Daily Archives: May 4, 2025
ঈদের চমক নিয়ে আসছেন অপূর্ব-মম
জাফরিন সাদিয়ার রচনায় ও রুবেল হাসানের পরিচালনায় গত ঈদ উল ফিতর এ ‘খুঁজি তোমায়’ নাটকটির জনপ্রিয়তা ও দর্শক পায়। এই জুটি এবার আসছেন একটি রোমান্টিক টেলেফিল্ম ‘ওয়ানস’ নিয়ে।
ভালোবাসার গল্পে দেখা যাবে মফস্বলের সহজ-সরল মেয়ে অর্শি স্থানীয় মাস্তানদের হাতে নির্যাতিত হয়। বাবা মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শহরে তার বোনের বাসায় নিয়ে আসে। ফুপুর বাসায় থেকেই অর্শি পড়াশোনা করে। পরিচয় হয় শহরের অতি স্মার্ট ও সুদর্শন জারিফের সাথে।
জারিফ সহজ-সরল অর্শিকে স্বপ্ন দেখায়। এক সময় প্রেমে পড়ে যায় অর্শি। এভাবে গল্প এগিয়ে যায়। গল্পের ক্লাইম্যাক্স সম্পর্কে জানতে চাইলে জাফরিন সাদিয়া বলেন, ক্লাইম্যাক্সটি দর্শকদের জন্য একটি চমক। টেলিফিল্মটিতে অর্শির চরিত্রে অভিনয় করছেন জাকিয়া বারি মম ও জারিফের চরিত্রে থাকছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব।
টেলিফিল্মে আরও অভিনয়ে করেছেন খালেকুজ্জামান, শারমীন আঁখি, রাজিয়া রশিদ, শিখা খান, মাহদী হাসান পিয়াল, সাইদুর এমন প্রমুখ।
জাফরিন সাদিয়া তার নাটকের প্রেজেন্টেশন ও ওয়েব পাবলিসিটিতে গ্রাফিক্স ডিজাইন দিয়ে আলাদা মাত্রা যোগ করেন। যা নাটক প্রচারের আগেই দর্শককে আকর্ষিত করে।
এবার ওয়ানস টেলিফিল্মটির জন্য ৩টি টিসার ইউটিউবে ইতিমধ্যে ছাড়া হয়েছে, দর্শকের আগ্রহ ও আকর্ষণ কাড়তে টেলিফিল্মটির এই আয়োজন।
ভালোবাসার এই টেলিফিল্মটিতে সংগীতায়োজন করেছেন অরূপ। জাফরিন সাদিয়ার কথায় কণ্ঠ দিয়েছেন রাফি আহমেদ ও আদনীন মৌরিন।
টেলিফিল্মটির নির্বাহী প্রযোজক মাসুদ উল হাসান। প্রযোজনা করেছেন সাব্বির চৌধুরী, রাসেল আলম ও জাফরিন সাদিয়া। আসছে ঈদ উল আজহায় ‘ওয়ানস’ টেলিছবিটি প্রচার হবে বাংলা টিভিতে।
হজ সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে প্রশ্নোত্তর
হজ মুসলিম উম্মাহর সর্বোত্তম ইবাদত। ইচ্ছা করলেই কেউ হজে যেতে পারে না। হজের জন্য সর্ব প্রথম শর্তই হলো আর্থিকভাবে সামর্থ থাকতে হবে। অতঃপর শারীরিক সক্ষমতা লাগবে। আর মানসিক প্রস্তুতিও হজের জন্য আবশ্যক বিষয়।
হজ হলো আল্লাহ তাআলা কিছু অনন্য নিদর্শন স্বচক্ষে দেখার জন্য পবিত্র নগরী মক্কা মুকাররমার ওই সব স্থানে স্বশরীরে উপস্থিত হওয়া এবং যথাযথ মন নিয়ে পালন করার নাম।
ওই সব নিদর্শন তারই হুকুম পালনকারী প্রিয় বান্দা নবি-রাসুলদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি স্মারক বা ঘটনা। যে ঘটনাগুলো আল্লাহ তাআলার অনেক পছন্দ হয়ে যায়। আর তার পরিদর্শনকে আল্লাহ তাআলা ইসলামের রোকন হিসেবে সাব্যস্ত করেন।
হজের নিদর্শন সম্পর্কিত কিছু তথ্য প্রশ্নোত্তর আকারে তুলে ধরা হলো-
>> পবিত্র কাবা শরিফ কে তৈরি করেছেন?
উত্তর : হজরত ইবরাহিম আলাইহি সালাম পবিত্র কাবা শরিফ নির্মাণ করেন। কাবার স্মৃতি চিহ্ন মুছে যাওয়ার পর আল্লাহর নির্দেশে তিনি হজরত ইসমাইলকে সঙ্গে নিয়ে কাবার জন্য নির্ধারিত স্থানেই কাবা নির্মাণ করেন।
>> পবিত্র কাবা শরিফের চারদিকে তাওয়াফ করতে কোন দিককে নির্দেশ করা হয়েছে?
উত্তর : কাবা শরিফকে বাম দিকে তাওয়াফ করতে হবে। সহজে বুঝার সুন্দর উপমা হলো- ঘড়ির কাঁটা যে দিকে ঘুরে তার বিপরীত দিকে কাবা শরিফ তাওয়াফ করতে হবে।
>> হাজরে আসওয়াদ কী?
উত্তর : এটি একটি পাথর। যা প্রিয়নবি বাইতুল্লাহর দক্ষিণ-পূর্ব কোনো নিজ হাতে স্থাপন করেছেন। এখান থেকেই বাইতুল্লাহর দরজার দিকে তাওয়াফ শুরু করতে হয়।
>> মাকামে ইবরাহিম কী?
উত্তর : একটি পাথরের নাম ‘মাকামে ইবরাহিম’। এ পাথরে দাঁড়িয়ে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম বাইতুল্লাহ নির্মাণ করেছিলেন। বাইতুল্লাহ নির্মাণে যা লিফটের কাজ করেছিল। অর্থাৎ প্রয়োজন অনুযায়ী এ পাথরটি হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে নিয়ে ওপরে ওঠেছিল এবং নিচে নেমেছিল।
>> মুলতাজেম কী?
উত্তর : হাজরে আসওয়াদ ও বাইতুল্লাহর দরজার মধ্যবর্তী কাবা শরিফের প্রাচীরই হলো মুলতাজেম। যেখানে বুক লাগিয়ে মুসলিম উম্মাহ আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করে।
>> হাতিমে কাবা কী?
উত্তর : হাতিমে কাবা হলো রুকনে শামি ও রুকনে ইরাকির মধ্যবর্তী গোলাকার আকৃতির স্থান। যা বাইতুল্লাহর অংশ।
>> পানি সন্ধানে কে সাফা ও মারওয়ায় দৌড়েছিলেন?
উত্তর : হজরত হাজেরা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) তাঁর সন্তান হজরত ইসমাইলের জন্য পানির সন্ধানে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে দৌড়েদৌড়ি করেছিলেন।
>> ‘ঝমঝম’ অর্থ কী?
উত্তর : ঝমঝম শব্দের অর্থ হলো বন্ধ বা থামা। হজরত হাজেরা রাদিয়াল্লাহু আনহা এ শব্দটি ব্যবহার করে বলেছিলেন ‘ঝমঝম’। যখন পানির খোঁজে বিবি হাজেরা দৌড়াদৌড়ি করছিলেন। তখন এসে দেখেন শিশু ইসমাইলের পায়ের তলা থেকে পানির ফোয়ারা প্রবাহিত হওয়া শুরু করে। তখন তিনি পানি প্রবাহিত হওয়া বন্ধের জন্য বলেন, ‘ঝমঝম’।
>> হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের কোন ছেলে নিজেকে আল্লাহর জন্য কুরবানিতে প্রস্তুত ছিলেন?
উত্তর : হজর ইসমাইল আলাইহিস সালাম। যার উপাধি ছিল ‘জবিহুল্লাহ’।
>> হজ সম্পর্কিত অনেক আয়াত সম্বলিত একটি সুরা রয়েছে কুরআনে। তার নাম কি?
উত্তর : সুরা হজ। কুরআনুল কারিমের ১৭তম পারায় রয়েছে এ সুরাটি। এর আয়াত সংখ্যা ৭৮। যেখানে হজ সম্পর্কিত অনেক আয়াত রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য সুরায়ও হজের ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্নভাবে হজের আলোচনা রয়েছে।
>> হজের কার্যক্রম শুরু হয় কত তারিখ থেকে?
উত্তর : ৮ জিলহজ থেকে হজ শুরু হয়। মূল হজ হলো ৯ তারিখ। আর আল্লাহ তাআলা শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজকে হজের মাস হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
>> আরাফাতের ময়দানে কত তারিখ উপস্থিত হতে হয়?
উত্তর : ৯ জিলহজ দ্বিপ্রহরের আগে। দ্বিপ্রহরের পর থেকে সুর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হলো হজ।
>> আরাফাতের ময়দানে ৯ তারিখ দিন কাটানোর পর হজযাত্রীরা রাত কাটাবেন কোথায়?
উত্তর : মুযদালিফায়। ৯ তারিখ সুর্যাস্তের পর আরাফাতের ময়দান থেকে মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা হবে হজযাত্রীরা। খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করবেন হজযাত্রীরা।
সেখানে রাত যাপন করা সুন্নাত। আর ফজরের নামাজের পর থেকে সুর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত এ মুহূর্তকাল সময় অবস্থান করা ওয়াজিব।
>> ইহরামের সময় পুরুষরা কি মাথায় কিছু ব্যবহার করবে?
উত্তর : না, পুরুষদের জন্য ইহরামের সময় মাথায় কিছু ব্যবহার করা যাবে না। কোনো টুপি, কাপড় বা পাগড়ি কোনো কিছুই ব্যবহার করতে পারবে না।
>> কোন স্থানকে তাবুর নগরী বলা হয়?
উত্তর : মিনাকে তাবুর নগরী বলা হয়।
>> হজের সময় তীর্থযাত্রীরা সবচেয়ে বেশি কী পড়ে করে?
উত্তর : হজের সময় তীর্থ যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি তালবিয়া পড়ে। প্রত্যেক হজযাত্রীকে অবশ্যেই তালবিয়া পড়ার মাধ্যমেই ইহরাম বাঁধার কাজ সমাপ্ত করতে হবে। তালবিয়াই হলো আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেয়ার ঘোষণা।
যেভাবে দুনিয়ার শ্রেণিকক্ষে ছাত্ররা শিক্ষকের নিকট হাজিরার সময় ‘ইয়েস স্যার’, উপস্থিত, লাব্বাইক; ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে।
আল্লাহ তাআলার নিকট তালবিয়া পড়া হলো সে রকমই।
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক; লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক; ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক; লা শারিকা লাক।’
‘আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি হাজির; আমি হাজির, আপনার কোনো শরিক নেই, আমি হাজির; নিঃসন্দেহে সব প্রসংশা এবং নেয়ামত রাজি আপনার এবং পৃথিবীর একচ্ছত্র ক্ষমতাও আপনার; আপনার কোনো অংশীদার নেই।’
>> পাথর নিক্ষেপের জন্য পিলার বা ওয়াল কতটি? এগুলোর নাম কি?
উত্তর : পাথর নিক্ষেপের জন্য ৩টি পিলার বা ওয়াল রয়েছে। এগুলোকে জামারাত বা পাথর নিক্ষেপের স্থান বলা হয়।
হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে কুরবানির সময় শয়তান প্ররোচনা দিয়েছিল আর তখন পিতা ও পুত্র শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করেছিল। সে স্মৃতি স্মরণেই শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করা হয়।
-জামারাহ উলা বা জামারাহ সোগরা (ছোট জামারাহ)
– জামারাহ ওয়াস্তা বা মধ্যম জামারাহ
– জামারাহ আকাবা বা জামারাহ কুবরা (বড় জামারাহ)
>> কোনটিকে হজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়?
উত্তর : আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়া। প্রিয়নবি বলেছেন- ‘আরাফাই হজ।’ যারা আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হতে পারবে না, তাদের হজ হবে না।
>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কতবার হজ ও ওমরা করেছেন?
উত্তর : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১০ম হিজরিতে ১বার হজ করেছেন।
আর সে হজেই তিনি উম্মতের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ নসিহত পেশ করেছেন। ইসলামের ইতিহাসে এটি বিদায় হজ নামে পরিচিত।
আর প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪বার ওমরা পালন করেছেন-
ওমরা ১ : ৬ষ্ঠ হিজরিতে হুদায়বিয়ার সন্ধির বছর। যদিও সে বছর তিনি ওমরা পালনে কাবা যেতে পারেননি তথাপিও তিনি মাথা মুণ্ডন করেছেন এবং আল্লাহর নামে পশু উৎসর্গ করেছেন। আর সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় তিনি পরবর্তী বছর ওমরা পালন করবেন।
ওমরা ২ : হুদায়বিয়ার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি ৭ম হিজরিতে ওমরা পালন করেন।
ওমরা ৩ : হুনাইনের যুদ্ধ থেকে ফেরার তিনি ৮ম হিজরিতে ওমরা পালন করেন।
ওমরা ৪ : ১০ম হিজরিতে হজ সময় তিনি ওমরা পালন করেছিলেন।
সফল হতে চাইলে এ ব্যাপারগুলো এড়িয়ে চলুন…
সফল হতে চাইলে সবাইকে খুশি রেখে চলতে পারবেন না আপনি। যতো বেশি আপনি কাউকে পাত্তা দিবেন, ততো কম আপনি পাত্তা পাবেন। এসব মানুষকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন এবং নিজের লক্ষ্য ও স্বপ্নের দিকে মনোযোগ দিন। বিষাক্ত মানুষ থেকে দূরে থাকুন। অনেক দেরি কিংবা অনেক দ্রুত বলতে কিছু নেই। আপনার ইচ্ছাশক্তি অনুযায়ী কাজ করুন। কিন্তু দরকারী ব্যাপার থেকে কিভাবে অদরকারী ব্যাপার আলাদা করবেন? আমরা একটি তালিকা তৈরি করেছি যেন আপনি সহজেই সাফল্যের রাস্তা খুঁজে পেতে পারেন। আজ আমাদের প্রতিবেদনের মূল বক্তব্য হলো- সফল হওয়ার জন্য কোন ব্যাপারগুলো এড়িয়ে চলবেন। চলুন জেনে আসা যাক-
অন্য মানুষের বিচার
এক সময় পুরো পৃথিবী নীরব হয়ে যাবে, তখন শুধুমাত্র আপনি নিজের বিবেককে শুনতে পাবেন। সেটিই আপনাকে জানান দিবে যে আদতে আপনার কী করা উচিত। সমস্যা হচ্ছে, আমরা প্রায়শই অন্য মানুষের মতামতকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে বসি যার দরুণ নিজের ইচ্ছা ও পছন্দের কথাই ভুলে যাই। তবে সফল হতে হলে এ অভ্যাস বদলাতে হবে। আপনার সফলতার জন্য আপনার কী দরকার, তা আপনি ছাড়া অন্য কেউ বুঝবেনা কখনোই।
অতীতের পুরনো স্মৃতিচারণ
অতীতে কি হয়েছে না হয়েছে তা হাজার চেষ্টা করলেও আপনি বদলাতে পারবেন না। তার দরকারও নেই। আপনি বরং নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যান। যে দিন চলে গিয়েছে তার কথা ভেবে সময় নষ্ট করার কোন মানেই হয় না।
কঠোর পরিশ্রমের পেছনের বেদনা
পৃথিবীতে দুই ধরনের বেদনা আছে। একটি হলো, যেটি আপনাকে কষ্ট দেয় এবং অপরটি হলো যেটি আপনাকে শিক্ষা দেয়। জীবনে যা যা কষ্ট আপনি পাছেন, সবগুলো থেকেই যদি শিক্ষা গ্রহণ করেন তবে আপনিই জয়ী হবেন। কোন কিছু অর্জন করতে হলে আপনাকে কষ্ট সহ্য করতে হবে, এটিই স্বাভাবিক। মনে রাখবেন, দিন শেষে কাজই কথা বলবে। সুতরাং, আপনি আপনার মতন কাজ করে যান।
হ্যাঁ এবং না বলা
আপনার নিজেরই এটা ঠিক করতে হবে যে কখন আপনি হ্যাঁ বলবেন এবং কখন না বলবেন। একেবারেই খুব বেশি চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই, তাহলে আপনি বিভ্রান্ত হয়ে যাবেন। নিজের লক্ষ্যের দিকে মনোযোগ দিন। মানুষকে সন্তুষ্ট করতে করতে নিজেকে ভুলে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। এতে আপনার কোন লাভ হবে না।
অধৈর্যশীল চিন্তা
কঠোর পরিশ্রম করার সময় ধৈর্য ধারণ করা শিখুন। যতদূরই আপনি যান না কেন ধৈর্যকে আপনার সাথে রাখুন। অধৈর্যশীল চিন্তা আপনার সাফল্যের শিখরে পৌছতে বাধা সৃষ্টি করে। মাঝে মাঝে হয়তো ফল না পেয়ে কিংবা দেরিতে পেয়ে আপনি কষ্ট পাবেন কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে চলবে না।
অনিয়ন্ত্রিত বিষয়সমূহ
কখনো কোন কাজ জোর করে করাতে চাইবেন না বরং সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে শিখুন। যা হবার তা হবেই। সমস্যাগুলোর কথা না ভেবে সমাধানের কথা চিন্তা করুন। প্রত্যেকটি পরিবর্তনের পেছনেই উদ্দেশ্য থাকে। প্রথম প্রথম হয়তো আপনার খুব কষ্ট হবে কিন্তু ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে।
প্রতিদিনের ছোটখাটো ব্যর্থতা
খারাপ দিন আসেই মানুষের জীবনে। কিন্তু সেটি কখনো থেমে থাকে না। মনে রাখবেন, আপনার ভুল থেকেই অনেক কিছু শেখার আছে। সুতরাং কোন ভুল কিংবা ব্যর্থতাকে সীমাবদ্ধতা না ভেবে আশীর্বাদ মনে করুন।
বিউটি স্ট্যান্ডার্ড
আপাতদৃষ্টিতে যেসব বিষয় আপনি সৌন্দর্য হিসেবে ধরে এসেছিলেন, সেগুলো বদলানোর সময় এসেছে এবার। ধবধবে সাদার দৃষ্টিকোণ থেকে এবার বের হয়ে বাদামী সৌন্দর্যকে আপন করে নিন।
ভয়-ভীতি
জীবন মানেই ঝুঁকি। আপনি যদি ঝুঁকি না নেন তবে কখনোই সামনে এগোতে পারবেন না। ভয়গুলোর সাথে মোকাবেলা করুন। থেমে থাকলে চলবে না।মনে রাখবেন, জীবন তার আপন গতিতেই এগিয়ে চলে।
মানসিক শঙ্কা
কষ্টের দিনগুলোতেও নিজের উপর ভরসা রাখুন। ভুল মানুষই করে। কেউ না জেনে ভুল করে, আবার কেউ কাউকে কষ্ট দেওয়ার জন্য ভুল করে। বিশ্বাস রাখুন, জীবন একদিন আপনাকে উপহার দিবেই। এই ভরসাই আপনাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
রক্তের ছোপ আর গুলির চিহ্নের জাদুঘরে
যে সিঁড়িতে গুলিবিদ্ধ বঙ্গবন্ধু পড়ে ছিলেন, সেখানে কাচের এপারে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি আমরা। বঙ্গবন্ধু ও শেখ ফজিলাতুন্নেছার রক্তমাখা পোশাক দেখে শিউরে ওঠেন ফারজানা, মলি ও শাহনাজ। এমন মৃত্যু কি প্রাপ্য ছিল জাতির জনকের? তিনজনই বলে ওঠেন একসঙ্গে।
টিপটিপ বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল সকাল এসে হাজির তাঁরা তিনজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীদের মধ্যে বিশেষ একটি মিল আছে—তাঁরা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে থাকেন। ফারজানা আকতার ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর করছেন, মলি হালদার দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষে ও শাহনাজ কবীর ব্যবস্থাপনা বিভাগে তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। ফারজানা ও মলি হলের রুমমেট। তবে শাহনাজের সঙ্গে সেদিনই পরিচয় হয় বাকি দুজনের। ফজিলাতুন্নেছা হলের এই তিন ছাত্রীকে নিয়ে ১১ আগস্ট গিয়েছিলাম ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে। চাপা একটা উত্তেজনা ছিল তাঁদের মধ্যে। গেটের বাইরে ফলক পড়ার সময় জানালেন, আগে আসার সুযোগ হয়নি। এবারই প্রথম আসা তিনজনের।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের বর্ধিত ভবনের শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সায়রা খাতুন প্রদর্শনী গ্যালারি থেকে দেখা শুরু হয়। আমাদের সঙ্গে ছিলেন জাদুঘরের গাইড বরুণ রাহা। হলে নিয়মিত অনুষ্ঠান হয়, প্রতিবছর আগস্ট মাসে অনুষ্ঠানের কারণে বঙ্গবন্ধুর পরিবার, বিশেষ করে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সম্পর্কে জেনেছেন এই তিন ছাত্রী।
‘বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে সারা জীবন বঙ্গবন্ধুকে নানাভাবে সমর্থন দিয়েছেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল (১০ আগস্ট) আমাদের হলে অনুষ্ঠান ছিল। আগামীকাল (১২ আগস্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছার স্মরণে অনুষ্ঠান হবে। প্রতিবছরই হয়। নিজের আগ্রহ থেকেই যাই। এভাবেই তাঁর সম্পর্কে জানতে পেরেছি।’ বললেন শাহনাজ। তবে মলির জানাবোঝা একটু বেশি। জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের ছবি দেখে তার পেছনের ইতিহাস বলতে শুরু করেন তিনি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে বঙ্গবন্ধুর যাওয়ার কথা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেটা কি জানা আছে এই তিনজনের? হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়েন। বর্ধিত ভবন থেকে আমরা গেলাম পুরোনো ভবনে। একতলায় রান্নাঘর দেখে দোতলায় উঠি আমরা। কাচঘেরা রক্তের ছোপ ও গুলির চিহ্ন দেখে ফারজানা, মলি ও শাহনাজ যেন কিছুক্ষণ কথা বলতে পারেন না। ‘আমার খুব খারাপ লাগছে। কী ভয়াবহ ছিল সেই রাত, এখানে না এলে বুঝতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ওপর দিয়ে কী দুর্যোগ গিয়েছে, ভাবতেই পারছি না। যারা মেরেছে, তারা আসলে মানুষ হতেই পারে না। মানুষ মানুষকে এভাবে মারতে পারে?’ ফারজানা বলেন। চোখভর্তি পানি তিনজনেরই।
কত বই এখানে! বঙ্গবন্ধুর লাইব্রেরি ছিল যেখানে, সেটা দেখে তাঁরা অবাক হলেন। শেখ কামাল ও শেখ জামালের শোয়ার ঘর দেখে বিস্ময়ের শেষ নেই। বাহুল্য নেই, কিন্তু রুচিশীল। শেখ কামালের ঘরে কি-বোর্ড, সেতার দেখে শাহনাজ বলেন, ‘শেখ কামাল সংগীতচর্চা করতেন, সুলতানা কামাল কত বড় অ্যাথলেট ছিলেন। সুলতানা কামালের মিষ্টি হাসির সৌরভ যেন এখনো ছড়িয়ে আছে ঘরময়—তাই না?’ তাঁর সঙ্গে সম্মত হন বাকি সফরসঙ্গীরা। কিন্তু মলি ও ফারজানার মন খুব খারাপ হয়ে গেছে। মলি বলেন, ‘এখানে না এলে জীবনে একটা অপূর্ণতা থাকত। আসব আসব করে এখানে আসা হচ্ছিল না। ধন্যবাদ, তাদের এই উদ্যোগের কারণে আসা হলো।’
‘শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে এখন কত বড় হতেন, তাঁর জন্য খুব খারাপ লাগছে।’ একটা দীর্ঘশ্বাসের পর ফারজানা আকতার বলেন। যে নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটেছে তাঁদের জন্মের আগে, সেই ঘটনায় যেন ফিরে গেলেন তাঁরা। নতুন প্রজন্ম জানল, যে বাড়িতে তাঁরা দাঁড়িয়ে, সেখানে ঘটেছিল ইতিহাসের কালো অধ্যায়।
পুরো জাদুঘর ঘুরে দেখার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান এই তিন ছাত্রীকে ঘুরতে আসার জন্য ধন্যবাদ দেন। বলেন, ‘শিগগিরই আমরা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীদের এখানে নিয়ে এসে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করব। যেখানে শেখ ফজিলাতুন্নেছার জীবন নিয়ে স্মৃতিকথা বলবেন বিশিষ্টজনেরা।’
তিন ছাত্রী যখন বেরিয়ে এলেন, মন ভারী তাঁদের। ইতিহাসের নিষ্ঠুরতার কালো ছায়া তখন তাঁদের মন ছেয়ে গেছে। প্রকৃতিও যেন তা বুঝতে পেরেছিল। আবারও আকাশ তাই ছেয়ে গেল কালো মেঘে।
চিজ বার্গার তৈরির সহজ রেসিপি
ফাস্টফুডের মধ্যে বার্গার খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। আর তা যদি হয় চিজ বার্গার তাহলে তো কথাই নেই। তবে এই খাবারটি আপনি তৈরি করতে পারেন ঘরে বসেও। কীভাবে? চলুন শিখে নেই-
উপকরণ :
প্যাটি বানানোর জন্য: মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম, গোলমরিচের গুঁড়া ২ চা-চামচ, লবণ ১ চা-চামচ, তেল ১ চা-চামচ।
বার্গারের জন্য: বার্গার বান ৪টি (মাঝখান থেকে ২ ভাগ করা), মেয়নেজ, বার্গার চিজ ৪টি বা, পছন্দ করলে ৮টি, লেটুসপাতা বড় করে কাটা, টমেটো মোটাকুচি কয়েকটি, পেঁয়াজ মোটাকুঁচি কয়েকটি, সরিষাবাটা ২ চা-চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি :
প্যাটির সব উপকরণ ভালোভাবে মাখিয়ে নিন। ৪ ভাগেভাগ করুন। গোল গোল প্যাটি বানিয়ে অল্প তেল দিয়ে দুই দিকে ভালোভাবে ভেজে নিন। চাইলে গ্রিল করে নিতে পারেন। এবার বার্গার বানের নিচের বানে আগে অল্প সরিষাবাটা দিন। তারপর লেটুস পাতা দিয়ে একটি প্যাটি দিন। এর উপর মেয়নেজ দিয়ে টমেটোকুচি আর পেঁয়াজকুচিও দিন। চিজ দিন। চিজ বেশি পছন্দ করলে একেবারে নিচেও আরেকটা দিন। উপরের বানটা দিয়ে বানিয়ে ফেলুন মজাদার বার্গার।
হালকা মেকআপে গর্জিয়াস
নারীর সাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি প্রসাধনী হচ্ছে মেকআপ। নিজেকে আরেকটু আকর্ষণীয় আর অনন্যা করে তুলতে মেকআপ ব্যবহার করে থাকেন বেশিরভাগ নারী। তবে এই মেকআপের আধিক্য আমাদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলার বদলে অনেকটাই কমিয়ে দেয়। বরং হালকা মেকআপেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন গর্জিয়াস।
বেইজ মেকআপের ক্ষেত্রে ভারী ফাউন্ডেশন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। দিনের বেলা ম্যাট ফাউন্ডেশন দিয়ে বেইজ করা ভালো। ত্বক তৈলাক্ত হলে প্রথমে সারা মুখে লুজ পাউডার লাগিয়ে তারপর ফাউন্ডেশন লাগাতে হবে। এতে মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী হবে। ত্বক যা-ই হোক, কমপ্যাক্ট পাউডার দিয়ে বেইজ মেকআপ শেষ করা ভালো।
রাতের সাজে তৈলাক্ত ত্বকে দিন ‘লিকুইড ফাউন্ডেশন’। আর শুষ্ক ত্বকে ‘ক্রিম ফাউন্ডেশন’। তারপর প্যানকেক দিন। জমকালো আর ভারী সাজেই কেবল প্যানকেক মানানসই। সাধারণত হলুদ আর গোলাপি এই দু’টি রংয়ের প্যানকেক ব্যবহৃত হয়। প্রথমে হলুদ প্যানকেক দিয়ে তারপর ত্বকের রংয়ের সঙ্গে মিলিয়ে গোলাপি শেইডের প্যানকেক দিন।
সব ক্ষেত্রেই মেইকআপ ব্লেন্ডিং খুব জরুরি। ত্বকের সঙ্গে বেইজ যত ভালোভাবে মিশে যাবে ততই ‘ন্যাচারাল লুক’ আসবে। তারপর কমপ্যাক্ট পাউডার দিন। রাতের জমকালো অনুষ্ঠানে চাইলে ‘শিমার পাউডার’ ব্যবহার করতে পারেন।
নাক একটু টিকালো দেখানোর জন্য নাকের দুপাশে গাঢ় শেইডের কনসিলার দিয়ে উপরে লম্বা করে হালকা শেডের কনসিলার দিন। একইভাবে চোয়ালের শেপ ঠিক করে নিন। কনসিলার ছাড়াও ব্রোঞ্জিং পাউডার দিয়েও কনট্যুর ও হাইলাইট করা যায়। চাইলে চোখও হাইলাইট করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ঠোঁটের জন্য ‘ন্যাচারাল স্কিন কালার’ মানানসই। হালকা বা ভারী- সাজ যা-ই হোক, চোখ আর ঠোঁটের সাজ হবে বিপরীত।
চোখের সাজে লাইনার, মাসকারা আর শ্যাডো ব্যবহার করা হয়। দিনের সাজে তিনটি একসঙ্গে ব্যবহার না করে যে কোনো দুটি বা একটিতে সীমাবদ্ধ রাখা যেতে পারে। কাজল ও আইলাইনারের চেয়ে মাসকারা প্রাধান্য দিন।
চোখের পাতা ঘন দেখালে আরও আকর্ষণীয় লাগবে চোখ। সেজন্য কাজল বা আইলাইনার টেনে দিতে পারেন। তিনটি একসঙ্গে কেবল রাতের সাজেই চলতে পারে। ঠোঁটে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করুন। ব্লাশন সব সময়ই হালকা হলে ভালো লাগে। এমনকি রাতের পার্টিতেও এখন গাঢ় ব্লাশনের চল নেই।
ঘরকন্নার দরকারি টিপস
প্রতিদিনের ঘরের কাজগুলো গুছিয়ে করতে ভালোবাসি আমরা। তবু মাঝেমাঝে একটু এলোমেলো হয়ে যায়। হয়তো রান্নায় লবণ বেশি অথবা কম হয়ে যায়, কখনোবা অসাবধানতাবশত কাপড়ে দাগ লেগে যায়। এরকম আরো কত কী! তাই প্রতিদিনের ঘরকন্নার কাজটাই গুছিয়ে করতে আপনার জন্য রইলো কিছু জরুরি টিপস। অসাবধানতাবশত তরকারিতে লবণ বেশি দিয়ে ফেললে একদলা মাখানো ময়দা ছেড়ে দিন। তরকারি নামানোর আগে ময়দার দলাটি তুলে নিন দেখবেন লবণের মাত্রা কমে গেছে।
আরও পড়ুন: তেলাপোকার উপদ্রব থেকে বাঁচতে যা করবেন
অনেক সময় পোলাও রান্না করতে গেলে দেখা যায় একটু বেশি নরম হয়ে যায় তখন নিজের কাছে খুবই খারাপ লাগে। একটি পরিষ্কার শুকনো তোয়ালে বিছিয়ে তার উপরে পোলাওগুলো ঢেলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখুন পোলাওগুলো কেমন ঝরঝরে হয়ে যায়!
নেতিয়ে যাওয়া লেটুস পাতা তরতাজা করতে হলে একটু আলুর খোসা ছাড়িয়ে কুচিকুচি করে লেটুস পাতা সহ ঠান্ডা পানিতে ছেড়ে দিন দেখবেন কেমন তরতাজা হয়ে উঠেছে।
ফ্রেঞ্চফ্রাই বাচ্চাদের অনেক প্রিয় একটা খাবার। এটি তৈরি করার আগে কিছুক্ষণ ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে তারপর শুকিয়ে ভাজলে তা অনেক বেশি মচমচে ও অধিক স্বাদের হয়।
আরও পড়ুন: মশা-মাছি তাড়ানোর উপায়
ফ্রিজ দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে এক টুকরো লেবু কেটে ফ্রিজে রেখে দিন। দেখবেন ফ্রিজে আর কোন গন্ধ থাকবেনা। তবে ফ্রিজ নিয়মিত পরিষ্কার করতে ভুলবেন না।
পেঁয়াজের স্বাদ ও গন্ধ টাটকা পেতে হলে পেঁয়াজ ভাজার আগে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে দুধে ভিজিয়ে তারপর ভাজতে হবে।
দুধ ফেটে যাওয়ার ভয় থাকলে জ্বাল দেবার আগে সামান্য পরিমাণ খারাব সোডা মিশিয়ে দিন।
পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে চাল বা আটা ময়দার পাত্রের মধ্যে একটা তেজ পাতা রেখে সংরক্ষণ করুন।
দই তাড়াতাড়ি জমাতে হলে দুধে এক চা চামচ কর্ণফ্লাওয়ার মিশিয়ে দিন।
ভালো লাগবে সবকিছু
‘কিছুই ভালো লাগে না’ বা ‘কিছুই করতে ইচ্ছা করে না’ অনেক সময় নানা চাপের কারণে খানিকটা ঝিমিয়ে পড়লে আমরা এ ধরনের কথা বলি। আপনি যদি একটা দীর্ঘ সময় ধরে এই অনুভূতির ভেতর দিয়ে যেতে থাকেন, তবে এখনই সময় সচেতন হওয়ার। বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে একঘেয়ে হয়ে যাই বা কর্মক্ষেত্রে দিনের পর দিন অপছন্দের কাজ করতে হচ্ছে, সে ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে।
এসব ক্ষেত্রে নিজেকে নব উদ্যমে ফিরিয়ে আনতে কয়েকটা বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে বলেছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো আসে, সেগুলো নিয়ে আমাদের হয় আগ্রহ কম থাকে, না হয় আমাদের প্রস্তুতি কম থাকে। যার কারণে আমরা পিছিয়ে আসি। ধীরে ধীরে আমাদের আশপাশের অন্যান্য বিষয় নিয়েও একধরনের খারাপ লাগা কাজ করে। তাই নিজেকে নব উদ্যমে ফিরিয়ে আনতে প্রথমেই জানতে হবে আমার জীবনে কাজটির গুরুত্ব কতটুকু এবং কাজটির ফলাফল কেমন হবে। শুধু তা-ই নয়, এ ক্ষেত্রে সময়জ্ঞানও অনেক জরুরি। কাজটি যেমনই হোক, আপনি যখনই কাজটি সময়ের মধ্যে শেষ করতে সক্ষম হবেন, তখনই আপনার মাঝে একটা ভালো লাগা কাজ করবে।’
যেসব কাজের চর্চা আপনাকে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে—
কঠিন দিয়েই শুরু
নতুন উদ্যমে ফিরে আসতে কঠিন বা আপনার অপছন্দের কাজটি দিয়েই দিন শুরু করতে পারেন। যেহেতু কাজটি আপনার ভালো লাগার জায়গায় নেই, সেহেতু আপনি অবশ্যই চাইবেন কাজটি যত দ্রুত সম্ভব শেষ করতে। শুধু তা-ই নয়, অপছন্দের কাজ বা কঠিন কাজ কিন্তু কেউই বারবার করতে পছন্দ করে না। তাই পুরো মনোযোগ দিয়ে একবারে কাজ শেষ করবেন।
সময় ধরে কাজ
কাজ করার আগ্রহ যদি একেবারেই না থাকে, তবে চেষ্টা করুন সময় ধরে কাজ করার। ধরা যাক, প্রথম দিকে আপনি ঠিক করলেন টানা ২৫ মিনিট আমি কাজ করব এবং এই ২৫ মিনিটে কাজের বাইরে আর কিছুই করব না। ২৫ মিনিট পর আমি একটু বিরতি নেব, এভাবেই ২৫ মিনিটে সারা দিনের কাজ ভাগ করে নিন। প্রথম প্রথম ২৫ মিনিট পুরোপুরি না-ও হতে পারে। তবে ধীরে ধীরে আপনার কাজের গতি বাড়তে শুরু করবে। শুধু তা-ই নয়, একটা সময় আপনি দেখবেন আপনার কাজের প্রতি মনোযোগ এবং আগ্রহ দুটোই বেড়ে গেছে।
সাহায্য নিন
অনেক সময় আমরা একা একা নিজেদের সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারি না। আমাদের তখন আশপাশের মানুষের সাহায্য দরকার হয়। মনে রাখুন, কারও সাহায্য চাওয়া খারাপ কিছু নয় বা এতে করে আপনার নিজেকে ছোট ভাবার কোনো অবকাশ নেই। আপনি যেহেতু কাজ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন, সেহেতু আপনার বন্ধু বা বড় কাউকে বলুন আপনার কাজটি পর্যবেক্ষণ করতে। আপনার কাজটির ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিতে। এতে আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে। একান্তই যদি আপনি কারও দ্বারা প্রভাবিত হতে না চান, তবে নিজেই পর্যবেক্ষণ করতে পারেন নিজেকে।
সময়ের কাজ সময়ে
আমাদের কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলার আরেকটি অন্যতম কারণ সময়ের কাজ সময়ে না করা। যখনই আমরা একটা কাজ ফেলে রাখি, তখনই সেই কাজের চাপ আমাদের ভালো না লাগার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই চেষ্টা করুন ‘পরে করব’ এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার। নিজেকে বলুন, আমি আজই করব এবং সঠিকভাবেই কাজটি করব।
শান্তভাবে শুরু হোক
কোনোভাবেই যখন ভালো লাগছে না, তখন বুঝতে হবে আমার মাঝে একটা অস্থিরতা রয়ে গিয়েছে। নিজের মাঝে স্থিরতা আনতে প্রকৃতির কাছাকাছি কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন অথবা কোনো এক ছুটির দিনে নিজেকে সময় দিতে পারেন। ঘুম থেকে উঠেই এক কাপ চা কিংবা কফি পান করতে পারেন জানালার পাশে কিংবা বারান্দায় বসে। এরপর তৈরি করুন কী কী কাজ এখনো পড়ে আছে, তার তালিকা ঠিক করুন, এর মাঝে কোনটি করতে আপনি প্রস্তুত। শুরু করে দিন কাজটি। একটা সময়ের পর দেখবেন, ভালো লাগছে সবই।
গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ?
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ মা ও গর্ভস্থ শিশুর জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। গর্ভাবস্থায় তাই নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করা জরুরি। রক্তচাপ বেশি হলে তার চিকিৎসা নিয়ে অবহেলা করা উচিত নয়।
গর্ভাবস্থার প্রথম ৫ মাসের মধ্যে রক্তচাপ বেড়ে গেলে সেই মায়ের আগে থেকেই খানিকটা উচ্চ রক্তচাপ ছিল বলে ধরে নেওয়া যায়। যাঁদের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ আছে এবং ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁরা সন্তান নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন। কিছু রক্তচাপের ওষুধ গর্ভাবস্থায় খাওয়া যায় না। তাই প্রয়োজনে চিকিৎসক আগে থেকেই ওষুধ পরিবর্তন করে দিতে পারেন। সেই সঙ্গে রক্তচাপ পুরোপুরি স্বাভাবিক আছে কি না এবং উচ্চ রক্তচাপের কোনো জটিলতা আছে কি না, তা-ও পরীক্ষা করে নেওয়া যাবে।
গর্ভাবস্থার পাঁচ মাস পর যদি রক্তচাপ বেড়ে যায়, তবে তাকে জেসটেশনাল হাইপারটেনশন বা গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়। এটি সন্তান প্রসবের তিন মাসের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যায়। কিন্তু গর্ভকালীন রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া নিয়ে সতর্ক থাকা উচিত। নিয়মিত রক্তচাপ মেপে নিয়ন্ত্রণে না রাখলে নানা জটিলতা হতে পারে। মায়ের পা ফোলা, শরীরে পানি জমা, মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, শ্বাসকষ্ট, হার্ট ফেইলিউর, রক্তক্ষরণ, খিঁচুনি ইত্যাদি হতে পারে। প্রি-একলাম্পসিয়া ও একলাম্পসিয়ার প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। যাঁদের ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, থাইরয়েডের সমস্যা আছে তাঁদের ঝুঁকি বেশি। ওজনাধিক্য, পরিবারে গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকলে বা ২০ বছরের কম বা ৪০-এর বেশি বয়সে মা হলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
*গর্ভকালীন নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন। রক্তচাপ বেশি থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ওষুধ নিন। নিয়মিত প্রস্রাবে আমিষ ও অন্যান্য কিছু পরীক্ষা করুন।
*আলাদা লবণ খাবেন না। অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবারও নয়। যেমন সালাদে বা ফলের সঙ্গে লবণ দেওয়া হয়। আচার, চানাচুর, সয়াসস ও টেস্টিং সল্টযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবারে লবণ থাকে।
*অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, গরু-খাসির মাংস, ভাজা-পোড়া এড়িয়ে চলুন। কিন্তু প্রচুর তাজা শাকসবজি ফলমূল খান। দুধ, ডিম, মাছ খান।
* ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খান। দুধ, দই, পনির, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ, শিম, গাজর ইত্যাদিতে ক্যালসিয়াম আছে।
* চিকিৎসকের পরামর্শমতো নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন। রক্তচাপ ১৫০ (সিস্টোলিক) ও ১০০ (ডায়াস্টোলিক) এর বেশি হলেই ওষুধ লাগবে।
* ধূমপান, জর্দা, তামাক, অ্যালকোহল একেবারেই নিষিদ্ধ।
* উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা দেখা দিলে বা রক্তচাপ ১৭০/১১০ বা তার বেশি উঠে গেলে দ্রুত হাসপাতালে যান।
ডা. শরদিন্দু শেখর রায়
হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
মৈনট ঘাট: বাড়ির কাছে ‘মিনি কক্সবাজার’!
মৈনট ঘাট থেকে দূরে তাকালে সমুদ্রের বেলাভূমির খানিকটা আভাস মেলে। দিগন্ত ছুঁয়ে থাকা পদ্মার উত্তাল ঢেউয়ের মাথায় দুলতে থাকা নৌকা, প্রায় ডুবুডুবু স্পিডবোটের ছুটে চলা, পাড়ে সারিবদ্ধ বাহারি রঙের ছাতার তলায় পেতে রাখা হেলান-চেয়ার। ঘাটের কাছাকাছি দুই পাশে হোটেলের সারি। সেগুলোর সাইনবোর্ডে ঘাটের পরিচিতি ‘মিনি কক্সবাজার’।
ঢাকার দোহার উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর কোলে মৈনট ঘাট। দোহার থেকে দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। নদীর অপর পাড়ে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন। পদ্মা ভাঙতে ভাঙতে দোহারের প্রান্তে এখন চরমোহাম্মদপুরে এসে ঠেকেছে। এখানেই ঘাট। ঢাকার গুলিস্তান থেকে সরাসরি পাকা সড়ক চলে এসেছে ঘাট পর্যন্ত। এই রুটে বাস সার্ভিসও চালু আছে বহুদিন থেকে। এখন জনপ্রতি ভাড়া ৯০ টাকা। ঢাকা থেকে বাসে আসতে সময় লাগে ঘণ্টা তিনেক। আসলে সময় নির্ভর করে পথের যানজটের ওপর।
মৈনট ঘাটের এই হঠাৎ খ্যাতি ঘাটের দক্ষিণ পাশের চরটির জন্য। ঘাটের মাঝি চরমোহাম্মদপুরের বাবুল মোল্লার কাছে জানা গেল, নদীর পাশের এই নিচু জমিটি ২০১৫ সালে বন্যায় তলিয়ে যায়। উত্তর পাশে বালু পড়লেও দক্ষিণের অংশে পুরু হয়ে পলি পড়ে। পানি নেমে যাওয়ার পরে পলি মাটি জমে থাকা জায়গাটি অনেকটা সমুদ্রসৈকতের মতো দেখায়। বালু না থাকায় চলাফেরাও বেশ সুবিধাজনক। নদী পারাপারের সময় অনেকে এখানে এসে ছবি তোলেন। ফেসবুকে সেই ছবি দিতে থাকেন। সেই ছবি দেখে লোকে এখানে বেড়াতে আসতে থাকে। লোকসমাগম গত বছর থেকে বেশি হচ্ছে। এ বছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে এখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিল। এ ছাড়া শুক্র-শনিবার আর ছুটির দিনেও ১০ হাজারের মতো লোক এখানে বেড়াতে আসে।
মৈনট ঘাটের বয়স কত, তা কেউ সঠিক বলতে পারে না। তবে মিনি কক্সবাজার হিসেবে তার এই নয়া পরিচিতি বছর দুই হলো, মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে।
দ্রুত খ্যাতি লাভ করার প্রতিক্রিয়া ভালো-মন্দ উভয়ই প্রকারেরই। সমুদ্রসৈকত ভেবে গোসল করতে নেমে গত দেড় বছরে এখানে নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর ধরনে বাড়ির কাছেই সমুদ্রসৈকতের আবহ উপভোগ করতে প্রচুর লোকসমাগম হচ্ছে এখানে। গড়ে উঠেছে বেশ কিছু খাবার হোটেল। শুকনো মরিচ সহযোগে ডুবো তেলে ইলিশ ভাজার সৌরভ ছড়িয়ে পড়ছে পদ্মার বুক ছুঁয়ে ধেয়ে আসা ঘাটপাড়ের ভেজা হাওয়ায়।
মৈনট ঘাট থেকে পদ্মা পার হয়ে লোকে ফরিদপুর যাতায়াত করে। ঘাটে নদী পার হওয়ার বাহনও সদা প্রস্তুত। বাহন দুই ধরনের—ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে ৭০-৮০ জন যাত্রী ওঠে। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। আর স্পিডবোটে ওঠে ১৫-২০ জন, ভাড়া ১৬০ টাকা। স্পিডবোটের যাত্রীদের জন্য কোনো লাইফ জ্যাকেট নেই। ঝুঁকি নিয়েই তারা নদী পারাপার হয়। ঘাটের কিনারে ইজারাদারের টোল আদায়ের ঘর। সেখানে দায়িত্ব পালনকারী ইজাদারের প্রতিনিধি মো. জিয়া দাবি করলেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটে না। তাই লাইফ জ্যাকেটের দরকার নেই। এ বছর তিন কোটি টাকায় তাঁরা ঘাটের ইজারা নিয়েছেন বলে জানালেন তিনি।
লোকসমাগম বাড়তে থাকায় বেশ কিছু নতুন হোটেল হয়েছে। নদীতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছাউনি দেওয়া নৌকা এসেছে ডজনখানেক। নৌকায় বেশ ভালোই আয় হচ্ছে। তাই বাবুল মোল্লাও এমন একটি নৌকা নামিয়েছেন এ বছর। ঘণ্টাপ্রতি নৌকা ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকা। শতকরা ৪০ টাকা টোল দিতে হয় বলে ভাড়া বেশি—জানালেন বাবুল। এ কারণে ঘাট পার হতে যাত্রীভাড়াও বেশি। স্পিডবোটে ১৬০ টাকা ভাড়ার টোল ১০০ টাকা, ট্রলারে ৮০ টাকা ভাড়ার টোল ৫০ টাকা।
ছাতার তলায় পাতা চেয়ারগুলো ভাড়া নেওয়া যায় প্রতিটি ১০০ টাকা ঘণ্টায়। এগুলো পেতেছেন মিজানুর রহমান ও তাঁর চার বন্ধু। মিজানুর জানালেন, তিনি ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী। পাশের গ্রামেই তাঁর বাড়ি। একটু আয়-রোজগারের আশায় ২০টি চেয়ার পেতেছেন পাঁচ বন্ধু মিলে।
আয়-রোজগার যে মন্দ হচ্ছে না, তা দেখা গেল। ছাতার তলায় খোলা হাওয়ায় বসে উদার প্রকৃতির অকৃত্রিম শোভা উপভোগ করছিলেন রেহান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী নাদিয়া জামান। তাঁদের ছেলে আর ভাগনেরা সামনের পলিমাটির চরে ছোটাছুটিতে মগ্ন। রেহান দম্পতি জানালেন, ফেসবুক থেকেই তাঁরা মৈনট ঘাট সম্পর্কে জেনে এখানে বেড়াতে এসেছেন। থাকেন ঢাকার জিগাতলায়। গুলিস্তান থেকে বাসে এসেছেন। বেশ ভালোই লাগছে তাঁদের এখানে এসে।
এ রকম আরেকটি দলের দেখা পাওয়া গেল খানিকটা দূরে। দলটি বেশ বড়। পরিবার-পরিজনের ১০ সদস্যের দলের নেতৃত্বে আছেন একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মনসুরুল হক। ঢাকার কলাবাগান থেকে নিজেদের গাড়িতে এসেছেন প্রায় দুই ঘণ্টায়। তাঁরা বিস্মিত। ‘ঢাকার এত কাছে এ রকম সুন্দর জায়গা আছে, না এলে বুঝতেই পারতাম না’—এই হলো মনসুরুলের প্রতিক্রিয়া। অন্যরা তখন ব্যস্ত নৌকা ভাড়া করতে।
প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা হবে চরটি। অনেকে হাঁটাহাঁটি করছেন, কেউবা হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দেখছেন পদ্মা। সাহস করে নেমেও পড়ছেন কেউ কেউ। তবে প্রহরারত পুলিশ সদস্যরা তাঁদের সতর্ক করে দিচ্ছেন, ‘সাঁতার না জানলে পানিতে নামবেন না।’ পুলিশ সদস্যদের কাছে জানা গেল, গত প্রায় দেড় বছরে এখানে নদীতে নেমে নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।
অনেকের ধারণা, কক্সবাজারের মতো জায়গাটি ক্রমশ ঢালু হয়ে নেমে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এটি নদী, সমুদ্র নয়। এখানে পাড় একেবারে খাড়া। সে কারণে নামলেই গভীরে পড়তে হয়। দক্ষ সাঁতারু না হলে সেখান থেকে ওঠা মুশকিল। এ কারণেই নদীতে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। এখন বহু লোক আসছে। নিরাপত্তার জন্য দোহার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি থেকে সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানালেন কর্তব্যরত সহকারী উপপরিদর্শক সাজেদুল ইসলাম।
পদ্মার পাড়ে এসে ইলিশের স্বাদ না নিয়ে ফিরলে মনে যেন আক্ষেপ না হয়, সেই ব্যবস্থা করে রেখেছেন হোটেলওয়ালারা। আস্ত ইলিশ ভাজা থেকে শুরু করে ইলিশ ভর্তা পর্যন্ত ইলিশেরই হরেক রকম পদ পাওয়া যাবে হোটেলগুলোতে। ইলিশ ছাড়া নদীর অন্য মাছ, খাসি-মুরগির তেল-ঝালের তরকারির সঙ্গে বিনা মূল্যের ডাল। পদ্মা রোজ নিউ খাবার হোটেলের মালিক জুলহাস ভূঁইয়া জানালেন, তিনি ২০০০ সাল থেকে এখানে হোটেল ব্যবসা করছেন। তাঁর হোটেলটিসহ আগে এখানে মোটে তিনটি হোটেল ছিল। লোকজনের যাতায়াত কম ছিল। এখন লোকসমাগম বাড়ায় হোটেল হয়েছে ১০টি। এ ছাড়া আছে অনেকগুলো চায়ের দোকান। বিকেলে নদীর চরে ফুচকা চটপটিওয়ালারা যায়। সব মিলিয়ে বেশ জমজমাট পরিবেশ।
মৈনট ঘাটে বেড়াতে গিয়ে ইলিশের স্বাদ নিন, নৌকায় ভেসে যান কিংবা ছাতার তলায় অলস বসে খোলা হাওয়ার ঝাপটায় শরীর জুড়িয়ে নিন; কোনো সমস্যা নেই, নারী-পুরুষ যে-ই হোন, মনে রাখতে হবে সেই গানটি—‘আমার যেমন বেণি তেমনি রবে চুল ভেজাব না…’। কারণ, পদ্মা প্রমত্তা। তার স্রোত প্রখর, খাড়া পাড় অনেক গভীর। দুঃসাহসী হয়ে ওঠার প্রলোভনে নেমে পড়লে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ বিপদ।