banner

রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ইং, ,

Monthly Archives: May 2025

 

জুনে অমিতাভ রেজার নতুন ছবি

জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নির্মাতা অমিতাভ রেজা পরিচালিত ‘আয়নাবাজি’ ছবিটি গেল ৩০ সেপ্টেম্বর মুক্তি পায়। তারপর চারদিকে জোয়ার ওঠে ‘আয়নাবাজি’র। রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করে ছবিটি।

নতুন খবর হচ্ছে, নির্মাতা অমিতাভ রেজা ভাবছেন তার নতুন ছবি নির্মাণ নিয়ে।  তিনি বলেন, ‘আগামী জুন মাসেই নতুন ছবির ঘোষণা দেব। বর্তমানে কয়েকটি পাণ্ডুলিপির কাটাছেঁড়া করছি। এরমধ্য থেকেই গল্পের প্লট বের করছি।’

সে পর্যন্ত চলচ্চিত্রপ্রেমীদের অপেক্ষা করতে বললেন নির্মাতা অমিতাভ। তবে তিনি জানান, নিজের দ্বিতীয় ছবিতে অনেক চমক থাকবে।

‘আয়নাবাজি’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন চঞ্চল চৌধুরী ও নাবিলা।

 

পরকালের প্রথম মনজিল কবর

কবর হচ্ছে আখিরাতের প্রথম মঞ্জিল। যারা সহজে এ মঞ্জিল থেকে মুক্তি লাভ করবে। তার জন্য সবকিছু সহজ হয়ে যাবে। এ জন্য আম্বিয়ায়ে কেরাম, সাহাবায়ে কেরাম, আওলিয়ায়ে কেরামগণ সব সময় কবরের যাবতীয় বিষয়াবলী থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর নিকট রোনাজারি করতেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও কবরের সব ধরনের বিপদাপদ ও আজাব হতে আশ্রয় লাভের জন্য তাঁর উম্মতকে কুরআন-সুন্নাহর বিধান পালনের তাগিদ দিয়েছেন। দোয়া শিখিয়েছেন। আল্লাহর রহমত কামনা করতে বলেছেন।

হজরত বারা বিন আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে এক আনসারি সাহাবির জানাযায় অংশগ্রহণ করার জন্য বের হলাম।

তখনও ওই সাহাবার কবর খননের কাজ শেষ হয়নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিবলামুখী হয়ে বসে পড়লেন। আমরাও তাঁর চারপাশে বসে গেলাম।

তাঁর হাতে ছিল একটি কাঠি। তা দিয়ে তিনি মাটিতে খুঁচাতে থাকলেন আবার আকাশের দিকে তাকাতে থাকলেন। একবার জমিনের দিকে আবার আকাশের দিকে তাকাচ্ছিলেন। এভাবে তিনি তিনবার দৃষ্টি উঁচু-নিচু করলেন।

অতঃপর সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে কবরের আজাব থেকে আশ্রয়ের জন্য প্রার্থনা করো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথাটি দুই বার অথবা তিনবার বললেন।

অতঃপর তিনি পরকালের প্রথম মনজিল কবরের আজাব থেকে রক্ষা পেতে এ দোয়াটি করলেন-
kabar
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউ’জুবিকা মিন আ’জাবিল ক্ববরি।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই।

পরিশেষে…
পরকালের প্রথম মঞ্জিল হলো কবর। কবরের সব বিপদাপদ থেকে মুক্ত থাকাই একজন মুমিনের জীবনের প্রথম চাওয়া-পাওয়া। যে ব্যক্তি কবরের প্রশ্ন ও সময় সুন্দরভাবে অতিবাহিত করতে পারবে। তার পরবর্তী সব কাজগুলো সুন্দরভাবে সম্পন্ন হওয়ার আশা করা যায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরকালের প্রথম মনজিল কবরের আজাব থেকে রক্ষা করুন। কুরআন সুন্নাহর বিধি-বিধান যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। চিরস্থায়ী জীবনকে সুখ-শান্তিময় করুন। আমিন।

 

বাসযাত্রীরাও শাহনাজের পরিবার

গত বছরের ৮ নভেম্বর ২০১৬, সন্ধ্যা ছয়টা। রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বর পার হয়ে পূবালী ফিলিং স্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাসটি। আর বাসের গেটে দাঁড়িয়ে একজন নারী অনবরত বলে চলছেন, ‘শুধু মহিলা! মিরপুর ১০, ১১, ১২, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া’।
এই কাজ যিনি করছেন, তিনি শাহনাজ পারভীন। পেশায় একজন বাস কন্ডাক্টর। আর বাসটি নারী যাত্রীদের জন্য। নারীদের যাতায়াত সেবা দিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ঢাকায় ১৫টি এবং চট্টগ্রামে ২টি বাস চালু রেখেছে। এই বাসগুলোর সব কন্ডাক্টরই নারী।
সাত বছর ধরে বিআরটিসির বাসে কন্ডাক্টরের কাজ করছেন শাহনাজ। যাত্রীদের বাসে ডেকে তোলা, নামানো, ভাড়া নেওয়া, চালককে সহায়তা করাসহ সব কাজই তাঁকে সামলাতে হয়। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ শুরুতেই তাঁকে তিন মাসের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। রবি থেকে বৃহস্পতি—সপ্তাহের পাঁচ দিন তিনি এখানে কাজ করেন। বাসটি সকাল সাড়ে সাতটায় মিরপুর ১২ থেকে এবং সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় মতিঝিল থেকে ছাড়ে।
যাত্রী ডাকার ফাঁকে ফাঁকেই শাহনাজের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এর মধ্যেই এক-দুজন করে যাত্রী এসে বসতে শুরু করেন। শাহনাজ বলেন, ‘বিয়ের পরে স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় আসছি। একদিন আমার ভাই এসে বলে, বিআরটিসির মেয়েদের স্কুলবাসে চাকরি নিবি। আমি রাজি হই। সেই থেকে শুরু।’
বিআরটিসির মেয়েদের স্কুলবাসে পাঁচ বছর কাজ করার পর এখানে চাকরি নেন বরগুনার মেয়ে শাহনাজ। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয় তাঁর। এরপর আর পড়ালেখা এগোয়নি। জীবন নিয়ে শাহনাজের কোনো স্বপ্নও ছিল না।
শাহনাজ নিজ থেকেই বলেন, ‘মহিলা হয়েও এই কাজে আসার সাহস কী করে হলো, নিজেও জানি না। তবে আমি কাউরে ডরাই না। বাসের সবাইকে ফ্যামিলি মনে করি। সবাইকে লাইক করি। সবাই আমাকেও লাইক করে।’
তাঁর কথার সত্যতা মিলল প্রত্যেক যাত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময়ের ধরন দেখে। বাসের যাত্রীদের বেশির ভাগই তাঁর পরিচিত। মূলত ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করা নারীরাই এ বাসের যাত্রী। মিরপুর থেকে মতিঝিলের ভাড়া ২৫ টাকা।
শাহনাজ পারভীন l ছবি: খালেদ সরকাররাস্তায় তেমন কোনো সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় না শাহনাজকে। তিনি বলেন, প্রায়ই পুরুষ যাত্রী বাসে উঠে পড়েন। তাঁদের হেসে বলি, এটা শুধু মেয়েদের বাস। তখন তাঁরা সরি বলে নেমে যান। পুলিশও কোনো ঝামেলা করে না। মাঝেমধ্যে অবশ্য অন্য বাসের সহকারী বা রাস্তাঘাটে কিছু পুরুষের টিটকারি শুনতে হয়। এসব তিনি খুব একটা আমলে নেন না। শাহনাজ বলেন, ‘ইচ্ছা থাকলে যেকোনো কাজই করা যায়। কাজের আবার নারী-পুরুষ কী! অবশ্য মানুষের কথা কানে নেওয়া যাবে না।’
তিন বছর ধরে এই বাসে যাতায়াত করেন ব্যাংকার তহমিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘শাহনাজ আপা খুব সহযোগিতা করেন। তিনি যত্ন করে আমাদের নেওয়া-আনা করেন।’ এই বাসে নিয়মিত যাতায়াত করা সবার কাছে শাহনাজের মোবাইল নম্বর আছে। বাসটি কোথায় আছে জানতে তাঁরা যোগাযোগও করেন। অনেক সময় বাসটি দু-এক মিনিট যাত্রীদের জন্য দাঁড় করিয়েও রাখা হয়। রাস্তায় কোনো নারী যাত্রীকেই তিনি রেখে যেতে চান না। আবার অসুস্থ যাত্রীদের যত্নের সঙ্গে নামিয়ে দেন। নারীদের বাস হওয়ায় অনেক সময় স্বামী, ভাই বা বন্ধুকে রেখেই নারীকে বাসে তুলতে হয়। তখন একটু খারাপ লাগে শাহনাজের।
ফারজানা আলম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘মেয়েদের জন্য সব সময় লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাস দেয়। মাঝেমধ্যেই গাড়ি নষ্ট হয়। তখন খুব ঝামেলা হয়।’ এর সঙ্গে সহমত পোষণ করেন অন্য যাত্রীরাও। এ কারণে আগের তুলনায় যাত্রী কিছুটা কমে গেছে বলে জানান শাহনাজ। সুফিয়া তরফদার বলেন, ‘নারীদের জন্য আরও বাস থাকা উচিত। এতে নারীরা নির্যাতনের হাত থেকে কিছুটা রেহাই পাবে।’
শাহনাজকে দেখা যায়, মজা করতে করতেই ভাড়া তুলছেন। যাত্রীরা তাঁদের খাবার দিচ্ছেন শাহনাজকে। বাসের ভেতরে মোটামুটি একটা পারিবারিক পরিবেশ। যানজটে কষ্ট হয় শাহনাজের। তিনি বলেন, ‘খালি মনে হয় আপাদের কখন বাসায় পৌঁছাই দেব।’
কাজ করলে প্রতিদিন ২০০ টাকা করে নির্ধারিত বেতন শাহনাজের। বেতন নিয়মিত নয়—অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেন, ‘রোদ-বৃষ্টিতে ডিউটি করি, এখনো সাত-আট মাসের বেতন বকেয়া আছে।’ আর লাভ-লস যা-ই হোক, ভাড়া বাবদ দিন শেষে তাঁকে কর্তৃপক্ষকে জমা দিতে হয় ১ হাজার ৩০০ টাকা। এর বেশি আয় হলে তা শাহনাজের।
এ বিষয়ে বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান  বলেন, নারীদের যাতায়াত সেবা দিতে সাধারণ বাসের চেয়ে নারীদের বাস থেকে তুলনামূলক কম ভাড়া নেওয়া হয়।
৩৫ বছর বয়সী শাহনাজের প্রিয় নায়ক রঞ্জিত মল্লিক, সালমান খান। সাজগোজ করতে ভালোবাসেন। প্রিয় রং লাল। তাঁর দাদি আদর করে ডাকতেন লাল বুড়ি। ড্রাইভিং লাইসেন্স পেলেও আপাতত চালক হওয়ার ইচ্ছে নেই তাঁর।
শাহনাজের দুই ছেলে। বড় ছেলে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষ আর ছোটটি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। স্বামী ওমানপ্রবাসী। মিরপুরে স্বামীর ও নিজের জমানো টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। সেখানেই তিনি ছেলেদের নিয়ে থাকেন।
স্বামী ও ছেলেরা চান, তিনি কাজটি ছেড়ে দিন। কিন্তু তাঁর কথা, ‘এ গাড়ির যাত্রীরাও আমার পরিবার। তাঁদের না দেখে আমি থাকতে পারি না। আর আমি না থাকলে আপাদের কোনো সমস্যা হলে কে দেখবে!’ সব আপাকে ঘরে পৌঁছে দিয়েই তাঁর শান্তি। তাঁদের সেবা দেওয়ার মধ্যেই তাঁর সুখ।

 

চিলি বিফ উইথ ক্যাপসিকাম রাঁধবেন যেভাবে

চিলি বিফ উইথ ক্যাপসিকাম অনেকেরই পছন্দের খাবার। তবে এর জন্য রেস্টুরেন্টে না গিয়ে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন। আর তা খুব সহজেই সম্ভব যদি জানা থাকে এর রেসিপি। চলুন তবে জেনে নেই-

উপকরণ : গরুর মাংস ৫০০গ্রাম, হলুদ ক্যাপসিকাম ১টি, লাল ক্যাপসিকাম ১টি, গাজর ২টি, ওয়েস্টার সস ২ টেবিল চামচ, কর্ণফ্লাওয়ার ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১/২ চা চামচ, রসুন বাটা ১/২ চা চামচ, কাঁচামরিচ ৫/৬ টি, গোলমরিচ পরিমাণমতো, বড় পেঁয়াজ ২টি, ডিম ১টি, ধনেপাতা পরিমাণ মতো।

প্রণালি : প্রথমে মাংস স্লাইস করে কেটে আদা, রসুন, গোলমরিচ, কর্ণফ্লাওয়ার ও ডিম দিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে। একটি ফ্রাই প্যানে তেল দিয়ে তা একটু গরম হলে তাতে মাখানো মাংস ভেজে নিতে হবে। আর একটি প্যানে তেল দিয়ে তাতে ২ রকম ক্যাপসিকাম, গাজর, টমেটো, কাঁচামরিচ হালকা ভেজে নিতে  হবে। এরপর এতে ভাজা মাংস আর ওয়েস্টার সস দিয়ে ১ মিনিট নাড়তে হবে। অল্প পানিতে কর্ণফ্লাওয়ার গুলিয়ে তা মাংসে ঢেলে ১ মিনিট নাড়তে হবে। সারভিং ডিশে নামিয়ে নিয়ে তার উপর ধনেপাতা ছড়িয়ে দিতে হবে।

 

নিপুনে ফাগুনের আয়োজন

শীত চলে যাচ্ছে, পাতাঝড়ার শব্দও শোনা যাচ্ছে। গাছের নতুন গজিয়ে ওঠা পাতা জানান দিচ্ছে ফাগুন এলো বলে। আর সেই সাথে রয়েছে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-ভালোবাসা দিবস। পরপর দুটি দিনে আনন্দ আর ভালোবাসায় মেতে থাকি আমরা সবাই। আর মনের আনন্দকে ভাগ করে নিতে শরীরে ওঠে ফাগুনের পোশাক।

ফাগুন এবং ভ্যালেন্টাইস ডে-র পোশাকের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে ফ্যাশন হাউজ নিপুন। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, ফ্রক এবং শিশুদের পোশাক রয়েছে এ আয়োজনে। আর পোশাকগুলোতে রঙ হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে বসন্তের রং হলুদ, সবুজ, কমলা, সরিষা হলুদ, অফ হোয়াইট এবং লাল। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ এবং শিশুদের পোশাকে এসেছে নানা ফ্লোরাল মোটিভ। সুতি, হাফ সিল্ক, লিলেন এবং তাঁতের কাপড়ের এসব পোশাকে করা হয়েছে ব্লক, অ্যাম্ব্রয়ডারি, অ্যাপ্লিক, হাতের কাজ, স্ক্রিনপ্রিন্টসহ ইত্যাদি। পোশাকের দামটাও রয়েছে হাতের নাগালেই।

পোশাকগুলো পাওয়া যাচ্ছে রাজধানীর হোসেন প্লাজা, মিরপুর জাতীয় স্টেডিয়ামের বিপরীত দিকে নিপুনের শোরুম, বসুন্ধরা দেশিদশ, সিলেট দেশিদশ, চট্রগ্রাম দেশিদশ এবং গুলশান দেশিদশের নিপুনের শোরুমে।

 

উপহার দেয়ার আগে যা খেয়াল রাখবেন

উৎসব-আনন্দে কিংবা নানা অনুষ্ঠানে সব জায়গাতেই যার দরকার পড়ে তা হলো উপহার। মেরেজ ডে থেকে শুরু করে জন্মদিন- ছোট ছোট এমন হাজারো অনুষ্ঠানে থাকে উপহার দেওয়ার বিষয়। আর এটিই আপনাকে নানাভাবে ভাবায়। কিভাবে উপহার দেবেন, কী ধরনের উপহার দেবেন, কোথা থেকে কিনবেন সবকিছু আপনার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। আপনি নিজেও বুঝে উঠতে পারেন না যে কোন উপহারটি আপনার কাছের মানুষটির জন্য ভালো হবে। তাই উপহার ঠিক করার আগে ছোট ছোট কিছু বিষয়ের উপর লক্ষ রাখুন। যা আপনাকে উপহার কিনতে ও তা নির্বাচন করতে সাহায্য করবে।

বাজেট
আপনি সবার আগে যা ঠিক করবেন তা হচ্ছে কত টাকার মধ্যে আপনি আপনার উপহারটি কিনতে চাচ্ছেন। তা কি আপনি আপনার সাধ্যর মধ্যে কিনতে পারবেন? এই খুঁটিনাটি বিষয়গুলো উপহার কেনার আগে হিসাব করে নিন। এতে আপনার বাজেট এবং উপহার দুটিরই সমন্বয় থাকবে। তাই সবার আগে বাজেট ঠিক করে নিন।

অনুষ্ঠান বুঝে উপহার
আপনি আপনার প্রিয় মানুষটিকে কোনো দিন উপলক্ষে উপহার দিচ্ছেন তা অবশ্যই মাথায় রাখুন। আপনাদের প্রথম দেখার দিন হলে এক রকম, আবার নিজেদের মধ্যকার আরো কোনো মধুর সময়ের দিন হলে সেই দিন হিসেব করে প্রিয় মানুষটিকে উপহার দিন।

রঙ
উপহার দেওয়ার সময় রঙের বিষয়টি অনেকেই খেয়াল করেন না। এটি আসলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি আপনার কাছের মানুষটিকে যখন কোনো উপহার দিতে যাচ্ছেন খেয়াল রাখুন তা যেন তার পছন্দের রঙের হয়। এতে গিফটের গুরুত্ব আর আপনার তার প্রতি ভালোবাসা আরো প্রকাশ পায়।

পছন্দ
কাউকে উপহার দিতে গেলে নিজের ইচ্ছার কথা না চিন্তা করে যাকে উপহার দিচ্ছেন তার কথা চিন্তা করুন। তার পছন্দের কথা মাথায় রেখে উপহার কিনতে যান। আর যাবার আগে যার জন্য উপহার কিনতে যাচ্ছেন তিনি কী পছন্দ করেন তা ভালো করে জেনে নিন। আপনার প্রিয় মানুষটির ছোট ছোট পছন্দের কথা মাথায় রেখে উপহার কিনুন। কারণ বড় বড় উপহার থেকে প্রিয় মানুষটি হয়তো আপনার দেওয়া ছোট ছোট উপহারেই বেশি খুশি হয়।

 

ইবাদত-বন্দেগি কবুলে যে দোয়া পড়বেন

আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম দোয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দোয়াই হলো ইবাদত।’ আর মানুষ আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া এবং ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমেই তাঁর নৈকট্য অর্জন করে থাকে।

মানুষের দোয়া ও ইবাদত-বন্দেগি যাতে আল্লাহ তাআলার দরবারে কবুল হয়, সে জন্য আল্লাহর দরবারে বেশি বেশি প্রার্থনা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে নসিহত করেছেন, তারা যেন দোয়া ও ইবাদত-বন্দেগি কবুলের জন্য আল্লাহ তাআলার নিকট বেশি বেশি প্রার্থনা করেন।

বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে রকম একটি দোয়া শিখিয়েছেন। তিনি একবার হজরত মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে অসিয়ত করেছেন, তিনি যেন ইবাদত-বন্দেগি কবুলের জন্য প্রত্যেক নামাজের পর এ দোয়াটি করেন-

উচ্চারণ:  আল্লা-হুম্মা আ’ইন্নি আ’-লা জিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ই’বা-দাতিক।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে সাহায্য কর যেন, আমি তোমাকে স্মরণ করতে পারি, তোমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি এবং ভালোভাবে তোমার ইবাদত-বন্দেগি করতে পারি।’ (মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ, আবু দাউদ, মিশকাত)

আল্লাহ তাআলা যেন মুসলিম উম্মাহকে তাদের সব চাওয়া-পাওয়া, ইবাদত-বন্দেগি কবুল করতে বিশ্বনবির অসিয়ত করা দোয়া নিয়মিত পড়ার তাওফিক দান করেন। আমিন।

 

যে কারণে দক্ষ কর্মীরা চাকরি ছেড়ে চলে যান

প্রতিযোগীতার এই যুগে একটি ভালো চাকরি পাওয়া বেশ কঠিন। একজন চাকরিপ্রার্থীর জন্য ভালো চাকরি পাওয়া যেমন কঠিন তেমনি প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন দক্ষ কর্মী পাওয়া আরো বেশি কঠিন। প্রতিষ্ঠানের কিছু ভুলের জন্য দক্ষ কর্মীরা প্রতিষ্ঠানে ছেড়ে চলে যান। অনেক প্রতিষ্ঠান মনে করেন শুধুমাত্র অর্থের জন্য কর্মীরা চাকরির ত্যাগ করেন, বস্তুত অর্থ ছাড়াও আরো কিছু কারণেও একজন দক্ষ কর্মী প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করতে পারেন। তার মধ্যে অন্যতম কিছু কারণ নিয়ে আজকের এই ফিচার।

১। অসম্মানিত এবং তুচ্ছ হিসেবে পরিগণিত

আপনি যদি কর্মীদের মানুষের পরিবর্তে আসবাবপত্র হিসেবে গণ্য করেন, তবে তা কর্মীর জন্য অসম্মানজনক। অনেক সময় প্রতিষ্ঠান লাভ লোকসানের হিসাব নিকাশ করতে করতে ভুল যায় কর্মীরাও মানুষ। তাদেরকে আসবাবপত্রের মতো ব্যবহার করা হয়। কম বেতন দেওয়া, অসম্মান, কাজের অবমূল্যায়ন, অদক্ষ ব্যক্তির উন্নতি ইত্যাদি কর্মীদের প্রতিনিয়ত তুচ্ছ করে তোলে।

২। কর্মজীবনে উন্নতির অভাব

কোনো মানুষই একই কাজ প্রতিদিন করতে চান না।  সবাই চায় নতুন কিছু শিখতে, নতুন কিছু করতে। কর্মক্ষেত্রে উন্নতি কর্মীদের অন্যতম একটি চাহিদা। কর্মীরা আশা করেন তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজে আরো  দক্ষ করে তোলা হবে। কর্মীরা চান নিজেদের ক্যারিয়ারে উন্নতি। প্রত্যেক কর্মী আশা করেন প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করা হবে  সে অনুযায়ী কর্মীদের কাজে উন্নতি ঘটবে। কর্মক্ষেত্রে কাজের উন্নতি তাদের কাজে উৎসাহিত করে।     

৩। অসমতা

অসমতা কেউ পছন্দ করেন না। স্বজনপ্রীতি, বর্ণবাদী, বৈষম্যমূলক পরিবেশে কোনো দক্ষ কর্মী চাকরি করতে চান না। শুধুমাত্র অসমতার কারণে অনেক দক্ষ কর্মী এক বছরের মধ্যে চাকরি ছেড়ে দেন। সময় পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমান সময়ে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা অনেক। তাই  খুব বেশি সময় দক্ষ কর্মীরা বেকার থাকেন না।

৪। স্বীকৃতি বা পুরষ্কারের অভাব  

কাজের স্বীকৃতি সব কর্মীরা আশা করেনকাজের পুরষ্কারের জন্য  খুব বেশি কিছু করার প্রয়োজন তা কিন্তু নয়। একটি ছোট ধন্যবাদ কিংবা কাজের প্রশংসা হতে পারে কর্মীদের কাজের পুরষ্কার। ছোট এই কাজটুকু কর্মীদের কাজের দক্ষতা বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ।  কাজের স্বীকৃতি অভাব কর্মীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি সৃষ্টি করে,তারা নিজেকে  অকেজো, অপর্দাথ মনে করেন। তারা মনে করেন প্রতিষ্ঠানে তাদের কোনো প্রয়োজন নেই। চাকরি  ছেড়ে দেওয়ার জন্য এই কারণটি যথেষ্ট।

৫। নতুন কিছুতে নিরুৎসাহিত করা  

উদ্ভাবন এবং আইডিয়া যেকোনো প্রতিষ্ঠানের হৃদস্পন্দন।  প্রত্যেক মানুষ নতুন কিছু করতে চান। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা পরিবর্তনকে ভয় পায়। নতুন কিছু সহজে মেনে নিতে পারেন না। এইসকলে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা একই কাজ করতে করতে  আগ্রহ হারিয়ে একসময় প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

৬। অযোগ্য মানুষের পদন্নোতি

কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা ভুল বা অযোগ্য মানুষকে পদন্নোতি দিয়ে থাকেন। শুধুমাত্র সুসম্পর্কের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী নিয়োগ এবং পদন্নোতি দেন।  যেসকল প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতা বা কাজের মূল্য নেই সেসকল প্রতিষ্ঠানে দক্ষ কর্মীরা থাকতে চান না।

৭।  স্বৈরাচারী নেতৃত্ব

যেসকল প্রতিষ্ঠানে স্বৈরাচারী নেতৃত্ব বিদ্যমান সেখানে কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেন। কর্মীদের মতামত গুরুত্ব প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া উচিত। “বস ইজ অলওয়েজ রাইট” এই ধরনের নেতাদের কর্মীরা পছন্দ করেন না। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে দক্ষ কর্মীরা খুব বেশিদিন থাকেন না।

সূত্র: লাইফহ্যাক

 

ফাল্গুনের আগে ত্বকের যত্ন

শীতের বিদায়বার্তা বাজছে বাতাসে। বসন্ত এলো বলে! শীত ঠিকই চলে যাচ্ছে তবে আমাদের ত্বকে তার রুক্ষতার প্রভাব রেখে যাচ্ছে। ফাল্গুনে নিজেকে সাজাতে হলে চাই সুস্থ ও সতেজ ত্বক। আর তাই ত্বকের রুক্ষতা দূর করে লাবণ্যময় ত্বক পেতে আমাদের রয়েছে কিছু করণীয়। প্রতিদিন নিয়ম করে যত্ন নিলে সতেজ ত্বক পাবেন সহজেই।

গোসলের আগে লেমন টারমারিক ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্রিম শুধু ত্বক নরম করে না, সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের কালোভাব, সানট্যানের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। সাবান ও ক্লোরিনযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে ত্বকের যা ক্ষতি হয়, তা থেকে ত্বককে রক্ষা করতেও এই ক্রিম সাহায্য করে। হলুদের অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান ত্বকে ইনফেকশন প্রতিরোধ করে।

মুলতানি মাটি, কাঁচা হলুদ ও জলপাইয়ের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে মুখে, হাতে ও পায়ে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললেও ত্বক সতেজ হবে।

তিলের তেল, গ্লিসারিন ও গোলাপজল সমপরিমাণে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়।

সপ্তাহে একদিন মধু, গ্লিসারিন, লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে লাগাতে পারেন। এই মাস্ক পরিষ্কারের পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজারের কাজ করবে।

ত্বকে কালো দাগ হলে দাগযুক্ত স্থানে লেবুর রস ও মধু লাগান। লেবুর রস ও মধু ত্বকের কালো দাগ দূর করে।হাত-পায়ে গ্লিসারিন বা লোশন ম্যাসাজ করলে ত্বকের ভিতরে রক্ত-সঞ্চালনে হয়, ফলে ত্বক সজীব হয়ে ওঠে।

যাদের হাতের চামড়া অত্যাধিক পরিমাণে রুক্ষ, তারা ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার না করে ময়েশ্চারাইজারযুক্ত সাবান ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।

পানি ত্বকের ময়েশ্চারাইজ হিসেবে কাজ করে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে ত্বকের ময়েশ্চারাইজ বজায় থাকবে।

এ সময় প্রচুর তাজা ফলমূল ও শাক-সবজি পাওয়া যায়, এসব খেলেও ত্বক ভালো থাকে।

 

মচমচে পনির রোল

বিকেলের নাস্তা হিসেবে ঝটপট তৈরি করে ফেলতে পারেন মজাদার পনির রোল। খেতে সুস্বাদু এই আইটেমটি অতিথি আপ্যায়নেও পরিবেশন করতে পারবেন অনায়াসে।

জেনে নিন কীভাবে তৈরি করবেন পনির রোল-
উপকরণ
কাঁচামরিচ- ২/৩টি (কুচি)
পনির কুচি- দেড় কাপ
আলু- ১টি (সেদ্ধ করে চটকে নেওয়া)
পাউরুটি- ৮ টুকরা
ব্রেড ক্রাম্ব- আধা কাপ
ধনেপাতা কুচি- ২ টেবিল চামচ
প্রক্রিয়াজাত পনির- ৩ টেবিল চামচ (পাতলা করে কেটে নেওয়া)
মরিচ গুঁড়া- ১ চা চামচ
তেল- ভাজার জন্য
চাট মসলা- আধা চা চামচ
লবণ- স্বাদ মতো
প্রস্তুত প্রণালি
একটি বড় পাত্রে পাউরুটি বাদে সব উপকরণ নিয়ে ভালো করে মেখে নিন। পাউরুটির চারপাশের শক্ত অংশ ফেলে বেলে সমান করে নিন। মেখে রাখা পনিরের মিশ্রণ দিয়ে রোল করে নিন পাউরুটি। দুই পাশে কেটে সমান করে নিন। চাইলে মাঝ দিয়ে কেটে দুই ভাগ করে নিতে পারেন। চুলায় প্যান দিয়ে ডুবো তেলে ব্রাউন করে ভেজে তুলুন মচমচে পনির রোল। টমেটো সসের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

 

৩ ধাপেই ল্যাপটপ পরিষ্কার

দীর্ঘদিন ও নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ল্যাপটপের স্ক্রিনে দাগ পড়ে যায়। কি-বোর্ডেও জমে যায় ধুলাবালি। নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় এই মেশিনটি পরিষ্কার করতে খুব বেশি সময় ব্যয় হবে না।

জেনে নিন ৩ ধাপেই কীভাবে পরিষ্কার করবেন ল্যাপটপ-

  • সাদা ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে তৈরি করুন দ্রবণ। অ্যালকোহল অথবা অ্যামোনিয়া ব্যবহার করবেন না।
  • দ্রবণ স্প্রে বোতলে ভরে ল্যাপটপের স্ক্রিনের উপর হালকা করে স্প্রে করুন। ল্যাপটপ যেন বন্ধ থাকে সেদিকে লক্ষ রাখবেন অবশ্যই। স্ক্রিনে স্প্রে করে সঙ্গে সঙ্গে পাতলা ডিসপোজেবল কাপড়ের সাহায্যে চক্রাকারে মুছে নিন।
  • ল্যাপটপের কি-বোর্ড প্রথমে ব্রাশের সাহায্যে পরিষ্কার করুন। তারপর একটি চামচের উল্টো দিকে ভেজা টিস্যু পেঁচিয়ে চামচটি কি-বোর্ডের উপর হালকা করে বুলিয়ে নিন। সবশেষে হেয়ার ড্রায়ারের ধরে কি-বোর্ড শুকান। এতে আলগা ময়লা থাকলে সেটাও দূর হবে। তবে খুব কাছ থেকে হেয়ার ড্রায়ার ধরবেন না। ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের সাহায্যেও ল্যাপটপের কি-বোর্ড পরিষ্কার করতে পারেন।

তথ্য: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও উইকি হাউ

 

সুন্দর ত্বকের জন্য কয়েকটি ঘরোয়া প্যাক

সুন্দর ত্বকের জন্য প্রয়োজন নানারকম যত্নআত্তি। যত্নের অভাবে সুন্দর ত্বকও অনেকসময় ম্লান হয়ে যায়। শুধু যত্ন নিলেই হবে না, প্রয়োজন যত্ন নেয়ার সঠিক উপায়টি জানা। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে ব্যবহার করতে পারেন ঘরে তৈরি কিছু প্যাক। আর সেজন্য বাড়তি তেমন কিছুরই দরকার পড়বে না। আপনার হাতের কাছেই থাকে এমন কিছু দিয়ে তৈরি করে ফেলতে পারেন ত্বকের উপযোগী কার্যকরী কিছু প্যাক।

এক টেবিল চামচ শসার রস, এক চা চামচ লেবুর রস, এক চা চামচ হলুদের গুঁড়ো, এক চাচামচ গ্লিসারিন( শুষ্ক ত্বকের জন্য) মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কার্যকরী একটি প্যাক।

একটি পাকা কলার সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে নিন। ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ কলা ত্বকের কালো দাগ দূর করে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে দেয়।

এক টেবিল চামচ বেসন, এক টেবিল চামচ লেবুর রস, এক চাচামচ হলুদ গুঁড়ো এবং গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে ম্যাসাজ করে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ত্বকের কালো দাগ দূর করে থাকে এই প্যাকটি।

মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে লোমকূপের ছিদ্রগুলো ছোট করে দেয়। যারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান, এটি ব্যবহার করতে পারেন।

ত্বকের বলিরেখা রিংকেল দূর করতে স্ট্রবেরি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। স্ট্রবেরি ম্যাশ করে সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে নিতে পারেন। এছাড়া স্ট্রবেরির সাথে গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। প্রথমে এটি ত্বকে কিছুটা চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। কিছুক্ষণ পর তা চলে যায়। ভাল ফল পেতে সপ্তাহে দুইবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।

 

একাকিত্ব যেভাবে আপনাকে শক্তিশালী করবে

মানুষ এমন একটি প্রাণি যে একা পৃথিবীতে আসে কিন্তু একা থাকতে পারে না। মানুষ সবসময় সঙ্গী খুঁজে ফেরে। যার সাথে সে তার মনের কথাগুলো খুব সহজে খুলে বলতে পারবে। যাকে সে তার মতো করে না হলেও সেই মানুষের মতো করে তার মনে জায়গা করে দিতে পারে। কিন্তু খুব কম মানুষের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়। কখনো কখনো এমন সময় আসে যখন মানুষ একা থাকতে চায় না কিন্তু তাকে একা থাকতে হয়। আর এই একাকিত্ব মানুষকে একদিকে যেমন দুর্বল করে দেয় আবার অন্যদিকে করে তোলে শক্তিশালী।

সামলে নেয়া
আপনি যখন কোনো কারণে আপনার পরিবার থেকে দূরে থাকবেন কিংবা পরিবারের সাথে কোনো কারণে যোগাযোগ রাখতে পারবেন না তখন আপনার মাঝে চরম আকারের একাকিত্ববোধ কাজ করবে। আর এই একাকিত্ববোধ আপনাকে শুধু নিঃস্ব করবে না, আপনাকে কিছু জিনিস শিখিয়ে যাবে। আপনি জীবন কিভাবে একা একা কাটাবেন, কেউ যখন আপনার পাশে না থাকবে তখন নিজেকে কিভাবে সামলে নেবেন একাকিত্ব আপনাকে তাই শেখাবে।

যোগ্যতা
আপনি যখন একা থাকবেন, হাজারো মানুষের ভিড়ে আপনি যখন একা থাকবেন তখন আপনি নিজের যোগ্যতা অনুভব করতে পারবেন। আপনি নিজেকে কতটা সময়ের সঙ্গে উপযুক্ত করে তুলতে পেরেছেন তা অনেকাংশে নির্ভর করে আপনার এই যোগ্যতার ওপর। অনেকে অনেক কথাই বলবে। সবার কথার আড়ালে আপনি নিজেকে খুঁজে পাবেন কেবল এই একা থাকার সময়টুকুতেই।

বন্ধু
আপনার জীবনে আসল বন্ধু কে তা এই একা থাকার সময়টুকুতে বুঝতে পারবেন। আপনার বন্ধুদের আপনার জীবনে কতটুকু দরকার আর কে কে আপনাকে সত্যিকার অর্থে আপন ভাবে তা কেবল বোঝা যায় এই একা থাকার সময়টাতেই।

 

সহজেই রাঁধুন লবস্টার তন্দুরি

রেস্টুরেন্টে গিয়ে লবস্টার তন্দুরি নিশ্চয়ই অনেক খেয়েছেন। তবে চাইলে আপনি ঘরে বসেই তৈরি করতে পারেন সুস্বাদু এই খাবারটি। রেসিপি জানা নেই? রইলো রেসিপি-

উপকরণ : লবস্টার ৫০০ গ্রাম, গোলমরিচ সিকি চা চামচ, মরিচগুঁড়া আধা চা চামচ, লেবুর রস ১ চা চামচ, সরিষা বাটা আধা চা চামচ, মাখন ১ চা চামচ, অলিভ অয়েল ১ চা চামচ, ডিমের হলুদ অংশ ১ চা চামচ, বেড ক্রাম ২ টেবিল চামচ, চিজ ৫০ গ্রাম, গাজর টুকরা ১০ গ্রাম, ছোলোরি ১০ গ্রাম ও লবণ আধা চা চামচ।

প্রণালি : ফ্রাইপ্যানে মাখন ও অলিভ অয়েল অল্প গরম করুন। আস্ত লবস্টার পরিষ্কার করে লবণ, গোল মরিচ, মরিচগুঁড়া ও সরিষা বাটা দিয়ে মেরিনেট করে রাখুন। এরপর ফ্রাইপ্যানে অল্প ভেজে তুলে ফেলুন। এবার ফ্রাইপ্যানে বেডক্রাম, গাজর, ছোলোরি ও ডিমের হলুদ অংশ একত্রে মিশিয়ে সস তৈরি করে নিন। লবস্টার তৈরি করা সসের সঙ্গে মাখিয়ে চুলায় দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করে নামিয়ে ফেলুন। এরপর লবস্টারের ওপরে চিজ দিয়ে মাইক্রোওভেনে দুই মিনিট বেক করে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

দেশসেরা সবজিচাষি বেলি বেগম

শীতের সকালে গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে হেঁটে সবজিচাষি বেলি বেগম সবজি খামারে এলেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, চোখ ভরে দেখছিলেন নিজের সবুজ খেত। এক ফসলি জমি ছিল এখানে। এখন সেই বিস্তীর্ণ খেতজুড়ে সবজির সমারোহ। সবজি চাষে বিপ্লব ঘটেছে এ গ্রামে। আর এই সবজি চাষে বিপ্লবের কারণে দেশসেরা সবজিচাষি হিসেবে ৭ জানুয়ারি কৃষিতে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন বেলি বেগম।
বেলি বেগম এখন দেশের একজন আদর্শ সবজিচাষি। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে বেলি বেগমের বাড়ি। স্বামী সিদ্দিকুর রহমান। তিনিও জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক। বেলি বেগম তাঁর নিজ চেষ্টায় শূন্য থেকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন ‘বেলি কৃষি খামার’। ৪০ বিঘা জমির এই খামার বর্তমানে সবজি চাষের দেশসেরা অন্যতম আদর্শ খামার। এই খামার থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন কৃষি কলেজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী-শিক্ষক এবং ঢাকা খামার বাড়ির কৃষি কর্মকর্তারা আসেন। তাঁর এই কৃতিত্বের কাহিনি শোনালেন বেলি বেগম নিজেই।
বেলি বেগমের পুতুল খেলার বয়স পেরিয়ে যেতে না যেতেই বিয়ে হয়ে যায়। ১২ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ায় ছোট ভেবে শাশুড়ি তাঁকে খুব আদর করতেন। পরিবারে ছিল অসচ্ছলতা। থাকতেন পাকশী রেল কলোনিতে। সেখান থেকে চলে আসেন সলিমপুরের জগন্নাথপুর গ্রামে। গ্রামের বাড়ির আঙিনায় শাশুড়ি চালকুমড়ার চাষ করতেন। হাটে বিক্রির পর সেই টাকার কিছু অংশ তাঁকে দিতেন। সেখান থেকে পুঁজি বানিয়ে বেলি বেগম প্রথমে ১০টি মুরগির বাচ্চা কেনেন। কিন্তু কষ্টে তাঁর প্রাণ কেঁদে ওঠে। কারণ, ১০টির মধ্যে ৮টি বাচ্চা মারা যায়। তবু বেলি বেগম হতাশ হননি। সেই দুইটি মুরগি বড় হয়ে ডিম দেয়। খুশিতে আত্মহারা হয়ে ওঠেন বেলি বেগম। এভাবে ডিম থেকে ৪০টি মুরগির বাচ্চা পান। ডিম বিক্রি করে ২ হাজার ৫০০ টাকা পুঁজি হয়। এরপর কিছু টাকা ঋণ করে কেনেন একটি গরু। ছয়-সাত মাস রাখার পর সেটি বিক্রি করে দেন। এরপর কেনেন ২৬ হাজার টাকায় একটি গাভি। এক বছর পর গাভি একটি বাচ্চা দেয়। সেটিও ছিল গাভি। সেই দুইটি গরু থেকে প্রতিদিন সাত কেজি দুধ পাওয়া যেত। এভাবে বছর খানেক পর তাঁর জগন্নাথপুর গ্রামের বাড়ির আঙিনায় তিন কাঠা জমিতে গড়ে তোলেন একটি কুলের নার্সারি। সেখান থেকে কুলের চারা বিক্রি করতেন। বেলি বেগম তাঁর সেই নার্সারি থেকে শুরু করেন কুলের চারা বিক্রির কাজ। ২০০৭ সালে তিনি প্রথম আয় করেন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এভাবে ৪ বছরে তিনি ৪৭ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেন।
নিজ নামে কেনেন এক বিঘা পাঁচ কাঠার একটি জমি। সেখানে গড়ে তোলেন সবজি ও ফলের বাগান। তাঁর এই সবজির খামারে বর্তমানে গাজর, লাউ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ধনেপাতাসহ নানা জাতের সবজি ও ফসল উৎপাদন হচ্ছে বিষমুক্ত পদ্ধতিতে। এখন আর বেলি বেগমকে অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না। খামার থেকে প্রতিবছর কয়েক লাখ টাকা আয় করেন।
বেলি বেগম বলেন, তাঁর এ সবজির খামার দেখে এলাকার অনেক নারী-পুরুষ উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তাঁরাও গড়ে তুলেছেন সবজির বাগান।
তবে শুধু সবজি চাষই নয়, তিনি সামাজিক বিভিন্ন কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। বেলি বেগম তাঁর স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমি তো তেমন লেখাপড়া জানি না। কিন্তু একজন নারী শিক্ষিত হওয়ার পরও স্বামী বা অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন অনেক সময়। তবে আমি কষ্ট হলেও নিজ পায়ে দাঁড়িয়েছি। আমার মতো দেশের সব নারীকে এভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানো উচিত।’ বেলি বেগম বলেন, তাঁর স্বামীর পাশাপাশি তাঁর মেয়ে স্মিতা খাতুনও তাকে এ কাজে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করে। খামারে প্রতিদিন ৪০ জন শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। স্মিতা খাতুন খামার শ্রমিকদের নির্দেশনা দেয়।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রওশন জামাল বলেন, বিষমুক্ত ও বাণিজ্যিকভিত্তিক সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি বেলি বেগম দেশের একজন অন্যতম নারী কৃষি উদ্যোক্তা। তাঁকে দেখে সবাই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন, এটা দেখে ভালো লাগছে।

 

নারীর মানসিক স্বাস্থ্যও অবহেলিত

পুরুষদের তুলনায় নারীরা মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন বেশি, কিন্তু চিকিৎসা পান কম। দেশের প্রধান দুটি মানসিক হাসপাতালে নারীদের জন্য শয্যার সংখ্যাও অনেক কম। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মানসিকভাবে অসুস্থ নারীর যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ার পথে বাধা—লোকলজ্জা, কুসংস্কার আর পরিবারের অবহেলা।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (এনআইএমএইচ) সাধারণ মানসিক অসুস্থতাগুলোর লক্ষণ বুঝতে এ বছর দুটি এলাকায় এক জরিপ চালায়। এতে দেখা যায়, নারী-পুরুষনির্বিশেষে জরিপে অংশগ্রহণকারী লোকজনের ৩৩ শতাংশ বিষণ্নতা, উদ্বেগ, শুচিবাই, সিজোফ্রেনিয়া বা অন্য কোনো মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন। তবে নারীদের মধ্যে এই হার বেশি। তাঁদের ৩৭ শতাংশ এমন অন্তত একটি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। পুরুষদের মধ্যে এমন সমস্যা রয়েছে ২৭ শতাংশের।

প্রকোপ বেশি বিষণ্নতার

জরিপে অংশগ্রহণকারী লোকজনের ১৩ শতাংশই বিষণ্নতায় ভুগছেন। পাবনা মানসিক হাসপাতালের সাবেক পরিচালক আহসানুল হাবীব অক্সফোর্ড হ্যান্ডবুক অব সাইকিয়াট্রির বরাত দিয়ে বলেন, দুনিয়াজুড়ে নারীদের মধ্যে বিষণ্নতার হার পুরুষের তুলনায় দ্বিগুণ। আর আত্মহত্যার ঘটনাগুলোর ৪০ শতাংশই বিষণ্নতার কারণে ঘটে থাকে।

 আহসানুল হাবীব বলেন, মাসিকের সময়, গর্ভধারণের সময়ে, প্রসবের পর ও মেনোপজ বা মাসিক বন্ধ হওয়ার সময়ে মেয়েদের বিষণ্নতাসহ নানা রকম মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা না নিলে, পরে সেগুলোই মানসিক রোগ ডেকে আনে। এভাবে পুরুষের তুলনায় নারীদের মানসিক অসুস্থতা বেশি হতে দেখা যায়।

এনআইএমএইচের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক মো. ফারুক আলম  বলেন, নারীরা সাধারণত বিষণ্নতা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, হিস্টিরিয়া বা স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার মতো সমস্যায় বেশি ভোগেন। প্রজননচক্রের প্রভাব তো আছেই। মেয়েদের থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যাও বেশি হয়, যা থেকে এ ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসায় পিছিয়ে

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের হাসপাতাল। সম্প্রতি এই প্রতিবেদক হাসপাতালটিতে যান। তখন দুপুর ১২টা। বহির্বিভাগে ১০৫ নম্বর কক্ষের সামনে সাতজন রোগীর লাইন। নারী রোগী মাত্র একজন। ১০৩ নম্বর ঘরের সামনেও একই রকম দৃশ্য। এই ইনস্টিটিউট ও পাবনার মানসিক হাসপাতালের চিত্র বলছে, নারীদের সেবা নেওয়ার হার পুরুষের তুলনায় কম।

হাসপাতালের বহির্বিভাগে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরুষ রোগী এসেছেন ২১ হাজারের বেশি। তুলনায় বহির্বিভাগে ১৬ হাজারেরও কম নারী চিকিৎসা করিয়েছেন। ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা ছিল নারীর দ্বিগুণ।

পাবনা মানসিক হাসপাতালে অবশ্য বহির্বিভাগে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি এসেছেন। কিন্তু রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা নারীর সংখ্যার প্রায় চার গুণ। কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে এল শয্যাসংকটের কথা। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের হাসপাতালে মোট শয্যা আছে ২০০টি। এর মধ্যে নারীর জন্য বরাদ্দ মাত্র ৬৯টি। এসব শয্যায় শিশুদেরও রাখা হয়। পাবনা মানসিক হাসপাতালের ৫০০ শয্যার মধ্যে নারীদের জন্য আছে মাত্র ১০০টি।

ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. ফারুক আলমের মতে, পুরুষেরা যেহেতু হাসপাতালে বেশি আসেন, তাই তাঁদের জন্য বেশি শয্যা। তবে তিনি বলেন, নীতিগতভাবে বা রোগের ধরন অনুযায়ী মেয়েদের জন্য শয্যা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দরকার। তিনি লোকবল বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।

এদিকে পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক তন্ময় প্রকাশ মুঠোফোনে  বলেন, নারীদের মানসিক অসুস্থতা বেশি হওয়ায় তাঁরা হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে আসেন বেশি। কিন্তু শয্যা কম থাকায় অনেকে ভর্তি হতে পারেন না।

অবহেলা, লোকলজ্জা

অধ্যাপক মো. ফারুক আলম মনে করেন, বেশির ভাগ পরিবারে মূল উপার্জনকারীরা পুরুষ। তাই পুরুষের অসুখ-বিসুখে দ্রুত   ডাক্তার দেখানো হয়। মেয়েদের অসুখের কথা পরিবার আমলে   নেয় না, বিশেষ করে  শ্বশুরবাড়িতে। তা ছাড়া কোনো নারীর মানসিক সমস্যা হলে পরিবারের সদস্যরা বদনামের ভয়ে তাঁকে ডাক্তারের কাছে নিতে চান না। নারীরাও নিজেদের রোগ সম্পর্কে সচেতন নন। তাঁদের মধ্যে রোগ লুকোনোর একটি প্রবণতা থাকে।

ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে এনআইএমএইচের হাসপাতালে এসেছেন এক মা। মেয়ে তিন বছর ধরে বিষণ্নতায় ভুগছেন। কিন্তু চিকিৎসা শুরু হয়েছে দুই মাস আগে। মা বলেন, ‘মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে তো। এ জন্য চেষ্টা করেছি যাতে আমার পাড়াপ্রতিবেশী না জানেন।’ এখন অসুখের বাড়াবাড়ি হওয়ায় হাসপাতালে এনেছেন।

আরেক মা ঝিনাইদহ থেকে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। এইচএসসি পাসের পরে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিছুদিন পার হতেই মেয়ে কথা বলা কমিয়ে  দেন। এখন একদম চুপচাপ হয়ে গেছেন, শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। মেয়ের এমন অবস্থা পর্যায়ে এসেছে ছয়    বছরে। মা বলেন, ‘এত দিন বাড়িতে চিকিৎসা করে ভালো   করার চেষ্টা করছি। কিন্তু দিন দিন মেয়ের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল দেখে হাসপাতালে নিয়ে আসছি। এর জন্য অনেক টাকাও জমাতি হইছে।’

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহিত কামাল বলেন, মানসিক রোগ হলে অনেকে সেটা বুঝতে পারেন না। মেয়েদের উচিত হবে লুকিয়ে না রেখে মানসিক সমস্যার কথা খুলে বলা। আর পরিবারকে বুঝতে হবে এটি একটি রোগ। সময়মতো এর চিকিৎসা করানো দরকার।

 

চুলায় কেক তৈরি করার সহজ উপায়

কেক এখন আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার অংশ হয়ে গেছে। সকাল-বিকাল-সন্ধ্যায় কেক খাওয়া হয়ই। তবে তার বেশিরভাগই বাইরে থেকে কিনে আনা। প্লেইন কেক তৈরি করতে পারেন ঘরেও। আর তার জন্য ওভেনের দরকার পড়বে না। গ্যাসের চুলায় সুস্বাদু প্লেইন কেক তৈরি করার উপায় জেনে নেই-

উপকরণ : মাখন বা তেল ১/২ কাপ (মাখন ফ্রিজ থেকে বের করে নিবেন আগেই), চিনি ১/২ কাপ (অথবা আপনার রুচি অনুযায়ী দিন), ডিম ২টি (ফ্রিজ থেকে বের করে নিবেন আগেই), ময়দা ১ কাপ, বেকিং পাউডার ১ চা চামচ, গুড়ো দুধ ২ টেবিল চামচ, ভ্যানিলা এসেন্স ১ চা চামচ, কিসমিস, টুট্টি-ফ্রুট্টি, মোরব্বা ও বাদাম (নিজের ইচ্ছামত বা না দিলেও চলবে)।

প্রণালি : ময়দার সাথে বেকিং পাউডার মিশিয়ে চেলে নিন। ডিম ভেঙে কুসুম আলাদা করে রাখুন, এবার ডিমের সাদা অংশ বিটার দিয়ে ফোম তৈরি করুন। কুসুম, তেল/মাখন ও চিনি দিয়ে আরও ভালোভাবে বিট করুন। ভ্যানিলা এসেন্স ও গুড়ো দুধ দিয়ে বিট করে ভালো করে মিশিয়ে দিন এবার চালা ময়দা মিশিয়ে দিন ডিম ময়দার মিশ্রণে এক্ষেত্রে কখনোই বিটার ব্যবহার করবেন না। ময়দা দেওয়ার পরে যে দিকেই নাড়ুন না কেন একদিকেই নাড়বেন, নাহলে ফোমটা বসে যাবে এবং কেক ফুলবে না। এবার পছন্দমতো কিসমিস, বাদাম ইত্যাদির গায়ে অল্প ময়দা/কর্নফ্লাওয়ার লাগিয়ে কেকর মিশ্রণে মিশিয়ে দিন এবং বেকিং প্যানে অথবা চুলার দেবার জন্য সুবিধা মতো একটি পাত্রে ঢেলে নিন(পাত্রের ভিতরে মাখন মেখে নিবেন আগেই)।

একটি সসপ্যান বা হাঁড়ি নিন। স্টিলের স্ট্যান্ড থাকলে স্টিলের/লোহার স্ট্যান্ড প্যান এর উপর বসিয়ে দিন আর না থাকলে বালি দেড় থেকে ২ ইঞ্চি পুরু করে প্যানের ভিতরে দিন। মাঝারি আঁচে পাত্রটি গরম করুন। এবার কেকের বাটি স্ট্যান্ড অথবা বালির উপর বসিয়ে অল্প আঁচে সসপ্যান বা হাঁড়ি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। ১ ঘণ্টা পর টুথপিক দিয়ে কেক হয়েছে কিনা দেখুন। না হলে আরও ১৫/২০ মিনিট বেক করুন।

 

ছোট বাড়ির সুবিধা

বাড়ি মানেই শান্তির জায়গা। সারাদিন আপনি যতই ক্লান্ত থাকুন না কেন, কাজ শেষে যখন বাড়ি ফিরবেন তখন দেখবেন আপনার সারা দিনের কষ্ট মিলিয়ে গেছে। তবে বাড়ি যদি বিশাল হয় তবে তা দেখে শুনে রাখা কিছুটা কষ্টের। আর যদি ছোটখাটো হয় তবে যেমন সুবিধা আছে তেমনই হাজারটা অসুবিধা। বড় বাড়িতে যেমন সবাই খুব মজা করে আরাম করে থাকা যায়, ছোট বাড়িতে তেমনটা থাকা যায় না। আবার যাদের ছোট পরিবার তাদের জন্য কেবল ছোট বাড়িই ভালো। এছাড়াও আরো সুবিধা আছে এই ছোট বাড়িতে থাকার।

খরচ
ছোট বাড়িতে থাকা মানে খরচ কমে যাওয়া। একটি বাড়ি পরিষ্কার রাখতে কিংবা পরিবারকে চালাতে খরচের বিষয়টি কাজ করে। বাড়ি ছোট হলে টাকা কম খরচ হয় আর বাড়ি বিশাল হলে খরচও হয় অনেক।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা
বাড়ি বড় হলে পরিষ্কার করতে খুব কষ্ট হয়ে পরে। কিন্তু বাড়ি ছোট হলে তা পরিষ্কার করা খুব সহজ কাজ। আপনি কিংবা আপনার পরিবারে যারা আছেন তারা সবাই মিলে দিন কিংবা সময় ভাগাভাগি করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজটি সেরে নিতে পারেন।

জিনিসপত্র খুঁজে পাওয়া
আপনি যখন বড় একটি বাড়িতে থাকবেন তখন আপনার জিনিসপত্র নানা জায়গায় থাকবে। অন্যদিকে আপনি যখন ছোট বাড়িতে থাকবেন তখন আপনার ঘরে আসবাবপত্রও কম থাকবে এবং আপনি আপনার জিনিসপত্র খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রাখতে পারবেন। তাই নিজের জিনিসপত্র খুঁজে পেতে আপনার ছোট ঘরটি সবচেয়ে ভালো জায়গা।

সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা
আপনি যখন ছোট পরিসরের বাড়িতে থাকবেন তখন আপনি আপনার শোবার ঘর থেকে শুরু করে আপনার ড্রয়িং রুম এবং আপনার বারান্দা সব কিছু আপনি খুব পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখতে পারেন। এতে আপনার ঘরটি যেমন খুব অল্পের মাঝে সুন্দর লাগবে তেমনই আপনিও আপনার ঘরে শান্তিতে থাকতে পারবেন।

 

সৃষ্টির নামে কসম মারাত্মক অপরাধ

কসম দ্বারা সাধারণত আমরা প্রতিজ্ঞা বা হলফ করাই বুঝি। আর ইসলামি শরিয়তে কসম বলতে আল্লাহ তাআলার নামে কসম করাকেই বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য কারো নামে (আল্লাহর সৃষ্টির নামে) কসম করা শিরক বা কুফরি।

কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কাজের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার নামে কসম করে এবং তা বাস্তবায়ন না করে তবে সে গোনাহগার হিসেবে পরিগণিত হবে।

কসমকারী ব্যক্তি কসম বাস্তবায়ন না করলে ওই ব্যক্তিকে কসমের কাফফারা দিতে হবে।  তাছাড়া ইসলামি শরিয়তে কসম করার নিয়ম রয়েছে। কসমের শব্দগুলো হবে এমন-

‘উকসিমু বিল্লাহ; ওয়াল্লাহ; বিল্লাহ; তাল্লাহ ইত্যাদি শব্দ দ্বারা কসম করা। অর্থাৎ ‘আল্লাহ তাআলার নামে কসম করা।’

সাধারণ অর্থে যদিও কসম করা ঠিক নয়। তারপরও মানুষ কথায় কথায় অজ্ঞতাবশতঃ কসম করে বসে। শুধু তাই নয়, বরং মানুষ আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য ব্যক্তি ও বস্তুর নামে ‍শিরকি ও কুফরি কসম করে থাকে।

যেমন বলে থাকে যে, ‘পশ্চিম (কাবার) দিকে মুখ করে কসম; মসজিদে গিয়ে বা স্পর্শ করে কসম; ছেলে-মেয়ের নামে বা স্পর্শ করে কসম; মা-বাবাসহ অন্যান্য গাইরুল্লাহর নামে কসম। যা শিরক ও কুফরি কাজ।

প্রকৃত পক্ষে সৃষ্টি জগতের কসম শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য নির্ধারিত। যা কুরআনের বহু জায়গায় অনেকবার উল্লিখিত হয়েছে। অথচ মানুষ সৃষ্টির কসম করে থাকে।

একান্ত প্রয়োজনে যদি কসম করতেই হয় তবে কমস করতে হবে ইসলামি রীতি অনুযায়ী শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার নামে। জ্বিন-ইনসান তথা গাইরুল্লাহর নামে কসম করা কুফরি তথা শিরকে আসগার বা ছোট শিরক। এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে-

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর (আল্লাহ ব্যতীত অন্যের) নামে হলফ বা কসম করলো সে কুফরি বা শিরক করলো। (তিরমিজি, মুসতাদরেকে হাকিম)

পরিশেষে…
যদি কোনো কারণে কসম করতেই হয় তবে শুধুমাত্র আল্লাহর নামেই কসম করা। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করা কুফরি বা শিরক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কসম করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।

একান্তই যদি কসম করতে হয় তবে গাইরুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করা থেকেও বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

শিশুর নৈতিক শিক্ষায় অভিভাবকের করণীয়

শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। বড়রা যা করে; তা দেখে দেখে শিশুদের মাঝে সে অভ্যাস গঠন হয়। তাই শিশুদের সঙ্গে পরিবারের সদস্য,বাবা-মা অথবা অভিভাবকের আচরণ মার্জিত, সুন্দর এবং শিক্ষণীয় হওয়া আবশ্যক।

শিশুদের সঙ্গে এমন কোনো আচরণ করা যাবে না; যা তাদেরকে বিপথগামী করে বা তাদের কচি মনে কোনো অযাচিত প্রশ্নের উদ্রেক হয়।

এ বিষয়ে জনপ্রিয় অনলাইন ইলমফিড ডটকম-এ (www.ilmfeed.com) মুসলিম শিশুদের বেড়ে ওঠায় অভিভাবকদের করণীয় সম্পর্কিত ১৮টি টিপস লিখেছেন মুফতি ইসমাইল মেন্‌ক। যা এখানে তুলে ধরা হলো-

১. সন্তানের প্রশংসা করুন যদিও সে কোনো কাজে ১০-এর মধ্যে ৪ পায়। এমনকি অন্যদের সামনেও সন্তানের প্রশংসা করুন।

২. আপনার সন্তানকে কখনোই ভাবতে দিবেন না যে, তার কাজ করার যোগ্যতা নেই। কখনোই আপনার সন্তানের সামনে অন্যের সন্তানকে বড় করে না দেখা বা দেখানো।

৩. সবসময় আপনি সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন। কথা বলুন মায়া-মমতা ও স্নেহের সঙ্গে। যেমন তাকে বলুন- ধন্যবাদ, শুকরিয়া ইত্যাদি। কখনো তাদের সঙ্গে অভদ্র ভাষা বা শব্দ ব্যবহার করবেন না। যেমন- কোনো জিনিস চেয়ে বলবেন না যে, দে, যা ইত্যাদি। বরং তাদের সঙ্গে বিনয় ও নম্রতার সঙ্গে বলুন- দাও, যেতে পার, খেয়ে নাও ইত্যাদি।

৪. আপনার সন্তান যখন বড় হতে থাকবে তখনো ছোটবেলার মতো তাকে সমানভাবে সঙ্গ দিন। তারা বড় হয়েগেছে ভেবে তাদের খেলাধূলাসহ সব কাজ থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখা থেকে বিরত থাকুন। যদি তাদের এড়িয়ে চলেন, তবে সে মানসিকভাবে বিরূপ মনোভাবাপন্ন হয়ে যাবে।

৫. সিদ্ধান্ত গ্রহণে সন্তানকে সহায়তা করুন। সে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সঠিক উপায় আপনার কাছ থেকেই শিখবে। তাকে প্রতিশ্রুতি বা দিক-নির্দেশনা দিন, গাইড বা সঠিক নির্দেশক হিসেবে তাদের সঙ্গে কথা বলুন। যদি তারা কোনো কিছু করতে চায় বা কোথাও যেতে চায় তবে তাদের পরিকল্পনায় সহযোগিতা করুন।

৬. আপনি যখন কোনো কাজের সিদ্ধান্ত নিবেন তখন সন্তানের মতামত জানুন। যেমন- আপনি একটি গাড়ি ক্রয় করবেন। সেক্ষেত্রে সন্তানের কাছ থেকে জানতে চেষ্টা করুন কি ধরণের গাড়ি তার পছন্দ ইত্যাদি। এতে তাদের মাঝে পরমর্শসূলভ অভ্যাগ গড়ে ওঠবে।

৭. যদি সম্ভব হয় ঘরের একটা জায়গা তাদের জন্য নির্ধারিত করে দিন। যেখানে তাদের অর্জনগুলো তারা প্রদর্শন করতে পারে। সেখানে তাদের নাম লিখা থাকবে। যেমন- কোনো প্রতিযোগিতায় অর্জিত স্মারক বা উপহার সামগ্রী প্রদর্শন করে রাখার জন্য একটি শোকেস বা জায়গা নির্ধারণ করে দিন। যাতে তারা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে যে, তারাও ভালো কিছু করতে পারে।

৮. আপনার সন্তানকে নামাজের শিক্ষা দিন। গা ছাড়া ভাবে অর্থাৎ অবহেলা করে তাদের নামাজের কথা না বলে বরং জোর দিয়ে বলুন- তুমি নামাজ পড়; তোমার নামাজ পড়া আবশ্যক। আপনার এ দায়িত্ববোধ আপনার সন্তান জীবনভর মনে রাখবে।

আপনার সন্তানের বয়স যখন ৭ বছর হবে তখন থেকেই তাকে নামাজের তাগিদ দিন। যখন এ বয়সে তাকে নামাজের তাগিদ দিবেন তখন তারা বয়ঃসন্ধিকালে সে এ কথা উপলব্দি করবে যে, তাদের জন্য নামাজ পড়া জরুরি।

৯. আপনার সন্তানকে মতামত প্রদানের বা দ্বিমত পোষনের পদ্ধতি শিক্ষা দিন। তাদেরকে সামনে কখনো কথায় কথায় শপথ বাক্য বলা যাবে না। অথবা আক্রমনাত্মক কোনো শব্দ ব্যবহার করা যাবে না; যা তাদের মধ্যে এর কুপ্রভাব পড়ে। কেননা সন্তানরা সব সময় অনুকরণ প্রিয়।

১০. আপনার সন্তানের জানার আগ্রহকে বাড়িয়ে দিতে প্রশ্ন করার প্রতি উৎসাহিত করুন। সন্তানের করা প্রশ্নের সুন্দর তথা ইতিবাচক উত্তর দিন। অন্যথায় তারা ভুল উত্তর গ্রহণের প্রতি ঝুঁকে পড়বে। তাদের প্রত্যেকটি প্রশ্নের প্রসংশা করুন।

১১. সব সময় সন্তানের সঙ্গে করা প্রতিটি ওয়াদা বা প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করুন। সন্তানের সঙ্গে এমন কোনো ওয়াদা বা প্রতিজ্ঞা করবেন না, যা করতে আপনি অপারগ।

১২. আপনার সন্তানকে শিখান, কিভাবে একটি দলের সদস্য হিসেবে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হয়। দলগতভাবে সফলতা লাভ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রতিযোগিতার পরিবর্তে তার জীবনের সুপ্ত প্রতিভা খুঁজতে সহায়তা করে।

১৩. আপনার সন্তানের জন্য দোয়া করুন। এমনকি যদি আপনার সন্তান পথহারা হয়ে যায় বা বিপথে যায়। তারপরও সন্তানের কল্যাণে দোয়া করুন।

১৪. সন্তানকে বলুন- তুমি যদি কোনো বিষয়ে সফল না হও। তথাপিও হতাশ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাকে শিখান কিভাবে ব্যর্থতার বিপরীত সফল হওয়া যায়।

১৫. যদি আপনি কোনো ভুল করে বসেন তবে তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করুন। তাদেরকে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি শিক্ষা দিন। এ ভুল নিয়ে তার সঙ্গে বাড়াবাড়ি না করাই উত্তম। তাহলে সন্তান অন্যের সঙ্গে এর রকম বাড়াবাড়ি আচরণ করা শিখবে। তার মধ্যে অনুশোচন ফিরে আসবে।

১৬. বাড়িতে তার ভালো কাজের জন্য আপনার সন্তানকে পুরস্কৃত করুন। তার ভালো কাজের ব্যাখ্যা করে জানিয়ে দিন যে, তাকে কোনো ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করেছেন।

১৭. আপনার সন্তানের সাধ্যানুযায়ী পবিত্র কুরআনের কিছু অংশ পড়তে তাকে প্রশিক্ষণ দিন। এবং প্রতিদিন কুরআন পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করুন।

১৮. আপনার সন্তানকে কতবেশি ভালো বাসেন তা তাকে বার বার বলুন। তাদেরকে বুঝান তারা আপনার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাদেরকে জড়িয়ে আদর করুন। তাঁদেরকে চুমু খান। এটা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব অভিভাবককে তাদের শিশু সন্তানের সঙ্গে সব সময় উত্তম আচরণ ও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে তাদের নৈতিক শিক্ষা ও উন্নত মনোভাব গঠনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

স্মার্ট মানুষেরা যে কাজগুলো কখনো করে না

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি পদক্ষেপই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কোন পদে কোন সিদ্ধান্ত নেবেন তার উপর ভিত্তি করে আপনার পার্সোনাটিটি অনুমান করা হয়। আপনি যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন তাহলে যেমন সাহসিকতার খেতাব পাবেন ঠিক তেমনই আপনার চারপাশের মানুষগুলো আপনাকে নানাভাবে অনুসরণ করবে। আপনার কাজের মাধ্যমেই প্রমাণ পাওয়া যাবে আপনি কতটুকু স্মার্ট।

টাকা বাঁচানোর বুদ্ধি
আপনি যদি স্মার্ট পার্সোনালিটির মানুষ হয়ে থাকেন তবে আপনি কখনো কাউকে দেখিয়ে টাকা বাঁচাতে যাবেন না। আপনি যতটা খরচ করবেন ঠিক কিভাবে তা আপনি আপনার ঝুলিতে নিয়ে আসবেন তার চিন্তা করবেন। আপনি খরচ করতে যতটা না ভাববেন তার থেকে ভাববেন আয়ের উৎস বের করা যায়।

অন্যর ওপর আশা না করা
আপনি যখন কোনো ব্যবসা কিংবা কাজ করতে যাবেন আপনাকে কারো না কারো ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আর আপনি যখন কারো ওপর চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করবেন ঠিক তখনই সমস্যার সৃষ্টি হবে। আপনি নানাভাবে ঠকলেও কাউকে কিছু বলতে পারবেন না। কিন্তু যাদের মাঝে স্মার্টনেস বিষয়টি আছে তারা কখনো অন্যর ওপর আশা করবে না । সবসময় নিজের দিক থেকে আগে চিন্তা করবে। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সময় নেবে।

দ্বায়িত্বহীনতা
অনেকের মাঝেই এই ব্যপারটি থাকে যে সময়ের কাজ সময়ে না করা। কিন্তু যারা স্মার্ট তারা সময়ের কাজ ঠিক সময়ে করে ফেলে। কারণ এতে আপনাকে দিয়ে যে কাজ করাচ্ছে সে যেমন আপনার ওপর খুশি হবে তেমনই আপনি আগাম একটা কাজ পেয়েও যাবেন।

কথা বুঝে বলা
কথা এমন একটি বিষয় যা একবার বললে আর ফেরত নেয়া যায় না। তাই যারা স্মার্ট তারা কথা কম বলে। এবং কথা বলার আগে ভেবে নেয় যে কথা বলাটা ঠিক হচ্ছে কি না।

 

রাজধানীতে আজ থেকে বিয়ে উৎসব

‘বিয়ের বাজার দেশেই’ স্লোগান নিয়ে আজ শুক্রবার থেকে রাজধানীতে শুরু হচ্ছে বিয়ের উৎসব। আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র আজ সেজে উঠবে বিয়েবাড়ির সাজে এই উৎসব। বিয়ের গেট, বিয়ের পোশাক, গয়না, দাওয়াতপত্র, খাবার, গায়েহলুদ, গৃহসজ্জা, প্রসাধন ইত্যাদি সবই থাকবে এই উৎসবে।

উৎসবে বিয়ে আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত সেরা ব্র্যান্ড আর দেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে থাকবেন বিশেষজ্ঞরা। শাড়িটা কোন রঙের হবে, বরের শেরওয়ানিটাই বা কী হবে, বর-কনের মঞ্চটা কেমন হবে এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে বিয়ে উৎসবে থাকবে নামি দামি পরিচিত সেলিব্রেটিরা।

বিয়ের আগে ত্বকের পরিচর্যা কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে পরামর্শ দিতে উপস্থিত থাকবেন রূপ বিশেষজ্ঞরা, বিয়ের ছবি তোলার প্রস্তুতি নিয়ে জানাবেন আলোকচিত্রীরা, পোশাক বিষয়ে পরামর্শ দেবেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা।

আয়োজকদের একজন হাসান জানান, উৎসবে থাকবে বিয়ের পোশাক, গয়না, দাওয়াতপত্র, খাবার, গায়েহলুদ, গৃহসজ্জা, প্রসাধন, রূপসজ্জা, হানিমুনে বেড়ানো এমন নানা অনুষঙ্গের সেরা ব্র্যান্ডের স্টল ও প্যাভিলিয়ন। আর উৎসব উপলক্ষে সবকিছুতেই থাকবে ছাড় আর উপহারের ছড়াছড়ি।

 

টাকি মাছের ভর্তা তৈরির সহজ রেসিপি

টাকি মাছের ভর্তা একটি জনপ্রিয় পদ। গরম ভাতের সঙ্গে এর জুড়ি মেলা ভার। খেতে সুস্বাদু ও সহজেই তৈরি করা যায় বলে এটি রয়েছে অনেকেরই পছন্দের খাবারের তালিকায়। চলুন জেনে নেই এর রেসিপি-

উপকরণ : টাকি মাছ ১ কাপ, পেঁয়াজ স্লাইস ৩ টেবিল চামচ, আদা রসুন, বাটা ১ চা চামচ, পেঁয়াজ পাতা ২ টেবিল চামচ, জিরা বাটা ১ চা চামচ, রসুন মিহি ২ টেবিল চা, ধনে বাটা ১ চা চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, হলুদ বাটা ১/২ চা চামচ, মরিচ বাটা ১ /২ চা চামচ।

প্রণালি : মাছ সিদ্ধ করে কাটা বেছে ১ কাপ মেপে নিন। তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা বাদামী রং করে ভেজে বাটা মসলা ও সামান্য পানি এবং রসুন দিয়ে কষান। কষানো হলে পেয়াজপাতাসহ কচি পেঁয়াজ দিয়ে নাড়ুন। মাছ দিয়ে নেড়ে নেড়ে ভাজুন। লবণ দিন। মাছ হালুয়ার মতো তাল বাঁধলে নামান। মাছ যেন ঝুরি এবং শুকনা না হয়। এরপর চাইলে হাত দিয়ে গোল গোল বল বানিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার টাকি মাছের ভাজা ভর্তা।

 

সরিষার তেলের যত উপকারিতা

আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের তালিকায় যে তেলটি না থাকলেই নয় তা হলো সরিষার তেল। সরিষার তেল যেমন প্রয়োজনীয় তেমন উপকারীও। সরিষার তেল উদ্দীপক হিসাবে পরিচিত এবং অন্ত্রে পাচক রস উত্পাদনে  সাহায্য করে, তাই হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। এছাড়াও একই প্রক্রিয়ায় আমাদের সিস্টেমে পাচক রস উৎপাদন বাড়িয়ে  ক্ষুধা সহায়তা করে।

বিভিন্ন ভোজ্য তেলের উপর করা একটি তুলনামূলক সমীক্ষায় দেখা যায় সরিষার তেল ৭০ শতাংশ হৃৎপিণ্ডসংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমায়। সরিষার তেল ব্যবহারে শরীরে কলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায় যা হৃদরোগের সম্ভবনা হ্রাস করে।

এছাড়াও সরিষা তেল ঠান্ডা এবং কাশি উপশমে সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে যখন  বুকের সম্মুখে প্রয়োগ বা তার দৃঢ় সুবাস নিঃশ্বাসের মাধমে নেয়া হয়, এটা শ্বাসযন্ত্রের নালীর থেকে কফ অপসারণেও সাহায্য করে।

সরিষার তেল তামাটে এবং কালো দাগ দূর করে স্বাভাবিক ত্বক ফিরিয়ে দিতে সহায়তা করে। এটি সন্ধিস্থলের ব্যথাও হ্রাস করে।

ঠোঁটের শুস্কতা দূর করে এবং ত্বকের প্রদাহ দূর করে। সরিষার তেল সামান্য কাটা ছেঁড়ায় এন্টিসেপটিক এর কাজ করে।

সরিষার তেল ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং প্রদাহবিরোধী হিসাবে কাজ করে।

চুল পড়া প্রতিরোধ করে, খুসকি দূর করে এবং চুল বৃদ্ধি করে।

 

মশা থেকে বাঁচতে

যতই অসহ্য হোক, মশার যন্ত্রণা আমাদের সহ্য করতেই হয়। যতদিন মানুষ আছে, মশাও ততদিন! মশা শুধু একটি বিরক্তিকর প্রাণিই নয়, এটি নানা রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে দেয়। ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া জ্বর হয় মশার কারণেই। তাছাড়া এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়। ভয়ংকর এসব রোগে ভোগার চেয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা ভালো। মশার কামড় থেকে রেহাই পেতে রয়েছে মশারি, মশা মারার ব্যাট, কয়েল।

বেশির ভাগ কয়েলেই এখন আর মশা কাবু হয় না। কয়েলের ধোঁয়ায় আবার অনেকেরই শ্বাসকষ্ট হয়। দম বন্ধ হয়ে আসে। তাদের ভরসা কিন্তু মশারি আর মশা মারার ব্যাট। সবসময় তো আর মশারি টানিয়ে রাখা যায় না, এ ক্ষেত্রে মশা মারার ব্যাটগুলো বেশি কার্যকর।

রিচার্জেবল এসব ব্যাট দুই থেকে তিন ঘণ্টা ব্যাকআপ দিয়ে থাকে। মশা মারার এ ব্যাট দিয়ে মশাকে মারতে পারেন অনায়াসেই। এসব ব্যাটে আবার এল-ই-ডি লাইটও থাকে। অন্ধকারে যা আপনার উপকারে আসবে।

ঘুমানোর সময় মশার হাত থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে পারেন মশারি। মশারি বিভিন্ন সাইজ ও কোয়ালিটির হয়ে থাকে। নেটের মশারিতে বাতাস ঢুকতে সমস্যা হয়। বাতাস চলাচল করতে পারে না। বাজারে পাওয়া যায় বিশেষ এক ধরনের মশারি। ম্যাজিক মশারি। ম্যাজিক মশারিতে বাতাস চলাচল করতে পারে অনায়াসেই।

দরদাম
মশারি বিভিন্ন সাইজ ও মানের হয়ে থাকে। সাইজ ও মানভেদে এদের দাম নির্ভর করে থাকে। ডাবল সাইজের মশারি ৩২০ থেকে ৬৫০ টাকা। সেমি ডাবল ২৮০ থেকে ৫৫০ টাকা। সিঙ্গেল সাইজের মশারি ২০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। ম্যাজিক মশারি ৪৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। ছোট বাচ্চাদের মশারির দাম ২৫০ থেকে ৭০০ টাকা, ফেমের কুশনের দাম ৬০ থেকে ১৫০ টাকা। ফাইবারের কুশন ১৩০ থেকে ৪০০ টাকা। মশা মারার ব্যাট বিভিন্ন কোয়ালিটির হয়ে থাকে। মশা মারার ব্যাট একদাম ২২০ থেকে ৫০০ টাকা।

 

শীত ফ্যাশনে কাশমিরি শাল

ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত পোশাকগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কাশমিরি শাল। কাশমিরি শাল যেমন সমগ্র বিশ্বে বিখ্যাত তেমন এটা আমাদের অনেক ঐতিহ্য বহন করে। সম্রাট আকবর এই শিল্পকে আরও অনুপ্রাণিত করেছিলেন এবং সেসময়ে তিনি ইংল্যান্ডের রাণী ইলিজাবেথকে একটি শাল উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। এই শাল আরও অনেক জনপ্রিয়তা পায় যখন নেপোলিয়ন এটি সম্রাট জোসেফাইনকে উপহার দিয়েছিলেন।

কাশমিরি শালের প্রথম রেকর্ড পাওয়া যায় ষোড়শ শতাব্দী থেকে। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে ফেব্রিক বার্নিয়ারের বিবরণে পশমিনা শালের উল্লেখ আছে যা পরবর্তীতে কাশমিরি শাল নামে পরিচিতি পায়। এরপরের শতকের শেষাংশে মহারাজা রণবীর শিং এর শাসনামলে এর উৎপাদন কমে যায়। কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইউরোপে এর জনপ্রিয়তা ও চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এই শিল্পকে নতুন উদ্যমে চালু করা হয়।

কাশমিরি শালের বিশেষত্ব হচ্ছে ইহা তৈরি হয় পশমিনা ছাগলের লোম থেকে। হিমালয় পর্বতে এদের বাস। প্রচন্ড শীত এবং কঠোর আবহাওয়ার বিরুদ্ধে টিকে থাকার জন্য এদের শরীরে বিশেষ এক ধরনের লোম গজায়। এই ছাগলের লোমগুলো অনেক নরম এবং মানুষের চুলের চেয়ে ছয় গুণ মসৃণ। এই লোম সংগ্রহ করে তৈরি হয় কাশমিরি শাল।

কাশমিরি শালের কাপড় খুবই উন্নত মানের। এই কাপড়গুলো খুব হালকা এবং শীতের জন্য খুবই উপযুক্ত। তবে বর্তমান বাজারে কৃত্রিম পলিস্টারের এক প্রকার কাপড় ‘পশমিনা’ নামেই বিক্রি হচ্ছে যার বাণিজ্যিক নাম দেওয়া হয়েছে ‘অথেন্টিক ভিসকোস পশমিনা’ যা কাশমিরি শাল থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু আসল কাশমিরি শাল এর চেয়ে অনেক সুন্দর এবং এক একটি তৈরি হতে এক বছরের ওপর সময় লাগে।

কাশমিরি শাল তৈরি দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। তাই বর্তমান বাজারে কাশমিরি সালে সিল্কের কিছুটা মিশ্রণ পাওয়া যায়। যেমনঃ শতকরা ৫০ ভাগ কাশমিরি এবং ৫০ ভাগ সিল্ক। আবার কিছু আছে ৭০ ভাগ কাশমিরি এবং ৩০ ভাগ সিল্ক। তবে শতকরা ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ কাশমিরি বাজারে এখনও পাওয়া যায়।

কাশমিরি শাল যেমন সুন্দর তেমন অভিজাত একটি পোশাক। তবে অভিজাত পোশাক হলেও এর বাজার মূল্য সেই তুলনায় অনেক কম। শীতের জন্য উপযুক্ত এই কাপড়গুলো অনেক টেকসই এবং পরতে পারবেন কয়েক বছর ধরে। আর এই পোশাক যে আরও অনেক বছর ফ্যাশনে রাজত্ব করবে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত থাকাই যায়।

বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক শপিং মলসহ বিভিন্ন অনলাইন শপে কাশমিরি শাল পাওয়া যায়। তবে এর সবচেয়ে বড় কালেকশনটি রয়েছে ঢাকার নিউ মার্কেটে। এছাড়া প্রতিবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার অন্যতম আকর্ষণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে বিখ্যাত এই শাল। এর মূল্য সাধারণত ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

 

শীতে হিজাব পরতে পারেন কোটের সঙ্গে

কে বলেছে শীতে কেবল গাঢ় রঙের পোশাক পরতে হবে! এটা একটি পুরানো মতবাদ। বর্তমানে বিভিন্ন রঙের পোশাক গাঢ় রঙের পোশাকের চেয়েও বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। শীতে আবহাওয়া থাকে কিছুটা কঠোর এবং আকাশ থাকে ধূসর। তাই নিজের হাসিখুশি ভাব ফুটিয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরাই উত্তম।

প্রথমে ধরে নেওয়া যাক শীতের পোশাকের জন্য আগে জনপ্রিয় রঙ ছিল কালো, ধূসর এবং ক্যামেল। এগুলো এখনও ফ্যাশনে আছে এবং প্রায় সবার ওয়ারড্রবে এগুলো আছে। এখন চিন্তা করুণ নিয়মটি কীভাবে ভাঙা যায় এবং শীতকালকে উজ্জ্বল রঙের পোশাকে কীভাবে উপভোগ করা যায়। এর জন্য উজ্জ্বল রঙের ট্রেন্ডগুলো দেখে নেওয়া যাক।

কোটের সঙ্গে রঙ মিল রেখে হিজাব পরতে পারেন। 

হিজাবি নারীদের কাছে এখন গাঢ় লাল রঙের ট্রেঞ্চ কোট বেশ প্রিয় এবং এর সাথে সাদা ও লালের চেকের স্কার্ফ বেশ ভাল মানায়। এরপর আছে জলপাই রঙের মিলিটারি কোট। শীতকালের পোশাকের জন্য অন্যান্য জনপ্রিয় রঙগুলোর মধ্যে আছে বেইজ এবং নেভি ব্লু। বেইজ রঙের কোটের সাথে হিজাব পরুন ঠিক এর চেয়ে আরেকটু উজ্জ্বল বেইজ রঙের স্কার্ফ নিয়ে। আর মিলিটারি হিজাব ট্রেন্ডের জন্য বেছে নিতে পারেন একটু মোটা ধরনের স্কার্ফ। তবে যে স্টাইলই বেছে নিন না কেনো, মনে রাখবেন আপনি নিজে যেন সেই স্টাইলে আরামদায়ক অনুভব করেন।

বর্তমানে শীতের ফ্যাশন হিসেবে বিভিন্ন রঙের জ্যাকেট প্রায় সব কাপড়ের মার্কেটেই পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং নিজের মতোই স্টাইল তৈরি করুণ আর উপভোগ করুণ শীতকাল।

সূত্র: জাস্টট্রেন্ডিগার্ল

 

ইসলামের বিধান লঙ্ঘন মারাত্মক অপরাধ

আল্লাহ তাআলার আনুগত্য স্বীকার করে শয়তানের পদাংক অনুসরণ না করাই হলো মানুষের একমাত্র কাজ। কারণ শয়তান মানুষকে অন্যায় ও পাপ কাজের দিকে ধাবিত করে। আল্লাহ তাআলার ওপর মিথ্যা অপবাদ দেয়ার জন্য প্ররোচিত করে। কারণ শয়তান ও তার দলের ইচ্ছা হলো যে, দুনিয়ার সব মুসলমান জাহান্নামে যায়।

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা ঈমানদারদেরকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশের কথা বলেছেন। ইসলামের বিধান লঙ্ঘন করা মরাত্মক অপরাধ। অনন্তর যারা ইসলামের এ বিধান নাজিলের পরও সত্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে প্রতিদান দেয়ার ক্ষেত্রে প্রবল পরাক্রান্ত। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা পরবর্তী আয়াতে ইরশাদ করেন-

Quran

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২০৯ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করার পরও যারা ইসলামের বিধান পালনে এগিয়ে আসেনি তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা বিচার দিবসে তাদেরকে প্রতিদান দিতে হবেন মহাপরাক্রমশালী।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিম উম্মাহর জন্য যে শরিয়ত বা জীবন-বিধান নিয়ে এসেছেন তা যেমন সম্পূর্ণ, তেমনি যুক্তিপূর্ণ, সুস্পষ্ট, বাস্তবের পরীক্ষায় বার বার পরীক্ষিত।

তারপরও যারা এ সব বিধানের অমান্য করবে, এমনকি ঈমান আনার পরও অন্য মতবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয় তবে তার পরিনাশ হবে শোচনীয় শাস্তি। যা বান্দার জন্য প্রতিদান দিবসে অবধারিত। কেননা আল্লাহ তাআলা মহাপরাক্রমশালী ও সর্বশক্তিমান।

তাঁর শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়ার সাধ্য কারো নেই। এমনকি কখন কাকে কিভাবে শাস্তি প্রদান করবেন তাও তিনি জানেন। কারণ তিনি মহাজ্ঞানী। তাই কারো প্রতি শাস্তি প্রদানে তিনি তাড়াহুড়ো করবেন না। আবার কারো প্রতি তিনি অবিচারও করবেন না।

পড়ুন- সুরা বাকারার ২০৮ নং আয়াত

পরিষেশে…
ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশের পর পুনরায় কেউ যেন ইসলাম থেকে বের হয়ে না যায়। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর নাজিলকৃত কুরআনের সুস্পষ্ট ও স্বচ্ছ বিধান বাস্তবায়ন করা প্রত্যেক ঈমানদারের ঈমানি দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের সুস্পষ্ট বিধান পালন করে পরিপূর্ণরূপে ইসলামে প্রবেশ করে আল্লাহ তাআলা নৈকট্য লাভ করার তাওফিক দান করুন। তাঁর অবাধ্যতা থেকে হিফাজত থাকুন। আমিন।

Save

Save

 

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যেমন হওয়া উচিত

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে (স্ত্রী) সৃষ্টি করেছেন; আর (পৃথিবীতে) বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। (সুরা নিসা : আয়াত ১)

উল্লেখিত আয়াতে কারিমা থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে স্বামী- স্ত্রীর মাধ্যমেই বংশ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করেছেন। আর মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং তাদের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্কটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা জেন রেখ, তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের ওপর অধিকার আছে। আর তোমাদের স্ত্রীদেরও অধিকার আছে তোমাদের ওপর।’

পুরুষদেরকে উদ্দেশ্য করে অন্য হাদিসে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের প্রতি কল্যাণকামী হও।’

স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক বা ভালোবাসা কেমন হবে; দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ক কেমন হবে; তার বিবরণ ফুটে ওঠেছে স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পারিবারিক জীবনে। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ।

>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে খেলাধূলা করতেন। একবার তিনি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা দিয়ে ইচ্ছা করে হেরে যান। কিছুদিন পর পুনরায় দৌঁড় প্রতিযোগিতায় হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হেরে যান।

অতপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়েশা! আজ আমি তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি, তুমি আমার সঙ্গে পারনি। এটা হলো প্রথম প্রতিযোগিতায় জিতে যাওয়ার বদলা।

>> বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক সময় স্ত্রীদের সঙ্গে বসে বিভিন্ন ঘটনা, কাহিনি ও আন্যান্য আলোচনা করতেন। এমনকি প্রত্যেক স্ত্রীও বিশ্বনবিকে পালাক্রমে নতুন নতুন কিসসা-কাহিনি শুনাতেন।  তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে নিজেও তাঁদেরকে কিসসা শুনাতেন।

>> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তিনি আমাদের সঙ্গে এমনভাবে হাসতেন, কথা বলতেন ও বসে থাকতেন, আমাদের মনেই হতো না যে তিনি একজন মহান রাসুল।

>> তিনি কখনো তাঁর স্ত্রীদের ভৎসনা, তিরস্কার করতেন না এবং তাদের সঙ্গে কটাক্ষ ভাষায় কথা বলতেন না। বরং মায়া-মমতায় মন জুড়ানো আকর্ষণীয় কথা বলতেন। তাঁর কথার ভাবভঙ্গিতে স্ত্রীদের মন জুড়িয়ে যেতো।

>> বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের কোনো কথা তাঁর মনের বিপরীত হলে তাদের সে কথা থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে অন্য চিন্তা করতেন। তিনি স্ত্রীগণকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তাদের চুমু দিতেন এবং কখনো কখনো তাদের উরুতে মাথা রেখে শুয়ে বিশ্রাম নিতেন।

>> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা পাত্রের যে স্থানে মুখ দিয়ে পানি পান করতেন, বিশ্বনবিও সে স্থানে মুখ দিয়েই পানি পান করতেন।

আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাঁড়ের যে জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন হজরত আশয়া রাদিয়াল্লাহু আনহাও হাড়ের ঐ জায়গা থেকে গোস্ত খাওয়া শুরু করতেন।’

এ থেকেও প্রমাণিত হয় যে, বিশ্বনবির দাম্পত্য জীবনে স্ত্রীদের সঙ্গে কত মধুর সম্পর্ক ছিল।

>> হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত খুশি মনে মুচকি হাসতে হাসতে গৃহে প্রবেশ করতেন এবং দরদমাখা কণ্ঠে সালাম দিতেন। বিশ্রামের সময় বিছানার ব্যাপারে কোনো দোষ ধরতেন না, এমনকি বিছানা যেভাবে পেতেন তার উপরই শুয়ে পড়তেন।

>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তম স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম স্বামী যে তার স্ত্রীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে। আমি আমার স্ত্রীদের সঙ্গে সবার চাইতে ভাল ব্যবহার করি।

পরিশেষে…
বিশ্বনবির দাম্পত্য জীবনের আলোকে বুঝা যায় যে, সুখ ও শান্তিময় জীবন যাপনে স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্কে বিকল্প নেই। জীবনকে সুখ-শান্তি ও আনন্দময় করে তুলতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণ আবশ্যক কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাদের প্রত্যেকের দাম্পত্য জীবনকে সুখ ও শান্তিময় করে গড়ে তুলতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাম্পত্য জীবনের মতো করেই রাঙিয়ে নেয়া জরুরি।

আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে তাঁর মতো করে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে তোলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

খাবার খান ওজন কমান

শিরোনাম দেখে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই। সবাই খাবারের তালিকা কাটছাঁট করে ওজন কমাতে চান আর এখানে কি না খাবার খেয়েই ওজন কমাতে বলা হচ্ছে! হ্যাঁ, খাবার অবশ্যই খাবেন এবং ওজনও কমবে। এমনকিছু খাবার রয়েছে যা আপনার শরীরে পুষ্টি যোগানোর পাশাপাশি বাড়তি ওজন ঝরাতেও সাহায্য করবে। এবং সেই খাবারগুলো রয়েছে আপনার হাতের কাছেই। চলুন জেনে নেই-

মটরশুটিতে কম মেদ হয় কিন্তু এটি শরীরে অনেক শক্তি ও প্রোটিন যোগায়। মটরশুটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এটি বিপাকীয় পরিবেশের জন্য উত্তম খাদ্য।

প্রতিদিন আপেল খেলে শরীরের মেদ সেল কমতে থাকে। আপেলের খোসা অকল্পনীয়ভাবে শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।

আদা  খাদ্য হজমের সমস্যা সমাধান করে। এটা খাওয়ার পর শরীরে অস্বস্তিকরভাবকমায় ও রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে। এসিড সমস্যা সমাধান করে আদা। যদি আপনি ওজন কমাতে চান তাহলে প্রতিদিনের খাবারে আদা রাখুন এবং ক্যালরি সঞ্চয় করুন এবং মেদ কমান।

আখরোট লিনোলিনিক এসিড তৈরি করে এবং শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি করে আখরোট খেলে আপনার স্বাস্থ্য ঠিক রেখে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ফেলবে।

গ্রীন টি এন্টি-অক্সিডেন্ট তৈরি করে শরীরের পরিবেশকে ঠিক রাখে। এটা ক্যান্সার প্রতিরোধী কাজ করে থাকে এবং কলেস্টেরলের পরিমান ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

মেদ কমানোর অন্যতম একটি খাদ্য ডিম। ডিমের কুসুমের পাশের সাদা অংশ মেদ ও ক্যালরি কমানোর একটি অন্যতম উপাদান। খাদ্যে বিদ্যমান কলেস্টেরল ব্যাপক প্রভাব ফেলে শরীরের রক্তের কলেস্টেরলে। ডিমের সাদা অংশ অনেক বেশি ফ্যাটি এসিড এবং প্রোপটন সমৃদ্ধ যা সমন্বয় করে শরীরের মেদ কমায়।

প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন। এটা একটা গুরুত্বপূর্ন উপাদান আমাদের শরীরের জন্য। যদি আপনি পরিমাণমতো পানি পান না করেন তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যে শুষ্কতা অনুভব করবেন। তাই নিয়মিত পানি পান করুন।

ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতকে মজবুত করতে সাহায্য করে। কিন্তু এটাও সত্যি যে ক্যালসিয়াম ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। দুধের তৈরি ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার এবং অন্যান্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার শরীরের মেদকে কমিয়ে দেয় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে।

 

সহজেই তৈরি করুন সুস্বাদু কুনাফা

মিষ্টিজাতীয় খাবারের ভেতরে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কুনাফা। সেমাই দিয়ে তৈরি মজাদার এ খাবারটি বিভিন্ন উৎসব ছাড়াও পরিবেশন করা যায় অতিথি আপ্যায়নে কিংবা ঘরোয়া আড্ডায়। ঝটপট তৈরি করা যায় বলে যে কেউ এটি তৈরি করতে পারবেন। তবে তার আগে জানা থাকা চাই এর রেসিপি-

উপকরণ : লাচ্ছা সেমাই এক প্যাকেট, তরল দুধ আধা লিটার, মজেরেলা চিজ এক কাপ, চিনি স্বাদমতো, নারকেল কোরানো ১/৪ কাপ, কনডেন্সড মিল্ক এক কাপ, কাস্টার্ড পাউডার এক চা চামচ, ঘি দুই টেবিল চামচ।

প্রণালি : লাচ্ছা সেমাই নারকেল, চিনি ও ঘি দিয়ে ভেজে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন হয়ে এলে কাস্টার্ড পাউডার, কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে নামিয়ে নিন। বেকিং মোল্ডে ঘি ব্রাশ করে এতে সেমাইয়ের উপরে দুধের মিশ্রণ ও চিজ দিয়ে আবার সেমাই দিন। ওভেনে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট বেক করুন। নামিয়ে চিনি সিরা ঢেলে ঠান্ডা করে উপরে কিশমিশ ও বাদাম কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন।

 

সহজেই সুন্দর চুল পেতে যা করবেন

সুন্দর চুল পেতে আমরা নানারকম পরিচর্যা করে থাকি। তবে ঝক্কিঝামেলার কথা ভেবে অনেকেই আবার সঠিক পরিচর্যা থেকে পিছিয়ে যান। তবে সহজ কিছু উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি ফিরে পেতে পারেন আপনার চুলের হারানো সৌন্দর্য। চলুন জেনে নেই-

তাজা মেদেহি পাতা বেটে এর মধ্যে ২/৩ টেবিল চামচ চায়ের লিকার দিয়ে রাখুন সারা রাত। পরের দিন ১টি ডিম, ৩ চা চামচ টকদই, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং ১ টেবিল চামচ নারিকেল তেল খুব ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে চুলে লাগিয়ে রাখুন ২ ঘণ্টা। এরপর হালকা কোনো শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১ বার ব্যবহারে চুলের রুক্ষতা দূর হবে একেবারে।

দুটি পাকা কলা বাটিতে নিয়ে চামচের সাহায্যে পিষে নিন ভালো করে। এরপর এতে ২ টেবিল চামচ মেয়োনেজ এবং ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন ভালো করে। এ মিশ্রণটি চুলে ১ ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন। এবং ভালো করে ধুয়ে নিন। কলা চুল নরম এবং উজ্জ্বল করে তুলবে।

২টি কলা নিয়ে পিষে নিন ভালো করে। এরপর এতে ১টি ডিমের কুসুম এবং ১ চা চামচ তাজা লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মেশান। এ মিশ্রণটি পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন ৩০-৪০ মিনিট। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১ দিন ব্যবহারে চুলের রুক্ষতা দূর হবে দ্রুত। এ প্যাকটি চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করবে এবং চুল পড়াও বন্ধ করবে।

চুলে প্রোটিনের ঘাটতি হলে চুল অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে পরে। তাই ব্যবহার করুন এ প্যাকটি। ১টি ডিমের কুসুম, ১ টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল, ১ টেবিল চামচ মধু খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান। ৩০ মিনিট পরে ভালো করে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ৩ বার ব্যবহারে এতে চুলে পুষ্টি পৌঁছাবে এবং চুলের রুক্ষতা দূর হবে।

৫/৬টি স্ট্রবেরি ধুয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন, চাইলে চামচ দিয়ে পিষে নিতে পারেন। এতে ১টি ডিমের কুসুম, ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণটি পুরো চুলে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ বার ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন।

 

চুল ও দাঁত সুস্থ রাখে কিসমিস!

সেমাই কিংবা ক্ষীর সাজাতে কিসমিস ব্যবহার করা হয়। তবে জানেন কি কিসমিসের নিজস্ব বেশকিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে? নিয়মিত কিসমিস খেলে দূরে থাকতে পারবেন বিভিন্ন রোগ থেকে।

জেনে নিন কিসমিসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে-

  • নিয়মিত কিসমিস খেলে ত্বকে সহজে বলিরেখা পড়ে না। কিসমিসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে।
  • কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে যা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে।
  • দাঁত ও মাড়ি শক্তিশালী রাখে কিসমিস। এতে থাকা ওলিয়ানোলিক অ্যাসিড দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। এছাড়া কিসমিসে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁত ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
  • রোদের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচায় কিসমিস। এতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড ত্বকের নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
  • অকালে চুল পাকা প্রতিরোধ করে কিসমিস। কিসমিসে থাকা ভিটামিন সি, আয়রন ও বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান চুল প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর ও কালো রাখে।

তথ্য: বোল্ডস্কাই

 

কেওক্রাডং ও বগা লেকে ভ্রমণ প্যাকেজ

অপরূপ বাংলাদেশের চমৎকার সব ভ্রমণ স্থানের মাঝে বগা লেক, কেওক্রাডং এখন বেশ জনপ্রিয়। যারা পাহাড় ভালোবাসেন, ভালোবাসেন মেঘ আর অবারিত সবুজ তারা বার বারই ছুটে যান এখানে। বাংলার অভিযাত্রী নামক ফেসবুক গ্রুপের আয়োজনে আবারও বেড়িয়ে আসতে পারেন এখানে। শীতের সময়ে পাহাড়ের আনন্দই আলাদা।

বগা লেক থেকে দার্জিলিং পাড়া হয়ে যেতে হয় কেওক্রাডং। এটি এক সময় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হিসেবে পরিচিত ছিলো। কেওক্রাডং-এ দাঁড়িয়ে যে অনুভূতি হয় তা কখনো ভোলার নয়। আর কেওক্রাডং এর সুর্যোদয়, সে তো এক মোহনীয় জাদুকরী মুহূর্ত।

 

তাজমহলের ছায়ায় নান্দনিক আগ্রা ফোর্ট

আগ্রার তাজমহল দেখে মুগ্ধ মাতোয়ারা যখন সবাই তখন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল মুগ্ধতার আরেক খনি আগ্রা ফোর্ট। অপূর্ব এই দূর্গের গল্প শুনেছি অনেক। অনেক বলেন তাজকেও নাকি হার মানায় এটি। একবার আগ্রা ফোর্ট দেখলে আর ভালো লাগে না কোন কিছুই। মনের মাঝে অদম্য কৌতুহল। ইন্ডিয়ান হাই কমিশনের আহবানে বাংলাদেশ থেকে শত যুবার যে দলটি ভারত ভ্রমণে যায় আমি ছিলাম তাদের একজন। আগ্রা ফোর্ট ভ্রমণ ছিল আমার জন্য জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইচ্ছাপূরণ।

লাল ইটে মোড়ানো পথ বেয়ে লাল উঁচু প্রাচীরে ঘেরা প্রাসাদে প্রবেশ করলাম আমরা। তাজে যে সম্রাট-সম্রাজ্ঞীর সমাধি দেখে এলাম তাদের বাস ছিল এই প্রাসাদে। নাটকে, উপন্যাসে, চলচ্চিত্রে, ইতিহাসের বইয়ে কতবার কতভাবে জেনেছি তাদের কথা। এ যেন সেই সময়ের সংস্পর্শে আসা, সময়কে দেখা খুব কাছ থেকে।

আগ্রা ফোর্টের দেয়ালে দেয়ালে কারুকাজ। আবাসনের পাশাপাশি রাজ পরিবারের বিনোদন, গান-নাচের আসর, রাজকার্যের জন্য দরবার হল কী নেই এখানে। তবে এই প্রাসাদের নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল একেবারে ভিন্ন। যদিও তাজমহল আর আগ্রা ফোর্টের নাম একই সাথে শোনা যায় তবে এর নির্মাণ হয়েছে আরও অনেক আগে। প্রকৃত অর্থেই, আগ্রা দূর্গ ছিল একটি দূর্গ। এর ইতিহাস বদলেছে সেই ইব্রাহিম লোদী থেকে শুরু করে বাবর, হুমায়ূন, আকবর, জাহাঙ্গীর, শাহজাহান, আওরঙ্গজেবের হাত ধরে। একে দূর্গের জটিল অবয়ব দেন সম্রাট আকবর।  তবে এর গঠন সর্বোচ্চ নান্দনিকতা পায় শাহজাহানের হাতে। সেনাদের দূর্গকে তিনি পরিণত করেন রাজপ্রাসাদে।

attr_1617

আগ্রা ফোর্টের ভেতরের একাংশ। ছবি- সংগৃহীত।

যমুনার তীরে নির্মিত দূর্গটির চারদিকে এমনভাবে দেয়াল তোলা হয়েছে যাতে বোঝা না যায় কোনটা ঠিক এর প্রবেশ পথ। দেয়ালের গঠন আর নকশার চাতুর্যই এর কারণ। রাজা মানসিং এর রাজপুত ফোর্টের নির্মাণ শৈলীর সাথে এর মিল রয়েছে। পরে আবার আগ্রা ফোর্টের আদলে তৈরি হয় দিল্লীর লাল দূর্গ। আকবর যখন শাসনভার নেন তখন তিনি পেয়েছিলেন এর ধ্বংসাবশেষ। তার ইতিহাসবিদ আবুল ফজল জানান এর নাম ছিল বাদলগর। এরপর রাজস্থান থেকে লাল বেলেপাথর এনে তিনি পুনর্নির্মাণ করেন এটি।

তবে শাহজাহানের ভালবাসা ছিল সাদা মার্বেলের প্রতি। তাই দূর্গের ভেতরে ভবন নির্মাণে তিনি ব্যবহার করেছেন শ্বেতপাথর।

সম্রাজ্ঞী যোধা বাই এর ভবনটি লাল, কারণ এর নির্মাতা আকবর। অন্যান্য ভবনগুলোর নাম জাহাঙ্গীর-ই মহল, খাস মহল, দরবারই খাস, আর শীষ মহল।

Sheesh_mahal

শিষ মহল। ছবি- সংগৃহীত।

আগ্রা ফোর্টের আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে এর শিষ মহল। হাম্মাম অর্থাৎ রাজ গোসলখানায় অসাধারণ ওয়াটার ইঞ্জিয়ারিং করা হয়েছে। সম্ভবত পানি গরম করার জন্য ল্যাম্প ব্যবহার করা হত এখানে। মার্বেলের চেয়েও দামী আয়না দিয়ে খচিত শিষ মহলের দেয়াল। শতকোটি প্রতিবিম্ব চোখ ধাঁধিয়ে দেবে আপনার।

আগ্রা ফোর্টের নিচে আছে ফাঁপা সুড়ঙ্গ, যার মধ্য দিয়ে যমুনার পানি বয়ে যেত। ফলে সমগ্র মহলটি থাকত ঠান্ডা। বিশাল এলাকা জুড়ে দূর্গের বিস্তার। রানীরা থাকতেন নিচের দিকের ঘরগুলোতে, যাতে ঠান্ডা আবহাওয়া পেতে পারেন সবসময়। দূর্গের ছাদে বসত গান নাচের আসর। সম্রাটের এবং শিল্পীর জন্য বাঁধানো মঞ্চ দেখতে পাবেন এখনো।

site

আগ্রা ফোর্ট থেকে তাজমহল। ছবি- সংগৃহীত।

আগ্রা ফোর্টেই বন্দী ছিলেন শাহজাহান, সন্তান আওরঙ্গজেব বন্দী করে রেখেছিলেন তাকে। নিজ প্রাসাদ থেকে তিনি দেখতে পেতেন যমুনার ওপারে তাজমহলকে। স্মৃতিচারণ করতেন প্রিয় সহধর্মিনী মমতাজকে। যোধা বাই এর মহল থেকেও তাজকে দেখা যায়। তবে কালের বিবর্তনে যমুনার জল আর নেই তেমন।

আগ্রা ফোর্টের নির্মাণ শৈলীতে হিন্দুয়ানি সংস্কৃতির ছাপ রয়েছে সুস্পষ্ট। হাতি, পাখি, ড্রাগনের প্রতিমূর্তি বা ছবি ইসলাম স্থাপত্যে দেখা যায় না। কিন্তু আগ্রা ফোর্টে আপনি পাবেন তার দেখা।

আগ্রা ফোর্টের আরেকটি বিশেষত্ব হল, এটির মাঝে শুধু নারীদের নামাজ পড়ার জন্য আলাদা মসজিদ আছে। এর নাম নাগিনা মসজিদ।

আগ্রা ফোর্টে সানন্দ্যে ঘুরে বেড়ায় কাঠবিড়ালী। খুবই বন্ধুবাৎসল এরা। একটু সময় দিলেই চলে আসে হাতে। সব মিলিয়ে আগ্রা ফোর্টে একদিন একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

Save

Save

Save

 

সেলাই মেশিনে সাফল্যের বুনন

২০০৩ সালের কথা। স্বামী মাত্র ১ হাজার ২০০ টাকা বেতনের চাকরি করেন। সংসারের আয় বাড়াতে হবে। এমন তাড়না থেকে ওই বছরই যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে সেলাই প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণে প্রথম স্থান অর্জন করে পান একটি সেলাই মেশিন। পারবেন, নাকি পারবেন না, এমন উৎকণ্ঠা আর শঙ্কা নিয়ে একটি সেলাই মেশিন নিয়েই শুরু করেন কাজ। ক্রমেই বাড়তে থাকে কাজের ব্যাপ্তি। ১৩ বছর পর এখন সফল নারী উদ্যোক্তা তিনি। তাঁর নাম আইনুন্নাহার। দীর্ঘ ১৩ বছরে অর্জনের ঝুলিতে জমা হয়েছে বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা। গত বছরের ১ নভেম্বর নারী কোটায় পেয়েছেন জাতীয় যুব পুরস্কার। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সফল ও অনুকরণীয় নারী উদ্যোক্তা হিসেবে।
আইনুন্নাহারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৩ সালে ময়মনসিংহ শহরের একটা ভাড়া বাড়িতে যখন সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন, তখন পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের পোশাক তৈরি করে দিতেন। উপার্জন কেমন হবে, তা নিয়ে ছিল না কোনো চাহিদা। চিন্তা ছিল একটাই—সফল হতেই হবে। কাজের শেষে গ্রাহকেরা যা দিতেন, তাতেই সন্তুষ্ট হতেন। কাজের গুণে দ্রুতই নিজের ও আশপাশের পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে আইনুন্নাহারের কাজের কথা। ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন এলাকার নারীরা নিজের পোশাক বানাতে তাঁর কাছে আসতে শুরু করেন। বাড়তে থাকে কাজের ফরমাশ ও ব্যাপ্তি।

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই একা কাজ করে কুলাতে পারছিলেন না। আইনুন্নাহার কর্মী নিয়োগ না নিয়ে ২০ জন নারীকে নিজের বাড়িতেই প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। তিন মাসের বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ শেষে পাঁচজনকে নিয়োগ দেন নিজের উদ্যোগে। ওই পাঁচজনকে নিয়ে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোশাক তৈরি শুরু হয়। ক্রমে বাড়তে থাকে কাজের পরিধি। নারী ও শিশুদের জন্য পোশাক তৈরি করে প্রথমে ময়মনসিংহের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করতে শুরু করেন। এর মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক তৈরির কাজ পেয়ে যান। বেড়ে যায় তাঁর কাজ ও কর্মীর সংখ্যাও।
ময়মনসিংহের আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক আবদুর রশিদ একদিন আইনুন্নাহারের কাজ দেখে মুগ্ধ হন। সেটা ২০০৯ সাল। আসপাডা থেকে আইনুন্নাহার ঋণ নেন ৫০ হাজার টাকা। ওই সময় তিনি মন দেন দক্ষ কর্মী তৈরিতে। আয়োজন করেন প্রশিক্ষণের। প্রতিবছর চলতে থাকে চারটি করে ব্যাচের প্রশিক্ষণ। প্রতি ব্যাচে ৩০ জন করে নারী বিনা মূল্যে সেলাই ও বুটিকের কাজের প্রশিক্ষণ নেন।

২০১৩ সালে নারী উন্নয়ন অধিদপ্তরের নিবন্ধন নিয়ে আইনুন্নাহার প্রতিষ্ঠা করেন তৃণমূল নারী উন্নয়ন সমিতি। বর্তমানে এই সমিতির মাধ্যমে নিয়মিত চলে নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিবছর বের হয়ে আসছেন দক্ষ কর্মী। তাঁদের অনেকেই পরবর্তী সময়ে নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়েছেন।

আইনুন্নাহারের রয়েছে তৃণমূল কারুপণ্য নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে তৈরি হয় ব্লকপ্রিন্ট ও বুটিকের পোশাক। দেড় বছর ধরে নিজের প্রতিষ্ঠানে তৈরি করছেন পাটের ব্যাগ ও অফিস ফাইল। ঢাকার রাপা প্লাজায় জয়িতাতেও ছিল তাঁর পোশাক বিক্রির জায়গা। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ময়মনসিংহ শহরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চালু করেছেন তৃণমূল কারুপণ্য দোকান।

দেশের বিভিন্ন মেলায় উদ্যোক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। দেশের বাইরে ভারতে দুবার, নেপালে একবার মেলায় স্টল নিয়েছে আইনুন্নাহারের তৃণমূল কারুপণ্য। সম্প্রতি চীনের একটি মেলায় অংশ নেয় এই প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে আইনুন্নাহারের অধীনে কাজ করছেন ১৬০ জন নারী ও পুরুষ।

আইনুন্নাহার বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমার কাজের সেরা স্বীকৃতি ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর নারী জাতীয় যুব পুরস্কার পাওয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পদক নেওয়া আমার জীবনে স্মরণীয় এক ঘটনা।’ কাজের ব্যাপারে স্বামী খোন্দকার ফারুক আহমেদের কাছ থেকে সব সময় সহযোগিতা পেয়েছেন। বললেন, ‘কাজের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অকৃত্রিম বন্ধু ও সহযোগীর ভূমিকায় থেকেছেন আমার স্বামী। তাঁর সহযোগিতা না পেলে এত দূর আসতে পারতাম কি না, সন্দেহ।’

২০১০ সালে সফল উদ্যোক্তা হিসেবেও আইনুন্নাহার পুরস্কার পেয়েছেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে। ২০১৩ সালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা, ময়মনসিংহ জেলা ও ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়ে ‘জয়িতা’ পুরস্কার ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি পেয়েছেন বেশ কিছু পুরস্কারের স্বীকৃতি। নারীদের দক্ষ কর্মী ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন নারী উন্নয়ন ফোরাম। বর্তমানে এটির নিবন্ধন-প্রক্রিয়া চলছে।

আইনুন্নাহার বলেন, ‘পড়াশোনা শেষে ইচ্ছা ছিল চাকরি না করে নিজে কিছু করব। পাশাপাশি আমাদের সমাজের নারীদের কর্মী হিসেবে স্বাবলম্বী করা যায়, এমন ভাবনা ছিল। সেই ভাবনা নিয়ে আস্তে আস্তে আমি এগিয়েছি। প্রয়োজনই মানুষকে অনেক কিছু করতে সাহসী করে।’ সেই সাহস থেকেই আজ একজন সফল উদ্যোক্তা আইনুন্নাহার।

 

বিশেষ কৌশলে ভালো রাখুন দাম্পত্যের সম্পর্ক

একটি সম্পর্কে জড়ানো যতটা সহজ, সেটাকে টিকিয়ে রাখা তারচেয়ে অনেক বেশি কঠিন। সম্পর্ক থাকলে  খুনসুটি, ভুল বোঝবুঝি, ঝগড়া থাকবে। তা সে যে সম্পর্কই হোক না কেন। আপনাকে এই বিষয়গুলো কিছুটা কৌশলে সামলে নিতে হবে। সম্পর্ককে সুন্দর করে তুলবে কিছু কৌশল। আসুন জেনে নিই সম্পর্ককে আরও সুন্দর করে তোলার সেই গোপন কৌশলগুলো।

১। খোলাখুলিভাবে কথা বলুন

প্রতিটি সম্পর্কে ঝগড়া, খুনসুটি, মান-অভিমান হয়। কিন্তু একটি সুখী দম্পতি জানেন এই বিষয়গুলোকে কীভাবে মানিয়ে নিতে হবে। যে বিষয়ে মতে অমিলে হবে সে বিষয়ে খোলাখুলিভাবে একে অপরের সাথে কথা বলুন। যখনই বিষয়টি বেরিয়ে আসবে দেখবেন আর আপনাদের মধ্যে মতের অমিল হচ্ছে না। ফোন বা ইন্টারনেট এই মাধ্যমগুলোতে কথা না বলে সরাসরি কথা বলুন।

২। ছোট বিষয়গুলোকে অবহেলা করবেন না

আমরা আমাদের সঙ্গীর সাথে কথা বলার সময় ধন্যবাদ, প্লিজ এই শব্দগুলো ব্যবহার করি না। আমরা মনে করি প্রিয় মানুষের সাথে কেন এই সৌজন্যতা! অথচ এই ছোট বিষয়গুলো আপনাদের সম্পর্কে আরও মজবুত করে দিবে। সঙ্গীর কাজকে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করুন। ধন্যবার জানানে সবকিছুর জন্য যা সে আপনার জন্য করছে।

৩। নিজেকে পরিবর্তন করুন, সঙ্গীকে নয়

আপনি যদি সত্যি কাউকে ভালবাসেন তবে তাকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করবেন না। প্রয়োজনে নিজের অভ্যাস পরিবর্তন করুন তার জন্য। আপনি যদি তার কোন অভ্যাস অপছন্দ করেন, তবে সরাসরি তার সাথে কথা বলুন। কিন্তু তাকে জোর করবেন না। বুঝিয়ে বলুন দেখবেন সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।

৪। একসাথে রাতের খাবার খান

প্রচলিত আছে একসাথে খাবার খান, আর থাকুন একসাথে। খাবার টেবিলে সবাই একসাথে হন, নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মত  যা সম্পর্কগুলোকের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে। সারাদিনে একে অন্যের কাজের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় এই সময়ে।

৫। একসাথে সময় কাটান

নিজেরা একসাথে সময় কাটান। কাজ, অফিস বাদে নিজেদেরকে সময় দিন। বছরে একবার দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন। একসাথে সময় কাটানোর সুযোগে নিজেদের মধ্যে কোন বিষয় নিয়ে  ভুল বুঝাবুঝি থাকলে তা দূর হয়ে যাবে।

৬। রাগ কম করুন

রাগ করে কোন সমস্যার সমাধান করা যায় না। এটি শুধু সময় এবং সম্পর্ক নষ্ট করে। সঙ্গীর ভূল ধরা বাদ দিন। তার খারাপ দিকগুলো না দেখে ভাল দিকগুল দেখুন। রাগ না করে তার ভূলগুলো তাকে বুঝিয়ে বলুন। দেখবেন সে তার ভূল বুঝতে পেরেছে।

৭। বন্ধু হোন

শুনতে কিছুটা অদ্ভূত শোনালেও,এটি সত্য। সম্পর্কে বন্ধুত্ব  থাকাটা অনেক বেশি জরুরি। এতে সম্পর্কটি অনেক সহজ হয়ে যায়। নিজেদের মধ্যে বোঝাপোড়াটি ভাল হয়।

ছোট একটি ভূল বা ঝগড়ার কারণে একটি সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। নিজেদেরকে সময় দিন, বোঝার চেষ্টা করুন। হঠাৎ কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না, যা সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

 

গান থামিয়ে তরুণীর ইজ্জত বাঁচালেন আতিফ

কনসার্ট চলছিল পুরোদমে। এমন সময় মঞ্চে দাঁড়িয়ে গায়ক আতিফ আসলাম খেয়াল করলেন দর্শক আসনে এক তরুণীকে হেনস্তা করছে কয়েকজন যুবক। সেই পরিস্থিতিতেই দারুণ সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

মাঝপথে গান থামিয়ে দিয়ে ওই তরুণীর বাঁচালেন তিনি। গায়ক আতিফ আসলামের এই কাজকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা বিশ্ব।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়, ঘটনা গত শনিবারের (১৪ জানুয়ারি)। করাচিতে একটি অনুষ্ঠানে গান করছিলেন পাকিস্তানি এই গায়ক। অনুষ্ঠান চলাকালীন দর্শকদের মধ্যে একটি অস্বাভাবিক বিষয় তার নজরে আসে। খেয়াল করে দেখেন কয়েকজন যুবক মিলে এক তরুণীকে উত্যক্ত করছে। তখনই তিনি তার সহ-শিল্পীদের থামিয়ে দেন। নিজেও গান থামিয়ে সোজা ওই যুবকদের কাছে চলে যান।

প্রচণ্ড ধমক দিয়ে জানতে চান, ‘কখনও মেয়ে দেখোনি? তোমাদের ঘরে মা-বোন নেই?’  গায়কের এই চিৎকারে স্তম্ভিত হয়ে যান উপস্থিত শ্রোতারা। চলে আসেন নিরাপত্তারক্ষীরাও। এরপরই ওই তরুণীকে তারা নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান।

ঘটনা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ উদ্যোক্তাদের। তবে সোশ্যাল মিডিয়া মারফত এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। বাহবা পাচ্ছেন আতিফ আসলামও।

 

নামাজের শারীরিক উপকারিতা

নামাজ ফরজ ইবাদাত। আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন সব মুসলমানের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে ফরজ করেছেন। এ নামাজ পরকালের মুক্তি লাভের অন্যতম মাধ্যম। কারণ পরকালে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। যে ব্যক্তি নামাজের হিসাব সুন্দরভাবে দিতে পারবে, তার পরবর্তী হিসাব সহজ হয়ে যাবে।

আবার নামাজ দুনিয়ায় সব ধরনের অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। শুধু তাই নয়, নামাজের মাধ্যমে নামাজি ব্যক্তি অনেক শারীরিক উপকার লাভ করে। যার কিছু তুলে ধরা হলো-

দাঁড়ানো
মানুষ যখন নামাজে দাঁড়ায়; তখন সব চোখ সিজদার স্থানে স্থির থাকে। ফলে মানুষের একাগ্রতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

রুকু
নামাজি ব্যক্তি যখন রুকু করে এবং রুকু থেকে ওঠে সোজা হয়ে দাঁড়ায় তখন মানুষের কোমর ও হাঁটুর ভারসাম্য রক্ষা হয়। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। ফলে কোমর ও হাটু ব্যাথা উপশম হয়।

সিজদা
নামাজে যখন সিজদা করা হয় তখন নামাজি ব্যক্তির মস্তিস্কে দ্রুত রক্ত প্রবাহিত হয়। ফলে তার স্মৃতি শক্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আবার সিজদা থেকে ওঠে যখন দুই সিজদার মাঝখানে বসে এতে তার পায়ের উরু ও হাঁট সংকোচন এবং প্রসরণ ঘটে। এতে করে মানুষের হাঁটু ও কোমরের ব্যথা উপশম হয়।

ওঠা বসা
নামাজের সময় নামাজি ব্যক্তিকে দাঁড়ানো, রুকুতে যাওয়া, রুকু থেকে ওঠে সোজা হয়ে স্থির দাঁড়ানো, আবার সিজদায় যাওয়া, সিজদা থেকে ওঠে স্থিরভাবে বসা, আবার সিজদা দিয়ে দাঁড়ানো বা বসা। এ সবই মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যায়াম। এতে মানুষের শারীরিক বহুবিদ উপকার সাধিত হয়।

মানসিকতার পরিবর্তন
নামাজের মাধ্যমে মানুষের মন ও মানসিকতায় অসাধারণ পরিবর্তন আসে। গোনাহ, ভয়, নীচুতা, হতাশা, অস্থিরতা, পেরেশানি ইত্যাদি দূরভীত হয়। ফলে বিশুদ্ধ মন নিয়ে সব কাজে সম্পৃক্ত হওয়া যায়।

দেহের কাঠামোগত উন্নতি
নামাজ মানুষের দেহের কাঠামোগত ভারসাম্যতা বজায় রাখে। ফলে স্থুলতা ও বিকলঙ্গতা হার কমে যায়। মানুষ যখন নামাজে নড়াচড়া করে তখন অঙ্গগুলো স্থানভেদে সংবর্ধিত, সংকুচিত হয়ে বিশেষ কাজ করে থাকে। অঙ্গ ও জোড়াগুলোর বর্ধন ও উন্নতি এবং শক্তি বৃদ্ধি পায়।

পরিচ্ছন্ন রাখে
নামাজের জন্য মানুষকে প্রতিদিন পাঁচবার অজু করতে হয়। আর এতে মানুষের ত্বক পরিষ্কার থাকে। ওজুর সময় মানুষের দেহের মূল্যবান অংশগুলো পরিষ্কার হয় য দ্বারা বিভিন্ন প্রকার জীবানু হতে মানুষ সুরক্ষিত থাকি।

চেহারার লাবন্যতা বৃদ্ধি
নামাজের জন্য মানুষ যতবার অজু করে, ততবারই মানুষের মুখমণ্ডল ম্যাসেস হয়ে থাকে। যাতে মুখমণ্ডলে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। ফলে মানুষের চেহারার লাবন্যতা বৃদ্ধি পায়, মুখের বলিরেখা ও মুখের দাগ কমে যায়।

বিশেষ করে…
নামাজ মানুষের মানসিক, স্নায়ুবিক, মনস্তাত্ত্বিক, অস্থিরতা, হতাশা-দুশ্চিন্তা, হার্ট অ্যাটাক, হাড়ের জোড়ার ব্যাথা, ইউরিক এসিড থেকে সৃষ্ট রোগ, পাকস্থলীর আলসার, প্যারালাইসিস, ডায়াবেটিস মেলিটাস,  চোখ এবং গলা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

হার্টের রোগীদের প্রতিদিন বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা উচিত,নামাজ মানুষকে সব সময় সতেজ রাখে, অলসতা এবং অবসাদগ্রস্ততাকে শরীরে বাড়তে দেয় না।

পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মের মধ্যে নামাজের মতো এমন সামগ্রিক ইবাদত আর নেই। নামাজির জন্য এটা একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য যে, এটা একান্তই সামগ্রিক ব্যায়াম। যার প্রভাব মানুষের সব অঙ্গগুলোতে পড়ে এবং মানুষের প্রতিটি অঙ্গ নড়াচড়ার ফলে শক্তি সৃষ্টি হয় এবং সুস্বাস্থ্য অটুট থাকে।

পরিশেষে…
নামাজের উপকারিতায় আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ শুধু তাই নয়, নামাজ মানুষের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক পবিত্রতা সাধনের অনন্য হাতিয়ার।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সময়মতো নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। নামাজ আদায়ের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

হতাশা ভুলে বদলে দিন জীবনের পথ

জীবন সুন্দর। বেঁচে থাকতে ভালবাসি আমরা সবাই। তবু জীবনে কখনো কখনো এমন সময় আসে যখন সবকিছু অর্থহীন মনে হয়! ক্যারিয়ারের ব্যর্থতা মানসিকভাবে দূর্বল করে দিতে পারে আপনাকে। মনে হতে পারে আর কোন আশা নেই, আলো নেই। যখন আপনি ডুবে আছেন হতাশার অন্ধকারে তখনো পৃথিবীতে বিরাজ করছে সম্ভাবনা। তাই মুখ তুলে তাকান। জীবনকে সাজান আবার নতুন করে। অবলম্বন করুন এই কৌশলগুলো-

আগামীকাল বলে কিছু নেই, এমনভাবে ঘুমান 
আপনার শরীর একটি যন্ত্র। চমৎকার জটিল একটি যন্ত্র। আপনার কম্পিউটারটি যেমন সারাক্ষণ চালু রাখা যায় না, একে বিশ্রাম দিতে হয়, ঠিক তেমনি আপনার শরীরেরও প্রয়োজন বিশ্রামের। প্রতিরাতে নিজেকে নির্বিঘ্ন একটি ঘুম দিন। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতের সুন্দর ঘুম মস্তিষ্কে সারাদিনের জমে থাকা সকল টক্সিন দূর করে দেয়। এজন্যই প্রতিরাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম আপনাকে তৈরি করে পরেরদিনের জন্য, আপনার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যেও এটি খুব প্রয়োজন। প্রতিদিনের ঘুমের সময়ের সাথে আরও ৩০ মিনিট যোগ করুন। দেখবেন, আপনার কাজের গতি বেড়ে গেছে, কাজ করতে ভাল লাগছে, ফ্রেশ মস্তিষ্ক থেকে নতুন নতুন আইডিয়া আসছে।

মনোযোগ দিয়ে খাবার গ্রহণ করুন
খাওয়ার সময় শুধু খাওয়ার দিকে মনোযোগ দেওয়া একটি অনুশীলনের বিষয়। বিশেষ করে তখন যখন আপনি এক হাতে খাবার গ্রহণ এবং অন্য হাতে ইমেইল বা ম্যাসেঞ্জারে উত্তর দিতে ব্যস্ত থাকেন। আপনি মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছেন মানে হল, আপনি প্রতিটি খাদ্য উপাদানের স্বাদ গ্রহণ করছেন। এতে আপনি কী গ্রহণ করছেন আর কী বাদ রয়ে গেল প্রয়োজনীয় খাদ্য তালিকা থেকে সে বিষয়ে সচেতন হয়ে ওঠেন। ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে। গবেষণায় দেখা গেছে, মনোযোগ দিয়ে খাওয়া আপনার মন ভাল রাখে, স্ট্রেস কমায়, বাড়তি ওজন কমাতে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করে।

ক্যাফেইন ত্যাগ করুন
ক্যাফেইন সরাসরি আপনার নার্ভাস সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলে। এজন্যই কফি পান করলে আপনি তরতাজা অনুভব করেন, মস্তিষ্ক কাজ করছে বলে মনে হয়। কিন্তু আপনি যদি চরম হতাশাগ্রস্থ একজন মানুষ হোন এবং জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে থাকেন তাহলে এই সাময়িক সমাধান আপনার জন্য নয়। প্রাকৃতিক এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধান গ্রহণ করুন। শরীরচর্চা করুন, ধ্যান করুন। সকালে এক মগ কফি আপনাকে যতটা সতেজতা দেবে ৩০ মিনিটের ব্যায়াম তার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরি হবে।

 

কর্মমূখী হোন

মনকে আবার জাগ্রত করুন, ফিরিয়ে আনুন কাজে। আপনি যখন হতাশাগ্রস্থ তখন কাজ ছেড়ে দিয়ে ব্যার্থতার সময়গুলোকে মনে করার কোন মানে নেই। এরচেয়ে বরং কাজ করুন। যখন আপনার চাকরি হচ্ছে না বা ব্যবসায় আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না তখন এই সময়টাকে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কাজে লাগান। আবার নতুন করে নির্ধারণ করুন আপনার লক্ষ্য। ফোকাস করুন। সকাল শুরু করুন শরীরচর্চা দিয়ে। সফল মানুষেরা নিজেকে কর্মমূখী করেছেন সকাল থেকেই। ধীরে কাজ করা আপনার মস্তিষ্ককে ঝিমিয়ে দেয়। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট বেশী কাজ করতে শুরু করুন।

 

নীরবতার শান্তিকে গ্রহণ করুন
মনকে শান্ত করতে আমরা কত কি না করি। আপনার নানান দিকে খরচ করা টাকা এবং সময় উভয়ই বেঁচে যাবে আপনি যদি শান্তির জন্য সঠিক পথটি বেছে নিতে পারেন। মনের ক্ষত দূর করা, শান্ত-পরিশুদ্ধ করা, আবারও উজ্জ্বীবিত করার চাবি আছে আপনারই হাতে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় মেডিটেশন করেন তারা খুজে পান নিজের মাঝেই শান্তি বা ইনার পিস। প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট মেডিটেশন আপনার পুরো দিনটিকেই ঝরঝরে উজ্জ্বল করে দেবে। রাতে ভাল ঘুম হবে, কমে যাবে উদ্বিগ্নতা, হতাশা। মস্তিষ্ক কাজ করবে আরও চমৎকারভাবে।

স্বাস্থ্যকর ত্বকের রুটিন
ত্বক ভাল থাকলে মনও ভাল থাকে। কিন্তু স্বাস্থ্যকর একটি অভ্যাস গড়ে তুলতে অনেক সময় প্রয়োজন। একটি অভ্যাস গড়ে তুলতে অন্তত ২১ দিন সময় লাগে। আপনি যদি সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে চান তাহলে কষ্ট করে নির্দিষ্ট সময়টিতে ২১ দিন উঠুন। এরপর আর কষ্ট হবে না। এমনিতেই ঘুম ভেঙ্গে যাবে আপনার। একইভাবে শরীরের সুস্থতা, ত্বকের যত্ন পরিণত হতে পারে একটি অভ্যাসে। স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয় গ্রহণ করুন। ত্বকের ধরণ বুঝে মনোযোগের সাথে এর যত্ন নিন।

 

অহমের জন্য নয় আত্মার শান্তির জন্য কাজ করুন
কাজ সেটাই করুন যেটা করতে আপনার ভাল লাগে। কোন কাজ করে আপনি সফলতার শিরোপা জয় করতে পারবেন বা বিখ্যাত হবেন সেই তৃষ্ণা থেকে কাজ না করে আত্মার তুষ্টির জন্য কাজ করুন। আপনার কাজ যখন আপনার মনে যোগ করবে শান্তি, আনন্দ তখন আপনি এমনিই ভাল থাকবেন। সফল হওয়া মানেই কোটিপতি হওয়া নয়। আপনি তখনি সফল যখন আপনি সন্তুষ্ট।

মনের কথা শুনুন
আমরা অনেক সময় টের পাই না আমাদের কী প্রয়োজন, কিন্তু টের পায় আমাদের শরীর। খুব ঘুম পাচ্ছে? ছোট একটি ন্যাপ নিন। দৈনন্দিন জীবন অসহ্য লাগছে? কোথাও ঘুরে আসুন। যখনই মনে হচ্ছে কিছু ঠিক নেই, তখনই নিজের মনকে জিজ্ঞেস করুন কী চাই! জীবন হোক উপভোগের, টিকে থাকার লড়াই নয়।

জীবনের হতাশাকে ঝেড়ে ফেলে জীবনকে দিন একটি নতুন শুরু। জেগে উঠুন। সবার আগে গুছিয়ে নিন আপনাকে। নিজেকে ভালোবেসে শুরু করুন আবার। গড়ে তুলুন সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী মানুষটিকে যাকে হারাতে পারবে না কেউ।

সূত্র: ব্রাইটসাইড

 

পানির অপর নাম আনুরার জীবন

ক্লান্ত শহরটি নীরব-নিঝুম, সবাই তখন ঘুমের ঘোরে। এ রকম একটি সময়ে জেগে ওঠেন একজন নারী। সময়-সংসার তাঁকে যেন তাড়া করে। ঘুমিয়ে থাকলে চলে না তাঁর। তিনি মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিম বাজার এলাকার আনুরা বেগম। বয়স কত! এটা বলা তাঁর কাছে কঠিন। তবু জানান পঞ্চাশ, হয়তোবা তার কাছাকাছি।

আনুরার শুধু এটুকু মনে আছে, ১৩ কি ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল একজন ইউনিয়ন পরিষদ কর্মচারীর সঙ্গে। মূল বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। তবে বিয়ের পর থেকে মৌলভীবাজারেই বসবাস। সংসার চলছিল ভালোই। সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়েও এসে গেছে। কিন্তু হঠাৎ করেই ছেদ পড়ে। প্রায় ১৯ বছর আগে মারা যান স্বামী। এর এক-দুই বছর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্বামী শিক্ষক ছিলেন। এই সংসারে এল দুই কন্যা। কোনোভাবে ঠেলেঠুলে সন্তানদের নিয়ে সংসার চলছিল। ছেলেমেয়েরাও বড় হচ্ছিল। দ্বিতীয় স্বামীও একসময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এত দিন দুজনের শ্রমে, আয়-উপার্জনে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে যে সংসার চলছিল, সেই সংসারের পুরোটাই ঝুপ করে আনুরার কাঁধে এসে পড়ে।

ছেলেমেয়েদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করা। ছোট মেয়ে দুটোকে লেখাপড়া করানো। কী করবেন, ভেবে কোনো দিশা মিলছিল না। একসময় চার দেয়ালের ভেতর আর তাঁর থাকা সম্ভব হলো না। দেয়াল তাঁকে ভাঙতেই হলো। হাতের কাছে যা পেলেন, তাই মনে হলো আকাশের চাঁদ। এটা প্রায় সাত বছর আগের কথা। শুরু করলেন মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিমবাজার এলাকার কাঁচাবাজারের শাকসবজির দোকান ও আশপাশের ছোটখাটো হোটেল-রেস্তোরাঁয় পানি বিক্রি।

প্রথম দিকে বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি এনে বিক্রি করতেন। পরে অনেকেই আর বিনি পয়সায় পানি দিতে চাইল না। এক জায়গা থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকার পানি কিনতেন। সেই পানি ড্রামে করে দোকানে দোকানে পৌঁছে দিতেন। প্রতিদিন রোজগারের ১০০ টাকা চলে যাওয়ায় মনটা খচখচ করে। টাকাটা বাঁচানো গেলে সংসারের কাজে আসত। একদিন এলাকার কাউন্সিলর অলিউর রহমানকে বিষয়টি জানালেন। কাউন্সিলর দুই হাজার টাকা দিলে নিজের মতো করে পানি নেওয়ার একটা ব্যবস্থা করলেন।

প্রতিদিন রাত তিনটায় ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা তখনো ঘুমে। পানির লাইনের কাছে ছুটে যান। দু-একজন নৈশপ্রহরী ছাড়া আর কোনো জনমানুষ তখন থাকে না। এরপর একটা একটা করে ছোট-বড় ড্রাম ভরে তা রিকশাভ্যানে সাজিয়ে তোলেন। ড্রামগুলো পানিতে ভরে গেলে ভ্যান ঠেলে নিয়ে আসেন বাজারের কাছে। তখনো দোকানিরা আসেন না। আনুরা বেগম নির্দিষ্ট স্থানে রাখা পানির পাত্র ভরে রাখেন। সকাল নয়টা পর্যন্ত তাঁর এই পানি সরবরাহের কাজ চলে। সব কটি স্থানে পানি ভরা শেষ হলে তাঁর দিনের ছুটি। পানির পাত্র অনুযায়ী মেলে দাম। নিচে ৫ টাকা এবং ওপরে ৪০ টাকা। এতে প্রতিদিন তাঁর ৫০০ টাকার মতো আয় হয়। এই পানি বেঁচেই এখন তাঁর সংসার চলে। দুই মেয়ের একজন পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, একজন সপ্তম শ্রেণিতে। এ থেকেই তাদের পড়ালেখার খরচ জোগান। বড় ছেলেটি অসুস্থ। তার ছেলেমেয়েকেও দেখাশোনা করতে হচ্ছে। দুই কাঁধে অনেক দায় তাঁর।

আনুরা বেগম বলেন, ‘সাত বছর ধরি এই কাজ করছি। মানুষের ছুটিছাটা আছে। আমার ঈদে-চান্দেও রেস্ট নাই। জীবনে তো কিচ্ছু নাই। কষ্ট করি বাইচ্চাইনতোরে পাড়াইতেছি। বাইচ্চাইনতর লাগিই এই কষ্ট কররাম। তবে এখন ব্যবসা নাই। দোকান কমে গেছে। আয়টাও তাই বাড়ছে না।’

রাতজাগা আর জলভেজা শীত-বর্ষার এই জীবন তাঁর চেহারায় ক্লান্তির ছাপ ফেলেই রেখেছে। কিন্তু কথা বলেন হেসেখেলেই। হয়তো তিনি ধরেই নিয়েছেন পানি চক্রের এই জীবন থেকে তাঁর বের হওয়ার কোনো রাস্তা নেই। এই পথ ধরেই যে তাঁকে বাকি জীবনের অনেকটা পথ যেতে হবে।

 

সহজেই রাঁধুন দরবারি মোরগ পোলাও

মোরগ পোলাও মানেই রাজকীয় একটা ভাব। বিয়েবাড়িতে কিংবা অতিথি আপ্যায়নে মোরগ পোলাও না হলে যেন চলেই না। তবে সবসময় অন্যের ওপর নির্ভর না করে নিজেই তৈরি করতে পারেন মজাদার এই খাবারটি। রেসিপি জানা নেই? রইলো রেসিপি-

উপকরণ : মোরগ অথবা মুরগি একটি, বাসমতি চাল ৫০০ গ্রাম, ঘি এক কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা এক টেবিল চামচ, টক দই আধা কাপ, কিসমিস এক টেবিল চামচ, কাজুবাদাম বাটা এক টেবিল চামচ, পোস্ত বাটা এক টেবিল চামচ, শাহী জিরা এক চামচ, গরম মশলা গুঁড়া এক চা চামচ, জাফরান এক চিমটি, লবণ স্বাদমতো, ঘন দুধ এক কাপ, চিনি সামান্য, বেরেস্তা আধা কাপ, গোলাপ জল এক চা চামচ।

প্রণালি : মোরগ/মুরগির সঙ্গে সব মশলা মেখে এক ঘণ্টা রেখে দিন। প্যানে ঘি দিয়ে মোরগ/মুরগিটা রান্না করুন। অন্য একটা পাত্রে পোলাও রান্না করে নিন। অর্ধেকটা পোলাও তুলে এর ভেতরে মোরগ/মুরগিটা দিন। এবার বেরেস্তা, ঘি, কিসমিস, পোলাও, দুধ ও ঘি উপরে জাফরান, গোলাপজল দিয়ে মুখ ঢেকে ১৫ মিনিট দমে রাখুন।

 

শীতের দিনের পার্টি সাজ

শীত মানেই নানা রকম পার্টি আর দাওয়াত। যারা সাজতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত সময়। শীতের সময়ে ঘেমে যাওয়ার ভয় থাকে না বলেই মনের মতো সাজগোজ করা যায়। তবে দিনের আলোতে একটু হালকা আর রাতের কৃত্রিম আলোতে একটু ঝলমলে সাজেই আপনাকে বেশি সুন্দর লাগবে। দিনের বেলা সাজের ক্ষেত্রে হালকা ধরনের মেকআপই আপনাকে অনন্য সাধারণ করে তুলবে।

মুখটা ভালো করে পরিষ্কার করে হালকা ফেস পাউডার বুলিয়ে নিন। পার্টির আমেজ আনতে চিরচেনা কাজলই একটু গাঢ় করে চোখের কোলে বুলিয়ে নিন। আপনার পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে নানা রঙের পেন্সিল ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু সবার আগে লক্ষ্য রাখবেন কোন রঙ আপনাকে মানায়। চোখের বাইরে কাজল দিলে মাশকারা ও আইলাইনার না দিলেও চলবে।

আপনার পোশাকের রঙের আইশ্যাডো ব্লেন্ড করেও দিতে পারেন। লিপস্টিকের ক্ষেত্রে প্রথমে একই রঙের লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট সুন্দর করে এঁকে নিয়ে লিপস্টিক দিয়ে ভরাট করে দিন। আপনি যদি গ্লসি পছন্দ করেন তবে এর উপরে নরমাল কালারের লিপগ্লস ব্যবহার করতে পারেন। চুলের স্টাইল নির্ভর করবে আপনার পোশাকের ওপর।

যদি শাড়ি পরেন তাহলে হাত খোঁপা করে চুলে ফুল লাগাতে পারেন। যা আপনাকে স্নিগ্ধতা এনে দেবে। আর আপনার চুল যদি ছোট হয় তাহলে ছেড়ে দিতে পারেন। এখন চলছে চুল রিবন্ডিং করার ট্রেন্ড। তাই অনুষ্ঠানের আগে ভালো হেয়ার আয়রন দিয়ে চুলটা সোজা করে নিতে পারেন।

ভারী গহনা বাদ দিয়ে পরতে পারেন মেটাল, এন্টিক, রূপার গহনা। অন্যরকম লুকের জন্য মাটির গহনাও দারুণ। শাড়ি অথবা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে পরুন চুড়ি অথবা ব্রেসলেট।

 

সুখ খুঁজে নেয়ার উপায়

সুখ খুঁজে পাবার জন্য দূরে কোথাও যেতে হয় না। এর জন্য প্রয়োজন কিছুটা নিজের জন্য সময় আর আশেপাশের সুন্দর পরিবেশ। আপনি হয়তো কখনো মনের অজান্তেই নিজের সুখকে দুঃখতে পরিণত করে দেন। আর এই ব্যস্ত জীবনে নিজেকে সুখী রাখা সবচেয়ে কঠিন কাজ। কাজটি কঠিন হলেও খুব সহজ কিছু পদ্ধতিতে আপনি হাসিখুশি থাকতে পারবেন। তাই নিজেকে সুখী রাখতে সুখ সুখ করে সুখের পেছনে না ঘুরে একটু সময় নিয়ে ভাবুন। আপনি ঠিক কোন কাজটি দিয়ে দুঃখ পাচ্ছেন।

উপায়
উপায় হচ্ছে সেই শব্দ যা দিয়ে আপনি আপনার সুখের সন্ধান পেতে পারেন। আপনি যখন কোনো কিছুর জন্য পথ খুঁজে না পান তখন এই উপায় শব্দটি হয়ে থাকে আপনার একমাত্র অবলম্বন। তাই যখন আপনি অনুভব করবেন যে আপনি সুখে নেই ঠিক সেই সময়েই তার কারণ খুঁজে বের করুন। কারণ খুঁজে বের করার পরের যে কাজটি আপনি করবেন তা হচ্ছে তাকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার উপায় খুঁজে বের করা। যদিও কাজটি এত সহজ না, এরপরেও আপনাকে উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের মাঝে মন খারাপ হলে একটি ব্যাপার কাজ করে আর তা হচ্ছে মন খারাপ নিয়ে বসে থাকা। এটি কোনো উপায় হতে পারেন না। তাই মন ভালো করার উপায় আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে।

স্রোতে গা না ভাসনো
কারো মুখে আপনার প্রশংসা শুনলেন, এতেই আপনি বিমোহত হয়ে যাবেন না। কারণ যে মানুষটি আপনাকে প্রশংসার সাগরে ভাসাতে পারে সে পরক্ষণেই পারে আপনাকে সমস্যা এবং দুঃখের সাগরে ফেলতে। তাই কারো কথার মাঝে সুখকে খুঁজে ফিরবেন না। আপনিই আপনার সুখের মালিক। তাই যতো খারাপ অবস্থাই যাক আপনার মাঝে এতটুকু শক্তি রাখুন যে আপনাকে দিয়ে সুখের মুখ দেখা সম্ভব।

মন্ত্র
যে কাজগুলো করতে ভালোবাসেন তা করতে থাকুন। কখনো কারো জন্য নিজের সুখের কারণ থেকে দূরে সরে আসবেন না। মন দিয়ে নিজের কাজটাই করুন তবে খেয়াল রাখবেন তা যেন কারো ক্ষতির কারণ না হয়। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এটি আপনাকে যেমন সুস্বাস্থ্যর অধিকারী করে রাখবে তেমনই আপনাকে সুখে থাকতেও সাহায্য করবে নানা ভাবে।

 

ঘরের ভেতরকার পরিবেশ ভালো রাখবেন যেভাবে

আপনি সারাদিন যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, দিন শেষে আপনার ঘরটাই হয়ে থাকে আপনার ক্লান্ত দিনের শেষ আশ্রয়। তবে সেই আশ্রয়টি যদি সুন্দরভাবে না থাকে তবে তাতে যারা বসবাস করে কিংবা একটা লম্বা সময় ধরে থাকে তাদের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়া ঘরের কিংবা বাড়ির অভ্যান্তরীণ আবহাওয়া ভালো না থাকলে তা সরাসরি মানুষের মনের ওপর প্রভাব ফেলে। আপনার ভালো মনকে খারাপ করে দিতে ঘরের গুমোট আবহাওয়াই যথেষ্ট।

ভ্যান্টিলেটর এবং জানালা পরিষ্কার রাখুন
আবহাওয়া চলাচলের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে জানালা কিংবা ভ্যান্টিলেটর। এসব জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখলে এবং বাড়ির জানালা বড় না থাকলে দেখা যায় পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাস ঘরে প্রবেশ করে না। এর ফলে ঘরে বাসা বাঁধে অসুখ। তাই প্রতি সপ্তাহে সময় করে একটি নির্দিষ্ট দিনে ভ্যান্টেলেটর এবং জানালা পরিষ্কার রাখুন। এতে আপনার আশেপাশের পরিবেশ এবং আপনার ঘরের ভেতরের পরিবেশ থাকবে সুন্দর।

ধূমপান এড়িয়ে চলুন
ধূমপানের কারণে ঘরের ভেতরের আবহাওয়াতে পরিবর্তন আসে। এর নিকোটিন এবং ধোঁয়া শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে শিশুদের মানসিক অবস্থার ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। এছাড়া ঘরের ভেতরে একটি বাজে পরিবেশ সৃষ্টি করে। এমন আবহাওয়াতে ছোট শিশুরা এবং গর্ভবতী মায়েরা থাকে তাদের স্বাস্থ্যর সাথে সাথে মানসিক অবস্থাতেও মারাত্মক হানি ঘটে। তাই ঘরের ভেতরে ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।

ময়লা আবর্জনা
ময়লা আবর্জনা যাতে ঘরে জমে না থাকে তার প্রতি খেয়াল রাখুন। এটি আপনার ঘরের সৌন্দর্যের যেমন বারোটা বাজাবে তেমনই আপনার ঘরের অভ্যান্তরীণ আবহাওয়ারও। আর এই অপরিষ্কার আবহাওয়াতে যাদের শরীর সবার আগে খারাপ হয় তারা হচ্ছে বয়স্ক এবং শিশুরা। তাই ঘরের আবহাওয়ার পাশাপাশি পরিষ্কারের দিকেও নজর দিন।

প্রতিদিনের যত্ন
অনেকেই মনে করেন সপ্তাহে কিংবা মাসে একটু ঝেরে মুছে রাখলেই ঘরের পরিবেশ সুন্দর থাকবে। যা মোটেও ঠিক নয়। তাই প্রতিদিন আপনার খাবার টেবিল, চেয়ার, ফ্যান, জানাল এবং পর্দা ঝেরে মুছে রাখুন। এতে আপনি যেমন ভালো থাকবেন ঠিক তেমনই ভালো থাকবে আপনার আশেপাশের মানুষগুলো।

 

শাহী কোপ্তা কোরমা তৈরির রেসিপি

অতিথি আপ্যায়নে কিংবা বিভিন্ন উৎসবে রান্না হয়ে থাকে নানা সুস্বাদু খাবার। তেমনই একটি পদ হলো শাহী কোপ্তা কোরমা। রেসিপি জানা থাকলে খুব সহজেই তৈরি করা যায় এটি। তাই বাড়িতে অতিথি এলেও আপ্যায়ন নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। চলুন শিখে নেই-

উপকরণ :
কোপ্তার জন্য : গরুর মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম, পাউরুটি দুই পিস, আদা ও রসুন বাটা দুই চা চামচ, গরম মশলা গুঁড়া এক চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিজ আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, মরিচ কুচি ৫টি।

গ্রেভির জন্য : টকদই আধা কাপ, ঘন দুধ এক কাপ, জাফরান একটি, ঘি এক টেবিল চামচ, ফ্রেশ ক্রিম আধা কাপ, বাদাম বাটা এক টেবিল চামচ, কিসমিস বাটা এক টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, আদা বাটা এক চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, এলাচ ৪টি, দারুচিনি দুটি।

প্রণালি :
কোপ্তার সব উপকরণ দিয়ে মেখে বল করে ভেতরে চিজ দিয়ে ভেজে নিন। কড়াইতে ঘি, এলাচ, দারুচিনি, পেঁয়াজ ভেজে অন্যসব উপকরণ দিয়ে কষিয়ে তরল দুধ দিন। ফুটে উঠলে কোপ্তা দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন। দুধে ভেজানো জাফরান দিন। ফ্রেশ ক্রিম দিয়ে নেড়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

 

মেঝে ঝকঝকে রাখার উপায়

দিনশেষে ঘরই আমাদের ঠিকানা। হাজারটা ব্যস্ততার পরে একটুকরো অবসরে সবাই চায় নিজের ঘরটিতে বিশ্রাম নিতে। আর সেই ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে মনও থাকে ফুরফুরে। নানা কারণেই ঘরের মেঝে নোংরা হতে পারে। সুন্দর ঘরের প্রথম শর্ত হচ্ছে পরিষ্কার মেঝে। মেঝে ঝকঝকে না হলে ঘরের সৌন্দর্য অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায়। চলুন জেনে নিই ঘরের মেঝে পরিষ্কার রাখার কিছু সহজ উপায়-

মোছার সময় হালকা গরম পানিতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল জাতীয় লিক্যুইড ব্যবহার করুন। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের এ লিকুইড ক্লিনার পাওয়া যাচ্ছে। আর এ লিকুইড ব্যবহার করলে আরশোলা, মশা এবং মাছির উপদ্রব কমে যাবে।

প্রতিদিন ক্লিনার দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করুন। এরপর নরম কাপড় বা দিয়ে ভালো করে মুছে নিন। কারণ খসখসে কাপড় ব্যবহার করলে মেঝেতে অ্যাচ পড়ে যেতে পারে।

অনেক সময় মার্বেলের মেঝেতে অসাবধানতার কারণে চা-কফি পড়ে গিয়ে দাগ বসে যায়। চিন্তার কারণ নেই। আমাদের প্রায় সবার ঘরেই ভিনেগার থাকে। তাই এক ভাগ সাদা ভিনেগারের সঙ্গে দু’ভাগ পানি মিশিয় স্প্রে বোতলে ভরে দাগের ওপর স্প্রে করুন। কিছুক্ষণ পর শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। চা বা কফির দাগ চলে যাবে।

দীর্ঘদিন ব্যবহার করার পর সাদা মার্বেলের মেঝে হলুদ হয়ে যায়। তাই তারপিন তেলে অল্প লবণ মিশিয়ে ভালো করে মার্বেলের ওপর মুছে নিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, দেখবেন সাদা রং আবার আগের মতো হয়ে যাবে।

টাইলসের মেঝেতে অনেক সময় দাগ বসে গিয়ে আঠালো হয়ে যায়। এরকম অবস্থায় দাগ তোলার জন্য হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে টাইলসের মেঝে মুছে নিন। লবণ ও পানি ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। দেখুন আপনার মেঝে কেমন ঝকঝক করছে।

 

চুল পড়া রোধ করবে যে তেল

সুস্থ ও সুন্দর চুলের আকাঙ্ক্ষা থাকে সবারই। আর তাই নানা উপায়ে নেয়া হয় চুলের যত্ন। চুলের যত্নে সাধারণত বাজারের নারকেল তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চুল পড়া রোধ করতে বেশ কার্যকর আমলকীর তেল। চুল পড়া প্রতিরোধে এই তেলটি ব্যবহার করতে পারেন।

যারা সময়ের অভাবে চুলের যত্ন নিতে পারছেন না, তারাও ব্যবহার করতে পারেন আমলকির তেল। খুব সহজে মাত্র দুটি উপাদান দিয়ে এই তেলটি তৈরি করা সম্ভব।

এক কাপ নারকেল তেল ৪-৫ মিনিট জ্বাল দিন। এর সাথে শুকনো আমলকী দিয়ে দিন। আমলকীসহ এই তেল জ্বাল দিতে থাকুন। বাদামী রং হয়ে আসলে চুলা থেকে এটি নামিয়ে ফেলুন। এরপর তেলটি ছেঁকে আমলকী থেকে আলাদা করে নিন।

তেলটি মাথায় কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করে লাগান। সারা রাত রাখুন, পরের দিন শ্যাম্পু করে ফেলুন।

আমলকির তেল শুধু নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে না। মাথার তালুতে রক্ত চলাচলও বৃদ্ধি করে থাকে। আমলকী চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। এটি সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করুন।

 

প্রতি মাসে পরিচালক সমিতিতে অনুদান দেবেন ডিপজল

এখন থেকে প্রতি মাসে পরিচালক সমিতিতে ৫০ হাজার করে টাকা দেবেন ঢাকাই ছবির ডেঞ্জারাম্যানখ্যাত অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। তার এই টাকা দেয়ার উদ্দেশ্য একেবারেই নিঃস্বার্থ; অসহায়, দুস্থ, পরিচালকদের সাহায্য করা।

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার অদূরে সাভারে ডিপজলের শুটিং বাড়িতে ডিপজল প্রযোজিত নতুন ছবির মহরত অনুষ্ঠানে একথা বলেন এক সময়ের আলোচিত এই অভিনেতা।

জাদরেল এই অভিনেতা বলেন, ‘নতুন বছরের শুরু থেকেই প্রতি মাসে পরিচালক সমিতিতে ৫০ হাজার করে টাকা দেব। যাতে আর শুনতে না হয় পরিচালক, শিল্পী-কলাকুশলী বিনা চিকিৎসায় অর্থের অভাবে ধুকে ধুকে মারা গেছেন।’

ডিপজল আরো বলেন, ‘চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি প্রয়াত বিনোদন সাংবাদিক আওলাদ হোসেনের পরিবারের জন্য এক লাখ টাকা দেয়া হবে। এছাড়া অসুস্থ সাংবাদিক ঝুটন চৌধুরীর চিকিৎসার জন্য এক লাখ টাকা দেয়া হবে।’

এছাড়া চলচ্চিত্র উন্নতির স্বার্থে সবসময় ঢাকাই ছবির পাশে থাকার আশা ব্যক্ত করেন ডিপজল।

প্রসঙ্গত, অনেকদিন পর আবারো চলচ্চিত্রে ফিরছেন ডিপজল। একসঙ্গে পাঁচটি ছবি নিয়ে চলচ্চিত্রে আগের মতো মনোযোগী হচ্ছেন তিনি। সে কারণে আজ দুটি ছবির মহরত করেন। ছবি দুটি হচ্ছে ‘এক কোটি টাকা’ এবং ‘মেঘলা’। ছবি দুটি পরিচালনা করবেন ছটকু আহমেদ এবং ডিপজল কন্যা ওলিজা মনোয়ার।

আগামীকাল রোববার (১ জানুয়ারি) থেকে ‘এক কোটি টাকা’ ছবির কাজ শুরু হবে। ছবিতে অভিনয় করবেন বাপ্পী-অমৃতা ছাড়াও আরো অনেকে। আর ‘মেঘলা’ ছবিটি বানাবেন ওলিজা। কিন্তু ছবির অভিনয় শিল্পী কারা থাকবেন সেটি জানানো হয়নি।

মহরত অনুষ্ঠানে ডিপজল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ইলিয়াস ভূঁইয়া, চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহীন সুমন, মুশফিকুর রহমান গুলজার, মমতাজুর রহমান আকবর, বাপ্পী, অমৃতা প্রমুখ।

 

বিবাহের সময় কাবিনের প্রয়োজনীয়তা

মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিবাহ নিবন্ধন বা কাবিননামা বর-কনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। নিবন্ধন বা কাবিননামা ব্যতীত বিবাহ প্রমাণ করা কঠিন হয়ে যায়। ফলে মেয়েদের প্রতারিত হবার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয় সবচেয়ে বেশি।

দেনমোহর, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের অভিভাবকত্ব ইত্যাদি দাবির ক্ষেত্রে বিবাহ নিবন্ধন বা বিবাহের কাবিননামা বিচারিক আদালতে আইনগত দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়। তাছাড়া পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে কাবিননামার গুরুত্ব ব্যাপক।

বিশেষ করে কাবিননামায় বয়স উল্লেখ করতে হয় বিধায় বাল্য বিবাহ রোধও সম্ভব। এটি বিবাহিত ছেলে-মেয়ে উভয়ের ভবিষ্যত আইনগত অধিকার সংরক্ষণ করে। বিবাহ সম্পর্কে উভয় পক্ষ থেকেই যে কোন সময় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, তখন কাবিননামা প্রমাণ পত্র হিসেবে কাজ করে।

নিবন্ধনবিহীন বিবাহের কারণে যেমন অনেক নারী নির্যাতিত, লাঞ্ছিত ও স্বামীর অধিকার, সম্পদের উত্তরাধিকার, নিজ সন্তানের পিতৃত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। আবার অনেক পুরুষও বিবাহ নিবন্ধন বা কাবিননামা না থাকায় নারীদের আক্রমণের শিকার।

এ কারণেই রাষ্ট্রীয়ভাবেই বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রমকে অত্যাবশক করা হয়েছে। এ নিবন্ধনের মাধ্যমেই বরকনের পরিপূর্ণ তথ্য নির্ধারিত নিবন্ধন বইতে সংরক্ষিত থাকে। যাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের অধিকার রক্ষা হয়।

যদিও বিবাহের ক্ষেত্রে কাবিন আবশ্যক। তথাপিও কাবিন বিবাহের কোনো অংশ নয়। কাবিন ছাড়া বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে সে বিবাহ বৈধ হবে। দাম্পত্য জীবনে এক সঙ্গে বসবাস করা যাবে। এ বিষয়ে ইসলামে কোনো অসুবিধা নেই।

মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য দেশের প্রচলিত বিধান অনুযায়ী বিবাহের নিবন্ধন অত্যন্ত জরুরি। কেননা দেশে রাষ্ট্রকর্তৃক নির্ধঅরিত মুসলিম বিবাহ আইন রয়েছে। আর বিবাহের এ নিবন্ধনকেই বলা হয় কাবিন। আর যিনি এ নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পাদন করেন তাকে প্রচলিত ভাষায় বলা হয় কাজি।

দেশের প্রতিটি প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডেই সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আলাদা আলাদা কাজি বা বিবাহ নিবন্ধনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিয়োজিত রয়েছে। যারা বিবাহের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর ও কনের ব্যক্তিগত ও বিয়ে সংক্রান্ত তথ্য বিবাহ নিবন্ধন (বালাম) বইতে লিপিবদ্ধ করেন।

বিবাহ নিবন্ধনের সময় কাজী বর-কনেসহ বিবাহের সাক্ষী, বর-কনের অভিভাবক, যে ব্যক্তি বিবাহ পড়িয়েছেন তাদের সবার নাম ও সাক্ষর রাখেন। বিবাহের সময় নির্ধারিত মহর কত ইত্যাদি তথ্য সংযোজন করেন।

বিবাহ নিবন্ধনের মাধ্যমেই বর ও কনের সব তথ্য সরকারের তথ্যভাণ্ডারে নথিভুক্ত হয়। যা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই সামাজিক নিরাপত্তার রক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে। তবে কাবিন প্রক্রিয়া নারীদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়েই প্রতারণা ফাঁদ থেকে বেঁচে থাকতে যথেষ্ট কার্যকরী এ কাবিন। স্ত্রীর জন্য স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর জন্য উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাহ নিবন্ধন বা কাবিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যারা সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত, নারী হোক কিংবা পুরুষ; উভয়ের জন্যই কাবিন অনেক জরুরি বিষয়।

আবার পারিবারিক বন্ধন বিচ্ছিন্ন তথা তালাকের ক্ষেত্রে বিবাহ নিবন্ধন বা কাবিন আরো বেশি প্রয়োজন। কারণ এ নিবন্ধন ওপর ভিত্তি করেই তালাক সংক্রান্ত ফয়সালা নির্ধারিত হয়।

স্বামী-স্ত্রী উভয়ে আদালত তথা বিচারিক কার্যক্রমে অধিকার নিশ্চিত করতে এ কাবিন বা বিবাহ নিবন্ধনের তথ্য প্রয়োজন হয়। যা স্বামী-স্ত্রীর জন্য একটি আবশ্যকীয় প্রমাণ।

সুতরাং বর-কনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও সহাবস্থান এবং সত্যতা নিরূপনে কাবিনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক। দেশের প্রতিটি সচেতন ব্যক্তি ও পরিবারের উচিত বিবাহের সময় বর-কনের নিরাপত্তা ও পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার লাভে বিবাহের নিবন্ধন (কাবিন) কার্যক্রম সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা।

 

নববর্ষ উদযাপনে ইসলামি মূল্যবোধ

নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার উৎসব পালনের সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও ইতিহাস পর্যালোচনা করলে যে বিষয়টি সুস্পষ্ট তা হলো প্রথম প্রথম ঘরোয়া পরিবেশে পরিবার-পরিজন নিয়ে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে নতুন বছরের প্রথম দিন সৌজন্যবোধ বিনিময়, ভালো খাবার-দাবারের আয়োজন, নতুন পোশাক গ্রহণের মধ্যেই বর্ষবরণ উদযাপন সীমাবদ্ধ ছিল।

বিশাল আকারে আয়োজন করে কখনো কোনো অনুষ্ঠান উদযাপন করা হতো না। সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঘটা করে বর্তমান সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘বর্ষবরণ’ অনুষ্ঠান উদযাপন হয়।

ইসলামে ‘বর্ষবরণ’ উপলক্ষে কোনো রুসুম-রেওয়াজ বা আনন্দ অনুষ্ঠানের অনুমোদন নেই। হোক ইংরেজি, বাংলা কিংবা আরবি নববর্ষের বেলায়।

বর্তমান সময়ে উপমহাদেশ থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা আচার-অনুষ্ঠান পালনের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ তথা নববর্ষ উদযাপন করা হয়।

এ সব আয়োজনের মধ্যে রয়েছে- আতশবাজি, ঘণ্টাধ্বনি, ফল খাওয়া, কাঁচ তথা তৈজশপত্র ছুঁড়ে মারা, যৌবন হারানো ও চুল-ভ্রু সাদা হওয়ার ভয়ে নির্ঘুম রজনী অতিবাহিত করাসহ ইত্যাদি নতুন নতুন আবিষ্কার। অথচ ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে এ সবের কোনো ভিত্তি নেই।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্দিষ্ট সময়ে এবং নতুন সূর্যকে স্বাগত জানাতে প্রত্যেক বছর ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২ টা ০১ মিনিটে বর্ষবরণের নামে নববর্ষ উদযাপনের উদ্দেশ্যে  বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নাচ-গান, আতশবাজি, যুবক-যুবতির ফ্রি স্টাইলে ফুর্তিসহ বিভিন্ন আনন্দ উৎসব শুরু হয়।

যার ফলশ্রুতিতে ঘটে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ইসলাম এ সব অন্যায় ও যৌন উত্তেজনামূলক কোনো কর্মকাণ্ড এবং আতশবাজিসহ অপচয়মূলক কোনো বিষয়ই সমর্থন করে না।

ইসলামি মূল্যবোধে বর্ষবরণ
রাতের গুরুত্বপূর্ণ যে সময়টি পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে টগবগে যৌবনের লাগামছাড়া উন্মাদনা ও নেশা মেটানোর সময় হিসাবে বেছে নেয়া হয়। ইসলামে গভীর রাতের এ সময়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

গভীর রাতের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মহান আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে এসে আহ্বানকারীকে(সাহায্য প্রার্থীকে), অসুস্থ ব্যক্তিকে, ক্ষমাপ্রার্থীকে (চাহিদা অনুযায়ী) যা ইচ্ছা তা ডেকে ডেকে দিয়ে যান। (মুসলিম, মিশকাত)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা অন্ধকার রাতের ঘনঘটার ন্যায় ফেতনার পূর্বে দ্রুত আমল কর, (যখন) ব্যক্তি ভোর অতিবাহিত করবে মুমিন অবস্থায়, সন্ধ্যা করবে কাফির অবস্থায়, অথবা সন্ধ্যা অতিবাহিত করবে মুমিন অবস্থায়, ভোর অতিবাহিত করবে কাফির অবস্থায়। মানুষ তার দ্বীনকে বিক্রি করে দিবে দুনিয়ার সামান্য কিছুর বিনিময়ে।’ (মুসলিম)

এমন হলে কেমন হতো-
নতুন বছর উপলক্ষে বর্ষবরণের ইসলামি সংস্কৃতি এ রকম হওয়া উচিত ছিল যে, গভীর রজনীতে পুরনো বছরের বিদায় মুহূর্তে নতুন বছরের শুরুতে বিদায় নেয়া বছরের সব অন্যায় ও অপরাধমূলক কাজের জন্য আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করা।

নতুন বছরের আগত দিনগুলোতে সুন্দর ও সৎ জীবনযাপনের দৃপ্ত শপথে আল্লাহ তাআলার দয়া ও সাহায্য চাওয়া।

পরিতাপের বিষয়-
বর্তমান সময়ে ইসলামি আক্বিদা বিশ্বাসের মানুষরাও ভিন্নধর্মী সংস্কৃতির মানুষের আচার-আচরণে আকৃষ্ট হয়ে দ্বীন ও ঈমানের কথা ভুলে অপসংস্কৃতি ও অন্যায় কাজে নিজেদের আমলি জিন্দেগিকে করছে কুলষিত।

অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রাতের মধ্যে এমন একটি সময় আছে, যদি কোনো মানুষ সে সময় লাভ করতে পারে, তবে আল্লাহর নিকট ইহকাল ও পরকালের কোনো কল্যাণ চাইলে আল্লাহ তাকে তা দান করেন। আর এ সময়টি প্রতি রাতেই রয়েছে। (মুসলিম, মিশকাত)

অনুষ্ঠান যদি করতেই হয়-
বর্ষবরণের অনুষ্ঠান ‘নববর্ষ’ যদি উদযাপন করতেই হয় তবে, ইসলামি আক্বিদা বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত মুসলমানের উচিত, রাত্রি জাগরণ করে আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করে বিগত জীবনে ভুলত্রুটি থেকে ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণে বিনিদ্র রজনী অতিবাহিত করা।

আতশবাজি, ঘণ্টাধ্বনি, কল্যাণের উদ্দেশ্যে ফল খাওয়া, কাঁচ তথা তৈজশপত্র ছুঁড়ে মারা, যৌবন হারানো ও চুল ভ্রু সাদা হয়ে যাওয়ার ভয়ে নির্ঘুম রজনী অতিবাহিত করাসহ বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার, নগ্ন নারীর পুরুষসংমিশ্রণ ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকা। যা প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানের জন্য আবশ্যক করণীয়।

পরিশেষে…
মুসলিম উম্মাহর প্রতি কুরআনের ছোট্ট একটি আয়াতের উদাত্ত আহবান করতে চাই। আর তা হলো- ‘আল্লাহ জীবন-মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষা করার জন্য, কে সবচেয়ে বেশি সুন্দর আমল করতে পারে।’ (সুরা মুলক : আয়াত ২)

আসুন, নববর্ষ উদযাপনে বর্ষবরণের অশ্লীল ও অপচয়মূলক কাজ থেকে বিরত থেকে সুন্দর ও কল্যাণমূলক জীবন গঠনের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হই।

বর্তমান সময়ের যাবতীয় ফেতনা, ঘোর মূর্খতা ও কুসংস্কারের অন্ধকার পরিহার করে সঠিক পথ খুজে পাওয়ার জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করি।

বিশেষ করে বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে নিজেদেরকে দ্বীনি ও ইসলামি আদর্শের বাস্তবায়নে সমাজ পরিবর্তনের সংস্কৃতি চালু করি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গভীর রজনীতে পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্তুতি নিয়ে বিগত জীবনের গোনাহ এবং আগত নতুন বছরের কল্যাণ কামনা করার সংস্কৃতি চালু করার তাওফিক দান করুন। অন্যায় ও ফাহেশা কাজ থেকে হেফাজত করে কল্যাণের পথে এগিয়ে যাওয়া তাওফিক দান করুন। আমিন।

Save

Save

Save

Save

Save

 

রুই মাছের মুড়িঘণ্ট রাঁধবেন যেভাবে

খাবারের তালিকায় মুড়িঘন্টের কদর আলাদা। বিয়েবাড়ি কিংবা অতিথি আপ্যায়নে অনেক সময় প্রাধান্য পায় এই পদটি। তবে এর রন্ধন প্রণালি মোটেই কঠিন কিছু নয়। রেসিপি জানা থাকলে আপনি নিজেই তৈরি করতে পারেন জনপ্রিয় এই খাবারের পদটি। রইলো রেসিপি-

উপকরণ : রুই মাছের মাথা একটি, মুগডাল ২৫০ গ্রাম, আদাবাটা দুই চা চামচ, রসুনবাটা দুই চা চামচ, মরিচ গুঁড়া এক চা চামচ, হলুদ গুঁড়া এক চা চামচ, ধনে গুঁড়া আধা চা চামচ, ভাজা জিরা গুঁড়া এক চা চামচ, গরম মশলার গুঁড়া আধা চা চামচ, টমেটো কুচি একটি, আস্ত জিরা আধা চা চামচ, তেজপাতা দুটি, তেল আধা কাপ, ঘি এক টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি দুই টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ চার/পাঁচটি, লেবুর রস এক টেবিল চামচ, এলাচ ও দারুচিনি দুটি করে, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজবাটা দুই টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি তিন টেবিল চামচ।

প্রণালি : মাছের মাথা কেটে ভালো করে ধুয়ে হলুদ, লবণ ও লেবুর রস মেখে হালকাভাবে ভেজে নিন। আগেই মুগডাল ভেজে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার একটি কড়াইতে তেল দিয়ে গরম হলে আস্ত জিরা, তেজপাতা, এলাচ ও দারুচিনির ফোড়ন দিন। টমেটো কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে গরম মশলার গুঁড়া, ধনেপাতা কুচি, কাঁচামরিচ বাদে অন্যসব মশলার উপকরণ দিয়ে মশলা ভালো করে কষিয়ে নিন।

এবার মুগডাল পানি ঝরিয়ে ঢেলে দিন কড়াইতে। মুগডাল কষিয়ে নিন মশলার সঙ্গে। এবার অল্প সেদ্ধ হলে মাছের মাথা দিয়ে কষিয়ে পরিমাণমতো গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিন। মুগডাল সেদ্ধ হয়ে এলে গরম মশলার গুঁড়া দিন। এবার ঘি, কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা কুচি দিয়ে দুই/তিন মিনিট পর চুলা বন্ধ করে দিন। কিছুক্ষণ পর পরিবেশন ডিশে ঢেলে নিন।

 

যেভাবে সাজাবেন নতুন বছর

নতুন মানেই সাজে ভিন্নতা, উপস্থাপনায় ভিন্নতা আর প্রত্যাশায় ভিন্নতা। তাই এই নতুনকে ঘিরে সবারই থাকে আশা আর স্বপ্ন। পুরানো যত গ্লানি ঝেড়ে মুছে নতুন করে কিছু পাওয়ার আশায় নতুনের আগমনকে ঘিরে যত আনন্দ। তাই একে ঘিরে তৈরি হয় আমাদের মাঝে কত আকাঙ্ক্ষা। নিজের মাঝে কিছু পরিবর্তন আর আশেপাশের পরিবর্তনকে নিজের মাঝে স্বাভাবিকভাবে নেওয়াই হলো নতুন বছরের আগমনের আশা আর প্রত্যাশা। নতুন বছরকে সবারই প্রত্যাশা থাকে নতুন কিছু করার আর নতুনকে ভালোবেসে গ্রহণ করার। তাই নিজের মাঝেও চাই কিছু পরিবর্তন আর গোছানো মনোভাব। যাতে আপনি নতুন বছরটিকে সাজিয়ে তুলতে পারেন নিজের মনের মতো করে।

চিন্তাধারা
প্রাপ্তির আনন্দ আর অপ্রাপ্তির বেদনা নিয়েই আমাদের জীবন। অনেক সময় প্রাপ্তিগুলোকে মনে না রেখে না অপ্রাপ্তিকে ঘিরে আমাদের মাঝে থাকে হতাশা। আমাদের মাঝে এই আকাঙ্ক্ষা থাকে যেন নতুন বছরটি ভালো কাটে। নতুন বছরে শুধু আশাই নয়, বিশ্বাস রাখুন নিজের ওপর। আপনি পারবেন। আপনাকে দিয়ে সম্ভব হবে সব অপূর্ণ কাজগুলো। আপনার এই মনোবল আর বিশ্বাস পারবে আপনার নতুন বছরকে নতুনের মতো সাজিয়ে তুলতে। যেখানে কেবল স্বপ্ন না থাকবে আপনার চিন্তাধারার বাস্তবায়িত রূপ।

কাজ
গত বছরে যে কাজটি শেষ করতে পারেননি কিংবা আপনাকে দিয়ে যে কাজটি সম্পূর্ণ হয়নি নতুন বছরেও আপনি সেটি পারবেন না, এরকম চিন্তা বাদ দিন। পূর্বের কাজের ক্ষেত্রে যে জায়গাগুলোতে ভুল ছিলো তা খুঁজে বের করুন। তার পেছনের কারণ খুঁজে বের করুন। এরপরে সেই কাজটি আবার শুরু করুন। দেখবেন এবার আপনাকে দিয়েই সেই কাজটি সবচেয়ে ভালোভাবে সম্পন্ন হবে।

পড়াশুনা
পড়াশোনার ফলাফল নিয়েও চিন্তিত থাকেন অনেকেই। কখনো খুব ভালো রেজাল্ট আবার কখনো তা নাও হতে পারে। তাতে হতাশ হয়ে পড়বেন না। নিজের ভুলগুলো এবং আপনার দুর্বলতার দিক বের করে তাতে মনোযোগ দিন। দেখবেন এই বছরে আপনার না পাওয়া জায়গাগুলো দখল করবে আপনার পাওয়া পূর্ণতা।

 

ঘর সুরভিত রাখার উপায়

দিনশেষে ঘরে ফিরে সবাই চায় একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে। যত জায়গায়ই ঘুরে বেড়ানো হোক না কেন সবার কাছে প্রিয় স্থান নিজের ঘরটাই। ঘরকে দুর্গন্ধমুক্ত ও সুরভিত রাখাটা জরুরি। নয়তো স্বস্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চলুন জেনে নেই কিছু উপায়।

প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য ঘরের সব দরজা জানালা খুলে দিন। এর ফলে রোদ, বাতাসে ঘরের জীবাণু দূর হয়ে ঘরে একটা সতেজ ভাব ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। বাড়ির যেখানে বেশি ধূমপান করা হয় সেখানে একটি বাটিতে সাদা ভিনেগার রেখে দিন। সিগারেটের খারাপ গন্ধ থেকে মুক্তি পাবেন। প্রতি সপ্তাহে বিছানার চাদর, বালিশের কভার, তোয়ালে বদলে ফেলুন।

প্রতিদিন ঘরের মেঝে পরিষ্কার করার সময় পানির সঙ্গে যে কোনো ভালো ব্র্যান্ডের ফ্লোর ক্লিনার ব্যবহার করুন। কিছু টাটকা ফুল ঘরে রাখুন। তবে ফুলদানির পানি প্রতিদিন বদলাতে হবে। ঘরের গন্ধ কাটাতে রুম ফ্রেশনার বা অ্যারোমা মোমবাতির জুড়ি নেই। কয়েক টুকরা লেবু ১০ মিনিট ওভেনে রেখে বেক করুন। এরপর ওভেনের দরজা খুলে দিন, ঘরের সব গন্ধ উড়ে যাবে।

লেবু পাতা এবং কমলা লেবুর শুকনা খোসা রুম ফ্রেশনার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। চন্দন গুঁড়ার সঙ্গে অল্প শুকনো নিমপাতা মিশিয়ে আলমারির এক কোণায় রেখে দিন। সুগন্ধ তো ছড়াবেই, সেই সঙ্গে পোকামাকড়ও দূরে থাকবে। তেজপাতা, দারুচিনি ও লেবুর টুকরো একটা বাটিতে ঘরের এক কোণে রেখে দিন অসাধারণ রুম ফ্রেশনার হিসেবে কাজ করবে।

পরিষ্কার থাকা সত্ত্বেও রান্নাঘরে যদি গন্ধ বের হয় তাহলে দারুচিনি, এলাচি ও তেজপাতা পানিতে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। পানি ফুটে গেলে আঁচ কমিয়ে কিছুক্ষণ চুলাতেই রাখুন। এতে করে সারা ঘরে সুন্দর একটা গন্ধ ছড়িয়ে পড়বে। মাছ কাটার পর ঘরে একটা আঁশটে দুর্গন্ধ থেকে যায়। তাই অলিভ অয়েলের সঙ্গে এক টুকরো দারুচিনি দিয়ে কিছুক্ষণ চুলোয় রাখুন।

বাথরুম মানে যে সব সময় ভেজা থাকবে তা কিন্তু নয়। তাই শুকনো রাখার চেষ্টা করুন সব সময়। শাওয়ার কার্টেন ও পাপোশ ব্যবহার করুন। ভিজে কাপড় বাথরুমে জমিয়ে রাখবেন না। চটজলদি বাথরুমের গন্ধ দূর করতে হলে একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ।

 

রঙ লাগলো চোখে

চোখের সৌন্দর্য তার সাজে। চোখের ভাষায় আপনি মনের কথা বলে দিতে পারেন অনায়াসেই। একটি সময় চোখের সাজ মানেই ছিল কাজল। সময়ের সাথেসাথে তা পাল্টে আগমন ঘটেছে নতুনভাবে। অফিস, ভার্সিটি, পার্টি থেকে শুরু করে আড্ডার স্থল সব জায়গাতেই আপনি চোখ সাজাতে পারবেন কাজল দিয়ে। কালো কাজলের পাশাপাশি এখন নানা রঙের কাজলের চাহিদা তরণীদের কাছে এখন সবচেয়ে বেশি।

আপনার চোখের আকৃতি যেমনই হোক তাতে কাজল খুব সহজেই মানিয়ে যায়। এটি নানা রঙের খেলায় আপনার চোখকে ফুটিয়ে তোলে। তবে যাদের চোখ কিছুটা ভিতরের দিকে থাকে, তাদের ভাসাভাসা ভাব আনতে, চোখে কাজল লাগানোর পর আঙ্গুল দিয়ে হালকা ব্লেন্ড করে দিতে হবে। এতে চোখে নমনীয়তা আর সজীবতা দুটোই ফিরে আসবে।

পোশাকের সাথে কাজলের রং মিলিয়ে চোখে নিয়ে আসতে পারেন আকর্ষণীয় লুক। যাদের চোখ ছোট তারা চোখের নিচের পাতায় সাদা কাজল ব্যবহার করুন এবং উপরের পাতায় মোটা করে পছন্দ মতো রঙের কাজল টানুন। এতে আপনার চোখ বড় দেখাবে।

যাদের চোখ বড় তারা শুধু উপরের পাতায় চিকন করে কাজল ব্যবহার করুন। যাদের চোখের পাতা ঘেমে যায় তারা কাজল দেওয়ার পূর্বে চোখের পাতায় ভালো করে পাউডার দিয়ে কাজল লাগাতে পারেন, এতে কাজল ছড়াবে না।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে আপনি চোখে রঙিন কাজন লাগাতে পারেন। কাজলকে আধুনিকরূপে সাজাতে ব্লেন্ড গোল্ডেন অথবা সিলভার আইশ্যাডো দিয়ে চোখ হাইলাইট করতে হবে। এবার পছন্দমতো কাজল দিয়ে চোখের ভেতর থেকে বাইরে পর্যন্ত টেনে দিন।

কাজল ব্যবহারে অবশ্যই ওয়াটারপ্রুভ কাজল ব্যবহার করতে হবে। নতুবা কাজল লেপটে মেকআপ নষ্ট হবার সম্ভবনা থাকতে পারে। ওয়াটার প্রুভ কাজল না থাকলে, কাজল ব্যবহারের পর একই রঙের আইশ্যাডোদিয়ে হালকা করে ব্লেন্ড করে দিতে হবে। এতে কাজল অনেক্ষণ সুন্দর থাকবে

দামদর
রঙ্গিন কাজলের ক্ষেত্রে আছে লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, বেশুনী সহ আরো অনেক রঙ। এই কাজলগুলোর দাম পরবে ২৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে।

কোথায় পাবো
নিউ মার্কেট, মৌচাক, যমুনা ফিউচার পার্ক, গাওছিয়া সহ আপনার কাছে শপিং মলগুলোতেও আপনি পাবেন আপনার মনের মতো রঙ্গিন কাজল।

 

একাই ছুটির দিনটি উপভোগ করবেন যেভাবে

ছুটি মানেই কাজ থেকে বিদায় নেয়া। একরাশ ঝামেলা কাঁধ থেকে নামিয়ে নিজেকে সময় দেওয়া। আর এই ছুটির দিনগুলোতে আমরা সবাই চাই বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে সময় কাটাতে। তবে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় আপনার ছুটির সময় তাদের ছুটি শেষ কিংবা ছুটিছাটার বালাই নেই। সেই মূহুর্তে আপনাকে একাই হতে হয় আপনার এই ছুটির সময়ের সঙ্গী। ছুটির সময়কে কীভাবে আপনি আনন্দের করে তুলতে পারেন তা জানা খুব সহজ। কিন্তু একাকী এই সময়কে নিজের মতো করে আনন্দে পরিপূর্ণ করাটা কঠিন কাজ। তারপরেও এই কঠিন কাজকে খুব সহজে সহজ করা যায় কিছু কাজের দ্বারা।

শুভ সকাল
কাজের কারণে সকাল সকাল প্রায় সবাইকেই ঘুম থেকে উঠতে হয়। কিন্তু ছুটির দিনের সকাল ঘুমানোর জন্য আদর্শ একটি সময়। যখন আপনাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়ার যেমন কেউ নেই তেমনি দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার জন্য বকা দেওয়ার কেউ নেই। ছুটির দিনটিতে আপনি যখন খুশি তখন ঘুম থেকে উঠতে পারবেন। এরপরেই আপনি খেতে পারেন আপনার পছন্দের সকালের নাস্তা। সচারচর খাওয়া হয়না কিংবা সময়ের জন্য তৈরি করতে পারেন না, এমন কিছু দিয়ে নাস্তাটা সেরে ফেলুন। এরপরেই হাতে গরম গরম কফির মগ কিংবা এক পেয়ালা চা নিয়ে বসে যান টিভির সামনে কিংবা ফেসবুকে সময় দিন বন্ধুদের।

শখ
কর্মক্ষেত্রের কাজ আমাদের শখের তালিকায় পরে না। কেউ পছন্দ করেন ফটোগ্রাফি, কেউ পছন্দ করেন গান গাইতে, কেউ আবার কবিতা লিখতে আবার কেউ ঘুরতে। আপনি আপনার ছুটির দিনটিতে শখের তালিকায় থাকা কাজটি খুব সহজেই করে ফেলতে পারেন। এতে আপনার পাশে কেউ না থাকলেও হবে। শখের কাজের ক্ষেত্রে সবসময় নিজের সময়টুকুই গুরুত্বের জায়গায় থাকে। তাই ছুটির সময়ে শখের ফেলে রাখা কাজগুলো গুছিয়ে নিন।

টেকনোলোজি থেকে দূরে
ছুটির দিনে কম্পিউটার, মোবাইল এসব থেকে কিছুটা দূরে থাকুন। নিজেকে সবুজের কাছে কিংবা অনেকদিন ধরে পরিকল্পনা করছেন এমন জায়গায়  ঘুরতে যান। এতে নিজেকে কিছুটা সময় যেমন দেওয়া হবে তেমনি আপনি ছুটিকে উপভোগ করতে পারবেন।

কেনাকাটা
কয়েকমাস ধরে শুধু ভেবেই যাচ্ছেন যে কিনতে হবে? শুধু সময় বের করতে পারছেন না! তাহলে আপনার জন্য ছুটির এই সময়টা হতে পারে সবচেয়ে ভালো একটি সময়। এতে একাকী ছুটি কাটানোও আপনার যেমন খারাপ লাগবেনা তেমনি আপনি সারা মাসের কেনাকাটাও শেষ করে ফেলতে পারবেন।