banner

রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

আনারকলির নতুন কিছু ফ্যাশন আইডিয়া

মনীশ মালহোত্রা, গৌরাঙ্গ শাহ এবং সব্যসাচীর মতো ডিজাইনাররা আনারকলিকে সুপ্ত অবস্থা নিয়ে আসলেন নতুন রুপে। এবার এই শীতের সিজনে এটি চলে আসবে আরও আকর্ষণীয় ও ক্লাসিক স্টাইলে এবং সবার কাছে বাড়বে এর গ্রহনযোগ্যতা। ঠিক যেন এটা কখনও ফ্যাশন থেকে চলে যায়নি। চলুন জেনে নেওয়া যাক আনারকলির নতুন ফ্যাশন আইডিয়াগুলো সম্পর্কে।

স্লিটস স্কাই হাই

নতুন এবং আরও উন্নত আনারকলি খুব বেশি ভারী না। হালকা কাপড়ের ওপর উজ্জ্বল রঙ, প্যাস্টেল কালার এবং আভিজাত্যের ছোঁয়া একে মডার্ন ফ্যাশনের অন্তর্ভুক্ত করে তুলেছে। এর সাথে যোগ হল নতুন স্টাইল লম্বালম্বিভাবে চিরা। একবার পরেই দেখতে পারেন এতে কেমন লাগে।

অপ্রতিসম হয়ে যান

সাধারণ এবং ক্লাসিক স্টাইলকে সর্বদাই স্বাগতম। তবে এই সিজনে অপ্রতিসম স্টাইলও একবার দেখে নিন। বেঙ্গালুরুর ডিজাইনার শুরতি কুলকারনি বলেন, ‘শান্তনু এবং নিখিলের আইটেমটি একবার নিয়ে দেখুন। এর নতুনত্ব হচ্ছে তারা প্রিন্টের খাদি কাপড় ব্যবহার করেছে এবং তাদের ডিজাইনটি অপ্রতিসম। খাদি কাপড়ে সুন্দর আকৃতি তৈরি হয় যা উৎসবের সিজনের জন্য খুবই উপযুক্ত।’

আবৃত এবং প্রাক-সজ্জিত

রানওয়ে থেকে ফ্রেশ এবং প্রাক-সজ্জিত দোপাট্টা আরও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কারণ এটা নিখুঁত। বেঙ্গালুরুর ডিজাইনার শকলা সুকান্দার বলেন, ‘আনারকলিতে আপনার দোপাট্টা যেখানেই শেষ হোক না কেন, একে শাড়ি কিংবা প্রাক-সজ্জিত হিসেবে পরুন এবং এক কাঁধে অলংকার যোগ করুন- এটা সব বয়সের নারীদের মানাবে। এতে আপনি সুন্দর স্টাইল নিয়ে পরীক্ষা করতে পারবেন এবং অনন্য স্টাইল তৈরি করে নিতে পারবেন।’ তিনি নিজে আনারকলির ওপর মেটালিক দোপাট্টা ডিজাইন করেছেন যা সম্পূর্ণ আউটফিটকে হাইলাইট করবে।

জ্যাকেট নিয়ে আসুন

ডিজাইনাররা আনারকলির সাথে এবার যোগ করল মানানসই জ্যাকেট। আবু জানি এবং সন্দ্বীপ খসলার সাদা স্টাইলটি আপনি কি পছন্দ করেন যা আনুশকা শরমা পরেছিলেন। তাহলে আপনিও ফ্যাশনে সেরকম জ্যাকেট নিয়ে আসতে পারেন। পরতে পারেন ভারী কাপড়ের পোশাক যেমনঃ জ্যাকুয়ার্ডস, টাফেটাস, পশমী উল অথবা ভারী সিল্ক। স্টাইলিস্টদের মতে আপনি এগুলো পরতে পারেন শাড়ি কিংবা লেহেঙ্গার সাথেও।

কেপ যোগ করুন

আরেকজন বেঙ্গালুরুর ডিজাইনার অদিতি লাল আনারকলির সাথে নিয়ে আসলেন কেপ। তিনি বলেন, ‘এটা স্টাইলে অনন্য লুক এনে দেয় ঠিক যেন দোপাট্টার মতো। এটা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন এবং ব্যক্তিগত স্টাইলের সাথে মানানসই করে পরলে এটা স্টাইলে চমক এনে দেয়। এতে সম্পূর্ণ আউটফিট নিয়ন্ত্রন করাও খুব সহজ হয় এবং এটা পিন দিয়ে আটকান কিংবা একটি অংশ সবসময় ধরে রাখারও দরকার পড়ে না।’

 

কল্যাণী স্কুলের ‘কল্যাণী’

ছয় বছর আগে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ছিল জরাজীর্ণ। মাঠে আবর্জনার স্তূপ। শিক্ষার্থীরাও নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসত না। জোড়াতালি দিয়ে চলছিল বিদ্যালয়টি। এখন আর সেই চিত্র নেই। দুটি পাকা ভবন, বারান্দায় হরেক রকম ফুলগাছের টব। শ্রেণিকক্ষগুলো সাজানো-গোছানো। শিক্ষার্থীদের ফলও চোখে পড়ার মতো। গত ছয় বছরে চারবার বিদ্যালয়টি উপজেলায় ‘শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
কল্যাণী নামের এই বিদ্যালয়টি যাঁর কারণে বদলে গেছে, তিনি প্রধান শিক্ষক সুফিয়া বেগম। শিশুদের পড়ানোর নিজস্ব কৌশল, কর্তব্যনিষ্ঠা ও একাগ্রতার জন্য এবার তিনি রংপুর বিভাগের ‘শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক’ নির্বাচিত হয়েছেন।
স্কুলটি এলাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠা কল্যাণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ২০০৯ সালে যখন সুফিয়া বেগম এখানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন, তখন স্কুলটি অনেকটাই বিলীন। রীতিমতো ভগ্নদশা। সুফিয়া বেগম বললেন, ‘তখন বিদ্যালয়ের পরিবেশ দেখে মন খারাপ হয়ে যেত। পড়ানোর জন্য ছিল আধা পাকা জরাজীর্ণ তিনটি ঘর। মাঠে নোংরা-আবর্জনার দুর্গন্ধ। কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী থাকলেও তারা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসত না। টিনের চালের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ত। ছেলেমেয়েদের বই-খাতা ভিজে যেত।’
কীভাবে বিদ্যালয়ে পড়ালেখার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায় সেটাই ধ্যানজ্ঞান হয়ে দাঁড়ায় তাঁর। প্রথমে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেন। তাদের নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ পরিষ্কার করেন। এরপর এলাকার সুধীজনদের নিয়ে সভা করলেন, পড়াশোনার পরিবেশ তৈরির জন্য চাইলেন সহযোগিতা। বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হলো। স্কুলের বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিল তৈরি হলো স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায়। শিক্ষকেরা ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করেন। নিয়মিত মা ও অভিভাবক সমাবেশ শুরু হয়। তাঁদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সেগুলোর বাস্তবায়ন করা হলো। এসবে শিক্ষার চমৎকার পরিবেশ তৈরি হলো, বেড়ে গেল শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার। পরীক্ষার ফলও ভালো হতে থাকল। বিদ্যালয়টিতে এখন শিক্ষার্থী ৫৯৬ জন, শিক্ষক ১৪ জন। গত তিন বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। ২০১০, ২০১১, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিদ্যালয়টি উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসেবে স্থান দখল করে।
২৫ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সামনে সবুজ মাঠ। মাঠের চারদিকে গাছ। দুটি পাকা ভবনের নয়টি কক্ষ সুসজ্জিত। শিশু শ্রেণির কক্ষটি যেন খেলাঘর। শিশুরা কীভাবে বেড়ে উঠলে ভালো কিছু শিখবে তার একটি গাইডলাইনও দেয়ালে সাঁটানো আছে স্কুলের দেয়ালে। অবশ্য এটি অভিভাবক ও শিক্ষকদের সচেতনতার জন্য। সংগীত চর্চার জন্য আছে নানা রকম বাদ্যযন্ত্র ঢোল-তবলা, হারমোনিয়াম ইত্যাদি। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে রয়েছে ছেলেমেয়ের আঁকা ছবি।
প্রধান শিক্ষক সুফিয়া বেগম সেদিন প্রথম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা তাঁর সঙ্গে সমবেত স্বরে কবিতা আবৃত্তি করছে। ক্লাস শেষে কথা হয় শিক্ষার্থী ফারজানার সঙ্গে। সে বলে, ‘হেড আপা (প্রধান শিক্ষক) হামাক খুব আদর করে। আপা কাসোত (কাছে) আসলে খুব ভালো নাগে।’
সুফিয়া বেগম মনে করেন নিজের কাজটুকু সব সময় যত্ন দিয়ে করতে হয়। পেশার প্রতি ভালোবাসা না থাকলে একজন মানুষ ভালো কিছু করতে পারেন না।

 

হত্যাকারীর লক্ষ্য কেবল নারী!

রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় গত তিন মাসে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে দুই নারীকে। আরও দুই নারীকে একইভাবে কোপানো হলে তাঁরা গুরুতর আহত হয়েছেন। এই চারজনের মধ্যে তিনজনই বাড়িওয়ালার স্ত্রী। চারজনই চল্লিশোর্ধ্ব।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, প্রতিটি ঘটনা একই ধরনের। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢোকার পর ওই নারীদের ওপর হামলা চালানো হয়।
দক্ষিণখান থানার সদ্যসাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ লুত্ফর রহমান  বলেন, যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের স্বজনদের বর্ণনা এবং যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের বর্ণনা অনুযায়ী ঘটনাগুলো একই ব্যক্তি ঘটিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। একটি বাড়ি থেকে পাওয়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ইতিমধ্যেই ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।
হত্যার জন্য লোকটি নারীদেরই কেন বেছে নিচ্ছে, সে বিষয়ে লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টা রহস্যজনক। লোকটিকে গ্রেপ্তার করা গেলেই এর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
ধারাবাহিক এই ঘটনাগুলোর সূত্রপাত গত ২৪ জুলাই থেকে। ওই দিন দক্ষিণখানের আশকোনা মেডিকেল রোডে মাহিরা বেগমকে (৫০) কুপিয়ে আহত করা হয়। মাহিরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। এর প্রায় এক মাস পর ২১ আগস্ট দক্ষিণখানের তেঁতুলতলা রোডে গৃহকর্ত্রী সুমাইয়া বেগমকে (৫২) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ৩১ আগস্ট দক্ষিণখানের মুন্সি মার্কেট এলাকায় জেবুন্নেছা চৌধুরীকে (৫৬) কুপিয়ে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায় এক ব্যক্তি। ৭ সেপ্টেম্বর আবারও উত্তর গাওয়াইরে ওয়াহিদা আক্তার (৪৮) একইভাবে খুন হন। এর মধ্যে মাহিরা বেগম বাদে বাকি তিনজনই বাড়ির মালিকের স্ত্রী।
দক্ষিণখান থানা-পুলিশ একটি বাড়ি থেকে যে ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করেছে, সেখানে লোকটির চেহারা অস্পষ্ট। তবে লোকটির পরনে সাধারণ পোশাক ছিল। আর কাঁধে ঝোলানো ছিল ব্যাগ। নিহত ওয়াহিদা আক্তারের মেয়ে শোভার বর্ণনা অনুযায়ী, লোকটির বয়স ২৩ থেকে ২৬ বছর। তিনি খুব পরিপাটি ছিলেন।
তবে দক্ষিণখান থানা-পুলিশ বলছে, হামলাকারীর বয়স আনুমানিক ২৫-২৬ বছর। উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। গায়ের রং ফরসা। মাথার চুল ছোট। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢোকেন। গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে ফ্ল্যাট দেখতে যান। আর ফ্ল্যাটে গেলেই পেছন থেকে গৃহকর্ত্রীর মাথা ও ঘাড়ে চাপাতি দিয়ে কোপ দেন। পরে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যান।
আহত দুই নারীর মধ্যে জেবুন্নেছা চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। জেবুন্নেছার ছেলে কাউছার আহমেদ  বলেন, চাপাতির কোপে তাঁর মায়ের মাথার খুলির হাড়ের একটি অংশ ভেঙে গেছে। ২২ দিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন। তাঁর ডান হাত ও পা প্যারালাইজড হয়ে গেছে। দৃষ্টিশক্তিও হারিয়েছেন। সন্তানদেরই তিনি এখন ঠিকমতো চিনতে পারছেন না।
র্যাব ১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ  বলেন, ভাড়াটিয়া সেজে লোকটি আসেন। তারপর কোনো একসময় তিনি ঘটনাটি ঘটান। এ কাজে তিনি চাপাতি ব্যবহার করেন।
কর্নেল তুহিন বলেন, ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ওই লোকটি সপ্তাহের কাজের দিনগুলো বেছে নেন। চারটি ঘটনাই বেলা দেড়টা থেকে বিকেল পাঁচটার মধ্যে ঘটেছে। সাধারণত ওই সময়ে বাসায় কোনো পুরুষ লোক থাকেন না। এখনো লোকটিকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ওই খুনির ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। কেউ তাঁর সন্ধান পেলে ০১৭৭৭৭১০১০০, ০১৭৭৭৭১০১৯৯ নম্বরে জানাতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
দক্ষিণখান আদর্শ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম তোফাজ্জল হোসেন বলেন, মসজিদের ইমামের মাধ্যমে ও মাইকিং করে বাড়িওয়ালাদের এ বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। আগত ভাড়াটেদের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সব তথ্য সংগ্রহ করার জন্য তাঁদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাড়ি ভাড়া নিতে যারা আসছে, তাদের বাড়ি দেখানোর সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।