banner

রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

মুগডালের বাদামি খিচুড়ি

খিচুড়ি খেতে ভালোবাসেন না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাঙালির খাদ্যতালিকায় খিচুড়ির স্থান উল্লেখযোগ্য। একটু বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই, খিচুড়ি খেতে মনটা কেমন আকুপাকু করে ওঠে। আজ থাকলো মুগডালের বাদামি খিচুড়ি তৈরির রেসিপি। রেসিপি দিয়েছেন কাকলী সাহা-

উপকরণ : পোলাওয়ের চাল- ৫০০ গ্রাম, হালকা ভাজা মুগডাল-২০০ গ্রাম, আদা বাটা-১ চা চামচ, হলুদ গুড়ো-১ চামচ, মরিচ গুড়ো -১ চামচ, জিরা বাটা-১ চামচ, কিসমিস-১২/১৪ টি, দারুচিনি এলাচ- ২/৩টি, শুকনো মরিচ- ২/৩টি, আস্ত জিরা-সামান্য, লবণ-স্বাদ মতো, চিনি-সামান্য, কাঁচা মরিচ-৭/৮ টা, ঘি-২ টে. চামচ।

প্রণালি : চাল ভালো করে ধুয়ে, পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। এবার হাড়িতে তেল গরম করে তাতে শুকনো মরিচ, আস্ত জিরা ও তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে চালগুলো হালকা ভেজে নিতে হবে। এবার ভাজা ডালগুলো দিয়ে গরম পানি দিয়ে তাতে লবণ, হলুদ গুড়ো, মরিচ, জিরাগুড়ো দিয়ে ভালো করে নেড়ে মধ্যম আঁচে ঢেকে রাখতে হবে। খিচুড়ি ঝরঝরে করার জন্য চাল ও ডালের দ্বিগুণ পানি দিতে হবে। এখন পানি কমে এলে এলাচ, দারুচিনি, কাঁচা মরিচ, চিনি, কিসমিস ও ঘি দিয়ে নেড়ে দমে ৪/৫ মিনিট রাখতে হবে। এবার ঘি ছাড়িয়ে নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে মজাদার মুগডালের খিচুড়ি।

 

নখে নান্দনিক নকশা

নখ সাজাতে পছন্দ করে থাকেন অনেকেই। পার্টিতে, অফিসে, কিংবা প্রিয় মানুষের সাথে কাটানো সময়গুলোতে আপনি চান আপনার নখকে একটু আলাদা ভাবে সাজাতে। তাই চলুন জেনে নেই তেমনি কিছু নখের সাজ, যা আপনাকে সাজাবে অপরূপ সাজে।

একুরিয়াম নেইল আর্ট
প্রয়োজনীয় উপকরণ : ফেক নেইল ১ সেট, ছোট চুমকি ২ পদের, ছোট পুতি ২ পদের, গ্লু, তুলি ১ টি, গুড়ো জরি, ড্রপার ১টি।

যেভাবে করবেন : ফেক নেইল ১ হাতে পরে নিন; নখের যে পাশ ফাঁকা সেখান থেকে নখের ভিতর ছোটো ছোটো চুমকি, পুতি, গুড়োজড়ি অল্প করে লাগিয়ে নিন। ড্রপার দিয়ে নখের ভিতর কয়েক ফোটা পানি দিন। তুলিতে অল্প গ্লু নিয়ে ফাঁকাটুকু আটকে দিন। ব্যস তৈরি হয়ে গেল একুরিয়াম নেইল আর্ট।সবগুলো ফেক নখ এভাবে সাজান। তুলি দিয়ে আসল নখের ওপর গ্লু লাগান। এবার ফেক নখটি ভাল করে চেপে লাগিয়ে নিন।

স্টাম্পিং নেইল আর্ট
প্রয়োজনীয় উপকরণ : স্ট্যাম্পার, টেমপ্লেট, স্ক্রাপার, রিমুভার প্যাডস, নেইল পলিশ ১/২টি, বেইস কোট ও টপকোট নেইল পলিশ। নখের উপর বেসকোট পলিশ লাগান।

যেভাবে করবেন : টেমপ্লেটের যেকোনো একটি ডিজাইন বেছে, তাতে পছন্দমত রঙের নেইল পলিশ লাগিয় নিন। নেইল পলিশ আবশ্যই ঘন হতে হবে। একটি স্ক্র্যাপার হাতে নিন। স্ক্র্যাপারটি দিয়ে টেমপ্লেটের উপর দেয়া নেইল পলিশ খুব দ্রুত ডান থেকে বামে টেনে নিয়ে যান।স্টাম্পার দিয়ে টেমপ্লেটের উপর টিপুন, এটাতে নকশা উঠে আসবে।  নখে নকশা দিতে স্ট্যাম্পারটি দ্রুত নখের উপর বসান এবং একটু চাপ দিয়ে ধরে ডান থেকে বামে ঘুরিয়ে আনুন। দেখুন নকশাটি নখে কী চমৎকার লেগে গেছে।আরো একবার টপকোট নেইল পলিশ লাগান। সবগুলি নখে একই পদ্ধতি ব্যবহার করুন। একাধিক রঙ ব্যবহার করতে পারেন। রিমুভার প্যাডস দিয়ে টেমপ্লেট ও স্ক্র্যাপার মুছে রাখুন পরে ব্যবহারের জন্য।

স্কচ টেপ নেইল আর্ট
প্রয়োজনীয় উপকরণ : পছন্দমত বেইস নেইল পলিশ কয়েকটি, স্কচ টেপ, ছোট কাচি, বেইস কোট ও টপ কোট নেইল পলিশ, রিমুভার, কটন বাড।

যেভাবে করবেন : নখে বেইস কোট নেইল পলিশ লাগান। স্কচ টেপ কাচি দিয়ে কেটে যে কোনো নকশা করে নখে লাগিয়ে দিন। অন্য আরেকটি রঙের নেইল পলিশ দিয়ে স্কচ টেপের উপর থেকে ফাঁকা অংশ ভরিয়ে নিন। স্কচ টেপ দ্রুত তুলে ফেলুন। নখের পাশে চামড়ায় লেগে থাকা বাড়তি নেইল পলিশ কটন বাডে রিমুভার লাগিয়ে আলতো করে তুলে ফেলুন। সব শেষে নখ চকচকে করতে টপ কোট নেইল পলিশ দিয়ে শেষ করুন। নকশা অনুযায়ী একাধিক রঙ ব্যবহার করতে পারেন।

 

অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্যেও পিছিয়ে নেই নারীরা

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ যেমন শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ নানা দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে; তেমনিভাবে এ দেশের নারীরাও অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্যে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের অসংখ্য নারী ইতোমধ্যে অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে অন্যান্য সাধারণ ব্যবসার ন্যায় এ ব্যবসাতেও সফলতা লাভ করছে। যদিও অনলাইন ব্যবসা বা ই-কমার্সের ধারণাটি আমাদের দেশে খুব একটা বেশি দিনের নয়, তারপরেও যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে অনলাইনের মাধ্যমে কেনাকাটার প্রতি জনগণের ঝোঁক দিনে দিনে বাড়ছে। আর এ বিষয়টিকে একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছেন অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্তরা।

তারা বলছেন, দেশে অনলাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু হওয়ার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই এখন আর জনগণকে কষ্ট করে, সময় ব্যয় করে, যানজট ঠেলে আর যানবাহনের ভাড়া দিয়ে মার্কেটে জিনিসপত্র কিনতে যেতে হচ্ছে না। বরং জনগণ বা ক্রেতা এখন ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে তার পছন্দের জিনিস অর্ডার করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কিনতে পারছেন। আবার এক্ষেত্রে বিল পরিশোধও অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই করতে পারছেন। ফলে এখানে কোনো ঝামেলা না থাকায় অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্য মানুষের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় ও সহজ করে তুলছে।

অনলাইন ব্যবসা প্রসঙ্গে অনলাইনশপ SKR Glamour Creation-“Happymom BD”-এর কর্ণধার শারমিন আক্তার জানান, তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে জীবন-জীবিকার জন্য নারীদের এখন অন্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কোনোই কারণ নেই।

তিনি বলেন, দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য্য, সঠিক পরিকল্পনা আর মেধা থাকলে এখন নারীরা ঘরে বসেই অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে সহজেই সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারেন, এমনকি হতে পারেন সফল উদ্যেক্তাও।

দেশের অসংখ্য নারী অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সফলতা লাভ করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অনলাইন ব্যবসার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠার কারণ প্রসঙ্গে শারমিন আক্তার জানান, ছোট বেলা থেকেই তার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে পারিবারিক চাপে প্রথমে একটি প্রতিষ্ঠানে মোটামুটি ভালো পোস্টে চাকরি পেলেও চাকরিতে মন না টেকায় তা বেশিদিন করা হয়ে ওঠেনি। পরে সাংসারিক প্রয়োজনে অপর একটি প্রতিষ্ঠানে মোটামুটি ভালো মানের পোস্টে চাকরি পেলেও সেখানে বেশিদিন চাকরি করা হয়নি। কারণ, চাকরি করাটাকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সবসময়ই দাসত্বের সর্বশেষ ভার্সন বলে মনে করেন।

অনলাইন ব্যবসার ভবিষ্যৎসহ নানা দিক চিন্তা-ভাবনা করে শেষপর্যন্ত তিনি অনলাইন ব্যবসার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেন SKR Glamour Creation-“Happymom BD”- নামক অনলাইন শপ।

কথা প্রসঙ্গে জানা গেছে, তিনি তার এই অনলাইন শপের জন্য নানা ধরনের শাড়ি-কাপড়, পোশাক-পরিচ্ছদ, খেলনা, প্রসাধনী, আর্টিফিসিয়াল গহনাসহ নানান জিনিস মূল্য, ভ্যাট ও কাস্টমচার্জ অনলাইনের মাধ্যমে পরিশোধপূর্বক বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্ডার দিয়ে আনেন। এরপর তিনি ওইসব জিনিপত্রের ছবি তার এ অনলাইন শপের ওয়ালে (প্রচ্ছদে) পোস্ট করেন। তারপর অনলাইনে দর্শক-ক্রেতারা তার অনলাইন শপ থেকে ছবি দেখে পছন্দের ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাছাইন করেন। এরপর বাছাইকৃত জিনিসপত্র কেনার জন্য অনলাইনের মাধ্যমেই অর্ডার করেন। অর্ডার অনুযায়ী তিনি ক্রেতাদের কাছে অর্ডারকৃত জিনিসপত্র দ্রুততম সময়ের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্তা করেন। আর এক্ষেত্রে ক্রেতা যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্ডারকৃত পণ্য হাতে পেতে পারেন সেজন্য তাকে কিংবা তার SKR Glamour Creation-“Happymom BD”–এর পক্ষ থেকে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’ কবিতার রানারের ন্যায় সময়ের প্রতি তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখতে হয়।

অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে সমস্যা বা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বা বিষয় হচ্ছে ক্রেতার নিকট থেকে বিশ্বস্ততা অর্জন করা-যা অনেকটাই কঠিন। তবে একবার বিশ্বস্ততা অর্জন করলে পরবর্তীতে কোনো সমস্যা হয় না, তখন বাকি পথটা চলা সহজ ও মসৃণ হয়।

অনলাইন শপ কাদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী এ প্রশ্নের জবাবে শারমিন আক্তার জানান, স্কুল-কলেজ, ঘর-সংসার, ছেলে-মেয়ে নিয়ে নানান কাজে যারা ব্যস্ত থাকেন, কাজের চাপে যারা কেনাকাটার জন্য সময় পান না, যাদের পক্ষে কষ্ট করে মার্কেটে যাওয়া সম্ভব হয় না এবং সর্বোপরি ঘরে বসে সহজেই যারা পছন্দের জিনিসপত্র ক্রয় করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন মূলত: তাদের জন্য অনলাইন শপ বিশেষভাবে উপকারী।

তিনি বলেন, বিশাল সমুদ্রবক্ষে অ্যালব্রাটস পাখি যেমন নাবিকদের জন্য সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়, ঠিক তেমনিভাবে দেশের নানান অনলাইন শপগুলো ওই ধরনের মানুষের জন্য উপকারীই বটে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনলাইন ব্যবসা চালু হওয়ার ফলে এখানে একজন ক্রেতা সহজেই যেমন ঘরে বসে অনায়াসেই তার পছন্দের জিনিস অর্ডার করে কেনার সুযোগ পাচ্ছেন; ঠিক অপরদিকে বিক্রেতাও ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে অতি সহজেই ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছেন।

দেশের নারী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সাবিনা পারভীন অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে আমাদের সমাজের নারীদের সম্পৃক্তার বিষয়ে বলেন, যদিও অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য করার বিষয়টি জনগণের নিকট অনেকটাই নতুন, তারপরেও অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ন্যায় অনলাইন জগতে ব্যবসা করার ক্ষেত্রেও আমাদের দেশের নারীরা কোনোভাবেই পিছিয়ে নেই। বরং সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে সমান তালে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সমাজে ‘নারী’ শব্দটিকে ইতিপূর্বে যেভাবে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হতো এখন আর সেভাবে দেখা হয় না। অবস্থা বদলেছে, বদলাচ্ছে। আবার ‘নারী’ নামক মানুষটিকে ইতিপূর্বে যেভাবে অবজ্ঞা করা হতো, যেভাবে অবমূল্যায়ন করা হতো; এখন কিন্তু আর সেই অবস্থা নেই, পরিস্থিতি বদলে গেছে। দেশকে সামনে দিকে এগিয়ে নিতে এবং সমাজ পরিবর্তনে পুরষের পাশাপাশি নারীর ভূমিকা অপরিসীম এবং পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এসব ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে সফল হচ্ছেন।

সাবিনা পারভীন বলেন, একজন নারী একটু সচেতন হলে, পরিবার-পরিজন থেকে একটু সহযোগিতা-সহমর্মিতা পেলে ওই নারীও যে তার জীবনের মোড় ও ভাগ্যের চাকা ইতিবাচকভাবে ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম, তার প্রমাণ মেলে দেশে অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্যে নিযুক্ত হাজারো নারীর সম্পৃক্ত হয়ে সফল হওয়ার ঘটনার মধ্য দিয়ে।

 

চাকরিতে নিবন্ধিত এলাকা বাধ্যতামূলক হলে ‘নারীর পরিসর কমবে’

তাহমিনার (ছদ্মনাম) বাবার বাড়ি বগুড়া। চাকরিতে নিবন্ধনের সময় তিনি অবিবাহিত ছিলেন। এ কারণে ঠিকানা দেওয়া ছিল বাবার বাড়ির। বিবাহসূত্রে তিনি এখন ঢাকায় থাকেন। এ অবস্থায় বিয়ের পর স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা নিজের ঠিকানা হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিলেন নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু কাজ হয়নি।

সেলিনা পারভীনের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। নিবন্ধনের সময় কিশোরগঞ্জে স্থায়ী ঠিকানা দেওয়া ছিল। বিয়ের পর স্থান পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে গেলে তাকে বলা হয়, স্থায়ী ঠিকানার সঙ্গে চাকরি কোটার সম্পর্ক থাকায় ঠিকানা পরিবর্তন করতে গেলে নানা জটিলতা তৈরি হবে।

এখন থেকে নিবন্ধনের পর প্রার্থীরা আর চাকরির এলাকা বদলের আবেদন করতে পারবেন না। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।

বিয়ের পর নারীরাই ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন বেশি করেন বলে জানিয়েছেন নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের উপসচিব তৌহিদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নিবন্ধন হওয়ার পর বিষয়টি একটা প্রক্রিয়ার ভেতর পড়ে যায়। তখন ঠিকানা পরিবর্তনের আবেদন নেওয়া সম্ভব নয়, জটিলতা বাড়ে।’

এখন থেকে শিক্ষিকা হিসেবে নিবন্ধনে যে ঠিকানা দেওয়া থাকবে, নিয়োগ সেই এলাকাতেই হবে, তার বাইরে নয়। অবিবাহিত নারীরা বাবার ঠিকানা দিয়ে চাকরির আবেদন করলে বিয়ের পর স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা নিজের বলে দাবি করতে পারবেন না। অর্থাৎ তাকে বাবার ঠিকানাতেই নিয়োগ নিতে হবে।

নারী নেত্রীরা বলছেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার কারণে চাকরি করার ব্যাপারে নারীরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, ‘আমাদের দেশে নারীদের চাকরি নিয়ে এমনিতেই জটিলতা আছে। এরপর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা থাকলে তাদের জায়গা ছোট হয়ে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘কেবল এ রকম একটা সিদ্ধান্ত দিলেই হবে না। নিজের ঠিকানা বাছাইয়ের স্বাধীনতা নারীর আছে। বাবার বাড়ি কিংবা শ্বশুর বাড়ির ঠিকানার বাইরেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যেখানে সে নিজেই নিজের আলাদা ঠিকানা তৈরি করতে সক্ষম। সে ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দিয়ে তা অবরুদ্ধ করার মধ্যে দুরভিসন্ধি লক্ষ্য করা যায়।’

আয়শা খানম আরও বলেন, ‘আমরা জানি এমন ক্ষেত্রে কোটা জাতীয় বিষয় থাকে। ফলে নিবন্ধনের পর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে পরিবর্তনটা কঠিন। কিন্তু বাস্তবতা তো বুঝতে হবে।’

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, ‘নারীর নিজের কোনও অধিকারই নেই যেন। যত রকমের সামাজিক রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা তার ওপরই বর্তাবে। প্রয়োজনে সে নিজ এলাকার বাইরে চাকরি করছে না? বাবার এলাকাতেই চাকরি করতে হবে কেন?’