট থেরাপির একটি সেশনে আগামী পাঁচ বছরে তাদের জীবনকে কীভাবে দেখতে চান তার উপর ভিত্তি করে একটি কোলাজ তৈরি অংশগ্রহণকারী নারীরা।

যুদ্ধের ফলে সব পরিকল্পনা, লক্ষ্য এবং স্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর নারীদের তাদের ভবিষ্যত নিয়ে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করার ক্ষেত্রে এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷ যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য দৃঢ় ভূমিকা পালন করেছে এ আর্ট থেরাপি।

অনুবাদঃ  সিলভিয়া জুম

 

নারী ভোটারের সমর্থন হারাচ্ছেন ট্রাম্প

 

যুক্তরাষ্ট্রে নারী ভোটারদের মধ্যে রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ক্রমে কমছে। এ নিয়ে দলটির নেতারা উদ্বিগ্ন। এমনটা যাতে না হয়, সেটাই চাচ্ছেন ট্রাম্প। তিনি চান, নারী ভোটাররা যেন তাঁর দিকে ঝোকেন। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না।

গতকাল বুধবার দ্য হিলের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, যদিও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মধ্যে রিপাবলিকানরা লিঙ্গ ব্যবধানের জন্য অপরিচিত নয়, তারা এখন নারী-পুরুষ ভোটারদের নিয়ে এক জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছে। দলটির জরিপকারী হুইট আইরেস বলেন, বড় নেতৃত্বের জন্য নারীদের মধ্য থেকে কমলার উঠে আসা ট্রাম্পের জন্য ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ হতে চলেছে।

তিনি সতর্ক করেন, রিপাবলিকানদের জন্য এ মুহূর্তে আসল চ্যালেঞ্জ হলো নারীদের মধ্যে তাদের জনপ্রিয়তা বাড়ানো। গত রোববার প্রকাশিত এবিসি নিউজ/ইপসস জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস নারীদের মধ্যে ট্রাম্পের চেয়ে বড় ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। তিনি ৫৪ শতাংশ মার্কিন নারীর সমর্থন পেয়েছেন; ট্রাম্প পেয়েছেন ৪১ শতাংশের। তবে পুরুষদের মধ্যে কমলার চেয়ে ট্রাম্প ৫ পয়েন্ট এগিয়ে আছেন। ট্রাম্পকে ৫১ শতাংশ ‍পুরুষ ভোটার সমর্থন করেন; ৪৬ শতাংশ কমলাকে সমর্থন করেছেন।

এ জরিপের তথ্য অনুযায়ী, শিকাগোতে ডেমোক্রেটিক জাতীয় সম্মেলনের পর নারীদের মধ্যে কমলার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয় রয়টার্স/ইপসোস জরিপ। সেখানে নারীদের মধ্যে কমলা ট্রাম্পের চেয়ে ১৩ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। উভয় জরিপে দেখানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পের চেয়ে কমলা সামগ্রিকভাবে ৪ শতাংশ এগিয়ে আছেন। এ প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল তৈরি করে দেওয়া ছয় অঙ্গরাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ জরিপের ফল প্রকাশ করেছে সিএনএন।

তাদের জরিপে দোদুল্যমান এসব অঙ্গরাজ্যে সার্বিকভাবে কমলা হ্যারিসকে এগিয়ে রাখা হয়েছে। কমলার এগিয়ে থাকা অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে আছে উইসকনসিন ও মিশিগান। আরিজোনায় কিছুটা এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। তবে জর্জিয়া, নাভাদা ও পেনসিলভানিয়ায় সমানে সমান টক্কর চলছে।

সন্তানকে ‘ফ্যাটি লিভার’ থেকে নিরাপদে রাখবেন যেভাবে

আজকাল অনেক শিশুর লিভারে ফ্যাট জমে। কারণ আজকালকার বাচ্চারা বাড়ির খাবার খেতে পছন্দ করে না। বরং বারবার তাদের মন কেড়ে নেয় পিৎজা, বার্গার, মোমো, বিরিয়ানি, চাউমিনের মতো খাবার। এমনকী তাদের মধ্যে অনেকেই কোল্ড ড্রিংকস, চকোলেট এবং মিষ্টির পোকা।

আর এসব খাবারের কারসাজিতেই বিপদে পড়ে তাদের লিভার। এই অঙ্গে জমে ফ্যাট। আর এই সমস্যার নামই হল ফ্যাটি লিভার। এই সমস্যার দিকে প্রথমেই নজর না দিলে মুশকিল! সেক্ষেত্রে শরীরের বড়সড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
তাই বিপদ বাড়ার আগেই এই প্রতিবেদন থেকে ছোটদের ফ্যাটি লিভারকে বশে আনার ৪ কৌশল সম্পর্কে বিশদে জেনে নিন। তাহলেই অনায়াসে সমস্যাকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন।
শিশুদের ​খেলতে পাঠান​
আপনার সন্তান কি মোবাইল, কম্পিউটারে গেম খেলে অভ্যস্ত? তাহলে আজ থেকেই তার এই অভ্যাসে বদল আনুন। তাকে সঙ্গে করে মাঠে যান।

সেখানে সমবয়সীদের সঙ্গে খেলতে দিন। আপনি চাইলে তাকে ফুটবল বা ক্রিকেট কোচিং সেন্টারেও তাকে ভর্তি করে দিতে পারেন। তাহলেই দেখবেন দ্রুত ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যাকে মাত দিয়ে সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে পারবে ছোট্ট সোনা।
​কমিয়ে ফেলুন ওজন​
সন্তানের ওজন বেশি থাকলে ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যার থেকে মুক্তি মিলবে না। তাই আজ থেকেই ছোট্ট সোনার ওজন কমানোর কাজে লেগে পড়ুন।

সেক্ষেত্রে তাকে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার পরামর্শ দিন। সে ব্যায়াম করতে না চাইলে সাঁতারে ভর্তি করে দিন। কিংবা তাকে সাইকেল চালাতেও বলতে পারেন। এই কাজটা করলেই উপকার মিলবে। দ্রুত কমে যাবে তার ওজন।
যেসব খাবার থেকে বিরত রাখবেন​
জানি আপনার সন্তান, ফাস্টফুডের জন্য পাগল! তাই সে রোজ রোজ বিরিয়ানি, রোল, চাউমিন, বার্গার খাওয়ার জন্য বায়না ধরে। তবে ভুলেও তাকে এসব খাবার কিনে দেবেন না। এই ভুলটা করলে সমস্যা আরও বাড়বে। তবে শুধু এসব খাবারই নয়, এর পাশাপাশি চিপস, চকোলেটের থেকেও তাকে দূরে রাখতে হবে। এমনকী খেতে দেওয়া চলবে না কোল্ড ড্রিংকস। আশা করছি, এসব খাবার এবং পানীয়কে ডায়েট থেকে দূর করে দিলেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।

​চেকআপে রাখুন​
বাচ্চার ফ্যাটি লিভার ধরা পড়লে মাঝে মাঝে চেকআপ জরুরি। তাই মাসে অন্তত একবার চিকিৎসকের কাছে যান। তিনি যদি ওষুধ বদলে দেন বা জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে বলেন, সেগুলি সন্তানকে মেনে চলতে বলুন। এমনকী তিনি কিছু টেস্ট দিলেও তা করে নিতে হবে। আশা করছি, এই নিয়মটা মেনে চললেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে ছোট্ট সোনা। তাই ঝটপট এই কাজে লেগে পড়ুন।

হার্টের সুরক্ষায় ৪ খাবার এড়িয়ে চলুন

 

যা কিছু খেতে আমরা পছন্দ করি তার সবই কি স্বাস্থ্যকর? বিশেষ করে আমাদের হার্ট ভালো রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক হতে হবে। সম্প্রতি এক ইনস্টাগ্রাম রিলে লন্ডনের কার্ডিওভাসকুলার সার্জন ডাঃ জেরেমি চারটি খাবার নিয়ে আলোচনা করেছেন। যে খাবারগুলো হার্ট ভালো রাখার খাতিরেই এড়িয়ে যেতে হবে। কিন্তু সেই চারটি খাবারই আমরা প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে খেয়ে থাকি। তবে সব চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ এই চারটি খাবার, বিশেষ করে তার তালিকার তৃতীয় আইটেমটি সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করার সাথে একমত হবেন না। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক, ডাঃ জেরেমি কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলার কথা বলেছেন-

১. ফাস্ট ফুড
ফাস্ট ফুড চেইনের বেশিরভাগ খাবারই আসলে কেবল চটকদার। তাতে পুষ্টির কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। হার্ভার্ড হেলথের মতে, হ্যামবার্গার, ফ্রাই এবং চিনিযুক্ত কোমল পানীয় প্রদাহ বৃদ্ধি করতে পারে, যা ধমনী-ক্লগিং প্লেকের বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। অপরদিকে গবেষণায় দেখা গেছে যে ফল, শাকসবজি প্রদাহ বিরোধী খাবার এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।

২. কোমল পানীয়
ডাঃ জেরেমি নিয়মিত কোমল পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা প্রকাশ করে, যেখানে দেখা গেছে যারা সাপ্তাহিক দু্বারের বেশি চিনিযুক্ত পানীয় গ্রহণ করেন তারা কার্ডিওভাসকুলার রোগের উচ্চ ঝুঁকির সম্মুখীন হন। যারা প্রতিদিন কোমল পানীয় পান করেন তাদের জন্য এই ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পায়।

 

৩. দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য

আমরাই একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী যারা শৈশবকালের পরেও দুধ পান করি, এবং আমরা এটি একটি ভিন্ন প্রজাতির থেকে খাই। তাই এ সম্পর্কে আরেকটু ভেবে দেখুন, এমনটাই বলেন ডাঃ জেরেমি। তবে অন্য অনেক বিশেষজ্ঞেরই দুধ সম্পর্কে মতামত ভিন্ন। হার্ভার্ড হেলথের একটি প্রবন্ধে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে দুধ কি হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে? ডক্টর জোআন ম্যানসন উল্লেখ করেছেন, ফুল ফ্যাট দুধের পরিমিত ব্যবহার স্বাস্থ্যকর খাদ্যের অংশ হতে পারে।

৪. অ্যালকোহল
অ্যালকোহল আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের জন্য বিষাক্ত, এমনটাই বলেন কার্ডিয়াক সার্জন জেরেমি। এমনকি মাঝারি বা মাঝে মাঝে গ্রহণ করলে তাও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। আমরা যদি আমাদের মঙ্গলকে অপ্টিমাইজ করার চেষ্টা করি, তাহলে অ্যালকোহল নির্মূল করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এমনটাই মত দেন ডাঃ জেরেমি।

 

রাতারাতি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী হয়ে ওঠেন যারা

নিজের যোগ্যতায় নয় বরং উত্তরাধিকার সূত্রে ধনী হয়েছেন এমন নারীর সংখ্যা নেহাতই কম নয়। কিন্তু এমনও নারী আছেন, যারা উত্তরাধিকার সূত্র বা ডিভোর্সের মাধ্যমে এতটাই ধনী হয়েছেন যে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন তারা।

ধনকুবেরদের তালিকা রাখা ফোর্বস জানিয়েছে, বর্তমানে শত কোটি ডলার বা তার চেয়ে বেশি সম্পদ আছে, এমন ব্যক্তির সংখ্যা ২ হাজার ৭৮১ জন। আর তাদের মধ্যে নারী হচ্ছে ৩৬৯ জন।

গেল বছরের চেয়ে ধনী নারীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে ফোর্বস। ২০২৩ সালে বিশ্বে সবচেয়ে ধনী নারীর সংখ্যা ছিল ৩৩৭ জন। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে হয়েছে ৩৬৯ জন। এই ধনী নারীদের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১.৮ ট্রিলিয়ন ডলার। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী নারীর ৮ জনই উত্তরাধিকার সূত্রে এই বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক হয়েছেন।

কেবলমাত্র একজন নারী নিজের যোগ্যতায় এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। আর ডির্ভোসের কারণে বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে তালিকায় স্থান পেয়েছেন এক নারী।

টানা চার বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারীর খেতাব জিতে নিয়েছেন ল’রিয়েলের উত্তরাধিকারী ফ্রাঁসোয়া বেনেটকোর্ট মেয়ার্স। ফোর্বস চলতি বছরের এপ্রিলে জানায়, গেল ১২ মাসে বেনেটকোর্টের সম্পদের পরিমাণ ১৯ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। সব মিলিয়ে তিনি এখন ৯৯.৫ বিলিয়ন ডলারের মালিক। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ওয়ালটনে একজন উত্তরাধিকারী বা বেনেটকোর্ট বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারীর খেতাব দখলের রেখেছেন। মায়ের মৃত্যুর দুই বছর পর ২০১৯ সালে বেনেটকোর্ট প্রথমবার বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারীদের তালিকায় স্থান পান।

ওয়ালমার্টের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়াল্টনের একমাত্র মেয়ে অ্যালিস ওয়ালটন। ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারীদের তালিকায় দ্বিতীয় ছিলেন। বিগত কয়েক মাসে ওয়ালমার্টের শেয়ার ফুলে-ফেঁপে ওঠায় আরও ধনী হয়েছেন তিনি। অ্যালিস কখনও ওয়ালমার্টের পরিচালকদের আসনে বসেননি, বরং আঁকাআঁকি নিয়েই থেকেছেন। নিজের হোমটাউন আরকানসাসের বেন্টনভাইলে একটি আর্ট গ্যালারি খুলেছেন তিনি শিল্পপ্রেমী অ্যালিস। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ৭২.৩ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী নারীর তালিকায় একমাত্র ব্যতিক্রম ম্যাকেঞ্জি স্কট। অন্যরা যেখানে বাবা, স্বামী বা মায়ের সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়েছেন, ম্যাকেঞ্জি সেখানে ডিভোর্সের পর রাতারাতি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ধনী নারীদের তালিকায় স্থান করে নেন।

ম্যাকেঞ্জি বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীতম ব্যক্তি জেফ বেজোসের স্ত্রী ছিলেন। তাদের ডিভোর্সের পর অ্যামাজনের ৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক হন। ব্যাস, আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ৫৩ বছর বয়সী এই নারীর বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৩৫.৬ বিলিয়ন ডলার। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারীদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন।

ধনীতম নারীদের এই তালিকায় একজন ভারতীয়ও রয়েছেন। তার নাম সাবিত্রী জিন্দাল। ৭৪ বছর বয়সী সাবিত্রী ভারতের সবচেয়ে ধনী নারী। ২০০৫ সালে স্বামী ওম প্রকাশ জিন্দালের মৃত্যুর পর তার বিশাল সাম্রাজ্যের মালিক হন সাবিত্রী। জিন্দাল গ্রুপের স্টিল, বিদ্যুৎ, সিমেন্ট ও অবকাঠামো খাতে ব্যবসা রয়েছে। ২০২৩ সালে বিশ্বের ধনীতম নারীদের তালিকায় ১২তম ছিলেন সাবিত্রী। তবে জিন্দাল গ্রুপের শেয়ারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ২০২৪ সালে এই তালিকায় ষষ্ঠ স্থান দখল করে নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ৩৩.৫ বিলিয়ন ডলার।

তেল শোধনের ব্যবসা থেকে শুরু করে পেপার টাওয়ালের ব্যবসা করা জুলিয়া কোচ ও তার পরিবার বিশ্বের তৃতীয় ধনীতম নারী। তালিকায় চতুর্থ স্থানে থাকা জ্যাকুলিন মার্স ক্যান্ডি ও পেট ফুডের ব্যবসা থেকে ধনী হয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিপিং কোম্পানির সহপ্রতিষ্ঠাতা রাফায়েলা অ্যাপোন্তে-ডিয়ামান্তর অবস্থান তালিকায় সপ্তম। শীর্ষ ১০ এর তালিকায় তিনিই একমাত্র নারী যিনি নিজের যোগ্যতায় ধনী হয়েছেন। মিরিয়াম অ্যাডেলসন ও তার পরিবার রয়েছে তালিকার অষ্টম অবস্থানে। আর জিনা রাইনহার্টের অবস্থান নবম। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারীদের তালিকায় অ্যাবিগেইল জনসন ১০ম স্থান দখল করেছেন।

 

১৫ বছরে বিদেশে গেছে ১১ লাখ নারী কর্মী

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, গত ১৫ বছরে অর্থাৎ ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত (১১ জুন ২০২৪) ১১ লাখ ১৪ হাজার ৩১২ জন নারী কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। সৌদি আরবে সব চেয়ে বেশি নারী কর্মী গেছেন।

রবিবার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান তিনি।

সরকারি দলের সদস্য মো. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর প্রশ্নের জবাবে প্রতমিন্ত্রী জানান, বিদেশে কর্মী প্রেরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া।

এগুরুত্ব বিবেচনায় সরকার অধিক হারে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে। বেসরকারি খাতকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্তকরণের অংশ হিসেবে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির অনুকূলে লাইসেন্স প্রদান করা হয়ে থাকে। এজেন্সি সমূহ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি’র) বহির্গমন ছাড়পত্র নিয়ে বিদেশে কর্মী প্রেরণ করছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশ ওভারসীজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিঃ (বোয়েসেল) এর মাধ্যমে জর্ডান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ফিজি, মালয়েশিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিয়মিতভাবে স্বল্প খরচ-বিনা খরচে কর্মী পাঠানো হচ্ছে।

শ্রমিক পরিবারের নিরাপত্তায় ১২ বছরে ১৪২ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান

শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে কিংবা দুর্ঘটনাজনিত কারণে কেহ কর্ম অক্ষম হলে আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে শ্রমিক পরিবারের সামাজিক নিরাপত্তা গত ১২ বছরে ১৪১ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫৫ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী মো নজরুল ইসলাম। সরকারি দলের সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডলের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি তিনি আরো জানান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অন্যতম কাজ হচ্ছে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল সেক্টরের শ্রমিকের কল্যাণ ও সুরক্ষা প্রদান করা। এ লক্ষ্য অর্জনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকার পরিযায়ী শ্রমিকসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক ও শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, মেধাবী সন্তানদের শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, কর্মরত অবস্থায় কোন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করলে বা কোন শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে কিংবা দুর্ঘটনাজনিত কারণে কেহ কর্ম অক্ষম হলে আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে শ্রমিক পরিবারের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।

রিমালে ৭৪৮২ কোটি টাকার ক্ষতি

সরকারি দলের এস এম আতাউল হকের প্রশ্নের জবাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সারা দেশে টাকার অঙ্কে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৭ হাজার ৪৮১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

একই দলের মাহবুব উর রহমানের প্রশ্নের জবাবে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালে মৃত্যের সংখ্যা ২০ জন। ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৮১৭ জন। দুর্যোগ মোকাবিলায় নগদ ৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, ৫ হাজার ৫০০ মেট্রিন টন চাল, ১১ হাজার ৫০০ ব্যাগ শুকনো খাবার, দুই কোটি ৪৫ হাজার টকার শিশু খাদ্য, দুই কেটি ৪৫ লাখ টাকার গো-খাদ্য, ৩০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহমঞ্জুরি বাবদ ৯ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

 

ইতিহাস গড়লো ওড়িশার প্রথম মুসলিম নারী বিধায়ক সোফিয়া

ভারতের ওড়িশায় ইতিহাস গড়েছেন ৩২ বছর বয়সী নারী রাজনীতিক সোফিয়া ফিরদৌস। ওড়িশার বারাবতী-কটক কেন্দ্রে প্রথম মুসলিম নারী বিধায়ক (এমএলএ) নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। বিজেপির পূর্ণচন্দ্র মহাপাত্রকে ৮ হাজার এক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন তিনি।

সোফিয়ার জন্ম রাজনৈতিক পরিবারে। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা মোহাম্মদ মকিমের মেয়ে তিনি। ২০২৪ সালের ওড়িশা বিধানসভা নির্বাচনে সোফিয়া ফিরদৌস তার বাবার স্থলাভিষিক্ত হয়ে জয়লাভ করলেন।

সোফিয়া কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করে ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ২০২২ সালে ব্যাঙ্গালোরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (আইআইএমবি) থেকে এক্সিকিউটিভ জেনারেল ম্যানেজমেন্টে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০২৩ সালের কনফেডারেশন্স অব রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (ক্রেডাই) ভুবনেশ্বর চ্যাপ্টারের সভাপতি নির্বাচিত হন সোফিয়া। এই সংগঠনের নারী শাখার পূর্ব জোনের সমন্বয়ক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

এ ছাড়া ইন্ডিয়ান গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (সিআইআই) ভুবনেশ্বর চ্যাপ্টারের কো-চেয়ার এবং আইএনডব্লিউইসি’র কোর মেম্বার ছিলেন সোফিয়া। বিশিষ্ট শিল্পপতি শেখ মিরাজ উল হককে বিয়ে করেছেন তিনি। ওড়িশার প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী নন্দিনী শতপথীও এই আসন থেকেই ১৯৭২ সালে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন।

২০২৪ সালের ওড়িশা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৪৭টি আসনের মধ্যে ৭৮টি আসনে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক এবং বিজু জনতা দলের (বিজিডি) ২৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটায়।

এদিকে, সদ্য সমাপ্ত ভারতের লোকসভা নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থীদের উপস্থিতি ছিল গতবারের তুলনায় কম। ২০১৯ সালে সাধারণ নির্বাচনে ১১৫ আসনে মুসলিম প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। তবে এবার মাত্র ৭৮ জন প্রার্থী নির্বাচনি লড়াইয়ে অংশ নেন। তাদের মধ্যে জয়লাভ করেন মাত্র ২৪ জন।

 

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আদালতের প্রথম মুসলিম নারী বিচারক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নুসরাত

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আদালতের প্রথম মুসলিম নারী বিচারক হিসেবে শপথ নিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নুসরাত জাহান চৌধুরী। ২০২২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফেডারেল আদালতের বেঞ্চে নিয়োগের জন্য নুসরাতসহ আটজনকে মনোনয়ন দেন। তিনি নিউ ইয়র্কের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা বিচারকের দায়িত্ব পালন করবেন।

গত ১০ মে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তিনি শপথ নেন। প্রথম বাংলাদেশি-আমেরিকান, প্রথম মুসলিম নারী এবং দ্বিতীয় মুসলিম আমেরিকান হিসেবে ফেডারেল বেঞ্চে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।

শপথ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের মেজরিটি লিডার চাক শুমার বলেন, নিউ ইয়র্ক ইস্টার্ন ডিসট্রিক্ট-এর কেন্দ্রীয় আদালতে বিচারক (ফেডারেল জাজ) হিসেবে নুসরাত চৌধুরীকে শপথ নিতে সাহায্য করতে পেরে আমি খুবই সম্মানিত। ফেডারেল জাজ হিসাবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে তার জন্য আমি তাকে সুপারিশ করতে পেরে গর্বিত।’

নুসরাত জাহান চৌধুরী বর্তমানে ইলিনয়ের আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (এসিএলইউ)আইনি পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শতবর্ষের পুরনো আইনি প্রতিষ্ঠান এসিএলইউ সাধারণ মানুষের অধিকারের পক্ষে কাজ করে থাকে।

নুসরাত চৌধুরী ১৯৭৬ সালে ইলিনয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার ৬ নম্বর দাগনভূঞা সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীপুর। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ল স্কুল, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি এবং কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করেন। তিনি ২০২০ সাল পর্যন্ত ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের লিগ্যাল ডাইরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি ২০০৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নিউ ইয়র্কে আমেরিকার সিভিল রাইটস ইউনিয়নে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। সর্বশেষ ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি রেসিয়াল জাস্টিস প্রোগ্রামের ডেপুটি ডাইরেক্টর ছিলেন। নুসরাত চৌধুরী ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রেসিয়াল জাস্টিস প্রোগ্রামের সিনিয়র স্টাফ অ্যাটর্নি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

 

মারা গেছেন নোবেলজয়ী সাহিত্যিক এলিস মুনরো

 

২০১৩ সালে সাহিত্যে নোবেলজয়ী কানাডিয়ান লেখক এলিস মুনরো মারা (৯২) গেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ মে) রাতে কানাডার অন্টারিওর পোর্ট হোপে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার ও প্রকাশক।। তিনি এক দশক ধরে ডিমেনশিয়ায় ভুগছিলেন। খবর বিবিসির।

মুনরো ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছোট গল্প লিখেছেন। কানাডার গ্রামীণ জীবনকে উপজীব্য করেই তার বেশিরভাগ লেখা। সুইডিশ নোবেল একাডেমি ২০১৩ সালে তাকে পুরস্কারে ভূষিত করার সময় ‘সমকালীন ছোটগল্পের মাস্টার’ অভিহিত করে বলেছিল, তার সুন্দর করে গুছিয়ে বলা গল্পের বিষয়বস্তু সুস্পষ্ট এবং বাস্তববাদী।

১৯৩১ সালের ১০ জুলাই কানাডার অন্টারিও প্রদেশের উইংহ্যাম এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন মুনরো। সেখানকার গ্রাম্য ও শান্ত পরিবেশেই তার বেড়ে ওঠা। বাবা ছিলেন খামার মালিক, মা স্কুলশিক্ষক।

মাত্র ১১ বছর বয়সেই মুনরো ঠিক করে ফেলেন, বড় হয়ে একজন লেখকই হবেন। সে মতোই এগিয়েছে সবকিছু। নিজের পেশা নিয়ে পরবর্তী সময়ে আর কখনো তিনি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেননি।

মুনরো গভর্নর জেনালের অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনবার। ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস, ১৯৭৮ সালে হু ডু ইউ থিংক ইউ আর এবং ১৯৮৬ সালে দ্য প্রোগ্রেস অব লাভ বইয়ের জন্য। তিনি কানাডার সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কারও পেয়েছেন। আর সাহিত্যে নোবেলের পর সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৯ সালে। দ্য বেয়ার কাম ওভার দ্য মাউন্টেন বইয়ের জন্য তিনি ওই পুরস্কার পান।

তার এই বই অবলম্বনে পরিচালক সারাহ পলি তৈরি করেন সিনেমা অ্যাওয়ে ফ্রম হার। তার প্রকাশিত অন্যান্য ছোটগল্পের সংকলনের মধ্যে আছে লাইভস অব গার্লস অ্যান্ড উইম্যান-১৯৭১, সামথিং আই হ্যাভ বিন মিনিং টু টেল ইউ-১৯৭৪, দ্য মুনস অব জুপিটার-১৯৮২, ফ্রেন্ড অব মাই ইয়োথ-১৯৯০, ওপেন সিক্রেটস-১৯৯৪, দ্য লাভ অব আ গুড উইম্যান-১৯৯৮।

 

পুরুষের চেয়ে বেশি অসুস্থ হন নারীরা

গড় হিসাবে পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি দিন বাঁচে। কিন্তু সেই জীবদ্দশায় পুরুষের চেয়ে বেশি অসুস্থ হন নারীরা। জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেট পাবলিক হেলথ জার্নালে প্রকাশিত ফলাফলে এমনটাই দেখা যাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচে কিন্তু দুর্বল স্বাস্থ্য নিয়ে। ফলে নারীদের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতেও জোর দিয়েছেন তারা। দ্য গার্ডিয়ান।

বিশ্বের ২০টি রোগের প্রধান কারণের প্রভাব পরীক্ষা করে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।

সাধারণত বিষণ্নতা, মাথাব্যথা, উদ্বেগ, হাড় ও পেশির সমস্যা, স্মৃতিভ্রম, এইচআইভি সমস্যাগুলো নারীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। এ ধরনের অসুখগুলো মারাত্মক শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি না করলেও অসুস্থতা ও অক্ষমতা তৈরি করে। ফলে নারীদের অকালমৃত্যুর হার কম।

অন্যদিকে গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২১ সালে অসুস্থতা ও মৃত্যুর শীর্ষ ২০টি কারণের মধ্যে ১৩টি কারণই পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা গেছে। যেমন-কোভিড-১৯, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়া, হৃদরোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, যকৃতের রোগের মতো সমস্যাগুলো নারীর চেয়ে পুরুষদের মধ্যে বেশি। এগুলোর মধ্যে অধিকাংশই প্রাণঘাতী ফলে পুরুষদের মধ্যে মৃত্যুর হার তুলনামূলক বেশি।

গবেষণার সিনিয়র লেখক ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই)-এর ডা. লুইসা সোরিও ফ্লোর বলেছেন: ‘এই প্রতিবেদনটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে, গত ৩০ বছরে স্বাস্থ্যবিষয়ক অগ্রগতি বিশ্বব্যাপী অসম ছিল। নারীরা দীর্ঘজীবী হলেও বেশির ভাগ সময় অসুস্থ থাকেন। বয়স্ক অবস্থায় নারীদের শারীরিক ও মানসিক কার্যক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এখন সেদিকে নজর দেওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছে।’ তবে এই গবেষণাটিতে স্ত্রীরোগ এবং প্রোস্টেট ক্যানসারের মতো লিঙ্গভিত্তিক স্বাস্থ্য অবস্থার তথ্যগুলো নেওয়া হয়নি।

সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর

 

দ্বীপ বাঁচাতে একাট্টা নারীরা

পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী ক্যারিবীয় দ্বীপ অ্যান্টিগার বাসিন্দা কিনিয়াহ ম্যাকে। ছবি : বিবিসি
ক্যারিবীয় দ্বীপ অ্যান্টিগার বাসিন্দা কিনিয়াহ ম্যাকে। বয়স মাত্রই ১১ বছর। হলে কী হবে, এই বয়সেই মেয়েটি জলবায়ু সংকট সম্পর্কে রীতিমতো সচেতন! কিনিয়াহ জানে, গাছ কমে গেলে পরিবেশে অক্সিজেন হ্রাস পায়। আরো জানে, উপকূলে আবর্জনা ফেললে সামুদ্রিক কচ্ছপরা মরে যায়, যারা কিনা সুন্দর রাখে সমুদ্রের পরিবেশ।

‘তরুণদের পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে’—বলে কিনিয়াহ। কথাটা বলার সময় এমন ভাবগম্ভীর দেখায় তাকে, কে বলবে বয়স মাত্রই ১০ পেরিয়েছে। বিবিসির সাংবাদিক যখন কিনিয়াহ ম্যাকের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন মাত্রই মার্চের মাঝামাঝি। কিন্তু এরই মধ্যে সূর্য ভয়ানক রকম তাপ ছড়াচ্ছে চারদিকে।

কিনিয়াহর ক্লাসরুমের বৈদ্যুতিক পাখাগুলো বনবন করে ঘুরেও যথেষ্ট ঠাণ্ডা করতে পারছে না ঘর।
ক্যারিবীয় অঞ্চলের বাকি অংশের মতো অ্যান্টিগায়ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিত্যদিনের বাস্তবতা। সৈকতের আকার হ্রাস, ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রা ক্রমেই তীব্র হওয়া, তীব্র খরা আর গ্রীষ্মকালের ক্রমেই দমবন্ধ করা হয়ে ওঠা তার প্রমাণ।

তবে দ্বীপের মানুষের একাংশ এ অবস্থার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে লড়ছে।

কিনিয়াহ তাদেরই একজন। ওদের এলাকার ৬০ জনের বেশি বিভিন্ন বয়সের নারীকে উপকূল রক্ষার কর্মী হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় ক্ষয় কমানোর জন্য দেশীয় গাছ লাগানো, বিপন্ন কচ্ছপের বাসা বাঁধার স্থানগুলো রক্ষা এবং সৈকতের আবর্জনা রাখার ডাস্টবিন তৈরি ও তার ব্যবস্থাপনার কাজ দেওয়া হয়েছে তাদের।
স্থানীয় এনজিও ‘অ্যাডপ্ট-এ-কোস্টলাইন’-এর নেওয়া এই প্রকল্পটি এতটাই সফল যে গত আগস্টে জাতিসংঘের গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) থেকে এক লাখ ডলার অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। ৬০০ আবেদনের মধ্যে নির্বাচিত মাত্র ২৩টি উদ্যোগের অন্যতম এটি।

এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক ক্যাট বাইলস জানিয়েছেন, তাঁদের কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার বিষয়ে নারী ও কম বয়সী মেয়েদের ‘আরো বেশি সোচ্চার হতে’ উৎসাহিত করা।
নারী-পুরুষের কাজকর্মের ক্ষেত্র নিয়ে এখনো ক্যারিবীয় অঞ্চলের বেশির ভাগ অংশে সেকেলে ভাবধারা বহাল। কিনিয়াহদের স্কুলের প্রিন্সিপাল রায়োনা শ জোসেফ তাঁর একদল শিক্ষার্থীকে নিয়ে সৈকত পরিচ্ছন্ন করার কর্মসূচিতে যুক্ত হয়ে খুবই আনন্দিত। ‘প্রাকৃতিক সম্পদের যত্ন নেওয়াটা শিশুদের শেখাতে হবে, যাতে তা ভবিষ্যতের জন্য টিকিয়ে রাখা যায়’, বলেন তিনি।

অ্যান্টিগার মাত্র ২৪ বছরের তরুণ এমপি কাইশা জোসেফ একদিন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। আপাতত তাঁর মনোযোগ অবশ্য তরুণদের নিয়ে অ্যাডপ্ট-এ-কোস্টলাইনের পরিবেশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার ওপরই নিবদ্ধ।

বিবিসিকে কাইশা জোসেফ বলেন, ‘আমরা অ্যান্টিগা এবং বারবুডায় এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলেছি, যেখানে কিছু ভূমিকা শুধু পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট করা আছে। অনেক নারীই এখনো সেই ধাত্রী, শিক্ষক এবং সেক্রেটারির মতো গতানুগতিক চাকরির পেছনেই ছোটেন।’

অ্যান্টিগার পশ্চিম উপকূলের পেনশনারস বিচ কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবকদের দেখভাল করা জায়গাগুলোর মধ্যে একটি। কাইশা স্বেচ্ছাসেবী দলটির ফেলে দেওয়া টায়ার থেকে তৈরি করা ডাস্টবিনগুলোকে দেখালেন বিবিসির সাংবাদিককে। এ কাজে না লাগানো হলে টায়ারগুলোর ঠাঁই হতো ভাগাড়ে। ধবধবে সাদা বালির এ সৈকতের কিনার ঘেঁষেই রয়েছে সিগ্রেপ গাছের সারি। দৃশ্যটা ভিউকার্ডের ছবির মতোই নয়নাভিরাম। প্রতিবছর এই রৌদ্রোজ্জ্বল দ্বীপে আসা লাখো পর্যটককে মুগ্ধ করে এই ছবি। কিন্তু মুগ্ধ পর্যটকের ঢলের বিপরীত চিত্রটি হচ্ছে অবিরাম বর্জ্য জমে ওঠা। ভ্রমণের মৌসুমে প্রায়ই রাজধানী শহরের বন্দরে দেখা যাবে এক থেকে কয়েকটি বিশাল পর্যটকবাহী প্রমোদতরি।

আগামী মে মাসেই অ্যান্টিগায় বসছে জাতিসংঘের চতুর্থ উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র সম্মেলন। তখনো বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতাসহ কয়েক হাজার দর্শনার্থীর চরণ পড়বে এখানে। জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাবের সম্ভাব্য শিকার ছোট দ্বীপগুলোর টেকসই উন্নয়নের সামর্থ্য মূল্যায়ন করা এ সম্মেলনের লক্ষ্য। এমপি কাইশা জোসেফের মতো তরুণী নারীদের মতামত এখানে গুরুত্বপূর্ণ হবে।

অ্যান্টিগা সরকারের যুব দপ্তরের কর্মকর্তা ক্যারোলাইন পেরি বলেছেন, এখন আগের চেয়ে বেশি নারী উচ্চতর শিক্ষা নিলেও তাঁরা এখনো উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার চাকরি পেতে বেগ পান। তাঁর মতে, মেয়েদের অল্প বয়স থেকেই ক্ষমতায়িত করা গেলে সমাজের রূপান্তর ঘটবে।

অ্যাডপ্ট-এ-কোস্টলাইন মেয়েদের দাতব্য দোকানে বিক্রির জন্য সামুদ্রিক বর্জ্য থেকে গহনা, পাখির বাক্স এবং বেঞ্চ তৈরি করা শিখিয়ে কিছু হলেও আয়ের পথ করে দিচ্ছে। অ্যান্টিগার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা জেনিফার মেরান্টো ২০০৯ সালে এনজিওটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সবার আগে নিজের ‘কৃতকর্মের প্রতিকার’ করতে চান। এ জন্য নিজে গত ২০ বছরে দ্বীপের মাটিতে যে পরিমাণ আবর্জনা সৃষ্টি করেছেন তার একটা সম্ভাব্য হিসাব বের করেছেন। তিনি দেখেছেন, বর্জ্যের বেশির ভাগই শেষ পর্যন্ত সমুদ্রে যায়। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগে নিজের ‘অবদান’ মুছে ফেলবেন।

দ্বীপের সৈকতগুলো থেকে এক হাজার ব্যাগ বর্জ্য সরানোর মাধ্যমে কাজটা শুরুও করেছেন জেনিফার মেরান্টো। সূত্র : বিবিসি।

 

প্রথম নারী উপাচার্য পেল ভারতের আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়

ভারতের উত্তর প্রদেশে অবস্থিত প্রাচীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে (এএমইউ) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক নাইমা খাতুন। বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসে এই প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ভারতের রাষ্ট্রপতি মুর্মু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য অধ্যাপক নাইমা খাতুনকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। তার আগে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় নাইমা খাতুনকে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নাইমা খাতুনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে। অধ্যাপক নাইমা খাতুন আগামী পাঁচ বছর এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন।

ভারতের ইতিহাসে অন্যতম প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন নাইমা। অবশ্য তাঁর আগে ১৯২০ সালে বেগম সুলতান জাহান বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর বা আচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অধ্যাপক নাইমা খাতুন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিলেন। এখান থেকে মনোবিজ্ঞানের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৮৮ সালে একই বিভাগেই প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৬ সালে অধ্যাপক হন। পরে ২০১৪ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ওমেনস কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। মাঝে এক বছর আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ১৮৭৫ সালে মোহামেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯২০ সালে সেটিকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। ২০২৩ সালের এপ্রিলে তৎকালীন উপাচার্য ও বিজেপি সহসভাপতি তারিক মনসুরের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কোনো পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য ছিলেন না। অবশেষে নিয়োগ পেলেন নাইমা।

 

সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন যেসব নারী

১৯০১ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার।  নোবেলপ্রাইজ. অর্গ এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ১২০ জন লেখককে সাহিত্যে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।  এদের মধ্যে মাত্র ১৭ জন নারী লেখক মর্যাদাবান এই পুরস্কারটি পেয়েছেন।

১. অ্যানি এরনো

নিজের বইয়ে স্বাক্ষর করছেন আনি এরনো

ফরাসি কথাসাহিত্যিক অ্যানি এরনো ২০২২ সালের সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ জিতেছেন। ফ্রান্সের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী যিনি মর্যাদাবান এই পুরস্কারটি পেলেন। ৮৩ বছর বয়সী এই লেখক ৫ দশকের বেশি সময় ধরে লেখালেখি করে ২০টির বেশি বই প্রকাশ করেছেন। এই বইগুলোতে তিনি নির্ভীকভাবে যৌনমিলন, অসুস্থতা, বার্ধক্য এবং মৃত্যুর মত জীবনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মুহুর্তগুলো গভীরভাবে অনুসন্ধান করেছেন।

 

২. লুইস গ্লিক 

২০২০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান মার্কিন কবি এবং প্রাবন্ধিক লুইস গ্লিক। তিনি পুলিৎজার, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। তার উল্লেখযোগ্য বই হলো, দ্য ওয়াইল্ড আইরিশ, ভিটা নোভা, অ্যাভের্নো।

 

৩. ওলগা তোকারচুক

নোবেল জয়ী ওলগা তোকারচুক ...

পোল্যান্ডের লেখক, সমাজকর্মী, নারীবাদী এবং বুদ্ধিজীবী ওলগা তোকারচুক ২০১৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ৬২ বছর বয়সী এই লেখক ২০১৮ সালে তার ফ্লাইট উপন্যাসের জন্য ইন্টারন্যাশনাল বুকার প্রাইজ পান। দ্য বুকস অব জ্যাকব উপন্যাসকে তোকারচুকের শ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবে অভিহিত করা হয়। নোবেল কমিটি এটিকে তার ম্যাগনাম ওপাস বা মহৎ কর্ম বলে উল্লেখ করেছে। তার উল্লেখযোগ্য বই হলো, দ্য বুকস অব জ্যাকব, ড্রাইভ ইয়োর প্লো ওভার দ্য বোনস অব দ্য ডেড, দ্য লস্ট সোল।

৪. সোয়েতলানা আলেক্সিয়েভিচ

বেলারুশের অনুসন্ধানী সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক সোয়েতলানা আলেক্সিয়েভিচ ২০১৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। তার লেখাকে দুর্ভোগের স্মারক এবং সময়ের সাহসী লেখনী বলে উল্লেখ করেছে নোবেল কমিটি। তিনিই বেলারুশের প্রথম লেখক যিনি সম্মানজনক এই পুরস্কার পেয়েছেন। ভয়েস ফ্রম চেরনোবিল তার সাড়া জাগানো একটি বই। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া কয়েকশ নারীর সাক্ষাতকারের উপর ভিত্তি করে তিনি লিখেছেন, ‘দ্য আনউইমেনলি ফেস অব ওয়ার: অ্যান ওরাল হিস্ট্রি অব উইমেন ইন ওয়ার্ল্ড ওয়ার টু’।

 

৫. অ্যালিস মুনরো

On “Dear Life”: An Interview with Alice Munro | The New Yorker

২০১৩ সালে কানাডিয়ান অ্যালিস মুনরো সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। মূলত ছোটগল্প লেখেন মুনরো। নোবেল কমিটি তাঁর কাজকে বলেছে, ‘সমসাময়িক ছোটগল্পের গুরু।’ কিশোর বয়স থেকেই লেখালেখি শুরু করেন মুনরো। তাঁর প্রথম ছোটগল্পের সংকলন ‘দ্য ডাইমেনশন্স অব শ্যাডো’ প্রকাশিত হয় ১৯৫০ সালে। সে সময়ে ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিওতে ইংরেজি ও সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ছিলেন তিনি। ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর আরেকটি ছোটগল্প সংকলন ‘ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস’।

৬. হার্টা মুলার

Herta Müller wird 70: Ein kalter, klarer Blick auf die Welt২০০৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পান জার্মান-রোমানিয়ান লেখিকা হার্টা মুলার। ভাষার কাব্যিকতার জন্য তাঁর লেখনী বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছে। ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হয় মুলারের প্রথম ছোটগল্পের বই ‘নিয়েদেরুনজেন’ (নাদিরস)। এ গল্পগ্রন্থকে অনেকটাই মুলারের রোমানিয়ান জীবনের আত্মকথা বলে মনে করা হয়। মুলারের বিখ্যাত কাজের মধ্যে রয়েছে ২০০৯ সালে প্রকাশিত ‘দ্য হাঙ্গার অ্যাঞ্জেল’ উপন্যাসটি।

৭. ডরিস লেসিং

Doris Lessing obituary | Doris Lessing | The Guardian

২০০৭ সালে সাহিত্যে নোবেল পান ডরিস। সাহিত্যে নোবেলজয়ীদের মধ্যেই তিনি সবচেয়ে বয়স্ক। রাজনৈতিক এবং নারীবাদ তাঁর লেখনীর মূল শক্তি। ১৯৫০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য গ্রাস ইজ সিংগিং’। জিম্বাবুয়ের মানুষের মধ্যে জাতি ও বর্ণবাদের যে বিরোধ, তাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে উপন্যাসটিতে। এ ছাড়া ব্রিটিশ এই লেখিকার বিখ্যাত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ১৯৬২ সালে প্রকাশিত ‘দ্য গোল্ডেন নোটবুক’।

৮. এলফ্রিদে জেলিনেক

2004 সালে জেলেনেক

২০০৪ সালে সাহিত্যে নোবেল পান তিনি। অস্ট্রিয়ান এই ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার প্রথম জীবনে ছিলেন একজন মিউজিশিয়ান। ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘লিসা’স শ্যাডো’। নারীর যৌন স্বাধীনতা তাঁর লেখার মূল উপজীব্য। তাঁর বিভিন্ন বক্তব্য অনেক সময় বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত ‘দ্য পিয়ানো টিচার’ তাঁর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস।

৯. ভিসলাভা সিমবরস্কা

Preminula Vislava Šimborska | SEEcult.org

১৯৯৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পান উইসলাওয়া। পুরস্কৃত করার সময় নোবেল কমিটি তাঁকে ‘কবিতার মোজার্ট’ বলে সম্বোধন করে। যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদ উইসলাওয়ার লেখার মূল বিষয়। ১৯৪৫ সালে এই পোলিশ কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘আই অ্যাম লুকিং ফর এ ওয়ার্ড’ প্রকাশিত হয়। ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর শেষ কাব্যগ্রন্থ ‘ডুয়েকরোপেক’।

১০. টনি মরিসন

টনি মরিসন

১৯৯৩ সালে সাহিত্যে পুরস্কার পান মার্কিন লেখিকা টনি মরিসন। আফ্রিকান-আমেরিকান চরিত্রগুলো তাঁর লেখায় মুখ্য হয়ে ওঠে। ১৯৭০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’। এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণীর কাহিনী এই উপন্যাসে বর্ণনা করা হয়েছে, যে কি না খুব করে চায় তার চোখটা যেন নীল হয়ে যায়। ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত হয় টনির আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস ‘বিলাভেড’। এ উপন্যাসের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পান তিনি। উপন্যাস অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়, যাতে অভিনয় করে অপেরাহ উইনফ্রে।

 

১১. নাদিন গর্ডামার

https://www.nobelprize.org/images/gordimer-13432-portrait-medium.jpg

১৯৯১ সালে সাহিত্যে নোবেল পান দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া এই লেখিকা। নোবেল কমিটি তাঁর কাজের বর্ণনায় বলে, ‘মানবতার জন্য অত্যন্ত সুখকর।’ বর্ণবাদ নিয়ে বেশি লেখালেখি করেছেন নাদিন। বিশেষ করে জন্মভূমি দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদের ভয়াবহ চিত্র তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে। ১৯৫১ সালে দ্য নিউইয়র্কার পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম গল্প ‘দ্য ওয়াচার অব দ্য ডেড’। এই লেখার মাধ্যমে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য কনজারভেশনিস্ট’। এই উপন্যাসের জন্য ফিকশন ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে ম্যান বুকার পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি।

 

১২. নেলি স্যাচস

Central Press/Getty Images

১৯৬৬ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান নেলি। জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি বেড়ে ওঠেন সুইডেনে। কবি ও নাট্যকার নেলির লেখার মূল উপজীব্য বিষয় নাৎসি বাহিনীর ক্ষমতায় আরোহণের পর ইহুদিদের বিষাদময় জীবনের কথা। গীতিকাব্যধর্মী ধরনের লেখা তাঁর মূল শক্তি। ১৯৪৩ সালে তিনি লেখেন তাঁর নাটক ‘এলি : আ মিস্ট্রি প্লে অব দ্য সাফারিংস অব ইসরায়েল’। গণহত্যা নিয়ে লেখা এটাই পৃথিবীর প্রথম নাটক।

 

১৩. গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল

Gabriela Mistral: First Latina to Win the Nobel Prize in ...

১৯৪৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পান গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল। চিলির এই কবি হচ্ছেন লাতিন আমেরিকান অঞ্চলের একমাত্র নারী, যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। গ্যাব্রিয়েলার কবিতায় মূলত লাতিন আমেরিকার আলাদা সত্তার পরিচয় বারবার ঘুরেফিরে এসেছে। ১৯২২ সালে প্রকাশিত তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘ডিসপেয়ার’ সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল।

 

১৪. পার্ল বাক

পার্ল এস. বাক - উইকিপিডিয়া

১৯৩৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন পার্ল বাক। আমেরিকায় জন্ম নিলেও চীনে বড় হন এই লেখিকা। ৩০টির বেশি উপন্যাস লিখেছেন পার্ল বাক। এর বাইরেও রয়েছে তাঁর আত্মজীবনী, নন-ফিকশন ও ছোটগল্প। ১৯৩১ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘দ্য গুড আর্থ’ উপন্যাসটি রচিত হয়েছিল চীনের গ্রামীণ জীবন নিয়ে। এ উপন্যাসের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।

 

১৫. সিগরিড আন্ডসেট

Sigrid Undset - Wikipedia

১৯২৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পান সিগরিড আন্ডসেট। নরওয়ের এই লেখিকা তাঁর কাজ নিয়ে নানা রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। ইতিহাসভিত্তিক বেশ কিছু উপন্যাস লিখেছেন তিনি। ‘ক্রিস্টিন ল্যাভর‍্যান্সডেটার’ তাঁর বিখ্যাত ট্রিলজি, যা ১৯২০ সাল থেকে প্রকাশিত হয়। ১৫০০ শতকের এক নারীর জীবনী নিয়ে সিগরিড দীর্ঘ এই উপন্যাস লিখেছিলেন।

 

১৬. গ্রাজিয়া ডেলেড্ডা

Grazia Deledda - Wikipedia

১৯২৬ সালে নোবেল পান গ্রাজিয়া ডেলেড্ডা। সার্দিনিয়ায় জন্মগ্রহণ করা এই ইতালিয়ান লেখিকার লেখায় ঘুরেফিরে এসেছে তাঁর জন্মস্থানের মানুষের ভালোবাসা ও পাপের গল্প। এসেছে তাঁর নিজের পরিবারের গল্প। প্রথম ইতালিয়ান নারী হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন গ্রাজিয়া। ১৯২০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর উপন্যাস ‘লা মাদরে’। যেখানে এক সার্দিনিয়ান মায়ের গল্প বলা হয়েছে, যার একমাত্র ছেলে প্রেমে পড়ে এক বিধবার।

 

১৭. সেলমা লাগেরলফ

সেলমা লাগেরলফ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার

১৯০৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পান সেলমা। সুইডেনে জন্ম নেওয়া সেলমা হচ্ছেন পৃথিবীর প্রথম নারী, যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। শিশুসাহিত্যিক হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিত ছিলেন। ১৯০৬ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর বই ‘দ্য ওয়ান্ডারফুল অ্যাডভেঞ্চার্স অব নিলস’।

 

নারী উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তি সহজ করতে হবে: স্পিকার

 

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ, আর্থিক সহায়তা ও প্রণোদনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, `আমাদের দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে নারীরা একটি বড় অংশ। তাদের সহজ ঋণপ্রাপ্তি, আর্থিক সহায়তা এবং প্রণোদনা দিয়ে এগিয়ে নেওয়া হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের মতো এগিয়ে যাবে।’

শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় অপরাজিতা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খান ফাউন্ডেশন, ডেমোক্রেসিওয়াচ, প্রিপ ট্রাস্ট ও রূপান্তর যৌথভাবে এর এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, নারীরা তাদের সংগ্রাম ও যোগ্যতার জন্য বিভিন্ন স্তরে অবস্থান করলেও এখনো নারীরা কিছু ক্ষেত্রে অবহেলিত।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, এমপি অ্যারোমা দত্ত, এমপি নাসিমা জামান ববি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি।

সম্মেলনে দেশের ছয় বিভাগ থেকে আসা ৩০০ ‘অপরাজিতা’ নারী নেত্রীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং প্রকল্পের দাতা সংস্থা ও বাস্তবায়নকারী সংস্থাসমূহের কর্মকর্তা ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

গরমে খাবারের তালিকায় রাখুন প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার

 

 

প্রোবায়োটিক হলো কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার সাথে লড়াই করে আমাদের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে ।  গরমে প্রোবায়োটিক রয়েছে এমন খাবার খাওয়া ভালো। এগুলি খেলে মনও ভালো হয়, কারণ এ খাবারগুলোর মাধ্যমে শরীরে কিছু হরমোন নিঃসৃত হয় যা আপনাকে ভালো বা খুশি বোধ করতে সাহায্য করে।

চলুন জেনে নেই কোন খাবারগুলোতে প্রোবায়োটিক রয়েছে:

 

দই

Got Leftover Dahi? Here Are 3 Ways You Can Use It | HerZindagi

প্রোবায়োটিকের উন্নত উৎস টকদই। এটি অন্ত্রের ও হাড়ের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি করে।
দইয়ে প্রচুর একটিভ ব্যাকটেরিয়া থাকে যেগুলো আমাদের অন্ত্রের জন্য উপকারী। শরীরে দরকারি ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে পাচক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। দই দুধ থেকে তৈরি হলেও এতে দুধের চেয়ে বেশী প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম এবং প্রোবায়োটিক থাকে। বেশি উপকারিতা পেতে আপনি ঘরেই দই বানিয়ে খেতে পারেন।

পনির

Probiotic Foods — 30 Foods for Gut Health

দেশের বাজারে বিভিন্ন ধরনের পনির পাওয়া যায়। কটেজ চিজ বা পনিরে প্রোবায়োটিক সবচেয়ে বেশী থাকে। এই পনির সাধারণত নানারকম রান্নায় ব্যবহৃত হয় এবং এতে প্রোটিনও অনেক বেশী মাত্রায় থাকে। এতে অ্যাসিডের পরিমাণ কম থাকায় ভালো ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে সাহায্য করে। ফার্মেন্টেশনের পরেও পনিরে আসল দুধের প্রায় ৯০% ফ্যাট এবং প্রোটিন, ৫০% মিনারেল, এবং ১০% ল্যাক্টোজ বর্তমান থাকে।

 

বাটার মিল্ক

Health Benefits Of Buttermilk

মাঠা, বাটার মিল্ক অনেক জনপ্রিয় ও সুপরিচিত পানীয়। অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যের মতো, এতেও প্রচুর পরিমানে প্রোবায়োটিক রয়েছে। দই এর মতই এর স্বাদও কিছুটা টক। খাবারের পরে এক গ্লাস বাটার মিল্ক পান করলে আপনার হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। শুধু তাই নয়, এটি আপনার অভ্যন্তরীণ সিস্টেম যে ভালো অবস্থায় আছে তা নিশ্চিত করে। বাটার মিল্ক বা ঘোল বয়স্ক লোকদের জন্য বেশ উপকারী পানীয়।

 

উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. ইয়াসমীন আরা লেখার ডি-লিট ডিগ্রি অর্জন

ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি অর্জন করেছেন উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা লেখা।

৪ এপ্রিল অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা লেখাকে এই ডিগ্রি প্রদান করে রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন আরা লেখার থিসিসের টপিক ছিল ‘বাংলাদেশের প্রবাদ প্রবচন: ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ’। তার থিসিসের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. এসকে পাল।

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে উত্তরা ইউনিভার্সিটির নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন এই শিক্ষাবিদ। ড. লেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ে ১৯৯২ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৯৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। গবেষক হিসেবে অর্জনের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

 

 ১৭৩ দেশ ভ্রমণের মাইলফলক স্পর্শ করলেন বাংলাদেশি পরিব্রাজক 

বাংলাদেশি বিশ্ব পরিব্রাজক নাজমুন নাহার ১৭৩ দেশ ভ্রমণের ব্যক্তিগত মাইলফলকটি স্পর্শ করেছেন। আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কার ভ্রমণের মাধ্যমে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই অনন্য রেকর্ডটি গড়েছেন তিনি।
রোববার মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভো ছাড়া আগে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাজমুন নাহার নিজেই। তিনি জানান, ‘এবারের ভ্রমণটি ছিল বেশ দুর্ধর্ষ ও কষ্টসাধ্য অভিজ্ঞতার। মঙ্গোলিয়া, সিরিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সী শেল ও মাদাগাস্কার—প্রতিটি দেশের অভিজ্ঞতাই ছিল একেকটার চেয়ে ভিন্ন।’
নাজমুন এ বছরের শুরুতেই এবারের অভিযাত্রা শুরু করেন মঙ্গোলিয়া থেকে। ১৬৮ তম দেশ হিসাবে মঙ্গোলিয়া ও দুর্গম সাইবেরিয়া অঞ্চল অভিযাত্রা করেন ডব্লিউপিসি- ওয়ার্ক পারমিট ক্লাউডের পৃষ্ঠপোষকতায়। মঙ্গোলিয়ার জনপ্রিয় পত্রিকা ‘জুনিমেডে (সেঞ্চুরি)’ এবং গো পো গণমাধ্যম নাজমুনকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
রমজানের প্রথমেই নাজমুন অভিযাত্রা শুরু করেছেন পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং দেশগুলো ভ্রমণের মাধ্যমে। এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল মানব কল্যাণে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা। তাই আরএফসি- রামাদান ফ্যামিলি কমিটমেন্টের অ্যাম্বাসেডর হয়ে ‘সাফার ফর পিস’-এর এই অভিযাত্রায় শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে নাজমুন যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, আফ্রিকান কন্টিনেন্টের দেশ সী শেল এবং পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশ মাদাগাস্কার ভ্রমণ করেন।
এই ৫টি দেশে নাজমুন ভ্রমণ করেন ৫৬ হাজার ৭৭ কিলোমিটার পথ। যা ছিল অত্যন্ত দুর্গম এবং কঠিনতম দেশ ভ্রমণের অংশ। এই সফরে বাংলাদেশের পতাকা বাহনের পাশাপাশি ইউকে বেসড টিভি চ্যানেল, চ্যানেলে এস এর  উদ্যোগে ২৬টি চ্যারিটিকে সহযোগিতার জন্য মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করেছেন নাজমুন।
বাংলাদেশি এই পরিব্রাজক জিম্বাবুয়ে ভ্রমণের মাধ্যমে শততম দেশ পূর্ণ করেছিলেন ২০১৮ সালের ১ জুন। এরপর ২০২১ সালের অক্টোবরে তিনি ১৫০টি দেশ ভ্রমণ সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু এখনো তিনি থেকে নেই। লাল-সবুজের পতাকা হাতে তার জয়যাত্রা চলছেই।

 

প্রথম পেশাদার নারী সাহিত্যিক আফরা বেন

 

বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম পেশাদার নারী সাহিত্যিক আফরা বেন (Aphra Behn) বিখ্যাত হয়েছিলেন তাঁর রচিত নাটক, গল্প, কবিতা, উপন্যাস ও অনুবাদ সাহিত্যের কারণে। ইংল্যান্ডের ক্যান্টাবেরির কাছে ১৬৪০ সালের ১৪ ডিসেম্বরে জন্মেছিলেন তিনি। এখনকার সময়ের চেয়েও পিছিয়ে থাকা সময়ে নারী হয়ে তিনি লিখেছিলেন তৎকালীন সমাজের রূঢ় বাস্তবতাগুলো নিয়ে। জীবিত অবস্থায় তিনি ছিলেন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। তাঁর লেখায় সমাজ সচেতনতা, লিঙ্গসমতা ও বর্ণবাদ বিরোধিতা তাঁকে সাহিত্যজগতে করে তুলেছে অনন্য। নিজেকে একজন পেশাদার লেখক হিসেবে তিনি দাবি করতেন। শুধু লেখালেখি করেই তিনি স্বাধীনভাবে জীবিকা নির্বাহ করেছিলেন ওই সময়ে। সে হিসেবে পৃথিবীর প্রথম পেশাদার নারী লেখক হিসেবে তাঁকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

আফরা বেনের জনপ্রিয় একটি উপন্যাস ‘অরুনোকো’ (Oroonoko), যেটিকে আজও ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে ধরা হয়। তাঁর মৃত্যুর এক বছর আগে ১৬৮৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল উপন্যাসটি।
আফ্রিকার সুরিনাম দেশের রাজপুত্র অরুনোকোর দাস মালিকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কাহিনী নিয়েই এই উপন্যাস। অরুনোকোর কাহিনী ছিল অনেকটা এমন :
অরুনোকোর পিতামহ (দাদা) ছিল আফ্রিকার একটি সম্প্রদায়ের রাজা। প্রচণ্ড লোভী ও বর্বর এই রাজার ছিল অনেক পত্নী-উপপত্নী ও সেবা দাসী। অরুনোকো ভালোবেসেছিল ইমোইন্ডাকে, গোপনে বিয়েও করেছিল তারা। কিন্তু অরুনোকোর দুশ্চরিত্র দাদা ইমোইন্ডাকে বিয়ে করতে চায়। তাতে রাজি না হওয়ায় জোর করে ইমোইন্ডাকে বানায় তার সেবাদাসী।
তবুও অরুনোকো আর ইমোইন্ডার প্রেম বাধা মানে না। একদিন ধরা পড়ে যায় ওরা। রাজা ইমোইন্ডাকে ক্রীতদাসী হিসেবে বেঁচে দেয় জঙ্গলে আর অরুনোকোকেও ক্রীতদাস বানিয়ে বিক্রি করে দেয়। অনেক জায়গায় হাতবদল হয়ে অরুনোকো একদিন সেই জঙ্গলেই নির্বাসিত হয়ে ফিরে আসে, যেখানে তার প্রেমিকা ইমোইন্ডা আছে।

আবার মিলন ঘটে অরুনোকো আর ইমোইন্ডার। সেখানে তারা নিয়মিত মিলিত হতে থাকে। ফলে ইমোইন্ডা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। নিরাপদ প্রসবের জন্য অরুনোকো ইমোইন্ডাকে দেশে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু এই আবেদন নাকচ করে দেয় ব্রিটিশ দাস মালিক ট্রেফরি ও ডেপুটি গভর্নর বিয়াম। প্রতিবাদী হয়ে ওঠে অরুনোকো। অন্যান্য ক্রীতদাসকে সঙ্গে নিয়ে মালিকের বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করে। সেই যুদ্ধে ক্রীতদাসরা পরাস্ত হয়। ইংরেজ ডেপুটি গভর্নর বিয়াম অরুনোকোর ওপর বর্বরতম নির্যাতন চালায়। তারপর শর্ত চাপিয়ে তাকে মুক্তি দেয়।

মুক্তি পেয়ে বিদ্রোহী অরুনোকো বিয়ামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নেয়। সেই যুদ্ধে তার মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। তার মৃত্যুতে স্ত্রী ইমোইন্ডার জীবনে যে অপমান নেমে আসবে, তা থেকে মুক্তি দিতে স্ত্রীর সম্মতিতে যুদ্ধের আগেই অরুনোকো ইমোইন্ডাকে হত্যা করে। কিন্তু বিয়ামকে মারতে পারে না অরুনোকো। বন্দি অরুনোকোকে মেরে রক্তাক্ত করে তার সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে সর্দারদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়।

দাসপ্রথার বিরুদ্ধে যোদ্ধা অরুনোকো যেন রোমের দাস বিদ্রোহের কিংবদন্তি নেতা স্পার্টাকাসেরই উত্তরসূরি। একই সঙ্গে অরুনোকো আমাদের সামনে একজন প্রেমিক ও স্বামীর প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে, যে তার স্ত্রীর সম্মান রক্ষার জন্য যুদ্ধ করে।

আফরা বেনের জীবন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। তথ্য খুবই কম, নির্ভরযোগ্য তথ্য আরো কম। পৈতৃক নাম আফরা জনসন। তাঁর শৈশব-কৈশোরের সময়টা ছিল ইংল্যান্ডের রাজতন্ত্রের সংকটকাল, যাকে ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধের কাল হিসেবে ধরা হয়।

ধারণা করা হয়, তিনি ১৬৬৩-৬৪ সালের দিকে আফ্রিকার সুরিনামে ছিলেন। আর সেখানেই তিনি অরুনোকোর কাহিনী বর্ণনাকারীর দেখা পান। ১৬৬৪ সালে লন্ডনে ফিরে তিনি মিস্টার বেন নামের এক বণিককে বিয়ে করেন। মিস্টার বেন ১৬৬৫ সালে মারা যান। তবে অনেকে মনে করেন, লেখিকা আত্মরক্ষার স্বার্থে নিজেকে বিবাহিত বলে দাবি করতেন, বাস্তবে তিনি বিয়েই করেননি।

ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লসের সুনজরে থাকায় কিছুদিন তিনি ব্রিটিশ সরকারের গুপ্তচর হিসেবেও কাজ করেছেন। বিনা বেতনের চর হিসেবে কাজ করতে গিয়ে অনেক দেনা করে ফেলেন লেখিকা, ফলে ঋণের দায়ে তাকে জেলখানায় কাজ করতে হয়েছিল। এর পর তিনি গুপ্তচরবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে নাটকে মনোনিবেশ করেন।

তাঁর প্রথম নাটক ছিল ‘দ্য ফোর্সড ম্যারেজ’ (১৬৭০), যা তাঁকে খ্যাতি ও অর্থ, দুই-ই এনে দেয়। ১৬৭১ সালে করেন ‘দি আমোরাস প্রিন্স’। এরপর একে একে ‘দ্য ডাচ লাভার’ (১৬৭৩), ‘আবদেলাজার’ (১৬৭৬), ‘দ্য টাউন ফপ’ (১৬৭৬), ‘দ্য ডেবাউচে’ (১৬৭৭), ‘দ্য কাউন্টার ফিট ব্রাইডগ্রুম’সহ (১৬৭৭) বেশ কয়েকটি সফল নাটক রচনা করেন।

ইংল্যান্ডের সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে (১৬৭৯-৮১) সেই সংকট নিয়ে মন্তব্য করার কারণে আফরা বেনকে আইনি হাঙ্গামা পোহাতে হয়।

আফরা বেনের সবচেয়ে সফল নাটক ছিল ১৬৭৭ সালে মঞ্চস্থ করা ‘দ্য রোভার’। ‘দ্য রোভার’-এর দ্বিতীয় অংশ মঞ্চস্থ করা হয় ১৬৮১ সালে। তাঁর অনেক নাটকেই যৌন বিষয় উপস্থাপনের কারণে সমসাময়িক সময়ে তিনি প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

তাঁর কবিতার বইয়ের মধ্যে ‘পোয়েমস আপন সেভারেল অকেশনস’ (১৬৮৪), ‘লাভ লেটারস বিটউইন এ নোবেল ম্যান অ্যান্ড হিজ সিস্টার’, ‘দি আমোরস অব ফিল্যান্ডার অ্যান্ড সিলভিয়া’ (১৬৮৭) উল্লেখযোগ্য।

মৃত্যুর আগে তিনি রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগেছিলেন। ১৬৮৯ সালের ১৬ এপ্রিলে লেখিকা মারা যান। তাঁকে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে সমাহিত করা হয়।

 

কঙ্গোর প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী জুডিথ সুমিনওয়া

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেডি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ দিয়েছেন।পরিকল্পনামন্ত্রী জুডিথ সুমিনওয়াকে কঙ্গোর প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জিন-মিশেল সামা লুকোন্ডের কাছ থেকে অর্থনীতিবিদ জুডিথ সুমিনওয়া প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত জানুয়ারিতে শিসেকেদির দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী এবং সরকার গঠন নিয়ে কয়েক সপ্তাহের অনিশ্চয়তার অবসান ঘটল।জাতীয় টেলিভিশনে নতুন প্রধানমন্ত্রী সুমিনওয়া বলেন, ‘আমি মহান দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন… আমরা শান্তি ও দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করব।’ কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট সিসেকেডি আনুষ্ঠানিকভাবে ডিসেম্বরে ৭৩.৪৭ শতাংশ ভোট নিয়ে বিজয়ী হন। দীর্ঘ সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতায় বিধ্বস্ত দেশটিতে নির্বাচন অনেকটা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।

সোনা এবং মূলবান খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ কঙ্গো।

গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে শতাধিক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াই করে আসছে দেশটির সরকার। এই সংঘাতে গত এক দশকে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ফলে নতুন প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।
সূত্র : রয়টার্স

 

যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে যে নারীর উদ্ভাবন

বিভিন্ন প্রয়োজনে এবং প্রিয়জনদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ইন্টারনেটে অডিও এবং ভিডিও কলের প্রযুক্তি উদ্ভাবন যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আমূল বদলে দিয়েছে। এক্ষেত্রে এককভাবে যাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি তাঁর নাম মারিয়ান রজার্স ক্রোক। তিনি বেলের হিউম্যান ফ্যাক্টরস বিভাগে শুরু করেছিলেন, মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে তা অধ্যয়নের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে।

১৯৯০ এর দশকের শুরুর দিকে দুই হাজারের বেশি প্রকৌশলীর একটি দল নিয়ে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি) প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কাজ শুরু করেন ক্রোক। ভিওআইপি পরবর্তীতে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগের দুয়ার খুলে দিয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভিওআইপির হাত ধরে পরবর্তীতে জুম, ফেসটাইম, স্কাইপির মতো অ্যাপ্লিকেশন বিকাশ লাভ করে।

মার্কিন টেলিযোগাযোগ কোম্পানি এটিঅ্যান্ডটিতে ক্রোকের নেতৃত্বে ১৯৯৫ সালে ভিওআইপির কাজ শেষ হয়। ভয়েসের ডেটা ডিজিটালাইজ করে তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ট্রান্সমিট করার মধ্য দিয়ে কাজ করে ভিওআইপি। এই প্রযুক্তিনির্ভর যোগাযোগ বিকাশ লাভ করার পর প্রচলিত টেলিফোন ব্যবস্থা বলতে গেলে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

করোনা মহামারির সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসে জুম বা অন্য মাধ্যমে ভিডিও কল ক্রোকের উদ্ভাবনের প্রভাবের কথা সবাইকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়। ভিওআইপিকে ভবিষ্যতের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অপরিহার্য বলে ধরা হয়।

ক্রোকের নামে প্যাটেন্ট করা উদ্ভাবনের সংখ্যা ২০০ এর বেশি। তাঁর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন ‘টেক্সট ডোনেশন’ প্রযুক্তি। মোবাইল ব্যবহারকারীরা টেক্সট ডোনেশন অ্যাপ ব্যবহার করে দুর্যোগকবলিত অঞ্চলের সার্বিক তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। রিয়েল-টাইমে এটি করা যায়। উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে এই প্রযুক্তি।

ক্রোক ২০১৪ সালে গুগলে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে নানা উদ্ভাবন চালিয়ে যাচ্ছেন। গুগলের প্রকৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বের মধ্যে ডিজিটাল ব্যবধান কমিয়ে আনতে, প্রযুক্তি খাতে বর্ণ ও লিঙ্গ সমতা তৈরি করতে কাজ করছেন ৬৯ বয়সী ক্রোক।

প্রসঙ্গত, যোগাযোগ ব্যবস্থায় অবদানের স্বীকৃতি হসেবে ২০২২ সালে ক্রোককের নাম আমেরিকার ন্যাশনাল ইনভেন্টরস হল অব ফেমে স্থান করে নেয়। এর আগে প্যাট্রিসিয়া বাথ নামে আরেকজন কৃঞ্চাঙ্গ নারী এ বিরল সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন।

 

তিন মাসে ধর্ষণের শিকার ১১৪ নারী: আসক

 

চলতি বছর প্রথম তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১৪ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে তিন জন নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন একজন নারী। ৩১ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৩৭ জন নারী। এর মধ্যে ৬৫ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৪৯ জন নারী। এছাড়া শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৩ জন।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৬ জন। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে পাঁচ জনকে এবং যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন দুই জন নারী। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আট জন। সাত জন গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা, চলতি বছর প্রথম তিন মাসে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৭৯ জন নারী-পুরুষ। তাদের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন ৫৫ জন নারী ও ২৪ জন পুরুষ। বখাটেদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন ৪৫ জন। বখাটেদের উৎপাতকে কেন্দ্র করে সংঘাতে আহত হয়েছেন ২৬ জন।

এতে আরও বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে গত তিন মাসে ৩২৫ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। এরমধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে ১৩৯ শিশু এবং একজন ছেলে শিশুকে বলাৎকারের পর হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ২৭ শিশু। বিভিন্ন সময়ে ৩২ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বলাৎকারের শিকার হয়েছে ১৪ ছেলে শিশু এবং বলাৎকারের চেষ্টা করা হয়েছে একজন শিশুকে।

আসক বলছে, হেফাজতে মৃত্যু, সীমান্তে হত্যা, সাংবাদিক নিপীড়নসহ মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে আইনের শাসন ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা জরুরি। অন্যথায়, বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায় এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়তে থাকে। রাষ্ট্রের কাছে নাগরিকের সব ধরনের মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার দ্রুততার সঙ্গে নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা, সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতাসহ বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২৬৮টি। এতে নিহত হয়েছেন ২৩ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৩৬৮ জন।

দেশের গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক ও নির্যাতন করে কারাগারে পাঠানোর পর ঢাকা ও চট্টগ্রামে ২ জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বিগত তিন মাসে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৩৫ জন। এর মধ্যে কয়েদি ১৪ জন এবং হাজতি ২১ জন। গত তিন মাসে ২০টি ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৩টি বাড়িসহ ২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া ১৫টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

গত তিন মাসে ৮১ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি, মামলা ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ এর গুলি ও নির্যাতনে নিহত হয়েছেন ছয় বাংলাদেশি নাগরিক। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও চার জন। অপর দিকে মিয়ানমার সীমান্তে মর্টার শেলের আঘাতে একজন বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশে আশ্রিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজন নিহত হয়েছেন।

তিন মাসে গণপিটুনীর ঘটনায় নিহত হন ১৭ জন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে ৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে একজন, খুলনা বিভাগে একজন এবং সিলেট বিভাগে একজন নিহত হয়েছেন।

সূত্রঃ আজকের পত্রিকaা

 

ভারতে নারীদের জন্য বছরে ১০ দিন বাড়তি ছুটি

নারীদের জন্য বছরে ১০ দিন বাড়তি ছুটির ঘোষণা করল ভারতের ওড়িষা রাজ্য সরকার।

আজ মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এতদিন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন অফিসে কর্মরত নারী কর্মচারীরা বছরে ১৫টি ক্যাজুয়াল লিভ (সিএল) পেতেন। এখন থেকে তাদের ক্যাজুয়াল লিভের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২৫টি।

নতুন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ওড়িষার মুখ্যন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। ‍মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে নারী সরকারি কর্মচারীদের বাড়িতে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। তাদের ওপর বাড়তি চাপ থাকে। সেটা বিবেচনা করেই ক্যাজুয়াল লিভের সংখ্যা ১০টি বাড়ানো হয়েছে।

অনেকে বলছেন, আসন্ন লোকসভা আর বিধানসভা নির্বাচনে নারী ভোটারদের মন জয় করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিল ওড়িষা সরকার। ইতোমধ্যে সরকারি চাকরিতে নারীদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষিত আসন রাখা হয়েছে।

গত বছরের অক্টোবরে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল স্কুটার কেনার জন্য দুই লাখ নারীকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেবে সরকার। সেজন্য কোনো সুদ দিতে হবে না। সেই প্রকল্পের আওতায় সুদ বহন করার জন্য পট্টনায়েক সরকারের তরফে ৫২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

 

ইফতারের আয়োজনে মজাদার কাস্টার্ড

 

ইফতারে পেট ও মনকে প্রশান্তি এনে দিবে এমন খাবারের খোঁজেই থাকেন অনেকে। যারা স্বাদ, পুষ্টি দুটো বিষয়কে এক সূতায় বাঁধতে চান তারা ইফতার আয়োজনে রাখতে পারেন ফ্রুট কাস্টার্ড।

আসুন জেনে নেই রেসিপি-

উপকরন
ইভাপোরেটেড মিল্ক ৩৫৪ মিলি (ইভাপোরেটেড মিল্ক না থাকলে আধা লিটার দুধ ঘন করে নিলেই হবে)
হেভি ক্রিম আধা কাপ
চিনি ৩ টেবিল চামচ বা স্বাদমত
কর্ণফ্লাওয়ার দেড় টেবিল চামচ
ডিমের কুসুম ১ টি
ভ্যানিলা এসেন্স ১ চা চামচ
ইচ্ছামত ফ্রুট (স্ট্রবেরি, কলা, আপেল, আঙ্গুর, আম, বেদানা)
জেলো আধা কাপ (২ ফ্লেভারের)

প্রস্তুত প্রণালী

প্রথমে প্যাকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলো তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিন সেট হবার জন্য।

এরপর একটি পাত্রে ইভাপোরেটেড মিল্ক, হেভি ক্রিম, চিনি, কর্ণফ্লাওয়ার, ভ্যানিলা এসেন্স এবং ডিমের কুসুম নিয়ে সব একসঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
পাত্রটি চুলায় বসিয়ে দিয়ে মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন। মিশ্রণটি ঘন ঘন নাড়ুন যাতে দুধ পাত্রের নিচে না লেগে যায়।
জ্বাল দিতে দিতে দুধের মিশ্রণ ঘন হয়ে গেলে চুলা বন্ধ করে দিয়ে পাত্র চুলা থেকে নামিয়ে নিন।

এখন রুম টেম্পারেচারে দুধ ঠাণ্ডা করে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন ২ ঘণ্টা।
সবশেষে পছন্দসই ফল এবং জেলো কেটে কাস্টার্ডের সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

 

ইফতার ও সেহরির খাবার কেমন হওয়া উচিত?

ইফতার : শুরু করা উচিত একগ্লাস পানি দিয়ে। ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে। কৃত্রিম শরবতের চেয়ে লেবুর শরবত স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে এক গ্লাসের বেশি শরবত না খাওয়াই ভালো। খেজুর অবশ্যই খাওয়া যেতে পারে।

 

ডায়াবেটিস রোগীরা একটি বা দুটি খেজুর খেলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে কম। ডায়াবেটিস রোগীরা চাইলে কম মিষ্টিযুক্ত খেজুর সংগ্রহ করতে পারেন। আলজেরিয়া থেকে আমাদের দেশে যেসব খেজুর আসে সেগুলোর মিষ্টি অনেক কম।

শসা খাওয়া যেতে পারে যেহেতু এখন পর্যন্ত এর মধ্যে রাসায়নিক পদার্থ মেশানো হয়নি। তরমুজ খেতে চাইলে সাবধানে খেতে হবে। কারণ তরমুজ টকটকে লাল রং করার জন্য অভিনব উপায়ে রঙিন রাসায়নিক পদার্থ তরমুজে প্রবেশ করানো হয়। পেট ভরে ইফতার করবেন না। এর ফলে পেটের সমস্যা ছাড়াও নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদত করতে সমস্যা হবে।

অনেক সুস্থ মানুষ এমনভাবে ইফতার করেন যে, পরের দিন ইফতার পর্যন্ত ক্ষুধা লাগে না। এভাবে খাবার গ্রহণ রোজার আদর্শ বিরোধী। মনে রাখতে হবে রোজার মাসে সব কিছুর মাঝে সংযম থাকতে হবে।

ইফতারের সময় রেস্টুরেন্ট এবং ফুটপাথে যেসব শরবত বিক্রি করা হয় তাতে বরফ মেশানো হয় যা মূলত সরবরাহ করা হয় মাছের জন্য ব্যবহৃত বরফ, এমনকি মৃত মানুষ সংরক্ষণ করার জন্য ব্যবহƒত বরফ থেকে। মাঝে মাঝে ছোটখাটো কারখানা থেকে নদীর দূষিত পানি দিয়ে বরফ তৈরি করে তা বাজারে সরবরাহ করা হয়।

শুধু ইফতারের শরবত নয় বরং রমজান মাসে কেনাকাটা করার সময় মেয়েরা বিশেষ করে লাচ্ছি এবং ফালুদা খাবেই। লাচ্ছি এবং ফালুদাতেও একই বরফ মেশানো হয়। মুড়ি, ছোলা, পিঁয়াজু, ঘুগনি, জিলাপি, ধনেপাতা সবকিছু এক করে মিশিয়ে সবাই মিলে ভাগাভাগি করে খাওয়ার মাঝে এক অন্য ধরনের আনন্দ রয়েছে।

কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে মুড়িকে বড় এবং সাদা করার জন্য ইউরিয়া মেশানো হয়। ইউরিয়া মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ইউরিয়া হজমের জন্য প্রয়োজনীয় ইউরিয়েজ এনজাইম মানব দেহে না থাকার জন্য মানুষ ইউরিয়া হজম করতে পারে না ফলে ইউরিয়া দেহের অভ্যন্তরে থেকে যায়। ইউরিয়া খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন জটিলতা সহ মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সাদা মুড়ি বর্জন করে হাতে ভাজা মুড়ি খেতে হবে।

ইফতারে কলা খেতে চাইলে কেনার সময় দেখেশুনে কিনতে হবে যেন কলাতে কার্বাইড মেশানো না থাকে। কার্বাইড পাকানো কলার বোঁটা হালকা সবুজ থাকে এবং কলার খোসা বা উপরিভাগ দাগহীন পরিষ্কার হলুদ রঙের হয়ে থাকে। স্বাভাবিক কলা কখনোই এরকম দাগহীন পরিষ্কার হলুদ রঙের হয় না। তবে ব্যতিক্রম দেখা যেতে পারে। ছোট চিনি চম্পা কলা অথবা বিচি কলা কিনতে পারেন। দাম কম বলে এবং লাভ কম হয় বলে রাসায়নিক মিশ্রণের সম্ভাবনা কম থাকে।

রমজান মাসে কেউ যদি হোটেলে খেতে বাধ্য হন তাহলে ভাতের সঙ্গে মুরগির মাংস না খাওয়াই ভালো। ঢাকা শহরের অধিকাংশ হোটেলে ভালো মুরগির সঙ্গে মরা মুরগিও রান্না করা হয়। তাই হোটেলে একান্তই খেতে হলে মুরগির পরিবর্তে মাছ খাওয়াই উত্তম।

কিডনি রোগীরা যদি রোজা রাখেন তাহলে ইফতারের সময় ডালের তৈরি কোনো ইফতার সামগ্রী গ্রহণ করবেন না। বেগুনি না খাওয়াই ভালো। বিভিন্ন রঙিন জিলাপি খাবেন না। রঙিন জিলাপিতে কৃত্রিম রং মেশানো থাকে। এটি আপনার কিডনির অবস্থা আরও খারাপ করে ফেলবে।

শুধু তাই নয় কৃত্রিম রং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। হালিম খাওয়া আপনার জন্য বিষের মতো। ইফতারের সময় কিডনি রোগীরা শুধু পানি দিয়ে ইফতার শুরু করবেন। ফলের মধ্যে আপেল, নাশপাতি খাবেন। দু একটি খেজুর খেতে পারেন। পালংশাক, পুঁইশাক, অথবা অন্য কোনো শাকের পাকুড়া খাবেন না। কাবাব জাতীয় খাবার খাবেন না। সামান্য ইফতার করে নামাজ পড়ার পর আপনি আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রাতের খাবার খেয়ে নেবেন। তরকারি হিসাবে চিচিঙ্গা, ধুন্দুল এবং লাউ খেতে পারেন।

সেহরি : সেহরি খাবার পর চা বা কফি পান করবেন না। সেহরিতে কোমল পানীয় অর্থাৎ কোল্ড ড্রিংকস খাবেন না। এতে দিনের বেলায় আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যাবে। ডিহাইড্রেশন হতে পারে। তখন আপনার রোজা রাখতে বেশ কষ্ট হবে। যারা মুখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন তারা সেহরি খাবার পর মলম জাতীয় ওষুধ মুখের অভ্যন্তরে ব্যবহার করবেন না।

রোজারত অবস্থায় মলম গলার অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে রোজা ভেঙে যাবে। রোজা রাখা অবস্থায় দিনের বেলায় টুথপেস্ট ব্যবহার করা যাবে না। মেসওয়াক করতে পারেন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে ইফতার থেকে শুরু করে সেহরি পর্যন্ত।

লেখক :ডা. মো. ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
চেম্বার : ইমপ্রেস ওরাল কেয়ার, বর্ণমালা সড়ক, ইব্রাহিমপুর, ঢাকা।

 

শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তি চান নারী গৃহকর্মীরা

শ্রম আইনে গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি এবং ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন ৫ শতাধিক গৃহকর্মী।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ-এর সুনীতি প্রকল্প আয়োজিত ‘গৃহকর্মী জাতীয় সম্মেলন ২০২৪’ শীর্ষক সম্মেলনে এই আহ্বান জানায় গৃহকর্মীরা।

‘সময় এখন গৃহকর্ম এবং গৃহকর্মীর’ প্রতিপাদ্যে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৫ শতাধিক গৃহকর্মীর অংশগ্রহণে আয়োজিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশিষ দামলে। সভাপতিত্ব করেন ডিএসকে’র নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শামসুল আলম বলেন, ‘সরকার নানানভাবে দেশের উন্নয়ন করছে। গৃহকর্মীদের জন্যেও এই সরকার সংবেদনশীল। তারই প্রমাণ ২০১৫ সালে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ প্রণয়ন করা। আমি মনে করি এ যাবতকাল পর্যন্ত গৃহকর্মীরা নিগৃহীত শ্রেণির। তাদের ছুটিছাটা নেই, যেখানে রান্না করেন সেখানেই ঘুমান, তারা নির্যাতিত হন এমনকি তাদের হত্যা পর্যন্ত করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহকর্মীদের মানবেতর জীবন থেকে সুস্থ জীবনে নিয়ে আসা, সেটাও একটা মানবিক সংগ্রাম। গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও শ্রমআইনে অন্তর্ভুক্তির দাবির সাথে আমি একমত। গৃহকর্মী নীতি ঠিকভাবে মনিটরিং হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, দেশে প্রায় ৪০ লাখ গৃহকর্মী রয়েছেন, আসন্ন জাতীয় বাজেটে তাদের জন্য সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখা যেতে পারে। সর্বশেষ, গৃহকর্মী এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সন্তানদের মাধ্যমিক পর্যন্ত উপবৃত্তি প্রদান করা যায় কিনা ভাবতে হবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার বলেন, ‘গৃহকর্মীদের কোনও ছুটি নেই, কাজের নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই, নেই কোনও নিয়োগপত্র, স্বাস্থ্যসুবিধা এবং ন্যূনতম মজুরি। গৃহকর্মীরা যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। তাদের সামাজিক মর্যাদা নেই এবং পেশা হিসেবে কাজের কোনও স্বীকৃতি নেই।’

এসময় নিজের অধিকারের কথা, বঞ্চনার কথা, সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন গৃহকর্মীদের একাধিক প্রতিনিধি। তাদের বক্তব্যে ন্যূনতম মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন, পর্যাপ্ত ছুটি না থাকা বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।

 

শিশুর ভিটামিন ডি এর ঘাটতির লক্ষণ

ভিটামিন ‘ডি’ আমাদের শরীরের অপরিহার্য উপাদান যা হাড় ও মাংসপেশিতে ক্যালসিয়াম ও ফসফেট শোষনে সাহায্য করে। বিশেষ করে শিশুদের শারীরিক বিকাশে এই ভিটামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। এই ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবে শিশুদের রিকেটস ও অস্টিওম্যালেশিয়ার মতো রোগ হতে পারে।

 

দুর্বলতা ও ক্লান্তিভাব

দুর্বলতা ও ক্লান্তিভাব শিশুদের শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ অভাবজনিত প্রধান লক্ষন। এছাড়া মাংপেশিতে ব্যাথা ও যেকোনো কিছুতে শিশুর মনোযোগ না দেয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

ফ্যাকাশে ত্বক

শরীর ভিটামিন ‘ডি’ কোষ ভালো রাখতে কাজ করে। ভিটামিন ‘ডি’ সূর্য থেকে সরাসরি গ্রহন করলে ত্বক স্বাস্থ্যকর থাকে। এর ঘাটতি হলে শিশুর ত্বক ফ্যাকাশে ভাব দেখা দিতে পারে।

খাদ্যে অনীহা

ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। সবসময় শরীরে ক্লান্তিভাব থাকায় অনেকক্ষেত্রে শিশুর খাদ্যে অনিহা দেখা দিতে পারে। এতে ওজন কমে যেতে পারে।

অপর্যাপ্ত ঘুম

ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবে শিশুদের স্লিপ ডিসঅর্ডাররের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রাতে সহজে ঘুম না আসা বা কম ঘুম হওয়ার মতো সমস্যার কারনে শিশুর মধ্যে দুর্বলতা কাজ করে। এসব লক্ষণ শিশুদের মধ্যে দেখা দিলে তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার পাচ্ছেন ফওজিয়া করিম

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড) পাচ্ছেন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফওজিয়া করিম ফিরোজ। আগামী ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘোষণা দেয়।

ফওজিয়া করিম ফিরোজসহ বিভিন্ন দেশের ১২ জন এ বছর আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার পাচ্ছেন। আগামী সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ওয়াশিংটন ডিসিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ফওজিয়া করিম ফিরোজ সম্পর্কে বলেছে, তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন। তিনি বর্তমানে তাঁর নিজস্ব ল চেম্বারের প্রধান এবং ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এফএলএডি) চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে এফএলএডি গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি বিষয়ে একটি রায়ে জিতেছিল।

ফওজিয়া ফিরোজ ব্যক্তিগতভাবে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পক্ষে তাঁদের নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রায় তিন হাজার মামলা করেছেন।

তিনি বাংলাদেশ স্বাধীন গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ফেডারেশন (বিআইজিইউএফ) এবং গৃহকর্মী নির্দেশিকা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছেন।
ফওজিয়া করিম ফিরোজ এর আগে ২০০৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এসিড সারভাইভরস ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি। ২০২৩ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন যৌন হয়রানির মামলা পর্যালোচনা এবং আদালতে সুপারিশ করার জন্য তাদের পাঁচ সদস্যের কমিটিতে ফওজিয়া ফিরোজকে নির্বাচিত করেছে।

 

নারী উদ্যোক্তা : বাংলাদেশের ৪ ধ্রুপদী নারীর সফলতার গল্প

 

“বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।”

সাম্যের কবি নজরুল ঠিকই বলেছেন। বিশ্বের অর্ধেক জনসংখা যেখানে নারী সেখানে নারীকে বাদ দিয়ে এই পৃথিবীর সামগ্রিক উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও কথাটি পুরোপুরি সত্য। তবে অপ্রিয় সত্য হচ্ছে, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ সবসময়েই কম। তবে আশার কথা এই যে, নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ এবং অবদান দিন দিন বাড়ছে। আজ নারী ঘরের বাইরে বেরোচ্ছে, নানা প্রতিযোগিতামূলক কাজে অংশ নিচ্ছে পুরুষের পাশাপাশি সমান তালেই। নারী আজ শুধু চাকরিই নয়, উদ্যোগী হচ্ছে নানা স্বাধীন ব্যবসায়। নারী দিবসের প্রাক্কালে আজ হাজির হয়েছি বাংলাদেশের চারজন স্বনামধন্য এবং সফল নারী উদ্যোক্তার গল্প নিয়ে। তারা শত বাঁধাকে জয় করে আজ নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে হাজারো নারী উদ্যোক্তার প্রেরণা স্বরুপ কাজ করছেন প্রতিনিয়ত।

তসলিমা মিজি

আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগে তিনি এসেছেন বাংলাদেশের টেক ইন্ডাস্ট্রিতে। প্রযুক্তিকে আপন করে নিয়ে একজন নারী হিসেবে শুরু করেছেন নিজের স্বাধীন ব্যবসা। ২০১৮ সালে এসেও দেশের টেক জগতে যখন খুব একটা ‘নারী পদচারণা’ চোখে পড়ে না, তখন তসলিমা মিজির কথা অবশ্যই বলতে হয়।

স্বাধীন নারী উদ্যোক্তা তসলিমা মিজি প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান টেকম্যানিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা এবং চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (CEO)। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি হার্ডওয়্যার, হার্ডওয়্যার বিষয়ক বিভিন্ন সেবা এবং নেটওয়ার্কিং বিষয়ক ব্যবসার সাথে জড়িত। এটি বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির একটি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। একজন নারীর পক্ষে ২০০৮ সালের দিকে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার খাতে ব্যাবসা শুরু করা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। ছিল প্রতিযোগিতা, নারী হিসেবে একটা খাতে প্রথম কাজ শুরু করবার প্রতিকূলতা। বিশেষ করে সাংবাদিকতার জগত থেকে উঠে আসা একজন মহিলা খুব একটা আন্তরিক পরিবেশ পাননি শুরুর সময়টাতে। কিন্তু অদম্য সাহসী মিজি থেমে থাকেননি কখনোই। নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য সুন্দর জায়গা নির্বাচন করে কাজ শুরু করেন তিনি। সময়ের সাথে সাথে একটু একটু করে গড়ে তোলেন তার নিজের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, যা আজকে বাংলাদেশের কম্পিউটার ব্যবসায় নিজের জায়গা করে নিয়েছে বেশ ভালভাবেই।

তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি মিজির পরামর্শ অনেকটা এরকম–

“সবসময় লক্ষ্যটা ঠিক রাখুন। প্রতিকূলতা আসবে, কখনো হতাশ হবেন না। প্রচেষ্টাগুলোকে ঠিক জায়গায় ব্যবহার করুন। আপনি অবশ্যই সফল হবেন।“

সামিরা জুবেরি হিমিকা

নিজের প্রতিষ্ঠান গড়ার আগে তিনি কাজ করছেন দেশি-বিদেশি নানা যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠানে। অভিজ্ঞতার ঝুলি করেছেন সমৃদ্ধ, শিখেছেন অনেক কিছুই। শেষে নিজেই আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে গড়ে তোলেন টিম ইঞ্জিন নামের প্রতিষ্ঠান, যার ম্যানেজিং ডিরেক্টর তিনি নিজেই। সামিরা জুবেরি হিমিকা’র কথা বলছি।

দেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ করে তিনি কাজ শুরু করেন ইউএনডিপিতে। পরবর্তীতে কাজ করেন বিবিসি ওয়াল্ড সার্ভিস, বাংলাদেশের ডেপুটি প্রধান হিসেবে। এরপরে কাজ করেন জিপি হাউজ আর্ট হাব নামের এক প্রজেক্টে। এটি ছিল কোনো বেসরকারি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে পরিচালিত প্রথম উদ্যোগ। প্রায় ৫-৬ বছর এভাবে কাজ করে তিনি নিজেই একদিন উদ্যোগী শুরু করেন নিজের প্রতিষ্ঠানের। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘টিম ইঞ্জিন’ সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা নীতি নির্ধারণী বিষয়ে কাজ করছে।

একজন মহিলা হিসেবে টেলিকম সেক্টরে কাজ শুরু করা মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু হিমিকার নানা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাকে সাহায্য করেছে এক্ষেত্রে। নিজের প্রতিষ্ঠান বাদেও তিনি বেসিসের একজন এক্সিকিউটিভ কমিটি সদস্য। বাংলাদেশে প্রযুক্তি স্টার্ট-আপ ক্ষেত্রে তিনি এখন এক অতি পরিচিত নাম। বিভিন্ন কম্যুনিটি ইভেন্টে প্রায়ই দেখতে পাই আমরা। তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি তার পরামর্শ অনেকটা এরকম-

“অভিজ্ঞতা অনেক জরুরি একটা বিষয়। অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করুন। অভিজ্ঞতা কাজে লাগবেই। কখনো দাম্ভিকতা দেখাবেন না। এটা নিজের উন্নতির পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।“

সাবিলা ইনুন

তিনি বিশ্বখ্যাত সংস্থা ব্র্যাকের শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন দেড় বছরের বেশি সময় ধরে। পরবর্তীতে একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে ডিক্যাস্টালিয়া (DCastalia) নামক প্রতিষ্ঠানের সাথে আছেন শুরু থেকেই। দেখাশোনা করছেন প্রতিষ্ঠানটির ‘যোগাযোগ এবং ব্যবসা উন্নয়ন’ বিভাগ। কথা বলছি দেশের স্বনামধন্য নারী উদ্যোক্তা সাবিলা ইনুন সম্পর্কে।

কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা করা সাবিলা কাজ করেছেন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক নামকরা প্রতিষ্ঠানেই। তথ্য প্রযুক্তি এবং উন্নয়ন ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে তার কর্মযজ্ঞ। বিজনেস ইন্টেলিজেন্স হিসেবে কাজ করেছেন গ্রামীণফোনে, কাজ করেছেন সেল বাজারে, ডি নেটে, তিনি কাজ করেছেন সিস্টেম সাপোর্ট প্রকৌশলী হিসেবে। অতঃপর ২০১২ সালে নাইকি ফাউন্ডেশনের গার্ল ইফেক্ট প্রজেক্টের ডিজাইন ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে যোগ দেন। এই প্রজেক্টের অধীনে তিনি ব্র্যাক এবং পরবর্তীতে ফ্রগ ডিজাইন নামের নামকরা আমেরিকান প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেছেন। এছাড়াও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইউএনডিপির এসআইসিটি প্রজেক্টে কাজ করেছেন একজন ট্রেইনার ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে।

বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে একজন নারী হিসেবে তিনিও সম্মুখীন হয়েছেন নানা প্রতিবন্ধকতার। কিন্তু কখনো থেমে যাননি তিনি। অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করা সাবিলা উনুন বাংলাদেশের নারীদের জন্য বিশেষ করে তরুণী নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণা স্বরুপ। প্রবল ইচ্ছা এবং যোগ্যতা থাকলে কোনো বাঁধা যে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, তার অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন সাবিলা উনুন।

আইভি হক রাসেল

তিনি ছিলেন একজন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার, কিন্তু স্বপ্ন দেখতেন বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া মহিলা জনগোষ্ঠীর জন্য কিছু করবেন। হঠাৎ করেই একদিন আইডিয়া এলো, মহিলাদের স্বাস্থ্য এবং নানা রকম সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি অনলাইন ভিত্তিক কোনো ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে পারেন। চাকরি ছেড়ে দিলেন, প্রতিষ্ঠা করলেন অনলাইনভিত্তিক ওয়েবসাইট– মায়া। আইভি হক রাসেলের কথা বলছি, যিনি এখন ‘মায়া আপা’ নামেই বেশি পরিচিত।

আইভি হক তার নানা উদ্ভাবনী ধারণা এবং ব্যবসাকেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনার জন্য সুপরিচিত। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্স এবং অর্থনীতির উপরে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। অনেক আগে থেকেই মানুষকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করার এক অনবদ্য প্রচেষ্টা কাজ করতো তার মধ্যে। মূলত এ কারণেই পড়াশোনার জায়গা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে এসে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন কিছু করার চিন্তা করেন, যা আগে কেউ কখনো করেনি। সেই চিন্তা থেকেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন অনলাইন প্লাটফর্ম মায়ার, যা মূলত কাজ করে নারীদের নিয়েই। নারীদের জন্য দরকারি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য এবং সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মায়ার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই একবিংশ শতাব্দীতে নারীদের কাছে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোর অবাধে যেন পৌঁছে যায়, এই ব্রত নিয়েই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে আইভি হক রাসেলের প্রতিষ্ঠান মায়া।

তার আজকের এই অবস্থানে আসাটা কখনো সহজ হয়নি, এসেছে নানা প্রতিবন্ধকতা। তিনি শুরুর সময়টাতে কারো কাছ থেকে তেমন কোনো সাহায্যই পাননি। কিন্তু তিনি যে থেমে থাকার পাত্রী নন। কাজ চালিয়ে গিয়েছেন নানা বাঁধাকে উপেক্ষা করেই। আজ তার প্রতিষ্ঠান দেশের মহিলাদের কাছে তাদের দরকারি সব তথ্য এবং সেবা পৌঁছে দিতে কার্যকরী অবদান রাখছে। হাজারো নতুন তরুণী উদ্যোক্তার কাছে তিনি আজ এক অনুপ্রেরণার নাম।

 

সূত্রঃ দ্য ফিন্যান্স টুডে

 

গর্ভনিরোধক ওষুধ যেসব ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে

পরিকল্পনা ছাড়া সন্তানধারণের ঝুঁকি এড়াতে অনেক নারী ভরসা রাখেন গর্ভনিরোধক ওষুধের ওপর। পরিকল্পনা ছাড়া ঝুঁকি এড়ানোর জন্য অনেকে গর্ভনিরোধক ওষুধ উপযুক্ত মনে করলেও অত্যধিক হারে এই ওষুধ সেবনে শরীরে ক্ষতি করতে পারে। তাই এই ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সম্ভব্য কিছু ঝুঁকির কথা নিচে উল্লেখ করা হলো।

১) দীর্ঘদীন গর্ভনিরোধক ওষুধ সেবনে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। ফলে মানসিক অবসাদে ভুগতে পারেন।

২) অতিরিক্ত পরিমাণে গর্ভনিরোধোক ওষুধ সেবন ঋতুস্রাব শুরুর আগে ‘স্পটিং’ সৃষ্টি করতে পারে। মাসিকের আগে রক্তপাত হওয়াকে ‘স্পটিং’ বলে।

ঋতুচক্রের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
৩) শরীরের ওজনও বাড়িয়ে দিতে পারে গর্ভনিরোধক ওষুধ। যারা আগে থেকেই ওজন বাড়ার সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য বাড়তি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে অপরিকল্পিত জন্মনিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতি।

৪) গর্ভনিরোধক ওষুধ হরমোনের ভারসাম্য ব্যাহত করায় চোখের সমস্যা তৈরি করতে পারে।

চোখে ঝাপসা দেখা, চোখ দিয়ে পানি পড়ার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে।
৫) যাদের শরীরে উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যা রয়েছে, তারা গর্ভনিরোধক ওষুধ সেবন করলে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। এ ছাড়া স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

 

পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন মরিয়ম

পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মরিয়ম নওয়াজ। পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গতকাল সোমবার শপথ নেন তিনি। মরিয়ম পাকিস্তান মুসলিম লিগ—নওয়াজের (পিএমএল-এন) জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে এবং আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের ভাতিজি।

গতকাল প্রাদেশিক পরিষদে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে ২২০ ভোট পেয়ে জয়ী হন পিএমএল-এনের প্রার্থী মরিয়ম। অন্যদিকে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল (এসআইসি) ভোট বয়কট করায় তাদের প্রার্থী রানা আফতাব আহমেদ কোনো ভোট পাননি। ভোটের ফল জানিয়ে মরিয়মকে বিজয়ী ঘোষণা করেন প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার মালিক আহমেদ খান। পরে তিনি মরিয়মকে পরিষদের নেতার আসনে বসার আহবান জানান।

এ সময় মরিয়ম নওয়াজ বলেন, ‘একজন নারীর মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া প্রত্যেক মা, বোন ও কন্যার জন্য সম্মানের। আমি প্রার্থনা করি, প্রক্রিয়াটি যেন অব্যাহত থাকে এবং আরো নারীরা যেন পার্লামেন্টের নেতা হিসেবে আমার স্থান নিতে পারেন।’

 

কর্মব্যস্ত দিনেও যত্ন নিন দাম্পত্য জীবনের

 

প্রতিটি সম্পর্ক স্বাভাবিক ও সুন্দর রাখার জন্য  একে অপরকে  সময় দেওয়ার বিকল্প নেই। বর্তমানে আমরা নিজেদের নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে সম্পর্কে সময় দেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হয়ে ওঠে না। আপনি যদি বিয়ে বা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কোনো সম্পর্কে আবদ্ধ হোন এবং ব্যস্ততার কারণে সঙ্গীকে পর্যাপ্ত সময় দিতে না পারেন, তাহলে কিছু নিয়ম অনুসরণ করে এ ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা করতে পারেন:

 

পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হন 

সংসারজীবনে ছোট–বড় অনেক ঘটনাই ঘটতে পারে। হতে পারে মতানৈক্য। তাই বলে সেসব বিষয়কে ইস্যু করে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করা নিছক নির্বুদ্ধিতা। রাগ না দেখিয়ে বরং নমনীয়ভাবে আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করুন। পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল থেকে আলোচনা করলে সম্পর্ক সুখের হবে।

 

জীবনসঙ্গীর সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন

সঙ্গীর সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারাটা সম্পর্কের মূল ভিত্তি। বিভিন্ন প্রজন্মের দম্পতিরাও একে অপরের সঙ্গে ভালো যোগাযোগের সুফল ভোগ করেছেন। আমরা যত স্বাবলম্বীই হই না কেন, দিনশেষে আমাদের সবারই মন খুলে বলার জন্য কাউকে না কাউকে প্রয়োজন হয়। বেশিরভাগ দম্পতিই দিনশেষে তাদের সঙ্গীকে মন খুলে কিছু বলতে পারার মাঝে আনন্দ খুঁজে পান এবং স্বাভাবিকভাবেই তখন তা একসঙ্গে কাটানো সময় হয়ে উঠে।

 

বন্ধুভাবাপন্ন সম্পর্ক তৈরি করুন 

দাম্পত্য জীবনে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিশেষ প্রয়োজন। এতে একজনের কাছে অন্যজন বিভিন্ন জটিলতা ও অসুবিধা সহজে শেয়ার করতে পারে। আর সেখান থেকে একটা সমাধান বের হয়ে আসে। তবে দাম্পত্যে যদি বন্ধুভাবাপন্ন সম্পর্ক না থাকে, তাহলে অনেক বিষয় অমীমাংসিত থেকে যায়, যা থেকে দূরত্বের সৃষ্টি হয়।

 

একে অপরের প্রশংসা করুন 

যেকোনো সাফল্য বা অর্জনে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে অভিবাদন জানাবে ও উৎসাহ দেবে। এতে দুজনের মধ্যে নির্ভরতা ও ঘনিষ্ঠতা বাড়বে। প্রশংসা পেলে আরও ভালো কিছু করার প্রেরণা জন্মে।

 

কোলাহল থেকে দূরে কোথাও বেড়িয়ে আসুন 

উপলক্ষ থাকুক বা না থাকুক দুজন মিলে মাঝে মাঝে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া জরুরি। বেড়ানো কিংবা একসঙ্গে বাইরে খাওয়া একঘেয়ে জীবনে ভিন্নমাত্রা যোগ করতে সাহায্য করে। তাই ব্যস্ততার ভেতরেও সময় বের করে মাঝে মাঝে ডেটিং করা দাম্পত্য জীবনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

 

শিশুর ওপর প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব

 

শিশু-কিশোরদের মধ্যে অধিক মাত্রায় ভিডিও গেম বা ফেসবুকের মতো ভার্চুয়াল লাইফে সংশ্লিষ্টতার কারণে ধীরে ধীরে তা আসক্তিতে পরিণত হয় – সংগৃহীত

নিঃসন্দেহে বলা যায়, বিশ্বের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শীর্ষ অবস্থায় এবং এ উন্নয়নের পরশে মানুষের জীবনযাত্রায় হয়েছে লক্ষণীয় পরিবর্তন; এনেছে গতি ও শৌখিনতা। কিন্তু এর অপব্যবহারে প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের ওপরও নানাভাবে এর কুপ্রভাব পড়ছে।

উন্নত বিশ্বের শিশুদের মতো বাংলাদেশের শিশু-কিশোরদের মধ্যেও প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি আসক্তি বাড়ছে। আল্ট্রাপ্রযুক্তির বিভিন্ন উপকরণে আসক্তির কারণে শিশু-কিশোরদের প্রযুক্তির প্রতি এ ক্রম-আসক্তি পরিপূর্ণ মানসিক ও শারীরিক বিকাশের অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। পরিবারে মা ও শিশুর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। মায়ের জন্য তারা আলাদা সময় বের করতে পারছে না। যার ফলে পারিবারিক প্রথাগত শিক্ষা, শিষ্টাচার, ভ্যালুজ এডুকেশন তথা ধর্মীয় ও সামাজিক আচরণ অর্জন থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।

অন্য দিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কো-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিতে নিয়মিত অনুপস্থিতির কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দিন দিন শিশু ও কিশোররা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। অপরিণত বয়সেই বেশির ভাগের ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। বর্তমানে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ভিডিও গেম, মোবাইল, ল্যাপটপ ও বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্যসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভরতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই ধারাবাহিক প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে শিশুসহ আবালবৃদ্ধবনিতা প্রযুক্তির প্রতি আকর্ষণ বেড়েই চলছে। ফলস্বরূপ পরিবার-পরিজনদের মধ্যে আন্তরিকতা কমে যাচ্ছে। বাবা-মায়ের অজান্তেই সন্তান কাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখছে, তা জানারও সুযোগ থাকছে না।

শিশু-কিশোরদের মধ্যে অধিক মাত্রায় ভিডিও গেম বা ফেসবুকের মতো ভার্চুয়াল লাইফে সংশ্লিষ্টতার কারণে ধীরে ধীরে তা আসক্তিতে পরিণত হয়। বাড়ন্ত বয়সে এ অস্বাভাবিক আকর্ষণ ক্রমান্বয়ে নেশায় পরিণত হয়। রাতের পর রাত জেগে এসব কাজে মগ্ন থাকায় পরদিন সকালে ক্লাসে ভীষণ অমনোযোগী থাকে এবং মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। বাবা-মায়ের সাথে ভালো ব্যবহার করে না। সে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে নিজেকে পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে।

বিরতিহীনভাবে এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে শিশুদের চোখ ও মস্তিষ্কের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত চাপ পড়ে। রেডিয়েশনের প্রভাবে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করে না। তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কোনো কিছুতেই আগ্রহ থাকে না। কোনো কায়িক পরিশ্রম কিংবা খেলাধুলা তারা করতে চায় না। সারাক্ষণ আঙুল, চোখ ও মস্তিষ্ক ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তাদের মনের চাহিদা পূরণ করতে চায়।

অন্যদিকে বিরামহীনভাবে ভিডিও গেম খেলার কারণে কনভালশন তথা খিঁচুনি কিংবা মৃগীর মতো স্নায়বিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘ সময় শুয়ে অথবা বসে ভিডিও গেমস বা ফেসবুকিং করার ফলে হাঁটু ও কোমরে ব্যথা দেখা দেয়। কায়িক পরিশ্রমের খেলাধুলা না করায় অল্প বয়সে তাদের শরীরে চর্বি জমে যায়। এতে করে লিভার, কিডনিসহ হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শিশুরা এখন মা-বাবার মনোযোগ পেতে তাদের প্রিয় ডিভাইসগুলোর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট শন পার্কার স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলেছেন, এই প্ল্যাটফর্ম আসক্তিপূর্ণ করে বানানো হয়েছে। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠার সময় তার কোনো ধারণা ছিল না যে তিনি কী করছেন। তিনি আরো বলেন, শুধু সৃষ্টিকর্তা জানেন, এটি আমাদের শিশুদের মস্তিষ্কের সাথে কী করছে?

ফেসবুক এমন প্রথম অ্যাপ্লিকেশন, যে অ্যাপ্লিকেশনগুলো বানানোর পেছনে পুরো চিন্তাধারা ছিল, আমরা কিভাবে আপনার যতটা বেশি সম্ভব সময় ব্যয় করব এবং সচেতন মনোযোগ আকর্ষণ করব। আর এ জন্যই তিনি নিজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ব্যবহার থেকে বিরত রয়েছেন। মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এতটা প্রযুক্তিপণ্যের ওপর আসক্তি এক ধরনের মানসিক রোগ। বিকারগ্রস্ত মানসিকতা নিয়ে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে এই শিশু-কিশোররাই বিভিন্ন সামাজিক অপরাধে যুক্ত হচ্ছে। তাদের কচি মস্তিষ্কে বিভিন্ন ইনোভেটিভ ক্রাইমপ্ল্যান করে নানা ঘটনার সাথে যুক্ত হচ্ছে। যার ফলে আশঙ্কাজনকভাবে সমাজে কিশোর অপরাধীর সংখ্যা বাড়ছে।

আজকের শিশুই আগামীর ভবিষ্যৎ ও জাতির মেরুদণ্ড। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্বের প্রশ্নেই আমাদের বোধোদয় হওয়া উচিত। মূলত প্রযুক্তিপণ্য ও ফেসবুকই সব সমস্যা নয়, আমরা কিভাবে এগুলো ব্যবহার করছি, সেটাই অন্যতম বিবেচ্য বিষয়। শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি আসক্তি দূর করতে জনসচেতনতা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে বাবা-মায়ের যেমন দায়দায়িত্ব সন্তানেরা কী করছে সেদিকে নজর রাখা; তাদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সময় কাটানো, সাহচর্য প্রদান; তাদের ভার্চুয়াল প্লেগ্রাউন্ডের পরিবর্তে খেলার মাঠের প্রতি আগ্রহী করে তোলা। যাতে তাদের মানসিক বৃদ্ধির পাশাপাশি দৈহিক গঠন ও সামাজিক জ্ঞানে পরিপূর্ণতা আসে। তাদের বোঝানো যে আপনিই তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও হিতাকাক্সক্ষী। সব কিছু সব বয়সের জন্য নয়- এ বাস্তবতা তাদের নিকট খোলাসা করতে হবে। এ জন্য শিশু ও কিশোরদের সাথে নিয়মিত কাউন্সেলিং জরুরি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরও মহান দায়িত্ব রয়েছে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল ও কুফল সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের মৌলিক ধারণা দিয়ে সচেতন করে গড়ে তুলতে। সেই সাথে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় দীক্ষিত করে সত্যিকারের মানুষ করে তুলতে হবে।

 

নারীর মর্যাদা বৃদ্ধিতে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ জরুরি

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত সভায় বক্তারা বলেছেন, উপার্জানমূলক কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নারীর পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই তৃণমূলের নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলো এ বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

আজ মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রায়েরবাজারস্থ কার্যালয়ে আয়োজিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারীদল সদস্যদের মধ্যে নগদ সহায়তা বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস-এর ঢাকা পূর্ব কেন্দ্রের সমন্বয়ক সেলিনা পারভীনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন সহকারী কমিশনার রুবানা তানজিন, বিএনপিএস-এর সমন্বয়কারী নাসরিন বেগম ও ঢাকা পশ্চিম কেন্দ্রের সমন্বয়কারী মো. হেলাল উদ্দিন।

সভায় বলা হয়, সংবিধানে সব নাগরিককে সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত হয়নি। অনেক সামাজিক সূচকে ভালো করলেও সামাজিকভাবে বাংলাদেশের নারীদের অবস্থান খুবই দুর্বল। এর অন্যতম কারণ আর্থিক অস্বচ্ছলতা।

আর্থিক সচ্ছলতার জন্য নারীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।
সভায় জানানো হয়, বিএনপিএস ১৯৮৬ সাল থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের আলোকে পরিবার থেকে রাষ্ট্রে নারীর সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে নানাবিধ কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নারী সদস্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে পারিবারিক ও সামাজিক সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির ব্যবসা বিষয়ক দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এরপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২০ জনকে নগদ আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়।

 

বর্ণাঢ্য উৎসবে হিজাব পরলেন তিন হাজার তরুণী

ইরাকের কুর্দিস্তানে বর্ণাঢ্য হিজাব উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি, শনিবার রাজধানী শহর ইরবিলে ‘গোল্ডেন ক্রাউন ফেস্টিভাল’ নামের উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিন হাজারের বেশি মুসলিম তরুণী হিজাব পরেন। এ সময় উৎসবমুখর পরিবেশে তাঁদের মাথায় সোনালি মুকুট পরানো হয়।

জানা যায়, প্রতিবছর তরুণীদের হিজাব পরা উপলক্ষে বর্ণাঢ্য এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। টানা দশমবারের মতো গোল্ডেন ক্রাউন ফেস্টিভাল নামের এই উৎসবের আয়োজন করে কুর্দিস্তান স্টুডেন্টস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (কেএসডিও)।

অনুষ্ঠানের আয়োজক কেএসডিও এক বিবৃতিতে জানায়, গোল্ডেন ক্রাউন ফেস্টিভাল প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়। মুসলিম নারীর হিজাব যে তার জন্য মুকুটের সমতূল্য এ বিশ্বাস থেকেই বিশাল এই আয়োজন করা হয়।

উৎসবমুখর পরিবেশে তরুণীরা এ আয়োজনে অংশ নেন। এখানে হিজাব পরতে শুরু করেন কুর্দিস্তানসহ ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলিম তরুণীরা। হিজাবি তরুণীদের স্বাগত জানানো এবং সবার মধ্যে হিজাবের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য। এর অর্থ আবরণ। যে অতিরিক্ত বড় কাপড় দিয়ে দেহ আচ্ছাদিত করা হয়। মুসলিম নারীদের জন্য শরিয়তসম্মত উপায়ে হিজাব পরা আবশ্যক।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী, আপনি আপনার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের ওপর টেনে দেন। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৯)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আর মুমিন নারীদের বলে দিন যেন তারা তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে…আর যা সাধারণত প্রকাশ পায়, তা ছাড়া তারা তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩১)

হিজাব পরায় ছাত্রীদের ঢুকতে দিলো না রাজস্থানের স্কুল

 

ভারতের রাজস্থানের পিপার শহরে একটি রাজ্য সরকার পরিচালিত স্কুল হিজাব পরার জন্য মুসলিম ছাত্রীদের ফিরিয়ে দিয়েছে। যা একটি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

এই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের মুখোমুখি হয়েছে এবং এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে বলে জানা গেছে।

হেট ডিটেক্টর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে (সাবেক টুইটার) জানিয়েছে, হিজাব পরিহিত মেয়েদেরকে হুমকি দেয়া হয়েছিল। এছাড়া তারা স্কুল প্রাঙ্গনে হিজাব পরা চালিয়ে গেলে তাদের গ্রেডকে প্রভাবিত করবে বলে জানানো হয়েছিল।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

অভিভাবকদের এক ভিডিওতে বলতে দেখা যায়, ‘এটা খুবই অনৈতিক যে আপনি শিক্ষার্থীদের হিজাব পরতে থাকলে তাদের নম্বর কমানোর হুমকি দিচ্ছেন।’

অন্য একটি ভিডিওতে স্কুল থেকে বের করে দেয়া মেয়েরা অভিযোগ করেছে, তাদের শিক্ষকরা হিজাব পরার জন্য তাদের ‘চাম্বল কে ডাকু’ বলে তিরস্কার করেছে।

তারা বলছে, ‘তারা আমাদের সতর্ক করে চলেছে যে স্কুলে হিজাব গ্রহণ করা হবে না।’

এদিকে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জনতাকে বলেন, তারা শুধুমাত্র মেয়েদের সরকারের নির্ধারিত স্কুল ড্রেস কোডে আসতে বলেছেন।

কয়েক দিন আগে শিক্ষামন্ত্রী মদন দিলাওয়ারও বলেছিলেন, রাজ্য সরকারের সকল সরকারি স্কুলে একটি নির্ধারিত ড্রেস কোড রয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র নির্ধারিত ড্রেস কোডেই স্কুলে যেতে হবে।

 

জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে যা করবেন

 

জরায়ুমুখ ক্যানসার হয় এক ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে, যার নাম প্যাপিলোমা ভাইরাস। সাধারণত এই ভাইরাসটি ছড়ায় ওই ভাইরাস আছে এমন কারও সাথে যৌন মিলনের ফলে। যৌন মিলনের সময় পুরুষদের কাছ থেকে নারীদের দেহে এই ভাইরাসটি ঢুকে যায়। তবে ভাইরাস শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসার হয় না। ক্যানসার হতে বেশ কয়েক বছর লাগতে পারে।
আসুন জেনে নেই জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে যা করবেন-

নারীদের যত ধরনের ক্যান্সার হয় তার মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার অন্যতম। বাংলাদেশে প্রতিবছর জরায়ুমুখের ক্যানসারে হাজার হাজার নারী আক্রান্ত হন এবং মৃত্যুবরণ করেন।

২০১৮ সালের ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি অব রিসার্স অন ক্যানসার-এর (আইএআরসি) এর তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১২ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন এবং প্রায় সাড়ে ৬ হাজার নারী মারা যান সার্ভিকাল ক্যানসার বা জরায়ুমুখ ক্যানসারে।
একটু সচেতন থাকলেই খুব সহজে জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধ বিষয়ে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডাক্তার দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে চলুন জেনে নেই –

জরায়ুমুখ ক্যানসার হয় এক ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে, যার নাম প্যাপিলোমা ভাইরাস। সাধারণত এই ভাইরাসটি ছড়ায় ওই ভাইরাস আছে এমন কারও সাথে যৌন মিলনের ফলে। যৌন মিলনের সময় পুরুষদের কাছ থেকে নারীদের দেহে এই ভাইরাসটি ঢুকে যায়। তবে ভাইরাস শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসারহয় না। ক্যানসার হতে বেশ কয়েক বছর লাগতে পারে।

জরায়ুমুখ ক্যানসারের মূল অসুবিধে হলো এটি শেষ পর্যায়ে গেলেই শুধু ব্যথা দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণগুলোকে অনেকেই মাসিকের মেয়েলি সমস্যা বলে মনে করেন। ক্যানসার যখন একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে যায় তখন রোগটা অনেকদূর ছড়িয়ে যায়।

যারা ঝুঁকিতে আছেন
১৬ বছর বয়সের আগে যৌন সঙ্গমের অভিজ্ঞতা থাকলে কিংবা পিরিয়ড শুরুর এক বছরের মধ্যে যৌনসঙ্গম শুরু করলে।
স্বামী বা যৌনসঙ্গীর শরীরে ভাইরাসটি থাকলে।
একাধিক যৌনসঙ্গী থাকলে।
জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য দীর্ঘদী, বিশেষ করে ৫ বছরের বেশি সময় ধরে পিল খেতে থাকলে।
শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি থাকলে।
যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কোনো রোগ থাকলে যেমন এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া ইত্যাদি।

লক্ষণ
যৌন মিলনের পর যোনি পথে রক্ত পাত।
অনিয়মিত মাসিক, অতিরিক্ত রক্তপাত বা ২ মাসিকের মধ্যে রক্তপাত।
অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বা চাল ধোয়া পানির মতো স্রাব অথবা কোনো সময় রক্ত মিশ্রিত স্রাব যাওয়া।
মেনোপজ এরপর আবার রক্তপাত, তলপেটে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, হাড়ে ব্যথা, কাশি, কাঁশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গও থাকতে পারে

প্রতিরোধ ব্যবস্থা
কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে না দেওয়া।
অধিক সন্তান ধারণা করা।
ধূমপান না করা।
যৌন-প্রজননস্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
একাধিক যৌনসঙ্গী না রাখা।
৯ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীদের জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধক টিকা গ্রহন করা।
৩০ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত নারীদের প্রতি ৩ বছর পরপর ভায়া টেস্ট করা।
উপরের লক্ষণগুলোর কোনো একটি নিয়মিত হতে থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা।

 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নারী বন্দিদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়া ঠেকাতে সুপারিশ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কারাগারগুলিতে থাকাকালীন নারী বন্দিরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন এবং কারাগারেই তাদের সন্তানরা জন্ম নিচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্যগুলিতে কারাগারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে ‘অ্যামিকাস কিউরে’ বা আদালত বন্ধু হিসাবে নিযুক্ত আইনজীবী তাপস ভঞ্জ’র।

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টকে এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।

তিনি বলেন, “রাজ্যের সংশোধনাগারগুলির (কারাগার) পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে যে ছবি উঠে এসেছে সেটা উদ্বেগজনক। সংশোধনাগারে থাকাকালীন নারী বন্দিরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন। ১৯৬ জন শিশু মায়ের সঙ্গে সংশোধনাগারে রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “সংখ্যাটা গত বছর পহেলা এপ্রিল পর্যন্ত। ইতিমধ্যে ওই সংখ্যা হয়তো বেড়েছে বলেই আশঙ্কা করা যায়।”

কলকাতা হাইকোর্টে এই প্রতিবেদন পেশ করার পর দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি টি এস গণনম। বিষয়টি ফৌজদারি মামলার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই এর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের জুন মাসে ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি আর সি লাহোটি সুপ্রিম কোর্টকে একটি চিঠি দিয়ে দেশের কারাগারের করুণ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছিলেন।

সে সময় সর্বোচ্চ আদালতকে দেশের কারাগারগুলিতে বন্দিদের মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যা, অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ সেখানকার বেহাল পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছিল। রাজ্যগুলি যে বন্দিদের প্রতি দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না, সে বিষয়েও উল্লেখ করেছিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি।

সে বছর জুলাই মাসে ওই চিঠি ‘জনস্বার্থ রিট পিটিশন’ হিসাবে দায়ের হয়।

“এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের হাইকোর্টগুলির প্রধান বিচারপতিদের নির্দেশ দেয় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করতে এবং সংশোধনাগারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। হাই কোর্ট আমাকে নিয়োগ করে সংশোধনাগারের আবাসিকদের অভাব অভিযোগ শোনার জন্য এবং রাজ্যের প্রতিটি জেলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বলবৎ করতে,” বলেছেন আইনজীবী তাপস ভঞ্জ।

রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অবশ্য বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, কোনও নির্দিষ্ট কারাগারের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে তাহলে নিশ্চয়ই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা

 

আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা

 

দেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সম্প্রতি তিনি ভারতে বেসামরিক বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’-তে ভূষিত হয়েছেন। এবার দেশি একটি সংগঠন থেকে পাচ্ছেন আজীবন সম্মাননা।

আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে অনুষ্ঠিতব্য একটি আয়োজনের মাধ্যমে তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেবে ‘টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ (ট্রাব)।

এ মুহূর্তে কলকাতা অবস্থান করছেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। মোবাইল ফোনে তিনি জানান, ‘নিশ্চয়ই যেকোনো পুরস্কার একজন শিল্পীর জন্য পরম আনন্দের, ভালোলাগার। যথারীতি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন এই সম্মাননা আমি আনন্দের সাথেই গ্রহণ করবো। ধন্যবাদ আয়োজকদের যারা আমাকে এই সম্মাননার জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করেছেন।’

অনুষ্ঠানের আয়োজন ট্রাব সভাপতি সালাম মাহমুদ বলেন, ‘বন্যা আপা আমাদের দেশের অত্যন্ত গুণী এবং প্রখ্যাত একজন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী। তার কণ্ঠ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের খ্যাতি ছড়িয়েছে। তাকে আমরা তাই পরম শ্রদ্ধা নিয়ে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করতে যাচ্ছি।’

এদিকে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি বন্যা দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার পান বন্যা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ‘বঙ্গভূষণ’, ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদকসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত এ শিল্পী।

 

দুদকে প্রথম নারী সচিব হিসেবে নিয়োগ পেলেন খোরশেদা ইয়াসমীন

 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন খোরশেদা ইয়াসমীন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এই অতিরিক্ত সচিবকে বৃহস্পতিবার সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে দুদকে পদায়ন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তিনি হলেন দুদকের প্রথম নারী সচিব।

এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আলাদা প্রজ্ঞাপনে দুদকের বর্তমান সচিব মো. মাহবুব হোসেনকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে বদলি করা হয়েছে।

অপরদিকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে চুক্তি ভিত্তিতে থাকা মো. এহছানে এলাহীর চুক্তি বাতিল করেছে সরকার।

 

কিচেন কেবিনেট পরিষ্কার রাখার টিপস

কিচেন কেবিনেট ব্যবহারের কারণে রান্নাঘর গোছানোও অনেক সহজ হয়ে পড়ে। তবে নিয়মিত পরিষ্কার না করা হলে কেবিনেটে পোকামাকড় বাসা বাঁধতে পারে।

আসুন জেনে নেইকিচেন কেবিনেট পরিষ্কার রাখতে পারেন-
যেসব স্থানে প্রতিদিন রান্নার উপকরণ রাখা হয় কিংবা যেসব কেবিনেট প্রতিদিনই খোলার প্রয়োজন পড়ে, সেসব নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। কিচেন কেবিনেট দীর্ঘদিন আবদ্ধ থাকলে তাতে তেলাপোকাসহ অন্যান্য যে কোনো পোকামাকড় বাসা বাঁধতে পারে। মাসে অন্তত দুইবার চেষ্টা করুন কেবিনেট পরিষ্কার করার।

কিচেন কেবিনেট যদি রঙ করা থাকে, তবে সেখানকার দাগ পরিষ্কার করতে বেকিং সোডা সবচেয়ে কার্যকরী।

একটি বাটিতে বেকিং সোডা আর পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার পেস্ট দাগের উপর রেখে সুতি কাপড় দিয়ে মুছে নিন। কাঠের কেবিনেটের জন্য যে সুতি কাপড় ব্যবহার করবেন খেয়াল রাখবেন সেটি যেন খুব ভেজা না হয়। এতে কাঠ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

কেবিনেটে যদি কাঁচ থাকে তাহলে সুতি কাপড়ে গ্লাস ক্লিনার নিয়ে ভেতরে ও বাইরে দুই দিক থেকেই ক্লিন করুন। কেবিনেট যেমন রান্নাঘরের শোভা বাড়ায়, তেমনই এটি ক্লিন না রাখলে দেখতেও ভালো লাগে না। তাই কাঠের বা কাঁচের কেবিনেট যাই হোক না কেন, নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি।

 

অসাধারণ স্বাদের রসে ভেজা দুধপুলি

 

শীত মানেই পিঠার আয়োজন। আর পিঠার কথা এলে প্রথমেই যে পিঠাগুলোর কথা মনে হয় সেসবের মধ্যে প্রথম দিকেই রয়েছে দুধপুলি। আসুন জেনে নেই কীভাবে তৈরি করবেন মজাদার রসে ভেজা দুধপুলি-

যা যা লাগবে
চালের গুঁড়া- দুই কাপ
নারকেল কোরা- এক কাপ
গুড়- আধা কাপ
দুধ- চার কাপ
এলাচ গুঁড়া- এক চা চামচ
পানি- প্রয়োজন অনুযায়ী

যেভাবে তৈরি করবেন
প্রথমে পুর তৈরির জন্য নারকেল কোরা এবং গুড় মিশিয়ে না গলে যাওয়া পর্যন্ত চুলায় নাড়তে থাকুন। মিশ্রণ ঘন হয়ে এলে নামিয়ে নিন।
চালের গুঁড়া এবং পরিমাণমতো পানি দিয়ে ময়ান তৈরি করুন।
ময়ান থেকে ছোট ছোট বল বানিয়ে এবারে রুটি বেলার পিঁড়িতে বেলে নিয়ে গোল কাটার দিয়ে গোল করে কেটে তার ভেতরে পুর দিয়ে পিঠার মুখ মুড়ে নিন।

রস তৈরির জন্য একটি পাত্রে দুধ ফুটিয়ে স্বাদমতো চিনি, এলাচ গুঁড়া দিন এবং দুধ ঘন হওয়া পর্যন্ত নাড়ুন।
রসের মধ্যে প্রস্তুত করা পুলি ছেড়ে দিন এবং মৃদু আঁচে সিদ্ধ করুন যতক্ষণ না পুলি ভালো করে ফুলে ওঠে। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল দুধপুলি।

ঠাণ্ডা অথবা গরম অবস্থায় পরিবেশন করুন। পরিবেশনের সময় উপরে পেশ্তা বাদাম গুড়ো বা নারিকেল ছিটিয়ে দিতে পারেন।

 

শিশুরা মিথ্যা বললে কী করবেন?

অনেক সময় দেখা যায়, বুঝে না বুঝে শিশুরা মিথ্যা কথা বলে। তবে শিশু মিথ্যা বলতে বলতে এমন হয় যে তার অভ্যাসে পরিণত হয়। তখন সে কারণে অকারণে মিথ্যা বলে।

মনোবিদদের মতে, শিশুদের মিথ্যে কথা বলার প্রবণতাকে প্রশয় দেয়া উচিত নয়। সন্তান কল্পনাপ্রবণ আর কোনো বিশেষ উদ্দেশে মিথ্যে বলছে কিনা বোঝার চেষ্টা করুন।

 

শিশুরা কেন মিথ্যা বলে?

১. শিশুরা কল্পনাপ্রবণ হলে মিথ্যের আশ্রয় নিতে পারে।

২. অনেক শিশু বিশেষ উদ্দেশে মিথ্যা কথা বলে। যেমন হয়তো তার সেদিন হোমওয়ার্ক হয়নি। সেদিন স্কুল না যাওয়ার জন্য সে পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা বলতেই পারে।

৩. মা-বাবা খুব রাগী হলেও শিশুরা মিথ্যা বলে।

৪. বাড়ির বড়রা যদি মিথ্যা বলে শিশুরাও মিথ্যা বলতে শিখবে।

৫. বড়দের মতোই অপ্রিয় সত্য কথা গোপন করতেও শিশুরা মিথ্যা বলে।

কী করবেন?

১. শিশুরা বড়দের দেখে শেখে। তাই আগে নিজেকে সংশোধন করুন।

২. শিশুরা মিথ্যা বললে মারধর করবেন না। ঠাণ্ডা মাথায় বোঝান। কারণে-অকারণে মিথ্যা বলতে নেই।

৩. মনোবিদদের মতে, ছয় বছর বয়সের পর শিশুদের ‘সুপার ইগো’র বিকাশ ঘটে। তার ফলে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল সে বুঝতে শেখে। এই সময় নীতিকথামূলক গল্প শোনান।

৪. শিশুদের সত্যি কথা বলার শিক্ষা অবশ্যই দিতে হবে।

 

আফগান নারীদের জন্য অনলাইন ম্যাগাজিন ‘জান টাইমস’

কানাডায় বসবাসরত আফগান নারী জাহরা নাদের ‘জান টাইমস’ নামের একটি অনলাইন ম্যাগাজিন প্রকাশ করছেন। আফগানিস্তানে বাস করা নারী ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশে থাকা আফগান নারীরা এতে কাজ করছেন।

২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলকরার পর মেয়েদের অনেক অধিকার খর্ব করেছে। এই অবস্থায় সেখানকার নারীদের পরিস্থিতি তুলে ধরতে ২০২২ সালের আগস্টে জান টাইমস চালু করেন জাহরা নাদের।

আফগানিস্তানে থাকার সময় নিউইয়র্ক টাইমসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন ৩৪ বছর বয়সি জাহরা। এরপর পিএইচডি করতে ক্যানাডা পাড়ি জমান। তিনি যখন দেশ ছাড়েন তখনও তালেবান ক্ষমতা দখল করেনি। ‘আমার মাতৃভূমির মেয়ে ও নারীদের সহায়তা করার দায়িত্ব অনুভব করেছি আমি,’ বলেন জাহরা।

দেশ ও দেশের বাইরে থাকা আফগান নারী সাংবাদিকেরা তার ম্যাগাজিনে কাজ করেন বলে জানান তিনি।

‘আফগানিস্তানের অল্প কয়েকজন নারী সাংবাদিক স্থানীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। তাদের জন্য কাজ করা খুব বিপজ্জনক। তালেবান যে ইস্যুগুলো শুনতে চায় না এমন বিষয়ে তারা প্রতিবেদন পাঠান—এলজিবিটি, মানবাধিকার, পারিবারিক সহিংসতা কিংবা বাল্যবিবাহ। প্রতিবেদন করার অনেক কিছু আছে। অনেক অবিচার আছে,’ বলেন জাহরা।

ফার্সি ও ইংরেজি ভাষায় ম্যাগাজিনটি প্রকাশিত হয়ে থাকে।

জাহরা বলেন, তালেবানের প্রোপাগাণ্ডার সঙ্গে মেলে না এমন বিষয়ে প্রতিবেদন করা খুব বিপজ্জনক। ‘আমাদের স্থানীয় সহকর্মীদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়। তারা ছদ্মনামে লেখেন আর আমাদের সঙ্গে কথা বলার পর ঘরের বাইরে যান। তারা একে অপরকে চেনেন না। শুধু বিদেশে থাকা সহকর্মীদের সঙ্গে তাদের পরিচয় আছে,’ বলে জানান তিনি।

নিজের কাছে জমা থাকা অর্থ দিয়ে ম্যাগাজিনের কাজ শুরু করেছিলেন জাহরা। সে কারণে শুরুতে তাদের বেতন ছাড়াই কাজ করতে হয়েছে। তবে এখন তারা বৃত্তি ও দান পাচ্ছেন। জাহরা বলেন, ‘আমরা মানুষকে সচেতন করতে চাই। তাদের চিন্তা করতে শেখাতে চাই।’

আফগানিস্তানের নারীরা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে থাকা আফগান নারীরা তার ম্যাগাজিন পড়েন বলে জানান তিনি।

 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ক্র্যানবেরির প্রথম মুসলিম মেয়র ঈমান

 

প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ক্র্যানবেরি টাউনশিপে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন এক মুসলিম। শুধু তাই নয়; তিনি একজন মুসলিম নারী।

এ মাসের শুরুতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ২০২৪ সালের মেয়র হিসেবে তাঁকে শপথ পাঠ করান সাবেক নারী মেয়র সাদাফ জেফার।

মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করা ওই নারীর নাম ঈমান আল-বাদাউই। তিনি মিসরীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত।

মেয়র নির্বাচিত হয়ে নিজের অনুভূতি জানিয়ে ঈমান বলেন, আমি কিছুতে প্রথম হতে চাইনি। তবে একজন হিজাবি নারী হিসেবে পুরোপুরি নতুন পরিবেশে নিজেকে দেখতে পেয়ে আমি সত্যিই অভিভূত। কারণ অনেক মানুষ নতুন করে আমার কার্যক্রম সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবে। সবাই আমার সম্পর্কে এভাবে বলা শুরু করছে, ‘ওহ, আপনি প্রথম ‍মিসরী মুসলিম, যিনি হিজাব পরে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন।’ আমি মনে করি, তা শুধু আমার জন্য নয়, বরং সবার জন্য গর্বের। সর্বোপরি আগের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতা ও দক্ষতা নিয়ে আমার শহরের জন্য কাজ করব।

এর আগে ২০২১ সালে ঈমান আল-বাদাউই তিন বছরের জন্য টাউনশিপ কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর গত বছর তিনি প্রথম মুসলিম ডেপুটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ক্র্যানবেরির একজন সফল নেতা ও মেয়র হিসেবে তিনি সবার জন্য কাজ করতে চান।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওতে নারী ক্রীড়া দলে ট্রান্সজেন্ডারদের অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা

রিপাবলিকান শাসিত অঙ্গরাজ্য ওহাইওতে নারী ক্রীড়া দলগুলোতে ট্রান্সজেন্ডারদের অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করল রাজ্যটির আইনপ্রণেতারা। ওহাইওর গভর্নর প্রথমে এই প্রস্তাবে ভেটো দিলেও স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

একটি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, নারী ক্রীড়া দলে ট্রান্সজেন্ডারদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ওহাইও সিনেট শিশুদের ক্ষেত্রে “জেন্ডার অ্যাফার্মিং কেয়ার” বা লৈঙ্গিক পরিচয় ফুটিয়ে তোলে এমন কোনো সেবা—চিকিৎসাসহ অন্যান্য সেবাও নিষিদ্ধ করেছে। এর ফলে এখন থেকে চাইলেও ট্রান্সজেন্ডার কোনো শিশুর ক্ষেত্রে তার কাঙ্ক্ষিত লিঙ্গ নিশ্চিত করতে সেবা দেওয়া যাবে না।

ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গভর্নর মাইক ডেওয়াইন নিজেও রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচিত। কিন্তু এ বিষয়ে তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অনেক বাবা-মায়ের কাছে তিনি শুনেছেন জেন্ডার অ্যাফার্মিং কেয়ার তাদের শিশুদের জীবন রক্ষার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কিন্তু গভর্নরের ভেটো আমলে না নিয়ে গতকাল বুধবার ওহাইও সিনেট বিষয়টিকে আইনে পরিণত করেছে। তার আগে অঙ্গরাজ্যটির হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভসেও বিলটি পাশ হয়। রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি গ্যারি ক্লিক বিলটি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘ওহাইও সিনেট আজ নারী ও শিশুদের সুরক্ষার জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা প্রশংসাযোগ্য।’

আগামী তিন মাস পর, অর্থাৎ ৯০ দিন পর থেকে এই আইন কার্যকর হবে। এর ফলে এখন রাজ্যটির কোনো চিকিৎসক শিশুদের স্বাভাবিকভাবে প্রাপ্ত লিঙ্গের পরিবর্তনের কোনো অপারেশন করতে পারবেন না। এমনকি, বয়ঃসন্ধিকালের বিকাশ রোধ করে এমন কোনো ওষুধও প্রেস্ক্রাইব করতে পারবেন না। একই সঙ্গে স্কুল, কলেজ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় পর্যায়ে নারীদের দলে ট্রান্সজেন্ডারদের অংশগ্রহণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই আইনে।

ওহাইওর এলজিবিটিকিউ অধিকারগোষ্ঠী ইকুয়ালিটি ওহাইওর নির্বাহী পরিচালক সিওভান বয়েড নেলসন বলেছেন, ‘ওহাইওর ট্রান্সজেন্ডার, তাদের পরিবার ও মিত্ররা তাদের অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে। কারণ, ওহাইও আমাদের নিজের দেশ।’

 

কুমিল্লায় ছাত্রীর হিজাব কেটে দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

 

কুমিল্লার নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজের তিন শিক্ষার্থীর হিজাব কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মিরন নাহার নামে এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে ওই কলেজের ক্যাম্পাসে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ২১ জানুয়ারি নার্সিং কলেজের ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর হিজাব কেটে দেন শিক্ষিকা মিরন নাহার। এসময় শিক্ষার্থীদেরকে হিজাব ছোট করে পড়ার কথা বললে শিক্ষার্থীরা এতে দ্বিমত পোষণ করেন। তবে ওই শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের কোনো কথার তোয়াক্কা না করে বারবার হিজাব কাটার কথা বলেন ও বিভিন্ন হুমকি দেন।

দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, এভাবে যদি আমাদের হিজাব কেটে পড়তে বলা হয়, বা কেটে ফেলা হয় তাহলে মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়? ক্যাম্পাসে আমাদের শালীনতা কীভাবে আমরা বজায় রাখবো?

আরেক শিক্ষার্থী মৌরী রহমান বলেন, আমাদের প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ এবং তৃতীয় বর্ষ শিক্ষার্থীদেরকে বেল্ট দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। তাই আমরা মেয়েরা যারা হিজাব বড় করে পড়ি তাদের বেল্ট দেখা যায় না। তাই আমাদের হিজাব কেটে দেয়া হয়েছে। আমি বলব বেল্ট দ্বারাই কেন চিহ্নিত করতে হবে, অন্য কোন উপায়ও তো এটা করা যায়। আমি আমাদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চাই। মেয়েরা যাতে শালীনভাবে চলাফেরা করতে পারে এটা চাই।

৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আকতার বলেন, আমাদের এই বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নার্সিং কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা মিরন নাহার বলেন, একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আমার এটি করা ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে আমি অনুতপ্ত। শিক্ষার্থীদেরকে নিয়মের মধ্যে আনার জন্য আমি এটি করেছিলাম। তবে হিজাব কেটে দেয়া আমার উচিত হয়নি। আমি আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করব।

এ বিষয়ে কুমিল্লা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজের নার্সিং ইন্সট্রাক্টর ইনচার্জ আকবরী খানম এর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

নারীদের ক্যান্সারের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে জরায়ুমুখ ক্যান্সার

 

জরায়ুর ক্যান্সার সচেতনতা মাস উপলক্ষে গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার কর্তৃপক্ষ। গত ২২ জানুয়ারি গোল টেবিল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ১ ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা অনুষ্ঠানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য ছয়জন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

তারা হলেন ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের গাইনি অনকোলজি প্যানেলের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন, অধ্যাপক ডা. সাহানা পারভীন এবং অধ্যাপক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস, অনকোলজি প্যানেলের ছিলেন অধ্যাপক ডা. পারভীন আক্তার বানু, অধ্যাপক ডা. মো. এহতেশামুল হক, বিগ্রে. জেনা. (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. ইউছুফ আলী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন গাইনি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. সিলভিয়া হোসেন (মিথুন)।

আলোচনায় জানানো হয়, বাংলাদেশের নারীদের ক্যান্সারের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে জরায়ুমুখ ক্যান্সার। গ্লোবোকান ২০২০-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতি বছর নতুন করে ৮০৬৮ জন নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রায় ৫ হাজার নারীই মৃত্যুবরণ করেন।

অথচ এটি একটি প্রতিরোধযোগ্য ক্যান্সার। সারা বিশ্বের মতো তাই জরায়ুমুখ ক্যান্সার বিষয়ে সচেতন করতে লার্ন, প্রিভেন্ট, স্ক্রিন এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখেই গোল টেবিল বৈঠকের শুরুতে প্রফেসর ডা. সাবেরা খাতুন জানান এইচপিভি ভাইরাস দিয়ে জরায়ু ক্যান্সার হয় কিন্তু এই ভাইরাস দেহের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থার মাধ্যমে ২ বছরের মধ্যেই শরীর থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু যাদের ১৮ বছরের নিচে বিয়ে হয়/ যৌন সংযোগ ঘটে, বহুবিবাহ হয়, অল্প বয়সে প্রথম বাচ্চা হয়, ঘন ঘন বাচ্চা হয়, দীর্ঘদিন একটানা (৫ বছরের বেশি) জন্ম বিরতিকরণ পিল খায়, ধূমপান করেন তাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস দীর্ঘস্থায়ী হয়ে জরায়ুমুখের পরিবর্তন ঘটায় এবং প্রায় ১০-১৫ বছর পর তা ক্যান্সারে রূপ নেয়। তাই যদি সচেতন হওয়া যায়, এইচপিভি ভ্যাকসিন নেওয়া হয়, ৩০-৬০ বছর বয়সে নিয়মিত ভায়া/প্যাপস/এইচপিভি ডিএনএ ভাইরাস পরীক্ষা করালে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
প্রফেসর জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, ৯-১৪ বছর বয়সী কিশোরী কন্যাদের ১ ডোজ এইচপিভি ডিএনএ ভ্যাকসিন দিলে তা শতভাগ কার্যকরী। ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে। সরকারিভাবে গত বছরের অক্টোবর মাসে ৯-১৪ বছর বয়সী কন্যাদের টিকা দেওয়া হয়েছে। ইপিআই-এ অচিরেই এই ভ্যাকসিন যুক্ত হবে বলে আশাবাদী চিকিৎসকরা। বর্তমানে বেসরকারিভাবে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের মতো অন্যান্য ভ্যাকসিন সেন্টারে পাওয়া যাচ্ছে এই ভ্যাকসিন।

তবে ভ্যাকসিন নিলেও ৩০ বছর বয়সী নারীদের নিয়মিতভাবে স্ক্রিনিং অবশ্যই করতে হবে।
প্রফেসের ডা. সাহানা পারভীন জানান, ক্যান্সারের পূর্ববর্তী এবং ক্যান্সারের শুরুতে সাধারণত তেমন কোনো লক্ষণ থাকে না। যখন ক্যান্সার ছড়াতে শুরু করে তখনই অনিয়মিত মাসিক, সহবাসের পর রক্তপাত, মেনোপোজের পর রক্তপাত, অতিরিক্ত দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব শুরু হয়। স্ক্রিনিংয়ে যখনই জরায়ুমুখের পরিবর্তন ধরা পড়ে অথবা জরায়ুমুখের টিউমার দেখা দেয় তখন অবশ্যই একজন গাইনি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। শুরুতেই ক্যান্সার কোনো পর্যায়ে আছে তা নির্ধারণ করতে হবে, কারণ স্টেজ অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন। অনেক সময় দেখা যায় স্টেজ নির্ধারণ না করে শুধু জরায়ু ফেলে দেওয়া হয়। এটি রোগীর জন্য বিরাট ক্ষতি বয়ে আনে। প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যান্সারে শুধুমাত্র অপারেশন করতে হয় এবং এটি একটি জটিল অপারেশন, যা গাইনি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের মাধ্যমেই করানো উচিত। এদিকে অ্যাডভান্স স্টেজে অপারেশন করা যায় না, সেক্ষেত্রে রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি দিতে হয়।

ডা. পারভীন আক্তার বানু জানান, প্রথমে জরায়ুমুখের ওপর থেকে রেডিওথেরাপী সাথে কেমোথেরাপী দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে জরায়ুমুখের নিচ দিয়ে রেডিওথেরাপি দেওয়া হয়। থেরাপী চলাকালীন বা পরবর্তীতে যে সমস্যাগুলো হয় তা খুব সামান্য। থেরাপির জায়গা একটু শক্ত হয়ে যেতে পারে, মাসিকের রাস্তা সরু হয়ে যেতে পারে এবং পায়খানা প্রস্রাবের সাথে হালকা রক্ত যেতে পারে। কিন্তু এখন এতো ভালো আধুনিক রেডিওথেরাপির মেশিন আছে এবং চিকিৎসা আছে তাতে এই সমস্যাগুলো খুব কমই হয়ে থাকে।

ডা. এহতেশামুল হক জানান সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও রেডিও থেরাপী মেশিনের অপ্রতুলতা রয়েছে, তবে বেসরকারিখাতে বাংলাদেশে পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। সুখবর হলো রেডিওথেরাপীতে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালের মেশিন উন্নত এবং খরচও তুলনামূলক কম। যাদের রেডিও থেরাপী প্রয়োজন তাদের ২ মাসের মধ্যেই সেটি শেষ করতে হয়।

ডা. মো. ইউসুফ আলী জানান, রেডিওথেরাপির আধুনিকরণ এবং অন্যান্য থেরাপি যেমন ইমিউনোথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপিসহ বিশ্বমানের ক্যান্সারের অন্যান্য সকল চিকিৎসা ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে রয়েছে।

সবশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়,
১. জরায়ুমূখ ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি
২. কিশোরী কন্যাদের ভ্যাকসিন দেয়া
৩. ৩০-৬০ বছরের নারীদের স্ক্রিনিং করা
৪. বাল্য বিয়েকে না বলা
৫. বহুবিবাহ/একাধিক যৌনসঙ্গী বর্জন করা
৬. ধূমপান পরিহার করা
৭. ক্যান্সারের কোনো লক্ষণ খেয়াল করা মাত্রই যত দ্রুত সম্ভব গাইনি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া এবং সঠিক স্থানে চিকিৎসা করানো।

সূত্রঃ যুগান্তর

 

কোকাকোলায় প্রথম বাংলাদেশি নারী এমডি জু-উন নাহার চৌধুরী

দেশের শীর্ষস্থানীয় পানীয় কোম্পানি কোকাকোলা, বাংলাদেশ লিমিটেডের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন জু-উন নাহার চৌধুরী। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি এই কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন। একইসঙ্গে তিনি কোকাকোলা, বাংলাদেশের প্রথম নারী এমডি। ২০২১ সালে যোগ দেওয়া সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তা জি তুং-এর স্থলাভিষিক্ত হবেন জু-উন নাহার।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জু-উন নাহার ইউনিলিভারের মার্কেটিং বিভাগের ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ইউনিলিভার বাংলাদেশের বিভিন্ন পদে তিনি কাজ করেছেন। তার নেতৃত্বে দেশব্যাপী ‘লাইফবয় হাত ধোয়া ক্যাম্পেইন বা হ্যান্ড ওয়াশিং ক্যাম্পেইন’ আয়োজন করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নেয়। দেশের ৬০টির বেশি এলাকায় ৮৬ হাজার তরুণ একইসঙ্গে এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করে।

২০১৪ সালে রেকিট বেনকিজারে যোগদানের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ায় তার কর্মজীবন শুরু হয়। সেখানে তিনি ডেটলের ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ডানোন ইন্দোনেশিয়ার হেড অফ ইনোভেশন হিসেবে কাজ করার পর তিনি এক মার্স-এর এফএমসিজি ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই অ্যান্ড-টু-অ্যান্ড ই-কমার্স ফ্যাসিলিটেটর প্রতিষ্ঠানটি আসিয়ানভুক্ত সাতটি দেশে কাজ করে। ইন্দোনেশিয়ায় আট বছর কাটিয়ে ২০২৩ সালে দেশে ফিরে তিনি এপেক্সের মার্কেটিং ডিরেক্টর হিসেবে যোগদান করেন।

নতুন দায়িত্ব গ্রহণ সম্পর্কে কোকাকোলা বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জু-উন নাহার চৌধুরী বলেন, কোকাকোলা সিস্টেম বাংলাদেশে যোগ দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। ভোক্তাদের সতেজ রাখতেও আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কোকাকোলার এই যাত্রায় বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া আমার জন্য সম্মানের বিষয়। আমাদের ব্র্যান্ড ও ফ্র্যাঞ্চাইজি অপারেশনকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবো বলে আশাবাদী।

 

মুঘল সাম্রাজ্যের প্রভাবশালী কয়েকজন নারী ব্যক্তিত্ব

মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাসে বেশ কয়েকজন বিখ্যাত নারীর কথা জানা যায় যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ যোগ্যতার পরিচয় রেখেছেন এবং সাম্রাজ্যে যাদের প্রভাবও ছিল।  রাজকীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বা যুদ্ধবিগ্রহে তাদের অনেকের অংশগ্রহণ ছিল, ডিক্রি বা ফরমান জারি, সংকেত দেয়া বা পরোয়ানা প্রদানসহ নানা ধরণের সরকারি নথি জারি করার ক্ষমতাও ছিল কারো কারো।

আসুন জেনে নেই মুঘল সাম্রাজ্যের প্রভাবশালী কয়েকজন নারী ব্যক্তিত্বের কথা-

মুঘল আমলে, ফার্স্ট লেডি হতেন সাধারণত সম্রাটের মা। সম্রাটের মায়ের মৃত্যুর পর তার জায়গা সম্রাটের স্ত্রী নিতে পারতেন। তবে, এক্ষেত্রে নুরজাহান এবং মমতাজ মহল অবশ্য ব্যতিক্রম ছিলেন। তারা রানী হিসেবেই ফার্স্ট লেডির মর্যাদা পেয়েছিলেন।

মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর থেকে শুরু করে সব মুঘল সম্রাটেরই মায়ের প্রতি সম্মানের বিষয়টি সুবিদিত ছিল। ইতিহাসবিদ এস এম এডওয়ার্ডস, ‘বাবর, ডায়েরিস্ট অ্যান্ড ডিসপোট’-এ লিখেছেন যে নানী এয়সান দৌলত বেগম এবং মা কুতলুঘ নিগার সম্রাট বাবরের জীবন গঠনে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন। বাবর তার বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা তার মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিলেন।

বাবর, নিজের স্মৃতিকথা ‘বাবরনামা’-তে তার নানী এয়সান দৌলত বেগম সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। বাবরনামায় তিনি বলেন,

এয়সান দৌলত বেগম ছিলেন মেজাজি এবং কৌশলী। তিনি ছিলেন অত্যন্ত দূরদর্শী ও বুদ্ধিমতী একজন নারী। তার পরামর্শেই বেশির ভাগ কাজ করা হতো।

এ বইয়ের মুখবন্ধে বলা হয়েছে, ১৪৯৪ সালে বাবরের পিতার মৃত্যুর পর বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে এয়সান দৌলত বেগম, বাবরের পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারী হিসেবে পাশে ছিলেন। প্রকৃত ক্ষমতা এবং কার্য পরিচালনার ভার তাঁর হাতে ছিল।

রাধে শ্যাম তার ‘বাবর’ বইয়ে লিখেছেন যে “জিহাদের সময় মা কুতলুঘ নিগার খানম বাবরের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন।”

তুর্কি এবং ফার্সি ভাষায় শিক্ষিত, খানম তার ছেলে বাবরের বেশিরভাগ অভিযানে এবং রাজত্বকালে তার সাথে ছিলেন।

বাদাখশান এবং ট্রান্সএক্সোনিয়ার মতো দূরবর্তী অভিযানে বাবর তার স্ত্রী অর্থাৎ হুমায়ুনের মা মাহাম বেগমকেও পাশে পেয়েছিলেন।

ইতিহাসবিদ রোমারগুডেনের মতে, মাহাম শক্তিশালী ও প্রাণোচ্ছল নারী ছিলেন, এবং ধারণা করা হয় বাবর তাকে কখনো কোন কিছু করতে নিষেধ করেননি।

বিবি মুবারাকাও ছিলেন বাবরের কাঙ্ক্ষিত স্ত্রীদের একজন। তাকে বিয়ে করার ফলে ইউসুফজাই বংশের সাথে বাবরের সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় এবং আফগানিস্তানের উপর তার দখল জোরদার হয়।

তবে, মাহাম বেগম উচ্চ পদে আসীন ছিলেন এবং সিংহাসনে তাকে তার স্বামীর সাথে বসতে দেওয়া হতো।

গবেষক এস এ তিরমিজি লিখেছেন,

“হুমায়ূন তার মা মাহাম বেগমের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়ার কারণে সৌভাগ্যবান ছিলেন। মাহাম বেগম সুশিক্ষিতা, বুদ্ধিমতী এবং বড় মনের অধিকারী ছিলেন।”

সম্রাট হুমায়ুনের বোন গুলবদন বেগম ‘হুমায়ুন নামা’ লিখেছিলেন, যা ছিল ১৬ শতকের মুঘল ভারতে একজন নারীর লেখা একমাত্র বই

মাহাম বেগম, গুলবদনকে দেখাশোনা করতেন এবং তিনিই তাকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন।

যখন হুমায়ুনকে বাদাখশানের গভর্নর হিসেবে প্রথম দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন তার প্রশিক্ষণের সময়ে মাহাম বেগম পুত্রের সাথে দায়িত্ব পালন করেন।

হুমায়ুনকে রাজ সিংহাসনের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তুলতে মাহাম বেগমের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল।

লেখক রুবি লাল, ব্রিটিশ লেখক এএস বেভারিজকে উদ্ধৃত করে বলেছেন,

“স্ত্রী এবং রানী মা দুটি ভূমিকায়, মাহাম বেগমকে প্রজ্ঞা, মর্যাদা এবং কর্তৃত্বের সমন্বয়ে একজন বিচক্ষণ নারী বলে মনে করা হতো। যিনি তার সন্তানদের নানা ধরণের পরামর্শ এবং নির্দেশনা দিতে পছন্দ করেন। নেতৃত্ব দেওয়া এবং তার পরিবারের নাম ও সম্মান বজায় রাখাকে তিনি তার কর্তব্য বলে মনে করতেন।”

এর বাইরে রাজনৈতিক বিষয়ে হামিদা বানু বেগমের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ, যিনি অনেক কষ্টে হুমায়ূনকে বিয়ে করতে রাজি হন।

এই ঘটনাটি ‘হুমায়ুন নামা’-তে বর্ণনা করা হয়েছে এভাবে –

“৪০ দিন ধরে হামিদা বানু বেগম (বিয়ে করতে) অনিচ্ছুক ছিলেন এবং তিনি কোনোভাবেই রাজি হচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত আমার মা দিলদার বেগম তাকে বলেন যে, তার তো কাউকে না কাউকে বিয়ে করতেই হবে। তাহলে রাজার চেয়ে ভালো আর কে হতে পারে?”

উত্তরে বেগম বলেছিলেন,

“হ্যাঁ, আমি তাকেই বিয়ে করবো যার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারবো। তাকে বিয়ে করবো না যার পা পর্যন্ত আমার হাত পৌঁছাবে না। আমার মা তাকে অনেক উপদেশ দিয়ে অবশেষে রাজি করান।”

তাকে মরিয়ম মাকানি উপাধি দিয়েছিলেন তার ছেলে সম্রাট আকবর।

বিয়ের পর হামিদা বানুকে হুমায়ুনের সঙ্গে দীর্ঘ সময় প্রবাসে কষ্টকর সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

সিন্ধুর অমরকোটে আকবরের জন্মের এক বছরের মধ্যে, তাকে একজন ধাত্রীর কাছে রেখে, তিনি হুমায়ুনের সাথে কান্দাহার এবং তারপর পারস্যের বিপদজনক যাত্রায় অংশ নেন।

হুমায়ুনের আস্থাভাজন আমির মুনাইম খানের নাতনির সাথে আকবরের বিয়ের ব্যবস্থা করে বৈরাম খানের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তারা একটি রাজনৈতিক জোট গঠন করেন।

হামিদা বানু রাজকীয় হারেমে উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং তার ফরমান জারি করার অধিকার ছিল।

‘হুমায়ুন নামা’ অনুসারে, রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানের পর, যাকে জশন-ই-জুলুস বলা হয়, সম্রাট প্রথমে তার মা এবং পরে অন্যান্য আত্মীয়দের সাথে দেখা করতেন।

ইতিহাসবিদ আবুল ফজল লিখেছেন যে, আকবর তার মা মরিয়ম মাকানিকে খুব সম্মান করতেন এবং তাকে স্বাগত জানাতে রাজধানী থেকে বের হয়ে যেতেন।

একবার আকবরের মাকে পালকিতে করে লাহোর থেকে আগ্রায় নিয়ে যাওয়া হয়।

আকবর, যিনি তাঁর সাথে ভ্রমণ করছিলেন, তাঁর পালকি কাঁধে করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যেতেন এবং নদীর এক তীর থেকে অন্য তীরে নিয়ে যেতেন।

‘আকবরনামা’-তে লেখা আছে যে একবার শাহজাদা সেলিমকে অতিরিক্ত মদ্যপান ও খারাপ সঙ্গের কারণে সম্রাট আকবর কিছু সময়ের জন্য তাকে শাস্তি দিয়েছিলেন, কিন্তু পরে মায়ের অনুরোধে সেটি প্রত্যাহার করে নেন।জাহাঙ্গীর তার মা যোধাবাইকে (মারিয়াম-উজ-জানি) অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন।

যুবরাজ সেলিম একবার বিদ্রোহ করেন এবং এলাহাবাদে রাজকীয় অবস্থান গ্রহণ করেন। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আকবর তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত উপদেষ্টা আবুল ফজলের সাহায্য নেন। কিন্তু পথে আবুল ফজলকে হত্যা করেন সেলিম। আকবর খুবই কষ্ট পান এবং ক্ষুব্ধ হন।

মরিয়ম মাকানি এবং গুলবদন বেগম, সেলিমকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য সম্রাটের কাছে অনুরোধ করেন।

আকবর তাদের অনুরোধ মেনে নেন এবং তার ফুফু গুলবদন ও স্ত্রী সালিমা সুলতানা বেগমকে বলেন রাজকুমার যেন তার কাছে ক্ষমা চায় এবং তাকে যেন আদালতে হাজির করা হয়।

পরে স্ত্রী সালিমা ও সৎ মা মাহ চুচাক বেগমের মেয়ে বখতুল-নিসা দুজনের মধ্যে মীমাংসা করেন।

এই সেলিম, সম্রাট জাহাঙ্গীর হন। তুজুক-ই জাহাঙ্গীরীর মতে, জাহাঙ্গীর তার মা যোধাবাইকে যার আনুষ্ঠানিক নাম রাখা হয়েছিল মারিয়াম-উজ-জানি, তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন।

তার বাড়িতে সম্রাটের ওজন করা হতো এবং রাজকুমারদের বিয়ে দেয়া হতো।

মাহাম বেগমের মৃত্যুর পর বাবর তার বড় বোন খানজাদা বেগমকে বাদশাহ বেগম উপাধি দিয়ে হারেমের প্রধান করেন। গুলবদন তাকে ‘প্রিয়তম নারী’ বা ‘আকে জনম’ বলে সম্বোধন করতেন।

হুমায়ুনের শাসনামলে তিনি এই পদে বহাল ছিলেন। সেসময় খানজাদা বেগম হুমায়ুন এবং তার ভাই হিন্দাল, কামরান এবং আসকারির মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন।

গুলবদন বেগম ‘হুমায়ুন নামা’য় অনেক উদাহরণ দিয়েছেন যেখানে বোনদের প্রতি বাবর এবং হুমায়ুনের ভালবাসার চিত্র ফুটে ওঠে। বোন বিধবা হলে ভাই তাকে আশ্রয় দিতে সদা প্রস্তুত থাকতেন।

গুল মিশকা বেগম বিধবা হলে হুমায়ুন তাকে আগ্রায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন। জাহাঙ্গীর তার স্মৃতিচারণে তার বোন শুকর-উল-নাসা বেগম এবং উরম বানু বেগমের কথা স্নেহের সাথে উল্লেখ করেছেন, যদিও তারা ভিন্ন মায়ের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

মুঘল সম্রাটরা তাদের কন্যাদের খুব ভালোবাসতেন। তাদের শিক্ষিত করে তুলতে এবং প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে নানা ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হত।

কিন্তু তাদের অনেকেই, বিশেষ করে আকবরের আমলে তারা অবিবাহিত থাকতেন। মানুচির মতো অনেক লেখক এবং বিদেশে ভ্রমণকারীরা আকবরকে এই ঐতিহ্যের সূচনা করার জন্য দায়ী করেন।

তবে অনেক লেখক এতে একমত হননি। তাদের মতে, আকবর তার বোন ও কন্যাদের যোগ্য পুরুষদের সাথে বিয়ে করাতেন। তবে আকবর নিকটাত্মীয়দের মধ্যে বিয়ে পছন্দ করতেন না।

শাহজাহানের সময় পর্যন্ত রাজকন্যাদের বিয়েতে কিছু বিধিনিষেধ ছিল। এটি সম্ভবত সিংহাসনের দাবিদারদের সংখ্যা সীমিত করার জন্য করা হয়েছিল।

কিন্তু আওরঙ্গজেব তার কয়েকজন কন্যা এবং ভাতিজিকে ভাই-বোনের সন্তানদের সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন।

মুঘল রাজকন্যাদের শিক্ষিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হতো।

বাবরের কন্যা, যিনি সাহিত্যকর্মে নিয়োজিত ছিলেন, তিনি ছিলেন গুলবদন বেগম। তিনি ‘হুমায়ুন নামা’ লেখার জন্য ব্যাপক পরিচিত ছিলেন।

আকবরনামা অনুসারে, হুমায়ুনের স্ত্রী বেগা বেগম, যিনি হাজী বেগম নামেও পরিচিত, একজন শিক্ষিত নারী ছিলেন। তিনি লেখালেখি করতে জানতেন এবং ওষুধ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখতেন।

হুমায়ুনের ভাতিজি সালিমা সুলতানা বেগম ফার্সি ভাষা ও সাহিত্যে পারদর্শী ছিলেন।

সম্রাট আকবরের নিজস্ব আনুষ্ঠানিক শিক্ষা খুবই কম ছিল। তবে তিনি শিক্ষাদীক্ষা বিস্তারে এবং রাজকুমার ও রাজকন্যাদের শিক্ষিত করে তোলার ব্যাপারে খুব আগ্রহী ছিলেন।

কথিত আছে যে তিনি তার ফতেহপুর সিক্রি প্রাসাদে মেয়েদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মুঘল রাজকন্যাদের প্রাসাদের অভ্যন্তরে শিক্ষিত নারী বা বয়স্ক পুরুষদের দ্বারা শিক্ষা দেওয়া হত।

আকবরের শাসনামলে জান বেগম নামে এক নারীকে কুরআনের তাফসীর লেখার জন্য সম্রাটের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার দিনার পুরস্কার দেয়া হয়েছিল।

শাহজাহান এবং রানী মমতাজ বেগমের কন্যা জাহান আরা তার জ্ঞান ও মাধুর্যের জন্য পরিচিত ছিলেন। চিশতী রাজবংশের প্রবীণদের উল্লেখ করে তাঁর লেখা ‘মনুস-উল-আরওয়াহ’ আজও গবেষকদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি বই।

মুঘল রাজকন্যাদের মধ্যে জাইব-উল-নিসা একজন খ্যাতনামা কবি এবং সাহেব দেওয়ান ছিলেন। তাঁর ফারসি গজলগুলো অত্যন্ত সমাদৃত হয়েছিল।

ইতিাহসবিদ সোমা মুখার্জি লিখেছেন যে, রানী যদি নিঃসন্তান হন তবে তাকে অন্য নারীর সন্তান দত্তক নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হতো।

হুমায়ুনের মা মাহাম বেগম হুমায়ুনের জন্মের পর চার সন্তানকে হারান। পরে হুমায়ুনকে লালন পালন করেন সম্রাট বাবরের দ্বিতীয় স্ত্রী দিলদার বেগমের সন্তান হিন্দাল এবং গুল বদন।

আকবরের প্রথম স্ত্রী রুকাইয়া সুলতান বেগম নিঃসন্তান ছিলেন। পরে শাহজাদা সেলিমের পুত্র খুররম জন্ম নেয়ার পর তাকে রুকাইয়া সুলতানের হাতে তুলে দেয়া হয়।

আরেক ইতিাহসবিদ ইরা মুখোতির মতে, আকবর বিধবাদের পুনরায় বিয়ে করতে উৎসাহিত করতেন। তিনি বিধবা ও বিবাহবিচ্ছেদকে কলঙ্ক হিসেবে বিবেচনা করেননি।

তার সামনে খানজাদা বেগমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিল, যিনি দুবার তালাকপ্রাপ্ত ছিলেন। তারপরও উচ্চ সম্মানে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

শুরুতে সতীদাহ প্রথা চর্চাকারী নারীদের প্রশংসা করলেও পরে, তিনি প্রথাকে ঘৃণা করতে শুরু করেন এবং যেসব যারা এর সমর্থন করতেন তাদের সমালোচনা করেন।

আবুল ফজলের মতে, পুত্র সন্তান জন্মের সময় সম্রাট আকবর যেমন বিশাল উদযাপন করতেন ঠিক কন্যা সন্তান জন্মের সময়ও তিন ধুমধাম আয়োজনের আদেশ দিতেন।

সম্রাট আকবর সমাজে প্রচলিত বাল্যবিবাহ প্রথা অপছন্দ করতেন।

আকবর বিবাহ সংক্রান্ত নিয়ম জারি করেন এবং শহরগুলোয় কোতোয়ালদের দায়িত্ব আরোপ করেন যেন যথাসম্ভব এই ধরনের প্রথা বন্ধ করা যায়।

মুঘল সম্রাটদের সম্মান তাদের মা বা বোনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না।

বাবর যখন রাজা ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করেন, তখন তিনি তার মাকে সম্মান করেছিলেন, তাকে জমি এবং একটি প্রাসাদ দিয়েছিলেন।

বাবর তাকে ‘মা’ বলে ডাকতেন। কিন্তু তারা সম্রাটের খাবারে বিষ মেশানোর ষড়যন্ত্র করেছিল এম তথ্য পাওয়া যায়।

সম্রাট খুব কম খাবার খেয়েও অসুস্থ হয়ে পড়ন। পরে জানা যায়, ইব্রাহিমের মায়ের দেওয়া বিষের কারণে এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাবর তার প্রতি নম্র ছিলেন।

ষড়যন্ত্রে জড়িত অন্যদের হত্যা করা হলেও ওই নারীকে কাবুলে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রক্ষীদের হাত থেকে পালিয়ে তিনি সিন্ধু নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

নিজের মা ছাড়াও সম্রাট হারেমের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নারীদেরও সম্মান করতেন।

বাবর নিজে প্রায়ই তাদের কাছে যেতেন। তাদের কেউ এসেছে খবর পেলে তিনি তাদের স্বাগত জানাতে মাঝে মাঝে পায়ে হেঁটে বের হতেন।

‘হুমায়ুন নামা’য় লেখা আছে যে তিনি শুক্রবারে বয়স্ক নারীদের সাথে দেখা করতেন।

“একবার খুব গরম পড়েছিল। রানী বললেন, বাইরে তাপের স্রোত বইছে, ওই এক শুক্রবার সেখানে না গেলে কী হবে? উত্তরে বাবর বললেন, যাদের বাবা-ভাই নেই, তাদের মন যদি খুশি না হয়, তবে আমাকেই তা করতে হবে।”

তার পিতার মতো, হুমায়ুন ব্যক্তিগতভাবে হারেমের বয়স্ক নারীদের সাথে দেখা করতেন এবং তাদের সাথে সদয় হয়ে কথা বলতেন। তার সম্মানে অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হতো।

আকবর তার দাদী গুল বদনকেও খুবই ভক্তি করতেন, তার অনুরোধেই গুল বদন ‘হুমায়ুন নামা’ লেখেন।

মুঘল হারেমে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, ইরানী, তুরানি, পর্তুগিজ এবং অন্যান্য অনেক ইউরোপীয় জাতীয়তা এবং দেশের বিভিন্ন দেশের নারীরা ছিলেন।

বাবর হারেমের নারীদের পরগণা দেওয়ার প্রথা চালু করেন। পরগনা হল কয়েকটি মৌজা নিয়ে গঠিত এলাকা যেখান থেকে রাজস্ব আদায় করা হত।

তিনি ইব্রাহিম লোদির মাকে সাত লাখ টাকার একটি পরগনা দিয়েছিলেন। তিনি হারেমের নারীদের জন্য কিছু বাড়ি এবং জমিও বরাদ্দ করেছিলেন।

হুমায়ুন সুফি ভোজে হারেমের নারীদের আশরাফি ও শাহরাখী আকারে মূল্যবান উপহার দিতেন।

এই অর্থ দিয়ে, তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন ছাড়াও, রাজকীয় নারীরা দাতব্য কাজ এবং ভোজের আয়োজন করতেন।

বাবরের মৃত্যুর পর মাহাম বেগম দিনে দুবেলা মানুষদের খাওয়াতেন।

তিনি ১৫৩০ সালে হুমায়ুনের সিংহাসনে আরোহণের জন্য একটি দুর্দান্ত ভোজের আয়োজন করেন এবং সাত হাজার লোককে খাওয়ান।

হুমায়ুনের স্ত্রী হাজী বেগমও তার ব্যক্তিগত ভাতার একটি বড় অংশ দাতব্য কাজে ব্যয় করতেন।

তিনি মক্কায় হজে প্রচুর দান-খয়রাত করেন। হারেমের এই রাজকীয় নারীরা প্রিয়জনকে বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোয় মূল্যবান উপহার দিতেন।

প্রকৃত মা ছাড়াও মুঘল পরিবারে পালক মাও ছিলেন। এই পালক মায়েরা, যাকে বলা হয় অঙ্গাস, তারা মুঘলদের অত্যন্ত সম্মানের পাত্র ছিলেন।

আকবরের পালক মা মাহিম অঙ্গাস ছিলেন সম্রাটের পর সবচেয়ে শক্তিশালী নারী।

প্রকৃত মা ছাড়াও মুঘল পরিবারে পালক মাও ছিলেন। জাহাঙ্গীর তার পালিত মায়ের মৃত্যুর কথা তার স্মৃতিকথা ‘তাজক জাহাঙ্গীরী’তে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন –

“কুতুবউদ্দিন খান কোকার মা, যিনি আমাকে লালন-পালন করেছেন এবং আমার কাছে মায়ের মতো ছিলেন।”

“তিনি আমার আপন মায়ের চাইতেও সদয় ছিলের। কিন্তু আল্লাহর রহমত নিয়ে আমার সেই মা চলে গেছেন। তার লাশ বহনকারী খাটিয়ার যেদিকে পা ছিল, সেই অংশটি আমি কাঁধে নিয়েছি, এবং তাকে কবর পর্যন্ত বয়ে নিয়ে গিয়েছি। তীব্র যন্ত্রণায়, কয়েকদিন ধরে কিছু খেতে ইচ্ছে করেনি, জামাকাপড় বদলাতেও মন চায়নি।”

ইতিহাসবিদ ফজল হুসেন লিখেছেন যে, মুঘল হারেমে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, ইরানী, তুরানি, পর্তুগিজ এবং অনেক ইউরোপীয় জাতীয়তা এবং বিভিন্ন দেশের নারীরা ছিলেন।

এইভাবে, তারা পরোক্ষভাবে তাদের স্বামী এবং অন্যদের বিভিন্ন ভাষা শেখাতেন এবং তাদের বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও শিল্পের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেন।

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজদীপ সিনহা, অন্নপূর্ণা সিংহদাস গবেষণাপত্রে দেখেছেন যে, মুঘল ভারতে রাজবংশের নারীদের অনেক আইনি অধিকার এবং অসাধারণ ক্ষমতা ছিল।

তাদের ডিক্রি বা ফরমান জারি, সংকেত দেয়া বা পরোয়ানা দেয়াসহ নানা ধরণের সরকারি নথি জারি করার ক্ষমতা ছিল।

শাহজাহানের শাসনামলে শাহী সীলমোহরটি রানী মমতাজ মহলের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মমতাজ মহলের মৃত্যুর পর এটি বেগম সাহেবা অর্থাৎ মেয়ে জাহান আরাকে দেওয়া হয় ।

ঝাড়ুকা দর্শনে সম্রাটের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের রানী নূরজাহানকেও দেখা গিয়েছিল।

এভাবে প্রশাসন কার্যত নূরজাহানের হাতে চলে আসে এবং তার সম্মতি ছাড়া রাষ্ট্র সংক্রান্ত কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হতো না।

জাহাঙ্গীরের রাজকীয় আদেশের সাথে নুরজাহানের সীলমোহর এবং স্বাক্ষরও লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল।

জাহাঙ্গীরের সময়কার রৌপ্য ও স্বর্ণমুদ্রায়ও নুরজাহানের নাম খোদাই করা ছিল। জাহাঙ্গীরের নির্দেশে তিনি ১০০টি রত্ন পান। তাকে নুরজাহান বাদশা বেগম বলা হতো।

জার্মান প্রাচ্যবিদ অ্যান মেরি শ্মাল জাহাঙ্গীরের এই কথাগুলো লিখেছেন – “আমি নুরজাহানকে প্রশাসনের দায়িত্ব অর্পণ করেছি; আমি রক্ত মাংসের মানুষ ছাড়া আর কিছুই না।”

কিন্তু ভাষ্যকার আলেকজান্ডার ডাও বলেছেন –

“নুরজাহান সমস্ত বিধিনিষেধ ও প্রথা ভেঙ্গে জাহাঙ্গীরের দুর্বলতার চেয়ে নিজের যোগ্যতায় ক্ষমতা অর্জন করেছিলেন।”

মূলত মুঘল সাম্রাজ্যে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী পুরুষদের একেকজনের দৃঢ় ব্যক্তিত্বের দিগ্বিজয়ী সম্রাট হয়ে ওঠা কিংবা তাদের মানস তৈরি অথবা পেছন থেকে তাদের পরিচালনায় ছিলেন কোন একজন অসামান্য নারী, যারা বুদ্ধিমত্তা এবং বিচক্ষনতার মাধ্যমে অর্জন করেছিলেন অগাধ শ্রদ্ধা আর বিপুল প্রভাব।

 

দাম্পত্য জীবনের শুরু থেকেই মনে রাখুন পাঁচ কৌশল

মাঝে মাঝে কিছু দমকা হওয়া ছন্দপতন এনে দিতে পারে সুন্দর দাম্পত্য জীবনে। অথবা কোনো ঠুনকো মান অভিমানের পাল্লা ভারী হতে হতে একসময় ভঙ্গুর হয়ে যায় দাম্পত্য জীবন। তাই দাম্পত্য জীবনের শুরুতেই মনে রাখুন পাঁচ কৌশল-

১। শ্রদ্ধার সম্পর্ক গড়ে তুলুন

দুটো প্রাণ এক সাথে পথ চলায় জীবনের আঁকাবাঁকা পথে কিছু কাঁটার আঁচড় রক্তাক্ত করে দেয় মাঝে মাঝে। রাগ ক্ষোভ জমতে জমতে একসময় একে অপরের প্রতি খানিক বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে। ঠিক এ মুহুর্তে সঙ্গীর ভালো গুণগুলো মনে করুন। ভাবুন তাঁর অকৃত্রিম গুণসমূহের কথা, রাগ ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলে শ্রদ্ধা করুন একে অপরকে। স্বামী হলে স্ত্রীকে যথাযথ মর্যাদা দিন। তাঁর ব্যক্তিত্বে আঘাত লাগে এমন কথা কখনোই বলবেন না । আর স্ত্রী হলে স্বামীর প্রতি ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কখনো বিষাক্ত বাণ ছুড়বেন না। কথার আঘাত তীরের চেয়েও ধারালো।

 

২। প্রত্যাশা ছাড়াই ভালবাসুন

কোনোরকম প্রত্যাশা ছাড়াই একে অপরকে ভালবাসুন। পরস্পরকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করতে হবে। যে কোনো সিদ্ধান্তে পরস্পরের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আপনি হয়তো তাকে বেশী ভালোবাসেন , তাই বলে সবক্ষেত্রে নিজের মতো ভালবাসা প্রত্যাশা করবেন না । মনে রাখুন প্রত্যেকের ভালবাসা প্রকাশের ধরণ ভিন্ন।

৩। বিবাহ পূর্ব জীবন সম্পর্কে অকারণ গোয়েন্দাগিরি বন্ধ করুন

আজকাল কিছু অতি উৎসাহী দম্পতিকে দেখা যায়, সঙ্গীর বিবাহ পূর্ববতী জীবন নিয়ে অতি সজাগ থাকে। এমনও হতে পারে আপনার স্বামী বা স্ত্রী বিবাহ পূর্ব কোন সম্পর্ক বা ভালো লাগায় জড়িত ছিলেন। এক্ষেত্রে সম্ভব হলে বিয়ের পূর্বে খোঁজ নিন, কিন্তু বিয়ের পরে নয়। স্বামী বা স্ত্রীকে মাফ করে দিন, মন থেকে ভালবাসুন।

৪। সহযোগী হন, প্রতিযোগী নয়

স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি সহযোগিতার মধ্য দিয়েই দাম্পত্য জীবন সুখী হয়। একে অপরের সাফল্যে নিজের মতোই খুশী হন । পরস্পরের কল্যাণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল হন।

৫। আজীবন একে অপরকে আবিষ্কার করুন

স্বামী স্ত্রীকে একে অপরকে আবিষ্কার করুন৷ প্রতিটি মানুষেরই ব্যক্তিগত ভালো মন্দের বিষয় আছে ৷ পরস্পরের প্রিয় বিষয়গুলোকে বিষয়গুলো মনোযোগের সাথে লক্ষ্য করতে হবে ৷ তার চাওয়া-পাওয়ার ব্যাপারগুলোর প্রতিও একইভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে ৷ এগুলো আবিষ্কার করলেই হবেনা বরং ন্যায় সঙ্গত চাওয়া-পাওয়ার ব্যাপারে আন্তরিক হতে হবে ৷ তাছাড়াও ভালোবাসার কথা জানান দিন নিয়ম করেই।
এছাড়া স্ত্রীর কাছ থেকে দূরে অবস্থান করলে নিয়মিত খোঁজ-খবর নেয়া উচিত ৷ কাজের ফাঁকে অফিস থেকে ফোন করে কথা বললে স্ত্রীর একাকীত্ব বা মন খারাপের ভেলা দূর হয়ে যায়। এছাড়া কোথাও বেড়াতে গেলে একে অপরকে ছোট-খাটো উপহার সামগ্রী দেয়া যেতে পারে। এতে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা প্রকাশ পায়।

 

শীতের সবজি দিয়ে তৈরি করুন মজাদার সবজী খিচুড়ি

 

শীত মানেই বিভিন্ন সবজীর সমাহার এবং মজাদার খাবারের মেলা। শীতে সুস্বাদু সবজি খিচুড়ি হলে জমে বেশ। শীতের সকালে এক প্লেট গরম খিচুড়ি দিয়ে পরিবারের সবার মন ভালো করে দিতে পারেন। আসুন জেনে নেই মজাদার সবজী খিচুড়ির রেসিপি-

যা যা লাগবে-
পেয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ
আদা কুচি দেড় চা-চামচ,
হলুদ গুড়া ১ চা চামচ
মরিচ গুড়া ১ চা চামচ
কাঁচা মরিচ ফালি ৬/৭ টি
তেজপাতা ৩ টি
দারচিনি ৩ টি
লবঙ্গ ৩টি
পোলাওয়ের চাল ২ কাপ
মুগ ডাল ১/২ কাপ
মসুরির ডাল ১/২ কাপ
গাজর, বরবটি, আলু, ফুলকপি, সিম প্রতিটা সবজি ১/২ কাপ করে। তাছাড়া পছন্দ মত যেকোনো সবজি
আলুবোখারা ও কিসমিস পরিমাণ অনুযায়ী
লবণ স্বাদ মত
তেল পরিমান অনুযায়ী
ঘি ১ টেবিল চামচ

যেভাবে তৈরি করবেন-
প্রথমে মুগ ডাল ভেজে চাল ও ডাল এক সঙ্গে ধুয়ে ১০-১৫ মিনিট পর ভালভাবে পানি ঝরিয়ে নিবেন ।
একটি পাত্রে তেল গরম হলে পেয়াজ বেরেস্তা দিয়ে সবিজিগুলো কিছুটা ভেজে নিন। আদা কুচি, তেজপাতা, দারচিনি, লবঙ্গ, হলুদ ও মরিচ দিয়ে চাল ও ডাল ভেজে নিন। এরপর ৭ কাপ ফুটন্ত গরম পানি দিয়ে ঢেকে চুলার জ্বাল বাড়িয়ে দিন। ভালো করে ফুটে উঠলে জ্বাল কমিয়ে দিন। কাঁচা মরিচ, আলুবোখারা, কিসমিস ও ঘি দিয়ে দমে রেখে দিন। আচার বা ভর্তা দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

একই রকমভাবে হলুদ ও মরিচ ছাড়া অন্যান্য উপরকরণ দিয়েও তৈরি করতে পারেন মজাদার সবজী খিচুড়ী।

 

শীতে যেভাবে চুলের যত্ন নিবেন

 

শীতে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারণে চুল হয়ে পড়ে নিষ্প্রাণ । আসুন জেনে নেই শীতে কীভাবে চুলের যত্ন নিবেন-

সঠিক উপায়ে চুল আঁচড়ান

শীতকালে চুলের শুষ্কতা বেড়ে যাওয়ায় সহজেই চুলে জট বেঁধে যায়। চুল ভালো করে আঁচড়ালে এই সমস্যা থাকবে না। তাছাড়া ঘুমানোর আগে, গোসলের আগে এবং তেল দেওয়ার আগে চুল আঁচড়ে নিলে চুল কম পড়ে। চুল নিয়মিত আঁচড়ালে মাথার রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। এতে করে চুল ও চুলের গোড়া সুস্থ থাকে।

 

ভালোভাবে চুল পরিষ্কার করুন

যেহেতু শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে, তাই এ সময় মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো। এতে চুল পড়া কিছুটা হলেও কমে। এক মগ পানির সঙ্গে ২ চামচ ভিনেগার মিশিয়ে রেখে শ্যাম্পু করার পর এই ভিনেগার মেশানো পানি মাথায় ঢালতে হবে। এতে করে চুল হবে মসৃণ ও উজ্জ্বল। চুলের যত্নে শীতকালে কিছু মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। চুল পড়া রোধে নারকেল তেল ও ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে ভিটামিন সি ক্যাপসুল ও ডিমের কুসুম মিশিয়ে মাথায় লাগালে চুলের উপকার হয়। আবার চুলে মসৃণ ও চকচকে ভাব আনার জন্য মধু, টকদই ও ডিমের সাদা অংশ একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

চুলে গরম পানি দেয়া থেকে বিরত থাকুন

শীতকালে কনকনে ঠান্ডায় কষ্ট হবে ভেবে চুলে গরম পানি ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে চুলের গোড়া নরম হয় ও চুলের নানা ক্ষতি হয়। বেশি গরম পানি চুলের গোড়াকে নরম করে দেয়, পাশাপাশি চুলকে অনেক বেশি শুষ্ক করে দেয়। তাই চেষ্টা করবেন বেশি গরম পানি চুলে না ঢেলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে।

চুলের যত্নে তেল ব্যবহার করুন

তেল দিয়ে অনেকটা সময় রেখে দেওয়া উচিত নয়। এতে চুল সহজে ময়লা ও চিটচিটে হয়ে যায়। রাতে ঘুমানোর আগে গরম তেলের ম্যাসেজ করে সকালে বাইরে যাওয়ার আগে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। গরম তেল ম্যাসাজ করে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা তোয়াল মাথায় জড়িয়ে রাখতে পারেন। এতে চুলের গোড়া হবে শক্ত ও মজবুত।