banner

রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ইং, ,

Monthly Archives: May 2025

 

কুরআনে অন্যায়ভাবে হত্যার শাস্তির বিধান

জাহেলিয়াতের যুগে কোনো আইন-কানুন ছিল না; তাই সবল গোত্রগুলো দুর্বল গোত্রগুলোর ওপর যেভাবে ইচ্ছা অত্যাচার, জুলুম-নির্যাতন করতো। তা অনেক সময় হত্যা পর্যন্ত গড়াতো। সবল সম্প্রদায়ের কাউকে দুর্বল সম্প্রদায়ের লোকেরা হত্যা করলে একজনের জন্য পুরো গোত্রকে বিনাশ করাই ছিল সে সমাজের কানুন। আবার দুর্বল সম্প্রদায়ের কাউকে হত্যা করলে সবলদের বিচার হতো না বললেই চলে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের পর সমাজ থেকে অত্যাচার-নির্যাতনসহ হত্যার সুষ্ঠু বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ তায়ালা বিধান প্রণয়ন করেন। হত্যার বিধান কেমন হবে- তা উল্লেখ করে আল্লাহ তায়লা বলেন-

Quran

আয়াতের অনুবাদ-

Quran

আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ১৭৮ নং আয়াতটি উল্লেখ করা হয়েছে। এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা হত্যার বিধান প্রণয়ন করেন। আর কেউ যদি কাউকে মুক্তিপণের মাধ্যমে ক্ষমা লাভ করতে চায় এবং তাতে উভয় পক্ষ সম্মত থাকে, তবে তারও বিধান রয়েছে।

উল্লিখিত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মুমিন বান্দাদের লক্ষ্য করে বলছেন, ‘মানুষ হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আল্লাহ তায়ালা বিধান নাজিল করেছেন। আর তা হলো- স্বাধীন ব্যক্তির বদলে হত্যা করা হবে স্বাধীন ব্যক্তিকে; দাসের পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করা যাবে না। আবার দাসের বদলে দাস এবং নারী বদলে নারীকে হত্যা করা হবে।’

জাহেলি যুগে কোনো আইনের শাসন ছিল না বললেই চলে। তাই ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতিই বিরাজমান ছিল। শক্তিমান গোত্র দুর্বল গোত্রকে যেভাবে ইচ্ছা জুলুম করত।

জুলুমের একটি পন্থা ছিল এ রকম, ‘শাক্তিশালী গোত্রের কেউ নিহত হলে শুধু হত্যাকারীর বদলে গোত্রের একাধিক লোককে হত্যা করা হতো। কখনো পুরো গোত্রকেই ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করা হতো। আবার পুরুষের পরিবর্তে নারীকে এবং গোলামের পরিবর্তে স্বাধীন লোককে হত্যা করা হতো।’

তাফসিরে ইবনে কাছিরে এসেছে- ইসলাম আবির্ভাবের কিছুকাল আগে দুটি গোত্রের মাঝে যুদ্ধ বাঁধে। উভয় পক্ষ বহু নারী-পুরুষ ও স্বাধীন-পরাধীন লোক নিহত হয়। তাদের এ সমস্যার সমাধান না হতেই ইসলামের আবির্ভাব ঘটে।

বিবদমান উভয় গোত্রই ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে। মুসলমান হওয়ার পর উভয় গোত্রই তাদের নিহতদের রক্তপণ গ্রহণের আলোচনা শুরু করে। তন্মধ্যে যে গোত্রটি শক্তিশালী তারা বলল, ‘আমরা যতক্ষণ আমাদের গোলামদের পরিবর্তে তাদের স্বাধীন ব্যক্তিকে এবং নারীদের পরিবর্তে পুরুষদের হত্যা না করবো ততক্ষণ থামবো না।’

তাদের এ রকম অজ্ঞ দাবির মুখে আল্লাহ তায়ালা এ আয়াত নাজিল করে বলেন, ‘স্বাধীনের পরিবর্তে স্বাধীন, গোলামের পরিবর্তে গোলাম এবং নারীর পরিবর্তে নারীই হবে ফয়সালা।’

জাহেলিয়াতের নিপীড়নমূলক প্রথাগুলোর প্রচলনের সমাধি রচনা করে ভারসাম্যপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা প্রণয়নে ইনসাফপূর্ণ আইন বা বিধান বাস্তবায়ন করতেই আল্লাহ তায়ালা এ বিধান জারি করেন। যে যাকে হত্যা করেছে; তার পরিবর্তে শুধু তাকেই হত্যা করা যাবে। এর বেশি কাউকে নয়।

পড়ুন- সুরা বাকারা : আয়াত ১৭৭

পরিশেষে…
কুরআনুল কারিমের উল্লিখিত এ আয়াতটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের অন্যায়-অবিচার ও জুলুম-অত্যাচারের লাগাম টেনে ধরতে এবং সুষ্ঠু-সুন্দর পন্থায় হত্যার বিচার করতেই আল্লাহ তায়ালা এ আয়াত নাজিল করেন। কুরআনের এ বিধানের বাস্তবায়ন যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আজো বিদ্যমান।

সমাজে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে এ বিধান বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। বিচার-ব্যবস্থায় হত্যার বিধান চালু হলে অবৈধ হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাস থেমে যাবে। সমাজে সুখ-শান্তি ফিরে আসবে।

মহান দয়ালু আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে তাদের জীবনে উল্লিখিত আয়াতের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের কুরআনের বিধান বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Save

Save

 

নতুন নায়িকা ফারিন

জাজ মাল্টিমিডিয়ার পরবর্তী ছবি ধেৎতেরিকির নতুন নায়িকা কে? এ নিয়ে এক মাস ধরে চলচ্চিত্রপাড়ায় নানা আলোচনা। সেই সময় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠান করে সবার কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে নতুন নায়িকাকে। অবশেষে সেই নাম ঘোষিত হলো। ধেৎতেরিকি ছবিতে অভিষেক ঘটছে নতুন নায়িকা ফারিনের।
শুরু থেকেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সম্ভাব্য নায়িকা হিসেবে তানজিন তিশা, পিয়া বিপাশা ও ফারিনের নাম ঘুরেফিরে আসছিল। নতুন নায়িকা যে ফারিনই হচ্ছেন—এমন একটি খবর প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ছাপা হয় সে সময়ই। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার জন্য সব আটকে ছিল।
গতকাল সোমবার রাতে জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফারিনকে সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দেয় ধেৎতেরিকি ছবির বাংলাদেশ অংশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায় ১০০ অভিনেত্রী থেকে বাছাই করে ফারিনকেই নতুন নায়িকা হিসেবে নির্বাচন করেছে জাজ। ফারিনকে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আবদুল আজিজ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বাছাই করার পর ফারিনকে নিয়ে এক সপ্তাহ গ্রুমিং করেছি। তাঁর মধ্যে যে অভিনয়-প্রতিভা দেখেছি, তাতে খুশি আমরা। সব দিক দিয়েই নায়িকা হওয়ার যোগ্যতা আছে ফারিনের।’ এদিকে চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ পেয়ে ফারিন বলেন, ‘আমি কম কথা বলি। কাজে বিশ্বাসী, কাজ করে দেখাতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’
ধেৎতেরিকি ছবিতে ফারিন অভিনয় করবেন রক্ত ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হওয়া নায়ক রোশানের বিপরীতে। এই ছবির আরেক তারকা জুটি হলেন আরিফিন শুভ ও নুসরাত ফারিয়া। ছবির পরিচালক শামীম আহমেদ রনি বলেন, আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে সিলেটে শুটিং শুরু হবে ছবিটির। ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনার এই ছবিটি কলকাতা থেকে প্রযোজনা করছে এসকে মুভিজ।

 

‘হাতে হেঁটে’ ফার্স্ট ক্লাস

নিজের যোগ্যতায় চাকরি খুঁজতে থাকেন। তাঁর ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনের কষ্ট, পাওয়া না-পাওয়ার হতাশা নিয়ে টিভি অনুষ্ঠান করার। টিভি চ্যানেলের মতো একটা জায়গায় প্রোগ্রাম করার সুযোগ পাওয়াটা খুব একটা সহজসাধ্য ব্যাপার ছিল না। তবে চেষ্টা করে একসময় সাড়া পান মাহবুবা।

স্নাতক শেষ করে ঢাকায় এসে ভর্তি হন ইডেন মহিলা কলেজে। স্নাতকে ৬ নম্বরের জন্য প্রথম শ্রেণি হাতছাড়া হলেও স্নাতকোত্তরে তা আর মিস হয়নি।

মাহবুবা হক সম্পর্কে তাঁর শিক্ষক ও মাদার বখশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের মনোবিজ্ঞানের প্রভাষক আখতার বানু বলেন, ‘শারীরিকভাবে সমস্যার মধ্যে থাকলেও অন্য অনেক শিক্ষার্থীর চেয়ে কর্মঠ ছিল। সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেই তার ছিল সরব উপস্থিতি।’

স্নাতক পড়ার সময় প্রথম বর্ষের কয়েক মাস তাঁকে সিঁড়ি বেয়ে পাঁচতলায় ক্লাস করতে হতো। এ জন্য নিয়মিত তিনি ক্লাস করতে পারতেন না। আখতার বানু বলেন, ‘আমরা অধ্যক্ষের সঙ্গে ওর কষ্টের বিষয়টি নিয়ে কথা বলি। তারপরই সিদ্ধান্ত হয় ওর সব ক্লাস দ্বিতীয় তলায় ২১০ নম্বর কক্ষে নেওয়ার ব্যাপারে।’

স্নাতকোত্তর পরীক্ষার সময় মাহবুবার পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল ঢাকা শেখ বোরহান উদ্দীন পোস্টগ্র্যাজুয়েট কলেজ। পরীক্ষা দিতে হয়েছে চারতলার কক্ষে। সিঁড়ি বেয়ে ওঠা ছিল তাঁর জন্য কষ্টকর। মাহবুবা বললেন, ‘প্রতিটি ভবনে প্রতিবন্ধী মানুষের কথা ভেবে লিফট থাকা উচিত। আলাদা শৌচাগারও থাকা দরকার।’

এখন আপনার লক্ষ্য কী? মাহবুবা হক বলেন, ‘ভালো একটি সরকারি চাকরির, যেন চাকরির পাশাপাশি প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করতে পারি।’

 

পেশা সবজি টোকানো, ঠিকানা ফুটপাত

তাঁরা তিনজন হারুপা আক্তার, শেফালি বেগম ও রিমা আক্তার। তিনজনই ঢাকার কারওয়ান বাজারে সবজি টোকান। ট্রাক থেকে নামানোর সময় কিছু সবজি মাটিতে পড়ে। তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েন সেগুলো কুড়াতে।

সপ্তদশ শতাব্দীতে চালু হওয়া এই পাইকারি বাজারটির নাম হয়েছিল মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ী কারওয়ান সিংয়ের নামে। ঢাকা শহর যখন ঘুমোতে যায়, কারওয়ান বাজার  তখন জেগে ওঠে। সারা দেশ থেকে আসতে থাকে শাকসবজি, ফলমূলবোঝাই ট্রাক আর পিকআপ ভ্যান। রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে নারী-পুরুষের ব্যস্ততা।

রাত ১০টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বাজার ঘুরে এখানে কমবেশি শ তিনেক নারীকে কাজ করতে দেখা গেল। বাজারের ব্যবসায়ীদের মতে এঁদের সংখ্যা হাজার খানেক। দুই ঈদের আগে কাজের খোঁজে আসা নারীদের সংখ্যা বাড়ে।

এখানে কাজ করেন অল্পবয়সী নারী থেকে বৃদ্ধারা। নানা ধরনের কাজ আছে। সবজি টোকানো, ট্রাক থেকে সবজি আড়তে নেওয়া, পেঁয়াজের খোসা বাছা, আড়ত ঝাড়ু দেওয়া, পাইকারদের ফুটফরমাশ খাটা। অনেকেই বাজারঘেঁষা ফুটপাতগুলোতে থাকেন।

হারুপা আক্তারের বয়স তিরিশের কাছাকাছি। আট বছর বয়স থেকেই কারওয়ান বাজারের ফুটপাতে থাকেন। সবজি বিক্রি শেষে বস্তাটি মাথার নিচে দিয়ে ঘুমিয়ে যান। তাঁর তিন সন্তানের জন্মও এখানে। নিরাপত্তা নেই, তাই বড় দুই মেয়েকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। স্বামী মাদকের ঝামেলায় এখন জেলে।

হারুপার কোমরে একটি কাপড়ের পুঁটলি বাঁধা। সবজি কুড়িয়ে প্রথমে এতে চালান করে দেন, পুঁটলি ভরে গেলে বস্তায় রাখেন। হারুপার সঙ্গে যাঁরা কাজ করেন, সবার কাজেরই এই তরিকা। রাত ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সবজি টোকান। এরপর তাঁরা বিক্রি করতে বসেন। বাজারের খুচরা বিক্রেতা ও অল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা এঁদের মূল ক্রেতা। ভোর ছয়টার মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যায়। পাঁচ-ছয় শ টাকার মতো পাওয়া যায়।

শাহনাজ বেগম, অঞ্জনা বেগম, মরিয়ম খাতুন আর খোরশেদা বেগম কাজ করেন আড়তে। তাঁরা বস্তা থেকে ঝুড়িতে সবজি সাজিয়ে দেন, পাল্লা মাপতে সাহায্য করেন। কখনো পাইকারদের চা-পানি এনে দেন। বিনিময়ে পাইকাররা শেষ রাতের দিকে তাঁদের দাগ লাগা, পচা সবজি ও ফল বিনা মূল্যে দিয়ে দেন। একেকজন গড়ে চার-পাঁচজন পাইকারের কাজ করেন।

শাহনাজ বেগম আবার রোজ ১৫০-২০০ টাকার সবজিও কেনেন। পাইকারদের দেওয়া সবজির সঙ্গে এগুলো ভোরে বিক্রি করেন। আয় হয় শ পাঁচেক টাকা। সবজি সংগ্রাহক এই নারীরা সুযোগ পেলে একেক জায়গা থেকে দুই-একটা করে সবজি কোমরের পুঁটলিতে ভরে ফেলেন। কথাটা পাইকাররাও জানেন। পাইকার মাসুদ রহমান যেমন বলেন, ‘হাজার হাজার মালের তোন একটা-দুইটা নিলে কমে না। প্যাডের দায়েই তো করে।’

অনেক নারী টোকান না, রাতে সবজি কিনে দিনে বিক্রি করেন। তাঁদের একজন মনোয়ারা বেগম। তিনি বেচাকেনা করেন আলু। লাভ থাকে বস্তাপ্রতি ২০০ টাকা। মনোয়ারার স্বামী মৃত। দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি পাকা বাজারের বারান্দায় থাকেন। বললেন, টাকা জমাচ্ছেন। জমি কেনার মতো টাকা হলেই জন্মভিটা জামালপুরে ফিরে যাবেন।

হারুপারা ফুটপাতে থাকেন, খান, ঘুমান। টয়লেট-গোসল সারেন বাজারের গণশৌচাগারে। তবে তাঁরা কেউ রান্না করেন না। তিন বেলাই খাবার কিনে খান। শেফালি বেগমের কথা, ‘রানমু কই? থাহি তো রাস্তায়। খাইতেই বেবাক টাহা চইল্যা যায়।’ তিনি পঙ্গু স্বামীসহ এখানে থাকেন। অসুখ হলে ফুটপাতে যাঁরা ওষুধ বিক্রি করেন, সেখান থেকে ওষুধ কিনে খান। মাঝেমধ্যে পুলিশ তাঁদের হয়রানি করে। তবে কোনো চাঁদা দিতে হয় না।

কেউ কেউ আবার কারওয়ান বাজার, বেগুনবাড়ি ও তেজগাঁও রেললাইন বস্তির বাসিন্দা। এঁরা রাত ১০টার দিকে আসেন, সকাল সাতটা-আটটায় চলে যান।

এ কাজে হাঙ্গামা আর ভোগান্তি কম না। রাতের ঘুম নষ্ট। কয়েকজন নারী বললেন, অনেক পুরুষ গায়ে হাত দেয়, বাজে মন্তব্য বা অশ্লীল ইঙ্গিত করে। সানোরা বেগম বলেন, ‘বাজার হইল বারো রহম মানুষের মেলা। খারাপ মানুষ সবহানেই আছে।’

দুর্ঘটনাও ঘটে। বছর দশেক আগে সবজির ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে শেফালি বেগমের চোখের সামনেই মারা গিয়েছিলেন রাহেলা খাতুন। ঝড়-বৃষ্টি আর শীতে বড় কষ্ট হয়। ফরিদা বেগম বলেন, বর্ষায় পায়ে ঘা হয়ে যায়।

এঁদের কারও স্বামী জেলে, কেউ আরেকটি বিয়ে করে চলে গেছেন, কেউ বাচ্চা জন্মের পর থেকে নিরুদ্দেশ। এই নারীরা উপার্জন নিয়ে সন্তুষ্ট। এই টাকায় সন্তান মানুষ করছেন। তবে তাঁরা বলেন, রাতে নারীদের বাজারে কাজ করা এখনো পরিবার বা সমাজ ভালো চোখে দেখে না। কাজটা ভালোও লাগে না। কিন্তু অন্য কাজ পাবেন কই?

তাঁরা শুনেছেন, কারওয়ান বাজার এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে তা নিয়ে মাথা ঘামান না তাঁরা। রিমা আক্তার যেমন বলেন, ‘আমরাও তহন চইল্যা যামু, সঙ্গী তো খালি অ্যাট্টা বস্তা!’

Save

 

মোড়কের নানা ঢং

প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার সময় তা কাগজে মুড়িয়ে দেওয়ার প্রচলন প্রথম শুরু করে চীনারা। মিসরেও এই রীতি চালু হয়েছিল অনেক কাল আগে। তবে, আধুনিক র‍্যাপিং পেপারের ধারণা নিয়ে আসে কার্ড বিক্রির প্রতিষ্ঠান হলমার্ক। র‍্যাপিং পেপারের ইতিহাস বিষয়ে ঘাঁটতে গিয়ে ইন্টারনেটের একটি ব্লগ থেকে পাওয়া গেল এমনই তথ্য। র‍্যাপিং পেপারে উপহার মুড়ে দেওয়াটা এখন শিল্পে পরিণত হয়েছে।
.উপহার তো কাগজে না মুড়েও দেওয়া যায়। তাহলে উপহার র‍্যাপিংয়ে কেন এত মেধা খরচ? অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ব্রাউন পেপারের অন্যতম অংশীদার নাজিলা সাবরিন জামান বলেন, ‘উপহার তো এমনি দেওয়া যায় কিন্তু তা একটি র‍্যাপিং পেপারে সুন্দর করে মুড়িয়ে দিলে যাকে উপহার দেবেন তাঁর মধ্যে একটি বাড়তি আকর্ষণ কাজ করে। ভেতরে কী আছে তা তো তিনি জানেন না। অনেক সময় নিজে থেকে কিছু একটা আন্দাজ করে নেন। আবার কখনো কোনো ধারণাও থাকে না যে প্যাকেটের ভেতর কী থাকতে পারে। প্রিয়জনকে চমকে দেওয়ার জন্য উপহারটি র‍্যাপিংয়ের মাধ্যমে আড়াল করে রাখাও একটি উদ্দেশ্য। ’
কোনো উপহার সুন্দর কাগজে র‍্যাপিং করে বা নানা কায়দায় নকশা করে দিলে যিনি উপহার পাবেন তিনিও খুশি হবেন। এই উপহার যে দায়সারা নয় বরং ভালোবাসা থেকে দেওয়া, এটা বোঝানোর একটি অন্যতম কৌশল হতে পারে আকর্ষণীয় র‍্যাপিং।
বাজারে নানা ধরনের র‍্যাপিং পেপার পাওয়া যায়। তবে শুধু কাগজ দিয়ে মুড়ে দিলেই কি চলে? মোড়ানোর ক্ষেত্রেও শৈল্পিক ছোঁয়া দেওয়া যেতে পারে। সুন্দর করে কীভাবে উপহার মোড়ানো যায়, তা ধাপে ধাপে থাকছে এখানে। ধাপগুলো দেখিয়ে দিয়েছেন সৈয়দা সাদিয়া শেহ্‌রীন।.

 

Save

Save

Save

Save

 

কী দেব উপহার?

উপহার মানেই তো চমক। তাই বিশেষ দিনে প্রিয় মানুষের জন্য উপহার ঘিরে থাকে হাজারও পরিকল্পনা। উপহার নির্বাচন দিয়ে যে পরিকল্পনার শুরু সেটার সমাপ্তিটা হয় সুনিপুণ হাতে মোড়ানোর মাধ্যমে। তবে এই উপহার পরিকল্পনায় হালের তরুণেরা কতটা ‘পরিকল্পনাবিদ’! তাঁরা উপহার হিসেবে কীই-বা বেছে নিচ্ছেন?

এ সময়ের তরুণদের উপহারপ্রবণতা জানতে কথা হয় বিভিন্ন জেলার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী কয়েকজন তরুণের সঙ্গে। রংপুর মেডিকেল কলেজের সুনন্দা সরকারের মতো তরুণদের কমবেশি সবাই মাথায় রাখেন উপহার নির্বাচনের মৌলিক বিষয়টি। সুনন্দা যেমনটি বললেন, যাকে উপহার দেওয়া হবে তিনি পুরুষ নাকি নারী, উপহারের উপলক্ষ, ব্যক্তির রুচিবোধ, বাজেট, সে মানুষটার সঙ্গে বন্ধুতের গাঢ়তা কতটুকু—এসব বিষয়ের ওপরই নির্ভর করে উপহারটা কী হবে।

.সম্পর্ক যেমন, উপহার তেমন
নিজের হাতে বানানো কাঠের একটি দেয়ালঘড়িকে ‘লাভ ক্লক’ নাম দিয়েছেন ফারজানা নোভা। ঘড়িটি তিনি উপহার দিয়েছেন তাঁর খুবই পছন্দের একজন মানুষকে। এমন নাম কেন? ‘ঘড়িটি আমি বানিয়েছি নিজের মতো করে। সংখ্যার ঘরগুলো ‘লাভ সাইন’ ব্যবহার করেছি। যার অর্থ ২৪ ঘণ্টা ধরেই ভালোবাসা!’
এই তরুণীর মতো অনেকেই হাতে বানানো উপহারকেই বেশি গুরুত্ব দেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রমা নওরীন বলেন, ‘আমি চমকে দেওয়া কেকের সঙ্গে হাতে বানানো কোনো কার্ড কিংবা ‘ম্যাজিক বক্স’ দিয়ে থাকি। তবে বই, চকলেট ও অলংকারও কখনো কখনো দেওয়া হয়।’ ম্যাজিক বক্স? বিষয়টি খোলসা করলেন নওরীন, এটা তেমন কিছু নয় তবে বেশ মজার। এটির ভেতর অনেকগুলো বক্স সাজিয়ে রাখা হয়। একটার পর একটা বক্স খুলে খুলে উপহারে পৌঁছাতে হয়।
এমন বিশেষ উপহারের মধ্যেও তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় উপহার বই। কী ধরনের বই পছন্দের তালিকায় থাকে? সেখানেও এল রুচির বিষয়টি সামনে আনলেন তাসনিয়া প্রিয়তা। তাঁর মতে, ‘এটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির রুচি কেমন তার ওপর। কেউ বাংলা বই বেশি পছন্দ করে, কেউ ইংরেজি। সবারই কোনো না কোনো পছন্দের লেখক বা কবি থাকেন। সে হিসেবেই বই কেনা হয়।’ তবে অনেকেই নিজে পড়ে মুগ্ধ হয়েছেন এমন বই উপহার দিয়ে থাকেন, সম্প্রতি প্রকাশিত বইও উপহারের তালিকায় রাখেন কেউ কেউ।
বইয়ের বাইরে অনেকে আবার বিবেচেনা করেন বন্ধুর খুব প্রয়োজনীয় কিছু দরকার কিনা। এই উপহার তালিকায় তখন চলে আসে টি-শার্ট, মানিব্যাগ থেকে নিত্যব্যবহার্য নানা গ্যাজেট। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিমেষ বৈদ্য যেমন প্রায় বন্ধুর জন্মদিনেই পেনড্রাইভ, পাওয়ার ব্যাংক কিংবা হেডফোনের মতো দরকারি গেজেট নিয়ে হাজির হন।

তবে উপহার যেমনই হোক, তা উপস্থাপনের ক্ষেত্রেও রয়েছে তরুণদের বিশেষ নজর।

নির্বাচিত উপহার

হালের তরুণেরা হরহামেশায় উপহার হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বই, ফুল, কানের ঝুমকা, চুড়ি-বালার মতো অলংকার, সুগন্ধিসহ বিভিন্ন নিত্যব্যবহার করা হয় এমন প্রসাধনী, হাতঘড়ি, পোশাক, মানিব্যাগ, কেক, চকলেট, হাতে বানানো কার্ড, স্ক্র্যাপ বুক, পেনহোল্ডার, নোটবই, গাছ, ফুল, কফি মগ, ছবিসহ মগ, ছবির ফ্রেম, ফুলদানি, টেডিবিয়ার, মোমবাতি, কাঠে খোদায় করা ছবি, সেলফিস্টিক, পেনড্রাইভ, পাওয়ার ব্যাংকসহ বিভিন্ন গেজেটসামগ্রী।

আগ্রহটা অনলাইনে

পছন্দের উপহারসামগ্রী সংগ্রহের জন্য অধিকাংশ তরুণের ভরসা অনলাইনভিত্তিক দোকানগুলোয়। অনলাইনে বই, সুগন্ধিসহ বিভিন্ন উপহারসামগ্রী কেনার সুবিধা হলো মূল্য পরিশোধ করলে তা সরাসরি নির্দিষ্ট মানুষের দরজায় পৌঁছে দেন। তরুণদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অনলাইন ছাড়াও ঢাকায় যাঁরা থাকেন তাঁরা বই সংগ্রহের ক্ষেত্রে ছুটে যান আজিজ সুপারমার্কেট, নীলক্ষেত, চট্টগ্রামের তরুণেরা বাতিঘর, প্রথমাসহ শহরের বড় বইয়ের দোকানগুলোয়। কাঠের ওপর ছবি বা কোনো উক্তি খোদাই করে দেওয়ার ক্ষেত্রে উডপেকারসহ কয়েকটি অনলাইন দোকানের নাম শোনা গেল। অলংকার, প্রসাধনী, পোশাকসামগ্রী সংগ্রহের ক্ষেত্রে অনলাইনের পাশাপাশি বড় কোনো শপিংমল বা ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোয় হাজির হোন। অন্যান্য উপহার কেনার ক্ষেত্রে হাতের নাগালে রয়েছে এমন ইলেকট্রনিকস দোকান, উপহার বিক্রির দোকানে খোঁজ করেন।

Save

Save

Save

 

এগ রোল তৈরির সবচেয়ে সহজ উপায়

বাড়িতে হঠাৎ অতিথি চলে এলে কিংবা নিছকই ঘরোয়া আড্ডায় ঝটপট কিছু তৈরি করা যায় এমন খাবারই সবার বেশি পছন্দ। তবে শুধু স্বাদই নয়, নজর রাখতে হবে সুস্বাস্থ্যের দিকেও। তাই সহজেই তৈরি করে নিতে পারেন মজাদার স্বাদের এগরোল। রইলো রেসিপি-

উপকরণ : ডিম ২টা, ময়দা ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো, পানি পরিমাণ মতো, তেল পরিমাণ মতো, পছন্দ মতো রান্না করা কিমা ১ কাপ, টেস্টিং সল্ট আধা কাপ।

প্রণালি : প্রথমেই ডিম, ময়দা, লবণ, টেস্টিং সল্ট ও পানি দিয়ে গোলা বানিয়ে নিন। এবার ননস্টিক প্যানে বানিয়ে রাখা গোলা ছেড়ে দিয়ে পাতলা প্যানকেকের মতো ভেজে নিন। ভাজা প্যানকেকে কিমার পুর ভরে রোল বানিয়ে লবণ দিয়ে ফেটে রাখা ডিমে রোলগুলোকে গড়িয়ে গরম ডুবু তেলে ভেজে তুলে ফেলুন। এবার পরিবেশন করুন হট টমেটো সস দিয়ে মজাদার এগ রোল।

 

ফাস্ট ডেলিভারি সুবিধা নিয়ে আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজ

অর্ডার দিচ্ছেন অনলাইনে ফেসবুক পেইজে কিংবা ফোনে, পণ্য পৌঁছে যাবে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। একজন ক্রেতার কাছে ব্যাপারটা খুবই উপভোগ্য। এতে তার কষ্ট কমছে, ঘরে বসেই বুঝে নিচ্ছেন অর্ডার করা প্রিয় পণ্যটি। এভাবেই ক্রেতাদের সময় ও অর্থ দুই বাঁচাতে লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজ চালু করেছে ফাস্ট ডেলিভারি সুবিধা।

ফাস্ট ডেলিভারি সুবিধা পেতে আইকনিক এর ধানমন্ডি, উত্তরা, বনানী ১১ ও যমুনা ফিউচার পার্কের স্টোরগুলোতে গিয়েও পছন্দনীয় পোশাকটি অর্ডার করতে পারবেন প্রিয়জনের জন্য। পাশাপাশি ফেসবুক পেইজে প্রিয় পোশাকটি বেছেও অর্ডার করা যাবে। এছাড়াও আইকনিকের ধানমন্ডি ও যমুনা ফিউচার পার্ক স্টোর থেকে পছন্দনীয় গয়না ও কসমেটিক যেকোন সময় অর্ডার করতে পারবেন ক্রেতারা । ফাস্ট ডেলিভারি সুবিধায় নির্দিষ্ট মূল্যের পণ্য অর্ডার দিলে পাওয়া যাবে সারপ্রাইজ উপহার পাওয়ারও সুযোগও। ফেসবুকের মাধ্যমে অর্ডারকৃত পণ্যের মূল্য  হাতে পেয়ে কিংবা বিকাশে বা আইকনিক এর ৫ টি স্টোরের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে সহজেই।

আইকনিকের উদ্যোক্তা তাসলিমা মলি জানান, ট্রেডিশনাল এবং পাশ্চাত্য পোশাকে নিজেদের গর্জাস লুকে উপস্থাপনার জন্য উজ্জ্বল রঙের পোশাক থাকছে আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজ-এ। সবই সমকালীন ফ্যাশন প্যাটার্ন ও কালার প্যালেট অনুসরণ করে তৈরি। তাই আমারদের ক্রেতা মূলত ট্রেন্ডি এবং ফ্যাশন সচেতন। আমাদের অনেক ক্রেতাই নতুন নতুন পোশাকের ছবি আইকনিকের ফেসবুকে প্রকাশ পেলেই তা কিনতে আগ্রহী হোন। কেউ কেউ প্রিয়জনকে পোশাক উপহার দিতে ফেসবুক থেকেই অর্ডার করতে আগ্রহী। মুলত এসব কারণেই ক্রেতাবান্ধব শপিংয়ের জন্যই আমাদের এই ফাস্ট ডেলিভারি সুবিধা চালু করা হয়েছে। ক্যাশ অন ডেলিভারি সুবিধাও থাকছে শর্ত সাপেক্ষে। পাশাপাশি আমরা আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজের নিয়মিত ক্রেতাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্যের অনলাইন অর্ডারে দিচ্ছি সারপ্রাইজ উপহারও।

উল্লেখ্য, আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজ মূলত তরুণীদের সর্বশেষ ফ্যাশন ট্রেন্ডের সাথে পরিচয়ের যোগসূত্র তৈরির একটি প্রয়াস। স্টোরে তাই চলতি ফ্যাশনের ক্যাপ, স্কার্ট, ব্লাউজ, টপস, গাউন কামিজ, ম্যাক্সি ড্রেস, সিল্ক জর্জেটের লং কটি বা জাম্পস্যুট সবই থাকছে রঙ এবং প্যাটার্ন ভিন্নতায়। প্যাটার্নে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে ফিউশন এবং পাশ্চাত্য কাট। প্রিন্টে ব্যবহার করা হয়েছে পিগমেন্ট প্রিন্ট, আফসন প্রিন্ট, ফ্লক প্রিন্ট আর থ্রিডি প্রিন্ট। উপমহাদেশের চলতি ডিজাইন ভাবনায় এবং ফেব্রিকেশনে লং থেকে সেমি লং কুর্তি, সালোয়ার কামিজ বা টপস-এ থাকছে গর্জাস লুক। ডিজাইন বৈচিত্র্যের এসব পণ্যের দাম শুরু ৯৯০ টাকা থেকে। তাই ফাস্ট ডেলিভারি সুবিধায় পণ্য পেতে অবশ্যই ভিজিট করুন .